content
stringlengths
1
63.8k
তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আবারও কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। আজ সোমবার সকাল নয়টা থেকে পুরো কর্মদিবস প্রায় সব কর্মকর্তা কর্মবিরতি পালন করেন।কর্মকর্তাদের তিন দফা দাবি হলো একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের সময়সীমা সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার পরিবর্তে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা, চাকরির বয়সসীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছরে উন্নীত করা এবং উপরেজিস্ট্রার ও সমমানের কর্মকর্তাদের বেতন স্কেল চতুর্থ গ্রেডে ৫০ হাজার এবং সহকারী রেজিস্ট্রার ও সমমানের কর্মকর্তাদের জন্য ষষ্ঠ গ্রেডে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত করা।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছেন এই কর্মকর্তারা। কর্মবিরতি পালন, মৌন মিছিল, প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। সর্বশেষ গত ৪ মার্চ কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তারা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত দাবি আদায় না হওয়ায় আজ আবারও আন্দোলনে নামেন তাঁরা।এদিকে কর্মকর্তাদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। ফাতেমা জান্নাত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে নম্বরপত্র তুলতে এসেছিলাম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে। কিন্তু তুলতে পারিনি।’পরে দুপুর তিনটা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেন কর্মকর্তা সমিতির নেতৃবৃন্দ।এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি শামসুল ইসলাম জোহা বলেন, ‘আমাদের দাবি মেনে নিতে প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি।’উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের দাবির বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আগামী মাসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে নেওয়া হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত, সাজাপ্রাপ্ত ও আটক জঙ্গিদের নিবিড় নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।আজ সোমবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে সরকারের জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণুতা) নীতির আলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের বিশেষায়িত ফোর্স গঠনের পাশাপাশি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, অপারেশনাল ও লজিস্টিকস সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা নজরদারি এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে জঙ্গি আস্তানা, জঙ্গিদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।আসাদুজ্জামান খান বলেন, জঙ্গি সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তকরণের সুবিধার্থে এলাকা ভিত্তিক ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বিডি পুলিশ হেল্প লাইন, হ্যালো সিটি ও রিপোর্ট টু র‌্যাব প্রভৃতি অনলাইন অ্যাপস চালু এবং গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেকগুলো সফল অভিযান চালিয়েছে। যেকোনো ধরনের জঙ্গি সংক্রান্ত বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর রয়েছে। জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমনের সফলতা বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে পশ্চিম জাপানের ওসাকা শহরে শুরু হচ্ছে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় ২০টি অর্থনীতির নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন। ১৯টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নিয়ে এই অনানুষ্ঠানিক জোট গঠিত হলেও প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করে এবারের সম্মেলনেও এর বাইরে আরও কিছু প্রভাবশালী দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এর ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া দুদিনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বের ২৭টি দেশ ও সেই সঙ্গে জাতিসংঘসহ ১০টি আন্তর্জাতিক সংগঠনের নেতারা ওসাকায় সমবেত হবেন।শীর্ষ সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে শুরু করে পরিবেশ সমস্যা ও স্বাস্থ্যসেবা পর্যন্ত বিস্তৃত বিষয়াবলি অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে এবারের সম্মেলনে সবকিছু ছাপিয়ে বাণিজ্য নিয়ে দেখা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিতর্ক এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব অংশগ্রহণকারী নেতাদের মনোযোগ আকৃষ্ট করছে সবচেয়ে বেশি। এর কারণ, মূল সম্মেলনের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের নেতাদের একান্ত বৈঠকে মিলিত হতে সম্মত হওয়া। ওসাকায় নির্ধারিত সেই বৈঠকে তাঁরা বাণিজ্য সংঘাতের নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার মধ্যে দিয়ে উত্তেজনা প্রশমনে পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হন কি না, সেদিকে এখন নজর দিচ্ছেন সংবাদমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহান্তে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় ওসাকায় বৈঠকে বসতে সম্মত হন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অন্যের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে এগিয়ে আসে কি না, তা নিয়ে প্রত্যাশা ও শঙ্কা দুটোই বেড়ে চলেছে। প্রত্যাশা এ জন্য যে সমঝোতা হলে বিশ্ব অর্থনীতি আপাতত হয়তো তাৎক্ষণিক নেতিবাচক প্রভাব কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। অন্যদিকে দুই দেশ এরপরও নিজ নিজ অবস্থানে অটল থাকলে সেই অবস্থা অন্যান্য দেশকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।গত সপ্তাহে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও তাঁর চীনবিরোধী কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। অন্যদিকে চীন বলে আসছে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলিতে কোনো রকম ছাড় দিতে তারা প্রস্তুত নয়। এদিকে চীনের জনগণের মধ্যে মার্কিনবিরোধী মনোভাব আরও কিছুটা উসকে দিতে দেশের সংবাদমাধ্যম সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা বাড়িয়েছে। ইংরেজি ভাষার দৈনিক ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয়েছে, দেশের জন্য অনুকূল শর্তাবলি আদায় করে নিতে কঠোর অবস্থান ধরে রাখায় চীনের ভয় পেলে চলবে না।এ রকম বাগ্‌যুদ্ধ এবং এর পাশাপাশি একে অন্যকে দিয়ে যাওয়া শুল্ক আরোপের হুমকি চলতে থাকা অবস্থায় ওসাকায় জি ২০ শীর্ষ বৈঠকের বাইরে ট্রাম্প ও সি আলোচনায় বসতে সম্মত হওয়ায় তা আশার ইঙ্গিত দেখাচ্ছে এবং সেদিকে এখন সবাই নজর দিতে শুরু করেছেন।জাপানের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা মিজুহো রিসার্চ ইনস্টিটিউটের করা হিসাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিটি পণ্যের বেলায় ২৫ শতাংশ হারে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করলে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এর ফলে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। জাপানের বেলায় সংকোচনের হার শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলেও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সতর্ক করে দিয়েছে। এর ফলে ওসাকা সম্মেলন চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি সমঝোতা চাইছে সবাই।এদিকে বিশ্বের ২৭টি দেশ ও সরকারপ্রধানের আসন্ন সফরের প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে আছে। জি ২০ উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা পশ্চিম জাপানের কানসাই অঞ্চলে নেওয়া হচ্ছে। ওসাকার মূল সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল চলতি সপ্তাহের শেষ দিক থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং নাগরিকদের পাতাল রেল কিংবা ট্রেনে চলাচলের উপদেশ দেওয়া হচ্ছে। ওসাকার বিভিন্ন স্কুলও আগামী বৃহস্পতিবার থেকে দু দিনের জন্য বন্ধ রাখা হবে। নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের ৩২ হাজার সদস্যকে সার্বক্ষণিকভাবে মোতায়েন রাখা হবে। সেই দায়িত্ব পালনের জন্য দরকার হওয়া পুলিশের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণ করে নিতে সমগ্র জাপান থেকে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ইতিমধ্যে ওসাকায় পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যেকোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি। নিরাপত্তাহীনতার কারণেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ কারণে সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি।আজ সোমবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি পরিচালনার পাশাপাশি মিয়ানমারের ওপর চাপি সৃষ্টির জন্য সব ধরনের আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। আশা করা যায় মিয়ানমার শিগগিরই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে এবং দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হবে।সরকারি দলের আরেক সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট সব প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলমান থাকলেও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে ঐকমত্যের অভাবে নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জোরালো পদক্ষেপ নিতে বিশেষ কোনো রেজল্যুশন নিতে সক্ষম হয়নি।ইসরাফিল আলমের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মানব পাচারের শিকার বিভিন্ন দেশের জলসীমায় উদ্ধারকৃত ২ হাজার ৫৫ জনসহ লিবিয়া, থাইল্যান্ড, ইয়েমেন, জার্মানি ও মিয়ানমার থেকে প্রায় ৪০ হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত আনতে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে ৩৪৩ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বাংলাদেশ মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও ভৌগোলিক কারণে মাদক সমস্যায় পড়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে দেশে অবৈধ মাদক প্রবেশ করে। বর্তমান সময়ের আলোচিত মাদক ইয়াবা আসছে মিয়ানমার থেকে। ভারত থেকে আমাদের দেশে পাচার হয় গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইনজেক্টিং মাদক।’স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন মাদক কারবারির বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা দায়ের করেছে। আর চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে ৬ হাজার ৬৭১ জন মাদক কারবারির বিরুদ্ধে ৬ হাজার ১৫৬টি মামলা দায়ের হয়েছে।এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বহুতল ভবনের আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসের জন্য জাপানের কারিগরি সহায়তায় বিশেষ হেলিকপ্টার সংগ্রহের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ান হেলিকপ্টারস্‌ কোম্পানি থেকে ফায়ার ফাইটিং হেলিকপ্টার কেনার বিষয়ে স্পেসিফিকেশন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াধীন।জামালপুর-৫ আসনের সাংসদ মোজাফ্ফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পুলিশের মঞ্জুরিকৃত মোট জনবল ২ লাখ ১২ হাজার ৭ জন। এর মধ্যে পুলিশ ২ লাখ ১ হাজার ৩৯৩ জন ও নন-পুলিশ ১০ হাজার ৬১৪ জন। প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশের জনবল কম বিধায় বর্তমান সরকার প্রথম মেয়াদে ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয় মেয়াদে অনুমোদিত ৫০ হাজার পদের মধ্যে ৪৮ হাজার ৩০০টি সৃষ্টি সম্পন্ন করা হয়েছে। অবশিষ্ট পদ সৃষ্টির প্রস্তাব বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, শুধু অভিযান চালিয়ে, মামলা দিয়ে ও গ্রেপ্তার করে দেশ থেকে মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী নির্মূল করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের জনসাধারণের সম্মিলিত উদ্যোগ। তাঁর ভাষ্য, জনতার সহযোগিতা ছাড়া উন্নয়নের পথের এ তিনটি বাধা দূর করা সম্ভব নয়।আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ফরিদপুরে ‘মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী’ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশপ্রধান। পুলিশ লাইনস মাঠে এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা কমিউনিটি পুলিশ। এই সভায় মাদক ব্যবসা ও সেবন ছেড়ে দেওয়া ৭৫ জন পুরুষ ও ৮ জন নারীর কর্মসংস্থানের জন্য রিকশা-ভ্যান ও সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর এক অবাক বিস্ময়। এ উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, কিছু কিছু অমানুষ এ উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা আমাদের মাদক দিয়ে, সন্ত্রাস দিয়ে, জঙ্গি দিয়ে ফাঁসিয়ে দিতে চাইছে। তারা চায় না এ দেশের উন্নয়ন হোক।’আইজিপি বলেন, ‘জনগণের সহায়তায় পুলিশ ইতিমধ্যে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, বর্তমানে আমাদের টার্গেট মাদক নির্মূল করা। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। এ যুদ্ধে আমরা জয়ী হতে চাই। এ জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাহায্য চাই। কেননা জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া পৃথিবীতে কোনো দেশের পুলিশ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব তথ্য পাই তার ৯৯ ভাগ তথ্য দেয় জনগণ। এ জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।’আইজিপি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন টেকসই শান্তি। আর টেকসই শান্তি আসে টেকসই নিরাপত্তা থেকে। পুলিশ জনগণকে টেকসই নিরাপত্তা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় তিনি জানান, গত এক বছরে ফরিদপুরে মোট মামলা হয়েছে ৩ হাজার ১৬২টি। অথচ এর মধ্যে শুধু মাদকের মামলাই হয়েছে ১ হাজার ৬৩১টি।এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশে মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ। ফরিদপুরে মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে তিন হাজার। এদের সুপথে আনা ও নির্মূলের ব্যাপারে আমাদের কাজ করতে হবে।’বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফরিদপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া সমাজ থেকে মাদক, জঙ্গি সন্ত্রাস নির্মূল করা সম্ভব নয়। পাশের ঘরে আগুন লাগলে আমাদেরও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। আমরা যদি একজন ব্যক্তিকে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে সরিয়ে আনতে পারি, তবে সেটা হবে সত্যিকারের দেশপ্রেমের কাজ।’সভাপতির বক্তব্যে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খান বলেন, ‘পুলিশের কোনো সদস্য মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমার বিরুদ্ধে যদি এ অভিযোগ থাকে, তাহলে তা আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানান।’সভায় আরও বক্তব্য দেন, ফরিদপুর কমিউনিটি পুলিশের আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহজাহান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মোশার্রফ আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, ফরিদপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মো. আকরামুল হক ফকির প্রমুখ।এর আগে আইজিপি ফরিদপুর পুলিশ লাইনে নারী পুলিশের ব্যারাক, নগরকান্দা থানা ভবন, চন্দ্রপাড়া তদন্তকেন্দ্রের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি পুলিশ টেলিকম ভবন, পুলিশ লাইনস মাল্টিপারপাস হল, চিকিৎসক ও নার্সদের ডরমিটরির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
‘আমি সামছু মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে দিনাজপুরের হিলিতে এসে বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করি। আজ হিলির সাতকুড়িতে মাদক সেবন করতে এসে এলাকাবাসী ও পুলিশের কাছে ধরা পড়ি। মাদক সেবন অপরাধ ও ক্ষতিকর। আর কখনো মাদক গ্রহণ করব না। আপনারা কেউ কখনো মাদক গ্রহণ করবেন না।’ সামছু গতকাল রোববার নিজের ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলছিলেন। পুলিশ জানায়, রোববার রাতে হিলিতে মাদক সেবন করতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ১১ জন। তাঁরা সবাই ফেসবুক লাইভে এসে এভাবে মাদক সেবনের স্বীকারোক্তি দেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে মাদক গ্রহণ না করার শপথ নেন।পুলিশ সূত্র জানায়, আটক ব্যক্তিরা হলেন মাসুদ বিল্লাহ, তুহিন, আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান, আবদুল খালেক, রায়হান কবির, সামছু মিয়া, রহমান সরকার, ফরিদ মিয়া, স্বপন তালুকদার এবং রফিকুল। এঁরা সবাই গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এরা কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ ছাত্র, কেউ সাংবাদিক বলে নিজেদের পরিচয় দেন।হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আখিউল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। সামাজিকভাবে দমন করা না গেলে কখনোই মাদক দমন সম্ভব নয়। অনেক মাদকসেবীর পরিবার, প্রতিবেশী, সহকর্মী জানেন না যে তাঁদের খুব কাছের লোকটি মাদকসেবী। ফলে ওই মাদকসেবীকে ঘৃণা বা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। ফেসবুক লাইভে এসে মাদকসেবীদের প্রতিজ্ঞা একটি সামাজিক প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, হিলি সীমান্তবর্তী শহর হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকসেবীরা সেখানে আসেন। আটক মাদকসেবীদের ফেসবুক লাইভে স্বীকারোক্তি হিলিতে মাদকসেবীদের আনাগোনা কমাবে।হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, এই ১১ জনের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে সোমবার আদালতে নেওয়া হয়। আদালত তাঁদের জামিনের নির্দেশ দিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৮ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার গণমিলনায়তনে সোমবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, গণমিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিরা হলেন আবদুর রাজ্জাক রিংকু, তাজু ভূঁইয়া, মো. রোমেল, সৌরভ হোসেন, মো. পারভেজ, মামুন রশিদ ও ফিরোজ আলম। তাঁরা সবাই যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।এ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়াও আহত হন। আহত লোকজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগের ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ র‍্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের কাজী বাবলু গ্রুপের কর্মীদের সঙ্গে ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মীদের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় উত্তেজিত হয়ে সভাস্থলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে আঞ্চলিক পর্যায়ের শীর্ষ চার কর্মকর্তাকে নিয়ে। আর বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটিতে সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। দুটি কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।আজ সোমবার এই দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম। রফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে আঞ্চলিক শীর্ষ চার সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন রেলওয়ের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (পূর্বাঞ্চল) মো. মিজানুর রহমান। এই কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব) আ. জলিল, চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (সিওপিএস) সুজিত কুমার এবং চিফ সিগনাল অ্যান্ড টেলিকম অফিসার (পূর্ব) ময়নুল ইসলাম। বিভাগীয় কর্মকর্তা পর্যায়ের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে ডিটিও ( কমলাপুর, ঢাকা) মো. ময়নুল ইসলাম। পাঁচ সদস্যে এই কমিটির সদস্যরা হলেন ডিএমই (পূর্ব,চট্টগ্রাম ) শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ, ডিএমও ( কমলাপুর, ঢাকা) আ. আহাদ, ডিএসটিই (কমলাপুর, ঢাকা) আবু হেনা মোস্তফা আলম এবং ডিইএন-২ (ঢাকা) আহসান জাবির।রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুটি তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই দুর্ঘটনায় আজ দুপুর পর্যন্ত চারজনের মৃতদেহ উদ্ধারের তথ্য পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য তিনি সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছেন ।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় ইটভর্তি ট্রাকের চাপায় আওয়ামী লীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। উপজেলার মেদীআশুলিয়া এলাকায় সোমবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুই চালককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী।কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহসীন হোসাইন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।নিহত ব্যক্তির নাম আজাহার পালোয়ান (৫৫)। তিনি মেদীআশুলিয়া পালোয়ানবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আ. ওহাব মিয়া বলেন, আজাহার চাপাইর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজাহার পালোয়ান মেদীআশুলাই বাজার থেকে মোটরসাইকেলে পাশের গ্রামে যাচ্ছিলেন। বেলা একটার দিকে তিনি কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কের মেদীআশুলাই দীঘিরপাড় পৌঁছান। এ সময় পেছন থেকে ইটভর্তি দুটি ট্রাক আজাহারকে অতিক্রম করতে গিয়ে তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ সময় ওই দুই ট্রাকের চালকেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তাঁদের আটক করেন। উত্তেজিত জনতা দুই চালককে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরিবারের আবেদনে পুলিশ আজাহারের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে চালক দুজনের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিরল আচার্য। মেয়াদ শেষের আট মাস আগে পদত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকতা করতে চলে যাচ্ছেন তিনি। বিরলের পদত্যাগের কথা স্বীকার করে রিজার্ভ ব্যাংক আজ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর বিবেচনাধীন। সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল পদত্যাগ করেছিলেন। ৪৫ বছর বয়সী অর্থনীতিবিদ বিরল আচার্যও এবার সেই পথে হাঁটলেন।উর্জিত প্যাটেলের সঙ্গে বিজেপি সরকারের মতপার্থক্যের পর বিরলও পদত্যাগ করবেন বলে একটা খবর রটেছিল। উর্জিত পদত্যাগ করেন গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। তাঁর পর গভর্নর নিযুক্ত হন সাবেক আমলা শক্তিকান্ত দাস। সরকারের ভাবনাচিন্তার সঙ্গে অর্থনীতিবিদদের মিল না হওয়ায় মোদি সরকার রিজার্ভ ব্যাংকের দায়িত্ব আমলার হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শক্তিকান্তর সঙ্গেও বিরলের বনিবনা হচ্ছিল না। দেশের প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ে তাঁদের মতবিরোধ হয়। রিজার্ভ ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগেও তিনি সরব হয়েছিলেন। এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় বিরল বলেছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাকে যে সরকার সম্মান করে না তাদের অর্থনীতির ক্রোধ ও রোষের মুখে আজ বা কাল পড়তেই হবে।’ এই সব কারণে কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল, বিরলও উর্জিতের পথে হাঁটতে চলেছেন। অবশেষে তা সত্য হলো।রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে মোদি সরকারের বিরোধের শুরু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। প্রথম খটাখটি লাগে কংগ্রেস আমলে নিযুক্ত গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গে। তিন বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় দফাতেও গভর্নরের দায়িত্বে থাকতে তিনি রাজি ছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ না দিয়ে মোদি সরকার দায়িত্ব দেন উর্জিত প্যাটেলকে। ডেপুটি হন বিরল আচার্য। বনিবনা তাঁদের সঙ্গেও হলো না। রাজনৈতিক স্বার্থে অর্থনীতিকে ব্যবহার করার এই প্রচেষ্টাই অর্থনীতিবিদেরা মেনে নিতে পারছেন না বলে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা টুইট করে বলেছেন, ‘সরকার বদল হয়। কিন্তু অর্থনীতির বিপর্যয় অব্যাহত। বিজেপির শাসনকালে সত্য তুলে ধরার জন্য যাদের সরে যেতে হয়েছে, সেই তালিকায় বিরল আচার্যের নাম যুক্ত হলো। ৪ জন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, রিজার্ভ ব্যাংকের ২ জন গভর্নর এবং নীতি আয়োগের একজন বড় কর্তা আগেই ইস্তফা দিয়েছেন।’
বাজেট হয় দেশের উন্নয়নের জন্য। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য। কিন্তু সংসদে যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা হচ্ছে ধনী ও ব্যবসায়ীবান্ধব। এখানে শ্রমিকদের জন্য কিছু নেই। কৃষকের জন্য বরাদ্দ নেই। শিক্ষার উন্নতির জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। ঋণনির্ভর এই বাজেটের লক্ষ্য লুটেরাদের পকেট ভারী করা। বাজেটে কর্মসংস্থানের দিকনির্দেশনা নেই।আজ সোমবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন (ডিবিএম)। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিবিএমের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ।মূল প্রবন্ধে প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘দায়সারা গোছের’ ও ‘প্রথাবদ্ধ’ উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এখানে দেশের মূল সমস্যাগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। বৈষম্য কমানোর দিকে নজর দেওয়া হয়নি। মানসম্মত কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাজেট পেশের আগে জনগণের মতামত নেওয়া হয় না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। এমনকি সংসদীয় কমিটিগুলোতেও এ বিষয়ে মমতা চাওয়া হয় না । তাহলে বাজেট আসলে প্রণয়ন করে কে? বাজেটে ধনীদের জন্য সুবিধা দেওয়া হয়। এই নীতি মুক্তিযুদ্ধের দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক । জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, বাজেট হয়েছে লুটেরা শ্রেণির জন্য। সরকার উন্নয়নের নহর বইয়ে দিচ্ছে, ঘরে ঘরে কর্মসংস্থান দিচ্ছে। আরেক দিকে কাজের খোঁজে সাগরে যুবকেরা জীবন দিচ্ছে। ঘরে বসে সমালোচনা করে লাভ নেই, পথে নামতে হবে।সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজ্জেকুজ্জামান রতন বলেন, বাজেট হয়েছে ব্যবসায়ী-শিল্পমালিকদের স্বার্থে। এখানে শ্রমিকদের জন্য কিছু রাখা হয়নি। বাজেটের মূলমন্ত্র হচ্ছে ধনীরা আরও ধনী হবে, গরিবেরা আরও গরিব। এটা গরিব মারার বাজেট। ‘তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এই বরাদ্দে তিন কোটি তরুণের জন্য কর্মসংস্থান কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার সঠিক কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা আবদুল্লাহ আল কাফী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট ধনী, ব্যবসাবান্ধব বাজেট। এর ফলে জনগণের মধ্যে বৈষম্য বাড়বে। এ বাজেটে পোশাকমালিকদের জন্য প্রণোদনা রাখা হয়। কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কিছু বলা হয় না। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা রাখার প্রশংসা করেন সিপিবির এই নেতা।গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাজেট বৈষম্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। সাকি বলেন, বাজেটের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনার চেয়ে ব্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। ১০০ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ৬০ টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে। তাই সরকারের নীতিতে পরিবর্তন না এলে বরাদ্দ বাড়িয়েও লাভ নেই। সরকার প্রতিবছর লাগামহীনভাবে প্রকল্পের ব্যয় বাড়াচ্ছে। এই বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ওপর ভর করে।ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, সংবিধানে অবৈধ উপার্জনের বিরোধিতা করা হয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করা সরকার বারবার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে, এটা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী নয়?
আরও একটা ফিফটি করে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। তবে এর আগে ফিরেছেন সিংহাসনে। এই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের মালিক আবার সাকিব। সাকিবকে সাক্ষী রেখেই গত ম্যাচে সবার ওপরে উঠে যান ডেভিড ওয়ার্নার। নিজের ইনিংসে সাকিব বেশ ভালোমতোই তাড়া করছিলেন ওয়ার্নারকে। কিন্তু ২২ রান দূরত্বে থেকে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচটায়। আজ ৫১ রান করেছেন। একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন। তার আগেই অবশ্য রানের মুকুটটা ফিরে পেয়েছেন। তৃতীয় ফিফটিটাকে তৃতীয় সেঞ্চুরিতে নিয়ে যেতে পারেননি। তবে চার বিশ্বকাপ মিলিয়ে হাজার রান পূর্ণ করে ফেলেছেন। সাকিবের আগে বিশ্বকাপে ১ হাজার রান পূর্ণ করেছেন ১৮ জন। আজকের ৮৩ রানের ইনিংসটি দিয়ে নয় থেকে মুশফিক উঠে এসেছেন ছয়ে।  এই বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানব্যাটসম্যানম্যাচরানগড়স্ট্রাইক১০০/৫০সাকিব আল হাসান৬*৪৭৬৯৫.২০৯৯.১৬২/৩ডেভিড ওয়ার্নার৬৪৪৭৮৯.৪০৮৭.৩০২/২জো রুট৬৪২৪৮৪.৮০৯২.৭৭২/৩অ্যারন ফিঞ্চ৬৩৯৬৬৬.০০১০৯.৬৯১/৩কেন উইলিয়ামসন৫৩৭৩১৮৬.৫০৮০.৫৬২/১মুশফিকুর রহিম৬*৩২৭৬৫.৪০৯২.৩৭১/২রোহিত শর্মা৪৩২০১০৬.৬৬৯৪.৯৫২/১এউইন মরগান৬২৭০৫৪.০০১২৪.৪২১/১বিরাট কোহলি৪২৪৪৬১.০০১০২.০৯০/৩স্টিভ স্মিথ৬২৪৪৪০.৬৬৮৯.০৫০/৩
আমার এক ফেসবুক বন্ধু অনুরোধ করেছিলেন, আমার বর্তমান কর্মসূত্রে আমি যেখানেই যাই, যেন তাঁর জন্য ছবি তুলি। কিছুদিন আগে আমি একটি স্কুলে গিয়েছিলাম। হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে–কলমে নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের কৌশল শেখাতে।শেখানোর এক ফাঁকে ঘণ্টাখানেকের বিরতি ছিল। এই বিরতিতে ভাবলাম আমার বন্ধুর অনুরোধ রক্ষা করি। অনুরোধ রক্ষার সময় আমি লক্ষ করলাম, নিজের অজান্তে আমি বাংলাদেশের দৃষ্টি দিয়ে স্কুলের প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় দেখতে শুরু করেছি। আর বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও আয়োজনের সঙ্গে আমেরিকার শিক্ষা কার্যক্রমের পার্থক্য বিবেচনা করছি।যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলো কীভাবে পরিচালিত হয়, এ নিয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল বহু আগে। কিন্তু লিখতে পারিনি। নিজের বাচ্চাকে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ছিলাম একজন অভিভাবকের ভূমিকায়।কিছুদিন থেকে হাইস্কুল ড্রাইভিং এডুকেশন প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মিশেছি ও কথা বলেছি। অনুভব করেছি, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদীক্ষায় প্রণোদনার বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে আমাদের স্কুল-কলেজগুলোতে এই প্রণোদনার বিষয়টি কতটা উপেক্ষিত থাকে।প্রণোদনা ছাড়াই আমরা আমাদের সন্তানদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ফল আশা করি। বিদ্যালয়ে শিক্ষক থেকে বাড়িতে অভিভাবক পর্যন্ত সবাই সন্তানকে কেবল ডাক্তার-প্রকৌশলী-উকিল-আমলা বানাতে চাই। কেবল মানুষ বানানোর আয়োজন ছাড়া। ‘মানুষ’ বানাতে চাইলে প্রণোদনা দিতে হয়। আমরা কাউকে, এমনকি নিজের সন্তানকেও প্রণোদনা দিতে অভ্যস্ত নই।সেদিন আমি যে স্কুলে গেলাম, এটির নাম ব্রুস্টার হাইস্কুল। আমার বাসা থেকে ৪০ মিনিটের পথ। ৫০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। আগের দিন ডজনখানেক একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সেদিন দিতে হবে অন্তত ছয়জনকে।আমি স্কুলের মূল দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকেছি। একজন অভ্যর্থনাকর্মী আমাকে স্বাগত জানালেন। এরপর আমার বন্ধুর অনুরোধ রক্ষার্থে আমি মুঠোফোনে কিছু ছবি তুলছি।প্রথম যে ছবিটা তোলার জন্য স্কুলের এক শিক্ষিকাকে অনুরোধ জানালাম, সেটি নিজের। সাধারণত আমি শার্টের সবগুলো বোতাম লাগিয়ে চলাফেরা করি। সেদিন বসন্তের বিকেলে চনমনে বাতাসে ওপরের বোতামটা কখন যে খুলে ফেলেছি, তা নিজেই খেয়াল করিনি! ছবি তোলার পর ঠাওর হলো।যাক গে, নিজের মুঠোফোনে প্রথম যে ছবিটা তুললাম, সেটি স্কুলের পারফর্মিং আর্ট অর্থাৎ ললিতকলায় এতকাল যারা ভালো করেছে তাদের কাজের স্বীকৃতি। সেগুলো যেমন ড্রামা, বেহালা বাদন, গিটার বাদন, ব্যান্ড-ড্রাম, গান, মিউজিক ইত্যাদি।এরপরের ছবিটি এতকাল যারা খেলাধুলা, ফিল্ড ট্র্যাক ইত্যাদিতে পুরস্কার পেয়েছে তাদের স্বীকৃতি। বলে রাখা ভালো, স্কুলে প্রবেশের এই মেইন লবিটির নাম রাখা হয়েছে ‘হল অব অনার’। যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব স্কুল, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, হাইস্কুল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়, সবার প্রবেশমুখেই দেখা যাবে হল অব অনার। সঙ্গে দেখা যাবে দেশটির জাতীয় পতাকা হয় সিলিং থেকে ঝোলানো, নয়তো ঢাউস সাইজের কোনো ফলকে।এবার আমি লবি থেকে দরজা ঠেলে বাইরে এলাম। একটি মজার জিনিস লক্ষ করলাম, কয়েকটি টাইম ক্যাপসুল। এসব ক্যাপসুলের ভেতর নিশ্চয় মজার কিছু লুকিয়ে আছে। এগুলো স্থাপন করেছে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচ।একটি টাইম ক্যাপসুল খোলা হবে ২০৪৩ সালে। আরেকটি ২০৫৪ সালে। হয়তো দেখা যাবে ক্যাপসুলের ভেতর লুকিয়ে আছে এক হাজার ডলারের একটি রাষ্ট্রীয় বন্ড। ৫০ বছর পর এর মূল্যমান দাঁড়াবে ১ লাখ ডলারে। যে অর্থে সে সময় হয়তো আরও দশজন ছাত্রকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য বৃত্তি দেওয়া যাবে।এটি একটি গ্রামের হাইস্কুল। কিন্তু এখানকার ছাত্রছাত্রীরাও ২০০১-এর নাইন ইলেভেনকে স্মরণ করে স্মৃতিচিহ্ন রেখেছে। পাশাপাশি দুটি তক্তাপোষ। এই আসনগুলো স্মৃতিচিহ্ন হয়ে আছে নাইন ইলেভেন স্মরণে। এর পাশেই মার্বেল পাথরের আসন। দান করেছে ১৯৫৬ সালের স্কুল ব্যাচ। তাঁদের অনেকের বয়স নিশ্চয় এখন ৮০ বছরের বেশি।পাশাপাশি আরেকটি স্মৃতিপাথর। ২০১২ সালে কানেকটিকাটের স্যান্ডিহুক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুটিংয়ে নিহত ২৮ জনের স্মরণে।আমেরিকার স্কুলছাত্রদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ যায় পাবলিক স্কুলে। ২৫ শতাংশ প্রাইভেটে। পাবলিক স্কুল পরিচালনা তহবিলের ৮ শতাংশ জোগায় ফেডারেল সরকার। বাকি ৯২ শতাংশের মধ্যে ৪৭ শতাংশ আসে রাজ্য ও ৪৫ শতাংশ স্থানীয় সরকারের বাজেট থেকে। স্থানীয় সরকার এই অর্থ জোগান দেয় প্রোপার্টি ট্যাক্স থেকে। যেমন আমার ২ লাখ ডলারের বাড়ির জন্য প্রতিবছর আমাকে প্রোপার্টি ট্যাক্স দিতে হয় প্রায় ৬ হাজার ডলার।একটি ছবিতে দেখতে পাবেন, স্কুলের প্রবেশমুখে বিছানো পাথুরে ইটে মানুষের নাম লেখা। তার মানে স্কুলে ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান ও অন্যান্য কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিতে এরা দান করেছে। যদিও এটি একটি পাবলিক স্কুল। এর দায় কেন্দ্রীয় কিংবা রাজ্য সরকারের। কিন্তু স্থানীয় কমিউনিটিকেও যুক্ত করা হয়েছে স্কুল পরিচালনায়। বেশির ভাগ ইটে কোনো নাম লেখা নেই। তার মানে ভবিষ্যৎ ডোনারদের নাম লেখা হবে তাতে।যুক্তরাষ্ট্রে প্রাইভেট স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। এদের ৭৮ শতাংশ আবার মাদ্রাসা অর্থাৎ ক্যাথলিক ধর্মীয় স্কুল। পরিসংখ্যানে জানা যায়, প্রাইভেট স্কুলের লেখাপড়ার মান পাবলিক স্কুলের চেয়ে ভালো। এমনকি শিক্ষকের যোগ্যতার ব্যাপারেও।আবার প্রাইভেট স্কুলগুলো ছাত্রদের কাছ থেকে কী পরিমাণ টিউশন ফি আদায় করবে তা–ও সিলিং করে দেওয়া আছে। এটি যেমন বছরে ৫ হাজার ডলার থেকে ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত। তবে গড়ে এর পরিমাণ ১০ হাজার ৭৪০ ডলার।লেখাপড়ার মান যদি এভাবে দেখা হয়, তাহলে বলতে হবে পাবলিক স্কুল থেকে ৪০ শতাংশ ছাত্র উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। প্রাইভেট স্কুল থেকে যায় ৬৪ শতাংশ। ক্যাথলিক স্কুল থেকে এর পরিমাণ আরও বেশি অর্থাৎ ৭৮ শতাংশ। প্রাইভেট স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন রেট ৯৫ শতাংশ হলে পাবলিক স্কুলে সেটি প্রায় ৮০ শতাংশ।এ লেখার ইতি টানছি একটি পরামর্শ রেখে। পরামর্শটি হলো, আমাদের বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে স্থানীয় কমিউনিটিকে জড়িত করা খুব প্রয়োজন। অভিভাবকেরা স্কুল কার্যক্রমে অংশ না নিলে পুরো কার্যক্রমই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।আমি মনে করতে পারি, আমাদের হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়টি অনেক বনেদি। অর্থাৎ ১৮৮৩ সালে স্থাপিত। কিন্তু কোনো একটি দিনের জন্য আমার বড় ভাই কিংবা অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরামর্শ শোনা তো অনেক দূরের পথ।আর ছাত্রছাত্রীদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি শিক্ষকেরা কখনো আমলে নেন বলে মনে হয় না। তাঁরা সব সময় তাকিয়ে থাকেন সরকারের দিকে কিছু পাওয়ার আশায়। অথচ কমিউনিটিকে যুক্ত করলে স্কুল পরিচালনা আরও সহজ ও প্রাণবন্ত হয়। এই স্কুলগুলো থেকেই বেরিয়ে আসতে পারে আমাদের ভবিষ্যৎ–নেতৃত্ব।
