title
stringlengths
10
148
text
stringlengths
14
34.6k
summary
stringlengths
1
7.08k
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে যাত্রীবাহী ফেরিডুবি, নিহত অন্তত ৫৮
আফ্রিকার দেশ মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়েছেন। ধারণক্ষমতার অতিরিক্তি যাত্রী বহন করা এই ফেরিটিতে প্রায় ৩০০ আরোহী ছিলেন। তাদের প্রায় সবাই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে যাত্রীবাহী ফেরি ডুবে যাওয়ার পর অন্তত ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নৌযানটিতে থাকা ৩০০ জনের বেশিরভাগই গত শুক্রবার একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন এবং পথিমধ্যে এটি ডুবে যায়। বিবিসি বলছে, রাজধানী বাঙ্গুইয়ের কাছে এমপোকো নদীতে ফেরিডুবি ও প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া দুর্ঘটনার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ফেরিডুবির পর লোকেরা নদীর তীরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন বা পানিতে ঝাঁপ দিচ্ছেন। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে নৌকাডুবির জেরে এমন বিপর্যয়ের ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী ফরাসি ভাষার সম্প্রচারকারী আরএফআইকে বলেছেন, ‘এইমাত্র যা ঘটেছে তা ছিল ভয়ঙ্কর। আমি এমন একটি পরিবারকে চিনি যারা এই ট্র্যাজেডিতে সাতজন আত্মীয়কে হারিয়েছে।’ শনিবার স্থানীয় স্টেশন রেডিও গুইরার সাথে কথা বলার সময় নাগরিক সুরক্ষা প্রধান থমাস ডিজিমাসে বলেন, উদ্ধারকারীরা পানি থেকে ‘৫৮ জনের মৃতদেহ’ উদ্ধার করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘পানির নিচে থাকা মোট লোকের সংখ্যা আমরা জানি না।’ অবশ্য ফেরি দুর্ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া বহু মানুষ বাঙ্গুইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
আফ্রিকার দেশ মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ফেরিডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়েছেন। ধারণক্ষমতার অতিরিক্তি যাত্রী বহন করা এই ফেরিটিতে প্রায় ৩০০ আরোহী ছিলেন।
সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত
আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পৃথক দু’টি হামলায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ২৮ জন সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবসারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হোমসে সেনাসদস্যদের বহনকারী একটি বাসকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলা আইএসের বন্দুকধারীরা। এতে ওই বাসের মোট ২২ জন যাত্রীর সবাই নিহত হন। নিহত এই সেনাসদস্যদের সবাই সিরীয় সশস্ত্র বাহিনীর কুদস ব্রিগেডের সদস্য। এই ব্রিগেডটির যোদ্ধারা সবাই জাতিগতভাবে ফিলিস্তিনি এবং সাম্প্রতিক গত কয়েক বছর ধরে দামেস্কের প্রধান মিত্র মস্কো নিয়মিত কুদস ব্রিগেডকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা প্রদান করছে। একই দিন সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর আলবু কামালের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ৬ সিরীয় সেনা কে হত্যা করেছে আইএস বন্দুকধারীরা। সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমে দুই ঘটনার কোনোটিই প্রকাশ করা হয়নি। ২০১৪ সালে আইএসের উত্থান ঘটে সিরিয়া এবং ইরাকে। দুই দেশের বিশাল ভূখ- দখল করে নিজেদের পৃথক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল আন্তর্জাতিক এই ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী। তবে ২০১৫ সালে রুশ বিমানবাহিনী আইএস অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে অভিযান শুরুর পর থেকে এই গোষ্ঠীটির দৌরাত্ম্য কমতে থাকে। ২০১৪ সালে যে পরিমাণ ভূখ- দখলে নিয়েছিল আইএস, বর্তমানে তার মাত্র এক পঞ্চমাংশ কোনো রকমে টিকিয়ে রাখতে পেরেছে এই গোষ্ঠীটি।
আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পৃথক দু’টি হামলায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ২৮ জন সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবসারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
মায়ানমার-থাই সীমান্তে আবারও বিদ্রোহীদের হামলা
আটকে থাকা জান্তা সেনাদের লক্ষ্য করে এবার মায়ানমার-থাই সীমান্তে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে বিদ্রোহীরা। শনিবার সকালে থাইল্যান্ডের সঙ্গে মায়ানমারের পূর্ব সীমান্তে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ভয়ে প্রাণ নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়েছেন ২০০ বেসামরিক। প্রত্যক্ষদর্শী, মিডিয়া এবং থাই সরকারের বরাতে রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে। ১১ এপ্রিল সীমান্তবর্তী প্রধান বাণিজ্য শহর মায়াবতী দখল করে প্রতিরোধ যোদ্ধা এবং জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীরা। ঘটনাটি সামরিক জান্তার জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা ছিল। এই ঘটনার পর থাই-মায়ানমার সীমান্তবর্তী একটি ক্রসিং সেতুতে আশ্রয় নেন প্রায় ২০০ জান্তা সেনা। তাদের লক্ষ্য করেই শনিবারের এই হামলার পরিচালনা করে বিদ্রোহীরা। থাই এবং মায়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের তিন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, শুক্রবার গভীর রাত থেকে একটি কৌশলগত সেতুর কাছে বিস্ফোরণ এবং ভারী মেশিনগানের গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন তারা। এই শব্দ শনিবার ভোর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। বেশ কয়েকটি থাই মিডিয়া জানিয়েছে, তাৎক্ষণিক আশ্রয়ের আশায় সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে গেছেন প্রায় ২০০ মানুষ। থাই সম্প্রচারকারী এনবিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ করা একটি পোস্টে বলেছে, জান্তা সেনাদের লক্ষ্য করে প্রতিরোধ বাহিনী ৪০ মিলিমিটার মেশিনগান ব্যবহার করেছে এবং ড্রোন ব্যবহার করে ২০টি বোমা ফেলেছে। তাদের লক্ষ্যবস্তু হওয়া জান্তা সেনারা ৫ এপ্রিলে থেকে মায়াবতী এবং সেনা পোস্টে সম্মিলিত বিদ্রোহী হামলা থেকে বাচতে সীমান্তবর্তী একটি সেতু ক্রসিংয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে আনুমানিক ২০০ জান্তা সেনা আশ্রয় নিয়েছেন। অবিলম্বে এই তথ্যগুলো যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মায়ানমার জান্তার মুখপাত্রের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও যোগাযোগ করতে পারেনি বার্তা সংস্থাটি। সীমান্তের এই অস্থিরতা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার কথা বলেছেন থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন। প্রয়োজনে তার দেশ মানবিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের কোনও সংঘর্ষ থাইল্যান্ডের আঞ্চলিক অখ-তার ওপর কোন প্রভাব ফেলুক তা আমরা দেখতে চাই না। আমাদের সীমানা এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা প্রস্তুত।’ তবে ওই পোস্টে উদ্বাস্তুদের বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি তিনি।
থাইল্যান্ডে পালাচ্ছে মানুষ
ইরাকে ইরানপন্থি মিলিশিয়া বাহিনীর ঘাঁটিতে বোমা হামলা
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুন কোনোভাবেই নিভছে না। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের তীব্রতার আঁচ থিতিয়ে আসতে না আসতেই এবার হামলা হলো ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর ওপর। পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস নামে ওই প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী ইরানের মদদপুষ্ট এবং প্রধানত শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ে গঠিত। ইরাকের সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স (পিএমএফ) জানিয়েছে, রাজধানী বাগদাদের প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে কালসো সামরিক ঘাঁটিতে তাদের একটি কমান্ড পোস্টে হামলা হয়েছে। পোস্টটিতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে দুইজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন। পিএমএফ জানায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। এক বিবৃতিতে পিএমএফ বলেছে, “বিস্ফোরণে বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।” কালসো সামরিক ঘাঁটির নিকটবর্তী শহর হিলার এক হাসপাতালের দুই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, হামলায় পিএমএফের এক যোদ্ধা নিহত ও আরও ছয়জন আহত হয়েছে। বিস্ফোরণের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পিএমএফ জানিয়েছে। বাহিনীটির দুই নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিমান হামলাটির জন্য কারা দায়ী তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনী কোনো তৎপরতা চালায়নি আর তারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। সামাজিক মাধ্যমে মার্কিন সামরিক বাহিনী বলেছে, “আজ (শুক্রবার) ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালিয়েছে, প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর এমন দাবির বিষয়ে আমরা সজাগ আছি। এসব প্রতিবেদন সত্য নয়। (শুক্রবার) ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালায়নি।” বিস্ফোরণে সামরিক উপকরণ, অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। অনামা এক সামরিক কর্মকর্তা ওই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “অস্ত্র গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে।” শেষ খবর পর্যন্ত কোনো পক্ষ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা তীব্র উত্তেজনার মধ্যে এ হামলার ঘটনাটি ঘটল। শুক্রবার ইরানি ভূখ-ে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। গত শনিবার ইরান ইসরায়েল তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনযোগে হামলা চালানোর কয়েকদিনের মধ্যে এ পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মূলত শিয়া যুবকদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়েছিল। আইএসকে পরাজিত করার পর এসব গোষ্ঠীর সমন্বয়ে পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স (পিএমএফ) গঠন করা হয়। পরে পিএমএফ ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর অংশ হিসেবে স্বীকৃত হয়। পিএমএফের অংশীভূত বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী ইরানপন্থি। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েল আক্রমণ শুরু করার পর এসব গোষ্ঠী ইরাকে মার্কিন বাহিনীর অবস্থানগুলোতে রকেট ও ড্রোন হামলা শুরু করেছিল, কিন্তু ফেব্রুয়ারির প্রথম দিক থেকে হামলা বন্ধ রাখে তারা।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার আগুন কোনোভাবেই নিভছে না। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের তীব্রতার আঁচ থিতিয়ে আসতে না আসতেই এবার হামলা হলো ইরাকের রাষ্ট্রায়ত্ত প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর ওপর। পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস নামে ওই প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী ইরানের মদদপুষ্ট এবং প্রধানত শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ে গঠিত।
মুখোমুখি ইরান-ইসরায়েল, পরীক্ষার মুখে মার্কিন সামরিক কৌশল
ইরানের বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করা যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় সামরিক সাফল্য। এটি ইঙ্গিত দিতে পারে যে, ইরান ও ইসরায়েল ছায়াযুদ্ধ থেকে বেরিয়ে এসে সরাসরি মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার ফলে আগামীতে যা-ই ঘটুক না কেন ওয়াশিংটনের খুব ভালো প্রস্তুতি রয়েছে। কিন্তু বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের ও দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের জন্য প্রস্তুত নয় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। সংকট আরও তীব্র হলে পেন্টাগনকে হয়ত অঞ্চলটিতে নিজেদের সামরিক প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা লাগবে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে দায়িত্ব পালন করা সাবেক মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক উপ-সহকারী প্রতিরক্ষা সচিব মাইকেল মুলরয় বলেছেন, যদি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ হয়, আর আমরা ইসরায়েলিদের সমর্থন দিতে চাই, তাহলে সেটির জন্য প্রয়োজনীয় সব বাহিনী রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। অবশ্য, তেহরান ইঙ্গিত দিয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার জবাব দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাদের তাদের নেই। গত কয়েক দিনের পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। যে যুদ্ধ প্রতিহত করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সহিংসতা উসকে দিয়েছে। অঞ্চলটিতে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ গত কয়েক বছরে অঞ্চলটিতে ধীরে ধীরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি কমে আসছিল। কিন্তু যুদ্ধ জাহাজ ও যুদ্ধবিমানে থাকা নতুন এসব মার্কিন সেনারা আসা-যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন এবং তাদের এই মোতায়েন সাময়িক। ইরান ও ইসরায়েল ছায়াযুদ্ধের আড়াল থেকে প্রকাশ্যে মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সেনা বাড়ানোর কৌশলের ওপর নির্ভরতার মার্কিন কৌশলটি পরীক্ষার মুখে পড়তে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের নেতৃত্ব দেওয়া অবসরপ্রাপ্ত চার তারকা জেনারেল জোসেফ ভোটেল বলেছেন, আমার মনে হয় মার্কিন সেনাবাহিনীর এই পরিস্থিতির অর্থ হলো, অঞ্চলটিতে আমাদের প্রয়োজনীয় ও দীর্ঘমেয়াদে সামরিক সক্ষমতা বজায় রাখার ধারণাটি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। ভোটেল ও অপর সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, ১৩ এপ্রিল ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে মার্কিন সেনাবাহিনী সাফল্যে ভূমিকা রেখেছিল গোয়েন্দা তথ্য। এর ফলে পেন্টাগন আগে থেকেই ইরানি হামলার সময় ও নিশানা সম্পর্কে ধারণা করতে পেরেছিল। ভোটেল বলেছেন, আমি মনে করি বড় উদ্বেগ হলো একটি দীর্ঘ সময় ধরে এমন সাফল্য বজায় রাখার সক্ষমতা। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান সম্ভবত ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ চায় না। শুক্রবারের হামলা নিয়ে ইসরায়েলকে দায়ী করেনি তেহরান। এরপরও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত যতদিন চলমান রয়েছে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোবে তা ধারণা করা মুশকিল। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের বর্তমান প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিল্লা গত মাসে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের বলেছিলেন যে, মধ্যপ্রাচ্যে যে সেনা পাঠিয়েছে পেন্টাগন, তা তিনি বাড়ানোর অনুরোধ করেছেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বলেছেন, চীনকে মোকাবিলার তুলনায় তাদের কাছে মধ্যপ্রাচ্যের অগ্রাধিকার কম। প্রতিনিধি পরিষদের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির কাছে এক লিখিত বক্তব্যে কুরিল্লা বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা উপাদানের বিপজ্জনক ঘাটতি, নির্দিষ্ট বিশেষজ্ঞের অভাব ও ভাষাগত জটিলতা সহিংস চরমপন্থি সংগঠনগুলোকে শনাক্ত ও তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে আমাদের সক্ষমতার দুর্বল করছে। এর ফলে তারা স্বাধীনভাবে ক্রমশ বিচরণ করছে। যদিও কুরিল্লার মন্তব্য দৃশ্যত অনেক বেশি আফগানিস্তানকেন্দ্রিক। তবে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি ইতোমধ্যে মার্কিন কৌশলকে প্রভাবিত করেছে। এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক নৌযানে হুথিদের হামলা শুরুর আগে ইরানপন্থি ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের অস্ত্রের মজুদ সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি। কর্মকর্তারা বলছেন, এর ফলে কয়েক মাস ধরে চলমান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কর্মকর্তারা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে আরও সেনা পাঠানো ও দীর্ঘ মেয়াদে গোয়েন্দা সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ কঠিন প্রমাণিত হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউরোপজুড়ে সেনারা ছড়িয়ে আছে। যারা সেখানে মোতায়েন নেই তারা রক্ষণাবেক্ষণ চক্রের মধ্যে আছেন। আর এশিয়া আমাদের প্রধান মনোযোগ হওয়ার কথা। আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তেজনা বৃদ্ধির পরও এশিয়া বা ইউরোপ থেকে সেনা প্রত্যাহারে মার্কিন সেনাবাহিনী প্রস্তুত কি-না তা স্পষ্ট নয়। গত বছরের অক্টোবরের আগে শেষ বার মধ্যপ্রাচ্যে সেনা সংখ্যা বাড়িয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে। ওই সময় মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের এক শীর্ষ জেনারেলকে হত্যা এবং পরবর্তীতে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে তেহরানের ধারাবাহিক হামলায় সৃষ্ট উত্তেজনায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম কর্মকর্তা বলেছেন, ২০১৯ ও ২০২০ সালে মধ্যপ্রাচ্যে সেনা সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হয়েছিল কারণ বর্তমানের মতো ইউরোপে মার্কিন সেনা ও সরঞ্জাম এত বেশি ছিল না। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলার পর নতুন বাস্তবতা দেখা দিয়েছে। সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মুলরয় বলেছেন, চীনকে প্রথম অগ্রাধিকার থেকে বাদ না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করা। তিনি বলেন, বর্তমান হুমকি পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমাদের সেনা মোতায়েন করা প্রয়োজন। বর্তমান প্রবণতা হলো অবশ্যই মধ্যপ্রাচ্যে দেশের সঙ্গে দেশের একটি সম্ভাব্য বৃহত্তর সংঘাত।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে - বিবিসি
কাতার ছাড়তে চায় হামাস!
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের জেষ্ঠ্য নেতারা তাদের ঘাঁটি কাতার থেকে অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করতে চান। ইতোমধ্যে তারা মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন। এই দু’দেশের মধ্যে একটির নাম ওমান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সারির দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করেছে এই তথ্য। মূলত গাজায় শান্তি স্থাপনে ব্যর্থতা ও তার জেরে কাতারের সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও একসময়ের উষ্ণ সম্পর্কে ভাঁটার টান আসার কারণেই হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কাতারের অন্তত ২ জন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এ সম্পর্কিত তথ্য দিয়েছেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত সংলাপ কার্যত থেমে আছে এবং শিগগিরই আবার তা শুরু হবে— এমন সম্ভাবনা এই মুহূর্তে খুবই কম। কাতার শুরু থেকে এই যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে ভূমিকা রেখে আছে এবং যুদ্ধ থামানোর জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যা যা কারা প্রয়োজন্, তার সবই করেছে।’ ‘ফলে যুদ্ধের যে পর্যায় বর্তমানে চলছে, তা কাতার এবং হামাস— উভয়ের জন্য অস্বস্তিকর এবং উভয়পক্ষের মধ্যেই এক ধরনের অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে।’ আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘শান্তি সংলাপের বর্তমান যে অবস্থা, তা খুবই হতাশাজনক। তবে আমরা এটুকু বলতে পারি যে কাতার তার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।’ প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষপাতি। পাশাপাশি এই গোষ্ঠীটি ইসরায়েলকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় এবং দলীয় আদর্শ অনুযায়ী, ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নীতিতেও’ তাদের আস্থা নেই। ২০০৬ সালের নির্বাচনে জিতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। সেই সঙ্গে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে আসা জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) এবং জোটের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ফাতাহকে উপত্যকা থেকে বিতাড়িত করে এই গোষ্ঠীটি। তবে দীর্ঘদিন ধরেই এই গোষ্ঠীর প্রথম সারির নেতারা কাতারে এবং মধ্যমসারির অনেক নেতা লেবাননে অবস্থান করছেন। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনীর টানা প্রায় ৬ মসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ৩৩ হাজার ফিলিস্তিনি। নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক লোকজন এবং নারী-শিশু। অন্যদিকে, হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এছাড়া ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরেও নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা। এই যুদ্ধের শুরু থেকেই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় রয়েছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র— এই তিন দেশ। এই তিন দেশের তৎপরতার কারণে গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অস্থায়ী বিরতিতে সম্মত হয়েছিল হামাস এবং ইসরায়েল। সেই বিরতির সময় জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১০৮ জনকে মুক্তিও দিয়েছিল হামাস। আশা করা হচ্ছিল যে এই বিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে; কিন্তু ১ তারিখ থেকে দুই পক্ষের মধ্যে ফের তুমুল সংঘাত শুরু হওয়া এবং উভয়পক্ষের অনমনীয় অবস্থানের কারণে তা কার্যত দুরাশায় পরিণত হয়। পরে রমজানের আগে ছয় সপ্তাহের একটি খসড়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠিয়েছিল মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। হামাস সেই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে বেশ কিছু নতুন শর্ত তাতে যোগ করেছিল; কিন্তু হামাসের সেসব শর্ত ‘বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ বলে বাতিল করে দিয়েছিল ইসরায়েল। কার্যত তারপর থেকেই গাজায় যুদ্ধবিরতির সংলাপে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, যা এখনও কাটেনি। সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, টাইমস অব ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের জেষ্ঠ্য নেতারা তাদের ঘাঁটি কাতার থেকে অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করতে চান। ইতোমধ্যে তারা মধ্যপ্রাচ্যের দু’টি দেশের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন। এই দু’দেশের মধ্যে একটির নাম ওমান।
বিমান হামলায় ৮ জন নিহতের পর রাশিয়ার বোম্বার নামানোর দাবি কিইভের
ইউক্রেইনের নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে বিমান হামলায় দু’টি শিশুসহ আটজন নিহত হওয়ার পর অভিযানে অংশ নেওয়া রাশিয়ার একটি বোমারু বিমান গুলি করে নামানোর দাবি করেছে কিইভ। কিইভ জানিয়েছে, শনিবার ভোররাতে নিপ্রো শহর ও এর আশপাশে বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, এতে বহু আবাসিক ভবন ও নগরীর প্রধান রেলস্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অঞ্চলটির গভর্নর সের্হি লিসাক জানান, নিপ্রোতে তিনজন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের মৃতদেহ আংশিক ধ্বংস হওয়া একটি পাঁচতলা ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করা হয়েছে। নিকটবর্তী নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় আরও পাঁচজন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরী ও ৮ বছর বয়সী এক বালক রয়েছে বলে ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে দূরপাল্লার বিমান হামলা জোরদার করেছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেইনের সেনা অবস্থানের পেছনে চালানো এসব হামলার মাধ্যমে কিইভের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে রাশিয়া, একইসঙ্গে পূর্ব দিক থেকে রুশ বাহিনীগুলো ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। রাশিয়া বেসামরিকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, জ্বালানি অবকাঠামো একটি বৈধ লক্ষ্যস্থল। কিন্তু তাদের এসব হামলায় কয়েকশ বেসামরিক নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ কিইভের; জানিয়েছে রয়টার্স। কিইভের শীর্ষ সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাতের হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ফিরে যাওয়ার পথে ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূর থেকে রাশিয়ার একটি টিইউ-২২এম৩ কৌশলগত বোমারু বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে ইউক্রেইনীয় বাহিনী। পুরো যুদ্ধে এই প্রথম রাশিয়ার একটি টিইউ-২২এম৩ কৌশলগত বোমারু বিমান গুলি করে নামানোর দাবি করল ইউক্রেইন। ইউক্রেইনের মূল গোয়েন্দা অধিদপ্তর জিইউআর এর প্রধান কিরিলো বুদানভ বিবিসি-ইউক্রেইনকে বলেছেন, “আমি শুধু বলেতে পারি ওই বিমানটিতে ৩০৮ কিলোমিটার দূর থেকে আঘাত হানা হয়েছে, অনেক দূর থেকে।” তিনি জানান, এর আগে চলতি বছরের প্রথমদিকে তারা রাশিয়ার এ-৫০ আকাশযান যেভাবে ভূপাতিত করেছিলেন এটিও একইভাবে করা হয়েছে। ইউক্রেইনের গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোভিয়েত আমলের দীর্ঘ পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পদ্ধতি এস-২০০ এর একটি পরিবর্তিত সংস্করণ ব্যবহার করে ওই বিমানটিতে আঘাত হানা হয়। সত্যাসত্য যাচাই করা যায়নি গণমাধ্যমে আসা এমন ভিডিও ফুটেজগুলোতে লেজের দিকে আগুন লাগা একটি যুদ্ধবিমানকে পাক খেতে খেতে নিচের দিকে পড়তে দেখা গেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, তাদের দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় স্তাভ্রোপল এলাকায় একটি বোমারু বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। তারা জানিয়েছে, বিমানটি অভিযান শেষে ফিরে আসার সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার যে অঞ্চলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটি ইউক্রেইনের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে। বোমারু বিমানটিতে থাকা রাশিয়ার বিমানবাহিনীর চার ক্রু সদস্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিমানটি থেকে বের হয়ে প্যারাসুটযোগে নামনে। তাদের দুইজনকে উদ্ধার করা হয়েছে, একজন মারা গেছেন ও অপরজনকে উদ্ধারে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে স্তাভ্রোপল অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন।
ইউক্রেইনের নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে বিমান হামলায় দু’টি শিশুসহ আটজন নিহত হওয়ার পর অভিযানে অংশ নেওয়া রাশিয়ার একটি বোমারু বিমান গুলি করে নামানোর দাবি করেছে কিইভ।
আদালতের ভেতরে ট্রাম্প, বাইরে নিজ দেহে আগুন দিলেন যুবক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ম্যানহাটানের যে আদালতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাশ-মানি মামলার বিচার চলছে, সেই আদালতের বাইরের চত্বরে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর ১ টার পরে ঘটেছে এই ঘটনা। নিজ দেহে অগ্নিসংযোগকারী ওই যুবকের নাম ম্যাক্সওয়েল আজারেল্লো। ফ্লোরিডার বাসিন্দা আজারেল্লো এক সপ্তাহ আগে নিউ ইয়র্কে এসেছিলেন। নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে তার পূর্ব অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই। তবে আজারেল্লো যে নিউইয়র্কে এসেছেন, তা ফ্লোরিডায় বসবাসরত তার পরিবারের সদস্যরার জানতেন না। মার্কিন পর্ন অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলের সঙ্গে একসময় ঘনিষ্টতা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরুর সময় এ ইস্যুতে মুখ বন্ধ রাখতে স্টর্মি ড্যানিয়েলকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ প্রদান করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাটিই পরিচিতি পেয়েছে ‘হাশ-মানি’ মামলা হিসেবে। শুক্রবার দুপুরে ম্যানহাটানের ওই আদালতে যখন হাশ-মানি মামলার শুনানি চলছিল, সে সময় এজলাসে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প। ওই ঘটনা ঘটার পর শুনানি স্থগিত করা হয়, ট্রাম্পও আদালত ত্যাগ করেন। তবে আজারেল্লোর এই ঘটনায় আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ঝামেলা সৃষ্টি হয়নি। কয়েক ঘণ্টা স্থগিত থাকার পর বিকেলের দিকে ফের মামলার শুনানি কার্যক্রম শুরু করেন আদালত। প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক পুলিশের প্রধান জেফ্রি ম্যাডরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে একটি ব্যাগ এবং রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডামূলক পুস্তিকা-প্ল্যাকার্ড নিয়ে আদালত এবং সংলগ্ন পার্ক এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন ম্যাক্সওয়েল আজারেল্লো। তারপর দুপুর ১ টার পর দিকে আদালত চত্বরের বাইরে ব্যাগ থেকে তরল দাহ্য পদার্থের বোতল বের করে নিজ গায়ে ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ম্যাডরে জানান, ট্রাম্পের বিচার চলার কারণে আদালতে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ছিল। কর্তব্যরত পুলিশরা ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে অগ্নি নির্বাপক দিয়ে আগুন নিভিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেন। বর্তমানে ম্যানহাটানের একটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটি চিকিৎসাধীন আছেন আজারেল্লো। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার ব্যাগ থেকে তরল দাহ্য পদার্থ এবং কিছু পুস্তিকা-প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব পুস্তিকার সবই ষড়যন্ত্র তত্ত্বনির্ভর এবং রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডামূলক এসব পুস্তিকা-প্রচারপত্রে মূল বক্তব্য— ট্রাম্প এবং বাইডেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করেছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ম্যাক্সওয়েল আজারেল্লোর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। আগুন দেওয়ার আগে অন্য কারো সঙ্গে বা সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে কোনো কথা বলেননি আজারেল্লো। ফলে ঠিক কী কারণে তিনি এভাবে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি। সূত্র : বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ম্যানহাটানের যে আদালতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাশ-মানি মামলার বিচার চলছে, সেই আদালতের বাইরের চত্বরে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর ১ টার পরে ঘটেছে এই ঘটনা।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো
নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার পথ আটকে গেল ফিলিস্তিনের। আজ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ পাওয়ার প্রস্তাবের ওপর হওয়া ভোটাভুটিতে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যকার সরাসরি আলোচনার মধ্য দিয়ে; জাতিসংঘের মাধ্যমে নয়। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে বৃহস্পতিবার যে খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোট হয়েছে, তাতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার জন্য ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কাছে সুপারিশ করা হয়েছিল। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের ১২টি সদস্য দেশ। যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড ভোটদানে বিরত ছিল। আর ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তা পরিষদে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার পথ আটকে গেল ফিলিস্তিনের।
হামলার পর ইসরায়েলকে যে হুমকি দিল ইরান
শুক্রবার ড্রোন হামলার পর ইসরায়েলকে হুমকি দিয়ে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) বলেছে, যদি দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে কোনো হামলা চালানো হয়— তাহলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে। পারমাণবিক স্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইআরজিসি টিমের প্রধান জেনারেল আহমেদ হাকতালাব এক বার্তায় বলেছেন, ‘যদি জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠী আমাদের পরমাণু স্থাপনা ও কেন্দ্রগুলোতে কোনো প্রকার ক্ষতি সাধনের পদক্ষেপ নেয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমরা তার প্রতিক্রিয়া জানাব এবং সেই প্রতিক্রিয়া হবে ভয়াবহ।’ ইসরায়েল যদি সত্যিই পরমাণু স্থাপনায় হামলা করে, তাহলে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন জেনারেল হাকতালাব। ‘ইসরায়েলের ভুয়া জায়নবাদী গোষ্ঠী যদি ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য পারমাণবিক স্থাপনা ও প্রকল্প কার্যালয়ে হামলা করে, তাহলে ইরানও তার পারমাণবিক ডকট্রিন ও নীতি সংশোধন করবে এবং পূর্বঘোষিত বিবেচন্য বিষয়গুলো থেকে সরে আসবে।’ গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমিও ছিলেন। হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল— তা পরিষ্কার। গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন— এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান ও আঞ্চলিক মিত্রদের সহায়তায় বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে ইরান। আকস্মিক এই হামলার পর ইরানকে পাল্টা জবাব দেওয় হবে বলে ঘোষণা করেছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও দ্ব্যর্থহীনভাবে আইডিএফের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। তারপর আজ শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় দুপুর সাড়ে ১২ টার (বাংলাদেশের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৬ টা) দিকে ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম নগরী ইসফাহানে ড্রোন হামলা চালায় আইডিএফ। তবে হামলায় ব্যবহৃত ৩টি ড্রোনই ধ্বংস করে দিয়েছে ইরানের আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা। রাজধানী তেহরান থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ইসফাহানে ইরানি সেনাবাহিনীর বেশ বড় একটি বিমান ঘাঁটি ও বেশ কয়েকটি পরমাণু স্থাপনা রয়েছে। উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে। সূত্র : তেহরান টাইমস
শুক্রবার ড্রোন হামলার পর ইসরায়েলকে হুমকি দিয়ে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) বলেছে, যদি দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে কোনো হামলা চালানো হয়— তাহলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার কোনো ক্ষতি হয়নি : আইএইএ
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইরানে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে দেশটির ইসফাহানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখানে একটি বড় বিমান ঘাঁটির পাশাপাশি রয়েছে পারমাণবিক স্থাপনাও। তবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। এছাড়া ইসফাহানের কাছে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনাটি ‘স্বাভাবিক ভাবে’ কাজ করছে বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি। শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বলেছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো ক্ষতি হয়নি বলে তারা নিশ্চিত করতে পারে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ‘সবার কাছ থেকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলো কখনোই সামরিক সংঘাতের লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।’ এদিকে ইসফাহানের কাছে পারমাণবিক স্থাপনাটি ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে’ কাজ করছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় টিভি। ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন নিউজ নেটওয়ার্ক প্রেস টিভি জানিয়েছে, ইসফাহান শহরের কাছে অবস্থিত ওই পারমাণবিক স্থাপনায় ‘বিস্ফোরণ বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো চিহ্ন’ নেই। প্রেস টিভির এই প্রতিবেদনে পারমাণবিক স্থাপনাটি চিহ্নিত করা হয়নি, তবে ইরানের প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রটি ইসফাহানের উত্তরে নাতাঞ্জ শহরে অবস্থিত। এই শহরটি আবার ইসফাহান প্রদেশের মধ্যে অবস্থিত। এর আগে ইরানের আধা-সরকারি ফারস নিউজ এজেন্সি জানায়, শুক্রবার ভোরে ইরানের ইসফাহান শহরের উত্তর-পশ্চিমে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ফারস জানিয়েছে, শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। তবে বিস্ফোরণের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি এই নিউজ এজেন্সি। ইরানের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এই ইসফাহান প্রদেশে একটি বড় বিমান ঘাঁটি, বড় ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কমপ্লেক্স এবং বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা রয়েছে। এছাড়া ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা ‘নিরাপদে’ রয়েছে বলে আগেই জানায় ইরানের আরেক রাষ্ট্রীয় টিভি ও সম্প্রচারকারী আইআরআইবি। ‘নির্ভরযোগ্য সূত্র’কে উদ্ধৃত করে সংস্থাটি বলেছে, ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনা ‘সম্পূর্ণ নিরাপদ’। অন্যদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির সংবাদদাতা বলেছেন, ইসফাহান শহরও ‘নিরাপদ’ রয়েছে। নাতাঞ্জ পরমাণু কেন্দ্রটি এর আগেও অবশ্য নাশকতামূলক হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। ২০২১ সালে একই অবকাঠামোতে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত’ বিস্ফোরণের খবরও রিপোর্ট করা হয়েছিল।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইরানে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে দেশটির ইসফাহানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখানে একটি বড় বিমান ঘাঁটির পাশাপাশি রয়েছে পারমাণবিক স্থাপনাও।
ইরানে বড় শহরগুলোতে বিমান চলাচল বন্ধ, সিরিয়া-ইরাকে ব্যাপক বিস্ফোরণ
ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। এরপরই ইরানের বড় শহরগুলোর পাশাপাশি কয়েকটি এলাকায় বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আকাশে উড্ডয়নরত ফ্লাইটও। এছাড়া সিরিয়ায় সামরিক অবকাঠামোগুলোর পাশাপাশি ইরাকেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদসাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা। বিবিসি বলছে, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত করেছে বলে দুই মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। ইরানের সেই হামলার জবাব দেওয়ার ঘোষণা ইসরায়েল আগেই দিয়েছিল এবং এরপর থেকে ইরান উচ্চ সতর্কতায় ছিল। ইরানের আধা-সরকারি ফারস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, শুক্রবার ভোরে ইরানের ইসফাহান শহরের উত্তর-পশ্চিমে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ফারস জানিয়েছে, শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। তবে বিস্ফোরণের সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি এই নিউজ এজেন্সি। ইসফাহান প্রদেশে একটি বড় বিমান ঘাঁটি, বড় ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কমপ্লেক্স এবং বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা রয়েছে। রয়টার্স নিউজ এজেন্সি বলছে, ইসফাহান, শিরাক্স এবং তেহরানসহ ইরানের প্রধান শহরগুলোতে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করা হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়া রিপোর্ট করছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এয়ারলাইন্স এমিরেটস এবং ফ্লাই দুবাই শুক্রবার ভোরে পশ্চিম ইরানের ওপর তাদের ফ্লাইটগুলোকে ডাইভার্ট করা শুরু করেছে। যদিও এই পদক্ষেপের কোনও কারণ ব্যাখ্যা করেনি এয়ারলাইন্স দুটি। এদিকে সিরিয়ায় সামরিক অবকাঠামোগুলোতেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, সিরিয়ায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে। আইআরএনএ আরও বলেছে, ‘আদ্রা’ ও ‘আল-থালা’ সামরিক বিমানবন্দর এবং ‘আদ্রা’ শহর এবং দক্ষিণ সিরিয়ার ‘কারফা’ গ্রামের মধ্যে অবস্থিত একটি রাডার ব্যাটালিয়নেও হামলা হয়েছে। এদিকে, ইরাকের বাবেলের আল-ইমাম এলাকায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে আল জাজিরা।
ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। এরপরই ইরানের বড় শহরগুলোর পাশাপাশি কয়েকটি এলাকায় বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কাল ভারতে লোকসভার প্রথম দফার ভোট
রাত পোহালেই (১৯ এপ্রিল শুক্রবার) সকালে দিল্লিবাড়ি দখলের প্রথমদফা লোকসভা নির্বাচন শুরু হবে। ভারতের ১৮তম নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটের জন্য প্রচারাভিযান আজ শেষ হয়েছে। প্রথম দফায় কাল ২১টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১০২টি আসনে ভোট নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিনটি আসন- কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার। এছাড়া তামিলনাড়ুর ৩৯টি, রাজস্থানের ১২টি, উত্তরপ্রদেশের ৮টি, মধ্যপ্রদেশের ৬টি, মহারাষ্ট্র, অসম ও উত্তরাখন্ডের ৫ টি করে, বিহারের ৪টি, অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়ের দুটি করে, ছত্তিশগড়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা, আন্দামান ও নিকোবর , জম্মু-কাশ্মীর, লাক্ষাদ্বীপ এবং পুদুচেরির একটি করে আসনে কাল ভোটগ্রহণ হবে। কাল শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে মোট ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ভোটকেন্দ্র ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে ১৮ লাখেরও বেশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হবে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। প্রথম দফার ভোটে ১৬.৬৩ কোটিরও বেশি ভোটার ১৩৪ জন নারী প্রার্থীসহ মোট ১৬২৫ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। ভোটারদের মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ পুরুষ, ৮ কোটি ২৩ লাখ নারী এবং ১১ হাজার ৩৭১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ লাখ ৬৭ হাজার ভোটার প্রথমবার ভোট দেবে। প্রথম দফায় ভোটের ময়দানে বিশিষ্ট বিজেপি প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নিতিন গড়করি, সর্বানন্দ সোনোয়াল, কিরেন রিজিউ, জিতেন্দ্র সিং এবং কে আন্নামালাই, ইউপি মন্ত্রী জিতিন প্রসাদা এবং তামিলনাড়ু বিজেপির সভাপতি৷ কংগ্রেসের হেভিওয়েটদের মধ্যে রয়েছেন লোকসভার উপনেতা গৌরব গগৈ এবং মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ছেলে নকুল নাথ। দলটি আসামের জোড়হাট সংসদীয় আসন থেকে গগৈ এবং মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া থেকে নকুলকে প্রার্থী করেছে। ভোটের ময়দানে অন্যান্য বিশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঞ্জি। তিনি বিহারের গয়া থেকে হিন্দুস্তানি আওয়ামী মোর্চা-সেকুলার (এইচএএম-এস) প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসিআই) বলেছে যে নির্বাচনের ‘শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে’ পরিচালনার জন্য বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভোট প্রক্রিয়া নিরাপদ করতে ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সমস্ত ভোটকেন্দ্রে মাইক্রো পর্যবেক্ষক মোতায়েনের সাথে ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট কেন্দ্রে ওয়েবকাস্টিং করা হবে। ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের যাবতীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। এই জন্য মোট ৪,৬২৭টি ফ্লাইং স্কোয়াড, ৫,২০৮টি পরিসংখ্যান নজরদারি দল, ২,০২৮টি ভিডিও নজরদারি দল এবং ১২৫৫টি ভিডিও দেখার দল ইতোমধ্যে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে করে ভোটারদের কোনপ্রকার প্ররোচিত করার বিষয়টি ‘কঠোরভাবে এবং দ্রুততার সাথে মোকাবিলা’ করা যায়।
