content
stringlengths
0
129k
বাঁশকে পৃথিবীতে দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত কাঠের উদ্ভিদ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়
ভারতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা ফসলের মধ্যে বাঁশ অন্যতম এবং এটি 'দরিদ্র মানুষের কাঠ' হিসেবেও পরিচিত | চীনের পর ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁশ উৎপাদনকারী দেশ
দেশে বার্ষিক বাঁশের উৎপাদন আনুমানিক ৩.২৩ মিলিয়ন টন |
এশিয়ায়, বাঁশ সংস্কৃতির সবচেয়ে সংহত অংশ এবং এটি কাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়
এটি প্রধানত নির্মাণ সামগ্রী, আসবাবপত্র, সজ্জা এবং পাতলা কাঠের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়
ভারত নিতান্তই খুব ভাগ্যবান যে এখানে বাঁশের উৎপাদন সবচেয়ে ভালো
সর্বোপরি, বাঁশের কান্ডগুলি খাদ্য হিসাবে খাওয়া হয় এবং পুষ্টির ভাল উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়
দেশের উত্তর -পূর্ব রাজ্যগুলি প্রধান বাঁশ উৎপাদনকারী রাজ্য
যদিও দেশে প্রায় ১৩৬ প্রজাতির বাঁশের অস্তিত্ব রয়েছে, তবুও তাদের মধ্যে কয়েকটি কেবল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা সম্ভব
জলবায়ু():
বাঁশ বাগান গরম থেকে উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়াতে ভাল জন্মায়
তবে এটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে গ্রীষ্মে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রার প্রয়োজন হয় না | যেহেতু বাঁশের পাতলা শিকড় এবং যথেষ্ট বৃদ্ধি আছে, তাই এটিকে সবসময় শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ বা ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করতে হবে
এছাড়াও, যে অঞ্চলে ঠান্ডা বাতাস আসে সেখানে বাঁশ চাষের জন্য উপযুক্ত নয় |কারণ শৈত্যপ্রবাহে বাঁশের পাতা শুকিয়ে মরে যেতে পারে |
মাটি():
সাধারনত, বাঁশগুলি কলম কাটিং বা রাইজোমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা হয়
কিন্তু এগুলি বীজের মাধ্যমেও বংশ বিস্তার করা যায়, যা খুব কমই পাওয়া যায় | বাঁশের চারাগুলি মূলত নার্সারিতে বেড়ে ওঠে এবং ১ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে সেগুলিকে মাটি ভর্তি পাত্রগুলিতে বাড়তে দেওয়া হয়
পরে চারা মূল জমিতে স্থানান্তরিত করা হয়
রাইজোম রোপণ পদ্ধতিতে একটু যত্নের প্রয়োজন হয়
এখানে, শিকড় সহ ১ বছরের কলম খনন করে ১ মিটার আকারে কাটা উচিত এবং বর্ষায় রোপণ করা উচিত
রোপণ পদ্ধতি():
সাধারণত বর্ষায় বাঁশের চারা রোপণ করা হয়
৬০*৬০ আকারের মাটিতে গর্ত খুঁড়তে হবে | ৫*৪ মিটারের জায়গায় নার্সারি থেকে নিয়ে আসা চারা রোপণ করতে হবে
১ একর জমিতে প্রায় ২০০ টি বাঁশের চারা একসাথে লাগানো যেতে পারে | বাঁশ রোপণে বেড়ে ওঠার সময়কাল ৫ বছর
অতএব আদা, মরিচ বা হলুদের মতো সাথী ফসস্ল অনায়াসে চাষ করে কিছু অতিরিক্ত আয় করা যায় | তাই, প্রথম ৩ বছরের মধ্যে বাঁশের সাথে এই সাথী ফসলগুলি সহজেই চাষ করা যেতে পারে |
সার প্রয়োগ():
উচ্চ মানের এবং সর্বোত্তম ফলনের জন্য, সার ব্যবহার করা হয়
যখন মূল জমিতে চারা রোপণ করা হয় তখন সার এবং কীটনাশক গুরুত্বপূর্ণ | যেহেতু বাঁশ গাছগুলি ভারী খাদক, এমনকি খুব উচ্চ মানের মাটিও হার মেনে যাবে যদি এই চাষে সার প্রয়োগ করা না হয় | কিন্তু সবসময় ফসল তোলার পর সার প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং গাছে সেচ প্রদান করার আগে | পটাসিয়াম এবং নাইট্রোজেন সার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান | এই ২ সারের প্রয়োগে যার কারণে বাঁশ গাছ বেড়ে ওঠে