৪১ বছর বয়সে আইনুদ্দিন মিয়া একটা বেআইনি কাজ করে বসলেন। বউয়ের জন্য একটা সতিন নিয়ে এসে বললেন, ‘তোমার বান্ধবী আনলাম গো বউ।’বউ সকালেও বুঝতে পারেনি, আজ রাতেই তার বিছানা আলাদা হয়ে যাবে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে নতুন পাঞ্জাবি-পায়জামা আর আতর লাগানোর ধুম দেখে তার কিছু আঁচ করার দরকার ছিল। কিন্তু তার মাথায় অত বুদ্ধি কই?সুখেরই তো সংসার। একমাত্র ছেলে। বয়স মোটে ৭। তাদের বিয়ের বয়স ১০। আর শরিফার (বউ) মাত্র ৩০ বছর বয়স। কী এমন বয়স!যাকে বউ করে আনছে, সে ২৩ বছরের মোটাসোটা পালোয়ান টাইপ। তবে চেহারা সুন্দর আছে। একবার যদি জড়িয়ে ধরে, নড়ার গতি থাকবে না চিকনা শরিফার। এই ভেবে হাসি পায় শরিফার।আইনুদ্দিনের মোটা বউ পছন্দ। এই জন্যই বিয়ে করল নাকি! কখনো কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস হয়নি শরিফার। আজও নয়।‘বড় বউ (একদিনেই বউ থেকে বড় বউ) আলমারি থেকে তোমার কাপড় আর শাহাদতের কাপড় নিয়ে পাশের রুমে রাখো। তোমার ছোট বইনরে জায়গা করে দেও।’ স্বামী আইনুদ্দিন অনেকটা মিষ্টি সুরেই শরিফাকে আদেশ করেন, অনুরোধের মতো করে।মুখ কালো করে শরিফা সব কাপড় অন্য রুমের আলমারিতে নিয়ে যায়।আইনুদ্দিন আবার বলে ওঠেন, ছোট বউয়ের মুখ দেখে কী দিলা বড় বউ?শরিফা কথা শুনে লজ্জা পেয়ে তোতলাতে থাকে। কিছু না ভেবেই তার হাতের বিয়ের আংটিটা ছোট বউয়ের কড়ে আঙুলে পরিয়ে দেয়।ওই রুম থেকে চলে যাওয়ার সময় ছোট বউ ওরফে জমিলা ধীরে ধীরে বলে, মনে কষ্ট নিয়েন না বুবু। ছোট বোন মনে কইরা মাফ দিয়েন।না না, মনে কষ্ট কেন নিব (হাসি মুখ করে বলে শরিফা)। তা তোমার নাম কী?জমিলা।শরিফা মনে মনে ভাবে, মেয়ে খারাপ হবে না তেমন। আর কপালে খারাপি থাকলে ভালো মানুষও খারাপ হয়ে যাবে। সব তকদিরের খেলা!রাতে শাহাদাতের কান্না কে দেখে...! বাপজানের লগে থাকুম, বাপজানের লগে...। চিল্লাতেই আছে। ছোট মাকে বলে, এই মুটি তুই সর...এইটা আমার বিছানা। আইনুদ্দিন আর না পেরে থাপ্পড় দিয়ে ছেলেকে রুম থেকে বের করে দেন।এক থাপ্পড়ে ছেলে চুপ। বাপের এমন রূপ সে দেখে নাই। হিংস্র বাঘও মনে হয় এতটা রাগে না।কিসের জন্য এত রাগ। সে তো বাপের সঙ্গে থাকতে চাইছে। খারাপ কী করল? প্রতিদিনই তো থাকে। মাথায় ঢোকে না ছোট্ট শাহাদতের।আর শরিফার মনে হলো সংসারে ভাঙন ধরছে। সতিন আনায় অত কষ্ট লাগে নাই। যতটা তার ছেলের গালে থাপ্পড়টা দেওয়ায় লাগছে। কেমন লাল হয়ে পাঁচ আঙুল বসে আছে। শরিফার কলিজায় যেন জোরে টান পড়েছে, ছেলের গালে স্বামী চড়টা যখন মারছিল। ছেলেকে কোলে নিয়ে শরিফা শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকে। ছেলে আর কাঁদে না। কিন্তু যতক্ষণ ঘুম আসে না, ফোঁপাতে থাকে। মাঝরাতে ঘুমের ঘোরেও।শরিফা আশা করতে থাকে, আইনুদ্দিন বাসর সেরে একবার রাতে এসে ছেলেকে দেখে যাবে, শরিফা নিরাশ হয়। হায়, ১০ বছরের বউ আর ৭ বছরের ছেলে মুহূর্তেই কেমনে পর হয়ে গেল! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে প্রায় নির্ঘুম রাত কাটে শরিফার।পরদিন পুরোনো বউয়ের মতো নতুন বউ ঘরের কাজে নেমে পড়ে। শরিফা বাধা দিলে শোনে না।বুবু, ঘরটা এখন একলা তোমার না। আমারেও করতে দাও।ঠিক আছে, করো। হার মানে শরিফা।শরিফা সামনের দরজা দিয়ে জগ হাতে পানি আনতে যায় কল থেকে। ওই রুমে আইনুদ্দিন কোরআন তিলাওয়াত করে নিচে পাটি পেতে বসে।পানি নিয়ে আসলে জমিলা বলে, বুবু...এরপর থেকে পেছনের দরজা দিয়ে পানি আনতে যায়েন, পুরুষ মানুষ বসা থাকে। দেখতে খারাপ লাগে!শরিফা কী উত্তর দেবে বুঝতে না পেরে, হু বলে তাড়াতাড়ি পাশের রুমে ঝরনাধারায় আসা চোখের পানি মুছতে যায়। ওর নিজের স্বামী একদিনে পুরুষ মানুষ হয়ে গেল! বুকটা ভেঙে যেতে চায় তার। ১০ বছরে আইনুদ্দিন তো কখনো মানা করে নাই।শরিফা বুঝতে পারে, জমিলা চায় না সে স্বামীর আশপাশে যাক।শাহাদতের পড়ার টেবিলটা সামনের রুমেই। ছোট ছেলে, পাঁচ ছয়টা বই, দুই তিনটা খাতা, তাও ভালোভাবে গুছিয়ে রাখতে চায় না। জমিলা এসে বকা দেয়, এত বড় ছেলে বই গুছাও না ক্যান?তোমার দরকার হলে তুমি গোছাও। শাহাদত জবাব দেয়।বেয়াদব, গোছাতে না পারলে তোদের খাটের নিচে নিয়ে রাখ। এই ঘরে এসব চলবে না। জমিলা রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলে।শরিফা দৌড়ে এসে বই গুছিয়ে ছেলেকে ধমক দেয়। সে ঘরে শান্তি চায়।জমিলার নাইওরের সময় হয়। কিন্তু সে বুবু আর শাহাদত ছাড়া কিছুতেই বাপের বাড়ি যেতে রাজি হয় না। আইনুদ্দিন তো মহাখুশি। ভাবে, কত ভালোবাসা বড় বউয়ের জন্য।কিন্তু শরিফা বুঝতে পারে, শরিফা যাতে জমিলার অবর্তমানে আইনুদ্দিনের ঘনিষ্ঠ না হয় তাই এত পিরিত।এক সপ্তাহর জন্য পাশের ঘরের চাচি এসে রাঁধাবাড়া করে দেয় তাদের অনুপস্থিতিতে।এরপর সামান্য ছোটখাটো ব্যাপার নিয়েই জমিলা ঝগড়া বাধাতে চায়। সারাক্ষণ মা ছেলের দোষ খোঁজে। এবার ব্যাপার আইনুদ্দিনের চোখেও পড়ে। সে ডেকচি আলাদা করে দেয়। মা ছেলের জন্য মাসিক একটা খরচ দিয়ে আলাদা চুলায় রেঁধে খেতে বলে।একদিন কালবৈশাখী ঝড় ওঠে। সারা রাত বৃষ্টির চাইতে বাতাসের তেজ বেশি। কারেন্ট চলে যায়। ল্যাম্প জ্বালিয়ে সবাই বসে আল্লাহ আল্লাহ করতে থাকে। বড় বড় গাছের ডালপালা ভাঙার মড়মড় শব্দ। গাছ পড়ার ধড়াম ধড়াম আওয়াজ অন্ধকার পরিবেশটাকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।কেমন ভয় লাগে শাহাদতের। মাকে জড়িয়ে ধরে থাকে সে।সকালে দেখে তাদের পুরোনো কড়ই গাছ উপড়ে পড়ে গেছে গোড়াসহ। শাহাদত গাছের ওপর উঠে খেলতে থাকে। আইনুদ্দিন ভেবে নেয় ফার্নিচার বানাবে। তাই শুনে শাহাদত খুব খুশি। দেখবে সে, কেমনে গাছ থেকে সুন্দর সুন্দর জিনিস বানাবে।বাপজান, কী বানাবে?একটা শোকেস আর একটা খাট।আমি কোনটা নিব?তোর যেটা ইচ্ছা।তাইলে বাবজান খাট নিব, মায়ের খাট বেশি পুরান।আইচ্ছা তোর যেটা ভালো লাগে।কিন্তু শাহাদত কিছু দেখতে পায় না। ওর মন খারাপ। বাপজান ফার্নিচারের দোকানে ঠেলা করে গাছ পাঠিয়ে দিছেন। তবে সে খাটের অপেক্ষা করে। নির্দিষ্ট দিন কী সুন্দর খাট আর বড় শোকেস আসে। দুইটাই ছোট মার ঘরে ঢোকে। শাহাদত চিল্লায় ওঠে, বাপ বলছে খাট আমার মায়ের জন্য...।চুপ থাক, আমি বলে বানিয়েছি, আর সে বলে তার মায়ের জন্য! জমিলা উত্তর দেয়।তখনই তাদের ঘরে আসে জমিলার বড় ভাই। বোনকে দেখতে। ঘটাঘটি শুনে কী হয়েছে জানতে চান তিনি। শাহাদত বিচার দেয়।দেখ মামা, বাপজান বলছে খাট আমার জন্য আর শোকেস ছোট মায়ের।তো সমস্যা কী?ছোট মা দুইটাই রেখে দিছে।কেন! কি রে জমিলা, খাট শাহদাতরে দিয়ে দে। ভাই জমিলাকে বলেন।না। উত্তর দেয় জমিলা।আমার কথায় সে বানায়ছে কেন দিব?দিবি না?না।জমিলার বড় ভাই রাগ করে চলে যাওয়ার সময় শাহদাতকে বলে যান, বিচার করতে পারলাম নারে ভাগনে। মাফ করে দিস। তোর বাপকে বলে নিতে পারিস কিনা দেখিস।সেই খাট কিংবা শোকেস কোনোটা শাহাদত বা শরিফা পায়নি।মাস শেষে ইলেকট্রিক বিল আসে ২০০ টাকা। জমিলা শরিফার কাছে গিয়ে ৭০ টাকা বিল চায়।কিসের বিল? শরিফা জানতে চায়।বারে, তোমরা মা-ছেলে ফ্যান চালাও, বাতি জ্বালাও, বিল দিবা না? টাকা তো তোমাদের আলাদা দেয়। দেয় না?শরিফা নিজের ঘরে এখন ভাড়াটিয়া। বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে সত্তর টাকা বের করে দেয়।...ফারহানা বহ্নি শিখা: পশ্চিম লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
সিডনিতে রংধনুর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাঅস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হয়ে গেল রংধনু অজি-বাংলা কালচারাল সোসাইটির বার্ষিক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। গত শনিবার (২২ জুন) সিডনির লাকেম্বার সিনিয়র সিটিজেন সেন্টারে স্থানীয় শিল্পীদের নাচ, গান, কবিতা ও নাটিকায় ভরপুর এ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে স্থানীয় রাজনীতিকসহ বাংলাদেশি ও অন্য কমিউনিটির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
‘এই রিয়েলিটি শোর ফরম্যাট আমার একদম পছন্দ না। এন্ডেমোল শাইন ইন্ডিয়া আর কালারস টিভির লোকজন কয়েকজনকে বেছে বেছে একটা বাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। আর তারা ওই বাড়ির সদস্য হিসেবে একে অপরের সঙ্গে বাস করা শুরু করে। এসব মোটেই ভালো লাগে না।’এই তো মাসখানেক আগে কালারস টিভির জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’ নিয়ে সালমান খান এই মন্তব্য করেছিলেন। ২০১২ সালে বিগ বসের ষষ্ঠ সিজন থেকে টানা ৭টি সিজন এই অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে আসছেন সালমান খান। আর যখন ‘বিগ বস ১৩’–এর জন্য সবকিছু চূড়ান্ত করা হচ্ছে, তখন হঠাৎ বেঁকে বসে এই মন্তব্য করলেন। বললেন, ১৩তম সিজন উপস্থাপনা করার কোনো ইচ্ছা নেই তাঁর।তবে সালমান খানকে ছাড়তে চান না আয়োজকেরা। যেভাবেই হোক, বলিউডের ‘ভাইজান’কে থাকতেই হবে। তার জন্য যা যা প্রয়োজন, সবই করা হবে। আর তাই সে ‘না’কে হ্যাঁ করাতে প্রযোজকেরা খরচ করলেন ৪০০ কোটি রুপি। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন, ৪০০ কোটি রুপি!গত বছর সালমান খান যেখানে প্রতিটি এপিসোডের জন্য ১২ থেকে ১৪ কোটি রুপি করে নিয়েছিলেন। মাত্র এক বছরে তাঁর দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি রুপিতে। তা ছাড়া প্রথমবারের মতো এই শোর প্রযোজনার সঙ্গেও নাকি যুক্ত হবেন তিনি। এর আগে ‘নাচ বালিয়ে ৯’ ও ‘দ্য কপিল শর্মা শো’তেও সালমান খানের বিনিয়োগ ছিল। যেই শো আর উপস্থাপনাই করতে চাচ্ছিলেন না, সেই শো দিয়েই নিজের প্রযোজনাকে আরও এক ধাপ উচ্চতায় নিয়ে গেলেন এই অভিনেতা।‘বিগ বস ১২’ সিজনটি বিগ বসের ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। গতবারই সব থেকে কম টিআরপি ছিল জনপ্রিয় এই রিয়েলিটি শোর। তাই প্রথম থেকেই বলা হচ্ছে, এবার একেবারে নতুন রূপে ফিরে আসবে বিগ বস। সব শ্রেণির দর্শককে যুক্ত করার জন্য এবার বিভিন্ন সেক্টর থেকে তারকা প্রতিযোগীদের আনা হবে। থাকবেন না কোনো সাধারণ প্রতিযোগী।এই বছরের সম্ভাব্য প্রতিযোগীরা হলেন: জিৎ (বাংলা ছবির তারকা)‌, জরিন খান (‌বলিউড তারকা)‌, চাঙ্কি পান্ডে (বলিউড তারকা)‌, রাজপাল যাদব (‌বলিউড তারকা)‌, ওয়ারিনা হুসেন (মডেল), দেবলীনা ভট্টাচার্য (‌টেলিভিশন তারকা)‌, অঙ্কিতা লোখান্ডে (‌টেলিভিশন তারকা)‌, রাকেশ বশিষ্ঠ (টেলিভিশন তারকা), মাহিকা শর্মা (বড় ও ছোট পর্দার তারকা), ড্যানি ডি (পর্নো ছবির তারকা), চিরাগ পাশোয়ান (রাজনীতিবিদ রাম বিলাস পাশোয়ানের ছেলে)‌, বিজেন্দ্র সিং (বক্সার)‌, রাহুল খান্ডেলওয়াল (‌মডেল)‌, হিমাংশ কোলি (‌মডেল)‌, মহিমা চৌধুরী (‌বলিউডের সাবেক তারকা)‌, মেঘনা মল্লিক (টেলিভিশন তারকা), মহাক্ষয় চক্রবর্তী (অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে), দয়ানন্দ শেঠি (বড় ও ছোট পর্দার অভিনেতা)‌, ফৈজি বো (রিয়েলিটি শো তারকা), ঋতু বেরি (ফ্যাশন ডিজাইনার)‌, সোনল চৌহান (মডেল, সংগীতশিল্পী, বড় পর্দার তারকা)‌, ফাজিলপুরিয়া রাহুল যাদব (সংগীতশিল্পী)‌ ও সিদ্ধার্থ শুক্লা (ছোট পর্দার তারকা)।কিন্তু এই নামগুলো এখনো চূড়ান্ত নয়। এখান থেকে ১০ জনকে বাদ দেওয়া হবে বলে কেউ নিজেকে প্রতিযোগী হিসেবে নিশ্চিত করে বলেননি। এই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই শো।
ছুটি হলে রোজ ভাসাই জলে কাগজ-নৌকা খানি...‘বিনি সুতোয়’ জয়া আহসান, ঋত্বিক চক্রবর্তী। পরিচালক অতনু ঘোষ এমন মন্তব্য করে তাঁর পরবর্তী চলচ্চিত্রের প্রথম ছবিটি প্রকাশ করলেন নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে। সেখানে দেখা যাচ্ছে এ দেশের জয়া আহসান এবং পশ্চিম বাংলার অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীকে। ছবিতে জয়াকে দেখা গেল আটপৌরে বাঙালি নারী রূপে। সিঁথিতে সিঁদুর, শাড়ি, চশমা, টিপের সৌম্য উপস্থিতি। রূপসজ্জার বাড়াবাড়ি নেই। জয়ার ছবিটা দর্শকের দারুণ পছন্দ হয়েছে বলে প্রমাণ মিলল ছবির নিচের মন্তব্যগুলোতে।এটিই অতনু ঘোষের পরিচালনায় ‘বিনি সুতোয়’ ছবির প্রথম দর্শন। যে ছবিতে সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পর এবার অতনুর সঙ্গে কাজ করলেন জয়া।জানা গেছে, এ ছবিতে শুধু অভিনয় নয়, গানও গেয়েছেন জয়া। অতনুর পর্দায় গল্প বলার মুনশিয়ানা তাঁর অন্যান্য ছবির মতো এ ছবিকেও আলাদা মাত্রায় পৌঁছে দেবে বলে মনে করেন টালিপাড়ার একটা অংশ।জানা গেছে, ‘বিনি সুতোয়’ ছবির গল্প শুরু হবে টেলিভিশনের এক রিয়েলিটি গেম শোর মধ্য দিয়ে। সেখানে অডিশন দিতে আসে কাজল সরকার আর শ্রাবণী বড়ুয়া। অডিশন দিয়ে ফেরার পথে ঘটনাচক্রে দুজনের আলাপ হয়। তাদের মধ্যে একটা যোগসূত্র তৈরি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দুজন পরস্পরকে ঠিক চিনতে পেরেছে? এমন ভাবনা নিয়ে ‘বিনি সুতোয়’ ছবির গল্প এগিয়ে যায়। এখানে কাজলের ভূমিকায় অভিনয় করছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী আর শ্রাবণীর ভূমিকায় জয়া আহসান।এর আগে ভারতীয় পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে অতনু ঘোষ বলেছিলেন, ‘আমাদের চেতনার বিভিন্ন স্তর আছে, যার অনেকগুলো থাকে অবচেতনে। মস্তিষ্কের সঙ্গে সেই সব স্তরের অনুভূতির কোনো গ্রন্থি থাকে না। হঠাৎ হঠাৎ সেই অনুভূতিগুলো প্রকাশ হয়ে পড়ে। আর তারপরই আমরা ভাবি, এটা তো আমার করার কথা নয়, কেন করলাম? এই হঠাৎ করে অনুভূতির প্রকাশ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও হয়। কিছু মানুষ আছেন যাঁদের প্রাত্যহিক জীবনচর্চার সঙ্গে তাঁর সত্তার কোনো মিল থাকে না। ফলে এ রকম দুটি মানুষের মধ্যে যখন সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন সেটাও একটা গ্রন্থিবিহীন বিনি সুতোর সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কথাই বলব আমার এই নতুন ছবির মধ্য দিয়ে।’‘বিনি সুতোয়’ ছবির ভাবনা নিয়ে অতনু ঘোষ বলেন, ‘প্রতি মুহূর্তে আমরা বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে আসি। তাঁদের সঙ্গে আলাপ হয়, একটা ধারণাও তৈরি হয়। কিন্তু তার সবই মেলে? সেটাই আমার এই ছবির ভাবনার উৎস। আমরা অন্যদের কাছে নিজের অন্তরকে গোপন করি, এমনকি নিজের কাছেও আসল সত্যিটা লুকিয়ে রাখি।’ছবির মুখ্য দুটি চরিত্রে যাঁরা অভিনয় করবেন, তাঁদের নিয়ে অতনু ঘোষ বললেন, ‘ঋত্বিক আর জয়া, দুজনই এই সময়ের অন্যতম সেরা দুই সংবেদনশীল অভিনয়শিল্পী। কাজেই তাঁদের একসঙ্গে একই ছবিতে নির্বাচন করলে কী ম্যাজিক তৈরি হয়, সেটা জানার একটা লোভ ছিল। চিত্রনাট্য পড়ে তাঁরা দুজনেই রাজি হয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে তারিখ পেতেও অসুবিধা হয়নি। এখন আমরা সেই ম্যাজিক দেখার অপেক্ষা।’ছবিতে আরও অভিনয় করবেন চান্দ্রেয়ী ঘোষ, কৌশিক সেন, রেশমি সেন, খেয়া চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
পুলওয়ামায় পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলায় ভারতের ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন। এ আত্মঘাতী হামলার প্রতিশোধে পাকিস্তানে ঢুকে বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত। বালাকোট হামলার পরপরই ভারত সীমান্তে পাকিস্তানের একটি ডুবোজাহাজ হঠাৎই উধাও হয়ে যায়। সেই ডুবোজাহাজ হামলা চালাতে পারে—এ আশঙ্কায় ভারত হন্য হয়ে সেই ডুবোজাহাজ খুঁজেছিল।ভারতীয় নৌবাহিনীর ধারণা, গোপনে হামলা চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে ডুবোজাহাজকে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিল ইসলামাবাদ। তাই সেটিকে আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।ইন্ডিয়া টুডে ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, পুলওয়ামা-বালাকোট পর্বে ‘পিএনএস-সাদ’ নামে পাকিস্তানের একটি ডুবোজাহাজ দিল্লিকে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ফেলেছিল। নৌবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বালাকোট হামলার পরই পাকিস্তানের অত্যাধুনিক সাবমেরিন ‘পিএনএস সাদ’ হঠাৎই উধাও হয়ে যায়। প্রায় ২১ দিন ধরে সেটির খোঁজ চালিয়েছিল ভারতীয় নৌবাহিনী।নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তারা জানান, পিএনএস সাদের এই রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা ভারতীয় নৌবাহিনীকে সক্রিয় হতে বাধ্য করে। তিনি বলেন, ‘করাচি–সংলগ্ন যে অঞ্চল থেকে পিএনএস সাদ উধাও হয়েছিল, সেখান থেকে গুজরাট উপকূল পৌঁছাতে মাত্র তিন দিন সময় লাগে। আবার মুম্বাইয়ে অবস্থিত নৌবাহিনীর ওয়েস্টার্ন সদর দপ্তর পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র পাঁচ দিন। তাই জাতীয় সুরক্ষা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করেছিলাম আমরা।’নিখোঁজ পাকিস্তানের সাবমেরিনটি খুঁজে পেতে বিশেষ অ্যান্টি-সাবমেরিন রণতরি ও যুদ্ধবিমানগুলোকে কাজে লাগায় ভারত। পি-৮ আই বিমানগুলোকে ব্যবহার করে ভারত। এ ছাড়া পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন আইএনএস চক্র, স্করপেনি ক্লাস সাবমেরিন আইএনএস কালভারিকে পাকিস্তানি জলসীমা–সংলগ্ন এলাকায় মোতায়েন করে ভারতের নৌ সেনারা। বালাকোট হামলার পর অনেক খোঁজাখুঁজিতে ২১ দিন পর পাকিস্তানের পশ্চিম দিকে পিএনএস সাদের খোঁজ মেলে।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের নীতিমালা বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে আজ সোমবার থেকে কর্মচারীরা আবারও অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন। কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী বান্ধব পদোন্নতি নীতিমালা বাস্তবায়ন, ৫৮ জন কর্মচারীর ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এবং মাস্টার রোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করণ।||উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের এই আন্দোলন আড়াই মাস আগেও পালন করেছেন কর্মচারীরা।আজ কর্মবিরতি চলাকালে কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে রেজিস্ট্রার কক্ষের সামনে সমবেত হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। কর্মচারীরা জানান, ৩৪৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ২৮৮ জনকে বকেয়া পরিশোধ করা হলেও ৫৮ জন কর্মচারীকে ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৫৮ জনের বকেয়া আটকে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা করছেন।কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুর আলম বলেন, গতকাল রোববার কর্মবিরতি ঘোষণার ডাক দিয়ে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন শুরু করা হয়েছে।জানতে চাইলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কর্মচারীদের এসব দাবি আগের উপাচার্যের আমলের। এরপরও আমি চেষ্টা করছি তাদের দাবিগুলো সমস্যা সমাধানে। তাদের তিনটি দাবিই প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
উপযুক্ত সম্মান দিয়ে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা নিমন্ত্রণ করেনি, এমন অভিযোগ এনে ক্ষোভে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার এক ব্যক্তির আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। রোববার সন্ধ্যার এ ঘটনায় সোমবার একটা অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম আলাউদ্দিন (৪১)। তিনি উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের লাউবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।পুলিশ ও আত্মহননকারী ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা যায়, এলাকার রীতি অনুসারে প্রতিবছর আমের মৌসুমে জামাতাদের নিমন্ত্রণ করে আম ও চিড়া খাওয়ানো হয়। এই সময় উপহার হিসেবে জামাতাদের নতুন পোশাকও দেওয়া হয়। যুগ যুগ ধরে বাগমারা এলাকায় এই প্রথা চলে আসছে। গত রোববার আলাউদ্দিনের শ্বশুরবাড়িতে জামাতাদের আম ও চিড়া খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। এর আগে আলাউদ্দিনকেও নিমন্ত্রণ জানান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তবে আলাউদ্দিন অভিযোগ করেন, শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা অন্য জামাতাদের যেভাবে দাওয়াত দিয়েছেন, ততটা সম্মানের সঙ্গে তাঁকে দাওয়াত দেননি। এ নিয়ে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মনোমালিন্যের হয় তাঁর। এরপর ক্ষোভে রোববার সন্ধ্যায় তিনি বিষপান করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন বিষপানের বিষয়টা বুঝতে পারেন। এরপর পরিবারের সদস্যরা আলাউদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।বাগমারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়ামুল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।একই গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গিয়াস উদ্দিন বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়াটা দুঃখজনক। আলাউদ্দিনের মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়ল।তবে আলাউদ্দিনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।আজ সোমবার দুপুরে এই মামলা করা হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।গত ১৯ জুন মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু, এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মিজানুর রহমান।
সফট সিগন্যাল নিয়ম নিয়ে বিতর্ক ছিলে আগে থেকেই। পরপর দুই দিনে দুটি সিদ্ধান্তের পর সেই বিতর্ক চাউর হয়েছে আবার।পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার গতকালের ম্যাচেই আলোচনার খোরাক জুগিয়েছিল আম্পায়ারদের ‘সফট সিগন্যাল’। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচেও এবার আলোচনার কেন্দ্রে এই সফট সিগন্যাল। বিতর্কিত এ সিদ্ধান্তের বলি হয়েই যে ফিরে যেতে হলো লিটনকে।গতকাল ক্রিস মরিসের বলটা সজোরে পুল করেছিলেন হারিস সোহেল। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচটা তালুবন্দী করেই ট্রেডমার্ক দৌড় শুরু করেছিলেন ইমরান তাহির। তাহির একপ্রকার নিশ্চিতই ছিলেন, ক্যাচটা যথার্থভাবে ধরেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠানোর আগে মাঠের আম্পায়ার সফট সিগন্যাল দিলেন নট আউট। বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হতে পারেননি থার্ড আম্পায়ার। ফলে মাঠের আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেই নট আউট দেওয়া হয় হারিসকে। সিদ্ধান্তটি নিয়ে এরপর সমালোচনা হয়েছে বেশ।আজ বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচেও একই দৃশ্য দেখা গেল। আফগান অফ স্পিনারদের সামলাতে বাঁহাতি সৌম্য সরকারের বদলে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয়েছিল ডানহাতি লিটন দাসকে। সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণ করে ভালো শুরুও করেছিলেন লিটন। দুই চারে পৌঁছে গিয়েছিলেন ১৬ রানে। কিন্তু পঞ্চম ওভারে মুজিব উর রেহমানের বলে ঘটল বিপত্তি।বলটা হালকা ড্রাইভ করেছিলেন, শর্ট কভারে হাশমতউল্লাহ শহীদী সেটি ধরেই আউটের আবেদন করলেন। লিটন নিশ্চিত ছিলেন না আউট হয়েছে কি না, দুই আম্পায়ারও পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তাই থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হলো, কিন্তু তার আগে সফট সিগন্যাল দেওয়া হলো আউট। বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না থার্ড আম্পায়ার আলিম দার। শেষ পর্যন্ত মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যালের ওপর ভিত্তি করে লিটনকে আউটই দিয়ে দিলেন আম্পায়ার।কিন্তু সিদ্ধান্তটি নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে যথেষ্ট। বারবার রিপ্লে দেখে মনে হচ্ছিল, শহীদী তালুবন্দী করার সময় বলটা কিছু সময়ের জন্য মাটি ছুঁয়েছিল। থার্ড আম্পায়ার বারবার জুম করে দেখেও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না কিছুতেই। এসব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত সাধারণত ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই আসে। কিন্তু লিটনের ক্ষেত্রে হলো উল্টোটা। এবং সেটির পেছনে দায়ী মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যাল।এই সফট সিগন্যাল পদ্ধতিটা নিয়েই যত বিতর্ক। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ থাকলে থার্ড আম্পায়ারের শরণাপন্ন হবেন মাঠের আম্পায়াররা, কিন্তু তার আগে নিজেদের মতামত জানাবেন সফট সিগন্যালের মাধ্যমে। থার্ড আম্পায়ার যদি রিপ্লে দেখে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেন যে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ভুল, কেবল তখনই তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন। কিন্তু যদি থার্ড আম্পায়ার পুরোপুরি নিশ্চিত হতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়ারদের দেওয়া সফট সিগন্যালের সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে। গতকালের ম্যাচের পরই বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার এই সফট সিগন্যালের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সাবেক ভারতীয় অফ স্পিনার হরভজন সিং টুইট করে নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন, ‘থার্ড আম্পায়ারই যদি সিদ্ধান্ত নেবেন, তাহলে আর মাঠ থেকে সফট সিগন্যাল দেওয়ার দরকার কী? সিদ্ধান্তটা থার্ড আম্পায়ারকেই নিতে দিন না!’আরেক ভারতীয় স্পিনার মুরালি কার্তিক তো আরও চাঁছাছোলা সমালোচনা করেছেন। গতকাল তাহিরের নেওয়া ক্যাচটিকে আউট মনে করেছেন তিনি, সিদ্ধান্তটাও দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে যাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন, ‘এমন অনেক ক্যাচ দেখেছি, যেগুলোতে সফট সিগন্যাল আউট দেওয়া হয়েছিল। অথচ এখানে প্রথম দেখাতেই আউট মনে হওয়ার পরেও আম্পায়ার সফট সিগন্যাল দিলেন নট আউট। থার্ড আম্পায়ার কেন সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন না? অদ্ভুত!’ সাবেক কিউই ক্রিকেটার স্কট স্টাইরিসও টুইটটি শেয়ার করে নিজের সমর্থন জানিয়েছেন।আরেক ভারতীয় ক্রিকেটার সুব্রামানিয়াম বদ্রিনাথও এই সফট সিগন্যালের বিরোধিতা করে টুইট করেছেন, ‘ক্যামেরা দিয়েই যেটি পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে না, সেটি আম্পায়াররা খালি চোখে কিছুতেই নিশ্চিত হয়ে দেখতে পারেন না। তাহলে কি মাঠের আম্পায়ারদের কোনো না কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা?’ জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার অ্যালান উইলকিন্সও এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।এর আগে গত বছর এই সফট সিগন্যাল নিয়ম উঠিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথও। সিডনিতে এক ওয়ানডেতে বিতর্কিত ক্যাচের সিদ্ধান্তে আউট হওয়া সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক স্মিথ বলেছিলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি এই নিয়মের সমর্থক নই। এই নিয়মের কারণে মাঠের সিদ্ধান্ত পাল্টানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফিল্ডার একটু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উদ্‌যাপন শুরু করলেই মাঠের আম্পায়াররা আউট দিয়ে দিচ্ছেন। আর সন্দেহ থাকলে দিচ্ছেন নট আউট। এরপর থার্ড আম্পায়ারের পক্ষে সিদ্ধান্ত বদলানো কঠিন হয়ে পড়ে। আমি চাই, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারটা থার্ড আম্পায়ারের কাছেই থাকুক।’আজকে লিটনের আউটটি দেখার পর নিশ্চিতভাবেই এই সফট সিগন্যাল সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠবে আরও। আইসিসি কি উত্তর দেবে এতসব বিতর্কের?
সাউদাম্পটনে মুখোমুখি বাংলাদেশ-আফগানিস্তান। বার্তা সংস্থার আলোকচিত্রীর ক্যামেরায় এ ম্যাচের বিভিন্ন মুহূর্তের রোমাঞ্চ উপভোগ করুন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া জটিল হলেও তা চূড়ান্তকরণে কাজ করছে সরকার। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সদ্যপ্রয়াত সৈয়দ মাহমুদুল হক কয়সর ও সৈয়দ নুরুর রশীদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর। তিনি তৃণমূলের মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়নের বিষয়েও জোর দেন। ১৫ জুন শনিবার লন্ডনের মূল শহরের ফিলপট লেনের একটি রেস্টুরেন্টে এ স্মরণসভা আয়োজন করা হয়।সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন। পরিচালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবদুল মাবুদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার জুলকার নায়েন ও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি স্পিকার আহবাব হোসেন।সভার শুরুতে প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।আলোচনা পর্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসান ও দেওয়ান গৌছ সুলতান, বিজয়ফুল কর্মসূচির চেয়ার কবি শামীম আজাদ, কো-অর্ডিনেটর কবি মিলটন রহমান ও কবি ফারাহ নাজ, শহীদ সোলায়মান স্মৃতি সংসদের কবি ময়নুর রহমান বাবুল, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক আলীমুজ্জামান এবং খালেদা কোরেশি, শিরিন চৌধুরী ও নিলুফার কয়সর।বক্তারা প্রয়াত দুই মুক্তিযোদ্ধার কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, তারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেই দায়িত্ব শেষ করেননি। আজীবন দেশের জন্য বিদেশে থেকেও কাজ করে গেছেন। বিলেতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমুন্নত রাখা ও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর ক্ষেত্রেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।আবদুল মাবুদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ধনী–গরিবের কোনো ভেদ তৈরি কাম্য নয়। সবাইকে একইভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা না হলে প্রকারান্তরে দেশকেই অবমূল্যায়ন করা হয়।স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আমান উদ্দিন, ফয়জুর রহমান, আবু মুসা হাসান ও মেফতাহউল ইসলাম এবং আবৃত্তিকার রুপা চক্রবর্তী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
পোর্তো আলেগ্রের অ্যারেনা দো গ্রেমিওতে কাতারের বিপক্ষে গত রাতে ২-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ জিতে কোনোভাবে কোয়ার্টারে উঠলেও এভাবে আর কতকাল?খোঁড়াতে খোঁড়াতে কোপা অভিযান শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়া এবং প্যারাগুয়ের সঙ্গে জয়বঞ্চিত তারা। যে টুর্নামেন্টের শিরোপায় ঠাসা আলবিসেলেস্তেদের ট্রফি কেস, সেই আরাধ্য টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব পেরোতেই কি না, এবার গলদঘর্ম হতে হচ্ছে। ২০১৮ বিশ্বকাপেও তাদের একই অবস্থা ছিল, গ্রুপ পর্বের দুই ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ছিলেন মেসিরা। শেষ ম্যাচে কাতারকে হারালেও প্রশ্ন উঠেছে, এই অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে আর্জেন্টিনার ফুটবল আদৌ কিছু জিততে পারবে কি?কোচ বদলেছে, খেলোয়াড়দের মাঝেও অনেক বদল এসেছে, কিন্তু বদলায়নি তাদের ফুটবলের চালচিত্র। ২০১৫ ও ২০১৬ আসরের ফাইনালিস্টদের ফুটবল যে পতনের দ্বারপ্রান্তে, তা অস্বীকারের জো নেই। কাতারকে হারিয়ে কোয়ার্টারে উঠলেও, সেমিতে ওঠার লড়াইতে যে ভেনেজুয়েলাকে হারাতে পারবে, সে কথাটা কি জোর দিয়ে বলা যায়?আর্জেন্টিনার ফুটবলের এই যে জঘন্য অবস্থা, তার পেছনে ভূমিকা রেখেছে বছরের পর বছর ধরে চলা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা এবং সেগুলোর সমাধানে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপের অভাব। আর্জেন্টিনার ফুটবলে সমস্যার মূলটা যেন একদম ভেতরে প্রোথিত। ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রতিটি পদেই অনিয়ম আর অস্বচ্ছতার মচ্ছব। প্রায় ৩৫ বছর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অসংখ্য দুর্নীতি এবং মাফিয়াসুলভ আচরণের অভিযোগ মাথায় নিয়ে হুলিও হুম্বের্তো গ্রন্দোনা ধরাধামের মায়া ত্যাগ করেন। গ্রন্দোনা যাওয়ার পরেও অরাজক অবস্থার উন্নতি হয়নি। একটি কারণে লোকে তবুও গ্রন্দোনাকে মনে রাখবে, কারণ তাঁর আমলে অন্তত 'সময়মতো ট্রেন ছেড়েছিল'। মানে ফুটবলীয় কার্যক্রমগুলো অন্তত বিনা ঝক্কিতে পরিচালিত হতো তাঁর সময়ে। কিন্তু জোড়াতালি দেওয়া আর্জেন্টিনার ফুটবলের দায়ভার যখন ক্লদিও তাপিয়ার ওপর এসে পড়ে, তখন শুরু হয় চূড়ান্ত হট্টগোল।সভাপতি পদে তাপিয়া আসার পর আর্জেন্টিনার বলার মতো তো দূরের কথা, মুখ বাঁচানোর মতো কোনো অর্জনও নেই। তাঁর আমলে ১১টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলে মাত্র তিনটিতে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এর একটি ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর অপরটি বিশ্বকাপের মূল আসরে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে। শেষ জয় এসেছে গতকাল। তাঁর আমলে বড় আসরগুলোতে প্রায় জিততে ভুলে গেছেন মেসি-আগুয়েরোরা। আর্জেন্টিনার ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত অনেকে তাই রসাত্মকভাবে বলে থাকেন, মেসির সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক রক্ষা এবং সেলফি তোলার মাঝেই তাপিয়ার সফলতা নিহিত।২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আলেজান্দ্রো সাবেলার বিদায়ের পর থেকেই আর্জেন্টিনার কোচের পদ নিয়ে জটিলতা চলছে। সাবেলা চার বছর দায়িত্ব পালন করে গেলেও তাঁর ৪ জন উত্তরসূরির মাঝে শুধু জেরার্ডো মার্টিনো অন্তত দুই বছর দায়িত্বে ছিলেন। কোচ নিয়োগ দেওয়ার বিষয়েও ক্লদিও তাপিয়া বেশ খামখেয়ালি। কাউকে মাথায় তুলতে যেমন কুণ্ঠা করেন না, তেমনি আশানুরূপ ফল না এলে সেই ব্যক্তিকে ছুড়ে ফেলতেও বাধে না তাঁর। ২০১৭ সালে সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই এডগার্ডো বাউজাকে কোচের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে হোর্হে সাম্পাওলির হাতে দায়িত্ব তুলে দেন। সে সময় সাম্পাওলিকে ‘বিশ্বের সেরা কোচ’ হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। অথচ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর সাম্পাওলিকে অবলীলায় পদচ্যুত করেছেন। আর এভাবে কোচদের সরিয়ে দেওয়ার ফলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। এই যেমন চুক্তিগত কারণে ২০১৬ সালে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরও টাটা মার্টিনোকে ২০১৮ পর্যন্ত বেতন দিয়েছে এফএ। তাই সস্তায় ভালো মানের কোনো কোচ না পেয়ে শেষে সাম্পাওলির সহকারী লিওনেল স্কালোনির হাতে জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। অথচ সিনিয়র পর্যায়ে কোচিংয়ের কোনো অভিজ্ঞতাই নেই কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার ভার কাঁধে নেওয়া স্কালোনির।সাম্পাওলির কাছ থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১১ টি ম্যাচে ১১টি ভিন্ন একাদশ মাঠে নামিয়েছেন স্কালোনি। ঠিক একই রকম অতি-পরিবর্তনের ধকল সামলে উঠতে না পেরে কিন্তু সাম্পাওলির বিপক্ষে বিশ্বকাপের সময় প্রায় বিদ্রোহের পথে পা বাড়িয়েছিলেন মেসি-ডি মারিয়ারা। অবশ্য স্কালোনিই বা কী করবেন, খেলোয়াড়েরা যদি মাঠে তাঁদের সবটুকু দিয়ে পারফর্ম না করেন! অনেক অদল-বদলের মাঝেও সাম্পাওলির দলে জিওভানি লো সেলসো, জার্মান পেজেল্লা, রদ্রিগো ডি পল, লাউতারো মার্টিনেজ এবং লিয়ান্দ্রো পারেদেস নিয়মিত ছিলেন। কিন্তু আর্জেন্টিনা দলে তাঁদের পূর্বসূরিদের নামের প্রতি কতটা সুবিচার করতে পেরেছেন তাঁরা, তাঁর উত্তর কারও অজানা নেই।কোপা আমেরিকা শুরুর আগেই এবার মেসি বলেছেন, ‘অন্যান্য বারের মতো আমরা এবার ফেবারিট নই।’ মেসি সত্যি কথাটাই সোজা ভাষায় বলে দিয়েছেন। কিন্তু আর্জেন্টিনার চিরাচরিত ফুটবল শিল্পের এ যুগের বার্তাবাহক মেসি যখন নিজেদের অসহায়ত্বের কথা মুখ ফুটে বলে দেন, তখন তা দলের মাঝে আত্মবিশ্বাসের প্রবল সংকটকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।মেসি কখনোই তুখোড় নেতৃত্বের জন্য বিখ্যাত নন। মাঠে ফুটবলীয় কারিকুরি দেখানোতেই তার শ্রেষ্ঠত্ব। কিন্তু দল যখন বিপদে, দিশেহারা হয়ে ক্রমেই হারের দিকে ধাবিত হচ্ছে; সেই মুহূর্তগুলোতে দলের প্রয়োজন প্রেরণাদায়ী কিছু কথা, দলকে চাঙা করার রসদ হিসেবে যা কাজ করবে। কিন্তু অধিনায়ক মেসি বা আগুয়েরো-ডি মারিয়াদের মতো সিনিয়ররা কেউই তাঁদের অনুপ্রেরণাদায়ী উপস্থিতির জন্য বিখ্যাত নন।কাতারের বিপক্ষে জয়টা নিয়ে কোয়ার্টারে উঠলেও, এই অবস্থায় সেমিতে কি পারবে আর্জেন্টিনা? এভাবেই কি চলবে আর্জেন্টিনার ফুটবল? একজন অনভিজ্ঞ কোচ, একটা দল যারা সাফল্য বাদ থাক, অন্তত মনকাড়া খেলাও উপহার দিতে পারছে না; একজন অধিনায়ক, যিনি নিজের কারিকুরি দেখাতে পটু, কিন্তু দলকে বিপদের মুহূর্তে উজ্জীবিত করতে অপারগ। এই সব ভঙ্গুর অনুষঙ্গে ভর করে আর কত দিন চলবে আর্জেন্টিনার ফুটবল?
জয়পুরহাটে এক কেজি হেরোইন উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় আদালত একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।আজ সোমবার দুপুরে জয়পুরহাটের বিশেষ আদালত এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম সারোয়ার এ রায় দেন।যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলার বাদালচান্দপুর গ্রামের আবদুল হামিদ (৪২)। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছিল। রায় ঘোষণার পর তাঁকে পুলিশ পাহারায় জয়পুরহাট কারাগারে পাঠানো হয়।মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি নওগাঁর ধামুইরহাট থেকে ঢাকাগামী সালমা এন্টারপ্রাইজ বাসে জয়পুরহাট- খনজনপুর সড়কে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের সামনে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তল্লাশি চালায় র‌্যাব। বাসে একটি নীল রঙের ব্যাগে রাখা চারটি পলিথিনে মোড়ানো এক কেজি হেরোইন উদ্ধার করে জয়পুরহাট র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৫-এর সদস্যরা। এ ঘটনায় বাসযাত্রী আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। আবদুল হামিদকে আসামি করে জয়পুরহাট র‌্যাব-৫-এর নায়েক সুবেদার অলিয়ার রহমান বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা করেন। জয়পুরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আসামি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নৃপেন্দ্র নাথ মণ্ডল বলেন, বিচারক রায় ঘোষণার সময় বলেছেন যে বয়স ও হাজতবাস বিবেচনায় নিয়ে আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। আর অবলোপন করা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন আদালতের আদেশে আছে ৮০ হাজার কোটি টাকাকে খেলাপি ঋণ বলা যাচ্ছে না।  আজ সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এমন তথ্য উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি খেলাপি ঋণের তথ্য আদালতে সিলগালা অবস্থায় উপস্থাপন করেন। তবে কোন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি বা অর্থের পরিমাণ কত তা আদালতে প্রকাশ্যে জানানো হয়নি।মোট ঋণের দুই শতাংশ এককালীন জমা দিয়ে একজন ঋণখেলাপি ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নীতিমালার কার্যক্রমের ওপর ইতিপূর্বে দেওয়া স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুই মাসের জন্য বাড়িয়েছেন আদালত। এর আগে ২১ মে হাইকোর্ট ঋণখেলাপিদের তথ্য সংক্রান্ত তথ্যাদি ২৪ জুন আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন এক মাসের জন্য। এর ধারাবাহিকতায় আজ ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্যাদি আদালতে দাখিল করা হয়।আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী মুনীরুজ্জামান। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার উপস্থিত ছিলেন।২০০৯ সালের শুরুতে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। ২০১৮ সাল শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। এ ছাড়া অবলোপন ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আমাদের দেশে বাচ্চাদের কপালের কোণে দেখা যায় কালো গোল টিপ। এই টিপের নাকি অনেক ক্ষমতা। কেননা, এই টিপই বাচ্চাকে রক্ষা করে সব খারাপ নজর থেকে। এবার মনে হচ্ছে বলিউড তারকা আলিয়া ভাটেরও কালো টিপের প্রয়োজন। সম্প্রতি বোম্বে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁর আর রণবীর কাপুরের সম্পর্ক নিয়ে এই তারকা বলেছেন, ‘যেন নজর না লাগে’।আলিয়া ভাট ও রণবীর কাপুর দুজনেই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কোনো লুকোচুরি খেলেননি গণমাধ্যমের সঙ্গে। সম্পর্কের কটা দিন যেতে না যেতেই ঘটা করে স্বীকার করেছেন নিজেদের ভালোবাসার কথা। আর সেই সহজ স্বীকারোক্তি নিয়ে দিস্তার পর দিস্তা লেখা হয়েছে প্রেমকাব্য। আলিয়া জানিয়েছেন, রণবীর সব সময় তাঁকে সাহায্য করতে মুখিয়ে থাকে। রণবীর এমনই একজন যে সব সময় একজন মানুষ, একজন অভিনেতা আর একজন বন্ধু হিসেবে মুগ্ধ করে আলিয়াকে।ওই সাক্ষাৎকারে আলিয়া বলেন, ‘আমি এটাকে প্রেমের সম্পর্ক না বলে বরং বন্ধুত্বই বলব। সেই বন্ধুত্ব যেটা কেবল অকৃত্রিমতা আর সততা দিয়ে তৈরি। আর পৃথিবীতে কিছুই এর চেয়ে মধুর হতে পারে না।’ দুজনের পেশাজীবন নিয়েও কথা বলেন আলিয়া। বলেন, ‘আমরা দুজনে ভিন্ন দুটো মানুষ। আমরা দুজন আমাদের পেশাজীবনের সবচেয়ে ভালো সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রণবীর একটার পর একটা কাজ করছে। আর আমারও একই অবস্থা। তাই আমাদের খুব কমই একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায়।’ তাদের দুজনের সম্পর্ক নিয়ে আলিয়া আরও বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে যতটা সুন্দর দেখা যায়, আমদের সম্পর্কটা ঠিক ততটাই সুন্দর আর সহজ।’ একটু থেমে মিষ্টি হেসে বলেন, ‘যেন নজর না লাগে’।রণবীর কাপুরের অভিনয় নিয়ে যত সুনামই থাকুক না কেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুর্নাম রয়েছে। তিনি নাকি বেশি দিন একটা সম্পর্কে থাকতে পারেন না। রণবীর কাপুরের প্রেমিকাদের লম্বা তালিকায় অবন্তিকা মালিক থেকে শুরু করে নন্দিতা মাহাতানি, সোনম কাপুর, দীপিকা পাড়ুকোন, অ্যাঞ্জেলা জনসন, নার্গিস ফাকরি, ক্যাটরিনা কাইফ ও মাহিরা খানের পরেই যুক্ত হয়েছে আলিয়া ভাটের নাম। তাই আলিয়া ভাটই যে এই তালিকার শেষ নাম, তা বলা যাচ্ছে না কিছুতেই। এ জন্যই আলিয়া ভাট যখন বলেন—‘যেন নজর না লাগে’, এই কথায় যৌক্তিকতা মেলে। আলিয়ার এই ভয় অমূলক নয়।কাজের চাপে আলিয়াকে মাঝে মাঝেই প্রচণ্ড ধকলের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। তখন রণবীর নাকি আলিয়াকে উপদেশ দিয়েছিলেন, কাজের সময় শুধু কাজে মন দিতে। অন্য কিছু নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা না করতে। এই উপদেশ নাকি বেশ স্বস্তি দিয়েছে আলিয়াকে। তবে রণবীরের যে ‘হৃদয় ভাঙার বদভ্যাস’, তাতে দুশ্চিন্তা না করে আর উপায় কী!কিছুদিন পর পরই এই জুটির বাগদানের গুজব রটে। দুই পরিবারও চাচ্ছে বিয়ের মাধ্যমে তাঁদের সম্পর্ককে স্থায়ীত্ব দিতে। রণবীর কাপুরের বাবা ঋষি কাপুরের ক্যানসার আর তাদের ব্যস্ততা সেই বিয়ের তারিখ কেবল পেছনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে আয়ান মুখার্জির ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ ছবি এই জুটিকে একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিয়েছে। হোক না তা ক্যামেরার সামনে!
