id
stringlengths 3
7
| url
stringlengths 31
795
| title
stringlengths 1
93
| text
stringlengths 13
179k
| en_url
stringlengths 30
381
⌀ | en_title
stringlengths 1
351
⌀ | en_text
stringlengths 0
21.3k
⌀ |
---|---|---|---|---|---|---|
2529 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0 | বাংলাদেশ বেতার | বাংলাদেশ বেতার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বেতার সংস্থা। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি রেডিও বাংলাদেশ নামে পরিচিত ছিল।
ইতিহাস
এই অঞ্চলে বাংলাদেশ ঢাকাতে রেডিও সম্প্রচার শুরু হয় ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৩৯ সালে। প্রথম দিকে কেন্দ্রটি পুরনো ঢাকায় নাজিমুদ্দিন রোডে একটি ভাড়া করা বাড়িতে (বর্তমানে যেটি শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ) যাত্রা শুরু করে। প্রথম নামকরণ করা হয় “ঢাকা ধ্বনি বিস্তার কেন্দ্র”। পরবর্তীতে কেন্দ্রটি শাহবাগে স্থানান্তর করা হয়। রেডিওটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে সম্প্রচার কেন্দ্র রেডিও পাকিস্তান স্বাধীনতার ঘোষণা সম্প্রচার করা হয়।যা চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গররত একটি জাপানী জাহাজ থেকে শোনা গিয়েছিল এবং তা পুনসম্প্রচার করা হয়েছিল। যুদ্ধের সময় এটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে পরিচিত ছিল। ভারী গোলা বর্ষণের কারণে বেতারকেন্দ্রটি কয়েকবার স্থানান্তর করা হয়েছিল।শেষে ২৫শে মে তারিখে কলকাতাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যেখান থেকে যুদ্ধের বাকি সময় পর্যন্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হতো। ডিসেম্বর ৬ তারিখে বেতারকেন্দ্রটিকে বাংলাদেশ বেতার নাম দেওয়া হয়।
সম্প্রচার
ঢাকার শেরে বাংলা নগরে জাতীয় বেতার ভবনে বাংলাদেশ বেতার ঢাকার ক, খ ও গ চ্যানেল এবং এফ.এম-এর অনুষ্ঠান নির্মাণের পাশাপাশি ১২টি আঞ্চলিক কেন্দ্র নিয়ে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান শাখার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া বহির্বিশ্বে কার্যক্রম বাংলার পাশাপাশি সার্কভূক্ত দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের জন্য ৫(পাঁচ)টি বিদেশি ভাষায় অনুষ্ঠান নির্মাণ করে। এছাড়া ঢাকা ও আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে এ.এমের পাশাপাশি এফ.এমের নিজস্ব অনুষ্ঠান প্রচার করে।এফ.এম অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বর্তমানে বিবিসি বাংলা, ডয়চে ভেলে, রেডিও চায়না ও এনএইচকে-এর অনুষ্ঠানও সম্প্রচার করে।
কেন্দ্র
বাংলাদেশ বেতারের সকল কেন্দ্র।
এএম
এফএম
আরো দেখুন
বাংলাদেশের বেতার কেন্দ্রের তালিকা
বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান বিভাগ ওয়েবসাইট
বাংলাদেশ বেতারের ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমের ওয়েবসাইট
বাংলাদেশ বেতারের বিভিন্ন ট্রান্সমিটার
বাংলাদেশের রেডিও স্টেশন
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
ঢাকার গণমাধ্যম
আন্তর্জাতিক সম্প্রচারক
১৯৩৯-এ ভারতে প্রতিষ্ঠিত
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ) | https://en.wikipedia.org/wiki/Bangladesh_Betar | Bangladesh Betar | Bangladesh Betar (Bengali: বাংলাদেশ বেতার; lit. 'Bangladesh Radio'), or BB is the state-owned radio broadcaster of Bangladesh, initially established as the Dhaka station of All India Radio in 1939. It was later made part of Radio Pakistan. After the independence of the country in 1971, Radio Pakistan ceased transmissions there and the Swadhin Bangla Betar Kendra was renamed to Bangladesh Betar, which took full control of all radio stations in the country at the time.
Bangladesh Betar is a sister service to Bangladesh Television, which is also state-owned. It operates several AM and FM stations around Bangladesh. It also broadcasts in six languages, including Bengali, to listeners in the country and overseas. Hosne Ara Talukdar is the Director General of Bangladesh Betar. |
2531 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A6%A8 | বাংলাদেশ টেলিভিশন | বাংলাদেশ টেলিভিশন, সাধারণত বিটিভি নামে পরিচিত, হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সংস্থা। এটি মূলে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশনের পূর্ব পাকিস্তান বিভাগ হিসেবে স্থাপিত হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বাংলা ভাষার টেলিভিশন সংস্থা, এবং এটি বাংলাদেশ বেতারের ভ্রাতৃপ্রতিম, যা, বিটিভির সাথে, সরকার মালিকানাধীন এবং পরিচালিত।
বাংলাদেশ টেলিভিশন টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে উপলব্ধ দেশের একমাত্র টেলিভিশন সংস্থা। এটি প্রাথমিকভাবে টেলিভিশন লাইসেন্স ফি এর মাধ্যমে অর্থায়ন করা হয়। যদিও এটি অনেক পুরষ্কারপ্রাপ্ত অনুষ্ঠানসমূহ প্রযোজনা করেছে, এটি প্রায়শই সরকারের মুখপত্র এবং তাদের মানসম্পন্ন অনুষ্ঠানসমূহের অভাব বলে অভিযোগ করা হয়েছে। উভয় বাংলাদেশ টেলিভিশনের সদর দপ্তর এবং প্রশাসনিক ভবন ঢাকার রামপুরা থানায় অবস্থিত।
১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকের পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিল বাংলাদেশের একমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল, এবং এটি প্রচুর জনপ্রিয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল ছিল। বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের উত্থানের পর, বিশেষত বেশিরভাগ সময় এটিকে সরকারি প্রচারযন্ত্র হিসেবে ব্যবহারের কারণে, বিটিভির জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়।
বাংলাদেশ টেলিভিশন দুটি পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন কেন্দ্র এবং ১৪টি রিলে কেন্দ্র চালায়। ২০০৪ সালে এটি স্যাটেলাইটে বিটিভি ওয়ার্ল্ড এর উদ্বোধন করে। এটি এশিয়া প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন এবং এশিয়াভিশনের সদস্য, এবং ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের সহযোগী সদস্য। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিটিভির সিগনাল এশিয়া এবং ইউরোপ ও আফ্রিকার কিছু অংশে গ্রহণ করা যায়। বাংলাদেশ টেলিভিশন সংসদীয় টেলিভিশন চ্যানেল, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, এরও ভ্রাতৃপ্রতিম। বিটিভি ওয়ার্ল্ডকেও বিটিভি ঢাকার তুলনায় ভিন্ন সময়সূচী সহ একটি স্বাধীন বিনোদন টেলিভিশন চ্যানেলে রূপান্তরিত করা হবে।
ইতিহাস
পাকিস্তান টেলিভিশনের যুগ (১৯৬৪-১৯৭১)
পাকিস্তান আমলে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের উদ্যোগে পাকিস্তানে টেলিভিশন আনা হয়। তিনি ২৭ নভেম্বর ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানের লাহোরে প্রথম টেলিভিশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন। দ্বিতীয় টেলিভিশন সেন্টারটি করা হয় বাংলাদেশে (তখন পূর্ব পাকিস্তান)। ঢাকায় ডি.আই.টি ভবনে (বর্তমান রাজউক ভবন) ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশনের ঢাকা কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত অনুষ্ঠানে প্রথম গান গেয়েছিলেন ফেরদৌসী রহমান, গানটি ছিল আবু হেনা মোস্তফা কামালের লেখা এই যে আকাশ নীল হল আজ / এ শুধু তোমার প্রেমে। টেলিভিশন কেন্দ্রের প্রথম প্রযোজক ছিলেন মুস্তাফা মনোয়ার, জামান আলী খান ও মনিরুল আলম ; পরবর্তীতে আসেন শহীদ কাদরী, আবদুল্লাহ আল মামুন, সৈয়দ আবদুল হাদী, দীন মোহাম্মদ, মোহাম্মদ জাকারিয়া, আতিকুল হক চৌধুরী।
আর অনুষ্ঠান বিভাগের প্রথম ব্যবস্থাপক ছিলেন কলিম শরাফী। সেসময় টেলিভিশনে প্রযুক্তির অভাবের কারণে সব অনুষ্ঠান লাইভ অর্থাৎ সরাসরি সম্প্রচার করা হতো এবং চ্যানেল ছিল একটি, চলতো সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। টিভির সম্প্রচার সীমা ছিল ঢাকা শহরের চারপাশে দশ মাইল, তবে এর বাইরে ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ফরিদপুর থেকেও তা দেখা যেত। ঢাকা টেলিভিশনের স্থাপনা তৈরি, পুরোপুরি চালু করা ও কিছুদিন দেখাশোনা করার দায়িত্বে ছিল জাপানি টেলিভিশন কোম্পানি এনএইচকে।
১৯৭১ সালের ৪ মার্চে পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্র অনানুষ্ঠানিকভাবে "ঢাকা টেলিভিশন" নামে পরিবর্তন হয়, এবং টেলিভিশন শিল্পীরা পাকিস্তান টেলিভিশনের জন্য কাজ করা প্রত্যাখ্যান করেছে, যেহেতু পূর্ব পাকিস্তানিরা স্বায়ত্তশাসনের জন্য সংগ্রাম করেছে। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চে যখন বাংলাদেশ একটি মুক্ত রাষ্ট্র ঘোষিত হয়, টেলিভিশন বাংলাদেশের পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত, আমার সোনার বাংলা, দেখানো শুরু করে, পাকিস্তানের পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তে।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে, পাকিস্তানের পতাকা টেলিভিশনে প্রদর্শন না করলে বাঙালি শ্রমিকদের টেলিভিশন কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হবে। কিন্তু ২৩ মার্চের রাতে ঢাকা টেলিভিশনে বাংলাদেশপন্থী গান প্রচারিত হয়। ফলস্বরূপ, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ডিআইটি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয়, কিন্তু মুক্তিবাহিনী দ্বারা আক্রমণ করা হয়। সেই মুহুর্তে, মানুষ তার টেলিভিশন শিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে যোগ দেয়।
স্বাধীনতা এবং সরকারি একচেটিয়া (১৯৭১-১৯৯৭)
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান টেলিভিশনের ঢাকা কেন্দ্র বাংলাদেশ টেলিভিশন নামে পরিবর্তন হয়, এবং পিটিভির সাথে সম্পর্ক হারিয়েছে। পরের সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত কর্পোরেশন থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর হয়। ১৯৭৪ সালে নেটওয়ার্কটি এটির প্রথম উপকেন্দ্র নাটোরে উদ্বোধন করে। ১৯৭৫ সালে এটির দপ্তর এবং স্টুডিও ঢাকার রামপুরায় নতুনভাবে নির্মিত সদর দপ্তরে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৭ সালে ফজলে লোহানী বিবিসির দ্য ডেভিড ফ্রস্ট শো এর উপর ভিত্তি করে বিটিভির জন্য একটি নতুন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান তৈরি করেন, যদি কিছু মনে না করেন, যা উনার মৃত্যুর ঠিক পরেই শেষ হয়।
১৯৮০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন রঙিন সম্প্রচার শুরু করে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম আনুষ্ঠানিক পূর্ণকাল রঙিন টেলিভিশন সম্প্রচারের চিহ্নিত করেছে। ১৯৮৫ সাল হিসেবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে টেলিভিশন সেট বিটিভির টেরেস্ট্রিয়াল সিগনাল গ্রহণ করতে পারে, সাতক্ষীরা উপকেন্দ্রের মাধ্যমে। এটি ১৯৯২ সালে বিবিসি এবং সিএনএনের সম্প্রচার রিলে করে শুরু করে, যা বাংলাদেশে বিদেশী টেলিভিশনের প্রথম উপস্থিতির চিহ্নিত করেছে। ১৯৯৪ সালে বিটিভি এটির প্রথম প্যাকেজ নাটক, আতিকুল হক চৌধুরী পরিচালিত প্রাচীর পেরিয়ে, প্রচারিত করে। ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বরে নেটওয়ার্কটি এটির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্বোধন করে।
১৯৮০ থেকে ১৯৯০ দশকের পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন অনেক গুলো জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান তৈরি করেছে, যেমন এইসব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি, অয়োময়, ইত্যাদি, কোথাও কেউ নেই, আজ রবিবার, এবং আরও কিছু। এটিতে আলিফ লায়লা এবং দ্য সোর্ড অব টিপু সুলতান এর মতো বিদেশি অনুষ্ঠানও প্রচারিত হতো, এমনকি অনেক জনপ্রিয় কার্টুনও দেখানো হতো যেগুলো নেটওয়ার্কের সাফল্যে সাহায্য করেছে। ১৯৯৭ সালের মেতে বাংলাদেশ টেলিভিশন এটির সেই সালে ঘটিত ঘূর্ণিঝড়ের উপরের কভারেজের জন্যে একটি এশিয়াভিশন অ্যাওয়ার্ড জিতেছে।
বিটিভির পতন এবং বেসরকারি টেলিভিশনের উত্থান (১৯৯৭-২০১৮)
বাংলাদেশ টেলিভিশন বাংলাদেশের একমাত্র টেলিভিশন সম্প্রচারক ছিল ১৯৯৭ সালে স্যাটেলাইট টেলিভিশনে এটিএন বাংলার উদ্বোধন এবং ২০০০ সালে টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে একুশে টেলিভিশনের উদ্বোধনের পর্যন্ত। বছর ধরে প্রতিযোগিতা বাড়ার সাথে সাথে বিটিভি হ্রাস পায় এবং স্থবির হয়ে পড়ে এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলি স্থানীয়দের মধ্যে আরও জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাংলাদেশ কেবল টিভি ভিউয়ারস ফরাম দ্বারা একটি ২০১৭ সালের জরিপে দেখায় যে কেবল টেলিভিশন দর্শকের মধ্যে শুধু ২৫% থেকে ৩০% স্থানীয় টেলিভিশন দেখে, এর মধ্যে বিটিভি সবচেয়ে কম দর্শকসংখ্যা পায়, এবং বেশিরভাগ গ্রামীণ দর্শকরা দেখেছিলেন, যাদের কাছে শুধুমাত্র টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন উপলব্ধি আছে। বিটিভির মহাপরিচালক, হারুন-অর-রশীদ, একবার বলেছিলেন যদি বিটিভি পরিবর্তন না করে এটি 'অপ্রচলিত' হয়ে যাবে।
কিন্তু ২০০৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন চৌদ্দটি উপকেন্দ্র স্থাপিত করেছে, যেগুলো দেশের ৯৩% এলাকায় পৌঁছে যায়। ২০০৪ সালে বিটিভি ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিভিশন আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট সম্প্রচার শুরু করেছে। ২০০৭ উত্তর ভারত মহাসাগরের ঘূর্ণিঝড় মৌসুম দ্বারা ঘটিত বিদ্যুত বিচ্ছিন্নের কারণে ২০০৭ সালের ১৭ নভেম্বরে বিটিভি তিন ঘণ্টার কাছাকাছির জন্য সম্প্রচার বন্ধ রাখে। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারিতে এটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু করে, যা জাতীয় সংসদ ভবনের থেকে সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। সেই দিনে বাংলাদেশ টেলিভিশন ডিজিটাল টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে সম্প্রচার শুরু করে। ২০১৪ সালের জুনে বিটিভির একটি অব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সি বাতিল করা হয়েছে যেহেতু এটি বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটরদের ৩জি সার্ভিস ব্যাহত করেছে। ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ টেলিভিশন দেশের প্রথম টেলিভিশন জাদুঘর উদ্বোধন করেছে।
বিটিভির নবজাগরণ (২০১৮-বর্তমান)
২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন এটির জনপ্রিয়তা এবং প্রাসঙ্গিকতা আবার ফিরে পায়, নেটওয়ার্কটি এটির অনুষ্ঠানসমূহ সংশোধন করার পর, যার ফলে দর্শকসংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করে সরকার। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বললেন দেশের ৮৩ শতাংশ বিটিভি দেখেছে সেই সালে। মাছরাঙ্গা টিভি এবং নাগরিকের সাথে বিটিভি বাংলাদেশে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপ প্রচারিত করার সম্প্রচারক ছিল।
২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এটি ভারতের ডিডি ফ্রি ডিশে সম্প্রচার শুরু করেছে। ২০১৯ সালে বিটিভির ৫৫তম বার্ষিকী উদযাপন করার জন্য বেসরকারি চ্যানেল আই এটির সদর দপ্তরে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত করে, এবং সেটি উভয় নেটওয়ার্কে সম্প্রচার হয়। বিটিভি ভবনে বিটিভি ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারিতে দুটি নতুন ডিজিটাল স্টুডিও উদ্বোধন করেছে, নেটওয়ার্কের রেনেসাঁর অংশে।
কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারীর সময় বিটিভি, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাথে, মাধ্যমিক ছাত্রদের জন্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা শুরু করে। এটি এটির কিছু পুরোনো অনুষ্ঠানের পুনঃপ্রচারও দেখায়। বিটিভি ছাত্রদের জন্য দূরবর্তী শিক্ষাকে আরও কার্যকর করার জন্য একটি শিক্ষামূলক চ্যানেল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে, যা ২০০৮ সালেও পূর্বের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
২০২১ সালের ১৩ মার্চে বাংলাদেশ টেলিভিশন আরও ছয়টি আঞ্চলিক টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপন করার ঘোষণা করে, যা ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ২০২১ সালের মেতে নেটওয়ার্কটি এটির অ্যাপ চালু করে, যেটির মধ্যে চারটি চ্যানেল, বিটিভি ঢাকা, বিটিভি চট্টগ্রাম, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, এবং সংসদ টেলিভিশন, দেখা যাবে। ২০২১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিটিভির খুলনা কেন্দ্রকে উপকেন্দ্রের থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রে রূপান্তর করার ঘোষণা করেন। ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের এইচডি সম্প্রচার শুরু হয়।
কেন্দ্র সমূহ
বাংলাদেশ টেলিভিশনের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রের সংখ্যা মাত্র দুটি, যেগুলো ঢাকায় এবং চট্টগ্রামে। দেশজুড়ে বিটিভির চৌদ্দটি রিলে স্টেশনের মাধ্যমে টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনে দেখা যায়। রিলে স্টেশনগুলো অথবা উপকেন্দ্রগুলো নাটোর, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, উখিয়া এবং রাঙ্গামাটিতে স্থাপিত। ২০২১ সালের মার্চে বিটিভির আরো ছয়টি কেন্দ্র স্থাপিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র
বিটিভি ঢাকা - বাংলাদেশ টেলিভিশনের মূল কেন্দ্র, স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনের নামে। এটি 'বিটিভি' নামে পরিচিত। বিটিভি ঢাকার সম্প্রচার স্যাটেলাইটে বিটিভি ওয়ার্ল্ডৈর মাধ্যমে সারাদেশে রিলে করা হয়।
বিটিভি চট্টগ্রাম - বাংলাদেশ টেলিভিশনের দ্বিতীয় এবং একমাত্র আঞ্চলিক কেন্দ্র, স্থাপিত হয় ১৯৯৬ সালে। স্যাটেলাইটে যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালে এবং ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বরে এটির ২৪ ঘন্টা সম্প্রচার উদ্বোধন করা হয়।
উপকেন্দ্র
জনপ্রিয় প্রোগ্রাম
জনপ্রিয় অনুষ্ঠান
যদি কিছু মনে না করেন (১৯৬৭-৬৮, ১৯৮২-৮৫)
ফজলে লোহানীর উপস্থাপিত ম্যাগাজিন-জাতীয় অনুষ্ঠান। সেসময় করাচি টেলিভিশনে গর তু বুরা না মানে নামে একটি অনুষ্ঠান চলছিল, এই অনুষ্ঠানটি সেটির সাথে খানিকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। কিছুদিন পর লোহানী লন্ডনে চলে যান এবং অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৮২ সালের দিকে দেশে ফিরে তিনি অনুষ্ঠানটি পাক্ষিকভাবে আবার শুরু করেন। এবার অনুষ্ঠানটিতে বিনোদনের অংশে মূল কাজ করেন হানিফ সংকেত, লোহানী থাকেন প্রতিবেদন অংশে। ১৯৮৫ সালে লোহানীর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।
হারজিত (১৯৭৩-৭৪)
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের নির্মিত ও উপস্থাপিত ধাঁধার অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটিতে দেখুনো বিভিন্নরকম ধাঁধার মধ্যে একটি ছিল "কবির লড়াই"। কবিতার মাধ্যমে আলাপ চালানোর এই লড়াইয়ে সেসময় অংশ নিয়েছিলেন রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহ, জাহিদ হায়দার, মুহম্মদ নূরুল হুদা প্রমুখ তরুণ কবিগণ।
সপ্তবর্ণা (১৯৭৫-৭৬)
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদেরই আরেকটি ধাঁধার অনুষ্ঠান। হারজিতের চেয়ে বড় পরিসরে এটি আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই সেসময় নবপরিচিত পপসংগীতকে (এখন ব্যান্ডগান) প্রথম জাতীয় কোনো গণমাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের গাননির্ভর ধাঁধাগুলোয় অংশ নেন পপশিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদ, ফিরোজ সাঁই, ফকির আলমগীর ও পিলু মমতাজ। অনুষ্ঠানটির শেষ পর্বে পপশিল্পী আজম খানও উপস্থিত হন এবং তার নতুন গান আলাল ও দুলাল গেয়ে শোনান। অনুষ্ঠানটির জন্য সায়ীদ ১৯৭৭ সালে শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপকের পুরস্কার লাভ করেন।
আপনার ডাক্তার (১৯৭০ দশক)
খ্যাতিমান ডাক্তার একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি) চিকিৎসাবিষয়ক এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করতেন এবং এর জন্য ১৯৭৮ সালে শ্রেষ্ঠ টিভি উপস্থাপকের পুরস্কার লাভ করেন।
আনন্দমেলা (১৯৭৫-বর্তমান)
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই "ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান" নামক ধারাটি সৃষ্টি করেন। শুরুতে ১৯৭৫ সালে ঈদ উপলক্ষে এই বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান তৈরি করা হয়, প্রথম ৫ বছরে এর ১০টি পর্ব প্রচারিত হয়, যার আটটি সায়ীদ করেছিলেন; পরবর্তীতে অন্য অনেকে এটি উপস্থাপনা করে চলেছেন। বিটিভি এটিকে ঈদের মূল অনুষ্ঠান হিসেবেই প্রচার করে থাকে।
চতুরঙ্গ (১৯৭৮-৭৯)
আনন্দমেলার পর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। নাচ, গান, নাটিকা, ধাঁধা সবকিছু মিলিয়ে নিজস্ব উপস্থাপনায় তিনি অনুষ্ঠানটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই জাদুকর জুয়েল আইচ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
ভরা নদীর বাঁকে (১৯৯০ দশক)
মোস্তফা জামান আব্বাসীর উপস্থাপিত গ্রামবাংলার লোকসংগীত বিষয়ক অনুষ্ঠান।
ইত্যাদি (১৯৮৯-বর্তমান)
হানিফ সংকেতের নির্মিত ও উপস্থাপিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। এটি প্রথমে পাক্ষিক, পরে মাসিক এবং এখন ত্রৈমাসিকভাবে প্রচারিত হয়; তবে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ পর্বের আয়োজন করা হয়।
শুভেচ্ছা (১৯৯৭?)
আবদুন নূর তুষার এই বিনোদনমূলক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটি প্রচার করেন।
মাটি ও মানুষ
শাইখ সিরাজের উপস্থাপিত কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান।
সময়ের কথা
সৈয়দ মুনির খসরুর পরিকল্পনা ও উপস্থাপনা এবং আবদুন নূর তুষারের পরিচালনায় দৈনন্দিন সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা, খানিকটা টকশোর মতো।
সিসিমপুর (২০০৪-বর্তমান)
পুতুল দিয়ে তৈরি শিশুতোষমূলক অনুষ্ঠান।
নতুন কুঁড়ি (১৯৬৬-,১৯৭৬-২০০৬)
মুস্তফা মনোয়ারের এই অনুষ্ঠানটি ছিল মূলত শিশুশিল্পীদের নিয়ে।
বিটিভি জাতীয় বিতর্ক
মাতৃভাষা
জনপ্রিয় নাটক
মুখরা রমণী বশীকরণ (১৯৬০ দশক)
উইলিয়াম শেক্সপিয়রের লেখা নাটক টেমিং অফ দ্য শ্রুর অনুবাদ করেন মুনীর চৌধুরী এবং মুস্তাফা মনোয়ার সেটি নিয়ে নাটক পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন। নাটকটিতে মূল অভিনেতা ও অভিনেত্রী ছিলেন গোলাম মুস্তফা ও আজমীরী জামান (রেশমা)।
সংশপ্তক
কোথাও কেউ নেই
আজ রবিবার
বহুব্রীহি
নক্ষত্রের রাত
সম্প্রচার মাধ্যম সমূহ
এনালগ টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার: সারাদেশের সকল ট্রান্সমিশন কেন্দ্র থেকে
ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার: শুধুমাত্র ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা ট্রান্সমিশন কেন্দ্র থেকে
স্যাটেলাইট সম্প্রচার: দেশব্যাপী ও দেশের বাইরে।
ইন্টারনেট সম্প্রচার: btvlive.gov.bd অফিশিয়াল সম্প্রচার মাধ্যম এ
আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান প্রচার
স্পেলবাইন্ডার
স্পেলবাইন্ডার- ল্যান্ড অফ দ্যা ড্রাগন লর্ড
কেয়ার বেয়ারস
ডালাস
ফেয়ারী টেল থিয়েটার
আলিফ লায়লা
ফ্যামিলি টাইস
নাইট রাইডার
ম্যাকগাইভার
মিয়ামি ভাইস
পারফেক্ট স্ট্রানজারস
রভেন
স্মার্ফস
দ্যা বিল কসবি শো
দ্যা গার্ল ফ্রোম টুমোরো
দ্যা টুইলাইট জোন
দ্যা এক্স-ফাইলস
থান্ডার ক্যাটস
হাতিম
টুইন পিকস
জুয়েল ইন দ্য প্যালেস
রবিনহুড
ইনক্রেডিবল হাল্ক
আরও দেখুন
বাংলাদেশ টেলিভিশন স্টেশন তালিকা
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ওয়েবসাইট
বাংলাদেশের সরকারি টেলিভিশন
বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল
বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল
১৯৬৪-এ প্রতিষ্ঠিত টেলিভিশন চ্যানেল ও স্টেশন
ঢাকার গণমাধ্যম
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম
বাংলাদেশ টেলিভিশন
বাংলাদেশে টেলিভিশন
পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশন
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ) | https://en.wikipedia.org/wiki/Bangladesh_Television | Bangladesh Television | Bangladesh Television (Bengali: বাংলাদেশ টেলিভিশন), commonly known by its acronym BTV (Bengali: বিটিভি), is the state-owned television network of Bangladesh. The network was originally established as the East Pakistan branch of PTV in 1964. It is the oldest Bengali-language television network in the world, and is sister to the radio broadcaster Bangladesh Betar, which, along with BTV, are both owned and operated by the government.
Bangladesh Television is the country's only television network provided on terrestrial television. It is primarily financed through television licence fees. Although it has produced many award-winning programs, it has often been accused of being the mouthpiece of the government and panned for its lack of quality programming. Both the headquarters and the administrative building of Bangladesh Television are located at Rampura in Dhaka.
Prior to the late 1990s, Bangladesh Television was the sole television broadcaster provided in Bangladesh, and was a very successful network in terms of viewership until the launch of several satellite television channels, which led to the network's downfall and stagnation, mostly due to the fact that it was used for spewing government propaganda ever since Bangladesh's independence.
It operates two main television stations, BTV Dhaka and BTV Chittagong, and fourteen relay stations all over Bangladesh, along with a satellite television channel, BTV World. It is a member of the Asia-Pacific Broadcasting Union and Asiavision, and is an associate member of the European Broadcasting Union. Bangladesh Television also plans to launch six more television channels.
BTV can be received via satellite throughout Asia and parts of Europe and Africa. Bangladesh Television is also the sister network of Sangsad Television, a parliamentary television channel. BTV World is also to be converted into an independent entertainment television channel with a different schedule compared to BTV Dhaka. BTV Dhaka broadcasts eighteen hours a day on terrestrial television, and twenty-four hours a day on satellite television. Its satellite feed relays BTV World's transmissions during the off-air hours of its terrestrial feed. BTV Chittagong broadcasts on a full-day basis daily. |
2533 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%80%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE | রাজশাহী জেলা | রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এই জেলাটি রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত। অবস্থানগত কারণে এটি বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা। রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের পুরাতন জেলাগুলোর অন্যতম প্রধান একটি জেলা। আমের রাজ্য হিসেবে ছাড়াও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জেলা হিসেবে দেশব্যাপী বিখ্যাত রাজশাহী। এছাড়াও সব ধরনের শাক-সবজি উদ্বৃত্তের কারণে রাজশাহীকে সবজিভান্ডার বলা হয়। প্রায় সব ধরনের ফল ও ফসল উৎপাদনে রাজশাহী সারাদেশে বিশেষ পরিচিত এবং শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। একইসাথে দেশের সর্বোচ্চ পান উৎপাদন হয় রাজশাহীতে। রাজশাহীকে শিক্ষা নগরী এ রেশমের নগরীও বলা হয়।
অবস্থান ও আয়তন
রাজশাহী জেলার উত্তরে নওগাঁ জেলা, দক্ষিণে কুষ্টিয়া জেলা,পদ্মা নদী ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে নাটোর জেলা, পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। দেশের প্রধানতম নদী পদ্মা এই জেলার সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই জেলার মোট আয়তন ২৪০৭.০১ বর্গকিলোমিটার।
নামকরণ ইতিহাস
এই জেলার নামকরণ নিয়ে প্রচুর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়র মতে রাজশাহী রাণী ভবানীর দেয়া নাম। অবশ্য মিঃ গ্রান্ট লিখেছেন যে, রাণী ভবানীর জমিদারীকেই রাজশাহী বলা হতো এবং এই চাকলার বন্দোবস্তের কালে রাজশাহী নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। পদ্মার উত্তরাঞ্চল বিস্তীর্ন এলাকা নিয়ে পাবনা পেরিয়ে ঢাকা পর্যন্ত এমনকি নদীয়া, যশোর, বর্ধমান, বীরভূম নিয়ে এই এলাকা রাজশাহী চাকলা নামে অভিহিত হয়। অনুমান করা হয় ‘রামপুর’ এবং ‘বোয়ালিয়া’ নামক দু’টি গ্রামের সমন্বয়ে রাজশাহী শহর গ’ড়ে উঠেছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে ‘রামপুর-বোয়ালিয়া’ নামে অভিহিত হলেও পরবর্তীকালে রাজশাহী নামটিই সর্ব সাধারণের নিকট সমধিক পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে আমরা যে রাজশাহী শহরের সঙ্গে পরিচিত, তার আরম্ভ ১৮২৫ সাল থেকে।তার আগে রাজশাহী জেলার সদরদপ্তর ছিল বর্তমান নাটোর শহর এলাকায়।নারদ নদের নাব্য সংকটের কারণে তৎকালীন রামপুর-বোয়ালিয়া পদ্মানদীর তীরবর্তী এলাকায় রাজশাহীর সদর ও প্রসাশনিক এলাকা ব্রিটিশরা স্থাপন করেন।
রাজাশাহী শব্দটি বিশ্লেষণ করলে দুটি ভিন্ন ভাষার একই অর্থবোধক দুটি শব্দের সংযোজন পরিলতি হয়। সংস্কৃত ‘রাজ’ ও ফারসি ‘শাহ’ এর বিশেষণ ‘শাহী’ শব্দযোগে ‘রাজশাহী’ শব্দের উদ্ভব, যার অর্থ একই অর্থাৎ রাজা বা রাজা-রাজকীয় বা বাদশাহ বা বাদশাহী। তবে বাংলা ভাষায় আমরা একই অর্থের অনেক শব্দ দু-বার উচ্চারণ করে থাকি। যেমন শাক-সবজি, চালাক-চতুর, ভুল-ভ্রান্তি, ভুল-ত্র“টি, চাষ-আবাদ, জমি-জিরাত, ধার-দেনা, শিক্ষা-দীক্ষা, দীন-দুঃখী, ঘষা-মাজা, মান-সম্মান, দান-খয়রাত, পাহাড়-পর্বত, পাকা-পোক্ত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি। ঠিক তেমনি করে অদ্ভুত ধরনের এই রাজশাহী শব্দের উদ্ভবও যে এভাবে ঘটে থাকতে পারে তা মোটেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। এই নামকরণ নিয়ে অনেক কল্পকাহিনীও রয়েছে। সাধারণভাবে বলা হয় এই জেলায় বহু রাজা-জমিদারের বসবাস, এজন্য এ জেলার নাম হয়েছে রাজশাহী। কেউ বলেন রাজা গণেশের সময় (১৪১৪-১৪১৮) রাজশাহী নামের উদ্ভব। ১৯৮৪ সালে বৃহত্তর রাজশাহীর ৪ টি মহকুমাকে নিয়ে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং নবাবগঞ্জ- এই চারটি স্বতন্ত্র জেলায় উন্নীত করা হয়। নবাবগঞ্জ জেলা পরবর্তীকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামকরণ করা হয়।
শিক্ষাব্যবস্থা
রাজশাহীতে একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, একটি মেডিকেল কলেজ, একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়,৪ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ টি সাধারণ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, একাধিক ঐতিহ্যবাহী কলেজ (রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রী কলেজ, রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ), কারিগরী মহাবিদ্যালয়, একটি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, একটি ক্যাডেট কলেজ, দুইটি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সহ আরও অসংখ্য সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সংবাদপত্র ও প্রেসক্লাব
রাজশাহী জেলা থেকে সোনালী সংবাদ, সানশাইন, দৈনিক বার্তা, সোনার দেশ, নতুন প্রভাত এবং আমাদের রাজশাহী সহ অনেকগুলি বাংলা দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এছাড়াও অনলাইন নিউজ পোর্টাল যেমন - সত্যের সকাল ডটকম, দ্য ক্যাম্পাস, সাহেব-বাজার টোয়েন্টিফোর ডটকম, সিল্কসিটিনিউজ ডটকম, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন, পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম, উত্তরকাল ইত্যাদি সংবাদপত্র রয়েছে। সরকার পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের রাজশাহীতে ট্রান্সমিশন কেন্দ্র রয়েছে।
একটি স্থানীয় এফএম রেডিও স্টেশন, রেডিও পদ্মা ৯৯.২ মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি এবং রেডিও ফুর্তি ৮৮.০ মেগাহার্টজে সম্প্রচার করে।
রাজশাহী মহানগরীতে ৫ টি প্রেসক্লাব রয়েছে - রাজশাহী প্রেসক্লাব,রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব, রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব, রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাব এবং রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাব।
রাজশাহী জেলার উপজেলা সমূহ
গোদাগাড়ী উপজেলা
তানোর উপজেলা
মোহনপুর উপজেলা
বাগমারা উপজেলা
দুর্গাপুর উপজেলা, রাজশাহী
বাঘা উপজেলা
চারঘাট উপজেলা
পবা উপজেলা
পুঠিয়া উপজেলা
</div>
রাজশাহী জেলার পৌরসভা সমূহ
রাজশাহী জেলায় পৌরসভা রয়েছে ১৪ টি।
বাঘা পৌরসভা
আড়ানী পৌরসভা
চারঘাট পৌরসভা
পুঠিয়া পৌরসভা
কাটাখালী পৌরসভা
নওহাটা পৌরসভা
কাঁকনহাট পৌরসভা
গোদাগাড়ী পৌরসভা
মুন্ডুমালা পৌরসভা
তানোর পৌরসভা
দুর্গাপুর পৌরসভা, রাজশাহী
ভবানীগঞ্জ পৌরসভা
তাহেরপুর পৌরসভা
কেশরহাট পৌরসভা
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
চারু মজুমদার - মাওবাদী রাজনীতিবিদ।
রিজিয়া পারভীন - কণ্ঠশিল্পী।
শর্মিলী আহমেদ - বিশিষ্ট নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।
ওয়াহিদা মল্লিক জলি - প্রখ্যাত মঞ্চ, নাট্য ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান - রাজনীতিবিদ ও জাতীয় নেতা।
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় - ভারতীয় ইতিহাসবেত্তা।
রাণী ভবানী - রাজশাহীর জমিদার।
সেলিনা হোসেন - বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক।
নুসরাত ইমরোজ তিশা - অভিনেত্রী।
শাহরিয়ার আলম - এমপি, রাজনীতিবিদ।
মাহিয়া মাহী - চিত্রনায়িকা।
ওমর ফারুক চৌধুরী - সংসদ সদস্য, রাজশাহী-২।
আবু হেনা - বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা।
এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন - রাজনীতিবিদ।
মিজানুর রহমান মিনু - রাজনীতিবিদ।
হাসান আজিজুল হক - সাহিত্যবিদ।
নাজমুল হোসেন শান্ত - বাংলাদেশী ক্রিকেট।
নাদিম মোস্তফা - রাজনীতিবিদ।
সরদার আমজাদ হোসেন - রাজনীতিবিদ।
সরদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর - রাজনীতিবিদ।
কবির হোসেন - রাজনীতিবিদ।
আমিনুল হক - রাজনীতিবিদ।
ওমর ফারুক চৌধুরী - রাজনীতিবিদ।
এন্ড্রু কিশোর - কণ্ঠশিল্পী।
পান্না ঘোষ - মহিলা ক্রিকেটার।
খোদা বক্স মৃধা - ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার।
মুহিন - গায়ক।
জিনাতুন নেসা তালুকদার - রাজনীতিবিদ।
জাহান পান্না - রাজনীতিবিদ।
আয়েন উদ্দীন - রাজনীতিবিদ।
উল্লেখযোগ্য স্থান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
পদ্মা নদীর বাঁধ
পুঠিয়া রাজবাড়ি
রাজশাহী কেন্দ্রীয় চিড়িয়াখানা
বরেন্দ্র জাদুঘর
শহীদ জিয়া শিশু পার্ক
পদ্মা গার্ডেন
বাঘা মসজিদ
রাজা কংস নারায়ণের মন্দির
তামলি রাজার বাড়ি
গোয়ালকান্দি জমিদার বাড়ি
হাজারদুয়ারি জমিদার বাড়ি
চিত্রশালা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশের জেলা
রাজশাহী জেলা
রাজশাহী বিভাগের জেলা
১৯৭১-এর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জেলা | https://en.wikipedia.org/wiki/Rajshahi_District | Rajshahi District | Rajshahi District (Bengali: রাজশাহী জেলা) is a district in mid-western Bangladesh. It is a part of the Rajshahi Division. The metropolitan city of Rajshahi is in Rajshahi District. |
2534 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%2C%20%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%AF%E0%A6%BC | আর্বানা, ইলিনয় | আর্বানা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের একটি শহর। এটি পূর্ব ইলিনয়ের শ্যাম্পেইন কাউন্টিতে অবস্থিত। এই শহরে ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় এট আর্বানা-শাম্পেইন অবস্থিত। ১ জুলাই, ২০১৯ অনুযায়ী জনসংখ্যা অনুমান করা হয়েছে ৪২,২১৪ জন।
তথ্যসূত্র
ইলিনয়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শহর
ইলিনয়ের শহর | https://en.wikipedia.org/wiki/Urbana,_Illinois | Urbana, Illinois | Urbana ( ur-BAN-ə) is a city in and the county seat of Champaign County, Illinois, United States. As of the 2020 census, Urbana had a population of 38,336. It is a principal city of the Champaign–Urbana metropolitan area, which had 236,000 residents in 2020.
Urbana is notable for sharing the main campus of the University of Illinois with its twin city of Champaign.
|
2537 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF%20%E0%A6%85%E0%A6%AC%20%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%AF%E0%A6%BC%20%E0%A6%85%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9F%20%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%87%E0%A6%A8 | ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন | ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় এট আর্বানা-শ্যাম্পেইন (ইউআইইউসি / UIUC) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের আর্বানা ও শ্যাম্পেইন শহরে অবস্থিত। ১৮৬৭ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
গঠন ও প্রশাসন
ইউআইইউসি কলেজ অব অ্যাগ্রিকালচার, কনজিউমার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস
ইউআইইউসি কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হেলথ সায়েন্সেস
ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় ইন্সটিটিউট অব এভিয়েশন
ইউআইইউসি কলেজ অব বিজনেস
ইউআইইউসি কলেজ অব এডুকেশন
ইউআইইউসি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং
ইউআইইউসি কলেজ অব ফাইন অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড আর্টস
গ্র্যাজুয়েট কলেজ
ইউআইইউসি ইন্সটিটিউট অব ল্যাবর অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস
ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় কলেজ অব ল
ইউআইইউসি কলেজ অব লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস
ইউআইইউসি গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফর্মেশন সায়েন্স
ইউআইইউসি কলেজ অব মিডিয়া
ডিভিশন অব জেনারেল স্টাডিজ
কলেজ অব মেডিসিন অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেন
ইউআইইউসি স্কুল অব সোশ্যাল ওয়ার্ক
ইউআইইউসি কলেজ অব ভেটেরিনারি মেডিসিন
ইউআইইউসি কলেজ অব নার্সিং
র্যাংকিং
কৃতি শিক্ষার্থী
ফজলুর রহমান খান, বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি ও পুরকৌশলী।
জ্যাক কিলবি, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স ১৯৬৯, আইইই মেডেল অব অনার ১৯৮৬, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ১৯৯০, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০০০, চার্লস স্টার্ক ড্র্যাপার প্রাইজ (১৯৮৯), কম্পিউটার পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৩), কিয়োটো প্রাইজ (১৯৯৩), হ্যারল্ড পেন্ডার অ্যাওয়ার্ড (২০০০)
এডয়ার্ড এ. ডয়সি, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৪৩, উইলার্ড গিবস অ্যাওয়ার্ড (১৯৪১)
ভিঞ্চেন্ত দু ভিগ্নেয়াউদ, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৫৫, আলবার্ট ল্যাস্কার অ্যাওয়ার্ড ফর বেসিক মেডিকেল রিসার্চ (১৯৪৮), উইলার্ড গিবস অ্যাওয়ার্ড (১৯৫৬)
এডুইন জি ক্রেবস, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৯২, লুইজা গ্রোস হরউইটস পুরস্কার (১৯৮৯)
পলিকার্প কুশ, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৫৫
জন রবার্ট শ্রিফার, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৭২, কমস্টক প্রাইজ ইন ফিজিক্স ১৯৬৮, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স ১৯৮৩
ফিলিপ এ শার্প, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৯৩, ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস অ্যাওয়ার্ড ইন মলিকুলার বায়োলজি (১৯৮০), লুইজা গ্রোস হরউইটস পুরস্কার (১৯৮৮), ডিকসন প্রাইজ (১৯৯১), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (২০০৪)
ওয়েন্ডেল মেরেডিথ স্ট্যানলি, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৪৬, উইলার্ড গিবস অ্যাওয়ার্ড (১৯৪৭), ফ্রাঙ্কলিন মেডেল (১৯৪৭)
নিক হলোনিয়াক, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ২০০২, আইইই মেডেল অব অনার ২০০৩, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স ১৯৯০, আইইইই এডিসন মেডেল (১৯৮৯)
আলফ্রেড চো, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ২০০৭, আইইই মেডেল অব অনার ১৯৯৪, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৯৩), এলিয়ট ক্রেসন মেডেল (১৯৯৫)
রাসেল ডীন ডুপুইস, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ২০০২, আইইইই এডিসন মেডেল ২০০৭, আইইইই মরিস এন লিয়েবম্যান মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৫), জন বারডীন অ্যাওয়ার্ড (২০০৪)
এম জর্জ ক্র্যাফোর্ড, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ২০০২, আইইই মরিস এন লিয়েবম্যান মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৫
ফ্লয়েড ডান, আইইইই এডিসন মেডেল ১৯৯৬
উইলিয়াম ডব্লিউ সিমন্স, আইইইই সাইমন রামো মেডেল ১৯৮৭
কৃতি শিক্ষক
জন বারডিন, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৫৬, ১৯৭২; আইইইই মেডেল অব অনার ১৯৭১, স্টুয়ার্ট ব্যালেন্টাইন মেডেল (১৯৫২), অলিভার ই বাকলি কনডেন্সড ম্যাটার প্রাইজ (১৯৫৪), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৬৫), লোমোনোসোভ গোল্ড মেডেল (১৯৮৭), হ্যারল্ড পেন্ডার অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৮)
এলিয়াস জেমস কোরি, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৯০, ফ্রাঙ্কলিন মেডেল (১৯৭৮), Wolf Prize in Chemistry (১৯৮৬), জাপান প্রাইজ ১৯৮৯), রসায়নে নোবেল পুরস্কার (১৯৯০), প্রিস্টলি মেডেল (২০০৪)
রুডলফ মার্কাস, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৯২, আর্ভিং ল্যাংমুইর অ্যাওয়ার্ড (১৯৭৮), পিটার ডিবাই অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৮), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৮৯)
অলভিন রোথ, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০১২
লিওনিদ হারউইচ, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০০৭, ন্যাশবনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৯০)
পল সি লতেরবার, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০০৩, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স ১৯৮৭, আইইই মেডেল অব অনার ১৯৮৭, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ১৯৮৮, কিয়োটো প্রাইজ (১৯৯৪), হার্ভে প্রাইজ (১৯৮৬)
চার্লস পেন্স স্লিখটার, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (২০০৭), বাকলি প্রাইজ (১৯৯৬), কমস্টক প্রাইজ ইন ফিজিক্স (1993), আর্ভিং ল্যাংমুইর অ্যাওয়ার্ড (১৯৬৯)
নিক হলোনিয়াক, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ২০০২, আইইই মেডেল অব অনার ২০০৩, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স ১৯৯০, আইইইই এডিসন মেডেল (১৯৮৯)
সিডনি ডেভিড ড্রেল, আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স অ্যাওয়ার্ড (১৯৭২), এনরিকো ফার্মি অ্যাওয়ার্ড (২০০০), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (২০০১)
ফ্রেডরিক সিটজ, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স, ১৯৭৩
রবার্ট ম্যাকএলিস, আইইইই আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল মেডেল ২০০৯
জন সিওফি, আইইইই আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল মেডেল ২০১০, মার্কনি প্রাইজ ২০০৬
উইলিয়াম ডব্লিউ সিমন্স, আইইইই সাইমন রামো মেডেল ১৯৮৭
টমাস হুয়াং, আইইইই জ্যাক এস কিলবি সিগনাল প্রসেসিং মেডেল ২০০১
উইলিয়াম লিটেল এভারিট, আইইইই মেডেল অব অনার ১৯৫৪, আইইইই জেমস এইচ মুলিগান জুনিয়র এডুকেশন মেডেল (১৯৫৭)
রাজ মিত্র, আইইইই জেমস এইচ মুলিগান জুনিয়র এডুকেশন মেডেল ২০১১, আইইইই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক্স অ্যাওয়ার্ড ২০০৬, AP-S Chen-To Tai Distinguished Educator Award - 2004, IEEE/AP-S Distinguished Achievement Award - 2002[6]
তথ্যসূত্র
ইলিনয়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়
ইলিনয়ের বিশ্ববিদ্যালয়
১৮৬৭-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | https://en.wikipedia.org/wiki/University_of_Illinois_Urbana-Champaign | University of Illinois Urbana-Champaign | The University of Illinois Urbana-Champaign (UIUC, U of I, Illinois, or University of Illinois) is a public land-grant research university in the Champaign–Urbana metropolitan area, Illinois, United States. It is the flagship institution of the University of Illinois system and was established in 1867. With over 53,000 students, the University of Illinois is one of the largest public universities by enrollment in the United States.
The university contains 16 schools and colleges and offers more than 150 undergraduate and over 100 graduate programs of study. The university holds 651 buildings on 6,370 acres (2,578 ha) and its annual operating budget in 2016 was over $2 billion. The University of Illinois Urbana-Champaign also operates a Research Park home to innovation centers for over 90 start-up companies and multinational corporations.
The University of Illinois Urbana-Champaign is a member of the Association of American Universities and is classified among "R1: Doctoral Universities – Very high research activity". In fiscal year 2019, research expenditures at Illinois totaled $652 million. The campus library system possesses the fourth-largest university library in the United States by holdings. The university also hosts the National Center for Supercomputing Applications.
Illinois athletic teams compete in Division I of the NCAA and are collectively known as the Fighting Illini. They are members of the Big Ten Conference and have won the second-most conference titles. Illinois Fighting Illini football won the Rose Bowl Game in 1947, 1952, 1964 and a total of five national championships. Illinois athletes have won 29 medals in Olympic events. The alumni, faculty members, or researchers of the university include 30 Nobel laureates, 27 Pulitzer Prize winners, two Fields medalists, and two Turing Award winners. |
2538 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%93%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC | শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় | শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষেপে শাবিপ্রবি) বাংলাদেশের সিলেটে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, এটি দেশের ভৌত বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিষয়ে অগ্রগামী গবেষণা এবং শিক্ষার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত সমন্বিত সম্মান কোর্স চালু করার পাশাপাশি ১৯৯৬-৯৭ সেশন থেকে স্নাতক কোর্সে সেমিস্টার পদ্ধতির (আমেরিকান সেমিস্টার পদ্ধতি) প্রবর্তন করে।
বিভিন্ন অলিম্পিয়াড সহ সাহিত্য ও বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সিলেট অঞ্চলের আয়োজন এই বিশ্ববিদ্যালয় করে থাকে। শাবিপ্রবির আয়োজিত প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় হাইস্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, জাতীয় মহিলা প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ পদার্থবিজ্ঞান অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ জ্যোতির্বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ইত্যাদি। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষার্থীরা মিলে এগুলোর সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার আয়োজন ও পরিচালনা করে থাকে।
ইতিহাস
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল শাস্ত্রে বিশেষ অবদান প্রদানকারী ও বাংলাদেশে নেতৃত্ব স্থানীয় এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ২৫শে আগস্ট ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর ক্যাম্পাসটি সিলেট শহর হতে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে কুমারগাঁওয়ে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭টি অনুষদের অধীনে ২৮ টি ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে ২৯ এপ্রিল ১৯৯৮ এবং ৬ ডিসেম্বর ২০০৭ সালে। এছাড়া সর্বোচ্চ সংখ্যক গবেষণাপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে ওয়েবমেট্রিক্স র্যাঙ্কিং এ এই বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভাল অবস্থান দখল করে আছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সবগুলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরাই আনুপাতিক হারে সবচেয়ে বেশি বিশ্বের অন্যান্য দেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার কাজে নিয়োজিত থাকছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা সংস্কৃতিচর্চা ও নতুন গবেষণায় বেশ উদ্যমী।
একাডেমিক কার্যক্রম
একাডেমিক কার্যক্রম বছরে ২টি সেমিস্টারে ক্রেডিট পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। শতকরা ৭৫ ভাগ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়।
ভর্তি কার্যক্রম
শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীরা অস্নাতক, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি হতে পারে। শিক্ষার্থীরা জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। ভর্তি পরীক্ষায় এক আসনের বিপরীতে প্রায় ৬৪ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ভর্তি পরীক্ষা বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি কমিটির তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে প্রথমবারের মত এসএমএস ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনের এসএমএস-এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে এ পদ্ধতির উদ্বোধন করেন। এই উদ্ভাবনের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয় ২০১০ সালে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিযোগিতায় Ambillion পুরস্কার, E-Content এ জাতীয় পুরস্কার এবং উন্নয়নের জন্য আইসিটি পুরস্কার ২০১০ লাভ করেছে।
অনুষদ এবং বিভাগসমূহ
শাবিপ্রবিতে ৬ টি অনুষদের অধীনে ২৭ টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীন পরিকল্পনা অনুসারে ৬ টি অনুষদের অধীনে আরো একাধিক বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে দুটি ইন্সটিটিউট রয়েছে এবং ইতোমধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের অধিনে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে।
অনুষদ এবং বিভাগসমূহ
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ
এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ
শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ, হবিগঞ্জ
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ, সুনামগঞ্জ
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ
নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ
সিলেট ওমেন'স মেডিকেল কলেজ
পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ
সংশ্লিষ্ট কলেজ
সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত একটি বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কলেজটি ৩ টি বিভাগ নিয়ে গঠিত:
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ (CSE)
পুরকৌশল বিভাগ (CE)
তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ (EEE)
ইন্সটিটিউট
এটি বাংলাদেশের অন্যতম গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান। পদার্থ ও পরিসংখ্যান শাস্ত্রে গবেষণার পাশা-পাশি এতে রয়েছে কয়েকটি প্রসিদ্ধ ইন্সটিটিউটঃ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইন্সটিটিউট
স্থাপত্য গবেষণা কেন্দ্র
কম্পিউটার প্রকৌশল গবেষণা কেন্দ্র
পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
পরিসংখ্যান গবেষণা কেন্দ্র
সহযোগী বিশ্ববিদ্যালয়
সাস্টের সাথে নিম্নোক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের একাডেমিক সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে:
কার্লসরুয়ে প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, জার্মানি
কালাব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইতালি
চিংশু বিশ্ববিদ্যালয়, চীন
ফ্যাচকশিউল, বার্লিন, জার্মানি
তামপেরে ফলিত বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ড
বিলকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক
উপাচার্যবৃন্দ
শিক্ষাঙ্গন
৫টি একাডেমিক ভবন, ২টি প্রশাসনিক ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, একটি মিলনায়তনসহ অনেকগুলো ভবন সমন্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে ২৫ টি বিভাগে প্রায় ৮ হাজার ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে।
আবাসিক হলসমূহ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রদের ৩টি এবং ছাত্রীদের ৩টি মোট ছয়টি ছাত্রাবাস রয়েছে। এছাড়া শিক্ষকদের জন্য রয়েছে ডরমেটরি এবং আবাসিক সুবিধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রাবাস শাহপরান হল। প্রতিটি হলের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন একজন প্রভোস্ট। সাধারণত সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্য হতে প্রভোস্ট নির্বাচন করা হয়। এটি দেশের সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থী এবং স্টাফদের জন্য বিনামূল্যে সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসে ওয়াই ফাই চালু করে।
সাস্টের শিক্ষার্থীদের জন্য ছয়টি আবাসিক হল রয়েছে :
শাহপরান ছাত্র হল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র হল
সৈয়দ মুজতবা আলী ছাত্র হল
জাহানারা ইমাম ছাত্রী হল
বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হল
বেগম ফজিলেতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল
ভাস্কর্য
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত সিলেটের প্রথম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ভাস্কর্য চেতনা '৭১' (ভাস্কর্য)'। ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ সালের ২৬ শে মার্চ চেতনা '৭১ নামে অস্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে স্থায়ী ভাস্কর্য নির্মাণ শুরু হয়।
মেডিকেল সেন্টার
ক্যাফেটেরিয়া
সংগঠন
বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন সংগঠন সহশিক্ষামূলক কাজে সক্রিয়; এখানে বছরের অধিকাংশ দিন বিভিন্ন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা বা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, যেমনঃ চাকরি মেলা, উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনার, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, টুর্নামেন্ট, জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা, নাট্যোৎসব, স্কিলস হান্ট ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক ও জাতীয় কেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস সুপরিচিত।
সাংবাদিক সংগঠন
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব
বিজ্ঞান বিষয়ক সংগঠন
সাস্ট সায়েন্স অ্যারেনা
কোপার্নিকাস এস্ট্রোনমিক্যাল মেমোরিয়াল অব সাস্ট (ক্যাম-সাস্ট)
বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
বিজ্ঞানের জন্য ভালবাসা
বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
রোবো সাস্ট
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন
গ্রিন এক্সপ্লোরার সোসাইটি, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন
নাট্য সংগঠন
অঙ্গীকার সাংস্কৃতিক সংসদ
থিয়েটার সাস্ট
দিক থিয়েটার
আজ মুক্তমঞ্চ
চলচ্চিত্র বিষয়ক সংগঠন
চোখ ফিল্ম সোসাইটি
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
স্টুডেন্ট এইড সাস্ট
স্বপ্নোত্থান
সঞ্চালন
কিন
শাবিপ্রবি বন্ধুসভা (প্রথম আলো)
অন্যান্য সংগঠন
সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, শাবিপ্রবি (সবিস)
সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাব
সাস্ট সাহিত্য সংসদ
শাহজালাল ইউনিভার্সিটি স্পীকার্স ক্লাব
ধূমপান ও মাদকবিরোধী সংগঠন
ধূমপান ও নিরকোটিন বিরোধী সংগঠন
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, সাস্ট
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
উদীচী
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
ক্যারিয়ার ডিজাইন সেন্টার
কার্টুন ফ্যাক্টরী
ধ্রুবতারা
এডুকেশন ওয়াচ
মাভৈ: আবৃত্তি সংসদ (আবৃত্তি বিষয়ক একমাত্র সংগঠন)
নোঙর
নিরাপদ সড়ক চাই
অন্বেশন
প্রমিসিং ইয়থ
রিম
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফি অ্যাসেসিয়েশন (সুপা)
শিকড়
স্পোর্টস সাস্ট
সাস্ট লেখক ক্লাব
ইউসাব
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি
টুরিস্ট ক্লাব
</div>
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ত্ব
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল - অধ্যাপক, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ।
অরুণ কুমার বসাক - প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক, পদার্থবিদ্যা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ইমেরিটাস অধ্যাপক।
চিত্রশালা
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তালিকা
বহিঃসংযোগ
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৮৬-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
১৯৮৬-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত
সিলেট জেলার বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের স্থাপত্য বিশ্ববিদ্যালয়
শাহ জালালের নামাঙ্কিত স্মারক
বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের সরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় | https://en.wikipedia.org/wiki/Shahjalal_University_of_Science_and_Technology | Shahjalal University of Science and Technology | Shahjalal University of Science and Technology, commonly known as SUST, is a public research university located in Kumargaon, Sylhet, Bangladesh. Established in 1986, it is one of the leading universities in pioneering research and education in the physical sciences and engineering in the country.
It is the 8th oldest university of the country and the first university to adopt American credit system. In 2016, SUST ranked as the top research university in Bangladesh (610th in the world) by Scopus-SCImago institution ranking. In 2017, the university had highest research expenditure among all universities in Bangladesh. Following the success of SUST, twelve more STEM universities have been established in the country by the Government of Bangladesh. |
2539 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0%20%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%A0 | বীর শ্রেষ্ঠ | বীর শ্রেষ্ঠ বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পুরস্কার । যুদ্ধক্ষেত্রে অতুলনীয় সাহস ও আত্মত্যাগের নিদর্শন স্থাপনকারী যোদ্ধার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক দেয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে এই পদক দেয়া হয়েছে ।
গুরুত্বের ক্রমানুসারে বীরত্বের জন্য প্রদত্ত বাংলাদেশের অন্যান্য সামরিক পদক হল - বীর উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরই এই পদকগুলো দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের একটি অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠদের তালিকা
বীরশ্রেষ্ঠদের তালিকা নিচের সারণিতে দেয়া হল:-
আরও দেখুন
বীর উত্তম
বীর বিক্রম
বীর প্রতীক
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পদক
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের খেতাব
সাহসিকতায় পুরস্কার
বাংলাদেশের সামরিক পুরস্কার ও সম্মাননা
সাহসিকতা পুরস্কার
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরিণাম | https://en.wikipedia.org/wiki/Bir_Sreshtho | Bir Sreshtho | The Bir Sreshtho (Bengali: বীরশ্রেষ্ঠ; lit. 'The Most Valiant Hero'), is the highest military award of Bangladesh. It was awarded to seven freedom fighters who showed utmost bravery and died in action for their nation. They are considered martyrs.
The other three gallantry awards are named, in decreasing order of importance, Bir Uttom, Bir Bikrom and Bir Protik. All of these awards were introduced immediately after the Liberation War in 1971. |
2540 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0%20%E0%A6%89%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%AE | বীর উত্তম | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যাঁরা অবদান রেখেছিলেন তাদের মধ্যে থেকে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন জনকে তাদের অবদানের ভিত্তিতে বীর শ্রেষ্ঠ, বীর-উত্তম, বীর বিক্রম ও বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করেন। বীর-উত্তম বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্বের পুরস্কার। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৬৮ জনকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। সর্বশেষ বীর-উত্তম পদক পেয়েছেন
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ (২০১০) মরণোত্তর সহ মোট বীর-উত্তম ৬৯ জন। বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের আগস্টে বাঁচানোর চেষ্টার জন্য তাকে ২০১০ সালে মরণোত্তর বীর-উত্তম পদক প্রদান করা হয়। তবে দুজনের খেতাব বাতিল করায় বর্তমানে মোট খেতাবপ্রাপ্ত বীর-উত্তম ৬৭ জন।
মাসিক ভাতা
খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান নীতিমালা ২০১৩ অনুসারে বীর-উত্তমদের ভাতা ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, বীরবিক্রমদের ভাতা ১২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা ও বীরপ্রতীকদের ভাতা ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা করা হয়।
নামের তালিকা
শহিদ বীরদের নামের পাশে তারকা (*) চিহ্ন উল্লেখ করা হলো।
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের খেতাব
বাংলাদেশের সামরিক পুরস্কার ও সম্মাননা | https://en.wikipedia.org/wiki/Bir_Uttom | Bir Uttom | Bir Uttom (Bengali: বীর উত্তম, lit. 'Great Valiant Hero') is the second highest award for individual gallantry in Bangladesh after the Bir Sreshtho and the highest gallantry award for a living individual.
Since the independence of Bangladesh in 1971, 69 people have been awarded the Bir Uttom. |
2545 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE | এটিএন বাংলা | এটিএন বাংলা একটি উপগ্রহ-ভিত্তিক বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল। এটির স্টুডিও ঢাকার কাওরান বাজার-এ ওয়াসা ভবনে। চ্যানেলটি সঞ্চারিত হয় দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, এবং উত্তর আমেরিকার মধ্যে। চ্যানেলের একটি আয়োজন বিস্তৃত খবর, চলচ্চিত্র, নাটক, টক শো সহ সমসাময়িক আরও বিভিন্ন উপলব্ধ। চ্যানেলটির সম্প্রচার শুরু হয় ১৫ জুলাই, ১৯৯৭ সালে। ইউরোপ থেকে সম্প্রচার শুরু করে ২০০১ সালে। চ্যানেলটি ১৬ আগস্ট ২০০১ থেকে সংবাদ সম্প্রচার করা শুরু করে।
২০১৬ সালে, এটিএন বাংলা ইউকে চ্যানেলটি দেশীয় পণ্য নিবেশ সংক্রান্ত বিধি লঙ্ঘনের কারণে ব্রিটিশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক অফকম কর্তৃক তিরস্কৃত হয়। এটিএন বাংলা এই যুক্তি দিয়ে লঙ্ঘন হয়নি বলার চেষ্টা করেছিল যে এটির স্থানীয় সংস্থা নিবেশ থেকে সরাসরি উপকৃত হয় নি (যেহেতু উপস্থাপিত ব্র্যান্ডগুলি ইউরোপে কাজ করে না), কিন্তু অফকম তারপরেও চ্যানেলটিকে সম্প্রচারের কোড লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করে।
ইতিকথা
এটিএন বাংলা চ্যানেলের সভাপতিত্বে আছেন ড.মাহফুজুর রহমান। এটিএন বাংলা প্রচারিত আমরাও পারি আন্তর্জাতিক শিশু দিবস উৎসবে ২০০৪ সালে ব্রডকাস্টিং পুরস্কার ৩২তম আন্তর্জাতিক এমি অ্যাওয়ার্ডস জিতেছিল। তথ্যচিত্র বাংলাদেশ থেকে তের থেকে উনিশ বছর বয়সের নির্মাতাদের পরিচালনায় ছোট চলচ্চিত্র, এখানে অধিশ্রয় করে ট্রেন দুর্যোগ প্রতিরোধকারী একটি সত্য ঘটনা আবুল খায়ের নামে ৯ বছরের এক বালকের গায়ের লাল জামা খুলে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন'কে বড় দুর্ঘটনার কবল থেকে বাঁচায়।
এটিএন বাংলা প্রতিষ্ঠার কথা
ড. মাহফুজুর রহমান তৈরি পোশাক রপ্তানির ব্যবসার সুবাদে আশি ও নব্বইয়ের দশকে কাপড় কিনতে ভারতের মুম্বাই (তৎকালীন বোম্বে) যেতেন। মুম্বাইয়ে তখন জিটিভি, এটিএন মিউজিক এবং চেন্নাইয়ে (তৎকালীন মাদ্রাজ) সান টিভিসহ ভারতে অল্প কয়েকটি টিভি চ্যানেল ছিল।
মুম্বাইয়ের একজন ব্যবসায়ী মাহফুজুর রহমানকে জিটিভি অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেটা দেখার পরই বাংলাদেশে একটি চ্যানেল করার কথা চিন্তা করেন তিনি। তখন রপ্তানির কাজে তিনি ইউরোপও যেতেন। ইতালি ও জার্মানিতে তিনি ওই দেশের নিজস্ব ভাষায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার দেখে বাংলা ভাষায় একটা চ্যানেল করতে আরও অনুপ্রাণিত হন।
এরপর মুম্বাইয়ে জিটিভি কর্তৃপক্ষকে বাংলা ভাষায় একটি অনুষ্ঠান চালানোর প্রস্তাব দেন, কিন্তু তারা রাজী হয়নি। এরপর সেখানকার এটিএন মিউজিক চ্যানেলে গেলেন। সিদ্ধার্থ শ্রীবাস্তব চ্যানেলটির দায়িত্বে ছিলেন। তাকে সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য রাজী করালেন মাহফুজুর রহমান। তারা ভারতের বাইরে হংকংয়ে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচারে রাজী হয়। ওই এক ঘণ্টার জন্য এক লাখ ডলার দিতে হতো। ওই সময়ে বাংলা নাটক ও গানের অনুষ্ঠান সম্প্রচার হতো। এসব অনুষ্ঠান বাংলাদেশে নির্মাণ করে বেটা ক্যাসেটের মাধ্যমে হংকংয়ে পাঠানো হতো। তবে মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় এটিএন মিউজিক চ্যানেলটি এক সময় বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর সিঙ্গাপুরের এক মেলায় থাইল্যান্ডের থাইকম স্যাটেলাইট কোম্পানি মাহফুজুর রহমানকে থাইল্যান্ডের টেলিপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এরপর তাদের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয় এবং বাংলাদেশের এটিএন বাংলা চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু হয়। ভারতের বন্ধ হওয়া এটিএন মিউজিক থেকেই চ্যানেলের নাম ধার করেন মাহফুজুর রহমান। এরপর খবর চালানার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করে এটিএন বাংলা । আওয়ামী লীগ সরকার ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়ার তিন ঘণ্টা আগে আর্থ স্টেশন বসানোর ও খবর সম্প্রচারের অনুমোদন দেয় এটিএন বাংলাকে। এভাবেই জন্ম হয় এটিএন বাংলা চ্যানেলটির।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
অফিসিয়াল সাইট
এটিএন বাংলা ইউকে
বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল
১৯৯৭-এ প্রতিষ্ঠিত টেলিভিশন চ্যানেল ও স্টেশন
১৯৯৭-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত
ঢাকার গণমাধ্যম | https://en.wikipedia.org/wiki/ATN_Bangla | ATN Bangla | ATN Bangla (Bengali: এটিএন বাংলা), 'ATN' being the acronym of the unused Asian Television Network, is a Bangladeshi Bengali-language satellite and cable television channel owned by Multimedia Production Company. It is based in the Kawran Bazar neighborhood of Dhaka. ATN Bangla is the first privately owned television channel and the first to broadcast on satellite in Bangladesh. The channel began broadcasting on 15 July 1997. ATN Bangla is broadcast in over 130 countries worldwide. |
2546 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2%20%E0%A6%86%E0%A6%87 | চ্যানেল আই | চ্যানেল আই বাংলাদেশের একটি উপগ্রহ-ভিত্তিক ও বাংলা ভাষায় সম্প্রচারিত টেলিভিশন চ্যানেল। এটি ইমপ্রেস গ্রুপের অধীনে কার্যরত। ঢাকার তেজগাঁও এলাকাতে টিভি চ্যানেলটির প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ১৯৯৯ সালের ১ অক্টোবর তারিখে সম্প্রচার শুরু করে।
ইতিহাস
ইমপ্রেস গ্রুপ ফরিদুর রেজা সাগরের অধীনে ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে টেক্সটাইল উত্পাদনের বাইরে টেলিভিশনে আসার দিকে কাজ করা শুরু করে। টেলিভিশনে আসার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গ্রুপটি ইমপ্রেস টেলিফিল্ম স্থাপন করে, যা পরে বিটিভির জন্য ছোট ছোট ধারাবাহিক এবং এক খণ্ডের অনুষ্ঠান তৈরি করা শুরু করে।
চ্যানেল আই ১৯৯৯ সালের ১ অক্টোবর চালু হয়। সে সময় চ্যানেলটি দিনে ১২ ঘণ্টা প্রাক-রেকর্ড করা প্রোগ্রাম সম্প্রচার করত। দুই বছর পর চ্যানেলটি প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার করা শুরু করে। এটি বর্তমানে প্যানআম ব্যবহার করে স্যাটেলাইট সম্প্রচার করে যা এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ অংশ কভার করে।
রেডিও ভূমি হল চ্যানলেটির সহযোগী এফএম রেডিও। চ্যানেল আইয়ের এইচডি সংস্করণ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে চালু হয়।
অনুষ্ঠান
চ্যানেল আইয়ে সম্প্রচারিত উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে:
তৃতীয় মাত্রা
হৃদয়ে মাটি ও মানুষ
কাফেলা
বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপ
ধারাবাহিক নাটক
লুকানো ভালোবাসা
নিকিতা
বাংলাবিদ
ঐক্য-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস
বাংলাদেশে সুস্থ সঙ্গীতের বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে ও সংগীতের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ অবদানের সম্মাননা জানাতে ২০০৪ সালে শুরু হয় বার্ষিক পুরষ্কারের অনুষ্ঠান সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ১৫তম আসরে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ঐক্য ফাউন্ডেশন কে সাথে নিয়ে এই অনুষ্ঠান ঐক্য-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস নামে শুরু হয় নতুন করে । সঙ্গীত নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচাইতে বড় আয়োজন এটি। ২০১০ সাল থেকে পুরস্কারের অনুষ্ঠানটি সরাসরি চ্যানেল আই-এ সম্প্রচার করা শুরু করে। ঐক্য-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস এ বছর অনুযায়ী পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকা।
আরও দেখুন
বাংলাদেশ টেলিভিশন স্টেশন তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
চ্যানেল আইয়ের ওয়েবসাইট
বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল
বাংলাদেশের কোম্পানি
ঢাকার গণমাধ্যম
১৯৯৯-এ প্রতিষ্ঠিত টেলিভিশন চ্যানেল ও স্টেশন
১৯৯৯-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত
চ্যানেল আই
যুক্তরাজ্যে সম্প্রচারিত বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেল | https://en.wikipedia.org/wiki/Channel_i | Channel i | Channel i (Bengali: চ্যানেল আই) is a Bangladeshi Bengali-language satellite and cable television channel owned by Impress Group. It was launched on 1 October 1999, as Bangladesh's first digital television channel. It is one of the oldest satellite television channels in Bangladesh. Channel i is broadcast via satellite television using PanAmSat and Bangabandhu-1, covering most of Asia and parts of Australia. It is sister to the radio station, Radio Bhumi. |
2547 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%A8%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BF | এনটিভি | এনটিভি ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল লি. কোম্পানির মালিকানাধীন বাংলাদেশি ও বাংলা ভাষার বেসরকারি একটি স্যাটেলাইটভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল। ‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ এই স্লোগানে ২০০৩ সালের ৩ জুলাই এনটিভির সম্প্রচার শুরু হয়। চ্যানেলটির বর্তমান চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক আলী ফালু। খবর ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ফ্যাশন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এনটিভি সম্প্রচার করে থাকে। বাংলাদেশের প্রথম টিভি চ্যানেল হিসেবে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আইএসও সনদ লাভ করে এনটিভি। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এনটিভি অনলাইনের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৭ সালে এনটিভি অনলাইনকে দেশের সেরা অনলাইন পোর্টাল হিসেবে সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশ অনলাইন মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ একাধিক দেশে এনটিভি সম্প্রচারিত হয়।
চ্যানেলটি মূলত সংবাদ, শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, নাটক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান প্রদর্শন করে থাকে। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এনটিভি বাংলাদেশের প্রথম টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবে আইএসও সনদ লাভ করেছে।
ইতিহাস
২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এনটিভি চালুর ঘোষণা আসে, প্রাথমিকভাবে একই বছরের এপ্রিলে কার্যক্রম শুরু হয়। আগস্ট ২০০৬ সালে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি বাংলাদেশী টিভি চ্যানেল স্কাই চ্যানেল ৮২৬-এর মাধ্যমে ইউকে এবং ইউরোপ জুড়ে এনটিভির অনুষ্ঠানগুলি দেখানোর অধিকার অর্জন করে, তবে এক বছর পর সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
২০০৪ সালে পরীক্ষা ছাড়াই সম্প্রচারের লাইসেন্স পাওয়ার অভিযোগ উঠে। সাধারণত বাণিজ্যিক টিভি চ্যানেল পেতে আন্তঃমন্ত্রনালয়ে যে মিটিং হওয়ার কথা যা হয়নি। ১৯৯৯ সাল থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র না পেলেও, ২০০৪ সালে মোসাদ্দেক আলী ফালু এনটিভির শেয়ার কিনার পরে ১৮ দিনে অনুমতিপত্র পেয়ে যান।
২০০৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টায় এনটিভি ভবনে আগুন লেগে দুইজন মারা যান, বাঁচার জন্য ১১ তলা থেকে লাফ দিয়ে আরো ২ জন মারা যায় এবং শতাধিক আহত হন। আগুনের কারণে চ্যানেলটির সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ভবনটিতে একই মালিকানাধীন আরটিভি ও ইসলামিক টিভি নামক চ্যানেলও অগ্নিকান্ডের শিকার হয়।
২০০৮ সালের আগস্টে এনটিভি স্কাই চ্যানেল ৮৩৩-এর মাধ্যমে ১ বছর পর আবার যুক্তরাজ্যে সম্প্রচার করা শুরু করে।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এনটিভি প্রথম বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল হিসাবে আইএসও প্রশংসা অর্জন করে।
৩১ অক্টোবর, ২০১৪ সালের ১১টা ৪৮ এর দিকে আবারো বিসেক ভবনে আগুন লেগে এনটিভি ও আরটিভির সম্প্রচার বন্ধ হয়। কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনাটি আমার দেশ পত্রিকার অফিস সরানোর সময় ঘটে।
২০১৫ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি এনটিভি ওয়েবে অনলাইন সংস্করণ চালু করে। এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন খন্দকার ফকরউদ্দীন আহমেদ (ফকরউদ্দীন জুয়েল)।
অনুষ্ঠান
এনটিভি সংবাদ, সমসাময়িক ঘটনা, আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রামাণ্যচিত্র, খেলাধুলার খবর, ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুষ্ঠান, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান, নাটক, টেলিফিল্ম, সংগীতানুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
এনটিভি - অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
এনটিভি - ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ
বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল
২০০৩-এ প্রতিষ্ঠিত টেলিভিশন চ্যানেল ও স্টেশন | https://en.wikipedia.org/wiki/NTV_(Bangladeshi_TV_channel) | NTV (Bangladeshi TV channel) | NTV (Bengali: এনটিভি), an acronym of less commonly used National Television, is a Bangladeshi Bengali-language satellite and cable television channel based in the BSEC Building in Karwan Bazar, Dhaka. It was launched on 2 July 2003, and is one of Bangladesh's most popular television channels. NTV is owned by International Television Channel Limited, with Mosaddek Ali Falu, a businessman and former vice president of the Bangladesh Nationalist Party, being the channel's chairman. |
2548 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A7%88%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE%20%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B | দৈনিক প্রথম আলো | দৈনিক প্রথম আলো বাংলাদেশ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি দৈনিক সংবাদপত্র। ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্র।
ইতিহাস
দৈনিক প্রথম আলো ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বরে প্রথম প্রকাশিত হয়।
২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে রেমন ম্যাগসেসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ মতিউর রহমান এ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তিনি এ পত্রিকাটির প্রকাশক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছেন। পত্রিকাটি সামাজিক আন্দোলনের সংকেত হিসাবে প্রথমে যে শ্লোগানটি আপ্ত করে তা হলো যা কিছু ভালো তার সঙ্গে প্রথম আলো। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তা পরিবর্তন করে বদলে যাও, বদলে দাও শ্লোগানটি গ্রহণ করা হয়। ২০১৩ সালে প্রথম আলোর ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন স্লোগান করা হয় পথ হারাবে না বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে স্লোগান হয় ভালোর সাথে আলোর পথে।
২০২১ সালে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে আটক করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টা’ অভিযোগ এনে তাঁকে সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের একজন কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক গোপনীয়তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ২৩ মে ২০২১ সালে আদালতে পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় মুক্তি পান রোজিনা ইসলাম।
পত্রিকার বিবরণ
প্রথম আলো ব্রডশিট আকারে মুদ্রিত হয়। এতে বাদামি নিউজপ্রিন্ট কাগজ ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে কলাম সংখ্যা ৬ (পূর্বে ছিল ৮)। নিয়মিত সংখ্যা ২০ পৃষ্ঠা। সপ্তাহে চার দিন মূল ব্রডশিট পত্রিকার সঙ্গে ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়।
নিয়মিত আয়োজন
প্রথম আলোর নিয়মিত আয়োজনে থাকে- সংবাদ, সম্পাদকীয়, খবর, আন্তর্জাতিক,খেলাধুলা, বিনোদন, পড়াশোনা, মতামত, অর্থ-বাণিজ্য,টেক বার্তা।
ফিচারপাতা হিসাবে আছে- শনিবারে "প্র-ছুটির দিনে", রোববারে "প্র-স্বপ্ন নিয়ে" ও "বন্ধুসভা", সোমবারে "প্র-বাণিজ্য" ও মূল পাতায় "গোল্লাছুট", মঙ্গলবারে "প্র-নকশা", বুধবারে "প্র-অধুনা", বৃহস্পতিবারে "প্র-আনন্দ" এবং শুক্রবারে "প্র-অন্য আলো"। এছাড়া শুধুমাত্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঠকদের জন্য সপ্তাহে তিনদিন প্রকাশ হয় "আমার চট্টগ্রাম"। প্রতিদিনই মূল কাগজে থাকে উত্তরাঞ্চলের পাঠকদের জন্য "রংপুর","বগুড়া" এবং "রাজশাহী" নামে বিভিন্ন আঞ্চলিক আয়োজন। প্রথম আলো'র অনেক পাঠক প্রিয় ফিচার পাতা বন্ধ হয়ে গেছে। যেমন: "রস+আলো", ঢাকার পাঠকদের জন্য "ঢাকায় থাকি" ইত্যাদি।
সামাজিক প্রকল্পসমূহ
সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও প্রথম আলো জড়িত আছে। এর মধ্যে রয়েছে এসিড সন্ত্রাস রোধ, মাদকবিরোধী আন্দোলনসহ নানা আয়োজন। পাশাপাশি কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা। এছাড়াও বিভিন্ন অলিম্পিয়াড আয়োজনেও এই প্রতিষ্ঠান সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তরুনদের সমাজসেবায় উৎসাহ দিতে আছে "বন্ধুসভা" নামের তরুনদের জন্য সংগঠন। এছাড়া জরুরি জাতীয় আপৎকালীন সময়ে প্রথম আলো ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সকল অর্থ আসে পাঠক-পাঠিকাদের আর্থিক অবদান থেকে। এ জন্য স্থাপন করা হয়েছে প্রথম আলো ট্রাস্ট।
গণিত অলিম্পিয়াড
প্রথম আলোর নানা ধরনের সামাজিক কাজের মধ্যে গণিত অলিম্পিয়াড অন্যতম। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পর্যায়ে গণিত অলিম্পিয়াড শেষে সেরা নির্বাচিতরা অংশ নেন আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে (আইএমও)।
ভাষা প্রতিযোগ
ভাষা প্রতিযোগ ২০০৫ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা একটি ভাষা বিষয়ক প্রতিযোগিতা যেখানে চতুর্থ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। প্রথম আলো-এইচএসবিসি ব্যাংকের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এই প্রতিযোগে এক ঘণ্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের সভাপতি আনিসুজ্জামান। এখন পর্যন্ত প্রায় ৯০০ স্কুলের ৬০,০০০+ শিক্ষার্থী এতে অংশ নিয়েছে। সাধারণত প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল মাসে এ প্রতিযোগের আঞ্চলিক পর্যায়ের আয়োজন করা হয়। এরপর মে-জুন মাসে জাতীয় পর্যায়ের আয়োজন হয়।
অন্যান্য উদ্যোগ
প্রথম আলো জবস ডট কম
প্রথম আলো ব্লগ (অধুনালুপ্ত)
সাময়িকী
কিশোর আলো
কিশোর আলো বাংলাদেশের একটি শিশু কিশোর প্রধান ম্যাগাজিন। ২০১২ সালে প্রথম আলো কিশোর নববর্ষ সংখ্যা ১৪১৯ প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হয় প্রথম আলো কিশোর নববর্ষ সংখ্যা ১৪২০। এরপর ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে এটি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।ম্যাগাজিনটি শিশু-কিশোর দের জন্য শিশুতোষ বিভিন্ন বিষয় ছাপিয়ে থাকে। প্রতিমাসের ৫ তারিখে ম্যাগাজিনটি প্রকাশিত হয়।
বিজ্ঞানচিন্তা
বিজ্ঞানচিন্তা দৈনিক প্রথম আলো কর্তৃক প্রকাশিত একটি বিজ্ঞান সাময়িকী। দেশের মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করার উদ্দেশ্যে ১৫ই অক্টোবর ২০১৬ থেকে "বিজ্ঞানচিন্তা" যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে প্রতি মাসের ১৫ তারিখ এটি প্রকাশিত হয়।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
প্রথম আলো ২০২২ সালে ‘গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২২’-এর ন্যাশনাল ব্র্যান্ড বিভাগে ‘বেস্ট ইউজ অব প্রিন্ট’ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান এবং ‘বেস্ট আইডিয়া টু গ্রো অ্যাডভার্টাইজিং সেলস’ ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।
সমালোচনা
কার্টুন বিতর্ক
পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যাওয়া সাপ্তাহিক রম্য ম্যাগাজিন আলপিন ২০০৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংখ্যায় বিড়ালের নামের আগে ইসলামিক নাম মোহাম্মদ ব্যবহার নিয়ে একটি কার্টুন ছাপায়। বাংলাদেশী মুসলিম সংগঠনগুলি আন্দোলন ও রাজনৈতিক চাপ তৈরি করে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আলপিনের ৪৩১তম সংখ্যাটির বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ও কার্টুনিস্টকে গ্রেফতার করে। প্রথম আলোর সম্পাদক জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের তৎকালীন খতিব উবায়দুল হক এর কাছে ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
পরবর্তীতে আলপিনের আদলে রস+আলো নামক আরেকটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয়।
কিআ উৎসবে দুর্ঘটনা
২০১৯ সালের ১ নভেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুরের ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ক্যাম্পাসে কিশোর আলোর ঢাকা অঞ্চলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব চলছিল। ওই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঐ স্কুলেরই নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমুল আবরার নিহত হয়। ঘটনাটি তদন্ত করে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে যেখানে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা উল্লিখিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি আদালত প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ দশজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
মার্চ ২০২৩
২০২৩ সালের ২৬ মার্চ প্রথম আলোর ফেসবুক পেইজে অসঙ্গতিপূর্ণ ছবি সম্বলিত একটি উদ্ধৃতি প্রকাশিত হয়। উক্ত বিষয়টির সমালোচনা করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম আলোকে দেশ, জাতি এবং গণতন্ত্রের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
আরও দেখুন
বাংলাদেশের সংবাদপত্রের তালিকা
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা
ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
প্রথম আলোর মুদ্রণ কপি ওয়েবসাইট
দৃষ্টি প্রতিবন্দীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সংস্করণ শ্রুতি যার তথ্যতীর্থের ইউআরএল
১৯৯৮-এ প্রতিষ্ঠিত
ঢাকার সংবাদপত্র
ঢাকার গণমাধ্যম
সংবাদ সংস্থা
ট্রান্সকম গ্রুপ
বাংলা ভাষার সংবাদপত্র
বাংলাদেশের সংবাদপত্র
বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষার সংবাদপত্র
বাংলাদেশে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদপত্র
১৯৯৮-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত | https://en.wikipedia.org/wiki/Prothom_Alo | Prothom Alo | The Daily Prothom Alo (Bengali: প্রথম আলো) is a Bengali-language daily newspaper in Bangladesh, published from Dhaka. It is the largest circulated newspaper in Bangladesh.
According to the National Media Survey of 2018, conducted by Kantar MRB Bangladesh, Prothom Alo has a daily readership of more than 6.6 million online. According to Alexa Internet, an American web traffic analysis company, the online portal of Prothom Alo is the most visited Bengali website in the world.
|
2554 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC | কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় | কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় (; ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এটি নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ইথাকা শহরে অবস্থিত। এটি আইভি লীগের সদস্য।
গঠন ও প্রশাসন
আর্থিক সহায়তা
র্যাংকিং
বিখ্যাত শিক্ষার্থী
ইসিদোর ইজাক রাবি, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৪৪, নিউকম্ব ক্লিভল্যান্ড প্রাইজ (১৯৩৯), এলিয়ট ক্রেসন মেডেল (১৯৪২), মেডেল ফর মেরিট (১৯৪৮), বার্নার্ড মেডেল (১৯৬০), অ্যাটমস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড (১৯৬৭), ওয়েরস্টেড মেডেল (১৯৮২), পাবলিক ওয়েলফেয়ার মেডেল (১৯৮৫), ভ্যানেভার বুশ অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৬)
জর্জ ওয়েলস বিডেল, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৫৮, আলবার্ট ল্যাস্কার অ্যাওয়ার্ড ফর বেসিক মেডিকেল রিসার্চ (১৯৫০), থমাস হান্ট মর্গান মেডেল (১৯৮৪)
শেল্ডন লি গ্ল্যাশো, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৭৯
স্টিভেন ভেইনবার্গ, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৭৯, এলিয়ট ক্রেসন মেডেল (১৯৭৯), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৯১)
বারবারা ম্যাকলিন্টক, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৮৩, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭০), থমাস হান্ট মর্গান মেডেল (১৯৮১), লুইজা গ্রোস হরউইটস পুরস্কার (১৯৮২)
ডগলাস ডীন অশেররফ, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৯৬, অলিভার ই বাকলি কনডেন্সড ম্যাটার প্রাইজ (১৯৭০)
রবার্ট এঙ্গেল, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০০৩
জ্যাক সজটাক, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০০৯, ল্যাস্কার অ্যাওয়ার্ড (২০০৬), ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস অ্যাওয়ার্ড ইন মলিকুলার বায়োলজি (১৯৯৪)
আরউইন মার্ক জ্যাকবস, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ১৯৯৪, আইইইই মেডেল অব অনার ২০১৩, আইইইই আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল মেডেল (১৯৯৫), মার্কনি প্রাইজ (২০১১), আইইইই/আরএসই ওলফসন জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল অ্যাওয়ার্ড (২০০৭)
রবার্ট স্যামুয়েল ল্যাঙ্গার, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স ২০০৬, ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ২০১১, চার্লস স্টার্ক ড্র্যাপার প্রাইজ (২০০২), জন ফ্রিটজ মেডেল (২০০৩), হার্ভে প্রাইজ (২০০৩), আলবেনি মেডিকেল সেন্টার প্রাইজ (২০০৫), মিলেনিয়াম টেকনোলজি প্রাইজ (২০০৮), পারকিন মেডেল (২০১২), প্রিস্টলি মেডেল (২০১২), ওলফ প্রাইজ ইন কেমিস্ট্রি (২০১৩), কিয়োটো প্রাইজ (২০১৪), বায়োটেকনোলজি হেরিটেজ অ্যাওয়ার্ড (২০১৪), কুইন এলিজাবেথ প্রাইজ ফর ইঞ্জিনিয়ারিং (২০১৫)
উইলিয়াম এসকো মোয়ের্নার, রসায়নে নোবেল পুরস্কার (২০১৪), ওলফ প্রাইজ ইন কেমিস্ট্রি (২০০৮), আর্ভিং ল্যাংমুইর অ্যাওয়ার্ড (২০০৯), পিটার ডিবাই অ্যাওয়ার্ড (২০১৩)
এরিক বেতজিগ, রসায়নে নোবেল পুরস্কার (২০১৪)
চিং তাং, ওলফ প্রাইজ ইন কেমিস্ট্রি (২০১১)
ডেভিড জে. থাউলেস, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০১৬, ম্যাক্সওয়েল মেডেল অ্যান্ড প্রাইজ (১৯৭৩), ওলফ প্রাইজ ইন ফিজিক্স (১৯৯০), ডির্যাক মেডেল (১৯৯৩), লার্স অনসেজার প্রাইজ (২০০০)
রিচার্ড ব্লাহুত, আইইইই ক্লদ ই শ্যানন অ্যাওয়ার্ড ২০০৫, আইইইই আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল মেডেল ১৯৯৮
টমাস ডব্লিউ পার্কস, আইইইই জ্যাক এস কিলবি সিগনাল প্রসেসিং মেডেল ২০০৪
নিল জেমস আলেক্সান্ডার স্লোয়ান, ক্লদ ই শ্যানন অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৮, আইইইই রিচার্ড ডব্লিউ হ্যামিং মেডেল ২০০৫
উইলিয়াম লিটেল এভারিট, আইইইই মেডেল অব অনার ১৯৫৪, আইইইই জেমস এইচ মুলিগান জুনিয়র এডুকেশন মেডেল (১৯৫৭)
বিখ্যাত শিক্ষক
জেমস ব্যাচেলার সামনার, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৪৬
ভিঞ্চেন্ত দু ভিগ্নেয়াউদ, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৫৫, আলবার্ট ল্যাস্কার অ্যাওয়ার্ড ফর বেসিক মেডিকেল রিসার্চ (১৯৪৮), উইলার্ড গিবস অ্যাওয়ার্ড (১৯৫৬)
রিচার্ড ফাইনম্যান, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৬৫, আলবার্ট আইনস্টাইন অ্যাওয়ার্ড (১৯৫৪), আর্নেস্ট অরল্যান্ডো লরেন্স অ্যাওয়ার্ড (১৯৬২), ওয়েরস্টেড মেডেল (১৯৭২), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৯)
হান্স বেটে, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৬৭,হেনরি ড্র্যাপার মেডেল (১৯৪৭), ফ্রাঙ্কলিন মেডেল (১৯৫৯), এডিংটন মেডেল (১৯৬১), এনরিকো ফার্মি অ্যাওয়ার্ড (১৯৬১), রামফোর্ড প্রাইজ (১৯৬৩), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৫), লোমোনোসোভ গোল্ড মেডেল (১৯৮৯), ওয়েরস্টেড মেডেল (১৯৯৩), ব্রুস মেডেল (২০০১), বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন মেডেল (২০০৫)
হ্যাল্ডান কে হার্টলাইন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৬৭
পল জন ফ্লোরি, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৭৪, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৪),প্রিস্টলি মেডেল (১৯৭৪), পারকিন মেডেল (১৯৭৭), এলিয়ট ক্রেসন মডেল (১৯৭১), পিটার ডিবাই অ্যাওয়ার্ড (১৯৬৯)
কেনেথ জি উইলসন, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৮২, ওলফ প্রাইজ ইন ফিজিক্স (১৯৮০), ডির্যাক মেডেল (১৯৮৯)
রোয়াল্ড হোফমান, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৮১, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৮৩), ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস অ্যাওয়ার্ড ইন কেমিক্যাল সায়েন্সেস (১৯৮৬), প্রিস্টলি মেডেল (১৯৯০), লোমোনোসোভ গোল্ড মেডেল (২০১১)
হেনরি টাউব, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৮৩, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৬), ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস অ্যাওয়ার্ড ইন কেমিক্যাল সায়েন্সেস (১৯৮৩), প্রিস্টলি মেডেল (১৯৮৫)
ডেভিড মরিস লী, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৯৬, অলিভার বাকলি প্রাইজ (১৯৮১)
স্যার ফ্রান্সিস সাইমন মেমোরিয়াল প্রাইজ (১৯৭৬)
অলিভার ই বাকলি কনডেন্সড ম্যাটার প্রাইজ (১৯৭০)
রবার্ট কোলম্যান রিচার্ডসন, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৯৬, অলিভার ই বাকলি কনডেন্সড ম্যাটার প্রাইজ (১৯৭০)
অমর্ত্য সেন, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ১৯৯৮, ভারত রত্ন (১৯৯৯)
টমাস ডব্লিউ পার্কস, আইইইই জ্যাক এস কিলবি সিগনাল প্রসেসিং মেডেল ২০০৪
টবি বার্গার, ক্লদ ই শ্যানন অ্যাওয়ার্ড ২০০২,আইইইই রিচার্ড ডব্লিউ হ্যামিং মেডেল ২০১১
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Cornell University—Official website
Cornell Big Red—Official athletics site
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়
নিউ ইয়র্ক (অঙ্গরাজ্যের) বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ
১৮৬৫-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | https://en.wikipedia.org/wiki/Cornell_University | Cornell University | Cornell University is a private Ivy League land-grant research university based in Ithaca, New York. The university was founded in 1865 by Ezra Cornell and Andrew Dickson White. Since its founding, Cornell has been a co-educational and nonsectarian institution. As of fall 2023, the student body included over 16,000 undergraduate and 10,000 graduate students from all 50 U.S. states and 130 countries.
The university is organized into eight undergraduate colleges and seven graduate divisions on its main Ithaca campus. Each college and academic division has near autonomy in defining its respective admission standards and academic curriculum. In addition to its primary campus in Ithaca, the university administers three satellite campuses, including two in New York City and one in the Education City region of Qatar.
Cornell is one of the few private land-grant universities in the United States. Among the university's eight undergraduate colleges, four are state-supported statutory or contract colleges through the State University of New York system, including the College of Agriculture and Life Sciences, the College of Human Ecology, the Industrial Labor Relations School, and the Jeb E. Brooks School of Public Policy. Among Cornell's graduate schools, only the Veterinary Medicine College is supported by New York state. The main campus of Cornell University in Ithaca spans 745 acres (301 ha).
As of October 2023, 62 Nobel laureates, 4 Turing Award winners, and 1 Fields Medalist have been affiliated with Cornell. Cornell counts more than 250,000 living alumni, which include 34 Marshall Scholars, 33 Rhodes Scholars, 29 Truman Scholars, 63 Olympic Medalists, 10 current Fortune 500 CEOs, and 35 billionaires. |
2555 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A6%BF%20%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC | কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয় | কার্নেগী মেলন ইউনিভার্সিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এটি পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের পিট্সবার্গ শহরে অবস্থিত।
ইতিহাস
র্যাংকিং এবং খ্যাতি
ক্যাম্পাস
গবেষণা
কৃতি শিক্ষার্থী
ক্লিফোর্ড গ্লেনউড শাল, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৯৪, অলিভার ই বাকলি কনডেন্সড ম্যাটার প্রাইজ (১৯৫৬)
জন ফর্ব্স ন্যাশ, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার, ১৯৯৪, জন ভন নিউম্যান থিওরি প্রাইজ (১৯৭৮), আবেল প্রাইজ (২০১৫)
এডওয়ার্ড প্রেস্কট, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০০৪
জন লুইস হল, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০০৫
অলিভার উইলিয়ামসন, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০০৯, জন ভন নিউম্যান অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৯)
ডেল টমাস মর্টেনসেন, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০১০
অ্যালেন নেওয়েল, টুরিং পুরস্কার ১৯৭৫, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৯২)
জেমস ডোনাল্ড মিন্ডল, আইইই মেডেল অব অনার ২০০৬, জে জে এবার্স অ্যাওয়ার্ড (১৯৮০), আইইইই সলিড-স্টেট সার্কিটস অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৯)
কৃতি শিক্ষক
ক্লিনটন জোসেফ ডেভিসন, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯৩৭, কমস্টক প্রাইজ ইন ফিজিক্স (১৯২৮), এলিয়ট ক্রেসন মেডেল (১৯৩১), হিউস মেডেল (১৯৩৫)
অটো ষ্টের্ন, পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার, ১৯৪৩
হার্বার্ট সাইমন, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ১৯৭৮, টুরিং পুরস্কার (১৯৭৫), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৮৫), হ্যারল্ড পেন্ডার অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৭), ভন নিউম্যান থিওরি প্রাইজ (১৯৮৮)
জন পোপল, রসায়নে নোবেল পুরস্কার, ১৯৯৮আর্ভিং ল্যাংমুইর অ্যাওয়ার্ড (১৯৭০), ডেভি মেডেল (১৯৮৮), কপলি মেডেল (২০০২)
অ্যালান পারলিস, প্রথম টুরিং পুরস্কার, ১৯৬৬, কম্পিউটার পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড (১৯৮৫)
মার্টন মিলার, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ১৯৯০
লারস পিটার হ্যান্সেন, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ২০১৩
পল জন ফ্লোরি, রসায়নে নোবেল পুরস্কার ১৯৭৪, ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৪), প্রিস্টলি মেডেল (১৯৭৪), পার্কিন মেডেল (১৯৭৭), এলিয়ট ক্রেসন মেডেল (১৯৭১), পিটার ডিবাই অ্যাওয়ার্ড (১৯৬৯)
পল সি লতেরবার, চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ২০০৩, কিয়োটো প্রাইজ (১৯৯৪), আইইইই মেডেল অব অনার (১৯৮৭), ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৮৭), হার্ভে প্রাইজ (১৯৮৬)
অ্যালেন নেওয়েল, টুরিং পুরস্কার ১৯৭৫
ডানা স্টুয়ার্ট স্কট, টুরিং পুরস্কার ১৯৭৬
রবার্ট বব ফ্লয়েড, টুরিং পুরস্কার ১৯৭৮
রাজ রেড্ডি, টুরিং পুরস্কার ১৯৯৪
ম্যানুয়েল ব্লাম, টুরিং পুরস্কার ১৯৯৫
এডমুন্ড এম. ক্লার্ক, টুরিং পুরস্কার ২০০৭
লেসলি ভ্যালিয়ান্ট, টুরিং পুরস্কার ২০১০
তথ্যসূত্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়
পেনসিলভেনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ
কার্নেগী মেলন বিশ্ববিদ্যালয়
১৯০০-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় | https://en.wikipedia.org/wiki/Carnegie_Mellon_University | Carnegie Mellon University | Carnegie Mellon University (CMU) is a private research university in Pittsburgh, Pennsylvania. The institution was established in 1900 by Andrew Carnegie as the Carnegie Technical Schools. In 1912, it became the Carnegie Institute of Technology and began granting four-year degrees. In 1967, it became Carnegie Mellon University through its merger with the Mellon Institute of Industrial Research, founded in 1913 by Andrew Mellon and Richard B. Mellon and formerly a part of the University of Pittsburgh.
The university consists of seven colleges, including the College of Engineering, the School of Computer Science, and the Tepper School of Business. The university has its main campus located 5 miles (8 km) from Downtown Pittsburgh. It also has over a dozen degree-granting locations in six continents, including campuses in Qatar, Silicon Valley, and Kigali, Rwanda (Carnegie Mellon University Africa) and partnerships with universities nationally and globally. Carnegie Mellon enrolls 15,818 students across its multiple campuses from 117 countries and employs more than 1,400 faculty members.
Carnegie Mellon is known for its advances in research and new fields of study, home to many firsts in computer science (including the first machine learning, robotics, and computational biology departments), pioneering the field of management science, and the first drama program in the United States. Carnegie Mellon is a member of the Association of American Universities and is classified among "R1: Doctoral Universities – Very High Research Activity".
Carnegie Mellon competes in NCAA Division III athletics as a founding member of the University Athletic Association. Carnegie Mellon fields eight men's teams and nine women's teams as the Tartans. The university's faculty and alumni include 20 Nobel Prize laureates and 13 Turing Award winners and have received 142 Emmy Awards, 64 Tony Awards, and 13 Academy Awards. |
2557 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C | চট্টগ্রাম কলেজ | চট্টগ্রাম কলেজ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় এবং ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার এলাকার কলেজ রোডে অবস্থিত। কলেজটি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত। এটি ঢাকা কলেজের পর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় কলেজ।
ইতিহাস
১৮৩৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা স্কুল হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম। প্রতিষ্ঠালগ্নের তেত্রিশ বছর পরে ১৮৬৯ সালে একে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। তখন থেকেই এটি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ বা চট্টগ্রাম কলেজ নামে পরিচিত হয়। বর্তমান চট্টগ্রাম এর চকবাজারের কলেজ রোডের পাশের প্যারেড গ্রাউন্ডের এক কোনের একটি পর্তুগিজ আমলের স্থাপনায় এই কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। কলেজে উন্নীত হবার পরে জনাব জে সি বোস এর প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন।
১৯০৯ সাল থেকে এই কলেজে কলা বিভাগের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ চালু করা হয়। ১৯১০ সালে এই কলেজটি তৎকালীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীর ডিগ্রী কলেজের স্বীকৃতি লাভ করে। সেই অনুযায়ী এই কলেজ থেকে গণিত, রসায়ন বিজ্ঞান ও পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ের বিষয় সমূহ সম্পর্কে পাঠদান আরম্ভ হয়। ১৯১৯ সাল থেকে স্নাতক শ্রেণীর বিষয় সমূহে ইংরেজি এবং সম্পূরক শ্রেণীতে দর্শন এবং অর্থনীতি যোগ করা হয়। ১৯২৪ সালে এই কলেজে প্রথম মুসলিম প্রিন্সিপাল হলেন শামসুল ওলামা কামালুদ্দিন আহমদ। তার আমলে কলেজ দ্রুত উন্নতি লাভ করে। শেরে বাংলা এ, কে, ফজলুল হক এই সময় মুসলিম হোস্টেল এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। শামসুল ওলামার সময়ে ই কলেজ ম্যাগাজিন প্রকাশ করার রেওয়াজ শুরু হয়। তার সময়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে সহশিক্ষার প্রবর্তন। ১৯২৬ সালে এই কলেজের প্রথম ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫৫ সালে স্নাতক শ্রেণীর যাবতীয় বিষয় সমূহ প্রত্যাহার করা হলেও ১৯৬০ সাল থেকে পুনরায় ইংরেজি, বাংলা, অর্থনীতি ছিত্তাগন, পদার্থ, রসায়ন এবং গণিতে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর বিষয়সমূহ চালু করা হয়। ১৯৬২ সাল থেকে প্রাণিবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা এবং পরিসংখ্যান এ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণী চালু করা হয়। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৫ এর মাঝে ব্যাপক হারে অবকাঠামোগত পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধন করা হয়। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীনে এর বিজ্ঞান গবেষণাগার এর উন্নয়ন সাধন, নতুন প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণ এবং পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান অনুষদের জন্য আলাদা ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর চট্টগ্রাম কলেজ এর আওতাভুক্ত হয়।
অনুষদ এবং বিভাগসমূহ
বর্তমানে এটি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক সনদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, গণিত, পরিসংখ্যান, ভূগোল, ইতিহাস, রাজনীতি বিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, ইসলাম শিক্ষা, সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান ও সনদ প্রদান করে থাকে।
শিল্প ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ
চট্টগ্রাম কলেজের ইংরেজি বিভাগকে রাজকীয় বিভাগ বলা হয়। বিখ্যাত পণ্ডিত সুবোধ চন্দ্র সেন গুপ্ত ১৯৩৩ সালে এই বিভাগে যোগদান করেছিলেন। এটি ১৯১০ সালে খোলা হয়েছিল।
এই অনুষদে নিম্নলিখিত বিভাগগুলি নিয়ে গঠিত:
বাংলা বিভাগ
ইংরেজি বিভাগ
অর্থনীতি বিভাগ
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
ইতিহাস বিভাগ
ইসলামী ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
দর্শন বিভাগ
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
ইসলামী শিক্ষা বিভাগ
বিজ্ঞান অনুষদ
এই অনুষদে নিম্নলিখিত বিভাগগুলি নিয়ে গঠিত:
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
রসায়ন বিভাগ
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
পরিসংখ্যান বিভাগ
গণিত বিভাগ
মনোবিজ্ঞান বিভাগ
অবকাঠামো
কলেজের অভ্যন্তরেই বিশাল আকৃতির ঐতিহাসিক প্যারেড গ্রাউন্ড অবস্থিত।
বিভাগ সমুহ
চট্টগ্রাম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক এবং বিজ্ঞান বিষয় চালু আছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে ১৭টি বিষয়ে পাঠ দেওয়া হয়।
কলেজ ভবন
১৬ টি প্রাতিষ্ঠানিক এবং ৫ টি আবাসিক ভবন নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের অবস্থান। প্রাতিষ্ঠানিক ভবনগুলো নিম্নরূপ-
প্রশাসনিক ভবন
রেড বিল্ডিং
ভূগোল ভবন
উদ্ভিদবিজ্ঞান ভবন
রসায়ন ও প্রাণিবিজ্ঞান ভবন
পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত ভবন
অডিটরিয়াম ভবন
ছাত্রী মিলনায়তন ভবন
টিএসসি ভবন
কেন্দ্রীয় মসজিদ ভবন
মেডিক্যাল সেন্টার
কলেজ ক্রীড়া ভবন
লাইব্রেরী ভবন
একাডেমিক ভবন ১
একাডেমিক ভবন ২
একাডেমিক ভবন ৩
ছাত্রাবাস
আবাসিক ভবনগুলোর মাঝে তিনটি ছাত্রাবাস এবং দুইটি ছাত্রী নিবাস অবস্থিত। এগুলো নিম্নরূপ :
শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাস (এর দুটি ব্লক অবস্থিত। এ ব্লকটি মুসলিম এবং বি ব্লকটি অমুসলিম ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত)
শের-এ-বাংলা ছাত্রাবাস
ড: আব্দুস সবুর ছাত্রাবাস
হযরত খাদিজাতুল কোবরা (র:) ছাত্রী নিবাস
জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রী নিবাস
বর্তমানে আবাসিক ভবন গুলো বন্ধ অবস্থায় রাখা হয়েছে।
পাঠাগার
ঠিক যেমন চট্টগ্রাম কলেজ চট্টগ্রাম এর অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এবং স্বনামধন্য কলেজ, তেমনি এর গ্রন্থাগারটিও ঐতিহ্য বহন করে।এই গ্রন্থাগারে সংগৃহীত বানিয়ান এর পিলগ্রম প্রগ্রেস এর এক কপি বই থেকেই পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠার সময়েই জানা যায়।বর্তমানে এর সুপ্রশস্ত পাঠগৃহ এবং রেফারেন্স বিভাগ রয়েছে যা টিচার এবং ছাত্রদের নিরিবিলিতে পড়াশোনা করার জন্য খুবই উপযোগী।পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরবর্তী বছরে এর বই এর সংখ্যা ছিল প্রায় বিশ হাজার। ১৯৬৪ সালের ৩০শে জানুয়ারীর এক হিসেব অনুযায়ী এর বই সংখ্যা ছিল ৩০,৫৪৭। কিন্তু এখন এর বই এর সংখ্যা অর্ধ লাখের ও বেশি।
অন্যান্য অবকাঠামোগত
দ্বিতল মসজিদ
ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা মিলনায়তন
জিমনেশিয়াম
ক্যান্টিন (বর্তমানে বন্ধ)
ডাকঘর
ব্যাংক
বিশাল মাঠ (প্যারেড মাঠ)
অন্যান্য
বিএনসিসি, আর্মি এবং নেভি
রোভার স্কাউট
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
তথ্য প্রযুক্তি ক্লাব
চট্টগ্রাম কলেজ ক্রিয়েটিভ ক্লাব
ল্যাঙ্গুয়েজ শিক্ষা
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীগণ
চট্টল গৌরব মহিমচন্দ্র দাস,ভারতবর্ষের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব।
মাস্টারদা সূর্য সেন - ভারতবর্ষের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন ও চট্টগ্রাম সশস্ত্র বিপ্লবের অন্যতম নেতা
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার - ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের চট্টগ্রাম সশস্ত্র আন্দোলনের অন্যতম মহিলা বিপ্লবী
বেণীমাধব বড়ুয়া - একজন ব্রিটিশ ভারতীয় তত্ত্ববিদ, পালি ও বৌদ্ধশাস্ত্রে পণ্ডিত।
বিনোদ বিহারী চৌধুরী- ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সদস্য।
মাহবুব উল আলম চৌধুরী বাংলাদেশী কবি, সাংবাদিক ও ভাষা সৈনিক; একুশের প্রথম কবিতার প্রণেতা।
মুহাম্মদ ইউনূস - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ
সুলতান আহমেদ চৌধুরী - জাতীয় সংসদ দ্বিতীয় ডেপুটি স্পিকার।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী - বাংলাদেশ সরকারের সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী।
সালাহউদ্দিন আহমেদ - বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ।
আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন- বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র।
রেজাউল করিম চৌধুরী- বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র
সলিমুল্লাহ খান - বাংলাদেশী লেখক, সমালোচক এবং অধ্যাপক।
নুরুল ইসলাম- বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী।
মোহাম্মদ হোসেন খান- শিক্ষাবিদ
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ - বাঙালি সাহিত্যিক
ওহীদুল আলম- কবি, লেখক, সাংবাদিক
হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী - রাজনীতিবিদ, লেখক, পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম স্বাস্থ্যমন্ত্রী
আবুল কাসেম খান-পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী
আসিফ ইকবাল - গীতিকার ও সুরকার
জাকির হোসাইন-পূর্ব পাকিস্তানের গবর্ণর
আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন - শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞান লেখক ও বিজ্ঞান কর্মী
মুহম্মদ এনামুল হক - বাঙালি শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক
মাহবুব উল আলম-সাহিত্যিক ও ইতিহাসবিদ
নকীব খান- সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক, শিল্পী
নিশিতা বড়ুয়া- সংগীতশিল্পী
আদিল হোসেন নোবেল- বাংলাদেশী মডেল, অভিনেতা ও চাকুরীজীবি।
হামিদুল হক - বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা।
সংগঠন
রাজনৈতিক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা
অরাজনৈতিক ও তরিকতভিত্তিক
গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ
বিজ্ঞান সংগঠন
বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
সাংস্কৃতিক
নাটক ক্লাব
পাঠক ক্লাব
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
চট্টগ্রাম কলেজ
চট্টগ্রাম মহানগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রাম জেলায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ
১৮৬৯-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রামের সরকারি কলেজ
সাবেক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত কলেজ
বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকেন্দ্র
চট্টগ্রাম কলেজ
১৮৬৯-এ ব্রিটিশ ভারতে প্রতিষ্ঠিত | https://en.wikipedia.org/wiki/Chittagong_College | Chittagong College | Chittagong College is a public educational institution in Chittagong, Bangladesh. It is a higher secondary school and also a degree awarding college of University of Chittagong. It is the second higher secondary school in Bangladesh, established in 1869 after the Dhaka College. |
2560 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C | ঢাকা কলেজ | ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এই কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে অবস্থিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ঢাকা কলেজের অবদান ছিলো সবচেয়ে বেশি। তৎকালীন কার্জন হল, শহীদুল্লাহ হল (ঢাকা হল), জমি এবং নিজস্ব শিক্ষক-ছাত্র ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইতিহাস
১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে নভেম্বর উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দের বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং প্রকৃতপক্ষেই তারা এ অঞ্চলের শাসকে পরিণত হয়। ইংরেজরা এসময় নিজেদের শাসক হিসেবে পরিচয় না দিলেও ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস এ মুখোশ খুলে দিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর হয়ে সরাসরি এ দেশের শাসনভার গ্রহণ করে। এরপর পরবর্তী ৬২ বছর পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসকেরা তাদের রাজত্বের অধিবাসীদের জন্য কোনো শিক্ষানীতি প্রনয়ণ বা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ দীর্ঘ সময়ে এ অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা ঐতিহ্যগতভাবেই চলছিলো। অবশেষে ১৮৩০-এর দশকে সরকার এক শিক্ষানীতি গ্রহণ করে এবং সে নীতিমালায় যে শিক্ষানীতির প্রচলন হয়েছিলো, তা মূলত পাশ্চাত্য বা ইংরেজি শিক্ষা নামে পরিচিতি পায়।
এ আধুনিক ধারার শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলনের জন্য সেসময়ে ঢাকাতে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠলেও শিক্ষা প্রসারের চেয়ে ধর্ম প্রচার সেখানে মুখ্য হয়ে ওঠে। ফলে উল্লেখ করার মতো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেখানে গড়ে ওঠেনি। পরবর্তীকালে, ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০এ এপ্রিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন লর্ড বেন্টিকের নিকট একটি প্রতিবেদন পেশ করেছিলো, যেখানে বলা হয়েছিলো: সরকারের তত্ত্বাবধানে বাংলা প্রেসিডেন্সির প্রধান প্রধান জনবহুল শহরে ইংরেজি সাহিত্য এবং বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য যতগুলো সম্ভব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক। পরবর্তীকালে এ প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ঢাকার কর্মকর্তাদের নিকট এ সংক্রান্ত চিঠি প্রদান করা হলে ঢাকার সেসময়ের সিভিল সার্জন ডা: জেমস টেইলার জানান যে, এখানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা যে কেবল উচিতই নয়, বরং এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকারের সুবিধা (আর্থিক এবং সামাজিক) পাওয়া যাবে। মূলত তখন থেকেই শুরু হওয়া বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৮৩৫ সালের ১৫ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছিলো ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী যা বর্তমানে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল নামে পরিচিত।
এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতে একদিকে যেমন বদলে যেতে থাকে সমাজের সামগ্রিক চিত্র, তেমনি বিদ্যার্থীদের মানসসম্মুখে পাশ্চাত্যের কলাবিদ্যা, বিজ্ঞান এবং দর্শনকে উন্মোচিত করে। শিক্ষা এবং সমাজব্যবস্থার এ ইতিবাচক পরিবর্তনে সেসময়ের গভর্নর জেনারেল লর্ড অকল্যান্ড এবং জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন কতগুলো কেন্দ্রীয় কলেজ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত ব্যয়ের কথা উল্লেখ এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা তার যথাযথ অনুমোদনসাপেক্ষে ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী স্কুলকে একটি কলেজে বা একটি আঞ্চলিক উচ্চতর ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হয়, যার নাম দেয়া হয় ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ বা সংক্ষেপে ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী স্কুলের নাম দেওয়া হয় ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল। বলাবাহুল্য, এ কলেজ প্রতিষ্ঠার পরপরই বদলে যায় সমগ্র ঢাকার চিত্র। ঢাকা হয়ে ওঠে সমগ্র পূর্ববাংলার ইংরেজি শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু।
কেমব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হিন্দু কলেজের শিক্ষক জে. আয়ারল্যান্ডকে ঢাকা কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল নিযুক্ত করা হয়। তার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে ঢাকা কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনার ভিত্তি। সে অর্থে আয়ারল্যান্ডই ঢাকা কলেজের সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক। তিনি কলেজের শিক্ষাদান ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনেন।
শিক্ষাব্যবস্থার ক্রম-বিকাশ
১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ২৪ জানুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরপরই ঢাকা কলেজকে এর অধিভুক্ত করা হয়। সে সময় থেকেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত কোর্সগুলোতে অংশগ্রহণ করে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হলেও এর কাঠামোগত বা অন্য পরিবর্তনসমূহের কথা ভাবা হয়নি গুরুত্বের সঙ্গে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, সেসময়ের সরকার মূলত কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজের সঙ্গে এর একটি বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করে। এমনকি এই কলেজে কোনো নতুন অধ্যাপকও নিয়োগ দেয়া হয়নি। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে গণিতশাস্ত্রের পণ্ডিত অধ্যাপক ব্রেনান্ডকে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়। ব্রেনান্ড নিয়োগ পাবার সঙ্গে সঙ্গে কলেজের উন্নতিকল্পে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করেন। বলাবাহুল্য, ব্রেনান্ডকে পেয়ে ঢাকা কলেজ এক ক্রান্তিলগ্ন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়।
ঢাকা কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা আবারো হোচট খায় ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময়। শহরের ইউরোপীয় কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবার, এমনকি ঢাকা কলেজের ইউরোপীয় শিক্ষকরাও এ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এ বিপ্লবের মূল উদ্দেশ্য ছিলো ইংরেজ শাসন থেকে মুক্তি। এ সশস্ত্র বিপ্লব কোম্পানীর অর্থনৈতিক ভিত্তিকে একেবারে ভেঙ্গে ফেলে এবং ভারত সরকারকে বহুকাল যাবত আর্থিক সংকটে রাখে। ফলে সরকারের তরফ থেকে ঢাকা কলেজের শিক্ষাথাতে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থব্যয়ের ইচ্ছা বা সাধ্য কোনোটাই ছিলো না। এসবের ভেতরেও কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম বছরেই (১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে) ৪ জন ছাত্র প্রথমবারের মতো স্নাতক বা বি.এ. পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে কোলকাতা পাড়ি দেয়। এখানে উল্লেখ্য যে, সেমসয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ই ছিলো একমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্র।
সিপাহী বিদ্রোহের অবসানের পর দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে বা অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল হতে বেশ সময় লাগে। একারণে ঢাকা কলেজের অবস্থা ক্রমাবনতির দিকেই যেতে থাকে। কলেজ ভবনটিও সামরিক বাহিনীর অধীনে চলে যায়। যে বাড়ি দুইটিতে কলেজের কার্যাবলী সাময়িকভাবে পরিচালিত হচ্ছিলো, তাও ছিলো বেশ অনুপযোগী। এতদসত্ত্বেও কলেজের ছাত্রসংখ্যা বেড়ে ১৮৫৯-৬০ খ্রিষ্টাব্দে ৫১জন হয়; এদের মধ্যে ২জন খ্রিস্টান, ১জন মুসলমান এবং ৪৮জন ছিলো হিন্দু।
পূর্ববঙ্গের স্কুল-কলেজ পরিদর্শক তার ১৮৫৯-৬০ সালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, ঢাকা কলেজে যে কোর্স পড়ানো হয়, তা লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এ. পরীক্ষার কোর্সের সমতুল্য এবং কোর্স সমাপনে ছাত্রদেরকে জ্ঞানের পাঁচটি শাখায় পরীক্ষা দিতে হয়। এ পাঁচটি বিষয় ছিলো যথাক্রমে ইংরজিসহ দুটি ভাষা, ইতিহাস এবং ভূগোল, অঙ্ক, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান (পদার্থবিদ্যা) এবং মানসিক নৈতিক বিজ্ঞানে। এসকল বিষয়ে পঠনের মান ছিলো অত্যন্ত উঁচু এবং ছাত্রদেরকে এ উচ্চমানই অর্জন করতে হতো। এগুলোর কোনো একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হলে অন্য সকল বিষয়ে অসাধারণ ভালো ফল করলেও ছাত্ররা কৃতকার্য হতে পারতো না।
পরবর্তীকালে সরকার ঢাকা কলেজের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়। প্রথমত, ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে দেশে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষার নিয়ম-কানুনে কিছু রদবদল করা হলে স্কলারশিপপ্রাপ্ত ছাত্রসংখ্যা বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, দেশে নতুন নতুন জেলা স্কুল এবং ইঙ্গ-বাংলা স্কুল থেকে ঠিক এসময়ই বেশি সংখ্যক ছাত্র এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করে যারা বৃত্তি নিয়ে ঢাকা কলেজে পড়তে আগ্রহী হয়ে ওঠে। ঢাকা কলেজের ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধির একটি সুন্দর পরিসংখ্যান পাওয়া যায় সেসময়ের পূর্ববাংলার ডিপিআই এটকিনসনের লেখা একটি চিঠি থেকে
১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ একটি বড় সম্মান লাভ করে: সেবছর থেকে ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান ক্লাস খোলা হয়, অর্থাৎ বিজ্ঞান বিষয়ক নতুন নতুন বিষয় পড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটা ছিলো একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন কেননা, এর মাধ্যমে পূর্ববাংলার তরুণদের মধ্যে আধুনিক যুগের হাতিয়ার, বিজ্ঞান বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা সম্ভব হয়ে ওঠে। বিজ্ঞান ক্লাশগুলো খোলার পর ঢাকা কলেজে ছাত্র ভর্তির হিড়িক পড়ে যায়। একই সঙ্গে এ কলেজের অবকাঠামোগত পরিবর্তনও হয়। এরপরও নানা ঘাতপ্রতিঘাত থাকলেও, ঢাকা কলেজ শিক্ষাক্ষেত্রে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছিলো, যার সোনালী ফসল ছিলো ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি।
গ্রন্থাগার
কলেজ প্রতিষ্ঠার সময় ১৮৪১ সালে ঢাকা কলেজের পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। লাইব্রেরিতে সজ্জিত পাঠকক্ষ সহ ৫০,০০০ বই রয়েছে। গ্রন্থাগারটি প্রতিদিন দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠ্য সহায়তা সরবরাহ করে। এটি সকাল ৮টায় খোলে এবং বিকেল ৪টায় বন্ধ হয়।
কলেজ ভবন
উনিশ শতকের ঢাকা নগরীর ইতিহাসের এক ক্রান্তিলগ্নে, অনেক আশা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সরকারি উদ্যোগ এবং জনগণের উৎসাহ ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কলেজ ভবনটিরও রয়েছে এক রোমাঞ্চকর ইতিহাস। শুরুতে কলেজটি পূর্বের স্থাপিত ঢাকা গর্ভনমেন্ট স্কুলের সঙ্গে সংযুক্ত করে গড়ে তোলা হলেও অতি শিগগিরই এটির জন্য একটি পৃথক ভবন প্রয়োজন হয়। তবে এবিষয়ে সরকারের খুব একটা সদিচ্ছা ছিলো না। কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য সরকার স্থানীয়ভাবে একটি কমিটি গঠন করে। তবে কলেজ ভবন তৈরি এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াবলীর দায়িত্ব তদারকি করে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন। ভবনটির নকশা তৈরি এবং নির্মাণের দায়িত্ব পায় মিলিটারি বোর্ড। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর কলকাতার তৎকালীন বিশপ রেভারেন্ড ড্যানিয়েল "ঢাকা কলেজ" হিসেবে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো বুড়িগঙ্গার তীরে । সদরঘাটের স্থপতি কর্নেল গ্যাসর্টিন, এর নকশা করেন। খাঁটি ব্রিটিশ ঢঙে, বিলাতি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আদলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রেভারেন্ড ড্যানিয়েল একটি যথাযথ এবং প্রাসঙ্গিক বক্তৃতা প্রদান করেন।
ছাত্রাবাস ও তার ইতিহাস
ঢাকার বাইরে থেকে ঢাকা কলেজে পড়তে আসা ছাত্রদের তথ্য প্রথম পাওয়া যায় ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে। সেবছর কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায় যে, ১৫জন ছাত্র বিভিন্ন জেলা থেকে এসে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে ৭জন ফরিদপুর, ২জন বরিশাল, ২জন যশোহর, ২জন ময়মনসিংহ এবং এমনকি ২জন ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকেও এসেছে। তবে তাসত্ত্বেও ঢাকা কলেজের বহিরাগত ছাত্রদের জন্য কোনো ধরনের ছাত্রাবাস ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। এ দীর্ঘ সময়ে ছাত্ররা তাই নানাবিধ কষ্টের মধ্যেই তাদের জীবন অতিবাহিত করে। যদিও ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকায় একটি ছাত্রাবাস স্থাপিত হয়, কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
তারপর নানা সময়ে ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাস স্থাপনে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কখনো সরকারি বিধি-নিষেধের বলয়, আবার কখনো সামাজিক নানা সমস্যার কারণে ছাত্রাবাস গড়ে ওঠেনি। সবশেষে বাংলা সরকারের অনুমতিসাপেক্ষে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত অনুদানে বাংলাবাজারের শ্রীদাস লেনে রাজচন্দ্র হিন্দু ছাত্র হোস্টেল নামে প্রথম ছাত্রাবাস নির্মিত হয়। সেসময়ের অধ্যক্ষ এ হোস্টেল স্থাপনাকে সে বছরের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেছিলেন। হোস্টেলের ছাত্রসংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে এবং ১৮৮৩-৮৪ খ্রিষ্টাব্দে বোর্ডারের সংখ্যা ৯০জনে এসে দাঁড়ায়। এক অর্থে এ বৃদ্ধি হোস্টেলের সমৃদ্ধি এবং ছাত্রদের সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশে বাস করার আগ্রহ বৃদ্ধির ইঙ্গিত করলেও কর্তৃপক্ষের জন্য হয়ে ওঠে বড় এক বিড়ম্বনা। কেননা এতো অধিক ছাত্রের জন্য ভবনটি যথেষ্ট ছিলো না।
পরবর্তীতে ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মে এক সরকারি সভায় ঢাকা কলেজের জন্য একটি আধুনিক ছাত্রাবাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেসময়ের অন্যতম স্থাপত্যবিদ পি. ডব্লিউ. ডি. কর্তৃক একটি নকশা পেশ করা হয়। বলা বাহুল্য, এ নকশাটিই ছিলো বাংলাদেশে প্রথম আধুনিক ধারার ছাত্রাবাস নির্মাণের নকশা। তিনি ঘরগুলোকে ২০X১৪ ফুট আয়াতাকারভাবে তৈরি করার প্রস্তাব দেন। প্রতিঘরে ৪জন করে থাকতে পারবে বলে মতামত প্রকাশ করেন।
পরবর্তীতে সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং-এ নতুন দুটি ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এতে বহু ছাত্র উপকৃত হয়। হোস্টেলের নামকরণ করা হয় সেক্রেটারিয়েট মুসলিম হোস্টেল । এ ছাত্রাবাসের খাবার কক্ষটি (ডাইনিং রুম) ছিলো বিরাটাকার। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে এখানেই বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনের একাদশ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ঢাকা কলেজের হিন্দু হোস্টেল রূপান্তরিত হয়ে হয় ঢাকা হল, যা বর্তমান শহীদুল্লাহ হল, এবং সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের মুসলিম হোস্টেলটি হয়ে যায় মুসলিম হল, যা বর্তমানে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল।
১৯৫৫ সালে ঢাকা কলেজ বর্তমান জায়গায় চলে আসে। ২৪ একর জমির ওপর ছিল ঢাকা কলেজ। তবে এরশাদ সরকারের সময় ৬ একরর জমি ছেড়ে দিতে হয়।
কার্জন হল রাজধানী ঢাকার লাল রঙের দৃষ্টিনন্দন একটি স্থাপত্য। ভিক্টোরীয় স্থাপত্যরীতি, মোগল স্থাপত্যশৈলী ও বাংলার স্বতন্ত্র সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভবনটি তৈরি। ১৯০৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতবর্ষে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিনিধি ভাইসরয় লর্ড কার্জন ন্যাথনিয়েল কার্জন ঢাকায় এসে কার্জন হলের উদ্বোধন করেন। ১৯০৮ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ইতিহাসবিদ আহমদ হাসান দানীসহ কারও কারও মতে, উনিশ শতকের শেষভাগ থেকেই ঢাকা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মুখরিত হয়ে ওঠে। সভা, আলোচনা, বিতর্ক, সংবর্ধনাসহ নানা অনুষ্ঠানের জন্য একটি টাউন হল নির্মাণের দাবি ওঠে। সে জন্যই এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়াতেও বলা হয়েছে, ভারতের ভাইসরয় লর্ড কার্জনের নামানুসারে এ ভবন টাউন হল হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে এটি ঢাকা কলেজ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ভবনটি বিজ্ঞান বিভাগের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে এবং এখনো এভাবেই চলছে। তবে শরীফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত ঢাকা কোষ-এ বলা হয়েছে, কার্জন হল মূলত ঢাকা কলেজের নতুন ভবন হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। বাংলাপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৮ সালে জিন্নাহ যখন এই কার্জন হলে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দেন, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এখান থেকে প্রথম প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কেউ যদি আজও কার্জন হলের মূল ভবনের সামনে যান, তবে ১৯০৪ সালে লর্ড কার্জনের উদ্বোধন করা নামফলকটি দেখতে পাবেন। পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগের সংখ্যা বাড়ায় কার্জন হলের অবয়বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অন্য ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়।
অনুষদ ও বিভাগসমূহ
বিজ্ঞান অনুষদ
প্রাণীবিদ্যা
রসায়ন
গণিত
পদার্থবিজ্ঞান
মনোবিজ্ঞান
পরিসংখ্যান
উদ্ভিদবিজ্ঞান
ভূগোল ও পরিবেশ
কলা অনুষদ
দর্শন
ইতিহাস
ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি
বাংলা
ইংরেজি
আরবী ও ইসলামিক স্টাডিজ
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ
অর্থনীতি
সমাজবিজ্ঞান
রাষ্ট্রবিজ্ঞান
সমাজকর্ম
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ
হিসাববিজ্ঞান
ব্যবস্থাপনা
আবাসিক হলসমূহ
ঢাকা কলেজ এ বর্তমানে রয়েছে ৮টি হল। ছাত্রাবাস গুলো হলো:
১. উত্তর হল
২. দক্ষিণ হল
৩. পশ্চিম হল
৪. আন্তর্জাতিক হল
৫. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস হল
৬. শহীদ ফরহাদ হোসেন হল
৭. দক্ষিণায়ন হল
৮. শেখ কামাল হল
সংগঠন
রাজনৈতিক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ
বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
সাংস্কৃতিক
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি
ঢাকা কলেজ কালচারাল ক্লাব
অন্যান্য
সাত কলেজ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ পরিবার
ঢাকা কলেজস্থ যাত্রাবাড়ী ছাত্রকল্যাণ সংঘ
ডিসিয়ান পলিটিশিয়ান্স
ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি
ঢাকা কলেজ আবৃত্তি সংসদ
বিএনসিসি
যুব রেড ক্রিসেন্ট, ঢাকা কলেজ ইউনিট
রোভার স্কাউট
বাঁধন
ঢাকা কলেজ মিউজিক স্কুল
ঢাকা কলেজ নাট্যমঞ্চ
ঢাকা কলেজ অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব
ঢাকা কলেজ বিজনেস ক্লাব
ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব
শহীদ রুমি সংসদ
বিজ্ঞান
ঢাকা কলেজ সায়েন্স ক্লাব
বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
ঢাকা কলেজ নেচার স্টাডি ক্লাব
ভূগোলবিদদের বাসা
এনভারজিও সোসাইটি বাংলাদেশ
উল্লেখযোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থী
শিক্ষক
হরিনাথ দে - বহু ভাষাবিদ, অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ
শওকত ওসমান - বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ - অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ
মো. নুরুল হক মিয়া - অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধান, রসায়ন বিভাগ
শহীদুল জহির - বাঙালি গল্পকার ও ঔপন্যাসিক
শিক্ষার্থী
ফজলে হাসান আবেদ- প্রতিষ্ঠাতা ব্র্যাক
শেখ কামাল - বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র
শেখ জামাল - বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র
আবুল কালাম শামসুদ্দীন - সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক
সরদার ফজলুল করিম - দার্শনিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য
জাফরুল্লাহ চৌধুরী - বাংলাদেশী চিকিৎসক ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠিতা
মুহম্মদ নুরুল হুদা - কবি, প্রাবন্ধিক, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি
জামিলুর রেজা চৌধুরী - প্রকৌশলী, অধ্যাপক।
ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী - সাবেক এমপি, এমসিএ, রাষ্ট্রদূত
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর - বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
মতিউর রহমান- সম্পাদক, দৈনিক প্রথম আলো
ড.আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক - সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
তানজির তুহিন - গায়ক, লিড ভোকালিস্ট, আভাস (শিরোনামহীন ব্যান্ডের প্রাক্তন লিড ভোকালিস্ট)
শফিক তুহিন - গায়ক
সজল নুর - অভিনেতা
আফরান নিশো - অভিনেতা
আসলাম তালুকদার মান্না - অভিনেতা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
কামরুল ইসলাম (চিকিৎসক) - স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী চিকিৎসক
হুমায়ূন আহমেদ - বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার
মুহাম্মদ জাফর ইকবাল - বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক
শাফী ইমাম রুমী - বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গেরিলা যোদ্ধা
শরিফ উদ্দিন আহমেদ- ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শহীদুল জহির (১১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩ - ২৩ মার্চ ২০০৮) - বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, গল্পকার এবং সরকারি আমলা
সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন - আইনজীবী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারক
মোঃ আতাবুল্লাহ - বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক
ফেরদৌস আহমেদ - বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা
শামসুর রাহমান - বাংলাদেশি কবি ও সাংবাদিক
চিত্রশালা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ িভুক্তি
ঢাকা জেলার কলেজ
১৮৪১-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ
১৮৪১-এ ব্রিটিশ ভারতে প্রতিষ্ঠিত
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত কলেজ
ঢাকা কলেজ
পুরান ঢাকা
বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
ঢাকা জেলার সরকারি কলেজ
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকেন্দ্র | https://en.wikipedia.org/wiki/Dhaka_College | Dhaka College | Dhaka College (Bengali: ঢাকা কলেজ), also known as DC, is a higher educational institution of Bangladesh located in Dhanmondi, Dhaka. It is one of the oldest educational Institutions indian subcontinent.
It offers Honours and Master's programs which are affiliated with the University of Dhaka. It also has Higher secondary certificate (Hsc). |
2561 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%80%20%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C | রাজশাহী কলেজ | রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের রাজশাহী শহরে অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৮৭৩ সালে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা কলেজ ও চট্টগ্রাম কলেজ এর পরে রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের তৃতীয় প্রাচীনতম কলেজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ৬৮৫টি কলেজের ২০১৫ সালের তথ্যের ভিত্তিতে রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের সেরা কলেজ। বাংলাদেশে এই কলেজ হতেই সর্বপ্রথম মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করা শুরু হয়। কলেজটি রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থলে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এর পাশে অবস্থিত। এই প্রাচীন কলেজের পাশে অবস্থিত হবার কারণে স্কুলটির নাম কলেজিয়েট রাখা হয়েছিলো । এটি বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স ও সম্মান ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। ১৯৯৬ সাল থেকে এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র নথিভুক্ত করা বন্ধ করা হলেও বর্তমানে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে পুনরায় ভর্তি করা হচ্ছে।
ইতিহাস ও পটভূমি
শিক্ষানগরী হিসেবে রাজশাহী মহানগরীর গোড়াপত্তন হয় ১৮২৮ সালে বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। প্রতিষ্ঠানটি তদানীন্তন পূর্ব বাংলায় আধুনিক শিক্ষার ইতিহাসে পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিল। মূলত ইংরেজি শিক্ষার প্রতিস্থাপনা ও প্রসারকল্পে সে সময় রাজশাহীতে কর্মরত ইংরেজ কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল। সেদিনের সে ক্ষুদ্র ‘বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল’ ১৮৩৬ সালে প্রাদেশিক সরকার জাতীয়করণ করলে এ স্কুলটি রাজশাহী জিলা (বা জেলা) স্কুল নামে পরিচিত (এই বিদ্যালয় রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল হিসাবে এখন পরিচিত)। সে স্কুলের ছাত্রদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের অধিকাংশ বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮৭৩ সালে জেলা স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের মর্যাদা দেয়া হয় এবং একই বছর ৫ জন হিন্দু ও ১ জন মুসলমান ছাত্রসহ মাত্র ছয় জন ছাত্র নিয়ে কলেজিয়েট স্কুলের সঙ্গে চালু হয় উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর সমমানের এফ. এ (ফার্স্ট আর্টস) কোর্স। ১৮৭৮ সালে এই কলেজকে প্রথম গ্রেড মর্যাদা দেয়া এবং “রাজশাহী কলেজ” নামে নামকরণ করার সাথে সাথে একে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধিভুক্ত করে এখানে বি.এ. কোর্স চালু করা হলে উত্তরবঙ্গের সর্বপ্রথম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। ১৮৮১ সালে এই কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণীর উদ্বোধন করা হয় এবং ১৮৮৩ সালে যোগ হয় বি.এল কোর্স। ১৯০৯ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন আইনে কলেজ তার চাহিদা মেটাতে না পারলে মাস্টার্স কোর্স ও বি.এল. কোর্সের অধিভুক্তি বাতিল করা হয়।
অবদান
রাজশাহী শহরে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ভূস্বামী রাজা, জমিদার এবং বিত্তশালীদের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। এদের মধ্যে দুবলাহাটির জমিদার হরনাথ রায় চৌধুরী, দীঘাপতিয়ার রাজা প্রমথনাথ রায়, রাজা প্রমোদ রায় ও বসন্ত রায়; পুঠিয়ার রাণী শরৎসুন্দরী দেবী ও হেমন্ত কুমারী দেবী; বলিহারীর কুমার শরবিন্দু রায়; খান বাহাদুর এমাদ উদ্দীন আহমেদ, কিমিয়া-ই-সাদাত এর অনুবাদক মীর্জা মোঃ ইউসুফ আলী, হাজী লাল মোহাম্মদ, নাটোরের জমিদার পরিবারের খান বাহাদুর রশীদ খান চৌধুরী, খান বাহাদুর এরশাদ আল খান চৌধুরী ও বঙ্গীয় আইন পরিষদের ডেপুটি স্পিকার ব্যারিস্টার আশরাফ আলী খান চৌধুরী ছিলেন অগ্রগণ্য। এছাড়া নাটোরের খান চৌধুরী জমিদার পরিবার রাজশাহী শহরের হেতেম খাঁ এলাকার তাঁদের পারিবারিক বাসস্থান চৌধুরী লজ রাজশাহী কলেজে অধ্যয়নরত প্রায় বিশ জন গরিব মুসলমান ছাত্রের জন্য বিনা ভাড়ায় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তদানীন্তন পশ্চাৎপদ মুসলমান সমাজের শিক্ষার উন্নয়নে তাদের এই ভূমিকা ছিলো তাৎপর্যপূর্ণ।
কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন হরগোবিন্দ সেন, যিনি রাজশাহী জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি পাঁচ বছর (১৮৭৩-১৮৭৮) এই কলেজের অধ্যক্ষ্যের দায়িত্বে ছিলেন। ১৮৭৫ সালে প্রথম ব্যাচের এফ.এ পরীক্ষায় উপস্থিত ছাত্রদের মধ্যে মাত্র দুইজন পাশ করে। সরকার কলেজটি উঠিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু রাজশাহী এসোসিয়েশন এর শক্ত প্রচেষ্টায় এই কলেজকে আপগ্রেড করে বি.এ. কোর্স প্রবর্তনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। রাজশাহী এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দিঘাপতিয়ার রাজা প্রমথনাথ রায় বাহাদুর রাজশাহী কলেজে ডিগ্রি কোর্স প্রবর্তনের জন্য রাজশাহী এসোসিয়েশন এর মাধ্যমে সরকারকে ১৫০,০০০ টাকা দেন। কলেজ অক্টোবর ১৮৭৭ সালে ডিগ্রী প্রোগ্রামের অনুমোদন পায় এবং ১৮৭৮ সালে বি.এ. কোর্স চালু হয়। এফ. টি. ডাওডিং ১৮৭৯ সালে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন।
১৯০৪ সালে ফী ছাড়া সংস্কৃত বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য রাজশাহী কলেজ প্রশাসনের অধীনে মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। বলিহারের কুমার শরদিন্দ্বু রায় এর আর্থিক সহায়তায় ১৯১০ সালে রাজা কৃষ্ণেন্দু হল নির্মিত হয়। ১৯১৫ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫৭,১৪৫ টাকা ব্যয়ে পদার্থবিজ্ঞান ভবন নির্মাণ করে। রাজশাহী এসোসিয়েশনের উদ্যোগ এবং অধ্যক্ষ কুমুদিনীকান্ত ব্যানার্জির প্রচেষ্টায় মোট ৬টি হোস্টেল নির্মিত হয়ঃ ১৯২২ সালে ৩,৫৩,৮৬৩ টাকা ব্যয়ে ৫টি এবং ১৯২৩ সালে ৭৮,০০০ টাকা ব্যয়ে ১টি দ্বিতল ছাত্রাবাস ভবন নির্মিত হয়। ১৯২৫-২৬ সেশনে ৮৬,৮০৯ টাকা খরচে আর্টস বিল্ডিং এবং ১৯২৭ সালে কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে পদ্মা নদীর ধারে অধ্যক্ষের জন্য বাসভবন নির্মাণ করা হয়। এভাবে ধীরে ধীরে প্রায় ৩৫ একর জায়গার উপর অন্যান্য ভবন নির্মিত হয়।
১৮৮৪ সালে রাজশাহী কলেজ চত্বরে হাজী মুহম্মদ মুহসীন ভবন নির্মিত হয়। ১৯৩০ সালে রাজশাহী মাদ্রাসা অন্যত্র স্থানান্তরিত হলে ঐ বছরই ১৯০৯ সালে নির্মিত ফুলার ছাত্রাবাসটি কলেজকে হস্তান্তর করা হয়। দিঘাপতিয়ার রাজা বসন্তকুমার রায়ের আর্থিক সহায়তায় রাজশাহী কলেজ প্রশাসনের অধীনে ১৯৩৬ সালে এগ্রিকালচারাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায় এবং ভবনটি কলেজের একটি ছাত্রাবাসে পরিণত হয়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অধিভুক্ত হয়ে কলেজে ১৮৮১ সালে এমএ কোর্স এবং ১৮৮৩ সালে থেকে স্নাতক ল কোর্স চালু হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই রাজশাহী কলেজ থেকে আটজন ছাত্র এম.এ. এবং ষাটজন ছাত্র বি.এল. ডিগ্রী অর্জন করে। কিন্তু কলেজ এম.এ. এবং বি.এল. কোর্সর জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯০৯ সাল থেকে এম.এ. ও বি.এল. কোর্স স্থগিত রাখে। পূর্ব পাকিস্তানে রাজশাহী কলেজ প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এ অধিভুক্ত হয় এবং পরে ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয়। এই কলেজে আই.কম., বি.কম. (পাস) এবং বি.কম. (সম্মান) কোর্স যথাক্রমে ১৯৫২, ১৯৫৪ এবং ১৯৬১ সালে চালু হয়। ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হলে এর অধীনে এই কলেজে ১৯৯৪ সালে মাস্টার স্তরের কোর্স পুনরায় চালু হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কোর্স বন্ধ থাকলেও এই অঞ্চলের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মেধাবী শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে পুনরায় চালু করা হয়। বর্তমানে রাজশাহী কলেজে ২২টি বিষয়ে সম্মান কোর্স এবং ২১টি বিষয়ে মাস্টার কোর্স চালু রয়েছে। কলেজের ২৪৯ শিক্ষকের মধ্যে ৫৬ নারী শিক্ষক রয়েছেন।
ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ
জাতির সামাজিক ও রাজনৈতিক সকল সংকটে রাজশাহী কলেজের শিক্ষক এবং ছাত্র ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। তারা স্বদেশী আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন কালে ঢাকা-য় ছাত্র হত্যাকাণ্ডের পরপরই রাজশাহী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলন-এ যুক্ত হয় এবং ভাষা আন্দোলনকে উৎসর্গ করে শহীদদের স্মরণে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন যাকে সম্ভবত দেশের প্রথম শহীদ মিনার মনে করা হয় । ১৯৬৯ সালে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভটি ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ধ্বংস করে ফেলে। এটি পুনঃস্থাপন করতে বর্তমান স্মৃতিস্তম্ভটি ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করা হয়। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে ১৯৬২ এবং ১৯৬৯ ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে তারা বিপুল সংখ্যায় যোগ দিয়ে মহান সাহস এবং বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে সহায়তা করেন।
সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্যসমূহ
ভবন সমূহ
প্রতিষ্ঠার শুরুতে রাজশাহী কলেজের কোন নিজস্ব ভবন ছিল না। রাজশাহী এসোসিয়েশন এর নেতৃবৃন্দ কলেজের প্রথম ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। একজন দক্ষ ইংরেজ প্রকৌশলীর পরিকল্পনায় ১৮৮৪ সালে ৬১,৭০০ টাকা ব্যয়ে বর্তমান প্রশাসন ভবনটি নির্মিত হয়। গাঢ় লাল বর্ণের দোতলা ভবনটি কালের গ্রাস জয় করে নগরীর প্রধান ও প্রাচীনতম সড়কের পাশে আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনটি একটি ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের ভাল উদাহরণ। রাজশাহী অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ১৮৯৪ সালে পি.এন. ছাত্রাবাস (কলেজের প্রথম ছাত্রাবাস) নির্মিত হয়। রায় বাহাদুর কুমুদিনীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অধ্যক্ষ (১৮৯৭-১৯১৯, ১৯২০-১৯২৪) হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে কলেজের উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখেন। পুঁঠিয়ার রাণী হেমন্তকুমারীর অর্থায়নে ১৯০২ সালে হেমন্তকুমারী হোস্টেল নির্মিত হয়।
ঔপনিবেশিক আমলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুরোনো বাড়িগুলো হলো ফুলার ছাত্রাবাস, জীববিজ্ঞান ভবন, রসায়ন ভবন, পদার্থবিজ্ঞান ভবন, প্রাক্তন মুসলিম ছাত্রাবাস ইত্যাদি। নবীনতর অর্থাৎ ১৯৫০ সালের পর যে সকল ভবন নির্মিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে লাইব্রেরি ভবন, কলা ভবন এবং অডিটোরিয়াম অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া ১৯৯০ সালে একটি নতুন বিজ্ঞান ভবন নির্মিত হয়েছে।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে রাজশাহী কলেজে গড়ে উঠেছে পাঁচটি বিজ্ঞান ভবন, দুইটি কলাভবন, ইরেজি বিভাগের জন্য একটি পৃথক ভবন; পুকুরের পশ্চিম পাড়ে রয়েছে গ্যালারি ভবন। গ্যালারি ভবন ১৮৮৮ সালে নির্মিত হয়ে প্রথমে রাজশাহী মাদ্রাসা নামে এবং পরে ১৭নং গ্যালারি হিসাবে পরিচিতি পায়। প্রখ্যাত দানবীর হাজী মুহম্মদ মহসীন-এর আর্থিক অনুদানে নির্মিত এই ভবনটি বর্তমানে হাজী মুহম্মদ মহসীন ভবন নামে পরিচিত। ১৯০৯ সালে নির্মিত হয় কলেজেরে অন্যতম একটি সুন্দর স্থাপনা মোহামেডান ফুলার হোস্টেল। বর্তমানে ভবনটি কলেজের বাংলা, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, উর্দু, সংস্কৃত, দর্শন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের কার্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। পুকুর পাড়ে নতুন কামারুজ্জামান ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কলেজের সম্মুখ চত্বরে আছে একটি শহিদ মিনার এবং শহিদ মিনারের পশ্চিমে অবস্থিত লাইব্রেরি ও অডিটোরিয়াম ভবন।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর উত্তরে হযরত শাহ মখদুম এর মাজার-এর পূর্ব পাশে নির্মিত হয় অধ্যক্ষের দোতলা বাসভবন। এই ভবনটিতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদগণ বসবাস করে গেছেন। কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মহোদয়ের বাসভবন হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা হয়। ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ভবনটি এখনও স্বমহিমায় অক্ষত রয়েছে। অধ্যক্ষের বাসভবনের পূর্বপ্রান্তে শিক্ষকদের জন্য রয়েছে দুটি তিন তলা আবাসিক ভবন। ছাত্রদের জন্য বিভাগপূর্ব কালে ছয়টি ব্লক নিয়ে একটি ছাত্রাবাস নির্মিত হয়। বিভাগোত্তর কালে এই ছাত্রাবাসের আরেকটি ব্লক নির্মিত হয় কলেজের উত্তর দিকে দুটি ছাত্রীনিবাস নির্মিত হয়েছে।
আবাসিক হলসমূহ
১৯২২ সালে সময়ের প্রয়োজনে রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের যাত্রা শুরু হয়। ছাত্রাবাসে মোট ০৭ টি ভবন রয়েছে, ভবনগুলো ০৭ জন বীরশ্রেষ্ঠদের নামানুসারে রাখা হয়েছে। এই ছাত্রাবাসেই ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে বাংলাদেশের প্রথম শহিদ মিনারটি অবস্থিত। কলেজের হিন্দু ছাত্রদের আবাসিক সুব্যবস্থার জন্য একটি হিন্দু ছাত্রাবাস আছে৷ ছাত্রাবাসটির নাম “মহারাণী হেমন্ত কুমারী হিন্দু ছাত্রাবাস”৷ যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯৯ সালে৷ রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠায় অবদানকারী মহীয়সী নারী মহারাণী হেমন্ত কুমারী দেবী’র নামে ছাত্রাবাসটির নামকরণ করা হয়৷
ছাত্রীদের কষ্ট লাঘবের জন্য ১৯৬৬ সালে রাজশাহী কলেজের অদূরে ছাত্রীদের থাকার সুবিধার জন্য অফিস বিল্ডিং, তত্ত্বাবধায়কের বাসভবন সহ একটি দোতলা বিল্ডিং নির্মাণ করা হয় যার নাম মেইন বিল্ডিং এবং এর মাধ্যমে ছাত্রীনিবাসের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে মেইন বিল্ডিং চারতলা করা হয়। ছাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যায়ক্রমে তাদের আবাসন সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে নিউব্লক, উত্তরা বিল্ডিং, বলাকা ও রহমতুন্নেছা বিল্ডিং তৈরি করা হয়।
গ্রন্থাগার
রাজশাহী কলেজের প্রসিদ্ধির অন্যতম কারণ হলো এর গ্রন্থাগার যাতে পুরাতন মূল্যবান ও সাম্প্রতিক সংষ্করনের বই, জার্নাল এবং সাময়িকীর প্রাচুর্য রয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিক খ্যাত মুদ্রিত তথ্য প্রাপ্তির নির্ভরযোগ্য উৎস। কলেজ লাইব্রেরিতে অনেক দুর্লভ বই, গেজেট, এনসাইক্লোপিডিয়া এবং পাণ্ডুলিপি রয়েছে এবং প্রাচীন পাণ্ডুলিপির অনেকগুলিই পুঁথি-তে সমৃদ্ধ। বর্তমানে (১৩/০২/২০১৩) কলেজ লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা মোট ৭৭,৯৪৯। গ্রন্থাগারটি কলেজের প্রশাসন ভবনের পশ্চিমে অবস্থিত ।
গবেষণাগার
কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের প্রত্যেকটিতে নিজস্ব গবেষণাগার রয়েছে যা পরীক্ষণ করার জন্য আধুনিক ও আদি যন্ত্রপাতি দ্বারা সজ্জিত।
প্রকাশনা
রাজশাহী কলেজের নিয়মিত ভাবে জনপ্রিয় বার্ষিকী ও সাময়িকী প্রকাশের ঐতিহ্য বিদ্যমান। উপরন্তু বর্তমানে বিশেষ এবং গবেষণা সমৃদ্ধ জার্নালের প্রকাশনা এই ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধতর করেছে।
নথিভুক্ত শিক্ষার্থী
১৮৭৩ সালে ১ এপ্রিল মাত্র ছয় জন ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও অতিদ্রুত সব অনিশ্চয়তা ও প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে কলেজটি দেখা পায় সোনালী ভবিষ্যতের। ১৮৭৮ সালেই এর ছাত্র সংখ্যা একশ তে উন্নীত হয়। প্রতিবছরই ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯০০ সালে দুইশ, ১৯১০ সালে চারশ, ১৯২০ সালে আটশো এবং ১৯২৪ সালে উন্নীত হয় অনধিক এক হাজার জনে। ১৮৭৩ সালে মুসলমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ থাকলেও পরবর্তী ৫ বছর তা অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু এই সংখ্যা ১৯১৬ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১৫৬ জনে এবং ১৯২৪ সালে ২১৫ জন। ১৯৩১ সালে প্রথম ছাত্রী ভর্তি করা হয়।
পরবর্তীতে মুসলমান শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং ১৯৪৭ সালে মুসলমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা হিন্দু শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে যায়। ১৯৭০ সালে কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১,৮৪০ জন যার মধ্যে ৩০০ জন ছাত্রী। স্বাধীনতার পর এই সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৯০ সালে দাঁড়ায় ৪,৭৩২ জনে যার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১,৩৫২ জন। কলেজের ছাত্রসংখ্যা ২০০০ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৮,০০০ এবং ২০১৬ সালে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২০০০ এর অধিক।
বর্তমান শিক্ষা পরিষদ
সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানে ২২ জন অধ্যাপক, ৫৭ সহযোগী অধ্যাপক, ৮০ জন সহকারী অধ্যাপক ও ৮২ জন প্রভাষক সমন্বয়ে শিক্ষা পরিষদ বিদ্যমান।
বর্তমান অনুষদ ও বিভাগসমূহ
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
প্রাক্তন অনুষদ
প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বিচারপতি রাধা বিনোদ পাল
মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার
মোঃ গোলাম কবির
স্যার যদুনাথ সরকার
কাজী মোতাহার হোসেন
রমাপ্রসাদ চন্দ
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
রাধিকা মোহন মৈত্র
শ্রী রাধিকা মোহন মৈত্র
নিখিলরঞ্জন সেন
প্রমথনাথ বিশী
কবি রজনীকান্ত সেন
খান বাহাদুর এমাদউদ্দীন আহমদ
মির্জা গোলাম হাফিজ
ড. কাজী আব্দুল মান্নান
ড. মযহারুল ইসলাম
ডাঃ গোলাম মওলা
বদরুল হায়দার চৌধুরী
বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী
মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
মুহম্মদ এনামুল হক
ড. মুহাম্মদ এনামুল হক
ঋত্বিক ঘটক
আনোয়ার পাশা (লেখক)
আনোয়ার পাশা
এবনে গোলাম সামাদ
ড. এবনে গোলাম সামাদ
মোহাম্মদ সুলতান
ড. এমাজউদ্দীন আহমদ
ড. ওয়াজেদ আলী মিয়া
নাজমা জেসমিন চৌধুরী
অরুণ কুমার বসাক
ফণীন্দ্রচন্দ্র দত্ত, জৈব রসায়নবিদ
চিত্রমালা
বহিঃসংযোগ
রাজশাহী কলেজ ওয়েবসাইট
তথ্যসূত্র
রাজশাহী জেলার কলেজ
১৮৭৩-এ ভারতে প্রতিষ্ঠিত
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অধিভুক্ত কলেজ
১৮৭৩-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
রাজশাহী কলেজ
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকেন্দ্র
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ | https://en.wikipedia.org/wiki/Rajshahi_College | Rajshahi College | Rajshahi College (Bengali: রাজশাহী কলেজ) is a public educational institution in Rajshahi, Bangladesh. Established in 1873, it is the third oldest college in Bangladesh after Dhaka College and Chittagong College. In 1895, Rajshahi College was the first institution in the territories now comprising Bangladesh to award a graduate (master's) degree. The first two master's degree candidates, Cayan Uddin Ahmed (Chawyone Uddin Ahmed) and N. N. Lehari, after graduation became Chief Secretary of Bengal and Session Judge respectively. Later both were awarded Khan Bahadur and Roy Bahadur titles.
Rajshahi College offers three years Degree pass course and four years honours degree courses in various disciplines under the University of Rajshahi. The college is affiliated with the University of Rajshahi. Since 1996, it has stopped enrolling higher secondary students. It again started enrolling higher secondary students in 2010. Situated in the city center, Rajshahi College is adjacent to Rajshahi Collegiate School and is very near the famous Barendra Museum. |
2562 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97 | চট্টগ্রাম বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি বিভাগ। বাংলাদেশের আটটি প্রশাসনিক বিভাগের মধ্যে এটি বৃহত্তম বিভাগ। এলাকার এই বিভাগটি সিলেট ব্যতীত বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল (সিলেট ব্যতীত) গঠন করে। এর বিভাগীয় সদরদপ্তর চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত।
চট্টগ্রাম বিভাগে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এবং বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন অবস্থিত।
ইতিহাস
১৮২৯ সালে চট্টগ্রাম বিভাগ বাংলার পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসাবে কাজ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর সদরদপ্তর ছিল চট্টগ্রাম জেলায়। ১৮৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের সিলেট জেলাকে বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে নবগঠিত আসাম প্রদেশে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় সিলেট জেলাকে আসাম থেকে পৃথক করে পূর্ব বাংলার অন্তর্ভূক্ত করা হলে জেলাটি পুনরায় চট্টগ্রাম বিভাগের অধীনে আসে। পূর্ব পাকিস্তান আমলে ১৯৬০ সালে এই বিভাগের ত্রিপুরা জেলার নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা জেলা করা হয়।
১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও সিলেট এই পাঁচটি বৃহত্তর জেলাকে ভেঙে ১৫টি নতুন জেলা গঠন করা হয়:
বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলাকে দুটি জেলায় বিভক্ত করা হয়: চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা
বৃহত্তর কুমিল্লা জেলাকে তিনটি জেলায় বিভক্ত করা হয়: কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর
পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে তিনটি জেলায় বিভক্ত করা হয়: বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি
বৃহত্তর নোয়াখালী জেলাকে তিনটি জেলায় বিভক্ত করা হয়: নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী
বৃহত্তর সিলেট জেলাকে চারটি জেলায় বিভক্ত করা হয়: সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ ।
সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলাকে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নবগঠিত সিলেট বিভাগের অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
প্রশাসনিক বিভাজন
চট্টগ্রাম বিভাগ বর্তমানে ১১টি জেলায় এবং তারপর ৯৯টি উপজেলায় বিভক্ত। নিচের তালিকাভুক্ত প্রথম ছয়টি জেলা বিভাগের উত্তর-পশ্চিম অংশ (৩৭.৬%) নিয়ে গঠিত, বাকি পাঁচটি অংশ দক্ষিণ-পূর্ব অংশ (৬২.৪%) নিয়ে গঠিত। এই দুটি অংশ ফেনী নদী দ্বারা বিভক্ত। উত্তর-পশ্চিম অংশটি নিয়ে প্রস্তাবিত মেঘনা বিভাগ বা কুমিল্লা বিভাগ গঠনের কথা রয়েছে। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি এই তিনটি পাহাড়ি জেলা সরকারিভাবে "পার্বত্য জেলা"র স্বীকৃতি-প্রাপ্ত। এই এলাকাগুলো নিয়ে গঠিত পূর্বতন বৃহত্তর জেলাটি পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম নামে পরিচিত ছিল।
জনসংখ্যা
২০২২ সালের আদমশুমারির সময়, বিভাগের জনসংখ্যা ছিল ৩৩,২০২,৩২৬ জন। তাদের মধ্যে ৮০.১১% মুসলমান, ১৭.৬১% হিন্দু, ২.৯২% বৌদ্ধ, ০.২২% খ্রিস্টান এবং ০.১৪% সর্বপ্রাণবাদী ।
আরও দেখুন
বাংলাদেশের বিভাগসমূহ
সূত্র
১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, জনসংখ্যা শুমারি উইং থেকে নেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যান প্রাথমিক ফলাফলের উপর ভিত্তি করে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি ওয়েবসাইট
ব্রিটিশ ভারতের বিভাগ
বাংলাদেশের বিভাগ
চট্টগ্রাম বিভাগ
উইকিউপাত্তে স্থানাঙ্ক আছে | https://en.wikipedia.org/wiki/Chittagong_Division | Chittagong Division | Chittagong Division, officially known as Chattogram Division, is geographically the largest of the eight administrative divisions of Bangladesh. It covers the south-easternmost areas of the country, with a total area of 34,529.97 km2 (13,332.10 sq mi) and a population at the 2022 census of 33,202,326. The administrative division includes mainland Chittagong District, neighbouring districts and the Chittagong Hill Tracts.