এছাড়াও অবশ্যই সবুজ সার, জৈব কম্পোস্ট, কাঠের ছাই এবং রাসায়নিক সার পরিমাণমতো ও প্রয়োজনমতো প্রয়োগ করতে হবে
পাতা কামড়ানো এবং পাতার রস চুষে খেয়ে নেওয়া পোকামাকড় দেখা যায় | তাই এই কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে
সেচ():
নার্সারিতে বাঁশ জন্মানোর সময় নিয়মিত সেচ দিতে হবে
নার্সারি থেকে মূল জমিতে চারা রোপণের সময় অবিলম্বে জল সরবরাহ করতে হবে
এটি অবশ্যই লক্ষ করা উচিত যে বাঁশের গাছ জলাবদ্ধতার জন্য সংবেদনশীল তাই বিশেষ করে ভারী বৃষ্টিপাত বা বন্যার সময় মাটি বের করতে হবে
জলের ভাল ব্যবহারের জন্য ড্রিপ সেচ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যেতে পারে |
ফসল সংগ্রহ():
পঞ্চম বছর থেকে ফসল কাটা শুরু করা যেতে পারে
অন্যদিকে, বাণিজ্যিক চাষের ক্ষেত্রে, ৬ বছর থেকে ফসল তোলা আবশ্যক
প্রথমবার ষষ্ঠ বছরে ৬ টি কলম এবং এরপর ৭ বছরে ৭ টি কলম কত হয় এবং পরবর্তীতে এভাবে চলতে থাকে | ১ একর বাঁশ রোপণের জন্য ৫ বছরে খরচ প্রায় ৯৪০০ টাকা
বাঁশ চাষ থেকে ফলন এবং আয়, প্রতি ৬ বছর থেকে বৃদ্ধি পায়
অতএব আমরা বলতে পারি যে বাঁশ হল একটি লাভজনক ফসল যার দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম অর্থনৈতিক পুনরাবৃত্তি লাভ দেয়
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
ধানের ভালো ফলনের জন্য বীজ শোধনের পদ্ধতি
নিজস্ব প্রতিনিধি
পশ্চিমবঙ্গ আউশ, আমন ও বোরো এই তিন মৌসুমে প্রতি বছর ১৫-১৬ মিলিয়ন টন ধান উৎপাদন করে
খরিফ ধান (আউশ ও আমন) মোট উৎপাদনের প্রায় ৭০ শতাংশ
বোরো ধান সাধারণত খাল বা সেচ সুবিধার উপর নির্ভরশীল জমিতে চাষ করা হয়
ধান চাষে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে কৃষকের লভ্যাংশের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে বৈজ্ঞানিক প্রথায় ও আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ করার সঙ্গে সঙ্গে কিছু খুটিনাটি বিষয়েও কৃষককে সচেতন থাকতে হবে
সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করতে পারলে মিলবে শতভাগ সফলতা
ভালো চারা তৈরীর একটি বিশেষ উপাদান হল ভালো বীজ
আমরা বীজ কিনে ভালো মন্দ বীজ পরখ না করে, বাছাই না করে সব বীজ বুনে দিই
বীজতলাতে আর চিটে বা স্বল্প পুষ্ট বীজ থেকে যে দুর্বল চারা বার হয় তাও মূল জমিতে রোপন করে দিই, কারণ একটা সময় পর সেই চারা তো আর আলাদা করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না
তাই সামান্য একটু সময় ব্যয় করে বীজ বাছাই করে নিয়ে তার সাথে সাথে যৎসামান্য খরচ করে বীজবাহিত রোগ থেকে বীজ কে মুক্ত করার লক্ষ্যে বীজ শোধন করে নিতে হবে
বীজ ধান বাছাই ( ) -
১.৩ কেজি খাদ্য লবন ৮ লিটার জলে দ্রবীভূত করে, তার মধ্যে বীজ ধান ঢেলে দিতে হবে
দ্রবণে ভেসে ওঠা অপুষ্ট ধান ফেলে দিতে হবে ও ডুবে যাওয়া পুষ্ট ধান বীজ হিসাবে উপযুক্ত বলে তা তুলে নিয়ে পরিষ্কার জলে ধোয়ার পর শুকিয়ে নিতে হবে
এইভাবে ৮ লিটার দ্রবণে ২০-৩০ কেজি বীজ ধান বাছাই করা যায়
এরপর প্রতি কেজি বীজ শোধনের জন্য ৪-৫ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি বা ২ গ্রাম ব্যাভিষ্টিন বা ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম -৪৫ (ম্যানকোজেব), ঝলসা প্রবন এলাকায় ১.৫ গ্রাম ট্রাইসাইক্লাজোল অথবা ব্যাক্টেরিয়া ধ্বসা প্রবণ অঞ্চলে ১ গ্রাম স্ট্রেপ্টোসাইক্লিন প্রতি ১০ লিটার জলে মিশিয়ে শোধন করতে হবে
যদি বীজ শোধন না করেই বীজ ফেলা হয় সেক্ষেত্রে চারা তোলার পর লাগানোর পূর্বে গামলা বা বালতিতে ওষুধ গুলে তাতে ১০ মিনিট শিকড় ডুবিয়ে রোয়া করা যেতে পারে
