content
stringlengths
1
63.8k
পবিত্র মক্কায় কাবা শরিফের বিভিন্ন জায়গায় দোয়া কবুল হয়ে থাকে। সেসব জায়গায় দোয়া করা দরকার।
রশিদ খান-মুজিব উর রহমান—আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণের মূল ভরসা। এ দুজন কী ভাবছেন আজকের ম্যাচ নিয়ে?প্রেসবক্সে কাল সকালে ঢুকতেই দেখা মুজিব উর রহমানের সঙ্গে। কাজ শেষে বিকেলে বেরোনোর সময় সামনে পড়লেন রশিদ খান। ভাবছেন প্রেসবক্সের সঙ্গে দুই আফগান স্পিনারের যোগ কোথায়?সাউদাম্পটনের স্টেডিয়ামকে কেউ ডাকেন রোজ বোল বলে, কেউ আবার বলেন হ্যাম্পশায়ার বোল। ২০০১ থেকে অত্যাধুনিক স্টেডিয়ামটি ব্যবহৃত হচ্ছে হ্যাম্পশায়ার ক্রিকেট কাউন্টি দলের ঘরের মাঠ হিসেবে। স্টেডিয়ামটা শুধুই মাঠ আর গ্যালারিসর্বস্ব নয়; এটির সঙ্গে যুক্ত আছে একটা পাঁচ তারকা হোটেলও। স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সটা পড়েছে একেবারে হোটেলের পেটে। হোটেলের লবি পেরিয়ে লিফট ধরে তবেই আসতে হয় প্রেসবক্সে। একেবারে স্টেডিয়াম-লাগোয়া হোটেল হিলটনে আছে আফগানিস্তান। আফগান ক্রিকেটারদের রুম থেকেই দেখা যায় মাঠ, পিচ, গ্যালারি—স্টেডিয়ামের প্রায় সবকিছুই। কাল আফগানিস্তান কোনো অনুশীলন করেনি। আফগান ক্রিকেটাররা দিনটা কাটিয়েছেন ছুটির মেজাজে।বিকেলে প্রেসবক্স থেকে বেরোনোর সময় হঠাৎ ‘একটু হেল্প করবেন?’ বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন এক ভদ্রলোক। তিনি কোনো বিপদে-টিপদে পড়েননি। ‘সহায়তা’ বলতে তাঁকে একটা ছবি তুলে দিতে হবে। ভদ্রলোক একজন ট্যাক্সিচালক। তাঁর গাড়িতে করে রশিদ খান যেন কোথা থেকে হোটেলে ফিরলেন। প্রিয় তারকার কাছে কোনো ভাড়া নিলেন না, তাঁর চাওয়া শুধু একটা ছবি। রশিদ ট্যাক্সিচালকের আবদার মেটালেন হাসিমুখে। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে তাঁর এ হাসি থাকবে তো?বাংলাদেশের দর্শকেরা অবশ্য মনেপ্রাণে চাইছে রশিদের হাসিটা কেড়ে নিন সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। নানা কারণে আফগানিস্তানের এই লেগ স্পিনার বাংলাদেশে খুবটা একটা নন্দিত নন। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংল্যান্ডের কাছে যেদিন বেধড়ক পিটুনি খেলেন, বাংলাদেশের দর্শকেরা কতভাবে যে তাঁকে ব্যঙ্গ করল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে! ‘এই ম্যাচে মাশরাফিরা আপনার হাসি কেড়ে নিতে চাইবেন, রশিদ’—কথাটা শুনে মুচকি হাসলেন এবং যা বললেন, তাতে বেশ চমকেই যেতে হলো! পরিষ্কার বাংলায় বললেন, ‘ভালোবাসি বাংলাদেশ!’ কিন্তু তাঁর এই ভালোবাসা কি আর বাংলাদেশের বিপক্ষে থাকবে? এবার রশিদের উত্তর, ‘রোজ রোজ ভালোবাসা!’বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিয়মিত খেলেন। বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটার, কোচ, সংগঠকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ভালো। দু-একটা বাংলা ভাষা হয়তো তাঁদের কাছ থেকেই শেখা। আগামী বিপিএলেও তিনি খেলবেন, জানিয়ে রাখলেন। অবশ্য বিপিএলের আগেই আফগানিস্তানের হয়ে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা আছে তাঁর।আলাপচারিতার মধ্যেই অটোগ্রাফ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এক বাংলাদেশি সাংবাদিক তাঁর হাতে একটা বল দিলেন। কিন্তু কলমের কালি ঠিক ঠিক বের হচ্ছিল না। আরেকটি কলমের খোঁজ যখন করা হচ্ছে, রশিদ কয়েকবার গ্রিপ ধরলেন, যেন হোটেল লবিতেই বোলিং শুরু করে দেবেন! ‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা আমাদের জেতা ছিল’—পরশু ভারতকে এত কাছে পেয়ে হারাতে না পারার আফসোস যাচ্ছে না রশিদের। সেদিন অবশ্য উইকেট থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন। শোনা যাচ্ছে, আজও একই উইকেটে খেলা হবে। পার্থক্যটা হচ্ছে, সেদিন ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল, কাল থেকে আবহাওয়ার চেহারা গেছে বদলে। সূর্য চলে গেছে মেঘের আড়ালে। মেট অফিসের পূর্বাভাস বলছে, আজও সেটি বজায় থাকার সম্ভাবনা।আবহাওয়া এমন থাকলে কি স্পিন-জাদু দেখা যাবে? ‘ডব্লিউ-ডব্লিউ প্রবাদ শোনেননি! ইংলিশ ওয়েদারের কোনো নিশ্চয়তা আছে? স্বাভাবিক থাকুন, উপভোগ করুন, আরাম করে একটা ঘুম দিন, এটাই আমার ভাবনা’—বোঝা গেল রশিদ আবহাওয়া নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন। তবে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে চিন্তা থাকার কথা। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আফগানদের জন্যও তিনি নিশ্চয়ই বড় হুমকি। আচ্ছা, কে বেশি ভয়ংকর—সাকিব আল হাসান, না রশিদ খান? গুগলিটা দারুণভাবে সামলালেন আফগান লেগ স্পিনার, ‘আমরা দুজন দুই ধরনের ক্রিকেটার। দুজনের খেলার ধরনও তাই দুই রকম।’ তবে রশিদের সঙ্গে তাঁর সতীর্থ মুজিবের অনেক মিল আছে—দুজনই কবজির স্পিনার। মন্থর উইকেট কাজে লাগিয়ে দুজনই ভারতের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন। সেদিন রশিদের চেয়ে তুলনামূলক বেশি সফল ছিলেন মুজিব। দ্রুত ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মাকে ফিরিয়েছেন। ৬০ বলের ৩৮টাই ডট, ১০ ওভারে ২৬ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। দল হারলেও তাঁর যে কাজ, সেটি ভালোভাবে করেছেন। কাল সকালে হোটেল হিলটনের লবিতে দাঁড়িয়ে মুজিব জানিয়ে রাখলেন, এ ছন্দটা তিনি বাংলাদেশের বিপক্ষেও ধরে রাখতে চান, ‘ম্যাচটা অসাধারণ ছিল। দুর্ভাগ্য আমাদের, শেষ পর্যন্ত হেরে গেছি। তবে এই উইকেটে স্পিনারদের অনেক হেল্প ছিল। বল ঘুরেছে, থেমে এসেছে। ইংল্যান্ডের অন্য মাঠগুলোর মতো উইকেট নয়। শুনছি বাংলাদেশের বিপক্ষেও একই উইকেটে খেলা হবে। চেষ্টা করব ছন্দটা ধরে রাখতে।’মুজিবের কথায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের প্রতি একটা হুমকিও যেন থাকল। এই মুজিব-রশিদ খান গত বছর জুনে দেরাদুনে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। লাল-সবুজ সমর্থকেরা প্রার্থনা করছেন, আজ যেন সেটার পুনরাবৃত্তি না হয়!
কথা বলাইন্টারনেটসহ সিম ব্যবহার করে ইমো, মেসেঞ্জারে কথা বলা যায়। সৌদি আরবে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলা যায় না, কিন্তু মেসেজ দেওয়া যায়, ছবি পাঠানো যায়, কথা রেকর্ড করে পাঠানো যায়। গ্রুপ তৈরি করে অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা যায়।কেনাকাটামক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত সমস্যা তেমন হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কেনা ভালো।দমে শোকর বা কোরবানিকোরবানি বা দম দেওয়ার জন্য ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সৌদি সরকারের স্বীকৃত ব্যবস্থা। মসজিদের পাশের বুথ থেকে ৫০০ সৌদি রিয়ালে কুপন কেনা যাবে। এতে সময় বাঁচে ও নিরাপদ। হজের অন্যান্য কাজ সহজে সারতে পারবেন। এর বাইরে দেওয়া হলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।খাবারমক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। মক্কার হোটেলগুলোর নাম ঢাকা, এশিয়া, চট্টগ্রাম, জমজম ইত্যাদি। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল—সব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে খাবার কিনে বাড়িতে আনাও যায়।
মোবাইল অ্যাপে ট্যাক্সি ডেকে হিলটন হোটেলের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন রশিদ খান। সঙ্গে দুই সতীর্থ হজরতউল্লাহ জাজাই ও হামিদ হাসান। কিন্তু অপেক্ষার সময়টা এত প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে, সেটি বোধ হয় আফগানিস্তানের এই তিন ক্রিকেটারেরও ধারণা ছিল না।হিলটনে আফগানিস্তান দল আছে জেনে সাউদাম্পটন ও এর আশপাশের আফগানরা নিয়মিতই ভিড় করছেন এই হোটেলে। লবিতে, হোটেলের বাইরে ‘কাবুলিওয়ালা’দের অবাধ যাতায়াত। হাতের কাছে প্রিয় তারকাকে পেয়ে গেলে অটোগ্রাফ, সেলফি—সবই হচ্ছে। কেউ বাধা দিচ্ছে না। আফগান খেলোয়াড়দেরও কোনো কিছুতে আপত্তি নেই। যেন কাউকেই মন খারাপ করে ফিরে যেতে দিতে চান না তাঁরা।কাল বিকেলে ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষার সময়টায় সে রকমই তিন খুদে ভক্তের দেখা পেলেন রশিদ-জাজাইরা।তিন ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র ফারজান একটু বেশিই চটপটে। তার কাছে রশিদ খানও যেন দ্বিতীয় শ্রেণিরই এক ছাত্র, সহপাঠী কোনো বন্ধু। আফগান তারকার সঙ্গে ফারজান যখন ছবি তুলতে চাইল, সঙ্গে থাকা তার বাবা দুষ্টুমি করে জানতে চাইলেন, ‘ছবি তোলার জন্য তুমি রশিদ খানকে কত পাউন্ড দেবে?’ একটু চিন্তা করে ফারজান জানাল তার বাজেট ‘১০ পাউন্ড’।সেই শুরু। ফারজানের চটপটে ভাবই তিন আফগান ক্রিকেটারকে আগ্রহী করে তুলল তার সঙ্গে আড্ডায়।রশিদ: কাল (আজ) খেলা দেখতে আসবে?ফারজান: হ্যাঁ, আসব।রশিদ: কীভাবে আসবে, তোমার স্কুল নেই?ফারজান: স্কুলে যাব না। কারণ, কাল আফগানিস্তানের খেলা আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে খেলা। আমি খেলা দেখতে আসব।রশিদ: গতকাল (শনিবার) এসেছিলে খেলা দেখতে?ফারজান: আমরা অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আসতে পারিনি। বাবা লন্ডনে ছিল।আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকার সঙ্গে এ রকম আরও কথা চলে খুদে ভক্ত ফারজানের। একপর্যায়ে তার বাবা জানতে চাইলেন, ‘কাল (আজ) কে জিতবে?’ প্রশ্ন শুনে ফারজান যে রকম জোর দিয়ে ‘অফকোর্স আফগানিস্তান’ বলল, অত আত্মবিশ্বাস আফগানিস্তান দলেরও আছে কি না সন্দেহ।কথার ফাঁকে ফাঁকে চলছিল ছবি তোলা। পশতু ভাষায় ফারজানকে নিয়ে তিন ক্রিকেটারের দুষ্টুমি। মাঝে আরেক ভক্ত তার পরিবারের কাকে যেন ভিডিও কল দিয়ে রশিদ খানকে মোবাইল ধরিয়ে দিলেন কথা বলার জন্য। রশিদও এমনভাবে হেসে হেসে কথা বললেন, যেন মুঠোফোনের পর্দায় ভেসে উঠেছে কাছের কোনো মানুষের মুখ।এর মধ্যে ট্যাক্সিও চলে এল। খুদে ভক্তসহ আরও যাঁরা প্রিয় ক্রিকেটারদের দেখতে হিলটনে এসেছিলেন, সবার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিদায় নিলেন রশিদ, জাজাই ও হাসান। শুরু থেকে ওখানে না থাকলে বিদায় পর্বটা দেখে বোঝার উপায় থাকত না, বিদায় নেওয়া আর দেওয়াদের মধ্যে সম্পর্কটা আসলে ভক্ত আর তারকার।কিংবা তারকা-ভক্তদের সম্পর্কটা হয়তো এ রকমই। শুধু বাংলাদেশেই তা বোঝা যায় না।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ১৬টি সেতু ও কালভার্টের নির্মাণকাজ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ ঠিকাদারেরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদে অবস্থান নিয়ে তাঁদের দরপত্র কিনতে দেননি। এরপর সমঝোতা করে গতকাল রোববার নিয়ম রক্ষায় ১৬টি কাজের প্রতিটিতে ৩টি করে দরপত্র দাখিল করা হয়।অভিযোগের বিষয়ে রায়পুর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাজের ভাগ-বাঁটোয়ারার বিষয়টি সঠিক নয়। তবে ঠিকাদারেরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে কাজ নিয়েছেন।’দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই সেতু ও কালভার্টগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জেলার রায়পুর উপজেলায় গ্রামীণ রাস্তায় সর্বোচ্চ ৩৬ ফুট দীর্ঘ ১৬টি সেতু ও কালভার্টের জন্য বরাদ্দ আসে। এক সপ্তাহ আগে অধিদপ্তর থেকে চিঠি দেওয়া হয়।সাধারণ ঠিকাদারেরা অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার ছিল দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। এদিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদে অবস্থান নিয়ে তাঁদের দরপত্র কিনতে দেননি। গতকাল ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। দরপত্র বহাল রাখার জন্য প্রতিটি কাজের জন্য ন্যূনতম তিনটি দরপত্র প্রয়োজন। আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় তাঁরা সেই নিয়ম রক্ষা করে গতকাল দুপুরে ১৬টি নির্মাণকাজের বিপরীতে ৪৮টি দরপত্র দাখিল করেন।অন্তত চারজন ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ভাগ-বাঁটোয়ারার জন্য গত বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের এক নেতার কার্যালয়ে বৈঠক হয়। তিন-চার ঘণ্টা চলে বৈঠক। পরে রাত ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের একটি কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করে সমঝোতা চূড়ান্ত করা হয়। রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ এবং পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকন সমঝোতা প্রক্রিয়া করেন। যাঁরা কাজ নিয়েছেন, তাঁদের ১০ শতাংশ টাকা অগ্রিম হিসেবে গতকাল ‘দলীয় তহবিলে’ জমা দিতে হয়েছে।তিন যুগ ধরে ঠিকাদারি ব্যবসা করছেন ফরিদা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার ব্যবসাই ঠিকাদারি। অথচ আমিও দরপত্র কিনতে পারিনি। সাধারণ ঠিকাদারদের কাছে ওই ১৬টি কাজের কোনো দরপত্র বিক্রি করা হয়নি।’এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়েছে কি না সেটা আমার জানা নেই। দরপত্র কিনতে পারেননি বা জমা দিতে বাধা পেয়েছেন—এমন অভিযোগ কেউ করেনি।’আর দলীয় তহবিলের নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়।
জনবিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে নতুন অস্ত্র ব্যবহার করছে ভারতের আসাম রাজ্য পুলিশ। উত্তর–পূর্ব ভারতের আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও মণিপুরে অনেক ঝাল মরিচ পাওয়া যায়। এই মরিচের নাম ভূত জলকিয়া। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের বদলে এবার ঝাল মরিচ ব্যবহার করছে।ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংগঠন (ডিআরডিও) নতুন ভেষজ অস্ত্রটি আসাম পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশের ধারণা, ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের থেকেও বেশি কার্যকর হবে এই অস্ত্র।অসমিয়া ভাষায় জলকিয়া মানে লঙ্কা বা মরিচ। এই মরিচে কামড় দিলে সাধারণ মানুষের চোখের জলে নাকের জলে অবস্থা হয়। তবে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজনের কাছে এই জলকিয়া অত্যন্ত প্রিয়।২০০৭ সালে ভূত জলকিয়া পেয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচের স্বীকৃতি। মেক্সিকোর ঝাল মরিচ স্কভিলির ঝালের তীব্রতা ৫ লাখ ৭৭ হাজার। আর ১০ লাখ ১ হাজার ৩০৪ মাত্রার ঝাল ভূত জলকিয়া নাম লিখিয়েছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।এর আগে হাতি তাড়াতেও এই ঝাল মরিচ ব্যবহার করা হয়। শস্যের মধ্যে স্প্রে করে দেওয়া হয়েছিল এই ঝালকে। ঝালের জ্বালায় পালাতে বাধ্য হয় হাতির দল।ডিআরডিওর দাবি, বিক্ষোভ থামাতে কাঁদানে গ্যাসের থেকে অনেক বেশি কার্যকর হবে ভূত জলকিয়া দিয়ে তৈরি গ্রেনেড। এতে আন্দোলনকারীদের শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা কম।২০১৫ সালে ভারতের সেনাবাহিনী এই অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। গোপন আস্তানা থেকে জঙ্গিদের বের করতেও এই অস্ত্র কার্যকর ভূমিকা রাখে। ২০০৯ সালে গোলমরিচ দিয়েও একই ধরনের অস্ত্র বানানো হয়। তবে বিশেষ ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি অস্ত্রের সাফল্য নিয়ে ডিআরডিও আশাবাদী।
বছর দুয়েক আগে কাশ্মীর আর লাদাখ ঘুরে আসার পর থেকেই একটা সুপ্ত ইচ্ছা মনের মধ্যে উঁকিঝুঁকি দিতে লাগল—ভারতের উত্তর প্রান্ত তো ঘুরে দেখা হলো বেশ ভালোভাবে, এবার দক্ষিণ প্রান্ত। কারণ, শিমলা-মানালি, উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল-মুশৌরি-গঙ্গোত্রীসহ উত্তরের নানা জায়গায় যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। দক্ষিণ অদর্শনে অতৃপ্ত থাকব কেন? যদিও একবার ভারতের দক্ষিণে গোয়া-কেরালা যাওয়া হয়েছে, কিন্তু একদম দক্ষিণের বিন্দু কন্যাকুমারী দেখার বড় ইচ্ছা ছিল মনে মনে।তিনটি কারণে কন্যাকুমারী দেখার তীব্র ইচ্ছা মনের মধ্যে। এক. এটি ভারতের শেষ বিন্দু বা মূল ভূখণ্ডের শেষ প্রান্ত। দুই. এখানে বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর আর ভারত মহাসাগরের মহামিলনে নীল জলরাশির এক রুদ্ধশ্বাস রোমাঞ্চ থাকে সব সময়। তিন. এখানে আছে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম চিন্তাবিদ এবং গুরু স্বামী বিবেকানন্দের নামাঙ্কিত ‘বিবেকানন্দ রক’। মনে হলো বাঙালির স্মৃতিধন্য নীল জলরাশিতে ডুবসাঁতার কাটার আনন্দে রোমাঞ্চিত হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করাটা ঠিক হবে না।হুট করে এই ঈদের ছুটিতে পারিবারিক প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য যেতে হয়েছিল চেন্নাইয়ে। তখন থেকেই কন্যাকুমারী দর্শনের তীব্র ইচ্ছা মনে জেগেছিল। তিন দিনের বিরতি পেয়েই ঝটপট ব্যাগপত্র গুছিয়ে চলে গেলাম চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে। কিন্তু মাকড়সার জালের মতো বিস্তৃত ভারতীয় ট্রেনের ততোধিক জটিল নিয়মকানুনের জন্য টিকিট পাওয়া গেল না।কিন্তু ওই যে গোঁ, সেটি আর থামানো গেল না! শেষ চেষ্টা হিসেবে চলে গেলাম চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরের কোইমবেটু বাসস্ট্যান্ডে। চেন্নাই থেকে দূরপাল্লার সব সরকারি আর বেসরকারি বাস এ স্ট্যান্ড থেকেই ছেড়ে যায়।বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সরকারি ননএসি বাসের টিকিট পেয়ে গেলাম। টিকিট করে ঝটপট হোটেলে ফিরে এসে একটু ফ্রেশ হয়ে ব্যাগপত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম চেন্নাই থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরের কন্যাকুমারী যাওয়ার ননএসি বাসের উদ্দেশে। মনে মনে কিছুটা ভয়, শঙ্কা ছিল ঠিকই। কারণ, একটানা এত লম্বা বাসভ্রমণ এর আগে কখনোই করা হয়নি। দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টার ননএসি বাস জার্নি, তাও জুনের এই ভয়াবহ গরমে! শেষ পর্যন্ত মনে অদম্য সাহস নিয়ে উঠেই পড়লাম বাসে। গরমে, ঘামে, জ্যামে, ঝিরঝিরে বাতাসে, আঁধার রাতে কত যে অচেনা শহর-বন্দর-গ্রামের পথ পেরিয়ে, পথের মাঝে তিন থেকে চারটি বিরতি দিয়ে বেলা ১১টায় পৌঁছে গেলাম কাঙ্ক্ষিত সেই ছোট্ট শহরে, দুই সাগর আর এক মহাসাগর—তিন বিশাল জলরাশির মহামিলনস্থল স্বপ্নের সেই কন্যাকুমারীতে।বাস যখন কন্যাকুমারীর শেষ পথে চলতে শুরু করেছিল তখন থেকেই সমুদ্র সমুদ্র একটা পুলক অনুভব করছিলাম চারপাশের প্রকৃতি দেখে। পথের দুধারে সারি সারি নারকেলগাছ, সামুদ্রিক বাতাসে যারা সারাক্ষণ নেচে বেড়াচ্ছে আপন মনে, মাতাল বাতাসে। উইন্ড মিলের বিশাল বিশাল পাখাগুলো জানিয়ে দিচ্ছিল কাছেই মহাসমুদ্রের মহামিলন। হু হু বাতাসের তোড়ে শেষ পথটুকু বাস যেন উড়ে উড়ে চলছিল! বাস থেকে নেমে, একটি মনের মতো হোটেল খুঁজে সেখানে ব্যাগপত্র রেখে, একটু ফ্রেশ হয়ে নিলাম দীর্ঘতম বাসভ্রমণের ধকল কাটিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে।উত্তাল নীল জলরাশি, মহাসমুদ্রের মহামিলন, কয়েক মানুষের চেয়েও উঁচু উঁচু ঢেউয়ের আছড়ে পড়া, সমুদ্রের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা বিবেকানন্দ রক, নতুন গড়ে ওঠা বিশাল মূর্তি, মহাসাগরের মাঝে ঢেউয়ের দোলায় ভেসে চলা রঙিন বোট, মাছ ধরার ট্রলার, শত মানুষের ভিড়, ঝকঝকে আকাশে সাদা মেঘেদের উড়ে যাওয়া, চারপাশে সবুজের নাচন, উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো মাতাল বাতাস—সবকিছুই উপভোগ করা যাচ্ছিল আমার রুমের কাচের জানালা দিয়ে। কোনো সরাইখানার এমন অপূর্ব, অপার্থিব আর মোহময় কক্ষে এই জীবনে খুব কমই থেকেছি। ইচ্ছে হচ্ছিল রুমের উন্মুক্ত বেলকনিতে বসে কাটিয়ে দিই এ বেলাটুকু। কিন্তু মন তখন দুভাগে বিভক্ত। একটা মন চাইছে মহাসাগর থেকে আসা ঝিরঝিরে বাতাস গায়ে মেখে বেলকনিতে বসে নীল জলরাশি দেখতে দেখতে অলস সময় কাটাতে, আর মনের অন্য অংশ চাইছে একছুটে শেষ বিন্দুতে গিয়ে দাঁড়িয়ে মহাসাগরের মহামিলন দেখতে। তর্কযুদ্ধে জয় হলো বাঙালি জেদের।একদম নতুন কাপড় পরে পথ ধরলাম অনেক দিনের লালিত স্বপ্নের সীমানা ছুঁতে—কন্যাকুমারীর শেষ বিন্দু, ভারতের শেষ ভূখণ্ড স্পর্শ করে, মহাসমুদ্রের উত্তাল জলরাশির মহামিলনে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে স্বপ্ন পূরণের শিহরণে পুলকিত হতে।আমার হোটেল থেকে কন্যাকুমারীর শেষ বিন্দুতে যেতে সময় লাগল প্রায় ১০ মিনিট। কারণ অনেকটা পথ পেরিয়ে, ঘুরে ঘুরে যেতে হয় সেখানে। তখন বিকেল গড়িয়ে পড়ছে কন্যাকুমারীর নীল জলে। শেষ বিকেলের মায়াময় আলো গায়ে মেখে কন্যাকুমারীর শেষ বিন্দুতে, বিশাল বিশাল পাথরে ঘিরে রাখা প্রাচীরে গিয়ে দাঁড়ালাম। সে বড় বিস্ময়কর অনুভূতি। এখানে, এই মহাসমুদ্রের উত্তাল জলরাশির মধ্যে অনন্তকাল ধরে দুটি দ্বীপের মতো দাঁড়িয়ে থাকা বিস্ময়কর পাথরখণ্ডের একটিতে বসে একদিন ধ্যান করেছিলেন বিবেকানন্দ নামের এক বাঙালি! ঝোড়ো বাতাসে উড়ে যেতে ইচ্ছে করাই তখন সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত। আমি দাঁড়িয়ে থাকি শেষ বিকেলের নরম আলো গায়ে মেখে। আমাকে ছুঁয়ে যায় প্রাগৈতিহাসিক নোনা বাতাস। আমি তখন স্বামীজিকে খুঁজে ফিরি সেই বিস্ময় পাথরের ওপরে গড়ে তোলা বিবেকানন্দ মেমোরিয়ালের উপাসনালয়ে, লাইব্রেরিতে, ধর্মীয় আচারের নানা রকম আয়োজনে। ধীরলয়ে অস্তাচলে যায় দিনমণি। আমাকে ফিরতে হয় সরাইখানায়।কন্যাকুমারী তামিলনাড়ু রাজ্যের নাগোড়কৈল জেলার একটি ছোট্ট শহর। মহাসমুদ্রের তীর ঘেঁষে এখানে রয়েছে অনেক হোটেল, মোটেল, পর্যটনকেন্দ্র, বাসস্ট্যান্ড, ভীষণ নান্দনিক একটি রেলওয়ে স্টেশন। আর রয়েছে নানা ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাসের সম্ভার পুরো কন্যাকুমারীর উপকূল ঘিরে। মাছ, ডাব, নানা রকম সামুদ্রিক খাবারসহ, দেশি–বিদেশি পর্যটকদের জন্য সব রকমের খাবার আর বিনোদনের সব আয়োজন আছে এখানে। ৫০০ থেকে ১৫ হাজার রুপিতে প্রতিদিন থাকতে পারবেন যেকেউ।কন্যাকুমারী যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে প্লেনে ভারতের দক্ষিণ প্রান্তের সর্বশেষ বিমানবন্দর ত্রিভুন্নাপুরামে উড়ে যাওয়া। যেখান থেকে কন্যাকুমারী পথের দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। এরপরের উপায় হলো কলকাতা থেকে কন্যাকুমারী ট্রেন। সাপ্তাহিক দুটি ট্রেন ছাড়ে কলকাতা থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত। সময় লাগে ৪২ থেকে ৪৫ ঘণ্টা। এ ছাড়া চেন্নাই হয়েও কম সময়ে ট্রেন আর বাসে করে যাওয়া যায় কন্যাকুমারী। ভ্রমণপিপাসুদের একবার হলেও ঘুরে আসা উচিত ভারতের দক্ষিণের শেষ প্রান্ত কন্যাকুমারী থেকে।ছবি: লেখক
সিলেটের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ আজ সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলসচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন। গতকাল রোববার রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় সিলেটের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।সকাল নয়টার দিকে কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশন থেকে রেলসচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জেল হোসেন, রেলের মহাপরিচালক মো. রফিকুল আলমসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেন। এর আগে প্রথম আলোর জুড়ী প্রতিনিধিকে রেলসচিব বলেন, উপবন এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি পড়ে গেছে। এগুলো ওঠাতে দুটি ক্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিকেল পাঁচটার মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ চালুর চেষ্টা চালাবেন।রেলসচিবকে প্রশ্ন করা হয়, রাতে ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় রেলের গতি অনেক বেশি ছিল। অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে কি?জবাবে রেলসচিব বলেন, এ দুর্ঘটনার বিষয়ে রেলওয়ের প্রধান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (পূর্ব) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি অভিযোগটি খতিয়ে দেখবে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত হয়ে এখন পর্যন্ত তিন নারীসহ অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবরের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানায়, দিবাগত রাত দুইটা পর্যন্ত কুলাউড়া উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চার‌টি মৃতদেহ ছিল। এর এক‌টি মস্তকবিহীন। জরুরি বিভা‌গে চি‌কিৎসা নি‌চ্ছেন ৬০ জন। শরী‌রের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জন‌কে সি‌লেট ওসমানী মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জ হাসপাতালে পাঠানো হ‌য়ে‌ছে। হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়‌তে পা‌রে।আরও পড়ুন:কুলাউড়ায় কালভার্ট ভেঙে রেলের বগি খালে, অনেক হতাহতের আশঙ্কাকুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিককুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারিউপবন দুর্ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশ৭ বগি নিয়ে ঢাকার পথে উপবন
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।আজ সোমবার সকালে এই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান।রফিকুল আলম বলেন, উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (পূর্বাঞ্চল) মো. মিজানুর রহমানকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।কুলাউড়ায় গতকাল রোববার রাতে লাইনচ্যুত হয় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের কয়েকটি বগি। এ ঘটনায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত শতাধিক। হতাহত হওয়ার সংখ্যা বাড়তে পারে।ঘটনার পর সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।উপবন এক্সপ্রেস রাতে সিলেট থেকে ছেড়ে ঢাকায় আসছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।শমশেরনগর স্টেশন সূত্র জানায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে পেছনের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়।যাত্রীরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর সেতু ভেঙে পড়ায় সড়কপথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। যে কারণে রেলে ভিড় ছিল অন্য দিনের চেয়ে বেশি।আরও পড়ুন:কুলাউড়ায় কালভার্ট ভেঙে রেলের বগি খালে, অনেক হতাহতের আশঙ্কাকুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিককুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বজনদের আহাজারিউপবন দুর্ঘটনাস্থলে বিজিবি মোতায়েনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশ৭ বগি নিয়ে ঢাকার পথে উপবন
বাগেরহাটের মোংলা বন্দর পৌরসভায় নির্মিত হতে চলেছে দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র। একটি ভারতীয় ও দেশি একটি কোম্পানির সঙ্গে গতকাল রোববার মোংলা বন্দর পৌর কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মেলনকক্ষে গতকাল দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। মোংলা বন্দর পৌরসভার মেয়র মো. জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইন্ডিয়া হাইকমিশন খুলনার সহকারী কমিশনার রাজেশ কুমার রায়না, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক শেখ রিয়াজ আহমেদ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন খান, প্রিমিয়ার সোলার পাওয়ারটেক প্রাইভেট লিমিটেড ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী সুধীর মুলা ও সোলার ইপিসি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইজাজ আল কুদরত এ মজিদ প্রমুখ।উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘ভাসমান ও পুকুরপাড়ে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করবে। ভারতের সহযোগিতায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আমাদের মধ্যে মৈত্রী ভাব আরও সুদৃঢ় হবে। এ ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশে এই প্রথম। এই দৃষ্টান্ত সামনে রেখে ভাসমান সোলার প্ল্যান্ট সারা বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাবে আশা করি।’ সুন্দরবন সুরক্ষার কথা বিবেচনায় নিয়ে দেশের প্রথম ভাসমান সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র মোংলায় স্থাপনের জন্য তিনি পৌর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না বলেন, সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, পরিবেশবান্ধব ভাসমান সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করায় মোংলা বন্দর পৌরসভার নাম বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলার কুমারখালীতে পানি শোধনাগার কেন্দ্রের দুটি পুকুর ও পুকুরপাড়ে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান ও পুকুরধার সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প স্থাপনে প্রিমিয়ার সোলার পাওয়ারটেক প্রাইভেট লিমিটেড ইন্ডিয়ার পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন প্রধান নির্বাহী সুধীর মুলা, সোলার ইপিসি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বাংলাদেশের পক্ষে চেয়ারম্যান ইজাজ আল কুদরত এ মজিদ এবং মোংলা পোর্ট পৌরসভার পক্ষে মেয়র মো. জুলফিকার আলী।এরপর বেলা তিনটায় উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না মোংলা বন্দর পৌরসভার কুমারখালী প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু মো. ফকির (৩৮) র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের কাঞ্চনবাজার এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে কথিত এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।র‍্যাব জানায়, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ র‍্যাবের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে র‍্যাব একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি গুলি জব্দ করেছে।র‍্যাব-১১–এর প্রধান কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মো. ফকির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু ছিলেন। তাঁকে ধরতে র‍্যাবের একটি দল কাঞ্চনবাজার এলাকায় ফকিরের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ফকির পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়। পরে ঘটনাস্থলে ফকিরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে র‍্যাব। ফকিরকে উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।র‍্যাব জানিয়েছে, ফকিরের লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে একাধিক মামলাসহ কমপক্ষে ছয়টি মামলা রয়েছে।চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন র‍্যাবের কাছে থেকে ফকিরের লাশ গ্রহণের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।এ ব্যাপারে ফকিরের পরিবারের তরফ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আগামী ১৫ জুলাই বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কাউন্সিল। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে।গতকাল রোববার বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে বিবাহিত কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের ২০০০ সালের মধ্যে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।তফসিল অনুযায়ী, আজ ২৪ জুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৫ জুন ভোটার তালিকার ওপর আপত্তি, ২৬ জুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৭ ও ২৮ জুন মনোনয়নপত্র বিতরণ, ২৯ ও ৩০ জুন মনোনয়নপত্র জমা, ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত প্রার্থী বাছাই হবে। ৪ জুলাই প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ, ৫ ও ৬ জুলাই তালিকার ওপর আপত্তি নিষ্পত্তি, ৭ জুলাই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার একটি গ্রামে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে এক বছর ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে দায়ের করা মামলায় শিশুটির ফুফাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।ফরিদপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গত শনিবার দুপুরে নির্যাতিত শিশুর ফুফাকে (৩৮) আসামি করে তার মা মধুখালী থানায় মামলা করেছেন। পরে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।মামলা সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির মা ও বাবা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় শিশুটির মা তাকে স্বামীর ভগ্নিপতির বাসায় গৃহস্থালির কাজে সহযোগিতা করার জন্য রেখে আসেন বছরখানেক আগে। এই সুযোগে শিশুটিকে তার ফুফা ধর্ষণ করে আসছিলেন।মধুখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল আলম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় শিশুটির ফুফাকে গ্রেপ্তার করে শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটিকে গতকাল রোববার শারীরিক পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ও জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে এখন পর্যন্ত তিন নারীসহ অন্তত চারজন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। মৌলভীবাজারের জেলা পুলিশ সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় উপবন এক্সপ্রেসের ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি কালভার্টের ওপর থেকে ছিটকে খালে পড়ে।সিলেট আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর স্টেশন সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকগামী রেল আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে বড়ছড়া খালের ওপর কালভার্টের কাছাকাছি আসলে পেছনে থাকা ১০টি বগি সামনের ৭টি বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী, একজন পুরুষ। লাশগুলো পুলিশের হেফাজতে আছে। রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের তরফ থেকে নিহত এক নারীর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। পরাভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্ত‌রের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জা‌নি‌য়ে‌ছে, রাত ২টা পর্যন্ত কুলাউড়া উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে জরু‌রি বিভা‌গে চি‌কিৎসা নি‌য়েছেন ৬০ জন। শরী‌রের বি‌ভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জন‌কে সি‌লেট ওসমানী মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। হতাহ‌তের সংখ্যা আরও বাড়‌তে পা‌রে।মাসুম আহমেদ নামে একজন যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তারা ছিলেন রেলের কেবিনে। প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি। অনেক সময় আটকে থাকার পর রেল থেকে নেমে দেখতে পান প্রচুর লোকজন। দেখতে পান পেছনের দিকে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গেছে। তখন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসও আসে। তারা তখন শুনতে পান একাধিক লোক মারা গেছেন। তবে তিনি মরদেহ দেখেননি। আহত হয়েছেন অনেকে। ট্রেনে অনেক যাত্রী ছিল বলে জানান তিনি।বরমচাল মানবসেবায় রক্তদান সংস্থা নামের এক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য মন্টু বর্ধন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই শত শত মানুষ আক্রান্তদের উদ্ধারে ছুটে আসে। তিনি এ পর্যন্ত তিনটি লাশ দেখেছেন বলে জানান মন্টু।দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধারকাজ অব্যাহত আছে। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট। উদ্ধারকাজে স্থানীয় লোকজনও সহায়তা করছে।
কুলাউড়ায় দুর্ঘটনায় কবলিত রেল উপবন এক্সপ্রেস সাতটি বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ৩টা ১৫ মিনিটে উপবন এক্সপ্রেস ৭টি বগি নিয়ে কুলাউড়া স্টেশন ছেড়ে আসে। আজ সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে এটির ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। কুলাউড়া রেল স্টেশন মাস্টার আনসার উদ্দিন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্ঘটনাকবলিত রেললাইনটির প্রায় এক কিলোমিটার অংশ একেবারে দুমড়েমুচড়ে গেছে। আপাতত ঢাকা থেকে কুলাউড়া পর্যন্ত রেল যোগাযোগ সচল থাকবে।এর আগে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকার বড়ছড়া খালের ওপর কালভার্টের কাছাকাছি আসলে উপবন এক্সপ্রেসের পেছনে থাকা ১০টি বগি সামনের ৭টি বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কালভার্টের ওপরে আসলে একটি বগি ছিটকে নিচে বড়ছড়া খালে পড়ে যায়। বাকি বগিগুলোর দুটি উল্টে পাশের জমিতে পড়ে যায়। বাকি ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে রেললাইনের পাশে পড়ে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। তবে আপাতত উদ্ধারকাজ বন্ধ রয়েছে।কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে আসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. শাহজালালসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রথম আলোকে তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন ৪ জনের লাশ রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ। নিহত এই চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। পরাভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে এখন পর্যন্ত তিন নারীসহ অন্তত চারজন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিদের লাশ কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। মৌলভীবাজারের জেলা পুলিশ সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এর আগে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জানিয়েছে, রাত ২টা পর্যন্ত কুলাউড়া উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চার‌টি মৃতদেহ ছিল। এর এক‌টি মস্তকবিহীন। জরুরি বিভা‌গে চি‌কিৎসা নি‌চ্ছেন ৬০ জন। শরী‌রের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জন‌কে সি‌লেট ওসমানী মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। হতাহ‌তের সংখ্যা আরও বাড়‌তে পা‌রে।কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটক থেকে ভেতর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক মানুষ অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা আহতদের দেখতে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে পরিচিতদের খোঁজ করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে আসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. শাহজালালসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রথম আলোকে তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন ৪ জনের লাশ রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ। নিহত এই চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। পরাভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী ট্রেন দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কাজে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম এ কথা জানান।মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে তিন নারীসহ অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।এর আগে রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়।সিলেট আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর স্টেশন সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকগামী রেল আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে পেছনের কয়েকটি যাত্রীবাহী বগি খালে পড়ে যায়। ঘটনার পর থেকে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে উদ্ধার কাজে বিজিবিকে নামানো হয়েছে।দুর্ঘটনার পরপরই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ উদ্ধার কাজে শামিল হয়। তারা আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারে নামে।জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উদ্ধার কাজ জোরদার করতেই মূলত বিজিবি নামানো হয়েছে।
উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের দেখতে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় করেছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানে এসেছেন ওই রেলে থাকা যাত্রীদের স্বজনেরা। এ সময় নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে এসে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।কুলাউড়ার বুকশিমুল গ্রামের বাসিন্দা আনু মিয়া এসেছেন তাঁর কলেজ পড়ুয়া ছেলে শাকিলের খোঁজে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, উপবন এক্সপ্রেসে করে তাঁর ছেলে ঢাকায় যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে ছুটে আসেন। এখন পর্যন্ত ছেলে শাকিলের খোঁজ পাননি আনু মিয়া। মুঠোফোনেও ছেলেকে পাচ্ছেন না বলে তিনি জানান। চিকিৎসা নিতে আসা রুবেল নামের এক যাত্রী জানান, রেলের নিচে অনেক লাশ এখনো চাপা পড়ে আছে।কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটক থেকে ভেতর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক মানুষ অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা আহতদের দেখতে অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে পরিচিতদের খোঁজ করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে আসেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. শাহজালালসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রথম আলোকে তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন ৪ জনের লাশ রয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ। নিহত এই চারজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। পরাভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে তিন নারীসহ অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। মৌলভীবাজারের জেলা পুলিশ সূত্র প্রথম আলোকে রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়।সিলেট আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর স্টেশন সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকগামী রেল আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে পেছনের কয়েকটি যাত্রীবাহী বগি খালে পড়ে যায়। ঘটনার পর থেকে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী, বাকি একজন পুরুষ। তাদের কারও পরিচয়ই জানা যায়নি। লাশগুলো পুলিশের হেফাজতে আছে। রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।স্বাস্থ্য অধিদপ্ত‌রের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জা‌নি‌য়ে‌ছে, রাত ২টা পর্যন্ত কুলাউড়া উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে জরু‌রি বিভা‌গে চি‌কিৎসা নি‌য়েছেন ৬০ জন। শরী‌রের বি‌ভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জন‌কে সি‌লেট ওসমানী মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। হতাহ‌তের সংখ্যা আরও বাড়‌তে পা‌রে।মাসুম আহমেদ নামে একজন যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তারা ছিলেন রেলের কেবিনে। প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি। অনেক সময় আটকে থাকার পর রেল থেকে নেমে দেখতে পান প্রচুর লোকজন। দেখতে পান পেছনের দিকে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গেছে। তখন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসও আসে। তারা তখন শুনতে পান একাধিক লোক মারা গেছেন। তবে তিনি মরদেহ দেখেননি। আহত হয়েছেন অনেকে। ট্রেনে অনেক যাত্রী ছিল বলে জানান তিনি।বরমচাল মানবসেবায় রক্তদান সংস্থা নামের এক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য মন্টু বর্ধন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই শত শত মানুষ আক্রান্তদের উদ্ধারে ছুটে আসে। তিনি এ পর্যন্ত তিনটি লাশ দেখেছেন বলে জানান মন্টু।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি খালে পড়ে যায়। এতে রেলে থাকা বেশ কয়েকজন যাত্রীর হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের সংখ্যা জানা যায়নি। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।সিলেট আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর স্টেশন সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন বরমচার স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে পেছনের কয়েকটি যাত্রীবাহী বগি খালে পড়ে যায়। এ ঘটনায় বেশ কিছু যাত্রী হতাহত হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।শমশেরনগর স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ দুর্ঘটনায় পুরো তথ্য এখনই জানানো না গেলেও বেশ কয়েকজন যাত্রী হতাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রোববার বিকেলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।নিহত ব্যক্তির নাম মো. শফিকুল ইসলাম (৩৩)। তিনি পূর্বধলার বাঘড়া গ্রামের বাসিন্দা।স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শফিকুল পূর্বধলার বৌলাম শাহ সুলতান অটো রাইস মিলে কাজ করতেন। তাঁর সহকর্মী রনি মিয়া (৩২)। শফিকুল ও রনি শনিবার সন্ধ্যার দিকে মিলের কাজ শেষে হাত-পা ধুতে যান। এ সময় প্রাকৃতিক বাতাসে হঠাৎ শরিফুলের পরনের লুঙ্গি ওপরে উঠে যায়। এতে রনি হাসতে হাসতে চাতাল কলের বাতাসের যন্ত্র ছেড়ে দেন। একপর্যায়ে খামখেয়ালিভাবে যন্ত্রের নলটি শফিকুলের পায়ুপথে ঢুকিয়ে দেন। এতে শফিকুলের পেটের ভেতরে বাতাস ঢুকে পড়লে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে তিনটার দিকে শফিকুল মারা যান। এ ঘটনার পর লাশ স্বজনেরা বাড়িতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রোববার বিকেল চারটার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর থেকে রনি মিয়া পলাতক আছেন। রনির ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। মিলের মালিক লাল মিয়ার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।পূর্বধলা থানার শ্যামগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘শফিকুলের লাশ উদ্ধার করে মর্গে নেওয়া হয়েছে। রনিকে আটকের চেষ্টা চলছে।’পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাওহীদুর রহমান রোববার রাত পৌনে নয়টার দিকে বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়নি। নিহতে শফিকুলের পরিবারের লোকজন মামলা করতে চাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
নির্ধারিত গতির চেয়ে জোরে ছুটছিল ট্রেনটি। যাত্রীও বেশি ছিল। ট্রেনের যন্ত্রাংশে ত্রুটি থাকারও সম্ভাবনা আছে। মৌলভীবাজারে কুলাউড়া উপজেলায় গত রোববার রাতে ট্রেন দুর্ঘটনায় এসব বিষয় জড়িত থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।ওই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। অতিরিক্ত গতি, বেশি যাত্রীর সঙ্গে ট্রেনের যন্ত্রাংশের ত্রুটি থাকার বিষয়টা মিলিয়ে দেখছেন তাঁরা।এদিকে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বুধবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন। কুলাউড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদি উর রহিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।একটি তদন্ত কমিটির সদস্য রেলওয়ের ঢাকার প্রধান দপ্তরের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আহসান জাবির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার থাকার কথা। গতি বেশি থাকার প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা।প্রকৌশলী আহসান বলেন, ট্রেনটির ব্রেকেট ও চাকার কিছু যন্ত্রাংশ ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। ট্রেনের ১৭টি বগিতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। বেশি গতি, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন অথবা যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে। তবে অন্য কোনো কারণেও থাকতে পারে।ট্রেনের গতি সম্পর্কে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের ঢাকা সেকশনের চালক আবদুস সাত্তারের সঙ্গে। সাংবাদিক পরিচয় জেনে ‘পরে কথা বলছি’ বলে সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করার পরও ফোন ধরেননি বরমচাল রেলস্টেশনে দায়িত্বে থাকা সহকারী স্টেশনমাস্টার সফিকুর রহমান। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অবসরে যাওয়া রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক প্রকৌশলী বলেন, ট্রেনের বগিগুলো অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। যন্ত্রাংশ মেরামত হচ্ছে না। জোড়াতালি দিয়ে চলছে।ওই প্রকৌশলী বলেন, ব্রেকের সময় ট্রেনের বগির নিচে চাকা আটকানোর জন্য কুলিং রড নামের একটি যন্ত্র টানা দেওয়া থাকে। ব্রেক কষতে গিয়ে এটি বেশি নিচে নেমে গেলে রেললাইনের সঙ্গে আটকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নির্ধারিত গতিসীমার বেশিতে চললে অথবা ট্রেনের চাকা, ব্রেকেটসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।প্রকৌশলী আরও বলেন, ট্রেন ছাড়ার আগে এটিকে ওয়াস পিটে (পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্ধারিত স্থান) নিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে সিলেট রেলস্টেশনে ওয়াস পিট নেই। ট্রেন ছাড়ার সময় রেললাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় শুধু স্বাভাবিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে।উল্লেখ্য, আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রোববার রাতে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। ট্রেন বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে রেলপথের একটি কালভার্ট ভেঙে পেছনের পাঁচটি বগি লাইন থেকে ছিটকে পড়ে। এর মধ্যে একটি বগি সেতুর নিচে এবং চারটি বগি রেললাইনের পাশে কাত হয়ে পড়ে। এতে চারজন যাত্রী নিহত হন। আহত হন শতাধিক যাত্রী।
রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এ ঘটনায় লালবাগ থানায় মঙ্গলবার দুটি মামলা হয়েছে।এ ঘটনায় চার আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন ঢাকার আদালত। আসামিরা হলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচির জিধুরী সরকারবাড়ী গ্রামের রিয়াদ আরেফীন (২৯), পল্লবী এলাকার আসিফ রহমান (৩৫), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার কাজীরবাগ গ্রামের মেহেদী হাসান (৩৫) এবং চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানার স্টেশনপাড়ার সুখেন্দু রায় (৫৩)।আসামিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও অস্ত্র আইনে লালবাগ থানায় মঙ্গলবার পৃথক দুটি মামলা করেন র‍্যাব-১০–এর জ্যেষ্ঠ ওয়ারেন্ট অফিসার মো. শামীম।মামলার এজাহারে বলা হয়, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে র‍্যাব-১০–এর সদস্যরা চকবাজার থানার বকশীবাজার মোড়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় গোপন সংবাদের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন, বিদেশ থাকা আনা সাপের বিষ বিক্রির জন্য চোরাকারবারিরা আছেন লালবাগ থানার স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার সামনে। পরে র‌্যাব সদস্যরা সেখানে গেলে উপস্থিতি টের পেয়ে প্রাইভেট কারে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন চোরাকারবারিরা। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করে তাঁদের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়। জারে রাখা কোবরা সাপের বিষ পাওয়া যায়। জব্দ করা হয় অস্ত্র-গুলি। মামলায় আরও বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেন, বিদেশ থেকে সাপের বিষ এনে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন তাঁরা। পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবসাও করেন।আদালতকে এক প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়েছে, আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া কোবরা সাপের বিষের বোতলে লেখা আছে, ‘মেড ইন ফ্রান্স।’ আসামিদের কাছ থেকে ছয়টি মুঠোফোন এবং একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়েছে।মামলার বাদী র‍্যাব-১০–এর কর্মকর্তা মো. শামীম মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আসামিরা দীর্ঘদিন থেকে সাপের বিষের ব্যবসা করে আসছেন। এ ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত আছেন, কীভাবে সাপের বিষ সংগ্রহ করেছেন তা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুই মামলায় আদালত চার আসামিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আদেশ দিয়েছেন।
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তাঁকে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হবে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ডিআইজি মিজানের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি প্রচলিত বিধি অনুযায়ী খোরাকি ভাতা পাবেন।জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বরখাস্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে তাঁর (ডিআইজি মিজান) বিরুদ্দে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’মিজানুরের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছিল। ডিআইজি মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি সামনে এলে তড়িঘড়ি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠায়। মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ অধিদপ্তর। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ প্রশাসন। গত সোমবার ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় মিজানুর রহমান, তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়েছে।
ইংল্যান্ডকে ৬৪ রানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচসেরা হয়েছেন সেঞ্চুরি করা অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। মিচেল স্টার্ক ও জেসন বেরেনডর্ফ ভাগ করে নিয়েছেন ৯ উইকেটক্রিকেটে একটি কথা বেশ প্রচলিত। একটি ভালো ইনিংসের সমাপ্তি ঘটাতে একটি মাত্র ভালো বলই যথেষ্ট। কথাটির আদর্শ উদাহরণ আজ দেখালেন মিচেল স্টার্ক। ওই একটি বলেই যে ইংল্যান্ডের শেষ আশার বাতিটি নিভিয়ে দিয়েছেন স্টার্ক, যেটিকে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা ডেলিভারি বলেই মানা হচ্ছে। ৬৪ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে চলে যাওয়ার পেছনে ওই একটি বলের অবদানই বেশি।শুরু থেকেই পথ হারানো ইংল্যান্ডকে বলতে গেলে একাই টানছিলেন বেন স্টোকস। কেন ইংলিশরা তাঁকে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের যোগ্য উত্তরসূরি মনে করেন, সেটির প্রমাণ আরও একবার দিচ্ছিলেন। একের পর এক সাহসী শটে যেন মনে করিয়ে দিতে চাইছিলেন, তিনি উইকেটে থাকা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত নয়। পথের শেষ কাঁটা সরাতে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক শরণাপন্ন হলেন নিজের সেরা অস্ত্র স্টার্কের। আস্থার প্রতিদান এর চেয়ে ভালোভাবে বোধ হয় দিতে পারতেন না বাঁহাতি ফাস্ট বোলার।স্টোকস যেভাবে এগোচ্ছিলেন, তাঁকে ফেরানোর জন্য বিশেষ একটি বলেরই দরকার ছিল। ঠিক সেটিই করলেন স্টার্ক। দুরন্ত গতিতে ছুটে এসে যে নিখুঁত ইয়র্কারে স্টাম্প উপড়ে ফেললেন, ৮৯ রানে দাঁড়িয়ে থাকা স্টোকসের বিন্দুমাত্র সাধ্য ছিল না সেটি ঠেকানোর। ওই এক বলেই নিশ্চিত হয়ে গেল, বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৭ বছরের জয়খরা এবারও ঘোচানো হচ্ছে না ইংলিশদের। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। অস্ট্রেলিয়ার ২৮৫ রানের জবাবে ২২১ রানেই থেমেছে ইংল্যান্ড। ২০১৭ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো টানা দুই ওয়ানডে হেরে সেমিফাইনালের স্বপ্নটাকেও আরেকটু ধূসর বানিয়ে ফেলল ইংলিশরা।ইংল্যান্ড মূলত হেরে গেল অস্ট্রেলিয়ার দুই বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক ও জেসন বেরেনডর্ফের কাছেই। দুজনে মিলে ভাগ করে নিয়েছেন ৯ উইকেট। স্টোকসকে এমন নিঃসঙ্গ যোদ্ধা বানানোর দায় ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের যতটা, তার চেয়ে বেশি কৃতিত্ব অস্ট্রেলীয় পেসারদের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ভয়ংকর এই ইনসুইংয়ে জেমস ভিন্সের মিডল স্টাম্প উড়িয়েছেন বেরেনডর্ফ। এটি দিয়ে শুরু, এরপর আরও চারটি উইকেট তুলেছেন এ বাঁহাতি পেসার। ৪৪ রানের বিনিময়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন বেরেনডর্ফ।উইকেট সংখ্যায় বেরেনডর্ফের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও আজকের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মূল নায়ক ছিলেন স্টার্ক। স্টোকসকে আউট করার আগে আরও বড় সর্বনাশ করেছেন ইংল্যান্ডের। চতুর্থ ওভারেই ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ জো রুটকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেছেন দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে। নিজের পরের ওভারেই ফিরিয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছয় হাঁকানোর বিশ্ব রেকর্ড করা অধিনায়ক এউইন মরগানকেও। বলতে গেলে ইংলিশ ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডটাই ভেঙে দিয়েছেন। আদিল রশিদকে ফিরিয়ে ম্যাচটা শেষও করেছেন স্টার্কই। ৪৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট পাওয়া স্টার্কের ২০১৯ বিশ্বকাপে উইকেট হয়ে গেল ১৯টি। মোহাম্মদ আমির ও জফরা আর্চারকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও এখন তিনি। হুমকি হতে পারতেন জনি বেয়ারস্টো বা জস বাটলাররাও। বেয়ারস্টোকে (২৭) ফিরিয়েছেন বেরেনডর্ফ, আর বাটলার (২৫) ফিরেছেন মার্কাস স্টয়নিসের বলে বাউন্ডারিতে উসমান খাজার দারুণ ক্যাচ হয়ে। পুরো ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডিং ছিল চোখে লেগে থাকার মতো। অ্যারন ফিঞ্চের অধিনায়কত্বও ছিল দুর্দান্ত।চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এই জয়ে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। আর সেমিফাইনালে ওঠাকে আরেকটু সংশয়ের মুখে ফেলে দিল বড় মঞ্চে ‘চোক’ করতে অভ্যস্ত ইংল্যান্ড।
তিনে তিন! সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের তিন জয়ে তিনবারই হলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ—ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়। তাঁর খেলা আগের তিন বিশ্বকাপে একবারও ম্যাচসেরা হননি। ওই বিশ্বকাপগুলোয় যদি অন্তত দুবার ম্যাচসেরা হতেন, বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশিবার ম্যাচসেরা হয়েছেন—এমন ক্রিকেটারদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নিতেন। সাকিবের সামনে সুযোগ আছে এই মহান কীর্তিমানদের ছোঁয়ার।১. শচীন টেন্ডুলকার: (৯ বার)তালিকার প্রথমে তাঁর নামটা আদতে তেমন বিস্ময় জাগায় না। সবচেয়ে বেশি রান, সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা এই ভারতীয় ক্রিকেটার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যান অব ম্যাচ অ্যাওয়ার্ডেরও মালিক। ৪৫ ম্যাচের বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে ম্যান অব দ্য ম্যাচের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন নয়বার। যার শুরুটা ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে। শুরুর মতো শেষটাও পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২০১১ সালের সেমিফাইনালে।২. গ্লেন ম্যাকগ্রা: (৬ বার)বিশ্বকাপ ইতিহাসের সফলতম বোলার আছেন টেন্ডুলকারের পরেই। ১৯৯৬ সালে নিজের প্রথম বিশ্বকাপে মাত্র ৬ উইকেট পাওয়া ম্যাকগ্রা নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন পরের বিশ্বকাপেই। প্রথমবার ম্যান অব দ্য ম্যাচও হয়েছিলেন সে বিশ্বকাপেই, উইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে। পরের ২৭ ম্যাচে উইকেট তুলে নিয়েছিলেন আরও ৫৫টি, ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছিলেন আরও ৫ বার।৩. ল্যান্স ক্লুজনার: (৫ বার)১৯৯৯ বিশ্বকাপের চিত্রনাট্য যেন লেখা হয়েছিল তাঁর জন্যই। সে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা যে ছয় ম্যাচে জয়ী হয়েছিল, তার চারটিতেই ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ল্যান্স ক্লুজনার। ব্যাটে-বলে দলকে প্রায় একা হাতে বয়ে চলা ক্লুজনারের কপালে টুর্নামেন্ট-সেরার স্বীকৃতিও জুটেছিল সেবার৷ পরের বিশ্বকাপে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন আরও একবার, কেনিয়ার বিপক্ষে। সব মিলিয়ে ১৪ ম্যাচের বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে পাঁচবার ম্যাচসেরার পুরস্কার জয়, বিশ্বকাপটা তো আসলে ক্লুজনারেরই।৪. এবি ডি ভিলিয়ার্স: (৫ বার)ইনিও দক্ষিণ আফ্রিকান, ম্যান অব দ্য ম্যাচের স্বীকৃতও পেয়েছিলেন পাঁচবার। তবে ল্যান্স ক্লুজনারের মতো কোনো নির্দিষ্ট আসরকে নিজের করে নিতে পারেননি। নিজের খেলা তিন বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই অন্তত এক ম্যাচে হলেও ম্যাচসেরার স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। ক্রিকেটের এই সুপারম্যান রান করেছিলেন সব দলের বিপক্ষেই, তবে উইন্ডিজকে সামনে পেলে যেন বিশেষভাবে জ্বলে উঠত তাঁর ব্যাট, পাঁচবারের তিনবারই যে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন উইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে। ৫. ভিভ রিচার্ডস: (৫ বার)ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম মেগাস্টার তিনি। অথচ এই মানুষটি কিনা প্রথম বিশ্বকাপ শেষ করেছিলেন ম্যাচ সেরার ট্রফি ছাড়াই! পঁচাত্তর পেরিয়ে সেই ট্রফি এসেছিল ১৯৭৯ বিশ্বকাপে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরে। তাঁর সেদিনের ১৩৮ তো পরে জায়গা করে নিয়েছে ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে। প্রথমের মতো শেষবার ম্যাচসেরার পুরস্কার এনে দেওয়া ইনিংসটিও মহাকাব্যিক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৮৭ বিশ্বকাপের ১৮১ রান। এটি ছিল তখনকার ক্রিকেটের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। মাঝে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন আরও তিন ম্যাচে, সর্বমোট পাঁচবার।৬. গ্রাহাম গুচ: (৫ বার)‘ইশ্‌, দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই নিষিদ্ধ সফরে না গেলে!’ ক্যারিয়ার নিয়ে গ্রাহাম গুচের এই আক্ষেপ নিশ্চয়ই এখনো আছে। তিন বছরের সে নিষেধাজ্ঞায় মিস করেছিলেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপ। নিষেধাজ্ঞায় পড়ার আগের বিশ্বকাপে দুবার, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে তিনবার, বিশ্বকাপে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার জিতেছিলেন পাঁচবার। নিষেধাজ্ঞা না জুটলে এ সংখ্যা আরও বাড়তেই পারত।৭. মার্ক ওয়াহ: (৫ বার) ১৯৯৬ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিন ম্যাচে, কেনিয়া, ভারত আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দল জয়ী হয়েছিল প্রতি ম্যাচেই, মার্ক ওয়াহও ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন সব ম্যাচেই। এর আগে ১৯৯২ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এবং পরে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচসেরার ট্রফি জিতে ট্রফির সংখ্যাটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন পাঁচে।৮. সনাৎ জয়াসুরিয়া: (৫ বার)ওয়ানডে ক্যারিয়ারে যিনি ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ৪৬ বার, তাঁর জন্য বিশ্বকাপের ৩৮ ম্যাচে পাঁচবার ম্যাচসেরার পুরস্কার জয় মাত্রই। এই পাঁচবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ ট্রফি জয়ের একটি এসেছিল ২০০৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ ছক্কায় সেঞ্চুরি করা ম্যাচের দিনে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোট গড়ে কামাল হোসেন কার্যত আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করেছেন। এ দাবি করেছেন সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ নাসিম।আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় এ কথা বলেন নাসিম।নাসিম বলেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে কৌশল। বিএনপির বন্ধুরা বারবার ভুল করেছে। ২০১৪ সালে একবার “গোস্যা” করে নির্বাচনে আসেনি। আবার ২০১৮ সালে নির্বাচন এল—লোক ভাড়া করে।’নাসিম বলেন, ‘কাকে ভাড়া কাকে করল? আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত নেতা, অত্যন্ত শিক্ষিত ও বিদগ্ধ নেতা, আওয়ামী লীগে চক্রান্ত করে ব্যর্থ কামাল হোসেনকে ভাড়া করে সামনে দাঁড় করাল।’নাসিম বলেন, ‘তিনি (ড. কামাল) আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করে মাঠ খালি করিয়ে দিলেন আর আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। এই হচ্ছে তাদের ভাড়াটের মুরদ। ওরা কামাল হোসেনকে ভাড়া করল ওদের জন্য, আর কাজ করল আমাদের জন্য।’নাসিম বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগের কৌশলের কাছে বারবার হেরে গেছে। ভোটে নেমে মাঠ থেকে পালিয়ে গেছে। তারেক রহমান এসে বিএনপির বারোটা থেকে তেরোটা বাজিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি আন্দোলনও করতে পারে না।মো. নাসিমের বক্তব্যের জবাবে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, সংসদে বারবার বলা হচ্ছে যে কৌশলে বিএনপি হেরে গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে জাতিসংঘ, টিআইবি, যুক্তরাষ্ট্র, নিউইয়র্ক টাইম, দিল্লির গবেষক-বিশ্লেষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন।হারুন বলেন, সাবেক মন্ত্রী নাসিম উপহাস করে বলেন, বিএনপি রাস্তায় দাঁড়াতে পারে না। বিএনপির কত নেতা–কর্মী অপহরণ, ব্রাশফায়ার, বিনা বিচারে হত্যার শিকার হয়েছেন। বিএনপির মহাসচিবের নামে ৮৪টি মামলা।হারুন বলেন, ‘যে সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, সেই সংসদ নির্বাচনে আগের রাত্রেই ব্যালট ভর্তি করা হয়, আর পরের দিন গণনা করা হয়। যে কারণে এটাকে বলা হচ্ছে মধ্যরাতের পার্লামেন্ট।’হারুন বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় সংলাপে প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। বিএনপির নেতা–কর্মীদের মামলার তালিকা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু নির্বাচনে বিএনপির ২২ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪০ জন প্রার্থী ভয়ানকভাবে আহত হন। ভোটাররা প্রতারিত ও অপমানিত হয়েছেন। ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে পারেননি। নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে হারুন প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনি জাতীয় সংলাপের সময় ওয়াদা করেছেন, সে ওয়াদা কি পূর্ণ হয়েছে?’হারুন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, গায়েবি মামলা বলে কিছু নেই। গত ১০ বছরে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯০ হাজার মামলা হয়েছে। অধিকাংশই ভুয়া। প্রায় ২৫ লাখ আসামি । তিনি এসব মামলা নিয়ে একটি সংসদীয় কমিটি করার দাবি জানান।গত ১০ বছরে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিখোঁজ হয়েছে দাবি করে হারুন বলেন, ‘জানি না, এখানে কথা বলে বাড়ি ফিরে যেতে পারব কি না। রাস্তা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে আমার ভাগ্যে ইলিয়াসের ভাগ্য জুটবে কি না, সালাহউদ্দিনের ভাগ্য জুটবে কি না, এ কথা বলতে পারছি না।’হারুনের বক্তব্যের একপর্যায়ে সরকারি দলের সদস্যরা হইচই করে প্রতিবাদ জানাতে থাকলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী হারুনের উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় সদস্য আপনি বাজেটের ওপর বলছেন না কথা। আপনি বাজেটের ওপর বলুন।’ এর জবাবে হারুন বলেন, এতক্ষণ সাধারণ আলোচনা হয়েছে। বক্তব্যের ধারা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। আজকে বক্তব্যের ধারা চেঞ্জ করে দিয়েছেন। সরকারি দলের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দয়া করে চুপ করেন। আপনারা আপনাদের সময় বক্তব্য দিয়েন।’হারুন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি বিলের নিন্দা জানান। তবে তিনি বলেন, বিচার করতে গিয়ে যাতে কোনো বাড়াবাড়ি না হয়। জাতীয় নেতারা সে বিষয়গুলো বিবেচনা করেছেন।বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে হারুন বলেন, এটি একটি অদ্ভুত সরকার। মহাজোটে ভোট করে শরিকদের বিরোধী দলে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের চেহারা মলিন। রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ওনারা নিজেদের অবস্থান নিয়ে বিব্রত। হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ফরমায়েশি বিরোধী দল দিয়ে সংসদ কার্যকর করা যাবে না। এগুলো সত্য।লুটকারীদের কেন ছাড় দেওয়া হলোআজ সংসদে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘ব্যাংক সেক্টর নিয়ে কথা উঠছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হলো, তাদের কেন ছাড় দেওয়া হলো? ঋণখেলাপিদের ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কৃষকেরা ১–২ হাজার টাকার জন্য সার্টিফিকেট মামলার আসামি হবে আর ঋণখেলাপিরা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নেবে এটা কেন হবে? কোর্ট এত কথা বলে, কোর্ট কেন স্থগিতাদেশ দেয়।’বাজেট বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সাংসদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘আমরা হাজার কোটি টাকার বাজেট করব, লক্ষ কোটি টাকার বাজেট করব। কিন্তু বাজেট বাস্তবায়ন হবে না, টাকা ফেরত যাবে, তা হবে না। অবশ্যই বাজেট বাস্তবায়ন করতে হবে। যারা বাস্তবায়ন করতে পারবে না তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।’নাসিম বলেন, ‘কিছু ব্যবসায়ী আছেন তাঁরা ব্যাংকের মালিক, গার্মেন্টস, ওষুধ কোম্পানি এমনকি সংবাদপত্রেরও মালিক। এই ধরনের বহুমুখী ব্যবসায়ী সরকারি দলে ঢুকে আছেন। সংসদ হবে রাজনৈতিক নেতাদের। যাঁরা ব্যবসায়ী, কোনো দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেননি, এঁরা সুখের পায়রা। আওয়ামী লীগ সরকারের থেকে লাইসেন্স নিয়ে তাঁরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তাঁরা সংবাদপত্রের মালিক হয়ে দিনের পর দিন লিখে যাচ্ছেন।’মো. নাসিম মুঠোফোন ও সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল প্রকল্পের খরচ বাড়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘যারা প্রজেক্ট বানায় তাদের ধরে পেটানো উচিত।’ রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি জাতীয় সংসদে ‘ক্যামেরা সেশন’ দাবি করেন।কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার সমালোচনা হলেও এর পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিলে নতুন কর্মসংস্থান হবে।অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাংসদ আ স ম ফিরোজ, কামাল আহম্মেদ মজুমদার, নুরুজ্জামান আহমদ, ইসরাফিল আলম, ফজিলাতুন্নেসা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) ‘আন্তবিভাগ গণিত অলিম্পিয়াড’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাধারণ শিক্ষা উন্নয়ন’ বিভাগের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিনব্যাপী এই প্রতিযোগীতা চলে। বিকেলে ২৫ বিজয়ী শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়।প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তনিমা হোসেন। প্রথম রানার আপ ও দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন একই বিভাগের স্বর্ণালি পাল চৈতি ও মো. সাজ্জাদ হোসেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের ধানমন্ডি ক্যাম্পাসের ৭১ মিলনায়তনে বিকেলে পুরস্কার বিতরণ হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুনির হাসান বলেন, সারা পৃথিবীতেই এখন এক ধরনের পরিবর্তন চলছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো এখন ব্যাংকের চাকরিতে গণিতবিদ নিয়োগ দিচ্ছে। এখন পৃথিবীর সবচেয়ে দামি চাকরির নাম ডেটা অ্যানালিস্ট। আর যারা গণিতে ভালো তারাই ডেটা অ্যানালিস্ট হয়। সুতরাং গণিতের বিকল্প নেই।ডিআইইউর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এস এম মাহবুব উল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণীতে আরও উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ শিক্ষা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান সৈয়দ মিজানুর রহমান, ডিআইইউ আন্তবিভাগ গণিত অলিম্পিয়াডের আহ্বায়ক ও সহযোগী অধ্যাপক বিমল চন্দ্র দাস, মো. জসীম উদ্দীন, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক শাহরিয়ার খান, আরিফা আক্তার প্রমুখ।
বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে তাঁর দেশ গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আমরা গঠনমূলক ভূমিকা পালন করব।’চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন।বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে তাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরত যেতে হবে এবং এই বিষয়ে মিয়ানমারকে বোঝানোর জন্য তিনি চীনের প্রতি আহ্বান জানান।প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং চীনের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফরের বিষয়েও আলোচনা করেন।এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে তাঁর চীন সফরের সময় দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও বিকশিত করার অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে চারটি চুক্তি সই হবে।বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এবং চীনের রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও শক্তিশালী হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের পর থেকে ঢাকা এবং বেইজিং সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হয়।ঢাকা-বেইজিং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের সহযোগিতায় চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণকাজ চলছে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চীন সফরের ওপর একটি বই প্রকাশনার বিষয়ে জানতে পেরে চীনা রাষ্ট্রদূত বইটি চীনা ভাষায় অনুবাদের বিষয়ে তাঁর দেশের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কাছে সংরক্ষিত থেকে থাকলে বঙ্গবন্ধুর চীন সফরের সময়কালীন আলোকচিত্র প্রদানের জন্যও চীনের রাষ্ট্রদূতের প্রতি অনুরোধ জানান।প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ১১ রোহিঙ্গা তরুণীসহ ১৫ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। এসব তরুণীদের মালয়েশিয়ায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাচারের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে টেকনাফে যে তিন ব্যক্তি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তাদের মধ্যে দুজন এই পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।আটক হওয়া এসব তরুণীরা উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে। সোমবার রাতে পুলিশ এসব রোহিঙ্গাদের আটক করে।টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর পর ভালো পাত্রে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ১১ তরুণীসহ ১৫ রোহিঙ্গাকে টেকনাফ নিয়ে আসে দালালচক্র। রোহিঙ্গাদের স্বীকারোক্তি মতে, পুলিশ মঙ্গলবার ভোররাতে টেকনাফ সমুদ্র উপকূলের নৌকাঘাটে মানবপাচারকারীদের ধরতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে তিন মানবপাচারকারী নিহত হন । পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এলজি, শটগানের ১৫টি গুলি ও ২০টি খোসা জব্দ করে।মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফ থানায় আটক রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেন এ প্রতিবেদকেরা। রোহিঙ্গা তরুণী জয়নাব বিবি (১৮) বলেন, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে তাঁকে বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করা হয়েছে-এমন প্রলোভনে কুরবান আলী (বন্দুকযুদ্ধে নিহত) তাঁকে শিবির থেকে টেকনাফে আনে। উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের এই বাসিন্দা আরও বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের বলিবাজার থেকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি ওই শিবিরে আশ্রয় নেন। থানায় জয়নাব বিবির সঙ্গে ছিলেন, একই শিবিরের তরুণী জুহুরা বেগম, দিলদার বেগম, আফিফা আক্তার, হাজেরা বেগমসহ বাকিরা।জুহুরা বেগম ও হাজেরা বেগম বলেন, গত ১৯জুন বিকেলে কুরবান আলী তিনটি টমটমে করে বালুখালী থেকে ১৫ রোহিঙ্গাকে টেকনাফে আনে। রাতে তাঁদের রাখা হয় টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীপাড়ার আবদুর রহমানের (বন্দুকযুদ্ধে নিহত) বাড়িতে। আবদুর রহমান কুরবান আলীর শ্যালক। দুই দিন পর রাতে তাদের টমটমে করে নেওয়া হয় পাহাড়ের জঙ্গলে আবদুল হাকিমের বাড়িতে। সেখানে মালয়েশিয়া পাঠানোর ট্রলার ভাড়া বাবদ মাথাপিছু ৬ হাজার টাকা করে সর্বমোট ৯০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। সোমবার (২৪ জুন) ট্রলারে তুলে দেওয়ার কথা বলে তাঁদের পাহাড়ের জঙ্গল থেকে আনা হয় টেকনাফ উপজেলা পরিষদ এলাকায়।থানা হাজতে কান্নাকাটি করছিলেন আফিফা আক্তার নামের আরেক রোহিঙ্গা তরুণী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিন মাস আগে মোবাইলে মালয়েশিয়া প্রবাসী জালাল নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামীর নির্দেশে তিনি দালালের সঙ্গে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যেতে বের হয়েছিলেন। এখন বুঝতে পারছেন-ঘর থেকে এভাবে বের হওয়াটা ভুল হয়েছে।থানায় আটক রোহিঙ্গা নুর মোহাম্মদ (৩৪) বললেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার পর ভবঘুরে দিন কাটছে তাঁর। কোনো কাজ-কর্ম ছিল না। মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরির আশায় তিনি অন্যদের সঙ্গে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এখন হাজতে আটকা পড়ে খারাপ লাগছে।টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ১১ তরুণীসহ আটক ১৫ রোহিঙ্গাকে বুধবার কক্সবাজার আদালতে পাঠানো হবে। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ওসি বলেন, সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে মানবপাচারকারীরা এই ১৫ রোহিঙ্গাকে উখিয়া থেকে টেকনাফ নিয়ে আসে। মানবপাচারকারী দলের দুই সদস্য কুরবান আলী ও আবদুর রহমান পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। অন্যদের ধরার চেষ্টা চলছে।
নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ৪৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে যুক্ত করে চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যাকে অভিহিত করা হয়েছে জেন্ডার বাজেট নামে। বাজেটের এই বরাদ্দ যথাযথভাবে হচ্ছে কি না এবং তা নারীর ক্ষমতায়নে কী ভূমিকা রাখছে, সেটা নিরীক্ষণ পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে ‘জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেটের (২০১৯-২০) বাস্তবায়ন পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এই সুপারিশ করেন। মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানমের সভাপতিত্বে সভায় জেন্ডার বাজেট বিষয়ে সরকারকে বিভিন্ন সুপারিশ দেওয়া হয়।আয়েশা খানম বলেন, জেন্ডার বাজেটের পরবর্তী পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ এবং বাজেটের এই বরাদ্দ আদৌ নারীর জীবনে কী পরিবর্তন আনছে, তা পরিবীক্ষণ জরুরি। এই পরিবীক্ষণের জন্য তিনি জেন্ডার বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও নারী আন্দোলনের সমন্বয়ে একটি সেল চালুর পরামর্শ দেন।অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ প্রমুখ।অনুষ্ঠানে বক্তারা নারী-পুরুষের বৈষম্য নিরসনে জেন্ডার বিভাজিত তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহারের বিষয়ে জোর দেন। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, জাতিসংঘে সিডও সনদের আলোকে অগ্রাধিকারমূলক নির্দেশনা এবং এর জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দের দাবি জানান বক্তারা।কর্মজীবী নারীর সুবিধার্থে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রণোদনা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতেও সরকারকে তাগিদ দেন তাঁরা। এ ছাড়া সমতা অর্জনে বাজেট বিশ্লেষণের ওপর জোর দেন তাঁরা।
কানাডার টরন্টোয় হয়ে গেল শিল্প-সাহিত্য-বিজ্ঞান-দর্শনচর্চার প্ল্যাটফর্ম পাঠশালার ত্রয়োদশ আসর। নোবেলজয়ী ও সমকালীন ছোটগল্পের দিকপাল অ্যালিস মানরোর নির্বাচিত ছোটগল্প নিয়ে বসেছিল এবারের আসর। আলোচক ছিলেন মানরোর 'অ্যামান্ডসান' ও 'ডে অব দ্য বাটারফ্লাই' গল্পের অনুবাদক উম্মে কুলসুম রত্না।আসর সঞ্চালনা করেন ফারহানা আজিম শিউলী। গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় এগলিনটন স্কয়ারের টরন্টো পাবলিক লাইব্রেরিতে এ আসরের আয়োজন করা হয়।মূল আলোচনা পর্বে উম্মে কুলসুম রত্না অ্যালিস মানরোর ‘রানঅ্যাওয়ে’, ‘ডিয়ার লাইফ’ ও ‘সিলেক্টেড স্টোরিজ’ বই তিনটি থেকে একটি করে মোট তিনটি নির্বাচিত ছোটগল্প 'অ্যামান্ডস্যান’, ‘প্যাশন’ ও ‘দ্য বিয়ার কেইম ওভার দ্য মাউন্টেন’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।উম্মে কুলসুম রত্না বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিম ওন্টারিওর অ্যামান্ডসানের এক স্যানিটারিয়াম স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে ভিভিয়েনের আগমন, কিশোরী ম্যারি, সেখানকার ডাক্তার রেড্ডি ফক্স, ডাক্তারের সঙ্গে ভিভিয়েনের রোম্যান্টিক সম্পর্ক, বিয়েপূর্ব যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, বিয়ে করতে হান্টসভিলে যাওয়া, কিন্তু সম্পর্কটা পরিণতি পেতে পেতে অন্য মাত্রায় উত্তরণ—এই নিয়ে শাশ্বত এক প্রেমের গল্প অ্যামান্ডসান।আর অন্য রকম ভালোবাসার গল্প ‘প্যাশন’। গ্রেস নামের এক নারী, তার বর্তমান, বর্তমান থেকে অতীতের জীবনস্মৃতি খুঁড়ে আনা, ছাত্রজীবন থেকে প্যাশনের পিছে ছোটা, অটোয়ায় এক হোটেলে গ্রীষ্মকালে কাজ করতে গিয়ে কটেজে থাকতে আসা ট্রাভার্স পরিবারের সন্তান মৌরির সঙ্গে প্রেম, এই পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, পড়ুয়া মিসেস ট্রাভার্সের সঙ্গে অসম বন্ধুত্ব, প্রথাগত প্রেমের বাইরে মৌরির সৎভাই ডাক্তার নীলের সঙ্গে অদ্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, গ্রেস ও নীলের পলায়ন, নীলের আত্মহত্যা, গ্রেসের জীবনের নতুন বাঁক—এসব নিয়েই প্যাশনের গল্প।অন্যদিকে জটিল এক ভালোবাসার গল্প ‘দ্য বিয়ার কেইম ওভার দ্য মাউন্টেন’। ফিওনা ও গ্রান্টের পরিচয়-প্রণয়-বিয়ে, তার বহু বছর বাদে বয়স্কা ফিওনার আলঝেইমার রোগ, চিকিৎসার জন্য মেডোলেইকে যাওয়া, সেখানে অব্রে নামের আরেক রোগীর সঙ্গে ফিওনার জড়িয়ে পড়া, বিয়ের বাইরেও নারীসঙ্গে অভ্যস্ত গ্রান্টের ফিওনার জন্য অব্রের স্ত্রী ম্যারিয়েনের কাছে অব্রেকে ভিক্ষা চাইতে গিয়ে কৌশলগত কারণে ম্যারিয়েনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া, জীবনের নানান বাঁক আর চরিত্রগুলোর নানা রকম মানবিক-নিষিদ্ধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া—এসব নিয়েই দ্য বিয়ার কেইম ওভার দ্য মাউন্টেন গল্প।উম্মে কুলসুম রত্না মানরোর লেখার নানান দিক তিনটি গল্পের সঙ্গে যুক্ত করে, নিজের ব্যাখ্যাসহ দারুণভাবে গল্পগুলোর নির্যাস তুলে এনেছেন অত্যন্ত সীমিত সময়ের মধ্যেও।পাঠশালার আসরে মানরোর তিনটি বই ‘রানঅ্যাওয়ে’, ‘ডিয়ার লাইফ’ ও ‘কালেকটেড স্টোরিজ’ থেকে তিনটি গল্প নির্বাচন করা হয়। গিলার পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘রানঅ্যাওয়ে’ বইটির নামটি নিয়ে মানরো খুব মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন সিবিসি রেডিওতে। বইটির নাম এক শব্দের। কিন্তু এর ঠিক আগের বইটির নাম ছিল ‘হেইটশিপ ফ্রেন্ডশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারেজ’। অতিরিক্ত লম্বা নাম দেওয়ায় এর পরের বইতে তিনি ঠিক করেন, খুব ছোট, এক শব্দের নাম দেবেন বইয়ের, এমনকি এর প্রতিটি গল্পেরও। ‘রানঅ্যাওয়ে’ বইয়ে গল্প আছে মোট ৮টি। এর মধ্য থেকে নির্বাচন করা হয় ‘প্যাশন’ গল্পটি। ডিয়ার লাইফ মানরোর সবশেষ গ্রন্থ। এই বইয়ের গল্পগুলো একটু ছোট ছোট। এতে ‘ডিয়ার লাইফ’ শিরোনামে মানরোর আত্মজৈবনিক একটি গল্প আছে। বইটির ১৪টি গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে অ্যামান্ডসান গল্পটি। আসরের আলোচক রত্না বাংলায় অনুবাদ করেছেন, যা ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত ‘অ্যালিস মানরো: নির্বাচিত গল্প’ বইটিতে সন্নিবেশিত আছে। আর মার্গারেট অ্যাটউডের দীর্ঘ ভূমিকাসহ ‘কালেকটেড স্টোরিজ’ বইটির ১৭টি গল্প থেকে নির্বাচন করা হয় ‘দ্য বিয়ার কেইম ওভার দ্য মাউন্টেন’ গল্পটি। গল্পটি আসলে ‘হেইটশিপ ফ্রেন্ডশিপ’ বইতে আছে। পরে এই সংকলনটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মানরোর সবচেয়ে আলোচিত, জনপ্রিয় ও বিখ্যাত এই গল্পটির চলচ্চিত্রায়ণ হয় ২০০৬ সালে।নোবেলজয়ী, সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার, শর্ট স্টোরি লিজেন্ড, লিটারারি জায়েন্ট, লিভিং লিটারারি ট্রেজার, কানাডিয়ান সাহিত্যিক অ্যালিস মানরোকে নিয়ে, তাঁর সৃষ্টি নিয়ে আলোচনার জন্য, তাঁর বিশাল সাহিত্য সম্ভারের কিছুটা স্বাদ পেতে টরন্টোর সাহিত্য অনুরাগীরা একসঙ্গে হয়েছিলেন পাঠশালার এবারের আসরে। আলোচক উম্মে কুলসুম রত্নার আন্তরিক, সাবলীল ও বিশ্বাসযোগ্য উপস্থাপনায় উপস্থিত বিদ্যোৎসাহীরা অনায়াসে ভ্রমণ করেন মানরোর গল্পের চরিত্রগুলোতে।এর আগে আলোচনার শুরুতে সঞ্চালক ফারহানা আজিম শিউলী অ্যালিস মানরোর পরিচিতি ও তাঁর ছোটগল্পের বিশেষত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ছোটগল্প রচনার জন্য অ্যালিস মানরো নোবেল পুরস্কার পান। সাহিত্যের এই শাখা থেকে এর আগে খুব কম লেখকই নোবেল পেয়েছেন। উল্লেখ্য, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে ও উইলিয়াম ফকনার ছোটগল্পের জন্য বিখ্যাত হলেও নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন উপন্যাসের জন্য। কানাডার প্রথম ও নোবেলের ১১৮ বছরের ইতিহাসে মানরো ১৩তম নারী। মানরোকে সমকালীন ছোটগল্পের মাস্টার অভিহিত করেছে নোবেল কমিটি। বলা হয়ে থাকে, ছোটগল্প বিশ্বসাহিত্যে প্রশংসিত হলেও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি তেমন নেই। নোবেলপ্রাপ্তির পরপরই নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে মানরোর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা। এই প্রাপ্তিতে ছোটগল্পও সম্মানিত হয়েছে।নোবেল পুরস্কার নিতে মানরো সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর বড় মেয়ে শিলা পুরস্কার গ্রহণ করেন। নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে আগে থেকে রেকর্ড করা মানরোর আধঘণ্টার একটা সাক্ষাৎকার ওই অনুষ্ঠানে দেখানো হয়।মানরো নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগে আরও কিছু সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করেন। এর মধ্যে আমেরিকার দ্য ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ড, দ্য পেন অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন শর্ট ফিকশন ও কমনওয়েলথ রাইটার্স প্রাইজ বেস্ট বুক অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আর কানাডার সব প্রধান লিটারারি পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। গভর্নর জেনারেলস লিটারারি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তিন তিনবার। ১৯৬৮ সালে প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস’, ১৯৭৮ সালের ‘হু ডু ইউ থিংক ইউ আর’ এবং ১৯৮৬ সালের ‘দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ’ বইয়ের জন্য। কানাডার সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার স্কোশিয়া ব্যাংক গিলার পান দুবার। ১৯৯৮ ও ২০০০ সালে ‘দ্য লাভ অব এ গুড উইমেন’ ও ‘রানঅ্যাওয়ে’ গ্রন্থের জন্য। এই পুরস্কার ১৯৯৪ সাল থেকে কানাডিয়ান ঔপন্যাসিক ও গল্পকারদের দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে মানরো পান নোবেলের পর সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ‘ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল’ পুরস্কার-লাইফটাইম বডি অব ওয়ার্কের জন্য। আর ২০১৩ সালে পান নোবেল।বিশ্বখ্যাত রাশিয়ান সাহিত্যিক আন্তন চেকভ ও ফরাসি সাহিত্যে রিয়ালিজম ধারার জনক গুস্তাভ ফ্লোবেয়ারের সঙ্গে তুলনা করা হয় মানরোর কাজ। মানরোর লেখার ধরন সুপার রিয়েলিস্টিক ও তিনি আমেরিকান পেইন্টার এডওয়ার্ড হপারের দ্বারা অনুপ্রাণিত।মানরোর জন্ম ১৯৩১ সালের ১০ জুলাই। ওন্টারিওর উইংহ্যামে। কৃষক পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা ছিলেন ফক্স ফার্মার। আর মা স্কুল টিচার। স্কচ-আইরিশ নেইবারহুডে ও উইংহ্যামের প্রাকৃতিক নিসর্গে বেড়ে ওঠেন তিনি।ওন্টারিওর লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন ওন্টারিওতে দুই বছরের আর্টস স্কলারশিপ নিয়ে পড়েন মানরো। বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালে পরিচয় ও প্রণয় হয় ওন্টারিওর ওকভিলের উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জেমস মানরোর সঙ্গে। ১৯৫১ সালে জেমস মানরোকে বিয়ে করে চলে যান কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের ভ্যাংকুভারে। ১৯৬৩ সালে ভ্যাংকুভার থেকে চলে যান ভিক্টোরিয়ায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী মিলে গড়ে তোলেন বইয়ের দোকান ‘মানরো বুকস’। স্টোরটা এখনো দারুণ চলছে। তিন কন্যা সন্তানের জননী অ্যালিস মানরো জেমস মানরোর সঙ্গে ১৯৭২ সালে ডিভোর্সের পর ফিরে আসেন ওন্টারিওর লন্ডনে। ১৯৭৬ সালে জেরাল্ড ফ্রেমলিনকে বিয়ে করে ওন্টারিওর ক্লিন্টনে স্থায়ী হন।মানরোর ছোটগল্প সংকলন ১৩টি, একটি উপন্যাস আর সাতটি সিলেক্টেড স্টোরিজ বা কম্পাইলেশন। ছোটগল্প সংকলনগুলোর মধ্যে রয়েছে: ড্যান্স অব দ্য হ্যাপি শেডস (১৯৬৮), সামথিং আই হ্যাভ বিন মিনিং টু টেল ইউ (১৯৭৪), হু ডু ইউ থিংক ইউ আর (১৯৭৮), দ্য মুনস অব জুপিটার (১৯৮২), দ্য প্রোগ্রেস অব লাভ (১৯৮৬), ফ্রেন্ড অব মাই ইয়ুথ (১৯৯০), ওপেন সিক্রেটস (১৯৯৪), দ্য লাভ অব এ গুড উইমেন (১৯৯৪), হেইটশিপ ফ্রেন্ডশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারেজ (২০০১), রানঅ্যাওয়ে (২০০৪), দ্য ভিউ ফ্রম ক্যাসল রক (২০০৬), টু মাচ হ্যাপিনেস (২০০৯) ও ডিয়ার লাইফ (২০১২)। ১৯৭১ সালে প্রকাশিত ‘লাইভস অব গার্লস অ্যান্ড উইমেন’কে উপন্যাস বলা হলেও এটি আসলে বেশ কয়েকটি আয়-সম্পর্কিত গল্পের সমন্বয় এবং এর প্রতিটি সেগমেন্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ।‘দ্য নিউইয়র্কার’, ‘দ্য আটলান্টিক মান্থলি’ ও ‘দ্য প্যারিস রিভিউ’ ইত্যাদি বিখ্যাত পত্রিকায় মানরোর গল্প নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে এবং তাঁর গল্প বিশ্বের ১৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।মানরোর গল্পের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে কয়েকটি। মার্থা, রুথ অ্যান্ড এডি (১৯৮৮), এজ অব ম্যাডনেস (২০০২), অ্যাওয়ে ফ্রম হার (২০০৬), হেইটশিপ অ্যান্ড লাভশিপ (২০১৩) ও জুলিয়েটা (২০১৬)। ২০১৫ সালে মানরোর সম্মানে কানাডায় ডাকটিকিট বের করা হয়।মানরোর লেখালেখির শুরু কিশোর বয়স থেকেই। পড়তেন প্রচুর ও স্কুলে যাওয়া-আসার পথের লম্বা সময়টুকু তিনি গল্পের প্লট নিয়ে ভাবতেন।ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় থাকাকালে ছোট তিন সন্তান নিয়ে সংসার সামলে লেখালেখি করাটা খুব সুখকর ছিল না মানরোর জন্য। কিন্তু তিনি সচেতনভাবে লেখক হতে চেয়েছেন। চেয়েছেন বাইরের জগতে গৃহিণী ছাড়া অন্য পরিচয়ে পরিচিত হতে। টিভি চ্যানেলে ২০১৫ সালের এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, একসময় লিখতে না পারায় তিনি বিষণ্নতা রোগে আক্রান্ত হন। তবে সবকিছু পিছে ফেলে অদম্য চেষ্টাতেই তিনি আজকের মানরো হয়ে উঠেছেন।ফারহানা আজিম শিউলী বলেন, ‘মানরোর লেখায় আমরা পাই দক্ষিণ-পশ্চিম ওন্টারিওর ফিকশনাল ল্যান্ডস্কেপ, যেটিকে বলা হয় কানাডিয়ান এক্সপেরিয়েন্স, সাউদার্ন ওন্টারিও এক্সপেরিয়েন্স। অধিকাংশ গল্পেরই পটভূমি দক্ষিণ-পশ্চিম ওন্টারিওর হিউরন কাউন্টি, যাকে বলা হয় মানরোর কাউন্টি। অর্থাৎ বলা চলে, তাঁর লেখায় একধরনের রিজওনাল ফোকাস আছে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “আই অ্যাম নট ইয়েট ডান অর ফিনিশড উইথ ইট। দেয়ার ইজ স্টিল টু ডিসকভার।” ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ২০ বছর বাদ দিলে মানরোর পুরো জীবনই কেটেছে এই অঞ্চলে।’ উল্লেখ্য, রিজওনাল লেখকের তকমা মানরোর খুব অপছন্দ।মানরোর লেখায় আমরা সাধারণ জায়গার সাধারণ মানুষের গল্প পাই। তাঁর ‘ফ্রেন্ড অব মাই ইয়ুথ’ বইটি বের হওয়ার পরপর ১৯৯০ সালে সিবিসি টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক রেক্স মারফি এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে মানরো বলেন, ‘সাধারণ টার্মটাই প্রবলেমেটিক। সবাই-ই এবং সবকিছুই কোনো না কোনোভাবে অসাধারণ।’ নোবেল কমিটির করা ভিডিওতে ছোট শহরের বিশেষত্ব জানতে চাইলে মানরো বলেন, ‘এনি লাইফ অর সারাউন্ডিংস ক্যান বি ইন্টারেস্টিং অ্যান্ড স্পেশাল অ্যান্ড আই ফাইন্ড ট্রিমেনডাস ইন্টারেস্ট ইন ইট।’ফারহানা আজিম শিউলী বলেন, মানরোর লেখা সহজ ও সরল। এই সারল্যের ভেতর দিয়েই তিনি মানব জীবনের ও মানুষের আচরণের শাশ্বত জটিলতা তুলে আনেন দারুণ মুনশিয়ানায়। নোবেল ঘোষণার সময় সুইডিশ একাডেমির পারমানেন্ট সেক্রেটারি পিটার এংলান্ড বলেন, দিস ফ্ল্যাট, কানাডিয়ান, অ্যাগ্রিকালচারাল ল্যান্ডস্কেপ, উইথ ইটস ব্রড রিভারস অ্যান্ড সিমিংলি ব্ল্যান্ড, স্মল টাউনস ইজ হোয়্যার মোস্ট অব হার শর্ট স্টোরিজ আনফোল্ড। বাট দ্য সেরেনিটি অ্যান্ড সিম্পলিসিটি আর ডিসেপটিভ ইন এভরি ওয়ে।মানরোর লেখা একেবারেই বাহুল্যবর্জিত। লেখায় বাহুল্য বা অলংকার বর্জন প্রসঙ্গে মানরো ১৯৯০ সালের সিবিসি টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে বলেন, নিজ লেখায় ভাষার বিন্দুমাত্র মারপ্যাঁচ পেলেই তিনি তা কেটে বাদ দিয়ে দেন, যাতে তা গল্পকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না করে।মানরোর গল্পের নারী চরিত্রগুলো শক্তিশালী, ঋজু, অন্তর্জ্ঞানী, প্যাশনেট। অনেকটা মানরোরই প্রতিচ্ছবি যেন। ২০০৬ সালে প্রকাশিত ‘সিলেক্টেড স্টোরিজ’-এর ভূমিকায় বিশ্বখ্যাত কানাডিয়ান সাহিত্যিক মার্গারেট অ্যাটউড লিখেছেন, ‘মানরো উইমেন আর নট নাম্ব টু দেয়ার হার্ট, রাদার দে আর ট্রুথফুল টু দেয়ার হার্ট।’ নোবেল কমিটির ভিডিওতে মানরো জি এইচ লরেন্স এমনকি টলস্টয়ের মতো তাঁর অতিপ্রিয় লেখকদের নারী চরিত্র নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা করেন, সেই সময়কার প্রেক্ষিত বিবেচনায় নিয়েও।স্মৃতি একটা বড় উপকরণ মানরোর লেখায়। তিনি পাঠকদের স্মৃতি নদীতে ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সামনে-পেছনে ভ্রমণ করান।ফারহানা আজিম শিউলী বলেন, মানরোর গল্পের আরেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যৌনতা। ২০০৪ সালে প্রকাশিত গ্রন্থ রানঅ্যাওয়ে গিলারের জন্য শর্ট লিস্টেড হলে, সিবিসি রেডিও থেকে মানরোর একটা লম্বা সাক্ষাৎকার ধারণ করা হয় তাঁরই প্রিয় গোদেরিচ শহরের কফি শপে বসে। জিজ্ঞেস করা হয়, ২০০১ সালে প্রকাশিত ‘হেইটশিপ ফ্রেন্ডশিপ কোর্টশিপ লাভশিপ ম্যারেজ’ বইয়ের নয়টার মধ্যে সাতটা গল্পেই ইনফাইডালিটি-বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক, কেন? তিনি বলেন, যৌনতার ব্যাপারটা তিনি প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে লেখেন ও বিশ্বস্ত থাকতে চেষ্টা করেন। মানুষ কীভাবে এর মধ্য দিয়ে যায়, কী চিন্তা করে, কী অনুভব করে ইত্যাদি তিনি তুলে আনতে চান। তবে, এই বিবাহপূর্ব যৌনতা ও বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক এতটাই স্বাভাবিকভাবে গল্পের শরীরে মিশে থাকে যে পাঠক রীতিমতো হোঁচট খেতে পারেন।মানরোর গল্পে আমরা প্রথাগত প্রেম পাই না। ন্যায়বোধ-নৈতিকতাও ভিন্ন মাত্রায় উপস্থিত তাঁর লেখায়। রোমাঞ্চ, ঝুঁকি, গোপনীয়তা, জটিলতা, রহস্যময়তা, শূন্যতা, বিপন্নতা, এক জীবনের ভেতর গুপ্ত অন্য জীবন, একই মানুষের অনেক সত্তা, ইনোসেন্ট বনাম অপরাধী জীবন, অপরাধবোধ—এসব অপূর্ব দ্যোতনায় উঠে আসে মানরোর গল্পের পরতে পরতে।মানরোর গল্পের আরেকটি দিক, ফ্লাইট বা পলায়ন। গল্পের চরিত্রগুলো বিভিন্ন সম্পর্ক ও যাপিত জীবন থেকে পালায়। ২০০৪ সালে সিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে মানরো বলেন, তারা পালায় নিশ্চিত থেকে অনিশ্চিতের পানে। এই পলায়ন সব সময় শুভ ফল বয়ে আনে না। অনেক খেদ থাকে, ভুল থাকে, আক্ষেপ থাকে। তারপরও চরিত্রগুলো পলায়নের ঝুঁকি নেয়। বিশেষ করে, তাঁর প্রজন্মের নারীদের অনেকের মধ্যে এটি দেখা যায়। তারা একসময় আবিষ্কার করে, মধ্যবয়স উপস্থিত, রুটিনমাফিক জীবন, বাচ্চাকাচ্চা পালন, কোনো উত্তেজনা নেই-তরঙ্গ নেই। তাই তাদের জীবনে আগে আসে মধ্যবয়স, পরে যৌবন-তারুণ্য, আর সেই জীবনের স্বাদ নিতে তারা রোমাঞ্চে জড়িয়ে যায়, ঝুঁকি নেয়।মানরোর গল্পে আমরা প্রায়ই বিয়োগান্ত, করুণ, বিষাদময় পরিসমাপ্তি দেখতে পাই। নোবেল কমিটির সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কিশোর বয়সে শিশুসাহিত্যের জন্য জগদ্বিখ্যাত ড্যানিশ সাহিত্যিক হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের ‘লিটল মারমেইড’ পড়ে, মারমেইডের পরিণতিতে ভীষণ কষ্ট পান তিনি। রাজপুত্রের জন্য প্রাণপাত করা মারমেইডের শেষ পর্যন্ত পানিতে করুণ মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে না পেরে তিনি নিজেই মারমেইড ও রাজপুত্রের বিয়ে দিয়ে, অতঃপর তাহারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল ধরনের সুখী পরিসমাপ্তি টানেন। কিন্তু পরে একসময় পড়েন এমিলি ব্রন্টের ওয়েদারিং হাইটস-এর মতো ক্ল্যাসিক। এরপর তিনি রিভার্স সিদ্ধান্তে আসেন, বিষাদময় পরিণতিও দারুণ হতে পারে।২০০৪ সালে সিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘রানঅ্যাওয়ে’ বইটির অধিকাংশ গল্পের পরিণতি মর্মভেদী যন্ত্রণার-ভায়োলেন্স, মৃত্যু, আত্মহত্যা, প্রিয়জন হারানো। তবে কি তাঁর গল্পগুলো তমসাচ্ছন্ন? তিনি বলেন, মানুষের জীবনে ট্র্যাজেডি খুব স্বাভাবিক বিষয়। বলেন, দিস আর নট স্যাড স্টোরিজ বাট সাম স্যাডনেস ইন ইট। ইট ডাজন্ট মেইক মাই রিডারস ডিপ্রেসড।মানরো তাঁর লেখায় ব্যক্তির জীবনের ঘটনাগুলো না বরং তুলে আনেন ব্যক্তিকে৷ তিনি গল্পটাই বলতে চান। আর গল্প বলতে গিয়ে চলে আসে ব্যক্তির জীবনের নানা ঘটনা-ভালোবাসা, যৌনতা, প্রতারণা, প্যারেন্টহুড, মা-মেয়ের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক, মৃত্যু, বার্ধক্য, যৌবনপ্রাপ্তি ইত্যাদি।ফারহানা আজিম শিউলী বলেন, মানরোর গল্পের শেষে আমরা নাটকীয় মোড় পাই। নাটকীয় ও আকস্মিক মোড় কিন্তু খুব সাবলীল। মানরোর ভাষায় যা চাপিয়ে দেওয়া না কিংবা ওই অর্থে পূর্ব-পরিকল্পিতও না। তিনি শুধু গল্পটা বলার পরিকল্পনা নিয়ে লেখা শুরু করেন। বাকিটুকু গল্পের প্রয়োজনেই আসে। আর নাটকীয় মোড় সেভাবে উপন্যাসে আনা সম্ভব না বলে লেখার ফর্ম হিসেবে ছোটগল্পেই তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। ছোটগল্পকার হয়ে ওঠা অবশ্য ছিল ঘটনাচক্রে।মানরোর গল্পগুলো কি আত্মজৈবনিক? ১৯৭৩ সালে অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত কানাডিয়ান লেখক ও কালচারাল অ্যাকটিভিস্ট গ্রায়েম গিবসন ১১ জন কানাডিয়ান সাহিত্যিকের সাক্ষাৎকার লিখিত প্রকাশ করেন। সেখানে মানরো বলেন, গল্পগুলো আত্মজৈবনিক না, বরং কিছুটা ব্যক্তিগত বলা চলে। তাঁর জীবনের ইভেন্টগুলো—ডিপ্রেশন, বিশ্বযুদ্ধে কানাডার অংশগ্রহণ, ফার্ম জীবনে বাবার পশু হত্যাসহ নানারকম দ্বন্দ্ব, পারকিনসনস-আক্রান্ত মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, স্কুলজীবন, প্রাকৃতিক নিসর্গ, নিজ সন্তানের মৃত্যু, ছোট শহরের মানুষের জীবনযাত্রা, মেয়েদের গার্হস্থ্য জীবনের বাইরে কিছু একটা হয়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা, এসব ঘুরে ফিরে এসেছে তাঁর গল্পগুলোতে।আলোচনার পর এক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে আলোচক রত্নার সঙ্গে অংশ নেন আসরে আসা সুধীজনেরা।
ইভিএমে যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা বগুড়া নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলনকক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।নির্বাচনে জয়লাভ করায় বিএনপিকে অভিনন্দন জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইভিএমে যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে অতীতের সব নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আশা করছি বিএনপি আর ইভিএমের বিরুদ্ধে কথা বলবে না।’বগুড়া-৬ (সদর) আসনে নির্বাচন সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মো. সিরাজ জয়লাভ করেছেন। ইভিএমে ভোট শেষ হওয়ার সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহাবুব আলম শাহ ফলাফল ঘোষণা করেন।ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সম্প্রচার নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সে দেশে বিটিভি দেখার সকল আয়োজন শেষ হয়েছে। আজ একটি টেকনিক্যাল কমিটি ভারতে যাচ্ছে। কবে থেকে ভারতে বিটিভির আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রচার শুরু করব, আমরা জুলাই মাসে দিনক্ষণ ঠিক করব।’বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচারের বিষয়ে করা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে ২০০৬ সালে একটি আইন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই আইন বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো চ্যানেল বন্ধ করা আমাদের লক্ষ্য নয়। আইন অনুযায়ী যাতে চ্যানেলগুলো চালানো হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলছেন রাজধানীর রমনা পার্কের রূপ। পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে তাঁরা তিন দিন ধরে রমনা পার্কের ছবি আঁকছেন। স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা নানা রং দিয়ে তাঁদের ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলছেন পার্কের ল্যান্ডস্কেপ। তবে ক্যানভাসে সবুজ রং বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে আছেন শিক্ষকেরাও। ছবিগুলো মঙ্গলবারের।
হোলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার মামলায় সাক্ষ্য দিতে আসা এক পুলিশ কর্মকর্তা আদালতের এজলাসেই বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন আসামিপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে। আইনজীবীর দিকে আঙুল উঁচিয়ে পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আ. আহাদ বলেন, তিনি কে, সে সম্পর্কে তিনি (আইনজীবী) জানেন কি না।আহাদের এ কথায় আদালতে বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।আজ মঙ্গলবার এই বাগ্‌বিতণ্ডার সূত্রপাত হয় আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ যখন মো. আ. আহাদকে জেরা করতে শুরু করেন। এর আগে সাক্ষী বলেন, ২০১৬ সালে ১ জুলাই তিনি বেতারবার্তায় হোলি বেকারিতে হামলার খবর পান। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে তাঁর সময় লাগে ৫ থেকে ৭ মিনিট। তাঁর সঙ্গে ছিলেন গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মোস্তাক হোসেন। তাঁর দায়িত্ব ছিল এলাকাটি ঘেরাও দিয়ে রাখা, যেন সন্ত্রাসীরা পালিয়ে না যায়। উপকমিশনার মোস্তাক হোসেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। কিছুক্ষণ পর ডিএমপি কমিশনার হোলি বেকারির মূল ফটকের ১০ থেকে ১৫ গজ দূরে দাঁড়িয়ে পুলিশ সদস্যদের ব্রিফ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ পুলিশকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড ছোড়ে। তিনি সহ ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হন। তাঁর দুই পায়ে ১০ থেকে ১৫টি স্প্লিন্টার ঢোকে। অঝোরে পা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। তাঁর এক সহকর্মী তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নেন।জেরার শুরুতে ফারুক আহম্মেদ জানতে চান, আ. আহাদ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে চেনেন কি না। আরও জানতে চান, তাঁরা অধস্তন কর্মকর্তা ও অন্যদের আইন সম্পর্কে অবহিত করেন কি না? জবাবে মো আ. আহাদ বলেন, তিনি আইও কে চেনেন এবং তাঁদের আইন শেখানো হয়। ফারুক আহম্মেদ বলেন, এজলাসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বসে আছেন। তিনি সাক্ষীদের শিখিয়ে-পড়িয়ে দেন। এটা ঠিক না। এর একটু পরই সরকারি কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কর্মকর্তাকে বাইরে পাঠিয়ে দেন। ফারুক আহম্মেদ জানতে চান, আইওকে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি নিজে হাতে লিখেছেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, তিনি স্বাক্ষর করেছেন। সাক্ষ্যটি টাইপ করা। পিপি বলে ওঠেন, টাইপ করে দিলে অসুবিধা কোথায়? ফারুক আহম্মেদ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২১ এর ২ ধারার উল্লেখ করে বলেন,এটি একটি বিশেষ আইন। এই আইনে নিজে হাতে সাক্ষ্য লেখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফারুক আহম্মেদ বলেন, লিখিত বক্তব্যে তিনি মোস্তাক হোসেনের নাম একবারও উল্লেখ করেননি। ফারুক আহম্মেদ নথিপত্র নিয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে গেলে আ. আহাদ চিৎকার করে ওঠেন। তিনি বলেন, তাঁকে কেন সব কথা লিখতে হবে? গুলশানের উপকমিশনার মানেই মোস্তাক হোসেন। তিনি একটি ‘ইনস্টিটিউশন’। তিনি নিজে (আহাদ) একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও আঘাতপ্রাপ্ত। তিনি তাঁকে তাঁর জায়গায় ফিরে যেতে বলেন। চিকিৎসা-সম্পর্কিত কাগজপত্র দিয়েছেন কি না? তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার আগে থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন, নাকি পরে যান? কারণ তাঁর সাক্ষ্যে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা বলা নেই। এতে রেগে গিয়ে মো. আ. আহাদ আঙুল উঁচিয়ে বলেন, ‘আপনি এই প্রশ্ন কেন করেন? মশকরা করেন? ক্রিটিসাইজ করেন?’ জবাবে ফারুক আহম্মেদ বলেন, তাঁর ব্যথায় তিনিও ব্যথিত। নথিপত্রে থাইল্যান্ডের উল্লেখ নেই বলে তিনি প্রশ্ন করেছেন।এ পর্যায়ে বিচারক মজিবুর রহমান পুলিশ কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, ‘মাইন্ড ইট। এটা কোর্ট। অনেক রকম প্রশ্ন আসতে পারে। আপনি টেম্পার (মেজাজ) হারাবেন না।’ বিচারক ফারুক আহম্মেদকে বলেন, ‘আপনি একজন লার্নেড (বিজ্ঞ) আইনজীবী। আপনি লে ম্যানদের মতো প্রশ্ন কেন করেন?’ বাগ্‌বিতণ্ডার সময় এজলাসের ভেতর আইনজীবীরা হতভম্ব হয়ে পড়েন। মো. আ. আহাদ ছাড়াও আজ আরও চারজন সাক্ষ্য দেন। পরবর্তী শুনানির তারিখ ২ জুলাই।শরিফুলের পক্ষে জামিন আবেদনআজ আসামি শরিফুল ইসলাম খালেদের পক্ষে জামিন প্রার্থনা করেন আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ। তিনি আদালতকে বলেন, ৬০ জন এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁদের কেউ শরিফুল ইসলাম খালেদের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেননি। শরিফুল নিজেও দায় স্বীকার করে বক্তব্য দেননি। হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার সময় শরিফুলকে গোয়েন্দা বিভাগ আটকে রেখেছিল। পরে বের করে এনে গ্রেপ্তার দেখায়। পিপি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, শরিফুলের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে অন্য আসামিরা জবানবন্দিতে বলেছেন। পরে বিচারক জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
তিন দিনের স্বর্ণমেলায় চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা ৯৪ হাজার ৬০ ভরি সোনা কর দিয়ে বৈধ বা সাদা করেছেন। এসব স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ৪৭১ কোটি টাকা। এসব স্বর্ণ বৈধ করার জন্য ব্যবসায়ীরা কর দিয়েছেন ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ৭৯ হাজার ৮৭৩ ভরি রুপা এবং ২৫৭ দশমিক ৫ ক্যারেট হীরা বৈধ করেছেন ব্যবসায়ীরা।নগরের আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের পিএইচপি পেলিকান মেহজাবিন ভবনে আজ মঙ্গলবার এ স্বর্ণমেলা শেষ হয়। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে ঘোষণার বাইরে যে স্বর্ণ মজুত আছে, তা ঘোষণার জন্য এই মেলার আয়োজন করে আয়কর বিভাগ। মেলায় নিবন্ধিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের অঘোষিত ও মজুত স্বর্ণ, স্বর্ণালংকার, কাট ও পলিশড ডায়মন্ড এবং রুপার ঘোষণার বিপরীতে কর পরিশোধ করে তা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এ জন্য ভরিপ্রতি স্বর্ণে ১ হাজার টাকা, রৌপ্যের জন্য ৫০ টাকা এবং প্রতি ক্যারেট কাট ও পলিশড ডায়মন্ডের জন্য ৬ হাজার টাকা কর পরিশোধ করতে হবে।চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-৩–এর কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, সব মিলিয়ে ৫১০ জন ব্যবসায়ী ও ৫টি ফার্ম ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা কর দিয়ে স্বর্ণ, রৌপ্য ও হীরা সাদা করেছেন।মঙ্গলবার মেলা ঘুরে দেখা যায়, স্বর্ণ সাদা করতে সকাল থেকেই ভিড় ছিল মেলা চত্বরে। নগর ও উপজেলার ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ সাদা করতে ভিড় করেন মেলায়।জুয়েলারি সমিতির চট্টগ্রামের সভাপতি মৃণাল কান্তি ধর প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সদস্যরাই কর দিয়ে অঘোষিত স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এ কারণে যাঁরা সমিতির সদস্য নন, তারাও এখন সমিতির সদস্য হওয়ার জন্য তৎপর হয়েছেন। মঙ্গলবার এক দিনে প্রায় ৫০ জন ব্যবসায়ীকে নতুন সদস্য পদ দেওয়া হয়।মঙ্গলবার দুপুরে হালিশহর থেকে পিন্টু ধর নামে এক ব্যবসায়ী মজুত স্বর্ণের কর দেওয়ার জন্য মেলায় আসেন। তিনি প্রথম আলোকে জানান, কর দিয়ে স্বর্ণের মজুত বৈধ করার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না তিনি। তিন দিনের মেলায় ছোট ব্যবসায়ীরাই স্বর্ণ সাদা করেছেন। বড় ব্যবসায়ীদের অনেকেই এখনো নিজেদের মজুত স্বর্ণ সাদা করেননি। তাঁরা মেলার বাইরে স্বর্ণ সাদা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সমিতির নেতারা জানান।মেলায় কথা হয় চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-৪–এর কমিশনার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকীর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মেলার বাইরে কর অঞ্চলগুলোতে ৩০ জুন পর্যন্ত অঘোষিত ও মজুতকৃত স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ থাকছে।
১৪ শতাংশ পোশাকশ্রমিককে তাঁদের বাড়িওয়ালা নির্যাতন ও হয়রানি করেন। বাসা থেকে কর্মস্থলে আসা–যাওয়ার পথে ৭৭ শতাংশ পোশাকশ্রমিক গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হন। আর কর্মস্থলে ৫১ শতাংশ পোশাকশ্রমিক শারীরিকভাবে এবং ৪৩ শতাংশ পোশাকশ্রমিক যৌন হয়রানির শিকার হন।‘কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি নির্যাতন ও হয়রানি: প্রেক্ষিত বাংলাদেশের পোশাকশিল্প’ শীর্ষক এক গবেষণাতে এই চিত্র উঠে এসেছে। মানবাধিকার সংস্থা নাগরিক উদ্যোগ এবং বাংলাদেশ শ্রম অধিকার ফোরাম যৌথভাবে এই গবেষণাটি প্রকাশ করেছে।আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তোপখানা সড়কের সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে গবেষণাটির ফলাফল তুলে ধরা হয়। আবাসস্থলে হয়রানির নির্যাতন প্রসঙ্গে গবেষণাতে এসেছে, বাড়িওয়ালারা যৌন সম্পর্ক স্থাপন, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা, রুমের ভাড়ার টাকা না নেওয়া, বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে পোশাকশ্রমিকদের হয়রানি করে থাকেন। ৩৩ শতাংশ পোশাকশ্রমিক জানিয়েছেন, তাঁরা যদি মালিকের কথা না শোনেন, তাহলে তাঁদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। আর বাড়িওয়ালার প্রস্তাবে রাজি হলে, ঘরভাড়া মওকুফ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।গবেষণাটির জন্য আটটি দলগত আলোচনা এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ১৭৩ জন নারী–পুরুষের কাছ থেকে তথ্য–উপাত্ত নেওয়া হয়। গবেষণায় ৯০ শতাংশ নারী তাঁদের কর্মক্ষেত্রে মানসিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেন। ৩৯ শতাংশ নারী পোশাকশ্রমিক বলেছেন, তাঁরা কর্মস্থলে নিরাপদ বোধ করেন না। ৪৩ শতাংশ পোশাকশ্রমিক জানিয়েছেন, তাঁদের কারখানায় নির্যাতন বা হয়রানি মোকাবিলায় ব্যবস্থা থাকলেও তার কার্যকরতা সন্তোষজনক নয়।জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে অন্তত ৪৩ শতাংশ পোশাকশ্রমিক জানান, গণপরিবহনে যাতায়াতে তাঁদের প্রতিদিনই শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে ইচ্ছাকৃত স্পর্শের শিকার হতে হয়। বাসের কন্ডাক্টর, হেলপার এবং পুরুষ যাত্রীরা এই কাজ বেশি করে থাকেন। বাসের হেলপাররা সব সময় বাসে ওঠা–নামার সময় তাঁদের গায়ে হাত দেন। এর প্রতিবাদ করলে খারাপ কথা বলেন।গত বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসে ঢাকার মোহাম্মদপুর, মিরপুর, আশুলিয়া, টঙ্গী, তুরাগ, ধামরাই, উত্তরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ এবং নারায়ণগঞ্জ এলাকার পোশাকশ্রমিকদের কাছ থেকে তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়।ফলাফল তুলে ধরার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন। সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শ্রম অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক আবুল হোসাইন বলেন, বিড়ালের গলায় ঘণ্টা পরাবে কে? নির্যাতন সব সময় দুর্বলের ওপরই হয়। এটাই নিয়ম।সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গবেষণাপত্রটি অত্যন্ত শ্রমবান্ধব বলে মনে হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পোশাকশিল্প খাতে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের দুঃসময়ের একটি চিত্র এখানে তুলে ধরা হয়েছে। যাঁরা শ্রমিক তাঁরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আর তাঁরাই সব সমস্যায় আছেন। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার।গবেষণাটি প্রসঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এটা খুবই সাধারণ চিত্র। এর মধ্য দিয়ে এই সমাজের বাস্তব চেহারাটি উঠে এসেছে। কারখানায় ঢুকতে গার্ড থেকে শুরু করে ভেতরে ম্যানেজার পর্যন্ত নারী পোশাকশ্রমিকদের নানাভাবে হয়রানি করে থাকে।’অনুষ্ঠানে গবেষণাটির ফলাফল তুলে ধরেন নাগরিক উদ্যোগের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসির সমন্বয়ক মঞ্জুরুল ইসলাম। আরও বক্তব্য দেন নারীপক্ষের রওশন আরা, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নাজমা আকতার, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কস ফেডারেশনের লাভলি ইয়াসমিন, গ্রীন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কস ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা বেগম প্রমুখ।