Chittagong Division is home to Cox's Bazar, the longest natural sea beach in the world; as well as St. Martin's Island, Bangladesh's sole coral reef. |
2565 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A6%A6%20%E0%A6%AD%E0%A6%AC%E0%A6%A8 | জাতীয় সংসদ ভবন | জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রধান ভবন। এটি ঢাকার শেরে বাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত। প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুইস কান এটির মূল স্থপতি।
ইতিহাস
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এগারোটি সংসদ নির্বাচনের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনের পর গঠিত সংসদের অধিবেশনগুলি অনুষ্ঠিত হয় পুরান সংসদ ভবনে, যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তানের (বর্তমান পাকিস্তান) জন্য আইনসভার জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের নির্মাণ শুরু হয় ১৯৬১ সালে। ১৯৮২ সালের ২৮শে জানুয়ারি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর একই বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম (এবং শেষ) অধিবেশনে প্রথম সংসদ ভবন ব্যবহৃত হয়। তখন থেকেই আইন প্রণয়ন এবং সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালনার মূল কেন্দ্র হিসাবে এই ভবন ব্যবহার হয়ে আসছে।
সংসদীয় ইতিহাস
বাংলাদেশে গঠিত সকল সংসদের তালিকা:
১) প্রথম সংসদ: ২ বছর ৬ মাস (৭ই এপ্রিল, ১৯৭৩ - ৬ই নভেম্বর, ১৯৭৫) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে
২) দ্বিতীয় সংসদ: ২ বছর ১১ মাস (২রা এপ্রিল, ১৯৭৯ - ২৪শে মার্চ, ১৯৮২) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে
৩) তৃতীয় সংসদ: ১ বছর ৫ মাস (১০ই জুলাই, ১৯৮৬ - ৬ই ডিসেম্বর, ১৯৮৭) জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে
৪) চতুর্থ সংসদ: ২ বছর ৭ মাস (১৫ই এপ্রিল, ১৯৮৮ - ৬ই ডিসেম্বর, ১৯৯০) জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে
৫) পঞ্চম সংসদ: ৪ বছর ৮ মাস (৫ই এপ্রিল, ১৯৯১ - ২৪শে নভেম্বর, ১৯৯৫) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে
৬) ষষ্ঠ সংসদ: ১২ দিন (১৯শে মার্চ, ১৯৯৬ - ৩০শে মার্চ, ১৯৯৬) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে
৭) সপ্তম সংসদ: ৫ বছর (১৪ই জুলাই, ১৯৯৬ - ১৩ই জুলাই, ২০০১) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে
৮) অষ্টম সংসদ: (২৮শে অক্টোবর, ২০০১ - ২৭শে অক্টোবর, ২০০৬) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটের নেতৃত্বে
৯) নবম সংসদ: (১৭ই জানুয়ারি, ২০০৯ - ) আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট
এর মধ্যে প্রথম সংসদ কখনোই জাতীয় সংসদ ভবন ব্যবহার করেনি। প্রতিটি সংসদের নেতা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
স্থাপত্যশৈলী ও নকশা
লুই ক্যান কমপ্লেক্সের অবশিষ্ট অংশের ডিজাইন করেন। জাতীয় সংসদ ভবন জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সের একটি অংশ। কমপ্লেক্সের মধ্যে আরো আছে সুদৃশ্য বাগান, কৃত্রিম হ্রদ এবং সংসদ সদস্যদের আবাসস্থল।
অবস্থান
ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে রয়েছে চারটি প্রধান সড়ক:
উত্তর দিকে লেক রোড
পূর্ব দিকে রোকেয়া সরণী
দক্ষিণ দিকে মানিক মিয়া এভিনিউ
পশ্চিম দিকে মিরপুর সড়ক
ফলে সংসদ অধিবেশন চলাকালে যানবাহন চলাচল ও সহজে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হয়। মূল ভবনটি (সংসদ ভবন) মূলতঃ তিন ভাগে বিভক্ত:
মূল প্লাজা : ৮২৩,০০০ বর্গফুট (৭৬,০০০ বর্গমিটার)
দক্ষিণ প্লাজা : ২২৩,০০০ বর্গফুট (২১,০০০ বর্গমিটার)
রাষ্ট্রপতি প্লাজা : ৬৫,০০০ বর্গফুট (৬,০০০ বর্গমিটার)
মূল ভবনটি কমপ্লেক্সের কেন্দ্রে অবস্থিত। এমপি হোস্টেল এবং জরুরী কাজে ব্যবহৃত ভবনসমূহ কমপ্লেক্সের বহির্ভাগে অবস্থিত। মূল ভবন ঘিরে অবস্থিত কৃত্রিম হ্রদ, দুটি বাগান এর মাঝের শূণ্যস্থান পূরণ করেছে।
স্থাপত্য দর্শন
এই স্থাপনার স্থাপত্য দর্শনের মূলে ছিল স্থানের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং স্থাপত্যশৈলীর মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা। প্রকৃতির বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্থাপত্যশৈলী দ্বারা।এটি পৃথিবীর অন্যতম শিল্পকলাগুলোর মধ্যে একটি।
মূল ভবনের নকশা
মূল ভবনটি নয়টি পৃথক ব্লক দিয়ে তৈরী: মাঝের অষ্টভূজ ব্লকটির উচ্চতা ১৫৫ ফুট এবং বাকি আটটি ব্লকের উচ্চতা ১১০ ফুট। প্রতিটি ব্লকের জায়গাকে বিভিন্ন কাজের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়েছে, করিডোর, লিফট, সিড়ি ও বৃত্তাকার পথ দিয়ে আনুভূমিক ও উলম্বিকভাবে ব্লকগুলোর মাঝে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। পুরো ভবনটির নকশা এমনভাবে প্রনয়ন করা হয়েছে যাতে সব ব্লকগুলোর সমন্বয়ে একটি ব্লকের অভিন্ন স্থান হিসাবে ব্যবহার করা যায়।
দ্বিতীয় তলার একটি লাগোয়া ব্লকে প্রধান কমিটির রুমগুলো রয়েছে। সকল ধরনের সংসদীয় কার্যক্রম, মন্ত্রী, চেয়ারপারসন এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির অফিস রয়েছে এই ভবনে। একই ভবনে সংসদীয় সচিবের জন্যও কিছু অফিস বরাদ্দ রয়েছে।
মূল প্লাজা
মূল প্লাজার মূল অংশটি হচ্ছে সংসদ অধিবেশন কক্ষ। এখানে একই সময়ে ৩৫৪ জন সদস্যের সংস্থান রাখা হয়েছে। ভিআইপিদের জন্য দুইটি পোডিয়াম এবং দুইটি গ্যালারী রয়েছে। পরাবৃত্তাকার ছাদসম্পন্ন(যা তৎকালীন পাকিস্তানের চাঁদ-তারার প্রতিচ্ছবি প্রকাশ করে) অধিবেশন কক্ষটির উচ্চতা ১১৭ ফুট। ছাদটি স্বচ্ছভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে দিনের আলো এতে প্রবেশ করতে পারে। সূর্যের আলো চারদিকের ঘেরা দেয়াল ও অষ্টভূজকৃতির ড্রামে প্রতিফলিত হয়ে অধিবেশন কক্ষ প্রবেশ করে। (আলোর নান্দনিকতা ও সর্বোচ্চ ব্যবহার লুই ক্যানের স্থাপত্য ক্ষমতার নিদর্শনস্বরূপ।)
কৃত্রিম আলোকে এমনভাবে বিভক্ত করা হয়েছে যে সূর্যের আলোর প্রবেশের ক্ষেত্রে তা কোনো বাধার সৃষ্টি করতে পারে না। শ্যান্ডেলির বা ঝাড়বাতিগুলো পরাবৃত্তাকার ছাদ হতে নিচে নেমে এসেছে। এর গঠনশৈলীতে ধাতুর ব্যবহার প্রতিটি আলোক উৎসর ভিত্তি হিসাবে কাজ করে।
উপরের অংশের অভ্যাগত এবং গণমাধ্যমের জন্য গ্যালারীর ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এর বিভিন্ন অংশে রয়েছে:
প্রথম তলায়, একটি গ্রন্থাগার;
তৃতীয় তলায়, সংসদ সদস্যদের জন্য লাউঞ্জ এবং
উপর তলায়, মিলনায়তন;
দক্ষিণ প্লাজা
দক্ষিণ দিকে মানিক মিয়া এভিনিউর অভিমুখে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা অবস্থিত। এর ক্রমোচ্চ (Gradually rises) ২০' উচ্চতার ভবন কাঠামো সৌন্দর্য বর্ধনের পাশপাশি সংসদ ভবনের মূল প্রবেশ পথ (অধিবেশন চলাকালে) হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এখানে আরো রয়েছে:
নিয়ন্ত্রিত প্রবেশপথ;
ড্রাইভওয়ে;
প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশল কক্ষ;
গাড়ি পার্কিং-এর জন্য বিস্তৃত পরিসর;
টেলিফোন এক্সচেঞ্জ;
রক্ষনাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলীদের অফিসকক্ষ;
উপকরণ সরঞ্জাম রাখার স্থান; এবং
মূল ভবনে যাওয়ার জন্য উম্মুক্ত চত্বর;
রাষ্ট্রপতি প্লাজা
উত্তর দিকে অবস্থিত রাষ্ট্রপতি প্লাজা সম্মুখে লেক রোড অবস্থিত। এই প্লাজা সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মার্বেলের তৈরি মেঝে, গ্যালারী এবং খোলা পথ এই প্লাজার নির্মাণশৈলীর বৈশিষ্ট্য।
তথ্য
নির্মাণকার্য সূচনা: ১৯৬১
নকশা ও নির্মাণ ব্যয়: ১২৯ কোটি টাকা
উদ্বোধন: ২৮শে জানুয়ারি, ১৯৮২
স্থপতি: লুইস কান
ডিজাইন:হেনরি এন.উইলকটস
স্ট্রাকচারাল ডিজাইনার : হ্যারি এম পামবাম
মোট এলাকা: ২০০ একর (৮,০০,০০০ বর্গমিটার)
অবস্থান: শেরে-বাংলা নগর, ঢাকা
মোট সংসদের সংখ্যা: ৭
চিত্রশালা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশের ভবন ও স্থাপনা
সমকালীন স্থাপত্য
বাংলাদেশের সরকারি ভবন
ঢাকার ভবন ও স্থাপনা
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক
জাতীয় সংসদ
ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থান
১৯৮২-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত | https://en.wikipedia.org/wiki/Jatiya_Sangsad_Bhaban | Jatiya Sangsad Bhaban | Jatiya Sangsad Bhaban or National Parliament Building, (Bengali: জাতীয় সংসদ ভবন, romanized: Jatiyô Sôngsôd Bhôbôn) is the house of the Parliament of Bangladesh, located at Sher-e-Bangla Nagar besides St. Joseph Higher Secondary School in the Bangladeshi capital of Dhaka. Designed while the country was still part of Pakistan by architect Louis Kahn, the complex is one of the largest legislative complexes in the world, covering 208 acres (840,000 m2).
The building was featured prominently in the 2003 film My Architect, detailing the career and familial legacy of its architect, Louis Kahn. Robert McCarter, author of Louis I. Kahn, described the National Parliament of Bangladesh as one of the twentieth century's most significant buildings. |
2568 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%95 | স্টার ট্রেক | স্টার ট্রেক () মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কল্পবিজ্ঞান টেলিভিশন ধারাবাহিক নাটকের ইতিহাসে একটি জনপ্রিয় নাম। অবশ্য এই থিমের উপর ভিত্তি করে অনেকগুলো সিনেমাও নির্মিত হয়েছে। এর যাত্রা শুরু হয়েছিল একটি টেলিভিশন সিরিজ তথা টিভি ধারাবাহিক নাটকের মাধ্যমে। স্টার ট্রেক: দি অরিজিনাল সিরিজ নামের সেই সিরিজটির পটভূমি তৈরি করেছিলেন বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান ব্যক্তিত্ব জিন রডেনবারি। প্রথম ধারাবাহিক নাটকটিতে স্টারশিপ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি মনুষ্যনির্মিত নভোযানের আকাশগঙ্গা ছায়াপথব্যাপী অভিযান দেখানো হয়। এই নভোযানের ক্যাপ্টেনের চরিত্রটি হচ্ছে ক্যাপ্টেন জেমস টি কার্ক, তার বিজ্ঞান কর্মকর্তা এবং ফার্স্ট অফিসারের নাম স্পক। স্পক মানুষরূপী (হিউম্যানয়েড) হলেও মানুষ (হোমো স্যাপিয়েন্স) নয়, "ভালকান" নামক একটি গ্রহের অধিবাসী। প্রথম ধারাবাহিক নাটকের পটভূমি ২৩শ শতাব্দীর, তখনও মানুষ আকাশগঙ্গা ছায়াপথ পেরোতে পারেনি। স্টারশিপ এন্টারপ্রাইজের দায়িত্ব হচ্ছে আকাশগঙ্গার এমন সব স্থানে যাওয়া যেখানে আগে কোন মানুষ যায়নি, নতুন নতুন সভ্যতা এবং প্রাণের অনুসন্ধান করা, কিন্তু তাদের কোন কর্মকাণ্ডে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করা। আর ছায়াপথব্যাপী মানুষের সকল কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রক হচ্ছে ইউনাইটেড ফেডারেশন অফ প্ল্যানেটস। মানব সভ্যতা সহ আরও অনেকগুলো সভ্যতা এই ফেডারেশনের সদস্য হয়।
প্রথম সিরিজটি ১৯৬৬ সালে শুরু হয়ে তিন মৌসুম ধরে চলে। তবে প্যারামাউন্ট স্টুডিওর জন্য স্টার ট্রেক সিরিজের যে প্রথম পর্বটি তৈরি করা হয়েছিল সেটি স্টুডিও গ্রহণ করেনি। এখন অবশ্য অরিজিনাল সিরিজের ডিভিডিতে সেই প্রথম পর্ব তথা পাইলট টিও দেখা যায়। তিন মৌসুমের প্রথম ধারাবাহিক নাটক শেষ হওয়ার পর স্টার ট্রেকের পটভূমিতে একটি এনিমেশনকৃত ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হয়। এরপর নির্মিত হয় একই থিমের ৬টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। তারপর আরও ৪ টি টেলিভিশন সিরিজ প্রচারিত হয়। পরের সিরিজগুলোতে পটভূমি একই থাকলেও চরিত্রগুলো ছিল একেবারে আলাদা। স্টার ট্রেক ফ্র্যানচাইজ এ টেলিভিশন ধারাবাহিক নাটক এবং চলচ্চিত্র ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ভিডিও গেইম, উপন্যাস, এবং এমনকি লাস ভেগাস শহরে একটি বিশেষ থিম পার্ক।
টেলিভিশন সিরিজ
ওয়েব সিরিজ
চলচ্চিত্র
বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক টেলিভিশন ধারাবাহিক
১৯৬৬ সালে প্রবর্তিত গণ মিডিয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি
বিজ্ঞান অলীক কল্পকাহিনী
টেলিভিশন ফ্র্যাঞ্চাইজি | https://en.wikipedia.org/wiki/Star_Trek | Star Trek | Star Trek is an American science fiction media franchise created by Gene Roddenberry, which began with the eponymous 1960s television series and became a worldwide pop-culture phenomenon. Since its creation, the franchise has expanded into various films, television series, video games, novels, and comic books, and it has become one of the most recognizable and highest-grossing media franchises of all time.
The franchise began with Star Trek: The Original Series, which debuted in the US on September 8, 1966, and aired for three seasons on NBC. It was first broadcast on September 6, 1966, on Canada's CTV network. The series followed the voyages of the crew of the starship USS Enterprise, a space exploration vessel built by the United Federation of Planets in the 23rd century, on a mission "to explore strange new worlds, to seek out new life and new civilizations, to boldly go where no man has gone before". In creating Star Trek, Roddenberry was inspired by C. S. Forester's Horatio Hornblower series of novels, Jonathan Swift's 1726 novel Gulliver's Travels, the 1956 film Forbidden Planet, and television westerns such as Wagon Train.
The Star Trek canon includes the Original Series, 11 spin-off television series, and a film franchise; further adaptations also exist in several media. After the conclusion of the Original Series, the adventures of its characters continued in the 22-episode Star Trek: The Animated Series and six feature films. A television revival beginning in the 1980s saw three sequel series and a prequel: The Next Generation, following the crew of a new starship Enterprise a century after the original series; Deep Space Nine and Voyager, set in the same era as the Next Generation; and Enterprise, set before the original series in the early days of human interstellar travel. The adventures of the Next Generation crew continued in four additional feature films. In 2009, the film franchise underwent a reboot, creating an alternate continuity known as the Kelvin timeline; three films have been set in this continuity. The newest Star Trek television revival, beginning in 2017, includes the series Discovery, Picard, Short Treks, Lower Decks, Prodigy, and Strange New Worlds, streaming on digital platforms.
Star Trek has been a cult phenomenon for decades. Fans of the franchise are called "Trekkies" or "Trekkers". The franchise spans a wide range of spin-offs including games, figurines, novels, toys, and comics. From 1998 to 2008, there was a Star Trek–themed attraction in Las Vegas. At least two museum exhibits of props travel the world. The constructed language Klingon was created for the franchise. Several Star Trek parodies have been made, and viewers have produced several fan productions.
Star Trek is noted for its cultural influence beyond works of science fiction. The franchise is also notable for its progressive civil-rights stances. The Original Series included one of the first multiracial casts on US television. |
2574 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%8F%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8 | বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স | বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, যা সাধারণত বিমান নামে পরিচিত, বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি এবং জাতীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ পরিচালনা সংস্থা যা 'বিমান পরিবহন সংস্থা' নামে পরিচিত। এটি প্রধানত ঢাকায় অবস্থিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এছাড়াও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক রুটের পাশপাশি অভ্যন্তরীণ রুটেও যাত্রী এবং মালামাল পরিবহন করে। বিশ্বের প্রায় ৭০ টি দেশের সাথে বিমানের বিমান সেবা চুক্তি রয়েছে এবং বর্তমানে ১৬টি দেশে এর কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিমানের প্রধান কার্যালয়ের নাম বলাকা ভবন, যেটি ঢাকার উত্তরাঞ্চলে কুর্মিটোলায় অবস্থিত। বিমান বাংলাদেশের যাত্রীদের অধিকাংশই হজ্জযাত্রী, পর্যটক, অভিবাসী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি এবং সহায়ক সংস্থাগুলির ক্রিয়াকলাপসমূহ বিমান পরিবহন সংস্থার কর্পোরেট ব্যবসায়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ গঠন করে। ব্যাপক সংখ্যক বিদেশী পর্যটক, দেশীয় পর্যটক এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের সেবা প্রদানের জন্য দেশের পরিবহন খাতে 8% বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হারের অভিজ্ঞতা অর্জনকারী বাংলাদেশ বিমানের সাথে অন্যান্য বাংলাদেশি বেসরকারী বিমান সংস্থাগুলির প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্ক বিদ্যমান।
১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১৯৯৬ পর্যন্ত দেশে উড়োজাহাজ খাতের একক সংস্থা হিসেবে ব্যবসা চালায়। বিভিন্ন সময়ে উড়োজাহাজ বহর ও গন্তব্য বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও দুর্নীতি আর অদক্ষতার জন্য বিমান বার বার পিছিয়ে পড়ে। বাংলাদেশ বিমান তার সুসময়ে সর্বোচ্চ ২৯টি গন্তব্যে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করত যা পশ্চিমে নিউ ইয়র্ক শহর থেকে পূর্বে টোকিও পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ২০০৭ সালের আগ পর্যন্ত বিমান পুরোপুরি একটি সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা ছিল যেটি সে বছরের জুলাই মাসের ২৯ তারিখ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয়। কোম্পানিতে রূপান্তরিত হওয়ার পর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি এর উড়োজাহাজ বহর আধুনিকায়নের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২০০৮ সালে বিমান সংস্থাটি বোয়িং কোম্পানির সাথে দশটি বিকল্পের পাশাপাশি নতুন দশটি বিমানের জন্য চুক্তি করে। নতুন উড়োজাহাজ হাতে পাওয়ার পর বিমান তার গন্তব্যের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ফ্লাইট চলাকালীন ইন্টারনেট/ওয়াই-ফাই, মোবাইল যোগাযোগ এবং টেলিভিশন দেখার সুবিধার মতো যাত্রীসুবিধাদি উন্নত করেছে।
ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি নিরাপদ সংস্থা হিসেবে বিমান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়াও আইএটিএ-এর নিরাপত্তা নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এরপর বিমান, এশিয়া এবং ইউরোপে তাদের পূর্ববর্তী কয়েকটি গন্তব্যে পুনরায় ফ্লাইট চালু করে। সাম্প্রতিক সময়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের নতুন পরিচালনা দলের অধীনে সময়োপযোগের পাশাপাশি অন-টাইম ফ্লাইটের কর্মক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে।
ইতিহাস
রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ নং ১২৬ অনুসারে ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গঠিত হয়। এদিন বাংলাদেশ বিমানবাহিনী থেকে একটি ডিসি-৩ বিমান নিয়ে জাতির বাহন হিসেবে বাংলাদেশ বিমান যাত্রা শুরু করে। সাবেক পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ২৫০০ কর্মচারী ও কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা এবং ১০ জন বোয়িং ৭০৭ কমান্ডার ও ৭ জন অন্যান্য পাইলটের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানটি গঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭১ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকারের কাছে সংস্থাটি একটি প্রস্তাব জানায়। প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল এয়ার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল।
১৯৭২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আভ্যন্তরীণ সেবার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বিমান। ভারত থেকে নিয়ে আসা ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-৩ ছিল প্রথম সংযোজন, যেটি ঢাকার সাথে চট্টগ্রাম, যশোর এবং সিলেটের যোগাযোগ স্থাপন করেছিল। এই ডিসি-৩ বিমানটি ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময় দুর্ঘটনার পরে। এই দুর্ঘটনার পর ভারত সরকার বাংলাদেশকে আরও দুই ফকার এফ২৭ উপহার দেয়। অল্প সময়ের ব্যাবধানে বাংলাদেশ বিমানের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ব চার্চ কাউন্সিলের কাছ থেকে লোন নিয়ে ডগলাস ডিসি-৬ সংযোযন করা হয়। পরবরতিতে ডগলাস ডিসি-৬ এর পরিবর্তে ডগলাস ডিসি-৬বি নিয়ে আসা হয়, যা ট্রল-এয়ারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া হয়েছিল, যেটি ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচল করত। ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বিমান বাংলাদেশ, ব্রিটিশ কালেডোনিয়ানের থেকে পাওয়া একটি বোয়িং ৭০৭ চার্টার্ড প্লেন নিয়ে ঢাকা-লন্ডন রুটে প্রথম সাপ্তাহিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। ঢাকা-কোলকাতা রুটে নিয়মিত সেবা প্রদানের জন্য ১৯৭২ সালের ৩ মার্চ ভারত থেকে একটি ফকার এফ-২৭ আনা হয়। ওই বছর বিমান প্রায় ১,০৭৮ টি ফ্লাইটে ৩,৮০,০০০ জন যাত্রী পরিবহন করে এবং সে বছরের সেপ্টেম্বরে নতুন ৩টি ফকার এফ-২৭ যোগ করে।
১৯৭৩ সালে ঢাকা-কোলকাতা রুটে নিয়মিত ২টি ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য আরও ৪টি ফকার এফ-২৭ আনা হয়। একই সময় একটি বোয়িং ৭০৭ সংযুক্ত হলে বিমান ঢাকা-লন্ডন সপ্তাহে ২টি ফ্লাইট চালু করে। সে বছরেই বিমান চট্টগ্রাম-কলকাতা রুটে সেবা প্রদান শুরু করে। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি, কাঠমান্ডু, নভেম্বরে ব্যাংকক এবং ডিসেম্বরে দুবাই রুটে বিমানের পরিসেবা চালু হয়। ১৯৭৬ বিমান তাদের দুইটি ফকার এফ-২৭ বিক্রি করে একটি বোয়িং ক্রয় করে আবুধাবি, করাচি ও বম্বে (বর্তমান মুম্বই) রুটে সেবা চালু করে। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আরও একটি বোয়িং কিনে সিঙ্গাপুরে বিমানের পরিসেবা বিস্তৃত করা হয়। পরের বছর বিমান তার ৪র্থ বোয়িং ক্রয়ের মাধ্যমে জেদ্দা, দোহা ও আমস্টারডাম রুটে বিমান সেবা চালু করে। সে বছরেই বিমান পাবলিক সেক্টোর কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয় এবং পরিচালনা পর্ষদ দ্বারা পরিচালিত হয়। ১৯৭৭-৭৮ অর্থ বছরে বিমান ব্রেক ইভেন পয়েন্ট স্পর্শ করে এবং পরের বছর লাভের মুখ দেখে। ১৯৭৯ সালে কুয়ালালামপুর, এথেন্স, মাসকট ও ত্রিপলির রুট চালু করে বিমান।
১৯৮০ সালে বিমানের ইয়াং, টোকিও এবং ধাবাওং রুট চালু হয়। বিমান ১৯৮১ সালে তাদের প্রথম ৮৫-সিটার ফকার এফ২৮-৪০০০ ক্রয় করে। একটি বোয়িং ৭০৭-৩২০সি ১৯৮১ সালে ঢাকা টু হিথ্রো রুটে সংযোজন করা হয়। ১৯৮৩ সালে আরও ৩টি ডগলাস ডিসি-১০ সংযুক্ত হয় এবং বিমান সংস্থাটি তাদের বোয়িং ৭০৭-এর দশকে প্রবেশ করে। এছাড়াও বিমান ১৯৮৩ সালে বাগদাদ, ১৯৮৪ সালে প্যারিস এবং ১৯৮৬ সালে বাহরাইনে তাদের সেবা শুরু করে। ৫ অগাস্ট ১৯৮৪ তে বিমানের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ দূর্ঘটনা ঘটে, একটি ফকার বিমান চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে দূর্ঘটনায় পরে, যাতে প্রায় ৪৯ জন যাত্রী মারা যায়।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি, লম্ভা দূরত্বর ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ১৯৯৬ সালে বিমান দুইটি দূরপাল্লার এয়ারবাস এ৩১০ ক্রয় করে। ২০০০ সালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স আর এয়ার জ্যামাইকা থেকে ভাড়ায় আনা দুইটি এয়ারবাস এ৩১০ সংযোজন করা হয়। এছাড়া ২০০৩ সালে আরও একটি ভাড়ায় আনা এয়ারবাস এ৩১০ বহরে যুক্ত হয়। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে বিমান ১১,৫০,০০০ জন যাত্রী পরিবহন করে, যা বিগত দশকের তুলনায় দুইগুন আর ৭০ ভাগ বেশি। প্রাইভেট সার্ভিস চালু হলে বিমান ৩৫ ভাগ বাজার হারায় এবং গড়ে বছরে ১,৬২,০০০ জন অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহন করে। একই সময় বিমান ইতিহাসে সর্ববৃহৎ লোকসানের মুখ দেখে, যার পরিমাণ প্রায় ৮ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। পরের বছর লোকসান হয় প্রায় ৬ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। সে সময় বিমান তার জ্বালানী সরবরাহকারী, বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশনকে এক মিলিয়ন ডলারের তেলের বিলও পরিশোধ করতে পারেনি। ২০০৭ সালে ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি ১০-৩০ ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অবতরন করে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়
পরিচালনা পর্ষদ
বিমান পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন। এর পূর্বে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান। বিমানের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারের অতিরিক্ত সচিব শফিউল আজিম। এর পূর্বে বিমানের ইতিহাসে প্রথম বিদেশী নাগরিক কেভিন জন স্টিল, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিযোগিতামূলক বাছাই প্রক্রিয়া শেষে দেশি-বিদেশি ৪২ জন প্রার্থীর একটি পুল থেকে তাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। স্টিল ছিলেন একজন ব্রিটিশ নাগরিক, যিনি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং বিশ্বের অন্যান্য এয়ারলাইন্সে পরিচালনা ও প্রশাসনিক পদে কাজ করার বহু বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। বিমানে যোগদানের পর একটি সংবাদ সম্মেলনে স্টিল বিমানকে একুশ শতকের আধুনিক ও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রতিজ্ঞা ব্যাক্ত করেছিলেন। যদিও নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে প্রায় এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর বিভিন্ন মাধ্যমে তার সাফল্য নিয়ে যথেষ্ট মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। স্টিল স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কথা উল্লেখ করে সালে বিমানের দ্বায়িত্বপদ থেকে পদত্যাগ করেন। স্টিলে বিমানের কর্মস্থল ত্যাগ করেছিলেন। সালে কাইল হেইউড বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ গ্রহণ করেন। একজন ব্রিটিশ নাগরিক হেইউড ছিলেন কেভিন স্টিলের পরে এয়ারলাইন্সের পদে অধিষ্ঠিত দ্বিতীয় বিদেশী নাগরিক।
এছাড়াও বিমানের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক হিসেবে যাদের নিযুক্ত করা হয়েছিল, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের মূখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সহকারী প্রধান (অপারেশন অ্যান্ড ট্রেনিং), বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) এম খুরশিদ আলম, বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজিবুল আলম, ইমার্জিং রিসোর্সেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর ই খোদা আব্দুল মবিন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও (পদাধিকারবলে)।
মালিকানা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সূচনালগ্ন থেকেই এর মালিকানা ছিল বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন। ১৯৭৭ সালে বিমানকে একটি পাবলিক সেক্টর করপোরেশনে পরিনত করা হয় যা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত পরিচালিত পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে বিমানের সীমাবদ্ধ স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ছিল এবং বিমানের পরিচালক ও কর্মকর্তাদের কিছুটা স্বাধীনতা প্রদান করেছিল। ১৯৮৭ সাল বিমানের পরিশোধিত মূলধন আরও দুই হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়। এবং সর্বশেষে ২০০৭ সালে যখন বিমানকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিনত করা হয় তখন এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিনত হয়।
বেসরকারিকরণ
১৯৮০-এর দশক
আশির দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বিমানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শুরুর দিকে কিছু উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটলেও অদক্ষ্য ব্যবস্থাপনা ও দূর্নিতীর কারণে ধীরে ধীরে বিমানের লাভ কমতে শুরু করে। তৎকালীন দূর্নিতীগুলোর মধ্যে ছিল লোক দেখানো জিনিসপত্র ক্রয়, ভুয়া মেরামত বিল, রাজনৈতিক কারণে অলাভজনক রুটে বিমান চালনা ইত্যাদি।
১৯৯০-এর দশক
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে বিমান বাংলাদেশের কাছে সরকারের বকেয়া কর ছিল প্রায় ২ কোটি ২০ লাক্ষ টাকা। পূর্বে ১৯৯৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা যায় যে শুধুমাত্র দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিমানে ৫,২৫৩ জন কর্মকর্তা ছিল যেখানে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স প্রায় সমান সংখ্যক দাফতরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে বিমান বাংলাদেশের চেয়ে দশগুন বেশি বিমান পরিচালনা করতে সক্ষম ছিল। এই গবেষণাই প্রমাণ করেছিল যে তৎকালীন বিমান মূলধন স্বল্পতায় ভূগছিল এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল। ১৯৯৯ সালে, বিমান বাংলাদেশের উপর পরিচালিত এক নিরীক্ষা থেকে জানা যায় যে বিমানের টিকিট বিক্রয় প্রতিনিধিদের (সেলস এজেন্ট) কাছে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা রকেয়া আছে যা বিমানেরই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে সম্ভব হয়েছিল। উপরন্তু এই টিকিট বিক্রয় প্রতিনিধিদেরকে অতিরিক্ত ২৪ লক্ষ টাকা কমিশন হিসেবে অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল যা বিমান বাংলাদেশের নিয়ম বহির্ভূত। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দূর্নিতী প্রতিরোধের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি দূর্নিতীর অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাই বাংলাদেশ বিমানের সাবেক ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার শামীম ইস্কান্দারকে গ্রেফতার করে। শামীম ইস্কান্দারের গ্রেফতারের আগে তার সহযোগী আরও প্রায় পয়ত্রিশ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়।
১৯৯০ সালের পর থেকে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতীক ক্ষতির কারণে বাংলাদেশ সরকার বিমান বাংলাদেশকে বেসরকারীকরনের সিন্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার ২০০৪ সালে বিভিন্ন বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে বিমানের চল্লিশ শতাংশ শেয়ার বিক্রয়ের করার প্রস্তাব দেয়। এই প্রস্তাবে উল্লেখ ছিল যে বাংলাদেশ সরকার বিমানের কিছু নিয়ন্ত্রণ সরকার সংরক্ষণ করতে চায়। এই প্রস্তাব বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় না উপরন্তু প্রস্তাবটি তৈরী এবং নিরীক্ষন করার পেছনে বেসরকারী তদারকি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করায় সরকারের ১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়।
২০০০-এর দশক
২০০৫–০৬ অর্থবছরে বিমান প্রায় সাড়ে ১১ কোটি যাত্রী পরিবহ বহন করেছিল, যা আগের দশকের তুলনায় ৭০% বৃদ্ধি পেয়েছিল। বাংলাদেশে বেসরকারী অভ্যন্তরীণ ক্যারিয়ার চালুর সাথে সাথে, গত দশ বছরের গড়ের তুলনায় বিমানের বাজারের শেয়ারের পরিমাণ ৩৫% হ্রাস পেয়েছে। ২০০৫–০৬ অর্থবছরে কেবল ১৬২,০০০ যাত্রী অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানে ভ্রমণ করেছিলেন। একই সময়কালে বিমানটি তার বৃহত্তম বার্ষিক ক্ষতির মুখে পর, যা প্রায় ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০১০ সালের হিসাবে ৮.৩ বিলিয়ন টাকা), পরের বছরে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০১০ সালের হিসাবে ৬৯9 বিলিয়ন টাকা) লোকসান হয়েছে। বিমানের জ্বালানী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের কাছে প্রায় দশ লক্ষ টাকা বকেয়া হয়, যা ডিসেম্বর ২০০৬ সালে শেষের দিকে বেড়ে ১৫.৬৪ বিলিয়ন ডলারে পৌছায়।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি
২০০৭ সালের মে মাসে বাংলাদেশের তত্বাবধায়ক সরকার বিমানকে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিনত করার পরিকল্পনা মঞ্জুর করে যার শেয়ারের মালিকানা সাতটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মানব সম্পদ ও যন্ত্রপাতির অনুপাত কমিয়ে আনার জন্য সরকার বিমানের কর্মকর্তাদের জন্য একটি স্বেচ্ছা অবসরের রুপরেখা প্রনণয়ন করে। তৎকালীন বিমান বাংলাদেশে বিমান এবং মানব সম্পদের অনুপাত ছিল ৩৬৭:১। কিন্তু একই শিল্পে অন্যান্ন এশিয়ান সংস্থাগুলো ১৫০:১ অনুপাত বজায় রেখেছিল। চাকুরীর মেয়াদ অনুযায়ী স্বেচ্ছা অবসরের পাওনাদি ঘোষিত হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া ২.৯৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয়ের জন্য পরিষেবার দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই পরিকল্পনা থেকে বিমান প্রায় ১৬০০ কর্মী কমিয়ে আনার পরীকল্পনা করেছিল, কিন্তু ২১৬২ জন কর্মী স্বেচ্ছা অবসরের জন্য আবেদন করে। এদের মধ্যে ১৮৬৩ থেকে ১৮৭৭ জনের আবেদন বিমান ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করে।
২৩ জুলাই ২০০৭ সালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। প্রথমে এটির নাম পূর্বের বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স রাখার সুপারিশ করা হলেও পরে তা বাতিল করা হয়। সরকার এর পূরো পনেরো লক্ষ শেয়ারেরই মালিক যদিও সরকার ৪৯% শেয়ার ব্যক্তিগত খাতের মালিকানায় দিয়ে বাকি ৫১% শেয়ার সরকারি মালিকানায় রেখে এর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চেয়েছিল। পূনর্গঠনের পর এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মোনেমকে পুনরায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। বাকী ছয়জন পরিচালককে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিমানের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন। এই ছয় মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুজ্ঞ সচিবকে সমানভাবে বিমানের শেয়ারের মালিকানা দেওয়া হয়। সরকার ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এয়ার কমোডর জাহেদ কুদ্দুস কে আব্দুল মোনেমের স্থলাভিষিক্ত করে। এ আগে ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত এয়ার কমোডর জাহেদ কুদ্দুস বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পূর্বে তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিভিন্ন উচ্চপদস্থ পদে কর্মরত ছিলেন।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রুপান্তরীত করার আগে যেসকল কর্মী স্বেচ্ছা অবসর পরীকল্পনায় চকুরি ছেড়েছিলেন তারা সমন্বিতভাবে একটি প্রতিযোগী এয়ারলাইন্স গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। যার জন্য এয়ার বাংলা ইন্টারন্যাশনাল, বিমান ইমপ্লইজ এয়ারলাইন ও বলাকা নামগুলি প্রস্তাব করা হয়েছিল। বিমানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট এসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিইডেন্ট তাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই বিষয়ে আর কিছু জানা যায় নি।
বিমান সংস্থা ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৬০০ কোটি টাকা এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে, ক্যারিয়ারের ৮০০ মিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছিল।
২০১০-এর দশক
২০১০-১১ অর্থবছরে যথাক্রমে বিপিসি ১১.৯৪ বিলিয়ন এবং সিএএবির ৫.৭৩ মিলিয়ন ডলার ছাড়ের পরেও বিমান ২ বিলিয়ন টাকা ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হয়। পরবর্তী ২০১১-১২ অর্থবছরে বিমান ৬.০৬ বিলিয়ন ( মিলিয়ন) ডলার লোকসান করে; এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরে নিরীক্ষাবিহীন পরিসংখ্যানে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি দেখানো হয়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে, বিভিন্ন উৎসের ব্যয় বাবদ বিমানের ১৫.৬০ বিলিয়ন ডলার অপরিশোধিত ছিল; যার মধ্যে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিকট ৩৬৭৬.২ মিলিয়ন ডলার এবং জ্বালানী সরবরাহকারী পদ্মা অয়েল কোম্পানির নিকট ৮.৫০ বিলিয়ন ডলার বকেয়া ছিল। বিমান ২০১৪–১৫ অর্থবছরে ৩.২৪ বিলিয়ন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২.৭৬ বিলিয়ন এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১.৫১ বিলিয়ন ডলার লাভ করেছিল। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বিমানের সর্বমোট লাভ হয়েছিল ৪৭০ মিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিমানের অপারেটিং আয়ের পরিমাণ ছিল ৪৯৩১ কোটি টাকা কিন্তু ব্যয় হয়েছিল ৫১৩৩ কোটি টাকা, এতে -২০২ কোটি টাকা লোকসান হয়। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিমানের ৩১৭৫ কোটি টাকা আয় করে যেখানে ব্যয় ছিল ২৯৩৮ কোটি টাকা এবং বিমানের সর্বমোট মুনাফা দাঁড়ায় ২৩৭ কোটি টাকা।
অধীনস্থ কোম্পানি
বিমানের সহায়ক সংস্থা বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং, বিমান চলাচল প্রকৌশল, বিমান প্রশিক্ষণ এবং ফ্লাইট ক্যাটারিংয়ের সাথে সম্পর্কিত। বিমানের পাঁচটি সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সহায়ক সংস্থা রয়েছে:
১৯৭২ সাল থেকে, বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সংস্থাটি বাংলাদেশের সকল বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং পরিসেবা প্রদার করছে। সংস্থাটি ২০১১-১২ অর্থবছরের ৪.৫ বিলিয়ন ডলার মুনাফা আয় করেছিল। উড্ডয়নকালীন সময়ে বিমানে খাবার সরবরাহের জন্য ১৯৮৯ সালে সম্পূর্ণ মালিকানাধীন সহায়ক সংস্থা বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি সৌদি, ইতিহাদ, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারওয়েজ, এমিরেট্স, ড্রাগন এয়ার, চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স এবং রিজেন্ট এয়ারওয়েজ সহ বাংলাদেশের অন্যান্য বিমান প্রতিষ্ঠানগুলিকে নৈমিত্তিক খাবার সরবরাহ করে এটি বিমানের অন্যতম লাভজনক খাত। বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের সুবিধার্থে ১৯৭৬ সালে বিমানের আরেকটি লাভজনক সহায়ক সংস্থা বিমান পোল্ট্রি কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়, যেটি ১৯৮০ সালের নভেম্বরে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এখানকার ৯০% ডিম ও মুরগি বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের পাঠানো হয়। ২০০৭ সালের মার্চে এই খামারে বার্ড ফ্লু ধরা পড়েছিল এবং এতে অনেক মুরগি মারা হয়েছিল। এটি ছিল বাংলাদেশে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের প্রথম ঘটনা।
সেবা
২০১৩ সালে, বিমান এয়ারলাইন্সে অবকাঠামোগত সহায়তা এবং উপার্জন সম্পর্কিত অ্যাকাউন্টিং পরিষেবা সরবরাহ করার জন্য সিআইটিএ এবং মার্কেটরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। ২০১৪ সাল থেকে বিমানের ওয়েবসাইটে অগ্রিম আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু হয়। এছাড়াও অনলাইনে খাবার নির্বাচনের বিকল্পও সরবরাহ করা হয়, যেখানে যাত্রীরা ডায়াবেটিক খাবার, নিরামিষ খাবার, এশিয় নিরামিষ খাবার, শিশুদের খাবার এবং মুসলিম খাবার থেকে পছন্দ মতো খাবার বেছে নিতে পারে, যা তাদেরকে উড্ডয়নকালে বিমানে পরিবেশন করা হবে। তৃতীয় পক্ষের পরিষেবা সরবরাহকারীর সাথে সহযোগিতামূলক ভাবে বিমান যাত্রীরা ইকোনমি (সাশ্রয়ী) শ্রেণি বুকিংয়ের পরে অতিরিক্ত আসন থাকা সাপেক্ষে বিজনেস শ্রেণির আসনের সুবিধা নিতে পারে।
ফ্লাইট শ্রেণী
সাধারনত বড় এবং সুপরিসর বিমানগুলোতে দুই ধরনের ভ্রমণ শ্রেণী বিজনেস ক্লাস ও ইকোনমি ক্লাস রয়েছে, কিন্তু ছোট এবং স্বল্পপরিসর বিমানগুলোতে শুধুমাত্র ইকোনমি ক্লাস সেবা প্রদান করা হয়। বিমানের বেশিরভাগ বিমানগুলিতে একটি দ্বি-শ্রেণীর পরিসেবায় (জে এবং ওয়াই) পরিচালিত হয়। বিমানের বোয়িং ৭৭৭ বিজনেস ক্লাসের কেবিনের আসনব্যবস্থা ২-৩-২ বিন্যাসে সাজানো হয়েছে, অন্যদিকে ইকোনমি ক্লাসের কেবিন ৩-৩-৩ বিন্যাসে সাজানো। সংকীর্ণ বডির বোয়িং ৭৩৭-৮০০-এর বিজনেস ক্লাস ২-২ বিন্যাসে সাজানো হয়েছে, অন্যদিকে ইকোনমি ক্লাসের কেবিন ৩-৩ বিন্যাসে সাজানো। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বিমানবন্দর এবং হোটেল লাউঞ্জে প্রবেশাধিকার রয়েছে। এয়ারবাস এ৩১০ ঘরানার বিমানগুলোতে মসলিন এক্সিকিউটিভ শ্রেনীর আসন ২-৩-২ বিন্যাসে সাজানো, অপরদিকে ম্যাকডনাল ডগলাস ডিসি ১০-৩০ বিমানগুলোতে যাত্রীদের আরও বেশি জায়গা দিয়ে ২-২-২ বিন্যাসে সাজানো। অন্যান্য ইকোনমি ক্লাসে সচরাচর আসনগুলো ২-৫-২ বিন্যাসে সাজানো থাকে।
ফ্লাইটের আভ্যন্তরীণ সুবিধা
বিমান তাদের ফ্লাইটের অভ্যন্তরে সরবরাহকৃত ম্যাগাজিনটি ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বর বিহঙ্গ নামে সাবকন্টিনেন্টাল মিডিয়া গ্রুপ থেকে পুনরায় প্রকাশ করছে। দ্বি-মাসিক ম্যাগাজিনটি পূর্বে দিগন্ত নামে পরিচিত ছিল এবং তারও আগে এটি যাত্রী নামে প্রকাশিত হত। ম্যাগাজিনটি বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় প্রকাশিত হয়, যেটি মুলত বাংলাদেশ ও বিমানের গন্তব্য বিষয়ক তথ্যাদি সরবরাহ করে। বিমানে বিজনেস ক্লাসে বাংলা ও ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র সরবরাহ করা হয়। বিমান ২০১৪ সালের মার্চে, বিমান বুটিক নামে ইন-ফ্লাইট শুল্ক-মুক্ত বিক্রয়প্রদর্শণী চালু করে। শুল্ক-মুক্ত পণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে আতর, প্রসাধনী, অলঙ্কার, ঘড়ি, শিশুদের উপহার, চকোলেট, তামাক ইত্যাদি। ২০১৪ সালে বিমান অন-বোর্ডে বাচ্চাদের জন্য রঙিন বই, স্টেশনারি, পুতুল এবং জিগস পাজলের ব্যবস্থা চালু করে। বিমান সাধারণত তাদের ইকোনমিক ক্লাসের ফ্লাইটে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় সরবরাহ করে না, তবে বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন লাউঞ্জে প্রবেশাধিকার দেয়া হয়।
ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-১০-৩০ বিমানগুলির প্রত্যেকটি কেবিনে প্রজেক্টরের সাহায্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে, অপরদিকে এয়ারবাস এ৩১০ বিমানে ছাদের লাগেজ রেকে ঝুলন্ত মনিটরের ব্যবস্থা আছে। তবে আধুনিক বোয়িং ৭৭৭ এবং বোয়িং ৭৮৭ বিমানগুলোতে যাত্রীদের ইন-ফ্লাইট বিনোদনের সুবিধার্থে ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য প্রতিটি আসনের পেছনে এলসিডি মনিটর যুক্ত রয়েছে। প্রতিটি আসনে একটি করে ব্যক্তিগত টাচ স্ক্রিন প্রদর্শন যুক্ত থাকে। পুরাতন বিমানগুলোর ক্ষেত্রে উৎপাদনের সময় এগুলোতে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা ছিলো বাংলাদেশ বিমান সেগুলোই অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও এই প্রদর্শনটিতে উচ্চ রেজোলিউশনে বিমানের চলমান মানচিত্র এবং সরাসরি ফ্লাইটের তথ্য জানানো হয়। এগুলি ইংরেজি এবং বাংলা দুটি ভাষায় উপলভ্য।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিমানের বহরে সদ্য যুক্ত হওয়া বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার বহরে বেশিরভাগ নতুন বিমানগুলিতে ইন্টারনেট, ওয়াইফাই, মোবাইল টেলিফোনি, মুভি স্ট্রিমিং এবং লাইভ টিভি স্ট্রিমিং সেবা চালু করেছে। এই সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে পঁচিশটি উপগ্রহ স্থাপন করা হয়েছিল। প্যানাসোনিক এভিওনিক্সের টাচ স্ক্রিন সহ নতুন প্যানাসোনিক ইএক্সথ্রি সিট-ব্যাক মনিটরগুলি যাত্রীদের এক শতাধিক অন-ডিমান্ড চলচ্চিত্র, সঙ্গীত এবং ভিডিও গেম সরবরাহ করে। অন-বোর্ড টাচ স্ক্রিন থ্রিডি রুট-ম্যাপ, বিমানের সর্বশেষতম সংযোজন। যেখানে বিমান উড্ডয়নকালীন সময়ে অতিক্রমকারী অঞ্চলগুলির বিভিন্ন কাঠামো প্রদর্শন করা হয়। ২০১৭ সালের মার্চ থেকে বিমান তাদের ফ্লাইটগুলিতে ডায়াবেটিস এবং শিশুদের খাবারের প্যাকেজ সহ নতুন-বৈচিত্র্যযুক্ত খাবার এবং পানীয় বিকল্প সরবরাহ করতে শুরু করেছে, যা প্রতি তিন মাস অন্তর পর্যালোচনার মাধ্যমে হালনাগাদ করা হয়। অন-বোর্ডে বিমানের ফ্লাইটে হালাল খাবার পরিবেশন করা হয় এবং বিজনেস ক্লাসে, লা কার্টে মেনু সরবহার হরা হয়।
ফ্রিকুয়েন্ট-ফ্লায়ার প্রোগ্রাম
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০১৩ সালের নভেম্বরে, বিমান লয়্যালিটি ক্লাব নামে ফ্রিকুয়েন্ট-ফ্লায়ার প্রোগ্রাম চালু করে। এটি গ্রাহকদের বিমানবন্দরে টায়ার্ড বেনিফিট, মাইলেজ বোনাস, অতিরিক্ত ব্যাগেজ, লাউঞ্জ প্রবেশাধিকার এবং চেক-ইন সুবিধার মতো বিভিন্ন পুরস্কার সেবা প্রদান করে। জুলাই ২০১৪ সালের হিসাবে বিমানের ফ্রিকুয়েন্ট-ফ্লায়ার প্রোগ্রামে চার হাজার সদস্য ছিল। ক্লাবটিতে গোল্ড, সিলভার, গ্রিন- এই তিন ধরনের সদস্যতা চালু রয়েছে। ২০১৭ সালে ক্লাবের অধীনে মানবিক রোবট সোফিয়াকে গোল্ড কার্ড প্রদানের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীর সদস্যতা প্রদান করে।
টিকেটিং
২০০৭ সালে. আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইএটিএ) নির্ধারিত ই-টিকেটিং নিয়ম প্রবর্তন করায় বিমান এমাডিউস নামক কোম্পানির সাথে চুক্তি করে। আইএটিএ-এর সদস্যদের জন্য এই ই-টিকেটিং নিয়ম চালু করার শেষ সময় ছিল ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭। ই-টিকিটিং সুবিধা যাত্রীদের জন্য হারানো টিকিটের চাপ এবং ব্যয় হ্রাস করার নিশ্চয়তা দেয়। আইএটিএ-এর সদস্য হওয়া সত্বেও বিমান এই সময়সীমার মধ্যে ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করে নি। এর অন্যতম কারণ ছিল এমাডিউসের স্থানীয় অফিস, ২০০৫ সালে আদালত কর্তৃক মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ায় এর সকল কর্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছিল। যদিও মাসখানেকের মধ্যেই উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে তারা কার্যক্রমে ফিরে আসে। পূর্বে ২০১৩ সালে, বিমান জার্মান ই-টিকিটিং সংস্থা হহন এয়ারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, যার ফলে বিশ্বের যে কোনও স্থান থেকে বিমানের টিকিট ক্রয় করার সুযোগ রয়েছে।
পণ্য পরিবহন
যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি বিমান বাংলাদেশ, যাত্রীবাহী বিমানগুলোর মালামাল রাখার জায়গা ব্যবহার করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে পৌছানোর কাজও করে থাকে। এই সুবিধার্থে বিমান বাংলাদেশ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি কার্গো ভিলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে বিদেশে পাঠানোর পূর্বে মালামাল মোড়কিকরণ এবং লেবেলযুক্ত করার কাজ করা হয়। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে বিমান বাংলাদেশ মালামাল পরিবহনে ১৬.৫% প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, যেখানে অন্যান্য মালবাহী বিমান পরিচালনা সংস্থা যেমন বিসমিল্লাহ এয়ারলাইন্স, বেষ্ট এভিয়েশন, এয়ার বাংলাদেশ সহ অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলো একই অর্থবছরে ১০৮% প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। তা সত্বেও পণ্য পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থানে ছিল। এই বেসরকারি সংস্থাগুলো পণ্য পরিবহন পরিসেবার বাজার ১০.৬% বৃদ্ধি করতে সক্ষয় হয়। মোট ৯৯,০০০ টন পণ্যের মধ্যে ৪৭% মালামাল বিদেশি বিমান পরিবহন সংস্থা, ২৪% বেসরকারি সংস্থা এবং বিমান মাত্র ২৯% মালামাল পরিবহন করেছিল। যাত্রীসেবার পাশাপাশি, পণ্য পরিবহনেও বিমানে বাংলাদেশ দূর্নিতিতে জড়িত হয়েছিল। ২০০৪ সালের এক তদন্ত প্রতিবেদন জানা যায় মধ্যপ্রাচ্যে বিমানের পণ্য পরিবহন পরিসেবায় বাংলাদেশ সরকার প্রায় মিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারিয়েছে।
২০১৮ সালের মার্চে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ইউরোপের সমস্ত গন্তব্যে সরাসরি কার্গো বিমানের অনুমতি লাভের মাধ্যমে ইউরোপিয় ইউনিয়নের কাছ থেকে এসিসি৩ ও আরএ-৩ (তৃতীয় দেশের জন্য নিয়ন্ত্রক এজেন্ট) শংসাপত্র লাভ করে। এসিসি৩ বলতে কোনো তৃতীয় দেশের বিমানবন্দর থেকে ইউরোপগামী এয়ার কার্গো বা মেল ক্যারিয়ার বোঝায়। বাংলাদেশ সরকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নত করার পরে বিস্ফোরক সনাক্তকরণ ব্যবস্থা (ইডিএস), বিস্ফোরক সনাক্তকরণ কুকুর (ইডিডি) এবং বিস্ফোরক ট্রেস সনাক্তকরণ (ইডিটি) মেশিন স্থাপন সহ এর সুরক্ষা উন্নয়নের পরে এই শংসাপত্রগুলি লাভ করেছিল। সুরক্ষার মান উন্নত করার পর বিমান কার্গো ভিলেজ এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একই সাথে এসিসি৩ এবং আরএ-৩ শংসাপত্র অর্জন করে। পাশাপাশি ইউরোপযুক্ত কার্গো ভাড়ার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি আরএ-৩ কমপ্লায়েন্ট গুদাম তৈরি করা হয়েছিল যেখানে বিমান বাংলাদেশে কর্মী ব্যতীত সকলের প্রবেশাধীর নিষেধাজ্ঞা জার করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ মোবাইল অ্যাপ
২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর, দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মোবাইল অ্যাপ উদ্ধোধন করেছিলেন। তিনি এছাড়াও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার পাশাপাশি বিমানের সোনার তরী এবং আচিন পাখির নামে নতুন দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার সংযোজন উদ্বোধন করেন। মোবাইল অ্যাপটি বিশ্বজুড়ে গ্রাহকদের ব্যবহারের জন্য বিনামূল্য উপলভ্য।
গন্তব্যসমূহ
বিমান ২৫টি গন্তব্যে সেবা প্রদান করছে, যার মধ্যে ১৭টি আন্তর্জাতিক। যদিও ভবিষ্যতে আরও ৪৩টি দেশে গন্তব্য সম্প্রসারণের জন্য বিমান বাংলাদেশের পরিসেবা চুক্তি রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৬ টি শহরে ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এরমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি গন্তব্য, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি গন্তব্য এবং ইউরোপের লন্ডন এবং ম্যানচেস্টারে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বিমান। এশিয়া ও ইউরোপে চলাচলকারী রুটসমূহের মধ্যে রয়েছে- লন্ডন, ম্যানচেস্টার, রোম, মিলান, কুয়েত, দোহা, কুয়ালালামপুর, কোলকাতা, দিল্লি, কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, হংকং ইত্যাদি। বিমান ম্যানচেস্টার হয়ে চীনের গুয়াংজু, নিউ ইয়র্ক এবং টরন্টোতে গন্তব্য চালু করার ঘোষণা করেছে।
ক্রমেই বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো বিমানের পূর্বের লাভজনক গন্তব্যগুলি দখল করে নিচ্ছে। যেমন ঢাকা-লন্ডন রুটে যেখানে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও বিমান বাংলাদেশের একছত্র আধিপত্য ছিল সেখানে এমিরেটস ও এয়ার ইন্ডিয়া সহ অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলো এই রুটটিকে লাভজনক রুট হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিমান বাংলাদেশের এই বিমান স্বল্পতা ও অব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগিয়ে ব্রিটেন প্রবাসীদের ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও রয়েল বেঙ্গল এয়ারলাইন্স সহ অন্যান্য বিমান সংস্থাগুলো সিলেট-লন্ডন রুটে বিমান পরিবহন সেবা প্রদান করার পরিকল্পনা খতিয়ে দেখছে।
নিউ ইয়র্ক ও ম্যানচেষ্টার
পর্যন্ত, বিমানের স্বল্পতার এবং বিশেষত মার্কিন বিমান সংস্থা নিয়ন্ত্রকের (এফএএ) বেপরোয়া ও অযৌক্তিক কর্মের কারণে বাংলাদেশ বিমানের নিউ ইয়র্কের ফ্লাইটগুলি স্থগিত রয়েছে। ১৯৯৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ ব্রাসেলস হয়ে নিউ ইয়র্কের জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যেবা প্রদান করে। এই ঢাকা- নিউ ইয়র্ক রুটটি বিমানের সবচেয়ে সম্মানজনক রুট হিসাবে বিবেচিত হওয়ায় এবং বিমানের স্বল্পতা ও ক্রমবর্ধমান ক্ষতির সম্মুখিন হওয়া সত্বেও জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের ল্যান্ডিং স্লট ধরে রাখার জন্য বিমান অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যায়। কারণ একবার ল্যান্ডিং স্লট বাতিল হলে তা পূনরুদ্ধার করা দূরহ ছিল। ক্ষতির পরিমাণ কমাবার লক্ষে এবং ব্রিটেনের উত্তরে ম্যানচেষ্টারে বসবাসরত বাংলাদেশিদের চাহিদা পূরনের লক্ষে বিমান তাদের ফ্লাইট সপ্তাহে একটিতে কমিয়ে আনার পাশাপাশি নিউ ইয়র্ক যাওয়া এবং আসার পথে ম্যানচেষ্টারে যাত্রাবিরতী দেওয়ার পরীকল্পনা করে। ৮ এপ্রিল ২০০৬ সালে নিউ ইয়র্ক যাবার পথে বিমান সর্বপ্রথম ম্যানচেষ্টার বিমানবন্দরে অবতরন করে। যদিও এর আগে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তাদের আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সুরক্ষা মূল্যায়ন কর্মসূচি অনুসারে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার মান পূরণ না করায় বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর সংস্থা হিসেবে তুলিকাভুক্ত করেছিল। দ্বিতীয় শ্রেনীর সিভিল এভিয়েশন-এর অন্তর্ভুক্ত বিমান সংস্থাগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবন্দরগুলোতে অবতরন করতে কিছু বাধ্যবাধকতা সম্মুখিন হতে হয়। এই বাধ্যবাধকতা সত্বেও বিমান নিউ ইয়র্কে সেবা কার্যক্রম চালু রাখতে সক্ষম হয়েছিল কিন্তু ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো ও নতুন ল্যান্ডিং স্লট পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পরেছিল। দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত বিমান সংস্থাগুলো অন্তত দুই বছরের জন্য তাদের নির্ধারিত সময়সূচী এবং গন্তব্যে কোন ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে না। কিন্তু বিমান বাংলাদেশ নিউ ইয়র্ক-ঢাকা ফ্লাইটটি ব্রাসেল্সে ট্রানজিট না দিয়ে সেটি ম্যানচেষ্টারে ট্রানিজিট দেওয়ার মাধ্যমে নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য বিমানকে জরিমানা করে। ফলে বিমান ম্যানচেষ্টারে ট্রানজিট বাতিল করে পুনরায় ব্রাসেল্সে ট্রানজিট চালু করে।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিমান বাংলাদেশকে তাদের ডিসি ১০ বিমানগুলি ২০০৫ সালের মধ্যে পরিবর্তন করার ব্যাপারে সতর্ক করে কারণ বিমানটি পুরানো হওয়ায় এতে ত্রুটির সম্ভাবনা থাকায় আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার মত যথেষ্ট সুরক্ষিত নয়। ২০০৬ সালের ১৩ মে ডিসি ১০ বিমানের নিরাপত্তা জনিত কারণে এফএএ বিমানের বিজি০০১ (ঢাকা–ব্রাসেল্স–জেএফকে) ফ্লাইট নিউ ইয়র্কের আকাশসীমায় প্রবেশের অনুমতি দেয় নি। পরে বিমানটি কানাডার মন্ট্রিয়ল-পিয়ের ইলিয়ট ট্রুডু আন্তর্জাতিক বিমনবন্দরে অবতরন করে এবং এর যাত্রীরা অন্য একটি বিমানে তাদের গন্তব্যে পৌছায়। কানাডীয় বিমান প্রশানন বিমানটিকে পর্যবেক্ষণ করে কোন ত্রুটিহীন মন্তব্য করলে এফএএ পরবর্তীকালে দুঃখ প্রকাশ করে জানায় যে এটি তাদের ভুল ছিল। সেবার কানাডা থেকে বিমানটি কোন যাত্রী না নিয়েই ঢাকা ফিরে আসে। এই ঘটনার পর থেকেই পুরাতন হয়ে যাওয়া এই ডিসি ১০ বিমান এবং প্রতি যাত্রায় প্রায় ডলার লোকসান করতে থাকা এই রুটটি বিমান বন্ধ করে দেয়। এই বিমানটিকে অন্যান্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক রুটে চালিয়ে বিমান তার অব্যাহত লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। তবে ২০০৭ সালে, সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিমানের নিউ ইয়র্ক রুটটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করা হয়। এর পূর্বে জন এফ. কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট পূনর্বহাল করার জন্য ২০০৮ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেধে দেয়, এবং এই সময়ের পরে স্থায়ীভাবে বিমানের অবতরন সময়সূচী বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ক্ষতির সম্মুখিন হওয়া সত্বেও গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় যুক্তরাজ্য সরকারের সাথে একটি চুক্তি পূনর্বিবেচনা করে, বিমান ২০১০ সালে ভাড়ায় আনা একটি বোয়িং ৭৮৭-৯ বিমান দিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বিমান পুনরায় সপ্তাহে তিনবার সরাসরি ঢাকা-ম্যানচেস্টার-নিউ ইয়র্ক ফ্লাইট চালু করার পরিকল্পনা করে।
লন্ডন
১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বিমান বোয়িং ৭০৭ ব্যবহার করে লন্ডনে সাপ্তাহিক ফ্লাইটের মাধ্যমে প্রথম আন্তর্জাতিক সেবা চালু করে। ২০২০ সালের জানুয়ারি অনুযায়ী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে সরাসরি উড়ে যায়। নতুন কেনা বোয়িং ৭৭৭ বিমান ব্যবহার করে সপ্তাহে দুটি যাত্রী ও দুটি কার্গো পরিবহন চালু করে। নতুন পরিচালনার অধীনে, বিমান বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে সময়ানুবর্তিতার পাশাপাশি অন-টাইম ফ্লাইটের কার্যকারিতাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। অনিয়ন্ত্রিত সময়সূচীর জন্য পূর্বে ২০০৭ সালে বিমান লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দর ও দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সহ অন্যান্য বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো থেকে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়। ২০০৭ সালের গ্রিষ্মে হিথ্রো বিমানবন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা বিএএ বিমানকে প্রমাণসহ একটি চিঠি দেয় যাতে উল্লেখ ছিল যে বিমান ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বরাদ্দকৃত সময়সূচীতে হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরন করে নি যা আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশনের নিয়মানুযায়ী বাধ্যতামূলক। এবং পরবর্তী গ্রীষ্মে যদি বিমান লন্ডনে পরিসেবা চালু রাখতে চায় তাহলে হিথ্রো বিমানবন্দরের আশা ছেড়ে দিয়ে স্ট্যান্সড বা গেটউইক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। পরবর্তী বছর বিএএ এর সাথে অলোচনায় বিমান এই মর্মে আশ্বস্ত করে যে এটি বরাদ্দকৃ অবতরন সময়সূচীর অন্তত পক্ষে ৮০% ব্যবহার করবে। ফলে ২০০৮ সালে বিমান লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরনের অনুমতি পায়। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিমানের একটি ডিসি-১০ দিয়ে পরিচালিত ঢাকা-লন্ডন সরাসরি সেবার একটি বিমান হিথ্রো বিমানবন্দরে তার নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পর পৌছালে বিমানটিকে হিথ্রোতে অবতরন করার অনুমতি না দিয়ে জ্বালানী ভরার জন্য গেটউইক বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বরে দ্য টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে হিথ্রো বিমানবন্দরের সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিমান সংস্থা হিসেবে আক্ষা দেওয়া হয় যার প্রত্তেকটি বিমানে প্রায় তিন ঘণ্টা করে দেরি হয়। ২০০৮ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং সময়সূচি না মানার কারণে এর কর্মীদের বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণ না করার সতর্কতা জারি করে। তাসত্বেও যারা বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণ করেছে তারা নিজ দায়িত্বে ভ্রমণ করেছে এবং তাদের বীমার টাকা দাবি করতে পারে নি। বাংলাদেশ বিমানের নুতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান ২০০৮ সালের এই ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানতেন না। তিনি আরও যোগ করেন যে সে সময় বিমান সময়সূচী মেনে চলতে হিমশিম খাচ্ছিল এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে।
হজ্জ্ব ফ্লাইট
বাংলাদেশের হাজার হাজার মুসলিম প্রতি বছর হজ্জ পালন করতে মক্কায় যান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একমাত্র বাংলাদেশি বিমান সংস্থা যা জেদ্দার বাদশাহ আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি বছর হজ্জ্বযাত্রী পরীবহন করে। বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ যেমন প্রধানমন্ত্রী বা বিমান মন্ত্রী প্রতি বছর এই হজ্জ্ব ফ্লাইটের উদ্বোধন করে থাকেন।
বাংলাদেশ সরকার ২০০২ সালে একবার বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর জন্য এই পরিসেবা উন্মুক্ত করেছিল। এয়ার বাংলাদেশ হল সর্বপ্রথম বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা যারা হজ্জ্ব ফ্লাইট পরিচালনা করে। কিন্তু বেসরকারি এই বিমান সংস্থা সেই বছর বিবিন্ন যাত্রায় প্রায় সর্বোচ্চ নয় দিন পর্যন্ত বিলম্ব করায় পুনরায় বিমান বাংলাদেশ একচ্ছত্র আধিপত্যে ফিরে যায়।
বিমানের হজ্জ্ব ফ্লাইটগুলো আজ পর্যন্ত কখনই ঝামেলামুক্ত ছিল না। ২০০৫ সালে হজ্জ্ব ফ্লাইটের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া ধার্য করার অভিযোগে তৎকালীন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। ২০০৬ সালে বর্ধিত চাহিদার কথা বিবেচনা করে বিমান বাংলাদেশের সমস্ত হজ্জ্ব ফ্লাইট থেকে প্রথম শ্রেণী সরিয়ে নেয়ার মত নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেয়। অপরদিকে হজ্জ্ব এজেন্সিগুলো নিয়মনীতি মেনে না চলার জন্য হজ্জ্বযাত্রীদের ভিসা প্রাপ্তি বিলম্ব হলে বিমান বাংলাদেশকে প্রায় ১৯টি যাত্রা বাতিল করতে হয়। আবার এই ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার অবসান হওয়ার পর বিমান বাংলাদেশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই অতিরীক্ত যাত্রীর জন্য অতিরীক্ত বিমান যোগাড় করতে ব্যার্থ হয়।
২০০৭ সালে বিমানের হজ্জ্ব ফ্লাইটের সমস্যা সমাধানের জন্য সাবেক তত্বাবধায়ক সরকার তিন বছর মেয়াদী পরীকল্পনা গ্রহণ করে। এই পরীকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের অন্য দুটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেও হজ্জ্ব ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয়। বিমান বাংলাদেশ হজ্জ্ব ফ্লাইট পরীচালনার জন্য ফুকেট এয়ার থেকে দুটি বিমান লিজ নেয়। ফুকেট এয়ারকে চুক্তি অনুযায়ী ১০% অগ্রিম দেওয়ার কথা থাকলেও তারা ৩০% অগ্রিম দাবি করে বসলে ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে এই চুক্তি শেষ হয়ে যায়। ফুকেট এয়ারের জায়গা পূরণ করতে একটি রি-টেন্ডারের মাধ্যমে অষ্ট্রেলিয়ার আসবান এরোনেটিক্সকে পরবর্তীতে নির্বাচন করা হয়। ২০০৮ সালে বিমান সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্লাইট পরিচালনা করতে নাইজেরিয়ার কাবো এয়ার থেকে একটি ৫৪২-সিটের বোয়িং ৭৪৭-২০০ ইজারা নিয়েছিল। ওরিয়েন্ট থাই এয়ারলাইন্স থেকে আরও একটি ৫১২-সিটের বোয়িং ৭৪৭-৩০০ ইজারা নেওয়া হয়েছিল। ২০১২ সালের আগস্ট মাসেও বিমান হজ্ব ফ্লাইট নিয়ে একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়। ২০১৩ সালে হজ্ব ফ্লাইটগুলো কিছুটা বিলম্বিত হলেও অন্যান্য বছরের তুলনায় যাত্রীদের দূর্ভোগ কিছুটা কমই হয়েছে। , বিমান তাদের নির্ধারিত পরিসেবাগুলি সরবরাহ করতে অসুবিধার সম্মুক্ষিণ হয়েছিল, কারণ ক্যারিয়ার হজ মৌসুমে জেদ্দায় হজযাত্রীদের যাতায়াতকে বিমানে অগ্রাধিকার দিয়েছিল ফলে হজ্ব ফ্লাইট সময়সূচী ঠিক রাখতে গিয়ে অন্যান্য গন্তব্যসমূহে অনিয়মিত হয়ে পরে। তা সত্বেও বিমান হজ্ব ফ্লাইট পরিচালনা করে প্রায় একশ কোটি টাকা লাভও করে যা ১৯৭৩ সালের পর বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এছাড়া ২০১৪ সালের হজ্ব ফ্লাইটে আরও দুটি ফ্লাইট যোগ করার কথা জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ।
উড়োজাহাজ বহর
বর্তমান বহর
, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর বহরে নিম্নোক্ত বিমানসমূহ রয়েছে:
বহরের ইতিহাস
১৯৭২–২০০০
একটি পুরাতন দগলাস ডাকোটা এবং ডিসি-৩ বিমান দিয়ে বিমান বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়। ঢাকা থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামের স্থানীয় রুটগুলো শুরু হয় চারটি ফকার ফকার এফ২৭ বিমান অধিগ্রহণের মধ্যমে। অপরদিকে ব্রিটিশ ক্যালিডোনিয়ান থেকে একটি বোয়িং ৭০৭ চাটার্ড বিমান আনার পর বিমানের আন্তর্জাতিক পরিসেবা শুরু হয়। ১৯৮৩ সালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স থেকে তিনটি ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-১০-৩০ বিমান ক্রয়ের মাধ্যমে লম্বা দূরত্বের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো চুলু করা সম্ভব হয়। ৪০,০০,০০০ মার্কিন ডলার (২০১৯ সালে ৪২,৫০২,০১৩ ডলারের সমতুল্য) চুক্তিতে ১৯৮৯ সালের শেষদিকে তিনটি ব্রিটিশ এরোস্পেস এটিপি অর্ডার করা হয়েছিল। এই এটিপিগুলি ১৯৯০ সালের শেষদিকে ফকার এফ-২৭ বিমানগুলির মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়।
১৯৯০ সালের মধ্যভাগে বিমান তার লম্বা দুরত্বের রুটগুলির জন্যে এয়ারবাস সিরিজের বিমানগুলির প্রতি নজর দেয়। ১৯৯৫ সালে, দুটি পিডব্লিউ ৪০০০ চালিত এয়ারবাস রএ৩১০-৩০০-এর আদেশ দেওয়া হয়েছিল; যার মধ্যে প্রথমটি সালে বহরে যুক্ত হয়েছিল। তবুও বিমান তাদের প্রবীণ ডিসি–১০ বিমানগুলি ব্যবহার অব্যহত রাখে। প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ডিসি ১০-৩০ বিমানগুলো কোনপ্রকার উল্লেখযোগ্য যান্ত্রিক গোলোযোগ ছাড়াই বিমান বাংলাদেশের একমাত্র সুপরিসর বিমান হিসেবে ভালভাবেই সেবা দিয়েছে। এই বিমানগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্তর্জাতিক সেবা প্রদানের কাজে ব্যবহার করা হত। অন্যদিকে ঘরোয়া রুটগুলোতে ফকার এফ২৭ এবং বিএ এটিপি বিমানগুলো ব্যবহার করা হত যেগুলো প্রায়শই যান্ত্রিক গোলোযোগের শিকার হয়ে পরে থাকত। একবার বাংলাদেশ সরকারের এক মন্ত্রী বিমানে চড়ে যখন জানতে পারলেন যে তিনি যে বিমানটিতে চড়েছেন সেটি ব্রিটিশ এরোস্পেস এটিপি বিমান তখন তিনি তার বিমান যাত্রা বাতিল করে সড়কপথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে বিমান দুটি বোয়িং ৭৩৭-৩০০ ইজারা নিয়েছিল যা আঠার মাসের জন্য আভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক রুটে ব্যবহৃত হয়েছিল।
ম্যাকডোনেল ডগলাস ডিসি-১০এস এবং এয়ারবাস এ৩১০-৩০০ ২০১১ সালে আধুনিক বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর বহরে যুক্ত হবার আগে বিমানের বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক রুটে সেবা দিত। ২০১২ সালে অবসর নেওয়ার পূর্বে, ফকর এফ২৮ দেশীয় এবং আঞ্চলিক রুটগুলির জন্য বহরের অবশিষ্ট অংশ ছিল। বিমানের বহরে দ্বিতীয় সর্বশেষ ডগলাস ডিসি–১০ বিমান যার উৎপাদন (এল/এন ৪৪৫) বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৯৯৬ সালে বিমানের দুটি নতুন এয়ারবাস এ৩১০ কেনার পরে তিনটি এয়ারবাস এ৩১০–৩০০ তৈরি করা হয়েছিল। বিমান বাংলাদেশের সর্বশেষ ক্রয়কৃত বিমানটি থাইল্যান্ডের পিবিএয়ার থেকে কেনা। ১৯৯৭ সালে তৈরি এই ফকার এফ২৮-৪০০০এস বিমানটি ২০০৪ সালে ২.৯১ নিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে কেনা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে নির্মিত বিমান দুটি বিমানের সর্বশেষ অধিগ্রহণকৃত ও বহরের সবচেয়ে পুরানো বিমান হওয়া সত্বেও বিমানটি বর্তমান বহরের মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন। এই পুরাতন হয়ে যাওয়া বিমানগুলোর কারণে অধিকাংশ সময়ই বিমান বাংলাদেশ এর বিমানের সময়সূচী বজায় রাখতে হিমশিম খায়। পুরাতন যামানার বিমানগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এগুলোর অনেক বেশি রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজন হয় এবং উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এর খুচরা যাওন্ত্রপাতি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পরে। এই বিমানগুলি কখনই লম্বা দূরত্বের রুটে ডিসি ১০ বিমানগুলির জায়গা দখল করতে পারে নি যদিও ডিসি ১০ বিমান বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তা জনিত কারণে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল। ডিসি–১০ বিমানগুলির জন্য তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি জার্মান কোম্পানির সাথে তিন বছরের চুক্তি ২০১২ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। বিমান সবসময় এর ফকার এফ২৭, ডিসি-১০-৩০ এবং এয়ারবাস এ৩১০-৩০০ বিমানগুলোর রক্ষনাবেক্ষণ সহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করে থাকে।
২০০০-এর দশক
২০০০ সালে, বিমান তাদের ডিসি-১০ বিমানগুলোকে প্রতিস্থাপন করার জন্য মোট চারটি সুপরিসর বিমান অধিগ্রহণ করার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিলেও বেসরকারিকরণ সহ সকল প্রস্তাব ফাইলবন্দি হয়ে পরে থাকে। ২০০৫ সালে আরেকটি প্রস্তাবে বিমান এয়ারবাস এবং বোয়িং কোম্পানির দশটি সুপরিসর বিমান কেনার আগ্রহ দেখায় যার মূল্য ছিল প্রায় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বোয়িং এই ক্রয় প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকারের নিশ্চয়তা প্রদান সাপেক্ষে অর্থায়নের অগ্রহ প্রকাশ করে। তবে আমলাতান্ত্রিক সময়ক্ষেপণ এবং সরকারের প্রতিশ্রুতির অভাবে বোয়িং এই প্রস্তাবে অগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং প্রস্তাবটি বাতিল করে। স্বল্প দূরত্বের এবং ছোট বিমান কেনার আরও একটি প্রস্তাবও একই কারণে ঝুলে থাকে। সালে, দুটি এয়ারবাস এ৩১০-৩০০ এবং দুটি এয়ারবাস এ৩০০-৬০০ বিমান ভাড়া নেওয়ার জন্য বিমান একটি টেন্ডার আহ্বান করে। এই টেন্ডারে একমাত্র অংশগ্রহণকারী ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক স্টার এভিয়েশন।
পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার পর বিমান বাংলাদেশের পুরাতন বিমানগুলোকে নতুন প্রজন্মের বিমানের মাধ্যমে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করে। এরই অংশ হিসেবে ২০০৭ সালের নভেম্বরে বোয়িং কোম্পানিকে চারটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ এবং চারটি বোয়িং বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান যথাক্রমে ২০১৩ এবং ২০১৭ সালে সরবরাহ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই বিমানগুলোর গড় সর্বনিম্ন দর ছিল মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সময়ে এয়ারবাস কোম্পানি বিমানকে বোয়িংয়ের চেয়ে সস্তা দরে তাদের এয়ারবাস এ৩২০ অথবা এয়ারবাস এ৩৩০ সিরিজের বিমান সরবরাহ করার প্রস্তাব দেয়। অপরদিকে বিমান বাংলাদেশের সাম্প্রতিক দৈনন্দিন সময়সূচী পালনের জন্য ২০০৮ সালে ক্রয়ের সুবিধা সহ পুরাতন এয়ারবাস এ৩১০-৩০০ বিমান ভাড়ার দরপত্র আহ্বান করে।
২০০৮ সালের মার্চে বিমানের পরিচালনা পর্ষদ বিলিয়ন ব্যয়ে বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেন্স থেকে আটটি নতুন প্রজন্মের সুপরিসর বিমান কেনার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। এগুলির মধ্যে প্রথম চারটি বিমান হল বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর (প্রত্তেকটির গড় মূল্য মিলিয়ন), এবং ২৯৪ সিটের চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার (প্রত্তেকটির গড় মূল্য মিলিয়ন), যেগুলি ২০১৭ সালে সরবাহ করা কথা ছিল। ২০০৮ সালের এপ্রিলে বিমান বোয়িংয়ের সাথে এই আটটি বিমানের অধিগ্রহণের চুক্তি সই করেছিল। এছাড়াও বিমান মিলিয়ন প্রাথমিক কিস্তি পরিশোধ সাপেক্ষে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ কেনার জন্য সমঝোতা স্মারক অন্তর্ভুক্ত করেছে, যেগুলি ২০১৫ সালে বহরে যুক্ত হবার কথা ছিল। বাকি অর্থ যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এক্সিম ব্যাংক ৮৫% এবং বাকী অংশ স্থানীয় বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো অর্থায়ন করবে। এই চুক্তির কিছুদিন পরেই বিমান বাংলাদেশ বোয়িংয়ে সাথে আভ্যন্তরীণ রুটগুলো পরিচালনার জন্য আরও চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান কেনার চুক্তি করে এবং এ ধরনের আরও দুটি বিমানের বিকল্প নির্বাচন করে। এই দশটি বিমানের জন্য দরপত্রের মোট মূল্য ছিল প্রায় বিলিয়ন ডলার।
২০১০-এর দশকে
২০১০ সালে, বিমান ইউরো আটলান্টিক এয়ারওয়েজের দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর ইজারা নিয়েছিল। ২০১১ সালে প্রথম দুটি নতুন বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর গ্রহণ করার পূর্বে এই বিমানগুলি মূলত অন্তর্বর্তীকালীন সময়কালের জন্য ইউরোপিয় গন্তব্যে যাওয়ার পথে ব্যবহৃত হত। এই দুটি ব্র্যান্ডের নতুন ৭৭৭-৩০০ইআর সরবরাহ প্রাপ্তি সুরক্ষিত করতে বিমান জেপিমারোগান চেজ সংস্থা থেকে দেওয়া প্রাথমিকভাবে মিলিয়ন ডলার ঋণ গ্রহণ করে। একটি নতুন লিভার পরিহিত, ক্যারিয়ার ২০১১ সালের অক্টোবরের শেষদিকে তার প্রথম বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর সরবরাহ গ্রহণ নিয়েছিল। এটি ছিল বোয়িং কর্তৃক সরবরাহকৃত ৭৭৭-৩০০ইআর। বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর সরবরাহকৃত বিমানটিও বহরে যুক্ত হয়। ২০১১ সালের নভেম্বরের শেষদিকে এয়ারলাইন্স এটি দখল করে নেয়। আকাশ প্রদীপ নামে তৃতীয় বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্যারিয়ারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। রাঙ্গা প্রভাত নামে চতুর্থ বিমানটি ২০১৪ সালের মার্চে বহরে যোগ দিয়েছিল। প্রারম্ভিকভাবে বাংলাদেশ সরকার বোয়িংকে ৩৫৬ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করে, যার মধ্যে ২৯০ মিলিয়ন এক্সিম ব্যাংক এবং বাকি অর্থ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক পরিশোধ করে।
২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, কুয়েত একটি স্টপওভার দিয়ে ঢাকা-বার্মিংহাম রুটে সর্বশেষ ফ্লাইট পরিচলনার পর বিমান তাদের ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-১০ বহরের ইতি টানে। একই বছর, ২২-২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্যারিয়ারটি বার্মিংহামে প্রতিদিন তিনটি করে নয়টি পৃথক ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। এরপরে বিমানটি স্ক্র্যাপ হিসাবে বিক্রির জন্য দেওয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালের অক্টোবরে এয়ারবাস এ৩১০-৩০০ পরিসেবা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
২০১৪ সালের মার্চে ক্যারিয়ারটি ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর বিমান ভাড়া নেয়। পরিবহনের রুট সম্প্রসারণের অনুমতি প্রাপ্তির জন্য, বিমান তার বহর ১৬টি বিমানে প্রসারিত করার পরিকল্পনা করেছে। নতুন ইজারা নেয়া ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ বিমানের সাথে ক্যারিয়ারটি ২০১৫ সালের এপ্রিলে, কক্সবাজার, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী এবং বরিশালে পুরোদমে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু করেছিল। স্মার্ট এভিয়েশন কোম্পানির নিকট থেকে পাঁচ বছরের জন্য ইজারা নেওয়া দুটি বিমান কলকাতা ও ইয়াঙ্গুনের আঞ্চলিক ফ্লাইটে চলাচল শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ২০১৩ সালের নভেম্বরে এটি পুনরায় চালু হওয়ার কথা ছিল, তবে বিমানের স্বল্পতার কারণে বিমান এতে ব্যর্থ হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে, ঘোষণা করা হয়েছিল যে বিমান তাদের নিজস্ব তিনটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ সংগ্রহ করবে যা অভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক রুটে চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্মার্ট এভিয়েশন কোম্পানি থেকে ইজিারা নেওয়া বর্তমান বিমান প্রতিস্থাপনের জন্য ব্যবহৃত হবে। ইজিপ্ট এয়ারের নিকট থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর ইজারা নেওয়ার নির্ভরযোগ্যতা সমস্যার কারণে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বিমান ঘোষণা করেছিল যে ইজারা শেষ হওয়ার এক বছর আগেই ২০১৮ সালের মার্চ এবং মে মাসে বিমানটি ফিরে আসবে।
২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের মধ্যে প্রথমটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় এবং এটি ৫ সেপ্টেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক এটি আকাশ বীনা নামকরণ করা হয়েছিল। ড্রিমলাইনার নামের পাশেই, ককপিটের নিচে, পোর্টের পাশে ইংরেজিতে এবং স্টারবোর্ডে বাংলায় নামটি লেখা রয়েছে। ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর, দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি ১৫৩ম ফ্লিট হিসাবে বিমানের বহরে যোগ দেয়, এবং এর সিরিয়াল নম্বর হিসাবে বিজি-২১১২ এর পাশাপাশি বাংলায় "হাংস বলাকা" নামকরণ করা হয়। "রাজ হ্যাংশা" নামে সর্বশেষ বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সালে বিমানের বহরে যোগ দেয়ে।
চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ গ্রহণ করার পরে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ক্রয়ের আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। চীন ভিত্তিক হাইনান এয়ারলাইন্স তাদের ৩০টি ড্রিমলাইনারের অর্ডার বাতিল করার পর বোয়িং কোম্পানি বিমানের নিকট প্রস্তার রাখে এবং পরবর্তী দুইটি ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনারের প্রতিটি মিলিয়ন ডলার দামে বিমানের কাছে বিক্রয়ের জন্য রাজি হয়। এই দুইটি বিমান ২১ ও ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে বিমানের বহরে যুক্ত হয় এবং দুটি বিমানের নাম সোনার তরী এবং অনিন পাখি রাখা হয়।
২০২০-এর দশকে
২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিমান আরও দুটি ড্যাশ-৮ কিউ৪০০এনজি শর্ট বোডি বিমান কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। প্রস্তাবটি করা হয়েছিল মূলত অভ্যন্তরীণ এবং আঞ্চলিক রুটে ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে। এছাড়া, আরও চারটি বোয়িং ৭৮৭-৯ কেনার আলোচনা চলছে যা হাইনান এয়ারলাইন্সের থেকে নেওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে ভিস্তারা থেকে নেয়া হয়। এছাড়া, বিমান অদূর ভবিষ্যতে কার্গো বিমান কেনার ঘোষণা জানায়।
বিমান বাংলাদশের পূর্বোক্তোন বিমানসমূহ
বিমান বাংলাদশের বিমান পরিচালনার ইতিহাসে নিম্নোক্ত বিমানসমুহ ব্যবহার করা হয়েছে:
এয়ারবাস এ৩১০-৩০০
ব্রিটিশ এরোস্পেস এটিপি
বোয়িং ৭০৭-১২০বি
বোয়িং ৭০৭-৩২০
বোয়িং ৭০৭-৩২০বি
বোয়িং ৭০৭-৩২০সি
বোয়িং ৭৩৭-৩০০
বোয়িং ৭৪৭-২০০বি
বোয়িং ৭৪৭-৩০০
বোয়িং ৭৪৭-৩০০এসসিডি
বোয়িং ৭৪৭-৪০০
বোয়িং ৭৭৭-২০০
বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর
ডগলাস ডিসি-৬বি
ডগলাস ডিসি-৮-৪০
ডগলাস ডিসি-৮-৫০
ফকার এফ২৭-২০০
ফকার এফ২৭-৬০০
ফকার এফ২৮-৪০০০
ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-১০-১৫
ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-১০-৩০
ম্যাকডনেল ডগলাস ডিসি-১০-৩০ইআর
ম্যাকডনেল ডগলাস এমডি-৮০
প্রতীক
আধুনিক বাংলায় বিমান শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ভিমান থেকে। প্রাচীন বৈদিক সাহিত্যে ভিমান শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে এমন একটি যন্ত্র বোঝাতে যা উড়তে সক্ষম। বিমানের প্রতীক হিসেবে লেজে লাল বৃত্তের ভিতরে সাদা বলাকা অঙ্কিত চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। প্রতীক নকশা করেছেন চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান। তবে শুরুর দিকে বিমানের নাক থেকে শুরু করে জানালার উপর দিয়ে লেজ পর্যন্ত একটি গাঢ় নীল লাইন বিমান বাংলাদেশের প্রতীক ছিল। এই গাঢ় নীল লাইনটি আশির দশকে পরিবর্তন করে বাংলাদেশের পতাকার সাথে মিলিয়ে লাল ও গাঢ় সবুজ রঙের লাইন ব্যবহার শুরু হয় যা পরবর্তীতে দুই দশক ধরে প্রচলিত ছিল।
২০১০ সালে বিমান বাংলাদেশ একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার ফলে এর সবধরনের প্রতীকেই পরিবর্তন আনা হয়। সেই বছরই টেগুর নকশাকৃত বিমানের নতুন প্রতীক উন্মোচন করা হয় এবং ভাড়ায় আনা বোয়িং ৭৭৭ ও ৭৩৭ বিমানে তা প্রথমবারের মত ব্যবহার করা হয়। তবে সরকার পরিবর্তনের পর বিমান তার পুরোনো প্রতীকে ফিরে যায় কারণ নতুন প্রতিকটি আকর্ষণীয় ছিল না এবং এটি বিমান ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করত না। পরবর্তিতে বিমান ২০১১ সালে পুরাতন প্রতীকের একটি পরিমার্জিত ও আধুনিক রূপ সংযোজন করে যা প্রথম বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর বিমানে প্রদর্শিত হয়। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশের সব বিমান এই নতুন প্রতীক ব্যবহার করছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পূর্ব সদর দফতরের নাম রাখা হয়েছে বলাকা ভবন যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত। বিমান ভবনের সামনে বলাকা নামে একটি বকের ভাস্কর্য রয়েছে। বাংলাদেশী ভাস্কর, মুরাল, পোড়ামাটি এবং ল্যান্ডস্কেপিং শিল্পী মৃণাল হক ভাস্কর্যটির নকশা প্রণয়ন এবং নির্মাণ করেছেন।
দূর্ঘটনা
, এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১২টি দুর্ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যার মধ্যে দুটি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
চিত্রশালা
আরও দেখুন
বাংলাদেশের বিমান পরিবহন সংস্থাসমূহের তালিকা
বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
১৯৭২-এ প্রতিষ্ঠিত
১৯৭২-এ প্রতিষ্ঠিত বিমান পরিবহন সংস্থা
বাংলাদেশের বিমান পরিবহন সংস্থা
রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহন সংস্থা
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
আইএটিএ সদস্য
বাংলাদেশী মার্কা
১৯৭২-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী কোম্পানি
বাংলাদেশের বিমানচালনা | https://en.wikipedia.org/wiki/Biman_Bangladesh_Airlines | Biman Bangladesh Airlines | Biman Bangladesh Airlines (Bengali: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স) commonly known as Biman (pronounced [bee-mah-n]) is the national flag carrier of Bangladesh. With its main hub at Hazrat Shahjalal International Airport in Dhaka, the airline also operates flights from its secondary hubs at Shah Amanat International Airport in Chittagong and as well as Osmani International Airport in Sylhet. The airline provides international passenger and cargo services to multiple destinations and has air service agreements in 42 countries. The headquarters of the airline, Balaka Bhaban, is located in Kurmitola, in the northern part of Dhaka. Annual Hajj flights, transporting tourists, migrants, and non-resident Bangladeshi workers and the activities of its subsidiaries form an integral part of the corporate business of the airline. Bangladesh's air transport sector, which is experiencing an 8% annual growth rate thanks to a large number of outbound tourists, domestic tourists, and non-resident Bangladeshi travelers, is very competitive with stiff competition among a number of private Bangladeshi airlines as well as Biman.: 11
Created in February 1972, Biman enjoyed an internal monopoly in the aviation industry of Bangladesh for 24 years, until 1996. In the decades following its founding, the airline expanded its fleet and destinations but it was adversely affected by corruption and mismanagement. At its peak, Biman operated flights to 29 international destinations, extending from New York City in the west to Tokyo in the east. The airline was wholly owned and managed by the government of Bangladesh until 23 July 2007, when it was transformed into the country's largest public limited company by the Caretaker Government of Bangladesh. Since becoming a public limited company in 2007, the airline has reduced staff and begun to modernize its fleet. The airline had signed a deal with Boeing to buy ten new aircraft along with options for ten more in 2008. After getting delivery of the new planes, Biman expanded its destinations and increased in-flight amenities, especially onboard Internet, WiFi, mobile telephony and live TV streams.
During his visit to Dhaka in September 2023, French President Emmanuel Macron, together with Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina, announced a large order of ten Airbus A350 aircraft for Biman. The Airbus order consists of the purchase by Biman Bangladesh Airlines of two A350F cargo aircraft and eight A350 passenger aircraft. Delivery of the aircraft will be done in stages with two passenger A350 aircraft joining the Biman fleet first. Biman Bangladesh Airlines is certified as safe to fly in Europe by the European Union Aviation Safety Agency. In addition, Biman has also successfully passed the IATA Operational Safety Audit and since then, the airline has resumed flights to some of its previous destinations in Asia and Europe. In recent times, Biman Bangladesh Airlines has seen a marked improvement in punctuality, as well as in on-time flight performance, under its new management team. |
2578 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A6%AF%E0%A6%B0%E0%A6%A4%20%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2%20%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%B0 | হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর | হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (পুরানো নাম: জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত বাংলাদেশের প্রধান এবং সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি ১৯৮০ সালে এর কার্যক্রম শুরু করার পরে, পূর্বের বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছিল তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে এর কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়। এটি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, এয়ার অ্যাস্ট্রা, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সহ বাংলাদেশের সকল এয়ার লাইন্সগুলোর হোম বেস।
১,৯৮১ একর এলাকা বিস্তৃত এই বিমানবন্দর দিয়ে দেশের প্রায় ৫২ শতাংশ আন্তর্জাতিক এবং আভ্যন্তরীন ফ্লাইট উঠা-নামা করে, যেখানে চট্টগ্রামে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রায় ১৭ শতাংশ যাত্রী ব্যবহার করে। এ বিমানবন্দর দিয়ে বার্ষিক প্রায় ৪০ লক্ষ আন্তর্জাতিক ও ১০ লক্ষ অভ্যন্তরীন যাত্রী এবং ১৫০,০০০ টন ডাক ও মালামাল আসা-যাওয়া করে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশকে বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সাথে সংযুক্ত করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এই বিমানবন্দর থেকে ইউরোপ এবং এশিয়ার ১৮টি শহরে চলাচল করে। এই বিমানবন্দরটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। ঘাঁটির নাম বিএএফ ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু।
ইতিহাস
১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার তেজগাঁও থেকে কয়েক কিলোমিটার উত্তরে কুর্মিটোলায় উড়োজাহাজ নামার জন্য একটি রানওয়ে তৈরি করে।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের পর তেজগাঁও বিমানবন্দরটি পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম বিমানবন্দর হয়ে ওঠে। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের সরকার কুর্মিটোলার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করে এবং ফরাসি বিশেষজ্ঞদের মতে টার্মিনাল নির্মাণ এবং রানওয়ে নির্মাণের জন্য টেন্ডার চালু করা হয়। নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন জন্য একটি রেল স্টেশন (বর্তমান এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশন) নির্মিত হয়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমানবন্দরটি অর্ধেক সম্পন্ন অবস্থায় ছিল।কিন্তু যুদ্ধের সময় বিমানবন্দরে গুরুতর ক্ষতি সাধিত হয়।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার পরিত্যক্ত কাজ পুনরায় চালু করে এবং এটিকে দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মূল রানওয়ে এবং কেন্দ্রীয় অংশটি খোলার মাধ্যমে ১৯৮০ সালে এয়ারপোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিমানবন্দরটির শুভ উদ্বোধন করেন। রাজনৈতিক কারণে আরও তিন বছর লাগে এটি সম্পন্ন হতে। অবশেষে ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে বিমানবন্দরের উদ্বোধন করেন।
২০১০ সালে ক্ষমতাসীন সরকার বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে, জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি দরবেশ হয়রত শাহজালালের নাম অনুসারে বিমানবন্দরের নাম শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামকরণ করা হয়৷
নির্ধারিত গন্তব্যসূচী
যাত্রিবাহী বিমান চলাচল
মালবাহী বিমান চলাচল
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশের ভবন ও স্থাপনা
বাংলাদেশের বিমানবন্দর
শাহ জালালের নামাঙ্কিত স্মারক
ঢাকার পরিবহন
ঢাকার ভবন ও স্থাপনা
বাংলাদেশের বিমানচালনা
১৯৪১-এ প্রতিষ্ঠিত বিমানবন্দর | https://en.wikipedia.org/wiki/Hazrat_Shahjalal_International_Airport | Hazrat Shahjalal International Airport | Hazrat Shahjalal International Airport (Bengali: হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, Romanized: Hôzrôt Shahjalal Antôrjatik Bimanbôndôr), (IATA: DAC, ICAO: VGHS, formerly VGZR), is the main international airport serving Dhaka City, the capital city of Bangladesh, and it is the largest airport in Bangladesh. It is located in Kurmitola, 17 km (11 mi) from the city centre, in the northern part of Dhaka. The airport is also used as a base for the Bangladesh Air Force, named BAF Base Bangabandhu. The airport has an area of 802 hectares (1,981 acres). The Civil Aviation Authority of Bangladesh (CAAB) operates and maintains the airport. It started operations in 1980, taking over from Tejgaon Airport as the principal international airport of the country. The airport was formerly known as Dacca International Airport and later as Zia International Airport, before being named in honour of Shah Jalal, who is one of the most respected Sufi saints of Bangladesh. The IATA code of the airport "DAC" is derived from "Dacca", which is the previously used spelling for "Dhaka".
It is the primary hub of most of airlines in Bangladesh including Air Astra, Novoair, US-Bangla Airlines, and the national flag carrier Biman Bangladesh Airlines. The annual passenger handling capacity of the airport is 18.5 million passengers, and this passenger handling capacity is predicted by CAAB to be sufficient until 2026. In 2014, the airport handled 9.1 million passengers and 248,000 tonnes of cargo. Average aircraft movement per day is around 190 flights. Ground handling at the airport is provided by Biman Ground Handling, which is a wholly owned subsidiary of Biman Bangladesh Airlines. The airport has complete Wi-Fi Internet coverage and all the terminals of the airport have multiple First Class and Business Class executive lounges operated by Five Star hotels, such as Intercontinental Dhaka; Bangladeshi companies such as Eastern Bank Skylounge or City Bank American Express Lounge; as well as local and foreign airlines. Passengers travelling on First Class or Business Class air tickets, as well as economy passengers who are Priority Pass card holders, have complimentary access to select lounges.
|
2579 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%9D%E0%A6%BF%E0%A6%B2 | মতিঝিল | মতিঝিল ঢাকা শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। এটি ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকসহ বহু প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় রয়েছে। এখানে পাঁচটি ওয়ার্ড ও ৩৫ টি মহল্লা রয়েছে।
মতিঝিল বাংলাদেশের একটি থানা (প্রশাসনিক বিভাগ)। এটি শহরের প্রাণকেন্দ্রে (জেনারেল পোস্ট অফিসটি জিরো পয়েন্ট হিসাবে বিবেচিত)। মতিঝিল ঢাকা শহরের প্রধান ব্যবসায়িক এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র ।শহরের অন্যান্য অংশের চেয়ে বেশি অফিস এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।এটি দেশের বৃহত্তম সংখ্যক কর্পোরেট সদর দফতরের আবাস। অনেক সংবাদ, ম্যাগাজিন, মুদ্রণ এবং অন্যান্য মিডিয়া প্রকাশক এখানে ভিত্তি করে। মতিঝিল প্রধান স্টেশন কমলাপুর রেলস্টেশনের নিকটে। মেগাসিটির অন্যতম আকাশচুম্বী বহুতল ভবনের অঞ্চল এটি। এটি কেন্দ্রীয় ব্যবসায় জেলা। সিটি সেন্টার বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন এই অঞ্চলে রয়েছে।
ইতিহাস
মোগল সাম্রাজ্যের সময়কাল হতেই মতিঝিল এলাকার নাম শোনা যায়। এই এলাকাটি সেই সময় মির্জা মোহাম্মদের মহল হিসাবে গন্য হতো, যার মধ্যে ছিলো একটি পুকুর। শুরুতে সুকাকু মহলের পুকুর হিসাবে খ্যাত হলেও পরে এই পুকুরটি মতিঝিল নামে পরিচিত হয়ে উঠে, এবং এর নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয়।
পরবর্তীতে এই এলাকা ঢাকার নবাব পরিবারের সম্পত্তিতে পরিণত হয়। নবাব আবদুল গনির সময়ে এখানে বাগান স্থাপন করা হয়। এই এলাকাতে নবাব পরিবারের বাগানবাড়িও নির্মিত হয়। পরবর্তীতে ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের সরকারের জন্য গভর্নর ভবন নির্মানের নিমিত্তে ব্রিটিশ সরকার নবাব সলিমুল্লাহের কাছ থেকে এই এলাকাটি অধিগ্রহণ করে।
আয়তন
মতিঝিল এলাকার আয়তন হচ্ছে ৪.৬৯ বর্গ কিলোমিটার। এ থানাটির উত্তরে পল্টন মডেল থানা, উত্তর-পূর্বে শাহজাহানপুর থানা ও খিলগাঁও থানা, পূর্বে কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে থানা, সবুজবাগ থানা এবং মুগদা থানা, দক্ষিণ-পূর্বে যাত্রাবাড়ী থানা, দক্ষিণ-পশ্চিমে ওয়ারী থানা, পশ্চিমে রমনা মডেল থানা অবস্থিত।
জনসংখ্যা
মতিঝিল এলাকায় বতর্মানে ২২৩৬৭৬ জন লোক বসবাস করছে। যাদের মধ্যে ৫৯.৪৫ শতাংশ পুরুষ ও ৪০.৫৫ শতাংশ জন নারী।
ভাষা
মতিঝিলের ৯৮% লোক বাংলা ভাষাতে কথা বলে। এছাড়া এখানে ২% লোক অন্যান্য ভাষায় কথা বলে।
তথ্যসূত্র
মতিঝিল থানা | https://en.wikipedia.org/wiki/Motijheel | Motijheel | |
2581 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%98%E0%A6%BE%E0%A6%9F | কালুরঘাট | কালুরঘাট চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণাঞ্চলে বহদ্দারহাটের ৫/৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি এলাকা। ১৯৩০ সালে এখানে কালুরঘাট সেতু নির্মিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বহদ্দারহাটের সন্নিকটে স্থাপিত বেতার কেন্দ্রটি দেশব্যাপী ঐতিহাসিক কালুরঘাট সেতুর কারণে ব্যাপক পরিচিত কালুরঘাট এর নামানুসারে নামকরণ করা হয় কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র যা বর্তমানে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র হিসাবে বাংলাদেশ বেতার এর সম্প্রচার কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখান থেকে ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান (পরবর্তীতে জেনারেল ও রাষ্ট্রপতি) বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করেন।
তথ্যসূত্র
চট্টগ্রামের স্থান
চট্টগ্রাম বিভাগের জনবহুল স্থান
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ | https://en.wikipedia.org/wiki/Kalurghat | Kalurghat | Kalurghat (Bengali: কালুরঘাট) is located several miles north of the port city of Chittagong, Bangladesh, and is mostly famous for several heavy industries located there. A bridge near Kalurghat on the Karnaphuli River connects Chittagong city with the southern parts of the district.
Kalurghat is also the location of the radio transmitter where Major Ziaur Rahman declared the independence of Bangladesh during the Bangladesh Liberation War in 1971. Using a makeshift radio transmitter located in Kalurghat, first M A Hannan on 26 March 1971 afternoon, and later on 26 March 1971 evening Ziaur Rahman, an army major then, and President of Bangladesh much later, declared the Independence of Bangladesh, on behalf of the Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. |
2591 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A6%A6 | জাতীয় সংসদ | জাতীয় সংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভা। এককক্ষ বিশিষ্ট এই আইনসভার সদস্য সংখ্যা ৩৫০; যার মধ্যে ৩০০ জন সংসদ সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন এবং অবশিষ্ট ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যগণ নির্বাচিত ৩০০ সংসদ সদস্যের ভোটে (পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে) নির্বাচিত হন। সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর।
সংসদ ভবন
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন পৃথিবীর দৃষ্টিনন্দন আইনসভা ভবনের একটি। রাজধানী ঢাকার শের-ই-বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার আয়তন ২১৫ একর। যেখানে মূল ভবনের পাশাপাশি রয়েছে উন্মুক্ত সবুজ পরিসর, মনোরম জলাধার ও সংসদ সদস্যদের কার্যালয়।
১৯৬১ সালে ৯ তলা এ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ইতিহাসের নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি এ ভবনের উদ্বোধন করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এ ভবনের নকশা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত স্থপতি লুই আই কান।
সংসদ ভবন এলাকাকে প্রধান ভবন, দক্ষিণ প্লাজা ও প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা এই তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। সংসদের পেছন দিকে ক্রিসেন্ট লেক নামে একটি নান্দনিক জলাধার রয়েছে।
আসন বিন্যাস
জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদ সদস্যদের আসন সংখ্যা ৩৫০, অতিথি আসন সংখ্যা ৫৬, কর্মকর্তা আসন সংখ্যা ৪১, সাংবাদিক আসন সংখ্যা ৮০ এবং দর্শক আসন সংখ্যা ৪৩০।
সদস্য পদ
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে হলে আগ্রহী প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া ছাড়াও বয়স ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। এছাড়া অপ্রকৃতিস্থ, দেউলিয়া কিংবা দ্বৈত নাগরিকত্ব এক্ষেত্রে প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে।
সদস্যরা তাদের নিজ নিজ আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে অধিকাংশের ভোটে নির্বাচিত হন। সদস্যগণ ৫ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। তারা নিরপেক্ষ বা একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অধিভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ক্ষমতা ও অধিকার
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়ে একটি মন্ত্রিসভা নিয়োগ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই একজন সংসদ সদস্য হতে হবে এবং মন্ত্রীসভার ৯০% সদস্যকেও সংসদ সদস্য হতে হবে। রাষ্ট্রপতিকে অবশ্যই একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে, যিনি নিজের যুক্তিযুক্ত মতামতে, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রাখেন। মন্ত্রিসভা সর্বদা সংসদের কাছে এবং প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছেও জবাবদিহি করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি উন্মুক্ত ব্যালট ভোটের মাধ্যমে সংসদ দ্বারা নির্বাচিত হন। ফলস্বরূপ, বিরোধীদলের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের খুব কমই সুযোগ থাকে। ফলে সাধারণত বিরোধীদল রাষ্ট্রপতি পদের জন্য কোনো প্রার্থী মনোনীত করে না এবং সরকারি দলের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন এবং পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, জিল্লুর রহমান, একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং শাহাবুদ্দিন আহমেদ সকলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সংসদ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনও করতে পারে।
বিল পরীক্ষা, সরকারি নীতি পর্যালোচনা এবং জনগুরুত্বপূর্ণ অন্য যেকোন বিষয়ে সংসদ যেকোনো সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করতে পারে। তবে এই কমিটির কার্যত ক্ষমতা সবসময়ই ছিল নামমাত্র; বিচারিক ক্ষমতাও অস্পষ্ট, বিশেষ করে যদি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে সংসদীয় কমিটি এবং সিনিয়র বেসামরিক কর্মচারীদের কাছে জবাবদিহি করার প্রয়োজন নেই। সরকারী প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে সরকারকে সংসদীয় কমিটির কাছে খুব কমই জবাবদিহি করতে হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের ফ্লোর ক্রসিং (নিজ দল থেকে পদত্যাগকৃত সাংসদ), মুক্ত ভোট (নিজ দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া) বা অনাস্থা প্রস্তাব পাস করার ক্ষেত্রে সংসদকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সাধারণ বুদ্ধিজীবী, সংবাদপত্র ও সাংবাদিক, নাগরিক অধিকার কর্মী এবং সংসদের অনেক সদস্য আইনটির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। সমালোচকরা যুক্তি দেন যে ৭০ নং অনুচ্ছেদ বাক স্বাধীনতা এবং বিবেকের স্বাধীনতাকে হরন করে এবং এটি সংবিধানের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। উপরন্তু, এই অনুচ্ছেদে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বিশাল ক্ষমতা প্রদান এবং ক্ষমতার ভারসাম্যকে সীমিত করা হয়েছে।
সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদ সংসদীয় অধিবেশনের মধ্যে সদস্যদের বক্তৃতা এবং কর্মের জন্য বিচার বিভাগকে জবাবদিহি করতে হবে না। ৪৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতির সেবায় যে কাউকে ক্ষমা প্রদানের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত এই অনুচ্ছেদের অধিনে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদকে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন করার অনুমতি দেওয়া হয়।
সংসদের ব্যাপ্তি
সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর। কিন্তু দেশের সংকটকালে সংবিধান সমুন্নত রাখতে আইন পাসের মাধ্যমে এ মেয়াদের হেরফের হতে পারে।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারদের তালিকা
আরও দেখুন
জাতীয় সংসদে প্রণীত আইনের তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
জাতীয় সংসদ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
বাংলাদেশ সরকার
দেশ অনুযায়ী সংসদ
জাতীয় সংসদ
১৯৭৩-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত
জাতীয় আইনসভা
এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা | https://en.wikipedia.org/wiki/Jatiya_Sangsad | Jatiya Sangsad | The Jatiya Sangsad (Bengali: জাতীয় সংসদ, romanized: Jatiyô Sôngsôd, lit. 'National Parliament'), often simply referred to as Sangsad and also known as the House of the Nation, is the supreme legislative body of Bangladesh. The current parliament of Bangladesh contains 350 seats, including 50 seats reserved exclusively for women. Elected occupants are called members of Parliament, or MPs. The 12th national parliamentary election was held on 7 January 2024. Elections to the body are held every five years, unless a parliament is dissolved earlier by the President of Bangladesh. On 6 August 2024, President Mohammed Shahabuddin dissolved parliament after the resignation of Sheikh Hasina and ordered to form a interim government.
The leader of the party (or alliance of parties) holding the majority of seats becomes the Prime Minister of Bangladesh, and so the head of the government. The President of Bangladesh, the ceremonial head of state, is chosen by Parliament. Since the December 2008 national election, the majority party has been the Awami League led by former Prime Minister Sheikh Hasina. The parliament has been dissolved by President Mohammed Shahabuddin on the 6th of August, 2024 following the resignation of Sheikh Hasina. |
2622 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%82 | অ্যালান টুরিং | অ্যালান ম্যাথিসন টুরিং (), অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার, ফেলো অব দ্য রয়েল সোসাইটি (২৩শে জুন, ১৯১২—৭ই জুন, ১৯৫৪) একজন অগ্রণী ইংরেজ কম্পিউটার প্রকৌশলী, গণিতজ্ঞ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, গোপন সংকেত বিশেষজ্ঞ, গাণিতিক জীববিজ্ঞানী এবং ম্যারাথন দৌড়বিদ ছিলেন। কম্পিউটার প্রকৌশলের বিকাশে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি তার টুরিং মেশিনের (Turing machine) মাধ্যমে গণনা (computation) ও অ্যালগোরিদম (algorithm) এর ধারণার প্রচলন করেন। টুরিংকে তাত্ত্বিক কম্পিউটার প্রকৌশল ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কম্পিউটার বিজ্ঞানের সবচেয়ে মৌলিক দুটি ধারণার সাথে তার নাম জড়িত: টুরিং টেস্ট এবং টুরিং মেশিন। প্রথমটি জড়িত বিতর্কিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ধারণার সাথে, দ্বিতীয়টি হচ্ছে কম্পিউটারের বিমূর্ত গাণিতিক গঠন। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের প্রধান সম্মামনা তার নামে, "টুরিং পুরস্কারকে প্রায়ই কম্পিউটার বিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার নামে অভিহিত করা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টুরিং ব্লেচলি পার্কে (bletchly park) অবস্থিত ব্রিটেনের গভার্নমেন্ট কোড অ্যান্ড সাইফার স্কুলের (government code and cipher school) জন্য কাজ করতেন। কিছু সময়ের জন্য তিনি জার্মান নৌবাহিনীর গুপ্তসংকেত বিশ্লেষণে নিয়োজিত হাট-৮ (hut-8) এর নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি জার্মান সাইফার বিশ্লেষণের বেশ কিছু কৌশল আবিষ্কার করেন। তিনি এনিগমা (enigma) মেশিনের বিন্যাস বের করার জন্য তড়িৎযান্ত্রিক (electromagnetic) যন্ত্র তৈরি করেন। গোপন সংকেত বিশ্লেষণে টুরিং এর অবদান অ্যাটলান্টিকের যুদ্ধে নাৎসীদের হারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ধারণা করা হয় ব্লেচলি পার্কের অবদানের কারণে ইউরোপের যুদ্ধের দৈর্ঘ্য দুই থেকে চার বছর কমে যায়।
যুদ্ধের শেষে তিনি ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে যোগ দেন যেখানে তিনি এইসের (ace) নকশা তৈরি করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটিতে ম্যাক্স নিউম্যানের কম্পিউটিং ল্যাবরেটরিতে যোগ দেন যেখানে তিনি ম্যাঞ্চেস্টার কম্পিউটার তৈরিতে সাহায্য করেন। এসময় তিনি গাণিতিক জীববিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি মর্ফোজেনেসিসের রাসায়নিক ভিত্তির উপর গবেষণাপত্র লিখেন এবং স্পন্দিত রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্বন্ধে ধারণা পোষণ করেন যা প্রথম লক্ষ করা হয় ১৯৬০ সালে।
১৯৫২ সালে টুরিংকে সমকামিতার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সে সময়ে যুক্তরাজ্যে সমকামিতাকে অপরাধ[ হিসেবে গণ্য করা হত। জেলে যাওয়া এড়াতে তিনি এস্ট্রোজেন (oestrogen) ইঞ্জেকশন গ্রহণ মেনে নেন। টুরিং ১৯৫৪ সালে তার ৪২তম জন্মদিনের ১৬ দিন আগে মারা যান। ২০০৯ সালে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন টুরিংকে যে ক্ষতিকর চিকিৎসায় বাধ্য করা হয় তার জন্য দাপ্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ২০১৩ সালে রাণী এলিজাবেথ তাকে মরণোত্তর ক্ষমা প্রদান করেন।
শৈশব ও যৌবন
টুরিং তার মায়ের গর্ভে আসেন ১৯১১ সালে ভারতের উরিষ্যার চাত্রাপুরে। তার বাবা জুলিয়াস ম্যাথিসন টুরিং ছিলেন ভারতীয় লোক প্রশাসনের (ইণ্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস) একজন সদস্য। জুলিয়াস এবং তার স্ত্রী সারা (নেই স্টোনি; ১৮৮১-১৯৭৬, মাদ্রাজ রেলওয়ের প্রকৌশলী এডওয়ার্ড ওয়েলার স্টোনির কন্যা) তাদের সন্তানকে ইংল্যান্ডে বড় করতে চেয়েছিলেন, তাই তার লণ্ডনের মাইডা ভেলে ফিরে আসেন যেখানে টুরিং এর জন্ম হয় ২৩ জুন, ১৯১২ সালে। তার ভাই জন ছিল তার বড়। তার বাবার লোক প্রশাসন কমিশন তখনো কার্যকর ছিল এবং টুরিং এর ছেলেবেলায় তাদের অভিভাবকেদের সন্তানদের বন্ধুদের কাছে রেখে ইংল্যান্ডের গিল্ডফোর্ড এবং ভারতের মধ্যে প্রায়ই যাতায়ত করতে হত। টিউরিং একজন সমকামি ছিলেন ।
তার অভিভাবকেরা তাকে ছয় বছর বয়সে দিবা বিদ্যালয় সেণ্ট মাইকেল’স এ ভর্তি করিয়ে দেন। প্রধান শিক্ষিকা তার প্রতিভাকে শুরুতেই ধরতে পারেন যেভাবে তার অনেক সমসাময়িক শিক্ষকেরা পেরেছিলেন। ১৯২৬ সালে চৌদ্দ বছর বয়সে তিনি ডরসেট ডরসেটের শেরবর্ন স্কুলে ভর্তি হন। তার পর্বের প্রথম দিন ইংল্যান্ডের জেনারেল স্ট্রাইক (সাধারণ ধর্মঘট) থাকার পর ও তার প্রতিগ্ঞার কারণে তিনি একাই সাউথহ্যাম্পটন থেকে ৬০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে স্কুলের কাছে পৌছান। মাঝপথে তাকে একটি হোটেলে বিশ্রাম নেবার জন্য থামতে হয়- ঘটনাটিকে স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়। গণিত ও বিজ্ঞানে টুরিং এর আগ্রহ জনপ্রিয় এবং ব্যয়বহুল পাবলিক স্কুল সেরবর্নের শিক্ষকদের নজর কাড়তে পারেনি। এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাব্যবস্থা ক্লাসিক (প্রাচীন গ্রিক এবং রোমান ভাষা এবং সাহিত্য শিক্ষা) এর দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তার প্রধান শিক্ষক তার অভিভাবকদের লেখেন: আমি আশা করি যেন সে দুটি শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝে না পরে। সে যদি পাবলিক স্কুলে থাকে চায়, তবে তাকে অবশ্যই শিক্ষিত হবার দিকে নজর দিতে হবে। সে যদি শুধু বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ হতে চায় তবে পাবলিক স্কুলে সে তার সময় নষ্ট করছে।
অন্যদিকে টুরিং তার অসাধারণ সক্ষমতার সাক্ষর রেখে চলে তার আগ্রহের বিষয়গুলোতে। ক্যালকুলাসের মূল বিষয়গুলো না জেনেই সে উন্নত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে থাকে। ১৯২৮ সালে ১৬ বছর বয়সে তিনি আলবার্ট আইস্টাইনের কাজের সংস্পর্শে আসেন; তিনি তা অধ্যয়ন করার পাশাপাশি নিউটনের গতি সূত্র সম্পর্কে আইনস্টাইনের সন্দেহ অণুধাবন করতে শুরু করেন এমন একটি লিখিত অংশ থেকে যেখানে এটি একদমই পরিষ্কার করা ছিল না।
টুরিং এর আশা ও আকাঙ্ক্ষার বিস্তৃতি ঘটে তার বন্ধু ক্রিস্টোফার মরকমের মাধ্যমে, যাকে সে ভালবেসে ফেলে। অবশ্য তা দ্বিমুখী ছিল না। মরকম মারা যায় সেরবর্নে তাদের শেষ পর্ব শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই।
বিশ্ববিদ্যালয় এবং কম্পিউট্যাবিলিটিতে তার অবদান
কেতাবী লেখাপড়ায় টুরিং এর অনাগ্রহের কারণে তাকে ক্যাম্ব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হতে হয়, এবং ফলশ্রুতিতে তাকে তার দ্বিতীয় পছন্দ কিংস কলেজে হয়। সেখানে তিনি ১৯৩১ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত একজন আণ্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্র ছিলেন এবং স্নাতক লাভ করেন বিশেষভাবে। ১৯৩৫ সালে গাউসের ফাশনের কাজের জন্য কলেজের ফেলো হন। despite the fact that he had failed to find out that it had already been proven in 1922 by Jarl Waldemar Lindeberg.
তার গুরুত্বপূর্ণ পেপার “অন কম্পিউটেবল নাম্বারস, উইথ এন এপ্লিকেশন টু দি এনসিডুংসপ্রবলেম” এ টুরিং পূণর্বিনাস করেন কার্ট গোবেলের ১৯৩১ সালের প্রমাণ এবং গণণার এবং গোবেলের বিশ্বজনীন পাটিগণিত নির্ভর ফর্মাল ভাষার পরিবর্তে টুরিং মেশিনস’এ পরিবর্তন করেন। তিনি প্রমাণ করেন যে এমন যন্ত্র সকল সম্ভাব্য গাণিতিক সমস্যার মোকাবিলা করতে পারবে যদি তা একটি এলগোরিদম আকারে প্রকাশ করা হয়। যদিও কোন টুরিং মেশিন সাধারণত কোন ব্যবহারিক এপ্লিকেশনের প্রক্রিয়া করেনা, কেননা তা সকল থেকে ধীরগতির।
বর্তমান সময় পর্যন্তও টুরিং মেশিন গণণা তত্ত্বের শিক্ষায় কেন্দ্রীয় অংশ বলে বিবেচিত হয়। তিনি টুরিং মেশিনের সাহায্যে হল্টিং প্রবলেমকে সিদ্ধান্তহীন দেখিয়ে প্রমাণ করেন যে Entscheidungsproblem এর কোন সমাধান নেই। টুরিং মেশিন কখনো হল্ট করবে কিনা তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব নয়। লাম্বডা ক্যালকুলাস অনুসারে আলোনজো চার্চের প্রমাণ প্রকাশের পর তার প্রমাণ প্রকাশিত হয়। টুরিংএর প্রমাণটি সহজে বোধগম্য হিসেবে পরিগণিত হয়।
১৯৩৭ এবং ১৯৩৮ সালের বেশির ভাগ সময় তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিবাহিত করেন আলোনজো চার্চের অধীনে গবেষণা করে। ১৯৩৮ সালে প্রিন্সটন থেকে তিনি তার পিএইচ. ডি ডিগ্রি লাভ করেন। তার গবেষণাপত্র রিলেটিভ কম্পিউটিং ধারণার সূচনা করে যেখানে টুরিং মেশিন তথাকথিত ওরাকলের সাথে বর্ধিত হয়। এ পদ্ধতি সে সকল সমস্যার অধ্যয়নের সুযোগ তৈরি করে দেয় যেগুলো টুরিং মেশিন দিয়ে সমাধান করা সম্ভব হত না।
১৯৩৯ সালে ক্যাম্ব্রিজে ফেরত এসে তিনি লুডভিগ ভিটজেনস্টাইন পরিচালিত গণিতের ভিত্তি বিষয়ক লেকচারে অংশ নেন। তারা দু’জন তর্ক করেন এবং পরস্পরের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। টুরিং ফরমালিজম এর পক্ষ নেন এবং ভিটজেনস্টাইন বলেন যে গণিতকে অতিরিক্ত মূল্য দেয়া হচ্ছে এবং এটি কোন পরম সত্য আবিষ্কারে অক্ষম।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে, ব্লেচলি পার্কে জার্মান ধাঁধার সমাধানকল্পে অন্যতম প্রধান অংশগ্রহণকারী ছিলৈন। ক্রিপ্ট্যানালাইসিস তৈরির কাজ যুদ্ধ শুরুর আগেই পোল্যান্ডে চলতে থাকে। তিনি এনিগমা মেশিন এবং লরেনজ এসজেড ৪০/৪২ খুলতে সহায়তা করেন এবং একদা হাট এইট এর প্রধান ছিলেন, যেই বিভাগটি জার্মান নৌ সংকেত উদ্ধারে তংপর ছিল।
১৯৩৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে টুরিং গভর্ণমেণ্ট কোড এণ্ড সাইফার স্কুল এ খণ্ডকালীন চাকরি করতেন, যা ছিল ব্রিটিশ সংকেত উন্মোচনকারী প্রতিষ্ঠান। তিনি জার্মান এনিগমা মেশিনের সমস্যাসমূহ নিয়ে কাজ করেন এবং ডিলি নক্স এর সাথেও যোগ দেন। ১৯৩৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, যেদিন ব্রিটেন জার্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, সেদিন টুরিং ব্লেচলি পার্কে রিপোর্ট করেন।
গবেষণা পত্র
"Computing machinery and intelligence"
Turing's paper titled "On Computable Numbers with an Application to the Entscheidungsproblem" (PDF)
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Alan Turing site maintained by Andrew Hodges including a short biography
AlanTuring.net Turing Archive for the History of Computing by Jack Copeland
The Turing Archive - contains scans of some unpublished documents and material from the Kings College archive
Alan Turing — Towards a Digital Mind: Part 1
Time 100:Alan Turing
Stanford Encyclopedia of Philosophy entry
১৯১২-এ জন্ম
১৯৫৪-এ মৃত্যু
ইংরেজ গণিতবিদ
ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
২০শ শতাব্দীর নাস্তিক
১৯৫৪-এ আত্মহত্যা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক
ইংরেজ নাস্তিক
ইংরেজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী
আইরিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
স্কটিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
রয়েল সোসাইটির সভ্য
গে ক্রীড়াবিদ
অফিসার্স অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ইংল্যান্ডে আত্মহত্যা | https://en.wikipedia.org/wiki/Alan_Turing | Alan Turing | Alan Mathison Turing (; 23 June 1912 – 7 June 1954) was an English mathematician, computer scientist, logician, cryptanalyst, philosopher and theoretical biologist. He was highly influential in the development of theoretical computer science, providing a formalisation of the concepts of algorithm and computation with the Turing machine, which can be considered a model of a general-purpose computer. Turing is widely considered to be the father of theoretical computer science.
Born in London, Turing was raised in southern England. He graduated in maths from King's College, Cambridge, and in 1938, earned a maths PhD from Princeton University. During the Second World War, Turing worked for the Government Code and Cypher School at Bletchley Park, Britain's codebreaking centre that produced Ultra intelligence. He led Hut 8, the section responsible for German naval cryptanalysis. Turing devised techniques for speeding the breaking of German ciphers, including improvements to the pre-war Polish bomba method, an electromechanical machine that could find settings for the Enigma machine. He played a crucial role in cracking intercepted messages that enabled the Allies to defeat the Axis powers in many crucial engagements, including the Battle of the Atlantic.
After the war, Turing worked at the National Physical Laboratory, where he designed the Automatic Computing Engine, one of the first designs for a stored-program computer. In 1948, Turing joined Max Newman's Computing Machine Laboratory at the Victoria University of Manchester, where he helped develop the Manchester computers and became interested in mathematical biology. Turing wrote on the chemical basis of morphogenesis and predicted oscillating chemical reactions such as the Belousov–Zhabotinsky reaction, first observed in the 1960s. Despite these accomplishments, he was never fully recognised during his lifetime because much of his work was covered by the Official Secrets Act.
In 1952, Turing was prosecuted for homosexual acts. He accepted hormone treatment, a procedure commonly referred to as chemical castration, as an alternative to prison. Turing died on 7 June 1954, aged 41, from cyanide poisoning. An inquest determined his death as suicide, but the evidence is also consistent with accidental poisoning.
Following a campaign in 2009, British prime minister Gordon Brown made an official public apology for "the appalling way [Turing] was treated". Queen Elizabeth II granted a pardon in 2013. The term "Alan Turing law" is used informally to refer to a 2017 law in the UK that retroactively pardoned men cautioned or convicted under historical legislation that outlawed homosexual acts.
Turing left an extensive legacy in mathematics and computing which today is recognised more widely, with statues and many things named after him, including an annual award for computing innovation. His portrait appears on the Bank of England £50 note, first released on 23 June 2021 to coincide with his birthday. The audience vote in a, 2019 BBC series, named Turing the greatest person of the 20th century. |
2624 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8 | ইউনিক্স | ইউনিক্স () একটি কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। এটা প্রথমে নির্মিত হয় ৬০ ও ৭০ এর দশকে বেল ল্যাবে। এর নেতৃত্বে ছিলেন কেন থমসন ও ডেনিস রিচি, তারা পরে কম্পিউটার বিজ্ঞানে মৌলিক অবদানের জন্য টুরিং পুরস্কার লাভ করেন।
ইতিহাস
অপারেটিং সিস্টেমটি মূলত অ্যাসেম্বলি ভাষায় লেখা হয়েছিল, তবে ১৯৭৩ সালে ৪ সংস্করণে ইউনিক্স নতুন করে সি তে লেখা হয়েছিল।
ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেমগুলি আধুনিক সার্ভার, ওয়ার্কস্টেশন এবং মোবাইল ডিভাইসে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
আরো দেখুন
অপারেটিং সিস্টেমসমূহের তুলনা
তথ্যসূত্র
অপারেটিং সিস্টেম | https://en.wikipedia.org/wiki/Unix | Unix | Unix ( , YOO-niks; trademarked as UNIX) is a family of multitasking, multi-user computer operating systems that derive from the original AT&T Unix, whose development started in 1969 at the Bell Labs research center by Ken Thompson, Dennis Ritchie, and others.
Initially intended for use inside the Bell System, AT&T licensed Unix to outside parties in the late 1970s, leading to a variety of both academic and commercial Unix variants from vendors including University of California, Berkeley (BSD), Microsoft (Xenix), Sun Microsystems (SunOS/Solaris), HP/HPE (HP-UX), and IBM (AIX). In the early 1990s, AT&T sold its rights in Unix to Novell, which then sold the UNIX trademark to The Open Group, an industry consortium founded in 1996. The Open Group allows the use of the mark for certified operating systems that comply with the Single UNIX Specification (SUS).
Early versions of Unix ran on PDP-11 computers.
Unix systems are characterized by a modular design that is sometimes called the "Unix philosophy". According to this philosophy, the operating system should provide a set of simple tools, each of which performs a limited, well-defined function. A unified and inode-based filesystem and an inter-process communication mechanism known as "pipes" serve as the main means of communication, and a shell scripting and command language (the Unix shell) is used to combine the tools to perform complex workflows.
Unix distinguishes itself from its predecessors as the first portable operating system: almost the entire operating system is written in the C programming language, which allows Unix to operate on numerous platforms. |
2625 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BE%20%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B8 | অ্যাডা লাভলেস | অগাস্টা অ্যাডা বা লাভলেসের কাউন্টেস (জন্ম: ডিসেম্বর ১০, ১৮১৫ - মৃত্যু: নভেম্বর ২৭, ১৮৫২) কে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ধারণার একজন প্রবর্তক মনে করা হয়। তিনি চার্লস ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন-এর একটি বর্ণনা লেখেন।
পুরো নাম তার অ্যাডা অগাস্টা কিং, আর ডাকা হতো কাউন্টেস অফ লাভলেস বা শুধুই অ্যাডা লাভলেস নামে। তার জন্ম হয় লন্ডনের সম্ভ্রান্ত পরিবারে কবি লর্ড বায়রনের কন্যা এবং একমাত্র সন্তান হিসেবে। অ্যাডা মাত্র ৩৬ বছর বেঁচে ছিলেন। ১৮৫২ সালের ২৭ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়, জরায়ুর ক্যান্সার এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে।
স্যার চার্লস উইলিয়াম ব্যাবেজ যখন তার ডিফারেন্স মেশিন বা অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামক কম্পিউটার আবিষ্কারের নেশায় মত্ত, তখন অ্যাডা তার গণিতবিষয়ক বিশ্লষণী ক্ষমতার দ্বারা বুঝতে পেরেছিলেন এই কম্পিউটারগুলোর নাম্বার ক্রাঞ্চিং এর অমিত সম্ভাবনা সম্পর্কে । সে চার্লস ব্যাবেজ তাই লিখে গেছেন তার Decline of Science in England এই বইয়ে। আর এমন একটা সময়ে এই অসামান্যা নারী চার্লস ব্যাবেজকে যেসব সম্ভাবনার কথা জানান তা তার কাজকে আরো বেগবান করেছিল। অ্যাডা অগাস্টা’কে এখন বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার ধরা হয়।
বায়রনের সৎ-বোন অগাস্টা লেই এর নামে মেয়ের নাম রাখা হয়, আর বায়রন তাকে অ্যাডা নাম দেন। মাত্র একমাস যখন অ্যাডা’র বয়স তখন থেকে তার মা অ্যানাবেলা তাকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান।
ছোট থেকেই অ্যাডা কিছুটা অসুস্থ্যতায় ভূগছিলেন, প্রচণ্ড মাথাব্যথা হতো এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা হতো। ১৮২৪ সালে তার বাবা মারা যান, যদিও তিনি তার দায় বহন করতেন না। ১৮২৯ থেকে তিনি হাম এবং পক্ষাঘাতগ্রস্ততায় ভূগছিলেন। কিন্তু ক্র্যাচে ভর দিয়ে হলেও শিক্ষা চালিয়ে গিয়েছেন। ১৮৩২ এ যখন তার বয়স ১৭ তখন তার বিশেষ গাণিতিক প্রতিভার স্ফূরণ ঘটে। তার ছেলেবেলা থেকেই তার মা তাকে গণিতে দক্ষ করে তুলতে চাইতেন বাবার প্রভাব যাতে কোনোভাবেই মেয়ের মধ্যে প্রতিফলিত না হয় এই ভেবে। ১৮৪১ সালের আগে অ্যাডা জানতেনই না লর্ড বায়রন তার বাবা। বাসায় গৃহশিক্ষকেরা বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিতেন তাকে। গণিতজ্ঞ ও যুক্তিবিদ ডি-মরগ্যান তার শিক্ষক ছিলেন। স্যার চার্লস ডিকেন্স, স্যার চার্লস হুইটস্টোন এবং বিজ্ঞানি মাইকেল ফ্যারাডে’র সাথেও তার জানাশোনা ছিল। ১৮৩৩ সালের ৫ জুন তার সাথে পরিচয় হলে তিনি বিশ্ববিখ্যাত স্যার চার্লস ব্যাবেজর অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনকে কাজে লাগানোর জন্য 'প্রোগ্রামিং' এর ধারণা দেন। ১৮৪২ সালে ব্যাবেজ তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ইঞ্জিন সম্পর্কে ধারণা দেন। অ্যাডা তাকে এ বিষয়ে সাহায্য করেন।
চার্লস ব্যাবেজের সঙ্গে তার বেশ ঘনিষ্ঠ এবং রোম্যান্টিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। ব্যাবেজ অ্যাডা’র অসাধারণ ধীশক্তি, সাবলিল লেখনী এবং প্রতিভায় মুগ্ধ ছিলেন। ব্যাবেজ অ্যাডা সম্পর্কে নিজের লেখায় অ্যাডাকে সংখ্যার জাদুকরী আখ্যা দিয়েছেন।
চার্লস ব্যাবেজ, যিনি তার সময়ের লোকদের কাছে অনেকটা পাগল হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, তার নতুন ধ্যান-ধারণাকে মাত্র গুটিকয়েক যে ক’জন বুঝতে পেরেছিলেন তন্মধ্যে অ্যাডা অগ্রগণ্য। যদিও ইতিহাসবেত্তাদের গলদঘর্ম হতে হয়, অ্যাডা কতোটা প্রভাব বিস্তার করেছিলেন ব্যাবেজের উদ্ভাবনী কাজে তা খুঁজে পেতে। কেননা, ব্যাবেজ কারো প্রতি কৃতজ্ঞতা সচেতনভাবে স্বীকার করেননি। লেডি অ্যানি ব্লান্ট ছিলেন, তার কন্যা, যিনি মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ করেন এবং সেখানে উন্নত প্রজাতির ঘোড়ার সংকর ঘটান। তাকে মর্যাদা দিতে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রণিত প্রোগ্রামিং ভাষার নামও রাখা হয় অ্যাডা।
কনসিভিং অ্যাডা নামে তাকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট অথেনটিসিটি হলোগ্রামে তার ছবিও আছে।
কম্পিউটিং এবং প্রোগ্রামিং এ বিশেষ অবদানের কারণে ২৪ মার্চকে অ্যাডা লাভলেস দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী উদ্যাপন করা হয়ে থাকে।
জীবনী
বাল্যকাল
লর্ড বায়রন তার সন্তান হিসেবে একটি "অপূর্ব বালক" চেয়েছিলেন; কিন্তুু লেডি বায়রন মেয়ে জন্ম দেয়ায় তিনি নিরাশ হন। বায়রনের সৎ-বোনের নাম অনুসারে সন্তানটির নাম অগাস্টা লেইহ্ রাখা হয় এবং বায়রন নিজে তাকে "অ্যাডা" বলে ডাকতেন। ১৮১৬ সালের ১৬ই জানুয়ারিতে লর্ড বায়রনের আদেশে লেডি বায়রন তার পাঁচ-সপ্তাহ বয়সী কন্যাকে নিয়ে কিরকবাই ম্যালরিতে তাঁর পিতৃনিবাশে চলে যান। তৎকালীন ইংরেজ আইন অনুসারে বিচ্ছেদ হলে সকল অভিভাবকত্বের দায়িত্ব পিতার হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজের পিতা হিসেবে কোনো অধিকার দাবি করার প্রচেষ্টা করেনি, তবে তাঁর বোনকে অ্যাডা’র খোজ রাখতে বলেছিলেন।
২১শে এপ্রিলে লর্ড বায়রন তীব্র অনিচ্ছায় আইনী বিচ্ছেদের জন্য সাক্ষর করেন এবং কিছুদিন পর চিরতরে ইংল্যান্ড ছেড়ে চলে যান। একটি বিদ্বেষপূর্ণ বিচ্ছেদের পাশাপাশি লেডি বায়রন আজীবন তাঁর স্বামীর অনৈতিক ব্যবহারের দাবি করতে থাকেন। এই ঘটনাগুলি লাভ্লেসকে ভিক্টোরিয়ান সমাজে কুখ্যাত করে তোলে। আডা-এর তাঁর পিতার সাথে কোনো সম্পর্ক ছিল না। ১৮২৪ সালে অ্যাডা’র আট বছর বয়সেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন। অ্যাডা-এর একমাত্র উল্লেখযোগ্য অভিভাবক তাঁর মা ছিলেন। লাভ্লাসের ২০তম জন্মদিনের আগে তাকে তাঁর বাবার পরিবারের চিত্রে দেখানো হয়নি।
লাভ্লেসের মায়ের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না। তাঁকে প্রায় সময়ে তাঁর মাতামহী, জুডিথ হন. লেডি মিলবানকের যত্নে রাখা হতো; যিনি তাঁকে আদরে রাখতেন। তবে, তৎকালীন সামাজিক মনোভাবে যেকোনো বিবাহ বিচ্ছেদ স্বামীর প্রতি অনুকুল ছিল এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে সন্তানের তহবিল দেয়া হতো। এতে, লেডি বায়রনকে নিজেকে স্নেহময় মা হিসেবে প্রদর্শন করতে হতো। এজন্য তিনি লেডি মিলবানকের কাছে উদ্বিগ্নভাবে মেয়ের তহবিল সম্পর্কিত অনেকগুলো চিঠি লেখেন এবং খামে চিঠিগুলো সংরক্ষণ করে রাখার কথা লিখেছিলেন যাতে প্রয়োজনে তিনি সেগুলো ব্যবহার করে মাতৃউদ্বেগ দেখাতে পারেন। এমন একটি চিঠিতে তিনি নিজের মেয়েকে "ইহা" হিসেবে সম্বোধন করেন: "আমি ইহার সাথিয়া কেবল তোমার সন্তুষ্টির নিমিত্তে কথা বলি, আমার নিমিত্তে নয়। এবং ইহা তোমার অধীনে হইলে অনেক খুশি হইব।" লেডি বায়রন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবের সাহায্যে কোনো নৈতিক বিচ্যুতির লক্ষণের জন্য কিশোরী মেয়ের উপরে নজর রাখতেন। লাভলেস তাঁদেরকে "Furies" বলতেন এবং পরবর্তীতে অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁরা তাঁর সম্পর্কে গল্প অতিরঞ্জিত করে এবং বানিয়ে বলতেন।
লাভলেস শৈশবকাল থকেই প্রায়সময় অসুস্থ থাকতেন। আট বছর বয়সে মাথাব্যাথার ফলে তাঁর দৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ১৮২৯ সালের জুন মাসে হামে আক্রান্ত হওয়ার পরে তিনি নিশ্চল হয়ে পরেন। তাঁকে প্রায় এক বছর অবিরত বিছানায় বিশ্রাম করানো হয়, যা সম্ভবত বিকলতার সময়কাল বাড়িয়ে দিয়েছিল। ১৮৩১ সালের মধ্যে তিনি ক্রাচের সাহায্যে হাটতে পারতেন। তাঁর অসুস্থতার সত্ত্বেও তিনি গাণিতিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।
১৮৩৩ সালের প্রথম দিকে অ্যাডা বায়রন তাঁর এক গ্রহশিক্ষকের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ধরা পরায় তিনি তাঁর সাথে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু শিক্ষকের আত্মীয়স্বজন তাঁকে চিনতে পেরে তাঁর মায়ের সাথে যোগাযোগ করেন। লৌকিক মানহানি প্রতিরোধে লেডি বায়রন এবং তাঁর বন্ধুবান্ধব ঘটনাটিকে চাপিয়ে ফেলে। লাভলেস কখনো তাঁর ছোট সৎবোন এবং লর্ড বায়রন ও ক্ল্যার ক্ল্যারমন্ট-এর মেয়ে, অ্যালেগ্রা-এর সাথে দেখা করেননি। অ্যালেগ্রা ১৮২২ সালে মাত্র ৫ বছর বয়সে মারা যায়। তবে বায়রনের সৎবোন অগস্টা লেইহ্-এর মেয়ে, এলিজাবেথ মেডোরা লেইহ্-এর সাথে লাভ্লেসের যোগাযোগ ছিল, যে লাভ্লেসের সাথে কোর্টে পরিচিত হলে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে চলেছিল।
প্রাপ্তবয়সকালীন
লাভলেস তাঁর শিক্ষক ম্যারি সমারভিল-এর সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলেন, যিনি তাঁকে পরবর্তীতে চার্লস ব্যাবেজের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর সমারভিলের জন্যে দৃঢ় শ্রদ্ধা ও প্রীতি ছিল এবং তাঁরা অনেক বছর যাবত চিঠিবিনিময় করেছিলেন। অন্যান্য পরিচিতদের মধ্যে ছিল বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু ক্রস, স্যার ডেভিড ব্রেউস্টার, চার্লস হুইটস্টোন, মাইকেল ফ্যারাডে এবং লেখক চার্লস ডিকেন্স। তাঁকে ১৭ বছর বয়সে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রদর্শিত করা হলে তিনি "এবং সেই কালের একটি জনপ্রিয় সুন্দরী হয়ে উঠেন" কিছুটা তাঁর "উজ্জ্বল বুদ্ধি"- এর জন্য। ১৮৩৪ এর মধ্যে তিনি নিয়মিত কোর্ট এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া শুরু করেন। তিনি প্রায়ই নাচতেন এবং অনেক মানুষকে মুগ্ধ করতে পেরেছিলেন এবং বেশিরভাগ মানুষই তাঁকে মিষ্টি মনে করতেন; যদিও বায়রনের বন্ধু জন হবহাউস তাঁকে বর্ণনা করেছিলেন- "একটি দাম্ভিক, শুষ্ক-ত্বক বিশিষ্ট তরুণী কিন্তু আমার বন্ধুর কিছু বৈশিষ্ট সমৃদ্ধ, বিশেষ করে মুখটি।" এই বর্ণনার পরে ১৮৩৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে একটি সাক্ষাৎকার অ্যাডা হবহাউসকে এতি স্পষ্ট করে বুঝিয়েছিলেন যে তিনি তাঁকে পছন্দ করতেন না, মায়ের সম্ভাব্য প্রভাবের কারনে। এতে তিনি তাঁর বাবার সকল বন্ধুকেই অপছন্দ করতে শুরু করেন। এই প্রথম পরিচয় দীর্ঘকাল স্থায়ী ছিল না এবং পরবর্তীতে তাঁরা বন্ধু হয়ে উঠে।
১৮৩৫ সালের ৮ই জুলাই, তিনি অষ্টম বায়রন রাজা, উইলিয়ামকে বিয়ে করার মাধ্যমে লেডি কিং হয়ে যান। তাদের তিনটি বাড়ি ছিল: ওকহাম পার্ক, সুররে; রস - শিররের লখ টরিডনে অবস্থিত একটি স্কটিশ এস্টেট; এবং লন্ডনে একটি বাড়ি। তারা তাদের হানিমুন সমেরসেটে পলক ওয়েইর এর নিকট একটি ওয়ার্থি মানোরে যাপন করেন। এই মানোরটি ১৭৯৯ সালে একটি শিকার বীরব হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল এবং কিং দ্বারা হানিমুনের জন্যে পরিবর্তন করা হয়েছিল। এটি পরবর্তীতে তাদের গ্রীষ্মকালীন বসবাস হয়ে উঠে এবং সেই সময়ে এটির আরো উন্নতি করা হয়। ১৮৪৫ থেকে পরিবারটির প্রধান বাড়ি হর্সলে টাওয়ার্সয়ে অবস্থিত ছিল, যা সংসদ ভবনের স্থপতি চার্লস ব্যারি দ্বারা টুদর্বেথান নকশায় তৈরি করানো হয়েছিল এবং পরে লোভেলাসের নিজের নকশায় প্রসারিত করা হয়।
তাদের তিনটি সন্তান ছিল: বায়রন(জন্ম ১৮৩৬), অ্যানি ইসেবেলা(অ্যানবেলা বলা হতো, জন্ম ১৮৩৭); এবং রালফ গর্ডন(জন্ম ১৮৩৯)। অ্যানবেলা জন্মের তৎক্ষণাৎ পরেই লেডি কিং "একটি একঘেয়েমি এবং যন্ত্রণাদায়ক অসুখ, যা ঠিক হতে কয়েক মাস লেগেছিল। অ্যাডা বিলুপ্ত বারনস লাভলাসের বংশধর ছিল এবং ১৮৩৮ সালে, তার স্বামীকে অ্যার্ল অফ লাভেলাসে ও ভিস্কাউন্ট ওকহামে</ref> পরিণত করা হয়, অর্থাৎ অ্যাডা হয় কাউন্টেস অফ লাভলেস। ১৮৪৩-১৮৪৪ সালে অ্যাডা’র মা অ্যাডা’র সন্তানদের শিক্ষা প্রধানের জন্যে এবং অ্যাডা’র "নৈতিক" প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালনের জন্যে উইলিয়াম বেনজামিন ক্যারপেন্টারকে নিযুক্ত করেন। তিনি দ্রুতই অ্যাডা’র প্রেমে পড়ে যান এবং অ্যাডাকে কোনো বিরক্তির মনোভাব প্রকাশ করতে উৎসাহ প্রদান করতেন, এই দাবি করে যে তিনি বিবাহিত এই মানে তিনি কখনো "অনুচিত" ব্যাবহার করবেন না। কিন্তু যখন এটি পরিষ্কার হয়ে উঠে যে তিনি সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছেন, তখন অ্যাডা এটি বন্ধ করে দেয়।
১৮৪১ সালে অ্যাডা’র মা লাভলেস এবং মেডোরা লেইহকে(লর্ড বায়রনের সৎ বোন আগস্টা লেইহয়ের পূত্রি) বলেন যে অ্যাডা’র বাবাই মেডোরার বাবা। ১৮৪১ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারিতে অ্যাডা তার মাকে লিখেন: "আমি একদম অবাক হইনি। আসলে, তুমি এমন জিনিস নিশ্চিৎ করেছ যা নিয়ে আমার বছরের পর বছর ধরে তেমন সন্দেহ ছিল না, কিন্তু এই ধারণা নিয়ে তোমার কাছে কোনো প্রকার ইঙ্গিত করা আমার জন্যে অনুপযুক্ত মনে হয়েছিল।" তিনি এই অজাচার সম্পর্ক নিয়ে বায়রনের কোনো দোষারোপ করেননি, বরং এর পরিবর্তে আগস্টা লেইহকে দোষ দিয়েছিলেন: "আমি আশঙ্কিত যে সে এমন সহজাতভাবে খারাপ যা তিনি কখনো ছিলেন না।" ১৮৪০এর দশকে অ্যাডা বিভিন্ন স্ক্যান্ডালের সাথে জড়িত ছিল: প্রথমত, পুরুষদের সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতি নরম মনোভাব ছিল, ফলে পরকিয়ার গুজব ছড়িয়েছিল; এবং দ্বিতীয়ত, তাঁর জুয়া খেলার প্রতি ভালোবাসা। ১৮৪০ দশকের শেষের দিকে তিনি ঘোড়ার উপর প্রায় ৩০০০ ইউরোর বেশি অর্থ হারিয়েছিলেন। এই জুয়া খেলার ফলে তিনি তাঁর পুরুষ বন্ধুদের সাথে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন এবং ১৮৫১ সালে তিনি সফল বড় বাজির জন্যে গাণিতিক মডেল তৈরি করার উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা চালান। এটি অনেক ভয়ংকরভাবে ভুল হওয়ায় তিনি সিন্ডিকেটের কাছে হাজার হাজার পাউন্ডের ঋন তৈরি হয়। এতে তিনি তার স্বামীর কাছে স্বীকার করতে বাধ্য হন। ১৮৪৪ সাল থেকে তাঁর অ্যান্ড্রু ক্রসের পুত্র জনের সঙ্গে আবছায়া সম্পর্ক ছিল। জন ক্রস অ্যাডা’র মৃত্যুর পরে একটি আইনী চুক্তির অংশ অনুসারে তাদের অধিকাংশ চিঠিপত্র নষ্ট করে দেন। অ্যাডা তাকে কেবমাত্র এমন জিনিসের উত্তরাধিকার দিয়েছিলেন যা অ্যাডা’র বাবা অ্যাডাকে ব্যাক্তিগতভাবে দিয়েছিলেন। অ্যাডা’র অন্তিম অসুখের সময়ে তিনি প্রায়ই ছোট ক্রসকে তাঁর সাথে দেখা করতে আটকানোর চিন্তায় আশঙ্কিত হতেন।
শিক্ষা
১৮৩২ সালে কেবল ১৭ বছর বয়স থেকেই অ্যাডা’র গাণিতিক দক্ষতা প্রকাশ পেতে শুরু করে এবং তাঁর প্রাপ্তবয়স্ককালীন জীবনের বেশিরভাগ অংশেই গণিতের প্রতি আগ্রহ আধিপত্য পেয়েছিল। তাঁর মায়ের যেকোনো যেকোনো পাগলামির মূল কারণ বের করার অভ্যাসের ফলে অ্যাডাকে ছোটবেলা থেকে গণিত শিখানোর জন্যে তিনি বায়রনকে একটি কারণ হিসেবে দোষারোপ করতেন। উইলিয়াম ফ্রেন্ড, উইলিয়াম কিং এবং ঊনবিংশ শতকের বিশিষ্ট গবেষক ও বৈজ্ঞানিক লেখক ম্যারি সমেরভিল তাকে ব্যাক্তিগতভাবে গণিত এবং বিজ্ঞান শিখিয়েছিলেন। ১৮৪০ দশকে গণিতবিদ অগাস্টাস দে মর্গান অ্যাডাকে "অ্যাডা’র গণিত পড়ালেখায় অনেক সাহায্য" প্রসারিত করেন। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল ক্যালকুলাসের উন্নত বিষয়গুলো যার মধ্যে বার্নুলির সংখ্যা(এটি ব্যাবেজের অ্যানালিটিকাল জন্যে তাঁর বিখ্যাত অ্যালগরিদম তৈরি করেছিল)ছিল।
লাভলেস প্রায়ই কবিতা ও বিজ্ঞান মিলিয়ে সাধারণ অনুমান গুলিকে প্রশ্ন করতেন। ডিফারেনশিয়াল ক্যালকুলাস অধ্যয়ন করার সময় তিনি দে মর্গানকে লিখেছিলেন:
আমি এই মন্তব্য করতে পারি যে সূত্রগুলো কতো বিচিত্র রুপান্তর দিয়ে যায়, কোনো অজ্ঞাত বা আরম্ভকারীর কাছে এগুলো প্রথম দৃষ্টিতে স্পষ্টভাবে অসম্ভব্য পরিচয়গুলো অতিশয় আলাদা মনে হয়, আমার মনে হয় এটি প্রাথমিক গণিত অধ্যয়নের প্রথম জটিলতার একটি। আমার প্রায়ই মানুষের পড়া কিছু নির্দিষ্ট ভুত ও পরীর কথা মনে পড়ে, যারা এক মুহূর্তে কারো কুনুইয়ের কাছে এক রূপে থাকে, কিন্তু পরের মুহূর্তেই অনেক আলাদা রূপ ধারণ করে।
লাভলেস বিশ্বাস করতেন যে কার্যকরীভাবে বিজ্ঞান ও গাণিতিক ধারণা প্রয়োগে অন্তর্দৃষ্টি এবং কল্পনাশক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি অধিবিদ্যাকেও গণিতের মতোন গুরুত্ব দিতেন এবং উভয়কেই "আমাদের চারিদিকের অচেনা বিশ্ব দেখার" জন্যে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম মনে করতেন।
মৃত্যু
১৮৫২ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে নভেম্বরভলাভলেস জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৩৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। এই অসুখ কয়েকমাস যাবৎ স্থায়ী ছিল, এ সময়ে অ্যানাবেলা দায়িত্ব নিয়েছিল যে অ্যাডা কার সাথে দেখা করতে পারবে এবং অ্যাডা’র সকল বন্ধুবান্ধব ও বিশ্বস্ত মানুষদের বহির্ভূত করে দেয়। তাঁর মায়ের প্রভাবে, অ্যাডা’র মধ্যে একটি ধর্মীয় পরিবর্তন আসে ও অ্যাডাকে প্রভাবিত করে তাকে দিয়ে অতীতের আচরণের জন্যে অনুতপ্ত করানো হয়। এখানে অ্যানাবেলাকে তাঁর নির্বাহক বানানো হয়। তিনি ৩০শে আগস্ট তাঁর স্বামীর নিকট কিছু শিকার করার পরে তাঁর স্বামীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বামী তাঁর মৃতুসজ্জা ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তিনি স্বামীকে কি বলেছিলেন তা জানা যায়নি। অ্যাডা’র অনুরোধে তাকে নটিংহামশিরের হুকনালে সেইন্ট ম্যারি ম্যাগডালেনের চার্চ-এ তাঁর পিতার পাশে দাফন করা হয়। হর্স লে টাওয়ারের সাথে সংযুক্ত একটি চ্যাপেলে তাঁর ও তাঁর পিতার জন্যে একটি স্মৃতিস্মারক ল্যাটিনে লেখা আছে।
কাজ
লাভলেস সারা জীবনই তৎকালীন বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন ও কাল্পনিক জিনিসের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহী ছিলেন। এর মধ্যে ফ্রেনোলজি ও মেসমেরিসম অন্তর্ভুক্ত ছিল। অ্যাডা ব্যাবেজের সাথে কাজের পরেও বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ জারি রেখেছিলেন। ১৮৪৪ সালে তিনি তার বন্ধু ওরঞ্জও গ্রেইগের কাছে তার একটি মস্তিষ্কে চিন্তা ও নার্ভে অনুভূতি কিভাবে তৈরি হয় তা নিয়ে একটি গাণিতিক মডেল(নার্ভাস সিস্টেমের গণনা) তৈরি করার ইচ্ছা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। যদিও তিনি এটি করতে পারেননি। কিছু ক্ষেত্রে, মস্তিষ্ক নিয়ে তার আগ্রহ এসেছিল তাঁর মা থেকে পাওয়া তার "সম্ভাব্য" পাগলামি নিয়ে দীর্ঘকালীন চিন্তায় সমাবেশ থাকার ফলে। এক্ষেত্রে গবেষণার অংশ হিসেবে, বৈদ্যুতিক পরীক্ষণ করার জন্যে তিনি ১৮৪৪ সালে বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী অ্যান্ড্রু ক্রসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। একই বছরে তিনি ব্যা রন কার্ল ভন রেইকেনবাকের রিসার্চেস্ অফ মাগনেটিসম নামে একটি পেপারের জন্যে রিভিউ লিখেছিলেন, কিন্তু এটি পাবলিশ করা হয়নি এবং মনে হয় প্রথম ড্রাফটের পরে আর অগ্রগতি হয়নি। ক্যান্সার হওয়ার পূর্ববর্তী বছরে, ১৮৫১ সালে তিনটি মাকে একটি চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন যে গণিত ও সঙ্গীত সম্পর্কিত "কিছু উৎপাদন" নিয়ে কাজ করছেন।
১৮৩৩ সালের জুনে তাদের পারস্পরিক বন্ধু ম্যারি সমারভিলের মাধ্যমে অ্যাডা প্রথমবার চার্লস ব্যাবেজের সাথে সাক্ষাৎ করেন। একই মাসের পরবর্তীতে ব্যাবেজ তার ডিফারেন্স ইঞ্জিনের প্রোটোটাইপ দেখানোর জন্যে লাভলেসকে আমন্ত্রণ করেন। তিনি ব্যাবেজের যন্ত্রটি দেখে অভিভূত হন এবং সমার্ভিলের সাথে সম্পর্কের সহায়ে প্রায়ই যথাসম্ভব ব্যাবেজের সাথে দেখা করতে যেতেন। ব্যবেজ তাঁর গাণিতিক ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা দেখে মুগ্ধ হন। ব্যাবেজ তাকে "সংখ্যার জাদুকরী" বলতেন। ১৮৪৩ সালে তিনি তাকে লিখেছিলেন:
১৮৪২-৪৩ সালে নয় মাস ধরে, ব্যাবেজের নতুন যন্ত্রের পরিকল্পনার উপর ইতালীয় গণিতবিদ লুইগি মেনাব্রিয়ার আর্টিকেল অনুবাদ করেছিলেন। এই আর্টিকেলের সাথে তিনি কয়েকটি নোট যুক্ত করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের কাজ একটি জটিল বিষয়; অনেক আরো বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টি বুঝতে পারি নি এবং ব্রিটিশ ব্যবস্থা তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি। লাভ লেসের নোটে অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন ও প্রাথমিক ডিফারেন্স ইঞ্জিনের পার্থক্যও বুঝতে হয়েছিল। তাঁর কাজ তৎকালীন প্রশংসিত হয়েছিল; বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে নিজেকে তাঁর লেখার সমর্থক মনে করতেন।
এই নোটগুলো মূল অনুচ্ছেদটির তুলনায় প্রায় তিন গুণ দীর্ঘ ছিল এবং এতে(নোট জি এর মধ্যে)অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন ব্যবহার করে বার্নুলীর লির সংখ্যার একটি ধারা গণনার প্রক্রিয়া সম্পুর্ণ বিস্তারিতভাবে লিখিত ছিল, এটি কখনো তৈরি করা হলে সঠিকভাবে হিসেব করতে পারতো(ব্যাবেজের কেবল ডিফারেন্স ইঞ্জিন তৈরি করা হয়েছে, ২০০২ সালে লন্ডনে সম্পুর্ণ হয়েছে)। এই কাজের উপর নির্ভর করে, অনেকেই লাভলেসকে প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে বিবেচনা করেন এবং তাঁর হিসেবের প্রক্রিয়াকে পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রাম বলা হয়। অনেকের এটিতে মতানুবাদ আছে কেননা চার্লস ব্যাবেজের কিছু পূর্ববর্তী লেখনীকে কম্পিউটার প্রোগ্রাম ধরা যায়।
নোট জিতে লাভলেস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বরখাস্ত করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন যে, "অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের কিছুই তৈরি করার স্বত্তা নেই। এটি কেবল সেই কাজগুলোই করতে পারে যেগুলো আমরা এটিকে করতে বলতে পারি। এটি কোনো বিশ্লেষণ অনুসরণ করতে পারে; কিন্তু এটির নিজের কোনো বিশ্লেষণধর্মী সম্পর্ক বা সত্য বুঝার কোনো ক্ষমতা নেই।" এই অসমম্মতি বিভিন্ন বিতর্ক ও প্রত্যাখ্যানের বিষয় হয়ে উঠেছে, উদাহরণস্বরূপ এটি অ্যালান টুরিং নিজের "কম্পিউটিং মেশিনারি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স" পেপারে করেছিলেন। বেশিরভাগ আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞানীই বিবেচনা করে যে এই দৃষ্টিভঙ্গিটি আদিকালের এবং কম্পিউটার সফওয়্যার এমনভাবে তৈরি করা যেতে পারে যা প্রোগ্রামার দ্বারা বোঝা নাও যেতে পারে।
ব্যাবেজ যখন একটি অসাক্ষরিত ইতিকথায় নিজের মন্তব্য(তাঁর ইঞ্জিনের প্রতি সরকারের ব্যবহার) লিখতে চেয়েছিলেন, যা ভুলে যুক্ত ঘোষণা হিসেবে বোঝা সম্ভব্য- ফলে পেপারগুলো প্রকাশ হওয়ার সময় ব্যাবেজ ও লাভলেস হালকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পারে। যখন ট্যালোরের সাইন্টিফিক মেমোর্স সিদ্ধান্ত নেয় যে মন্তব্যটি সাক্ষর করতে হবে, তখন ব্যাবেজ লাভ লেস কে পেপারটি প্রত্যাখ্যান করতে বলে চিঠি লেখেন। এই প্রথম লাভলেস জানতে পারেন যে তিনি সেটি অসাক্ষরিত রেখে দিয়েছিল। লাভ লেস পেপারটি প্রত্যাখ্যান করতে মানা করে ফেরত চিঠি লিখে। ইতিহাসবিদ বেনজামিন উলি ধারণা করেন যে, "ব্যাবেজের কাজ বুঝায় যে তিনি অনেক উৎসাহিত ভাবে অ্যাডা’র অংশগ্রহণ চেয়েছিলেন এবং খুশিখুসি অ্যাডাকে জড়িত করেছিলেন ...কারণ তার 'প্রখ্যাত নাম' আছে। তাদের বন্ধুত্ব উদ্বৃত হয়ে উঠে এবং তারা পত্রবিনিময় চালিয়ে যান। ১৮৫১ সালের ১২ই আগস্ট, যখন অ্যাডা ক্যান্সারে মারা যাচ্ছিলেন, তখন তিনি ব্যবেজকে তার নির্বাহক হতে বলে চিঠি লিখেন, কিন্তু এই পত্রটি ব্যাবেজকে প্রয়োজনীয় আইনী অধিপত্ত দেয়নি। ওয়ার্থী ম্যানোরের ছাদের একটি অংশ ফিলোসফারস্ ওয়াক নামে পরিচিত। এই স্থানটিতে লাভলেস ও ব্যাবেজ গাণিতিক নীতিমালা আলোচনা করতে করতে হাটতেন বলে খ্যাত।
প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রাম
১৮৪০ সালে ব্যাবেজ কে তার অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নিয়ে একটি সেমিনার দেয়ার জন্যে ইউনিভার্সিটি অফ টুরিং-য়ে ডাকা হয়েছিল। এখানে একটি যুবক ইতালীয় প্রকৌশলী ও ভবিষ্যতে ইতালির প্রধানমন্ত্রী, লুইগী মেনাবেরা ব্যাবেজের লেকচারকে ফ্রেঞ্চে লিখেছিলেন এবং এই লেখাকে পরবর্তীতে Bibliothekke unidnsn de Geneve হিসেবে ১৮৪২ সালের অক্টোবরে প্রকাশ করা হয়। ব্যাবেজের বন্ধু চার্লস হুইটস্টোন মেনাবেরার পেপারটিকে ইংলিশে অনুবাদ করার জন্যে অ্যাডা লাভলেসকে নিয়োজিত করেন। অ্যাডা এই পেপারটিকে বিভিন্ন নোট দ্বারা প্রসারিত করেন, যা অনুবাদের সাথে যুক্ত করা হয়েছিল। অ্যাডা লাভলেস ব্যাবেজের সাহায্যের সন্নিবেশে এক বছরের বেশিরভাগ সময়ই এটি করে কাটিয়ে দেন। এই নোটগুলো মেনবেরার পেপারের থেকে বেশি বিস্তারিত ছিল ও এটি পরবর্তীতে ট্যায়লোর-এর সাইন্টিফিক মেমৈর্স ১৮৪৩ সালের সেপ্টেম্বর এডিশনে এএএল নামে প্রকাশিত হয়েছিল।
অ্যাডা লাভলেসের এই নোটগুলোকে বর্ণানুক্রমে A থেকে G পর্যন্ত আখ্যায়িত করা হয়েছিল। নোট জি-তে তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনে বের্ণুলির সংখ্যা হিসেব করার জন্যে একটি অ্যালগরিদমের বর্ণনা করেছিলেন। এটিকে প্রথম প্রকাশিত অ্যালগরিদম মনে করা হয় যা কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্যে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল এবং এ কারণেই অ্যাডা লাভলেসকে প্রায়ই প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই ইঞ্জিন কখনো সম্পুর্ণ হয় নি তাই অ্যাডা’র প্রোগ্রামকে কখনোই পরীক্ষণ করা হয়নি।
অ্যাডা’র মৃত্যুর প্রায় এক শতক পরে, ১৯৫৩ সালে ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের উপর অ্যাডা লাভলেসের নোটগুলোকে বি. ভি. বাউডেনের ফাস্টার দ্যান থউট: এ সিম্পোজিয়াম অন ডিজিটাল কম্পিউটিং মেশিন-এ পরিশিষ্ট হিসেবে পুনরায় প্রকাশ করা হয়। এই ইঞ্জিনকে এখন কম্পিউটারের প্রাথমিক মডেল হিসেবে চেনা হয়েছে নোটগুলোকে এখন একটি কম্পিউটার এবং সফটওয়্যারের বর্ণনা ধরা হয়।
কম্পিউটিং ডিভাইসের সম্ভাবনার অন্তর্দৃষ্টি
অ্যাডা লাভলেস তাঁর নোটগুলোতে অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন এবং পূর্ববর্তী গণনা যন্ত্রের মধ্যের পার্থক্যের উপর জোর দেন, বিশেষ করে এটির যেকোনো জটিলতার সমস্যা প্রোগ্রামের মাধ্যমে সমাধান করার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এই যন্ত্রের ক্ষমতা সংখ্যা গণনার তুলনায় অনেক দূর প্রসারিত হতে পারে। তার নোটগুলোতে, তিনি লিখেছেন:
এই বিশ্লেষণ পূর্ববর্তী গণনা যন্ত্রের সক্ষমতার নিয়ে ধারণার উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এবং সত্যায়িত হওয়ার এক শতক পূর্বেই আধুনিক কম্পিউটিংয়ের প্রভাব প্রত্যাশা করতে পেরেছিল। যৌক্তিক চিন্হের উপর ভিত্তি করে যেকোনো প্রক্রিয়ায় কম্পিউটিংয়ের প্রয়োগের ক্ষেত্রে অ্যাডা’র এই অন্তর্দৃষ্টিকে ওয়াল্টার আইজাকসন টেক্সটাইলের একটি পর্যবেক্ষণের সাথে বর্ণিত করেন: "যখন তিনি কিছু যান্ত্রিক তাঁত দেখলেন যা পাঞ্চকার্ড ব্যবহার করে সুন্দর ফোঁড়োন সেলাই করার নির্দেশনা প্রদান করে, এটি তাকে ব্যাবেজের ইঞ্জিনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় কেননা সেটি পাঞ্চকার্ড ব্যবহার করে হিসেব করে।" এই অন্তর্দৃষ্টি কে বেটি টোল ও বেনজামিন উওলির মতোন লেখকেরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, এমনকি প্রোগ্রামার জন গ্রাহাম-কামিং ও মনে করেন(তাঁর প্রকল্প প্ল্যান ২৮ এর উদ্দেশ্য প্রথম সম্পুর্ণ অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন তৈরি করা)।
কম্পিউটিংয়ের ইতিহাসবিদ এবং ব্যাবেজ বিশেষজ্ঞ দোরণ সোয়াদ অনুসারে:
অ্যাডা এমন কিছু দেখতে পেয়েছিল যা ব্যাবেজ দেখতে পারেনি। ব্যাবেজের ইঞ্জিনের জগৎ সংখ্যা দ্বারা আবদ্ধ ছিল... যা অ্যাডা দেখেছিল...তা হলো যে সংখ্যা পরিমাণ ব্যতীত অন্যান্য সত্ত্বাও প্রকাশ করতে পারে। তাই কোনো যন্ত্র দ্বারা সংখ্যা পরিবর্তন করা গেলে, যদি সেই সংখ্যাগুলো অন্য জিনিস, অক্ষর, স্বরলিপির প্রতিরূপ হতে পারে তাহলে কোনো মেশিন নিয়ম অনুসারে চিন্হ পরিবর্তন করতে পারে, যার মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত হলো সংখ্যা। এটি কোনো সংখ্যা গণনা করার যন্ত্র এবং নিয়ম অনুসারে চিন্হ পরিবর্তন করার যন্ত্রের মধ্যে মূল রূপান্তর এবং এটিই গণনা ও কম্পিউটার -- এবং সাধারণ ক্ষেত্রে মধ্যে মূল রূপান্তর-- আর বর্তমান আধুনিক কম্পিউটিংয়ের উচ্চ স্থল থেকে ফেরত তাকিয়ে দেখলে, আমরা যদি সেই রূপান্তরের ইতিহাসকে ওলোট-পালোট করে দেখি, তখন এই রূপান্তর অ্যাডা স্পষ্টভাবে তাঁর ১৮৪৩ সালের পেপার আবিষ্কার করেছিলেন।
মেকানিজম এবং লজিক্যাল কাঠামোর মধ্যে পার্থক্য
১৮৩৪ সালের প্রবন্ধ অনুসারে ডিফারেন্স ইঞ্জিনের কম্পিউটিং প্রক্রিয়া এবং তাঁর রিভিউ করা অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের যৌক্তিক কাঠামোর মধ্যের পার্থক্য বিস্তারিতভাবে বুঝতেন। তিনি মতবাদ দিয়েছিলেন যে দুইটি ক্ষেত্রেই আলাদা আলাদা বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হতে পারে।
[১৮৩৪ সালের নিবন্ধে] ইঞ্জিনটি কে প্রথমত যান্ত্রিক দিক দিয়ে বর্ননা করে, ইঞ্জিনটি যেই গাণিতিক নীতিগুলো অনুসরণ করে তাতে মৃদু প্রবেশ করা হয়, কিন্তু এই ইঞ্জিনটি বিভিন্ন প্রকার সরণী গননার পদ্ধতি ও কৌশল অনেক সূক্ষ্মভাবে আলোচনা করা হয়। অন্যদিকে এম. মেনাবেরা এটি অনুমান করে নেন যে ইঞ্জিনটি নির্দিষ্ট কিছু কাজ করতে পারে, কিন্তু কিভাবে পারে তার কোনো ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন নি; আর তার পুরো মনোযোগ ছিল যন্ত্রটির অনুমান করা ক্ষমতার মধ্যে ওই বৃহৎ বিষয়টির প্রত্যেকটি শাখা একত্রে আনার জন্যে কিভাবে যৌত্তিক বিধিগুলো সাজানো আর মিশ্রিত করা যায় সেটির প্রতি। এটি পরিষ্কার যে, গণনাকারী ইঞ্জিন আবিষ্কারের সময় বিষয়টির দুইটি শাখাই তদন্ত করার জন্যে সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র... তারা অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত, যদিও অন্তর্গত প্রকৃতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে, এ কারণেই হয়তো একই ব্যাক্তি উভয় বিষয়তেই সমভাবে প্রগাঢ় বা সফল প্রমাণিত নাও হতে পারে।
অবদান নিয়ে বিতর্ক
যদিও লাভলেসকে প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার মনে করা হয়, কিছু জীবনবৃত্তান্তকারী, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও ইতিহাসবিদ অন্যটি দাবি করে।
অ্যালান জি ব্রম লি ১৯৯০ সালে ডিফারেন্স অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন প্রবন্ধে লিখেছিলেন:
ব্রুস কলিয়ের ১৯৭০ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির পিএইচডি থিসিসে লিখেছিলেন যে লাভলেস "অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনে উল্লেখযোগ্য অনুদান দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো প্রমাণ নেই যে তিনি কোনোভাবে এটির নকশা বা তত্ত্বকে উন্নত করেছে।"
ইউজিন এরিক কিম এবং বেটি আলেকজান্দ্রিয়া টুলে ধরেন যে লাভলেসকে প্রথম প্রোগ্রামার মনে করা "সঠিক", কেননা ব্যাবেজ তার অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের জন্যে কিছু প্রাথমিক প্রোগ্রাম লিখেছিলেন, যদিও এর বেশিরভাগই কোনোদিন প্রকাশ পায়নি। ব্রমলে উল্লেখ করেন যে ব্যাবেজ ১৮৩৭ থেকে ১৮৪০ পর্যন্ত কয়েক ডজন নমুনা প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন, যেই সবগুলো লাভলেসের নোটের পূর্বে হয়েছিল। ডরোথি কে. স্টেইন মনে করেন লাভলেসের নোটগুলো "কোনো বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের নীল নকশার তুলনায় লেখকের গাণিতিক অনিশ্চয়তা, আবিষ্কারকের রাজনৈতিক লক্ষ্য এবং সবার উপরে লেখাটির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গের প্রতিফলক।"
ব্যাবেজের উপরে কাজের জন্যে পরিচিত কম্পিউটিং ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ দোরণ সোয়াদ ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের উপর একটি লেকচারের সময় অ্যাডা লাভলেসকে নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বর্ণনা করেছিলেন যে, অ্যাডা লাভলেসকে কোনো গাণিতিক প্রতিভাবান ব্যাক্তির বদলে "প্রতিশ্রুতিশীল আরম্ভকারী", এবং ব্যাবেজ অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন ধারণা করার পাঁচ বছর পরে তিনি গণিতের সাধারণ বিষয়গুলো অধ্যয়ন শুরু করেছিলেন, তাই তিনি কোনো এতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ যোগদান করেননি, এবং এটি যে তিনি প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রাম লেখার পরিবর্তে কেবল প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রাম প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সোয়াদ এ বিষয়ে একমত যে, কেবলমাত্র অ্যাডাই অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনকে পরিমাণ ব্যতীত সত্ত্বা ব্যক্ত করার ক্ষমতাসম্পন্ন হিসেবে সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন।
স্টিফেন ওলফ্রাম তাঁর বই আইডিয়া মেকার্স-এ লাভলেসের অবদানের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। যদিও তিনি এটি শিকার করেন যে লাভলেসের নোটের পূর্বে ব্যাবেজ অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের জন্যে বেশ কিছু অপ্রকাশিত অ্যালগরিদম লিখেছিলেন, তিনি দাবি করেন যে "অ্যাডা’র বার্ণুলির সংখ্যার হিসাবের মতোন এতো জটিল—বা এতো পরিষ্কার কিছুই নেই। ব্যাবেজ অবশ্যই অ্যাডা’র কাজে সাহায্য ও মন্তব্য প্রদান করেছিলেন, কিন্তু অ্যাডাই স্পষ্টভাবে এটির চালক ছিল।" ওলফার্ম তারপর ইঙ্গীত করেন যে লাভলেসের প্রদান অর্জন ছিল ব্যাবেজের চিঠিপত্র থেকে পরিমার্জন করা "যন্ত্রের একটি ভাবগত প্রক্রিয়ার স্পষ্ট প্রদর্শন—যা ব্যাবেজ কখনো করেননি।"
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
১৮১০ দশক
অ্যাডা লাভ লেসের জন্মের পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের পরে, লর্ড বায়রন ১৮১৬ সালে তাঁর স্ত্রী লেডি বায়রনকে "ফেয়ার থি ওয়েল" কবিতা লেখেন। কবিতাটিতে তিনি লিখেন:
And when thou would'st solace gather—
When our child's first accents flow—
Wilt thou teach her to say "Father!"