ছয়-সাত বছর আগের কথা। দিনাজপুরের বাহাদুর বাজার এলাকার অগ্রণী ব্যাংকে একটি কাজে গিয়েছিলেন রাবেয়া সুলতানা রাব্বি। তিনি গাড়ির মেকানিক—এ পরিচয় শুনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের চোখ কপালে উঠে গেল! কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইলেন না। বাধ্য হয়ে রাব্বি তাঁর পরিচয়পত্র দেখালেন। তারপরও বিস্ময় কাটে না, একজন নারী কীভাবে গাড়ির মেকানিক হন!শুধু ব্যাংকের ব্যবস্থাপকই নন, অনেকেই রাব্বির পেশা শুনে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকেন। যাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে, সেই রাবেয়া সুলতানা রাব্বি ২০০৬ সাল থেকে বেসরকারি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা কেয়ারে গাড়ির মেকানিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।রাজধানীর পান্থপথে কেয়ারের গ্যারেজে বসে রাব্বি জানালেন তাঁর জীবনযুদ্ধের কথা। ২০০৫ সালে টাকার অভাবে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না। বাবা আবদুল আজিজ ফরাজী তরিতরকারির ব্যবসা করলেও প্রায়ই নানা অসুখ-বিসুখে বাড়িতেই বসে থাকতেন। ছয় ছেলেমেয়ের সংসার তাঁর। একদিন কেয়ারের মাঠকর্মীরা রাব্বিদের বাড়িতে এসে কেয়ারের পক্ষ থেকে নারীদের গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণের কথা জানালেন। একেবারেই ভিন্ন একটি পেশার কথা শুনে রাব্বি যোগ দিলেন সেই প্রশিক্ষণে।রাব্বি বলছিলেন, ‘গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণে নাম লেখালাম। প্রশিক্ষণ শেষে কয়েকজন নারীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয় কেয়ার থেকে। কিন্তু আমার চাকরি হলো না। কিছুদিন পর কেয়ার থেকে বলা হলো মেকানিক হিসেবে কাজ করার জন্য। সেই সুযোগ লুফে নিয়ে শুরু করলাম গাড়ি দেখভালের কাজ। সেই থেকে এখন পর্যন্ত করেই চলছি। কেয়ারের বিভিন্ন গাড়ি, মোটরসাইকেল সার্ভিসিংয়ের কাজ করি। সেখানে সবার কাছে আমার পরিচয় “মেকানিক রাব্বি আপা”। আমিও তাঁদের এই ডাকে সাড়া দিই।’গাড়ির ব্রেক ঠিক করা, গাড়ির মবিল বদলানো, ফিল্টার পরিবর্তনসহ নানা কাজ করতে হয় রাব্বিকে। রাব্বি গর্বের সঙ্গেই বললেন, ‘গাড়ির চাকায় হাত দিলেই বুঝতে পারি কোন গাড়িতে কী সমস্যা হয়েছে।’তিন বছর বয়সী ছেলের মা রাব্বি। স্বামী একরামুল হক একটি নিরাপত্তা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সন্তানকে দেখভাল করার জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। পরিবারের উপার্জনক্ষম মানুষ এখন রাব্বি। গ্রামে থাকা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের খরচও চালান রাব্বি। বলছিলেন, ‘প্রতি মাসে বাবা-মায়ের জন্য পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। অন্য পাঁচ ভাইবোন থাকলেও বাবা-মায়ের মাসিক খরচ আমাকেই দিতে হয়।’ মূল বেতন আর ওভারটাইম মিলে ৪৪ থেকে ৪৫ হাজার টাকা বেতন পান রাব্বি। নিয়মিত ট্যাক্স দেন। রাব্বি বললেন, ‘আমার বেতনের কথা শুনে আরও নারীরা যাতে এই পেশায় আসে, সেই জন্য কত বেতন পাই তা বললাম।’ হাসতে হাসতে বললেন, ‘গ্রামে গেলে মানুষ আমার চারপাশে ভিড় করে। কী কী কাজ করি, কীভাবে করি, জানতে চায় আর অবাক হয়। ওদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার ভালো লাগে।’কেয়ারের সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাব্বি জানালেন, কেয়ারে কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমান, কোনো বৈষম্য নেই। রাব্বির কাজের সম্পর্কে কেয়ারের পরিবহন ব্যবস্থাপক মো. সেলিম শেখ বললেন, রাব্বি শুধু মেকানিকের কাজই নিখুঁতভাবে করেন না, ফাইলিং থেকে শুরু অফিসের বেশ কিছু কাজেও সাহায্য করেন। কোনো কাজের কথা বললে ‘না’ করেন না। সব মিলে দারুণ এক কর্মী তিনি।
বিশ্বব্যাংকের সর্বসাম্প্রতিক ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ প্রতিবেদনে তিন বছরে ভারতের অবস্থান ১৩১ থেকে ৭৭–এ এসে দাঁড়িয়েছে, আর বাংলাদেশ দুই ধাপ পিছিয়ে ১৭৪ থেকে ১৭৬–এ নেমেছে। এটি নিয়ে ‘বাংলাদেশের বন্ধুদের’ মধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তারা বলছে—কী সমস্যা? বাংলাদেশের অবনমন হচ্ছে কেন? ব্যবসা শুরু, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, ইনসলভেন্সি ফ্রেমওয়ার্কসহ অন্য অনেক বিষয় আমরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করে আসছি। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি বিনিয়োগ সহায়তায় অনেক বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে তাদের আমি বলেছি যে এখানে সমস্যা কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকা কিংবা অতিনিয়ন্ত্রণ নয়; বরং সমস্যা হলো নিয়ন্ত্রণমূলক অনিশ্চয়তা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক শাসনের অধীনে আইন বা বিধির সুবিধাজনক ব্যাখ্যা হাজির করা।দেশের জাতীয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সামনে বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণমূলক অনিশ্চয়তাই প্রধান প্রতিবন্ধক। এই প্রতিবন্ধকের বিরূপ প্রভাবের মধ্যে রয়েছে অদক্ষতাজনিত উৎপাদনশীলতা হ্রাস ও উত্পাদনব্যয় বৃদ্ধি। চূড়ান্তভাবে এটি প্রধান প্রধান বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে একটি অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি করে। ফলে দেশি–বিদেশি ব্যক্তি খাতের সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হন। এই দীর্ঘমেয়াদি অস্বস্তিকর অবস্থা থেকে উত্তরণের যেকোনো প্রচেষ্টায় গভীর রোগনির্ণয় বা সমাধান গুরুত্বপূর্ণ। প্রারম্ভিক পরিকল্পনার ধাপ থেকে প্রয়োগের যেকোনো সময়ে এই নিয়ন্ত্রণমূলক দ্ব্যর্থবোধকতা ছড়াতে পারে।প্রায়ই ক্ষেত্রসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে প্রাক্‌–আলোচনা বা মূল্যায়ন ছাড়া নতুন নীতি ও বিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ করা হয়। ব্যক্তি খাতের প্রতিযোগীদের ক্ষেত্রেও কথাটি সত্য। এই অন্তর্ভুক্তিহীনতার কারণে প্রাথমিক বিধিমূলক খসড়াগুলো ব্যবহারিক অন্তর্দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়, সেটা শুধু ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তারাই ধারণ করেন। ফলে একটি দুর্বল ও অস্থিতিশীল জ্ঞান বুনিয়াদের ভিত্তিতে একটি অদক্ষ নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো তৈরি হয়। তবে ধারণাগতভাবে এসব নতুন বিধি শক্তপোক্ত হলেও সেগুলো প্রকাশ বা বাস্তবায়নের তাৎক্ষণিক ঘোষণা চলমান ব্যবসায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। আইএফসি ও বিল্ডের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জরিপে অংশগ্রহণকারী মোট ৮৩ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানই একমত যে প্রাক্‌–আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়াই নীতি ও বিধি প্রণয়ন কিংবা কার্যকর করায় তা তাদের ব্যবসায় বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। অধিকন্তু ওই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ শতাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে তাদের পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি হবে না এবং না করা হলে কেন নয়, সেই সম্পর্কে সরকার কমই জানায়। দুর্ভাগ্যক্রমে এই যোগাযোগ ব্যবধান শুধু সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নয়, বিভিন্ন আন্তসরকারি এজেন্সিও নিজেদের নিয়ন্ত্রণমূলক সিদ্ধান্তে কার্যকরভাবে সমন্বয় সাধনে ব্যর্থতা দেখিয়েছে। এটা নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনায় বড় ধরনের অসামঞ্জস্য ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে। ফলে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণে দেরি ও ভুল হয়। এভাবে নিয়ন্ত্রণজনিত অনিশ্চয়তা ও সমন্বয়হীনতা ব্যক্তি খাতের সার্বিক বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে।বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণমূলক অনিশ্চয়তার আরেকটি প্রধান কারণ দলিলপত্রের নির্ভরযোগ্যতার অভাব। এই সমস্যার দুটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস বা দিক রয়েছে। প্রথমত, বিপুলসংখ্যক এসআরও এবং অন্যান্য আইনি বিধান হালনাগাদ কিংবা প্রয়োজনের নিরিখে পর্যালোচনা, পরিবর্তন কিংবা বাতিল করা হয় না। ১৯৪৭ সালের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে এবং ৭০০–এর বেশি বন্ড–সংক্রান্ত এসআরও কেবল ভাসা–ভাসা অবস্থায় রয়েছে। ফলে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোনো ও অনাবশ্যক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে, যা সমকালীন বিনিয়োগ সংস্কৃতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং উদ্ভাবনবান্ধব নয়। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর আইনের সেবাপ্রাপ্তিতে কোনো ওয়ান স্টপ গন্তব্যও নেই। এর ফলে বিধিমূলক তথ্য যাচাই করতে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। এভাবে নীতি ও বিধিবিধানগুলোর ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়নকালে ব্যাপক দ্বিধা ও ভুল–বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়, যার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব আছে। উল্লিখিত জরিপ অনুযায়ী, ১০০ শতাংশ অংশগ্রহণকারীই মনে করেন যে শুল্কসংক্রান্ত বিধিবিধানে অসামঞ্জস্য বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করে।তথ্যগত অস্পষ্টতা এবং শুরুর প্রাক্কালে প্রাথমিক সমন্বয়হীনতা, স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়োগ বা তার ঘাটতি ভয়াবহ প্রতিকূল পরিণাম সৃষ্টি করতে পারে। পর্যাপ্ত নীতিমালা বিধিমূলক আদেশের অদৃশ্য প্রকৃতি নিজের মতো করে ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি করে। সঠিক কার্যপরিক্রম বিন্যাসের ক্ষেত্রে এসব বিষয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাপকভাবে দ্বিধায় ফেলে দেয়। যখন কোনো নতুন ব্যবসায়িক ধারণা মাঠে বাস্তবায়ন হয় এবং তার জন্য সংবিধিবদ্ধ কোনো উপযুক্ত আইনি বিধি থাকে না, তখন আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়।অধিকন্তু দেশে একটি দুর্বল ও সংশয়পূর্ণ প্রতিকার বা অসন্তুষ্টি প্রকাশের ব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে। এই ব্যবস্থায় কোনো ইস্যু ও সুনির্দিষ্ট কিছু বিধির কারণে মুখোমুখি হওয়া জটিলতা সম্পর্কে নিজস্ব মতামত প্রকাশের খুব একটা সুযোগ নেই। এটি ব্যবসায়িক পরিবেশে বিপত্তি সৃষ্টি করে। ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের (বাধ্য হয়েই) অস্বচ্ছ ও সামঞ্জস্যহীন নীতিমালার মধ্যে নিজেদের ব্যবসা করে যেতে হয় এবং কর্তৃপক্ষের দিক থেকে স্পষ্টীকরণের সব আশা ছেড়ে দিতে হয়।বিনিয়োগ ও রাজনৈতিক পরিবেশের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে সামনের বছরগুলোয় যে কোনো প্রকল্প চালিয়ে নেওয়া যাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। রাজনৈতিক আনুকূল্যপ্রাপ্ত ও ক্ষমতাবানদের দ্বারা আইনি ভঙ্গুরতার অন্যায্য সুযোগের ব্যবহার এখানে প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়। নৈমিত্তিক দৃশ্যপটে অর্থনৈতিক ঝুঁকির অসংখ্য ধরন সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আশাও করা হয়। তথাপি দুর্বল বিধিমূলক অবস্থানের সঙ্গে কারও কারও প্রতি বিশেষ প্রাধিকারমূলক আচরণের উপস্থিতি ব্যবসায়িক পরিবেশে আরও অনিশ্চয়তা ও গোলযোগের শক্তি জোগায়। পরিণামে এটি অনেক ভালো ব্যবসায়ীকে ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করা থেকে নিরুত্সাহিত করে।সম্ভাবনাময়ভাবে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় শামিল হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ৫ থেকে প্রায় ৮ শতাংশের চমকপ্রদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে। তবে এখনো লক্ষ্য পূরণ হয়নি। আলোচ্য লক্ষ্য অর্জনে তর্কাতীতভাবে ব্যক্তি খাতের উল্লেখযোগ্য মাত্রার অবদান দরকার হবে। খাতটিকে ব্যাপক কার্যকর রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তি খাতের কার্যকারিতার একটি নির্ধারক হলো বিধিমূলক পরিবেশের উন্নয়ন।মামুন রশীদ: অর্থনীতি বিশ্লেষক
পটুয়াখালীর বাউফলে পুলিশকে মারধর করে পিস্তল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। আজ সোমবার সকালে উপজেলার বড় ডালিমা গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর একটার দিকে পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে।আহত তিন পুলিশ হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মাঈনুদ্দিন, পুলিশ লক্ষ্মণ সেন ও ইমরান হোসেন।বাউফল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড় ডালিমা গ্রামে জমি-সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এমন অভিযোগ পেয়ে সকাল ১০টার দিকে সংঘাত থামাতে পুলিশের এএসআই মাঈনুদ্দিরে নেতৃত্বে তিন পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। তখন এক পক্ষ পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন। ওই সময় তাঁরা এএসআই মাঈনুদ্দিনের পিস্তল ১০টি গুলিসহ ছিনতাই করে নিয়ে যান।বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান পিস্তল ছিনতাই ও উদ্ধারের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ফ্লাইটেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঘুম যখন ভাঙল, নিজেকে আবিষ্কার করলেন এয়ার কানাডা বিমানের ভেতর। মাঝরাতে, একাকী অন্ধকারে। ঠিক এমনটাই ঘটেছে কানাডার টিফানি অ্যাডামসের বেলায়।কানাডার কুইবেক থেকে টরোন্টোয় যাচ্ছিলেন টিফানি। বিমানে ওঠার কিছুক্ষণ পরই ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে উঠে গা হিম করা ঠান্ডার ভেতর সিটবেল্ট বাঁধা অবস্থায় নিজেকে দেখে চমকে উঠলেন। আশপাশের দিকে তাকিয়ে বুঝলেন বিমানটি ভ্রমণ শেষ করে হ্যাঙ্গারে বিশ্রাম নিচ্ছে, আর তার পেটের ভেতর আটকে পড়েছেন তিনি।৯ জুন বিবিসি অনলাইনে এ খবর প্রকাশের পর দায় স্বীকার করেছে এয়ার কানাডা। এ ঘটনার পর থেকে রাতেও আর ঘুমাতে পারছেন না টিফানি। বারবার দুঃস্বপ্ন দেখে আঁতকে উঠে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাঁর। এ ব্যাপারে তদন্ত করতে কমিটি গঠন করেছে এয়ার কানাডা।টিফানি অ্যাডামস তাঁর ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের সে সময়কার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। বিমান অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর মাঝরাতে ঘুম ভাঙে টিফানির। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঠান্ডায় জমে যাচ্ছিলেন। এক কথায় সে অভিজ্ঞতাকে ‘দুর্বিষহ’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।কী করবেন—ভাবতে ভাবতে বান্ধবী ডিয়েনা ডেলকে ফোন করেন তিনি। কিন্তু এক মিনিটও স্থায়ী হয়নি সে ফোনকল। চার্জ না থাকায় কথা বলতে বলতেই বন্ধ হয়ে যায় টিফানির ফোন। এদিকে বিমান বন্ধ থাকায় ফোন চার্জ দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সৌভাগ্যক্রমে ওই আধা মিনিটে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিতে পেরেছিলেন টিফানি।টিফানির বান্ধবী ডেল সঙ্গে সঙ্গে টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরে ফোন করে টিফানির ব্যাপারে জানান। এর মধ্যে সিট থেকে উঠে ককপিট থেকে একটি টর্চ খুঁজে বের করেন টিফানি। আলো ফেলে আশপাশের লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। শেষমেশ এক লাগেজ কার্ট অপারেটর এসে হতবিহ্বল অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করেন।এয়ার কানাডার লোকজন এসে তাঁকে লিমোজিন গাড়িতে করে হোটেলে নিয়ে থাকার প্রস্তাব দিলেও টিফানি তা ফিরিয়ে দেন। যত দ্রুত সম্ভব বাসায় ফিরে যান। পরবর্তী সময়ে এয়ার কানাডার পক্ষ থেকে দুবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরা ক্ষমা চান টিফানির কাছে। এয়ার কানাডা এখনো বুঝতে পারছে না—এমন একটি ঘটনা কীভাবে ঘটল। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা।
পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানির মুনাফা থেকে রাখা সঞ্চিতি বা রিটেইনড আর্নিংসের ওপর করের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেছেন, বাজেট পাসের আগেই এ বিষয়ে কাজ হবে।আজ সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে এক প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রিটেইনড আর্নিংসে রাখা হয় কর দেওয়ার পর আয় থেকে। এর ওপর আবার কর আরোপ হলে সেটা দুবার করারোপ হয়।২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংস পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হলে সেটার ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করেন। এক পক্ষ মনে করে, শেয়ারধারীদের মুনাফার ভাগ বা লভ্যাংশ না দিয়ে এভাবে সঞ্চিতি রাখা ঠেকানো দরকার। আবার আরেক পক্ষের আশঙ্কা, এতে কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগযোগ্য তহবিল কমে যাবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে যেহেতু রিটেইনড আর্নিংস বেশি, সেহেতু তারা সেটা লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে দিলে টাকা বিদেশে চলে যাবে।সালমান এফ রহমান বলেন, রিটেইনড আর্নিংসের ওপরে কর পুরোনো আয়ের ওপর নতুন করে কর আরোপেরও সমান। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি চিহ্নিত করেছি।’
ই-কমার্স খাতকে আরও পাঁচ বছর ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা। তাঁরা বলছেন, বিকাশমান এ খাতে এখনই ভ্যাট আরোপ করা হলে মানুষ এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। অথচ ই-কমার্স খাত নানাভাবে কর্মসংস্থান তৈরি করছে। এই খাতে এখন প্রায় দুই লাখ মানুষ যুক্ত।প্রথম আলো আয়োজিত ‘বাজেটে তারুণ্যের চাওয়া-পাওয়া’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ খাতের উদ্যোক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রমের প্রধান মুনির হাসান।আলোচনায় অংশ নিয়ে আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাসরুর বলেন, অনলাইন কেনাবেচায় বাংলাদেশ এখনো ভারত, ভিয়েতনাম ও পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে আছে। সিংহভাগ প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানি এখনো লোকসান দিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ভ্যাট আরোপ করা হলে খাতটি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।যুক্তরাষ্ট্রে এখনো মোট খুচরা বিক্রির মাত্র ১০ শতাংশ অনলাইনে হচ্ছে। অন্যদিকে আমাজন ২৩ বছর পর প্রথম মুনাফার মুখ দেখেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোগগুলো এখন মাতৃগর্ভে আছে বলে মনে করেন সহজ ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির। বাজেটে ই-কমার্সের ওপর যে ভ্যাট প্রস্তাব করা হয়েছে, তা বিদেশি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে উঠতে পারে। তিনি বলেন, প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানি বা স্টার্টআপগুলো ব্যাংকঋণ পায় না। তাই তাদের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থেকে অর্থ নিয়ে ব্যবসা করতে হয়।গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা তরুণদের আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান। বিডি ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন বলেন, কর্মসংস্থান তৈরিতে বরাদ্দ দেওয়ার চেয়ে তরুণদের কর্মোপযোগী করে গড়ে তোলা দরকার। এতে তরুণেরা নিজেদের পথ নিজেরা করে নিতে পারবেন। পাশাপাশি তিনি ব্যবসা সহজ করতে তথ্যভান্ডার তৈরিতে জোর দেন। কারণ, তথ্যভান্ডার না থাকলে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন।অন্যদিকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি এবং ভিশন ২০৪১-এর লক্ষ্য অর্জনে কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া উচিত বলে মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবেলী খানম। প্রস্তাবিত বাজেটে ১০০টি উপজেলায় কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। তাঁর মতে, ১০০টি নয়, দেশের সব উপজেলায় কারিগরি বিদ্যালয় স্থাপন করা প্রয়োজন।এমডিজিতে (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সংখ্যাগত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। এবার এসডিজির (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) আলোকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে গুণগত মান অর্জন করতে হবে বলে মত দেন সঞ্চালক মুনির হাসান। তিনি বলেন, এ জন্য শিক্ষা ও গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে।নারীদের জন্য বাজেটে বিশেষ কিছু নেই বলে মনে করেন চাকরি খুঁজব না, চাকরির দেব প্ল্যাটফর্মের পরিচালক প্রীতি ওয়ারেসা। এত দিন নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ রাখা হতো। কিন্তু এবার শুধু নারী নয়, সবার জন্যই এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মালিহা কাদির বলেন, নারীদের উদ্যোক্তা হতে অনুপ্রাণিত করতে হবে। প্রশিক্ষণ দিতে হবে।অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চালডালের প্রধান নির্বাহী জিয়া আশরাফ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান কাজী হাসান রবিন, প্রথম আলোর বিশেষ বার্তা সম্পাদক শওকত হোসেন, ইউনিকম বাংলাদেশের বিপণন পরিচালক কাজী মাহবুব মোর্শেদ, শিক্ষা গবেষক ইবরাহিম মুদ্দাসসের, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম, বিইউপির বিতার্কিক রিদওয়ানুল আরেফিন, উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থী মাহামুদুল হাসান প্রমুখ।অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো এত দিন কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিত। কিন্তু এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে ভাড়ার ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি রাইডারের আয়ের ওপর উইথ হোল্ডিং কর দিতে হবে। এতে বিকাশমান এই খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন তরুণ উদ্যোক্তারা।
শুধু বাবা দিবসে নয়, প্রতিদিনই বাবাকে খুব মনে পড়ে। এতিম সন্তানেরা বাবার না পাওয়া আদর-ভালোবাসার নিরন্তর হাহাকার সব সময় বয়ে বেড়ায় হৃদয়ের গহিনে। হয়তো কখনো কখনো নীরবে-নিভৃতে অঝোর ধারায় অশ্রু ঝরায় বৃথা হালকা হওয়ার চেষ্টায়। জীবনের ব্যর্থতা, সফলতা—সব ক্ষেত্রেই বাবা নামক বটবৃক্ষের শীতল ছায়ার অভাব যেন দুর্ভিক্ষ, মহামারি, তার চেয়েও কঠিনে পতিত করে।ব্যর্থতায় মনে হয় বাবা থাকলে হয়তো সঠিক কোনো নির্দেশনা দিতেন। এতে ব্যর্থতার সমস্ত গ্লানি মুছে নতুন শক্তি সঞ্চারিত হতো। আবার সফলতার সময় আরও নির্মমতা গ্রাস করে। হয়তো বাবা তাঁর ছেলের সফলতায় গর্বে বুক স্ফীত করে বলতেন, জানি তুমি পারবে। আমার ছেলে বলে কথা! ঘটা করে সব আত্মীয়স্বজন, পাড়া–প্রতিবেশী আর গরিব-দুঃখী মানুষকে দাওয়াত করে খাওয়াতেন এবং ছেলের আরও অনেক সফলতার জন্য দোয়া চাইতেন।বাবা দিবস এলে আমাকে খুব কাতর করে। নিজের ভেতরটা গুমরে কেঁদে ওঠে নিজের অজান্তেই। আমার অনেক কবি-লেখক বন্ধু বাবা দিবস নিয়ে অনেক স্মৃতিকথা, কবিতা, গল্প লেখেন বিভিন্ন পত্রিকায় অথবা ব্লগে বাবার সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে প্রকাশ করেন। লেখাগুলো পড়ি আর সেই স্মৃতিমূলক ছবি দেখে নিজের হৃদয়ে সবার অগোচরে কষ্ট পরমাণু বিস্ফোরিত হয়। অবারিত হাহাকার নিয়ে অসহায় জীবনে জ্যান্ত পথিক যেন পথহারা হয়ে যায়। মনে হয় যেন কষ্টের কৃষ্ণগহ্বরে অতলে হারিয়ে গেলাম চিরতরে।আফসোস, বাবার সঙ্গে স্মৃতিস্বরূপ একটি ছবিও নেই! জীবন তো আর থেমে থাকার নয়। জীবন বহমান অবিরাম; শুধু স্থান বদলায়। শূন্য থেকে ধরণি আবার ধরণি থেকে শূন্যে অথবা মহাশূন্যে! ভালোবাসা না পাওয়ার বেদনা হয়তো সব সময়ের সঙ্গী। একালে, সেকালে, পরকালে—হয়তো সব কালে। বাবা থাকলে যেমন শাসন–অনুশাসন করতেন, তেমনি হৃদয়ের সর্বস্ব দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখতেন। তবে এ জগতে কারও বাবা না থাকলে পিতৃতুল্য আদরের অভাব হলেও শাসন করার নামে শোষণ করার লোকের অভাব হয় না। আদর করতে অনেক কিছু দেওয়া লাগে। কিন্তু শাসন করতে তেমন কিছু দেওয়া লাগে না। শুধু চড়–থাপ্পড় আর ঝাড়ি দিলেই চলে। সেটা মাথা, কান আর মুখমণ্ডলের ওপর দিয়েই যায়।আমার মাথায় চুল নেই। কিছুদিন আগে একজন আমাকে কথা প্রসঙ্গে বললেন টাক দুই রকম। সুখটাক আর টুকটাক। বললেন, ভাই আপনার তো সুখটাক! ইচ্ছে করলেই তো চুল লাগাতে পারেন। আমি ঠাট্টা করে বলি, আমার মাথায় চুল লাগানো যাবে না। বললেন কেন? আমি বলি, আমি এতিম, আমার মাথা বরকতময় তাই!জীবনে চলার বন্ধুর পথে প্রতিটি মুহূর্ত শুধু বাবাকেই মিস করেছি। কি সাফল্যে, কি ব্যর্থতায়। এখনো মনে হয়, বাবা থাকলে হয়তো জীবনটা আরও অনেক সুন্দর হতো। জাগতিক বিষয়ে যদিও বাবার শূন্যতা মা কখনো বুঝতে দেননি, কিন্তু দিন শেষে বাবা তো বাবাই। সেই বটবৃক্ষের শীতল আশ্রয় কি পাওয়া যায়? বাবা, পরপারে তুমি পরম শান্তিতে থাকো—মহান মাবুদের কাছে এই প্রার্থনা করি। বাবা দিবসে সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা রইল।
একের পর এক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম অমনিবাস (অ্যান্থলজি) চলচ্চিত্র ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এই ছবি এবার লন্ডনের বাগরি ফাউন্ডেশন লিফ ফেস্টিভ্যালে থাকছে। লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারে চলছে এই চলচ্চিত্র উৎসব।লন্ডনে চলচ্চিত্র উৎসবটির পর্দা উঠেছে ২০ জুন থেকে, চলবে ২৯ জুন পর্যন্ত। বার্মিংহামে চলচ্চিত্র উৎসবটির পর্দা উঠেছে ২১ জুন থেকে, চলবে ১ জুলাই পর্যন্ত এবং ম্যানচেস্টারে উৎসব শুরু হবে ২৬ জুন থেকে, চলবে ২৯ জুন পর্যন্ত। ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ চলচ্চিত্রটি লন্ডনে দেখানো হয়েছে গতকাল ২৩ জুন। একই স্থানে পরের প্রদর্শনীটি হবে ২৭ জুন সন্ধ্যা ৬টায় । প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান ছবিটির নির্বাহী প্রযোজক পরিচালক আবু শাহেদ ইমন।১১ নির্মাতার ছবি ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ চলচ্চিত্রটি ইতিমধ্যে বেশ কিছু উৎসবে অংশ নিয়েছে। সর্বশেষ ছবিটি কানাডার টরন্টোর ‘সাউথ এশিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এর ৮ম আসরে প্রদর্শিত হয়। এর আগে গেল ৩০ এপ্রিল ‘কাজান আন্তর্জাতিক মুসলিম চলচ্চিত্র উৎসব’-এর ১৫তম আসরে ছবিটি ‘রাশিয়ান গিল্ড অব ফিল্ম ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নেয়। ফেব্রুয়ারিতে বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ১১তম আসরে প্রদর্শনের পর গেল মাসে কম্বোডিয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও অংশ নেয় ছবিটি।চলতি বছরের শুরুর দিকে জয়পুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য’র পুরস্কার জিতে নেয় ছবিটি। ছবিটির প্রদর্শনী হয়েছে কোলহাপুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, চেন্নাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, ইন্দোনেশিয়ার জগজা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, ভারতের মুম্বাই থার্ড আই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও আওরঙ্গবাদ চলচ্চিত্র উৎসবে। তার আগে গেল অক্টোবরে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও সম্মানজনক চলচ্চিত্র উৎসব ‘বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এর ২৩ তম আসরে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় এই ছবিটি।ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মোট ১১ জন তরুণ পরিচালক। তাঁরা হলেন নুহাশ হ‌ুমায়ূন, আবদুল্লাহ আল নুর, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, মাহমুদুল ইসলাম, মীর মোকাররম হোসেন, মো. রবিউল আলম, তানভীর আহসান, রাহাত রহমান, সৈয়দ সালেহ আহমেদ সোবহান ও সৈয়দ আহমেদ শাওকী। ছবিটির মহরত করা হয় গত বছরের ১২ এপ্রিল। তারপর থেকেই নির্মাতারা ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় শুটিং শুরু করেন।‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ সিনেমা প্রসঙ্গে আবু শাহেদ ইমন বলেন, ‘এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয় রাজধানী ঢাকা। এই চলচ্চিত্রে উঠে এসেছে ঢাকার নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাপন, তাদের সংগ্রাম আর বেঁচে থাকার নিরন্তর যুদ্ধ। সেই সঙ্গে ঢাকার নিজস্ব সংস্কৃতিও ফুটে উঠেছে সেখানে।’ ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভাবনাটি আমার মাথায় অনেক দিন থেকে ঘুরছিল। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়াতে সিনেমা নিয়ে পড়াশোনার সময় ভেবেছি আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব এবং সেখানকার চলচ্চিত্র নিয়ে কিছু করব। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ফিচার ফিল্মের নাম ছিল “ওরা এগারো জন”। সেই ভাবনা থেকে নতুন প্রজন্মের এই ১১ জন চলচ্চিত্র নির্মাতার সঙ্গে কাজ করা। এরপর ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে চার মাস আমরা এই কাজটির জন্য ওয়ার্কশপ করেছি।’
বলিউডে চলছে সিক্যুয়াল তৈরির হিড়িক। বাদ নেই দোস্তানা ছবিটিও। বেশ আগেই শোনা গিয়েছিল, করণ জোহর প্রযোজিত সিনেমাটির সিক্যুয়াল হচ্ছে। অভিনয় করতে পারেন, এমন কয়েকজনের নামও শোনা যায়। এবার তিন কেন্দ্রীয় অভিনয়শিল্পীর নাম জানা গেল।বলে রাখা ভালো, দোস্তানা ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৮ সালে। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন জন আব্রাহাম, অভিষেক বচ্চন ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। আগে থেকেই জানা যায়, সিক্যুয়ালে থাকছেন না পুরোনো তারকারা। নাম উঠে আসে রাজকুমার রাও, আয়ুষ্মান খুরানা, ক্যাটরিনা কাইফ, আলিয়া ভাট, জাহ্নবী কাপুরদের। শেষমেশ দুজনকে চূড়ান্ত করা হয়। প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার স্থলে জাহ্নবী কাপুর ও অভিষেক বচ্চনের স্থলে রাজকুমার রাও। বাকি থাকল জন আব্রাহামের করা চরিত্রটি।এই চরিত্রে প্রথমে ভাবা হয়েছিল আয়ুষ্মান খুরানাকে। কারণ রাজকুমার রাও ও আয়ুষ্মান খুরানা জুটি হিসেবে তুখোড়। বারেলি কি বরফি ছবিতে এই জুটির অভিনয় ছিল অনবদ্য। কিন্তু আয়ুষ্মান খুরানাকে নিচ্ছেন না করণ জোহর। সেখানে দেখা যেতে পারে দোস্তানা ছবিরই জন আব্রাহামকে। এর মাধ্যমে দোস্তানা ছবিরও কেন্দ্রীয় তিন অভিনেতার একজন থাকলেন সিক্যুয়ালে।ধর্ম প্রডাকশনের ব্যানারে ছবিটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ২০২০ সালে। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে গুঞ্জন, অভিষেক ও জনের জায়গায় এবার রাজকুমার ও জনের রসায়ন দেখতে উম্মুখ হয়ে থাকবেন দোস্তানা-ভক্তরা। তাঁর সঙ্গে নতুন উঠতি তারকা শ্রীদেবীকন্যা জাহ্নবী কাপুর যোগ করবেন ভিন্ন মাত্রা। সূত্র: বলিউড হাঙ্গামা
নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে চারটি ছবির ঘোষণা দিলেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। গতকাল রোববার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে এ ঘোষণা দেন তিনি।ছবি চারটি হচ্ছে পাসওয়ার্ড ২, বীর, ফাইটার ও প্রিয়তমা। অনুষ্ঠানে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে ফিল্মস থেকে নির্মিতব্য এই ছবিগুলোর মধ্যে তিনজন পরিচালক কাজী হায়াত, মালেক আফসারী ও বদিউল আলম খোকন উপস্থিত ছিলেন।শাকিব খান আগেই বলেছিলেন, চলচ্চিত্রকে চাঙা করতে তিনি শুধু অভিনয় নয়, চলচ্চিত্রে বিনিয়োগও করবেন। তাই ছবির শুটিং চলাকালেই ছবিগুলোর কথা জানান দিলেন তিনি। শাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলচ্চিত্রপাড়ার গুটিকয় মানুষের কিছু কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দিয়েছে। সেসব এখন অনেকটাই কেটে গেছে। অনেক নতুন বিনিয়োগকারী চলচ্চিত্র বানাতে আগ্রহী হচ্ছেন। আমিও নিয়মিত প্রযোজনা করতে চাই, যাতে শিল্পী-কলাকুশলী সবাই কাজে ব্যস্ত থাকেন।’এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রযোজক নাসির উদ্দিন দিলু, মোহাম্মদ হোসেন, শামসুল আলম, খোরশেদ আলম খসরু, ইকবাল হোসেন, মেহেদী সিদ্দিকী মনির প্রমুখ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তেহরানের সঙ্গে কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, পারস্য অঞ্চলে যেকোনো সংঘর্ষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যার ফলে এ অঞ্চলে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তাঁর এ হুঁশিয়ারির জবাবে গতকাল রোববার যুদ্ধের বিপক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান ট্রাম্প। যুদ্ধ নয়, বরং চলমান সংকট নিরসনে ইরানের সহায়তা চায় যুক্তরাষ্ট্র।ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। উপসাগরীয় এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকারে হামলা ও ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে গত শনিবার নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নিষেধাজ্ঞা কী ধরনের, সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি। এদিকে ইরান তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার কথা অস্বীকার করলেও মার্কিন সামরিক ড্রোনের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তা ভূপাতিত করার কথা স্বীকার করেছে।আমেরিকাভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসির ‘মিট দ্য প্রেস’ প্রোগ্রামে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যুদ্ধে জড়ানোর পক্ষপাতী নই।’ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতকাল রোববার ট্রাম্পের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলেন, উপসাগরীয় অঞ্চলে চলমান উত্তেজনা নিরসনে তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় ওয়াশিংটন।পম্পেও বলেন, কোনো ধরনের পূর্বশর্ত ছাড়াই বৈঠকে অংশ নিতে রাজি ওয়াশিংটন। ইরান খুব ভালো করেই জানে—যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করতে হবে। ইরান রাজি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আলোচনা শুরু হতে পারে বলে আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন পম্পেও। যুক্তরাষ্ট্র সেই দিনের অপেক্ষায় আছে বলে জানান তিনি। ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন পম্পেও।আজ সোমবার ইরানের ওপর ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ অবরোধ আরোপের কথা জানিয়েছেন পম্পেও। উপসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে ইরান যে সম্পদ ব্যবহার করে, তার পরিমাণ সীমিত করতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। ইরান জানিয়েছে, পারমাণবিক চুক্তিতে কোনো ধরনের আপস তাঁরা করবেন না।আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে গতকালের হুতি বিদ্রোহীদের হামলা। ইরানসমর্থিত হুতি মিলিশিয়ারা আবহা বিমানবন্দর লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় সিরিয়ার এক নাগরিক নিহত ও ২১ জন সাধারণ নাগরিক আহত হয়েছে। ইয়েমেনে ইরানসমর্থিত হুতি বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে প্রায় চার বছর ধরে লড়াই চলছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট আবদ-রাব্বু মানসুর হাদি সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের শেষ দিকে হুতিরা হাদি সরকারকে সানার ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে। ২০১৫ সালে আরব উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট ইয়েমেনে দুই পক্ষের লড়াইয়ে অংশ নেয়।চলমান উত্তেজনা নিরসনে ইরানের ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙা করে তুলতে কোনো চুক্তির ব্যবস্থা করা যায় কি না ভাবছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, ইরান সমঝোতায় আসতে চায়। চুক্তি করতে চায়। আমার চুক্তি পারমাণবিক। ইরানের কাছে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারবে না।’এদিকে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না ইরান। তাদের দাবি, নতুন অবরোধের ঘোষণা কেবল প্রোপাগান্ডা। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরিবকে (আইআরআইবি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভি বলেন, এর আগে এত বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে যে নতুন করে আর কিছু চাপিয়ে দেওয়ার বাকি নেই।ইরান জানিয়েছে, তারা কোনো পারমাণবিক অস্ত্র খুঁজছে না। ২০০০ সালে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ফতোয়া জারি করে কোনো ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে না ইরান।২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয়টি দেশের করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর নিজেদের প্রত্যাহার করে ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ওই ঘটনা থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পারমাণবিক চুক্তিতে সই করা অন্য পাঁচটি দেশ যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের হস্তক্ষেপ চায় ইরান। ইরান মার্কিন স্বার্থে হামলা করতে পারে—নিজ দেশের এমন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত মাসে ইরানকে লক্ষ্য করে মধ্যপ্রাচ্যে রণসাজে সজ্জিত হয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চারটি ট্যাংকারে হামলা এবং জুন মাসে ওমান উপসাগরীয় এলাকায় জাপান ও নরওয়ের মালিকানাধীন দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে মধ্যপ্রাচ্যে আরও এক হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সামরিক ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনায় পরদিন ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করেন ট্রাম্প।নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে শর্তহীন আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৬২ রান বাংলাদেশের। লিটন ফিরেছেন আম্পায়ারের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে। ভালো খেলতে থাকা তামিম ফিরেছেন নিজের ভুলেক্রিকেট বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের স্বপ্নটা জিইয়ে রাখার জন্য তো বটেই, নিজেদের ক্রিকেটীয় অহম ধরে রাখার লড়াইও এটি। এ কারণেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার। এমন একটা ম্যাচে বাংলাদেশ শুরুতেই আম্পায়ারের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তের শিকার। লিটনের আউট নিয়ে প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে। সেই ধাক্কা দেওয়া তামিম অবশ্য ফিরেছেন নিজের ভুলে। পরের বলেই ফিরতে পারতেন সাকিব। আম্পায়ারের আরেকটি ভুল সিদ্ধান্ত! এবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন সাকিব। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক রিভিউ? সময়ই বলে দেবে। দুটি ভুল সিদ্ধান্তই দিয়েছেন আম্পায়ার রিচার্ড ক্যাটেলবরো। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে শর্ট কাভারে লিটনের বলটা লুফে নিয়েই হাশমতউল্লাহ শহিদি উল্লাস শুরু করে দেন। ক্যাটেলবরো নিশ্চিত ছিলেন না আউট কি না। সফট সিগনাল আউট দেখিয়ে সিদ্ধান্তটা নিতে তিনি পাঠান তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, বলটা তালুবন্দী হওয়া আগে মাটি ছুঁয়েছিল। মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগন্যালের কারণেই তৃতীয় আম্পায়ার আলিম দারও আউট দিয়ে দেন। লিটনের বিশ্বাসই হচ্ছিল না। মাঠে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মাথা নাড়তে নাড়তে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন আজ ওপেনারের ভূমিকায় তামিমের সঙ্গী হওয়া লিটন। শুরুতেই এমন সিদ্ধান্তের শিকার হওয়ার পর তামিম-সাকিব মিলে অবশ্য বেশ সামাল দিচ্ছিলেন। ২৫ রান উঠেছে এ জুটিতে। দারুণ এক চার মেরে পরের বলে নবীকে ব্যাকফুটে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান তামিম (৩৬)। সেটি ছিল ওভারের শেষ বল। রশীদের করা পরের ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লুর আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। সাকিব কোনো দ্বিধা ছাড়াই রিভিউ চান। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বেলের ইঞ্চির চারেক ওপর দিয়ে চলে যেত বল। বেঁচে যান সাকিব। তৃতীয় আম্পায়ার দারের উচিত ছিল লিটনের ব্যাপারেও একই ভূমিকা নেওয়া। ভিডিও রিপ্লে দেখার পরও দার কেন লিটনকে আউট ঘোষণা করলেন, সেটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে।  এরপর সাকিব ও মুশফিক দলকে দ্রুত গতিতে রান এনে দিয়েছেন। তবে ফিফটির সামনে এসে একটু থমকে গিয়েছিলেন সাকিব। ২৭তম ওভারে ৪৯ রানে থাকা সাকিব গুলবদিন নাইবের ৬ বল থেকে ১টি রানও নিতে পারেননি। পরে মোহাম্মদ নবীর পরীর ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় ফিফটি বুঝে নিয়েছেন সে সঙ্গে দুটি সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। ফিফটির একটু পরেই অবশ্য ফিরে গেছেন সাকিব। মুজিবের একটি ভেতরে ঢোকা বলে ৫১ রানে এলবিডব্লু  হয়েছেন সাকিব। ১৪৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। এরপরই আউট হয়েছেন সৌম্য সরকার। এবারও রিভিউ নাটক। সৌম্যকে এলবিডব্লু  দিয়েছেন আম্পায়ার রিচার্ড ক্যাটলবেরো। রিভিউতে দেখা গেছে সেটা আম্পায়ারস কল। অর্থাৎ আম্পায়ার আউট না দিলে আফগানিস্তান রিভিউ নিয়েও সৌম্যকে আউট করতে পারত না। আজ ফিফটি-ফিফটি সিদ্ধান্তগুলো বাংলাদেশের বিপক্ষেই যাচ্ছে।   এ ম্যাচে বাংলাদেশ দলে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দুজনই। চোটের কারণে এ দুজনের কেউই ছিলেন না ট্রেন্টব্রিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে।বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান।[তাৎক্ষণিক আপডেট দেওয়া হচ্ছে বলে কিছু ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে। পাঠকদের সদয় বিবেচনা কাম্য]
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে মন্ত্রিসভায় আজ সোমবার আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, পুরোনো ব্রিজগুলো পুনঃস্থাপন (রিপ্লেস) করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি নিয়ে আগেও আলোচনা হয়েছে। ট্রেনটিতে অতিরিক্ত যাত্রী (ওভারলোডেড) ছিল বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকটি হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুলাউড়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা জানান।মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম আশ্বস্ত করেছেন, সিলেটের সঙ্গে ও ঢাকা ও চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক হবে।মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ সুরক্ষা আইন ২০১৯-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ আইনে বিধান রয়েছে, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমুদ্রপথে বাংলাদেশে যত পণ্য আসবে, তার ৫০ শতাংশ বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহন করতে হবে। অর্থাৎ এই পণ্যবাহী জাহাজগুলো বাংলাদেশে নিবন্ধিত হতে হবে। বর্তমানে ৪০ শতাংশ পণ্য বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজে আনার নিয়ম রয়েছে।মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিদ্যমান আইনটি ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশ অনুসারে জারি হয়। আদালতের বাধকতা থাকায় এখন এটি নতুন করে করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত এই আইনে জরিমানার টাকাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ছোট ছোট কিছু বিষয় এ আইনে সংশোধন করা হয়েছে।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট পদক নীতিমালা খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই নীতিমালা অনুযায়ী এখন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক দেওয়া হবে। এর মধ্যে দুটি পদক হবে জাতীয়ভাবে। দুটি পদক হবে আন্তর্জাতিকভাবে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই পদক দেওয়া হবে। জাতীয় ক্ষেত্রে এই পদকের মূল্য হবে চার লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পদকের মূল্য হবে পাঁচ হাজার ডলার।সভায় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়া ঘটনার পর সিলেটের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে আজ সোমবার সকাল থেকে উপবন এক্সপ্রেসকে জয়ন্তিকা ট্রেন করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস কুলাউড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বরমচালে রেললাইন মেরামত না হওয়া পর্যন্ত সিলেটের সব ট্রেন কুলাউড়া থেকে চলাচল করবে।শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার কবির আহমদ বলেন, গত রাতের দুর্ঘটনার পর আখাউড়া জংশন স্টেশন থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন বরমচালে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ঢাকাগামী উপবন ট্রেনটি জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেন নামে দুপুরে কুলাউড়া ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন আজ বেলা একটা পর্যন্ত শমশেরনগর স্টেশনে আটকা পড়ে ছিল। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীমঙ্গল স্টেশনে আটকা পড়ে। এ দুটি ট্রেন কুলাউড়া স্টেশনে যাওয়ার পর উদয়ন ট্রেনটিকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন করে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ও পারাবত ট্রেনটি বিকেলে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন হয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।এদিকে পারাবত এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি খলে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় আজ সোমবার সকালে সিলেট থেকে কালনী এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। তবে বরমচালে কালভার্ট মেরামত না হওয়া পর্যন্ত সিলেট স্টেশনের বদলে কুলাউড়া রেলস্টেশন ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সহকারী স্টেশনমাস্টার সজীব কুমার মালাকার।সিলেট রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট স্টেশনের সঙ্গে সারা দেশের সঙ্গে আন্তনগরসহ ১১টি ট্রেন চলাচল করে। রেল দুর্ঘটনার পর সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বাতিল হওয়া উপবন এক্সপ্রেসের যাত্রীদের টিকিট ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সিলেট স্টেশনের সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ থাকলে কুলাউড়া স্টেশন হয়ে সারা দেশের সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে।সিলেটের সহকারী স্টেশন মাস্টার সজীব কুমার মালাকার বলেন, ভেঙে যাওয়া কালভার্ট মেরামতে রেলওয়ের প্রকৌশলী ও কর্মীরা কাজ করছেন। আজ রাতের মধ্যে কালভার্টটি মেরামত করে রেল চলাচল স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভেঙে যাওয়া কালভার্টটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না। সিলেট-আখাউড়া রেলপথে মাত্র একটি ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্ট আছে। সেটি মাইজগাঁও ও ভাটেরা স্টেশনের মাঝামাঝিতে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিলেটের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং আখাউড়া থেকে আসা ট্রেনগুলো থামবে এবং একই স্টেশন থেকে আবার নিজ নিজ গন্তব্যে চলাচল করবে। সিলেট স্টেশন থেকে যাঁরা টিকিট কেটেছেন, তাঁরা কালভার্টে রেললাইন মেরামত না হওয়া পর্যন্ত কুলাউড়া স্টেশন দিয়ে চলাচল করতে পারবেন।