ব্রাজিলে চলছে কোপা আমেরিকা ফুটবল উৎসব। ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘বি’ থেকে রানার্সআপ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছে আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের মাঠগুলো ভালো নয় বলে অভিযোগ তুলেছেন মেসি।এ জন্যই কি কোপা আমেরিকায় নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারছেন না লিওনেল মেসি!দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই চলছে ব্রাজিলে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ শেষ হয়ে গেলেও নিজের ছায়া হয়ে আছেন মেসি। বল নিয়ে মাঝে মাঝে দুই একটা সলো মুভ ছাড়া মেসিকে চিনতে হয় আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি দেখে। আর মেসির দিন ভালো না যাওয়ায় আর্জেন্টিনার খেলার মধ্যেও নেই প্রাণ। ফলে ব্রাজিলে মেসির সঙ্গে ধুঁকছে আর্জেন্টিনা। ব্যর্থতার পেছনে অনেক কারণই থাকতে পারে। তবে একটা কারণ পাওয়া যাচ্ছে, ব্রাজিলের মাঠ ভালো নয় বলে অভিযোগ তুলেছেন মেসি।শেষ ম্যাচে কাতারের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় নিয়ে কোনো রকমে দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছে আর্জেন্টিনা। কাতারের বিপক্ষে জয় পেতেও জ্বর দিয়ে ঘাম ছেড়েছে মেসিদের। খাঁদের কিনারায় দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট পাওয়া গেলেও পোর্তো এলেগ্রির স্টেডিয়ামের মাঠ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেসি। ম্যাচ শেষে কোন রাখ ঢাক না রেখেই মাঠের সমালোচনা করেছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক, ‘আমরা যতগুলো মাঠে খেলেছি, সবগুলো মাঠের অবস্থাই খারাপ ছিল। বল অতিরিক্ত লাফাচ্ছিল এবং বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে অতিরিক্ত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন।’মেসির জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো ‘নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা’ বলে প্রশ্ন তুলা যেত। কিন্তু পাঁচবারের ফিফা ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মেসির যোগ্যতা নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন নেই। কোপায় যদিও মেসি নিজের সেরা ফর্মে নেই। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ৩ ম্যাচ খেলে মেসির পা থেকে গোল এসেছে মাত্র একটি। তাও প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্রয়ের ম্যাচের গোলটি করেছেন পেনাল্টি থেকে মেসি।বাজে মাঠের অভিযোগ শুধু মেসিই তোলেননি, আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনিও একই কথা বলেছেন, ‘মানুষ মনে করতে পারেন খারাপ মাঠের অভিযোগ তোলাটা একটা অজুহাত। কিন্তু এ রকম মাঠে খেলা সম্ভব নয়।’ কাতারের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনা দুইটি ম্যাচ খেলেছিল বেলো হরিজন্তে ও সালভাদরে। সালভাদরে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে কোপা মিশন শুরু করে মেসিরা। দ্বিতীয় ম্যাচে বেলো হরিজন্তে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৮১০ কোটি ৪২ লাখ টাকার খসড়া বাজেট প্রণয়ন করেছে। তবে এবারের খসড়া বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ কমছে।গবেষণা ও বিশেষ গবেষণা মিলিয়ে এই খাতে বিশ্ববিদ্যালয় এবার বরাদ্দ করেছে ১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ২.১ শতাংশ। বাজেটের আকার বিগত বছরের চেয়ে ৯.৩৫ শতাংশ বাড়লেও গবেষণায় বরাদ্দ কমছে ২.৮৪ শতাংশ।বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে হবে কাল বুধবার। ওই অধিবেশনে এই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হবে। বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অধিবেশনে বাজেট উত্থাপন করবেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন।গত অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের আকার ছিল ৭৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এতে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৪.৯৪ শতাংশ (৩৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা)। ফলে প্রকৃত বরাদ্দ ও শতাংশ- দুদিক থেকেই এবার গবেষণায় বরাদ্দ কমছে।গবেষণা খাতের বরাদ্দকে অপ্রতুল বলছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাজেটের মোট কলেবর বাড়লেও গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ছে না। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে গবেষণা ও ছাত্রস্বার্থসংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।বাজেটে আয়ের খাতবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা গেছে, ৮১০ কোটি ৪২ লাখ টাকার এ বাজেট বাস্তবায়নে প্রতি বছরের মতোই আয়ের উৎস হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ও নিজস্ব আয়।বাজেটের খসড়া অনুযায়ী এটি বাস্তবায়নে ইউজিসি ৬৯৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা অনুদান দেবে আর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি, ভর্তি ফরম বিক্রি, বেতন-ভাতা থেকে কর্তন, সম্পত্তিসহ নিজস্ব খাতগুলো থেকে ৭০ কোটি টাকা আয় হবে। এই দুই খাত থেকে ৭৬৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আয় হলেও বাজেটে ৪৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ঘাটতি থাকবে।বাজেট ঘাটতি মেটাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাড়াতে হচ্ছে নিজস্ব আয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি টাকা। আর এ বছর ৭০ কোটি টাকা নিজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে প্রশাসন।
এক সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির দুই মঞ্চে দুই দেশের নাটক দেখল ঢাকার দর্শক। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়েছে আরণ্যক নাট্যদলের দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘রাঢ়াঙ’। অন্যদিকে নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়েছে ভিয়েতনামের লে নখ থিয়েটারের নাটক ‘কিম তু’। দুটি নাটকে দর্শকের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল।সব মিলে বলতে হয়, ঢাকার নাট্যাঙ্গন এখন দারুণ সরগরম। প্রতিদিন একসঙ্গে একাধিক নাটক দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শক। তারা পাচ্ছেন মানসম্পন্ন নাটক বেছে নেওয়ার সুযোগ। বিদেশের পাশাপাশি পুরোনো নাটক ফিরে আসছে মঞ্চে।সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের ষষ্ঠ দিনের সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় ‘কিম তু’। নাটকটি লিখেছেন প্রখ্যাত চীনা নাট্যকার ক্যাও ইউ। প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন হ্যানয় একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড আটের শিক্ষক সুয়া সু পং। নাটকটির গল্প আনা হয়েছে চীনা শেক্সপিয়ারখ্যাত বিংশ শতাব্দীর অন্যতম চৈনিক লেখক কাওযুর ‘দ্য ওয়াইল্ডনেস’ থেকে। যেখানে দেখানো হয়েছে মানবহৃদয়ে প্রেম-প্রতারণা, শুভ-অশুভ কতটা পাশাপাশি এবং দখলদারির মনোভাব নিয়ে অধিষ্ঠান।আরণ্যকের রাঢ়াঙ নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ। দূরাগত মাদলের ধ্বনির সঙ্গে শোষিত সাঁওতালদের জেগে ওঠার আহ্বান জানানো হয়েছে এই নাটকে। প্রযোজনাটিতে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ঘাত-প্রতিঘাত, হাসি-কান্না, জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ ও হত্যার নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে। নাটকের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে, ২০০০ সালে নওগাঁর সাঁওতালদের ভূমি বিদ্রোহ নিয়ে। এ বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন তরুণ আলফ্রেড সরেন। তাঁর নেতৃত্বে সাঁওতালদের সেই বিদ্রোহ দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিল। বিদ্রোহ দমাতে না পেরে জোতদারের দল আলফ্রেড সরেনকে হত্যা করেছিল। তাঁর সেই আত্মদানের গল্প মিশে আছে নাটকের ঘটনাপ্রবাহে। সব মিলিয়ে সাঁওতালদের দীর্ঘ সংগ্রামের বিশাল উত্তরাধিকারকে মেলে ধরার প্রয়াস ‘রাঢ়াঙ।’ নাটকে আলফ্রেড সরেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, আ খ ম হাসান, তমালিকা কর্মকারসহ আরণ্যকের অভিনয়শিল্পীরা।কাল বুধবারও আলাদা দুটি মঞ্চে দুটি প্রদর্শনী রয়েছে। এদিন উৎসবের সমাপনী দিনে সন্ধ্যা সাতটায় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আলোকরশ্মির ব্যবহারে রাশিয়ার নিকোলাই জাইকভ থিয়েটার উপস্থাপন করবে ‘লাইট পাপেট শো’। অন্যদিকে নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে বটতলার দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘খনা’র সত্তরতম প্রদর্শনী।
ভারতীয় ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকারের অবস্থান কিংবদন্তিতুল্য। অথচ মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় সেই শচীনকেই সমর্থকদের কাছ থেকে কথা শুনতে হচ্ছে! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শচীনকে কথা শুনিয়েছেন বেশ কিছু ধোনি ভক্ত।আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে পুরো ৫০ ওভার খেলেও ২২৪ এর বেশি তুলতে পারেনি ভারত। ভারতীয় ইনিংস শেষে অনেকেই ধোনির ৫২ বলে ২৮ রানের শম্বুকগতির ইনিংসের সমালোচনা করেছিলেন। সে দলে ছিলেন শচীনও। ধোনির মন্থর ইনিংসের সমালোচনা করে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ বলেছিলেন, ‘আমি কিছুটা নাখোশ। আরও ভালো ব্যাটিং হতে পারত। ধোনি ও কেদারের জুটি নিয়েও আমি খুশি নই। জুটিটি খুবই ধীর গতির ছিল। ৩৪ ওভার স্পিন খেলে আমরা মাত্র ১১৯ রান তুলেছি। স্পিনের সামনে আমাদের একদমই স্বচ্ছন্দ মনে হয়নি। আমাদের ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক কোনো তাড়নাই ছিল না।’টেন্ডুলকারের এমন মন্তব্য ভালোভাবে নিতে পারেননি অনেক ধোনি ভক্তই। ২৮ বছর পর ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ এনে দেওয়া ধোনির ভক্ত-সমর্থকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাদেরই একাংশ টুইটারে শচীনকে জবাব দিয়েছেন বেশ দৃষ্টিকটুভাবে। কেউ কেউ দুজনের ক্রিকেটীয় অর্জনের তুলনায় নেমেছেন, আবার কেউ কেউ তাদের বায়োপিকের দর্শকসংখ্যাকেও টেনে এনেছেন!নির্মল নামের একজন যেমন উল্টো শচীনের বিশ্বকাপ জেতার পেছনে ধোনির অবদান মনে করিয়ে দিয়ে খোঁচা দিয়েছেন, ‘ইতিহাসের অন্যতম সেরা ভারতীয় খেলোয়াড়দের পাশে নিয়েও পুরো ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ জিততে পারেননি আপনি। এই সেই ধোনি, যে আপনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন। শচীন এমনভাবে কথা বলছেন, যেন তিনি নিজে খুব বড় হিটার ছিলেন। নব্বইয়ের ঘরে ঢুকলেই তো তিনি রানের জন্য সংগ্রাম করতেন। নব্বইয়ের ঘরে তাঁর স্ট্রাইক রেট কেমন ছিল, সে ব্যাপারে কেউ তাঁকে একটু মনে করিয়ে দিন।’শচীনকে কথা শোনাতে গিয়ে আরেকজন টেনে এনেছেন ২০১২ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কাছে ভারতের হারা ম্যাচকে। ওই ম্যাচেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শততম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন শচীন। তবে ১১৪ রানের ইনিংস খেলতে ১৪৭ বল খরচ করেছিলেন সেদিন। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে হেরেছিল ভারত। ওই হারের পেছনে শচীনের বল অপচয়কেই দায়ী করেছেন সানিমা নামের একজন টুইটার ব্যবহারকারী, ‘আমার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে শততম সেঞ্চুরির ইনিংসটির কথা তিনি ভুলে গেছেন। আপনার ইনিংসের কারণেই বাংলাদেশ সেদিন সহজে জিততে পেরেছিল। সেঞ্চুরিগুলো বাদ দিয়ে হিসাব করে দেখুন, কটি ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস খেলেছেন তিনি?’ধোনি ও শচীনের জনপ্রিয়তার তুলনা করতে গিয়ে একজন তাদের বায়োপিককেও টেনে এনেছেন। এক পাশে একটি ভরা স্টেডিয়ামের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ধোনির বায়োপিক দেখা দর্শকের সংখ্যা’, আরেকদিকে একটি ফাঁকা গ্যালারির ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘টেন্ডুলকারের বায়োপিক দেখা দর্শকের সংখ্যা।’তবে শচীনের পক্ষ হয়েও জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কেউ কেউ। হরিশ নামের একজন যেমন লিখেছেন, ‘২০০৩ বিশ্বকাপে শচীনের রান ৬৭৩। আর ২০০৭, ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে আফগানিস্তান ম্যাচের আগে ধোনির মোট রান ৫৯৭।’ব্যাট হাতে এবারের বিশ্বকাপটা খুব একটা ভালো কাটছে না ৩৭ বছর বয়সী ধোনির। চার ইনিংসে স্কোর ২৮, ১, ২৭ ও ৩৪। ঋষভ পন্তের মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানকে বাইরে বসিয়ে রেখে ধোনিকে খেলিয়ে যাওয়ার সমালোচনাও করেছেন অনেকে।
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হচ্ছে ‘বিজ্ঞানচিন্তা-মেটাল বিজ্ঞান বক্তৃতা ২০১৯-২০’। প্রতি দুই মাস পরপর এই বিজ্ঞান বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এর সঙ্গে আরও থাকবে বিজ্ঞানবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা।আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন বিজ্ঞান সাময়িকী ‘বিজ্ঞানচিন্তা’-এর সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ও বীজসংক্রান্ত বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেটাল-এর গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এ এম এম ফরহাদ।সমঝোতা চুক্তি অনুষ্ঠানে মেটালের গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১ বছর বিজ্ঞানের এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করবে। রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোচিত কোনো বিষয় নিয়ে বিজ্ঞান বক্তৃতার আয়োজন করা হবে। বিজ্ঞান ও কৃষি বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক ও বিজ্ঞানীরা এতে বক্তৃতা করবেন। কিশোর ও তরুণ শিক্ষার্থীসহ বিজ্ঞানে আগ্রহীরা বিজ্ঞানচিন্তা-মেটাল বিজ্ঞান বক্তৃতা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে।চুক্তি অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাশার, মেটালের ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনের উপব্যবস্থাপক মীর মুহাম্মদ এমদাদুল হক, প্রথম আলোর ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশনের বিভাগীয় প্রধান কবির বকুল, বন্ধুসভার সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন।
তৈরি পোশাকমালিকদের করপোরেট কর সুবিধার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ল। আজ মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, নিট ও ওভেন পোশাকমালিকদের করপোরেট কর হার ১২ শতাংশ হবে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সবুজ কারখানা হলে ওই প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর হার হবে ১০ শতাংশ।চলতি জুন মাসে হ্রাসকৃত করপোরেট কর হারের সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এখন এটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে।এদিকে বস্ত্র খাতের করপোরেট কর হার ১৫ শতাংশ বহাল রাখা হয়েছে। তবে মেয়াদ বেড়েছে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। এনবিআর আলাদা এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের আট লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর মওকুফ এবং বিভাগীয় শহরগুলোয় তাঁদের জন্য হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে যুক্তফ্রন্ট ও বিকল্পধারার আয়োজনে ‘বাজেট ২০১৯-২০২০ বাস্তবায়ন ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বি চৌধুরী এসব কথা বলেন।বি চৌধুরী ভারতীয় বাজেটে সে দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের আয়করের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ৬০ বছর পর্যন্ত উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য আয়কর ৫ লাখ এবং ৬০ থেকে ৮০ এবং ৮০-এর ঊর্ধ্বে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর মওকুফ করা উচিত।’ মওকুফের কারণ হিসেবে বি চৌধুরী বলেন, বয়োজ্যেষ্ঠরা যে আয় করেন তার ৮০ ভাগ টাকা খরচ হয়ে যায় বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাতেই।সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বিভাগীয় শহরে জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য পাঁচ হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানান। ক্যানসারের ওষুধের দাম কমানোর প্রস্তাবের জন্য তিনি সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, কিডনি ও লিভারের বিভিন্ন রোগে ব্যবহৃত ওষুধের দাম শতকরা ৫০ ভাগ কমানোরও দাবি জানান। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ও বয়স্ক ভাতা বাড়ানোর জন্যও সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া জনগণ পছন্দ করেনি বলে উল্লেখ করেন বি চৌধুরী। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাত এবং শেয়ারবাজারের জন্য পৃথক কমিশন গঠনের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি উপজেলায় ট্যাক্স সেন্টার করার প্রস্তাবের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। বিকল্পধারার সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, বাজেটে শিক্ষার উন্নয়নে দৃঢ় পদক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বি. চৌধুরী কৃষকের সমস্যা সমাধানে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কৃষিজাত দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে হবে।সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, প্রেসিডিয়াম সদস্য সমশের মবিন চৌধুরী, মাহী বি. চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, বিএলডিপির চেয়ারম্যান নাজিমউদ্দিন আল আজাদ, জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লা আল মেহেদী প্রমুখ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আমীনুর রহমান ও আবদুল মালেককে মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা, কলেজ শাখা ছাত্রলীগ নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতাকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওই কার্যালয়ে মরধারের ঘটনা ঘটে।অভিযুক্ত তিন আসামি হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল মাদবর, তাঁর ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক জুলহাস মাদবর ও স্থানীয় পূর্ব মাদারীপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন।এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগে ডামুড্যা থানায় মামলা করা হয়েছে। উপসহকারী প্রকৌশলী আমীনুর রহমান বাদী হয়ে ওই তিন নেতাকে আসামি করে মামলাটি করেন।ডামুড্যা থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবেল মাদবর, তাঁর ভাই জুলহাস মাদবর ও ইমরান হোসেন ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ইমরান হোসেন সম্প্রতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্প থেকে ১০টি সেলাই মেশিন সরবরাহ করার কাজ নেন। ৯২ হাজার টাকার ওই প্রকল্পটির বিল উত্তোলন নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ডামুড্যা উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীদের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে মঙ্গলবার সকালে রুবেল মাদবর, জুলহাস মাদবর ও ইমরান প্রকৌশলীদের কক্ষে যান। সেখানে তাঁরা বিলের চেকে সই করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। মেশিন সরবরাহ ও বিতরণের পূর্ণাঙ্গ কাগজপত্র না থাকায় প্রকৌশলীরা বিলের চেকে সই করতে অস্বীকৃতি জানান। তখন ওই তিন নেতা উপসহকারী প্রকৌশলী আমীনুর রহমান ও আবদুল মালেককে মারধর করেন। তাঁরা উপজেলা প্রকৌশলী এস এম ইবনে মিজান হাসানকে মারধরের চেষ্টা করেন। তখন তিনি কক্ষের দরজা বন্ধ করে মারধর থেকে রক্ষা পান।মারধরের শিকার উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মালেক বলেন, ‘এডিপি প্রকল্পের একটি বিলের চেকে সই করা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বিলের কাগজপত্রে ত্রুটি ছিল। আমরা ওই ত্রুটি সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তাঁরা কাগজপত্র ছাড়াই বিল দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। আমরা তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমাদের চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মেরেছে। এমনকি লোহার রড দিয়ে পিটিয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাদের পরামর্শে মামলা করা হয়েছে।’উপজেলা প্রকৌশলী ইবনে মিজান হাসান বলেন, ‘রুবেল মাদবর ও জুলহাস মাদবর এলজিইডির কয়েকটি প্রকল্পের ঠিকাদার। কাজের মান নিয়ে কড়াকড়ি করার কারণে তাঁরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁরা প্রায়ই হুমকি দিতেন, গালাগালি করতেন। মঙ্গলবার গায়ে হাত তুলেছেন। দায়িত্ব পালন করার জন্য এভাবে আমাদের মার খেতে হবে?’অভিযোগের বিষয়ে ডামুড্যা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল মাদবর বলেন, ‘আমাদের ছোট ভাই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান ছোট একটি কাজ করেছে। ওই কাজের বিলটি দিচ্ছিল না। ১০ হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছিল। বিষয়টি জানতে গিয়ে একটু তর্কাতর্কি হয়েছে। তবে আমরা কাউকে মারধর করিনি।’ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ছাত্রলীগের নেতাদের দুজন উপসহকারী প্রকৌশলীকে মারধর করার খবর শুনেছি। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আনন্দ কুমার ঘোষ বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে ত্রুটি রেখে বিল নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। বিল দিতে না চাইলে কর্মকর্তাদের মারধর করা হবে। এটা হতে পারে না। আমরা এই অন্যায় সহ্য করব না। যাঁরা কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।’
মেসিকে নিয়ে আলোচনা প্রতিদিনই হয়। কেউ তাঁর প্রশংসায় মুগ্ধ হন, অন্যরা তাঁর সমালোচনায় ব্যস্ত। এই আলোচকেরা সবাই ফুটবল সংশ্লিষ্ট অথবা ফুটবল সমর্থক। তবে এবার মেসিকে নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনায় নামল একটি সংস্থা। সেটাও আবার কারা? জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা!কোপা আমেরিকা নিয়ে আপাতত ব্যস্ত আছেন মেসি। আর্জেন্টিনাকে কোয়ার্টার ফাইনাল পার করা নিয়েই আপাতত চিন্তিত। তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্য মাথা ঘামাচ্ছে না ইউনাইটেড নেশন উইমেন। ক্লাব থেকে মেসির পাওয়া বেতন নিয়ে তাদের যত সমালোচনা। কেন মেসিকে এত বেতন দেওয়া হচ্ছে এমনটাই প্রশ্ন এ সংস্থার।না, মেসি বেশি বেতন পাচ্ছেন এ নিয়ে সংস্থাটির আলোচনার ইচ্ছে ছিল না। কিন্তু নারী ফুটবলারদের পাওয়া বেতনই মেসির বেতনের দিকে তাদের দৃষ্টি টেনে নিয়েছে। নারী ফুটবলের সঙ্গে পুরুষ ফুটবলে বেতনের মধ্যে বৈষম্যটা রীতিমতো দৃষ্টিকটু। শুধুমাত্র মেয়েদের ফুটবলকে ছেলেদের ফুটবল দলের মতো গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে এবং বেতন বৈষম্যের কারণে চলতি বিশ্বকাপে খেলছেন না অ্যাডা হ্যাজারবার্গ। নরওয়ে দলের জন্য ব্যাপারটা অনেক বড় এক ধাক্কা। কারণ হ্যাজারবার্গ শুধু এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ীই নন, লিঁওর হয়ে টানা চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতেছেন এই ফুটবলার।হ্যাজারবার্গ জাতীয় দল থেকে পর্যাপ্ত বেতন না পাওয়ায় খেলছেন না। কিন্তু ক্লাব ফুটবলেও যে নারীরা ভালো বেতন পাচ্ছেন, এমন নয়। এ কারণেই মেসিকেই উদাহরণ হিসেবে বেছে নিয়েছে ইউনাইটেড নেশন উইমেন। কারণ, বিশ্বে ক্লাব থেকে সবচেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছেন মেসি। কর দেওয়ার আগে বাৎসরিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার বেতন পান বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড।জাতিসংঘের ফেসবুক পেজের এক পোস্টে একটি ছবি দেওয়া হয়েছে। সে পোস্টেই জানিয়েছে ইউরোপের ৭টি সেরা লিগে খেলা ১ হাজার ৬৯৩ জন নারী ফুটবলাররা সবাই মিলে যে বেতন পান, সেটা মেসির একার বেতনের অর্ধেক! ইউরোপের সেরা সাতটি লিগের এই ফুটবলারদের মোট বেতন ৪২.৬ মিলিয়ন ডলার। সঙ্গে লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘একজন পুরুষ ফুটবলার ইউরোপের সেরা সাত লিগের মেয়েদের মোট বেতনের দ্বিগুণ পাচ্ছেন। বিশ্বকাপ চলার সময়েই খেলাধুলায় মেয়েদের সমান বেতনের দাবি চেয়ে ইউএন নেশনসের আন্দোলনে যোগ দিন।’বেতন বৈষম্য নিয়ে এমনিতেই প্রচুর ঝামেলা হচ্ছে। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্র দলের ২৮ জন মামলা করেছেন বোর্ডের বিরুদ্ধে। বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে অ্যালেক্স মরগান, মেগান র‍্যাপিনু, কার্লি লয়েডদের দাবির মুখে বিশ্বকাপ শেষ হলেই সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে বোর্ড
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, রাজউকের আওতাধীন উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরের ফ্ল্যাট প্রকল্পে ‘এ‘ ব্লকে ১৬৫৪ বর্গফুট আয়তনের কিছু ফ্ল্যাট অ-বরাদ্দকৃত অবস্থায় আছে। সংসদ সদস্যরা ফ্ল্যাটের জন্য আবেদন করলে তাদের সবাইকে ওই প্রকল্পের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে।আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ হাবিবা রহমান খানের এক প্রশ্নের জবাবে পূর্তমন্ত্রী এ কথা জানান।স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।সরকারি দলের ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, বনানীর এফ আর টাওয়ার অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মাণ হয়নি। ওই ভবনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।সংরক্ষিত আসনের খোজেদা নাসরিন আক্তার হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।সরকারি দলের মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত স্নাতক ও সমপর্যায়ের ১০ লাখ ২৮ হাজার ৮৮০ জন শিক্ষার্থীকে ৬৫৩ কোটি ৭০ লাখ ২১ হাজার ১২০টাকা উপবৃত্তি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর মধ্যে আট লাখ ৪০ হাজার ৬২ জন নারী শিক্ষার্থী।সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে দীপুমনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে গেলে তাদের পরিচালন ব্যয় কমে যাবে। এতে করে ছাত্রছাত্রীদের বেতন কমানো সহজ হবে এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈষম্য অনেকাংশে দূর হবে।সংরক্ষিত আসনের হাবিবা রহমান খানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ১ শতাংশ থেকে বর্তমানে ১৫ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সালে ভর্তির লক্ষ্যমাত্রা ২০ শতাংশে উন্নীত করতে কারিগরি শিক্ষায় আসন ২৫ হাজার থেকে ৫৭ হাজার ৭৮০টিতে উন্নীত করা হয়েছে।
ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক নৈশ প্রহরীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আজ মঙ্গলবার সকালে ওই স্কুলের বারান্দা থেকে তাঁর রক্তমাখা টিশার্ট, মশারি, বালিশ ও মোবাইল উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি স্কুলের বারান্দার মেঝেতে রক্তের মোটা দাগও দেখা যায়।‘নিখোঁজ’ ওই ব্যক্তির নাম ইয়াকুব আলী শেখ (৩৮)। ইয়াকুবের পরিবার জানিয়েছে, তিনি সোমবার বিকেলে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি। তাঁর বাড়ি ফরিদপুর সদরের কৈজুরি ইউনিয়নের পশ্চিম বিলনালিয়া গ্রামে। তিনি দুই সন্তানের জনক। ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান শহরের স্টেশন রোডে।ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শামীমা বেগম বলেন, ‘আজ সকাল ৮টার দিকে ঝাড়ুদার দুলাল জমাদ্দার প্রথম স্কুলে এসে মেইন গেট বন্ধ পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। এরপর তিনি আমার বাড়িতে চলে আসেন। পরে দপ্তরি রেজাউল করিমকে ডেকে স্কুলের গেট খুলে ভেতরে প্রবেশ করি। এরপর স্কুলের বারান্দায় ইয়াকুবের গায়ের রক্তমাখা টিশার্ট এবং দরজা ও মেঝে জুড়ে রক্ত লেগে থাকতে দেখি। পাশেই তাঁর মোবাইল ফোনটিও পড়েছিল। এরপর পুলিশ ও ইয়াকুবের পরিবারকে খবর দিই।’ তিনি জানান, স্কুলের আশপাশে সম্ভাব্য সকল স্থানে খুঁজেও ইয়াকুবের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।ইয়াকুবের স্ত্রী ছকিনা বেগম বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই এখানে ডিউটি করতে চাইছিলেন না তাঁর স্বামী। গত জানুয়ারি মাসে এ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাবে চুরি হয়েছিল। গত ঈদুল ফিতরের দুই দিন পর ওই বিদ্যালয়ে চোর ঢোকে। ইয়াকুব তাদের তাড়িয়ে দেন। তখন চোরেরা ইয়াকুবকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তা ছাড়া মাদক সেবীদের প্রচুর উৎপাত হতো। এগুলো ইয়াকুব পছন্দ করত না। অনেকবার স্কুলের শিক্ষকদের নিকট নালিশও করেছেন।ইয়াকুবের শ্যালক মিনারুল বলেন, ‘দুলাভাই গত কয়েক দিন ধরে খুব ভীত ছিলেন। স্থানীয় মাদকসেবীরা রাতে স্কুলের বারান্দায় আড্ডা বসাতো। তিনি বলেন, এ কারণে দুলাভাইয়ের বেশ শত্রু তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ভয় লাগে বলে কয়েক দিন আগে দুলাভাই আমাকে তাঁর সঙ্গে স্কুলে থাকতে বলেছেন।’ইয়াকুবের পরিবারের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে শামীমা শিক্ষক শামীমা বেগম বলেন, ‘রাতে মাঝেমধ্যে মাদকসেবীরা উৎপাত করত। সেগুলো ইয়াকুব আমাদের জানালে আমরা এই এলাকায় থাকা গোয়েন্দা পুলিশকে মৌখিকভাবে সেসব জানাই। তারা কয়েকবার ধাওয়া করে ওদের তাড়িয়েও দেয়।’স্কুল সূত্রে আরও জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে ইয়াকুব ছাড়াও ফারুখ হোসেন (৩৮) নামে আরেকজন নৈশ প্রহরী ছিলেন। তবে তারা সাধারণত পালাক্রমে কাজ করতেন। সোমবার রাতে প্রহরার দায়িত্ব ছিল ইয়াকুবের। ইয়াকুবের স্বজনেরা জানিয়েছেন, গত সাত বছর ধরে তিনি এই স্কুলে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি শহরের দক্ষিণ আলীপুরে একটি সেলুনে কাজ করতেন।সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলটি কংক্রিটের সাত ফিট উচ্চতার সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। স্কুলে প্রবেশের একটি মাত্র ফটক। যা রাতে ভেতর থেকে তালাবদ্ধ থাকে। বারান্দা ব্যতীত স্কুলের অন্য কোথাও রক্তের ছাপ দেখা যায়নি।ফরিদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সেখানকার আলামত দেখে মনে হয়েছে ইয়াকুবের সঙ্গে খারাপ কিছু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁকে খুঁজে বের করতে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় স্কুলের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
খুলনাসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার রোগীদের একটি বড় অংশ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেন। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন গুরুতর অসুস্থ রোগীরা। এ অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে খুলনা ও কলকাতার মধ্যে সরাসরি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন।সম্প্রতি ভারতের এএমআরআই হাসপাতালের তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে খুলনায়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা নগরের একটি অভিজাত হোটেলে ওই তথ্যকেন্দ্রের পরিচিত অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার (খুলনা) রাজেশ কুমার রায়না। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।রাজেশ কুমার রায়না বলেন, খুলনার মানুষের চিকিৎসার কথা চিন্তা করে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে ওই প্রস্তাব দেন। ভারতীয় হাইকমিশনার ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সার্ভিসটি চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। রোগীদের জন্য ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তি সহজ করার আশ্বাসও দেন তিনি।খুলনা নগরের আহসান আহমেদ রোডের লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওই তথ্যকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। পরিচিতি সভায় জানানো হয়, পূর্ব ভারতের এএমআরআই হাসপাতালটি এক হাজার বেডের একটি হাসপাতাল। এখন থেকে খুলনা কেন্দ্রের মাধ্যমেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। সেখান থেকে মেডিকেল ভিসা-সংক্রান্ত পরামর্শও পাওয়া যাবে বলে ওই সভায় জানানো হয়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। তিনি বলেন, ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে বেশ উন্নত। চিকিৎসা সেবায় দেশটি রোগীদের আস্থা অর্জন করেছে। ধনী লোকেরা থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে চিকিৎসার জন্য যান। তবে যাঁদের সামর্থ্য কম, তাঁরা ছোটেন ভারতে। সে ক্ষেত্রে চেন্নাই, ভেলরসহ ভালো মানের হাসপাতালগুলো বেশ দূরে। ট্রেনে করে যেতে কয়েক দিন লেগে যায়। এ জন্য কলকাতা থেকে চেন্নাইয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করা যায় কি না, তা ভেবে দেখতে ভারতীয় হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন মেয়র।এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন খুলনার ভিসা কর্মকর্তা মানস কুমার পান্ডে বলেন, ভারতে যাতায়াতের সময় ভারতীয় অংশে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কর্মকর্তাদের দ্বারা পাসপোর্টধারী যাত্রী হয়রানি হন, এমন অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে দ্রুতই একটি সমাধান হবে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর গোড়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছিল। এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ একটি পোস্ট দেন। পোস্ট চোখে পড়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও)। এরপর তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বালু তোলা বন্ধ করেন দেন।রাঙ্গুনিয়ার রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলী এলাকায় ইছামতী নদীতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান।ভ্রাম্যমাণ আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযানে সেতুর পাশে বসানো দুটি খননযন্ত্র ও বালু তোলার পাইপ পুড়িয়ে নষ্ট করে করা হয়। অবৈধভাবে বালু তোলার দায়ে মো. আজগর নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন। অভিযান চলাকালে আদালতকে সহযোগিতা করে রাঙ্গুনিয়া থানা-পুলিশ।স্থানীয় তরুণ মো. জাহেদ ও মো. শহীদ বলেন, সেতুর গোড়া থেকে বালু তোলার কারণে সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বালু তোলার বিষয়টি ‘আমাদের বগাবিলী’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ছবিসহ পোস্ট করা হয়। ফেসবুকে দেওয়ার পর আজ ইউএনও মহোদয় অভিযান চালান।ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ফেসবুকে সেতুর গোড়া থেকে অবৈধ বালু তোলার বিষয়টি নজরে আসার পর এলাকায় খোঁজ নেওয়া হয়। এরপর এলাকা থেকেও অভিযোগ আসে। পরে অভিযান চালানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বরাবরই নস্টালজিয়া পেয়ে বসে শাহরুখ খানকে। নানা সময়ে দেখা গেছে আড্ডায়, সাক্ষাৎকারে পুরোনো দিনগুলোতে ফিরে যেতে। যেমন আজ ফিরে গেলেন সাতাশ বছর আগে, ১৯৯২ সালের ২৫ জুনে। ১৯৯২ সালের এই দিনটাতেই মুক্তি পেয়েছিল তাঁর দিওয়ানা ছবিটি। যে ছবি দিয়ে বলিউড রাজ্য জয়যাত্রা চালু হয়েছিল, আজও চালু আছে যা। আজ সেই দিনটির কথা টুইটে নিজেই জানালেন শাহরুখ। যদিও শাহরুখ আগে সই করেছিল ‘দিল আশনা হ্যায়’ ছবিতে। তবে তার আগেই মুক্তি পায় ‘দিওয়ানা।’ বলিউডে ২৭ বছর পূর্ণ করলেন শাহরুখ খান। সে স্মরণে অভিনন্দন জানিয়ে টুইটারে ঝড় তুলেছেন তাঁর ভক্তরা। দিওয়ানায় শাহরুখ ছাড়াও ছিলেন দিব্যা ভারতী ও ঋষি কাপুর। এই ছবিটি ছিল তাঁর জন্য ‘এলাম, দেখলাম, জয় করলাম’ এর মতো। মোড় ঘুরতে শুরু করে বলিউড বাদশার। এই ছবির জন্য সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে তিনি পান ফিল্মফেয়ার পুরস্কার।তারপর কেটে যায় ২৭টি বছর। এই ২৭ বছরে বলিউড চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গেই কাজ করে গেছেন। নিজেকে বারবার ভেঙেছেন, গড়েছেন শাহরুখ। যদিও শেষ ছবি জিরোর ব্যর্থতার পর এখনো কোনো ছবিতে হাত দেননি শাহরুখ। অবশ্য সেসবে পাত্তা দিচ্ছেন না শাহরুখের ভক্তরা। বরং আজ শাহরুখের স্মৃতিকে নানাভাবে উসকে দিচ্ছে না তারা, সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে। লিখলে বাড়াবাড়ি হবে না, বলিউড অভিষেকের ২৭ তম বছরে বিশ্বজুড়ে যে ভাবে তাঁকে ভালোবাসা জানিয়েছেন অনুরাগীরা তা নিঃসন্দেহে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা জোগাবে শাহরুখকে।তাজ মুহম্মদ খান আর লতিফ ফাতিমার পরিবারে ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর জন্ম হয় শাহরুখের। শাহরুখের বাবা পাকিস্তানের পেশোয়ারের মানুষ, মা ভারতের হায়দরাবাদের আর দাদি কাশ্মীরের। তবে শাহরুখের প্রথম টেলি-সিরিয়াল শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। কর্নেল কাপুরের পরিচালনায় 'ফৌজি' নামের সেই ধারাবাহিক খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। সেখানেই প্রথমবার ভারতের দর্শক দেখলেন পরের কয়েক বছরে স্টার থেকে সুপার স্টার হয়ে ওঠা শাহরুখ খানকে। ১৯৮৯-৯০ সালে রেণুকা সাহানের সঙ্গে ‘সার্কাস’ ধারাবাহিকে কাজ করতে শুরু করেন শাহরুখ। ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে মারা যান শাহরুখ খানের মা। মায়ের মৃত্যুর শোক থেকে দূরে সরে যেতে এক বছরের জন্য শাহরুখ দিল্লি থেকে মুম্বাই গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ফেরা আর হয়নি আর। সে বছরই প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ খান। সেটি ছিল হেমা মালিনী অভিনীত ‘দিল আসনা হ্যায়’। নায়ক হিসাবে শাহরুখকে প্রথম দেখা গেল পরের বছর ২৫ জুন ১৯৯২তে ‘দিওয়ানা’য়। কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন শাহরুখ। মাত্র চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ঘুমান তিনি। তাঁর প্রিয় উক্তি হলো, 'ঘুমানো মানে জীবন নষ্ট করা'। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে এবং বিবিসি।
পিরোজপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলার উদয়তারা বুড়িরচর গ্রামের কৃষক হানিফ মাতুব্বরকে (৪০) হত্যার দায়ে মনির মাতুব্বর (৪৫) নামের এক প্রতিবেশীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।আজ মঙ্গলবার বিকেলে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সামছুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।দণ্ডপ্রাপ্ত মনির মাতুব্বরের বাড়ি উপজেলার উদয়তারা বুড়িরচর গ্রামে। রায় ঘোষণার সময় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। নুর ইসলাম, মামুন মাতুব্বর ও মাছুম মাতুব্বর নামে তিনজন খালাস পেয়েছেন।মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উদয়তারা বুড়িরচর গ্রামের মনসুর মাতুব্বরের ছেলে হানিফ মাতুব্বরের সঙ্গে প্রতিবেশী মনির মাতুব্বরের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ২০০৯ সালের ৫ মার্চ রাত ১১টার দিকে হানিফ মাতুব্বর এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় আগে থেকে হানিফ মাতুব্বরের বাড়িতে ওত পেতে থাকা মনির মাতুব্বরসহ কয়েক ব্যক্তি হানিফ মাতুব্বরকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। হানিফ মাতুব্বরের চিৎকার শুনে আত্মীয়-স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ মার্চ দিবাগত রাত তিনটায় হানিফ মাতুব্বর মারা যান। এ ঘটনায় পরের দিন নিহত হানিফ মাতুব্বরের ভাই সিদ্দিক মাতুব্বর বাদী হয়ে মনির মাতুব্বরকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঠবাড়িয়া থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল মালেক চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।নিহত হানিফ মাতুব্বরের বড় ভাই আবদুল কুদ্দুস মাতুব্বর বলেন, ‘এ রায়ে আমরা খুশি হতে পারিনি। তিন আসামির খালাস পাওয়ায় আমরা অবাক হয়েছি। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মনির মাতুব্বর ঘটনার পর থেকে পলাতক। শুনেছি তিনি পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে গেছেন।’ রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) জহুরুল ইসলাম।