Though his care she must forego?
When her little hands shall press thee—
When her lip to thine is pressed—
Think of him whose prayer shall bless thee—
Think of him thy love had blessed!
Should her lineaments resemble
Those thou never more may'st see,
Then thy heart will softly tremble
With a pulse yet true to me.
১৯৭০ দশক
রমুলাস লিন্নের ১৯৭৭ সালের নাটক চিল্ডে বায়রন -এ লাভলেসকে দেখানো হয়েছিল।
১৯৯০ দশক
উইলিয়াম গিবসন এবং ব্রুস স্টার্লিংয়ের ১৯৯০ সালের স্টীমপাঙ্ক উপন্যাসে, লাভ লেস "পাঞ্চড কার্ড" এর উপরে একটি লেকচার প্রদান করেন যা আসল আবিষ্কারের কয়েক দশক পূর্বেই গোডেলের অসম্পূর্ণতার উপপাদ্য প্রমাণ করে দেয়।
১৯৯৭ এর "কন্সিভিং অ্যাডা" নামন চলচ্চিত্রে দেখায়, অ্যাডা’র দ্বারা আবিষ্ট হয়ে একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী "আমৃত্যু তথ্যের তরঙ্গ" ব্যাবহারে তার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম খুঁজে বের করেন।
১৯৯৩ সালে টম স্টপার্ড রচিত আর্কেডিয়া নাটকে, অকাল্পক্কো প্রতিভাবান কিশোর থমাসিয়া কভার্লি- "আপাতদৃষ্টিতে" অ্যাডা লাভলেসের উপর ভিত্তি করে (নাটকে লর্ড বায়রন ও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন)- বিশৃংখলা তত্ত্ব অনুধাবন করেন এবং তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র তাত্ত্বিকভাবে ধারণা করেন; উক্ত দুটোর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত পাওয়ার পূর্বেই।
২০০০ দশক
২০০৫ সালে জন ক্রাউলির লিখিত লর্ড বায়রনস্ নভেল: দ্যা ইভনিং ল্যান্ড উপন্যাসে লাভ লেস কে একটি অদেখা চরিত্র হিসেবে তাঁর ব্যাক্তিত্ব জোরালোভাবে তাঁর বাবার নভেল সংরক্ষণের করতে কথা ও বীর-বিরোধী প্রচেষ্টায় প্রকাশ পেয়েছিল।
২০১০ দশক
লরেন গুন্ডারসন রচিত ২০১৫ সালের নাটকে লাভলেস ও চার্লস ব্যাবেজকে প্রতিদানহীন ভালোবাসায় জড়িত হতে দেখিয়েছিল এবং এটিতে মুত্যুর পরবর্তীতে লাভলেস ও তাঁর বাবার একটি সাক্ষাৎ কল্পনা করা হয়।
দ্যা থ্রিলিং অ্যাডভেঞ্চারস্ অফ লাভলেস অ্যান্ড ব্যাবেজ নামক ওয়েব কমিক ও গ্রাফিক নোভেলের প্রধান চরিত্র হিসেবে লাভলেস এবং বেবেজকে দেখানো হয়। এই কমিকে অ্যাডা লাভলেসের ইতিহাসের উপর বিস্তারিত পাদটীকা রয়েছে এবং সংলাপের অনেক বাক্য আসল চিঠিপত্র থেকে নেয়া হয়েছিল।
জর্ডান স্ট্রাটফর্ড দ্বারা তৈরি স্টীমপাঙ্ক দ্যা উলস্টোনক্রাফট্ ডিটেকটিভ এজেন্সি সিরিজে লাভলেস ও ম্যারি শেলিকে কিশোরী প্রধান চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়।
লিলি লেসার দ্বারা দ্যা ফ্রানকেস্টাইন ক্রনিকলস্-এর দ্বিতীয় সিজনে লাভলেস, অ্যাডা আগস্টা বায়রন হিসেবে পরিচিত। একটি সত্যরূপে মানব-রূপ মেশিনের কার্যক্রম প্রদান করতে তাকে "বিশ্লেষক" হিসেবে নিয়োগদান করা হয়। মেশিনটির ব্রাশ অংশগুলো ব্যাবেজের অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিনের মতোন ছিল। এখানে সে উচ্চতর গণিত অধ্যয়নে ফেরত যাওয়ার পূর্বে তাঁর চাকরি তাকে ব্যস্ত রেখেছে।
এইটিভি সিরিজ ভিক্টোরিয়া (২০১৭)- এর দ্বিতীয় সিজনে লাভলেস ও ব্যাবেজকে দেখানো হয়। "দ্যা গ্রীন-আইড মনস্টার" পর্বে এমরাল্ড ফেনেল লাভলেস হিসেবে অভিনয় করেন।
২০১৭ সালে আরম্ভ ক্যার্ডানো ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্ম তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম অ্যাডা দিয়েছে এবং অ্যাডা’র ক্ষুদ্রতম সাব-ইউনিট হলো লাভলেস।
হল্ট অ্যান্ড ক্যাচ ফায়ার-এর চরিত্র ক্যামেরন হাউই দ্বারা তৈরি অপারেটিং সিস্টেমের নাম "লাভলেস" দেয়া হয়েছিল।
২০১৯ সালের বিগ ফিনিশ ডক্টর হু-এর শ্রুতি নাটক দ্যা ইঞ্চাট্রেস অফ নাম্বরস্ পর্বে লাভলেস একটি মূল চরিত্র, এখানে চতুর্থ ডক্টর হিসেবে টম বেকার, তাঁর সঙ্গী ডাব্লিউপিসি অ্যান কেলসো হিসেবে জ্যান স্লাভিন। লাভলেসের চরিত্র পালন করেছিলেন ফিন্টি উইলিয়ামস্।
২০১৯ সালে ফিলাডেলফিয়া মঞ্চ কোম্পানি অ্যাপ্লাইড মেকানিক্সের পক্ষ থেকে স্টেম ফেম্মেস নাটকে লাভলেস একটি বিশিষ্ট চরিত্র।
২০২০ দশক
২০২০ সালের ৫ই জানুয়ারি প্রথম প্রচারিত ডক্টর হু সিরিজ ১২ এর দ্বিতীয় পর্ব স্পাইফল, পার্ট ২ পর্বটিতে লাভলেসকে একটি চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সিলভী ব্রিগস, এর সাথে ছিল চার্লস ব্যাবেজ ও নুর এনায়েত খানের চরিত্র। ২০২১ সালে নিভিডিয়া তাদের আরটিএক্স ৪০০০ সিরিজে প্রদর্শিত জিপিইউ কাঠামোর নাম "অ্যাডা লাভলেস" রেখেছিলেন। এটি নিভিডিয়ার প্রথম এমন একটি কাঠামো, যার উভয় প্রথম ও শেষ নাম রয়েছে।
স্মারক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্যে তৈরিকৃত কম্পিউটার ভাষার নাম অ্যাডা, যা লাভলেসের নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৮০ সালের ১০ই ডিসেম্বর এই ভাষার রেফারেন্স ম্যানুয়ালকে অনুমোদিত করা হয়েছিল এবং এই ভাষার জন্যে ইউনাইটেড স্টেটস মিলিটারি স্ট্যান্ডার্ড ছিল MIL-STD-1815, এতে লাভলেসের জন্মসাল হিসেবে এই সংখ্যা দেয়া হয়েছে।
১৯৮১ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর উইমেন ইন কম্পিউটিং তাদের অ্যাডা লাভলেস অ্যাওয়ার্ড প্রচলন করে। ১৯৯৮ সাল থেকে ব্রিটিশ কম্পিউটার সোসাইটি(বিসিএস) লাভলেস মেডেল প্রদান করছে এবং ২০০৮ সাল থেকে ছাত্রীদের জন্যে বার্ষিক প্রতিযোগিতা চালু করেছে। বিসিএসউইমেন লাভলেস কলোকিয়াম নামক স্নাতক ছাত্রীদের জন্যে একটি বার্ষিক সম্মেলন অর্থায়ন করে। লন্ডনের টটেনহ্যাম হ্যালে অ্যাডা কলেজ নামক একটি পরবর্তী-মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যা ডিজিটাল দক্ষতায় জোরপ্রদান করে।
২০০৯ সাল থেকে অ্যাডা লাভলেস ডে নামক একটি বার্ষিক অনুষ্ঠান অক্টোবরের দ্বিতীয় মঙ্গলবারে পালন করা হয়। এর লক্ষ্য হলো "... বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে নারীদের ব্যাক্তিত্ব বৃদ্ধি করা।" এবং এ ক্ষেত্রগুলোতে "মেয়ে এবং নারীদের জন্যে নতুন রোল মডেল তৈরি করা"। অনুষ্ঠান হিসেবে উইকিপিডিয়ায় এডিটাথন করা হয় যাতে উইকিপিডিয়া নিবন্ধের দিক দিয়ে নারীদের অবদান স্মিকৃতির উন্নয়ন করা যায় এবং যাতে সম্পাদকেরা উইকিপিডিয়ায় অনিচ্ছাকৃত লিঙ্গ পক্ষপাত হ্রাস করতে পারে।
অ্যাডা ইনিশিয়েটিভ নামক একটি বেসরকারি সংস্থা ছিল যারা মুক্ত সংস্কৃতি ও মুক্ত-প্রবেশিধিকার আন্দোলনে নারীদের অবদান বৃদ্ধির কাজে নিয়োজিত ছিল।
জারাগজা ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল কলেজ বিল্ডিংয়ে প্রকৌশল বিল্ডিংটিকে অ্যাডা বায়রন বিল্ডিং বলা হয়। লাভলেসের বাসস্থানের নিকট পর্লক গ্রামে একটি কম্পিউটার সেন্টারকে তাঁর নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছে। লাভলেসের নবজাতকালীন বাসস্থানের নিকট নটিংশিরের কিরকবি-ইন-আশফিল্ড স্থানে একটি পরিষদের মালিকাধীন বিল্ডিংয়ের নাম অ্যাডা লাভলেস হাউস।
২০১২ সালে, অ্যাডা লাভলেসের জন্মদিনে গুগল ডুডল ও একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে তাকে সম্মাননা দেয়া হয়।
২০১৩ সালে অ্যাডা ডেভলপারস একাডেমী সংশাপিত হয় এবং তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়। অ্যাডা ডেভলপারস একাডেমী এর উদ্যোগ ছিল প্রযুক্তিকে বৈচিত্র্যময় করতে নারী ও বৈচিত্র্যময় লিঙ্গের লোকেদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সাম্প্রদায়িক সহায়তা প্রদান করে প্রযুক্তির চেহারা পরিবর্তনে পেশাগত সফটওয়্যার উন্নয়নকারী হিসেবে গড়ে তোলা।
২০১৩ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বরে, বিবিসি রেডিও ৪-এ জিবনির প্রোগ্রাম গ্রেট লাইভসএর একটি পর্ব অ্যাডা লাভলেস কে উৎসর্গ করা হয়েছিল। তাঁকে টিভি উপস্থাপক কনি হক অর্থায়ন করেছিল।
২০১৫ সাল থেকে, সকল নতুন ব্রিটিশ পাসপোর্টে চার্লস ব্যাবেজ ও অ্যাডা লাভলেসের ছবি থাকবে।
২০১৭ সালে, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে অন্যান্য নারীদের পাশাপাশি তাঁকেও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল।
২০১৮ সালের ২রা ফেব্রুয়ারিতে, স্যাটেলজিক নামক একটি উচ্চ-রেজোলিউশন বিশিষ্ট পৃথিবী পর্যবেক্ষণ চিত্রায়ন ও বিশ্লেষণ কোম্পানি অ্যাডা লাভলেসের সম্মানে নিউস্যাট(ÑuSat) জাতীয় ক্ষুদ্র স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে।
২০১৮ সালের মার্চে, অ্যাডা লাভলেসের জন্যে নিউ ইয়র্ক টাইমস্ একটি বিলম্বিত মৃত্যুকথা প্রকাশ করে।
২০১৮ সালের ২৭শে জুলাই, সিনেটর রন ওয়্যাডেন ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবরকে ন্যাশনাল অ্যাডা লাভলেস ডে হিসেবে আখ্যায়িত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনেটে উপস্থিত করেন: "বিজ্ঞান ও গণিতে নেতৃস্থানীয় নারী হিসেবে অ্যাডা লাভলেসের জীবন ও অবদানকে সম্মান করতে"। এই সিদ্ধান্ত(S.Res.592) একটি প্রস্তাবনার সাথে সর্বসম্মত ভাবে কোনো সংশোধনী ব্যতীত বিবেচিত ও অনুমোদিত হয়েছিল।
২০২০ সালের নভেম্বরে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন, যেখানে লাইব্রেরীতে পুরুষদের চল্লিশটি ভাস্কর্য ছিল, সেখানে চারটি নারীদের নতুন ভাস্কর্য তৈরি করা হবে। এর মধ্যে একজন ছিলেন অ্যাডা লাভলেস।
২০২২ সালে সম্মানে লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার শহরে প্রাক্তন এরগণ হাউসের কেন্দ্রে স্থানটির বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের সম্মানে অ্যাডা লাভলেসের একটি ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। এই পুনঃউন্নয়নটি ইমপেরিয়াল কেমিক্যাল হাউসের যৌগিক অংশ হিসেবে ছিল। এই ভাস্কর্যটি মার্গারেট সারাহ্ ক্যারপেন্টারের প্রতিকৃতির উপর নির্ভর করে এটিন ও ম্যারি মিলনার তৈরি করেছিলেন। ২০২২ সালের নারী দিবসে এই ভাস্কর্যটি উম্মোচন করা হয়েছিল। এটি মিলব্যাংক কোয়াটারের ৮ম তলা থেকে ডিন ব্র্যাডলি স্ট্রিট ও হর্সফেরি রোডের দিকে তাকিয়ে আছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, নিভিডিয়া নিজেদের নতুন অ্যাডা লাভলেস গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট(জিপিইউ) ক্ষুদ্রস্থাপত্য ঘোষণা করে।
দ্বিশতবার্ষিকী উৎসব
অ্যাডা লাভলেসের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
দ্যা অ্যাডা লাভলেস বাইসেনেটারি লেকচারস্ অন কম্পিউটিবিলিটি, ইসরায়েল ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিস, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫ - ৩১ জানুয়ারি ২০১৬।
অ্যাডা লাভলেস সিম্পোজিয়াম, ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড, ১৩-১৪ অক্টোবর ২০১৫।
২০১৫ সালের ১১ই এপ্রিল অ্যাডা.অ্যাডা.অ্যাডা নামক অ্যাডা লাভলেসের জীবন ও কাজের উপর একটি এক-নারী বিশিষ্ট শো(এলইডি আলো ব্যবহার করে) এডিনবার্গ ইন্টারন্যাশনল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে প্রথমবার দেখানো হয়েছিল এবং বিভিন্ন প্রযুক্তির সম্মেলন, ব্যবসা, সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিকভাবে ঘুরে ঘুরে দেখানো হচ্ছে।
লন্ডনের সায়েন্স মিউজিয়ামে এবং ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডের ওয়েস্টন লাইব্রেরীতে (বডলেইয়ান লাইব্রেরীর অংশ) বিশেষ প্রদর্শনী দেখানো হয়েছিল।
প্রকাশনা
Lovelace, Ada King. Ada, the Enchantress of Numbers: A Selection from the Letters of Lord Byron's Daughter and her Description of the First Computer. Mill Valley, CA: Strawberry Press, 1992. .
প্রকাশনার ইতিহাস
১৮৪৩ সালের অ্যাডা লাভলেসের "নোটসহ" স্কেচ অফ দ্যা অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন-এর প্রথম এডিশনের ছয়টি কপি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনটি রয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে, একটি আছে ইউনিভার্সিটি অফ ওকলাহোমা তে এবং একটি আছে ইউনাইটেড স্টেটস ইয়ার ফোর্স একাডেমিতে। ২০১৮ সালের ২০শে জুলাই, ষষ্ঠতম কপিটি একটি নিলামে ৯৫,০০০ ইউরোতে একটি অচেনা ক্রেতার কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীর কপিগুলোর একটির ডিজিটাল প্রতিকৃতি অনলাইনে পাওয়া যায়।
নিউ ইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ টাক্সাশোন অ্যান্ড ফাইনান্সে অপরিশোধিত করের জন্যে মার্টিন শ্ক্রেইলির কাছ থেকে অ্যাডা লাভলেসের লিখিত একটি পত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
তথ্যসূত্র
১৮১৫-এ জন্ম
১৮৫২-এ মৃত্যু
ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী
যুক্তরাজ্যের গণিতবিদ
ব্রিটিশ নারী গণিতবিদ
ইংল্যান্ডে ক্যান্সারে মৃত্যু
স্কটিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি
ইংরেজ নারী কবি | https://en.wikipedia.org/wiki/Ada_Lovelace | Ada Lovelace | Augusta Ada King, Countess of Lovelace (née Byron; 10 December 1815 – 27 November 1852), also known as Ada Lovelace, was an English mathematician and writer chiefly known for her work on Charles Babbage's proposed mechanical general-purpose computer, the Analytical Engine. She was the first to recognise that the machine had applications beyond pure calculation.
Lovelace was the only legitimate child of poet Lord Byron and reformer Anne Isabella Milbanke. All her half-siblings, Lord Byron's other children, were born out of wedlock to other women. Lord Byron separated from his wife a month after Ada was born and left England forever. He died in Greece when she was eight. Lady Byron was anxious about her daughter's upbringing and promoted Lovelace's interest in mathematics and logic in an effort to prevent her from developing her father's perceived insanity. Despite this, Lovelace remained interested in her father, naming her two sons Byron and Gordon. Upon her death, she was buried next to her father at her request. Although often ill in her childhood, Lovelace pursued her studies assiduously. She married William King in 1835. King was made Earl of Lovelace in 1838, Ada thereby becoming Countess of Lovelace.
Lovelace's educational and social exploits brought her into contact with scientists such as Andrew Crosse, Charles Babbage, Sir David Brewster, Charles Wheatstone and Michael Faraday, and the author Charles Dickens, contacts which she used to further her education. Lovelace described her approach as "poetical science" and herself as an "Analyst (& Metaphysician)".
When she was eighteen, Lovelace's mathematical talents led her to a long working relationship and friendship with fellow British mathematician Charles Babbage, who is known as "the father of computers". She was in particular interested in Babbage's work on the Analytical Engine. Lovelace first met him on 5 June 1833, when she and her mother attended one of Charles Babbage's Saturday night soirées with their mutual friend, and Lovelace's private tutor, Mary Somerville.
Between 1842 and 1843, Lovelace translated an article by the military engineer Luigi Menabrea (later Prime Minister of Italy) about the Analytical Engine, supplementing it with an elaborate set of seven notes, simply called "Notes".
Lovelace's notes are important in the early history of computers, especially since the seventh one contained what many consider to be the first computer program—that is, an algorithm designed to be carried out by a machine. Other historians reject this perspective and point out that Babbage's personal notes from 1837 to 1840 contain the first programs for the engine. She also developed a vision of the capability of computers to go beyond mere calculating or number-crunching, while many others, including Babbage himself, focused only on those capabilities. Her mindset of "poetical science" led her to ask questions about the Analytical Engine (as shown in her notes), examining how individuals and society relate to technology as a collaborative tool. The coding language Ada is named after her. |
2628 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%82 | কম্পিউটার প্রোগ্রামিং | কম্পিউটার প্রোগ্রামিং () হল একটি নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদন করার জন্য এক্সিকিউটেবল কম্পিউটার প্রোগ্রাম ডিজাইন ও বিল্ডিংয়ের প্রক্রিয়া। প্রোগ্রামের লিখিত রূপটিকে সোর্স কোড বলা হয়। যিনি সোর্স কোড লিখেন তাকে প্রোগ্রামার, কোডার বা ডেভেলপার বলা হয়। যেকোন বই যেমন একটি ভাষাতে যেমন ইংরেজি, রুশ, জাপানি, বাংলা, ইত্যাদিতে লেখা হয়, তেমনি প্রতিটি প্রোগ্রাম কোন একটি নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং ভাষাতে লেখা হয়,যেমন পাইথন, সি++, জাভা ইত্যাদি। প্রোগ্রাম রচনা করার সময় প্রোগ্রামারকে ঐ নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং ভাষার সিনট্যাক্স বা ব্যাকরণ মেনে চলতে হয়।
কম্পিউটার প্রোগ্রামিং হলো একটি প্রক্রিয়া যা একটি কম্পিউটিং সমস্যার মূল সূত্র থেকে এক্সিকিউটেবল কম্পিউটার প্রোগ্রামগুলির দিকে পরিচালিত করে। প্রোগ্রামিং ভাষা যেমন অ্যালগোরিদম তৈরি করে, বিশ্লেষণের উন্নয়ন, তাদের সঠিকতা এবং সম্পদ খরচ এবং বাস্তবায়নের এলগরিদমগুলির প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে একটি প্রোগ্রামিং ভাষাতে অ্যালগরিদমগুলির অন্তর্ভুক্ত। সোর্স কোড এক বা একাধিক প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা আছে। প্রোগ্রামিং এর উদ্দেশ্য হল একটি নির্দিষ্ট নির্দেশনা খুঁজে বের করা যা একটি নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদন বা প্রদত্ত সমস্যার সমাধান করা স্বয়ংক্রিয় হবে। প্রোগ্রামিং এর প্রক্রিয়াটি প্রায়ই অ্যাপ্লিকেশন ডোমেন, বিশেষ অ্যালগরিদম এবং আনুষ্ঠানিক যুক্তিবিজ্ঞান জ্ঞানের সহ বিভিন্ন বিষয়গুলিতে দক্ষতা প্রয়োজন।
সম্পর্কিত কর্মগুলি সোর্স কোড পরীক্ষা, ডিবাগিং এবং বজায় রাখা, বিল্ড সিস্টেমের বাস্তবায়ন এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামের মেশিন কোডের মত উপকারী জিনিসপত্রের ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত। এই প্রোগ্রামিং প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে, কিন্তু প্রায়ই সফ্টওয়্যার উন্নয়ন শব্দ শব্দ প্রোগ্রামিং, বাস্তবায়ন, বা সোর্স কোড প্রকৃত লেখা জন্য সংরক্ষিত কোডিং সঙ্গে এই বৃহত্তর প্রক্রিয়া জন্য ব্যবহার করা হয়। সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং সফ্টওয়্যার উন্নয়ন চর্চা সঙ্গে প্রকৌশল কৌশল সম্মিলান।
প্রোগ্রামিং এর বিভিন্ন ধাপসমূহ
প্রোগ্রামিং-এর ধাপগুলো যেকোন সমস্যা সমাধানের ধাপগুলোর মতোই। প্রধান ধাপগুলো হলো:
১. সমস্যাকে সংজ্ঞায়িত করা।
২. ইনপুট ও আউটপুট কি হবে তা নির্বাচন করা।
৩. ধারাবাহিক (ধাপে ধাপে) বর্ণনা করা (এলগরিদম লেখা)।
৪. ফ্লোচার্ট অঙ্কন করা।
৫. প্রোগ্রামিং ভাষা নির্নয় করা ও কোড লেখা।
৬. কোড কম্পাইল ও ডিবাগ করা।
৭. ডকুমেন্টেশন তৈরি করা।
উদাহরণস্বরূপঃ
সমস্যাঃ তিনটি সংখ্যার মধ্যে বড় সংখা বের করুন।
তথ্যসূত্র
Text Book: ANSI C by Ebalagurusamy.
আরো দেখুন
প্রোগ্রামিং ভাষা
কম্পিউটার বিজ্ঞান
কম্পিউটিং
প্রোগ্রামিং
বাইনারি ল্যাংগুয়েজ
কম্পিউটার | https://en.wikipedia.org/wiki/Computer_programming | Computer programming | Computer programming or coding is the composition of sequences of instructions, called programs, that computers can follow to perform tasks. It involves designing and implementing algorithms, step-by-step specifications of procedures, by writing code in one or more programming languages. Programmers typically use high-level programming languages that are more easily intelligible to humans than machine code, which is directly executed by the central processing unit. Proficient programming usually requires expertise in several different subjects, including knowledge of the application domain, details of programming languages and generic code libraries, specialized algorithms, and formal logic.
Auxiliary tasks accompanying and related to programming include analyzing requirements, testing, debugging (investigating and fixing problems), implementation of build systems, and management of derived artifacts, such as programs' machine code. While these are sometimes considered programming, often the term software development is used for this larger overall process – with the terms programming, implementation, and coding reserved for the writing and editing of code per se. Sometimes software development is known as software engineering, especially when it employs formal methods or follows an engineering design process. |
2629 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%20%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0 | সুব্রত মিত্র | সুব্রত মিত্র (১২ই অক্টোবর, ১৯৩০ - ৯ই ডিসেম্বর, ২০০১) ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান ক্যামেরাশিল্পী বা চিত্রগ্রাহক। অপু ত্রয়ীসহ সত্যজিৎ রায়ের বেশ কিছু চলচ্চিত্রে কাজের কারণে তিনি খ্যাতিলাভ করেন।
সুব্রত মিত্র একটি বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । বিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই তিনি সহপাঠীদের সাথে কাছাকাছি সিনেমা হলে ব্রিটিশ এবং হলিউডের চলচ্চিত্র দেখতেন । কলেজে পড়ার সময়ে তিনি ঠিক করেন তিনি একজন আর্কিটেক্ট বা একজন চিত্রগ্রাহক হবেন । তিনি ক্যামেরা সহকারীর কোন কাজ না পেয়ে বিজ্ঞানে ডিগ্রীর জন্য পড়াশোনা করতে থাকেন ।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক জঁ রনোয়ার দ্য রিভার ছবি তুলতে কলকাতায় আসেন । সুব্রত মিত্র এই ছবিতে কাজ পাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন । কিন্তু তিনি তার বাবার সাহয্যে শুটিং দেখবার অনুমতি লাভ করেন । সেই সময়ে তিনি শুটিং-এর বিশদ বিবরণ এবং ছবি আঁকেন যার মধ্যে আলো, ক্যামেরা এবং অভিনেতাদের নড়াচড়া সমস্ত কিছুর বর্ণনা ছিল । একদিন চিত্রগ্রাহক ক্লদ রনোয়ার শুটিং-এর ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য তার বিবরণ দেখতে চান । এইভাবে তিনি এই চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক ক্লদ রনোয়ারের সান্নিধ্যে আসেন। এছাড়াও তিনি এই ছবিতে কাজ করার সময়ে সত্যজিৎ রায়ের সাথে পরিচিত হন। যিনি এই ছবিতে পরিচালক জঁ রনোয়ারের সাহায্যকারী হিসাবে ছিলেন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক হিসাবে মাত্র বাইশ বছর বয়েসে তার চলচ্চিত্র জীবনের সূচনা হয় । চলচ্চিত্রের ক্যামেরার ব্যবহার সম্পর্কে এর আগে তার কোন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল না। দ্য রিভার ছবিতে পর্যবেক্ষক হিসাবে তার অভিজ্ঞতা নিয়েই তিনি পথের পাঁচালীর চিত্রগ্রাহকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন । পথের পাঁচালী থেকে শুরু করে নায়ক সত্যজিৎ রায়ের এই দশটি ছবি ছাড়াও তিনি অন্য পরিচালকের বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দি ছবিতে কাজ করেছেন ।
বাংলা চলচ্চিত্রকে পরিণত এবং আন্তর্জাতিক করে তোলার ক্ষেত্রে অন্যতম পথিকৃৎ তিনি ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহকের জাতীয় পুরস্কার এবং ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে সারাজীবনের কাজের স্বীকৃতি হিসাবে কোডাক পুরস্কার লাভ করেন । শেষজীবনে তিনি সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের সিনেমাটোগ্রাফির অধ্যাপক ছিলেন ।
তথ্যসূত্র
সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান - সাহিত্য সংসদ
আপারস্টল ডট কমে সুব্রত মিত্রের জীবনী http://www.upperstall.com/people/subrata-mitra
১৯৩০-এ জন্ম
২০০১-এ মৃত্যু
২০শ শতাব্দীর ভারতীয় আলোকচিত্রশিল্পী
শিল্পকলায় পদ্মশ্রী প্রাপক
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) প্রাপক
কলকাতার শিল্পী
পশ্চিমবঙ্গের চিত্রগ্রাহক
সত্যজিৎ রায়
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বাঙালি হিন্দু
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) বিজয়ী | https://en.wikipedia.org/wiki/Subrata_Mitra | Subrata Mitra | Subrata Mitra (12 October 1930 – 7 December 2001) was an Indian cinematographer. Acclaimed for his work in The Apu Trilogy (1955–1959), Mitra often is considered one of the greatest Indian cinematographers. |
2631 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0%20%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8 | শামসুর রাহমান | শামসুর রাহমান (২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৭ আগস্ট ২০০৬) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। জীবদ্দশাতেই তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি হিসেবে মর্যাদালাভ করেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ, তথা পঞ্চাশের দশকে তিনি আধুনিক কবি হিসেবে বাংলা কবিতায় আবির্ভূত হন এবং অল্প সময়ের ভেতরেই দুই বাংলায় (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম বাংলায়) কবি হিসেবে পরিচিতি পান। আধুনিক কবিতার অনন্য পৃষ্ঠপোষক বুদ্ধদেব বসুর 'কবিতা' পত্রিকায় 'রূপালি স্নান' কবিতাটি প্রকাশিত হলে কবি হিসেবে শামসুর রাহমান সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে উভয় বাংলাতেই তার শ্রেষ্ঠত্ব এবং জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি নাগরিক কবি, তবে নিসর্গ তার কবিতায় খুব কম ছিল না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) ছদ্মনামে কলকাতার বিখ্যাত দেশ ও অন্যান্য পত্রিকায় কবিতা লিখতেন।
জন্ম, শৈশব ও শিক্ষা
কবি শামসুর রাহমানের জন্ম পুরনো ঢাকার মাহুতটুলি এলাকায় নানাবাড়িতে। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম। শামসুর রাহমানের ডাক নাম বাচ্চু। পৈতৃক বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার পাড়াতলী গ্রামে। কবি শামসুর রাহমান ১৩ জন ভাই-বোনের মধ্যে ছিলেন ৪র্থ। ১৯৪৫ সালে পুরনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৪৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাস করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। ১৯৫৩ সালে পাস কোর্সে বিএ পাশ করে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এমএ (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি।
পেশা
শামসুর রাহমান পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৫৭ সালে দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ সহসম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক ছিলেন। এরপর তিনি আবার ফিরে আসেন দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ। সেখানে তিনি ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৬৪ সালের নভেম্বর মাসে দৈনিক পাকিস্তান (স্বাধীনতা উত্তর দৈনিক বাংলা) এর সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন এবং ১৯৭৭ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি একইসাথে দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এরপর তিনি অধুনা নামের একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সাহিত্যধারা
বিংশ শতকের তিরিশের দশকের পাঁচ মহান কবির পর তিনিই আধুনিক বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ হিসেবে প্রসিদ্ধ। কেবল বাংলাদেশের কবি আল মাহমুদ এবং পশ্চিমবঙ্গের কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বিংশ শতকের শেষার্ধে তুলনীয় কাব্যপ্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন বলে ধারণা করা হয়। আধুনিক কবিতার সাথে পরিচয় ও আন্তর্জাতিক-আধুনিক চেতনার উন্মেষ ঘটে ১৯৪৯-এ, এবং তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ১৯৪৯ মুদ্রিত হয় সাপ্তাহিক সোনার বাংলা পত্রিকায়। শামসুর রাহমান বিভিন্ন পত্রিকায় সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় লিখতে গিয়ে নানা ছদ্মনাম নিয়েছেন। সে
গুলো হচ্ছে: সিন্দবাদ, চক্ষুষ্মান, লিপিকার, নেপথ্যে, জনান্তিকে, মৈনাক। পাকিস্তান সরকারের আমলে কলকাতার একটি সাহিত্য পত্রিকায় মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) নামে কবিতা ছাপা হয় যা দিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট সমালোচক আবু সায়ীদ আইয়ুব।
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৫৫ সালের ৮ই জুলাই শামসুর রাহমান জোহরা বেগমকে বিয়ে করেন। কবির তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। তাদের নাম সুমায়রা আমিন, ফাইয়াজ রাহমান, ফাওজিয়া সাবেরিন, ওয়াহিদুর রাহমান মতিন ও শেবা রাহমান।
প্রতিবাদী কবি ও শহুরে কবি
শামসুর রাহমান স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে বিদ্রুপ করে ১৯৫৮ সালে সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকায় লেখেন 'হাতির শুঁড়' নামক কবিতা। বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান যখন কারাগারে তখন তাকে উদ্দেশ্য করে লেখেন অসাধারণ কবিতা 'টেলেমেকাস' (১৯৬৬ বা ১৯৬৭ সালে)।
১৯৬৭ সালের ২২ জুন পাকিস্তানের তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী রেডিও পাকিস্তানে রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্প্রচার নিষিদ্ধ করলে শামসুর রাহমান তখন সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা দৈনিক পাকিস্তান-এ কর্মরত থাকা অবস্থায় পেশাগত অনিশ্চয়তার তোয়াক্কা না করে রবীন্দ্রসঙ্গীতের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন যাতে আরও স্বাক্ষর করেছিলেন হাসান হাফিজুর রহমান, আহমেদ হুমায়ুন, ফজল শাহাবুদ্দীন। ১৯৬৮ সালের দিকে পাকিস্তানের সব ভাষার জন্য অভিন্ন রোমান হরফ চালু করার প্রস্তাব করেন আইয়ুব খান যার প্রতিবাদে আগস্টে ৪১ জন কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দেন যাদের একজন ছিলেন শামসুর রাহমানও। কবি ক্ষুদ্ধ হয়ে লেখেন মর্মস্পর্শী কবিতা 'বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা'। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি গুলিস্তানে একটি মিছিলের সামনে একটি লাঠিতে শহীদ আসাদের রক্তাক্ত শার্ট দিয়ে বানানো পতাকা দেখে মানসিকভাবে মারাত্মক আলোড়িত হন শামসুর রাহমান এবং তিনি লিখেন 'আসাদের শার্ট' কবিতাটি। ১৯৭০ সালের ২৮ নভেম্বর ঘূর্ণিদুর্গত দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় ও মৃত্যুতে কাতর কবি লেখেন 'আসুন আমরা আজ ও একজন জেলে' নামক কবিতা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবার নিয়ে চলে যান নরসিংদীর পাড়াতলী গ্রামে। এপ্রিলের প্রথম দিকে তিনি লেখেন যুদ্ধের ধ্বংসলীলায় আক্রান্ত ও বেদনামথিত কবিতা 'স্বাধীনতা তুমি' ও 'তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা'। শামসুর রাহমান ১৯৮৭ সালে এরশাদের স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে দৈনিক বাংলার প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৮৭ থেকে পরবর্তী চার বছরের তিনি প্রথম বছরে 'শৃঙ্খল মুক্তির কবিতা', দ্বিতীয় বছরে 'স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কবিতা', তৃতীয় বছরে 'সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা' এবং চতুর্থ বছরে 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কবিতা' লেখেন। ১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর লেখেন 'গণতন্ত্রের পক্ষে কবিতা'। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও জনমানুষের প্রতি অপরিসীম দরদ তার চেতনায় প্রবাহিত ছিল। তাকে সমালোচনাকারীদের হত্যার হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছিলো।
শিশুবান্ধব কবি
কবি শামসুর রাহমান যেমন একজন কবি হিসেবে খ্যাতিমান তেমনি তার শিশুদের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা ছিল। একারণে তিনি শিশুদের জন্য লিখেছেন বেশ ক’টি বই। শিশুদের অনুষ্ঠান হলে তো কথাই নেই। শিশুদের অনুষ্ঠানে ছিল তার সরব উপস্থিতি।
তিনি ছিলেন জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা’র প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা। তার মৃত্যুর আগের কয়েক বছর তার শ্যামলীর বাসায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল 'বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা'। তার জন্মদিনে শিশুরা উৎসব করে। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তারই রচিত ছড়া কবিতা আবৃত্তি করে শোনায় শিশুরা। এসময় শিশুদের সাথে তিনি খুব আনন্দঘন পরিবেশে কাটিয়েছেন, কবিতা গান শুনেছেন, অটোগ্রাফ দিয়েছেন। মোট কথায় শামসুর রাহমান ছিলেন শিশুবান্ধব একজন মানুষ।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালের ৩ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠালাভের পর থেকে তিনি এই সংস্থার বিভিন্ন সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ দিয়ে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে সংগঠনকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
· এলাটিং বেলাটিং (১৯৭৪)
· ধান ভানলে কুঁরো দেব (১৯৭৭)
· গোলাপ ফোটে খুকীর হাতে (১৯৭৭)
· স্মৃতির শহর (১৯৭৯)
· রংধনুর সাঁকো (১৯৯৪)
· লাল ফুলকির ছড়া (১৯৯৫)
· নয়নার জন্য (১৯৯৭)
· আমের কুঁড়ি জামের কুঁড়ি (২০০৪)
· নয়নার জন্য গোলাপ (২০০৫)
মৃত্যু
কবি শামসুর রাহমান ২০০৬ সালের ১৭ই আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৩৫ মিনিটে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার ইচ্ছানুযায়ী ঢাকাস্থ বনানী কবরস্থানে, নিজ মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।
প্রকাশিত গ্রন্থ
শামসুর রাহমানের প্রকাশিত গ্রন্থের পূর্ণ তালিকার জন্য দেখুন শামসুর রাহমানের গ্রন্থাবলি
শামসুর রাহমানের প্রথম কাব্য গ্রন্থ প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে প্রকাশিত হয় ১৯৬০ সালে।
বন্দী শিবির থেকে (১৯৭২): এ কাব্যে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন আবেগ ও প্রত্যাশা প্রাধান্য পেয়েছে। এ কাব্যের মাধ্যমে তিনি কবি খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ‘মজলুম আদিব’ ছদ্মনামে কাব্যগ্রন্থটি রচনা করেন। এ কাব্যের অধিকাংশ কবিতা মুক্তিযুদ্ধকালে অবরুদ্ধ সময়ে রচিত। এ কাব্যটি ১৯৭১ সালের শহিদদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়। এ গ্রন্থে ৩৮ টি কবিতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’, ’স্বাধীনতা তুমি’।
উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ (১৯৮২): ১৯৭৫-৮২ সাল পর্যন্ত দেশে সংঘটিত একাধিক সামরিক অভ্যুত্থান এবং সামরিক শাসনের যুপকাষ্ঠে দেশ ও জনগনের চরম অবস্থার প্রতিফলন আছে এ কাব্যে।
প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা
কাব্যগ্রন্থ - ৬৬( * ''প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে'' (১৯৬০)
বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ (মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন ,রাজনৈতিক কবিতা)
* ''রৌদ্র করোটিতে'' (১৯৬৩)
* ''বিধ্বস্ত নিলীমা'' (১৯৬৭) *
''নিরালোকে দিব্যরথ'' (১৯৬৮)
* ''নিজ বাসভূমে'' (১৯৭০) * (মুুক্তিযুদ্ধা ভিত্তিক কাব্যগ্রন্থ)
'বন্দী শিবির থেকে'' (১৯৭২) (মুুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাব্যগ্রন্থ। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই কাব্যের কবিতাগুলো লিখিত) * ''দুঃসময়ে মুখোমুখি'' (১৯৭৩)
* ''ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাটা'' (১৯৭৪)
* 'আদিগন্ত নগ্ন পদধ্বনি'' (১৯৭৪)
* ''এক ধরনের অহংকার'' (১৯৭৫)
* ''আমি অনাহারী'' (১৯৭৬)
* ''শূন্যতায় তুমি শোকসভা'' (১৯৭৭)
* ''বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে'' (১৯৭৭) *
'প্রতিদিন ঘরহীন ঘরে'' (''১৯৭৮) *
''প্রেমের কবিতা'' (১৯৮১) *
''ইকারুসের আকাশ'' (১৯৮২)
* ''মাতাল ঋত্বিক'' (১৯৮২) *
''উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে'' (১৯৮৩) *
''কবিতার সঙ্গে গেরস্থালি'' (১৯৮৩)
* ''নায়কের ছায়া'' (১৯৮৩)
* ''আমার কোন তাড়া নেই'' (১৯৮৪)
* ''যে অন্ধ সুন্দরী কাঁদে'' (১৯৮৪)
* ''অস্ত্রে আমার বিশ্বাস নেই'' (১৯৮৫)
* ''হোমারের স্বপ্নময় হাত'' (১৯৮৫)
* ''শিরোনাম মনে পড়ে না'' (১৯৮৫)
* ''ইচ্ছে হয় একটু দাঁড়াই'' (১৯৮৫)
* ''ধুলায় গড়ায় শিরস্ত্রাণ'' (১৯৮৫)
* ''এক ফোঁটা কেমন অনল'' (১৯৮৬)
* ''টেবিলে আপেলগুলো হেসে উঠে'' (১৯৮৬)
* ''দেশদ্রোহী হতে ইচ্ছে করে'' (১৯৮৬)
* ''অবিরল জলভূমি'' (১৯৮৬) *
''আমরা ক'জন সঙ্গী'' (১৯৮৬)
* ''ঝর্ণা আমার আঙুলে'' (১৯৮৭)
* ''স্বপ্নেরা ডুকরে উঠে বারবার'' (১৯৮৭) *
''খুব বেশি ভালো থাকতে নেই'' (১৯৮৭)
* ''মঞ্চের মাঝখানে'' (১৯৮৮)
* ''বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়'' (১৯৮৮)(মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কাব্যগ্রন্থ) * ''হৃদয়ে আমার পৃথিবীর আলো'' (১৯৮৯)
* ''সে এক পরবাসে'' (১৯৯০)
* ''গৃহযুদ্ধের আগে'' (১৯৯০)
* ''খন্ডিত গৌরব'' (১৯৯২)''' *
''ধ্বংসের কিনারে বসে'' (১৯৯২)
* ''হরিণের হাড়'' (১৯৯৩) *
''আকাশ আসবে নেমে'' (১৯৯৪)
* ''উজাড় বাগানে'' (১৯৯৫) *
''এসো কোকিল এসো স্বর্ণচাঁপা'' (১৯৯৫)
* ''মানব হৃদয়ে নৈবদ্য সাজাই'' (১৯৯৬) *
''তুমিই নিঃশ্বাস তুমিই হৃৎস্পন্দন'' (১৯৯৬)
* ''তোমাকেই ডেকে ডেকে রক্তচক্ষু কোকিল হয়েছি'' (১৯৯৭)
* ''হেমন্ত সন্ধ্যায় কিছুকাল'' (১৯৯৭)
* ''ছায়াগণের সঙ্গে কিছুক্ষণ'' (১৯৯৭)
* ''মেঘলোকে মনোজ নিবাস'' (১৯৯৮)
* ''সৌন্দর্য আমার ঘরে'' (১৯৯৮) *
''রূপের প্রবালে দগ্ধ সন্ধ্যা রাতে'' (১৯৯৮)
* ''টুকরা কিছু সংলাপের সাঁকো'' (১৯৯৮)
* ''স্বপ্নে ও দুঃস্বপ্নে বেচে আছি'' (১৯৯৯)
* ''নক্ষত্র বাজাতে বাজাতে'' (২০০০)
* ''শুনি হৃদয়ের ধ্বনি'' (২০০০)
* ''হৃদপদ্মে জ্যোৎস্না দোলে'' (২০০১)
* ''ভগ্নস্তূপে গোলাপের হাসি'' (২০০২) *
''ভাঙাচোরা চাঁদ মুখ কালো করে ধুকছে'' (২০০৩)
* ''গন্তব্য নাই বা থাকুক'' (২০০৪) * '
'কৃষ্ণপক্ষে পূর্ণিমার দিকে'' (২০০৪)
* ''গোরস্থানে কোকিলের করুণ আহবান'' (২০০৫)
* ''অন্ধকার থেকে আলোয়'' (২০০৬)
* ''না বাস্তব না দুঃস্বপ্ন'' (২০০৬)
উপন্যাস - ৪টি ‘অক্টোপাশ’ (১৯৮৩), ’অদ্ভুত আঁধার এক’ (১৯৮৫), ‘নিয়ত মন্তাজ’ (১৯৮৫), ‘এলো সে অবেলায়’ (১৯৯৪),
প্রবন্ধগ্রন্থ - ‘আমৃত্যু তার জীবনানন্দ’ (১৯৮৬), ‘কবিতা এক ধরনের আশ্রয়’ (২০০২)
শিশু কিশোর সাহিত্য,
আত্মস্মৃতি,
অনুবাদ কবিতা - ৩টি,
অনুবাদ নাটক - ৩টি
সম্মাননা ও পুরস্কার
আদমজী সাহিত্য পুরস্কার,
বাংলা একাডেমি পুরস্কার,
একুশে পদক,
নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক,
জীবনানন্দ পুরস্কার,
আবুল মনসুর আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার,
মিতসুবিসি পুরস্কার (সাংবাদিতার জন্য),
স্বাধীনতা পদক,
আনন্দ পুরস্কার
ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। তার ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুগল তাদের হোমপেজে শামসুর রাহমানের গুগল ডুডল প্রদর্শন করে তার জন্মদিন উদ্যাপন করে। গুগল ডুডলটিতে দেখা যায় সবুজ পাঞ্জাবি পরা শুভ্র চুলের শামসুর রাহমান লেখালেখি করছেন।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
শামসুর রাহমানের সাক্ষাতকার
নান্দনিক শামসুর রাহমান - কুমার দীপ
আধুনিক কবি
১৯২৯-এ জন্ম
২০০৬-এ মৃত্যু
বাংলাদেশী কবি
বাঙালি কবি
কবিতায় বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক বিজয়ী
সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বাংলাদেশী সাংবাদিক
সার্ক সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
২০শ শতাব্দীর কবি
আদমজী সাহিত্য পুরস্কার প্রাপক
২০শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক
২০শ শতাব্দীর সাংবাদিক
বনানী কবরস্থানে সমাধিস্থ
বাঙালি লেখক
পোগোজ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের উপর হামলা
বাংলাদেশী পুরুষ কবি
বাঙালি ব্যক্তি
একুশে পদক বিজয়ী
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
আনন্দ পুরস্কার বিজয়ী | https://en.wikipedia.org/wiki/Shamsur_Rahman_(poet) | Shamsur Rahman (poet) | Shamsur Rahman (Bengali: শামসুর রাহমান; 23 October 1929 – 17 August 2006) was a Bangladeshi poet, columnist and journalist. A prolific writer, Rahman produced more than sixty books of poetry collection and is considered a key figure in Bengali literature from the latter half of the 20th century. He was regarded as the unofficial poet laureate of Bangladesh. Major themes in his poetry and writings include liberal humanism, human relations, romanticised rebellion of youth, the emergence of and consequent events in Bangladesh, and opposition to religious fundamentalism. |
2632 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B8%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE | এট্সখার ডেইক্স্ট্রা | এট্স্খার ওয়েইবে ডেইক্স্ট্রা () (মে ১১, ১৯৩০ – আগস্ট ৬, ২০০২) একজন ওলন্দাজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী, প্রোগ্রামার, সফটওয়্যার প্রকৌশলী, সিস্টেম বিজ্ঞানী, বিজ্ঞান প্রবন্ধকার। টুরিং পুরস্কার সহ বহু সম্মানে অভিষিক্ত ডেইক্স্ট্রাকে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ইতিহাসের প্রধানতম বিজ্ঞানীদের একজন মনে করা হয়।
ডেইক্স্ট্রা ১৯৭২ সালে প্রোগ্রামিং ভাষার ক্ষেত্রে মৌলিক অবদানের জন্য টুরিং পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস অ্যাট অস্টিনে ১৯৮৪ থেকে ২০০২ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কম্পিউটার বিজ্ঞানের শ্লুমবার্গার সেন্টেনিয়াল চেয়ার ছিলেন।
তথ্যসূত্র
গণিতবিদ
১৯৩০-এ জন্ম
২০০২-এ মৃত্যু
ওলন্দাজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী
ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিনের শিক্ষক
২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক
মলাশয়ের ক্যান্সারে মৃত্যু
অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারির সভ্য
রয়্যাল নেদারল্যান্ডস কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য
টুরিং পুরস্কার বিজয়ী
লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী | https://en.wikipedia.org/wiki/Edsger_W._Dijkstra | Edsger W. Dijkstra | Edsger Wybe Dijkstra ( DYKE-strə; Dutch: [ˈɛtsxər ˈʋibə ˈdɛikstra] ; 11 May 1930 – 6 August 2002) was a Dutch computer scientist, programmer, software engineer, mathematician, and science essayist.
Born in Rotterdam, the Netherlands, Dijkstra studied mathematics and physics and then theoretical physics at the University of Leiden. Adriaan van Wijngaarden offered him a job as the first computer programmer in the Netherlands at the Mathematical Centre in Amsterdam, where he worked from 1952 until 1962. He formulated and solved the shortest path problem in 1956, and in 1960 developed the first compiler for the programming language ALGOL 60 in conjunction with colleague Jaap A. Zonneveld. In 1962 he moved to Eindhoven, and later to Nuenen, where he became a professor in the Mathematics Department at the Technische Hogeschool Eindhoven. In the late 1960s he built the THE multiprogramming system, which influenced the designs of subsequent systems through its use of software-based paged virtual memory. Dijkstra joined Burroughs Corporation as its sole research fellow in August 1973. The Burroughs years saw him at his most prolific in output of research articles. He wrote nearly 500 documents in the "EWD" series, most of them technical reports, for private circulation within a select group.
Dijkstra accepted the Schlumberger Centennial Chair in the Computer Science Department at the University of Texas at Austin in 1984, working in Austin, Texas, until his retirement in November 1999. He and his wife returned from Austin to his original house in Nuenen, where he died on 6 August 2002 after a long struggle with cancer.
He received the 1972 Turing Award for fundamental contributions to developing structured programming languages. Shortly before his death, he received the ACM PODC Influential Paper Award in distributed computing for his work on self-stabilization of program computation. This annual award was renamed the Dijkstra Prize the following year, in his honor.
|
2636 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%BE%20%28%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%82%20%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE%29 | জাভা (প্রোগ্রামিং ভাষা) | জাভা একটি প্রোগ্রামিং ভাষা। সান মাইক্রোসিস্টেম ৯০এর দশকের গোড়ার দিকে জাভা ডিজাইন করার পরে এটি অতি দ্রুত বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষার একটিতে পরিণত হয়। জাভা'র এই জনপ্রিয়তার মূল কারণ এর বহনযোগ্যতা (portability), নিরাপত্তা, এবং অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ও ওয়েব প্রোগ্রামিং এর প্রতি পরিপূর্ণ সাপোর্ট।
ইতিহাস
James Gosling, Mike Sheridan, এবং Patrick Naughton ১৯৯১ সালের জুনে জাভা ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোজেক্ট শুরু করেন। প্রাথমিকদিকে জাভা ল্যাঙ্গুয়েজকে "ওক"(Oak) বলা হত। জেমস গসলিং এর অফিসের বাহিরের ওক গাছের সাথে মিল রেখে এই নাম রাখা হয়। এরপর এর নাম রাখা হয় "গ্রীন"। তারপর একদিন তাঁরা একটি কফিশপে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন, ঐ তখনই কফির কাপটি দেখে ধোঁয়াতোলা কফির কাপের সাথে মিল রেখে লোগো তৈরি এবং এর নাম পরিবর্তন করে "জাভা" নামকরণের পরিকল্পনা করলেন।
১৯৯৫ সালে সান মাইক্রোসিস্টেমস জাভা-১.০ প্রকাশ করেন। তাদের মূলনীতি ছিল "একবার লিখুন, যে কোনো জায়গায় চালান (Write Once, Run Anywhere or WORA)"।
জাভার উল্লেখযোগ্য সংস্করণের মধ্যে অন্যতম হল -
জেডিকে ১.০ (জানুয়ারী ২১, ১৯৯৬)
জেডিকে ১.১ (ফেব্রুয়ারি ১৯, ১৯৯৭)
জে২এসই ১.২ (ডিসেম্বর ৮, ১৯৯৮)
জে২এসই ১.৩ (মে ৮, ২০০০)
জে২এসই ১.৪ (ফেব্রুয়ারি ৬, ২০০২)
জে২এসই ৫.০ (সেপ্টেম্বর ৩০, ২০০৪)
জাভা এসই ৬ (ডিসেম্বর ১১, ২০০৬)
জাভা এসই ৭ (জুলাই ২৮, ২০১১)
জাভা এসই ৮ (মার্চ ১৮, ২০১৪)
জাভা এসই ৯ (সেপ্টেম্বর ২১,২০১৭)
জাভা এসই ১০ (মার্চ ২০,২০১৮)
জাভা এসই ১১ (সেপ্টেম্বর ২৫,২০১৮)
জাভা এসই ১২ (মার্চ ১৯, ২০১৯)
জাভা এসই ১৩ (মার্চ ১৭, ২০১৯)
জাভা এসই ১৪ (মার্চ ১৭, ২০২০)
জাভা'র গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
বহনযোগ্যতা
জাভা'র পূর্বতন প্রোগ্রামিং ভাষাগুলিতে সাধারণত এক অপারেটিং সিস্টেমের জন্য লেখা প্রোগ্রাম অন্য অপারেটিং সিস্টেম এ চালানো যেত না। জাভায় লেখা প্রোগ্রাম যেকোন অপারেটিং সিস্টেমে চালানো যায় শুধু যদি সেই অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি জাভা রানটাইম এনভায়রনমেন্ট(জাভা ভার্চুয়াল মেশিন)থেকে থাকে। এই সুবিধা জাভাকে একটি অনন্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত করে। বিশেষ করে ইন্টারনেটে, যেখানে অসংখ্য কম্পিউটার যুক্ত থাকে এবং কম্পিউটারগুলো বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে সেখানে জাভায় লেখা অ্যাপলেট গুলো সকল কম্পিউটারে চলতে পারে এবং এর জন্য কোন বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয় না। জাভা'র এই সুবিধাকে বলা হয় বহনযোগ্যতা।
অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং
অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং জাভা'র খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রোগ্রামিং জগতে মূলত সিমূলা৬৭ (প্রোগ্রামিং ভাষা) এবং স্মলটক (প্রোগ্রামিং ভাষা) এর মাধ্যমে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং এর সূচনা হলেও, জাভা'র মাধ্যমেই এটি পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পেরেছে। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং এর কারণে জাভায় অতিদীর্ঘ প্রোগ্রাম লেখা এবং ত্রুটিমুক্ত(debug) করা অনেক সহজ হয়েছে।
মূলনীতি
১. এটি হবে সরল, অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড এবং পরিচিত।
২. এটি হবে শক্তিশালী এবং সুরক্ষিত।
৩. এটি কোন নির্দিষ্ট প্লাটফর্মের উপর নির্ভর করবে না আর এর থাকবে বহনযোগ্যতা।
৪. এটি অনেক উচ্চ কার্যশীলতাসম্পন্ন হবে।
৫. এটি হবে ইন্টারপ্রিটেড, থ্রেডেড এবং ডাইনামিক।
জাভা প্রোগ্রাম কীভাবে কাজ করে
জাভাতে লেখা কোড কম্পাইল হয়ে সরাসরি মেশিন কোড-এ রূপান্তরিত হয় না। বরং তা বাইট কোড নামক বিশেষ একটি মধ্যবর্তি অবস্থায় আসে যা .class ফাইলে থাকে। এই ক্লাস ফাইল সরাসরি চলতে পারে না। একে চালাতে গেলে জাভা ভার্চুয়াল মেশিন এর মাধ্যমে চালাতে হয়। কারণ বাইট কোড কেবলমাত্র জাভা ভার্চুয়াল মেশিন বুঝতে পারে ।
বাক্যরীতি
জাভার বাক্যরীতি মূলত সি++ থেকে নেওয়া। সি++ এর মত এতে বাক্যরীতি রয়েছে স্ট্রাকচারড, জেনেরিক এবং অবজেক্ট অরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং এর জন্য। তবে সি++ বিশুদ্ধ অবজেক্ট অরিয়েন্টেড না হলেও জাভা বিশুদ্ধ অবজেক্ট অরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ভাষা।
ডাটা কাঠামো/স্ট্রাকচার
জাভাতে এগুলোর জন্য আলাদা বাক্যরীতি রয়েছে। উল্লেখ্য, এরে এবং স্ট্রিং সাধারণ/primitive ডাটা টাইপ নয়, তারা reference ডাটা টাইপ এবং তাদের কে java.lang.Object থেকে আনা হয়।
সাধারণ/মৌলিক ডাটা টাইপগুলো
প্রযুক্তিসমূহ
ওরাকল দ্বারা
প্লাটফর্ম
তৃতীয় পক্ষের প্রধান প্রযুক্তিসমূহ
নেটবিনস – সমন্বিত বিকাশ কাঠামো
এক্লিপস – সমন্বিত বিকাশ কাঠামো
গুগল ওয়েব টুলকিট – সম্মুখ প্রান্ত টুল
হাইবারনেট – অবজেক্ট-রিলেশনাল ম্যাপিং টুল
স্প্রিং কাঠামো – অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক
অ্যাপাচি স্ট্রাটস - অ্যাপ্লিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক
ওরাকল টপলিংক - অবজেক্ট-রিলেশনাল ম্যাপিং টুল
ওয়াইল্ডফ্লাই - এপ্লিকেশন সার্ভার
আরও দেখুন
স্প্রিং কাঠামো
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Sun Microsystems: Java home page
Sun Microsystems: Developer Resources for Java Technology.
Chamber of Chartered Java Professionals International: Professionalism for Java Technology.
Sun Microsystems: Java Language Specification 3rd Edition.
A Brief History of the Green Project
Michael O'Connell: Java: The Inside Story, SunWord, July 1995.
Patrick Naughton: Java Was Strongly Influenced by Objective-C (no date).
David Bank: The Java Saga, Wired Issue 3.12 (December 1995).
Shahrooz Feizabadi: A history of Java in: Marc Abrams, ed., World Wide Web – Beyond the Basics, Prentice Hall, 1998.
Patrick Naughton: The Long Strange Trip to Java, March 18, 1996.
Open University (UK): M254 Java Everywhere (free open content documents).
is-research GmbH: List of programming languages for a Java Virtual Machine.
How Java's Floating-Point Hurts Everyone Everywhere, by W. Kahan and Joseph D. Darcy, University of California, Berkeley.
প্রোগ্রামিং ভাষা
ক্লাস-ভিত্তিক প্রোগ্রামিং ভাষা
জাভা প্রোগ্রামিং
জাভা প্ল্যাটফর্ম
বস্তু-সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামিং ভাষা | https://en.wikipedia.org/wiki/Java_(programming_language) | Java (programming language) | Java is a high-level, class-based, object-oriented programming language that is designed to have as few implementation dependencies as possible. It is a general-purpose programming language intended to let programmers write once, run anywhere (WORA), meaning that compiled Java code can run on all platforms that support Java without the need to recompile. Java applications are typically compiled to bytecode that can run on any Java virtual machine (JVM) regardless of the underlying computer architecture. The syntax of Java is similar to C and C++, but has fewer low-level facilities than either of them. The Java runtime provides dynamic capabilities (such as reflection and runtime code modification) that are typically not available in traditional compiled languages.
Java gained popularity shortly after its release, and has been a very popular programming language since then. Java was the third most popular programming language in 2022 according to GitHub. Although still widely popular, there has been a gradual decline in use of Java in recent years with other languages using JVM gaining popularity.
Java was originally developed by James Gosling at Sun Microsystems. It was released in May 1995 as a core component of Sun's Java platform. The original and reference implementation Java compilers, virtual machines, and class libraries were originally released by Sun under proprietary licenses. As of May 2007, in compliance with the specifications of the Java Community Process, Sun had relicensed most of its Java technologies under the GPL-2.0-only license. Oracle offers its own HotSpot Java Virtual Machine, however the official reference implementation is the OpenJDK JVM which is free open-source software and used by most developers and is the default JVM for almost all Linux distributions.
As of March 2024, Java 22 is the latest version. Java 8, 11, 17, and 21 are previous LTS versions still officially supported. |
2637 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%A8 | লালন | লালন (১৭ অক্টোবর ১৭৭৪ – ১৭ অক্টোবর ১৮৯০) ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি; যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার গান উনিশ শতকে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তার গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে। তার গানগুলো যুগে যুগে বহু সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেয়া হয়েছিল।
জীবনী
লালনের জীবন সম্পর্কে বিশদ কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না। তার সবচেয়ে অবিকৃত তথ্যসূত্র তার নিজের রচিত ২৮৮টি গান। কিন্তু লালনের কোনো গানে তার জীবন সম্পর্কে কোনো তথ্য তিনি রেখে যাননি, তবে কয়েকটি গানে তিনি নিজেকে "লালন ফকির" হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তার মৃত্যুর পনেরো দিন পর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত হিতকরী পত্রিকার সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়, “ইহার জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছু বলিতেন না। শিষ্যরা তাঁহার নিষেধক্রমে বা অজ্ঞতাবশত কিছুই বলিতে পারে না।"
লালনের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। লালন নিজে কখনো তা প্রকাশ করেননি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বলে উল্লেখ করা হয়। একসূত্র থেকে জানা যায়, তার পিতার নাম কাজী দরীবুল্লাহ্ দেওয়ান। পিতামহের নাম কাজী গোলাম কাদির ও মাতার নাম আমিনা খাতুন। কাজী তাদের বংশগত উপাধি। গবেষকদের ধারণা, লালন শাহের আরো দুই ভাই ছিলেন। আলম শাহ্ ও কলম শাহ্। আলম শাহ্ কলকাতা শ্রমিকের কাজ করেন। আরেক তথ্য থেকে জানা যায়, তারা চার ভাই: আলম শাহ্, কলম শাহ্, চলম শাহ্ ও লালন শাহ্। চলম শাহ নামে ভাই ছিল না বলে মনে করা হলেও মলম শাহ্ নামে আরেক ভাই ছিলেন। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে আলম ও মলম মৃত্যুমুখে পতিত হন। লালন ফকির জীবকা জন্য হরিশপুরের দক্ষিণ পাড়ার ইনু কাজীর বাড়ি আশ্রয় নেন।
হিতকরী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ নিবন্ধে বলা হয়েছে, লালন তরুণ বয়সে একবার তীর্থভ্রমণে বের হয়ে পথিমধ্যে গুটিবসন্ত রোগে আক্রান্ত হন। তখন তার সাথীরা তাকে মৃত ভেবে পরিত্যাগ করে যার যার গন্তব্যে চলে যায়। কালিগঙ্গা নদীতে ভেসে আসা মুমূর্ষু লালনকে উদ্ধার করেন মলম শাহ। মলম শাহ ও তার স্ত্রী মতিজান তাকে বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রূষা দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। এরপর লালন তার কাছে দীক্ষিত হন এবং কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে স্ত্রী ও শিষ্যসহ বসবাস শুরু করেন। গুটিবসন্ত রোগে একটি চোখ হারান লালন। ছেউড়িয়াতে তিনি দার্শনিক গায়ক সিরাজ সাঁইয়ের সাক্ষাতে আসেন এবং তার দ্বারা প্রভাবিত হন।
এছাড়া লালন সংসারী ছিলেন বলে জানা যায়। তার সামান্য কিছু জমি ও ঘরবাড়ি ছিল। লালন অশ্বারোহণে দক্ষ ছিলেন এবং বৃদ্ধ বয়সে অশ্বারোহণের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে যেতেন।
ধর্ম বিশ্বাস
লালনের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে গবেষকদের মাঝে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে, যা তার জীবদ্দশায়ও বিদ্যমান ছিল। তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত প্রবাসী পত্রিকার মহাত্মা লালন নিবন্ধে প্রথম লালন জীবনী রচয়িতা বসন্ত কুমার পাল বলেছেন, “সাঁইজি হিন্দু কি মুসলমান, এ কথা আমিও স্থির বলিতে অক্ষম।” বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় লালনের জীবদ্দশায় তাকে কোনো ধরনের ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন করতেও দেখা যায়নি। লালনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। নিজ সাধনাবলে তিনি হিন্দুধর্ম এবং ইসলামধর্ম উভয় শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন। তার রচিত গানে এর পরিচয় পাওয়া যায়। প্রবাসী পত্রিকার নিবন্ধে বলা হয়, লালনের সকল ধর্মের লোকের সাথেই সুসম্পর্ক ছিল। মুসলমানদের সাথে তার সুসম্পর্কের কারণে অনেকে তাকে মুসলমান বলে মনে করতেন। আবার বৈষ্ণবধর্মের আলোচনা করতে দেখে হিন্দুরা তাকে বৈষ্ণব মনে করতেন। প্রকৃতপক্ষে লালন ছিলেন মানবতাবাদী এবং তিনি ধর্ম, জাত, কূল, বর্ণ, লিঙ্গ ইত্যাদি অনুসারে মানুষের ভেদাভেদ বিশ্বাস করতেন না।
বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম মুসলিম পরিবারে বলে উল্লেখ করা হয়। আবার ভিন্ন তথ্যসূত্রে তার জন্ম হিন্দু পরিবারে বলে উল্লেখ করা হয়।
লালনের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন,
লালনের পরিচয় দিতে গিয়ে সুধীর চক্রবর্তী লিখেছেন,
কাঙাল হরিনাথ তাঁকে জানতেন, মীর মশাররফ চিনতেন, ঠাকুরদের হাউসবোটে যাতায়াত ছিল, লেখক জলধর সেন বা অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় তাঁকে সামনাসামনি দেখেছেন কতবার, গান শুনেছেন, তবু জানতে পারেননি লালনের জাতপরিচয়, বংশধারা বা ধর্ম।
একটি গানে লালনের প্রশ্ন:
এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে।
যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান
জাতি গোত্র নাহি রবে।
কিছু লালন অনুসারী যেমন মন্টু শাহের মতে, তিনি হিন্দু বা মুসলমান কোনোটিই ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন ওহেদানিয়াত নামক একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদের অনুসারী। ওহেদানিয়াতের মাঝে বৌদ্ধধর্ম এবং বৈষ্ণব ধর্মের সহজিয়া মতবাদ, সুফিবাদসহ আরও অনেক ধর্মীয় মতবাদ বিদ্যমান। লালনের অনেক অনুসারী লালনের গানসমূহকে এই আধ্যাত্মিক মতবাদের কালাম বলে অভিহিত করে থাকে।
লালন মূলত অসাম্প্রদায়িক ও মানবধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন।
লালনের আখড়া
লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেউড়িয়াতে একটি আখড়া তৈরি করেন, যেখানে তিনি তার শিষ্যদের নীতি ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তার শিষ্যরা তাকে “সাঁই” বলে সম্বোধন করতেন। তিনি প্রতি শীতকালে আখড়ায় একটি ভান্ডারা (মহোৎসব) আয়োজন করতেন। যেখানে সহস্রাধিক শিষ্য ও সম্প্রদায়ের লোক একত্রিত হতেন এবং সেখানে সংগীত ও আলোচনা হত। চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর এবং পশ্চিমে অনেক দূর পর্যন্ত বাংলার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বহুসংখ্যক লোক লালন ফকিরের শিষ্য ছিলেন; শোনা যায় তার শিষ্যের সংখ্যা প্রায় দশ হাজারের বেশি ছিল।
শিষ্যদের কথা
লালনের শিষ্যের মধ্যে অন্যতম ছিলেন পাঞ্জু শাহ, ভোলাই শাহ, মলম শাহ, শীতল শাহ, মনিরুদ্দিন, যাদের কাছ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সংস্কৃতি ও লোকায়ত ধর্মের সম্পর্কে জানেন। লালন সাঁইজির সঙ্গে তার উত্তরাধিকার সম্পর্ক–লতিকার পর্যায়ক্রমটা এই রকম: ফকির লালন শাহ, ভোলাই শাহ, কোকিল শাহ, লবান শাহ ওরফে আব্দুর রব শাহ, তারপরই ফকির নহির শাহ। আব্দুর রব শাহর প্রধান খলিফা ফকির নহির একাধারে আধ্যাত্মিক গুরু, ভাবসংগীতের শিক্ষক এবং সংগীত সংগ্রাহক।
ঠাকুর পরিবারের সাথে সম্পর্ক
কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের অনেকের সঙ্গে লালনের পরিচয় ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যায়। বিরাহিমপুর পরগনায় ঠাকুর পরিবারের জমিদারিতে ছিল তার বসবাস এবং ঠাকুর-জমিদারদের প্রজা ছিলেন তিনি। উনিশ শতকের শিক্ষিত সমাজে তার প্রচার ও গ্রহণযোগ্যতার পেছনে ঠাকুর পরিবার বড় ভূমিকা রাখেন।
কিন্তু এই ঠাকুরদের সঙ্গে লালনের একবার সংঘর্ষ ঘটে। তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কুষ্টিয়ার কুমারখালির কাঙাল হরিনাথ মজুমদার গ্রামবার্তা প্রকাশিকা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। এরই একটি সংখ্যায় ঠাকুর-জমিদারদের প্রজাপীড়নের সংবাদ ও তথ্য প্রকাশের সূত্র ধরে উচ্চপদস্থ ইংরেজ কর্মকর্তারা বিষয়টির তদন্তে প্রত্যক্ষ অনুসন্ধানে আসেন। এতে করে কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ঠাকুর-জমিদারেরা। তাঁকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে লাঠিয়াল পাঠালে শিষ্যদের নিয়ে লালন সশস্ত্রভাবে জমিদারের লাঠিয়ালদের মোকাবিলা করেন এবং লাঠিয়াল বাহিনী পালিয়ে যায়। এর পর থেকে কাঙাল হরিনাথকে বিভিন্নভাবে রক্ষা করেছেন লালন।
লালনের জীবদ্দশায় তার একমাত্র স্কেচটি তৈরী করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। লালনের মৃত্যুর বছরখানেক আগে ৫ মে ১৮৮৯ সালে পদ্মায় তার বোটে বসিয়ে তিনি এই পেন্সিল স্কেচটি করেন- যা ভারতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। যদিও অনেকের দাবী এই স্কেচটিতে লালনের আসল চেহারা ফুটে ওঠেনি।
মৃত্যু
লালন ১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর প্রায় একমাস পূর্ব থেকে তিনি পেটের সমস্যা ও হাত পায়ের গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতেন না। এসময় তিনি মাছ খেতে চাইতেন। মৃত্যুর দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত তিনি গান-বাজনা করেন এবং এক সময় তার শিষ্যদের বলেন, “আমি চলিলাম”, এবং এর কিছু সময় পরই তার মৃত্যু হয়। তার নির্দেশ বা ইচ্ছা না থাকায় তার মৃত্যুর পর হিন্দু বা মুসলমান কোনো ধরনের ধর্মীয় রীতি নীতিই পালন করা হয় নি। তারই উপদেশ অনুসারে ছেউড়িয়ায় তার আখড়ার মধ্যে একটি ঘরের ভিতর তার সমাধি গড়ে তোলা হয়।
আজও সারা বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাউলেরা অক্টোবর মাসে ছেউড়িয়ায় মিলিত হয়ে লালনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তার মৃত্যুর ১২ দিন পর তৎকালীন পাক্ষিক পত্রিকা মীর মশাররফ হোসেন সম্পাদিত হিতকরী-তে প্রকাশিত একটি রচনায় সর্বপ্রথম তাঁকে ‘মহাত্মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। রচনার লেখকের নাম রাইচরণ।
দর্শন
লালনের গানে মানুষ ও তার সমাজই ছিল মুখ্য। লালন বিশ্বাস করতেন সকল মানুষের মাঝে বাস করে এক মনের মানুষ। আর সেই মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া যায় আত্মসাধনার মাধ্যমে। দেহের ভেতরেই মনের মানুষ বা যাকে তিনি অচিন পাখি বলেছেন, তার বাস। সেই অচিন পাখির সন্ধান মেলে পার্থিব দেহ সাধনার ভেতর দিয়ে দেহোত্তর জগতে পৌঁছানোর মাধ্যমে। আর এটাই বাউলতত্ত্বে 'নির্বাণ' বা 'মোক্ষ' বা 'মহামুক্তি' লাভ। তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানবতাবাদকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছেন। তার বহু গানে এই মনের মানুষের প্রসঙ্গ উল্লিখিত হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন মনের মানুষ এর কোন ধর্ম, জাত, বর্ণ, লিঙ্গ, কূল নেই। মানুষের দৃশ্যমান শরীর এবং অদৃশ্য মনের মানুষ পরস্পর বিচ্ছিন্ন, কিন্তু শরীরেই মনের বাস। সকল মানুষের মনে ঈশ্বর বাস করেন। লালনের এই দর্শনকে কোন ধর্মীয় আদর্শের অন্তর্গত করা যায় না।
লালন, মানব আত্মাকে বিবেচনা করেছেন রহস্যময়, অজানা এবং অস্পৃশ্য এক সত্তা রূপে। খাঁচার ভিতর অচিন পাখি গানে তিনি মনের অভ্যন্তরের সত্তাকে তুলনা করেছেন এমন এক পাখির সাথে, যা সহজেই খাঁচারূপী দেহের মাঝে আসা যাওয়া করে কিন্তু তবুও একে বন্দি করে রাখা যায় না।
লালনের সময়কালে যাবতীয় নিপীড়ন, মানুষের প্রতিবাদহীনতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি-কুসংস্কার, লোভ, আত্মকেন্দ্রিকতা সেদিনের সমাজ ও সমাজ বিকাশের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সমাজের নানান কুসংস্কারকে তিনি তার গানের মাধ্যমে করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ। আর সে কারণেই লালনের সেই সংগ্রামে বহু শিষ্ট ভূস্বামী, ঐতিহাসিক, সম্পাদক, বুদ্ধিজীবী, লেখক এমনকি গ্রামের নিরক্ষর সাধারণ মানুষও আকৃষ্ট হয়েছিলেন ।
আধ্যাত্মিক ভাবধারায় তিনি প্রায় দুই হাজার গান রচনা করেছিলেন। তার সহজ-সরল শব্দময় এই গানে মানবজীবনের রহস্য, মানবতা ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে। লালনের বেশ কিছু রচনা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে তিনি ধর্ম-গোত্র-বর্ণ-সম্প্রদায় সম্পর্কে অতীব সংবেদনশীল ছিলেন। ব্রিটিশ আমলে যখন হিন্দু ও মুসলিম মধ্যে জাতিগত বিভেদ-সংঘাত বাড়ছিল তখন লালন ছিলেন এর বিরূদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তিনি মানুষে-মানুষে কোনও ভেদাভেদে বিশ্বাস করতেন না। মানবতাবাদী লালন দর্শনের মূল কথা হচ্ছে মানুষ। আর এই দর্শন প্রচারের জন্য তিনি শিল্পকে বেছে নিয়েছিলেন। লালনকে অনেকে পরিচয় করিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন সাম্প্রদায়িক পরিচয় দিয়ে। কেউ তাকে হিন্দু, কেউ মুসলমান হিসেবে পরিচয় করাবার চেষ্টা করেছেন। লালনের প্রতিটি গানে তিনি নিজেকে ফকির (আরবি "সাধু") হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
লালন সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন: </blockquote>
যদিও তিনি একবার লালন 'ফকির' বলেছেন, এরপরই তাকে আবার 'বাউল' বলেছেন, যেখানে বাউল এবং ফকিরের অর্থ পারস্পরিক সংঘর্ষপ্রবণ।
বাউল দর্শন
বাউল একটি বিশেষ লোকাচার ও ধর্মমত। লালনকে বাউল মত এবং গানের একজন অগ্রদূত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লালনের গানের জন্য উনিশ শতকে বাউল গান জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বাউল গান মানুষের জীবন দর্শন সম্পৃক্ত বিশেষ সুর সমৃদ্ধ। বাউলরা সাদামাটা জীবনযাপন করেন এবং একতারা বাজিয়ে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোই তাদের অভ্যাস। বাংলা লোকসাহিত্যের একটি বিশেষ অংশ। ২০০৫ সালে ইউনেস্কো বাউল গানকে বিশ্বের মৌখিক এবং দৃশ্যমান ঐতিহ্যসমূহের মাঝে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে।
বাউলেরা উদার ও অসাম্প্রদায়িক ধর্মসাধক। তারা মানবতার বাণী প্রচার করেন। বাউল মতবাদের মাঝে বৈষ্ণবধর্ম এবং সূফীবাদের প্রভাব লক্ষ করা যায়। বাউলরা সবচেয়ে গুরুত্ব দেন আত্মাকে। তাদের মতে আত্মাকে জানলেই পরমাত্মা বা সৃষ্টিকর্তাকে জানা যায়। আত্মা দেহে বাস করে তাই তারা দেহকে পবিত্র জ্ঞান করেন। সাধারণত অশিক্ষিত হলেও বাউলরা জীবনদর্শন সম্পর্কে অনেক গভীর কথা বলেছেন। বাউলরা তাদের দর্শন ও মতামত বাউল গানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করে থাকেন।
বিশ্ব সাহিত্যে প্রভাব
লালনের গান ও দর্শনের দ্বারা অনেক বিশ্বখ্যাত কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক প্রভাবিত হয়েছেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ লালনের মৃত্যুর ২ বছর পর তার আখড়া বাড়িতে যান এবং লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন। তার বিভিন্ন বক্তৃতা ও রচনায় তিনি লালনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। লালনের মানবতাবাদী দর্শনে প্রভাবিত হয়েছেন সাম্যবাদী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ লালনের দর্শনে প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলিতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়। তিনি আফটার লালন নামে একটি কবিতাও রচনা করেন।
লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা গবেষণা হয়েছে ও হচ্ছে। ১৯৬৩ ছেউড়িয়ায় আখড়া বাড়ি ঘিরে লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্রের বিলুপ্তি ঘটিয়ে ১৯৭৮ সালে শিল্পকলা একাডেমীর অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয় লালন একাডেমী।
তার মৃত্যুদিবসে ছেউড়িয়ার আখড়ায় স্মরণ উৎসব হয়। দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অসংখ্য মানুষ লালন স্মরণোৎসব ও দোল পূর্ণিমায় এই আধ্যাত্মিক সাধকের দর্শন অনুস্মরণ করতে প্রতি বছর এখানে এসে থাকেন। ২০১০ সাল থেকে এখানে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানটি "লালন উৎসব" হিসেবে পরিচিত। ২০১২ সালে এখানে ১২২তম লালন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
জনপ্রিয় মাধ্যমে লালন
নাটক
লালন সাঁইজির জীবনীর নির্ভরযোগ্য তথ্য ও লালন-দর্শনের মূল কথা নিয়ে সাইমন জাকারিয়া রচনা করেছেন “উত্তরলালনচরিত” শীর্ষক নাটক। নাটকটি ঢাকার সদর প্রকাশনী হতে প্রকাশিত হয়েছে। উত্তরলালনচরিত নাটকটি নাট্যকার ও বাউলসাধকদের সমন্বয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডলে উপস্থাপিত হয়েছে।
উপন্যাস
রণজিৎ কুমার লালন সম্পর্কে সেনবাউল রাজারাম, নামে একটি উপন্যাস রচনা করেন। পরেশ ভট্টাচার্য রচনা করেন বাউল রাজার প্রেম নামে একটি উপন্যাস। ভারতের বিখ্যাত বাংলা কথা সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লালনের জীবনী নিয়ে রচনা করেন মনের মানুষ উপন্যাস। এই উপন্যাসে কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র ব্যতিরেকেই লালনকে হিন্দু কায়স্থ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছ, নাম দেয়া হয়েছে লালন চন্দ্র কর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উপন্যাস ‘গোরা’ শুরু হয়েছে লালনের গান ‘‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়’’ দিয়ে।
ছোট গল্প
১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে সুনির্মল বসু লালন ফকিরের ভিটে নামে একটি ছোট গল্প রচনা করেন। শওকত ওসমান ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে রচনা করেন দুই মুসাফির নামের একটি ছোটগল্প।
চলচ্চিত্র
লালনকে নিয়ে কয়েকটি চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র নির্মিত হয়েছে। ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ হাসান ইমাম পরিচালনা করেন লালন ফকির চলচ্চিত্রটি। শক্তি চট্টোপাধ্যায় ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ম. হামিদ ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে পরিচালনা করেন তথ্যচিত্র দ্যাখে কয়জনা যা বাংলাদেশে টেলিভিশনে প্রদর্শিত হয়। তানভীর মোকাম্মেল ১৯৯৬ সালে পরিচালনা করেন তথ্যচিত্র অচিন পাখি। ২০০৪ সালে তানভির মোকাম্মেলের পরিচালনায় লালন নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয় । এ চলচ্চিত্রটিতে লালনের ভূমিকায় অভিনয় করেন রাইসুল ইসলাম আসাদ এবং এটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। এছাড়া ২০১০ এ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে গৌতম ঘোষ মনের মানুষ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে যা ২০১০ খ্রিস্টাব্দে ৪১তম ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে। উল্লেখ্য যে এই চলচ্চিত্রে লালনকে কোন উল্লেখযোগ্য সূত্র ছাড়াই হিন্দু হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রটি অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হয়। ২০১১ সালে মুক্তি পায় হাসিবুর রেজা কল্লোল পরিচালিত ‘অন্ধ নিরাঙ্গম’ নামের চলচ্চিত্র। এ চলচ্চিত্রটিতে লালনের দর্শন ও বাউলদের জীবনযাপন তুলে ধরা হয়েছে। এটিতে অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, আনুশেহ্ অনাদিল প্রমুখ।
কবিতা
মার্কিন কবি এলেন গিন্সবার্গ লালনের দর্শনে প্রভাবিত হন এবং তার রচনাবলিতেও লালনের রচনাশৈলীর অনুকরণ দেখা যায়। তিনি After Lalon নামে একটি কবিতাও রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন তিনি লালনের আছে যার মনের মানুষ সে মনে এই গানে উল্লিখিত মনের মানুষ কে তা আবিষ্কার করতে পেরেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি একটি কবিতাও রচনা করেন। যার কথা ছিল আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে, তাই হেরি তায় সকলখানে...
লালনের গান
লালনের গান লালনগীতি বা লালন সংগীত হিসেবে পরিচিত। লালন তার সমকালীন সমাজের নানান কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, সামাজিক বিভেদ ইত্যাদির বিরুদ্ধে তার রচিত গানে তিনি একই সাথে প্রশ্ন ও উত্তর করার একটি বিশেষ শৈলী অনুসরণ করেছেন। এছাড়া তার অনেক গানে তিনি রূপকের আড়ালেও তার নানান দর্শন উপস্থাপন করেছেন।
গানের জনপ্রিয়তা
সমগ্র বিশ্বে,বিশেষ করে বাংলাদেশসহ সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে লালনের গান বেশ জনপ্রিয়। শ্রোতার পছন্দ অনুসারে বিবিসি বাংলার করা সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় লালনের
"খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়"
গানটির অবস্থান ১৪তম।
আত্মতত্ত্ব,দেহতত্ত্ব,গুরু বা মুর্শিদতত্ত্ব, প্রেম-ভক্তিতত্ত্ব,সাধনতত্ব,মানুষ-পরমতত্ত্ব, আল্লাহ্-নবীতত্ত্ব, কৃষ্ণ-গৌরতত্ত্ব এবং আরও বিভিন্ন বিষয়ে লালনের গান রয়েছে।
লালনের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গানঃ
আমি অপার হয়ে বসে আছি
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে
কে বোঝে সাঁইয়ের লীলাখেলা
জাত গেলো জাত গেলো বলে
খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়
আপন ঘরের খবর লে না
আমারে কি রাখবেন গুরু চরণদাসী
মন তুই করলি একি ইতরপনা
এই মানুষে সেই মানুষ আছে
যেখানে সাঁইর বারামখানা
বাড়ির কাছে আরশিনগর
আমার আপন খবর আপনার হয় না
দেখ না মন,ঝকমারি এই দুনিয়াদারী
ধর চোর হাওয়ার ঘরে ফান্দ পেতে
সব সৃষ্টি করলো যে জন
সময় গেলে সাধন হবে না
আছে আদি মক্কা এই মানব দেহে
তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে
এসব দেখি কানার হাট বাজার
মিলন হবে কত দিনে
কে বানাইলো এমন রঙমহল খানা
ফরিদা পারভিন উপমহাদেশের সেরা লালন সঙ্গীত শিল্পীদের একজন। আনুশেহ আনাদিল, অরূপ রাহী, ক্লোজআপ ওয়ান তারকা
মশিউর রহমান রিংকু জনপ্রিয় লালন সঙ্গীত শিল্পী। লালনের মাজারে অসংখ্য বাউল শিল্পী একতারা বাজিয়ে লালন গানের চর্চা করে থাকেন। একতারার সাথে বাউল গান আলাদা মাত্রা যোগ করে।
গানের সংগ্রহ
লালনের গান "লালনগীতি" বা কখনও "লালন সংগীত" হিসেবে প্রসিদ্ধ। লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং সুর করে পরিবেশন করতেন। এ ভাবেই তার বিশাল গান রচনার ভাণ্ডার গড়ে ওঠে। তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন বলে ধারণা করা হয়। তবে তিনি নিজে তা লিপিবদ্ধ করেন নি। তার শিষ্যরা গান মনে রাখতো আর পরবর্তীকালে লিপিকার তা লিপিবদ্ধ করতেন। আর এতে করে তার অনেক গানই লিপিবদ্ধ করা হয় নি বলে ধারণা করা হয়।
বাউলদের জন্য তিনি যেসব গান রচনা করেন, তা কালে-কালে এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে মানুষ এর মুখে মুখে তা পুরো বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের গানে প্রভাবিত হয়ে, প্রবাসী পত্রিকার ‘হারামণি’ বিভাগে লালনের কুড়িটি গান প্রকাশ করেন। মুহম্মদ মনসুরউদ্দিন একাই তিন শতাধিক লালন গীতি সংগ্রহ করেছেন যা তার হারামণি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এ ছাড়াও তার অন্য দুটি গ্রন্থের শিরোনাম যথাক্রমে ‘লালন ফকিরের গান’ এবং ‘লালন গীতিকা’ যাতে বহু লালন গীতি সংকলিত হয়েছে। জ্যোতিরিন্দ্রিনাথ ঠাকুর সম্পাদিত ‘বীণা’, ‘বাদিনী’ পত্রিকায় ৭ম সংখ্যা ২ ভাগ (মাঘ) ১৩০৫-এ ‘পারমার্থিক গান’ শিরোনামে লালনের ‘ক্ষম অপরাধ ও দীননাথ’ গানটি স্বরলিপিসহ প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় ৮ম সংখ্যা ২ ভাগ (ফাগুন) ১৩০৫-এ প্রকাশিত আরেকটি লালনগীতি ‘কথা কয় কাছে দেখা যায় না’ দুটি গানেরই স্বরলিপি করেন ইন্দিরা দেবী। প্রেমদাস বৈরাগী গীত এ লালন গীতি সংগ্রহ করেছিলেন মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন এবং তা মাসিক প্রবাসী পত্রিকার হারামণি অংশে প্রকাশিত হয়েছিল।
লালনের গানের কথা, সুর ও দর্শনকে বিভিন্ন গবেষক বিভিন্নভাবে উল্লেখ করেছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লালন গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী বলেন, অনেক গান যাতে লালন বলে কথাটির উল্লেখ আছে তার সবই প্রকৃতপক্ষে লালনের নয়। মন্টু শাহ নামের একজন বাউল, তিন খণ্ডের একটি বই প্রকাশ করেছেন যাতে তিনি মনিরুদ্দিন শাহ নামক লালনের সরাসরি শিষ্যের সংগৃহীত লালন সংগীতগুলো প্রকাশ করেছেন।
বিতর্ক ও সমালোচনা
সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদীরা লালনের অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তার সর্বাধিক সমালোচনা করে থাকে। লালন তার জীবদ্দশায় নিজের ধর্ম পরিচয় কারও কাছে প্রকাশ করেন নি। তার ধর্মবিশ্বাস আজও একটি বিতর্কিত বিষয়। লালনের অসাম্প্রদায়িকতা, লিঙ্গ বৈষম্যের বিরোধিতা ইত্যাদির কারণে তাকে তার জীবদ্দশায় ধর্মান্ধ এবং মৌলবাদী হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের ঘৃণা, বঞ্চনার এবং আক্রমণের শিকার হতে হয়। এছাড়া তার ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী দর্শন এবং ঈশ্বর, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ে তার উত্থাপিত নানান প্রশ্নের কারণে অনেক ধর্মবাদী তাকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন।
চিত্রশালা
আরও দেখুন
আরশি নগর
মনের মানুষ
টীকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
লালনগীতি সংগ্রহ
ফকির লালন শাহ তথ্যতীর্থ
১৭৭৪-এ জন্ম
১৮৯০-এ মৃত্যু
বাউল
বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ
বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী
বাংলাদেশী কবি
বাঙালি দার্শনিক
মানবতাবাদী
বাংলাদেশী দার্শনিক
লালন
১৭৭২-এ জন্ম
বাঙালি গীতিকার
বাঙালি পুরুষ কবি
বাঙালি জাতীয়তাবাদী
ভক্তি আন্দোলন
বাংলাদেশী সংস্কৃতি | https://en.wikipedia.org/wiki/Lalon | Lalon | Lalon (Bengali: লালন; 14 October 1772 – 17 October 1890), also known as Lalon Shah, Lalon Fakir, Shahji and titled Fakir, Shah, was a prominent Bangladeshi spiritual leader, philosopher, mystic poet and social reformer born in Jhenaidah, Bengal Subah. Regarded as an icon of Bengali culture, he inspired and influenced many philosophers, poets and social thinkers including Rabindranath Tagore, Kazi Nazrul Islam and Allen Ginsberg. Lalon's philosophy of humanity rejects all distinctions of caste, class, and creed and takes stand against theological conflicts and racism. It denies all worldly affairs in search of the soul and embodied the socially transformative role of sub-continental Bhakti and Sufism.
Lalon founded the institute known as Lalon Akhra in Cheuriya, about 2 kilometres (1.2 mi) from Kushtia railway station in southwestern Bangladesh. His disciples dwell mostly in Bangladesh and Indian states of West Bengal, Tripura and Assam’s Barak valley. Every year on the occasion of his death anniversary, thousands of his disciples and followers assemble at Lalon Akhra and pay homage to him through celebration and discussion of his songs and philosophy for three days.
In 2004, Lalon was ranked 12 in BBC's poll of the Greatest Bengali of all time. |
2638 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%20%28%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%82%20%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE%29 | সি (প্রোগ্রামিং ভাষা) | সি একটি প্রোগ্রামিং ভাষা। সি নির্মাণ করেন ডেনিস রিচি, বেল ল্যাবে '৭০এর দশকে কাজ করার সময়। ভাষাটি তৈরির প্রথম উদ্দেশ্য ছিল ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম এর কোড লেখা, কিন্তু অচিরেই এটি একটি বহুলব্যবহৃত ভাষায় পরিণত হয়। সি++ ও জাভাসহ পরবর্তীকালের অনেক প্রোগ্রামিং ভাষার উপর সি'র গভীর প্রভাব পড়েছে। সি'র সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর বহনযোগ্যতা (portability)। সি'তে রচিত প্রোগ্রাম যেকোনো অপারেটিং সিস্টেমের কম্পিউটারে চালানো যায়। ৭০ এবং ৮০র দশকের দিকে সি এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে এর অনেকগুলো সংস্করণ তৈরি হয়। ১৯৮৩ সালে মার্কিন মাননিয়ন্ত্রক সংস্থা সি এর একটি আদর্শ সংস্করণ তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে। দীর্ঘ ৬ বছর পরে ১৯৮৯ সালে সেই আদর্শ সি ভাষাটি তৈরি হয়, যা আমেরিকান মাননিয়ন্ত্রক সংস্থার সি (আনসি সি (ANSI C)) নামে পরিচিত। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মাননিয়ন্ত্রক সংস্থা ১৯৯০ সালে সি এর এই আদর্শ সংস্করণটি গ্রহণ করে, যা সি৯০ নামে পরিচিত। মূলত "সি৮৯" এবং "সি৯০" একই ভাষা। যুগের প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মাননিয়ন্ত্রক সংস্থা ১৯৯৫ সালে এই সংস্করণকে বর্ধিত করে এবং পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে সম্পূর্ণ নতুন একটি সংস্করণ প্রকাশ করে যা সি৯৯ নামে পরিচিত। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের সংস্করণ সি১১ এবং ২০১৮ সালের জুনে সংশোধিত সি১৭ প্রকাশিত হয়।
উৎপত্তি
১৯৬০-এর দশকে বেশ কিছু কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা তৈরি করা হয়েছিল। মার্কিন কম্পিউটারবিদ গ্রেস হপার Mathematic, Flowmatic এবং A2 নামে তিনটি প্রোগ্রামিং ভাষা উদ্ভাবন করেন। এরপর জেম্স ব্যাকাস তৈরি করেন ForTran। তারও পরে ALGOL, COBOL, Ada ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ভাষা উদ্ভাবন করা হয়। মূলত এই ভাষাগুলিই আধুনিক প্রোগ্রামিং ভাষাগুলির পূর্বসূরী। কিন্তু ঐ ভাষাগুলিকে ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হত। তাই কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা এমন একটি প্রোগ্রামিং ভাষার কথা ভাবতে থাকেন যার মাধ্যমে সব ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করা সম্ভব হবে। এরই ফলশ্রুতিতে বিজ্ঞানীরা তৈরি করেন ALGOL 60 (Algorithmic Language) এবং এরপর Combined Programming Language (CPL), কিন্তু CPL শেখা এবং ব্যবহার করা ছিল বেশ কঠিন। তাই এটা জনপ্রিয়তা পায়নি।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এর মার্টিন রিচার্ড CPL কে ভিত্তি করে ১৯৬৭ সালে তৈরি করেন Basic Combined Programming Language (BCPL) কিন্তু এটি ছিল মূলত Less Powerful to Specific এবং টাইপবিহীন একটি প্রোগ্রামিং ভাষা।
এ সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের বেল গবেষণাগারে বিজ্ঞানী টমসন তৈরি করেন বি (B) নামক একটি প্রোগ্রামিং ভাষা; এটি ছিল পূর্বের BCPL-এর একটি উন্নত সংস্করণ। ডেনিস রিচি পরবর্তীতে B এবং BCPL অনুসরণ করেন এবং নিজে থেকে আরো কিছু কৌশল ব্যবহার করে তৈরি করেন "সি" (C)। মূলত B-এর সীমাবদ্ধতা গুলো দূর করার উদ্দেশ্যেই "সি" এর উৎপত্তি।
ইতিহাস
প্রারম্ভিক উন্নয়ন
সি-এর উৎপত্তি, উনিক্স অপারেটিং সিস্টেমের বিকাশের সাথে অতোপ্রতোভাবে জড়িত, যা মূলত ডেনিস রিচি এবং কেন থম্পসন ও তাদের সহকর্মীদের বিভিন্ন ধারণাকে কাজে কাজে লাগিয়ে PDP-7-এ প্রয়োগ করা হয়। অবশেষে, তারা অপারেটিং সিস্টেমটিকে PDP-11-এ পোর্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ইউনিক্সের আসল PDP-11 সংস্করণটিও অ্যাসেম্বল ভাষায় তৈরি করা হয়েছিল।
থমসন নতুন প্লাটফর্মটির জন্য কার্যকারি কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলেন। প্রথমে, তিনি একটি ফোরট্রান কম্পাইলার তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শীঘ্রই ধারণাটি বাদ দেন। পরিবর্তে, তিনি সম্প্রতিক আবিষ্কৃত বিসিপিএল সিস্টেম প্রোগ্রামিং ভাষা-এর সাহায্যে একটি স্বল্প খরচের সংস্করণ তৈরি করেন। তখনও বিসিপিএলের অফিসিয়াল বিবরণ পাওয়া যায়নি, এবং থম্পসন সিনট্যাক্স গুলোকে যতটা কম শব্দের সাহায্যে লেখা যায়, সেভাবে লিখেছিলেন যা সরলীকৃত ALGOL যা SMALGOL নামে পরিচিত, এর মতো ছিলো।
নতুন বি এবং প্রথম সি রিলিজ
১৯৭১ সালে, রিচি আরও শক্তিশালী পিডিপি-১১-এর বৈশিষ্ট্যগুলিকে কাজে লাগানোর জন্য বি-এর উন্নয়ন করতে শুরু করেন। একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন ছিল ক্যরেক্টার টাইপ নামক ডাটা টাইপ সংযোজন। তিনি এটিকে নতুন বি বলে ডাকতেন। থম্পসন ইউনিক্স কার্নেল লিখতে এনবি ব্যবহার করা শুরু করেন এবং এর প্রয়োজনীয়তা প্রোগ্রামিং ভাষার বিকাশের জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এনবি ভাষায় আরও সমৃদ্ধ ধরনের ডাটা টাইপ যোগ করা হয়েছিল। এনবি-এর int এবং char এর অ্যারে ছিল; কিন্তু তারপর পয়েন্টার যোগ করা হয়েছে, অন্যান্য ধরনের পয়েন্টার তৈরি করার ক্ষমতা, এই সবগুলির অ্যারে, ফাংশন থেকে ফলফল ফেরত দেওয়ার ধরন (return)। এক্সপ্রেশন মধ্যেকার অ্যারে পয়েন্টার হিসাবে কাজ করা শুরু করে। এর মাধ্যমে একটি নতুন কম্পাইলার লেখা হয়, এবং ভাষাটির নাম পরিবর্তন করে C করা হয়।
সি কম্পাইলার এবং এটির সাথে তৈরি কিছু ইউটিলিটি ইউনিক্স সংস্করণ ২এ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কে অ্যান্ড আর সি
১৯৭৮ সালে, ব্রায়ান কার্নিঘান এবং ডেনিস রিচি দ্যা সি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর প্রথম সংস্করণ প্রকাশ করেন। এই বইটি, যা সি প্রোগ্রামারদের কাছে K&R নামে পরিচিত, বহু বছর ধরে এই ভাষার একটি অনানুষ্ঠানিক নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করেছে। এটিকে অনেকেই K&R C নামে চেনে। এই বইটির দ্বিতীয় সংস্করণটি, সি ভাষার ANSI C মান্দন্ডকে মেনে চলে, যা নীচে বর্ণিত হয়েছে।
K&R সি ভাষায় বেশ কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য চালু করেছে:
আদর্শ I/O লাইব্রেরি
long int ডেটা টাইপ
unsigned int ডেটা টাইপ
কম্পাউন্ড (যৌগিক) অ্যাসাইনমেন্ট অপারেটর =op (যেমন =-) কে পরিবর্তন করে এরূপ (op=) করা
এমনিকি, ১৯৮৯ সালে ANSI মানদন্ড প্রকাশের পরও অনেক দিন ধরেই K&R C নির্দেশবলী হালনাগাদ করা হয়নি। ফলে, এটি কম্পাইল করতে এখনো অনেক পুরোনো কম্পাইলার ব্যবহৃত হয়।
সি-এর প্রথম দিকের সংস্করণগুলোতে , যে ফাংশনগুলি শুধুমাত্র int ব্যতীত অন্য কোনো টাইপের ডাটা প্রত্যাবর্তন(return) করে তা ঘোষণা করা আবশ্যক, যদি তা ফাংশন লেখার আগে ব্যবহার করা হয়। পূর্বে ডাটা টাইপ ্না বলে দেওয়া হলে, ফাংশন টাইপ ও রিটার্ন টাইপ কম্পাইলার ডিফল্ট হিসাবে int ধরে নেয়। উদাহরণস্বরূপ:
long some_function();
/* int */ other_function();
/* int */ calling_function()
{
long test1;
register /* int */ test2;
test1 = some_function();
if (test1 > 1)
test2 = 0;
else
test2 = other_function();
return test2;
}
যে int গুলি কমেন্ট ব্লকের মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে তা K&R C-তে বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে এগুলো প্রয়োজন হতে পারে।
K&R C প্রকাশের পরের বছরগুলিতে, AT&T (বিশেষ করে পিসিসি) এবং কিছু অন্যান্য ভেন্ডার। এর অন্তর্ভুক্ত হলো:
voidফাংশন (অর্থাৎ, কোন রিটার্ন ছাড়া ফাংশন)
ফাংশন রিটার্নিং structবা unionটাইপ (পয়েন্টারের পরিবর্তে)
structডেটা টাইপের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট
গণনা করার টাইপ
বিপুল সংখ্যক এক্সটেনশন এবং একটি স্ট্যান্ডার্ড লাইব্রেরি-এর শর্তের অভাব, সি ভাষার জনপ্রিয়তা এবং এটাও সত্য যে ইউনিক্স কম্পাইলাররাও K&R স্পেসিফিকেশন সঠিকভাবে প্রয়োগ করেনি, যা সংশোধনের প্রয়োজন।
সি৯৯
১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে সি কে আরও সংশোধিত আকারে প্রকাশ করা হয়। ফলে ১৯৯৯ সালে ISO/IEC 9899:1999 প্রকাশ করা হয়, যাকে সাধারণত "সি৯৯" বলা হয়। টেকনিক্যাল করিজেন্ডা দ্বারা এটি তিনবার সংশোধন করা হয়েছে।
সি৯৯-এ বেশ কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইনলাইন ফাংশন, বেশ কয়েকটি নতুন ডেটা টাইপ (যেমন : long int) এব জটিল সংখ্যার জন্য (complex),পরিবর্তনশীল-দৈর্ঘ্যের অ্যারে এবং নমনীয় অ্যারের সদস্য, IEEE 754 ফ্লোটিং পয়েন্টের জন্য উন্নত ভ্যরিয়াবেল, (ভেরিয়েবলের ম্যাক্রো), এবং // দিয়ে শুরু হওয়া এক-লাইনের মন্তব্য ইত্যাদি। BCPL বা সি++ এর মতো অনেক প্রোগ্রামিং ভাষা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সি কম্পাইলারে এটি এক্সটেনশন হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সি৯৯ অধিকাংশ যায়গায় সি৯০ এর সাথে মিলে যায়, কিন্তু কিছু বিষয়ে নিয়মগুলো আরো কঠোর করা হয়। বিশেষ করে, একটি ভ্যরিয়েবল যেখানে ডাটা টাইপ নির্দিষ্ট করা বলা নেই, সেটিকে আর int হিসাবে ধরে নেওয়া. সি৯৯ সমর্থন উপলব্ধ রয়েছে তা নির্দেশ করার জন্য একটি কোড ম্যাক্রো __STDC_VERSION__ মান 199901L দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।জিসিসি, সোলারিস স্টুডিও, এবং অন্যান্য সি কম্পাইলার এখন সি৯৯ এর অধিকাংশ বা সমস্ত নতুন বৈশিষ্ট্য সমর্থন করে।মাইক্রোসফট ভিজুয়াল সি++-এর সি কম্পাইলার, তবে, C89 স্ট্যান্ডার্ড এবং সি৯৯-এর সেই নিয়মগুলো মেনে চলে যেগুলো সি++11-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সি১১
২০০৭ সালে, সি স্ট্যান্ডার্ডের আরেকটি সংশোধনের কাজ শুরু হয়, যাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে "সি১এক্স" বলা হয়। ২০১১-১২-০৮ তারিখে ISO/IEC 9899:2011 এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত এটি একটি স্ট্যান্ডার্ড ছিলো। সি স্ট্যান্ডার্ড কমিটি নতুন বৈশিষ্ট্য সংযোজন সীমিত করার জন্য নির্দেশিকা গ্রহণ করেছে যা বিদ্যমান বাস্তবায়ন দ্বারা পরীক্ষা করা হয়নি।
C11 স্ট্যান্ডার্ড C এবং লাইব্রেরিতে অসংখ্য নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করে, যার মধ্যে রয়েছে টাইপ জেনেরিক ম্যাক্রো, নামহীন কাঠামো, উন্নত ইউনিকোড, পারমাণবিক অপারেশন, মাল্টি-থ্রেডিং এবং বাউন্ড-চেকড ফাংশন। এটি বিদ্যমান C99 লাইব্রেরির কিছু অংশকে ঐচ্ছিক করে তোলে এবং C++ এর সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ায়। সি১১ এ স্ট্যান্ডার্ড ম্যাক্রো __STDC_VERSION__ কে 201112L হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
সিনট্যাক্স
কী ওয়ার্ড
সি প্রোগ্রামিং ভাষায় কীওয়ার্ড বলতে বোঝায় সেইসব সংরক্ষিত শব্দসমূহকে যেগুলো একটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। সি৮৯ এ এরকম ৩২টি কীওয়ার্ড আছে।
auto
break
case
char
const
continue
default
do
double
else
enum
extern
float
for
goto
if
int
long
register
return
short
signed
sizeof
static
struct
switch
typedef
union
unsigned
void
volatile
while
সি৯৯ এ এরকম আরো পাঁচটি কীওয়ার্ড যুক্ত হয়।
_Bool
_Complex
_Imaginary
inline
restrict
সি১১ তে যুক্ত হয় আরো সাতটি কীওয়ার্ড।
_Alignas
_Alignof
_Atomic
_Generic
_Noreturn
_Static_assert
_Thread_local
অপারেটর
সি এর অপারেটরগুলো হল -
অ্যারিথমেটিক: +, -, *, /, %
অ্যাসাইনমেন্ট: =
অগমেন্টেড অ্যাসাইনমেন্ট: +=, -=, *=, /=, %=, &=, |=, ^=, <<=, >>=
বিটওয়াইজ লজিক: ~, &, |, ^
বিটওয়াইজ শিফট্: <<, >>
বুলিয়ান লজিক: !, &&, ||
কন্ডিশনাল ইভালুয়েশন: ? :
ইকুয়ালিটি টেস্টিং: ==, !=
কলিং ফাংশন: ( )
ইনক্রিমেন্ট ও ডিক্রিমেন্ট অপারেটর: ++, --
মেম্বার সিলেকশন: ., ->
অবজেক্ট সাইজ: sizeof
অর্ডার রিলেশন: <, <=, >, >=
রেফারেন্স ও ডিরেফারেন্স: &, *, [ ]
সিকুয়েন্সিং: ,
সাবএক্সপ্রেসন গ্রুপিং: ( )
টাইপ কনভার্সন: (typename)
উদাহরণ কোড
সি #প্রোগ্রামিং ভাষার উদাহরণ :
Hello World হল একটি সাধারণ প্রোগ্রামিং হলো।
uning System;
namespase Hellw_Wold
{
class Program
{
static Void Main(string [] args)
{
Console.WriteLine("Hello World);
}
}
}
সি প্রোগ্রামিং কোডের আদর্শ উদাহরণ
#include <stdio.h>
int main(void)
{
printf("Hello World\n");
return 0;
}
এখানে #include <stdio.h> লিখার মাধ্যমে কম্পেইলার কে stdio.h নামের হেডার ফাইল পড়তে বলা হয়েছে ।
int main(void) মানে মূল ফাংশন ইন্টেজার (গাণিতিক পূর্ণ সংখ্যা) প্রদান করবে । আর (void) লিখার কারণে মূল ফাংশনে কোন কিছু ইনপুট করতে হবে না ।
printf("Hello World\n") এখানে printf হল একটি ফাংশন যার বিস্তারিত stdio.h হেডার ফাইলের মধ্যে লিখা আছে । সাধারণত printf এর মাধ্যমে স্ট্রিং উপাত্ত কম্পিউটারের পর্দায় দৃশ্যমান করার জন্য ব্যবহার হয় । এর মানে Hello World লিখাটি কম্পিউটারের পর্দায় দৃশ্যমান হবে।
উপাত্তের ধরন
সি তে উপাত্তের ধরন মুলত তিন প্রকারঃ
ব্যবহারকারী সংজ্ঞায়িত উপাত্তের ধরন
অন্তর্নির্মিত বা বিল্ট ইন উপাত্তের ধরন
উদ্ভূত উপাত্তের ধরন
অন্তর্নির্মিত উপাত্তের ধরন
ANSI কর্তৃক নির্ধারিত উপাত্তের ধরন সমুহ কে অন্তর্নির্মিত বা বিল্ট ইন উপাত্তের ধরন বা অপরিহার্য উপাত্তের ধরন বলে।
অন্তর্নির্মিত উপাত্তের ধরন সাধারনত ৪ প্রকারঃ
ক্যারেক্টার ধরনের উপাত্ত - সাধারনত ক্যারেক্টার বা স্ট্রিং জাতীয় কোন উপাত্ত ঘোষণার জন্য ক্যারেক্টার ধরনের উপাত্ত ব্যবহার করা হয় । ক্যারেক্টার ধরনের উপাত্ত মেমোরিতে ১ বাইট জায়গা দখল করে । কোন উপাত্তকে ক্যারেক্টার হিসাবে ঘোষণা করার জন্য 'char' কীওয়ার্ড ব্যবহৃত হয় যেমনঃ char abc; char xya;। এর বিন্যাস নির্দিষ্টকারী হিসেবে '%c' ব্যবহার করা হয় ।
ইন্টিজার ধরনের উপাত্ত - পূর্ণসংখ্যা জাতীয় কোন উপাত্ত ঘোষণার জন্য এই উপাত্তের ধরন ব্যবহার করা হয় । এই উপাত্তের ধরন মেমোরিতে ২ বাইট জায়গা দখল করে । এর কীওয়ার্ড হচ্ছেঃ 'int' । যেমনঃ int abc; int xyz; । বিন্যাস নির্দিষ্টকারী হিসেবে '%d' ব্যবহার করা হয়।
ফ্লোটিং পয়েন্ট ধরনের উপাত্ত
দ্বৈত ধরনের উপাত্ত
অ্যারে
কম্পিউটার সায়েন্সে , অ্যারে হল একটি ডেটা স্ট্রাকচার যা উপাদানগুলির ( মান বা ভেরিয়েবল ) সমষ্টির সমন্বয়ে গঠিত একই মেমরি আকারের, প্রতিটিকে অন্তত একটি অ্যারে সূচক বা কী দ্বারা চিহ্নিত করা হয় । একটি নির্দিষ্ট নাম থাকে। '[ ]' তৃতীয় বন্ধনীর সাহায্যে অ্যারের নামের সাথে অ্যারে সাইজ লেখা হয়, যা অ্যারে ভেরিয়েবলের(Variable) সর্বোচ্চ ডেটার সংখ্যা নির্দেশ করে। এই সংখ্যাকে অ্যারের ইনডেক্স(Index) বলা হয়। যেমন, একটি অ্যারে— int num[4]; এখানে [4] দ্বারা অ্যারের ইনডেক্স প্রকাশ করে। int num[4]; অ্যারেটিতে মোট পাঁচটি চলক(Variable) আছে। যেমন, ১ম— num[0] , ২য়— num[1] , ৩য়— num[2] , ৪র্থ— num[3] , ৫ম— num[4]
অ্যারের উপাদানগুলো মেমোরিতে পাশাপাশি অবস্থান করে। প্রোগ্রাম নির্বাহের সময়ে স্টাটিক অ্যারের আকার কখনো পরিবর্তন করা যায় না।
ব্যবহার
ওয়েব ডেভেলাপমেন্টে পূর্বের ব্যবহার
ইতিহাস অনুযায়ী সি কখনো কখনো ওয়েব ডেভেলাপমেন্টেও ব্যবহার করা হতো এবং সেক্ষেত্রে কমন গেটওয়ে ইন্টারফেস (সিজিআই) কে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, সার্ভার এবং ব্রাউজারের মধ্যকার তথ্য আদানপ্রদানের "গেটওয়ে" হিসেবে ব্যবহার করা হতো। "ইন্টারপ্রিটেড" প্রোগ্রামিং ভাষাগুলোর থেকে গতি, স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক প্রাপ্যতা বেশি হবার কারণে সি প্রায়ই প্রাধান্য পেয়ে এসেছে। বর্তমানে সিতে ওয়েব ডেভেলাপমেন্ট করা হয়না এবং ওয়েব ডেভেলাপমেন্টের জন্য প্রচুর সরঞ্জাম সি এর বদলে সহজলভ্য রয়েছে।
অন্যান্য ভাষা উন্নয়নে ব্যবহার
সি এর সহজলভ্যতা ও কার্যকারিতার ফলাফল হিসেবে অন্যান্য প্রোগ্রামিং ভাষার কম্পাইলার, লাইব্রেরি ও ইন্টারপ্রেটার প্রস্তুতে প্রায়ই সি ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ হিসেবে পাইথনের রেফারেন্স ইমপ্লিমেন্টেশন, পার্ল, রুবি এবং পিএইচপির কথা উল্লেখ করা যায়, যাদের প্রত্যেককেই সি ব্যবহার করে লেখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র
সি (প্রোগ্রামিং ভাষা)
মার্কিন উদ্ভাবন
সি প্রোগ্রামিং ভাষা পরিবার
ক্রস-প্ল্যাটফর্ম সফটওয়্যার
উচ্চস্তরের প্রোগ্রামিং ভাষা
পদ্ধতিমূলক প্রোগ্রামিং ভাষা
কাঠামোগত প্রোগ্রামিং ভাষা
১৯৭২-এ নির্মিত প্রোগ্রামিং ভাষা
সিস্টেম প্রোগ্রামিং ভাষা | https://en.wikipedia.org/wiki/C_(programming_language) | C (programming language) | C (pronounced – like the letter c) is a general-purpose programming language. It was created in the 1970s by Dennis Ritchie and remains very widely used and influential. By design, C's features cleanly reflect the capabilities of the targeted CPUs. It has found lasting use in operating systems code (especially in kernels), device drivers, and protocol stacks, but its use in application software has been decreasing. C is commonly used on computer architectures that range from the largest supercomputers to the smallest microcontrollers and embedded systems.
A successor to the programming language B, C was originally developed at Bell Labs by Ritchie between 1972 and 1973 to construct utilities running on Unix. It was applied to re-implementing the kernel of the Unix operating system. During the 1980s, C gradually gained popularity. It has become one of the most widely used programming languages, with C compilers available for practically all modern computer architectures and operating systems. The book The C Programming Language, co-authored by the original language designer, served for many years as the de facto standard for the language. C has been standardized since 1989 by the American National Standards Institute (ANSI) and, subsequently, jointly by the International Organization for Standardization (ISO) and the International Electrotechnical Commission (IEC).
C is an imperative procedural language, supporting structured programming, lexical variable scope, and recursion, with a static type system. It was designed to be compiled to provide low-level access to memory and language constructs that map efficiently to machine instructions, all with minimal runtime support. Despite its low-level capabilities, the language was designed to encourage cross-platform programming. A standards-compliant C program written with portability in mind can be compiled for a wide variety of computer platforms and operating systems with few changes to its source code.
Since 2000, C has consistently ranked among the top three languages in the TIOBE index, a measure of the popularity of programming languages. |
2640 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE | আকিরা কুরোসাওয়া | আকিরা কুরোসাওয়া (জাপানি ভাষায়: 黒澤 明 কুরোসাওয়া আকিরা) (২৩শে মার্চ, ১৯১০ - ৬ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮) প্রখ্যাত জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, সম্পাদক এবং চিত্রনাট্যকার। বিংশ শতাব্দীর সেরা পরিচালকদের মধ্যে একজন তিনি। তার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ১৯৪৩ সালের সানশিরো সুগাতা এবং শেষ চলচ্চিত্র ছিল ১৯৯৩ সালের মাদাদাইয়ো। তার দুটি চলচ্চিত্র সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করে। তিনি একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার, লেজিওঁ দনর সহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
প্রাথমিক জীবন
আকিরা কুরোসাওয়া ১৯১০ সালের ২৩শে মার্চ জাপানের রাজধানী টোকিওর শিনাগাওয়া উপশহর অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। ইসামু কুরোসাওয়া ও শিমা কুরোসাওয়া আট সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। তার জন্মের সময় তার বাবার বয়স ছিল ৪৫ আর মায়ের বয়স ছিল ৪০। তার তিন ভাই এবং চার বোন ছিল। ভাইদের মধ্যে একজন তার জন্মের আগেই মারা যান এবং একজন তার জন্মের সময়ই কাজের সন্ধানে শহরে চলে যান। বোনদের মধ্যেও একজনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তার জন্মের আগে। কুরোসাওয়ার ঠিক বড় যে বোন ছিলেন তাকে তিনি "ছোট আপা" বলে ডাকতেন। দশ বছর বয়সে তার এই বোনটিও রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
কুরোসাওয়া পরিবার প্রাক্তন সামুরাইদের বংশধারা বহন করে আসছিল। তার বাবা জাপানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত একটি জুনিয়র হাই স্কুলের পরিচালকের দায়িত্ব নিয়োজিত ছিলেন। এই পরিবারের অর্থাভাব কোনও কালেই ছিল না। বাবা ইসামু কুরোসাওয়া পশ্চিমা সংস্কৃতির অনেক কিছুই পালন করতেন, যেমন স্কুলে পরিচালিত অ্যাথলেটিক প্রতিযোগিতা ও সপরিবারে সিনেমা দেখতে যাওয়া। উল্লেখ্য জাপানি নাট্যাঙ্গণে এই সিনেমাগুলো তখন কেবলমাত্র আসতে শুরু করেছিল। পরবর্তীতে জাপানি সংস্কৃতি যখন পশ্চিমা চলচ্চিত্রের প্রভাব থেকে বেরিয়ে এসে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠে তখন ইসামু মনে করতেন, চলচ্চিত্র এক ধরনের ইতিবাচক শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আকিরার এক শিক্ষক তাকে আঁকতে উৎসাহ দিতেন। তিনি আকিরার মেধা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন এবং তাকে চোখে চোখে রাখতেন। তার উপর তার বড় ভাই হেইগোর বিশাল প্রভাব ছিল। হেইগো খুব মেধাবী ছিলেন এবং স্কুলের অনেক প্রতিযোগিতায় পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। অবশ্য চরিত্রের দিক দিয়ে তিনি একটু নৈরাশ্যবাদী ছিলেন। ১৯২৩ সালে কান্তো ভূমিকম্পে টোকিওর এক লক্ষ মানুষ মারা যায়। ভূমিকম্পের পর ১৭ বছর বয়সী হেইগো ও ১৩ বছর বয়সী আকিরা হেঁটে হেঁটে বিধ্স্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেছিলেন। তারা দেখেছিলেন সর্বত্র স্তূপ হয়ে থাকা মানুষের লাশ। আকিরা যখনই মৃত্যু দেখে ঘাড় ঘুরিয়ে নিতে চাইছিলেন, তখনই হেইগো তাকে এমনটি করতে নিষেধ করছিলেন। আকিরার ভাষ্যমতে এই অভিজ্ঞতা তাকে একটি সত্য শিখিয়েছিল, সেটি হল: ভীতিকর কিছুর দিকে সরাসরি তাকালে তার ভয় দেখানোর ক্ষমতা চলে যায়।
হেইগো এক সময় টোকিও চলচ্চিত্র থিয়েটারে বেনশি হিসেবে কাজ করা শুরু করে। বেনশিরা নির্বাক চলচ্চিত্রের দর্শকদের জন্য পেছন থেকে কাহিনী ও কথোপকথন বর্ণনা করত। এই বিষয়টা নির্বাক চলচ্চিত্রে জাপানিদের বিশেষ সংযোজন হিসেবে প্রশংসা অর্জন করেছিল। কিন্তু সবাক চলচ্চিত্রের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে জাপান জুড়ে বেনশিরা চাকরি হারাতে থাকে। হেইগো একটা বেনশি আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় আকিরা শ্রমিক ব্যবস্থাপনা আন্দোলনের সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং একটি পত্রিকায় এ নিয়ে লেখালেখি করেন। একই সাথে চিত্রকর এবং সাহিত্য পাঠক হিসেবে তার দক্ষতার ভিত গড়ে উঠতে থাকে। জীবনে বেশ কিছু কাজে প্রতিফলিত হলেও আকিরা কখনও নিজেকে সাম্যবাদী বলেন নি।
আকিরার বয়স যখন বিশের একটু উপরে তখন তার বড় ভাই হেইগো আত্মহত্যা করেন। এর চার মাস পড়ে কুরোসাওয়া পরিবারের বড় ছেলে মারা যান। চারজন ছেলের মধ্যে তখন কেবল আকিরাই বেঁচে থাকেন। তখন তার বয়স ছিল ২৩
প্রাথমিক কর্মজীবন
১৯৩৬ সালে কুরোসাওয়া জাপানের একটি মূলধারার চলচ্চিত্র স্টুডিওতে পরিচালনার জন্য আয়োজিত একটি শিক্ষানবিশি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। পিসিএল নামের এই স্টুডিওটি পরবর্তীতে তোহো নামে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। পরিচালক কাজিরো ইয়ামামোতো তাকে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়ে বেশ কিছু কাজ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আকিরা তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি নির্মাণ করেন যার নাম ছিল সানশিরো সুগাতা। এর পর তার করা সব ছবিই যুদ্ধকালীন জাপানি সরকার খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখত। এ কারণে এ সময়ের ছবিগুলোতে জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা উঠে এসেছে। যেমন তার "দ্য মোস্ট বিউটিফুল" নামের ছবিটি সামরিক অপটিক্সের কারখানায় কাজ করে এমন এক নারীর জীবন নিয়ে করা। "জুডো সাগা ২" ছবিতে জাপানি জুডোকে পশ্চিমা তথা মার্কিন বক্সিং থেকে উত্তম হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
যুদ্ধের পর তার করা প্রথম ছবিতে এ ধরনের কোনও প্রভাব ছিল না, বরং এতে পূর্বতন জাপান রাজতন্ত্রকে কটাক্ষ করা হয়েছে। "আমার যুবকাল নিয়ে অক্ষোভ" (わが青春に悔なし ওয়াগা সেইশুং নি কুইনাশি, ইংরেজি নাম No Regrets for Our Youth) নামের এই সিনেমাটি বাম রাজনীতির সাথে যুক্ত এক ব্যক্তির স্ত্রীকে নিয়ে করা। এই বামপন্থী রাজনীতিবিদ পুলিশের হাতে আটক হওয়া থেকেই কাহিনীর শুরু। সমসাময়িক জাপান নিয়ে কুরোসাওয়া আরও কিছু ছবি করেছেন যার মধ্যে আছে "মাতাল দেবদূত" (酔いどれ天使 য়োইদোরে তেন্শি) এবং "স্ট্রে ডগ"। কিন্তু তার পিরিয়ড চলচ্চিত্র "রাশোমোন" (羅生門 রাশোওমোং) তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এই ছবিটি ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন লায়ন পুরস্কার অর্জন করে এবং পরবর্তীতে একাডেমি পুরস্কার ও লাভ করে।
পরিচালক হিসেবে আকিরা
১৯৫০-এর দশকের মধ্যে কুরোসাওয়া এমন কিছু কৌশল রপ্ত করেছিলেন যা তার ছবিগুলোকে অনন্য করে তুলতো। ছবির শুটিংয়ের সময় তিনি "টেলিফটো লেন্স" ব্যবহার করতেন কারণ তার বিশ্বাস ছিল অভিনেতার কাছ থেকে ক্যামেরা দূরে রাখলে অভিনয় ভাল হয়। এছাড়া তিনি একাধিক ক্যামেরা ব্যবহার করতে পছন্দ করতেন। একাধিক ক্যামেরা ব্যবহারের জন্যই অ্যাকশন দৃশ্যগুলো বিভিন্ন কোণ থেকে দেখানো সম্ভব হতো। কুরোসাওয়ার ছবির আরেকটি বড় ট্রেডমার্ক হল ভাব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আবহাওয়ার সাহায্য নেয়া। যেমন: রশোমনের শুরুর দৃশ্যের অঝোরে বৃষ্টিপাত, সাত সামুরাইয়ের (七人の侍 শিচিনিং নো সামুরাই) শেষ যুদ্ধের দৃশ্য, "স্ট্রে ডগ" এর প্রচণ্ড উত্তাপ, "ইয়োজিম্বো"-তে প্রচণ্ড শীত, ইকিরু-তে তুষারপাত এবং "রক্তের সিংহাসনে" (蜘蛛巣城 কুমোনোসুজো, "মাকড়জাল দুর্গ") কুয়াশা। এছাড়া কুরোসাওয়া ওয়াইপ ব্যবহার করতেন।
একনায়কসুলভ পরিচালনার জন্য আকিরা চলচ্চিত্র মহলে "টেনো" বা "সম্রাট" হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। কাঙ্ক্ষিত ভিজুয়াল ইফেক্ট তৈরির জন্য তিনি বিপুল সময় ও শ্রম ব্যয় করতেন। এক্ষেত্রে তাকে পারফেকশনিস্ট বলা চলে। রশোমনের শুরুর দৃশ্যে ভারী বৃষ্টিপাতকে ফুটিয়ে তোলার জন্য শুটিং এলাকার স্থানীয় পানির পুরো সাপ্লাই শেষ করে ফেলেছিলেন। আর এই পানির সাথে ক্যালিগ্রাফির কালি মিশিয়ে কালো রঙের সৃষ্টি করেছিলেন। কারণ কালো রঙে বৃষ্টির গাঢ়তা বোঝা যায়। "রক্তের শিংহাসনের" শেষ দৃশ্যে মিফুনে তীরবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এই শটের জন্য কুরোসাওয়া দক্ষ তীরন্দাজদের দিয়ে প্রকৃত তীর ব্যবহার করিয়েছিলেন। দক্ষ তীরন্দাজেরা মিফুনের শরীরের কয়েক সেন্টিমিটার দূরে তীর নিক্ষেপ করেছিল। রান (乱 রাং অর্থাৎ "গোলমাল", "যুদ্ধ", "বিদ্রোহ") ছবির একটি দৃশ্যে বিশাল দুর্গ প্রাসাদ আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজন ছিল। এজন্য মাউন্ট ফুজির উপরে একটি আলাদা দুর্গ সেট তৈরি করিয়েছিলেন তিনি। এই দুর্গটি তৈরিই করা হয়েছিল পুড়িয়ে দেবার জন্য।
তার পরিচালনার আরও কিছু কাহিনী আছে। যেমন, সামনের অতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এই ভিজুয়াল ইফেক্ট আনার জন্য তিনি উল্টো দিক থেকে ঝোড়ো হাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। ছবির একটি দৃশ্যে ট্রেন থেকে বাড়ির শট নেয়া হচ্ছিল। আকিরা মনে করেছিলেন সেই বাড়ির ছাদ থাকার কারণে শটটা দেখতে ভালো লাগছে না। এজন্য তিনি বাড়ির পুরো ছাদ সরিয়ে ফেলেছিলেন। পরে বাড়ির ছাদ অন্য কিছু দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়।
পোশাক সজ্জার ব্যাপারেও তার পারফেকশনিস্ট চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটেছিল। তিনি মনে করতেন অভিনেতাকে সিনেমার শটের জন্য সম্পূর্ণ নতুন পোশাক দিলে বিষয়টা বাস্তবসম্মত হয় না। এজন্য অনেক সময় তিনি অভিনেতাদেরকে শুটিঙের এক সপ্তাহ আগে পোশাক দিয়ে দিতেন। অভিনেতাদের প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই পোশাক পরতে হত এবং পোশাকের সাথে নিজের বন্ধন বাড়িয়ে তুলতে হত। বিশেষ সেভেন সামুরাই ছবিতে এটার দরকার পড়েছিল। কারণ এ ছবির লোকজন অধিকাংশই ছিল গরিব কৃষক। এ কারণে অভিনেতাদেরকে বারবার বলে দেয়া হয়েছিল, তারা যেন কাপড় এমনভাবে পরে যে শুটিঙের সময় বোঝাই যায় সেটার অবস্থা ভালো না।
পরিপূর্ণ সঙ্গীত চলচ্চিত্রের সাথে যায় না বলে বিশ্বাস করতেন তিনি। এ কারণে ছবির জন্য গান ও সুর নির্বাচনের বেলায় তিনি সেটাকে একটি মাত্র বাদ্যযন্ত্রে নামিয়ে আনতেন। অর্থাৎ একটি সুরের জন্য কেবল একটি সুরই ব্যবহৃত হত। অবশ্য ছবির শেষের দিকে পরিপূর্ণ সঙ্গীতের ব্যবহার বাড়িয়ে দিতেন তিনি।
চলচ্চিত্রসমূহ
পুরস্কার ও সম্মাননা
১৯৫১ – ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন লায়ন, রশোমন এর জন্য
১৯৫১ – একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার, রশোমন এর জন্য
১৯৫৪ – ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে সিলভার লায়ন, "সেভেন সামুরাই" এর জন্য
১৯৬৫ – সাংবাদিকতার জন্য রামন ম্যাগসাসে পুরস্কার, সাহিত্য এবং সৃজনশীল যোগাযোগ শিল্প
১৯৭৫ – সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র হিসেবে একাডেমি পুরস্কার, দেরসু উজালা 'র জন্য।
১৯৮০ – পাম দোর - কান চলচ্চিত্র উৎসব, কাগেমুশা'র জন্য
১৯৮২ – ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ক্যারিয়ার গোল্ডেন লায়ন
১৯৮৪ – লেজিওঁ দনর
১৯৯০ – ফুকুওকা এশিয়ান কালচার প্রাইজ
১৯৯০ – একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার, আজীবন সম্মাননা
২০০৬ – ১০ম ইরান চলচ্চিত্র সেলিব্রেশন, বিশেষ সম্মান
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
সেন্সেস অফ সিনেমা: বিখ্যাত পরিচালকদের সমালোচনামূলখ তথ্যভাণ্ডার
গ্রেট পারফরমেন্সেস: কুরোসাওয়া (পিবিএস)
কুরোসাওয়া প্রকল্প
আকিরা কুরোসাওয়া সংক্রান্ত তথ্য ও সংবাদ
১৯১০-এ জন্ম
১৯৯৮-এ মৃত্যু
জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক
জাপানি চলচ্চিত্র প্রযোজক
জাপানি চলচ্চিত্র সম্পাদক
জাপানি চিত্রনাট্যকার
একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার বিজয়ী
লেজিওঁ দনর প্রাপক
২০শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য
সেজার পুরস্কার বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে বাফটা পুরস্কার বিজয়ী
রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে রৌপ্য ভল্লুক বিজয়ী
দাভিদ দি দোনাতেল্লো বিজয়ী
পাল্ম দর বিজয়ী চলচ্চিত্রের পরিচালক
জাপানি পুরুষ লেখক
পুরুষ চিত্রনাট্যকার
ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা পুরস্কার বিজয়ী
আকিরা কুরোসাওয়া পুরস্কার বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রের পরিচালক | https://en.wikipedia.org/wiki/Akira_Kurosawa | Akira Kurosawa | Akira Kurosawa (黒澤 明 or 黒沢 明, Kurosawa Akira, March 23, 1910 – September 6, 1998) was a Japanese filmmaker and painter who directed 30 films in a career spanning over five decades. He is widely regarded as one of the greatest and most influential filmmakers in the history of cinema. Kurosawa displayed a bold, dynamic style, strongly influenced by Western cinema yet distinct from it; he was involved with all aspects of film production.
Kurosawa entered the Japanese film industry in 1936, following a brief stint as a painter. After years of working on numerous films as an assistant director and scriptwriter, he made his debut as a director during World War II with the popular action film Sanshiro Sugata (1943). After the war, the critically acclaimed Drunken Angel (1948), in which Kurosawa cast the then little-known actor Toshiro Mifune in a starring role, cemented the director's reputation as one of the most important young filmmakers in Japan. The two men would go on to collaborate on another fifteen films.
Rashomon (1950), which premiered in Tokyo, became the surprise winner of the Golden Lion at the 1951 Venice Film Festival. The commercial and critical success of that film opened up Western film markets for the first time to the products of the Japanese film industry, which in turn led to international recognition for other Japanese filmmakers. Kurosawa directed approximately one film per year throughout the 1950s and early 1960s, including a number of highly regarded (and often adapted) films, including Ikiru (1952), Seven Samurai (1954), Throne of Blood (1957), The Hidden Fortress (1958), Yojimbo (1961), High and Low (1963) and Red Beard (1965). After the 1960s he became much less prolific; even so, his later work—including two of his final films, Kagemusha (1980) and Ran (1985)—continued to receive great acclaim.
In 1990, he accepted the Academy Award for Lifetime Achievement. Posthumously, he was named "Asian of the Century" in the "Arts, Literature, and Culture" category by AsianWeek magazine and CNN, cited there as being among the five people who most prominently contributed to the improvement of Asia in the 20th century. His career has been honored by many retrospectives, critical studies and biographies in both print and video, and by releases in many consumer media. |
2641 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%82%20%E0%A6%B2%E0%A6%BF | অ্যাং লি | অ্যাং লি (জন্ম অক্টোবর ২৩, ১৯৫৪) অস্কার বিজয়ী তাইওয়ানী পরিচালক। ২০০৬ সালে তিনি ব্রোকব্যাক মাউন্টেন চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার পান। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় এট আর্বানা-শ্যাম্পেইন এ পড়াশোনা করেছেন।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
১৯৫৪-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
তাইওয়ানি চলচ্চিত্র পরিচালক
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য
গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (সেরা পরিচালক - চলচ্চিত্র) বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে বাফটা পুরস্কার বিজয়ী
বাফটা ফেলো
ডিরেক্টরস গিল্ড অব আমেরিকা পুরস্কার বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্পিরিট পুরস্কার বিজয়ী
ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্র পরিচালক
শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রের পরিচালক | https://en.wikipedia.org/wiki/Ang_Lee | Ang Lee | Ang Lee (Chinese: 李安; pinyin: Lǐ Ān; born October 23, 1954) is a Taiwanese filmmaker. His films are known for their emotional charge and exploration of repressed, hidden emotions. During his career, he has received international critical and popular acclaim and numerous accolades including three Academy Awards, four BAFTA Awards, and three Golden Globe Awards. In 2003, he was ranked 27th in The Guardian's 40 best directors.
Born in Pingtung County, Lee was educated in Taiwan and later in the United States. He rose to prominence directing films such as Pushing Hands (1991), The Wedding Banquet (1993), and Eat Drink Man Woman (1994), which explored the relationships and conflicts between tradition and modernity, Eastern and Western; the three films are informally known as the "Father Knows Best" trilogy. The films were critically successful both in Taiwan and internationally.
His breakthrough in Hollywood was the costume drama Sense and Sensibility (1995), which was also his first entirely English-language film. Lee went on to receive the Academy Award for Best Director twice for
the romantic drama Brokeback Mountain (2005); and the survival drama Life of Pi (2012). He directed films in a broad range of genres, including the drama The Ice Storm (1997); the martial arts drama Crouching Tiger, Hidden Dragon (2000); the superhero blockbuster Hulk (2003) and the erotic espionage drama Lust, Caution (2007). |
2642 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A4%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%20%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A8 | তসলিমা নাসরিন | তসলিমা নাসরিন (জন্ম: ২৫ আগস্ট ১৯৬২) বাংলাদেশী-সুইডিশ লেখক, চিকিৎসক, নারীবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী এবং কর্মী। তিনি নারী নিপীড়ন এবং ইসলাম ধর্মের সমালোচনা নিয়ে লেখার জন্য পরিচিত; তার কিছু বই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ । তিনি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য উভয় থেকেই বঙ্গীয় অঞ্চল থেকে কালো তালিকাভুক্ত এবং নির্বাসিত হয়েছেন ।
তিনি বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে একজন উদীয়মান কবি হিসেবে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন এবং তার রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, নাস্তিক্যবাদ এবং ধর্মবিরোধী মতবাদ প্রচার করায় ইসলামপন্থীদের রোষানলে পড়েন ও তাদের নিকট হতে হত্যার হুমকি পেতে থাকায় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ত্যাগ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করতে বাধ্য হন। তিনি ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে এক দশকেরও বেশি সময় বসবাস করার পর, তিনি ২০০৪ সালে ভারতে চলে আসেন, কিন্তু ২০০৮ সালে তাকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়। এরপর তিনি ভারত সরকার কর্তৃক ভারতে অজ্ঞাতবাসে অবস্থানের সুযোগ পান। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে বসবাস করছেন।
প্রথম জীবন
তসলিমা নাসরিন ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের ময়মনসিংহ শহরে একজন বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তার মাতা ঈদুল ওয়ারা গৃহিণী এবং পিতা রজব আলী পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পাস করেন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পাস করেন। এরপর তিনি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সরকারী গ্রামীণ হাসপাতালে এবং ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মিটফোর্ড হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিভাগে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেকহা) তে অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সাহিত্য জীবন
তেরো বছর বয়স থেকে তসলিমা কবিতা লেখা শুরু করেন। কলেজে পড়ার সময় ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সেঁজুতি নামক একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তসলিমার কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা নামক তার প্রথম কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে নির্বাসিত বাহিরে অন্তরে ও ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে আমার কিছু যায় আসে না কাব্যগ্রন্থগুলি প্রকাশিত হয়। এই সময় তসলিমা ঢাকা হতে প্রকাশিত নঈমুল ইসলাম খান দ্বারা সম্পাদিত খবরের কাগজ নামক রাজনৈতিক সাপ্তাহিকীতে নারী অধিকার বিষয়ে লেখা শুরু করেন। তার কাব্যগ্রন্থ ও সংবাদপত্রের কলামে নারীদের প্রতি ইসলামপন্থীদের শোষণের অভিযোগ করায় ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের একদল ইসলামপন্থী এই পত্রিকার অফিস ভাঙচুর করে। এই সময় নির্বাচিত কলাম নামক তার বিখ্যাত প্রবন্ধসংকলন প্রকাশিত হয়, যার জন্য ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে তসলিমা আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে অতলে অন্তরীণ, বালিকার গোল্লাছুট ও বেহুলা একা ভাসিয়েছিল ভেলা নামক আরো তিনটি কাব্যগ্রন্থ; যাবো না কেন? যাব ও নষ্ট মেয়ের নষ্ট গল্প নামক আরো দুইটি প্রবন্ধসংকলন এবং অপরপক্ষ, শোধ, নিমন্ত্রণ ও ফেরা নামক চারটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়।
১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে লজ্জা নামক তার পঞ্চম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসে বাংলাদেশের মুসলিমদের দ্বারা একটি সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের ওপর অত্যাচারের বর্ণনা করা হয়। এই উপন্যাসটি প্রকাশের পর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় একদল ইসলামপন্থী তসলিমার ওপর শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে ও তার এই উপন্যাস নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানায়। গ্রন্থমেলা কর্তৃপক্ষ তাকে মেলায় প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। এই বছর অক্টোবর মাসে কাউন্সিল অব ইসলামিক সোলজার্স নামক এক ইসলামপন্থী সংগঠন তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে।
তসলিমা নাসরিনের সাতটি আত্মজীবনী গ্রন্থের অধিকাংশ বাংলাদেশ ও ভারত সরকার দ্বারা নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষিত হয়। আমার মেয়েবেলা নামক তার প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে ইসলাম ও মুহাম্মাদের প্রতি বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষিত হলেও ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে এই বইয়ের জন্য তসলিমা দ্বিতীয়বার আনন্দ পুরস্কার জয় করেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তার দ্বিতীয় আত্মজীবনী উতাল হাওয়া বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষিত হয়। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ক নামক তার তৃতীয় আত্মজীবনী বাংলাদেশ উচ্চ আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে এই বইটি দ্বিখণ্ডিত নামে প্রকাশিত হলেও ভারতীয় মুসলিমদের একাংশের চাপে নত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে বইটি নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষিত হলে সরকারের এই সিদ্ধান্ত লেখক মহলে তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। এই নিষেধাজ্ঞা ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বলবৎ ছিল। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে সেই সব অন্ধকার নামক তার চতুর্থ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
দেশত্যাগ
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকার এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইসলামি ধর্মীয় আইন শরিয়া অবলুপ্তির মাধ্যমে কুরআন সংশোধনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এর ফলে ইসলামপন্থীরা তার ফাঁসির দাবি জানাতে শুরু করে। তিন লাখ ইসলামপন্থীদের একটি জমায়েতে তাকে ইসলামের অবমাননাকারী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দালালরূপে অভিহিত করে। দেশ জুড়ে তার শাস্তির দাবিতে সাধারণ ধর্মঘট ডাকা হয়। হাবিবুর রহমান সিলেটে একটি সমাবেশে তার মাথার দাম ৫০ লাখ টাকা ঘোষণা করে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে জনগণের ধর্মীয় ভাবনাকে আঘাত করার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয় এবং জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেসময় আলোকচিত্রী শহিদুল আলম সহ বিভিন্ন জনের আশ্রয়ে তিনি দুই মাস লুকিয়ে থাকার পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে তার জামিন মঞ্জুর করা হয় এবং তসলিমা বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
নির্বাসিত জীবন
বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর তিনি ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে সুইডেনে ও ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত জার্মানিতে বসবাস করেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সুইডেন ফিরে গেলে রাজনৈতিক নির্বাসিত হিসেবে জাতিসংঘের ভ্রমণ নথি লাভ করেন। এই সময় তিনি সুইডেনের নাগরিকত্ব লাভ করেন ও সুইডিশ কর্তৃপক্ষের নিকট তার বাংলাদেশের পাসপোর্ট জমা দেন। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। এই সময় তার মা অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বাংলাদেশ সরকারের নিকট দেশে ফেরার অনুমতি চেয়ে ব্যর্থ হলে তিনি জাতিসংঘের ভ্রমণ নথি ত্যাগ করে সুইডিশ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে তার বাংলাদেশের পাসপোর্ট ফেরত পান ও বিনা অনুমতিতে বাংলাদেশ প্রবেশ করেন। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে পুনরায় জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারী পরোয়ানা রুজু হলে তিনি পুনরায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ১৯৯৯ থেকে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ফ্রান্সে বসবাস করেন।
দীর্ঘ ছয় বছর অপেক্ষার পর ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারতে প্রবেশ করার ভিসা সংগ্রহ করতে সমর্থ হলে তিনি কলকাতা যাত্রা করেন। এই বছর মার্চ মাসে তিনি শোধ নামক তার একটি উপন্যাসের মারাঠি ভাষায় অনুবাদকর্মের প্রচারে মুম্বই শহরে পৌঁছানোর সময় ইসলামপন্থীরা তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তসলিমার পিতা মৃত্যুশয্যায় শায়িত হলে তসলিমার বাংলাদেশ প্রবেশে অনুরোধ করে ব্যর্থ হন। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাকে অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হলে তসলিমা কলকাতা শহরে বসবাস শুরু করেন। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম সৈয়দ নূরুর রহমান বরকতি নাসরিনের মুখে কালিলেপন করলে পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণা করেন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল বোর্ড নামক একটি সংগঠন তার মুন্ডচ্ছেদের জন্য পাঁচ লাখ টাকা ঘোষণা করেন। এই বছর ৯ই আগস্ট তিনি শোধ উপন্যাসের তেলুগু ভাষায় অনুবাদকর্মের প্রচারে হায়দ্রাবাদ শহরে গেলে অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন নামক একটি রাজনৈতিক দলের প্ররোচনায় উত্তেজিত জনতা তাকে আক্রমণ করে। ১৭ই আগস্ট কলকাতা শহরের মুসলিম নেতারা তসলিমাকে হত্যা করার জন্য বিপুল অর্থ পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। ২১শে নভেম্বর অল ইন্ডিয়া মাইনোরিটি ফোরাম নামক একটি ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠী কলকাতা শহরে তাণ্ডব শুরু করলে সেনাবাহিনীকে আইন ও শান্তিরক্ষার জন্য মোতায়েন করা হয়। এই দাঙ্গার পর নাসরিনকে কলকাতা থেকে জয়পুর হয়ে নতুন দিল্লি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারত সরকার তাকে পরবর্তী সাত মাস একটি অজ্ঞাত স্থানে গৃহবন্দি করে রাখে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তাকে সিমোন দ্য বোভোয়ার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হলেও তিনি ভারতে প্রবেশে অনুমতি না পাওয়ার আশঙ্কায় ফ্রান্স যাত্রা করে পুরস্কার নিতে অসম্মত হন। এই সময় তিনি নেই কিছু নেই নামক তার আত্মজীবনীর ষষ্ঠ ভাগ প্রকাশ বাতিল করেন ও কলকাতার দাঙ্গার জন্য দায়ী দ্বিখণ্ডিত নামক তার বিতর্কিত বইটির কিছু অংশ অপসারণ করতে বাধ্য হন। ভারতের প্রাক্তন বিদেশসচিব মুচকন্দ দুবে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে একটি পত্রে ভারত সরকারকে চাপ দিয়ে তসলিমার গৃহবন্দী অবস্থার মুক্তির জন্য অনুরোধ করেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে মার্চ তসলিমা ভারত ছাড়তে বাধ্য হন।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত ইসলামপন্থীরা তার প্রাণনাশের হুমকি দিলে সেন্টার ফর ইনক্যুয়ারি তাকে ঐ বছর ২৭শে মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে সহায়তা করে এবং তার খাদ্য, বাসস্থান নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।” নির্বাসিত হওয়ার পর তসলিমা নাসরিন ভারতে থাকাকালীন সময়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসাবে জনপ্রিয় টেলিভিশন শো বিগ বস ৮ -এ আমন্ত্রণ পান। কিন্তু তিনি এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করেন।
বৈবাহিক জীবন
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তসলিমা কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র প্রেমে পড়েন এবং গোপনে বিয়ে করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের সাথে তার বিয়ে এবং ১৯৯১ সালে বিচ্ছেদ হয়। তিনি ১৯৯১ সালে সাপ্তাহিক বিচিন্তার সম্পাদক মিনার মাহমুদকে বিয়ে করেন এবং ১৯৯২ সালে তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়। তসলিমার কোন সন্তানাদি নেই।
সমালোচনা
নানান সময়ে তসলিমা নাসরিন সমালোচিত হয়েছেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে ইংরেজ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মঈন আলীকে নিয়ে টুইট করেন। তিনি বলেন, ‘মঈন আলী ক্রিকেট না খেললে সিরিয়াতে গিয়ে আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগ দিত।’ তার এই টুইটের ফলে আরো অনেক ক্রিকেটার এর বিরোধিতা করেন। ইংরেজ জাতীয় দলের পেসার আর্চার রি-টুইট করে লিখেছেন, "আপনি কি সুস্থ? আমার মনে হয় না।" তবে, তোপের মুখে এবং বিরোধিতার মুখে তসলিমা নাসরিন তার এই টুইট সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হন। এছাড়াও আরো কিছু ইংরেজ ক্রিকেটার স্যাম বিলিংস ও বেন ডাকেট টুইটারে তসলিমা নাসরিনের আইডিটিকে রিপোর্ট করার জন্য আহবান জানান। তসলিমা নাসরিন পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি মূলত মঈন আলীকে নির্দেশ করে টুইটটি করেন নি। তিনি "কট্টর ইসলাম"কে নির্দেশ করে টুইটটি করেছেন। এবং এই টুইটের কারণে তার মাঝে কোন অনুশোচনা নেই। তাকে নিয়ে ইংরেজ ক্রিকেটারদের বিরোধিতা নিয়ে তিনি বলেন, "তারা তাদের সতীর্থকে সমর্থন করছে ভালো কথা। তারা বলেছে বলে আমি টুইটটি মুছে দিয়েছি, কিন্তু তারা আমার সম্পর্কে কতদূর জানে?"
গ্রন্থ তালিকা
চলচ্চিত্র
তসলিমা নাসরিনের জীবনভিত্তিক প্রথম চলচ্চিত্র নির্বাসিত ২০১৪ সালে মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবে মুক্তি পায়। ২০১৫ সালে এই চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্র বিভাগে ৬২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
তসলিমা তার উদার ও মুক্তচিন্তার মতবাদ প্রকাশ করায় দেশ-বিদেশ থেকে একগুচ্ছ পুরস্কার ও সম্মাননা গ্রহণ করেছেন। সেগুলো হলো -
আনন্দ সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯২ এবং ২০০০।
নাট্যসভা পুরস্কার, বাংলাদেশ, ১৯৯২
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট কর্তৃক শাখারভ পুরস্কার, ১৯৯৪
ফ্রান্স সরকার প্রদত্ত মানবাধিকার পুরস্কার, ১৯৯৪
ফ্রান্সের এডিক্ট অব নান্তেস পুরস্কার, ১৯৯৪
সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল পেন কর্তৃক কার্ট টুকোলস্কি পুরস্কার, ১৯৯৪
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ কর্তৃক হেলম্যান-হ্যামেট গ্রান্ট সম্মাননা, ১৯৯৪
নরওয়েভিত্তিক হিউম্যান-এটিস্ক ফরবান্ড কর্তৃক মানবতাবাদী পুরস্কার, ১৯৯৪
তথ্যসূত্র
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগ
ISIS interview with Taslima Nasrin
The Vanishing
Taslima and her Technicolor Boat - On the Heels of Sir Salman
Women’s untold stories: Michael Deibert interviews with Taslima Nasrin
For freedom of expression by Taslima Nasrin
Bangladeshi Writer Wins UNESCO Madanjeet Singh Prize – IFEX
১৯৬২-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
বাঙালি কবি
বাংলাদেশী কবি
বাংলাদেশী প্রাবন্ধিক
বাঙালি প্রবন্ধকার
শাখারভ পুরস্কার প্রাপক
আনন্দ পুরস্কার বিজয়ী
বাংলাদেশী নাস্তিক
নির্বাসিত বাংলাদেশী
ময়মনসিংহ জেলার ব্যক্তি
ময়মনসিংহের ব্যক্তি
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
+নারী
ঔপন্যাসিক
প্রাক্তন মুসলিম
২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী কবি
২১শ শতাব্দীর বাংলাদেশী কবি
২০শ শতাব্দীর বাঙালি কবি
২১শ শতাব্দীর বাঙালি কবি
বাঙালি মহিলা কবি
২০শ শতাব্দীর নাস্তিক
২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক
২১শ শতাব্দীর নাস্তিক
অজ্ঞেয়বাদী বা নাস্তিক্যবাদী প্রাক্তন মুসলিম
২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী লেখিকা
বাংলাদেশী স্মৃতিকথাকার
ভারতে বাংলাদেশী প্রবাসী
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের উপর হামলা
২১শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক
নাস্তিক নারীবাদী
বাংলাদেশী নারীবাদী
বাংলাদেশী মানবতাবাদী
বাংলাদেশী ধর্মনিরপেক্ষবাদী
বাংলাদেশী নারী কবি
বাংলাদেশী লেখক
বাঙালি লেখক
ইসলামের সমালোচক
ফতোয়া
ইসলামের প্রাক্তন সমালোচক | https://en.wikipedia.org/wiki/Taslima_Nasrin | Taslima Nasrin | Taslima Nasrin (born 25 August 1962) is a Bangladeshi writer, physician, feminist, secular humanist, and activist. She is known for her writing on women's oppression and criticism of religion; some of her books are banned in Bangladesh. She has also been blacklisted and banished from the Bengal region, both from Bangladesh and the Indian state of West Bengal.