রাত পোহালেই (১৯ এপ্রিল শুক্রবার) সকালে দিল্লিবাড়ি দখলের প্রথমদফা লোকসভা নির্বাচন শুরু হবে। ভারতের ১৮তম নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটের জন্য প্রচারাভিযান আজ শেষ হয়েছে।
বিরোধিতা করায় চাকরি গেল ২৮ কর্মীর
ইসরায়েল সরকারের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন টেক জায়ান্ট গুগলের কিছু সংখ্যক কর্মী। এমনকি স্বাক্ষরিত সেই চুক্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভও করেছিলেন তারা। আর এই কারণেই গুগলের ২৮ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। ইসরায়েলি সংস্থার সঙ্গে চুক্তির প্রতিবাদ জানানোয় ২৮ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে অ্যালফাবেট ইনক-এর গুগল। ইসরায়েলকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ক্লাউড সার্ভিস পরিষেবার জন্য অ্যামাজন-এর সঙ্গে যৌথভাবে ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই চুক্তির বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন গুগলের ওই ২৮ কর্মী। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর, সিয়াটেল এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সানিভেলে যৌথভাবে ‘নো টেক ফর অ্যাপারথেড অর্গানাইজেশন’ নাম দিয়ে এই বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়। ওইদিন বিক্ষুব্ধরা প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে এই চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি পালনসহ বিক্ষোভ করেন এবং পুরো বিক্ষোভের সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ওই ঘটনার পর বিক্ষোভে জড়িত ৯ জনকে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনার পরেই বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের গুগলের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়। এমনকি যারা আন্দোলনের সমর্থক, কিন্তু সরাসরি অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেননি তাদের কাছেও নোটিশ যায় সংস্থার এমপ্লয়ী রিলেশনশ গ্রুপের পক্ষ থেকে। তাদের সকলকেই ছুটিতে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ব্লুমবার্গ দেখেছে এমন একটি ইমেইলে গুগল ভুক্তভোগী ওই কর্মীদের বলেছে, তারা ‘এই বিষয়টি যতটা সম্ভব গোপনীয় রাখছে, শুধুমাত্র জানার প্রয়োজনের ভিত্তিতে তথ্য প্রকাশ করছে’। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় এই কর্মীরা জানতে পারেন সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি
পানির নিচে দুবাই বিমানবন্দর, ব্যাপক বিশৃঙ্খলা
রেকর্ড বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে মরুভূমির দেশটির রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন এলাকা। এমনকি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও পানিতে তলিয়ে গেছে। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফ্লাইট চলাচল। ফ্লাইট বাতিল-বিলম্ব ও যাত্রীদের নানা বিড়ম্বনার মধ্যে দুবাই বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিস্থিতি সম্পর্কে যাত্রীদের সতর্ক করেছে এবং কিছু এলাকা পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে সেদিক এড়িয়ে চলতে বলেছে। আরো উত্তরে, বন্যার পানিতে গাড়ি ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এতে করে গত রবিবার থেকে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১৯ জনে পৌঁছেছে। বুধবার ফ্লাইট অ্যাওয়্যার-এর ডেটা অনুসারে, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৩০০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো কয়েক শ ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। বিমানবন্দরটি গত বছর ৮০ মিলিয়নেরও বেশি যাত্রীদের পরিষেবা দিয়েছে এবং যাত্রী পরিষেবার দিক থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সারা বিশ্বের যাত্রীদের জন্য ব্যস্ততম এয়ার হাব হিসেবে পরিচিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দরটি। এ ছাড়া এয়ারলাইনস থেকে নিশ্চিতকরণ ছাড়া ১ নম্বর টার্মিনালে যাওয়া এবং বিমানবন্দরে ভ্রমণ এড়ানোর জন্য যাত্রীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস এমিরেটস বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জনপ্রিয় এই পর্যটন শহর থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য চেক-ইন স্থগিত করেছে। এই সংস্থাটির সদর দপ্তরও দুবাইয়ে। কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, আরো বজ্রপাত, ভারি বৃষ্টি এবং শক্তিশালী বাতাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অনেক নিচু এলাকা এখনও পানির নিচে রয়েছে।
রেকর্ড বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে মরুভূমির দেশটির রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন এলাকা। এমনকি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও পানিতে তলিয়ে গেছে। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফ্লাইট চলাচল। ফ্লাইট বাতিল-বিলম্ব ও যাত্রীদের নানা বিড়ম্বনার মধ্যে দুবাই বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
হিজবুল্লাহর হামলায় ১৪ ইসরায়েলি সেনা আহত
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে চালানো এই হামলায় ইসরায়েলের ১৪ সেনা আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসাবে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে একটি সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে লেবাননের হিজবুল্লাহ বুধবার জানিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, এই হামলায় তাদের ১৪ সৈন্য আহত হয়েছে। আহত সেনাদের মধ্যে ছয় জনের অবস্থা গুরুতর। জবাবে লেবানন থেকে আরব আল আরামশে বেদুইন গ্রামের দিকে গোলাবর্ষণের বেশ কয়েকটি উৎস-সহ অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল এবং ড্রোন উৎক্ষেপণ শনাক্ত করার পরে ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি ইয়েনেট নিউজ সাইট জানিয়েছে, ইসরায়েলে ওই সৈন্যরা গ্রামের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ছিল। এর আগে গত মঙ্গলবার দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর ফিল্ড কমান্ডারসহ তিনজন নিহত হন বলে লেবাননের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে। পরে বুধবার, ইসরায়েলের বিমান বাহিনী জানায়, তাদের যুদ্ধবিমান পূর্ব লেবাননের বালবেকের উত্তরে হিজবুল্লাহর অবকাঠামোতে আঘাত করেছে। যদিও লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চলেই ইসরায়েল এতোদিন তার বেশিরভাগ হামলা চালিয়ে এসেছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। এর জেরে লেবানন সীমান্তেও হামলার মুখে পড়েছে ইহুদিবাদী এই দেশটি। লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে আসছে।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে চালানো এই হামলায় ইসরায়েলের ১৪ সেনা আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ইউক্রেনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭
ইউক্রেনের ঐতিহাসিক শহর চেরনিগিভে তিনটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এতে ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সময় বুধবার এই হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা মিত্রদের কাছ থেকে আরো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে, এর মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটে। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের প্রকাশ করা কিছু ছবিতে দেখা যায়, হামলায় ঘটনাস্থলে রক্ত ছড়িয়ে রয়েছে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান করছে এবং আহতদের স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাচ্ছে। চেরনিগিভের বাসিন্দা ওলগা সামোইলেঙ্কো এএফপিকে বলেছেন, প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণ হওয়ার পরে সুরক্ষার জন্য তার সন্তানদের সঙ্গে তাদের অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের করিডরে ঢুকেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশীরা আগে থেকেই সেখানে ছিল। আমরা সবাই মেঝেতে পড়ে যাওয়ার জন্য চিৎকার করতে লাগলাম। তখন আরো দুটি বিস্ফোরণ হয়। তারপরে আমরা পার্কিং লটে ছুটে যাই।’ দিনের বেলায় সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে পৌঁছেছে কিন্তু যখন জরুরি পরিষেবাগুলো বলেছে ৬০ জন। মেয়র ওলেকজান্ডার লোমাকো বলেছেন, হামলায় বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা বলেছেন, বেশ কয়েকটি যানবাহন এবং চিকিৎসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার কারণে একটি আটতলা হোটেল ভবন ধসে পড়ে। উদ্ধারকর্মীরা একটি ক্রেন ব্যবহার করে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করছিলেন বলে ঘটনাস্থলে অবস্থানরত এএফপি সাংবাদিকরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া আশপাশের অ্যাপার্টমেন্ট, একটি বিউটি সেলুন এবং দোকানের জানালা হামলায় উড়ে যায়। চেরনিহিভের ভারপ্রাপ্ত মেয়র অলেকজান্ডার লোমাকো বলেন, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার পর শহরের একটি ব্যস্ততম অংশে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। হামলার পর লোকজন বাস থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে যেতে ছুটতে থাকে। আহতদের চিকিৎসায় জরুরি পরিষেবা এবং চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এদিকে হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ইউক্রেন যদি পর্যাপ্ত বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পেত এবং যদি রাশিয়ার সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিহত করতে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো দৃঢ় পদক্ষেপ নিত তাহলে এ হামলার ঘটনা ঘটত না।
ইউক্রেনের ঐতিহাসিক শহর চেরনিগিভে তিনটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এতে ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঈদ উদযাপনে এক সপ্তাহে সৌদিবাসীর ব্যয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা
মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্ব জাঁকজমকের সঙ্গেই এই উৎসব পালন করে থাকে। আনন্দ উদ্যাপনে অর্থ ব্যয়েও কসুর করেন না অধিকাংশ মানুষ। এবারের ঈদে সৌদি আরবের বাসিন্দারাও দুই হাত খুলে খরচ করেছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ঈদের এক সপ্তাহে সৌদি আরবের মুদ্রায় ১ হাজার ১৩০ কোটি রিয়াল খরচ করেছেন, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের আগে থেকে শুরু করে ঈদের পর পর্যন্ত সব মিলিয়ে সাত দিনে ১১ দশমিক ৩ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল খরচ করেছেন সৌদি জনগণ। সৌদি আরবের বাসিন্দারা ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছেন বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও কফি হাউসে। সৌদি আরবের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এসব স্থানে মোট ব্যয় হয়েছে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল, যা মোট খরচের ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনায় ব্যয় করেছেন ১৩০ কোটি সৌদি রিয়াল। এর বাইরে ১১০ কোটি ব্যয় করেছেন, কাপড়, জুতাসহ বিভিন্ন প্রসাধনী কিনতে। এ ছাড়া, বিভিন্ন ধরনের গয়না কিনতে সৌদি আরবের নাগরিকেরা ব্যয় করেছেন প্রায় ৩৭৬ মিলিয়ন। বিনোদনের জন্য ব্যয় করেছে ৩১১ দশমিক ৪ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল, টেলিকম সেবায় ব্যয় করেছেন ৭৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল এবং ৩১৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল ব্যয় করেছেন পরিবহনে। অঞ্চলভেদে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছেন রিয়াদের বাসিন্দারা। অঞ্চলটির বাসিন্দারা মোট ৩২০ কোটি সৌদি রিয়াল ব্যয় করেছেন। এর পরই আছে জেদ্দাবাসী। তাঁরা ব্যয় করেছেন ১৬০ কোটি সৌদি রিয়াল। পবিত্র দুই নগরী মক্কা ও মদিনার মানুষ ব্যয় করেছেন যথাক্রমে ৬৩৪ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল এবং ৫৬০ দশমিক ৯ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল।
মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। সৌদি আরবসহ মুসলিম বিশ্ব জাঁকজমকের সঙ্গেই এই উৎসব পালন করে থাকে। আনন্দ উদ্যাপনে অর্থ ব্যয়েও কসুর করেন না অধিকাংশ মানুষ।
‘ইউক্রেন হারলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে’
রাশিয়ার সাথে সংঘাতে ইউক্রেন হেরে গেলে ‌‌‘‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’’ শুরু হয়ে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল। রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা একটি বিদেশি সহায়তা বিল পাসের আহ্বান জানিয়ে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি। ইউক্রেনের এই প্রধানমন্ত্রী বিলটি পাসের বিষয়ে আশাপ্রকাশ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা কিয়েভের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজটির অনুমোদন দেবেন। আগামী শনিবার মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে এই বিলের ওপর ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরায়েলের পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক সহায়তার বিষয়টিও ওই বিলে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী শ্যামিহাল যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহায়তার বিষয়ে বলেন, ‘‘এই অর্থ আমাদের গতকালই দরকার ছিল, আজ কিংবা আগামীকাল নয়।’’ তিনি বলেন, আমরা যদি এটা না পাই... তাহলে ইউক্রেনের পতন ঘটবে। আর তখন বিশ্ব, বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে...। আর এটা ঘটলে পুরো বিশ্বকে নিরাপত্তার একটি নতুন ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে হবে।’’ ‘‘অথবা বিশ্বজুড়ে অনেক সংঘাত দেখা দেবে। এই ধরনের অনেক যুদ্ধ বাধবে। দিনের শেষে এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে গড়াবে।’’ রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে সম্ভাব্য পরাজয় নিয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এবারই প্রথম যে এভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, বিষয়টি তেমন নয়। কারণ এর আগে গত বছর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, সংঘাতে রাশিয়া যদি জিতে যায়, তাহলে তারা পরবর্তীতে পোল্যান্ডে আক্রমণ করবে; যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করবে। তবে পশ্চিমাদের এই ধরনের যুদ্ধভীতির দাবিকে নিয়ে উপহাস করেছেন ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা। গত মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়া পূর্ব ইউরোপে একদিন হামলা চালাতে পারে পশ্চিমাদের এমন আশঙ্কাকে ‘‘পুরোপুরি বাজে কথা’’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ভেতরে কোনও দেশে রাশিয়া কখনই হামলা চালায়নি। ন্যাটোর সামষ্টিক প্রতিরক্ষা চুক্তি অনুযায়ী, কোনও সদস্য দেশের ওপর হামলা হলে তা জোটের সব সদস্যের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হয়। বুধবারের সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শ্যামিহালকে রিপাবলিকান হাউসের পররাষ্ট্রবিষয়ক চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককালের নিজ দলের সদস্যরা রাশিয়ার প্রচারণায় ‘‘সংক্রমিত’’ হচ্ছেন’, সাম্প্রতিক এমন এক দাবির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বোঝা উচিত যে, মিথ্যা তথ্য এবং অপপ্রচার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক মানুষের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক লোকজনের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে ইউক্রেনেও ছড়ানো হচ্ছে।’’
সতর্কবার্তা ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর
নতুন অনলাইন ভিসা পদ্ধতি চালু করেছে শ্রীলঙ্কা, দেওয়া হয়েছে নতুন লিঙ্ক
নতুন অনলাইন ভিসা সিস্টেম চালু করেছে শ্রীলঙ্কা। নতুন এই পদ্ধতিতে ভিসা আবেদন করতে হবে এই লিঙ্কে: www.srilankaevisa.lk। ১৭ এপ্রিল থেকে চালু করা হলো এই পদ্ধতি। দেশটির সরকারি তথ্য বিভাগের মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতদিন ধরে যে ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশনের মাধ্যমে ভিসা নিতে হতো, তার পরিবর্তে এই লিঙ্কেই এখন আবেদন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে। নতুন ভিসার পদ্ধতি, কত টাকা দেওয়া লাবে, আর কী কী শর্তাবলী আছে, কতদিনের ভিসা এসবও গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এই লিঙ্ক, www.documents.gov.lk, থেকে গেজেটটি ডাউনলোড করা যাবে।
নতুন অনলাইন ভিসা সিস্টেম চালু করেছে শ্রীলঙ্কা।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব ভারতের সোনার বাজারে
ভারতে হু হু করে বাড়ছে সোনার দাম। এখন ২৪ ক্যারেট মানের ১০ গ্রাম স্বর্ণের দাম পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ছাড়া ৭৩ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনার দাম ৮০ হাজার টাকা ছুঁতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। যুদ্ধের আবহে অশান্ত পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাতের প্রভাবে একাধিক জিনিসের দাম হু হু করে বাড়তে পারে, সেই তালিকায় রয়েছে সোনাও। এদিকে সোনার পাশাপাশি লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে রুপার দামও। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২৪ সালের মাত্র সাড়ে তিন মাসেই সোনার দাম ১৪.৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি ১০ গ্রাম সোনার দাম ছিল ৬৩৯২০ টাকা। যেখানে গত ১২ এপ্রিল সোনার দাম ৭৩৩৫০ টাকার রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছে। স্বর্ণের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির জেরে হলদে ধাতুর রেট এখন আকাশছোঁয়া। মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (এমসিএক্স) গত সোমবার সোনার দাম প্রায় ০.৪০ শতাংশ বেড়ে যায়। এছাড়াও, ১.১৭ শতাংশ বেড়ে রুপার দাম প্রতি কেজিতে হয়েছে ৮৩৭৮০ টাকা। বৈশ্বিক প্রভাবে সোনার দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, শুধু ২০২৪ সালেই বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ থেকে প্রায় ২০ শতাংশের রিটার্ন পেতে পারেন। তবে ঝুঁকি থেকেই যায়। উল্লেখ্য, ভারতে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের নিরিখে সোনা বিনিয়োগকারীদের ১৮ শতাংশের রিটার্ন দিতে পারে।
ভারতে হু হু করে বাড়ছে সোনার দাম। এখন ২৪ ক্যারেট মানের ১০ গ্রাম স্বর্ণের দাম পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ছাড়া ৭৩ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনার দাম ৮০ হাজার টাকা ছুঁতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ১৭
ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে নিহত হয়েছেন ১৭ জন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ শহরে চালানো রুশ এই হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের চেরনিহিভ শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে জরুরি সেবা জানিয়েছে। একইসঙ্গে এই হামলায় তিন শিশুসহ ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি আট তলা ভবনে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে বলে শহরের মেয়র জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরের কেন্দ্রস্থলে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। বিবিসি বলছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের হামলার খবর প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর এ হামলা চালানো হয়। সেই হামলার বিস্তারিত এখনও নিশ্চিত করা হয়নি, যদিও স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো উত্তর ক্রিমিয়ার ঝানকোয় এয়ারফিল্ডে আগুনের ভিডিও শেয়ার করেছে। চেরনিহিভের ভারপ্রাপ্ত মেয়র অলেক্সান্ডার লোমাকো বলেছেন, একটি ভবনে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত করেছে এবং বেশ কয়েকটি তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিয়েভের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, হামলায় আরও চারটি উচ্চ ভবন, একটি হাসপাতাল, কয়েক ডজন গাড়ি এবং একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি পরিষেবাগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং কর্মকর্তারা জনসাধারণকে রক্ত ​​দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসার আবেদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ান এই হামলাটি ঘটত না ‘যদি ইউক্রেন পর্যাপ্ত আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পেত’। এসময় তিনি আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য পশ্চিমা মিত্রদের কাছে তার আবেদনের পুনরাবৃত্তি করেন। চেরনিহিভ রাশিয়ান সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দূরে অবস্থিত। ২০২২ আক্রমণের শুরুতে শহর থেকে দূরে নয় এমন চেরনিহিভ অঞ্চলের কিছু অংশ কয়েক সপ্তাহ ধরে দখল করে রেখেছিল রাশিয়া। সেসময় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শহরটি অবরুদ্ধ ছিল। যুদ্ধে শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শত শত বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে মেয়র জানিয়েছেন। এছাড়া ২০২৩ সালের আগস্টে শহরের একটি থিয়েটারও রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়। এতে সেসময় সাতজন নিহত হয়েছিলেন।
ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে নিহত হয়েছেন ১৭ জন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ শহরে চালানো রুশ এই হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
হিজবুল্লাহ বা ইরান কেউই বর্তমানে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় : ইইউ
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ নিতে কয়েকদিন আগে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলে এটিই ছিল ইরানের সরাসরি প্রথম কোনও হামলা। যদিও কনস্যুলেটে হামলা চালানোর কথা ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে এই হামলার পর এখন ইসরায়েলও প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজছে। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে বড়সড় যুদ্ধের সূচনা হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে হিজবুল্লাহ বা ইরান কেউই বর্তমানে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় বলে মন্তব্য করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এমনকি আঞ্চলিক সংঘাত সৃষ্টি হলে তা ‘কারো স্বার্থেই ভালো হবে না’ বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ বা ইরান কেউই বর্তমানে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান মঙ্গলবার ফরাসি দৈনিক লে মন্ডে’কে বলেছেন। সপ্তাহান্তে ইসরায়েলে ইরানের হামলা সম্পর্কে জোসেপ বোরেল বলেন, ‘আমাদের বেশ কয়েক দিন আগে সতর্ক করা হয়েছিল।’ জোসেপ বোরেল আরও বলেছেন, ‘আক্রমণের পর, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন- তারা শুধুমাত্র সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, তিনি আমাকে বুঝিয়েছেন- এটি ছিল কেবল নিয়ন্ত্রিত প্রতিক্রিয়া। আপনি যখন ক্ষতি করতে চান, তখন আপনি এমন কোনও ড্রোন পাঠাবেন না যেটি আঘাত হানতে ছয় ঘণ্টা সময় নেয়।’ তার ভাষায়, ‘বর্তমানে, হিজবুল্লাহ বা ইরান কেউই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয়।’ ইইউ পররাষ্ট্র নীতির এই প্রধান জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক লক্ষ্য হলো উত্তেজনা এড়ানো। তিনি উল্লেখ করেছেন, আঞ্চলিক সংঘাত ‘কারো স্বার্থে, বিশেষ করে গাজার স্বার্থে ভালো কিছু নয়’। দ্বন্দ্ব-সমাধানে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা জোসেপ বোরেল জোর দিয়ে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতি এবং ঐক্য ছাড়া অন্য কোনও ক্ষমতা নেই, যদিও জার্মানিসহ কিছু সদস্য দেশের ইসরায়েলের সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘আমেরিকানরা চাইলে অন্য উপায় ব্যবহার করতে পারে, বিশেষ করে ইসরায়েলে তাদের অস্ত্র হস্তান্তরের বিষয়ে। তারা অতীতে অপরিবর্তনীয় নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আজ, আমি মনে করি, তাদের যে সুবিধা আছে তা তারা ব্যবহার করতে চায় না।’ তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত সম্পর্কে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ‘স্পষ্ট এবং গভীর বিভাজন’ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং উল্লেখ করেছেন, তাদের মধ্যে কিছু দেশ - যেমন ফ্রান্স - অবস্থান পরিবর্তন করেছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে শুরু করেছে। বোরেল জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি সর্বদা পারস্পরিক সম্মতিসূচক অবস্থান উপস্থাপনের চেষ্টা করি: যদি ইউক্রেনের অবরুদ্ধ জনসংখ্যার জন্য পানি, বিদ্যুৎ, খাদ্য বন্ধ করা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি হয়, তাহলে গাজাতেও তা একই।’ তার ভাষায়, ‘যদি আমরা এই সার্বজনীনতাবাদী অবস্থান গ্রহণ না করি, তাহলে আমাদেরকে দ্বিচারিতা বা ভণ্ডামির জন্য অভিযুক্ত করা হবে।’ এর আগে সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারপরও উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে। মূলত গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইসরায়েলে রাতারাতি ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তেহরান। এর বেশিরভাগই ইরানের অভ্যন্তর থেকে নিক্ষেপ করা হয়। তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রবাহিনী।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ নিতে কয়েকদিন আগে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলে এটিই ছিল ইরানের সরাসরি প্রথম কোনও হামলা।
সময় এখন মাথা ঠান্ডা রাখার, নেতানিয়াহুকে বললেন সুনাক
কয়েক দিন আগেই ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চালানো এই হামলার পর ইসরায়েলও প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজছে। ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাপ্রধান। এমন অবস্থায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে মাথা ঠান্ডা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। বুধবার (১৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহান্তে ইরানের হামলার পর ‘মাথা ঠান্ডা রেখে জয় করতে’ মঙ্গলবার বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এএফপি বলছে, মঙ্গলবার বিকেলে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ফোন কলে প্রধানমন্ত্রী সুনাক নেতানিয়াহুকে চলমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সতর্ক করেন। ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘তিনি (সুনাক) জোর দিয়ে বলেছেন, উত্তেজনার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি কারও স্বার্থে ভালো কিছু নয় এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তাহীনতাকে আরও গভীরে নিয়ে যাবে। জয়ের জন্য মাথা ঠান্ডা রাখার সময় এখন।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, সুনাক ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য যুক্তরাজ্যের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন’। প্রধানমন্ত্রী সুনাক (নেতানিয়াহুকে) বলেছেন- ইরান গুরুতরভাবে ভুল হিসেব-নিকেশ করেছে এবং বিশ্ব মঞ্চে এই দেশটি ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ইরানের হামলার জেরে বিশ্বমঞ্চে জি-৭ কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ায় সমন্বয় করছে বলেও জানিয়েছে সুনাকের কার্যালয়। এদিকে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে এবং সেখানে আপাতভাবে যুদ্ধবিরতির কোনও সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনকলের রিডআউটে বলা হয়েছে, সুনাক কলে বলেছেন- তিনি গাজায় ‘গুরুতর মানবিক সংকট নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল যত দ্রুত সম্ভব নতুন ত্রাণ রুট উন্মুক্ত করার পাশাপাশি অত্যাবশ্যকীয় সহায়তা সরবরাহ করাসহ গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য ব্যাপক পদক্ষেপ ও জোরালো পরিবর্তন দেখতে চায়।’ ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- সপ্তাহান্তে হামাস একটি চুক্তি আটকে দিয়েছে এবং এটি গভীরভাবে হতাশাজনক। এই চুক্তি ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে এবং বন্দিদের নিরাপদ মুক্তি নিশ্চিত করতে পারত’।
কয়েক দিন আগেই ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চালানো এই হামলার পর ইসরায়েলও প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজছে। ইরানের হামলার জবাব দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি সেনাপ্রধান।
ইউক্রেইন যুদ্ধে রুশ সেনা নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে : বিবিসি
ইউক্রেইনে যুদ্ধ করতে এসে এরই মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ করে রাশিয়া। তখন থেকে বিবিসি রাশান, স্বাধীন মিডিয়া গ্রুপ মিডিয়াজোন এবং স্বেচ্ছাসেবকরা ইউক্রেইনে রুশ সেনাদের নিহত হওয়ার সংখ্যা গণনা করে আসছে। বিবিসির খবরে বলা হয়, দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে প্রথম বছরের তুলনায় দ্বিতীয় বছরে প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছে। রাশিয়া জুড়ে কবরস্থানগুলোতে নতুন নতুন কবর অনেক সেনাদের নাম খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে বলেও জানায় বিবিসি। এছাড়া, আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন, পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মত উন্মুক্ত উৎস থেকে পাওয়া তথ্য সমন্বয় করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে ২৭ হাজার ৩০০’র বেশি রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছে। আর এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, অনেক প্রাণের বিনিময়ে রাশিয়া ইউক্রেইনের কিছু অঞ্চলের দখল পেয়েছে। বিবিসি জানায়, রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেইনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এ রুশপন্থি যেসব মিলিশিয়া যোদ্ধারা ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত হয়েছে তাদের তারা এই তালিকায় রাখেনি। না হলে রাশিয়ার পক্ষের সেনা নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতো। রাশিয়া সরকার অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে এর চেয়ে অনেক কম সেনা নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে। একইভাবে ইউক্রেইনও যুদ্ধে তাদের সেনা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করেনি। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, যুদ্ধের দুই বছরে তাদের ৩১ হাজার সেনা প্রাণ হারিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বিবিসি বলেছে, সেনা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি।
ইউক্রেইনে যুদ্ধ করতে এসে এরই মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী ইউক্রেইনে আক্রমণ করে রাশিয়া।
ভাষার শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সুদৃঢ় করে: উপাচার্য ড. মশিউর রহমান
ভাষার শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সুদৃঢ় করে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘বাঙালির জীবনে এই ভাষার প্রভাব সর্বব্যাপী। দুই বাংলার মানুষের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্কের নতুন মাত্রার প্রধান অনুষঙ্গ ভাষা এবং সংস্কৃতি।’ আজ (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ প্রাক্তনী সংসদ ও বঙ্গ সাহিত্য সমিতির সহযোগিতায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে অমর একুশের অনুষ্ঠানমালার ‘সংযোগ ২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, ‘ভারত থেকে যারা এখানে একুশের অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করতে এসেছেন তাদের মধ্যে ঋদ্ধতা রয়েছে। সেটি হয়তোবা ভাষার সূত্রে গাথা। তারও ভেতরে রয়েছে আমাদের অভিন্ন সংস্কৃতির শক্তি। ভারত-বাংলাদেশের যে সম্প্রীতি সেটি ঐতিহাসিক এবং প্রাণবন্ত। বাংলাদেশের যেকোনো সংকটকালে এই সম্পর্ক আরও বেশি সুদৃঢ় হয়। যখন বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির আন্দোলন হয়েছে তখনও ভারত আমাদের কোটি কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে পাশে থেকেছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ যেকোনো উন্নয়নে সেই ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত রয়েছে।’ উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘ইতিহাসের অনুসন্ধানে ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধন সারাজীবনের। অনেকের বক্তব্যে বেরিয়ে এসেছে ভাষা কখনো কখনো বড় ভাষার ও বড় অর্থনীতির চাপে পড়ে। কিন্তু যেই ভাষা তার নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং শক্তিকে বাড়াতে পারে। যেই ভাষায় একজন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত, শরৎ থাকে সেই ভাষায় আঘাত হানলে তার প্রতিঘাত সৃষ্টি হয়। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যের শক্তি, নজরুলের কাব্যের শক্তি, ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের শক্তিই হচ্ছে আমাদের অনুপ্রেরণা। যত বড় আঘাতই আসুক না কেন সেই অনুপ্রেরণা ভাষার শক্তিকে পুনর্বার ব্যক্ত করবে। বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা যে মর্যাদা পেয়েছে, যে স্বীকৃতি পেয়েছে- আমরা ভাগ্যবান এই ভাষার শক্তি দিয়েই বিশ্বে আমাদের অর্থনৈতিক শক্তিকে নেতৃত্ব পর্যায়ে নিতে সক্ষম হব।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, ময়মনসিংহের ত্রিশালের কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। এছাড়া কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের উপাধ্যক্ষ জোসেফ কুলাণদাই, সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস রেক্টর ফাদার জোসেফ রাজ, বিজ্ঞান অনুষের ডিন ফাদার আরক এন্টনি, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফাদার অনীল গোমস, বাংলাদেশের সেন্ট জেভিয়ার্স প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ফাদার মিল্টন কোস্টা, ফাদার প্রবাস রোজারিও, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনী সংসদের সদস্য দীপন দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ভাষার শক্তি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সুদৃঢ় করে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
আট বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন নির্বাচন
দীর্ঘ আট বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিভিন্ন অনুষদের ডিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।আগামী ১৫ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। ‌ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ২৬(৫) ধারা এবং নির্বাচন সংক্রান্ত সংবিধি, অধ্যাদেশ ও বিধিসমূহের সংশ্লিষ্ট ধারা/উপধারা অনুযায়ী ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সাময়িক ভোটার তালিকা ২২ এপ্রিল প্রকাশ করা হবে। ২৪ এপ্রিল দুপুর ২টা পর্যন্ত সাময়িক ভোটার তালিকার বিষয়ে আপত্তি দাখিল করা যাবে এবং ২৫ এপ্রিল চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী ২৯ এপ্রিল দুপুর ২টা পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসারের কাছে অনুমোদিত ফরমে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ৩০ এপ্রিল, বৈধ প্রার্থীগণের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২ মে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ৬ মে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এছাড়া আগামী ৭ মে প্রার্থীগণের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ১৫ মে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রসঙ্গত, জাবির কলা ও মানবিকী, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক, সমাজবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, বিজনেস স্টাডিজ ও আইন অনুষদসহ মোট ছয়টি অনুষদ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১০ মে ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট অনুসারে নির্বাচিত ডিনের মেয়াদ দুই বছর। নির্বাচিত ডিনদের দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন।
দীর্ঘ আট বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বিভিন্ন অনুষদের ডিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
জাবি উপাচার্যের সঙ্গে ইন্ডিয়া মাইক্রোবায়োলজিস্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্টের সৌজন্য সাক্ষাৎ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলমের সাথে আজ মাইক্রোবায়োলজিস্ট সোসাইটি, ইন্ডিয়া প্রেসিডেন্ট ড. এ. এম. দেশমুখ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ রবিবার সকাল নয়টায় উপাচার্য অফিসে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে দু’দেশের মধ্যে যৌথ গবেষণা ও শিক্ষক-ছাত্র বিনিময়ের বিষয়ে মতবিনিময় করেন। সাক্ষাৎকালে জলবায়ু পরিবর্তন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স, অপুষ্টি, দারিদ্র দূরীকরণে টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার বিষয়ে আলোচনা হয়। দুই দেশের মধ্যে উক্ত সমস্যাগুলোর সমাধানে মাইক্রোবায়োলজি, বায়োটেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে যৌথ গবেষণা এবং পারস্পরিক শিক্ষা গবেষণার সহযোগিতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মাননীয় উপাচার্যের অনুরোধে ড. দেশমুখ এই ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, যৌথ প্রোগ্রামের বাংলাদেশ সমন্বয়ক ও বিভাগীয় শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সোহায়েল, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হাফিজুর রহমান এবং প্রভাষক সিয়াম আহমেদ ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলমের সাথে আজ মাইক্রোবায়োলজিস্ট সোসাইটি, ইন্ডিয়া প্রেসিডেন্ট ড. এ. এম. দেশমুখ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
তীব্র গরমে ঢাবির শতভাগ ক্লাস অনলাইনে
সারা দেশে তীব্র তাপদাহের (হিট ওয়েভ) কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরীক্ষা যথারীতি চলমান থাকবে। শনিবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলমান তীব্র তাপদাহের কারণে ঢাবিতে ১০ শতাংশ অনলাইন ক্লাসের পরিবর্তে শতভাগ অনলাইন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরীক্ষাসমূহ যথারীতি চলমান থাকবে৷ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীদের সাদা বা হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরিধান করা, যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা, বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সারা দেশে তীব্র তাপদাহের (হিট ওয়েভ) কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরীক্ষা যথারীতি চলমান থাকবে। শনিবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তীব্র গরমে অনলাইন ক্লাস চায় জবি শিক্ষার্থীরা
চৈত্র শেষে বৈশাখ আসার সাথে সাথে দেশে শুরু হয়েছে তীব্র তাপদাহ। এতে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এসময়ে অনলাইন ক্লাসের দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা না থাকায় পুরান ঢাকা ঘিঞ্জি এলাকায় তীব্র যানজটে বাসে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। ছোট আয়তনের ক্যাম্পাসে এতো মানুষের চলাচল, বাড়তি গরমে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্লাস পরীক্ষা একেবারে বন্ধ না করে, অনলাইন ক্লাস চালু রাখা হোক। পাশাপাশি পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। নাহলে নতুন করে সেশনজট হবে। ইতিমধ্যে করোনার কারণে বেয় কিছু বিভাগে ৩ মাস থেকে ৬ মাসের সেশনজট রয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইউনুস হাসান বলেন, এই তীব্র গরমে বাসে যাতায়াত করে নিয়মিত ক্লাসে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ছে। যানজট ও অসহ্য গরমে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করলে আমাদের জন্য ভালো হয়। একই শিক্ষাবর্ষের লোক প্রশাসন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন তীব্র গরমে বাসা থেকে জ্যাম ঠেলে ক্যাম্পাসে এসে ক্লাস করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এই তীব্র দাবদাহে অনলাইন ক্লাস চালু করার দাবি জানাচ্ছি। তবে পরীক্ষা চালু রাখা যেতে পারে। নইলে সেশনজট হয়ে যাবে। করোনার কারণে এমিনতেই এক বছরের একটা জট আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াতকারী একজন শিক্ষার্থী আশরাফ হোসেন বলেন, আসহ্য গরমে বাসে ধাক্কা- ধাক্কি করে ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। একদিকে গরম আর অন্যদিকে তীব্র যানজট। পুরান ঢাকায় মেসে থাকা শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, এর আগে কখনো এরকম গরম পড়তে দেখিনি। তীব্র গরমে বাসা থেকেই বের হওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল বেলা ১১টায় এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সকল অনুষদের ডিনদের সাথে মিটিং রয়েছে। মিটিং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সকল স্কুল-কলেজ বন্ধের ঘোষণাটা দেখলাম। তবে আমরা চাইলেই দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত তো নিতে পারি না। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, অনলাইনে ক্লাস নেয়া সম্ভব হলেও কিছু পরীক্ষা আছে। তাই সেসব বিষয় মাথায় রেখে সিদ্ধান্তটা নিতে হবে। আগামীকাল ১১টায় ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি সভাও ডেকেছি। সভা থেকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।’ উল্লেখ্য, দেশজুড়ে চলা তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সব স্কুল-কলেজ সাতদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এছাড়া,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