বাংলাদেশের ৪ ফুটবলারকে অনুশীলন করার সুযোগ করে দিয়েছে ব্রাজিল। আজ রাতেই ব্রাজিলের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে সেই ৪ সম্ভাবনাময় ফুটবলার। এখানেই শেষ নয়, দেশের ফুটবলে আরও বড় চমক উপহার দিতে চান বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত।বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বাংলাদেশের আকাশের একাংশ দখল করে নেয় ব্রাজিলের পতাকা। গত বিশ্বকাপের সময় হাজার হাজার মাইল দূরের এক দেশে নিজ মাতৃভূমির হাজার হাজার পতাকা উড়তে দেখে রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন ঢাকাস্থ ব্রাজিলীয় রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা দি অলিভিয়েরা জুনিয়র। ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব করেন তিনি। সে তাগিদের ফল হিসেবেই আজ রাতে ব্রাজিলে অনুশীলন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের চার তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার। ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত বলেছেন তাঁর দেশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছে।ব্রাজিল দূতাবাসের সঙ্গে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এ ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছে। চার ফুটবলারকে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে শুভেচ্ছা জানায় বাফুফে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। ভবিষ্যতে আরও বেশি সময়ের জন্য অনুশীলনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, ‘স্বপ্নের কেবল শুরু। এক মাসের জন্য যাচ্ছে ওরা। এক বছরের জন্য যেতে পারলে ভালো হতো। তবে বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ থাকবে।’প্রথমবারের মতো ব্রাজিলে এক মাসের অনুশীলনের সুযোগ পাওয়া সেই চার ভাগ্যবান মেধাবী কিশোর ফুটবলার জগেন লাকরা, লতিফুর রহমান নাহিদ, ওমর ফারুক মিঠু ও নাজমুল আকন্দ। প্রথম দুজন অনূর্ধ্ব-১৫ এবং বাকি দুজন অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগের। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ক্রীড়া পরিদপ্তরের অধীনে অনুষ্ঠিত ডেভেলপমেন্ট কাপ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ থেকে সেরা ২০ জনকে ডাকা হয়েছিল বাছাইপর্বে। দুই দিনের বাছাই পরীক্ষায় সেরা হয়ে পেলে-গারিঞ্চা-নেইমারদের দেশের টিকিট পেয়েছে তারা। ব্রাজিলের ভাস্কো দা গামা ক্লাবের অধীনে অনুশীলন করার কথা রয়েছে তাদের। ব্রাজিলীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ফুটবলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রকল্প এখানেই শেষ নয়। ভবিষ্যতে আরও ফুটবলারের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আছে। আমি ঢাকায় এসে শুরু থেকে চিন্তা করে যাচ্ছিলাম ফুটবলের মাধ্যমে কিছু একটা হোক। অবশেষে সেটা হচ্ছে। এতে আমি খুশি। বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য আরও বড় চমক অপেক্ষা করছে।’ কিন্তু কী সেই চমক, তা খোলাসা করেননি ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত।ব্রাজিলে এখন কোপা আমেরিকা ফুটবল চলছে। অনুশীলনের ফাঁকে ফাঁকে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের স্বাদ কিশোর ফুটবলাররাও উপভোগ করতে পারবেন, ‘ব্রাজিলের ফুটবল ঐতিহ্য থেকে শুরু করে সবকিছু প্রত্যক্ষ করার সুযোগ আছে। এখন কোপা আমেরিকা চলছে। সেই উৎসবের অংশ গ্রহণ করার সুযোগ আছে তাদের।’এর আগে শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশ সফর করতে পারেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের কিংবদন্তি সাদা পেলে খ্যাত জিকো। কিন্তু আপাতত সম্ভব না হলেও ভবিষ্যতে আসার সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত, ‘বিশ্বকাপের পরে জিকো জাপানে কোচিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন করে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আসার সম্ভাবনা আছে।’
‘এই যে চাচা, এদিকে আসেন’, যাত্রী ভেবে এগিয়ে আসেন রিকশাচালক। কিন্তু যাত্রী যে রিকশায় না উঠে মাথায় ছাতা বেঁধে দেবেন, তা কে জানে! অবাক হতে হতে আনন্দে নাতি-নাতনির বয়সী ছেলে-মেয়েদের এই কাজ দেখে হেসে ফেলেন রিকশাওয়ালা। মঙ্গলবার দুপুরের তপ্ত রোদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ফুলার রোডে দেখা মিলল ১০-১২টি ছেলেমেয়ের এই কর্মকাণ্ড। গরমের তীব্রতা থেকে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘব করতে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বরিশালে গড়ে ওঠা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লাল-সবুজ সোসাইটি’। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বিএম কলেজের শিক্ষার্থী তাহসিন উদ্দীন জানালেন, আজ সারা দিনে সংগঠনের ঢাকার সদস্যদের হাতখরচের টাকা জমিয়ে কেনা ৫০টি ছাতা তাঁরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বৃদ্ধ রিকশাচালকদের দিয়েছেন। শ্রমজীবী মানুষকে ছাতা দেওয়ার এই কর্মসূচি তাঁরা প্রথমবার করেন বরিশালে। আর সংগঠনটির ঢাকার সদস্য, যাঁরা রাজধানীর স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তাঁরা করলেন আজকের এই আয়োজন। সামনে নরসিংদী ও খুলনায় এই কর্মসূচি পালন করবেন বলে তাঁরা জানান। আর যাঁদের জন্য এ আয়োজন, হাসি মুখে তাঁরা জানালেন ‘আল্লাহ তাগোর মঙ্গল করুক।’
৫০ ওভারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২৮৫ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড ৩৯.৩ ওভারে ১৮৯ রান তুলতে হারিয়েছে ৭ উইকেট। ৬৩ বলে ৯৭ রান দরকার ইংল্যান্ডের। এই ম্যাচ ইংল্যান্ড হারলে বাংলাদেশের লাভ ইনিংসের অর্ধেকটা শেষেও মনে হচ্ছিল, ৩০০ পার করা স্কোরের দিকেই এগোচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগে ইংলিশ বোলাররা ম্যাচে ফিরেছেন দারুণভাবে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে ২৮৫ রানে বেঁধে ফেলেছে ইংল্যান্ড। অথচ অনায়াসে তিন শ পার করার পথেই ছিল অস্ট্রেলিয়া। ৩০ ওভারে ১ উইকেটে ১৬২, সেখান থেকে শেষ ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৩ রান! টি-টোয়েন্টির জমানায় ৯ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ২০ ওভারে এই রান! ৪০ ওভারেই ২১৫ রান তুলে ফেলেছিল তারা, সেখান থেকেও শেষের ঝড়টা তুলতে পারল না। শেষ ১০ ওভারে উঠেছে ৭০। স্লগ ওভারে আবারও ভুগল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং। শেষ দুই ওভারে ২২ রান উঠেছে বলে কিছুটা রক্ষা।১ উইকেটে ১৭৩ রান তোলা অস্ট্রেলিয়ার পথ হারানোর শুরু ৩৩তম ওভার থেকে। দ্বিতীয় উইকেটে অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি ভাঙেন বেন স্টোকস। স্টাম্পের বল অন সাইডে খেলতে গিয়ে বোল্ড উসমান খাজা। এরপর থেকে বড় কোনো জুটি দাঁড় করাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। যখন ঝড় তুলছি-তুলব করেছে, ইংল্যান্ড মোক্ষম সময়ে তুলেছে নিয়েছে উইকেট। এ কারণেই জেট গতি পায়নি শেষের ওভারগুলোর রান রেট।খাজা ফেরার মাত্র দুই ওভার পরে অস্ট্রেলিয়াকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন জফরা আর্চার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পাওয়ার ঠিক পরের বলেই অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ফিঞ্চকে তুলে নেন আর্চার। ইংলিশদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ইনিংসকে অবশ্য কখনোই খুব বড় করতে পারেননি ফিঞ্চ। যে ৭ বার সেঞ্চুরি পেয়েছেন, ৫ বারই আউট হয়েছেন ১১০ এর নিচে।ফিঞ্চের বিদায়ের পর বড় সংগ্রহের জন্য যার দিকে তাকিয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া, সেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আরও একবার হতাশ করেছেন। একটি করে চার-ছয় মেরে ম্যাক্সওয়েল ফিরেছেন মাত্র ১২ করে। মার্কাস স্টয়নিস ফিরেছেন স্টিভ স্মিথের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে। নিজের কাজটা শেষ করে আসতে পারেননি স্মিথও। চার ওভার বাকি থাকতেই ক্রিস ওকসের বলে ফিরেছেন ৩৮ রানে। শেষ দিকে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি (৩৮) চেষ্টা করে ২৮৫ পর্যন্ত নিয়ে যান পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।ইংলিশরা ম্যাচে ফিরেছে সব বোলারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। দুটির বেশি উইকেট পাননি কেউই, কিন্তু নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে বাধ্য করেছেন উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসতে। উইকেটসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে সফল ছিলেন ক্রিস ওকস, ১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন।এ টুর্নামেন্টে যে দুটি ম্যাচ হেরেছে ইংল্যান্ড, দুটিই রান তাড়া করে। মিচেল স্টার্ক-প্যাট কামিন্সরা জ্বলে উঠলে এ রানও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে ইংল্যান্ডের জন্য। বিশেষ করে বাংলাদেশের সমর্থকেরা এই ম্যাচে খুব করে চাইবে অস্ট্রেলিয়া যেন জেতে।
বিশ্বকাপের আগে রশিদ খান সেমিফাইনালের স্বপ্নও দেখিয়েছিলেন আফগানদের। সে আশায় গুড়েবালি। সেমিফাইনাল তো দূর, বিশ্বকাপে এখনো পরাজয়ের গণ্ডি থেকেই বেরোতে পারল না আফগানিস্তান। তবে সবকিছু এ রকম উল্টে যাওয়ার কারণ জানালেন অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। বাজে ফিল্ডিংই নাকি ডুবিয়ে দিয়েছে তাঁদের।ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিং দিয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন, গড়েছেন এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা খাওয়ার রেকর্ড। ক্রিকেট বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ডটাও তাঁর নামের পাশে। বাংলাদেশের বিপক্ষেও নিষ্প্রভ রশিদ খান। রান খুব বেশি না দিলেও পাননি কোনো উইকেট। রশিদ খানের এমন পারফরম্যান্সের জন্য নাকি ফিল্ডাররাই দায়ী। রশিদ খানকে বাঁচাতে আফগান অধিনায়ক গুলবদিন নাইব এমনটাই দাবি করেছেন।ম্যাচের আগে মজা করেছিলেন, বাংলাদেশকে নিয়েই নাকি ডুববেন। কিন্তু নিজেরাই হারিয়ে গেছেন অথই সাগরে। একের পর এক হারের জন্য জবাবদিহি করতে হয়েছে নাইবকে। আফগান অধিনায়কের মতে, বাজে ফিল্ডিংয়ের জন্যই ম্যাচ হারতে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু যাঁর দিকে তাকিয়ে আফগানরা বিশ্বকাপের আগেই সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছিল, সেই রশিদ খান কি সন্তুষ্ট করতে পেরেছে অধিনায়ককে? এ প্রসঙ্গে নাইব বলেছেন, ‘'সে তাঁর এক শ ভাগই দিচ্ছে কিন্তু আপনি যদি ফিল্ডিংয়ের দিকে দেখেন। আমি কিছুটা হতাশ ফিল্ডিং নিয়ে।’ম্যাচের মাঝখানে ফিল্ডিং নিয়ে রশিদও নাকি ভীষণ চটেছিলেন, ‘ও মাঠে খুব রেগে গিয়েছিল। আমি ওকে শান্ত হতে বলেছিলাম যেন ও শুধু ওর বোলিংয়ে মনোযোগ ধরে রাখে। আমার ধারণা, বাজে ফিল্ডিংয়ের জন্যই ও মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলেছিল।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২১টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ নবরূপায়ণসহ ১০ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা।আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, একনেকে অনুমোদিত ১০ প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৬ হাজার ৯৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে ৬ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২৪১ কোটি ৫২ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রেলের ২১ ইঞ্চিন আধুনিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় রেলের ২১টি এমজি লোকোমোটিভ পুনর্বাসনের মাধ্যমে নবরূপায়ণ করা হবে। এতে লোকোমোটিভগুলোর কর্মক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি চলাচলে গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে যাত্রীসেবা নিশ্চিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ রেলওয়ের ২১টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ নবরূপায়ণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। জানুয়ারি ২০১৯ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে সমন্বিতভাবে সরকারি অফিস স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া ছোট, মাঝারি ও বড়—এই তিনভাবে ভাগ করে জেলা সদরের সরকারি অফিসগুলো যেন একই নকশার হয়, সেই নির্দেশনাও প্রদান করেছেন তিনি।একনেকে প্রকল্পগুলো হলোএকনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো বামনডাঙ্গা (গাইবান্ধা)-শঠিবাড়ী-আফতাবগঞ্জ জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন জোনের প্রধান সংযোগ সড়কগুলো প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। অফিসার্স ক্লাব, ঢাকার ক্যাম্পাসে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় হবে ২২৮ কোটি টাকা। মানিকগঞ্জ বহুতলবিশিষ্ট সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি টাকা।ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯৮ কোটি টাকা। দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনর্নির্মাণ, কোনাবাড়ী, গাজীপুর প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১ কোটি টাকা। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৯ কোটি টাকা। বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে ২০০ কোটি টাকা। ওয়েস্ট জোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও আপগ্রেডেশন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় মাহমুদা বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামী দুলাল গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।সখীপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, নড়িয়া উপজেলার শরিফ হাওলাদারের মেয়ে মাহমুদা বেগম। ১০ বছর আগে পাশের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরভাগা হাওলাদারকান্দি গ্রামের দুলাল গাজীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাদের তিন সন্তান আছে। দরিদ্রতা নিয়ে প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হতো। গত রোববার মাহমুদার সঙ্গে দুলাল গাজীর ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে দুলাল মাহমুদাকে মারধর করেন। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও পেটে লাথি মেরে আহত করা হয় তাঁকে। এতে মাহমুদা অচেতন হয়ে পড়েন।অচেতন অবস্থায় রাতেই মাহমুদার মৃত্যু হয়। মাহমুদা মারা যাওয়ার পর তাঁর স্বামী দুলাল গাজী এলাকায় প্রচার করেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাহমুদার মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। গতকাল সোমবার ময়নাতদন্তে তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ওই দিনই দুলাল গাজীকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সোমবার রাতে দুলাল তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।এ ঘটনায় মাহমুদার বাবা শরিফ হাওলাদার বাদী হয়ে আজ সকালে সখীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুলাল গাজীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।মাহমুদার বাবা শরিফ হাওলাদার বলেন, ‘দুলাল আমার মেয়েকে প্রায়ই নির্যাতন করত। টাকা দাবি করত। ওর তিনটি শিশুসন্তানের মুখের দিকে চেয়ে আমরা সাধ্য অনুযায়ী দিতাম। দুলাল এভাবে আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলবে তা ভাবতেও পারিনি। মাহমুদার সন্তানদের কী জবাব দেব? তাদের কার কাছে রাখব?’সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, ডায়রিয়ায় মাহমুদার মৃত্যু হয়েছে, এমন প্রচারণা চালান তাঁর স্বামী। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। তাই তাঁর স্বামী দুলালকে পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়। ময়নাতদন্তে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাঁকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আইসক্রিম খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে ৯ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় আজ মঙ্গলবার অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম আল-আমিন (২০)।ধর্ষণের শিকার শিশুটি সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার তার মা বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে শিশুটি তার ছোট ভাইকে নিয়ে তাদের বাসার সামনে খেলছিল। পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া আল-আমিন আইসক্রিম খাওয়ানোর কথা বলে শিশুটিকে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। পরে দরজা বন্ধ করে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন তিনি। শিশুটি রক্তাক্ত অবস্থায় কান্নাকাটি শুরু করলে তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাড়িতে গিয়ে শিশুটি তার দাদির কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। এই ঘটনায় পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন মিলে অভিযুক্ত আল-আমিনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, শিশুটির মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার অভিযুক্ত আল-আমিনকে আসামি করে মামলা করেন। শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
সারা বিশ্ব যখন বিশ্বকাপ ক্রিকেট জ্বরে আক্রান্ত, ঠিক তখনই মার্কিন মুল্লুকে জমকালো ও বর্ণিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পর্দা উঠল দ্বিতীয় মিশিগান বেঙ্গলস কাপ ক্রিকেটের। দীর্ঘ শীত ও তুষার বৃষ্টির অপেক্ষার পর মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হার্টল্যান্ড ক্রিকেট মাঠে আয়োজিত হয় মিশিগানের বাংলাদেশি অভিবাসীদের জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।গত শনিবার (২২ জুন) মিশিগানের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে নয়টায় টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চিকিৎসক ও দার্শনিক ডা. দেবাশীষ মৃধা ও চিনু মৃধা। এরপর ছোট শিশুদের দিয়ে বেলুন উড়িয়ে শুরু হয় ২০১৯ সালের মিশিগান বেঙ্গলস কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই অনুষ্ঠিত হয় এবারের আসরের প্রথম ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ‘বি’ গ্রুপ থেকে বেঙ্গলস স্পারটান্স ও ওকল্যান্ড গোল্ডস।এই টুর্নামেন্টের আয়োজন নিয়ে মিশিগানের বাংলাদেশিদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করে যাচ্ছে। আয়োজনের স্পনসর করেছে দেবাশীষ মৃধা ও চিনু মৃধার মৃধা ফাউন্ডেশন এবং বেঙ্গলস অটো সেলস। আরও স্পনসর করেছেন কমিউনিটি নেতা গিয়াস তালুকদার।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিশিগান বেঙ্গলস ক্লাবের উপদেষ্টা ও জেনারেল মটরস কোম্পানির ম্যানেজার সাইদ ফয়সাল, ড. জাফরি আল ক্বাদরী, কমিউনিটি নেতা আবু হোসাইন জুয়েল, মারুফ মনোয়ার জয়, মাহমুদুল খান আপেল, রাহাত খান, প্রকৌশলী নেতা আবিদ রহমান, ড. কাজী তারেকুল ইসলাম, মোহাম্মদ মামুন, রসি মীর, হাসান খান, কৌশিক আহমেদ ও সাইফ সিদ্দিকী প্রমুখ। এ ছাড়া বিভিন্ন দলের অধিনায়ক, খেলোয়াড় ও ম্যানেজারেরা উপস্থিত ছিলেন।মিশিগানের বিভিন্ন শহরের প্রবাসী বাংলাদেশি-আমেরিকান ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত আটটি দল দুটি গ্রুপে টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে। প্রতি গ্রুপে রয়েছে চারটি দল। অংশগ্রহণকারী দলগুলো হচ্ছে মিশিগান বেঙ্গলস হিরোস, মিশিগান বেঙ্গলস ওয়ারিয়রস, মিশিগান কোবরা, ওকল্যান্ড গোল্ডস, মিশিগান টাইটানস, সাগিনাও টাইগার্স, মিশিগান অ্যাভেঞ্জারস ও বেঙ্গল স্পারটান্স।টুর্নামেন্ট চলবে আগামী তিন মাস। প্রতি শনিবার ও রোববার দুটি করে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।টুর্নামেন্ট সফল করতে আয়োজকেরা সবার সহযোগিতা কামনা করে আশা প্রকাশ করেন, ক্রিকেটপাগল প্রবাসী বাংলাদেশিরা মাঠে যাবেন, খেলবেন ও প্রিয় দলকে সমর্থন করবেন।
কানাডার টরন্টোয় সবজি চাষবিষয়ক কর্মশালায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া লক্ষ করা গেছে। কমিউনিটির উন্নয়নে সবজি চাষবিষয়ক সর্বশেষ কর্মশালা গত শনিবার (২২ জুন) টরন্টোর ৩০৭৯ ডেনফোর্থ অ্যাভিনিউয়ের এক্সেস পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয়। কানাডিয়ান সেন্টার ফর ইনফরমেশন অ্যান্ড নলেজ আয়োজিত এই কর্মশালায় টরন্টো ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ জন অংশগ্রহণ করেন। এর আগে একই বিষয়ে অনুষ্ঠিত চারটি কর্মশালায় প্রায় দেড় শ প্রবাসী অংশগ্রহণ করেন।গত শনিবারের কর্মশালা পরিচালনা করেন অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি অ্যাগ্রিকালচারিস্ট ইন কানাডার (আবাকান) যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, সবজি চাষ ও গার্ডেনিংয়ের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়। এটা ওষুধের চেয়েও ভালো কাজ করে। বিশেষ করে সবজি চাষে শারীরিক পরিশ্রমের ফলে ডায়াবেটিস, ডিপ্রেশনসহ অনেক রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আর বিভিন্ন ধরনের সবজি যেমন টমেটো, ক্ষীরা, লাউ, কুমড়া, বিভিন্ন শাকসহ অনেক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধেও দারুণ কাজ করে।কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা কানাডায় সবজি চাষ করতে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন সে ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। আর এক এক করে এসব প্রশ্নের উত্তর দেন গোলাম কিবরিয়া ও ড. শিরীন নুরুন নাহার খানম। কর্মশালায় ব্যাপক জনসমাগম ও আগ্রহী লোকজনকে বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে ফেসবুকে এ বিষয়ে অচিরেই একটি লাইভ অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দেন কানাডিয়ান সেন্টারের উপদেষ্টা আসমা আহমেদ।উল্লেখ্য, পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে কানাডায় এখন অনেকে বাড়ির আঙিনা, সিটি করপোরেশনের বরাদ্দকৃত জায়গা, খামার কিংবা বারান্দায় নানা জাতের দেশীয় সবজি চাষ করছেন। সবজি চাষের উপকারিতা, এর উপযুক্ত সময়, বীজ বা চারা রোপণপ্রক্রিয়া, এর পরিচর্যা সম্পর্কে আগ্রহীদের তথ্য প্রদান করার লক্ষ্যে কানাডিয়ান সেন্টার এই কর্মশালার আয়োজন করেছে। এতে সহায়তা করছে সার্ভিস কানাডা।সবজি উত্তোলন নিয়ে পরবর্তী কর্মশালা আগামী ১৩ জুলাই একই সময় একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। অংশগ্রহণে আগ্রহীরা আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে ৪১৬-২৬৭-৩০২৬ ফোন নম্বরে অথবা <cciktoronto@gmail.com> ই-মেইলে যোগাযোগ করে নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। সেমিনারে হালকা খাবার পরিবেশন করা হবে। আর শুধু নাম নিবন্ধনকারী দূর-দূরান্ত থেকে আগতদের যাতায়াতের জন্য টিটিসি টোকেন দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে যাঁরা আদর্শবাদিতার ঝান্ডা সমুন্নত রেখে গণমানুষের মুক্তির আন্দোলনে আজীবন নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রয়াত কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ ছিলেন অন্যতম। মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে ছোটবেলা থেকে সমাজতন্ত্রের যে দীক্ষায় তিনি উজ্জীবিত হয়েছিলেন, কোনো লোভ–লালসার কাছে সেই চেতনা তাঁর বিসর্জিত হয়নি। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও অসততার দাপটে সুস্থ ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার একেবারেই কঠিন হয়ে পড়া এই সময়টাতে এমন একজন রাজনীতিকের অকালমৃত্যু জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সদ্যপ্রয়াত সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ স্মরণে মন্ট্রিয়েলে গত রোববার (২৩ জুন) অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন। স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ও গবেষক তাজুল মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তারা বলেন, সহজ–সরল, সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত এই মানুষটির সমগ্র চিন্তাচেতনায় ছিল শোষণ বঞ্চনাহীন একটি সুষম সমাজব্যবস্থা কায়েম করা। রাষ্ট্রীয় ও বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় কাজটি সহজ নয় জেনেও তিনি তাঁর লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি। তাঁরা এই সময়টায় তাঁর মতো সত্যিকারের অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল রাজনীতিকের খুব প্রয়োজন ছিল উল্লেখ করে বলেন, জাতির জন্য এটা দুর্ভাগ্যজনক যে একে একে আমরা এই ভালো মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলছি।সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও লেখক ড. কাবেরী গায়েন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক এজিএস নাসিরুদ্দোজা, আওয়ামী লীগের কানাডা শাখার উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শ্যামল দত্ত, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোহাম্মদ মহিবুর রহমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ফণীন্দ্র কুমার ভট্টাচার্য, প্রকৌশলী ড. সৈয়দ জাহিদ হোসেন, বিএনপির কানাডা শাখার সাবেক সভাপতি ফয়সল আহমদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার দেব, ছাত্র মৈত্রীর সাবেক নেতা জিয়াউল হক জিয়া ও কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদের ভাই সাবেক আমলা সৈয়দ আবু আজফার আহমদ।সঞ্চালনা করেন উদীচীর মন্ট্রিয়েল শাখার সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাবেক সভাপতি বাবলা দেব।কাবেরী গায়েন বলেন, কমরেড আবু জাফর আহমেদ যে রাজনৈতিক আদর্শের মানুষ ছিলেন, আমিও মনেপ্রাণে সেই ধারাই লালন করি। সুন্দর সমাজ সাজানোর স্বপ্ন ছিল তাঁর মধ্যে। একটি মানবিক আদর্শের চেতনাকে আজীবন আঁকড়ে রেখেছিলেন তিনি। নানা প্রতিকূল-প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও জাফর ভাই বিশ্বাস করতেন, মেহনতি মানুষের মুক্তি কেবলই সমাজতন্ত্রের বিপ্লব দ্বারাই সম্ভব। তিনি বলেন, প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক চাহিদাসমূহ পূরণ, সম–অধিকার, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন সুদূরপরাহত রেখে শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়েই দেশ আর জাতির সমৃদ্ধি আসে না। তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ে দেশে–বিদেশে সব বিবেকবান ও প্রগতিশীল মানুষকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।নাসিরুদ্দোজা বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল যেভাবে কলুষিত হচ্ছে, প্রগতিশীলতার মুখোশ পরে প্রতিক্রিয়াশীল কর্মকাণ্ড যেভাবে রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে, জাতি বিনাশী এই প্রক্রিয়া রোধ করতে হলে কমরেড জাফর ভাইয়ের মতো আদর্শিক মানুষের জাগরণ দরকার। কমরেড আবু জাফরকে আপাদমস্তক একজন নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিক হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর অবদান জাতি চিরদিন মনে রাখবে।ফণীন্দ্র কুমার ভট্টাচার্য বলেন, কমরেড জাফর আহমেদ ও আমি একই শহরের মানুষ। বয়সে আমার ছোট হলেও একসময় একই সঙ্গে একই ধারার রাজনীতি করেছি। ফলে তাঁকে খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আদর্শে অবিচলতা, সততা, নিষ্ঠা ও ভদ্রতাবোধ ছিল অসাধারণ। শুধু রাজনীতি নয় মৌলভীবাজারের সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতেও তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করতে হয়।শ্যামল দত্ত বলেন, বর্তমান কলুষিত রাজনীতির বৃত্ত থেকে দূরে থাকা পরিচ্ছন্ন এই মানুষটি ইচ্ছে করলেই ক্ষমতা আর অর্থবিত্তের রমরমা অবস্থানে যেতে পারতেন। কিন্তু সে পথে তিনি যাননি। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও কৃষক–শ্রমিক–মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই ছিল কমরেড জাফর আহমেদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত অবিচল ছিলেন তিনি।সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এ যুগে জাফর আহমেদের মতো মানবিক লোকগুলোই আমাদের বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়। ঘন অমানিশার মধ্যেও তাঁরা মিটিমিটি আলো জ্বালানো তারকা। জাফর ভাইয়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আমরা আবারও আশা জাগানিয়া আরেকটি তারা হারালাম।ফয়সল আহমেদ চৌধুরী বলেন, জাফর ভাই রাজনীতির একজন শুদ্ধ মানুষ। শুধু রাজনীতি নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও তাঁর ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তিনি তাঁর আদর্শের সঙ্গে কখনো আপস করেননি। সাংগঠনিক দক্ষতায় তিনি তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের শীর্ষে পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তাঁকে হারিয়ে মৌলভীবাজার তথা বাংলাদেশ একজন আলোকিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী জননেতাকে হারাল বলে মন্তব্য করেন তিনি।গোলাম মোহাম্মদ মহিবুর রহমান বলেন, সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের শুধু বীর সেনানীই ছিলেন না, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধীসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল সক্রিয়। তাঁর অমায়িক ব্যবহারের কারণে দলমত–নির্বিশেষে মৌলভীবাজারের প্রতিটি মানুষ হৃদয় দিয়ে তাঁকে ভালোবেসেছে।সৈয়দ আবু আজফার আহমেদ তাঁর ভাইকে একজন নির্লোভ ও জনকল্যাণকামী এক ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, মানুষটি তাঁর জীবনের পুরোটা সময়ই ব্যয় করেছেন জনগণের মঙ্গলের জন্য।জিয়াউল হক জিয়া বলেন, সকল প্রকার শোষণ–বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখানো মানুষের বড় অভাব এখন পৃথিবীতে। এই অস্থির সময়ের মধ্যেও যে কজন মানুষ আলোকবর্তিকার মতো আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ দেখান, তাঁদের মধ্যে কমরেড জাফর আহমেদ ছিলেন অন্যতম।স্বপন কুমার দেব কমরেড জাফর আহমেদের কথা বলতে গিয়ে রাজনৈতিক কারণে ১৯৭৬ সালে একই সঙ্গে প্রায় ছয় মাস কারাবরণের স্মৃতিচারণা করেন।সভাপতির বক্তব্যে তাজুল মোহাম্মদ বলেন, আমাদের সময়ের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে জাফর ভাই ছিলেন আমাদের কাছে একটি স্বপ্নময় আদর্শের নায়ক। তাঁর একনিষ্ঠতা, দলীয় কর্মকাণ্ডের দক্ষতা তাঁকে জেলা থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দায়িত্বশীল মূল পদটিতে আসীন করে। নষ্ট রাজনীতির দুষ্ট খেলা তাঁর আদর্শ থেকে তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি। তিনি বলেন, তাঁর রাজনৈতিক দর্শন লালনের মধ্য দিয়েই আমরা পারি তাঁকে প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে।বাবলা দেব বলেন, জাফর ভাইয়ের হাত ধরেই আমার ছাত্ররাজনীতিতে আসা। আশির দশকে আমার মতো মৌলভীবাজারের অগণিত ছাত্র–যুবক তাঁর আদর্শের পথ ধরেই একটি বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্নে রাজপথে নেমেছিলাম। দীর্ঘদিন স্বদেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে। তবু এই দূর পরবাসে থেকেও ভাবতাম আমাদের জাফর ভাই আছেন মাথার ওপর ছায়ার মতো অভিভাবক হয়ে। এখন জাফর ভাইহীন মৌলভীবাজার আমার কাছে মনে হয় শূন্য এক জনপদ।সভায় আলেচনা ছাড়াও ছিল শোকাশ্রিত কবিতা আবৃত্তি ও সংগীত। কবিতা আবৃত্তি করেন আফাজ উদ্দিন তোতন ও শামসাদ রানা। সংগীত পরিবেশন করেন মুনমুন দেব, শেলি দেব, পুষ্পিতা ঘোষ চম্পা ও জয়ন্ত ভৌমিক জয়।সভার শুরুতে কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদের প্রতিকৃতির সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন, পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। সবশেষে প্রদর্শন করা হয় তাঁর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি স্লাইড শো।শোকসভায় দল–মত–অঞ্চলনির্বিশেষে প্রচুর লোক উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য, কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ গত ২৯ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
এক মাস পূর্ণ হলো ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বহীনতার। কবে শতাব্দী প্রাচীন এই দল নেতৃত্ব প্রশ্নের মীমাংসা করবে অজানা। কিন্তু তারই মধ্যে রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক তৎপরতায় কিছুটা হলেও দলীয় মহলে আশা সৃষ্টি করেছে। কারণ, তিন রাজ্যের নেতাদের পাশাপাশি সেই রাজ্যগুলোর ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে রাহুল বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।দলীয় সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনে রাহুল দেখা করবেন মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও দিল্লির নেতৃত্ব ও এই রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতাদের সঙ্গে। কংগ্রেস সদর দপ্তরে সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ঝাড়খন্ডের নেতাদের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন। এই চার রাজ্যেই এই বছরের শেষ ও আগামী বছরের গোড়ায় বিধানসভার ভোট। দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যগুলোর নেতারা দিনকয়েক ধরেই রাহুলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য। রাহুলকে তাঁরা ‘দেশ ও দলের স্বার্থে’ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধও জানিয়েছেন।নির্বাচন বিপর্যয়ের যাবতীয় দায় মাথায় নিয়ে গত মাসের ২৫ তারিখ কংগ্রেস ওয়ার্কিং বৈঠকে রাহুল সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, দায় ও দায়িত্ব পদাধিকারীর নেওয়া দরকার। সেই দায় তিনি নিচ্ছেন। দলকে তিনি জানিয়ে দেন, পরিবারের কেউ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব নেবেন না। কে বা কারা দায়িত্ব নেবেন ওয়ার্কিং কমিটি তা ঠিক করবে। এক মাস কেটে গেলেও ওয়ার্কিং কমিটি সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। নানাবিধ চাপ সৃষ্টি ও অনুরোধ, উপরোধ, দাবি সত্ত্বেও রাহুল সিদ্ধান্ত বদলে নমনীয় হননি। লোকসভার নেতা হতেও রাজি হননি। কিন্তু ঠিক এক মাসের মাথায় রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হওয়াকে দল ‘ইতিবাচক’ বলে মনে করছে। এমনও ভাবা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত রাহুল হয়তো মন বদলাতে পারেন।কিন্তু রাহুল রাজি না হলে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। সে ক্ষেত্রে সময় নষ্ট না করে সেই বৈঠক ডাকা উচিত বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন। মোটামুটি যে বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়াভাবে দলের শীর্ষ নেতারা একমত, তা হলো চার-পাঁচজন নেতাকে নিয়ে একটা ‘কলেজিয়াম’ তৈরি করা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সেই ‘কলেজিয়াম’ নেবে। পাশাপাশি, সভাপতি পদের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে। সে জন্য গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এআইসিসির অধিবেশন ডাকতে হবে।আপাতত ঠিক আছে, পরশু বৃহস্পতিবার, মহারাষ্ট্র এবং পরের দিন, শুক্রবার, হরিয়ানা ও দিল্লির নেতাদের সঙ্গে রাহুল আলোচনায় বসবেন। ইতিমধ্যেই উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটকের প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য রাজ্য কমিটিও পুনর্গঠনের উদ্যোগ চলছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চলতি মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট আগামী ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবে। ওই দিন সকাল সোয়া সাতটায় ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানের বিজি-৩০০১ ফ্লাইটটি ঢাকা ছাড়বে।বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। তাঁদের মধ্যে বিমানের ফ্লাইটে যাবেন ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন। প্রত্যেক হজযাত্রী ৪৬ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।আজ মঙ্গলবার বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জানান, প্রত্যেক হজযাত্রী বিনা মূল্যে সর্বাধিক দুটি ব্যাগেজে ২৩ কেজি করে মোট ৪৬ কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই প্রতিটি ব্যাগেজের ওজন ২৩ কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হাজীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি দেশে আসার পর তাঁদের কাছে দিয়ে দেওয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই হাজিরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।ধারালো বস্তু ব্যাগেজে নেওয়া যাবে না উল্লেখ তাহেরা খন্দকার জানান, যেকোনো ধারালো বস্তু যেমন—ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন অ্যারোসল এবং ১০০ (এম এল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না। এ ছাড়া কোনো প্রকার খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নেওয়া যাবে না। লাগেজ স্যুটকেস অথবা ট্রলিব্যাগ হতে হবে। কোনো অবস্থায় গোলাকৃতি, দড়িবাঁধা ব্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির ব্যাগেজ গ্রহণযোগ্য হবে না।প্রথমবারের মতো এ বছর কিছু ফ্লাইটের জেদ্দা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঢাকা থেকেই সম্পন্ন করা হবে। এ জন্য সৌদি আরবের একটি ইমিগ্রেশন টিম ঢাকায় অবস্থান করবে। এ বছর বিমান হজযাত্রীদের উড়োজাহাজের সামনের অপেক্ষাকৃত বড় ও আরামদায়ক নিশ্চিত আসন নেওয়ার ক্ষেত্রে ওয়ানওয়েতে ১০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ২০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের টিকিট কেনার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে ২০০ মার্কিন ডলার এবং যাত্রার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা পরিবর্তনের জন্য ৩০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাড়তি মাশুল আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। নির্ধারিত ফ্লাইটে না গেলে টিকিটের অর্থ ফেরত দেওয়া হবে না। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটগুলোর চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। এ বছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত স্লটের বাইরে অতিরিক্ত কোনো ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেবে না বলে জানিয়েছে।বিমানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বছর বিমানের ফ্লাইটে ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী যাবেন। তাঁদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৭ হাজার ১৯৮ জন ব্যালটি হজযাত্রী এবং বাকি ৫৬ হাজার ৪০১ জন নন-ব্যালটি হজযাত্রী, যাঁরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। বিমানের চারটি নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা জেদ্দায় যাবেন। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক সাত ঘণ্টা। দুই মাসব্যাপী হজফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৬৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, এর মধ্যে ৩০৪টি ডেডিকেটেড এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকে এ বছর যথাক্রমে ১৯টি ও ০৩টি হজ-ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হজ–পূর্ব মোট ১৮৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১৫৭ এবং শিডিউল ৩২)। হজ–পরবর্তী ১৪৭টি ফ্লাইট চলবে ১৭ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১৪৭ এবং শিডিউল ২৯)। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মদিনা ১৮টি ও মদিনা থেকে বাংলাদেশে ১৫টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।এদিকে ৪ জুলাই উদ্বোধনী হজ ফ্লাইটের আগে বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ হজযাত্রীদের বিদায় জানাবেন।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা থেকে শহর পর্যন্ত আজ মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বিআরটিসি ডাবল ডেকার বাস সার্ভিস। আজ মঙ্গলবার সকালে মুক্তাগাছা উপজেলার ভাবকির মোড় থেকে বাস সেবার উদ্বোধন করেন ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনের সাংসদ ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কে ১৬টি বিআরটিসি ডাবল ডেকার বাস চলবে। তবে আজ চারটি বাসের মাধ্যমে এ সেবা উদ্বোধন করা হয়েছে। মুক্তাগাছা উপজেলার ভাবকির মোড় থেকে ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল মোড়, পাটগুদাম, চরপাড়া হয়ে মাসকান্দা এলাকা পর্যন্ত যাবে বাসগুলো। পরে আবার একই পথ হয়ে চলে যাবে মুক্তাগাছা। এই পথের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা।আনুষ্ঠানিকভাবে বাস সেবা চালুর অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বাসগুলো জনগণের জন্য দেওয়া হয়েছে। এগুলোর সুরক্ষা করা জনগণের দায়িত্ব। কেউ ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে বিনা টাকায় ভ্রমণ করবেন না। উদ্বোধনের পর একটি বাসের প্রথম যাত্রী হয়ে বাসে চড়েন তিনি। তিনি ওই বাসে চড়ে ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল মোড়ে নামেন। উদ্বোধনী যাত্রার সময় তিনটি বাস একসঙ্গে মুক্তাগাছা থেকে ময়মনসিংহে আসে। ওই তিনটি বাসের সব যাত্রীর ভাড়া পরিশোধ করেন তিনি।ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কে বিআরটিসি বাস চালু হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মুক্তাগাছা থেকে ময়মনসিংহে চলাচল করেন। ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছায় এত দিন কোনো বাস সার্ভিস ছিল না। ময়মনসিংহ থেকে টাঙ্গাইল ও উত্তরবঙ্গের দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। ওই বাসগুলো মুক্তাগাছা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাত্রী বহন করে না। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চলাচল করতে হয়। এ সুযোগে অটোরিকশার চালকেরা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করেন। বাসগুলো উদ্বোধনের পর সাধারণ মানুষ তাই উচ্ছ্বসিত।