She gained global attention by the beginning of 1990s owing to her essays and novels with feminist views and criticism of what she characterizes as all "misogynistic" religions. Nasrin has been living in exile since 1994, with multiple fatwas calling for her death. After living more than a decade in Europe and the United States, she moved to India in 2004 and has been staying there on a resident permit long-term, multiple-entry or 'X' visa since. She now lives in New Delhi, India. |
2643 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%20%E0%A6%AC%E0%A7%8C%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0 | পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার | পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর বিহার বা সোমপুর মহাবিহার বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপাল দেব (৭৮১-৮২১) অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন।
ইউনেস্কোর মতে পাহাড়পুর বিহার বা সোমপুর বৌদ্ধ বিহার দক্ষিণ হিমালয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার। আয়তনে এর সাথে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের তুলনা হতে পারে। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্ম শিক্ষাদান কেন্দ্র ছিল। শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, মায়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। খ্রিস্টীয় দশম শতকে বিহারের আচার্য ছিলে অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি প্রদান করে।
অবস্থান ও আয়তন
পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী পুন্ড্রনগর (বর্তমান মহাস্থান) এবং অপর শহর কোটিবর্ষ (বর্তমান বানগড়)-এর মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত ছিল সোমপুর মহাবিহার। এর ধ্বংসাবশেষটি বর্তমান বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজশাহীর অন্তর্গত নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে অবস্থিত। অপরদিকে জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে এর দূরত্ব পশ্চিমদিকে মাত্র ৫ কিলোমিটার। এর ভৌগোলিক অবস্থান ২৫°০´ উত্তর থেকে ২৫°১৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫০´ পূর্ব থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত। গ্রামের মধ্যে প্রায় ০.১০ বর্গ কিলোমিটার (১০ হেক্টর) অঞ্চল জুড়ে এই পুরাকীর্তিটি অবস্থিত। প্রত্নতাত্ত্বিক এই নিদর্শনটির ভূমি পরিকল্পনা চতুর্ভূজ আকৃতির। এটি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের প্লাবন সমভূমিতে অবস্থিত, প্লাইস্টোসীন যুগের বরেন্দ্র নামক অনুচ্চ এলাকার অন্তর্ভুক্ত। মাটিতে লৌহজাত পদার্থের উপস্থিতির কারণে মাটি লালচে। অবশ্য বর্তমানে এ মাটি অধিকাংশ স্থানে পললের নিচে ঢাকা পড়েছে। পার্শ্ববর্তী সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩০.৩০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত পাহাড়সদৃশ স্থাপনা হিসেবে এটি টিকে রয়েছে। স্থানীয় লোকজন একে গোপাল চিতার পাহাড় আখ্যায়িত করত; সেই থেকেই এর নাম হয়েছে পাহাড়পুর, যদিও এর প্রকৃত নাম সোমপুর বিহার।
আবিষ্কারের প্রেক্ষাপট
ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজদের আগমনের পর তাঁরা সকল স্থানে জরিপ কাজ চালানো শুরু করেন। পূর্ব ভারতে জরিপ কাজ পরিচালনা করেন বুকানন হ্যামিল্টন; যিনি ১৮০৭ থেকে ১৮১২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনো এক সময়ে পাহাড়পুর পরিদর্শন করেন। এটিই ছিল পাহাড়পুরে প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক পরিদর্শন। এরপর এই প্রত্নস্থল পরিদর্শনে আসেন ওয়েস্টম্যাকট। এঁরা দেশে ফিরে তাঁদের অভিজ্ঞতা সংবলিত বিবরণ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এরই সূত্র ধরে ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার কানিংহাম এই ঐতিহাসিক স্থানটি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর এই জমিটি ব্যাপক হারে খনন করার প্রতি তিনি আগ্রহ দেখান। কিন্তু জমির মালিক বলিহারের তদানীন্তন জমিদার তাঁকে এই কাজে বাধা দেন। তাই তিনি বিহার এলাকার সামান্য অংশে এবং পুরাকীর্তির কেন্দ্রীয় ঢিবির শীর্ষভাগের সামান্য অংশে খনন কাজ চালিয়েই অব্যাহতি দেন। এই খননকার্যের সময় কেন্দ্রীয় ঢিবির অংশে চারপাশে উদ্গত অংশবিশিষ্ট একটি বর্গাকার ইমারত আবিষ্কার করেন যার দৈর্ঘ্য ছিল ২২ ফুট। অবশেষে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের প্রত্নতাত্ত্বিক আইনের আওতায় এই স্থান ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষিত হয়।
ইতিহাস ও পটভূমি
৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝিতে হিউয়েন সাং পুন্ড্রবর্ধনে আসেন, তবে তার বিস্তারিত বিবরণে সোমপুরের বিহার ও মন্দিরের কোন উল্লেখ নেই। গোপালের পুত্র ধর্ম পাল (৭৮১ - ৮২২ খ্রি) সিংহাসনে আরোহণ করে দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন ও রাজ্যকে বাংলা বিহার ছাড়িয়ে পাকিস্তানের উত্তর - পশ্চিম সীমান্তের গান্ধার পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। সম্রাট ধর্মপাল অনেক নিষ্ঠাবান বৌদ্ধ ছিলেন ও তিনিই বিক্রমশীলা ও সোমপুর বিহার প্রতিষ্ঠা করেন। অন্য মতে, বিখ্যাত তিব্বতীয় ইতিহাস গ্রন্থ "পাগ সাম জোন ঝাং" এর লেখক অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ধর্মপালের পুত্র দেবপাল (৮১০-৮৫০) কর্তৃক সোমপুরে নির্মিত বিশাল বিহার ও সুউচ্চ মন্দিরের উল্লেখ করেছেন। সোমপুর বিহারের ভিক্ষুরা নালন্দা, বুদ্ধগয়া প্রভৃতি ভারতীয় বিভিন্ন বৌদ্ধ তীর্থস্থানে অর্থ ও ধন রত্ন দান করতেন বলে বিভিন্ন লিপিতে উল্লেখ করা আছে, যা ১০ম - ১১শ শতাব্দীতে সমৃদ্ধশীল অবস্থার ইঙ্গিত বহন করে। এছাড়া ৯ম শতাব্দী পর্যন্ত পাল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় সোমপুর বিহার ছাড়াও অগ্রপুর (রাজশাহীর অগ্রাদিগুণ), উষ্মপুর, গোটপুর, এতপুর ও জগদ্দল ( রাজশাহীর জগদল) বিহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। ৯ম শতাব্দীর শেষভাগে গুর্জর রাজ প্রথম ভোজ ও মহেন্দ্র পাল, পাল সাম্রাজ্যের বিশেষ ক্ষতিসাধন করেন। পরে ১০ম শতাব্দীর শেষভাগে পাল বংশীয় রাজা মহীপাল (৯৯৫ - ১০৪৩) সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন ও সোমপুর বিহার মেরামত করেন। কিন্তু মহীপাল ও তার পুত্র নয়াপালের মৃত্যুর পর আবার পাল বংশের পতন শুরু হয়। এই সুযোগে মধ্যভারতের চেদীরাজ কর্ণ, চোলরাজ রাজেন্দ্র ও দিব্বো নামের এক দেশীয় কৈবর্ত সামন্ত নরপতি পর পর বরেন্দ্রভূমি আক্রমণ করেন। নালন্দায় পাহাড়পুর মন্দির ও বিহার ধ্বংসের উল্লেখ সম্ভবত এ সময়ের আক্রমণের। ১১শ শতাব্দীতে পাল বংশীয় রামপাল হৃতরাজ্য পুনরুদ্ধার করেন। ১২শ শতাব্দীতে দাক্ষিণাত্যের কর্ণাট থেকে আগত সেন রাজারা বাংলা দখল করেন। সে রাজদের আমলে সোমপুর রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা হারায়। এ সময় শেষবারের মত সোমপুরের পতন শুরু হয়। সেন শাসনের ফলে পতনের দ্বারপ্রান্তে থাকা এই বিহার সম্পর্কে একজন পণ্ডিত লিখেছেন, "পাহাড়পুরের বিহার ও মঠের ধ্বংসাবশেষগুলো বড় আকারের ধ্বংসের কোনও স্পষ্ট চিহ্ন বহন করে না। বিহার পরিত্যাগ বা ধ্বংসের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের পতনের অবশ্যই মুসলিম আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ব্যাপক অস্থিরতা ও জনসংখ্যার বাস্তুচ্যুতির প্রভাব ছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিক খনন
পাহাড়পুরের প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যকে দুভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্বকালীন সময়ে মূলত ব্রিটিশ যুগে, এবং দ্বিতীয়ত স্বাধীনতা-উত্তর কালে আশির দশকে। ১৮৭৯ সালে কানিংহাম প্রথম উদ্যোগটি নেন। কিন্তু বলিহারের জমিদারের বিরোধিতায় কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় ঢিবির শীর্ষভাগ খনন করে তাঁকে থেমে যেতে হয়। এ খননে চারপাশে উদগত অংশযুক্ত প্রায় ৭মি উঁচু একটি কক্ষ আবিষ্কৃত হয়। এর দীর্ঘদিন পর ১৯২৩ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র গবেষণা পরিষদ ও ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের যৌথ প্রচেষ্টায় এবং দিঘাপতিয়ার জমিদার পরিবারের সদস্য শরৎ কুমার রায়ের অর্থানুকূল্যে পুনরায় খননকাজ শুরু হয়। এ বছর ঐতিহাসিক ডি.আর.ভান্ডারকরের নেতৃত্বে প্রত্নস্থলটির দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে খনন পরিচালিত হলে উত্তর-দক্ষিণে বিন্যস্ত একসারি কক্ষ এবং চত্বরের অংশবিশেষ পাওয়া যায়। রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯২৫-২৬ সালে খনন করে কেন্দ্রীয় ঢিবির উত্তরে প্রধান সিঁড়ি, পোড়ামাটির ফলকচিত্র শোভিত দেয়াল ও প্রদক্ষিণ পথসহ উত্তর দিকের মন্ডপ বা হল ঘর আবিষ্কার করেন। ফলে প্রথমবারের মত এ বিহারের ভূমিপরিকল্পনা ও দেয়ালচিত্রণ সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। ১৯৩০-৩১ এবং ১৯৩১-৩২ সালে জি.সি.চন্দ্র বিহারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ ও সংলগ্ন চত্বর খনন করেন। ১৯৩৩-৩৪ সালে কাশিনাথ দীক্ষিতের তত্ত্বাবধানে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ পুনরায় খনন করে। এতে বিহার ও মন্দিরের অবশিষ্ট অংশ এবং সত্যপীরের ভিটায় একগুচ্ছ স্তূপসহ একটি তারা মন্দিরের ধ্বংশাবশেষ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রফিক মোঘল পূর্ব বাহুর কয়েকটি কক্ষে গভীর উৎখনন পরিচালনা করেন।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে ১৯৮১-৮৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ 'নতুন তথ্যের অনুসন্ধান এবং ইতোপূর্বে দীক্ষিতের আবিষ্কৃত কক্ষসমূহের প্রাপ্ত নিদর্শনাবলী সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া'র উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের খনন কাজ শুরু করে। ১৯৮৭-৮৯ সালে পুনরায় খনন পরিচালিত হয় বিহার অঙ্গন থেকে অপ্রয়োজনীয় জঞ্জাল ও পূর্ববর্তী খননের স্তূপীকৃত মাটি অপসারণ করে সুশৃঙ্খল পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, যেন বিহারে বিদ্যমান জলাবদ্ধতা দূরীভূত হয় এবং লবণাক্ততা হ্রাস পায়।
স্থাবর স্থাপত্য নিদর্শনসমূহ
বিহার
বৌদ্ধ বিহারটির ভূমি-পরিকল্পনা চতুষ্কোনাকার। উত্তর ও দক্ষিণ বাহুদ্বয় প্রতিটি ২৭৩.৭ মি এবং পূর্ব ও পশ্চিম বাহুদ্বয় ২৭৪.১৫ মি। এর চারদিক চওড়া সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। সীমানা দেয়াল বরাবর অভ্যন্তর ভাগে সারিবদ্ধ ছোট ছোট কক্ষ ছিল। উত্তর দিকের বাহুতে ৪৫টি এবং অন্য তিন দিকের বাহুতে রয়েছে ৪৪টি করে কক্ষ। এই কক্ষগুলোর তিনটি মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রতিটি মেঝে বিছানো ইঁটের ওপর পুরু সুরকী দিয়ে অত্যন্ত মজবুত ভাবে তৈরি করা হয়েছিলো। সর্বশেষ যুগে ৯২টি কক্ষে মেঝের ওপর বিভিন্ন আকারের বেদী নির্মাণ করা হয়। এ থেকে অনুমান করা যায় যে, প্রথম যুগে সবগুলো কক্ষই ভিক্ষুদের আবাসকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরবর্তীকালে কিছু কক্ষ প্রার্থনাকক্ষে রুপান্তর করা হয়েছিলো।
কক্ষগুলোর প্রতিটিতে দরজা আছে। এই দরজাগুলো ভেতরের দিকে প্রশস্ত কিন্তু বাইরের দিকে সরু হয়ে গেছে। কোন কোন কক্ষে কুলুঙ্গি পাওয়া যায়। কুলুঙ্গি সংবলিত কক্ষগুলোর মেঝেতে দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য বেশ কিছু দ্রব্যাদি পাওয়া যায়। ভেতরের দিকে কক্ষগুলোর দৈর্ঘ্য ৪.২৬ মি এবং প্রস্থ ৪.১১ মি। কক্ষের পেছনের দিকের দেয়াল অর্থাৎ সীমানা দেয়াল ৪.৮৭মি এবং সামনের দেয়াল ২.৪৪মি চওড়া। কক্ষগুলোর সামনে ২.৫ মি. প্রশস্ত টানা বারান্দা আছে। ভেতরের দিকের উন্মুক্ত চত্বরের সাথে প্রতিটি বাহু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত।
বিহারের উত্তর বাহুর মাঝ বরাবর রয়েছে প্রধান ফটক। এর বাইরের ও ভেতরের দিকে একটি করে স্তম্ভ সংবলিত হলঘর এবং পাশে ছোট ছোট কুঠুরি আছে। এই কুঠুরিগুলো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হত। প্রধান ফটক এবং বিহারের উত্তর-পূর্ব কোনের মাঝামাঝি অবস্থানে আরও একটি ছোট প্রবেশ পথ ছিলো। এখান থেকে ভেতরের উন্মুক্ত চত্বরে প্রবেশের জন্য যে সিঁড়ি ব্যবহৃত হত তা আজও বিদ্যমান। উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম বাহুতেও অনুরুপ সিঁড়ির ব্যবস্থা ছিলো। এদের মাঝে কেবল পশ্চিম বাহুর সিঁড়ির চিহ্ন আছে। উত্তর বাহুর প্রবেশ পথের সামনে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত একটি পুকুর ছিল। ১৯৮৪-৮৫ সালের খননে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম নির্মাণ যুগের পরবর্তী আমলে এ পুকুর খনন করা হয় এবং এসময় এ অংশের সিঁড়িটি ধ্বংস করে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে পুকুরটি ভরাট করে দেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় মন্দির
বিহারের অন্তর্বর্তী স্থানের উন্মুক্ত চত্বরের মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। এখন এটি ২১মি উঁচু হলেও মূল মন্দিরটি কমপক্ষে ৩০ মি উঁচু ছিল। তিনটি ক্রমহ্রাসমান ধাপে ঊর্ধ্বগামী এ মন্দিরের ভূমি-পরিকল্পনা ক্রুশাকার। প্রতিটি ক্রুশবাহুর দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ১০৮.৩ মি ও ৯৫.৪৫মি। কুশের মধ্যবর্তী স্থানে আরও কয়েকটি অতিরিক্ত দেয়াল কৌণিকভাবে যুক্ত। মূল পরিকল্পনাটির কেন্দ্রে দরজা-জানালা বিহীন একটি শূন্যগর্ভ চতুষ্কোণাকার প্রকোষ্ঠ আছে। এই প্রকোষ্ঠটি মন্দিরের তলদেশ থেকে চূড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলতঃ এ শূন্যগর্ভ প্রকোষ্ঠটিকে কেন্দ্র করেই সুবিশাল এ মন্দিরের কাঠামো নির্মিত। এ কক্ষের চারদিকে মন্দিরের দ্বিতীয় ধাপে চারটি কক্ষ ও মন্ডপ নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলেই মন্দিরটি ক্রুশাকার ধারণ করেছে। মন্দির পরিকল্পনার সমান্তরালে দেয়াল পরিবেষ্টিত প্রদক্ষিণ পথ আছে। অনুরুপভাবে প্রথম ধাপে দ্বিতীয় ধাপের প্রদক্ষিণ পথের দেয়ালের চারদিকে চারটি কক্ষ যুক্ত করে ক্রুশাকৃতি বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে এবং এর সমান্তরালে প্রদক্ষিণ পথ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রথম ধাপের সমান্তরালে মন্দিরের ভিত্তিভূমির পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে দেয়াল তৈরি করা হয়েছে। উত্তর দিকের মধ্যবর্তীস্থলে সিঁড়ি ছিল। পরবর্তিতে এ সিঁড়ি ধ্বংস করে তার উপর কিছু নতুন কাঠামো নির্মাণ করা হয়।
কেন্দ্রীয় শূন্যগর্ভ কক্ষে একটি ইঁট বাধানো মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে। এ মেঝে কক্ষের বাইরে চারদিকের কক্ষ ও মন্ডপের প্রায় একই সমতলে অবস্তথিত। কিন্তু চারদিকের কক্ষগুলো থেকে কেন্দ্রীয় এ কক্ষে যাওয়ার কোন পথ বা দরজা নেই এবং আগে ছিলো,পরে বন্ধ করা হয়েছে এমন কোন প্রমাণও পাওয়া যায় না। কক্ষে মূর্তি রাখার বেদী বা কুলুঙ্গী কিছুই নেই। তাই অনুমিত হয় ফাঁপা এ দন্ডটি মন্দিরের সুউচ্চ দেয়ালগুলোর সুদৃঢ় নির্মানের জন্য একটি উপকরণ ছিল। মূর্তিগুলো সম্ভবত এর চারদিকের কক্ষগুলোতে স্থাপন করা হয়েছিলো। মন্দিরের শীর্ষদেশের কোন নিদর্শন নেই বিধায় এর ছাদ সম্বন্ধে সুস্পষ্ট কিছু বলা যায় না।
কেন্দ্রীয় শূন্যগর্ভ কক্ষটির দেয়াল নিরাভরণ কিন্তু প্রতিটি ধাপের দেয়ালগুলোর বহির্ভাগ উদগত কার্নিশ, অলংকৃত ইঁট এবং সারিবদ্ধ পোড়ামাটির ফলকচিত্র দ্বারা সজ্জিত। ক্রুশাকার পরিকল্পনার বর্ধিত অংশগুলোর সংযোগস্থলে কার্নিশের প্রান্ত পর্যন্ত পানি নিষ্কাশন নালার ব্যবস্থা আছে। পাথর নির্মিত এ নালাগুলোর মুখ গর্জনরত সিংহের মুখের অবয়বে নির্মিত। ভিত্তিভূমির দেয়ালের বহির্দেশে ৬৩টি কুলুঙ্গি আছে। এর প্রতিটিতে একটি করে পাথরের ভাস্কর্য ছিলো।
উন্মুক্ত অঙ্গন
বিহারের মধ্যবর্তী উন্মুক্ত অঙ্গনে আরও কিছু ইমারতের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এদের মাঝে বেশ কিছু ইমারতের বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অঙ্গনের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ভোজনশালা ও রন্ধনশালা অবস্থিত। এ দুটি স্থাপনার মাঝে ৪৬মি দীর্ঘ ইট বাঁধানো একটি নর্দমা আছে এবং এর কাছে এক সারিতে তিনটি কূপ আছে। এছাড়াও রয়েছে কিছু নিবেদন স্তূপ, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় মন্দিরের প্রতিকৃতি ইত্যাদি। নিবেদন স্তূপগুলোর মাঝে দক্ষিণ-পূর্বাংশে অবস্থিত স্তূপটি ১৬কোণ বিশিষ্ট নক্ষত্র আকৃতির। অনুচ্চ একটি মঞ্চের মাঝে সংস্থাপিত এ স্তূপটির সংলগ্ন স্থানে রয়েছে একটি পাকা কূপ। অন্যান্য নিবেদন স্তূপগুলো বিক্ষিপ্তভাবে নির্মিত। চত্বরের উত্তর-পূর্বাংশের ইমারতগুলো সম্ভবত প্রশাসনিক এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হত।
স্নানাগার ও শৌচাগার
এটি মূলত বিহারের বাইরের অবস্থিত স্থাপনা। বিহারের দক্ষিণ দেয়াল হতে ২৭মি দক্ষিণে অবস্থিত একটি মঞ্চে অনেকগুলো স্নানাগার ও শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছিলো। মঞ্চটি পূর্ব-পশ্চিমে ৩২মি দীর্ঘ ও উত্তর-দক্ষিণে ৮.২৩ মি. প্রশস্ত। এটি বিহারের ১০২ নম্বর কক্ষ থেকে একটি উঁচু বাধানো পথ দ্বারা সংযুক্ত। এই পথের নিচে বিহার দেয়ালের সমান্তরালে ১.৯২মি চওড়া এবং ২.৫ মি. উঁচু একটি ভল্টযুক্ত খিলান রয়েছে। সম্ভবত বিহারের বহির্ভাগে অবাধে চলাচল এবং চারদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য এইরুপ করা হয়েছিলো।
সংলগ্ন স্থাপনাসমূহ
স্নানঘাট
বিহারের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ থেকে প্রায় ৪৯মি দক্ষিণে প্রায় ৩.৫মি প্রশস্ত স্নানঘাট অবস্থিত। এর দুপাশে প্রতিটি দেয়াল ১.৫মি প্রশস্ত। খাড়াভাবে ইট স্থাপিত করে এ ঘাটটি নির্মাণ করা হয়েছিলো আর এর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ধাপে বিরাটকার পাথর ছিল। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ঘাটটি ঢালু হয়ে প্রায় ১২ মি. নিচে নেমে গিয়েছে। ঘাটের উপর পুরু বালির স্তর ছিল। এ থেকে অনুমান করা হয়, এ ঘাট জলাশয় বিশেষতঃ নদীর সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
গন্ধেশ্বরী মন্দির
স্নানঘাট থেকে ১২ মি. পশ্চিমে পূর্বমুখী একটি ইমারত পাওয়া গেছে যাকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় গন্ধেশ্বরীর মন্দির। এর দৈর্ঘ্য ৬.৭ মি. ও প্রস্থ ৩.৫ মি.। এর সম্মুখ দেয়ালের ইটে পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্মসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের নকশা এবং গাঁথুনিতে ব্যবহৃত উপাদান দেখে মনে হয় এদেশে মুসলমান যুগের প্রথম এ ইমারতটি নির্মিত হয়েছিলো। এতে একটি চতুষ্কোণ হলঘর রয়েছে। হলঘরের মধ্যবর্তী স্থানে অষ্টকোণাকৃতি একটি স্তম্ভের নিম্নাংশ পাওয়া যায়। পশ্চিমের উদগত একটি দেয়ালের বাইরের দিকে ১.৪ মি. বাহু বিশিষ্ট বর্গাকার একটি পূজার কক্ষ রয়েছে। তাছাড়া হলঘরের চারটি কুলুঙ্গিতেও মূর্তি স্থাপনের ব্যবস্থা আছে। মন্দিরের সামনে একটি চত্বর আছে। এর মেঝে খাড়া ভাবে স্থাপিত ইট দিয়ে গাঁথা এবং গাঁথুনি পাহাড়পুরের অন্যান্য স্থাপত্য-নিদর্শন থেকে পৃথক।
পাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত মূর্তি
বেলে পাথরের চামুণ্ডা মূর্তি
লাল পাথরের দণ্ডায়মান শীতলা মূর্তি
কৃষ্ণ পাথরের বিষ্ণুর খণ্ডাংশ
কৃষ্ণ পাথরের দণ্ডায়মান গণেশ
বেলে পাথরের কীর্তি মূর্তি
দুবলহাটির মহারাণীর তৈলচিত্র
হরগৌরীর ক্ষতিগ্রস্ত মূর্তি
কৃষ্ণ পাথরের লক্ষ্মী নারায়ণের ভগ্ন মূর্তি
কৃষ্ণ পাথরের উমা মূর্তি
বেলে পাথরের গৌরী মূর্তি
বেলে পাথরের বিষ্ণু মূর্তি
নন্দী মূর্তি
কৃষ্ণ পাথরের বিষ্ণু মূর্তি
সূর্য মূর্তি
কৃষ্ণ পাথরের শিবলিঙ্গ
বেলে পাথরের মনসা মূর্তি
জনপ্রিয় মাধ্যমে
সোমপুর বিহার নিয়ে বেশকিছু ভিডিও তথ্যচিত্র নির্মাণ হয়েছে। ২০১৬ সালের ঈদুল আযাহায় চ্যানেল আই-তে রাজিব হাসানের রচনা ও পরিচালনায় চাঁদের শহর নামে একটি বিশেষ টেলিফিল্ম প্রচার হয়, যার সম্পূর্ণ গল্প ও চিত্রায়ন সোমপুর বিহারকে ঘিরে হয়।
চিত্রশালা
আরও দেখুন
পাহাড়পুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের তালিকা
সত্যপীর ভিটা
নালন্দা
তথ্যসূত্র
আরো পড়ুন
বাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি, প্রথম খণ্ড , আ কা মো যাকারিয়া, জুন ১৯৮৫
পাহাড়পুর- মোঃ মোশারফ হোসেন, মো শফিকুল আলম (প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত)
মহাস্থান, ময়নামতি, পাহাড়পুর- ডক্টর নাজিমুদ্দিন আহমেদ
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সমীক্ষামালা-২, স্থাপত্য- বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি
বহিঃসংযোগ
৯ম শতাব্দীর স্থাপত্য
বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
বাংলাদেশের বৌদ্ধবিহার
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়
পাল সাম্রাজ্য
নওগাঁ জেলার দর্শনীয় স্থান
নওগাঁ জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান
বাংলাদেশে বৌদ্ধ মঠ
বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ
বাংলাদেশের প্রাক্তন জনবহুল স্থান
নওগাঁ জেলা
বাংলার বিশ্ব ঐতিহ্য
বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্য | https://en.wikipedia.org/wiki/Somapura_Mahavihara | Somapura Mahavihara | Somapura Mahavihara (Bengali: সোমপুর মহাবিহার, romanized: Shompur Môhabihar) or Paharpur Buddhist Vihara (Bengali: পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার, romanized: Pāhāṛpur baud'dha bihār) in Paharpur, Badalgachhi, Naogaon, Bangladesh is among the best known Buddhist viharas or monasteries in the Indian Subcontinent and is one of the most important archaeological sites in the country. It was designated as a UNESCO World Heritage Site in 1985. It is one of the most famous examples of architecture in pre-Islamic Bangladesh. It dates from a period to the nearby Halud Vihara and to the Sitakot Vihara in Nawabganj Upazila of Dinajpur District. |
2644 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%87%E0%A6%9F%20%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9F | কেইট মিলেট | কেইট মিলেট (১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪-৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭) মার্কিন নারীবাদী লেখক ও সমাজকর্মী। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত তার বই সেক্সুয়াল পলিটিক্স (Sexual Politics) তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
১৯৩৪-এ জন্ম
আইরিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
মার্কিন নারীবাদী
মার্কিন স্মৃতিকথাকার
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
২০১৭-এ মৃত্যু
দ্বিপ্রান্তিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি
নারী সাহিত্য সমালোচক
২০শ শতাব্দীর মার্কিন স্মৃতিকথাকার
২০শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক
২০শ শতাব্দীর মার্কিন ভাস্কর
২০শ শতাব্দীর মার্কিন নারী শিল্পী
২০শ শতাব্দীর মার্কিন লেখিকা
২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক
২১শ শতাব্দীর মার্কিন ভাস্কর
২১শ শতাব্দীর মার্কিন নারী শিল্পী
২১শ শতাব্দীর মার্কিন লেখিকা
মার্কিন গর্ভপাত-অধিকার কর্মী
জাপানে মার্কিন প্রবাসী
মার্কিন নারীবাদী লেখক
মার্কিন নারী স্মৃতিকথাকার
মার্কিন নারী ভাস্কর
নারীবাদী শিল্পী
নারীবাদ অধ্যয়ন পণ্ডিত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এলজিবিটি অধিকার কর্মী
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলির শিক্ষক
নারী মানবাধিকার কর্মী | https://en.wikipedia.org/wiki/Kate_Millett | Kate Millett | Katherine Murray Millett (September 14, 1934 – September 6, 2017) was an American feminist writer, educator, artist, and activist. She attended the University of Oxford and was the first American woman to be awarded a degree with first-class honors after studying at St Hilda's College, Oxford. She has been described as "a seminal influence on second-wave feminism", and is best known for her book Sexual Politics (1970), which was based on her doctoral dissertation at Columbia University. Journalist Liza Featherstone attributes the attainment of previously unimaginable "legal abortion, greater professional equality between the sexes, and a sexual freedom" in part to Millett's efforts.
The feminist, human rights, peace, civil rights, and anti-psychiatry movements were some of Millett's principal causes. Her books were motivated by her activism, such as woman's rights and mental health reform, and several were autobiographical memoirs that explored her sexuality, mental health, and relationships. In the 1960s and 1970s, Millett taught at Waseda University, Bryn Mawr College, Barnard College, and the University of California, Berkeley. Some of her later written works are The Politics of Cruelty (1994), about state-sanctioned torture in many countries, and Mother Millett (2001), a book about her relationship with her mother. Between 2011 and 2013, she won the Lambda Pioneer Award for Literature, received Yoko Ono's Courage Award for the Arts, and was inducted into the National Women's Hall of Fame.
Millett was born and raised in Minnesota, and then spent most of her adult life in Manhattan and the Woman's Art Colony, established in Poughkeepsie, New York, which became the Millett Center for the Arts in 2012. Millett came out as a lesbian in 1970, the year the book Sexual Politics was published. However, late in the year 1970 she came out as bisexual. She was married to sculptor Fumio Yoshimura (1965 to 1985) and later, until her death in 2017, she was married to Sophie Keir. |
2650 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97 | ঢাকা বিভাগ | ঢাকা বিভাগ বাংলাদেশ এর আটটি প্রশাসনিক বিভাগের মধ্যে অন্যতম। এটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত।
আয়তনে ঢাকা বিভাগের বৃহত্তম জেলা হচ্ছে টাঙ্গাইল জেলা এবং ক্ষুদ্রতম জেলা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা।
ভৌগোলিক অবস্থান
রংপুর বিভাগ ব্যতীত দেশের অন্য সব বিভাগের সাথে ঢাকা বিভাগের সীমানা রয়েছে। এর উত্তরে ময়মনসিংহ বিভাগ, দক্ষিণে বরিশাল বিভাগ, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রাম বিভাগ, উত্তর-পূর্বে সিলেট বিভাগ এবং পশ্চিমে রাজশাহী বিভাগ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে খুলনা বিভাগ।
প্রশাসনিক বিভাজন
ঢাকা বিভাগ ১৩টি জেলা, ৪টি সিটি কর্পোরেশন, ১২৩টি উপজেলা, ৫৮টি পৌরসভা, ১,২৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১২,৭৬৫টি মৌজা, ৫৪৯টি ওয়ার্ড, ১,৬২৩টি মহল্লা এবং ২৫,২৪৪টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশের বিভাগ
ঢাকা বিভাগ | https://en.wikipedia.org/wiki/Dhaka_Division | Dhaka Division | Dhaka Division (Bengali: ঢাকা বিভাগ, Ḍhaka Bibhag) is an administrative division within Bangladesh. Dhaka serves as the capital city of the Dhaka Division, the Dhaka District and Bangladesh. The division remains a population magnet, covers an area of 20,508.8 km2 with a population in excess of 44 million, It is the most populous country second level division of the world, growing at 1.94% rate since prior count, compared with national average of 1.22%. However, national figures may include data skewing expatriation of male labor force as gender ratio is skewed towards females.
Dhaka Division borders every other division in the country except Rangpur Division. It is bounded by Mymensingh Division to the north, Barisal Division to the south, Chittagong Division to the east and south-east, Sylhet Division to the north-east, and Rajshahi Division to the west and Khulna Divisions to the south-west. |
2651 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%B0%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE | বাংলাদেশের নদীর তালিকা | দক্ষিণ এশিয়ায় অন্তর্গত বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ''বাংলাদেশের নদ-নদী: সংজ্ঞা ও সংখ্যা'' শীর্ষক গ্রন্থের তথ্যমতে শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ১,০০৮ টি নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২২,১৫৫ কিলোমিটার জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর তথ্য মতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের নদ-নদীর সংখ্যা ছিল ৩১০টি । বর্তমানে বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা প্রায় ১,০০৮ টি । এ নদ-নদীগুলোর উপনদী ও শাখানদী রয়েছে। উপনদী শাখানদীসহ বাংলাদেশের নদীর মোট দৈর্ঘ্য হলো প্রায় ২২,১৫৫ কিলোমিটার ।
বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা কত এটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আমাদের সমাজে ও বিসিএস ভিত্তিক বইগুলোতে ৭০০ বা ২৩০ এমনকি ১৩ শত টি এই তথ্য প্রচলিত রয়েছে। তবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর গবেষণা মতে বাংলাদেশের নদীর সংখ্যা ৪০৫ টি ।
বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই শত শত নদীর মাধ্যমে বয়ে আসা পলি মাটি জমে তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীসমূহের তালিকা নিম্নে প্রদান করা হল:
বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদী
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীমাতৃক বাংলাদেশে অসংখ্য নদনদী রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান নদ-নদীগুলো হলো:
পদ্মা,
মেঘনা,
যমুনা,
কর্ণফুলী,
ব্রহ্মপুত্র,
তিস্তা,
পশুর,
সাঙ্গু ইত্যাদি।
এই প্রধান নদ ও নদী গুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
পদ্মা: পদ্মা নদী ভারত ও ভারতের উত্তরবঙ্গে গঙ্গা এবং বাংলাদেশের পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মধ্য হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ। উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা রাজশাহী জেলা দিয়ে পদ্মা নামে বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে। এটি গোয়ালন্দের নিকট ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুরে এসে এ নদী মেঘনার সঙ্গে মিলিত হয়ে বরিশাল ও নোয়াখালী অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ৩৪,১৮৮ বর্গ কিঃমিঃ। পশ্চিম থেকে পূর্বের নিম্ন গঙ্গা অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : ভাগীরথী, হুগলি, মাথাভাঙ্গা, ইছামতী, ভৈরব, কুমার, কপোতাক্ষ, নবগঙ্গা, চিত্রা,মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি।
ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা :তিব্বতের মানস সরোবরে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে। আসাম হয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলা এটি প্রবেশ করেছে। ব্রহ্মপুত্র প্রধান ধারাটি এক সময় ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে উত্তর পশ্চিম দিক থেকেও দক্ষিণ পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু ১৭৮৭ সালে সংঘটিত ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্র তলোদেশ উন্নীত হওয়ায় পানির ধারণ ক্ষমতা বাইরে চলে যায় এবং নতুন স্রোতধারায় একটি শাখা নদীর সৃষ্টি হয়। এই নতুন স্রত ধারাটি যমুনা নামে পরিচিত। এটি দক্ষিণের গোয়ালন্দ পর্যন্ত যমুনা নদী বলে পরিচিত। যমুনা শাখা নদীর ধলেশ্বরী এবং ধলেশ্বরী শাখা নদী বুড়িগঙ্গা। ধরলা ও তিস্তা ব্রহ্মপুত্র উপনদী। করতোয়া ও আত্রাই হল যমুনার উপনদী। ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য ২৮৯৭ কিলোমিটার। এর অববাহিকার আয়তন ৫,৮০,১৬০ বর্গ কিলোমিটার যার ৪৪,০৩০ কিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত।
মেঘনা: আসামের বরাক নদী নাগা মণিপুর অঞ্চলে উৎপত্তি হয়ে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। এই মিলিত ধারা সুনামগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের কাছে কালনী নামে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। এটি কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার অতিক্রম করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের কাছে বুড়িগঙ্গা,ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা জলধারায় মেঘনায় এসে যুক্ত হয়েছে। সেখান থেকে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা সাথে মিলিত বিস্মিত মোহনায় সৃষ্টি করেছে। এটি পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। মনু,তিতাস,গোমতী, বাউলাই মেঘনার শাখা নদী। বর্ষার সময় প্লাবন ও পলি মাটিতে মেঘনা বাংলাদেশের উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
কর্ণফুলী: বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলের প্রধান নদী কর্ণফুলী। এর উৎপত্তিস্থল লুসাই পাহাড়ে। ৩২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদী চট্টগ্রাম শহরের খুব কাজটি এবং বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী হচ্ছে কাপ্তাই, হালদা, কাসালাং ও রাঙখিয়াং।বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম কর্ণফুলী তীরে অবস্থিত। পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য এ নদীর গুরুত্ব অধিক।
পাউবো নির্ধারিত অন্যান্য নদী
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" বাংলাদেশের নদীগুলোকে সংখ্যাবদ্ধ করেছে এবং প্রতিটি নদীর একটি পরিচিতি নম্বর দিয়েছে। এর ফলে তাদের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা এখন মোট ৭০০ টি। পাউবো কর্তৃক নির্ধারিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১০২টি) , উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী (১১৫টি), উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী (৮৭টি), উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী (৬১টি), পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী (১৬টি) এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী (২৪টি) হিসেবে বিভাজন করে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী
আঠারবাঁকি নদী
আড়িয়াল খাঁ নদ
আতাই নদী
আন্ধারমানিক নদী
আফ্রা নদী
অর্পণগাছিয়া নদী
ইছামতি-কালিন্দি
কচা নদী
কপোতাক্ষ নদ
কুমার নদ (চুয়াডাঙ্গা)
কুমার নদী (ফরিদপুর-গোপালগঞ্জ)
কুমার আপার নদী
কুমার লোয়ার নদী
কয়রা নদী
করুলিয়া নদী
কাকশিয়ালী নদী
কাজীবাছা নদী
কাটাখালী নদী
কাটাখাল নদী
কালীগঙ্গা নদী (পিরোজপুর),
কীর্তনখোলা নদী
খায়রাবাদ নদী
খোলপেটুয়া নদী
গড়াই নদী
গুনাখালি নদী
গলঘেসিয়া নদী
গুলিশাখালী নদী
ঘাঘর নদী
ঘাসিয়াখালী নদী
চত্রা নদী
চুনকুড়ি নদী
চন্দনা-বারাশিয়া নদী
চাটখালী নদী
চিত্রা নদী
ঝপঝপিয়া নদী
টর্কি নদী
টিয়াখালি নদী
ঢাকি নদী
তেঁতুলিয়া নদী
তেলিগঙ্গা-ঘেংরাইল নদী
দড়াটানা-পয়লাহারা নদী
দাড়ির গাঙ নদী
দেলুতি নদী
নুন্দা-উত্রা নদী
নবগঙ্গা নদী
নড়িয়া নদী
নেহালগঞ্জ-রঙমাটিয়া নদী
পটুয়াখালী নদী
পুটিমারি নদী
পুরাতন পশুর নদী
পশুর নদী
পাণ্ডব নদী
পানগুছি নদী
পালং নদী
ফটকি নদী
বগী নদী
বুড়িশ্বর-পায়রা নদী
বলেশ্বর নদী
বাদুড়গাছা নদী
বিশখালী নদী
বিশারকন্দা-বাগদা নদী
বিষ্ণু-কুমারখালি নদী
বেগবতী নদী
বেতনা নদী
বেলুয়া নদী
ভদ্রা নদী
ভুবনেশ্বর নদী
ভৈরব নদ
ভৈরব নদী (বাগেরহাট)
ভৈরব-কপোতাক্ষ নদ
ভোলা নদী
মংলা নদী
মুক্তেশ্বরী টেকা নদী
মধুমতি নদী
মরিচ্চাপ-লবঙ্গবতী নদী
মাথাভাঙ্গা নদী
মাদারগাঙ নদী
মাদারীপুর বিলরুট নদী
মালঞ্চ নদী
মিনহাজ নদী
রূপসা নদী
রাবনাবাদ নদী
রায়মঙ্গল নদী
লোহালিয়া নদী
শাকবাড়িয়া নদী
শাতলা-হারতা-নাথারকান্দা নদী
শালদহ নদী
শিবসা নদী
শোলমারি নদী
সুগন্ধা নদী
সন্ধ্যা নদী
সয়া-হাড়িভাঙ্গা নদী
সাপমারা-হাবড়া নদী
সালতা নদী
সিরাজপুর হাওর নদী
হরি নদী
হরিহর নদী
হামকুড়া নদী
হাড়িয়া নদী
হাপরখালী নদী
হাবরখালী নদী
হিশনা-ঝাঞ্চা নদী
মালঞ্চ নদী ফরিদপুর
</div>
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নদী
আখিরা-মাচ্চা নদী
আত্রাই নদী
আত্রাই বা কাঁকড়া নদী (দিনাজপুর)
আত্রাই বা গুড় নদী (নওগাঁ-নাটোর)
আত্রাই নদী (পাবনা)
আলাই নদী
আলাইকুমারী নদী
ইছামতি নদী (দিনাজপুর)
ইছামতি নদী (পাবনা)
ইছামতি নদী (বগুড়া)
ইছামতি নদী (বগুড়া-সিরাজগঞ্জ)
ইরামতি নদী
করতোয়া নদী
করতোয়া নদী (নীলফামারী)
কাগেশ্বরী নদী
কাটাখালী নদী (গাইবান্ধা)
কালা নদী
কালাপানি নদী
কালুদাহা নদী
কুমলাল-নাউতারা নদী
কুরুম নদী
কুলিক নদী
খড়খড়িয়া-তিলাই নদী
খালসিডিঙ্গি নদী
গদাই নদী
গভেশ্বরী নদী
পদ্মা নদী
গাংনাই নদী
গিদারী নদী
গিরাই নদী
গুকসী নদী
গোবরা নদী
গোহালা নদী
ঘড়িয়া খাল নদী
ঘাঘট নদী
ঘিরনাই নদী
ঘোড়ামারা নদী
চাওয়াই নদী
চিকনাই নদী
চিকলী নদী
চিরি নদী
চিড়ি নদী
চুঙ্গাভাঙ্গা নদী
ছাতনাই নদী
ছোট ঢেপা নদী
ছোট যমুনা নদী
ছোট সেনুয়া নদী
টাঙ্গন নদী
ডাহুক নদী
ঢেপা নদী
তালমা নদী
তিস্তা নদী
তিস্তা নদী (পঞ্চগড়)
তীরনই নদী
তীরনই নদী (পঞ্চগড়)
তুলসীগঙ্গা নদী
দুধকুমার নদী
দেওনাই-চাড়ালকাটা-যমুনেশ্বরী নদী
ধরলা নদী
ধাইজান নদী
ধুম নদী
নর্ত নদী
নলশীসা নদী
নলেয়া নদী
নাগর আপার নদী
নাগর লোয়ার নদী
নারোদ নদী
পলিমারি নদী
পাগলা নদী
পাথরঘাটা নদী
পাথরাজ নদী
পুনর্ভবা নদী
পেটকী নদী
ফকিরনী নদী
ফুলকুমার নদী
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা
বড়াল আপার নদী
বড়াল লোয়ার নদী
বাঙালি নদী
বাদাই নদী
বার্নাই নদী
বান্নী নদী
বুরাইল নদী
বুল্লাই নদী
বুড়িখোড়া নদী
বুড়ি তিস্তা নদী
বেরং নদী
বেলান নদী
বেসানী নদী
বোরকা নদী
ভাদাই নদী
ভুল্লী নদী
ভেরসা নদী
মহানন্দা আপার নদী
মহানন্দা লোয়ার নদী
মাইলা নদী
মালদাহা নদী
মুসাখান নদী
মানস নদী
যমুনা নদী (পঞ্চগড়)
রতনাই নদী
রামচণ্ডি নদী
রাক্ষসিনী-তেঁতুলিয়া নদী
লেংগা নদী
লোনা নদী
শিব নদী
সতী-স্বর্ণামতি-ভাটেশ্বরী নদী
সিমলাজান নদী
সিরামাখালী খাল নদী
সিংগিমারী নদী
সুই নদী
সেনুয়া নদী
শুক নদী
হারাবতী নদী
হুড়াসাগর নদী
</div>
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী
আত্রাখালি নদী
আবুয়া নদী বা নান্দিয়া গাং
আমরি খাল নদী
ইসদার খাল-বারভাঙ্গা নদী
উপদাখালী নদী
উমিয়াম নদী
কর্ণঝরা নদী
কর্ণ-বালজা নদী
করিস নদী
কাঁচামাটিয়া নদী
কাপনা নদী
কামারখাল নদী
কামারখালী নদী
কালদাহার-কানিয়াকুল নদী
কালনী নদী
কালাপানিঝরা নদী
কুশিয়ারা নদী
কোরাঙ্গী নদী
খাজাচিং নদী
খাসিমারা নদী
খেপা নদী
খোয়াই নদী
গুমাই নদী
ঘাগটিয়া নদী
ঘানুরা-বগালা নদী
ঘোড়াউত্রা নদী
চামতি নদী
চিতলখালী নদী
চেলা নদী
জাফলং-ডাউকি নদী
জালিয়া ছড়া নদী
জালুখালি নদী
জুরী নদী
ডাউকা নদী
ধলা নদী
দুধদা নদী
দোলতা নদী
ধনু নদী
ধলাই-বিসনাই নদী
ধলাই নদী
নকলা-সুন্দ্রাকাশি নদী
নরসুন্দা নদী
নলজুর নদী
নয়াগাং নদী
নয়া গাং নদী
নিতাই নদী
পাটনাই-পাইকারতলা নদী
পাবিজুড়ি-কুশি গাঙ-কুশিয়া নদী
পিয়াইন নদী
পিয়াইন নদী (সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা)
পুরনো সুরমা নদী
পোড়া খাল-খাইয়া নদী
বটরখাল নদী
বড় গাং নদী
বাউলাই নদী
বাথাইল নদী
বালই নদী
বিজনা-গুঙ্গাইজুরি নদী
বিবিয়ানা নদী
বেকরা নদী
বেতৈর নদী
বেদুরি নদী
ভাবনা-বাঁশিয়া-বহিয়া নদী
ভোগাই-কংস নদী
মগড়া নদী
মনু নদী
মরা সুরমা নদী
মহারশি নদী
মহাসিং নদী
মালিজি নদী
মিরগী নদী
জাদুকাটা-রক্তি নদী
লংলা নদী
লাইন নদী
লাউরানজানি নদী
লুভা নদী
সাইদুলি-বারনি নদী
সাতারখালী নদী
সারি গোয়াইন নদী
সিনাই নদী
সিঙ্গুয়া নদী
সুতাং নদী
সুরমা নদী
সোনাই-বরদাল নদী
সোমেশ্বরী নদী
সোমেশ্বরী নদী (ধর্মপাশা)
সোমেশ্বরী নদী (শ্রীবর্দী-ঝিনাইগাতি)
</div>রাকতী নদী
কিনসী নদী ( সুনাম গন্জ )
সারী গোয়াইন নদী ( গোয়াইন নদী )
উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী
আইমন-আখিলা নদী
আইমন-মোবারি নদী
আড়িয়াল খাঁ নদী
ইছামতি নদী (মানিকগঞ্জ)
ইছামতি নদী (সিরাজদিখান)
ইলিশমারী নদী
এলংজানী নদী
কাটাখালি নদী
কালিগঙ্গা নদী (মানিকগঞ্জ)
খিরো নদী (ত্রিশাল)
খিরো নদী (ভালুকা)
গাংডুবি নদী
গাজীখালী নদী
গোল্লার নদী
চাতাল নদী
চাপাই নদী
চিলাই নদী
জয়পাড়া খাল নদী
ঝারকাটা নদী
জিঞ্জিরাম নদী
ঝিনাই নদী
টঙ্গী নদী
টংকি নদী
তালতলা নদী
তুরাগ নদী
তুলসীখালী নদী
ধলেশ্বরী নদী
নাগদা নদী
নাঙ্গলা নদী
নালজুরি নদী
নাংলী নদী
পদ্মা নদী
পাগারিয়া-শিলা নদী
পারুলি খাল নদী
পাহাড়িয়া নদী
পুরনো ধলেশ্বরী নদী
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী
পুংলী নদী
বংশী নদী
বংশী নদী (সাভার)
ব্রহ্মপুত্র নদী (নরসিংদী-মুন্সীগঞ্জ)
বাকসাতরা নদী
বাজ্জা-মেধুয়া নদী
বানার আপার নদী
বানার লোয়ার নদী
বালু নদী
বুড়িগঙ্গা নদী
বৈরান নদী
বোশখালীর নদী
মরা জিঞ্জিরাম নদী
মাহারি নদী
মিনিখালী নদী
লাবুন্ধা নদী
লোহাজং নদী
শীতলক্ষ্যা নদী
সালদা নদী
সুতী নদী
সুতিয়া নদী
সোনাখালী নদী
হাই নদী
হাড়িদোয়া নদী
</div>
পূর্ব-পাহাড়ি অঞ্চলের নদী
ইছামতি নদী (রাঙ্গামাটি)
ঈদগাও নদী
কর্ণফুলি নদী
কাসালং নদী
চেঙ্গি নদী
ডলু-টংকাবতী নদী
নাফ নদী
বুড়া মাতামুহুরী নদী
বাঁকখালি নদী
ভারুয়াখালি নদী
ভোলাখাল নদী
মাইনী নদী
মাতামুহুরী নদী
রাংখাইন নদী
সাঙ্গু নদী
হালদা নদী
</div>
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী
আর্সি-নালিয়া নদী
কাকড়ি নদী
কাস্তি নদী
গোমতী নদী
ঘুংঘুর নদী
ছোট ফেনী নদী
ডাকাতিয়া নদী
ডাসাডিয়া নদী
তিতাস নদী
পুরনো তিতাস নদী
ধনাগোদা নদী
ফেনী নদী
বিজলি নদী
বুড়ি নদী
ভুলুয়া নদী
মুহুরী নদী
মেঘনা আপার নদী
মেঘনা লোয়ার নদী
লহর নদী
লংগন বলভদ্রা নদী
সালদা নদী
সেলোনিয়া নদী
সোনাই নদী
মুহুরী নদী
হাওড়া নদী
</div>
বাংলাদেশ-ভারত-মায়ানমার আন্তঃসীমান্ত নদীর তালিকা
রায়মঙ্গল
ইছামতী-কালিন্দী
বেতনা-কোদালিয়া
ভৈরব-কপোতাক্ষ
মাথাভাঙ্গা
গঙ্গা
পাগলা
আত্রাই
পুনর্ভবা
তেতুলিয়া
টাংগন
কুলিক বা কোকিল
নাগর
মহানন্দা
ডাহুক
করতোয়া
তালমা
ঘোড়ামারা
দিওনাই-যমুনেশ্বরী
বুড়িতিস্তা
তিস্তা
ধরলা
দুধকুমার
ব্রহ্মপুত্র
জিঞ্জিরাম
চিল্লাখালি
ভোগাই
সোমেশ্বরী
দামালিয়া/যালুখালী
নয়াগাঙ
উমিয়াম
যাদুকাটা
ধলা
পিয়াইন
শারি-গোয়াইন
সুরমা
কুশিয়ারা
সোনাই-বারদল
জুরি
মনু
ধলাই
লংলা
খোয়াই
সুতাং
সোনাই
হাওড়া
বিজনী
সালদা
গোমতী
কাকরাই-ডাকাতিয়া
সিলোনিয়া
মুহুরী
ফেনী
কর্ণফুলি
নিতাই
সাংগু
মাতামুহুরী
নাফ
</div>
অন্যান্য নদী
উপরে উল্লেখিত আন্তঃসীমান্ত নদী এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবাহিত ৪০৫টি নদী ছাড়াও আরও প্রায় চার শতাধিক নদী রয়েছে। সেসবের কিছু নদীর নাম নিচে দেয়া হলো।
অমাবস্যাখালী নদী
অযোধ্যা নদী
অর্জুনদাড়া নদী
আউলিয়াখানা নদী
আমনদামন নদী
আস্তাইল নদী
কম্পো নদী
কাওরাইদ নদী
কাজীপুর নদী
কালিন্দী নদী
কাচমতি নদী
খাড়িয়া নদী
গন্দর নদী
গুমানি নদী
খোয়াথল্যাংতুইপুই নদী
চিলাই নদী (সুনামগঞ্জ)
চোরখাই নদী
জলঢাকা নদী
তেতুলিয়া নদী
তৈনগাঙ
থেগা নদী
নাগেশ্বরী নদী
ধানখালী নদী
ধানসিঁড়ি নদী
নীলগঞ্জ নদী
পঞ্চবেণী
প্রাণসায়র নদী
ফটিকছড়ি নদী
বরাক নদী
বান্দসা নদী
বুড়ো গৌরাঙ্গ নদী
ময়ুর নদী
রহমত খালি নদী
রায়ডাক নদী
লঙ্গাই নদী
সোয়াই নদী
হরবাংছড়া নদী
হরিণঘাটা নদী
হাড়িয়াভাঙা নদী
হেরাচামতি নদী
হালদা নদী
</div>
আরো দেখুন
পশ্চিমবঙ্গের নদনদীর তালিকা
আন্তঃসীমান্ত নদী
ফারাক্কা বাঁধ
গজলডোবা বাঁধ
কাপ্তাই বাঁধ
টিপাইমুখ বাঁধ
দিবাং বাঁধ
</div>
তথ্যসূত্র
দেশ অনুযায়ী নদীসমূহের তালিকা
বাংলাদেশের ভূমিরূপের তালিকা
বঙ্গোপসাগর | https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_rivers_of_Bangladesh | List of rivers of Bangladesh | Bangladesh is a riverine country. According to Bangladesh Water development board (BWDB) about 907 rivers currently flow in Bangladesh (during summer and winter), although the numbers stated in some sources are ambiguous. As stated by a publication called বাংলাদেশের নদ-নদী by BWDB (Bangladesh Water development board), 310 rivers flow in the summer although they republished another study in 6 volumes where stated 405 rivers. The number differs widely due to lack of research on the counts and the fact that these rivers change flow in time and season. Historical sources state about 700 to 800 rivers but most of them have dried up or are extinct due to pollution and lack of attention. The numbers also differ because the same rivers may change names in different regions and through history. About 17 rivers are on the verge of extinction.
A total of 57 international rivers flow through Bangladesh, 54 from India and 3 from Myanmar. The number of international rivers can be 58 as Brahmaputra is called "Nod" while the general term for river is "Nodi". The gender division of rivers is interesting from history and mainly depending on the source of the river but not the size or flow briskness. Sangu and Halda are the only two internal rivers originated and finished within Bangladesh. Of the three major rivers, the Jamuna - part of the Brahmaputra - is the longest, Padma is the swiftest, and Meghna is the widest. According to banglapedia, 700 rivers flow in Bangladesh, but the information is old and obsolete. There is an including tributaries flow through the country constituting a waterway of total length around 24,140 kilometres (15,000 mi). But the number differs ambiguously due to the lack of updated information. Most of the country's land is formed through silt brought by the rivers. Bangladesh geography and culture is influenced by the riverine delta system. Bangladesh lies in the biggest river delta of the world - the Ganges Delta system. |
2655 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE | অপরাজেয় বাংলা | অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নিবেদিত একটি ভাস্কর্য যা তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রায়িত করেছে।
অবস্থান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য। এটি নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ। অপরাজেয় বাংলা নামকরণটি করেছিলেন মুক্তিযাদ্ধা ও সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী (১৯৩৮ - ২০১৭)।
ভৌগোলিক স্থানাঙ্কে অপরাজেয় বাংলার অবস্থান ।
বিবরণ
১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি তৈরি করা শুরু হয়। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে অপরাজেয় বাংলা উদ্বোধন করা হয়। ৬ ফুট বেদীর উপর নির্মিত এর উচ্চতা ১২ ফুট, প্রস্থ ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট। এই ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে।
স্থাপত্য তাৎপর্য
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে। তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ ও আক্রমণে পাক বাহিনী পরাজিত হয়। সর্বস্তরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের প্রতীকী চিহ্নই 'অপরাজেয় বাংলা'।
১৯৭২-৭৩ সালে ডাকসুর ভিপি ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং জিএস ছিলেন মাহবুব জামান। এ সময় ডাকসুর উদ্যোগে অপরাজেয় বাংলার কাজে হাত দেয়া হয়। এর তিনটি মূর্তির একটির ডান হাতে দৃঢ় প্রত্যয়ে রাইফেলের বেল্ট ধরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি। এর চোখেমুখে স্বাধীনতার চেতনা উদ্দীপনা নিরাপোষ। এর মডেল ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম বেনু। থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে সাবলীল ভঙ্গিতে দাঁড়ানো অপর মূর্তির মডেল ছিলেন সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে। আর নারী মূর্তির মডেল ছিলেন হাসিনা আহমেদ। ১৯৭৫ সালের পর অনেকদিন অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল।
১৯৭৯ সালের ১৯ জানুয়ারি পূর্ণোদ্যমে অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। তবে অপরাজেয় বাংলার কাছে ভাস্করের নাম খচিত কোন শিলালিপি নেই।
স্বাধীনতার এ প্রতীক তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন গুণী শিল্পী ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনের বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি যেন অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার গান গাইছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ ভাস্কর্যে সব শ্রেণীর যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ভাস্কর্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরিণাম
মূর্তি | https://en.wikipedia.org/wiki/Aparajeyo_Bangla | Aparajeyo Bangla | Aparajeyo Bangla (Bengali: অপরাজেয় বাংলা) is one of the most well known sculptures dedicated to the Bangladesh Liberation War in 1971. It is located in the campus of Dhaka University, just in front of the Faculty of Arts Building. In Bengali, the phrase means "Unvanquished Bengal". |
2656 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE | খ্রিস্টধর্ম | খ্রিস্টধর্ম (; ; ; ) একটি অব্রাহামীয় একেশ্বরবাদী ধর্ম যা নাসরতীয় যীশুর জীবন ও শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয়। অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী এটি পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম; এর অনুসারী সংখ্যা প্রায় ২৫০ কোটি। এর অনুসারীগণ—যারা খ্রিস্টান হিসেবে পরিচিত—১৫৭টি দেশ ও অঞ্চলের সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী, এবং তারা বিশ্বাস করে যে যীশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র, যাঁর মশীহ বা খ্রীষ্ট হিসেবে আগমনের ব্যাপারে হিব্রু বাইবেল বা পুরাতন নিয়মে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে এবং নতুন নিয়মে তা বিবৃত হয়েছে।
খ্রিস্টধর্ম সাংস্কৃতিকভাবে এর পশ্চিমা ও পূর্বদেশীয় শাখাগুলোর মধ্যে এবং পরিত্রাণের প্রকৃতি ও প্রতিপাদন, যাজকাভিষেক, মণ্ডলীতত্ত্ব ও খ্রিস্টতত্ত্ব বিষয়ক মতাদর্শে বৈচিত্র্যময়। খ্রিস্টানদের সাধারণ ধর্মমত অনুসারে যীশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র ও পুত্র ঈশ্বরের অবতার—মাংসে মূর্তিমান বাক্য—যিনি পরিচর্যা, দুঃখভোগ ও ক্রুশারোপিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, যা বাইবেলে সুসমাচার তথা “সুখবর” বলে অবিহিত হয়েছে। সাধু মথি, মার্ক, লূক ও যোহন লিখিত চারটি ধর্মসম্মত সুসমাচারের পাশাপাশি এর পটভূমি হিসেবে ইহুদি পুরাতন নিয়ম হল যীশুর জীবন ও শিক্ষার বিবরণী।
খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্যের যিহূদিয়া প্রদেশে একটি দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক ইহুদি উপদল হিসেবে খ্রিস্টধর্ম যাত্রা শুরু করে। প্রারম্ভিক নিপীড়ন সত্ত্বেও যীশুর প্রেরিতগণ ও তাঁদের অনুসারীরা লেভান্ত, ইউরোপ, আনাতোলিয়া, মেসোপটেমিয়া, আন্তঃযর্দন, মিসর ও ইথিওপিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এটি দ্রুত পরজাতীয় ঈশ্বরভীরুদের আকৃষ্ট করে, যা একে ইহুদি রীতিনীতি থেকে ভিন্নপথে চালিত করে। ৭০ খ্রিস্টাব্দে যিরূশালেমের পতনের পর দ্বিতীয় মন্দিরভিত্তিক ইহুদিধর্মের অবসান ঘটে এবং খ্রিস্টধর্ম ক্রমশ ইহুদিধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সম্রাট মহান কনস্টান্টিন মিলান ফরমান (৩১৩ খ্রি.) জারি করার মাধ্যমে রোমান সাম্রাজ্যে খ্রিস্টধর্মকে বৈধতা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি নিকেয়ার প্রথম পরিষদ (৩২৫ খ্রি.) আহ্বান করেন, যেখানে প্রারম্ভিক খ্রিস্টধর্মকে সংহত করা হয় যা রোমান সাম্রাজ্যের রাষ্ট্রীয় মণ্ডলীতে (৩৮০ খ্রি.) পরিণত হয়। প্রধান বিচ্ছেদগুলোর পূর্বে খ্রিস্টধর্মের সংযুক্ত মণ্ডলীর ইতিহাসকে প্রায়শই “মহামণ্ডলী” বলে অবিহিত করা হয় (যদিও তৎকালে প্রচলিত মতের বিরোধী রহস্যবাদী খ্রিস্টান ও ইহুদি খ্রিস্টানদের অস্তিত্ব ছিল)। খ্রিস্টতত্ত্বকে কেন্দ্র করে এফেসুসের পরিষদের (৪৩১ খ্রি.) পর পূর্ব মণ্ডলী এবং চ্যালসিডনের পরিষদের (৪৫১ খ্রি.) প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে রোমের বিশপের কর্তৃত্বকে কেন্দ্র করে পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী ও ক্যাথলিক মণ্ডলীর মধ্যে মহাবিচ্ছেদ (১০৫৪ খ্রি.) ঘটে। ধর্মতাত্ত্বিক ও মণ্ডলীতাত্ত্বিক বিতর্ককে (প্রধানত আত্মপক্ষসমর্থন ও পোপীয় আধিপত্য) কেন্দ্র করে সংস্কার যুগে (১৬শ শতাব্দী) প্রতিবাদী মণ্ডলী পূর্ব ক্যাথলিক মণ্ডলীসমূহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অসংখ্য উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পশ্চিমা সভ্যতার বিকাশে, বিশেষত ইউরোপে প্রাচীনযুগের শেষভাগ থেকে মধ্যযুগে, খ্রিস্টধর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবিষ্কারের যুগের (১৫শ–১৭শ শতাব্দী) পর খ্রিস্টধর্ম প্রচারাভিযানের মাধ্যমে খ্রিস্টধর্ম দুই আমেরিকা মহাদেশ, ওশেনিয়া, সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা এবং বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।
খ্রিস্টধর্মের চারটি বৃহত্তম শাখা হল ক্যাথলিক মণ্ডলী (১৩০ কোটি/৫০.১%), প্রতিবাদী মণ্ডলী (৯২ কোটি/৩৬.৭%), পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (২৩ কোটি) ও প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (৬ কোটি ২০ লক্ষ/১১.৯%), যাদের মধ্যে ঐক্যের (বিশ্বব্যাপ্তিবাদ) বিভিন্ন প্রচেষ্টা জারি রয়েছে। পাশ্চাত্যে খ্রিস্টধর্মের অনুসারীর সংখ্যা সাম্প্রতিককালে হ্রাস পেলেও এটি এখনও অঞ্চলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্ম, যেখানে প্রায় ৭০% জনগণ নিজেদের খ্রিস্টান হিসেবে চিহ্নিত করে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল মহাদেশ আফ্রিকা ও এশিয়ায় খ্রিস্টানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী পৃথিবীর কিছু অঞ্চলে, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিপীড়নের শিকার।
অনুসারীর সংখ্যা ও মণ্ডলীসমূহ
অনুসারীর সংখ্যা অনুযায়ী খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম। সারা বিশ্বে প্রায় ২৪০ কোটি খ্রিস্টধর্মের অনুসারী আছে, যা বিশ্ব জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রে খ্রিস্টধর্ম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম। বর্তমান যুগে খ্রিস্টধর্ম বেশ কিছু শাখা বা মণ্ডলীতে বিভক্ত। এদের মধ্যে ৫টি প্রধান শাখা হল রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী (১৩০ কোটি অনুসারী), প্রতিবাদী মণ্ডলী (৯২ কোটি অনুসারী), পূর্বদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (২৭ কোটি অনুসারী), প্রাচ্যদেশীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী (৮ কোটি অনুসারী) এবং ইঙ্গ (অ্যাংলিকান) মণ্ডলী (৮৫ লক্ষ)। এদের বাইরেও বিশ্বের সর্বত্র ভিন্ন ভিন্ন মতের অনেক মণ্ডলী রয়েছে।
রোমান ক্যাথলিক (বিশ্বজনীন) মণ্ডলী
রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলী খ্রিস্টধর্মের বৃহত্তম শাখা। প্রায় ১২০ কোটি খ্রিস্টান রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর সদস্য। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা পুণ্যপিতা বা পোপের কর্তৃত্ব স্বীকার করে, যিনি ক্যাথলিক মণ্ডলীকে শাসন ও পরিচালনা করেন। পুণ্যপিতাকে সন্তু পিতরের উত্তরাধিকারী হিসেবে এবং এর ফলে রোমান ক্যাথলিক মণ্ডলীর প্রধান হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা সাতটি ধর্মানুষ্ঠানে বিশ্বাস করে, যেগুলি মানুষকে পাপ থেকে পরিত্রাণ অর্জন করে স্বর্গলাভ নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
প্রতিবাদী মতবাদ
প্রতিবাদী মতবাদের অনুসারীরা পুণ্যপিতার কর্তৃত্ব অস্বীকার করে। তারা মনে করে শুধুমাত্র বাইবেল সমস্ত কর্তৃত্বের উৎস। প্রতিবাদীদের কাছে সাতটি ধর্মানুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে কম। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ অর্জনে বিশ্বাস করে। প্রতিবাদী ঐতিহ্যের ভেতরে অনেক উপদল বিদ্যামান, যেমন দীক্ষাবাদী (ব্যাপ্টিস্ট) এবং পদ্ধতিবাদী (মেথডিস্ট)। এছাড়া কিছু প্রান্তিক সম্প্রদায়ও বিদ্যমান, যারা মূলধারার প্রতিবাদী বিশ্বাসের সাথে দ্বিমত পোষণ করে, যেমন একব্যক্তি একেশ্বরবাদী (ইউনিটারিয়ান) এবং জিহোভার সাক্ষীগণ। প্রতিবাদী সম্প্রদায়গুলির মধ্যে মূল্যবোধে ব্যাপক বৈচিত্র্য বিদ্যমান।
সনাতনপন্থী ঐতিহ্য
সনাতনপন্থী (মূলত পূর্বদেশীয় খ্রিস্টধর্ম) খ্রিস্টানরাও পুণ্যপিতার কর্তৃত্বকে অস্বীকার করে। তবে কাথলিকদের মতো তারাও পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য ধর্মানুষ্ঠানগুলির আবশ্যকীয়তায় বিশ্বাস করে। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির উৎস জেরুসালেমে যিশুর শিষ্যদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম মণ্ডলীটি পর্যন্ত প্রসারিত, তাই বহু সনাতনপন্থী খ্রিস্টান মনে করে যে তারা যিশুর সঠিক শিক্ষার অনুসারী এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় তাদের কর্তৃত্ব বেশি। সনাতনপন্থী মণ্ডলীগুলির অধিকাংশই আন্তর্জাতিক স্তরে নয়, বরং জাতীয় স্তরে সংগঠিত, যেমন সার্বীয় সনাতনপন্থী মণ্ডলী এবং গ্রিক সনাতনপন্থী মণ্ডলী।
উদ্ভব (যিশুখ্রিস্টের জীবন)
মধ্যপ্রাচ্যের (বর্তমান ইসরায়েল রাষ্ট্রের উত্তরভাগে অবস্থিত) ঐতিহাসিক গালীল অঞ্চলের নাসরত শহর থেকে আগত ইহুদি বংশোদ্ভূত ধর্মীয় নেতা যিশুখ্রিস্টের জীবন ও শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে খ্রিস্টীয় ১ম শতকে ধর্মটির উৎপত্তি হয়। ঐতিহাসিকভাবে নাসরতের যিশু খ্রিস্টীয় ১ম শতকের প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের প্রদেশ যিহূদিয়াতে (ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন অঞ্চলের পার্বত্য দক্ষিণাংশ) বসবাসকারী একজন ধর্মপ্রচারক ও নৈতিক শিক্ষক ছিলেন। যিশুর পালক বাবা যোসেফ ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রী। কিন্তু যিশুর অনুসারীরা অর্থাৎ খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করেন যে যিশু স্বয়ং ঈশ্বরের একমাত্র সন্তান। খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থগুলিতে বর্ণিত কাহিনী অনুযায়ী তিনি দুরারোগ্য ব্যাধি সারাতে পারতেন, এমনকি মৃত মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারতেন। এসব অলৌকিক ঘটনা সম্পাদনের প্রেক্ষিতে যিশুকে ইহুদিদের রাজা হিসেবে দাবী করা হয়। এই উপাধি ব্যবহার ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে দাবী করার দোষে জেরুসালেমের ইহুদি নেতাদের নির্দেশে যিশুকে জেরুসালেমে গ্রেপ্তার করা হয়। ইহুদিদের সর্বোচ্চ আদালতে তার বিচার হয় ও ইহুদিরা যিহূদিয়ার স্থানীয় রোমান প্রশাসক পোন্তিউস পীলাতকে অনুরোধ করে যেন যিশুকে মৃত্যদণ্ড দান করা হয়। পীলাত প্রথমে যিশুকে নিরপরাধ গণ্য করলেও পরবর্তীতে যাজকদের প্ররোচণায় উন্মত্ত ইহুদি জনতার ইচ্ছাপূরণ করতে যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করান।
ধর্মগ্রন্থ
খ্রিস্টধর্মের অনুসারীরা একটি ধর্মীয় পুস্তকসমগ্র অনুসরণ করে, যার সামগ্রিক নাম বাইবেল। বাইবেলের পুস্তকগুলিকে দুইটি বড় অংশে ভাগ করা হয়েছে: পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম। খ্রিস্টানেরা বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মের সমস্ত পুস্তককে ঈশ্বরের পবিত্র বাণী হিসেবে গণ্য করেন। পুরাতন নিয়ম অংশটি হিব্রু বাইবেল (বা তানাখ) এবং অব্রাহামের পৌত্র যাকব তথা ইসরায়েলের বংশধরদের লেখা অনেকগুলি ধর্মীয় পুস্তক নিয়ে গঠিত। খ্রিস্টধর্মের সবচেয়ে জনপ্রিয় শাখা ক্যাথলিক মণ্ডলীতে অনুমোদিত পুস্তকতালিকা অনুযায়ী বাইবেলের পুরাতন নিয়ম অংশে ৪৬টি পুস্তক আছে। এই পুস্তকগুলি বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন সময়ে খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতক থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতক পর্যন্ত মূলত হিব্রু ভাষাতে রচিত হয়।
বাইবেলের দ্বিতীয় অংশটির নাম নতুন নিয়ম, যা ২৭টি পুস্তক নিয়ে গঠিত। এই পুস্তকমালাতে যিশুর জীবন, শিক্ষা ও খ্রিস্টীয় ১ম শতকে তার অনুসারীদের কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে। নতুন নিয়মের বিভিন্ন পুস্তক খ্রিস্টীয় ১ম শতকেই পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সেসময়ে অতি প্রচলিত গ্রিক ভাষাতে রচিত হয়, পরে খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতকে এসে ৩৯৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যাথলিক মণ্ডলীর ধর্মীয় নেতারা উত্তর আফ্রিকার কার্থেজ শহরে আয়োজিত একটি সম্মেলনে নতুন নিয়মের পুস্তকগুলির একটি সঠিক তালিকা অনুমোদন ও প্রণয়ন করেন। নতুন নিয়মের প্রথম চারটি পুস্তককে একত্রে সুসমাচার নামে ডাকা হয়; এগুলিতে যিশুর জীবন, তার মৃত্যু এবং মৃত অবস্থা থেকে তার পুনরুত্থানের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
খ্রিস্টানদের বিশ্বাস
খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে একজন মাত্র ঈশ্বর স্বর্গ ও মর্ত্যের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা। অর্থাৎ ঈশ্বর জগতের পিতা। পিতারূপী ঈশ্বর প্রতিটি মানুষকে সন্তানের মতো ভালোবাসেন এবং তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চান। কিন্তু প্রতিটি মানুষ পাপ করার প্রবণতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে (যার উৎস প্রথম মানব আদমের আদিপাপ)। এই সব ছোট-বড় পাপের কারণে মানুষ ও জগতের পিতা ঈশ্বরের মাঝে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। খ্রিস্টানেরা বিশ্বাস করে যে যিশুখ্রিস্ট ঈশ্বরেরই দ্বিতীয় একটি রূপ; তিনি ঈশ্বরের একমাত্র প্রকৃত পুত্র। ঈশ্বরের তৃতীয় আরেকটি রূপ হল পবিত্র আত্মা। পবিত্র আত্মা বিভিন্ন নবী বা ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে মানবজাতির সাথে যোগাযোগ করেছে। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর মানব কুমারী মেরির গর্ভে পুত্ররূপী ঈশ্বর তথা যিশুখ্রিস্টের জন্ম দেন, যার সুবাদে যিশুখ্রিস্ট রক্তমাংসের মানুষের রূপ ধারণ করে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমে আসেন। পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বরের সুবাদে পুত্ররূপী ঈশ্বর যিশুখ্রিস্ট পৃথিবীতে বহু অলৌকিক কাজ সম্পাদন করেন। শেষ পর্যন্ত যিশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে যন্ত্রণাভোগ করে মৃত্যুবরণ করে সমগ্র মানবজাতির পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন। কিন্তু তিন দিন পরে তিনি মৃত্যুকে পরাজিত করে পুনরুজ্জীবিত হন এবং স্বর্গে আরোহণ করেন যেখানে তিনি পিতারূপী ঈশ্বরের ডান পাশের আসনে অধিষ্ঠিত হন। ঈশ্বর উপহার হিসেবে সবাইকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। সময়ের যখন সমাপ্তি হবে, তখন যিশু আবার পৃথিবীতে ফেরত আসবেন এবং শেষ বিচারে সমস্ত মানবজাতির (মৃত বা জীবিত) বিচার করবেন। যারা যিশুখ্রিস্টে বিশ্বাস আনবে এবং ঈশ্বরের ক্ষমা গ্রহণ করবে, তারাই ভবিষ্যতে শেষ বিচারের দিনে পরিত্রাণ পাবে ও স্বর্গে চিরজীবন লাভ করবে। পুরাতন নিয়মের পুস্তকগুলিতে যে মসিহ বা ত্রাণকর্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে যে যিশুই সেই ত্রাণকর্তা। তারা যিশুকে একজন নৈতিক শিক্ষক, অনুকরণীয় আদর্শ এবং প্রকৃত ঈশ্বরকে উদ্ঘাটনকারী ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করে।
খ্রিস্টীয় বর্ষের পবিত্র দিবস ও উৎসবসমূহ
খ্রিস্টানরা বহুসংখ্যক পবিত্র দিবস ও উৎসব উদ্যাপন করে। বেশিরভাগ দিবসে যিশুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে স্মরণ করা হয়। কোনও কোনও মণ্ডলীতে বিশেষ বিশেষ দিনে বিশেষ বিশেষ সন্তকে স্মরণ করা হয়। খ্রিস্টীয় পবিত্র দিবস ও উৎসবের সময় গির্জায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং কখনও কখনও খ্রিস্টানরা নিজেদের মধ্যে উপহার বিনিময় করে।
খ্রিস্টীয় বর্ষের ২৫শে ডিসেম্বর তারিখে সারা বিশ্বের খ্রিস্টানরা যিশুখ্রিস্টের জন্মদিবস উদ্যাপন করে, যার নাম বড়দিন। ঐ দিন খ্রিস্টানদের বাসগৃহে ও গির্জাগুলিতে প্রায়ই বেথলেহেমের এক গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুর জন্মের দৃশ্যটির একটি প্রতীকী ক্ষুদ্রকায় স্থাপনা প্রদর্শন করা হয়।
মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৪০ দিনব্যাপী একটি উপবাস পর্ব পালন করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ বৃহস্পতিবারে যিশুর শেষ নৈশভোজটিকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটির শেষ শুক্রবারে যিশুর ক্রুশারোহণকে স্মরণ করা হয়। উপবাস পর্বটি শেষ পর্যন্ত একটি রবিবারে গিয়ে শেষ হয়, যাকে পুণ্য রবিবার বা পুনরুত্থান পার্বণ বলে, যেদিন মৃতাবস্থা থেকে যিশুর পুনরায় জীবিত হয়ে পুনরুত্থানের অলৌকিক ঘটনাটিকে স্মরণ করা হয়। কিছু কিছু দেশে পুনরুত্থান পার্বণের দিনে খ্রিস্টানরা একে অপরকে ডিম উপহার দেয়, যা কিনা নতুন জীবনের প্রতীক। ডিমগুলি সত্যিকারের ডিম হতে পারে, কিংবা কাঠের বা চকোলেটের তৈরি হতে পারে।
মৃত্যুর কয়েকদিন আগে যিশু জেরুসালেমে গাধার পিঠে চড়ে আগমন করেছিলেন। তাঁকে স্থানীয় জনগণ তাঁর চলার পথে পামগাছের পাতা বিছিয়ে স্বাগত জানিয়েছিল। খ্রিস্টানরা এই ঘটনাটিকে পাম রবিবার নামের একটি দিবসে স্মরণ করে থাকে এবং কিছু কিছু গির্জায় পামগাছের পাতা দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ক্রুশ উপাসনাকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
যিশুর স্বর্গারোহণের কয়েক দিন পরে তাঁর শিষ্যরা শাভুওত নামের একটি ইহুদি উৎসবের সময় একত্রিত হয়েছিলেন। বাইবেলে বর্ণিত আছে যে এসময় তাঁরা হঠাৎ শনশন বায়ুপ্রবাহের শব্দ শুনতে পান এবং তাদের প্রত্যেকের উপরে আগুনের শিখা জ্বলতে দেখতে পান। তারা সবাই পবিত্র আত্মার শক্তিতে বলীয়ান হন এবং ভিনদেশী ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন। খ্রিস্টানরা শিষ্যদের উপরে পবিত্র আত্মার অবতরণের এই অলৌকিক ঘটনাটি মে বা জুন মাসে পুনরুত্থান পার্বণের পরে পঞ্চাশ দিন পরে সপ্তম রবিবারে উদ্যাপন করেন, যাকে পঞ্চাশত্তমী রবিবার বলে।
বিকাশ ও বিস্তার
খ্রিস্টধর্ম প্রথমে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলগুলিতে ইহুদিধর্মের একটি উপ-সম্প্রদায় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। খ্রিস্টের মৃত্যুর পরে তার আদি বারো শিষ্য জেরুসালেম থেকে বাইরে ছড়িয়ে পড়েন। কয়েক দশকের মধ্যে খ্রিস্টে বিশ্বাসী অনুসারীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
বারো শিষ্যের বাইরে খ্রিস্টধর্মের বাণীর আদি প্রচারকদের মধ্যে সন্ত পৌল (৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ- আনু. ৬৭ খ্রিস্টাব্দ) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; বাইবেলের নতুন নিয়মের ২৭টি পুস্তকের মধ্যে ১৩টিই তিনি রচনা করেন। খ্রিস্টীয় ১ম শতকেই বারো শিষ্যদের সবার মৃত্যু হয়। এরপর ২য় ও ৩য় শতকে খ্রিস্টের বারো শিষ্যের উত্তরসূরী ধর্মবিদেরা খ্রিস্ট ধর্মের তত্ত্ব নির্মাণ ও প্রচার অব্যাহত রাখেন; তাদের রচনার অংশবিশেষ নতুন নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এসময় খ্রিস্টধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ অ-ইহুদি ধর্ম হিসেবে রোমান সাম্রাজ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়। একই সাথে ধর্মটি মধ্যপ্রাচ্য, ইথিওপিয়া (আকসুম সাম্রাজ্য) ও আন্তঃককেশিয়ার বিশাল অংশে এবং এশিয়ার কিয়দংশে ছড়িয়ে পড়ে। আকসুম সাম্রাজ্য প্রথম সাম্রাজ্য হিসেবে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে। ৪র্থ শতকে রোমান সম্রাট কোনস্তানতিন খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং তিনি ৩১৩ খ্রিস্টাব্দে মিলানের রাজকীয় অধ্যাদেশবলে খ্রিস্টধর্মকে আইনবিরুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা বন্ধ করেন। এর প্রেক্ষিতে এটি সমগ্র রোমান সাম্রাজ্যের প্রধান ধর্মে পরিণত হয়। ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট কোনস্তানতিনের আহুত নিকায়েয়া-র (বর্তমান তুরস্কের ইজনিক শহর) ধর্মীয় সম্মেলনে খ্রিস্টধর্মের ধর্মীয় বিশ্বাসের সারসংক্ষেপ প্রথমবারের মত রচিত হয়। এতে বাইবেলে বর্ণিত পিতারূপী ঈশ্বর, পুত্ররূপী ঈশ্বর (যিশু) ও পবিত্র আত্মারূপী ঈশ্বর - এই তিন সত্তাই যে একই ঈশ্বরের তিন রূপ, এই ত্রিত্ববাদ ধারণাটি গৃহীত হয়। বর্তমানে খ্রিস্টান মণ্ডলীগুলির সিংহভাগ ঈশ্বরের ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী; তবে মূলধারার বাইরে অনেক ছোট ছোট মণ্ডলী এতে বিশ্বাস করে না। ৫ম শতকে খ্রিস্টধর্মের নেতৃস্থানীয় ধর্মযাজকেরা ধর্মগ্রন্থসমগ্র বাইবেলের সংকলন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। মধ্যযুগে এসে ইউরোপের বাকি অংশগুলিরও খ্রিস্টধর্মায়ন ঘটে। সে সময় খ্রিস্টানরা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতের অংশবিশেষেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে বাস করত। আবিষ্কারের যুগের পরে উপনিবেশ স্থাপন ও জোরালো ধর্মপ্রচারণার সুবাদে খ্রিস্টধর্ম সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং বিশ্বের অন্যত্র (যেমন পূর্ব এশিয়া বিশেষত ফিলিপাইন) ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত অঞ্চলব্যাপী বিরাজমান প্রধান ধর্ম।
২০১১ সালে প্রকাশিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক পিউ গবেষণা কেন্দ্রের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী খ্রিস্টানরা বিশ্বের সর্বব্যাপী এত বেশি ছড়িয়ে আছে যে কোনও একক একটি মহাদেশ বা অঞ্চল বিশ্ব খ্রিস্টান মণ্ডলীর কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে দাবী করতে পারে না। এটি একটি সাম্প্রতিক ঘটনা। ২০শ শতকের শুরুতে এসেও ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ খ্রিস্টান ইউরোপ মহাদেশে বাস করত এবং এ অবস্থাটি তার আগের এক সহস্রাব্দ থেকেই বিরাজ করছিল। ২১শ শতকের শুরুতে এসে বিশ্বের খ্রিস্টানদের মাত্র এক-চতুর্থাংশ ইউরোপে বাস করে, এবং এর বিপরীতে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি দুই আমেরিকা মহাদেশে বাস করে। এছাড়া প্রায় এক-চতুর্থাংশ খ্রিস্টান সাহারা-নিম্ন আফ্রিকাতে এবং প্রায় এক-অষ্টমাংশ এশিয়া মহাদেশ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাস করে।
টীকা
তথ্যসূত্র
ধর্ম
খ্রিস্টধর্ম
ইব্রাহিমীয় ধর্ম
একেশ্বরবাদী ধর্ম
পশ্চিমা সংস্কৃতি
১ম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত | https://en.wikipedia.org/wiki/Christianity | Christianity | Christianity is an Abrahamic monotheistic religion based on the life and teachings of Jesus Christ. It is the world's largest and most widespread religion with roughly 2.4 billion followers, comprising around 31.2% of the world population. Its adherents, known as Christians, are estimated to make up a majority of the population in 157 countries and territories. Christians believe that Jesus Christ is the Son of God, whose coming as the Messiah was prophesied in the Hebrew Bible (called the Old Testament in Christianity) and chronicled in the New Testament.
Christianity remains culturally diverse in its Western and Eastern branches, and doctrinally diverse concerning justification and the nature of salvation, ecclesiology, ordination, and Christology. The creeds of various Christian denominations generally hold in common Jesus as the Son of God—the Logos incarnated—who ministered, suffered, and died on a cross, but rose from the dead for the salvation of humankind; and referred to as the gospel, meaning the "good news". The four canonical gospels of Matthew, Mark, Luke and John describe Jesus's life and teachings, with the Old Testament as the gospels' respected background.
Christianity began in the 1st century, after the birth of Jesus, as a Judaic sect with Hellenistic influence in the Roman province of Judaea. The disciples of Jesus spread their faith around the Eastern Mediterranean area, despite significant persecution. The inclusion of Gentiles led Christianity to slowly separate from Judaism (2nd century). Emperor Constantine I decriminalized Christianity in the Roman Empire by the Edict of Milan (313), later convening the Council of Nicaea (325) where Early Christianity was consolidated into what would become the state religion of the Roman Empire (380). The Church of the East and Oriental Orthodoxy both split over differences in Christology (5th century), while the Eastern Orthodox Church and the Catholic Church separated in the East–West Schism (1054). Protestantism split into numerous denominations from the Catholic Church in the Reformation era (16th century). Following the Age of Discovery (15th–17th century), Christianity expanded throughout the world via missionary work, evangelism, immigration and extensive trade. Christianity played a prominent role in the development of Western civilization, particularly in Europe from late antiquity and the Middle Ages.
The six major branches of Christianity are Roman Catholicism (1.3 billion people), Protestantism (1.17 billion), Eastern Orthodoxy (230 million), Oriental Orthodoxy (60 million), Restorationism (35 million), and the Church of the East (600,000). Smaller church communities number in the thousands despite efforts toward unity (ecumenism). In the West, Christianity remains the dominant religion even with a decline in adherence, with about 70% of that population identifying as Christian. Christianity is growing in Africa and Asia, the world's most populous continents. Christians remain greatly persecuted in many regions of the world, particularly in the Middle East, North Africa, East Asia, and South Asia. |
2657 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C%20%E0%A6%A1%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%89.%20%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%B6 | জর্জ ডব্লিউ. বুশ | জর্জ ওয়াকার বুশ (; জন্ম: জুলাই ৬, ১৯৪৬) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩তম রাষ্ট্রপতি যিনি ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০০ ও ২০০৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। এর আগে তিনি ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ৪৬তম প্রশাসক বা গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বুশ যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম রাষ্ট্রপতি জর্জ হার্বার্ট ওয়াকার বুশের বড় ছেলে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে উচ্চশিক্ষা অধ্যয়ন সমাপ্ত করে বুশ পারিবারিক খনিজ তেলের ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৭৭ সালে স্ত্রী লরা ওয়েলচ্কে বিয়ে করেন এবং ১৯৭৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। পরবর্তীকালে টেক্সাস রেঞ্জার্স বেসবল দলের যৌথ মালিকানা ভোগ করেন এবং টেক্সাসের গভর্নরের জন্য প্রচারণায় অংশ নেয়ার মাধ্যমে আবার রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ১৯৯৪ সালে তিনি অ্যান রিচার্ডসকে পরাজিত করে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গভর্নর নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি ও ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী আল গোরের বিরুদ্ধে এক বিতর্কিত বিজয় অর্জন করেন। দেশব্যাপী গণভোটে সর্বোচ্চ ভোট না পেলেও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে ১৩০ কোটি ডলার কর মওকুফ করেন এবং "কোন শিশু আইনের বাইরে থাকবে না" শীর্ষক আইন প্রণয়ন করে বিশেষ আলোচিত হন। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর ১১ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বিধ্স্ত হওয়ার পর তিনি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তারের তালেবান সরকারকে উৎখাত করার জন্য সেদেশে আগ্রাসন চালান। মূল উদ্দেশ্য ছিল আল কায়েদা ধ্বংস করে ওসামা বিন লাদেনকে আটক করা। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে বুশ ইরাক দখলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন সেদেশে অবৈধ গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে যা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষণা ১৪৪১-এর পরিপন্থী। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা অজুহাত দেখিয়ে ইরাক দখল করলেও সেখানে কোন গণবিধ্বংসী অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তার ঘোষণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
নিজেকে তিনি "যুদ্ধ রাষ্ট্রপতি" অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। ইরাক যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে অনেকটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও ২০০৪ সালের নির্বাচনে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হন। ইরাক যুদ্ধ বিষয়ে অনেক সীমাবদ্ধতার স্বীকার হলেও তিনি প্রতিপক্ষ জন কেরির প্রচারণাকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে সক্ষম হন। এই নির্বাচনের পর বুশের কঠোর সমালোচনা হতে থাকে। ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার পরপর যেখানে বুশের পক্ষে জনগণের অবস্থান ছিল শতকরা ৯০ ভাগ সেখানে ২০০৭ সালের জুন মাসের হিসাবে তা শতকরা ২৬ ভাগে নেমে এসেছে। বিগত ৩৫ বছরে কোন মার্কিন রাষ্ট্রপতির জন্য এটিই সর্বনিম্ন। এর আগে হ্যারি ট্রুম্যান এবং রিচার্ড নিক্সন এর চেয়ে কম স্কোর করেছিলেন।
বাল্য জীবন থেকে মধ্য বয়স
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের নিউ হ্যাভেরে জন্মগ্রহণকারী জর্জ বুশ ছিলেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ এবং বারবারা বুশের জ্যেষ্ঠ্য সন্তান। চার ভাই-বোনের সাথে টেক্সাসের মিডল্যান্ড এবং হাউসটনে তার শৈশব-কৈশোর কাটে। তার ভাই-বোনদের নাম হল, জেব, নেইল, মারভিন এবং ডরোথি। তার রবিন নামের আরেকটি ছোট বোন ছিল যে ১৯৫৩ সালে লিউকেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বুশের দাদা প্রেসকট বুশ কানেক্টিকাট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং তার বাবা ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিল। এছাড়াও তিনি রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন পিয়ার্সসহ আরও কয়েকজন রাষ্ট্রপতির সাথে দূর সম্পর্কের আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ।
বাল্য জীবনে বুশ ম্যাসাচুসেটসের অ্যানডোভারে অবস্থিত ফিলিপ অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনা করেন। সেখানে নিয়মিত বেসবল খেলতেন এবং সিনিয়র থাকা অবস্থায় সেখানকার অল-বয়েজ স্কুল বেসবল দলের চিয়ারলিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই বুশ পরবর্তিতে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে এখান থেকে ইতিহাস বিভাগে বিএ ডিগ্রী লাভ করেন। কলেজে সিনিয়র থাকাকালে বুশ স্কাল অ্যান্ড বোন সোসাইটি নামক একটি সংগঠনের সদস্য ছিলেন। ছাত্র হিসেবে তিনি মধ্যম মানের ছিলেন।
১৯৬৮ সালের মে মাসে ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালে এর বিশেষ গুরুত্ব বিবেচনায় অতিরিক্ত সেনা সদস্য ভর্তি করা হচ্ছিল। পাইলটদের অ্যাপটিচুড পরীক্ষার সর্বনিম্ন মানের চেয়ে কম নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও বুশকে টেক্সাস এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে ভর্তি করে নেয়া হয়। সর্বনিম্ন শতকরা ২৫ ভাগ নম্বর গ্রহণযোগ্য ছিল। তখন ১০ হাজারেরও বেশি এয়ার ন্যাশনাল গার্ড এবং জঙ্গী বৈমানিকদেরকে ভিয়েতনাম যুদ্ধে পাঠানো হয়েছিল। এদের অনেককেই ভিয়েতনামে প্রেরিত সৈন্যবাহিনীর বিকল্প হিসেবে মজুদ রাখা হয়েছিল। প্রশিক্ষণের পর বুশকে হাউজটনে দায়িত্ব দেয়া হয়। এলিংটন বিমান বাহিনী ঘাঁটির বাইরে করভেয়ার ১০২ বিমান চালনার মাধ্যমে সেখানে নিরাপত্তা বজায় রাখতে হতো। সমালোচনা করা হয়েছিল বাবার বিশেষ রাজনৈতিক পদমর্যাদার কারণে নিয়মিত উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও বুশকে বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ টেক্সাসের এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে রাখা বুশের সকল নথিপত্র নিজস্ব আর্কাইভে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
১৯৭২ সালে বুশ নিজের ইচ্ছায় আলবামা এয়ার ন্যাশনাল গার্ডে বদলি হয়ে যান। উদ্দেশ্য ছিল সেখানকার একটি রিপাবলিকান সিনেট প্রচারণা অংশ নেয়া। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে তাকে টেক্সাস এয়ার ন্যাশনাল গার্ড থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তিনি হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখানে তার ছয় বছর ব্যাপী সার্ভিস অবলিগেশন সম্পন্ন করেন। এ সময়ে বেশ কিছু বিষয়ে তিনি অনিয়ম করেছেন এবং কয়েকটি সুবিধার অপব্যবহার করেছেন বলে প্রমাণ রয়েছে। এ সময় তিনি এতোটাই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন যে তার নিজের ভাষায় এ সময়টি ছিল তার জন্য দায়িত্বজ্ঞানহীন যৌবনের নোমাডীয় যুগ। ১৯৭৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অপরাধে তাকে মেইনের কেনেবাংকপোর্টে পরিবারের নিজস্ব গ্রীষ্মকালীন আবাস স্থলের নিকট থেকে আটক করা হয়েছিল। দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ১৫০ ডলার জরিমানা করা হয় এবং ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত মেইনে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর বুশ টেক্সাসে পারিবারিক তেল ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৭৭ সালে বন্ধুদের মাধ্যমে তার সাথে লরা ওয়েল্চের পরিচয় হয় যে স্কুল শিক্ষক এবং গ্রন্থাগারিক ছিল। তারা বিয়ে করে টেক্সাসের মিডল্যান্ডে আবাস স্থাপন। বুশ নিজ পরিবারের এপিস্কোপাল চার্চ পরিত্যাগ করে স্ত্রীর ইউনাইটেড মেথডিস্ট চার্চে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে তিনি টেক্সাসের ১৯তম কংগ্রেশনাল জেলা থেকে হাউজ অফ রিপ্রেসেনটিটিভ্সের জন্য প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা করেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কেন্ট হ্যান্স টেক্সাসের গ্রামবাসীদে সাথে বুশের কোন সম্পর্ক নেই বলে অভিযুক্ত করেন। বুশ ৬,০০০ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। আবার তেল ব্যবসায় ফিরে যান, কয়েকটি বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার এবং সিনিয়র অংশীদারের দায়িত্ব পান। এর মধ্যে রয়েছে আরবুস্টো এনার্জি, স্পেকট্রাম ৭ এবং পরবর্তিতে হারকেন এনার্জি। তার ব্যবসায়িক উদ্যোগে শীঘ্রই অখাল আসে। তেলের দাম কমে যাওয়ায় ১৯৮০'র দশকে তেল কারখানা এবং আঞ্চলিক অর্থনীতি বিশেষভাবে আক্রান্ত হয়। সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের তদন্ত থেকে জানা যায়, হারকেন এনার্জির অভ্যন্তরস্থ কোন ব্যক্তি এর সাথে সংশ্লিষ্ট। অবশেষে বুশ বলেন, একটি বিষয় নিশ্চিত করার জন্য তার স্টক বিক্রী ঞ।ঔয়ার আগে তিনি কোম্পানির ভিতরের এ ধরনের কোন ব্যক্তি সম্বন্ধে যথেষ্ট তথ্য জানতেন না।
১৯৮৮ সালে বাবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারণায় সহায়তা করার জন্য বুশ পরিবারের সাথে ওয়াশিংটন ডি সি-তে চলে যান। প্রচারণাকাজ শেষে টেক্সাসে ফিরি গিয়ে ১৯৮৯ সালের এপ্রিল মাসে টেক্সাস রেঞ্জার্স বেসবল ফ্রাঞ্চাইজের একটি শেয়ার ক্রয় করেন। চাঁচ বছর এই দলের অংশীদারী মহাব্যবস্থাপক হিসেবে ছিলেন। বুশ প্রখ্যাত বেসবল খেলোয়াড় স্যামি সোসার উপর নির্ভর করে তার ব্যবসা নিয়ে বেশ উচ্চাকাংখী হয়ে উঠেন। সোসা শিকাগো কাবে খেলে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। দলের কাজে তিনি খুবই সক্রিয় ছিলেন এবং খেলার সময় উন্মুক্ত গ্যালারিতে দর্শকদের সাথে বসতেই পছন্দ করতেন। বুশ প্রথমে বিনিয়োগ করেছিলেন ৮০০০,০০০ মার্কিন ডলার। শেয়ার বিক্রী করে অচিরেই ১৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি আয় করেন।
বাবার নামের সাথে পার্থক্য করার জন্য বুশকে মাঝেমাঝে জর্জ বুশ জুনিয়র নামে আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু বাবা এবং ছেলের নাম আসলে এক নয়। বাবার নাম জর্জ হার্বার্ট ওয়াকার বুশ, আর ছেলের নাম জর্জ ওয়াকার বুশ। তাই বুশের নামের সাথে জুনিয়র যোগ করাটা সঠিক নয়। তার অন্য একটি ডাক নাম "ডুবিয়া"। এই শব্দটি আসলে তার মধ্য নামে উপস্থিত ডব্লিউ বর্ণের পূর্ণ রূপ হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলে প্রচলিত। এটি দ্বারাও বাবার সাথে তার নামের পার্থক্য করা যায়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর অনেক সময় তাকে "বুশ ৪৩" এবং তার বাবাকে "বুশ ৪১" নামে ডাকা হয়।
নির্বাচিত পদসমূহ
টেক্সাসের গভর্নর
বুশ ১৯৯৪ সালে টেক্সাসের গভর্নর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন। তার ভাই জেব ফ্লোরিডার গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতার জন্য নাম ঘোষণা করেছিল। খুব সহজেই বুশ প্রাথমিক রিপাবলিকান মনোনয়ন পেয়ে যান। এর পর তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় তৎকালীন গভর্নর অ্যান রিচার্ডসের সাথে। অ্যান রিচার্ডস একজন জনপ্রিয় ডেমোক্র্যাট এবং এই নির্বাচনের জন্য ফেভারিট বিবেচিত হয়েছিলেন। বুশ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক উপদেষ্টার সহায়তা পান যাদের মধ্যে রয়েছেন ক্যারেন হিউস, জন আলবাউ এবং কার্ল রোভ। অ্যান রিচার্ডসকে অপদস্থ করার মাধ্যমে নেতিবাচক রাজনৈতিক প্রচারণা চালিয়েছেন বলে অনেকেই বুশের সমালোচনা করেন। কিন্তু একটি রাজনৈতিক বিতর্কে আশাতীত সাফল্য লাভ করায় অচিরেই বুশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নির্বাচনে বুশ শতকরা ৫২ ভাগ এবং রিচার্ডস ৪৭ ভাগ ভোট পান।
রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থিতা ২০০০
রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থিতা ২০০৪
রাষ্ট্রপতি জীবন
সমালোচনা
২০০১ সালের সেপ্টেম্বর ১১ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বিধ্স্ত হওয়ার পর তিনি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তারের তালেবান সরকারকে উৎখাত করার জন্য সেদেশে আগ্রাসন চালান। মূল উদ্দেশ্য ছিল আল কায়েদা ধ্বংস করে ওসামা বিন লাদেনকে আটক করা। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে বুশ ইরাক দখলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন সেদেশে অবৈধ গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে যা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষণা ১৪৪১-এর পরিপন্থী। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা অজুহাত দেখিয়ে ইরাক দখল করলেও সেখানে কোন গণবিধ্বংসী অস্ত্র পাওয়া যায়নি। তার ঘোষণা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
হোয়াইট হাউজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
হোয়াইট হাউজের অফিসিয়াল জীবনী
রিপাবলিকান ন্যাশনাল কিমিটির জীবনী
নিকোলাস ডি ক্রিস্টোফ প্রণীত রাষ্ট্রীয় প্রোফাইল
ভোট স্মার্ট প্রকল্পে তথ্যাদি
মিলার সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স প্রণীত বুশ এবং তার কেবিনেটের সবাইকে নিয়ে করা চোট আকারের প্রবন্ধ
জর্জ ডব্লিউ. বুশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি
১৯৪৬-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তি
টেক্সাসের গভর্নর
২০শ শতাব্দীর স্মৃতিকথাকার
২০০০ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী
২০০৪ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী
২০শ শতাব্দীর মার্কিন ব্যবসায়ী
২০শ শতাব্দীর মার্কিন রাজনীতিবিদ
২১শ শতাব্দীর মার্কিন রাজনীতিবিদ
২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক
২০শ শতাব্দীর মার্কিন ব্যক্তি
২১শ শতাব্দীর মার্কিন ব্যক্তি
মার্কিন বিনিয়োগকারী
২০শ শতাব্দীর মার্কিন স্মৃতিকথাকার
মার্কিন প্রেরণাদায়ী বক্তা
বুশ পরিবার
হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২১শ শতাব্দীর রাষ্ট্রপতি
রিপাবলিকান পার্টি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের) রাষ্ট্রপতি মনোনীত প্রার্থী | https://en.wikipedia.org/wiki/George_W._Bush | George W. Bush | George Walker Bush (born July 6, 1946) is an American politician and businessman who served as the 43rd president of the United States from 2001 to 2009. A member of the Republican Party, he also served as the 46th governor of Texas from 1995 to 2000.
The eldest son of the 41st president, George H. W. Bush, and a member of the Bush family, he flew warplanes in the Texas Air National Guard in his twenties. After graduating from Harvard Business School in 1975, he worked in the oil industry. He later co-owned the Texas Rangers, of Major League Baseball, before being elected governor of Texas in 1994. As governor, Bush successfully sponsored legislation for tort reform, increased education funding, set higher standards for schools, and reformed the criminal justice system. He also helped make Texas the country's leading producer of wind-generated electricity. In the 2000 presidential election, he won over Democratic incumbent Vice President Al Gore, while losing the popular vote after a narrow and contested Electoral College win, which involved a Supreme Court decision to stop a recount in Florida.
In office, Bush signed a major tax-cut program and an education-reform bill, the No Child Left Behind Act. He pushed for socially conservative efforts such as the Partial-Birth Abortion Ban Act and faith-based initiatives. He also initiated the President's Emergency Plan for AIDS Relief, in 2003, to address the AIDS epidemic. The terrorist attacks on September 11, 2001, decisively reshaped his administration, resulting in the start of the war on terror and the creation of the Department of Homeland Security. Bush ordered the 2001 invasion of Afghanistan in an effort to overthrow the Taliban, destroy al-Qaeda, and capture Osama bin Laden. He signed the Patriot Act to authorize surveillance of suspected terrorists. He also ordered the 2003 invasion of Iraq, on the inaccurate belief that Saddam Hussein's regime possessed weapons of mass destruction and had ties with al-Qaeda. Bush later signed the Medicare Modernization Act, which created Medicare Part D. In 2004, Bush was re-elected president in a close race, beating Democratic opponent John Kerry and winning the popular vote.
During his second term, Bush made free trade agreements. He appointed John Roberts and Samuel Alito to the Supreme Court. He sought major changes to Social Security and immigration laws, but both efforts failed in Congress. Bush was widely criticized for his handling of Hurricane Katrina and the midterm dismissal of U.S. attorneys. Amid his unpopularity, the Democrats regained control of Congress in the 2006 elections. The Afghanistan and Iraq wars continued; in January 2007, Bush launched a surge of troops in Iraq. By December, the U.S. entered the Great Recession, prompting the Bush administration to get congressional approval for economic programs intended to preserve the country's financial system, including the Troubled Asset Relief Program.
After his second term, Bush returned to Texas, where he has maintained a low public profile. At various points in his presidency, he was among both the most popular and the most unpopular presidents in U.S. history. He received the highest recorded approval ratings in the wake of the September 11 attacks, and one of the lowest ratings during the 2007–2008 financial crisis. Although public opinion of Bush has improved since he left office, his presidency has generally been rated as below average by scholars.
|
2659 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%93%20%E0%A6%A6%E0%A7%87%20%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE | ভিত্তোরিও দে সিকা | ভিত্তোরিও দে সিকা (ইংরেজি: Vittorio De Sica, ইতালীয়: Vittorio Domenico Stanislao Gaetano Sorano De Sica) (৭ জুলাই ১৯০১-১৩ নভেম্বর ১৯৭৪) ছিলেন একজন ইতালীয় পরিচালক, অভিনেতা এবং নব্যবাস্তবতাবাদী আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব।
তার পরিচালিত চারটি চলচ্চিত্র একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছে, সেগুলো হল শুশশা (১৯৪৬) এবং লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (১৯৪৮) সম্মানসূচক অস্কার লাভ করে, এবং ইয়েরি, ওগ্গি, ডোমানি ও ইল গিয়ারডিনো ডাই ফিঞ্জি কোনতিনিস শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কার লাভ করে।
প্রাথমিক জীবন
দে সিকা ১৯০১ সালের ৭ই জুলাই ইতালির লাজিওর সোরা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯২০-এর দশকে মঞ্চ অভিনেতা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯২৩ সালে তাতিয়ানা পাভলোভা থিয়েটার কোম্পানিতে যোগদান করেন। ১৯৩৩ সালে তিনি তার স্ত্রী গুদিত্তা রিসোনে ও সের্জিও তোফানোর সাথে যৌথভাবে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানির অধীনে সূক্ষ্ম হাস্যরসাত্মক নাটক মঞ্চস্থ হত, কিন্তু তারা বোমারশাইয়ের নাটকের মঞ্চায়ন করতেন এবং লুচিনো ভিসকন্তির মত খ্যাতনামা পরিচালকদের সাথেও কাজ করতেন।
কর্মজীবন
ব্যক্তিগত জীবন
চলচ্চিত্র তালিকা
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহি:সংযোগ
Vittorio De Sica director bio for The Garden of the Finzi-Continis Sony Pictures Entertainment website, retrieved 8 April 2006
Vittorio De Sica Review Wall Street Journal article, retrieved 9 March 2013
১৯০১-এ জন্ম
১৯৭৪-এ মৃত্যু
২০শ শতাব্দীর ইতালীয় অভিনেতা
২০শ শতাব্দীর ইতালীয় কৌতুকাভিনেতা
ইতালীয় কৌতুকাভিনেতা
ইতালীয় চলচ্চিত্র পরিচালক
ইতালীয় নির্বাক চলচ্চিত্র অভিনেতা
ইতালীয় ভাষার চলচ্চিত্র পরিচালক
ইতালীয় রোমান ক্যাথলিক
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে দাভিদ দি দোনাতেল্লো বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে দাভিদ দি দোনাতেল্লো বিজয়ী
নাস্ত্রো দারজেন্তো বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে ন্যাশনাল বোর্ড অব রিভিউ পুরস্কার বিজয়ী
পাল্ম দর বিজয়ী চলচ্চিত্রের পরিচালক
ইতালীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা
দাভিদ দি দোনাতেল্লো বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রের পরিচালক | https://en.wikipedia.org/wiki/Vittorio_De_Sica | Vittorio De Sica | Vittorio De Sica ( də SEE-kə, Italian: [vitˈtɔːrjo de ˈsiːka]; 7 July 1901 – 13 November 1974) was an Italian film director and actor, a leading figure in the neorealist movement.
Widely considered one of the most influential filmmakers in the history of cinema, four of the films he directed won Academy Awards: Sciuscià and Bicycle Thieves (honorary), while Yesterday, Today and Tomorrow and Il giardino dei Finzi Contini won the Academy Award for Best Foreign Language Film. Indeed, the great critical success of Sciuscià (the first foreign film to be so recognized by the Academy of Motion Picture Arts and Sciences) and Bicycle Thieves helped establish the permanent Best Foreign Film Award. These two films are considered part of the canon of classic cinema. Bicycle Thieves was deemed the greatest film of all time by Sight & Sound magazine's poll of filmmakers and critics in 1952, and was cited by Turner Classic Movies as one of the 15 most influential films in cinema history.
De Sica was also nominated for the Academy Award for Best Supporting Actor for playing Major Rinaldi in American director Charles Vidor's 1957 adaptation of Ernest Hemingway's A Farewell to Arms, a movie that was panned by critics and proved a box office flop. De Sica's acting was considered the highlight of the film. |
2660 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%20%E0%A6%93%E0%A6%9C%E0%A7%81 | ইয়াসুজিরো ওজু | ইয়াসুজিরো ওজু (ডিসেম্বর ১২, ১৯০৩, ডিসেম্বর ১২, ১৯৬৩) খ্যাতিমান জাপানী চলচ্চিত্রকার। তাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান মানবতাবাদী চলচ্চিত্রশিল্পীদের একজন মনে করা হয়।
কর্মজীবন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে ছবি তৈরি করেছিলেন জাপানি পরিচালক ওজু। আন্তর্জাতিক সিনেমা সাম্রাজ্যের অন্যতম সম্রাট— ‘লেট স্প্রিং’, ‘আর্লি সামার’, ‘টোকিয়ো স্টোরি’-খ্যাত ওজু । জাপানের সামরিক প্রচারচিত্রের অঙ্গ হিসেবে ছবিটা তৈরির বরাত পেয়েছিলেন তিনি। অভিনয়ে প্রবাসী ভারতীয়রাই ছিলেন। ওজুর তোলা ছবি প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে গচ্ছিত ছিল। আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ককে নিয়ে প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি।
অন টু দিল্লি
চলচ্চিত্র গবেষক পিটার বি হাই এবং নোবোরি শিগেকি দুজনেই জানিয়েছেন, সুভাষের সঙ্গে অন্তত এক বার সরাসরি কথা হয়েছিল ওজুর। ওঁরা একসঙ্গে বসেই ঠিক করেন, বর্মা হয়ে আইএনএ-র ভারতে পৌঁছনোর কাহিনি চিত্রায়িত করা হবে। ছবির নাম ‘অন টু দিল্লি’ সুভাষই ঠিক করে দেন। ঠিক কবে ওঁদের এই আলোচনা হল, সেই তারিখটা অবশ্য পরিষ্কার নয়। তবে সিঙ্গাপুরের ক্যাথে থিয়েটার ভবনই ছিল মূল কর্মকেন্দ্র। সেখানেই সুভাষ তাঁর প্রথম জনসভা করেন। ১৯৪৩-এর জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরে রাসবিহারী বসুর হাত থেকে আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়কত্ব গ্রহণ। ২১ অক্টোবর আজাদ হিন্দ সরকারের ঘোষণাও হল ক্যাথে থিয়েটারে। ওই বাড়িতেই আজাদ হিন্দ সরকারের বেতারকেন্দ্র এবং একাধিক দফতরের কার্যালয়। ওই বাড়ির ছ’তলাতেই ওজুর অফিসঘর।
মূল শুটিং শুরু করতে ১৯৪৪-এর ডিসেম্বর গড়িয়ে গেল । হয়তো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াও কিছু কিছু শুটিং স্বাধীন ভাবে করছিলেন ওজু। কারণ তিনি প্রথম কিছু দিন সেনা ব্যারাক, সেনা প্রশিক্ষণের ছবি তুলছিলেন। ব্রিটিশ বন্দিদের কাজে লাগিয়ে ১৯৪২-পূর্ব সিঙ্গাপুরের ছবি দেখাতে ব্রিটিশ সেনার টহলের দৃশ্যও তোলা হয়। আর ওজুর জীবনীকারেরা প্রায় সকলে এক বাক্যে এ-ও লিখছেন যে, ওজু সিঙ্গাপুরের সময়টা অনেকটাই কাটাচ্ছিলেন নিজের মতো করে। বই পড়ে, টেনিস খেলে, দেদার সিনেমা দেখে। ১৯৪৪-এর ডিসেম্বরে শুটিং থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট— ইম্ফল অভিযান ব্যর্থ হওয়া এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মাটিতে অন্তত জাপান আর যুদ্ধ চালাতে আগ্রহী নয়, এটা স্পষ্ট হওয়ার পরেও ছবির কাজ পুরোদমে চলছিল। তার কারণ সম্ভবত এই যে, সুভাষচন্দ্র তথা আইএনএ-র মনোবলে তখনও চিড় ধরেনি। ১৯৪৪-এর ডিসেম্বরেও সুভাষের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, তাইপেই, সায়গন আর সিঙ্গাপুর থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া যাবে।
জাপানের জয়ের আশা নিভে আসছে বোঝামাত্র ওজু শুটিং বন্ধ করেন।
সিঙ্গাপুরের সফরেই নেহরুর হাতে আসে ওজুর অসমাপ্ত, অসম্পাদিত ছবি। নেহরুর সফরে অসমাপ্ত ছবি তাঁর হাতে তুলে দেন মালয়ের এক ভারতীয় স্বাধীনতা-যোদ্ধা। নেহরু ভারতে ফেরার পরে ছবিটি শেষ করার দায়িত্ব নেন বল্লভভাই পটেল। পটেলের হয়ে প্রযোজনার দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছেন নাথলাল পারেখ। পূর্ণাঙ্গ ছবিটি ‘নেতাজী সুভাষ’ নামে ১৯৪৮ সালের ২৩ জানুয়ারি, অর্থাৎ স্বাধীন ভারতের প্রথম নেতাজি জয়ন্তীতে মুক্তি পায়।
১৪টি চিত্রগৃহে মুক্তি পেল ‘নেতাজী সুভাষ’। আইএনএ-র মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ খান এবং মেয়র সুধীরবাবু এ ছবির উদ্বোধন করেন। প্রথম সপ্তাহের প্রথম ও শেষ প্রদর্শনীর বিক্রীত অর্থ আজাদ হিন্দ ফৌজের শহিদদের দুঃস্থ পরিবারের সাহায্যার্থে দেওয়া হয়।
তথ্যসূত্র
১৯০৩-এ জন্ম
১৯৬৩-এ মৃত্যু
জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক
পার্পল রিবন পদক প্রাপক
জাপানে ক্যান্সারে মৃত্যু | https://en.wikipedia.org/wiki/Yasujir%C5%8D_Ozu | Yasujir%C5%8D_Ozu | null |
2662 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%81-%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%95%20%E0%A6%97%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0 | জঁ-লুক গদার | জঁ-লুক গদার (; ৩ ডিসেম্বর, ১৯৩০ – ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২) ফরাসি নবকল্লোল চলচ্চিত্র আন্দোলনের প্রধান পুরোধাদের অন্যতম, খ্যাতিমান চলচ্চিত্র সমালোচক এবং বিতর্কিত ও প্রভাবশালী পরিচালক।
২০০২ সালে সাইট অ্যান্ড সাউন্ড ম্যাগাজিনের আয়োজিত ভোটে সমালোচকদের প্রদত্ত ভোটে তিনি সর্বকালের সেরা দশ পরিচালকের তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। বলা হয়ে থাকে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের যে কোন চলচ্চিত্র নির্মাতার সমালোচনামূলক বিশ্লেষণের অন্যতম কাজ তার সৃষ্টি। তিনি এবং তার কাজে বর্ণনামূলক তত্ত্বের কেন্দ্রে ছিল এবং বাণিজ্যিক বর্ণনাধর্মী চলচ্চিত্র শিল্পের রীতি ও চলচ্চিত্র সমালোচনার শব্দভান্ডারকে পরিবর্তন করে দিয়েছে। ২০১০ সালে গদারকে একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হয়, কিন্তু তিনি এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেননি। গদারের চলচ্চিত্র অনেক বিখ্যাত পরিচালকদের অনুপ্রাণিত করেছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মার্টিন স্কোরসেজি, কোয়েন্টিন টারান্টিনো, ব্রায়ান ডে পালমা, স্টিভেন সোডারবার্গ, ডি. এ. পেনবেকার, রবার্ট অল্টম্যান, জিম জারমুশ, ওং কার-ওয়াই, ভিম ভেন্ডার্স, বেরনার্দো বেরতোলুচ্চি ও পিয়ের পাওলো পাসোলিনি।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
ব্রেথলেস
ম্যাস্কুলিন ফেমিনিন
দ্য লিটল সোলজার
মেড ইন ইউএসএ
ইমেজ বুক - ২০১৮ স্পেশাল পাম দ’র পুরস্কার প্রাপ্ত
গুডবাই - ২০১৪ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি পুরস্কার প্রাপ্ত।
পাদটীকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
১৯৩০-এ জন্ম
প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
প্যারিসের লেখক
ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক
ফরাসি চলচ্চিত্র প্রযোজক
ফরাসি চলচ্চিত্র সমালোচক
ফরাসি চলচ্চিত্র সম্পাদক
ফরাসি চিত্রগ্রাহক
ফরাসি চিত্রনাট্যকার
ফরাসি ভাষার চলচ্চিত্র পরিচালক
ফরাসি মার্ক্সবাদী
একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার বিজয়ী
ইউরোপীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে রৌপ্য ভল্লুক বিজয়ী
২০২২-এ আত্মহত্যা
২০২২-এ মৃত্যু
২০শ শতাব্দীর ফরাসি অভিনেতা
২০শ শতাব্দীর চিত্রনাট্যকার
২১শ শতাব্দীর ফরাসি অভিনেতা
২১শ শতাব্দীর চিত্রনাট্যকার
ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিরোধী সক্রিয় কর্মী
অস্তিত্ববাদী
চলচ্চিত্র প্রযোজনা কোম্পানি প্রতিষ্ঠাতা
চলচ্চিত্র তাত্ত্বিক
ফরাসি সাম্যবাদী
ফরাসি মানবতাবাদী
সুইস বংশোদ্ভূত ফরাসি ব্যক্তি
প্যারিসের অভিনেতা
পরাবাস্তববাদী চলচ্চিত্র নির্মাতা
পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক | https://en.wikipedia.org/wiki/Jean-Luc_Godard | Jean-Luc Godard | Jean-Luc Godard (UK: GOD-ar, US: goh-DAR; French: [ʒɑ̃ lyk ɡɔdaʁ]; 3 December 1930 – 13 September 2022) was a French and Swiss film director, screenwriter, and film critic. He rose to prominence as a pioneer of the French New Wave film movement of the 1960s, alongside such filmmakers as François Truffaut, Agnès Varda, Éric Rohmer and Jacques Demy. He was arguably the most influential French filmmaker of the post-war era. According to AllMovie, his work "revolutionized the motion picture form" through its experimentation with narrative, continuity, sound, and camerawork. His most acclaimed films include Breathless (1960), Vivre sa vie (1962), Contempt (1963), Band of Outsiders (1964), Alphaville (1965), Pierrot le Fou (1965), Masculin Féminin (1966), Weekend (1967) and Goodbye to Language (2014).
During his early career as a film critic for the influential magazine Cahiers du Cinéma, Godard criticised mainstream French cinema's "Tradition of Quality", which de-emphasised innovation and experimentation. In response, he and like-minded critics began to make their own films, challenging the conventions of traditional Hollywood in addition to French cinema. Godard first received global acclaim for his 1960 feature Breathless, helping to establish the New Wave movement. His work makes use of frequent homages and references to film history, and often expressed his political views; he was an avid reader of existentialism and Marxist philosophy, and in 1969 formed the Dziga Vertov Group with other radical filmmakers to promote political works. After the New Wave, his politics were less radical, and his later films came to be about human conflict and artistic representation "from a humanist rather than Marxist perspective."
Godard was married three times, to actresses Anna Karina and Anne Wiazemsky, both of whom starred in several of his films, and later to his longtime partner Anne-Marie Miéville. His collaborations with Karina—which included such critically acclaimed films as Vivre sa vie (1962), Bande à part (1964) and Pierrot le Fou (1965)—were called "arguably the most influential body of work in the history of cinema" by Filmmaker magazine. In a 2002 Sight & Sound poll, Godard ranked third in the critics' top ten directors of all time. He is said to have "generated one of the largest bodies of critical analysis of any filmmaker since the mid-twentieth century." His work has been central to narrative theory and has "challenged both commercial narrative cinema norms and film criticism's vocabulary." In 2010, Godard was awarded an Academy Honorary Award. |
2663 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A6%A8%20%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%B8 | অরসন ওয়েলস | জর্জ অরসন ওয়েলস () (৬ই মে, ১৯১৫ - ১০ই অক্টোবর, ১৯৮৫) ছিলেন বিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, লেখক এবং প্রযোজক। তিনি মঞ্চ নাটক, রেডিও এবং চলচ্চিত্রে প্রায় সমান তালে কাজ করেছেন। তিনটি মিডিয়াতেই অনন্য এবং উদ্ভাবনী কাজের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। তার ব্রডওয়েতে মঞ্চায়িত নাটক সিজার (১৯৩৭) বিপুল প্রশংসা অর্জন করেছিল এবং এখনও এটি শেকসপিয়রের জুলিয়াস সিজার নাটকের অন্যতম উৎকৃষ্ট মঞ্চায়ন হিসেবে স্বীকৃত। এই নাটকের মাধ্যমেই মার্কারি থিয়েটার যাত্রা শুরু করেছিল। তার বেতার অনুষ্ঠান দ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস যুক্তরাষ্ট্রের বেতার সম্প্রচারের ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত অনুষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আর তার সিটিজেন কেইন (১৯৪১) সিনেমাকে অনেক সমালোচক ও পণ্ডিত সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
সিজার ছাড়াও যুবক বয়সে অনেকগুলো অতি উঁচু মানের সফল মঞ্চ নাটক পরিচালনা করেছিলেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য শেক্সপিয়ারের ম্যাকবেথ-এর একটি অভিনব মঞ্চায়ন এবং দ্য ক্র্যাডল উইল রক। ১৯৩৮ সালে এইচ জি ওয়েলস-এর দ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস উপন্যাস অবলম্বনে করা বেতার অনুষ্ঠান দিয়েই নিজের দেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশে পরিচিত হয়ে উঠেন। আসলে তার প্রতিষ্ঠিত মার্কারি থিয়েটারের বিভিন্ন নাটক সরাসরি রেডিওতে সম্প্রচার করা হতো মার্কারি থিয়েটার অন দি এয়ার নামে। এই ধারাবাহিকেরই একটি পর্ব ছিল ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস। সম্প্রচারের পর কেউ কেউ রিপোর্ট করেছিলেন এই অনুষ্ঠান নাকি অনেক স্থানে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে কারণ শ্রোতারা ভেবে বসেছিলেন আসলেই ভিনগ্রহের অধিবাসীরা পৃথিবী আক্রমণ করেছে। প্রচারণাটি অতিরঞ্জিত হলেও এর কারণে অরসন ওয়েলসের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
ওয়েলসের প্রথম সিনেমাই ছিল সিটিজেন কেইন যার সহলেখক, প্রযোজক, পরিচালক এবং প্রধান অভিনেতা সবই তিনি নিজে। সিনেমায় তার চরিত্রের নাম ছিল চার্লস ফস্টার কেইন। প্রথম সিনেমাই সর্বকালের সেরা সিনেমা হিসেবে স্বীকৃত হলেও ওয়েলস জীবনের প্রায় পুরোটা সময়ই চলচ্চিত্র স্টুডিওতে একজন বহিরাগত ছিলেন। জীবনে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা নির্মাণ করেছেন মাত্র ১৩ টি। স্টুডিওর বিরুদ্ধে শৈল্পিক স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে খুব বেশি সফলতা পাননি কারণ তার অধিকাংশ সিনেমাই স্টুডিওতে অনেক সম্পাদনার শিকার হয়েছে এবং কিছু আবার কখনোই প্রেক্ষাগৃহের মুখ দেখতে পায়নি। তার অনন্য পরিচালনার পদ্ধতির মধ্যে ছিল লেয়ারভিত্তিক ও অরৈখিক গড়ন, আলোকসজ্জার খুব উদ্ভাবনী ব্যবহার, ক্যামেরার প্রথাবিরুদ্ধ অ্যাংগেল, বেতার থেকে ধার করা শব্দ সংযোগ, ডিপ ফোকাস শট এবং লং টেক। তাকে সৃজনশীলতার প্রবাদপুরুষ এবং সিনেমার ইতিহাসে সেরা ওটার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সিটিজেন কেইনের পর করা তার অন্যান্য বহুল প্রশংসিত সিনেমার মধ্যে রয়েছে দ্য ম্যাগণিফিসেন্ট অ্যাম্বারসনস (১৯৪২), টাচ অফ ইভিল (১৯৫৮) ইত্যাদি।
২০০২ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট চলচ্চিত্র সমালোচক ও পরিচালকদের মতামতের ভিত্তিতে সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রকারদের তালিকা তৈরি করে যেখানে অরসন ওয়েলসকে দেয়া হয় প্রথম স্থান। এছাড়া আরও অনেক সমালোচকদের জরিপ ও তালিকায় তাকে সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রকার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সিনেমায় অভিনেতা হিসেবেও তিনি বিশেষ নাম কুড়িয়েছিলেন। অনেক সিনেমার মুখ্য চরিত্রে নিজেই অভিনয় করতেন। তার গলার মন্দ্রস্বরটি সবার বেশ পরিচিত ছিল। অ্যামেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট সর্বকালের সেরা মার্কিন অভিনেতাদের তালিকায় তাকে ১৬তম অবস্থানে রেখেছে। এছাড়া মঞ্চে শেক্সপিয়ারীয় অভিনেতা হিসেবে তার খ্যাতি ছিল, পাশাপাশি আবার জাদুকর হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বছরগুলোতে ভ্যারাইটি শো দলের সাথে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্থানে জাদু দেখিয়ে বেড়াতেন।
চলচ্চিত্রসমূহ
এখানে কেবল তার পরিচালিত চলচ্চিত্রসমূহের তালিকা দেয়া হল। এছাড়া যেসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন, যেগুলো শেষ পর্যন্ত শেষ করতে পারেননি, যেগুলো মুক্তি পায়নি বা অন্য যেসব সিনেমায় তার কোন না কোন ভূমিকা ছিল তা জানতে ইংরেজি উইকিপিডিয়ার এই নিবন্ধ বা আইএমডিবি দেখা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
অরসন ওয়েলসের জীবন ও কর্মের বিশ্লেষণ, সেন্সেস অফ সিনেমা
অরসন ওয়েলসের রচনার তালিকা
মার্কারি থিয়েটার অন দি এয়ার
দি আনসিন ওয়েলস, অরসন ওয়েলসের অসম্পূর্ণ বা অকার্যকর প্রকল্পগুলোর বর্ণনা
Guide to the Orson Welles Materials, লিলি লাইব্রেরি, ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি
Finding Aid for the Orson Welles – Oja Kodar Papers 1910–1998 (bulk 1965–1985 ), স্পেশাল কালেকশন লাইব্রেরি, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান
Finding Aid for the Richard Wilson – Orson Welles Papers 1930–2000 (bulk 1930–1991 ), স্পেশাল কালেকশন লাইব্রেরি, ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান
Orson Welles: A Man of a Certain Ego, রজার জ্যাকবস, পপ ম্যাটারস
১৯১৫-এ জন্ম
১৯৮৫-এ মৃত্যু
মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক
মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেতা
মার্কিন মঞ্চ অভিনেতা
মার্কিন লেখক
মার্কিন বেতার অভিনেতা
মার্কিন যাদুকর
মার্কিন নাট্যকার
উইসকনসিনের অভিনেতা
ইংরেজ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার বিজয়ী
মার্কিন চলচ্চিত্র সম্পাদক
মার্কিন বেতার পরিচালক
লেজিওঁ দনর প্রাপক
পাল্ম দর বিজয়ী চলচ্চিত্রের পরিচালক
গ্র্যামি পুরস্কার বিজয়ী
২০শ শতাব্দীর মার্কিন অভিনেতা
স্পেনে মার্কিন প্রবাসী
মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক
এএফআই আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রাপক
আরকেও পিকচার্সের চুক্তিবদ্ধ শিল্পী
নিউ ইয়র্ক (অঙ্গরাজ্য)-এর চিত্রনাট্যকার
২০শ শতাব্দীর মার্কিন চিত্রনাট্যকার
২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক
২০শ শতাব্দীর নাস্তিক
মার্কিন নাস্তিক
মার্কিন পুরুষ চিত্রনাট্যকার
অডিওবই পাঠক
শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট
ক্যালিফোর্নিয়ার চলচ্চিত্র পরিচালক
ক্যালিফোর্নিয়ার চলচ্চিত্র প্রযোজক
হলিউড কালোতালিকা
শিকাগোর অভিনেতা
লস অ্যাঞ্জেলেসের অভিনেতা
নিউ ইয়র্ক শহরের অভিনেতা
ক্যালিফোর্নিয়ার চিত্রনাট্যকার
লস অ্যাঞ্জেলেসের লেখক
নিউ ইয়র্ক শহরের লেখক | https://en.wikipedia.org/wiki/Orson_Welles | Orson Welles | George Orson Welles (May 6, 1915 – October 10, 1985) was an American director, actor, writer, producer, and magician who is remembered for his innovative work in film, radio, and theatre. He is considered to be among the greatest and most influential filmmakers of all time.
At age 21, Welles was directing high-profile stage productions for the Federal Theatre Project in New York City—starting with a celebrated 1936 adaptation of Macbeth with an African-American cast, and ending with the controversial labor opera The Cradle Will Rock in 1937. He and John Houseman then founded the Mercury Theatre, an independent repertory theatre company that presented a series of productions on Broadway through 1941, including a modern, politically charged Caesar (1937). In 1938, his radio anthology series The Mercury Theatre on the Air gave Welles the platform to find international fame as the director and narrator of a radio adaptation of H. G. Wells's novel The War of the Worlds, which caused some listeners to believe that a Martian invasion was in fact occurring. The event rocketed 23-year-old Welles to notoriety.
His first film was Citizen Kane (1941), which he co-wrote, produced, directed, and starred in as the title character, Charles Foster Kane. It has been consistently ranked as one of the greatest films ever made. He directed twelve other features, the most acclaimed of which include The Magnificent Ambersons (1942), The Stranger (1946), The Lady from Shanghai (1947), Touch of Evil (1958), The Trial (1962), Chimes at Midnight (1966), and F for Fake (1973). Welles also had roles in other directors' films, notably Rochester in Jane Eyre (1943), Harry Lime in The Third Man (1949), and Cardinal Wolsey in A Man for All Seasons (1966).
His distinctive directorial style featured layered and nonlinear narrative forms, dramatic lighting, unusual camera angles, sound techniques borrowed from radio, deep focus shots and long takes. He has been praised as "the ultimate auteur".: 6 Welles was an outsider to the studio system and struggled for creative control on his projects early on with the major film studios in Hollywood and later in life with a variety of independent financiers across Europe, where he spent most of his career. Many of his films were either heavily edited or remained unreleased.
Welles received an Academy Award and three Grammy Awards among other numerous honors such as the Academy Honorary Award in 1970, the Golden Lion in 1970, the AFI Life Achievement Award in 1975, and the British Film Institute Fellowship in 1983. In 2002, he was voted the greatest film director of all time in two British Film Institute polls among directors and critics. In 2018, he was included in the list of the 50 greatest Hollywood actors of all time by The Daily Telegraph.
Welles had three marriages, including one with Rita Hayworth, and three children.
Micheál Mac Liammóir, who worked with the 16-year-old Welles on the stage in Dublin and later played Iago in his film Othello, wrote that "Orson's courage, like everything else about him, imagination, egotism, generosity, ruthlessness, forbearance, impatience, sensitivity, grossness and vision is magnificently out of proportion.": xxxvii |
2666 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%97%E0%A6%B2 | গুগল | গুগল এলএলসি () বা গুগল লিমিটেড লায়াবেলিটি কোম্পানি ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা ও পণ্যে বিশেষায়িত একটি আমেরিকান বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ছাত্র থাকাকালীন ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন ১৯৯৮ সালের ৪ই সেপ্টেম্বর গুগল নির্মান করেন। গুগলের ১৪ শতাংশ শেয়ার তাদের এবং বিশেষ সুপারভোটিং ক্ষমতার মাধ্যমে ৫৬ শতাংশ স্টকহোল্ডারকে নিয়ন্ত্রণ করে। ৪ ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮ সালে তারা গুগলকে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। গুগল আগস্ট ১৯, ২০০৪ সালে ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) দেয় ও গুগলপ্লেক্স নামে মাউন্টেইন ভিউতে তাদের নতুন সদরদপ্তরে স্থানান্তরিত হয়। আগস্ট ২০১৫ সালে গুগল এর বিভিন্ন কার্যক্রম আলফাবেট ইনকর্পোরেটেড নামে সমন্বিত করার পরিকল্পনার কথা জানায়। আলফাবেটের প্রধান অধীনস্থ সংগঠন হিসেবে আলফাবেটের ইন্টারনেট কার্যক্রম পরিচালনা করবে। পুনর্গঠনের সমাপনী অংশ হিসেবে ল্যারি পেজ সুন্দর পিচাইকে গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিস্থাপন করেন। (ল্যারি পেজ এখন আলফাবেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা)
গুগলের প্রধান সেবা গুগল সার্চ ছাড়াও নতুন পণ্য, অধিগ্রহণ ও অংশীদারত্বের সাথে সাথে কোম্পানিটির দ্রুত প্রসার হয়। কাজ ও প্রোডাক্টিভিটি সেবা (গুগল ডক, শিট ও স্লাইড), ইমেইল (জিমেইল/ইনবক্স), সময়সূচী ও সময় ব্যবস্থাপক (গুগল ক্যালেন্ডার), ক্লাউড স্টোরেজ (গুগল ড্রাইভ), সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (গুগল+), ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং ও ভিডিও চ্যাট (গুগল এলো/ডুও/হ্যাংআউট), অনুবাদক (গুগল ট্রান্সলেট), মানচিত্র (গুগল ম্যাপস/ওয়েজ/আর্থ/স্ট্রিট ভিউ), ভিডিও ভাগাভাগি (ইউটিউব), নোট নেওয়া (গুগল কিপ), এবং ছবি ব্যবস্থাপক (গুগল ফটোজ) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
গুগল সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ডেটা সেন্টারে প্রায় এক মিলিয়ন সার্ভার চালায় ও ৫.৪ বিলিয়নের বা ৫০০কোটির উপর অনুসন্ধানের অনুরোধ
এবং প্রায় ২৪ পেটাবাইট ব্যবহারকারী কর্তৃক তৈরী ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে প্রতিদিন। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর অনুযায়ী এলেক্সা আমেরিকার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা ওয়েবসাইটের তালিকায় স্থান দেয় গুগলকে। এছাড়াও গুগলের অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাইট যেমন ইউটিউব, ব্লগার এবং অরকুট সেরা একশটি সাইটে স্থান পায়। ব্রান্ড্য তাদের ব্রান্ড ইকুইটি ডাটাবেজে গুগলকে ২য় স্থান দেয়। গুগলের আধিপত্য বিভিন্ন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে যেমন কপিরাইট, গোপনীয়তা এবং সেন্সরশিপ প্রভৃতি। গুগল সম্পর্কে যে ১০টি তথ্য হয়তো আপনার জানা নেই
ইতিহাস
১৯৯৬ সালে গবেষণা প্রকল্প হিসাবে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন পিএইচডি কোর্সের ছাত্র ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিন এর কাজ শুরু করেন। ঐ সময়ের অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলো ফলাফলকে বিন্যাস করত কত বার একটি বিষয়কে অনুসন্ধান ইঞ্জিন পাতায় এনেছে সেই ভিত্তিতে। তাদের তত্ত্ব ছিল তখনকার কৌশলগুলোর চেয়ে নতুন কৌশলে কোনো একটা অনুসন্ধান ইঞ্জিন বানানো, যেটি ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যেকার পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষন করে ফলাফল দেখায়, তাহলে আরো ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। তারা একে পেজর্যাঙ্ক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এই পদ্ধতিতে একটি ওয়েব সাইটের পাতাগুলো কতটুকু সম্পর্কযুক্ত (অনুসন্ধান টার্মের সাথে) এবং ঐ পাতাগুলো কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা বিবেচিত হয় যা আসল সাইটের সাথে সংযুক্ত থাকে।
পেজ এবং ব্রিন শুরুতে নতুন অনুসন্ধান ইঞ্জিনের নাম রাখে "ব্যাকরাব", কারণ এই ব্যবস্থায় সাইটের ব্যাকলিংকগুলো যাচাই করা হত ঐ সাইট কত গুরুত্বপূর্ণ তা নির্ধারণ করার জন্য। পরবর্তীতে তারা নাম পরির্বতন করে গুগল রাখে, যা আসলে ভুল বানানে লিখা "googol" থেকে এসেছে। এটি দিয়ে বোঝানো হত একটি সংখ্যার পেছনে একশত শূন্য। এরপর তা নাম হিসেবে নির্বাচন করা হয় কারণ তারা অনুসন্ধান ইঞ্জিনের বিশাল পরিমাণ তথ্য প্রদানের ব্যপারটিকে গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলেন। প্রথমত, গুগল স্ট্যানফোর্ড ইউনির্ভাসিটির ওয়েবসাইটের অধীনে চলত যার ঠিকানা ছিল google.stanford.edu এবং z.stanford.edu।
ডোমেইন নাম গুগল নিবন্ধিত করা হয় ১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ সালে এবং কর্পোরেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ১৯৯৮ সালে। এটি চালানো হত তাদের এক বন্ধুর গ্যারেজ থেকে যার নাম ছিল সুজান ওজচিচকি। তিনি ম্যানলো পার্ক, ক্যালিফোর্নিয়ার ক্রেইগ সিলভারস্টাইনে থাকতেন। প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিটি ছিল স্ট্যানফোর্ডের ফেলো পিএইচডি ডিগ্রি প্রাপ্ত একজন ছাত্র।
২০১১ সালের মে মাসে, প্রথমবারের মত এক মাসে গুগলে ইউনিক ভিজিটর এক বিলিয়ন পার হয়। যা ছিল ২০১০ সালের মে মাসের থেকে ৮.৪ ভাগ বেশি। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে, গুগল ঘোষণা করে এটি $৫০ বিলিয়ন বার্ষিক আয় করে ২০১২ সালে। যা গত বছরের চেয়ে ১২ বিলিয়ন বেশি।
১৯৯৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিন একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে গুগল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৪ সালের ১৯শে আগস্ট এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। সময়ের সাথে নিত্যনতুন পণ্য ও সেবা যোগ করে গুগল প্রতিনিয়ত নিজেদের আকার ও উপযোগিতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। একই সাথে নতুন কোম্পানি কিনে নিজেদের সাথে একীভূতকরণ, ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারত্ব ও বিজ্ঞাপন জগতে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ়ীকরণের মাধ্যমে নিজেদের বহুমুখিতাকে সমৃদ্ধ করেছে। ফলে তথ্য খোঁজার পাশাপাশি বর্তমানে ইমেইল, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, ভিডিও শেয়ারিং, অফিস প্রোডাক্টিভিটি, প্রভৃতি বিষয়ে গুগলের সেবা রয়েছে।
অর্থায়ন, ১৯৯৭ এবং আইপিও, ২০০৪
গুগলের প্রথম অর্থায়ন করা হয় ১৯৯৮ সালের আগস্টে, এ্যান্ডি ব্যাকওলশাইম $১০০,০০০ টাকা প্রদান করেন গুগল যৌথ মালিকানায় যাবার পূর্বে। তিনি সান মাইক্রোসিস্টেম নামক প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৯৯ সালের শুরুর দিকে ব্রিন এবং পেজ যখন স্নাতক ছাত্র ছিলেন, তারা দেখেন যে অনুসন্ধান ইঞ্জিনটি তৈরী করতে প্রচুর সময় লাগছিল এবং তাদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে এক্সাইট সিইও জর্জ বেলের কাছে যান এবং তার কাছে $১ মিলিয়ন দামে বিক্রির প্রস্তাব করেন। তিনি প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন। পরে এক্সাইটের একজন মূলধন প্রদানকারী বিনোদ খোসলা এর সমালোচনা করেন এবং ব্রিন এবং পেজের সাথে $৭৫০,০০০ পর্যন্ত দরাদরি করেন। ১৯৯৯ সালের ৭ই জুন একটি $২৫ মিলিয়নের অর্থায়ন ঘোষণা করা হয় যাতে প্রধান বিনিয়োগকারী হিসেবে মূলধন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ক্লাইনার পারকিনস কওফিল্ড এবং বেয়ারস ও সিকোইয়া ক্যাপিটাল অর্ন্তভূক্ত ছিল।
গুগলের আইপিও ছাড়া হয় পাচঁ বছর পর ২০০৪ সালের ১৯শে আগস্ট। এই সময়ের মধ্যে ল্যারি পেজ, সের্গেই ব্রিন এবং এরিক স্কমিডট একসাথে গুগলে ২০ বছর কাজ করার জন্য সম্মত হন। কোম্পানীটি ১৯,৬০৫,০৫২টি শেয়ার প্রতিটি $৮৫ বাজারে ছাড়ে। শেয়ারগুলো অনলাইন নিলাম ব্যবস্থায় বিক্রি করা হয়। এই ব্যবস্থাটি তৈরী করেন মরগান ষ্টানলি এবং ক্রেডিট সুইস যারা চুক্তিটির আন্ডাররাইটার ছিলেন। $১.৬৭ বিলিয়নের বিক্রয়ের ফলে গুগলের বাজার মূলধন দাড়ায় ২৩ বিলিয়নেরও বেশি। ২০১৪ সালের জানুয়ারি নাগাদ এর বাজার মূলধন বেড়ে দাড়ায় ৩৯৭ বিলিয়ন। প্রধান শেয়ারের প্রায় ২৭১ মিলিয়ন শেয়ার গুগলের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অনেক গুগল কর্মীই এতে দ্রুত মিলিয়নিয়ার হয়ে যায়। গুগলের আইপিও ছাড়ার পূর্বেই ইয়াহু! কিছু গুগলের শেয়ার পেয়েছিল। পরবর্তীতে আইপিও ছাড়লে ইয়াহু! এতে লাভবান হয় ৮.৪ মিলিয়ন শেয়ার থেকে।
গুগল শেয়ার ছাড়ার পর ধারণা করা হয়েছিল গুগলের কোম্পানী সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। যেহেতু কোম্পানীর নির্বাহীরা রাতারাতি মিলিয়নিয়ার হয়ে যাবে। সেহেতু কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে আনার জন্য শেয়ারহোল্ডারদের চাপ থাকবে বলে মনে করা হয়। এই প্রতিক্রিয়ার জন্য সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন এবং ল্যারি পেজ শেয়ার হোল্ডারদের নিশ্চিত করেন যে কোম্পানির সংস্কৃতি পরিবর্তন হবে না। ২০০৫ সালে দি নিউ ইয়র্ক টাইমস সহ অন্যান্য উৎসের খবরে মতামত দেয়া হয় যে গুগল তার এন্টি-কর্পোরেট ও নো ইভল আদর্শ হারিয়ে ফেলেছে। কোম্পানির ব্যতিক্রম এই সংস্কৃতি ধরে রাখতে গুগল একজন প্রধান কালচার অফিসার নিয়োগ করেন। তিনিই আবার মানব সম্পদের পরিচালকের কাজ করেন। তার দ্বায়িত্ব হল কোম্পানি যে সত্যিকারের মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি নিয়ে গড়ে উঠেছিল তা বজায় রাখা। গুগল তার প্রাক্তন কর্মীদের কাছ থেকে লিঙ্গ বৈষম্য ও বয়সের বৈষম্য করা নিয়ে বিতর্কিত হয়েছিল। ২০১৩ সালে একটি শ্রেনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় সিলিকন ভ্যালিতে অবস্থিত হাই-টেক কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে যাতে গুগলও ছিল। এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল বিতর্কিত "কোল্ড কল" অবস্থার জন্য। এর ফলে নিয়োগকৃত এই সব কর্মীদের নো কোল্ড কল চুক্তির আওতায় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
আইপিও ছাড়ার পর গুগলের শেয়ার কার্যক্রম ভাল চলে। ২০০৭ সালের ৩১শে অক্টোবর প্রথম বারের মত শেয়ারের দাম দাড়ায় $৭০০। এর কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে অনলাইন বিজ্ঞাপনের বিক্রয় এবং আয়ের বাজারকে ধরা হয়। শেয়ারের এই উর্ধগতি একক বিনিয়োগকারীর জন্য। কোম্পানিটি নাসডাক শেয়ার বাজারে টিকার চিহ্ণের সাথে "GOOGL" ও "GOOG"নামে এবং ফ্র্যাংকফুট স্টক বাজারে টিকার চিহ্ন নিয়ে GGQ1 নামে অর্ন্তভুক্ত হয়। ২০১৫ সালের চতুর্থ ভাগে এই সব টিকার চিহ্নগুলো এলফাবেট ইনককে নির্দেশ করে যা গুগলের হোল্ডিং কোম্পানি।
বিকাশ
১৯৯৯ সালের মার্চে, ক্যালিফোর্নিয়ার পালো অল্টোতে কোম্পানীটি তাদের অফিস সরিয়ে নেয়, যেখানে অনেক প্রথম সারির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ শুরু করেছিল। পরবর্তী বছরে পেজ এবং ব্রিনের আপত্তি সত্ত্বেও বিজ্ঞাপন-অর্থায়ন ভিত্তিক অনুসন্ধান ইন্জিনের সূচনা করা হয়। গুগল অনুসন্ধান কিওয়ার্ড ভিত্তিক বিজ্ঞাপন বিক্রি শুরু করে। অনুসন্ধান পাতার দ্রুততা ও পরিষ্কার দৃষ্টি নন্দন রাখার জন্য বিজ্ঞাপনগুলো লেখা ভিত্তিক রাখা হয়। কিওয়ার্ড বিক্রি করা হত নিলাম দর এবং কতটি ক্লিক পড়ে তার উপর ভিত্তি করে, নিলাম শুরু হত পাঁচ সেন্ট ক্লিক প্রতি দরে।
কিওয়ার্ড ভিত্তিক বিজ্ঞাপন বিক্রির এই মডেল প্রথমে Goto.com থেকে আসে যা ঐ ক্ষেত্রে প্রথম সারির ছিল। এটি আইডিয়াল্যাবের বিল গ্রস কর্তৃক তৈরী। যখন কোম্পানীটি তাদের নাম পরিবর্তন করে ওভারচার সার্ভিসেস রাখে, তখন এটি গুগলের বিরুদ্ধে তাদের পে-পার-ক্লিক এবং নিলাম পদ্ধতির পেটেন্ট নকল করার অভিযোগ আনে। পরবর্তীতে ওভারচার সার্ভিস ইয়াহু! কিনে নেয় এবং নাম পরিবর্তন করে ইয়াহু! অনুসন্ধান মার্কেটিং রাখে। মামলাটি কোর্টের বাইরে সমঝোতা করা হয়; গুগল তার কিছু সাধারণ শেয়ার ইয়াহু! কোম্পানীকে প্রদান করে বিনিময়ে তারা লাইসেন্স পায় পদ্ধতিটি ব্যবহারের।
২০০১ সালে গুগল পেজর্যাঙ্কের জন্য পেটেন্ট নেয়। পেটেন্টটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ করা হয় এবং লরেন্স পেজকে এর উদ্ভাবক হিসেবে দেখানো হয়। ২০০৩ সালে, প্রাতিষ্ঠানিক কার্য বৃদ্ধির ফলে কোম্পানিটি একটি অফিস কমপ্লেক্স লিজ নেয় সিলিকন গ্রাফিক্স থেকে যেটির ঠিকানা ছিল ১৬০০ এম্পিথিয়েটার পার্কওয়ে, মাউন্টেন ভিউ, ক্যালিফোর্নিয়া। এই কমপ্লেক্সটি পরবর্তীতে গুগলপ্লেক্স হিসেবে পরিচিত হয়। এটির অভ্যন্তরীন নকশা করেন ক্লিভ উইলকিনসন। তিন বছর পরে গুগল এই জায়গাটি কিনে নেয় $৩১৯ মিলিয়নে। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যেই "গুগল" তাদের নাম প্রতিদিনের ভাষায় যোগ করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। যার ফলে মেরিয়াম-ওয়েবস্টার কলেজিয়েট ডিকশনারি এবং অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান একে একটি ক্রিয়া হিসেবে অভিধানে যোগ করে।
অসম্ভব জনপ্রিয়তা প্রাপ্ত গুগল ইন্জিনের ব্যবহারকারীরা তাদের নিজেদেরকে "গুগলিষ্ট" হিসেবে ডাকা শুরু করে, এমনকি একে বিভিন্ন ধর্মের মত "গুগলিজম" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। গুগলের অনুসারিরা একটি অলাভজনক অনলাইন প্রতিষ্ঠান পায় যা "দি চার্চ অব গুগল" একটি ওয়েবসাইট, যেখানে তারা উপাসনা করে এই বিশাল অনুসন্ধান ইন্জিনকে। দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস এই বিষয়টিকে "ইজ গুগল গড?" শিরোনামে আলোচনা করে তাদের "মতামত" বিষয়শ্রেণীতে। ইন্টারনেটে অনেক ব্লগ রয়েছে যেখানে গুগলকে কেন ঈশ্বরতুল্য তার কারণ উল্লেখ্য আছে।
২০১৩ পরবর্তী
গুগল নতুন কোম্পানী ক্যালিকো শুরু করার ঘোষণা দেয় ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সালে যা পরিচালিত হবে এ্যাপলের চেয়ারম্যান আর্থার লেভিনসনের দ্বারা। দাপ্তরিক উন্মুক্ত ব্যাখায় বলা হয় "স্বাস্থ্য এবং কল্যানভিত্তিক" কোম্পানিটির মূল দৃষ্টি থাকবে "বৃদ্ধ ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত রোগের" প্রতি।
২০১৩ সেপ্টেম্বর নাগাদ গুগল ৭০টি অফিস প্রায় ৪০টিরও বেশি দেশে পরিচালনা করছে বলে জানা যায়। গুগল তার ১৫তম বার্ষিকী পালন করে সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৩ সালে যদিও এটি আগে অন্য তারিখে দাপ্তরিক জন্মদিন পালন করেছে । কেন এটি তারা বেছে নিয়েছে তা পরিষ্কার নয় এবং প্রতিযোগী অনুসন্ধান ইন্জিন ইয়াহু! অনুসন্ধানের সাথে ২০০৫ সালে হওয়া একটি বিরোধকে কারণ ধরা হচ্ছে।
২০১৩ সালেই এ্যালায়েন্স ফর এফোরডেবল ইন্টারনেট (A4AI) চালু করা হয় এবং গুগল এই সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মিলিতরূপের একটি অংশ।ফেসবুক, ইন্টেল কর্পোরেশন এবং মাইক্রোসফট। স্যার টিম বার্নার্স-লি একে পরিচালিত করেন। এই সংস্থার উদ্দেশ্য হল ইন্টারনেট ব্যবহারকে সকলের হাতের নাগালে আনা এবং বৈশ্বিক উন্নয়নকে প্রশ্বস্ত করা। কারণ মাত্র ৩১% লোক অনলাইনে প্রবেশ করতে পারে পুরো পৃথিবী জুড়ে। গুগল ইন্টারনেট প্রবেশের দাম কমাতে সাহায্য করবে যাতে তারা ইউএন ব্রডব্যান্ড কমিশনের বিশ্বব্যাপি ৫% মাসিক আয়ের লক্ষ্যের নিচে নেমে আসে।
২০১৩ সালের তৃতীয় ভাগের সামগ্রিক আয়ের রিপোর্টে দেখা যায় ১৪.৮৯ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে যা আগের ভাগের চেয়ে ১২% বেশি। গুগলের ইন্টারনেট ব্যবসায় এক্ষেত্রে যোগায় ১০.৮ বিলিয়ন যার সাথে আরো ছিল ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপনে ক্লিকের হার।
২০১৩ সালের নভেম্বরে গুগল ঘোষণা করে নতুন ১ মিলিয়ন বর্গ ফিটের (৯৩০০০ বর্গ.মি) অফিস স্থাপনের যা হবে লন্ডনে এবং সম্ভাব্য উন্মুক্তের সাল হিসেবে ২০১৬ সালকে ধরা হয়। নতুন অফিসে প্রায় ৪৫০০ চাকুরীজিবীর কর্মসংস্থান হবে এবং ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সম্পদ কেনার ইতিহাস হয়ে থাকবে।
২০১৪ সালের অক্টোবরে, ইন্টারব্রান্ড সূচক অনুযায়ী গুগল ছিল দ্বিতীয় সবোর্চ্চ মূলবান ব্রান্ড পুরো পৃথিবীতে যার মূল্যমান ছিল প্রায় ১০৭.৪ বিলিয়ন ডলার। মিলওয়ার্ড ব্রাউনের অন্য একটি রির্পোটে গুগলকে প্রথম স্থানে রাখা হয়।
পণ্য এবং সেবা
বিজ্ঞাপন
গুগলের ৯৯% আয় আসে বিজ্ঞাপন খাত থেকে। ২০০৬ অর্থবছরে, কোম্পানী জানায় ১০.৪৯২ বিলিয়ন বিজ্ঞাপন থেকে এবং লাইসেন্স ও অন্যান্য খাত থেকে ১১২ মিলিয়ন আয় হয়। গুগল অনলাইন বিজ্ঞাপন বাজারে বিভিন্ন নতুন মাত্রা যোগ করে এবং অন্যান্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকে। ডাবলক্লিক কোম্পানীর প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুগল ব্যবহারকারীদের আগ্রহ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে । গুগল এন্যালিটিকস এমন একটি প্রযুক্তি যা ওয়েব সাইটের মালিকগন ব্যবহার করে থাকেন কোথায় এবং কীভাবে মানুষ তাদের ওয়েব সাইট ব্যবহার করে থাকেন, উদাহরণ সরূপ বলা যায়, কোন পৃষ্ঠার সকল লিংকের মধ্যে কোনগুলোতে ক্লিক বেশি পড়েছে তা জানা যায় ক্লিক রেটের মাধ্যমে। গুগল দুটি পদ্ধতিতে তাদের বিজ্ঞাপনগুলো বিভিন্ন থার্ড-পার্টি ওয়েব সাইটে রাখার সুযোগ দেয়। গুগলের এ্যডওয়ার্ডস এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রদানকারীরা কস্ট পার ক্লিক অথবা কস্ট পার ভিউ দুটির একটি ব্যবহার করে গুগল নেটওর্য়াকে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। আরেকটি পদ্ধতিতে, যা গুগল এ্যাডসেন্স নামে পরিচিত, ওয়েব সাইট মালিকরা তাদের ওয়েব সাইটে বিজ্ঞাপনগুলো দেখাতে পারেন এবং তা থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন (প্রতিবার বিজ্ঞাপনে ক্লিক পড়লে)।
এই প্রোগ্রামের একটি বড় অসুবিধা সেই সাথে সমালোচনার বিষয় হল গুগলের ক্লিক ধোঁকাবাজি ধরতে না পারা যেমন যখন কোন ব্যক্তি বা কোন স্বয়ংক্রিয় স্ক্রীপ্ট বিজ্ঞাপনে আগ্রহ ব্যতীত ক্লিক করবে এবং গুগল তার জন্য বিজ্ঞাপন প্রদানকারীকে অর্থ দিবে। ২০০৬ সালের শিল্প সংবাদে দাবি করা হয় ক্লিকের প্রায় ১৪-২০ ভাগই অবৈধ। অধিকন্তু, গুগলের অনুসন্ধান এর মধ্যে অনুসন্ধান বাদানুবাদের কারণ হয়, যার কারণ গুগলের অনুসন্ধান বক্স কোন ওয়েব সাইটের বিষয়াদি খুজতে ব্যবহার করা হয়। খুব দ্রুতই খবর প্রকাশ হয় যে যখন এই ধরনের অনুসন্ধান চালানো হয় তখন ফলাফল পৃষ্ঠায় প্রতিযোগী কোম্পানীগুলোর বিজ্ঞাপন ভেসে ওঠে যা ব্যবহারকারীদের তাদের ওয়েব সাইটে আকৃষ্ট করে। ২০০৮ সালের জুনে গুগল ইয়াহুর সাথে বিজ্ঞাপন চুক্তি স্বাক্ষর করে যার মাধ্যমে ইয়াহু গুগলের বিজ্ঞাপন গঠন করবে তার ওয়েব সাইটে। দুটি কোম্পানীর মধ্যে মৈত্রী স্থাপন সম্ভব হয়নি মার্কিন বিচার বিভাগের এন্টিট্রাস্ট আইনের কারণে। ফলে ২০০৮ সালে গুগল তার চুক্তি থেকে সরে আসে।
গুগল তাদের নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন করতে একটি ওয়েব সাইট ছাড়ে যার নাম ডেমো স্লাম, এটি তৈরী করা হয় গুগলের বিভিন্ন পণ্যের প্রযুক্তি ডেমো বা সাময়িকভাবে দেখানোর জন্য। প্রতি সপ্তাহে দুটি দল প্রতিযোগিতা করে গুগলের প্রযুক্তিকে নতুনভাবে দেখানোর জন্য।
অনুসন্ধান ইঞ্জিন
"গুগল অনুসন্ধান" একটি ওয়েব ভিত্তিক অনুসন্ধান ইঞ্জিন, কোম্পানীর সবচেয়ে জনপ্রিয় সেবা। ২০০৯ সালের নভেম্বরে কমস্কোরের প্রকাশ করা একটি বাজার জরিপে বলা হয় গুগল আমেরিকার বাজারে প্রধান অনুসন্ধান ইঞ্জিন যার বাজার অংশীদারী ছিল ৬৫.৬ শতাংশ। গুগল বিলিয়নেরও বেশি ওয়েব পাতার সূচি রাখে যাতে ব্যবহারকারীরা যে তথ্য খুজছে তা পায়। এর জনপ্রিয়তা থাকা স্বত্তেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এর সমালোচনা করে। ২০০৩ সালে, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস গুগলের সূচির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে তারা ওয়েব পাতা এবং বিষয়বস্তু ক্যাশ করে রাখায় তা কপিরাইট লঙ্গন করার সামিল। এই ঘটনায় (ফিল্ড বনাম গুগল এবং পার্কার বনাম গুগল), আমেরিকার নেভাদা জেলা আদালত গুগলের পক্ষে রায় দেয়। অধিকন্তু, ২৬০০: দ্য হ্যাকার কোয়ার্টালী একটি শব্দের তালিকা এনে অভিযোগ করে যে গুগল ইনস্টান্ট সেবা সেগুলো অনুসন্ধান করে না। গুগল ওয়াচ গুগলের পেজ র্যাংকিং এ্যালগরিদমের সমালোচনা করে বলেছে এগুলো নতুন ওয়েব সাইটগুলোর সহায়ক নয় বরং পুরনো প্রতিষ্ঠিত ওয়েব সাইটকেই গুরুত্ব দেয় এবং জোর দাবি করে যে গুগলের সাথে এনএসএ এবং সিআইএর যোগাযোগ রয়েছে। সমালোচনা স্বত্তেও গুগল তার সেবা বাড়িয়ে চলে যেমন ছবি অনুসন্ধান ইঞ্জিন, গুগল নিউজ অনুসন্ধান, গুগল ম্যাপস এবং আরো অনেক। ২০০৬ সালের শুরুর দিকে গুগল নতুন সেবা গুগল ভিডিও শুরু করে যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ভিডিও আপলোড, দেখতে এবং খুজঁতে পারবে। ২০০৯ সালে, গুগল ভিডিওতে আপলোড কমে আসে কারণ তারা অনুসন্ধানের প্রতি জোর দেয়। এমনকি গুগল ডেস্কটপের জন্য গুগল ডেস্কটপ তৈরী করে যা দিয়ে যে কেউ তার নিজের ডেস্কটপে অনুসন্ধান চালাতে পারবেন। গুগল অনুসন্ধানে সম্প্রতি যে বিষয়টি যোগ হয়েছে তা হল ফ্রি প্যাটেন্ট এবং ট্রেডমার্ক অনুসন্ধান। গুগল এবং ইউনাইটেড স্টেটস প্যাটেন্ট এ্যন্ড ট্রেডমার্ক অফিস অংশীদারত্বের ফলে এই সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
অন্য একটি বির্তকমূলক অনুসন্ধান সেবা হল গুগল বুকস সেবা। কোম্পানীটি বিভিন্ন বইয়ের পাতা স্ক্যান করে আপলোড করে। এতে কিছু কিছু বইয়ের পাতা সীমাবদ্ধ আকারে দেখানো হয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরোটাই। ২০০৫ সালে, লেখক সমিতি যারা ৮০০০ আমেরিকান লেখকের হয়ে কাজ করেন, তারা নিউ ইয়র্ক সিটি আদালতে গুগলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে গুগল পুনর্সম্পাদন করে এই সেবায় এতে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার লেখকদের বই খুবই সীমিত আকারে স্ক্যান করে প্রকাশ করা হয়। অধিকন্তু, প্যারিস আদালত ২০০৯ সালের শেষের দিকে "লা মার্টিনিয়ার" সম্পাদন করা কাজ গুগলের ডেটাবেস থেকে মুছে ফেলতে আদেশ জারি করে। আমাজন ডট কমের সাথে প্রতিযোগিতা করতে গুগল নতুন বইগুলোর ডিজিটাল সংস্করণ ছাড়ার পরিকল্পনা নেয়। ২০১০ সালের ২১ জুলাই, বিং অনুসন্ধান ইঞ্জিনকে টেক্কা দিতে, ছবির থাম্বনেইলে মাউস পয়েন্টার রাখলে বড় হয় এমন একটি বৈশিষ্ট্য যোগ করে। ২০১০ সালেরই ২৩ জুলাই আরেকটি বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়, বিভিন্ন ইংরেজি শব্দের সংজ্ঞা সংবলিত পাতা যা অনুসন্ধান দিলে লিঙ্কগুলো উপরে দেখা যায়। সেবার মান আরো বাড়াতে, ২০১১ সালের মার্চে গুগল অ্যালগরিদম পরির্বতন করা হয়।
উৎপাদনশীল প্রোগ্রাম
জিমেইল গুগলের একটি ফ্রি ওয়েবমেইল সেবা, ১ এ্রপ্রিল ২০০৪ সালে এটি শুরু করা হয়েছিল শুধুমাত্র আমন্ত্রন নির্ভর বেটা প্রোগ্রাম হিসেবে। ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০০৭ সালে জনগনের কাছে উন্মুক্ত করা হয়। সেবাটি বেটা সংস্করন থেকে ৭ই জুলাই ২০০৯ সালে মূল প্রোগ্রামে আসে যখন এটার প্রায় ১৪৬ মিলিয়ন মাসিক ব্যবহারকারী ছিল। সেবাটি ছিল প্রথম অনলাইন ইমেইল সেবা যার সাথে ছিল ১ গিগাবাইট সংরক্ষণের জায়গা। এটিই প্রথম ইমেইল সেবা যেখানে ইন্টারনেট ফোরামের মত একই ইমেইলগুলোকে একসাথে রাখা হয়। সেবাটি এখন গুগলের অন্যান্য এ্যাপ্লিকেশনের সাথে ভাগাভাগি করে ১৫ গিগাবাইট পর্যন্ত সংরক্ষণের জায়গা প্রদান করে যা পরে ২০ গিগাবাইট থেকে ১৬ টেরাবাইট পর্যন্ত বর্ধিত করা যায় যার জন্য প্রতি এক গিগাবাইটে ০.২৫ ডলার প্রতি বছর ফি দিতে হয়।
জিমেইল আজাক্স ব্যবহার করে, যা কিনা একটি প্রোগ্রামিং কৌশল যেটি ব্যবহার করে ব্রাউজারকে রিফ্রেশ করা ছাড়াই কাজ করা যায়। স্টিভ বালমার, লিজ ফিগারোআ, মার্ক রাসছ এবং গুগল ওয়াচের সম্পাদক গুগলের গোপনীয়তা নিয়ে সমালোচনা করেন। কিন্তু গুগল দাবি করে একাউন্টের মালিক ছাড়া অন্য কেউ ইমেইলে কি পাঠানো হয়েছে তা পড়ে না বা দেখে না। শুধুমাত্র মাত্র বিজ্ঞাপনের সুবিধার্থে এবং উন্নয়নে সংশ্লিষ্টতা বজায় রাখা হয়।
২০০৪ সালে, গুগল মুক্ত উৎসের সফটওয়্যার প্রকল্প হোষ্টিং করা শুরু করে যার নাম গুগল কোড। এটি ডেভেলপারদের ডেভেলপমেন্টের প্রোগ্রামগুলো বিনা খরচে ডাউনলোড করার সুযোগ দেয়। গুগল ড্রাইভ, গুগলের আরেকটি উৎপাদনশীল পণ্য, ব্যবহারকারীদের ডকুমেন্ট তৈরি, সম্পাদনা এবং সমন্বয় করতে সহায়তা করে অনলাইনে যা কিনা মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের মতই। এই সেবাটিকে আসলে ডাকা হত রাইটলি নামে কিন্তু গুগল ৯ মার্চ ২০০৬ সালে একে অর্জন করে এবং এটিও আমন্ত্রণ নির্ভর করে ছাড়া হয়। কিনে নেয়ার পর ৬ই জুন গুগল পরীক্ষামূলক স্প্রেডশীট সম্পাদনার প্রোগ্রাম তৈরি করে। যা অক্টোবরের ১০ তারিখে গুগল ডকসের সাথে সমন্বয় করা হয়।
গুগল ফর ওয়ার্ক হল একটি গুগলের সেবা যা গুগল পণ্যের পরিবর্তনযোগ্য ব্যবসায়িক সংস্করণ প্রদান করে ক্রেতাদের দেয়া ডোমেইন নাম ব্যবহার করে। এটির মধ্যে আছে বেশকিছু ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন যা গতানুগতিক অফিস প্যাকেজের মতই। যেমন জিমেইল, হ্যাঙ্গআউটস, গুগল ক্যালেন্ডার, গুগল ড্রাইভ, গুগল ডকস, গুগল শীটস, স্লাইডস, গুগল গ্রুপস, গুগল নিউজ, গুগল প্লে, গুগল সাইটস এবং ভল্ট। এটি ছিল একজন গুগল কর্মী রাজেন শেঠের, ভিশন বা ভবিষ্য স্বপ্ন। তিনিই পরে ক্রোমবুকসের উন্নয়ন করেন।
এন্টারপ্রাইজ পরিষেবা
১৫ই মার্চ, ২০১৬-য় গুগল গুগল অ্যানালিটিক্স ৩০০ স্যুট, "এন্টারপ্রাইজ-ক্লাস মার্কেটারদের প্রয়োজনের জন্য বিশেষত ডিজাইন করা ইন্টিগ্রেটেড ডেটা এবং মার্কেটিং অ্যানালিটিক্যালস প্রোডাক্টস" চালু করার ঘোষণা দেয়, যা গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম-এ বিগকুয়ারির সাথে সংহত করা যায়। অন্যান্য জিনিসের মধ্যে স্যুটটি "এন্টারপ্রাইজ শ্রেণির বিপণনকারীদের" "সম্পূর্ণ গ্রাহক ভ্রমণ" দেখতে, "দরকারী অন্তর্দৃষ্টি" তৈরি করতে এবং "সঠিক ব্যক্তির কাছে আকর্ষক অভিজ্ঞতা সরবরাহ করা" সহায়তা করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের জ্যাক মার্শাল লিখেছেন যে, স্যুটটি অ্যাডোব, ওরাকল, সেলসফোর্স এবং আইবিএম সহ সংস্থাগুলি দ্বারা বিদ্যমান বিপণন ক্লাউডের প্রস্তাবগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে।
যৌথ কারবার এবং সংস্কৃতি
ফরচুন পত্রিকায় প্রকাশিত কাজ করার সর্বোত্তম কোম্পানির তালিকায় গুগল ২০০৭, ২০০৮ এবং ২০১২ সালে প্রথম স্থান অধিকার করে।। এছাড়া ২০০৯ এবং ২০১০ সালে চতুর্থ স্থান দখল করে।। ২০১০ সালে ইউনিভার্সাল কমিউনিকেশনস ট্যালেন্ট এট্রাকশান সূচকে বিশ্বের সকল কোম্পানির মধ্যে গুগল সবচেয়ে আকর্ষণীয় চাকুরিদাতা হিসেবে স্নাতকধারী শিক্ষার্থীদের কাছে মনোনয়ন পায়।। গুগলের কর্পোরেট নীতিতে- "তুমি কোনো খারাপ কাজ ছাড়াই টাকা কামাতে পারো", "কোনো স্যুট ছাড়াই তুমি গুরুতর হতে পারো" এবং "কাজ হতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে হবে মজাদার" ইত্যাদি প্রধান সারির আদর্শ রয়েছে।
কর্মী
২০১৩ সালে অধীনস্থ মোটরোলা কোম্পানিসহ সব মিলিয়ে গুগলে ৪৭,৭৫৬ জন কর্মী রয়েছে, যাদের মধ্যে ১০,০০০ হাজারেরও বেশি সফটওয়্যার ডেভেলপারগন রয়েছে ৪০টি অফিসে। ২০০৪ সালে কোম্পানিটি প্রথম শেয়ার বাজারে আসার পর এর প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন এবং ল্যারি পেজ এবং সিইও এরিখ স্কমিডট অনুরোধ করেন তাদের মূল বেতন যাতে এক ডলারে নামিয়ে আনা হয়। পরবর্তী সময়েও কোম্পানির
র তরফ থেকে তাদের বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারটি মানা করা হয়। কারণ প্রাথমিকভাবে তাদের মূল বেতন আসত গুগলের শেয়ার থেকে। ২০০৪ সালের আগেই স্কমিডট $২৫০,০০০ আয় করেন প্রতি বছর এবং পেজ ও ব্রিন প্রত্যেকেই বার্ষিক বেতন পেতেন $১৫০,০০০।
২০০৭ এবং ২০০৮ সালের শুরুর দিকে, বেশ কিছু উচ্চ নির্বাহী গুগল ছেড়ে যান। ২০০৭ সালের অক্টোবরে ইউটিউবের প্রাক্তন প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা গিডিওন ইউ ও উচ্চ পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বেঞ্জামিন লিং ফেসবুকে যোগ দেন। ২০০৮ সালের মার্চে শেরিল স্যান্ডবার্গ তারপর বৈশ্বিক অনলাইন বিক্রয় এবং পরিচালনার বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফেসবুকে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। একই সময়ে ব্র্যান্ড বিজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান অ্যাশ ইডিফ্রাউই নেটশপসে যোগ দেন। ২০১১ সালের, ৪ এপ্রিল ল্যারি পেজ সিইও এবং এরিখ স্কমিডট নির্বাহী চেয়ারম্যান হন। ২০১২ সালের জুলাইয়ে গুগলের প্রথম নারী কর্মী মারিসা মেয়ার গুগল ছেড়ে দিয়ে সিইও হিসেবে তে ইয়াহুতে যোগ দেন । ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুন্দর পিচাই গুগলের প্রধান কার্যনির্বাহী অফিসার বা সিইও নিযুক্ত হন।
প্রেষণার কৌশল হিসেবে গুগল তাদের নীতি "উদ্ভাবন সময়" ব্যবহার করত। যেখানে গুগল ইঞ্জিনিয়ারদের উৎসাহ দেয়া হত যেন তারা তাদের কাজের ২০% সময় ঐসব প্রকল্প কাজ করেন যে সকল প্রকল্পে তারা আগ্রহবোধ করেন। গুগলের কিছু নতুন সেবা যেমন জিমেইল, গুগল সংবাদ, অরকুট এবং এডসেন্স এই নীতির কারণে উদ্ভাবিত হয়েছিল। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আলোচনায় মারিসা মেয়ার জানান, তাদের ২০০৫ সালের দ্বিতীয়ভাগে নতুন উদ্ভাবিত পণ্যগুলোর অর্ধেকই এসেছে এই "উদ্ভাবন সময়" থেকে।
আর গুগল হচ্ছে প্রথম বড় প্রযুক্তি কোম্পানি যারা তাদের কর্মচারীদের বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করে। তাছাড়া, কর্মচারীদেরকে তাদের পোষা কুকুর অফিসে নিয়ে আসতে দেয়া হয়।
অন্যান্য পণ্য
মটো এক্স
২০১৩ সালের মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ডি১১ সম্মেলনে, মটোরোলা সিইও ডেনিস শুটিং ঘোষণা করেন যে, একটি নতুন মোবাইল ডিভাইস তার কোম্পানি দ্বারা নির্মিত হবে। এখানে উল্লেখ্য মটোরোলা সম্পূর্ণরূপে গুগল মালিকানাধীন । টেক্সাসের ৫০০,০০০ বর্গফুটের বিশাল এক জায়গাতে নতুন মোবাইল ডিভাইস তৈরি হবে। পূর্বে এই জায়গাটি নকিয়া কোম্পানি কর্তৃক ব্যবহৃত হতো । এখানে ২০০০ জনের চাকরি হবে।
আরও দেখুন
ইয়াহু!
