title
stringlengths
4
148
text
stringlengths
14
41.8k
summary
stringlengths
1
8.73k
লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়-বন্যায় ৬ বাংলাদেশির মৃত্যু
লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে দেশটির পূর্বাঞ্চলের দারনা শহরে বসবাসরত অন্তত ৬ বাংলাদেশি নাগরিক মারা গেছেন। আজ বুধবার লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে। মৃত ৬ জনের মধ্যে ৪ জনের প্রাথমিক পরিচয় জানতে পেরেছে দূতাবাস। তারা হলেন-রাজবাড়ি জেলার শাহীন ও সুজন এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার মামুন ও শিহাব। অপর ২ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া দারনা শহরে বসবাসরত আরও কয়েকজন বাংলাদেশি নিখোঁজ আছে বলে আশঙ্কা করছে দূতাবাস। ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের তথ্য জানতে এবং ঘূর্ণিঝড়ে নিখোঁজ প্রবাসীদের তথ্য জানানোর জন্য দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. রাসেল মিয়ার (মোবাইল নম্বর +২১৮৯১৮৫৮০৯৮৯) সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে দূতাবাস। ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার তাণ্ডবে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে দারনা, সাহাত, আল-বাইদা, আল-মার্জ শহর ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে দারনা বাঁধে ভয়াবহ ধসে সৃষ্ট বন্যায় কয়েক হাজার মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ উদ্ধার কার্যক্রমে নিয়োজিত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলে দূতাবাস জানিয়েছে।
লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে দেশটির পূর্বাঞ্চলের দারনা শহরে বসবাসরত অন্তত ৬ বাংলাদেশি নাগরিক মারা গেছেন।
মালয়েশিয়ায় নাইট ক্লাবে অভিযান: ৫ বাংলাদেশিসহ গ্রেপ্তার ৪৫
মালয়েশিয়ার মেলাকা প্রদেশের একটি নাইট ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ৫ বাংলাদেশিসহ ৪৫ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেলাকা প্রদেশের বন্দর হিলির তামান মেলাকা রায়ার নাইট ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বেশ কয়েকজনের কাগজপত্র চেক করার পর ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে ১৫ জন থাইল্যান্ডের নাগরিক, সবাই নারী। এই ১৫ নারী ও ৫ বাংলাদেশি ওই নাইট ক্লাবের কর্মচারী। একই সময়ে অন্যান্য প্রদেশের কয়েকটি নাইট ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আরও ২৫ জনকে। সব মিলিয়ে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে অভিবাসন বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতদের সবার বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায়, তাদের কাছে বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অনেকেই ওয়ার্ক পারমিট বা পারমিট পাসের শর্ত লঙ্ঘন করে ভিজিট ভিসায় মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছে। এরপর প্রোস্টিটিউশন ও বডি ম্যাসেজের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণেই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার হওয়া বিদেশি নারীদের নাইট ক্লাবে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য রাখা হয়েছিল। ক্লাবে তাদের 'ফুলের নেকলেস' বলে ডাকা হয়। তারা নাইটক্লাবে আসা পুরুষদের মনোরঞ্জন করে প্রতি রাতে জনপ্রতি ২০০ থেকে ১ হাজার রিঙ্গিত আদায় করে আসছিলেন। নাইটক্লাবের প্রহরী ও ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী দুই স্থানীয় ব্যক্তি ছাড়াও একই অভিযোগে ক্লাবটির কর্মচারী ৫ বাংলাদেশিকে ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩ (অ্যাক্ট ১৫৫)-এর ৫৫বি ধারা ও ৫৬(১)(ডি) ধারা ও ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের ৩৯(বি) ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার মেলাকা প্রদেশের একটি নাইট ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ৫ বাংলাদেশিসহ ৪৫ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ।
গ্রিসে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব
গ্রিসে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপন করা হয়েছে। গত শনিবার ২৭ এপ্রিল এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশি খাবার উৎসবের সঙ্গে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা উদযাপন করা হয়। এতে বাংলাদেশি নারী-পুরুষ ও শিশুরা লোকজ ও বৈশাখী পোষাকে সজ্জিত গিতে অংশ নেন। হাতে মেহেদি ও বাঙালী পোশাকের সাজে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন বিদেশি নাগরিকরাও। গত শনিবার সকাল থেকেই এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে বৈশাখী আলপনা, নববর্ষের সাজসজ্জাসহ বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী সাজে সজ্জিত করা হয়। নারী-পুরুষ সবাই বৈশাখি পোষাকে সজ্জিত হন। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বেশ কয়েকটি স্টলে বাংলাদেশি খাবার, শাড়ি ও অলংকার সামগ্রী এবং আলপনা সহকারে বাংলাদেশকে ফুটিয়ে তোলেন। বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দূতাবাসের সদস্যবৃন্দ এবং শিশু-কিশোররা বৈশাখী ও লোকজ সংগীত, কবিতা, নৃত্য ইত্যাদি পরিবেশন করেন। শত শত নারী-পুরুষের আগমনে কলকাকলিতে মুখরিত হয় দূতাবাস এবং সৃষ্টি হয় এক বর্ণিল মনোরম পরিবেশের। মেলায় আগমনকারীরা বিভিন্ন স্টলে বাংলাদেশি পণ্য দর্শন এবং বাংলাদেশি খাবারও আস্বাদন করেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি, গ্রামীণ বাংলার বৈশাখী আবহে স্টলসহ দূতাবাস প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ। দূতাবাসের কর্মকর্তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে নিয়ে নতুন বছরে বর্ণিল সাজে সজ্জিত ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা করেন। বিপুল উৎসাহে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বাদ্যযন্ত্র সহকারে এ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। বাংলা বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দিয়ে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার উদাত্ত আহবান জানিয়ে এথেন্সস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এর চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ খালেদ বলেন, 'বাংলা নববর্ষের উৎসব বাঙালির প্রাণের উৎসব, সম্প্রতির উৎসব এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির উৎসব। বাংলাদেশ দূতাবাস এর আয়োজনে প্রবাসীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈশাখি উৎসবে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি সবাই সম্প্রতির সাথে এবং সৌহার্দের সাথে উৎসব এক সাথে উদযাপন করছি এবং এই উৎসব আমরা সবাইকে সারা বছর এক সাথে থাকার ও এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগাবে।' শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীবৃন্দ এবং শিশু-কিশোররা বৈশাখী ও লোকজ সংগীত, নৃত্য ইত্যাদি পরিবেশনের মাধ্যমে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের বর্তমান ও সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রিসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী এবং আঞ্চলিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশি বন্ধুদের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন গ্রিক নাগরিক উপস্থিত হন। এর মধ্যে দুইজন বাঙালি সাজে সজ্জিত হয়ে আসেন। তারা পাঞ্জাবী ও হাতে মেহেদি দিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হন। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপের শুরুতেই 'কেমন আছেন ভাই' বলে বাংলা ভাষায় সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তারা বলেন বাংলার সংস্কৃতি তাদের খুব ভালো লাগে। তাই এক বন্ধুর আমন্ত্রণে এই অনুষ্ঠানে বাঙালির সাজে এসেছেন।'
গ্রিসে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উদযাপন করা হয়েছে।
বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মালয়েশিয়ায় ৫৫ বাংলাদেশি আটক
মালয়েশিয়ার জহুর রাজ্যের একটি পাম বাগানে অভিযান চালিয়ে ৫৫ বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। এ ছাড়াও, মিয়ানমারের ৬২, ভারতের ২৮, ইন্দোনেশিয়ার ৩১ (২৬ পুরুষ ও ৫ নারী), পাকিস্তানের ১৬, চীনের ২ এবং পূর্ব তিমুরের এক নাগরিকসহ মোট ১৯৫ জনকে আটক করেছে জহুর ইমিগ্রেশন পুলিশ। ইমিগ্রেশন পুলিশ জানায়, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের আটক করা হয়েছে। আজ শনিবার জহুর ইমিগ্রেশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়, রাজ্যের জহুর বারু জেলার গেলাং পাতার পাম বাগানের দুটি পৃথক স্থানে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। অভিযানে ৬৪১ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও ভিসা (কাগজপত্র) যাচাই-বাছাই করা হয়। এদের মধ্যে ১৯৫ জনের কাছে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের বয়স ১৯ থেকে ৬৯ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ইউএনএইচসিআর'র শরণার্থী কার্ডধারীও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জহুর ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক বাহারউদ্দিন তাহির। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, 'অবৈধ অভিবাসীরা ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছ থেকে বাঁচতে গেলাং জহুর বারুর গেলাং পাতার মেইন রোড থেকে অনেক ভেতরে ১৫টি কন্টেইনারে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছিলেন। এই তথ্য পাওয়ার পর সেখানে অভিযান চালানো হয়।' বাহারউদ্দিন তাহির আরও বলেন, 'মালয়েশিয়ায় কাজের পারমিটের অপব্যবহার, অতিরিক্ত অবস্থান ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তী তদন্তের জন্য তাদের জহুর বারুর সেতিয়া ট্রপিকা ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।' যারা অবৈধ অভিবাসীদের চাকরি অথবা নিয়োগ দেবে সেসব নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন অবৈধ অভিবাসীদের ডিসেম্বরের মধ্যে চলমান আরটিকে ২.০ প্রোগ্রামে দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করে নিতে নিয়োগকর্তাদের আহ্বান জানান জহুর ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক।
মালয়েশিয়ার জহুর রাজ্যের একটি পাম বাগানে অভিযান চালিয়ে ৫৫ বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ।
সিডনিতে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য নগরী সিডনির বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, পবিত্র গ্রন্থ থেকে পাঠ ও ভিডিও প্রদর্শন। স্থানীয় সময় সকালে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে অর্পণ করা হয় ফুলের তোড়া। সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তারা দিবসটির ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তারা জাতির ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখতে ও অর্জনগুলোকে সমৃদ্ধ করতে সবার ভূমিকার ওপর জোর দেন। সন্ধ্যায় জাতীয় সংগীত, পবিত্র গ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে শুরু হয় এ পর্ব। কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। কনসাল জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়াসহ অনেক সামাজিক-রাজনৈতিক ঘটনা ও অর্জনের ভিত্তি ছিল ভাষা আন্দোলন।' তিনি সিডনির কমিউনিটির সদস্যদের দেশপ্রেম ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। 'একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়া'র সাংস্কৃতিক দল অনুষ্ঠান অংশ নেয়। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য নগরী সিডনির বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাপানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোসাইটির পিঠা উৎসব
শীতের পিঠা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তা ছড়িয়ে দিতে জাপানে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে প্রবাসীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোসাইটি জাপানের পক্ষ থেকে গতকাল রোববার সাইতামা কেন এর 'ওয়ারাবিশিরিৎসু কিতামাচি কমিউনিটি সেন্টারে' এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। সোসাইটির সভাপতি রাজিব মাহমুদ ইউনুছ উৎসবে আগতদের স্বাগত জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। উৎসবে সোসাইটির ৩২ জন সদস্যের তৈরি চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, পুয়া পিঠা, মুগ পাকন পিঠা, নকশি পিঠা, শামুক পিঠা, পানতোয়া পিঠা, নারকেল পুলি, পাটিসাপটা পিঠা, খাজা, সিমফুল পিঠা, পুলি পিঠা, ম্যারা পিঠা, শিরীশ পিঠা, ঝাল পুলি, ছিট পিঠা, পাতা পিঠা, ঝিনুক পিঠা, পাকান পিঠাসহ বাহারি সব নামের পিঠার আয়োজন ছিল। রকমারি সব পিঠার পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের নাস্তা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন ধরনের ভর্তাসহ মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হয়। পিঠা উৎসবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন লোকজ সংস্কৃতি স্থান পায়। এছাড়াও, ভাষার মাস হওয়ায় পিঠা উৎসবে শহীদ মিনারের রেপ্লিকা শোভা পায়। অতিথিরা জানান, এ উৎসবের কারণে গ্রামের পিঠাপুলির ঘ্রাণ-স্বাদ নিতে পেরেছেন তারা এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দেশীয় খাদ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারছেন। পিঠা উৎসবে সোসাইটির পক্ষ থেকে জাপানে বসবাসরত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার চারজনকে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। তারা হলেন-ইয়ামাগুচি চন্দন, মীর মোশাররফ, মশিউর রহমান এবং আবদুল হান্নান। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩০ জুন টোকিওর কিতা সিটির তাকিনোগাওয়া বুনকা সেন্টারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোসাইটি জাপানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০২৩ সালের ১৪ মে টোকিওর ইতাবাশি সিটি ফুনাদো হলে প্রবাসীদের উপস্থিতিতে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে নতুন সোসাইটির নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। [email protected]
শীতের পিঠা বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে তা ছড়িয়ে দিতে জাপানে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে প্রবাসীরা।
কাতারে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শোক দিবস পালন
কাতারে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। ১৫ আগস্ট সকালে কাতারের রাজধানী দোহায় বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্যে দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি সূচনা করেন কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম। এরপর প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ নাছির উদ্দীনের পরিচালনায় আলোচনা সভার শুরুতে জাতীয় শোক দিবসের বাণী পড়ে শোনানো হয় এবং  শোকাবহ ১৫ আগস্ট  নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র 'বাঙালির কালরাত' প্রদর্শিত হয়। রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, 'স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং অবদান রেখেছেন, তার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের মাধ্যমেই তার প্রতিদান দিতে হবে।' তিনি বলেন, 'স্বাধীনতা উত্তর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়ে প্রাজ্ঞ রাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতি বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিশ্ব নেতার মর্যাদায় আসীন করেছে।' অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, কাউন্সেলর ও ডেপুটি চিফ অব মিশন মো. ওয়ালিউর রহমান, কাউন্সেলর মোবাশ্বেরা কাদের, শ্রম কাউন্সিলর মোহাম্মদ মাশহুদুল কবির, কাউন্সিলর ভিসা ও পাসপোর্ট মাহাদি হাসান প্রমুখ। কাতারে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধা, কমিউনিটি সংগঠনের নেতাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ তাদের পরিবারের শাহাদত বরণকারী সকল সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত ও দেশের শান্তি, মঙ্গল ও উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়। লেখক: কাতারপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক
কাতারে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় অনিবন্ধিত ২৫২ বাংলাদেশি অভিবাসী আটক
মালয়েশিয়ায় ২৫২ বাংলাদেশিসহ ৫৬৭ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। গতকাল শুক্রবার রাতে কুয়ালালামপুরের জালান বাংসারের আবদুল্লাহ হুকুম অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালিয়ে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের আটক করা হয়। কুয়ালালামপুরের ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক সামসুল বদরীন মহসিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অভিবাসীদের গতিবিধি সম্পর্কে সপ্তাহব্যাপী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিবাসন বিভাগের ৮৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৪ তলা ভবনটির ১২৫টি বাসায় তল্লাশি চালান। এ সময় এক হাজারেরও বেশি দেশি-বিদেশি নাগরিকদের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা হয়। তার মধ্যে দেশটিতে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ৫২৮ জন পুরুষ, ৩৮ জন নারী ও এক শিশুকে আটক করা হয়। আটক হওয়া ৫৬৭ জনের মধ্যে ২৫২ জন বাংলাদেশি, নেপালের ১৬৩ জন, মিয়ানমারের ৭৫ জন, ইন্দোনেশিয়ার ৭২ জন, ফিলিপাইনের ৪ জন এবং ভারতের ১ জন নাগরিক রয়েছেন। সামসুল বলেন, আটকদের অনেকেই সামাজিক ভিজিট পাস ব্যবহার করে দেশটিতে প্রবেশের পর ওই আবাসিক ভবনের আশেপাশের এলাকায় কাজ করছেন। অভিযান চলাকালে একজন ব্যক্তি দ্বিতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। আটকদের দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩ অনুযায়ী তদন্তের জন্য বুকিত জলিল ইমিগ্রেশন ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইমিগ্রেশন আইনের অধীনে আরও অধিকতর তদন্তের কথা জানিয়ে পরিচালক বলেন, পুলিশ স্থানীয় জনগণের দেওয়া অভিযোগ এবং নানা তথ্যের ভিত্তিতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত  রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না। অবৈধ অভিবাসীদের কাছে বাসা ভাড়া দেওয়ায় বাড়ির মালিকদের খুঁজে বের করতে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
মালয়েশিয়ায় ২৫২ বাংলাদেশিসহ ৫৬৭ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল এবার খেলেছেন লিসবন টি-১৬ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে
বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন ইন পর্তুগাল আয়োজিত তৃতীয় টি-১৬ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খেলতে লিসবনে গিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। গত শনিবার বিকেলে লিসবনের অদূরে আলমাডার কখোইস মাঠে রাইজিং সিলেট ও সাইনিং কুমিল্লা খেলায় অংশ নেয়। শুরুতে ব্যাটিং করে সাইনিং কুমিল্লা ১৬ ওভার ৭ উইকেটে ১৪৩ রান করে। জবাবে রাইজিং সিলেট মাত্র ১০ ওভার ৪ উইকেটে ১৪৩ রান করে এবং ৬ উইকেটে জয়লাভ করে। রাইজিং সিলেটের পক্ষে মোহাম্মদ আশরাফুল সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন। আশরাফুলের আগমনে খেলায় ব্যাপক দর্শক সমাগম হয়। তাছাড়া লিসবনে বাংলাদেশ কমিউনিটির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় সাধারণ দর্শক এবং দুই দলের খেলোয়াড়ের মাঝে ব্যপক উচ্ছ্বাস দেখা যায়। উল্লেখ্য, আগামী ৬ অগাস্ট টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল এবং ১ সেপ্টেম্বর সেমি ফাইনাল ও ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন ইন পর্তুগাল আয়োজিত তৃতীয় টি-১৬ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে খেলতে লিসবনে গিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল।
নিউইয়র্কে ‘স্বাধীনতার রঙ’ ছড়ালেন দেশবরেণ্য ৫২ চিত্রশিল্পী
বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদের চিত্রকর্ম নিয়ে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে আয়োজিত 'কালার্স অব ফ্রিডম' শীর্ষক ৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক চিত্রপ্রদর্শনী শেষ হয়েছে। স্থানীয় সময় গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কয়েকশ চিত্রপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়ের মাঝে প্রদশর্নী উদ্বোধন করেন বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম। আইবিটিভি ইউএসএ'র উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এই চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশি আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরাম ও গ্যালারি চিত্রক সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। স্থানীয় সময় গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কয়েকশ চিত্রপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়ের মাঝে প্রদশর্নী উদ্বোধন করেন বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইবিটিভি'র ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাকারিয়া মাসুদ, চেয়ারম্যান চিত্রশিল্পী মিলা হোসেন, বাংলাদেশি আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামে প্রেসিডেন্ট আর্থার আজাদ, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চিত্রশিল্পী তাজুল ইমাম, বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহমুদ উল্লাহসহ নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অ্যারিক অ্যাডামসের পক্ষে বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন। প্রদর্শনীর কিউরেটর হিসেবে ছিলেন জিয়াউল করিম। ছবি: সংগৃহীত আন্তর্জাতিক এই চিত্রপ্রদর্শনীতে চিত্রশিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, আবদুস শাকুর শাহ, হামিদুজ্জামান খান, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, আবদুল বারেক আলভি, আফজাল হোসেন, রোকেয়া সুলতানা, শিশির ভট্টাচার্য, কনক চাপা চাকমাসহ ৫৭ জন শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদের সেরা চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইবিটিভি'র ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাকারিয়া মাসুদ, চেয়ারম্যান চিত্রশিল্পী মিলা হোসেন, বাংলাদেশি আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামে প্রেসিডেন্ট আর্থার আজাদ, সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চিত্রশিল্পী তাজুল ইমাম, বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহমুদ উল্লাহসহ নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অ্যারিক অ্যাডামসের পক্ষে বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন। প্রদর্শনীর কিউরেটর হিসেবে ছিলেন জিয়াউল করিম। ছবি: সংগৃহীত আন্তর্জাতিক এই চিত্রপ্রদর্শনীতে চিত্রশিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, আবদুস শাকুর শাহ, হামিদুজ্জামান খান, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, আবদুল বারেক আলভি, আফজাল হোসেন, রোকেয়া সুলতানা, শিশির ভট্টাচার্য, কনক চাপা চাকমাসহ ৫৭ জন শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদের সেরা চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। আন্তর্জাতিক এই চিত্রপ্রদর্শনীতে চিত্রশিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, আবদুস শাকুর শাহ, হামিদুজ্জামান খান, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, আবদুল বারেক আলভি, আফজাল হোসেন, রোকেয়া সুলতানা, শিশির ভট্টাচার্য, কনক চাপা চাকমাসহ ৫৭ জন শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদের সেরা চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পীদের চিত্রকর্ম নিয়ে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে আয়োজিত 'কালার্স অব ফ্রিডম' শীর্ষক ৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক চিত্রপ্রদর্শনী শেষ হয়েছে।
এক-তৃতীয়াংশ অস্ট্রেলিয়ানের জন্ম বিদেশে
এক বছরে অস্ট্রেলিয়ায় বিদেশে জন্মগ্রহণকারী জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ বেড়েছে। সবশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা ছিল ২৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন। যার মধ্যে ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ানের জন্ম বিদেশে। ১৮৯১ সাল থেকে বিদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ানদের সংখ্যা প্রথম রেকর্ড করা শুরু হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মহামন্দার সময় অভিবাসন হ্রাসের কারণে ১৯৪৭ সালে বিদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ানদের অনুপাত ছিল মাত্র ১০ শতাংশ। আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানরা ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এই ধরনের গণনায় নিয়মিতভাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ মাসে অস্ট্রেলিয়ান পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত পরিসংখ্যান দেখায়, বিদেশে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার অনুপাত ২০২৩ সালে ৩০ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২২ সালে যা ছিল ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যায়, ইংল্যান্ড, ভারত, চীন এবং নিউজিল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারীরা বিদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ানরা রয়েছেন তালিকার শীর্ষে। তাদের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী হচ্ছেন ভারতে জন্মগ্রহণকারীরা। বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৮ লাখ ৪৬ হাজার। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৪ হাজার। জনসংখ্যা নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চীন। চীনা বংশোদ্ভূত জনসংখ্যা ৬ লাখ ৫৬ হাজার। আরও আছে নিউজিল্যান্ড। তাদের সংখ্যা ৫ লাখ ৯৮ হাজার। বিভিন্ন তথ্য থেকে এটি অনুমান করা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৮০ মিলিয়ন মানুষ (যা বিশ্ব জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ) তাদের জন্ম নেওয়া দেশের বাইরে বসবাস করছে। যুক্তরাষ্ট্রে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বিদেশে জন্মগ্রহণ করা সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস করছেন। সেখানকার ৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দেশের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের ৮৮ দশমিক ১ শতাংশ দেশের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছেন। কুয়েতের জনসংখ্যার ৭২ দশমিক ৮ শতাংশের জন্ম বিদেশে। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
এক বছরে অস্ট্রেলিয়ায় বিদেশে জন্মগ্রহণকারী জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ বেড়েছে।
সিডনিতে শপিংমলে হামলা, নিহত ৬ আহত ৯
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যনগরী সিডনির বন্ডাই জংশনে ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে বেশ কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করেন একজন। ছুরিকাঘাতে কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন এবং আঘাতকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আজ শনিবারের এ ঘটনায় মোট ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। নিউ সাউথ ওয়েলস অ্যাম্বুলেন্স জানিয়েছে, নয় মাস বয়সী এক শিশুসহ ছুরিকাঘাতে আহত মোট ৯ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত করে পুলিশ জানিয়েছে, একজন অপরাধী একাই হামলা করেছে। রাজ্য পুলিশের সহকারী কমিশনার অ্যান্থনি কুক শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেছেন, পুলিশ এখনো অপরাধীর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, 'তার সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এ পর্যায়ে জানি না যে তিনি কে ছিলেন।' 'তার কোনো উদ্দেশ্য বা কোনো মতাদর্শ ছিল কি না, তা চিহ্নিত করার জন্য ঘটনাস্থলে কোনো আলামত ছিল না। তবে পুলিশ সন্ত্রাসবাদকে অস্বীকার করছে না,' যোগ করেন পুলিশ কর্মকর্তা কুক। পুলিশ জানায়, বিকেল ৩টার পর শপিং সেন্টারে প্রবেশ করে ওই ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পর বাইরে চলে যান এবং প্রায় ১০ মিনিট পর আবার ফেরত আসে এবং এরপরই ৯ জনকে ছুরিকাঘাত করেন। এক নারী পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং অপরাধীর মুখোমুখি হন। সহকারী কমিশনার বলেন, 'অপরাধী ওই অফিসারের দিকে ছুরি নিয়ে এগিয়েছিল। অফিসার আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা করেন।' 'এখানে পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকায় অনেক মানুষের জীবন বেঁচেছে,' বলেন তিনি। ঘটনার সময় এসবিএস নিউজের উপস্থাপক রিকার্ডো গনসালভেস শপিং সেন্টারে ছিলেন। গনসালভেস এসবিএস নিউজকে বলেন, 'আমি লোকজনকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছি এবং তারপর আমি খুব কাছ থেকে গুলির শব্দ শুনি।' এসবিএস অডিওর ইতালীয় প্রোগ্রামের ডমেনিকো জেন্টিলও সেই সময় শপিং সেন্টারে ছিলেন। তিনি এসবিএস নিউজকে বলেন, 'আমি তিনটি গুলির শব্দ শুনেছি। আমার মনে হচ্ছিল আতঙ্কে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এরপর আমরা সবাই যে যেখানে পেরেছি আশ্রয় নিয়েছি, কারণ কোনো দিক-নির্দেশনা ছিল না। তখন সেখানে কোনো পুলিশ ছিল না। আমি একটি হ্যারিস ফার্মে গিয়েছিলাম।' প্রত্যক্ষদর্শীরা মিডিয়াকে দোকানের কর্মীদের সাহসিকতার কথা জানিয়েছেন। অনেকে ক্রেতাদের দোকানের ভেতরে ঢুকিয়ে নিরাপত্তার জন্য দরজা বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছেন, 'আহতদের প্রতি আমাদের সমবেদনা। তাদের যারা সহযোগিতা করেছেন তারাসহ আমাদের সাহসী পুলিশ সদস্যদের এবং জরুরি সেবা কর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।' আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যনগরী সিডনির বন্ডাই জংশনে ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে বেশ কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করেন একজন। ছুরিকাঘাতে কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন এবং আঘাতকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
সিডনি অপেরা হাউসে বাসভূমি উৎসব
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক বাংলা মিডিয়া সংস্থা বাসভূমির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ৩০ জুন সিডনি অপেরা হাউসে একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। বাসভূমি উৎসবের এবারের থীম ছিলো 'হাত বাড়ালেই বন্ধু।' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটিক মিশনের কনসাল জেনারেল শাখাওয়াৎ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্বারল্যান্ড সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর সাবরিন ফারুকী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. সিরাজুল হক, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মতিন, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম ও বিডি হাব সিডনির সভাপতি আব্দুল খান রতন ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক শফিক। বাসভূমি উৎসবের ইভেন্ট ম্যানেজার লেখক-কলামিস্ট ড. রতন কুন্ডুর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচনা হয় অনুষ্ঠানের।  এরপর নতুন প্রজন্মের সারস বেহালার সুরে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। সংগীত পরিবেশনায় অংশ নেন মোস্তাফিজুর রহমান রানা, ইভানা খালেদ, সুপর্ণা মুখার্জী, জিনিয়া-তানিয়া, ইমরান হোসাইন, আয়েশা মানহা, জাহাঙ্গীর আলম, সমীর রোজারিও, মধুমিতা সাহা, ফায়েজা কালাম রুবা ও নিলুফা ইয়াসমীন। নৃত্য পরিবেশন করেন সারিকা, মিশা, অমৃতা পাল চৌধুরীর পরিচালনায় কলাঙ্কন ড্যান্স একাডেমীর শিল্পী পুর্নাশা দাশ, প্রিয়াসা দাশ, আকাংখিতা চৌধুরী, নিকিতা ভান্দুর, তানিয়া মুখার্জি, মাধুরিমা ভট্টাচার্য, রিমা সেনের পরিচালনায় ইরানা এন্সেম্বল ড্যান্স গ্রুপের শিল্পী আশা রাজু, মানালি রায়, মৌমিতা মুখার্জি, পায়েল বসু, ব্যানার্জি, প্রিয়াঙ্কা সেন, শর্মিষ্ঠা সিনহা, শ্রেয়সী দাশের পরিচালনায় নটরাজের শিল্পী মিতা দে, অহনা দাশ, লাবন্য স্নেহা, স্বপ্নিল দে, সঞ্চারী মান্না, অনন্যা জানা, স্বাগতা চ্যাটার্জীর পরিচালনায় স্বাগতা ট্র্যুপের শিল্পী তরুনিমা, প্রিয়াঙ্কা, শ্রেষ্ঠা, বিতিশা, দেবযানী, তনিমা ব্যানার্জির পরিচালনায় বন্দনা কালচারাল স্কুলের শিল্পী অনন্যা, রিথভিকা, নবমিতা ও সন্দিপ কুমার। লোকসংগীত পরিবেশন করেন তারিক, মাসুদ, শাহরিয়ার, তালাত, হিমেল, শিপলু ও রকি।। রতন কুন্ডুর গ্রন্থনা ও পরিচালনায় মহুয়া সুন্দরীর পালায় অংশ নেন বাংলা সিডনি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর মধুমিতা সাহা, নমিতা চৌধুরী, শ্রীমন্ত পাল, প্রিয়াঙ্কা সাহা ও সুহৃদ সোহান হক। দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন ব্যান্ড টিম ব্যাকগ্রাউন্ড শিল্পী মাহাদি সাঈদ, এলেন গোমেজ ও মাসুদ হোসেন। মঞ্চসজ্জায় ছিলেন কানিতাস্, মিউজিক ও শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিল পিউর সাউন্ড। ফটোগ্রাফি ও ভিডিও ধারণ করেছেন আকাশ ও শাকিল। উৎসবটি সার্বিকভাবে পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন আকিদুল ইসলাম ও শামিমা সুমী।
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক বাংলা মিডিয়া সংস্থা বাসভূমির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ৩০ জুন সিডনি অপেরা হাউসে একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
ওয়ান ডিশ পার্টি থেকে নেটওয়ার্কিং নাইট