বিভাগ ভিন্ন হলেও মা ও মেয়ে দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। মা আবেদা সুলতানা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, আর মেয়ে সাবিহা চৌধুরী ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রভাষক।আবেদা সুলতানার বললেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবা-ছেলে, বাবা-মেয়ে শিক্ষক রয়েছেন। তবে মা-মেয়ে শিক্ষকের সংখ্যা অত্যন্ত কম হওয়ায় তাঁদের ঘিরে সহকর্মীদের আগ্রহ উৎসাহ বেশি। এই আগ্রহ তাঁদের মধ্যে ভালো লাগা সৃষ্টি করে।আবেদা সুলতানা ১৯৯৬ সালে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। তিনি জানান, ১৯৮৫ সালে হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাসের পর চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয়ে চট্টগ্রাম চলে যান। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে অনার্স পাস করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি প্রথম শ্রেণি পেয়েছিলেন।আবেদা সুলতানা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়ার সময় তিনি রাজধানীর একটি কলেজে শিক্ষকতা করতেন। কুষ্টিয়া যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন। মেয়ে সাবিহা তখন ভিকারুননিসা নূন স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। স্বামী ব্যবসার প্রয়োজনে ওই সময় সৌদি আরবের জেদ্দায় ছিলেন। নিজ পরিবার আর শ্বশুরবাড়ি বিশেষ করে ছোট্ট সাবিহার উৎসাহে তিনি নিজের মায়ের কাছে মেয়েকে রেখে চলে যান কুষ্টিয়া। আবেদা বলেন, ‘আমার অত ছোট্ট মেয়েটা আমাকে অভয় দিয়ে বলল, আম্মু তুমি যাও, আমি থাকতে পারব। এখন এই সময়ে এসে মনে হয়, ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ না দিলে ভুল করতাম।’সাবিহা চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন ২০১৬ সালে। এর আগের এক বছর তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। সাবিহা জানান, ২০০৮ সালে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হন। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে গোল্ড মেডেল ও ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাওয়া সাবিহা এ বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে যাচ্ছেন।সাবিহা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আম্মুকে শিক্ষকতা করতে দেখেছি। আম্মুকে সব সময় পরিপাটি হয়ে ক্লাসে যেতে দেখতে ভালো লাগত। তবে মূল অনুপ্রেরণা পেয়েছি নিজের স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের দেখে।’তবে মেয়ে শিক্ষকতায় যোগ দিক—এটা শুরুতে চাননি মা আবেদা। তিনি বললেন, ‘আমি চেয়েছিলাম ও প্রকৌশলী হোক। কিন্তু ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইল। আমি ওর ইচ্ছেতে আর বাধা দিইনি।’সাবিহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ক্লাসের সময়ে মিলত না বলে আম্মুর সঙ্গে কখনো যাওয়া হতো না। এখন আমরা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রায়ই একসঙ্গে আসা-যাওয়া করি।’মা-মেয়ে দুজনই জানালেন, তাঁদের পছন্দ–অপছন্দে মিলই বেশি। নিয়মিত না হলেও তাঁরা রাঁধতে ভালোবাসেন। দুজনই ঘরে-বাইরে ভিন্ন ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করেন। ঘুরতে ভালোবাসেন। আর দুজনেরই পছন্দের পোশাক শাড়ি।
কাটমানি ইস্যুতে অবস্থান বদল করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি যেন অনেকটা ডিগবাজি খেয়েছেন। রাজ্যজুড়ে কাটমানি ইস্যুতে জোর আন্দোলন চলছে। জেলায় জেলায় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। প্রতিবাদী আন্দোলন চলছে।মমতা তাই এ বিষয়ে তড়িঘড়ি নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশমতো দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এক বিবৃতিতে বলছেন, একশ্রেণির সংবাদমাধ্যম মমতার বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করেছে। তৃণমূলের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ জনপ্রতিনিধি সৎ এবং পরিশ্রমী। তাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। ফলে, এই বিবৃতি দিয়ে তৃণমূল প্রকারান্তরে নিজেদের দুর্নীতিমুক্ত করতে চাইলেও মানুষ বুঝে গেছে, মমতা যা আগে বলেছেন, তাই-ই ঠিক। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা সরকারি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সত্যিই কাটমানি বা ঘুষ খেয়েছেন।কাটমানি ফেরত দেওয়ার আন্দোলন মূলত শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশের জেরে। গত মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে মমতা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পৌরসভার দলীয় চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের এক সভা ডেকেছিলেন। সেখানেই তিনি ঘোষণা দেন, ‘যাঁরা সরকারি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে কাটমানি বা ঘুষ নিয়েছেন, তাঁরা অবিলম্বে সেই টাকা ফেরত দিয়ে দিন। নইলে দুর্নীতি দমন শাখা তাঁদের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে।’মমতার এই ঘোষণার পর উত্তাল হয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। পশ্চিমবঙ্গজুড়ে শাসক দল তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ঘুষের টাকা বা কাটমানি ফেরতের আন্দোলন শুরু হয়। যেসব নেতা সরকারি প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে ঘুষ বা কাটমানি নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই এই আন্দোলন শুরু হয়। এর মধ্যে এক কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগে তৃণমূলের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করাও হয়েছে।তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কোনো সরকারি প্রকল্পের কাজ বা অনুদান দিতে নিয়মিত সাধারণ গরিব মানুষের কাছ থেকে ঘুষ বা কাটমানি আদায় করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা গরিবদের গৃহনির্মাণ প্রকল্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প—যেমন: কন্যাশ্রী, সমব্যথী, নির্মল বাংলা, ১০০ দিনের কাজ ইত্যাদি—থেকে ঘুষের টাকা নিয়মিত আদায় করতেন। নানা ভাতা ও অনুদান প্রদানের সময়ও তাঁরা সেই টাকায় ভাগ বসাতেন। তৃণমূল এত দিন এটি প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বুঝতে পেরেছে, গরিব মানুষের নানা প্রকল্প থেকে ঘুষ নিলে ফল ভালো হয় না। তবে বিষয়টিকে মমতা ভালোভাবে নেননি। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে এই ঘুষের টাকা নেওয়ার নানা স্পষ্ট ছবি দেখা গেছে। গ্রামের মানুষ তৃণমূলকে ছুড়ে ফেলেছে। তাই ফলাফল বিশ্লেষণ করে তৃণমূল বুঝতে পেরেছে, গরিব মানুষের জন্য সরকারি প্রকল্পের টাকা নেতারা যেভাবে ব্যবহার করেছেন এবং এই টাকা গরিবদের জন্য বরাদ্দ করতে গিয়ে নেতারা যেভাবে ঘুষ গ্রহণ করেছেন, সেটা এই রাজ্যের মানুষ মেনে নিতে পারেনি।মমতার কাটমানি নিয়ে কলকাতা নজরুল মঞ্চ ও তৃণমূল ভবনে নদীয়া জেলার নেতাদের দেওয়া নির্দেশ যে দলের কত ক্ষতি করেছে, সেটি উপলব্ধি করে গতকাল রোববার রাতে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতিতে বলেছেন, তৃণমূলের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ জনপ্রতিনিধি সৎ এবং পরিশ্রমী। সংবাদমাধ্যমের একাংশ তৃণমূল নেত্রীর কথা বিকৃত করেছে। অন্য দল থেকে আসা কিছু লোক এখন তৃণমূলের নাম ডোবাচ্ছে। সেসব লোকই দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত। পঞ্চায়েত ও পৌরসভার মুষ্টিমেয় কিছু লোক বিজেপিতে গেছে। তাদের উদ্দেশ্য অসৎ। তারা ভাবছে, অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। বিজেপিতে গেলেও অপরাধীরা ছাড় পাবে না।বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি নিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো কথা বলছেন। পশ্চিমবঙ্গে তো সবকিছু ওনার অনুপ্রেরণায় হয়। কিন্তু কাটমানির বিষয়টি বুঝতে ওনার আট বছর সময় লাগল। এরপরই তিনি বলেন, উনি সব জানতেন, এখন প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন।দিলীপ ঘোষও মন্তব্য করেন, ‘এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাসভবন ঘেরাও করে ধরনা দেওয়া উচিত। মানুষ সেটা করতে পারে।’
বিশ্বাসই হয় না তুমি নেই প্রতিদিনই তোমায় অনুভব করি, তুমি আছ আমাদের চারপাশেতোমায় আবেশিত হই প্রতিক্ষণ।কেনই হব না বলো বাবা? আমাদের যে প্রাণ সে তো তোমারইতোমারই আবেগ তো পেয়েছি আমরা আমাদের সব সত্তাজুড়ে যে শুধু তুমি।কী লিখব তোমায় নিয়ে বলো? তোমার স্মৃতি যে মহাসমুদ্রসমান, কোথায় পাব এত শব্দ বলো? তোমার তুলনা যে শুধু তুমি।নিশ্চিত তোমার এখনো খুব দুশ্চিন্তা হয়আমাদের সুখ আর নিরাপত্তা নিয়ে, যখন ছোট ছিলাম রাত জেগে বসে থাকতে কখন ফিরব বাড়ি।যখন বড় হলাম তখনো তোমায় দেখেছি একইভাবে।গল্প কবিতায় তোমায় খুঁজি প্রতিদিন প্রতিবেলায় তুমি ছায়াসঙ্গী, অবিনশ্বর সন্ধি আমাদের, বিচ্ছেদ হওয়ার নয় তোমার চলে যাওয়া যে সাময়িক ছুটি।তুমি ভালো থেকো ওপারে খুব ভালো থেকোএপারে ধরে রাখব তোমার স্মৃতি আমৃত্যু, তুমি অনুরণিত হও আমাদের হৃদয়জুড়েকী করে ভুলি তোমায় বলো?ড. মো. ফজলুল করিম: পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো, পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়, পেনসিলভানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।
বগুড়া-৬ আসনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। বগুড়া সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই আসনে আজ সকাল ৯টা থেকে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রথম দুই ঘন্টায় শহর-গ্রামে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। কোন কোন কেন্দ্রের বুথে প্রথম এক ঘন্টায় ভোট পড়েছে দুই থেকে তিনটি। উপস্থিতি কম থাকলেও ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট প্রার্থীরা।সকাল নয়টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রথম আলোর তিনজন সাংবাদিক নির্বাচনী এলাকার সাতটি কেন্দ্র ঘুরে ভোটার উপস্থিতি কম পেয়েছেন। ভোটারেরা বলছেন, ইভিএম নিয়ে ভীতি-সংশয়ের কারণে অনেকেই ভোট কেন্দ্রে আসছেন না। তবে কেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়ার পর ইভিএম নিয়ে সন্তষ্টি প্রকাশ করতেও দেখা গেছে ভোটারদের।সকল নয়টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও প্রথম একঘন্টায় ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল বগুড়ার শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথার অদূরে পিটিআই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। সকাল ১০টা ৩ মিনিট পর্যন্ত এই কেন্দ্রের ৩ নম্বর কক্ষে ৩৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে মাত্র ৩টি। ১০টা ৪ মিনিট পর্যন্ত ৫ নম্বর কক্ষে ৩৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৩ জন। এক ঘন্টা ৫ মিনিটে ৮ নম্বর কক্ষে ৩৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ৫টি। কেন্দ্রের ৬ নম্বর কক্ষে ভোটার সংখ্যা ৩৭৩ জন। এক ঘন্টা ১০ মিনিটে ভোট পড়েছে ৮টি। ১ নম্বর বুথে ৩৭৩ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ৬টি। ২ নম্বর বুথে ৩৭৬ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৪টি। ৪ নম্বর বুথে ৩৭৩ ভোটের মধ্যে একঘন্টা ১০মিনিটে পড়েছে ১০টি।প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৯৮৪। প্রথম একঘন্টায় ভোট পড়েছে ৩৯টি। নারী কেন্দ্র হওয়ায় দুপুরের পর ভোটার বাড়বে। একই চিত্র পিটিআই ইনষ্টিটিউট একাডেমিক ভবন কেন্দ্রেও। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৬৪৮টি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন,একঘন্টায় ভোট পড়েছে ১০৬টি। এরমধ্যে ৩ নম্বর বুথে ৩৭৯ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ১৭টি। ৪ নম্বর বুথে ৩৭৯ ভোটের মধ্যে একঘন্টায় পড়েছে ১২ ভোট। ২ নম্বর বুথে ৩৯৪ ভোটের মধ্যে পড়েছে ১১টি। ৩ নম্বর বুথে ৩৬৪ ভোটের মধ্যে প্রথম ঘন্টায় পড়েছে ১২টি।ইভিএম ভোট দেওয়ার পর শহরের রহমাননগর এলাকার ভোটার মালিক আহমেদ আলী বলেন, ইভিএম নিয়ে কিছুটা সংশয় ও ভীতি ছিল। তবে ভোট দেওয়ার পর মনে হচ্ছে, জীবনে এই প্রথম স্বতফুর্তভাবে ভোট দিতে পারলাম। পছন্দের প্রতীকে ভোট পড়া আগে কখনো এভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।কানুছগাড়ি এলাকার ভোটার জাহানারা বেগম বলেন, ইভিএমে ভোট চুরির ভয়, ভোট দিতে পারবো কীনা তা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে আসছেন না। তবে এখানে এসে ইভিএমে ভোট দেওয়ার পর মনে হচ্ছে ,ইভিএমে ভোট দেওয়া খুবই সহজ।শহরের উপশহর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৪০টি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়া বলেন, এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৮৮৮ ।একই চিত্র শহরের বাইরের কেন্দ্র গুলোতেও। বগুড়া সদর উপজেলার বেলাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল দশটা পর্যন্ত ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৬টি বুথে ভোট পড়েছে ১৩৭টি। সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রথম দুই ঘন্টায় ভোট পড়েছে ২৭২টি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম বলেন, কেন্দ্রে ভোট ভোটার ২ হাজার ৪৭৮টি। সদর উপজেলার নুনগোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ভোটার ৩ হাজার ৬০০। সকাল দশটা পর্যন্ত পড়েছে ১৯০টি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নূর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বাড়ছে।সদর উপজেলার বুজর্গধামা ফাজিল মাদ্রাসা পুরুষ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৮১১। ১০টা ৩ মিনিট পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১৫০টি। এরমধ্যে ৩ নম্বর কক্ষে ৪১০ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ২৯টি। বুজর্গধামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৭১৩। এঘন্টায় ভোট পড়েছে ১৪১টি। এরমধ্যে ৮ নম্বর বুথে প্রথম ঘন্টায় ৩৯১ ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১৩টি।রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভোট কেন্দ্রে সকাল দশটা পর্যন্ত প্রথম ঘন্টায় ২ হাজার ৮২৬ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ১০০টি।সকাল দশটায় পিটিআই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী টি জামান নিকেতা প্রথম আলোকে বলেন, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সব প্রার্থীর মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ণ সর্ম্পক এবং সহাবস্থান ভোটের দিন পর্যন্ত অটুট রয়েছে। ইভিএমে ভোট দেওয়ার পর খুশি ভোটারেরা। কয়দিন আগেই জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটারেরা। বিএনপি শপথ না নেওয়ায় এই নির্বাচন হচ্ছে। এ কারণে ভোটে মানুষের আগ্রহ কম। তবে মানুষের ভোটাধিকারকে অসম্মানের জবাব দিতেই অনেকেই ভোট দিতে আসছেন।সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষের কথা জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী জি এম সিরাজ । বেলা ১১টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। তাঁর আশা ভোটার উপস্থিতি সকালের দিকে কম হলেও দুপুরের পর তা বাড়বে। সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা এসএম জাকির হোসেন বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়ছে। এখন পর্যন্ত ভোটারের উপস্থিতি সন্তোষজনক। ইভিএমে ভোট দেওয়ার পর ভোটারেরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাজোট সমর্থিত জাতীয়পার্টির নুরুল ইসলাম ওমরকে প্রায় দেড় লাখ ভোটে পরাজিত করে বিজয়ী হন। শপথ না নেওয়ায় আসনটি শুন্য ঘোষণা করা হয়। এই আসনে ভোটারসংখ্যা ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৮। ১৪১ টি কেন্দ্রে ৯৬৫টি কক্ষে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।এবারে এ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টি ছাড়াও মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।১৯৭৯ থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত আসনটি একচ্ছত্র দখলে ছিল বিএনপির। বিএনপিবিহীন ২০১৪ সালের নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম এ আসনে সাংসদ হন।এবারের নির্বাচনে ১৪১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ১১টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ছাড়াও আইনশৃংখ্লা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৪ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচনী আইনশৃংখ্যলা রক্ষায় তাৎক্ষনিক বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনায় ২৫ জন নির্বাহী হাকিম নিয়োজিত রয়েছেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর নয়াপল্টনে বিএনপির অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রদলের কাউন্সিলের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কয়েকজন পদপ্রত্যাশী।আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছিল। ছাত্রদলের এই নেতারা সম্প্রতি ঘোষিত নেতৃত্ব নির্বাচনের তফসিল বাতিলে আন্দোলন করছেন।বেলা দেড়টার দিকে কর্মসূচি শেষ করে নয়াপল্টন থেকে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পাঁচটি ককটেলের বিস্ফোরণ হয়। তবে কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা জানা যায়নি। এ ছাড়া ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশীদের কয়েকজন কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের মারধর করেন। আজকের মতো অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে আগামীকাল মঙ্গলবার আবারও অবস্থানের ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধরা।বিক্ষুব্ধরা চলে যাওয়ার পর ছাত্রদলের কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়ে নয়াপল্টনে আবারও পদপ্রত্যাশীরা মিছিল বের করেন। তাঁরা সকালেও একবার মিছিল করেন।বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি ও কাউন্সিলের ঘোষিত তারিখ মানেন না জানিয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিলেন বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিদ্যুতের সংযোগও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাঁরা কাউকে কার্যালয়ে ঢুকতে দেননি। বিক্ষুব্ধরা চলে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।বিক্ষোভ চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান করছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের।২২ জুন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের ১২ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কাউন্সিলের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এতে বলা হয়, আগামী ১৫ জুলাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কাউন্সিল। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে।বিএনপি ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই বিলুপ্ত কমিটির নেতারা বয়সসীমা না রেখে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানে হামলা চালানোর জন্য অনুমোদন দিয়েও পরে তা বাতিল করার সংবাদটি যখন প্রকাশিত হয়েছে, তখন থেকেই পত্রিকাগুলো, বিশ্লেষকেরা, এমনকি সরকারি কর্মকর্তারা এর পেছনের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়েছেন।নিউইয়র্ক টাইমস–এ প্রথম ইরানে হামলা চালানোর অনুমোদনের খবরটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ইরানের হামলায় একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প পাল্টা হামলা চালানোর অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু গত শুক্রবার বিকেলে জানা গেল যে বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানির কথা বিবেচনা করে ট্রাম্প সেই হামলা চালানোর পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। ট্রাম্পের এই হঠাৎ ইউটার্নের কারণ হিসেবে একাধিক তত্ত্ব বেরিয়ে এসেছে।প্রথম কারণটি হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র জানতে পেরেছে যে ইরানের নেতৃত্ব কখনোই মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার নির্দেশ দেয়নি। তেহরান বলেছে যে ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় ছিল, তাই তারা এটি ভূপাতিত করেছে। তবে মার্কিন প্রশাসন বলেছে, ড্রোনটি আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপর ছিল।জ্যাক কিন নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন জেনারেল বলেছেন, ইরানের জাতীয় নেতৃত্ব যারা মার্কিন ড্রোনটি ভূপাতিত করেছে, তাদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারণ, তাঁরা চাননি যে কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি হোক। এই খবরের ওপর ভিত্তি করে হয়তো ট্রাম্প হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।কেন ট্রাম্প ইরানে বোমা হামলা বাতিল করেছেন, সে ব্যাপারে দুজন মার্কিন কর্মকর্তা একটি সংবাদমাধ্যমকে সম্পূর্ণ ভিন্ন উত্তর দিয়েছেন। একজন বলেছেন, মার্কিন বোমারু বিমানগুলো হয়তো হামলার জন্য প্রস্তুত হতে পারেনি। এ জন্য হামলার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। অন্যজন বলেছেন, মার্কিন অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাবের কথা চিন্তা করেই ট্রাম্প হামলা বাতিল করেছেন।ডেইলি বিস্ট–এর খবর অনুযায়ী, ফক্স নিউজের উপস্থাপক টাকার কার্লসনের পরামর্শক্রমে ট্রাম্প হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট–এর জশ রজিন টুইটারে লিখেছেন, বৃহস্পতিবার রাতে টাকার কার্লসনের অনুষ্ঠান দেখার পর ট্রাম্প ইরানের হামলা বাতিল করেছেন, এমন সামান্যতম জল্পনাও ওয়াশিংটনে নেই।কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা মার্কিন প্রশাসনের ইরানের ওপর ‘সর্বাধিক চাপ’ প্রয়োগের বিষয়টি দেখেছি। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং মার্কিন সম্পদের ওপর আক্রমণ প্রতিরোধে মধ্যপ্রাচ্যে আরও মার্কিন সেনা মোতায়েন। ইরানের বিরুদ্ধে হরমুজ প্রণালির কাছে কয়েকটি ট্যাংকার জাহাজকে ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দেশটি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে ২০১৫ সালে করা পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করে তারা ইউরেনিয়াম উৎপাদন শুরু করবে। কিছু বিশ্লেষক ইরানের কর্মকাণ্ডকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন। গত বছর ট্রাম্প প্রশাসন ওই পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে একতরফাভাবে এসব নিষেধাজ্ঞা জারি করে।ইরানের ওপর সামরিক আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে খোদ ট্রাম্প প্রশাসনে বিতর্ক আছে। ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং সিআইএ পরিচালক জিনা হাস্পেল এই হামলার পক্ষে ছিলেন। পম্পেও এমনও বলেছেন যে ইরানের হামলার কারণে কোনো মার্কিন সেনার মৃত্যু হলে তার জবাব তাঁরা দেবেন। অন্যদিকে, এ ধরনের মিশন সম্পর্কে খুব একটা নিশ্চিত নন মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রধান এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে। ট্রাম্প কয়েক বছর ধরে ইরানি শাসনের সমালোচনা করে আসছেন ঠিকই, কিন্তু আবারও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরু করাটা তাঁর জন্য এখনো কঠিন।আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতিবিষয়ক গবেষণার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল প্লেটকা বাজফিড নিউজের সঙ্গে একটি ফোন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পর্যবেক্ষকেরা বুঝতে পারছেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে কীভাবে ইরানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্পর্কে চিন্তা করছেন। তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য যে ইরানিদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা, সেটা অনেকেই বুঝতে পারছেন না।ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান প্রজেক্টের প্রধান আলী ভায়েজ বাজফিড নিউজকে পাঠানো একটি ই-মেইল বার্তায় বলেছেন, ইরানিরা ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশলগত বিভ্রান্তির বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন এবং তাঁরা এর সুবিধা গ্রহণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু তেহরানের বিষয়ে ট্রাম্পের ভুল হিসাব যুক্তরাষ্ট্রকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।তারপরও ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী ইরানে আঘাত হানা হতে পারে এমন খবর রয়েছে। যদি তা–ই হয়, তাহলে ইরান পাল্টা আঘাত হানবে না, তা কীভাবে নিশ্চিত হবে? ইরান হামলা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র কী করবে? উত্তরটা একটু কঠিন বটে।বাজফিড নিউজ থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিতহেইস ব্রাউন: বাজফিড নিউজের সাংবাদিক
ভোটে জিতে আইনপ্রণেতা হলে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতা নিশ্চিত—যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্রে এটা প্রযোজ্য নয়। আইনপ্রণেতা অভিযুক্ত হলে আদালত যেমন আইনপ্রণেতাদের (এমপি) সাজা দেন, তেমনি জনগণও কেড়ে নিতে পারেন তাঁর পদ। গত শুক্রবার এ ঘটনাই ঘটল।যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের ব্রেকন অ্যান্ড রেডনোরশায়ার আসনের এমপি ছিলেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ক্রিস ডেভিস। ২০১৬ সালে তিনি কার্যালয় সজ্জায় একটি ছবির জন্য ৭০০ পাউন্ডের বিল করেন, যা ভুয়া প্রমাণিত হয়। গত ২৩ এপ্রিল লন্ডনের একটি আদালত তাঁকে জরিমানা করেন। এর জেরে ডেভিসের নির্বাচনী এলাকার জনগণ তাঁর এমপি পদ কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব আনেন। শুক্রবার হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বার্কো বলেন, ব্রেকন অ্যান্ড রেডনোরশায়ার আসনের ১৯ শতাংশ ভোটার উপনির্বাচন চেয়েছেন। ফলে ডেভিস এমপি পদ হারিয়েছেন।২০১৫ সালে প্রণীত ‘দ্য রিকল অব এমপিস অ্যাক্ট’ আইনে বলা হয়েছে, মিথ্যাচার, দুর্নীতি কিংবা কোনো অপরাধে আইনপ্রণেতা দণ্ডিত হলে সংশ্লিষ্ট আসনের বাসিন্দারা ওই আসনে উপনির্বাচন দাবি করতে পারবেন। আসনের ১০ শতাংশ ভোটার স্বাক্ষর করলেই আসনটি শূন্য হবে।এর আগে গত মার্চে সড়কে গাড়ির গতিসীমা লঙ্ঘন করে অভিযুক্ত পিটারবোরা আসনের এমপি ফিওনা ওনাসানিয়া পদ হারান।
ওভাল, কার্ডিফ, ট্রেন্ট ব্রিজ, ব্রিস্টল, টন্টন—ইংল্যান্ডের পাঁচটি মাঠেই আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের অপূর্ব মিশেল ভীষণ মুগ্ধ করেছে। সাউদাম্পটনের রোজ বোলে যেন শুধুই আধুনিকতার ছোঁয়া। টাইটানিক ছেড়েছিল যে বন্দর থেকে, সেই বন্দরনগরী সাউদাম্পটনের অনেক স্থাপনা করা হয়েছে জাহাজের স্থাপত্যের সঙ্গে মিল রেখে। রোজ বোলও ব্যতিক্রম নয়।সকালে অবশ্য স্টেডিয়ামের স্থাপত্য নয়, বেশি টানল বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের পাশের গ্যালারিটা, যেটার নাম—‘শেন ওয়ার্ন স্ট্যান্ড’। ২০০০ থেকে ২০০৭—সাত বছর সাউদাম্পটনের কাউন্টি দল হ্যাম্পশায়ারে খেলেছেন সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার। হ্যাম্পশায়ারের হয়ে ৬৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ২৭৬ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া দলের বাইরে যে দলটায় তিনি সবচেয়ে বেশি খেলেছেন, সেটি হ্যাম্পশায়ার। ইংলিশ কাউন্টি দলটাও সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে ওয়ার্নকে, গ্যালারির নামকরণ দেখে সেটা বোঝা যাচ্ছে।আগেই বলা হলো, বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমটা শেন ওয়ার্ন গ্যালারির পাশেই। দলের সবার নিশ্চয়ই চোখে পড়েছে স্ট্যান্ডের নাম। এই স্ট্যান্ডের পাশে সিঁড়ি বেয়ে তাঁরা যখন উঠছেন, নামছেন—একটা আফসোস কি কাজ করছে না, ওয়ার্নের মতো না হোক, কাছাকাছি মানের একজন লেগ স্পিনারও যদি বাংলাদেশ দলে থাকত…। অথচ এই মাঠেই তাঁদের তৈরি হতে হচ্ছে প্রতিপক্ষের দুর্দান্ত এক লেগ স্পিনারের জন্য। অন্যদিকে আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খানকে নিশ্চয়ই অনুপ্রাণিত করছে ‘শেন ওয়ার্ন’ নামটা। বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডসের সংবাদ সম্মেলনেও উঠল প্রসঙ্গটা। ওয়ার্নের নামে শুধু গ্যালারিই নয়, এখানে লেগ স্পিনাররা ভালোও করে। বাংলাদেশ দলে কোনো লেগ স্পিনার নেই কিন্তু আফগানিস্তান দলে আছে, এটি নিশ্চয়ই কাজে দেবে প্রতিপক্ষকে। তবে রোডস বিষয়টি দেখছেন এভাবে, ‘বিশ্বকাপে বাঁহাতি স্পিনার, অফ স্পিনারের সঙ্গে একজন লেগ স্পিনার নিয়ে আসতে পারলে ভালো হতো। এটা যেহেতু সম্ভব নয়, আমাদের সেরা স্পিনারদের নিয়েই ভাবতে হবে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে লেগ স্পিনারের স্বল্পতা আছে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আপনি ভালো করলে খুব দ্রুতই বিখ্যাত হয়ে যাবেন। শেন ওয়ার্ন এখানে কাউন্টি খেলেছে। খুব ভালো খেলেছে। তবে সে বিখ্যাত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলে।’কাল সাউদাম্পটনে বাংলাদেশের ফিঙ্গার স্পিনাররা ‘বিখ্যাত’ হতে পারলেই হয়!
হাঁপানি রোগীদের শ্বাসটান আকস্মিকভাবেই ওঠে। বিশেষ করে হঠাৎ ঠান্ডা আবহাওয়ায়, মৌসুম পরিবর্তনের সময়, ধুলাবালু লাগলে, ঘর ঝাড়মোছ করলে বা ফুলের পরাগরেণুর সংস্পর্শে রোগীর হাঁপানির টান ওঠে। ভাইরাস সংক্রমণ, সর্দি-কাশিও এই সমস্যার জন্য দায়ী। যাদের হাঁপানি আছে তাদের জেনে রাখা ভালো এমন হঠাৎ শ্বাসটান উঠলে, বিশেষ করে ছোটদের হলে, সঙ্গে সঙ্গে কী করা উচিত।• রোগীকে সোজা হয়ে বসতে বলুন ও আশ্বস্ত করুন যে আতঙ্কের কিছু নেই।• উপশমকারী সালবিউটামল বা সালবিউটামল ও ইপরাট্রোপিয়ামযুক্ত ইনহেলার স্পেসারের সাহায্যে ধীরে ধীরে পাঁচটি চাপ নিন। স্পেসার না থাকলে কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে পারেন।• স্পেসারের মধ্যে প্রতিবার এক চাপ দিয়ে তা থেকে পাঁচবার শ্বাস নিতে হবে। এভাবে পাঁচবার চাপ দিন। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে খেয়াল করুন, শ্বাস বড় করে ওষুধ ঠিকমতো টেনে নেওয়া হচ্ছে কি না, খেয়ে ফেললে কাজ হবে না।• ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। বিশ্রাম নিন। তারপরও শ্বাসকষ্ট না কমলে আবার পাঁচ চাপ নিন। এভাবে মোট পাঁচবার (মোট ২৫ চাপ) নেওয়া যেতে পারে।• এরপরও শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানির টান না কমলে রোগীকে কাছাকাছি হাসপাতালে নিতে হবে বা নেবুলাইজার যন্ত্রের সাহায্য লাগবে। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত পাঁচ চাপ করে ইনহেলার নিতে থাকবেন।• শুরুতেই জিব, নখ বা আঙুল নীল হয়ে এলে, শ্বাসকষ্টের জন্য কথা পর্যন্ত না বলতে পারলে বা চেতনা হারিয়ে যেতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়াই ভালো। এ ক্ষেত্রে নেবুলাইজার ছাড়াও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।প্রশ্ন-উত্তরপ্রশ্ন: আমার বয়স ২৬। আমি একজন মাদ্রাসাশিক্ষক। দিনের বেশির ভাগ সময়ই বসে থাকতে হয়। কোমর খুব ব্যথা করে আর মেরুদণ্ডের হাড়েও ব্যথা করে। ঘুম থেকে ওঠার পরই কোমর আর মেরুদণ্ডের হাড়ে বেশি টের পাই। করণীয় কী?উত্তর: দীর্ঘ সময় বসে বা উবু হয়ে থাকার কারণে, ভুল দেহভঙ্গির কারণে এমন সমস্যা হতে পারে। কিন্তু মনে রাখা ভালো, আপনার বয়সী পুরুষদের অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস নামের বাতরোগ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। যদি ঘুম থেকে ওঠার পর বা বিশ্রাম নেওয়ার পর ব্যথা বেশি হয়, সন্ধি স্টিফ বা অকেজো মনে হয়, তবে মেডিসিন বা বাতরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।ডা. রাশেদুল হাসান, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আগামীকাল পড়ুন: হাতের যত্ন নিনআমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: valothakun@prothomalo.com
প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন জহির সুমন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন এ শিক্ষার্থী একজন ডিজাইনার। ৩৯ বছর বয়সী সুমন বৈশাখী টেলিভিশনে কাজ করতেন।শৈশবে বাতজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন সুমন। পরিণত বয়সে রোগটি তাঁর শরীরে নানা জটিলতা তৈরি করে। হৃৎপিণ্ডের একটি ভালভ অকেজো হয়ে পড়েছে তাঁর। হৃদ্‌রোগ ও ফুসফুসের সংক্রমণের চিকিৎসা চলাকালে তাঁর স্ট্রোক হয়। এখন তাঁর পরিস্থিতি সংকটজনক।সামগ্রিক ঝুঁকি বিবেচনায় দেশের ডাক্তাররা সুমনের অস্ত্রোপচার করতে পারছেন না। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হবে। চিকিৎসার পুরো ব্যয় সুমনের পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।দ্রুত বিদেশে নিয়ে না গেলে তাঁর আবার স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা আছে।সুমনের চিকিৎসায় সহায়তার জন্য তাঁর পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।সাহায্য পাঠানো যাবে: নাজমুল হক রেজওয়ান, ব্যাংক এশিয়া, অ্যাকাউন্ট নম্বর ৫০৩১১০০৬০২৫। অ্যাকাউন্ট নাম: মো. জহিরুল হক, যমুনা ব্যাংক, অ্যাকাউন্ট নম্বর ০০০১০৩১০০৭০৭৫৯। বিকাশ ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট: ০১৯১১৫৮৮৫৬৩।
পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত ৪৭৩টি উপজেলার নির্বাচনে ১৪৯টিতে চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১৪০ জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এসব উপজেলায় দলীয় বিদ্রোহীদের কাছে হেরে যান সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থীরা। বিদ্রোহীদের পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠেও নেমেছিলেন আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-সাংসদ।নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সর্বশেষ ১৮ জুন অনুষ্ঠিত ১৮টি উপজেলার নির্বাচনে ৯টিতে চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ৪৭৩টি উপজেলার মধ্যে ১০৯টিতে চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রয়োজন হয়নি। সব মিলিয়ে ৫ ধাপে আওয়ামী লীগ থেকে ৩২০ জন চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছেন ১৪৯ উপজেলায়। জাতীয় পার্টির তিন এবং জেপির এক প্রার্থী জিতেছেন। পার্বত্য তিন জেলার কয়েকটি উপজেলায় আঞ্চলিক দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র পদে জয়ী হয়েছেন। গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলায় আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। সেখানে সবাই ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, সঠিক প্রার্থী বাছাই করতে না পারা এবং দলীয় কোন্দলের কারণে মূলত বিদ্রোহী প্রার্থীরা বেশি সংখ্যায় জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-সাংসদদের অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ নেন। তা ছাড়া এবারের উপজেলা নির্বাচন তুলনামূলক সুষ্ঠু হওয়ায় অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।উপজেলা নির্বাচনের প্রথম চার ধাপে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ ওঠে ৫৫ জন দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পঞ্চম ধাপেও একাধিক সাংসদ বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাংসদদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এবারের উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের জয়ে দলীয় ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অসারতা প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বলা হয়েছিল, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হলে দলে শৃঙ্খলা আসবে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে এর বিপরীত চিত্রই দেখা গেছে। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে মানের অবনতি হওয়াই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরাজয়ের বড় কারণ।পাঁচ ধাপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেউ কেউ স্থানীয় সাংসদের আত্মীয়। আবার কেউ কেউ একান্ত অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাংসদেরা সরাসরি ঘোষণা না দিলেও তাঁদের সমর্থিত প্রার্থীকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। সাংসদদের অনুসারীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রচারে অংশ নেন। আবার কোনো কোনো সাংসদ আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে মাঠেও নেমেছেন। নির্বাচন চলাকালীন ১৪ জন সাংসদকে এলাকা ছাড়তে বলে নির্বাচন কমিশন।মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ওবায়দুর রহমান খান। তিনি সাবেক নৌমন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ শাজাহান খানের ছোট ভাই এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি। এই পদে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে। তিনি মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারী।জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, শাজাহান খান বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে যোগসূত্র রেখে তাঁর ভাইয়ের পক্ষে ভোট সংগ্রহ করেছেন।খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী এজাজ আহমেদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ার হেরেছেন প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিরোধিতাই পরাজয়ের মূল কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয় জনগণ ও রাজনীতিসংশ্লিষ্টরা।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে দলের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আভাস দিয়েছেন তিনি।
ইংলিশ মাধ্যম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আইমান খৈয়াম জানাল, তার বাবা ব্যাংকার। আর মা? প্রশ্নের উত্তরে বলল, ‘মা কোনো কাজ করেন না, মা বাসায় থাকেন।’ বাসায় কিছু করেন কি না, পাল্টা প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, রান্নাবান্নাসহ বাসার সবকিছু মা-ই করেন। রাজধানীর চিত্র এটি। মায়ের মজুরিবিহীন কাজগুলোর স্বীকৃতিতে এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে।আর যে নারী বাইরে চাকরি করেন, আবার ঘরও সামলান, সে ক্ষেত্রেও পরিবার ঘরের কাজের স্বীকৃতিটুকু দিতে কুণ্ঠাবোধ করছে। ফলে বেশির ভাগ শিশু ছোটবেলা থেকেই ‘মা কোনো কাজ করেন না’—এ ধরনের মনোভাব নিয়ে বড় হচ্ছে। এই শিশু বড় হয়ে নিজের সংসারেও মনে করেন, স্ত্রী তো কোনো কাজ করেন না।গত বছর বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ম্যান অ্যান্ড ম্যাসকুলিনিটিস স্টাডিজ (সিএমএমএস) পরিচালিত ‘ব্রেভম্যান ক্যাম্পেইন’–এর প্রতিবেদন বলছে, মায়ের কাজ সম্পর্কে ১২ শতাংশ ছেলে জানিয়েছিল, তাদের মা কাজ করেন। তবে ক্যাম্পেইন শেষে এই শিশুদেরই সচেতন করার পর ৯৬ শতাংশ একবাক্যে বলতে পারে, তাদের মা কাজ করেন।সিএমএমএস ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ‘ব্রেভম্যান’ ক্যাম্পেইনের একটি কার্যক্রমে ছেলে শিক্ষার্থীদের ডায়েরি দেওয়া হচ্ছে। ডায়েরির একটি অংশে লেখা, আমার মা। ছেলে শিশুরা সেখানে মা, মায়ের কাজসহ বিভিন্ন বিষয়ে লিখে। একসময় তারা বুঝতে পারে, সংসারে মায়ের ভূমিকা কতটুকু। ডায়েরিতে মায়ের বক্তব্যও থাকে।২০১৩ সালে ডায়েরিতে জামালপুরের এক শিক্ষার্থী লিখেছে, ঘরের কাজ করার পর মা বিশ্রাম নেওয়ার সময় খুব কম পান। তাই এ কাজে সন্তানদের সাহায্য করা প্রয়োজন। আর মা লিখেছেন, ছেলে মায়ের কষ্ট বুঝতে পারায় তিনি খুব খুশি হয়েছেন।চলতি বছর দেশের ৫০টি স্কুলে ‘ব্রেভম্যান’ ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। ক্যাম্পেইনে অংশ নেওয়া গাইবান্ধা জেলার পিয়ারাপুর আই জি এম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জয়নাল আবেদিন বলল, ‘ মা রাতদিন সব সময়ই কাজ করেন।’ এখন জয়নাল তার মায়ের কাজে সহায়তা করে । প্রতিষ্ঠানটির বাংলা বিভাগের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জানালেন, ব্রেভম্যান ক্যাম্পেইনটি মাত্র তিন মাস ধরে শুরু হয়েছে। তবে এ সময়েই যে অগ্রগতি, ভবিষ্যতে তা অনেক কাজে দেবে।সিএমএমএসের চেয়ারপারসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বললেন, পরিবারের সদস্যদের নারীর কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। এ ক্যাম্পেইনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে, মা কাজ করেন, সন্তানদের এটা বোঝানো। আর এ উপলব্ধি যখন হবে, তখনই ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়বে। এ বিষয়টিকে অভ্যাসে পরিণত করলে নারীদের প্রতি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন আসবে।বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বললেন, নারীর কাজের স্বীকৃতি দিতে রাষ্ট্রের নীতি, শিক্ষাসহ সমাজের সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে হবে। শিশুরা যখন দেখবে, বাবা বা পরিবারের অন্যরা তার মায়ের কাজকে সম্মান করছে, তখন সে–ও সম্মান করবে। একটি শিশুর মানসিকতা গঠনে পারিবারিক শিক্ষাটা জরুরি। শিক্ষা পাঠক্রমেও নারীর কাজের স্বীকৃতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধূরী বললেন, নারীর মজুরিবিহীন শ্রমের স্বীকৃতির পথে বড় বাধা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা। তবে শিশুদের সচেতনতামূলক কার্যক্রমে নারী মানেই ঘরের কাজ করবে, এ ধারণা যাতে বাচ্চাদের মাথায় ঢুকে না যায়, তা মনে রাখতে হবে।
মার্কিন মডেল প্যারিস জ্যাকসন তাঁর প্রেমিক ও বন্ধুদের নিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ছুটি কাটাচ্ছেন। আগামীকাল ২৫ জুন তাঁর বাবা ‘কিং অব পপ’ মাইকেল জ্যাকসনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। এই দিনের শোক কাটাতেই কাছের মানুষদের নিয়ে প্রিয় শহরে সময় কাটাচ্ছেন প্যারিস।প্যারিস জ্যাকসনের প্যারিসে অবকাশযাপনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে। কারণ, কয়েক মাস ধরেই ২১ বছর বয়সী এই মডেল নানা কারণে নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখছিলেন। মাঝে খবর ছড়িয়েছিল, বিষণ্নতা ও অবসাদের কারণে প্যারিস আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। পরে তাঁকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালের বাইরেও দেখা গিয়েছিল, হাতে ছিল ব্যান্ডেজ। কিন্তু সুস্থ হয়ে প্যারিস সেসবকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সব শেষ মাসখানেক আগে বাবা মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে ওঠা শিশুদের ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগ প্যারিসের জীবনকে আরও জটিল করে দেয়। চারদিকে বাবা মাইকেল জ্যাকসনকে ঘিরে ছড়ানো অভিযোগ যন্ত্রণা দিতে শুরু করে প্যারিসকে। তাই বেশ কয়েক দিন ধরে নিজেকে সবকিছু থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন তিনি। অবশেষে গত সপ্তাহে ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘এই হলো আমার দুর্লভ সেই হাসি। কারণ, আমি আছি সেই শহরে, যার সঙ্গে আছে নাড়ির টান।’প্যারিসের এক বন্ধু সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস অনেক কঠিন সময় গেছে প্যারিসের জন্য। তাঁকে মানসিক সুস্থতার জন্য চিকিৎসক ও পুনর্বাসনের সহায়তা নিতে হয়েছে। এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে প্যারিস। কাছের মানুষদের সান্নিধ্য ও স্বস্তির পরিবেশ দরকার তাঁর। সবাই প্যারিসের জন্য সেটাই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। এ জন্য মাইকেলের প্রয়াণদিবসের সময়ে তাঁর প্যারিসে যাওয়া। সূত্র: মিরর