জিমেইল
ল্যারি পেইজ
ইউটিউব
তথ্যসূত্র
গুগল
১৯৯৮-এ প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি
ওয়েবসাইট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানি
ওয়েবি পুরস্কার বিজয়ী
ওপেনকর্পোরেটসের জোট
১৯৯৮-এ প্রতিষ্ঠিত কম্পিউটার কোম্পানি
১৯৯৮-এ ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিষ্ঠিত
আলফাবেট ইনকর্পোরেটেড
১৯৯৮-এ কম্পিউটার সম্পর্কিত প্রবর্তন
১৯৯৮-এ প্রতিষ্ঠিত ইন্টারনেট সম্পত্তি
মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সদর দফতর বহুজাতিক কোম্পানি
সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরীয় অঞ্চল ভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানি
ওয়েব প্রবেশদ্বার
ওয়েব পরিষেবা প্রদানকারী
মার্কিন কর্পোরেট সহযোগী প্রতিষ্ঠান | https://en.wikipedia.org/wiki/Google | Google | Google LLC ( GOO-ghəl) is an American multinational corporation and technology company focusing on online advertising, search engine technology, cloud computing, computer software, quantum computing, e-commerce, consumer electronics, and artificial intelligence (AI). It has been referred to as "the most powerful company in the world" and is one of the world's most valuable brands due to its market dominance, data collection, and technological advantages in the field of AI. Google's parent company, Alphabet Inc., is one of the five Big Tech companies, alongside Amazon, Apple, Meta, and Microsoft.
Google was founded on September 4, 1998, by American computer scientists Larry Page and Sergey Brin while they were PhD students at Stanford University in California. Together, they own about 14% of its publicly listed shares and control 56% of its stockholder voting power through super-voting stock. The company went public via an initial public offering (IPO) in 2004. In 2015, Google was reorganized as a wholly owned subsidiary of Alphabet Inc. Google is Alphabet's largest subsidiary and is a holding company for Alphabet's internet properties and interests. Sundar Pichai was appointed CEO of Google on October 24, 2015, replacing Larry Page, who became the CEO of Alphabet. On December 3, 2019, Pichai also became the CEO of Alphabet.
The company has since rapidly grown to offer a multitude of products and services beyond Google Search, many of which hold dominant market positions. These products address a wide range of use cases, including email (Gmail), navigation (Waze & Maps), cloud computing (Cloud), web navigation (Chrome), video sharing (YouTube), productivity (Workspace), operating systems (Android), cloud storage (Drive), language translation (Translate), photo storage (Photos), videotelephony (Meet), smart home (Nest), smartphones (Pixel), wearable technology (Pixel Watch & Fitbit), music streaming (YouTube Music), video on demand (YouTube TV), AI (Google Assistant & Gemini), machine learning APIs (TensorFlow), AI chips (TPU), and more. Discontinued Google products include gaming (Stadia), Glass, Google+, Reader, Play Music, Nexus, Hangouts, and Inbox by Gmail.
Google's other ventures outside of internet services and consumer electronics include quantum computing (Sycamore), self-driving cars (Waymo, formerly the Google Self-Driving Car Project), smart cities (Sidewalk Labs), and transformer models (Google DeepMind).
Google and YouTube are the two most-visited websites worldwide followed by Facebook and X (formerly known as Twitter). Google is also the largest search engine, mapping and navigation application, email provider, office suite, online video platform, photo and cloud storage provider, mobile operating system, web browser, machine learning framework, and AI virtual assistant provider in the world as measured by market share. On the list of most valuable brands, Google is ranked second by Forbes and fourth by Interbrand. It has received significant criticism involving issues such as privacy concerns, tax avoidance, censorship, search neutrality, antitrust and abuse of its monopoly position. On August 5, 2024, D.C. Circuit Court Judge Amit P. Mehta ruled that Google held an illegal monopoly over Internet search. |
2667 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%A5%E0%A6%BF%20%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8 | টিমোথি গাওয়ার্স | টিমোথি গাওয়ার্স(পুরোনামঃ উইলিয়াম টিমোথি গাওয়ার্স) () (জন্ম ২০শে নভেম্বর, ১৯৬৩, উইল্টশায়ার, যুক্তরাজ্য) কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক। ১৯৯৮ সালে তিনি গণিতের সর্বোচ্চ সম্মান ফিল্ড্স পদক লাভ করেন।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
টিমোথি গাওয়ার্সের ওয়েবসাইট
১৯৬৩-এ জন্ম
ব্রিটিশ গণিতবিদ
ফিল্ডস পদক বিজয়ী
জীবিত ব্যক্তি
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী
ডি মর্গান পদক বিজয়ী
সিলভেস্টার পদক বিজয়ী
ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
নাইটস ব্যাচেলর
রয়েল সোসাইটির সভ্য
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষক
বিজ্ঞান ব্লগ-লেখক | https://en.wikipedia.org/wiki/Timothy_Gowers | Timothy Gowers | Sir William Timothy Gowers, (; born 20 November 1963) is a British mathematician. He is Professeur titulaire of the Combinatorics chair at the Collège de France, and director of research at the University of Cambridge and Fellow of Trinity College, Cambridge. In 1998, he received the Fields Medal for research connecting the fields of functional analysis and combinatorics. |
2670 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BF | লুঙ্গি | লুঙ্গি (হিন্দি: लुंगी, সিন্ধি: لنگی, তেলুগু: లుంగీ, ওড়িয়া: ଲୁଙ୍ଗି, কন্নড়: ಪನ್ಛಎ, মালয়ালম: ലുങ്കി, তামিল: லுங்கி) দেহের নিচের অংশে পরার একধরনের পোশাক, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমারে এর প্রচলন দেখা যায়। বঙ্গ লুঙ্গির উৎপত্তিস্থল। বাঙালি পুরুষের বাঙালি পুরুষদের সবচেয়ে প্রচলিত বস্র হচ্ছে লুঙ্গি। যদিও এক রঙের লুঙ্গিই বেশি জনপ্রিয় কিন্তু সাধারণত এটি বিভিন্ন নকশা এবং রঙে সুতায় বুনা হয়। নকশা ও রঙ ছাড়াও লুঙ্গির উপরে এবং নিচে সাদা বা কালো রঙের ডোরা কাটা দাগ থাকে। ধুতি চাদরের মত হলেও লুঙ্গি স্কার্টের মতন করে গোল করে সেলানো থাকে। বিভিন্ন সম্প্রদায় ভেদে লুঙ্গি পুরুষ ও মহিলা উভয়ই, বিভিন্নভাবে কোমরে বেঁধে পরে থাকে যা দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পরা হয়। দৈনন্দিন পরার ক্ষেত্রে লুঙ্গি সাধারণ দুই গেড়ো বাঁধন বেশি জনপ্রিয়, কারণ এতে লুঙ্গি খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। লুঙ্গি সাধারণত নিজের স্বস্তিপূর্ণভাবে পরা হয়, যাতে এর দৈর্ঘ্য সহজেই ঠিক করে নেওয়া যায়। যে সকল অঞ্চলে গরম এবং আর্দ্রতার কারণে ট্রাউজার পরিধান কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে সে সব অঞ্চলেই এটি পরা হয়।
লুঙ্গি অথবা লোঙ্গাই মায়ানমারের জাতীয় পোশাক হিসেবে স্বীকৃত।
উৎস
গবেষণায় দেখা গেছে, এর সূচনা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। ইতিহাসে উল্লেখিত আছে মসলিন কাপড়ের ভেস্তি পোশাক তামিল থেকে ব্যাবিলনে রপ্তানী হত। সময়ের সাথে, সাদা কাপড়ে ফুল এবং অন্যান্য নকশা চিত্রিত হয়ে পরবর্তীতে লুঙ্গিতে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে লুঙ্গি বাংলাদেশ, বার্মা, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোয় বেশি জনপ্রিয়।
আঞ্চলিক প্রভেদসমূহ
বাংলাদেশ
লুঙ্গি সাধারণতঃ বাংলাদেশী সকল সম্প্রদায়ের পুরুষদেরই পরতে দেখা যায়, যদিও এটি কোন বিশেষ অনুষ্ঠান বা দিনে পরা হয় না। বাংলাদেশে লুঙ্গি বেশিরভাগ পুরুষই দৈনন্দিন নিত্য ব্যবহার্য পোশাক হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। সুতায় নকশা করা, বাটিক করা অথবা সিল্কের লুঙ্গি কখনও কখনও বিয়ের উপহার হিসেবে বরকে দেওয়া হয়। কোন বিশেষ দিন উপলক্ষে শিক্ষক এবং মসজিদের ইমামদের লুঙ্গি উপহারের রীতি এখনও চালু আছে। যদিও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উপজাতীয় মহিলারা লুঙ্গির মত দেখতে একই রকম একটি পোশাক পরিধান করেন, তবে বাঙালি মহিলারা লুঙ্গি পরিধান করেন না। উপজাতীয়দের কাছে এ পোশাক থামি নামে পরিচিত। প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পুরুষের দৈনন্দিন পোশাক হিসেবে ধুতির পরিবর্তে লুঙ্গির জনপ্রিয়তা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোন কোন বাঙালি লুঙ্গি পরেন না, কারণ তারা মনে করেন লুঙ্গি খুবই অনানুষ্ঠানিক এবং মানানসই নয়, যদিও এটি আরামদায়ক এবং অনেকেই ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশে ধীরে ধীরে লুঙ্গির ব্যবহার কমে আসছে, কিন্তু তা এখনও বাংলাদেশের অধিকাংশ পুরুষের পরিচ্ছেদ পোশাক।
ভারত
ভারতের কেরালায় লুঙ্গি পুরুষ ও মহিলা উভয়েই পরে থাকেন। এটিকে খুবই অনানুষ্ঠানিক এবং দিনমজুরদের পোশাক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে লুঙ্গি সাধারণত রঙ্গিন এবং বিভিন্ন নকশা করা থাকে। সাদা রঙের নকশা ছাড়া লুঙ্গির সংস্করণকে মুন্ডু নামে ডাকা হয়। কোনো অনুষ্ঠানের (যেমন: বিয়ে) ক্ষেত্রে, মুন্ডুতে কখনো কখনো সোনালি সুতায় এমব্রয়ডারি করা থাকে যা কাসাভু নামে পরিচিত। লুঙ্গি সাধারণত বিয়ে বা অন্য কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরা হয় না। জাফরান রঙের মুন্ডু কাভি মুন্ডু নামে পরিচিত।
রঙ্গিন লুঙ্গিকে কর্ণাটকে ডাকা হয় মুন্ডা বলে। লুঙ্গির মত সাদা রঙের নকশা ছাড়া দুই ভাজের কাপড়কে ডাকা হয় পাঞ্চে বলে। পাঞ্চে যা লুঙ্গির বিপরীতে পরা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানসমূহে। অন্ধ প্রদেশেও এগুলো ব্যবহার করা হয়।
কেরালায় স্থানীয় পুরুষেরা সাধারণতঃ তাদের মুন্ডু ও লুঙ্গিকে গুটিয়ে পরেন। কাপড়ের নিচের অংশ ভাজ করে গুটিয়ে তুলে আবার কোমরে বাঁধা হয়। এভাবে পরলে মুন্ডু বা লুঙ্গি দিয়ে কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত ঢাকা থাকে। এ ধরনের কাপড় পরা অনেকটা ভাঁজ ছাড়া স্কটল্যান্ডের স্থানীয় ঘাগড়ার মত দেখা যায়।
তামিলনাডুয় শুধু পুরুষেরা লুঙ্গি পরিধান করেন এবং কেরালার লোকদের মত করেই ব্যবহার করেন। দক্ষিণ তামিলনাডুয় এটি কাইলি অথবা সারং/চারাং বলে ডাকা হয়। মুন্ডু মত ভেত্তি বা ভেস্তি যা আসলে ভারতীয় ধুতি কোমরে পেঁচিয়ে পরা হয়, যা লুঙ্গি ভেবে ভুল হতে পারে।
মায়ানমার
মায়ানমারে বার্মিজ ভাষায় লুঙ্গিকে লোঙ্গাই বলে ডাকা হয়। পুরুষের জন্য এটি ঘর থেকে কাজে জীবনের সর্বত্রই ব্যবহৃত হয়। সাধারণতঃ শুধু সৈনিকগণ পায়জামা পরেন এবং যে সকল যুবক পাশ্চাত্য চিন্তাধারায় মত্ত তারা বাড়িতে লোঙ্গাই পরে থাকেন। মহিলাদের জন্য এটি তামাইন (htamain) হিসেবে পরিচিত, যা খুবই জনপ্রিয়। বিভিন্ন সুতায় বোনা যেমন সুতি এবং সিল্কের লুঙ্গি বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক অনানুষ্ঠানিক সময়ে পরিধান করা হয়।
ইয়েমেন ও আরব অঞ্চল
ইয়েমেনে এ ধরনের পোশাককে মা' আউইস (Ma'awiis) ও "সারুন صارون" বলে ডাকা হয় এবং সকল বয়সের পুরুষই এ পোশাক পরিধান করেন।
এছাড়াও আরব অঞ্চলে এর যে সকল নাম প্রচলিত আছে তা হল ইযার বা ইজার (আরবি: إِزَار), ফুতাহ (فُوطَة), মা'আওয়াজ (مَعَوَز), উইজারাহ (وِزَرَة) ও মাক্বতাব (مَقْطَب)।
এর সঙ্গে তারা সাওব (ثَوْب) নামক জুব্বা পরিধান করেন, যা অধিকাংশ সময় সাদা রঙের হয়ে থাকে।
সোমালিয়া
সোমালিয়ায় মা' আউইস এর হুস গুনতি পুরুষদের পরিধেয়। এটি বয়োজ্জ্যেষ্ঠ পুরুষই বেশি পরে থাকেন যারা সাথে কুফি বারাওয়ে পরেন, এটি সাধারণতঃ অনেক সোমালীয় পরিধান করেন যখন বাড়ীতে অবসর সময় কাটান। এ পোশাকের ঐতিহ্যবাহী রঙ হচ্ছে সাদা নকশা ছাড়া, কিন্তু এশিয়ার প্রভাবে এবং সোমালিয়া মসলা রপ্তানীর পথিমধ্যে হওয়ায় এশিয়া বণিকদের ব্যবহৃত রঙ্গিন লুঙ্গির সাথে এ দেশের মানুষের পরিচয় ঘটে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশী পোশাক
স্কার্ট
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক
ভারতীয় পোশাক
এশীয় পোশাকের ইতিহাস
শ্রীলঙ্কান পোশাক | https://en.wikipedia.org/wiki/Lungi | Lungi | The lungi is a clothing similar to the sarong that originated in the Indian subcontinent. The lungi, which usually multicoloured, is a men's skirt usually tied around the lower waist below the navel. It can be worn as casual wear and night wear. It is favoured in hot and humid climates where the airflow it allows makes it more comfortable than alternatives.
|
2672 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C | নামাজ | নামাজ বা নামায () বা সালাত বা সালাহ () ইসলাম ধর্মের একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক। ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ।
সালাত একটি সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির ইবাদত যার পদ্ধতি ‘ইসলামী শরী‘আতে পরিপূর্ণভাবে বর্ণিত হয়েছে। নামাজ ‘তাকবিরে তাহরিমা’ দ্বারা শুরু হয় ও ‘সালাম ফিরানো’ দ্বারা শেষ হয়’।
নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন৷ নামাজ প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয়।
পবিত্র কুরআনের ১৭টি আয়াতে বলা হয়েছে সালাত প্রতিষ্ঠা করো।
শব্দতত্ত্ব
সালাত বা সালাহ ( , , অর্থ "প্রার্থনা", "দোয়া" বা "প্রশংসা") -এর আভিধানিক অর্থ দোয়া, রহমত, ক্ষমা প্রার্থনা করা ইত্যাদি। কোরআনে ইসলামী আনুষ্ঠানিক প্রার্থনা হিসেবে সালাত শব্দটিকেই ব্যবহার করা হয়েছে। আরবি ভাষায় অন্যান্য ধর্মেও এবং ধর্মনিরপেক্ষভাবে প্রার্থনা বা উপাসনা বোঝাতে সালাত শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
নামাজ () শব্দটি প্রাচীন ইরান বা পারস্যে প্রচলিত ইন্দো-ইরানীয় আদি আর্য ধাতুমূল নমস্ (নমস্কারও একই ধাতুমূল হতে উদ্ভূত) থেকে ইসলাম পরবতী মধ্যযুগীয় পারস্য বা ইরানে ইসলাম ধর্মের প্রসারের ফলে নিকটবর্তী আরব উপদ্বীপের আরব্য উচ্চারণশৈলীতে বিবর্তিত ও রূপান্তরিত হয়ে ফার্সি ভাষায় প্রবেশকৃত একটি ইসলামী পারিভাষিক শব্দ যা ইসলামী সালাতকে বোঝাতেই মুসলিম ফার্সি সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে, এবং কালক্রমে মোগল আমলে ব্যবহারক্রমে বাংলা ভাষায় পরিগৃহীত হয়েছে। আরবি ভাষার সালাত শব্দের (, কুরআনিক আরবি:صلاة,) ফারসি প্রতিশব্দ নামাজ, যা প্রায় বিগত এক হাজার বছর ধরে ইরানি ও তুর্কি মুসলিম শাসক ও ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ভাষার সাথে সাথে বাংলা ভাষাতেও ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। তুর্কিক ও স্লাভীয় ভাষাতেও নামাজ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
লাক ও আভার ভাষাতে, চাক () ও কাক () ব্যবহৃত হয়, সালাতের প্রতিশব্দ হিসেবে। মালয়শিয়ায় ও ইন্দোনেশিয়ায়, সোলাত পরিভাষাটি ব্যবহৃত হয়, পাশাপাশি স্থানীয় পরিভাষা, সেমবাহহ্যায়াং ও ব্যবহৃত হয় (অর্থ "উপাসনাকর্ম", সেমবাহ - উপাসনা, ও হ্যায়াং - ঈশ্বর বা দেবতা - শব্দ দুটি থেকে)।
কিছু মুসলিম আলেম মূল ইসলামী আরবী শব্দ "সালাত" (صَلاة)-এর ব্যবহারকে অধিক উৎসাহিত করে থাকেন, যুক্তি হিসেবে তারা বলেন, সালাত শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই শব্দটি বলার সময় প্রতি হরফে দশ নেকি করে চার হরফে মোট ৪০ নেকি সাওয়াব পাওয়া যাবে, যা নামাজ বা অন্যান্য অ-কুরআনীয় প্রতিশব্দ উচ্চারণে পাওয়া যাবে না। কুরআনীয় শব্দ বলায় প্রতি হরফে দশ নেকির ক্ষেত্রে তারা ইসলামী নবী মুহাম্মাদের উক্ত হাদীসটি পেশ করেন,
উক্ত হাদীসের মান নিয়ে বক্তব্য:
ইতিহাস
ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনা অনুযায়ী মুহাম্মাদ (সাঃ) ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন এবং অব্যবহিত পরে
আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল ও সন্ধ্যায় দৈনিক দুই ওয়াক্ত নামাজ মুসলিমদের জন্য ফরজ (আবশ্যিক) হওয়ার নির্দেশনা লাভ করেন। তিনি ৬১৪ খ্রিষ্টাব্দে সকাল, সন্ধ্যা ও দুপুরে দৈনিক তিন ওয়াক্ত নামাজের আদেশ লাভ করেন। ৬১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে রজব তারিখে মিরাজের সময় পাঁচওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, এ সময় যোহর, আসর ও ইশা ২ রাকাত পড়ার বিধান ছিল। ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে আল্লাহর তরফ থেকে ২ রাকাত বিশিষ্ট যুহর, আসর ও ইশাকে ৪ রাকাতে উন্নীত করার আদেশ দেয়া হয়।
শর্ত
কারো উপর নামাজ ফরজ বা অবশ্যকরণীয় হওয়ার জন্য শর্তগুলো হলো:–
মুসলিম হওয়া;
সাবালক হওয়া
সুস্থ মস্তিষ্কের (মানুষ) হওয়া।
নিম্নের পাঁচটি কারণ সংঘটিত হলে নামাজ বৈধ হয়।
নামাজের ওয়াক্ত সম্পর্কে নিশ্চিত হলে। অনিশ্চিত হলে নামাজ হবে না, যদি তা ঠিক ওয়াক্তেও হয়।
কাবামুখী হয়ে দাঁড়ানো। তবে অসুস্থ এবং অপারগ ব্যক্তির জন্য এই শর্ত শিথিলযোগ্য।
সতর ঢাকা থাকতে হবে। পুরুষের সতর হল নাভির উপর থেকে হাঁটুর নিচ (টাখনুর উপরে) পর্যন্ত, আর নারীর সতর হল মুখমণ্ডল, দুই হাতের কব্জি ও দুই পায়ের পাতা ব্যতীত সারা শরীর।
পরিধেয় কাপড়, শরীর ও নামাজের স্থান পরিষ্কার বা পাক-পবিত্র হতে হবে।
অযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।
নামাজ কবুল হওয়ার শর্ত
ঈমান-আকীদা সহীহ শুদ্ধ হওয়া
শিরকমুক্ত হওয়া
বিদআতমুক্ত হওয়া
মুনাফেকীমুক্ত হওয়া
হারাম উপার্জন বর্জন করা
সৃষ্টির ফরজ হক্ক (হাক্কুল ইবাদ) আদায় করা ও বান্দার হক্ক নষ্ট না করা
নিয়ম
নামাজের প্রধান ধাপগুলোকে 'রাকাত' বলা হয়। নামাজ দুই বা তিন বা চার রাকাত হতে পারে। ইসলামের বিভিন্ন সম্প্রদায়ে নামাজ পড়ার রীতিতে কিছু পার্থক্য রয়েছেঃ শিয়া ও সুন্নি পার্থক্য পাশাপাশি সুন্নিদের মধ্যে মাজহাবী পার্থক্য ও লা মাজহাবী তথা আহলে হাদীস বা সালাফী পার্থক্য।বিভিন্ন আলেমদের মতানুসারে, পার্থক্যসমূহ মূলত নামাজের মুস্তাহাব(ঐচ্ছিক) বিষয়াবলিতে।
নামাজ আরবিতে পড়ার কারণ
আহমেদ হুসাইন শরীফ তার "হোয়াই প্রে ইন এরাবিক" (নামাজ কেন আরবিতে পড়া হয়?) বইতে আরবিতে নামাজ পড়ার পেছনে যে সকল কারণ বলেছেন তা হল,
আরবি হল একটি গভীর ও বিস্তৃত ভাষা
নামাজের জন্য একটি সাধারণ ও সার্বজনীন ভাষা
(আরবির মাধ্যমে) ইসলামী ভ্রাতৃত্বে সংযোগ স্থাপন।
কুরআন হল আল্লাহর সৃজনকর্ম
কুরআনের পূর্নাঙ্গ ও পরিপূর্ণ অনুবাদ করা অসম্ভব
কুরআনই একমাত্র (ঐশীভাবে) সংরক্ষিত ওহী
কুরআনের নিজস্ব ছন্দ রয়েছে
দোয়া এবং নামাজের পার্থক্য হলোঃ দোয়া হল আমন্ত্রণ বা মিনতি, যা ঐচ্ছিক, তাই তা শিথিল এবং তা যে কোন ভাষায় করা যায়, আর নামাজ হলো প্রার্থনা, যা বাধ্যতামূলক ও তার নীতিমালা কঠোর, এছাড়া জামাতে ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে মুসলিমদের সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত রাখারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে, একারণে নামাজ শুধু আরবিতে পড়তে হয়।
আরবি নামাজ বুঝতে শেখা কঠিন কিছু নয় এবং তা সহজ।
পরিশেষে তিনি বলেন, "এইভাবে আমরা দেখতে পাই যে, নামাজের মাধুর্য, মর্যাদা, সৌন্দর্য এবং আধ্যাত্মিকতা মূল আরবীতে নামাজ পড়ার উপর নির্ভর করে; এবং যদি অনুবাদে নামাজ পড়া হয়, তবে কুরআনের সাহিত্যিক এবং শৈল্পিক মূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বাধ্য; এবং অনূদিত নামাজের ফলে সর্বপ্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হবে ইসলামী ভ্রাতৃত্ব।"
সুন্নি হানাফি নিয়ম
নামাজের প্রধান ধাপগুলোকে 'রাকাত' বলা হয়। নামাজ দুই বা তিন বা চার রাকাত হতে পারে। ইসলামের বিভিন্ন মাযহাবে নামাজ পড়ার রীতিতে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। তবে মূল আঙ্গিক অভিন্ন।
প্রথমে দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে নামাজ শুরু করতে হয়। তারপর সানা পড়তে হয়। সানা কেবল প্রথম রাকাতে পাঠ করতে হয়। প্রতি রাকাতে প্রথমে সুরা ফাতিহা ও অপর একটি সুরা বা অংশ বিশেষ পাঠ করতে হয়।
এরপর রুকু করতে হয় অর্থাৎ হাঁটুতে হাত রেখে ভর দিয়ে পিঠ আনুভূমিক করে অবনত হতে হয়। রুকু থেকে দাঁড়িয়ে ছোটো একটা বিরতি দিয়ে সিজদা করতে হয়। সিজদা দুুইবার করতে হয়, আর দুটি সিজদার মাঝে ছোট্ট একটা বৈঠক করতে হয়। ঠিক একই ভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত সম্পূর্ণ করতে হয়।
দুই রাকআত নামাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতের দুই সিজদা সম্পূর্ণ করার বসে যথাক্রমে "আত্তাহিয়াতু (তাশাহুদ)" ও "দরূদ শরীফ" ও "দোয়া মাসুরা" পড়তে হয়। অতঃপর প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।
তিন বা চার রাকাতের নামাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদার পর বসে তাশাহুদ ("আত্তাহিয়াতু") দোয়া পড়তে হয় এবং পাঠ শেষে দাঁড়িয়ে উঠে তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত পড়তে হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে ফরজ নামাজে শুধু সূরা ফাতিহা পড়তে হয়। শেষ রাকাতের দুই সিজদা সম্পূর্ণ করার বসে যথাক্রমে "আত্তাহিয়াতু (তাশাহুদ)" ও "দরূদ শরীফ"ও "দোয়া মাসুরা" পড়তে হয়। অতঃপর প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হয়।
আহলে হাদীস/সালাফি পার্থক্য
নামাজের নিয়মে মাজহাব বা ইমাম বা আলেমের তাকলিদ না করে সহীহ হাদীস অনুসরণ করা
নামাজের নিয়তে নির্দিষ্ট কোন দোয়া না পড়া
নামাজে নাভির উপরে/বুকের উপর হাত বাধা
সশব্দে আমীন বলা
রুকুর আগে ও পরে এবং সিজদার আগে তাকবীরে হাত তোলা
সিজদায় যাওয়ার সময় পায়ের আগে হাত রাখা
সেজদা থেকে উঠে দাড়ানোর সময় হাতে ভর করে ওঠা
তাশাহুদে তর্জনী আঙ্গুল ক্রমাগত নাড়ানো
সিজদা সাহু নামাজ শেষে সালাম ফেরানোর পর করা
তিন রাকাত বিতরে দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠকে না বসা
বিতরের নামাজে প্রচলিত হানাফি দোয়ায় কুনুতকে কুনুতে নাজেলা বা বিপদকালীন কুনুত দাবি করে তা বিপদ ছাড়া নিয়মিত না পড়া এবং সিহাহ সিত্তাহসহ সুন্নি হাদীসে বর্নিত অন্যান্য কুনুত পড়া
বিতর নামাজকে ওয়াজিব বলার ক্ষেত্রে কোন কোন আহলে হাদীস আলেমের ভিন্নমত পোষণ করা
ফরজ নামাজ শেষে সম্মিলিত মুনাজাত না করা
জুম্মার নামাজের খুতবার পূর্বে বা মসজিদে প্রবেশের সাথে সাথে সুন্নত পড়া ও তা চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত পড়া
মাগরিবের ফরজ নামাজের আগে মসজিদে প্রবেশের পর দুইরাকাত সুন্নত নামাজ পড়া বা পড়তে উৎসাহিত করা
অনারব দেশসমূহে জুম্মার নামাজে জনগণের বোধগম্য ভাষায় শুধুমাত্র একটি খুতবা দেওয়া, আলাদাভাবে আরবিতে খুতবা না দেওয়া
নামাজের ফরজ
নামাজের ফরজ মোট ১৩টি। আহকাম ৭ টি। আরকান ৬ টি। নামাজের বাহিরের কাজগুলিকে আহকাম বলে। আর নামাজের ভিতরের কাজগুলোকে আরকান বলে।
আহকাম
শরীর পবিত্র হওয়া।
কাপড় বা বস্ত্র পবিত্র হওয়া।
নামাজের জায়গা পবিত্র হওয়া।
সতর ঢেকে রাখা।
কিবলামুখী হওয়া।
ওয়াক্তমত নামাজ আদায় করা
নামাজের নিয়্যত করা।
আরকান
তাকবীরে তাহরীমা (আল্লাহু আকবার) বলে নামাজ শুরু করা।
দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।
সুরা ফাতিহার সাথে কুরআন পড়া।
রুকু করা।
দু্ই সিজদা করা।
শেষ বৈঠক করা।
ওয়াক্ত ও রাকাত
প্রতিদিন একজন মুসলিমকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হয়। প্রথম ওয়াক্ত হল "ফজর নামাজ" সুবহে সাদিক হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত এর ব্যপ্তিকাল। এরপর "যুহর ওয়াক্ত" বেলা দ্বিপ্রহর হতে "আসর ওয়াক্ত"-এর আগ পর্যন্ত যার ব্যপ্তি। তৃতীয় ওয়াক্ত "আসর ওয়াক্ত" যা সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। চতুর্থ ওয়াক্ত হচ্ছে "মাগরিব ওয়াক্ত" যা সূর্যাস্তের ঠিক পর পরই আরম্ভ হয় এবং এর ব্যপ্তিকাল প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট। "মাগরিব ওয়াক্ত" এর প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট পর আরম্ভ হয় "ইশা ওয়াক্ত" এবং এর ব্যপ্তি প্রায় "ফজর ওয়াক্ত"-এর আগ পর্যন্ত।
উপর্যুক্ত ৫ টি ফরজ নামাজ ছাড়াও ইশা'র নামাজের পরে বিতর নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি সুন্নত নামাজ ও মুসলিমরা আদায় করে থাকে।
কোন ওয়াক্ত-এর নামাজ কয় রাকাত তা দেয়া হল :
১ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) প্রতিদিন এ নামাজগুলো পড়তেন।
২শুক্রবারে জুমার নামাজ যোহরের নামাজের পরিবর্তে পড়তে হয়
এশার নামাজ আদায় করার পর বেজোড় সংখ্যক রাকাত বিতর এর ওয়াজিব নামাজ আদায় করতে হয়।
আয়াতসমূহ
অন্যান্য নামাজ
নামাজের মধ্যে মূল হলো ফরয নামাজ ৷ এই ফরজ নামাজ ছাড়াও মুসলমানগণ আরো কিছু নামাজ আদায় করে থাকেন। আবশ্যকীয়তার স্তরভেদে সেগুলোকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়ে থাকে। তবে শ্রেণিবিভাগ অনুসারে ফরয ছাড়া বাকি নামাজগুলোকে ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল এই তিনভাগে ভাগ করা যায়।
ওয়াজিব নামাজ
অধিকাংশ আলেমের মতে, নিয়মিত ওয়াজিব নামাজ হচ্ছে বিতর নামাজ, তবে বিতর নামাজকে সমস্ত মাযহাবে ওয়াজিব নামাজ হিসেবে গন্য করা হয় না। যেমন সালাফি আলেমগণের মতে এটি সুন্নত নামাজের অন্তর্ভুক্ত। প্রত্যেকদিন এশার নামাজের পর হতে সুবহে সাদিক পর্যন্ত এই ওয়াজিব নামাজের সময় থাকে। এছাড়া কোন নফল নামাজের নিয়ত করে নামাজ শুরু করলে তা আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়। এছাড়া দুই ঈদের নামাজ আদায় করাও ওয়াজিব ।
সুন্নাত নামাজ
নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) যেই নামাজগুলো আদায় করতেন, তাকে সুন্নাত নামাজ বলে। সুন্নাত নামাজ দুই প্রকার। ১. সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ ২. সুন্নাতে যায়েদাহ
সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ বলতে ঐসব নামাজকে বুঝায়, যেগুলো নবী (সা:) নিয়মিত আদায় করতেন। কখনো পরিত্যাগ করতেন না ৷
সুন্নাতে যায়েদাহ বলতে বুঝায়, ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (সা:) যেসব সুন্নাত নিয়মিত আদায় করতেন না। বরং প্রায় সময় আদায় করতেন ৷
নফল নামাজ
নফল নামাজ হলো এক প্রকার ঐচ্ছিক নামাজ। নামাজের নিষিদ্ধ সময় ব্যতিত অন্য যেকোন সময়ে তা আদায় করা যায় ৷
বিভিন্ন প্রকারের নফল নামাজ আদায়ের প্রমাণ হাদিস সমূহে বর্ণিত আছে।
নফল নামাজ সমূহ সাধারণত ২ রাকাত করে আদায় করতে হয়। তবে চার রাকাত করেও আদায় করা যায় ৷
জানাযার নামাজ
জানাযা একটি বিশেষ প্রার্থনা যা কোনো মৃত মুসলমানকে কবর দেয়ার পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামের পরিভাষায় এটি জানাযার নামাজ নামে অভিহিত হয়। মুসলমান অর্থাৎ ইসলাম ধর্মামলম্বীদের জন্য এটি ফরযে কেফায়া ৷ সমাজের মুসলমানদের জন্য আবশ্যকীয় দায়িত্ব হলো কোনো মুসলমানের মৃত্যু বরণ করলে তাকে দাফন করার পূর্বে অবশ্যই জানাযার নামাজ আদায় করতে হবে। তবে কোনো এলাকা বা গোত্রের পক্ষ থেকে কয়েকজন আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায়।
জানাযার নামাজ একজন ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সাথে দলবদ্ধভাবে হয়। অংশগ্রহণকারীরা কাতারবদ্ধ বা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে এ নামায আদায় করেন। এটি ৪ তকবিরের সাথে আদায় করতে হয়। দাঁড়িয়ে এ নামাজ আদায় করতে হয় ৷ জানাযা শেষে মৃতব্যক্তিকে অবিলম্বে গোরস্থানে নিয়ে যেতে হয় এবং ইসলামী রীতিতে কবর তৈরী করে দাফন করতে হয়।
জানাজা নামাজের নিয়ম
ইসলামের বিধান অনুসারে—প্রথমে দাড়িয়ে এই নিয়ত করতে হয় যে, "আমি এই ইমামের পিছনে চার তাকবিরের সাথে জানাজার ফরজে কিফায়া নামাজ আদায় করিতেছি "৷
এরপর আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দিবে ৷ প্রথম তাকবিরের পর "সানা" পড়বে ৷ দ্বিতীয় তাকবিরের পর "দুরুদ শরীফ" ও তৃতীয় তাকবিরের পর "জানাজার দোয়া" পড়বে ৷ এরপর চতুর্থ তাকবিরের পর সালাম ফিরাবে ।
সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণের নামাজ
ইসলামে নামাজের গুরুত্ব
নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকন মধ্যে দ্বিতীয় রোকন৷ এ বিষয়ে ইবনে ওমর রাঃ বলেন, আমি রাসুল (সঃ) কে বলতে শুনেছি— ইসলামের মূল ভিত্তি পাঁচটি , "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" এর সাক্ষ্য প্রদান করা, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, রমজান মাসের রোজা পালন করা এবং সামর্থ থাকলে হজ্বব্রত পালন করা ৷ (সহিহ মুসলিম; কিতাবুল ইমান) অপর হাদিসে রাসুল (সঃ) বলেছেন, দ্বীনের মূল বিষয় হলো ইসলাম, এবং মূল স্তম্ভ হলো নামাজ, আর তার সর্বোচ্চ চূড়া হলো জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ৷ (সহিহ মুসলিম, তিরমিযী, মুসনাদে আহমাদ)। অন্য আরেক হাদিসে এসেছে– আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি আল্লাহ্র রসূল (সঃ)-কে বলতে শুনেছেন, বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তাঁর দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তাঁর দেহে কোনরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহ্র রসূল (সঃ) বললেন: এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদহারণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা বান্দার গুনাহসমুহ মিটিয়ে দেন। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫২৮)
কুরআন বলে, নামাজ অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত রাখে। কুরআনে রয়েছে,
নামাজ পড়ার নির্দেশ
নামাজের পুরস্কার
নামাজ না-পড়ার বা নামাজে অবহেলার জন্য বিধান
কুরআনে বর্ণিত নামাজ তরককারীর শাস্তির কথাগুলো মানুষ জানতে পারলে নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতে নিয়োজিত রাখবে। তাই কুরআনে ঘোষিত বেনামাজির শাস্তির কথাগুলো তুলে ধরা হলো-
আল্লাহ তাআলা বলেন,
বেনামাজির অবস্থান হবে সাকার নামক জাহান্নাম। আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতিটি কাজের হিসাব নেবেন। আর প্রতি কাজের হিসাব দিতে না পারলে শাস্তি অবধারিত। শাস্তি প্রাপ্ত মানুষকে তাদের অপরাধে কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তারা তাদের অপরাধগুলোও বলতে থাকবে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে সে কথা তুলে ধরেন এভাবে-
যথাযথভাবে নামাজ না পড়ার শাস্তিযারা মোটেও নামাজ পড়ে না বা পড়লেও করে অবহেলা ও অলসতা। অথবা নামাজে দেরি করে। লোক দেখানো নামাজ পড়ে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-
হাশরের ময়দানে যেসব বেনামাজি অপমানিত হবে।দুনিয়াতে যারা যথাযথভাবে নামাজ আদায় করবে, পরকালে তারা আল্লাহর নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে সেজদায় লুটিয়ে পড়বে। আর যারা দুনিয়াতে যথাযথভাবে নামাজ পড়বে না, লোক দেখানো কিংবা সুনাম লাভের আশায় নামাজ পড়তো তারা সে দিন সেজদা করতে পারবে না। বরং তারা হবে অপমানিত ও লাঞ্ছিত। আল্লাহ তাআলা বলেন-
নামায পরিত্যাগকারীর হুকুম
যে ব্যক্তি নামাযকে অবহেলা করে নামায পরিত্যাগ করে, এর ফরয অস্বীকার করে, জেনেও যে আল্লাহ তা আদায় করতে আদেশ করেছেন, তাহলে উম্মতের ঐক্যমতের দ্বারা সে মুরতাদ এবং কাফের। যে কেউ এর অস্তিত্ব সম্পর্কে অজ্ঞতা থেকে এটি ত্যাগ করে, যে ইসলামে নতুন, তাকে কাফের বলে বিবেচনা করা হয় না, তবে তাকে শিক্ষা দেওয়া হয় এবং আদেশ করা হয়। ইবনে আবদ আল-বার বলেন: মুসলমানরা সর্বসম্মতভাবে একমত যে, যে ব্যক্তি সালাতের ফরজ অস্বীকার করে সে কাফের এবং সে তার কুফর থেকে তওবা না করলে তাকে হত্যা করা হবে।
নিচের টেবিলে নামাজকে অবজ্ঞা বা সাধারণভাবে নামাজ পরিত্যাগকারীদের হুকুম বর্ণনা করা হলো:
ইবনে উসাইমিনের মতে, সালাত আদায়কারী মুসলিম নারীর সাথে বেনামাযীর বিয়ে দেওয়া নাজায়েয। তার অভিভাবকত্ব বিলুপ্ত, তার জবাহকৃত গোশত খাওয়া নাজায়েয, সে তার কোনো আত্মীয়ের সম্পত্তির অংশ পাবে না। তেমনি তার আত্মীয়গণও তার থেকে কোনো অংশের অধিকারী হবে না, মারা গেলে তার জানাযা আদায় করা যাবে না, তার ক্ষমা ও করুণার জন্য দো‘আ করা যাবে না, মুসলিমদের কবরস্থানে দাফন করা হবে না এবং সে দীনী ভাই হিসেবে গণ্য হবে না, বরং তার থেকে বিমুখ হওয়া ও তার সাথে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ছিন্ন করা ওয়াজিব। বেনামাযীকে কবরে শাস্তি দেওয়া হবে, যেমন সহীহ বুখারীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক স্বপ্নের বর্ণনায় রয়েছে: “তিনি চিৎ অবস্থায় শায়িত এক ব্যক্তির নিকট আসলেন, এমতাবস্থায় একটি পাথর হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে অন্য একজন, অতঃপর সে উক্ত পাথর দিয়ে তার (শায়িত ব্যক্তির) মাথায় আঘাত করছে, যার ফলে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে, পাথরটি ছিটকে দূরে চলে যাচ্ছে, পুনরায় সে দৌড়ে গিয়ে পাথরটি নিয়ে ফিরা মাত্র উক্ত ব্যক্তির মাথা পূর্বের ন্যায় ঠিক হয়ে যাচ্ছে। পুনরায় ঐ ব্যক্তি আপন স্থানে ফিরে তাকে ঐ ভাবেই (শাস্তি) দিচ্ছে যেভাবে প্রথমবার দিয়েছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন তখন দুই ফিরিশতা তাঁকে অবহিত করেন যে, এতো ঐ ব্যক্তি যে কুরআন পড়ত, কিন্তু তার প্রতি আমল করত না এবং ফরয সালাত ছেড়ে ঘুমাত।
নামায ভঙ্গের কারণ
১. নামাযে অশুদ্ধ পড়া।
২. নামাযের ভিতর কথা বলা।
৩. কোন লোককে সালাম দেওয়া।
৪. সালামের উত্তর দেওয়া।
৫. উহঃ আহঃ শব্দ করা।
৬. বিনা উযরে কাশি দেওয়া।
৭. আমলে কাছীর করা।
৮. বিপদে কি বেদনায় শব্দ করিয়া কাদা।
৯. তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় সতর খুলিয়া থাকা।
১০. মুক্তাদি ব্যতীত অপর ব্যক্তির লুকমা নেওয়া।
১১. সুসংবাদ ও দুঃসংবাদের উত্তর দেওয়া।
১২. নাপাক জায়গায় সিজদা করা।
১৩. ক্বিবলার দিক হইতে সীনা ঘুরিয়া যাওয়া।
১৪. নামাযে কুরআন শরীফ দেখিয়া পড়া।
১৫. নামাযে শব্দ করিয়া হাসা।
১৬. নামাযে দুনিয়াবী কোন কিছুর প্রার্থনা করা।
১৭. হাচির উত্তর দেওয়া
(জওয়াবে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলা)।
১৮. নামাযে খাওয়া ও পান করা।
১৯. ইমামের আগে মুক্তাদি দাড়ানো বা খাড়া হওয়া।
নামাজ মাকরূহ হওয়ার কারণ
১। পেশাব পায়খানার চাপ অনুভব করার পর তা নিয়ে নামাজ আদায় করলে নামায মাকরুহ হবে।
২। নামাজের মধ্যে শরীরের কাপড় বা অন্য কোন জিনিস নাড়াচাড়া করলে নামাজ মাকরুহ হবে।
৩। দাঁড়িয়ে অহেতুক হাত লাগানো বা ধূলা ইত্যাদি পরিষ্কার করা।
৪। ধুলাবালি হতে কাপড় পরিষ্কার রাখার জন্য সতর্কতার সাথে নামাজের রুকুন আদায় করা।
৫। নামাজে নিম্ন মানের পোশাক পরিধান করা। যে পোশাক পরে সাধারণত কোনো মজলিস বা অনুষ্ঠানে যেতে পছন্দ করে না।
৬। নামাজের মধ্যে কনুই পর্যন্ত খোলা রাখা।
৭। নামাজের মধ্যে পুরুষের মাথার চুল বেঁধে রাখা।
৮। নামাজের মধ্যে আঙ্গুল ফোটানো।
৯। নামাজের মধ্যে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে নামাজ মাকরুহ হবে।
১০। নামাজের মধ্যে ঘাঁড় ফিরিয়ে তাকানো। যদি ঘাড় কাবার দিক হতে ঘুরে যায় তবে নামাজ ভেঙে যাবে।
১১। নামাজের মধ্যে বিনা কারণে চোখ বাঁকিয়ে তাকানো।
১২। মহিলাদের উভয় পা খাড়া করে বসা।
১৩। শুধু কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে সিজদা করা।
১৪। সিজদার মধ্যে পুরুষের উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মাটিতে বিছিয়ে রাখা।
১৫। এক তাসবীহ পরিমাণ পা মাটিতে রাখার পর বিনা কারণে এক পা উঠিয়ে রাখা; বা সেজদার মধ্যে দুই পা উপরে উঠিয়ে রাখা।
১৬। হাত বা পায়ের আংগুল সমূহ কিবলার দিক হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখা।
১৭। নামাজের মধ্যে ইচ্ছাকৃত হাই তোলা।
১৮। চোখ বন্ধ করে নামাজ পড়া।
১৯। বিনা কারণে নামাজের মধ্যে থুতু ফেলা।
২০। হাত কিংবা মাথার ইশারায় সালামের জবাব দেওয়া।
২১। রুকুর মধ্যে হাঁটুতে হাত না রাখলে নামাজ মাহরুহ হবে।
২২। উভয় সেজদার মাঝের বৈঠকে বা প্রথম বৈঠক বা শেষ বৈঠকে উরুর উপর হাত না রাখা।
২৩। নামাজের মধ্যে ইচ্ছাকৃত সুন্নতের খেলাফ কাজ করা এবং অহেতুক নামাজের মধ্যে মশা, পিঁপড়া বা উকুন মারা।
২৪। পয়সা বা এই জাতীয় কোন কিছু মুখের ভেতর রেখে নামাজ পড়া।
২৫। নামাজের মধ্যে ইচ্ছা করে গন্ধ বা ঘ্রাণ নেয়া।
২৬। পরিধান করা পোশাক বা পাখা দিয়ে বাতাস করা।
২৭। মুখমন্ডল ঢেকে রেখে নামাজ আদায় করলে সালাত মাকরুহ হবে।
২৮। নিজের পরিধান করা কাপড় বা চাদর এমন ভাবে জড়িয়ে নামাজ আদায় করা যেন তা থেকে হাত বের করতে অনেক কষ্ট হয়।
২৮। পাগড়ির উপর সেজদা করলে নামাজ মাকরুহ হবে।
২৯। জামা ব্যবহার করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও শুধু লুঙ্গি বা পায়জামা পরিধান করে নামাজ পড়া।
৩০। দুই কাঁধে চাদর বা কাপর পেঁচিয়ে নামাজ আদায় করা।
৩১। প্রাণীর ছবি যুক্ত পোশাক পরে নামাজ আদায় করা।
৩২। লোভনীয় খাবার মজুদ রেখে নামাজ আদায় করা।
৩৩। জলন্ত আগুন সামনে রেখে নামাজ আদায় করা।
৩৪। যে জায়গায় নামাজ আদায় করলে নামাজের ভিতরে অন্য মনস্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেখানে নামায পড়া।
৩৫। কারো যায়গায় তার অখুসি বা বাধা সত্ত্বেও নামাজ আদায় করা।
৩৬। নাপাক স্থানের পাশে দাড়িয়ে নামাজ পড়া।
৩৭। বায়তুল শরীফের ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা।
৩৮। বিনা কারণে উঁচু বা নিচু জায়গায় সেজদা করা।
৩৯। বিনা কারণে নামাজে কোন কিছুর সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা।
৪০। সামনের কাতারে জায়গা থাকার পরও পিছনের কাতারে দাঁড়িয়ে একা একা নামাজ পড়া।
৪১। রুকু সিজদা সহ নামাজের কোনো আমলে মুক্তাদী ইমামের আগে চলে গেলে তা মাকরুহ তাহরীমী হবে।
৪২। নামাজের মধ্যে আঙ্গুল দিয়ে সুরা আয়াত বা তাসবিহ গণনা করা যাবেনা। এতে মাকরুহ হবে।
৪৩। প্রথম রাকাতের চেয়ে দ্বিতীয় রাকাত লম্বা করা।
৪৪। ফরজ নামাজের একই রাকাতে কোন সূরা বা আয়াত বার বার পাঠ করা।
৪৫। কিয়ামের হালতে সূরা শেষ না করে, রুকুতে গিয়ে ও তার কিছু অংশ তেলাওয়াত করা।
৪৬। কোনো রাকাতের জন্য কোনো সূরাকে এমন ভাবে নির্দিষ্ট করা, যে কেউ উক্ত সূরা ছাড়া নামাজ আদায় করে না।
৪৭। ফরজ নামাজে কুরআনের ধারাবাহিক নিয়ম বজায় না রেখেই কেরাত পড়া।
আরও দেখুন
নামাজের নিয়মাবলী
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নামাজ/সালাত সম্পাদন পদ্ধতি, (বই) - মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানীর বই
ফরজ নামাজ
জামাআতের নামাজ
রোযা
মেরাজ
টীকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি (বাংলা অনুবাদ) - মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (অনলাইনে ইউনিকোডে সম্পূর্ণ বই)
স্বলাতে মুবাশশির - আব্দুল হামিদ ফাঈযী
ছালাতুর রাসূল (সাঃ) - মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
- জ্বাল হাদীসের কবলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ছালাত - মুজাফফর বিন মহসিন
চেয়ারে বসে সালাত আদায় - ইসলামহাউজ.কম
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ
নামাজ
প্রার্থনা
ইসলামি পরিভাষা | https://en.wikipedia.org/wiki/Salah | Salah | Salah (Arabic: ٱلصَّلَاةُ, romanized: aṣ-Ṣalāh) is the principal form of worship in Islam. Facing Mecca, it consists of units called rak'ah (specific set of movements), during which the Quran is recited, and prayers from the Sunnah are typically said. The number of rak'ah varies from prayer to prayer. Minor details of performing salah may differ according to the madhhab (school of Islamic jurisprudence) of the person performing it.
Salah may refer to the form of worship in general, or specifically to the daily obligatory prayers performed by Muslims, observed three or (most commonly) five times a day. The obligatory prayers play an integral part in the Islamic faith, being the second and the most important pillar (After Shahadah) from the Five Pillars of Islam for Sunnis, and one of the Ancillaries of the Faith for Shiites. In addition, supererogatory salah may be performed by Muslims at any time with a few exceptions, or at specific times in accordance with the Sunnah.
Wudu (Ritual Purity) is a must prerequisite for performing salah. Muslims may perform salah alone or in congregation. Some of these prayers are special and are exclusively performed in congregation, such as the Friday salah and Eid prayers, both are performed with a khutbah (sermon). Some concessions are made for Muslims who are physically unable to perform the salah in its original form, or are travelling.
|
2673 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B9%E0%A7%80%20%28%E0%A6%95%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%BE%29 | বিদ্রোহী (কবিতা) | বিদ্রোহী কবিতা কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতাসমূহের মধ্যে একটি। ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি, বিজলী পত্রিকায় কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এরপর কবিতাটি মাসিক প্রবাসী পত্রিকার মাঘ ১৩২৮ সংখ্যায়, মাসিক সাধনা বৈশাখ ১৩২৯ সংখ্যায় ও ধূমকেতুতে (২২ আগস্ট ১৯২২) ছাপা হয়। প্রকাশিত হওয়া মাত্রই এটি ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি করে। দৃপ্ত বিদ্রোহী মানসিকতা এবং অসাধারণ শব্দবিন্যাস ও ছন্দের জন্য আজও বাঙালি মানসে কবিতাটি "চির উন্নত শির" বিরাজমান। <ref name="Prothomalo">প্রথম আলো পত্রিকা </ref>
কবিতাটির প্রথম প্রকাশ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।প্রাণতোষ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, '''বিদ্রোহী কবিতা বিজলীতে প্রকাশেরও আগে মোসলেম ভারতে প্রকাশিত হয়।
ইতিহাস ও পটভূমি
১৯১৯ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে কাজী নজরুল ইসলাম তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মুজাফফর আহমেদের সাথে কলকাতায় বসবাস শুরু করেন। ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে, যখন তারা কলকাতার ৩/৪ সি তালতলা লেনে বসবাস করছিলেন, নজরুল কবিতাটি পেনসিলে লেখেন। মুজাফফর আহমেদের মতে, কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ৬ জানুয়ারি ১৯২২ সালে সাপ্তাহিক বিজলী পত্রিকায়। প্রকাশের পর, কবিতাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং দ্য মোসলেম ভারত , প্রবাসী , মধুমতি এবং সাধনা ম্যাগাজিন সহ অন্যান্য কিছু পত্রিকাও কবিতাটি প্রকাশ করে। ‘বিদ্রোহী’ সমিল মুক্তক মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। বাংলা ভাষায় নজরুলই এই ছন্দের প্রবর্তক। এটি ৮টি স্তবক, ১৪৯টি পঙ্ক্তির একটি দীর্ঘ কবিতা।
কবিতাটি প্রথম ১৯২২ সালের অক্টোবর মাসে আর্য পাবলিশিং হাউস থেকে প্রকাশিত অগ্নিবীণা বইয়ে অন্যান্য ১১টি কবিতার সাথে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন
অভ্যর্থনা
পাঠক জনপ্রিয়তা
বিজলী পত্রিকায় ১৯২২ সালের ৬ জানুয়ারি, ২২ পৌষ ১৩২৮ বঙ্গাব্দ শুক্রবারে প্রথম কাজী নজরুল ইসলামের "বিদ্রোহী" কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। কবিতাটি প্রকাশের পর হতেই নজরুল সকলের কাছে পরিচিত হতে থাকেন এবং নানানভাবে সমাদৃত হন। নলিনীকান্ত সরকার সেসময় বিজলী পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন। বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশনার দিন বিজলী পত্রিকা পরপর দুই বার ছাপতে হয়েছিল, যার সংখ্যা ছিলো ২৯ হাজার। মুজাফফর আহমদের কাছ থেকে জানা যায়, সেদিন কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ বিদ্রোহী পড়েছিল।
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমাদর
কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার প্রশংসা করে বুদ্ধদেব বসু বলেছিলেন, এরপর তিনি আরো এক স্থানে বলেন
বিদ্রোহী স্মরণে
২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর 'বিদ্রোহী' কবিতার শতবর্ষ উপলক্ষে জাতীয় কবির সমাধিস্থলে অনুষ্ঠিত হয়েছে শত কন্ঠে বিদ্রোহী কবিতা পাঠ। এ পাঠের আয়োজন করে নজরুল চর্চা কেন্দ্র বাঁশরী।
সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া
ভাব চুরির অভিযোগ
মুজফফর আহমদ -এর বই হতে জানা যায়, 'বিদ্রোহী' ছাপা হওয়ার পর কবি মোহিতলাল মজুমদার দাবী করেছিলেন যে, তার 'আমি' শীর্ষক একটি লেখার ভাব নিয়ে নজরুল কবিতাটি লিখেছে, কিন্তু কোন ঋণ স্বীকার করেনি। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ গুপ্ত ও 'বিংশ শতাব্দী'-তে লিখেছিলেন, মোহিতলাল মজুমদারের 'আমি' প্রবন্ধের ভাববস্তুর সঙ্গে নজরুলের বিখ্যাত 'বিদ্রোহী' কবিতাটির সাদৃশ্য অত্যন্ত স্পষ্ট। তবে অন্যান্য সাহিত্যিকগণ এবং মুজফফর আহমদ নিজেও তাদের সেই দাবিকে সম্পূর্ণরূপে নাকোচ করে দেন।
বিদ্রূপ
নজরুলের বিদ্রোহী প্রকাশিত হবার পর কয়েকজন কবি একে কোনো কবিতার আওতাতেই ফেলতে রাজি ছিলেন না। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে তারা এর ব্যঙ্গাত্মক রূপ প্রকাশ করতে থাকেন। বিদ্রোহী কবিতার ব্যাঙ্গ করে সজনীকান্ত দাস 'ব্যাঙ' নামে একটি কবিতাও লিখেছিলেন, যা শনিবারের চিঠি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। সেখানে তিনি প্যারোডি করে লিখেছিলেন,
আমি ব্যাঙ!
লম্বা আমার ঠ্যাং ।
আমি ব্যাঙ!
আমি সাপ!
আমি ব্যাঙেরে গিলিয়া খাই,
আমি বুক দিয়ে হাঁটি ইঁদুর ছুঁচোর গর্তে ঢুকিয়া যাই।
ব্রিটিশদের প্রতিক্রিয়া
এই কবিতা সেই সময় নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, সেটা নিয়ে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের মধ্যে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলছেন,
অভিযোজন
রূপান্তর (বিদ্রোহী গান)
১৯৪৯, মতান্তরে ১৯৫২ সালে সংক্ষিপ্তাকারে ‘বিদ্রোহী’র সুর করেছিলেন প্রবাদপ্রতিম সংগীতগুরু, লোক ও নজরুলসংগীতশিল্পী এবং সুরকার গিরীন চক্রবর্তী। আর এতে কন্ঠ দিয়েছিলেন সংগীতশিল্পী শেখ লুৎফর রহমান এবং অভিনেতা ও গায়ক আরিফুল হক। ১৯৬৫ সালে বিদ্রোহী’ কবিতায় সম্পূর্ণ নতুন এবং আধুনিক জোড়ালো একটি সুরারোপ করেছিলেন বাংলাদেশের শহীদ গায়ক ও সুরকার আলতাফ মাহমুদ।
জনপ্রিয় মাধ্যমে ব্যবহার
ভারতীয় চিত্রনায়ক জিৎ অভিনীত এবং ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র 'দ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার' এবং ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় বাংলা ভাষার নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র 'কণ্ঠ'-তে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতাটি ব্যবহৃত হয়েছে।
আরো দেখুন
অগ্নিবীণা
বিজলী
বিদ্রোহী (গান)
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলা কবিতা ওয়েবসাইটে বিদ্রোহী কবিতা
যেভাবে লেখা হয়েছিল নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা
ইউটিউবে বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তি
কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা | https://en.wikipedia.org/wiki/Bidrohi_(poem) | Bidrohi (poem) | "Bidrohi" (Bengali: "বিদ্রোহী"; English: "The Rebel") is a popular revolutionary Bengali poem and the most famous poem written by Kazi Nazrul Islam in December 1921. Originally published in several periodicals, the poem was first collected in October 1922 in a volume titled Agnibeena: the first anthology of Nazrul's poems. Many have seen, in this poem, elements of romanticism, heroism, and love. Syed Ali Ahsan wrote that the poem was inspired by Walt Whitman's "Song of Myself". |
2681 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A6%B0%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারে অবস্থিত একটি আবাসিক স্বায়ত্তশাসিত গবেষণাধর্মী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ৬৯৭.৫৬ একর জায়গা বেষ্টিত জাবিতে ৩৬টি বিভাগ এবং চারটি ইনস্টিটিউট সহ ছয়টি অনুষদ রয়েছে, যেখানে পনের হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী যুক্ত হয়েছে এবং প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষাবিদ পাঠদান ও গবেষণায় অনুগত রয়েছে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারী এর বিচারক রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আহসান, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছিলেন।
ইতিহাস
১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামে দেশের প্রথম ও একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে এটির নামকরণ করা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা শহরের মুঘল আমলের নাম "জাহাঙ্গীরনগর" থেকে এই নামকরণ করা হয়। প্রথম ব্যাচে ১৫০ জন ছাত্র নিয়ে ৪ টি বিভাগ চালু হয়; বিভাগগুলো হচ্ছে অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত এবং পরিসংখ্যান। ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন। তার আগে ১৯৭০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য নিযুক্ত হন অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রখ্যাত কবি সৈয়দ আলী আহসান, লোকসাহিত্যবিদ মজহারুল ইসলাম, লেখক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, আ ফ ম কামালউদ্দিন, আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ আব্দুল বায়েস, আলাউদ্দিন আহমেদ, খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান প্রমুখ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো শিক্ষকতা করেছেন অধ্যাপক সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায়, লেখক হায়াত্ মামুদ, লেখক হুমায়ুন আজাদ, নাট্যকার সেলিম আল দীন, কবি মোহাম্মদ রফিক (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত), অধ্যাপক মুস্তাফা নূরুল ইসলাম, আবু রুশদ মতিনউদ্দিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, ইতিহাসবিদ বজলুর রহমান খান, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আনু মুহাম্মদ প্রমুখ।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে পুরোদমে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ক্রমে বিভাগের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বাংলাদেশের একমাত্র প্রত্নতত্ত্ব বিভাগও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুরুতে দুইটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা করলেও পরের বছর কলা ও মানবিকী অনুষদ খোলা হয়। আইন অনুষদের অধীন আইন ও বিচার বিভাগ ২০১১ সালে পদচারনা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যক্রম শুরু করে।
বাংলাদেশের স্বায়ত্বশাসিত প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ছাত্রসংখ্যায় এটি ক্ষুদ্রতম। কিন্তু বিভিন্ন জাতীয় ও অভ্যন্তরীণ আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এরশাদ সরকারের আমলে শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে।
বিদ্যায়তনিক পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্য। মৌলিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এছাড়া উয়ারী ও বটেশ্বরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খননকার্য, দেশীয় নাট্যচর্চায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অবদান, বিদ্যায়তনিক নৃবিজ্ঞান চর্চায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের পথপ্রদর্শন সুবিদিত।
অবস্থান ও ক্যাম্পাস
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানী থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিমে অবস্থিত। এটি ৬৯৭.৫৬ একর (২.৮ বর্গকিলোমিটার) জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটি উত্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, উত্তর-পূর্বে সাভার সেনানিবাস, দক্ষিণে বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং পূর্বে একটি বৃহৎ দুগ্ধ উৎপাদন খামার (ডেইরি ফার্ম) দ্বারা পরিবেষ্টিত। বিশ্ববিদ্যালয়টির শ্যামল পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য জলাশয় একে পরিযায়ী পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে যার ফলে এটি পাখি পর্যবেক্ষকদের এক পছন্দের জায়গা। এটিই বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সার্বজনীন স্বীকৃত।
অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট সমূহ
অনুষদসমূহ
বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগ রয়েছে।
এগুলো হলো:
সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
অর্থনীতি বিভাগ
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
নৃবিজ্ঞান বিভাগ
নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
লোকপ্রশাসন বিভাগ
গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদ
গণিত বিভাগ
পরিসংখ্যান বিভাগ
রসায়ন বিভাগ
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ
কলা ও মানবিকী অনুষদ
বাংলা বিভাগ
ইংরেজি বিভাগ
ইতিহাস বিভাগ
দর্শন বিভাগ
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ
চারুকলা বিভাগ
জীববিজ্ঞান অনুষদ
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
ফার্মেসী বিভাগ
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ
ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগ
একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগ
মার্কেটিং বিভাগ
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ
আইন অনুষদ
আইন ও বিচার বিভাগ
ইনস্টিটিউটসমূহ
ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ-জেইউ)
ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আই আই টি)
ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএস
বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট
অন্যান্য
ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র
ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র
সেন্টার অব এক্সিলেনস ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ
শহীদ মিনার
স্থপতি রবিউল হুসাইনের তত্বাবধানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সম্মুখে ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনের ও ১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক হিসাবে ৫২ ফুট ব্যাস ও ৭১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু শহীদ মিনারটি অবস্থিত। ৮টি সিঁড়ি ও ৩টি স্তম্ভ বিশিষ্ট; দৃঢ়তার প্রতীক ত্রিভুজ আকৃতির ঋজু কাঠামোটিতে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের জন্য মহান বীর শহীদ-গণের আত্মত্যাগের মহিমা বিধৃত হয়েছে। ৮টি সিঁড়ি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ৮টি তাৎপর্যপূর্ণ বছর ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০ ও ১৯৭১ সাল-গুলোর এবং তিনটি স্তম্ভের একটি বাংলাভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অপর দুইটি মাটি ও মানুষ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে।
ভাস্কর্য
সংশপ্তক
বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য সংশপ্তক। এই ভাস্কর্যে এক পা ও এক হাত হারিয়েও এক সংশপ্তক মুক্তিযোদ্ধা বিজয়ের হাতিয়ার উর্ধে তুলে ধরেছেন। এর স্থপতি হামিদুজ্জামান খান।
অমর একুশ
সমাজবিজ্ঞান ভবনের সামনে এবং ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সাথেই রয়েছে ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ভাস্কর্য। মা-বাবা তার গুলিবিদ্ধ সন্তানকে ধরে রেখেছে অমর একুশ। এর স্থপতি শিল্পী জাহানারা পারভীন।
সরণিসমূহ
কবির সরণি
সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদল নেতা হাবিবুর রহমান কবিরের স্মরণে কবির সরণির নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক থেকে আ.ফ.ম কামালউদ্দিন হল পর্যন্ত এ সরণি বিস্তৃত।
মুন্নী সরণি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মুন্নীর স্মরণে আল বেরুনী হলের সামনে রয়েছে মুন্নী সরণি।
জুবায়ের সরণি
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অসন্তোষ-কে কেন্দ্র করে ২০১২ সালে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল পর্যন্ত এ সরণি বিস্তৃত।
স্বপ্না সরণি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নার স্মরণে মিহির চত্ত্বর থেকে নওয়াব ফয়েজুন্নেসা হল পর্যন্ত বিস্তৃত এ সরণি।
আবাসিক হলসমূহ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট হল সংখ্যা ২১টি, এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য ১১টি এবং ছাত্রীদের জন্য ১০টি হল রয়েছে।
আল বেরুনী হল
আসন ৬০০+, স্থাপিত ১৯৭০। ১ঌ৬৮-৬ঌ সালে ১২৮ কক্ষ বিশিষ্ট ৪(চার) তলার এই ছাত্রাবাসটি নির্মিত হয়৷ ১ঌ৭ঌ সালে খ্যাতনামা জ্ঞানসাধক `আল-বেরুনী'র নামানুসারে এই হলের নামকরণ করা হয়৷এই হল এ একটি মূল ভবনের পাশাপাশি একটি সম্প্রসারিত ভবন ও রয়েছে। বর্তমানে এর সম্প্রসারিত ভবনটি ছাত্রাবাসের পরিবর্তে চারুকলা বিভাগের সম্প্রসারিত ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে মহিলাদের জন্য আলাদা কোন হল না থাকায় আল বেরুনী হলের সাথে সংযুক্ত করে ১ঌ৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষে মোট (তেইশ) জন ছাত্রীর নামে হলে সিট বরাদ্দ করা হয়; ১ঌ৭৮ সনে ছাত্রীদের জন্য ১টি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হল (নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল) নির্মিত হলে আল বেরুনী হলের ছাত্রী ভর্তি বন্ধ করা হয়৷
মীর মশাররফ হোসেন হল
"মীর মশাররফ হোসেন হল" ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে নির্মিত হয়েছে ১৯৭৩ সালে। ১ঌ৭৮ সালের ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বিশিষ্ট কথাশিল্পী মীর মশাররফ হোসেনের নাম অনুসারে ১৯৭৮ সালে এই প্রজাপতি হলের নাম নির্ধারণ করা হয় 'মীর মশাররফ হোসেন হল'৷ হলটির ছাত্র ধারণ ক্ষমতা ৯০০+
আয়তনে ও ধারণক্ষমতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় হল এটি।
প্রজাপতির প্রতিকৃতিতে নকশাকৃত এই হলটির স্থপতি ছিলেন, মাজহারুল ইসলাম।
প্রভোস্টঃ অধ্যাপক ড. সাব্বির আলম (২০২৩-বর্তমান)
শহীদ সালাম-বরকত হল
আসন ৫০০, স্থাপিত ১৯৮৭। ১ঌ৮৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বৃহত্তম এই হলের যাত্রা শুরু হয় ও ১ঌ৮৫ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ১০৬তম সভায় নাম রাখা হয় শহীদ সালাম-বরকত হল৷
আ. ফ. ম. কামালউদ্দিন হল
আসন ৫০০, স্থাপিত ১৯৮৬। ১ঌ৮৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি এ হলেরই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তত্কালীন উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম কামালউদ্দিন; কাজ শেষ হয় ১ঌ৮ঌ সালের ৩১ ডিসেম্বর, কিন্তু হলের নির্মাণ কাজ শেষ হবার আগেই কর্মরত অবস্থায় উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম কামালউদ্দিন মৃতু্বরণ করেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচিত উপাচার্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ঌ৮৮ সালের ১০ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় তার নামে এই হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়৷
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল
১৯ আগস্ট ২০১৭ সাল হতে হলটি ছাত্রদের বসবাসের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। বর্তমানে প্রায় ৭০০ ছাত্র হলটিতে বসবাস করতে পারে। হলটির বর্তমান প্রাধ্যক্ষ হচ্ছেন অধ্যাপক নাজমুল হোসেন তালুকদার। হলের পাশে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ছায়াময় শান্তিনিকেতন। অপরুপ সৌন্দর্যময় ও দৃষ্টিনন্দন জায়গাটি হলের পাশে অবস্থিত।
মওলানা ভাসানী হল
মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে ১৯৯২ সালে নির্মিত হয় ছেলেদের পঞ্চম হল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিখ্যাত বটতলার পশ্চিমেই এই হলের অবস্থান।
হলের সামনেই রয়েছে একটি পুকুর।
পুকুরঘাট,হলের আকৃতি ও অবস্থানের কারনে হলটিকে "রাজবাড়ি" ও বলা হয়।
হলের বর্তমান আসন সংখ্যা ৭৬৮টি ও হলের বর্তমান প্রাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এইচ.এম.সায়েম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল
আসন ৭৮৪, স্থাপিত ২০০১। এই হলের অবস্থান কম্পিউটার বিজ্ঞান ভবনের পাশেই।
হলের দক্ষিন পাশে আছে একটি খেলার মাঠ যা সিডনি ফিল্ড হিসেবে পরিচিত।
শহীদ রফিক-জব্বার হল
৭০০+ আসন বিশিষ্ট হলটি ভাষাশহীদ রফিক ও জব্বারের নামে নামকরণ করা হয়।
এটি স্থাপিত হয় ২০১০ সালে।
২০২২ সালে রফিক-জব্বার হলের পাশে নবনির্মিত শেখ রাসেল হল চালু হলে,
নিজেদের অস্তিত্ব সংকটে ও পরবর্তীতে দুই হলের মধ্যকার ঝামেলা এড়ানোর জন্য রাস্তায় দেয়াল তৈরী করে দিয়ে পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
যার কারনে শেখ রাসেল হলের ১০০০ শিক্ষার্থীর বটতলা ও একাডেমিক এরিয়ার সাথে যোগাযোগ বাধাপ্রাপ্ত হয় ও বিকল্প পথ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
শেখ রাসেল হল
বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠতম সন্তান শেখ রাসেলের নামে হলটির নামকরন করা হয়েছে। লিফটসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পূর্ণ ১০ তালা বিশিষ্ট হলটিতে শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা ১০০০+
তাজউদ্দিন আহমেদ হল
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ এর নামে এ হলের নামকরণ করা হয়। লিফটসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পূর্ণ ১০ তলা (মাটির নিচে তলাসহ ১১ তলা) বিশিষ্ট হলটির আসন সংখ্যা ১০০০+
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল
জাতীয় কবির নামে এ হলের নামকরন করা হয়। ১০ তালাবিশিষ্ট হলটির আসন সংখ্যা ১০০০+।
হলটি ২০২৫ সালে চালু হবার কথা।
ফজিলতুন্নেসা হল
১ঌ৮৬ সালের অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি মহিলা হল নং-২ রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ও ১ঌ৮৭ সালের জানুয়ারিতে প্রথম এই হলে ছাত্রীদের সিট বরাদ্দ করা হয়৷ ১ঌঌ০ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪৫ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফজিলতুন্নেসা হল নামে নামকরণ করা হয়৷
২০২২ সালে চালু করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮নং হল।
এবং ফজিলতুন্নেসা হলের সকল শিক্ষার্থীকে ১৮নং হলে স্থানান্তরিত করে ফজিলতুন্নেসা হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফজিলতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীদের দাবীতে পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সভায় ১৮নং হলের নামকরণ করা হয় "ফজিলতুন্নেসা হল"।
নওয়াব ফয়জুননেসা হল
আসন ৪০০+, স্থাপিত ১৯৭৮। ১ঌ৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এটি স্বতন্ত্র হল ও ১৪ এপিল সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে এই ছাত্রী হলটির নামকরণ করা হয় নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল৷ হলটি এক নম্বর হল বলেও পরিচিত।
প্রীতিলতা হল
আসন ৮০০+, স্থাপিত ১৯৯৪। স্থাপতি ফয়সাল মাহবুব এর নকশাকার। ১ঌঌ৭ সালের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভার এটি “প্রীতিলতা হল” নামে নামকরণ করা হয়৷ দুদিকে লেক বেষ্টিত এ হলে ৫০৪ জন ছাত্রীর আসন রয়েছে৷
জাহানারা ইমাম হল
আসন ৭০০+, ১ঌঌ৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়৷
বেগম খালেদা জিয়া হল
বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামানুসারে এই হলের নামকরণ করা হয়।
আসন ৬০০+, স্থাপিত ২০০৫
প্রভোস্টঃ অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার।
;
প্রভোস্টঃ বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্যবিদ এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ।
শেখ হাসিনা হল
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ৬ষ্ঠ হল হিসেবে শেখ হাসিনা হল ২০১৪ সালের ১২ জুন থেকে যাত্রা শুরু করে।
প্রভোস্টঃ অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ
মোট আসন- ৭০০
বেগম সুফিয়া কামাল হল
বাংলা সাহিত্যে কবি বেগম সুফিয়া কামালের অবদানকে স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ৭ম হল হিসেবে ২০১৫ বেগম সুফিয়া কামাল হল যাত্রা শুরু করে। আসন সংখ্যা ৭৭০।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা হল
বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব -এর নামে মেয়েদের ৮ম হল হিসেবে ২০১৭ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা হল যাত্রা শুরু করে।আসন সংখ্যা ৮৫০।
রোকেয়া হল
বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেনের নামে ২০২৪ সালে চালু করা হয় রোকেয়া হল।
শুরুতে হলের নাম "বেগম রোকেয়া হল" নির্বাচিত হলেও পরবর্তীতে 'বেগম' বাদ দিয়ে শুধু "রোকেয়া হল" রাখা হয়।
এর আসন সংখ্যা ১০০০.
তারামন বিবি হল
১০০০ আসন সংখ্যা বিশিষ্ট এই হলটি এখনো চালু হয়নি।
২০২৫ এর শুরুতে চালু হবার কথা রয়েছে।
সংগঠন
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে:
রাজনৈতিক
বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলো হলো: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সাংস্কৃতিক
উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে: জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ধ্বনি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জলসিঁড়ি, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, আনন্দন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ক্যারিয়ার ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি কুইজ সোসাইটি, উত্থানপাঠ, প্রপদ, জাহাঙ্গীরনগর স্টুডেন্টস ফিল্ম সোসাইটি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, কহনকথা, অস্তিত্ব প্রভৃতি।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মীদের সমন্বিত সামাজিক-রাজনৈতিক জোট বা সংগঠন। জোট ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু সাংস্কৃতিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে। পরে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় আন্দোলনে সংগঠনগুলো একইভাবে অংশগ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এক ছাত্রসভায় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোট ছাত্র-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে। এই সকল আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় একটি স্থায়ী কাঠামোর প্রয়োজন অনুভূত হয়। এভাবেই আটানব্বই সালে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের ময়দানে যাত্রা করে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট। বর্তমানে এই জোটে ১৩টি সংগঠন রয়েছে: জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ধ্বনি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জলসিঁড়ি, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন, আনন্দন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি।
বিজ্ঞান/প্রযুক্তি বিষয়ক সংঘ
বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
বাংলাদেশও ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান ক্লাব
ই-বাণিজ্য ও উদ্যোক্তা সংগঠন
বিবিধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সেবামূলক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন জেলার ছাত্র কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়াও সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীদের সমন্বিত উদ্যোগে রয়েছে সিলেট বিভাগীয় ছাত্র কল্যাণ সংস্থা। রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কেটিং ক্লাব, ফিজিক্যালি-চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ) জাবি, জাহাঙ্গীরনগর হায়ার স্টাডি ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, পাবলিক হেলথ ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর এডভেঞ্চার ক্লাব, লিও ক্লাব অব লিবার্টি, রোট্যারাক্ট ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগর, বাঁধন, গৌরব ৭১, জাহাঙ্গীরনগর প্রোগ্রামারস ক্লাব, এক্সপ্লোরার্স, লিও ক্লাব, পিডিএফ, কাশফুল, বন্ধুসভা, স্বজন সমাবেশ, যাযাদি ফ্রেন্ডস ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বি.এন.সি.সি. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কন্টিনজেন্ট,
ইয়্যুথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশ, লিও ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল সমিতি।
উৎসব
হিম উৎসব
২০১৫ সাল থেকে শীতকালে হিম উৎসব পালন করা হয়। হারিয়ে যেতে বসা ঐহিত্যবাহী লোকজ সংস্কৃতিগুলোতে তুলে আনা হয় এই উৎসবে। সাপ খেলা, লাঠি খেলা, গাজীর গান, পটের গান, পালাগানের আসর, গম্ভীরা, ঘাটুগান, পুতুলনাচ, আদিবাসী নাচ, মনিপুরী নৃত্য, সঙ, বাউল সন্ধ্যা, কাওয়ালী গান, কবিতা পাঠ, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর, কনসার্ট, আর্ট ক্যাম্প, পেইন্টিং ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা প্রকার আয়োজন থাকে হিম উৎসবে।
সমাবর্তন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৭ সালে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০১ সালে দ্বিতীয়, ২০০৬ সালে তৃতীয়, ২০১০ সালে চতুর্থ এবং ২০১৫ সালে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৬ষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, যেখানে অংশ নেন ১৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। সর্বশেষ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ নুরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। এছাড়াও সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
হুমায়ূন ফরীদি - বাংলাদেশি অভিনেতা।
আব্দুল্লাহ আল মামুন - পদার্থ বিজ্ঞানী।
শহীদুজ্জামান সেলিম - অভিনেতা ও পরিচালক।
মাশরাফি বিন মর্তুজা - ক্রিকেটার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
মুশফিকুর রহিম - ক্রিকেটার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
আনু মুহাম্মদ - বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতিবিদ।
সৌমিত্র শেখর - শিক্ষাবিদ ও উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমান)।
শরিফ এনামুল কবির - শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
আনন জামান - নাট্যকার ও গবেষক।
সুমাইয়া শিমু - মডেল ও অভিনেত্রী।
জাকিয়া বারী মম - মডেল ও অভিনেত্রী।
মিম মানতাসা - মডেল ও অভিনেত্রী।
আফসানা আরা বিন্দু - মডেল ও অভিনেত্রী।
সজল নূর - মডেল ও অভিনেতা।
ফারুক আহমেদ - খ্যাতিমান নাট্যকার ও অভিনেতা।
মোবারক আহমদ খান - স্বাধীনতা পদক জয়ী বিজ্ঞানী।
মোস্তাফিজুর নূর ইমরান - অভিনেতা।
এ কে এম এনামুল হক শামীম - সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী।
সাদাত হোসাইন - বাংলাদেশী কবি ও ঔপন্যাসিক।
আরও দেখুন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দের নামের তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা জেলার বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৭০-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
১৯৭০-এ পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত | https://en.wikipedia.org/wiki/Jahangirnagar_University | Jahangirnagar University | Jahangirnagar University (abbreviated as JU) is a fully residential public research university located in Savar, Dhaka, Bangladesh. It was established in 1970 by the Jahangirnagar Muslim University Ordinance of the Pakistani Government, which was amended after the independence of Bangladesh to form the university. It is one of the four autonomous universities by the act of universities in Bangladesh.
It offers undergraduate and graduate programs in various disciplines, including Arts, humanities, social science, natural science, biological science, business studies, law and engineering. The university has produced many alumni over the years contributing notably to research, literature, education, culture and sports.
The university has 36 different departments under five faculties including the faculty of mathematical and physical sciences, faculty of social sciences, faculty of arts and humanities, faculty of biological sciences, and faculty of business administration. It has several academic and research institutes including institute of Information technology, institute of Remote sensing and GIS, institute of Business administration, Bangabandhu institute of Comparative literature and culture, Wazed Miah science research center, Wildlife conservation and research center, and Butterfly park and research center. It is the fourth oldest generalized public university in Bangladesh. Also, it has fourth-largest university campus in Bangladesh. |
2682 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%80%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE | ফেনী জেলা | ফেনী জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ২০১১ সালের জনশুমারী অনুযায়ী, এর জনসংখ্যা ১৪৩৭৩৭১ জন,ফেনীর প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র হলো ফেনী শহর, যা ফেনী সদর উপজেলার মূখ্য প্রশাসনিক কেন্দ্র। এর প্রকৃত নাম শমশের নগর। ১৯৮৪ সালের ৬ ডিসেম্বর এর আগ পর্যন্ত এটি বৃহত্তর নোয়াখালীর একটি মহকুমা ছিল। ফেনী বাংলাদেশের ৬৪তম জেলা। এর উপজেলা সংখ্যা ৬টি। সেগুলো হলো: সোনাগাজী, ফুলগাজী, পরশুরাম, দাগনভূঞা, ছাগলনাইয়া এবং ফেনী সদর।
আয়তন
ফেনী জেলার মোট আয়তন ৯২৮.৩৪ বর্গ কিলোমিটার।
প্রশাসনিক অঞ্চল ও জনসংখ্যা
ফেনী জেলায় ৬টি উপজেলা, ৬টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৪৩টি ইউনিয়ন, ৫৬৪টি গ্রাম ও ৫৪০টি মৌজা রয়েছে। এবং ৩ টি সংসদীয় আসন রয়েছে।
আয়তন ও অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°৪৪´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৫´ থেকে ৯১°৩৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে ফেনী জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৫১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে কুমিল্লা জেলা ও ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে নোয়াখালী জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা।
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠাকাল
১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে যে সকল মহকুমাকে মানোন্নীত করে জেলায় রূপান্তর করা হয়েছিল ফেনী জেলা তার একটি। ১৯৮৪ সালের পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ মহকুমার গোড়াপত্তন হয় ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরসরাই, ছাগলনাইয়া ও আমীরগাঁও এর সমন্বয়ে। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন কবি নবীনচন্দ্র সেন। ১৮৭৬ সালে মীরসরাইকে কর্তন করে চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথম মহকুমা সদর দপ্তর ছিল আমীরগাঁওয়ে। ১৮৭২ থেকে ১৮৭৪ সালের মধ্যে মোগল আমলের আমীরগাঁও থানা নদী ভাঙ্গনের ফলে ফেনী নদীর ঘাটের কাছাকাছি খাইয়ারাতে স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে এটি ফেনী থানা নামে পরিচিত হয়। অতঃপর ১৮৭৬ সালে নতুন মহকুমায় পতিত হলে খাইয়ারা থেকে থানা দপ্তরটি মহকুমা সদরে স্থানান্তরিত হয় ও নতুন মহকুমাটি ফেনী নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীতে ১৮৮১ সালে তা ফেনী শহরে স্থানান্তরিত হয়।
নামকরণ
ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী। মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় একটি বিশেষ নদীর স্রোতধারা ও ফেরী পারাপারের ঘাট হিসেবে ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ষোড়শ শতাব্দীর সময়ে কবি কবীন্দ্র পরমেশ্বর পরাগলপুরের বর্ণনায় উল্লেখ করেন, ফনী নদীতে বেষ্টিত চারিধার, পূর্বে মহাগিরি পার নাই তার। এরপর সতের শতকে মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত বাহরিস্তান-ই-গায়েবীতে ফনী শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে ফেনী-তে পরিণত হয়।
আঠারো শতকের শেষার্ধে কবি আলী রজা প্রকাশ কানু ফকির তার পীরের বসতি হাজীগাঁও এর অবস্থান সম্পর্কে লিখছেন, ফেনীর দক্ষিণে এক ষর উপাম, হাজীগাঁও করিছিল সেই দেশের নাম। কবি মুহম্মদ মুকিম তার পৈতৃক বসতির বর্ণনাকালে বলেছেন, ফেনীর পশ্চিমভাগে জুগিদিয়া দেশে। তারাও নদী অর্থে ফেনী ব্যবহার করেছেন। ধারণা করা হয়, আদি শব্দ ফনী মুসলমান কবি ও সাহিত্যিকদের ভাষায় ফেনীতে পরিণত হয়েছে।
সাধারণ ইতিহাস
দূর অতীতে এ অঞ্চল ছিল সাগরের অংশ, তবে উত্তর পূর্ব দিক ছিল পাহাড়িয়া অঞ্চলের পাদদেশ। ফেনীর পূর্ব দিকের রঘুনন্দন পাহাড় থেকে কাজিরবাগের পোড়ামাটি অঞ্চলে হয়ত আদিকালে শিকারী মানুষের প্রথম পদচিহ্ন পড়েছিল। এখানকার ছাগলনাইয়া গ্রামে ১৯৬৩ সালে একটা পুকুর খননকালে নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের ব্যবহৃত একটা হাতিয়ার বা হাতকুড়াল পাওয়া গেছে। পণ্ডিতদের মতে ঐ হাতকুড়াল প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরাতন।
বৃহত্তর নোয়াখালীর মধ্যে পূর্ব দিকের ফেনী অঞ্চলকে ভূ-খণ্ড হিসেবে অধিকতর প্রাচীন বলে পণ্ডিতগণ মত প্রকাশ করেছেন। ফেনীর পূর্বভাগের ছাগলনাইয়া উপজেলার শিলুয়া গ্রামে রয়েছে এক প্রাচীন ঐতিহাসিক শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ। প্রকাশ শিলামূর্তির অবস্থানের কারণে স্থানটি শিলুয়া বা শিল্লা নামে পরিচিত হয়েছে। প্রাচীন কালে হয়ত এখানে বৌদ্ধ ধর্ম ও কৃষ্টির বিকাশ ঘটেছিল।
ড. আহমদ শরীফ চট্টগ্রামের ইতিকথায় বলেছেন, প্রাচীনকালে আধুনিক ফেনী অঞ্চল ছাড়া নোয়াখালীর বেশির ভাগ ছিল নিম্ন জলাভূমি। তখন ভুলুয়া (নোয়াখালীর আদি নাম) ও জুগিদিয়া (ফেনী নদীর সাগর সঙ্গমে অবস্থিত) ছিল দ্বীপের মতো। ছাগলনাইয়া নামকরণ সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন যে, ইংরেজ আমলের শুরুতে সাগর (Shagor) শব্দটি ভুল ক্রমে ছাগল (Chagol) নামে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। তাই ছাগল নাইয়া শব্দটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। উল্লেখ্য ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন পুঁথি পত্রে ছাগল নাইয়া নামের কোন স্থানের নাম পাওয়া যায় না।
ফেনী নদীর তীরে রঘুনন্দন পাহাড়ের পাদদেশে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বীর বাঙ্গালী শমসের গাজীর রাজধানী ছিল। তিনি এখান থেকে যুদ্ধাভিযানে গিয়ে রৌশনাবাদ ও ত্রিপুরা রাজ্য জয় করেন। তিনি চম্পক নগরের একাংশের নামকরণ করেছিলেন জগন্নাথ সোনাপুর।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে তিন দিক থেকে ফেনীর রয়েছে সীমান্ত।
১মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার সাথে সাথে সারা দেশের মতো ফেনীও ফুঁসে ওঠে । বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পরপরই ফেনীতে শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ। জননেতা খাজা আহমদ ও জননেতা মালেক সাহেবের নেতৃত্বে গঠিত হয় ২টি সংগ্রাম কমিটি। একটি আওয়ামী লীগ সংগ্রাম কমিটি ও অপরটি যুব ও ছাত্র সংগ্রাম কমিটি। ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে একটি সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় যা পরবর্তীতে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির অন্তর্ভুক্ত হয়ে একত্রে কাজ করে। এরই ধারাবাহিকতায় জননেতা খাজা আহমদের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ সকাল থেকে ফেনীর পূর্বউকিল পাড়াসহ হাজী মনির উদ্দিন সওদাগর বাড়ির রফিকুল হকের বাসায় কর্মনির্ধারণী বৈঠকে ১১ জন সংগঠক পবিত্র কুরআন ছুঁয়ে স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজনে আত্মোৎসর্গের শপথ নেন । মূলত ঐদিন থেকেই শুরু হয় ফেনীর মুক্তিযুদ্ধের পথচলা। যুব ও ছাত্র সংগ্রাম কমিটিতে ছিলেন জয়নাল হাজারী, জয়নাল আবেদীন(ভিপি জয়নাল), কমান্ডার মুর্তজা ভূঁইয়া, আব্দুল মোতালেব (কমান্ডার), জহির উদ্দিন বাবর, হাফেজ আহমদ, নূর মোহম্মদ হাজারী, জাফর উল্ল্যাহ খান, খোন্দকার মোজাম্মেল, মোহাম্মদ মুছা, কাজী নূরুন নবী সহ আরো কয়েক জন।
২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ঘুমন্ত বাঙ্গালীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ২৬ মার্চ বিকেলে জননেতা খাজা আহমদ ও জননেতা মালেক সাহেবের নেতৃত্বে বৈঠকে বসেন সংগঠকবৃন্দসহ অপরাপর নেতৃবৃন্দ। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেনী পিটিআই'র মাঠে শুরু হয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। ৩০ মার্চ সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ, সামরিক, আধা-সামরিকবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সৈনিক এবং যুব ও ছাত্রদের নিয়ে মিশ্রবাহিনী গঠিত হয়। তৎপূর্ব হতেই ৩০০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে পিটিআই মাঠে শুরু হয় সামরিক প্রশিক্ষণ। প্রথম থেকে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন সুবেদার মেজর(অবঃ) আবু আহম্মদ (খাজুরিয়া ইব্রাহিম মৌলবী বাড়ি), ফ্লাইট সার্জেণ্ট (অবঃ) নূরুল ইসলাম(কালিদহ), সার্জেণ্ট সামছুল হক(ফরহাদ নগর), সুবেদার সিদ্দিকুর রহমান, ব্যাটেলিয়ান সামছু(উকিল পাড়া), ক্যাপ্টেন আবদুররৌফ(সোনাপুর) সহ আরো কয়েকজন ।
২৩ এপ্রিল সংগঠকগনসহ হাজার হাজার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন জনতা সীমান্ত অতিক্রম করে বিলোনিয়া সহ ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং ফেনীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এইসময় বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স - বি এল এফ (বিলোনিয়া ) প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেন জননেতা আব্দুল মালেক ।
ফেনী সীমান্তে মুক্তিযুদ্ধের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। এর মধ্যে শুভপুর ও বিলোনিয়া যুদ্ধ অন্যতম। তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা ফেনী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুল মালেক (যুদ্ধকালীন সময়ে বি এল এফ এর প্রেসিডেন্ট) ও খাজা আহমদের নেতৃত্বে ফেনীর মুক্তিযোদ্ধারা দেরাদুন ও চোত্তাখোলায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার জাফর ইমামের নেতৃত্বে বিলোনিয়া যুদ্ধ একটি অনন্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।
৬ ডিসেম্বর ফেনী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীকে মুক্ত করেন। প্রতি বছর ৬ ডিসেম্বর দিনটিকে ফেনী জেলাবাসী ফেনী মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য ফেনীর ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় খেতাব দেওয়া হয়। খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৪ জন বীর উত্তম, ৭ জন বীর বিক্রম এবং ২০ জন বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত হন।
শিক্ষা ব্যবস্থা
ফেনী জেলার সাক্ষরতার হার ৫৯.৬০%। এ জেলায় রয়েছে:
বিশ্ববিদ্যালয় : ১টি
ডিগ্রী কলেজ : ১১টি
উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ : ১০টি
ক্যাডেট কলেজ : ১টি (বালিকা)
কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ৭টি
কম্পিউটার ইনস্টিটিউট : ১টি
মাদ্রাসা : ৯৭টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ১৫৫টি
শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র : ১টি
নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ১৯টি
পিটিআই : ১টি
প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৫২৮টি
অর্থনীতি
জেলার মানুষের প্রধান পেশা কৃষি ও প্রবাসী। এ জেলার অর্থনীতি- কৃষি ২১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৭%, শিল্প ৩৫%, ব্যবসা-বাণিজ্য ১৫.৯৮%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৪.৬৬%, নির্মাণ ১.৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৪৩%, ভাড়া এবং রেমিট্যান্স ১১.৪৩% এবং অন্যান্য ১২.১৯%। এই জেলায় দুটি শিল্প এলাকা রয়েছে। মোট বৃহৎ শিল্পের সংখ্যা ৪টি তার মধ্যে একটি স্টার লাইন গ্রুপ, মাঝারি শিল্প ১৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ৮২৬টি এবং কুটির শিল্প ৩৪১৯টি। ফেনী সদর এলাকার ধালিয়া ইউনিয়নে একটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। কৃষি জমির পরিমাণ ৭৫,৯২২ হেক্টর এবং আবাদি জমির পরিমাণ ৭৪,৭২০ হেক্টর।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
ফেনী জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়। এছাড়া এ জেলায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাও রয়েছে।
স্বাস্থ্য
ফেনী জেলায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ১টি আধুনিক হাসপাতাল, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট ৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স,১০ শয্যা বিশিষ্ট ১টি হাসপাতাল(মঙ্গলকান্দি), ১টি হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল, ১টি ডায়াবেটিক হাসপাতাল, ১টি বক্ষ ব্যাধি ক্লিনিক, ১টি ট্রমা সেন্টার, ১টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ১টি নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ১৯টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩৩টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং ১১৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।
নদ-নদী
ফেনী জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হল ফেনী নদী, মুহুরী নদী, ছোট ফেনী নদী, কহুয়া নদী, সিলোনিয়া নদী এবং কালিদাস পাহালিয়া নদী।
দর্শনীয় স্থান
ফেনী নদী
ফেনী বিমানবন্দর
মুহুরী প্রজেক্ট
শমসের গাজীর কেল্লা
বিজয় সিংহ দীঘি
রাজাঝির দীঘি
চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদ
শর্শাদী শাহী মসজিদ
মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মসজিদ
প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি
কালীদহ বরদা বাবু জমিদার বাড়ি
সেনেরখিল জমিদার বাড়ি
শিলুয়া মন্দির
সাত মঠ
ভারত-বাংলাদেশ প্রীতি রাধানগর-কৃষ্ণনগর সীমান্ত হাট
কৈয়ারা দীঘি
জগন্নাথ মন্দির ও জয় কালী মন্দির
ভাষা শহীদ সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
খালেদা জিয়া – রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশের সাবেক এবং প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী।
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ভুঁইয়া (ন্যাপ কমিউনিস্ট গেরিলা বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট)
শমসের গাজী – জমিদার, ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী।
শামসুল হুদা – ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,একুশে পদকপ্রাপ্ত ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকপ্রাপ্ত,রাজনৈতিক চিন্তাবিদ ও কলামিস্ট।
আবদুস সালাম – ভাষা শহীদ।
জহির রায়হান – ভাষা সৈনিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক এবং গল্পকার।
আওরঙ্গজেব চৌধুরী – বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রাক্তন প্রধান।
আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন উপাচার্য।
আবদুল আউয়াল মিন্টু – এফবিসিসিআই সাবেক প্রেসিডেন্ট, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।।
ওবায়েদ উল হক - কবি, ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, গীতিকার
আবদুস সালাম – বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম মহাপরিচালক।
আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী – বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রাক্তন উপাচার্য।
আমিন আহমদ – প্রাক্তন বিচারপতি।
এ এফ রহমান - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য।
আমীন আহম্মেদ চৌধুরী – বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
আহমেদ ফজলুর রহমান – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙালি উপাচার্য।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী – সাংবাদিক নেতা এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা।
ইনামুল হক – অভিনেতা, লেখক এবং নাট্যকার।
এ বি এম মূসা – সাংবাদিক এবং বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
ওয়াসফিয়া নাজরীন – পর্বতারোহী, এভারেস্ট বিজয়ী দ্বিতীয় বাঙালি নারী।
কাইয়ুম চৌধুরী – চিত্রশিল্পী।
কাজী এবাদুল হক – ভাষা সৈনিক এবং প্রাক্তন বিচারপতি।
খান বাহাদুর আবদুল আজিজ – শিক্ষাবিদ, লেখক এবং সমাজকর্মী।
গাজীউল হক – সাহিত্যিক, গীতিকার এবং ভাষাসৈনিক।
গিয়াস উদ্দিন সেলিম – নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা এবং চলচ্চিত্রকার।
গিয়াস কামাল চৌধুরী – সাংবাদিক, কলামিস্ট এবং সংবাদ বিশ্লেষক।
জহুর হোসেন চৌধুরী – সাংবাদিক।
খাজা আহমেদ – মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন - ব্যবসায়ী,শিল্পপতি,প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।।
মাহবুবুল আলম তারা - প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জয়নাল হাজারী – বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জয়নাল আবেদিন – বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশী প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
জাফর ইমাম – বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশী প্রাক্তন মন্ত্রী,প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
সাঈদ এস্কান্দার – প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
রেহানা আক্তার রানু প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
শিরীন আখতার – সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
নিজাম উদ্দিন হাজারী – সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী – প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
রহিম উল্লাহ – প্রাক্তন সংসদ সদস্য।
জাহান আরা বেগম সুরমা – রাজনীতিবিদ।
নজির আহমেদ – ছাত্রনেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার তিনি প্রথম শিকার।
পান্না কায়সার – রাজনীতিবিদ।
ফয়জুল মহিউদ্দিন – শহীদ বুদ্ধিজীবী।
শহীদুল্লা কায়সার – লেখক এবং বুদ্ধিজীবী।
আবুল হাশেম- অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ।
বেলাল চৌধুরী – সাংবাদিক এবং প্রাবন্ধিক।
মকবুল আহমদ – বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাবেক আমির। বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
মিজানুর রহমান সাঈদ – ইসলামি পণ্ডিত ও মুফতি
মহম্মদ আবুল কাসেম – বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতি।
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন – ক্রিকেটার।
আবদুস সালাম (বীর বিক্রম) -বীর মুক্তিযোদ্ধা।
রবিউল হক – বীর বিক্রম খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
রোকেয়া প্রাচী – অভিনেত্রী এবং নাট্যকার।
শমী কায়সার – অভিনেত্রী এবং প্রযোজক।
শরিফা খাতুন – শিক্ষাবিদ এবং ভাষা সৈনিক।
শামসুন নাহার মাহমুদ – নারী মুক্তি আন্দোলনের নেত্রী।
শাহরিয়ার কবির – লেখক এবং সাংবাদিক।
শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন – সেনা কর্মকর্তা।
সালাহউদ্দিন মমতাজ – বীর মুক্তিযোদ্ধা।
সিরাজুল হক খান – শহীদ বুদ্ধিজীবী।
সুমাইয়া কাজী – নারী উদ্যোক্তা।
সুলতান মাহমুদ – বীর উত্তম খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা।
আনিসুর রহমান আনিস - চলচ্চিত্র অভিনেতা।
সেলিনা পারভীন – শহীদ বুদ্ধিজীবী।
সেলিম আল দীন – নাট্যকার এবং গবেষক।
হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী – রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং ফুটবলার।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যগণ
সংবাদপত্র
সাপ্তাহিক স্বদেশ কন্ঠ
সাপ্তাহিক ফেনীর তালাশ
দৈনিক অজেয় বাংলা
সাপ্তাহিক নবকিরন
পাক্ষিক পরশুরাম
সাপ্তাহিক স্বদেশ বার্তা
সাপ্তাহিক ফেনীর আলো
সাপ্তাহিক ফেনী বার্তা
সাপ্তাহিক নবীন বাংলা
দৈনিক আমাদের ফেনী
ফেনী প্রতিদিন
দৈনিক স্টার লাইন
দৈনিক ফেনীর সময়
দৈনিক নয়া পয়গাম
দৈনিক ফেনী
আরও দেখুন
চট্টগ্রাম বিভাগ
বাংলাদেশের জেলাসমূহ
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
ফেনী জেলা
চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা
বাংলাদেশের জেলা | https://en.wikipedia.org/wiki/Feni_District | Feni District | Feni (Bengali: ফেনী) is a coastal district situated in the south-east of Bangladesh, within the Chittagong Division. One of Bangladesh's smallest districts, it is strategically located along the Dhaka–Chittagong transportation corridor. Bordered by India to the north and the Bay of Bengal to the south, it serves as the sole entry point linking Chittagong, the country's primary port city, to the northern districts.
The district's population stood at 1.6 million in 2022, ranking 42nd among 64 districts and 4th least populous in Chittagong Division. Established as Bangladesh's 61st district in 1984 with its administrative hub in Feni city, it was previously a sub-division under Noakhali District. The district comprises six upazilas (sub-districts): Sonagazi, Fulgazi, Parshuram, Daganbhuiyan, Chhagalnaiya and Feni Sadar.
Deriving its name from the Feni River, the district has a rich history spanning five millennia, having been historically part of the greater regions of Noakhali, Comilla, and Tripura. It was ruled by ancient kingdoms before coming under the Muslim rule of the Delhi Sultanate in the 14th century, and later the Mughals from the 17th century, when it briefly served as a frontier settlement with thriving cities. The British gained control in the late 18th century, formally establishing Feni as a sub-division in 1876. Significant infrastructure development, including schools, colleges, roads and railways, occurred in the early 20th century. Feni's students played a vital role during Bangladesh's language movement in the mid-20th century and subsequent liberation war, ultimately gaining independence from Pakistan on 6 December 1971. |
2683 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE | চট্টগ্রাম জেলা | চট্টগ্রাম জেলা () বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। অবস্থানগত কারণে চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা। পাহাড়, সমুদ্র, উপত্যকা, বন-বনানীর কারণে চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম লীলাভূমি। চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়। প্রতিষ্ঠা কালের হিসেবে এই জেলা বাংলাদেশের প্রথম এবং আয়তনে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা।
আয়তন ও অবস্থান
চট্টগ্রাম জেলার মোট আয়তন ৫,২৮২.৯২ বর্গ কিলোমিটার (১,৩০৫,৪৩৮ একর)। আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে চট্টগ্রাম জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ২৫৯ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে ফেনী জেলা এবং ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা, পূর্বে বান্দরবান জেলা, রাঙ্গামাটি জেলা ও খাগড়াছড়ি জেলা, পশ্চিমে নোয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। এছাড়া দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপ চট্টগ্রামের অংশ।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলার মোট জনসংখ্যা ৯১,৬৩,৭৬০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫,৬৬,০৩৯ জন এবং মহিলা ৪৫,৯৭,০৭৬ জন এবং বাকি ৬৪৫ জন হিজড়া । জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৭০০ জন।
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৮৭.৪৭% মুসলিম, ১০.৭০% হিন্দু এবং ১.৮৩% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠাকাল
১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। তিন পার্বত্য জেলা এ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৬০ সালে পার্বত্য এলাকা নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ জেলা ভেঙ্গে কক্সবাজার জেলা গঠিত হয়।
নামকরণ
চট্টগ্রামের প্রায় ৪৮টি নামের খোঁজ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে রম্যভুমি, চাটিগাঁ, চাতগাঁও, রোসাং, চিতাগঞ্জ, জাটিগ্রাম ইত্যাদি। চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতভেদ রয়েছে। পণ্ডিত বার্নোলির মতে, আরবি "শ্যাত (খণ্ড)" অর্থ বদ্বীপ, গাঙ্গ অর্থ গঙ্গা নদী এ থেকে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি। অপর এক মত অনুসারে ত্রয়োদশ শতকে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করতে বার জন আউলিয়া এসেছিলেন, তারা একটি বড় বাতি বা চেরাগ জ্বালিয়ে উঁচু জায়গায় স্থাপন করেছিলেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় 'চাটি' অর্থ বাতি বা চেরাগ এবং 'গাঁও' অর্থ গ্রাম। এ থেকে নাম হয় 'চাটিগাঁও'। আবার এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোন্সের মতে এ এলাকার একটি ক্ষুদ্র পাখির নাম থেকে চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি। চট্টগ্রাম ১৬৬৬ সালে মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ হয়। আরাকানীদের হটিয়ে মুঘলরা এর নাম রাখে ইসলামাবাদ। মোগলরা এর প্রশাসনিক সীমানা চিহ্নিত করে। ১৭৬০ সালে নবাব মীর কাশিম আলী খান ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে এটি হস্তান্তর করেন। ব্রিটিশরা এর নাম রাখে 'চিটাগাং'।
সাধারণ ইতিহাস
খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দী থেকেই আরবগণ চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে পরিচিত ছিল। এশিয়ার ঘটনাবলী বর্ণনা করেছেন এমন বিখ্যাত পর্তুগিজদের মধ্যে প্রথম ঐতিহাসিক ডি বারোস ১৫৫২ সালে চট্টগ্রামকে এর বন্দরের জন্য বাংলা রাজ্যের সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত ও সম্পদশালী নগরী বলে বর্ণনা করেছেন; যেখানে পূর্বাঞ্চলের সকল বাণিজ্য জাহাজ সমবেত হত। বর্মি ঘটনাপঞ্জিতে আরাকান অঞ্চলের নরপতিদের এক দীর্ঘ তালিকা পাওয়া যায়। ষষ্ঠ ও সপ্তম শতকে চট্টগ্রাম আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সকল নরপতির নামের শেষে চন্দ্র পদবী যুক্ত ছিল। ঐতিহাসিক লামা তারনাথ যিনি গোপীচন্দ্র নামে এক বৌদ্ধ রাজার নাম উল্লেখ করেছেন। দশম শতাব্দীতে যাঁর রাজধানী ছিল চট্টগ্রামে। তিব্বতি জনশ্রুতি মতে, চট্টগ্রাম ছিল দশম শতাব্দীতে কর্মরত বৌদ্ধ তান্ত্রিক তিলাযোগীর জন্মস্থান। বাংলার শাসক গিয়াসউদ্দীন তুঘলক বাংলাকে লখনৌতি, সাতগাঁও ও সোনারগাঁও এ তিনটি প্রশাসনিক এলাকায় বিভক্ত করেন। ১৩৩৮ সালে ফখরুদ্দীন মুবারক শাহ সোনারগাঁও-এর ক্ষমতা দখল করেন এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই চট্টগ্রাম অধিকার করেন। তিনি চাঁদপুর হতে চট্টগ্রাম পর্যন্ত একটি মহাসড়ক এবং চট্টগ্রামের কয়েকটি মসজিদ ও সমাধিসৌধ নির্মাণ করেন। শেরশাহ এর হাতে সুলতান গিয়াসউদ্দীন মাহমুদ শাহ এর পতনের পর ১৫৩৮ হতে ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে ঘন ঘন আক্রমণ চালায় এবং প্রকৃতপক্ষে এ সময়ে চট্টগ্রাম তাদেরই শাসনাধীন ছিল। পরবর্তী ১২৮ বছর চট্টগ্রাম পতুর্গিজ ও মগ জলদস্যুদের আবাসস্থলে পরিণত হয়। মুঘলদের চট্টগ্রাম বিজয়ের ফলে সার্বিকভাবে এ জেলায় এবং বিশেষ করে নগরীতে শান্তি-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। অবশ্য পর্তুগিজদের অধিকারে থাকাকালে চট্টগ্রাম নগরী ও বন্দর ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে বিশেষ সুখ্যাতি অর্জন করে। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রধানত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে দিনে দিনে কলকাতার উত্থান ও উন্নয়নের ফলে এতদঞ্চলে চট্টগ্রামের গুরুত্ব হ্রাস পায়। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ এবং পূর্ববাংলা ও আসাম নিয়ে নতুন প্রদেশ সৃষ্টি হলে চট্টগ্রাম পুনরায় প্রাধান্য লাভ করে। আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে নির্মাণের ফলে এর প্রাকৃতিক পশ্চাদভূমির সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ সাধিত হয় এবং সার্বিকভাবে চট্টগ্রাম ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে।
১৮৫৭ সালের সিপাহি বিপ্লবের সময় ৩৪তম বেঙ্গল পদাতিক রেজিমেন্টের ২য়, ৩য় ও ৪র্থ কোম্পানীগুলি চট্টগ্রামে মোতায়েন ছিল। ১৮ নভেম্বর রাতে উল্লিখিত তিনটি কোম্পানী বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং জেল থেকে সকল বন্দী মুক্ত করে সিপাহিরা ৩টি সরকারি হাতি, গোলাবারুদ ও ধনসম্পদ নিয়ে চট্টগ্রাম ত্যাগ করে। তারা পার্বত্য ত্রিপুরার সীমান্ত পথ ধরে এগিয়ে সিলেট ও কাছাড়ে পৌঁছে । দূর্ভাগ্যবশত তাদের সকলেই কুকি স্কাউটস এবং পরবর্তীকালে দশম গোর্খা রাইফেল নামে পরিচিত সিলেট লাইট ইনফ্যান্ট্রির হাতে নিহত বা বন্দী হয়।
১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল রাতে ৭০ জন যুবক ,
মহাবিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেনের নির্দেশে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে আর্টিলারী কোরের অস্ত্রাগার ও গোলাবারুদের ভাণ্ডার আক্রমণ করে, টেলিফোন ও টেলিফোন অফিস দখল করে এবং ধুম নামক স্থানে রেলপথের ফিসপ্লেট উপড়ে ফেলে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তাছাড়া মাস্টারদার তত্বাবধানে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার নামে এক উচ্চ শিক্ষিতা বিপ্লবী নারীর নেতৃত্বে পাহাড়তলীতে অবস্থিত ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণ করে তা ধ্বংস করে দেয়া হয়। ক্লাব ধ্বংস করে ফেরার পথে ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মহীয়সী এ নারী পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। পরবর্তীতে সূর্যসেন ইংরেজ শাসকগণ কর্তৃক গ্রেফতার হন এবং ১৯৩৪ সালের ১২ই জানুয়ারি তাঁর ফাঁসি হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশগণ চট্টগ্রামকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে। ফলে চট্টগ্রাম জাপানি আক্রমণের লক্ষ্যস্থলে পরিণত হয়। ১৯৪২ সালের এপ্রিলে পতেঙ্গার বিমানঘাঁটিতে পর পর দুদিন এবং ঐ বছর ২০ ও ২৪ ডিসেম্বর পুনরায় বোমাবর্ষণ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাটস্থ স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে ২৭ শে মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন। ২০ এপ্রিল ক্যাপ্টেন অলি আহমদের নেতৃত্বে মীরসরাই সদরের দক্ষিণে ফেনাফুনি ব্রীজের পাশে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয় এবং যুদ্ধে পাকবাহিনীর প্রায় ১০০ সৈন্য নিহত হয়। ১৩ এপ্রিল পাকবাহিনী রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের ঊনসত্তরপাড়ায় ৪৮ জন এবং জগৎমল্লাপাড়ার ৩৫ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। আনোয়ারা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর কাফকো, কালীগঞ্জ, পরৈকোড়া প্রভৃতি স্থানে সংঘটিত লড়াইয়ে প্রায় ৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং অনেক পাকসেনা হতাহত হয়। পাকসেনারা আমিরাবাদ বণিক পাড়ায় ১৫ জন গ্রামবাসীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং মুক্তিযোদ্ধারা জোটপুকুরিয়ায় ১৭ জন রাজাকারকে হত্যা করে। পটিয়া সদরে পাকবাহিনীর দুটি বোমারু বিমান থেকে কয়েক দফা বোমা হামলা চালালে কিছু সংখ্যক বেসামরিক লোক হতাহত হয়। ৩ মে এ উপজেলার মুজাফফরাবাদ গ্রামে পাকবাহিনী অসংখ্য ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। পাকবাহিনী ১৯ মে বাঁশখালীতে ৭৫ জন নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং অক্টোবর মাসে নাপোড়া গ্রামে ৮৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। বাড়বকুণ্ড ক্যামিক্যালস ব্রীজের কাছে পাকবাহিনীর সাথে লড়াইয়ে দুইজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৩ অক্টোবর কধুরখীল দুর্গাবাড়ি প্রাঙ্গণে পাকবাহিনী গণহত্যা চালায় এবং নাজিরহাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ১১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। যুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম শহর থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র দোহাজারীতে স্থানান্তর করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
গণকবর: ৯টি
(পিটিআই প্রাঙ্গণ, নাজিরহাট, করেরহাট, লেলাং চা বাগান, দরবার শরীফ, বাগানবাড়ি, দাঁতমারা উল্টোবিট, বাঁশখালী, লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের জোটপুকুরিয়া)
বধ্যভূমি: ১৩টি
স্মৃতিস্তম্ভ: ৯টি
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
চট্টগ্রাম জেলা ৪১ ওয়ার্ড বিশিষ্ট ১টি সিটি কর্পোরেশন, ১৫টি উপজেলা, ৩৩টি থানা (উপজেলায় ১৭টি ও ১৬টি মেট্রোপলিটন থানা), ১৫টি পৌরসভা, ১৯০টি ইউনিয়ন, ৮৯০টি মৌজা, ১২৬৭টি গ্রাম ও ১৬টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।
মেট্রোপলিটন থানা
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন মোট ১৬টি মেট্রোপলিটন থানা রয়েছে। মেট্রোপলিটন থানাগুলো হল:
উপজেলাসমূহ
চট্টগ্রাম জেলায় মোট ১৫টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:
সংসদীয় আসন
শিক্ষা ব্যবস্থা
২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলার সাক্ষরতার হার ৮০.৮৫%। এ জেলায় রয়েছে:
বিশ্ববিদ্যালয় : ১৩টি
সরকারি : ৫টি
বেসরকারি : ৮টি
পাবলিক : ৩টি
মেডিকেল কলেজ : ৩টি
আইন কলেজ : ৩টি
কলেজ : ১১৯টি
সরকারি (মাস্টার্স) : ৫টি
সরকারি (ডিগ্রী/অনার্স) : ২০টি
বেসরকারি (ডিগ্রী/অনার্স) : ৮২টি
সরকারি (উচ্চ মাধ্যমিক) : ১টি
বেসরকারি (উচ্চ মাধ্যমিক) : ২৬টি
মাদ্রাসা : ২৯৯টি
কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : ১০টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ৭১৯টি
সরকারি : ৫৮টি
বেসরকারি : ৬৩২টি
স্কুল এন্ড কলেজ : ২৯টি
নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ৩২টি
প্রাথমিক বিদ্যালয় : ২৯৯৭টি
সরকারি : ১৬৩৪টি
বেসরকারি : ৮৪৭টি
রেজিস্টার্ড : ৫১৯টি
পরীক্ষণ : ২টি
অন্যান্য (কিন্ডারগার্টেন সহ) : ৮৪২টি
শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র : ২টি
মেরিন একাডেমী : ১টি
মিলিটারী একাডেমী : ১টি
নেভাল একাডেমী : ১টি
মেরিন ফিসারীজ একাডেমী : ১টি
পাবলিক লাইব্রেরী : ৮টি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ভূ-প্রকৃতি
পাহাড়, নদী, সমুদ্র, অরণ্য, উপত্যকা প্রভৃতি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্যে এ জেলা অন্যান্য জেলা থেকে স্বতন্ত্র। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ৩৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩,১৯৪ মিলিমিটার।
নদ-নদী
চট্টগ্রাম জেলার প্রধান নদীর মধ্যে কর্ণফুলী নদী, হালদা নদী, সাঙ্গু নদী এবং মুহুরী নদী উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও তুলনামূলক ছোট ডলু নদী ও টংকাবতী নদী রয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
আকাশপথ
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এ জেলায় আকাশপথে যোগাযোগের মাধ্যম। ঢাকাসহ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন শহর থেকে বাংলাদেশ বিমান, জি এম জি, ইউনাইটেড এয়ার, ওমান এয়ার সহ আরও অনেক অপারেটর ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।
সড়কপথ
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, হানিফ এন্টারপ্রাইজসহ অনেক এসি/নন-এসি বাস যাতায়াত করে থাকে।
রেলপথ
ঢাকা হতে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম হতে ঢাকার মাঝে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। তার মধ্যে তূর্ণা নিশিতা, পাহাড়িকা, মহানগর গোধূলী, মহানগর প্রভাতী, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম মেইল অন্যতম। এছাড়া দেশের অন্যান্য জেলা শহরের সাথেও চট্টগ্রামের রেল যোগযোগ রয়েছে।
ভাষা ও সংস্কৃতি
চট্টগ্রাম জেলার অফিসিয়াল ভাষা বাংলা হলেও এ জেলার একটি নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যেটি চাটগাঁইয়া নামে পরিচিত। এ ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, ব্যকরণ ও শব্দভাণ্ডার রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার অধিকাংশ লোক এ ভাষায় কথা বলে।
চট্টগ্রাম জেলা নানান লোকসংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। মুসলমান সম্প্রদায়ের মেজবান এ জেলার একটি ঐতিহ্য। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো যথাযোগ্য মর্যাদা আর আনুষ্ঠানিকতায় পালন করে থাকে। এছাড়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখী উৎসব, বিয়ে, চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ, হালখাতা, পূণ্যাহ, নবান্ন, পৌষ পার্বন, অন্ন প্রাশন উপলক্ষে এ জেলার জনগোষ্ঠী লোকজ অনুষ্ঠান পালন করে।
অর্থনীতি
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সর্বমোট রপ্তানী বাণিজ্যের প্রায় ৭৫ ভাগ সংঘটিত হয়। অন্যদিকে আমদানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ হার ৮০ ভাগ। রাজস্ব আয়েও চট্টগ্রামের ভূমিকা অপরিসীম। দেশের মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ৬০ ভাগ আসে চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে।
বাংলাদেশের প্রথম রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল হিসাবে ১৯৮৩ সালে চট্টগ্রামের হালিশহরে ৪৫৩ একর জায়গার উপর নির্মাণ করা হয় চট্টগ্রাম ইপিজেড। এটা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩.১০ কিলোমিটার এবং শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে মাত্র ১.৩০ কিলোমিটার দুরত্বে হওয়ায় শিল্প পার্ক হিসাবে দ্রুত প্রসার লাভ করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃতিক সমুদ্র বন্দর।
শিল্প প্রতিষ্ঠান
চট্টগ্রাম জেলার শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প (সীতাকুণ্ড)
ইস্টার্ন রিফাইনারি
কাফকো
সিইউএফএল
টিএইচপি কমপ্লেক্স
পাহাড়তলী রেলওয়ে ওয়ার্কশপ
যমুনা অয়েল
এস আলম গ্রুপ
টি কে গ্রুপ
কেডিএস গ্রুপ
প্যাসিফিক গ্রুপ
এয়ারবেল
শাহ আমিন গ্রুপ
পিএইচপি গ্রুপ
ইউনিলিভার
গ্ল্যাক্সো
বি এস আর এম
এ কে খান গ্রুপ
ওয়েস্টার্ন শিপইয়ার্ড
ইয়ংওয়ান গ্রুপ
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড
আরামিট গ্রুপ
মোস্তফা হাকিম গ্রুপ
প্রাকৃতিক সম্পদ
খনিজ সম্পদ
জেলার একমাত্র গ্যাস ফিল্ড সাঙ্গু ১৯৯৪ সালে আবিস্কৃত হয়। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কেয়ার্ন এনার্জির এই গ্যাস ফিল্ড নিয়ে চুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৯৯৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে এ গ্যাস ফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়।
কৃষি সম্পদ
তামাক
১৯৬০ এর দশকে শংখ ও মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী এলাকায় তামাক চাষ শুরু হয়। বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানি (এখন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানী) রাঙ্গুনিয়াতে তামাক চাষের ব্যবস্থা করে এবং পরে লাভজনক হওয়ায় চাষীরা তা অব্যাহত রাখে।
লবণ
সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় লবণ চাষ লাভজনক। ইতিহাসে দেখা যায়, ১৭৯৫ সালে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে গড়ে বার্ষিক ১৫ লাখ টন লবণ উৎপন্ন হত।
প্রাণীজ সম্পদ
চট্টগ্রাম জেলায় মাছ চাষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। সমুদ্র এবং নদী-নালার প্রাচুর্য এর মূল কারণ। শহরের অদূরের হালদা নদীর উৎসমুখ থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত মিঠা পানির প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে বেশ উর্বর। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দীঘি, বিল ও হাওড়ের সংখ্যা ৫৬৮, পুকুর ও ডোবার সংখ্যা ৯৫,৯৪১। মোট আয়তন ৮৫,৭০০ একর (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ১৯৮১), কর্ণফুলী নদীর মোহনায় প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার একর বিস্তৃত মাছ ধরার জায়গা হিসাবে চিহ্নিত। মৎস্য চাষ ও আহরণ রপ্তানির ক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ হাঙ্গর, স্কেট, রে, হেরিং, শার্কফিন এবং চিংড়ি উল্লেখ্য। চট্টগ্রামের মাছ চাষ ও আহরণের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল শুটকি (মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করা)। সোনাদিয়া, সন্দ্বীপ প্রভৃতি দ্বীপাঞ্চল থেকে শুটকি মাছ চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ আমলে শুটকি রেঙ্গুনে রপ্তানি করা হত।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান
সাহিত্য
চট্টগ্রামে বাংলা সাহিত্যের বিকাশ শুরু হয় ষোড়শ শতকে। সে সময়কার চট্টগ্রামের শাসক পরাগল খাঁ এবং তার পুত্র ছুটি খাঁর সভাকবি ছিলেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর ও শ্রীকর নন্দী। কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতের অশ্বমেধ পর্বের একটি সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ করেন। আর শ্রীকর নন্দী জৈমিনি সংহিতা অবলম্বনে অশ্বমেধ পর্বের বিস্তারিত অনুবাদ করেন।
মধ্যযুগ
কবি শাহ মোহাম্মদ ছগির, রহিমুন্নিসা, আলী রজা, মুহম্মদ মুকিম, কবি মুজাম্মিল, কবি আফজাল আলী, সাবিরিদ খান, কবীন্দ্র পরমেশ্বর, শ্রীকর নন্দী, দৌলত উজির বাহরাম খান, হাজী মুহম্মদ কবির, কবি শ্রীধর, সৈয়দ সুলতান, শেখ পরান, মোহাম্মদ নসরুল্লা খাঁ, মুহাম্মদ খাঁ, নওয়াজিশ খান, করম আলী, কবি কাজি হাসমত আলী।
আরাকানের রাজসভা
দৌলত কাজী, মহাকবি আলাওল, কোরেশী মাগন ঠাকুর, কবি মরদন এবং আব্দুল করিম খোন্দকার।
অষ্টম শতক থেকে পরবর্তীকাল
কবি আবদুল হাকিম, রামজীবন বিদ্যাভূষণ, ভবানী শঙ্কর দাস, নিধিরাম আচার্য, মুক্তারাম সেন, কবি চুহর, হামিদুল্লা খান, আস্কর আলী পণ্ডিত, রঞ্জিত রাম দাস, রামতনু আচার্য, ভৈরব আইচ, নবীন চন্দ্রদাস, নবীনচন্দ্র সেন, শশাঙ্ক মোহন সেনগুপ্ত, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, বেন্দ্রকুমার দত্ত, হেমেন্দ্র বালা দত্ত, পূর্ণচন্দ্র চৌধুরী, আশুতোষ চৌধুরী, সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ।
আধুনিক যুগ
মাহাবুব উল আলম, আবুল ফজল, সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, ওহীদুল আলম, ডক্টর আবদুল করিম, আহমদ শরীফ, আবদুল হক চৌধুরী, আহমদ ছফা, সুকুমার বড়ুয়া, শামসুল আরেফীন।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
আরও দেখুন
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন
চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বিভাগ
বাংলাদেশের জেলাসমূহ
তথ্যসূত্র
বহিসংযোগ
চট্টগ্রাম জেলার সরকারি ওয়েব জেলা তথ্য বাতায়ন
চট্টগ্রাম জেলা
চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা
বাংলাদেশের জেলা
১৯৭১-এর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জেলা | https://en.wikipedia.org/wiki/Chittagong_District | Chittagong District | Chittagong District, renamed the Chattogram District, is a district located in south-eastern Bangladesh. It is a part of the Chittagong Division. The port city of Chittagong, which is the second largest city in Bangladesh, is located within this district. |
2684 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE | কক্সবাজার জেলা | কক্সবাজার জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। উপজেলার সংখ্যানুসারে কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি “এ” শ্রেণীভুক্ত জেলা। এটি বাংলাদেশের সর্ব-দক্ষিণের জেলা।
আয়তন
কক্সবাজার জেলার মোট আয়তন ২৪৯১.৮৬ বর্গ কিলোমিটার।বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২০°৩৫´ থেকে ২১°৫৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫০´ থেকে ৯২°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে কক্সবাজার জেলার অবস্থান। রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ৪০২ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার। এ জেলার উত্তরে চট্টগ্রাম জেলা; পূর্বে বান্দরবান জেলা, নাফ নদী ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য এবং দক্ষিণে ও পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।
জনসংখ্যা
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কক্সবাজার জেলার মোট জনসংখ্যা ২২,৮৯,৯৯০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১১,৯৭,০৭৮ জন এবং মহিলা ১০,৯২,৯১২ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৯২০ জন।
ধর্মবিশ্বাস অনুসারে এ জেলার মোট জনসংখ্যার ৯৩% মুসলিম, ৫% হিন্দু এবং ২% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠাকাল
১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা গঠিত হয় এবং ঐ বছরই কক্সবাজার, চকরিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ থানার সমন্বয়ে কক্সবাজার মহকুমা গঠিত হয়। পরে টেকনাফ থেকে উখিয়া, মহেশখালী থেকে কুতুবদিয়া এবং কক্সবাজার সদর থেকে রামু থানাকে পৃথক করে এই মহকুমার অধীনে তিনটি নতুন থানা গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালে কক্সবাজার জেলাকে টাউন কমিটিতে রূপান্তর করা হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে পৌরসভায় রূপান্তর করা হয়। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচির আওতায় প্রথম পর্যায়ে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ কক্সবাজার মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ ২০০২ সালের ২৩ এপ্রিল বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা থেকে পেকুয়া উপজেলাকে পৃথক করা হয়।
নামকরণ
কক্সবাজারের প্রাচীন নাম পালংকী। একসময় এটি প্যানোয়া নামে পরিচিত ছিল। প্যানোয়া শব্দটির অর্থ হলুদ ফুল। অতীতে কক্সবাজারের আশপাশের এলাকাগুলো এই হলুদ ফুলে ঝকমক করত। ইংরেজ অফিসার ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দে এখানে একটি বাজার স্থাপন করেন। কক্স সাহেবের বাজার থেকে কক্সবাজার নামের উৎপত্তি।
সাধারণ ইতিহাস
আরব ব্যবসায়ী ও ধর্ম প্রচারকগণ অষ্টম শতকে চট্টগ্রাম ও আকিব বন্দরে আগমন করেন। এই দুই বন্দরের মধ্যবর্তী হওয়ায় কক্সবাজার এলাকা আরবদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসে। নবম শতাব্দীতে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম হরিকেলার রাজা কান্তিদেব দ্বারা শাসিত হত। ৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে আরাকান রাজা সুলাত ইঙ্গ চন্দ্র চট্টগ্রাম দখল করে নেবার পর থেকে কক্সবাজার আরাকান রাজ্যের অংশ ছিল। ১৬৬৬ সালে মুঘলরা চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। মুঘল সেনাপতি বুজুর্গ ওমেদ খান কর্ণফুলির দক্ষিণের মাঘ কেল্লা দখল করে নেন এবং আরাকানবাসী রামু কেল্লাতে আশ্রয় নেয়, যা কিনা পরে মুঘলরা হঠাৎ আক্রমণ করে দখল করে নেয়।
কক্সবাজারে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চাষীদের মাঝে জমি বিতরণের এক উদারনৈতিক পদক্ষেপ নেয়। এর ফলে চট্টগ্রাম ও আরাকানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ এই এলাকায় আসতে থাকে। বার্মা রাজ বোধাপায়া (১৭৮২-১৮১৯) ১৭৮৪ সালে আরাকান দখল করে নেন। প্রায় ৩০ হাজার আরাকানী বার্মারাজের হাত থেকে বাঁচার জন্য ১৭৯৯ সালে কক্সবাজারে পালিয়ে যায়। এদের পুনর্বাসন করতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হিরাম কক্সকে নিয়োগ দেয়। প্রতি পরিবারকে ২.৪ একর জমি এবং ছয় মাসের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়েছিল। এ সময় ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স রাখাইন অধ্যুষিত এলাকায় একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। যা কক্স সাহেবের বাজার হিসেবে পরিচিত হয় স্থানীয়দের মাঝে। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় তার অবদানের জন্য কক্স-বাজার নামক একটি বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই কক্স-বাজার থেকেই কক্সবাজার জেলার নামের উৎপত্তি। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ হবার পূর্বেই ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হিরাম কক্স ১৭৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী চকরিয়ায় ১৩ জন লোককে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। এসময় পাকবাহিনী টেকনাফ ডাকবাংলোতে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং রামু, উখিয়া ও টেকনাফ থেকে প্রায় ২৫০জন নিরীহ লোককে ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন
স্মৃতিস্তম্ভ ৩টি
বধ্যভূমি ১টি
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
কক্সবাজার জেলা ৯টি উপজেলা, ৯টি থানা, ৪টি পৌরসভা, ৭১টি ইউনিয়ন, ১৮৮টি মৌজা, ৯৯২টি গ্রাম ও ৪টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত।
উপজেলাসমূহ
কক্সবাজার জেলায় মোট ৯টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:
সংসদীয় আসন
শিক্ষা ব্যবস্থা
কক্সবাজার জেলার সাক্ষরতার হার ৩৯.৩০। কক্সবাজার জেলায় "কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয়" নামে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে UGC কর্তৃক সুপারিশ করা হয়েছে। এ জেলায় রয়েছে:
বিশ্ববিদ্যালয়: ২টি (১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (সুপারিশকৃত), ১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়)
মেডিকেল কলেজ: ১টি
স্নাতকোত্তর কলেজ: ২টি
কামিল মাদ্রাসা: ৪টি
ডিগ্রী কলেজ: ১১টি
ফাজিল মাদ্রাসা: ১২টি
উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ: ১৯টি
আলিম মাদ্রাসা: ১৯টি
কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট: ১টি
মাধ্যমিক বিদ্যালয়:১৪০টি
দাখিল মাদ্রাসা: ১০৪টি
নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়: ৫২টি
প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৭০১টি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ভূ-প্রকৃতি
চট্টগ্রাম জেলার মত কক্সবাজার জেলাও পাহাড়, নদী, সমুদ্র, অরণ্য, উপত্যকা প্রভৃতি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্যে অন্যান্য জেলা থেকে স্বতন্ত্র। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩,৩৭৮ মিলিমিটার। উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় এ জেলা প্রায়ই সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, হারিকেন, সাইক্লোন ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হয়।
নদ-নদী
কক্সবাজার জেলার মূল ভূখণ্ডের উপর দিয়ে প্রবাহিত প্রধান প্রধান নদীগুলো হল মাতামুহুরী নদী, বাঁকখালী নদী ও রেজু খাল। মায়ানমার সীমান্তে প্রবাহিত হচ্ছে নাফ নদী। এছাড়া কুতুবদিয়া ও মহেশখালী দ্বীপদ্বয়কে কক্সবাজার জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে পৃথক করেছে যথাক্রমে কুতুবদিয়া চ্যানেল ও মহেশখালী চ্যানেল। আবার মহেশখালী উপজেলা থেকে মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নদ্বয়কে পৃথক করেছে কোহেলিয়া নদী।
দ্বীপ ও বনাঞ্চল
প্রধান দ্বীপ
মহেশখালী
কুতুবদিয়া
সোনাদিয়া
সেন্টমার্টিন (নারিকেল জিঞ্জিরা)
শাহপরীর দ্বীপ
মাতারবাড়ী
ছেঁড়া দ্বীপ
প্রধান বন
ফুলছড়ি রেঞ্জ
ভুমারিয়াঘোনা রেঞ্জ
মেহেরঘোনা রেঞ্জ
বাঁকখালী রেঞ্জ
যোগাযোগ ব্যবস্থা
আকাশপথ
কক্সবাজার বিমানবন্দর এ জেলায় আকাশপথে যোগাযোগের মাধ্যম। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহর থেকে বাংলাদেশ বিমান সহ আরও বিভিন্ন ফ্লাইটে যোগাযোগ করা যায়।
সড়কপথ
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, হানিফ এন্টারপ্রাইজসহ অনেক এসি/নন-এসি বাস যাতায়াত করে থাকে। বর্তমানে মার্সা নামের একটি গাড়ী বেশ আলোচিত, চট্টগ্রাম যাতায়াত করার জন্য।
রেলপথ
১১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধন এর মাধ্যমে কক্সবাজারের সাথে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হয়। ১ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ থেকেই এই রেলপথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল করবে।
কক্সবাজার এক্সপ্রেস এর মাধ্যমে রেলপথের যাত্রা শুরু হয়।
বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দুটি আন্তনগর ট্রেন চালু আছে। একটি কক্সবাজার এক্সপ্রেস, অন্যটি পর্যটক এক্সপ্রেস
ভাষা ও সংস্কৃতি
কক্সবাজার জেলার মানুষ সাধারণত চাটগাঁইয়া ও বাংলা ভাষায় কথা বলে, তবে কথ্য ভাষায় অনেক ক্ষেত্রে কক্সবাজার কেন্দ্রিক শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ঐতিহাসিকভাবে এ অঞ্চলের মানুষের সাথে বর্তমান মায়ানমার (পূর্বে যাকে আরাকান নামে অভিহিত করা হত) এর সাথে ব্যাপক যোগাযোগের সম্পর্ক ছিল যা এখনও সীমিত আকারে হলেও অটুট রয়েছে। এ কারণে আরাকানের ভাষার কিছু কিছু উপাদান কক্সবাজারের কথ্য ভাষায় মিশ্রিত হয়ে গেছে। এ উপজেলায় নৃতাত্ত্বিক রাখাইন জনগোষ্ঠী বসবাস করে। এদের ভাষার প্রভাবও স্থানীয় ভাষায় লক্ষ্য করা যায়।
সমুদ্র তীরবর্তী শহর হিসেবে কক্সবাজার জেলার সংস্কৃতি মিশ্র প্রকৃতির। পূর্ব হতেই বার্মার সাথে এ অঞ্চলের মানুষের সম্পর্ক থাকায় এবং রাখাইন নামক নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বসবাস করায় কক্সবাজারে বাঙালী এবং বর্মী সংস্কৃতির এক অভূতপূর্ব সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে রাখাইন সঙ্গীত এবং নৃত্যকলা এ অঞ্চলতো বটেই বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
এছাড়া চাকমারাও কক্সবাজার জেলায় বহু শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে তারা মূলত উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলাতে বসবাস করে। কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী চাকমারকূল ও রাজারকূল চাকমাদের স্মৃতি বহন করে। সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ প্রাচীনকাল হতেই নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং উত্তাল সাগরের সাথে সংগ্রাম করে টিকে রয়েছে বিধায় স্থানীয় সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যম ও উপস্থাপনায় সংগ্রামের সেই চিত্র ফুটে ওঠে, বিশেষ করে জেলে সম্প্রদায়ের প্রাত্যহিক জীবন।
পর্যটন
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম (১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ) সমুদ্র সৈকত । এটি বাংলাদেশের একটি বৃহৎ পর্যটন কেন্দ্র। এখানে ২ শতাধিক বড় হোটেল, ৫ শতাধিক অন্যান্য হোটেল রয়েছে। এখানে একটি ঝিনুক মার্কেট ও একটি বার্মিজ মার্কেট রয়েছে, যেখানে মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও চীনের বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া যায়।
অর্থনীতি
প্রধান পেশা: কৃষি, মৎস্যজীবি, কৃষি শ্রমিক, মজুর, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য।
প্রধান শস্য: ধান, আলু, ডাল, পিঁয়াজ, হলুদ, আঁদা, গম, আঁখ, তামাক, রাবার, সবজী, পান, সুপারি।
প্রধান ফল: আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, পেঁপে, নারিকেল, লিচু, পেয়ারা, তাল।
কারখানা ও প্রতিষ্ঠান: চালের কল ৪৭৩টি, লবণের কল ৩৮টি, বরফের কল ৬৪টি, ময়দার কল ১৪৫টি, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ (শুঁটকি) শিল্প ৩১টি, মৎস্য-খাদ্য কল ১টি, স'মিল, ছাপাখানা ১৮টি।
খনিজ পদার্থ: প্রাকৃতিক গ্যাস, জিরকন, লিমেনাইট, রুটাইল, ম্যাগনেটাইট, মোনাজাইট, লাইমস্টোন, গন্ধক,
কক্সবাজারের এর কুতুবদিয়ায় বাংলাদেশের একমাত্র গন্ধক(sulphur) খনি অবস্থিত।
রপ্তানি পণ্য: পান, সুপারি, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, চীনাবাদাম, কাঠ, চিংড়ি, শুঁটকি, লবণ, তামাক, সামুদ্রিক মাছ, নারিকেল, রাবার।
দর্শনীয় স্থান
হযরত মালেক শাহ (র:) দরবার শরীফ, কুতুবদিয়া
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, ডুলহাজারা,চকরিয়া
অগ্গমেধা বৌদ্ধ বিহার
আদিনাথ মন্দির
ইনানী সমুদ্র সৈকত
পাটুয়ারটেক সমুদ্র সৈকত
ইলিশিয়া জমিদার বাড়ি
রোহিঙ্গা ক্যাম্প
কক্সবাজার বিমানবন্দর
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার সরকারি কলেজ
টেকনাফ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য
ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
নাফ নদী
ফাসিয়াখালি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম
মগনামা ঘাট
মাথিন কূপ, টেকনাফ
মেধা কচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান
মেরিন ড্রাইভ কক্সবাজার
রাখাইন পাড়া
রামু সেনানিবাস
রাংকূট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার
শাহ ওমরের সমাধি,কাকারা, চকরিয়া
শাহপরীর দ্বীপ
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম
সাতগম্বুজ মসজিদ, মানিকপুর, চকরিয়া
নিভৃতি নিসর্গ,মানিকপুর, চকরিয়া
মাতামুহুরি নদী, শ্বেত পাহাড় মানিকপুর, চকরিয়া
কিউক এর বাড়ি মানিকপুর চকরিয়া
মুরার কিয়াং(পুরানো বৌদ্ধ মন্দির) মানিকপুর
সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ
ছেঁড়া দ্বীপ
সোনাদিয়া দ্বীপ
হিমছড়ি
হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান
বরইতলি ঝর্ণা
চকরিয়া সুন্দরবন চকরিয়া,চোয়ারফাঁড়ি।
গোলাপ ফুলের ক্ষেত বরইতলি, চকরিয়া।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সলিমুল্লাহ খান – অধ্যাপক, লেখক, গবেষক, আইনজ্ঞ ও রাজনীতি বিশ্লেষক
ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী – সাবেক রাষ্ট্রদূত (সংযুক্ত আরব আমিরাত),সাবেক সাংসদ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক, ককসবাজার জেলা, ককসবাজার মহিলা কলেজের প্রতিষ্টাতা।
প্রফেসর ড. আনছারুল করিম - আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশবিজ্ঞানী। (মহেশখালী, ককক্সবাজার।)
নাজিমুদ্দিন ফরহাদ - সাবেক অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ সচিবালয়। (রামু, কক্সবাজার।)
প্রফেসর ড. বদিউল আলম - ১৩তম উপচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। (মহেশখালী, ককক্সবাজার।)
অধ্যাপক ড. শিরীণ আক্তার - ১৮তম উপচার্য ও ১ম নারী উপচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। (ঈদগাঁও, ককক্সবাজার।)
বিচারপতি মোহাম্মদ আলী বিচারপতি, হাইকোর্ট ডিভিশন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
তৌহিদুল আলম সবুজ - আক্রমণভাগের খেলোয়াড়, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবলদল। (মহেশখালী, ককক্সবাজার।)
লুৎফুর রহমান কাজল – সাবেক সাংসদ, জাতীয় রাজনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট শিল্পউদ্যোক্তা।
আশেক উল্লাহ রফিক – রাজনীতিবিদ;
খালেকুজ্জামান - রাজনীতিবিদ;
এ.টি.এম. জাফর আলম - স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত;
দিদারুল আলম চৌধুরী – রাজনীতিবিদ;
নুরুল হুদা – বীর প্রতীক;
ফরিদ আহমদ – ডাকসুুু'র সাবেক ভিপি এবং পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী;
মমিনুল হক – ক্রিকেটার;
মুহম্মদ নূরুল হুদা – ভাষাবিদ, কবি, ঔপন্যাসিক ও সাহিত্য সমালোচক এবং মহাপরিচালক - বাংলা একাডেমি।
মোস্তাক আহমদ চৌধুরী – রাজনীতিবিদ।
শফিউল আলম – মন্ত্রিপরিষদ সচিব;
শাহীন আক্তার – রাজনীতিবিদ;
শাহজাহান চৌধুরী – রাজনীতিবিদ;
শিরিন আক্তার – শিক্ষাবিদ;
সত্যপ্রিয় মহাথের – বৌদ্ধ পণ্ডিত;
সাইমুম সরওয়ার কমল – মাননীয় সাংসদ ককসবাজার ( রাজনীতিবিদ)
সালাহউদ্দিন আহমেদ – রাজনীতিবিদ;
সুশান্ত ত্রিপুরা – ফুটবল খেলোয়ার।
হেলালুদ্দীন আহমদ – পদস্থ সরকারি কর্মচারী।
হামিদুল হক (মেজর জেনারেল)
আনিসুর রহমান জিকো – গোল রক্ষক, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল
চিত্রশালা
আরও দেখুন
বাংলাদেশের জেলাসমূহ
কক্সবাজার
চট্টগ্রাম বিভাগ
কক্সবাজার সদর উপজেলা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা
বাংলাদেশের জেলা
১৯৮৪-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত
রোহিঙ্গা অভিবাসী | https://en.wikipedia.org/wiki/Cox%27s_Bazar_District | Cox%27s_Bazar_District | null |
2685 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B6 | ইলিশ | ইলিশ (বৈজ্ঞানিক নাম: Tenualosa ilisha) বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। এটি একটি সামুদ্রিক মাছ, যা ডিম পাড়ার জন্য বাংলাদেশ ও পূর্ব ভারতের নদীতে আগমন করে। বাঙালিদের কাছে ইলিশ খুব জনপ্রিয়। এ ছাড়াও ইলিশ ভারতের বিভিন্ন এলাকা যেমন পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, ত্রিপুরা ও আসামে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাছ। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
বাংলা ভাষা, ভারতের আসাম এর ভাষায় ‘ইলিশ’ শব্দটি পাওয়া যায় এবং তেলুগু ভাষায় ইলিশকে পোলাসা ( Pulasa বা Polasa) আখ্যায়িত করা হয়। পাকিস্তানের সিন্ধ ভাষায় বলা হয় পাল্লু মাছি (সিন্ধু: پلو مڇي Pallu Machhi), ওড়িয়া ভাষায় ইলিশী (ওড়িয়া: ଇଲିଶି Ilishii) গুজরাটে ইলিশ মাছ মোদেন (স্ত্রী) বা পালভা (পুরুষ) নামে পরিচিত। ইলিশ অর্থনৈতিক ভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মাছ। বঙ্গোপসাগরের ব-দ্বীপাঞ্চল, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা নদীর মোহনার হাওর থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ ধরা হয়। এটি সামুদ্রিক মাছ কিন্তু এই মাছ বড় নদীতে ডিম দেয়। ডিম ফুটে গেলে ও বাচ্চা বড় হলে (যাকে বাংলায় বলে জাটকা) ইলিশ মাছ সাগরে ফিরে যায়। সাগরে ফিরে যাবার পথে জেলেরা এই মাছ ধরে।
যদিও ইলিশ লবণাক্ত জলের মাছ বা সামুদ্রিক মাছ, বেশিরভাগ সময় সে সাগরে থাকে কিন্তু বংশবিস্তারের জন্য প্রায় ১২০০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে ভারতীয় উপমহাদেশে নদীতে পাড়ি জমায়। বাংলাদেশে নদীর সাধারণ দূরত্ব ৫০ কিমি থেকে ১০০ কিমি। ইলিশ প্রধানত বাংলাদেশের পদ্মা (গঙ্গার কিছু অংশ), মেঘনা (ব্রহ্মপুত্রের কিছু অংশ) এবং গোদাবরী নদীতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এর মাঝে পদ্মার ইলিশের স্বাদ সবচেয়ে ভালো বলে ধরা হয়। ভারতের রূপনারায়ণ নদী, গঙ্গা, গোদাবরী নদীর ইলিশ তাদের সুস্বাদু ডিমের জন্য বিখ্যাত। ইলিশ মাছ সাগর থেকেও ধরা হয় কিন্তু সাগরের ইলিশ নদীর মাছের মত সুস্বাদু হয় না। দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশেও এই মাছ পাওয়া যায়। সেখানে মাছটি "পাল্লা" নামে পরিচিত। এই মাছ খুব অল্প পরিমাণে থাট্টা জেলায় ও পাওয়া যায়। বর্তমানে সিন্ধু নদীর জলস্তর নেমে যাওয়ার কারণে পাল্লা বা ইলিশ আর দেখা যায় না।
শ্রেণিবিন্যাস
ইলিশের বৈজ্ঞানিক নাম Tenualosa ilisha। এটি Clupeidae পরিবার (family) এর অন্তর্গত। এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় মাছ।
বাসস্থান
এটি নোনা জলের মাছ। সাধারণত বড় নদী এবং মোহনায় সংযুক্ত খালে বর্ষাকালে পাওয়া যায়। এ সময় ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে সমুদ্র থেকে বড় নদী এবং মোহনায় সংযুক্ত খালে আসে। ইলিশ মাছ চাষ করা যায় না। জেলেরা মাছ ধরার নৌকা নিয়ে নদীতে যায় এবং জাল ফেলে মাছ ধরে। এই মাছ উপকূলবর্তী ঘাটে আনা হয়। সেখান থেকে বরফ দিয়ে দেশের দূরবর্তী স্থানসমূহে প্রেরণ করা হয়। ভোলা জেলার তজুমুদ্দিনে মেঘনা ও বঙ্গপোসাগরের মোহনায় সর্বাধিক পরিমাণ ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। ভোলা জেলা ইলিশের জন্য বিখ্যাত। দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইলিশ পাওয়া যায় বরগুনা জেলায়। বাংলাদেশ ইলিশ মাছ রপ্তানি করেও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।
খাদ্য উপাদান ও রন্ধনপ্রণালী
ইলিশ একটি চর্বিযুক্ত মাছ আর ইলিশে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড (ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড) রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে, এই অ্যাসিড ইদুরের কোলেস্টোরেল ও ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
সর্ষে ইলিশ, ভাপা ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, কড়া ভাজা, দোপেয়াজা এবং ঝোল খুবই জনপ্রিয়। কচুর পাতা এবং ইলিশ মাছের কাটা, মাথা ইত্যাদির ঘন্ট একটি বিশেষ রান্না। ডিম ভর্তি ইলিশ মাছ এবং সুগন্ধি চাল দিয়ে বিশেষ একরকম রান্না করা হয় যা ভাতুরী বা ইলিশ মাছের পোলাও নামে পরিচিত। এটি বর্ষাকালের একটি বিশেষ রান্না। ইলিশ মাছ টুকরো করে লবণে জারিত করে অনেক দিন সংরক্ষণ করা যায়। এভাবে সংরক্ষিত ইলিশকে নোনা ইলিশ বলে। এটা দিয়েও বিভিন্ন সুস্বাদু পদ রান্না করা হয়।
বাংলাদেশে এই ইলিশ ভাপে, ভেজে, সিদ্ধ করে, কচি কলা পাতায় মুড়ে পুড়িয়ে, সরিষা দিয়ে, জিরা, বেগুন, আনারস দিয়ে এবং শুঁকিয়ে শুটকি করে, আরো বিভিন্ন প্রণালীতে রান্না করা হয়। বলা হয়, ইলিশ মাছের প্রায় ৫০ রকম রন্ধনপ্রণালী রয়েছে। ইলিশের ডিম ও খুব জনপ্রিয় খাবার। এই মাছ রান্না করতে খুব অল্প তেল প্রয়োজন হয় কারণ ইলিশ মাছে প্রচুর তেল থাকে। উত্তর আমেরিকার ইলিশ সব সময় পাওয়া যায়না বলে, বাঙালি অধিবাসীরা সাদ (shad) মাছ ইলিশের বিকল্প হিসেবে নিয়েছে। সাদ মাছকে ইলিশের বিকল্প হিসেবে ধরা হয় কারণ এই মাছের রঙ ও স্বাদ প্রায় ইলিশের মত।
বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ইলিশ
অনেক বাঙালি হিন্দু পরিবার বিভিন্ন পূজার শুভ দিনে জোড়া ইলিশ বা দুইটি ইলিশ মাছ কেনেন। সরস্বতী পূজা ও লক্ষ্মী পূজায় জোড়া ইলিশ কেনা খুব শুভ লক্ষণ হিসেবে মনে করা হয়। কিন্তু এই প্রথা পশ্চিমবঙ্গ (ভারত) ও বাংলাদেশের বাঙালি হিন্দুদের মাঝে প্রচলিত আছে। তাদের অনেকে লক্ষ্মী দেবীকে ইলিশ মাছ উৎসর্গ করেন। অনেকেই ইলিশ উৎসর্গ ছাড়া পূজাকে অসম্পূর্ণ মনে করেন।
নামকরণ
ফিশবেইসে (ফ্রোইসি ও পোলি ২০১৭) ২৫টি ভাষায় এই ইলিশের নাম দেওয়া হয়েছে (ইংরেজি শব্দ থেকে উচ্চারণ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় উচ্চারণের সঙ্গে তা হুবহু নাও মিলতে পারে)।
ফিশবেইসে বলা হয়েছে, বৈশ্বিকভাবে ইলিশকে বলা হয় হিলসা শ্যাড এবং আলোস হিলসা। বাংলাদেশে বলা হয়, ইলিশ মাছ, ইলিশ, পদ্মা ইলিশ, জাটকা—দেশের কোনো কোনো এলাকায় ইলিশকে ইলশাও বলে।
মিয়ানমারে বার্মিজ ভাষায় বলা হয় না-থা-লোক, না-থালাংক। ভারতে বাংলা ভাষাভাষীরা বলেন ইলিশ এবং ছোট ইলিশকে বলেন খোকা ইলিশ। অসমীয়া ভাষায় বলা হয় ‘ইলিহি’। তেলুগু ভাষায় বলা হয় পালাসা, পালাসাহ, পালিয়া, পোলাসা। গুজরাটি ভাষায় বলা হয় চাকশি, চাকসি, চাসকি, পাল্লা। হিন্দিতে বলা হয় হিলসা, পালা। কানাড়া ভাষায় বলা হয় মুল্লাসু, পালাসা, পালিয়া, পোলাসা। মালয়ালম ভাষায় বলা হয় পালিয়াহ, পালুভা, ভালাভা। মারাঠি ভাষায় বলা হয় পালা, পাল্লা, পালভা। উড়ে ভাষায় বলা হয় ইলিশ, ইলিশা, জোড়ি। তামিল ভাষায় বলা হয় উল্লাম, ভেনগান্নাই, সেভা। শ্রীলঙ্কায় তামিল ভাষায় ইলিশকে বলা হয় সেভ্ভা, উল্লাম। পাকিস্তানের পাঞ্জাবি ভাষায় ইলিশকে পাল্লা এবং উর্দুতে পালো ও পুল্লা বলা হয়। ভিয়েতনামে ক্যা কে বলা হয় ইলিশকে। যুক্তরাষ্ট্রে বৈশ্বিক নাম হিলসা বলেই ডাকা হয়। যুক্তরাজ্যে বলা হয় হিলসা হেরিং। পোলান্ডে পলিশ ভাষায় বলা হয় হিলজা ইনডিজস্কা। পর্তুগালে পর্তুগিজ ভাষায় ইলিশকে বলা হয় পালা। চেক ভাষায় ইলিশের নাম প্লাককা ইলিশা, স্লেড পালাসাহ। ডেনমার্কে ইলিশের নাম হিলসা-স্টামস্লিড। স্প্যানিশ ভাষায় ইলিশের নাম সাবালো হিলসা। সুইডিশ ভাষায় বলা হয় হিনডিস্ক স্টাকসিল। এস্তোনিয়ান ভাষায় ইলিশকে বলা হয় ইন্ডিয়া সালিলুসা। রাশিয়ায় রুশ ভাষায় এই ইলিশকেই ডাকা হয় তেনুয়ালোসা নামে। ইরাকে আরবি ভাষায় ইলিশের নাম শোর। ইরানে ফারসি ভাষায় ইলিশকে কয়েকটি নামে ডাকা হয়। যেমন: বার্ক, মাহি খোর কুচিকু, সবোর, সবুর, জাবুর, জমুর। ওমানে ইলিশকে ডাকা হয় চাকোরি নামে। ম্যান্ডারিয়ান চায়নিজ ভাষায় চীনে ইলিশের নাম ইচাচা।
বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ
আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে হুমকির সম্মুখীন নয়। তবে ইলিশের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ২০০২ সালে ইলিশ রক্ষার জন্য মা মাছ ও জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা ও প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর ফলস্বরূপ অন্যান্য ১০টি দেশে অতিরিক্ত মাছ ধরা, দূষণে মাছ ধরার হার কমলেও; বাংলাদেশে ২০২১ পর্যন্ত তা প্রতিবছর ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ মাছ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে প্রথম।
অর্থনীতিতে ইলিশের অবদান
বাংলাদেশের জিডিপিতে ইলিশের অবদান ১ শতাংশ। প্রতিবছর ইলিশ মাছ রপ্তানি করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। বিশ্বে আহরিত ইলিশের প্রায় ৮৬ শতাংশ আহরণ করা হয় বাংলাদেশে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা বেড়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। এটি দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ। এর চলতি বাজারমূল্য প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। গত ১০ বছরের ব্যবধানে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ৬৬ শতাংশ। প্রায় ২৫ লাখ জনবল ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও খুচরা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। উপকূলীয় দ্বীপ ও চরাঞ্চলে কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্যবিমোচনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে ইলিশ।
আরও দেখুন
বাংলাদেশের মাছের তালিকা
বাংলাদেশের স্বাদুপানির মাছের তালিকা
বাংলাদেশের সংরক্ষিত মাছের তালিকা
'প্রথম আলো' পত্রিকার ইলিশ বিষয়ক সকল সংবাদ
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাঙালি রন্ধনশৈলী
টেনুয়ালোসা
১৮২২-এ বর্ণিত মাছ
অন্ধ্রপ্রদেশ রন্ধনশৈলী
ওড়িয়া রন্ধনশৈলী
বাংলাদেশের মাছ
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক
বাণিজ্যিক মাছ
বাংলাদেশী রন্ধনশৈলী
ভারতীয় রন্ধনশৈলী
বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য
অন্ধ্র রন্ধনশৈলী | https://en.wikipedia.org/wiki/Ilish | Ilish | The ilish (Tenualosa ilisha) (Bengali: ইলিশ, romanized: iliś), also known as the ilishi, hilsa, hilsa herring or hilsa shad, is a species of fish related to the herring, in the family Clupeidae. It is a very popular and sought-after food fish in the Indian subcontinent, and is the national fish of Bangladesh and the state fish of West Bengal.