দেশে যেমন এই সময়ে ফাইনাল পরীক্ষা চলতো, যুক্তরাষ্ট্রেও এই সময়ে সেমিস্টার প্রায় শেষের দিকে। কারও কয়েক ঘণ্টার কাগজে-কলমে পরীক্ষা, কারও গবেষণা প্রবন্ধ জমা দেওয়ার সময়, আবার কারও সর্বশেষ গবেষণা উপস্থাপন। চার মাসব্যাপী সেমিস্টারের শেষের সময়টা এখানকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সবারই খুব ব্যস্ত কাটে। এমনও হয়, হোয়াইট বোর্ডের পুরোটাই কর্মপরিকল্পনা লিখে ভরাট হয়ে গেলেও অযাচিতভাবে নতুন সব কাজ চলে আসে। তাই খুব সহজভাবে এই সময়টায় আপনাকে সব ডেডলাইনের একটা চাপের সম্মুখীন হতেই হবে। অনেক সহপাঠীকে দেখেছি একঘেয়ে হয়ে পড়েন। এখানকার অনেক শিক্ষার্থীকেও দেখেছি, কয়টা মাসের জন্য বিরতি নিতে। আমরা যারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং পড়ার পাশাপাশি শ্রেণীকক্ষে গিয়ে পড়াতেও হয়, তাদের এই বিরতি নেওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের একঘেয়ে থেকে বিরতি নেওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এখানকার 'ওয়ান ডিশ পার্টি' কিংবা 'পট লাক' আয়োজন করে ফেলা। 'পট লাক' মূলত এ কারণে বলা হয়, বিশাল এক খাবারের তালিকার মধ্য থেকে যার ভাগ্যে যেটা পরবে, তাকে সেটাই রান্না করে নিয়ে আসতে হবে। তবে আইটেম বদলে নেওয়ারও সুযোগ আছে। কোনো একটা উইকেন্ড বা ছুটির দিনক্ষণ ঠিক করে সে অনুযায়ী বাজার করে রান্নার জোগাড়যন্ত্র করা। এই ওয়ান ডিশ আয়োজন যে শুধু আমাদের একঘেয়েমি দূর করে তা নয়, সব থেকে ভালো লাগে- বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। একেক দেশের খাবার, রসনা-বিলাসের রীতিনীতি নিয়েও কথা হয়। যেমন- গত আয়োজনেই ইরানের পিএইচডির শিক্ষার্থী এলহামের সঙ্গে যখন গল্প হচ্ছিল, দেখলাম বাংলাদেশের কিছু ডেজার্ট বা মিষ্টি সেখানেও আছে। তবে অবশ্যই ভিন্ন নামে। খাবার বা এই রসনা-বিলাস, বিভিন্ন মশলার মিশ্রণ আসলে একেকটা দেশের সংস্কৃতি আর রুচির সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই জড়িত। আমরা হয়ত বিশ্বায়নের যুগে ঢাকা শহরে বসেই হরেক রকমের খাবার পেয়ে যাই। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরিসরে, যেখানে বহু জাতির মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়, সেখানে নিজেদের খাবারের স্বকীয়তাটা বোঝা যায় খুব সহজেই। এই এক 'পট লাক'র মাধ্যমেই চেনাজানা হয়েছে অনেক দেশের শিক্ষার্থীর সঙ্গে। কয়েকজনের সঙ্গে বেশ ভালো বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছে। দিনের কাজ আর ক্লান্তি শেষে কফি হাতে কোনো এক সুবিশাল গাছের নিচে বসে কিছুক্ষণ গল্প করা বা কখনো প্রয়োজনে কোনো কোনো আবদারও রাখা হয়েছে এই ষোল মাসে। শুধু আমাদের নিজেদের 'ওয়ান ডিশ' আয়োজনই নয়, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, অধ্যাপকেরাও সেমিস্টারের প্রায় শেষ সময়টাতে আয়োজন করেন এই 'পট লাক'র। দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, বৃহৎ এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের, মধ্যপ্রাচ্য কিংবা আফ্রিকা থেকে আসা অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দের বা স্থানীয় কোনো খাবার তৈরি করে নিয়ে আসে। আর সব শেষে থাকে 'নেটওয়ার্কিং নাইট'। নাম দিয়েই বুঝিয়ে দেওয়া হয় এখানে রসনা-বিলাস, খাবারের পাশাপাশি বন্ধুত্বটা যাতে গড়ে ওঠে তাই এই আয়োজন। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে বিভিন্ন জায়গায় এর আয়োজন করে থাকে। 'ওয়ান ডিশ' বা 'পট লাক'র থেকে এই 'নেটওয়ার্কিং নাইট' কিছুটা ভিন্ন, কেননা এখানে শিক্ষার্থীদের খাবার তৈরি করে নিতে যেতে হয় না। বরং বিশ্ববিদ্যালয় বা ডাইভারসিটি এবং ইনক্লুশন অফিসগুলোই খাবার এবং বিভিন্ন খেলাধুলা, আউটডোর অ্যাক্টিভিটিসের আয়োজন করে। গত বছরই রেড রিভার গর্জে যাওয়া হয়েছিল হাইকিংয়ে। এখনো বন্ধুত্ব আছে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে। 'ফল কালার' বা শরতের রঙ্গিন পাতাদের মৌসুমে আমরা হাইকিং করে বেরিয়েছিলাম পড়ন্ত বিকেলের আগ পর্যন্ত। আর রাতে কাঠের তৈরি এক রিসোর্টে সবাই মিলে কুমড়ো কেটে হ্যালোইনের জন্য সাজিয়েছিলাম। আবার কখনো রোলার স্কেটিং, আইস স্কেটিং করা হয়েছে সবাই মিলে। কিছুদিন পরেই আবার আসছে তুষারের সময়, স্কেটিং করার পরিকল্পনাও চলছে। এই 'ওয়ান ডিশ' থেকে যদি কয়েকজন ভালো বন্ধু মিলে যায়, পড়ালেখার ঝক্কিটাও অনেক কম মনে হয়। নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
দেশে যেমন এই সময়ে ফাইনাল পরীক্ষা চলতো, যুক্তরাষ্ট্রেও এই সময়ে সেমিস্টার প্রায় শেষের দিকে। কারও কয়েক ঘণ্টার কাগজে-কলমে পরীক্ষা, কারও গবেষণা প্রবন্ধ জমা দেওয়ার সময়, আবার কারও সর্বশেষ গবেষণা উপস্থাপন। চার মাসব্যাপী সেমিস্টারের শেষের সময়টা এখানকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সবারই খুব ব্যস্ত কাটে।
সিডনির শপিংমলে হামলাকারী সম্পর্কে যা জানা গেল
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যনগরী সিডনির বন্ডাই জংশনে ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে ছুরিকাঘাতে ছয়জনকে হত্যা ও নয়জনকে আহতকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকালে দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সহকারী পুলিশ কমিশনার অ্যান্টনি কুক জানিয়েছেন, হামলাকারীর নাম জোয়েল কাউচি। তার বয়স ৪০ বছর এবং তিনি অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রনগরী কুইন্সল্যান্ডের অধিবাসী। তিনি জানান, জোয়েল কাউচি গত মাসে ব্রিসবেন থেকে সিডনি এসেছিলেন। কাউচি তার নিজ রাজ্যে পুলিশের কাছে পরিচিত ছিলেন। তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। অ্যান্টনি কুক বলেন, 'জোয়েল কাউচির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন।' 'পুলিশ এখনো হামলার কারণ নিশ্চিত হতে পারেনি। এই পর্যায়ে মনে হচ্ছে যে এটি জড়িত ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। কারণ, আমরা জানি যে এই ঘটনার অপরাধী মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছিলেন,' যোগ করেন তিনি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যান্টনি কুক বলেন, 'আমরা এমন কোনো প্রমাণ কিংবা এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে পারিনি, যা থেকে বোঝা যায় যে এটি কোনো বিশেষ অনুপ্রেরণা বা আদর্শ থেকে সংঘটিত হয়েছে।' আরওসিডনিতে শপিংমলে হামলা, নিহত ৬ আহত ৯ গতকাল ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে হামলায় পাঁচ নারী ও এক পুরুষসহ ছয়জন নিহত হন। সিডনির ডেইলি টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজন অ্যাশ গুড, যিনি তার আহত নয় মাসের শিশুটিকে অপরিচিতদের হাতে তুলে দিয়ে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রায়ান পার্ক বলেছেন, অ্যাশ গুড মারা গেছেন এবং তার মেয়ে হ্যারিয়েট র‍্যান্ডউইকের চিলড্রেন হাসপাতালের আইসিইউতে গুরুতর অবস্থায় আছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ছয়জনের মধ্যে দুজন বিদেশ থেকে এসেছেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কোনো পরিবার বা স্বজন নেই। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক গতকাল ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে হামলায় পাঁচ নারী ও এক পুরুষসহ ছয়জন নিহত হন। সিডনির ডেইলি টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজন অ্যাশ গুড, যিনি তার আহত নয় মাসের শিশুটিকে অপরিচিতদের হাতে তুলে দিয়ে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেন। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রায়ান পার্ক বলেছেন, অ্যাশ গুড মারা গেছেন এবং তার মেয়ে হ্যারিয়েট র‍্যান্ডউইকের চিলড্রেন হাসপাতালের আইসিইউতে গুরুতর অবস্থায় আছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ছয়জনের মধ্যে দুজন বিদেশ থেকে এসেছেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কোনো পরিবার বা স্বজন নেই। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্যনগরী সিডনির বন্ডাই জংশনে ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে ছুরিকাঘাতে ছয়জনকে হত্যা ও নয়জনকে আহতকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে।
অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশ: ২০ জনের বেশি বাংলাদেশি, পাকিস্তানি আটক
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ২০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্সের হাতে আটক হয়েছে। তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে নৌকায় করে অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কঠোর সীমান্ত সুরক্ষা নীতির অর্থ হলো, কেউ নৌকায় বিনাঅনুমতিতে এভাবে ভ্রমণ করলে তাকে কখনও অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে না। অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম এবিসি জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার ২০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশিকে ব্রুমের ১০০ কিলোমিটার উত্তরে বিগল বে এলাকার সমুদ্র সৈকতে দেখা যায়। বিগল বে আদিবাসী সম্প্রদায় অধ্যুষিত অঞ্চল। এর জনসংখ্যা মাত্র ৩০০ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে গতকাল শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্সের হাতে তারা আটক হয়েছেন। ওই অঞ্চলে অন্য কেউ লুকিয়ে আছে কিনা তা খুঁজে বের করার জন্য আজ শনিবার কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। আটক একজন এবিসি নিউজকে বলেছেন যে তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি নৌকায় আসেন। পাঁচ দিন সেটিতে ছিলেন। তারপর অস্ট্রেলিয়ার একটি দূরবর্তী সৈকত থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার হেঁটে এসেছেন। নৌকায় এভাবে আসার খবর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিরোধী নেতা পিটার ডাটন বলেছেন, এই সরকার আমাদের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার কঠোর নীতি পরিবর্তন হয়নি। অস্ট্রেলিয়ান সরকারের নীতি অনুযায়ী নৌকায় করে আসা লোকদের নাউরুতে পাঠানো হয়। সেখানে একটি অফশোর ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টার রয়েছে। আকিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ২০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্সের হাতে আটক হয়েছে। তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে নৌকায় করে অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।
থাইল্যান্ডে ‘থাই স্যুপ’ নেই
যে দেশের নামে নামকরণ, সে দেশেই যদি সেই পণ্য কিংবা খাবার না পাওয়া যায়, তাহলে তো সেটা অবাক করার মতোই ব্যাপার! বাংলাদেশের রসনাবিলাসীদের কাছে যেগুলো 'থাই স্যুপ' হিসেবে পরিচিত, চেষ্টা করলেও তা থাইল্যান্ডে পাওয়ার জো নেই। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই বাস্তব। থাইল্যান্ডের কোনো স্থানীয় রেস্তোরাঁয় গিয়ে আপনি যদি থাই স্যুপ অর্ডার করতে চান, তাহলে সেটা বোঝাতে আপনাকে বেশ ধকল পোহাতে হবে। তার কারণ থাইল্যান্ডে জনগণের এমন কোনো স্যুপ নেই, যা মৌলিক খাবার হিসেবে পরিবেশন করা হয়। তবে ব্যাংকক বা পাতায়ায় ভারতীয় এবং বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টগুলো স্বদেশী কায়দায় থাইস্যুপ তৈরি করে থাকে। যার সঙ্গে থাই খাবারের কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ নয়, বরং পশ্চিমের অনেক মানুষের মধ্যেও একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে, থাই জনগণ প্রতি বেলায় থাই স্যুপ আর নুডলস খেয়ে থাকেন। আসলে প্রতিবেলায় ভাত খায় এখানকার বেশিরভাগ মানুষ। ভাতের বিকল্প হিসেবে নুডলসও খেয়ে থাকে অনেকে। তবে থাইল্যান্ডের মূল খাবার কি বা সবচেয়ে প্রচলিত খাবার কি? উত্তর হচ্ছে, 'গাই মান কাই'। রসুন এবং আদা দিয়ে স্বেদ্ধ ভাতের ওপর মুরগীর মাংস সিদ্ধ বা ভেজে দেওয়া হয়। এর সঙ্গে রসুন, লেবু, ধনিয়াপাতা, শুকনো মরিচ দিয়ে বানানো সস পরিবেশ করা হয়। এই গাই মান কাই এখানে সবচেয়ে প্রচলিত খাবার। ৫০ বাথ (প্রায় ১৫০ টাকা) দিয়ে খাওয়া যায়। তবে থাইল্যান্ডে যেকোনো স্থানীয় রেস্টুরেন্টে গেলে একটি স্যুপ আপনি ফ্রি পাবেন। মূলা,  আদা এবং পেঁয়াজে দীর্ঘ সময় সেদ্ধ করে এই স্যুপ বানানো হয়। থাইরা মূল খাবারের পাশাপাশি চামচে কেটে মুখে দেয় এই গরম স্যুপ। থাইল্যান্ডে স্থানীয়দের কাছে স্যুপ একটি সাইড ডিশ, যেটা ভাত বা অন্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। চামচে কেটে শুধু স্যুপ খাওয়া হয় না। থাইল্যান্ডের স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতে গেলে শুধু থাই স্যুপ না বলে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যুপটির অর্ডার করতে হলে আপনাকে বলতে হবে, টম ইয়ামের কথা। বিদেশিদের কাছে থাই স্যুপ হিসেবে সবচেয়ে পরিচিত এই টম ইয়াম। গাই মান কাই বা পান কা পাওয়ের (ভাতের সঙ্গে শূকরের মাংস) সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। সোমবার সকালে চাতুচাকে আমাদের বাসার পাশের ফুড কোর্টে আমরাও অর্ডার করি টম ইয়াম। তবে টম ইয়াম যে শুধু চিংড়ি দিয়েই হয়, তা নয়। বরং চিংড়ির বদলে মুরগী, গরু অথবা শূকরের মাংস দিয়েও হতে পারে। বা সি-ফুডের সঙ্গেও মাংস মেলানো যেতে পারে। তবে আমাদের জন্য অর্ডার করা টম ইয়ামে স্কুইড এবং মুরগীর মাংস দিতে বলি। টম ইয়াম বা যেকোন স্যুপ বানাতে এখানে প্রধান শর্ত হচ্ছে প্রচুর হার্বের ব্যবহার। এটা কিন্তু খুবই ঝাল হবে, সঙ্গে টক স্বাদ এবং লেবুর সুগন্ধ। টম ইয়াম রান্নার মূল উপাদানগুলো হচ্ছে, শ্যালট (পেঁয়াজ প্রজাতি), লেমনগ্রাস, ফিস সস, থাই জিঞ্জার বা গ্যালানগাল (আদা প্রজাতি), চিংড়ি বা অন্য মাংস, মাশরুম, কাফির লাইম লিভস, লেবুর রস এবং থাই মরিচ। পানিতে এই হার্বগুলো সিদ্ধ করে এক পর্যায়ে মাছ বা মাংস যোগ করা হয়। স্থানীয়রা যে টম ইয়াম খায়, বেশিরভাগ সময় সেটি খুবই ঝাল। তাই আপনার ঝালের পরিমাণ অর্ডারের সময়ই বলে দিতে হবে। টম ইয়ামের পর সবচেয়ে পরিচিত স্যুপ হচ্ছে 'টম খা গাই'। এটাকে থাইল্যান্ডের জাতীয় খাবারও বলা হয়। যদিও বিয়ে বাড়ি বা বড় আয়োজন ছাড়া এই খাবারের উপস্থিতি চোখে পড়বে না। উত্তর থাইল্যান্ডের এই খাবারে প্রতিবেশি দেশ লাওসের খাবারের স্বাদের প্রভাব রয়েছে। এটাকে সিদ্ধ গালাংগাল চিকেন স্যুপও বলা হয়। যেটার মূল উপাদান নারিকেলের দুধ আর মুরগীর মাংস। হার্ব উপাদান হিসেবে থাকে, গালাংগাল (আদা প্রজাতি), লেমনগ্রাস, রসুন, পাকা মরিচের গোড়া, কাফির লাইম লিভস, ফিস সস এবং মাশরুম। এ ছাড়া থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় স্যুপগুলোর মধ্যে রয়েছে, টম ইয়াম বোরাম, টম চুয়েট, কেম অং, টাই কিয়ে, সুকি ইত্যাদি।   এখানে কোনো প্রকার স্যুপেই মাংস বা মাছকে একেবারে মিশিয়ে ফেলা হয় না। বরং স্যুপের মধ্যে টুকরা হিসেবেই থাকে। এবং মূল খাবারের সঙ্গে খাওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাবহৃত কোনো হার্বই পিশে বা মিহি গুড়া করে ব্যবহৃত হয় না। ফলে স্যুপ খাওয়া শেষ হলেও বাটিতে সেদ্ধ সব হার্ব পড়ে থাকে। তাহলে বাংলাদেশে যে থাই স্যুপ খাই আমরা সেগুলো কি? আমার স্ত্রী কানলাওয়াই ওয়ায়েক্লায়হং থাই নাগরিক। তাকে নিয়ে ঢাকার বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে থাই খাবার খেতে গিয়েছিলাম। গুলশানের একটি রেস্টুরেন্ট ছাড়া আর কোনটিতেই পরিপূর্ণ থাই হার্ব পায়নি সে। কানলাওয়াইয়ের মতে, থাই স্যুপতো কখনো আলাদা করে পরিবেশনের বিষয় না! এটা মূল খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়। যেমন বাংলাদেশিরা ডাল খায়। তবে খাওয়ার প্রক্রিয়াটা ভিন্ন। বাংলাদেশের রেস্টুরেন্টগুলোতে নিজস্ব স্বাদে এবং প্রক্রিয়ায় স্যুপ তৈরি করে 'থাই স্যুপ' হিসেবে বিক্রি করা হয় বলে মনে করেন তিনি। থাইল্যান্ডের স্থানীয় রেস্টুরেন্টে গেলে মেন্যুতে 'থাই স্যুপ' নামে কোনো ডিশ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর শুধু টম ইয়াম অর্ডার দিয়ে খেতে বসলেও সেটা হবে কিছুটা অস্বাভাবিক! মাজেদুল নয়ন: থাইল্যান্ড প্রবাসী সাংবাদিক
যে দেশের নামে নামকরণ, সে দেশেই যদি সেই পণ্য কিংবা খাবার না পাওয়া যায়, তাহলে তো সেটা অবাক করার মতোই ব্যাপার!
মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ১০ শিক্ষার্থীর ৩ জন বাংলাদেশি
পৃথিবী বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর স্নাতক শেষ‌ বর্ষের পরীক্ষার শীর্ষ ১০ এ রয়েছেন বাংলাদেশের ৩ শিক্ষার্থী৷ গত ২০ সেপ্টেম্বর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাদের ভেরিফাইড অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে স্নাতক মেধা তালিকার ফলাফল প্রকাশ করে তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছে৷ পেইজটির তথ্যমতে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক থিওলজি ফ্যাকাল্টির হাদিস ও উলূমুল হাদিস ডিপার্টমেন্টের স্নাতক ৪ বছরের সমষ্টিগত ফলাফলে সেরা ১০ এ আছেন বাংলাদেশের ৩ মেধাবী শিক্ষার্থী৷ স্নাতক সেরা দশে জায়গা করে নেওয়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা হলেন- পাবনা জেলার মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম (গড় নম্বর: ৯০%, মেধা স্থান: দ্বিতীয়), ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার জাফর উল্লাহ (গড় নম্বর: ৯০%, মেধা স্থান: তৃতীয়) এবং কুমিল্লা জেলার মুহাম্মদ আব্দুস সালাম (গড় নম্বর: ৮৭.৪৫%, মেধা স্থান: ষষ্ঠ)। এছাড়াও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (সানুভি) পরীক্ষায় সেরা দশের ৭ জনই ছিল বাংলাদেশের শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মিশরের গ্র‌্যান্ড ইমাম ও শাইখুল আজহার ড. আহমাদ আত-তাইয়্যাব। তিনি শিক্ষার্থীদের সফলতা কামনা করে বলেন, আমি আশা করছি তারা সবাই নিজেদের দেশে ফিরে আল-আজহারের প্রতিনিধিত্ব করবে। এদিকে গত শুক্রবার মিশরে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'ইত্তেহাদ' এর বার্ষিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই গৌরবময় ফলাফলের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, 'বাংলাদেশি কারো সফলতার কথা শুনলে গর্বে বুক ভরে যায়। আমি কৃতি শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।' লেখক: মিশরপ্রবাসী সাংবাদিক
পৃথিবী বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর স্নাতক শেষ‌ বর্ষের পরীক্ষার শীর্ষ ১০ এ রয়েছেন বাংলাদেশের ৩ শিক্ষার্থী৷
যুক্তরাষ্ট্রের বল স্টেট ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রেসিডেন্ট রবি, ভিপি সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে আল রবি উল্লাহ প্রেসিডেন্ট ও মো. সুমন আলী ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন। বল স্টেট ইউনিভার্সিটির সাইডলার অ্যাপার্টমেন্টের কমিউনিটি অফিসে গতকাল সোমবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেন। নির্বাচনে সেক্রেটারি পদে ফাবিহা তাসনিম অরনী এবং ট্রেজারার পদে মুসা ভূইয়া নির্বাচিত হন। নবনির্বাচিত সভাপতি রবি উল্লাহ বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে যেসব শিক্ষার্থী বল স্টেটে আসতে চান বা নতুন যারা আসেন, তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে আমাদের এই কমিটি। তাছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বল স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবো আমরা।' যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে আল রবি উল্লাহ প্রেসিডেন্ট ও মো. সুমন আলী ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা
মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আরেক বাংলাদেশি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে মালয়েশিয়ার জহুর প্রদেশে এ ঘটনা ঘটে। দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, মোহাম্মদ সবুজ (২৮) নামে এক বাংলাদেশিকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আরেক বাংলাদেশি। রাজ্যের ক্লুয়াং পুলিশ প্রধান বাহরিন নোহ বলেন, 'নিহত মোহাম্মদ সবুজ একটি সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। তার মাথায় ও ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।' তিনি জানান, ঘটনার পর ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী পাঁচ বাংলাদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের প্রস্রাব পরীক্ষায় মাদক গ্রহণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আজ তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়। বাহরিন নোহ বলেন, 'সন্দেহভাজনদের একজন নিহতের সঙ্গে একই কক্ষে থাকতেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে চাপাতি দিয়ে সবুজকে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছেন। ওই চাপাতিটি তার কক্ষে পাওয়া গেছে।'
মালয়েশিয়ায় এক বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন আরেক বাংলাদেশি।
অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমে ড. ইউনুসের কারাদণ্ডের রায়
শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার শ্রম আদালত। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে ড. ইউনূসের কারাদণ্ডের রায়ের খবর। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক সংবাদ সাইট নিউজ ডট কমের পাঠক সংখ্যা ১ কোটির বেশি। ড. ইউনুসের কারাদণ্ডের রায়ের পর সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, 'নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে সোমবার বাংলাদেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই রায়কে তার সমর্থকরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।' প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, 'শেখ হাসিনার প্রশাসনের রাজনৈতিক ভিন্নমতের বিরুদ্ধে আক্রমণ ক্রমশ বেড়ে চলেছে এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে ইউনূসের জনপ্রিয়তা তাকে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।' এতে আরও লেখা হয়, 'ইউনূস ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংকের মাধ্যমে লাখো মানুষকে দারিদ্র্যতা থেকে বের করে আনার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শত্রুজ্ঞান করায়, তাকে তিনি দরিদ্রদের "রক্তচোষা" হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।' নিউজ ডট কমের বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে, 'বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর বিরুদ্ধে জঘন্য মৌখিক আক্রমণ করেছেন, যাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখা হয়।' প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, 'বিরোধীরা বয়কট করলেও আগামী সপ্তাহের নির্বাচনে আরও একটি মেয়াদে হাসিনার জয় নিশ্চিত। বাংলাদেশের আদালতকে হাসিনা সরকার নির্বাচনে জয়ী হতে ব্যবহার করছে বলে সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন।' আরওযে দোষ করিনি, সেই দোষের শাস্তি পেলাম: ড. ইউনূস দ্য ক্যানবেরা টাইম লিখেছে, 'বাংলাদেশের রাজধানীর একটি আদালত দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।' এতে আরও লেখা হয়েছে, 'ইউনূস যেহেতু পশ্চিমা রাজনৈতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের জন্য পরিচিত, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অনেকে মনে করেন এই রায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।' তবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সোমবার বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ইস্যু বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে না। ইউনূসের সমর্থকরা মনে করেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।' এক্সামিনারের প্রতিবেদনে ড. ইউনূসের সাজার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, 'আগস্টে ১৭০ জনের বেশি বিশ্বনেতা এবং নোবেল বিজয়ীরা একটি খোলা চিঠিতে ইউনূসের বিরুদ্ধে সব আইনি প্রক্রিয়া স্থগিত করার জন্য হাসিনাকে অনুরোধ করেছিলেন।' 'সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ নেতৃবৃন্দ চিঠিতে বলেছেন যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সাম্প্রতিক হুমকির কারণে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।' দ্য নর্থ ওয়েস্ট স্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে শিরোনাম করে লিখেছে, 'নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথিত দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। সোমবারের রায়টি যখন এসেছে, তখন বাংলাদেশ ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ওই নির্বাচন বয়কট করেছে।'  আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক আরওশ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের কারাদণ্ড আরও‘একটা কন্ট্রাডিকশন দিলেই খুনির আসামিও খালাস পায়, অথচ ১০৯টা কন্ট্রাডিকশন দিয়েও এই রায়’ আরওগ্রামীণ টেলিকম শ্রম আইনের পরিবর্তে নিজস্ব আইন অনুসরণ করেছে: খুরশিদ আলম দ্য ক্যানবেরা টাইম লিখেছে, 'বাংলাদেশের রাজধানীর একটি আদালত দেশের শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।' এতে আরও লেখা হয়েছে, 'ইউনূস যেহেতু পশ্চিমা রাজনৈতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের জন্য পরিচিত, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অনেকে মনে করেন এই রায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।' তবে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সোমবার বলেছেন, কোনো ব্যক্তির ইস্যু বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে না। ইউনূসের সমর্থকরা মনে করেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।' এক্সামিনারের প্রতিবেদনে ড. ইউনূসের সাজার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, 'আগস্টে ১৭০ জনের বেশি বিশ্বনেতা এবং নোবেল বিজয়ীরা একটি খোলা চিঠিতে ইউনূসের বিরুদ্ধে সব আইনি প্রক্রিয়া স্থগিত করার জন্য হাসিনাকে অনুরোধ করেছিলেন।' 'সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ নেতৃবৃন্দ চিঠিতে বলেছেন যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সাম্প্রতিক হুমকির কারণে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।' দ্য নর্থ ওয়েস্ট স্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে শিরোনাম করে লিখেছে, 'নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কথিত দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। সোমবারের রায়টি যখন এসেছে, তখন বাংলাদেশ ৭ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ওই নির্বাচন বয়কট করেছে।' আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার শ্রম আদালত।
ইউকে বিআরইউ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২-২৩ জিতলেন যারা
ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির উদ্যোগে 'ইউকে বিআরইউ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২-২০২৩' তুলে দেওয়া হয়েছে বিজয়ীদের হাতে। গত ২৮ জুলাই যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের একটি হলে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। 'ইউকে বিআরইউ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২-২০২৩' বিজয়ীরা হচ্ছেন সাংবাদিক নিলুফা ইয়াসমীন হাসান, আনসার আহমদ উল্লাহ, কামাল এইচ মেহেদী ও প্রয়াত সাংবাদিক শ্রী অজয় পাল। প্রয়াত অজয় পালের পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন তার স্ত্রী দিপা পাল ও পুত্র দিপায়ন পাল। এ ছাড়া, ইউকে বিআরইউ বেস্ট রিপোর্টার অব দ্য ইয়ার ২০২১ পেয়েছেন আমিনুল হক ওয়েছে এবং ইউকে বিআরইউ বেস্ট রিপোর্টার অব দ্য ইয়ার ২০২২ পেয়েছেন মুহাম্মদ সালেহ আহমদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, 'যুক্তরাজ্যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তুলে ধরার পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সমাজ ও কমিউনিটির প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটি কাজ করে যাচ্ছে, যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।' তিনি বলেন, 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় থেকে গ্রেটব্রিটেনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক চমৎকার। ২ দেশের সম্পর্ক আরও গতিশীল হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে। এ সম্পর্ককে ধরে রাখতে বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকরা সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছেন।' ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মতিয়ার চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাজিদুর রহমান ও হ্যাপী শারমিনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন বোরো অব নিউহাম কাউন্সিলের চেয়ার স্পিকার কাউন্সিলার রহিমা রহমান, লন্ডন বোরো অব রেডব্রিজ কাউন্সিলের মেয়র জোছনা ইসলাম, কেমডেন সিটি কাউন্সিলের মেয়র কাউন্সিলর নাজমা রহমান, লন্ডন বোরো অব টাওয়ার হ্যামলেটে কাউন্সিলর ডেপুটি মেয়র মাইয়ুম তালুকদার, লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) আশিকুন নবী চৌধুরী ও ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, উর্মি মাজহার, ডা. জাকি রেজোয়ানা আনোয়ার, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল, শিক্ষাবিদ ড. রোয়াব উদ্দিন, রেডব্রিজ কাউন্সিলের কাউন্সিলর শামস ইসলাম, নিউহ্যাম কাউন্সিলের কাউন্সিলার মুজিবুর রহমান জসিম, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন ও রেবেকা সুলতানা, ড. আনিসুর রহমান আনিছ, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পিকার আহবাব হোসেইন, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট হোসনে আরা মতিন, সাংবাদিক বাতিরুল হক সরদার, অলিউর রহমান অলি, জামাল খান, কলামিষ্ট রুমি হক। এ ছাড়া, বক্তব্য রাখেন লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাসন, সাবেক ট্রেজারার মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার সালেহ আহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি সাঈম চৌধুরী, ইসি মেম্বার আহাদ চৌধুরী বাবু। অনুষ্ঠানের ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এর সদস্য সাহেদা আর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির অপর সদস্য জুবায়ের আহমদ, অ্যাসিস্টেন্ট ট্রেজারার আশরাফুল হুদা ও মিজানুর রহমান মিরু। অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি জার্নাল অব ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির জুলাই-২০২৩ সংখ্যার মোড়ক উম্মোচন করেন অতিথিরা।
ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির উদ্যোগে 'ইউকে বিআরইউ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২২-২০২৩' তুলে দেওয়া হয়েছে বিজয়ীদের হাতে।
নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে ১৪৩১ বর্ষবরণের ঘোষণা
নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে ১৪৩১ বাংলা বর্ষবরণের ঘোষণা দিয়েছে এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড। টাইমস স্কয়ার এবং জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজাতে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল শতাধিক কন্ঠে বরণ করে নেওয়া হবে বাংলা নতুন বছরকে। জ্যাকসন হাইটসের এক রেস্টুরেন্টে সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা শত মানুষের উপস্থিতিতে ২৪ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর প্রথম মহড়া পরিচালনা করেন মহিতোষ তালুকদার তাপস। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সভাপতি বিশ্বজিত সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন। বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ‍্যাপক হোসাইন কবির, অভিনেত্রী লুৎফুন নাহার লতা, শত কণ্ঠের মহড়া পরিচালক মহিতোষ তালুকদার তাপস, প্রজন্ম '৭১ যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতি শিবলী ছাদেক এবং আয়োজক সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক তানভীর কায়সার। অনুষ্ঠানে বর্ষবরণ ঘোষণা করার সময় সাপ্তাহিক ঠিকানা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, 'নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ার এবং জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজাতে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল শতাধিক কণ্ঠে বরণ করে নেওয়া হবে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে। মঙ্গল শোভাযাত্রা, চিরায়ত বাংলার সংস্কৃতি পরিবেশনা এবং বৈশাখী মেলায় উপস্থিত থাকবেন দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পীরা।' ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বরণের শত কণ্ঠের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহীতোষ তালকদার তাপস। এবারও হবে তার পরিচালনায়। মহড়া শুরুর প্রাক্কালে তিনি বলেন,  'নিউইয়র্ক টাইম স্কয়ারের পাদদেশে ১৪৩০ বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানটি আমাকে বিশ্ব বাঙালির কাছে পরিচিত করিয়ে দিয়েছে। এজন্য আয়োজক সংগঠন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা। প্রথম মহড়ায় প্রত্যেকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মনে হচ্ছে, আমরা গত বছরকেও ছাড়িয়ে যাব।' অভিনেত্রী লুৎফুন নাহার লতা বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে থেকেও অভিবাসীরা হৃদয়ে ধারণ ও লালনপালন করেন বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশ। নিউইয়র্কে প্রচণ্ড ঠান্ডা ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শিল্পীর উপস্থিতি প্রমাণ করে, এখানে যারা এসেছেন তারা প্রত্যেকে প্রকৃত সংস্কৃতিকর্মী। তাদের হাত ধরেই বাংলা সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বব্যাপী।' এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সভাপতি বিশ্বজিত সাহা বলেন, 'এবার তিন স্তরবিশিষ্ট অংশগ্রহণকারী নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করছি আমরা। গতবারের  অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে যুক্ত হবে পরিবারের শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা। নিজেদের পরিবারে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। এবার টাইম স্কয়ারকে সাজানো হবে রমনার বটমূলের আদলে।' এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন বলেন, 'গত বছরের ঐতিহাসিক বর্ষবরণ সারা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তৈরি করেছে। এবার আমরা চেষ্টা করছি যুক্তরাষ্ট্রের ৫২টি অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত বাঙালি অভিবাসীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার। ইতোমধ্যে ২৫টি অঙ্গরাজ্য বরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। বাঙালি সংস্কৃতিপ্রেমী অভিবাসীরা শত কণ্ঠের এই আয়োজনকে সহস্র কণ্ঠে নিয়ে যাবেন সেই প্রত্যাশা করছি।'
নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে ১৪৩১ বাংলা বর্ষবরণের ঘোষণা দিয়েছে এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড। টাইমস স্কয়ার এবং জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজাতে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল শতাধিক কন্ঠে বরণ করে নেওয়া হবে বাংলা নতুন বছরকে।
টাইমস স্কয়ারে সহস্রকন্ঠে বরণ হবে ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে সহস্রকন্ঠে ১৪৩১ বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে পৌঁছে গেছেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম এবং পার্বতী দাস বাউল। আগামী ১৩ এপ্রিল টাইমস স্কয়ারে তারা গান গাইবেন।‌ আয়োজনের আহ্বায়ক সৈয়দ হাসান ইমাম ও শুভেচ্ছা দূত লায়লা হাসানও ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্কে পৌঁছে গেছেন। আয়োজক সংগঠন এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, টাইমস স্কয়ারে দুপুর আড়াইটায় মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করবেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডাম। মহিতোষ তালুকদার তাপসের পরিচালনায় সহস্রকন্ঠে বর্ষবরণ, কাবেরী দাসের সঙ্গীতায়োজনে শতাধিক শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণ গান ও নাচ, যাত্রাসহ আবহমান বাংলার চিরায়ত অনুষ্ঠানে এই আয়োজন চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটন বলেন, 'জ্যাকসন ডাইভারসিটি প্লাজায় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ১০টায়। সকালে লুচি-সপ্তব্যঞ্জন দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে দর্শনার্থীদের। দুপুরের পর থেকে থাকবে পান্তা-ইলিশ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলবে বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিক পরিবেশনা।'
নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে সহস্রকন্ঠে ১৪৩১ বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে পৌঁছে গেছেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম এবং পার্বতী দাস বাউল। আগামী ১৩ এপ্রিল টাইমস স্কয়ারে তারা গান গাইবেন।‌
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৯০ অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৯০ অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে অভিবাসন বিভাগ। দেশটির ইপুহ রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ শুক্রবার মানজুংয়ের ব্যবসায়িক প্রাঙ্গণ এবং আবাসিক এলাকায় অপস সাপু (অপারেশন ক্লিন) অভিযান চালিয়ে সেলেরা, কুটিপ ও বেলাঞ্জা থেকে ৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে। আজ সোমবার দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা বার্নামা ও দ্যা সান ডেইলি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, 'শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া ৬ ঘণ্টার অভিযানে গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৬২ জন পুরুষ, ২৩ জন মহিলা এবং ৫ শিশু রয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ৬৬, বাংলাদেশের ১৪, মিয়ানমারের ৫, নেপাল ও ভারতের ২ জন করে এবং পাকিস্তানের ১ জন আছে। যাদের বয়স ১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।' রাজ্যের অভিবাসন বিভাগের পরিচালক হাপদজান হুসাইনি আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'কাজের পারমিট ও পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকায় অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩ এর ১৫ (১) (সি) এবং ৬ (১) (সি), ব্যক্তি পাচার বিরোধী এবং অভিবাসী আইন ২০০৭ এবং পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬-এর ধারায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।' হাপদজান হুসাইনি বলেছেন, 'অভিবাস বিভাগ আবাসিক ও বাণিজ্যিক জায়গার মালিকদের তদন্ত করা হবে, যারা অবৈধ বিদেশিদের থাকার অনুমতি দিয়েছে। এ ছাড়া যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অবৈধ অভিবাসীদের তথ্য শেয়ার করতে স্থানীয় জনসাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্যের অভিবাসন বিভাগ।'
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৯০ অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে অভিবাসন বিভাগ।
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান ২৩ ডিসেম্বর
প্রশান্ত মহাসাগরের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম ও সর্ববৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন 'অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আগামী ২৩ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। 'এসো মিলি প্রাণের উৎসবে' শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে থাকবে গান, গীতিআলেখ্য, কবিতা, নাটিকা ও আলোচনা। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল মতিন জানান, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এবারের অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মীভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রবাসী শিল্পীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। 'অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন' এক যুগের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে প্রবাসীদের প্রশংসা পেয়েছে। সংগঠনটির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আছে-অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী  বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, দেশ থেকে আসা খ্যাতিমান লেখক, সাংবাদিক, রাজনীতিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা আয়োজন এবং দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানো। করোনাকালে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি শরণার্থী ও শিক্ষার্থীদের আর্থিক সাহায্য করার কারণে স্থানীয় কাউন্সিল সংগঠনটিকে 'কোভিড হিরো' অ্যাওয়ার্ড দিয়ে সম্মানিত করেছিল। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
প্রশান্ত মহাসাগরের দেশ অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম ও সর্ববৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন 'অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আগামী ২৩ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
৫৫তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলায় ৭০ দেশের অংশগ্রহণ
প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরের রাজধানীর নিউ কায়রোর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুরু হয়েছে পক্ষকালব্যাপী ৫৫তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা। দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশি ও শিক্ষার্থীরাও মেলায় ভিড় করছেন। ২৪ জানুয়ারি বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড. মোস্তফা মাদবউলি। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এ মেলায় অংশ নিয়েছে ৭০টি দেশের এক হাজার ২০০টিরও বেশি প্রকাশনী সংস্থা, রয়েছে পাঁচ হাজার ২৫০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল। এ বছর প্রাচীন মিসরবিদ সেলিম হাসান ও শিশু সাহিত্যের অগ্রদূত ইয়াকুব আল-শারুনিকে কায়রো বইমেলার বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সুউচ্চ চিত্তাকর্ষক পাঁচটি হল সমৃদ্ধ ৮০ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি আয়তনের দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনী কেন্দ্রে বইমেলার সুবিন্যস্ত স্টলের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরকাড়া প্যাভিলিয়ন। বই বিক্রি ছাড়াও প্রতিদিন এসব প্যাভিলিয়নে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত ও বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে চলে সভা, সেমিনার এবং শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানান বর্ণাঢ্য আয়োজন। প্রদর্শনীর পাশাপাশি মেলায় সাড়ে ৫০০ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের অতিথি দেশ নরওয়ে নিজেদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আরব পাঠকদের কাছে তুলে ধরছে 'জ্ঞান বিনির্মাণের মাধ্যমে আমরা শব্দের সুরক্ষা করব' প্রতিপাদ্যে। গতকাল শনিবার বইমেলার চত্বরে কথা হয় আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন‌ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে। বিভিন্ন দেশের প্যাভিলিয়নে ঘুরতে ঘুরতে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় বই ও বইমেলা নিয়ে। শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন আজাদ বলেন, 'ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দেশ মিশর। আমি মনে করি, বইমেলা শুধুমাত্র বই বিপণনের জন্য নয় বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক মিলন মেলা। বইমেলা থেকে শিক্ষামূলক অনেক কিছু শেখা যায়। তাই প্রতি বছর এই সময়টির অপেক্ষায় থাকি আমরা।' শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, 'আল-আজহারের শিক্ষার্থীরা এই বইমেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কেননা এখান থেকে সূলভমূল্যে বই পাওয়া যায়, যেগুলো আমাদের পড়াশুনার জন্য অনেক কাজে লাগে। এ বছর আমি তাফসির, হাদিস বিষয়ক কিছু বই সংগ্রহ করবো।' আরেক শিক্ষার্থী সাইমুম আল-মাহদী বলেন, 'মেলায় বিভিন্ন দেশের স্টল থাকলেও দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এখানে বাংলাদেশের কোনো স্টল নেই। বাংলাদেশ সরকার ও মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসকে অনুরোধ করব, আগামীতে বিশ্বের এই বৃহত্তম মেলায় অন্তত একটি বাংলাদেশি স্টল রাখার জন্য, যেখানে থাকবে লাল-সবুজের একটি পতাকা।' আরব বিশ্বের প্রাচীন ও বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলাটি ১৯৬৯ সালে কায়রো শহর প্রতিষ্ঠার এক হাজার বছর পূর্তি উপলক্ষে শুরু হয়। কালক্রমে এর পরিধি ও সমৃদ্ধি এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, বর্তমানে কোনো কোনো সমীক্ষায় একে ফ্রাঙ্কফুট বইমেলার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ইসলামি সাহিত্যের সবচেয়ে বড় বইমেলাটি প্রতি বছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলে।
প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরের রাজধানীর নিউ কায়রোর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুরু হয়েছে পক্ষকালব্যাপী ৫৫তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা।
মালয়েশিয়ায় ভবন ধসের ঘটনায় নিখোঁজ ৪ বাংলাদেশি আটক
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে পেনাং রাজ্যে নির্মাণাধীন ভবন ধসের ঘটনায় নিখোঁজ ৪ বাংলাদেশি কর্মীর খোঁজ পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনার পর কাউকে কিছু না জানিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে তাদের আটক করেছে মালয়েশিয়ান পুলিশ। পেনাংয়ের ডেপুটি পুলিশ প্রধান দাতুক মোহাম্মদ ইউসুফ জান মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেছেন, বুধবার বিকেল ৪টায় পেনাংয়ের বায়ান লেপাসে পুলিশ তাদের ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, তারা ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিল, কিন্তু ঠিক পরেই পালিয়ে যায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আটক বাংলাদেশিদের পরিচয় জানা যায়নি। নিখোঁজ ৪ বাংলাদেশির খোঁজ পাওয়ায় বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। এদিকে মালয়েশিয়ায় নির্মাণাধীন ভবন ধসে নিহত বাংলাদেশি শ্রমিকদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। হাইকমিশন নিহত বাংলাদেশি কর্মীদের মরদেহ দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছে হাইকমিশন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিহতদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ আদায়েও কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাইকমিশন।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে পেনাং রাজ্যে নির্মাণাধীন ভবন ধসের ঘটনায় নিখোঁজ ৪ বাংলাদেশি কর্মীর খোঁজ পাওয়া গেছে।
মালয়েশিয়ায় অস্ত্রসহ সন্দেহভাজন ইসরাইলি গুপ্তচর গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি হোটেল থেকে অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়া পুলিশ। তিনি ইসরাইলি গুপ্তচর বলে ধারণা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক রাজারুদ্দিন হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। দেশটির প্রভাবশালী অনলাইন সংবাদমাধ্যম মালয় মেইল জানিয়েছে, গত ২৭ মার্চ জালান আমপাংয়ের একটি হোটেল থেকে ছয়টি হ্যান্ডগান ও ২০০ গুলিসহ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ১২ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। এই সময় তিনি জাল ফরাসি পাসপোর্ট ব্যবহার করেছিলেন। মালয় মেইল আরও জানিয়েছে, আটক ব্যক্তি মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন বেশ কয়েকটি হোটেল পরিবর্তন করেন। তিনি কীভাবে অস্ত্র পেয়েছেন সে বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। সিঙ্গাপুরে ইসরাইলি দূতাবাসকে এই বিষয়ে ইমেইল করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা অনুসারে, মালয়েশিয়ার সঙ্গে ইসরাইলের কূটনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। এদিকে সন্দেহভাজন ওই ইসরাইলিকে অস্ত্র সরবরাহের সন্দেহে শুক্রবার এক দম্পতিসহ তিন মালয়েশিয়কে গ্রেপ্তার করে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক রাজারুদিন। ওই দম্পতির গাড়ি থেকে একটি পিস্তলও জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মালয়েশিয়ার রাজা, প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা জোরদার এবং দেশজুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, মালয়েশিয়ায় প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছেন। ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার রাজধানীতে এক ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানীকে গুলি করে হত্যা করে দুই অজ্ঞাত ব্যক্তি। এরপর হামাস দাবি করে, ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে হত্যা করেছে। তবে ইসরাইল এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি হোটেল থেকে অস্ত্রসহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়া পুলিশ। তিনি ইসরাইলি গুপ্তচর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা মানেই গবেষণা
গবেষণার কথা মনে করলে প্রথমেই যে শব্দটি মাথায় আসে তাহলো, 'গো+এষণা' অর্থাৎ কোনো কিছুর ব্যাপক অনুসন্ধান। ব্যাপক অনুসন্ধান আসলে কত প্রকার এবং কী, তার হাতেনাতে বাস্তবায়ন পেয়েছি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে এসে। যদিও দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এবং শিক্ষকতা পেশায় থাকার কারণে গবেষণার প্রয়োগ ছিল অবশ্য কর্তব্য। তবে শুনতে নেহায়েত খারাপ লাগলেও, এটা সত্য যে মানবিক বা সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষণার যে প্রকৃত অর্থ এবং তার যে প্রয়োগ তা এখানে এসেই হয়েছে। গবেষণা এখানে কতটা নিখুঁত এবং সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করা হয় লেখনীতে, সেটা বুঝতে পেরেছি এখানকার শিক্ষকদের গবেষণা প্রবন্ধ থেকে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা গবেষণাকেন্দ্রিক। আপনি যদি মনে করে থাকেন, দেশের মতো পুরো সিমেস্টার খুব একটা নিয়মিত পড়াশোনা না করে, পরীক্ষার আগে পড়ে ভালো করা যাবে বিষয়টা মোটেও তা নয়। এখানে রোজকার পড়া যেমন রোজই শেষ করতে হয়, তেমনি ক্লাসে শিক্ষকের সামনে আলোচনায় অংশ নিতে হয়। নতুবা নম্বরের খাতায় আপনার কিছুই যোগ হবে না। কথা হচ্ছিল গবেষণা নিয়ে। একে তো এখানে শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোটাই গবেষণাকেন্দ্রিক। এ ছাড়া এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয় বিস্তারিত আলোচনা এবং সৃজনশীলতার ওপর। অর্থাৎ, আপনাকে যে শত শত গবেষণা প্রবন্ধ পড়তে দেওয়া হচ্ছে, এ থেকে আপনি নিজে নতুন কী জ্ঞান সৃষ্টি করতে পারবেন এবং তার প্রয়োগে বাস্তবে কী ভিন্নতা আসবে, সেদিকে আপনাকে নিয়োজিত করা। কোনো শিক্ষার্থী যদি সত্যই ভালো গবেষণা করতে চান, তাহলে এমন একাডেমিয়ার কোনো বিকল্প নেই। একটু কষ্ট হলেও ভালো লাগা কাজ করে যখন দেখি বিভিন্ন দেশের বহু অধ্যাপক গবেষণা নিয়ে তাদের বিভিন্ন চিন্তা আলোচনা করছেন। এমন পরিবেশ আপনাকে আসলেই উপলব্ধি দেবে যে, আপনি প্রকৃত অধ্যাপকদের সঙ্গেই আছেন। যেহেতু এখানে গবেষণার অনেক সুযোগ রয়েছে, তাই নিজের গবেষণার বিষয় কোনো অধ্যাপকের কাজের সমধর্মী হলে সহজেই গবেষণা সহকারী হিসেবে শেখার এবং কাজের সুযোগ পাওয়া যায় এবং এখানে কোনো গবেষণাই বৃথা যায় না। আপনি যে কাজটাই করবেন, সেটার প্রয়োগ মিলবে। সামার বা গ্রীষ্মে যখন দীর্ঘ ছুটি থাকে, অনেক শিক্ষার্থীকেই দেখেছি গবেষণা সহকারী হিসেবে অধ্যাপকের সঙ্গে বিভিন্ন প্রোজেক্টে কাজ করতে। একে তো এর মাধ্যমে কাজের সংস্থান হলোই, পাশাপাশি অভিজ্ঞতার তালিকায় নতুন সংযোজনও হলো। ইতিবাচক দিক হলো, এখানে শিক্ষাব্যবস্থা এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছে যে গবেষণার পরিবেশ, পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের সরবরাহ রয়েছে। খারাপ লাগে ভেবে যে দেশে কত থিসিস পেপার, গবেষণা প্রকাশনার মুখ দেখে না। অথচ এখানে উচ্চশিক্ষা মানেই গবেষণা। তাই যেসব শিক্ষার্থী মার্কিন মুল্লুকে উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা করছেন, তাদের অবশ্যই এমন একটি ভিন্ন একাডেমিয়ার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে, যেখানে শ'খানেক গবেষণা প্রবন্ধের মধ্য দিয়েই এই যাত্রাপথ পাড়ি দিতে হবে। এমনকি আবেদনের সময়েই দেখতে চাওয়া হয়, এ নাগাদ আপনার কোনো গবেষণা কাজ কিংবা প্রস্তাবনা আছে কি না! আর যারা প্রকৃতঅর্থেই গবেষণা করতে চান, তাদের জন্য অবশ্যই এটি একটি বড় সুযোগ! নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
গবেষণার কথা মনে করলে প্রথমেই যে শব্দটি মাথায় আসে তাহলো, 'গো+এষণা' অর্থাৎ কোনো কিছুর ব্যাপক অনুসন্ধান। ব্যাপক অনুসন্ধান আসলে কত প্রকার এবং কী, তার হাতেনাতে বাস্তবায়ন পেয়েছি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে এসে।
প্রকৃতির মতো মন খারাপের কত রঙ
দেশের বাইরে পড়তে আসলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সাধারণ এবং স্বাভাবিক বিষয় হলো- মন খারাপ হওয়া। মন খারাপের তো আর এ মহাদেশ সে মহাদেশ নেই, তবে নিজের বাড়ি, চেনা জগত থেকে দূরে থাকলে ছোটখাটো বিষয়ও অনেক ভারী মনে হয়। বিশেষ করে পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে, বিশেষ দিনগুলোয় পরিবারের কাছে না থাকলে যতই ভিডিও কলে কথা হোক না কেন, একটা অপূর্ণতা থেকেই যায়। একটা সময় শুনেছি মানুষের মনের ওপর আবহাওয়ার প্রভাব অনেক বেশি। দেশ ছেড়ে এখানে আসার পর এটা বুঝতে পেরেছি ভালোভাবে। অক্টোবর থেকেই যে মেঘলা আকাশ, একটানা নিশ্চুপ বৃষ্টি আর তুষারপাত শুরু হয় যে, একটু রোদের দেখা মেলা ভার। এসময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিত্যদিন বই নিয়ে বসে থাকতে ভালো লাগার কথাও না। সকালের ক্লাসগুলো যারপরনাই ভারী মনে হয়। সবকিছু মিলিয়ে ক্লাস শেষে ফিরতি পথে কারও সঙ্গে দুটো কথা বলার সংস্কৃতি এখানে খুব একটা নেই। আর যে জিনিসটা বেশি, বারবার মনে পরবে তা হলো- দেশের খাবার। শীত মৌসুমে বাড়িতে কত কিছুই না হতো। এখানে দিনভর কাজ-বই পড়ার পর এত সময়ই বা কোথায়। কিছু সহপাঠীকে দেখেছি দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু গবেষণার কাজে আর যাওয়া হয়নি। তাই মন খারাপের কতই না উপকরণ মাঝেমধ্যেই নজরে আসবে। এ সময়গুলোতে কাছের বন্ধু বা সহকর্মীদের কথা স্বীকার করতে হয়। ব্যস্ততা তো এখানে সবারই। তারপরও কিছু বন্ধু বা সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ হয়, যৌক্তিক আলোচনা হয় বা কখনো একসঙ্গে লাইব্রেরিতে পড়তে যাওয়া। শীত মৌসুম না থাকলে বিকেলে, সন্ধ্যায় কোথাও হাঁটতে বেরনো, কখনো জিনিসপত্র জোগাড় করে ওয়ান ডিশ আয়োজন করা, এভাবেই চলে মন খারাপের মরশুম। এ ছাড়া, নিজেকেও বেশিরভাগ সময় মন ভালো করার উপায় খুঁজে নিতে হয়। ভালো কোনো চলচ্চিত্র, শখের কাজগুলো করা, যেমন: জানালার পাশে ছোট গাছ, বাগানের যত্ন নেওয়া কিংবা রান্না করা। আমাদের ছোট গ্রুপের কয়েকজনের কথাই ধরা যাক। মন খারাপ হলে একজন বিভিন্ন রেসিপি দেখে রান্নার চেষ্টা করেন, আরেকজন রঙতুলি নিয়ে বসে পরেন। আমি রান্না কিংবা রঙতুলির ধৈর্য রাখি না। চেষ্টা করি জিমনেশিয়ামে যেতে, বিভিন্ন স্পোর্টস অনুশীলন করতে। কিংবা কখনো সেই ছোটবেলার মতো ডায়েরি লিখতে। জানালার পাশেই আমার পড়ার টেবিল। এখানে বসে ডায়েরি লিখতে আর বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতেই শীত-বসন্ত-গ্রীষ্ম-শরৎ চোখে পড়ে। কখনো সব সাদা তুষারে ঢাকা, কোথাও কেউ নেই, একটা কাকপক্ষীও না। এই কিছুদিন আগেই সহপাঠীরা সবাই সন্ধ্যার ক্লাস শেসে হই-হুল্লোড় করে হেঁটে ডর্মে ফিরেছি। সূর্য তখনো ডুবেনি। আর এখন ৬টা না বাজতেই চারিদিক অন্ধকার। আবার ফের কিছুদিন পর বসন্তে গাছেদের নিজেদের পাতা জোগাড়যন্ত্রের কাজ চলে। মে থেকে জুলাই মাস নাগাদ গ্রীষ্মে সারা দিন-রাত বিভিন্ন পোকার একটানা শব্দ। এই মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতই এগুতে থাকে বাড়ি ফেরার পঞ্জিকার পাতা। নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
দেশের বাইরে পড়তে আসলে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সাধারণ এবং স্বাভাবিক বিষয় হলো- মন খারাপ হওয়া। মন খারাপের তো আর এ মহাদেশ সে মহাদেশ নেই, তবে নিজের বাড়ি, চেনা জগত থেকে দূরে থাকলে ছোটখাটো বিষয়ও অনেক ভারী মনে হয়। বিশেষ করে পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে, বিশেষ দিনগুলোয় পরিবারের কাছে না থাকলে যতই ভিডিও কলে কথা হোক না কেন, একটা অপূর্ণতা থেকেই যায়।
আপিলে মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচলেন মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি
মালয়েশিয়ায় স্বদেশিকে হত্যার দায়ে সোহেল (৩৮) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির ফেডারেল আদালত। গতকাল বুধবার দেওয়া এই রায়ে আসামিকে ১২ বার বেত্রাঘাতের নির্দেশও দেওয়া হয়। আগের রায়ে হাইকোর্ড সোহেলকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয় তাকে। কোর্ট অফ আপিলের সভাপতি আবাং ইস্কান্দার জানান, ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সোহেলকে আটক করা হয়। সেদিন থেকেই এই সাজা কার্যকর হবে। মালয়েশিয়ার ট্যাবলয়েড পত্রিকা দ্য সান- এর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরে বলা হয়, ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কুয়ালা সেলাঙ্গোরের আলম জায়া জেরামে পলাশ কুমার (২৯) নামে এক বাংলাদেশিকে নির্মাণাধীন ভবনে হত্যা করা হয়। ভবনের দশম তলায় পলাশের মাথাবিহীন লাশ পাওয়া যায়। সোহেলকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাকে নিয়ে ওই ভবন থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কুড়াল উদ্ধার করে। এ মামলায় ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর সোহেলকে দোষী সাব্যস্ত করেন হাইকোর্ট। সোহেলের আইনজীবী আমিরুল জামালুদ্দিন আদালতকে তার মক্কেলের মৃত্যুদণ্ডকে জেলের মেয়াদে পরিবর্তন করার আবেদন করেন, যা দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় একটি সংশোধনীমূলক ব্যবস্থা। আমিরুল জামালুদ্দিন জানান, হত্যাকাণ্ডটি উসকানির কারণে মুহুর্তের প্ররোচনায় ঘটেছে। এটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল না।
মালয়েশিয়ায় স্বদেশিকে হত্যার দায়ে সোহেল (৩৮) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির ফেডারেল আদালত।
বাংলাদেশি কর্মীকে মারধর, কুয়েত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার ৭ বছরের কারাদণ্ড
কুয়েতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীকে মারধরের ঘটনায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ফৌজদারি আদালত। কুয়েতের আপিল আদালতের কাউন্সিলর নাসর সালেম আল-হেইদের নির্দেশনায় এই শাস্তি দেওয়া হয় তাকে। গাড়ি না ধোয়ার অজুহাতে মো. জামাল উদ্দিন (৪১) নামে ওই বাংলাদেশি কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হলে তিনি গুরুতর আহত হন। মো. জামাল উদ্দিনের নিয়োগকর্তার (কফিল) অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জামাল উদ্দিন ওই কর্মকর্তার বাসায় খণ্ডকালীন (পার্টটাইম) কাজ করতেন। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তির আঘাতে ভুক্তভোগী জামাল স্থায়ীভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। তার শারীরিক কার্যকারিতার অন্তত ৫০ শতাংশ অচল হয়ে পড়েছে। যার ফলে আসামীকে প্রাথমিকভাবে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল ফৌজদারি আদালত। সূত্র জানায়, আসামীর খালাস চেয়ে তার আইনজীবী আপিল আবেদন করলে উচ্চ আদালত অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তি কমিয়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন।
কুয়েতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীকে মারধরের ঘটনায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ফৌজদারি আদালত।
মিশরে রমজানের ঐতিহ্য ফানুস
পৃথিবীর শত আঁধারের মাঝে আলোর সঞ্চারণের প্রতীকী মাধ্যম হলো ফানুস। প্রাচীনকালে সাইরিয়াস নামক নক্ষত্রের উদয় উদযাপনের জন্য ফারাওরা যে উৎসব পালন করত, সেই উৎসবে ব্যবহৃত মশাল থেকেই প্রকৃত পক্ষে ফানুসের উদ্ভব হয়। প্রাচীন মিশরীয়রা ফারাও সম্রাটদের জন্মদিন পালন করার সময় রাস্তাগুলো আলোকিত করতো ফানুস দিয়ে। এ ছাড়া, নেপোলিয়ন মিশর আক্রমণ করার পর তার দখলদারিত্বের প্রতিবাদে পুরো মিশরবাসী আকাশে ফানুস ছেড়ে প্রতিবাদ করেছিল। মিশরে রমজানের সাজসজ্জার উপকরণ হিসেবে ফানুসের প্রথাগত ব্যবহারের সূচনা ধরা হয় ফাতিমীয় খিলাফতের সময়‌ থেকে। ফাতিমীয় খিলাফত মূলত ছিল মিশরকেন্দ্রিক। ৯৫২ খ্রিস্টাব্দে ফাতেমি খলিফা মুইজ ঈল-দ্বীনিল্লাহ আবু তামিম মা'আদ বিন মানসুর আল-উবাইদি পবিত্র রমজান মাসে তৎকালীন মিশরের রাজধানী ফুসতাতে আসেন। তখন তার সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফুসতাতকে ফানুস দিয়ে আলোকোজ্জ্বল করা হয়েছিল। সেই থেকে রমজানে ফানুসের ব্যবহার করে আসছে মিশরীয়রা। প্রতি বছর আরবি মাস শাবানের ১৫ তারিখের পর পরেই‌ বিশ্বের প্রাচীন কৃষ্টি সভ্যতা সমৃদ্ধ মুসলিম দেশটির রাজধানী ইসলামিক কায়রোসহ সারা দেশের বিভিন্ন দোকানে বাহারি নামের রং বেরংয়ের ফানুসের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। রমজান শুরু হওয়ার‌ ১৫ দিন‌ আগে থেকেই রাস্তায় বের হলেই কানে‌ ভেসে আসে দেশটির ঐতিহ্যবাহী রমজানের গান 'ওহাওয়ী-ওয়া-ওহাওয়ী, ইউয়োয়া-উয়াহা...।'
পৃথিবীর শত আঁধারের মাঝে আলোর সঞ্চারণের প্রতীকী মাধ্যম হলো ফানুস। প্রাচীনকালে সাইরিয়াস নামক নক্ষত্রের উদয় উদযাপনের জন্য ফারাওরা যে উৎসব পালন করত, সেই উৎসবে ব্যবহৃত মশাল থেকেই প্রকৃত পক্ষে ফানুসের উদ্ভব হয়।
মালদ্বীপে বিজয় দিবস উদযাপন
মালদ্বীপে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। মালদ্বীপ সময় গতকাল শনিবার বাংলাদেশ হাই কমিশন প্রাঙ্গনে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ। বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সন্ধ্যায় মালদ্বীপ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ইবাদ উল্লাহ'র সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করেন মাওলানা তাজুল ইসলাম। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে মিশনের তৃতীয় সচিব চন্দন কুমার সাহা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিরিন ফারজানা, কনসুলার সহকারী ময়নাল হোসেন এবং কল্যাণ সহকারী আল মামুন পাঠান। অনুষ্ঠানে হাইকমিশনের কাউন্সিলর ও দূতালয় প্রধান মো. সোহেল পারভেজ স্বাগত বক্তব্য দেন। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করেন। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান। বিজয় দিবসে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সি আই পি মো. সোহেল রানা ও দুলাল মাতবর। পর্যায়ক্রমে মুক্তিযুদ্ধ ও উন্নয়নমূলক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্রকারীরা হত্যা করলেও তার স্বপ্নকে হত্যা করা যাবে না। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সকলকে বিশেষ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে বলেন। প্রবাসী ও দেশে সবাই একযোগে কাজ করলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তথা উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সহজ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানের পর একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হতে আগত শিল্পি আকাশ মাহমুদ, দৃষ্টি তালুকদার বন্যা, মহুয়া মুনা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়াও, প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক ডা. জেবা উন নাহার, ফেরদৌসী, তনিমা সাহা, শফিকুল ইসলাম সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করেন। মালদ্বীপের মালেতে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ও মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে নৈশ ভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
মালদ্বীপে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা: সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ফান্ডিংয়ের প্রয়োজনীয় তথ্য
একটা সময় সোশ্যাল সায়েন্স বা সামাজিক বিজ্ঞানের কোনো বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে বেঁছে নেওয়া হতো ইউরোপকে। তার একমাত্র কারণ না হলেও অন্যতম কারণ ছিল ভর্তির ক্ষেত্রে জিআরই স্কোরকে গুরুত্ব দেওয়া। তবে কোভিড-১৯-এর পর ইউরোপে উচ্চশিক্ষায় বিভিন্ন বৃত্তি বা স্টাইপেন্ড সীমিত হয়ে যাওয়া এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে জিআরই শিথিল করে দেওয়ার কারণে এখন সামাজিক বিজ্ঞানের অনেক শিক্ষার্থীই পড়তে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে। এখানকার উচ্চশিক্ষার অন্যতম সুযোগ হলো ফান্ডিং পলিসি। এর জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ থেকে শুরু করে পুরো টিউশন ফি বহনের পাশাপাশি খণ্ডকালীন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (টিএ), রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট (আরএ), কিংবা গ্র্যাজুয়েট অ্যাসিসট্যান্ট (জিএ) হিসেবে একাডেমিয়ায় যুক্ত থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। এই খণ্ডকালীন চাকরি থেকে যে ফান্ড বা স্টাইপেন্ড দেওয়া হয় তা দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে থাকা-খাওয়ার খরচ চলে যায় এবং এই অর্থের পরিমাণ অবশ্যই নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে কী পরিমাণে ফান্ড দিচ্ছে তার ওপর। এর অন্যতম আরেকটি সুবিধা হলো, আপনার সিভিতে অভিজ্ঞতা যোগ হওয়া। সঙ্গে আপনাকে নতুন এই পরিবেশে, ক্যাম্পাসের বাইরের কোনো পরিবেশে কাজ করতে হচ্ছে না। এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন, সামাজিক বিজ্ঞানের যে বিভাগগুলোতে ফান্ডিং দেওয়া হয়, সেটা কীভাবে নির্ধারিত হয়। যেমন, বিজ্ঞান অনুষদে অধিকাংশ ফান্ডিং নির্ধারিত হয় অধ্যাপকের গবেষণা প্রকল্প থেকে। যার জন্য বিজ্ঞান বা সায়েন্সের একজন শিক্ষার্থীকে যোগাযোগ করতে হয় সরাসরি ওই বিভাগের কোনো অধ্যাপককে। তবে সামাজিক বিজ্ঞানের জন্য এমনটি সব ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই। কেন না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখানে ফান্ড নির্ধারিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের একেক স্টেট, একেক বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানকার শিক্ষার্থী সংখ্যা, সরকারের যে বাজেট বরাদ্দ থাকে গবেষণার জন্য; সবকিছুর ওপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দেয় একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার ফান্ডের পরিমাণ কেমন হবে। তাই সামাজিক বিজ্ঞান এবং কলার অধীনে যে বিভাগগুলো রয়েছে, সেটা মাস্টার্স কিংবা পিএইচডি, উভয় ক্ষেত্রে অধ্যাপকের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ করতেই হবে, বিষয়টি এমন নয়। স্বল্প সময়ে যে বিষয়টি করা প্রয়োজন তা হলো, বিভাগের ডিজিএস বা কোর্ডিনেটরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা। ওয়েবসাইটে অনেক তথ্য দেওয়া থাকলেও অনেক সময় ফান্ডিংসহ অনেক তথ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে না। এসব বিষয় সরাসরি কোর্ডিনেটরের সঙ্গেই আলোচনা করে নেওয়া ভালো। এমনিতেই এক দেশে বসে অন্য দেশের পলিসি বোঝা দুরূহ, তাই এ ক্ষেত্রে যোগাযোগের বিকল্প নেই। পাশাপাশি, স্টেটমেন্ট অব পারপাসে এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন, কোন শিক্ষকের কাজ আপনার গবেষণা আগ্রহের সঙ্গে মিলছে কি না, এতে করে বোঝায় আপনি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিদের গবেষণা, তাদের কাজ দেখেই বিশ্ববিদ্যালয়টি বাছাই করেছেন। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় থাকে, যেখানে গবেষণা সহকারী হিসেবে আপনাকে অধ্যাপক বা ফ্যাকাল্টিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে ফান্ডিং হয়তো ওই শিক্ষকের গবেষণা প্রকল্প থেকেই আসে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সোশ্যাল সায়েন্সের ফান্ডিং সেন্ট্রালি হওয়ায় শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে, এমনটি নয়! নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