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হতে পারে আগামী ২০, ২১ বা ২২ জুলাই। শিক্ষা বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে এই তিন দিনের যেকোনো এক দিন ফল প্রকাশের অনুমোদন চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। সম্ভাব্য এই তারিখগুলোর মধ্যে যেদিন প্রধানমন্ত্রী সময় দিয়ে সম্মতি দেবেন, সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে।প্রথা অনুযায়ী ফল প্রকাশের দিন প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেওয়া হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফল প্রকাশ করা হয়। যদিও এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সফরে থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতে ফল প্রকাশ করা হয়। অবশ্য তিনি মুঠোফোনে ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে কথা বলেন।গত ১ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শুধু এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৪৭ জন।
বিয়ের কন্যা বলে কথা! মেহেদি রাঙা চুড়িভর্তি হাতে শপথ নিলেন ভারতের বাংলা ছবির জনপ্রিয় তারকা ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভার নবনির্বাচিত সদস্য নুসরাত জাহান। এ সময় সাদা-বেগুনি পাড়ের শাড়ি পরেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে নির্বাচিত এই সাংসদ। সিঁথিতে ছিল চওড়া সিঁদুর। শপথ শেষে স্বামী নিখিল জৈনকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় ফিরেছেন নুসরাত। এর আগে ১৯ জুন সন্ধ্যায় তুরস্কের রোমান্টিক বন্দর শহর বোদরুমের সিক্স সেন্সেস কাপলাঙ্কায়া রিসোর্টে অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করেছেন নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈন। পরদিন একই স্থানে খ্রিষ্টান রীতিতে বিয়ে হয়েছে তাঁদের। এবার কলকাতায় তাঁদের বিয়ে নিবন্ধন করা হবে।বিয়ের ব্যস্ততার কারণে অধিবেশন শুরুর এক সপ্তাহ পর সংসদে গিয়ে শপথ নিতে হলো নুসরাত জাহানকে। তাঁর বিয়েতে সঙ্গী হয়েছিলেন আরেক নায়িকা মিমি চক্রবর্তী। তিনিও একই দিন শপথ নিয়েছেন। ভারতের বিভিন্ন সংবাদ সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, যেসব সাংসদ এখনো শপথ গ্রহণ করেননি, তাঁরা যেন আগে শপথ নেন। তখনই এগিয়ে যান মিমি ও নুসরাত। বাংলায় শপথবাক্য পাঠ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই সাংসদ।লোকসভায় সাদা সালোয়ার-কামিজ পরে হাজির হয়েছিলেন যাদবপুর থেকে নির্বাচিত মিমি চক্রবর্তী। অন্যদিকে নুসরাতের সাজ ছিল চোখে পড়ার মতো। ভারতের সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়, সাধু বাংলা ভাষায় শপথের বাক্যগুলো পাঠ করে ‘জয় বাংলা’ বলে শেষ করেন। এরপর নির্ধারিত কাগজে স্বাক্ষর করে ওম বিড়লাকে পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন।১৭ জুন ছিল লোকসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান হয়। পশ্চিমবঙ্গের বাকি সাংসদরা উপস্থিত থাকলেও সংসদের প্রথম দিনেই ছিলেন না মিমি ও নুসরাত। এক সপ্তাহ পর দুই সাংসদ-অভিনেত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।নুসরাতের বিয়ের সময় তাঁর আসন বসিরহাটের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শোনা যাচ্ছে, কলকাতার আলীপুরে নতুন একটি ফ্ল্যাটে থাকবেন নুসরাত-নিখিল। তাঁদের ফ্ল্যাট সাজানোর কাজও শেষ। নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈনের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে আগামী ৪ জুলাই, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়, কলকাতায় আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে। দিল্লি থেকে ফিরে বসিরহাট যাবেন নুসরত।রাজনীতি এবং বিয়ে। খুব কম সময়ের মধ্যে জীবনের দুটো নতুন গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু করলেন নুসরাত। কবে শুটিং ফ্লোরে ফিরবেন, তা অবশ্য এখনো জানাননি তিনি।
বিশ্বকাপে এবার দুর্বল আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। পরশু পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ৭ বলে ওভার দিয়েছেন মাঠের দুই আম্পায়ারক্রিকেট বিশ্বকাপে এবার বাজে আম্পায়ারিং নিন্দা কুড়োচ্ছে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে আম্পায়ারের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল ‘নো বল’। কাল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচেও বিতর্ক হয়েছে আম্পায়ারদের ‘সফট সিগন্যাল’ নিয়ে। আর পরশু লর্ডসে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে তো ওভার হয়েছে ৭ বলে!পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে মাঠের দুই আম্পায়ার ছিলেন শ্রীলঙ্কার কুমার ধর্মসেনা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জোয়েল উইলসন। পাকিস্তানের ইনিংসে ১৪তম ওভারে ৭টি বৈধ ডেলিভারিতে ওভার দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। তখন মাঠের দুই আম্পায়ারই বলের হিসেব রাখতে ভুল করেন। ভাগ্য ভালো, ওই ওভারের সপ্তম বলে কোনো রান হয়নি কিংবা উইকেট পড়েনি। তা না হলে বিতর্ক আরও বাড়ত।মাঠের আম্পায়ার ওভারের বলসংখ্যা গুনতে ভুল করলে আসলে কিছুই করার নেই। এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন ইংলিশ ক্রিকেটের খ্যাতনামা স্কোরার জেমস এমারসন, ‘রোববার (পরশু) আমি লর্ডসে ছিলাম না। তবে ঘটনাটা শুনেছি। ১৭.৫ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, আম্পায়ারেরা গুনতে ভুল করলে যেভাবে ওভার হবে সেটাই থেকে যাবে। অতিরিক্ত বলে রান কিংবা উইকেট পড়লে সেটি আসলে খেলার ভাগ্য।’এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারের কারণ হিসেবে ‘বাজে আম্পায়ারিং’কে দায়ী করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার কার্লোস ব্রাফেট। সে ম্যাচে ভুলটা করেছিলেন মাঠের আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে পঞ্চম ওভারে ক্রিস গেইলের বিপক্ষে তিন-তিনবার আঙুল তুলেছিলেন গ্যাফানি। গেইল দুবার বেঁচেছেন রিভিউ নিয়ে। তৃতীয়বার ভর করল দুর্ভাগ্য। রিভিউ নিলেও ‘আম্পায়ারস কল’ নামের বিষয়টি তাঁকে বাঁচতে দেয়নি।কিন্তু ভুলটা ধরা পড়ে একটু পরই। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল গেইল যে বলে আউট হয়েছেন,তা করার আগে মিচেল স্টার্ক করেছেন বিশাল এক নো বল। ক্রিজের অনেক বাইরে পা ফেললেও গ্যাফানির চোখ এড়িয়ে গেছে তা। যার মাশুল দিতে হয় গেইল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ফ্রি-হিট পাওয়ার কথা যেখানে, সেখানে গেইলকে ফিরতে হয় ড্রেসিং রুমে।পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে বিতর্কের খোরাক জুগিয়েছে সফট সিগন্যাল। ক্রিস মরিসের বল সজোরে পুল করেছিলেন হারিস সোহেল। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচটা তালুবন্দী করেই ট্রেডমার্ক দৌড় শুরু করেছিলেন ইমরান তাহির। তাহির একপ্রকার নিশ্চিতই ছিলেন, ক্যাচটা যথার্থভাবে ধরেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠানোর আগে মাঠের আম্পায়ার সফট সিগন্যাল দিলেন নট আউট। বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হতে পারেননি থার্ড আম্পায়ার। ফলে মাঠের আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেই নট আউট দেওয়া হয় হারিসকে।কাল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচেও দেখা গেছে একই দৃশ্য। আফগান অফ স্পিনারদের সামলাতে বাঁহাতি সৌম্য সরকারের বদলে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয়েছিল ডানহাতি লিটন দাসকে। সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণ করে ভালো শুরুও করেছিলেন লিটন। দুই চারে পৌঁছে গিয়েছিলেন ১৬ রানে। কিন্তু পঞ্চম ওভারে মুজিব উর রেহমানের বলে ঘটল বিপত্তি। বলটা হালকা ড্রাইভ করেছিলেন, শর্ট কভারে হাশমতউল্লাহ শহীদী সেটি ধরেই আউটের আবেদন করেন। লিটন নিশ্চিত ছিলেন না আউট হয়েছে কি না, দুই আম্পায়ারও পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য তাই থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হলো, কিন্তু তার আগে সফট সিগন্যাল দেওয়া হলো আউট। বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না থার্ড আম্পায়ার আলিম দার। শেষ পর্যন্ত মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যালের ওপর ভিত্তি করে লিটনকে আউটই দিয়ে দিলেন আম্পায়ার।কিন্তু সিদ্ধান্তটি নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে যথেষ্ট। বারবার রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, শহীদী তালুবন্দী করার সময় বলটা কিছু সময়ের জন্য মাটি ছুঁয়েছিল। থার্ড আম্পায়ার বারবার জুম করে দেখেও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না কিছুতেই। এসব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত সাধারণত ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই আসে। কিন্তু লিটনের ক্ষেত্রে হলো উল্টোটা। এবং সেটির পেছনে দায়ী মাঠের আম্পায়ারদের সফট সিগন্যাল।
ভোলা জেলা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন হচ্ছে। গঠনতন্ত্র অনুসারে চলমান কমিটি ও পদ বাতিল হওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এ কমিটি বাতিল করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ‘তৃণমূল নেতা-কর্মী’-এর ব্যানারে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। তাঁরা চলমান কমিটি বাতিল ও নতুন কমিটি গঠনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। দুপুর ১২টার দিকে শহরে তাঁরা বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ভোলা জেলা ছাত্রলীগের ‘তৃণমূল নেতা-কর্মী’-এর আহ্বায়ক মো. তৈয়বুর রহমান। তৈয়বুর রহমান বলেন, ২০১৫ সালের ৯ মে সম্মেলনের মাধ্যমে ১ বছর মেয়াদি ছাত্রলীগের সংক্ষিপ্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির বয়স ৪ বছর অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও কমিটি বাতিল হয়নি। চলমান কমিটির ১০ জন নেতাই পদে আসার পর থেকে সাংগঠনিকভাবে চরম অদক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। নানা অপকর্ম করেছেন। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, মাদক-সেবন ও মাদক বিক্রির অভিযোগ আছে। অনেকে আসামি হয়ে জেল খেটেছেন। তাঁরা প্রত্যেকে ব্যবসায়ী ও বিবাহিত।লিখিত বক্তব্যে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে বারবার ভোলার চলমান কমিটি বাতিলের জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা দিই-দিচ্ছি করে সময় ক্ষেপণ করছেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আনার জন্য আন্দোলনে নেমেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবিদুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, ভোলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিফ মাহমুদ (মারসেল), জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী জাকারিয়া হোসেন অমি, বোরহানউদ্দিন পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নেওয়াজ শরীফ কুতুব, ভোলা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।ভোলা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম চৌধুরী চাঁদাবাজির মামলায় জেলে আছেন। সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মাহমুদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি। জানা গেছে, রিয়াজ মাহমুদ বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তৈয়বুর রহমান ও যুগ্ম সম্পাদক আকবর হোসেন জানান, তাঁরা কর্মজীবনে চলে এসেছেন। সংসার সামলাচ্ছেন। তাই তাঁরাও ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতে থাকতে চাচ্ছেন না। তাঁদেরও দাবি কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করা হোক।
নওগাঁর রানীনগর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে একটি মামলা হয়েছে।রানীনগর থানায় করা মামলায় মোহন আলী (২৩) নামের এক যুবককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তিনি একই উপজেলার বাসিন্দা। মোহনের সঙ্গে আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। অভিযুক্ত মোহন ঘটনার পর থেকে পলাতক। মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোহন আলী ও স্কুলছাত্রীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মোহন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৭ জুন বিকেলে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে যান। এরপর বিভিন্ন স্থানে রেখে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। দুই দিন পর বিয়ে না করেই মেয়েটিকে বাড়িতে রেখে সটকে পড়েন মোহন। ঘটনা বুঝতে পরে মেয়েটির পরিবার মোহনসহ ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা সবাই পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে লিটন ঘোষ (৫০) নামের একজনের গলা কেটে কাটা মাথা নিয়ে থানায় হাজির হন লবু দাস (৪৬) নামের এক ব্যক্তি। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে। লবু মানসিক ভারসাম্যহীন পুলিশের ধারণা।লিটনের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ঘোষপাড়া গ্রামে। আর নাসিরনগর থানা-পুলিশের হেফাজতে থাকা লবু দাসের (৪৬) বাড়ি নাসিরনগর উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া গ্রামে।স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে লিটন নাসিরনগর উপজেলা সদরের ঘোষপাড়ার বাসিন্দা ভগ্নিপতি নেপাল ঘোষের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। আজ দুপুরে উপজেলা সদরের গৌর মন্দিরের ভেতরে পূজা করার জায়গায় তিনি শুয়েছিলেন। এ সময় লবু ধারালো দা দিয়ে লিটনের ঘাড়ে কোপ দিয়ে মাথা আলাদা করে ফেলেন। পরে সেই মাথা নিয়ে থানায় হাজির হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহের বাকি অংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন খান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিটনের ঘাড়ে কুপিয়ে হত্যা করে মাথা কেটে ফেলেন লবু। পরে নিজেই সেই কাটা মাথা নিয়ে থানায় হাজির হন। ২০১২ সালে এই ব্যক্তি আরেকটি খুন করেছেন বলে জানতে পেরেছি। তবে ওই ঘটনায় তাঁর কোনো সাজা হয়নি। কেন হয়নি সে সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। লবু মানসিক ভারসাম্যহীন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
পারভীন সুলতানা গত ১৯ জুন ফ্যাশানহাউসবিডি নামক একটি অনলাইন হাউস থেকে তিনটি কাতান শাড়ি কেনেন। শাড়ি তিনটির মূল্য ৫ হাজার ১৩০ টাকা। সেই অনুযায়ী টাকাও পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু প্যাকেট খুলে যে তিনটি শাড়ি পেলেন, তার সঙ্গে অনলাইনে অর্ডার করা শাড়ির কোনো মিল নেই। সবচেয়ে বড় কথা সেগুলো কাতান শাড়িও নয়, অত্যন্ত নিম্নমানের শাড়িগুলো।পারভীন প্রথম আলোকে বলেন, ১৯ জুন অনলাইনে অর্ডার করেন। পরদিন এস এ পরিবহনে শাড়ি তিনটি আসে। সেখানেই দাম ও অন্যান্য খরচ পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু হাতে পাওয়া প্যাকেট বাসায় এনে খুলেই বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন তিনি। এস এ পরিবহন থেকে যে মানি রিসিটটি দেওয়া হয়েছে সেখানেও প্রেরকের জায়গায় লেখা রয়েছে লুনা ফ্যাশান নামে একটি দোকানের নাম। ফ্যাশনহাউসবিডি’র কথা উল্লেখ করা নেই। পারভীন সুলতানা জানালেন, গত রোববার তিনি জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর ‘অনলাইন শপিং হাউসের বিরুদ্ধে অর্ডারমাফিক পণ্য না দেওয়ায়’ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।পারভীন সুলতানা জানালেন, ‘বাসায় এসে প্যাকেট খুলে দেখি একেবারে অন্য তিনটা শাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করলাম, ফোন ধরল । সমস্যা বলার পর মেসেঞ্জারে উত্তর দিল-‘ শিট,ভুল হয়ে গেছে, আমরা এক্সচেঞ্জ করে দিব’। আসল শাড়িগুলো আবার এস এ পরিবহনে পাঠানো হবে বলে জানায়। কিন্তু ২২ জুন বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও এস এ পরিবহন থেকে ফোন না আসায় আবার ওদের ফোন দিলাম। কিন্তু ফোন ধরছে না। অন্য ফোন থেকে ফোন করলাম, তাও ধরছেনা। খুদে বার্তা পাঠালাম। মেসেঞ্জারে লিখলাম । মেসেঞ্জার তারা সিন করছে, কিন্তু উত্তর দেয় না। এরপর আমার মেসেঞ্জার বাউন্স হচ্ছে অর্থাৎ তারা আমাকে ব্লক করেছে।’পারভীন সুলতানা ঝুমা বললেন, ‘অনলাইনে যে শাড়ির ছবি তা অনেক সুন্দর ছিল। তবে অন্যান্য অনলাইন ফ্যাশন হাউসের তুলনায় দাম অনেক কম লেখা ছিল। তখন একবার খটকা লেগেছিল। তবে এভাবে ধরা খাব তা বুঝতে পারিনি। চেয়েছিলাম কাতান শাড়ি, আর আমাকে যেগুলো পাঠানো হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের শাড়ি। আকাশ-পাতাল ফারাক।’অনলাইন ফ্যাশান হাউস বিডির ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ,সাভার হেমায়েতপুর হাউজিং কমপ্লেক্স, লেভেল ৪/৭১৪ ।ই–কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার এই ফ্যাশন হাউসটির বিরুদ্ধে পারভীন সুলতানার অভিযোগ প্রসঙ্গে বললেন, ‘অভিযোগ সম্পর্কে জানার পর পেজের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি। পেজে লাইকের সংখ্যা খুব কম। বুঝতে পারছি এরা নতুন অথবা মানুষকে ঠকানোর জন্যই এসেছে। এ ধরনের কয়েকজনের জন্য আমাদের ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষতি হচ্ছে। তবে পেজের লোকজন সরি বলেছেন, বলেছেন সঠিক পণ্য পাঠিয়ে দেবেন।’নাসিমা আক্তার বললেন, ‘এই ফ্যাশন হাউসটি ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে, আমরা এই ধরনের পেজ চিহ্নিত করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেব, এ ছাড়া আমরা আমাদের পেজেও বলে দেব, যাতে এই ধরনের পেজে কেউ লেনদেন না করেন। আমাদের সদস্য হলে ভোক্তাদের ঠকাতে সাহস পেত না। ক্রেতাদেরও অনলাইন থেকে পণ্য কেনার আগে সচেতন হতে হবে। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্যভুক্ত কিনা তাও একটু দেখে নিতে পারেন।’প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ফ্যাশন হাউসটির পেজে দেওয়া টেলিফোন নম্বরে ফোন করলে একজন জানালেন তিনি সেখানের কর্মচারী। পেজের মালিকের ফোন নম্বর দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে।
বাংলাদেশকে ডুবোতে চেয়েছিলেন গুলবদিন নাইব। নিজেরা ডুবে যাওয়ার আগে অন্যকে নিয়েই ডোবার ইচ্ছা জানিয়েছিলেন আফগান অধিনায়ক। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে হেরে যাওয়ায় এখন হাসি ঠাট্টা হচ্ছে নাইবকে নিয়ে।ভারতের সঙ্গে দুর্দান্ত খেলেছে আফগানিস্তান। স্পিনারদের অসাধারণ পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল তাদের। তাই ভেবেছিল বাংলাদেশকে কুপোকাত করেই বিশ্বকাপ ২০১৯ থেকে বিদায় নেবে। কিন্তু সাকিবের দাপুটে পারফরম্যান্স আফগান অধিনায়কের আশা শেষ করে দিয়েছে। ম্যাচ শেষে তাই নাইবকে খোঁচাটা দিয়েই দিলেন রুবেল হোসেন।পরশু গুলবদিন নাইব বলেছিলেন বাংলাদেশকে নিয়েই নাকি ডুববেন। কিন্তু বাংলাদেশকে ডোবানো তো দূর, নিজেরাই হারিয়ে গেলেন অথই সাগরে। বিশ্বকাপে বড় বড় বুলি ছাড়লেও এখন পর্যন্ত কিছুই করেনি আফগানরা। গত পরশু ম্যাচ পূর্ববর্তী প্রেস কনফারেন্সে আফগান এই অধিনায়ক বলেছিলেন, 'হাম তো ডুবে হ্যায় সানাম, তুম কো লে কার ডুবেঙ্গে (আমরা তো ডুবেছিই, এখন তোমাকে নিয়েই ডুবব হে প্রিয়!)!’ এ নিয়ে ম্যাচ শেষে রুবেল টুইটারে নাইবকে ট্যাগ করে পেসার লিখেছেন, ‘দুঃখিত বন্ধু, আমরা তোমাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য অতটা আগ্রহী না।’ আফগানদের সঙ্গে বিদায় নেওয়ার মিছিলে যুক্ত হতে আগ্রহী নন তারা। নাইব এখন হয়তো মনে মনে আফসোসই করছেন। কথাটা না বললে তো আর খোঁচাটা খেতে হতো না তাঁকে।গতকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে ঠিকঠাক দাঁড়াতেই পারেনি আফগানরা। সাকিব আল হাসান একাই সব লন্ডভন্ড করে দিল। ব্যাট হাতে ৫১ আর বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২৯ রানে। এমন পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের জয় ছাড়া অন্য কোনো ফলের সম্ভাবনা জাগেনি।
বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য করতে ভারতে গিয়েছিলেন, আর সেখানেই বুকের ব্যথাটা বেড়ে যায় ব্রায়ান লারার।ক্রিকেটপ্রেমীরা আপাতত বিশ্বকাপ নিয়েই ব্যস্ত। কারা যাবে শেষ চারে ? এমন নানারকম হিসেব নিকেশ নিয়েই চলছে যত জল্পনা কল্পনা। তবে কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ব্রায়ান লারার খবরে যেন হঠাৎই সবকিছু বিষিয়ে গেল। বুকের ব্যথার কারণে সাবেক এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান আপাতত হাসপাতালে ভর্তি আছেন ।সবার মতো বিশ্বকাপ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ব্রায়ান লারাও । ভারতের স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে আইপিএলের ধারাভাষ্যের পর বিশ্বকাপেও ধারাভাষ্য করছিলেন এই ক্রিকেটার। সবকিছু ঠিকই ছিল, কিন্তু আজ সকাল বেলাতেই ঘটল অঘটন। হঠাৎই বুকের ব্যথা শুরু। আর তাতেই ভর্তি হতে হলো হাসপাতালে। এখন মুম্বাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতালে আছেন এই কিংবদন্তি। তবে বিপদ এখন নেই বললেই চলে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে ভালো আছেন তিনি।পিটিআই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘দুই বছর আগে তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানো হয়েছিল এবং আজ তার নিয়মিত চেক আপ করানো হয়েছে। কারণ সব সময়ই বুকের ব্যথার ভয় থাকে। তিনি ভালো আছেন এবং দ্রুত তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। গত কয়েক দিন কোনো টিভি শুটিং করেননি লারা। ’ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই খেলোয়াড়, সর্বপ্রথম টেস্ট ম্যাচে এক ইনিংসে চার শত রান করার রেকর্ড গড়েন। এখনো পর্যন্ত তাঁর সে রেকর্ড কেউ ছুঁতে পারেনি। ১৩১ ম্যাচ খেলা এই ব্যাটসম্যানের গড়টাও ঈর্ষণীয়। ৫২.৮৯ গড় নিয়ে করেছেন ১১৯৫৩ রান।
ইট তৈরিতে উর্বর মাটি ব্যবহার করা হয়। ফসল উৎপাদনকারী এই উর্বর মাটি ও পরিবেশ রক্ষা করতে হলে মাটিতে পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে সরকারি ভবনে ইটের বিকল্প ব্লক ব্যবহার বাড়াতে হবে। তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও এসব ব্লক ব্যবহারের প্রবণতা তৈরি হবে। এতে রক্ষা পাবে উর্বর মাটি ও পরিবেশ।আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে পরিবেশবান্ধব বিকল্প ইটের ব্যবহার’ শীর্ষক এক জাতীয় সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এইচবিআরআই), জগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশ। সুইস এশিয়া প্রকল্পের অধীনে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহমেদ বলেন, আমরা ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে যুগ উপযোগী করেছি। একদিকে যেমন উন্নয়ন করতে হবে আরেক দিকে পরিবেশও রক্ষা করতে হবে। ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্লকের ব্যবহারকে উৎসাহিত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ ব্লকের উৎপাদন করলে সে জন্য লাইসেন্স করতে হবে না। এ ছাড়া আরও কীভাবে মাটিতে পোড়ানো ইটের ব্যবহার বন্ধ করা যায় সে জন্য আমরা কাজ করছি। এটির ব্যবহার রোধে সচেতনতার ওপর জোর দেওয়ার কথা জানান তিনি।স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন তাঁর এক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, আমরা ইটের বিকল্প তৈরির কথা বলছি সঙ্গে সঙ্গে এর মানের কথাও ভাবতে হবে। ভালো মানের ব্লক ব্যবহার একবার জনপ্রিয় হলে মাটি ও পরিবেশ রক্ষা করা অনেকটাই সহজ হবে। আমাদের দেশের সরকার যেসব ভবন করে সেখানে ইটের বিকল্প ব্লক ব্যবহার করা শুরু করতে হবে। তাহলে মানুষ এটি ব্যবহারে আস্থা বাড়বে।ব্লকের ইতিবাচক দিক উল্লেখ করে এই স্থপতি বলেন, ব্লক ইটের থেকে অনেক হালকা তাই ভবন ভারী হবে না। এ ছাড়া ব্লকের ব্যবহারে নির্মাণ খরচ ২৫-৩০ শতাংশ কম হয়।বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। তিনি বলেন, কৃষি জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি ব্যবহার করে সনাতনী পোড়ানো ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে প্রতিবছর আমরা শতকরা ১ শতাংশ কৃষি জমি হারাচ্ছি। মাটি দিয়ে পোড়ানো ইটের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে হবে। মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নির্দেশাবলী জারি করে অপোড়ানো বিকল্প ইটকে সকল আইনি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পোড়ানো ইটের বিকল্প ইট প্রচলনে পরিবেশবান্ধব কাঁচামালের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।এইচবিআরআইয়ের মহাপরিচালক শামিম আক্তার বলেন, পোড়ানো ইটের নেতিবাচক দিক অনেক। সরকার ২০২০ সালের মধ্যে মাটিতে পোড়ানো ইটের ব্যবহার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে বলেছে সেটি মাথায় রেখে আমরা ইটের বিকল্প বিভিন্ন ব্লক তৈরি করেছি। এসব ব্লক ব্যবহারে বাড়ির নির্মাণ খরচ অনেকটাই কমে আসে। ইটের বিকল্প ব্যবহারে ইতিমধ্যে সরকার টেন্ডার শিডিউলে বিকল্প ইটের কথা অন্তর্ভুক্ত করার কাজ করছে। সরকারি বিভিন্ন ভবন নির্মাণে এই বিকল্প ইট ব্যবহার করলে মানুষের মধ্যে এটির ব্যবহারের প্রবণতা বাড়বে। এইচবিআরআইয়ের সাবেক পরিচালক আবু সাদেক বলেন, একটি ইটভাটা ১ হাজার ঘনফুট মাটি ব্যবহার করে গড়ে প্রায় ৮ হাজার ৫০০ ইট উৎপাদন করে। এতে যে পরিমাণ উর্বর মাটি নষ্ট হয় তাতে কৃষির ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতাবাচক প্রভাব পড়ে। ইট ভাটায় যে পরিমাণে কাঠ পোড়ানো হয় তাতে পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়। এটি কমাতে এইচবিআরআই যে বিকল্প ইট বা ব্লক তৈরি করেছে তা পরিবেশবান্ধব। এই ইট নদীর তলদেশের মাটি দিয়ে তৈরি হয় ও মাটি পোড়াতে হয় না।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর দিপংকর দত্ত। এ ছাড়া জগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের পরিচালক অদিতি আরজু, অক্সফামের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক খালিদ হোসেন, মীর কংক্রিটের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা মো. সেলিম।
জাতীয় পার্টির (জাপা) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) বলেছেন, ভবিষ্যতে জাপা একটি জোটের নেতৃত্ব দেবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, একটি সম্ভাবনাময় দল হিসেবে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট আগামী দিনে সরকার গঠন করতে পারবে।আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় কাদের এ কথা বলেন।জি এম কাদের বলেন, জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন না করলে বাংলাদেশে ভালো ফলাফল করা যাচ্ছে না। প্রতিটি দলই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করছে। কিন্তু বড় দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হলে ছোট দলগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়ে।কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে পারলে আমরা আমাদের স্বকীয়তা নিয়ে রাজনীতিতে একটি জোটের নেতৃত্ব দিতে পারব। রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণে জাতীয় পার্টি নিয়ামকশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আছে। আগামীতে জাতীয় পার্টি সাধারণ মানুষের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবে।’জি এম কাদের সভাপতির বক্তৃতায় আরও বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছরে জাতীয় পার্টি ক্ষমতার বাইরে থেকে ঘাত-প্রতিঘাত ও চাড়াই-উতরাই পেরিয়ে, সব প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।দল পরিচালনা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, দল চলবে গঠনতন্ত্রের নির্দেশনায়। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামত, পরামর্শ এবং শক্তিতে জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে।কাদের বলেন, ‘আমি পারিবারিক পরিচয়ে নেতৃত্ব দিতে চাই না। পার্টির সাধারণ কর্মীদের সমর্থন ও আস্থা নিয়ে জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে নিতে চাই। সবাইকে নিয়েই রাজনীতি করতে চাই আমরা। জামিদারি বা কর্তৃত্ব করতে রাজনীতি করি না। তৃণমূলে যারা জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করবে, তারাই সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে রাজনীতি করবে আমাদের সঙ্গে।’এ সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আওয়ামী লীগে পাঁচ ভাগ, বিএনপিতে চার ভাগ কিন্তু জাতীয় পার্টি একভাগ। জাতীয় পার্টিতে কোনো কোন্দল বা দ্বন্দ্ব নেই। কোনো বিভেদ নেই। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে আমরা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।’রাঙ্গা বলেন, ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর প্রতিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের পাশে থেকে নির্বাচন করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা পেয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে যে আচরণ করেছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। গতকালের বগুড়ার নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়ের ধারাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সরকারি দল।সকাল থেকেই রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মতিঝিল এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থান নেন। তাঁরা স্লোগানে স্লোগানে আশপাশের এলাকা মুখর করে তোলেন।প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতারা আজকের সভায় বক্তব্য দেন।আজ অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে সড়ক ও রেলপথের সব সেতু বা কালভার্টের অবকাঠামো জরিপের নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ষার আগেই নড়বড়ে সেতু চিহ্নিত করে যেন সংস্কার করা যায়, এ জন্যই এ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের জানান, ২৩ জুন রাতে উপবন এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে হতাহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী দেশের রেল ও সড়কপথের সব সেতু জরিপ করার নির্দেশ দিয়েছেন রেলপথ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু চিহ্নিত করে বর্ষার আগেই যেন মেরামত করা যায়, তাই এ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ দল বিজয় লাভ করায় সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিমসহ সব খেলোয়াড়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি টাইগারদের খেলার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ছাড়া সব পেশাদার খেলোয়াড় যেন সব সময় প্রশিক্ষণের সুযোগ পায়, এ জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষ প্রশিক্ষণ তহবিল গঠনের জন্য অর্থ ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।এম এ মান্নান জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোনো খেলোয়াড় অবসর গ্রহণের পরও যেন প্রশিক্ষণের সুযোগ পায়, এ জন্য প্রশিক্ষণ তহবিল গঠন করতে হবে। এতে তাঁরা শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে পারবেন। ফিটনেস ঠিকঠাক থাকলে তাঁদের অন্য কাজেও লাগানো যাবে। ফলে তাঁরা অবসর গ্রহণের পর অর্থকষ্টে ভুগবেন না।আরও পড়ুনকুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনা, হাসপাতালে ৪ লাশউপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটি ‘আম্মু ট্রেনের নিচে আটকে ছিল...’ বরমচালে অন্য রকম এক মানবতা
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন অংশে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার শত শত যান। এ কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণ ঝরে মানুষের। তা ছাড়া যানজটের সৃষ্টি হয়। মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, সুশাসন নিশ্চিত না হওয়ার কারণে মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা চলছে। আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে হলে মহাসড়কে তিন চাকার বাহন চলবে না। সড়ক ও জনপথ (সওজ) এবং হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ জুলাই রাজধানীতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে সড়ক তদারক কমিটির এক পর্যালোচনা সভায় মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (তিন চাকার বাহন) চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এরপর দেশের ২২টি মহাসড়কে অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা জেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়ক দুটি রয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই দুই মহাসড়কের মধ্যে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অটোরিকশা সব সময়ই চলে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে অটোরিকশা। কোথাও কোথাও এক পাশ থেকে আরেক পাশে পার হচ্ছে তিন চাকার বাহন। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নন্দনপুর, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের উত্তর রামপুর ইউটার্ন, সদর দক্ষিণ উপজেলা ফটক, সুয়াগাজী ও চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার এলাকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা পার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সুয়াগাজী এলাকা দিয়ে চলে অটোরিকশা। এর মধ্যে তিন বছর আগে সদর দক্ষিণ উপজেলা কমপ্লেক্স ফটকে সড়ক দুর্ঘটনায় মহাসড়ক পার হতে গিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়। সরেজমিনে গত শুক্রবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় উল্টো পথে নছিমন চলতে দেখা গেছে। চান্দিনা, রায়পুর এলাকায়ও তিন চাকার বাহন চলছে। কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের দেবীদ্বার, দেবপুর, কংশনগর, কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় তিন চাকার বাহন চলতে দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নন্দনপুর এলাকা দিয়ে কেবল ক্রসিং পার হওয়ার জন্য কুমিল্লা জেলা ও পুলিশ প্রশাসন অটোরিকশা চলাচলের অনুমোদন দেয়। এই মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার ১০৪ কিলোমিটারের মধ্যে এখান দিয়েই অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। কোনো ধরনের গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীদের সুবিধার্থে এই অনুমোদন মেলে। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী যখনই এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন তার আগে–পরে এখান দিয়ে অটোরিকশা পারাপার বন্ধ থাকে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্লাহ বলেন, তিন চাকার বাহনের কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এই মহাসড়ক দুটিতে অটোরিকশা চলাচল একেবারেই নিষেধ। বিষয়টি পুলিশ দেখছে। হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনই আমরা তিন চাকার বাহন জব্দ করছি। চান্দিনায় মহাসড়কের পাশে তিন চাকার বাহনের স্তূপ করা হয়েছে।’ বিআরটিএ কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আবু আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, ‘কুমিল্লা জেলায় বৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ১২ হাজারের মতো। লাইসেন্সবিহীন আছে আরও অন্তত ১০ হাজার। আমরা বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে থাকি। তখন হাইওয়ে পুলিশ আমাদের সঙ্গে থাকে। এরপরও ফাঁকে ফাঁকে অটোরিকশা চলে।’