As of 2021, 86% of the world's total ilish supply originates in Bangladesh. The fish contributes about 12% of the total fish production and about 1.15% of GDP in Bangladesh. On 6 August 2017, Department of Patents, Designs and Trademarks under the Ministry of Industries of Bangladesh has declared the recognition of ilish as the product of Bangladesh. As of 2021, 86% of the world's total ilish supply originates in Bangladesh which applied for Geographical indication (GI) in 2004. About 450,000 people are directly involved in the catching of the fish as a large part of their livelihood; around four to five million people are indirectly involved with the trade. |
2686 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%98%E0%A6%A8%E0%A6%BE%20%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%80 | মেঘনা নদী | মেঘনা নদী বা মেঘনা আপার নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৫৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩৪০০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। মেঘনা চাঁদপুরের মোহনা থেকে শুরু করেই সবথেকে বেশী খরস্রোতা হয়েছে এবং মেঘনা ভোলার শুরু থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১০০কি:মি: প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক মেঘনা আপার নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নং ১৭। মেঘনা বাংলাদেশের গভীরতম ও প্রশস্ততম নদী এবং অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান নদী।
উৎপত্তি ও গতিপ্রকৃতি
আসামের পার্বত্য অঞ্চল থেকে 'বরাক' নদী আসামের শেরপুরের কাছে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে। তারপর সিলেট জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার সীমান্তে মারকুলীতে এই দুই নদী এক হয়ে কালনি নামে কিছুদূর অগ্রসর হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামের ইকুরদিয়া নামক গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরব বাজারের কাছে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। তারপর আরো দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা নদীতে এসে মিলিত হয়েছে। আরো দক্ষিণে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা দ্বীপের মধ্য দিয়ে মেঘনা নদী মেঘনা লোয়ার নদী নামে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। সুরমাসহ মেঘনা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৫০ মাইল। চাঁদপুরের কাছে পদ্মা-মেঘনার মিলিত ধারাটি মোহনা নামে পরিচিত। এখান থেকে আনুমানিক ৯০ মাইল দক্ষিণে চারটি মোহনা পথে মেঘনা বঙ্গোপসাগরে মিলেছে। এগুলোর স্থানীয় নাম তেঁতুলিয়া, শাহবাজপুর, সন্দ্বীপ ও হাতিয়া। বাংলাদেশের সবচেয়ে গভীরতম এবং দীর্ঘতম নদীও মেঘনা।
অন্যান্য তথ্য
মেঘনা পৃথিবীর বড় নদীগুলোর মতোই অনেক বেশি বৃষ্টির পানি বহন করে। এই নদী সুরমা, কুশিয়ারা, খাসিয়া-জয়ন্তীয়া পাহাড়, শিলং উপত্যকা ও চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি বহন করে আনে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির বিপুল জলরাশির জন্য সিলেটে বড় বড় বিল বা হাওর তৈরি হয়েছে। আর এ কারণে মেঘনা খুব গভীর ও খরস্রোতা। ঢল বা বন্যার জন্য মেঘনা বিখ্যাত। বৃষ্টির পানি যখন খুব দ্রুত মোহনার কাছে পৌঁছাতে পারে না তখনই এর দু'কূল ছাপিয়ে বন্যা হয়। চাঁদপুরের কাছে পদ্মা-মেঘনার মিলনস্থলে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়। এই ইলিশ অত্যন্ত সুস্বাদু। এজন্য চাঁদপুরের ইলিশ বিশ্ববিখ্যাত। কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে মেঘনা নদীর উপর সুদীর্ঘ মেঘনা-গোমতী সেতুর অবস্থান। এছাড়াও ভৈরব ও আশুগঞ্জ রেলওয়ে সেতু এ নদীর উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু।
সুরমা নদীর তীরে কানাইঘাট, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, ছাতক, সুনামগঞ্জ, দিরাই, মারকুলী প্রসিদ্ধ শহর ও বাণিজ্যকেন্দ্র। কুশিয়ারার তীরে জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, আজমীরগঞ্জ, শাল্লা, ভৈরব বাজার ও চাঁদপুর মেঘনার তীরে বিখ্যাত শহর ও বন্দর।
সাহিত্যে মেঘনা নদী
মেঘনা তার দু'তীরের মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। তাই বাংলা সাহিত্যে গান-কবিতা-কথায় অনিবার্যভাবে মেঘনার প্রসঙ্গ এসেছে। কবি আহসান হাবিবের একটি বিখ্যাত কবিতা।
মেঘনা পারের ছেলে
লেখক হুমায়ুন কবিরের মেঘনার ঢল একটি বিখ্যাত কবিতা। এ কবিতায় মেঘনার প্রাসঙ্গিকতা এসেছে চমৎকারভাবে।
শামসুর রাহমান তাঁর প্রিয় স্বাধীনতা কবিতায় লিখেছেন,
চিত্রশালা
মেঘনা নদীর চরসমূহ
ঢালচর ইউনিয়ন
চর কুকরী মুকরী
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন
ইব্রাহীমপুর ইউনিয়ন
ফতেজংগপুর
ঈশানবালা
চরগাজীপুর মনিপুর
নীলকমল
দিয়ারা
চররাও
চর আলেকজেন্ডার
বাবুর চর
চরকাশিম
ষষ্ঠখণ্ড বোরোচর
চর ইলিয়ট
লগ্গিমারা
চর সোনারামপুর
আরও দেখুন
বাংলাদেশের নদীর তালিকা
বাংলাদেশের বড় নদীসমূহ
তথ্যসূত্র
বাংলাদেশের নদী
গঙ্গা অববাহিকা
বঙ্গোপসাগর | https://en.wikipedia.org/wiki/Meghna_River | Meghna River | The Meghna (Bengali: মেঘনা নদী, romanized: Mēghanā Nadī) is one of the major rivers in Bangladesh, one of the three that form the Ganges Delta, the largest delta on earth, which fans out to the Bay of Bengal. A part of the Surma-Meghna River System, the Meghna is formed inside Bangladesh in Kishoreganj District above the town of Bhairab Bazar by the joining of the Surma and the Kushiyara, both of which originate in the hilly regions of eastern India as the Barak River. The Meghna meets its major tributary, the Padma, in Chandpur District. Other major tributaries of the Meghna include the Dhaleshwari, the Gumti, and the Feni. The Meghna empties into the Bay of Bengal in Bhola District via four principal mouths, named Tetulia (Ilsha), Shahbazpur, Hatia, and Bamni.
The Meghna is the widest river that flows completely inside the boundaries of Bangladesh. At a point near Bhola, Meghna is 13 km wide. In its lower reaches, this river's path is almost perfectly straight. |
2689 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%20%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%9F%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2 | ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল | ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়টি পুরান ঢাকার সদরঘাট এ অবস্থিত। বাংলাদেশ তথা অখন্ড ভারতের অবিভক্ত বাংলার প্রথম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল।
বিদ্যালয়টি ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ জুলাই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইতিহাস
ঢাকা কলেজের স্কুল ভারতবর্ষের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী ও গৌরবদীপ্ত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সূচনালগ্ন থেকে বহু দেশবরেণ্য ও বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের বিদ্যাপীঠ হিসেবে অত্র বিদ্যালয়টি সমহিমায় সমুজ্জ্বল।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮৩৫ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, ১৮৩৬ সালে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এবং পাটনা কলেজিয়েট স্কুলের গোড়াপত্তন করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে ঢাকা জেলার কালেক্টর মিঃ স্কিনার স্কুল গভনিং বডির সভাপতি ও জেলা সার্জন ডাঃ জেমস টেইলর স্কুল সচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং মিঃ রিজ নামক একজন দক্ষ ইংরেজ শিক্ষককে স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা
প্রথমে এর নাম দেয়া হয়েছিল ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে এ সেমিনারী থেকে ঢাকা কলেজ-এর জন্ম হয়। তখন স্কুল শাখাটির নাম রাখা হয় ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল এবং কলেজের অধ্যক্ষের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়টি ১৯০৮ সালের জুন পর্যন্ত পরিচালিত হয়। ১৯০৮ সনের জুলাই মাসে এই বিদ্যালয়টি বিদ্যালয় পরিদর্শকের তত্ত্বাবধানে নেয়া হয়। তখন থেকেই বিদ্যালয়টি জিলা স্কুলের মর্যাদা পেয়ে আসছে। কিন্তু বিদ্যালয়টির নাম "ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল" রয়ে যায়।
১৮৭২ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয়দের দ্বারাই এই স্কুলটি পরিচালিত হয়। ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম প্রধান শিক্ষকের পদ অর্জনের গৌরব লাভ করেন বাবু কৈলাস চন্দ্র ঘোষ। পরে বাবু রায়সাহেব রত্ন মণি গুপ্তের (১৮৮৮-১৮৯৬) পরিচালনাধীনে এ বিদ্যালয়ের ছাত্রগণ পরপর আট বছর বাংলা, বিহার ও আসাম প্রদেশের মধ্যে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথম স্থান অধিকার করার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
সাবেক ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, পদার্থবিদ ও জীববিজ্ঞানী
মেঘনাদ সাহা, পদার্থবিজ্ঞানে থার্মাল আয়নাইজেসন তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা।
দীনেশ গুপ্ত, বিপ্লবী
জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, সাবেক সভাপতি(বাংলা একাডেমী)
সৈয়দ শামসুল হক, সব্যসাচী লেখক
শিবলী সাদিক, চলচ্চিত্র পরিচালক
মতিউর রহমান (বীর শ্রেষ্ঠ), বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যাংলার
মুনীর চৌধুরী, ভাষাবিদ, ও শহীদ বুদ্ধিজীবী।
আলমগীর কবির,
রামপ্রসাদ চন্দ,
নাজির আহাম্মেদ,
কাজী আব্দুল ওয়াদুদ,
খাজা আব্দুল গনি, ঢাকার জমিদার।
ব্রজসুন্দর মিত্র
খান আতাউর রহমান, চলচ্চিত্র পরিচালক
সতীশ চন্দ্র রায়
বুদ্ধদেব বসু, সাহিত্যিক
আব্দুল হালিম
মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশের বিচারপতি)
শাহ মোয়াজ্জেম, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ।
সাঈদ আহমদ, বাংলাদেশী নাট্যব্যক্তিত্ব।
বুলবুল আহমেদ, অভিনেতা।
মুস্তফা মনোয়ার,চিত্রশিল্পী
রমেশচন্দ্র মজুমদার, সাবেক উপাচার্য (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
শহীদুল জহির (১১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩ - ২৩ মার্চ ২০০৮) - বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, গল্পকার এবং সরকারি আমলা।
ছাত্র সংগঠন সমূহ
এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন
বিতর্ক ক্লাব
স্কাউটস
সাহিত্য সংসদ
বিজ্ঞান ক্লাব
দাবা ক্লাব
ইতিহাস ক্লাব
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বি এন সি সি)
জীববৈচিত্র্য অনুসন্ধানকারী ক্লাব
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বিদ্যার বাতিঘর ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল দৈনিক ইত্তেফাক, ১৯ মে ২০১৮।
ঢাকা জেলার বিদ্যালয়
১৮৩৫-এ ব্রিটিশ ভারতে প্রতিষ্ঠিত
ঢাকার সরকারি বিদ্যালয়
পুরান ঢাকা
১৮৩৫-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশের বালক বিদ্যালয় | https://en.wikipedia.org/wiki/Dhaka_Collegiate_School | Dhaka Collegiate School | Dhaka Collegiate School is a secondary school in Dhaka, Bangladesh. It is one of the oldest schools in Bangladesh. The students of collegiate school are called Collegiatian.
|
2690 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8C%E0%A6%B7%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF | পৌষ সংক্রান্তি | পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি (সংস্কৃত: मकरसङ्क्रान्ति মকরসঙ্ক্রান্তি) ভারত উপমহাদেশীয় সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিন বাঙালিরা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। তার মধ্যে পিঠে খাওয়া, ঘুড়ি উড়ানো অন্যতম। সারাদিন ঘুড়ি উড়ানোব পরে সন্ধ্যায় পটকা ফাটিয়ে ফানুস উড়িয়ে উৎসবের সমাপ্তি করে। মূলত জ্যোতিষশাস্ত্রের একটি ক্ষণ। 'মকরসংক্রান্তি' শব্দটি দিয়ে নিজ কক্ষপথ থেকে সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশকে বোঝানো হয়ে থাকে। ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী 'সংক্রান্তি' একটি সংস্কৃত শব্দ, এর দ্বারা সূর্যের এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে প্রবেশ করাকে বোঝানো হয়ে থাকে। ১২টি রাশি অনুযায়ী এরকম সর্বমোট ১২টি সংক্রান্তি রয়েছে। সারা ভারত উপমহাদেশে এই দিনে বহু দেশীয় বহু-দিনের উৎসবের আয়োজন করা হয়। ভারতের বীরভূমের কেন্দুলী গ্রামে এই দিনটিকে ঘিরে ঐতিহ্যময় জয়দেব মেলা হয়। বাউল গান এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ।
মকর সংক্রান্তির সঙ্গে যুক্ত উৎসবগুলি কেরালায় মকর সংক্রান্তি , আসামে মাঘ বিহু , হিমাচল প্রদেশে মাঘি সাজি , পাঞ্জাবের মাঘী স্যংগ্রান্ড, জম্মুতে মাঘি স্যংগ্রান্ড বা উত্তরায়ণ (উত্তরায়ণ), হরিয়ানায় সক্রাত, রাজস্থানে সক্রাত, ইত্যাদি নামে পরিচিত । মধ্য ভারতের সুকরাত , তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল , গুজরাটে উত্তরায়ণ, এবং উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের ঘুঘুটি , বিহারে দহি চুরা , ওড়িশা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, গোয়া, পশ্চিমবঙ্গে মকর সংক্রান্তি (একেও বলা হয়)পৌষ সংক্রান্তি বা মোকর সোনক্রান্তি ) , উত্তর প্রদেশ (এছাড়াও খিচিড়ি সংক্রান্তি বলা হয় ), উত্তরাখণ্ড ( উত্তরায়নীও বলা হয় ) বা সহজভাবে, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানায় সংক্রান্তি ,"After a 100 years, Makar Sankranti gets a new date", The Hindustan Times (14 Jan 2017) মাঘে সংক্রান্তি (নেপাল), সোংক্রান (থাইল্যান্ড), থিংয়ান (মিয়ানমার), মোহন সংক্রান (কম্বোডিয়া), মিথিলায় তিল সাকরাত, মাঘে সংক্রান্তি নেপাল এবং শিশুর সেনক্রথ (কাশ্মীর)। মকর সংক্রান্তিতে, সূর্য দেবতা বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর সাথে পূজা করা হয় ভারত জুড়ে।
মকর সংক্রান্তি সামাজিক উৎসবের সাথে পালন করা হয় যেমন রঙিন সাজসজ্জা, গ্রামীণ শিশুদের ঘরে ঘরে যাওয়া, গান গাওয়া এবং কিছু এলাকায় খাবারের জন্য অনুরোধ করা, মেলা (মেলা), নাচ, ঘুড়ি ওড়ানো, বনফায়ার এবং ভোজ। ইন্ডোলজিস্ট ডায়ানা এল. একের মতে মাঘ মেলার উল্লেখ আছে হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতে । অনেক পর্যবেক্ষক পবিত্র নদী বা হ্রদে যান এবং সূর্যকে ধন্যবাদ জানানোর অনুষ্ঠানে স্নান করেন। প্রতি বারো বছর পর হিন্দুরা কুম্ভ মেলার সাথে মকর সংক্রান্তি পালন করে- বিশ্বের বৃহত্তম গণ তীর্থস্থানগুলির মধ্যে একটি, আনুমানিক ৬ থেকে ১০ কোটি লোক এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে৷ এই অনুষ্ঠানে, তারা সূর্যের কাছে প্রার্থনা করে এবং গঙ্গা ও যমুনা নদীর প্রয়াগরাজ সঙ্গমে স্নান করে, আদি শঙ্করাচার্যকে দায়ী করা একটি ঐতিহ্য মকর সংক্রান্তি হল উদযাপন এবং ধন্যবাদ জানানোর একটি সময় এবং এটি বিভিন্ন আচার ও ঐতিহ্য দ্বারা চিহ্নিত।
সময়ের ভিন্নতা
মকর সংক্রান্তি সৌর চক্র দ্বারা সেট করা হয় এবং সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশের সঠিক সময়ের জ্যোতির্বিদ্যার ঘটনার সাথে মিলে যায় এবং এটি এমন একটি দিনে পালন করা হয় যেটি সাধারণত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের 14 জানুয়ারিতে পড়ে, কিন্তু লিপ বছরে 15 জানুয়ারি। মকর সংক্রান্তির তারিখ এবং সময় মকর রাশির রাশিচক্রের সাইডরিয়েল সময়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ (যখন সূর্য প্রবেশ করে)।
বছরটি ৩৬৫.২৪ দিন দীর্ঘ এবং মকর সংক্রান্তির পরপর দুটি দৃষ্টান্তের (মকর রাশির সাইডরিয়েল সময়) মধ্যে সময়ের পার্থক্য প্রায় বছরের সমান। আমাদের বছরে মাত্র ৩৬৫ দিন থাকে তাই চার বছরের সময় ক্যালেন্ডার একদিন পিছিয়ে যায় তাই আমাদের এটিকে লিপ ডে, ২৯ ফেব্রুয়ারী দ্বারা সামঞ্জস্য করতে হবে। কিন্তু মকর সংক্রান্তি লিপ ডে সংশোধন করার আগে পড়ে তাই প্রতি চতুর্থ বছরে এটি ১৫ জানুয়ারি পড়ে। অধিবর্ষের কারণে মকর রাশির সাইডেরিয়াল সময়ও এক দিন বদলে যায়। একইভাবে, ইকুইনক্সের সময়ও প্রতি চার বছরের উইন্ডোতে এক দিন বদলে যায়। উদাহরণস্বরূপ, সেপ্টেম্বরের বিষুব প্রতি বছর একই তারিখে পড়ে না এবং শীতকালীন অয়নকালও পড়ে না। সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর একটি ঘূর্ণনের সাথে সম্পর্কিত যে কোনও ঘটনা ৪ বছরের চক্রের মধ্যে এই তারিখ পরিবর্তন হবে। একই রকম পরিবর্তন অয়নকাল এবং বিষুব এর সঠিক সময়ে দেখা যায়। টেবিলটি দেখুন, কীভাবে বিষুব এবং একটি অয়নকাল চার বছরের চক্রে বৃদ্ধি এবং হ্রাস পায়।
আমরা দেখতে পাচ্ছি পরপর দুটি শীতকালীন অয়ান্তির মধ্যে সময়ের পার্থক্য প্রায় ৫ ঘন্টা ৪৯ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড, শীতকালীন অয়নকালীন সময়ের সাপেক্ষে এবং পরপর দুটি মকর সংক্রান্তির মধ্যে সময়ের পার্থক্য প্রায় ৬ ঘন্টা এবং ১০ মিনিট। একবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে, চার বছরের চক্রে ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির আরও ঘটনা ঘটবে। এবং মকর সংক্রান্তি (মকর রাশির রাশিচক্রের পার্শ্ববর্তী সময়) ২১০২ সালের প্রথম ১৬ জানুয়ারি হবে কারণ ২১০০ একটি অধিবর্ষ হবে না।
মকর সংক্রান্তি ও উত্তরায়ণ
Makar Sankranti is celebrated when the Sun's ecliptic longitude becomes 270° measured from a fixed starting point which is in opposition to Spica, i.e. this is a sidereal measure. Uttarayana begins when the Sun's ecliptic longitude becomes 270° measured from the Vernal equinox, i.e. this is a tropical measure. While both concern a measure of 270° their starting points are different. Hence, Makar Sankranti and Uttarayana occur on different days. On the Gregorian calendar, Makar Sankranti occurs on 14 or 15 January; Uttarayana starts on 21 December.
Due to the precession of the equinoxes the tropical zodiac (i.e. all the equinoxes and solstices) shifts by about 1° in 72 years. As a result, the December solstice (Uttarayana) is continuously but very slowly moving away from Makar Sankranti. Conversely, the December solstice (Uttarayana) and Makar Sankranti must have coincided at some time in the distant past. Such a coincidence last happened 1700 years back, in 291 AD .
তাৎপর্য
প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে মকর সংক্রান্তি পালিত হয়। এই উৎসব হিন্দু ধর্মীয় সূর্য দেবতা সূর্যকে উৎসর্গ করা হয় । সূর্যের এই তাৎপর্য বৈদিক গ্রন্থে, বিশেষ করে গায়ত্রী মন্ত্র, হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র স্তোত্র যা ঋগ্বেদ নামক ধর্মগ্রন্থে পাওয়া যায় । ঈশ্বরের সংবিধান, আমাদের পবিত্র বেদ এবং শ্রীমদ ভগবদ্গীতা অনুসারে, যদি আমরা একজন সম্পূর্ণ গুরু/সন্তের কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করি এবং পরম ঈশ্বরের উপাসনা করি এবং মুক্তি লাভ করি। প্রকৃত ধর্মগ্রন্থ ভিত্তিক উপাসনা করার মাধ্যমে একজনের জীবন ধন্য হয় এবং পৃথিবী স্বর্গে পরিণত হয়।
মকর সংক্রান্তি আধ্যাত্মিক অনুশীলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হয় এবং সেই অনুযায়ী, লোকেরা বিশেষত গঙ্গা , যমুনা , গোদাবরী , কৃষ্ণ এবং কাবেরী নদীতে পবিত্র স্নান করে । বিশ্বাস করা হয় যে স্নানের ফলে অতীতের পাপের পুণ্য বা মুক্তি পাওয়া যায়। তারা সূর্যের কাছে প্রার্থনা করে এবং তাদের সাফল্য ও সমৃদ্ধির জন্য ধন্যবাদ জানায়। ভারতের বিভিন্ন অংশের হিন্দুদের মধ্যে একটি ভাগ করা সাংস্কৃতিক চর্চা হল আঠালো, আবদ্ধ মিষ্টি বিশেষ করে তিল ( তিল ) এবং গুড় ( গুড়, গুড়, গুল ) এর মতো চিনির ভিত্তি তৈরি করা ।) এই ধরনের মিষ্টি ব্যক্তিদের মধ্যে স্বতন্ত্রতা এবং পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও শান্তি এবং আনন্দে একসাথে থাকার প্রতীক। ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে, এই সময়কালটি রবি শস্য এবং কৃষি চক্রের প্রাথমিক পর্যায়ের একটি অংশ, যেখানে ফসল বপন করা হয়েছে এবং মাঠের কঠোর পরিশ্রম বেশিরভাগই শেষ। এইভাবে সময়টি সামাজিকীকরণের সময়কালকে নির্দেশ করে এবং পরিবারগুলি একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করে, গবাদি পশুর যত্ন নেয় এবং বনফায়ারের চারপাশে উদযাপন করে, গুজরাটে উৎসবটি ঘুড়ি উড়িয়ে উদযাপন করা হয়।
মকর সংক্রান্তি হল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্যান-ভারতীয় সৌর উত্সব, যা বিভিন্ন নামে পরিচিত যদিও একই তারিখে পালন করা হয়, কখনও কখনও মকর সংক্রান্তির আশেপাশে একাধিক তারিখের জন্য। এটি অন্ধ্র প্রদেশে পেদ্দা পান্ডুগা, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রে মকর সংক্রান্তি, তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল, আসামে মাঘ বিহু , মধ্য ও উত্তর ভারতের কিছু অংশে মাঘ মেলা, পশ্চিমে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত। কেরালায় মকর সংক্রান্তি বা শঙ্করান্তি, এবং অন্যান্য নামে।
নামকরণ এবং আঞ্চলিক নাম
মকর বা মকর সংক্রান্তি ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক অংশে কিছু আঞ্চলিক ভিন্নতার সাথে পালিত হয়। এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত এবং বিভিন্ন ভারতীয় রাজ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে বিভিন্ন রীতির সাথে উদযাপন করা হয়:
সংক্রান্তি, মকর সংক্রান্তি, মকর সংক্রমনাম, পেদ্দা পান্ডুগা: অন্ধ্রপ্রদেশ , তেলেঙ্গানা
পুস্না: পশ্চিমবঙ্গ , আসাম , মেঘালয়
সুগ্গি হাব্বা, মাকারা সংক্রমনা, মকর সংক্রান্তি: কর্ণাটক
মকর সংক্রান্তি , উত্তরায়ণ বা ঘুঘুটি : উত্তরাখণ্ড
মকর সংক্রান্তি বা মকরা মেলা এবং মকর চৌলা : ওড়িশা
মকর সংক্রান্তি বা সংকরান্তি বা শঙ্করান্তি : কেরালা
মকর সংক্রান্তি বা দহি চুড়া বা তিল সংক্রান্তি : মিথিলা বিহার
মকর সংক্রান্তি , মাঘী সংক্রান্তি , হলদি কুমকুম বা সংক্রান্তি : মহারাষ্ট্র , জম্মু , গোয়া , নেপাল
হাংরাই : ত্রিপুরা
পোঙ্গল বা উঝাভার থিরুনাল : তামিলনাড়ু , শ্রীলঙ্কা , সিঙ্গাপুর , মালয়েশিয়া
উত্তরায়ণ : গুজরাট
মাঘি : হরিয়ানা , হিমাচল প্রদেশ পাঞ্জাব
মাঘ বিহু বা ভোগালী বিহু : আসাম
শিশুর সায়েঙ্করাত: কাশ্মীর উপত্যকা
সাকরাত বা খিচড়ি : উত্তর প্রদেশ এবং পশ্চিম বিহার
পৌষ সংক্রান্তি : পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ
টিলা সাকরাইত: মিথিলা
তিরমুরী: পাকিস্তান
ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে সংক্রান্তি উৎসব দুই থেকে চার দিন স্থায়ী হয় যার প্রতিটি দিন আলাদা আলাদা নাম ও আচার-অনুষ্ঠানের সাথে উদযাপন করা হয়।
দিন ১ - মাঘি (লোহরির আগে), ভোগী পান্ডুগা
দিন ২ - মকর সংক্রান্তি, পোঙ্গল, পেদ্দা পান্ডুগা, উত্তরায়ণ, মাঘ বিহু
দিন ৩ - মাত্তু পোঙ্গল, কানুমা পান্ডুগা
দিন ৪ - কানুম পোঙ্গল, মুক্কানুমা
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে
ভারতের উত্তর এবং পশ্চিম প্রদেশগুলোতে উৎসবটি প্রবল আগ্রহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে সংক্রান্তি দিবস হিসেবে পালিত হয়। প্রাচীন মহাকাব্য মহাভারতেও এই দিনের তাৎপর্য সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। তাই সামাজিক এবং ভৌগোলিক গুরুত্ব ছাড়াও এই দিনটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে।
পশ্চিম ভারতীয় প্রদেশ গুজরাটে উৎসবটি আরো অনেক বড় আকারে উদযাপিত হয়। মানুষ, সূর্য দেবতার কাছে নিজেদের ইচ্ছা বা আকূতিকে সুন্দর সুন্দর ঘুড়ির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পালন করে ঘুড়ি উৎসব, যা মূলত প্রিয় দেবতার কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি রূপক বা প্রতীক হিসেবে কাজ করে। গ্রামগঞ্জে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে মোরগ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। মকরসংক্রান্তি সম্মান, অভিলাষ এবং জ্ঞানের দেবী সরস্বতীকে সম্মান প্রদানের মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। যেহেতু উৎসবটি শীতের মাঝামাঝি সময়ে উদযাপিত হয়, সেহেতু এই উৎসবে এমন ধরনের খাবার তৈরি করা হয়, যা শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং বেশ শক্তি জোগায়। গুড় দিয়ে তৈরি তিলের লাড্ডু এই উৎসবের অন্যতম উপাদেয় খাবার। মহারাষ্ট্রে একে বলা হয় 'তিলগুল'। কর্ণাটকে একে বলা হয় 'ইল্লু বিল্লা'। অন্য কিছু প্রদেশে গবাদিপশুকে নানা রঙে সজ্জিত করা হয় এবং আগুনের ওপর দিয়ে ঝাঁপ দেওয়ানো হয়।
পশ্চিমবঙ্গে পৌষ পার্বণ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মকর সংক্রান্তি বা পৌষসংক্রান্তি-তে মূলত নতুন ফসলের উৎসব 'পৌষ পার্বণ' উদযাপিত হয়। নতুন ধান, খেজুরের গুড় এবং পাটালি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরি করা হয়, যার জন্য প্রয়োজন হয় চালের গুঁড়া, নারিকেল, দুধ আর খেজুরের গুড়। মকরসংক্রান্তি নতুন ফসলের উৎসব ছাড়াও ভারতীয় সংস্কৃতিতে 'উত্তরায়ণের সূচনা' হিসেবে পরিচিত। একে অশুভ সময়ের শেষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, পঞ্জিকা মতে, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয়। এই দিনে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত সাগরদ্বীপে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করে পুণ্যস্নান ও বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সহস্রাধিক পুণ্যার্থী ও অন্যান্য রাজ্য থেকে আগত দর্শনার্থীদের সমাগম হয় এই মেলায়।
আউনি বাউনি
আউনি বাউনি (বানানান্তরে আওনি বাওনি) বা আগলওয়া পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে পালিত একটি শস্যোৎসব। এই উৎসব ক্ষেতের পাকা ধান প্রথম ঘরে তোলা উপলক্ষে কৃষক পরিবারে পালনীয় অনুষ্ঠানবিশেষ। হেমন্তকালে আমন ধান ঘরে প্রথম তোলার প্রতীক হিসেবে কয়েকটি পাকা ধানের শিষ ঘরে এনে কিছু নির্দিষ্ট আচার অনুষ্ঠান পালন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে পৌষ সংক্রান্তির দিন দু-তিনটি ধানের শিষ বিনুনি করে 'আউনি বাউনি' তৈরি করা হয়। শিষের অভাবে দু-তিনটি খড় একত্রে লম্বা করে পাকিয়ে তার সঙ্গে ধানের শিষ, মুলোর ফুল, সরষে-ফুল, আমপাতা ইত্যাদি গেঁথে 'আউনি বাউনি' তৈরি করারও রেওয়াজ রয়েছে। এই আউনি বাউনি ধানের গোলা, ঢেঁকি, বাক্স-পেটরা-তোরঙ্গ ইত্যাদির উপর এবং খড়ের চালে গুঁজে দেওয়া হয়। বছরের প্রথম ফসলকে অতিপবিত্র ও সৌভাগ্যদায়ক মনে করে একটি পবিত্র ঘটে সারা বছর ধরে সংরক্ষণ করা হয়। এই আচারটিকেই 'আউনি বাউনি' বলা হয়।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশের পুরান ঢাকায় পৌষসংক্রান্তি সাকরাইন নামে পরিচিত। ভারতবর্ষের মতো একটি উষ্ণ অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে আরামপ্রদ সময় শীতকাল। এখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার এবং অন্যান্য উপহার ছাড়াও পৌষমেলার মাধ্যমে পৌষসংক্রান্তি উদযাপিত হয়। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিশেষ করে বাউল গানের আসর বসে।
এছাড়াও এই দিনে ঢাকার নবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে গরু দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে চন্দ্রখোলা ও বিল্পপল্লী সবুজ সংঘ্যের মাঠে জমজমাট আয়োজন করা হয়।প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
ঘুড়ি উৎসব
পৌষ সংক্রান্তির দিন বাঙালিরা সারাদিনব্যাপি ঘুড়ি উড়ায়। এইদিন ঘুড়ি উড়ানোর জন্য তারা আগে থেকে ঘুড়ি বানিয়ে এবং সুতায় মাঞ্জা দিয়ে প্রস্তুতি নেয়। ঘুড়ি উৎসব বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী একটি উৎসব। মুঘল আমল থেকে এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এই উৎসবে প্রচুর লোক সমাগম ঘটে। পুরোন ঢাকার অধিবাসীদের কাছে এটি অত্যন্ত উৎসবমুখর দিন যা সাধারণত শীতকালে পালিত হয়।
আরও দেখুন
হিন্দু ক্যালেন্ডারের জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভিত্তি
হিন্দু উৎসবের তালিকা
জাল্লিকাট্টু
ফসল কাটা উৎসবের তালিকা
উত্তরায়ণ
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি
পশ্চিমবঙ্গের উৎসব
বাংলাদেশী সংস্কৃতি
বাংলাদেশের উৎসব
বাঙালি উৎসব
নেপালের হিন্দু উৎসব
নেপালে সরকারি ছুটির দিন
হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞান
জানুয়ারি উদ্যাপন
শীতকালীন উৎসব
ভারতের ধর্মীয় উৎসব
গুজরাতি সংস্কৃতি
হিন্দু উৎসব
পাঞ্জাবের উৎসব
ভারতের হিন্দু উৎসব
বাংলাদেশের ধর্মীয় উৎসব
নবান্ন উৎসব | https://en.wikipedia.org/wiki/Makar_Sankranti | Makar Sankranti | Makar(a) Sankranti (Sanskrit: मकरसङ्क्रान्ति, romanized: Makarasaṅkrānti), (transl. Capricorn Festival) also referred to as Uttarayana, Makar, or simply Sankranti, is a Hindu observance and a festival. Usually falling on the date of 14 January annually (15 January on a leap year), this occasion marks the transition of the sun from the zodiac of Sagittarius (dhanu) to Capricorn (makara). Since the sun has made this transition which vaguely coincides with moving from south to north, the festival is dedicated to the solar deity, Surya, and is observed to mark a new beginning. Many native multi-day festivals are organised on this occasion all over India.
The festivities associated with Makar Sankranti are known by various names including Sankranthi or Peddha Panduga in Andhra Pradesh and Telangana, Magh Bihu in Assam, Maghi Saaji in Himachal Pradesh, Makara Sankranti in Kerala, Maghi Sangrand in Punjab, Pongal in Tamil Nadu, Maghi Sangrand or Uttarain (Uttarayana) in Jammu, Sakrat in Haryana, Sakraat in Rajasthan, Sukarat in central India, Uttarayana in Gujarat and Uttar Pradesh, Ghughuti in Uttarakhand, Dahi Chura in Bihar, Makar Sankranti in Odisha, Karnataka, Jharkhand, Maharashtra, Goa, West Bengal (also called Poush Sankranti or Mokor Sonkranti), Uttar Pradesh (also called Khichidi Sankranti), Uttarakhand (also called Uttarayani) or as simply, Maghe Sankranti (Nepal), Songkran (Thailand), Thingyan (Myanmar), Mohan Songkran (Cambodia), Til Sakraat in Mithila, and Shishur Senkrath (Kashmir). On Makar Sankranti, Surya (Hindu solar deity) is worshipped along with Vishnu and goddess Lakshmi throughout India.
Makar Sankranti is observed with social festivities such as colourful decorations, rural children going house to house, singing and asking for treats in some areas, melas (fairs), dances, kite flying, bonfires and feasts. The Magha Mela is mentioned in the Hindu epic Mahabharata. Many observers go to sacred rivers or lakes and bathe in a ceremony of thanks to the Sun. Every twelve years, the Hindus observe Makar Sankranti with Kumbha Mela – one of the world's largest mass pilgrimage, with an estimated 60 to 100 million people attending the event. At this event, they say a prayer to the Sun and bathe at the Prayagaraj confluence of the River Ganga and River Yamuna, a tradition attributed to Adi Shankaracharya. Makar Sankranti is a time of celebration and thanks giving, and is marked by a variety of rituals and tradition.
|
2697 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%96%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A6%BE%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC | খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় | খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খুলনাতে অবস্থিত। ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি গেজেটে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর ৪টি পাঠ্য বিষয়ের ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ টি স্কুল ও একটি ইন্সিটিউট এর অধীনে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার এবং প্রতিবছর ২৯ টি পাঠ্য বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। এটি ছাত্র রাজনীতি মুক্ত বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
অবস্থান
খুলনা মহানগরী থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন ময়ূর নদীর পাশে গল্লামারীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। এর আয়তন ১০৫.৭৫ একর।
ইতিহাস
১৯৭৪ সালে ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে খুলনা বিভাগে উচ্চ শিক্ষার্থে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়। ১৯৭৯ সালের ১০ নভেম্বর তৎকালীন সরকারের ক্যাবিনেটে খুলনায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অধ্যাদেশ ৫(১)জি ধারা মতে খুলনা বিভাগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ১৯৮৩ সালে সরকারের কাছে প্রস্তাব পেশ করা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৮৭ সালের জানুয়ারি ৪ গেজেটে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৮৯ সালের ১ অগাস্ট বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম রহমানকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকল্প পরিচালক এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই তারিখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংসদে পাস হয় যা এই প্রতিষ্ঠানের কার্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। অবশেষে, ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর একাডেমিক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ঐ বছর থেকে মোট চারটি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।
অনুষদ ও বিভাগ
বর্তমানে ৮ টি অনুষদের অধীনে ২৯ টি বিভাগ এবং ১টি ইনস্টিটিউট রয়েছে।
বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
স্থাপত্য বিভাগ
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ
নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা বিভাগ
ইলেক্ট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগ
গণিত বিভাগ
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
রসায়ন বিভাগ
পরিসংখ্যান বিভাগ
জীববিজ্ঞান অনুষদ
ফিশারীজ ও মেরিন রিসোর্স টেকনোলজী বিভাগ
বনবিদ্যা ও কাঠ প্রযুক্তি বিভাগ
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ
জীবপ্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল বিভাগ
মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ
কৃষি প্রযুক্তি বিভাগ
ফার্মেসি বিভাগ
ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ
ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
১৯৯১ সালের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের পরিচয় হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কলা ও মানবিক অনুষদ
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ
ইতিহাস ও সভ্যতা
সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
অর্থনীতি বিভাগ
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা
আইন অনুষদ
আইন বিভাগ
চারুকলা অনুষদ
অংকন এবং চিত্রন।
মুদ্রণ তৈরি
স্কাল্পচার (ভাস্কর্য)
শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল ডিসিপ্লিন
১৯৯১ সালে মাত্র ২০ জন স্নাতক ছাত্রদের নিয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল ডিসিপ্লিন (সিএসই) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স সংক্ষেপে(BSc in Engg.) বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে তার শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। এখন পর্যন্ত ২১টি ব্যাচ এর প্রায় ৮০০ স্নাতক ছাত্র এই ডিসিপ্লিন থেকে স্নাতক হন। সিএসই ডিসিপ্লিনে প্রতি বছর স্নাতক পর্যায়ে ৪০ জন ছাত্র ভর্তি করা হয়।
মর্ডান ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার
ইংরেজি ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
জাপানি ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
ফরাসি ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
ফার্সি ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
স্প্যানিশ ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
কোরিয়ান ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
জার্মান ভাষা সার্টিফিকেট কোর্স
সংগঠন
রাজনৈতিক
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-বিষয়ক পরিচালকের দপ্তর কর্তৃক জারীকৃত শিক্ষার্থী আচরণ বিষয়ক নীতিমালা অনুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। তবে শিক্ষক ও কর্মচারী - কর্মকর্তাদের জন্য রাজনীতি বিষয়ক কোন প্রকার বাধ্য-বাধকতা নেই।
সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য সংগঠনসমূহ
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বি.এন.সি.সি.)
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (খুবিসাস)
চেতনা'৭১
নৃ-নাট্য (নাটক)
থিয়েটার নিপুন(নাটক)
ব-পাঠ(পাঠক)
ছায়াবৃত্ত পাঠক ফোরাম(সেচ্ছাসেবী সংগঠন)
৩৫ মিমি.(মুভি ক্লাব)
খুলনা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (ফটোগ্রাফি ক্লাব)
কৃষ্টি (সংগীত)
ওঙ্কার-শৃনুতা
ভৈরবী(সংগীত)
রোটারেক্ট ক্লাব (সেচ্চাসেবক)
বাঁধন (রক্তদান কর্মসূচি ও স্বেচ্ছাসেবক)
স্পার্ক (নাচের ক্লাব)
নয়েজ ফ্যাক্টরি (ব্যান্ড সংগীত)
অন্বেষ - খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সংগঠন
নৈয়ায়িক (খুবি-বিতর্ক সংগঠন)
কুয়েস - খুলনা ইউনিভার্সিটি ইকনোমিক্স সোসাইটি
বায়স্কোপ (নাটক)
খুলনা ইউনিভার্সিটি ক্যারিয়ার ক্লাব(ক্যারিয়ার ক্লাব)
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সোসাইটি (KURS)
ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ক্লাব (FWTC)
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় চেস ক্লাব (KUCC)
বিবিধ
স্থাপত্য নিদর্শনসমূহ
গ্রন্থাগার ভবনসমূহ
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন
শার্লি ইসলাম গ্রন্থাগার ভবন
গবেষণাগার
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগার
একাডেমিক ভবনসমূহ
একাডেমিক ভবন ১
একাডেমিক ভবন ২
একাডেমিক ভবন ৩
ছাত্রাবাস
ছাত্র হল
খান জাহান আলী হল
খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ হল
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল
ছাত্রী হল
অপরাজিতা হল
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল
অন্যান্য
রেজিস্টার ভবন
প্রশাসনিক ভবন
কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়া
মেডিকেল সেণ্টার
জিমনেশিয়াম
পোস্ট অফিস ভবন
টিচার্স কোয়ার্টারস ও ডরমিটরি
কেন্দীয় শহীদ মিনার
মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য
কটকা মন্যুমেনট
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান। বর্তমানে অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন।
উপাচার্যের তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৯১-এ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
খুলনার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের স্থাপত্য বিশ্ববিদ্যালয়
খুলনায় শিক্ষা
১৯৯১-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত
খুলনা ভিত্তিক সংগঠন
খুলনা জেলার বিশ্ববিদ্যালয় | https://en.wikipedia.org/wiki/Khulna_University | Khulna University | Khulna University (Bengali: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়) is a public research university at Gollamari in Khulna, Bangladesh. It was established in 1991.
It is near the river Moyur, beside the Sher-e Bangla Road (Khulna-Satkhira highway). The academic programs of Khulna University started on 31 August 1991 with 80 students in four disciplines. As of 2023, the university has 29 disciplines under eight schools. |
2698 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%A8%E0%A7%8C%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%80 | বাংলাদেশ নৌবাহিনী | বাংলাদেশ নৌবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নৌযুদ্ধ শাখা যার দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা, এছাড়াও এই সমুদ্রসীমায় অবস্থিত সকল অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বাংলাদেশের সকল সমুদ্রবন্দরের নিরাপত্তা বিধান করা। নৌবাহিনীর প্রাথমিক লক্ষ্য হলো সমুদ্রের ওপরে ও তলদেশে উদ্ভূত হুমকি থেকে দেশকে রক্ষা করা, দেশের সামুদ্রিক স্বার্থের প্রচার ও সুরক্ষা, সমুদ্র শাসনে সহায়তা করা এবং জাতির কূটনৈতিক লক্ষ্য পূরণে অবদান রাখা। পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনী বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং বিদেশে মানবিক সহায়তা মিশনেও একটি নেতৃত্বস্থানীয় বাহিনী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। নৌবাহিনী আঞ্চলিক সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমে একটি প্রধান অংশগ্রহণকারী শক্তি এবং জাতিসংঘ মিশনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমেও যুক্ত রয়েছে।
ইতিহাস
প্রারম্ভিক ইতিহাস
দেশীয় জাহাজ নির্মাণ শিল্প বাংলার অনেক পুরানো ঐতিহ্য। চতুর্দশ শতকে ঐতিহাসিক পর্যটক ইবনে বতুতা বাংলায় এসে সোনারগাঁয়ে নির্মিত কাঠের জাহাজে ভ্রমণ করেছিলেন। ইউরোপীয় পর্যটক সিজার ফ্রেডরিকের মতে পঞ্চদশ শতকে চট্টগ্রাম ছিল সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণের মূল কেন্দ্র। সপ্তদশ শতকে তুরস্কের সুলতানের নৌবহর নির্মিত হয় চট্টগ্রামে। দেশীয় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের বিকাশ বাংলায় শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের ভিত্তি তৈরি করে।
ভারতীয় উপমহাদেশে মুঘল শাসনের সময় মুঘল নৌবাহিনীর অধিকাংশ জাহাজ বাংলায় তৈরি হয়। মুঘলদের বাংলা দখলের পর জলদস্যুতা রুখতে তারা একটি শক্তিশালী নৌবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। সে লক্ষ্যে তারা ভোলা, সন্দ্বীপ, নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল, খিজিরপুর, ঢাকা ইত্যাদি কৌশলগত জায়গায় নৌঘাঁটি স্থাপন করে। কিন্তু মুঘলরা সমুদ্রে দুর্বল হওয়ায় তারা বার্মিজ জলদস্যুদের থামাতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীকালে মুঘলরা শায়েস্তা খানকে জলদস্যু দমনের দায়িত্ব প্রদান করে। দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মাথায় শায়েস্তা খান প্রায় ৩০০ নৌকা ও জাহাজ সংগ্রহ করেন। পরে তিনি বার্মিজ জলদস্যুদের দমন করেন এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং আরাকান বার্মিজদের থেকে ছিনিয়ে আনেন।
ব্রিটিশ শাসনামলে তারা ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ নৌঘাঁটি স্থাপন করতে থাকে। তবে তাদের মূল মনোযোগ ছিল পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে কেন্দ্রীভূত। বাংলাসহ উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে কোন নৌ-অবকাঠামো নির্মাণের কোন উদ্যোগ ব্রিটিশরা গ্রহণ করে নি।
১৮০৫ সালের বিখ্যাত ট্রাফালগার যুদ্ধে ব্রিটিশ নৌবাহিনী বাংলায় তৈরি জাহাজ ব্যবহার করে। ১৮১৮ সালে জার্মান নৌবাহিনীর কাঠ-নির্মিত ফ্রিগেট ডাচল্যান্ড চট্টগ্রামে তৈরি হয়।
পাকিস্তান পর্ব
পাকিস্তান সৃষ্টির পরও পূর্ব পাকিস্তানে নৌ-অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়টি গুরত্ব পায় নি। ১৯৬৫ সালে ভারতের সাথে যুদ্ধের পর নৌবাহিনীর প্রতিকী উপস্থিতি হিসেবে প্রথমবারের মত চট্টগ্রামে চারটি টহল জাহাজ মোতায়েন করা হয়। ১৯৭০ সালে খুলনায় সীমিত অবকাঠামো নিয়ে পিএনএস তিতুমীর প্রতিষ্ঠা করা হয়। একই বছর চট্টগ্রামে নৌ কমান্ডারকে কমোডোর কমান্ডিং চিটাগাং এ উন্নীত করা হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে কোন অবকাঠামো বা সরঞ্জাম সম্প্রসারণ বা আধুনিকায়ন করা হয় নি। ১৯৭১ সালের শেষ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে নৌশক্তি বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।
১৯৭১: স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্ম
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সৈন্যরা পূর্ব পাকিস্তানে নৃশংস সামরিক আক্রমণ শুরু করে যার ফলস্বরূপ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। পাকিস্তান নৌবাহিনীর ফ্রান্সে নির্মাণাধীন ডুবোজাহাজ পিএনএস ম্যাংরো থেকে ৮ জন বাঙালি নাবিক বিদ্রোহ করেন এবং বাংলাদেশে ফিরে নৌবাহিনীর ভিত্তি তৈরি করেন। পরবর্তীতে আরও বিদ্রোহী নৌসেনা তাদের সাথে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে সেক্টর কমান্ডার্স কনফারেন্সে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে নৌবাহিনীর জনবল ছিল ৪৫ জন আর সরঞ্জাম ছিল ভারত থেকে পাওয়া দুটি টহল জাহাজ পদ্মা ও পলাশ। এই জাহাজগুলো পাকিস্তানি নৌবহরের উপর আক্রমণের কাজে ব্যবহৃত হত। যুদ্ধের সময় ১০ নম্বর সেক্টর ছিল নৌ সেক্টর। তবে যুদ্ধকালীন সময়ে নৌকমান্ডোরা সারা দেশেই অভিযান চালিয়েছেন। অন্য সেক্টরে অভিযান চালানোর সময় সেক্টর কমান্ডের সাথে সমন্বয় করে নেয়া হত।
যুদ্ধের সময় নৌসেনাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল সামুদ্রিক যোগাযোগের পথ বন্ধ করা এবং সকল সমুদ্র ও নদীবন্দরগুলো ব্যবহার অনুপযোগী করে তোলা। সে লক্ষে তারা সারা দেশব্যাপী ৪৫টি প্রথাগত ও অপ্রথাগত আক্রমণ চালান। ১৯৭১ সালের ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর নৌযোদ্ধারা অপারেশন জ্যাকপট নামক একটি কমান্ডো অভিযান চালান চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরে। এই অভিযানে মোট ২৬টি জাহাজ ধ্বংস হয় ও আরও বহু জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব জাহাজের মধ্যে রয়েছে এমভি হরমুজ, এমভি আল আব্বাস, ওরিয়েন্ট বার্জ নং-৬ এবং এসএস লাইটিং এর মত জাহাজ যারা পাকিস্তানি বাহিনীর জন্য অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বহন করছিল। দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই নৌকমান্ডোরা সারাদেশে অসংখ্য সফল অভিযান পরিচালনা করেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় বিমানবাহিনীর ভুলবশত আক্রমণে পদ্মা ও পলাশ ডুবে যায়। অফিশিয়াল তথ্য অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধকালে নৌবাহিনীর সাথে যুক্ত ছিল ৩৩৪ জন সদস্য যাদের মধ্য ২২ জন যুদ্ধে শহীদ হন।
১৯৭২-২০০০: বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিকাশ
স্বাধীনতার পর পর নৌবাহিনীর সম্পদ বলতে ছিল চট্টগ্রামে পাকিস্তান নৌবাহিনীর পরিত্যক্ত ঘাঁটি সাবেক পিএনএস বখতিয়ার, খুলনায় বিপর্যস্ত ঘাঁটি সাবেক পিএনএস তিতুমীর এবং ঢাকায় একটি পরিবহন শিবির। সে সময় নৌবাহিনীর কোন জাহাজ, ঘাঁটি, স্থায়ী আবাস, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, সাংগঠনিক কাঠামো কিছুই ছিল না। স্বাধীনতার পর পাকিস্তান হতে পলায়ন করা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নুরুল হককে ঢাকায় এনে ক্যাপ্টেন পদে আসীন করা হয় ও নৌবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ১৮০ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। নৌবাহিনীর প্রথম সদর দপ্তর ছিল সেনাসদরের এক উইং এ। পরবর্তীতে তা পুরাতন বিমান সদরের এক উইং এ স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে বর্তমান বানৌজা হাজী মহসিন এর জায়গায় নৌসদর স্থাপন করা হয়।
১৯৭২ সালে নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মত ১০০ জন জনবল নিয়োগ দেয়া হয় যাদের অধিকাংশই ছিল মুক্তিযোদ্ধা। তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় চট্টগ্রাম নৌঘাঁটিতে। ১৯৭২ সালে সংস্থাপন বিভাগের দুইটি জলযানকে নদীভিত্তিক টহল জাহাজে রূপান্তরিত করে নৌবাহিনীতে যুক্ত করা হয়। ১৯৭২ সালে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি উপকূলীয় টহল জাহাজ উপহার দেয় যা বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বানৌজা পদ্মা নামে সংযুক্ত করা হয়। এই জাহাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রথমবারের মত সমুদ্রে পদার্পণ করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন বন্ধুসুলভ দেশ থেকে আরও টহল জাহাজ যুক্ত করা হয়। ১৯৭৪ সালে একটি কানাডিয়ান কার্গো জাহাজকে সংস্কার করে বানৌজা শহীদ রুহুল আমিন নামে যুক্ত করা হয় এবং জাহাজটিকে নৌবাহিনীর ফ্ল্যাগশিপ করা হয়। এটি ছিল নৌবাহিনীর প্রথম জাহাজ যা গভীর সমুদ্রে চলাচল করতে সক্ষম। ১৯৭৪ সালের মধ্যে নৌবাহিনীর ঘাঁটি ঈসা খান, হাজী মহসিন ও তিতুমীর স্থাপিত হয়।
১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের জলদিয়ায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমীর ক্যাম্পাসে নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাংলাদেশ নেভাল একাডেমী অস্থায়ীভাবে স্থাপিত হয়। নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড পাচটি নদিভিত্তিক টহল জাহাজ নির্মাণ করে যা ছিল নৌবাহিনীর জন্য একটি মাইলফলক। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর স্থায়ী সদর দপ্তর বনানীর বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭৬ সালে সাবেক ব্রিটিশ নৌবাহিনীর ফ্রিগেট বানৌজা ওমর ফারুক যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৮ ও ১৯৮২ সালে ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর আরও দুইটি ফ্রিগেট যথাক্রমে বানৌজা আলী হায়দার ও বানৌজা আবু বকর হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়। ১৯৮০ সালে কিছু মিসাইল বোট ক্রয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অর্জন করে। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমীকে পতেঙ্গার বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮৯ সালে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয় প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রবাহি ফ্রিগেট বানৌজা ওসমান। পরবর্তীকালে টহল জাহাজ, দ্রুত আক্রমণকারী জাহাজ, মাইনসুইপার সহ নানা ধরনের জাহাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়।
একবিংশ শতাব্দী
২০০৮ সালের মায়ানমার সরকার দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি দাইয়ুকে সেইন্ট মারটিন্স দ্বীপের ৫০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে বিতর্কিত সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়। ২ নভেম্বর ২০০৮, দাইয়ু বিতর্কিত সীমায় অনুসন্ধান রিগ বসায়। বাংলাদেশ সরকার মায়ানমারকে অনুসন্ধান বন্ধ করার অনুরোধ জানায় কিন্তু মায়ানমারের পক্ষ থেকে কোন সারা পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সেখানে ফ্রিগেট বানৌজা আবু বকর, টহল জাহাজ বানৌজা মধুমতি এবং ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী জাহাজ বানৌজা নির্ভয়কে মোতায়েন করে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে মায়ানমার ও দুইটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করলে যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা শুরু হয় এবং ৭ নভেম্বর মায়ানমার রিগ সরিয়ে নেয়।
২০১১ সালে নৌবাহিনীর একটি উদ্ধার ও চিকিৎসক দলকে টোকিও ভূমিকম্প ও সুনামির পর জাপানে মোতায়েন করা হয়। ২০১৩ সালে টাইফুন হাইয়ান এ আক্রান্ত মানুষের সহায়তায় ১০ লক্ষ ডলার মূল্যের মানবিক সহায়তা সরঞ্জাম ও নৌবাহিনীর চিকিৎসক দল সহ বানৌজা সমুদ্র জয়কে ফিলিপাইনে মোতায়েন করা হয়।
২০১৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিখোঁজ মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৩৭০ এর অনুসন্ধান অভিযান শুরু করে ফ্রিগেট বানৌজা উমর ফারুক এবং সামুদ্রিক টহল বিমান ডরনিয়ার ডিও-২২৮এনজি মোতায়েনের মধ্য দিয়ে। বিমানটি ছিল একটি বোয়িং ৭৭৭-২০০এআর মডেলের বিমান যা ১৪টি দেশের ২২৭ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে চীনে যাচ্ছিল। পরবর্তীতে বানৌজা উমর ফারুককে বানৌজা সমুদ্র জয় দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। ২০১৪ সালের মে মাসে একটি অস্ট্রেলীয় কোম্পানি বঙ্গোপসাগর এ বিমানটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার দাবি করলে অনুসন্ধান অভিযান পুনরায় শুরু হয়।
২০১৪ সালে মালদ্বীপের পানি সংকটের সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ছিল প্রথম যারা মানবিক সহায়তা ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে। সেসময় বানৌজা সমুদ্র জয়কে ১০০ টন পানির বোতল সহ মোতায়েন করা হয়।
ফোর্সেস গোল ২০৩০
২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ নামক একটি দীর্ঘমেয়াদি আধুনিকায়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বঙ্গোপসাগরের ভূকৌশলগত গুরুত্ব অনুধাবন করে নৌবাহিনীকে এই পরিকল্পনায় সর্ব্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়। পরিকল্পনায় নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তর করার কথা বলা হয়। পটুয়াখালী জেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে নৌবাহিনীর জন্য বানৌজা শের-এ-বাংলা নামক ঘাঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। এটি হবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি যেখানে বিমান উড্ডয়ন ও ডুবোজাহাজ ভেড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে। একই সাথে কক্সবাজারের পেকুয়ায় বানৌজা শেখ হাসিনা নামক ডুবোজাহাজ ঘাঁটির কাজও চলমান রয়েছে।
জাহাজবহর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী চীন থেকে দুইটি ব্যবহৃত টাইপ ০৫৩এইচ২ (জিয়াংহু ক্লাস) ফ্রিগেট ক্রয় করে। যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ড নৌবাহিনীকে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে উপহার হিসেবে দুইটি হ্যামিল্টন ক্লাস কাটার প্রদান করে যা নৌবাহিনী বর্তমানে টহল ফ্রিগেট হিসেবে ব্যবহার করছে। যুক্তরাজ্য নৌবাহিনী থেকে ২০১১ সালে কেনা হয়েছে দুইটি ব্যবহৃত টহল জাহাজ যা সংস্কার ও আধুনিকায়নের পর নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী কর্ভেট হিসেবে। নৌবাহিনী যুক্তরাজ্য থেকে পুরাতন জরিপ ও গবেষণা জাহাজও ক্রয় করেছে। ২০১৬ সালে চীন থেকে দুইটি টাইপ ০৫৬ কর্ভেট কেনা হয়েছে এবং বর্তমানে আরও দুইটি নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০১৩ সালে চীন থেকে কেনা হয় দুইটি দুর্জয় ক্লাস বৃহৎ টহল জাহাজ। ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী ক্ষমতা সম্পন্ন আরও দুইটি দুর্জয় ক্লাসের জাহাজ খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয়েছে এবং ২০১৭ সালে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে।
২০১১ সালের ১৪ জুলাই দুইটি এডব্লিউ ১০৯ হেলিকপ্টার সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উড্ডয়ন শাখার উদ্বোধন হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে দুইটি ডরনিয়ার ডিও-২২৮এনজি সামুদ্রিক টহল বিমান উড্ডয়ন শাখায় যুক্ত হয়।
২০১৭ সালে চীন থেকে দুইটি পুরাতন টাইপ ০৩৫জি (মিং ক্লাস) ডুবোজাহাজ সংযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সমুদ্রগর্ভে অপারেশনের সক্ষমতা অর্জন করে। ডুবোজাহাজ সংযোজনের মাধ্যমে নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত হয়।
জাতিসংঘ মিশন, বহুজাতিক মহড়া ও নৌ কূটনীতি
১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাতিসংঘ মিশনে যুক্ত হয়। ১৯৯৭ সালে প্রথমবারের মত স্বতন্ত্র নৌবাহিনী ইউনিট মোতায়েন করা হয় প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর ইরাক-কুয়েত সীমান্তের জলপথের নিরাপত্তায়। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে সুদানে একটি ফোর্স রিভারাইন ইউনিট (এফআরইউ) নামক নদীভিত্তিক টহল দল পাঠানো হয়। এছাড়াও সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন মিশনেও নৌসদস্যরা অংশ নিয়ে থাকেন। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী লেবাননে জাতিসংঘ মিশন ইউনিফিল এর আওতায় ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে আসছে। বর্তমানে এই মিশনে একটি ক্যাসল ক্লাস ক্ষেপণাস্ত্রবাহী কর্ভেট মোতায়েন রয়েছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী নিয়মিতভাবে অন্যান্য নৌবাহিনীর সাথে মহড়ায় অংশগ্রহণ করে থাকে যা মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন ও যুদ্ধ সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী এক্সারসাইজ সী ব্যাট নামক বার্ষিক সমুদ্র মহড়ায় অংশ নিত। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর বিশেষ বাহিনী এক্সারসাইজ টাইগার শার্ক নামক মহড়ায় অংশ নিয়ে আসছে। ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর মধ্যে কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেনিং (কারাত) নামক বাৎসরিক সামুদ্রিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ভারতীয় নৌবাহিনী আয়োজিত দ্বিবার্ষিক মহড়া মিলান এও নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ নিয়মিতভাবে অংশ নিয়ে থাকে। ২০০৯ সাল থেকে আরব সাগরে পাকিস্তান নৌবাহিনী আয়োজিত দ্বিবার্ষিক মহড়া আমান এ বাংলাদেশ নৌবাহিনী ফ্রিগেট নিয়ে অংশগ্রহণ করে আসছে। নৌবাহিনী কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত সংকট মোকাবিলা অনুশীলন মহড়া এক্সারসাইজ ফেরোশাস ফ্যালকন এও অংশ নিয়ে থাকে। বানৌজা আবু বকর ২০১৪ সালে চীনের শ্যানডং প্রদেশের কুইংদাওতে অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট প্যাসিফিক নেভাল সিম্পোজিয়াম (ডব্লিউপিএনএস) এ অংশগ্রহণ করে। এছাড়া নৌবাহিনী ২০১৫ সাল থেকে মালেশিয়ায় অনুষ্ঠিত বহুজাতিক প্রদর্শনী মহড়া লাংকাউই ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অ্যান্ড অ্যারোস্পেস এক্সিবিশন (লিমা) এ অংশগ্রহণ করে থাকে। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরীয় ফোরামের ব্যানারে বহুজাতিক সমুদ্র মহড়া ইওএনএস মাল্টিলেটারাল মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এক্সারসাইজ (আইএমএমএসআরইএক্স) আয়োজন করে। এটি ছিল নৌবাহিনীর আয়োজিত প্রথম বহুজাতিক মহড়া।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নারী
২০০০ সালের জানুয়ারি মাসে সর্বপ্রথম ১৬ জন নারী ক্যাডেট হিসেবে নৌবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন; বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে নারী অফিসার নিয়োগ ছিলো এই প্রথম। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মত ৪৪ জন নারী নাবিক নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়।
নারীরা অফিসার হিসেবে এক্সিকিউটিভ শাখায় যোগদানের সুযোগ পাননা; অন্য দিকে নাবিক পদে নারীদের শুধু মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, রাইটার, স্টুয়ার্ড এবং স্টোর অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নেওয়া হয়।
নৌপ্রধানগণের তালিকা
বর্তমান প্রধান - অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান
সংগঠন
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান হচ্ছেন একজন চার তারকা অ্যাডমিরাল। নৌপ্রধান নৌবাহিনীর সকল যুদ্ধকালীন এবং শান্তিকালীন সকল কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। নৌবাহিনী সদর দপ্তরের চারটি শাখা রয়েছে: অপারেশন্স(ও), পার্সোনেল (পি), ম্যাটেরিয়াল (এম) এবং লজিস্টিকস (লগ)। প্রত্যেক শাখার প্রধান হিসেবে রয়েছেন একজন সহকারী নৌবাহিনী প্রধান। প্রত্যেক সহকারী নৌপ্রধানের অধীনে রয়েছে একাধিক পরিদপ্তর যার পরিচালক হিসেবে থাকেন একজন কমোডোর বা ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার কর্মকর্তা। প্রত্যেক পরিচালকের অধিনে থাকেন সহকারী পরিচালক এবং স্টাফ অফিসার পদের কর্মকর্তাগণ। নৌবাহিনীতে নয়টি এলাকাভিত্তিক কমান্ড রয়েছে যার নেতৃত্বে আছেন একজন রিয়ার অ্যাডমিরাল বা কমোডোর পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কর্মকর্তা:
নৌবাহিনী প্রধান: অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান, এনবিপি, এনইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স): রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মকবুল হোসেইন
সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পার্সোনেল): রিয়ার অ্যাডমিরাল মো: শাহীন ইকবাল
সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (ম্যাটেরিয়াল): রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শফিউল আজম
সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (লজিস্টিকস): রিয়ার অ্যাডমিরাল এম লোকমানুর রহমান
এলাকাভিত্তিক নেতৃত্ব
প্রশাসনিক শাখা
বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ৬টি প্রশাসনিক শাখা রয়েছে:
নির্বাহী শাখা
প্রকৌশল শাখা
সরবরাহ শাখা
তড়িৎ শাখা
শিক্ষা শাখা
চিকিৎসা শাখা
পদবিন্যাস
কমিশন্ড অফিসার
জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও) প্রথম শ্রেণী(নন-ক্যাডার)
নন কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) পেটি অফিসার (২য় শ্রেণী) এবং নাবিক
নৌঘাঁটি
নৌবাহিনী সদর দপ্তর, ঢাকা
বানৌজা হাজী মহসীন, ঢাকা
বানৌজা শেখ মুজিব, ঢাকা
বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জেম, কাপ্তাই, রাঙামাটি
বানৌজা উল্কা, চট্টগ্রাম
বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
বানৌজা ভাটিয়ারী, চট্টগ্রাম
বানৌজা পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম
বানৌজা নির্ভীক, চট্টগ্রাম
বানৌজা তিতুমীর, খুলনা
বানৌজা উপশম, খুলনা
বানৌজা মোংলা, মোংলা
বানৌজা শেরে বাংলা, পটুয়াখালী
বানৌজা শেখ হাসিনা, কক্সবাজার
বিএন ডকইয়ার্ড, পতেঙ্গা, চট্রগ্রাম
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
বাংলাদেশ নেভাল একাডেমী, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম
গানারি স্কুল, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
নেভিগেশন অ্যান্ড ডিরেকশন (এনডি) স্কুল, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
টর্পেডো অ্যান্টি সাবমেরিন (টিএএস) স্কুল, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
হাইড্রোগ্রাফি স্কুল, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
সিগন্যাল স্কুল, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
ফাস্ট অ্যাটাক ক্রাফট (এফএসি) স্কুল, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
এসডব্লিউএমটি, বানৌজা ঈসা বানৌজা ঈসা খান, চট্টগ্রাম
সোয়াডস স্কুল অ্যান্ড সেন্টার, বানৌজা নির্ভীক, চট্টগ্রাম
ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল, বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জেম, রাঙামাটি
ইলেক্ট্রিক্যাল স্কুল, বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জেম, রাঙামাটি
স্কুল অফ লজিসটিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, খুলনা
সরঞ্জাম
২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে রয়েছে ৫টি ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেট, দুইটি টহল ফ্রিগেট, ৬টি কর্ভেট, ৩৮টি বিভিন্ন ধরনের ছোট যুদ্ধজাহাজ এবং ৩০টি সহায়ক যুদ্ধজাহাজ। ডুবোজাহাজ শাখায় রয়েছে দুইটি ডিজেল ইলেক্ট্রিক আক্রমণকারী ডুবোজাহাজ। নৌবাহিনীর উড্ডয়ন শাখার রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হেলিকপ্টার ও স্থির ডানার বিমান। পাশাপাশি নৌবাহিনীর স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ (সোয়াডস) নামে একটি বিশেষ বাহিনীও রয়েছে।
ডুবোজাহাজ
১২ মার্চ ২০১৭ দুইটি টাইপ ০৩৫ (মিং ক্লাস) ডুবোজাহাজ সংযোজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ডুবোজাহাজ যুগে প্রবেশ করে।
জাহাজ
বিমান
ক্ষেপণাস্ত্র
ক্ষুদ্রাস্ত্র
ভবিষ্যৎ আধুনিকায়ন পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে ফোর্সেস গোল ২০৩০ নামক একটি দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনা চলমান রয়েছে। এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সব ধরনের সরঞ্জাম এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশ নৌবাহিনী পটুয়াখালী জেলার রাবনাবাদে বানৌজা শের-এ-বাংলা নামক একটি ঘাঁটি স্থাপন করছে যা হবে দেশের সর্ববৃহৎ নৌঘাঁটি। এই ঘাঁটিতে বিমান উড্ডয়ন এবং ডুবোজাহাজ ভিড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়াও কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় বানৌজা শেখ হাসিনা নামক একটি ডুবোজাহাজ ঘাঁটির নির্মাণ কাজও চলমান রয়েছে। একই সাথে ঢাকার খিলক্ষেতে বানৌজা শেখ মুজিব ঘাঁটির নির্মাণ কাজ চলছে। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ চ্যানেলে জাহাজ ভিড়ানোর সুবিধা সহ ফ্লিট হেডকোয়ার্টার্স এর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২০১৫ সালে চীনের সাথে দুইটি টাইপ ০৫৬ কর্ভেট এর ক্রয়চুক্তি করে যা বর্তমানে পানিতে ভাসানো হয়েছে এবং ২০১৮ সালের শেষভাগে নৌবাহিনীতে যুক্ত হবে। খুলনা শিপইয়ার্ড নৌবাহিনীর জন্য দুইটি জরিপ ও গবেষণা জাহাজ নির্মাণ করছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে দুইটি উপকূলীয় জরিপ জাহাজ ক্রয়ের দরপত্র প্রকাশিত হয়। এই জাহাজদুটি কোন বাংলাদেশি শিপইয়ার্ড এ নির্মিত হবে।
২০১৭ সালের ২৭ মার্চ দুইটি ডরনিয়ার ডিও-২২৮এনজি সামুদ্রিক টহল বিমান ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন হয়। একই বছর নৌবাহিনী দুইটি এডব্লিউ-১৫৯ ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী হেলিকপ্টার ক্রয়ের চুক্তিও সম্পন্ন করে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে আরও দুইটি ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষমতাসম্পন্ন হেলিকপ্টার ক্রয়ের দরপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে নৌবাহিনী হেলিকপ্টার উড্ডয়ন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি এক্স-ব্যান্ড নৌচালনা রাডার ক্রয়ের দরপত্র আহ্বান করে। একই সময়ে বানৌজা বঙ্গবন্ধুতে থাকা দুইটি ৪০ মিমি ফাস্ট ফর্টি প্রতিস্থাপনের জন্যও দরপত্র প্রকাশ করে।
২০১৮ সালের মে মাসে নৌবাহিনী চীন থেকে দুইটি ব্যবহৃত টাইপ ০৫৩এইচ৩ ফ্রিগেট ক্রয়ের দরপত্র প্রকাশ করে।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে সংসদে প্রতিরক্ষা কার্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর আলোকপাত করেন। তিনি জানান, পেকুয়ায় ডুবোজাহাজ ঘাঁটি নির্মাণের জন্য ৩৩৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ঘাঁটিটি নির্মাণের জন্য চীনের সাথে সমঝোতা স্বারক সাক্ষরিত হয়েছে। নৌবাহিনীর জন্য চারটি মাইনসুইপার এবং একটি পালযুক্ত প্রশিক্ষণ জাহাজ ক্রয় করা হবে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি আরও জানান যে চট্টগ্রাম ড্রাই ডকে বিদেশি জাহাজ নির্মাণ সংস্থার সহযোগিতায় ছয়টি ফ্রিগেট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সরকার দেশেই ক্ষেপণাস্ত্র এবং শত্রু-মিত্র চিহ্নিতকরণ ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে মন্ত্রী আনিসুল হক সংসদকে ফ্রিগেট নির্মাণ প্রকল্প সমন্ধে নিশ্চিত করেন। তিনি জানান নৌবাহিনীর জন্য দুইটি সামুদ্রিক টহল বিমান এবং দুইটি হেলিকপ্টার কেনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নৌবাহিনীর জন্য দুইটি ফ্রিগেট, আরও টহল জাহাজ, ডুবোজাহাজ উদ্ধারকারী জাহাজ, রসদবাহী জাহাজ, টাগবোট, এবং ভাসমান ডক ক্রয়ের কার্যক্রম চলছে।
আরও দেখুন
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী
বাংলাদেশ নৌবাহিনী
বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী | https://en.wikipedia.org/wiki/Bangladesh_Navy | Bangladesh Navy | The Bangladesh Navy (Bengali: বাংলাদেশ নৌবাহিনী, romanized: Bānlādēśa naubāhinī) is the naval warfare branch of the Bangladesh Armed Forces, responsible for the defence of Bangladesh's 118,813 square kilometres (45,874 sq mi) of maritime territorial area, and the security of sea ports and exclusive economic zones of Bangladesh. Bangladesh Navy is a front line disaster management force in Bangladesh. It is a key regional player in counter terrorism efforts, and engages in global peacekeeping with the United Nations. |
2700 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%80 | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর স্থল শাখা। এটি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্ববৃহৎ শাখা। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা সহ বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং সব ধরনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাথে প্রয়োজনীয় শক্তি ও জনবল সরবরাহ করা। সেনাবাহিনীর সব ধরনের কর্মকাণ্ড সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। প্রাথমিক দায়িত্বের পাশাপাশি যেকোন জাতীয় জরুরি অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সাংবিধানিক ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ইতিহাস
প্রারম্ভিক ইতিহাস
বাংলার সামরিক ইতিহাসের মূল রাজা-মহারাজাদের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সেসময় সেনাবাহিনীর প্রধানকে সেনাপতি বা মহাসেনাপতি নামে ডাকা হত। সেই সব সেনাবাহিনী গঠিত হত পদাতিক, অশ্বারোহী, যুদ্ধ হাতি আর যুদ্ধজাহাজ নিয়ে। বাংলায় মুসলমানদের আগমন আর বাংলা সুলতানাত এর প্রতিষ্ঠা সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছিল। সুলতানাতের একটি সুসজ্জিত ও সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনী ছিল। মুঘল শাসনের সময় বাংলায় কামান ও গোলন্দাজ বাহিনীর প্রচলন হয়। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় বাংলা ছিল দক্ষিণ এশিয় অঞ্চলে ব্রিটিশদের শক্তির প্রতীক। ১৭৫৭ সালে লর্ড ক্লাইভের নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ বাহিনী, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার নেতৃত্বাধীন ৫০০০০ সৈন্যের বাংলার সেনাবাহিনীকে পলাশীর প্রান্তরে পরাজিত করে।পরবর্তীতে একই ব্রিটিশ বাহিনী ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে নবাব মীর কাসিমের নেতৃত্বাধীন বাংলার বাহিনীকে পরাজিত করে। ব্রিটিশরা বাংলায় আর্মি অফ বেঙ্গল প্রতিষ্ঠা করে যা পরবর্তীতে ১৮৯৫ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর অংশ হয়ে যায়। ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিম অংশ ছিল পুলিশ এবং সেনা সংগ্রহের জন্য অগ্রগণ্য অঞ্চল। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পূর্বে অশ্বারোহী বাহিনী এবং বল্লমধারী সৈন্যদলের সবাই ছিল এই অঞ্চলের। বিদ্রোহের পর বেঙ্গল উপসর্গ-যুক্ত বিভিন্ন ইউনিটে, যেমন: বেঙ্গল স্যাপারস এবং বেঙ্গল ক্যাভালরি ইত্যাদি, বিহার, বানারসি, উত্তর প্রদেশ ইত্যাদি অবাঙ্গালি অঞ্চল থেকে নিয়োগ দেয়া হত কারণ এই অঞ্চলগুলো তখন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অধীনে ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বাংলা থেকে সৈন্য সংগ্রহের জন্য বেঙ্গলি পল্টন প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯১৬ সালে ব্রিটিশ সরকার বেঙ্গলি ডাবল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে। এই সৈন্যদেরকে করাচিতে প্রশিক্ষণ দেয়া হত আর পরে বাগদাদে মোতায়েন করা হত। যুদ্ধ শেষে এই সৈন্যরা বাগদাদে ১৯১৯ সালের কুর্দি বিদ্রোহ দমনে সাহায্য করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড পাইওনিয়ার কোর নামক একটি সহায়ক বাহিনী প্রতিষ্ঠা করে যারা ছিল কিছুটা প্রকৌশলী কিছুটা পদাতিক। এই বাহিনীর বেশিরভাগ সৈন্য সংগ্রহ করা হয়েছিল পূর্ব এবং পশ্চিম বাংলা থেকে। এই বাহিনী মূলত রাস্তাঘাট ও বিমানঘাঁটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি নির্মাণের মাধ্যমে মূল বাহিনীকে সাহায্য করত। তবে প্রয়োজনে তারা পদাতিক বাহিনী হিসেবে জাপানের সাথে যুদ্ধও করত। এই বাহিনীকে বিভিন্ন কোম্পানিতে সংগঠিত করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রেজিমেন্টের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছিল। ক্যাপ্টেন গনি ছিলেন একজন কোম্পানি কমান্ডার এবং তিনি বার্মা ফ্রন্টে তার বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যুদ্ধ শেষে পাইওনিয়ার কোরের সৈন্যরা ভারত ও জাপানের বিভিন্ন স্থানে সমবেত হয়ে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় ছিল। ১৯৪৬ সালে, জালনায় অবস্থিত পাইওনিয়ার কোর সেন্টারের তৎকালিন অ্যাডজুট্যান্ট এবং কোয়ার্টারমাস্টার ক্যাপ্টেন গনি পূর্ব বাংলার যুদ্ধফেরত পাইওনিয়ার কোরের সৈন্যদের নিয়ে একটি পদাতিক রেজিমেন্ট তৈরির ধারণা দেন এবং কেন্দ্রীয় কমান্ডের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করেন। পরবর্তীতে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয় এবং ভারত ও পাকিস্তান নামক নতুন দুই রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল স্যার ফ্রাংক মেজারভি এর অনুমতি পাওয়ার পর ক্যাপ্টেন গনি পূর্ববাংলার সৈন্যদের নিয়ে বাঙালি পল্টন গঠন করেন যা ছিল পরবর্তীতে গঠিত পদাতিক রেজিমেন্টের মূল ভিত্তি।
পাকিস্তান পর্ব
পাকিস্তান সৃষ্টির সময় ক্যাপ্টেন আব্দুল গনি পাকিস্তানের নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল মেজারভির অনুমতি নিয়ে পূর্ববাংলার যুবকদের নিয়ে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনের কাজ শুরু করেন। ১৯৪৭ সালের ১৭ আগস্ট বোম্বেতে পাইওনিয়ার কোরের সৈন্যদের বিদায় অনুষ্ঠানে ক্যাপ্টেন গনি বলেন "তোমরা পৃথিবীর কাছে প্রমাণ করে দেবে বাঙালি সৈন্যরা পৃথিবীর অন্যান্য জাতির মতই সক্ষম"। এইসব উৎসাহব্যঞ্জক কথার সাথে ক্যাপ্টেন গনি ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুইটি পাইওনিয়ার কোম্পানি নিয়ে ঢাকায় ফিরে পিলখানায় (বর্তমান বিজিবি হেডকোয়ার্টার্স) অবস্থান নেন। পরবর্তীতে তিনি প্রশাসনের কাছে সৈন্যদের উপযুক্ত আবাসস্থল চান। তিনি রাজধানীর উত্তর দিকের কুর্মিটোলাকে সেনানিবাসের উপযুক্ত স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেন। দিনের পর দিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে এখানে জঙ্গল পরিষ্কার করে ব্যারাক, প্যারেড গ্রাউন্ড ইত্যাদি গড়ে তোলা হয়।
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পথিকৃৎ, ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর পতাকা উত্তোলন করা হয়। ক্যাপ্টেন গনি ছিলেন এই ব্যাটালিয়নের সবকিছুর প্রধান তবে প্রথম কমান্ডিং অফিসার ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভি জে ই প্যাটারসন। এবং অফিসার কমান্ডিং ছিলেন মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী প্রথম ব্যাটালিয়নের গঠনের পর দ্বিতীয় ব্যাটালিয়ন স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয় এবং ক্যাপ্টেন গনি সৈন্য সংগ্রহ শুরু করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পতাকা উত্তোলিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মোট ৮টি ব্যাটালিয়ন গঠিত হয়।
১৯৭১: স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্ম
১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় যার ফলস্বরূপ অসন্তোষ ছড়িয়ে পরে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট শুরুর মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক জনগণের উপর ঝাঁপিয়ে পরে। পাকিস্তানি বাহিনী এবং এর সহযোগী আধাসামরিক বাহিনী হাজার হাজার সামরিক-বেসামরিক মানুষ হত্যা করে। ২৬ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান এর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা প্রদান করে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান। মার্চ মাসেই ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। পরবর্তীতে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) সৈন্যরাও সশস্ত্র প্রতিরোধে অংশ নেয়। সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি বেসামরিক জনগণ মিলে গড়ে তোলে মুক্তিবাহিনী। ১৭ এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় এবং কর্ণেল (অব:) মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানীকে বাংলাদেশ বাহিনীর নেতৃত্বদানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
১৯৭১ সালের ১১-১৭ জুলাই সেক্টর কমান্ডার্স কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এই কনফারেন্সে লে: কর্ণেল আব্দুর রবকে চিফ অফ স্টাফ, গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকারকে ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ এবং মেজর এ আর চৌধুরীকে অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ অফ স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে বাংলাদেশ বাহিনী কমান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সে বিভিন্ন সেক্টরের গঠন এবং বিন্যাস, সেক্টরের সমস্যা, বিভিন্ন কৌশলগত দিক এবং বাংলাদেশ বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। এই কনফারেন্সে বাংলাদেশকে এগারটি সেক্টরে ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেক সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ দেয়া হয়। সেক্টরের সকল কর্মকাণ্ড সেক্টর কমান্ডার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে কিছু সেক্টরকে একাধিক সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। ১০ নম্বর সেক্টর ছিল সরাসরি বাংলাদেশ বাহিনীর প্রধানের অধীনস্থ এবং এই সেক্টরের জনবল ছিল প্রধানত নৌ কমান্ডোগণ।
কনফারেন্সের পর বাংলাদেশ বাহিনী একটি দীর্ঘমেয়াদী গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে। পরবর্তীতে বাহিনীকে আবার পুনর্গঠন করা হয় এবং তিনটি ব্রিগেড আকারের সৈন্যদলে ভাগ করা হয়:
কে ফোর্স, মেজর খালেদ মোশাররফ এর নেতৃত্বাধীন, ৪, ৯ ও ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত।
এস ফোর্স, মেজর কেএম শফিউল্লাহর নেতৃত্বাধীন, ২ ও ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত।
জেড ফোর্স, মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন, ১, ৩ ও ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত।
২১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ বাহিনীর সামরিক সদস্যদের নিয়ে। প্রতিষ্ঠার পর মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যুদ্ধের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী প্রথাগত যুদ্ধ শুরু করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ এবং ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ৯ মাসব্যাপী চলা স্বাধীনতা যুদ্ধের অবসান ঘটে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়।
১৯৭১ পরবর্তী: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিকাশ
মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মুক্তি বাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন শাখায় অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান ফেরত কর্মকর্তা ও সৈনিকদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৭২-৭৩ সালের মধ্যেই সেনাবাহিনীতে ইঞ্জিনিয়ার্স, সিগন্যাল, সার্ভিস, অর্ডন্যান্স, মিলিটারি পুলিশ, অশ্ব গবাদি পশুপালন ও খামার এবং মেডিকেল কোর গঠিত হয়। ১৯৭৪ সালে কুমিল্লা সেনানিবাস এ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম শর্ট কোর্সের পাসিং আউট প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) গঠিত হয়।
সেনাবাহিনীতে মুক্তিবাহিনীর বেসামরিক সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি এবং জাতীয় রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির মত ঘটনা গুলো নিয়ে তৎকালীন সেনাবাহিনীর সদস্য এবং সরকারের মধ্যে সন্দেহ-অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়। এই সমস্ত সন্দেহ-অবিশ্বাস এবং ভুল বোঝাবুঝি পেশাদার সেনা কর্মকর্তা এবং বিদ্যমান সরকারের মধ্যে নানা রকম মতবিরোধ সৃষ্টি করে যার ফলস্বরূপ সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তাক্ত অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়।
অভ্যুত্থান, বিদ্রোহ এবং হত্যাকাণ্ড
১৫ অগাস্ট ১৯৭৫, কিছু চাকুরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা, বিশৃঙ্খল নিম্নপদস্থ সেনা কর্মকর্তা এবং এনসিও গোপন পরিকল্পনা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে ধানমন্ডিতে তার ব্যক্তিগত বাসভবনে হত্যা করে। রাষ্ট্রপতির দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় তাদের জীবন রক্ষা পায়। এদের মধ্যে দায়ী পাঁচ কর্মকর্তার ২০১০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ২০২০ সালে পলাতক আরো একজনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। বাকিরা বর্তমানে দেশের বাইরে আত্মগোপনে রয়েছে। হত্যাকান্ডের পর অভ্যুত্থানকারীদের সমর্থিত খন্দকার মোশতাক আহমেদ এর নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা দখল করে। খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন যা খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দান করে।
তিনমাস পর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ এবং কর্ণেল শাফায়াত জামিল এর নেতৃত্বাধীন একদল সেনা কর্মকর্তা এবং এনসিও পালটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে খন্দকার মোশতাকের সরকারকে উৎখাত করেন। একই দিনে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকারি সেনাসদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মুহাম্মদ মনসুর আলী এবং কামারুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করে। সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহ-অন্তরীণ করে রাখা হয়।
৭ নভেম্বর ১৯৭৫, লে: কর্ণেল আবু তাহের এর নেতৃত্বে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) নিয়ন্ত্রিত এক সংক্ষিপ্ত কিন্তু খুবই সংগঠিত অভ্যুত্থান ঘটে ঢাকা সেনানিবাসে। এই অভ্যুত্থানে খালেদ মোশাররফ, এটিএম হায়দার সহ অনেক সেনা ও বিমানবাহিনী কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। কর্ণেল শাফায়ত জামিলকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো হয়। কর্ণেল আবু তাহের মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহ-অন্তরীণ অবস্থা থেকে মুক্তি দেন। জিয়াউর রহমান লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি নেন এবং নিজেকে সেনাপ্রধান এবং ডেপুটি প্রধান সামরিক প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে তিনি কর্ণেল তাহেরকে ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থানে ভূমিকার জন্য মৃত্যুদণ্ড দেন। পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন। ৩০ মে ১৯৮১ চট্টগ্রামে এক সেনা বিদ্রোহে জিয়াউর রহমান নিহত হন।
এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তৎকালীন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এক নিরব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। তিনি সংবিধান বিলুপ্ত করেন এবং দেশব্যাপী সেনা আইন জারি করেন। স্বৈরাচারী শাসন, দুর্নীতি এবং নির্বাচন জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ পর্যন্ত ক্ষমতা দখলে রাখেন। প্রচন্ড বিক্ষোভ এবং গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত
পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসন এবং এ অঞ্চলে বসবাসরত উপজাতিদের অধিকার নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ও এর সশস্ত্র শাখা শান্তি বাহিনী এর সামরিক এবং রাজনৈতিক সংঘাত। ১৯৭৭ সালে শান্তি বাহিনী বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। ২০ বছর ধরে চলা এই সংঘাতের সমাপ্তি ঘটে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার এবং জনসংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মধ্য দিয়ে।
বিদ্রোহ শুরু হলে বাংলাদেশ সরকার বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর একজন জেনারেলের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি ক্রমে অজনপ্রিয় হয়ে উঠে ও স্থানীয় আদি অধিবাসী ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে অবিশ্বাস ও সক্রিয় বিরোধিতার সূত্রপাত ঘটায়। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার নির্মিত কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে ভূমি হারানো প্রায় এক লক্ষ উপজাতির পুনর্বাসন সহ আরও অন্যান্য সমস্যার সমাধানে সরকার ব্যর্থ হয়। ভূমি হারানোদের কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি এবং ৪০০০০ হাজারের বেশি চাকমা নাগরিককে ভারতে চলেআশ্রয় নেয়। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালি বসতি স্থাপন শুরু করে, ফলে আরো কিছু স্থানীয় উপজাতি বসতি উচ্ছেদ হয় এবং এ অঞ্চলের জনমিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। যেখানে ১৯৭৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি ছিল মোট জনসংখ্যার ১১.৬ শতাংশ, ১৯৯১ সাল নাগাদ তা ৪৮.৫ শতাংশে দাঁড়ায়।
দেশে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৯১ সালে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর সরকারের সময় এ ব্যাপারে অগ্রগতি ছিল সীমিত। ১৯৯৬ সালে নতুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শান্তি আলোচনা গতি পায়। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মধ্য দিয়ে দুই দশক ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটে।
শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর এ অঞ্চলে থাকা অধিকাংশ সেনা ক্যাম্প সরিয়ে নেয়া হয়। তবে তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি স্থায়ী সেনানিবাসে তিন ব্রিগেড সৈন্য স্থায়ীভাবে অবস্থান করছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং অবকাঠামো নির্মাণে সেনাবাহিনী এ অঞ্চলে মূল ভুমিকা পালন করে।
পরবর্তী যুগ
১৯৭৫ সালের অভ্যুত্থানের পর জাতীয় রক্ষী বাহিনী বিলুপ্ত করে সকল জনবল সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হয়। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশ পাঁচটি সামরিক অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। পাঁচটি অঞ্চলের দায়িত্বে ছিল পাঁচটি পদাতিক ডিভিশন। ১৯৮২ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় আসাকালীন সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল ৭০,০০০। ১৯৮৫ সাল থেকে সেনাবাহিনী আরেকবার দ্রুত সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। ১৯৮৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেনাবাহিনীর জনবল দাঁড়ায় ৯০,০০০ (অনেক পর্যবেক্ষকের মতে তা ৮০,০০০ এর কাছাকাছি ছিল) যা ১৯৭৫ সালের সংখ্যার তিনগুন। এই সময়ে সেনাবাহিনীর পদাতিক ডিভিশন সংখ্যা সাতে উন্নীত করা হয়।
১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিত্র বাহিনীর অধীন বহুজাতিক বাহিনীর অংশ হিসেবে অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম-এ অংশগ্রহণ করে। এটি ছিল জাতিসংঘ মিশনের বাইরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিদেশের মাটিতে প্রথম মোতায়েন। সেনাবাহিনী যুদ্ধ শেষে কুয়েতে থাকা মাইন পরিষ্কার করতে এক দল ইঞ্জিনিয়ার মোতায়েন করে। অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠন (ওপিকে) এর আওতায় এই মোতায়েন সম্পন্ন হয়
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গঠন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সেনাবাহিনীর অনুরূপ। তবে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণালী, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা কৌশল এবং এনসিও শিক্ষা ব্যবস্থা আত্বীকরনের মধ্য দিয়ে এই অবস্থার বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বহুবছর ধরেই জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রথমবারের মত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হয়। সেবছর সেনাবাহিনীকে ইরাকে এবং নামিবিয়ায় মোতায়েন করা হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হু মু এরশাদের উদ্যোগে এই মোতায়েন সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে উপসাগরীয় যুদ্ধ শেষে জাতিসংঘ মিশনের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি যান্ত্রিক-পদাতিক বহর প্রেরণ করে। সেই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২৫টি দেশে ৩০টি শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাঙ্গোলা, নামিবিয়া, কম্বোডিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইরিত্রিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, মোজাম্বিক, যুগোস্লাভিয়া, লাইবেরিয়া, হাইতি, তাজিকিস্তান, পশ্চিম সাহারা, সিয়েরা লিওন, কসভো, জর্জিয়া, পূর্ব তিমুর, কঙ্গো, আইভোরি কোস্ট এবং ইথিওপিয়া।
এই সকল শান্তিরক্ষা মিশনে এখন পর্যন্ত ৮৮ জন বাংলাদেশি সেনাসদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনাদলের অবদান সর্বোচ্চ মানের প্রশংসিত। এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘ মিশনের উচ্চ পদগুলোতে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তিরক্ষা ও জাতি গঠন অপারেশন পরিচালনার মধ্য দিয়ে শান্তিরক্ষা অপারেশনে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে। সেনাবাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট) স্থাপন করেছে। এই প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশন বিষয়ক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেখানে বলা হয়েছে- "যেকোন মোতায়েনের পূর্বে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রত্যেকটি দেশের দায়িত্ব"।
ফোর্সেস গোল ২০৩০
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ফোর্সেস গোল ২০৩০ নামক দীর্ঘমেয়াদি আধুনিকায়ন পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বড় ধরনের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন কর্মকাণ্ড চলমান। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো বাহিনীকে উত্তর, দক্ষিণ ও কেন্দ্রীয় নামক তিনটি কোরে ভাগ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সিলেটে ১৭ পদাতিক ডিভিশন, কক্সবাজারের রামুতে ১০ পদাতিক ডিভিশন ও বরিশাল-পটুয়াখালিতে ৭ পদাতিক ডিভিশন স্থাপন করা হয়েছে যা সেনাবাহিনীর মোট ডিভিশন সংখ্যাকে ১০ এ উন্নীত করেছে। সেনাবাহিনী পদাতিক সেনাদের আধুনিকায়নের জন্য ইনফ্যান্ট্রি সোলজার সিস্টেম নামক উচ্চাভিলাষী আধুনিকায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রত্যেক পদাতিক সৈন্যকে নাইট ভিশন গগলস, ব্যালিস্টিক হেলমেট, চোখ সুরক্ষা সরঞ্জাম, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, ব্যক্তি-থেকে-ব্যক্তি যোগাযোগের যন্ত্র, হাতে বহনযোগ্য জিপিএস যন্ত্র এবং কলিমেটর সাইট যুক্ত বিডি-০৮ রাইফেল দ্বারা সজ্জিত করা হচ্ছে।
বিশেষ অপারেশন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ২ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ব্যাটালিয়ন এবং পূর্বের ১ প্যারাকমান্ডো ব্যাটালিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে দেশের একমাত্র প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০১১ সালে চীন থেকে ৪৪টি এমবিটি-২০০০ ট্যাংক ক্রয় করেছে। এই ক্রয় ছিল দেশটির ইতিহাসের প্রথম বারের মত ট্যাংক ক্রয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীগণ চীনের তৈরী টাইপ-৬৯ ট্যাংককে আপগ্রেড করে টাইপ-৬৯টুজি মানে উন্নত করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভারি ওয়ার্কশপে ১৭৪টি টাইপ-৫৯ ট্যাংককে আপগ্রেড করে টাইপ-৫৯ বিডি দুর্জয় মানে উন্নীত করা হচ্ছে। পদাতিক সৈন্যদের গতিশীলতা বাড়ানোর জন্য ৩০০টি বিভিন্ন ধরনের আর্মারড যান যেমন: রাশিয়ার বিটিআর-৮০, তুরস্কের অটোকার কোবরা, সার্বিয়ার বিওভি এম১১ ইত্যাদি কেনা হয়েছে।
গোলন্দাজ বহরের আধুনিকায়নের জন্য সার্বিয়া থেকে ৩৬ টি নোরা বি-৫২ ১৫৫মিমি স্বচালিত কামান কেনা হয়েছে। সক্ষমতা আরও বাড়াতে ৪৯টি ডব্লিউএস-২২ মাল্টিপল লাঞ্চ রকেট সিস্টেম কেনা হয়েছে। ট্যাংক বিধ্বংসী সক্ষমতা বাড়াতে কেনা হয়েছে রাশিয়ান মেতিস এম-১ ট্যাংক বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র এবং চীনা পিএফ-৯৮ ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র। আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতার উন্নয়নে কেনা হয়েছে দুই রেজিমেন্ট এফএম-৯০ স্বল্প পাল্লার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। আর্মি এভিয়েশন এরও উন্নয়ন চলমান রয়েছে। ২০১২ সালে দুইটি ইউরোকপ্টার এএস৩৬৫ ডাউফিন হেলিকপ্টার সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়। ২০১৬ সালে এই বাহিনীতে যুক্ত হয় ৬টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার। ২০১৭ সালে একটি কাসা সি-২৯৫ পরিবহন বিমান সেনাবাহিনীতে যুক্ত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে নজরদারি এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য ২০১৭ সালে স্লোভেনিয়া থেকে ৩৬টি ব্রামোর সি৪ আই মনুষ্যবিহীন আকাশযান যুক্ত হয় এই বাহিনীতে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী
২০১৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রথমবারের মতো আর্মি মেডিকেল কোরে নারী সৈনিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে নারী সৈনিকদের প্রথম ব্যাচ মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করে। ২০০০-এর দশকে প্রথম নারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে সেনাবাহিনীর জন্মলগ্ন থেকেই নারীরা ডাক্তার হিসেবে যোগ দিতে পারছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম সামরিক বাহিনীর একজন মহিলা ডাক্তার ছিলেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রথম নারী মেজর জেনারেল হিসেবে সুসানে গীতিকে নিয়োগ দেয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম চারজন নারী কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্যাটেলিয়ন অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান।
সেনাপ্রধানগণের তালিকা
সংগঠন
গঠন
প্রশাসনিক শাখা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিম্নলিখিত প্রশাসনিক কোরে বিভক্ত:
পদবিন্যাস
কমিশন্ড অফিসার
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি তে কমিশন প্রদান করা হয় এবং কমিশন পাওয়া অফিসারগণ প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে মর্যাদাপ্রাপ্ত হন।
বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কমিশন অফিসারের প্রথম পদবী লেফটেন্যান্ট। সম্প্রতি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদবী বিলুপ্ত করা হয়েছে।
জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও)
প্রথম শ্রেণি (নন-ক্যাডার) গেজেটেড কর্মকর্তা।
নন-কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) এবং সৈনিক
সার্জেন্ট দ্বিতীয় শ্রেণি (নন-গেজেটেড) এবং কর্পোরাল, ল্যান্স কর্পোরাল ও সৈনিক তৃতীয় শ্রেণীর পদবী। এছাড়া কোম্পানি, ব্যাটারি, পদাতিক ব্যাটালিয়ন, গোলন্দাজ রেজিমেন্ট ইত্যাদির গুরুত্বপূর্ণ নিয়োজিত নিয়োগ গুলোও পদবী হিসেবে বিবেচিত। যেমন: কোম্পানি কোয়ার্টার মাস্টার সার্জেন্ট (সিকিউএমএস), রেজিমেন্টাল সার্জেন্ট মেজর(আরএসএম) ইত্যাদি সার্জেন্টদের দখলে থাকে। যদিও এগুলো আলাদা কোন পদ নয় তারপরেও তাদের আলাদা পদচিহ্ন রয়েছে।
সেনানিবাসের তালিকা
আলিকদম সেনানিবাস, বান্দরবান
বান্দরবান সেনানিবাস
চট্টগ্রাম সেনানিবাস
কুমিল্লা সেনানিবাস, কুমিল্লা
ঢাকা সেনানিবাস
দীঘিনালা সেনানিবাস, খাগড়াছড়ি
হালিশহর সেনানিবাস, চট্টগ্রাম
জাহানাবাদ সেনানিবাস, খুলনা
জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাস, বগুড়া
জালালাবাদ সেনানিবাস, সিলেট
যমুনা সেনানিবাস, টাঙ্গাইল
যশোর সেনানিবাস
কাপ্তাই সেনানিবাস, রাঙামাটি
খাগড়াছড়ি সেনানিবাস
খোলাহাটি সেনানিবাস, দিনাজপুর
মাঝিড়া সেনানিবাস, বগুড়া
মিরপুর সেনানিবাস
ময়মনসিংহ সেনানিবাস
পদ্মা সেনানিবাস, মাদারীপুর
পোস্তগোলা সেনানিবাস
কাদিরাবাদ সেনানিবাস, নাটোর
রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস, গাজীপুর
রাজশাহী সেনানিবাস
রামু সেনানিবাস, কক্সবাজার
রাঙ্গামাটি সেনানিবাস
রংপুর সেনানিবাস
লালমনিরহাট সেনানিবাস
সৈয়দপুর সেনানিবাস, নীলফামারী
সাভার সেনানিবাস
শহীদ সালাহউদ্দীন সেনানিবাস, ঘাটাইল
শেখ হাসিনা সেনানিবাস, লেবুখালী,পটুয়াখালী
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস, মিঠামইন, কিশোরগঞ্জ।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ), ভাটিয়ারি, চট্টগ্রাম
স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি এন্ড ট্যাকটিকস (এসআই&টি), জালালাবাদ সেনানিবাস , সিলেট.
ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসি&এসসি), মিরপুর সেনানিবাস, ঢাকা।.
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি), মিরপুর সেনানিবাস ঢাকা
মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজি (এমআআইএসটি), মিরপুর সেনানিবাস, ঢাকা
আর্মাড কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল (এসিসি&এস), জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাস, বগুড়া
ইঞ্জিনিয়ার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল অফ মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং, কাদিরাবাদ সেনানিবাস, নাটোর
সিগনাল ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, যশোর সেনানিবাস, যশোর
আর্মি সার্ভিস কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, জাহানাবাদ সেনানিবাস, খুলনা
আর্মি মেডিকাল কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস, ঘাটাইল, টাংগাইল
অর্ডন্যান্স কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস, গাজীপুর
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিপসট), রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস, গাজীপুর
ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, সৈয়দপুর সেনানিবাস, নীলফামারী
কোর অফ মিলিটারি পুলিশ সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস, ঘাটাইল, টাংগাইল
আর্মি স্কুল অফ এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস, ঘাটাইল, টাংগাইল
আর্মি স্কুল অফ ফিজিক্যাল ট্রেনিং অ্যান্ড স্পোর্টস (এএসপিটিএস), ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা
আর্মি স্কুল অফ মিউজিক, চট্টগ্রাম সেনানিবাস, চট্টগ্রাম
আর্মড ফোর্সেস মেডিকাল কলেজ (এএফএমসি), ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা
আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, হালিশহর, চট্টগ্রাম
স্কুল অফ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স, ময়নামতি সেনানিবাস, কুমিল্লা
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টার, চট্টগ্রাম সেনানিবাস, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টার, রাজশাহী সেনানিবাস, রাজশাহীপ
নন-কমিশন্ড অফিসারস একাডেমী, মাঝিরা সেনানিবাস, বগুড়া
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি), মিরপুর সেনানিবাস, ঢাকা
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি), ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা
সরঞ্জাম
ভবিষ্যৎ আধুনিকায়ন পরিকল্পনা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফোর্সেস গোল ২০৩০ নামক একটি দীর্ঘমেয়াদি আধুনিকায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে পূর্ব, কেন্দ্রীয় ও পশ্চিম নামক তিনটি কোরে ভাগ করা হবে। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে একটি নদীভিত্তিক ব্রিগেড স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সেনাবাহিনীতে ২০২১ সালের মধ্যে ৯৭টি নতুন ইউনিট যুক্ত হবে। এর মধ্যে সিলেট সেনানিবাসে ১৯টি, রামু সেনানিবাসে ২২টি ও বরিশালের শেখ হাসিনা সেনানিবাসে ৫৬টি ইউনিট সংযুক্ত হবে। কিছু পদাতিক ব্যাটেলিয়নকে প্যারা ব্যাটালিয়ন ও যান্ত্রিক ব্যাটালিয়নে রূপান্তরের কাজ চলমান রয়েছে।
দুইটি সাজোয়া রেজিমেন্ট স্থাপনের কাজ বিবেচনাধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পদাতিক সেনাদের আধুনিকায়নের জন্য ইনফ্যান্ট্রি সোলজার সিস্টেম নামক উচ্চাভিলাষী আধুনিকায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রত্যেক পদাতিক সৈন্যকে নাইট ভিশন গগলস, ব্যালিস্টিক হেলমেট, চোখ সুরক্ষা সরঞ্জাম, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট, ব্যক্তি-থেকে-ব্যক্তি যোগাযোগের যন্ত্র, হাতে বহনযোগ্য জিপিএস যন্ত্র এবং কলিমেটর সাইট যুক্ত বিডি-০৮ রাইফেল দ্বারা সজ্জিত করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নতুন অ্যাসল্ট রাইফেল ও সাবমেশিন গান ক্রয়ের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
২০১৮ সালের মার্চে সেনাবাহিনী ২২০টি ট্যাংক-বিধ্বংসী অস্ত্র কেনার দরপত্র আহ্বান করে। এই দরপত্রের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে রাশিয়ার তৈরি আরপিজি-৭ভি২ এবং চীনের তৈরি টাইপ ৬৯-১ ট্যাংক-বিধ্বংসী অস্ত্র। এপ্রিল ২০১৮ তে সেনাবাহিনী মধ্যম পাল্লার ট্যাংক বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের মূল্যায়ন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সেনাবাহিনীর লাইট আর্মাড যান ক্রয়ের মূল্যায়ন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেনাবাহিনী হালকা ট্যাংক কেনার দরপত্র প্রকাশ করে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেনাবাহিনী ১৫৫মিমি কামান ক্রয়ের মূল্যায়নের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সেনাবাহিনী ১২২মিমি কামান ক্রয়ের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে। একই মাসে সেনাবাহিনীর ১০৫মিমি কামান ক্রয়ের দরপত্র প্রকাশিত হয়। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সেনাবাহিনী দূরপাল্লার মাল্টিপল লাঞ্চ রকেট সিস্টেম ক্রয়ের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই সিস্টেম গুলোর পাল্লা হতে হবে ১২০ থেকে ২৮০ কিলোমিটার।
২০১৮ সালের মার্চে দুইটি লোকাল ওয়ার্নিং রাডার ক্রয়ের দরপত্র প্রকাশ পায়। এই দদরপত্রের সসংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে ফ্রান্সের গ্রাউন্ড মাস্টার ২০০, জার্মানির টিআরএমএল ৩ডি/৩২ এবং ইতালির ক্রনোস ল্যান্ড রাডার। সেনাবাহিনী ১৮১টি কাধে বহনযোগ্য বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র ক্রয়েরও দরপত্র প্রকাশ করেছে। চীনা এফএন-১৬, রাশিয়ান ইগলা-এস এবং সুইডিশ আরবিএস ৭০ এই দদরপত্রের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ এর জন্য একটি পুনর্গঠন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আর্মি এভিয়েশন গ্রুপের নাম পরিবর্তন করে আর্মি এভিয়েশন রাখা হবে এবং এর জনবল ২০৪ থেকে বাড়িয়ে ৭০৪ করা হবে। ২০২১ সাল নাগাদ আর্মি এভিয়েশনের মোট বিমানের সংখ্যা হবে ২৬। ১৪৭ জন জনবল যুক্ত আর্মি এভিয়েশন মেইন্টেইনেন্স ওয়ার্কশপ কে পুনর্গঠন করে ৪৯০ জনবল যুক্ত আর্মি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে পরিণত করা হবে। সেনাবাহিনীতে একটি এভিয়েশন পরিদপ্তর ও স্থাপন করা হবে।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নদীভিত্তিক অপারেশনে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্যএকটি ৩০ মিটার দৈর্ঘের কমান্ড শিপ ক্রয়ের টেণ্ডার দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে দুইটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক ক্রয়ের জন্য ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের সাথে চুক্তি সাক্ষর করেছে। ৬৮ মিটার দৈর্ঘের এই জাহাজগুলো ৮টি ট্যাংক বহনে সক্ষম হবে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সেনাবাহিনী দুইটি ট্রুপস ক্যারিয়িং ভেসেল এর জন্য দরপত্র আহ্বান করে। ৫৫ মিটার লম্বা এই জাহাজ গুলোকে ২০০ সৈন্য বহনে সক্ষম হতে হবে। একই সময়ে সেনাবাহিনী দুইটি ''ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক (এলসিটি) ক্রয়ের ও দরপত্র ছাড়ে। দরপত্র অনুযায়ী, ৬৫ থেকে ৭২ মিটার দৈর্ঘ্যের এই জাহাজগুলোকে ৮টি ট্যাংক বহনে সক্ষম হতে হবে। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সেনাবাহিনী একই রকম বৈশিষ্ট্যের আরও দুইটি এলসিটি ক্রয়ের দরপত্র প্রকাশ করে।
আরও দেখুন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সেক্টরসমূহের তালিকা
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পদক
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী
বাংলাদেশ নৌ বাহিনী
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড
বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী
বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফুটবল দল
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী
১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
বাংলাদেশের সরকারি সংস্থা
১৯৭১-এ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত | https://en.wikipedia.org/wiki/Bangladesh_Army | Bangladesh Army | The Bangladesh Army (Bengali: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, romanized: Bānlādēśa sēnābāhinī) is the land warfare branch and the largest component of the Bangladesh Armed Forces. The primary mission of the Army is to provide necessary forces and capabilities, to deliver the Bangladeshi government's, adaptative security measures, modular strategies, and optimized or informed intelligence, used in prevision of defending the nation's territorial integrity against external attack. Control of personnel and operations is administered by the Army Headquarters, Dhaka. The Bangladesh Army is also constitutionally obligated to assist the government and it's civilian agencies, either during times of domestic national emergency, or as preventive measures in rare cases. This additional role is commonly referred to as "aid to civil administration" or, using the Latin form, "Protectio, Transparentia, Reintegratio", in others words, "Protect and Serve". |
2702 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%80 | বাংলাদেশ বিমান বাহিনী | বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আকাশ যুদ্ধ শাখা। বিমান বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের আকাশ সীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিমান সহায়তা প্রদান করাও বিমান বাহিনীর অন্যতম দায়িত্ব। এছাড়াও বিমান বাহিনী দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সাথেও যুক্ত রয়েছে।
ইতিহাস
১৯৭১: স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্ম
১৯৭১ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিমান বাহিনীর বৈমানিকরা ওতপ্ৰোতভাবে জড়িত ছিলেন এবং স্থল যুদ্ধের প্ৰস্তুতি ও পরিচালনায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালের জুলাইয়ে সেক্টর অধিনায়কদের সম্মেলনের সময় বিমান বাহিনী গঠন নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয় নি। কারণ সেই সময় তা সম্ভবপর এবং যুক্তি সংগত ছিলনা। ফলে আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্তে পৌছায়নি প্ৰবাসী সরকার। কিন্ত যুদ্ধের শুরু থেকেই বেশ কিছু বিমান বাহিনীর কৰ্মকৰ্তা ও সদস্য সক্ৰিয় ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে উইং কমান্ডার খাদেমুল বাশার ও স্কোয়াড্ৰন লিডার এম হামিদুল্লাহ্ খান ছিলেন যথাক্রমে ৬ ও ১১ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক। এছাড়াও জেড ফোৰ্সে আশরাফ, রউফ, লিয়াকত প্ৰমুখও যুদ্ধ ময়দানে বিভিন্ন গুরুত্বপূৰ্ণ পদে দায়িত্বরত ছিলেন। অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের ডিমাপুরে গঠিত হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। শুরুতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জনবল ছিলেন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পক্ষত্যাগী বাঙালি কর্মকর্তা ও বিমানসেনারা।
সে সময় ভারতে আশ্ৰয় নিয়ে যুদ্ধ সমাপ্ত পৰ্যন্ত থেকে যাওয়া বেশ কিছু বিমান কৰ্মকৰ্তা ছিলেন; যেমন বদরুল আলম, এ কে খন্দকার, সুলতান মাহমুদ, পিআইএ পাইলট ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাবেক পিআইএ পাইলট ক্যাপ্টেন সাত্তার, সাবেক পিআইএ পাইলট ক্যাপ্টেন সরফুদ্দিন এবং সাবেক কৃষিবিভাগের পাইলট ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ প্রমুখ। তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে ২/৩ জনের দাবি অনুযায়ী "বাংলাদেশ বিমান বাহিনী" নাম করণ করা হয় এবং তাঁদের প্ৰশিক্ষণ দেয়া হয়। মূলত তাঁরাই ভারত থেকে বাংলাদেশে উড়ে এসে বিভিন্ন দুঃসাহসিক অভিযান চালান। এই অপারেশন তাঁরাই কিলো ফ্লাইট নাম দেন। ভারত উপহার হিসেবে কিলো ফ্লাইটের সাফল্যর জন্য ছোট তিনটি পুরাতন বিমান দেয় - একটি ডাকোটা ডিসি-৩ পরিবহন বিমান, একটি ডি.এইচ.সি-৩ টুইন অটার পর্যবেক্ষণ বিমান ও একটি ঔষধ নিক্ষেপের কাজে ব্যবহৃত অ্যালুয়েট থ্রি হেলিকপ্টার। ডিমাপুরের একটি পরিত্যক্ত রানওয়েতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর টেকনিশিয়ানরা উপহার পাওয়া বিমানগুলো রূপান্তর ও আক্রমণ উপযোগী করে তোলার কাজ শুরু করেন। ডাকোটা বিমানটিকে ৫০০ পাউন্ড বোমা বহনের উপযোগী করে তোলা হয়। টুইন অটারটির প্রতি পাখার নিচে ৭টি করে রকেট যুক্ত করা হয়। পাশাপাশি এটি ১০টি ২৫ পাউন্ড ওজনের বোমাও বহন করতে পারত যা একটি দরজা দিয়ে হাত দিয়ে নিক্ষেপ করতে হত। আর অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারের সামনে একটি .৩০৩ ব্রাউনিং মেশিন গান এবং দুই পাইলন থেকে ১৪টি রকেট নিক্ষেপের ব্যবস্থা করা হয়। এই ছোট বাহিনীকে কিলো ফ্লাইট নামকরণ করা হয়। স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদকে কিলো ফ্লাইটের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমান বাহিনী অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করে। ওইদিন ক্যাপ্টেন আকরাম কর্তৃক পরিচালিত আক্রমণে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারির তেল ডিপো ধ্বংস হয়ে যায়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিমান বাহিনী মৌলভীবাজারে অবস্থিত পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যারাকে হামলা চালায়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পাকিস্তানিদের ঘাঁটিতে অনেকগুলো আক্রমণ পরিচালনা করে।
১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল থেকে সরকারি ঘোষণায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয়।
১৯৭১ পরবর্তী: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিকাশ
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত অনেক বাংলাদেশী কর্মকর্তা ও বিমান সেনা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। যার ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সূচনালগ্নেই এক দল প্রশিক্ষিত জনবল পেয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৭৩~৭৪ সালে পাকিস্তান ফেরত জনবল বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণের ফলে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বহু বিমান মিয়ানমার হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যায়। ভূমিতে আটকা পরা বিমান ভারত নিয়ে যায়। আত্মসমর্পণের পরে পাকিস্তানি বাহিনীর এসব বিমানের বেশিরভাগই ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত বিমান রয়ে যায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রযুক্তিবিদরা কিছু বিমানকে মেরামত করে উড্ডয়ন সক্ষম করে তোলে। স্বাধীনতার পর বিমান বাহিনী তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বড় ধরনের অনুদান পায় যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০টি মিগ-২১এমএফ এবং ২টি মিগ-২১ইউএম যুদ্ধ বিমান।
১৯৭৭ সালে জাপান এয়ারলাইন্স ভারত থেকে ঢাকায় হাইজ্যাক হওয়ার ঘটনাৱ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে বিদ্রোহ দেখা দেয়। যেটা দমনে অনেক কর্মকর্তা ও বিমানসেনা নিহত হয়। বিদ্রোহ পরবর্তী বিচারে আরও বহু সংখ্যক কর্মকর্তা ও বিমানসেনার মৃত্যুদণ্ড হয় যার ফলে বিমান বাহিনীর জনবল ভয়াবহ হ্রাস পায়। বিদ্রোহ পরবর্তী বিমান বাহিনীতে জনবল সংকটে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে পড়ে যা একটি সদ্যসৃষ্ট বিমান বাহিনীর বিকাশে বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি করে।
জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর শাসনামলে পাকিস্তানের সাথে সামরিক সহযোগিতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। যার ফলস্বরূপ ১৯৮০ এর দশকের শেষ দিকে পাকিস্তান কয়েক স্কোয়াড্রন এফ-৬ যুদ্ধবিমান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে উপহার হিসেবে প্রদান করে। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী রাশিয়া থেকে ৮টি চতুর্থ প্রজন্মের মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ক্রয় করে।
২০০৩ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমিকে জাতীয় পতাকা প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।
ফোর্সেস গোল ২০৩০
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বর্তমানে ফোর্সেস গোল ২০৩০ নামক একটি উচ্চাভিলাষী আধুনিকায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠছে। এই পরিকল্পনার অধীনে বিমান সক্ষমতা এবং ভূমি-ভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুইটিই শক্তিশালিতা করা হচ্ছে। ২০১১ সালে কক্সবাজারে নতুন বিমান ঘাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে ঢাকায় স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিমানঘাঁটি। ঘাঁটি প্রতিরক্ষা ও পাইলট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠিত হয়েছে বিশেষায়িত ইউনিট স্কোয়াড্রন ৪১।
২০১০ সাল থেকে বিমান বাহিনীতে ১৬টি এফ-৭বিজিআই যুদ্ধ বিমান, ১৬ টি উচ্চতর জেট প্রশিক্ষণ বিমান, ৯টি কে-৮ প্রাথমিক জেট প্রশিক্ষণ বিমান, ৩টি এল-৪১০ পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমান এবং ২৩টি পিটি-৬ প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বিমান যুক্ত হয়েছে। একই সময়ে আরও যুক্ত হয়েছে ১৬টি এমআই-১৭১এসএইচ যুদ্ধ হেলিকপ্টার, ২টি এডব্লিউ-১৩৯ সামুদ্রিক উদ্ধার ও অনুসন্ধান হেলিকপ্টার এবং ২টি এডব্লিউ-১১৯কেএক্স প্রশিক্ষণ হেলিকপ্টার।
২০১১ সালে এফএম-৯০ স্বল্প পাল্লার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের মধ্য দিয়ে বিমান বাহিনী ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অর্জন করে। এখন পর্যন্ত বিমান বাহিনী দুই রেজিমেন্ট এই ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করেছে। ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে জেওয়াই-১১বি, জেএইচ-১৬, ওয়াইএলসি-৬ এবং ওয়াইএলসি-২ রাডার ব্যবস্থা।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অফিসার ও বিমানসেনা মিলিয়ে ৬০০ এর অধিক জনবল, ১২টি হেলিকপ্টার ও ১টি পরিবহন বিমান বর্তমানে জাতিসংঘ মিশনে মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে হাইতিতে ৩টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার, মালিতে ৩টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার এবং কঙ্গোতে ৬টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার ও ১টি সি-১৩০বি পরিবহন বিমান মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া লাইবেরিয়া, আইভরি কোস্ট প্রভৃতি দেশেও বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট মোতায়েন রয়েছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে নারী
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে প্রথমবারের মতো ৬৪ জন নারী বিমানসেনা হিসেবে প্রাথমিক রিক্রুট প্রশিক্ষণ শেষ করে। পুরুষদের মতো নারীদেরকে বিমানসেনা হিসেবে সকল ট্রেডে নেওয়া হয়না; নারীদেরকে টেকনিক্যাল ট্রেডে, প্রভোস্ট, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট, মিউজিক ট্রেড এবং ফিজিক্যাল ফিটনেস অ্যান্ড ড্রিল ইন্সট্রাক্টর (পিএফঅ্যান্ডডিআই) ট্রেডে নেওয়া হয়। নারীরা কর্মকর্তা হিসেবে ২০০০-এর দশক থেকেই যোগ দিতে পারেন তবে তাদের বৈমানিক হওয়ার অনুমতি ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত ছিলোনা, ২০১৪ সালে দুইজন নারী কর্মকর্তা বৈমানিক হওয়ার প্রশিক্ষণ অর্জন করেন।
বিমান বাহিনী প্রধানগণের তালিকা
সংগঠন
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান হচ্ছেন একজন চার তারকা এয়ার চিফ মার্শাল পদমর্যাদার কর্মকর্তা। বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের চারটি শাখা রয়েছে: অপারেশন্স, প্লানস, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং মেইনটেনেন্স। প্রত্যেক শাখার প্রধান হিসেবে রয়েছেন একজন সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান। প্রত্যেক সহকারী বিমান প্রধানের অধীনে রয়েছে একাধিক পরিদপ্তর যার পরিচালক হিসেবে থাকেন একজন এয়ার কমোডোর বা গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার কর্মকর্তা। প্রত্যেক পরিচালকের অধিনে থাকেন সহকারী পরিচালক এবং স্টাফ অফিসার পদের কর্মকর্তাগণ।
গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কর্মকর্তা:
বিমান বাহিনী প্রধান: এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান
সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (অপারেশন্স): এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান এনডিইউ, পিএসসি, জিডি(পি)
সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্লানস): এয়ার ভাইস মার্শাল এম সানাউল হক ওএসপি, জিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি)
সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন): এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ আবুল বাশার বিবিপি, ওএসপি, এনডিসি, এসিএসসি, পিএসসি
সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (মেইনটেনেন্স): এয়ার ভাইস মার্শাল এম কামরুল এহসান বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি
আঞ্চলিক নেতৃত্ব
অফিসার-বিমানসেনাদের শাখা/ট্রেড
অফিসার
সাধারণ দায়িত্ব (প্রশাসন)
সাধারণ দায়িত্ব (পাইলট)
সাধারণ দায়িত্ব (নেভিগেটর)
আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ
বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ
আবহাওয়া
প্রকৌশল
সরবরাহ
অর্থ/হিসাব
শিক্ষা
আইন
চিকিৎসা (সেনাবাহিনী থেকে অন্তর্ভুক্ত)
বিমানসেনা
নিরাপত্তাসংক্রান্ত
বিমান প্রকৌশল
শিক্ষা
গোয়েন্দা
তড়িৎ এবং যন্ত্র প্রকৌশল
সাধারণ প্রকৌশল
যান্ত্রিক পরিবহন প্রকৌশল
অস্ত্র প্রকৌশল
বেতার প্রকৌশল
স্থল সংকেত
রাডার পরিচালনা
জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম
আলোকচিত্র
বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ
আবহাওয়াসংক্রান্ত
চিকিৎসাসংক্রান্ত
সাচিবিক
সরবরাহ
স্থল যুদ্ধ
যান্ত্রিক পরিবহন চালনা
খাবারসরবরাহ
বাদক
বিমানক্রু
পদবিন্যাস
কমিশন্ড অফিসার
জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (জেসিও)
নন-কমিশন্ড অফিসার (এনসিও) এবং বিমানসেনা
বিমান ঘাঁটি
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি খাদেমুল বাশার, ঢাকা
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু, ঢাকা
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি মতিউর রহমান, যশোর
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি সুলতান মাহমুদ, টাঙ্গাইল
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজার
মৌলভীবাজার রাডার ইউনিট
বগুড়া রাডার ইউনিট
তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট, লালমনিরহাট
তত্ত্বাবধান ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট, শমসেরনগর
প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি, যশোর
ফ্লাইট ইনস্ট্রাক্টরস স্কুল (এফআইএস), বগুড়া
কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (সিএসটিআই)
ফ্লাইট সেফটি ইন্সটিটিউট (এফএসআই), ঢাকা
অফিসারস ট্রেনিং স্কুল (ওটিএস), যশোর
অ্যারোমেডিক্যাল ইন্সটিটিউট (এএমআই), কুর্মিটোলা, ঢাকা
ফাইটার কন্ট্রোলার ট্রেনিং ইউনিট (এফসিটিইউ), ঢাকা
স্কুল অফ ফিজিক্যাল ফিটনেস (এসওপিএফ), কুর্মিটোলা, ঢাকা
রিক্রুটস ট্রেনিং স্কুল (আরটিএস), শমসেরনগর, মৌলভীবাজার
বিমান সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (এটিআই, বা বি বা) , পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম
মেকানিক্যাল ট্রান্সপোর্ট ড্রাইভিং স্কুল, শমসেরনগর, মৌলভীবাজার
সরঞ্জাম
বিমান
ভবিষ্যৎ আধুনিকায়ন পরিকল্পনা
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন করছে। ক্রমবর্ধমান দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালনের জন্য বিমান বাহিনীকে দক্ষিণ বিমান কমান্ড ও উত্তর বিমান কমান্ড নামক দুইটি কমান্ডে ভাগ করা হচ্ছে। দক্ষিণ বিমান কমান্ডের অধীনে একটি মেরটাইম এয়ার সাপোর্ট অপারেশন সেন্টার (এমএএসওসি) স্থাপন করা হবে। সমুদ্রসীমার নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণ বিমান কমান্ডের অধীনে বরিশালে একটি বিমান ঘাঁটি স্থাপন করা হচ্ছে। একই সাথে কক্সবাজার বিমানঘাঁটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সিলেটে আরেকটি বিমান ঘাঁটি স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকার বাশার বিমান ঘাঁটি, চট্টগ্রামের জহুরুল হক বিমান ঘাঁটি, যশোরে মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটি ও কক্সবাজার বিমান ঘাঁটিতে এয়ার ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স (এটিএস) রাডার স্থাপনের কাজ চলছে। বিমান বাহিনী ১০৫ অ্যাডভান্সড জেট ট্রেনিং ইউনিট নামক একটি উন্নত প্রশিক্ষণ ইউনিট স্থাপন করতে যাচ্ছে। এই ইউনিটটি যুদ্ধবিমানের পাইলট দের উন্নত প্রশিক্ষণের কাজ করবে। এই ইউনিটের অধীনে থাকবে তিনটি প্রশিক্ষণ স্কোয়াড্রন।
২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যুক্তরাজ্য বিমান বাহিনীর ব্যবহৃত দুইটি সি-১৩০জে এমকে৫ পরিবহন বিমান ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষর করে। ২০১৯ সালের জুন মাসে এরকম আরও তিনটি বিমান ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০২০ সালের মে অনুযায়ী, এর দুইটি বিমান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে।
২০১৮ সালের ২০ জুন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী চীনের চায়না ন্যাশনাল এ্যারো টেকনোলজি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন এর সাথে ৭টি কে-৮ জেট প্রশিক্ষণ বিমান ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষর করে।
২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর ইতালীয় কোম্পানি লিওনার্দো বাংলাদেশের কাছে অজানা সংখ্যক ক্রোনস ল্যান্ড রাডার বিক্রির চুক্তি করার ঘোষণা দেয়। সি-ব্যান্ডের এই ত্রিমাত্রিক রাডারের পাল্লা ২৫০ কিমি।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিমান বাহিনী একটি মনুষ্যবিহীন আকাশযান ব্যবস্থা ক্রয়ের দরপত্র আহ্বান করে। এই ব্যবস্থায় ৩/৪টি মনুষ্যবিহীন আকাশযান এবং ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সংসদে প্রতিরক্ষা কার্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক জানান বিমান বাহিনীর জন্য ১৬টি মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এমআরসিএ), ৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, তিনটি ভিভিআইপি হেলিকপ্টার, দু’টি এয়ার ডিফেন্স রাডার ইউনিট, ২৪টি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বিমান, দুইটি হালকা বিমান, একটি কে-৮ ডাব্লিউ সিমুলেটর, চারটি এমআরএপি যান, একটি এডব্লিউ-১১৯ সিমুলেটর, দু’টি কাউন্টার ড্রোন সার্ভেইল্যান্স রাডার সিস্টেম এবং একটি মোবাইল এটিসি টাওয়ার ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
আরও দেখুন
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ নৌবাহিনী
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী | https://en.wikipedia.org/wiki/Bangladesh_Air_Force | Bangladesh Air Force | The Bangladesh Air Force (BAF) (Bengali: বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, romanized: Bānlādēśh bimān bāhinī) is the aerial warfare branch of the Bangladesh Armed Forces. The air force is primarily responsible for air defence of Bangladesh's sovereign territory as well as providing air support to the Bangladesh Army and Bangladesh Navy. Furthermore, the BAF has a territorial role in providing tactical and strategic air transport and logistics capability for the country.
Since its establishment on 28 September 1971, the Bangladesh Air Force has been involved in various combat and humanitarian operations, from the Bangladesh Liberation War in which it was born, to supporting international efforts including United Nations peacekeeping missions. Operation Kilo Flight was a famous operation conducted by the Bangladesh Air Force during the Bangladesh Liberation War. |
2703 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%B2%E0%A6%BE | শাপলা | শাপলা (বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaeaceae) সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভূক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। হাওড়-বিল ও দিঘিতে এটি বেশি ফোটে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের কিছু জেলায় একে নাইল বা নাল বলা হয়।
শাপলা ফুল
এই উদ্ভিদ প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে এই ফুল পুকুর ও বাগান সাজাতে খুব জনপ্রিয়। সাদা শাপলা বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইয়েমেন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশের পুকুর ও হ্রদে দেখা যায়। এই ফুল পাপুয়া নিউগিনি এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু এলাকায়ও দেখা যায়। এই ফুল যেমন দেখা যায় চাষের জমিতে, তেমনই হয় বন্য এলাকায়। কাটা ধান ক্ষেতের জমে থাকা অল্প পানিতে এই ফুল ফুটে থাকতে দেখা যায়। বিশ্বে এই উদ্ভিদের প্রায় ৩৫টি প্রজাতি পাওয়া গেছে।
নামকরণ
বাংলায় বলা হয় শাপলা। ইংরেজিতে শাপলাকে বলা হয় “Water Lily”, White Water Lily, White Lotus.অন্যান্য ভাষায়: থারো আংগৌবা (মনিপুরী), வெள்ளாம்பல் ভেলাম্বাল (তামিল), कुमुद কুমুদ (সংস্কৃত), শালুক (বাংলা), নিরাম্বল (মালয়ালম ভাষা), কান্নাইদিলি (কান্নাদা), নাল (অসমীয়া)। বাংলায় নীল শাপলা ফুলকে শালুক বা নীলকমল, লাল শাপলা ফুলকে রক্তকমল বলা হয়। চট্টগ্রাম এ এই ফুল কে অঁলাফুল বলা হয় ।
বিবরণ
শাপলা ফুল ভোর বেলা ফোটে এবং দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথে পাপড়ি বুজে যায়। সরাসরি কাণ্ড ও মূলের সাথে যুক্ত থাকে। শাপলার পাতা আর ফুলের কাণ্ড বা ডাটি বা পুস্পদণ্ড পানির নিচে মূলের সাথে যুক্ত থাকে। আর এই মূল যুক্ত থাকে মাটির সঙ্গে এবং পাতা পানির উপর ভেসে থাকে। মূল থেকেই নতুন পাতার জন্ম নেয়। পাতাগুলো গোল এবং সবুজ রঙের হয় কিন্তু নিচের দিকে কালো রঙ। ভাসমান পাতাগুলোর চারদিক ধারালো হয়। পাতার দৈর্ঘ্য ২০-২৩ সেন্টিমিটার এবং এদের ব্যাপ্তি প্রায় ০.৯-১.৮ মিটার। শাপলা ফুল নানা রঙের দেখা যায় যেমনঃ গোলাপী, সাদা, নীল, বেগুনি ইত্যাদি। এই ফুলে ৪-৫টি বৃতি থাকে ও ১৩-১৫টি পাপড়ি থাকে। ফুলগুলো দেখতে তারার মত মনে হয়। কাপের সমান বৃতিগুলো ১১-১৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।
প্রায় বছরের সব সময় শাপলা ফুটতে দেখা যায় তবে বর্ষা ও শরৎ এই উদ্ভিদ জন্মানোর শ্রেষ্ঠ সময়।
প্রতীক
শাপলা ফুল অনেক রঙের হলেও কেবল সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুলের মর্যাদা পেয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের পয়সা, টাকা, দলিলপত্রে জাতীয় ফুল শাপলা বা এর জলছাপ আঁকা থাকে।
এই ফুল শ্রীলংকারও জাতীয় ফুল। শ্রীলংকায় এই ফুল Nil Mānel নীল মাহানেল নামে পরিচিত। শ্রীলংকার ভাষায় নীল থেকে এই ফুলকে ইংরেজিতে অনেক সময় blue lotus বলা হয়। শ্রীলংকায় বিভিন্ন পুকুর ও প্রাকৃতিক হ্রদে এই ফুল ফোটে। এই জলজ উদ্ভিদের ফুলের বিবরণ বেশ কিছু প্রাচীন বই যেমন - সংস্কৃত, পালি ও শ্রীলংকান ভাষার সাহিত্যে প্রাচীনকাল থেকে "কুভালয়া", "ইন্ধিয়ারা", "নীলুপ্পালা", "নীলথপালা", "নীলুফুল" নামে পাওয়া গেছে যা শ্রেষ্ঠতা, শৃংখলা, পবিত্রতার প্রতীক। শ্রীলংকার বুদ্ধদের দৃঢ় বিশ্বাস গৌতম বুদ্ধের পায়ের ছাপে পাওয়া ১০৮ টি শুভ চিহ্নের মাঝে একটি ছিল এই শাপলা ফুল।
ইতিহাস ও পুরাণ
শাপলার পরিবার বা গোত্র হল Nymphaea। এটি একটি গ্রিক শব্দের অনুবাদ।
গ্রীক দার্শনিক প্লেটো ও এরিস্টটল এর এক শিষ্য থিউফ্রাস্টাস বলেছেন, এই উদ্ভিদ প্রায় ৩০০ খৃস্টপূর্ব পুরানো। তিনি আরো বলেছেন প্রাচীন গ্রীকে জল দেবীদের এই ফুল উৎসর্গ করে উপাসনা করার রীতি ছিল।
প্রাচীন মিশরে, হাজার বছর ধরে Nymphaea caerulea (এখন যা Nymphaea nouchali/ caerulea এ হারিয়ে গেছে), নীল শাপলা ফুল, সাদা শাপলা ফুলের প্রতি অনুরাগী ছিল। মানুষ এই ফুল খেত, আঁকত এবং শ্রদ্ধা করত।
কথিত আছে ভারতে হিন্দুদের সর্প দেবী মনসা পূজায় শাপলা ফুল দেয়া হয়।
ব্যবহার
শাপলা প্রাচীন যুগ থেকেই বিভিন্ন জাতীর প্রার্থনা বা বাগান সাজানোর পাশাপাশি খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেমন: মিশর, চীন, জাপান ও এশিয়ার বিভিন্ন এলাকা শাপলার কাণ্ড বা ডাটা বা পুস্পদন্ড সবজী হিসেবে খাওয়া হয়। পূর্ণবিকশিত শাপলা ফুলের গর্ভাশয়ে গুড়ি গুড়ি বীজ থাকে। আঠালো এই বীজ বাংলাদেশের গ্রামের মানুষদের খেতে দেখা যায়। এই বীজ ভেজে একধরনের খাবার খৈ তৈরি হয় যার নাম “ঢ্যাপের খৈ”। উদ্ভিদটির গোড়ায় থাকে আলুর মত এক ধরনের কন্দ যার নাম শালুক, অনেকে এটি সব্জি হিসেবে খেয়ে থাকে।
নীল শাপলা ফুল ও লাল শাপলা ফুল ঘর সাজাতে ব্যবহৃত হয়। এটি বাগানের জলাধারে লাগানো বা অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখার জন্য খুব জনপ্রিয় একটি উদ্ভিদ। কখনো কখনো এই উদ্ভিদ তাদের ফুলের জন্য বেড়ে উঠে।
ভারতে আম্বাল নামের আয়ুর্বেদিক ঔষুধ বানাতে শাপলাকে ঔষধি গাছ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধ অপরিপাকজনিত রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে এই উদ্ভিদে ডায়াবেটিক রোগের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে।
এই উদ্ভিদ পানি থেকে তুলে রোদে শুকিয়ে গবাদি। পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
চিত্রমালা
তথ্যসূত্র
Nymphaea nouchali
Nymphaea pubescens
বহিঃসংযোগ
Night Bloom Lily
NCBI Taxonomy Browser
Phylogenetic analysis of the order Nymphaeales based on the nucleotide sequences of the chloroplast
Flora of North America
Nymphaeaceae of Mongolia in FloraGREIF
ফুল
বাংলাদেশের ফুল
জলজ উদ্ভিদ
ঔষধি উদ্ভিদ
আলংকারিক উদ্ভিদ
উদ্যান উদ্ভিদ
সবজি মূল | https://en.wikipedia.org/wiki/Nymphaeaceae | Nymphaeaceae | Nymphaeaceae () is a family of flowering plants, commonly called water lilies. They live as rhizomatous aquatic herbs in temperate and tropical climates around the world. The family contains five genera with about 70 known species. Water lilies are rooted in soil in bodies of water, with leaves and flowers floating on or rising from the surface. Leaves are round, with a radial notch in Nymphaea and Nuphar, but fully circular in Victoria and Euryale.
Water lilies are a well-studied family of plants because their large flowers with multiple unspecialized parts were initially considered to represent the floral pattern of the earliest flowering plants. Later genetic studies confirmed their evolutionary position as basal angiosperms. Analyses of floral morphology and molecular characteristics and comparisons with a sister taxon, the family Cabombaceae, indicate, however, that the flowers of extant water lilies with the most floral parts are more derived than the genera with fewer floral parts. Genera with more floral parts, Nuphar, Nymphaea, Victoria, have a beetle pollination syndrome, while genera with fewer parts are pollinated by flies or bees, or are self- or wind-pollinated. Thus, the large number of relatively unspecialized floral organs in the Nymphaeaceae is not an ancestral condition for the clade. |
2705 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE | রসগোল্লা | রসগোল্লা সাদা রঙের এক প্রকার ছানার মিষ্টি। এটি চিনি বা গুড় দিয়ে তৈরি হয়। সবার কাছেই রসগোল্লা একটি জনপ্রিয় মিষ্টি। ছানা (তার মধ্যে অনেক সময় সুজির পুর দেওয়া হয়) পাকিয়ে গরম রসে ডুবিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়।
নাম
এই সুস্বাদু খাদ্যটি রসগোল্লা বা বাংলার রসগোল্লা নামে বেশি পরিচিত ও বিখ্যাত তবে ওড়িশার অনেকে ক্ষীর থেকে তৈরি শুষ্ক প্রকৃতির মিষ্টিকে ওড়িশার সরগোল্লা বলে থাকে। রসগোল্লা শব্দটি রস ("মিষ্টি তরল") এবং গোল্লা ("বল") শব্দ থেকে উদ্ভূত হয়। রসগোল্লা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন উচ্চারনে উচ্চারিত হয়: রাশগুল্লা (সিলেট), রাশগোল্লা রসোগ্লোল্লা, রোশোগলা, রাজগোলার রাসগোলার এবং রাশবরী বা রাশবাড়ি (নেপালি)।
ইতিহাস
এক দাবি অনুসারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রথম রসগোল্লা প্রস্তুত করা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার ফুলিয়ার হারাধন ময়রা আদি রসগোল্লার সৃষ্টিকর্তা । কলকাতার নবীনচন্দ্র দাস আধুনিক স্পঞ্জ রসোগোল্লার আবিষ্কর্তা ছিলেন। ১৯৩০ সালে, নবীন চন্দ্রের পুত্র কৃষ্ণচন্দ্র দাসের ভ্যাকুয়াম প্যাকিংয়ের প্রবর্তনের ফলে রসগোল্লার বিরাট বাজার পাওয়া যায়, যা কলকাতার বাইরে এবং পরবর্তীতে ভারতে বাইরে খাবারটি রপ্তানি করা সম্ভব হয়। কৃষ্ণ চন্দ্রের পুত্র সরদার চরণ দাশ কে.সি. প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৬ সালে দাস প্রাইভ লিমিটেডের কোম্পানি। সরদার চরন এর ছোটো বন্ধুর পুত্র দেবেন্দ্রনাথ কে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন দস গ্রেডসন ইন ১৯৫৬। ১৪ শতকের শেষভাগে ১৫ শতকের ভক্তি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভীষণাভক্তি বৃদ্ধি লাভের সময় মিষ্টিটির প্রাচীনতা নাদিয়াতে ফিরে আসত। এর পর এই রসগোল্লা জনপ্রিয় হয়ে, পাশের রাজ্যগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কলকাতায় এটি উল্লেখযোগ্যভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। রসগোল্লা নদীয়া থেকে কলকাতা ও ওড়িশায় ছড়িয়ে পড়ে।
আরেক দাবি অনুসারে, রসগোল্লার আদি উৎপত্তিস্থল বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলে। বিশেষ করে, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় পর্তুগীজদের সময় সেখানকার ময়রাগণ ছানা, চিনি, দুধ ও সুজি দিয়ে গোলাকার একধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করেন যা ক্ষীরমোহন বা রসগোল্লা নামে পরিচিত। পরবর্তীতে বরিশাল এলাকার হিন্দু ময়রাগণের বংশধর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতা কিংবা ওড়িশায় বিস্তার লাভ করে।
বাংলা সাহিত্যেও এই রসগোল্লাকে নিয়ে রচিত হয়েছে সরেস সাহিত্যকর্ম। বিশিষ্ট রম্য সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচনা করেছেন বিখ্যাত রম্যগল্প "রসগোল্লা" যা ইউরোপের বহু দেশে সমাদৃত হয়েছে।
অন্যদিকে রসগোল্লা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার বিরোধ বহু দিনের। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রসগোল্লার জিআই ট্যাগ লাভ করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা শুধু 'ভৌগোলিক সূচক' বা 'ভৌগোলিক ইঙ্গিত' (জিআই) ট্যাগের জন্য অনুরোধ করেছিলেন, যা স্থানীয় রসগোল্লা 'বাংলার রসগোল্লা' (বেঙ্গল রসগোল্লা) নামেও পরিচিত করে এবং বলেছিল যে "উড়িষ্যার সাথে কোন দ্বন্দ্ব নেই। আমাদের রসগোল্লা পরিচয় রক্ষা করার জন্য আমরা যা চাই তা আমাদের রঙিন, জমিন, স্বাদ, রসের সামগ্রী এবং উৎপাদন পদ্ধতির উভয় দিক থেকে ভিন্ন।
আজ, প্লাস্টিকের ক্যনে ভরা রসগোলা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে পাওয়া যায়, পাশাপাশি উপমহাদেশের বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার মুদি দোকানেও পাওয়া যায়। নেপালের রাজবাড়ী নামে রাশবুলি নামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে রসগোল্লা।
ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা, ইসরো ২০১৬ সালে পরিকল্পিত মনুষ্য অভিযানে ভারতীয় মহাকাশচারীদের জন্য নিরূদিত রসগোল্লা এবং অন্যান্য খাবারের উদ্ভাবন করছে।
পুষ্টি
সাধারণত, ১০০ গ্রাম রাসগোল্লায় ১৮৬ ক্যালরি শক্তি থাকে, যার মধ্যে ১৫৩ ক্যালরি কার্বোহাইড্রেট আকারে থাকে। এতে ১.৮৫ গ্রাম চর্বি এবং ৪ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে।
ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগ
২০১৫ সালে, পশ্চিমবঙ্গ "বাংলার রসগোল্লা"-এর জন্য একটি ভৌগোলিক নির্দেশক চিহ্ন বা (জিআই ট্যাগ) প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেছিল। সরকার স্পষ্ট করে বলে যে ওড়িশার সাথে কোন দ্বন্দ্ব ছিল না এবং তার আবেদন শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট রূপের জন্য ছিল যা উড়িষ্যাতে উৎপাদিত বৈকল্পিক থেকে "রঙিন, জমিন, স্বাদ, রস উপাদান এবং উৎপাদন পদ্ধতি" উভয়ই ছিল। সারা দুনিয়া জানে বাংলার রসগোল্লা! এ নিয়ে মতভেদ থাকা উচিত না! ১৪ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে, ভারতের জিআই রেজিস্ট্রি বাংলার রসগোল্লা জন্য পশ্চিমবঙ্গকে জিআই স্থিতি মঞ্জুর করে।
২০২৩ সালের শেষের দিকে নাগাদ বাংলাদেশও "গোপালগঞ্জের রসগোল্লা" নামে জি আই লাভ করে
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক সংবাদ সম্পর্কে একটি টুইটের প্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, মিষ্টিদের উৎপত্তি সম্পর্কে বিতর্ক পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে স্থির করা হয়েছিল। যাইহোক, জিআই ট্যাগ শুধুমাত্র বাংলার রাসগোলার জন্য দেওয়া হয়েছিল, এটি একটি শব্দ যা পশ্চিমবঙ্গে মিষ্টি উৎপাদনের জন্য বোঝায়। চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রার অফিসটি স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে জিআই ট্যাগ রাসগোল্লার জন্য একটি জেনেরিক টার্ম ছিল না এবং মিষ্টি এর উৎপত্তি সম্পর্কে বিতর্কের অপব্যবহার ছিল না। অফিসটিও উল্লিখিত হয়েছে যে উড়িষ্যা কোন জিআই ট্যাগের জন্য এতদূর প্রয়োগ করেনি, তবে এটি প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করে জিআই ট্যাগও পেতে পারে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
পশ্চিমবঙ্গের মিষ্টান্ন
পশ্চিমবঙ্গের রন্ধনশৈলী
পশ্চিমবঙ্গের মিষ্টি
বাংলাদেশের খাদ্য
বাংলার খাদ্য
মিষ্টান্ন
মিষ্টি
বাংলাদেশী রন্ধনশৈলী
বাংলাদেশী মিষ্টান্ন
বাংলাদেশী খাবার
মুহাজির রন্ধনশৈলী
ভারতীয় রন্ধনশৈলী
বাঙালি রন্ধনশৈলী
ভারতীয় মিষ্টান্ন
পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক
ভারতীয় পনিরের পদ
নেপালি রন্ধনশৈলী
ওড়িয়া রন্ধনশৈলী
মৌরিশিয় রন্ধনশৈলী
ভারতের নিরামিষ পদ
ওড়িশার ভৌগোলিক নির্দেশক | https://en.wikipedia.org/wiki/Rasgulla | Rasgulla | Rasgulla (literally "syrup filled ball") is a syrupy dessert popular in the eastern part of South Asia. It is made from ball-shaped dumplings of chhena dough, cooked in light sugar syrup. This is done until the syrup permeates the dumplings.
While it is near-universally agreed upon that the dessert originated in the eastern Indian subcontinent, the exact locus of origin is disputed between locations such as West Bengal, and Odisha, where it is offered at the Puri Jagannath Temple.
In 2017, when West Bengal got its rosogolla's geographical indication (GI) status, the Registry Office of India clarified that West Bengal was given GI status for Banglar rosogolla and Odisha can claim it too if they cite the place of origin of their variant along with colour, texture, taste, juice content and method of manufacturing. In 2019, the government of Odisha was granted the GI status for "Odisha rasagola" (Odia rasagola). |
2706 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%A8%20%E0%A6%86%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%A6 | আব্বাসউদ্দীন আহমদ | আব্বাসউদ্দীন আহমদ (২৭ অক্টোবর ১৯০১ – ৩০ ডিসেম্বর ১৯৫৯) ছিলেন একজন বাঙালি লোক সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক, ও সুরকার। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর প্রাইড অফ পারফরম্যান্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা পুরস্কারে (১৯৮১) ভূষিত হন।
পরিবারও শিক্ষা
আব্বাসউদ্দীন আহমদ ১৯০১ সালের ২৭শে অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আব্বাস উদ্দীন আহমদের পিতা জাফর আলী আহমদ ছিলেন তুফানগঞ্জ মহকুমার আদালতের উকিল। মাতা হিরামন নেসা। শৈশবে বলরামপুর স্কুলে আব্বাসউদ্দীনের শিক্ষা জীবন শুরু হয়। ১৯১৯ সালে তুফানগঞ্জ স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা এবং ১৯২১ সালে কুচবিহার কলেজ থেকে আই. এ পাস করেন। এখান থেকে বি.এ পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়ে তিনি সঙ্গীত জগতে প্রবেশ করেন। তার বড় ছেলে ড. মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন বিচারপতি ছিলেন। মেজো ছেলে মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও একমাত্র মেয়ে ফেরদৌসী রহমান কণ্ঠশিল্পী।
সঙ্গীত জীবন
একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আব্বাস উদ্দীনের পরিচিতি দেশজোড়া। আধুনিক গান, স্বদেশী গান, ইসলামি গান, পল্লীগীতি, উর্দুগান সবই তিনি গেয়েছেন। তবে পল্লীগীতিতে তার মৌলিকতা ও সাফল্য সবচেয়ে বেশি। গানের জগতে তার ছিল না কোনো ওস্তাদের তালিম। আপন প্রতিভাবলে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি প্রথমে ছিলেন পল্লীগায়ের একজন গায়ক। যাত্রা, থিয়েটার ও স্কুল-কলেজের সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান শুনে তিনি গানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং নিজ চেষ্টায় গান গাওয়া রপ্ত করেন। এরপর কিছু সময়ের জন্য তিনি ওস্তাদ জমিরউদ্দীন খাঁর নিকট উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিখেছিলেন। রংপুর ও কোচবিহার অঞ্চলের ভাওয়াইয়া, ক্ষীরোল, চটকা গেয়ে আব্বাস উদ্দীন প্রথমে সুনাম অর্জন করেন। তারপর জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিচ্ছেদি, দেহতত্ত্ব, মর্সিয়া, পালা গান ইত্যাদি গান গেয়ে জনপ্রিয় হন। তিনি তার দরদভরা সুরেলা কণ্ঠে পল্লি গানের সুর যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন তা আজও অদ্বিতীয়। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দীন, গোলাম মোস্তফা প্রমুখের ইসলামি ভাবধারায় রচিত গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন। তিনি কাজী নজরুল ইসলামের সহায়তায় কলকাতায় এসে গ্রামোফোন রেকর্ডে গান রেকর্ড করেন। তার প্রথম রেকর্ড 'কোন বিরহীর নয়নজলে বাদল ঝরে গো' এবং রেকর্ড করা গানের সংখ্যা কমপক্ষে সাত-শো। শহুরে জীবনে লোকগীতিকে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব আব্বাসউদ্দিনের। আবার বাংলার মুসলমান সমাজকে উদীপ্ত করেছিলেন ইসলামি গান গেয়ে। পল্লীগীতির সংগ্রাহক কানাইলাল শীলের কাছে কৃতজ্ঞ ছিলেন। ক্ল্যাসিক্যাল গান শিখেছিলেন ওস্তাদ জমিরউদ্দিন খাঁর কাছে। আব্বাস উদ্দিন ছিলেন প্রথম মুসলমান গায়ক যিনি আসল নাম ব্যবহার করে এইচ এম ভি থেকে গানের রেকর্ড বের করতেন। রেকর্ডগুলো ছিল বাণিজ্যিকভাবে সফল ছিল। তাই অন্যান্য হিন্দু ধর্মের গায়করা মুসলমান ছদ্মনাম ধারণ করে গান করতে থাকে।
আব্বাস উদ্দীন ১৯৩১ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বসবাস করেন। প্রথমে তিনি রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ডিপিআই অফিসে অস্থায়ী পদে এবং পরে কৃষি দপ্তরে স্থায়ী পদে কেরানির চাকরি করেন। এ কে ফজলুল হকের মন্ত্রীত্বের সময় তিনি রেকর্ডিং এক্সপার্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। চল্লিশের দশকে আব্বাস উদ্দিনের গান পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে মুসলিম জনতার সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশ বিভাগের পর (১৯৪৭ সালে) ঢাকায় এসে তিনি সরকারের প্রচার দপ্তরে এডিশনাল সং অর্গানাইজার হিসেবে চাকরি করেন।পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৫৫ সালে ম্যানিলায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সঙ্গীত সম্মেলন, ১৯৫৬ সালে জার্মানিতে আন্তর্জাতিক লোকসংগীত সম্মেলন এবং ১৯৫৭ সালে রেঙ্গুনে প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন।
আব্বাসউদ্দিন সম্পর্কে ফরহাদ মজহার বলেন, "আব্বাসউদ্দিন কেবল গায়ক ছিলেন না, এই প্রজন্মের গায়করা যদি ভাবেন আব্বাসউদ্দিন শুধু গান গেয়ে এদেশের মানুষের মন জয় করেছেন তাহলে তা মস্ত বড় ভুল হবে। আব্বাস তার সময়কালের আকাঙ্ক্ষা ও সংগ্রামকে ধারণ করেছিলেন, সঙ্গে ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম এবং আরো অনেকে।" তার সন্তান ফেরদৌসী রহমান এবং মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও গান গেয়ে খ্যাতি লাভ করেছেন।
বিখ্যাত কিছু গান
তার কিছু অবিস্মরণীয় গান হল:
ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষ
আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান
ওকি গাড়িয়াল ভাই
আমার গলার হার খুলে নে
আমায় এত রাতে কেন ডাক দিলি
আল্লাহ মেঘ দে পানি দে
মাঝি বাইয়া যাও রে
ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে
থাকতে পার ঘাটাতে তুমি
নদীর কুল নাই
বাউকুমটা বাতাসে
আগে জানলে তোর ভাংগা নৌকায়
আমায় ভাসাইলি রে
আমার হাড় কালা করলাম রে
রোজ হাশরে আল্লাহ আমার
শোন শোন ইয়া ইলাহী
খাদা এই গারীবের শোন মোনাজাত
তুমি অনেক দিলে খোদা
তাওফিক দাও খোদা ইসলামে
দে যাকাত দে যাকাত
হে নামাজী আমার ঘরে নামাজ পড়
শোন মোমিন মোসলমানও
ইসলামের ঐ সওদা লয়ে
তাওহীদেরই মুরশিদ আমার
ত্রিভূবনের প্রিয় মোহাম্মদ
মোহাম্মাদ এর নাম জপে ছিলি
ধর্মের পথে শহীদ যাহারা
দিকে দিকে পূর্ণ
আমি ভাবি যারে পাই না গো তারে
নাও ছাড়িয়া দে
দিন গেল মোর মায়ায় ভুলে
উঠুক তুফান পাপ দরিয়ায়
গুরুর পদে প্রেম ভক্তি
তোরষা নদী উথাল পাতাল
প্রেম জানে না রসিক কালাচান
নদী না যাইও রে
ধিক ধিক মইশাল রে
চলচ্চিত্রে অভিনয়
আব্বাসউদ্দিন আহমেদ মোট ৪টি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই ৪টি সিনেমা হল বিষ্ণুমায়া (১৯৩২), মহানিশা (১৯৩৬), একটি কথা ও ঠিকাদার (১৯৪০)। ঠিকাদার সিনেমাতে আব্বাস উদ্দিন একজন কুলির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ধারণা করা হয় যে তিনি এর চেয়ে বেশি সংখ্যক চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও তা উল্লেখ করেননি। কারণ সেই চরিত্রগুলো তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না। এসব সিনেমাতে তিনি গানও করেছিলেন। তখনকার দিনে মুসলমান ব্যক্তির সিনেমা করা ছিল একটা ব্যতিক্রম ঘটনা।তাই হয়ত ‘বিষ্ণুমায়া’ ছবিতে অভিনয়ের পরও এর ভূমিকা লিপিতে আব্বাস উদ্দিনের নাম ছিল না যার তথ্য সংগৃহীত হয়েছিল কানন দেবীর কাছ থেকে।
গ্রন্থ ও পুরস্কার
আমার শিল্পীজীবনের কথা (১৯৬০) আব্বাস উদ্দীনের রচিত একমাত্র গ্রন্থ। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর
মৃত্যু
তিনি ১৯৫৯ সালের ৩০শে ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্র
১৯০১-এ জন্ম
১৯৫৯-এ মৃত্যু
কোচবিহার জেলার ব্যক্তি
বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী
বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক
বাঙালি সুরকার
বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা
সংস্কৃতিতে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
প্রাইড অব পারফরম্যান্স প্রাপক
বাঙালি গীতিকার
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
২০শ শতাব্দীর ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাংলাদেশী ব্যক্তি
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীতজ্ঞ | https://en.wikipedia.org/wiki/Abbasuddin_Ahmed | Abbasuddin Ahmed | Abbasuddin Ahmed (27 October 1901 – 30 December 1959) was a Bengali folk song composer and singer born in the Bengal province of British India. He was known for Bhawaiya folk song which is a style commonly found in Rangpur, Undivided Goalpara district and Cooch Behar. |
2709 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A6%BF%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B8 | গ্রেগরি মারগুলিস | গ্রেগরি মারগুলিস ফিল্ডস মেডাল ও উলফ পুরস্কার বিজয়ী গণিতবিদ এবং লি অ্যালজেবরা সহ গণিতের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক অবদানের জন্য পরিচিত। রুশ বংশোদ্ভুত মারগুলিস ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
রুশ গণিতবিদ
ফিল্ডস পদক বিজয়ী
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী
১৯৪৬-এ জন্ম
রুশ ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
আমেরিকান ম্যাথমেটিকাল সোসাইটির সভ্য
জীবিত ব্যক্তি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য
রুশ ইহুদি
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক | https://en.wikipedia.org/wiki/Grigory_Margulis | Grigory Margulis | Grigory Aleksandrovich Margulis (Russian: Григо́рий Алекса́ндрович Маргу́лис, first name often given as Gregory, Grigori or Gregori; born February 24, 1946) is a Russian-American mathematician known for his work on lattices in Lie groups, and the introduction of methods from ergodic theory into diophantine approximation. He was awarded a Fields Medal in 1978, a Wolf Prize in Mathematics in 2005, and an Abel Prize in 2020, becoming the fifth mathematician to receive the three prizes. In 1991, he joined the faculty of Yale University, where he is currently the Erastus L. De Forest Professor of Mathematics. |
2713 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%BE | ববিতা | ফরিদা আক্তার পপি (ববিতা নামে পরিচিত; জন্ম: ৩০ জুলাই, ১৯৫৩) বাংলাদেশের একজন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং প্রযোজক। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ৭০-র দশকের সেরা অভিনেত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ২৩তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে গোল্ডেন বীয়ার জয়ী সত্যজিৎ রায়ের অশনি সংকেত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রশংসিত হন। ববিতা ৩৫০ এর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এছাড়া ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৮৫ সালে আরেকবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী। এছাড়া ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রাথমিক জীবন
ফরিদা আখতার পপি ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্ম নেন। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাইয়ুব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা জাহানারা বেগম ছিলেন একজন চিকিৎসক। নিজামুদ্দীন ছিলেন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র। জাহানারা পড়েছেন লেডি ব্রেবোর্নে। বাবার চাকরি সূত্রে তারা তখন বাগেরহাটে থাকতেন। তবে তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলায়। শৈশব এবং কৈশোরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউজের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে। তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়বোন সুচন্দা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, বড়ভাই শহীদুল ইসলাম ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেজভাই ইকবাল ইসলাম বৈমানিক, ছোটবোন গুলশান আখতার চম্পা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং ছোটভাই ফেরদৌস ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। এছাড়াও অভিনেতা রিয়াজ তার চাচাত ভাই। চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হান তার ভগ্নিপতি। ববিতার পরিবার একসময় বাগেরহাট থেকে ঢাকার গেন্ডারিয়াতে চলে আসে। তার মা ডাক্তার থাকায়, ববিতা চেয়েছিলেন ডাক্তার হতে। ববিতার একমাত্র ছেলে অনীক কানাডায় পড়াশোনা করেন।
শিক্ষাজীবন
তিনি পড়াশোনা করেছেন যশোর দাউদ পাবলিক বিদ্যালয়ে। সেখানে অধ্যয়নকালে বড়বোন কোহিনুর আক্তার চাটনীর (সুচন্দা) চলচ্চিত্রে প্রবেশের সূত্রে পরিবার সহ চলে আসেন ঢাকায়। গেন্ডারিয়ার বাড়িতে শুরু হয় কৈশোরের অবশিষ্টাংশ। এখানে তিনি মনিজা রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। চলচ্চিত্রে অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়ায় প্রতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অর্জন না করলেও ববিতা ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে শিক্ষিত করে তোলেন। দক্ষতা অর্জন করেন ইংরেজিসহ কয়েকটি বিদেশি ভাষায়। নিজেকে পরিমার্জিত করে তোলেন একজন আদর্শ শিল্পীর মাত্রায়।
কর্মজীবন
অভিনয়ের শুরু: ১৯৬৮-১৯৭৪
তার চলচ্চিত্র কর্মজীবনে আসার পেছনে বড়বোন সুচন্দার অনুপ্রেরণা রয়েছে। বড়বোন সুচন্দা অভিনীত জহির রায়হানের সংসার চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে ববিতার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৮ সালে। এই চলচ্চিত্রে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন, যদিও ছবিটি মুক্তি পায়নি। চলচ্চিত্র জগতে তার প্রাথমিক নাম ছিলো "সুবর্ণা"। তিনি আব্দুল্লাহ আল মামুনের কলম নামের একটি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছিলেন সে সময়। জহির রায়হানের জ্বলতে সুরুজ কি নিচে চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়েই তার নাম "ববিতা" হয়ে যায়। প্রযোজক ক্যামেরাম্যান আফজাল চৌধুরী ও তার স্ত্রী ববিতা নাম রাখার প্রস্তাব করেন। ১৯৬৯ সালে শেষ পর্যন্ত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন প্রথম নায়িকা চরিত্রে। ১৯৬৯ সালের ১৪ই আগস্টে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় এবং ঐদিন তার মা মারা যান। সেই সিনেমায় ১২০০০ টাকা পারিশ্রমিক পান, তিনি সেই টাকা দিয়ে একটি টয়োটা গাড়ি কেনেন। তার কর্মজীবনের শুরুতে ভগ্নিপতি জহির রায়হানের পথ প্রদর্শনে চললেও পরে তিনি একাই পথ চলেছেন। ৭০'-এর দশকে শুধুমাত্র অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি গোটা দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমাটা ছিল তার জন্য টার্নিং পয়েন্ট যা পরিচালনা করেছিলেন জহির রায়হান। এরপর তিনি নজরুল ইসলামের ‘স্বরলিপি’ সিনেমাতে অভিনয় করেন যা ছিল সুপারহিট সিনেমা।
অশনি সংকেত
ববিতার চলচ্চিত্র কর্মজীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একই নামের একটি অসমাপ্ত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অশনি সংকেত (১৯৭৩)। এই চলচ্চিত্রে "অনঙ্গ বৌ" চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেন এবং ব্যাপক প্রশংসিত হন। ১৯৯৩ সালে ভারতে বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, ১৯৭৩ সালে ভারতে বাংলা চলচ্চিত্র প্রসার সমিতি পুরস্কার এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি কর্তৃক বিশেষ পুরস্কার অর্জন করেন।
তেতাল্লিশের মন্বন্তর এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামীণ বাংলার আর্থ-সামাজিক পটপরিবর্তন ছিলো এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয়। চলচ্চিত্রের প্রাক্কালে সত্যজিত রায়ের নির্দেশে ভারতীয় চিত্রগ্রাহক নিমাই ঘোষ স্বাধীনতার পর ঢাকায় এফডিসিতে আসেন, এবং সেখানে ববিতার প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ আলোকচিত্র তুলেন। এর কিছুদিন পর ববিতার বাসায় ভারতীয় হাইকমিশন থেকে একটি চিঠি আসে, প্রাথমিক মনোনয়ণের কথা জানিয়ে। এরপর ববিতা এবং তার বোন সুচন্দা ভারতে যান সত্যজিৎ রায়ের সাথে দেখা করতে। সত্যজিত ববিতাকে দেখে প্রথমে অনেক লাজুক ভেবেছিলেন। তাই ইন্দ্রপুরের স্টুডিওতে তিনি তাকে আবার নানারকম পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সত্যজিত বলেন, "আমি অনেক খুশি, আমি "অনঙ্গ বউ" আজকে পেয়ে গেছি। আমি ভাবতেও পারিনি এই মেয়েটি সেদিনের সেই মেয়েটি। আজকে এই মেয়ে সম্পূর্ণ অন্য মেয়ে। এই আমার অনঙ্গ বউ।" ববিতাও অনেক চাপের মুখে ছিলেন তাঁকে নেয়া হয় কিনা এ ব্যপারে। তিনি বলেন, "একজন অল্পবয়সী বাঙালী যা করে, ভেতরে-ভেতরে অনেক মানত-টানত করে শেষে জানলাম, আমি তাঁর ছবির জন্যে নির্বাচিত হয়েছি।"
প্রতিষ্ঠা ও স্বীকৃতি: ১৯৭৫-১৯৮৫
১৯৭৫ সালে ববিতা বাঁদী থেকে বেগম, লাঠিয়াল ' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। মোহসীন পরিচালিত বাঁদী থেকে বেগম ছবিতে একজন কচুয়ানের ঘরে লালিত পালিত হওয়ার জমিদারের কন্যা চাঁদনী চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রে একধারে কচুয়ানের মেয়ে, নর্তকী এবং জমিদারের কন্যা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে প্রবর্তিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রথম আসরে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত লাঠিয়াল ছবিতে তিনি বানু চরিত্রে অভিনয় করেন। পারিবারিক অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং চর দখল নিয়ে আবর্তিত এই চলচ্চিত্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রথম আয়োজনে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে।
পরের বছর ফারুকের বিপরীতে অভিনয় করেন সূর্যগ্রহণ ও নয়নমনি ছবিতে। নয়নমনি ছবিতে তিনি প্রথমবার আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় কাজ করেন। পরবর্তীকালে তিনি হোসেনের পরিচালনায় গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮) ও গোলাপী এখন ঢাকায় (১৯৯৪) ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন। নয়নমনি ছবিতে নাম চরিত্র মনি ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য তিনি টানা দ্বিতীয়বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৭৬ সালে রাজ্জাকের বিপরীতে জহিরুল হক পরিচালিত কি যে করি, ওয়াহিদের বিপরীতে বন্দিনী, এবং জাফর ইকবালের বিপরীতে এক মুঠো ভাত ছবিতে কাজ করেন।
১৯৭৭ সালের মার্চে মুক্তি পায় চিত্রনায়ক রাজ্জাক পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র অনন্ত প্রেম। এই চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে রাজ্জাক-ববিতার গভীর চুম্বনের একটি দৃশ্য ছিলো যা সেই সময়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছিল। তবে চুম্বনের দৃশ্য বাদ দিয়েই চলচ্চিত্রটি মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৭৭ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটির জন্যই চিত্রায়িত হয়েছিল বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের প্রথম চুম্বন দৃশ্য। একই বছর তিনি ইলিয়াস জাভেদের বিপরীতে ইবনে মিজান পরিচালিত নিশান চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া এই বছর তিনি কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদ রচিত তেইশ নম্বর তৈলচিত্র অবলম্বনে নির্মিত বসুন্ধরা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। সুভাষ দত্ত পরিচালিত ছবিটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন নবাগত ইলিয়াস কাঞ্চন। একজন চিত্রকরের তার স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা এবং তার সন্তানের প্রতি স্ত্রীর মার্তৃত্ববোধ নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রে ছবি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি টানা তৃতীয়বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
১৯৮৩ সালে ববিতা দূরদেশ নামক হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজ কর্মজীবনে এবং বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো বলিউডে পদার্পণ করেন।
১৯৮৬-২০০০
নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে ববিতা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৯১ সালে তিনি চাষী নজরুল ইসলামের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পদ্মা মেঘনা যমুনা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এতে তিনি তার বোন চম্পা ও ফারুকের সাথে অভিনয় করেন। ছবিতে সাজু চরিত্রে সৎ বাবার পরিবারে এক নিগৃহীতার ভূমিকায় অভিনয় করেন। একই বছর তিনি আজিজুর রহমান পরিচালিত শ্বশুর বাড়ী চলচ্চিত্রে মাহমুদ কলির বিপরীতে অভিনয় করেন। পরের বছর দিলীপ সোম পরিচালিত মহামিলন চলচ্চিত্রে শাহানা মালিক চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটিতে প্রধান দুই ভূমিকায় অভিনয় করেন সালমান শাহ ও শাবনূর।
১৯৯৬ সালে তিনি প্রযোজনা করেন পোকামাকড়ের ঘর বসতি। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন রচিত একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি পরিচালনা করেন আখতারুজ্জামান। ববিতা এই ছবিতে অভিনয়ও করেন। তার বিপরীতে ছিলেন খালেদ খান এবং খলচরিত্রে অভিনয় করেন আলমগীর। ছবিটির জন্য ববিতা শ্রেষ্ঠ প্রযোজক হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ছবিটি শ্রেষ্ঠ পরিচালকসহ আরও তিনটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে। এই বছর তিনি পার্শ্ব চরিত্রে এম এ খালেক পরিচালিত স্বপ্নের পৃথিবী, শিবলি সাদিক পরিচালিত মায়ের অধিকার, জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত জীবন সংসার এবং মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত দীপু নাম্বার টু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৯৭ সালে তিনি মহম্মদ হান্নান পরিচালিত প্রাণের চেয়ে প্রিয় ছবিতে রোকেয়া চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন রিয়াজ ও রাভিনা, এবং ববিতার বিপরীতে ছিলেন বুলবুল আহমেদ। জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত এ জীবন তোমার আমার ছবিতে তিনি মমতা চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন রিয়াজ এবং পূর্ণিমা। জিল্লুর রহমান পরিচালিত টাইগার চলচ্চিত্রে তিনি জসিমের বিপরীতে কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর খান আতাউর রহমান পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এখনো অনেক রাত চলচ্চিত্রে বাঁধন চরিত্রে অভিনয় করেন। এটি ছিল খান আতার মৃত্যুর পূর্বে পরিচালিত শেষ চলচ্চিত্র। ১৯৯৯ সালে তিনি শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ম্যাডাম ফুলি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন নবাগত শিমলা এবং ববিতা তার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন।
২০০১-২০১০
২০০২ সালে বাঙালি গীতিকবি হাছন রাজার জীবনী অবলম্বনে নির্মিত হাছন রাজা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম। ছবিতে তাকে হাছন রাজার মায়ের ভূমিকায় দেখা যায়। ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে এবং ববিতা শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর জন্য বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৩ সালে তিনি চিত্রনায়িকা মৌসুমী পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি চলচ্চিত্রে কাজ করে। এই ছবিতে তাকে দীর্ঘ ১৪ বছর পর রাজ্জাকের বিপরীতে দেখা যায়। ২০০৫ সালে তিনি নারগিস আক্তার পরিচালিত চার সতীনের ঘর ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন আলমগীর এবং তার বাকি তিন সতীনের চরিত্রে অভিনয় করেন পারভীন সুলতানা দিতি, শাবনূর ও ময়ূরী।
২০০৯ সালে তিনি রাজ্জাকের বিপরীতে অভিনয় করেন সবাই তো ভালোবাসা চায় ছবিতে। দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত এই ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামনুন হাসান ইমন এবং পূর্ণিমা। ২০১০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ছোটগল্প সমাপ্তি অবলম্বনে নির্মিত অবুঝ বউ ছবিতে অভিনয় করেন। ছবিটি পরিচালনা করেন নারগিস আক্তার। এই ছবিতে তিনি রানীমা চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র মৃন্ময়ীর ভূমিকায় অভিনয় করেন প্রিয়াংকা এবং রানীমার পুত্র অপূর্বের ভূমিকায় অভিনয় করেন ফেরদৌস আহমেদ। একই বছর তিনি কাজী হায়াৎ পরিচালিত অপরাধধর্মী-নাট্য চলচ্চিত্র ওরা আমাকে ভাল হতে দিল না-এ অভিনয় করেন। ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন কাজী মারুফ এবং পূর্ণিমা। ববিতা মারুফের চরিত্রের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেন।
২০১১-বর্তমান
অভিনয়ের ধরন
ববিতা প্রায় তিন দশক ধরে চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। তবে এক পর্যায়ে সিনেমার জগতে টিকে থাকার জন্য এবং বাণিজ্যিক ছবিতে নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের জন্য তিনি পুরোপুরি বাণিজ্যিক ঘরানার ছবির দিকে ঝুঁকে পড়েন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তাই ববিতা একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। নায়িকা হিসেবে তার স্বাতন্ত্র্য লক্ষণীয় ছিল। অভিনয়, জৌলুস,দেহসৌষ্ঠব,ব্যক্তিত্ব, নৃত্য কুশলতা সবকিছুতেই তিনি পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি মা-ভাবির চরিত্রে অভিনয় করে আসছেন।
গ্রামীণ, শহুরে চরিত্র কিংবা সামাজিক অ্যাকশন অথবা পোশাকি সব ধরনের ছবিতেই তিনি সাবলীলভাবে অভিনয় করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন।তৎকালীন সময়ে তিনি ফ্যাশনের ক্ষেত্রে শহরের মেয়েদের ভীষণ প্রভাবিত করেন। নগর জীবনের আভিজাত্য তার অভিনয়ে ধরা পড়েছিল। সত্তর দশকের প্রথমার্ধে রুচিশীল, সামাজিক সিনেমা মানেই ছিল ববিতা।
চলচ্চিত্র তালিকা
পুরস্কার ও সন্মাননা
ববিতা পরপর তিন বছর একটানা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন। সত্যজিৎ রায়ের অশনি সংকেত চলচ্চিত্র "অনঙ্গ বউ" চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে সর্বভারতীয় শ্রেষ্ঠ নায়িকার পুরস্কার পান। এছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারী অসংখ্য পুরস্কার তিনি লাভ করেছেন। এজন্য তাকে ‘পুরস্কার কন্যা’ বলা হতো। তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সবচেয়ে বেশিবার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আরও দেখুন
সুচন্দা
চম্পা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
১৯৫৩-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী অভিনেত্রী
২১শ শতাব্দীর বাংলাদেশী অভিনেত্রী
বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
বাংলাদেশী টেলিভিশন অভিনেত্রী
খুলনা বিভাগের ব্যক্তি
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ) বিজয়ী
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ) বিজয়ী
বাচসাস পুরস্কার বিজয়ী
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার বিজয়ী
বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা বিজয়ী
যশোর জেলার ব্যক্তি
হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী | https://en.wikipedia.org/wiki/Farida_Akhtar_Babita | Farida Akhtar Babita | Farida Akhtar Poppy, known by her stage name Babita, (born 30 July 1953) is a Bangladeshi film actress. She is best known for her performance in Satyajit Ray's Distant Thunder, a novel adaptation about the Bengal famine of 1943, which won the Golden Bear prize at the 23rd Berlin International Film Festival in 1973. She was active in the 1970s through 1990s as an actress in Bangladeshi films. She acted in 275 films.