একটা সময় সোশ্যাল সায়েন্স বা সামাজিক বিজ্ঞানের কোনো বিষয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে বেঁছে নেওয়া হতো ইউরোপকে। তার একমাত্র কারণ না হলেও অন্যতম কারণ ছিল ভর্তির ক্ষেত্রে জিআরই স্কোরকে গুরুত্ব দেওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরল বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিংকার সেন্টারে সংস্কৃতি বিনিময় অনুষ্ঠানে সেখানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশ শিক্ষার্থীরা দেশীয় শিক্ষা, সাহিত্য, উল্লেখযোগ্য স্থাপনা, নদ-নদীসহ দেশীয় সংস্কৃতির নানা দিক তুলে ধরেন। বিদেশি শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো জানাতে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে বাংলাদেশ সম্পর্কিত ১০ বিষয় তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে দেশীয় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগামে প্রায় ১২ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানার বল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
মালয়েশিয়ায় বাংলা মার্কেটে তল্লাশির সময় চুরির অভিযোগে ৩ পুলিশ আটক
চুরির অভিযোগে মালয়েশিয়ার তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় 'মিনি ঢাকা' খ্যাত বাংলা মার্কেটে চালানো অভিযানে তল্লাশির সময় প্রবাসীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে নগদ অর্থ চুরির অভিযোগ ওঠে ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। গত ২৬ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়া পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি আয়োব খান মাইদিন পিচাই এই তথ্য জানান। আটক পুলিশ সদস্যদের ২৩ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। পরে রিমান্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। ২৭ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যম দ্য স্টারের অনলাইনে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, গত ২১ ডিসেম্বর অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে 'মিনি ঢাকা' খ্যাত বাংলা মার্কেট ও এর আশেপাশে অভিযান চালায় দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রায় এক হাজার সদস্য। অভিযানে বাংলাদেশিসহ এক হাজারের বেশি অভিবাসীকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় মার্কেটে তল্লাশির নামে প্রবাসীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৮৫ হাজার রিঙ্গিত চুরির অভিযোগ ওঠে তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। পরে তাদের আটক করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়া পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক আয়োব খান মাইদিন পিচাই বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের সঙ্গে আপস করা হবে না। দণ্ডবিধির ৩৮০ ধারায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিশেষ তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষে প্রতিবেদন ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটরের কাছে পাঠানো হবে।
চুরির অভিযোগে মালয়েশিয়ার তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ‘বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার’
বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের হিলটন মিড টাউন হোটেলে 'বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার' অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মুক্তধারা নিউইয়র্ক এবং ইউএসএ-বাংলাদেশ বিজনেস লিংক গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্সের সহযোগিতায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এই মেলাটি ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত 'বাংলাদেশী অভিবাসী দিবস ও বাণিজ্য মেলা-২০২৩'-এর পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হবে। মুক্তধারা নিউইয়র্কের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, 'ব্যাংক, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, রেমিটেন্স সংক্রান্ত অ্যাপ সার্ভিস, মানি এক্সচেঞ্জ হাউস এবং রেমিট্যান্স চ্যানেল পার্টনাররা এই মেলায় অংশগ্রহণ করবে।' তিনি বলেন, 'অনুষ্ঠানে সেরা ৩০০ রেমিট্যান্স প্রেরককে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং সেরা ১০ জনকে রেমিট্যান্স পুরস্কার দেওয়া হবে।' মেলায় বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি অংশ নেবে বলেও জানান তিনি। এই মেলায় শীর্ষ ৩টি মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি, রেমিট্যান্স চ্যানেল পার্টনারদের পুরস্কৃত করা হবে জানান তিনি। এ ছাড়া তিনি বলেন, 'অংশগ্রহণকারী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে একটি নেটওয়ার্কে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা হবে।' তিনি বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৈধপথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।' 'বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার' রেমিট্যান্স ও অর্থ ট্রান্সফারের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য সুনির্দিষ্ট প্রবাসীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি প্লাট ফর্ম হবে এই মেলা', বলেন তিনি।
বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের হিলটন মিড টাউন হোটেলে 'বাংলাদেশ রেমিট্যান্স ফেয়ার' অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে বাংলাদেশিসহ নিহত ৩
মালয়েশিয়ায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে বাংলাদেশিসহ তিন বিদেশি নিহত হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বার্নামা ও স্টার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১১ মার্চ সোমবার মধ্যরাতে মালয়েশিয়ার পাহাং রাজ্যের কুয়ান্তানের জালান পেকান-কুয়ান্তানে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে তিন বিদেশি ডাকাত নিহত হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন এক বাংলাদেশি নাগরিকও। তারা দেশটিতে বেশ কয়েকটি সোনার দোকানে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত সেন্ট্রো গ্যাং -এর সদস্য বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ৩৪ থেকে ৪৪ বছর বয়সী সন্দেহভাজন ভিয়েতনামের দুই নাগরিক এবং একজন বাংলাদেশি নাগরিক, যার বয়স ৩৮। তবে তাদের নাম-পরিচয় বিস্তারিত প্রকাশ করেনি পুলিশ। মঙ্গলবার পাহাং কন্টিনজেন্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে (আইপিকে) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। পাহাং পুলিশ প্রধান দাতুক সেরি ইয়াহয়া ওথমান বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি প্রোটন ওয়াজা টাইপ গাড়িতে চড়েছিল সেটি পরবর্তীতে জব্দ করা হয় এবং সাত রাউন্ড গুলিসহ একটি গ্লক-১৭ টাইপ পিস্তল জব্দ করা হয়।  এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত আরও সরঞ্জামও পাওয়া গেছে, যার মধ্যে দুটি ম্যাচেট ব্লেড রয়েছে। এদিকে তিনজন বিদেশি নাগরিক নিয়ে গঠিত সেন্ট্রো গ্যাং, গত বছরের জুন থেকে সেলাঙ্গর, নেগেরি সেম্বিলান, পেরাক এবং পাহাংয়ে সোনার দোকানের বেশ কয়েকটি ডাকাতি এবং চুরির সাথে জড়িত বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপরাধীরা ছুটির দিনগুলোতে স্বর্ণের দোকানে অনুপ্রবেশের পাশাপাশি সহিংসতা যেমন-প্রত্যক্ষদর্শীদের আক্রমণ ও ছিনতাইও করে থাকে। সোমবার সেলাঙ্গর এবং পাহাং অপরাধ তদন্ত বিভাগের সদস্যদের একটি দল যৌথ অভিযান চালায়। তারা রাত সাড়ে ১১টার দিকে পাহাং রাজ্য উন্নয়ন বোর্ড, পেকানের এলাকায় সন্দেহজনক অবস্থায় একটি গাড়ি শনাক্ত করে। গাড়িটি থামার আগে পুলিশের গাড়ির পেছনে ধাক্কা দেয় এবং গাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয়। পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। গাড়িতে থাকা সন্ত্রাসীরা পেকান এলাকায় কোনো অপরাধ করার পরিকল্পনা করছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ।
মালয়েশিয়ায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে বাংলাদেশিসহ তিন বিদেশি নিহত হয়েছে।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে আমিরাতপ্রবাসীদের পড়ালেখার সুযোগ
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) নিশ-২ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ভার্চুয়ালি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ম. আবু জাফর, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাউবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন এবং দুবাই ও উত্তর আমিরাতের বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন। ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিক প্রোগ্রাম উইংয়ের যুগ্ম পরিচালক এমএস সঙ্গীতা মোরশেদে এই অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন বাউবির ওপেন স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিন, সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম এবং রেজিস্ট্রার ড. ম. শফিকুল আলম। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) পরিচালিত বহির্বাংলাদেশ শিক্ষা পদ্ধতিতে বাংলাদেশি প্রবাসীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে এসব প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে। এসব প্রোগ্রামে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। দুবাইয়ের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অনলাইনে টিউটোরিয়াল ক্লাস এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হবে। প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সংযোগসহ ফোন, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার প্রয়োজন হবে। শিগগিরই প্রবাসীদের মাঝে ভর্তির পদ্ধতি ও লিংক শেয়ার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) নিশ-২ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।
স্পেনে জাতীয় শোক দিবস পালন
স্পেনে যথাযথ মর্যাদা, গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। ১৫ আগস্ট রাজধানী মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত কর্মসূচির শুরুতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ। এর আগে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। দিবসের আলোচনার শুরুতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয় এবং  তাঁর জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত সারওয়ার মাহমুদ বলেন, 'বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার ইতোমধ্যে করা হয়েছে। কয়েকজন খুনী দেশের বাইরে অবস্থান করছে। সরকার তাদের দেশে এনে বিচার করার চেষ্টা করছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রবাসিদের স্বতঃস্ফুর্ত সমর্থন কামনা করছি।' তিনি আরও বলেন, 'খুনীদের অপকর্মের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া সম্ভব হবে তখনই, যখন জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবো। সেই লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে "স্মার্ট বাংলাদেশ" বিনির্মানে আজ বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে।' আলোচনা সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে শাহাদতবরণকারী ব্যক্তিবর্গ, জাতীয় ৪ নেতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদের রূহের মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করা হয়। লেখক : স্পেনপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক
স্পেনে যথাযথ মর্যাদা, গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে।
কুয়েত বিমানবন্দরে প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু
কুয়েত বিমানবন্দরে অসুস্থ হয়ে এক প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম দেলোয়ার হোসেন (৫০)। রোববার স্থানীয় সময় রাতে এই ঘটনা ঘটে। দেলোয়ার নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সিদ্দিক উল্লাহর ছেলে। দেলোয়ারের দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী আকলিমা বেগম। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের স্টেশন ম্যানেজার মো. শাহজাহান জানান, রোববার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১টার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৩৪৪ ফ্লাইটে কুয়েত থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার উদ্দেশে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন শেষ করে উড়োজাহাজে ওঠার আগে ২২ নম্বর গেটের সামনে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে বিমানবন্দরের মেডিকেল টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। একই এয়ারলাইনসের যাত্রী ইব্রাহিম খলিল রিপন জানান, কুয়েতপ্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রী দেলোয়ার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে যখন ২১ নম্বর গেট অতিক্রম করার পর আকস্মিক অসুস্থ হয়ে মারা যান। জানা গেছে, প্রায় দুই যুগ আগে দেলোয়ার কুয়েতে যান। প্রথম দিকে তার বৈধ কাগজপত্র থাকলেও পরে ছিল না। কুয়েতের সাধারণ ক্ষমার সুযোগে দেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) মোহাম্মদ আবুল হোসেন জানান, বর্তমানে দেলোয়ার হোসেনের মরদেহ কুয়েতের একটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ দ্রুত দেশে পাঠানো হবে।
কুয়েত বিমানবন্দরে অসুস্থ হয়ে এক প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম দেলোয়ার হোসেন (৫০)।
ফিলিস্তিনের সমর্থনে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় শিশুসহ বেসামরিক মানুষ নিহতের প্রতিবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বিক্ষোভ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল এএনসিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রিটোরিয়াস্থ কূটনীতিক এলাকার স্থানীয় ও বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার পোর্ট এলিজাবেথে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে শনিবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে হাজারো মানুষ। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরটিতে থাকা কয়েকশ বাংলাদেশি যোগ দেয় মিছিলে। রাজধানী প্রিটোরিয়ার লোডিয়ামেও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শত শত ফিলিস্তিন সমর্থক অংশগ্রহণ করেন। ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় লোকজন। বিক্ষোভে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় সাড়ে তিন হাজার নারী পুরুষ ও শিশু অংশগ্রহণ করে। দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার দল এএনসির পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সভাপতি  ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় শিশুসহ বেসামরিক মানুষ নিহতের প্রতিবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বিক্ষোভ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল এএনসিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ।
মিশিগানে শুরু হচ্ছে ‘বাংলা টাউন মেলা’, গাইবেন কনা-ইমরান
মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকানদের আয়োজনে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিন ব্যাপী ২২তম ডাইভার্সিটি ফেস্টিভ্যাল 'বাংলা টাউন মেলা'। ডিট্রয়েট সিটির বাংলা টাউনখ্যাত জেইন ফিল্ডে এই মেলা চলবে প্রতিদিন ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। গত ৯ সেপ্টেম্বর হ্যামট্রামেক সিটির একটি হলরুমে আয়োজক কমিটি মেলার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। তারা জানান, ৩ দিনের এই মেলায় থাকছে নানা আয়োজন। মেলায় গান পরিবেশন করতে আসবেন হাল সময়ের জনপ্রিয় গায়ক-গায়িকা ইমরান ও কনা। সাথে থাকবেন ফোক গানের আরেক জনপ্রিয় শিল্পী শাহনাজ বেলী। পাশাপাশি গান পরিবেশন করবেন উত্তর আমেরিকা ও স্থানীয় সংগীত শিল্পীরা। কণ্ঠশিল্পী কনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, উত্তর আমেরিকা সফরের ৯টি কনসার্টের মধ্যে মিশিগানের বাংলা টাউনে তাদের দলের পঞ্চম কনসার্ট হবে। ইতোমধ্যে ইমরান ও কনা ভিডিওবার্তায় সবাইকে মেলায় এসে গান শোনার আহ্বান জানিয়েছেন। মেলায় চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য ডিট্রয়েট সিটি পুলিশ ও ইউএসএ আর্মির দুটি বুথ থাকবে, এই দুই ডিপার্টমেন্টে চাকরির জন্য আবেদন করতে চাইলে তাৎক্ষণিক সব তথ্য সেখানে পাওয়া যাবে। স্কুল পড়ুয়া শিশুদের এপিআই ভোট মিশিগানের সহযোগিতায় প্রদান করা হবে ৫০০টি শিক্ষা উপকরণসহ স্কুল ব্যাগ। পাশাপাশি তাদের স্টলে আসলে ভোটার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করা হবে এবং মেলায় যারা ভোটার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করবেন তাদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে দেওয়া হবে ১টি নতুন আইফোন। চিরাচরিত বাংলা মেলায় ভোজন রসিকদের জন্য থাকবে খাবারের স্টল, কাপড় ও গয়নার দোকান এবং শিশুদের জন্য থাকবে নানাবিধ আয়োজন। রাফেল ড্রতে থাকবে গাড়িসহ অসংখ্য পুরস্কার। আয়োজকরা জানিয়েছেন, মেলায় অতিথি হিসেবে থাকছেন কংগ্রেসওম্যান রশিদা তালিব, স্টেট সিনেটর, সিটি মেয়র, স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ ও সিটি কাউন্সিলর। মেলায় ৫ গুণীজনকে প্রদান করা হবে বিশেষ সম্মাননা। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের ব্রিফিং ও বিভিন্ন বিষয়ে জানান কামাল রহমান, সেলিম আহমেদ ও নাজেল হুদা। উপস্থিত ছিলেন শোভন আহমেদ, সাইফুল আলম হারুন, ফিরোজ আলী, কামাল হোসেন লিলু, জিয়াউদ্দিন জুয়েল ও রিপন লস্কর। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তাহমিদ চৌধুরী, মোশারফ আহমেদ, খাজা আফজল হোসেন, রাজ রহমান, কাওসার দেওয়ান, মওদুদ চৌধুরী তাসমিন খান, রাসেল মোহাম্মদ, দিপু চৌধুরী, মো. রাজা, কিবরিয়া লস্কর, পারভেজ আহমেদ, তারেক ও ইকবাল মিয়াসহ কমিউনিটির নেতারা। লেখক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক
মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকানদের আয়োজনে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ৩ দিন ব্যাপী ২২তম ডাইভার্সিটি ফেস্টিভ্যাল 'বাংলা টাউন মেলা'।
ইতালিতে ভেনিস বাংলা স্কুলের ইফতার
ইতালির ভেনিস বাংলা স্কুল গতকাল শনিবার ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। এসময় বাংলাদেশসহ বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হয়। ভেনিস বাংলা স্কুলের নিজস্ব কার্যালয়ে ইফতারের পাশাপাশি স্কুলের সভাপতি সৈয়দ কামরুল সরোয়ারের সভাপতিত্বে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠান ও আলোচনার সময় প্রায় ৩০ জন ইতালীয় শিক্ষক, সাংবাদিক এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। ইফতার মাহফিলে বক্তৃতা করেন স্কুল কমিটির সভাপতি সৈয়দ কামরুল সরোয়ার এবং গবেষক কামরুল হাছান। কামরুল হাছান এসময় ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরে ইসলামের ৫ স্তম্ভের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ রোজার উদ্দেশ্য, লক্ষ্য উল্লেখ করে বলেন, রোজা আমাদের আত্ম সংযম বা আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। যা বিশ্ব মানব সভ্যতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি রোজার আধ্যাত্মিক ও বৈজ্ঞানিক দিকসহ মুসলিম নারীদের হিজাব ব্যবহারের বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেন। কামরুল হাছান যোগ করেন, ইতালিয় সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ইতালিতে বসবাসকারী সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালন, প্রচার এবং উদযাপন করতে পারবে। কিন্তু মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ঈদের দিনে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়া হয় না। কর্মজীবীদের বাধ্যতামূলক কাজে যেতে হয়। এতে সামাজিক এবং ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টি হয়। যা মুসলিমদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ইতালি সরকারের উচিৎ এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা। অপর আলোচক প্রকৌশলী লিয়ন শরিফ বলেন, 'ইসলাম বুঝতে হলে কুরআন, হাদিসের কাছে যেতে হবে। পড়াশোনা করতে হবে।' 'ইতালীয় গণমাধ্যমে রোজাকে "রমাদান" হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যা সঠিক নয়। রমাদান একটি মাসের নাম। এ মাসে মুসলিমরা রোজা রাখেন। সুতরাং রোজা বা সওম বললে তা সঠিক হবে', যোগ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন, মারতা লাভারা ফাচ্চিনি, জাকমো বেল্লাতো, সোহেলা আক্তার বিপ্লবী, আনতোনিয় স্পানো, আলেসসানদ্রো, জান্নি দাল্লা পেল্লেগ্রিনা, জাদা, ক্লাউদিয়া মানতোভান, মানুয়েলা যোরদানা, আকতার উদ্দিন, মোহাম্মদ উল্লাহ সোহেল, আনদ্রেয়া অনোরি, ভালেরিয়া তোনিয়লি, আলেসসানদ্রা বারদেল্লি, গাবরিয়েলে মালুতা, মারিয়া কারমেলা, সেরজো, ফাবরিচ্ছিয়, লাওরা, মিকেয়লা, কাজী টিপু, জানফ্রাংকো বোনেচ্ছো, ইকবাল হাসান, ফিয়রিনা মাসুম, লোরেনছো পোরচিলে, প্রমূখ। আলোচনা শেষে গাজার দুর্দশাগ্রস্তত ফিলিস্তিনিদের জন্য এবং বিশ্বশান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। বিরিয়ানিসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহি বিভিন্ন পদের ইফতার পরিবেশন করা হয়।
ইতালির ভেনিস বাংলা স্কুল গতকাল শনিবার ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। এসময় বাংলাদেশসহ বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনায় দোয়া করা হয়।
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ, অস্ট্রেলিয়ান লেখককে মৃত্যুদণ্ড দিল চীনের আদালত
অস্ট্রেলিয়ান লেখক ইয়াং হেনজুনকে বেইজিংয়ের একটি আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে। এ রায়ের পর অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল সরকার ক্যানবেরায় চীনা রাষ্ট্রদূতকে 'আপত্তি' জানাতে তলব করেছে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং গতকাল সোমবার বেইজিং আদালতে হেনজুনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার কথা গণমাধ্যমকে জানান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'অস্ট্রেলিয়ার সরকার এই রায়ে হতবাক।' 'আমি আমার বিভাগের সচিবকে এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বেগ জানাতে চীনা রাষ্ট্রদূতকে ফোন করার নির্দেশ দিয়েছি,' বলেন পেনি ওং। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আপিল করা হবে। সেই আপিল বিকল্প হিসেবে প্রভাবিত করতে পারে, নাও পারে।' 'তবে অস্ট্রেলিয়া চীনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করবে না,' যোগ করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হেনজুন ইয়াং একাধারে প্রগতিশীল লেখক এবং গণতন্ত্রপন্থী সংগঠক। ইয়াংকে ২০১৯ সালের আগস্টে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বেইজিংয়ের একটি কারাগারে তিনি ৪ বছরের বেশি সময় কাটাচ্ছেন। ২০২১ সালে ইয়াং হেনজুনের বিরুদ্ধে চীনা আদালত অভিযোগ গঠন করে। অভিযোগে বলা হয়, ইয়াং অস্ট্রেলিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচর সংস্থার মিশনের মাধ্যমে চীনের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করার চেষ্টা করেছেন। এই অপরাধে তিন বছরের জেল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সাজা দেওয়ার আইনি বিধান আছে। ইয়াং অবশ্য গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন। আটক হওয়ার আগে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় চীন সরকারের সমালোচনামূলক মন্তব্য পোস্ট করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অস্ট্রেলিয়ান সরকার প্রতিটি সুযোগে এবং সর্বোচ্চ স্তরে চীনের সাথে ইয়াংয়ের পক্ষে 'ওকালতি' করেছে। আমরা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক নিয়ম এবং চীনের আইনি বাধ্যবাধকতা অনুসারে ইয়াংয়ের জন্য ন্যায়বিচারের মৌলিক মান, পদ্ধতিগত ন্যায্যতা এবং মানবিক আচরণের জন্য আহ্বান জানিয়েছি।' ইয়াংয়ের পরিবারের এক মুখপাত্র বলেন, 'তিনি জেলে আছেন কারণ তিনি সত্য, গণতন্ত্র, যুক্তিবাদী ধারণার সম্মানজনক প্রতিনিধিত্ব করেন।' আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ান লেখক ইয়াং হেনজুনকে বেইজিংয়ের একটি আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে। এ রায়ের পর অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল সরকার ক্যানবেরায় চীনা রাষ্ট্রদূতকে 'আপত্তি' জানাতে তলব করেছে।
সময় এসেছে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর অঞ্চল ভাগাভাগির জন্য পেনসিল ও স্কেল নিয়ে বসে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। মধ্যপ্রাচ্যের কোন অঞ্চল কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা ঠিক করে নিজেদের সুবিধামতো সোজাসুজি দাগ কেটে নতুন মানচিত্র তৈরি করে তারা। যদিও তারা কেউই সশরীরে  মধ্যপ্রাচ্যে যায়নি। আক্ষরিক অর্থে মানচিত্রেই চলে ভাগাভাগি। এই সাইকস-পিকো চুক্তি বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের ম্যাপের আকার ঠিক করে দেয়। বরফ যুগের পর আদিম মানুষ হাতিয়ার তৈরি ও আগুনের ব্যবহার শিখে ফেলায় তাদের জীবনযাত্রা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। দলবদ্ধভাবে পশু শিকার করে নিজেদের মধ্যে মাংস ভাগাভাগি করতে শেখে। ওসমানী সাম্রাজ্যের পতনের পর আরব অঞ্চল ভাগাভাগির ১০০ বছর পেরিয়ে গেলেও, শক্তিধর দেশগুলো এখন নতুন কায়দায় ব্যবসা-বাণিজ্য ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। সাম্রাজ্যবাদ মার্কিনিরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অজুহাতে সভ্য জাতিগোষ্ঠীর নাম ব্যবহার করে দরিদ্র দেশগুলোকে সুকৌশলে শাসন-শোষণ করছে। বিশ্ব মোড়ল হিসেবে তাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন দেশে তাবেদার সরকার বসিয়ে শাসন পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। ডিজিটাল যুগে এসে শাসন-শোষণ পদ্ধতিও ডিজিটাল হয়ে গেছে, যা সাধারণ মানুষের বোঝার বাইরে। তাদের কাছে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী প্রাধান্য পায় না। যাকে দিয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার হবে, সেই তাদের পরিকল্পিত দেশের মনোনীত শাসক। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে গণতন্ত্রের চর্চার অভাব ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন তোলে তারা। ক্ষমতার অপব্যবহার, ভোটগ্রহণ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভিসা নীতি আরোপ ও বিভিন্ন ধরনের স্যাংশন এবং বিভিন্নভাবে স্নায়ুচাপ দিয়ে বাণিজ্যিক অবরোধ দিয়ে চলেছে তারা। ঔপনিবেশিক শাসকদের চরিত্র অনেকটা একইরকম। আজ আমেরিকা, কাল চীন, পরশু ব্রাজিল বা অন্য কেউ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন নতুন খেলোয়াড় আসে, যারা ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নামে পরিচিত। বিশ্ব মোড়ল বা মহাজনদের আসল উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-অর্থব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ। চীনে গণতন্ত্র বা মানবাধিকার আছে? সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ও স্যাংশন কোথায়? বরং বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চর্চা চীনের চেয়ে অনেক বেশি। তবে বিশ্বসমাজ ও রাজনীতিতে একটা বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গা ঝাড়া দিয়ে উঠছে এক সময়ের শাসিত উপনিবেশ, যাদের নতুন নাম বৈশ্বিক দক্ষিণ। যার প্রতিফলন আমরা সম্প্রতি ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক নেতৃত্ব নিজেদের হাতের মুঠোয় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের নিয়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও ডব্লিওটিও গড়ে তোলে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তাদের পরিকল্পিত পৃথিবীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গতিপথ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। একের পর এক যুদ্ধে জড়িয়ে তাদের নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৈশ্বিক নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে না। এই শূন্যতা পূরণ করতে পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থার বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নতুন খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে। এখানে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণের উদিত রাষ্ট্র বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশ যোগ দেবে না কেন, যেখানে পশ্চিমা দেশগুলোতে পৃথিবীর ১২ শতাংশ মানুষ বাস করে। আর বাকি ৮৮ শতাংশ মানুষ বৈশ্বিক দক্ষিণের বাসিন্দা। আমরা দেখেছি কোভিড-১৯ সংকটের সময় ধনী রাষ্ট্রগুলোর উদ্ভাবিত টিকা দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোকে দান হিসেবে দিলেও, তা উৎপাদনের অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে তারা অনড় ছিল। ব্রিটিশদের ১৯০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসন ও ২৩ বছরের পাকিস্তানি দুঃশাসনে বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতিত-নিষ্পেষিত হয়েছে। কিন্তু বাঙালির ইতিহাস বীরত্বের ইতিহাস। দুরন্ত সাহসে উজ্জীবিত আমাদের এই জাতি। মার্টিন লুথার কিংয়ের কথায় বলতে হয়- 'শিখতে হয় মাথা নিচু করে, বাঁচতে হয় মাথা উঁচু করে।' মাহবুবুর রহমান: ডেনমার্ক প্রবাসী; সাধারণ সম্পাদক, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগ ও সংগঠক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ডেনমার্ক
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর অঞ্চল ভাগাভাগির জন্য পেনসিল ও স্কেল নিয়ে বসে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন।
উচ্চশিক্ষায় শিক্ষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের বিকল্প নেই
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা স্কুল-কলেজে বেশ ভালো রেজাল্ট রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে কিছুটা হোঁচট খাই। আর ভিনদেশ হলে তো কথাই নেই। ভিন্ন ভাষা থেকে শুরু করে নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশ, না বলা অনেক পার্থক্যই ধরা পড়ে তখন। যারা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই ফান্ডিং হয় কোনো না কোনো অধ্যাপকের মাধ্যমে। এদিক থেকে সামাজিক বিজ্ঞান এবং কলা অনুষদের ফান্ডিং বা স্কলারশিপ ভিন্ন। এই অংশে বেশিরভাগ ফান্ডিংই হয় বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভাগের সেন্ট্রাল পর্যায় থেকে। তাই শুরুর দিকে ভিনদেশের শিক্ষার্থী সম্পর্কে অধ্যাপক জানেন কেবল তার অ্যাপ্লিকেশন পর্যায়ে জমা দেওয়া ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র থেকেই। তাই এখানে প্রায় সব অধ্যাপককেই বলতে শুনি, শ্রেণীকক্ষের বাইরে শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা হয়, একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর গবেষণা ও থিসিসের বিষয়ের আগ্রহ পরিবর্তন হয়। কেননা আমাদের দেশে কোর্স বা কারিকুলামে এত বৈচিত্র্য নেই। আবার এখানে নিজ বিভাগের বাইরেও অন্য বিভাগের নির্দিষ্ট কিছু কোর্স নেওয়া যায়। আমার সহপাঠীদের দেখেছি, যোগাযোগ বিভাগে পড়েও অনেকেই মনোবিজ্ঞান বা সাইকোলজি, পাবলিক হেলথ বিভাগ থেকে কোর্স বাছাই করছে। যার ফলে উচ্চশিক্ষার এই সময়টাতে থিসিসের বিষয়েও অনেক পরিবর্তন আসে। আর এই প্রতিটি পর্যায়ে পরামর্শের জন্য প্রয়োজন অধ্যাপকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। যুক্তরাষ্ট্রে যেহেতু উচ্চশিক্ষা মানেই গবেষণা, তাই সেমিস্টারের শুরু থেকেই গবেষণা, এর মেথড আয়ত্ত করা প্রয়োজন। এখানে প্রায় প্রত্যেক শিক্ষকই বিভিন্ন গবেষণা, প্রকল্পের কাজে যুক্ত থাকেন। তাই নিজের গবেষণা পরিকল্পনা বা কাজের ইচ্ছা প্রকাশ করলে শিক্ষকের সঙ্গে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করা যায়। আমার বেশ কিছু সহপাঠী গ্রীষ্মের ছুটির সময়টা গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করেই তিন মাস পাড় করে দিয়েছেন। যেহেতু এসময় সেমিস্টারের কোনো কোর্স এবং ফান্ড কোনোটাই থাকে না, তাই এই গবেষণার কাজটি অভিজ্ঞতা অর্জন ছাড়াও আয়ের উৎস হিসেবে নেয় অনেকে। আর একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিন্ন এক পরিবেশে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হওয়াটাও স্বাভাবিক। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা বন্ধুদের কিছু বিষয় দেখে যেমন সহজ মনে হয়েছে, নিজে যখন বাড়ি ছেড়ে প্রথমবারের মতো বিদেশে পড়তে এসেছি, সামান্য বিষয়গুলোও অনেক ঝামেলার মনে হয়েছে। আমরা নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার অনেক পরিকল্পনাই করি খুব উৎসাহ নিয়ে, কিন্তু নতুন এক দেশে শুরুর সময়টা প্রতিকূলই বটে। অন্তত যে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়, যাকে কখনো বাড়ি ছেড়ে এই আত্মীয়-পরিচয়হীন অঞ্চলে থাকতে হয়নি, তার জন্য তো অবশ্যই। অনেক ক্ষেত্রে এই ছোটখাটো বিষয়গুলো বা অসুস্থতা, হেলথ ইনস্যুরেন্সের নানা পলিসির কারণে পড়ালেখায় প্রভাব পড়ে। আর এখানে গ্রেডিং গেল মানে তো পুরো ফান্ডিংই গেল। তাই নিজের এই বিষয়গুলো সুপারভাইজার বা অ্যাডভাইজারকে জানিয়ে রাখা নিরাপদ। এখানকার শিক্ষকরাও সাধ্যমত চেষ্টা করেন একজন শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য, তার সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করতে। তাই বলা চলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগের কোনো বিকল্প নেই। নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা স্কুল-কলেজে বেশ ভালো রেজাল্ট রাখলেও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে কিছুটা হোঁচট খাই। আর ভিনদেশ হলে তো কথাই নেই। ভিন্ন ভাষা থেকে শুরু করে নতুন সংস্কৃতি ও পরিবেশ, না বলা অনেক পার্থক্যই ধরা পড়ে তখন।
টোকিওতে ইসরাইল দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ
ইসরাইলের আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে আজ রোববার জাপানের টোকিওতে ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমান অভিবাসীরা। জাপান পুলিশের অনুমতি নিয়ে রোববার দুপুর ১টায় টোকিওর চিয়োদা সিটিতে অবস্থিত ইসরাইল দূতাবাসের সামনে জাপান মুসলিম কমিউনিটির ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। মুসলমানদের সঙ্গে অন্যান্য ধর্মের প্রবাসী এবং স্থানীয় জাপানিরাও নিজ দেশের পতাকা নিয়ে এতে যোগ দেন। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হামলার নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন জানান। তারা গাজায় ইসরাইলি হামলাকে 'গণহত্যা' আখ্যা দেন। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাষায় 'ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো' লেখা পতাকা নিয়ে 'ইন্তিফাদা দীর্ঘজীবী হোক' বলে স্লোগান দেন। সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রবাসী নেতৃবৃন্দ বলেন, আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ঢুকে ইসরাইলি পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস এবং নির্বিচারে রাবার বুলেট ছুড়েছে। বিমান হামলায় হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় ইসরায়েলকে সমর্থনকারী ভারত, ব্রিটেন, জার্মানি এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তারা বলেন, এ হামলা মানবতার বিরুদ্ধে। হাসপাতালে বর্বরোচিত বোমা হামলা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। [email protected]
ইসরাইলের আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে আজ রোববার জাপানের টোকিওতে ইসরাইলি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমান অভিবাসীরা।
ভিনদেশে শীতকালীন ছুটি
পুরো ক্যাম্পাসে হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাড়া এখন কারও দেখা মেলা ভার। ক্যাম্পাসের পরিচিত পথ এবং ডর্মগুলোয় যেখানে সবসময় শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততা, কোলাহল চোখে পড়তো, এখন সে সবের কিছুই নেই। এমনটা হওয়া মানেই ছুটি। গ্রীষ্মকালীন ছুটির পর বছরের শেষে এমন নীরবতা। শুধু চোখে পরবে শুনশান ক্যাম্পাসের দুই পাশে সারি সারি পাতাবিহীন গাছ আর বৃষ্টি, না-হয় শুভ্র তুষার। ক্যাম্পাস হাউজিংগুলোতে শুধু রয়ে গেছি আমরা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। আমাদের ডর্মগুলোয় সন্ধ্যা না হতেই হলদে ল্যাম্পের আলোগুলো জ্বলে উঠে। এসময় সন্ধ্যাও হয় বেশ দ্রুত, ঠিক ৫টার দিকে। বিকেল নেই বললেই চলে। অথচ গ্রীষ্মের সময় রাত ৯টার দিকেও সহপাঠীরা মিলে হইচই করে একইপথে হেঁটে 'বাড়ি' ফিরেছি, সূর্য তখনো ডুবেনি। সেই পথই এখন একাকী, নিশ্চুপ। এই সময়গুলোতে বাড়ির কথা বেশ মনে পড়ে। বিশেষ করে আমরা যারা এখানে পরিবার-পরিজন ছাড়া থাকি। তা-ও ভালো, কয়েকজন বন্ধু পাওয়া গেছে এই ভিন দেশে। যাদের প্রত্যেকেরই মনের ভাষা এক, ভিন্ন মহাদেশ আর ভিন্ন সংস্কৃতি হলেও। আর দেশের যে কয়জন বন্ধু আছে, হাঁটতে বের হলেই আমাদের কথায় কথায় চলে আসে- দেশে এখন কোন পিঠা খাওয়া যেত, ঘরে মা কী বানিয়ে দিতেন, নয়তো ক্যাম্পাসে গিয়ে হিসেব ছাড়া আড্ডা দেওয়ার সন্ধ্যাগুলোর স্মৃতি। এখন যেহেতু পরীক্ষা নেই, ব্যস্ততা সবারই অনেকখানি কম, তাই নিজেরাই উদ্যোগ নেই মিলেমিশে কিছু একটা রান্না করে ফেলার। যতই হোক বাঙালি কি না! রসনা-বিলাস সহজে বাদ দেওয়া যায় না। দেশে চড়ুইভাতি আর এখানে না হয় ওয়ান ডিশ। যে দেশের শব্দচয়নই হোক, কয়েকজন মিলে জোগাড়যন্ত্র করে মাঝরাত পর্যন্ত চলে আমাদের পিকনিক আর আড্ডা, যেখানে আসলে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ই থাকে না। তবে অন্যতম একটি আলোচনার বিষয় হলো, দেশে ফেলে আসা পরিবার। প্রত্যেকেরই মা-বাবা বা প্রিয়জন, বন্ধুর কথা আসবেই। একেক জনের গল্প একেক রকম, বাড়ি ছেড়ে থাকার নানা আক্ষেপ, খারাপ লাগার কথা আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে আসবেই। ওয়ান ডিশ ছাড়াও আমাদের ছুটি উপভোগ করার তালিকায় আছে রাজ্যের বই পড়া। অন্তত আমার। লাইব্রেরি এসময় বন্ধ হয়ে যায়, ক্যাম্পাসের বাসও চলে না। অনেকেই আবার দল বেঁধে ঘুরতে বের হয়। আমাদের যাদের এই সময়টায়ও গবেষণা বা শিক্ষকতার কিছু কাজ করতে হয়, তাদের জন্য অবসরে বই-ই আরামদায়ক। জানলার পর্দা তুলে দিয়ে একটানা বৃষ্টি বা তুষারপাত দেখতে দেখতে টেবিলে বসে বই পড়া। সঙ্গে হট চকোলেট বা চা। আমার বন্ধুরা অবশ্য প্রায়ই বলে, কীভাবে এত বই পড়ি। তাই তাদেরও মন রাখা চাই। এখানকার এই চেনা মানুষদের সঙ্গেই বেড়িয়ে আসা হয় ডাউন-টাউন বা শহরতলীর শোরগোলে। কখনো জাপানিজ সুশি, থাই বা চায়নিজ ডিশ, আবার কখনো কোরিয়ান তরকারির সঙে কিমচি। সঙে মেক্সিকান, মেডিটেরানিয়ান বিরিয়ানি, সালাদ ঘুরে নেপালি খাবারও বাদ যায় না। যেহেতু বড়দিন আর সামনেই নতুন বছর, তাই ছবির মত ছিমছাম সাজানো থাকে এই শহরতলী, আর দোকানপাটগুলো। বড়দিন উপলক্ষে ক্রিসমাস ট্রি, বিভিন্ন পুতুল, চকোলেট এমনভাবে সাজিয়ে রাখা হয়, যে ছোটবেলার দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। যখন জগতটা শুধুই গল্পের বইয়ের পাতায় অসীম ছিল। পূর্ব আর পশ্চিমের যাতায়াত এতটা সহজ ছিল না। এখানকার শহরতলীতে যেনতেন-ভাবে বড় শপিংমল গড়ে উঠে না। সেগুলো আরেক প্রান্তে, যে জায়গা শুধুই বাণিজ্য আর পুঁজিবাদের এই দেশে শত-সহস্র পণ্যের। শহরতলী কিছুটা শান্তিপ্রিয়। সঙে থাকে পার্ক, যেগুলো এই সময়টায় বেশ চমৎকারভাবে আলোকসজ্জায় রঙ্গিন করে রাখা হয়। এই শহরতলীর রাস্তা-জুড়েই বড়দিনের প্যারেড হয়। বহু মানুষ এই প্যারেডে গান এবং সুরের তালে হেঁটে চলেন। আর বছরের শেষ দিনে হয় আতশবাজি, যা সবখানেই হয় আসলে। তবে মাঝরাতে এই জনসমাগমের উৎসব-মুখরতা দেশে চোখে পড়েনি। এখানে এই উৎসব-মুখরতা এই সময়ের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এখানে কেউ কারও শান্তি, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে না। চারদিকেই যে একটা মুক্ত পরিবেশ, তা টের পাওয়া যায়। এ কারণেই অত চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই মাঝরাতে আমরা আনন্দ কোলাহল করে যে যার ডর্মে ফিরে যাই। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো চেষ্টা করি এই সময়টা উপভোগ করে নিতে। যখন অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নতুন বছরের শুরুতে নানা আশা ও উৎসাহ নিয়ে হরেকরকম আয়োজন করেন, আমরাও তখন একই সুরে প্রার্থনা করি, দেশে থাকা আমাদের প্রিয়-মুখগুলো ভালো থাকুক। দ্রুতই সেমিস্টারের পাতা কেটে যাক, আর আমাদের আগামী ছুটির দিনগুলো কাটুক পরিচিত ঘরের কোণে। নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
পুরো ক্যাম্পাসে হাতে গোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী ছাড়া এখন কারও দেখা মেলা ভার। ক্যাম্পাসের পরিচিত পথ এবং ডর্মগুলোয় যেখানে সবসময় শিক্ষার্থীদের ব্যস্ততা, কোলাহল চোখে পড়তো, এখন সে সবের কিছুই নেই। এমনটা হওয়া মানেই ছুটি।
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ক্ষমতাসীন দল থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটরের পদত্যাগ
অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন সিনেটর ফাতিমা পেম্যান। গতকাল বৃহস্পতিবার পদত্যাগের পর আজ তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, 'ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি এবং মুক্তি এমন একটি বিষয় যার সঙ্গে আপস করতে পারিনি।' তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলায় তিনি 'মৃত্যুর হুমকিসহ তীব্র চাপের' সম্মুখীন হয়েছেন। ২৯ বছর বয়সী ফাতেমা একজন স্বাধীন সিনেটর হিসাবে পার্লামেন্টে বসবেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে প্রথম হিজাব পরা সিনেটর। গত মে মাসে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে তিনি দুটি পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। পদত্যাগের আগে পেম্যান এক বিবৃতিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও তার সহকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, 'আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের পার্লামেন্ট সদস্যদের জিজ্ঞাসা করি, ইসরায়েলকে সমর্থনের জন্য কতগুলো আন্তর্জাতিক অধিকার আইন ভঙ্গ করতে হবে? ম্যাজিক সংখ্যা কী? কত গণকবর দরকার? খুন হওয়া শিশুদের রক্তাক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কয়টি ছবি দেখতে হবে?' পেম্যান বারবার বলেছেন, তিনি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানে বিশ্বাস করেন। আজ এসবিএস নিউজকে তিনি বলেছেন, 'পদত্যাগ করা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত। এটি এমন একটি বিষয় ছিল, যেখানে বিবেকের সঙ্গে আপস করা সম্ভব ছিল না।' আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন সিনেটর ফাতিমা পেম্যান।
জাপানে চাঁদ দেখা যায়নি, মঙ্গলবার থেকে রোজা
পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামীকাল সোমবার থেকে জাপানে রোজা শুরু হচ্ছে না। দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, জাপানে কাল শাবান মাসের শেষ দিন হবে এবং মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। মুসলিম দেশগুলোর সমন্বয়ে জাপান চাঁদ দেখা কমিটির (রুইয়াতে হেলাল জাপান) ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে আজ রোববার এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। মালয়েশিয়ার জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান রুইয়াতে হেলাল জাপানের অন্যতম মুখপাত্র প্রবাসী বাংলাদেশি হাফেজ আলাউদ্দিন। তিনি জানান, সোমবার রাতে তারাবি নামাজ আদায় করা হবে এবং ওই রাতের শেষ প্রহরে সেহরি খেয়ে ১২ মার্চ মঙ্গলবার প্রথম রোজা হবে জাপানে।
পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামীকাল সোমবার থেকে জাপানে রোজা শুরু হচ্ছে না।
জাপানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৩
বছরের প্রথমদিনে মধ্য-পশ্চিম জাপানের ইশিকাওয়া জেলায় মারাত্মক ভূমিকম্পের পর উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। ইশিকাওয়া জেলায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৩ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৩০০ জন। তবে উভয় ক্ষেত্রে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ এখনো অনেকে ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়ে আছেন। এ ছাড়া, ওয়াজিমা সিটি, সুজু সিটি এবং নোতো সিটিতে ধসে যাওয়া অনেক বাড়ির ভেতর উদ্ধার কাজ চলছে। ভবনগুলোর দরজা-জানালা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ এবং পানি স্বল্পতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। এলাকাগুলোতে আফটারশক অব্যাহত রয়েছে। আজও ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে ইশিকাওয়া প্রিফেকচারে। আবহাওয়া সংস্থা সতর্ক করেছে যে, ইশিকাওয়া প্রিফেকচারসহ আশপাশের প্রিফেকচারগুলোতে পরবর্তী সপ্তাহে ৭ মাত্রার কম্পন অনুভূত হতে পারে। মঙ্গলবার সকালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। তিনি বলেন, 'রাস্তায় প্রতিকূলতার কারণে ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে ভারী যন্ত্রপাতি পাঠানোও কঠিন হয়ে পড়ছে। আমরা যাত্রাপথ নিরাপদ করার উপায় নিয়ে ভাবছি এবং এ ক্ষেত্রে জাহাজ ব্যবহার করা একটি বিকল্প হতে পারে। জনগণের চাহিদা মেটাতে আমরা যথাসাধ্য করতে প্রস্তুত।' উল্লেখ্য, মধ্য জাপানের ইশিকাওয়া জেলায় নতুন বছরের প্রথম দিনে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার জন্য অধিকাংশ লোকজন একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। ভূমিকম্পের কারণে এই জেলায় একটি বড় সুনামি সতর্কতা জারির করে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তা তুলে নেওয়া হয়। যদিও ইশিকাওয়ার বেশ কয়েকটি শহরে সুনামি আঘাত হানে, তবে বিপদজনক পর্যায়ে নয়। ওয়াজিমা শহরের কর্মকর্তারা ২০ সেন্টিমিটার উঁচু সুনামি তরঙ্গের কথা জানায় এবং কানাযাওয়া ৯০ সেন্টিমিটার সুনামি রেকর্ড করে। [email protected]
বছরের প্রথমদিনে মধ্য-পশ্চিম জাপানের ইশিকাওয়া জেলায় মারাত্মক ভূমিকম্পের পর উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে।
মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন নির্বাচনে অযোগ্য
মালদ্বীপের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। তার প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত উচ্চ আদালত বহাল রাখায় যোগ্যতা হারান তিনি। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছিলেন ইয়ামিন। আজ রোববার মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় ঘোষণায় বলেন যে, আবদুল্লাহ ইয়ামিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। একটি মামলায় ১১ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় আবদুল্লাহ ইয়ামিন বর্তমানে কারাগারে আছেন। কারাগার থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে গত সপ্তাহে ৯ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা জমা দেন ইয়ামিন। নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতা বাতিল করে দিলে ইয়ামিনের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। আপিল বিভাগও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। দুর্নীতি ও অর্থপাচার মামলায় মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ১১ বছরের কারাদণ্ড দেন দেশটির এক আদালত। এ ছাড়া, তাকে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানাও করা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইয়ামিন। এর আগে, ২০১৯ সালে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে ১০ লাখ ডলার আত্মসাতের জন্য তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ লাখ ডলার জরিমানা করা হয়েছিল। ইয়ামিন দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সংবিধানের ১০৯ (ফ) অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে ইসি জানায়, কোনো নাগরিক ১২ মাসের বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে তার সাজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিংবা আদালত তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সেই প্রার্থী অযোগ্য। ২০১৮ সালে ক্ষমতা হারান আবদুল্লা ইয়ামিন। তবে এ বছর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রগ্রেসিভ পার্টি থেকে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। রায়ের পর বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম মালদ্বীপের প্রগ্রেসিভ পার্টি (পিপিএম) এবং পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) নিয়ে গঠিত বিরোধী জোটকে আগামী নির্বাচন বয়কটের নির্দেশ দিয়েছেন।
মালদ্বীপের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
২৩তম টোকিও বৈশাখী মেলা উদযাপিত
জাপানের টোকিওতে বৈশাখী মেলা কারি ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ উদযাপিত হয়েছে ২১ এপ্রিল। এবার ছিল এর ২৩তম আয়োজন। তোশিমা সিটির ইকেবুকুরো নিশিগুচি পার্কে এই মেলার আয়োজন করা হয়। এই পার্কেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে টোকিও শহীদ মিনার, যা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের অর্থায়নে নির্মিত প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার। করোনা মহামারির কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে টোকিওতে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এরপর ২০২৩ সালে পবিত্র রমজানে বাংলা নববর্ষ হওয়ায় এর ২৪ দিন পর ৮ মে মেলার আয়োজন করে আয়োজকরা। এ বছর রমজানের পরে বাংলা নববর্ষ হলেও ঈদ পরবর্তী বিভিন্ন আয়োজন এবং মেলার মাঠ প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন কারণে এক সপ্তাহ পরে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাটি ঘিরে জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাপক উচ্ছ্বসিত ছিলেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'এসো হে বৈশাখ' গান পরিবেশনার মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন করা হয়। এরপর উন্মুক্ত অনুষ্ঠান, জাপানি অনুষ্ঠান, ভিআইপি অতিথিদের অভ্যর্থনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেলা শেষ হয়। এ বছর মেলার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস, জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং টোকিও মেট্রোপলিটন সরকার। মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহামেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন তোশিমা সিটি মেয়র মিয়ুকি তাকাগিওয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া বিভাগের সচিব ইয়াসুহিরো শিনতো, জাপান-বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হিরোয়ুকি সাকুরাই এবং আয়োজক সংগঠন জেবিএসের চেয়ারম্যান ওসামু ওৎসুবো। এ বছর অতিথি শিল্পী হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন।
জাপানের টোকিওতে বৈশাখী মেলা কারি ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ উদযাপিত হয়েছে ২১ এপ্রিল। এবার ছিল এর ২৩তম আয়োজন।
মেক্সিকো সিটির সাহিত্য-সংলাপে অনুবাদকর্মের ওপর জোর
সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক সংযোগকে উপজীব্য করে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর বিশিষ্ট লেখকদের একত্রিত করার প্রয়াসে 'সাহিত্য- সংলাপে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মেলবন্ধন' শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৭ অক্টোবর মেক্সিকোয় বাংলাদেশ দূতাবাস এবং দেশটির জাতীয় জাদুঘরের যৌথ আয়োজনে মেক্সিকো সিটির ডাউন টাইনে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আলোচকরা দুই দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির সংযোগ ঘটাতে অনুবাদকর্মের ওপর জোর দেন। সেমিনারের শুরুতে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। জাদুঘরের পরিচালক আলেহান্দ্রা গোমেজ কোলোরাদো স্বাগত বক্তব্যে দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সংযোগ তৈরিতে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান। আলোচনা করেন মেক্সিকোর মেক্সিকোর বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পাবলো রুলফো, আরতুরো ভাজকেজ, ফাব্রিসিও রামিরেস, ইউহেনিও পারতিদা, এরনেসতো লুমব্রেরাস। বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন লেখক আনিসূজ জামান। সেমিনারের সঞ্চালক ফাব্রিসিও রামিরেস শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। অন্যরা দুই দেশের সাহিত্যের মধ্যে সংযোগ তৈরিতে সরাসরি স্প্যানিশ থেকে বাংলা এবং বাংলা থেকে স্প্যানিশ ভাষায় অনুবাদের উপর জোর দেন। রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম দুই দেশের সাহিত্যের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন তাদের কথা স্মরণ করেন। পাশাপাশি সেমিনারে অংশ নেওয়ার জন্য উপস্থিত লেখক-সাহিত্যিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। আলোচনা পর্ব শেষে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে জাদুঘরের সংগ্রহশালার জন্য একটি নকশী কাঁথা ও মেক্সিকোর জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী ইসাবেল আনিসের একটি চিত্রকর্ম উপহার দেওয়া হয়। এছাড়া সেমিনারের শুরুর পর্বে জাদুঘরের বিপণিবিতানে 'বাংলাদেশ কর্ণার'র উদ্বোধন করা হয়।
সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক সংযোগকে উপজীব্য করে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর বিশিষ্ট লেখকদের একত্রিত করার প্রয়াসে 'সাহিত্য- সংলাপে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মেলবন্ধন' শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি নিহত
কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় ফাহিম আহমদ (২৬) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলা বাজার ইউনিয়নের মতিচর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় কুয়েতের মাংগাফ এলাকায় ফাহিম সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনায় ঘটে। এতে ঘটনাস্থলই প্রাণ হারান তিনি। নিহতের চাচাতো ভাই ইমন মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'সিগনাল ক্রস করার সময় অন্য একটি গাড়ি ফাহিমের সাইকেলকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়। ফাহিম একটি কোম্পানিতে কাজ করতো। ডিউটি শেষে পার্টটাইম কাজ করার জন্য বের হয়ে এই দুর্ঘটনায় পরে সে।' ফাহিম আহমদ ছয় বছর আগে কুয়েত যান। মাঝে দুই মাস ছুটি কাটিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে কুয়েত ফিরছিলেন তিনি। ফাহিমের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে আছে। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় ফাহিম আহমদ (২৬) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলা বাজার ইউনিয়নের মতিচর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
নিউইয়র্ক সিনেটে ‘বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস’ প্রস্তাব পাস
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সিনেট সপ্তমবারের মতো বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস প্রস্তাব পাস করেছে। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার প্রস্তাবে, নিউইয়র্ক রাজ্যের সিনেটর স্ট্যাভিস্কির উদ্যোগে সম্প্রতি প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য সচিব আলেজান্দ্রা পাউলিনো এ সংক্রান্ত ঘোষণার একটি অনুলিপি প্রকাশ করেছেন। ২৫ সেপ্টেম্বর 'বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস' পালনে নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর কেথি হুকুল এ নিয়ে এক অনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন। ওই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো 'বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস' পালনের বিল পাস করেছিলেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু এম কুওমো। নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটের  ৫৬৩ রেজুলুউশনে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক শহরে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যতা বাড়াতে বৈচিত্র্যময় জাতি গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলিকে স্বীকৃতি দিয়ে নিউ ইয়র্ক আইনসভা সম্মানিত বোধ করে। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত সাহা বলেন, আমরা গত ছয় বছর ধরে বর্ণাঢ্যভাবে দিবসটি উদযাপন করে আসছি যুক্তরাষ্ট্রের সকল বাংলাদেশি অভিবাসীদের সহযোগিতা নিয়ে। এবারও এ  উপলক্ষে আগামী ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক শহরের হিলটন মিডটাউন হোটেলে 'বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস ও বাণিজ্য মেলা-২০২৩' আয়োজন করা হবে। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য গভর্নর অফিসের সহযোগিতায় মুক্তধারা নিউইয়র্ক এবং ইউএসএ-বাংলাদেশ বিজনেস লিংক, গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্স এই আয়োজন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সিনেট সপ্তমবারের মতো বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস প্রস্তাব পাস করেছে।
এরপর দেখা হবে নতুন কোনো শহরে, অন্য কোনো রেস্তোরাঁয়
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম 'বিদেশে' পড়তে যাব। সুন্দর গোছানো প্রকৃতির মাঝে ক্লাস শেষে হেঁটে ডর্মে ফিরব। দেশ-বিদেশের কনফারেন্স-সিম্পোজিয়ামে বসে বিভিন্ন অধ্যাপকদের আলোচনা শুনব! সময়টা তখন ২০০০ সালের দিকের। এখনকার আধুনিক যুগ তখনো পুরোদমে শুরু হয়নি। তাই এসব পরিকল্পনা একটু বেশিই কাল্পনিক মনে হতো। পরিবার থেকেও বিধিনিষেধ কম ছিল না! যাক, সময়ের ফেরে আমার শিক্ষকতা পেশায় আসা (যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত এই পরিকল্পনাই ছিল না) এবং এই পেশার সুবাদেই খুব বেশি না হলেও কয়েকটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে নিজের গবেষণা, কাজ উপস্থাপনের সুযোগ হয়েছে। ব্যাংককের সি'লম রাজপথে আন্তর্জাতিক কোনো কনফারেন্সে এটাই আমার প্রথম গবেষণা উপস্থাপন। এর আগে দেশে কয়েকবার গবেষণাকাজ উপস্থাপন করলেও দেশের বাইরে এই ছিল প্রথম। একইসঙ্গে আমার প্রথম দেশের বাইরে একাকী ভ্রমণও। ভ্রমণ বা যাত্রাপথে সঙ্গী অনেক বড় বিষয়। প্রায় সব কটা আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে একা যাত্রা শুরু করলেও কোনো না কোনো ভ্রমণসঙ্গী পেয়েই গেছি যাদের সঙ্গে কর্মজীবনের ভারিক্কি ভাবটা দূরে রেখে, হিসেব-নিকেশ ছাড়াই আমুদে গল্প করা যায়। ব্যাংককের কোলাহলপূর্ণ সি'লমে শ্রীলঙ্কার এমন দু'জন সঙ্গী পেয়েছিলাম। দু'জনই ছিলেন শিক্ষক। আমরা প্রত্যেকেই একই কনফারেন্সে নিজেদের কাজ উপস্থাপন করেছিলাম। সকালেই আমরা বেরিয়ে পড়তাম কনফারন্সের একেক সেশনের উদ্দেশে। বিকেল নাগাদ ম্যাকডোনাল্ডসে লাঞ্চ সেরে গুগল ম্যাপ দেখে পরিকল্পনা করে নিতাম, কোথায় যাওয়া হবে। ব্যাংককে যে কদিনই ছিলাম, এই দুজনকে নিয়েই পুরোটা সময় ঘুরে বেড়িয়েছি। সি'লম বেশ বাণিজ্যিক একটা লোকালয় এবং ব্যাংককের একদম কেন্দ্রে। সকাল থেকেই সেখানে ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় যা চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। দুপুর থেকে বিকেল নাগাদ একই লোকালয়টি কেমন ঝিমিয়ে নেয়। এখনো মনে আছে, সেই শান্ত বিকেলগুলো। আমার সুবিশাল অট্টালিকার হোটেলে রোদ এসে পড়ত। সব থেকে মনে রাখার মতো হলো, সেখানকার নাইট লাইফ। প্রতিটি গলিতেই বিভিন্ন জ্যাজ মিউজিক, নানান রঙের মৃদু আলো, আর স্ট্রিট ফুড-পাব থেকে ভেসে আসা বন্ধুমহলের আনন্দ-উচ্ছ্বাস। বিভিন্ন গলির মোড়েই স্যুভেনিরের ছোট দোকান। আর বিভিন্ন সুগন্ধির সুবাস। আমরা দুএকটা দোকানও খুঁজে পেয়েছিলাম যেখানে অল্প দামে উপহার দেওয়ার বেশ ভালো জিনিস পাওয়া যাচ্ছিল। যে জিনিসটা সব থেকে ভালো লেগেছিল, সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা। চলে আসবার আগের দিন এক পশলা বৃষ্টির পর প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন অলিতে-গলিতে ঘুরেছি। কিন্তু কোথাও নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হয়নি। আসবার দিন যারপরনাই মন খারাপ হয়েছিল। মনে হয়েছিল এই কটা দিন ছিল 'এসক্যাপ' করবার উপায়। এরপর সামাজিকমাধ্যমে শ্রীলঙ্কার সেই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। একজনের সঙ্গে যোগাযোগ এখনো আছে, কিন্তু গেল চার বছরে আমাদের কোথাও দেখা হয়নি। বিভিন্ন পরিকল্পনা করলেও কোভিডের সময়ই অনেক কিছু ভেস্তে গেছে যা আর বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এখনো এই মার্কিন মুল্লুকে দুপুরবেলা বসে সি'লমের সেই দিনগুলোর কথা মনে হয়। উড়িষ্যা এবং কলকাতার পথে  একই বছরে আরেকটি কনফারেন্সে নিজের আর এক অধ্যাপকের গবেষণা উপস্থাপনের জন্য গিয়েছিলাম উড়িষ্যার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউটে। বিশাল ক্যাম্পাস পুরোটাই নিজেদের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ভেতরেই বিভিন্ন ডর্ম, কনফারেন্স, অডিটোরিয়ামের ব্যবস্থা। সময়টা ছিল ডিসেম্বরের কনকনে শীত। মনে আছে, কলকাতায় তখন তাপমাত্রা ছিল তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। এখানেও তাই। সারাদিন নাগাদ কনফারেন্স, আলোচনা আর বিকেল হলেই ঘুরে দেখা। মানুষ হিসেবে আমার মনে আসলে দাগ কাটে একেকটি জায়গার জীবন ব্যবস্থা, সেখানকার অলিগলি এবং মুহূর্তগুলো। শীতের কুয়াশাঘেরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের গিটার, আড্ডা, স্ট্রিট ফুড ছিল বেশ আমুদে।  তখন সবেমাত্র প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছি। তাই শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডা-গল্প বারবার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল।  আমাদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল কাঠের তৈরি গেস্ট হাউজে। সন্ধ্যা না হতেই কুয়াশায় হলদে বাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হতো। বাইরে ঠান্ডা আর ভেতরে আগুণের তাপে আমরা কয়েকজন একসঙ্গে ডিনার সেরে মধ্যরাত নাগাদ গল্প করতাম। আমরা কয়েকজন মাত্র শিক্ষক আর বাদবাকি সবাই অধ্যাপক। এই আড্ডায় বসলে বোঝা যায়, বয়সে একেকজন একেক সময়ের হলেও সবার জীবনেই বিশ্ববিদ্যালয়, বন্ধুমহলের স্মৃতি থাকেই। ১২টার পর যখন গেস্ট হাউজের কফি হাউজ বন্ধ করে দেবে তখনো আমাদের পেয়ালার কফি, চা কিন্তু শেষ হয়নি। এভাবেই পরদিন সকালে ঘুমকাতুর হয়ে ফর্মাল পোশাকে কনফারেন্সে ভারিক্কি ভাব নিয়ে মনোযোগ দিতাম!  ফেরার পথে একদিন মাত্র সময় পেয়েছিলাম কলকাতায় থাকার। হিসেব করে বললে কেবল এক বিকেল। নিজের শিক্ষকের সঙ্গে কলকাতার কফিহাউজ আর বইয়ের দোকান ঘুরে দেখবার যে আনন্দ, তা হয়তো আমার মতো 'পড়ুয়া' মানুষের সঙ্গেই শুধু যায়! সেই কুয়াশার আধো অন্ধকার, ট্রামের শহরে রবীন্দ্র সঙ্গীত আর অধ্যাপকের বিভিন্ন ইতিহাস বর্ণনার ভিন্ন এক মোহ ছিল। তাই এবারে ফেরার দিনও মন খারাপ হয়েছিল এবং কোভিডের দরুন সেই অধ্যাপকের সঙ্গে আর কোনো আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যাওয়া হয়নি। এরপর তো আমি নিজেই চলে আসলাম সমুদ্রের এপারে। কিন্তু ক্ষণিকের বিকেল আর ভ্রমণসঙ্গীদের সঙ্গে মুহূর্তগুলো রেখে দিলাম দীর্ঘ সময়ের জন্য।  অতঃপর ওয়াশিংটন ডিসিতে  এ বছর, যোগাযোগ এবং সাংবাদিকতার অন্যতম কনফারেন্সে অংশ নিয়েছিলাম গত অগাস্ট মাসে। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসবার পর এই প্রথম ভিন দেশে নিজ বিভাগের পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হয়েছে এই কনফারেন্সে। পুরোটা সময়ই ছিল কেন্টাকির নিত্যদিনের জীবন থেকে একেবারে ভিন্ন। দেশি খাবার, একসঙ্গে বাজার করা, অফিসের বাইরে ভিন্ন পরিবেশে সবার সঙ্গে আলোচনা আর সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কত অধ্যাপক। শেষদিন ডিনারে বিশাল অট্টালিকার, এত রঙ্গিন আলোয় আমরা বলছিলাম, আমরা কেউ ভাবিনি নিজ দেশ ছেড়ে এভাবে আমাদের দেখা হবে। সবাই উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা করলেও একই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পড়তে আসা হবে, এটা নিশ্চয়ই আমরা কেউ ভাবিনি।  শেষ বেলায় মন খারাপ হলেও প্রত্যেককেই হাসিমুখেই বিদায় দিয়ে বলা হলো, এরপর নিশ্চয়ই দেখা হবে নতুন আরেক শহরে, অন্য কোনো রেস্তোরাঁয়! নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী। একই বছরে আরেকটি কনফারেন্সে নিজের আর এক অধ্যাপকের গবেষণা উপস্থাপনের জন্য গিয়েছিলাম উড়িষ্যার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউটে। বিশাল ক্যাম্পাস পুরোটাই নিজেদের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ভেতরেই বিভিন্ন ডর্ম, কনফারেন্স, অডিটোরিয়ামের ব্যবস্থা। সময়টা ছিল ডিসেম্বরের কনকনে শীত। মনে আছে, কলকাতায় তখন তাপমাত্রা ছিল তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। এখানেও তাই। সারাদিন নাগাদ কনফারেন্স, আলোচনা আর বিকেল হলেই ঘুরে দেখা। মানুষ হিসেবে আমার মনে আসলে দাগ কাটে একেকটি জায়গার জীবন ব্যবস্থা, সেখানকার অলিগলি এবং মুহূর্তগুলো। শীতের কুয়াশাঘেরা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের গিটার, আড্ডা, স্ট্রিট ফুড ছিল বেশ আমুদে। তখন সবেমাত্র প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছি। তাই শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডা-গল্প বারবার নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। আমাদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল কাঠের তৈরি গেস্ট হাউজে। সন্ধ্যা না হতেই কুয়াশায় হলদে বাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হতো। বাইরে ঠান্ডা আর ভেতরে আগুণের তাপে আমরা কয়েকজন একসঙ্গে ডিনার সেরে মধ্যরাত নাগাদ গল্প করতাম। আমরা কয়েকজন মাত্র শিক্ষক আর বাদবাকি সবাই অধ্যাপক। এই আড্ডায় বসলে বোঝা যায়, বয়সে একেকজন একেক সময়ের হলেও সবার জীবনেই বিশ্ববিদ্যালয়, বন্ধুমহলের স্মৃতি থাকেই। ১২টার পর যখন গেস্ট হাউজের কফি হাউজ বন্ধ করে দেবে তখনো আমাদের পেয়ালার কফি, চা কিন্তু শেষ হয়নি। এভাবেই পরদিন সকালে ঘুমকাতুর হয়ে ফর্মাল পোশাকে কনফারেন্সে ভারিক্কি ভাব নিয়ে মনোযোগ দিতাম! ফেরার পথে একদিন মাত্র সময় পেয়েছিলাম কলকাতায় থাকার। হিসেব করে বললে কেবল এক বিকেল। নিজের শিক্ষকের সঙ্গে কলকাতার কফিহাউজ আর বইয়ের দোকান ঘুরে দেখবার যে আনন্দ, তা হয়তো আমার মতো 'পড়ুয়া' মানুষের সঙ্গেই শুধু যায়! সেই কুয়াশার আধো অন্ধকার, ট্রামের শহরে রবীন্দ্র সঙ্গীত আর অধ্যাপকের বিভিন্ন ইতিহাস বর্ণনার ভিন্ন এক মোহ ছিল। তাই এবারে ফেরার দিনও মন খারাপ হয়েছিল এবং কোভিডের দরুন সেই অধ্যাপকের সঙ্গে আর কোনো আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যাওয়া হয়নি। এরপর তো আমি নিজেই চলে আসলাম সমুদ্রের এপারে। কিন্তু ক্ষণিকের বিকেল আর ভ্রমণসঙ্গীদের সঙ্গে মুহূর্তগুলো রেখে দিলাম দীর্ঘ সময়ের জন্য। অতঃপর ওয়াশিংটন ডিসিতে এ বছর, যোগাযোগ এবং সাংবাদিকতার অন্যতম কনফারেন্সে অংশ নিয়েছিলাম গত অগাস্ট মাসে। যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসবার পর এই প্রথম ভিন দেশে নিজ বিভাগের পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হয়েছে এই কনফারেন্সে। পুরোটা সময়ই ছিল কেন্টাকির নিত্যদিনের জীবন থেকে একেবারে ভিন্ন। দেশি খাবার, একসঙ্গে বাজার করা, অফিসের বাইরে ভিন্ন পরিবেশে সবার সঙ্গে আলোচনা আর সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কত অধ্যাপক। শেষদিন ডিনারে বিশাল অট্টালিকার, এত রঙ্গিন আলোয় আমরা বলছিলাম, আমরা কেউ ভাবিনি নিজ দেশ ছেড়ে এভাবে আমাদের দেখা হবে। সবাই উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা করলেও একই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পড়তে আসা হবে, এটা নিশ্চয়ই আমরা কেউ ভাবিনি। শেষ বেলায় মন খারাপ হলেও প্রত্যেককেই হাসিমুখেই বিদায় দিয়ে বলা হলো, এরপর নিশ্চয়ই দেখা হবে নতুন আরেক শহরে, অন্য কোনো রেস্তোরাঁয়! নাদিয়া রহমান: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির শিক্ষার্থী।
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতাম 'বিদেশে' পড়তে যাব। সুন্দর গোছানো প্রকৃতির মাঝে ক্লাস শেষে হেঁটে ডর্মে ফিরব। দেশ-বিদেশের কনফারেন্স-সিম্পোজিয়ামে বসে বিভিন্ন অধ্যাপকদের আলোচনা শুনব!