চক্ষু চড়কগাছ! প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে শিক্ষক আনা হবে। মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিদেশ থেকে শিক্ষক আনা হবে। বাজেটের এই প্রস্তাব আমাদের শিক্ষার দৈন্য দশাকেই প্রকাশ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত যদি বিদেশি শিক্ষক নিয়েই আসা হয়, তবে এত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বরাদ্দ বৃদ্ধি করে কী লাভ? আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়িয়েছি, শিক্ষক–শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত উপযুক্ত শিক্ষক তৈরি করতে পারিনি।কোন পর্যায়ে শিক্ষক আনা হবে, তা নিশ্চিত না। তবে আলোচনার সুবিধার জন্য ধরে নেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগগুলোয় বিদেশ থেকে দক্ষ শিক্ষক আনা হবে। এ ক্ষেত্রে জাপানের সম্রাট মেইজির উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। জাপানের পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে মিলিয়ে ফেলা সমীচীন না। আমাদের বিশাল মানবসম্পদ রয়েছে। এই জনসম্পদের চার কোটি এখন বেকার; বাংলাদেশ পরিসংখ্যার ব্যুরোর হিসাবমতে। এদের আমরা উপযুক্ত ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। কারণ, গণহারে বিশ্ববিদ্যালয়–কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। নিম্নমানের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরাজনীতির কারণে অপ্রয়োজনীয় বিভাগ চালু করা হয়েছে। কিন্তু মান ও গবেষণার দিকে নজর দেওয়া হয়নি।সব সরকারই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে গুরুত্ব দিয়েছে বলে দাবি করে। কিন্তু শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ১৫ দশমিক ২ শতাংশ অর্থ, যা দেশজ মোট উৎপাদনের ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বাজেটের ২০ শতাংশ অর্থ বা দেশজ উৎপাদনের ৬ শতাংশ সম্পদ শিক্ষা খাতে ব্যয় করাই আদর্শ। শুধু বরাদ্দ বৃদ্ধি করলেই হবে না; এর সঙ্গে বাস্তবভিত্তিক ও সময়োপযোগী নীতিরও বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে বটে, কিন্তু শিক্ষাবিষয়ক নীতিগুলো কার্যকর ও শ্রমবাজারভিত্তিক মনে হচ্ছে না। উচ্চশিক্ষার কথাই ধরুন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ খোলার হিড়িক পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এমন সব বিভাগ খোলা হয়েছে, যেগুলো একটি–দুটি কোর্স বা বড়জোর মাস্টার্স প্রোগ্রাম হিসেবে পড়ালেই যথেষ্ট। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন এবং টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি নামে তিনটি বিভাগ খোলা হয়েছে। এতে করে নিজস্ব লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরাজনীতির সুবিধা হয়েছে। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নতুন নতুন বিভাগ চালু হয়েছে, ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত হয়নি।উপযুক্ত শিক্ষক তৈরি করতে না পারার অন্যতম কারণ গবেষণায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ না দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে মাত্র ৫০ কোটি টাকা বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। উন্নত উচ্চশিক্ষার অন্যতম প্রধান অংশই হচ্ছে গবেষণা। কেবল শ্রেণিকক্ষে পাঠদানেই উপযুক্ত শিক্ষক তৈরি হয় না; শ্রেণিকক্ষে অর্জিত তাত্ত্বিক জ্ঞানকে পরীক্ষার সুযোগ করে দেয় গবেষণা। উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষক–শিক্ষক তৈরির কারখানা। এক অধ্যাপকের কতগুলো গবেষণা প্রকল্প চলছে, তার ওপর নির্ভর করে অধ্যাপকের মান। উন্নত বিশ্বে অধ্যাপকের সংখ্যা ও গবেষণাকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় সমান। এখানে বলে রাখা ভালো, অধ্যাপকেরা উন্নত বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধীনেই গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন করেন। আর আমদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেকার ও রাজনৈতিক ক্যাডার তৈরি কারখানা। ইউরোপের দুটি দেশে আমার শিক্ষা লাভের সুযোগ হয়েছে। সুইডেন ও জার্মানিতে দেখেছি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাভিত্তিক। আর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলো শ্রমশক্তি তৈরির জন্য কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতেও গবেষণা হয়। তবে এরা গবেষক তৈরি থেকে জনশক্তি তৈরিতে বেশি মনোযোগী। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা বাদ দিয়ে জনশক্তি তৈরিতেই মনোযোগী। সন্দেহ নেই আমরা ভালো ভালো আমলা বা করপোরেট হাউসগুলোর জন্য জনশক্তি তৈরি করতে সফল হচ্ছি। কিন্তু গবেষক তৈরি করতে পারিনি। তাই উপযুক্ত শিক্ষকের সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণেই সরকার বিদেশ থেকে শিক্ষক আনার কথা চিন্তাভাবনা করছে।বিদেশ থেকে শিক্ষক এনে সুবিধা হবে না যদি গবেষণার পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও সুবিধা না থাকে। কারণ, বিদেশি শিক্ষকেরাও এসে গবেষণার সুযোগ-সুবিধার খোঁজ করবেন। অন্যথায় মানসম্পন্ন শিক্ষকেরা আসতে চাইবে না। কেবল মেধাবী শিক্ষক দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের মাধ্যমে ভবিষ্যতের শিক্ষক তৈরি করা যাবে না। যদি তা–ই হতো, তবে আমাদের আর বিদেশে শিক্ষকের জন্য খোঁজ করতে হতো না। দেশে মেধাবী শিক্ষার্থীর অভাব নেই। কিন্তু গবেষকের অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব ও শিক্ষকরাজনীতির জন্য অনেকেই গবেষণায় উৎসাহিত হচ্ছেন না।পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথমেই গবেষণায় বরাদ্দ কয়েক গুণ বাড়াতে হবে। হুটহাট করে নতুন নতুন বিভাগ শুরু না করে ওই অর্থ বিদ্যমান বিভাগগুলোয় গবেষণার জন্য বরাদ্দ দেওয়া উচিত। বরং বিভিন্ন বিভাগের অধীনে একাধিক মাস্টার্স প্রোগ্রাম শুরু করা যেতে পারে। যেমন ঢাবির ওই তিনটি বিভাগ বন্ধ করে দিয়ে ওই অর্থ গবেষণার জন্য গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকদের দেওয়া যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভিসি ও ডিন হওয়ার জন্য শিক্ষকেরা রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করেন। ভিসি ও ডিন হওয়ার জন্য কিছু নিয়মকানুন যুক্ত করা উচিত। যেমন ভিসি হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৫০টি পিএইচডি ও এমফিল গবেষণা তত্ত্বাবধানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ডিন হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৩০টি। গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব লাভের জন্য শিক্ষকদের নির্দিষ্টসংখ্যক গবেষণা প্রকল্প সম্পন্ন করতে হবে। বিদেশি পিয়ার রিভিউ জার্নালে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ গবেষণার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষকদের গবেষণায় আকৃষ্ট করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার ন্যূনতম যোগ্যতা হবে পিএইচডি। তবেই মানসম্পন্ন শিক্ষক তৈরি হবে।বিদেশি শিক্ষক না এনে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিক্ষাবিনিময় প্রকল্প শুরু করা উচিত। সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে শুরু করা যেতে পারে। আমাদের শিক্ষকেরা এক সেমিস্টার বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে আসবেন। ওদের শিক্ষকেরা এসে আমাদের এখানে পাঠ দান করবেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা যাবে ওদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওদের শিক্ষার্থীরা আসবেন।এসবের পাশাপাশি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। দলীয় ক্যাডারদেরই নিয়োগ দিন। কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে অপেক্ষাকৃত মেধাবী ও গবেষণায় অভিজ্ঞদের নিয়োগ দিতে হবে। কয়েক বছর আগের একটা ঘটনা বলি। বিভাগে সর্বোচ্চ রেকর্ড নম্বর পাওয়ার পরও একজন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেননি। কারণ, নিয়োগ পরীক্ষার দিন কয়েকজন প্রার্থীসহ ভিসিকে আটকে রাখা হয়। উদ্দেশ্য, দলীয় ক্যাডারকে নিয়োগ দেওয়া। হয়েছেও তা–ই। যখন যোগ্য প্রার্থীদের আটকে রাখা হয়, অপহরণ করা হয়, গবেষণায় বরাদ্দ থাকে না, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাজেটের ৭০-৭৫ ভাগ শিক্ষক–কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য খরচ করা হয়, তখন দেশে উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব থাকবেই। এটাই স্বাভাবিক। বিদেশি শিক্ষক দিয়েও সেই অভাব পূরণ করা যাবে না। পরিস্থিতিরও কোনো পরিবর্তন আসবে না। এই ব্যর্থতার দায় যাঁদের, তাঁদের জায়গায়ও কি বিদেশি পরিচালক, নেতা, প্রশাসক আমদানি করে বসানো যায় না? ড. মারুফ মল্লিক: ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো, ইনস্টিটিউট অব ওরিয়েন্ট অ্যান্ড এশিয়ান স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অব বন।
বাউন্ডারির পাশে দাঁড়িয়ে আইসিসির প্রতিনিধিকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মাঠকে পেছনে রেখে দাঁড়ানোয় খেয়ালই করেননি মাঝমাঠ থেকে সাব্বির রহমানের পুল শট ধেয়ে আসছে সেদিকে। গ্যালারির চেয়ারে আছড়ে পড়ে বলটা এসে লাগল মিরাজের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে মাথায় হাত দিয়ে বসে গেলেন তিনি।রোজবোলে কিছু সময়ের জন্য আতঙ্ক ছড়াল। খেলোয়াড়েরা দৌড়ে গেলেন, ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে সেদিকে ছুটলেন ফিজিও তিহান চন্দ্রমোহনও। একটু পরই মিরাজ উঠে দাঁড়িয়ে ফিজিওর সঙ্গে হেঁটে চলে গেলেন ড্রেসিংরুমের দিকে। জানা গেল গুরুতর কোনো চোট পাননি মিরাজ। ব্যাটিংও নাকি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাঁকে সেটি করতে দেওয়া হয়নি। কাল এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিরাজের আজ খেলা নিয়েও কোনো সংশয় ছিল না।ছোট্ট এ ঘটনাটি ছাড়া বাংলাদেশ দলের অনুশীলন হলো নির্বিঘ্নেই। আকাশ দিনভর মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি। মিরাজের খেলা নিয়েও সৃষ্টি হয়নি সংশয়, বরং পিঠের ব্যথা কাটিয়ে আজ সম্ভবত রুবেল হোসেনের জায়গায় দলে ফিরছেন আগের ম্যাচে না খেলা পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। মোসাদ্দেক হোসেনের কাঁধের চোটও ভালো হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। সাব্বিরের জায়গায় তিনিও দলে ফিরবেন আজ। গত ম্যাচের দলে আজ পরিবর্তনের সম্ভাবনা এ দুটিই।পরশু স্পিন দিয়েই ভারতের ব্যাটসম্যানদের ২২৪ রানে আটকে রেখেছিল আফগানিস্তান দল। বাংলাদেশের বিপক্ষেও নিশ্চিতভাবেই রশিদ খানের নেতৃত্বে সেই অস্ত্রটাই ব্যবহার করতে চাইবে তারা রোজ বোলের উইকেটে। স্পিনশক্তিতে বাংলাদেশও কম যাবে না নিশ্চয়ই! সাকিব আল হাসান, মিরাজের সঙ্গে যোগ হচ্ছেন আরেক অফ স্পিনার মোসাদ্দেক। সঙ্গে পেস আক্রমণের কাছ থেকেও আশাটা কম নয়। কাল অনুশীলনে মোস্তাফিজ, সাইফউদ্দিনদের ইয়র্কার বলে বেশ মনোযোগী মনে হলো। কোচ স্টিভ রোডস অবশ্য জানালেন, তা বিশেষ কোনো পরিকল্পনা থেকে নয়। অনুশীলনকে প্রাণবন্ত করে তুলতেই ওটা করা, ‘আমরা বোলারদের সঙ্গে মজা করছিলাম। নইলে অনুশীলন ম্যাড়মেড়ে হয়ে যায়। ব্যাটসম্যানদের বুটে বল করার কথা বলে ওদের চ্যালেঞ্জ করছিলাম। আমার আর সাইফউদ্দিনের মধ্যে চ্যালেঞ্জের খেলা চলছিল। সঙ্গে একটু চাপ দিচ্ছিলাম আরকি! চাপের মুখে কেমন করে, সেটাই দেখতে চাচ্ছিলাম।’রোজবোলের মাঠটা বেশ বড়। যে উইকেটে খেলা হবে, সেটিও মাঠের ঠিক মাঝখানে। টন্টনের বাউন্ডারি অনেক ছোট থাকলেও এখানে উল্টো। পরশু অনুশীলনে এসে ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচের কিছু অংশ দেখেছেন রোডস, সেই দেখা থেকে তাঁর মন্তব্য, ‘উইকেট কিছুটা মন্থর ছিল। বল টার্ন করেছে কিছুটা। বাউন্ডারি বেশ বড়। দেখে মনে হচ্ছিল আমরা অনেকটা ১৯৮০ সালে ফিরে যাচ্ছি। এখানে ছয় ও চার কম হবে। এক-দুই রান নিতে হবে অনেক। চেষ্টা করতে হবে এক-দুই রানকে তিন রানে পরিণত করতে।’ কোচের আশা, মাঠের আকৃতি বোলারদের সাহায্যই করবে।২০১৯ বিশ্বকাপে এখনো কাউকে ধাক্কা দিতে পারেনি আফগানিস্তান। তবে রোডসের দৃষ্টিতে এই দলটা ‘ক্রিকেটের নতুন সূর্য’। আফগানিস্তানকে ভয় না পেলেও তাদের প্রতি সমীহ আছে বাংলাদেশের। রোডস বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ গত ২০ বছরে দারুণ উন্নতি করেছে। আমি মনে করি, এই দুই দেশেই ক্রিকেটের উত্থান হচ্ছে। বাংলাদেশ তো অনেক দূর এসেছে। আফগানিস্তানও দেশে এত সমস্যার পরও এগিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি সমর্থনও চোখে পড়ার মতো।’বাংলাদেশ পিছিয়ে একটা জায়গাতেই। আফগানদের যেমন আছেন রশিদ খান, লাল-সবুজ শিবিরে নেই তেমন কোনো লেগ স্পিনার। শুরু থেকেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে যেটাকে বলা হচ্ছে একমাত্র অপূর্ণতা। রোজবোলের গ্যালারির ‘শেন ওয়ার্ন স্ট্যান্ড’ দেখে সেটি অনুভূত হতে পারে আরও বেশি করে। তবে যা নেই, তা নিয়ে আক্ষেপ করলেন না রোডস, ‘বাংলাদেশে লেগ স্পিনারের স্বল্পতা আছে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। শেন ওয়ার্ন এখানে কাউন্টি খেলেছে। খুব ভালোও খেলেছে সে। তবে ও বিখ্যাত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলে।’
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন উপবন এক্সপ্রেসের বগি উল্টে নিহত চারজনেরই পরিচয় মিলেছে। পরিবাররে লোকজন এসব মরদেহ শনাক্ত করেছেন।গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় উপবন এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে যায়। এর মধ্যে বরমচাল রেলপথের একটি কালভার্ট থেকে নিচে পড়ে যায় ট্রেনের বগি এবং কিছু বগি লাইনের ওপর উল্টে যায়।এ ঘটনায় নিহত যাত্রীরা হলেন কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা আবদুল বারীর স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫), সিলেটের মোগলা বাহার থানার আবদুল্লাহপুর গ্রামের আবদুল বারীর মেয়ে ফাহমিদা ইয়াসমিন ওরফে ইভা (২০), বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার আকরাম মোল্লার মেয়ে সানজিদা আক্তার (২০) ও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার নুর হোসেনের ছেলে কাওসার হোসেন (২৬)।মনোয়ারা পারভীনের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর স্বামী আবদুল বারী।ফাহমিদার লাশ তাঁর ভাই আবদুল হামিদ শনাক্ত করেন। তিনি সিলেট নার্সিং কলেজের বিএসএসি নার্সিং কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। সানজিদা ও ফাহমিদা সহপাঠী ছিলেন ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন কলেজের কোষাধ্যক্ষ জহির আহমেদ।কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুরুল হক কাওসার হোসেনের পরিচয় নিশ্চিত করে জানান, তাঁর পরিবারের লোকজন লাশ নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।দুর্ঘটনার পর কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৭ জন, মৌলভীবাজারের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে সাতজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৩ জন।আরও পড়ুন:কুলাউড়ায় কালভার্ট ভেঙে রেলের বগি খালে, অনেক হতাহতের আশঙ্কাকুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিককুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারিউপবন দুর্ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশ৭ বগি নিয়ে ঢাকার পথে উপবনছবিতে ট্রেন দুর্ঘটনা
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে পুনর্নির্বাচনেও সরকারি দল হেরে গেছে। গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) প্রার্থী একরেম ইমামগ্লু (৪৯)। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) প্রার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম তাঁর কাছে পরাজিত হন। বিজয়ী একরেমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এরদোয়ান।গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে সবাইকে অবাক করে দিয়ে একরেম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারি দল পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে। ২৩ জুন ভোটের দিন নির্ধারণ করে গত মে মাসের শুরুতে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়।আজ সোমবার বিবিসি অনলাইন ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক টুইটে বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমি একরেম ইমামগ্লুকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’তবে এই ফলাফলকে এরদোয়ানের জন্য আরেক বিপত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘ইস্তাম্বুল যে জিতবে, সে তুরস্ক জিতবে।’ একসময় তিনি ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন।এদিকে জয়ের পর দেওয়া এক ভাষণে একরেম ইমামগ্লু এই শহর ও দেশের জন্য নতুন সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইস্তাম্বুলে আমরা এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছি। এই অধ্যায় থেকে ন্যায়বিচার, সমতা ও ভালোবাসা থাকবে।’ এরদোয়ানের সঙ্গে একত্রে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, ঐকতান রেখে আপনার সঙ্গে কাজ করতে আমি প্রস্তুত।’এর আগে গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থীকে অল্প ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন একরেম ইমামগ্লু। ইস্তাম্বুলে ৮০ লাখের বেশি ভোট গৃহীত হয়। ১৪ হাজারের কম ভোটের ব্যবধানে ইমামগ্লু নির্বাচিত হন। ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ অভিযোগ তুলে সরকারি দল একে পার্টি ইস্তাম্বুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানও তাঁর দলের পরাজয় প্রত্যাখ্যান করেন। তবে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর একে পাটির পার্লামেন্টারি বৈঠকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ইস্তাম্বুলে পুনর্নির্বাচন দেশের জন্য ‘সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ’। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তকে (পুনর্নির্বাচন) গণতন্ত্র ও আইনি কাঠামোর মধ্যে সমস্যা সমাধানে আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে শক্তিশালী করতে সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।’ তিনি দাবি করেন, মার্চে অনুষ্ঠিত ভোট ‘অবৈধ’ ছিল এবং পুনর্নির্বাচন ‘দেশটির গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবে।ওই সময় একরেম ইমামগ্লু পুনরায় ভোট গ্রহণের ঘোষণার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনী বোর্ড শাসক দলের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছে। সমবেত সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নীতি বিসর্জন দেব না। এই দেশ ৮ কোটি ২০ লাখ দেশপ্রেমিকে ভর্তি, যাঁরা লড়াই করবেন...গণতন্ত্রের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।’মার্চে নির্বাচনের আগে খুব কম লোকই একরেম ইমামগ্লুকে চিনতেন।সরকারি দলের দাবির মুখে দেশটির নির্বাচন বোর্ড পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।
ভাঙনের শব্দ শোনা যাচ্ছে এলআরবিতে। নতুন সদস্য নিয়ে এলআরবি গঠনের পর আইয়ুব বাচ্চুর ছেলের শুভকামনা থাকা সত্ত্বেও দুই মাস পর খবর এল, দলটি দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য স্বপনের সঙ্গে আছেন ড্রামার রোমেল। অন্য ভাগে আছেন বেস গিটারিস্ট মাসুদ, ব্যবস্থাপক শামীম এবং নতুন যোগ দেওয়া বালাম। ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবসে ক্যাডেট কলেজ ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে স্বপন ও রোমেল আলাদাভাবে শোতে অংশ নিলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়। ‘ট্রিব্রিউট টু আইয়ুব বাচ্চু’ নামের সেই অনুষ্ঠানে এলআরবি সদস্যদের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছিলেন জাহিদ মাসুদ ও বিজয় মামুন।দেশে এবং দেশের বাইরের সংগীতপ্রেমী সবার কাছে এলআরবি ও আইয়ুব বাচ্চুর নাম পরিপূরক হয়ে আছে। একটি ছাড়া অন্যটি কল্পনাও করা যায় না। তাই দেশের এই জনপ্রিয় গিটার জাদুকরের মৃত্যুর পর কে হবেন দলের কান্ডারি, তা নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। হঠাৎ বালামকে এলআরবি ভোকাল হিসেবে ঘোষণা করলে চমকে ওঠেন সবাই। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন বালাম। বালাম নিয়ে এলআরবি সদস্যরা নাম বদল করতে বাধ্য হন।এলআরবি সদস্যরা গানের দলটির নতুন নাম দেন ‘বালাম অ্যান্ড দ্য লিগাসি’। এই বিষয় নিয়েও অনেক জল ঘোলা হয়। আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নাম পরিবর্তন কিংবা সদস্য অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। এলআরবি ব্যান্ডে বালামের অন্তর্ভুক্তি, দিন দশেক পর বালাম অ্যান্ড দ্য লিগ্যাসির এমন ঘটনা চলার মধ্যেই পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ এপ্রিল ছেলে আহনাফ তাজওয়ার আইয়ুব বলেন, ‘এলআরবি অথবা বালাম অ্যান্ড দ্য লিগ্যাসির (তাঁরা এখন এই নামে গান করতে চান) সদস্যদের বলতে চাই, তাঁরা চাইলে এলআরবি নামে গান করতে পারেন। এ নিয়ে আমাদের কোনো বাধা নেই।’এলআরবি নাম নিয়ে স্বপন ও রোমেলের আলাদা করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ব্যাপারটি একেবারেই জানা ছিল না ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদের। তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আয়োজকেরা শুরুতে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু দলের কারও মহড়া না থাকায় শো করতে রাজি ছিলাম না। আমি চেয়েছিলাম, এলআরবি যখন নতুন করে দর্শকের সামনে আসবে, বিষয়টা যেন বর্ণাঢ্য হয়। হুট করে আমাদের না জানিয়ে এমন ঘটনায় বিব্রত বোধ করেছি।’শামীম বলেন, ‘আমরা তো ভেবেছিলাম, আমরা ঐক্যবদ্ধ। এখন তেমন মনে হচ্ছে না।’এলআরবি কি থাকছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না থাকার কিছু নেই। তবে কোথায় যেন শুনলাম, আমাদের বাদ দিয়ে এলআরবি! এটা শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। স্বপন ভাইয়ের মতো জ্যেষ্ঠ সদস্যের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ আশা করিনি।’আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে একেবারে শুরু থেকেই আছেন স্বপন। তিনি বলেন, ‘কিছু জটিলতা ছিল, সবশেষে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ১৫ মে থেকে মহড়া হবে। নতুনভাবে ফটোশুট হবে। এলআরবি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবে। আমি আর রোমেল বসে আছি তো আছিই। কবে প্র্যাকটিস, ঈদের শোর কথা ছিল—কিছুই জানতে পারছিলাম না। এর মধ্যে এমনও শুনেছি, ফোয়াদ নাসের বাবু ভাইয়ের সঙ্গে শো নিয়ে কথা বলার সময় শামীম আহমেদ জানায়, এলআরবি আপসেট, এখন শো করবে না। এর বাইরেও আরও কয়েক জায়গায় এমন কথা বলা হয়েছে। শামীম সাহেবের সাউন্ডের ব্যবসা আছে, এলআরবি ছাড়াও তিনি চলতে পারেন। বস (আইয়ুব বাচ্চু) আমাদের শিখিয়েছেন গানবাজনা করে চলতে। আমরা সেভাবেই চলছি। এত দিন ধরে বসে আছি, বাড়ি ভাড়া, সন্তানদের পড়ালেখার খরচ, সংসারের আরও অনেক খরচ আছে—সব বন্ধ। শামীম সাহেব ও মাসুদ সাহেবের আশায় বসে ছিলাম। তাঁরা যোগাযোগই করছেন না। বাধ্য হয়েই ক্যাডেট কলেজ ক্লাবের শো করেছি।’এলআরবি ব্যান্ডের ড্রামার রোমেল বললেন, ‘শামীম সাহেবকে অনুরোধ করছি, তিনি যেন এলআরবি নিয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কথা না ছড়ান। এলআরবিতে এখন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বাচ্চু ভাইয়ের পরই আছেন স্বপন ভাই। আমরা একসঙ্গে আছি। যত দিন বেঁচে থাকি, মঞ্চে বাচ্চু ভাইয়ের রুপালি গিটার ও মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড সবসময় থাকবে। আমরা ভাবব, তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন।’পুরো বিষয়টি শুনে বালাম বললেন, ‘আমি হতবাক। সংগীতজীবনে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি, যেটা এলআরবিতে যুক্ত হওয়ার পর হয়েছে। শুধু এটুকু বলব, আমাদের সবাইকে একসঙ্গে বসে এই পরিস্থিতির সমাধানে আসা উচিত। আমি চাইব ইতিবাচক সমাধান হোক।’
সাউদাম্পটনের উইকেট বাংলাদেশের বোলিংয়ের জন্য বেশি উপযোগী—এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস। তিনি মনে করেন, মাঠটি বড় হওয়ায় এখানে পুরোনো ঘরানার ক্রিকেটটা খুব দরকার হতে পারে।সাউদাম্পটনের রোজবোল মাঠে ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচটির কতটা প্রভাব পড়বে আজ বাংলাদেশের খেলায়? সেদিন আফগান বোলাররা যেভাবে বিশ্বসেরা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নাকাল করে ছেড়েছেন, তাতে শঙ্কা জাগাটাই স্বাভাবিক। তবে বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস মনে করেন, শঙ্কার কিছু নেই। সাউদাম্পটনের মাঠেই আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে বাংলাদেশের ভয়ের কিছু নেই।ভয়ের কিছু নেই! যে দলটি কোহলি-রোহিতদের মতো ব্যাটসম্যানদের ঠান্ডা করে রেখেছিল তাদের স্পিন বোলিং দিয়ে, তাদের সমীহও করে না বাংলাদেশ। রোডস অবশ্য আফগানদের সমীহ করার লাইনেই যাননি ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে, ‘আফগানিস্তানের চেয়েও আমরা ভালো দল, এ নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের ভয় পাব কেন! সত্যি কথা বলতে কি, আফগানিস্তানকে সমীহ করারও কিছু নেই। এর মানে এই নয় যে তারা ভালো দল নয়। আফগানিস্তান অবশ্যই ভালো দল। তারা ক্রিকেটে দ্রুত উন্নতি করছে। তবে আমরা কিন্তু আফগানদের চেয়ে পুরোনো ও অভিজ্ঞ দল।’সেদিন ভারতের বিপক্ষে যে উইকেটটিতে আফগানরা খেলেছিল, আজ বাংলাদেশের বিপক্ষেও সেখানেই খেলা। ব্যাপারটা স্বস্তি দিচ্ছে রোডসকে। রোডস আনন্দিত, রোজবোলের এই মাঠে বাংলাদেশ পুরোনো দিনের ক্রিকেট খেলতে পারবে বলে, ‘আমি সেদিন যা দেখলাম, এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যে ধরনের উইকেটে খেলা হচ্ছে, সাউদাম্পটনের উইকেট তার চেয়ে অনেকটা ধীরগতির। উইকেটে স্পিনও ধরবে কিছুটা। ওই দিন ভারতের বিপক্ষে আফগানিস্তান যে উইকেটে খেলেছে, আজ সেটিতেই খেলা হবে, সুতরাং ব্যাপারটা আমাদের জন্য ভালোই। মাঠটা বড়। সুতরাং এখানে খুব বেশি ছক্কা-টক্কা মারা যাবে না। এখানে রানিং বিটুইন দ্য উইকেট গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আমাদের খেলোয়াড়দের আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকের ক্রিকেট খেলতে হবে।’উইকেটে টার্ন থাকবে, তার মানে তো এই উইকেটে রশিদ খান, মুজিব-উর-রেহমান কিংবা মোহাম্মদ নবীরা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন। রোডস অবশ্য এ শঙ্কার ধারেকাছ দিয়েও যাননি। তিনি মনে করেন, সাউদাম্পটনের রোজবোলের উইকেট বরং বাংলাদেশের বোলিং-শক্তির সঙ্গেই বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ, ‘রোজবোলের উইকেট আমাদের কয়েকজন বোলারের বোলিংয়ের জন্য খুব উপযোগী। এ ম্যাচে আমরা যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হয়েই আছি।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলবে আফগানিস্তান। ওরা খুব খারাপ দল, তা কিন্তু নয়। সাধারণ দল হিসেবে গণ্য করা ঠিক হবে না। ওদের বোলাররা ভালো। বেশ কয়েকজন ভালো ব্যাটসম্যান আছে। আগেও এই কলামে লিখেছি, এবারের বিশ্বকাপে কেউই সহজ দল না। তবে তুলনামূলকভাবে সহজ দল আফগানিস্তান। আমাদের ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে। হারার ভয় মাথায় যেন না থাকে।শ্রীলঙ্কা সেদিন ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে। ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলেছে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে কিছু কিছু ম্যাচ এমন হওয়ার কথা। এসব নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করলেই সমস্যা বাড়বে। মিডিয়ার কাছে আমার অনুরোধ, জেতার আগে জিতে যাওয়ার মতো কিছু করে বসবেন না। আবার আফগানিস্তান আমাদের হারিয়ে দেবে, এমন মনোভাবও দেখানো ঠিক হবে না।এসবের প্রভাব পড়ে ক্রিকেটারের ওপর। হয়তো সাকিব, মাশরাফি, তামিম, মুশফিক, রিয়াদের ওপর পড়ে না। কিন্তু বাকি সবাই তো এক না। সবাই যদি এসব না ভেবে নিজ নিজ প্রক্রিয়া মেনে চলে, তাহলে ভালো ফল আসেই। সাধারণ একটি ম্যাচ হিসেবে দেখলেই কাজ সহজ হয়ে যায়। কারণ আমাদের সামর্থ্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে যেটা হয়—আপনি জিতলে সবাই বলবে, ওদের সঙ্গে তো জেতার কথাই ছিল। না জিতলে আবার বিশাল সমস্যা। এটাই বড় চাপের বিষয়। আগে আমাদের সঙ্গে এমন হতো। এই ভয়েই আমাদের সঙ্গে সিরিজ খেলতে চাইত না বড় দলগুলো। এখন সেভাবে দেখার দিন শেষ। আফগানিস্তান এখন সেই জায়গায় আছে। যেকোনো দিন যেকোনো কিছু করে বসতে পারে আফগানিস্তান।ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে থেকেই ওদের ক্রিকেটাররা অনেক কথা বলেছে। আমার কাছে ওদের কথাবার্তা অপরিণত খেলোয়াড়দের মতো মনে হয়েছে। ইতিবাচক মানসিকতা ধারণ করা ঠিক আছে। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটাররা এভাবে কথা বলে না। ওদের মধ্যে এখনো পেশাদারি মনোভাব আসেনি। ওদের এখনই এমন কথাবার্তা বলার সময় আসেনি। আর কথা বলে নাড়িয়ে দেওয়া এত সহজ নয় এই যুগে।আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে রুবেলের খেলা উচিত। আমরা এই ম্যাচে ২ পয়েন্টের জন্য খেলব। সেই দিক থেকে আমাদের জন্য ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের একটু জোরের বোলার দরকার। আর সাইফউদ্দিন থাকলেও খুব বেশি পার্থক্য আসবে না।বাংলাদেশ টানা পেস বোলিংনির্ভর দলের সঙ্গে খেলে এসেছে। আফগান স্পিনের সঙ্গে একটু মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার আছে। স্পিনে রান একটু কম হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপে। রশিদ খান ওদের সেরা বোলার। তবে বিশ্বকাপে আহামরি বোলিং করেনি রশিদ। আমাদের টপ অর্ডারে অনেক বাঁহাতি আছে। সে ক্ষেত্রে মুজিব উর রেহমানকে একটু দেখে খেলতে হবে। তবে ইংল্যান্ডের এমন উইকেটে স্পিন খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করবে না।বাংলাদেশ নিজেদের ক্রিকেটটা খেললেই হবে। আফগানিস্তান কী করবে, এসব নিয়ে না ভেবে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা দেখাতে পারলেই জয় সম্ভব। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলেই দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে মাশরাফিরা। আফগানিস্তান ম্যাচেও সেই চেনা বাংলাদেশকে দেখতে চাইব।
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি ও কাউন্সিলের তারিখ মানেন না জানিয়ে আবার বিক্ষোভ করছেন বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে নয়াপল্টনে অবস্থান নিয়েছেন।ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক নেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন।ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ করে দেন। তাঁরা কাউকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন না।বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন কার্যালয়ে ঢুকতে চাইলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।এ ছাড়া ছাত্রদলের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ইউনিটের এক নেতা কার্যালয়ে ঢুকতে চাইলে তাঁকে মারধর করা হয়।অন্যদিকে, কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশীরা আজ সকালে মিছিল করেছেন।বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে এখন অবস্থান করছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের।২২ জুন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের ১২ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কাউন্সিলের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এতে বলা হয়, আগামী ১৫ জুলাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কাউন্সিল। ওই দিন সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে।বিএনপি ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই বিলুপ্ত কমিটির নেতারা বয়সসীমা না রেখে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন।
টেলিভিশন খুললেই ইদানীং চোখে পড়বে একটা বিজ্ঞাপন—নেটে ব্যাটিং করতে নামা সাকিব আল হাসানকে পেছন থেকে ডাকছে ছোট্ট এক বাঘ। আসলে ছেলেটার সারা গায়ে বাঘের সাজ আর বুকে আঁকা দেশের পতাকা। বাঁ হাত বুকে চেপে ডান হাতের মুঠি ওপরে তুলে চিৎকার করে বলছে, ‘সা-কি-ব। খেলবে টাইগার, জিতবে টাইগার।’ বিজ্ঞাপনচিত্রে সাকিব ছাড়াও রয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন ও ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। তারকায় ঠাসা লাইফবয় সাবানের বিজ্ঞাপনটিতে আলাদা করে সবার নজর কেড়েছে আয়াজ।আয়াজের বয়স ৫ বছর। পড়ছে বাড্ডার ন্যাশনাল স্কুলে নার্সারিতে। বাবা আশরাফুল আলম স্কুলশিক্ষক। মা সালমা আলী গৃহিণী। এই দম্পতির একমাত্র সন্তান আয়াজ। বন্ধুরা ডাকে টাইগার আয়াজ বলে। ক্লাসে ঢুকলেই সবাই বলে, ‘ওই যে টাইগার আসছে।’ যেখানেই যাক না কেন, সবাই তার সঙ্গে সেলফি তুলতে চায়। টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে আয়াজ এর আগে অনেকবার দাঁড়ালেও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে কাজ করেই বেশি রোমাঞ্চিত। এ পর্যন্ত টেলিভিশন ও অনলাইন মিলিয়ে ১৮টি বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছে খুদে আয়াজ।সালমা আলী বলছিলেন, ‘ও প্রথম বিজ্ঞাপনের মডেল হয় ৩ বছর বয়সে, কিন্তু এই একটা বিজ্ঞাপনের কারণেই সবাই ওকে বেশি করে চিনেছে।’গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অফিশিয়াল স্পনসর হয়েছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে ইউনিলিভারের পক্ষ থেকে জাতীয় ক্রিকেট দলকে নিয়ে একটা বিজ্ঞাপন বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই বিজ্ঞাপনে অংশ নিতে অডিশনে বাছাইয়ের পর টেকে আয়াজ। গত মাসে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবং কোকাকোলা স্টুডিওতে হয় শুটিং।এর আগে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল তার বিপিএল চলার সময়। সারা দিন সাকিবের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে, সেটা প্রথমে বিশ্বাসই হতে চাইছিল না আয়াজের। শুটিংয়ে কেমন মজা করলে? প্রশ্ন করতেই হেসে ছোট্ট আয়াজের উত্তর, ‘আমার হাঁচির দৃশ্যটা ১০ বার দিতে হয়েছে। যখন হাঁচি আসছিল না, সাকিব ভাইয়া মজা করে নাকে সুড়সুড়ি দিচ্ছিলেন।’ক্রিকেট বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৪২৫ রান করেছেন সাকিব। বল হাতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। যখনই সাকিব ব্যাট করতে নামেন, টিভির সামনে থেকে উঠতেই চায় না আয়াজ। খেলার বিরতিতে নিজের বিজ্ঞাপনটা শুরু হতেই বাবাকে ডেকে বলে, ‘দেখো বাবা, আমাকে দেখাচ্ছে।’ইউনিলিভার বাংলাদেশের মার্কেটিং ডিরেক্টর (পারসোনাল কেয়ার) নাফিস আনোয়ার বিজ্ঞাপনটা তৈরি করতে পেরে ভীষণ খুশি, ‘আমরা এটা এমনভাবে তৈরি করতে চেয়েছি যেন এটা মনে না হয় লাইফবয়ের বিজ্ঞাপন। চেয়েছি, এটা যতটা না লাইফবয়ের বিজ্ঞাপন হোক, তার চেয়েও বেশি হোক বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপার। হারুক বা জিতুক, দলের জন্য আমাদের থাকবে নিঃশর্ত সমর্থন।’বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল যখন হারিয়ে দেয় প্রতিপক্ষকে, ঠিক ওই মুহূর্তে টেলিভিশনের পর্দায় বিজ্ঞাপনে ভেসে ওঠে আয়াজের মুখ। যেন পুরো দেশবাসীর হয়েই ছোট্ট আয়াজ বলছে, ‘খেলবে টাইগার, জিতবে টাইগার।’
ম্যাচ যখন শেষ হলো, ঘড়িতে রাত ২টা ৪৩। প্রেজেন্টেশন দেখেটেখে বিছানায় যেতে যেতে আরও মিনিট পনেরো। ভোর পর্যন্ত শুধুই এপাশ-ওপাশ। দিনটা শুরু হয়েছিল আর দশটা দিনের চেয়ে অনেক আগে। তারপরও ঘুমের দেখা নেই। ঘণ্টাখানেক আগেও ক্লান্ত-শিথিল স্নায়ুগুলো যে তখন উত্তেজনার ছোঁয়ায় রীতিমতো কাঁপছে! তা সেই ছোঁয়াটা কে দিলেন? নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটা দেখে থাকলে উত্তরটা আপনি জানেন। কার্লোস ব্রাফেট!একসময়ের শখটা পেশার দায়ের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে প্রায় তিন দশক। এ কারণেই কি না, খেলা দেখে উত্তেজিত-রোমাঞ্চিত হওয়ার অনুভূতিটা প্রায় হারিয়েই গিয়েছিল। প্রেসবক্সের বাইরে শুধুই দর্শকের ভূমিকায় প্রত্যাবর্তনই কি তাহলে ফিরিয়ে নিয়ে গেল প্রায় ভুলে যেতে বসা সেই সময়টাতে! ম্যাচ শেষ হওয়ার অনেকক্ষণ পরও জাগিয়ে রাখল সেটির রোমাঞ্চ!গত পরশু বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু প্রথম ম্যাচটাতেও ক্লাসিক হওয়ার প্রায় সব উপাদানই ছিল। আফগানিস্তান জিতলে আপসেটের সৌরভে সেটি পূর্ণতা পেত। নাকি শেষ ওভারে মোহাম্মদ শামির হ্যাটট্রিক আরও বেশি স্মরণীয় করে রাখল ম্যাচটাকে! আগের দিন শ্রীলঙ্কার কাছে ইংল্যান্ডের হেরে যাওয়াতেও উচ্চকিত হয়ে উঠেছে খেলার সেই চিরন্তন আকর্ষণ—যা ভাবা যায়নি, তা হয়ে যেতে পারে; যা ঘটার কথা নয়, তা ঘটে যেতে পারে। এককথায় প্রকাশ করলে ‘অভাবনীয়’ আর ‘অঘটন’ বললেই চলে।এই দুটি ম্যাচ দেখেই মনে হচ্ছিল, টুর্নামেন্টের ঠিক মাঝপথে এসে আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়িয়েছে বিশ্বকাপ। পূর্ব অনুমিত পথে এগোতে এগোতে হঠাৎই যেন সেটির মনে হয়েছে, ধেৎ, আমার নাম না বিশ্বকাপ! এমন হলে এই নামের মর্যাদা থাকে নাকি!ক্রিকেট বিশ্বকাপের স্বমহিমায় দেখা দেওয়ার পর্বটাও যেন অদৃশ্য কারও লেখা পাণ্ডুলিপি নিখুঁত অনুসরণ করে। অর্কেস্ট্রায় মিউজিক যেমন ক্রেসেন্ডোর পথ বেয়ে একসময় ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছায়, শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড আর ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচ দুটি যেন সেই ক্রেসেন্ডো আর নিউজিল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটি ক্লাইম্যাক্স। আহা, কী ম্যাচটাই না হলো! কী লড়াইটাই না করলেন কার্লোস ব্রাফেট!খেলা তো জীবনেরই মিনিয়েচার। সাফল্য-ব্যর্থতা, আনন্দ-বেদনা, আশা-হতাশা, পাওয়া-হারানো...জীবনের সব অনুভূতিই যেখানে ‘বনসাই’ হয়ে লুকিয়ে। জীবন যেমন বীর খোঁজে, খেলাও তো তা-ই। অসম্ভবের সাগরে একা তরি বেয়ে তীরে পৌঁছে যাওয়ার বীরত্বের চেয়ে কাব্যগাথার আদর্শ উপাদান আর কীই-বা হতে পারে। তীরের একেবারে কাছে এসে তরি ডুবে গেলেই বা কী! ‘ট্র্যাজিক হিরো’র আবেদনও কি কম! কখনো কখনো হয়তো বেশিও। ওল্ড ট্রাফোর্ডের এই রাতে কার্লোস ব্রাফেট সেই ট্র্যাজিক হিরো।১৬৪ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর একবার ভেবেছিলাম, এই ম্যাচ দেখে আর কী লাভ! ঘুমিয়ে পড়াই ভালো। অনেকেই এই ভাবনাটাকে কাজে রূপান্তর করেছেন বলেই ধারণা। তাঁদের জন্য একটু দুঃখই হচ্ছে। কী মিসটাই করেছেন! এখন পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচ, বিশ্বকাপ শেষেও যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাতেও অবাক হব না। টেলিভিশনে খেলা রিপিট হয়, হাইলাইটস তো দেখা যায় যখন ইচ্ছা—কিন্তু কার্লোস ব্রাফেটের ওই অসম্ভবকে ধাওয়া করা সরাসরি দেখার শিহরণ সেখানে কীভাবে খুঁজে পাওয়া সম্ভব!পরের বলের জন্য অপেক্ষা করার সময় হেলমেটের গ্রিলে ঢাকা দৈত্যাকার ব্রাফেটের ওই জ্বলজ্বলে চোখ, একটু হাঁ করা মুখ। যেন রোমান গ্ল্যাডিয়েটর। শেষ তিন উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তোলা ১২২ রানের ৮৭-ই তাঁর ব্যাট থেকে। ম্যাচ যখন শুধুই তিনের মামলা—৩ ওভারে চাই ৩৩—তখন ম্যাট হেনরির প্রথম পাঁচ বল থেকে ২, ৬, ৬, ৬, ৪। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইকে আবার ব্রাফেট। নিজের রান ৯৯, জয় থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাত্র ৮ রান দূরে। ২ ওভারে ৮, কোনো ব্যাপার নাকি! তার ওপর ‘একটা উইকেটই তো চাই’ ভাবতে ভাবতে তূণের আসল দুই তির বোল্ট আর ফার্গুসনের কোটা শেষ করে ফেলেছেন কেন উইলিয়ামসন।বাধ্য হয়ে তাঁকে বল তুলে দিতে হয়েছে জিমি নিশামের হাতে। প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে বাউন্সার, যেটি ব্রাফেটকে পেরিয়ে যেতেই কমেন্ট্রি বক্স থেকে ইয়ান বিশপ বললেন, ‘নো সিক্স!’ যেন ছয় না হওয়াটাই ঘটনা, হওয়াটা নয়। তিন বছর আগে কলকাতায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের অবিস্মরণীয় সেই শেষ অঙ্কেও কমেন্ট্রি বক্সে ছিলেন বিশপ। শেষ ওভারে লাগত ১৯ রান, বেন স্টোকসের প্রথম চার বলেই ছক্কা মেরে ব্রাফেট ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার পর তাঁর কথাটা এখনো অনুরণন তোলে—রিমেম্বার দ্য নেম। সেই ম্যাচে আমি প্রেসবক্সে, যেখানে টেলিভিশনের ভলিউম ‘মিউট’ করা থাকে। বিশপের ওই কথাটা স্বকর্ণে তাই পরে শুনেছি। মাঝের তিন বছরে ব্রাফেট বলার মতো কিছুই করতে পারেননি বলে বিশপের ওই ‘রিমেম্বার দ্য নেম’ কথাটা উল্টো বিদ্রূপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এদিন যেন ব্রাফেট প্রতিজ্ঞা করেছেন, ম্যানচেস্টারে ফিরিয়ে আনবেন কলকাতাকে, ইডেন গার্ডেনকে ওল্ড ট্রাফোর্ডে। স্টোকসও দেখলাম টুইট করেছেন, ‘...ভেবেছিলাম ২০১৬ কলকাতা ফিরে আসবে।’আর একটা ছয়েই যখন লেখা হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়, সেটি মারতে গিয়েই লং অনে ক্যাচ। একমাত্র নিউজিল্যান্ডাররা ছাড়া বিশ্বের বাকি কেউ তা চেয়েছিলেন বলে মনে হয় না। হতাশায় হাঁটু গেড়ে উবু হয়ে মাঠে বসে ব্রাফেট। তাৎক্ষণিক উল্লাস শেষে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা ছুটে এলেন তাঁর দিকে। কেউ পিঠে হাতে রাখলেন, কেউবা মেলালেন হাত। অভিনন্দন জানালেন না সান্ত্বনা, বোঝা মুশকিল! হয়তো দুটিই।ভাঙা শোনাচ্ছে বিশপের গলা। কমেন্ট্রি বক্সে তাঁর সঙ্গী ব্রেন্ডন ম্যাককালামেরও তা-ই। যা হলো, তা নিয়ে তাঁকে কিছু বলতে বললেন বিশপ। কীভাবে এর বর্ণনা করবেন, তা বুঝতে না পারার অক্ষমতার কথা জানিয়ে ম্যাককালাম বললেন, ‘আজ কোনো একজনের জয়ের আনন্দে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে মাঠ থেকে বেরোনোর অধিকার থেকে থাকলে সেটি ছিল কার্লোস ব্রাফেটের।’ম্যাককালামের এই কথা দিয়েই লেখাটা শেষ করে দেওয়া ভালো মনে হচ্ছে। দুটি বাক্যই শুধু যোগ করতে চাই।ধন্যবাদ কার্লোস ব্রাফেট। হারিয়ে যাওয়া দর্শক-মনটা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সরকার আগামী অর্থবছরের জন্য নতুন বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ করছেন নানা ধরনের মন্তব্য। নির্মোহভাবে বলতে হবে, বাজেটের প্রশংসা করার মতোও বেশ কিছু দিক আছে। যেমন বৈদেশিক সহায়তা-নির্ভরতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস, সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের আরও প্রসার, উচ্চতর প্রবৃদ্ধির জন্য নানা ধরনের সুবিধা, প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের ওপর কিছুটা প্রণোদনা ইত্যাদি। অন্যদিকে কালোটাকা কতিপয় ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য শতকরা ১০ ভাগ আয়কর দিলেই নিয়মিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারে হাত না দিলেও আয়কর উন্নীত করা হয়েছে ১০ শতাংশ হারে। কোটি কোটি লোকের নিত্যব্যবহার্য মুঠোফোন ও ডেটা ব্যবহারের ওপর বিভিন্ন ধরনের কর ২৭ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। মোটাদাগে দেশের ধনিকশ্রেণির দিকেই বাজেটটি ঝুঁকে পড়েছে বলে সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয়। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলটির নজর গত দুই দশকে বড় ধরনের মোড় নিয়েছে। সংগঠনটি সৃষ্টির সূচনা থেকেই নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের চাহিদাকে সর্বাগ্রে স্থান দিত। এখন বিপরীতমুখী হয়েছে। রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ধনিকশ্রেণির নিয়ন্ত্রণ ক্রমান্বয়ে জোরদার হচ্ছে।অন্যদিকে ব্যাংক খাতে আমানতের হার ক্রমহ্রাসমান। অবস্থাটিকে সংকটজনক বলে অনেকেই মনে করছেন। কদিন আগে দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান খবরের শিরোনাম ছিল—‘ব্যাংক থেকে এত টাকা গেল কোথায়’। খবরটিতে রয়েছে একই বাজারে বিভিন্ন ব্যাংক ৭ থেকে ১৪ শতাংশ মুনাফায় আমানত নিচ্ছে। পর্যাপ্ত ঋণ পাচ্ছেন না ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা। ঋণের সুদের হারও ক্ষেত্রবিশেষে ১৬-১৭ শতাংশ বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, বর্তমান বছরের প্রথম প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে আরও ১৭ হাজার কোটি টাকা। অবলোপনসহ হিসাব করলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। তাই এত টাকা কোথায় যায়, সে প্রশ্নের জবাব খুব কঠিন, এমন তো মনে হয় না। একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, আমানতের ২৬-২৭ শতাংশ সঞ্চয়পত্রে চলে গেছে। হতে পারে। এর জন্য সরকারকে কিছু বেশি সুদে ধার করতে হবে। তবে টাকাগুলো তো কোথাও মার খায়নি। অবশিষ্ট আমানত তো ব্যাংক আর শেয়ারবাজারে। সেখানকার হাল সবারই জানা। খেলাপি ঋণের ভারে ব্যাংক ভারাক্রান্ত। এর জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চিতিও নেই সব ব্যাংকে। ফলে গোটা ব্যাংক ব্যবস্থাই একরকম হুমকির মুখে।বলা হয়, কালোটাকা সাদা না করলে বিদেশে পাচার হবে। এটা শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা। অবশ্য স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব সরকারই কোনো না কোনোভাবে এ ব্যবস্থা রেখেছে। তবে ঢালাও শতকরা ১০ ভাগ আয়কর দিয়ে দুটো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ নিয়মিত আয়করদাতাদের প্রতি অবিচারের নামান্তর। আর এভাবে সুযোগ দিয়ে খুব বেশি টাকা বিনিয়োগে এসেছে, এমন কখনো দেখা যায়নি। তাহলে এ অনৈতিক ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার দায়বদ্ধতা কোথায় এবং কেন? এসব টাকা ব্যাংকের তারল্যসংকট দূর করতে তেমন একটা কাজে আসবে না। তবে শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শক্তিশালী একটি মহল এর পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে নির্মাণ খাত এ দাবিতে ছিল সোচ্চার। তাদের সুবিধার্থে প্লট ও ফ্ল্যাট কেনার রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমানোর ব্যবস্থা হয়েছে। প্রয়োজন বিবেচনা করলে দেওয়া যেত আরও ছাড়। এতে এগুলোর ক্রেতা মধ্যবিত্ত শ্রেণিও উপকৃত হবে। অবশ্য এ খাতে কালোটাকা সাদা করতে নিয়মিত হারে আয়করের বিধান রয়েছে। ঢালাও ছাড় দেওয়া হয়েছে দুটো খাতে। সেসব কালোটাকার একই কাতারে আয়কর ধরা হয়েছে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর। বেশ কিছুকাল ধরেই একটি মহল সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন ‘কুফল’-এর ওপর বিভিন্ন রকম তথ্য তুলে ধরছে। সরকারি ব্যয় সীমিত রাখতে তার সুদ খাতে ব্যয়ের রাশ টানার প্রয়োজন আছে। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের সুবিধাভোগীদের বিরাট অংশ এর মাধ্যমে একটি সামাজিক নিরাপত্তাবলয় ভোগ করছে, এটাও দেখার বিষয়। অন্যদিকে ঘাটতি ব্যয় মেটাতে সরকার ব্যাংক থেকে অধিক ধার নিলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা আরও বিপাকে পড়বেন। তাই সঞ্চয়পত্র ব্যবস্থাটিকে আর বিপন্ন করা যৌক্তিক হবে না।ব্যাংক খাতে তারল্যসংকটের জন্য খেলাপি ঋণের ভূমিকাই মুখ্য, এটাই ব্যাপকভাবে বিবেচনা করা হয়। এসব ঋণ নিয়মিত করতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল নিকট অতীতেও ফলপ্রসূ হয়নি। আমানত সঞ্চয়পত্রমুখী হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্যাংকের অত্যন্ত অনাকর্ষণীয় মুনাফার হার। আগে এমনটা ছিল না। অনেকেই স্থায়ী আমানতেও ব্যাংকে টাকা রাখতেন। ব্যাংক যখন এর প্রকৃত মুনাফা মুদ্রাস্ফীতির বেশ নিচেই নামিয়ে নিল, তখন আমানতকারীদের এ প্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিক বলা যাবে না। সরকার সঞ্চয়পত্র ব্যবস্থাটি সংস্কারে হাত দিয়েছে। নীতিগতভাবে একে স্বাগত জানাতে হয়। তবে সঞ্চয়পত্রের পরিমাণ এক লাখ টাকার ওপরে হলেই কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) লাগবে, বিষয়টি পুনরায় বিবেচনাযোগ্য। হিসাব করলে কারও কারও আয়করই আসে না। তবু উৎস কেটে নেওয়া হচ্ছে। এখন এগুলো নবায়ন করতে হলে তাদেরও টিআইএন খুলতে হবে। এ বিষয়গুলো ভেবে দেখা প্রয়োজন। যাঁরা এসব বিধান করছেন, তাঁরা বহাল আছেন চাকরিতে। বেশ ভালো টাকা বেতন-ভাতা পান। তাঁদের বেতনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডে রাখতে পারেন। এর সুদহার ১৩ শতাংশ। কোনো আয়করও নেই।ব্যাংক খাতে বাস্তবমুখী নীতি গ্রহণ করলে তারল্যসংকট হয় না। মুনাফা করে ব্যাংক। গ্রাহককে ঋণ দিতে পারে। কমিয়ে আনা যায় খেলাপি ঋণ। এ দৃষ্টান্ত কিন্তু কয়েকটি ব্যাংক এর মধ্যেই সামনে নিয়ে এসেছে। বেসরকারি খাতের শীর্ষে অবস্থান করা একটি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার ছেপেছে ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিক। তাঁর ভাষ্যমতে, সেই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বর্তমানে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অথচ এ খাতে গড় খেলাপি ঋণ ১২ শতাংশের ওপরে। অবিশ্বাস্য হলেও সেই ব্যাংকের দাবি তথ্য দ্বারা সমর্থিত। ২০১৮ সালে তাদের মুনাফার পরিমাণ ৩০৮ কোটি টাকা। শেয়ারমালিকেরা মুনাফা পেয়েছেন ৩০ শতাংশ হারে। ব্যাংকটি দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের শতকরা ৪ ভাগ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। বিদেশে শাখা খোলার উদ্যোগ নিচ্ছে। অথচ সে ব্যাংক আমানত নেয় ৮ দশমিক ৫ থেকে ৯ শতাংশ সুদে। ব্যাংকটি দেশের বড় কয়েকটি প্রকল্পসহ অনেক ক্ষেত্রেই অর্থায়ন করে যাচ্ছে। তারল্যসংকট আর সঞ্চয়পত্রের ওপর আর অভিযোগ নেই।উল্লেখ করা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের একটি সামাজিক দিক আছে। তাই বিভিন্ন প্ররোচনার পরও সরকার এর মুনাফার হারে গত বছর তিনেক হাত দেয়নি। এগুলোতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধনিকশ্রেণির কিছু লোক বড় অঙ্কের টাকা বেনামে বিনিয়োগ করতে পারেন। বিশেষ করে, পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে এটা সম্ভব। তাঁদের শনাক্ত করে মুনাফা কিংবা আসল বাজেয়াপ্ত করা যায়। তবে পেনশন সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র কিংবা পরিবার সঞ্চয়পত্রের এসব লোক বিনিয়োগে আছেন বলে মনে হয় না। পেনশন সঞ্চয়পত্রে তো সুযোগই নেই। এসব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর আয়ের প্রধান উৎস এগুলোই। প্রবৃদ্ধির হারের পাশাপাশি বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। সঞ্চয়পত্রের সুবিধাভোগী লোক কিন্তু অনেক। এ মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ভিতে ধস নামলে সামাজিক অস্থিতিশীলতা আসবে। এমনিতেই বাজেটের কল্যাণে আমাদের বেশ কিছু ব্যয় বাড়বে। আর সঞ্চয়পত্রের মুনাফার টাকা থেকে বর্ধিত হারে আয়কর কেটে নিলে সেটা হবে বোঝার ওপর শাকের আঁটি। ধনিকশ্রেণির জন্য বাজেটে অনেক সুবিধা রয়েছে। তাদের প্রণোদনা সব ক্ষেত্রেই অসংগত, এমনও নয়। ঠিক তেমনি মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণিও রাষ্ট্রের নজর দাবি করে। এর একটি বড় হাতিয়ার সঞ্চয়পত্র।আলী ইমাম মজুমদার: সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবmajumderali1950@gmail.com