After winning the National Film Award in 1975, she won three consecutive best actress prizes. She won Best Actor in 1986, Best Producer in 1997 and Best Supporting Actress Award twice in 2002 and 2012. In addition, she was awarded the lifetime achievement award of the National Film Award in the year 2016. In 2023, Bob Dubey, the mayor of Richardson, a city in North Texas, officially declared August 5 as "Babita Day" in honor of her. |
2714 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%9F%E0%A7%8B%20%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A8 | অটো ইয়েসপার্সেন | অটো ইয়েসপার্সেন [ʌtˢo ˈjɛsb̥ɐsn̩] (জুলাই ১৬, ১৮৬০ - এপ্রিল ৩০, ১৯৪৩) একজন ডেনীয় ভাষাবিজ্ঞানী এবং ইংরেজি ব্যাকরণ বিশেষজ্ঞ।
প্রাথমিক জীবন
অটো ইয়েসপার্সেন জুটল্যান্ডের র্যান্ডারসে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি ডেনীয় ভাষাবিজ্ঞানী রাস্মুস রাস্কের কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হন এবং রাস্কের ব্যাকরণ শিক্ষা সাহায্যে আইসল্যান্ডীয়, লাতিন ও স্পেনীয় ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হন। আইন বিষয়ে পড়াশোনা করলেও তিনি ভাষা শিক্ষার চর্চা চালিয়ে যান। ১৮৮১ সালে তিনি সম্পূর্ণরূপে ভাষা শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন এবং ১৮৮৭ সালে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজি ও লাতিনসহ ফরাসি ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি নিজের ভরণপোষণের জন্য কিছুদিন আংশিক সময়ের স্কুল শিক্ষক ও ডেনীয় পার্লামেন্টে শর্টহ্যান্ড রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন। ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৮ সালে তিনি ইংল্যান্ড, জার্মানি, ও ফ্রান্স ভ্রমণ করেন এবং হেনরি সুইট ও পল পাসির মত ভাষাবিজ্ঞানীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এ বক্তৃতায় অংশগ্রহণ করেন। তার শিক্ষক ভিলহেল্ম থমসেন এর উপদেশানুসারে তিনি ১৮৮৮ সালের আগস্ট মাসে কোপেনহেগেন ফিরে আসেন এবং ইংলিশ কেস সিস্টেম বিষয়ের উপর তার ডক্টরিয়াল ডিসার্টেশন শুরু করেন। ১৮৯১ সালে তিনি কৃতিত্বের সাথে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।
গ্রন্থতালিকা
দ্য আর্টিকুলেশন্স অফ স্পীচ সাউন্ডস্ রিপ্রেজেন্টেড বাই মিনস্ অফ অ্যান অ্যালফাবেটিক সিম্বল (১৮৮৯)
প্রোগ্রেস ইন ল্যাঙ্গুয়েজ (১৮৯৪)
হাউ টু টিচ অ্যা ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ (১৯০৪)
গ্রোথ অ্যান্ড স্ট্রাকচার অফ দ্য ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ (১৯০৫)
অ্যা মডার্ন ইংলিশ গ্রামার অন হিস্ট্রিকাল প্রিন্সিপালস্ (১৯০৯-১৯৪৯)
ল্যাঙ্গুয়েজ: ইটস্ ন্যাচার, ডেভেলপমেন্ট, অ্যান্ড অরিজিন (১৯২২)
দ্য ফিলোসপি অফ গ্রামার (১৯২৪)
ম্যানকাইন্ড, ন্যাশন অ্যান্ড ইন্ডিভিজুয়াল: ফ্রম অ্যা লিঙ্গুয়েস্টিক পয়েন্ট অফ ভিউ (১৯২৫)
অ্যান ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ (১৯২৮)
নোভিয়াল লেক্সিক (১৯৩০)
এসেনশিয়ালস্ অফ ইংলিশ গ্রামার (১৯৩৩)
অ্যানালিটিক সিনট্যাক্স (১৯৩৭)
এন স্প্রোগ্মান্ডস্ লেভ্নেড (১৯৩৮)
ইফিশিয়েন্সি ইন লিঙ্গুয়েস্টিক চেঞ্জ (১৯৪১)
অ্যা লিটারেরি মিস্সিলানি: প্রসেডিংস্ অফ দ্য অটো ইয়েসপার্সেন সিম্পোজিয়াম এপ্রিল ২৯-৩০ (১৯৯৩)
অ্যা লিঙ্গুয়েস্ট্স লাইফ (১৯৯৫)
প্রবন্ধ
হোয়াট ইজ দ্য ইউজ অফ ফোনেটিক্স? (ফেব্রুয়ারি ১৯১০)
ন্যাচার অ্যান্ড আর্ট ইন ল্যাঙ্গুয়েজ (১৯২৯)
অ্যাডভার্সেটিভ কনজাঙ্কশন (১৯৩৩)
তথ্যসূত্র
১৮৬০-এ জন্ম
১৯৪৩-এ মৃত্যু
ডেনীয় ভাষাবিজ্ঞানী
ডেনীয় শিক্ষাবিদ
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
রয়্যাল নেদারল্যান্ডস কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য | https://en.wikipedia.org/wiki/Otto_Jespersen | Otto Jespersen | Jens Otto Harry Jespersen (Danish: [ˈʌtsʰo ˈjespɐsn̩]; 16 July 1860 – 30 April 1943) was a Danish linguist who specialized in the grammar of the English language. Steven Mithen described him as "one of the greatest language scholars of the nineteenth and twentieth centuries." |
2716 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%87%E0%A6%B8%20%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%20%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87 | লুইস হার্বার্ট গ্রে | লুইস হার্বার্ট গ্রে, পিএইচ.ডি. (১৮৭৫–১৯৫৫) ছিলেন একজন মার্কিন ভাষাবিজ্ঞানী যিনি নিউ জার্সিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৯৬ সালে স্নাতক এবং কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯০০ সালে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্ম
তথ্যসূত্র
১৮৭৫-এ জন্ম
১৯৫৫-এ মৃত্যু
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
মার্কিন ভাষাবিজ্ঞানী | https://en.wikipedia.org/wiki/Louis_Herbert_Gray | Louis Herbert Gray | Louis Herbert Gray (1875–1955) was an American Orientalist, born at Newark, New Jersey. He graduated from Princeton University in 1896 and from Columbia University (Ph.D., 1900).
Gray contributed to the annals of the New York Academy of Sciences, with contributions on such topics as the Avestan texts. He served as American collaborator on the Orientalische Bibliographie in 1900–1906; revised translations for The Jewish Encyclopedia in 1904–1905; was associate editor of the Hastings Encyclopædia of Religion and Ethics (Edinburgh, 1905–15); editor of Mythology of all Races (1915–18); translated Subandhu's Vasavadatta (1913); and afterwards (1921) served as professor at the University of Nebraska. His 1902 work Indo-Iranian Phonology was published as the second volume of the 13 volume Columbia University Indo-Iranian Series, published by the Columbia University Press, in between 1901–32 and edited by A. V. Williams Jackson.
He was one of the American commissioners to negotiate peace in Paris (1918) and attaché to the American embassy. |
2718 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE | ভাষাবিজ্ঞানী তালিকা | ভাষাবিজ্ঞানীদের নিবন্ধের তালিকা।
অ
অটো ইয়েসপার্সেন
আ
আউগুস্ট ফ্রিড্রিশ পট
আগস্ট লেসকিয়েন
আউগুস্ট শ্লাইখার
আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ
আর্নল্ড জুইকি
ই
ইভান স্যাগ
ইয়াকপ গ্রিম
ইয়োহান ক্রিস্টফ আডেলুং
ইয়োহানেস শ্মিট (ভাষাবিজ্ঞানী)
উ
উইলিয়াম লাবভ
গ
গিলাদ জাকারমান (Ghil'ad Zuckermann) (ইসরায়েল/যুক্তরাজ্য/ইতালি/অস্ট্রেলিয়া): Revivalistics
এ
এডওয়ার্ড স্যাপির
এমিল বঁভনিস্ত
ক
কার্ল পোলার্ড
কার্ল ব্রুগমান
কার্ল ভার্নার
চ
চার্লস হকেট
জ
জন রবার্ট রস
জন লায়ন্স (ভাষাবিজ্ঞানী)
জর্জ কিংস্লি জিফ
জর্জ লেকফ
জিন বার্কো গ্লীসন
জে আর ফার্থ
জেমস ম্যাকলি
জেরল্ড ক্যাট্জ
জেরাল্ড গাজডার
ড
ডেভিড ক্রিস্টাল
ডেভিড ডিরিঙ্গার
ন
নিকোলাই ত্রুবেৎস্কোয়
নোম চম্স্কি
প
পল পোস্টাল
পিটার ল্যাডিফোগিড
ফ
ফ্রান্ৎস বপ
ফ্রিড্রিশ ক্লুগে
ফ্রিড্রিশ ফন শ্লেগেল
ফের্দিনঁ দ্য সোস্যুর
ব
বের্টোল্ড ডেলব্রুক
বার্নার্ড কম্রি
বেনজামিন হোর্ফ
ভ
ভিক্টর ইংভে
ভিল্হেল্ম ফন হুম্বোল্ট
ভিলহেল্ম ব্রাউনে
ম
মুনীর চৌধুরী
মুহম্মদ আবদুল হাই
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
মাইকেল হ্যালিডে
মার্ক অ্যারনফ
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
র
রুডল্ফ ফন রাউমার
রফিকুল ইসলাম (ভাষাবিজ্ঞানী)
র্যান্ডল্ফ কোয়ার্ক
রাস্মুস রাস্ক
রে জ্যাকেন্ডফ
রোমান ইয়াকবসন
ল
লুই ইয়েল্ম্স্লেভ
লুইস হার্বার্ট গ্রে
লুডভিগ ভিটগেনস্টাইন
লিওনার্ড ব্লুমফিল্ড
স
সুকুমার সেন
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
স্টিভেন পিংকার
হ
হুমায়ুন আজাদ
হের্মান অস্টহফ
হের্মান গ্রাসমান
হের্মান পাউল
ভাষাবিজ্ঞানী
ভাষাবিজ্ঞানের তালিকা
পেশা অনুযায়ী ব্যক্তিদের তালিকা | https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_linguists | List of linguists | A linguist in the academic sense is a person who studies natural language (an academic discipline known as linguistics). Ambiguously, the word is sometimes also used to refer to a polyglot (one who knows several languages), a translator/interpreter (especially in the military), or a grammarian (a scholar of grammar), but these uses of the word are distinct (and one does not have to be multilingual in order to be an academic linguist). The following is a list of notable academic linguists. |
2722 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%B9%E0%A6%AB | হের্মান অস্টহফ | হের্মান অস্ট্হফ () (১৮ই এপ্রিল, ১৮৪৭, বিলমেরিশ, উনা, জার্মানি—৭ই মে, ১৯০৯, হাইডেলবের্গ, জার্মানি) একজন জার্মান ভাষাবিজ্ঞানী।
জীবন
অস্ট্হফ জার্মানির বার্লিন, টুবিঙেন ও বন শহরে চিরায়ত ভাষাতত্ত্ব (Classical philology), জার্মান সংস্কৃতি, সংস্কৃত ভাষা ও তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৮৬৯ সালে বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। ১৮৭০ থেকে তিনি কাসেল শহরে শিক্ষকতা করতে থাকেন ও ১৮৭৫ সালে বাসস্থান পরিবর্তন করে লাইপ্ৎসিশ শহরে চলে যান। ১৮৭৭ সালে তিনি হাইডেলবের্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান ও সংস্কৃতের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৮৭৮ সালে তিনি পূর্ণ অধ্যাপক পদ লাভ করেন। তার গবেষণার মূল বিষয় ছিল ভারতীয় ব্যাকরণ। কার্ল ব্রুগমান ও আউগুস্ট লেসকিনের সাথে তাকেও নব্যব্যাকরণবিদদের মধ্যে অন্যতম ভাষাবিজ্ঞানী হিসেবে গণ্য করা হয়।
অস্ট্হফের ওপর লেখা রচনাবলি
Einhauser, Eveline (Hrsg.) (1992). Lieber freund ... : die Briefe Hermann Osthoffs an Karl Brugmann, 1875 - 1904. Trier: WTV.
Killy, Walther & Rudolf Vierhaus (Hrsg.) (1998). Deutsche Biographische Enzyklopädie (DBE). Band 7: May - Pleßner. München, K.G. Saur. S. 519.
তথ্যসূত্র
১৮৪৭-এ জন্ম
১৯০৯-এ মৃত্যু
জার্মান ভাষাবিজ্ঞানী
হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক | https://en.wikipedia.org/wiki/Hermann_Osthoff | Hermann Osthoff | Hermann Osthoff (18 April 1847 – 7 May 1909) was a German linguist. He was involved in Indo-European studies and the Neogrammarian school. He is known for formulating Osthoff's law, and published widely on Indo-European word-formation and morphology. |
2727 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%20%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95 | রমনা পার্ক | রমনা পার্ক বা রমনা উদ্যান বাংলাদেশের ঢাকা শহরের রমনা এলাকায় অবস্থিত একটি উদ্যান। এখানে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এটি রাজধানীবাসীর প্রাতঃভ্রমণের মূল কেন্দ্র।
ইতিহাস
এই উদ্যানটি ১৬১০ সালে মোঘল আমলে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই সময়ে রমনার পরিসীমা ছিল বিশাল এলাকা জুড়ে। মোঘলরাই রমনার নামকরণ করেন। পুরানো হাইকোর্ট ভবন থেকে পূর্বের সড়ক ভবন পর্যন্ত মোঘলরা বাগান তৈরী করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোম্পানী আমলে এ এলাকা জঙ্গলে পরিণত হয়। পরবর্তিতে ১৮২৫ সাল থেকে ব্রিটিশ কালেক্টর ডাউইজের সময় ঢাকা নগর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যার অন্যতম ছিল রমনা এলাকার উন্নয়ন। এ সময় এলাকার একটি অংশ ঘেরাও করে ঘোড়দৌড় বা রেসকোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর অন্য অংশটিকে রমনা গ্রিন নাম দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজকের রমনা পার্ক। এ সময় ঢাকার নবাব পরিবার এখানে একটি রাজকীয় বাগান তৈরি করেন যার নাম দেওয়া হয় 'শাহবাগ'। তখন পার্কের আয়তন ছিল প্রায় ৮৯ একর। এ সময় ঢাকার নবাবরা এখানে একটি চিড়িয়াখানাও গড়ে তোলেন। ১৯ শতকে ব্রিটিশ শাসক এবং ঢাকার নবাবদের সহায়তায় এটির উন্নয়ন সাধন করা হয়। ঢাকা শহরের নিসর্গ পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছিল ১৯০৮ সালে লন্ডনের কিউই গার্ডেনের অন্যতম কর্মী আর. এল প্রাউডলকের তত্ত্বাবধানে। শহরের সেই নিসর্গ পরিকল্পনার ফল ছিল রমনা পার্কের উন্নয়ন। ২০ বছর লেগেছিল সে কাজ শেষ হতে। যা ১৯২৮ সালে শেষ হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরও রমনা ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবেই থেকে যায়। শাহবাগ থেকে ইডেন বিল্ডিং (সচিবালয়) পর্যন্ত নতুন একটি রাস্তা করা হয় এবং এই রাস্তার পূর্বদিকের অংশ হয় বর্তমান রমনা পার্ক। বর্তমানের সুপ্রীম কোর্ট ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণের চিড়িয়াখানাটি তখনও বিদ্যমান ছিল। চিড়িয়াখানার প্রাণীদের মধ্যে ছিল শুধু গুটিকয়েক বাঘ, ভালুক এবং বিভিন্ন জাতের কিছু পাখি। পরে চিড়িয়াখানাটি মীরপুরে তার বর্তমান অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে রমনা পার্ক উদ্বোধন করা হয় ১৯৪৯ সালে।
বর্তমানে রমনা পার্কে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। রমনার বটমুলে ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন অনেক জনপ্রিয়। রাজধানীতে প্রাতভ্রমণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র রমনা পার্ক। এটি ‘ঢাকার ফুসফুস’ হিসেবেও পরিচিত । প্রতিদিন সকালে ও বিকালে এখানে হাঁটতে ও ব্যায়াম করতে আসেন কয়েক হাজার মানুষ।
আয়তন
এর আয়তন ৬৮ দশমিক ৫ একর। এর ভেতরে একটি লেক আছে যার আয়তন ৮ দশমিক ৭৬ একর।
উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা
রমনা পার্কে বর্তমানে উদ্ভিদ প্রজাতি ২১১টি। এর মধ্যে ফুল ও শোভাবর্ধক প্রজাতির সংখ্যা ৮৭টি, ফলজাতীয় উদ্ভিদ ৩৬টি, ঔষধি প্রজাতি ৩৩টি, কৃষি বনায়নের উদ্ভিদ প্রজাতি ৩টি, বনজ উদ্ভিদ প্রজাতি ২টি, জলজ উদ্ভিদ প্রজাতি ২টি ও মশলা উদ্ভিদ প্রজাতি ৩টি।
বিরল প্রজাতির গাছ
রমনা পার্কে বেশ কিছু বিরল প্রজাতির গাছ আছে। এর কয়েকটি হলো পাদাউক, পলাশ, ধারমার, কাউয়াতুতি (বনপারুল), আগর, জ্যাকারান্ডা, তমাল, বাওবাব, গি¬রিসিডিয়া, কর্পূর, স্কারলেট কর্ডিয়া, জহুরিচাঁপা, ক্যাশিয়া জাভানিকা, মাধবী, মালতী, আফ্রিকান টিউলিপ, কেয়া, অশোক, ট্যাবেবুয়া, পাখিফুল, কফি, উদয়পদ্ম, সহস্রবেলী, গোল্ডেন শাওয়ার, পালাম, কাউফল, ঝুমকো, লতা পারুল, স্থলপদ্ম, মহুয়া, কুর্চি, বন আসরা, চন্দন, মাকড়িশাল, দুলিচাঁপা, কনকচাঁপা, অঞ্জন ইত্যাদি।
রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান
প্রতি বছর বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ ভোরে রমনা পার্কের রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট এটি আয়োজন করে। ছায়ানট ১৯৬৭ সালের পহেলা বৈশাখ (১৩৭৪ বঙ্গাব্দ) থেকে এখানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে আসছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাদে অদ্যাবধি এই উৎসব হয়ে আসছে। বর্তমানে এটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। আপামর জনসাধারণ পহেলা বৈশাখ ভোরে রমনা বটমূলে এসে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়।
শিশু প্রাঙ্গণ
রমনা পার্কের ভিতর একটি শিশু প্রাঙ্গণ রয়েছে। শিশুদের বিনোদনের জন্য এখানে দোলনা, ঢেঁকিকল সহ বেশ কিছু খেলার উপকরণ আছে।
চিত্রশালা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
ঢাকার উদ্যান | https://en.wikipedia.org/wiki/Ramna_Park | Ramna Park | Ramna Park (Bengali: রমনা পার্ক) or Ramna Green (রমনা উদ্যান, Rômna Uddan) is a significant urban green space renowned for its historical significance and recreational amenities, situated at the centre of Dhaka, Bangladesh. Described the "lungs of Dhaka City," the 68.50-acre (277,200 m2) park was built during the British colonial era with a lake at its core, undergoing several transformations over the years and evolving into a popular public space. Additionally, Ramna Park hosts cultural events and festivals, notably, the yearly Bengali New Year celebrations, further enriching its role as a communal space for relaxation and social gatherings. |
2729 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%B2%20%E0%A6%97%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC | সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় | {{তথ্যছক লেখক
| নাম = সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
| চিত্র = Sunil Gangopadhyay taken by Ragib.jpg
| alt = সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি
| চিত্রের_আকার = 220px
| শিরোলিপি = সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, আর্বানার টেগোর ফেস্টিভালে তোলা ছবি, ২০০৬
| স্থানীয়_নাম =
| জন্ম_তারিখ =
| জন্ম_স্থান = মাদারীপুর মহকুমা, ফরিদপুর, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা মাদারীপুর জেলা, ঢাকা, বাংলাদেশ)
| মৃত্যু_তারিখ =
| মৃত্যু_স্থান = কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
| ছদ্মনাম = নীললোহিত, সনাতন পাঠক, এবং নীল উপাধ্যায়
| পেশা = লেখক, ঔপন্যাসিক, কবি,প্রাবন্ধিক, সম্পাদক
| ভাষা = বাংলা
| বাসস্থান =
| জাতীয়তা = ভারতীয়
| নাগরিকত্ব = ভারতীয়
| শিক্ষা = এম.এ. (বাংলা সাহিত্য)
| শিক্ষা_প্রতিষ্ঠান = কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৫৪)
| সময়কাল = ১৯৫৩–২০১২
| উল্লেখযোগ্য_রচনাবলি = প্রথম আলো, পূর্ব-পশ্চিম, সেই সময়
| পুরস্কার = আনন্দ পুরস্কার (১৯৭২, ১৯৮৯)সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৮৫)
| দাম্পত্যসঙ্গী =
| সন্তান = সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৬৭)
|স্বাক্ষর= সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় - স্বাক্ষর.jpg
}}
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ – ২৩ অক্টোবর ২০১২) বিশ শতকের শেষভাগে সক্রিয় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষার জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাংলা ভাষায় এই ভারতীয় সাহিত্যিক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসাবে অজস্র স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দ-পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তার কবিতার বহু পঙ্ক্তি সাধারণ মানুষের মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় "নীললোহিত", "সনাতন পাঠক", "নীল উপাধ্যায়" ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম অধুনা বাংলাদেশের মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায়। মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ একা এবং কয়েকজন এবং ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ প্রকাশিত হয়। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি, যুগলবন্দী (শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে), হঠাৎ নীরার জন্য, রাত্রির রঁদেভূ, শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা, অর্ধেক জীবন, অরণ্যের দিনরাত্রি, অর্জুন, প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম, ভানু ও রাণু, মনের মানুষ'' ইত্যাদি। শিশুসাহিত্যে তিনি "কাকাবাবু-সন্তু" নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা। মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য অকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রাথমিক জীবন
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম মাদারীপুর জেলায়,কালকিনি থানার মাইজপাড়া গ্রামে। বর্তমান যা বাংলাদেশের অন্তর্গত। জন্ম বাংলাদেশে হলেও তিনি বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশোনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। ব্যাংকের পিয়নের চেয়েও স্কুল মাস্টারের বেতন ছিল কম। সুনীলের মা কখনোই চান নি তার ছেলে শিক্ষকতা করুক। পড়াশুনা শেষ করে কিছুদিন তিনি অফিসে চাকুরি করেছেন। তারপর থেকে সাংবাদিকতায়। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মি. পলেন কলকাতায় এলে সুনীলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয়। সেই সূত্রে মার্কিন মুলুকে গেলেন সুনীল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে। ডিগ্রি হয়ে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগ্রন্থাগারিক হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন সুনীল।
সাহিত্যিক জীবন
সুনীলের পিতা তাকে টেনিসনের একটা কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বলেছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে দুটি করে কবিতা অনুবাদ করবে। এটা করা হয়েছিল এ জন্য যে তিনি যেন দুপুরে বাইরে যেতে না পারেন। তিনি তা-ই করতেন। বন্ধুরা যখন সিনেমা দেখত, সুনীল তখন পিতৃ-আজ্ঞা শিরোধার্য করে দুপুরে কবিতা অনুবাদ করতেন। অনুবাদ একঘেয়ে হয়ে উঠলে তিনি নিজেই লিখতে শুরু করেন।
নীললোহিত নামে সুনীল
নীললোহিত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম। নীললোহিতের মাধ্যমে সুনীল নিজের একটি পৃথক সত্তা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। নীললোহিতের সব কাহিনিতেই নীললোহিতই কেন্দ্রীয় চরিত্র। সে নিজেই কাহিনিটি বলে চলে আত্মকথার ভঙ্গিতে। সব কাহিনিতেই নীললোহিতের বয়স সাতাশ। সাতাশের বেশি তার বয়স বাড়ে না। বিভিন্ন কাহিনিতে দেখা যায় নীললোহিত চির-বেকার। চাকরিতে ঢুকলেও সে বেশিদিন টেকে না। তার বাড়িতে মা, দাদা, বৌদি রয়েছেন। নীললোহিতের বহু কাহিনিতেই দিকশূন্যপুর বলে একটি জায়গার কথা শোনা যায়। যেখানে বহু শিক্ষিত, সফল কিন্তু জীবন সম্পর্কে নিস্পৃহ মানুষ একাকী জীবনযাপন করেন।
টিভি এবং চলচ্চিত্র
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু গল্প-উপন্যাসের কাহিনি চলচ্চিত্রে রূপায়ণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী উল্লেখযোগ্য। এছাড়া কাকাবাবু চরিত্রের চারটি কাহিনি সবুজ দ্বীপের রাজা, কাকাবাবু হেরে গেলেন?, মিশর রহস্য এবং পাহাড়চূড়ায় আতঙ্ক চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। হঠাৎ নীরার জন্য তার চিত্রনাট্যে নির্মিত আরেকটি ছবি।
সম্মাননা
২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৭২ ও ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
এছাড়া বাংলা সাহিত্যের সৃজনশীল গল্পের ওপর স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রতিবছরের সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিবস ৭ সেপ্টেম্বরে সুনীল সাহিত্য ট্রাস্টের পক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মাদারিপুর কর্তৃক সুনীল সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।
মৃত্যু
২৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে হৃদ্যন্ত্রজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ৪ এপ্রিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার ‘গণদর্পণ’-কে সস্ত্রীক মরণোত্তর দেহ দান করে যান। কিন্তু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতে তার দেহ দাহ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায় ২৫ অক্টোবর ২০১২ তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।
উপন্যাস
ঐতিহাসিক
সেই সময়
প্রথম আলো
পূর্ব-পশ্চিম
একা এবং কয়েকজন
আত্ম জীবনী
অর্ধেক জীবন
ছবির দেশে কবিতার দেশে
অন্যান্য
আত্মপ্রকাশ
অরণ্যের দিনরাত্রি
সরল সত্য
তুমি কে?
জীবন যেরকম
কালো রাস্তা সাদা বাড়ি
অর্জুন
কবি ও নর্তকী
স্বর্গের নিচে মানুষ
আমিই সে
একা এবং কয়েকজন
সংসারে এক সন্ন্যাসী
রাধাকৃষ্ণ
কনকলতা
সময়ের স্রোতে
মেঘ বৃষ্টি আলো
প্রকাশ্য দিবালোকে
দর্পনে কার মুখ
গভীর গোপন
কেন্দ্রবিন্দু
ব্যক্তিগত
বন্ধুবান্ধব
রক্তমাংস
দুই নারী
স্বপ্ন লজ্জাহীন
আকাশ দস্যু
তাজমহলে এক কাপ চা
ধূলিবসন
অমৃতের পুত্রকন্যা
আজও চমৎকার
জোছনাকুমারী
নবজাতক
শ্যামসাহেব
সপ্তম অভিযান
মধুময়
ভালোবাসার দুঃখ
হৃদয়ের অলিগলি
সুখের দিন ছিল
ফিরে আসা
রক্ত
স্বর্গ নয়
জনারণ্যে একজন
সমুদ্রের সামনে
সামনে আড়ালে
জয়াপীড়
বুকের মধ্যে আগুন
কেউ জানে না
তিন নম্বর চোখ
সুখ অসুখ
অগ্নিপুত্র
বসন্তদিনের ডাক
সোনালি দুঃখ
নদীর পাড়ে খেলা
যুবক যুবতীরা
পুরুষ
অচেনা মানুষ
বৃত্তের বাইরে
কয়েকটি মুহুর্ত
রূপালী মানবী
মহাপৃথিবী
উত্তরাধিকার
আকাশ পাতাল
নদীর ওপার
হীরকদীপ্তি
অমলের পাখি
মনে মনে খেলা
মায়া কাননের ফুল
রাণু ও ভানু
ময়ূর পাহাড়
অন্য জীবনের স্বাদ
দুজন
খেলা নয়
কিশোর ও সন্ন্যাসিনী
গড়বন্দীপুরের কাহিনী
টান
প্রবাসী পাখি
বুকের পাথর
বেঁচে থাকা
রাকা
রূপটান
শান্তনুর ছবি
শিখর থেকে শিখরে
উদাসী রাজকুমার
নীল চাঁদ : দ্বিতীয় মধুযামিনী
একটি মেয়ে অনেক পাখি
আলপনা আর শিখা
অনসূয়ার প্রেম
মধ্যরাতের মানুষ
কেউ জানে না
অনির্বাণ আগুন
নবীন যৌবন
দরজার আড়ালে
দরজা খোলার পর
পায়ের তলায় সরষে
মানসভ্রমণ
ভালো হতে চাই
দৃষ্টিকোণ
দুজনে মুখোমুখি
মনে রাখার দিন
সেই দিন সেই রাত্রি
বেঁচে থাকার নেশা
কর্ণ
প্রথম নারী
দময়ন্তীর মুখ
প্রতিশোধের একদিক
কল্পনার নায়ক
উড়নচণ্ডী
বাবা মা ভাই বোন
এলোকেশী আশ্রম
সমুদ্রতীরে
প্রতিদ্বন্দ্বী
সোনালী দিন
স্বপ্নসম্ভব
ছবি
প্রতিপক্ষ
একাকিনী
এর বাড়ি ওর বাড়ি
এখানে ওখানে সেখানে
দুই বসন্ত
ভালোবাসা, প্রেম নয়
প্রথম প্রণয়
কপালে ধুলো মাখা
অন্তরঙ্গ
সুপ্ত বাসনা
জলদস্যু
আঁধার রাতের অতিথি
দুই অভিযান
ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ
অজানা নিখিলে
কাজরী
সময়ের স্রোতে
এক জীবনে
সময় অসময়
তিন চরিত্র
প্রেম ভালবাসা
বসন্ত দিনের খেলা
সেতুবন্ধন
বিজনে নিজের সঙ্গে
হৃদয়ে প্রবাস
কোথায় আলো
এক অপরিচিতা
গড়বন্দীপুরের সে
স্বপ্নের নেশা
ভালোবাসা
নিজেকে দেখা
কবিতা
নাটক
গল্পগ্রন্থ
শাজাহান ও তার নিজস্ব বাহিনী
আলোকলতার মূল
অন্যান্য বই
সৃষ্ট চরিত্র
কাকাবাবু
নীল মানুষ (রণজয়)
আরও দেখুন
সুনীল সাহিত্য পুরস্কার
বাংলার জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
The South Asian Literary recordings project
১৯৩৪-এ জন্ম
পূর্ববঙ্গে জন্ম
আদিনিবাস পূর্ববঙ্গে
২০১২-এ মৃত্যু
বাঙালি কবি
বাঙালি ঔপন্যাসিক
ভারতীয় ঔপন্যাসিক
বাঙালি ভ্রমণ বিষয়ক লেখক
বাঙালি শিশুসাহিত্যিক
আনন্দ পুরস্কার বিজয়ী
বাংলা ভাষায় সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার বিজয়ী
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মাদারীপুর জেলার ব্যক্তি
বঙ্কিম পুরস্কার বিজয়ী
২০শ শতাব্দীর বাঙালি ঔপন্যাসিক
বাংলা ভাষার বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক
২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ঔপন্যাসিক
স্বাক্ষরের সাথে জীবনী
পশ্চিমবঙ্গের ঔপন্যাসিক
বাঙালি লেখক
কলকাতার লেখক
বাঙালি পুরুষ কবি
ভারতীয় পুরুষ ঔপন্যাসিক
পশ্চিমবঙ্গের কবি
ভারতীয় শিশুসাহিত্যিক
বাংলা ভাষার লেখক
সুরেন্দ্রনাথ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ফরিদপুর জেলার ব্যক্তি
২০শ শতাব্দীর ভারতীয় কবি
ভারতীয় পুরুষ কবি
কলকাতার শেরিফ
সিটি কলেজ, কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষার্থী | https://en.wikipedia.org/wiki/Sunil_Gangopadhyay | Sunil Gangopadhyay | Sunil Gangopadhyay or Sunil Ganguly (7 September 1934 – 23 October 2012) was an Indian poet, novelist, short story writer, historian, and critic in the Bengali language. He was one of the foremost poets experimenting with new forms, themes, rhythms, and words in Bengali poetry in the 1950s and 1960s. In 1953, along with Deepak Majumder and Ananda Bagchi, he founded the Bengali poetry magazine, Krittibas. He is regarded as one of the most prolific and popular writers in Bengali since Rabindranath Tagore.
He is best known for his novels Atmaprakash (1964), Aranyer Din Ratri, Sei Somoy, Pratham Alo (1996), and Purba Paschim; travelogues Payer Tolay Sorshe (Vol. 1 and 2); the poetry collections Eka ebong Koekjon (1958), Ami Ki Rokom Vabe Beche Achi (1966), and Hathat Nirar Janya. Sunil Gangopadhyay introduced the fictional character Kakababu, writing 36 novels in the series that became influential in Bengali children's literature. In 1985, he received the prestigious Sahitya Akademi award for his historical fiction Those Days (Sei Somoy).
His prose style, conversational and colloquial, simple and lucid yet deeply penetrating with often a thin layer of dry humor, has by now created a niche of its own which have influenced many later writers, not only in Bengal but elsewhere too. Sunil, according to Shankha Ghosh, "used to narrate the story using contemporary language, which often allows readers to find aspects of themselves they may have not seen, perhaps did not want to see. In doing so, Sunil skillfully turned his personal confession into a shared experience for a wide readership." Sitanshu Yashaschandra observed that in his works "the personal is never sacrificed in favor of the 'regional,' nor is 'Bengaliness' ever given up to aspire for any larger status. He is a writer of international stature, simply because he is a writer, such a good writer." |
2730 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE | কলকাতা | কলকাতা বা কোলকাতা (), পূর্বনাম কলিকাতা, হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর এবং ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। কলকাতা শহরটি হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। এই শহর পূর্ব ভারতের শিক্ষা, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ায় কলকাতা তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির শহর। কলকাতা বন্দর ভারতের প্রাচীনতম সচল বন্দর তথা দেশের প্রধান নদী বন্দর। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যা ৪,৪৯৬,৬৯৪। জনসংখ্যার হিসেবে এটি ভারতের ৭ম সর্বাধিক জনবহুল পৌর-এলাকা। অন্যদিকে বৃহত্তর কলকাতার জনসংখ্যা ১৪,১১২,৫৩৬। জনসংখ্যার হিসেবে বৃহত্তর কলকাতা ভারতের ৩য় সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল। বৃহত্তর কলকাতার সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সূচক (আনুমানিক)$২৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যবর্তী (ক্রয়ক্ষমতা সমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জিডিপি অনুযায়ী)। এই সূচক অনুযায়ী ভারতে কলকাতার স্থান মুম্বই ও নয়াদিল্লির ঠিক পর তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির শহর।
সুতানুটি, ডিহি কলকাতা ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রাম নিয়ে মূল কলকাতা শহরটি গড়ে ওঠে। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত এই গ্রামগুলির শাসনকর্তা ছিলেন মুঘল সম্রাটের অধীনস্থ বাংলার নবাবেরা। ১৬৯০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের কাছ থেকে বাংলায় বাণিজ্য সনদ লাভ করে। এরপর কোম্পানি কলকাতায় একটি দুর্গবেষ্টিত বাণিজ্যকুঠি গড়ে তোলে। ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা জয় করেছিলেন। কিন্তু পরের বছরই কোম্পানি আবার শহরটি দখল করে নেয়। এর কয়েক দশকের মধ্যেই কোম্পানি বাংলায় যথেষ্ট প্রতিপত্তি অর্জন করে এবং ১৭৯৩ সালে "নিজামত" বা স্থানীয় শাসনের অবলুপ্তি ঘটিয়ে এই অঞ্চলে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব কায়েম করে। কোম্পানির শাসনকালে এবং ব্রিটিশ রাজশক্তির প্রত্যক্ষ শাসনকালের প্রথমার্ধ্বে কলকাতা ছিল ভারতের ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চলগুলির রাজধানী। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকেই কলকাতা ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র। ১৯১১ সালে ভারতের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্র শাসনে ভৌগোলিক অসুবিধার কথা চিন্তা করে এবং বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজধানী স্থানান্তরিত হয় নয়াদিল্লিতে। স্বাধীনতার পর কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল আধুনিক ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা, বিজ্ঞানচর্চা এবং সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে কলকাতা এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার সম্মুখীন হয়।
উনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাংলার নবজাগরণের কেন্দ্রস্থল ছিল কলকাতা। এই শহর বাংলা তথা ভারতের ধর্মীয় ও জাতিগত বৈচিত্র্যপূর্ণ এক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও বটে। সাহিত্য, থিয়েটার, শিল্পকলা ও চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই শহর এক স্বতন্ত্র ঐতিহ্য বহন করে আসছে। কলকাতার অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি সাহিত্য, সঙ্গীত, নাটক, চলচ্চিত্র, শিল্পকলা, বিজ্ঞান ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন। এঁদের মধ্যে কয়েকজন নোবেল পুরস্কার ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিতও হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের কেন্দ্রও কলকাতা শহর। এখানে জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন বেশ কয়েকটি খ্যাতনামা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলির মধ্যে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল, এশিয়াটিক সোসাইটি, ভারতীয় সংগ্রহালয় ও জাতীয় গ্রন্থাগারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ভারতীয় উদ্ভিদ সর্বেক্ষণ, কলকাতা গাণিতিক সমিতি, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস সংস্থা, জুওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের মতো কয়েকটি পেশাদার বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান কলকাতাতেই অবস্থিত। এই শহরে একাধিক ক্রিকেট মাঠ ও ফ্র্যাঞ্জাইজি আছে। কিন্তু ভারতের অন্যান্য শহরে ক্রিকেট বেশি গুরুত্ব পেলেও, কলকাতার অধিবাসীরা ফুটবল ও অন্যান্য খেলার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।বলা হয়ে থাকে, ভারতবর্ষের ফুটবলের শহর ও কলকাতা।
নামের উৎস
ইতিহাস
প্রাক-ব্রিটিশ যুগ
সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী
নবজাগরণ
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন
স্বাধীনতা-উত্তর যুগ
ভূগোল
কলকাতা শহর ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পূর্বদিকে ২২°৩৪′ উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৮°২১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শহরের গড় উচ্চতা থেকে মধ্যে। উত্তর-দক্ষিণে শহরের বিস্তার হুগলি নদীর পাড় বরাবর। শহরের বেশিরভাগ এলাকাই আদতে ছিল জলাজমি। শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সব জলাজমি ভরাট করে বসতযোগ্য করে তোলা হয়। অবশিষ্ট জলাভূমি এখন "পূর্ব কলকাতা জলাভূমি" নামে পরিচিত। এই জলাভূমিটি রামসার কনভেনশন অনুযায়ী একটি "আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন জলাভূমি"।
সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমির বেশিরভাগ এলাকার মতো, কলকাতার মাটি ও জল মূলত পলিজ (alluvial) প্রকৃতির। শহরের মাটির তলায় কাদা, পলি, বিভিন্ন ক্রমের বালি ও নুড়ি নিয়ে গঠিত কোয়্যাটারনারি যুগের পললস্তর দেখা যায়। পললস্তরগুলি দুটির কাদার স্তরের মধ্যে বদ্ধ রয়েছে। নিচের কাদার স্তরটির গভীরতা ২৫০ মিটার (৮২০ ফুট) থেকে ৬৫০ মিটার (২,১৩৩ ফুট) এবং উপরের কাদার স্তরটির গভীরতা ১০ মিটার (৩৩ ফুট) থেকে ৪০ মিটার (১৩১ ফুট)। ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা শহর তৃতীয় ভূ-কম্পী ক্ষেত্রের অন্তর্গত, যার মাত্রা ১ (I) থেকে ৫ (V) (ভূমিকম্পের বৃদ্ধিপ্রবণতা অনুসারে)। আবার রাষ্ট্রসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির রিপোর্ট অনুযায়ী বায়ুপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড় ক্ষেত্র হিসেবে কলকাতা “অতি উচ্চ ক্ষয়ক্ষতি-প্রবণ” এলাকা।
নগরাঞ্চলের গঠন
বৃহত্তর কলকাতার আয়তন । ২০০৬ সালের হিসেব অনুযায়ী, মোট ৭২টি বড়ো শহর এবং ৫২৭টি ছোটো শহর ও গ্রাম এই এলাকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা পৌরসংস্থা সহ চারটি পৌরসংস্থা, ৩৯টি পৌরসভা ও ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত বৃহত্তর কলকাতার অন্তর্ভুক্ত। বৃহত্তর কলকাতার শহরতলি এলাকাগুলি উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়া জেলার অন্তর্গত। কলকাতা পৌরসংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার আয়তন । পৌর এলাকার প্রস্থ পূর্ব-পশ্চিমে তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ। পশ্চিম সীমায় হুগলি নদী থেকে পূর্ব সীমায় ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস পর্যন্ত শহরের প্রস্থ মোটামুটি । অন্যদিকে শহরের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তের মধ্যবর্তী দূরত্বটি অনেকটাই বেশি। এই দূরত্বের নিরিখেই মূলত সমগ্র শহরটিকে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতা নামে তিনটি অংশে ভাগ করা হয়ে থাকে। এছাড়া পরবর্তীকালে শহরে গড়ে ওঠা পূর্ব দিকের অংশটিকে পূর্ব কলকাতা নামে চিহ্নিত করা হয়।
উত্তর কলকাতা
উত্তর কলকাতা হল শহরের প্রাচীনতম অংশ। ১৯শ শতাব্দীর স্থাপত্যশৈলী, জীর্ণ প্রাসাদোপম বাড়িঘর, ঘিঞ্জি বস্তি, জনাকীর্ণ বাজার ও অজস্র সরু সরু গলিপথ শহরের এই অংশের বৈশিষ্ট্য। শ্যামবাজার, হাতিবাগান, মানিকতলা, কাঁকুড়গাছি, রাজাবাজার, শোভাবাজার, শ্যামপুকুর, সোনাগাছি, কুমারটুলি, বাগবাজার, জোড়াসাঁকো, চিৎপুর, পাথুরিয়াঘাটা, কাশীপুর, কেষ্টপুর, সিঁথি, বেলগাছিয়া, জোড়াবাগান ও দমদম এলাকাগুলি উত্তর কলকাতার অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে বেলঘরিয়া, সোদপুর, ব্যারাকপুর , মধ্যমগ্রাম, বারানগর , বারাসত এগুলি কলকাতা উত্তর শহরতলির অংশ হিসাবে কলকাতার উত্তরের সীমান্তবর্তী এলাকা।
মধ্য কলকাতা
মধ্য কলকাতা হল শহরের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র। বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (বিবাদীবাগ; পূর্বতন নাম ডালহৌসি স্কোয়ার), এসপ্ল্যানেড, স্ট্র্যান্ড রোড, চৌরঙ্গী, বড়বাজার, কলেজ স্ট্রিট (বইয়ের বাজারের জন্য ‘বইপাড়া’ নামেও পরিচিত), শিয়ালদহ, তালতলা, জানবাজার, বউবাজার, এন্টালি, চাঁদনি চক, ধর্মতলা, টেরিটি বাজার, বো ব্যারাকস, মল্লিকবাজার, পার্ক সার্কাস, বাবুঘাট প্রভৃতি এলাকা মধ্য কলকাতার অন্তর্ভুক্ত। জেনারেল পোস্ট অফিস, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক, উচ্চ আদালত, লালবাজার পুলিশ সদর দফতর সহ একাধিক সরকারি ও বেসরকারি কার্যালয় এখানেই অবস্থিত। এই এলাকার কিছুদূরে মাদার টেরিজা সরণির (পূর্বতন নাম পার্ক স্ট্রিট) দক্ষিণে আরেকটি বাণিজ্য কেন্দ্র রয়েছে। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর সরণি (পূর্বতন নাম ক্যামাক স্ট্রিট ), ড. মার্টিন লুথার কিং সরণি (পূর্বতন নাম উড স্ট্রিট ), ড. উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী সরণি (পূর্বতন নাম লাউডন স্ট্রিট ), শেকসপিয়র সরণি (পূর্বতন নাম থিয়েটার রোড), আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড সন্নিহিত এলাকাগুলি এই বাণিজ্য কেন্দ্রের অন্তর্গত। মধ্য কলকাতায় শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ময়দান, একটি বিশাল মাঠ। এই মাঠটি "কলকাতার ফুসফুস" নামে পরিচিত। এখানে বিভিন্ন ক্রীড়ানুষ্ঠান ও জনসভার আয়োজন করা হয়। ময়দানের দক্ষিণ প্রান্তে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল ও কলকাতা রেস কোর্স অবস্থিত। হুগলি নদীর তীরে স্ট্র্যান্ড রোডের ধারে অবস্থিত মিলেনিয়াম পার্ক কলকাতার একটি বিখ্যাত উদ্যান। ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ফোর্ট উইলিয়াম ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্ব সচীবের সদর দফতর। এই দুর্গটি এবং সন্নিহিত এলাকা সেনাবাহিনীর অধিকাররভুক্ত।
দক্ষিণ কলকাতা
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দক্ষিণ কলকাতার বৃহত্তর অংশের বিস্তার ঘটে। বালিগঞ্জ, আলিপুর, নিউ আলিপুর, শরৎ বসু রোড, ভবানীপুর, কালীঘাট,বেহালা , ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ, নাকতলা, যোধপুর পার্ক, লেক গার্ডেনস, গল্ফ গ্রীন, যাদবপুর, গড়ফা, কালিকাপুর, হালতু, নন্দীবাগান, সন্তোষপুর, বাঘাযতীন, গাঙ্গুলিবাগান, গড়িয়া, কামালগাজী, রানিকুঠি, বিক্রমগড়, বিজয়গড়, বাঁশদ্রোণী ও কুঁদঘাট নিয়েই দক্ষিণ কলকাতা। অন্যদিকে মাঝেরহাট, বজবজ, , সরসুনা, বড়িশা, পর্ণশ্রী, ঠাকুরপুকুর, মহেশতলা ও জোকা দক্ষিণ কলকাতার শহরতলির সীমান্তবর্তী এলাকা।
পূর্ব কলকাতা
বিধাননগর, নিউ টাউন, ট্যাংরা, তোপসিয়া, কসবা, আনন্দপুর, মুকুন্দপুর, পিকনিক গার্ডেন, বেলেঘাটা, উল্টোডাঙ্গা, ফুলবাগান, কৈখালি, লেক টাউন প্রভৃতি এলাকা পূর্ব কলকাতার অন্তর্গত। এই এলাকাগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকা সাম্প্রতিক নগরায়নের উদাহরণ। বৃহত্তর কলকাতার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যান সেন্ট্রাল পার্ক ছাড়াও পূর্ব কলকাতা জলাভূমি, বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন (সল্ট লেক স্টেডিয়াম), নিকো পার্ক, সায়েন্স সিটি ইকো পার্ক (প্রকৃতি তীর্থ) ইত্যাদি পূর্ব কলকাতায় অবস্থিত।
বৃহত্তর কলকাতা অঞ্চলের দুটি পরিকল্পিত নগর হল শহরের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত সল্টলেক (বিধাননগরের অংশ) এবং এর পূর্বে অবস্থিত নিউ টাউন। ২০০০-এর দশকে সল্টলেকের সেক্টর ৫ তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলির কেন্দ্র হিসেবে বিকাশ লাভ করে। সল্টলেক ও নিউ টাউন দুটি এলাকাই কলকাতা পৌরসংস্থার বাইরে নিজস্ব প্রশাসনের এখতিয়ারভুক্ত।
জলবায়ু
কলকাতার জলবায়ু ক্রান্তীয় সাভানা জলবায়ু প্রকৃতির (কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ অনুসারে Aw)। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৬.৮° সেন্টিগ্রেড এবং মাসিক গড় তাপমাত্রা ১৯°-৩০° সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে। এখানে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র। এই সময় গড় তাপমাত্রা ৩১° সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি থাকলেও মে-জুন মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কখনো কখনো ৪০° সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে যায়। শীতকাল সাধারণত মাত্র আড়াই মাস স্থায়ী হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১৪° সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি থাকে। শহরের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড যথাক্রমে ৪৩.৯° সেন্টিগ্রেড ও ৫.০° সেন্টিগ্রেড। সাধারণভাবে মে মাস কলকাতার উষ্ণতম মাস। এই সময় শহরের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা থাকে যথাক্রমে ৩৫.৪° সেন্টিগ্রেড ও ২৬° সেন্টিগ্রেড। অন্যদিকে জানুয়ারি শীতলতম মাস। জানুয়ারির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা যথাক্রমে ২৬.৪° সেন্টিগ্রেড ও ১৩.৮° সেন্টিগ্রেড। গ্রীষ্মের শুরুতে প্রায়শই শিলাবৃষ্টি, ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এই ধরনের ঝড়বৃষ্টি প্রকৃতিগতভাবে পরিচলন। এর স্থানীয় নাম কালবৈশাখী।
দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি শহরে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বর্ষাকাল সাধারণত স্থায়ী হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। শহরের বার্ষিক ১৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের অধিকাংশই এই সময়ে ঘটে থাকে। জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বোচ্চ থাকে। এই সময় গড়ে ৪১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কলকাতা বার্ষিক ২১০৮ ঘণ্টা সূর্যালোক পেয়ে থাকে। অধিকাংশ সূর্যালোক প্রাপ্তির সময় মার্চ মাস। দূষণ কলকাতার অন্যতম প্রধান সমস্যা। ভারতের অন্যান্য প্রধান শহরের তুলনায় কলকাতার সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার বা এসপিএম-এর হার এতটাই বেশি যে প্রায়শই ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। মারাত্মক বায়ুদূষণের ফলে শহরে ফুসফুসের ক্যান্সার সহ দূষণসৃষ্ট অসুখবিসুখ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অর্থনীতি
কলকাতা পূর্ব ভারত ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যবসাবাণিজ্য ও অর্থনীতির প্রধান কেন্দ্র। কলকাতায় অবস্থিত কলকাতা শেয়ার বাজার ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেয়ার বাজার। বর্তমানে ভারতের আঞ্চলিক শেয়ার বাজারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয় এটি তার মধ্যে একটি। কলকাতা একটি প্রধান বাণিজ্যিক ও সামরিক বন্দরও বটে। একদা ভারতের রাজধানী ও অগ্রণী শিল্পনগরী কলকাতা স্বাধীনোত্তর কালে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জঙ্গি ট্রেড-ইউনিয়ন আন্দোলনের শিকার হয়ে দ্রুত আর্থিক অবনতির পথে এগিয়ে যায়। ১৯৬০-এর দশক থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত একদিকে যেমন মূলধন বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে, তেমনি অন্যদিকে বন্ধ হয়ে যেতে থাকে বৃহৎ কলকারখানাগুলি। অধিকাংশ কলকারখানাগুলির উৎপাদন কমে আসে। অনেকেই ব্যবসা অন্যত্র সরিয়ে নেন। মূলধন ও সম্পদের এই হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত হয় বিশ্ববাজারে এই অঞ্চলে উৎপাদিত ঐতিহ্যবাহী দ্রব্যগুলির (যেমন পাট ইত্যাদি) চাহিদা হ্রাস। ফলে শহরের আর্থিক অবস্থায় গুরুতর সংকট দেখা দেয়। এটি তার মধ্যে একটি
১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় অর্থনীতির উদারীকরণ কলকাতার ভাগ্যোন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হয়। আজও নমনীয় উৎপাদন কলকাতার অর্থব্যবস্থার একটি বৈশিষ্ট্য। ঘরোয়া সেক্টরগুলি তাই এখানে মোট শ্রমশক্তির ৪০% অধিকার করে আছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী ফুটপাথের হকারদের মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮,৭৭২ কোটি ভারতীয় টাকা (প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। শহরের অন্যতম বৃহৎ কর্মশক্তি হল রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীগণ। এছাড়াও বিভিন্ন কায়িক ও বৌদ্ধিক শ্রমিকসহ শহরে একটি বৃহৎ সংখ্যক অদক্ষ ও অর্ধদক্ষ শ্রমিক জনসংখ্যাও পরিলক্ষিত হয়। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কলকাতার অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা গ্রহণ করেছে। এই শহরে আইটি সেক্টরের বৃদ্ধির হার বছরে ৭০%, যা জাতীয় গড়ের দ্বিগুণ। বিগত কয়েক বছরে আবাসন পরিকাঠামো সেক্টরে উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে গৃহীত হয়েছে বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্পও।
বড় বড় ভারতীয় কর্পোরেশনগুলি দ্বারা পরিচালিত অনেকগুলি শিল্প ইউনিট কলকাতায় অবস্থিত। আইটিসি লিমিটেড, ভারত সরকার টাঁকশাল, এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিজ, হিন্দুস্তান মোটরস, ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ, বাটা ইন্ডিয়া, বিড়লা কর্পোরেশন, কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন, ইউনাইটেড ব্যাংক অব ইণ্ডিয়া, ইউকো ব্যাংক ও এলাহাবাদ ব্যাংক ইত্যাদি বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য সংস্থার প্রধান কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত। সাম্প্রতিককালে, কেন্দ্রীয় সরকারের "পুবে তাকাও" ("লুক ইস্ট") নীতির মতো বিভিন্ন কর্মসূচি সিক্কিমের নাথুলা গিরিপথ খুলে দেওয়ায় চীনের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছে। তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলি ভারতীয় বাজারে প্রবেশে ইচ্ছুক হওয়ায় কলকাতার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন অনেকটাই সুবিধাজনক।
প্রশাসন
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা, রাজ্য সচিবালয়, কলকাতা হাইকোর্ট সহ একাধিক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার প্রধান কার্যালয় বা আঞ্চলিক কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত।
কলকাতার নগর প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক পরিষেবাগুলির দায়িত্ব একাধিক সরকারি সংস্থার হাতে ন্যস্ত। এই সকল সংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা অনেক ক্ষেত্রেই পরস্পরের সঙ্গে প্রাবৃত। কলকাতা এই জাতীয় অন্তত চারটি এক্তিয়ার এলাকার অন্তর্গত। এগুলি হল:
কলকাতা জেলা
কলকাতা পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা
কলকাতা পৌরসংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা
বৃহত্তর কলকাতা বা কেএমডিএ এলাকা
পৌরসংস্থা
কলকাতার স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন কর্তৃপক্ষ হল কলকাতা পৌরসংস্থা। ১৯২৩ সালে আধুনিক স্বায়ত্বশাসনমূলক সংস্থা হিসেবে এই পৌরসংস্থা গঠিত হয়। ১৯৮০ সালে কলকাতা পৌরসংস্থা আইন সংশোধনের মাধ্যমে এই পৌরসংস্থা তার বর্তমান চেহারাটি লাভ করে। বর্তমানে কলকাতার সমগ্র এলাকাটি ১৬টি বরো ও মোট ১৪৪টি ওয়ার্ডে বিভক্ত। ১৯৮০ সালের পৌর আইনের ভিত্তিতে কলকাতা পৌরসংস্থায় প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। এই নির্বাচনে বামফ্রন্ট জয়লাভ করেছিল। এরপর ১৯৯০ ও ১৯৯৫ সালের নির্বাচনেও বামফ্রন্টই ক্ষমতা দখল করে। ২০০০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০০৫ সালে পুনরায় বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে। ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিকতম নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস পুনরায় জয়লাভ করেছে। কলকাতা পৌরসংস্থায় বর্তমানে তিনটি কর্তৃপক্ষ রয়েছে: পৌরনিগম, মহানাগরিক (মেয়র) ও সপরিষদ-মহানাগরিক। পৌরসংস্থার ১৪৪ জন পৌরপিতা/পৌরমাতা (কাউন্সিলর) শহরের এক একটি ওয়ার্ড থেকে নাগরিকদের ভোটে প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত পৌরপিতা/পৌরমাতাগণ নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে মহানাগরিক নির্বাচিত করেন। মহানাগরিক, উপমহানাগরিক ও ১০ জন পৌরপিতা/পৌরমাতাকে নিয়ে গঠিত হয় সপরিষদ-মহানাগরিক। পৌরসংস্থার প্রধান কাজ হল জল সরবরাহ, শহরের রাস্তাঘাট ও প্রকাশ্য স্থানসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, রাস্তার আলোকদান, বাড়িনির্মাণ নিবন্ধীকরণ ও নিয়ন্ত্রণ, পয়ঃপ্রণালী রক্ষণাবেক্ষণ ও কঠিন বর্জ্য পদার্থের অপসারণ ইত্যাদি।
জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা
কলকাতা পৌরসংস্থা এলাকার অন্যান্য শাসনবিভাগীয় ও আরক্ষা-সংক্রান্ত কর্তৃপক্ষগুলি হল: কলকাতা জেলার সমাহর্তা (কালেকটর) ও কলকাতা পুলিশ। কলকাতায় শেরিফ নামে একটি নামসর্বস্ব সাম্মানিক পদও রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মামলা নিষ্পত্তির জন্য কলকাতায় একাধিক নিম্ন আদালত, দেওয়ানি মামলার জন্য ছোটো আদালত ও ফৌজদারি মামলার জন্য দায়রা আদালত অবস্থিত। নগরপালের (পুলিশ কমিশনার) নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশ সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বরাষ্ট্র বিভাগের অন্তর্গত।
সংসদীয় ক্ষেত্র
কলকাতা শহরের অধিকাংশ অঞ্চল ভারতীয় সংসদের কলকাতা উত্তর ও কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রদুটির অন্তর্গত। দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতার কয়েকটি অঞ্চল যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মালা রায় এবং যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। কলকাতা মোট ১৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে বিভক্ত। এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলি কলকাতা পৌর এলাকার ১ থেকে ১৪৪ টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে বিভক্ত। এগুলি হল:
কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্র
চৌরঙ্গী বিধানসভা কেন্দ্র
এন্টালি বিধানসভা কেন্দ্র
বেলেঘাটা বিধানসভা কেন্দ্র
জোড়াসাঁকো বিধানসভা কেন্দ্র
শ্যামপুকুর বিধানসভা কেন্দ্র
মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র
কাশীপুর-বেলগাছিয়া বিধানসভা কেন্দ্র
কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র
কসবা বিধানসভা কেন্দ্র
বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র
বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র
কলকাতা বন্দর বিধানসভা কেন্দ্র
ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র
রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্র
বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র
যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্র
টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র
মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্র (আংশিক)
জনপরিসংখ্যান
২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা পৌরসংস্থার জনসংখ্যা ৪্৮৬,৬৭৯ এবং কলকাতা মহানগর অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা ১,৪১,১২,৫৩৬। লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষে ৯১৯ জন নারী। এই হার জাতীয় লিঙ্গানুপাত হারের তুলনায় কম; তার কারণ, অনেক উপার্জনশীল পুরুষ তাদের পরিবারের মহিলা সদস্যদের গ্রামে রেখে শহরে কাজ করতে আসেন। কলকাতার সাক্ষরতার হার ৮৮.৩৩ শতাংশ; যা জাতীয় সাক্ষরতার হার ৭৪.০৪ শতাংশের তুলনায় বেশি। নথিভুক্ত হিসেব অনুযায়ী কলকাতা পৌরসংস্থা অধিভুক্ত এলাকার বৃদ্ধির হার ৪.১ শতাংশ; যা ভারতের দশ লক্ষাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট মহানগরগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন।
ভাষা
বাঙালিরা কলকাতার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী; মারোয়াড়ি ও বিহারি সম্প্রদায় শহরের উল্লেখযোগ্য জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় (২০ শতাংশ)। এছাড়াও কলকাতা প্রবাসী চীনা, তামিল, নেপালি, ওড়িয়া, তেলুগু, অসমীয়া, গুজরাটি, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান, আর্মেনিয়ান, তিব্বতি, মহারাষ্ট্রীয়, পাঞ্জাবি, পারসি প্রভৃতি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসভূমি। কলকাতার প্রধান ভাষা হল বাংলা ও ইংরেজি; এছাড়াও হিন্দি, উর্দু, ওড়িয়া ও ভোজপুরি ভাষাও শহরের একাংশের বাসিন্দাদের দ্বারা কথিত হয়ে থাকে।
ধর্ম
জনগণনা অনুসারে, কলকাতার জনসংখ্যার ৭৭.৬৮ শতাংশ হিন্দু, ২০.২৭ শতাংশ মুসলিম, ০.৮৮ শতাংশ খ্রিস্টান এবং ০.৪৬ শতাংশ জৈন; অবশিষ্ট শিখ, বৌদ্ধ, ইহুদি ও জরথুস্ট্রীয় সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা অত্যন্ত অল্প। শহরের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ ২,০১১টি নথিভুক্ত এবং ৩,৫০০টি অনথিভুক্ত (মূলত দখলদার) বস্তিতে বাস করেন।
অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা
২০০৪ সালে দেশের ৩৫টি মহানগরের মধ্যে কলকাতায় সংঘটিত বিশেষ ও স্থানীয় আইনের আওতাভুক্ত অপরাধের হার ৬৭.৬ শতাংশ। ২০০৪ সালে কলকাতা পুলিশ ১০,৭৫৭টি ভারতীয় দণ্ডবিধির আওয়াভুক্ত মামলা নথিভুক্ত করে; যা সারা দেশে দশম স্থানের অধিকারী। ২০০৬ সালে জাতীয় স্তরে যখন অপরাধ হার ছিল প্রতি এক লক্ষে ১৬৭.৭, তখন কলকাতায় এই হার ছিল ৭১; যা ভারতীয় মহানগরগুলির মধ্যে ছিল সর্বনিম্ন হার। কলকাতার সোনাগাছি অঞ্চল এশিয়ার বৃহত্তম নিষিদ্ধ পল্লিগুলির অন্যতম; এখানে প্রায় ১০,০০০ যৌনকর্মী কাজ করেন।
সংস্কৃতি
কলকাতা মহানগরী তার সাহিত্যিক, শৈল্পিক ও বৈপ্লবিক ঐতিহ্যগুলির জন্য বিশ্ববিদিত। এই শহর কেবলমাত্র ভারতের পূর্বতন রাজধানীই ছিল না, বরং আধুনিক ভারতের শিল্প ও সাহিত্য চেতনার জন্মস্থানও ছিল। শিল্প ও সাহিত্যের প্রতি কলকাতাবাসীদের বিশেষ আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়ে থাকে; নতুন প্রতিভাকে গ্রহণ করার ঐতিহ্য কলকাতাকে তাই পরিণত করেছে "প্রচণ্ড সৃজনীশক্তিধর এক শহরে"। এই সকল কারণে কলকাতাকে অনেক সময় "ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী" বলে উল্লেখ করা হয়।
কলকাতার অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল শহরের ছোটো ছোটো অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পাড়া সংস্কৃতি। সাধারণত প্রত্যেক পাড়ায় একটি করে ক্লাবঘর সহ নিজস্ব সংঘ বা ক্লাব থাকে। অনেক সময় ক্লাবগুলির নিজস্ব খেলার মাঠও থাকে। পাড়ার বাসিন্দারা অভ্যাসগতভাবে এখানে এই সব ক্লাবঘরে আড্ডা দিতে আসেন; মাঝেমধ্যে এই সব আড্ডা হয়ে ওঠে মুক্তছন্দের বৌদ্ধিক আলাপআলোচনা। এই শহরে রাজনৈতিক দেওয়াললিখনেরও এক ঐতিহ্য লক্ষিত হয়; এই সব দেওয়াললিখনে কুরুচিপূর্ণ কেচ্ছাকেলেংকারির বর্ণনা থেকে শ্লেষাত্মক রঙ্গব্যঙ্গ, লিমেরিক, কার্টুন, ইস্তাহার – সবই বিধৃত হয়।
সাহিত্য
ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে কলকাতাকেন্দ্রিক সাহিত্যিকদের হাত ধরে বাংলা সাহিত্যের আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয়। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮–১৮৯৪), মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১), কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৮–১৯৭৬) ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৬–১৯৩৮) প্রমুখ। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করে চলেন শহরের পরবর্তী প্রজন্মের খ্যাতিমান সাহিত্যিকেরা। এঁদের মধ্যে উল্লেখনীয় হলেন জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯–১৯৫৪), বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৪–১৯৫০), তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৮–১৯৭১), মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯০৮–১৯৫৬), বুদ্ধদেব বসু (১৯০৮-১৯৭৪), আশাপূর্ণা দেবী (১৯০৯–১৯৯৫) প্রমুখ। বর্তমান প্রজন্মের সাহিত্যিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৫), বুদ্ধদেব গুহ (জন্ম ১৯৩৬), মহাশ্বেতা দেবী (জন্ম ১৯২৬), সমরেশ মজুমদার (জন্ম ১৯৪৪), সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৬), সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৪) এবং জয় গোস্বামী (জন্ম ১৯৫৪) প্রমুখ।
সঙ্গীত
কলকাতা শহরের সঙ্গীত-গীতি-কাব্যের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধ থেকেই বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত এমনকি বহির্বঙ্গ থেকেও বহু বিশিষ্ট সঙ্গীতস্রষ্টা ও গায়ক কলকাতায় এসে বসতি স্থাপন করেন। এর ফলে অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলা গানে একটি বিশেষ কলকাতা-কেন্দ্রিক ধারার সৃষ্টি হয়, যা অধুনা "পুরাতনী" নামে পরিচিত। এই সময়কার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উল্লেখযোগ্য সঙ্গীতস্রষ্টা-গায়ক হলেন বাংলা টপ্পা সঙ্গীতের জনক রামনিধি গুপ্ত (নিধুবাবু); তার রচিত টপ্পাগান আজও জনপ্রিয়। নিধুবাবুই বাংলায় প্রথম দেশাত্মবোধক গান "নানান দেশে নানান ভাষা, বিনে স্বদেশীয় ভাষা মিটে কি আশা"-র রচয়িতা। সেযুগের অন্যান্য বিশিষ্ট সঙ্গীতস্রষ্টা-গায়কেরা হলেন রাম বসু, হরু ঠাকুর, গোপাল উড়ে, গোঁজলা গুই, রূপচাঁদ পক্ষী, শ্রীধর কথক প্রমুখ। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলা গানে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি ও ব্রহ্মসঙ্গীতের অবদানও অনস্বীকার্য। কলকাতার জনসমাজে কবিগান, তরজা, আখড়াই-হাফ আখড়াই, টপ্পা প্রভৃতি গানের বিশেষ জনপ্রিয়তা ছিল।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেন ও কাজী নজরুল ইসলাম রচিত গানের চর্চা শুরু হয়। রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে কলকাতা এক বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। এই শহরের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং "গীতবিতান", "রবিতীর্থ", "দক্ষিণী" প্রভৃতি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিক্ষায়তন বিশেষ খ্যাতিসম্পন্ন। কলকাতা-কেন্দ্রিক উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীরা হলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক, কুন্দনলাল সায়গল, দেবব্রত বিশ্বাস, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, সাগর সেন, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, সুমিত্রা সেন প্রমুখ; এবং একালের বিশিষ্ট শিল্পীদের মধ্যে প্রমিতা মল্লিক, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, শ্রাবণী সেন, ইন্দ্রাণী সেন, শ্রীকান্ত আচার্যের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নজরুলগীতির ক্ষেত্রে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, অঞ্জলি মুখোপাধ্যায়,ধীরেন বসু,অনুপ ঘোষাল প্রমুখ শিল্পীরা। দ্বিজেন্দ্রগীতি-অতুলপ্রসাদী-রজনীকান্তের গানে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, মঞ্জু গুপ্ত, শর্বাণী সেন,নিশিথ সাধু প্রমুখ। বিংশ শতাব্দীর শেষ পর্বে কলকাতা-কেন্দ্রিক গীতিকার-সুরকার ও গায়ক-গায়িকারা বাংলা আধুনিক গানে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। এই সময়কার বিশিষ্ট গীতিকার-সুরকারেরা হলেন সলিল চৌধুরী, হিমাংশু দত্ত, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, নচিকেতা ঘোষ, সুধীন দাশগুপ্ত, মোহিনী চৌধুরী, প্রনব রায়,শ্যামল গুপ্ত, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, কমল দাশগুপ্ত প্রমুখ। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কৃষ্ণচন্দ্র দে,, শচীন দেববর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, জগন্ময় মিত্র, ধঞ্জয় ভট্টাচার্য,মান্না দে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র,মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়,সতিনাথ মুখোপাধ্যায়, কিশোরকুমার, প্রমুখ।
১৯৯০-এর দশকের প্রথম ভাগ থেকে বাংলা সঙ্গীতের জগৎে এক নতুন ধারার সূচনা ঘটে। এই ধারার বৈশিষ্ট্য লক্ষিত হয় বিভিন্ন বাংলা ব্যান্ডের গানে। কোনো কোনো ব্যান্ড আবার বাংলা লোকসঙ্গীতের সঙ্গে জ্যাজ ও অন্যান্য পাশ্চাত্য সঙ্গীতের ফিউশনও ঘটায়। তবে এই ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কবীর সুমন, নচিকেতা, অঞ্জন দত্ত এবং বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দু ও ক্যাকটাসের "জীবনমুখী গান"। এছাড়া কলকাতায় হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও বাউল-ভাটিয়ালি ইত্যাদি বাংলা লোকসঙ্গীতও বিশেষ জনপ্রিয়। কলকাতার দুটি প্রধান সঙ্গীত-উৎসব হল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত "বাংলা সঙ্গীত মেলা"(২০১১ পর থেকে এটি এখন ডিসেম্বর জানুয়ারিতে হয়) ও ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলন।
নাটক
কলকাতার যাত্রাপালা, নাটক ও গ্রুপ থিয়েটারের ঐতিহ্য সুবিদিত। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩), দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০–১৮৭৩), গিরিশচন্দ্র ঘোষ (১৮৪৪–১৯১২), দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩–১৯১৩), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১), ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ (১৮৬৩–১৯২৭) প্রমুখ কলকাতাকেন্দ্রিক নট ও নাট্যকারগণের হাত ধরে বাংলা নাট্যসাহিত্যে আধুনিকতার সূত্রপাত হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পশ্চিমবঙ্গের বাংলা নাটকে যা বাস্তবমুখী গণনাট্য ও নবনাট্য ধারার সূচনা হয় তার পুরোধা ব্যক্তিত্বরা ছিলেন তুলসী লাহিড়ী (১৮৯৭–১৯৫৯), বিজন ভট্টাচার্য (১৯১৫–১৯৭৮), উৎপল দত্ত (১৯২৯–১৯৯৩), শম্ভু মিত্র (১৯১৫–১৯৯৭), তৃপ্তি মিত্র (১৯২৪–১৯৮৯) প্রমুখ নাট্যব্যক্তিত্বেরা। বাংলা নাটকের এই ঐতিহ্য বর্তমানে বহন করছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৫), মনোজ মিত্র (জন্ম ১৯৩৮), শাঁওলি মিত্র, ব্রাত্য বসু প্রমুখেরা। নাট্য গবেষণার উন্নতিকল্পে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি স্থাপন করেছে। কলকাতার উল্লেখযোগ্য নাট্যমঞ্চগুলি হল স্টার থিয়েটার, মিনার্ভা থিয়েটার, মহাজাতি সদন, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ ও গিরিশ মঞ্চ।
১৯৮৪ সালে নান্দীকার জাতীয় নাট্যোৎসব শুরু হয়। এটি একটি বার্ষিক নাট্যোৎসব। নান্দীকার নাট্যদল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের মঞ্চে এই উৎসব আয়োজন করে।
চলচ্চিত্র
বাংলা চলচ্চিত্র ও মূলধারার হিন্দি চলচ্চিত্র কলকাতায় সমান জনপ্রিয়। শহরের ফিল্ম স্টুডিও টালিগঞ্জে অবস্থিত; এই কারণে বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকে "টলিউড" নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। সত্যজিৎ রায় (১৯২১–১৯৯২) কলকাতার একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৯১ সালে তিনি তার সারা জীবনের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ অস্কার পুরস্কার পেয়েছিলেন। tতার জন্ম ও কর্মস্থল ছিল কলকাতা। সেই জন্য তার বহু ছবিতে কলকাতার জীবনযাত্রার ছবি ধরা পড়েছে। ১৯৭০-এর দশকে সত্যজিৎ রায় সমকালীন কলকাতাকে আর্থ-সামাজিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে নির্মিত তিনটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন। এগুলি হল প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৭০), সীমাবদ্ধ (১৯৭১) ও জন অরণ্য (১৯৭৫)। এই তিনটি ছবি "কলকাতা ট্রিলজি" নামে পরিচিত। সত্যজিৎ রায় ছাড়াও একাধিক কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালকের কর্মজীবন গড়ে উঠেছে এই শহরকে কেন্দ্র করেই। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মৃণাল সেন (জন্ম ১৯২৩), তপন সিংহ (১৯২৪-২০০৯), ঋত্বিক ঘটক (১৯২৫–১৯৭৬) এবং আধুনিক চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (জন্ম ১৯৪৪), অপর্ণা সেন (জন্ম ১৯৪৫), গৌতম ঘোষ (জন্ম ১৯৫০) ও ঋতুপর্ণ ঘোষ (৩১ শে আগস্ট, ১৯৬৩-৩০ শে মে, ২০১৩)। কলকাতার বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তম কুমার (১৯২৬–১৯৮০), সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৩৫), সুচিত্রা সেন (১৯২৯-২০১৪), ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯২০–১৯৮৩), অপর্ণা সেন (জন্ম ১৯৪৫), প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ১৯৬২) প্রমুখ।
কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি ভারতের দ্বিতীয় ফিল্ম সোসাইটি। ১৯৪৭ সালে সত্যজিৎ রায় ও চলচ্চিত্র জগৎের অন্যান্য ব্যক্তিত্বেরা এই সোসাইটি স্থাপন করেন। ১৯৮৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নন্দনে "পশ্চিমবঙ্গ চলচ্চিত্র কেন্দ্র" স্থাপন করে। এরপর ১৯৯৫ সালে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়।
স্থাপত্য
কলকাতার অনেক ভবন ও স্থাপনা গথিক, ব্যারোক, রোমান, প্রাচ্য, ও মুঘল স্থাপত্য সহ অন্যান্য ইন্দো-ইসলামীয় শৈলীর মোটিফ দ্বারা সজ্জিত। ঔপনিবেশিক যুগের অনেক উল্লেখযোগ্য ভবনই সুসংরক্ষিত এবং "ঐতিহ্যবাহী ভবন" হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। আবার অনেক ভবনই আজ কালের গহ্বরে বিলীয়মান।
গোর্খা যুদ্ধের (১৮১৪-১৬) স্মৃতিতে নির্মিত অক্টারলোনি মনুমেন্ট (১৮৪৮) মিশরীয়, সিরীয় ও তুর্কি স্থাপত্যরীতির সংমিশ্রণ দেখা যায়। ১৯৬৯ সালে এই স্মৃতিস্তম্ভটি স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত হয়। তাই এখন এটি "শহীদ মিনার" নামে পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় মহাকরণ গ্রিকো-রোমান স্থাপত্যের একটি নিদর্শন। কলকাতায় অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের রাজভবন ইংল্যান্ডের ডার্বিশায়ারের কেডলস্টন হলের আদলে নির্মিত। কলকাতা হাইকোর্টের মূল ভবনটি বেলজিয়ামের ইপ্রেসের ক্লথ হলের আদলে নির্মিত।
কলকাতার আলিপুরে অবস্থিত জাতীয় গ্রন্থাগার হল ভারতের বৃহত্তম গ্রন্থাগার তথা দেশের সর্বজনীন নথিপত্রের অভিলেখাগার। এই গ্রন্থাগারে বাইশ লক্ষেরও বেশি বই সংগৃহীত রয়েছে। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস ও অন্যান্য শিল্প প্রদর্শশালায় নিয়মিত শিল্প প্রদর্শনী আয়োজিত হয়ে থাকে।
জাদুঘর
কলকাতার ভারতীয় সংগ্রহালয় হল এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো জাদুঘর। ১৮১৪ সালে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে ভারতের প্রাকৃতিক ইতিহাস ও ভারতীয় শিল্পকলার এক বিরাট সংগ্রহ সংরক্ষিত আছে। কলকাতার আর একটি উল্লেখযোগ্য দ্রষ্টব্য স্থল হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। এটি ১৯২১ সালে যুক্তরাজ্যের সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিসৌধ হিসেবে স্থাপিত হয়েছিল। সৌধটি বেলফাস্ট সিটি হলের আদলে নির্মিত। এর মধ্যে ইতালীয় রেনেসাঁ, ইন্দো-সারাসেনীয় ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণ দেখা যায়। বর্তমানে এটি একটি জাদুঘর ও প্রদর্শশালা। কলকাতার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘরগুলি হল রাজ্য পুরাতত্ত্ব সংগ্রহালয় বেহালা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আশুতোষ সংগ্রহশালা, স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক বাসভবন, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, নেতাজি ভবন ইত্যাদি।
শিল্পকলা
কলকাতার কালীঘাটের পট চিত্রকলা ভারতীয় শিল্পের একটি স্বতন্ত্র ঘরানা। কালীঘাট মন্দিরের কাছে উনিশ শতকে এই চিত্রশিল্প বিকাশ লাভ করেছিল। সেই সময় তীর্থযাত্রীরা স্মারক হিসেবে এই ছবিগুলি কিনে নিয়ে যেত। হিন্দু দেবদেবী, পৌরাণিক ঘটনাবলি ও সমসাময়িক নানা ঘটনাকে এক বিশেষ ধরনের ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলাই ছিল এই ঘরানার বৈশিষ্ট্য।
বিশ শতকের গোড়ার দিকে কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে "বেঙ্গল স্কুল অফ আর্ট" চিত্রশিল্পের বিশেষ এক ঘরানার জন্ম হয়। এই শিল্পকলার পুরোধাপুরুষ ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ক্যালকাটা স্কুল অফ আর্টের প্রভাবে মুঘল চিত্রকলা ও পাশ্চাত্য শিল্পীরীতির মিশ্রণ ঘটিয়ে বাংলা চিত্রকলার এই নিজস্ব ঘরানাটির জন্ম দেন। পরবর্তীকালে গণেশ পাইন, বিকাশ ভট্টাচার্য প্রমুখ শিল্পীরা এই ঘরানার দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হন।
উৎসব
কলকাতার উৎসবগুলি প্রকৃতিগতভাবে দুই প্রকার। যথা: ধর্মীয় উৎসব ও ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। কলকাতার জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় হিন্দু উৎসবগুলি এই শহরে সর্বাধিক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে থাকে। দুর্গাপূজা কলকাতার বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে আশ্বিন-কার্তিক মাসে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতার দুর্গাপূজা শহরের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণও বটে। হিন্দুদের অন্যান্য উৎসবগুলির মধ্যে লক্ষ্মীপূজা, কালীপূজা, জগদ্ধাত্রী পূজা, পৌষ সংক্রান্তি, সরস্বতী পূজা, শিবরাত্রি, দোলযাত্রা, পয়লা বৈশাখ, রথযাত্রা, জন্মাষ্টমী ও বিশ্বকর্মা পূজা;এবং অবাঙালি হিন্দুদের উৎসবগুলির মধ্যে দীপাবলি, ধনতেরস ও ছটপূজা সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামি উৎসবগুলির মধ্যে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, মহরম, শবেবরাত ইত্যাদি; খ্রিষ্টান উৎসবগুলির মধ্যে বড়দিন ও গুড ফ্রাইডে; বৌদ্ধ উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা; জৈন উৎসব মহাবীর জয়ন্তী এবং শিখ উৎসব গুরু নানক জয়ন্তীও মহাসমারোহে পালিত হয়।
কলকাতার ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবগুলির মধ্যে সর্বপ্রধান হল আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী পঁচিশে বৈশাখ। এছাড়া কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব, নান্দীকারের জাতীয় নাট্যমেলা, বিভিন্ন আঞ্চলিক ও ছোটো বইমেলা ইত্যাদিও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়। কলকাতার চায়নাটাউনে প্রবাসী চীনাদের চৈনিক নববর্ষ উৎসবও কলকাতার অন্যতম দ্রষ্টব্য উৎসব। প্রতি বছর জুন মাসে কলকাতায় সমকামীদের গৌরব পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়; কলকাতার এই পদযাত্রা ভারতের প্রথম গৌরব পদযাত্রা।
খাদ্যাভ্যাস
কলকাতার বাঙালিদের প্রধান খাদ্য ভাত ও মাছ। এর সঙ্গে রসগোল্লা ও সন্দেশ নামে দুই ধরনের মিষ্টি ও মিষ্টি দই বাঙালিরা বিশেষ পছন্দ করে। চিংড়ি ও সামুদ্রিক মাছ ইলিশ দিয়ে রান্না করা বিভিন্ন রকম পদও বাঙালিদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়। পথখাদ্যের মধ্যে বেগুনি, রোল (চিকেন, মাটন, এগ বা সবজি), ফুচকা বিশেষ জনপ্রিয়। চায়নাটাউনের চীনা খাবারও বেশ জনপ্রিয়। কলকাতার অধিবাসীদের মধ্যে মিষ্টি খাবার চল বেশি। বিশেষত সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে মিষ্টির বিশেষ চাহিদা দেখা যায়।
পোশাক-পরিচ্ছদ
কলকাতার পুরুষদের মধ্যে পাশ্চাত্য পোশাক পরার চল থাকলেও মহিলাদের মধ্যে সাধারণত ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। পুরুষেরা শার্ট, টি-শার্ট, ট্রাউজার্স, জিনস প্রভৃতি পরতে অভ্যস্ত। তবে উৎসবে অনুষ্ঠানে ধুতি-পাঞ্জাবি অথবা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরার চলই বেশি। অন্যদিকে মহিলারা শাড়ি অথবা সালোয়ার-কামিজ পরেন। ধর্মপ্রাণ মুসলিম মহিলাদের বোরকা পরতেও দেখা যায়। অবশ্য তরুণীদের মধ্যে পাশ্চাত্য পোশাকও সমান জনপ্রিয়।
শিক্ষাব্যবস্থা
কলকাতার বিদ্যালয়গুলি রাজ্য সরকার অথবা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত। এই সংস্থাগুলির মধ্যে বেশ অনেকগুলিই ধর্মীয় সংগঠন। কলকাতায় শিক্ষাদানের প্রাথমিক ভাষা হল বাংলা ও ইংরেজি। তবে মধ্য কলকাতার কয়েকটি বিদ্যালয়ে হিন্দি ও উর্দুতেও শিক্ষাদান করা হয়। কলকাতার বিদ্যালয়গুলি "১০+২" পরিকল্পনা অনুসরণ করে। মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করার পর ছাত্রছাত্রীরা প্রধানত পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বা ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইসিএসই) অথবা কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (সিবিএসই) কর্তৃক অনুমোদিত এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার উপযুক্ত পরিকাঠামোযুক্ত বিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হয়। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে তারা মূলত মানবীয় বিদ্যা, বাণিজ্য বা বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নেন। বৃত্তিমূলক কর্মসূচিগুলিও এখানে সুলভ। কলকাতার কয়েকটি বিদ্যালয় সারা দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম। এগুলির মধ্যে লা মার্টিনিয়ার ক্যালকাটা, ক্যালকাটা বয়েজ’ স্কুল, সেন্ট জেমস’ স্কুল, সেন্ট জেভিয়ার'স কলেজিয়েট স্কুল ও লোরেটো হাউজ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
২০১০ সালের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা মহানগর অঞ্চলে রাজ্য সরকার পরিচালিত মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ১৪টি। কলকাতার প্রত্যেকটি কলেজ কলকাতায় অথবা ভারতের অন্যত্র অবস্থিত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুমোদিত। ১৭৮০ সালে মোহামেডান কলেজ অফ ক্যালকাটা নামে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ছিল শহরের সবচেয়ে পুরনো উত্তর-মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এটি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত। ১৮৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হল দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৮১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হিন্দু কলেজ ভারতের সবচেয়ে পুরনো সুবিখ্যাত কলেজগুলির অন্যতম। ১৮৫৫ সালে এই কলেজটির নাম বদলে প্রেসিডেন্সি কলেজ রাখা হয়। ২০১০ সাল পর্যন্ত কলেজটি ছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত। ওই বছরই কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে উন্নীত হয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নামে চিহ্নিত হয়। হাওড়ার ভারতীয় প্রকৌশল বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ভারতের প্রথম ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা আইআইইএসটি স্তরে উন্নীত হয় এবং জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘোষিত হয়। ১৯৬১ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম শহরতলির জোকায় প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট ক্যালকাটা দেশের ম্যানেজমেন্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সর্বাগ্রে স্থাপিত। ২০০৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় বৈদেশিক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কলকাতায় স্থাপিত পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় আইনবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় হল ভারতের অন্যতম স্বশাসিত আইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট হল একটি সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান তথা বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পূর্বতন নাম পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) হল ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির সংখ্যার নিরিখে ভারতের বৃহত্তম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
যে সকল স্বনামধন্য বিদ্বজ্জন কলকাতায় জন্মগ্রহণ, পড়াশোনা বা কাজ করেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদার্থবিদ সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা, ও জগদীশচন্দ্র বসু; রসায়নবিদ প্রফুল্লচন্দ্র রায়; পরিসংখ্যানবিদ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ ও অনিল কুমার গাঁই; চিকিৎসক উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী; শিক্ষাবিদ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়; এবং নোবেল পুরস্কারজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চন্দ্রশেখর বেঙ্কট রমন, ও অমর্ত্য সেন.
ভারতের বিভিন্ন অগ্রণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বৃহত্তর কলকাতায় অবস্থিত। এগুলির মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স (আইএসিএস), ভারতীয় রাসায়নিক জীববিজ্ঞান সংস্থা (আইআইসিবি), ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থান, কলকাতা (আইআইএসইআর), বসু বিজ্ঞান মন্দির, সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স (এসআইএনপি), অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ (এআইআইএইচপিএইচ), সেন্ট্রাল গ্লাস অ্যান্ড সেরামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিজিসিআরআই), সত্যেন্দ্রনাথ বসু জাতীয় মৌলিক বিজ্ঞান কেন্দ্র (এসএনবিএনসিবিএস), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (আইআইএসডব্লিউবিএম), ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাকিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এনআইপিইআর), ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার (ভিইসিসি) ও ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স (আইসিএসপি)। নোবেল পুরস্কারজয়ী পদার্থবিদ চন্দ্রশেখর বেঙ্কট রমন রমন এফেক্টের উপর তার প্রসিদ্ধ কাজটি করেছিলেন আইএসিএস-এ।
গণমাধ্যম
সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র
ভারতের প্রথম সংবাদপত্র বেঙ্গল গেজেট ১৭৮০ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। কলকাতার জনপ্রিয় বাংলা সংবাদপত্রগুলি হল আনন্দবাজার পত্রিকা, বর্তমান, সংবাদ প্রতিদিন, আজকাল, দৈনিক স্টেটসম্যান ও গণশক্তি। দ্য স্টেটসম্যান ও দ্য টেলিগ্রাফ হল দুটি ইংরেজি সংবাদপত্র যা কলকাতা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। এছাড়া দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য হিন্দু, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এশিয়ান এজ কলকাতার অপর কয়েকটি জনপ্রিয় ইংরেজি সংবাদপত্র। পূর্ব ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যকেন্দ্র কলকাতা থেকে বেশ কয়েকটি ব্যবসা-বিষয়ক দৈনিকও প্রকাশিত হয়। এগুলির মধ্যে দি ইকোনমিক টাইমস, দ্য ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস, বিজনেস লাইন ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। হিন্দি, উর্দু, গুজরাতি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি ও চীনা প্রভৃতি ভাষাতেও সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। সাময়িকপত্রগুলির মধ্যে দেশ, সানন্দা, সাপ্তাহিক বর্তমান, নবকল্লোল, আনন্দলোক ইত্যাদি বিনোদনের পত্রিকা এবং আনন্দমেলা, কিশোর ভারতী, শুকতারা,সন্দেশ ইত্যাদি কিশোর মাসিক-পাক্ষিক-ত্রৈমাসিক পত্রিকা জনপ্রিয়। দীর্ঘকাল ধরে কলকাতা বাংলা লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের একটি কেন্দ্র।.
বেতার ও টেলিভিশন
কলকাতার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বেতার সম্প্রচার সংস্থাটি হল আকাশবাণী। শহরে আকাশবাণীর বেশ কয়েকটি এএম রেডিও স্টেশন আছে। কলকাতায় ১২টি স্থানীয় রেডিও স্টেশন আছে, যেগুলি এফএম-এ বেতার সম্প্রচার করে থাকে। এগুলির মধ্যে দুটি আকাশবাণীর স্টেশন। ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিভিশন সম্প্রচার সংস্থা হল দূরদর্শন। দূরদর্শন দুটি ফ্রি-টু-এয়ার টেরেস্ট্রিয়াল চ্যানেল চালায়। এছাড়া কেবল টেলিভিশন, ডাইরেক্ট-ব্রডকাস্ট স্যাটেলাইট সার্ভিস বা ইন্টারনেট-ভিত্তিক টেলিভিশনের মাধ্যমে একাধিক বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি ও অন্যান্য আঞ্চলিক চ্যানেল দেখা যায়। বাংলা ২৪ ঘণ্টার টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলগুলির মধ্যে এবিপি আনন্দ, তারা নিউজ, কলকাতা টিভি, ২৪ ঘণ্টা, এনই বাংলা, নিউজ টাইম ও চ্যানেল ১০ উল্লেখযোগ্য।
পরিবহন
কলকাতায় গণপরিবহন পরিষেবা দেয় কলকাতা শহরতলি রেল, কলকাতা মেট্রো, ট্রাম ও বাস। শহরতলি রেল কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির শহরগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। হুগলি নদীর উপর অবস্থিত হাওড়া সেতু (রবীন্দ্র সেতু) ও বিদ্যাসাগর সেতু (দ্বিতীয় হুগলি সেতু) কলকাতার সঙ্গে হাওড়া শহরের যোগাযোগ রক্ষা করছে।
সড়ক পরিবহন
কলকাতায় বাস পরিষেবা সরকারি ও বেসরকারে উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে থাকে। কলকাতার সরকারি বাস পরিবহন সংস্থাগুলি হল পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম ও দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা। কলকাতার ট্রাম পরিষেবার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগমের উপর ন্যস্ত রয়েছে। উল্লেখ্য, কলকাতা ভারতের একমাত্র শহর যেখানে ট্রাম পরিষেবা অদ্যাবধি বিদ্যমান। তবে শহরের কয়েকটি অঞ্চলে শ্লথগতির ট্রাম চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হয়েছে। বর্ষাকালে অত্যধিক বৃষ্টিতে জল জমে মাঝে মাঝেই শহরের পরিবহন ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করে থাকে।
কলকাতার পরিবহন ব্যবস্থার অপর এক বিশিষ্ট মাধ্যম হল ট্যাক্সি। কলকাতার ট্যাক্সিগুলি হলুদ রঙের হয়ে থাকে। অন্যান্য শহরে যখন টাটা ইন্ডিকা বা ফিয়েট গাড়ি ট্যাক্সি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে কলকাতার অধিকাংশ ট্যাক্সিই হিন্দুস্তান অ্যাম্বাস্যাডার মডেলের। কোনো কোনো নির্দিষ্ট রুটে অটোরিকশাও চলাচল করে। স্বল্পদুরত্বের যাত্রীরা অনেক সময় সাইকেল রিকশা ও হস্তচালিত রিকশাও ব্যবহার করে থাকেন। কলকাতায় বিভিন্ন রকমের গণ পরিবহন মাধ্যম সুলভ বলে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য শহরের তুলনায় অল্পই। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে শহরে নথিভুক্ত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে; ২০০২ সালের একটি তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ববর্তী সাত বছরে এই বৃদ্ধির হার ছিল ৪৪ শতাংশ। জনঘনত্বের তুলনায় শহরে রাস্তার পরিমাণ মাত্র ৬ শতাংশ। এর ফলে তীব্র যানজট শহরে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। উল্লেখ্য, এই হার দিল্লিতে ২৩ শতাংশ ও মুম্বইতে ১৭ শতাংশ।
রেলপথ
কলকাতা শহরকে রেল পরিষেবা দেয় ভারতীয় রেলের চারটি টার্মিনাল স্টেশন হাওড়া জংশন, শিয়ালদহ, শালিমার ও কলকাতা। এর মধ্যে শিয়ালদহ ও কলকাতা স্টেশন কলকাতা শহরে এবং হাওড়া ও শালিমার স্টেশন হাওড়া শহরে অবস্থিত। এগুলি ছাড়াও কলকাতায় আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রেলওয়ে স্টেশন আছে। এগুলি হল: বিধাননগর রোড, দমদম জংশন, গড়িয়া, ইডেন গার্ডেনস ইত্যাদি। ভারতীয় রেলের দুটি অঞ্চলের সদর কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত। এগুলি হল: পূর্ব রেল ও দক্ষিণ পূর্ব রেল।
চক্ররেল
মেট্রো
বিমান
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কলকাতার একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ১৭ কিলোমিটার উত্তরে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার দমদমে অবস্থিত। এই বিমানবন্দর থেকে আভ্যন্তরিণ ও আন্তর্জাতিক দুই ধরনের উড়ানই চালু আছে। বেহালা বিমানবন্দর কলকাতার একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। এটি কলকাতার বেহালা অঞ্চলে অবস্থিত।
জলপথ
কলকাতা পূর্ব ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদীবন্দর। কলকাতা ও কলকাতার সহকারী হলদিয়া বন্দরের দায়িত্ব কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত। এই বন্দর থেকে শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারে যাত্রী পরিষেবা এবং ভারতের অন্যান্য বন্দর ও বিদেশে পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়া কলকাতা ও হাওড়া শহরের মধ্যে একটি ফেরি পরিষেবাও চালু আছে।
নাগরিক পরিষেবা
কলকাতা পৌরসংস্থা শহরের পানীয় জলের প্রধান সরবরাহকারী। হুগলি নদী থেকে সংগৃহীত জল উত্তর চব্বিশ পরগনার পলতার পাম্পিং স্টেশনে পরিশোধিত করে সমগ্র শহরে পানীয় জল হিসেবে সরবরাহ করে হয়। প্রতিদিন প্রায় ২৫০০ টন কঠিন বর্জ্য কলকাতার পূর্ব দিকে অবস্থিত ধাপায় ফেলা হয়ে থাকে। এই বর্জ্যভূমিতে বর্জ্য পদার্থ ও নোংরা জলের প্রাকৃতিক পুনর্নবীকরণের জন্য চাষাবাদও করা হয়ে থাকে। শহরের অনেক অঞ্চলেই অনুন্নত পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থার কারণে অস্বাস্থ্যকর উপায়ে বর্জ্য নিঃসরণ করা হয়ে থাকে। শহরাঞ্চলে ও শহরতলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে যথাক্রমে ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ নামে দুই সরকারি সংস্থা। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত কলকাতাবাসীদের উপর্যুপরি লোডশেডিং-এর যন্ত্রণা ভোগ করতে হত। যদিও বর্তমানে অবস্থার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, তবে এখনও মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে থাকে। পশ্চিমবঙ্গ দমকল পরিষেবার অধীনে কলকাতায় ২০টি দমকল কেন্দ্র রয়েছে। এগুলি বছরে গড়ে ৭,৫০০টি অগ্নিসংযোগ ও উদ্ধারকার্যের জন্য ডাক পায়।
কলকাতার প্রধান টেলিফোন ও মোবাইল ফোন পরিষেবা সরবরাহকারী হল সরকারি সংস্থা ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) এবং ভোডাফোন আইডিয়া, ভারতী এয়ারটেল, রিলায়েন্স জিও, টাটা ইন্ডিকম, ইউনিনর, ভার্জিন মোবাইল ও এমটিএস ইন্ডিয়া সহ একাধিক বেসরকারি সংস্থা। শহরে জিএসএম ও সিডিএমএ সহ সুপ্রসারিত সেলুলার কভারেজ সুলভ। বিএসএনএল, ভোডাফোন আইডিয়া, এয়ারটেল, রিলায়েন্স জিও প্রভৃতি সংস্থা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহ করে থাকে।
স্বাস্থ্য পরিষেবা
২০১১ সালের হিসেব অনুসারে, কলকাতায় ৪৮টি সরকারি হাসপাতাল ও ৩৬৬টি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র আছে। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনস্থ। কলকাতার হাসপাতালগুলির মোট শয্যাসংখ্যা ২৭,৬৮৭। প্রতি ১০,০০০ মানুষে কলকাতায় হাসপাতাল শয্যাসংখ্যার অনুপাত ৬১.৭। জাতীয় স্তরে এই অনুপাত প্রতি ১০,০০০ নাগরিকে ৯ জন। সেই হিসেবে এটি জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। কলকাতায় দশটি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ আছে। এগুলি কলকাতা মহানগর অঞ্চলের মধ্যে রাজ্যের টার্টিয়ারি রেফারাল হাসপাতাল হিসেবে কাজ করে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছিল ১৮৩৫ সালে। এটিই এশিয়ার প্রথম আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে কলকাতার স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থাকে যথেষ্ট মনে করা হয় না। কলকাতার অধিবাসীদের ৭৫% বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিকে বেশি পছন্দ করেন।জন্য সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার নিম্নমান, অপ্রতুলতা ও দীর্ঘসূত্রতাকে দায়ী করা হয়।
২০০৫ সালের জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুসারে, কলকাতার অধিবাসীদের একটি ছোট অংশই কোনোরকম স্বাস্থ্য স্কিম বা স্বাস্থ্য বিমা পরিষেবার আওতাভুক্ত। কলকাতার শিশু জন্ম হার ১.৪। এই হার সমীক্ষার অন্তর্গত আটটি মহানগরের মধ্যে সর্বনিম্ন। কলকাতার ৭৭% বিবাহিত মহিলা জন্মনিরোধক ব্যবহার করেন। এই হার সমীক্ষার অন্তর্গত শহরগুলির মধ্যে সর্বাধিক। তবে কলকাতায় আধুনিক জন্মনিরোধকের ব্যবহারের হার সর্বনিম্ন (৪৬%)। কলকাতায় প্রসবকালীন শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০-এ ৪১। পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০-এ ৪৯।
২০০৫ সালের একটি সমীক্ষার অন্তর্গত শহরগুলির মধ্যে শিশুদের বিশ্বজনীন টীকাকরণ কর্মসূচির অধীনে টীকা না পাওয়া শিশুদের হারে কলকাতার স্থান দ্বিতীয় (৫%)। সুসংহত শিশু উন্নয়ন পরিষেবা কর্মসূচিতে "অঙ্গনওয়াড়ি" কেন্দ্রে যোগাযোগের ব্যাপারে কলকাতার স্থান দ্বিতীয়। কলকাতা ০ থেকে ৭১ মাস বয়সী শিশুদের ৫৭% অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যুক্ত হয়। অপুষ্টি, অ্যানিমিয়া ও কম ওজনজনিত সমস্যায় ভোগা শিশুদের অনুপাত কলকাতায় সমীক্ষার অন্যান্য শহরের তুলনায় কম।
কলকাতার প্রায় ৩০% নারী ও ১৮% পুরুষ অতিরিক্ত মেদজনিত সমস্যায় ভোগেন। এদের একটি বড় অংশ সমাজের সচ্ছল অংশের মানুষ। ২০০৫ সালের হিসেব অনুসারে, সমীক্ষাকৃত শহরগুলির মধ্যে কলকাতায় অ্যানিমিয়াগ্রস্থ নারীর শতাংশ হার সর্বাধিক (৫৫%)। পুরুষদের মধ্যে এই হার ২০%। ডায়াবেটিস, হাঁপানি, বাত ও অন্যান্য থাইরয়েড-সংক্রান্ত অসুখে ভোগা মানুষও অনেক আছেন। কলকাতায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, চিকনগুনিয়া ইত্যাদি অসুখ বেশি দেখা যায়। তবে এই জাতীয় অসুখে অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। কলকাতা ভারতের সেই জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম যেখানে এইডস-আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সর্বাধিক। কলকাতা জেলাকে এইডস রোগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বিপজ্জনক অঞ্চল মনে করা হয়।
খেলাধুলা
ফুটবল, ক্রিকেট ও ফিল্ড হকি কলকাতার জনপ্রিয় খেলা। কলকাতা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম প্রধান কর্মকেন্দ্র। ভারতের অন্যান্য শহরের তুলনায় এখানে মানুষদের মধ্যে ফুটবল নিয়ে উন্মাদনা খুব বেশি বরাবরই। এই শহর "ভারতীয় ফুটবলের মক্কা" নামেও পরিচিত। ১৮৯৮ সালে চালু হওয়া কলকাতা ফুটবল লিগ এশিয়ার প্রাচীনতম ফুটবল লিগ। ভারতের অন্যতম প্রধান তিন জাতীয় দল মোহনবাগান, মহমেডান ও ইস্টবেঙ্গল কলকাতারই তিন ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব। এছাড়াও ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব এই শহরেরই আই-লিগে অংশগ্রহণকারী স্বনামধন্য ফুটবল ক্লাব। মোহনবাগান শুধুমাত্র এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ফুটবল ক্লাবই নয়, এটি "ভারতের জাতীয় ক্লাব" আখ্যাপ্রাপ্ত একমাত্র ক্লাব। মোহনবাগান ও ইষ্টবেঙ্গলের মধ্যে ফুটবল ম্যাচ কলকাতায় কলকাতা ডার্বি নামে পরিচিত। ম্যাচগুলোতে দর্শকদের উৎসাহ উত্তেজনা দেখবার মতন থাকে।
শাহরুখ খানের মালিকানাধীন "ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ" (আইপিএল) ক্রিকেট দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের কেন্দ্রও কলকাতায় অবস্থিত।
ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের মতো কলকাতাতে ক্রিকেট অত্যন্ত জনপ্রিয়। শহরের মাঠেঘাটে ও রাস্তায় ক্রিকেট খেলার রেওয়াজ রয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন প্রভৃতি বহির্দ্বার এবং ক্যারাম প্রভৃতি অন্তর্দ্বার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কলকাতায় নিয়মিত আন্তঃঅঞ্চল ও আন্তঃক্লাব পর্যায়ে আয়োজিত হয়ে থাকে। কলকাতা ময়দানে একাধিক ছোটোখাটো ফুটবল ও ক্রিকেট ক্লাব এবং প্রশিক্ষণ সংস্থা অবস্থিত। কলকাতার উল্লেখযোগ্য ক্রীড়া ব্যক্তিত্বগণ হলেন প্রাক্তন ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও পঙ্কজ রায় এবং অলিম্পিক টেনিস ব্রোঞ্জ পদকজয়ী লিয়েন্ডার পেজ। কলকাতার ফুটবল তারকাদের মধ্যে উল্লেখনীয় হলেন প্রাক্তন অলিম্পিক পদকজয়ী শৈলেন মান্না, চুনী গোস্বামী, প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ এবং বর্তমান কালের ভারতীয় জাতীয় ফুটবল তারকা বাইচুং ভুটিয়া। শাহরুখ খানের মালিকানাধীন "ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ" (আইপিএল) ক্রিকেট দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের কেন্দ্রও কলকাতায় অবস্থিত।
কলকাতা একাধিক বৃহদাকার স্টেডিয়ামের জন্য সুবিখ্যাত। ইডেন গার্ডেন্স বহুকাল পর্যন্ত বিশ্বের দুটিমাত্র ১০০,০০০-আসনবিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একটি বলে গণ্য হত। ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য সংস্কারের পর বর্তমানে আসনসংখ্যা ১,০০,০০০ র থেকে কমে গেছে। বর্তমানে এটি ভারতের বৃহত্তম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম | বিধাননগরের বহুমুখী-ব্যবহারোপযোগী বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন (বা সল্টলেক স্টেডিয়াম) বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম। ক্যালকাটা ক্রিকেট অ্যান্ড ফুটবল ক্লাব বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ক্রিকেট ক্লাব। রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাব, টালিগঞ্জ ক্লাব ও ফোর্ট উইলিয়ামে কলকাতার তিনটি ১৮-হোলবিশিষ্ট গলফ কোর্স অবস্থিত। রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাব ব্রিটেনের বাইরে বিশ্বের প্রথম গল্ফ ক্লাব। রয়্যাল ক্যালকাটা টার্ফ ক্লাব শহরে নিয়মিত ঘোড়দৌড় ও পোলো ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। ক্যালকাটা পোলো ক্লাব বর্তমানে বিশ্বের প্রাচীনতম পোলো ক্লাব হিসেবে পরিগণিত হয়। অন্যদিকে ক্যালকাটা সাউথ ক্লাব কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক টেনিস প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানস্থল। এখানে ১৯৪৬ সালে প্রথম গ্লাস-কোর্ট ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচ খেলা হয়েছিল। ২০০৫-২০০৭ সাল নাগাদ উইমেনস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন ট্যুরের টায়ার-থ্রি টুর্নামেন্ট সানফিস্ট ওপেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল। তার পর থেকে সেটি আর চালু হয়নি।
ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব নিয়মিত নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে। রাগবি কলকাতার একটি অপ্রধান খেলা হলেও এই শহরকে ভারতের রাগবি ইউনিয়নের "রাজধানী" আখ্যা দেওয়া হয়, যা ক্যালকাটা কাপ নামে পরিচিত। রাগবি ইউনিয়নের প্রাচীনতম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ক্যালকাটা কাপের নাম এই শহরের নামানুসারেই উদ্ভূত। কাপটি ভারতে নির্মিত হয়ে থাকে। কলকাতার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্টেডিয়ামগুলি হল রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম এবং বেহালার প্রস্তাবিত সত্যজিৎ রায় ইন্ডোর ও আউটডোর স্টেডিয়াম। পূর্ব ভারতের অটোমোবাইল অ্যাশোসিয়েশন, যে ১৯০৪ সালে তৈরি হয়েছিল, এবং বেঙ্গল মোটর স্পোর্টস ক্লাব কলকাতায় মোটর স্পোর্টস এবং র্যালি করায় কলকাতায় তাদের প্রোমোশনের জন্য। বেইটন কাপ, আরেকটি ইভেন্ট যা বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনের দ্বারা পরিচালনা করা হয় এবং যা প্রথম খেলা হয়েছিল ১৮৯৫ সালে, হল ভারতের সবথেকে প্রাচীন ফিল্ড হকি প্রতিযোগিতা, যা প্রধানত ময়দানের মোহনবাগান মাঠ-এ পরিচালনা করা হয়।
বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব
অ
স্বামী অখণ্ডানন্দ (১৮৬৪–১৯৩৭), হিন্দু ধর্মগুরু, রামকৃষ্ণের সাক্ষাৎ শিষ্য, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তৃতীয় সংঘাধ্যক্ষ
গ
অতুলকৃষ্ণ গোস্বামী (১৮৬৭–১৯৪৬), বৈষ্ণব লেখক
চ
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮–১৮৯৪), বাংলা সাহিত্যিক, "সাহিত্যসম্রাট" হিসেবে পরিচিত
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩–১৯৩৮), বাংলা ঔপ্যনাসিক
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৮৯০–১৯৭৭), বাংলা ভাষাবৈজ্ঞানিক
ট
মাদার টেরিজা (১৯১০–১৯৯৭), নোবেলজয়ী সন্ন্যাসিনী ও মিশনারি
ঠ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১), নোবেলজয়ী বাংলা সাহিত্যিক
দ
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩), বাংলা কবি ও নাট্যকার
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮২–১৯২২), বাংলা কবি ও লেখক
প
অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ (১৮৯৬–১৯৭৭), আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের প্রতিষ্ঠতা
ব
অক্ষয়কুমার বড়াল (১৮৬০–১৯১৯), কবি
জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮–১৯৩৭), বাঙালি বিজ্ঞানী
সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪–১৯৭৪), বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী, অধ্যাপক ও লেখক
সুভাষচন্দ্র বসু (১৮৯৭–১৯৪৫), ভারতীয় জাতীয়তাবাদী নেতা, রাজনীতিবিদ ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী
স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩–১৯০২), ভারতীয় সন্ন্যাসী, দার্শনিক ও হিন্দু পণ্ডিত
ম
রমেশচন্দ্র মজুমদার (১৮৮৪–১৯৮০), বাঙালি ঐতিহাসিক
প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ (১৮৯৩–১৯৭২), বাঙালি পরিসংখ্যানবিদ
দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০–১৮৭৩), বাংলা নাট্যকার, নীলদর্পণ নাটকের স্রষ্টা
র
রামকৃষ্ণ (১৮৩৬–১৮৮৬), ভারতীয় সন্ন্যাসী, দক্ষিণেশ্বরের পূজারি
রামমোহন রায় (১৭৭২–১৮৩৩), ভারতীয় ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষা সংস্কারক
সত্যজিৎ রায় (১৯২১–১৯৯২), ভারতবর্ষের চলচ্চিত্রের অন্যতম পুরোধা ও পরিচালক
সুকুমার রায় (১৮৮৭–১৯২৩), বাংলা সাহিত্যিক, সত্যজিৎ রায়ের পিতা
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (১৮৬৩–১৯১৫), বাংলা সাহিত্যিক, সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
ভগিনী শহর
: ওডেসা
: থেসালোনিকি (২১ জানুয়ারি, ২০০৫)
: কুনমিং (অক্টোবর, ২০১৩)
: ইনছন
: করাচি
: ঢাকা
:
জার্সি সিটি
ডালাস
পাদটীকা
আরও পড়ুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
কলকাতা পৌরসংস্থার সরকারি ওয়েবসাইট
কলকাতা মেট্রোপলিটান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সরকারি ওয়েবসাইট
বাংলার মুখ: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি ওয়েবসাইট
পশ্চিমবঙ্গের নগর
প্রাক্তন জাতীয় রাজধানী
বাংলার রাজধানী
ভারতের প্রাক্তন রাজধানী শহর
ভারতের রাজধানী শহর
ভারতের মহানগর
ভারতের বন্দরনগরী
প্রাক্তন জাতির রাজধানী
১৬৯০-এর দশকে ভারতে প্রতিষ্ঠিত
পশ্চিমবঙ্গের মহকুমা | https://en.wikipedia.org/wiki/Kolkata | Kolkata | Kolkata, also known as Calcutta (its official name until 2001), is the capital and largest city of the Indian state of West Bengal. It lies on the eastern bank of the Hooghly River, 80 km (50 mi) west of the border with Bangladesh. It is the primary financial and commercial centre of eastern and northeastern India. Kolkata is the seventh most populous city in India with an estimated city proper population of 4.5 million (0.45 crore) while its metropolitan region Kolkata Metropolitan Area is third most populous metropolitan region of India with metro population of over 15 million (1.5 crore). Kolkata is the regarded by many sources as the cultural capital of India and a historically and culturally significant city in the historic region of Bengal. It is the second largest Bengali-speaking city in the world. It has the highest number of Nobel laureates among all cities in India.
The three villages that predated Calcutta were ruled by the Nawab of Bengal under Mughal suzerainty. After the Nawab granted the East India Company a trading licence in 1690, the area was developed by the Company into Fort William. Nawab Siraj ud-Daulah occupied the fort in 1756 but was defeated at the Battle of Plassey in 1757, after his general Mir Jafar mutinied in support of the company, and was later made the Nawab for a brief time. Under company and later crown rule, Calcutta served as the de facto capital of India until 1911. Calcutta was the second largest city in the British Empire, after London, and was the centre of bureaucracy, politics, law, education, science and the arts in India. The city was associated with many of the figures and movements of the Bengali Renaissance. It was the hotbed of the Indian nationalist movement.
The partition of Bengal in 1947 affected the fortunes of the city. Following independence in 1947, Kolkata, which was once the premier centre of Indian commerce, culture, and politics, suffered many decades of political violence and economic stagnation before it rebounded. In the late 20th century, the city hosted the government-in-exile of Bangladesh during the Bangladesh Liberation War in 1971. It was also flooded with Hindu refugees from East Bengal (present-day Bangladesh) in the decades following the 1947 partition of India, transforming its landscape and shaping its politics. The city was overtaken by Mumbai (formerly Bombay) as India's largest city.
A demographically diverse city, the culture of Kolkata features idiosyncrasies that include distinctively close-knit neighbourhoods (paras) and freestyle conversations (adda). Kolkata's architecture includes many imperial landmarks, including the Victoria Memorial, Howrah Bridge and the Grand Hotel. The city's heritage includes India's only Chinatown and remnants of Jewish, Armenian, Greek and Anglo-Indian communities. The city is closely linked with Bhadralok culture and the Zamindars of Bengal, including Bengali Hindu, Bengali Muslim and tribal aristocrats. The city is often regarded as India's cultural capital.
Kolkata is home to venerable institutions of national importance, including the Academy of Fine Arts, the Asiatic Society, the Indian Museum and the National Library of India. The University of Calcutta, first modern university in south Asia and its affiliated colleges produced many leading figures of South Asia. It is the centre of the Indian Bengali film industry, which is known as Tollywood. Among scientific institutions, Kolkata hosts the Geological Survey of India, the Botanical Survey of India, the Calcutta Mathematical Society, the Indian Science Congress Association, the Zoological Survey of India, the Horticultural Society, the Institution of Engineers, the Anthropological Survey of India and the Indian Public Health Association. The Port of Kolkata is India's oldest operating port. Four Nobel laureates and two Nobel Memorial Prize winners are associated with the city. Though home to major cricketing venues and franchises, Kolkata stands out in India for being the country's centre of association football. Kolkata is known for its grand celebrations of the Hindu festival of Durga Puja, which is recognized by UNESCO for its importance to world heritage. Kolkata is also known as the 'City of Joy'. |
2733 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%B6%20%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%AA%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%B0 | অতীশ দীপঙ্কর | অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি পণ্ডিত যিনি পাল সাম্রাজ্যের আমলে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারক ছিলেন।
জন্ম
তিনি ৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে বিক্রমপুর পরগণার বজ্রযোগিণী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত। অতীশ দীপঙ্করের বাসস্থান এখনও 'পণ্ডিত ভিটা' নামে পরিচিত। অতীশ দীপঙ্কর গৌড়ীয় রাজ পরিবারে রাজা কল্যাণশ্রী ও প্রভাবতীর মধ্যম সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
শৈশব
ছোটবেলায় তার নাম ছিল আদিনাথ চন্দ্রগর্ভ। তিন ভাইয়ের মধ্যে অতীশ ছিলেন দ্বিতীয়। তার অপর দুই ভাইয়ের নাম ছিল পদ্মগর্ভ ও শ্রীগর্ভ। অতীশ খুব অল্প বয়সে বিয়ে করেন। কথিত আছে তার পাঁচ স্ত্রীর গর্ভে মোট ৯টি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। তবে পুন্যশ্রী নামে একটি পুত্রের নামই শুধু জানা যায়।
শিক্ষা
প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন মায়ের কাছে। তিন বছর বয়সে সংস্কৃত ভাষায় পড়তে শেখা ও ১০ বছর নাগাদ বৌদ্ধ ও অবৌদ্ধ শাস্ত্রের পার্থক্য বুঝতে পারার বিরল প্রতিভা প্রদর্শন করেন তিনি। মহাবৈয়াকরণ বৌদ্ধ পণ্ডিত জেত্রির পরামর্শ অনুযায়ী তিনি নালন্দায় শাস্ত্র শিক্ষা করতে যান।
১২ বছর বয়সে নালন্দায় আচার্য বোধিভদ্র তাকে শ্রমণ রূপে দীক্ষা দেন এবং তখন থেকে তার নাম হয় দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বোধিভদ্রের গুরুদেব অবধূতিপাদের নিকট সর্ব শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। ১৮ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বিক্রমশীলা বিহারের উত্তর দ্বারের দ্বারপণ্ডিত নাঙপাদের নিকট তন্ত্র শিক্ষা করেন। এরপর মগধের ওদন্তপুরী বিহারে মহা সাংঘিক আচার্য শীলরক্ষিতের কাছে উপসম্পদা দীক্ষা গ্রহণ করেন। ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের জন্য তিনি পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণগিরি বিহারে গমন করেন এবং সেখানে প্রখ্যাত পণ্ডিত রাহুল গুপ্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বৌদ্ধ শাস্ত্রের আধ্যাত্নিক গুহ্যাবিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণ করে ‘গুহ্যজ্ঞানবজ্র’ উপাধিতে ভূষিত হন।
দীপঙ্কর ১০১১ খ্রিষ্টাব্দে শতাধিক শিষ্যসহ মালয়দেশের সুবর্ণদ্বীপে (বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ) গমন করেন এবং আচার্য ধর্মপালের কাছে দীর্ঘ ১২ বছর বৌদ্ধ দর্শনশাস্ত্রের বিভিন্ন বিষয়ের উপর অধ্যয়ন করে স্বদেশে ফিরে আসার পর তিনি বিক্রমশীলা বিহারে অধ্যাপনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
তিব্বত যাত্রা
গুজ রাজ্যের দ্বিতীয় রাজা ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ নাগ-ত্শো-লো-ত্সা-বা-ত্শুল-খ্রিম্স-র্গ্যাল-বা সহ কয়েক জন ভিক্ষুর হাতে প্রচুর স্বর্ণ উপঢৌকন দিয়ে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বত ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানালে দীপঙ্কর সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। এতে নিরাশ না হয়ে ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ সীমান্ত অঞ্চলে সোনা সংগ্রহের জন্য গেলে কারাখানী খানাতের শাসক তাকে বন্দী করেন ও প্রচুর সোনা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করেন। ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদ তার পুত্র ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদকে মুক্তিপণ দিতে বারণ করেন এবং ঐ অর্থ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বতে আনানোর জন্য ব্যয় করতে বলেন। ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদ গুজ রাজ্যের রাজা হয়ে গুং-থং-পা নামে এক বৌদ্ধ উপাসককে ও আরো কয়েক জন অনুগামীকে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বতে আনানোর দায়িত্ব দেন। এরা নেপালের পথে বিক্রমশীলা বিহারে উপস্থিত হন এবং দীপঙ্করের সাথে সাক্ষাৎ করে সমস্ত সোনা নিবেদন করে ভূতপূর্ব রাজা ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস'-ওদের বন্দী হওয়ার কাহিনী ও তার শেষ ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করলে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অভিভূত হন। আঠারো মাস পরে ১০৪০ খ্রিষ্টাব্দে বিহারের সমস্ত দায়িত্বভার লাঘব করে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বত যাত্রার জন্য প্রস্তুত হন। তিনি বারো জন সহযাত্রী নিয়ে প্রথমে বুদ্ধগয়া হয়ে নেপালের রাজধানীতে উপস্থিত হন এবং নেপালরাজের আগ্রহে এক বছর সেখানে কাটান। এরপর নেপাল অতিক্রম করে থুঙ বিহারে এলে তার সঙ্গী র্গ্যা-লো-ত্সা-বা-ব্র্ত্সোন-'গ্রুস-সেং-গে () অসুস্থ হয়ে মারা যান। ১০৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতে র পশ্চিম প্রান্তের ডংরী প্রদেশে পৌছন। সেখানে পৌছলে ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদ এক রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করে তাকে থোলিং বিহারে নিয়ে যান। এখানে দীপঙ্কর তার বিখ্যাত গ্রন্থ বোধিপথপ্রদীপ রচনা করেন। ১০৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পুরঙে, ১০৪৭ খ্রিষ্টাব্দে সম-য়ে বৌদ্ধ বিহার ও ১০৫০ খ্রিষ্টাব্দে বে-এ-বাতে উপস্থিত হন।
তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার
দীপঙ্কর তিব্বতের বিভিন্ন অংশে ভ্রমণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন। তিনি তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে প্রবিষ্ট তান্ত্রিক পন্থার অপসারণের চেষ্টা করে বিশুদ্ধ মহাযান মতবাদের প্রচার করেন। বোধিপথপ্রদীপ রচনাকে ভিত্তি করে তিব্বতে ব্কা'-গ্দাম্স নামে এক ধর্ম সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়।
রচনা
দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন। তিব্বতের ধর্ম, রাজনীতি, জীবনী, স্তোত্রনামাসহ তাঞ্জুর নামে বিশাল এক শাস্ত্রগ্রন্থ সংকলন করেন। বৌদ্ধ শাস্ত্র, চিকিৎসা বিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা বিষয়ে তিব্বতী ভাষায় অনেক গ্রন্থ রচনা করেন বলে তিব্বতীরা তাকে অতীশ উপাধীতে ভূষিত করে। অতীশ দীপঙ্কর অনেক সংস্কৃত এবং পালি বই তিব্বতী ভাষায় অনুবাদ করেন। দীপঙ্করের রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে বোধিপথপ্রদীপ, চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ, সত্যদ্বয়াবতার, মধ্যমোপদেশ, সংগ্রহগর্ভ, হৃদয়নিশ্চিন্ত, বোধিসত্ত্বমণ্যাবলি, বোধিসত্ত্বকর্মাদিমার্গাবতার, শরণাগতাদেশ, মহযানপথসাধনবর্ণসংগ্রহ, শুভার্থসমুচ্চয়োপদেশ, দশকুশলকর্মোপদেশ, কর্মবিভঙ্গ, সমাধিসম্ভবপরিবর্ত, লোকোত্তরসপ্তকবিধি, গুহ্যক্রিয়াকর্ম, চিত্তোৎপাদসম্বরবিধিকর্ম, শিক্ষাসমুচ্চয় অভিসময় ও বিমলরত্নলেখনা উল্লেখযোগ্য। বিখ্যাত পণ্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এবং ইতালির বিখ্যাত গবেষক গ্যুসেপ তুচ্চি দীপঙ্করের অনেকগুলো বই আবিষ্কার করেন।
মৃত্যু
বৌদ্ধ ধর্মে সংস্কারে তাকে পায়ে হেঁটে ও ঘোড়ায় চড়ে প্রচুর ভ্রমণ করতে হতো। মরু, পাহাড়ি অঞ্চলে রুক্ষ আবহাওয়ায় ধর্ম সংস্কারের মতো শ্রমসাধ্য কাজ করতে করতে দীপঙ্করের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে ১০৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ৭৩ বছর বয়সে লাসা নগরের কাছে চে-থঙের দ্রোলমা লাখাং তারা মন্দিরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরও দেখুন
দীপঙ্কর
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
সেই এক বাঙালি বৌদ্ধ
কদম
পূর্ববঙ্গে জন্ম
বাংলাদেশী বৌদ্ধ
মুন্সীগঞ্জ জেলার ব্যক্তি
বিক্রমপুরের ব্যক্তি
৯৮২-এ জন্ম
১০৫৪-এ মৃত্যু
১০ম শতাব্দীর বাঙালি
১১শ শতাব্দীর বাঙালি
তিব্বতের ইতিহাস
বাংলাদেশে বৌদ্ধধর্ম | https://en.wikipedia.org/wiki/Ati%C5%9Ba | Ati%C5%9Ba | null |
2737 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%20%28%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%29 | কলিকাতা (গ্রাম) | কলিকাতা গ্রাম বা ডিহি কলিকাতা ছিল বাংলার একটি অধুনালুপ্ত জনপদ। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে পরস্পর-সংলগ্ন কলিকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর গ্রাম তিনটিকে কেন্দ্র করে কলকাতা মহানগরীর উত্থান ঘটে। ব্রিটিশ ঐতিহাসিকেরা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রশাসক জব চার্নককে এই শহরের প্রতিষ্ঠাতার মর্যাদা দিয়েছিলেন। জব চার্নক সুতানুটি গ্রামে বসতি স্থাপন করেন।
সুতানুটি ও গোবিন্দপুরের তুলনায় কলিকাতা গ্রামটি ছিল কম গুরুত্বসম্পন্ন। তবে স্থানপ্রাচুর্যের কারণে এই অঞ্চলে ব্রিটিশদের বসতি স্থাপনে বিশেষ সুবিধা হয়। টমাস বাওরের ১৬৮৭ সালের মানচিত্র এবং জর্জ হেরনের ১৬৯০ সালের মানচিত্রে সুতানুটি ও গোবিন্দপুরের উল্লেখ থাকলেও, এই দুই অঞ্চলের মধ্যবর্তী কলিকাতা গ্রামের কোনো উল্লেখ ছিল না। যদিও ১৫৯০ সালে আবুল ফজল তাঁর আইন-ই-আকবরি গ্রন্থে ‘কলকাতা’ নামে একটি স্থানের উল্লেখ করেন।
ইতিহাস
১৬৯০ সালের ২৪ অগস্ট ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাংলা সদর কার্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে জব চার্নক নামে এক ইংরেজ বণিক সুতানুটিতে উপস্থিত হন। কলিকাতা গ্রামে স্থানীয় লোকেদের বসতি না থাকায়, এই গ্রামটি ইংরেজরা সহজেই দখল করে নিতে পারে। ১৬৯৬ সালে কোনোরূপ আইনি অধিকার ব্যতিরেকেই বর্তমান জিপিও অঞ্চলে ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৬৯৮ সালের ১০ নভেম্বর জব চার্নকের জামাতা ও উত্তরাধিকারী চার্লস আয়ার এই অঞ্চলের পূর্বতন জমিদার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের কাছ থেকে কলিকাতা ও তৎসংলগ্ন তিনটি গ্রামের জমিদারি ক্রয় করলে এই অঞ্চলের উপর কোম্পানির আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দিন থেকেই কলকাতায় ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত ঘটে। উল্লেখ্য, আওরঙ্গজেবের অধীনে মুঘল সাম্রাজ্য তখনও শক্তিশালী ছিল।
সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার কবে কলিকাতা গ্রামের জমিদারি লাভ করেন, তা সঠিক জানা যায় না। শোনা যায়, ১৬০৮ সালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের জ্ঞাতিভাই রাজা মানসিংহের কাছ থেকে এক বিশাল ভূসম্পত্তি লাভ করেছিলেন। তবে অন্য মতে, এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা কেবলমাত্র রাজা মানসিংহের প্রশংসাই অর্জন করেছিলেন, কোনো সম্পত্তি লাভ করেননি। এই কারণে ঠিক কতদিন সাবর্ণ রায়চৌধুরীরা কলিকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুরের জমিদারি সত্ত্ব ভোগ করেন, তা জানা যায় না। তবে ১৬৯৮ সালের পূর্বাবধি তাঁরাই এই অঞ্চলের জমিদার ছিলেন এবং মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে কিছু সুযোগসুবিধাও পেতেন। তাঁরা স্বেচ্ছায় এই অঞ্চলের জমিদারি হস্তান্তর করেন, করেছিলেন মুঘল রাজদরবারের চাপে।
কর্নেল মার্ক উডের ১৭৮৪ সালের মানচিত্রে (১৭৯২ সালে উইলিয়াম বেইলি কর্তৃক প্রকাশিত) জোড়াবাগান ঘাট থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত অঞ্চলটিকে ডিহি কলিকাতা নামে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ব্রিটিশরা কলিকাতাকে ‘ক্যালকাটা’ নামে অভিহিত করত। সেই থেকেই এই মহানগর ‘কলিকাতা’ বা ‘ক্যালকাটা’ নাম ধারণ করে।
হোয়াইট টাউন
এইচ. এ. ই. কটন লিখেছেন, “The pivot of the settlement must be sought in what is now Dalhousie Square, but was then known as the Lall Bagh or Park. In the centre was the Lall Dighi, or great Tank, which has been in existence before the coming of Charnock within what was the cutcherry (court-house) of the former zemindars (landlords)… There was no Strand Road, and the waves of the Hooghly lapped the ramparts of the Fort. To the south there extended from Koila Ghat to Chandpal Ghat the mouth of a creek, navigable for large boats, which passed along Hastings Street and made way through Creek Row and Wellington Square to Beliaghata near the Salt Lakes… Beyond Chitpore Road, which formed the eastern boundary of the settlement, lay more pools, swamps and rice-fields, dotted here and there with the struggling huts of fishermen, falconers, wood-cutters, weavers and cultivators.” সংক্ষেপে এই ছিল অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের কলিকাতা। ধীরে ধীরে ব্রিটিশরা সুতানুটি ত্যাগ করে কলিকাতাতেই বসতি স্থাপন করতে শুরু করেন।
পুরনো দুর্গের উত্তরভাগের অঞ্চলটিকে বলা হত ‘হোয়াইট টাউন’। ইংরেজরা এই হোয়াইট টাউনের সীমার মধ্যেই বসবাস করত। সুতানুটি, চিৎপুর ও গোবিন্দপুরের স্থানীয় অধিবাসী-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিকে বলা হত ‘ব্ল্যাক টাউন’। ব্ল্যাক টাউন ও হোয়াইট টাউনের মধ্যে একটা সুস্পষ্ট বিভেদরেখাও বিদ্যমান ছিল।
কলিকাতার যুদ্ধ
১৭৫৬ সালে কলকাতায় দুর্গনির্মাণে বিরক্ত হয়ে নবাব সিরাজদ্দৌল্লা কলিকাতা আক্রমণ করেন। কলিকাতা অধিকারের পর সিরাজ এই শহরের নাম পরিবর্তন করে তাঁর দাদামশায় আলিবর্দি খানের নামানুসারে ‘আলিনগর’ রাখেন। ১৭৫৮ সালে ইংরেজরা কলকাতা পুনরুদ্ধার করলে পুর্বতন নামটিই আবার বহাল হয়। তবে সিরাজের কলকাতা দখল ছিল ইংরেজদের নিকট এক দুঃস্বপ্নের সময়। এই যুদ্ধে গোবিন্দপুর, সুতানুটি, কলিকাতা ও চিৎপুরের মধ্যে কেবলমাত্র ‘হোয়াইট টাউন’ নামে পরিচিত কলিকাতাই সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ‘ব্ল্যাক টাউন’ খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কেবল বড়োবাজারে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল এবং ইংরেজরা গোবিন্দপুর গ্রামটি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। হুগলি নদীর ৪০ কিলোমিটার ভাটিতে ফলতা নামক এক গ্রামে ইংরেজরা পালিয়ে যায়। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে সিরাজদ্দৌল্লার পরাজয় ঘটলে বাংলায় ব্রিটিশ প্রাধান্য সুপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং কলিকাতা এক বিশেষ মর্যাদা লাভ করে।
কলকাতা পুনর্দখলের পর ব্রিটিশরা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ পুনরায় নির্মাণ করেন। গোবিন্দপুর গ্রামটি ধ্বংস করে ফেলা হয়। এই গ্রামের অধিবাসীরা উত্তরের গ্রামগুলিতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে এই অঞ্চলটিই ময়দান নামে পরিচিত।
ময়দানের উত্তরে এসপ্ল্যানেডের দক্ষিণে শহরের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন ও বেশ কিছু বিলাসবহুল ব্যক্তিগত বাড়ি গড়ে ওঠে। মিসেস ফে লিখেছেন, “এসপ্ল্যানেডকে মনে হয় প্রাসাদে নির্মিত।” শহরের শ্বেতাঙ্গ জনসমাজ এরপর চৌরঙ্গীর দিকে সরে আসে। চৌরঙ্গী সেই সময় ছিল একটি ছোটো গ্রাম। বৈঠকখানা, ধর্মতলা, জানবাজারে দেশীয়রা এবং পর্তুগিজ, আর্মেনিয়ান প্রভৃতিরা এসে বসবাস শুরু করেন। এই অঞ্চলটি হোয়াইট ও ব্ল্যাক টাউনের মধ্যে সংযোগস্থল হয়ে ওঠে।
পাদটীকা
বাংলার ইতিহাস
কলকাতার ইতিহাস
কলকাতা জেলার গ্রাম | https://en.wikipedia.org/wiki/Kalikata | Kalikata | Kalikata was one of the three villages which were merged to form the city of Kolkata (formerly Calcutta) in India. The other two villages were Gobindapur and Sutanuti. Job Charnock, an administrator with the British East India Company is traditionally credited with the honour of founding the city. He settled in the village of Sutanuti.
A handful of merchants began their operations by building a few factories near the coastal area, one of which was established near the fishing village Kalikata, which was about a hundred miles above the mouth of the Ganges, known as Hooghly. The factory was erected in the vicinity of the celebrated heathen Kalighat Kali Temple. That fishing village is now the famous city of Kolkata, which had received this appellation from the idol temple. While both Sutanati and Gobindapur appear on old maps like Thomas Bowrey's of 1687 and George Herron's of 1690, Kalikata situated between the two is not depicted. However, one variant of the name, "Kalkatâ", is shown in Abu'l Fazal's Ain-i-Akbari (around 1590).
|
2739 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A7%80%E0%A6%97%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE | মুন্সীগঞ্জ জেলা | মুন্সীগঞ্জ বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। মুন্সীগঞ্জ ঢাকা বিভাগের একটি জেলা। মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন নাম বিক্রমপুর।
অবস্থান ও আয়তন
মুন্সীগঞ্জ জেলার আয়তন ৯৫৪.৯৬ বর্গ কিমি। এর বৃহত্তম থানা- শ্রীনগর (২০৩ বর্গ কিমি), ক্ষুদ্রতম থানা- লৌহজং (১৩০ বর্গ কিমি)। মুন্সীগঞ্জ জেলার উত্তরে ঢাকা জেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে মাদারীপুর জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও পদ্মা নদী, পূর্বে মেঘনা নদী, কুমিল্লা জেলা ও চাঁদপুর জেলা, পশ্চিমে ঢাকা জেলা ও ফরিদপুর জেলা। অবস্থান: ২৩°২৩´ থেকে ২৩°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১০´ থেকে ৯০°৪৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। মোট আয়তন ২৩৫৯৭৪ একর যার মধ্যে ১৩৮৪৭২ একর চাষযোগ্য এবং ৫৬০৯ একর নিচু জমি। মুন্সীগঞ্জ সমতল এলাকা নয়। জেলার কিছু কিছু অঞ্চল যথেষ্ট উচু যদিও জেলায় কোনো পাহাড় নেই। মুন্সীগঞ্জের বেশির ভাগ এলাকা নিম্নভূমি বলে বর্ষায় পানিতে অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে।
ইতিহাস
প্রাচীনকালে নিঃসন্দেহে মুন্সীগঞ্জ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র ছিল। অঞ্চলটি খ্রিস্টীয় দশ শতকের শুরু থেকে তেরো শতকের প্রথম পর্যন্ত চন্দ্র, বর্মন ও সেন রাজাদের রাজধানী ছিল। মুন্সীগঞ্জ উল্লেখ ‘স খলু শ্রী বিক্রমপুর সমাবাসিত শ্রীমজ্জয়স্কন্ধবারাত’ (বিজয় অথবা রাজধানীর রাজকীয় স্থান যা মুন্সীগঞ্জে অবস্থিত)-রূপে শ্রীচন্দ্রের তাম্রশাসনে সর্বপ্রথম দেখা যায় এবং পরবর্তী বর্মন ও সেন রাজবংশের শাসনামলে এ মর্যাদা অব্যাহত ছিল। এমনকি সেনদের শাসনামলে, যাঁরা বলতে গেলে প্রায় সমগ্র বঙ্গের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করেছিলেন, মুন্সীগঞ্জ তাদের রাজধানী রূপে বলবৎ ছিল এবং নদীয়ায় মুসলমান আক্রমণকারী বখতিয়ার খলজীর হাতে পরাজিত হওয়ার পর লক্ষ্মণসেন এ অঞ্চলে এসেছিলেন। তার দুই পুত্র বিশ্বরূপসেন ও কেশবসেন স্বল্পকালের জন্য এ অঞ্চল শাসন করেছিলেন। বিশ্বরূপসেন ও কেশবসেনের তাম্রশাসনগুলিতে রাজধানী রূপে মুন্সীগঞ্জের উল্লেখ না থাকলেও তারা যে ভূমি দান করেছিলেন তার অবস্থান ছিল মুন্সীগঞ্জ ভাগে। এতে এ অঞ্চলের ওপর তাদের কর্তৃত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মুন্সীগঞ্জের খ্যাতি ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিক পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। এসময় দনুজমাধব দশরথদেব কিংবা জিয়াউদ্দীন বরনীর দনুজ রায় সুবর্ণ গ্রামের (সোনারগাঁও) সন্নিকটে তার রাজধানী স্থানান্তর করেন। তখন থেকে সমগ্র সুলতানি আমলে এ অঞ্চলটি বিস্মৃতির পাতায় থেকে যায়। এরপর মোঘল যুগে রাজস্ব তালিকায় শুধু পরগনা হিসেবে এর নামের উল্লেখ পুনরায় দেখা যায়। মোঘল আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জের জমিদার চাঁদ রায় ও কেদার রায় এর (বাংলার বারো ভূঁইয়াদের উল্লেখযোগ্য দুজন) বীরোচিত প্রতিরোধ মুন্সীগঞ্জকে কিছুটা স্বল্পস্থায়ী গৌরব প্রদান করে।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি
১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ ছাত্রজনতা সরকারি অস্ত্রাগার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র লুট করে এবং পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ৯ মে পাকবাহিনী গজারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসিকে গুলি করে হত্যা করে এবং ১৪ মে কেওয়ার এলাকায় হামলা করে কিছুসংখ্যক যুবককে হত্যা করে। এর আগে ৩১ মার্চ পাকবাহিনী নারায়ণগঞ্জ জেলায় আক্রমণ চালালে মুন্সীগঞ্জ জেলার তরুণরা নারায়ণগঞ্জবাসীদের সঙ্গে মিলিতভাবে আক্রমণ প্রতিহত করে। জুলাই মাসে ধলাগাঁও এলাকায় শত শত যুবককে রিক্রুট করে ট্রেনিং দেওয়া হয় এবং তারা বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেয়। ১১ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা শ্রীনগর থানা, ১৪ আগস্ট লৌহজং থানা নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে টংগিবাড়ী থানা আক্রমণ করে প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ হস্তগত করে। মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার শিবরামপুর এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে পাকবাহিনীর তিনটি গানবোট ডুবিয়ে দেয় এবং এতে বেশসংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। গোয়ালিমান্দ্রাতে মুক্তিযোদ্ধারা ৬ জন রাজাকারকে হত্যা করে এবং পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে এক সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৩৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। পাকবাহিনী শেখর নগর গ্রামের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং নিরীহ লোকদের হত্যা করে। ওই বছরের ২৭ রমজান শবে কদর রাতে ১১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকসেনাদের ওপর সম্মিলিত আক্রমণ চালিয়ে মুন্সীগঞ্জ শহর দখল করে নেয়। ৪ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা টংগিবাড়ী থানা দখল করে এতে এলাকাটি ১৫ নভেম্বর তারিখে সম্পূর্ণ হানাদারমুক্ত হয় এবং সবশেষে ১১ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয়।
এক নজরে মুন্সীগঞ্জ
নামকরণ
মোঘল শাসনামলে মুন্সীগঞ্জ এর নাম ছিলো ইদ্রাকপুর। ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ইদ্রাকপুর কেল্লার ফৌজদারের নাম ছিলো ইদ্রাক। ধারণা করা হয় তার নাম অনুসারেই তখন এখানকার নাম হয়েছিলো ইদ্রাকপুর। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময়ে রামপালের কাজী কসবা গ্রামের মুন্সী এনায়েত আলীর জমিদারভুক্ত হওয়ার পর তার মুন্সী নাম থেকে ইদ্রাকপুরের নাম মুন্সীগঞ্জ হিসেবে অভিহিত হয়। আবার অনেকের মতে, মোঘল শাসনামলে এলাকার ফৌজদারী আদালতের প্রধান হায়দার আলী মুন্সীর নামানুসারে মুন্সীগঞ্জ নামের উৎপত্তি।
জলবায়ু
মুন্সীগঞ্জের জলবায়ু সমভাবাপন্ন। তবে আর্দ্রতা ও দূষনযুক্ত এলাকার সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এখানকার জলবায়ু ঋতু বিশেষে পরিবর্তনশীল। শীতকালে শীতের তীব্রতা দেশের অন্যান্য স্থানের মতো তত প্রবল নয়। এলাকাটি নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলভূক্ত।
জনসংখ্যা
মুন্সীগঞ্জ জেলার জনসংখ্যা ১২,৯৩,৯৭২ জন; পুরুষ ৬৫৫৫৮৫ জন ও মহিলা ৬৩৮৩৮৭ জন।
মুসলিম ১১৮১০১২ জন, হিন্দু ১১০৮০৪ জন , বৌদ্ধ ১৯২২ জন , খ্রিস্টান ১০৩ জন এবং অন্যান্য ৩০৮ জন।
শিক্ষা
শিক্ষার হার ৬১.২০%; পুরুষ ৬১.০৮%, মহিলা ৫৯.১২%। কলেজ ১৬টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৮টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৪৯টি, মাদ্রাসা ২৯টি। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কে কে গভঃ ইন্সটিটিউশন (১৯৪২), আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জ (১৮৯২) যা ১৯৯১ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ নির্বাচিত হয়, বিক্রমপুর টংগীবাড়ী সরকারি কলেজ, মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৫) যেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ, মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৬৮), সরকারি হরগঙ্গা কলেজ (১৯৩৮), সরকারি শ্রীনগর কলেজ (১৯৭০), রংমেহার উচ্চ বিদ্যালয় প্রভৃতি।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
মুন্সীগঞ্জ জেলায় ছয়টি উপজেলা রয়েছে। ৬ টি উপজেলার মধ্যে ৬৭ টি ইউনিয়ন রয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা
জনসংখ্যা = ৩,৯৯,৫৬০
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ০৯ টি।
শিলই, আধারা, বাংলাবাজার, পঞ্চসার, রামপাল, বজ্রযোগীনি, চরকেওয়ার, মোল্লাকান্দি, মহাকালি।
টংগিবাড়ী উপজেলা
জনসংখ্যা = ১,৯৭,১৭৩
টংগিবাড়ী উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ১৩ টি।
রংমেহার, পাঁচগাও, কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া, সোনারং-টংগিবাড়ী, বেতকা, আব্দুল্লাপুর, যশলং, কামারখাড়া, দিঘিরপাড়, হাসাইল-বানারী, আউটশাহী, আড়িয়ল, বালিগাঁও
শ্রীনগর উপজেলা
জনসংখ্যা = ২,৫৯,৮৮৭
শ্রীনগর উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ১৪ টি।
শ্রীনগর, শ্যামসিদ্ধি, ষোলঘর, কুকুটিয়া, তন্তর, আটপাড়া, রাঢ়ীখাল, ভাগ্যকুল, বাঘড়া, কোলাপাড়া, পাটাভোগ, হাঁসাড়া, বীরতারা, বাড়ৈখালী
লৌহজং উপজেলা
জনসংখ্যা = ১,৬৭,৭৪৩
লৌহজং উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ১০ টি।
মেদিনীমন্ডল, খিদিরপাড়া, বৌলতলী, কলমা, গাওদিয়া, বেজগাঁও, কনকসার, লৌহজং-তেউটিয়া, কুমারভোগ, হলদিয়া
গজারিয়া উপজেলা
জনসংখ্যা = ১,৩৮,১০৮
গজারিয়া উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ৮ টি।
টেংগারচর, বালুয়াকান্দি, ভবেরচর, বাউশিয়া, গজারিয়া, হোসেন্দী, ইমামপুর, গুয়াগাছিয়া
সিরাজদিখান উপজেলা
জনসংখ্যা = ২,৪১,৮০৪
সিরাজদিখান উপজেলায় মোট ইউনিয়নের সংখ্যা ১৪ টি।
চিত্রকোট, শেখর নগর, রাজানগর, কেয়াইন, বাসাইল, রশুনিয়া, লতব্দী, বালুচর, ইছাপুর, বয়রাগাদি, মালখানগর, মধ্যপাড়া, জৈনসার, কোলা।
অর্থনীতি
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৪.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ২.১৭%, শিল্প ৪.৬৯%, ব্যবসা ২৩.১৭%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৭৫%, নির্মাণ ২.২৭%, ধর্মীয় সেবা ১.১৯%, চাকরি ১২.৮৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৫.৯৫% এবং অন্যান্য ৯.৩%।
অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মুন্সীগঞ্জ খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কয়েক বছরে এখানে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় নগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
শিল্প প্রতিষ্ঠান
১। হিমাগার- ৬৭টি
২। সিমেন্ট ফ্যাক্টরী - ৬টি
৩। লবণ ফ্যাক্টরী - ২টি
৪। কাগজ ফ্যাক্টরী - ২টি
৫। টিস্যু - ১টি (বসুন্ধরা)
৬। জাহাজ নির্মাণ শিল্প- ৩টি
৭। ম্যাচ ফ্যাক্টরী - ২টি
পত্র-পত্রিকা
উৎসব
উৎসব লোকসংস্কৃতি দুর্গাপূজা, নববর্ষ, চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে যাত্রা, পালাগান, কবিগান, কীর্তনলীলা, বাউল গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। শ্যামসিদ্ধির মেলা এবং ঐতিহ্যবাহী ঝুলন মেলার প্রচলন রয়েছে। এছাড়া রথ যাত্রা, নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
নয়াগাঁও বেরিবাধ,
জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মস্থান,
অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থান,
রাজা শ্রীনাথের বাড়ি,
ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি,
রামপালে বাবা আদম মসজিদ,
হাঁসাড়ার দরগা,
সোনারং জোড়া মন্দির,
পদ্মার চর,
ইদ্রাকপুর কেল্লা,
রাজা বল্লাল সেন ও হরিশচন্দ্রের দীঘি,
শ্যামসিদ্ধির মঠ,
শুলপুরের গির্জা,
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট প্রভৃতি
ধলেশ্বরী সকার কিংস ক্লাব
ধলেশ্বরী নদী
বিক্রমপুর বিহার
রংমেহার ক্লাব
পদ্মা সেতু
নাটেশ্বর দেউলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামে মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার বছরের পুরনো বৌদ্ধ বিহারের সন্ধান মিলেছে। প্রত্নসম্পদ ও ঐতিহাসিক নিদর্শন উদ্ধারে চালানো খনন কাজের মাধ্যমে এ বৌদ্ধ বিহার আবিষ্কৃত হয়। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন বিক্রমপুর অঞ্চলে প্রত্নতত্ত্ব খনন ও ঐতিহাসিক নিদর্শন আবিষ্কার নিয়ে গবেষণা পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এরই মধ্যে বৌদ্ধ বিহারের পাঁচটি ভিক্ষু কক্ষ উন্মোচিত হয়েছে। একেকটি ভিক্ষু কক্ষের পরিমাপ ৩ দশমিক ৫ মিটার (দৈর্ঘ্য) ও ৩ দশমিক ৫ মিটার (প্রস্থ)। ধারণা করা হচ্ছে, বৌদ্ধ ধর্মের জ্ঞান তাপস অতীশ দ্বীপঙ্করের সঙ্গে এ বৌদ্ধ বিহারের সম্পর্ক রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
জগদীশ চন্দ্র বসু – আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী।
চিত্তরঞ্জন দাশ – রাজনীতিবিদ।
আলাউদ্দিন আলী
চাঁদ মিয়া
ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ
ব্রজেন দাস
অতীশ দীপঙ্কর
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
সৈয়দ মাইনুল হোসেন
আব্দুল জব্বার খান
ইমদাদুল হক মিলন
হুমায়ুন আজাদ
মুহাম্মদ আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী
এম কোরবান আলী
সরোজিনী নায়ডু – কবি ও রাজনীতিবিদ।
অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় – বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ।
তানিয়া বৃষ্টি – অভিনেত্রী।
তাহসান রহমান খান
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
ঢাকা বিভাগ
বাংলাদেশের জেলাসমূহ
বহিঃসংযোগ
মুন্সীগঞ্জ জেলার সরকারি ওয়েবসাইট - জেলা তথ্য বাতায়ন
বাংলাদেশের জেলা
মুন্সীগঞ্জ জেলা | https://en.wikipedia.org/wiki/Munshiganj_District | Munshiganj District | Munshiganj (Bengali: মুন্সীগঞ্জ), also historically and colloquially known as Bikrampur, is a district in central Bangladesh. It is a part of the Dhaka Division and borders Dhaka District. |
2745 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%A2%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE | পুরান ঢাকা | পুরান ঢাকা ঢাকা মহানগরীর আদি অঞ্চলটিকে বলা হয়। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাধারণ বাঙালি সংস্কৃতি থেকে এখানকার সংস্কৃতি অনেকটাই ভিন্নতর। পুরান ঢাকা পূর্ব-পশ্চিমে গেন্ডারিয়া ফরিদাবাদ থেকে হাজারীবাগ ট্যানারি মোড় পর্যন্ত এবং দক্ষিণে ঢাকা সদরঘাট থেকে নবাবপুর পর্যন্ত বিস্তৃত।
ইতিহাস পর্যবেক্ষণে জানা যায়, পুরান ঢাকা একসময় অত্যন্ত সুপরিকল্পিত, সুন্দর ও ছিমছাম একটি শহর ছিলো। কিন্তু মুঘল শাসকদের পতনের পর থেকে পুরান ঢাকা'র ভাগ্যে বিপর্যয় নেমে আসে। ব্রিটিশ শাসকরা এ শহরের কিছু দেখভাল করলেও বর্তমান সময়ের প্রশাসনযন্ত্রের অবহেলায় পুরান ঢাকা ধীরে ধীরে তার শ্রী হারিয়ে ফেলছে।
ইতিহাস
৭০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে পূর্ববঙ্গের ঢাকা নামক অঞ্চলটিতে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে শহর গড়ে ওঠে। ঢাকার নামকরণের সঠিক ইতিহাস নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। কথিত আছে যে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে দেবী দুর্গার একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ অঞ্চলে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ঢাকা বা গুপ্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো তাই রাজা বল্লাল সেন মন্দিরের নাম রাখেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হয়ে ওঠে।
আবার অনেক ঐতিহাসিকের মতে, মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকাকে সুবাহ্ বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার বেশকিছু অঞ্চল) রাজধানী রূপে ঘোষণা করেন; তখন সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ নগরে ঢাক বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবং তা থেকেই নগরের নাম ‘ঢাকা’ হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিলো।
প্রশাসন
পুরান ঢাকা ৮টি মেট্রোপলিটন থানা এলাকা নিয়ে গঠিত। এগুলো হল হাজারীবাগ, চকবাজার, লালবাগ, বংশাল, কোতোয়ালী, ওয়ারী, সূত্রাপুর, ও গেন্ডারিয়া। পুরান ঢাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এর অন্তর্ভুক্ত একটি অঞ্চল। পুরান ঢাকার পশ্চিমে মোহাম্মদপুর, উত্তরে ধানমন্ডি, নিউ মার্কেট, শাহবাগ, রমনা, মতিঝিল ও সবুজবাগ, পূর্বে যাত্রাবাড়ী ও শ্যামপুর এবং দক্ষিণে কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত।
যাতায়াত
পুরান ঢাকা'র সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় বাহন হলো রিকশা। এই প্রাচীন শহরটির যাতায়াতের পথগুলো অত্যন্ত সরু হওয়াতে রিকশা এখানকার প্রধান বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্য পরিবহনের জন্য মানুষ টানা চাকা গাড়ীও রয়েছে প্রচুর। সীমিতভাবে ঘোড়ার গাড়ী বা টমটম এখনো চালানো হয়ে থাকে। এছাড়া যান্ত্রিক বাহনগুলোর মধ্যে বাস, টেম্পো, সি.এন.জি. চালিত অটোরিকশা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অঞ্চল হওয়ায় মালপত্র আনা-নেয়ার জন্য গভীর রাতে পুরান ঢাকার সড়কগুলো ট্রাকের দখলে চলে যায়।
অর্থনীতি ও বাণিজ্য
পুরান ঢাকা বাংলাদেশের প্রধানতম বাণিজ্যকেন্দ্র। এখানকার চকবাজার এলাকায় সব রকমের পণ্যসামগ্রীর পাইকারী বিপণন হয়ে থাকে। ঢাকা মহানগরীর এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের বাজারগুলোর ব্যবসায়ীরা এখান থেকেই তাদের অধিকাংশ দ্রব্য ও পণ্য ক্রয় করে। মৌলভীবাজার হলো স্বল্প সময়ে পচনশীল নয়, এমন সব খাদ্যপণ্যের বৃহত্তম বিক্রয় অঞ্চল। কাওরান বাজারের বিক্রেতাগণ এখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নিয়ে যান। চামড়া শিল্প হলো বাংলাদেশে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্প। বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান চামড়া প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি পুরান ঢাকা'র হাজারীবাগ অঞ্চলে অবস্থিত। লালবাগের পোস্তা হলো দেশের অন্যতম কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ অঞ্চল। ইসলামপুর হলো থান কাপড়ের বৃহত্তম বিপণন অঞ্চল। এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হলো: নয়াবাজার, মিটফোর্ড, সিদ্দিকবাজার, আলুবাজার, নবাবপুর, পাটুয়াটুলী, সদরঘাট, বংশাল ইত্যাদি। এখানকার স্থানীয় অধিবাসীরা মূলত ব্যবসায়ী। বংশপরম্পরায় তারা ব্যবসা করে আসছে। বহিরাগত অনেক লোক এখানে চাকরি করে থাকে।
জনগোষ্ঠী ও সংস্কৃতি
পুরান ঢাকা'র অধিকাংশ স্থানীয় অধিবাসী আদি ঢাকাইয়া। এখানকার অধিবাসীগণ ঢাকা মহানগরীর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অধিকতর রক্ষণশীল। পুরান ঢাকা'র সংস্কৃতির সাথে দিল্লি'র স্থানীয় অধিবাসীদের সংস্কৃতির কিছুটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এই অঞ্চলের মানুষজন কিছুটা পৃথক ধরনের ভাষায় কথা বলে। যাকে ঢাকাইয়া কুট্টি উপভাষা বলা হয়। এই ভাষাতেও অনেক আরবি, ফার্সি এবং হিন্দি-উর্দু শব্দের ব্যবহার বেশি। আদি ঢাকাইয়া'রা সুব্বাসিতে ও কথা বলে থাকে।
ঢাকাইয়া লোকেরা বুদ্ধিমান ও চতুর, কিন্তু ব্যবহারে অত্যন্ত অমায়িক হয়ে থাকেন। অতিথিদের আপ্যায়নে পুরান ঢাকা'র লোকেরা দেশে সর্বশ্রেষ্ঠ। ঢাকাইয়া পরিবারে ও মহল্লায় বয়স্ক ব্যক্তিদের অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা দেখানো হয়। এখানকার সংখ্যাগুরু লোকের ধর্ম ইসলাম। তারা ঢাকা'র অন্য অঞ্চলের মানুষের তুলনায় অধিকতর ধর্মসচেতন। প্রায় প্রতিটি মহল্লায় একটি অথবা দু'টি করে মসজিদ রয়েছে। এর কারণেই ঢাকাকে 'মসজিদের নগরী' বলা হয়ে থাকে। পুরান ঢাকায় হিন্দু ও ঈসায়ী (খ্রিষ্টান), এ দুই সম্প্রদায়ের লোকজনও রয়েছেন।
খাদ্য
ঢাকাইয়ারা ভোজনরসিক। মুঘল প্রাদেশিক রাজধানী রূপে অনেক আগে থেকেই উত্তর ভারতীয় খাবারগুলো এখানে জনপ্রিয়। এখানকার উল্লেখযোগ্য খাবারগুলো হলো - টিক্কা, জালি কাবাব, কাঠি কাবাব, শামী কাবাব, বটি কাবাব, নার্গিস কাবাব, শিক কাবাব, দই বড়া, মুরগি মুসল্লম, পায়া, কাচ্চি বিরিয়ানি, পাক্কি বিরিয়ানি, মোরগ পোলাও, নান রুটি, বাকরখানি, নিহারী, বোরহানী, লাবাং, ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য মসলাদার খাবার ঢাকাইয়াদের বিশেষ পছন্দনীয়। নান্নার বিরিয়ানী, হাজী বিরিয়ানী আল রাজ্জাক রেস্টুরেন্ট, রয়েল রেস্টুরেন্ট, আমানিয়া হোটেল, ইত্যাদি এখানকার সুপরিচিত খাদ্যসামগ্রী বিক্রেতা।
উৎসব
ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও শবে বরাত পুরান ঢাকার প্রধান ধর্মীয় উৎসব। পহেলা বৈশাখ ও এখানে সাড়ম্বরে পালিত হয়। পৌষ সংক্রান্তির দিনে লোকজন ঘুড়ি উৎসবে মেতে ওঠে। প্রতিবছর ১৪ বা ১৫ই জানুয়ারি এ উৎসব পালিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হাজারীবাগ লেদার টেকনোলজি কলেজ মাঠে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে মধ্য পুরান ঢাকা'র প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদে ঘুড়ি উড়ানো হয়। উত্তর ভারতীয় এ ঘুড়ি উৎসবটিকে স্থানীয়রা 'সাকরাইন' নামে অভিহিত করে। এছাড়া ১০ মহররম এখানে সাড়ম্বরে শিয়া রীতিতে আশুরা উদ্যাপন করা হয়।
সামাজিক ব্যবস্থা
ঢাকা মহানগর সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ঢাকাইয়াদের স্বার্থ সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পুরান ঢাকার কিছু মহল্লায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে। এসব পঞ্চায়েতের প্রধানদের সরদার বলা হয়। বেশ ক'জন জীবিত ও মৃত উল্লেখযোগ্য সরদারগণ হলেন - সিদ্দিক সরদার,আলহাজ্ব গণি সরদার, মাজেদ সরদার, সোরাজ সরদার, পিয়ারু সরদার, আলহাজ্ব খলিলুর রহমান সরদার, আলম সরদার, কাদের সরদার, বেল্লাল সরদার, সাহাবুদ্দিন সরদার ও আরো অনেকে। তারা বিভিন্নসময় পুরান ঢাকা'র সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এখনো রাখছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
পুরান ঢাকার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইন্সটিটিউট অব লেদার টেকনোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজি), পোগোজ স্কুল, তিব্বিয়া হাবিবিয়া ইউনানী মেডিকেল কলেজ, আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ইত্যাদি।
দর্শনীয় স্থানসমূহ
পুরান ঢাকায় অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যাদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব দেশ-বিদেশের মানুষকে টেনে আনে। সদরঘাটে লঞ্চ আগমন ও প্রস্থান এবং ডিঙ্গী নৌকার উত্তাল অবস্থা আকর্ষণীয়।
লালবাগের কেল্লা
ঢাকেশ্বরী মন্দির
তারা মসজিদ
হোসেনি দালান
আহসান মঞ্জিল
শাঁখারিবাজার
ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল
বড় কাটারা
শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ
ছোট কাটারা
বাহাদুর শাহ পার্ক
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, ঢাকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সদরঘাট, ঢাকা
করতলব খান মসজিদ
খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ
বিনত বিবির মসজিদ
রূপলাল হাউজ
আর্মেনীয় গির্জা
চকবাজার শাহী মসজিদ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ
শায়েস্তা খাঁর মসজিদ
কার্জন হল
পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার
নর্থব্রুক হল বা লালকুঠি
আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বাংলার রাজধানী
ঢাকার ভূগোল
ঢাকা জেলা
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জেলা | https://en.wikipedia.org/wiki/Old_Dhaka | Old Dhaka | Old Dhaka (Bengali: পুরান ঢাকা, romanized: Puran Dhaka) is a term used to refer to the historic old city of Dhaka, the capital of Bangladesh. It was founded in 1608 as Jahangirabad or Jahangirnagar (Bengali: জাহাঙ্গীরনগর, romanized: Jahangirnogor, lit. 'City of Jahangir'), the capital of Mughal Province of Bengal and named after the Mughal emperor Jahangir. It is located on the banks of the Buriganga River. It was one of the largest and most prosperous cities of the Indian subcontinent and the center of the worldwide muslin trade. The then Nawab of Bengal Murshid Quli Khan shifted the capital from Dhaka to Murshidabad in the early-18th century. With the rise of Calcutta (now Kolkata) during the British rule, Dhaka began to decline and came to be known as the "City of Magnificent Ruins". The British however began to develop the modern city from the mid-19th century.