জাপানে শিশুর জন্মগত অধিকার, প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ও সরকারের দায়
জাপানে  ১৪ বা তার চেয়ে কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের তুলনায় ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারী-পুরুষের সংখ্যা বেশি। এখানে ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নাগরিকের সংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখের মতো। দেশটিতে জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকার বিপরীতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত আগের ৭ বছর দেশটিতে টানা জন্মহার কমেছে। এতে করে দেশটির জনসংখ্যা কমে যাওয়ার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকার নিম্নমুখী জন্মহার বাড়ানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। সন্তান জন্মদানে নাগরিকদের উৎসাহিত করতে ঘোষণা করেছে নজিরবিহীন প্যাকেজ। সন্তান জন্মদান এবং লালন-পালন বাবদ দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রণোদনা দিচ্ছে ফুমিও কিশিদা প্রশাসন। সে মোতাবেক সন্তানের জন্ম থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত লেখাপড়ার একটা বড় ব্যয়ভার বহন করবে সরকার। ২০৩০ সাল নাগাদ এ প্রণোদনা দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। জাপানে আগে প্রতিটি শিশু জন্মের পর তার অভিভাবককে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের তহবিল থেকে ৪ লাখ ২০ হাজার ইয়েন দেওয়া হতো, যা চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ৫ লাখ ইয়েন-এ উন্নীত করা হয়েছে। এর বাইরে জন্মের পর স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিমাসে প্রতিটি শিশুকে (বিদেশি শিশুসহ) কম-বেশি ১৫ হাজার ইয়েন মাসিক ভাতা প্রদান করা হয়। এছাড়া সরকারি পর্যায়ের জুনিয়র হাইস্কুল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ ও অবৈতনিক শিক্ষা সুবিধা দেওয়া হয়। আগে স্কুলগুলোতে নামমাত্র মূল্যে যে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হতো, এখন সেটাও বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী যদি বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে বিদ্যালয় থেকে স্কুল ফিডিং বাবদ ওই শিক্ষার্থীর জন্য যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ থাকে সেটা তাকে দিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, সেখানকার অনেক মুসলিম পরিবার ধর্মীয় বিবেচনায় সন্তানদের জন্য বাসার তৈরি খাবার সরবরাহ করে থাকে। আর ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের পথ্যসহ বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তাও দিয়ে আসছে জাপান সরকার। জাপানের প্রাথমিক শিক্ষা জাপানে প্রাথমিক এবং নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাগ্রহণ বাধ্যতামূলক। সেখানে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় উৎসবমুখর পরিবেশে। অভিভাবকদের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ও ‍পুলিশের প্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের পুনর্গঠন ও বাণিজ্যিক সাফল্যের ক্ষেত্রে শিক্ষা সবচেয়ে বেশি অবদান রেখে চলেছে। ১৯৪৭ সালে জাপান শিক্ষার জন্য যুগোপযোগী ও সুদুরপ্রসারী একটি আইন পাশ করে। জাপানের এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থাতেও এই আইনের প্রভাব আছে। এই আইনে শিক্ষানীতি অনুসারে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। এই ধাপগুলো হচ্ছে—ছয় বছরের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিন বছরের জন্য নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তিন বছরের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং দুই অথবা চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষা শুরুর আগে শিশুদের কিন্ডারগার্টেন ও ডে-কেয়ার সেন্টারে পাঠানোর বিষয়টি সেখানে অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ জন্য অনেকে জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পাঁচ ধাপে ভাগ করার কথা বলে থাকেন। জাপানের নাগরিকদের সবাই এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের পাবলিক ও ডে-কেয়ার সেন্টারে পাঠিয়ে থাকেন। সেখানে শিশুরা খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করে বিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। এছাড়াও  সেখানে তারা একে অপরকে সহযোগিতা, মনুষ্যত্ববোধ, ত্যাগ, শৃঙ্খলা, সততা, বিনয়-শিষ্টাচার, সৌন্দর্যবোধ ও নৈতিক চেতনার শিক্ষা নেয়। আত্মিক বিকাশের এই শিক্ষাই পুরো জাপানি শিক্ষাব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য। যেকোনো ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের চেয়ে আত্মিক বিকাশের এই দিকটাতেই বেশি গুরুত্ব দেয় জাপানিরা। এ কারণেই জাপানিদের অপরাধ প্রবণতার হার প্রায় শূণ্যের কোঠায়। জীবনমুখী শিক্ষা জাপানের স্কুলগুলোতে যে শিক্ষাটা দেওয়া হয় তা মূলত জীবনমুখী। গণিত ও ভাষাশিক্ষার পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় নৈতিকতা শিক্ষার ওপর। শেখানো হয় সামাজিক ন্যায়-অন্যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মতো বিষয়গুলো। ছয় বছর বয়স হলে জাপানের শিশুদেরকে প্রাথমিক স্কুলে যেতে হয়। জাপানে সরকারি এবং বেসরকারি দুই ধরনের প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সোমবার থেকে শুক্রবার সপ্তাহে পাঁচ দিন ক্লাস হয়। দিনে সর্বোচ্চ ছয়টি ক্লাস নেওয়া হয়। প্রতি ক্লাসের ব্যাপ্তি ৪৫ মিনিট করে। মাঝে থাকে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের বিরতি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবার আগে স্কুলে আসেন। তিনি নিজে স্কুলগেটে দাঁড়িয়ে সব শিক্ষার্থীকে অভ্যর্থনা জানান। ধনী-গরিব সব শিক্ষার্থীকে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হয়। স্কুলে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের সবাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেয়। কেউ খেলাধুলা করে। কেউ কেউ শেখে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং। কেউ শেখে হাতের কাজ। প্রতিটি ক্লাসে একজন শিক্ষক ও ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী থাকে। সঙ্গীত, শিল্পকলা এবং শারীরিক শিক্ষার জন্য থাকেন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক। এর পাশাপাশি প্রতিটি স্কুলে একজন করে ডায়েটিশিয়ান থাকেন। ডায়েটিশিয়ান বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরি হিসাব করে ব্যালেন্স ডায়েট তৈরি করেন। সেটা অনুসরণ করেই খাবার তৈরি করেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাবুর্চি। জাপানের প্রতিটি স্কুলের নিজস্ব রান্নাঘর আছে। খাবারের সময় শিক্ষার্থীরা বিশেষ ধরনের পোশাক পরে সারিবদ্ধভাবে রান্নাঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। তাদের হয়ে প্রতি ক্লাসের দায়িত্বপ্রাপ্তরা রান্নাঘর থেকে খাবার বুঝে নেন। তারপর খাবার নিয়ে ক্লাসরুমে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। জাপানে প্রায়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে। তাই ক্লাসগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে কী করণীয় এবং বর্জনীয় তা হাতে-কলমে শেখানো হয়। এছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত শারীরচর্চা শেখানো হয়। বেসবল, ফুটবল, দৌড়সহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় বাচ্চারা নিয়মিত অংশ নেয়। বিদ্যালয়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো সব আয়োজন হয় শিক্ষার্থীদের পরিকল্পনায়। তারাই সেগুলো পরিচালনা করে। শিক্ষকরা তাদের কেবল সহযোগিতা করে। জাপানের বিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবন্ধী অর্থাৎ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। এছাড়া অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের দিকেও দেওয়া হয় বিশেষ নজর। স্কুল থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে জাপানের শিক্ষার্থীদের প্রায়ই সন্ধ্যা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অবসরে যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের বাসা পর্যন্ত নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করেন। কারা এই দায়িত্ব পালন করবেন সেটা সমন্বয় করে থাকে স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন ও অভিভাবকরা। জাপানের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে বিবেচনা করা হয় আদর্শের সূতিকাগার হিসেবে। বিদ্যালয়গুলো প্রতিটি কর্মকাণ্ড সুনাগরিক তৈরির একেকটি ভিত্তি। শিক্ষকরা তার কারিগর। জাপানি সমাজে শিক্ষকদের সমাজের আদর্শতম মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়। জাপানে শিক্ষক-অভিভাবক কর্তৃক নির্ধারিত জ্যেষ্ঠ একজন দলনেতার নেতৃত্বে প্রত্যেক শিশু পায়ে হেঁটে স্কুলে যায়। করোনাভাইরাস মহামারির শুরুতে এই নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আসে। অথচ এখানকার প্রায় প্রত্যেক অভিভাবকেরই ব্যক্তিগত গাড়ি আছে।
জাপানে  ১৪ বা তার চেয়ে কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের তুলনায় ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারী-পুরুষের সংখ্যা বেশি। এখানে ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নাগরিকের সংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখের মতো। দেশটিতে জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকার বিপরীতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
নয়াদিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন
অসৎ সঙ্গ ত্যাগ কর, আলস্য দোষের আকর, ইক্ষুরস অতি মিষ্ট, ঈশ্বরকে বন্দনা কর, উগ্রভাব ভালো নয়, ঊর্ধ্ব মুখে পথ চলিও না...। আদর্শ লিপির এই কথাগুলো নিয়েই আমরা শিখেছিলাম ভাষাকে রপ্ত করতে। ভাষা কি? ভাষা মানে কি শুধুই শব্দ? নাহ ভাষা মানে শুধু শব্দ নয়। ভাষা সেই মাধ্যম যার হাত ধরে আমরা প্রতিদিন নিজের আবেগ, অনুভূতি, চিন্তাশক্তির প্রকাশ করি। বিশ্বের প্রতিটি ভাষাই একই তথ্য বহন করে। এই ভাষা হতে পারে মুক্তির ভাষা, হতে পারে যুক্তির ভাষা অথবা রাজনীতির ভাষা। নিজেদের ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা আদায়ের আন্দোলনে ১৯৫২ সালে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে একদল তরুণ জীবন দেন। শহীদদের স্মরণে ভারতের নয়াদিল্লিতে সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির একদল বাংলাদেশি গবেষক শিক্ষার্থী আটটি দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পালন করল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভুটানের গবেষক শিক্ষার্থীরা। এতে আরও অংশ নেন ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট কে কে আগারওয়ালসহ কালচারাল কমিটির সদস্যরা। কালচারাল কমিটির প্রেসিডেন্ট কেরালার শিক্ষার্থী আনান্থ বলেন, ভাষা হলো আরেকজনের সংস্কৃতিকে জানবার মাধ্যম। নেপাল থেকে আসা সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী সিপি বলেন, নিজের ভাষায় যত সহজে আবেগকে বোঝাতে পারি তার মধ্যে এক অপার আনন্দ আছে। আর কাশ্মীর থেকে আসা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী হামাদ সাহেব বলেন, ভাষার কোনো জাত নেই, ভাষাকে নিয়ে রাজনীতির যোগাযোগ করা যায় কিন্তু সেই রাজনীতি যেন কারো আদর্শকে আঘাত না করে। দূর দেশ হতে যখন বিদেশের মাটিতে শহীদ মিনারটি দেখছিলাম, দ্বীপের আলোয় চোখটা কেমন ছলছল করে উঠছিল। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি? নাহ ভুলতে নেই। সারাদিন ইংরেজিতে লিখতে লিখতে বা লেকচার শুনতে শুনতে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখন ফোনে মায়ের আওয়াজ শুনলে এক নিমিষেই দূর হয়ে যায় সমস্ত ক্লান্তি। বন্যা চক্রবর্তী সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী
অসৎ সঙ্গ ত্যাগ কর, আলস্য দোষের আকর, ইক্ষুরস অতি মিষ্ট, ঈশ্বরকে বন্দনা কর, উগ্রভাব ভালো নয়, ঊর্ধ্ব মুখে পথ চলিও না...। আদর্শ লিপির এই কথাগুলো নিয়েই আমরা শিখেছিলাম ভাষাকে রপ্ত করতে।
মালদ্বীপে এক প্রবাসীর হাতে আরেক প্রবাসী অপহৃত, সাড়ে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়
মালদ্বীপ প্রবাসী টাঙ্গাইলের জলিল মিয়াকে অপহরণের ৫ দিন পর বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থানীয় নাগরিকদের সহায়তায় উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। মালদ্বীপের স্থানীয় একটি পত্রিকার বরাতে জানা যায়, জলিলকে অপহরণের সঙ্গে জড়িতরা সবাই প্রবাসী বাংলাদেশি। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। জলিলের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি তিলাফুশি আইল্যান্ডে একটি প্রাইভেট কোম্পানির চালক হিসেবে কর্মরত এবং পুরোনো মালামাল কিনে ব্যবসা করেন। গত ৩ অক্টোবর জলিলকে মালদ্বীপের তিলাফুশি আইল্যান্ড থেকে অপহরণ করে রাজধানী মালেতে আটকে রাখা হয়। এর দুদিন পর তার ফোন থেকে দেশে পরিবারের কাছে কল করে ৮ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। বিষয়টি জলিলের স্ত্রী মালদ্বীপে অবস্থানরত তাদের আত্মীয় রাকিবকে জানান। রাকিব তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মালদ্বীপ পুলিশকে অবহিত করেন। কিন্তু এর মধ্যেই জলিলকে নির্যাতন থেকে বাঁচাতে তার পরিবার অনলাইনে অপহরণকারীদের কাছে ৫০ হাজার টাকা পাঠায়। এ ছাড়া জলিলের এলাকার বাসিন্দা ও মালদ্বীপ প্রবাসী রুবেলের কাছ থেকে অপহরণকারীরা ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে জানা গেছে। রাকিব জানান, জলিলকে অপহরণের পর তার ফোন থেকে কল করে টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। কিন্তু তিনি কোথায় আছেন জানতে চাইলে অপর প্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেয়। পরে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মালদ্বীপ পুলিশের সহযোগিতায় ৫ দিন পর তাকে উদ্ধার করা হয়। জলিলকে তার কোম্পানির সহযোগিতায় দেশে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। আরেক প্রবাসী রুবেল জানান, তার কাছ থেকেও ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অপহরণকারীরা। জলিলের ফোন থেকে কল করে তাকে জানানো হয় যে জলিল মিয়া অ্যাকসিডেন্ট করেছেন। তার চিকিৎসায় জরুরি টাকা লাগবে। তিনি তখন অপহরণকারীদের ৬ লাখ টাকা পাঠান। এ বিষয়ে মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর মো. সোহেল পারভেজ বলেন, 'বিষয়টি জানার পরপরই আমরা মালদ্বীপ পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করি।' এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে যুক্ত না হওয়ার জন্য মালদ্বীপে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সর্তক করেন তিনি। জলিল মিয়ার বড় মেয়ে জুলি আক্তার জানান, তার বাবা ২০১৬ সালে মালদ্বীপে যান। তিনি চাকরির পাশাপাশি ব্যবসাও করতেন। সেখানে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মো. আরিফ মিয়ার সঙ্গে তার বাবার পরিচয় হয়। জুলির দাবি, তার বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন আরিফ মিয়া। ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় তার বাবাকে অপহরণ করা হয়। তিনি আরও জানান, আরিফ তার বাবাকে মালে যেতে বলেন। মালে পৌঁছার পরই তার বাবাকে একটি রুমে নিয়ে হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। সেখানে মোট ৬ জন থাকলেও, আরিফ ছাড়া কাউকে চিনতে পারেননি জলিল। জুলি আক্তার বলেন, 'দুদিন পর বাবার নম্বর থেকে কল করে ৮ লাখ টাকা দিতে বলে, না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর তারা দুটি বিকাশ নম্বর পাঠায়। দুটি নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানোর হলে তারা বাকি টাকা বাবার আরেক বন্ধুর কাছ থেকে নেবে বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।' তিনি আরও জানান, তারা সখীপুর থানায় এ ঘটনায় জিডি করতে চাইলে দায়িত্বরত অফিসার অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে যে দুটি নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়, তার বিপরীতে জিডি করা হয়।
মালদ্বীপ প্রবাসী টাঙ্গাইলের জলিল মিয়াকে অপহরণের ৫ দিন পর বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থানীয় নাগরিকদের সহায়তায় উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।
মালয়েশিয়ায় কনডোমিনিয়ামে অভিযান, বাংলাদেশিসহ ১৩৬ অভিবাসী আটক
মালয়েশিয়ায় একটি কনডোমিনিয়ামে অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিসহ ১৩৬ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। রাজধানী কুয়ালালামপুরের জালান মুন্সি আবদুল্লাহর একটি বিলাসবহুল কনডোমিনিয়াম থেকে তাদের আটক করা হয়। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ বলেছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত নজরদারি ও জনসাধারণের অভিযোগের পর চালানো হয় অভিযান। আটকদের মধ্যে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ডের ২০ থেকে ৭০ বছর বয়সী ১৩০ জন পুরুষ ও ছয়জন নারী রয়েছেন। দেশটিতে অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান এবং ভ্রমণের কাগজপত্র না থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে। তবে আটকদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি, তা জানা যায়নি। ইমিগ্রেশনের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, বিদেশিরা তিন বা চার বেডরুমের ইউনিটসহ দুটি কনডোমিনিয়াম ব্লক ভাড়া নিয়েছিল, যার প্রতিটিতে কমপক্ষে আটজন ব্যক্তি বাস করছিল। মহাপরিচালক গণমাধ্যমকে বলেন, 'কিছু লোককে পেন্টহাউসে থাকতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ বিদেশি প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ৮০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত ভাড়ায় ওই রুম নিয়েছিলেন। রুসলিন আরও বলেন, ইউনিটগুলো বিদেশেরা নিজেরাই নাকি তাদের নিয়োগকর্তারা ভাড়া নিয়েছেন, তা জানতে বাড়ির মালিক ও কনডোমিনিয়াম ম্যানেজমেন্টকে তলব করবে ইমিগ্রেশন বিভাগ। একই কনডোমিনিয়ামে এর আগেও অভিযান চালানো হয়েছিল এবং তখন বেশ কয়েকজন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছিল বলে জানান তিনি। রুসলিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের অভিযানে পুত্রজায়া, মেলাকা, নেগেরি সেম্বিলান, কুয়ালালামপুর ও কেএলআইএ থেকে ৩৩৮ জন অভিবাসন কর্মীর সমন্বয়ে মোট তিন হাজার ০১৬ জন বিদেশির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ১৩৬ জনকে আটক করা হয়। আটকদের ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট অ্যাক্ট ১৯৬৬ ও ইমিগ্রেশন রেগুলেশনস ১৯৬৩ এর অধীনে আরও অধিকতর তদন্তে সিমুনিয়াহ, সেলাঙ্গরের অভিবাসন ডিপোতে নিয়ে রাখা হয়েছে। ইমিগ্রেশন বিভাগ জানুয়ারি থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাত হাজার ১৬৯টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে ৪৮ হাজার ৬৫৬ জন অবৈধ অভিবাসী ও ২৪৫ জন নিয়োগকর্তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ।
মালয়েশিয়ায় একটি কনডোমিনিয়ামে অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিসহ ১৩৬ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ান সিনেটরের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের এক লেবার সিনেটর দুটি পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন। অস্ট্রেলিয়া সরকারের এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে, 'সিনেটর ফাতিমা পেম্যান পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য এবং বৈদেশিক বিষয়ক, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য আইন সংক্রান্ত যৌথ স্থায়ী কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।' সিনেটর পেম্যান প্রধানমন্ত্রীসহ তার সহকর্মীদের 'যা সঠিক তার পক্ষে দাঁড়ানোর' আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, তার বিবেক অনেকদিন ধরে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ছিল, কারণ তিনি দূর থেকে গাজার যুদ্ধ দেখছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে প্রথম হিজাব পরিহিত সিনেটর ফাতিমা পেম্যান এ মাসের শুরুতে একটি বিবৃতির জন্য মর্যাদাপূর্ণ সংসদীয় কমিটি থেকে পদত্যাগ করার জন্য চাপের মুখে পড়েছিলেন। পেম্যান তার বিবৃতিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও তার সহকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, 'আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের পার্লামেন্ট সদস্যদের জিজ্ঞাসা করি যে, ইসরায়েলকে সমর্থনের জন্য কতগুলো আন্তর্জাতিক অধিকার আইন ভঙ্গ করতে হবে? ম্যাজিক সংখ্যা কী? কত গণকবর দরকার? খুন হওয়া শিশুদের রক্তাক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কয়টি ছবি দেখতে হবে?' তিনি আরও বলেন, এটি একটি গণহত্যা এবং আমাদের ভান ধরা বন্ধ করতে হবে। স্বচ্ছতার অভাব, নৈতিক বিভ্রান্তি, সিদ্ধান্তহীনতা এই জাতির হৃদয়কে গ্রাস করছে।' 'নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে,' বলেন তিনি। ইহুদি সম্প্রদায় এই স্লোগানটিকে ইসরায়েলের ধ্বংসের আহ্বান হিসেবে নিন্দা করেছে। সম্প্রতি রাফা শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর সিনেটর পেম্যান আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার এ আহ্বানের পুনরাবৃত্তি করেছিলেন। তিনি লিখেছেন, 'আমাদের অবশ্যই এই গণহত্যার অবসান দাবি করতে হবে, সব বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে হবে।' অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবেনিজ একজন 'তরুণ সিনেটর' হিসেবে ফাতিমা পেম্যানের বক্তব্যকে উপেক্ষা করেছেন এবং বলেছেন, 'এটা অনুপযুক্ত, আমি সরকারের পক্ষে কথা বলছি।' বিরোধীদলীয় নেতা পিটার ডাটন প্রধানমন্ত্রী আলবেনিজকে 'দুর্বল নেতৃত্ব' হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন এবং পেম্যানকে দল থেকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের এক লেবার সিনেটর দুটি পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের শোষণের অভিযোগ জাতিসংঘের
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তারা অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের হাত থেকে রক্ষা করতে মালয়েশিয়াকে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার দেশটির স্থানীয় অনলাইন ফ্রি মালয়েশিয়া টুডেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, তারা বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা সম্পর্কিত এক প্রতিবেদন দেখে হতাশ হয়েছেন, মালয়েশিয়ায় কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে এসে যাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এ বিবৃতিতে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে পরিচালিত অপরাধমূলক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতারণামূলক নিয়োগের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অভিবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন, কারণ তাদের ভুয়া কোম্পানি দ্বারা নিয়োগ করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত নিয়োগ ফি দিতে বাধ্য করা হয়েছে, যা তাদের ঋণের জালে বন্দি করেছে। তারা উল্লেখ করেন যে, অনেক অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেখেন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ নেই এবং প্রায়ই তাদের ভিসাহীন থাকতে বাধ্য করা হয়। যার ফলে তাদের গ্রেপ্তার হয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে পড়তে হয়। এ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় কয়েক মাস বা তার বেশি সময় ধরে কর্মহীন বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবস্থা খুবই নাজুক এবং অসম্মানজনক। মালয়েশিয়াকে অভিবাসীদের ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের শোষণ, অপরাধীকরণ এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার জন্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে, উভয় সরকারের কিছু উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এটা অগ্রহণযোগ্য এবং এর শেষ হওয়া দরকার। আর এই শোষণমূলক নিয়োগের জন্য অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে এসব বেসরকারি ব্যবসা ও প্রতারণামূলক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত 'অপর্যাপ্ত'। জাতিসংঘের এ দাসত্ব বিষয়ক বিশেষ রিপোর্টটি তোমোয়া ওবোকাতা কর্তৃক জারি করা, যিনি পাচার সংক্রান্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক। এ ছাড়া, সিওভান মুল্লালি, যিনি অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক, গেহাদ মাদি এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা বিশেষ এ রিপোর্টটি তৈরি করেছেন। এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কিছু অভিবাসী তাদের শোষণের কথা জানানোর কারণে কঠোর প্রতিশোধের সম্মুখীন হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মালয়েশিয়াকে শ্রমিকদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা গ্রহণে আরও কার্যকরভাবে শ্রমিক অভিবাসন পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা আরও বলেছেন, মালয়েশিয়াকে অবশ্যই ইউএন গাইডিং প্রিন্সিপালস অন বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের অধীনে বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হবে এবং মালয়েশিয়াকে অবশ্যই শোষণের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্ত, সুরক্ষা এবং সহায়তা করার জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করতে হব, ব্যক্তি পাচারের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনি সুরক্ষা কার্যকর করতে হবে এবং দেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা সমুন্নত রাখতে হবে। তারা এর আগে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ এ দলটি। গত অক্টোবরে অভিবাসী অধিকারকর্মী অ্যান্ডি হল জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের অধীনস্থ সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস অফিস অব দ্য হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের (ওএইচসিএইচআর) কাছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। শ্রমিকদের পরিস্থিতিকে 'ভয়াবহ' হিসেবে বর্ণনা করে তিনি তাদের দরিদ্র জীবনযাত্রার বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে আবদ্ধ কোয়ার্টার, দুর্বল স্যানিটেশন ও সীমিত খাবার এবং কীভাবে তারা অতিরিক্ত নিয়োগ ব্যয়ের কারণে ঋণী হয়ে পড়েছেন। অ্যান্ডি হল দাসপ্রথা, পাচার, অভিবাসী এবং দারিদ্র্যের বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ রিপোর্টারদের কাছে নথিযুক্ত অভিযোগও পাঠিয়েছিলেন, বিশেষ করে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস এবং পিয়া ওবেরয়, যিনি জাতিসংঘের এশিয়া প্যাসিফিকের মাইগ্রেশন এবং মানবাধিকার বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তারা অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের হাত থেকে রক্ষা করতে মালয়েশিয়াকে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রশংসায় পর্তুগিজ প্রেসিডেন্ট
পর্তুগালের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মারসেলো রেবেলো দ্য সোজা। পর্তুগালে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিমত জানান। গত ৮ জানুয়ারি রাজধানী লিসবনে পর্তুগিজ প্রেসিডেন্টের অফিস 'প্যালাসিও দ্যা বেলেমে' আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। পরিচয়পত্র পেশের পর সৌজন্য বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মারসেলো রেবেলো দ্য সোজা পর্তুগাল ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বিশেষ করে বাণিজ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর জোর দেন। রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ বাংলাদেশ ও পর্তুগালের জনগণের মধ্যে বিদ্যমান '৫০০ বছরের' ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেন। তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে ঢাকায় পর্তুগিজ দূতাবাস স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনার জন্য পর্তুগিজ প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেন। রেজিনা আহমেদ আরও উল্লেখ করেন, পর্তুগিজ ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এখনই উপযুক্ত সময় এবং বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
পর্তুগালের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মারসেলো রেবেলো দ্য সোজা।
সিডনির শপিংমলে হামলা: সাহসিকতার জন্য অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পাচ্ছেন ফরাসি ট্যুরিস্ট
সিডনির ওয়েস্টফিল্ড বন্ডাই শপিং সেন্টারে হামলার সময় সাহসী ভূমিকার জন্য এক ফরাসি নাগরিককে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই নাগরিকের নাম ড্যামিয়েন গুয়েরোট। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ তাকে 'অসাধারণ প্রচেষ্টার' জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকার আমন্ত্রণ জানান। গত শনিবার ওই শপিং সেন্টারে হামলায় ৬ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হন। ওই সময় গুয়েরোট অন্যদের রক্ষা করার জন্য সাহসের সাথে আক্রমণকারী জোয়েল কাউচির মুখোমুখি হয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অপরিচিতদের সাহায্যের জন্য রুখে দাঁড়িয়েছিলেন গুয়েরোট। শপিংমলের চলমান সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে 'বোলার্ড' হাতে নিয়ে মোকাবেলা করছেন হামলাকারীকে। শনিবার অন্যদের রক্ষা করার প্রয়াসে ওয়েস্টফিল্ড বন্ডাই জংশনে আক্রমণকারী জোয়েল কাউচির মুখোমুখি হওয়ার পরে ড্যামিয়েন গুয়েরোটকে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি অনলাইন পিটিশন শুরু হয়েছিল। ড্যামিয়েন গুয়েরোটের অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান ট্যুরিস্ট ভিসার মেয়াদ আগামী মাসে শেষ হবে। যিনি পিটিশন শুরু করেছিলেন সেই আইনজীবী বেলিন্ডা রবিনসনের মতে, বন্ডাই জংশন হামলার সময় তার সাহসিকতার জন্য 'বোলার্ড ম্যান' নামে পরিচিত এই ফরাসি নাগরিককে স্থায়ীভাবে বসবাসের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অভিবাসন মন্ত্রী অ্যান্ড্রু গাইলস এসবিএস নিউজকে বলেছেন, 'আমরা মি. গুয়েরোটের পাশাপাশি তাদেরও ধন্যবাদ জানাই যারা অন্যদের বিপদ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছেন।' প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমি ড্যামিয়েনকে এখানে তস্বাগত জানাই। তিনি যতক্ষণ চান ততক্ষণ এই দেশে থাকতে পারেন।' আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
সিডনির ওয়েস্টফিল্ড বন্ডাই শপিং সেন্টারে হামলার সময় সাহসী ভূমিকার জন্য এক ফরাসি নাগরিককে অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভেনিসে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশ
ইতালির ভেনিস শহরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন জানিয়ে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কয়েক হাজার নারী-পুরুষের মিছিল-সমাবেশ থেকে 'পালেস্তিনা লিবেরা' বা 'ফ্রি প্যালেসটাইন' স্লোগান দেওয়া হয়। গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মেসত্রে ট্রেন স্টেশন থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি ১১টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র পিয়াচ্ছো ফেরেত্তোয় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলটিকে কেন্দ্র করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পুলিশ কড়া নিরাপত্তা বেস্টনি দিয়ে মিছিলটি ঘিরে রাখে। সে সময় শহরের বাসিন্দাদের অনেককে বলতে শোনা যায়, স্মরণকালে তারা এই শহরে এত বড় মিছিল দেখেননি। মিছিলে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশিসহ অন্যান্য মুসলিম অভিবাসীদের পাশাপাশি বহু ইতালীয় নাগরিককে অংশ নিতে দেখা যায়। তাদের অনেকেই গায়ে ফিলিস্তিনির পতাকা ও শান্তির পতাকা জড়িয়ে, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও পতাকা হাতে মিছিলে অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা ইতালীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ইতালি ক্যাথলিকদের তীর্থস্থান ভেটিকানের দেশ। মানবাধিকার যাদের সংস্কৃতি, তারা কীভাবে দখলদার ইসরায়েলের পক্ষ নিতে পারে? তারা অবিলম্বে গাজায় গণহত্যার দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইতালির পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি জানান এবং যুদ্ধ বন্ধ করে স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভূমিকা রাখার আহবান জানান। প্রায় চার সপ্তাহ ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলা বন্ধ ও গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর দাবিও জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
ইতালির ভেনিস শহরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন জানিয়ে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিউইয়র্কে শেষ হলো দুদিনের বাণিজ্য মেলা
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে শেষ হয়েছে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ অভিবাসী দিবস এবং বাণিজ্য মেলার আয়োজন। ইউএসএ-বাংলাদেশ বিজনেস লিংক, গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্স এবং মুক্তধারা নিউইয়র্কের এই আয়োজনটি গত ২২ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী। সমাপনী দিনে ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। মেলায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা। তাদের প্রত্যাশা, এই মেলার মাধ্যমে অন্তত ৫ লাখ ডলারের ব্যবসায়িক লেনদেন হবে। ইউএসএ-বাংলাদেশ বিজনেস লিংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী বিশ্বজিত সাহা বলেন, '১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে বাংলায় ভাষণ দেন। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা নিউইয়র্ক স্টেটের কাছে আবেদন করি, ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য। স্টেট সিনেটর স্টেভেসকি আবেদন করলে তা সর্বসম্মতি ক্রমে পাশ হয়।' উদ্বোধনী আয়োজনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, 'রাজনৈতিক কোনো সিদ্ধান্ত ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করবে না। এই আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক শক্ত হলো।' পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, 'প্রবাসীদের সমস্যা ও সুবিধার কথা আলোচনা করার জন্য এমন আয়োজন সুযোগ তৈরি করে দেয়। এতে করে সমস্যা সমাধানের সূত্রপাত করা যায়।' গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জেফি বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা আরও বাড়ছে। বাংলাদেশ থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইসিটি পণ্য আমদানির বিষয়টি উঠে এসেছে এই আয়োজনে। আমরা আশা করছি এই মেলার মাধ্যমে অন্তত ৫ লাখ ডলারের বাণিজ্যিক লেনদেন হবে।' আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শাহ এ. সারওয়ার বলেন, 'আমরা চাই এমন আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ুক। এ জন্য আমরা নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত চারটি বরোতে রেমিট্যান্স রোড শোয়ের আয়োজনও করছি।' বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান আলোচনা পর্বে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি তরুণ উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। তাদেরকে বাংলাদেশের বিনিয়োগে উৎসাহী করতে হবে। এ আয়োজনে সারা বিশ্ব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স গ্রহীতা হিসেবে পুরস্কার দেওয়া হয় ইসলামী ব্যাংককে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে বৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠাতে অভিবাসীদের সহযোগিতা করায় সোনালী এক্সচেঞ্জ, স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেস, প্লাসিড এক্সপ্রেস ও সানমান গ্লোবাল এক্সপ্রেসকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে শেষ হয়েছে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ অভিবাসী দিবস এবং বাণিজ্য মেলার আয়োজন।
নিউইয়র্কে এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির শীতবস্ত্র বিতরণ