চৈত্র শেষে বৈশাখ আসার সাথে সাথে দেশে শুরু হয়েছে তীব্র তাপদাহ। এতে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এসময়ে অনলাইন ক্লাসের দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে অনড়
ঈদের ছুটির পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলেও ‘ছাত্র রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তা না পেলে তারা ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন না। অন্যদিকে অ্যাকাডেমিক অচলাবস্থা ও আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের টানা ১৩ দিনের ছুটি শেষে বুধবার বুয়েট ক্যাম্পাস খোলা হয়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, কিন্তু তারা তা বর্জন করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেন ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ পরীক্ষা থাকায় এ দুদিন কোনো ব্যাচের ক্লাস ছিল না। শুক্রবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার ২০ ব্যাচের একটি পরীক্ষা রয়েছে, আন্দোলনের অংশ হিসেবে সেটিও তারা বর্জন করবেন। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে আপিল করা হলে এবং বর্জন করা পরীক্ষার নতুন তারিখ ঠিক করা হলে শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবেন। বুয়েট প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, শনিবার বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভা রয়েছে। সভায় পরীক্ষার সময়সূচি পুনঃনির্ধারণ করা হতে পারে, যাতে শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেন। জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, “হাই কোর্টের অর্ডার আমরা এখনও হাতে পাইনি। পেলে আমরা লিগ্যাল অ্যাডভাইজারের সঙ্গে কথা বলে আপিলের সিদ্ধান্ত নেব। “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তারা পরীক্ষা দিতে রাজি হয়েছে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পুনরায় পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।” ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদকে রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি। গত ২৮ মার্চ গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ একদল নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৯ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ছয় দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং ‘দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ’ ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের অপসারণ। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর হলের সিট বাতিল করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, রাব্বীই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের সমাগম ঘটিয়েছিলেন। পরে রাব্বীর রিট আবেদনে হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। তার আলাদা আবেদনে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞাও স্থগিত করে উচ্চ আদালত। তাতে প্রকৌশল শিক্ষার এই বিদ্যাপীঠে ছাত্র রাজনীতি ফেরার পথ খোলে। এদিকে ক্যাম্পাস খোলার আগে গত মঙ্গলবার বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই পদে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরকৌশলের অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিককে। তার পরও শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেননি।
ঈদের ছুটির পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলেও ‘ছাত্র রাজনীতিমুক্ত’ ক্যাম্পাসের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
‘তোকে সিটে উঠতে না দিলে প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষ আসবে’- আবাসিক ছাত্রকে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে আবাসিক শিক্ষার্থীর সিট দখল ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ হবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ইমরান ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী এবং শহিদ হবিবুর রহমান হলের ১৪৬ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র। অভিযুক্ত একই হল ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মিনহাজ ইসলাম ও আইন বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব ফিরোজ। ভুক্তভোগী ইমরানের অভিযোগ, গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে আমি হল প্রশাসনের বরাদ্দকৃত ১৪৬ নম্বর কক্ষে ওঠি। রাতে খাওয়ার জন্য বাহিরে গেলে ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে আমার বিছানাপত্র সড়িয়ে দেন এবং সেখানে সমাজকর্ম ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মাহফুজুলকে তুলে দেন। রাত হলে এসে এ অবস্থা দেখে প্রাধ্যক্ষে জানাই। তিনি জানান, তুমি ছাত্রলীগকে জানাও প্রক্টর স্যারের সুপারিশে প্রাধ্যাক্ষ এই সিট তোমাকে বরাদ্দ দিয়েছে। এই দুই দিন তো ছুটি। রবিবার এসে এটা দেখব। তুমি এখান থেকে বের হবা না। ফলে রাত গভীর হওয়ায় ওভাবেই রুমে থাকি। ১৯ এপ্রিল সকালে হলের ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ তার কক্ষে ডাকেন এবং সিট ছাড়ার জন্য হুমকি-ধামকি দেন। তিনি বলেন, তোকে যদি সিটে ওঠতে না দেই তাহলে প্রক্টর বা প্রাধ্যক্ষ আসবে? এখান থেকে যাওয়ার পর বিছানাপত্র নিয়ে চলে যাবি। তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে। অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজ ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষার্থী ওই সিটেই থাকবে। তাছাড়া ছাত্রলীগের কেউ যেন কোন শিক্ষার্থীকে হলকক্ষে না ডাকে সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক করব। হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে আরেক নেতা আহসান হাবিব ফিরোজ জানান, প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েই ওই সিটে আমি একজনকে উঠিয়েছি। এ ব্যাপারে হলের প্রাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি অবগত হয়েছি। বিষয়টি আমি দেখছি। ওই শিক্ষার্থী ওই সিটেই থাকবে। আবাসিক ছাত্রকে হুমকি বিষয়ে কি ব্যবস্থা জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ জানান, আমি কথা বলেছি, আর সমস্যা হবে না। পরবর্তীতে যদি একই ঘটনা ঘটলে তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজের বিরুদ্ধে হলে সিট দখল, আবাসিক ছাত্রকে হুমকি-ধমকি ও ডাইনিং-ক্যান্টিনে খেয়ে টাকা পরিশোধ না করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের দখলকৃত সিটে ওঠা মাহফুজুল হলের আবাসিক ছাত্র নয়। এদিকে হলগুলোতে ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডে কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবেই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে অ্যাখ্যা দিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস এসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদি সজিব বলেন, হলে ছাত্রলীগের সিট দখল নতুন কিছু নয়। এমন ঘটনা ঘটিয়ে ক্ষমতা নামক বটবৃক্ষের নিচে আশ্রয় নিচ্ছে অভিযুক্তরা। একটি ঘটনাকে প্রশ্রয় দেওয়ার মানে এমন অসংখ্য ঘটনার জন্ম নিতে পরোক্ষভাবে সাহায্য করা। তাই অবিলম্বে এদের লাগাম টেনে ধরে হলে যথাযথ সিট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নিকট দাবি জানান তিনি। বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আলিফ বলেন, হলগুলোতে প্রতিনিয়ত ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব ও নির্যাতনের ঘটনায় হল প্রশাসনের নিরব ভূমিকা ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করার বিষয়টি প্রকাশ পায়। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের নিয়মানুযায়ী সেশন টু সেশন আবাসিকতা দেবার নিয়ম থাকলেও হল প্রশাসন নিয়মিত আবাসিকতা দিতে আগ্রহী নয়। এ থেকে স্পষ্ট হয়, হল প্রশাসন নিয়মিত আবাসিকতা দিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের হলে উঠাতে আগ্রহী নয়। তারা উল্টো ছাত্রলীগকে সিট বাণিজ্য ও দখলদারিত্বে সুযোগ করে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিষয়গুলো আমরাও দেখছি। একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য চেষ্টা করছি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে আবাসিক শিক্ষার্থীর সিট দখল ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ হবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।
‘যৌন কেলেংকারিতে’ অভিযুক্ত শিক্ষককে রেজিস্ট্রার নিয়োগ, শিক্ষক সমিতির পাল্টাপাল্টি বিবৃতি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আইনুল ইসলামকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) থেকে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ১৬ই এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ‘বিতর্কিত শিক্ষককে জবির রেজিস্ট্রার নিয়োগ’ খবর প্রকাশের পর শিক্ষক সমিতি থেকে পাল্টাপাল্টি দুইটি বিবৃতি দেওয়া হয়। ১৭ই এপ্রিল (বুধবার) শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একটি বিবৃতি দেন। আর পাল্টা বিবৃতি দেন সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ১৬ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মোঃ আইনুল ইসলামকে নিয়ে খবরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ এ ধরনের সর্বৈব মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ খবর প্রকাশ শুধু অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম নয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহত সুনামকে কালিমালিপ্ত করার অপপ্রয়াস বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মনে করে।’ আর সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ১৭ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নামে প্রচারিত প্রতিবাদপত্রের সাথে শিক্ষক সমিতির ‘সকল সদস্য একমত নন’ এবং প্রতিবাদপত্রের সাথে ‘আমরা সংশ্লিষ্ট নই’। পাল্টাপাল্টি বিবৃতি নিয়ে জবিশিসের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: জাকির হোসেন বলেন, ‘জবিশিসের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয় আমরা সমিতির প্যাডে জনকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ লিপি দিব। এক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরে অনীহা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে একই প্যাডে আবার বিবৃতি প্রকাশ করা কতটা স্বাভাবিক, উদ্দেশ্যে প্রনোদিত কিনা সেটি আমার প্রশ্ন? এভাবে দুইবার শিক্ষক সমিতির প্যাডে বিবৃতি দেওয়া বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।” সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাসরিক হাসান বলেন, ‘যাকে নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তার কাছ থেকে আবেদন জানানোর কথা বলা হয়েছিলো। এছাড়াও এর আগে যেসব শিক্ষক নিয়ে নিউজ হয়েছে তাদের জন্যও বিবৃতি দিতে বলা হয়। কিন্তু শিক্ষক সমিতির প্যাডে আমাকে বাদ দিয়ে নিজেদের মতো করে বিবৃতি দেওয়ায় আমাকে অপমান করা হয়েছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. আইনুল ইসলামকে ‘যৌন কেলেঙ্কারির’ ঘটনায় ২০১১ সালের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহের ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষিকার সাথে কথিত ‘যৌন কেলেঙ্কারির’ ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ পদ থেকে আইনুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়। আইনুল ইসলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য। তিনি আইসিবি সিকিউরিটির পরিচালকও।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আইনুল ইসলামকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) থেকে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
জাবিতে বাংলা বর্ষবরণ ও মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় “নব আনন্দে জাগো আজি নবরবিকিরণে” প্রতিপাদ্য ধারণ করে বর্ষবরণ ও পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ উদযাপন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল সোয়া আটটায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম তাঁর বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর সকাল পৌনে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবনের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে শেষ হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হওয়ার পর উপাচার্য তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। উপাচার্যের বক্তব্যের পর “এসো হে বৈশাখ এসো এসো” গানসহ বাংলা নববর্ষের গান পরিবেশন করা হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধনকালে উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলা নববর্ষ সকলের জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক। বাংলা নববর্ষ উৎসব বাঙালি জাতিসত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। উপাচার্য বিগত বছরের গ্লানি-ব্যর্থতা পেছনে ফেলে নব শক্তি ও উদ্যোমে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রচলনের জন্য বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শোভাযাত্রায় অন্যান্যের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো: মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, মহিলা ক্লাবের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জাবি স্কুল ও কলেজের শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় “নব আনন্দে জাগো আজি নবরবিকিরণে” প্রতিপাদ্য ধারণ করে বর্ষবরণ ও পহেলা বৈশাখ ১৪৩১ উদযাপন করেছে।
জবিতে বৈশাখ রাঙায় চারুকলার শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক কাজ, বাজেট বৃদ্ধির দাবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে রঙিন মাত্রা যুক্ত করে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক কাজকর্ম। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের নান্দনিক পেইন্টিং ও নানারকম শিল্পকর্ম তৈরী সহ উদ্ভাবনী বিভিন্ন কাজ-কর্মে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয় বৈশাখকে ঘিরে। তবে এক্ষেত্রে এখনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থায়ন সম্ভব হয়না। যার ফলে সার্বিক আয়োজন বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয় শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের। অর্থের পরিমাণ বাড়ালে আরও সুন্দর কাজ বিশ্ববিদ্যালয়কে উপহার দিতে পারবেন দাবি শিক্ষার্থীদের। জানা গেছে, পহেলা বৈশাখের কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের বর্ণিল কর্মযজ্ঞ। বর্ষবরণের মূল আয়োজন থাকে চারুকলা অনুষদকে ঘিরেই। তাই সবার প্রথমে শুরু হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেয়াল চিত্র অঙ্কন। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীর্ণশীর্ণ দেয়ালও হয়ে উঠে রঙিন। ২০২২ সালে বৈশাখকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউটিলিটি ভবন ও চতুর্থ গেইটের দেয়াল জুড়ে গাজীর পট,রিকশা-ঘোড়া নিয়ে ছুটে চলার দৃশ্য ও চারুকলা বিভাগ সংশ্লিষ্ট নানান চিত্র অঙ্কন করে সাড়া ফেলেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। বিগত বছরের মত এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেইট ও দ্বিতীয় গেইট জুড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন রিকশা চিত্র এবং ফুল, মাছ, বাঘ,ময়ূর, নৌকা,বিল্ডিং সহ নানা চিত্র। যাতে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে গেইটগুলো। গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে চিত্রকর্ম অঙ্কনের কাজ ২ এপ্রিল শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিনের কর্ম প্রচেষ্টায় সবচেয়ে বড় আকৃতির কৃত্রিম রিক্সাটি রঙতুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। পাশাপাশি বর্ষবরণ উপলক্ষে একটি কুমিরের অবয়ব তৈরী করেছেন তারা। প্রতিবছর বৈশাখকে ঘিরে স্বল্প সময়েই অসংখ্য মুখোশ,ফ্যাস্টুন,মৌমাছি,পায়রা, প্যাঁচা সহ বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র তৈরী করেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী এক চমৎকার মেলবন্ধন তৈরী হয় এক্ষেত্রে। চারুকলা অনুষদের শিক্ষকরা এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে গাইডলাইন দিয়ে থাকেন শিক্ষার্থীদের। কাজের ক্ষেত্রে যেকোনো সমস্যা সমাধান কিংবা আনুষঙ্গিক প্রয়োজনে শিক্ষকরা সাড়া দেন। এবার চারুকলা বিভাগের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বৈশাখকে রাঙিয়ে তোলার জন্য সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন। গত কয়েকদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। বিভাগগুলোতে চলছিল আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র তৈরী করার কর্মযজ্ঞ। নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় দুইটি স্ট্রাকচার তৈরীতে দিন-রাত কাজ করে গেছেন তারা। দেয়ালে পেইন্টিং করা অবস্থায় কথা হয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী রুবেল সরকারের সাথে। তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী বিভাগের ৫ম ব্যাচ হিসেবে এবার আমাদের উপর বৈশাখের মূল দায়িত্ব এসেছে। দুইটি স্ট্রাকচারের পাশাপাশি দেয়ালচিত্র এবং মুখোশ-ফ্যাস্টুনের কাজ শেষ হয়েছে। এত অল্প সময়ে সব কাজ শেষ করা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তাও অনুষদের শিক্ষক ও সিনিয়র-জুনিয়র সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণের ফলস্বরূপ আমরা মহা সমারোহে বৈশাখ উদযাপন করতে পারবো। চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সূচনা দাস বলেন,প্রতিবছর আমাদের শিক্ষকরাই সিলেক্ট করে দেন কোন থিমে বৈশাখ উদযাপন করা হবে। বৈশাখের সময় আর ক্লাস হয় না। এ সময়ে কয়েকটা দিন সিনিয়র-জুনিয়র সবাই মিলে একত্রে খুব আনন্দ নিয়ে কাজ করি। কাজের সময় আড্ডা,গান-বাজনা, আর একসাথে সবার খাওয়া-দাওয়া এসব পুরোটাই একটা উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি করে। আমরা চারুকলার শিক্ষার্থীরা এসব কাজে ভীষণ আগ্রহী। তবে বাজেট বাড়ানো হলে আরও সুন্দর কাজ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে উপহার দিতে পারবো। জবির চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাঃ আলপ্তগীন তুষার বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়ে আসছে। এই আয়োজন আমাদের ঐতিহ্য ও শৈল্পিক সত্ত্বাকে পুনরুজ্জীবিত করে। চারুকলার শিক্ষার্থীরা বরাবরই নিজ প্রচেষ্টা ও শৈল্পিক গুণে বৈশাখের জন্য কাজ করে থাকেন। এটি অনুষদের জন্য গর্বের বিষয়। তবে এই বিশাল আয়োজন ও পরিশ্রমের বিপরীতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে অর্থ পাই সেটা অপ্রতুল। অর্থের পরিমাণ বাড়ালে সুন্দরভাবে সার্বিক আয়োজন করা সম্ভব। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে ১৮ এপ্রিল আমরা বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান করবো। মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সহ বিগত দিনে চলে আসা সকল আয়োজন থাকবে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালগুলোতে চারুকলার শিক্ষার্থীরা নান্দনিক রিকশাচিত্র ফুটিয়ে তুলার কাজ করছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে রঙিন মাত্রা যুক্ত করে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক কাজকর্ম। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের নান্দনিক পেইন্টিং ও নানারকম শিল্পকর্ম তৈরী সহ উদ্ভাবনী বিভিন্ন কাজ-কর্মে ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি হয় বৈশাখকে ঘিরে।
মতিঝিল আইডিয়ালে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ফি ধার্য, অভিভাবকদের ‘অসন্তোষ’
ঈদের ছুটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকার বিভিন্ন ভাতা ও চার্জ চাপিয়ে দিয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানকেও কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত জানুয়ারিতে নতুন ভর্তি ও পূণভর্তির সময় যেসব ভাতা ও চার্জ নেয়া হয়েছিল সেগুলির অধিকাংশই নতুন করে ধার্য করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির তিন ক্যাম্পাসের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। সম্প্রতি প্রথম শ্রেণীর ‘ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন ও অন্য ফি আদায়ের বিবরণ’ শীর্ষক এক নোটিশে দেখা গেছে, বার্ষিকী ২০০ টাকা, আর্থিক সাহায্য ২০০ টাকা, রিপোর্ট কার্ড ৩০০ টাকা, বিদায় অনুষ্ঠান ১০০ টাকা ও জাতীয় অনুষ্ঠান ২০০ টাকা ধরা হয়েছে। আর ডায়েরি, সিলেবাস ও ওয়াসা পৌরকর, জেনারেটর, আইডিকার্ড ও অন্য ৯৫০ টাকা। সবমিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৫০ টাকা। মাসিক বেতনের বাইরে এই টাকা অতিরিক্ত হিসেবে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘বাড়তি চার্জ ও ফি আদায়ের বিষয়টি আমার নলেজে নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।’ গত ২৯ মার্চ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মনিরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে প্রায় সব ছাত্র-ছাত্রীর কাছে বিভিন্ন অঙ্কের ফি ও টাকা ধার্য করা হয়। শিক্ষাবর্ষ শুরুর তিনমাসের মধ্যে হঠাৎ এ ধরণের ব্যয় ধার্য করায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মধ্যে। এ বিষয়ে ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গার্ডিয়ান সোসাইটির’ সভাপতি ও রামপুরা বনশ্রী শাখার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কেএম সাইফুর রহমান (খোকন) সংবাদকে বলেন, শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ভর্তির সময় নানা অজুহাতে আট থেকে দশ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিয়ে থাকে। এরপর দু’তিন মাস পরই এভাবে শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা ধার্য করা ‘অমানবিক’। তিনি শিক্ষার নামে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের ‘বাণিজ্য’ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক সৈয়দ জাফর আলী সংবাদকে বলেছেন, ‘স্কুলগুলি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই তাদের যাবতীয় ফি নিয়ে থাকে। বছরের তিনমাসের মাথায় নতুন করে কোনো ফি আদায়ের সুযোগ নেই। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের বিরুদ্ধে এ ধরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখা (ক্যাম্পাস) রয়েছে। এর প্রধান ক্যাম্পাস মতিঝিলে। আর রামপুরা বনশ্রী ও মুগদা সড়কের পাশে দুটি শাখা ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই তিন ক্যাম্পাসে প্রথম শ্রেণী থেকে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। প্রতিষ্ঠানটির দু’জন শিক্ষক ও গভর্নিং বডির সাবেক দু’জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি অন্তত দুই হাজার টাকা করে আদায় হলে মোট প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আদায় হয়। বেতনভাতার অতিরিক্ত হিসেবে বছরে দু’তিনবার এভাবে অভিভাবকদের ‘জিম্মি’ করে টাকা আদায় করা হয়। একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গভর্নিং বডির ‘সম্মতির’ ভিত্তিতেই এভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। তা ব্যয় দেখানো হয়, গভর্নিং বডির বিভিন্ন সভার ‘সম্মানী’, ‘আপ্যায়ন’ ও বিভিন্ন ‘কেনাকাটার’ নামে। শিক্ষকরাও নানা ‘অজুহাত’ দেখিয়ে এই টাকার ‘ভাগ নিয়ে থাকেন। নির্বাচিত গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বর্তমানে ‘অ্যাডহক’ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। একাধিক শিক্ষক জানান, প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখায় প্রায় সাতশ’ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত আছেন মাত্র ১০৯ জন। বাকি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকেই দিতে হয়। এ খাত দেখিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে বাড়তি চার্জ আদায় করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির গভর্ণিং বডির সাবেক সদস্য গোলাম আশরাফ তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘বর্তমানে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক পুরো কার্যক্রম জামায়াতপন্থী লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। তারা যা খুশি তাই করছেন।’ শিক্ষা সফরের নামে ৪২ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেওয়া এক অভিযোগপত্রে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির তিনটি শাখার নবম ও দশম শ্রেণীর ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে মোট শিক্ষার্থী (নবমে ২,৬০০ এবং দশমে ২,৬৫০ জন) পাঁচ হাজার ২৫০ জন। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ শিক্ষা সফরের জন্য জনপ্রতি দুই হাজার টাকা চাঁদা নেয়া হয়। সেই হিসেবে মোট চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা। এর মধ্যে দুপুরের খাবার ও দু’বেলা নাস্তাসহ সবমিলিয়ে মোট ৬৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৪১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। কামরুজ্জামান নামের এক শিক্ষক ও তার সহকারীরা ‘আত্নসাত’ করেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগগুলির বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ধরেনি।
ঈদের ছুটি ঘোষণার পর শিক্ষার্থী প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকার বিভিন্ন ভাতা ও চার্জ চাপিয়ে দিয়েছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানকেও কোনো কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ডিমেনশিয়া রোগ নির্ণয়ে জাবি-এনটিইউর যৌথ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজির (আইআইটি) অ্যাপ্লাইড ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স ল্যাবের যৌথ উদ্যোগে স্মৃতিভ্রষ্টতা বা ডিমেনশিয়া রোগ নির্ণয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ নির্ণয় বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গত শুক্রবার এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স এর পরিচালক অধ্যাপক ড. দ্বীন মোহাম্মদ । এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ৷ বিভিন্ন পেশার অর্ধশতাধিক মানুষ অংশ নেন। যুক্তরাজ্যের নটিংহাম টুয়েন্টি ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ডা.মুফতি মাহমুদ এর সঞ্চালনায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন খান, ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট ডা. আব্দুল মাহিদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইআইটি বিভাগের অধ্যাপক ড.শামীম কায়সার এবং আস্থা ফাউন্ডেশনের শিল্পী আক্তার। বর্তমান বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারীর মতো যেসব বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তার একটি ডিমেনশিয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বেশিরভাগ দেশ ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার ক্রমবর্ধমান সমস্যা মোকাবেলায় ব্যর্থ হচ্ছে। সংস্থাটির নতুন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে- সারা বিশ্বের মাত্র এক চতুর্থাংশ দেশের জাতীয় নীতিমালা রয়েছে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারকে সাহায্য দেওয়ার ব্যাপারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বর্তমানে সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত এবং এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মধ্যে এই সংখ্যা তিনগুন বৃদ্ধি পাবে। কর্মশালার ডিমেনশিয়া রোগ-বিশেষজ্ঞরা বলেন, মস্তিস্কের অনেক অসুখের একটি উপসর্গ এই ডিমেনশিয়া। ‌এর স্বাভাবিক ও সাধারণ একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়া বা ভুলে যাওয়া। কেউ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হলে তার পক্ষে অতীতের চেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা মনে রাখা অনেক বেশি কঠিন। এটা মূলত বয়স্ক মানুষের রোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্মৃতির ব্যাপারে সমস্যা দেখা দেয়। সহজ করে বললে এটি হচ্ছে ভুলে যাওয়া রোগ। এর সাথে অন্যান্য সমস্যাও হয়। যেমন নিজের কাজগুলো নিজে ঠিক মতো করতে না পারা,কারো ক্ষেত্রে হাঁটা চলারও সমস্যা হয়। কর্মশালায় ড. মুফতি মাহমুদ বলেন, এই কর্মশালাটি ডিমেনশিয়া চিকিৎসায় বহুবিষয়ক সহযোগিতা এবং উদ্ভাবনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেছে। আমরা ব্যাখ্যাযোগ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সমাধান ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার এবং যত্নশীলদের ক্ষমতায়ন করার লক্ষ্য রাখি। সেশনটি ডিমেনশিয়া টুল ডিজাইন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ইন্টারেক্টিভ কথোপকথনকে উৎসাহিত করেছিল। অংশগ্রহণকারীরা ডিমেনশিয়া শনাক্তকরণ এবং পরিচালনার অনন্য সমস্যাগুলির উত্তর খুঁজে পেতে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও প্রাথমিক পর্যায়ে ডিমেনশিয়া নির্ণয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে জন্য কর্মশালায় অংশগ্রহনকারী বিশেষজ্ঞরা মতামত দেন।
যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজির (আইআইটি) অ্যাপ্লাইড ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স ল্যাবের যৌথ উদ্যোগে স্মৃতিভ্রষ্টতা বা ডিমেনশিয়া রোগ নির্ণয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ নির্ণয় বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
রিকশাচিত্রে জবিতে বৈশাখের প্রস্তুতি, উদযাপন হবে ১৮ এপ্রিল
ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হবে। এরই মধ্যে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি উপলক্ষে রিকশাচিত্র অংকন করেছেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এবার ঈদের ছুটি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারের বৈশাখ উদযাপনের মূল অংশ জুড়েই থাকবে রিকশাচিত্র। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ কে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় ফটকের পাশের দেয়ালে পেইন্টিং করা হয়েছে। রিকশা পেইন্টিংয়ের আদলে দেয়ালে ফুটে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, বুড়িগঙ্গার নৌকা, মা ও প্রকৃতির বিভিন্ন চিত্র। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রতে রয়েছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূরসহ নানা ধরনের চিত্র। দেশের রিকশায় আঁকা নানা ধরনের চিত্রের মধ্য থেকে আকর্ষনীয় ও দৃষ্টিনন্দন চিত্রগুলোকে উজ্জ্বল রঙে দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রাতেও থাকবে বড় আকৃতির রিকশা পেইন্টিং। এরই মধ্যে দেয়ালগুলোতে রিকশা পেইন্টের মাধ্যমে নান্দনিক ছোঁয়া দিয়েছে চারুকলার শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ কাজের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। ‘বৈশাখে নুতন করিনু সৃজন / মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানে পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। কেউ কেউ পুতুল, পাখি, বাঘের মুখোশ, পেঁচার মুখোশ, পাখির মুখোশ, রাজা-রানির মুখোশ, নানা রকমের মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন আকার ও রকমের চিত্রকর্ম এবং মুখোশে রঙ করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের রং তুলিতে ফুটে উঠছে আবহমান বাংলার রূপ। এদিকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য প্রস্তুত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী। দিন-রাত পরিশ্রম করে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এবারের আয়োজনে থাকছে মঙ্গল শোভাযাত্রা, থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বাংলা বর্ষবরণের নানা আয়োজন। পাশাপাশি থাকবে পা‌খি, ফুল ও বি‌ভিন্ন প্রাকৃতিক বস্তু। প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তুলার জন্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এবার কাজ হচ্ছে। শোভাযাত্রার জন্য বড় আকারের ফুল, মৌমাছি, পাতা ছাড়াও বাঘ ও পেঁচার মুখোশ তৈরি করা হয়েছে। আয়োজনের দায়িত্বে থাকা চারুকলা অনুষদের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাঈম মৃধা বলেন, দেয়াল চিত্র, মুখোশ, স্টাকচার সবকিছুতেই রিকশা পেইন্টিংকে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেয়াল পেইন্টিংয়ের ক্ষেত্রে রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন মুটিভ এবং উজ্জ্বল রঙগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। রিকশাচিত্রে সাধারণত নায়ক-নায়িকা, কুমির, বাঘ, মাছ, ময়ূর, ফুল, লতাপাতার ও বিভিন্ন পশুপাখির ছবি দেখতে পাই। এগুলোর মধ্য থেকে দৃষ্টিনন্দন চিত্রগুলোকেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী হৃদয় হোসাইন বলেন, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম হচ্ছে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃত বাংলাদেশের রিকশা চিত্র। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদ হওয়ার পর এটি প্রথম বৈশাখ। এজন্য মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি আগের বারের থেকে আমাদের জন্যে একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। চারুকলা অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের হাতে খুব সুন্দরভাবে এই আয়োজনের প্রস্তুতি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারে আমরা খুব এ আনন্দিত। এছাড়াও প্রথমবারের মত এবার বৈশাখী চারু শিল্পমেলার আয়োজন করা হয়েছে। এজন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম আপার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দেয়ালচিত্র অংকন করা শিক্ষার্থী পরমা দাস বলেন, এবারে বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রায়ও রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হবে। শোভাযাত্রা জন্য আমরা মুখোশ তৈরি করছি। বাঘ পেঁচার পাশাপাশি রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন ফর্ম দিয়ে মুখোশ তৈরি করেছি এবং সবগুলো মুখোশে রিকশা পেইন্টিংয়ের মত উজ্জ্বল রং ব্যবহার করছি। রিকশা পেইন্টিংকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। কাজের ফাঁকে আরেক শিক্ষার্থী তৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালগুলো আরও দৃষ্টিনন্দন করে তোলার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়েই রিকশাচিত্র অংকন করা হয়েছে। দেয়াল পেইন্টিংয়ের পাশাপাশি মুখোশ ও বিভিন্ন রিকশার মোটিভ ফেস্টুনও করা হচ্ছে। ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবার অনেক মানুষ কম। তাই আমাদের উপর চাপ পরে যাচ্ছে। তবুও আমরা সবাই মিলে ভালো কিছু করার চেষ্টা করছি। দেয়াল চিত্রের পাশাপাশি আরও আয়োজন রয়েছে বলে জানান পায়েল দাস অনিক। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে বড় একটি কুমিরের স্ট্রাকচার তৈরি করা হচ্ছে। কুমিরটির দৈর্ঘ্যে ১৬ ফুট ও প্রস্থ্যে ৯ ফুট। এছাড়াও সাধারণ রিকশার দ্বিগুণ মাপের একটি রিকশার স্টাকচারও তৈরি করা হচ্ছে। রিকশা উচ্চতা ৯ ফুট ও প্রস্থ ৬ ফুট। ঈদের ছুটির আগে কাজগুলো সম্পূর্ণ করা হবে। ঈদের পর অনুষ্ঠিত হবে আমাদের উৎসব। সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে রিকশাচিত্র স্বীকৃতি পেয়েছে। এজন্যই বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উপলক্ষে আমরা রিকশাচিত্রের যত রকমের অঙ্কন, মোটিভ এবং চিত্রায়ণের যতগুলো অলংকরণ রয়েছে সেগুলো সব নিয়েই রিকশাকে কেন্দ্র করে দেয়াল পেইন্টিং করেছি। মূলত এবারে আমাদের থিম হচ্ছে রিকশা চিত্র। মঙ্গল শোভাযাত্রাতেও বড় আকৃতির রিকশা পেইন্টিং থাকবে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে আমরা বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে চাই। সেজন্য ১৮ এপ্রিল আমরা বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান করবো। মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সহ বিগত দিনে চলে আসা সকল আয়োজন থাকবে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালগুলোতে চারুকলার শিক্ষার্থীরা নান্দনিক রিকশাচিত্র ফুটিয়ে তুলার কাজ করছে।
ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হবে। এরই মধ্যে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি উপলক্ষে রিকশাচিত্র অংকন করেছেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এবার ঈদের ছুটি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি জাবি সাংস্কৃতিক জোটের
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আয়তায় চলমান মাস্টারপ্ল্যানবিহীন উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ করে দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট। ৫ এপ্রিল (শুক্রবার) জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্ধকৃত ১৪৪৫ কোটি টাকার সঠিকভাবে ব্যয় না করা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের যে সুফল ভোগ করার কথা ছিল তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপরন্তু, প্রশাসনের নানা অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির ফলে এই মাস্টারপ্ল্যানবিহীন উন্নয়ন জাহাঙ্গীরনগরকে দিন দিন কনক্রিটের শহরে পরিণত করছে। পাশাপাশি তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণপ্রকৃতিকে যেমন ধ্বংস করছে, তেমনি তা তৈরি করছে নানা কৃত্রিম সংকট। বিবৃতিতে সাম্প্রতিক সময়ের `অপরিকল্পিত’ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট ভোগান্তির কথা তুলে ধরে বলা হয়, মেয়েদের হল মহাসড়কের পাশে নির্মাণ করায় নারী শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এবং সংযোগ রাস্তাবিহীন তাজউদ্দিন আহমেদ হল এবং শহীদ রফিক জব্বার হলের মধ্যকার সংঘর্ষ এই মাস্টারপ্ল্যানবিহীন উন্নয়নেরই ফল। ছুটিতে ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রশাসন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে Technical Monitoring and Evaluation Committe গঠন করে। কিন্তু প্রশাসন নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির সময় আবার প্রাণপ্রকৃতি ধ্বংস করে ভবন নির্মাণ করছে। অপরিকল্পিত এসব ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানানো হচ্ছে। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনের মতামতকে উপেক্ষা করে বারবার অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হীনমন্যতা ও অনৈতিক আকাঙ্ক্ষাকেই নগ্নভাবে সকলের সামনে তুলে ধরে। জ্ঞান উৎপাদন কারখানা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের যে অবস্থান- তাকে নষ্ট করে, শিক্ষা ও সংস্কৃতির পরিবেশকে ধ্বংস করে, এই অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন আমরা চাই না। সকল বিভাগ এবং অনুষদের শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম ও ল্যাব সংকট নিরসনের মাধ্যমে পড়াশোনার পরিবেশ আরো উন্নত হোক তা আমাদেরও চাওয়া। তবে যত্রতত্র অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ কোন সুফল বয়ে আনতে পারেনা বলেই এতদিনে প্রতীয়মান হয়।” এসময় তারা আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট সবসময় মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার পক্ষে। আমাদের ৬৫০০ শিক্ষার্থীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন লেকচার থিয়েটারের কাজ শেষের দিকে। সেটার নির্মাণ কাজ শেষ হলে কেন আরও ভবনের প্রয়োজন তা প্রশ্ন থেকে যায়। সম্প্রতি চারুকলা বিভাগের জন্য ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে ৬ তলা ভবনসহ জীববিজ্ঞান অনুষদ, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ এবং কলা ও মানবিকী অনুষদের সম্প্রসারিত অংশের নির্মাণকাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতির বিস্তর ধ্বংসের পাশাপাশি শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কা করে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আয়তায় চলমান মাস্টারপ্ল্যানবিহীন উন্নয়ন কর্মকান্ড বন্ধ করে দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।
জবি উপাচার্যের নামে ভুয়া ই-মেইল, সতর্ক করলো প্রশাসন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের নামে ভুয়া ই-মেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কে বা কারা বিভিন্ন মানুষকে স্ক্যাম মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একটি অসাধু মহল profsadekahalim@gmail.com ই-মেইল অ্যাড্রেসটি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে স্ক্যাম মেসেজ পাঠাচ্ছে। এই ই-মেইলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নয় এবং এর সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়র কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। স্ক্যামের উদ্দেশ্যে তৈরি করা এই ই-মেইলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে বলেও সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। সবাইকে এই ভুয়া ই-মেইল থেকে আসা সব বার্তা পরিহার করে চলার জন্য এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে অনুরোধও করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের নামে ভুয়া ই-মেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কে বা কারা বিভিন্ন মানুষকে স্ক্যাম মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। এতে বিভ্রান্ত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।
জাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার সাক্ষাৎকারের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির জন্য আবেদনকারী সকল শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার আগামী ২৯ ও ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) ও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও নাতি-নাতনি কোটায় ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার আগামী ২৯ এপ্রিল ও ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রসাশন) এবং প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) মহোদয়ের অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সাক্ষাৎকারের সময়, পিতা/মাতার মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণস্বরূপ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.molwa.gov.bd এ সংরক্ষিত/প্রদর্শিত মুক্তিযোদ্ধার যে কোনো একটি প্রমাণক এবং মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত সরকারী ভাতা প্রাপ্তির প্রমানপত্র (ভাতা বই অথবা ব্যাংক স্টেটমেন্টের কপি) সঙ্গে আনতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, মুক্তিযোদ্ধার নাতি- নাতনিদের সাক্ষাৎকারের সময়, দাদা/দাদী/নানা/নানীর মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণস্বরূপ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.molwa.gov.bd এ সংরক্ষিত/প্রদর্শিত মুক্তিযোদ্ধার যে কোনো একটি প্রমাণক, মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত সরকারী ভাতা প্রাপ্তির প্রমাণপত্র (ভাতা বই অথবা ব্যাংক স্টেটমেন্টের কপি), শিক্ষার্থীর পিতা/মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূলকপি (জাতীয় পরিচয়পত্রে মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকতে হবে) অথবা শিক্ষার্থীর পিতা/মাতার এস.এস.সির সনদের মূলকপি অথবা শিক্ষার্থীর পিতা/মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি অথবা সম্পর্কের প্রমাণস্বরূপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা/নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (প্যাডে স্বাক্ষরযুক্ত) কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্রের মূলকপি। বিজ্ঞপ্তিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির যে কোনো পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র ও নাতি-নাতনির ক্ষেত্রে সম্পর্কের প্রমাণপত্রসহ প্রদত্ত অন্যান্য তথ্য অসত্য প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাক্ষাৎকারের সময় শিক্ষার্থীকে অবশ্যই আবেদনপত্রের ১ সেট ফটোকপি ও নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্নোক্ত প্রমাণকসমূহ সঙ্গে আনতে হবে এবং অনুপস্থিত আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের পরবর্তীতে ভর্তির কোন সুযোগ থাকবে না।। এতে আরও জানানো হয়, ভর্তির জন্য নির্বাচিত সকল শিক্ষার্থীদের তালিকা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে (bachelor.ju-admission.org) প্রচার করা হবে। এছাড়া সকলকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির জন্য আবেদনকারী সকল শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার আগামী ২৯ ও ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।
বুয়েটে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরজি জানালেন ৬ শিক্ষার্থী
নিরাপদে ও সৎসাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আরজি জানিয়েন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রলীগ-সমমনা ছয়জন ছাত্র। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনারে ছয় শিক্ষার্থী সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত আবেদন পড়ে শোনান। তাঁরা হলেন আশিকুল আলম, অর্ঘ্য দাস, অরিত্র ঘোষ, তানভীর মাহমুদ, সাগর বিশ্বাস ও মিশু দত্ত। বুয়েটের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সমর্থক বলে পরিচিত। লিখিত বক্তব্য আশিকুল আলম ও অরিত্র ঘোষ পড়ে শোনান। এতে বলা হয়, জীবনের হুমকিসহ নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে। ছাত্রশিবির পরিচালিত বাঁশেরকেল্লার পক্ষ থেকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের নাম, মুঠোফোন নম্বর, শিক্ষার্থী নম্বর থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে মেসেজিং অ্যাপগুলো ব্যবহার করে। আমরা ২১ জন এ ধরনের হুমকির সম্মুখীন। এর প্রমাণ এরই মধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। আরও বলা হয়, হে দেশরত্ন, বঙ্গবন্ধু তনয়া, আমাদের সাহায্য করুন। আমরা সব মতের সাধারণ বুয়েট শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে স্বাভাবিক ও নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চাই। আমরা চাই না আমাদের ক্যাম্পাস জঙ্গি তৈরির কারখানা হোক।’হিযবুত তাহরীর বা শিবিরের সন্ত্রাসী আক্রমণ থেকে বুয়েটের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কতটা নিরাপদ, সে প্রশ্ন তুলে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র মেধাবীদের এই ক্যাম্পাসকে কতটা নজরদারিতে রেখেছে বা এর সুরক্ষা নিশ্চিত করছে, তা আমরা জানি না। যেকোনো বড় ধরনের নাশকতার ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দিলে হোলি আর্টিজানের মতো কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।’ আরও বলা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আমরা আমাদের আকুল আরজি রাখলাম। আমাদের নিরাপদ ও স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্যাম্পাস উপহার দিন। দেশ ও দশের প্রতি ভালোবাসা রেখে সবার কল্যাণকে মাথায় রেখে আমরা ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিস্থিতি চাই এবং জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপদে ও সৎসাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চা করতে চাই। লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতিকে একপ্রকার নিষিদ্ধ কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আমরা প্রগতিশীল রাজনৈতিক চিন্তা-ধারণায় বিশ্বাসী এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আমরাও অংশ নিতে চাই বলে আমাদের ক্যাম্পাসে দীর্ঘ একটি সময় ধরে মানসিক নিপীড়ন চলে আসছে, যা বর্তমানে আমাদের জীবনের হুমকিতে রূপ নিয়েছে। আরও বলা হয়, আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আমরা বলতে চাই, শুধু স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য যে পরিমাণ বুলিং করা হয়েছে আমাদের ওপর, তা অকথ্য। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু এরপর র‍্যাগিং বা এর সঙ্গে জড়িত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আইন ভঙ্গের অভিযোগ না থাকলেও সংখ্যালঘু ছাত্রদের ওপর শুরু হয় প্রকাশ্যে অপমান করা ও অপবাদ দেওয়া। এটি হয় শুধু স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ার কারণে। পরে আমরা বুয়েটে ভর্তি হলে আমরাও জাতির জনকের আদর্শকে লালন করতে চাইলেই আমাদের সঙ্গে বুলিং ও নানাভাবে আমাদের হয়রানি করা হয়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বুয়েট প্রাঙ্গণে রাতে উপস্থিত হলে তাঁর সঙ্গে বুয়েটে অধ্যয়নরত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ইমতিয়াজ হোসেনের সৌজন্য বিনিময়ের কারণকে অভিযোগ হিসেবে তুলে ধরে পরীক্ষা বর্জনের মতো কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ইমতিয়াজের হল বহিষ্কার দাবি করা হলে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই উপাচার্য কর্তৃক তা গৃহীত হয়। পরে তাঁকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিও জানানো হয়, যা আসলে একজন শিক্ষার্থীর একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের শামিল। এই আন্দোলন ক্যাম্পাসে শান্তির পরিবেশ নষ্ট করে, যা পরীক্ষা বয়কটের মতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এসব ঘটনায় সব সময়ই হোতা কিছু নির্দিষ্ট মানুষ, যাদের সঙ্গে গত বছরের জুলাইয়ে শিবির সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা ও মৌলবাদী চিন্তা পালনের দৃষ্টান্ত মেলে। অনেক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক মতামত প্রতিষ্ঠার জোরও চালানো হয় তাদের দ্বারা। কিন্তু এই অন্ধকার রাজনীতি আড়াল হয় আবরার ফাহাদ ভাইকে হারানোর বেদনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগকে ব্যবহার করে। সম্প্রতি বুয়েটের ইসিই ভবনের লিফটে হিযবুত তাহরীর পোস্টারে কিউআর কোডের মাধ্যমে ‘খিলাফত প্রতিষ্ঠার’ আহ্বান করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত প্রাতিষ্ঠানিক মেইলেও পাঠানো হয়।
নিরাপদে ও সৎসাহসের সঙ্গে প্রগতিশীল রাজনীতির চর্চা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আরজি জানিয়েন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রলীগ-সমমনা ছয়জন ছাত্র।
যৌন হয়রানির দায়ে জবির এক শিক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত, আরেকজনকে আবারও কারণ দর্শানোর নোটিশ
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে তাকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবেনা তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। আরেক সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার কেন করা হবেনা তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। প্রথমজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসী এবং দ্বিতীয়জন ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমন। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ এসব তথ্য জানান। অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ জানান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাণিক মুনসীর বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সিন্ডিকেটে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কেন স্থায়ী বরখাস্ত করা হবেনা সেই জবাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পাওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ অর্থাৎ কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হবেনা সেই জবাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগেই তাকে সাময়িক বহিষ্কার ও প্রথম নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তিনি জানান, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেই সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে বারবার শিক্ষাছুটি নিয়ে তা শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে না আসায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল হক শেখকে স্থায়ী বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, জিয়াউল হক শেখের বিরুদ্ধে দুইবার শিক্ষাছুটি নিয়ে তা শেষ হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভঙ্গ করে ফিরে না আসার অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের এক ছাত্রীর মানসিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসীকে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর গত ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম (জরুরি ভিত্তিতে ডাকা) সিন্ডিকেট সভায়  ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। গত ১৫ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর এবং এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরোজ সাদাফ অবন্তিকা। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। তখন শিক্ষার্থীরা বিগত সময়ের বিভিন্ন যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। এতে নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে তাকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবেনা তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে। আরেক সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার কেন করা হবেনা তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
জাবিতে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কর্মচারীর স্ত্রীর সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক কর্মচারীর স্ত্রীর সাথে অশালীন আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গত ২৭ মার্চ (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন ঐ কর্মচারী। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম দেবব্রত পাল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপ পরিচালক। অন্যদিকে ভুক্তভোগী স্ত্রীর ওই কর্মচারির নাম আলমগীর হোসেন। তিনি আ ফ ম কামালউদ্দীন হলের সিনিয়র ক্লিনার হিসেবে কর্মরত আছেন। অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, আলমগীর হোসনের স্ত্রী ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার ছোট মেয়েকে নিয়ে ড. শ্যামল কুমার শালীকে দেখানোর জন্য মেডিকেলে যায়। ডাক্তার দেখানোর জন্য মেয়েকে নিয়ে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আলমগীরের স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করে দেবব্রত পাল। এতে আলমগীরের স্ত্রী সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে আছে বললে তার সাথে খারাপ আচরণ করে ও ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করে। পরে রুম থেকে বের হওয়ার সময় আলমগীরের স্ত্রীকে আবারও ধাক্কা দেয় দেবব্রত পাল। এ সময় ভুক্তভোগী তার স্বামীর পরিচয় দিলে তার সাথে উশৃঙ্খল আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন দেবব্রত। সেখানে থাকা মেডিকেল অফিসারসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা বিষয়টি দেখেছেন। পরবর্তীতে দেবব্রত পাল বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকতে ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখান। অভিযুক্ত দেবব্রত পাল বলেন, এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রারের কাছে আমিও একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। সেদিন মেডিকেলের কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়নি। এটি শুধু ডাক্তারের কাছে আগে পরে যাওয়া নিয়ে একটা বিষয় ছিল। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। বিষয়টি তারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন এবং এটি মিমাংসা করতে আগামীকাল সম্ভবত তারা বসতেও চাচ্ছেন। তবে ভুক্তভোগীর স্বামী আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনার মিমাংসা করতে তার সাথে বসার কোনো কথা জানি না। অকারণে আমার স্ত্রীর সঙ্গে এমন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং ধাক্কা দেওয়া আমার পরিবারের জন্য মানহানিকর। আমি প্রশাসনের কাছে দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। প্রত্যক্ষদর্শী ড. শ্যামল কুমার শীল জানান, কে আগে আসবে আর কে পরে আসবে এটা নিয়ে মূলত ঝামেলা হয়েছে। আর হাসপাতাল তো মানবিক জায়গা। এখানে ইমারজেন্সি রোগীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এখানে কে কর্মকর্তা আর কে কর্মচারী সেটা ক্লাসিফাই করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ওই কর্মকর্তা আমাকে জিজ্ঞেস করেন ‘আমি অফিসার, আমাকে আগে দেখানোর সুযোগ আছে কিনা’। তখন আমি বলেছি, না। যদি আপনি ইমার্জেন্সি হন তবে আপনি আগে। এখানে যে ইমারজেন্সি তাকে আগে দেখা হবে। সে যদি রিকশাওয়ালাও হয় তবুও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক কর্মচারীর স্ত্রীর সাথে অশালীন আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এবার রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আর্জি
এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আর্জি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আর্জি জানান শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে খোলাচিঠি পড়ে শোনান বুয়েটের পাঁচ শিক্ষার্থী ৷ সরকারপ্রধানের উদ্দেশে লেখা এই খোলা চিঠিতে শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের অনুরোধ, আপনি দয়া করে আমাদের ক্যাম্পাসে আসুন; ছাত্ররাজনীতিহীন বুয়েট গত কয়েকবছর ধরে শিক্ষার্থীদের জন্য যে আদর্শ ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে, সেটা আমরা আপনাকে দেখাতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়, আমরা ত্রাসের রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝি না; আমরা শুধু দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতে জানি। নিজেদের কাজ দিয়ে তা আমরা প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের সবার অভিভাবক, দেশের অভিভাবক। আমরা জানি দেশের কোথাও কোনো দুঃখজনক পরিস্থিতি চললে, কোথাও সংকট চললে আপনার হৃদয়ে গভীর রক্তক্ষরণ হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার নেতিবাচক দিকগুলোই প্রত্যক্ষ করেছি। ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের মাঝে সূচনা ঘটেছে আধিপত্য, দাপট, র‍্যাগিং, শিক্ষকদের অপমান, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও খুনোখুনিতে মেতে ওঠার মতো ঘটনার। ঘটেছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও। খোলাচিঠিতে বলা হয়, ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েটের পরিবেশ ছিল সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। মৌলবাদী শক্তিকেও রুখে দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ার পর থেকে আজ অবধি প্রতিটি জাতীয় দিবস সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে বুয়েট প্রাঙ্গণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করা হচ্ছে। আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জাতীয় মূল্যবোধ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মনে-প্রাণে ধারণ করি। শিক্ষার্থীরা বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে কতিপয় ব্যক্তি বা গণমাধ্যমের তৎপরতায় ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েট ক্যাম্পাসকে জাতীয় চেতনার বিরোধী মতাদর্শের স্থান হিসেবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ৷ বিষয়টিতে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের ব্যাপারে যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। তাই দেশের যেকোনো স্থানের মতো আমাদের ক্যাম্পাসকে আমরা অবশ্যই যেকোনো ধরনের সন্ত্রাস, মৌলবাদ বা নিষিদ্ধ গোষ্ঠী থেকে নিরাপদ রাখতে সর্বদা তৎপর। শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আমরা আপনাকে নির্দ্বিধায় বলতে চাই, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেকোনো মুহূর্তে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর যেকোনো কার্যকলাপ ক্যাম্পাসে দেখলে শিগগিরই তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব এবং প্রশাসনকে অবহিত করব। এমনকি ভবিষ্যতে যদি ক্যাম্পাসে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সেটার বিরুদ্ধেও আমাদের দৃঢ় অবস্থান থাকবে। আরও বলা হয়, আমাদের মতো দেশজুড়ে লাখো শিক্ষার্থী এমন একটা ক্যাম্পাসের স্বপ্ন নিয়েই বাড়ি ছাড়ে, যেখানে তাদের ওপর অকারণে জুলুম হবে না, নির্যাতিত হতে হবে না, দিন-রাত কারও ভয়ে তটস্থ থাকতে হবে না, বাবা-মাকে দুশ্চিন্তায় চোখের পানি ফেলতে হবে না। চার বছর আগে আপনার দৃঢ় এবং দ্রুত হস্তক্ষেপে আমরা নতুন করে এই ক্যাম্পাসে বাঁচতে শিখেছি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, এই ছোট্ট একটা চাওয়ার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি হুমকি, হচ্ছি লাঞ্ছিত ও অপদস্থ ৷ আমরা, আমাদের ছোট ভাইবোনেরা আরও একবার সেই অন্ধকার দিনগুলোর সাক্ষী হতে চাই না। আমাদের মাননীয় উপাচার্য ও সব শিক্ষকের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে ৷ তাঁরা তাঁদের সন্তানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় সর্বদা সচেষ্ট আছেন এবং থাকবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে সবিনয়ে অনুরোধ, আপনি আমাদের পাশে দাঁড়ান। আপনি সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছেন৷ আমরা জানি, এই দুর্দিনে আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না। বুয়েট শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে আরও বলেন, বুয়েটকে ছাত্ররাজনীতির বাইরে রাখুন, প্রয়োজনে আইন সংস্কার করে হলেও৷ কারণ, সুবিচারের জন্যই আইনের সৃষ্টি ৷ আমাদের অনুরোধ, আপনি দয়া করে আমাদের ক্যাম্পাসে আসুন। ছাত্ররাজনীতিহীন বুয়েট গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের জন্য যে আদর্শ ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে, সেটা আমরা আপনাকে দেখাতে চাই। আমরা আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা প্রযুক্তিবিদ্যায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পেছনে ফেলে দেব শিগগিরই। আমাদের এই পথচলা আপনিই নির্বিঘ্ন রাখতে পারেন। সেই আশাতেই এই চিঠি। আমরা আপনার হাজারো সন্তান, আপনার সহযোগিতার প্রতীক্ষায় আছি। আরও পড়ুন : ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস দাবিতে অটল বুয়েট শিক্ষার্থীরা
এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আর্জি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আর্জি জানান শিক্ষার্থীরা।
জাবিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় মানহানির মামলা দায়ের
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে সাবেক এক নারী শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করায় পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেছেন অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক। সোমবার (১ এপ্রিল) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট সেল বরাবর পাঠানো এক মেইলে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অপরদিকে এদিন দুপুরেই ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেন অধ্যাপক সাজু সাহা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেলের প্রধান অধ্যাপক জেবউননেছা। অনুসন্ধানে জানা যায়, সাজু সাহা ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। তিনি রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নির্বাহী সদস্য। এর আগে, ১৫ মার্চ (শুক্রবার) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহনন দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করলে তার‌ই প্রেক্ষিতে মূলত ঘটনার সুত্রপাত হয়। গত ১৯ মার্চ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজ ফেসবুক ওয়ালে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহননের খবর শেয়ার করে লেখেন, ‘এটা অহরহ হয়! আমার নিজেরও একজনের নাম বলে দিতে খুব ইচ্ছা করছে...। কী বিভৎস গেছে আমার সময়গুলো, একজন শিক্ষকের জন্য।’ পরবর্তীতে গত ২৩ মার্চ (শনিবার) করা ফেসবুকে অপর এক পোস্টে শিক্ষকের নাম উল্লেখপূর্বক তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ওনার নাম সাজু সাহা.. অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র।’ অভিযুক্ত শিক্ষকের পূর্বের আচরণের কথা উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারিনি উনি এই ধরনের কাজ করতে পারেন.. এত অমায়িক, এত ভালো একটা আচরণ! আমার খারাপ সময়ে আমাকে এত সাপোর্ট দেওয়া। বুঝতে এত দেরি করে ফেলেছি যে, উনি আসলেই মুখোশধারী। তিনি আমাকে ডিরেক্টলি বলছেন, আমি ভুল মানুষকে চুজ করেছি। আমি ভেবেছিলাম তুমি লিবারেল। তুমি হুক-আপ কালচারে বিশ্বাস কর.. কিন্তু তুমি দেখি কনজারভেটিভ।’ ... উনি মেসেজ ডিলিট করেছেন। আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিতেন, আর এতে আমি কিছুই নাকি প্রমাণ করতে পারবো না। উনি শুধু বলেছেন, ওনার হেল্প লাগবে দেশের বাইরে এমবিএ করা নিয়ে। তিনি আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য রেস্টুরেন্টে পা পর্যন্ত ধরতে চেয়েছিলেন। এসব অত্যাচারে কারণে আমি ঠিকমতো ক্লাস পর্যন্ত করতে পারিনি।’’ অভিযোগকারী শিক্ষার্থী তার ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, সাজু সাহার জন্য আমি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করতে পারিনি। অন্যসব বিষয়ের চেয়ে ওনার বিরক্ত করা ছিল অন্যতম প্রধান কারন। স্নাতকের শেষ সেমিস্টার থেকেই আমাকে হয়রানি শুরু করে। যে কারণে শেষ সেমিস্টারে আমার ফলাফলও ভালো হয়নি। আমার কাছে সব তথ্য-প্রমাণ আছে। সময়মতো আমি সব উপস্থাপন করব। এদিকে ছাত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বিষয়ে সাজু সাহা বলেন, অভিযোগকারী সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আমার মানহানি করেছে। আমি তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেছি। এর আগে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছিলাম। কিন্তু সে আমার মানহানি করেই যাচ্ছে তাই আদালতে মামলা করেছি। প্রথমে দারুস সালাম থানায় মামলা করতে গেলে সেখান থেকে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুল হক বলেন, নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানো অভিযোগপত্রটি আমিও পেয়েছি। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হোক। তাকে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিভাগীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য মনোনীত হয়েছেন সাজু সাহা। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হ‌ওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম বোর্ড অফ গভর্ন্যান্স নিয়োগ আটকে দিয়েছে। এবিষয়ে সিলেকশন বোর্ডের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, ‘বিষয়টি আজ বোর্ড অফ গভর্ন্যান্সে উঠেছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। সেখান থেকে এটি আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে সাবেক এক নারী শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করায় পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেছেন অভিযুক্ত ঐ শিক্ষক।
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের আদেশ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রুলসহ সোমবার (১ এপ্রিল) এ আদেশ দেন। রুলে ওই সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না- সংশ্লিষ্টদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বুয়েটের ভিসি ও রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বুয়েটের হল থেকে সম্প্রতি বের করে দেয়া শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বির দায়ের করা এক রিট পিটিশনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার এ আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শাহ মঞ্জরুল হক আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী এটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ। হাইকোর্টের আদেশের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত রুল দিয়ে জরুরি বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করে দিয়েছেন। এর ফলে বুয়েটে এখন থেকে ছাত্ররাজনীতি করায় আর কোনো বাধা থাকল না।’ সোমবার দুপুরে হাইকোর্টের এই আদেশের পর বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন, ‘আদালত যেটা বলবেন, আমাকে সেটা মানতে হবে। আদালতের আদেশ শিরোধার্য। আমরা আদালত অবমাননা করতে পারব না।’ সোমবার দুপুরে বুয়েট ক্যাম্পাসে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন উপাচার্য। আদালতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বুয়েটের শহীদ মিনারসংলগ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সমমনা একদল শিক্ষার্থী। সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সেখানে তারা কিছুক্ষণ ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দেন। ছাত্রলীগের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও বুয়েটের সদ্য সাবেক ছাত্র হাসিন আজফারসহ ১১ শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। অন্য ১০ শিক্ষার্থীও ছাত্রলীগ-সমর্থক বলে জানা গেছে। এ কর্মসূচির সময় শহীদ মিনারের সামনেই অবস্থান করছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক। ২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর আন্দোলনের মুখে ওই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের নেতারা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে ফের আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তীতে শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান। এরপর রাতে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করে ৮ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। অন্যদিকে ইমতিয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ছয় দফা দাবিতে সোমবার ফের বিক্ষোভের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে রোববার থেকে ক্যাম্পাসে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে বুয়েট ছাত্র রাজনীতি ফেরানোর দাবিতে সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করার পর নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে যান ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। বুয়েটে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি চান না আবরারের বাবা ও ভাই ২০১৯ সালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের মুখে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয় প্রতিষ্ঠানটিতে। এ ঘটনার ৪ বছর না পেরোতেই আবারও বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চালুর তৎপরতা শুরু করেছে ছাত্রলীগ। এদিকে হাইকোর্ট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার আদেশ বাতিল করে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির অনুমতি দিয়েছে। তবে বুয়েটে নতুন করে ছাত্ররাজনীতি চালুর বিপক্ষে মত দিয়েছেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহর। তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতি শুরু হলে এখন বুয়েটের যে পরিবেশ আছে তা বিঘিœত হবে। আমার এক ছেলেকে হারিয়েছি,আরেক ছেলেকেও সেখানেই(বুয়েটে) ভর্তি করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালু হোক। আমার স্ত্রীর দাবিও একই। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হয়েছেন আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। ঈদের ছুটিতে এসে কুষ্টিয়া শহরের বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি। বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালুর তোড়জোড় চলছে, ছাত্র হিসেবে আপনি কি চান এমন প্রশ্নের জবাবে আবরার ফাইয়াজ বলেন, পঞ্চাশজন ছাত্ররাজনীতি চাই না, আর পাঁচজন চাই। অথচ এই পাঁচজনের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যারা ক্যাম্পাসে রাজনীতি চাচ্ছেন,তারা কি আর কাউকে মারার আগে দ্বিতীয়বার ভাববে, ভাববে না। ছাত্ররাজনীতির অনুমতি দেয়া মানে তাদেরকে এক ধরনের ইনডেমনিটির ব্যবস্থা করে দেয়া। যাতে এরপর থেকে আর কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না পাই। আবরার ফাহাদ ছিলেন ফাইয়াজের একমাত্র ভাই। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে। বাবা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখতে উপাচার্যের প্রতি আইনি লড়াইয়ের আহ্বান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের-সংবাদ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অমান্য করে লিয়েন ছুটিতে শিক্ষক,তদন্ত কমিটি গঠন
★ ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটিকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ ★ শেষ চারটি একাডেমিক কমিটিতে অনুপস্থিত ★ কোর্স ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন অমান্য করে লিয়েন ছুটিতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোচনা শোভার বিরুদ্ধে। অনুমোদনহীন ভাবে এক বছর ১০ মাস দুই দিন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন তিনি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হলে রেজিস্ট্রার অফিস থেকে নোটিশও দেয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দর্শন বিভাগের শিক্ষক সোচনা শোভা ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট শিক্ষাছুটিতে যান। মোট ৬ বছর ৭ মাস ১০ দিন শিক্ষাছুটি ভোগ করে ০৭ এপ্রিল ২০১৯ সালে কর্মস্থলে যোগদান করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০২০ সালে ১০ফেব্রুয়ারী লিয়েন ছুটির আবেদন করেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম যোগদানের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১১ হতে লিয়েন ছুটিতে যাওয়ার তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ পর্যন্ত সর্বমোট চাকরিকাল হতে ভোগকৃত মোট ৬ বছর ৭ মাস ১০ দিন শিক্ষাছুটি বাদ দিলে সোচনার চাকরিকাল হয় ১ বছর ৬ মাস ১৪ দিন যা লিয়েন ছুটিতে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জেষ্ঠ্য শিক্ষক। এক্ষেত্রে লিয়েন ছুটির নীতিমালা অনুযায়ী তার ন্যূনতম চাকরিকাল ৩ বছর পূর্ণ হয় না। কিন্ত লিয়েন ছুটি অনুমোদনের পূর্বেই মোনাস ইউনিভার্সিটির মোনাস বায়োএথিক্স সেন্টার, স্কুল অন ফিলোসোফিক্যাল হিস্টোরিক্যাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (এসওপিএইচআইএ), ফ্যাকাল্টি অব আর্টস বিভাগে টিচিং অ্যাসোসিয়েট হিসেবে যোগদান করেন বলে জানা যায় রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক চিঠিতে। ফলে ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০ হতে ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ পর্যন্ত ০১ বছর ১০ মাস ০২ দিন তিনি অননুমোদিত ভাবে অস্ট্রেলিয়া অবস্থান করেন। এসময় তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকাসহ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অস্ট্রেলিয়াতে গমন ও অবস্থান করে। যা সরকারি নির্দেশাবলী অমান্য করেছেন। তার ভোগকৃত শিক্ষা ছুটির সমপরিমান তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করেননি। এছাড়া শিক্ষক সোচনা শোভার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটিকে কোনরূপ সহযোগীতা না করা এবং বিভাগের ৪টি একাডেমিক কমিটি ও একটি ‘কমিটি অব কোর্সেস’ এর মিটিং-এ অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তার এ ধরনের কার্যকলাপ ও আচরণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫ এর ৪৪ (৬) অনুচ্ছেদ এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ২ (খ) ও (চ) বিধিতে বর্ণিত কার্যসমূহের আওতায় পড়ে। ফলে সোচনা শোভাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫ এর ৪৪ (৬) অনুচ্ছেদ ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) ও (গ) বিধিতে বর্ণিত কার্যসমূহের দায়ে অভিযুক্ত করেছে প্রশাসন। অভিযুক্ত শিক্ষক সোচনা শোভার বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.মাসুম বিল্লাহ বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। কেসটি নানা মাত্রিকতায় ভরপুর। সর্বোচ্চ অনুধাবন ও মনোনিবেশ দিয়ে ড.সোচনা শোভার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট উপস্থাপন করা হবে। এই তদন্ত কমিটি গঠনের আগেও ঘটনার অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিও গঠন হয়। তবে সেই কমিটিকে কোন রুপ সহযোগিতা করেন না সোচনা। পূর্বের কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.রবীন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে আমাদের তদন্তের রিপোর্ট প্রশাসনকে জমা দিয়েছি। তদন্ত কার্যক্রমে অভিযুক্তের সহযোগিতা পাইনি। সকল বিষয়েই বিস্তারিত বলা আছে। সিন্ডিকেট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। এদিকে গত জানুয়ারি মাস থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত বিভাগে অনুষ্ঠিত ধারাবাহিক চারটি একাডেমিক মিটিংয়ে অনুপস্থিত ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অর্থ্যাৎ প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ক্লাস থাকলেও ক্লাস নেয় নি বলে অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নাম গোপন রাখার শর্তে এই শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রায় দেড় মাস যাবৎ আমাদের ক্লাস চলছে কিন্তু ম্যাডাম কোন ক্লাস নেয় নি। তবে ঈদের পরে উনি ক্লাস নিবে বলে জানিয়েছেন। বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড হাফিজুর রহমান বলেন, এই ঘটনা ও অভিযোগ গুলো আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব নেওয়ার আগের। বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত করছে। তদন্ত অনুযায়ী প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। সার্বিক বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক সোচনা শোভাকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি। এমনকি ক্ষুদেবার্তার উত্তর মেলেনি। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.আইনুল ইসলাম বলেন, বিষয়ে তদন্ত কমিটি রয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করছে। তারাই আইন বিশ্লেষণ করবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
★ ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটিকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের ছুটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছুটি ৪ দিন বাড়িয়ে ১৯ দিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস ছুটি এবং ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস ছুটি থাকবে। সোমবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান। তিনি জানান, বিশেষ বিবেচনায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩১ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিদ্যমান ১৫ দিনের ক্লাস ছুটি ৪ দিন বাড়িয়ে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এবং ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের অফিস ছুটি ২ দিন বাড়িয়ে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে, গত ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ ছুটির ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ঈদের পূর্বে পর্যাপ্ত ছুটি থাকলেও পরে ছুটি কম থাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভায় ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছুটি ৪ দিন বাড়িয়ে ১৯ দিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস ছুটি এবং ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস ছুটি থাকবে।
ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস দাবিতে অটল বুয়েট শিক্ষার্থীরা
ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে এখনো অটল অবস্থানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার জরুরি বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করায় সেখানে ছাত্ররাজনীতিতে আর বাধা নেই। এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আবারও ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আকাঙ্ক্ষার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যার আগে বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তাদের এ অবস্থানের কথা জানান শিক্ষার্থীরা। এসময় তিন শিক্ষার্থী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা বুয়েটের শিক্ষার্থীরা দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান ও আস্থা রাখি। বুয়েট ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আগমন এবং শোডাউনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালার লঙ্ঘন বলে মনে করে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর ৯ অক্টোবর গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বুয়েট যদি মনে করে, তারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে দিতে পারে। এরই ফলে বুয়েটের সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট প্রশাসন সব ধরনের সাংগঠনিক রাজনীতি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করে। আমরা বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি রাখব যে এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত বিচার বিভাগে যথাযথভাবে তুলে ধরা হোক। বক্তব্যে বলা হয়, যে ছাত্ররাজনীতি র‍্যাগিংয়ের সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেয়, ক্ষমতার অপব্যবহারের পথ খুলে দেয়, যার বলি হতে হয় নিরীহ শিক্ষার্থীদের, তা আমাদের জন্য ভালো কিছু কখনোই বয়ে আনেনি, আনবেও না। উল্লেখ করে বলা হয়, ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েটের পরিবেশ সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব ছিল। মৌলবাদী শক্তিকেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দিতে পারি। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আমাদের বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও ইতিমধ্যে আমাদের ক্যাম্পাস ছাত্ররাজনীতিমুক্ত রাখার মতামতের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে একাত্মতা পোষণ করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ নিজ জায়গা থেকে তাঁরা আমাদের পক্ষে তাঁদের অবস্থান ব্যক্ত করছেন। বক্তব্যে বলা হয়, বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের প্রতি পূর্ণ ভরসা ও আস্থা রাখে। যেসব শিক্ষক আমাদের ক্লাস নিয়েছেন, আমরা গত চার বছরে এমনটা কখনো অনুভব করিনি যে তাঁরাও চান পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রবেশ করে সেই অন্ধকার দিনগুলো ফিরে আসুক। আমরা বুয়েটের সব শিক্ষকের কাছে আরজি জানাচ্ছি, তাঁরা যেন এমন সংকটের মুহূর্তে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান। আমরা উপাচার্য স্যারের ওপর আস্থা পোষণ করি। তাঁর সদিচ্ছা সব সময় আমাদের পক্ষে ছিল বলেই আমরা বিশ্বাস করি। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা উপাচার্য স্যারকে এই আরজি জানাচ্ছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে নিয়ে আপামর বুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের যে আকাঙ্ক্ষা, তা সব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি যেন পূরণ করেন।
ছাত্ররাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে এখনো অটল অবস্থানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার জরুরি বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করায় সেখানে ছাত্ররাজনীতিতে আর বাধা নেই। এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আবারও ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আকাঙ্ক্ষার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ঢাবি দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে চৌর্যবৃত্তি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্তে কমিটি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পিএইচডি থিসিসে চৌর্যবৃত্তির (প্লেজিয়ারিজম) এবং নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। রবিবার ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য। দর্শন বিভাগের অধ্যাপক দাউদ খানের বিরুদ্ধে পিএইচডি থিসিসে চৌর্যবৃত্তির (প্লেজিয়ারিজম) অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল বাছিরকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবুল মনসুর আহাম্মদ ও ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক নাসিরউদ্দিন মুন্সী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, অধ্যাপক ফেরদৌস জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। ঐ বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী প্রথমে বিভাগে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ জানালে পরে সেটি সিন্ডিকেটে আসে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছে সিন্ডিকেট। আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীমা জামানকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের এই কমিটিতে আরও রয়েছেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাসুদুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পিএইচডি থিসিসে চৌর্যবৃত্তির (প্লেজিয়ারিজম) এবং নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।
হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বুয়েটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ২০১৯ সালের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। উচ্চ আদালতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বুয়েটের শহীদ মিনারসংলগ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সমমনা একদল শিক্ষার্থী। আজ সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসময় শিক্ষার্থীরা কিছুক্ষণ জয় বাংলা স্লোগানও দেন। ছাত্রলীগের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও বুয়েটের সদ্য সাবেক ছাত্র হাসিন আজফারসহ ১১ শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। অন্য ১০ শিক্ষার্থীও ছাত্রলীগ-সমর্থক বলে জানা গেছে। এ কর্মসূচির সময় শহীদ মিনারের সামনেই অবস্থান করছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ কনক। এসময় বুয়েটের ২০তম ব্যাচের ছাত্র আশিক আলম গণমাধ্যমকে বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিজেদের রাজনৈতিক মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেয়েছি। জয় বাংলা স্লোগান ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আমরা এ রায়কে সাধুবাদ জানালাম। প্রগতিশীল সব সংগঠনকে আমরা বুয়েটে স্বাগত জানাই। অন্ধকার কোনো সংগঠন এবং স্বাধীনতাবিরোধী কোনো চেতনা বুয়েটে ঠাঁই পাবে না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ২০১৯ সালের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। উচ্চ আদালতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বুয়েটের শহীদ মিনারসংলগ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সমমনা একদল শিক্ষার্থী।
‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে কুবি সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডি থেকে আরো এক সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছে। পদত্যাগকারী শিক্ষক হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসেনা বেগম৷ তিনি ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সোমবার (০১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর প্রেরিত একটি পদত্যাগ পত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়। পদত্যাগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, আমি ব্যক্তিগত কারণে বর্তমানে উক্ত পদে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করছি। এবিষয়ে জানতে হাসেনা বেগমকে ফোন করা হলে, নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার, ০৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ১৮ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মো: কামরুল হাসান ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক কুলছুম আক্তার স্বপ্না পদত্যাগ করেন। এছাড়াও ১৯ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় ‘এজেন্ডা বহির্ভূত ও বেআইনীভাবে ডিন নিয়োগ’ দেয়ার কারণ দেখিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যর পদ থেকে অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান পদত্যাগ করেন। গত ২০ মার্চ চার হলের চার আবাসিক শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিনিধি মোহাম্মদ আইনুল হক।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডি থেকে আরো এক সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছে। পদত্যাগকারী শিক্ষক হলেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসেনা বেগম৷ তিনি ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনকালে দুই শিক্ষার্থী আটক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হলে হেরোইন সেবনকালে দুই শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করেছে হল প্রশাসন। শনিবার (৩০ মার্চ) রাত ১টায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে শহীদ সালাম-বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু অভিযান চালায়। হলের বি ব্লকের ১৩৫ নাম্বার কক্ষে মাদক সেবনকালে তাদের হাতেনাতে আটক করেন তিনি। আটককৃতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ও তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী বশির আনজুম অর্নব এবং একই ব্যাচের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রিয়াদ মিয়া। তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি হলের একটি কক্ষে হেরোইন সেবন চলছে। তৎক্ষনাৎ হলের আবাসিক শিক্ষক মওদুদ আহমেদকে নিয়ে হলের ১৩৫ নম্বর কক্ষে অভিযান চালাই। পরে সেখানে দুই শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করি। প্রাথমিক অবস্থায় দুইজনের একজন সেবনের কথা স্বীকার করেছে। পরে ডোপ টেস্ট করার জন্য আমরা তাদের নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছি। পরদিন তাদের পরীক্ষা থাকায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেব। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, শুধু এরাই নয়, হলের আরও বেশ কয়েক শিক্ষার্থীর নামে আমরা এমন তথ্য পেয়েছি। তাদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর চলছে। প্রমাণ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে গতবছর (১৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা এক মোবাইল কারিগরকে তুলে নিয়ে ছিনতাই করার অভিযোগে অর্নবকে হাতেনাতে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হলে হেরোইন সেবনকালে দুই শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করেছে হল প্রশাসন।
কোচিং বাণিজ্য, নির্বাচন ঘিরে আধিপত্যের লড়াই মতিঝিল আইডিয়ালে
কোচিং ‘বাণিজ্য’ ও গভর্নিং বডির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কয়েকটি পক্ষ্যের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই চলছে। স্কুলের তিন ক্যাম্পাসে চলছে মহড়া ও পাল্টা মহড়া। ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্যের স্বার্থে শিক্ষকদের একটি বড় অংশই দলাদলিতে জড়িয়ে পরছেন বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন। আগামী ১৯ এপ্রিল ‘আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০২৪’ হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনকে ঘিরে নানা বিতর্ক শুরু হয়েছে। অভিভাবকদের একটি পক্ষ্য নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন। অন্য পক্ষ্যটি যথাসময়ে নির্বাচনের পক্ষ্যে। কোচিং কার্যক্রমে বিতর্ক :নতুন শিক্ষাক্রমে কোচিং বাণিজ্যকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। স্কুলভিত্তিক কোচিং কার্যক্রম বন্ধের কথাও বলা হচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন থেকে। যদিও একটি কোচিং সেন্টারের (সেইফ কোচিং) মালিক গভর্নিং বডির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি এর আগেও প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে সেইফ কোচিং সেন্টারের মালিক শাহদাৎ হোসেন ঢালী বলেন, কোচিং সেন্টারের মালিক হয়ে গভর্নিং বডির নির্বাচনে অংশ নিতে আইনি কোনো বাঁধা নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও এই ধরণের কোনো শর্ত আরোপ করেনি। এরপরও এই বিতর্ক এড়াতে ‘সেইফ কোচিং’ সেন্টারের মালিকানা তার স্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছেন বলে দাবি করেন শাহাদাৎ ঢালী। এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সংবাদকে বলেন, ‘কে কোচিং পরিচালনা করছে, কী ব্যবসা করছে সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের দেখার বিষয় সে প্রকৃত অভিভাবক কিনা।’ তবে কেউ যদি কোচিং সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগপত্র দেয় তখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বোর্ড চেয়ারম্যান। একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, তিন বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইডিয়াল স্কুলের তিনটি শাখার ১৮৬ জন কোচিংবাজ শিক্ষকের তালিকা করেছিল। এর মধ্যে কয়েকজনকে বিভিন্ন সময়ে দুদকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ওইসব শিক্ষক গভর্নিং বডির নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক :অন্যদিকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাওয়া প্রতিষ্ঠানটির সমাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাকসুদা আক্তারকে ফরম কিনতে না দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, মাকসুদা আক্তার সাময়িক বরখাস্ত আছে। এ কারণে তাকে ফরম দেয়া হয়নি। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় এক মাসের মধ্যে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মাকসুদা আক্তার বলেন, ভোটার তালিকায় নাম থাকার পরও তাকে সদস্য পদের মনোনয়ন ফর দেয়া হয়নি। সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি অধ্যক্ষ। তিনি হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও ‘গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০১৪’ কমিশনের প্রিজাডিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। এরপরও তাকে ফেরম দেয়া হয়নি বলে মাকসুদা আক্তারের অভিযোগ। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির আজীবন দাতা সদস্য কাজী তৌহিদুজ্জামান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ করেছেন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০২৪’ এর দাতা ভোটার তালিকা হাল নাগাদের জন্য আবেদনকারী ৯৮ জন আজীবন দাতা সদস্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি গত ১৩ মার্চ অধ্যক্ষকে তদন্তের বিষয়ে জানানোর পরও তিনি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার জন্য ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভোটার তালিকা পাঠান। এরপর গত ২০ মার্চ তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্তের জন্য স্কুলে উপস্থিত থেকে অধ্যক্ষ ও তিন জন সহকারী প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নিয়েছেন। ৯৮ জন দাতা সদস্যকে বাদ দেয়ার কারণ হিসেবে যদি কোনো তথ্য উপাত্ত থাকে তাহলে সেগুলো নিয়ে অধ্যক্ষকে গত ২৫ মার্চ শিক্ষা বোর্ডে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়। এর আগেই গত ১৯ মার্চ তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। আইডিয়াল স্কুল অভিভাক ঐক্য ফেরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা না মেনে ‘শাখা ক্যম্পাস’ আলাদা না করে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। সে কারণে তিনি তফসিল স্থগিত করে নতুন করে আলাদা ভোটার তালিকা তৈরি করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন। স্থায়ী অধ্যক্ষ না থাকায় বারবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিবর্তন :গত এক বছরে অন্তত তিনজন অধ্যক্ষ পরিবর্তন হয়েছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। স্থায়ী অধ্যক্ষ না থাকায় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে বলে বলে অভিভাবকদের দাবি। প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য গোলাম আশরাফ তালুকদার গত ২৮ মার্চ ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘স্থায়ী অধ্যক্ষ না থাকায় ঘন ঘন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পরিবর্তন করায় অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার অভাবে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রাশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা থাকায় মৌলবাদ শক্তি জেকে বসেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসন্ন গভর্নিং বডি গঠনের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য জয় পরাজয়ের হিসাব নিকাশে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ওপর চলছে নিয়ম এবং আইন বহিভূর্ত নিপীড়ন, ভেঙে পড়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, চলছে বিভক্তি, বিভাজন ও আঞ্চলিকভাবে বিষবাম্পের লেলিহাল।’ আশরাফ তালুকদার প্রতিষ্ঠানটি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি মুখ থুবড়ে পড়ে যাবার সম্ভাবনা আসন্ন প্রায়।’ গভর্নিং বডির নির্বাচনসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এমাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি তা ধরেননি। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী সংবাদকে বলেন, তারা আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির নির্বাচনসহ সার্বিক বিষয়ে নজর রাখছেন। কোচিং কার্যক্রম ও গভর্নিং বডির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ বিশৃঙ্খলা বা সরকারি বিরোধী তৎপরতা চালালে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কোচিং ‘বাণিজ্য’ ও গভর্নিং বডির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কয়েকটি পক্ষ্যের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই চলছে। স্কুলের তিন ক্যাম্পাসে চলছে মহড়া ও পাল্টা মহড়া। ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্যের স্বার্থে শিক্ষকদের একটি বড় অংশই দলাদলিতে জড়িয়ে পরছেন বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।
একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরতে চায় বুয়েটের আন্দোলনকারীরা
নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা জানিয়েছেন বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানান তারা। নিরাপত্তা পেলে একাডেমি কার্যক্রমে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন তারা। গত বুধবার মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় গত শুক্রবার থেকে টানা আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে রোববার দুপুর ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও শিক্ষা বিরোধী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির দাবিও জানায় ছাত্র সংগঠনটি। প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে দলবেঁধে বুয়েট ক্যাম্পাসে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দুজন লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান। তবে তাদের নাম পরিচয় দেননি। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমাদের ক্যাম্পাসের রাজনীতিমুক্ত থাকা, অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত থাকা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেলে আমরা সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরত যাব।’ যে দুদিন শিক্ষার্থীরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে, সেই দুই দিনের পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। ২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর আন্দোলনের মুখে ওই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে ফের আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘন করে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম এ সমাগম ঘটান। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান। এরপর রাতে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিনের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করে ৮ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ইমতিয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করাসহ ছয় দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে ফের বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে রোববার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলন নিজেদের অবস্থান তুলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের পক্ষে আন্দোলনরত সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীরা আজ নিরাপত্তাজনিত তীব্র শঙ্কার কারণে কেউ কোনোরূপ সমাগম করেনি। ক্যাম্পাসের আশপাশের সকল এলাকায় রোববার রাত থেকে ক্রমাগত মাইকিং, শিক্ষার্থীদের ফোন কলে হুমকি-ধমকি প্রদান করা, সোশাল মিডিয়ায় নানারকম গুজব, বুয়েট শিক্ষার্থীদের মিথ্যা ট্যাগ দেয়া, শিক্ষার্থীদের ছবি নাম পরিচয়সহ পোস্ট করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয়- এমন সব অপপ্রচার চালানো হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত এসব কারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আজ ক্যাম্পাসে অবস্থান না নেয়া মানে এই নয় যে, বুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্ররাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাস এর দাবি থেকে সরে এসেছে, এ দাবি বুয়েটের সব ব্যাচের সব শিক্ষার্থীর। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে বলা হয়, ‘আজ বুয়েটের ২০ ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, উক্ত পরীক্ষায় ক্যাম্পাসে কোনোরূপ অবস্থান আন্দোলন ছাড়াই, কোনো বাধা ছাড়াই নিয়মিত শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র ১ জন বাদে সব শিক্ষার্থীই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিল। ‘১২১৫ জন ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২১৪ জনই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এ থেকেই শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত নৈতিক অবস্থান ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কতটুকু সুদৃঢ় তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়।’ ৩০ মার্চ শনিবারও বুয়েট ২২ ব্যাচের প্রথম টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাতেও কোনো শিক্ষার্থীই অংশগ্রহণ করেনি বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি মিডিয়ায় বুয়েটের আন্দোলনরত বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। আমরা আবারও সাফ জানিয়ে দিতে চাই যে, আমাদের অবস্থান কোনো একক ছাত্ররাজনীতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে নয়, বরং বুয়েট ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের সব ছাত্ররাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে।’ বুয়েটে হিযবুত তাহরির কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে হিজবুত তাহরির নিয়ে কথা উঠেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল না, বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। এদের কর্মকাণ্ড আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে পাই বহিরাগতদের (সিসি ফুটেজ অনুযায়ী) লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট না। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিবিরের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগ আসছে, তাদের ঘটনাটি বুয়েটের বাইরে হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। তবে অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য লিখিতভাবে আহ্বান জানাই এবং এটি আমাদের পূর্বের একটি আন্দোলনের অন্যতম দাবি হিসেবে ছিল। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি না চাওয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মতাদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়া নয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছেন, আমরা শুধু চাই না, ক্ষমতার লোভ ও অপচর্চা আবারও এসে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ফেলুক। আমরা সব শিক্ষার্থীই গর্বের সঙ্গে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনার চর্চা আমাদের অন্তরে লালন করি। আমরা হিযবুত তাহরিরের সম্পূর্ণ বিপক্ষে এবং কারও শিবির-সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তার বহিষ্কার চাই। এর আগে ইমতিয়াজকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে ও বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশের পর নেতাকর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। বুয়েট শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে তারা বুয়েট ত্যাগ করেন। ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলায় কি সমাধান। বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কালাকানুন বাতিল করতে হবে। আইন অনুসারে গণতান্ত্রিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। সমাবেশ থেকে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দেন ছাত্রলীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আলটিমেটাম দিচ্ছি, বুয়েটে ছাত্র সংসদের নির্বাচন দিতে হবে। ইমতিয়াজ বাপ্পীকে (হলে আসন বাতিল হওয়া ছাত্র) সসম্মানে হলে বরণ করে নিতে হবে।’ তিনি বুয়েটে জঙ্গি কর্মকা-ের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান। সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, বুয়েট ক্যাম্পাসে আবরারের মৃত্যু তাদের অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। তবে বুয়েট ক্যাম্পাসে হিজবুত তাহরির, জেএমবি, ছাত্রশিবির ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের কারিগর হবে, এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, গুটিকয় ছদ্ম প্রতারক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে তাদের আন্দোলনে নামিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ছাত্ররাজনীতি আবার চালু হতে পারে : বুয়েট উপাচার্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। রোববার উপাচার্য তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। উপাচার্য বলেন, ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের গড়ে ওঠার জন্যই দরকার। বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে আবার ছাত্ররাজনীতি চালু হতে পারে। সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে, রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেব। আর পরীক্ষা ওপেন আছে, কেউ চাইলে দিতে পারে। এর আগে শনিবার উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও সহমত। কিন্তু এগুলো পুরণে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য সময় প্রয়োজন।’ বুয়েটকে অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে : ওবায়দুল কাদেরবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) অপরাজনীতির কারখানা বানানো হচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। বুয়েটকে জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে সরকার অ্যাকশনে যাবে।’ ওবায়দুল কাদের রোববার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত সাংগঠনিক জেলাসমূহের নেতারা, জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্যরা এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুয়েটের ঘটনা তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি। সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে একটা অপরাজনীতি জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিনত করা হবে। এটা যাতে না হয়, আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। এরকম কিছু পাওয়া গেলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে।’ বুয়েটে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব অপকর্ম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স। সেই নীতিতে আমরা এগিয়ে চলছি। বুয়েটে আবরার হত্যায় কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডে নেতাকর্মীদের দণ্ড হয়েছে, কাউকে ছাড় দেয়া হয়নি।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বুয়েটে সেদিন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না আর আমি রাজনীতি করি বলে বুয়েটে যেতে পারবো না- এটা কোন ধরনের আইন? কোন ধরনের নিয়ম?
রোববার নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি চালুর দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সমাবেশ-সংবাদ
ক্যাম্পাস রাজনীতিমুক্ত থাকলে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রাজনীতি মুক্ত রাখার শর্তে ক্লাস পরীক্ষায় ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য জানায় তারা। বক্তব্যে বলা হয়, রাজনীতি মুক্ত থাকা, অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত থাকা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা শিক্ষার্থীরা পেলে আমরা সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমের ফেরত যাব। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের পরীক্ষাগুলো রিশিডিউল করার আবেদন জানিয়েছি। কর্মসূচি এবং পরীক্ষা বর্জন প্রসঙ্গে তারা বলেন, নিরাপত্তাজনিত তীব্র শঙ্কার কারণে কেউ কোনোরুপ সমাগম করেনি। ক্যাম্পাসের আশপাশের সকল এলাকায় গতকাল রাত থেকে ক্রমাগত সাইকিং, শিক্ষার্থীদের ফোন কলে হুমকি ধামকি প্রদান, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানারকম গুজব, বুয়েট শিক্ষার্থীদের মিথ্যা ট্যাগ দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ছবি নাম পরিচয়সহ পোস্ট করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা গুরুতরভাবে বিঘ্নিত হয় এমন সকল অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বুয়েট ক্যাম্পাস এবং আশেপাশের এলাকা বুয়েটের শিক্ষার্থীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। তারা আরও বলেন, বুয়েট ক্যাম্পাসের বাইরেও শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। নিরাপত্তাজনিত এ সকল কারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আজ ক্যাম্পাসে অবস্থান না নেওয়া মানে এই নয় যে, বুয়েট শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্র রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাস এর দাবি থেকে সরে এসেছে। এ দাবি বুয়েটের সকল ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীদের বলে জানান তারা। তারা বলেন, বুয়েট এর ২০ ব্যাচের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ছিল, উক্ত পরীক্ষায় দুই-তিনজন বাদে সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিল। ২০ ব্যাচের ১২১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২১১ জনই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এ থেকেই শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত নৈতিক অবস্থান ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে কতটুকু সুদৃঢ় তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। হিযবুত তাহরীরসহ উগ্রবাদী সংগঠনের ক্রিয়াকলাপ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে হিযবুত তাহরীর নিয়ে কথা উঠেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল না বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। এদের কর্মকাণ্ড আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে পাই বহিরাগতদের (সিসি ফুটেজ অনুযায়ী) লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট না। আমরা হিজবুত তাহরীরের নিঃসন্দেহে সম্পূর্ণ বিপক্ষে এবং এ জাতীয় অপশক্তির উত্থান যেন বুয়েটে না হয় এজন্য আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রাজনীতি মুক্ত রাখার শর্তে ক্লাস পরীক্ষায় ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য জানায় তারা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির অনুমতি দেয়া যেতে পারে: উপাচার্যের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালু করা যেতে পারে। রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে বুয়েটে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য এসব কথা বলেন। উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, রাজনীতি না করলে দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ আসবে না। রাজনীতি করার অধিকার সবারই আছে। আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যাওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। তদন্ত প্রতিবেদন পাবার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সামগ্রিক বিষয়ে সিদ্ধান্তে যাবে বলেও মন্তব্য করেন উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বিবদ্যালয়টিতে বন্ধ করা হয় ছাত্র রাজনীতি। এরই মধ্যে, গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বিশাল বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ইমতিয়াজ রাব্বিকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আলটিমেটাম দেন। এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে বুয়েট উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানানো হয়। এদিকে, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ফেরাতে আজ রোববার (৩১ মার্চ) সকালে শহিদ মিনারে ছাত্রলীগের সমাবেশ করে। এরপর দুপুরের দিকে প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে বুয়েটে প্রবেশ করেছেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে বুয়েট শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন ছাত্রলীগের শীর্ষ এই দুই নেতা। এরপর পরই তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে দেখা যায়। এসময় যদিও বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার নামে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) জঙ্গি রাজনীতির কারখানায় পরিণত করার প্রমাণ পেলে সরকার অ্যাকশনে যাবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালু করা যেতে পারে। রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে বুয়েটে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
বুয়েটে প্রবেশ করলো ছাত্রলীগ, দাবি সাংগঠনিক রাজনীতির
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা। রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের নেতৃত্বে একটি মিছিল প্রবেশ করে বুয়েট ক্যাম্পাসে। এর আগে, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি ও শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এতে বুয়েটের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রলীগ। সেই সঙ্গে রাব্বির সিট ফেরত দিতে বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র সংগঠনটি। এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে মিছিল নিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাসহ নেতাকর্মীরা। এদিকে, রোববার দুপুরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার জানিয়েছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চাইলে ক্যাম্পাসে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালু করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা।
শতাধিক গাছ কেটে ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বৃক্ষ নিধন করে ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ। এতে দুই শতাধিক গাছ কাটা পড়বে বলে আশঙ্কা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নির্মান প্রকল্পের কার্যাদেশ হয়েছে। এখন শুধু অর্থছাড় ও নির্মাণকাজ শুরু করা বাকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী হলের সম্প্রসারিত ভবনের পাশে (আল বিরুনী এক্সটেনশন) চারুকলা বিভাগের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে দুইশতাধিক গাছ রয়েছে । গাছ কেটে নতুন ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে বলে দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও পাশে থাকা লেকে বর্জ্য নিরসনের মাধ্যমে লেক `হত্যা’ করা হবে বলেও দাবি তাদের। মাস্টারপ্ল্যান না করে ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে চারুকলা ভবন নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এম. এম. ময়েজউদ্দীন বলেন, পূর্বনির্ধারিত এই জায়গাটির পাশের বিল্ডিং এ চারুকলার ক্লাস চলত আগে থেকে এবং আমরা মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নকারী কমিটির সাথে কথা বলেছি, তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছে, মাস্টারপ্ল্যান এর সাথে সমন্বয় করেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। তিনি আরো জানান, ভবন নির্মাণে নির্ধারিত জায়গায় মেহগনি সহ কিছু ডালপালা বিহীন গাছ আছে এবং জায়গাটিতে বর্তমানে ঘাস ও জন্মাচ্ছে না। এর ফলে কিছু গাছ কাটা পড়লেও পরিবেশের ক্ষতি হবে বলে মনে করছি না । এছাড়াও ঈদের ছুটিতে কাজ শুরু করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ছাত্র, শিক্ষক ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নকারী কমিটির মতামতের উপর ভিত্তি করে ঈদের বন্ধে কাজ শুরু হবে না। অন্যদিকে জায়গা নির্ধারণ সম্পন্ন হলেও কতটুকু জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে বা কতগুলো গাছ কাটা পড়বে এ সম্পর্কে কিছুই জানে না বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেস্ট অফিস। ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, আমরা কখনো চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করে ভবন নির্মাণ করা হোক। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ঢাকা শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই অপরিকল্পিত নগরায়ণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে এখানে পড়াশোনার পরিবেশ থাকবে না। তাই আমরা চাই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ হোক। তিনি আরো বলেন, এছাড়াও এইখানে ভবন নির্মাণ করার ফলে প্রায় দুই শতাধিক গাছ কাটা পড়বে যা আমাদের পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বলেন, ভবন নির্মাণে কতটুকু জমি নির্ধারণ করা হবে এবং কতগুলো গাছ কাটা পড়বে এ বিষয়ে আমাদের এখনো অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি ।
বৃক্ষ নিধন করে ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ। এতে দুই শতাধিক গাছ কাটা পড়বে বলে আশঙ্কা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে জিরো টলারেন্স: প্রতিমন্ত্রী
'নদী তীর দখলরোধে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স বজায় থাকবে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কোর্টের নির্দেশনার আলোকে অভিযান চলবে।' নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী  মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শিপিং রিপোর্টার্স ফোরাম বাংলাদেশের (এসআরএফবি) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় শোক ও সমবেদনা  প্রকাশ করেন। তিনি নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। প্রতিমন্ত্রী আহতদের  আরোগ্য কামনা করেন। এ সময় রোববার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাইয়ের বিষয়টি সরকার সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন এবং এর স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য শিপিং রিপোর্টার্স ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সাংবাদিকদের গঠনমূলক লেখনীকে তিনি সাধুবাদ জানাবেন বলেও জানান। তিনি জানান, মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার তথ্য জানতে বিভিন্ন সোর্স থাকলেও সাংবাদিকদের ওপর অনেক ক্ষেত্রে নির্ভর হতে হয়। প্রতিমন্ত্রী আশা করে বলেন, এসব ক্ষেত্রে শিপিং রিপোর্টার্স ফোরাম আরও বেশি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে। প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যতে করণীয় দিকগুলো তুলে ধরতে শিপিং রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। শিপিং রিপোর্টার্স ফোরামের নেতারা মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম, সমস্যা ও সমাধানের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বিশেষ করে বিআইডব্লিউটিসির স্টিমার ও ফেরি সার্ভিসের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এবং ওয়াটারবাস চালু, বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং, সদরঘাটের ইজারা প্রথা ও লেবার হ্যান্ডলিং, স্পিডবোট চলাচল, নৌপরিবহন অধিদফতরের জাহাজের নকশা অনুমোদন, সার্ভে ও বিভিন্ন পরীক্ষার অনিয়ম, গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরকে আরও গতিশীল করার বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পায়। এসআরএফবির সভাপতি রাশেদ আলী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। কার্যকরী সদস্য আশীষ সেন, শফিকুল ইসলাম,  এইচ আর সাগর,কিশোর সরকার,  ফারুক খান, মাহমুদ আকাশ, রতন বালো, তোফাজ্জল হোসেন, তরিকুল ইসলাম সুমন, কামাল হোসেন তালুকদার, তাসনীম মহসীন, গাজী শাহনেওয়াজ, মাহফুজুর রহমান শুভ, শফিকুল ইসলাম ও রানা মাসুদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
'নদী তীর দখলরোধে উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স বজায় থাকবে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কোর্টের নির্দেশনার আলোকে অভিযান চলবে।'
বিমানে চড়ল অস্ত্রধারী, প্রতিমন্ত্রী বললেন নিরাপত্তার ত্রুটি পাননি
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে র‌্যাবের তালিকাভুক্ত একজন অপরাধী রাষ্ট্রীয় বিমানে চড়ে বিমানটি ছিনতাইচেষ্টা করলেও এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আয়োজনে কোনো ত্রুটি পাননি বলে দাবি করেছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। প্রতিমন্ত্রীর দাবি, রোববারের ঘটনার পর শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার আয়োজন পর্যালোচনা করে কোনো ত্রুটি তারা পাননি।তিনি বলেন, এখানে এমন কোনো লিকেজ ছিল না বা এখনো নেই যে একজন যাত্রী এভাবে বিমানে যেতে পারে। তাহলে কী করে 'পিস্তল' নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা অতিক্রম করে বিমানে চড়ল একজন অপরাধী? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি প্রতিমন্ত্রী। পারেনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও। সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। তবে আসল ঘটনা জানতে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের অপেক্ষায় থাকার কথা বলেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে বিমান প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বিমান সচিব মহীবুল হক এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান। এখনো পুরো বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছেন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, 'আজকেও আমরা পুরো বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করেছি। সাংবাদিকরাও পুরো বিষয়টি দেখেছেন।' তিনি বলেন, কলিগদের থেকে জানতে পারি বিমান হাইজ্যাক হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলে দেখলাম তিনি ঘটনাটি জানেন। কমান্ডো প্রসিড করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক পুরো বিষয়টি মনিটর করেছেন। পরবর্তীতে আমরা জানলাম সবাই নিরাপদে রয়েছে। বিমান সচিব মহীবুল হক বলেন, 'আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখেছি, অন্য ১০টা যাত্রীর মতো তাকেও (বিমান ছিনতাইকারী) তল্লাশি করা হয়েছিল। তার কাঁধে একটা ব্যাগ ছিল। সেটা স্ক্যান করা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে কিছু দেখা যায়নি।' তাহলে অস্ত্রটা ভেতরে গেল কীভাবে? এই প্রশ্নে বলেন, 'সেটা অস্ত্র কিনা আমরা ওয়াকিবহাল না। তদন্ত প্রতিবেদনের পর এটা নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।' উল্লেখ্য, রোববার বিকালে দুবাইয়ের উদ্দেশে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে বিমানটি। বিমানের চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটটি যখন মাঝ আকাশে, তখন এক ব্যক্তি পাইলটকে অস্ত্র ঠেকিয়ে উড়োজাহাজটি জিম্মি করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জরুরি অবতরণ করা হয়। জরুরি অবতরণের পরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ। পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হলেও একজন ক্রুকে ওই ছিনতাইকারী জিম্মি করে রাখে বলে সূত্রের খবর। পরে বিমানবন্দরে যায় সোয়াত টিম ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসও। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সূত্র জানায়, বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই এ ঘটনা ঘটে। এরপরই দ্রুত ফ্লাইটের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করে এবং সেটি ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রীদের নামিয়ে আনলেও সাগর নামে একজন ক্রু ও ছিনতাইকারী বিমানটির ভেতরে রয়ে যান। বিমানটি রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে জরুরি অবতরণ করা হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ করা হয় বলে জানান বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ। পরে সেনা স্পেশাল ফোর্স ও নৌ কমোডর এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে নৌ কমোডর দলের অভিযানে সন্দেহভাজন ওই ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয় এবং আহতাবস্থায় ক্রু সাগরকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বিমানটির সব যাত্রী-ক্রুরা সুস্থ রয়েছেন। বিমানের কোনো ক্ষতিও হয়নি। এদিকে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। এর আগে রাত ৮টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। রোববার রাতে নিহত ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয়, তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু সোমবার যে তথ্য এল, তাতে দেখা যাচ্ছে তার নাম মাহাদী ও মাজিদুল কোনোটিই নয়; তার নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। সে ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল। গ্রামের সবাই তাকে পলাশ নামেই চিনত। গ্রামের বাইরে পলাশ নিজেকে মাহাদী নামে পরিচয় দিত।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে র‌্যাবের তালিকাভুক্ত একজন অপরাধী রাষ্ট্রীয় বিমানে চড়ে বিমানটি ছিনতাইচেষ্টা করলেও এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আয়োজনে কোনো ত্রুটি পাননি বলে দাবি করেছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সেই বিমান ছিনতাইকারীকে নিয়ে যা বললেন তার বাবা
বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় সেনা কমান্ডোদের হাতে নিহত মাহাদীর ওরফে মাজিদুল ওরফে পলাশ  (২৩) ।  তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার।  সে ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল।  গ্রামের সবাই তাকে পলাশ নামেই চিনত। গ্রামের বাইরে পলাশ নিজেকে মাহাদী নামে পরিচয় দিত। সোমবার দুপুরের পলাশের (মাহাদী) বাবা মুদি দোকানি পিয়ার জাহান বলেন, পলাশ সোনারগাঁয়ের তাহেরপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়। এরপর সে আর পড়াশোনা করেনি।  পিয়ার জাহান আরও বলেন, গত শুক্রবার ছেলে (পলাশ) আমাকে জানায় সে আর বাংলাদেশে থাকবে না। দুবাই চলে যাবে। এ কারণে সে আমার কাছে ৫০০ দিরহাম দাবি করে এয়ারপোর্টে দেখানোর জন্য। আমি সেই টাকা জোগাড় করে দেই। পিয়ার জাহানের দাবি, পলাশ তাদের অবাধ্য সন্তান। এর আগেও বিদেশে যাওয়ার কথা বলে সে অনেক টাকা নষ্ট করেছে। যে কারণে ছেলের সঙ্গে তিনি ঠিকমতো কথা বলতেন না। পলাশের (মাহাদী) বাবা বলেন, গত ১০ মাস আগে চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে পলাশ বাসায় আসে। তখন সে জানায় সিমলাকে নিয়ে এলাকায় বেড়াতে এসেছে। কিন্তু দেড় থেকে দুই মাস পর লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি তাদের বিয়ে হয়েছে। এর ঠিক দেড় থেকে দুই মাস পরে পলাশ আবারও সিমলাকে নিয়ে বাড়ি আসে। তখন জানায় সিমলাকে সে বিয়ে করেছে। প্রথমে না মানলেও পরবর্তীতে বিয়ে মেনে নেই এবং বউকে (সিমলা) বলি ছেলেকে ভালো করে তুলতে। এরপর পলাশের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ হতো না। পলাশের বাবা পিয়ার জাহান আরও বলেন, এর আগে পলাশ আরেকটি বিয়ে করে বগুড়ায়। তার একটি বাচ্চাও আছে। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।  এছাড়া, এলাকায় নারী কেলেঙ্কারির একটি ঘটনায় মামলাও হয়েছিল পলাশের নামে। সেই মামলায় ২০ দিন জেল খেটে সে জামিন পেয়েছিল।  তিনি বলেন, গতরাত ১টার দিকে সোনারগাঁ থানা পুলিশ আমাদের বাসায় আসে এবং বাড়ি তল্লাশি করে। পরে আমি ও আমার স্ত্রীকে স্থানীয় এক মুরুব্বির জিম্মায় রেখে যায় তারা। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে পলাশ ছোট। একমাত্র ছেলে হওয়ায় যা চাইতো তাই দেওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু ছোটবেলা থেকে পলাশ অবাধ্য সন্তান ছিল বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার বাবা। ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজের (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) যাত্রী তালিকায় তার নাম উল্লেখ ছিল AHMED/MD POLASH। সিট নম্বর ১৭এ। পলাশ আহমেদ ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে জানান, নিহত ওই যুবক ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমানে চড়েন চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশে। চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল ওই বিমানটি। ক্রিমিনাল ডাটাবেজ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্তের কথা বললেও ঠিক কী ধরনের অপরাধের জন্য তার নাম র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেজে যুক্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এ মুফতি মাহমুদ। এর আগে রোববার রাতে ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয় তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু আজ যে তথ্য এলো তাদের দেখা যাচ্ছে তার নাম মাহাদী ও মাজিদুল কোনোটিই নয়; তার নাম পলাশ। গুলিতে নিহত হওয়ার সময় যুবকের নাম মাহাদী বলে জানান চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ওই যুবকের নাম মাজিদুল। প্রসঙ্গত বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে। এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়। বিমানের একজন পরিচালক জানান, বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার সিডিউল ছিল। এতে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রুসহ ১৪৮ জন ছিলেন। ফ্লাইটের ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির। কেবিন ক্রু ছিলেন নিম্মি, হুসনে আরা, সাগর, সাকুর ও বিথী। ওই ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করার পর পরই ককপিটে বসে ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির কোনোভাবে আঁচ করতে পারেন ভেতরে যাত্রীবেশে সন্ত্রাসী ঘাপটি মেরে আছে। এর পরই পাইলট শাহ আমানতের টাওয়ারের কাছে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান। অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি ফ্লাইটটি ল্যান্ড করার পর দ্রুত যাত্রীদের নিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন। একটি সূত্র জানায়, ওই ফ্লাইটটি টেকঅফের পর পরই নিহত ব্যক্তি যাত্রী ককপিটে গিয়ে পাইলটের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাকে সে সুযোগ দেয়া হলে সে ক্যাপ্টেনকে জানায়- জরুরিভাবে এখনই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। এর পরই ক্যাপ্টেন কৌশলে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান টাওয়ারে। বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে ফ্লাইটটি শাহ আমানতে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই কেবিন ক্রুরা পেছনের জরুরি নির্গমনের দরজা দিয়ে একে একে সব যাত্রীকে বের করে আনেন। এদিকে ককপিটে আলোচনারছলে ক্যাপ্টেন ওই অস্ত্রধারীকে রেখেই বের হয়ে আসতে সক্ষম হন। ভেতরে তখন ছিলেন কেবিন ক্রু সাগর। এদিকে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনী ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র‌্যাবসহ অন্যান্য নিরাপত্তারক্ষীদের যৌথ অভিযানের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তারা গ্রাউন্ড থেকে ফোনে অস্ত্রধারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। তাকে ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে হঠাৎ একপর্যায়ে ফ্লাইটের ভেতরে পৌঁছে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তারা ওই অস্ত্রধারীকে জাপটে ধরে বের করে আনেন। পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আকমল হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর অস্ত্রধারী ককপিটে ঢুকে পাইলটকে পিস্তল ধরে বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে হবে। পাইলট ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করান। ওই বিমানের যাত্রী সংসদ সদস্য মাঈনউদ্দিন খান বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, পাইলট আমার সঙ্গে নেমে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন- তাকে পারসু করার চেষ্টা করেছে হাইজ্যাকার, বলছে সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী ক্রু জানান, সাড়ে ৪টার কিছু সময় পর ময়ূরপপঙ্খি (বিজি-১৪৭) আকাশে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরের দিকে উড়ে যাচ্ছিল। তখন উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন। এ সময় ওই ব্যক্তি এক ক্রুর কাছে যান। কাছে গিয়ে তিনি ওই ক্রুকে ধাক্কা দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ একটি বস্তু বের করে বলেন, ‘আমি বিমানটি ছিনতাই করব। আমার কাছে পিস্তল ও বোমা আছে। ককপিট না খুললে আমি বিমান উড়িয়ে দেব।’ এর মধ্যে অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটকে গোপনে সাংকেতিক বার্তা দেন যে, উড়োজাহাজে অস্ত্রধারী আছে, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক এ সময় উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছিল। তিনি বলেন, পাইলট মো. শফি ও সহকারী পাইলট মো. জাহাঙ্গীর কৌশলে সফলভাবে জরুরি অবতরণ করেন। এ সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছিলেন ওমানগামী ফ্লাইটের যাত্রী কাউছার। তিনি জানান, ছিনতাইয়ের কবলে থাকা বিমানটি যখন অবতরণ করে, তখন তারা দ্বিতীয়তলায় ছিলেন। পৌনে ৬টার দিকে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের অফিস স্টাফদের বিমানটির কাছে ছুটে যেতে দেখেন। তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে যখন হুড়োহুড়ি শুরু হয়, তখন আমিসহ অনেকেই নিচতলায় নেমে আসি। এ সময় ওই বিমানের কয়েকজন যাত্রী বিমানে গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান। ৮ মিনিটের সফল অভিযান : পুরো ঘটনা সম্পর্কে রাত পৌনে ৯টার দিকে ব্রিফিং করেন চট্টগ্রামের সেনা নিবাসের জিওসি মতিউর রহমান। তিনি বলেন, বিকাল ৫টা ৩৩ মিনিটে পাইলট ককপিট থেকে কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান, বিমানটি ছিনতাই হয়েছে। এর পর ৫টা ৪১ মিনিটে সেটি অবতরণ করে। অবতরণের পর বিমানবাহিনী দ্রুত ‘মুভ’ করে। অন্যান্য বাহিনী জরুরি অবস্থায় যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হয় সেসব ব্যবস্থা নেয়। সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো ও বিমানবাহিনীর টিম দ্রুত বিমানবন্দরে অবস্থান নেয়। বিমানটি ঘিরে রাখে। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান প্রথমে মোবাইল ফোন থেকে ওই দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। তখন ওই দুষ্কৃতকারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং তার (দুষ্কৃতকারী) স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। জিওসি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমরা অনবরত মোবাইল ফোনে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখি। যাতে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে। যেহেতু আমরা দ্রুততম সময়ে অপারেশন শেষ করতে চেয়েছি, তাই দেরি না করে অভিযান শুরু করি। এতে গোলাগুলি হয়। আহতাবস্থায় ওই দুষ্কৃতকারীকে বিমান থেকে বের করে আনি। পরে সে মারা যায়। তার কাছে একটি পিস্তল পাওয়া গেছে। ৮ মিনিটের মধ্যেই সফলভাবে কমান্ডো অভিযান সম্পন্ন হয়।
বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় সেনা কমান্ডোদের হাতে নিহত মাহাদীর ওরফে মাজিদুল ওরফে পলাশ (২৩) । তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে।তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। সে ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল। গ্রামের সবাই তাকে পলাশ নামেই চিনত। গ্রামের বাইরে পলাশ নিজেকে মাহাদী নামে পরিচয় দিত।
বিমান ছিনতাইকারী পলাশের লাশ নিতে চান না মুদিদোকানি বাবা
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী যুবক মো. পলাশ আহমদ র‌্যাবের তালিকাভূক্ত অপরাধী।সে নারী অপহরণ ও বিমান ছিনতাইয়ের মতো  ঘটনায় নিজেকে জড়াবে এমনটি বিশ্বাস করতে পারছেন না বাবা মুদিদোকানি বাবা পিয়ার জাহান জর্দার।   পলাশের এমন অপকর্মে লজ্জিত বাবা পলাশের লাশ দেখতে চান না, এমনকি লাশ গ্রহণও করতে চান না।পলাশের পরিবারের কেউ লাশ দেখতেও যায়নি।   র‌্যাবের দেয়া তথ্যানুয়ায়ী, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার।   সোমবার  পলাশের বাবা পিয়ার সর্দার জানান, পলাশ ছোট থেকেই তাদের অবাধ্য সন্তান ছিল। সে বখে গিয়েছিল বহু আগেই।তবে সে বিমান হামলার যে ঘটনা ঘটিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক। সেই সঙ্গে পরিবারের জন্য মানহানিকর। এসব অপকর্মের জন্য পলাশের লাশ তিনি দেখতে চান না এমকি বাড়িতেও নিতে চান না বলে জানান পিয়ার জাহান সরদার।তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পলাশের লাশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।   ‘পলাশের লাশ আমি দেখতে চাই না। তবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’-যোগ করেন পিয়ার সর্দার।   পলাশের বখে যাওয়ার বিষয়ে পিয়ার সর্দার জানান, চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল পলাশ। একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ায় পলাশের প্রতি সবার একটু বেশি ভালোবাসা ছিল। এসব কারণে সবার আদরে সে বেপরোয়া হয়ে উঠে।   পলাশের মৃত্যুর খবর শোনে মা শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছে জানিয়ে পিয়ার সর্দার বলেন, ‘পলাশের খবর শোনার পর থেকে তার মা শয্যাশায়ী। তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।   ছেলের বখে যাওয়ার বিষয়ে আক্ষেপ করে মুদিদোকানি বাবা বলেন, ছেলে যে সুপথে ফিরে আসে সেজন্য আল্লাহর কাছে নামাজের পর দোয়া করতাম। ছেলেকেও অনেক বুঝিয়েছি, কাজ হয়নি।   দুবাই যাওয়ার জন্য বাবার কাছ থেকে পলাশ টাকা নেন।গত শুক্রবার সে তার বাবাকে জানায় সে আর বাংলাদেশে থাকবে না দুবাই চলে যাবে। এ কারণে সে বাবার কাছ থেকে ৫০০ দিরহাম দাবি করে। বাবা সেই টাকা দেন।   পলাশ সোনারগাঁর তাহেরপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়। এরপর সে আর পড়ালেখা করেনি।   পলাশকে ২০১২ সালে তরুণী অপহরণের অভিযোগ এবং ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল।তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।   সোমবার বেলা ৩টায় র‌্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পলাশ আগেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০১২ সালের মার্চে পলাশ আহমেদ ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। তার অপরাধ ছিল, সে একজন নারীকে অপহরণ করে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেইজে এ তথ্য লেখা আছে।   র‌্যাবের অপরাধী তথ্যভান্ডারের বিবরণ দিয়ে মুফতি মাহমুদ আরও জানান, পলাশের জন্ম ১৯৯৪ সালে। ২০১২ সালে যখন পলাশকে গ্রেফতার করা হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। ওই সময়ই সে নিজেকে বিবাহিত বলে দাবি করে।   মুফতি মাহমুদ আরও জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ওই ঘটনার পর র‌্যাব-৭ ঘটনাস্থলে যায়। র‌র‌্যাবের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট সেখানে কাজ করে।পলাশের শরীরে বিস্ফোরকসদৃশ যা পাওয়া গেছে তাতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না।এটা ভুয়া একটা জিনিস ছিল, যেখানে ভুয়া তার-সার্কিট দিয়ে ভেস্টের মতো তৈরি করা হয়েছিল।   এর আগে সকালে এক মুঠোফোন বার্তায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার বার্তা জানানো হয়।র‌্যাব জানায়, ছিনতাই চেষ্টাকারী ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল।   প্রসঙ্গত বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে।   এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী যুবক মো. পলাশ আহমদ র‌্যাবের তালিকাভূক্ত অপরাধী।সে নারী অপহরণ ও বিমান ছিনতাইয়ের মতো ঘটনায় নিজেকে জড়াবে এমনটি বিশ্বাস করতে পারছেন না বাবা মুদিদোকানি বাবা পিয়ার জাহান জর্দার।
বিমান ছিনতাইকারী পলাশ ২০১২ সালে নারী অপহরণ করে: র‌্যাব
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান হামলার চেষ্টাকারী যুবক মো. পলাশ আহমদ র‌্যাবের তালিকাভূক্ত অপরাধী। তাকে ২০১২ সালে তরুণী অপহরণের অভিযোগ এবং ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল।তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।   সোমবার বেলা ৩টায় র‌্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।   মুফতি মাহমুদ বলেন, পলাশ আগেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০১২ সালের মার্চে পলাশ আহমেদ ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। তার অপরাধ ছিল, সে একজন নারীকে অপহরণ করে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেইজে এ তথ্য লেখা আছে।   র‌্যাবের অপরাধী তথ্যভান্ডারের বিবরণ দিয়ে মুফতি মাহমুদ আরও জানান, পলাশের জন্ম ১৯৯৪ সালে। ২০১২ সালে যখন পলাশকে গ্রেফতার করা হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। ওই সময়ই সে নিজেকে বিবাহিত বলে দাবি করে।   র‌্যাবের ডাটাবেইজে সে সময় পলাশের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি সমমানের। সে মাদরাসা বোর্ডের শিক্ষার্থী ছিল।   মুফতি মাহমুদ আরও জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ওই ঘটনার পর র‌্যাব-৭ ঘটনাস্থলে যায়। র‌র‌্যাবের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট সেখানে কাজ করে।পলাশের শরীরে বিস্ফোরকসদৃশ যা পাওয়া গেছে তাতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না।এটা ভুয়া একটা জিনিস ছিল, যেখানে ভুয়া তার-সার্কিট দিয়ে ভেস্টের মতো তৈরি করা হয়েছিল।   এর আগে সকালে এক মুঠোফোন বার্তায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার বার্তা জানানো হয়।র‌্যাব জানায়, ছিনতাই চেষ্টাকারী ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল।   ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে পলাশের পরিচয় জানা গেছে। র‌্যাবের দেয়া তথ্যানুয়ায়ী, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল পলাশ আহমেদ। সে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের যাত্রী ছিল।   র‌্যাব বলছে, রোববারের অভিযানে নিহত বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের আঙুলের ছাপ র‌্যাব ক্রিমিনাল ডেটাবেজের (অপরাধী তথ্যভাণ্ডার) একজন অপরাধীর সঙ্গে মিলে গেছে। ডেটাবেজ অনুযায়ী, যুবকের নাম পলাশ আহমেদ। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার।   ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজের (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) যাত্রী তালিকায় তার নাম  উল্লেখ ছিল AHMED/MD POLASH। সিট নম্বর ১৭এ। পলাশ আহমেদ ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল।   র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে জানান, নিহত ওই যুবক ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমানে চড়েন চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশে। চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল ওই বিমানটি।   ক্রিমিনাল ডাটাবেজ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্তের কথা বললেও ঠিক কী ধরনের অপরাধের জন্য তার নাম র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেজে যুক্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এ মুফতি মাহমুদ।   এর আগে রোববার রাতে ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয় তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু আজ যে তথ্য এলো তাদের দেখা যাচ্ছে তার নাম মাহাদী ও মাজিদুল কোনোটিই নয়; তার নাম পলাশ।   গুলিতে নিহত হওয়ার সময় যুবকের নাম মাহাদী বলে জানান চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান।   রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ওই যুবকের নাম মাজিদুল।   প্রসঙ্গত বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে।   এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।   বিমানের একজন পরিচালক জানান, বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার সিডিউল ছিল। এতে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রুসহ ১৪৮ জন ছিলেন।   ফ্লাইটের ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির। কেবিন ক্রু ছিলেন  নিম্মি, হুসনে আরা, সাগর, সাকুর ও বিথী। ওই ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করার পর পরই ককপিটে বসে ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির কোনোভাবে আঁচ করতে পারেন ভেতরে যাত্রীবেশে সন্ত্রাসী ঘাপটি মেরে আছে।   এর পরই পাইলট শাহ আমানতের টাওয়ারের কাছে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান। অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি ফ্লাইটটি ল্যান্ড করার পর দ্রুত যাত্রীদের নিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।   একটি সূত্র জানায়, ওই ফ্লাইটটি টেকঅফের পর পরই নিহত ব্যক্তি যাত্রী ককপিটে গিয়ে পাইলটের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাকে সে সুযোগ দেয়া হলে সে ক্যাপ্টেনকে জানায়- জরুরিভাবে এখনই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে।   এর পরই ক্যাপ্টেন কৌশলে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান টাওয়ারে। বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে ফ্লাইটটি শাহ আমানতে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই কেবিন ক্রুরা পেছনের জরুরি নির্গমনের দরজা দিয়ে একে একে সব যাত্রীকে বের করে আনেন। এদিকে ককপিটে আলোচনারছলে ক্যাপ্টেন ওই অস্ত্রধারীকে রেখেই বের হয়ে আসতে সক্ষম হন। ভেতরে তখন ছিলেন কেবিন ক্রু সাগর।   এদিকে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনী ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র‌্যাবসহ অন্যান্য নিরাপত্তারক্ষীদের যৌথ অভিযানের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তারা গ্রাউন্ড থেকে ফোনে অস্ত্রধারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। তাকে ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে হঠাৎ একপর্যায়ে ফ্লাইটের ভেতরে পৌঁছে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তারা ওই অস্ত্রধারীকে জাপটে ধরে বের করে আনেন।   পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আকমল হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর অস্ত্রধারী ককপিটে ঢুকে পাইলটকে পিস্তল ধরে বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে হবে। পাইলট ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করান।   ওই বিমানের যাত্রী সংসদ সদস্য মাঈনউদ্দিন খান বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, পাইলট আমার সঙ্গে নেমে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন- তাকে পারসু করার চেষ্টা করেছে হাইজ্যাকার, বলছে সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।   একজন প্রত্যক্ষদর্শী ক্রু জানান, সাড়ে ৪টার কিছু সময় পর ময়ূরপপঙ্খি (বিজি-১৪৭) আকাশে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরের দিকে উড়ে যাচ্ছিল। তখন উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন।   এ সময় ওই ব্যক্তি এক ক্রুর কাছে যান। কাছে গিয়ে তিনি ওই ক্রুকে ধাক্কা দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ একটি বস্তু বের করে বলেন, ‘আমি বিমানটি ছিনতাই করব। আমার কাছে পিস্তল ও বোমা আছে। ককপিট না খুললে আমি বিমান উড়িয়ে দেব।’   এর মধ্যে অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটকে গোপনে সাংকেতিক বার্তা দেন যে, উড়োজাহাজে অস্ত্রধারী আছে, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক এ সময় উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছিল। তিনি বলেন, পাইলট মো. শফি ও সহকারী পাইলট মো. জাহাঙ্গীর কৌশলে সফলভাবে জরুরি অবতরণ করেন।   এ সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছিলেন ওমানগামী ফ্লাইটের যাত্রী কাউছার। তিনি জানান, ছিনতাইয়ের কবলে থাকা বিমানটি যখন অবতরণ করে, তখন তারা দ্বিতীয়তলায় ছিলেন। পৌনে ৬টার দিকে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের অফিস স্টাফদের বিমানটির কাছে ছুটে যেতে দেখেন।   তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে যখন হুড়োহুড়ি শুরু হয়, তখন আমিসহ অনেকেই নিচতলায় নেমে আসি। এ সময় ওই বিমানের কয়েকজন যাত্রী বিমানে গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান।   ৮ মিনিটের সফল অভিযান : পুরো ঘটনা সম্পর্কে রাত পৌনে ৯টার দিকে ব্রিফিং করেন চট্টগ্রামের সেনা নিবাসের জিওসি মতিউর রহমান। তিনি বলেন, বিকাল ৫টা ৩৩ মিনিটে পাইলট ককপিট থেকে কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান, বিমানটি ছিনতাই হয়েছে। এর পর ৫টা ৪১ মিনিটে সেটি অবতরণ করে। অবতরণের পর বিমানবাহিনী দ্রুত ‘মুভ’ করে। অন্যান্য বাহিনী জরুরি অবস্থায় যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হয় সেসব ব্যবস্থা নেয়।   সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো ও বিমানবাহিনীর টিম দ্রুত বিমানবন্দরে অবস্থান নেয়। বিমানটি ঘিরে রাখে। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান প্রথমে মোবাইল ফোন থেকে ওই দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে কথা বলেন।   তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। তখন ওই দুষ্কৃতকারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং তার (দুষ্কৃতকারী) স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। জিওসি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমরা অনবরত মোবাইল ফোনে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখি।   যাতে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে। যেহেতু আমরা দ্রুততম সময়ে অপারেশন শেষ করতে চেয়েছি, তাই দেরি না করে অভিযান শুরু করি। এতে গোলাগুলি হয়। আহতাবস্থায় ওই দুষ্কৃতকারীকে বিমান থেকে বের করে আনি।   পরে সে মারা যায়। তার কাছে একটি পিস্তল পাওয়া গেছে। ৮ মিনিটের মধ্যেই সফলভাবে কমান্ডো অভিযান সম্পন্ন হয়।
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বিমান হামলার চেষ্টাকারী যুবক মো. পলাশ আহমদ র‌্যাবের তালিকাভূক্ত অপরাধী। তাকে ২০১২ সালে তরুণী অপহরণের অভিযোগ এবং ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল।তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
জেমস-সাকিবের সঙ্গে পলাশের ছবি!
বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় নিহত যুবক পলাশ আহমেদের সঙ্গে বিখ্যাত কয়েকজনের ছবি পাওয়া গেছে।  পলাশ আহমেদের ‘মাহিবি জাহান’ নামের ফেসবুক আইডিতে এসব ছবি পাওয়া গেছে।   ওই আইডিতে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, নগরবাউল জেমস ও বলিউড অভিনেতা (খলনায়ক) আশিষ বিদ্যার্থীর সঙ্গে তোলা পলাশের তিনটি ছবি রয়েছে।  সাকিবের সঙ্গে তোলা ছবিটি গত বছরের ৩১ আগস্ট পোস্ট করা হয়। ছবিতে পলাশের স্ত্রী চিত্রনায়িকা সিমলাকেও দেখা গেছে। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা- ‘বউ আমি আর সালা বাবু সাকিব।’ মাহিবি জাহান আইডি থেকে একই বছরের ৮ জুন আরেকটি ছবি পোস্ট করা হয়। সেখানে বিমানের ভেতর বলিউড ছবির খলনায়ক আশিষ বিদ্যার্থীর সঙ্গে বসে আছেন পলাশ।  একই আইডি থেকে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর আপ করা একটি ছবিতে শিল্পী জেমসের সঙ্গে পলাশকে দেখা যাচ্ছে।  এ ছাড়া আমেরিকান এক পাইলট ও বিদেশি আরেক বয়স্ক লোকের সঙ্গে তার ছবি রয়েছে।
বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় নিহত যুবক পলাশ আহমেদের সঙ্গে বিখ্যাত কয়েকজনের ছবি পাওয়া গেছে।
বিমান ছিনতাইকারী পলাশের স্ত্রী ‘ম্যাডাম ফুলি’খ্যাত নায়িকা সিমলা
অবশেষে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ (২৬)। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। তিনি বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব জানিয়েছে, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে। গতকাল বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় নিহত মাজেদুলই দুধঘাটা গ্রামের পলাশ মাহমুদ তা নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, নিহতের ছবি রোববার রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ছবিটি পলাশের বলে নিশ্চিত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইতিমধ্যে তার বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় করে। এরই মধ্যে জানা গেছে, ঢাকাই ছবির চিত্রনায়িকা সিমলার স্বামী ছিলেন এই পলাশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সিমলাকে বিয়ে করেন তিনি। এ বিষয়ে যুগান্তরে গত বছরের ৫ জানুয়ারি ‘২০ বছরের কম বয়সীকে বিয়ে করলেন ম্যাডাম ফুলি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে সিমলার স্বামীর নাম জানানো হয় মাহি বি জাহান। সেই সময় সিমলার ঘনিষ্ঠজনরা গণমাধ্যমকে জানান, বিয়েতে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজন ও বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। সিমলার স্বামীর বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। সিমলার সেই স্বামী ও বিমান ছিনতাইকারী নিহত পলাশ একই ব্যক্তি। পলাশের ফেসবুক আইডির ইউজার নেম মাহি বি জাহান। যেখানে অভিনেত্রী সিমলার সঙ্গে একাধিক অন্তরঙ্গ ছবি রয়েছে। এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর বাবা পিয়ার জাহান ও মা রীনা বেগম। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাতের বেলা চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে পলাশ বাড়িতে আসেন বলে জানান পিয়ার জাহান। ছেলের থেকেই তিনি প্রথম জানতে পারেন সঙ্গে আনা মেয়েটির নাম শিমলা ও সে সিনেমার অভিনেত্রী। পিয়ার জাহান বলেন, গত বছরের এপিলের দিকে আবার সিমলাকে নিয়ে এসে পলাশ জানায় যে, তারা বিয়ে করেছে। এ সময় শিমলাও নিজেকে পলাশের স্ত্রী বলে জানায়। ওই রাতেই তারা আবার ঢাকায় চলে যায় বলে জানান পিয়ার জাহান। পলাশ অবাধ্য ছেলে ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ছেলে যেন ভালো পথে ফিরে আসে সে জন্য আমরা পলাশের স্ত্রী শিমলাকে অনুরোধ করি। চলতি মাসের শুরুতে পলাশ বাড়িতে এলে তার আচরণে অনেকটা পরিবর্তন দেখেন পিয়ার জাহান। ছেলেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে দেখেন তিনি। তিনি বলেন, ছেলেকে শুধরে যেতে দেখে মন খুশিতে ভরে ওঠে আমার। পলাশ আবার নামাজ পড়া শুরু করে এবং মসজিদে গিয়ে আজানও দেয়। এখন কেমন চলছে জিজ্ঞেস করলে কাজের সন্ধানে দুবাই যাবে বলে জানায়। পলাশ প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, পলাশ মাহমুদ তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পরীক্ষা দেয়। এর পর সে সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। কলেজে পড়া অবস্থায় সে ঢাকায় চলে যায় ও তার আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয় বলে জানান স্থানীয়রা। তারা বলেন, মাঝেমধ্যে পলাশ ঢাকা থেকে বাড়িতে আসত কিন্তু এলাকার লোকজনের সঙ্গে আগের মতো কথা বলত না, একা একা থাকত। এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, যতটুকু খবর নিয়েছি পলাশ নেশাগ্রস্ত ছিল। আর নেশার কারণেই সে বিমান ছিনতাইয়ের কাজ করেছে। স্থানীয়রা জানান, পলাশ ঢাকায় চলচ্চিত্রে কাজ করছে। মিডিয়াজগতে অনেক নায়ক-নায়িকার সঙ্গে তার মেলামেশা ছিল।
অবশেষে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ (২৬)। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে।
বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারীর শেষ স্ট্যাটাস: ঘৃণা নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে
চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। তার মো. পলাশ আহমেদ, বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেজে (অপরাধী তথ্যভাণ্ডার) থাকা তথ্যানুযায়ী, নিহত যুবক পলাশের বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার লেখা আছে। তবে ফেসবুকে পলাশের ছবি দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা আছে। সেখানে তার নাম লেখা আছে মাহিবি জাহান।  ফেসবুক আইডিতে তার পরিচয়ে লেখা আছে- তিনি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের আইটি বিজনেস অ্যানালিস্ট। পড়ালেখা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে। এই অ্যাকাউন্ট প্রকৃতই পলাশের কিনা সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এই অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময়ে পলাশের বেশ কিছু ছবি আপলোড করা আছে।   পলাশ ওই অ্যাকাউন্টে সর্বশেষ স্ট্যাটাস দেন রোববার দুপুর ১টা ৩ মিনিটে। সেখানে তিনি লেখেন- ‘ঘৃণা নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে’।  এই অ্যাকাউন্টে জনপ্রিয় ঢালিউড অভিনেত্রী শিমলার সঙ্গে পলাশের অন্তরঙ্গ কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে পলাশ সিমলাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন।  উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী অস্ত্রধারী যুবক নিহত হন।
চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। তার মো. পলাশ আহমেদ, বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
দুপুরে দুবাইয়ের উদ্দেশে যাত্রা করলেন ছিনতাইয়ের কবলেপড়া যাত্রীরা
ছিনতাইয়ের কবলেপড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটের যাত্রীরা সোমবার  দুপুরে অন্য একটি বিমানে দুবাই রওনা দেন। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ১৪০ যাত্রী নিয়ে বিমানের একটি বোয়িং-৭৩৭ ফ্লাইট যাত্রা করে। ঢাকা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বোয়িং বিমানটি চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। সেই বিমানে করেই যাত্রীদের দুবাই নেয়া হচ্ছে। বিমান কর্তৃপক্ষ জানান, উড়োজাহাজটির দুবাইগামী যাত্রীদের রোববার রাতেই গন্তব্যে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু চট্টগ্রামে ঘন কুয়াশার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাই সোমবার তাদের দুবাই পাঠানো হয়। ওই বিমানের দুবাইগামী চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছে। তাদের নিয়ে আজ দুবাই যাবে উড়োজাহাজ। উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা পলাশ আহমেদ নামে অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন।
ছিনতাইয়ের কবলেপড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-১৪৭ ফ্লাইটের যাত্রীরা সোমবার দুপুরে অন্য একটি বিমানে দুবাই রওনা দেন। চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ১৪০ যাত্রী নিয়ে বিমানের একটি বোয়িং-৭৩৭ ফ্লাইট যাত্রা করে। ঢাকা থেকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বোয়িং বিমানটি চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। সেই বিমানে করেই যাত্রীদের দুবাই নেয়া হচ্ছে। বিমান কর্তৃপক্ষ জানান, উড়োজাহাজটির দুবাইগামী যাত্রীদের রোববার রাতেই গন্তব্যে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু চট্টগ্রামে ঘন কুয়াশার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাই সোমবার তাদের দুবাই পাঠানো হয়। ওই বিমানের দুবাইগামী চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছে। তাদের নিয়ে আজ দুবাই যাবে উড়োজাহাজ। উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা পলাশ আহমেদ নামে অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন।
ছিনতাইকারী অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছে কিনা নিশ্চিত নয়: বিমান প্রতিমন্ত্রী
বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবক বিমানবন্দরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। বিষয়টি তদন্ত করে নিশ্চিত হতে হবে।   সোমবার দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।   বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের কাছে যে অস্ত্র ছিল, সেটি আসল নয়, খেলনা পিস্তল ছিল বলে ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তার পরও এত নিরাপত্তার ফাঁক গলে কিভাবে বিমানবন্দরে ‘অস্ত্র’ নিয়ে ছিনতাইকারী ঢুকল সেটি নিয়ে তদন্ত হবে।   প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারীদের ধরতে কারও দায়িত্বে অবহেলা ছিল বলে মনে হয় না।    বিমান প্রতিমন্ত্রী জানান, বিকল্প একটি ফ্লাইটে ওই বিমানের ১৩৪ যাত্রীকে আজ দুবাইয়ে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।‍   প্রসঙ্গত বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে।   এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।   বিমানের একজন পরিচালক জানান, বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার সিডিউল ছিল। এতে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রুসহ ১৪৮ জন ছিলেন।   এদিকে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।   র‌্যাবের দেয়া তথ্যানুয়ায়ী, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল পলাশ আহমেদ। সে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের যাত্রী ছিল।   র‌্যাব বলছে, রোববারের অভিযানে নিহত বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের আঙুলের ছাপ র‌্যাব ক্রিমিনাল ডেটাবেজের (অপরাধী তথ্যভাণ্ডার) একজন অপরাধীর সঙ্গে মিলে গেছে। ডেটাবেজ অনুযায়ী, যুবকের নাম পলাশ আহমেদ। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার।   ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজের (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) যাত্রী তালিকায় তার নাম  উল্লেখ ছিল AHMED/MD POLASH। সিট নম্বর ১৭এ। পলাশ আহমেদ ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল।   র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে জানান, নিহত ওই যুবক ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমানে চড়েন চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশে। চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল ওই বিমানটি।   ক্রিমিনাল ডেটাবেজ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্তের কথা বললেও ঠিক কী ধরনের অপরাধের জন্য তার নাম র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেজে যুক্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এ মুফতি মাহমুদ।   ফ্লাইটের ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির। কেবিন ক্রু ছিলেন  নিম্মি, হুসনে আরা, সাগর, সাকুর ও বিথী। ওই ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করার পর পরই ককপিটে বসে ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির কোনোভাবে আঁচ করতে পারেন ভেতরে যাত্রীবেশে সন্ত্রাসী ঘাপটি মেরে আছে।   এর পরই পাইলট শাহ আমানতের টাওয়ারের কাছে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান। অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি ফ্লাইটটি ল্যান্ড করার পর দ্রুত যাত্রীদের নিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।   বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা তদন্তে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবক বিমানবন্দরে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। বিষয়টি তদন্ত করে নিশ্চিত হতে হবে।
যুগান্তরের সাংবাদিকদের গ্রেফতারে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড়
ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার বিতর্কিত ওসি মোস্তফা কামালের অবৈধ সম্পদের খবর প্রকাশিত হওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগান্তরের ছয় সাংবাদিককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় কেরানীগঞ্জের যুগান্তর প্রতিনিধি আবু জাফর লোহাগাড়া প্রতিনিধি সেলিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর প্রতিবাদে ক্ষোভ, নিন্দা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন সারা দেশের সাংবাদিকরা।  আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- যশোর ব্যুরো: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ছয় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ওসি মোস্তফা কামাল নিজের দুর্নীতি ঢাকতে কথিত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় সাংবাদিকদের ফাঁসিয়েছেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে অপসারণ ও দুর্নীতির তদন্ত করে ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। কতিপয় কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অপকর্মের দায় কেন সরকার নেবে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে।  মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিলন, প্রেসক্লাব নেতা সরোয়ার হোসেন। সঞ্চালনা করেন দৈনিক যুগান্তর যশোর ব্যুরোপ্রধান ইন্দ্রজিৎ রায়। মানববন্ধনে প্রেসক্লাব, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন, যশোর জেলা ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসেয়িশনের সদস্য ও নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। গফরগাঁও (ময়মনসিংহ):  গফরগাঁও পৌর শহরের  মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং  গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন সাংবাদিকরা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গফরগাঁও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান মিন্টু, ফকির এ মতিন, উপাধ্যক্ষ শফিকুল কাদির, রফিকুল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম মারুফ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন, নাজমুল হক বিপ্লব, কোষাধ্যক্ষ রুকুন উদ্দিন সবুর, সাংবাদিক সারোয়ার ফরাজী, শাখাওয়াত হোসেন, তাওহিদুল ইসলাম, তানিয়া আক্তার প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক জাতির বিবেক। মামলা করে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। বক্তারা তিন দিনের মধ্যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। কুমিল্লা ব্যুরো: ডিজিটাল নিরাপত্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইন মামলায় যুগান্তরের সাংবাদিক আবু জাফর ও সেলিম উদ্দিনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকরা।  সোমবার দুপুরে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় যুগান্তরের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয়।  অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে মানববন্ধনে জানানো হয়।  যুগান্তরের কুমিল্লা ব্যুরো রিপোর্টার আবুল খায়েরের সঞ্চালনায় এ সময় কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার সাদিক হোসেন মামুন, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও একুশে টিভির স্টাফ রিপোর্টার হুমায়ূন কবির রনি, কুমিল্লা ফটো সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও সিটিভি নিউজের সম্পাদক ওমর ফারুকী তাপস, এনটিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি জালাল উদ্দিন, ডাক প্রতিদিনের সম্পাদক হাবীব জালাল, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এম সাদেক, বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ আহমদ লাভলু, জয়যাত্রা টিভির কুমিল্লা ব্যুরোপ্রধান দেলোয়ার হোসেন জাকির, এশিয়ান টিভি স্টাফ রিপোর্টার আজিজুল হক, এসএ টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি আবু মুসা, ডাক প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার নুরুল ইসলাম, আজকের জীবনের প্রতিনিধি নেকবর হোসেন, বিজনেস বাংলাদেশের কুমিল্লা ব্যুরো আনোয়ার হোসাইন, দুর্নীতির সন্ধানে স্টাফ রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম প্রমুখ। নওগাঁ: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার যুগান্তরের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধির মুক্তি এবং সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার বিচারসহ দেশের সকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের প্রতিবাদে নওগাঁয় মানবন্ধন হয়েছে।  সোমবার বেলা ১১টায় নওগাঁ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন নওগাঁর উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসময় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি অ্যাড. শহীদ হাসান সিদ্দিকী স্বপনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সাধারাণ সম্পাদক আজাদ হোসেন মুরাদ, যুগ্ম সম্পাদক রিফাত হোসেন সবুজ ও যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলীসহ প্রমুখ।  এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক এবাদুলক হক, যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল নয়ন, কোষাধ্যক্ষ ইয়াছিন আলী, সাংবাদিক ইউসুফ আলী সুমনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার বিতর্কিত ওসি মোস্তফা কামালের অবৈধ সম্পদের খবর প্রকাশিত হওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগান্তরের ছয় সাংবাদিককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবক পলাশ, বাড়ি সোনারগাঁয়ে: র‌্যাব