বেশ কিছু অঞ্চলে আগাছা একটা বিরাট সমস্যা
ভালো চারা তৈরী করতে গেলে বীজতলা আগাছামুক্ত রাখতে হবে
তার জন্য কয়েকটা বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে যেমন -
বীজতলা আগাছামুক্ত ( ) -
১) বীজতলার জন্য এমন জমি নিতে হবে যেখানে সাধারনভাবেই আগাছা কম হয়
২) অনেক সময় বীজতলায় জৈবসারের মাধ্যমে আগাছা বীজ চলে আসে, সে বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে, প্রয়োজনে নিজের জন্য জৈবসার নিজেই তৈরী করুন
৩) যে জমিতে বীজতলা তৈরী করবেন, বপনের ১৫ দিন আগে সেই জমি ভিজিয়ে ৭ দিন রেখে দিন, দেখা যাবে বেশ কিছু আগাছা বেড়িয়েছে তখন চাষ দিয়ে দিন এবং এর পর আরো ৭ দিন রেখে দিন
দেখা যাবে আরও কিছু আগাছা দেখা যাচ্ছে তখন মই ও লাঙল দিয়ে বীজতলার জমি তৈরী করুন
৪ ) নমিনিগোল্ড / অ্যাডোরা / মংআচো / তারাক এই আগাছানাশকটি ১ কাঠা বীজতলার জন্য মোট ৩ লিটার জলে ২ মিলি প্রয়োগ করুন
অর্থাৎ ১ বিঘা জমির জন্য ৬০ লিটার জল ব্যবহার করতে হবে আর ৪০ মিলি ঔষধ
অনেকসময় বীজতলায় রোগ বা পোকার উপদ্রব দেখা যায় সেক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে হবে
পোকার আক্রমণ হলে পাদান ১ গ্রাম বা অ্যাসিফেট ০.৭৫ গ্রাম বা ট্রয়োজোফস ১ মিলি প্রতি লিটার জলে স্প্রে করা যেতে পারে
ঝলসা, বাদামী দাগ, গোড়াপচা ইত্যাদি রোগ লাগলে আইসোপ্রোথিওলেন ১ মিলি, বা ট্রাইসাইক্লাজোল (বীম বা টুপার) ০.৫ গ্রাম অথবা সাফ বা কমপ্যানিয়ান ২ গ্রাম প্রতি লিটার জলে স্প্রে করুন
চারা তোলার ক্ষেত্রে সতর্কতা -
চারা তোলার সময় মোটামুটি যত মাসের ধান তত সপ্তাহের চারা তুলতে হবে
তার আগে হলে আরো ভালো কারণ সুস্থ সবল কম বয়সী চারাই আমাদের উদ্দেশ্য
চারা তোলার ৬-৮ ঘন্টা আগে বীজতলায় ১০ সেমি জল রাখতে হবে
চারা তোলার ২ দিনের মধ্যে অবশ্যই রোয়া করা উচিৎ
অনেক সময় পোকার ডিম বা রোগ থেকে চারাকে মুক্ত করার জন্য চারার ডগার দিকে কিছুটা ছিঁড়ে ফেলা হয়
যেভাবে চার তোলা হয় অনেকসময়ই প্রচুর চারার শিকড় ছিঁড়ে যায় এবং এই অবস্থাতেই আমরা মূল জমিতে রোয়া করি
বীজতলা তো সামনা একটু জায়গা
তাই বীজতলাতে ভালো করে বেশী বেশী করে জৈবসার দিয়ে ভালো করে মাটি তৈরী করতে হবে যাতে মাটি আলগা থাকে, চারার বৃদ্ধি ভালো হয় আবার চারার শিকড় অটুট থাকে
ভালো ফলনের জন্য ভালো চারা সবচেয়ে জরুরী
সে বিষয়ে সবচেয়ে বেশী নজর দিতে হবে
সবশেষে কৃষক বন্ধুদের জন্য বৈজ্ঞানিকদের পরামর্শ হল -
সুস্থ সবল মোটা চারা তৈরী করুন, শিকড় সমেত কম বয়সী চারা ফাঁকা ফাঁকা রোয়া করুন আর গুছিতে কম চারা দিন যাতে আভ্যন্তরীণ প্রতিযোগীতা কম হয় এবং ভালো ফলন নিশ্চিত করুন
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ
শিখে নিন টবে দারুচিনির চাষের কৌশল
রজনীগন্ধা চাষের পলিথিন ব্যাবহারে ব্যাপক লাভ
তিস্তার চরে পেঁয়াজের ব্যাপক ফলনের আশায় চাষিরা
শতবর্ষী তেজপাতা গাছ চাষের সহজতম উপায়
অর্কিডের যত্ন নিবেন যেভাবে
বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের একমাত্র পন্থা জৈব কৃষিকাজ
জেনে নিন তৈল উৎপাদনকারী সূর্যমুখী চাষের পদ্ধতি
টমেটোর বিভিন্ন রোগ দূর করার উপায়
মাশরুম চাষ করে বাঁকুড়া জেলায় প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে প্রণব পাত্র আজ পেয়েছেন অসামান্য সাফল্য
অ্যারোপোনিক্স উপায়ে সব্জি চাষে দারুন লাভ
বছরে একটি নয় দুটি বাছুর দেবে গাভী
জেনে নিন কাঠ গোলাপের কাটিং পদ্ধতি
ফুলের বাগানে রাখুন অপরাজিতা
স্মার্ট এরিয়েটর এর সাথে অটো ফিডিং সিস্টেম - লাভজনক মাছ চাষ করার প্রযুক্তি