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী সংগঠন এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে করোনা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর এস্টোরিয়ায় অভিবাসাী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীসহ বিভিন্ন কমিউনিটির বিপুল সংখ্যক মানুষের মাঝে বিনামূল্যে এসব শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে অ্যাপেলো ইন্সুরেন্স ব্রোকার্স এর সহায়তায় প্রায় ৪৫০ লোকের মাঝে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি সোহেল আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—স্পন্সর শমসের আলী, সংগঠনের উপদেষ্টা দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, সালেহ চৌধুরী, সহ-সভাপতি কয়েস আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হক চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ এমদাদ রহমান তরফদার, প্রচার সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, সদস্য ফয়সল আহমেদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট শমশের আলী, কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটির উপদেষ্টা তোফায়েল চৌধুরীসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে করোনা ক্ষতিগ্রস্ত বিপুল সংখ্যক পরিবারের মধ্যে গ্রোসারি সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। জাহেদ শরীফ: নিউইয়র্কপ্রবাসী সাংবাদিক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী সংগঠন এস্টোরিয়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে করোনা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
নিউইয়র্কে দশ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে বাংলা বর্ষবরণ
দশ হাজারের বেশি মানুষের উপস্থিতিতে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বরণ করে নেওয়া হয়েছে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে। ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো সহস্র কণ্ঠের গানের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নতুন বছর। বাংলাদেশের সময়ের সঙ্গে মিল রেখে ১৩ এপ্রিল স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে টাইমস স্কয়ারে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় বর্ষবরণ আয়োজন। এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের দুই দিনব্যাপী এ আয়োজন শেষ হয় ১৪ এপ্রিল মধ্যরাতে জ্যাকসন হাইসের ডাইভারসিটি প্লাজায়। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের এ আয়োজনে বাংলাদেশিদের সঙ্গে যুক্ত হন ভারত, থাইল্যান্ড এবং নেপালের শিল্পী ও দর্শনার্থীরা। একই নকশার পোশাকে সহস্র মানুষ মেতে ওঠেন আনন্দ উৎসবে। বাংলাদেশ থেকে সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে পার্বতী দাস বাউল এ আয়োজনে অংশ নেন। নিউইয়র্ক টাইমস স্কয়ারে সহস্র কণ্ঠে ১৪৩১ বাংলা বর্ষবরণ আয়োজনের আহ্বায়ক সৈয়দ হাসান ইমাম মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধনের সময় বলেন, 'টাইমস স্কয়ারে হাজারো বাঙালির উপস্থিতিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং সহস্র কণ্ঠে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বাঙালি অভিবাসীরা তা অবিস্মরণীয়। এ আয়োজন দেখে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বাঙালিরা বর্ষবরণ উদযাপন করবেন সেই স্বপ্ন দেখছি।' মমতাজ বেগম রাত পৌনে ১০টায় টাইমস স্কয়ারের মঞ্চে উঠে দর্শক দেখে অভিভূত হয়ে বলেন, 'কনকনে শীতের মধ্যে হাজার দশেক মানুষ আমার গান শুনতে দাঁড়িয়ে আছে, এটা আমার জন্য খুবই সম্মানের।' রাত ১০টা পর্যন্ত উচ্চশব্দ ব্যবহারের অনুমতি ছিল। অগণিত মানুষের আনন্দ এবং মমতাজের গানে মুগ্ধ হয়ে টাইমস স্কয়ার পুলিশ ইউনিটের সার্জেন্ট মোহাম্মদ খান মঞ্চে এসে বলেন, 'আমেরিকায় আপনি বাংলা গানের অ্যাম্বাসেডর। আপনার সম্মানে আমরা সময়ের সীমা তুলে নিলাম। আপনি যতক্ষণ পারেন গান করেন, আমরাও শুনব।' পরে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে মমতাজের গান। নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা বলেন, 'ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই আয়োজন আগামী প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ করবে।' আয়োজক এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল লিটনের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা মীর বাসার। তিনি মেয়র এরিক অ্যাডামের পক্ষ থেকে বলেন, 'বাঙালির সার্বজনীন উৎসবের বর্ণাঢ্য এই আয়োজন দেখে আমরা অভিভূত। সব ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিউইয়র্ক সিটিকে আমরা আরও প্রাণবন্ত ও আনন্দমুখর করে তুলব।' এ সময় নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের আরও কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের অ্যাম্বাসেডররা বক্তব্য দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সহস্র কণ্ঠে বিশ্ব বাঙালির ১৪৩১ বাংলা বর্ষবরণের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আইএফআইসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ার বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীরা টাইমস স্কয়ারে যে অভূতপূর্ব আয়োজন করেছেন তার সাক্ষী এবং এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে আমরা গর্বিত।' বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের কর্ণধার শাহনেওয়াজ বলেন, 'আমেরিকায় বাংলাদেশিরা স্বতন্ত্র একটি অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। টাইম স্কয়ারের বিশাল এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা বিশ্ববাসীকে বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানাতে পেরেছি।' আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বলেন, 'গত বছর আমরা শত কণ্ঠে নতুন বছরকে বরণ করেছিলাম, এবার বরণ করেছি সহস্র কণ্ঠে। এ আনন্দ আয়োজন অব্যাহত থাকবে। গত তিন মাস ধরে মহিতোষ তালুকদার তাপসের নেতৃত্বে মহড়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন। আবহমান বাংলার ঐহিত্যবাহী সংস্কৃতি, নাচ গান ও যাত্রাপালা, কোনো কিছুই বাদ ছিল না আমাদের আয়োজনে।' ১৪ এপ্রিল জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় সকাল ১১টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ছিল বর্ষবরণ এবং বৈশাখী মেলা। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছিল জ্যাকসন হাইটস।
দশ হাজারের বেশি মানুষের উপস্থিতিতে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বরণ করে নেওয়া হয়েছে ১৪৩১ বঙ্গাব্দকে।
‘ভার্চুয়াল অপহরণ’ বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি 'ভার্চুয়াল অপহরণ' কেলেঙ্কারিতে এক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর পরিবারকে দুই লাখ ৮৮ হাজার ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছে। সম্প্রতি, নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে প্রতারণার অন্তত তিনটি ঘটনার খোঁজ পেয়েছে। এরপরই পুলিশ তাদেরকে 'হাই অ্যালার্ট' থাকার পরামর্শ দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণাটি সাধারণত শুরু হয় একটি ফোন কলের মাধ্যমে। যাতে দাবি করা হয় যে, শিক্ষার্থীকে একটি অপরাধে জড়িত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার, অস্ট্রেলিয়া থেকে নির্বাসন ও আইনি উদ্যোগ এড়াতে প্রতারক চক্রটি নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ দেওয়ার দাবি করে। পুলিশের ভাষ্য, যখন চক্রটি বুঝতে পারে শিক্ষার্থী ভীত হয়ে তাদের ফাঁদে আটকা পড়েছে তখন তাকে নানান নির্দেশ মানতে বাধ্য করা হয়। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে এবং একটি হোটেল রুম ভাড়া নিয়ে ক্যামেরার সামনে চোখ বেঁধে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই ভিডিওগুলো বিদেশে অবস্থানরত শিক্ষার্থীর মা-বাবার সঙ্গে করা হয় শেয়ার। তারা তাদের অপহৃত সন্তানের 'মুক্তির' বিনিময়ে স্ক্যামারদের কাছে বড় অংকের টাকা পাঠায়। অভিনব এই 'ভার্চুয়াল অপহরণ' ঘটনায় চীনের একটি পরিবারকে দুই লাখ ৮৮ হাজার ডলার অস্ট্রেলিয়ার বাইরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মুক্তিপণ হিসেবে জমা দিতে হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশকে শুধুমাত্র চলতি অক্টোবরেই আরও দুইটি ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। ওই ঘটনায় পাঁচ লাখ ডলার মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। ডাকাতি ও গুরুতর অপরাধ স্কোয়াডের গোয়েন্দা সুপারিনটেনডেন্ট জোসেফ ডুইহি গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রতারক চক্রটি দ্রুত তাদের কৌশল পরিবর্তন করছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, সংগঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের ভার্চুয়াল অপহরণগুলো গত দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এবং তারা সংগঠিত হয়ে উঠছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে স্ক্যামাররা সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে কথা বলছেন। তিনি বলেন, 'আমরা এমন কয়েকটি ঘটনাও দেখেছি যেখানে ভুক্তভোগীকে শেষ পর্যন্ত জোরপূর্বক অপরাধী হতে বাধ্য করা হয়েছে। আরও শিক্ষার্থীদের প্রতারণা করার জন্য তাদের হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।' ভিক্টোরিয়া পুলিশ এ বছরের শুরুতে রাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে এমন প্রতারণা সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছিল। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে একটি 'ভার্চুয়াল অপহরণ' কেলেঙ্কারিতে এক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর পরিবারকে দুই লাখ ৮৮ হাজার ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছে।
সিডনিতে ফিলিস্তিনপন্থীদের মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা
অস্ট্রেলিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের আয়োজকরা আগামী রোববার সিডনিতে আরেকটি মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ইতোমধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার এটির অনুমতি দেবেন না বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স বলেছেন, 'আমি নিশ্চিত করতে চাই যে আর কোনো সমাবেশ ঘটবে না। বিক্ষোভ সংগঠকরা ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছে যে তারা শান্তিপূর্ণ নয়। জাতিগত বৈষম্য চিৎকার করে বলা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সংজ্ঞা নয়। সিডনির রাস্তায় "কমান্ডো মহড়া" করতে দেওয়া হবে না।' গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের একটি ছোট দল মিছিল ও সমাবেশে ইসরায়েল এবং ইহুদিবিরোধী শ্লোগান উচ্চারণ করেছিল। মিছিলটি সিডনি টাউন হলে শুরু হয়ে অপেরা হাউসে শেষ হয়। ওই রাতে অপেরা হাউসের পালগুলো ইসরায়েলের পতাকার রঙে আলোকিত করা হয়। প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স জানিয়েছেন যে, হামাস ইসরায়েলি শহরগুলোতে আক্রমণ করে গণহত্যা করার পর অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি সম্প্রদায়ের অনুরোধে তিনি অপেরা হাউসে আলোকসজ্জার অনুমোদন দিয়েছেন। প্রতিবাদকারীরা বলেছেন, 'নিরপরাধ জীবনের ক্ষতি থেকে উদযাপন করার কিছু নেই।' নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স বলেছেন, এটি 'অসহনীয়' যে ফিলিস্তিনিপন্থী সমাবেশের কারণে ইহুদি সম্প্রদায় অপেরা হাউসে যেতে পারেনি।' ফিলিস্তিনিপন্থী অন্যতম সংগঠক ফাহাদ আলী এসবিএস নিউজকে বলেছেন, নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ তাদের জানিয়েছে যে রোববারের সমাবেশের জন্য তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা আপিল করার আইনি উপায় বিবেচনা করছি। ইসরায়েলের সামরিক দখলের প্রতিবাদ করার অধিকার ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের আছে।' তিনি আরও বলেন, কেন শুধুমাত্র কিছু লোক শোক করতে পারবে এবং অন্যরা নয়। কেন আমরা আমাদের পরিবার, আমাদের বন্ধু, আমাদের সহকর্মীদের জন্য শোক করতে পারব না। নাগরিক স্বাধীনতার জন্য এর মারাত্মক প্রভাব রয়েছে।' নিউ সাউথ ওয়েলসের সহকারী পুলিশ কমিশনার টনি কুক সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা আশা করি না যে কেউ  অন্য জায়গা থেকে সংঘর্ষ সিডনির রাস্তায় নিয়ে আসবে। সহিংসতা সহ্য করা হবে না।' আকিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের আয়োজকরা আগামী রোববার সিডনিতে আরেকটি মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ইতোমধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার এটির অনুমতি দেবেন না বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
মালয়েশিয়া: কাজ-বেতন নেই-পাসপোর্ট জব্দ, থানায় অভিযোগ বাংলাদেশি কর্মীদের
বেতন ও কাজ না দেওয়ায় নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগে করেছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী চার বাংলাদেশি কর্মী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কুয়ালালামপুরের সেন্তুল থানায় তারা এই অভিযোগ দায়ের করেন। বাংলাদেশিদের অভিযোগ, গত সাত মাস ধরে নিয়োগকর্তা তাদের কাজ বা বেতন কিছুই দেয়নি, উপরন্তু তাদের পাসপোর্ট জব্দ করে রেখেছে। তারা জানিয়েছে, ১৬১ জন বাংলাদেশি এই কোম্পানিতে আসার পর থেকে কাজ এবং বেতন ছাড়া অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করছে। ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্মীদের কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে বেসিক ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিতে কাজ দেওয়ার কথা বলে মালয়েশিয়াতে নিয়ে এসেছে নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠান। পরে কুয়ালালামপুরের চৌকিটে তাদের কাজ ও বেতনবিহীন রাখা হয়। তারা জানান, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত নিয়োগকর্তা ১৬১ বাংলাদেশি কর্মীকে কোনো কাজ বা বেতন দেয়নি। বর্তমানে তাদের কাছে খাবার কেনারও টাকা নেই। উল্টো নিয়োগকর্তা তাদের পাসপোর্ট আটকে রেখে ৬ হাজার রিংগিত দাবি করছেন। এই প্রবাসীদের অভিযোগ জমা দিতে সাহায্য করে প্রবাসী অধিকার নিয়ে কাজ করা স্থানীয় সংগঠন নর্থ-সাউথ ইনিশিয়েটিভ এবং পার্টি সোশালিস্ট মালয়েশিয়া। এই অধিকার কর্মীরা আশা প্রকাশ করেন, পুলিশ প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট ফিরে পেতে সাহায্য করবে। এর আগে ১৭১ জন বাংলাদেশি শ্রমিক থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে আটক হলে গত ১৬ জানুয়ারি দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী বলেছিলেন, যেসব নিয়োগকর্তা বিদেশি শ্রমিক নিয়ে আসবে ওই শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেওয়ার দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তাবে। পরে ওই নিয়োগকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
বেতন ও কাজ না দেওয়ায় নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগে করেছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী চার বাংলাদেশি কর্মী।
দুবাইয়ে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি যুবক নিহত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি কারখানায় কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত জাকারিয়া আহমেদ পাভেল (২৪) সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রনকেলী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। গত শুক্রবার কর্মস্থলে পণ্য ছিঁড়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। নিহতের স্বজন শেখ বদরুল ইসলাম জানান, 'পাভেল দুবাইয়ের মিনা জেবল আলীর সিএসইসি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিতে স্টিল ফিক্সার হিসেবে কাজ করতেন। দুই বছর আগে তিনি দুবাই এসেছিলেন।' শুক্রবার সকাল ১০টায় ফ্যাক্টরিতে কর্মরত অবস্থায় ক্রেনের স্টিলবার দড়ি ছিঁড়ে তার উপর পড়লে পা ও শরীর থেঁতলে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দুবাই এনএমসি রয়্যাল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পাভেল চতুর্থ। বর্তমানে তার মরদেহ দেইরা দুবাইয়ের সরকারি লাশঘরে রাখা আছে। আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি কারখানায় কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি কর্মী নিহত হয়েছেন।
মালয়েশিয়ায় ভুয়া ভিসা তৈরির অভিযোগে বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ায় ভুয়া ভিসা তৈরির অভিযোগে এক বাংলাদেশি ও তার ইন্দোনেশিয়ান স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ। গত শুক্রবার জহুর রাজ্যের ইমিগ্রেশন বিভাগ এক অভিযান চালায়। অভিযানে পাসির গুদাংয়ের একটি ফ্ল্যাটে নকল ভিসা বানানোর সরঞ্জাম ও পাসপোর্টসহ ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়। জহুরবারু ইমিগ্রেশন পরিচালক বাহারউদ্দিন তাহিরের বরাত দিয়ে শনিবার মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা বার্নামা জানায়, অভিযানে আলমারিতে লুকিয়ে রাখা বাংলাদেশ ও ভারতীয় নাগরিকদের ১৩টি পাসপোর্ট ও নগদ ৩৪ হাজার ৯৮৩ রিঙ্গিত জব্দ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের প্রধান টার্গেট ছিল বিদেশিরা, প্রধানত বাংলাদেশের নাগরিক, যাদের কাছ থেকে ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন ও লেবার রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামে নিবন্ধন করতে প্রতি আবেদনে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত আদায় করা হতো। বাহারউদ্দিন বলেন, অভিযানে জব্দকৃত পাসপোর্ট ও পারমিটগুলো আসল নাকি ভুয়া, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জনসাধারণকে এজেন্টদের প্রতারণা এড়াতে ইমিগ্রেশন অফিসের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি। এর আগে অক্টোবরে জহুর ইমিগ্রেশন গেলাং পাতাহতে বিদেশি কর্মীদের অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট জাল করার সঙ্গে জড়িত আরেকটি সিন্ডিকেটের বাংলাদেশিসহ ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এই চক্রটি গত এক বছর ধরে শ্রম বিভাগের সঙ্গে ভ্রমণ নথি, ফ্লাইট টিকেট, ই-ভিসা এবং নিবন্ধন পরিষেবা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিল এবং এর মাধ্যমে কয়েক হাজার রিঙ্গিত মুনাফা অর্জন করেছে।
মালয়েশিয়ায় ভুয়া ভিসা তৈরির অভিযোগে এক বাংলাদেশি ও তার ইন্দোনেশিয়ান স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ঈদুল ফিতর উদযাপন
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের মসজিদগুলোতে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ১০ এপ্রিল। মুসলিম অধ্যুষিত শহরগুলোর মসজিদ অর্থাৎ মিশিগানের বাংলাদেশি-আমেরিকানদের পরিচালিত প্রায় ২২টি মসজিদ ও অন্যান্য কমিউনিটির প্রায় শতাধিক মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডেট্রয়েট সিটির বায়তুল মোকাররম মসজিদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমেদ কাশেম এবং দ্বিতীয় জামাত পরিচালনা করেন দারুল উলুম ডেট্রয়েট মিশিগানের শিক্ষাসচিব হাফেজ মাওলানা জাবেদ আহমেদ। ঈদের দিন মিশিগানের আবহাওয়া অনেক ভালো থাকলেও খোলা মাঠে নামাজ আদায় করতে না পারার কারণ জানতে চাইলে বায়তুল মোকাররম মসজিদের প্রেসিডেন্ট ও ডেভিসন স্কুলের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'বাইরে বা খোলা মাঠে নামাজ আদায় করতে হলে প্রশাসনিক কিছু জটিলতা থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পূর্বানুমতি নিতে হয়, যা সময় স্বল্পতার কারণে সম্ভব হয়নি। আশা করছি আগামী ঈদে খোলা মাঠে নামাজের ব্যবস্থা হবে।' ডেট্রয়েট, হ্যামট্রামেক ওয়ারেন, ট্রয়, স্টার্লিং হাইটস সিটির মসজিদগুলোসহ অধিকাংশ মসজিদে একের অধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের মসজিদগুলোতে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয় ১০ এপ্রিল।
সিডনিতে ইসরায়েলি জাহাজ আসায় ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ
সিডনির পোর্ট বোটানিতে অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্র বহনকারী ইসরায়েলি জাহাজ আসার প্রতিবাদ করেছেন ফিলিস্তিনপন্থিরা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। গত রোববার সন্ধ্যায় শতাধিক প্রতিবাদকারী ইসরায়েলভিত্তিক জাহাজ চলাচলকারী প্রতিষ্ঠানের গ্যাগনেস কন্টেইনার জাহাজ আসার প্রতিবাদ জানাতে বন্দরের কাছে জড়ো হন। প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেয় অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম ইউনিয়ন ও প্যালেস্টাইন জাস্টিস মুভমেন্ট। বিক্ষোভকারীরা বন্দর এলাকার রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করেন। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশের অভিযোগ, রাস্তা ও বন্দরে প্রবেশের পথ অবরুদ্ধ করায় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম ইউনিয়নের সিডনি শাখার সেক্রেটারি পল কিটিং আছেন। গ্রেপ্তারের আগে পল কিটিং গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি ইউনিয়ন নেতাকে বলছি, এখন রুখে দাঁড়ানোর সময়, এখন লড়াই করার সময়।' 'এই গণহত্যা, এই বর্বরতা, মানুষ হিসেবে, অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে আর সহ্য করতে পারছি না,' যোগ করেন তিনি। বিক্ষোভে যোগ দেওয়া ফেডারেল গ্রিনসের সিনেটর ও ডেপুটি লিডার মেহরীন ফারুকি গণমাধ্যমকে বলেন, 'ইসরায়েলের যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে অস্ট্রেলিয়ায় অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।' বিক্ষোভকারীরা অস্ট্রেলিয়া সরকারকে বর্ণবাদী ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত বছরের শেষের দিকে, মালয়েশিয়া গাজা যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলের বৃহত্তম শিপিং প্রতিষ্ঠান জিমকে তাদের বন্দরে নিষিদ্ধ করেছিল। গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৪ হাজারেরও বেশি। আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
সিডনির পোর্ট বোটানিতে অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্র বহনকারী ইসরায়েলি জাহাজ আসার প্রতিবাদ করেছেন ফিলিস্তিনপন্থিরা। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
আবারও বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ মালদ্বীপের শ্রম বাজার
অবৈধ নিয়োগের কারণে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করেছে মালদ্বীপ। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মালদ্বীপের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফাতিমাথ রিফাথ স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, 'মালদ্বীপের কিছু কোম্পানি জাল কাগজপত্র দাখিল করে শ্রমিক নিয়োগ করেছে। তাই গত এক মাস আগে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করা হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।' দ্বীপদেশটিতে অবৈধ অভিবাসী সমস্যা দীর্ঘদিনের। সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি 'কুরাঙ্গি' নামে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে ৭০০ জনেরও বেশি অভিবাসীর বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল মালদ্বীপ। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নতুন প্রেসিডেন্ট  মোহাম্মদ মুইজ্জুর প্রশাসন গত বছরের ডিসেম্বরে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল। গত ডিসেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইহুসান বলেছিলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ১ লাখ ৩৯ হাজার ২২০টি ওয়ার্ক পারমিট আগে থেকেই রয়েছে। তাদের মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট ফি নিয়মিতভাবে দিয়ে বৈধ আছে মাত্র ৩৯ হাজার ৪ জন। স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মালদ্বীপে ৯০ হাজার ৬৪২ জন শ্রমিক বাংলাদেশি আগে থেকেই ছিলেন। মালদ্বীপের কর্মসংস্থান আইন অনুযায়ী, একটি দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের কোটা ১ লাখের কম।
অবৈধ নিয়োগের কারণে বাংলাদেশ থেকে অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করেছে মালদ্বীপ।
সিডনিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন বিষয়ক সেমিনার
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি নতুন শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন বিষয়ক ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে এক সেমিনারের আয়োজন করেছে সিবিজি গ্লোবাল। ৭ অক্টোবর সিডনিতে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নকালে শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব, অস্ট্রেলিয়ান ডিগ্রি অর্জনের গুরুত্ব ও নিজের ক্যারিয়ার গঠনে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা। অন্যের প্ররোচনায় কোর্স পরিবর্তন না করা, ভিসা শর্ত সঠিকভাবে পালন করা এবং ভিসা শর্তের বাইরে অতিরিক্ত সময় কাজ না করার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়। সিডনির বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। নতুন আসা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ ড. ফয়সাল আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি অস্ট্রেলিয়ান সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্ট আইনজীবী সারাহ আহমেদ। সিবিজি গ্লোবালের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, 'বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনেক মেধাবী। এখন সময় এসেছে আমাদের গ্লোবাল ক্যারিয়ারের দিকে ফোকাস করার।' তিনি আরও বলেন, 'নানা কারণেই এখন অস্ট্রেলিয়ান ইমিগ্রেশন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক। তাই সঠিক গাইডের অভাবে অনেক সময় মেধাবীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পান না। এ ছাড়াও নতুন আসা শিক্ষার্থীরাও বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন। আমাদের সংস্থা তাদের পাশে থেকে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে।' আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি নতুন শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন বিষয়ক ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে এক সেমিনারের আয়োজন করেছে সিবিজি গ্লোবাল।
মালয়েশিয়া প্রবাসীদের বৈধ পথে টাকা পাঠানোর আহ্বান
মালয়েশিয়া প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন 'বাংলাদেশি এক্সপ্যাট ইন মালয়েশিয়া'র নেতারা। শনিবার কুয়ালালামপুরের জিও সানওয়ে মলের স্টার কাবাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত 'চা-সিঙ্গারার আড্ডা' থেকে প্রবাসীদের এ আহ্বান জানান তারা। মালয়েশিয়ায় বসবাস ও কর্মরত প্রফেশনালদের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন 'বাংলাদেশি এক্সপ্যাট ইন মালয়েশিয়া' বা বিডিএক্সপ্যাট। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে শতাধিক প্রবাসী জড়ো হন চা-সিঙ্গারার আড্ডায়। আড্ডায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিবিএল মানি ট্রান্সফারের সিইও মো. সাইদুর রহমান ফরাজী। তিনি বাংলাদেশের জন্য রেমিট্যান্সের গুরুত্ব, সঠিক উপায়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা তুলে ধরেন এবং প্রবাসীদের সহযোগিতাও কামনা করেন। সংগঠনটির এক্সিকিউটিভ মুশফিকুর রহমান রিয়াজ, ড. মোহাম্মদ আলী তারেক, ডা. তানিয়া ইসলাম, রিবো আলম, আফনান জাফর ও পাভেল সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের দায়িত্বশীলরা জানান, মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রফেশনালদের সংযুক্ত করে বাংলা ভাষা, স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, প্রবাসে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং, প্রবাসী শিশু-কিশোরদের মাঝে দেশপ্রেম বৃদ্ধি, পারস্পরিক বন্ধন ও বৈচিত্র্য প্রচারের ক্ষেত্রে কাজ করছে।
মালয়েশিয়া প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন 'বাংলাদেশি এক্সপ্যাট ইন মালয়েশিয়া'র নেতারা।
মিশরে বিজয় দিবস উদযাপন
নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল‌ ৯টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ। দুপুর সাড়ে ১২টায় দূতাবাসের হলরুমে আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, জাতিসংঘ কর্মকর্তা, মিশরের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও শ্রমজীবীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী অংশগ্রহণ করেন। শিশির কুমার সরকারের সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান যথাক্রমে দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন, দ্বিতীয় সচিব আতাউল হক ও তৃতীয় সচিব শিশির কুমার সরকার। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও দেশের উন্নয়নের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করার পর রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ আগত সব অতিথিকে স্বাগত ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ তার বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের। সামিনা নাজ বলেন, 'বাংলাদেশ এই মুহূর্তে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। লন্ডনের সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড ব্যাংকিং রিসার্চ অনুসারে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে।' তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের এ সাফল্যের পিছনের চালিকা শক্তি। তার সুদূর প্রসারী নেতৃত্বে সরকার ভিশন-২০৪১ এবং মাতৃভূমিকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে এবং এ ব্যাপারে প্রবাসী সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানাই।'
নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে বাংলাদেশ
'সরকারের ভবিষ্যৎ গঠন' প্রতিপাদ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট-২০২৪। আজ সোমবার শুরু হওয়া শীর্ষ সম্মেলনটি শেষ হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী। আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রী ড. আব্দুল রহমান আল আওয়ারের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় সামিটটি৷ সামিটের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং আসন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে পরামর্শ দেওয়া। এতে ফোকাস করা হচ্ছে—সরকারের ডিজিটাল রূপান্তর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উন্নয়নের মডেল ও ভবিষ্যত অর্থনীতির পুনর্গঠন, ভবিষ্যত সমাজ ও শিক্ষা, স্থায়িত্ব ও নতুন বৈশ্বিক রূপান্তর এবং নগরায়ন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য। এ ছাড়া, ফিলিস্তিনের গাজা পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, বিভিন্ন দেশের নির্বাচন, বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো এই শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা করার কথা রয়েছে।
'সরকারের ভবিষ্যৎ গঠন' প্রতিপাদ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট-২০২৪।
জাপানে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন বাংলাদেশ দূতাবাসের
জাপানের রাজধানী টোকিওতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ দূতাবাস। এদিন সকালে দূতাবাস ভবন প্রাঙ্গণে প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পতাকা উত্তোলন শেষে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদ সদস্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে টোকিওর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে কূটনৈতিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২৬ মার্চ মঙ্গলবার হোটেল নিউ ওতানিতে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুগে ইয়োশিফুমি।   জাপানের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয় মন্ত্রী কোনো তারোসহ দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, চেম্বার প্রতিনিধি, টোকিওর বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। স্বাগত ও শুভেচ্ছা বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রম ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি আজ সমগ্র বিশ্বে স্বীকৃত।' উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা রক্ষা ও প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মের তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পারস্পরিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও ঐতিহাসিক বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাপানের স্থানীয় পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করা হয়। প্রসঙ্গত, এ বছরের ২৬শে মার্চ রমজান মাসে পড়ায়, দূতাবাস স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ইফতার দিয়ে শুরু হয়। [email protected]
জাপানের রাজধানী টোকিওতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
স্পেনে প্রথম বাংলাদেশি চিকিৎসক জুমা আক্তার
স্পেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির সূচনা হয় প্রায় ৩৪ বছর আগে। দেশটির রাজধানী মাদ্রিদে ১৯৮৯ সালে হাতেগোনা কয়েকজন বাংলাদেশি অভিবাসী বসবাস করতেন। ধীরে ধীরে কমিউনিটি বড় হতে হতে বর্তমানে প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করছেন দেশটিতে। ইউরোপের অন্যতম পর্যটন নির্ভর দেশটির রাজধানী মাদ্রিদে বসবাস করছেন প্রায় ৩৫ হাজার বাংলাদেশি। অনেকেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে। বাবারা অধিকাংশ কল-কারখানা, রেস্তোরাঁ বা পর্যটন সংশ্লিষ্ট চাকরিতে আছেন। কেউ কেউ ব্যবসা-বাণিজ্যও করেন। মায়েদের বড় অংশ ঘর-গৃহস্থালির কাজ করলেও, অনেকেই চাকরি করেন। অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম জেনারেশন বা ছেলে-মেয়েদের একটা বড় অংশ এখন পূর্ণ যৌবনে পা দিয়েছে। কেউ কেউ কর্মজীবন শুরু করেছে। তাদের একজন জুমা আক্তার কালাম, স্পেনে প্রথম বাংলাদেশি চিকিৎসক। গত রোববার মাদ্রিদের ঐতিহ্যবাহী মনক্লোয়া হসপিটালে যোগ দিয়ে চিকিৎসা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন জুমা। যেখানে অধিকাংশ অভিবাসীর সন্তানরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই কর্মজীবন শুরু করে ঝরে পড়েছে, সেখানে জুমা আক্তার চিকিৎসক হয়েছেন। এতে তার পরিবারসহ অভিবাসীদের মধ্যে বইছে খুশির ঝিলিক। ইউরোপে বাংলাদেশিদের বসবাসের দিক থেকে দ্বিতীয় স্পেন। দেশটিতে প্রথম বাংলাদেশি নারী চিকিৎসক পেয়ে প্রবাসীরাও আনন্দে উচ্ছ্বাসিত। জুমা তাদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। জুমা আক্তারের জন্ম ১৯৯৯ মাদ্রিদের ১৬ জানুয়ারি মাদ্রিদের মনক্লোয়া হাসপাতালে। বাবা আবুল কালাম সেলিম মাদ্রিদে বাংলাদেশি কমিউনিটির পরিচিত মুখ ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাদের আদিনিবাস কুমিল্লায়। স্থানীয় স্কুলে পড়ালেখা শেষ করে জুমা মেডিসিন বিষয় নিয়ে ভর্তি হন ইউনিভারসিদাদ অটোনোমো মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রযুক্তির এই যুগে মেডিসিন ও চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রতি আগ্রহ থেকেই স্বপ্ন দেখেন চিকিৎসক হওয়ার। অবশেষে তার সেই স্বপ্ন বাস্তব হলো যে হাসপাতালে জন্ম নিয়েছিলেন, সেই হাসপাতালের চিকিৎসক হওয়ার মাধ্যমে। জুমার পরিবারে বাবা-মা, বড় বোন আর ছোট বোন। বড় বোন সুমা নাহিদা আক্তার স্থাপত্য ও নগরায়ন নিয়ে ইউনিভার্সিটি অফ আর্কিটেচার আলকালা দে হেনারেসে অধ্যয়নরত। ছোট বোন জান্নাত আক্তার লন্ডন কিং লো বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। জুমা আক্তার বলেন, 'ছেলেমেয়েদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে হলে বাবা-মার উৎসাহ থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া সামাজিক গুজব কিংবা অপপ্রচারে কান না দিয়ে আর্থিক ও মানসিকভাবে ছেলেমেয়েকে সহযোগিতা করতে হবে। আর ছেলেমেয়েদের মধ্যেও চেষ্টা, সাধনা থাকা প্রয়োজন।' 'লেখাপড়া করে বাবা-মা ও কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করতে হবে,' যোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমি ফুল টাইম চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি আরও লেখাপড়া করে চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে চাই।' জুমা আরও বলেন, 'আমি জন্মসূত্রে স্প্যানিশ হলে বাবা-মার সহযোগিতায় বাংলা ভাষায় কথা বলার পাশাপাশি বাংলাদেশ ও বাংলা সংস্কৃতির প্রতি আমার গভীর আগ্রহ আছে। আমি বাংলা ও স্প্যানিশ উভয় সংস্কৃতির মানুষের সেবা করে যেতে চাই।' জুমার এই সাফল্যে বাবা আবুল কালাম সেলিম, বাংলাদেশি মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মো. ফজলে এলাহীসহ কমিউনিটির তার কর্মস্থল মনক্লোয়া হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে তার সফলতা কামনা করে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