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নারী উদ্যোক্তাদের উপস্থিতি বাড়ছে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) তথ্য বলছে, এখন দেশে প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেজে কেনাকাটা চলছে। এর মধ্যে ১২ হাজার পেজ চালাচ্ছেন নারীরা।ফেসবুককে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে স্বল্প পুঁজিতেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠছেন নারীরা। ই-ক্যাবের তথ্যমতে, গত এক বছরে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ঈদসহ যেকোনো উৎসবে এ লেনদেন বাড়ে।নারী উদ্যোক্তাদের কেউ পোশাক, কেউ গয়না, কেউ হাতে তৈরি জিনিস, কেউ তৈরি খাবারসহ নানা পণ্য বিক্রি করছেন। অনেকে দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরার কাজ করছেন। কেউ শৌখিন পণ্য নিয়ে ব্যবসায় নেমেছেন। এই নারীরা শিক্ষিত। সংসারের চাপসহ নানা সমস্যায় অনেকের পক্ষে চাকরি করা সম্ভব হয়নি। অনেকে নিজে কিছু করবেন বলে বদ্ধপরিকর। ফলে সংসার সামলানোর পাশাপাশি স্বাধীন এ ব্যবসায় আগ্রহ বাড়ছে নারীদের।ইসলামপুরের সরু গলি থেকে শুরু করে এখন লন্ডনসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই সুনাম কুড়িয়েছে আঁখি’স কালেকশন। আঁখি’স কালেকশনের উদ্যোক্তা সালমা রহমান আঁখি বললেন, ‘কলেজে পড়া অবস্থায় বুটিক হাউস দিই। ইসলামপুর, মিরপুর, মোহাম্মদপুর থেকে পোশাক এনে বিক্রি করি। এখন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি বলেই মনে করি।’মা-মেয়ে মিলে ফেসবুকে ‘সাবেরেং’ নামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর খাবারের ব্যবসা শুরু করেছেন পারাহিতা চাকমা ও তাঁর মা দেবলক্ষী চাকমা (৫৫)। মা খাবার রান্নার বিষয়টি দেখভাল করেন। একটি কলেজের প্রশাসনিক বিভাগে কর্মরত পারাহিতা বললেন, ‘মায়ের ইচ্ছাতে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে মিরপুরের নিজের বাসায় বসে ফেসবুকে নতুন এই উদ্যোগ চালু করে বেশ সাড়া পাচ্ছি।’ উদ্যোক্তারা ঘরে বসে ব্যবসা করছেন, একইভাবে ক্রেতারাও ঘরে বসে পণ্য পছন্দ করে কল করে অথবা খুদে বার্তা পাঠিয়ে পছন্দের পণ্যটি হাতে পাচ্ছেন। তবে অনলাইনে এ ধরনের ব্যবসায় ক্রেতারা ঠকছেন বলেও অভিযোগ আছে। ফেসবুকে এক পণ্য দেখিয়ে ক্রেতার কাছে অন্য পণ্য পাঠিয়ে দেওয়ার পর ক্রেতারা কোনো প্রতিকারও পাচ্ছেন না।কিছু অভিযোগ থাকলেও ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বাড়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করছেন ই–কমার্সের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে প্রযুক্তির সুবিধায় নারীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে এফ-কমার্স বা ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসা। অনলাইনভিত্তিক ক্রেতা হিসেবেও নারীর সংখ্যাই বেশি।দেশে প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেজে কেনাকাটা চলছে১২ হাজার পেজ চালাচ্ছেন নারীরা এক বছরে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঈদসহ যেকোনো উৎসবে এই লেনদেন বাড়েঅনলাইন উদ্যোগে আরেক সফল নারী তোহফাতুল জান্নাত। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যবিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করার সময়ই যুক্ত হন অনলাইন ব্যবসায়। তারপর চাকরি করলেও ব্যবসা বন্ধ করেননি। গৃহসজ্জার (এনটেরিয়র) ফার্ম দেওয়ার পাশাপাশি শোরুম দিয়েছেন রাজধানীর অভিজাত শপিং মলে। অনলাইনে তাঁর পেজের নাম ‘ক্যারিড অ্যাওয়ে বাংলাদেশ’। একজন সহকারী নিয়ে নিজের নকশা করা পোশাক বিক্রি করেন। তাঁর মতে, ক্রেতার চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ঢাকা বা ঢাকার বাইরের ক্রেতার সন্তুষ্টি ও বিশ্বাস অর্জন করতে না পারলে এ ব্যবসায় ভালো করা যায় না।হুর নুসরাত নামের ব্যবসার উদ্যোক্তা নুসরাত আক্তার জানালেন, শুধু চার বোন হওয়ায় চলার পথে অনেক বাধাবিপত্তি এসেছে। ২০১৪ সালে ব্যবসা শুরুর আগে ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেসবুকে পেজ তৈরি করেন। হাতে থাকা ১ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে শুরু করা ব্যবসায় এখন ১৫০ জন তাঁতীর কাছ থেকে পোশাক নিয়ে দেশে–বিদেশে দিনে প্রায় ২০০ পোশাক বিক্রি করা হচ্ছে। গয়নাও বিক্রি করেন তিনি।বিক্রয় ডটকমের বিপণন প্রধান ঈশিতা শারমিন বললেন, অনলাইন শপিং সাইটসহ ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এখন অনেক নারী উদ্যোক্তা ব্যবসা করছেন। ইলেকট্রনিকস, লাইফ স্টাইল পণ্য আবার কেউ জমি ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত হচ্ছেন। অল্প পুঁজিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াই ব্যবসা করা যাচ্ছে। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মাহমুদা সুলতানা নিয়মিত অনলাইনে কেনাকাটা করেন। তিনি বলেন, ‘অনলাইনে কেনাকাটা নিয়ে অনেকে প্রতারণার শিকার হলেও নিজে কখনো সমস্যায় পড়িনি।’তবে মিরপুর ১০ নম্বরের ইলিয়াস কবির তাঁর স্ত্রীর জন্য ফেসবুকে থ্রিপিস কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন। সঠিক পণ্য মেলেনি, পণ্যের দাম নিয়েও মনে সংশয় ছিল।ই-ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার বললেন, ই-ক্যাবের ফেসবুক গ্রুপে অভিযোগ দিলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউ প্রতারিত হলে প্রথমে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে ক্রেতা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলা হয়। এ ছাড়া কেনাকাটায় প্রতারণার শিকার হলে থানায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ আছে। নারী উদ্যোক্তাদের নিজেদের ব্যবসার স্বার্থেই এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে, যাতে কোনো ক্রেতা প্রতারণার শিকার না হন।
হাইকোর্ট বলেছেন, লাইসেন্স ছাড়া, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া গাড়ি চলছে। পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে কীভাবে লাইসেন্স ছাড়া যান চলে। এভাবে চলে বলে হয়তো মানুষ মারা যাচ্ছে। আমাদের একটা সিস্টেমের মধ্যে আসতে হবে।বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার যানবাহনের ফিটনেস ও চালকের লাইসেন্স-সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানিকালে এই মন্তব্য করেন।সারা দেশে রেজিস্ট্রেশনের পর ফিটনেস নবায়ন না করা যানের সংখ্যা ও লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকের সংখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী এক মাসের মধ্যে বিআরটিএকে এই তথ্য প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।একই সঙ্গে ফিটনেস নবায়ন না করা যান ও লাইসেন্স নবায়ন না করা চালকের ব্যাপারে বিআরটিএ আইনগত কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা একই সময়ের মধ্যে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।‘নো ফিটনেস ডকস, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে গত ২৩ মার্চ ইংরেজি ডেইলি স্টার পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।প্রতিবেদনটি নজরে এলে গত ২৭ মার্চ হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন।আদালত বিআরটিএর পরিচালককে (রোড সেফটি) ২৪ জুন (আজ) আদালতে হাজির হতে বলেন। একই সঙ্গে লাইসেন্সবিহীন চালক ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানের সংখ্যাসংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়। আদালতে বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মঈন ফিরোজী। সঙ্গে ছিলেন রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনুদ্দিন। দুদকের পক্ষে ছিলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব।
দুপুরের রোদে সবুজ পাতার মধ্যে লাল করমচাগুলো চকচক করছে। যেন সবুজের মাঝে সিঁদুর লাল বিন্দু! গাছে গাছে ধরে আছে আম, জাম, আলুবোখারা, লাল শরিফা, জামরুল, লটকন। আছে আনারসও। আগারগাঁওয়ে বৃক্ষমেলায় গেলে দেখা মিলবে এমন দৃশ্যের। মেলার এমন সবুজ পরিবেশ টানছেও দর্শনার্থীদের। বিক্রেতারা বললেন, ইট-পাথরের বহুতল জঙ্গলের মধ্যে একটু প্রশান্তি পেতে অনেকে যেখানে পারছে, সেখানে গাছ লাগাচ্ছে। এ কারণে গাছ কিনতে প্রচুর মানুষ আসছে মেলায়। দেখতেও আসছে অনেকে।আগারগাঁওয়ে বাণিজ্য মেলার মাঠে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা শুরু হয়। আগামী ১৯ জুলাই পর্যন্ত এ মেলা চলবে। মেলায় ১০৪টি স্টলে নানা প্রজাতির ফুল, ফল, ওষধি, শোভাবর্ধনকারী গাছ বিক্রি হচ্ছে। আরও আছে গাছ লাগানোর ও পরিচর্যার সরঞ্জাম, বই, ফুলের টব, বীজ, সার। কেউ কেউ গাছ লাগানোর মাটিও বিক্রি করছেন।মেলায় গ্রিন ওয়ার্ল্ড নার্সারির মো. তোরাব হোসেন বলেন, ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য অনেকে এখন ইনডোর প্ল্যান্ট কেনেন। এসব গাছ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে রাখা যায়। পানি দিতে হয় কম। দাম এক শ থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে।বৃক্ষমেলার পরিবেশ অন্য মেলার চেয়ে আলাদা বলে বন্ধুদের নিয়ে দল বেঁধে এসেছেন কলেজছাত্রী যারিন তাসনিম। তিনি বললেন, বৃক্ষমেলার পরিবেশই অন্য রকম। বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে ও গাছ কিনতে এসেছেন তাঁরা।মেলা ঘুরে দেখা যায় প্রচুর বিদেশি গাছ। থাই শোভাবর্ধনকারী এলেরিয়াগাছ দেখতে দেশি আলুপাতার মতো। বৃক্ষমেলায় আছে থাইল্যান্ডের গ্রাফটিং করা থাই আম ‘ই টু আর টু’। আছে চার কেজি ওজনের আম ‘ফোর কেজি’। বিদেশি ‘গোল্ডেন বল’ ক্যাকটাসের দাম লাখ টাকার মতো। আরও আছে থাইল্যান্ড থেকে আনা ক্যাকটাস। বিক্রেতারা জানান, এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং যত্নে খরচ বেশি, তাই দামও বেশি। মেলা ঘুরে দেখা যায়, মা-বাবার সঙ্গে শিশুরাও এসেছে। তারা বেশ আগ্রহ নিয়েই বিভিন্ন ধরনের গাছ দেখছে। গাছের ঝুলে থাকা ফল তাদের আনন্দ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।মেলায় দেখা গেছে, মালয়েশিয়ার মিল্ক কোকোনাট, গন্ধযুক্ত সাদা রঙের অ্যারোমেটিক জুঁই, মিসরীয় ডুমুর, থাই সফেদা, থাই পদ্ম, আমাজন লিলি, প্যারাডাইস, পয়েন, সৌদি খেজুরগাছ, গোল্ডেন বোতলব্রাশ আরও অসংখ্য রকমের গাছ। আছে পিচ, ডেউয়া, হানি ডিউ, চায়নিজ মাল্টা, থাই শসা। আরও আছে হরেক রকমের লতা ও গুল্মজাতীয় গাছ। হরেক রঙের এবং দামের ক্যাকটাস, অর্কিড, ঔষধি গাছ মিলবে মেলায়। আছে ঝুমকোলতা (থাই ফ্যাশন ফ্লাওয়ার), জুঁই, কামিনী, ক্যামেলিয়া ফুলের গাছ। ফলের মধ্যে আছে আমলকী, পেয়ারা, লেবু, জাম্বুরা, আমড়া, কামরাঙাসহ হরেক রকমের দেশি-বিদেশি ফল। এগুলোর দাম শুরু হয়েছে ১০০ টাকা থেকে। তবে যেসব গাছে ফল ধরেনি, সেগুলোর দাম আরেকটু কম।বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) স্টলে আছে বিলুপ্তপ্রায় নাগলিঙ্গম, মহুয়া, পলাশের চারাগাছ। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে সাওয়ারসপ (টক আতা), গাইনুরা, মিসরীয় ডুমুর, ভ্যানিলা অর্কিড, নীল গাছ, চুইঝালগাছ, জয়তুনগাছ (জলপাই)। এগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশি জাতের আমগাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে। ঘাসও কেনা যাবে মেলা থেকে।নিজের ফ্ল্যাটের বারান্দায় ছোট মসলার বাগান করবেন আশা বারী। নিজের ছোট্ট সন্তানকেও এই কাজে যুক্ত করবেন। তার জন্য বিভিন্ন ধরনের মসলার গাছের চারা কিনছেন। একটি মসলার গাছ কিনবেন বলে দরদাম করছেন। লিভিং আর্ট নামের একটি স্টলে সালমা শিরিন সেই গাছের দাম হাঁকছেন। সালমা শিরিন জানালেন, এই গাছের পাতা যেকোনো মাংস রান্নার সময় ছিঁড়ে দিলে তা মসলার কাজ করবে।মেলায় আছে মডেল সুন্দরবন। ‘সুন্দরবন কর্নার’ নামের ওই মডেল বন তৈরি করেছে বন বিভাগ। সেখানে বটগাছে ঝুলছে মাটির বানর। আরও আছে মাটির তৈরি বাঘ, চিত্রাহরিণ, কুমির ও বক। আছে কৃত্রিম নদীও। নদীর পাড়ে নৌকায় রাখা শুকনো গোলপাতার ডাল।গত শনিবার মেলায় গাছ কিনতে আসা মানুষের বেশ ভিড় দেখা গেছে। দর্শনার্থীদের প্রায় সবাইকে এক বা একাধিক গাছের চারা নিয়ে মেলা থেকে বের হতে দেখা যায়।বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার ঘোষ জানান, মেলার প্রথম দিনে ১৪ হাজার ২২৮টি চারা বিক্রি হয়েছে ২২ লাখ ২৮ হাজার ৫০২ টাকায়।
মা মনোয়ারা পারভীনের মৃত্যুর সময় তিনি ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী। তাই ঘটনাটি জানার জন্য তাঁর দিকেই ভিড় করেন সাংবাদিকেরা। তবে সাংবাদিক দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন। চিৎকার করে বলতে লাগলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে আমি কোনো কথা বলব না। কোথায় ছিলেন আপনারা, যখন আম্মু ট্রেনের নিচে আটকে ছিল?’গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি পড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মনোয়ারা পারভীন। সাংবাদিকসহ লোকজনের প্রতি যিনি ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন, তিনি মনোয়ারা পারভীনের দ্বিতীয় সন্তান রোকসানা পারভীন।রোকসানা আর্তনাদ করে বলেই যাচ্ছিলেন, ‘এখন আসছেন ছবি তুলতে, বক্তব্য নিতে! কাল রাতে কোথায় ছিলেন? আম্মু যখন ট্রেনের নিচে আটকে পড়ল, তখন কতজনের হাতে–পায়ে ধরে বলেছি, হেল্প মি, হেল্প মি। কেউ এগিয়ে এল না। বরং তারা সেলফি তোলা শুরু করল। লাইভ শুরু করল। তামাশা শুরু করল। আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে চাই না। প্লিজ, আমাকে বিরক্ত করবেন না।’মায়ের জন্য বুকভাঙা আর্তনাদ করা রোকসানাকে তখন জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন বড় বোন ইশরাত আরা। তাঁরা বিলাপ করছিলেন, ‘আল্লাহ আমাদের আম্মুকে নিয়ে গেছেন, আমরা কারও সঙ্গে কথা বলতে চাই না।’ তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্বজনেরা।ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত তিন নারী ও এক পুরুষের মধ্যে মধ্যরাতে প্রথম মনোয়ারা পারভীনের (৪৫) লাশই শনাক্ত হয়। পরে সকালে শনাক্ত হয় সিলেটের মোগলা বাহার থানার আবদুল্লাহপুর গ্রামের ফাহমিদা ইয়াসমিন ওরফে ইভার (২০) লাশ। ফাহমিদা সিলেট নার্সিং ইনস্টিটিউটের বিএসএসি নার্সিং কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।মনোয়ারা পারভীন কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা আবদুল বারীর স্ত্রী। আবদুল বারী আওয়ামী লীগের কুলাউড়া উপজেলা কমিটির সদস্য। সপরিবারে থাকেন কুলাউড়া পৌর শহরের ইউটিডিসি এলাকায় নিজেদের বাড়িতে। বারী-মনোয়ারা দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে ইশরাত আরার বিয়ে হয়েছে সিলেট নগরে। আরেক মেয়ে রোকসানা পারভীন কুলাউড়া পৌর শহরে অবস্থিত ইয়াকুব-তাজুল মহিলা ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ছোট ছেলে শাহরিয়ার আহমেদ এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। সিলেট শহরে একটি মেসে থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোচিং করছেন।আবদুল বারী জানান, গত শুক্রবার স্ত্রী মনোয়ারা মেয়ে রোকসানাকে নিয়ে সিলেট শহরে বড় মেয়ে ইশরাতের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। গতকাল রাতে ছেলে শাহরিয়ার তাঁদের উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে তুলে দেন। রাত পৌনে ১২টার দিকে রোকসানা তাঁকে ফোন করে বলেন, ‘আব্বু, ট্রেন অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। আম্মু মনে হয় বেঁচে নেই।’ খবর পেয়ে তিনি কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে দেখেন, দুর্ঘটনার কাছাকাছি একটি বাড়িতে মেয়ে রোকসানাকে স্থানীয় লোকজন নিয়ে রেখেছেন। মেয়ে কাঁদছেন। লোকজন তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে জেনে তিনি সেখানে চলে যান। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তিনি স্ত্রীর লাশ শনাক্ত করেন।আবদুল বারী জানান, মনোয়ারার লাশ আজ বাদ আসর গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে।আরও পড়ুন:কুলাউড়ায় কালভার্ট ভেঙে রেলের বগি খালে, অনেক হতাহতের আশঙ্কাকুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিককুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারিউপবন দুর্ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশ৭ বগি নিয়ে ঢাকার পথে উপবনছবিতে ট্রেন দুর্ঘটনা
কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টারে উঠেছে আর্জেন্টিনা। এখন থেকে শুরু করে প্রতিটি ম্যাচই মেসিদের জন্য বাঁচা-মরার। এটা খুব ভালো করেই জানেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এখন থেকেই যে আর্জেন্টিনার ‘কোপা’ শুরু সেটা জানালেন কোয়ার্টার নিশ্চিত করেই।প্রথম দুই ম্যাচে জয়হীন থেকে নিজেদের কাজ নিজেরাই কঠিন করে ফেলেছিল মেসিরা। অবশেষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কাতারের বিপক্ষে জিতে আত্মবিশ্বাসটা কিছুটা হলেও ফিরেছে। আত্মবিশ্বাসী হয়েই মেসি জানিয়েছেন, সময় এখন ‘বাঁচা-মরার’।ম্যাচের ফল নিয়ে সন্তুষ্ট মেসি। তিনি মনে করেন, ঠিক যেভাবে খেলার দরকার ছিল, দল সেভাবেই খেলেছে। ম্যাচ জিতে যেন সঞ্জীবনী শক্তি পেয়েছেন তারা, ‘আমরা বেশ ভালো একটা ম্যাচ খেলেছি। ম্যাচটা জিতেছি আমরা। ম্যাচ জয়টাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমন একটা ম্যাচের দরকার ছিল। যে ম্যাচে আমরা আমাদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে পারি, মানসিক শান্তি ফিরে পেতে পারি। আমাদের সমর্থকেরা সে কাজে আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন এখন পর্যন্ত।’প্রথম থেকে ‘প্রেসিং ফুটবল’ খেলে সুফল পায় আর্জেন্টিনা। কাতারের বিপক্ষে প্রথম গোলটা আসে চার মিনিটের মাথাতে। ইন্টার মিলানের তরুণ স্ট্রাইকার লওতারো মার্টিনেজের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এসব ছোটখাটো উন্নতিতেই সন্তুষ্ট মেসি, ‘যত ম্যাচ যাচ্ছে, আমরা আস্তে আস্তে উন্নতি করছি। আর এই ম্যাচটা সেই লক্ষ্য পূরণ করেছে।’মেসি নিজেও বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিলেন গোল করার, কিন্তু গোল করতে পারেননি। তা সত্ত্বেও, দল যে কোয়ার্টারে উঠতে পেরেছে, এতেই সন্তুষ্ট তিনি। এখন থেকে প্রত্যেক ম্যাচই জীবন-মরণ লড়াই আর্জেন্টিনার, সেটা বেশ ভালোই জানেন মেসি, ‘আমাদের কোপা এখন থেকে শুরু হলো। এখন থেকে হয় সবকিছু জিতব, নয় খালি হাতে ফেরত যাব। লড়াইগুলো বাঁচা-মরারই।’
অন্যান্য সংক্রামক রোগের মতো টিকা দিয়েই কি মরণব্যাধি কর্কট রোগ বা ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব? যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী স্টিফেন জনস্টোন বলেছেন, এটা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মাত্র ১০ শতাংশ সম্ভাবনাও যদি থেকে থাকে, তিনি সেই সুযোগ নিতে চান। যে কথা সেই কাজ, জনস্টোন একটি টিকা তৈরি করেছেন, যা ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারবে বলে তিনি আশা করছেন। এই টিকা দিয়ে ইতিমধ্যে কুকুরের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু করেছেন।জনস্টোন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ওষুধ আবিষ্কার কেন্দ্রের পরিচালক। কুকুরের ওপর ক্যানসারের টিকা পরীক্ষার কাজে তাঁর সহযোগী হয়েছেন কলোরাডো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্লিন্ট পশু ক্যানসার কেন্দ্রের ক্লিনিক্যাল রিসার্চের পরিচালক ডগ থাম।আণবিক পর্যায়ে প্রত্যেক ক্যানসার রোগীর রোগের ধরন আলাদা। তবে সব ক্যানসারই তিনটি বিষয়ে অভিন্ন। তা হলো এরা টিউমার কোষ থেকে সৃষ্টি হয়, দ্রুত ছড়ায় এবং এর ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়া ধরা খুব কঠিন। এ জন্যই এই রোগ প্রতিরোধও খুব কঠিন। অনেকটা ডুবোজাহাজের রাডার ফাঁকি দেওয়ার মতো করেই অজ্ঞাতসারে টিউমার জন্ম নেয়, বেড়ে ওঠে।তবে জনস্টোন মানুষের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকেই ক্যানসার কোষ শনাক্তের সক্ষমতা দেওয়ার দাবি করেছেন। তাঁর আবিষ্কৃত টিকা তিনি মানুষের ওপরই পরীক্ষা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে অনুমোদনের জটিলতায় পরে তিনি তা পশুর ওপর পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। ডগ থাম তাঁকে ধারণা দেন, কুকুর ও মানুষ একই ধরনের পরিবেশে বসবাস করে থাকে। অধিকাংশ বয়স্ক কুকুর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় এবং মানুষ ও কুকুরের ক্যানসার আণবিক পর্যায়ে একই ধরনের বলে কুকুরের ওপর পরীক্ষা কার্যকর হতে পারে।জনস্টোন কুকুরের যে আট প্রকারের ক্যানসার বেশি হয়, সেই আট প্রকার ক্যানসার কোষ থেকে কয়েক শ অভিন্ন নিওএপিটোপ নেন। নিওএপিটোপ ক্যানসার কোষের উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে আক্রমণ করে। এ রকম অভিন্ন ৩১টি নিওএপিটোপ ব্যবহার করে তিনি টিকা উদ্ভাবন করেছেন। জনস্টোন বলেন, তাঁর টিকা ক্যানসার ভাইরাস নয়, খোদ ক্যানসার কোষ প্রতিরোধ করবে। আর এটি সফল হলে ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় মাত্র ১০০ থেকে ৫০০ মার্কিন ডলারে নেমে আসবে।
তদন্ত বা অনুসন্ধানের জন্য আয়কর বিভাগ এবং ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য সরাসরি তলব করতে পারবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া গুরুত্ব বিবেচনায় দুদক অভিযোগ অনুসন্ধান না করেই সরাসরি মামলা দায়ের করতে পারবে। দুদক আইনের সংশোধিত বিধিমালার গেজেটে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, দুদক আইনের তফসিলভুক্ত কোনো অপরাধ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও তা চলে যাবে থানার পরিবর্তে সংস্থাটির ২২টি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে। নতুন বিধি অনুযায়ী অনুসন্ধান বা তদন্ত চলাকালে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে বা বেনামে থাকা সম্পত্তি ক্রোক বা অবরুদ্ধ করতে পারবেন।২০০৪ সালে দুদক আইন পাস হওয়ার পর ২০০৭ সালে দুদক বিধিমালা জারি হয়। প্রায় এক যুগ পর বিধিমালাটি সংশোধন করে দুদকের বিদ্যমান ক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনগতভাবে স্বাধীন ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের জন্য দুদকের ক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। তবে তাঁরা এই ক্ষমতার অপপ্রয়োগের আশঙ্কা প্রকাশ করে সাম্প্রতিক সময়ে দুদকের কিছুসংখ্যক কর্মকর্তার দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিধির এই সংশোধন দুদক আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে গড়ে তুলতে এমন বিধি দরকার। তবে ব্যক্তির অবস্থান বা পরিচয়ের ওপর যদি এই আইন বা বিধির প্রয়োগ হয় এবং সেটি যদি বৈষম্যমূলক হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানটি বরং বিতর্কিত এবং অকার্যকর হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে তিনি দুদকের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, দুদকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা এবং জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করার ওপর এই বিধির সাফল্য নির্ভর করবে।মামলা, আয়কর ও ব্যাংক হিসাববিধিমালা সংশোধনের পর কেউ যদি থানায় দুর্নীতির অভিযোগ করেন, সে ক্ষেত্রে পুলিশ তা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে রেকর্ড করবে। পরে তা অনুসন্ধানের জন্য দুই কার্যদিবসের মধ্যে দুদকে পাঠাবে। অভিযোগের অনুসন্ধান বা মামলার তদন্তের জন্য তদন্ত বা অনুসন্ধান কর্মকর্তা ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিতে পারবেন। এমনকি আয়কর অফিস থেকে হিসাব বিবরণীসহ আনুষঙ্গিক সব তথ্য জব্দ বা অনুলিপি তলব করতে পারবেন। অবশ্য দুদকের একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, বিধি সংশোধন করে যেসব ক্ষমতা দুদককে দেওয়া হয়েছে, তা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু অনেকেই এটা জানতেন না। বেশ কিছু অস্পষ্টতাও ছিল। সংশোধিত বিধির মাধ্যমে সব বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, আইনে দুদকের অনেক ক্ষমতা, এটা আগেও ছিল। এখন বিধি সংশোধন করে তা স্পষ্ট করা হচ্ছে। তাঁর মতে, দুদক আইন অন্য সব আইনের ওপরে এবং এটা ২০১৩ সালের সংশোধিত আইনে বলা আছে। তিনি মনে করেন, আইন বা বিধি কেবল থাকলেই হবে না। এর বাস্তবায়নে সৎ, দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা দরকার। দুদকের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে।সম্পত্তি ক্রোককোনো ব্যক্তির জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পত্তি থাকলে তা ক্রোক বা অবরুদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আদালতে আবেদন করতে পারবেন। এই সম্পত্তি অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে বা বেনামে বা দখলে থাকলেও তা ক্রোকের আবেদন করা যাবে। এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তির সম্পত্তি সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা না গেলে অথবা অন্য কোনো কারণে সম্পত্তি ক্রোক না করা গেলে ওই ব্যক্তির সমমূল্যের অন্য সম্পত্তি ক্রোক করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আদালতে আবেদন করতে পারবেন। স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হলে এর হস্তান্তর বা লেনদেন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আদালতের আদেশ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে। ভূমি কার্যালয় ও সাবরেজিস্ট্রারকে বিষয়টি অবহিত করা হবে। এ ছাড়া কোনো ব্যাংক হিসাব বা লকার অবরুদ্ধ করা হলে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অবহিত করা হবে। শেয়ার বা ডিবেঞ্চার ক্রোক করা হলে তা স্টক এক্সচেঞ্জ, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে জানানো হবে। এ ছাড়া নৌযান, স্থলযান এবং আকাশযান ক্রোক করা যাবে এবং এসব যানবাহন যাতে না চলতে পারে, সে জন্য প্রত্যেক যানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে (বিমান, নৌপরিবহন বা সড়ক পরিবহন) আদালতের নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হবে।কেউ থানায় দুর্নীতির অভিযোগ করলে পুলিশ জিডি হিসেবে রেকর্ড করবেঅনুসন্ধানের জন্য দুই কার্যদিবসের মধ্যে দুদকে পাঠাবেআরও যেসব বিষয়দুদকের কর্মকর্তারা জানান, সংস্থার সমন্বিত ২২টি কার্যালয়ে মামলা করা যাবে। তবে সেগুনবাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয় এবং আটটি বিভাগীয় কার্যালয়ে কোনো মামলা করা যাবে না। আগের বিধিতে অনুসন্ধানের সময় ছিল নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে ১৫ দিন, নতুন বিধিতে তা ৪৫ দিন করা হয়েছে। তবে যুক্তিসংগত কারণ থাকলে তা আরও ৩০ দিন বাড়ানো যাবে।গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত বিধি সংশোধনের গেজেট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, বিধিমালাটির গেজেট গতকাল প্রকাশিত হলেও এটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। তাঁর মতে, এই বিধির ফলে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদকের ক্ষমতা বিকশিত হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষা করেই সব আইন বা বিধি প্রণয়ন বা প্রয়োগ করা দরকার। আয়কর ফাইল তলব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যক্তির আয়কর-সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করার দায়িত্ব আয়কর বিভাগের। সেখানে দুদক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট আইন বা বিধির মধ্যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। শাহদীন মালিক আরও বলেন, ‘আমরা একটি শক্তিশালী দুদক চাই। কিন্তু মানুষের আস্থা অর্জন এবং সক্ষমতা ছাড়া দুদকের ক্ষমতা বাড়ানো হলে তা আইন বা বিধির অপব্যবহারের সম্ভাবনা বাড়াবে। বড় দুর্নীতিবাজদের তেমন কিছুই হচ্ছে না এবং ছোটখাটোদের ধরার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের তো কিছুই হয়নি। অথচ ওই ব্যাংকের অনেকে জেলে। এমনটি হলে ক্ষমতা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
বিশ্বকাপে এখনো কোনো ম্যাচেই জিততে পারেনি আফগানরা। ভারতের বিপক্ষে আশা জাগালেও শেষটা সুন্দর হয়নি। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে আজ যে করেই হোক একটা জয় চাইছে আফগানিস্তান।কাগজে–কলমে আরও আগেই বাদ পড়েছে আফগানিস্তান। এখন শুধু নিয়ম রক্ষার খাতিরেই বাকি ম্যাচগুলো খেলবে তারা। বলতে গেলে, আফগানিস্তানের হারানোর আর কিছুই নেই। আর এই ভয়ডরহীন আফগানিস্তানই হুমকি হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের জন্য। আজ সাউদাম্পটনে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলকে প্রচ্ছন্ন এক হুমকিই দিয়ে রাখলেন আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব।বিশ্বকাপের শুরুতে স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকার ‘ডার্ক হর্স’ মেনেছিলেন আফগানিস্তানকে। লিটল মাস্টারের সে ভবিষ্যদ্বাণী ফলেনি, বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচও জিততে পারেনি আফগানরা। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে নিজেদের সপ্তম ম্যাচটি খেলবে গুলবাদিন নাইবের দল। সাউদাম্পটনে আফগানদের জন্য আজকের লড়াই অনেকটা নিজেরে সম্মানটুকু পুনরুদ্ধারের। অন্যদিকে, সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে মাশরাফিদের আজ জিততেই হবে। শক্তিমত্তার কথা চিন্তা করলে ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। এ সবকিছুই জানেন আফগান অধিনায়ক। তবে বাংলাদেশকে হারানোর আশা ছাড়ছেন না তিনি, নিজেদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন যেমন শেষ হয়ে গেছে, বাংলাদেশকে হারিয়ে মাশরাফি-সাকিবদের বিশ্বকাপ ক্রিকেট স্বপ্নও শেষ করে দিতে চাচ্ছেন গুলবাদিন! সেই আশার কথা বলতে বলতেই যে আফগান অধিনায়ক আবৃত্তিকার হয়ে উঠলেন! বললেন, ‘হাম তো ডুবে হ্যায় সানাম, তুম কো লে কার ডুবেঙ্গে (আমরা তো ডুবেছিই, এখন তোমাকে নিয়েই ডুবব হে প্রিয়!)!’সাকিব–তামিমদের মনে এখনো বিশ্বকাপ সেমির স্বপ্ন। তবে প্রদীপের আলো জ্বালিয়ে রাখতে আজ আফগানদের বিপক্ষে যেকোনো মূল্যে জিততেই হবে। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো এই, সাউদাম্পটনেই কোহলিদের ঘাম ছুটিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ঠিকমতো দাঁড়াতেই পারেননি মুজিব-রশিদদের সামনে। তাই শুধু মুখের কথার জন্য না, মাশরাফিদের আজকে একটু বেশি সতর্ক তো থাকতেই হচ্ছে!
মো. রিদোয়ান ওরফে জুবায়ের একজন আন্তর্জাতিক ইয়াবা ব্যবসায়ী। ১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় ছয় মাস আগে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে এই তথ্য রয়েছে। অথচ গত মাসে বায়েজিদ থানা-পুলিশের আরেকটি ইয়াবা উদ্ধারের মামলার অভিযোগপত্র থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আর্থিক সুবিধা নিয়ে নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রিদোয়ান গত মাসে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী সাইফুল করিমের অন্যতম সহযোগী। মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে তাঁদের জন্য ইয়াবার চালান পাঠাতেন সেখানকার বাসিন্দা ও মাদক ব্যবসায়ী আবদুর রহিম। মাদক মামলায় বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন রিদোয়ান। তালিকাভুক্ত এই ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে।চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীর নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় এটি অধিকতর তদন্তে পাঠানোর জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। ডিবি পুলিশ তাঁর সম্পর্কে তথ্য পেলেও থানা-পুলিশ না পাওয়ার পেছনে রহস্য থাকতে পারে। এটিও বের করা উচিত।ঘটনার শুরু গত বছরের ৬ অক্টোবর। ওই দিন নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কুয়াইশ-অক্সিজেন রোড এলাকা থেকে ৭ হাজার ৭৫০টি ইয়াবাসহ আবদুল গফুর নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি উখিয়ার পালংখালীতে। এই ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। আসামি করা হয় গফুর ও মো. রিদোয়ানকে। এজাহারে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গফুর জানিয়েছেন, তিনি টেকনাফ থেকে কম দামে ইয়াবা সংগ্রহ করে রিদোয়ানের সাহায্যে চট্টগ্রামে বিক্রি করে থাকেন।ছয় মাস আগে ডিবির অভিযোগপত্রে রিদোয়ানকে আন্তর্জাতিক ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়গত মাসে বায়েজিদ থানার মামলায় অভিযোগপত্র থেকে রিদোয়ানের নাম বাদ যায়ওই বছরের ৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিদোয়ানকে নগরের হালিশহর থানার একটি মামলায় (১৩ লাখ ইয়াবা উদ্ধার) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের মাসের ২ ডিসেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই উৎপল চক্রবর্তী রিদোয়ানকে ৭ হাজার ৭৫০টি ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় গ্রেপ্তার দেখান।এদিকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ফরহাদ হোসেন গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রিদোয়ানসহ ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ওই বছরের ৩ মে নগরের হালিশহর থেকে ১৩ লাখ ইয়াবাসহ আশরাফ আলী নামের একজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনার মামলার অভিযোগপত্র এটি। এতে বলা হয়, আশরাফের জবানবন্দি অনুযায়ী এই ইয়াবার মালিক কক্সবাজারের সিআইপি সাইফুল করিম (বন্দুকযুদ্ধে নিহত) ও রিদোয়ান। ইয়াঙ্গুন থেকে তাঁদের জন্য ইয়াবার চালানটি পাঠান সেখানকার বাসিন্দা ও মাদক ব্যবসায়ী আবদুর রহিম। আগে-পরে মিলে রিদোয়ানের কাছে রহিমের পাওনা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।রিদোয়ান সম্পর্কে নগর ডিবি পুলিশ এত সব তথ্য পেলেও বায়েজিদ বোস্তামী থানার পুলিশ কিছুই জানে না। শুধু গফুরকে আসামি করে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, গ্রেপ্তারের ছয় দিন আগে-পরে গফুরের সঙ্গে রিদোয়ানের ফোনে কথা হয়নি।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই উৎপল চক্রবর্তী বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় রিদোয়ানকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়া হয়নি।
আগামী ৪ জুলাই হজ ফ্লাইট শুরু। এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই। হজে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা কী করবেন, কীভাবে হজব্রত পালন করবেন—এসব নিয়ে এই বিশেষ আয়োজন। পরিকল্পনা ও সমন্বয় করেছেন ফেরদৌস ফয়সালজিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই।এ বিষয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান জানালেন, এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা, টিকা দেওয়া, স্বাস্থ্যসনদ সংগ্রহ, হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। হজ পালনের প্রশিক্ষণও নিতে হবে। হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ কার্যালয় থেকে জানা যাবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় বইপুস্তক বা পরিচিত লোকজনের কাছ থেকেও হজবিষয়ক তথ্য জানতে পারেন। আর হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd ঠিকানার ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করুন—‘হে আল্লাহ! আমার হজকে সহজ করো, কবুল করো’—দেখবেন, আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য হারাবেন না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না।হজে যাওয়ার আগেপাসপোর্ট, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও তারিখ নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। নিয়ম মেনে ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে নিন। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। চাইলে প্রথম আলো হজ গাইড সংগ্রহ করতে পারেন।www.prothomalo.com/hajj ঠিকানার ওয়েবসাইট থেকেও নামিয়ে নিতে পারেন। যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যে আলেমের ইলম ও তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তার সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সে মতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না।প্রয়োজনীয় মালপত্রহজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। যেমন: ১. পরিচয়পত্র। পাসপোর্ট, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ। ২. পুরুষের জন্য ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট। প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ এক টুকরা কাপড়। ইহরামের কাপড় সাদা এবং সুতি হলে ভালো হয়। নারীদের জন্য সেলাইযুক্ত স্বাভাবিক পোশাকই ইহরামের কাপড় ৩. নরম ফিতাওয়ালা স্যান্ডেল। ৪. ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হলে কটিবন্ধনী (বেল্ট)। ৫. গামছা, তোয়ালে, ৬. লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি (আপনি যে পোশাক পরবেন)। ৭. সাবান, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ বা মিসওয়াক। ৮. নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা। ৯. থালা, বাটি, গ্লাস, ১০. হজবিষয়ক বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক। ১১. কাগজ-কলম। ১২. চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা। ১৩. বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য), ১৪. নারীদের জন্য বোরকা, ১৫. যত দিন বিদেশে থাকবেন, সেই অনুযায়ী নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ ওষুধ নেবেন, ১৬. মোবাইল ফোন (সৌদি আরবে ব্যবহার করা যায়, এমন সিম কিনে নিতে হবে)। ১৭. মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা স্যুটকেস (তালা-চাবিসহ)। বাংলাদেশের পতাকা খচিত ট্রলি ব্যাগ (৬৫ x ৪৫ x ২৫ সেন্টিমিটার) ও হাতব্যাগ নিজ দায়িত্বে সংগ্রহ করতে হবে। ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর লিখতে হবে। এর বাইরে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মনে হলে তা নিয়ম মেনে সঙ্গে নিতে হবে। ঢাকার হজ ক্যাম্পে● বিমানে যাত্রার আগে হজ ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার শরীর ও মালপত্রের প্রতি খেয়াল রাখবেন।● কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন।মালপত্রের বিধিনিষেধবিমানে উড্ডয়নকালে হাতব্যাগে ছুরি, কাঁচি, দড়ি নেওয়া যাবে না। বিমান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী বিমানে কোনো হজযাত্রী সর্বোচ্চ ৪০ কেজির বেশি মালামাল বহন করতে পারবেন না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ নেওয়া যাবে না। চাল, ডাল, শুঁটকি, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেমন: রান্না করা খাবার, তরিতরকারি, ফলমূল, পান, সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া যাবে না।জরুরি কাগজপত্র১০ কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, ৬ কপি স্ট্যাম্প ছবি, পাসপোর্টের শুরুর ২-৩ পৃষ্ঠার ফটোকপি, স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও টিকার সনদ। নারী হজযাত্রীর ক্ষেত্রে শরিয়তসম্মত মাহরামের সঙ্গে সম্পর্কের সনদ, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ। সরকারি চাকরিজীবী হলে অফিস আদেশ বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে দেখাতে হয়। প্রত্যেক হজযাত্রীর ৭ সংখ্যার একটি পরিচিতি নম্বর থাকে। এর প্রথম ৪ সংখ্যা এজেন্সির নম্বর আর শেষ ৩ সংখ্যা হজযাত্রীর নম্বর। ১০ সংখ্যার ট্র্যাকিং নম্বরটি প্রাক্​–নিবন্ধনের সময় কম্পিউটারের দেওয়া নম্বর যেমন N1AB*7F0*9D জানা থাকলে হজযাত্রী ও তাঁর আত্মীয়স্বজন ওয়েবসাইটে ওই হজযাত্রীর তথ্য পেতে পারেন সহজে।● সৌদি সরকার হজযাত্রীদের জন্য ই-ভিসা চালু করেছে। এই ভিসা পাসপোর্টের সঙ্গে লাগানো থাকে না। কাগজে প্রিন্ট করে দেবে। ফলে হজযাত্রীদের এটি আলাদা সংরক্ষণ করতে হবে। আগে পাসপোর্টের সঙ্গে ভিসা লাগানো থাকত বলে আলাদা করে ভিসা সংরক্ষণের প্রয়োজন হতো না।● মুক্তচিন্তা প্রকাশনীর একজন হজযাত্রীর রোজনামচা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত পবিত্র মক্কা মদিনার পথে প্রান্তরে বই পড়তে পারেন।হজের তথ্য ও প্রথম আলো হজ গাইড পেতে এই কিউআর কোডটি স্ক্যান করুন ।
তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আদা ও রসুনের দামের ঝাঁজ বেড়েছে। রমজানের শুরুর দিকে খুচরায় প্রতি কেজি আদা মানভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে সেই আদা মানভেদে খুচরায় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। রসুনও প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরুর দিকে প্রতি কেজি রসুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এখন সেই রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদের আগের আদা ও রসুনের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। ছবিগুলো বগুড়া শহরের পাইকারি বাজার রাজাবাজার ও ফতেহ আলী বাজার থেকে তোলা।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় আগামী বোরো মৌসুমে বেগুনি রঙের ধান চাষ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। এ ধানের বীজ সংগ্রহ করতে কৃষকেরা ১ কেজি বীজ ১০০ টাকায় কিনছেন। আগামী মৌসুমে বেগুনি রঙের ধান চাষ উপজেলায় ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে বীজ ধান কিনতে কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষক শাহিনুর আলমের সঙ্গে কৃষকেরা যোগাযোগ করছেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পার্সেল করে এই বীজ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়েছে।উপজেলা কৃষি কার্যালয় ও কৃষকদের মাধ্যমে জানা গেছে, নালিতাবাড়ীর সন্তান ব্যাংকার সারোয়ার আলম কুমিল্লায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির সুবাদে কুমিল্লার আদর্শ সদরের মনাগ্রামের কৃষক মনজুর হোসেনের সঙ্গে পরিচিত হন। সে সুবাদে কৃষক মনজুরের বেগুনি রঙের ধানখেত দেখে সারোয়ার ধানের বীজ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নিজের এলাকায় বেগুনি রঙের এই ধানের বিস্তার ঘটাতে মনজুরের কাছ থেকে ৫ কেজি ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। পরে সেই বীজ উপজেলা কৃষি কার্যালয়ে জমা দেন। কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল আগ্রহ নিয়ে উপজেলার ভেদিকুড়া গ্রামের কৃষক শাহিনুর আলমের ৫ শতাংশ জমিতে চলতি বোরো মৌসুমে এই ধান লাগিয়েছিলেন। শুরুতেই সবুজের মধ্যে ধূসর রঙের ধানখেত দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন খেতটি অযত্নে মরে যাচ্ছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধানগাছের পাতা গাঢ় বেগুনি রং ধারণ করে। সবুজের সমারোহের মাঠে ৫ শতাংশ বেগুনি খেত সবার দৃষ্টি কাড়ে।৫ শতাংশ জমিতে বেগুনি রঙের ধান শুকিয়ে ১৩ মণ ধান পেয়েছেন কৃষক। হিসাব অনুযায়ী, একরে ধান হয়েছে ৫২ মণ। ১৩ মণ ধানই বীজ হিসেবে কৃষক শাহিনুর সংগ্রহ করেছেন। ইতিমধ্যে ৩ মণ ধান ১০০ টাকা কেজি হিসেবে বাড়িতে বসেই বিক্রি করেছেন।কৃষক শাহিনুর বলেন, ব্যাংকার সারোয়ার ও কৃষি কর্মকর্তা শরিফের প্রচেষ্টায় তিনিই প্রথম এই উপজেলায় বেগুনি রঙের ধান চাষ করতে পেরেছেন। ৫ শতাংশ জমিতে ধান কাটাই-মাড়াই করে ১৩ মণ ধান পেয়েছেন। সারা বছর কৃষি কাজ করে যা পাননি। কিন্তু ৫ শতাংশ জমিতে বেগুনি রঙের ধান চাষ করে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে মানুষ বীজ নিতে তাঁকে ফোন করেন। এলাকায় বীজ ধানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল বলেন, বেগুনি রঙের ধানের বীজ পেতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। গণমাধ্যমে এই ধানের প্রচার পাওয়ায় আগামী মৌসুমে কৃষকেরা এই ধান চাষ করতে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করছেন। ইতিমধ্যে কৃষক শাহিনুরের কাছ থেকে ৩ মণ বীজ বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিদিন বীজ নিতে অনেকেই ফোন করেন। আশা করছেন, আগামী বোরো মৌসুমে উপজেলায় বেগুনি রঙের ধানের আবাদে বিস্তার ঘটবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর সেতুর প্রবেশমুখে শিপমেন্টের মালামাল নিয়ে একই জায়গায় চার দিন ধরে আটকে আছেন কাভার্ড ভ্যানের চালক রিপন মিয়া। ১৮ জুন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দিয়ে মধ্যরাতে সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে পৌঁছান তিনি। বিশ্বরোড থেকে শাহবাজপুর সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার যেতে তাঁর দুই দিন লেগেছে।ঢাকার আরিচা থেকে কাঁঠাল নিয়ে এসে ছয় দিন ধরে আটকা পড়েছেন সিলেটগামী ট্রাকের চালক মো. মানিক, ঝিনাইদহ থেকে সিলেটগামী ট্রাকচালক ইমতিয়াজ আলী, রাজশাহী থেকে রসুন নিয়ে এসেও ছয় দিন ধরে আটকা পড়েছেন ট্রাকচালক দুলাল মিয়া।ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলের তিতাস নদের ওপর নির্মিত শাহবাজপুর সেতু দিয়ে ছয় দিন ধরে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এদিকে গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, সওজ কর্তৃপক্ষ সেতুর ওপর বেইলি সেতু বসানোর কাজ করছে। সেতুর দুই পাশে ৩০-৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পণ্যবাহী ভারী ট্রাক ও লরি আটকা পড়ে আছে।পরিবহনশ্রমিকদের অভিযোগ, সওজ ও হাইওয়ে পুলিশের উদাসীনতার কারণে মহাসড়কে আটকে থাকা শ্রমিকদের নানা রকম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। রাস্তায় পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন শ্রমিকেরা। তবে সওজ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য শ্রমিকেরা দিনরাত কাজ করছেন। আজ সোমবার বিকেলে সেতু দিয়ে হালকা যান চলাচল সম্ভব হবে।সওজ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরি আনা হচ্ছে। তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ফেরি চলে আসবে। তিতাস নদের দুই পাশে ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপারের জন্য রাস্তা ও ঘাট নির্মাণের কাজ চলছে। বেইলি সেতুর পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে এই ফেরি ব্যবহার করা হবে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ভূঁইয়া রেদওয়ানুর রহমান বলেন, সেতুর ওপর বসানো নতুন বেইল সেতু দিয়ে চার–পাঁচ টনের হালকা যান চলাচল করতে পারবে। তবে ভারী যান চলাচল করতে দেওয়া হবে না। সেতুর দুই পাশে আটকা পড়া বিভিন্ন ভারী পণ্যবাহী যানবাহন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীরা আলোচনা করছেন।চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের হবিগঞ্জগামী চালবোঝাই ট্রাকের চালক সালাম মিয়া, দিনাজপুর থেকে চাল নিয়ে সিলেটগামী ট্রাকের চালক সাত্তার মিয়া, সিলেট থেকে খাদ্যসামগ্রীবাহী ট্রাকের চালক নাসির আহমেদ ও সিলেট থেকে কাঁচামাল নিয়ে ঢাকাগামী ট্রাকের চালক মো. রাসেল বলেন, তাঁরা পাঁচ-ছয় দিন ধরে মহাসড়কে আটকা পড়েছেন। এখানে পানি ও খাদ্যসামগ্রীর অভাব। অন্যদিকে সন্ধ্যার পর অস্ত্রধারী স্থানীয় যুবকেরা তাঁদের ট্রাক ও লরির সব লুটে নিচ্ছে। এমনকি যানবাহনের জ্বালানি তেল, ব্যাটারি, হেড লাইট ও চাকা পর্যন্ত খুলে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় পুলিশ তেমন কোনো নিরাপত্তা দিচ্ছে না।শাহবাজপুর এলাকায় বুধবার ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হওয়া মাছ ব্যবসায়ী সুভাষ দাস বুধবার শাহবাজপুর এলাকায় মাছবোঝাই ট্রাক নিয়ে আটকা পড়েন। তিনি বলেন, ট্রাকে তাঁর ১১ লাখ টাকার মাছ ছিল। তিন দিন পর তিনি ওই মাছ শাহবাজুর মৎস্য আড়তে সাত লাখ টাকায় বিক্রি করেন। কিন্তু বিক্রির হওয়া মাছের টাকা না পেয়ে ঢাকায় ফেরত যেতে পারছেন না।মহাসড়কের বিজয়নগর উপজেলায় চান্দুরা এলাকায় সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক আবদুল কাদের বলেন, মহাসড়কের ওপর দুই সারিতে রাখা ট্রাক নিয়ে সামান্য এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁকে মারধর করে এবং ট্রাকের হেড লাইট ভেঙে দেয়।চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী কাঁচামাল নিয়ে শাহবাজপুর সেতু এলাকায় ছয় দিন ধরে আটকা পড়ে আছেন ট্রাকচালক বাবু নিমাই। তিনি বলেন, তিন-চার দিন ধরে সন্ধ্যার পর দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে বেইলি সেতু (ঢাকা অভিমুখী অংশ) দিয়ে ট্রাক ছেড়ে দেওয়া হয়।গতকাল দুপুরে শাহবাজপুর সেতুর ওপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বামীর আল খাতুনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, আগামীকাল (আজ সোমবার) বিকেলের মধ্যে বেইলি সেতু দিয়ে চার থেকে পাঁচ টন ওজনের যান চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে। তবে মাঝারি ও ভারী যানবাহন এই সেতু দিয়ে চলাচল সম্ভব নয়। যাত্রী নামিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে। তা ছাড়া আশা করা যায়, আগামী ৩ জুলাই নির্মাণাধীন সেতু দিয়ে সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে একাধিক নির্মাণশ্রমিক বলেন, নতুন সেতুর ৪৪ মিটার অংশের কাজ সম্পন্ন করতে আরও ৪০ দিন লাগবে।পরিবহনশ্রমিকদের দুর্ভোগ ও চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার বলেন, ‘এমন কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। চালকদের যানবাহনের আশপাশে থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।’
‘তুমি পারবে না’ কিংবা ‘তোমাকে দিয়ে হবে না’—এমন নেতিবাচক কথা নয়, বরং ‘তুমিই যোগ্য, তুমিই সেরা’ স্লোগান নিয়ে সিলেটে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে মুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশন পরিচালিত চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করার কৃতিত্ব দেখিয়ে সমীহ আদায় করে নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান হচ্ছে সিলেট কমার্স কলেজ, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, ইডেন গার্ডেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মুহিবুর রহমান একাডেমি।সিলেট কমার্স কলেজ‘প্রাইভেট পড়াকে না বলুন’ স্লোগান নিয়ে ২০০৫ সালে নগরের মিরের ময়দান এলাকায় ১২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল কলেজটি। বর্তমানে ৭০০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এখানে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ২০০৯ সালে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিষ্ঠানটি ফলাফলের ভিত্তিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একজন শিক্ষার্থী কোনো এক দিন ক্লাস ফাঁকি দিলে, তাৎক্ষণিকভাবে সেটি ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। এর ফলে অভিভাবকেরা ওই শিক্ষার্থীর গতিবিধির ওপর নজর রাখেন। কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে কোনো বিষয় না বুঝলে, ক্লাসের বাইরে অতিরিক্ত সময় নিয়ে তাকে সেটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী আবু ইফতেখার বলে, ‘শহরের মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য এই কলেজটিই সবচেয়ে ভালো।’সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজবিজ্ঞান শাখার জন্য বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কলেজটি পরিচিতি পেয়েছে। নগরের মিরের ময়দান এলাকায় ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ৩৭৫ জন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উচ্চমাধ্যমিকে এখানকার শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করে আসছেন।মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে এ কলেজে ভর্তি হয়েছে রিজওয়ানা ইসলাম। সে বলে, ‘এখানে পড়াশোনার পরিবেশ খুবই ভালো। মানসম্মত পড়ালেখার দিক দিয়েও এ প্রতিষ্ঠান এগিয়ে।’ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে যেমন মুখস্থ করতে দেওয়া হয় না, তেমনি প্রাইভেটকেও ‘না’ জানানো হয়।কলেজের অধ্যক্ষ মু. ম রহমান বুলবুল বলেন, ‘আমাদের এখানে একেকটি ক্লাস হয় ৭৫ মিনিটের। প্রতিদিন ল্যাব ক্লাস হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনায় প্রতিযোগিতা তৈরিতে শিক্ষকেরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।’ইডেন গার্ডেন স্কুল অ্যান্ড কলেজএ কলেজটির অবস্থান নগরের রায়নগর দর্জিপাড়া এলাকায়। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ২৫০ জন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ কলেজের শিক্ষার্থীরাও শতভাগ পাস করে আসছে।মুহিবুর রহমান একাডেমিনগরের দরগামহল্লা এলাকায় ২০১২ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে প্লে গ্রুপ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত চালু রয়েছে। বর্তমানে ৮৬০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রধান শিক্ষক মো. শামস উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ক্লাসের বাইরেও বিশেষ ক্লাস নেওয়া হয়। এতে ইতিবাচক ফল আসছে। ভালো পাঠদানের পরিবেশ তৈরি করতে শিক্ষকদেরও নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।চেয়ারম্যানের বক্তব্যমুহিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কতগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের শতভাগ ক্লাসে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের গৃহশিক্ষকের শরণাপন্ন হতে হয় না। সিসিটিভির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক ক্লাস ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে অভিভাবকদের রেকর্ড প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থা আছে।’ মুহিবুর রহমান আরও বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর ভর্তি পরীক্ষাসহ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জীবনের যেকোনো প্রকার প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যে নিয়মিত সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রয়েছে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসনসুবিধাও। এর বাইরে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমও নিয়মিত চারটি প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হয়।’
ওমরাহর নিয়ত করে ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করলাম মক্কার উদ্দেশে। বিকেল পাঁচটায় ছিল ফ্লাইট। সন্ধ্যা সাতটা বাজে, সাড়ে সাতটা বাজে, রাত আটটা বাজে, সাড়ে আটটা বাজে। অবশেষে রাত নয়টার কাছাকাছি ইফতারের সময় হয়। পরে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ আদায় করি। যাহোক, স্থানীয় সময় রাত আড়াইটায় ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ কণ্ঠে পৌঁছালাম মক্কা নগরীতে। হোটেলে লাগেজ রেখেই ছুটে চললাম কাবা ঘরের দিকে। ছয়-সাত মিনিট পথ হাঁটতেই মসজিদুল হারামে এসে পৌঁছলাম। মসজিদের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকেই চোখের সামনে চলে এল কালো গিলাফে আবৃত কাবা ঘর। যে ঘরটি জন্মের পর থেকে টিভিতে দেখে আসছি আর আজ তা চোখের সামনে। এ এক শিহরণ, নৈসর্গিক অনুভূতি। শরীর আমার কাঁপছে আর দোয়া করছি আল্লাহর দরবারে। মাতাফে গিয়ে হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করলাম। নিয়ম অনুযায়ী তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর দরবারে কাঁদলাম। এরপর জমজমের পানি খেয়ে গেলাম সাফা-মারওয়া পাহাড়ের উদ্দেশে। যদিও এখন সেখানে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত এবং মানুষের সুবিধার্থে কোনো পাহাড় বোঝা যায় না। সেখানেও নিয়ম অনুযায়ী দুই পাহাড়ে সাতটি দৌড় দিলাম। সব শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে মাথার চুল ফেলে ওমরাহর আনুষ্ঠানিকতা শেষ করলাম। এরপর সাহরি খেয়ে রোজা রাখলাম।পরদিন পুনরায় আবার তাওয়াফ, সায়ি জিয়ারত ও দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে নিজের দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রার্থনা এবং এভাবে শবে কদর পবিত্র মক্কা মোকাররমায় উদ্​যাপন করলাম। ২৮ রমজান একটি মাইক্রোযোগে মক্কা থেকে চলে গেলাম মদিনায়। মদিনায় রাতে হোটেলে পৌঁছে মন মানল না তাই চলে গেলাম মসজিদে নববিতে। নবীজির (সা.) রওজা মোবারক জিয়ারত করতে। হোটেল থেকে ছয়-সাত মিনিট হাঁটাপথের পরই মসজিদে নববি। প্রাণ জুড়িয়ে গেল সেই মসজিদ দেখে। বিশাল মসজিদ, যার চারদিকের দেয়ালে ৪০টির মতো গেট আছে। গভীর রাত, অথচ সেখানে এতটা রাত মনে হবে না। হাঁটিহাঁটিতে পা চালাতেই নজরে পড়ল মসজিদের ভেতরে একটি বড় ঘরের স্বর্ণের তিনটি গেট। ঘরটির সামনে যেতেই আপনার মন শিউরে উঠবে। মনের অজান্তেই যেন চোখ ভিজে গেল। নবীজি (সা.) কে সালামসহ দোয়া পড়লাম, যা গাইড বইয়ে লেখা ছিল। নবীজির (সা.) রওজার পাশের স্থানই রিয়াজুল জান্নাহ। মসজিদের সব স্থানে লাল রঙের কার্পেট থাকলেও সেই স্থান সবুজ কার্পেট ঢাকা। এটিকে জান্নাতের বাগান বলা হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা সেখানে নামাজ পড়তে অধীর আগ্রহ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। সেখানে একাধিক সময় আমি নামাজ আদায় করেছি।এভাবে আমাদের সময় কেটে গেল আর রাত চারটায় মধুর কণ্ঠে আজান শুনলাম। মনে করলাম ফজরের আজান কিন্তু না, পৃথিবীতে একমাত্র দুই স্থানে তাহাজ্জুদের আজান হয়—মসজিদুল হারাম আর মসজিদুল নববিতে। তাহাজ্জুদ নামাজের পর পাঁচটায় আবার আজান হলো। দলে দলে লোক আরও বাড়তে থাকল। ভেতরে নারীদের আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে। আমরা সবাই নামাজ পড়ে হোটেলের পথে রওনা দিলাম। অসাধারণ সেখানকার সকাল। গরমের দেশ অথচ মদিনা ঠান্ডা। এ জন্য হয়তো বলা হয়েছে সোনার মদিনা। সেখানে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্​যাপন করলাম। ঈদের সকালের অনুভূতি সেখানে না থাকলে বোঝানো যাবে না। নামাজ শেষে সেমাই-রুটি খেয়ে পুনরায় পবিত্র মক্কা নগরীর দিকে রওনা দিলাম। জীবনে একবার হলেও সেখানে ঘুরে আসুন। মনে তৃপ্তি পাবেন সন্দেহ নেই এবং বারবার যেতে মন চাইবে। লেখক: শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শরীয়াহ্ বিভাগের প্রধান
গত রাতে কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে দলটির কোচ লিওনেল স্কালোনি জানিয়েছেন, আরও উন্নতি করতে হবে দলকে।বিরাট বড় এক লজ্জার হাত থেকে বাঁচল আর্জেন্টিনা। এবারের কোপা আমেরিকায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে কলম্বিয়ার কাছে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে প্যারাগুয়ের সঙ্গে ড্র করেছিল তারা। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে হলে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। ২-০ গোলের জয়ে সেই লক্ষ্য পূরণ করেছেন মেসি-আগুয়েরোরা। ম্যাচশেষে কোচ লিওনেল স্কালোনি জানিয়েছেন নিজের সন্তুষ্টির কথা।কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে দল, বড় একটা বোঝা নেমেছে কাঁধ থেকে। তাও আনন্দে ভেসে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনা কোচ। আরও উন্নতি করার প্রত্যয় বোঝা গেছে তাঁর কথায়, ‘যৌক্তিকভাবে চিন্তা করলে বলতে হবে, আমাদের আরও উন্নতির জায়গা আছে। তবে আজকের ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট। কোপা আমেরিকায় যত দিন খেলব, নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে খেলতে হবে।’ প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাও শোনা গেল স্কালোনির কথায়, ‘কাতার দলটা বেশ ভালো। তারা সব সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে। তাদের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল বলে আমি মনে করি।’নিজের দলের খেলা পর্যালোচনা করতে গিয়ে স্কালোনির কাছে দ্বিতীয়ার্ধের খেলাই বেশি ভালো লেগেছে, প্রথমার্ধের চেয়ে, ‘আমি সন্তুষ্ট, কেননা আমরা পরের রাউন্ডে উঠতে পেরেছি এবং বেশ কিছু সময়ে আমরা ভালোই খেলেছি। আমরা ভালো ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছি, আমার মনে হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক ভালো খেলেছি।’প্রথম গোলটা আসে ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার লওতারো মার্টিনেজের পা থেকে। আর্জেন্টিনার প্রেসিং ফুটবলের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে কাতারের রক্ষণভাগ একটা ভুল করে বসে, সে ভুলের সুযোগ নিয়ে দলকে এগিয়ে দেন মার্টিনেজ। ‘প্রেস’ করে খেলাটা আর্জেন্টিনার পরিকল্পনাতে ছিল বলে জানিয়েছেন স্কালোনি, ‘এখনকার যুগে ফুটবল খেলতে গেলে সবাইকে প্রচুর দৌড়াতে হয়। প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হয়। প্রথম গোলটাও আমরা এভাবেই পেয়েছি, প্রতিপক্ষের ওপর বেশ ভালো রকম চাপ সৃষ্টি করে।’কলম্বিয়ার পর গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে কোয়ার্টারে উঠল আর্জেন্টিনা। সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে তারা খেলবে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে। কিছুদিন আগে এই ভেনেজুয়েলার কাছেই এক প্রীতি ম্যাচে ৩-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিলেন মেসিরা। একসময় ভেনেজুয়েলাকে লাতিন আমেরিকার দুর্বলতম দল ভাবা হলেও সে দিন নেই আর। সলোমন রনডন, টমাস রিঙ্কনদের নৈপুণ্যে ভেনেজুয়েলা নিজেদের দিনে যেকোনো দলকেই হারিয়ে দিতে পারে। আর্জেন্টিনা কি সেই প্রীতি ম্যাচ হারের বদলা নিতে পারবে? স্কালোনি তাদের বেশ সমীহই করছেন বোঝা গেল, ‘ভেনেজুয়েলা বেশ যোগ্য একটা দল। দলটার খেলোয়াড়গুলো একই সঙ্গে অনেক দিন যাবৎ খেলে যাচ্ছে।’আগামী শুক্রবার সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা-ভেনেজুয়েলা।
হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ ইচ্ছা করা। এর পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে শরিয়তের নিয়মানুসারে নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ ও সংশ্লিষ্ট স্থান গুলোতে নির্ধারিত কাজ করা।বেশিরভাগ হজযাত্রী তামাত্তু (এক ইহরামে ওমরাহ শেষ করে, আলাদা ইহরাম করে হজ) হজ করেন। চিত্রে তামাত্তু হজের বিবরণ দেওয়া হল। *মদিনা যাওয়া হজের আগে বা পরে হতে পারে
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম মনে করেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে আফগানিস্তানকে হারানো কোনো সমস্যা নয়। তিনি আশা করেন, রশিদ, মুজিবদের মতো স্পিনারদের সামলাতে বাংলাদেশের নিশ্চয়ই দারুণ কোনো পরিকল্পনা আছে।আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য একটু অন্য রকম। এই ম্যাচে জিতলে কেউ খুব বেশি উচ্ছ্বাস দেখাবে না, কিন্তু হারলেই সবাই সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠবে। সে কারণে সাউদাম্পটনের এই ম্যাচ আমাদের ক্রিকেটারদের ওপর একধরনের বাড়তি চাপ তৈরি করবে। তবে এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত আমরা যেভাবে খেলেছি, তাতে আজকের ম্যাচটি খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়।ভারতের বিপক্ষে আফগানিস্তান খুব ভালো খেলেছে—এটা একটা চিন্তার বিষয়। তবে দিন শেষে তারা হেরেছে। ভারতীয় ক্রিকেটাররা দেখিয়ে দিয়েছে অভিজ্ঞতার মূল্য কত! বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ দল। আমি আশা করি, আজ অভিজ্ঞতা দিয়েই আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলবে মাশরাফি-সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। দল হিসেবে আমরা এরই মধ্যে নিজেদের প্রমাণ করেছি। বিশ্বসেরা বেশ কয়েকজন বোলারকেই আমরা ভালোভাবে সামলেছি। হ্যাঁ, আজ আফগানিস্তানের হয়ে বাংলাদেশকে চোখ রাঙাবে রশিদ খান ও মুজিব-উর-রহমান কিংবা মোহাম্মদ নবীর মতো স্পিনাররা। তবে আমি মনে করি রশিদ, মুজিবদের মতো বোলারদের নিয়ে এরই মধ্যে খুব ভালো পরিকল্পনা বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট করে ফেলেছে। আমি সব সময়ই একটা কথা বলি, আজও বলব। আমাদের ক্রিকেটাররা যদি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী মাঠে খেলতে পারে, তাহলে কোনো সমস্যাই সমস্যা নয়। সে হিসাবে রশিদ-মুজিব-নবীদের মতো স্পিনারদের মোকাবিলা করার জন্যও নিজেদের খেলাটা খেললেই হবে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল।আফগানদের শক্তি নিঃসন্দেহে তাদের বোলিং লাইনআপ। সেটি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বোঝা গেছে। কী অবলীলায় রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনিদের মতো ব্যাটসম্যানদের তারা বিপাকে ফেলেছে। তবে আমার কেন যেন মনে হয়, সেদিন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের একটা বাজে দিন গেছে। এমনটা প্রতিদিন করা সম্ভব নয়। ভারতের বিপক্ষে আফগানিস্তান কী খেলেছে, সেটি মাথা থেকে পুরোপুরি দূর করে বাংলাদেশ যদি আজ মাঠে নামে, সেটিই ভালো হবে।ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই আমরা প্রথম ১০ ওভারে ভালো বোলিং করেছি। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে শেষ ১৫ ওভার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ১৫ ওভারই খেলা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এদিকটাতে যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট আমি নিশ্চিত শেষ ১৫ ওভারের ব্যর্থতা নিয়ে অনেক কাজ করে যাচ্ছে।অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি ব্যাটিংয়ে আমরা খুব ভালো করেছি। ৩৮৪ রানের জবাবে ৩৩৩ রানে থামা যেকোনো বিচারেই দুর্দান্ত। কিন্তু আমার মনে হয়, সে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৩৮৪ রান করে ফেলার পরপরই বাংলাদেশ হাল ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু মাঠে ভালো ব্যাটিংয়ের পর যখন সম্ভাবনা জাগে, ততক্ষণে বেশ দেরি হয়ে গেছে। মাহমুদউল্লাহ আর মুশফিক সেটি গ্যাপটা পূরণ করার চেষ্টা করেছে। আমার মনে হয় শুরুতে সৌম্য সরকারের ওই রান আউটটি আমাদের বেশ পিছিয়ে দিয়েছে। সৌম্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমাদের রান তাড়া অনেকটাই এগিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে আরও কিছুক্ষণ থাকলে আমাদের লাভ হতো। তামিম ভালো খেলছিল। কিন্তু সেট হয়ে যাওয়ার পর ওভাবে আউট হওয়াটা ওর উচিত হয়নি।যা–ই হোক, আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে দল ভালো করবে—এ প্রত্যাশাটা রাখছি। আমি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাইফউদ্দিনকে বেশ মিস করেছি। ওকে নিয়ে কিছুটা বিতর্ক হচ্ছে, সেটি কাম্য নয়। আমি চাই বিশ্বকাপের মধ্যে এসব বিতর্ক বন্ধ হবে। তবে আমি চাই, সাইফ চোট কাটিয়ে আবার দলে ফিরুক।সেমির সম্ভাবনা এখনো আছে। কিন্তু আমি খেলোয়াড়দের বলব, সেমিটেমি নিয়ে ভেবে চাপ বাড়িয়ে কাজ নেই। নিজেদের কাজটা করে যাক দল। হাতে তিনটি ম্যাচ আছে। এখনই তিনটি ম্যাচ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। আগে আফগানিস্তানকে হারাই, পরে দেখা যাবে। আমি নিশ্চিত, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জেতার পর পরের দুটি ম্যাচে (ভারত-পাকিস্তান) বাংলাদেশ দল সামর্থ্যের চেয়েও বেশি দিয়ে লড়বে এবং দেশের মানুষকে গর্বিত করবে।
আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায়—তা জেনে নিন। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম করতে হবে না। যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম করতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কায় যান। যদি মক্কায় যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরামের নিয়ত করা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেই ‘মিকাত’ (ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান)।বিমানে যদিও ইহরামের নিয়ত করার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে। ইহরাম করার পর সাংসারিক কাজকর্ম নিষেধ—যেমন সহবাস করা যাবে না, পুরুষদের জন্য কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়, কথা ও কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না, নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ ও শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না, কোনো ধরনের সুগন্ধি লাগানো যাবে না, কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না, তবে ক্ষতিকারক প্রাণী মারা যাবে। ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না। ঢাকা বিমানবন্দরে যা করতে হবেউড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মালপত্র দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, তা দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মালপত্র রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, নিরাপত্তা চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।● বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন। সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন। জেদ্দা বিমানবন্দরেবিমান থেকে নামার পর দেখবেন, একটি হলঘরে বসার ব্যবস্থা করা আছে।● লাল-সবুজ পতাকা অনুসরণ করে ‘বাংলাদেশ প্লাজায়’ পৌঁছাবেন। হজ টার্মিনাল শুধু হজযাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। শুধু হজের সময় (জিলকদ, জিলহজ ও মহররম মাসে) এটি চালু থাকে। বছরের বাকি সময় বন্ধ থাকে। বিমানবন্দর টার্মিনালের চারদিক খোলা। সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী তাঁবুর নকশায় করা ছাদ। এই হজ টার্মিনালের স্থপতি একজন বাংলাদেশি। তাঁর নাম ফজলুর রহমান খান। তিনি এফ আর খান নামে পরিচিত। যখন হজ টার্মিনালে● হজ টার্মিনালের ‘বাংলাদেশ প্লাজায়’ গিয়ে অপেক্ষা করুন। ধৈর্য হারাবেন না। সেখানে অজু করা, নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। বসার জন্য চেয়ারও রয়েছে।● প্রতি ৪৫ জনের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা। মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবে। আরবিতে লেখা মোয়াল্লেমের নম্বরসহ কবজি বন্ধনী (বেল্ট) দেওয়া হবে আপনাকে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন।● জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া (লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...) পড়ুন। মক্কায় পৌঁছানোর পরমক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের সময় হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহর নিয়ত করে থাকলে ওমরাহ পালন করুন।● মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেক প্রবেশপথ রয়েছে। সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন ‘কিং আবদুল আজিজ গেট, নাম্বার ওয়ান’। আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।● কাবা শরিফে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখুন। যেখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রতিটি জুতা রাখার র​্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন। চাইলে জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন।● কাবাঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে: হাজরে আসওয়াদ, রুকনে ইরাকি, রুকনে শামি ও রুকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রুকনে ইরাকি (দুই কোণের মাঝামাঝি স্থান মিজাবে রহমত ও হাতিম)। তারপর যথাক্রমে রুকনে শামি ও রুকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়।● রুকনে ইয়ামেনি থেকে হাজরে আসওয়াদের মাঝখানে ‘রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও, ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও, ওয়াকিনা আযাবান্নার। ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার, ইয়া আযিযু, ইয়া গাফফার, ইয়া রব্বাল আলামিন’ বলুন। অতঃপর হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত এসে প্রথম চক্কর পুরো করুন।● পুনরায় হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করুন। এভাবে সাত চক্করে তাওয়াফ শেষ করুন। হাতে সাত দানার তসবিহ অথবা গণনাযন্ত্র রাখতে পারেন। তাহলে সাত চক্কর ভুল হবে না।● এ সময় যে দোয়া, সুরা, আয়াত মনে আসে, তা দিয়ে দোয়া করবেন।● তাওয়াফ শেষে সাফা–মারওয়া গিয়ে সাঈ করুন। সাঈ সাফা থেকে শুরু করে মারওয়ায় ​িগয়ে শেষ হয়। সাফা থেকে মারওয়া প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন দৌড়। এভাবে সাতটি দৌড় সম্পূর্ণ হলে একটি সাঈ পূর্ণ হয় (মনে রাখার জন্য মারওয়াতে ১, ৩, ৫, ৭ নম্বর দৌড় বা চক্করগুলো হবে)।● ওমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন। এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, যেমন: তাওয়াফের সাত চক্কর, নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো—যদিও মসৃণ পথ এবং শীতাতপনিয়ন্ত্রিত), মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা। ওয়াক্তের নামাজের সময় হলে, যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।তালবিয়ালাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্​দা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্​ক, লা শারিকা লাক।তাওয়াফ ও সাঈ করার সময় বিশেষভাবে লক্ষণীয়● তাওয়াফের সময় অজু থাকা জরুরি। তবে সাঈ (সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সাতবার যাওয়া-আসা করা) করার সময় অজু না থাকলেও সাঈ সম্পন্ন হয়ে যাবে। ● হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া সুন্নত। তা আদায় করতে গিয়ে লোকজনকে ধাক্কাধাক্কির মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া বড় গুনাহ। তাই তাওয়াফকালে বেশি ভিড় দেখলে ইশারায় করবেন। ভিড়ে অন্যকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। ● তাওয়াফ শেষে সাফা-মারওয়ায় গিয়ে সাঈ করুন। সাঈ সাফা থেকে শুরু করে মারওয়ায় গিয়ে শেষ হয়। সাফা থেকে মারওয়া প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন দৌড় (মারওয়াতে ১, ৩, ৫, ৭ নম্বর দৌড়)।
সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলে আবহা বেসামরিক বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। গতকাল রোববারের এ হামলায় একজন নিহত হয়। আহত ২১ জন। ইয়েমেনে যুদ্ধরত সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।এর আগে হুতি বিদ্রোহী পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশনের পক্ষ থেকে সৌদিকে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়। তারা জানায়, সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলের আবহা ও জিজান বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার পরিকল্পনা করছে ইরানসমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা।সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের এক বিবৃতি প্রচারিত হয়। বিবৃতি অনুযায়ী, ইরানসমর্থিত হুতি মিলিশিয়ারা আবহা বিমানবন্দর লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় সিরিয়ার এক নাগরিক নিহত ও ২১ জন সাধারণ নাগরিক আহত হয়েছে। জিজান বিমানবন্দরে কোনো হামলা হয়েছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টেলিভিশন জানায়, আবহা বিমানবন্দরের পার্কিং লটে সন্দেহভাজন একটি ড্রোন হামলা চালায়। অভ্যন্তরীণ চলাচলের জন্য ইয়েমেন সীমান্তের প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তরের এই বিমানবন্দর ব্যবহার করা হয়। হামলার পর থেকে বিমানবন্দরটিতে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।এ মাসের মধ্যভাগে আবহা বিমানবন্দরে হুতি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২৬ জন আহত হয়।ইয়েমেনে ইরানসমর্থিত হুতি বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে প্রায় চার বছর ধরে লড়াই চলছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট আবদ-রাব্বু মানসুর হাদি সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের শেষ দিকে হুতিরা হাদি সরকারকে সানার ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে। ২০১৫ সালে আরব উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট ইয়েমেনে দুই পক্ষের লড়াইয়ে অংশ নেয়।গত মাস থেকে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে ইরানসমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। ইরানের সঙ্গে পারস্য অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মধ্যকার চলমান দ্বন্দ্ব আরও উসকে দিচ্ছে এ হামলা।রিয়াদের পক্ষ থেকে ১৩ জুন আবহা বিমানবন্দর হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করা হয়। হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সরবরাহ করে যুদ্ধে জড়াতে সহায়তা করছে বলে ইরানকে দোষারোপ করে তারা।
হজ তিন প্রকার—তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ। হজের মাসগুলোতে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) ওমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, ওমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।পবিত্র হজের সময় একই সঙ্গে হজ ও ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে ওমরাহ ও হজ করাকে হজে কিরান বলে।আর শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে। পরামর্শ● দেশে থাকার সময় আপনার প্যাকেজের সুবিধাদি যেমন মক্কা, মদিনায় থাকা, খাওয়া, কোরবানিসহ অন্য সুবিধার কথা হজ এজেন্সির কাছ থেকে লিখিতসহ খুব ভালোভাবে বুঝে নিন। সৌদি আরব গিয়ে তা মিলিয়ে নিতে পারবেন।● সৌদি আরবে অবস্থানকালে সে দেশের ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। ট্রাফিক সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হতে হবে। কখনো দৌড়ে রাস্তা পার হবেন না।● কাবা শরিফ ও মসজিদে নব​িবর ভেতরে কিছুদূর পরপর জমজম পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাণভরে জমজম পানি পান করুন।● কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।● হজযাত্রীদের তথ্য, হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত আইটি হেল্পডেস্ক সাহায্য করে।● তাওয়াফ, সাঈ করার সময় অহেতুক কথা বলা বা ছবি তোলা থেকে বিরত থাকুন। টাকাপয়সা নিরাপদে রাখুন।● আপনার হজ এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধা (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনে অভিযোগ জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওয়াজারাতুল হজ (হজ মন্ত্রণালয়) বরাবর লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।● মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।● মসজিদে নববিতে নারীদের জন্য প্রবেশপথ ও নামাজ পড়ার আলাদা জায়গা আছে। রিয়াজুল জান্নাতে নারীদের প্রবেশের সময়সূচি: সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা, বেলা ১টা থেকে বেলা ৩টা, রাত ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।● হজযাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড়ে পথ হারানোর আশঙ্কা থাকে। তবে এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এ ব্যাপারে হজযাত্রীদের সচেতন থাকতে হবে।● মক্কা-মদিনায় প্রচুর ফলমূল ও ফলের রস পাওয়া যায়। এগুলো কিনে খেতে পারেন। হজের সময় লক্ষ করুন● হজের ৫ দিন মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা, মিনায় অবস্থান করতে হয়। তাই হাতব্যাগে এক সেট অতিরিক্ত ইহরামের কাপড় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস রাখবেন।● কোনো কোনো হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় ৯ কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার। এসব স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।● দিনের বেলায় বাইরে বের হলে ছাতা সঙ্গে নেবেন। মুজদালিফায় রাতে থাকার জন্য প্লাস্টিকের পাটি ব্যবহার করতে পারেন। সঙ্গে কিছু শুকনো খাবার রাখতে পারেন। মক্কাসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাতা, পাটি কিনতে পাওয়া যায়।● মিনার মানচিত্র থাকলে হারানোর ভয় নেই। মিনার কিছু স্থান চিনে নিজের মতো করে আয়ত্তে আনলে এখানে চলাচল করা সহজ হয়। যেমন জামারা (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের স্থান), মসজিদে খায়েফ, মিনার তিনটি সেতু (বাদশাহ খালেদ ব্রিজ ১৫ নম্বর, বাদশাহ আবদুল্লাহ ব্রিজ ২৫ নম্বর, বাদশাহ ফয়সাল ব্রিজ ৩৫ নম্বর), হাঁটার পথ (টিনশেড নামে পরিচিত)। এখানে সাতটি জোন রয়েছে। মিনার বড় রাস্তাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নাম ও নম্বর রয়েছে।● রাস্তার নাম ও নম্বর জানা থাকলে মিনায় চলাচল সহজ হয়। পথ হারানোর আশঙ্কা কম থাকে। বড় রাস্তাগুলো হলো: বাদশাহ ফয়সাল ৫০ নম্বর রোড, আলজাওহারাত ৫৬ নম্বর রোড, সুক্কল আরব ৬২ নম্বর রোড, কিং ফাহাদ ৬৮ নম্বর রোড। মিনায় রেলস্টেশন ৩টি। মুজদালিফায় রেলস্টেশন ৩টি। এ ছাড়া রয়েছে সুড়ঙ্গপথ, টানেল, পায়ে চলার রাস্তা, হাসপাতাল, মসজিদ, পোস্ট অফিস, মিনার বাদশাহ বাড়ি, রয়েল গেস্টহাউস (রাজকীয় অতিথি ভবন) মোয়াচ্ছাসা কার্যালয়।● মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাতের মানচিত্র কাগজে মুদ্রিত বা অনলাইনে ডিজিটাল ছবি আকারে পাওয়া যায়। সম্ভব হলে মানচিত্র দেখুন, তাহলে ওখানকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।● মিনায় মোয়াল্লেম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারেন। ধরা যাক, মিনার তাঁবু নম্বর ৮/৫৬ । ওপরের সংখ্যা তাঁবু নম্বর ৮, নিচের সংখ্যা ৫৬ হলে রাস্তার নম্বর। মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়। তা যত্নে রাখতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময়ও কার্ডটি সঙ্গে রাখুন। সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেই তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।● মিনায় জামারা থেকে আপনার তাঁবুর অবস্থান, তাঁবু থেকে মসজিদুল হারামে যাওয়া-আসার পথ সম্পর্কে ধারণা নিন। ভিড় এড়াতে কেউ কেউ হেঁটে সুড়ঙ্গ (টানেল) পথ দিয়ে মসজিদুল হারামে পৌঁছান। হাঁটার পথ চিনতে স্থানীয় (বাংলাদেশি কাউকে বললে দেখিয়ে দেবেন) বা গুগল ম্যাপসের সহায়তা (https://goo.gl/WPBR25) নিতে পারেন।● অনেকে ট্যাবলেট কম্পিউটার বা আইফোন নিয়ে যান। রাস্তাঘাট, অবস্থান ইত্যাদি জানতে হজ ও পিলগ্রিম অ্যাপের সহায়তা নিতে পারেন।● আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, ফল, ফলের রস ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হয়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।● মিনায় চুল কাটার কর্মী পাওয়া যায়। তাঁদের সহায়তা নিন। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।একজন হজযাত্রীর রুটিন হজযাত্রীরা ৪০ থেকে ৫০ দিন সৌদি আরবে অবস্থান করেন। এর মধ্যে জিলহজ মাসের ৭ থেকে ১২ তারিখ হজের আনুষ্ঠানিকতায় পূর্ণ থাকে। আর আছে মদিনায় মসজিদে নববিতে আট দিন ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। বাকি দিনগুলো ইবাদত-বন্দেগি আর স্বাভাবিক জীবনযাপনে কাটে হজ পালনকারীদের। হজ পালন করতে গিয়ে মক্কা–মদিনায় সাধ্যমতো ইবাদত করা ভালো। একজন হজযাত্রীর রুটিন কেমন হতে পারে। এই লেখায় একটা ধারণা দেওয়া হলো। স্থান, কাল, পাত্রভেদে সুবিধামতো আমলগুলো করার চেষ্টা করবেন। সব নামাজ মক্কায় থাকলে মসজিদুল হারামে আর মদিনায় অবস্থান করলে মসজিদে নববিতে জামাতে নামাজ আদায়ের চেষ্টা করা। এ ছাড়া ইশরাক, চাশ্​ত, আউয়াবিন, তাহাজ্জুদ নামাজ ও প্রতি ওয়াক্ত নামাজ শেষে ২টি করে তাওয়াফ করা, জমজম পানি খাওয়া এবং ঐতিহাসিক স্থানে বেড়াতে যেতে পারেন। এই অভিজ্ঞতাগুলো লিখেও রাখতে পারেন। ভোররাত: তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়। মক্কা-মদিনায় জামাতে ফজরের নামাজ আদায় করা। তাওয়াফ করা, জমজম পানি পান, কোরআন তিলাওয়াত করা। সকাল: জমজমের পানি পান, সকালের নাশতা খাওয়া, ঐতিহাসিক স্থানে বেড়ানো, ব্যক্তিগত কাজ বা বিশ্রাম। দুপুর: জামাতে জোহরের নামাজ আদায়। জমজমের পানি পান, দুপুরের খাবার খাওয়া, বিশ্রাম নেওয়া। বিকেল: জমজমের পানি পান, মক্কা-মদিনায় জামাতে আসরের নামাজ আদায়। সন্ধ্যা: জামাতে মাগরিবের নামাজ আদায় করা। তাওয়াফ করা, জমজমের পানি পান, কোরআন তিলাওয়াত করা, আল্লাহর জিকির করা। রাত: মক্কা-মদিনায় জামাতে এশার নামাজ আদায়। তাওয়াফ করা। জমজমের পানি পান, নফল নামাজ আদায়, বিতরের নামাজ আদায় করা। রাতের খাবার খাওয়া। রাতে ঘুমানোর প্রস্তুতি। আল্লাহর জিকির করা।হারিয়ে গেলে কী করবেন সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে নতুন পরিবেশে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারেন। দলছুট হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলে অস্থির বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া যাবে না। ঠান্ডা মাথায় নিচের কাজগুলো করার চেষ্টা করতে হবে। আপনার ফোন চালু থাকলে, সঙ্গীকে ফোন দিতে পারেন। নিজের ফোন দিয়ে কল করা সম্ভব না হলে, সেখানে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিকে পাবেন, তাঁদের সাহায্য নিতে পারেন। তাঁদের সাহায্য নিয়ে মক্কা ও মদিনায় বাংলাদেশ হজ অফিসে আপনাকে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারেন। বাংলাদেশ হজ অফিস মক্কার ঠিকানা: ইব্রাহিম খলিল রোডে মিসফালাহ কার পার্কিংয়ের উল্টা দিকে। মদিনায় হজ অফিসের ঠিকানা: মসজিদে নববির উত্তর (ওহুদ পাহাড়) দিকে কিং ফাহাদ গেট অর্থাৎ ২১ নম্বর গেট দিয়ে বের হয়ে বাঙালি মার্কেটের পরে বাংলাদেশ হজ অফিস।কত টাকা সঙ্গে নেবেন একজন হজযাত্রীর খরচ কেমন হতে পারে। একটা ধারণা নেওয়া যাক। স্থান–কাল–পাত্রভেদে খরচ কমবেশি হতে পারে। সাধারণত হজ প্যাকেজে খাবারের ব্যবস্থা থাকে। এর বাইরে সম্ভাব্য খাওয়ার খরচ ১ হাজার ২০০ রিয়াল। কোরবানি ৫০০ রিয়াল, মিনায় ৫ দিনের খরচ ৫০০ রিয়াল, ঐতিহাসিক স্থান, জেদ্দায় বেড়ানো ৫০০ রিয়াল এবং আনুষঙ্গিক ৩০০ রিয়াল। এর বাইরে কেনাকাটা যা করবেন। সাধারণত ১ ভরি (১১.৬৬ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ৮০০ রিয়াল, খেজুর কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১০০ রিয়াল, জায়নামাজ প্রতিটি ৫ থেকে ২০০ রিয়াল, প্রতিটি টুপি ১ থেকে ১০০ রিয়াল ও তসবিহ ১ থেকে ১০০ রিয়াল। * ১ রিয়াল = ২২.৬০ টাকা। পরিবর্তনশীল।
বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে মৎস্যভান্ডার বলে খ্যাত চলনবিলের বিভিন্ন জলাশয়, নদী-নালা ও খাল-বিলে চলছে মা মাছ নিধনের ‘মহোৎসব’। একশ্রেণির অসাধু জেলে নদী ও বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে বাদাই, কারেন্ট, খোরা জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মা মাছ ধরছেন। সেগুলো সিংড়া মৎস্য আড়ত ও হাটবাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও মৎস্য বিভাগকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। গত শুক্রবার সরেজমিনে নাটোরে চলনবিল ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার মৎস্য অভয়াশ্রম দহ, জোড়মল্লিকা, সাতপুকুরিয়া, বিয়াশ, আত্রাই নদসহ বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে একশ্রেণির অসাধু জেলে বাদাই, কারেন্ট, খোরা জালসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ডিমে ভরপুর ট্যাংরা, বাতাসি, পুঁটি, মলা, মাগুরসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ প্রকাশ্যে নিধন করছেন। সরকারিভাবে মা মাছ নিধন নিষেধ থাকলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন ডিমে ভরপুর ওই মাছগুলো সিংড়া মৎস্য আড়ত ও আশপাশের স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই মাছগুলো স্থানীয় লোকজন বেশি দাম হাঁকিয়ে কিনে নিচ্ছেন। চলনবিলের সিংড়া মৎস্য আড়তে ডিমে ভরপুর প্রতি কেজি ট্যাংরা ৭০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, শিং মাছ ৭০০ এবং চান্দা, বাতামি, চিংড়িসহ বিভিন্ন মিশালি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এ সময়টা মাছের প্রজননকাল। চলনবিলের মা মাছ ধরা না হলে তারা বিলের মুক্ত জলে ডিম ছাড়ত। এতে বিলে মিঠা পানির মাছ কয়েক শ গুণ বেড়ে যেত। নির্বিচারে মা মাছ নিধনে দেশীয় প্রায় ৩৯ প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি ঘটেছে। তিনি অভিযোগ করেন, মা মাছ নিধন বন্ধে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এর সঙ্গে এলাকার একশ্রেণির অসচেতন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত।নাটোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম বলেন, চলনবিলের বিভিন্ন পয়েন্টে মা বোয়াল মাছ নিধনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে অভিযান শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। তবে জনবলসংকটের কারণে পুরো এলাকায় একসঙ্গে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