Old Dhaka is famous for its variety of foods and amicable living of people of all religions in harmony. The main Muslim festivals celebrated with funfair here are Eid-ul-Fitr, Eid-ul-Adha and Ashura, Hindu festivals like Durga Puja, Kali Puja, and Saraswati Puja are also celebrated with enthusiasm. The festivals which are celebrated by all religious communities with much splendor include Shakrain (পৌষ সংক্রান্তি), Pohela Falgun, and Halkhata (হালখাতা). Religion-wise, the old Dhaka is predominantly Muslim, while a significant number of Hindus also reside here. Christians and Buddhists are also inhabitants here in small numbers. Its inhabitants are known as Dhakaiya and converse in the Dhakaiya Kutti, a dialect of Bengali and Dhakaiya Urdu, a dialect of Urdu. |
2746 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A6%BE%20%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%A8 | নোগা আলন | নোগা আলন (; জন্মঃ ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬) হলেন একজন ইসরায়েলি গণিতবিদ ও তাত্ত্বিক কম্পিউটীর বিজ্ঞানী। আলনের প্রধান বিশেষজ্ঞতা ডিসক্রীট গণিত ও কম্বিনেটোরিক্স-এ। তিনি তার অবদানের জন্য আরদিশ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
গবেষণা
আলন পাঁচ শতাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। তার বেশিরভাগ গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু কম্বিনেটোরিক্স ও তাত্ত্বিক কম্পিউটার বিজ্ঞান। এছাড়া তিনি একটি বইও প্রকাশ করেছেন। তিনি "এ. নিলি" ছদ্মনামেও বই প্রকাশ করেছেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ
দ্য প্রবাবিলিস্টিক মেথড (১৯৯২); জোল স্পেন্সারের সাথে যৌথভাবে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
১৯৮৯: আরদিশ পুরস্কার
১৯৯১: ফেহের পুরস্কার
২০০০: পোলিয়া পুরস্কার
২০০১: ব্রুনো স্মারক পুরস্কার
২০০৫: ল্যান্ডাউ পুরস্কার
২০০৫: গোদেল পুরস্কার (ইয়োসি মাতিয়াস ও মারিও সজেগেদির সাথে যৌথভাবে)
২০০৮: গণিতে অবদানের জন্য ইসরায়েল পুরস্কার
২০১১: গণিতে অবদানের জন্য এমেট পুরস্কার
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
নোগা আলনের ওয়েবসাইট
১৯৫৬-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
ইসরায়েলি গণিতবিদ
ইসরায়েলি কম্পিউটার বিজ্ঞানী
আমেরিকান ম্যাথমেটিক্যাল সোসাইটির ফেলো
তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
ইহুদি বিজ্ঞানী
কানুথ প্রাইজ বিজয়ী
আমেরিকান ম্যাথমেটিকাল সোসাইটির সভ্য
অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারির সভ্য
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক | https://en.wikipedia.org/wiki/Noga_Alon | Noga Alon | Noga Alon (Hebrew: נוגה אלון; born 1956) is an Israeli mathematician and a professor of mathematics at Princeton University noted for his contributions to combinatorics and theoretical computer science, having authored hundreds of papers. |
2747 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%B2%20%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%B0 | পল সিমর | পল সিমর (Paul Seymour) (জন্ম ২৬শে জুলাই, ১৯৫০) প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গ্রাফ থিয়োরিস্ট বলে পরিচিত। বর্তমানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
১৯৫০-এ জন্ম
মার্কিন গণিতবিদ
জীবিত ব্যক্তি
২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ
২১শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ
গ্রাফতত্ত্ববিদ
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
রয়েল সোসাইটির সভ্য | https://en.wikipedia.org/wiki/Paul_Seymour_(mathematician) | Paul Seymour (mathematician) | Paul D. Seymour (born 26 July 1950) is a British mathematician known for his work in discrete mathematics, especially graph theory. He (with others) was responsible for important progress on regular matroids and totally unimodular matrices, the four colour theorem, linkless embeddings, graph minors and structure, the perfect graph conjecture, the Hadwiger conjecture, claw-free graphs, χ-boundedness, and the Erdős–Hajnal conjecture. Many of his recent papers are available from his website.
Seymour is currently the Albert Baldwin Dod Professor of Mathematics at Princeton University. He won a Sloan Fellowship in 1983, and the Ostrowski Prize in 2003; and (sometimes with others) won the Fulkerson Prize in 1979, 1994, 2006 and 2009, and the Pólya Prize in 1983 and 2004. He received an honorary doctorate from the University of Waterloo in 2008, one from the Technical University of Denmark in 2013, and one from the École normale supérieure de Lyon in 2022. He was an invited speaker in the 1986 International Congress of Mathematicians and a plenary speaker in the 1994 International Congress of Mathematicians. He became a Fellow of the Royal Society in 2022. |
2748 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%20%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8 | বের্নহার্ট রিমান | জর্জ ফ্রেডরিক বার্নার্ড রিম্যান (;) (১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৮২৬ - ২০শে জুলাই, ১৮৬৬) বিখ্যাত জার্মান গণিতবিদ যিনি বিশ্লেষণী ও অন্তরকলনীয় জ্যামিতিতে মৌলিক অবদানের জন্য পরিচিত। তার প্রস্তাবিত রিমান প্রতিপাদ্য গণিতের সবচেয়ে কঠিন সমস্যাগুলির অন্যতম, যার সমাধান এখনও হয়নি।
রিমান হাজার বছরের জ্যামিতির ধারনায় ব্যাপক পরিবর্তন আনেন এবং সেই সময়ে জ্যামিতির মাধ্যমেই প্রকৃতির নিয়মগুলোকে একীকরণের চেষ্টা করে গেছেন। আমরা বর্তমান সময়ে আইন্সটানের সাধারণ আপেক্ষিকতা থেকে জানি মহাকর্ষ হল স্থান-কালের বক্রতার ফল। এই সিদ্ধান্ত সম্ভব হয়েছে রিমানের কাজের ফলেই। রিমানের কাছে বল(Force) হলো জ্যামিতির বহিঃপ্রকাশ (Force=Geometry) । এই ধারণার মাধ্যমেই তিনি প্রকৃতির সকল বলকে একীভবনের চেষ্টা করেছিলে। রিমান তার এই জ্যামিতির ধারণা প্রকাশ করেছিলেন ১৮৫৪ সালে। তার ঠিক ৬১ বছর পর ১৯১৫ সালে আইনস্টাইন প্রকাশ করলেন আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব অনেকটাই রিমানের জ্যামিতি বিষয়ক কাজ দ্বারা প্রভাবিত ছিল।
তথ্যসূত্র
১৮২৬-এ জন্ম
১৮৬৬-এ মৃত্যু
জার্মান গণিতবিদ
রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য
জার্মান লুথারান | https://en.wikipedia.org/wiki/Bernhard_Riemann | Bernhard Riemann | Georg Friedrich Bernhard Riemann (German: [ˈɡeːɔʁk ˈfʁiːdʁɪç ˈbɛʁnhaʁt ˈʁiːman] ; 17 September 1826 – 20 July 1866) was a German mathematician who made profound contributions to analysis, number theory, and differential geometry. In the field of real analysis, he is mostly known for the first rigorous formulation of the integral, the Riemann integral, and his work on Fourier series. His contributions to complex analysis include most notably the introduction of Riemann surfaces, breaking new ground in a natural, geometric treatment of complex analysis. His 1859 paper on the prime-counting function, containing the original statement of the Riemann hypothesis, is regarded as a foundational paper of analytic number theory. Through his pioneering contributions to differential geometry, Riemann laid the foundations of the mathematics of general relativity. He is considered by many to be one of the greatest mathematicians of all time. |
2749 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A7%8B%20%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B6 | লাসলো লোভাশ | লাসলো লোভাস হাঙ্গেরীয় গণিতবিদ ও তাত্বিক কম্পিউটার বিজ্ঞানী। লোভাশ বর্তমানে মাইক্রোসফট রিসার্চ-এ কর্মরত। কম্বিনেটোরিক্স, কম্প্লেক্সিটি তত্ব, সম্ভাবনা ও অপটিমাইজেশন সহ গণিতের বিভিন্ন শাখায় তাঁর অবদান আছে।
জীবনী
বই
তিনি নিম্নোক্ত বই সমূহ লিখেছেন অথবা সম্পাদনা করেছেন:
Lovász L., Pelikán J., Vesztergombi K.: Kombinatorika, Tankönyvkiadó, Budapest, 1977
Gács P., Lovász L.: Algoritmusok, Müszaki Könyvkiadó, Budapest, 1978; Tankönyvkiadó, Budapest, 1987
L. Lovász: Combinatorial Problems and Exercises, Akadémiai Kiadó - North Holland, Budapest, 1979, revised: Elsevier, Akadémiai Kiadó, 1993, reprint: AMS Chelsea Publishing, 2007.
L. Lovász, M.D. Plummer: Matching Theory, Akadémiai Kiadó - North Holland, Budapest, 1986
L. Lovász: An Algorithmic Theory of Numbers, Graphs, and Convexity, CBMS-NSF Regional Conference Series in Applied Mathematics 50, SIAM, Philadelphia, Pennsylvania, 1986
M. Grötschel, L. Lovász, A. Schrijver: Geometric Algorithms and Combinatorial Optimization, Springer, 1988
B. Korte, L. Lovász, R. Schrader: Greedoids, Springer, 1991
Ronald L. Graham, M. Grötschel, L. Lovász (eds.): Handbook of Combinatorics Elsevier Science B.V., 1995
L. Lovász, J. Pelikán, K. Vesztergombi K.: Discrete Mathematics: Elementary and Beyond, Springer, New York, 2003
L. Lovász: Large Networks and Graph Limits, American Mathematical Society, 2012
পুরস্কার
তথ্যসূত্র
হাঙ্গেরীয় গণিতবিদ
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী
১৯৪৮-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ
২১শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ
মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী
আমেরিকান ম্যাথমেটিকাল সোসাইটির সভ্য
রুশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির বিদেশী সদস্য
গ্রাফতত্ত্ববিদ
কানুথ প্রাইজ বিজয়ী
রয়্যাল নেদারল্যান্ডস কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য
রয়েল সুয়েডীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক | https://en.wikipedia.org/wiki/L%C3%A1szl%C3%B3_Lov%C3%A1sz | L%C3%A1szl%C3%B3_Lov%C3%A1sz | null |
2750 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A6%AE%20%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE | বেগম রোকেয়া | রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (সাধারণত বেগম রোকেয়া নামে অধিক পরিচিত; ৯ ডিসেম্বর ১৮৮০ - ৯ ডিসেম্বর ১৯৩২) হলেন একজন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসি বাংলার 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' জরিপে ষষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন বেগম রোকেয়া। ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ও শ্লেষাত্মক রচনায় রোকেয়ার স্টাইল ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। উদ্ভাবনা, যুক্তিবাদিতা এবং কৌতুকপ্রিয়তা তার রচনার সহজাত বৈশিষ্ট্য। তার প্রবন্ধের বিষয় ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিজ্ঞান সম্পর্কেও তার অনুসন্ধিৎসার পরিচয় পাওয়া যায় বিভিন্ন রচনায়। মতিচূর (১৯০৪) প্রবন্ধগ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবকে নারীপশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। তার সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫) নারীবাদী ইউটোপিয়ান সাহিত্যের ক্লাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত। পদ্মরাগ (১৯২৪) তার রচিত উপন্যাস। অবরোধ-বাসিনীতে (১৯৩১) তিনি অবরোধপ্রথাকে বিদ্রূপবাণে জর্জরিত করেছেন।
রোকেয়ার কর্ম ও আদর্শ উদ্যাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর ৯ই ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদ্যাপন করে এবং বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করে।
প্রারম্ভিক জীবন
রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার অর্ন্তগত পায়রাবন্দ গ্রামে। তার পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের একজন শিক্ষিত জমিদার ছিলেন। তার মাতা ছিলেন রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। তার দুই বোন করিমুননেসা ও হুমায়রা, আর তিন ভাই যাদের একজন শৈশবে মারা যায়।
বেগম রোকেয়ার পিতা আবু আলী হায়দার সাবের আরবি, উর্দু, ফারসি, বাংলা, হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হলেও মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে ছিলেন রক্ষণশীল। তার বড় দু’ভাই মোহাম্মদ ইব্রাহীম আবুল আসাদ সাবের ও খলিলুর রহমান আবু যায়গাম সাবের ছিলেন বিদ্যানুরাগী। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে অধ্যয়ন করে তারা আধুনিকমনস্ক হয়ে ওঠেন। তার বড় বোন করিমুন্নেসাও ছিলেন বিদ্যোৎসাহী ও সাহিত্যানুরাগী। বেগম রোকেয়ার শিক্ষালাভ, সাহিত্যচর্চা এবং সামগ্রিক মূল্যবোধ গঠনে বড় দু’ভাই ও বোন করিমুন্নেসার যথেষ্ট অবদান ছিল।
তৎকালীন সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের গৃহের অর্গলমুক্ত হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভের কোনো সুযোগ ছিল না। পাঁচ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে কলকাতায় বসবাস করার সময় একজন মেম শিক্ষয়িত্রীর নিকট তিনি কিছুদিন লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সমাজ ও আত্মীয়স্বজনদের ভ্রুকুটির জন্য তাও বন্ধ করে দিতে হয়। তবু রোকেয়া দমে যাননি। বড় ভাই-বোনদের সমর্থন ও সহায়তায় তিনি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সি এবং আরবি আয়ত্ত করেন।
যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সম্পর্কে বঙ্গের মহিলা কবি গ্রন্থে লিখেছেন,
সাহিত্যচর্চার সূচনা
সাহিত্যিক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯০২ সালে।কলকাতা থেকে প্রকাশিত 'নভপ্রভা' পত্রিকায় ছাপা হয়"পিপাসা"।বিভিন্ন সময়ে তার রচনা নানা পত্রিকায় ছাপা হতে থাকে। ১৯০৫ সালে প্রথম ইংরেজি রচনা "সুলতানাজ ড্রিম বা সুলতানার স্বপ্ন" মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকায় ছাপা হয়। সবাই তার রচনা পছন্দ করে। তিনি সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
১৮৯৮ সালে রোকেয়ার বিয়ে হয় বিহারের ভাগলপুর নিবাসী উর্দুভাষী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, তদুপরি সমাজসচেতন, কুসংস্কারমুক্ত এবং প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন। উদার ও মুক্তমনের অধিকারী স্বামীর উৎসাহ ও সহযোগিতায় রোকেয়া দেশি-বিদেশি লেখকদের রচনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান এবং ক্রমশ ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তার সাহিত্যচর্চার সূত্রপাতও ঘটে স্বামীর অনুপ্রেরণায়। তবে রোকেয়ার বিবাহিত জীবন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১৯০৯ সালের ৩ মে সাখাওয়াৎ হোসেন মারা যান। ইতোপূর্বে তাঁদের দুটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে অকালেই মারা যায়। ১৯০২ সালে পিপাসা নামে একটি বাংলা গল্প লিখে সাহিত্যজগতে তার অবদান রাখা শুরু হয়। এরপর একে একে লিখে ফেলেন মতিচূর-এর প্রবন্ধগুলো এবং সুলতানার স্বপ্ন-এর মতো নারীবাদী বিজ্ঞান কল্পকাহিনী।
সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড
স্বামীর মৃত্যুর পর নিঃসঙ্গ রোকেয়া নারীশিক্ষা বিস্তার ও সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর স্বামীর প্রদত্ত অর্থে পাঁচটি ছাত্রী নিয়ে তিনি ভাগলপুরে ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস’ স্কুল স্থাপন করেন। কিন্তু পারিবারিক কারণে রোকেয়া ভাগলপুর ছেড়ে কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেন। ১৯১১ সালের ১৬ মার্চ কলকাতার ১৩ নং ওয়ালিউল্লাহ লেনের একটি বাড়িতে মাত্র আটজন ছাত্রী নিয়ে তিনি নবপর্যায়ে ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৬ সালের মধ্যে ছাত্রীসংখ্যা একশত পেরিয়ে যায়। স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রোকেয়া নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রাখেন। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩০ সালে বঙ্গীয় মুসলিম সম্মেলনে রোকেয়া বাংলা ভাষার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন, যা সে যুগের পরিপ্রেক্ষিতে ছিলো দুঃসাহসিক কাজ।
সাহিত্য কর্ম
রোকেয়া তার নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন মতিচূর প্রবন্ধসংগ্রহের প্রথম (১৯০৪) ও দ্বিতীয় খণ্ডে (১৯২২)। সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫), পদ্মরাগ (১৯২৪), অবরোধবাসিনী (১৯৩১) ইত্যাদি তার সৃজনশীল রচনা। তার সুলতানার স্বপ্নকে বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবার আগে তার লেখাগুলো নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। তার প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাসের মধ্য দিয়ে তিনি নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর লিঙ্গসমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। হাস্যরস আর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সাহায্যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর অসম অবস্থান ফুটিয়ে তুলেছেন। তার রচনা দিয়ে তিনি সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন, ধর্মের নামে নারীর প্রতি অবিচার রোধ করতে চেয়েছেন, শিক্ষা আর পছন্দানুযায়ী পেশা নির্বাচনের সুযোগ ছাড়া যে নারী মুক্তি আসবে না --তা বলেছেন।
রোকেয়া অলঙ্কারকে দাসত্বের প্রতীক বিবেচনা করেছেন এবং নারীদের অলঙ্কার ত্যাগ করে আত্মসম্মানবোধে উজ্জীবিত হয়ে আর্থরাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে সচেষ্ট হতে আহ্বান জানিয়েছেন:
মৃত্যু
১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি ‘নারীর অধিকার’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখছিলেন। তার কবর উত্তর কলকাতার সোদপুরে অবস্থিত যা পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু দে আবিষ্কার করেন ।
স্বীকৃতি
বাংলাদেশের ৭ম বিভাগ হিসেবে রংপুর বিভাগের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে 'রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়' ৮ অক্টোবর ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ২০০৯ সালে 'নারী জাগরণের অগ্রদূত' হিসেবে তার নামকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করেন। উল্লেখ্য, নারীর নামে বাংলাদেশে প্রথম কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি।
বেগম রোকেয়ার নামে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬০-এর দশকে ছাত্রীনিবাস 'রোকেয়া হল' খোলা হয় যার নাম আগে ছিলো 'উইমেন্স হল' তবে ব্রিটিশ আমলে ১৯৩৮ সালে চামেলি হাউজ নামে প্রথমে হলটি চালু হয়েছিলো।
মহীয়সী বাঙালি নারী হিসেবে বেগম রোকেয়ার অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসনের জন্য আবাসিক হল "রোকেয়া হল" নামকরণ করা হয়।
প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর তার জন্মদিনে বেগম রোকেয়া দিবস পালন করা হয় এবং নারী উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য বিশিষ্ট নারীদেরকে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়।
১৯৮০ সালে বেগম রোকেয়ার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ দুটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
তার ১৩৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গুগল তাদের হোমপেজে বেগম রোকেয়ার গুগল ডুডল প্রদর্শন করে তার জন্মদিন উদ্যাপন করে। গুগল ডুডলটিতে দেখা যায় সাদা পোশাকে চশমা পরা বেগম রোকেয়া বই হাতে হেঁটে যাচ্ছেন।
বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন স্মরণে বাংলাদেশ সরকার একটি গণউন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে পৈতৃক ভিটায় ৩ দশমিক ১৫ একর ভূমির উপর নির্মিত হয়েছে বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র। এতে অফিস ভবন, সর্বাধুনিক গেস্ট হাউজ, ৪ তলা ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি ইত্যাদি রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে স্মৃতিকেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলা একাডেমি।
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
বেগম রোকেয়ার উপন্যাসিকা সুলতানার স্বপ্ন অবলম্বনে স্প্যানিশ নির্মাতা ইসাবেল হারগুয়েরা তৈরি করেছেন অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র। স্প্যানিশ ভাষায় চলচিত্রটির নাম রাখা হয়েছে 'এল সুয়েনো দে লা সুলতানা'—ইংরেজিতে 'সুলতানাস ড্রিম'।
আরও দেখুন
সুলতানার স্বপ্ন
রোকেয়া চেয়ার
বেগম রোকেয়া পদক
বেগম রোকেয়া সরণি
বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
টীকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
বেগম রোকেয়ার ভাষণ
বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ও নম্র সাহসিকতা
বেগম রোকেয়ার রচনায় ইসলামি চেতনা
বাঙালি লেখক
১৮৮০-এ জন্ম
পূর্ববঙ্গে জন্ম
১৯শ শতাব্দীর বাঙালি
১৯৩২-এ মৃত্যু
বাঙালি জনহিতৈষী নারী
বাঙালি সমাজ সংস্কারক
বাঙালি শিক্ষাবিদ
বাংলাদেশী সমাজকর্মী
বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি
বাঙালি মুসলিম
রংপুর জেলার ব্যক্তি
২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী দার্শনিক
বাংলাদেশী লেখিকা
২০শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখিকা
ভারতীয় নারীবাদী লেখক
১৯শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখক
১৯শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখিকা
২০শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখক
বাংলা ভাষার লেখক
ভারতীয় নারীবাদী
ভারতীয় নারী অধিকারকর্মী
ইসলামি নারীবাদী
২০শ শতাব্দীর বাঙালি
বেগম রোকেয়া | https://en.wikipedia.org/wiki/Begum_Rokeya | Begum Rokeya | Rokeya Sakhawat Hossain (9 December 1880 – 9 December 1932), commonly known as Begum Rokeya, was a prominent Bengali feminist thinker, writer, educator and political activist from British India. She is widely regarded as a pioneer of women's liberation in Bangladesh and India.
She advocated for men and women to be treated equally as rational beings, noting that the lack of education for women was responsible for their inferior economic position. Her major works include Matichur (A String of Sweet Pearls, 1904 and 1922), a collection of essays in two volumes expressing her feminist thoughts; Sultana's Dream (1908), a feminist science fiction novella set in Ladyland ruled by women; Padmarag ("Essence of the Lotus", 1924) depicting the difficulties faced by Bengali wives; and Abarodhbasini (The Confined Women, 1931), a spirited attack on the extreme forms of purdah that endangered women's lives and self-image.
Rokeya held education to be the central precondition of women's liberation, establishing the first school aimed primarily at Muslim girls in Kolkata. She is said to have gone from house to house persuading the parents to send their girls to her school in Nisha. Until her death, she ran the school despite facing hostile criticism and social obstacles.
In 1916, she founded the Muslim Women's Association, an organization that fought for women's education and employment. In 1926, Rokeya presided over the Bengal Women's Education Conference convened in Kolkata, the first significant attempt to bring women together in support of women's education rights. She was engaged in debates and conferences regarding the advancement of women until her death on 9 December 1932, shortly after presiding over a session during the Indian Women's Conference.
Bangladesh observes Rokeya Day on 9 December every year to commemorate her works and legacy. On that day, Bangladesh government also confers Begum Rokeya Padak on individual women for their exceptional achievement. In 2004, Rokeya was ranked number 6 in BBC's poll of the Greatest Bengali of all time. |
2753 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0 | বিহার | বিহার সরকারের সাংবিধানিক প্রধান হলেন রাজ্যপাল। যিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিযুক্ত হন। নির্বাহী ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রী এবং তাদের মন্ত্রিসভার উপর নির্ভর করে। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করে।
রাজ্যের আমলাতন্ত্রের প্রধান হলেন মুখ্য সচিব। যার অধীনে ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা, ভারতীয় পুলিশ পরিষেবা, ভারতীয় বন পরিষেবা এবং রাজ্য সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন শাখা থেকে কর্মকর্তাদের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। বিচার বিভাগের প্রধান বিচারপতি। বিহারে একটি হাইকোর্ট রয়েছে যা ১৯১৬ সাল থেকে কাজ করছে। সরকারের সকল দফতর রাজ্যের রাজধানী পাটনায় অবস্থিত।
রাজ্যটি প্রশাসনিকভাবে ৯টি বিভাগ এবং ৩৮টি জেলায় বিভক্ত। শহরাঞ্চলের প্রশাসনের জন্য বিহারে ১২টি পৌরসভা, ৪৯ টি নগর পরিষদ, এবং ৮০টি নগর পঞ্চায়েত রয়েছে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
বঙ্গের প্রাচীন রাজ্য
১৯১২-এ ভারতে প্রতিষ্ঠিত
বিহার | https://en.wikipedia.org/wiki/Bihar | Bihar | Bihar (; Hindi pronunciation: [bɪˈɦaːr] ) is a state in Eastern India. It is the third largest state by population, the 12th largest by area, and the 15th largest by GDP in 2021. Bihar borders Uttar Pradesh to its west, Nepal to the north, the northern part of West Bengal to the east, and Jharkhand to the south. Bihar is split by the river Ganges, which flows from west to east. On 15 November 2000, southern Bihar was ceded to form the new state of Jharkhand. Only 11.27% of the population of Bihar lives in urban areas as per a 2020 report. Additionally, almost 58% of Biharis are below the age of 25, giving Bihar the highest proportion of young people of any Indian state. The official language is Hindi, which shares official status alongside that of Urdu. The main native languages are Maithili, Magahi and Bhojpuri. But there are several other languages being spoken at smaller levels.
In Ancient and Classical India, the area that is now Bihar was considered the centre of political and cultural power and as a haven of learning. From Magadha arose India's first empire, the Maurya empire, as well as one of the world's most widely adhered-to religions: Buddhism. Magadha empires, notably under the Maurya and Gupta dynasties, unified large parts of South Asia under a central rule. Another region of Bihar, Mithila, was an early centre of learning and the centre of the Videha kingdom.
However, since the late 1970s, Bihar has lagged far behind other Indian states in terms of social and economic development. Many economists and social scientists claim that this is a direct result of the policies of the central government, such as the freight equalisation policy, its apathy towards Bihar, lack of Bihari sub-nationalism, and the Permanent Settlement of 1793 by the British East India Company. The state government has, however, made significant strides in developing the state. Improved governance has led to an economic revival in the state through increased investment in infrastructure, better healthcare facilities, greater emphasis on education, and a reduction in crime and corruption. |
2754 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AE | আসাম | আসাম (; অখ়ম) উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। আসামের অধিবাসী বা আসামের ভাষাকে অসমীয়া নামে আখ্যায়িত করা হয়। তবে আসামের এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসী বাঙালী। ব্রিটিশ শাসনকালে বিশেষ করে ১৮৫০ থেকে ১৮৬০ সালের মধ্যে ব্রিটিশরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অনেক শ্রমিক এনেছিলেন চা বাগানে জন্য। যার মধ্যে অন্যতম রাজ্য ওড়িশা এবং বিহার (বর্তমানে ঝাড়খণ্ডসহ)।
১৮২৬ সালে ইয়াণ্ডাবু চুক্তির মাধ্যমে আসাম প্রথম ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। এ প্রদেশ মূলত চা, রেশম তন্তু, খনিজ তেল এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। আসাম বাড়ি এক শৃঙ্গযুক্ত ভারতীয় গণ্ডার এছাড়াও এখানে বুনো মহিষ, বেঁটে শূকর, বাঘ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষিত হয়েছে। এশীয় হাতির অন্যতম বাসস্থান হল আসাম। এ রাজ্যটি বন্যপ্রাণী পর্যটনের ক্ষেত্রে ক্রমেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হয়ে উঠছে।
নামের উৎপত্তি
পর্বতবাহুল্যবশত ভূমি অসমতল (অসমভুমি) হওয়ায় রাজ্যটি অসম (অপভ্রংশে ‘আসাম’) নামে অভিহিত - এ মত কেউ কেউ প্রকাশ করে থাকেন। অপর মতে, ‘অসম’ প্রতাপবিশিষ্ট আহম জাতি কর্তৃক একসময়ে অধিকৃত হওয়ায় প্রদেশটির নাম আসাম হয়েছে।
আসামের অন্যতম নগর কামরূপের প্রাচীন নাম প্রাগ্জ্যোতিষপুর। এখানে পৌরাণিক যুগে নরক নামধেয় জনৈক রাজা ছিলেন। তারই পুত্র মহাভারতবর্ণিত ভগদত্ত। তার পরবর্তী রাজগণের নাম যোগিনীতন্ত্রে বর্ণিত হয়েছে। তাদের কীর্তি গৌহাটি প্রভৃতি স্থানে এখনও কিংদংশে দৃষ্ট হয়। এছাড়াও খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে কামরূপ নামে এই অঞ্চলের পরিচিতি ছিল। এই অঞ্চলে আহোম সাম্রাজ্য (১২২৮-১৮৩৮) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে এই রাজ্য "আসাম" নামে পরিচিত হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান
উত্তর-পূর্ব ভারতের এ রাজ্যটি হিমালয়ের দক্ষিণে অবস্থিত এবং এর অভ্যন্তরে রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ, বরাক উপত্যকা এবং উত্তর কাছাড় পর্বতমালা। উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও ছয়টি রাজ্য, যথা অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং মেঘালয় দ্বারা আসাম পরিবেষ্টিত এবং আসামসহ প্রতিটি রাজ্যই উত্তরবঙ্গের একটি সঙ্কীর্ণ অংশ দ্বারা ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত। এছাড়াও আসামের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে।
ইতিহাস
প্রাগৈতিহাসিক যুগ
আসাম এবং এর আশপাশের এলাকাগুলিতে প্রস্তর যুগ থেকেই মানুষের বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। সতেরোশো থেকে আঠারোশো শতকের মধ্যে লেখা কালিকাপুরাণ অনুসারে আসামের প্রাচীনতম শাসক ছিলেন মহীরঙ্গ।
আদিযুগ এবং মধ্যযুগ
৬৪০ সালে হুয়েনথসাং যখন এই প্রদেশে পর্যটন করেন, তখন কুমার ভাস্কর বর্ম এখানে রাজত্ব করতেন। পরে পালবংশীয় বৌদ্ধরাজগণ এখানে কিছুকাল রাজত্ব করেন। ১৩শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে আহম জাতি এ স্থান অধিকার করে। এ জাতি উত্তর ব্রহ্ম এবং চীনসীমান্তবাসী সান বংশসম্ভূত। এ জাতির রাজা চুহুম ফা সর্বপ্রথম হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৪৯৭ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। তার পরবর্তী রাজার অব্যবহিত পরবর্তী আহমজাতীয় রাজা চুচেং ফা ১৬১১ থেকে ১৬৪৯ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার সময়েই শিবসাগরে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় এবং হিন্দুধর্মই রাজধর্মরূপে গৃহীত হয়। তার পরবর্তী রাজা চুটুম্লা ১৬৫০ সালে ব্রাহ্মণগণ কর্তৃক ‘জয়ধ্বজ’ নামে অভিহিত হন। তার রাজত্বকালে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সুবিখ্যাত সেনাপতি মীরজুমলা রাজ্য আক্রমণ করে বসেন। কিন্তু, তিনি বিশেষভাবে সফলকাম হতে পারেননি। এরপর আহমরাজগণ গোয়ালপাড়া পর্যন্ত অধিকার বিস্তার করেন।
ব্রিটিশ আসাম
আহমরাজগণের মধ্যে রুদ্রসিংহ সর্বাপেক্ষা অধিক প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে আহমরাজগণ অন্তর্বিদ্রোহ ও বহিরাক্রমণবশতঃ হীনবল হয়ে পড়েন। ১৭৯২ সালে রাজা গৌরীনাথ সিংহ, দারাংয়ের কোচ রাজা এবং মোয়ামারিয়া নামক ধর্মসম্প্রদায়ের নেতৃগণ কর্তৃক সিংহাসনচ্যূত হন। ভারতের ইংরেজ সরকার দেশীয় রাজ্য সম্বন্ধে হস্তক্ষেপ করা হবে না, এ নীতি অবলম্বন করে উদাসীন থাকাতে, আহম রাজা ব্রহ্মরাজকে মধ্যস্থতা করতে আহ্বান করেন। এর ফলে ব্রহ্মবাসীরা রাজ্য অধিকার করে এবং কঠোরভাবে শাসনদণ্ডের পরিচালনা করতে থাকে। ১৮২৪ সালে ব্রহ্মরাজের সাথে ইংরেজদের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৮২৬ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ব্রহ্মরাজের সাথে ইংরেজের যে সন্ধিস্থাপনা হয়, এর ফলে ইংরেজ এই প্রদেশটি প্রাপ্ত হয়। নিম্ন আসাম তখনই সাক্ষাৎভাবে ইংরেজের শাসনাধীন হয়। ১৮৩২ সালে বার সেনাপতি বা মাটক রাজা ছাড়া উত্তর আসাম রাজ্য আহম সিংহাসনাধিকার-প্রার্থী পুরন্দর সিংহকে দেয়া হয়। কিন্তু তার সময়ে উক্ত প্রদেশে শাসন সম্বন্ধে নানা বিশৃঙ্খলা উপস্থিত হওয়ায় এটিও ইংরেজদের অধিকারে চলে আসে।
বঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভের সঙ্গেই শ্রীহট্ট ও গোয়ালপাড়া ১৭৬৫ সালে ইংরেজদের অধিকারভূক্ত হয়। অপুত্রক রাজা গোবিন্দচন্দ্রের মৃত্যুর পর ১৮৩০ সালে কাছাড় ইংরেজের হস্তগত হয়। পরে তুলারাম সেনাপতির দেশ, গারো পর্বত, খাসী পর্বত, জয়ন্তী পর্বত, নাগা পর্বত প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশগুলো ইংরেজের অধীনতা স্বীকার করে।
স্বাধীনতা পরবর্তী
স্বাধীনতার পর আসাম রাজ্যের পুনর্গঠন হয়। ১৯৬৩ সালে নাগা পার্বত্য জেলা নিয়ে গঠিত হয় নাগাল্যান্ড। ১৯৭০ সালে গারো , খাসি ও জয়ন্তিকা নিয়ে মেঘালয় অন্তরাজ্য গঠিত হয় যা পরে ১৯৭২ সালে পূর্ণ রাজ্যের রূপ পায়। ১৯৭২ সালে অরুণাচল প্রদেশ ও মিজোরাম কেন্দ্র স্বাসিত অঞ্চল ঘোষিত হয় পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে তা পূর্ণ রাজ্যের রূপ পায়।
সরকার ব্যবস্থা
আসামের প্রশাসনিক বিভাগ
আসাম প্রদেশকে প্রথমে বাঙ্গালার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীনে রাখা হয়েছিল। ১৮৭৪ সালে একে জনৈক চিফ কমিশনারের শাসনাধীন করা হয়। ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গব্যবচ্ছেদ উপলক্ষে এই রাজ্যকে পূর্ববঙ্গের সাথে একত্রিত করে জনৈক নতুন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীন করা হয় এবং পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যা পুরাতন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের শাসনাধীন থাকে। ১৯১১ সালের ১২ই ডিসেম্বর দিল্লীর করোনেসন দরবার উপলক্ষে সম্রাট যে ঘোষণা পাঠ করেন, এরফলে দুই বঙ্গ মিলে একটি প্রদেশ; আর বিহার, উড়িষ্যা ও ছোটনাগপুর নিয়ে একটি নূতন প্রদেশ গঠিত হয়। প্রথমটি একজন গভর্নর এবং দ্বিতীয়টি একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অধীনতায় দেয়া হয়; আসাম প্রদেশকে পূর্বের ন্যায় জনৈক চিফ কমিশনারের শাসনাধীন করা হয়। ১৯১২ সালের এপ্রিল মাস থেকে এই ঘোষণা কার্যে পরিণত হয়েছিল। পরে ১৯২১ সালের নূতন সংস্কার বিধি অনুসারে বড় বড় প্রদেশগুলোর ন্যায় আসামও একজন গভর্নরের শাসনাধীন হয়েছে।
আসাম বর্তমানে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা নিযুক্ত একজন রাজ্যপাল দ্বারা শাসিত হয়ে আসছে।
ব্রিটিশ শাসনোত্তর আসাম
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আসাম সহ পুরো উত্তর-পূর্ব ভারতে অর্থনৈতিক সমস্যা প্রকট হতে শুরু করে। যার ফলে ওই অঞ্চলে সার্বভৌমত্ব দাবী করে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাকামী শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকেই আসামে অধুনা বাংলাদেশ (তখনকার পূর্ব পাকিস্তান) থেকে শরণার্থীরা আসতে শুরু করে। ১৯৬১ সালে মুখ্যমন্ত্রী বিমলাপ্রসাদ চালিহার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস পরিচালিত আসাম সরকার বিধানসভায় একটি বিল পাশ করে, যার মাধ্যমে পুরো রাজ্যে একমাত্র সরকারি ভাষা হিসাবে অসমীয়াকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে দক্ষিণ আসামের কাছাড় জেলার বাঙালিরা ভাষা আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬১ সালের ১৯ মে তারিখে এই ভাষা আন্দোলন চলাকালীন আধা-সামরিক বাহিনীর গুলিতে এগারোজন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। এর পরে চাপের মুখে ভাষা বিলটি প্রত্যাহৃত হয়।
বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকের পর থেকে আসামে বিভিন্ন সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী যথা, আলফা এবং ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক ফ্রন্ট অব বড়োল্যান্ড ইত্যাদি জন্ম নেয়।
অর্থনীতি
শাল, শিশু প্রভৃতি কাঠ আসাম রাজ্যের প্রধান লাভজনক পণ্য। ভারতীয় গণ্ডার থেকেও প্রভূতঃ আয় হয়। মুগা ও এন্ডি রেশম এ রাজ্যের বিখ্যাত ব্যবসায়ের দ্রব্য। আসাম চায়ের ব্যবসায়েও বিলক্ষণ লাভ হয়ে থাকে।
আসাম চা
আসামের চা বিশেষ বিখ্যাত এবং এ চায়ের বৈজ্ঞানিক নাম হল ক্যামেলিয়া আসামিকা (Camellia assamica)|
জনসংখ্যা
২০১১ সালের হিসাব মতে আসামের জনসংখ্যা ৩,১২,০৫,৫৬৬।
আগত শরণার্থীর পরিসংখ্যান
বাংলাভাষী ও অসমীয়াভাষীর জনগণনা
২০১১ অনুযাায়ী ভাষাসমূহ
ধর্ম
আসামের প্রধান ধর্মগুলো হল হিন্দুধর্ম ( ৫৭.৯%) এবং ইসলাম (৩৯.৯%)। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্ট ধর্ম (৩.৭%), শিখ ধর্ম (১%), বৌদ্ধ ধর্ম ইত্যাদি।
সাংস্কৃতিক বিবর্তন
বাংলার সাথে ভাষার সৌসাদৃশ্য এত অধিক যে, সেজন্য বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের মতো বাংলা ভাষাই এ রাজ্যের আদালতের এবং রাজকার্যের ভাষারূপে পূর্বে পরিগণিত হতো। কিন্তু রাজ্যের উন্নতি হওয়ায়, সরকার ১৮৭৩ খ্রীস্টাব্দে অসমীয়া ভাষাকেই বাংলা ভাষার পরিবর্তে প্রবর্তিত করেন।
উৎসব
আসাম বিভিন্ন উৎসব আর মেলার ভূমি। এই রাজ্যের প্রধান উৎসবগুলো হলো বিহু, দুর্গা পূজা, কালি পূজা, দীপান্বিতা, কামাখ্যা মেলা, মে-ডাম-মে-ফী, ঈদ, মহরম, শঙ্করদেবের জন্মোৎসব, বৈচাগু, আলি আঃয়ে লৃগাং, বাইখু, রংকের, অম্বুবাচী মেলা, জোনবিল মেলা ইত্যাদি। পালন করেন।
বিহু
অসমীয়াদের প্রধান উৎসব হলো বিহু। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে অসমীয়ারা বিহু পালন করে। বিহু তিনটি- ব'হাগ (রঙালি) বিহু, মাঘ (ভোগালী) বিহু আর কাতি (কঙালি) বিহু।
পরিবহণ
রেল
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল-এর সদর দপ্তর এই রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে অবস্থিত।
আরও দেখুন ==
নিম্ন আসাম
উচ্চ আসাম
নিম্ন আসাম বিভাগ
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Assam Tourism (আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট)
আসামের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আসাম সম্পর্কে বর্ণনা
আসামের শহরসমূহের মানচিত্র
অসম ডট অর্গ
ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল
সপ্তভগিনী রাজ্য
উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য
১৯৪৭-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল
উত্তর-পূর্ব ভারত
ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল | https://en.wikipedia.org/wiki/Assam | Assam | Assam ( ə-SAM, a-SAM, Assamese: [ɔ'xɔm] ) is a state in northeastern India, south of the eastern Himalayas along the Brahmaputra and Barak River valleys. Assam covers an area of 78,438 km2 (30,285 sq mi). It is the second largest state in northeastern India by area and the largest in terms of population, with more than 31 million inhabitants. The state is bordered by Bhutan and Arunachal Pradesh to the north; Nagaland and Manipur to the east; Meghalaya, Tripura, Mizoram and Bangladesh to the south; and West Bengal to the west via the Siliguri Corridor, a 22-kilometre-wide (14 mi) strip of land that connects the state to the rest of India. Assamese and Boro are the official languages of Assam. Meitei (Manipuri) is the official language of Hojai district and the entirety of the Barak Valley region, while Bengali is an official language in the three districts of Barak Valley.
The state has 35 districts with 5 divisions. Guwahati (containing the state capital Dispur) is the largest city in northeastern India. Assam is known for Assam tea and Assam silk. The state was the first site for oil drilling in Asia. Assam is home to the one-horned Indian rhinoceros, along with the wild water buffalo, pygmy hog, tiger and various species of Asiatic birds, and provides one of the last wild habitats for the Asian elephant. The Assamese economy is aided by wildlife tourism to Kaziranga National Park and Manas National Park, which are World Heritage Sites. Dibru-Saikhowa National Park is famed for its feral horses. Sal tree forests are found in the state which, as a result of abundant rainfall, look green all year round. Assam receives more rainfall than most parts of India; this rain feeds the Brahmaputra River, whose tributaries and oxbow lakes provide the region with a distinctive hydro-geomorphic environment.
|
2755 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE%20%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%80 | বুড়িগঙ্গা নদী | বুড়িগঙ্গা নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ২৯ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩০২ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা "পাউবো" কর্তৃক বুড়িগঙ্গা নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ৪৭। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। ৪০০ বছর আগে এই নদীর তীরেই গড়ে উঠেছিল ঢাকা শহর।
ইতিহাস
ব্রহ্মপুত্র আর শীতলক্ষ্যার পানি এক স্রোতে মিশে বুড়িগঙ্গা নদীর সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বর্তমানে এটা ধলেশ্বরীর শাখাবিশেষ। কথিত আছে, গঙ্গা নদীর একটি ধারা প্রাচীনকালে ধলেশ্বরী হয়ে সোজা দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মিশেছিল। পরে গঙ্গার সেই ধারাটির গতিপথ পরিবর্তন হলে গঙ্গার সাথে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে প্রাচীন গঙ্গা এই পথে প্রবাহিত হতো বলেই এমন নামকরণ। মূলত ধলেশ্বরী থেকে বুড়িগঙ্গার উৎপত্তি। কলাতিয়া এর উৎপত্তিস্থল। বর্তমানে উৎসমুখটি ভরাট হওয়ায় পুরানো কোন চিহ্ন খোঁজে পাওয়া যায় না।
বুড়িগঙ্গার সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজ করেছিলেন বাংলার সুবাদার মুকাররম খাঁ। তার শাসনামলে শহরের যেসকল অংশ নদীর তীরে অবস্থিত ছিল, সেখানে প্রতি রাতে আলোক সজ্জা করা হতো। এছাড়া নদীর বুকে অংসখ্য নৌকাতে জ্বলতো ফানুস বাতি। তখন বুড়িগঙ্গার তীরে অপরুপ সৌন্দর্য্যের সৃষ্টি হতো। ১৮০০ সালে টেইলর বুড়িগঙ্গা নদী দেখে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন- "বর্ষাকালে যখন বুড়িগঙ্গা পানিতে ভরপুর থাকে তখন দুর থেকে ঢাকাকে দেখায় ভেনিসের মতো।" তবে বুড়িগঙ্গার আগের ঐতিহ্য এখন আর নেই। কালের বিবর্তনে দখল হয়ে যাচ্ছে বুড়িগঙ্গার নদীতীর।
অন্যান্য তথ্য
বুড়িগঙ্গা সাকুল্যে ৩০ কিমি দীর্ঘ। গড়পড়তা ৪০০ মিটার প্রশস্ত। গভীরতা প্রায় ৪০ মিটার। ১৯৮৪ সালে এর পানিপ্রবাহের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯০২ কিউসেক। তবে বর্তমানে বুড়িগঙ্গার পানিপ্রবাহের পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
চিত্রশালা
আরও দেখুন
বাংলাদেশের নদীর তালিকা
বাংলাদেশের বড় নদীসমূহ
তথ্যসূত্র
কিংবদন্তির ঢাকা, নাজির হোসেন, পৃষ্ঠা ৪২১ ও ৪২৭
ঢাকা সমগ্র ৩, মুনতাসীর মামুন, পৃষ্ঠা ১৫০
বাংলাদেশের নদীঃ মোকাররম হোসেন; পৃষ্ঠা ১০৩; কথাপ্রকাশ; দ্বিতীয় সংস্করণঃ আগস্ট ২০১৪
বহিঃসংযোগ
কেরানীগঞ্জ উপজেলা
ঢাকা জেলার নদী
নারায়ণগঞ্জ জেলার নদী
সাভার উপজেলা
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা
বাংলাদেশের পরিবেশগত সমস্যা
গঙ্গা অববাহিকা
বাংলাদেশের নদী
ঢাকার ভূগোল
ঢাকা জেলা | https://en.wikipedia.org/wiki/Buriganga_River | Buriganga River | The Buriganga (Bengali: বুড়িগঙ্গা, Buŗigônga, lit. 'Old Ganges') is a river in Bangladesh which flows past the southwest outskirts of the capital city, Dhaka. Its average depth is 7.6 metres (25 ft) and its maximum depth is 18 metres (58 ft). It ranks among the most polluted rivers in the country. |
2763 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE | কালেমা | কালেমা বা কালিমা () ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস সংবলিত কয়েকটি আরবি পংক্তির নাম। এর মাধ্যমেই ইসলামের প্রথম স্তম্ভ শাহাদাহ্ পূর্ণতা পায়। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ — আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ বা উপাস্য নেই। এটি ইসলামের চূড়ান্ত কালেমা, মানবজীবনের পরম বাক্য। এই মহামূল্যবান বাণীর রয়েছে বিশেষ মর্যাদা এবং এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে বিভিন্ন হুকুম আহকামের। আর এই কালেমার রয়েছে এক বিশেষ অর্থ ও উদ্দেশ্য এবং কয়েকটি শর্ত, ফলে এ কালেমাকে গতানুগতিক মুখে উচ্চারণ করাই ঈমানের জন্য যথেষ্ট নয়। বান্দার প্রথম কাজ হলো এ কালেমার স্বীকৃতি দান করা; কেননা এ হলো সমস্ত কর্মের মূল ভিত্তি। ইসলামে মোট ছয়টি কালেমা রয়েছে।
ব্যক্তি জীবনে কালেমার গুরুত্ব
এটি এমন এক গুরুত্বপূর্ণ বাণী যা মুসলিমগণ তাদের আযান, ইকামত, বক্তৃতা-বিবৃতিতে বলিষ্ঠ কন্ঠে ঘোষণা করে থাকে, এটি এমন এক কালেমা যার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আসমান জমিন, সৃষ্টি হয়েছে সমস্ত মাখলুকাত। আর এর প্রচারের জন্য আল্লাহ যুগে যুগে পাঠিয়েছেন অসংখ্য রাসুল এবং অবতীর্ণ করেছেন আসমানী কিতাবসমূহ, প্রণয়ন করেছেন অসংখ্য বিধান। প্রতিষ্ঠিত করেঁছেন মীযান এবং ব্যবস্থা করেছেন পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেবের, তৈরি করেছেন জান্নাত এবং জাহান্নাম। এই কালেমাকে স্বীকার করা এবং অস্বীকার করার মাধ্যমে মানব সম্প্রদায় ঈমানদার এবং কাফির এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। অতএব, সৃষ্টি জগতে মানুষের কর্ম, কর্মের ফলাফল, পুরস্কার অথবা শাস্তি সব কিছুরই উৎস হচ্ছে এই কালেমা। এরই জন্য উৎপত্তি হয়েছে সৃষ্টিকুলের, এ সত্যের ভিত্তিতেই আখিরাতে জিজ্ঞাসাবাদ এবং এর ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে সাওয়াব ও শাস্তি। এই কালেমার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুসলিমদের কিবলা এবং এ হলো মুসলিমদের জাতি সত্তার ভিত্তি-প্রস্তর এবং এর প্রতিষ্ঠার জন্য খাপ থেকে খোলা হয়েছে জিহাদের তরবারী।
বান্দার ওপর এটাই হচ্ছে আল্লাহর অধিকার, এটাই ইসলামের মূল বক্তব্য ও শান্তির আবাসের (জান্নাতের) চাবিকাঠি এবং পূর্বা-পর সকলেই জিজ্ঞাসিত হবে এই কালেমা সম্পর্কে। আর এ কালেমাই হচ্ছে কুফর ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী।
কালেমার উদ্দেশ্য
কালেমা যার সাক্ষ্য আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং নিজেই নিজের জন্য দিয়েছেন, আরো দিয়েছেন ফিরিশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
এ কালেমাই ইখলাস তথা সত্যনিষ্ঠার বাণী, এটাই সত্যের সাক্ষ্য ও তার দাওয়াত এবং শির্ক এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার বাণী এবং এ জন্যই সমস্ত সৃষ্টি জগতের সৃষ্টি।
এই কালেমা প্রচারের জন্য আল্লাহ সমস্ত রাসূল এবং আসমানি কিতাবসমূহ প্রেরণ করেছেন, তিনি বলেন,
আল্লাহ আরো বলেন,
ইবন উইয়াইনা বলেন, “বান্দার ওপর আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে প্রধান এবং বড় নি‘আমত হলো তিনি তাদেরকে لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) তাঁর এই একত্ববাদের সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন। দুনিয়ার পিপাসা কাতর তৃষ্ণার্ত একজন মানুষের নিকট ঠাণ্ডা পানির যে মূল্য, আখেরাতে জান্নাতবাসীদের জন্য এ কালেমা তদ্রূপ’
স্তম্ভ ও শর্তসমূহ
إِلهَ (ইলাহ) শব্দের অর্থ ‘মা‘বুদ’ আর তিনি হচ্ছেন ঐ সত্ত্বা যে সত্ত্বার প্রতি কল্যাণের আশায় এবং অকল্যান থেকে বাঁচার জন্য হৃদয়ের আসক্তি সৃষ্টি হয় এবং মন তার উপাসনা করে।
এ কালেমার রয়েছে দু’টি স্তম্ভ বা রুকন। তন্মধ্যে প্রথম রুকন হচ্ছে না বাচক আর অপরটি হলো হাঁ বাচক।
না বাচক কথাটির অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ ব্যতীত সমস্ত কিছুর ইবাদতকে অস্বীকার করা, আর হ্যাঁ সূচক কথাটির অর্থ হচ্ছে একমাত্র আল্লাহই সত্য মা‘বুদ। আর মুশরিকগণ আল্লাহ ব্যতীত যেসব মা‘বুদের উপাসনা করে সবগুলো মিথ্যা এবং বানোয়াট মা‘বুদ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
এই পবিত্র কালেমা মুখে বলাতে কোনই উপকারে আসবে না যে পর্যন্ত এর সাতটি (কোনো কোনো আলেম এর সাথে অষ্টম শর্ত যোগ করেছেন, আর তা হচ্ছে, তাগুতেরসাথে কুফুরী।) শর্ত পূর্ণ করা না হবে।
প্রথম শর্ত: এ কালেমার না বাচক এবং হ্যাঁ বাচক দু’টি অংশের অর্থ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। অর্থ এবং উদ্দেশ্য না বুঝে শুধুমাত্র মুখে এ কালেমা উচ্চারণ করার মধ্যে কোনো লাভ নেই। কেননা সে ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি এ কালেমার মর্মের ওপর ঈমান আনতে পারবে না। আর তখন এ ব্যক্তির উদাহরণ হবে ঐ লোকের মতো যে লোক এমন এক অপরিচিত ভাষায় কথা বলা শুরু করল যে ভাষা সম্পর্কে তার সামান্যতম জ্ঞান ও নেই।
দ্বিতীয় শর্ত: ইয়াকীন বা দৃঢ় প্রত্যয়। অর্থাৎ এ কালেমার মাধ্যমে যে কথার স্বীকৃতি দান করা হলো তাতে সামান্যতম সন্দেহ পোষণ করা চলবে না।
তৃতীয় শর্ত: ঐ ইখলাস বা নিষ্ঠা, যা لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর দাবী অনুযায়ী ঐ ব্যক্তিকে শির্ক থেকে মুক্ত রাখবে।
চতুর্থ শর্ত: এই কালেমা পাঠকারীকে সত্যের পরাকাষ্ঠা হতে হবে, যে সত্য তাকে মুনাফিকী আচরণ থেকে বিরত রাখবে। মুনাফিকরাও لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এ কালেমা মুখে মুখে উচ্চারণ করে থাকে, কিন্তু এর নিগূঢ় তত্ত্ব ও প্রকৃত অর্থে তারা বিশ্বাসী নয়।
পঞ্চম শর্ত: ভালোবাসা। অর্থাৎ মুনাফেকী আচরণ বাদ দিয়ে এই কালেমাকে সানন্দচিত্তে গ্রহণ করতে হবে ও ভালোবাসতে হবে।
ষষ্ট শর্ত: আনুগত্য করা। এই কালেমার দাবী অনুযায়ী তার হকগুলো আদায় করা, আর তা হচ্ছে আল্লাহর জন্য নিষ্ঠা ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ফরয ওয়াজিব কাজগুলো সম্পাদন করা।
সপ্তম শর্ত: আন্তরিকভাবে এ কালেমাকে কবুল করা এবং এর পর দ্বীনের কোনো কাজকে প্রত্যাখান করা থেকে নিজকে বিরত রাখা। অর্থাৎ আল্লাহর যাবতীয় আদেশ পালন করতে হবে এবং তাঁর নিষিদ্ধ সব কাজ পরিহার করতে হবে।
এই শর্তগুলো প্রখ্যাত আলেমগণ চয়ন করেছেন কুরআন ও হাদীসের আলোকেই। অতএব, এ কালেমাকে শুধুমাত্র মুখে উচ্চারণ করলেই যথেষ্ট এমন ধারণা ঠিক নয়।
কালেমার অর্থ ও তার দাবি
لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর অর্থ হচ্ছে, সত্য এবং হক উপাস্য বলতে যে ইলাহকে বুঝায় তিনি হলেন একমাত্র আল্লাহ, যার কোনো শরীক নেই এবং তিনিই একমাত্র ইবাদত পাওয়ার অধিকারী। তাই এ মহান কালেমার অর্থে এটাও অন্তর্ভুক্ত যে, তিনি ব্যতীত যত উপাস্য আছে সব অসত্য এবং বাতিল, তাই তারা ইবাদত পাওয়ার অযোগ্য। এজন্য অধিকাংশ সময় আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাতের আদেশের সাথে সাথে কুরআনে তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করতে নিষেধ করা সম্বলিত নির্দেশনা এসেছে। কেননা আল্লাহর ইবাদতের সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করা হলে সে ইবাদত গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তিনি আরো বলেন,
ইবন রজব বলেন, কালেমার এই অর্থ বাস্তবায়িত হবে তখন, যখন বান্দাহ لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর স্বীকৃতি দান করার পর এটা বিশ্বাস করবে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং মা‘বুদ হওয়ার একমাত্র যোগ্য ঐ সত্তা যাকে ভয়-ভীতি, বিনয়, ভালোবাসা, আশা-ভরসা সহকারে আনুগত্য করা হয়, যার নিকট প্রার্থনা করা হয়, যার সমীপে দো‘আ করা হয় এবং যার অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকা হয়। আর এ সমস্ত কাজ একমাত্র মহান আল্লাহ ছাড়া আর কারো জন্য প্রযোজ্য নয়। এ জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কার কাফেরদেরকে বললেন, তোমরা বলো, لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ উত্তরে তারা বললো,
তাদের সম্পর্কে আল্লাহ আরো বলেন,
যে ব্যক্তি কালেমার অর্থ জেনে বুঝে কালেমার দাবী অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে এর স্বীকৃতি দান করল এবং প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সর্বাবস্থায় নিজকে শির্ক থেকে বিরত রেখে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে একমাত্র আল্লাহর ইবাদাতকে নির্ধারণ করল, সে ব্যক্তি প্রকৃত অর্থে মুসলিম। আর যে এই কালেমার মর্মার্থকে বিশ্বাস না করে এমনিতে প্রকাশ্যভাবে এর স্বীকৃতি দান করল এবং এর দাবী অনুযায়ী গতানুগতিকভাবে কাজ করল সে ব্যক্তি মূলত মুনাফিক। আর যে মুখে এ কালেমা বলল এবং শির্ক এর মাধ্যমে এর বিপরীত কাজ করল সে প্রকৃত অর্থে স্ববিরোধী মুশরিক। সুতরাং এ কালেমা উচ্চারণের সাথে সাথে অবশ্যই এর অর্থ জানতে হবে। কারণ, অর্থ জানাই হচ্ছে এর দাবী অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যম। আল্লাহ বলেন,
আর কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর অন্যতম দাবী হলো ইবাদত, মোয়‘আমেলাত (লেন-দেন) হালাল-হারাম, সর্বাবস্থায় আল্লাহর বিধানকে মেনে নেওয়া এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও প্রবর্তিত বিধানকে বর্জন করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
এ থেকে বুঝা গেল অবশ্যই ইবাদত, লেন-দেন এবং মানুষের মধ্যে বিতর্কিত বিষয়সমূহ ফয়সালা করতে আল্লাহর বিধানকে মেনে নিতে হবে এবং এর বিপরীত মানব রচিত সকল বিধানকে ত্যাগ করতে হবে। এ অর্থ থেকে আরো বুঝা গেল যে, সমস্ত বিদ‘আত এবং কুসংস্কার যা জিন্ন ও মানবরূপী শয়তান রচনা করে, তাও পরিত্যাগ করতে হবে। আর যে এগুলোকে গ্রহণ করবে সে মুশরিক বলে গণ্য হবে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আদী ইবন হাতেম আত-ত্বায়ীর সামনে উল্লিখিত আয়াত পাঠ করেন তখন ‘আদী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমরা আমাদের পীর-পুরোহিতদের ইবাদত করি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ যে সমস্ত জিনিস হারাম করেছেন তোমাদের পীর-পুরোহীতরা তা হালাল করেছে, আর আল্লাহ যে সমস্ত জিনিস হালাল করেছেন তা তারা হারাম বা অবৈধ করেছে, তোমরা কি এতে তাদের অনুসরণ কর না? আদী বললেন, অবশ্যই হ্যাঁ, এতে আমরা তাদের অনুসরণ করতাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটাই তাদের ইবাদত।
আশ-শাইখ আবদুর রহমান ইবন হাসান বলেন, সুতরাং অন্যায় কাজে তাদের আনুগত্য করার জন্যই এটা আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের ইবাদত হয়ে গেল এবং এরই মাধ্যমে পীর-পুরোহিতদের তারা নিজেদের রব হিসেবে গ্রহণ করল। আর এ হলো আমাদের বর্তমান জাতির অবস্থা এবং এটা এক প্রকার বড় শির্ক যার মাধ্যমে আল্লাহর একত্ববাদ বা তাওহীদকে অস্বীকার করা হয়, যে একত্ববাদ বা তাওহীদের অর্থ বহন করে কালেমা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ এর সাক্ষ্য। অতএব, এখানে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, এই ইখলাসের কালেমা (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ) এসব বিষয়কে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে কারণ তা এ কালেমার অর্থের সম্পূর্ণ বিরোধী।
অনুরূভাবে মানব রচিত আইনের কাছে বিচার চাওয়া, বিচারের জন্য সেগুলোর দ্বারস্থ হওয়া পরিত্যাগ করা ওয়াজিব। কেননা, বিচার ফয়সালাতে আল্লাহর কিতাব কুরআনের কাছে যাওয়া ওয়াজিব। তদ্রূপ আল্লাহর কিতাব ব্যতীত অন্য কোনো আইন ও বিধানের কাছে বিচারের জন্য যাওয়া পরিত্যাগ করাও ওয়াজিব। যে ব্যক্তি আল্লাহর হুকুম মোতাবেক ফয়সালা করে না তার বিষয়ে আল্লাহর ফয়সালা হলো এই যে, সে কাফির অথবা যালিম অথবা ফাসেক এবং তার ঈমানদার থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। যা প্রমাণ করে যে, আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী যে ব্যক্তি ফয়সালা করবে না সে কাফির হয়ে যাবে যখন সে শরী‘আত বিরোধী ফায়সালা দেয়াকে জায়েয বা মুবাহ মনে করবে অথবা মনে করবে যে, তার ফয়সালা আল্লাহ তা‘আলার ফয়সালা থেকে অধিক উত্তম বা অধিক গ্রহণীয়। এমন বিশ্বাস পোষণ করা হবে তাওহীদ পরিপন্থী, কুফুরী ও শির্ক এবং তা لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এই কালেমার অর্থের একেবারে বিরোধী।
আর যদি বিচারক বা শাসক শরী‘আত বিরোধী ফয়সালা দানকে মুবাহ বা জায়েয মনে না করে, বরং শরী‘আত অনুযায়ী ফয়সালা প্রদানকে ওয়াজিব মনে করে কিন্তু পার্থিব লালসার বশবর্তী হয়ে নিজের মনগড়া আইন দিয়ে ফয়সালা করে তবে এটা ছোট শির্ক ও ছোট কুফুরীর পর্যায়ে পড়বে। তবে এটাও لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ এর অর্থের পরিপন্থী। অতএব, لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ একটি পূর্ণাঙ্গ পথ ও পদ্ধতি, এ কালেমাই মুসলিমদের জীবনকে সার্বিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং পরিচালনা করবে তাদের সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী এবং সমস্ত কাজ কর্মকে। এই কালেমা শুধুমাত্র কতগুলো শব্দের সমারোহ নয় যে, না বুঝে একে সকাল সন্ধ্যার তাসবীহ হিসেবে শুধুমাত্র বরকতের জন্য পাঠ করবে আর এর দাবী অনুযায়ী কাজ করা থেকে বিরত থাকবে অথবা এর নির্দেশিত পথে চলবে না। মূলতঃ অনেকেই একে শুধুমাত্র গতানুগতিক ভাবে মুখে উচ্চারণ করে থাকে, কিন্তু তাদের বিশ্বাস ও কর্ম এর পরিপন্থী।
প্রথম কালেমা
প্রথম কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে তাইয়্যেবা এর অর্থ হল পবিত্র বাক্য।
আরবি
لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ ٱللَّٰهِ
প্রতিবর্ণীকরণ / বাংলা উচ্চারণ
লা~ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লা-হ্।।
বাংলা অনুবাদ
আল্লাহ্ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নাই, মুহাম্মাদতার প্রেরিত রসূল।
দ্বিতীয় কালেমা
দ্বিতীয় কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে শাহাদাত, যার অর্থ হল সাক্ষ্য বাক্য।
আরবি
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
প্রতিবর্ণীকরণ / বাংলা উচ্চারণ
আশ্হাদু আল-লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু-লা-শারীকালাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আ'বদুহু ওয়া রাসূলুহু।
অনুবাদ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই। তিনি এক, অদ্বিতীয় এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ (স) তার বান্দা ও প্রেরিত রাসুল।
তৃতীয় কালেমা
তৃতীয় কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে তামজিদ, যার অর্থ হল "শ্রেষ্ঠত্ববাদী বাক্য"।
আরবি
سُبْحَانَ ٱللَّٰهِ وَٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ وَلَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ وَٱللَّٰهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِٱللَّٰهِ ٱلْعَلِيِّ ٱلْعَظِيمِ
বাংলা উচ্চারণ
সুবহানআল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীইল আযীম।
বাংলা অনুবাদ
মহিমান্বিত আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। আল্লাহ মহান। সমস্ত পবিত্রতা আল্লাহর, সকল প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নাই, কোনো ক্ষমতা নাই, তিনি সম্মানিত, তিনি মহান।
চতুর্থ কালেমা
চতুর্থ কালেমা হচ্ছে কালেমায়ে তাওহিদ, যার অর্থ হল "একত্ববাদী বাক্য"।
আরবি
لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ ٱلْمُلْكُ وَلَهُ ٱلْحَمْدُ، يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ حَيٌّ لَا يَمُوتُ أَبَدًا أَبَدًا، ذُو ٱلْجَلَالِ وَٱلْإِكْرَامِ بِيَدِهِ ٱلْخَيْرُ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
প্রতিবর্ণীকরণ / বাংলা উচ্চারণ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওলাহুল হামদু উহয়ী ওয়া ইয়োমিতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা জুল জালালি ওয়াল ইকরাম বি ইয়াদিহিল খাইর ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির
বাংলা অনুবাদ
আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তার কোন অংশীদার নেই। সকল ক্ষমতা এবং প্রশংসা তারই জন্য। তিনিই জীবন ও মৃত্যুর মালিক। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি সকল সম্মানের মালিক। তার হাতেই সকল মঙ্গল এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতা রাখেন।
পঞ্চম কালেমা
পঞ্চম কালেমা কালেমা-ই-আস্তাগফের নামেও পরিচিত।
আরবি
أَسْتَغْفِرُ ٱللَّٰهَ رَبِّي مِنْ كُلِّ ذَنْبٍ أَذْنَبْتُهُ عَمْدًا أَوْ خَطَأً سِرًّا وَعَلَانِيَةً وَأَتُوبُ إِلَيْهِ مِنَ ٱلذَّنْبِ ٱلَّذِي أَعْلَمُ وَمِنَ ٱلذَّنْبِ ٱلَّذِي لَا أَعْلَمُ، إِنَّكَ أَنْتَ عَلَّامُ ٱلْغُيُوبِ وَسَتَّارُ ٱلْعُيُوْبِ وَغَفَّارُ ٱلذُّنُوبِ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِٱللَّٰهِ ٱلْعَلِيِّ ٱلْعَظِيمِ
প্রতিবর্ণীকরণ / বাংলা উচ্চারণ
আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জামবি আয নাবতুহু আমাদান আওখাতাআন সিররান আওয়ালা নিয়াতান ওয়াতুবু ইলাইহি মিনাযযামবিল্লাজি ওয়ামিনাযযামবিল্লাজি লা আলামু ইন্নাকা আনতা আল্লামুল গুয়ুবী ওয়া সাত্তারুল উইয়ুবী ওয়া গাফফারুজজুনুবি ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীইল আযীম।
বাংলা অনুবাদ
আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই সকল পাপ থেকে, যা আমি সংঘটিত করেছি আমার জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে, গোপনে বা প্রকাশ্যে এবং আমি আমার পালনকর্তার আশ্রয় চাই সেই পাপ থেকে, যে পাপ আমি জানি এবং যে পাপ আমি জানিনা। অবশ্যই আপনি লুকানো এবং গোপন (ভুল) পাপ সম্পর্কে জানেন এবং ক্ষমাশীল। আল্লাহ ছাড়া কোন শক্তি নেই, কোন ক্ষমতা নেই, তিনি সম্মানিত, তিনি মহান।
ষষ্ঠ কালেমা
কালেমা-ই-রুদ-ই-কুফর ইসলামে অবিশ্বাসীদের প্রত্যাখ্যানমূলক বাক্য হিসেবেও পরিচিত।
আরবি
ٱللَّٰهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْءً وَأَنَا أَعْلَمُ بِهِ وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا أَعْلَمُ بِهِ تُبْتُ عَنْهُ وَتَبَرَّأَتُ مِنَ ٱلْكُفْرِ وَٱلشِّرْكِ وَٱلْكِذْبِ وَٱلْغِيبَةِ وَٱلْبِدْعَةِ وَٱلنَّمِيمَةِ وَٱلْفَوَاحِشِ وَٱلْبُهْتَانِ وَٱلْمَعَاصِي كُلِّهَا وَأَسْلَمْتُ وَأَقُولُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ ٱللَّٰهِ
প্রতিবর্ণীকরণ / বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন উশরিকা বিকা শাইআও ওয়ানা আলামু বিহি ওয়াস্তাগফিরুকা লিমালা আলামু বিহি তুবতু আনহু ওয়া তাবাররাতু মিনাল-কুফরি ওয়াশ-শিরকী ওয়াল-কিজবি ওয়ালা-গিবাতি ওয়াল-বিদাতি ওয়ান্না-মিমাতি ওয়াল-ফাওয়া হিমি ওয়াল-রুহতানী ওয়াল-মাআসি কুল্লিহা ওয়াসলামতু ওয়াকুলু লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
বাংলা অনুবাদ
হে আল্লাহ নিশ্চয়, ক্ষমা চাই শিরক করা থেকে (আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করা), আমি ক্ষমা চাই সকল পাপ থেকে যা সম্পর্কে আমি সচেতন নই বা জানি না, আমি পুনরায় ঘোষণা করছি, আমি সকল প্রকার কুফর থেকে, শিরক থেকে, মিথ্যা (কথা বলা), গিবত (কারও অনুপস্থিতিতে পরনিন্দা), বিদাত, পরনিন্দা, অশ্লীলতা এবং অন্যান্য সকল পাপ থেকে মুক্ত। আমি ইসলাম স্বীকার এবং বিশ্বাস করি এবং ঘোষণা দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রভু নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।
তথ্যসূত্র
টিকা
বহিঃসংযোগ
কালেমা
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ
ইসলামি পরিভাষা
বিশ্বাস | null | null | null |
2771 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8 | মিনিক্স | মিনিক্স একটি ইউনিক্স-লাইক কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। মাইক্রো কার্নেল আর্কিটেকচার ভিত্তিক এই অপারেটিং সিস্টেমটি অ্যান্ড্রুএস ট্যানেনবাম শিক্ষামূলক কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরী করেছিলেন। মিনিক্স লিনাক্স কার্নেল তৈরীতেও প্রেরণা যুগিয়েছিল।
মিনিক্স (মিনি-ইউনিক্স) প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে, সম্পূর্ণ সোর্স কোড বিশ্ব বিদ্যালয়ে লেখাপড়া এবং গবেষণার কাজে ব্যবহার করার জন্য উন্মুক্ত ছিল। এটি ফ্রি এবং মুক্ত সোর্স করা হয় ২০০০ সালে যখন এটির লাইসেন্স পরিবর্তন করে বিএসডি লাইসেন্সের অধিনে নেয়া হয়।
ইমপ্লিমেন্টেশন
মিনিক্স ১.০
অ্যান্ড্রু ট্যানেনবাম মিনিক্স তৈরী করেছিলেন আর্মস্টর্ডামের ভ্রিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৭ সালেপাঠ্য বইয়ের অপারেটিং সিস্টেম:ডিজাইন এবং প্রয়োগ অধ্যায়ে উল্লেখিত বৈশিষ্টগুলির কার্যকরী প্রয়োগ দেখানোর জন্য তিনি এটি তৈরী করেছিলেন।
বইতে মিনিক্স ১.০ এর প্রায় ১২০০০ লাইন সি সোর্স কোড প্রকাশ করা হয়েছে। মূলত কার্নেল, মেমরী ব্যবস্থাপনা, এবং ফাইল সিস্টেমের বিভিন্ন অংশের কোড এটি। Prentice-Hall মিনিক্সের সোর্স কোড এবং বাইনারি ফাইল ফ্লপি ডিস্কে প্রকাশ করেছে, এবং এর সাথে ব্যবহারী নির্দেশিকা অন্তর্ভুক্ত করা ছিল। মিনিক্স ১ সিস্টেমটি ইউনিক্সের সপ্তম সংস্করণের সমমানের।
টেনেনবাম সেই সময়ে সহজলভ্য IBM PC এবং IBM PC/AT মাইক্রোকম্পিউটারের উপযোগী করে ইউনিক্স তৈরী করেছিলেন।
মিনিক্স ১.৫
মিনিক্স ২.০
মিনিক্স-ভিএমডি
মিনিক্স৩
মিনিক্স এবং লিনাক্স
লাইসেন্স
আরও দেখুন
MINIX file system
Minix-vmd
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
History of MINIX from Andrew Tanenbaum
অপারেটিং সিস্টেম
মুক্ত সফটওয়্যার
এআরএম অপারেটিং সিস্টেম
ওলন্দাজ উদ্ভাবন
মুক্ত সফটওয়্যারের অপারেটিং সিস্টেম | https://en.wikipedia.org/wiki/Minix | Minix | MINIX (from mini-Unix) is a Unix-like operating system based on a microkernel architecture. Since version 2.0, it has been POSIX compliant.
Early versions of MINIX were created by Andrew S. Tanenbaum for educational purposes. Starting with MINIX 3, the primary aim of development shifted from education to the creation of a highly reliable and self-healing microkernel OS. MINIX 3 was developed as open-source software.
MINIX was first released in 1987, with its complete source code made available to universities for study in courses and research. It has been free and open-source software since it was relicensed under the BSD 3-Clause license in April 2000. |
2772 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%20%28%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A6%9F%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%29 | ল্যাম্প (সফটওয়্যার গুচ্ছ) | ল্যাম্প (L.A.M.P.) শব্দটি একগুচ্ছ বিনামূল্য সফটওয়্যারকে বোঝায়, যেগুলো সাধারণত ওয়েব সাইট বা সার্ভার পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
লিনাক্স(Linux), (এক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম)
এ্যাপাচি(Apache), (এক ধরনের ওয়েব সার্ভার),
মাইএসকিউএল(MySQL), (এক ধরনের ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম)
পিএইচপি (PHP), বা পার্ল(Perl), বা পাইথন(Python) (স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ)
একত্রে ল্যাম্প (L.A.M.P.) নামে অভিহিত করা হয় (ইংরেজিতে তাদের প্রথম অক্ষরগুলি সাজালে এরকমই দাঁড়ায়)।
লিনাক্স সফটওয়্যার
লিনাক্স-এর জন্য ইন্টারনেট সফটওয়্যার
লিনাক্স
মাইএসকিউএল
মারিয়াডিবি
ওয়েব সার্ভার সফটওয়্যার | https://en.wikipedia.org/wiki/LAMP_(software_bundle) | LAMP (software bundle) | A LAMP (Linux, Apache, MySQL, Perl/PHP/Python) is one of the most common software stacks for the web's most popular applications. Its generic software stack model has largely interchangeable components.
Each letter in the acronym stands for one of its four open-source building blocks:
Linux for the operating system
Apache HTTP Server
MySQL for the relational database management system
Perl, PHP, or Python for the programming language
The components of the LAMP stack are present in the software repositories of most Linux distributions.
|
2773 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AE | গ্নোম | গ্নোম () পরিপূর্ণ ফ্রি ও ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের সম্মিলনে নির্মিত ইউনিক্স-সদৃশ অপারেটিং সিস্টেমসমূহের জন্যে একটি ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট।
"গ্নু নেটওয়ার্ক অবজেক্ট মডেল এনভায়রনমেন্ট"-এর সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে গ্নোম নামটি আসে। কিন্তু পরবর্তীতে গ্নোমের নতুন দর্শনের সাথে মিল না থাকার কারণে, এ পূর্ণরূপ ত্যাগ করা হয়।
গ্নু প্রকল্পের অংশ হিসেবে গ্নোম প্রকল্প দ্বারা গ্নোম উন্নয়ন করা হয়। দ্য গ্নোম প্রজেক্ট সেচ্ছাসেবী ও বেতনভূক্ত কর্মচারী উভয়ের সমন্বয়েই গঠিত।সফটওয়্যার উন্নয়নের জন্যে সফটওয়্যার ফ্রেমওয়ার্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত গ্নোম প্রকল্প একটি আন্তর্জাতিক প্রকল্প।
বিভিন্ন প্রধান লিনাক্স ডিস্ট্রোর ডিফল্ট ডেস্কটপ পরিবেশ গ্নোম, যে তালিকায় নাম আছে ফেডোরা, ডেবিয়ান, উবুন্টু, সুয্যে লিনাক্স, রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স, কালি লিনাক্সসহ অনেক জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমের। সোলারিস, ইউনিক্সেরও এটি ডিফল্ট ডেস্কটপ পরিবেশ।
গ্নোম দুটো ভিন্ন লগইন সেশনে পাওয়া যায়। একটি গ্নোম প্যানেল ও মেটাসিটি (উইন্ডো ম্যানেজার) ভিত্তিক, যেটি আবার সুয্যে লিনাক্স এন্টারপ্রাইজ, রেড হ্যাট এন্টারপ্রাইজ লিনাক্স, সেন্টওএস, ওরাকল লিনাক্স, সায়েন্টিফিক লিনাক্স এবং সোলারিসের ডিফল্ট সেশন। এর স্টেবলিটি ও ডেস্কটপ-ফ্রেন্ডলি ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের জন্যেই মূলত এর এত জনপ্রিয়তা, একে গ্নোম ফ্ল্যাশব্যাক বা গ্নোম ক্লাসিকও বলা হয়। অন্যটি গ্নোম শেল ও মাটার (উইন্ডো ম্যানেজার]]-ভিত্তিক। এ সেশনের মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্যবহারকারী ইন্টারফেস এবং ইউএক্স রয়েছে। এটি সাধারণত তুলনামূলক বেশি র্যাম ও সিপিইউ ব্যবহার করে, গ্নোম শেল ও এক্সটেনশনের জন্যে জাভাস্ক্রিপ্ট ব্যবহারের কারণে।
উদ্দেশ্য
গ্নোম মূলত সরলতা, ব্যবহারযোগ্যতা এবং সহজে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। এই প্রকল্পের অন্যান্য উদ্দেশ্য হচ্ছে:
স্বাধীনতা: মুক্ত সফটওয়্যার লাইসেন্সের আওতায় উন্মুক্ত সোর্স কোডের ডেস্কটপ পরিবেশ তৈরি করা যা ব্যবহারকারীর পরবর্তনের স্বাধীনতা থাকবে।
ব্যবহার উপযোগিতা—কারিগরি দক্ষতাহীন বা শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও যাতে ডেস্কটপ ব্যবহার করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা।
আন্তর্জাতিকায়ন ও স্থানীয়করণ: বিভিন্ন ভাষায় ডেস্কটপ পরিবেশ ব্যবহার করা। বর্তমানে ১০০টিরও বেশি ভাষায় গ্নোম ব্যবহৃত হচ্ছে।
নির্মাতা-সহায়ক: ডেস্কটপের জন্য সহজে সফটওয়্যার তৈরি করা এবং প্রোগ্রামিং ভাষা নির্বাচনে নির্মাতাদের সহায়তা করা।
সংগঠন: নিয়মিত সংস্করণ প্রকাশ ও সুশৃঙ্খল কম্যুনিটি সিস্টেম গড়ে তোলা।
সহায়তা: গ্নোম কম্যুনিটির অন্যান্য সংস্থাকে সহায়তা প্রদান করা।
ইতিহাস
১৯৯৬ সালে মুক্ত সফটওয়্যার হিসেবে কেডিইর যাত্রা শুরু হলেও গ্নু প্রকল্পের সাথে জড়িতরা কেডিইতে কিউটি উইজেট টুলকিট ব্যবহারকে সন্দেহের চোখে দেখছিলেন কারণ কিউটি মুক্ত সফটওয়্যারের আওতায় পড়ে না। ১৯৯৭ সালের আগস্টে দুটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, একটি হচ্ছে কিউটি লাইব্রেরির উন্মুক্ত বিকল্প হারমোনি এবং দ্বিতীয়টি হলো গ্নোম যেটি কিউটি ব্যবহার করে না, কিন্তু ফ্রি সফটওয়্যারে বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্নোম প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন মিগুয়েল ডি কাজা এবং ফেডেরিকো মেনা।
কিউটি টুলকিটের বদলে গ্নোম ডেস্কটপের জন্য জিটিকে+ বেছে নেওয়া হয়। জিটিকে+ গ্নু লেসার জেনারেল পাবলিক লাইসেন্সের (এলজিপিএল) আওতায় একটি মুক্ত সফটওয়্যার যেটি জিপিএল নয় এমন সফটওয়্যারগুলোর সাথে প্রোগ্রামের সংযোগ ঘটাতে পারে। গ্নোম প্রকল্পের অংশ হিসেবে গ্নোম ডেস্কটপকে এলজিপিএল এবং জিপিএল লাইসেন্সের আওতায় আনা হয়। গ্নোম প্যাকেজের টুলকিট এবং লাইব্রেরিকে এলজিপিএল লাইসেন্সের আওতায় আনার ফলে গ্নোমের জন্য স্বত্বসংরক্ষিত সফটওয়্যারসহ নানা ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা সহজ হয়ে পড়ে।
১৯৯৮ সালে কিউটি মুক্ত সোর্সের আওতায় আসে। যেহেতু কিউটি কিউপিএল এবং জিপিএল উভয় লাইসেন্সের আওতায় কাজ করে, সুতরাং স্বত্বসংরক্ষিত সফটওয়্যারগুলোকে কোনো খরচ ছাড়াই জিটিকে+-এর সাথে যুক্ত করার বিষয়টি কিউটিতে আলাদাভাবে দেখা হয়। এলজিপিএল-এর আওতায় আসা সফটওয়্যারগুলো আসলে মুক্ত সফটওয়্যার দর্শনের বিপরীতে কাজ করে যা সফটওয়্যার নির্মাতাদের জন্য যথেষ্ট অসুবিধাজনক। অন্যদিকে জিপিএল লাইসেন্সের আওতায় লাইব্রেরিগুলো সফটওয়্যার নির্মাতাদের উন্মুক্ত ব্যবহারের সুবিধা দেয়, যেটা স্বত্ত্বকৃত সফটওয়্যার নির্মাতারা পায় না। ২০০০ সালের শেষ দিকে হারমোনি প্রকল্প বন্ধ করে দিতে হয়। অপরদিকে মুক্ত সোর্স লাইব্রেরি ব্যবহারের কারণে কেডিই প্রজেক্ট বন্ধ করতে হয় নি। অন্তত ২০০৯ সাল পর্যন্ত গ্নোম প্রজেক্ট বন্ধ হবে না।
কিউটির জন্য এলজিপিএল লাইসেন্সের মেয়াদ আপাতত ২০০৯ সালে মার্চ মাস পর্যন্ত রয়েছে।
নাম
অবজেক্ট অ্যাকটিভেশন ফ্রেমওয়ার্ক এবং অরবিটের অন্যতম লেখক এলিয়ট লি গ্নু নেটওয়ার্ক অবজেক্ট মডেল এনভায়রনমেন্টের সংক্ষিপ্তরূপ হিসেবে গ্নোম (GNOME) নামটি প্রস্তাব করেন। এটি বুঝায় যে গ্নোমের মূল উদ্দেশ্য মাইক্রোসফটের ওএলইর মতো একটি অবজেক্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা। তবে উপর্যুক্ত উদ্দেশ্য মূল গ্নোম প্রকল্পের ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে নি। যে কারণে গ্নোম তার মূল উদ্দেশ্য নিয়ে ভালোভাবেই চলছে। উদ্দেশ্য অনুযায়ী নামকরণের জন্য বর্তমানে গ্নোমের কিছু সদস্য গ্নোমের নাম পরিবর্তন করে গ্নোমের (GNOME) বদলে গ্নোম (Gnome) রাখার পক্ষপাতী।
গ্যালারি
গ্নোম ৩-এর ব্যবহারকারী ইন্টারফেস ডিজাইনে মডার্ন এপ্রোচ এবং নিচের এপ্লিকেশনগুলো রয়েছে:
প্রকল্পের গঠন
অন্যান্য মুক্ত সফটওয়্যার প্রকল্পের মতো গ্নোম প্রকল্পও চলে ধীরগতিতে। সদস্যরা সাধারণ মেইলিং লিস্টের মাধ্যমে এ সম্পর্কিত আলাপ-আলোচনা চালায়।
২০০০ সালের আগস্টে গ্নোম ফাউন্ডেশন গঠিত হয় যার মূল কাজ প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন করা এবং যে সমস্ত সংস্থা বা সংগঠন গ্নোম সফটওয়্যার উন্নয়নে কাজ করতে চায় তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা। গ্নোমের কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ না করলেও ফাউন্ডেশন গ্নোমের সংস্করণ এবং প্রজেক্টের কোন কোন বিষয় বা উপাদান গ্নোমের অংশ হতে পারে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যারা এই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য অনুসারে কাজ করেন তাদের যে কেউ ফাউন্ডেশনের সদস্য হতে পারেন। প্রতি বছরের নভেম্বর ফাউন্ডেশনের সদস্যরা নিজেদের মধ্য থেকে ফাউন্ডেশন পরিচালনার জন্য একটি পরিচালক বোর্ড নির্বাচিত করেন।
এছাড়া গ্নোমের বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্য প্রতি বছর সদস্য এবং ব্যবহারকারীরা সাধারণ সভায় মিলিত হয় যেটিকে GUADEC বলা হয়ে থাকে। গ্নোম প্রায়ই freedesktop.org থেকে নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় স্ট্যান্ডার্ডগুলো গ্রহণ করে থাকে। পাশাপাশি এটি অন্যদের সাথে সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতাকেও উৎসাহিত করে যাতে কাজের মান উন্নত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ উপপ্রকল্প
বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট বা প্রকল্প থেকেই গ্নোম তৈরি করা হয়েছে। সেগুলোর কয়েকটির নাম এখানে উল্লেখ করা হলো:
বনবু – একটি কম্পাউন্ড ডকুমেন্ট প্রযুক্তি ।
GConf – অ্যাপ্লিকেশন সেটিংস ঠিক রাখার জন্য।
GVFS – একটি ভার্চুয়াল ফাইল সিস্টেম।
গ্নোম কিরিঙ – এনক্রিপ্টেড কি এবং নিরাপত্তা সম্পর্কিত তথ্য জমা করে রাখার জন্য।
গ্নোম অনুবাদ প্রকল্প – বিভিন্ন ভাষায় ডকুমেন্ট ও অ্যাপ্লিকেশন অনুবাদ করার জন্য।
জিটিকে+ – বিভিন্ন গ্র্যাফিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। জিটিকে+ ব্যবহারে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের থিম বদলানো যায় এবং সেগুলো সাবলীলভাবে ব্যবহার করা যায়। এর উপপ্রকল্পগুলো অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিঙে সহায়তা দিয়ে থাকে এবং আন্তর্জাতিক ক্যারেক্টার সেট ও টেস্ট লে-আউট (Pango) এবং আ্যাকসেসিবিলিটি (এটিকে) বিষয়ক সহায়তা প্রদান করে থাকে। এছাড়া জিটিকে+গ্নোম অ্যাপ্লিকেশনগুলো থেকে উইন্ডোজ বা ম্যাক ওএসে চালানোর ক্ষেত্রেও সহায়তা করে থাকে, বিশেষ করে এ সম্পর্কিত কাজ কমিয়ে দেয়।
হিউম্যান ইন্টারফেস গাইডলাইন (এইচআইজি) – গ্নোম অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে গবেষণা ও ডকুমেন্টেশনের জন্য।
লিবএক্সএমএল – এক্সএমএল লাইব্রেরি।
অরবিট – একটি কোবরা ওআরবি।
অ্যাপ্লিকেশন লেখার জন্য সি++ (জিটিকেএমএম), জাভা (জাভা-গ্নোম), রুবি (রুবি-গ্নোম২), সি#, (জিটিকে#), পায়থন (পাইজিটিকে), পার্ল (জিটিকে২-পার্ল) এবং আরো অন্যান্য প্রোগ্রামিং ভাষা রয়েছে। তবে বর্তমানে গ্নোম ডেস্কটপের জন্য সি, সি# এবং পায়থন অফিসিয়ালি ব্যবহার করা হচ্ছে।
গ্নোমের বহির্দৃশ্য
কম্পিউটারের প্রচলিত ডেস্কটপ পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে গ্নোম ডিজাইন করা হয়েছে। এটি অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের মতোই উইন্ডোজ, অ্যাপ্লিকেশন এবং বিভিন্ন ফাইলের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এতে একটি লাঞ্চার আছে যা দিয়ে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন বা ফাইল দ্রুত খোলা যায় কিংবা কোনো ড্রাইভ বা লোকেশনে খুব তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। এর টাস্কবারটি সাধারণত উপরে বা নিচে থাকে, যেখানে বিভিন্ন প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশন একসাথে পাওয়া যায়। তবে ব্যবহারকারী ইচ্ছে করলে টাস্কবার বা অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন কোথায় থাকবে তা নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারেন। পাশাপাশি কোন অ্যাপ্লিকেশন থাকবে, বা কোনটি থাকবে না, সেগুলোও ব্যবহারকারীর প্রয়োজনমতো সাজিয়ে নিতে পারেন। তাছাড়া কোনো প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশন বাদ দিতে হলে বা নতুনভাবে যুক্ত করতে হলেও সেটা এখানে করা সম্ভব।
ডিফল্ট উইন্ডো ম্যানেজার হিসেবে গ্নোম মূলত মেটাসিটি ব্যবহার করে থাকে। থিম, আইকন, উইন্ডো ম্যানেজ বর্ডার বা জিটিকে+ থিম ইঞ্জিন ও প্যারামিটার ইত্যাদি সবই ব্যবহারকারী বদলে নিতে পারেন। বর্তমানে ব্লুকার্ভ ও ক্লিয়ারলুকস (ডিফল্ট থিম) সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত দুটো জনপ্রিয় জিটিকে+ থিম।
গ্নোম মূলত ব্যবহারকারী যাতে সহজে ব্যবহার করতে পারে সেদিকে গুরুত্ব দেয়। গ্নোম ইন্টারফেস বা অ্যাপ্লিকেশনগুলো কীভাবে সহজ-সাধারণ হবে, এ বিষয়ে গ্নোমের নির্মাতারা এইআইজি থেকে সাহায্য পেয়ে থাকে।
ব্যবহারযোগ্যতা
গ্নোম ২.০ সংস্করণ পর্যন্ত এই প্রজেক্টের একটি বড় লক্ষ্য ছিলো ব্যবহারযোগ্যতা বাড়ানো। যে কারণে গ্নোম হিউম্যান ইন্টারফেস গাইডলাইন (এইচআইজি) তৈরি করা হয়েছিলো যেটি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর গুণগত মান, জিইউআই প্রোগ্রামের স্থিতি ও স্থায়িত্ব, সহজে ব্যবহার এবং পিক্সেলভিত্তিক লেআউটের ব্যবহার নিশ্চিত করার কাজে ব্যবহৃত হতো।
গ্নোম ২.০ সংস্করণটি যখন তৈরি করা হচ্ছিলো, তখন দেখা গেলো অনেক সেটিংসই খুব কম ব্যবহৃত হয় এবং অধিকাংশ ব্যবহারকারীর কাছে সেগুলোর কোনো গুরুত্ব নেই। ফলে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। যেমন, প্যানেলের প্রেফারেন্স সেকশনটিকে ছোট করা হয় সেখানকার ছয়টি ট্যাবের বদলে দুটি ট্যাব রেখে। ফ্রি সফটওয়্যার ইউআই-এর লেখক হ্যাভক পেনিংটন মনে করেন, প্রত্যেক প্রেফারেন্সের একটি মূল্য বা গুরুত্ব রয়েছে। ফলে সেখানকার সফটওয়্যারগুলো ভেঙে সেখানে নতুন করে ইউআই প্রেফারেন্স যুক্ত করা উচিত।
কেউ কেউ মনে করেন গ্নোমের আরও ফাংশনাল হওয়া উচিত। তাদের একজন হলেন লিনাক্স কার্নেল-এর জনক লিনুস তোরভাল্দ্স। গ্নোমের ব্যবহার সংক্রান্ত মেইলিং লিস্টের আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
যদিও, সাম্প্রতিককালে লিনুস তোরভাল্দ্স কেডিই এর ৩য় সংস্করণ থেকে সংস্করণ ৪.০ এ আপগ্রেড করতে অনীহা প্রকাশ করেন , এবং পুনরায় গ্নোম ব্যবহার করতে শুরু করেন।E:
ভবিষ্যৎ উন্নতি
গ্নোম প্রজেক্টের আওতায় অনেকগুলো উপপ্রকল্প রয়েছে। তবে সবগুলোই বর্তমান গ্নোম রিলিজের আওতায় আসে নি। কিছু কিছু পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে বা এমন অবস্থায় রয়েছে যেগুলো শিগগিরই গ্নোমে যুক্ত হবে। কিছু কিছুর উন্নতি করা হচ্ছে।
গ্নোম ৩
গ্নোম ১ ও ২ এ ঐতিহ্যবাহী ডেস্কটপ অলংকারকেই অনুসরণ করতে দেখা যায়। ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া গ্নোম ৩ গ্নোম শেলের মাধ্যমে এটাতে পরিবর্তন আনে, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন টাস্ক ও ভার্চুয়াল ডেস্কটপের মধ্যে স্থানান্তর ভিন্ন একটা জায়গা 'ওভারভিউ'-তে হয়। আর যেহেতু মাটার উইন্ডো ম্যানেজার মেটাসিটি উইন্ডো ম্যানেজারকে প্রতিস্তাপিত করেছে, মিনিমাইজ এবং ম্যাক্সিমাইজ বাটন ডিফল্টভাবে এখন আর থাকে না, আর ক্লায়েন্ট-সাইড ডেকোরেশন মেকানিজমের মাধ্যমে মেনুবার এবং টুলবার হেডার বার নামে একটি শায়িত বারে সম্মিলিতভাবে উপস্থিত হয়। ক্লিয়ারলুকের বদলে আদওয়াইতা এখন ডিফল্ট থিম। অনেক গ্নোম কোর অ্যাপলিকেশনেও বেশ পরিবর্তন এসেছে।
গ্যালারি
আরও দেখুন
গ্নোম ফাউন্ডেশন
গ্নোম প্যানেল
সিনামন গ্নোম ৩ ভিত্তিক একটি ডেস্কটপ পরিবেশ
মাটে গ্নোম ২ ভিত্তিক একটি ডেস্কটপ পরিবেশ
ইউনিটি গ্নোম শেলের বদলে গ্নোম ৩-রর জন্যে বিকল্প গ্রাফিক্যাল শেল
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
গ্নোম ওয়েবসাইট
ফুটনোটস – একটি সংবাদ সাইট এবং আলোচনা ফোরাম
গ্নোম জার্নাল – গ্নোম ডেস্কটপের জন্যে একটি অনলাইন জার্নাল
গ্নু প্রকল্প তালিকা
বিনামূল্যে ডেস্কটপ ব্যবস্থা
মুক্ত সফটওয়্যার
গ্নু প্রকল্প
ডেস্কটপ পরিবেশ
গ্নু প্রকল্পের সফটওয়্যার
পাইথন সফটওয়্যার
গনোম
১৯৯৯-এর সফটওয়্যার | https://en.wikipedia.org/wiki/GNOME | GNOME | GNOME (), originally an acronym for GNU Network Object Model Environment, is a free and open-source desktop environment for Linux and other Unix-like operating systems.
Many major Linux distributions, including Debian, Fedora Linux, Ubuntu, Red Hat Enterprise Linux, and SUSE Linux Enterprise distribute GNOME as their default desktop environment; it is also the default in Oracle Solaris, a Unix operating system.
GNOME is developed by the GNOME Project, which is composed of both volunteers and paid contributors, the largest corporate contributor being Red Hat. It is an international project that aims to develop frameworks for software development, to program end-user applications based on these frameworks, and to coordinate efforts for the internationalization, localization, and accessibility of that software.
In 2023/2024, GNOME received over 1 million Euros from Germany's Sovereign Tech Fund. |
2774 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%BE | রোজা | রোযা বা রোজা (ফার্সি روزہ রুজ়ে), সাউম বা সাওম (আরবি صوم স্বাউম্, অর্থঃ সংযম), বা সিয়াম হলো ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয়। সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোযা। ইসলামী বিধান অনুসারে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য রমযান মাসের প্রতি দিন রোজা রাখা ফরজ, (فرض ফ্যর্দ্ব্) যার অর্থ অবশ্য পালনীয়।
শব্দ ব্যবহার
কিছু মুসলিম আলেম মূল ইসলামী আরবী শব্দ "সাওম" বা সিয়াম (صوم)-এর ব্যবহারকে অধিক উৎসাহিত করে থাকেন, যুক্তি হিসেবে তারা বলেন, সাওম শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই শব্দটি বলার সময় প্রতি হরফে দশ নেকি করে তিন হরফে মোট ৩০ নেকি সাওয়াব পাওয়া যাবে, যা রোজা বা অন্যান্য অ-কুরআনীয় প্রতিশব্দ উচ্চারণে পাওয়া যাবে না। কুরআনীয় শব্দ বলায় প্রতি হরফে দশ নেকির ক্ষেত্রে তারা ইসলামী নবী মুহাম্মদের উক্ত হাদীসটি পেশ করেন,
রোজার ফযিলত
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ঈমানের সাথে ছাওয়াবের আশায় যে ব্যক্তি রোযা পালন করে তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়।”
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “শাইতান ও দুষ্ট জিনদেরকে রামাযান মাসের প্রথম রাতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয় এবং এর দরজাও তখন আর খোলা হয় না, খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের দরজাগুলো এবং এর একটি দরজাও তখন আর বন্ধ করা হয় না। (এ মাসে) একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেনঃ হে কল্যাণ অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আর বহু লোককে আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ হতে এ মাসে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে।”
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহর মর্জি হলে আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকাজের প্রতিদান দশ গুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। আল্লাহ্ বলেনঃ তবে রোযা ব্যতীত, তা আমার জন্যই (রাখা হয়) এবং আমিই তার প্রতিদান দিবো। সে তার প্রবৃত্তি ও পানাহার আমার জন্যই ত্যাগ করে। রোযাদারের জন্য দু’টি আনন্দঃ একটি আনন্দ তার ইফতারের সময় এবং আরেকটি আনন্দ রয়েছে তার প্রভু আল্লাহর সাথে তার সাক্ষাতের সময়। রোযাদার ব্যক্তির মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট কস্তুরীর ঘ্রাণের চেয়েও অধিক সুগন্ধময়।”
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “সিয়াম এবং কুরআন বান্দার জন্য শাফা‘আত করবে। সিয়াম বলবে, হে রব! আমি তাকে দিনে খাবার গ্রহণ করতে ও প্রবৃত্তির তাড়না মিটাতে বাধা দিয়েছি। অতএব তার ব্যাপারে এখন আমার শাফা‘আত কবূল করো। কুরআন বলবে, হে রব! আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার ব্যাপারে এখন আমার সুপারিশ গ্রহণ করো। অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে।”
উৎপত্তি
মূল কুরআনীয় ইসলামী আরবিতে ইসলামী উপবাসের নাম সাওম, বহুবচনে সিয়াম, যার শাব্দিক অর্থ হচ্ছে সংযম বা আত্মনিয়ন্ত্রণ বা বিরত থাকা। রোজা শব্দটি ফারসি শব্দ, যা এসেছে আদি-ইরানীয় ধাতুমূল রোওচাকাহ থেকে, যার অর্থ উপবাস, যা আবার এসেছে ইন্দো-ইরানীয় ধাতুমূল রোচস (रोचस्) থেকে, যার অর্থ দিন বা আলো। ফারসি ভাষায় সিয়ামের প্রতিশব্দ হিসেবে রোজা ব্যবহৃত হয়, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ভাষার মত কালক্রমে বাংলা ভাষাতেও শত শত বছর আগে থেকে এখন পর্যন্ত সাওম বা সিয়াম নামক ইসলামী উপবাস বোঝানোর জন্য সমধিকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,কামাচার, পাপাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস ও অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নাম সাওম বা রোজা।
ইতিহাস
কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে,
হযরত আদম যখন নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার পর তাওবাহ করেছিলেন তখন ৩০ দিন পর্যন্ত তার তাওবাহ কবুল হয়নি। ৩০ দিন পর তার তাওবাহ কবুল হয়। তারপর তার সন্তানদের উপরে ৩০টি রোযা ফরয করে দেয়া হয়।।
নূহ (আ.)-এর যুগেও রোজা ছিল। কারণ, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন:
হযরত ইবরাহীমের যুগে ৩০টি রোজা ছিল বলে কেউ কেউ লিখেছেন।
হযরত দাউদ (আ.) এর যুগেও রোযার প্রচলন ছিল। হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় রোযা হযরত দাউদ (আ.)-এর রোযা। তিনি একদিন রোযা রাখতেন এবং একদিন বিনা রোযায় থাকতেন।
আরববাসীরাও ইসলামের পূর্বে রোযা সম্পর্কে কমবেশী ওয়াকিফহাল ছিল। মক্কার কুরাইশগণ অন্ধকার যুগে আশুরার (অর্থাৎ ১০ মুহররম) দিনে এ জন্য রোযা রাখতো যে, এই দিনে খানা কাবার ওপর নতুন গেলাফ চড়ানো হতো। মদীনায় বসবাসকারী ইহুদীরাও পৃথকভাবে আশুরা উৎসব পালন করতো। অর্থাৎ ইহুদীরা নিজেদের গণনানুসারে সপ্তম মাসের ১০ম দিনে রোযা রাখতো।
শর্ত
রোজার কিছু মৌলিক আচার আছে। যা ফরজ বলে চিহ্নিত। সুস্থ-সবল প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমকে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। কিন্তু শারীরিক অসমর্থতার কারণে সে এ দায়িত্ব থেকে আপাতভাবে মুক্তি পেতে পারে। এর প্রতিবিধানে রয়েছে কাজা ও কাফফারার বিধান। নিচে রোজার ফরজ ও শর্তগুলো দেওয়া হলো-
রোজার ৩ ফরজ :
নিয়ত করা
সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকা
যৌন আচরণ থেকে বিরত থাকা।
রোজা রাখার ৪ শর্ত :
মুসলিম হওয়া
বালেগ হওয়া
অক্ষম না হওয়া
ঋতুস্রাব থেকে বিরত থাকা নারী।
প্রকারভেদ
রোজা পাঁচ প্রকার।
ফরজ রোজা: যা আবার চার প্রকার-
রমজান মাসের রোজা।
কোন কারণ বশত রমজানের রোজা ভঙ্গ হয়ে গেলে তার কাযা আদায়ে রোজা।
শরীয়তে স্বীকৃত কারণ ব্যতীত রমজানের রোজা ছেড়ে দিলে কাফ্ফারা হিসেবে ৬০টি রোজা রাখা।
রোজার মান্নত করলে তা আদায় করা।
ওয়াজিব রোজা: নফল রোজা রেখে ভঙ্গ করলে পরবর্তীতে তা আদায় করা ওয়াজিব।
সুন্নত রোজা: মহরম মাসের নয় এবং দশ তারিখে রোজা রাখা।
মুস্তাহাব রোজা: প্রতি চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪, এবং ১৫ তারিখে, প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবারে, কোন কোন ইমামের মতে শাওয়াল মাসে পৃথক পৃথক প্রতি সপ্তাহে দুটো করে ছয়টি রোজা রাখা মোস্তাহাব। তবে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে এক সাথে হোক কিংবা পৃথক পৃথক হোক শাওয়ালের ছয়টি রোজা মুস্তাহাব।
নফল রোজা: মোস্তাহাব আর নফল খুব কাছাকাছির ইবাদত। সহজ অর্থে নফল হলো যা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত নয় এমন ইবাদত পূণ্যের নিয়তে করা। রোজার ক্ষেত্রেও তাই।
রোজা ভঙ্গের কারণ
১. ইচ্ছা করে বমি করা
২. বমির বেশির ভাগ মুখে আসার পর তা গিলে ফেলা
৩. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসবের পর ঋতুস্রাব
৪. ইসলাম ত্যাগ করলে
৫. গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা সেলাইন দিলে
৬. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করালে
৭. রোজাদারকে জোর করে কেউ কিছু খাওয়ালে
৮. ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে
৯. মুখ ভরে বমি করলে
১০. ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে, রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরও কিছু খেলে
১১. বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেললে
১২. কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে
১৩. জিহ্বা দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে
১৪. অল্প বমি মুখে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে তা গিলে ফেললে
১৫. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেয়ার সময় ভেতরে পানি চলে গেলে। (ফাতাওয়ায়ে শামি ও ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)।
যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়
*বিনা ওজরে কোনো জিনিস মুখে দিয়ে চিবানো।
*গরমের কারণে বারবার কুলি করা।
*টুথ পাউডার, পেস্ট, কয়লা বা অন্য কোনো মাজন দ্বারা রোজার দিনে দাঁত পরিষ্কার করা।
*বিনা ওজরে জিহ্বা দ্বারা কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা। তবে বদমেজাজি স্বামীর জন্য স্ত্রীর তরকারির স্বাদ গ্রহণ করার অনুমতি আছে।
*রোজাদার অবস্থায় কারও গিবত (পরচর্চা, পরনিন্দা) করা।
*মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
*অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করা কিংবা পাঠ করা।
*ঝগড়া-বিবাদ করা।
রোজা ভঙ্গ হলে করনীয়
বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা একটির পরিবর্তে একটি অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু একটি রোজাই যথেষ্ট। কাফফারা আদায় করার তিনটি বিধান রয়েছে।
একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
যদি কারও জন্য ৬০টি রোজা পালন সম্ভব না হয় তবে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খাওয়াতে হবে। কেউ অসুস্থতাজনিত কারণে রোজা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন দুই বেলা করে পেটভরে খাওয়াতে হবে।
গোলাম বা দাসী আজাদ করে দিতে হবে।
যেসব কারণে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ করা যাবে কিন্তু পরে কাজা করতে হয় তা হচ্ছে
মুসাফির অবস্থায়
রোগ-ব্যাধি বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে
মাতৃগর্ভে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে
এমন ক্ষুধা বা তৃষ্ণা হয়, যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে
শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে
কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে।
মহিলাদের মাসিক হায়েজ-নেফাসকালীন রোজা ভঙ্গ করা যায়
যেসব কারণে শুধু কাজা আদায় করতে হয়
স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করার কারণে যদি বীর্যপাত হয়
ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে
পাথরের কণা, লোহার টুকরা, ফলের বিচি গিলে ফেললে
ডুশ গ্রহণ করলে
বিন্দু পরিমাণ কোন খাবার খেলে তবে অনিচ্ছাকৃত ভাবে বা মনের ভুলে খেলেও রোজা ভাংবে না তবে মনে আসা মাত্রই খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে
নাকে বা কানে ওষুধ দিলে (যদি তা পেটে পেঁৗছে)
মাথার ক্ষতস্থানে ওষুধ দেওয়ার পর তা যদি মস্তিষ্কে বা পেটে পেঁৗছে
যোনিপথ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে সহবাস করার ফলে বীর্য নির্গত হলে
স্ত্রী লোকের
ওষুধ দিলে
মেরু অঞ্চলসমূহে
ইসলামে মেরু অঞ্চলসমূহে রোজা রাখা সম্পর্কে সরাসরি কিছুই বলা হয় নি। তবে সৌদি আরব রাজ্যের উর্ধতন বিশেষজ্ঞ পরিষদের মতামত অনুযায়ী, দজ্জাল সম্পর্কে একটি হাদিস রয়েছে, যেখানে প্রমাণিত হয় যে প্রতি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোজা এবং একই সঙ্গে নামাজ উপক্রম করতে হবে।
এই সমস্যার কারণ হলো গ্রীষ্মকালে মেরু অক্ষাংশে নিশীথ সূর্য এবং শীতকালে মেরু নিশি দেখা যায়। এই প্রাকৃতিক ঘটনাটি সংঘটিত হয় কারণ গ্রীষ্মকালে পৃথিবীর অক্ষাংশ সূর্যের দিকে হেলে থাকে এবং শীতকালে সূর্য থেকে দূরে সরে যায়, এই কারণে মেরু অঞ্চলসমূহে প্রতি ছয়-মাস যাবৎ টানা সূর্যের আলো দেখা যায়। ইসলামের প্রাথমিক যুগের আদি মুসলমানরা মেরু অঞ্চলে বসবাস করতেন না, তারা উপক্রান্তীয় অঞ্চলে বসবাস করতেন যেখানে সূর্য দিনের বেলায় সরাসরি উপরিভাগে থাকে এবং রাতে অস্ত যায়। এজন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের এই ঘটনাগুলির অভিজ্ঞতা হয় নি।
উদ্দেশ্য
রোজা রাখার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা, পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং নিজেদের কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরহেজগারি বা তাকওয়া বৃদ্ধি করা।
কুরআনে বলা হয়েছে,
আরও বলা হয়েছে,
‘তাকওয়া’ শব্দটির মূল অর্থ ‘রক্ষা করা।’ এর অনুবাদ করা হয়েছে নানাভাবে। যেমন পরহেজগারি, আল্লাহর ভয়, দ্বীনদারি, সৎ কর্মশীলতা, সতর্কতা প্রভৃতি। রোজা ঢালের মতো কাজ করে, যা গোনাহের হাত থেকে বাঁচায়।
উপকারিতা
রমজানের একটি বিশেষ ফজিলত বা মাহাত্ম্য হচ্ছে,এই পবিত্র রমজান মাসে আল কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। রমজান মাসের রোজা মানুষকে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি দেয়,মানুষের কুপ্রবৃত্তি ধুয়ে মুছে দেয় এবং আত্মাকে দহন করে ঈমানের শাখা প্রশাখা সঞ্জিবীত করে। সর্বোপরি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। এই মর্মে মহানবী ইরশাদ করেছেন,
আরও দেখুন
রমজানে রোজা
অটোফেজি
ডোপামিন ডিটক্স
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
বহিঃসংযোগ
সিয়াম, কিয়াম, যাকাত বিষয়ক বই - "রমযান মাসের ৩০ আসর"
ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ
রমজান
রোজা
উপবাস | https://en.wikipedia.org/wiki/Fasting_in_Islam | Fasting in Islam | In Islam, fasting (known as sawm, Arabic: صوم; Arabic pronunciation: [sˤawm] or siyam, Arabic: صيام; Arabic pronunciation: [sˤijaːm]) is the practice of abstaining, usually from food, drink, sexual activity and anything which substitutes food and drink. During the holy month of Ramadan, sawm is observed between dawn and sunset when the adhan of the Maghrib prayer is sounded. Ramadan is the ninth month of the Muslim lunar calendar and fasting is a requirement for Muslims as it is the fourth of the five pillars of Islam. |
2791 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AB%E0%A6%9C%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%B0%20%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8 | ফজলুর রহমান খান | ফজলুর রহমান খান (১৯২৯ - ১৯৮২) বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশী - আমেরিকান স্থপতি ও পুরকৌশলী। তিনি পৃথিবীর অন্যতম উচ্চ ভবন শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার (বর্তমানে উইলিস টাওয়ার)-এর নকশা প্রণয়ন করেন। তাকে বিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ প্রকৌশলীদের মধ্যে অন্যতম বলা হয়।
জন্ম
ফজলুর রহমান খান ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে ৩ এপ্রিল তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ঢাকায় একটি বাঙ্গালী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা খান বাহাদুর আবদুর রহমান খাঁ ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। তাঁর দাদার নাম আসলত রহমান খাঁন এবং তাঁদের আদিবাড়ি ছিল মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ভাণ্ডারিকান্দি গ্রামে। তাঁর মা খাদিজা খাঁতুন ছিলেন পাবনা জেলার দুলাই ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জমিদার আব্দুল বাসিত চৌধুরীর মেয়ে এবং তাঁদের পূর্বপুরুষ শরফুদ্দীন সরকার তুর্কেস্তানের সমরকন্দ শহর থেকে বাংলায় এসে দুলাই গাঁওয়ে বসতি স্থাপন করেছিলেন। ফজলুর রহমান খানের ভাই হলেন ডাঃ জিল্লুর রহমান খান এবং তার বোন মাসুদা খান লীনা হলেন সাবেক মন্ত্রী এনায়েতুল্লাহ্ খানের বিবি।তার স্ত্রীর নাম মাসুদা খান
শিক্ষাজীবন
তিনি ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক বা মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতার শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমানে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, শিবপুর) ভর্তি হন। চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালে পঞ্চাশের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তিনি ঢাকায় ফিরে এলে তৎকালীন আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বাকি পরীক্ষা সমাপ্ত করেন৷ কলকাতার শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার এবং আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরীক্ষার উভয় ফলের ভিত্তিতে তাকে বিশেষ বিবেচনায় ব্যাচেলর অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্থাৎ প্রকৌশলে স্নাতক উপাধি প্রদান করা হয়৷ এ মূল্যায়নে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ফজলুর রহমান খান ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে যুগপৎ সরকারী বৃত্তি ও ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি উপাধি অর্জনের উদ্দেশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন৷ সেখানে ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন থেকে অবকাঠামো প্রকৌশল (স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং) ক্ষেত্রে সনদ এবং ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তত্ত্বীয় ও ফলিত বলবিজ্ঞান ক্ষেত্রে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর (মাস্টার অফ সায়েন্স) উপাধি লাভ করেন।
কর্মজীবন
স্নাতক উপাধি অর্জনের পরপরই ফজলুর রহমান খান আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপকের পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিকাগো শহরের স্কিডমোর, ওউইং ও মেরিল নামের প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান দেন। ডক্টরেট উপাধি অর্জনের পর ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পূর্ব পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে আমেরিকার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্কিড মোর এর আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে এ কোম্পানীর শিকাগো অফিসের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন৷ পাশাপাশি তিনি আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি এর স্থাপত্য বিভাগে অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত হন। সেখানে পরে তিনি প্রফেসর এমিরিটাস হয়েছিলেন।
কৃতিত্ব
শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার তার অনন্য কীর্তি। তিনি ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে 'ইঞ্জিনিয়ারিং নিউজ রেকর্ড'-এ ম্যান অব দি ইয়ার বিবেচিত হন এবং পাঁচবার স্থাপত্য শিল্পে সবচেয়ে বেশি অবদানকারী ব্যক্তিত্ব হিসেবে অভিহিত হবার গৌরব লাভ করেন (৬৫,৬৮,৭০,৭১,৭৯ খ্রিষ্টাব্দে)৷ ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকার 'নিউজ উইক' ম্যাগাজিন শিল্প ও স্থাপত্যের উপর প্রচ্ছদ কাহিনীতে তাকে মার্কিন স্থাপত্যের শীর্ষে অবস্থানকারী ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে৷ স্থপতি ডঃ এফ, আর, খান আন্তর্জাতিক গগনচুম্বী ও নগরায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন৷ তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে শিকাগোর জন হ্যানকক সেন্টার, বাদশাহ আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হজ্ব টার্মিনাল এবং বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য মডেল অঙ্কন৷
১৯৯৮ সালে শিকাগো শহরের সিয়ার্স টাওয়ারের পাদদেশে অবস্থিত জ্যাকসন সড়ক পশ্চিম পার্শ্ব এবং ফ্রাঙ্কলিন সড়কের দক্ষিণ পার্শ্বের সংযোগস্থলটিকে নামকরণ করা হয় "ফজলুর আর. খান ওয়ে"।
গবেষণা
এফ, আর, খান মুসলিম স্থাপত্য বিষয়ের উপর নানা ধরনের গবেষণা করেছেন৷ ডঃ খান Tube in Tube নামে স্থাপত্য শিল্পের এক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন যার মাধ্যমে অতি উচ্চ (কমপক্ষে একশত তলা) ভবন স্বল্প খরচে নির্মাণ সম্ভব৷ গগনচুম্বী ভবনের উপর সাত খণ্ডে প্রকাশিত একটি পুস্তকের তিনি সম্পাদনা করেন৷
অবদান
সিয়ার্স টাওয়ার (Sears Tower) এর নকশা প্রনয়ন করেন।
জন হ্যানকক সেন্টার এর নকশা। (১০০ তলা)
জেদ্দা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর।
হজ্ব টার্মিনালের ছাদ কাঠামো। (৫০,০০০ বর্গফুট)
বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য নকশা।
স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ভূমিকা
তিনি ১৯৭১ সনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রবাসে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন ৷ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা যখন নিক্সন সরকারের সমর্থনের বিরোধিতা করেন এফ আর খান। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। তার নেতৃত্বে প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত হয় দুটি সংগঠন: ‘বাংলাদেশ ইমার্জেন্সি ওয়েলফেয়ার আপিল’, যার উদ্দেশ্য ছিলো মুক্তিবাহিনীর সমর্থনে প্রচার-প্রচারণা এবং রিলিফ সংগ্রহ এবং ‘বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ’, এই সংগঠনটি কূটনৈতিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিল। মূলত এই সংগঠনের তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে সৈন্য পাঠাতে অপারগতা প্রকাশ করে।
মৃত্যু
১৯৮২ সনের ২৬শে মার্চ জেদ্দায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন৷ মৃত্যুর পর তার দেহ আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং শিকাগোতে তাকে সমাহিত করা হয়।
সম্মাননা
ডঃ এফ আর খান নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, লি হাই বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইস ফেডারেল ইনিস্টিটিউট অফ টেকনোলজি জুরিখ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট উপাধি লাভ করেন ৷
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তাকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।
ফজলুর রহমান খানকে নিয়ে গুগল তার ৮৮ তম জন্মদিনে গুগল ডুডল প্রকাশ করে।
১৯৯৯ সালে ফজলুর রহমান খানের স্মরণে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। ২ টাকা মূল্যমানের এই টিকিটটিতে রয়েছে ফজলুর রহমান খানের আবক্ষ চিত্র, আর পটভূমিতে রয়েছে সিয়ার্স টাওয়ারের ছবি।
২০২৪ সালের ৮ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে ফজলুর রহমান খান সম্পর্কে লেখা সংযোজিত করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র
আইআইইএসটি, শিবপুরের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বহিঃসংযোগ
বাংলাদেশী স্থপতি
১৯২৯-এ জন্ম
১৯৮২-এ মৃত্যু
ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
মাদারীপুর জেলার ব্যক্তি
সংস্কৃতিতে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
মার্কিন মুসলিম
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বাংলাদেশী পুরকৌশলী
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি অভিবাসী
২০শ শতাব্দীর মার্কিন স্থপতি
২০শ শতাব্দীর বাঙালি
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
কাঠামোগত প্রকৌশলী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
২০শ শতাব্দীর প্রকৌশলী
ফুলব্রাইট বৃত্তিধারী | https://en.wikipedia.org/wiki/Fazlur_Rahman_Khan | Fazlur Rahman Khan | Fazlur Rahman Khan (Bengali: ফজলুর রহমান খান, Fazlur Rôhman Khan; 3 April 1929 – 27 March 1982) was a Bangladeshi-American structural engineer and architect, who initiated important structural systems for skyscrapers. Considered the "father of tubular designs" for high-rises, Khan was also a pioneer in computer-aided design (CAD). He was the designer of the Sears Tower, since renamed Willis Tower, the tallest building in the world from 1973 until 1998, and the 100-story John Hancock Center.
A partner in the firm Skidmore, Owings & Merrill in Chicago, Khan, more than any other individual, ushered in a renaissance in skyscraper construction during the second half of the 20th century. He has been called the "Einstein of structural engineering" and the "Greatest Structural Engineer of the 20th Century" for his innovative use of structural systems that remain fundamental to modern skyscraper design and construction. In his honor, the Council on Tall Buildings and Urban Habitat established the Fazlur Khan Lifetime Achievement Medal, as one of their CTBUH Skyscraper Awards.
Although best known for skyscrapers, Khan was also an active designer of other kinds of structures, including the Hajj airport terminal, the McMath–Pierce solar telescope and several stadium structures. |
2792 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%20%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%AB | হামজা ইউসুফ | শায়েখ হামজা ইউসুফ (জন্ম মার্ক হ্যানসন ; 1958) একজন আমেরিকান ইসলামি নব্য ঐতিহ্যবাদী, ইসলামিক শায়েখ , এবং জায়তুনা কলেজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ইসলামে শাস্ত্রীয়বিদ্যা চর্চার একজন প্রবক্তা এবং বিশ্বজুড়ে ইসলামিক বিজ্ঞান এবং শাস্ত্রীয়বিদ্যা পদ্ধতিগুলোর প্রচারে অবদান রেখেছেন।।
তিনি বার্কলেতে গ্র্যাজুয়েট থিওলজিক্যাল ইউনিয়নের ইসলামিক স্টাডিজ কেন্দ্র এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ প্রোগ্রাম উভয়েরই উপদেষ্টা। এছাড়াও, তিনি গ্লোবাল সেন্টার ফর গাইডেন্স অ্যান্ড রিনিউয়ালের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন, যেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং বর্তমানে আবদুল্লাহ বিন বায়াহ এর সভাপতিত্ব করছেন। তিনি “গাইডেন্স এবং পুনর্নবীকরণের জন্য গ্লোবাল সেন্টার প্রতিষ্ঠানে” সহকারী সভাপতি পদে নিযুক্ত আছেন যার প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি পদে নিযুক্ত আছেন আবদুল্লাহ বিন বাইয়াহ্। এছাড়াও তিনি আরব আমিরাত ভিত্তিক ফোরাম "মুসলিম সমাজে শান্তি প্রচারের জন্য ফোরাম" এর সহকারী সভাপতি । আবদুল্লাহ বিন বাইয়াহ্ ও এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।
দ্য গার্ডিয়ান শায়েখ হামজা ইউসুফকে "তর্কসাপেক্ষে পশ্চিমের সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামিক স্কলার" বলে উল্লেখ করেছে। নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিন তাকে "সম্ভবত পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামিক পণ্ডিত" বলেও অভিহিত করেছে, এবং সাংবাদিক গ্রায়েম উড তাকে "আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুইজন বিশিষ্ট মুসলিম পণ্ডিত" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আমাদের এবং আপনার মধ্যে একটি সাধারণ শব্দের স্বাক্ষরকারীদের একজন, শান্তি ও বোঝাপড়ার আহ্বান জানিয়ে খ্রিস্টান নেতাদের কাছে ইসলামিক শায়েখদের একটি খোলা চিঠি। প্রাক্তন আইএসআইএস এর নেতা আবু বকর আল বাগদাদীকে উদ্দেশ্য করে পাঠানো খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ছিলেন ইউসুফ। চিঠিটিতে সন্ত্রাসী সংগঠনটির সচরাচর প্রচারিত মূলনীতির বিপরীতে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
শায়েখ হামজা ইউসুফ ওয়ালা ওয়াল্লা, ওয়াশিংটনে মার্ক হ্যানসন হিসাবে জন্মগ্রহণ করেন হুইটম্যান কলেজে কর্মরত দুই শিক্ষাবিদ এবং তিনি উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় বেড়ে ওঠেন। তিনি একজন ধর্মপ্রাণ আইরিশ ক্যাথলিক খ্রিস্টান হিসাবে বেড়ে ওঠেন এবং পূর্ব এবং পশ্চিম উভয় উপকূলে প্রিপ স্কুলে যোগদান করেন। 1977 সালে, একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রায় মৃত্যু অভিজ্ঞতার সম্মুখীন এবং কোরআন পড়ার পর, তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন। শায়েখ হামজা ইউসুফ আইরিশ, স্কটিশ এবং গ্রীক বংশ রয়েছে।
সৌদি আরবের এক যুবক দম্পতির দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার পর যারা আবদাল কাদির আস-সুফির অনুসারী ছিলেন — একজন স্কটিশ ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত এবং দারকাওয়া সুফি তরিকা এবং মুরাবিতুন বিশ্ব আন্দোলনের নেতা — শায়েখ হামজা ইউসুফ সরাসরি আস-সুফী পড়াশোনা করার জন্য ইংল্যান্ডের নরউইচে চলে যান। । 1979 সালে,শায়েখ হামজা ইউসুফ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল আইনে চলে যান যেখানে তিনি পরবর্তী চার বছর সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ ইনস্টিটিউটে শরিয়া বিজ্ঞান অধ্যয়ন করেন, প্রায়শই ইসলামের সাথে একের পর এক ভিত্তিতে। শায়েখ হামজা ইউসুফ আরবি ভাষায় সাবলীল হয়ে ওঠেন এবং অন্যান্য ধ্রুপদী ইসলামী শাখার মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত ( তাজবিদ ), অলঙ্কারশাস্ত্র, কবিতা, আইন ( ফিকাহ ) এবং ধর্মতত্ত্ব ( আকিদাহ ) শিখেছিলেন।
1984 সালে, শায়েখ হামজা ইউসুফ আনুষ্ঠানিকভাবে আস-সুফী শিক্ষা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন এবং আমিরাতে বসবাসরত মৌরিতানীয় পণ্ডিতদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক দিকে চলে যান। তিনি 1984 সালে আলজেরিয়া এবং মরক্কো, সেইসাথে স্পেন এবং মৌরিতানিয়ায় অধ্যয়নরত উত্তর আফ্রিকায় চলে যান। মৌরিতানিয়ায় তিনি ইসলামিক পণ্ডিত সিদি মুহাম্মদ ওউলদ ফাহফু আল-মাসুমির সাথে তার সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবংঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন, যিনি মুরাবাত আল-হজ নামে পরিচিত।
2020 সালে, শায়েখ হামজা ইউসুফ তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। গ্র্যাজুয়েট থিওলজিক্যাল ইউনিয়নে তার প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল, "উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকায় আদর্শিক ইসলামিক ঐতিহ্য: ইবনে আশিরের আল-মুর্শিদ আল-মুইন (দ্যা সহায়ক গাইড) এ কেস স্টাডি অফ ট্রান্সমিশন অফ অথরিটি অ্যান্ড ডিস্টিলেশন অফ নলেজ।" শায়েখ হামজা ইউসুফ এর আগে ইম্পেরিয়াল ভ্যালি কলেজ থেকে নার্সিং-এ সহযোগী ডিগ্রি এবং সান জোসে স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ধর্মীয় গবেষণায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবন
জায়তুনা কলেজ
তিনি এবং অন্যান্য সহকর্মীরা 1996 সালে বার্কলে, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জায়তুনা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন, ঐতিহ্যগত অধ্যয়ন পদ্ধতি এবং ইসলামধর্মীয় বিজ্ঞানের পুনরুজ্জীবনের জন্য নিবেদিত। জাইদ শাকির এবং হাতেম বাজিয়ান তখন জায়তুনা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় তার সাথে যোগদান করেছিলেন। 2010 সালের শরৎকালে এটি জায়তুনা কলেজ হিসাবে তার দরজা খুলে দেয়, একটি চার বছরের মুসলিম লিবারেল আর্ট কলেজ, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম। এটি প্রথাগত ঐতিহ্যবাহী ইসলামিক অনুশাসনে কঠোর প্রশিক্ষণের সাথে ট্রিভিয়াম এবং কোয়াড্রিভিয়াম -ভিত্তিক লিবারেল আর্টসকে একত্রিত করার ইউসুফের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটির লক্ষ্য "নৈতিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পেশাদার, বুদ্ধিজীবী এবং আধ্যাত্মিক নেতাদের শিক্ষিত করা এবং প্রস্তুত করা"। ওয়েস্টার্ন অ্যাসোসিয়েশন অফ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর জায়তুনা কলেজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম স্বীকৃত মুসলিম ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে। ইউসুফ বলেছিলেন যে "আমরা আশা করি, স্রষ্টার ইচ্ছায়, এরকম আরও মুসলিম কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় আসবে"
দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রভাব
জর্ডানের রয়্যাল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ 500 প্রভাবশালী মুসলিমদের তালিকায় তাকে 36তম স্থানে রেখেছে। এর 2016 সংস্করণে, জন এস্পোসিটো এবং ইব্রাহিম কালিন দ্বারা সম্পাদিত 500 মোস্ট ইনফ্লুশিয়াল মুসলিম দ্বারা শায়েখ হামজা ইউসুফকে "মুসলিম বিশ্বের বাইরে ইসলামের অন্যতম প্রধান কর্তৃপক্ষ" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
শায়েখ হামজা ইউসুফ সন্ত্রাসী হামলার ক্ষেত্রে ধর্মীয় ন্যায্যতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি 9/11 হামলাকে " সোজাসাপ্টা গণহত্যা" বলে বর্ণনা করেছেন। হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন যে "ইসলামকে হাইজ্যাক করা হয়েছিল... সেই বিমানের একজন নির্দোষ শিকার হিসেবে।"
আন্তঃবিশ্বাস
শায়েখ হামজা ইউসুফ সংযুক্ত আরব আমিরাত আয়োজিত মুসলিম সমাজে শান্তির প্রচার ফোরামে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রমবর্ধমান সহনশীলতা এবং বহু-বিশ্বাসের উদ্যোগ গ্রহণ এবং আবুধাবিতে একটি বহু-বিশ্বাস কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনার জন্য প্রশংসা করেন।
সিরিয়ার বিপ্লব সম্পর্কে মন্তব্য
2019 সালে, শায়েখ হামজা ইউসুফ সিরিয়ার সংকটের বিষয়ে ধৈর্য এবং সতর্কতার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেউ কেউ এই মন্তব্যগুলিকে সিরিয়ার শাসনের সমর্থক হিসাবে দেখেছেন, তবে এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইউসুফ, যিনি প্রতিক্রিয়ার বিবৃতি দিয়েছিলেন। শায়েখ হামজা ইউসুফ 2010 সালে 'নিপীড়িতদের প্রার্থনা' শিরোনামের একটি কবিতা অনুবাদ করেছিলেন, যা তিনি বিশ্বের মানুষদের জন্য উৎসর্গ করেছেন।
2016 ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার মন্তব্য
ডিসেম্বর 2016-এ, শায়েখ হামজা ইউসুফ এমন মন্তব্য করেছিলেন যা ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন দ্বারা নিযুক্ত কৌশলগুলির সমালোচনা হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। ইউসুফ দাবি করেছেন যে কালো সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও স্থানীয় সমস্যা রয়েছে যেমন ,পরিবার ভাঙ্গন। তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের বর্ণবাদী অনুভূতির বিষয়ে উদ্বেগও উত্থাপন করেছিলেন, যেখানে 'শ্বেতাঙ্গ বিশেষাধিকার'-এর নিন্দা প্রচণ্ড, কিন্তু আরব বিশ্বের কিছু অংশে পাকিস্তানি এবং ভারতীয়দের প্রতি আচরণের কথা উল্লেখ করে 'আরব বিশেষাধিকার' নিয়ে নীরব। এই মন্তব্যের জন্য তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করা হয়েছিল, কিন্তু অনেকে শায়েখ হামজা ইউসুফ ইউসুফকে রক্ষা করেছেন, যেমন ইমাম জাইদ শাকির বলেছেন, "আমি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি যে শায়খ হামজার শরীরে একটি বর্ণবাদী হাড় নেই। একজন বর্ণবাদী হলেন এমন, একজন যিনি অন্য জাতির উপর এক জাতির শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাস করেন। শায়খ হামজা, যে কোনো বিশিষ্ট মুসলমানের মতো, এই ধারণাকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেন।"
প্রকাশনা
শায়খ আবদুল্লাহ বিন বায়াহ রহ
শেখ আবুবকর আহমদ
ইমাম যায়েদ শাকির রহ
Hamza Yusuf Audio Lectures
মালিকি ফিকহ পণ্ডিত
মুসলিম সংস্কারক
মুসলমান আত্মপক্ষসমর্থনকারী
২১শ শতাব্দীর ইসলামের মুসলিম পণ্ডিত
স্কটিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
আইরিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
মার্কিন মুসলিম
গ্রিক বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি
জীবিত ব্যক্তি
১৯৬০-এ জন্ম
অপর্যালোচিত অনুবাদসহ পাতা | https://en.wikipedia.org/wiki/Hamza_Yusuf | Hamza Yusuf | Hamza Yusuf (born Mark Hanson; 1958) is an American Islamic neo-traditionalist, Islamic scholar, and co-founder of Zaytuna College. He is a proponent of classical learning in Islam and has promoted Islamic sciences and classical teaching methodologies throughout the world.
He is an advisor to both the Center for Islamic Studies at the Graduate Theological Union in Berkeley and the Islamic Studies programme at Stanford University. In addition, he serves as vice-president for the Global Center for Guidance and Renewal, which was founded and is currently presided over by Abdallah bin Bayyah. He also serves as vice-president of the UAE-based Forum for Promoting Peace in Muslim Societies, where Abdallah bin Bayyah also serves as president. The Forum has attracted huge controversy for its close ties to the UAE dictatorship as well as Hamza Yusuf's personal support for authoritarian leaders since the Arab Spring.
The Guardian has referred to Yusuf as "arguably the West's most influential Islamic scholar". The New Yorker magazine also called him "perhaps the most influential Islamic scholar in the Western world", and journalist Graeme Wood has called him "one the two most prominent Muslim scholars in the United States today". He has been listed in the top 50 of The 500 Most Influential Muslims. His detractors, however, have widely criticised him for his stance on race, politics, the Syrian revolution, and the Palestinian-Israeli conflict. |
2793 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%20%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%82 | কারেন আর্মস্ট্রং | ক্যারেন আর্মস্ট্রং (জ. নভেম্বর ১৪, ১৯৪৪) ইংরেজ লেখিকা যিনি ইসলাম, ইহুদীবাদ, খ্রিস্ট ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে লেখেন। আর্মস্ট্রং ইংল্যান্ডের ওয়ারসেস্টারশায়ারের উইল্ডমুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত গির্জার সেবিকা তথা নান ছিলেন। বর্তমানে মুক্তচিন্তার একজন একেশ্বরবাদী বুদ্ধিজীবী হিসেবে সুপরিচিত। তিনি একটি অভিনব তত্ত্বের অবতারণা করেছেন যাতে বলা হয়েছে মানব সভ্যতার বিকাশের আবশ্যকীয় ফলস্বরুপ মৌলবাদী ধর্মগুলোর সৃষ্টি হয়েছে। তিনি একটি আইরিশ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার পরিবার পরে বার্মিংহামে বসবাস করতে থাকে।
জীবনী
বিশ্বাস
রচনাবলী
Through the Narrow Gate (১৯৮১)
Beginning the World (১৯৮৩)
The First Christian: Saint Paul's Impact on Christianity (১৯৮৩)
Tongues of Fire: An Anthology of Religious and Poetic Experience (১৯৮৫)
The Gospel According to Woman: Christianity's Creation of the Sex War in the West (১৯৮৬)
Holy War (১৯৮৮)
Muhammad: a Biography of the Prophet (১৯৯১)
The English Mystics of the Fourteenth Century (১৯৯১)
A History of God: From Abraham to the Present, the 4000 Year Quest for God (১৯৯৩),
The End of Silence: Women and the Priesthood (১৯৯৩),
In the Beginning: A New Interpretation of Genesis (১৯৯৬),
Jerusalem: One City, Three Faiths (১৯৯৬),
The Battle for God: Fundamentalism in Judaism, Christianity and Islam (২০০০),
Buddha (২০০০),
Islam: A Short History (২০০০),
Faith After September 11th (২০০২),
The Spiral Staircase (২০০৪),
A Short History of Myth (২০০৫),
The Great Transformation: The World in the Time of Buddha, Socrates, Confucius and Jeremiah (২০০৬),
published in the U.S. as The Great Transformation: The Beginning of Our Religious Traditions (২০০৬),
Muhammad: A Prophet For Our Time'' (২০০৬),
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Review of ''The Battle for God: Fundamentalism in Judaism, Christianity and Islam by Rod Benson
Interview on the Brian Lehrer Show March 28, 2006
Interview with Robert Wright One of a series of interviews with influential philosophers and theologians on Slate.com's meaningoflife.tv (1hr 19min)
Booknotes interview with Brian Lamb September 22, 2000
ইংরেজ লেখক
১৯৪৪-এ জন্ম
২০শ শতাব্দীর ব্রিটিশ লেখিকা
জীবিত ব্যক্তি
আইরিশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ
ব্রিটিশ অ-কল্পকাহিনী লেখক
ব্রিটিশ ধর্মীয় লেখক
নারীবাদ অধ্যয়ন পণ্ডিত
প্রাক্তন রোমান ক্যাথলিক
অফিসার্স অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার
মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি
নারী ধর্মীয় লেখক
২১শ শতাব্দীর ব্রিটিশ লেখিকা
২১শ শতাব্দীর ব্রিটিশ লেখক
ফোর ফ্রিডমস পুরস্কার প্রাপক
মুহাম্মাদের জীবনীগ্রন্থ লেখক | https://en.wikipedia.org/wiki/Karen_Armstrong | Karen Armstrong | Karen Armstrong (born 14 November 1944) is a British author and commentator of Irish Catholic descent known for her books on comparative religion. A former Roman Catholic religious sister, she went from a conservative to a more liberal and mystical Christian faith. She attended St Anne's College, Oxford, while in the convent and graduated in English. She left the convent in 1969. Her work focuses on commonalities of the major religions, such as the importance of compassion and the Golden Rule.
Armstrong received the US$100,000 TED Prize in February 2008. She used that occasion to call for the creation of a Charter for Compassion, which was unveiled the following year. |
2795 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%A6%20%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%82%E0%A6%B8 | মুহাম্মদ ইউনূস | ড. মুহাম্মদ ইউনূস (জন্ম: ২৮ জুন, ১৯৪০) বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক ছিলেন। তিনি ক্ষুদ্রঋণ নামক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জনক হিসেবে সমাদৃত। অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন। ড. ইউনূস বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার সহ আরও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন।
পরিবার এবং শৈশব
মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার জোবরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এবং চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা করেন। তার পিতার নাম হাজী দুলা মিয়া সওদাগর এবং মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। তার প্রথম বিদ্যালয় মহাজন ফকিরের স্কুল। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি বয়েজ স্কাউটসে যোগ দেন এবং বয়েজ স্কাউটসের পক্ষ থেকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন।
মুহাম্মদ ইউনূসের সহধর্মিনী ডঃ আফরোজী ইউনুস। ব্যক্তিগত জীবনে মুহাম্মদ ইউনূস দুই কন্যার পিতা।
মুহাম্মদ ইউনূসের ভাই মুহাম্মদ ইব্রাহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং ছোট ভাই মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর একজন জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব।
শিক্ষা ও প্রাথমিক কর্মজীবন
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় মুহাম্মদ ইউনূস মেধা তালিকায় ১৬তম স্থান অধিকার করেন এবং চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। কলেজে তিনি নাটকে অভিনয় করে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা এবং আজাদী পত্রিকায় কলাম লেখার কাজে যুক্ত ছিলেন।
১৯৫৭ সালে মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই বিএ এবং এমএ সম্পন্ন করেন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ.ডি করেন। এরপর তিনি ব্যুরো অব ইকোনমিক্স -এ গবেষণা সহকারী হিসাবে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি লাভ করেন। ইউনূস বাংলাদেশে ফিরে আসার আগে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের পক্ষে বিদেশে জনমত গড়ে তোলা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদানের জন্য সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭২ সালে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন এবং ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন।
ইউনুস দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম শুরু করেন ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত দুর্ভিক্ষের সময়। তিনি বুঝতে পারেন স্বল্প পরিমাণে ঋণ দরিদ্র মানুষের জীবন মান উন্নয়নে অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে। সেই সময়ে তিনি গবেষণার লক্ষ্যে গ্রামীণ অর্থনৈতিক প্রকল্প চালু করেন। ১৯৭৪ সালে মুহাম্মদ ইউনুস তেভাগা খামার প্রতিষ্ঠা করেন যা সরকার প্যাকেজ প্রোগ্রামের আওতায় অধিগ্রহণ করে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯৬ সালে সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা
মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন গরিব বাংলাদেশীদের মধ্যে ঋণ দেবার জন্য। তখন থেকে গ্রামীণ ব্যাংক ৫.৩ মিলিয়ন ঋণগ্রহীতার মধ্যে ৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করে। ঋণের টাকা ফেরত নিশ্চিত করার জন্য গ্রামীণ ব্যাংক "সংহতি দল" পদ্ধতি ব্যবহার করে। একটি অনানুষ্ঠানিক ছোট দল একত্রে ঋণের জন্য আবেদন করে এবং এর সদস্যবৃন্দ একে অন্যের জামিনদার হিসেবে থাকে এবং একে অন্যের উন্নয়নে সাহায্য করে। ব্যাংকের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে গরিবকে রক্ষা করার জন্য ব্যাংক অন্যান্য পদ্ধতিও প্রয়োগ করে। ক্ষুদ্রঋণের সাথে যোগ হয় গৃহঋণ, মৎস খামাড় এবং সেচ ঋণ প্রকল্প সহ অন্যান্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা।
গরিবের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাংকের সাফল্য উন্নত বিশ্ব এমন কি যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশসমূহকে গ্রামীণের এই মডেল ব্যবহার করতে উদ্ভুদ্ধ হয়।
নোবেল পুরস্কার অর্জন
মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে এই পুরস্কার লাভ করেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ
Three Farmers of Jobra; ডিপার্টমেন্টস অফ ইকোনোমিক্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; (১৯৭৪)
Planning in Bangladesh: Format, Technique, and Priority, and Other Essays; Rural Studies Project, ডিপার্টমেন্টস অফ ইকোনোমিক্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; (১৯৭৬)
Jorimon and Others: Faces of Poverty (co-authors: Saiyada Manajurula Isalama, Arifa Rahman); গ্রামীণ ব্যাংক; (১৯৯১)
Grameen Bank, as I See it; গ্রামীণ ব্যাংক; (১৯৯৪)
Banker to the Poor: Micro-Lending and the Battle Against World Poverty; Public Affairs; (২০০৩)
Creating a World without Poverty: Social Business and the Future of Capitalism; Public Affairs; (২০০৮)
Building Social Business: The New Kind of Capitalism that Serves Humanity's Most Pressing Needs[১২৭] ; Public Affairs; (২০১০);
সম্মাননা
ডঃ ইউনুস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬২টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
কারাদণ্ড
মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি শ্রম আদালত তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মোট ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে। আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে আপিল করার শর্তে তার আইনজীবীরা জামিন চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করেছে। আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মুহাম্মদ ইউনূস বলেন,
পুরস্কার
১৯৭৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ড. ইউনূস জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহ প্রায় ১৪৫টি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড। (১৯৭৮)
রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার। (১৯৮৪)
কেন্দ্রীয় ব্যাংক অ্যাওয়ার্ড। (১৯৮৫)
স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৭)
আগা খান অ্যাওয়ার্ড। (১৯৮৯)
কেয়ার পুরস্কার। (১৯৯৩)
নোবেল পুরস্কার (শান্তি)। (২০০৬)
মানবহিতৈষণা পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র। (১৯৯৩)
মুহাম্মদ সাহেবুদ্দিন বিজ্ঞান (সামাজিক অর্থনীতি) পুরস্কার,শ্রীলঙ্কা (১৯৯৩)
রিয়াল এডমিরাল এম এ খান স্মৃতি পদক,বাংলাদেশ (১৯৯৩)
বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার,যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৪)
পিফার শান্তি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৪)
ডঃ মুহাম্মাদ ইব্রাহিম স্মৃতি স্বর্ণ পদক, বাংলাদেশ (১৯৯৪)
ম্যাক্স সছমিধেইনি ফাউন্ডেশন ফ্রিডম পুরস্কার,সুইজারল্যান্ড (১৯৯৫)
ঢাকা মেট্রোপলিটন রোটারারি ক্লাব ফাউন্ডেশন পুরস্কার, বাংলাদেশ (১৯৯৫)
আন্তর্জাতিক সাইমন বলিভার পুরস্কার (১৯৯৬)
ভ্যানডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় বিশিষ্ট আলামনাই পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৬)
আন্তর্জাতিক একটিভিটিস্ট পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৭)
প্লানেটরি কনশিয়াশনেস বিজনেস ইনোভেশন পুরস্কার, জার্মানি (১৯৯৭)
হেল্প ফর সেলফ হেল্প পুরস্কার,নরওয়ে (১৯৯৭)
শান্তি মানব পুরস্কার (ম্যান ফর পিস এওয়ার্ড), ইতালি (১৯৯৭)
বিশ্ব ফোরাম পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৭)
ওয়ান ওয়ার্ল্ড ব্রডকাস্টিং ট্রাস্ট মিডিয়া পুরস্কার, যুক্তরাজ্য (১৯৯৮)বিশ্ব
দ্যা প্রিন্স অফ আউস্তুরিয়া এ্যাওয়ার্ড ফর কনকর্ড, স্পেন (১৯৯৮)
সিডনি শান্তি পুরস্কার, অস্ট্রেলিয়া (১৯৯৮)
অযাকি (গাকুডো) পুরস্কার, জাপান (১৯৯৮)
ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার, ইন্ডিয়া (১৯৯৮)
জাস্টটি অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার,ফ্রান্স (১৯৯৮) ( Les Justes D'or )
রোটারারি এ্যাওয়ার্ড ফর ওয়ার্ল্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৯)
গোল্ডেন পেগাসাস এ্যাওয়ার্ড, ইটালি (১৯৯৯)
রোমা এ্যাওয়ার্ড ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান, ইটালি (১৯৯৯)
রাথিন্দ্রা পুরস্কার, ইন্ডিয়া (১৯৯৮)
অমেগা এ্যাওয়ার্ড অফ এক্সিলেন্সি ফরব লাইফ টাইম এচিভমেন্ট, সুইজারল্যান্ড (২০০০)
এ্যাওয়ার্ড অফ দ্যা মেডেল অফ দ্যা প্রেসিডেন্সি,ইটালি (২০০০)
কিং হুসেইন হিউম্যানিটারিয়ান লিডারশীপ এ্যাওয়ার্ড, জর্ডান (২০০০)
আই ডি ই বি গোল্ড মেডেল এ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ (২০০০)
আরতুসি পুরস্কার, ইটালি (২০০১)
গ্র্যান্ড প্রাইজ অফ দ্যা ফুকুওকা এশিয়ান কালচার পুরস্কার, জাপান (২০০১)
হো চি মীণ পুরস্কার, ভিয়েতনাম (২০০১)
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পুরস্কার 'কাজা ডি গ্রানাডা', স্পেন (২০০১)
নাভারা ইন্টারন্যাশনাল এইড এ্যাওয়ার্ড, স্পেন (২০০১)
মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০২)
বিশ্ব টেকনলজি নেটওয়ার্ক পুরস্কার, যুক্তরাজ্য (২০০৩)
ভলভো পরিবেশ পুরস্কার, সুইডেন (২০০৩)
জাতীয় মেধা পুরস্কার, কলম্বিয়া (২০০৩)
দ্যা মেডেল অফ দ্যা পেইন্টার অসওয়াল্ড গুয়ায়াসামিন পুরস্কার, ফ্রান্স (২০০৩)
তেলিছিনকো পুরস্কার, স্পেন (২০০৪)
সিটি অফ অরভিতো পুরস্কার, ইটালি (২০০৪)
দ্যা ইকোনমিস্ট ইনোভেশন পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৪)
ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৪)
লিডারশীপ ইন সোশ্যাল অন্টাপ্রিনেয়ার এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৪)
প্রিমিও গ্যালিলীয় ২০০০ স্পেশ্যাল প্রাইজ ফর পিস ২০০৪, ইটালি (২০০৪)
নিক্কেই এশিয়া পুরস্কার, জাপান (২০০৪)
গোল্ডেন ক্রস অফ দ্যা সিভিল অর্ডার অফ দ্যা সোশ্যাল সলিডারিটি,স্পেন (২০০৫)
ফ্রিডম এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৫)
বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি গোল্ড মেডেল, বাংলাদেশ (২০০৫)
প্রাইজ ২ পন্টে, ইটালি (২০০৫)
ফাউন্ডেশন অফ জাস্টিস, স্পেন (২০০৫)
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি নেউসতাদ এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৬)
গ্লোব সিটিজেন অফ দ্যা ইয়ার এ্যাওয়ার্ড,যুক্তরাষ্ট্র (২০০৬)
ফ্রাঙ্কলিন ডি রুসভেল্ট স্বাধীনতা পুরস্কার, নেদারল্যান্ড (২০০৬)
ইতু বিশ্ব তথ্য সংগঠন পুরস্কার, সুইজারল্যান্ড (২০০৬)
সিউল শান্তি পুরস্কার, কোরিয়া (২০০৬)
কনভিভেঞ্চিয়া (উত্তম সহকারিতা) সেউতা পুরস্কার, স্পেন (২০০৬)
দুর্যোগ উপশম পুরস্কার, ইন্ডিয়া (২০০৬)
সেরা বাঙালী, ইন্ডিয়া (২০০৬)
গ্লোবাল ট্রেইলব্লেজার পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
এ বি আই সি সি এ্যাওয়ার্ড ফর লিডারশীপ ইন গ্লোবাল ট্রেড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
সামাজিক উদ্যোক্তা পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
বিশ্ব উদ্যোগী নেতৃত্ব পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
রেড ক্রস স্বর্ণ পদক, স্পেন (২০০৭)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্ম শত বার্ষিকী স্মারক, ইন্ডিয়া (২০০৭)
ই এফ আর বাণিজ্য সপ্তাহ পুরস্কার,নেদারল্যান্ড (২০০৭)
নিকলস চ্যান্সেলর পদক, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
ভিশন এ্যাওয়ার্ড, জার্মানি (২০০৭)
বাফি গ্লোবাল এচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
রুবিন মিঊজিয়াম মানডালা এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
সাকাল বর্ষ ব্যক্তিত্ব পুরস্কার, ইন্ডিয়া (২০০৭)
১ম আহপাডা গ্লোবাল পুরস্কার, ফিলিপাইন (২০০৭)
মেডেল অফ ওনার, ব্রাজিল (২০০৭)
জাতিসংঘ সাউথ- সাউথ সহযোগিতা পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৭)
প্রোজেক্ট উদ্যোগী পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৮)
আন্তর্জাতিক নারী স্বাস্থ্য মিশন পুরস্কার, নিউইয়র্ক (২০০৮)
কিতাকইয়ুশু পরিবেশ পুরস্কার, জাপান (২০০৮)
চ্যান্সেলর পদক, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৮)
প্রেসিডেন্স পদক, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৮)
মানব নিরাপত্তা পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৮)
বাৎসরিক উন্নয়ন পুরস্কার, অস্টিয়া (২০০৮)
মানবসেবা পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৮)
শিশু বন্ধু পুরস্কার,স্পেন (২০০৮)
এ জি আই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পুরস্কার, জার্মানি (২০০৮)
করিনি আন্তর্জাতিক গ্রন্থ পুরস্কার, জার্মানি (২০০৮)
টু উয়িংস প্রাইজ,জার্মানি (২০০৮)
বিশ্ব মানবতাবাদী পুরস্কার, ক্যালিফোর্নিয়া (২০০৮)
ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল এ্যাওয়ার্ড ,ক্যালিফোর্নিয়া (২০০৮)
এস্টরিল গ্লোবাল ইস্যু'স ডিসটিনগুইশড বুক প্রাইজ, পর্তুগাল (২০০৯)
এইসেনহওয়ের মেডেল ফর লিডারশীপ অ্যান্ড সার্ভিস, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৯)
গোল্ডেন বিয়াটেক এ্যাওয়ার্ড, স্লোভাকিয়া (২০০৯)
গোল্ড মেডেল অফ ওনার এ্যাওয়ার্ড, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৯)
প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম, যুক্তরাষ্ট্র (২০০৯)
পি আই সি এম ই টি এ্যাওয়ার্ড, পোর্টল্যান্ড (২০০৯)
বৈরুত লিডারশীপ এ্যাওয়ার্ড (২০০৯)
সোলারওয়ার্ল্ড আইন্সটাইন এ্যাওয়ার্ড (২০১০)
কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডাল (২০১০)
জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের ‘চ্যাম্পিয়ন অব গ্লোবাল চেঞ্জ’ পুরস্কার (২০২১)
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
গ্রামীণ ব্যাংক, ডঃ ইউনূসের স্বপ্ন
ডঃ ইউনূসের জীবনী - বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার
SAJAforum.org Q&A from around the world with Muhammad Yunus (audio/MP3 ৪২ মিনিট)
ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বক্তব্য
মুহাম্মদ ইউনূসের উপর বিজনেসউইকের নিবন্ধ, ডিসেম্বর ২৬, ২০০৫
সিএনএন এর নিবন্ধ ক্ষুদ্রঋণের জন্ম, ২০০১।
মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কিত বক্তব্যের ভিডিও
মুহাম্মদ ইউনূসের একটি স্বাক্ষাতকার
মুহাম্মদ ইউনূসের পুরস্কারসমূহ
১৯৪০-এ জন্ম
জীবিত ব্যক্তি
বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী
বাংলাদেশী নোবেল বিজয়ী
চট্টগ্রাম জেলার লেখক
চট্টগ্রাম জেলার অর্থনীতিবিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী
বাঙালি নোবেল বিজয়ী
বাঙালি মুসলিম
পল্লী উন্নয়নে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
চট্টগ্রাম কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠাতা
বাংলাদেশী ব্যাংকার
নিক্কেই এশিয়া পুরস্কার বিজয়ী
উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ
আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ব্যক্তি
ক্ষুদ্রঋণ ব্যক্তি
মিডল টেনেসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম প্রাপক
অশোকা বাংলাদেশ সভ্য
হাটহাজারী উপজেলার ব্যক্তি
হাফপোস্ট লেখক ও কলাম লেখক
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত ব্যক্তি
সামাজিক উদ্যোক্তা
পিফার শান্তি পুরস্কার বিজয়ী
বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
ফোর ফ্রিডমস পুরস্কার প্রাপক
কৃষি ও খাদ্য পুরস্কার বিজয়ী
আন্তর্জাতিক সিমন বলিভার পুরস্কার প্রাপক
প্যারিসের সম্মানিত নাগরিক
বাংলাদেশী ব্যবসায়ী
বাঙালি ব্যক্তি
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
ফুলব্রাইট বৃত্তিধারী | https://en.wikipedia.org/wiki/Muhammad_Yunus | Muhammad Yunus | Muhammad Yunus (born 28 June 1940) is a Bangladeshi entrepreneur, banker, economist, politician, and civil society leader who has been serving as the Chief Adviser of the interim government of Bangladesh since 8 August 2024. Yunus was awarded the Nobel Peace Prize in 2006 for founding the Grameen Bank and pioneering the concepts of microcredit and microfinance. Yunus has received several other national and international honors, including the United States Presidential Medal of Freedom in 2009 and the Congressional Gold Medal in 2010.
In 2012, Yunus became Chancellor of Glasgow Caledonian University in Scotland, a position he held until 2018. Previously, he was a professor of economics at Chittagong University in Bangladesh. He published several books related to his finance work. He is a founding board member of Grameen America and Grameen Foundation, which support microcredit. Yunus also served on the board of directors of the United Nations Foundation, a public charity to support UN causes, from 1998 to 2021. In 2022, he partnered with Global Esports Federation to build esports for the development movement.
After dissolving parliament on 6 August 2024, Bangladeshi president Mohammed Shahabuddin nominated Yunus to serve as the head of the interim government of Bangladesh, acceding to student demands following the resignation of former Prime Minister Sheikh Hasina. His acquittal on appeal the following day of charges of labor code violations, which were viewed as politically motivated, facilitated his return to the country and appointment. |
2796 | https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%A3%20%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%95 | গ্রামীণ ব্যাংক | গ্রামীণ ব্যাংক একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান । এটি বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী বিশেষায়িত সামাজিক উন্নয়ন ব্যাংক । ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে এটি একটি বৈধ এবং স্বতন্ত্র ব্যাংক হিসেবে যাত্রা শুরু করে। গ্রামীণ ব্যাংক মূলত ভূমিহীন এবং দরিদ্র নারীদের পাঁচ জনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে এবং এ ঋণের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে। গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের হার ৯৮%।
পরিচালনা পদ্ধতি
এটি বাংলাদেশ ব্যাংক এর তালিকাভুক্ত নয়। এটি বাংলাদেশের ৫টি অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংকের একটি।
অর্জন ও পুরস্কার
২০০৬ সালে দারিদ্র বিমোচনে অবদান রাখায় গ্রামীণ ব্যাংক এবং মুহাম্মদ ইউনুস যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
আগাখান স্থাপত্য পুরস্কার: ১৯৮৯ (সুইজারল্যান্ড)
কাজী মাহবুবউল্লাহ পুরস্কার: ১৯৯২ (বাংলাদেশ)
রাজা বোঁদওয়া আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পুরস্কার : ১৯৯৩ (বেলজিয়াম)
তুন আবদুল রাজাক পুরস্কার: ১৯৯৪ (মালয়েশিয়া)
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার: ১৯৯৪ (বাংলাদেশ)
বিশ্ব বসতি পুরস্কার: ১৯৯৭ (যুক্তরাজ্য)
গান্ধী শান্তি পুরস্কার: ২০০০ (ভারত)
পিটার্সবার্গ পুরস্কার: ২০০৪ (যুক্তরাষ্ট্র)
নোবেল শান্তি পুরস্কার: ২০০৬ (নরওয়ে)
এম সি সি আই ঢাকা এর শতবর্ষ পদক পুরস্কার:২০১৪ (বাংলাদেশ)
ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন এর "বেস্ট কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সেবল ব্যাংক পুরস্কার :২০১৪ (যুক্তরাজ্য)
আই সি এম এ বি'র বেস্ট কর্পোরেট এ্যাওয়ার্ড পুরস্কার :২০১৪ (বাংলাদেশ)
আরও দেখুন
বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকা
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
গ্রামীণ ব্যাংকের ওয়েবসাইট
বাংলাদেশে সমবায়
বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংক
১৯৮৩-এ প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক
বাংলাদেশী নোবেল বিজয়ী
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সংস্থা
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সংস্থা
পল্লী উন্নয়নে স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
১৯৮৩-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী কোম্পানি
গান্ধী শান্তি পুরস্কার বিজয়ী
স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
ঢাকা ভিত্তিক কোম্পানি
মুহাম্মদ ইউনূস | https://en.wikipedia.org/wiki/Grameen_Bank | Grameen Bank | Grameen Bank (Bengali: গ্রামীণ ব্যাংক) is a microfinance specialized community development bank founded in Bangladesh. It provides small loans (known as microcredit or "grameencredit") to the impoverished without requiring collateral.
Grameen Bank is a statutory public authority. It is originated in 1976, in the work of Muhammad Yunus, a professor at the University of Chittagong, who launched a research project to study how to design a credit delivery system to provide banking services to the rural poor. In October 1983 the Grameen Bank was authorized by national legislation to operate as an independent bank.
The bank grew significantly between 2003 and 2007. As of January 2022, the total borrowers of the bank number nearly 9.5 million, and 96.81% of those are women. In 1998 the Bank's "Low-cost Housing Program" won a World Habitat Award. In 2006, the bank and its founder, Muhammad Yunus, were jointly awarded the Nobel Peace Prize.
The bank's success has inspired similar projects in more than 64 countries around the world, including a World Bank initiative to finance Grameen-type lending systems. |