ময়মনসিংহ নগরের মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুলের পুরোনো জিনিসপত্রের তালিকায় থাকা পুরোনো দুটি সিন্দুক বিক্রি করে দেওয়া হয়। এ খবর জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের সাবেক একাধিক ছাত্র বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিন্দুক দুটি ফেরত আনার জন্য অনুরোধ করেন। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্রীত সিন্দুক দুটি ফেরত এনেছে।মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রুকন উদ্দিন জানান, মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুলের একটি ভবন পরিত্যক্ত। ওই ভবনটি ভেঙে নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ করা হবে। পরিত্যক্ত ভবনের ভেতর থাকা সিন্দুক দুটি রাখার জায়গা ছিল না। বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে এগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। বিদ্যালয়ের সব নিয়ম মেনে এগুলো বিক্রি করা হয়। সিন্দুক বিক্রির টাকায় বিদ্যালয়ের বেঞ্চ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার সিন্দুক দুটি নগরের গোলপুকুর পাড় এলাকার একটি দোকানে বিক্রি করা হয়।সিন্দুক দুটি বিক্রির পর অপরিচিত নম্বর থেকে এক ব্যক্তি ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক আজকের বাংলাদেশ–এর বার্তা সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ পালকে ফোন করেন। ওই ব্যক্তি জানান, বিদ্যালয়ে থাকা ১১৬ বছরের পুরোনো সিন্দুক দুটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। পরে রবীন্দ্রনাথ পাল খুঁজে খুঁজে গোলপুকুর পাড়ের একটি পরিত্যক্ত জিনিসপত্র কেনার দোকানে সিন্দুক দুটি দেখতে পেয়ে ফেসবুকে লেখেন। গতকাল সিন্দুক দুটি আবারও স্কুলে ফিরিয়ে আনা হয়। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘সিন্দুক দুটিন বয়স ১১৬ বছর। এর ঐতিহ্যগত মূল্য অনেক বেশি। তাই সিন্দুক দুটি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলাম।’প্রধান শিক্ষক রুকন উদ্দিন বলেন, রবীন্দ্রনাথ পাল ও সাবেক জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস দুজনই মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুলের সাবেক ছাত্র। তাঁদের অনুরোধে সিন্দুক দুটি ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
প্রিয়জন মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে ৩টি বিষয় মেনে চলতে হবেএক. আসক্তির বিষয়টি গোপন করা যাবে না। সন্তান বা পরিবারের সদস্যের আচরণ সন্দেহজনক হলে দ্রুত মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসতে হবে ও পূর্ণ চিকিৎসা করাতে হবে।দুই. মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে ঘৃণা না করে পাশে থাকতে হবে।তিন. পরিবারকে ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ, আসক্ত ব্যক্তি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করতে পারে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিরও মাদক ছাড়ার ইচ্ছা থাকতে হবে।ব্যক্তিগত উদ্যেগ না থাকলে মাদক থেকে নিরাময় সহজ হয়।যারা জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসতে চায়, তাদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। এমন নয় যে আসক্ত ব্যক্তিরা কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে না। এর জন্য প্রয়োজন নিজের প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহযোগিতা। কিছুটা দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সা।ডিটক্সিফিকেশন, প্রত্যাহারজনিত উপসর্গ হ্রাস, ওষুধ, সহযোগী মানসিক সমস্যার চিকিৎসা, কাউন্সেলিং, সাইকোথেরাপিসহ বিভিন্ন উপায়ে ইয়াবায় আসক্ত ব্যক্তিদের সাফল্যেও সঙ্গে চিকিৎসা করা সম্ভবএ জন্য মাদকাসক্তি বিশেষজ্ঞ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সাইকোলজিস্ট, সাইকোথেরাপিস্ট, পরিবার, স্বজন শিক্ষক, আর প্রকৃত ভালো বন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরে বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে ইয়াবায় আসক্তরা সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে পারে। মাদকাসক্তির পরিণতিতাৎক্ষণিক ক্ষতি: আত্মবিশ্বাস বেশি মনে হওয়া, মনে আনন্দের ভাব, সময় ও স্থান সম্পর্কে ভ্রান্ত অনুভূতি,স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া, ভ্রান্ত বিশ্বাসদীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি: শারীরিক ক্ষতি ,মানসিক সমস্যা, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়সত্য গল্প রাকেশ ভৌমিক ও মাহমুদুর রহমান—দুজনের জীবনের গল্পে বেশ মিল। মাদকের চোরাবালি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে দুজনই এখন সুস্থজীবন যাপন করছেন। প্রথম আলো মাদকবিরোধী আন্দোলনের অংশ হয়ে তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন নতুন জীবনের সন্ধান।রাকেশের ঘুরে দাঁড়ানোয় বড় ভূমিকা ছিল তাঁর মা নিলু ভৌমিকের। রাকেশ বলেন, ‘মা খুব করে চাইতেন আমি সুস্থ হই। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে তিনি প্রথম আলো ট্রাস্টের মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা অনুষ্ঠানে যাওয়া শুরু করেন। প্রতি মাসে যেতেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ শুনতেন।’ মা নিলু ভৌমিক ২০১৬ সালের শুরুতে চলে গেছেন না–ফেরার দেশে।রাকেশ সাড়ে ছয় মাস চিকিৎসা নেন মাদকাসক্ত মানুষের জন্য পুনর্বাসনকেন্দ্র ‘আপন’-এ। তারপর দুই মাস সেখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন। সুস্থ হওয়ার পর থেকে প্রথম আলোর মাদকবিরোধী আয়োজনের নিয়মিত আয়োজন—পরামর্শ সহায়তার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেন তিনি। একসময় পরামর্শ নিতে আসা অভিভাবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দিতে শুরু করেন। এখন তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।‘মাদককে না বলো’ স্লোগানে প্রথম আলো ট্রাস্ট এ পর্যন্ত ৭৫টি মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এই আয়োজনের মাধ্যমে যাঁরা মাদকের অন্ধকার জীবন থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন, তাঁদেরই একজন মাহমুদুর রহমান। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষার্থী প্রায় ১০ বছর ছিলেন মাদকের সংস্পর্শে। কৌতূহলের বশে শুরু করলেও একসময় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েন মাদকের বেড়াজালে।নেশার চোরাস্রোতে তলিয়ে যেতে থাকা সজীবকে টেনে তুলেছেন তাঁর মা শাহীনুর সুলতানা। সজীব বলেন, ‘আম্মা প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রতি মাসের মাদকবিরোধী পরামর্শ সহায়তার খোঁজ পেয়ে সেখানে যান। সেখানে ডা. মোহিত কামালের সঙ্গে মায়ের কথা হয়। স্যারের পরামর্শে আমার চিকিৎসা শুরু হয়।’ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিয়ে চার বছর ধরে সুস্থজীবন যাপন করছেন তিনি। এখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন।নিরাময়ের উপায় নিরাময়ের জন্য যেখানে যাবেনপরামর্শ সহায়তাপ্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নিয়মিত কার্যক্রম পরামর্শ সহায়তা অনুষ্ঠান। প্রতি মাসে সাধারণত ঢাকার ধানমন্ডি ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে এ আসর অনুষ্ঠিত হয়।এ ছাড়া ঢাকার বাইরেও পরামর্শ সহায়তা হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ৯৯টি মাদক পরামর্শ সহায়তা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মাদকাসক্ত তরুণ, মাদকাসক্তের পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও মাদকমুক্ত তরুণ-তরুণীরা উপস্থিত থাকেন। মাদকাসক্ত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন রকমের সমস্যা তুলে ধরেন। এসব সমস্যার সমাধান ও প্রশ্নের উত্তর দেন মনোরোগ চিকিৎসক ও পরামর্শকেরা।টেলিফোনে পরামর্শপ্রথম আলো কার্যালয়ের একটি নির্ধারিত টেলিফোন নম্বরে মাসে একবার মাদক নিরাময় বিষয়ে পরামর্শ দেন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক। সারা দেশ থেকে ফোনের মাধ্যমে পরামর্শ পেয়ে থাকেন।সরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রকেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ৪৪১ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা।চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র১১৫ পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।রাজশাহী আঞ্চলিক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র২০৪/২ উপশহর ক্যান্টনমেন্ট, রাজশাহী।খুলনা আঞ্চলিক মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ২ কেডিএ অ্যাভিনিউ, ময়লাপোতার মোড়, খুলনা।জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।মানসিক রোগ বিভাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকাখরচ কেমনকেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর৪৪১, উত্তর বেগুনবাড়ি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮।ফোন ৮৮৭০৬২০, ৮৮৭০৬১৯, মোবাইল ০১৭১৩১১১১৩০১০ টাকায় টিকিট ক্রয় ও রেজিস্ট্রেশন করে মাদকাসক্ত রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়।রোগী ও অভিভাবকদের ভর্তি পূর্ব (প্রি-অ্যাডমিশন) নিরূপণ ও মূল্যায়নবহি বিভাগ (প্রতি কর্ম দিবসে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা) অন্ত বিভাগ (পুরুষ বেড-৪০টি, শিশু বেড- ১০টি)ফলো-আপ মিটিংফ্যামিলি মিটিং (সপ্তাহের প্রতি – বুধবার সকাল ১০টা)বিনা মূল্যে নির্দিষ্ট কিছু প্যাথলজিকাল পরীক্ষামাদকাসক্ত রোগীদের বিশেষায়িত সেবাসমন্বিত চিকিৎসা (মেডিকেল, সাইকোলজিক্যাল, সোশ্যাল ও স্প্রিচুয়াল)বহির্বিভাগে টিকিট কেটে প্রথমে চিকিৎসক মূল্যায়ন করবেন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশনা দিয়ে ভর্তির সম্ভাব্য তারিখ দেবেন।  ভর্তির পূর্বে কমপক্ষে ২ টি ব্যক্তিগত কাউন্সেলিং সেশন এবং ১ টি ফ্যামিলি মিটিং অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। সিট ভাড়া ও নিয়ম কানুন : বিনা ভাড়া (নন-পেয়িং বেড): ৮০০টাকা (২৮ দিনের জন্য)এবং নিরাপত্তা জামানত ৫০০/= (ভর্তি কালীন সময়ে রোগী কর্তৃক কোন ক্ষতি না হলে ফেরতযোগ্য)ভাড়া বেড (পেয়িং বেড): ২৮০০টাকা (২৮ দিনের জন্য)এবং নিরাপত্তা জামানত ৫০০/= (ভর্তি কালীন সময়ে রোগী কর্তৃক কোন ক্ষতি না হলে ফেরতযোগ্য)ভর্তির দিন রোগী এবং আইনগত অভিভাবক এর ভোটার আইডি কার্ড এবং রোগীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি নিয়ে আসতে হবে।
শারীরিক লক্ষণমাদক গ্রহণের ফলে একজন ব্যক্তির মাঝে বিরাট শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তন হয়। সেই পরিবর্তনগুলো একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন আপনার পরিবার মাদক নিচ্ছে কি না।(১) খাওয়ার প্রবণতা এবং ঘুমের সময়সীমার পরিবর্তন চলে আসলে। ওজন হঠাৎ করে বেড়ে গেলে বা কমে গেলে।(২) চোখ লাল হয়ে থাকলে এবং চোখের মণি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় বা ছোট দেখালে।(৩) নাক দিয়ে প্রায়ই রক্ত পড়লে। সাধারণত কোকেইন বা নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করতে হয় এমন মাদকের বেলায় এই লক্ষণ দেখা যায়।(৪) চেহারা এবং পোশাকের পরিধান ও যত্নে অবনতি দেখা দিলে।(৫) শরীরে এমন কোন ক্ষত বা কাটা ছেড়া দেখা গেলে যা সম্পর্কে তারা জানে না বা কীভাবে আঘাত পেলো তা আপনাকে বলতে না চাইলে।(৬) তাদের মুখে বা শরীরে বা পোষাকে অদ্ভুত বা অপরিচিত কোন গন্ধ পেলে।(৭) মাদকাসক্ত ব্যক্তির চেহারায় কালো ছোপ ছোপ দাগ তৈরি হয় ।আচরণগত পরিবর্তন(১) যৌন ক্রিয়ায় অনীহা বা ক্ষমতা হ্রাস পেলে।(২) ক্লাস বা অফিসে ঘনঘন যেতে না চাওয়া বা প্রতিষ্ঠানে কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া।(৩) কাজে অমনযোগী হলে, ব্যক্তিগত শখ বা খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেললে ।(৪) তার সহকর্মী, শিক্ষক বা বন্ধুদের কাছ থেকে ঘনঘন নালিশ আসতে থাকলে ।(৫) বাসায় রাখা টাকার হিসাব না মিললে। কারণ নেশার দ্রব্য কিনতে টাকা লাগে। তাই সাধারণত নেশার দ্রব্যের মুল্য পরিশোধের জন্য আপনার সন্তান টাকা , মুল্যবান সামগ্রী, অলংকার চুরি করতে পারে ।(৬) পড়াশোনার নাম করে ঘনঘন টাকা চাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেলে ।(৭) পরিবাররে সদ্যসদের সাথে ব্যবহারের পরিবর্তন আসলে। সাধারণত মাদকাসক্তির সময়গুলোতে তারা খিটখিটে মেজাজের হয়ে থাকে ।(৮) বেশিরভাগ সময়ই একা থাকলে বা প্রাইভেসি সচেতন হয়ে পড়লে। বেশির ভাগ সময়ই রুমের দরজা বন্ধ রাখলে ।(৯) অকারণে বিরক্তিবোধ করলে ।(১০) অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে আরম্ভ করলে ।(১১) পুরনো বন্ধুদের পরিবর্তে নতুন নতুন বন্ধু চোখে পড়লে ।(১২) ঘরে বা বিছানায় পাউডার জাতীয় জিনিস পাওয়া ।(১৩) প্রায়ই কারো না কারো সাথে মারামারি বা ঝগড়া ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়া।(১৪) সব সময় রুমে এবং শরীরে পারফিউম বা এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করা ।(১৫) চোখের লাল ভাব কাটানোর জন্য ড্রপ ব্যবহার শুরু করলে ।(১৬) অকারণে রেগে গেলে । আচরণগত পরিবর্তন(১) যৌন ক্রিয়ায় অনীহা বা ক্ষমতা হ্রাস পেলে।(২) ক্লাস বা অফিসে ঘনঘন যেতে না চাওয়া বা প্রতিষ্ঠানে কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া।(৩) কাজে অমনযোগী হলে, ব্যক্তিগত শখ বা খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেললে ।(৪) তার সহকর্মী, শিক্ষক বা বন্ধুদের কাছ থেকে ঘনঘন নালিশ আসতে থাকলে ।(৫) বাসায় রাখা টাকার হিসাব না মিললে। কারণ নেশার দ্রব্য কিনতে টাকা লাগে। তাই সাধারণত নেশার দ্রব্যের মুল্য পরিশোধের জন্য আপনার সন্তান টাকা , মুল্যবান সামগ্রী, অলংকার চুরি করতে পারে ।(৬) পড়াশোনার নাম করে ঘনঘন টাকা চাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেলে ।(৭) পরিবাররে সদ্যসদের সাথে ব্যবহারের পরিবর্তন আসলে। সাধারণত মাদকাসক্তির সময়গুলোতে তারা খিটখিটে মেজাজের হয়ে থাকে ।(৮) বেশিরভাগ সময়ই একা থাকলে বা প্রাইভেসি সচেতন হয়ে পড়লে। বেশির ভাগ সময়ই রুমের দরজা বন্ধ রাখলে ।(৯) অকারণে বিরক্তিবোধ করলে ।(১০) অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে আরম্ভ করলে ।(১১) পুরনো বন্ধুদের পরিবর্তে নতুন নতুন বন্ধু চোখে পড়লে ।(১২) ঘরে বা বিছানায় পাউডার জাতীয় জিনিস পাওয়া ।(১৩) প্রায়ই কারো না কারো সাথে মারামারি বা ঝগড়া ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়া।(১৪) সব সময় রুমে এবং শরীরে পারফিউম বা এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার করা ।(১৫) চোখের লাল ভাব কাটানোর জন্য ড্রপ ব্যবহার শুরু করলে ।(১৬) অকারণে রেগে গেলে ।আপনার পরিবারের কারো মাঝে এধরনের শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তনের কয়েকটি লক্ষণ একসাথে থাকলে বুঝে নিবেন নিঃসন্দেহে সে একজন মাদকাসক্ত। কখন মাদক গ্রহণ করে(১) বন্ধু বান্ধবের চাপে পড়ে, তাদের সঙ্গ দিতে গিয়ে এবং তাদের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার    ভয়ে অনেকে মাদক গ্রহণে বাধ্য হয় এবং একপর্যায়ে আসক্ত হয়ে পড়ে।(২) কেউ নিছক মজা করে একবার-দু’বার নিতে নিতে আসক্ত হয়ে পড়ে। নিজেকে স্মার্ট দেখানোর জন্য অনেকে মাদক নেয়(৩) অনেকে প্রথমে কৌতূহলের বশে মাদক গ্রহণ করে, ভাবে সে আসক্ত হবে না কিন্তু একপর্যায়ে সেও আসক্ত হয়ে পড়ে।(৪) মানসিক ভাবে বিষাদগ্রস্থ হলে বেকারত্ব, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, ব্যবসায় ক্ষতি, পরীক্ষায় ফেল ইত্যাদি নানা কারণে পারিবারিক টানাপোড়েন ইত্যাদি কারণেও মাদকে আসক্ত হয়ে যায় অনেকে।(৫) ব্যক্তিত্বের কিছু সমস্যা যেমন এন্টিসোশ্যাল পার্সোনালটি, শৈশবে বিকাশের সমস্যা, কিছু মানসিক রোগ।(৬) সিগারেট দিয়েই শুরু হয় নেশার জগতে প্রথম প্রবেশ, তাই সিগারেটকে আপাত নিরীহ মনে হলেও এটা মাদকের জগতে প্রবেশের মূল ফটককে উন্মুক্ত করে দেয়, তাই ধূমপানও হতে পারে মাদকাসক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ।(৭) একটা পর্যায়ে শরীর ও মন এমনভাবে মাদক নির্ভর হয়ে পড়ে যে চিকিৎসা ব্যতীত আর কোনোভাবেই মাদক মুক্ত হওয়া সম্ভব হয় না।
তামাক, ইয়াবা, গাঁজা,  ফেনসিডিল, হেরোইন, আফিম, মরফিন, এ সবই মাদক।(১) মাদকাসক্তির বড় কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা।(২) বন্ধুদের চাপে পড়ে অনেকে মাদক নিয়ে থাকে।(৩) বাবা-মায়ের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেকে মাদক গ্রহণ করে থাকে।(৪) অনেকের মাঝে মাদক নিয়ে স্মার্ট হওয়ার প্রবণতা থাকে যা তাকে ঠেলে দেয় মাদকের জগতে।(৫) মানসিক সমস্যা যেমন: হতাশা, একাকীত্ববোধ, বিষণ্ণতার কারণে এসব থেকে রেহাই পেতে মাদককে বেছে নেয়।(৬) এন্টি সোশ্যাল পারসোনালাটি, শৈশবে বিকাশে সমস্যা থাকলেও অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।(৭) ভালোবাসার সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ায় মানসিক কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে মাদক গ্রহণ করে।৮) পারিবারিক কারণেও অনেকে মাদকে জড়িয়ে পড়ে।৯) পারিবারিক কোলাহলে কারণে অনেক সময় মাদকে আসক্ত হয়ে থাকে।১০) সহপাঠীদের চাপে পরে অনেকে মাদক নিয়ে থাকে।
মাদক দ্রব্য হলো একটি রাসায়নিক দ্রব্য যা গ্রহণে মানুষের স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব পড়ে এবং যা আসক্তি সৃষ্টি করে। মাদক দ্রব্যে বেদনানাশক কর্মের সাথে যুক্ত থাকে তন্দ্রাচ্ছন্নতা, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক, আচ্ছন্নতা রক্তচাপ পরিবর্তন ইত্যাদি । মাদক দ্রব্য গ্রহণ করলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে এবং দ্রব্যের উপর নির্ভরশীলতা সৃষ্টির পাশাপাশি দ্রব্যটি গ্রহণের পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকে ব্যক্তির এই অবস্থাকে বলে মাদকাসক্তি এবং যে গ্রহণ করে তাকে বলে মাদকাসক্ত।মাদকাসক্তি বলতে মাদকের প্রতি আসক্তিকে বোঝায়। বিভিন্ন ধরণের মাদক হতে পারে। মাদক বা ড্রাগস হলো বিষধর সাপের বিষাক্ত ছোবলের মতো যা প্রতিনিয়ত একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে ধীরে ধীরে তার দংশনে নি:শেষ করে দেয়।
নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার সপ্তাহ না পেরোতেই কালভার্টে ফাটল দেখা দেয়। এক পাশে দেবেও যায়। চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে কালভার্টটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ভেঙে ফেলতে হয়েছে।চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের গজালিয়া ফকিরটিলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। নিম্নমানের উপকরণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে কালভার্টটিতে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে প্রকৌশলীর দাবি, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই কালভার্ট দেবে গেছে। উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের ফকিরটিলা, গাজালিয়া, ফুইট্ট্যাগোদা, ছনখোলা বিল, মোল্লাপাড়া, আকবর শিকদারপাড়া, ওয়াহেদ আকবর শিকদারপাড়া, সামসের নগর, আলম শাহপাড়া ও পাশ্ববর্তী হোছনাবাদ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তাপুর এলাকার লোকজন এই কালভার্ট দিয়ে চলাচল করে। লালানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মীর তৌহিদুল ইসলামের উদ্যোগে ১৩ জুন কালভার্টের ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর থেকে কালভার্টে ফাটল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দেবে যায়। এ জন্য গতকাল সোমবার তা ভেঙে ফেলা হয়।উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে ২০১৭ সালের শুরুর দিকে এই কালভার্টের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ইউনিয়নের কুলকুরমাই খালের ওপর ২০ ফুট দীর্ঘ ও ৬ ফুট প্রশস্ত এই কালভার্টের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ টাকা। কিন্তু অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে মাত্র তিনটি পিলার তৈরির পরেই নির্মাণকাজ থেমে যায়। পরে আর শুরু হয়নি। এরপর স্থানীয় লোকজন পিলারের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচল করছিল।স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল করিম বাঁশের সাঁকোর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেন। তা দেখে কালভার্টটি পুনর্নিমাণের জন্য স্থানীয় লালানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মীর তৌহিদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান। ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দ কম থাকায় শুধু পিলারের কাজ করেছিলেন ঠিকাদার। সম্প্রতি ইউএনও তাঁকে এর নির্মাণকাজ শেষ করার দায়িত্ব দেন। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কালভার্টের নিচ থেকে ঢালাইয়ের জন্য দেওয়া খুঁটিগুলো সরে যায়। ফলে কালভার্ট দেবে যায়। এখন ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।তবে পুনর্নির্মাণের পর কালভার্টে ফাটলের বিষয়ে জানা নেই বলে জানান ইউএনও। ইউনিয়নের হোছনাবাদ–লালানগর উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সিরাজুল করিম অভিযোগ করেন, ঠিকাদার তিনটি পিলার তৈরি করে দুই বছর পার করে দিয়েছেন। সরকারি নিয়ম না মেনে অপরিকল্পিতভাবে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। নিম্নমানের পিলারে ঢালাই দেওয়ায় কালভার্টটিতে ফাটল দেখা দেয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।ফাটল দেখা দেওয়ায় কালভার্টটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম। তিনি বলেন, কাঠের পাটাতন দিয়ে কালভার্টটি নতুনভাবে নির্মাণ করা হবে।
বর্ষা নিয়ে আতঙ্কে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরের কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে আছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবারে অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা। এর মধ্যে অতিঝুঁকিতে থাকা ৪ হাজার ৩৫০ পরিবারের ৫০ হাজার রোহিঙ্গাকে আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।এর সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ আবুল কালাম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের বর্ষা মৌসুমেও পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা ১৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছিল। এবারও তাই হচ্ছে। পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গা পরিবারের তালিকা তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। আগামী দেড় মাস সময়ে অতিঝুঁকিতে থাকা ৪ হাজার ৩৫০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে কয়েক দফায় সরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। উখিয়ার কুতুপালং, কুতুপালং ফাইভ-ডি, মধুর ছড়া, জুমশিয়া, লম্বাশিয়া, বালুখালী রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া বৃষ্টিতে পাহাড়ের ঢালুতে তৈরি অসংখ্য ঘরবাড়ির তলার মাটি সরে গেছে। কিছু ঘর হেলে পড়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত কিংবা ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকলে এসব ঘর নিচে ধসে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। উখিয়ার জুমশিয়া পাহাড়ের ৯০ ফুট উঁচুতে (পাহাড়ের ঢালুতে) ঝুপড়ি ঘরে বসবাস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বলীবাজার থেকে পলিয়ে আসা রোহিঙ্গা নুরুল আমিন। সঙ্গে মা, স্ত্রী, চার মেয়ে ও দুই ছেলে। নুরুল আমিন (৫৬) বলেন, গত বছরের বর্ষায় পাহাড়ধসে তাঁর আশপাশের ১০-১২টি ঘর বিলীন হয়েছিল। এবার তাঁর ঘর ঝুঁকিতে পড়েছে। পরিবার নিয়ে তিনি কোথায় যাবেন ভেবে পাচ্ছেন না। কুতুপালং ও বালুখালী শিবিরের আশপাশের কয়েকটি উঁচু পাহাড়ের পাশ দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে উত্তর দিকে চলে গেছে মধুর ছড়া খাল। খালের দুই পাশের ৫০ থেকে ১০০ ফুট উচ্চতার কয়েকটি পাহাড় নিয়ে গড়ে ওঠে মধুর ছড়া আশ্রয়শিবির। এ শিবিরের বাসিন্দা প্রায় তিন লাখ। এর মধ্যে পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে আছে অন্তত ৮০ হাজার রোহিঙ্গা।বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরের মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) জাকের হোসেন বলেন, বর্ষার শুরুতে পাহাড়ধসের ঝুঁকির পাশাপাশি শিবিরে অপরাধ বেড়ে চলেছে। সন্ধ্যার পর অন্ধকার শিবিরে মাদক বিক্রির হাট বসে। এসবের সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ধসের আতঙ্ক। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হয়। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৩ জন। বন বিভাগের তথ্য মতে, ৩৪টি আশ্রয়শিবির তৈরির বিপরীতে উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় ৮ হাজার একর বনভূমি উজাড় হয়েছে। গত বছর একাধিক পাহাড়ধসের ঘটনায় দুই শিশুসহ পাঁচজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছিল। কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সহসা শুরু হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ভাসানচরেও এই মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জটিলতা আছে। যত দিন রোহিঙ্গারা এ দেশে থাকছে, তত দিন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
মাত্র ৫০০ গজ সড়কের সংস্কার না হওয়ায় বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের হাজারো মানুষ। শুকনো মৌসুমে ধুলা আর বর্ষায় কাদায় একাকার হয়ে থাকা সড়কটিকে ব্যবহারের অনুপযোগী বলছেন পথচারীরা। এলাকাবাসীর মতে, এই সড়ক ভয়ংকর।নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার স্বাধীনতা চত্বর (বাপ্পি চত্বর) থেকে সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের হাটখোলা মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ সুলতান গিয়াস উদ্দিন সড়ক। ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ শহরের সংযোগ স্থাপনকারী গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির শীতলক্ষ্যা জোনাল অফিসসহ বেশ কিছু তৈরি পোশাক কারখানা। রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে সড়কটির প্রায় ৫০০ গজ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দেওয়া হলেও গত ছয় বছরে সংস্কার করা হয়নি সড়কের এই অংশ।সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ফটক থেকে হাটখোলা মোড় পর্যন্ত সড়কটি কাদা-পানিতে ডুবে আছে। সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত। কোথাও কোথাও গর্তগুলো এক ফুট গভীর। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকা সেসব গর্তের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মালামাল বহনকারী যানবাহন। সড়কের পাশের একটি চায়ের দোকানে কথা হয় হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জগামী যানবাহনের যাত্রীরা নারায়ণগঞ্জ শহর হয়ে মুন্সিগঞ্জে প্রবেশ করেন। নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও লেগুনাগুলো এই সড়ক ব্যবহার করে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে সড়কটির গুরুত্ব বেড়েছে। চায়ের দোকানি রিপন মিয়া বলেন, ‘এই রাস্তা আমাগো লাইগা অভিশাপ। খোদার ৩০ দিনই অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) হয়।’ রিপন মিয়ার কথা শেষ না হতেই দোকানের সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে উল্টে পড়েন একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি আহমেদ জুয়েল। হাটখোলা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসলিমা আক্তার বলে, বৃষ্টি হলে কাদা–পানি ছিটকে এসে ইউনিফর্ম নষ্ট হয়। শুষ্ক মৌসুমে ধুলার জন্য হাঁটা যায় না। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুন্সিগঞ্জের সুমাইয়া হাসান বলেন, ‘ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে নারায়ণগঞ্জ শহর হয়ে চলাচল করি। কিন্তু এই সড়কটির সামান্য অংশটুকুর জন্যই ভোগান্তি থেকে রেহাই পাচ্ছি না। ভয়ে থাকি কখন না লেগুনা উল্টে লাশ হয়ে যাই।’ ইজিবাইকের চালক আলাউদ্দিনের মতে, সড়কটি ভয়ংকর। তিনি বলেন, প্রতিদিন অন্তত চার-পাঁচটি দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়ি উল্টে যায়, হাত-পা ভাঙে। ভাঙা রাস্তার কারণে যানজটে সময় নষ্ট হয়।সড়কটির সর্বশেষ কবে সংস্কার হয়েছিল সেটা জানেন না কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, এই সড়কের ভাঙা অংশটি ইউনিয়ন পরিষদের। বাকিটুকু নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের। কিন্তু সম্পূর্ণ সড়কটিই সিটি করপোরেশন সংস্কার করে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কবির হোসেন বলেন, ‘মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে মেয়র সম্পূর্ণ সড়কটিই সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হাটখোলা মোড় থেকে স্বাধীনতা চত্বর পর্যন্ত সড়কটিতে নালাসহ আরসিসি ঢালাই হবে। রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সড়কটি সরু হওয়ায় সেদিকটা প্রশস্ত করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছি।’
সেতুর রেলিং ভেঙে রড বেরিয়ে গেছে। দুর্বল হয়ে পড়েছে পিলারগুলোও। ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের সময়ও সেতুটি কাঁপে। এ কারণে প্রায় চার বছর আগে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তবু আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ এই সেতু দিয়েই জেলা সদরে যাতায়াত করছে। এই পরিস্থিতি মানিকগঞ্জ জেলা শহরের অদূরে নতুনবসতি সেতুটির।স্থানীয় দিঘী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মোল্লা বলেন, জেলা সদরের কাছের নতুনবসতি, দিঘী, ছুটি ভাটবাউর, কয়রা, পিতলাই, শুশুন্ডা, খরসতাই, রৌহাদহ ও চাননগর—এই ১০টি গ্রামের মানুষ সেতুটি দিয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব গ্রামের কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছে। এ ছাড়া এসব গ্রামে তিন ফসলি জমির উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাটবাজারে নিতেও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কৃষকেরা।এলজিইডির সদর উপজেলা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে জেলা সদরের দিঘী ইউনিয়নের নতুনবসতি খালের ওপর এই সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এলজিইডি। এরপর সেতুর পূর্ব পাশে ‘সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বেহাল এ সেতুর পাশে নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। গত বছর সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা ও সেতুর নকশা প্রণয়ন করা হয়। তবে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় নির্মাণকাজ শুরু করা যায়নি। তবে সম্প্রতি সেতুটি নির্মাণে আবারও উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ।এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৩২ বছর আগে জেলা শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে নতুনবসতি খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় জনবসতি কম থাকায় সেতুটিও সরু করে নির্মাণ করা হয়। সেতুটি চওড়া কম হওয়ায় এতে বড় ধরনের যান চলাচল করতে পারে না। বর্তমানে সেতুটির গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। আশপাশের গ্রামের কৃষকদের উৎপাদিত ধান, ভুট্টা, সরিষা, তামাক, পাটসহ অন্যান্য শস্য ছোট ট্রলি, টেম্পো বা রিকশা-ভ্যানে করে হাটবাজারে নিতে হয়। এতে তাঁদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। পাশাপাশি ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির পিলার এবং ওপরের বিভিন্ন অংশ ভেঙে রড বেরিয়ে গেছে। সেতুটির রেলিংও ভেঙে ভেঙে পড়ছে। এসব রডে মরিচা ধরে গেছে। সেতুর ওপরের পশ্চিম পাশের কিছু অংশে সিমেন্ট ও বালু দিয়ে পথচারীদের চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবু ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর ছোট যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে।স্থানীয় নতুনবসতি গ্রামের আকরাম হোসেন বলেন, সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একটা টেম্পো উঠলেও সেতুটি কেঁপে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এখানে নতুন একটি সেতুর দাবি জানিয়ে এলেও কোনো ফল মেলেনি।দিঘী ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফুলচান মিয়া বলেন, জেলা শহরের কাছেই নতুনবসতি, দিঘী, চাননগর, কয়রা ও পিতলাই গ্রাম। সেতুটি সরু হওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল করতে পারে না। তাই অনেকে বসতভিটা তৈরিতে মাটি ফেলতে পারছেন না। ফলে বাসাবাড়ি নির্মাণসহ কোনো কলকারখানা স্থাপন করা যাচ্ছে না। এই সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কয়েক বছর ধরে ছোট যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।কয়রা গ্রামের শামসুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি নতুনবসতি-দিঘী-ডাউটিয়া সড়কটি সংস্কার করা হয়েছে। তবে নতুনবসতি সেতু নির্মাণ না হওয়ায় রাস্তাটির সুফল মিলছে না বললেই চলে। বড় যানবাহন চলাচল করতে না পারায় এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন তেমন একটা হচ্ছে না।উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, নতুনবসতি খালের ঝুঁকিপূর্ণ ওই সেতুর পাশে নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে সরকারি অর্থায়নে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।
লেখালেখির অভ্যাস আমাদের সবারই একটু–আধটু থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই নিজেদের লেখার মান নিজেরা যাচাই করতে পারি না, নিজেদের ভুলভ্রান্তিগুলোও নিজেরা ধরতে পারি না। যার কারণে সৃজনশীল লেখাগুলোয় উন্নতি ততটা হয় না। নিজেদের লেখাগুলো যদি সবার সামনে উপস্থাপন করা যায়, তাহলে সবার কাছ থেকেই নিজের লেখা সম্পর্কে কিছু না কিছু মন্তব্য পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে নিজের লেখায় যদি কোনো ভুল থাকে, সেগুলো শুধরানোর পাশাপাশি আরও ভালো লেখার জন্য পাওয়া যায় উৎসাহ। যা কিনা ভবিষ্যৎ লেখক হওয়ার জন্য হয়ে উঠতে পারে অন্যতম পাথেয়।ড্যাফোডিল স্থায়ী ক্যাম্পাস বন্ধুসভা ২৪ জুন আয়োজন করেছিল ‘স্বরচিত সাহিত্য আড্ডা’। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের লেখার মান যাচাই ও মানোন্নয়ন। অংশগ্রহণকারী বন্ধুরা নিজেদের লেখা সবার সামনে উপস্থাপন করেন এবং অনুষ্ঠানে আগত সবাই প্রতিটি লেখার বিষয়ে নিজেদের মন্তব্য তুলে ধরেন। এসব লেখার মধ্যে ছিল কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে ফিচার ও চিঠি।
রিয়াল মাদ্রিদ না বার্সেলোনা, কোথায় যাবেন নেইমার? এ নিয়ে বহু আলোচনাই হয়েছে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি বার্সেলোনাতেই যাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডপ্যারিস আর ভালো লাগছে না নেইমারের। ভালোবাসার নগরীতে প্রাণ ভোলানো ভালোবাসা টের পাচ্ছেন না আর। তাই ফ্রান্স ছেড়ে আবার স্পেনে ফিরতে চাইছেন নেইমার। এমন খবর গত এক বছর ধরেই বারবার লেখা হয়েছে। তবে স্প্যানিশ পত্রিকা স্পোর্তের দাবি, নেইমারের ইচ্ছা এবার বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। বার্সেলোনায় ফিরছেন এই ফরোয়ার্ড।নেইমার বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যাওয়ার পর থেকেই তাঁকে রিয়াল মাদ্রিদে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। এ দলবদলের মৌসুমে আওয়াজ উঠেছিল এ ব্যাপারে। কিন্তু নেইমার নাকি নিজের ভুল বুঝে বার্সেলোনাতেই ফেরার কথা বলছিলেন। আজ স্পোর্ত জানিয়েছে, নেইমার ও বার্সেলোনার মধ্যে এর মাঝেই চুক্তি হয়ে গেছে।স্পোর্তের প্রথম পাতাতেই এই খবর দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে এ মৌসুমেই পিএসজি থেকে বার্সেলোনায় ফিরছেন নেইমার। শুধু এ খবর দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি স্পোর্ত। সে সঙ্গে চুক্তির বিভিন্ন দিকও তুলে ধরেছে তার। স্পোর্তের মতে চুক্তির বিভিন্ন দিকগুলো হলো—চুক্তিটা পাঁচ বছরের জন্য হচ্ছে। অর্থাৎ এ চুক্তিতে ৩২ বছর পর্যন্ত বার্সেলোনায় থাকবেন নেইমার। পরে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ আছে।বার্সেলোনায় ফেরার জন্য নিজের বেতন চাহিদা অনেক কমিয়ে ফেলবেন নেইমার।বার্সেলোনার বিপক্ষে যে বকেয়া পরিশোধের মামলা করেছিলেন সেটা তুলে নেবেন নেইমার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পিএসজিতে বাৎসরিক যে ৩৭ মিলিয়ন ইউরো পেতেন সেটা যে বার্সেলোনায় পাওয়া সম্ভব নয় সেটা মেনে নিয়েছেন নেইমার। কাতালানদের ঘরে ফিরে ২৪ মিলিয়ন ইউরোই নেবেন এই ফরোয়ার্ড। ক্রীড়া সাংবাদিক আলবার্ট মাসনুর দাবি, ফিরতে এতটাই উদ্‌গ্রীব যে এ নিয়ে কোনো দর-কষাকষির চেষ্টাই নাকি করেননি নেইমার! সে সঙ্গে বার্সেলোনার কাছ থেকে বোনাস হিসেবে ৩০ মিলিয়ন পাওনা নিয়ে যে মামলা চলছে সেটাও তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। এখন শুধু নেইমারের জন্য দলবদলের অঙ্কটা ঠিক করাটাই বাকি। কদিন আগে লে প্যারিসিয়েন দাবি করেছিল, পিএসজি নেইমারের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ইউরো চাইবে। কিন্তু দলবদলের অঙ্কটা এতটাই বেশি যে সেটা বার্সেলোনার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। ফলে এ দলবদলে অন্য খেলোয়াড়দের যুক্ত করার চেষ্টা করবে বার্সেলোনা। সে ক্ষেত্রে ফিলিপে কুতিনহোর পিএসজিতে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। স্পোর্ত আবার এটাও বলেছে নেইমারের দলবদলের অঙ্ক নিয়ে মতের মিল না হলে রিয়ালের সম্ভাবনাও খারাপ না!