প্রস্তাবিত নতুন অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ এবার সর্বোচ্চ। তবে এ জন্য কৃতিত্ব পাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। সরকারের এই ‘মেগা’ প্রকল্প এবার শিক্ষা খাতের বরাদ্দ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এভাবে ঢুকে যাওয়ার পেছনের কারণটি হলো, বাজেটে শিক্ষা খাতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তি খাত। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিক্ষা ও প্রযুক্তি’ খাত। আর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ ১৪ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। আর এতেই শিক্ষা খাত নতুন বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দের স্বীকৃতি পেয়ে গেছে।উন্নয়ন বাজেটে এর আগে শিক্ষা ও ধর্ম একসঙ্গে যুক্ত ছিল। আর বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ছিল আলাদা খাত হিসেবে। কিন্তু মোট বাজেট বরাদ্দের দিক থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগকে এক করে দেওয়া হয়েছে। কেবল শিক্ষা ও ধর্ম খাত হিসেবে বরাদ্দ ধরলে মোট বাজেট দাঁড়ায় ৬১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। এর বাইরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ১৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। সব একসঙ্গে ধরে এখন সরকার বলছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এবারের বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার পরিমাণ ৭৯ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন এ বিষয়ে গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, হিসাবটি কীভাবে দেখানো হচ্ছে, সেটা না দেখে মন্তব্য করা যাবে না। তবে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষাসংক্রান্ত কাজ হয়। যেমন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ক্যাডেট কলেজগুলো চলে। ফলে অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর শিক্ষাসংক্রান্ত খরচ যোগ করলে শিক্ষা খাতে আরও বেশি খরচ হয়।শিক্ষাবিদ ও উদ্যোক্তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, শিক্ষা খাতে চাহিদামতো বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। আর পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা যাচ্ছে না। দেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে শিক্ষার বরাদ্দ ২ শতাংশের মধ্যেই ঘোরাঘুরি করছে। এই বরাদ্দ জিডিপির ৬ শতাংশ করাটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে মানা হয়।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ১শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে কেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ ঢোকানো হলো, তা বুঝলাম না। এটি তো বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এই প্রকল্প বিদ্যুৎ খাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা। এভাবে বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ দিয়ে অযথা শিক্ষা খাতের বরাদ্দে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে।’কোথায় কত বরাদ্দ২০১৬ সালে শুরু হওয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের সম্ভাব্য মোট ব্যয় ধরা আছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এই মেগা প্রকল্প টাকার অঙ্কে দেশের অন্যতম বড় প্রকল্প। ইতিমধ্যে প্রথম তিন বছরে এই প্রকল্পে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আবার রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য পরিবহনের জন্য রেলপথ সংস্কার ও নির্মাণ নামে আরেকটি প্রকল্প চলমান আছে। এই প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে ১৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা-ও শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের খরচে ঢুকে গেছে।কাগজে-কলমে বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে। কারণ এর মধ্যেই ঢুকে আছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।শুধু রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়; শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এমন প্রকল্পও আছে এই খাতে। আর তাতে রাখা হয়েছে ২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বরাদ্দ। এই তালিকায় আছে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রেললাইন নির্মাণ, হাইপো থাইরয়েড রোগের প্রাদুর্ভাব শনাক্ত করা, জাতীয় জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, সংসদ সচিবালয়ের আইসিটি অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প ইত্যাদি। এমনকি শিক্ষা ও প্রযুক্তি নামের খাতে ঢুকে গেছে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার প্রকল্পও। যেমন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় কালিয়াকৈর, সিলেট ও রাজশাহীতে হাইটেক পার্ক নির্মাণের জন্য তিনটি পৃথক প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে মোট ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) দলিল অনুযায়ী আগামী বছর মিলিয়ে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১৮৪টি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের ৪৬টি প্রকল্প।শিক্ষা খাত শীর্ষে নয়প্রযুক্তি খাত বাদ দিলে বরাদ্দপ্রাপ্তিতে বাজেটে শিক্ষা খাত শীর্ষ স্থানে থাকছে না। আগামী অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় মিলিয়ে মোট বরাদ্দ ৭৯ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১৫ শতাংশের কিছু বেশি। আর প্রযুক্তি খাত বাদ দিলে শুধু শিক্ষা খাতের ব্যয় দাঁড়ায় ৬১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা, যা বাজেটের সাড়ে ১১ শতাংশের মতো। এতে দ্বিতীয় স্থানে নেমে যায় শিক্ষা খাত। আর ৬৪ হাজার ৮২০ কোটি টাকার বরাদ্দ নিয়ে শীর্ষে উঠে যায় পরিবহন ও যোগাযোগ খাত।প্রযুক্তি খাত বাদ দিলে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ তেমন বাড়েনি। আগামী অর্থবছরে জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে জিডিপিতে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ দাঁড়ায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ। আর প্রযুক্তি বাদ দিলে তা নেমে আসে ২ দশমিক ১১ শতাংশে। চলতি অর্থবছরে তা ২ দশমিক ০৫ শতাংশ। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৫ দেশের মধ্যে শিক্ষা খাতে খরচের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৪তম।শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষাকে আমরা বাজেটে বিনিয়োগের অঞ্চল হিসেবে দেখছি না। “ডাকার ঘোষণা” অনুযায়ী শিক্ষা খাতে বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ না দিলে জিডিপি অনুপাতে এর অংশ ৬ শতাংশে পৌঁছাবে না। আমরা এর ধারেকাছেও নেই। শিক্ষায় ১ টাকা বিনিয়োগ করলে ১০ টাকা ফেরত আসে। সুতরাং শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করলে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতুর মতো কারিগরি প্রযুক্তি আমরাই তৈরি করতে পারব। অথচ শিক্ষার মানের দৈন্যদশার কারণেই প্রতিবছর ৫০০-৬০০ কোটি ডলার বিদেশিরা নিয়ে যাচ্ছে।’
বাঙালি ইতিহাসমনস্ক নয়, এমন অভিযোগ আছে। পাল্টা নালিশও আছে যে বাঙালি অতীতচারী। পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটতেই সে পছন্দ করে, সামনের দিকে তাকানোর তার সময় কই। দুটোই সত্য। আমরা অতীত থেকে শিখি না। অতীতের নির্যাসটুকু পাথেয় হিসেবে ঝুলিতে ভরে ভবিষ্যতের পথ তৈরি করি না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকালে এমনটিই মনে হয়।একসময় ভারত নামে ইংরেজদের বিশাল এক উপনিবেশ ছিল। ইংরেজ চলে গেছে। ভারত তিন টুকরা হয়ে এখন হিন্দুস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ নামে মানচিত্রে বহাল আছে। ইংরেজরা তাদের উপনিবেশগুলোতে সীমিত আকারে গণতন্ত্রের চর্চা করত। এতে অনেক লাভ ছিল। জনবিক্ষোভ প্রশমিত রাখার জন্য স্পেস তৈরি হতো। এভাবেই তৈরি হয়েছিল ১৮৮৫ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এবং ১৯০৬ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ। ১৯৩০-এর দশকে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে বাংলা মুলুকে কৃষক-প্রজা পার্টি বেশ জোরকদমে এগিয়েছিল। কংগ্রেসে টিকতে না পেরে সুভাষ চন্দ্র বসু তৈরি করেছিলেন ফরোয়ার্ড ব্লক। তাঁদের অবর্তমানে ওই দলগুলো হারিয়ে গেছে। পুরোনো উল্লেখযোগ্য আরেকটি দল হলো কমিউনিস্ট পার্টি। এটা কখনোই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। এলিটিস্ট নেতৃত্বের এই দলটি খণ্ডবিখণ্ড হয়ে এখন সিন্দুকে ঠাঁই পেয়েছে।১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকায় জন্ম নিয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। আজ তার বয়স সত্তর। সময়ের বিচারে দলটি নিঃসন্দেহে প্রবীণ। নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে এই দলটি এখনো প্রবল প্রতাপে ক্ষমতার কেন্দ্রে টিকে আছে। একদা মহা পরাক্রমশালী কংগ্রেস এখন হিন্দুস্তানের রাজনীতিতে রীতিমতো কোণঠাসা। সেখানে নবশক্তির উত্থান হয়েছে। মুসলিম লীগের প্রদীপ পাকিস্তানে নিবুনিবু। বাংলাদেশে (একদা পূর্ব বাংলায়) এই দলটির দাফন হয়ে গিয়েছিল ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে। কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগ কেন ক্ষমতার বৃত্ত থেকে ছিটকে পড়ল, কমিউনিস্ট পার্টি কেন রাষ্ট্রক্ষমতা হাতের মুঠোয় পুরতে পারল না, কেন আওয়ামী লীগ এখনো নিজ বলয়ে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে, এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হতে পারে।একটা কথা সত্য যে আওয়ামী লীগ ক্রমাগত নিজেকে বদলে দিচ্ছে। আজকের প্রজন্ম হয়তো জানেও না, কারা কীভাবে আওয়ামী লীগ তৈরি করেছিল। এ নিয়ে বেশ কিছু কিতাব থাকলেও কে আর ওই সব পড়ে। হাতের তালুতে আছে উইকিপিডিয়া। সেখানে হঠাৎ করেই কেউ যদি ঢুঁ মারে, সে কিছু তথ্য পেয়ে যেতে পারে। তবে উইকিপিডিয়ার তথ্যের সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক।পুরান ঢাকার ১৫০ নম্বর মোগলটুলীতে ছিল মুসলিম লীগের ‘ওয়ার্কার্স ক্যাম্প’ বা কর্মী শিবির। কলকাতা এবং ঢাকায় যারা মুসলিম লীগের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের সমর্থক-ভক্ত ছিলেন, তাঁরা চালাতেন এই কর্মী শিবির। মুসলিম লীগের বিক্ষুব্ধ তরুণেরা তখন ঢাকার নবাববাড়িকেন্দ্রিক মুসলিম লীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছিলেন। তাঁদের এই পথচলা গিয়ে থামে টিকাটুলীর কে এম দাস লেনে অবস্থিত রোজ গার্ডেনে। মুসলিম লীগের গণতন্ত্রায়ণের দাবিতে তাঁরা তৈরি করেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৫ সালে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ বাদ পড়ে। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের জায়গায় আসে বাংলাদেশ।২৩ জুন (১৯৪৯) বেলা তিনটায় রোজ গার্ডেনের দোতলার হলঘরে আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে মুসলিম লীগ কর্মীদের এক অধিবেশনে তৈরি হয় এই ইতিহাস। দলের নাম প্রস্তাব করেছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তিনিই দলের ৪০ জনের একটি সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা করেছিলেন। তিনি সভাপতি, টাঙ্গাইলের যুবনেতা সামসুল হক সাধারণ সম্পাদক। পাঁচজন সহসভাপতির মধ্যে ছিলেন আতাউর রহমান খান, সাখাওয়াত হোসেন, আলী আহমেদ খান, আলী আমজাদ খান এবং আবদুস সালাম খান। কোষাধ্যক্ষ ছিলেন ইয়ার মোহাম্মদ খান। যুবনেতা শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাবন্দী। তাঁকে কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক করা হয়। এটি করা হয়েছিল মাওলানা ভাসানীর আগ্রহে ও চাপে। তিনি শেখ মুজিবের পেছনে ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেখতে পেয়েছিলেন। জানি না, সত্তর বছর পরে দলের নেতা-কর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাতাদের স্মরণ করেছেন কি না।আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটির প্রথম সভা হয়েছিল ১৫০ নম্বর মোগলটুলীতে। সামসুল হকের লেখা ‘মূল দাবি’ অনুসরণ করে দলের খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরি হয়েছিল। এরপর দলের প্রথম অফিসটি চালু হয় ইয়ার মোহাম্মদ খানের ১৮ নম্বর কারকুনবাড়ি লেনে। মাওলানা ভাসানী ঢাকায় এলে এ বাড়িতেই থাকতেন। পরে আওয়ামী লীগের অফিস নেওয়া হয় সিমসন রোডে এবং পরে ৯৪ নম্বর নবাবপুর রোডে। সেখান থেকে পুরানা পল্টন হয়ে আওয়ামী লীগ অফিস এখন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে।আওয়ামী লীগের পথচলা শুরু হয় গণতন্ত্রের দাবিতে। এরপর এর সঙ্গে যোগ হয় আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি। প্রধানত এ দুটো দাবি নিয়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জনসম্পৃক্ত রাজনীতির শক্ত ভিত তৈরি করতে পেরেছিল, সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিল এর ব্যাপ্তি। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল ম্যান্ডেট এসেছিল এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই। তবে এ কথা স্বীকার করতেই হবে, আওয়ামী লীগ তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়লেও সাংগঠনিকভাবে ততটা শক্তিশালী হয়ে ওঠেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রায়ই বলতেন, তাঁর মূল শক্তি হলো ছাত্রলীগ। তিনি আওয়ামী লীগের নেতা থেকে রূপান্তরিত হলেন জাতীয় নেতায়। তিনি হলেন ‘বঙ্গবন্ধু’। দলকে ছাড়িয়ে তিনি তখন অনেক ওপরে। দল তাঁকে ধারণ করতে পারেনি। যে যুবশক্তি এবং জনগোষ্ঠী তাঁকে ‘জাতির পিতার আসনে বসিয়েছিল, তাঁরা তাঁকে রক্ষা করতে পারেনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে। বাঙালি জাতির প্রাণভোমরা এখন আওয়ামী লীগের লোগো। আওয়ামী লীগের নেতারা এখন নতুন করে ইতিহাসের কথা বলছেন। সেই সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে সরকারি ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণও। আমরা দেখছি, দলের প্রচারে থাকে সংকীর্ণতা, আত্মসন্তুষ্টি।আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ছিল, তখন ছিল তার এক ধরনের রূপ। তাতে ধৈর্য ছিল, গতি ছিল, ত্যাগ ছিল, স্বপ্ন ছিল। দলটি সরকারে যাওয়ার পর থেকেই এটি বদলে যেতে থাকে। মাঠের রাজনীতি আর রাষ্ট্র পরিচালনা যে এক বিষয় নয়, এটা তাঁরা অনেক সময় বুঝতে চান না। যে কথা যে ভাষায় পল্টন ময়দানের মঞ্চে বলা যায়, সেটি সংসদ অধিবেশনে বলা যায় না। দেশটা এগিয়েছে অনেক। রাজনৈতিক দলগুলো সে অনুযায়ী এগোয়নি, আওয়ামী লীগও নয়।টানা দশ বছরেরও বেশি ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এখন দল, সরকার ও রাষ্ট্র একাকার। দল সরকার চালায় না। সরকার দল চালায়। ক্ষমতার কেন্দ্র এখন ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ নয়, যেমনটি ছিল ১৯৭০-৭১ সালে ৫১ পুরানা পল্টন।শরৎচন্দ্রের বিলাসী গল্পে পড়েছিলাম, ‘টিকিয়া থাকাটাই চরম সার্থকতা নহে। অতিকায় হস্তী লোভ পাইয়াছে, কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।’ আওয়ামী লীগ সরকার টিকে থাকবে ততদিন, যতদিন দলটির পক্ষে দুটো শর্ত কাজ করবে। এক, রাষ্ট্রশক্তির নিরঙ্কুশ সমর্থন। দুই. চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো সক্ষম রাজনৈতিক বিকল্প দৃশ্যমান না হওয়া। শর্তগুলো এখনো আওয়ামী লীগের পক্ষে।মহিউদ্দিন আহমদ: লেখক ও গবেষকmohi2005@gmail.com
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে মেঘালয় পুলিশ। গতকাল রোববার মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মার্কিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত ওই ব্যক্তিকে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিলংয়ে এক নারী বিচারপতির (জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) পাঁচতলা বাড়ির প্রথম তলা ভাড়া নেয় মার্কিন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (এনজিও) ব্লাইন্ড লিড ট্রাস্ট। সেখানে থাকতেন অভিযুক্ত এনজিওকর্মী থিয়োডর এম মোয়ালেম। বাসার পানির মোটর চালানোকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার গৃহকর্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়।এ ঘটনার পরদিন, অর্থাৎ শনিবার ওই বিচারপতি এনজিওকর্মী মোয়ালেমের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। একই দিনে মার্কিন এনজিওটির তরফ থেকেও বিচারপতির বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা অভিযোগ করা হয়। তাঁদের অভিযোগ, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও তাঁর সঙ্গীরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছেন। বিচারপতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার মোয়ালেমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।ব্লাইন্ড লিড ট্রাস্টের পরিচালক জিতেন্দ্র ডিখার শিলংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যৌন নিগ্রহের অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য। বরং নিজের ক্ষমতা জাহির করে নারী বিচারক বিদেশিদের নিগ্রহ করছেন। আমরা সুবিচার চাইছি।’পাল্টাপাল্টি অভিযোগ সামলাতে এখন হিমশিম খাচ্ছে মেঘালয় পুলিশ।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় গতকাল রোববার রাতে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত শতাধিক। ট্রেনটি সিলেট থেকে ছেড়ে ঢাকায় আসছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুলাউড়ার বরমচাল এলাকায় ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে গেলে ট্রেনটির পেছনের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনার পর সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আরও পড়ুন:কুলাউড়ায় কালভার্ট ভেঙে রেলের বগি খালে, অনেক হতাহতের আশঙ্কাকুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিককুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারিউপবন দুর্ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশ৭ বগি নিয়ে ঢাকার পথে উপবন
পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য কাতারের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। তবে আর্জেন্টিনা যেভাবে খেলছিল, তাতে কাতারকে তারা আদৌ হারাতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন ছিলই। আপাতত সব সংশয়কে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করে কোয়ার্টারে উঠল আর্জেন্টিনা। কাতারকে ২-০ গোলে হারিয়েছে তারা।ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে আর্জেন্টিনা। দুই মিনিটের মধ্যেই দুই স্ট্রাইকার লওতারো মার্টিনেজ আর লিওনেল মেসি দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। তবে তৃতীয় সুযোগটা আর হেলায় হারাননি মার্টিনেজ। কাতারের রক্ষণভাগের শিশুতোষ এক ভুলের সুবিধা নিয়ে দলকে এগিয়ে দেন ইন্টার মিলানের তরুণ এই স্ট্রাইকার। গোলের পর আর্জেন্টিনা আরও জেঁকে বসবে কি, উল্টো আর্জেন্টিনার দেখাদেখি কাতারও বেশ কিছু আক্রমণ করে বসে। একটা ভালো উইঙ্গার আর স্ট্রাইকারের ঘাটতি কাতারকে ভুগিয়েছে বেশ। গোলমুখের সামনে কাতারের খেলোয়াড়দের কার্যকারিতা ভালো হলে প্রথমার্ধেই মোটামুটি দুটি গোল হয়ে যেত কাতারের। টানা দুই ম্যাচ রক্ষণভাগের মাঝখানে নিকোলাস ওটামেন্ডি ও জার্মান পেজ্জেলাকে খেলানোর পর এই ম্যাচে ওটামেন্ডির সঙ্গে পেজ্জেলার জায়গায় টটেনহামের হুয়ান ফয়থকে নামিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। ফয়থ বেশ ভালো খেলেছেন। তবে বেশ কবার আর্জেন্টিনাকে সমস্যায় ফেলে দিচ্ছিলেন ওটামেন্ডি। গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কো আরমানির দৃঢ়তায় কোনো অঘটন ঘটেনি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে মারা কাতারের এক ফ্রি কিক রুখে দিয়ে নিজের জাত চেনান আরমানি।পুরো ম্যাচে মুড়িমুড়কির মতো সুযোগ নষ্ট করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার সার্জিও আগুয়েরো। অন্তত প্রথমার্ধেই তাঁর হ্যাটট্রিক হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। গোলমুখে হাস্যকর কিছু ভুল করে ম্যাচটা অযথা কঠিন বানিয়েছেন নিজেদের জন্য। ওদিকে কোনো আদর্শ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার না থাকার খেসারত দিয়েছে আর্জেন্টিনা। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে যে জিওভান্নি ল সেলসোকে খেলানো হয়েছিল, তিনি আদতে আরও আক্রমণাত্মক ফুটবলার। কিন্তু ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলার কারণে তিনি গতকাল তাঁর প্রতিভার বিকাশ করতে পারেননি তেমন, উল্টো একটা হলুদ কার্ড খেয়ে কোয়ার্টারে নিজের খেলার সম্ভাবনা খুইয়েছেন।অধিনায়ক লিওনেল মেসি গোটা ম্যাচে ভালো খেললেও আক্রমণভাগে যথারীতি কোনো একজন যোগ্য সহকারীর সঙ্গে ওয়ান-টু পাস খেলে আক্রমণে যেতে না পারার কারণে নিষ্ক্রিয় থেকেছেন। এই হতাশাতেই কি না, ৭২ মিনিটে মেসি নিজেই হাস্যকর এক ভুল করে বসেন। বাঁ প্রান্ত থেকে মাটিঘেঁষা এক ক্রস মেসির পায়ে এলে মেসি বলটা গোলমুখে না মেরে আকাশে তুলে দেন। এ ধরনের গোল যেখানে মেসির মতো খেলোয়াড় দশবার সুযোগে নয়বারই করতে পারবেন হয়তো!লিওনেল স্কালোনির অধীনে আর্জেন্টিনার মূল একাদশে যে মেসি ছাড়া কেউই নিশ্চিত নন, সেটা খুব সম্ভবত ম্যাচের শেষ মাথায় এসে মনে পড়ে আগুয়েরোর। এত এত সুযোগ নষ্ট করার পর একটা গোল করতে না পারলে পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না, এই আশঙ্কায় আগুয়েরো ম্যাচের শেষ দিকে এসে মিডফিল্ড থেকে মোটামুটি একক প্রচেষ্টায় এক গোল করে দলের ব্যবধান বাড়ান। আর্জেন্টিনার জয়ের জন্য এই দুটি গোলই যথেষ্ট ছিল। ম্যাচের শেষ দিকে লওতারো মার্টিনেজের জায়গায় পাওলো দিবালাকে নামান আর্জেন্টিনা কোচ। দিবালা নামার সঙ্গে সঙ্গে মাঠের দর্শকদের গর্জন প্রমাণ করে, মূল একাদশে মেসির সঙ্গে দিবালাকে খেলতে দেখার জন্য দর্শকেরা কতটা অধীর! মাঠে দিবালা যতক্ষণ ছিলেন, বেশ ভালো খেলেছেন তিনি। আক্রমণভাগে মেসি ও আগুয়েরোর সঙ্গে তাঁর রসায়ন দেখে আর্জেন্টিনা–সমর্থকেরা আশায় বুক বাঁধতেই পারেন!আগামী শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে খেলতে নামবেন মেসিরা।
আমি কয়েকবার স্ত্রীসহ হজ ও ওমরাহ পালন করেছি। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই।উচ্চ স্বরে ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ পাঠ করতে করতে পৌঁছেছিলাম সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে। সেখানে গিয়ে হোটেলে লাগেজ রেখেই ছুটে চললাম মসজিদুল হারামে। হজের আগে ওমরাহ করে নেওয়া উদ্দেশ্য। মসজিদের ১ নম্বর গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখের সামনে চলে এল কাবা ঘর। মনে মনে দোয়া করছি আল্লাহর দরবারে।ওমরাহর অংশ হিসেবে মাতাফে গিয়ে হাজরে আসওয়াদকে বাঁ দিকে রেখে তাওয়াফ শুরু করলাম। সাত পাক ঘুরে একটি তাওয়াফ সম্পন্ন করলাম। প্রতি পাকের শুরুতে ও শেষে নির্ধারিত দোয়া পড়েছি। মনে রাখার সুবিধার্থে আমি একটি সহজ দোয়া পড়েছিলাম, যার বাংলা রূপ হচ্ছে, ‘আল্লাহ পবিত্র এবং সকল প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আল্লাহ মহান। আল্লাহ একমাত্র শক্তিশালী, যিনি মহান ও পবিত্র। দরুদ ও সালাম মহানবী (সা.)-এর জন্য।’সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল, তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদ পাথরে চুমু খাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তাওয়াফ শেষ করে মাকামে ইব্রাহিমে ওয়াজিবুত তাওয়াফ নামাজ আদায় করে আল্লাহর দরবারে কেঁদেছিলাম। ওমরাহর রীতি অনুসারে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে দোয়া করলাম, তারপর কাবার দরজা ও গিলাফ ধরে দোয়া করলাম। তারপর জমজমের পানি খেয়ে গেলাম সাফা-মারওয়া পাহাড়ের উদ্দেশে। সেখানেও নিয়ম অনুযায়ী দুই পাহাড়ে সাতটি দৌড় দিলাম। সব শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে মাথা ন্যাড়া করে ওমরাহ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করলাম।৮ জিলহজ হজের ইহরাম বেঁধে মিনার উদ্দেশে রওনা দিই। জোহরের নামাজের আগেই মিনায় পৌঁছানোর নিয়ম। সেভাবেই আমি রওনা দিয়েছিলাম এবং মিনায় পৌঁছে ওই দিনের জোহর থেকে পরবর্তী দিনের (৯ জিলহজ) ফজর পর্যন্ত মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছিলাম। নামাজের পরপরই আরাফাতের উদ্দেশে রওনা হই। আরাফাতে অবস্থান ফরজ। দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করতে হবে। আরাফাতের ময়দানে তাঁবুর ভেতরে ওয়াক্তমতো জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করে সূর্যাস্তের সময় মুজদালিফায় রওনা দিলাম। সেখানে নিয়ম অনুসারে এক আজান ও দুই একামতের সঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে পড়লাম। মুজদালিফায় বালুর ওপরে চাদর বিছিয়ে রাত যাপনের করার অভিজ্ঞতা সত্যিই মনে রাখার মতো। রাতযাপনের সুবিধার্থে আমি একটি হালকা লাগেজ সঙ্গে রেখেছিলাম। কঙ্কর নিক্ষেপের প্রস্তুতি হিসেবে মুজদালিফায় থাকাকালে ৭০টি ছোট কঙ্কর সংগ্রহ করে আমার ব্যাগে রেখেছিলাম।১০ জিলহজ ফজরের নামাজ পড়ে সূর্য উদয়ের আগেই মিনার উদ্দেশে রওনা দিলাম। মিনায় এসে তাঁবুতে লাগেজ রেখে বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের উদ্দেশে রওনা দিলাম। সাতটি পাথর নিক্ষেপ করলাম। যথারীতি পাথর নিক্ষেপ করে মিনায় ফিরে এলাম। এবার আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করার পালা। কোরবানির উদ্দেশ্যে ব্যাংকে প্রয়োজনীয় টাকা জমা দিলাম। ব্যাংক জানিয়ে দিল, আমার পক্ষ থেকে কখন কোরবানি সম্পন্ন হবে। কোরবানি সম্পন্ন হয়ে গেলে মাথা ন্যাড়া করে গোসল সেরে এহরাম খুলে ফেললাম। ওই দিনই মক্কায় গিয়ে তাওয়াফে জিয়ারত সম্পন্ন করেছিলাম। মক্কায় গিয়ে তাওয়াফে জিয়ারত করা ফরজ। এটার পদ্ধতি আগের তাওয়াফের মতোই। তাওয়াফ শেষে পুনরায় সাফা-মারওয়া সায়ি করা ওয়াজিব। নিয়মানুসারে তাওয়াফ শেষে মিনায় গিয়ে রাত যাপন করেছিলাম।১১ জিলহজ দুপুরের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ৭টি করে মোট ২১টি পাথর নিক্ষেপ করেছিলাম। পরদিন, অর্থাৎ ১২ জিলহজও আগের দিনের মতো ২১টি পাথর নিক্ষেপ করেছিলাম।বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের হজ শেষে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয়। আমি বিদায়ী তাওয়াফ করে মদিনার উদ্দেশে রওনা দিলাম।মদিনায় এসে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করলাম। সে এক আবেগঘন স্মৃতি। আমি মদিনা শরিফে ৮ দিন অবস্থান করে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছিলাম আর জান্নাতুল বাকি, জাবালে ওহুদ, মসজিদে কুবাসহ মুসলিম ঐতিহ্যের উল্লেখযোগ্য সব নিদর্শন পরিদর্শন করেছিলাম।মদিনা শরিফ জিয়ারতের পর আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও তাঁর দিনের প্রতি বর্ধিত প্রেম নিয়ে জেদ্দা হয়ে স্বদেশে ফিরে এলাম।সৌদির বাদশাহর উদ্যোগে একবার বাংলাদেশের ৫০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পবিত্র ওমরাহ পালন ও মক্কা-মদিনা জিয়ারতসহ দর্শনীয় স্থান প্রদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিচারপতি, পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা। ওই দলের সঙ্গে রাজকীয় অতিথি হিসেবে ওমরাহ পালনের সুযোগ আমার হয়েছিল। ২০১৫ সালের ২০ মে বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় আমরা সেখানে পৌঁছাই। ১০ দিনের সফর শেষে ৩০ মে দেশে ফিরে আসি। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পর সৌদি আরব বাংলাভাষীদের জন্য পবিত্র কোরআনের অনুবাদ প্রকাশ করে। আগে কিং ফাহাদ প্রিন্টিং কমপ্লেক্সে মাওলানা মুহিউদ্দীন খান অনূদিত তাফসিরে মারেফুল কোরআনের প্রায় ১০ লাখ কপি বিনা মূল্যে বিতরণ করেছিল সৌদি সরকার। দীর্ঘদিন পর আবারও সৌদি সরকার কর্তৃক বিনা মূল্যে পবিত্র কোরআন বিতরণের এই প্রকল্প চালু করায় বাংলাভাষীদের মধ্যে বিপুল আগ্রহ দেখা দিয়েছে। সফরের অংশ হিসেবে আমরা মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ আলেম ও মসজিদে নববির খতিব আলী আবদুর রহমান হোজাইফির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করি।লেখক: এক্সিম ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)
‘বিদ্যালয়ের অভাবে শিশুশিক্ষা বিঘ্নিত’—এ ধরনের শিরোনামের সংবাদ এতটাই সাধারণ যে এ খবর নিয়ে সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে অসাধারণ কর্মকর্তাদের কাউকেই বিচলিত হতে দেখা যায় না। সবাই জানে, সরকার প্রতিবছরই নতুন নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেও এখনো দেশে চাহিদার তুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা অপ্রতুল। ঠিক এমনই এক পরিস্থিতিতে খবরের কাগজে এসেছে একটি খবর, ‘তিন কিলোমিটারে নয়টি স্কুল, মিলছে না শিক্ষার্থী’।শিরোনাম পড়ে যে কেউ ধাক্কা খেতে পারেন। তাঁর মনে হতে পারে সরকারি অর্থের অপব্যয় করে মাত্র তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে নয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বানানো হয়েছে। তবে খবরের বিস্তারিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় বন্যা ও নদীভাঙনের কারণে বিভিন্ন এলাকার নয়টি বিদ্যালয় বাঁধের ওপর স্থানান্তর করা হয়েছে। এমনিতেই এক জায়গায় এতগুলো বিদ্যালয়, তার ওপর বাঁধ এলাকায় জনবসতি নেই বললেই চলে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে পাঁচ-সাতজনের বেশি ছাত্রছাত্রী নেই। নেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুবিধা। বিদ্যালয় ও বসতঘর দেখতে একই রকম। জাতীয় পতাকা না টাঙালে বিদ্যালয় কোনটি, তা বোঝা যায় না। বিদ্যালয়গুলো কুতুবপুর ও চন্দনবাইশা ইউনিয়নে পড়েছে।২০১৭ সালের নদীভাঙনে বিদ্যালয়গুলোর ভবন বিলীন হওয়ার পর এই দশা চলছে। তার মানে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনিবার্যভাবেই বিদ্যালয়গুলো স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে প্রায় দেড় বছর পার হয়েছে। লোকালয়ের কাছে বিদ্যালয় না হওয়ায় বহু শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। শিক্ষকেরা অস্থায়ী বিদ্যালয়ে এসে সময় কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। তাঁদের বেতন–ভাতা সরকারকে দিতেই হচ্ছে। এতে একদিক থেকে সরকারি তহবিলের অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে বহু শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সে কারণে দ্রুত এসব বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।শিক্ষা কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেসব চরে জনসংখ্যা বেশি, সেসব চরে বিদ্যালয়গুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। এ সিদ্ধান্তকে যথার্থ বলা যায়। জনসংখ্যার ঘনত্ব যেখানে বেশি, সেখানে এগুলো সরিয়ে নেওয়াটাই যথার্থ হবে। তবে খেয়াল করা দরকার, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার আশঙ্কা আছে। চিঠি ও ফাইল চালাচালিতে সময়ক্ষেপণ হলে সরকার ও জনগণ উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকারের কর্মকর্তারা উদ্যোগী হলে চলতি বছরের মধ্যেই বিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ ভবনে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সবার আগে সরকারের সদিচ্ছা দরকার।সারিয়াকান্দির মতো আরও যেসব এলাকায় একইভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে কিন্তু কার্যত অকার্যকর রয়েছে, সেগুলোকে কার্যকর করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। অন্যথায় সেটি সরকারি অর্থের অপচয় ও শিশুদের লেখাপড়া ব্যাহত করার নামান্তর বলেই গণ্য হবে।
খেলা নিয়ে লিখতে হবে— চিন্তাটা মাথার ভেতরে থাকলে যতই চিন্তাটাকে ঠেলে মাথার এক পাশে সরিয়ে রাখি না কেন, খেলা দেখার নির্ভেজাল আনন্দে ঘাটতি পড়ে। আমি ২০১১ সালে ঢাকায় বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলাকালে শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে প্রথম আলোর জন্য একদিন স্পট রিপোর্টিং করেছিলাম। জাস্ট অভিজ্ঞতা লাভের জন্য করা। কাজটা কঠিন এবং অতিশয় বিরক্তিকর বলে মনে হয়েছিল আমার।একবার গাজী টিভির ভাষ্যকার হিসেবেও কোনো একটি খেলার ধারাভাষ্য দিয়েছিলাম কিছুক্ষণের জন্য। ক্রিকেট ভাষ্যকাররা যে বিশেষ ধরনের মাইক্রোফোনটি মুখের সামনে বিশেষ ভঙ্গিতে ধরে রেখে খেলার ধারাভাষ্য প্রদান করেন, সহধারাভাষ্যকারের সঙ্গে হাসি-মশকরা করেন, রঙ্গ-তামাশা করেন, সেই মাইক্রোফোনটি হাতে নিলে কেমন লাগে, কথা বলতে কেমন লাগে—এই অনুভূতি নিজের হাতে, নিজের মুখে যাচাই করে দেখাটাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। এটা ছিল আমার নেশার অংশ, পেশার অংশ নয়।তাই পেশাদার ক্রিকেট সাংবাদিক বা ক্রিকেট ভাষ্যকার, যাঁরা ক্রিকেট নিয়ে লেখেন এবং ক্রিকেটের ধারাভাষ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে নিজেকে কখনো ভাবিনি। কৌতূহলের অবসানে শিশুরা যেমন তাদের প্রিয় খেলাগুলো পরিত্যাগ করে, আমিও তেমনি ক্রিকেটের স্পট রিপোর্টিং এবং ভাষ্যকারের মাইক্রোফোন পরিত্যাগ করেছি। এ পৃথিবী একবারই পায় তারে, পায় নাকো আর। তাতে ক্রিকেটের সঙ্গে আমার অন্তরের ভালোবাসার সম্পর্কের কোনো হেরফের হয়নি। এই ৭৫ বছরে পদার্পণ করার পরও, এবারের চলতি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রতিটি খেলাই ২৫ বছরের তরুণ-তরুণীদের মতোই আমাকে টিভির সামনে বসিয়ে রেখেছে। জয়-পরাজয়ের উত্তেজনায় আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছে এবং আমি আনন্দ পাচ্ছি। খুব আনন্দ পাচ্ছি।এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া প্রতিটি দলই প্রতিটি দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাচ্ছে বলে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দ্বাদশ আসরটি দারুণ জমে উঠেছে। ২২ জুনের দুটি খেলাকেই এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শুধু নয়, এযাবৎকালের সব বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সেরা খেলা, ক্লোজেস্ট ম্যাচ বলে আমার মনে হয়েছে। এবারের আসরের এখন পর্যন্ত অপরাজিত দুটি দল নিউজিল্যান্ড ও ভারত। এই দুই দলের বিরুদ্ধে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা নবাগত আফগানিস্তান এবং ১৯৭৯-র পর আর বিশ্বকাপের ছোঁয়া না পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে যে খেলা খেলেছে, আমি একই দিনে পরপর এ রকম দুটো উত্তেজনাপূর্ণ সমশক্তির ক্রিকেট ম্যাচ আগে কখনো দেখিনি। শেষ পর্যন্ত যদিও পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা দুটি অপরাজিত দলই জিতেছে, কিন্তু ১১ রানে ভারতের কাছে আফগানিস্তানের হার বা ৫ রানে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারটাকে জয়ের অধিক বলেই মনে হয়েছে আমার। এ রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলার কথা কে ভেবেছিল? আমি অন্তত ভাবিনি। এ রকম স্মরণীয় খেলা উপহার দেওয়ার জন্য আমি আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে অভিনন্দন জানাই।পয়েন্টে সমান হলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর সুখস্মৃতি আজ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করবে বলেই মনে করি। বিশ্বকাপ জেতার চাইতেও হারানো পঞ্চম স্থানটি পুনরুদ্ধার করাই এখন জরুরি।
হাইকোর্টের আদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের আওতায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া দুটি আলাদা বিষয়। হাইকোর্ট নিহত রাজীব হোসেনের পরিবারকে আগামী দুই মাসের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছেন। আশা করব, এই টাকা দিতে ওজর-আপত্তি আমরা দেখব না। কিন্তু জাতীয় বাজেট পাসের উপলক্ষ সামনে রেখে আমরা সবচেয়ে বেশি আশা করব সরকার যাতে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনে বর্ণিত ক্ষতিপূরণ প্রদানের নিয়মতান্ত্রিক বিধান বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়।গত ১০ বছরে সড়কে ২৫ হাজার মানুষের প্রাণ হারানোর ভয়াবহ তথ্য বাজেট অধিবেশনেই প্রকাশ করা হয়েছে। ঈদুল ফিতরের দিনসহ এর আগে-পরে দেড় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। অথচ স্বজন হারানো পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে রাষ্ট্রের কোনো অঙ্গীকার নেই; এমনকি যেন কোনো অনুভূতি নেই। প্রতিদিন হতাহতের ঘটনা ঘটছে। রাষ্ট্র সড়ক নিরাপদ রাখতে ব্যর্থ। সড়কে নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের প্রতি আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে, তাতেও তাদের ভীষণ কার্পণ্য। আসলে রাষ্ট্রের এই ঔদাসীন্য, এই যান্ত্রিক মনোভাব কোনোভাবেই মার্জনা করা যায় না।হাইকোর্ট ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে অনধিক ১০টি পরিবারকে অনধিক ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিলেও তার বাস্তবায়নের হার মোটেই সন্তোষজনক নয়। ক্ষতিপূরণের বেশির ভাগ মামলাই নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। যত দূর জানা যায়, দেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত দীর্ঘ লড়াই শেষে মাত্র দুটি মামলায় ক্ষতিপূরণ পেয়েছে নিহত ব্যক্তির পরিবার। সম্প্রতি পা হারানো একজনকে দেওয়া ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের মধ্যে মাত্র ৫ লাখ টাকা আদালতকক্ষেই উশুল করা হয়েছে। বাকি অর্থ আদায় নিয়ে বাহ্যত অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এসবই নির্দেশ করে ক্ষতিপূরণদানের সংস্কৃতি দেশে অনুপস্থিত। এটা বেসরকারি খাতে গ্রহণযোগ্য করতে হলে আগে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে।সড়ক পরিবহন আইনের ৫২ ধারা বলেছে, কোনো ব্যক্তি আঘাতপ্রাপ্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা ক্ষেত্রমত, তার উত্তরাধিকারীগণ ক্ষতিপূরণ পাবেন। সরকারের অধীনে গঠিত আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে একটি ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হারে ক্ষতিপূরণ বা চিকিৎসার খরচ দেওয়া হবে। টাকার পরিমাণ বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে ও পদ্ধতিতে ঠিক হবে। আইন আরও বলেছে, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান থেকে মোটরযানের শ্রেণিবিন্যাস বিবেচনাক্রমে প্রত্যেক মোটরযানের বিপরীতে আর্থিক সহায়তা তহবিলের জন্য বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা আদায় করা হবে। সুতরাং এটা পরিষ্কার যে আইনে শুধু গাড়িমালিকদের চাঁদার টাকায় তহবিল করার কথাই বলা আছে। কিন্তু আমরা মনে করি, ক্ষতিপূরণের তহবিলে রাষ্ট্রের একটা অংশ থাকতে হবে। কারণ, সড়ক দুর্ঘটনায় শাসনগত ব্যর্থতার বিষয় রয়েছে। তহবিল গঠনের বিষয়টি পুরোপুরি মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়নির্ভর রাখা হয়েছে। সে কারণে মালিকেরা তা ঠেকিয়ে রাখবেন। সরকার তঁাদের চাপের কাছে আত্মসমর্পণ করছে বলেই প্রতীয়মান হয়। এটা তাই পরিতাপের বিষয়, কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বিধি কার্যকর করতে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করে কার্যত রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী পরিবহন খাতকে দায়মুক্তি দেওয়ার নীতিই অনুসরণ করছে। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত আমরা দুঃখজনকভাবে মালিকপক্ষকে দায়মুক্তি দেওয়ার নীতিই সব কটি সরকারকে মানতে দেখলাম। আগের আইনে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের এখতিয়ার ছিল ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালের। কিন্তু কোনো সরকারই সেই বিধান কার্যকর করেনি।বিআরটিএর চেয়ারম্যান সম্প্রতি আমাদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিধির খসড়া হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে তা কার্যকর হবে। তবে বিধি হলেই যে সুষ্ঠুভাবে তহবিল গঠন হবে, তা অনিশ্চিত। সুতরাং বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখাই সমীচীন।
সহপাঠীদের সঙ্গে একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন ফাহমিদা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট স্টেশন থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসে ওঠেন। এর আগে বিকেলে ফাহমিদা মাকে ফোন দিয়ে জানান, তিনি রাতের ট্রেনে ঢাকায় যাচ্ছেন। এটাই ছিল পরিবারকে করা তাঁর শেষ ফোন।মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফাহমিদা ইয়াসমিন ওরফে ইভার (২০) লাশ শনাক্ত করেন তাঁর ভাই আবদুল হামিদ (৩৫)। ফাহমিদা সিলেটের মোগলা বাহার থানার আবদুল্লাহপুর গ্রামের আবদুল বারীর মেয়ে। এ নিয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মধ্যে দুজনের লাশ শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মনোয়ারা পারভীন (৪৫) নামের আরেকজনের লাশ শনাক্ত হয়। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী। পারভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেন।গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি খালে পড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ।ফাহমিদার ভাই আবদুল হামিদের সঙ্গে কথা হয় আজ সোমবার সকালে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বোনের জন্য তিনি আহাজারি করছিলেন। বললেন, কাল বিকেলে ফাহমিদা ফোন দিয়ে বলেছিলেন, ‘আম্মা ঢাকায় যাচ্ছি’। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে ফাহমিদা ছিলেন তৃতীয়। তিনি সিলেট নার্সিং ইনস্টিটিউটের বিএসএসি নার্সিং কোর্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পাঁচ-ছয়জন সহপাঠীর সঙ্গে তিনি ঢাকায় যাচ্ছিলেন।আবদুল হামিদ বলেন, গতকাল বিকেলে মায়ের সঙ্গে শেষবার মুঠোফোনে কথা ফাহমিদার। মাকে বলেছিলেন, ঢাকায় সহপাঠীদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছেন। রাতের উপবন এক্সপ্রেসে করে যাবেন।ফাহমিদার মৃত্যুর খবর কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে ভাই বলেন, আজ ভোররাত চারটার দিকে ফাহমিদার লাশের সঙ্গে থাকা মুঠোফোন থেকে কেউ একজন তাঁর বান্ধবীকে ফোন দিয়ে মৃত্যুর খবর দেন। ওই বান্ধবী পরে তাঁর মাকে (ফাহমিদার মা) ফোনে এ ঘটনা জানান।কুলাউড়া থানার পুলিশ ফাহমিদার লাশ শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত ছাড়াই ফাহমিদার লাশ পরিবারের লোকজন বাড়িতে নিয়ে গেছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানিয়েছে, গতকাল দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চারটি মৃতদেহ ছিল। এর একটি মস্তকবিহীন। জরুরি বিভা‌গে চিকিৎসা নি‌চ্ছেন ৬০ জন। শরী‌রের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জন‌কে সি‌লেট ওসমানী মেডিকেল ক‌লে‌জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়‌তে পা‌রে।আরও পড়ুন:কুলাউড়ায় কালভার্ট ভেঙে রেলের বগি খালে, অনেক হতাহতের আশঙ্কাকুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিককুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারিউপবন দুর্ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশ৭ বগি নিয়ে ঢাকার পথে উপবনছবিতে ট্রেন দুর্ঘটনা
হজ ব্যবস্থাপনার অনেকাংশই এখন তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে হজের প্রাক্​-নিবন্ধন ও নিবন্ধন করছেন হজযাত্রীরা। ব্যাংকে হজ প্যাকেজের টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক থেকে নিবন্ধন সনদ পাচ্ছেন, যাতে প্যাকেজ সম্বন্ধে বিস্তারিত থাকছে।হজযাত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ অনেক ভুল–বোঝাবুঝিকে দূর করে সার্বিক অভিজ্ঞতাকে উন্নততর করা সম্ভব হয়েছে। হজের ওয়েবসাইটে ট্র্যাকিং নম্বর দিয়ে সার্চ দিলে তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে। কিয়স্কের মাধ্যমে ট্রিটমেন্ট কার্ড প্রদানের ফলে সৌদি আরবে চিকিৎসাসেবা গ্রহণে কম সময় লাগছে। সৌদি আরবে হারানো হজযাত্রীদের সেবা প্রদান দ্রুততার সঙ্গে করা যাচ্ছে। আর এই সবই করা যায় মুঠোফোনের মাধ্যমে। প্রযুক্তির যেসব সেবাহজযাত্রীর পক্ষে তাঁর হজ এজেন্সি এবং বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করছে। ফলে সার্বিকভাবে তাঁর প্রশাসনিক কাজগুলোয় সময় কম লাগছে। তবে হজযাত্রী নিজে তাঁর মুঠোফোনে ‘হজগাইড’ অ্যাপের মাধ্যমে হজসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পেতে পারেন। মিনা ও আরাফাতে মুঠোফোনতুলনামূলকভাবে অনেক মানুষ মিনা ও আরাফাতে অবস্থান করেন বলে হজের সময় সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায় না। মোবাইল ফোনের চার্জ নিয়ে সমস্যা হয় এবং অনেক অ্যাপ চালু থাকায় ডেটা বেশি ব্যবহৃত হয়। দরকার না হলে এ সময় মোবাইল ডেটা অপশন বন্ধ রাখতে পারলে ভালো। তা না হলে পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখতে হবে।হজের সময় প্যাকেজ সংযোগহজ উপলক্ষে সৌদি আরবে মোবাইল ফোন সংযোগদাতা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হজের বিশেষ সিমকার্ড বা সংযোগ চালু করে। হজযাত্রী নিজের পাসপোর্ট ও ভিসা দেখিয়ে আঙুলের ছাপ দিয়ে (বায়োমেট্রিক পদ্ধতি) রিয়ালের (সৌদি মুদ্রা) বিনিময়ে সিম কিনতে পারবেন। কেনার আগে সিমের কথা বলার রেট ও ইন্টারনেট ডেটার চার্জ কেমন, তা ভালো করে জেনে নেবেন।ইন্টারনেটসহ সিম ব্যবহার করে ইমো, মেসেঞ্জারে কথা বলা যায়। সৌদি আরবে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলা যায় না, কিন্তু মেসেজ দেওয়া যায়, ছবি পাঠানো যায়। কথা রেকর্ড করে পাঠানো যায়। গ্রুপ তৈরি করে অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। লেখক: তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং বেসিসের সহসভাপতি
বাংলাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক মুসলমান হজ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব যান। ভাষার ভিন্নতা, নতুন দেশ, নতুন পরিস্থিতির কারণে তাঁদের নানা সমস্যায় পড়তে হতে পারে। হজযাত্রীরা যাবেন পবিত্র মক্কা, মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায়। এ ছাড়া মদিনায় মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করবেন। মক্কা বা মদিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে একাধিকবার বাসা থেকে বেরোতে হবে। রাস্তা নতুন হওয়ায় অনেকেই পথ হারিয়ে ফেলেন। এ জন্য মুঠোফোনে অ্যাপ ব্যবহার করা ভালো। হজের দরকারি সব তথ্য পাওয়া সহজ করতে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশন মুঠোফোনের জন্য হজ গাইড সফটওয়্যার তৈরি করেছে। এটি অ্যান্ড্রয়েডে চলা স্মার্টফোনে চলে। ফোনটিতে সৌদি আরবের ইন্টারনেটসহ সিমকার্ড থাকতে হবে। গুগল প্লে–স্টোর থেকে অথবা হজের ওয়েবসাইট (www.hajj.gov.bd) থেকে হজ গাইড সফটওয়্যারটি নামানো যাবে।বিজনেস অটোমেশন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক জাহিদুল হাসান জানালেন, এ সফটওয়্যারটি ইনস্টল করা হলে সেটিংস থেকে হাজি তাঁর প্রাক্-নিবন্ধন নম্বর (১০ সংখ্যার নম্বর), মোবাইল নম্বর লিখে নিবন্ধন করতে পারবেন। এটি একবারই করতে হয়।অ্যাপটিতে মক্কা-মদিনার সময়, হজে করণীয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র অনুসন্ধান, দিকনির্দেশনা, হজ সংবাদ, প্রয়োজনীয় তথ্য, হাজি প্রোফাইল, আবহাওয়া, কোরআন শরিফ, ঐতিহাসিক স্থান মেন্যু রয়েছে। নিবন্ধন করে একবার হালনাগাদ করে নিলে বিভিন্ন তথ্য মুঠোফোনে চলে আসবে। সময়সূচি এবং আবহাওয়া মেন্যুতে মক্কা-মদিনার নামাজের সময়সূচি, আবহাওয়া ও সময় দেখা যাবে।হজের মেন্যুতে করণীয় বিষয়ের মধ্যে একনজরে হজ, ওমরাহ, ইহরাম, অজিফা আরবি, বাংলা, ইংরেজি ভাষায় বর্ণনা করা আছে।এতে কোরআন শরিফের ১১৪টি সুরা বাংলা, ইংরেজি ভাষায় দেখা ও শোনার ব্যবস্থা আছে।স্বাস্থ্যকেন্দ্র অনুসন্ধান মেন্যুতে মক্কা–মদিনার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থান দেখা যাবে। পথনির্দেশক মেন্যুতে আপনার গন্তব্যস্থান শুরু হবে কোথা থেকে আর শেষ কোথায় হবে, এটা ঠিক করে নিলে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে নির্দেশনা পাবেন। ধরা যাক, আপনার মক্কার বাসা শুরুর স্থান নির্বাচন করলেন আর যেতে চান কাবা শরিফে, এরপর তা গুগল ম্যাপে গাড়িতে অথবা হাঁটা রাস্তার নির্দেশনা দেবে। এখন আপনি যদি হারিয়ে যান, তবে নির্দেশনা ধরে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।তথ্য ও যোগাযোগ মেন্যুতে রয়েছে ঢাকার হজ কার্যালয়, মক্কা, মদিনা ও জেদ্দার হজ আইটি ডেস্ক, বাংলাদেশের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের টেলিফোন নম্বর।নামাজের সময় মেন্যুতে পাওয়া যাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময়।প্রোফাইল মেন্যুতে পাওয়া যাবে নাম, পিলগ্রিম আইডি, গাইড, ফোন, এজেন্সি ফোন, দেশে ফেরার তারিখ ইত্যাদি। এককথায় হাতের মুঠোতেই থাকছে সব তথ্য।