স্পেনে বাংলাদেশি কমিউনিটির সূচনা হয় প্রায় ৩৪ বছর আগে। দেশটির রাজধানী মাদ্রিদে ১৯৮৯ সালে হাতেগোনা কয়েকজন বাংলাদেশি অভিবাসী বসবাস করতেন।
সিডনিতে পানিতে ডুবে মারা গেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত শহিদুল
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ২৬ বছর বয়সী শহিদুল হক গত রোববার জর্জেস রিভারের ক্যান্টলিন বেসিন এলাকায় পানিতে ডুবে মারা গেছেন I তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের প্যারামেটা এলাকায় বাস করতেন। আজ বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬ টায় ল্যাকেম্বাতে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শহিদুল রোববার বিকেলে তার ছোট বোনের সঙ্গে কিথ লংহার্স্ট রিজার্ভের কেন্টলিন বেসিনে একটি রিমোট-কন্ট্রোল নৌকা চালাচ্ছিলেন। দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনির দুর্গম ওই এলাকায় যেতে প্রায় ৪৫ মিনিট হাইকিং করতে হয় I বিকেল ৪টার দিকে নৌকাটি পাথরে আটকে গেলে সেটি উদ্ধার করতে শহিদুল পানিতে ঝাঁপ দেন। সাঁতার না জানায় পানি থেকে আর উঠে আসতে পারেননি শহিদুল। ঘটনাস্থলে পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও প্যারামেডিকদের ডাকা হয়। কিথ লংহার্স্ট রিজার্ভের কেন্টলিন বেসিনে হেলিকপ্টারসহ অনুসন্ধান শুরু করা হয়। ডুবুরিরা প্রায় চার ঘণ্টা পর তার মৃতদেহ খুঁজে পায়। পুলিশের পরিদর্শক পল ক্রেমার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বেসিনটি একটি জনপ্রিয় সুইমিং স্পট হলেও এটি বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচিত। প্রত্যন্ত অঞ্চলে, গভীর জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত এই এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক কাজ করে না। যারা দক্ষ সাঁতারু নন তাদের জন্য সেখানে হুশিয়ারি দেওয়া আছে। পুলিশের পরিদর্শক পল ক্রেমার জানান, 'যদি আপনি একজন দক্ষ সাঁতারু না হয়ে থাকেন বা একেবারেই সাঁতার না জানেন, তাহলে এ ধরনের ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়।' আকিদুল ইসলাম : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ২৬ বছর বয়সী শহিদুল হক গত রোববার জর্জেস রিভারের ক্যান্টলিন বেসিন এলাকায় পানিতে ডুবে মারা গেছেন I তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের প্যারামেটা এলাকায় বাস করতেন।
ভেনিস বাংলা ফুটবল ক্লাবের উদ্বোধন
ইতালির ভেনিসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে একটি ফুটবল ক্লাব উদ্বোধন করা হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে মেসত্রেস্থ একটি রেষ্টুরেন্টের হল রুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেক কেটে ক্লাবের উদ্বোধন করা হয়। ভেনিস বাংলা কালচো নামের ফুটবল ক্লাবটির প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশি বংশদ্ভূত মনোয়ার ক্লার্ক বলেন, ভেনিসের বাংলাদেশি কম্যুনিটি এখন অনেক বড়। প্রায় ৩০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস এই কম্যুনিটিতে। এখানে আমাদের ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে, লেখাপড়ায়, পেশাগত দক্ষতায় এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই আমাদের ছেলে মেয়েরা খেলাধুলায় মনোযোগী হোক। সুস্থ, সবল কম্যুনিটি গড়ে উঠুক। তিনি বলেন, 'ইতালি হলো ফুটবলের রাজধানী। এখানে বড় হওয়া ছেলেমেয়েরা ফুটবলে দক্ষ হবে না তা হতে পারে না। এই ক্লাবের মাধ্যমে আমরা প্রবাসী বাংলাদেশি ছেলে মেয়েদের ফুটবলে দক্ষ করে তুলবো এবং ইতালির জাতীয় দলে খেলার মতো যোগ্য খেলোয়াড় তৈরি করবো।' মনোয়ার ভেনিসের বাংলাদেশি কম্যুনিটির সহযোগীতা এবং ব্যবসায়ীদের স্পন্সর প্রত্যাশা করে বলেন, 'ভেনিস বাংলা কালচো আমাদের প্রতিষ্ঠান। এটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো অগামী বছরের ভেনিস প্রভিন্সিয়াল চ্যাম্পিয়নে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে।' উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভেনিসের সাবেক মেয়র এবং সেনাতরে এডভোকেট উগো বেরগামো, ভেনিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল অ্যাডভোকেট ফাবরিচ্ছিয়ো ইপোলিতো দাভিনো ও স্থানীয় বাংলাদেশি কম্যুনিটির নেতারা। অ্যাডভোকেট উগো বেরগামো বলেন, 'বাংলাদেশিরা ইতালির অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। আমরা চাই খেলাধুলায়ও ভূমিকা রাখুন। আপনাদের ভেতর থেকে মেধাবী খেলোয়াড় তৈরি হোক।' তিনি বাংলাদেশি কম্যুনিটির উদ্দেশে বলেন, 'আপনারা নিজেদের কখনো বিদেশি ভাববেন না। হীনমন্যতায় ভুগবেন না। এ দেশের অর্থনীতিতে আপনাদের ভূমিকা আছে। এ দেশের আইনে আপনাদের মেধা বিকাশের এবং দক্ষতা তুলে ধরার সকল অধিকার আছে।' 'মনে রাখবেন, আপনার সন্তানের স্বাভাবিক বিকাশের পরিবেশ কোনো সুযোগ নয়, অধিকার,' বলেন তিনি।
ইতালির ভেনিসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে একটি ফুটবল ক্লাব উদ্বোধন করা হয়েছে।
সামার, ফল, উইন্টার অ্যান্ড...স্প্রিং
গ্রীষ্ম এখানে বিদায়ের পথে। শীতের আগমনে পাতাহীন হয়ে পড়বে বৃক্ষশাখা। তার আগে, শরৎজুড়ে প্রতিটি গাছ যেন সেজে ওঠে রঙিন সাজে।  হালকা গোলাপি, কমলা, হলদে-সোনালি আর টকটকে লাল রঙের পাতা। এই সময়টাকে তাই আলাদা করেই বলা হয় 'ফল কালার' বা শরতের রঙে রঙিন। গ্রীষ্মের বিদায় আর শরতের আগমনকে কেন্দ্র করে এ সময় শীতপ্রধান বৃক্ষ, গুল্মগুলোকে দেখা যায় ফলে ফলে ভরে উঠতে। এরমধ্যে অন্যতম হলো এখানকার বেরি। মূলত জুন মাসের শেষ থেকেই গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। এই সময়টা হলো বিভিন্ন ফার্ম বা বাগানগুলো থেকে ঝুড়ি ভরে ফল তোলার মৌসুম। বাজার থেকে তো কিনে খাওয়াই হয় কিন্তু একবারে মাইলের পর মাইলজুড়ে বাগান, সেই বুনো ঘাস, গাছের ঘ্রাণ (অরচার্ড) আর ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা শব্দের মধ্যে নিজ হাতে ফল পেড়ে খাওয়ার অবশ্যই ভিন্ন এক আনন্দ আছে। বিশেষ করে আমরা যারা ইট-কাঠের বিশাল দালান ঘেরা শহরে বেড়ে উঠেছি, তাদের জন্য কিছুটা সময় হলেও স্বচক্ষে দেখতে পাওয়া যে, প্রকৃতির প্রতি একটু যত্নশীল হলে সে কতটা উজাড় করে দিতে জানে! আসন্ন শরতের আগেই একদিন শহরের বাইরে বেড়িয়ে পড়ি। গিয়েছিলাম প্রফেসরের সঙ্গে। লেক্সিংটন শহর ছাড়িয়ে কেন্টাকির আরেকটি শহর প্যারিসের একেবারে উপকণ্ঠে। যান্ত্রিক শহর ছেড়ে যে অনেক দূর এসে পড়েছি, তা বোঝাই যাচ্ছিল মাইলের পর মাইল বিস্তৃত ভুট্টাক্ষেত দেখে। যেন এর কোনো শেষ বা শুরু নেই। একপাশে সীমাহীন ভুট্টাক্ষেত, আরেকপাশে সীমাহীন ঘোড়ার ফার্ম। আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে সেই রিড ভ্যালি অরচার্ড। টিলা জাতীয় উঁচু জায়গায় এই বাগান বলেই এমন নামকরণ। বাগানে যাবার আগে যে জিনিসগুলো হাতে ধরিয়ে দেওয়া হলো তা হলো ফল রাখার রঙিন কিছু ঝুড়ি আর একটা ম্যাপ। এই ম্যাপ ছাড়া বাগানের নির্দিষ্ট দিক, নির্দিষ্ট ফলের গাছ খুঁজে পাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এখানে আপেল গাছই আছে কম করে হলেও পঞ্চাশ রকমের এবং সংখ্যায় ৩ হাজারেরও বেশি। এশিয়া, ইউরোপ থেকে শুরু করে আফ্রিকার বিভিন্ন আপেল গাছের কলম করা আছে। গোল্ডেন হারভেস্ট, সুইট সিক্সটিন, ম্যাকিনটস, হানি ক্রিস্প, পিঙ্ক লেডি, রোম কিংবা গোল্ড রাশ, এত সব নামের আপেলের মধ্য থেকে বাছাই করাটাই দুষ্কর ঠেকছিল। আর এত বড় অরচার্ড ঘুরে দেখবার জন্য আসতে হবে কয়েকবার। এ ছাড়া পিয়ার্স আর আপেলের হাইব্রিডে নতুন এক ধরনের ফল গোল্ডেন এশিয়ান পিয়ার্স চাষ করা হচ্ছে। আর বিভিন্ন রকমের বেরি, পিচ, কুমড়ো (পাম্পকিন) দিয়ে বোঝাই ছিল পুরো বাগান। বেশিরভাগ গাছই নুয়ে আছে ফলের ভারে। কত আপেল, পিচ যে পড়ে আছে মাটিতে। শুনে স্বস্তি লাগল যে; এসব পড়ে থাকা ফল নষ্ট করা হয় না। এগুলো সবই চলে যায় বিভিন্ন পশুর ফার্মে, পশুর খাবার হিসেবে। নিজ হাতে ফল পেড়ে কিনে নেওয়া ছাড়াও, যত ইচ্ছা এই বাগানে দাঁড়িয়ে ফল খাওয়া যায়। কোন বাঁধা-ধরা নেই, কেউ দেখতেও আসবে না! ক্রেতা আর বাগানের মালিকেরা হয়তো চিন্তাও করতে পারে না, কেউ লুকিয়ে ফল নিয়ে যাবে বা কেউ দুটো ফল বেশি খেলেও এদের হিসেবে কোনো গড়মিল হয় না। একে তো প্রয়োজনের অতিরিক্ত উৎপাদন। তার থেকেও বড় এদের নৈতিকতা এবং উদার মানসিকতা! এমনো কতদিন হয়েছে বাক্সভরা টমেটো, হরেক রকমের টিউলিপ, গোলাপ কিংবা রুটি ডর্মের সামনে রেখে গিয়েছে দোকানের মালিক। এত টমেটো যাতে নষ্ট না হয় এবং আমরা শিক্ষার্থীরা যাতে বিনা খরচে নিতে পারি তাই এই ব্যবস্থা। বাচ্চাদের দেখেছি সারি সারি আপেল, বেরি গাছের ভিড়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে নিজের পছন্দসই ফল বাছাই করতে। শৈশব থেকেই কত স্বাধীনতা আর নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে শেখে এরা! পড়ন্ত বিকেলে ফেরার পথে আরও একবার থামতে হলো হর্স ফার্মের পাশে। প্রফেসর গাড়ির জানালা নামিয়ে দিলেন, যাতে গোধূলি বেলায় সবুজ ঘাসে এই প্রাণীগুলোকে ভালো মতো দেখা যায়। খোলা প্রান্তরে অসংখ্য ঘোড়াকে ঘাস খেতে দেখে মনে পড়ে মহীনের ঘোড়াগুলোর কথা। মানুষকে নিয়ে এদের কোনো ভয়, উদ্বিগ্নতা ছিল না। এই বুনো এবং স্বাধীন প্রাণীরাও জানে; নিজ আবাসে কেউ তার ক্ষতি করতে আসবে না। এ জায়গাটুকু নিতান্তই তার। বরঞ্চ আমরাই ছিলাম আগুন্তুক। নাদিয়া রহমান: প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
গ্রীষ্ম এখানে বিদায়ের পথে। শীতের আগমনে পাতাহীন হয়ে পড়বে বৃক্ষশাখা। তার আগে, শরৎজুড়ে প্রতিটি গাছ যেন সেজে ওঠে রঙিন সাজে।  হালকা গোলাপি, কমলা, হলদে-সোনালি আর টকটকে লাল রঙের পাতা। এই সময়টাকে তাই আলাদা করেই বলা হয় 'ফল কালার' বা শরতের রঙে রঙিন।
ঢাকা থেকে ৬ ঘণ্টায় টোকিও
ঢাকা থেকে মাত্র ৬ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে জাপান। কোনো কানেক্টিং ফ্লাইটে নয়, ঢাকা থেকে সরাসরি জাপানের নারিতায় নামা যাবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে। এই রুটে ফ্লাইট চালু করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। থাই এয়ারওয়েজ, ক্যাথে প্যাসিফিক, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসসহ এই রুটে চলাচলকারী সংস্থাগুলোর ফ্লাইটে বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যে যাতায়াতে ট্রানজিটসহ সময় লাগে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা, অনেক ক্ষেত্রে এরচেয়েও বেশি। সেই তুলনায় বিমানের এই ফ্লাইটটি অর্ধেকেরও কম সময়ে পৌঁছে দেবে যাত্রীদের। ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইট হওয়ায় ট্রানজিটের বিষয়টিও থাকবে না। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকা-নারিতা রুটটিকে লাভজনক করার পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করছি।' তিনি জানান, উদ্বোধনী ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে ফ্লাইটটি ছেড়ে যাবে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে এবং নারিতায় স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় পৌঁছাবে। ফিরতি ফ্লাইট আসবে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় এবং ঢাকা পৌঁছাবে দুপুর ৩টায়। এই ফ্লাইটে নারিতায় যেতে সময় লাগবে ৬ ঘণ্টা এবং ফিরতে সময় লাগবে ৭ ঘণ্টা। এ ছাড়া, বিমান প্রতি শুক্রবার, সোমবার ও বুধবার ঢাকা থেকে এবং শনিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার নারিতা থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। শফিউল আজিম জানান, জাপানে অবস্থানরত বাংলাদেশির সংখ্যা খুব বেশি না হলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে নিযুক্ত জাপানি নাগরিকরা এই রুটে নিয়মিত যাতায়াত করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও জাপানে যাতায়াতকারী যাত্রী আমাদের লক্ষ্য নয়। এর বাইরে দিল্লি ও কাঠমুন্ডুগামীরাও যেন আমাদের এই ফ্লাইটের যাত্রী হতে পারেন, সেটা আমাদের লক্ষ্য থাকবে। এ ছাড়া, অন্যান্য এয়ারলাইনস—জাপান এয়ারলাইনস, অল নিপ্পন এয়ারওয়েজসহ বেশকিছু সংস্থার সঙ্গে কোড শেয়ারিংয়ের বিষয়ে আলোচনা চলছে। যাতে আমাদের এই ফ্লাইটের বোর্ডিং পাস দিয়েই তারা কানেক্টিং ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য গন্তব্যে যেতে পারেন।' গত ২৫ জুলাই থেকে ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বিমান। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সর্বশেষ মডেল দিয়ে এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা-নারিতা রুটের একমুখী সর্বনিম্ন ভাড়া ৭০ হাজার ৮২৮ টাকা এবং ফিরতি টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে মাত্র ৬ ঘণ্টায় যাওয়া যাবে জাপান। কোনো কানেক্টিং ফ্লাইটে নয়, ঢাকা থেকে সরাসরি জাপানের নারিতায় নামা যাবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে। এই রুটে ফ্লাইট চালু করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।
১০০ বছর পর গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদে ঈদের নামাজ
১০০ বছর পর নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গ্রিসের থেসালিনিকির ঐতিহাসিক মসজিদ ইয়েনি। গ্রিসে ঠিক ১০০ বছর আগে মুসলিমরা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর অনেক মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ। জানা গেছে, গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদে ১০০ বছর নামাজ আদায় বন্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অর্থোডক্স খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠদের দেশটিতে গত শতক থেকেই এ সিদ্ধান্ত বহাল ছিল।  সম্প্রতি, ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মত পাল্টেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এক শতাব্দি পর গত বুধবার খুলে দেওয়া হয় মসজিদটি। পরে মুসলিমরা সেখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। ৯৮ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর দেশ গ্রিস। দেশটিতে মুসলিমদের সংখ্যা মাত্র ২ শতাংশ। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর প্রাচীন নিদর্শন ইয়েনি যামি মসজিদটি কখনো ব্যবহার হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে, কখনোবা জাদুঘর। গ্রিসের এক মুসলিম নাগরিক জানান, গ্রিসে মুসলিম আর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ ধরনের উদ্যোগ তারই বার্তা দেয়। তিনি বলেন, 'আমার দেশ, আমার ধর্মকে সম্মান করছে তারা। প্রার্থনা করতেও সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এটি খুবই ভালো আর গুরুত্বপূর্ণ খবর।' অটোম্যান শাসনামলে মসজিদটি তৈরি হয়েছিলো মূলত ডনমেহ সম্প্রদায়ের জন্য, যারা ইহুদি থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। ১৯২৩ সালে গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নাগরিক বিনিময় হয়। এর পর ওই মসজিদে মুসলিমদের প্রার্থনা বন্ধ হয়। গ্রিসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে অবস্থিত এই মসজিদ সম্পর্কে অজানা ছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি, দেশটির কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে মসজিদটিতে ঈদের নামাজে অংশ নেন ৭০ জন মুসলিম। এ সময় একজন বলেন, 'আমাদের বলা হয়েছে ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম নামাজের জন্য মসজিদটির দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে। তাই নামাজ পড়তে এসেছিলাম। এতদিন এটাকে জাদুঘর হিসেবে চিনলেও, জানতাম না এটা একটা মসজিদ। প্রায় ৬৩ বছর ধরে এখানে আছি, আজই প্রথম দেখলাম।' প্রায় এক শতাব্দীর বেশি সময়ের আগে (১৯০২) নির্মিত মসজিদটির স্থাপত্যে দেখা মেলে ইসলামিক কারুকার্যের। ১৯০২ সালে ইতালিয়ান স্থপতি ভিতালিনো পোসেলির হাত ধরে গড়ে ওঠে অনন্য নিদর্শনটি। ইউরোপের দেশ গ্রিসের অধিকাংশই অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। ২০২০ সাল পর্যন্তও দেশটিতে মুসলিমদের জন্য ছিল না কোনো মসজিদ। ২০২০ সালে এথেন্সের ভোটানিকোসে প্রথম সরকারিভাবে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি এখনো চালু আছে। এবারের ঈদুল ফিতরেও একমাত্র সরকারি ওই মসজিদে হাজারো মুসলিম জামাতের নামাজ আদায় করেন। পাশাপাশি এথেন্সের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশিসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য মসজিদ আছে যেগুলাতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া, নেয়া মানোলদায় বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছ। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থায়নে ক্রয়কৃত জায়গায় নির্মিত মসজিদ মাঠে ঈদের জামাতে হাজারো মুসলিমের ঢল নামে।
১০০ বছর পর নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গ্রিসের থেসালিনিকির ঐতিহাসিক মসজিদ ইয়েনি।
কুয়েতে অনুপ্রবেশের দায়ে ৫ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
কুয়েতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্স ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট অব সার্চ অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। স্থানীয় গণমাধ্যম আরব টাইমসের প্রতিবেদনে জানা যায়, গ্রেপ্তার বাংলাদেশিদের এর আগে বিভিন্ন অপরাধে কুয়েত থেকে দেশে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারা অবৈধভাবে আবারও কুয়েতে প্রবেশ করে। তাদেরকে কুয়েতের আল-মুতলা ও আল-খাইরান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
কুয়েতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্স ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট অব সার্চ অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
ভারী বর্ষণ, আমিরাত থেকে ঢাকাগামী ৯ ফ্লাইট বাতিল
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারী বর্ষণের কারণে সে দেশের দুবাই ও শারজাহ থেকে ঢাকাগামী মোট নয়টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, এয়ার অ্যারাবিয়া ৫টি এবং এমিরেটস ও ফ্লাই দুবাই দুটি করে ফ্লাইট বাতিল করেছে। গত কয়েকদিন ধরে মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঝড়, বজ্রসহ ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। বন্যায় প্রধান সড়ক এবং দুবাইয়ের ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে বলে জানা গেছে। দুবাই এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের আবহাওয়ার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দিনের শেষে বৃষ্টি শুরু হয়। ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে দুবাইয়ের রাস্তা নিমজ্জিত হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৪২ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ডুবে আছে দুবাই। বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোর একটি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দুই দিনের বৃষ্টিতে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণের স্থানে পানি জমে গেছে। মঙ্গলবার রাতে বন্যার পানির মধ্যে যাত্রীদের টার্মিনালে পৌঁছাতে যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে এবং পরে এ বিমানবন্দরে ফ্লাইট অবতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারী বর্ষণের কারণে সে দেশের দুবাই ও শারজাহ থেকে ঢাকাগামী মোট নয়টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
জাপানে মুসলিম প্রবাসীদের মধ্যে ইসলামিক কুইজ প্রতিযোগিতা
সিরাতুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে জাপানে বয়সভিত্তিক 'ইসলামিক কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২৩' অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৬ নভেম্বর টোকিওর অদূরে সাইতামা প্রিফেকচারের বায়তুল আমান মসজিদ কমপ্লেক্সে এই কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন জাপান আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায়  বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের মুসলিম প্রবাসী এবং তাদের সন্তানরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপান মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক জাপানিজ দাঈ ও ইসলামিক স্কলার আহমেদ মাএনো। ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বায়তুল আমান মসজিদের খতিব মাওলানা সাবের হোসেন। শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে সীরাত-আলোচনা করেন প্রধান অতিথি আহমেদ মাএনো । প্রতিযোগিতায় পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামি জীবন গড়ার ওপর আগে সরবরাহ করা ৫০টি প্রশ্ন থেকে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ২৫টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। অনূর্ধ্ব-৯ বছর, ৯-১১ বছর, ১২-১৮ বছর এবং ১৮ বছরের বেশি-এই ৪ বিভাগে প্রতিযোগিতা হয়। প্রতিটি বিভাগে ১০ জন করে মোট ৪০ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সবাইকে বিশেষ পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করা হয়।
সিরাতুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে জাপানে বয়সভিত্তিক 'ইসলামিক কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২৩' অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে ৫ বাংলাদেশি আটক
মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৩৮ 'অবৈধ' অভিবাসীকে আটক করেছে অভিবাসন বিভাগ। গত সোম ও মঙ্গলবার রাজ্যের কয়েকটি জেলায় অভিযানে তাদের আটক করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বাংলাদেশি ছাড়াও আটকদের মধ্যে আছেন ১৭ ইন্দোনেশীয়, পাঁচ পাকিস্তানি, দুই ভারতীয় ও নয় মিয়ানমারের নাগরিক। যাদের আটক করা হয়েছে তাদের পাসপোর্ট ও কাজের অনুমতি ছিল না। গতকাল বুধবার অভিবাসন পরিচালক বাহারউদ্দিন তাহির সাংবাদিকদের বলেন, 'আটক অবৈধ অভিবাসীদের বয়স ২১ থেকে ৫৮ বছর। তাদেরকে রাজ্যের মুয়ার, বাতু পাহাত, মেরসিং ও সেগামত জেলা থেকে আটক করা হয়েছে।' আটকদের বিরুদ্ধে অভিবাসন আইন অনুযায়ী তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
মালয়েশিয়ার জোহর রাজ্যে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৩৮ 'অবৈধ' অভিবাসীকে আটক করেছে অভিবাসন বিভাগ।
গালফ এয়ারের সঙ্গে বিমানের কোড শেয়ার চুক্তি
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনের গালফ এয়ারের সঙ্গে আজ বুধবার কোড শেয়ার চুক্তি সই করেছে। বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় ওয়েব প্লাটফর্মে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে এ চুক্তি সই করা হয়। বিমানের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম এবং গালফ এয়ারের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ওয়ালিদ আল আলাউয়ি কোড শেয়ার চুক্তিতে সই করেন। এ সময় বলাকায় গালফ এয়ারের বাংলাদেশ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে এবং যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন। টিকেট বিক্রিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উভয় এয়ারলাইন্স একে অপরকে সহযোগিতা করবে। বিমান ও গালফ এয়ারের যাত্রীরা ঢাকা-বাহারাইনের পাশাপাশি উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ রুটেও সহজে যাতায়াত করতে পারবেন, যা পারস্পারিক সংযোগ বৃদ্ধি করবে। অনুষ্ঠানে শফিউল আজিম বলেন, 'গালফ এয়ারের সঙ্গে কোড শেয়ার চুক্তি উভয় এয়ারলাইন্সের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এটি যাত্রীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর বন্ধনকে শক্তিশালী করবে।' ক্যাপ্টেন ওয়ালিদ আল আলাউয়ি বলেন, 'বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বে যুক্ত হতে পেরে আমরা আনন্দিত। এর ফলে আমাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হবে এবং যাত্রীরা ভ্রমণ উপভোগ করবেন।' কোড শেয়ার চুক্তির মাধ্যমে এয়ারলাইন্স ২টির অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে এবং এর ফলে উভয় এয়ারলাইন্স সুবিধা পাবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনের গালফ এয়ারের সঙ্গে আজ বুধবার কোড শেয়ার চুক্তি সই করেছে।
উপ-প্রচার সম্পাদক খান শওকতকে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ
দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক খান শওকতকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার তাকে বহিষ্কার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিল, খান শওকত জামায়াত এবং বিএনপি ঘেঁষা সাম্প্রদায়িক মানুষ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তিনি পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে সাম্প্রদায়িকতার কথা ছড়িয়েছেন। গণমাধ্যম কর্মীর তথ্যের ভিত্তিতে তাকে উপ-প্রচার সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।' খান শওকত জামায়াত নেতা ও দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ভক্ত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বহিষ্কৃত খান শওকত বলেন, 'আমি নোংরা রাজনীতির শিকার। আমার সঙ্গে ঈর্ষাবশত এ কাজ করা হয়েছে। গত পহেলা বৈশাখে আমি আয়োজক এবং অভিবাসীদের বলেছি পহেলা বৈশাখ উদযাপন না করতে। তবে আমি কাউকে জোর করিনি অনুষ্ঠানে না যেতে।'
দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক খান শওকতকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার নাসরিন মুক্তি মারা গেছেন
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (পলিটিকাল) নাসরিন মুক্তি মারা গেছেন। লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে জানানো হয়েছে, মৃত্যুকালে নাসরিনের বয়স হয়েছিল ৪৯ বছর। স্বামী ও এক শিশুকন্যাসহ আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। লন্ডন হাইকমিশনে যোগ দেওয়ার আগে নাসরিন বিসিএস ২০তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেছেন। নাসরিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (পলিটিকাল) নাসরিন মুক্তি মারা গেছেন।
২০২৩ সালে ইউরোপে ৪০ হাজার ৩৩২ বাংলাদেশির আশ্রয় আবেদন
অভিবাসীদের অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে দিন দিন কঠোর হচ্ছে ইউরোপ, অনেকেই যাত্রা পথে হারাচ্ছেন প্রাণ। তবুও থামছে না অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রা। ভাগ্য ফেরানোর আশায় বাংলাদেশি ছাড়াও পাকিস্তানি, আফগানিস্তানি ও সিরিয়ান নাগরিকদের ইউরোপে পছন্দের গন্তব্যের মধ্যে রয়েছে ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, সাইপ্রাস ও রোমানিয়া। স্বপ্নবাজরা বিভিন্ন পথ পাড়ি দিয়ে প্রতি বছরই ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন করেন। তবে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২৩ সালে ইউরোপে এবার আবেদনে নতুন রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশিরা। গত বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে আবেদন করেন ১১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ, যার মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি। বেশিরভাগই যেতে চেয়েছেন ইতালি ও ফ্রান্সে। শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এজেন্সি ফর এসাইলাম (ইইউএএ) প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে নতুন এই তথ্য উঠে এসেছে। উন্নত জীবনের আশায় প্রতিনিয়তই অবৈধ পথে ইউরোপ-আমেরিকায় পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। অনেকেই পথিমধ্যে হারাচ্ছেন প্রাণ। গত বছর ৪০ হাজার ৩৩২ জন বাংলাদেশি ইউরোপে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন।   ইইউএএ'র পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩ সালে ইউরোপে আশ্রয় চেয়ে করা আবেদনের সংখ্যা এর আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়েছে। যা ২০১৫-১৬ সালে বিশ্বজুড়ে তৈরি হওয়া শরণার্থী সংকটের পর সর্বোচ্চ। সে বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৩ লাখ মানুষ ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন করেছিল। ইইউএএ বলেছে, গত বছর বাংলাদেশিদের আশ্রয় আবেদনের প্রধান গন্তব্য ছিল ইতালি। ইইউ প্লাসে আশ্রয় চেয়ে করা বাংলাদেশিদের আবেদনের ৫৮ শতাংশই ইতালিতে করেছেন। অর্থাৎ ২০২৩ সালে ২৩ হাজার ৪৪৮ জন বাংলাদেশি ইতালিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এরপরই বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বেশি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে ফ্রান্স ও রোমানিয়ায়। ইইউতে বাংলাদেশিদের মোট আশ্রয় আবেদনের ২৫ শতাংশই ফ্রান্সে জমা দিয়েছেন। গত বছর ১০ হাজার ২১৫ জন বাংলাদেশি ফ্রান্সে আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। একই সময়ে রোমানিয়ায় আশ্রয় চেয়েছেন ২ হাজার ৮২২ জন বাংলাদেশি। এরপর অস্ট্রিয়ায় ১ হাজার ৪০৯ জন, গ্রিসে ৬৪০ জন, আয়ারল্যান্ডে ৪৪৫ জন, স্পেনে ৩৮০ জন, সাইপ্রাসে ৩১৪ জন, জার্মানিতে ১৬৪ জন, মাল্টায় ১১৮ জন ও অন্যান্য দেশে ৩৭৭ জন বাংলাদেশি আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। ইইউএএ'র তথ্য বলছে, গত বছর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে আশ্রয় প্রার্থীদের পছন্দের শীর্ষে ছিল জার্মানি। আর আশ্রয়ের আবেদনে সবার শীর্ষে আছে সিরিয়ান নাগরিকরা। এরপরই এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আরেক দেশ আফগানিস্তান। মূলত উন্নত জীবন, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আর নিরাপত্তার আশায় প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইউরোপে যান অসংখ্য মানুষ। অবৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন অনেকে। কেউ আবার নানা কারণ দেখিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেন। সিংগভাগই করেন দেশের বিরুদ্ধে নালিশ। এদিকে, বাংলাদেশি অভিবাসীদের দারুণ সুযোগ দিয়েছে গ্রিস। ২০২৩ সালে প্রাচীন সভ্যতার এই দেশে রেসিডেন্স কার্ড পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০৫ জন বাংলাদেশি অভিবাসী। আরও বিবেচনাধীন আছে ৫ হাজার ৯১০ জনের আবেদন। এদের অনেকেই বৈধতার জন্য আবেদন করে সব প্রক্রিয়া শেষে বর্তমানে রেসিডেন্স পারমিট বা স্মার্ট কার্ডের অপেক্ষায় আছেন। বিভিন্ন ত্রুটির কারণে বাতিল হয়েছে ১ হাজার ১৯টি আবেদন। সম্প্রতি দেশটির আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন গ্রিক অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি। এসময় তার মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপের দেশ গ্রিসে প্রতি বছর ৪ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে মৌসুমি কাজের ভিসা দেওয়া হবে এবং গ্রিসে বসবাসরত ১৫ হাজার অনিয়মিত বাংলাদেশিকে ৫ বছরের জন্য অস্থায়ী বৈধতার আওতায় আনা হবে। দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই বৈধতা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে গ্রিক সরকার। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে চালু করা হয় আবেদন করার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। ধাপে ধাপে রেসিডেন্স পারমিট দেওয়া শুরু করে দেশটি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিয়মিতকরণের জন্য গ্রিক সরকারের কাছে আবেদন করেছেন মোট ১০ হাজার ৩৩৭ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি। আবেদনকারীদের মধ্যে সব যাচাই-বাচাই সম্পন্ন ও সব ধাপ পেড়িয়ে রেসিডেন্স কার্ড হাতে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০৫ জন বাংলাদেশি। বাকি সবাইও পর্যায়ক্রমে বৈধতার আওতায় চলে আসবেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন ক্রুটির কারণে বাতিল হয়েছে ১ হাজার ১৯ জনের আবেদন। তবে বাতিলকৃত আবেদনগুলোর মধ্যে শর্তপূরণ করে আবারও আপিলের সুযোগ রয়েছে। গত বছর প্রাক-নিবন্ধনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈধতার জন্য আবেদন করেছেন ১১৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি।
অভিবাসীদের অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে দিন দিন কঠোর হচ্ছে ইউরোপ, অনেকেই যাত্রা পথে হারাচ্ছেন প্রাণ। তবুও থামছে না অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রা।
সুইজারল্যান্ডে প্রাণীদের সুরক্ষায় ব্যাক্তিগত পর্যায়ে আতশবাজি নিষিদ্ধের দাবি
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সুইজারল্যান্ডেও বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও নববর্ষকে ঘিরে আতশবাজির উৎসব করা হয়। তবে দেশটিতে আতশবাজি বিরুদ্ধে এখন জনমত তৈরি হচ্ছে। দেশটির সচেতন নাগরিকরা বলছেন, আতশবাজির সংস্কৃতি শব্দ দূষণ, পরিবেশ দূষণ এবং বন্যপ্রাণিদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। এটি একটি উপদ্রব। এই উপদ্রব বন্ধ হওয়া উচিত। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, সুইজারল্যান্ডের ৬৮ জন মানুষ আতশবাজীর অপব্যাবহারের বিরুদ্ধে। তারা চাইছেন ক্ষতিকর এই সংস্কৃতি বন্ধ হউক। সুইজারল্যান্ডের আতশবাজির অপব্যবহারের বিপক্ষে সবগুলো রাজনৈতিক শিবিরে জনমত তৈরি হচ্ছে। কট্টর জাতিয়তাবাদী রাজনৈতিক দল, ফলক্স পার্টির (এসভিপি) ভোটাররাও এই উদ্যোগকে সমর্থন করছেন। সবুজ দলগুলো তথা পরিবেশবাদীরা অনেক আগে থেকে এই দাবিতে সোচ্চার আছেন। তবে আতশবাজির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সুইজারল্যান্ডের জনগণই। ছোট-বড় অনেক ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য এদেশে গণভোট আয়োজন করতে দেখা যায়। শেয়ালের উপদ্রব কমাতে কোন বনে কয়টি শেয়াল মারা উচিত সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় জনমত যাচাই করে। ফলে আতশবাজির অপব্যবহার বন্ধে যেকোনো পদক্ষেপ নির্ভর করছে জনগণের মতামতের ওপর। সুইজারল্যান্ডের ৩২ শতাংশ খামারির অভিযোগ, উচ্চ শব্দের আতশবাজি পোষা প্রাণী এবং খামারের পশুদের আতঙ্কিত করে, তাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। এতে করে পশুপাখিদের মধ্যে অস্থিরতা বা স্ট্রেস তৈরি হয় এবং তাদের স্বাস্থ্যহানি ঘটে। এমনকি পশুপাখি অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্ট্রেসের কারণে গরু স্বাভাবিকের তুলনায় কম দুধ দেয়। তবে ঐতিহ্যের দোহাই দিয়ে আতশবাজির পক্ষেও রয়েছে সুইসদের একাংশ। আতশবাজির বিরুদ্ধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তাতে তারা হতাশ। প্রায় ২৪ শতাংশ মানুষ এখনো চাইছেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এই সংস্কৃতি সামনেও চলুক। আতশবাজি শিল্পের সঙ্গে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা জড়িয়ে আছে। কারণ সুইস মেইড আতশবাজি গুণেমানে এবং নিরাপত্তায় বেশ উন্নত। আতশবাজির যথেচ্ছ ব্যবহার সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণউপদ্রবে পরিণত হয়েছে। এরমধ্যে জুরিখ অন্যতম একটি শহর। সময়ে অসময়ে, যেকোনো অনুষ্ঠান, এমনকি জন্মদিন উদযাপনেও এখানে হারমামেশা আতশবাজি ব্যবহার করা হয়। হাতের কাছে প্রায় সব বিপণি বিতানেই আতশবাজি পাওয়া যায়। স্বাধীনতার মাসের নামে আগস্টে এবং নববর্ষের নামে পুরো ডিসেম্বর মাসেই আতশবাজি নিয়ে আনন্দ করতে দেখা যায় কিছু মানুষকে। এই সংস্কৃতির অবসান চাইছেন উদ্যোগীরা। ২০১৭ সাল থেকে জুরিখ লেকের জাহাজ এবং লঞ্চগুলো অতি জরুরি বিপদ সংকেতের বাইরে হর্ন বাজাতে পারেন না। হর্ন বাঁজানো ৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ছিল। জাহাজগুলো ঘাটে ভিড়বার সময় এবং ছেড়ে যাবার সময় হর্ন বাজিয়ে জানান দিত। এটাই ছিল নিয়ম। জুরিখ লেকের ধারে বসবাসকারী লোকজন শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা করেন। অনেক দিন ধরে চলা যুক্তিতর্ক শেষে আদালত হর্ন বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। রাতে ঘুমানোর জন্য নিঃশব্দের পরিবেশ নিশ্চিত করতে ইজারল্যান্ডে রাত ১টার পরে কোনো গণপরিবহন চালু থাকে না। এই সময়ে মেইন স্টেশনগুলোর ভেতরে কেউ অবস্থানও করতে পারেন না। স্টেশন থাকে নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। এক সময় শেষ ট্রেন বা বাসে এসে স্টেশনেই রাত কাটাতে পারতেন অনেক যাত্রী। ছিল রেষ্ট রুমের ব্যবস্থাও। এই সুযোগটা অনেকদিন ধরেই আর নেই। স্টেশনে রাতভর কোলাহল করার কোনো সুযোগ নেই। সুইজারল্যান্ডে মধ্যরাতের পর বিমান উঠানামা করতে পারে না। বিমানবন্দরের ভেতরের মার্কেটগুলোও এ সময়ে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ম চলছে। এখন শতশত বছরের পুরোনো আতশবাজির ঐতিহ্যেরও লাগাম টানা হচ্ছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো সুইজারল্যান্ডেও বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও নববর্ষকে ঘিরে আতশবাজির উৎসব করা হয়। তবে দেশটিতে আতশবাজি বিরুদ্ধে এখন জনমত তৈরি হচ্ছে। দেশটির সচেতন নাগরিকরা বলছেন, আতশবাজির সংস্কৃতি শব্দ দূষণ, পরিবেশ দূষণ এবং বন্যপ্রাণিদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। এটি একটি উপদ্রব। এই উপদ্রব বন্ধ হওয়া উচিত।