অবশেষে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তবে এত নিরাপত্তার ফাঁক গলে কীভাবে পলাশ অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ল সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি র‌্যাব।   ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে পলাশের পরিচয় জানা গেছে। র‌্যাবের দেয়া তথ্যানুয়ায়ী, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল পলাশ আহমেদ। সে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের যাত্রী ছিল।   র‌্যাব বলছে, রোববারের অভিযানে নিহত বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের আঙুলের ছাপ র‌্যাব ক্রিমিনাল ডেটাবেজের (অপরাধী তথ্যভাণ্ডার) একজন অপরাধীর সঙ্গে মিলে গেছে। ডেটাবেজ অনুযায়ী, যুবকের নাম পলাশ আহমেদ। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার।   ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজের (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) যাত্রী তালিকায় তার নাম  উল্লেখ ছিল AHMED/MD POLASH। সিট নম্বর ১৭এ। পলাশ আহমেদ ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল।   র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান গণমাধ্যমকে জানান, নিহত ওই যুবক ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিমানে চড়েন চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশে। চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল ওই বিমানটি।   ক্রিমিনাল ডাটাবেজ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্তের কথা বললেও ঠিক কী ধরনের অপরাধের জন্য তার নাম র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেজে যুক্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এ মুফতি মাহমুদ।   এর আগে রোববার রাতে ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয় তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু আজ যে তথ্য এলো তাদের দেখা যাচ্ছে তার নাম মাহাদী ও মাজিদুল কোনোটিই নয়; তার নাম পলাশ।   গুলিতে নিহত হওয়ার সময় যুবকের নাম মাহাদী বলে জানান চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান।   রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ওই যুবকের নাম মাজিদুল।   প্রসঙ্গত বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে।   এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।   বিমানের একজন পরিচালক জানান, বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার সিডিউল ছিল। এতে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রুসহ ১৪৮ জন ছিলেন।   ফ্লাইটের ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির। কেবিন ক্রু ছিলেন  নিম্মি, হুসনে আরা, সাগর, সাকুর ও বিথী। ওই ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করার পর পরই ককপিটে বসে ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির কোনোভাবে আঁচ করতে পারেন ভেতরে যাত্রীবেশে সন্ত্রাসী ঘাপটি মেরে আছে।   এর পরই পাইলট শাহ আমানতের টাওয়ারের কাছে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান। অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি ফ্লাইটটি ল্যান্ড করার পর দ্রুত যাত্রীদের নিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।   একটি সূত্র জানায়, ওই ফ্লাইটটি টেকঅফের পর পরই নিহত ব্যক্তি যাত্রী ককপিটে গিয়ে পাইলটের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাকে সে সুযোগ দেয়া হলে সে ক্যাপ্টেনকে জানায়- জরুরিভাবে এখনই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে।   এর পরই ক্যাপ্টেন কৌশলে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান টাওয়ারে। বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে ফ্লাইটটি শাহ আমানতে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই কেবিন ক্রুরা পেছনের জরুরি নির্গমনের দরজা দিয়ে একে একে সব যাত্রীকে বের করে আনেন। এদিকে ককপিটে আলোচনারছলে ক্যাপ্টেন ওই অস্ত্রধারীকে রেখেই বের হয়ে আসতে সক্ষম হন। ভেতরে তখন ছিলেন কেবিন ক্রু সাগর।   এদিকে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনী ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র‌্যাবসহ অন্যান্য নিরাপত্তারক্ষীদের যৌথ অভিযানের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তারা গ্রাউন্ড থেকে ফোনে অস্ত্রধারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। তাকে ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে হঠাৎ একপর্যায়ে ফ্লাইটের ভেতরে পৌঁছে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তারা ওই অস্ত্রধারীকে জাপটে ধরে বের করে আনেন।   পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আকমল হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর অস্ত্রধারী ককপিটে ঢুকে পাইলটকে পিস্তল ধরে বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে হবে। পাইলট ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করান।   ওই বিমানের যাত্রী সংসদ সদস্য মাঈনউদ্দিন খান বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, পাইলট আমার সঙ্গে নেমে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন- তাকে পারসু করার চেষ্টা করেছে হাইজ্যাকার, বলছে সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।   একজন প্রত্যক্ষদর্শী ক্রু জানান, সাড়ে ৪টার কিছু সময় পর ময়ূরপপঙ্খি (বিজি-১৪৭) আকাশে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরের দিকে উড়ে যাচ্ছিল। তখন উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন।   এ সময় ওই ব্যক্তি এক ক্রুর কাছে যান। কাছে গিয়ে তিনি ওই ক্রুকে ধাক্কা দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ একটি বস্তু বের করে বলেন, ‘আমি বিমানটি ছিনতাই করব। আমার কাছে পিস্তল ও বোমা আছে। ককপিট না খুললে আমি বিমান উড়িয়ে দেব।’   এর মধ্যে অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটকে গোপনে সাংকেতিক বার্তা দেন যে, উড়োজাহাজে অস্ত্রধারী আছে, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক এ সময় উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছিল। তিনি বলেন, পাইলট মো. শফি ও সহকারী পাইলট মো. জাহাঙ্গীর কৌশলে সফলভাবে জরুরি অবতরণ করেন।   এ সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছিলেন ওমানগামী ফ্লাইটের যাত্রী কাউছার। তিনি জানান, ছিনতাইয়ের কবলে থাকা বিমানটি যখন অবতরণ করে, তখন তারা দ্বিতীয়তলায় ছিলেন। পৌনে ৬টার দিকে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের অফিস স্টাফদের বিমানটির কাছে ছুটে যেতে দেখেন।   তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে যখন হুড়োহুড়ি শুরু হয়, তখন আমিসহ অনেকেই নিচতলায় নেমে আসি। এ সময় ওই বিমানের কয়েকজন যাত্রী বিমানে গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান।   ৮ মিনিটের সফল অভিযান : পুরো ঘটনা সম্পর্কে রাত পৌনে ৯টার দিকে ব্রিফিং করেন চট্টগ্রামের সেনা নিবাসের জিওসি মতিউর রহমান। তিনি বলেন, বিকাল ৫টা ৩৩ মিনিটে পাইলট ককপিট থেকে কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান, বিমানটি ছিনতাই হয়েছে। এর পর ৫টা ৪১ মিনিটে সেটি অবতরণ করে। অবতরণের পর বিমানবাহিনী দ্রুত ‘মুভ’ করে। অন্যান্য বাহিনী জরুরি অবস্থায় যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হয় সেসব ব্যবস্থা নেয়।   সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো ও বিমানবাহিনীর টিম দ্রুত বিমানবন্দরে অবস্থান নেয়। বিমানটি ঘিরে রাখে। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান প্রথমে মোবাইল ফোন থেকে ওই দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে কথা বলেন।   তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। তখন ওই দুষ্কৃতকারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং তার (দুষ্কৃতকারী) স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। জিওসি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমরা অনবরত মোবাইল ফোনে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখি।   যাতে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে। যেহেতু আমরা দ্রুততম সময়ে অপারেশন শেষ করতে চেয়েছি, তাই দেরি না করে অভিযান শুরু করি। এতে গোলাগুলি হয়। আহতাবস্থায় ওই দুষ্কৃতকারীকে বিমান থেকে বের করে আনি।   পরে সে মারা যায়। তার কাছে একটি পিস্তল পাওয়া গেছে। ৮ মিনিটের মধ্যেই সফলভাবে কমান্ডো অভিযান সম্পন্ন হয়। জিওসি মতিউর আরও বলেন, নিহত দুষ্কৃতকারী নিজেকে মাহাদী পরিচয় দিলেও তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।   সিভিল অ্যাভিয়েশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান শুরু করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এদিকে ঘটনার পর পর বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান ওঠানামা এবং অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। রাত ৯টার পর বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অবশেষে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তবে এত নিরাপত্তার ফাঁক গলে কীভাবে পলাশ অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ল সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি র‌্যাব।
কে এই বিমান ছিনতাইকারী যুবক
রোববার রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খি’ ছিনতাইচেষ্টাকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের কৃষক মো. পিয়ারজাহানের ছেলে মো. পলাশ আহমেদ। সোনারগাঁও থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান তার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ছিনতাইচেষ্টায় কমান্ডো অভিযানে নিহত যুবক র‌্যাবের অপরাধী ডাটাবেজের অন্তর্ভুক্ত। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার বাবার নাম পিয়ারজাহান সরদার। বোরবার অভিযানের পর বলা হয়েছিল, বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী নিজের নাম ‘মাহাদী’ বলে জানিয়েছে। র‌্যাব আরও জানায়, প্লেনটি ঢাকা থেকে দুবাইগামী হলেও পলাশ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিলেন। টিকিট অনুযায়ী তার নাম ‘আহমেদ/মো. পলাশ’। ফ্লাইটের ‘১৭এ’ আসনের যাত্রী ছিলেন তিনি। এলাকাসী জানায়, সোনাগাঁওয়ের মঙ্গলেরগাঁও সড়কে পলাশ প্রায়ই ডাকাতি করতো। কিন্তু পুলিশ তাকে কখনও ধরতে পারেনি। সোনারগাঁ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহতের ছবি রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ারজাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ছবিটি পলাশের বলে নিশ্চিত করে। তবে যতটুকু খবর নিয়েছি পলাশ নেশাগ্রস্ত ছিল। আর নেশার কারণেই বিমান ছিনতাইয়ের মতো জঘন্য অপরাধ করেছে সে। উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা মাহাদী নামে অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন।
রোববার রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খি’ ছিনতাইচেষ্টাকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের কৃষক মো. পিয়ারজাহানের ছেলে মো. পলাশ আহমেদ। সোনারগাঁও থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান তার পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ছিনতাইচেষ্টায় কমান্ডো অভিযানে নিহত যুবক র‌্যাবের অপরাধী ডাটাবেজের অন্তর্ভুক্ত। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তার বাবার নাম পিয়ারজাহান সরদার। বোরবার অভিযানের পর বলা হয়েছিল, বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী নিজের নাম ‘মাহাদী’ বলে জানিয়েছে। র‌্যাব আরও জানায়, প্লেনটি ঢাকা থেকে দুবাইগামী হলেও পলাশ ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিলেন। টিকিট অনুযায়ী তার নাম ‘আহমেদ/মো. পলাশ’। ফ্লাইটের ‘১৭এ’ আসনের যাত্রী ছিলেন তিনি। এলাকাসী জানায়, সোনাগাঁওয়ের মঙ্গলেরগাঁও সড়কে পলাশ প্রায়ই ডাকাতি করতো। কিন্তু পুলিশ তাকে কখনও ধরতে পারেনি। সোনারগাঁ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহতের ছবি রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ারজাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ছবিটি পলাশের বলে নিশ্চিত করে। তবে যতটুকু খবর নিয়েছি পলাশ নেশাগ্রস্ত ছিল। আর নেশার কারণেই বিমান ছিনতাইয়ের মতো জঘন্য অপরাধ করেছে সে। উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা মাহাদী নামে অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন।
বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারীর পরিচয় জানাল র‌্যাব
চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব।   রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিমান ‘ময়ূরপঙ্খি’ ছিনতাইচেষ্টাকারী ওই যুবক আগে থেকেই র‌্যাবের ‘তালিকাভুক্ত অপরাধী’। সেই তালিকা থেকে তার পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। সোমবার বেলা ১২টার আগে র‌্যাবের পক্ষ থেকে এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়।   এর আগে রোববার রাতে ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয় তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে জানানো হয়।   গুলিতে নিহত হওয়ার সময় তার নাম মাহাদী বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান।   রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ওই যুবকের নাম মাজিদুল।   প্রসঙ্গত বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে।   এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।   বিমানের একজন পরিচালক জানান, বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার সিডিউল ছিল। এতে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রুসহ ১৪৮ জন ছিলেন।   ফ্লাইটের ককপিটে ছিলেন ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির। কেবিন ক্রু ছিলেন  নিম্মি, হুসনে আরা, সাগর, সাকুর ও বিথী। ওই ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করার পর পরই ককপিটে বসে ক্যাপ্টেন শফিউল ও ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির কোনোভাবে আঁচ করতে পারেন ভেতরে যাত্রীবেশে সন্ত্রাসী ঘাপটি মেরে আছে।   এর পরই পাইলট শাহ আমানতের টাওয়ারের কাছে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান। অত্যন্ত সুকৌশলে তিনি ফ্লাইটটি ল্যান্ড করার পর দ্রুত যাত্রীদের নিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন।   একটি সূত্র জানায়, ওই ফ্লাইটটি টেকঅফের পর পরই নিহত ব্যক্তি যাত্রী ককপিটে গিয়ে পাইলটের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাকে সে সুযোগ দেয়া হলে সে ক্যাপ্টেনকে জানায়- জরুরিভাবে এখনই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে।   এর পরই ক্যাপ্টেন কৌশলে জরুরি অবতরণের মেসেজ পাঠান টাওয়ারে। বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে ফ্লাইটটি শাহ আমানতে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই কেবিন ক্রুরা পেছনের জরুরি নির্গমনের দরজা দিয়ে একে একে সব যাত্রীকে বের করে আনেন। এদিকে ককপিটে আলোচনারছলে ক্যাপ্টেন ওই অস্ত্রধারীকে রেখেই বের হয়ে আসতে সক্ষম হন। ভেতরে তখন ছিলেন কেবিন ক্রু সাগর।   এদিকে খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিমানবাহিনী ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র‌্যাবসহ অন্যান্য নিরাপত্তারক্ষীদের যৌথ অভিযানের প্রস্তুতি নেয়া হয়। তারা গ্রাউন্ড থেকে ফোনে অস্ত্রধারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। তাকে ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত রেখে হঠাৎ একপর্যায়ে ফ্লাইটের ভেতরে পৌঁছে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তারা ওই অস্ত্রধারীকে জাপটে ধরে বের করে আনেন।   পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইজি আকমল হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর অস্ত্রধারী ককপিটে ঢুকে পাইলটকে পিস্তল ধরে বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিতে হবে। পাইলট ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চট্টগ্রামে অবতরণ করান।   ওই বিমানের যাত্রী সংসদ সদস্য মাঈনউদ্দিন খান বাদল গণমাধ্যমকে বলেন, পাইলট আমার সঙ্গে নেমে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন- তাকে পারসু করার চেষ্টা করেছে হাইজ্যাকার, বলছে সে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়।   একজন প্রত্যক্ষদর্শী ক্রু জানান, সাড়ে ৪টার কিছু সময় পর ময়ূরপপঙ্খি (বিজি-১৪৭) আকাশে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরের দিকে উড়ে যাচ্ছিল। তখন উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন।   এ সময় ওই ব্যক্তি এক ক্রুর কাছে যান। কাছে গিয়ে তিনি ওই ক্রুকে ধাক্কা দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ একটি বস্তু বের করে বলেন, ‘আমি বিমানটি ছিনতাই করব। আমার কাছে পিস্তল ও বোমা আছে। ককপিট না খুললে আমি বিমান উড়িয়ে দেব।’   এর মধ্যে অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটকে গোপনে সাংকেতিক বার্তা দেন যে, উড়োজাহাজে অস্ত্রধারী আছে, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক এ সময় উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছিল। তিনি বলেন, পাইলট মো. শফি ও সহকারী পাইলট মো. জাহাঙ্গীর কৌশলে সফলভাবে জরুরি অবতরণ করেন।   এ সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছিলেন ওমানগামী ফ্লাইটের যাত্রী কাউছার। তিনি জানান, ছিনতাইয়ের কবলে থাকা বিমানটি যখন অবতরণ করে, তখন তারা দ্বিতীয়তলায় ছিলেন। পৌনে ৬টার দিকে বিমানটি জরুরি অবতরণ করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের অফিস স্টাফদের বিমানটির কাছে ছুটে যেতে দেখেন।   তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে যখন হুড়োহুড়ি শুরু হয়, তখন আমিসহ অনেকেই নিচতলায় নেমে আসি। এ সময় ওই বিমানের কয়েকজন যাত্রী বিমানে গুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান।   ৮ মিনিটের সফল অভিযান : পুরো ঘটনা সম্পর্কে রাত পৌনে ৯টার দিকে ব্রিফিং করেন চট্টগ্রামের সেনা নিবাসের জিওসি মতিউর রহমান। তিনি বলেন, বিকাল ৫টা ৩৩ মিনিটে পাইলট ককপিট থেকে কন্ট্রোল টাওয়ারকে জানান, বিমানটি ছিনতাই হয়েছে। এর পর ৫টা ৪১ মিনিটে সেটি অবতরণ করে। অবতরণের পর বিমানবাহিনী দ্রুত ‘মুভ’ করে। অন্যান্য বাহিনী জরুরি অবস্থায় যেসব নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হয় সেসব ব্যবস্থা নেয়।   সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডো ও বিমানবাহিনীর টিম দ্রুত বিমানবন্দরে অবস্থান নেয়। বিমানটি ঘিরে রাখে। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান প্রথমে মোবাইল ফোন থেকে ওই দুষ্কৃতকারীর সঙ্গে কথা বলেন।   তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। তখন ওই দুষ্কৃতকারী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং তার (দুষ্কৃতকারী) স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। জিওসি আরও বলেন, তার সঙ্গে আমরা অনবরত মোবাইল ফোনে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখি।   যাতে কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে। যেহেতু আমরা দ্রুততম সময়ে অপারেশন শেষ করতে চেয়েছি, তাই দেরি না করে অভিযান শুরু করি। এতে গোলাগুলি হয়। আহতাবস্থায় ওই দুষ্কৃতকারীকে বিমান থেকে বের করে আনি।   পরে সে মারা যায়। তার কাছে একটি পিস্তল পাওয়া গেছে। ৮ মিনিটের মধ্যেই সফলভাবে কমান্ডো অভিযান সম্পন্ন হয়। জিওসি মতিউর আরও বলেন, নিহত দুষ্কৃতকারী নিজেকে মাহাদী পরিচয় দিলেও তার বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।   সিভিল অ্যাভিয়েশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান শুরু করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এদিকে ঘটনার পর পর বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান ওঠানামা এবং অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। রাত ৯টার পর বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়।   তদন্ত কমিটি : বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক রোববার রাতে যুগান্তরকে বলেন, অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান মন্ত্রণালয়।   কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, সিভিল অ্যাভিয়েশনের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি) উইং কমান্ডার জিয়া উল কবির, সিকিউরিটি কনসালট্যান্ট গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর, বিমানের পরিচালক (প্ল্যানিং) এয়ার কমোডর (অব.) মাহবুব জাহান খান।
চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
পিলখানা হত্যায় দোষীদের শাস্তি পর্যায়ক্রমে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় দোষীদের পর্যায়ক্রমে শাস্তির আওতায় আনা হবে। সোমবার সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ কথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। পিলখানা বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহে নিহত সেনা সদস্যদের প্রতি প্রথমে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সামরিক সচিব শ্রদ্ধা জানান।  এর পর শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সামরিক সচিব। পরে তিন বাহিনী এবং বিজিবির মহাপরিচালক পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা স্যালুট প্রদান করেন এবং শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। প্রসঙ্গত ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহী জওয়ানদের হাতে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহে বেসামরিক ব্যক্তিসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে জওয়ানদের বিদ্রোহ। প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস পালিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় দোষীদের পর্যায়ক্রমে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আজ দুবাই যাবেন ছিনতাইয়ের কবলেপড়া যাত্রীরা
রোববার ছিনতাইয়ের কবলেপড়া বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খি নামে উড়োজাহাটির দুবাইগামী যাত্রীদের আজ সোমবার বিকালে নির্ধারিত গন্তব্যে পাঠানো হবে। বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, উড়োজাহাজটির দুবাইগামী যাত্রীদের রোববার রাতেই গন্তব্যে পাঠানোর কথা ছিল।  কিন্তু চট্টগ্রামে ঘন কুয়াশার কারণে তা সম্ভব হয়নি।  তাই সোমবার তাদের দুবাই পাঠানো হচ্ছে। ওই বিমানের দুবাইগামী চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছে। তাদের নিয়ে আজ দুবাই যাবে উড়োজাহাজ। উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা মাহাদী নামে অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। তার পুরো পরিচয় ও ছিনতাইচেষ্টার কারণও জানা যায়নি।
রোববার ছিনতাইয়ের কবলেপড়া বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খি নামে উড়োজাহাটির দুবাইগামী যাত্রীদের আজ সোমবার বিকালে নির্ধারিত গন্তব্যে পাঠানো হবে। বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, উড়োজাহাজটির দুবাইগামী যাত্রীদের রোববার রাতেই গন্তব্যে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু চট্টগ্রামে ঘন কুয়াশার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাই সোমবার তাদের দুবাই পাঠানো হচ্ছে। ওই বিমানের দুবাইগামী চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছে। তাদের নিয়ে আজ দুবাই যাবে উড়োজাহাজ। উল্লেখ্য, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ মডেলের ময়ূরপঙ্খি উড়োজাহাজটি (বিজি-১৪৭ ফ্লাইট) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৩৪ যাত্রী ও ১৪ ক্রু নিয়ে রোববার বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার টান টান উত্তেজনার পর উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার অবসান ঘটে। পরে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২৪ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজটিতে থাকা মাহাদী নামে অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। তার পুরো পরিচয় ও ছিনতাইচেষ্টার কারণও জানা যায়নি।
‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির অর্ধশতবার্ষিকী উদযাপন
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির অর্ধশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে আজ।  এ উপলক্ষে সোমবার বিকাল ৩টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। প্রসঙ্গত ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আগরতলা মামলা থেকে মুক্তি পান শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তখন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা রূপে আত্মপ্রকাশ করেন।  ’৬৯-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের গণসংবর্ধনায় ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে ডাকসুর তৎকালীন সহসভাপতি, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশবাসীর পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। তবে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথম বঙ্গবন্ধু উপাধি দেন তখনকার ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক।
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির অর্ধশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে আজ।
ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে জনজীবনে ছন্দপতন
রাজধানীতে ফের নেমেছে বৃষ্টি। কখনও ঝিরিঝিরি আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নামে, সঙ্গে ছিল কনকনে হাওয়া। সোমবার ভোর থেকেই রাজধানীর আকাশ ছিল মেঘে ঢাকা। এর পর ৬টার দিকে টিপ টিপ করে বৃষ্টি শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর অবশ্য বন্ধ হয়ে যায়। তবে সকাল ৭টার দিকে আবারও নামে বৃষ্টি। এদিকে ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ এই বৃষ্টিতে রাজধানীর পথচারীরা বিপাকে পড়েন। মাত্র ২০ মিনিটের বৃষ্টি কর্মজীবীদের কিছুটা হলেও দুর্ভোগের মধ্যেই ফেলে দেয়। হঠাৎ এই বৃষ্টির জন্য বেশিরভাগ মানুষ প্রস্তুত ছিল না। সাতসকালে যাদের ঘরের বাইরে ছুটতে হয়, তাদের অনেকেই কাকভেজা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন। যানবাহন কম থাকায় স্কুলগামী শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েন অভিভাবকরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অফিসগামী অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজেছেন। পথচারীরা কেউ কেউ দৌড়ে আশ্রয় নেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বারান্দা ও কার্নিশের নিচে। যারা রিকশায় ছিলেন তারাও পর্দা না থাকায় ভিজেছেন। আর যাদের সঙ্গে ছাতা ছিল, তারা রক্ষা পেয়েছেন। আবহাওয়া অধিদফতর সূত্র জানায়, আজ রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা এবং ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আজ সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে- শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি থাকতে পারে। সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৬৪ শতাংশ। সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ৫৮ মিনিট। আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
রাজধানীতে ফের নেমেছে বৃষ্টি। কখনও ঝিরিঝিরি আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নামে, সঙ্গে ছিল কনকনে হাওয়া।
বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি
বাংলাদেশে বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্যের এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার।  রোববার দিবাগত রাতে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানায়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর নির্দেশে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার। বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী মাহাদী (২৬) সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে জানা গেছে। তবে তার সর্ম্পকে বিস্তারিত কিছু জানা যায়ানি। ইতিমধ্যে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গোলাগুলিতে নিহত হওয়ার সময় তার নাম মাহাদী বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে আইএসপিআর জানায়, অভিযানের পর ছিনতাই চেষ্টাকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই যুবককে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু সে তাতে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। এতে জানানো হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন।
বাংলাদেশে বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী যুবকের হাতে ছিল খেলনা পিস্তল: পুলিশ
বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী যুবকের হাতের অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল ছিল। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান সাংবাদিকদের এমন তথ্যই দিয়েছেন। তিনি বলেন, তার কাছে যে অস্ত্রটি পাওয়া গেছে এটা ভুয়া, খেলনা পিস্তল। পরবর্তীতে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও রাতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে একই কথা বলেছেন। তিনিও বলেছেন, ওই পিস্তলটি ছিল খেলনা। বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী মাহাদী (২৬) সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে টিকিটে তার নাম মাজিদুল বলে জানা গেছে।  তার সর্ম্পকে বিস্তারিত কিছু জানা যায়ানি। ইতিমধ্যে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গোলাগুলিতে নিহত হওয়ার সময় তার নাম মাহাদী বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।  এর আগে আইএসপিআর জানায়, অভিযানের পর ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। রাত ৮টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাই চেষ্টাকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়।
বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী যুবকের হাতের অস্ত্রটি খেলনা পিস্তল ছিল। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ মাহবুবার রহমান সাংবাদিকদের এমন তথ্যই দিয়েছেন।
নিহত বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারীর ছবি প্রকাশ
বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী মাহাদী (২৬) সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে জানা গেছে।  তবে তার সর্ম্পকে বিস্তারিত কিছু জানা যায়ানি। ইতিমধ্যে তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গোলাগুলিতে নিহত হওয়ার সময় তার নাম মাহাদী বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান। রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে আইএসপিআর জানায়, অভিযানের পর ছিনতাই চেষ্টাকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই যুবককে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু সে তাতে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে।  এতে জানানো হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। রাত ৮টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাই চেষ্টাকারী আহত অবস্থায় আটক করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আটক আহত ছিনতাই চেষ্টাকারী সুস্থ হলে তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে। অভিযান সমাপ্ত হওয়ার পর সিভিল অ্যাভিয়েশন কার্যালয়ে এ বিষয়ে ব্রিফিং করে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যমকে জানান সিভিল অ্যাভিয়েশনের নতুন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. নাইম হাসান। এর আাগে রোববার বিকালে দুবাইয়ের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে। এর পরই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে বিমানটি। বিমানের চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটটি যখন মাঝ আকাশে, তখন এক ব্যক্তি পাইলটকে অস্ত্র ঠেকিয়ে উড়োজাহাজটি জিম্মি করেন।  অবস্থা বেগতিক দেখে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জরুরি অবতরণ করা হয়। জরুরি অবতরণের পরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ। পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হলেও একজন ক্রুকে ওই ছিনতাইকারী জিম্মি করে রাখে বলে সূত্রের খবর। পরে বিমানবন্দরে যায় সোয়াত টিম ও বোমা ডিসপোজাল ইউনিট। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসও। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সূত্র জানায়, বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই এ ঘটনা ঘটে। এরপরই দ্রুত ফ্লাইটের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করে এবং সেটি ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ছিনতাই চেষ্টাকারী মাহাদী (২৬) সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছে। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে জানা গেছে।
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে আমুর সংবাদ সম্মেলন সোমবার
চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসায় সোমবার বেলা ১১টায় তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন বলে জানা গেছে। এর আগে শনিবার সকালে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমুকে দোষারোপ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক- সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে শিল্পমন্ত্রী ছিলেন, উনি যদি সিরিয়াসলি কেমিক্যাল গোডাউন ও কারখানা সরানোর বিষয়টি টেকআপ করে নিতেন তাহলে হয়তো এতদিনে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন রিলোকেট করা সহজ হতো।’ ১৪ দলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে চকবাজারে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।  ২০১০ সালের ৩ জুনে নিমতলীর আগুনের ঘটনার সময় শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন দিলীপ বড়ুয়া। তিনি আরও বলেন, ‘কেমিক্যাল বিজনেস রিলোকেট করার জন্য আমি মন্ত্রী থাকাকালে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কেমিক্যাল মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং বিসিক- তারা মিলেও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সিদ্ধান্তটি ছিল তারা ঢাকার বাইরে একটি জমিতে স্থানান্তরিত হবে। এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল। কিছু ডিসক্রিট ব্যাপারের কারণে পুরো ব্যাপারটি এগোয়নি।’ ঢাকাকে বাসযোগ্য ও নিরাপদ করতে ‘সোশ্যাল কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটি’ যেভাবে গড়ে ওঠার কথা, তা হয়নি বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই শিল্পমন্ত্রী। দিলীপ বড়ুয়া বলেন, যারা স্টেক হোল্ডার আছেন, তারা সরকারকে বাধ্য করতে পারেনি। ভবন মালিকদেরও দায় আছে। তারা বেশি ভাড়া পাওয়ার জন্য গোডাউন (রাসায়নিকের জন্য) ভাড়া দেয় এবং ব্যাপারটি লুকিয়ে রাখে। রাসায়নিকের মজুদের সনদ দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সিটি কর্পোরেশনকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন সাবেক এই শিল্পমন্ত্রী। এ সময় অন্যদের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজুল হক মোক্তার, বাসদের (বাসদ-মাহবুব) আহ্বায়ক রেজাউর রশীদসহ ১৪ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসায় সোমবার বেলা ১১টায় তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন বলে জানা গেছে।
ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ নিয়ে সোমবার সিআইডির সংবাদ সম্মেলন
চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে জীবন্ত দগ্ধদের পরিচয় শনাক্তকরণে সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরির কার্যক্রম সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলন সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীতে সিআইডির নতুন ভবনের ছয় তলার ৬০৮ নম্বর কক্ষে বেলা সাড়ে ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। পুরান ঢাকার ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লাশ হস্তান্তরে নিহতদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছেন সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের কর্মীরা। ইতিমধ্যে ১৯টি মরদেহের পরিচয় শনাক্তে ৩৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রোববার বেলা ২টা পর্যন্ত এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ঢকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের তথ্য নথিভুক্ত করার দায়িত্ব পালন করা উপ-পরিদর্শক (এসআই) লোকমান সাংবাদিকদের বলেন, চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৬৭ জনের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত ৪৮টি লাশ তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রোববার নতুন করে কোনো মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি। কাজেই এ পর্যন্ত ১৯টি মরদেহ অজ্ঞাত রয়েছে। ‘এগুলো শনাক্ত করতে শনিবার পর্যন্ত ৩৬ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। রোববার নতুন করে আরও দুজন ডিএনএ নমুনা দিয়ে গেছেন।’
চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে জীবন্ত দগ্ধদের পরিচয় শনাক্তকরণে সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরির কার্যক্রম সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলন সোমবার অনুষ্ঠিত হবে।
যে কারণে বিমান ছিনতাই করতে চেয়েছিলেন পলাশ
বিমান উড়িয়ে দিয়ে চিত্রনায়িকা সিমলার প্রতি ‘ভালোবাসার নজির’ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন মাহাদী ওরফে মাজিদুল ওরফে পলাশ! ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ বিজি-১৪৭ ফ্লাইটি উড্ডয়ন করে মাঝ আকাশে, তখন এক যুবক দৌঁড়ে এসে ক্রু সাগরকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে জিম্মি করে। তখন ক্রু সাগর জানতে চান কেন তিনি (ওই যুবক) এমনটি করছেন। তখন ওই যুবক সাগরকে বলেন, নায়িকা সিমলার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে তাকে ডিভোর্স দিয়েছেন। সিমলাকে ভালবাসতেন তিনি। সিমলা  একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। রাত কাটান। এটি তিনি মানতে পারছেন না। তিনি এর বিচার প্রধানমন্ত্রীকে দিতে চান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই মিনিট কথা বলতে চান। সিমলার সঙ্গে কথা বলতে চান। এক পর্যায়ে ক্রু সাগরের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন জিম্মিকারী যুবক।  এরপর তিনি   মোবাইল ফোনে  (সিমলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠা সেই ব্যক্তির সঙ্গে ) কথা বলেন। এ সময় জিম্মিকারী যুবক অন্য প্রান্তে যার সঙ্গে কথা বলছেন তাকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই মিনিট কথা বলার সুযোগ করে দিন।   ‘স্ত্রী’ সিমলার সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিন।’ জিম্মিদশায় থাকা  কেবিন ক্রু সাগরের উদ্ধৃতি দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, কথা বলার ফাঁকেই একাধিকবার সাগরকে গুলি করার হুমকি দেন জিম্মিকারী যুবক। শার্ট উল্টে বুকের মধ্যে বোমাসদৃশ বেল্ট বেঁধে রাখার দৃশ্য দেখান।  ককপিটে যেতে না দিলে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়োজাহাজ উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় ক্রু সাগর জিম্মিকারী যুবককে বলেন, একটি মেয়ের জন্য আপনি কেন এমন করছেন। একটি উড়োজাহাজ উড়িয়ে দেয়ার মতো ঘটনা কেন ঘটাতে চাচ্ছেন। দেশে কী মেয়ের অভাব আছে। তখন উত্তরে জিম্মিকারী যুবক বলেন, তিনি সিমলাকে ভালোবাসেন। ভালোবাসার নজির রাখতে চান এই ঘটনার মধ্যদিয়ে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে প্রথম বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়ে ইতিহাস রচনা করতে চান। উল্লেখ্য, রোববার বিকালে দুবাইয়ের উদ্দেশে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে বিমানটি। বিমানের চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটটি যখন মাঝ আকাশে, তখন এক ব্যক্তি পাইলটকে অস্ত্র ঠেকিয়ে উড়োজাহাজটি জিম্মি করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জরুরি অবতরণ করা হয়। জরুরি অবতরণের পরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ। পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হলেও একজন ক্রুকে ওই ছিনতাইকারী জিম্মি করে রাখে বলে সূত্রের খবর। পরে বিমানবন্দরে যায় সোয়াত টিম ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসও। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সূত্র জানায়, বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই এ ঘটনা ঘটে। এরপরই দ্রুত ফ্লাইটের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করে এবং সেটি ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রীদের নামিয়ে আনলেও সাগর নামে একজন ক্রু ও ছিনতাইকারী বিমানটির ভেতরে রয়ে যান। বিমানটি রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে জরুরি অবতরণ করা হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ করা হয় বলে জানান বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ। পরে সেনা স্পেশাল ফোর্স ও নৌ কমোডর এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে নৌ কমোডর দলের অভিযানে সন্দেহভাজন ওই ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয় এবং আহতাবস্থায় ক্রু সাগরকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বিমানটির সব যাত্রী-ক্রুরা সুস্থ রয়েছেন। বিমানের কোনো ক্ষতিও হয়নি। এদিকে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। এর আগে রাত ৮টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। রোববার রাতে নিহত ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয়, তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু সোমবার যে তথ্য এল, তাতে দেখা যাচ্ছে তার নাম মাহাদী ও মাজিদুল কোনোটিই নয়; তার নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। সে ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল। গ্রামের সবাই তাকে পলাশ নামেই চিনত। গ্রামের বাইরে পলাশ নিজেকে মাহাদী নামে পরিচয় দিত।
বিমান উড়িয়ে দিয়ে চিত্রনায়িকা সিমলার প্রতি ‘ভালোবাসার নজির’ স্থাপন করতে চেয়েছিলেন মাহাদী ওরফে মাজিদুল ওরফে পলাশ!
বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় সর্বদলীয় তদন্তের দাবি
বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা তদন্তে সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। একই সঙ্গে যাত্রীদের নিরাপদে অবতরণ এবং সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলার স্বীকৃতি হিসেবে ওই বিমানের পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রুদের বিশেষভাবে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি কীভাবে ছিনতাইকারী অস্ত্র নিয়ে বিমানে প্রবেশ করতে পারল, সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে। সোমবার সংসদে মাগরিবের বিরতির পর অধিবেশন শুরু হলে প্রথমে কার্যপ্রণালী বিধির ৩০০ বিধিতে সংসদে এ বিষয়ে বিবৃতি দেন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বিষয়টির অবতারণা করে বলেন, এভাবে কোনো ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে বিমানে ঢুকতে পারে না। সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ সেখানে কী করে? বিষয়টিকে আমরা সহজভাবে নিতে পারি না। উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যেন আর এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া জরুরি। সরকারিভাবে যদি তদন্ত হতে হয় তাহলে অন্তত সচিবের নিচে কাউকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা উচিত হবে না। কেননা বিমানের সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি ও জাতির সুনাম জড়িত। সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। দ্রুত তদন্ত শেষ করে এই সংসদকে বিস্তারিত জানাতে হবে। নইলে মানুষ এই বিমানে আর উঠবে না, বিমান লোকসানে যাবে। এরপর ফ্লোর নিয়ে বাংলাদেশ জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে দেখলাম বলা হয়েছে আমি নাকি ওই বিমানের যাত্রী ছিলাম। আমি ওই বিমানের যাত্রী ছিলাম না। চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে আমি ওই বিমানবন্দরে এসেছিলাম ঢাকায় ফেরার জন্য। সেখানে তখন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা দু’জন সিদ্ধান্ত নিলাম, সংসদ সদস্য হিসেবে বিষয়টি তদারকি করা আমাদেরও কর্তব্য। এ জন্য আমরা একেবারে টারমার্কে ঢুকে পড়ি এবং একেবারে শেষ পর্যন্ত সেখানে থাকি। নিজের দেখা ঘটনা ও পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য বাদল বলেন, আমার ফাইন্ডিং হলো- একজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি বিমানে পেছন দিক থেকে গালাগালি করতে করতে সামনে দিকে আসতে থাকে। সে পাইলটকে দরজা খুলতে বলে। পাইলট দরজা খুলেননি। বাদল বলেন, পত্রপত্রিকায় লেখা হয়েছে পাইলটের সঙ্গে অনেক কিছু হয়েছে। না, পাইলটের সঙ্গে মল্লযুদ্ধ হয়নি। পাইলট তার সঙ্গে কথা বলে তাকে ব্যস্ত রাখার কৌশল নেন। পাইলট অত্যন্ত দূরদর্শিতা ও সাহসের সঙ্গে বিমান অবতরণ করেন। বিমানের ক্রুদেরও পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাহসী ভূমিকা ছিল। ক্রুরা ইকোনমি ও বিজনেস সিটের মাঝখানে পর্দা লাগিয়ে দেন। বিমানটি অবতরণের পর বিমানের ডানার পাশে থাকা জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে যাত্রীদের বের করে আনা হয়। পরে পাইলট যখন বেরিয়ে আসেন তার সঙ্গে আমার কথা হয়। তিনি বলেন, পাইলট বললেন- ভেতরে ওই ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ নেই, এখন অপারেশন চালানো যায়। পরে সেনা কমান্ডো অফিসার আমাকে জানান, ভেতরে ওই ব্যক্তি অফেসনিভ নিয়েছে, যার কারণে তার সঙ্গে আমাদেরকে নেগোসিয়েশনে যেতে হয়েছে। এরপর অপারেশনে ওই ব্যক্তি আহত হওয়ার পর মারা যায়। মইন উদ্দীন খান বাদল আরও বলেন, এ দেশে রিয়েল হিরোরা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পান না। পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রুরা অসীম সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব, তাদেরকে পুরস্কৃত করা উচিত। অপারেশন শেষ করে মাত্র ২ ঘণ্টা ৩২ মিনিটের মাথায় বিমানবন্দর আবার চালু করে দেয়া হয়েছে। এখানে বোঝা যায়, এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দ্রুত বিমানবন্দর খুলে দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের পারদর্শিতা অর্জিত হয়েছে। একই সঙ্গে চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাহসী ভূমিকার জন্য ফায়ার ব্রিগেডের সংশ্লিষ্ট সদস্যদেরও পুরস্কৃত করতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। রুস্তম আলী ফরাজী ও বাদলে বক্তব্যের আগে কার্যপ্রণালী বিধি ৩০০ বিধিতে দেয়া এক বিবৃতিতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ৫টা ১৩ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম-দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১৪৭ ঢাকা বিমানবন্দর ত্যাগ করে। তবে চট্টগ্রামে অবতরণের আগে বিমানে যাত্রী বেশে একজন আকস্মিক ব্যক্তি যাত্রীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং বিমান উড়িয়ে দেয়ার হুমকি ও চিৎকার করতে থাকে। তিনি বলেন, বিমানের কর্তব্যরত ক্যাপ্টেন অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা, পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে দুষ্কৃতিকারীদের কথোপকথনে ব্যস্ত করে কালক্ষেপণ করে ইতিমধ্যে বিমানের ক্রুদের সহায়তায় সব যাত্রীদের নিরাপদে বের করে নিয়ে আসা হয়। তিনি বলেন, ঘটনা চলাকালে বিমানবাহিনীর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফায়ার সার্ভিসসহ সব সংস্থার দ্রুত ব্যবস্থার ফলে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপদ স্থানে নিতে সক্ষম হয়। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী কমান্ডো ও র‌্যাবের একটি চৌকস দল বিমানবন্দরে অবস্থান গ্রহণ করে। কমান্ডো দল বিমানের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ঝটিকা আক্রমণ করে দুষ্কৃতকারীকে নিষ্ক্রিয় করে। একপর্যায়ে কমান্ডো বাহিনীর দুর্বার অভিযানে ছিনতাইকারী আহত হয়ে পরে মৃত্যুবরণ করে। বিমানটিতে ১৪৮ জন যাত্রী ও ৭ জন ক্রু সবাই নিরাপদে আছেন। বিমানটিও অক্ষত রয়েছে। বেবিচক পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে বলে সংসদকে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা তদন্তে সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের সর্বদলীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে জাতীয় সংসদে।
১৯ লাশের দাবিদার ২৩ পরিবার
পুরান ঢাকার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে জীবন্ত দগ্ধ ১৯ জনের লাশ ও একটি বিচ্ছিন্ন হাতের মালিকের পরিচয় শনাক্তের জন্য ২৩টি পরিবারের ৩৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার। ডিআইজি বলেন, শনাক্ত না হওয়া মৃতদেহগুলোর মধ্যে পাঁচটির হাড় এবং বাকিগুলো থেকে টিস্যু ও রক্ত নেওয়া হয়েছে। হাড় থেকে নেওয়া নমুনা এবং পরিবারের সদস্যদের দেওয়া নমুনা মেলাতে তিন সপ্তাহের বেশি সময় লাগবে। বাকিগুলোর সময় লাগবে ১০ থেকে ১২দিন। রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ওই ভবনে বুধবার দিবাগত রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুনের ভয়াবহতা কিছুটা কমলেও আবারও বেড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বিক্ষিপ্তভাবে এখনও বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলছে। ভবনটির ছাদেও আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্ট্রেচারে করে ব্যাগ ভর্তি করে একের পর এক লাশ বের করে নিয়ে আসছেন। কতজন দগ্ধ হয়েছেন তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। অর্ধশতাধিক ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে ভর্তি। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৪০টি ইউনিট। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের শতাধিক কর্মীসহ অনেকেই এখানে কাজ করছেন। নগরবাসী, দেশবাসী সবার দোয়া চাচ্ছি, যাতে করে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পারি। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য হলো আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। যারা আহত হয়েছেন তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আমরা ঘটনার তদন্ত করব। কেন, কিভাবে আগুন লেগেছে সে সম্পর্কে জানাতে পারব। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনালের আলী আহাম্মেদ খান বলেন, আগুন লাগার পর থেকেই পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৪০টি ইউনিটের দুইশতাধিক ফায়ার ফাইটার্স কাজ করছে। এই জায়গাটা আসলে সংকীর্ণ, আমাদের পানির সঙ্কট হয়েছিল। এখানে বিভিন্ন ধরনের কেমিকেল আছে। আমরা দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। আগুনের সূত্রপাত নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত।
পুরান ঢাকার চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে জীবন্ত দগ্ধ ১৯ জনের লাশ ও একটি বিচ্ছিন্ন হাতের মালিকের পরিচয় শনাক্তের জন্য ২৩টি পরিবারের ৩৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।
বিমান ছিনতাইকারী পলাশের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী উড়োজাহাজ ময়ুরপঙ্খী ছিনতাইয়ের অভিযোগে নিহত পলাশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন অধ্যাদেশ ও বিমান নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।  সোমবার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় সিভিল এভিয়েশন এ মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়ের করার বিষয়টি পতেঙ্গা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে সোমবার বেলা ৩টায় র‌্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পলাশ আগেও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। ২০১২ সালের মার্চে পলাশ আহমেদ ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। তার অপরাধ ছিল, সে একজন নারীকে অপহরণ করে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। র‌্যাবের ক্রিমিনাল ডেটাবেইজে এ তথ্য লেখা আছে। র‌্যাবের অপরাধী তথ্যভান্ডারের বিবরণ দিয়ে মুফতি মাহমুদ আরও জানান, পলাশের জন্ম ১৯৯৪ সালে। ২০১২ সালে যখন পলাশকে গ্রেফতার করা হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। ওই সময়ই সে নিজেকে বিবাহিত বলে দাবি করে। মুফতি মাহমুদ আরও জানান, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ওই ঘটনার পর র‌্যাব-৭ ঘটনাস্থলে যায়। র‌র‌্যাবের বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট সেখানে কাজ করে।পলাশের শরীরে বিস্ফোরকসদৃশ যা পাওয়া গেছে তাতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না।এটা ভুয়া একটা জিনিস ছিল, যেখানে ভুয়া তার-সার্কিট দিয়ে ভেস্টের মতো তৈরি করা হয়েছিল। এর আগে সকালে এক মোবাইল বার্তায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে পলাশের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার বার্তা জানানো হয়।  র‌্যাব জানায়, ছিনতাই চেষ্টাকারী ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। সে বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিল। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা পাইলট-ক্রুদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা ও যৌথবাহিনীর অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে। রোববার বিকালে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যাকাশে এ ঘটনা ঘটে। এর পর অত্যন্ত সুকৌশলে ককপিটের দরজা বন্ধ করে বিমানটিকে শাহ আমানত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। সেখানে উদ্ধার অভিযানের সময় উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার মৃত্যু ঘটে। এর আগে বিমানটির যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের দুবাইগামী উড়োজাহাজ ময়ুরপঙ্খী ছিনতাইয়ের অভিযোগে নিহত পলাশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন অধ্যাদেশ ও বিমান নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পলাশকে নিয়ে যা বললেন নায়িকা সিমলা
বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত মো. পলাশ আহমেদ ও চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এর জন্য এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন সিমলা। রোববার বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় যুগান্তরসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পলাশ ও সিমলার বিয়ের বিষয়টি সামনে আসে। এর ব্যাখা দিতেই ভিডিও বার্তা দেন নায়িকা সিমলা। ভিডিও বার্তায় সিমলা বলেন, ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তার সঙ্গে পরিচয় পলাশের। আমি পরিচালক রশিদ পলাশের 'নাইওর' ছবি করেছিলাম। সেদিন (১২ তারিখ) পরিচালক রশিদ পলাশের জন্মদিন ছিল। আমাকে সেখানে ইনভাইট করেছিলেন তিনি। আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই পলাশের (বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী) সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সিমলা বলেন, এরপর ২০১৮ সালের ৩ মার্চ আমরা বিয়ে করি। ওই বছরেরই নভেম্বরে আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। পলাশকে ডিভোর্স দেয়ার তথ্য জানিয়ে নায়িকা সিমলা আরও বলেন, ডিভোর্স দেয়ার কারণ ছিল। মূল কারণ হচ্ছে- মানসিক সমস্যা। তিনি বলেন, পেশা হিসেবে আমি যেটা জানতাম-জানি সেটা হলো পরিচালক রশিদের 'কবর' ছবিতে প্রযোজক হিসেবে ছিলেন পলাশ (বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী)। আমি তাকে (পলাশ) একজন প্রযোজক হিসেবেই চিনি। সিমলা বলেন, আমি ঘটনার (বিমান ছিনতাইচেষ্টা) সবই শুনেছি। আমার এখন কী করা উচিত। যেহেতু উনাকে (পলাশ) আমি ডিভোর্স দিয়ে ফেলেছি। আমাদের ডিভোর্স হয়েছে চার মাস চলছে। গতবছরের নভেম্বর মাসের ৬ তারিখে ডিভোর্স হয় আমাদের। এখন আমার কী করণীয় আছে। তিনি বলেন, তবুও একটা কথা থাকে এখানে। যেহেতু এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছে। করেছে দুঃসাহসিক একটা ঘটনা উনি (পলাশ) এবনরমালেই করেছেন। যেটাই করেন না কেন এটা তো শুভনীয় নয়। এটা তো দেশের জন্য শুভনীয় নয়। এটা আমার দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। সেখানে যদি আমার দেশের স্বার্থের জন্য কোথাও ফেইস হতে হয়, কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, নো প্রোবলেম। আমি রেডি, নো প্রোবলেম। উল্লেখ্য, রোববার বিকালে দুবাইয়ের উদ্দেশে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে বিমানটি। বিমানের চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটটি যখন মাঝ আকাশে, তখন এক ব্যক্তি পাইলটকে অস্ত্র ঠেকিয়ে উড়োজাহাজটি জিম্মি করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের জরুরি অবতরণ করা হয়। জরুরি অবতরণের পরপরই রানওয়েতে বিমানটি ঘিরে ফেলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ। পরে সব যাত্রীকে নিরাপদে নামিয়ে আনা হলেও একজন ক্রুকে ওই ছিনতাইকারী জিম্মি করে রাখে বলে সূত্রের খবর। পরে বিমানবন্দরে যায় সোয়াত টিম ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসও। ঘটনাস্থল থেকে একাধিক সূত্র জানায়, বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা। কিন্তু উড্ডয়নের পরপরই এ ঘটনা ঘটে। এরপরই দ্রুত ফ্লাইটের সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিমানটি রানওয়েতে অবস্থান করে এবং সেটি ঘিরে ফেলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রীদের নামিয়ে আনলেও সাগর নামে একজন ক্রু ও ছিনতাইকারী বিমানটির ভেতরে রয়ে যান। বিমানটি রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে জরুরি অবতরণ করা হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে বিমান ওঠানামা বন্ধ করা হয় বলে জানান বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ। পরে সেনা স্পেশাল ফোর্স ও নৌ কমোডর এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমানের নেতৃত্বে নৌ কমোডর দলের অভিযানে সন্দেহভাজন ওই ছিনতাইকারীকে আহতাবস্থায় আটক করা হয় এবং আহতাবস্থায় ক্রু সাগরকে উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বিমানটির সব যাত্রী-ক্রুরা সুস্থ রয়েছেন। বিমানের কোনো ক্ষতিও হয়নি। এদিকে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিমানের ভেতরে অভিযান চালানোর সময় ওই ব্যক্তিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে গুলি চালানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিমানে ক্রুসহ ১৪৮ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই নিরাপদে বের হয়ে এসেছেন। এর আগে রাত ৮টার দিকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৭টা ১৭ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে। এটি শেষ হয় ৭টা ২৫ মিনিটে। এ সময় ছিনতাইকারীকে আহত অবস্থায় আটক করা হয়। রোববার রাতে নিহত ওই যুবকের পরিচয় নিয়ে একাধিক তথ্য জানানো হয়, যা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। প্রথমে বলা হয়, তার নাম মাহাদী। পরে বলা হয় মো. মাজিদুল। তবে টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল লেখা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু সোমবার যে তথ্য এল, তাতে দেখা যাচ্ছে তার নাম মাহাদী ও মাজিদুল কোনোটিই নয়; তার নাম মো. পলাশ আহমেদ। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের দুধঘাটা গ্রামে। তার বাবার নাম পিয়ার জাহান সরদার। সে ওই উড়োজাহাজের ১৭/এ নম্বর আসনের যাত্রী ছিল। গ্রামের সবাই তাকে পলাশ নামেই চিনত। গ্রামের বাইরে পলাশ নিজেকে মাহাদী নামে পরিচয় দিত।
বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত মো. পলাশ আহমেদ ও চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এর জন্য এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন সিমলা।
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পাবেন দশম গ্রেডে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডসহ গেজেটেড পদমর্যাদা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন দোলন।  এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এই রায় দেয়া হয়। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে এ আদেশ কার্যকর করার জন্য বলা হয়েছে।এ রায়ের ফলে প্রাথমিকের ৬৫ হাজার ৫৯ জন প্রধান শিক্ষকের ভাগ্য ফেরার সম্ভাবনা দেখছেন আইনজীবীরা।প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন উভয় ধরনের প্রধান শিক্ষকদের জন্য এই রায় কার্যকর হবে।  সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫৯ জন প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে এবং ৫০ হাজারের কাছাকাছি পদের প্রধান শিক্ষক।   রায় ঘোষণার পর আইনজীবী সালাউদ্দিন দোলন সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ৯ মার্চ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করেন।এছাড়া একই দিনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডসহ গেজেটেড পদমর্যাদা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ডাকসু নির্বাচন: ছাত্রদল নেত্রীর আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত চাওয়া রিটের শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট। ফলে ডাকসু নির্বাচন হতে এখন পর্যন্ত  আইনি কোনো বাধা নেই। তবে আদালতের আদেশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভোটার তালিকায় রিটকারী ছাত্রদল নেত্রী ফাহমিদা মজিদের নাম অন্তর্ভুক্তি ও প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করতে নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ভোটার তালিকায় ফাহমিদা মজিদের নাম অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানিতে আদালত বলেন, তারা নির্বাচনের তফসিল পেছাবেন না। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আপনারা একটা আদেশ দিতে পারেন। উনি ভোটার হতে চেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলা যেতে পারে যে, তাকে ভোটার করার বিষয়টি বিবেচনা করা হোক। তখন হাইকোর্ট ফাহমিদা মজিদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির আবেদন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আদালতের আদেশে বলা হয়, 'আমরা ঘোষিত তফসিল বাধাগ্রস্ত না করেই তার আবেদন নিষ্পত্তি করতে বলছি।' রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, 'ফাহমিদা মজিদ রোকেয়া হলের প্রভোস্টের কাছে যে আবেদন দিয়েছেন, সেটা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যখন তাকে বিবেচনা করা হবে তখন তিনি যদি প্রার্থী হতে চান, সে বিষয়টিও বিবেচনা করতে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। আদালত সেই সঙ্গে একটি রুলও দিয়েছেন।' আবেদনকারীকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে তাকে প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করায় ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসু নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. এস এম মাহফুজুর রহমানসহ পাঁচজনকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ফাহমিদা মজিদ নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক। রোববার ওই ছাত্রীর পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত চাওয়া রিটের শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট। ফলে ডাকসু নির্বাচন হতে এখন পর্যন্ত আইনি কোনো বাধা নেই।
যুগান্তরের কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তিসহ মামলা প্রত্যাহারের দাবি ডিইউজের
সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়ে দৈনিক যুগান্তরের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি আবু জাফরকে গ্রেফতার ও অন্য ৫ প্রতিনিধিকে হয়রানির নিন্দা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। সোমবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষে ডিইউজে সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী এই নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকার যখন বারবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ করছে তখন রিপোর্ট প্রকাশের কারণে সাংবাদিককে গ্রেফতার ও হয়রানি সরকারের সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরকারকে বিতর্কিত করতে ও বেকায়দায় ফেলতে চাইছে কিনা তাও বিবেচনা করা দরকার। বিবৃতিতে আবু জাফর সূর্য ও সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, সরকার যখন গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নানা ধরনের কল্যাণমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন রাখছে, তখন পুলিশের কোনো কোনো সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ড সরকারের সদিচ্ছাকে বিতর্কিত করছে। তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে সাংবাদিকদের আপত্তির মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন, তথ্যবহুল সাংবাদিকতার জন্য কোনো প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিক এ আইনে হয়রানির শিকার হবেন না। অথচ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি যুগান্তরে ‘নবাবগঞ্জের ওসি মোস্তফা কামালের আলীশান বাড়ি’ শীর্ষক সংবাদের কারণে পত্রিকাটির কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। যা সাংবাদিক সমাজকে হতাশাগ্রস্ত করছে। বিবৃতিতে নেতারা অবিলম্বে আবু জাফরকে নিঃশর্ত মুক্তিদানসহ সংশ্লিষ্ট ৫ জনকে হয়রানি থেকে নিবৃত্ত হতে পুলিশকে অনুরোধ জানান। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থাকা সাংবাদিক নিবর্তনমূলক ধারাগুলো বাতিল করা অথবা তথ্যবহুল প্রকৃত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এ আইনের ব্যবহার বন্ধের অনুরোধ জানান।
সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়ে দৈনিক যুগান্তরের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি আবু জাফরকে গ্রেফতার ও অন্য ৫ প্রতিনিধিকে হয়রানির নিন্দা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
পলাশকে নিয়ে নায়িকা সিমলার ভিডিও বার্তা
বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছেন  মো. পলাশ আহমেদ নামে এক যুবক। রোববার ঘটনার দিন এই যুবককে নিয়ে নানান ধূম্রজাল তৈরি হয়েছিল। প্রথম বিভ্রান্তি তৈরি হয় তার নাম নিয়ে। একবার জানা যায় তার নাম মাহাদী, পরে মাজিদুল। অবশেষে সোমবার তার সঠিক নাম জানা গেল। তার নাম  মো. পলাশ আহমেদ (২৬)। কেন এই যুবক এ ঘটনা ঘটাল। ঘটনার রাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসেছে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। পরে সোমবার ওই যুবক সম্পর্কে নানান তথ্য সামনে আসতে থাকে। জানা যায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঢাকাই ছবির চিত্রনায়িকা সিমলাকে বিয়ে করেন পলাশ নামে ওই যুবক। র্যাব জানায়, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে। রোববার বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় নিহত মাজেদুলই দুধঘাটা গ্রামের পলাশ মাহমুদ তা নিশ্চিত করেন সোনারগাঁ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, নিহতের ছবি রোববার রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ছবিটি পলাশের বলে নিশ্চিত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইতিমধ্যে তার বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় করে। এরই মধ্যে জানা গেছে, সিমলার স্বামী ছিলেন এই পলাশ। এ বিষয়ে যুগান্তরে গত বছরের ৫ জানুয়ারি ‘২০ বছরের কম বয়সীকে বিয়ে করলেন ম্যাডাম ফুলি’ শিরোনামে একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়। সেখানে সিমলার স্বামীর নাম জানানো হয় মাহি বি জাহান। সেই সময় সিমলার ঘনিষ্ঠজনরা গণমাধ্যমকে জানান, বিয়েতে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজন ও বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। রোববার বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় যুগান্তরসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পলাশ ও সিমলার বিয়ের বিষয়টি আবার সামনে আসে। এর ব্যাখা দিতে ভিডিও বার্তা দেন নায়িকা সিমলা। ভিডিও বার্তায় সিমলা বলেন, ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তার সঙ্গে পরিচয় পলাশের। আমি পরিচালক রশিদ পলাশের 'নাইওর' ছবি করেছিলাম। সেদিন (১২ তারিখ) পরিচালক রশিদ পলাশের জন্মদিন ছিল। আমাকে সেখানে ইনভাইট করেছিলেন তিনি। আমি সেখানে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই পলাশের (বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী) সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সিমলা বলেন, এরপর ২০১৮ সালের ৩ মার্চ আমরা বিয়ে করি। ওই বছরেরই নভেম্বরে আমাদের ডিভোর্স হয়েছে। পলাশকে ডিভোর্স দেয়ার তথ্য জানিয়ে নায়িকা সিমলা আরও বলেন, ডিভোর্স দেয়ার কারণ ছিল। মূল কারণ হচ্ছে- মানসিক সমস্যা। তিনি বলেন, পেশা হিসেবে আমি যেটা জানতাম-জানি সেটা হলো পরিচালক রশিদের 'কবর' ছবিতে প্রযোজক হিসেবে ছিলেন পলাশ (বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী)। আমি তাকে (পলাশ) একজন প্রযোজক হিসেবেই চিনি। সিমলা বলেন, আমি ঘটনার (বিমান ছিনতাইচেষ্টা) সবই শুনেছি। আমার এখন কী করা উচিত। যেহেতু উনাকে (পলাশ) আমি ডিভোর্স দিয়ে ফেলেছি। আমাদের ডিভোর্স হয়েছে চার মাস চলছে। গতবছরের নভেম্বর মাসের ৬ তারিখে ডিভোর্স হয় আমাদের। এখন আমার কী করণীয় আছে। তিনি বলেন, তবুও একটা কথা থাকে এখানে। যেহেতু এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছে। করেছে দুঃসাহসিক একটা ঘটনা উনি (পলাশ) এবনরমালেই করেছেন। যেটাই করেন না কেন এটা তো শুভনীয় নয়। এটা তো দেশের জন্য শুভনীয় নয়। এটা আমার দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। সেখানে যদি আমার দেশের স্বার্থের জন্য কোথাও ফেইস হতে হয়, কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, নো প্রোবলেম। আমি রেডি, নো প্রোবলেম।
বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইচেষ্টার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছেন মো. পলাশ আহমেদ নামে এক যুবক। রোববার ঘটনার দিন এই যুবককে নিয়ে নানান ধূম্রজাল তৈরি হয়েছিল।
রাজধানীতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) তিন দিন মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে ইতিমধ্যে নির্দেশনাও পাঠিয়েছেন ইসি উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান। জানা গেছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচন ও ২০টি ওয়ার্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার ১ মার্চ সকাল ৬টা পর্যন্ত তিন দিনের জন্য মোট ৫৪ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচল একদম নিষেধ। আর ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত, ২৪ ঘণ্টা জন্য অন্য সব যান চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবেন তারা হলেন- রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক, নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শকের (নির্বাচন কমিশন থেকে পরিচয়পত্র পদর্শন করতে হবে)। এছাড়া কতিপয় জরুরি কাজ যেমন-অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য যানবাহন চালাচলও এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে। ওই দিন বিমানবন্দরে যেসব যাত্রী দেশের বাইরে যাবেন ও যারা দেশে ফিরবেন আত্মীয়স্বজনের চলাচলের জন্য গাড়ির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া বিদেশি কূটনৈতিক ও দূতাবাসে কর্মরত দেশি-বিদেশির দূতাবাসে চলাচলের গাড়িও এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে ডিএনসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম বলেন, মেয়র পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে মোটরসাইকেল বন্ধ থাকবে তিন দিন। এছাড়া সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল একদিনের জন্য বন্ধ থাকবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে (ডিএনসিসি) তিন দিন মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত শিমলা কোথায়?
ঢাকাই ছবির এক সময়ের আলোচিত নায়িকা ‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত শিমলা।  ১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।   শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত সেই ছবির নাম ‘ম্যাডাম ফুলি’। সেই থেকে 'ম্যাডাম ফুলি' নামেই চলচ্চিত্রে পরিচিতি শিমলার।  এক সময়ের আলোচিত এ নায়িকার ক্যারিয়ারে ভাটা চলছে প্রায় ১০ বছর হলো।   তার সর্বশেষ অভিনীত ছবি ‘নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প’। পরিচালক রুবেল আনুশ। ছবিটির শুটিং নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ায় আলোচনায় ছিলেন কিছু দিন।  সম্প্রতি তার কোনো আলোচনা না থাকলেও বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট ছিনতাইয়ের ঘটনার চেষ্টায় নিহত যুবক পলাম আহমেদের নিহতের পরই তার নাম প্রকাশ্যে চলে আসে।  এরপরই খোঁজ পরে শিমলার।  নিহত বিমান ছিনতাইকারী চিত্রনায়িকা শিমলার স্বামী।  এসূত্রেই এখন আলোচনায় শিমলা।  র‌্যাব জানায় 'ময়ূরপঙ্খী' ছিনতাই চেষ্টাকারীর নাম পলাশ আহমেদ।  ২৪ বছর বয়সী পলাশের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার দুধঘাটা গ্রামে।   এদিকে পলাশ আহমেদের সয়্গে গত বছরের প্রথম দিনে বিয়ে নিয়ে খবরের শিরোনাম হন শিমলা।  নিহত পলাশের পিতা জানান, শিমলা পলাশের দ্বিতীয় স্ত্রী।  এর আগে পলাশ বগুড়ায় বিয়ে করে।   একটি সূত্র জানায়, পলাশ ও শিমলার মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দিয়েছে।  আর এ নিয়ে শিমলার আগ্রহেই বিচ্ছেদ হয়।  কিন্তু এমন বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারেননি পলাশ। হতাশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।  এদিকে ছিনতাইয়ের ঘটনা চাউর হওয়ার পর থেকে গণমাধ্যমে আলোচনায় আসার পর থেকে শিমলার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়।  কিন্তু তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি।   খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিমলা এক সময় মগবাজারের ডাক্তার গলিতে থাকতেন। এখন সেখানে তিনি থাকেন না। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ।  তার একসময়ের এক পরিচালক বন্ধু জানান, শিমলা কিছুদিন রাজধানীর উত্তরায় থেকেছেন।  এখন সেখানেও থাকেন না।  তাহলে কোথায় আছেন শিমলা? খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ১০ বছরের ক্যারিয়ারে ভাটা চলায় নায়িকা থাকছেন না দেশে।  বর্তমানে ভারতের মুম্বাইয়ে থাকছেন শিমলা।  সেখানে মীরা রোড নামের একটি এলাকায় বসবাস করছেন।  তবে এ তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়ানি।
ঢাকাই ছবির এক সময়ের আলোচিত নায়িকা ‘ম্যাডাম ফুলি’ খ্যাত শিমলা। ১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া প্রথম ছবিতেই শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের দায় রাষ্ট্রের কাউকে নিতেই হবে: হাইকোর্ট
'চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দায় রাষ্ট্রের কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। নিমতলীর ঘটনার পর কমিটির সুপারিশ মানায় আন্তরিক হলে চকবাজারের ঘটনা ঘটত না, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না, এটা অবহেলা। একজন  দায়িত্বশীল আরেকজনের ওপরে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন, এটা ঠিক না।' বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি  কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট  বেঞ্চ সোমবার এসব মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে এ বিষয় করা তিনটি রিট মঙ্গলবার দুপুরে একসঙ্গে শুনানির জন্য ধার্য করেছেন আদালত। চকবাজারে ভায়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে বিচারিক কমিশন গঠন ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ কয়েক দফা নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক তিনটি রিট করা হয়। সুপ্রিমকোর্টের চার আইনজীবী আবেদনকারী হয়ে রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৃথক তিনটি রিট করেন। এসব রিটের ওপর সোমবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। রাষ্ট্রপক্ষ ও রিটকারী আইনজীবীর উপস্থিতিতে আদালত বিভিন্ন মন্তব্য করেন। আদালতের রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অমিত তালুকদার ও মো. রিয়াজ উদ্দিন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি  জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সময়ের আবেদন করেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সরকার খুব আন্তরিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, আগুনে মানুষ পুড়ে মরে তাহলে সিটি কর্পোরেশন কী করে? শুধু আন্তরিক হলে হবে না। কাজ করতে হবে। নিমতলীর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কমিটির যে সুপারিশ ছিল, সেগুলোর বাস্তবায়ন হলে চকবাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। নিমতলীর আগুনের ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রী দুই বোনকে দত্তক (ভরণপোষণ) নিয়েছিলেন। তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সরকার এ ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। আদালত বলেন, আন্তরিক হলে লাভ নেই। মানুষতো চলে  গেছে। কাজ তো করতে হবে। আইনজীবী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই চকবাজারের ঘটনা তদারকি করছেন। আদালত বলেন, উনি তো (প্রধানমন্ত্রী)একা  দেশ চালাতে পারবেন না। এই যে সুপারিশ, এগুলো তো বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্ব। আদালত আরও বলেন, ওই সব এলাকার বাড়ির মালিকরা তিন গুণ বেশিতে গোডাউন ভাড়া দেন। আর নিজেরা থাকেন গুলশানে। মারা যায় গরিব মানুষ। সিটি কর্পোরেশন  দেখেও না  দেখার ভান করে। যারা রাস্তায় মারা গেল তাদের কী দোষ? আদালত বলেন, পত্রিকায় দেখেছি- সুপারিশ বাস্তবায়নের  কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এটা বাস্তবায়ন করা তাদের দায়িত্ব ছিল। আমরা জানি না তারা কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা। পদক্ষেপ না নিলে ধরে নিতে হবে তাদের অবহেলা ছিল। পুরান ঢাকার রাস্তা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও যেতে পারে না। পাঁচ থেকে ছয় মাত্রার ভ‚মিকম্পে না হয় কিছু হবে না। কিন্তু সাত থেকে আট মাত্রায় ভ‚মিকম্প হলে কোনো বিল্ডিং থাকবে না। এ ধরনের ভ‚মিকম্প হলে কাউকে উদ্ধার করারও কেউ থাকবে না। চকবাজারের আগুনের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে আদালত বলেন, এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এটা অবহেলা। এর দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। একজন দায়িত্বশীল আরেকজনের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন, এটা ঠিক না। আমাদের অর্থনীতিতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা দেশের ভাব মর্যাদা নষ্ট করে দিচ্ছে। নিমতলীর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলোর উল্লেখ করে আদালত বলেন, গভর্নমেন্টকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। নিমতলীর ঘটনার পর কিছুটা বাস্তবায়ন হলে এই ঘটনা ঘটত না। এরপর আদালত এ সংক্রান্ত সব রিট একসঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার  দুপুর দু’টায় শুনানি করবেন বলে জানান। গত রোববার সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বিষয়ে পৃথক পৃথক রিট আবেদন দায়ের করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ, অ্যাডভোকেট অমিত দাস গুপ্ত, ব্যারিস্টার নূর মোহাম্মদ আজমী এবং খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার ও সাগুফতা তাবাচ্ছুম। আবেদনে হতাহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের  গোডাউন এবং কারখানা অপসারণ ও বিক্রির উদ্দেশ্যে মজুত করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিমতলী ট্র্যাজেডির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়। উল্লেখ্য, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মারা যান ৬৭ জন।
'চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দায় রাষ্ট্রের কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। নিমতলীর ঘটনার পর কমিটির সুপারিশ মানায় আন্তরিক হলে চকবাজারের ঘটনা ঘটত না, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না, এটা অবহেলা। একজন দায়িত্বশীল আরেকজনের ওপরে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন, এটা ঠিক না।'
কাশ্মীর নিয়ে ওআইসিতে মুখোমুখি হবে পাক-ভারত!
ভারতের কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা নিয়ে ইসলামিক সম্মেলন সংগঠন ওআইসিতে মুখোমুখি হতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। প্রথমবারের মতো কাশ্মীর সংকট নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ওআইসির উদ্বোধনী আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।  এদিকে পাকিস্তানের অনুরোধে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ইসলামিক সম্মেলন সংগঠন (ওআইসি) জরুরি সভা ডেকেছে। জম্মু-কাশ্মীরের ঘটনায় ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের অনুরোধে এ আহ্বান জানানো হয়। খবর: কাশ্মীরি গ্রেটার মঙ্গলবার ১১টার দিকে পাঠানো একিট নোটিশে 'জরুরি' চিহ্নিত করে জেদ্দায় ওআইসি সচিবালয়ে পাঠানো হয়। ডন নিউজ এ তথ্য জানায়।   পাকিস্তান ইসলামিক রিপাবলিকের অনুরোধে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ওআইসি সাধারণ সচিবালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।    ডন নিউজ টিভি বলে, ভারতের দক্ষিণ কাশ্মীরে পুলওয়ামায় দেশটির ৪৯ জন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য নিহত হওয়া নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সভায় আলোচনা হবে।    এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবুধাবিতে ওআইসি কাউন্সিলের ১-২ মার্চে ৪৬ তম অধিবেশনের সিডিউল নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমবারের মতো ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ওআইসির উদ্ধোধনী আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়া আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।  সবকিছু ছিকঠাক থাকলে ১ মার্চ আবুধাবিতে মুখোমুখি হতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও।   ওআইসির ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, মুসলিম বিশ্বের কণ্ঠস্বর হিসেবে এটিকে বর্ণনা করা হয়েছে। এর বিবৃতি অনুযায়ী, এটা মুসলিম বিশ্বকে রক্ষা ও নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। পাশাপাশি এটি বিশ্বের শান্তি রক্ষা ও বিভিন্ন জাতির মধ্যে সম্প্রতি বজায় রাখে।
ভারতের কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার ঘটনা নিয়ে ইসলামিক সম্মেলন সংগঠন ওআইসিতে মুখোমুখি হতে পারে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। প্রথমবারের মতো কাশ্মীর সংকট নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ওআইসির উদ্বোধনী আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
পুলওয়ামা হামলার সিসিটিভি ফুটেজ এখন এনআইএর হাতে
পুলওয়ামায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ওপর হামলার সিসিটিভি ফুটেজ এখন এনআইএর হাতে। ফুটেজে লাল রঙের একটি ইকো গাড়ির ছবি পাওয়া গেছে। ওই গাড়িতেই বিস্ফোরক বোঝাই করে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। জিনিউজের খবরে বলা হয়, ভিডিও ফুটেজের ওপরে ভিত্তি করে লাল ওই গাড়িটির মালিককে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবক গাড়িটিকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সম্ভবত সে-ই আত্মঘাতী জঙ্গী আদিল দার। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি হামলার পর থেকেই ওই গাড়ির মালিকের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা। গোয়েন্দাদের ধারণা, ২০১০-১১ সাল মডেলের ওই গাড়িটিকে নতুনভাবে রঙ করা হয়েছিল। বিস্ফোরণস্থল থেকে গাড়িটির যে সকার পাওয়া গিয়েছে সেটি থেকে গাড়িটি সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য মিলতে পারে। পুলওয়ামা হামলার পরই অনুমান করা হয়েছিল একটি এসইউভি গাড়িতে বিস্ফোরক নিয়ে হামলা করা হয়েছে কনভয়ে। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান,  একটি লাল ইকো গাড়ির সাহায্যে হামলা করা হয়েছে। তার বক্তব্য অনুযায়ী একটি লাল ইকো গাড়ি বারবার কনভয়ের সামনে ডানদিক-বাঁ দিক করতে থাকে। অবশেষে সে কনভয়ের একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে। প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় সন্ত্রাসী হামলায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হয়। জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এই ঘটনার দায় স্বীকার করার পরই ভারত জঙ্গি হামলার ইস্যুতে পাকিস্তানের ওপর দায় চাপায়। যদিও এই হামলার দায় ইমরান খানসহ পাকিস্তান অস্বীকার করেছে। ভারত কোনও আক্রমণ চালালে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান।
পুলওয়ামায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ওপর হামলার সিসিটিভি ফুটেজ এখন এনআইএর হাতে। ফুটেজে লাল রঙের একটি ইকো গাড়ির ছবি পাওয়া গেছে। ওই গাড়িতেই বিস্ফোরক বোঝাই করে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুদ্ধের কারণে ২০১৮ সালেই আফগানিস্তানে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু
আফগানিস্তানে বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১৮ সালে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান আফগান যুদ্ধে ২০১৮ সালেই সবচেয়ে বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।  বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর হার ২০১৭ সালের তুলনায় গত বছর বেড়েছে ১১ শতাংশ । এ সময় দেশটিতে তিন হাজার ৮০৪ জন বেসামরিক নাগরিক যুদ্ধের কারণে নিহত হয়। তারা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর আত্মঘাতী ও সরকার সমর্থিত বহুজাতিক বাহিনী উভয় পক্ষের হামলাতেই এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। রোববার আফগানিস্তানে জাতিসংঘ সহায়তা মিশন (ইউএনএএমএ) এই তথ্য প্রকাশ করেছে। আফগান তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরবর্তী শান্তি আলোচনার আগমুহুর্তে এ তথ্য দিল জাতিসংঘ মিশন। এরই মধ্যে কাতারের রাজধানী দোহা ও আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে কয়েক দফা বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান তালেবান। ইউএনএএমএর প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগান যুদ্ধে ২০১৮ সালে তিন হাজার ৮০৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। আহত হয় সাত হাজার ১৮৯ জন। ২০০৯ সাল থেকে আফগান যুদ্ধের হতাহত সংখ্যার তালিকা করে  ইউএনএএমএ। তাদের মতে, এই যুদ্ধে গত এক দশকে ৩২ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৬০ হাজার আহত হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে বেসামরিক মানুষের হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটা আশঙ্কার বিষয়। এতে জঙ্গিগোষ্ঠী ও সরকার সমর্থিত বহুজাতিক বাহিনী উভয় পক্ষেরই দায় রয়েছে। পরিসংখ্যাণ বলছে, ২০১৮ সালে তালেবানের তুলনায় আই এস ও বহুজাতিক বাহিনীর হামলার বেশি শিকার হয়েছে সাধারণ জনগণ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে তিন হাজার ৮০৪ জন বেসামরিক মানুষের মধ্যে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর হাতে মারা যায় দুই হাজার ২৪৩ জন। এই সময় তারা ৬৫টি আত্মঘাতী হামলা চালায়। এর মধ্যে তালেবানের হামলায় মারা যায় এক হাজার ৩৪৮ জন, আইএসের হামলায় মারা যায় ৬৮১ জন এবং অজ্ঞাত জঙ্গিদের হাতে মারা যায় ১৯৬ জন।
আফগানিস্তানে বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১৮ সালে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান আফগান যুদ্ধে ২০১৮ সালেই সবচেয়ে বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর হার ২০১৭ সালের তুলনায় গত বছর বেড়েছে ১১ শতাংশ ।
কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানে ২ পাকিস্তানি নিহত
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানের সময় পুলিশের গুলিতে দুই পাকিস্তানি নিহত হয়েছে। এ সময় একজন স্থানীয় বাসিন্দাও গুলিতে মারা যান বলে জানায় পুলিশ।   সোমবার পুলিশ জানায় নিহত তিনজনই জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের সদস্য। খবর: হিন্দুস্তান টাইমস। এতে বলা হয় এর আগে রোববার কাশ্মীরের কুলগাম জেলায় তারিগাম এলাকায় স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আমান ঠাকুর নিহত হন। পরে আহত এক সেনা কর্মকর্তা মারা গেছেন। এরপর ভারতীয় নিরাপত্তাকর্মীরা এলাকাটি ঘিরে ফেলে অভিযানে নামেন। তিন থেকে চারজনের একটি দল এ হামলা চালায়। এ ঘটনার পর থেকে সিআরটিএফ, আরআর এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে অপারেশন শুরু করে। এ সময় তিনজন নিহত হওয়ার কথা জানা যায়।   এদিকে রাজ্য পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ওয়ালিন ও নুমান নামের দুইজন পাকিস্তানি সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে। পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী তারা জইশ-ই-মোহাম্মদের শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন।       পুলিশের দাবি, ওই সদস্যরা বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলো। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা ছিল।’ ঘটনাস্থল থেকে রাইফেলসহ গুলি ও অন্যান্য অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। হিন্দুস্তান টাইমস জানায়,  চলতি বছর কাশ্মীরে পুলিশের অভিযানে এমন ৩৭ জঙ্গি নিহত হয়েছে। এছাড়া প্রাণ হারিয়েছে আট সেনা কর্মকর্তা ও তিন পুলিশ। নিহত হয়েছেন চারজন বেসামরিকও। প্রসঙ্গত, ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ৪৯ জন সদস্য নিহত হয়েছে। এ নিয়ে ভারতজুড়ে পাকিস্তানবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে। এ হামলার পর থেকে কাশ্মীরিদের ওপর নির্যাতন বেড়ে চলছে। পুলওয়ামার হামলার পর থেকে মোদি সরকার দেশটির সেনাবাহিনীকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সব ধরনের ক্ষমতা প্রদান করা হয়।   এদিকে এ আত্মঘাতী হামলা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়।  ১৯৪৭ সাল থেকে দেশ ভাগের পর থেকে কাশ্মীরের একাংশ ভারত সরকার ও অন্য অংশ পাকিস্তান সরকার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এ পর্যন্ত সংঘর্ষে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানের সময় পুলিশের গুলিতে দুই পাকিস্তানি নিহত হয়েছে। এ সময় একজন স্থানীয় বাসিন্দাও গুলিতে মারা যান বলে জানায় পুলিশ।
এরদোগানের উদ্যোগে ইউরোপের সর্ববৃহৎ মসজিদ
তাশামালিজা মসজিদের মিনারা আকাশ ছুঁই ছুঁই। মিনারা থেকে ইস্তাম্বুলের মেঘমালা খুব কাছ থেকে দেখা যাবে। মনে হবে সুদীর্ঘ মিনারাটি যেন আকাশকে আলিঙ্গন করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বারান্দা ও জানালা দিয়ে পুরো ইস্তাম্বুল নগরীর দুপাশ দেখে নেয়া যায় এক নজরে । প্রবহমান সুদৃশ্য বসফরাস প্রণালীকে তখন খুব আপন মনে হয়। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে নির্মিত ইউরোপের সর্ববৃহৎ মসজিদটি আগামী মাসে উদ্বোধন করা হবে। গত ছয় বছর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান এ মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আগামী ৭ মার্চ মসজিদটি নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হবে। খবর তুর্কি প্রেসের। তুরস্কের সংবাদ মাধ্যম তুর্কি প্রেস জানায়, ৬৩ হাজার মুসল্লি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মসজিদ কমপ্লেক্সেটিতে ইসলামি ইতিহাস সংরক্ষক নয়নাভিরাম জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি, মনোরম লাইব্রেরি, সুবিশাল কনফারেন্স হল, বিস্তৃত পার্কিং লটসহ নতুন নতুন বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। আয়তনগত দিক বিবেচনায় এশীয় ও ইউরোপ অঞ্চলে এটিকে বলা হচ্ছে  সর্ববৃহৎ মসজিদ।  বিগত প্রায় এক শতাব্দীতে আধুনিক তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর এটিই তুরস্ক নির্মিত সর্ববৃহৎ মসজিদ। তুরস্কের বৃহত্তম মসজিদটি নির্মাণের তত্ত্বাবধান প্রেসিডেন্ট এরদোগান নিজেই করেছিলেন, যা নিয়ে দেশে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। দেশটির সেক্যুলারদের একটি অংশ রাষ্ট্রীয় টাকায় এত বড় মসজিদ নির্মাণ নিয়ে এরদোগানের সমালোচনায় লিপ্ত হন। তাশামালিজার সবুজ পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত হওয়ায় মসজিদটির নাম দেওয়া হয়েছে তাশামালিজা মসজিদ। মসজিদে সর্বমোট ছয়টি মিনারা রয়েছে। বড় মিনারা দুটির উচ্চতা ১০৭.১ মিটার যা মসজিদে নববীর মিনারা হতেও লম্বা। একটি বিশেষ তাৎপর্যের দিকে লক্ষ রেখে ১০৭.১ সংখ্যাটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সংখ্যার মাধ্যমে ১৭০১ সালের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। সেলজুকী সুলতান আলাব আরসালান ১৭০১ সালে মালাযিকারদের যুদ্ধে বাইজান্টাইনকে পরাজিত করেছিলেন। তুরস্কের সর্ববৃহৎ এ মসজিদটি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের অন্যতম সফলতা বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে এর জন্য অনেক সমালোচনাও শুনতে হয়েছে।
তাশামালিজা মসজিদের মিনারা আকাশ ছুঁই ছুঁই। মিনারা থেকে ইস্তাম্বুলের মেঘমালা খুব কাছ থেকে দেখা যাবে। মনে হবে সুদীর্ঘ মিনারাটি যেন আকাশকে আলিঙ্গন করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বারান্দা ও জানালা দিয়ে পুরো ইস্তাম্বুল নগরীর দুপাশ দেখে নেয়া যায় এক নজরে । প্রবহমান সুদৃশ্য বসফরাস প্রণালীকে তখন খুব আপন মনে হয়।