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১৬তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আবদুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারীর সভাপতিত্বে প্রশাসন ভবনের সভাকক্ষে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শুরু হয়। সভায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি উত্থাপিত হলে এতে একমত পোষণ করেন কাউন্সিলের সদস্যরা।এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আবদুল লতিফসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করে ও ভর্তি-ইচ্ছুকদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তবে কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় বা আঞ্চলিকভাবে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এ বিষয়ে উপাচার্যদের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে তিনি জানান।গত ১ ফেব্রুয়ারি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি ও দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদের সঙ্গে ৪৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা দেখা করতে যান। এ সময় রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ফিঞ্চ-ওয়ার্নারের ব্যাটে শক্তিশালী সূচনা পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।ইংল্যান্ডকে পেলে বরাবরই রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে ভালোবাসেন অ্যারন ফিঞ্চ। ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার গড় যেখানে ৪০.৮০, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গড়টা সেখানে ৫০.১৩। ২৫ ম্যাচে ১ হাজার ১৫৩ রান, ১৪ ওয়ানডে সেঞ্চুরির ৬টিই ইংলিশদের বিপক্ষে। আজও সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক, পেয়ে গেছেন টুর্নামেন্টে নিজের চতুর্থ ফিফটি।প্রথম উইকেটের দেখা পাওয়া পর্যন্ত ২৩ ওভার অপেক্ষা করতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৫ রান। ৫৩ রান করে মঈন আলীর বলে ফিরেছেন ওয়ার্নার। ওয়ার্নারের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা উসমান খাজাকে সঙ্গে নিয়ে ফিঞ্চ ৫০ রানের জুটি গড়েছেন। খাজা আউট হয়েছেন ২৩ রানে। ফিঞ্চ আউট হয়েছেন ১০০ রানে।ফিফটি পেয়েছেন ফিঞ্চের ওপেনিং সঙ্গী ডেভিড ওয়ার্নারও। সর্বোচ্চ রান নিয়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যেন ইঁদুর দৌড় খেলা চলছে তাঁর। গতকাল টপকে গিয়েছিলেন সাকিব, আজ আবার শীর্ষে উঠে গেলেন ওয়ার্নার। পেয়ে গেছেন টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় ফিফটি। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এ বিশ্বকাপে ৫০০ রানের গণ্ডিও পেরিয়েছেন এ বাঁ হাতি। তবে এরপরই ফিরতে হয়েছে মঈন আলীর বলে। ফেরার আগে ফিঞ্চের সঙ্গে মিলে দলকে এনে দিয়েছেন ১২৩ রানের উদ্বোধনী জুটি।ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগানের টসে জিতে বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাত্র ১৮ ওভারেই শতরানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন ফিঞ্চ-ওয়ার্নার। পঞ্চম ওভারে জফরা আর্চারের বলে কঠিন একটা সুযোগ দিয়েছিলেন ফিঞ্চ। ঝাঁপিয়ে পড়েও ক্যাচটা ধরে রাখতে পারেননি জেমস ভিন্স। পরের ওভারে ফিঞ্চের বিপক্ষে রিভিউও নিয়েছিল ইংল্যান্ড। আম্পায়ার্স কল হওয়ায় বেঁচে গেছেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। দ্বাদশ ওভারে ফিঞ্চ আরেকটি কঠিন সুযোগ দিয়েছিলেন, সেটিও ধরতে পারেননি ভিন্স।দুই ইংলিশ পেসার আর্চার ও উড বেশ ভালো বল করেছেন। দারুণ গতিতে ভেতরে ঢোকা বলে ফিঞ্চের দুর্বলতার কথা জেনে বারবার সেখানে বল করে গেছেন উড। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। শেষ পর্যন্ত অফ স্পিনার মঈন আলীই ইংল্যান্ডকে এনে দিয়েছেন প্রথম সাফল্য।[তাৎক্ষনিক আপডেট দেওয়া হচ্ছে বলে শিরোনাম ও প্রতিবেদনে অমিল থাকতে পারে]
নামমেহেদী হাসান মিরাজজন্ম২৫ অক্টোবর, ১৯৯৭ধরনঅলরাউন্ডারঅভিষেকবনাম শ্রীলঙ্কা, মার্চ ২৫, ২০১৭তাঁর নিজের ইচ্ছেটা ছিল একটু অন্যরকম। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয়, ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছিল আজন্মলালিত। সেই স্বপ্নটুকু ধরা পড়েছিল প্রয়াত শেখ সালাউদ্দিনের জহুরি চোখে। শেখ সালাউদ্দিন বলতে, বাংলাদেশের সাবেক অব-স্পিনার, যাকে বলা হতো সেই প্রজন্মের সেরা বাংলাদেশি অফ-স্পিনার। স্বপ্নের বাক্স গেল খুলে, তিনিও সেই বাক্স থেকে হিরে-জহরত-মণি-মুক্তা দু হাত ভরে নিতে থাকলেন। খুলনায় বেড়ে ওঠা মিরাজের বাংলাদেশের ‘মেহেদী হাসান মিরাজ’ হয়ে ওঠার সেটাই হলো শুরু। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সংবাদপত্রের শিরোনামে এলেন মিরাজ, বাংলাদেশ ওই বছরই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে উঠেছিল সেমিফাইনালে। মিরাজের নেতৃত্বে সেবার ট্রফি জিততে না পারলেও হয়েছিল তৃতীয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সেটাও অর্জনের পাল্লায় কম কিছু ছিল না। দারুণ প্রশংসিত হয়েছিল মিরাজের নেতৃত্ব, বেশি মুগ্ধতা ছড়াল অলরাউন্ড নৈপুণ্য। তখন থেকেই তাঁর সঙ্গে তুলনা হতে শুরু করল সাকিব আল হাসানের, যার সঙ্গে জুটি গড়েই এখন জাতীয় দলে খেলছেন নিয়মিতই।ঘরোয়া ক্রিকেটে মিরাজের পা রাখা ২০১৪-১৫ মৌসুমে। তবে নজরকাড়া পারফরম্যান্স উপহার দিতে তাকে অপেক্ষা করতে হলো আরেকটা মৌসুম। বল হাতে তিনটি ইনিংসে পাঁচ উইকেটসহ মাত্র ১৬.৪৩ গড়ে তুলে নিলেন ৩০ উইকেট, আর এই পারফরম্যান্সই জাতীয় দলের দরজা খুলে দিল। মিরাজ ডাক পেলেন অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম টেস্ট সিরিজে।অভিষেক হলো চট্টগ্রামে, নিজের জন্মদিনের মাত্রই কয়েকটা দিন আগে। টেস্ট আঙিনায় মাত্র একদিনের পদচারণাতেই অভিষেকটা রঙিন আলোয় রাঙালেন মিরাজ, প্রথম ইনিংস শেষে তাঁর নামের পাশে ৬ উইকেট লেখা হয়ে গেল। তাঁর চেয়েও বড় ব্যাপার, তিনি যেভাবে নিয়ন্ত্রিত লাইন লেংথে বল ফেলে বড় টার্নে ব্রিটিশ ব্যাটসম্যানদের নাকের জল চোখের জল একসঙ্গে করে ফেললেন। একজন অভিষিক্ত বোলার যখন নিজের এক স্পেলে টানা ১০ ওভার বোলিং করে ফেলেন, আর প্রতিটা বলই যখন ব্যাটসম্যানকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে খেলতে বাধ্য করেন, বুঝতে হবে তাঁর স্নায়ু ধরে রাখার ক্ষমতা কতখানি।আর এখানেই সাকিবের সঙ্গে আরেকবার মিল খুঁজে পাওয়া গেল মিরাজের। সাকিব বরাবরই শান্ত, অথচ অদম্য হিমালয়ের মতো অবিচল আত্মবিশ্বাসসম্পন্ন খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত। আর মিরাজের ক্ষেত্রে সম্ভবত এই ব্যাপারটি একেবারেই ঐশ্বরিক। চেহারার মধ্যে বালকসুলভ চপলতা যেমন ছিল, নিজের শক্তির জায়গাটাও খুব স্পষ্ট ছিল মিরাজের কাছে। ফলে তাঁর মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল না বিন্দুমাত্র। ফলাফল, বয়স ১৯ ছোঁয়ার আগেই মিরাজের নামের পাশে টেস্টে ফাইফার জমা পড়ল। তবে জেতাতে পারলেন না দলকে, ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে শেষ অবধি ম্যাচটা হারতে হলো ২২ রানে।তবে তাতে থোড়াই কেয়ার মিরাজের। পরের ম্যাচে হয়ে উঠলেন আরও ভয়ংকর, দ্বিতীয় টেস্টে দুই ইনিংসে আরও দু’বার ছয়টি করে উইকেট সংগ্রহ করলেন। এই দফায় বাংলাদেশ চির অধরা জয়কে স্পর্শ করার স্পর্ধা দেখাল, কুকের ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিল প্রথমবারের মতো! মিরাজ জিতলেন ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ এবং ‘ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট’ খেতাব।২০১৭ সালে শততম টেস্ট জিতল বাংলাদেশ, দলকে দারুণ সংগত দিলেন মিরাজ। অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাটিতে পরিষ্কার ব্যবধানে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ, যথারীতি সেখানেও দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করলেন মিরাজ। বলাই বাহুল্য, দলের জন্য সে বছরটা ছিল রীতিমতো পয়মন্ত। আর দীর্ঘপরিসর ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স তাকে সুযোগ এনে দেয় সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও।শুরুটা অবশ্য খুব একটা সুবিধার হয়নি, অন্তত টেস্টের মতো বিধ্বংসী সূচনার ধারেকাছেও যায়নি সীমিত ওভারের পারফরম্যান্স। তবে মেহেদীও স্রেফ চুপচাপ বসে থাকা মানুষ নন, কাজ করতে শুরু করলেন সীমিত ওভারের ক্রিকেট নিয়ে। কাজের ফলাফল চোখে পড়ল গত বিপিএলে, ব্যাটে-বলে-অধিনায়কত্বে মুগ্ধতা ছড়ালেন মিরাজ। সর্বশেষ এশিয়া কাপে সুযোগ পেয়ে প্রমাণ করতে বিন্দুমাত্র সময় নেননি তিনি, হয়ে উঠেছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার অন্যতম ভরসা।এই এশিয়া কাপটাও ছিল রীতিমতো দুঃসহ এক দুঃস্বপ্নেরই নামান্তর। একের পর এক ইনজুরিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে টাইগার শিবির। ইনজুরির থাবায় তামিম-সাকিবকে হারিয়ে দল হয়ে পড়ে দিশেহারা। এমন পরিস্থিতিতে ওপেনিং জুটি হয়ে ওঠে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা, লিটন দাস কিংবা নাজমুল হোসেন শান্ত কেউই ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না। ফাইনালে হঠাৎই একটা ফাটকা খেললেন মাশরাফি, মিরাজকে তুলে আনলেন ওপেনিংয়ে। ভোজবাজির মতো বদলে গেল খেলা, এই ম্যাচে ওপেনিং জুটি হলো শতরানেরও বেশি। তাতে লিটনের চোখ জুড়ানো ১২১ রানের কারণে কিছুটা ঢাকা পড়লেও মিরাজের স্থিতধী ৫৯ বলে ৩২ রান বাংলাদেশকে দিল লড়াই করার ভিত্তি। আরেকবার প্রমাণিত হলো, মিরাজ স্নায়ুচাপকে এক তুড়িতে উড়িয়ে দিতে জানেন।এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিলেটে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মিরাজ মাত্র ২৯ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন চার উইকেট, যা দলকে পরিষ্কার ব্যবধানে জিততে সহায়তা করেছিল। এই ম্যাচ দিয়েই তিনি প্রমাণ করেন, যেকোনো ফরম্যাটেই তিনি দলের জন্য দারুণ এক সংযোজন হয়ে উঠতে পারেন। পরে নিদাহাস ট্রফিতে দারুণ সব স্পেল উপহার দিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও নিজেকে প্রমাণ করেন।নির্ভুল লাইন লেংথই তাঁর বোলিংয়ের মূল অস্ত্র। বিশেষ করে পিচে স্পিনারদের জন্য বিন্দুমাত্র সাহায্য যদি থেকে থাকে, মিরাজ হয়ে ওঠেন অনবদ্য। বয়সটা নেহাতই কম, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও খুব বেশি দিনের বিচরণ নয় তাঁর। উন্নতির এখনো ঢের বাকি তাঁর, বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। তবে কঠোর পরিশ্রমই যার মূলমন্ত্র, যিনি ক্যারিয়ারের শুরুতেই ‘ফোকাস না হারানো’র মতো বড় প্রতিশ্রুতি উচ্চারণ করতে জানেন, দুর্দান্ত ক্রিকেট মস্তিষ্কের উদাহরণ দিয়ে যিনি শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পারফর্ম করতে জানেন।তাঁর সামর্থ্যে বাজি রেখে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই বলে দেওয়া যায়, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১০ বছরে তিনিই হতে চলেছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা সুপারস্টার।
বোর্ডিং শেষ। যাত্রীরা বিমানে উঠে পড়েছেন। এমন সময় জানানো হলো ফ্লাইটটিতে যান্ত্রিক ক্রুটি রয়েছে। এটি উড়বে না। এমন ঘটনা ঘটেছে সৈয়দপুর থেকে ঢাকাগামী বিমানের ফ্লাইটে।ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ নিয়ে আবারও বিপত্তিতে পড়ল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। আজ মঙ্গলবার সকালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানের বিজি ৪৯৪ ফ্লাইটটি সৈয়দপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হতে পারেনি। ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। বিমান সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল সোয়া আটটার দিকে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমানের একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ। ৭০ জন আরোহী নিয়ে বিমানটির সকালে নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ ওই বিমানে ত্রুটি ধরা পড়ে। উড়োজাহাজটির ল্যান্ডিং গিয়ারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে এর যাত্রা বাতিল করা হয়। বিমানটির একটি স্পেয়ার পার্টস পরিবর্তন করা হবে। এটি ঢাকা থেকে নিয়ে বিমানের প্রকৌশলীদের রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে। ত্রুটি সারানোর পর বিমানটি আজ সন্ধ্যায় সৈয়দপুর থেকে ঢাকায় রওনা হতে পারে।বিমানের বাতিল হওয়া ফ্লাইটের যাত্রী রাসেল জোতদার প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল ৮টায় আমি সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসি। সকাল সোয়া ৮টার পর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বিমানটি অবতরণ করে। কিন্তু হঠাৎ যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সেটি আর ঢাকায় ফিরে যেতে পারেনি।দুপুর ১২টায় এই ফ্লাইট সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরের স্টেশন অফিসে বিমানের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিমানের জেলা ব্যবস্থাপক আসলাম পারভেজ ফ্লাইটটিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে এক্সপার্ট কল করা হয়েছে। তাঁরা এলে বিমানটির ত্রুটি সারানো হবে।এ ব্যাপারে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, সৈয়দপুরে বিমানের একটি উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে। এটিকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।এদিকে আজ বেলা সোয়া তিনটা পর্যন্ত বিমানটি সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবস্থান করছিল। এ সময় ঢাকা থেকে কোনো বিশেষজ্ঞ এখানে এসে পৌঁছাননি। আজ বিকেল চারটার ফ্লাইটে তাঁদের সৈয়দপুরে আসার কথা রয়েছে বলে বিমান সূত্রে জানা গেছে। এদিকে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় অনেক যাত্রী টিকিট ফেরত নিয়েছেন। অনেকে বেসরকারি বিমান সংস্থার ফ্লাইটে করে বা বিকল্প পথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তবে প্রায় ৩০ জন যাত্রীকে বিকেলে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমানের পরবর্তী ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।বিমান বহরে তিনটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ ছিল। তিনটি উড়োজাহাজই ভাড়ায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ড্যাশ-৮ চার বছর আগে ২০১৫ সালে বিমান বহরে যোগ হয়। ২০১৮ সালে আরও একটি ড্যাশ-৮ ভাড়ায় আনে বিমান। ড্যাশ মডেলের উড়োজাহাজ দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট পরিচালনা করা হয় দেশের অভ্যন্তরে সব বিমানবন্দরে। এ ছাড়া ভারতের কলকাতা, নেপাল, মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন—এই তিনটি রুটেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে ড্যাশ-৮ মডেলের বিমান ব্যবহার করা হয়। তবে ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজে প্রায়ই যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। এ কারণে বিমানের ফ্লাইট শিডিউল এলোমেলো হয়ে যায়। বিমানকে অনেক সময় ফ্লাইট বাতিলও করতে হয়। সৈয়দপুরে আজ বিকল হওয়া ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটির বয়স আট বছর তিন মাস।২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর সৈয়দপুর থেকে ঢাকায় আসার সময় বিমানের একটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ ৫ ক্রুসহ ৭১ জন আরোহী নিয়ে অলৌকিকভাবে রক্ষা পেয়েছিল পাইলটের দক্ষতায়। চাকা খুলে যাওয়ায় বিমানটি সেদিন ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছিল। এরপর চলতি বছরের ৩১ মার্চ ড্যাশ-৮-এর একটি বিমান সিলেট থেকে ঢাকায় রওনা দেয়। কিছুক্ষণ পরই চাকায় ত্রুটি টের পান পাইলট। বিকেল চারটার দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন তিনি। সবশেষ গত ৮ মে রাতে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে বিমানের একটি ড্যাশ-৮ বিধ্বস্ত হয়েছিল। তবে ৩৪ আরোহী সেদিনও অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান। বর্তমানে দুটি ড্যাশ-৮ দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান। তবে নতুন তিনটি ড্যাশ-৮ কিনে আনছে বিমান। ২০১৯ সালে এগুলো বিমান বহরে যোগ হবে।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন একজন। তালার ত্রিশ মাইল এলাকায় সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত একজনের নাম এস এম কামরুল ইসলাম (৩৮)। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের লস্কারপাড়ায়। অপরজনের নাম নান্নু হোসেন (৩৫)। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের উত্তর কাটিয়া এলাকায়। তাঁরা দুজনই সাতক্ষীরার স্টার স্যাটেলাইট কেবলের কর্মচারী ছিলেন। আহত অ্যাম্বুলেন্স চালকের নাম হযরত আলী (৪০)। তিনি তালার সার্জিক্যাল হাসপাতালের চালক ও তালা সদরের বাসিন্দা।প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, কামরুল ও নান্নু আজ বেলা আড়াইটার দিকে কাজ শেষে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। ত্রিশ মাইল এলাকার পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে তাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে কামরুল, নান্নু ও অ্যাম্বুলেন্সের চালক মারাত্মক আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে দায়িত্বরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইকবাল মাহমুদ পরীক্ষা শেষে কামরুল ও নান্নুকে মৃত ঘোষণা করেন।সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দায়িত্বরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইকবাল মাহমুদ বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের চালক হযরত আলীর অবস্থাও ভালো নয়।তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নামমোহাম্মদ মিঠুনজন্মমার্চ ০২, ১৯৯১ধরনডানহাতি মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানঅভিষেকবনাম ভারত, জুন ১৭, ২০১৪বিকেএসপিতে পড়ছেন যখন, তখন থেকেই তাঁর নাম ছড়িয়েছে ‘প্রডিজি’ হিসেবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানে থাকতেই যখন এত বড় এক উপাধি পেয়ে যান কেউ, সেই প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গী হয় পাহাড় সমান চাপ। সেই চাপ জয় করে কেউ কেউ হয়ে ওঠেন কিংবদন্তি, আবার সেই চাপেই কেউ কেউ ভেঙে পড়েন হঠাৎই। মোহাম্মদ মিঠুন ছিলেন দ্বিতীয় দলে।শুরুটা হয়েছিল উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে, বয়সভিত্তিক পর্যায়ে এই ভূমিকাতেই মন জিতেছেন সবার। তবে ব্যাটিংটাই ছিল মূল অস্ত্র, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে লম্বা ইনিংস খেলতে জানা একজন খেলোয়াড় হিসেবেই তাঁর পরিচয় গোটা দেশে।মিঠুনের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হলো যখন, বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর। তত দিনে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে বেশ জাঁকিয়ে বসেছেন মিঠুন, প্রায়ই দারুণ সব পারফরম্যান্সে তাঁর নাম শোনা যায়। মালয়েশিয়াতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও খেলে ফেললেন তিনি।২০০৮-০৯ মৌসুমে ঘরোয়া লিগে ২৮৫ রান সংগ্রহ করেন মিঠুন। স্ট্রাইকরেট বেশ নজরকাড়া, ১০৫। তবে পরবর্তী পর্যায়ে ঠিক যেতে পারছিলেন না ধারাবাহিকতার অভাবের কারণে। সেই সময়টা আসতে আসতে তিন বছর লেগে গেল।২০১১-১২ মৌসুমে ঘরোয়া লিগে ৫০.৮১ গড়ে রান করলেন, হাঁকালেন তিনটি সেঞ্চুরিও। ফলাফলও পেলেন হাতেনাতে, বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ক্যারিবিয়ান সফরে সুযোগ পেয়ে গেলেন প্রথমবারের মতো। এরপর আবারও একটু যতি পড়ল তাঁর পারফরম্যান্সে।২০১৩-১৪ মৌসুমে মাত্র নয় ম্যাচ ৭০৬ রান করে চোখে পড়লেন নির্বাচকদের। এখন পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেটে সেটাই তাঁর সেরা মৌসুম। ফলাফলও এল এবার। এর আগেও বেশ কয়েকবার ১৫ জনের স্কোয়াডে ডাক পেয়েছিলেন মিঠুন। বেশ কয়েকবারই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল লাল-সবুজ জার্সিটা গায়ে ওঠানোর, তবে নানা কারণে হয়ে উঠছিল না।অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে অভিষিক্ত হলেন মিঠুন। সুযোগ মিলল বটে, তবে রানের দেখা মিলল না। প্রথম বলেই কুলাসেকারাকে উইকেট উপহার দিয়ে ফিরলেন সাজঘরে।দুঃস্বপ্নের টি-টোয়েন্টি অভিষেকের পরও ওয়ানডে অভিষেকের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হলো না। ভারতের বিপক্ষে ওই বছরেরই জুনে অনুষ্ঠিত সিরিজে অভিষেক হয়ে যায় মিঠুনের। সেই ম্যাচে অভিষিক্ত হয়েছিলেন তাসকিন আহমেদও, বল হাতে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। তবে সেই ম্যাচটা হয়তো মনেপ্রাণে ভুলে যেতেই চাইবেন মিঠুন। নিজে ২৬ রানের একটা ইনিংস খেললেও দল যে গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৫৮ রানে!এরপর আরেকবার যতি পড়ল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে। ২০১৬ সালে আরেকবার ডাক পেলেন দলে, তবে পারফর্ম করতে পারলেন না ঠিক। টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সঙ্গে ঠিক যাচ্ছিল না তাঁর ব্যাটিংয়ের ধাঁচ। ফলাফল, আবারও দলের বাইরে।অবশেষে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পেলেন ২০১৮ সালে। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৫০ ওভারের ক্রিকেটে। প্রথম ম্যাচে ১০ করলেও ওই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচেই চাপের মুখে খেললেন ৬৩ রানের দারুণ এক ইনিংস। পরের তিন ম্যাচে পারফরম্যান্স তথৈবচ, তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আরেকবার বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে খেললেন ৬০ রানের আরেকটি ইনিংস। তবে ফুটে উঠল ভালো মানের স্পিনের বিপক্ষে তাঁর দুর্বলতা।এরই মধ্যে অভিষেক হয়ে গেল সাদা পোশাকেও। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে শুরুটা হয়েছিল শূন্য দিয়ে, ঠিক যেমনভাবে শুরু হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও। তবে দ্বিতীয় ইনিংসেই ৬৭ রানের একটি ইনিংস খেলে ভরসার প্রতিদান দিলেন মিঠুন। এরপর আবারও সেই অধারাবাহিকতা ঘিরে ধরল তাকে, পরের চার টেস্টে আর নেই কোনো ফিফটি। স্পিনের বিপক্ষে দুর্বলতাটা দারুণভাবে ভোগাচ্ছিল তাকে।সেই দুর্বলতাকে পাশ কাটিয়েই ওয়ানডে ফরম্যাটে নিয়মিতই ছোট্ট কিছু অবদান রেখে যাচ্ছিলেন দলের সংগ্রহে, মিডল অর্ডারে ভরসা জোগাচ্ছিলেন। নিউজিল্যান্ড সফরে গোটা দল যখন থরহরিকম্প অবস্থা, সেই পরিস্থিতিতেই টানা দুই ম্যাচে করলেন ফিফটি। আস্থা অর্জন করলেন অধিনায়কের। এরপর উইন্ডিজের বিপক্ষেও খেললেন ৪৩ রানের একটি ইনিংস।মিঠুন বাংলাদেশের ক্রিকেটে ধূমকেতুর মতো এসেই হারিয়ে যাওয়ার জন্য আসেননি। ধ্রুবতারা হতেই এসেছেন।[সব তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান এই বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত]
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে পুলিশের বিশেষ টাস্কফোর্সের (এসটিএফ) সদস্যরা চার জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে এসব জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার করা এসব জঙ্গি বাংলাদেশে নিষিদ্ধঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। তাঁদের তিনজন বাংলাদেশি, একজন ভারতীয় নাগরিক।গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন (৪৪), মামুনুর রশিদ (৩৩), মোহাম্মদ শাহিন আলম ওরফে আল আমিন (২৩) ও রবিউল ইসলাম (৩৫)। এর মধ্যে রবিউল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মিত্রপুরের বাসিন্দা। অন্যদের বাড়ি বাংলাদেশে।এসটিএফ গোপন সূত্রে তথ্য পেয়ে শিয়ালদহ স্টেশনের পার্কিং এলাকা থেকে মহসিন ও মামুনুরকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে খবর মেলে অন্য দুই জঙ্গির। এরপর হাওড়া স্টেশন থেকে আল আমিন ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ।পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা নিষিদ্ধঘোষিত নব্য জেএমবির সদস্য। এসটিএফ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে আইএস মতাদর্শের বিভিন্ন পুস্তিকা, মোবাইল ফোন, জিহাদি আদর্শের ভিডিও, পোস্টার ও ল্যাপটপ উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে বলা হয়, তিন বাংলাদেশি জঙ্গি গ্রেপ্তার এড়াতে পশ্চিমবঙ্গে এসে ঘাঁটি গাড়ে। তাদের দলে নিয়োগের জন্য যুবকদের প্ররোচিত করার কাজে নামে। গ্রেপ্তার করা ভারতীয় এ কাজে বাংলাদেশি তিনজনকে সহযোগিতা করে।
বয়সসীমা নির্ধারণ না করে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবিতে ও ১২ নেতাকে বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে ভাঙচুর চালিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিএনপির কার্যালয়ের নিচে ভাঙচুর চালান ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা।আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কাকরাইলের স্কাউট ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধরা বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় কার্যালয়ের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রদলের বেশ কিছু নেতা–কর্মীকে ধাওয়া দেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। তাঁরা কার্যালয়ের নিচের শাটার ও প্রবেশপথে লাথি মারেন।ধাওয়ার সময় নিচতলায় অবস্থান করা ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের মারামারিতে মাহবুবুর রহমান নামের একজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ বিষয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য নেই। তবে তিনি বলেন, তারিখ অনুযায়ী ১৫ জুলাই সম্মেলন হবে। সেই অনুযায়ী তাঁদের কর্মকাণ্ড চলছে।ভাঙচুরের বিষয়ে সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ইকতিয়ার কবির (বর্তমানে বহিষ্কৃত) অভিযোগ করে বলেন, ভেতরে যাঁরা আছেন, তাঁরা চেয়ার-টেবিল, সিসি ক্যামেরা এগুলো ভেঙেছেন। তাঁরা যখন ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়েছিলেন, তখন ভেতরে থাকা নেতা-কর্মীরা তাঁদের দিকে কাপ ছুড়ে মারেন। এতে তাঁদের একজন আহত হয়েছেন।ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা ইকতিয়ার রহমান কবির বলেন, বয়সসীমা তুলে দিয়ে পুনঃ তফসিল না হলে সম্মেলন হতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আগামীকালের মধ্যে দাবি আদায় না হলে অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো ঘটনা ঘটলে তার জন্য সিন্ডিকেট দায়ী থাকবে। ঘোষিত তফসিল বাতিল করে নতুন তফসিলের দাবি জানান তিনি।দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তারা আমাদেরই ছোট ভাই। আমরা আশা করব জ্যেষ্ঠ নেতারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন, তা মেনে নিয়ে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।’
এখনই ই-কমার্স খাতে ভ্যাট আরোপের সময় আসেনি। এ খাতটি কেবল যাত্রা শুরু করেছে। আরও কিছুদিন সময় দিলে এ খাত থেকেই সরকার ব্যাপক রাজস্ব আয় করতে পারবে। এ খাতের সব লেনদেনের হিসাব পাওয়া সহজ বলে ভবিষ্যতে এ খাতে বড় ধরনের ট্যাক্স পাবে সরকার। তাই আরও কিছুদিন বা ৫ বছর পর্যন্ত ট্যাক্স মওকুফ করার আহ্বান জানিয়েছে ই-কমার্স খাতের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘বাজেট নিয়ে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতামত’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্স খাতের ভ্যাট প্রত্যাহার ও একে আলাদা সেবা হিসেবে বিবেচনা করে নতুন সেবা কোড বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।প্রস্তাবিত বাজেটে ভার্চুয়াল ব্যবসায় সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ই-কমার্সখাতে ট্যাক্স আরোপ করলে এ খাতের উদ্যোক্তা উঠে দাঁড়াতে পারবে না। এখনো এ খাত লাভের মুখ দেখতে হিমশিম খাচ্ছে। এ ছাড়া ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স দিয়ে পণ্য কিনে এনে তারপর বিক্রি করে। প্ল্যাটফর্মের ওপর আবার ট্যাক্স বসালে তাদের দুবার ট্যাক্স দিতে হবে। এতে অনেক উদ্যোক্তা এ ব্যবসা থেকে দূরে সরে যাবেন। অনেক নারী উদ্যোক্তা এতে ক্ষতির মুখে পড়বেন।ই-ক্যাবের সভাপতি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে ব্যবসায়ের ডিজিটাল রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই। ফেসবুক ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনতে গিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে ডিজিটাল ব্যবসায়ের ওপরেও সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যে এনবিআর, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি উপদেষ্টা, বাণিজ্যমন্ত্রী ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, চূড়ান্ত বাজেটে এ বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিফলন দেখতে পাবেন।সংবাদ সম্মেলনে বাগডুম, রকমারি, দারাজ, চালডাল, সিন্দাবাদ, প্রিয়শপডটকমের মতো ই-কমার্স সাইটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ই-কমার্স খাতে ট্যাক্স আরোপ নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান।সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হকসহ ই-ক্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো উন্মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ ও নারীবিষয়ক তথ্য বৃদ্ধিতে আয়োজিত ‘উইকিগ্যাপ’ শীর্ষক কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠান। এর আগে বাংলাদেশে উইকিপিডিয়া নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘উইকিমিডিয়া বাংলাদেশ’ ও সুইডিশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে বাংলা উইকিপিডিয়াতে নারীবিষয়ক তথ্য সমৃদ্ধ করতে ১৫ দিনব্যাপী একটি নিবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতা হয়।২৩ জুন রোববার ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার তাঁর বাসভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সেরা ১০ জন উইকিপিডিয়া অবদানকারীকে সনদ দেন।স্লাইটার বলেন, ২০১৮ সালে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের সুইডিশ চ্যাপটার, উইকিমিডিয়া সুইডেন ও সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে উইকিপিডিয়াতে নারীবিষয়ক নিবন্ধ বৃদ্ধি ও উইকিপিডিয়ায় নারীদের অবদানকে উৎসাহ দিতে ‘উইকিগ্যাপ’ কর্মসূচি শুরু করে। লিঙ্গ সমতাভিত্তিক ইন্টারনেট তৈরির লক্ষ্যে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সুইডিশ মিশন ও উইকিপিডিয়া নিয়ে কাজ করা স্থানীয় উইকিমিডিয়া চ্যাপ্টারের সঙ্গে মিলে স্থানীয় ভাষায় বাড়ানো হয়।অনুষ্ঠানে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক নাহিদ সুলতান, কোষাধ্যক্ষ তানভির মোর্শেদ, সম্প্রদায় পরিচালক আফিফা আফরিন ও বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রশাসক ইব্রাহিম হোসেন মেরাজ।উইকিগ্যাপ প্রসঙ্গে উইকিমিডিয়া বাংলাদেশের সভাপতি শাবাব মুস্তাফা বলেন, ‘আমরা ২০১৮ সাল থেকে ঢাকার সুইডিশ দূতাবাসের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলা উইকিপিডিয়াতে উইকিগ্যাপ কর্মসূচি পরিচালনা করছি। এর অধীনে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বাংলা উইকিপিডিয়াতে ৭০০টির বেশি নারীবিষয়ক নতুন নিবন্ধ তৈরি হয়েছে।’
কিছুদিন আগে নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন বলিউড অভিনেতা হৃতিক রোশনের বোন সুনয়না রোশন। সুনয়নার অভিযোগ ছিল, তিনি মুসলিম ছেলেকে ভালোবাসেন। তাই তাঁর পরিবার এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে। বাবা রাকেশ রোশন তাঁর প্রেমিককে আতঙ্কবাদী বলেছেন। এমনকি তাঁকে রাকেশ রোশন থাপ্পড়ও মেরেছেন।এসব ঘটনার পর এবার প্রকাশ্যে এসেছেন সুনয়নার প্রেমিক রুহুল আমিন। ভারতীয় জনপ্রিয় একটি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে রুহুল আমিন রোশন পরিবারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, ‘শুধু ধর্মের কারণে কাউকে আতঙ্কবাদী বলে অভিহিত করা খুবই অপমানজনক। এর তীব্র নিন্দা হওয়া উচিত।’ তিনি বলেন, ‘এটা আফসোসের বিষয় যে আমার আর সুনয়নার সম্পর্কে রাকেশ রোশন ও পিংকি রোশন খুশি নন। আমাদের বন্ধুত্ব নিয়ে ওনাদের আপত্তি আছে। আমি জানতে পেরেছি, সুনয়নার আশপাশে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। আমাদের বন্ধুত্বের পরে এসব ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে সুনয়না যখন আমাকে বলেছিল, তখন আমার বিশ্বাস হয়নি। আমি খুব হেসেছিলাম। কিন্তু এসব সত্যি।’রুহুল বলেছেন, ধর্ম ও ভৌগোলিক কারণের ভিত্তিতে আতঙ্কবাদী হিসেবে চিহ্নিত করার মানসিকতা বদলাতে হবে। এ ধরনের মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বলেন তিনি। রুহুল আরও বলেন, ‘সুনয়না আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজের জীবন নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিল। ও চায় ওর পরিবার যেন ওকে সমর্থন করে।’ রুহুল প্রশ্ন তোলেন, হৃতিক যখন মুসলিম সুজান খানকে বিয়ে করেছিলেন, তখন কোনো সমস্যা হয়নি। তবে এখন কেন এ ব্যাপারে আপত্তি উঠছে? ভারতীয় এক ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারে সুনয়না বলেছিলেন, তিনি রুহুল আমিন নামের এক মুসলিম ছেলেকে ভালোবাসেন। রুহুল সাংবাদিক। ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয় হয়। সুনয়না পরিবারের ভয়ে রুহুলের নম্বর সেভ পর্যন্ত করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।