content
stringlengths
1
63.8k
ভারতের আসামের ১ লাখেরও বেশি মানুষ ফের নাগরিকত্ব হারাতে চলেছেন। এর আগে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বুধবার এনআরসির (রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জি) অতিরিক্ত খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, বাঙালিদের নামই বাদ পড়েছে বেশি।২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এনআরসির প্রাথমিক খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও আসামে অনেকের নাগরিকত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বুধবার প্রকাশিত অতিরিক্ত খসড়া তালিকায় ১ লাখ ২ হাজার ৪৬২ জনের নাম পাওয়া যায়নি। কিন্তু গত বছর প্রকাশিত চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় এঁদের সবার নাম ছিল। এখন নতুন করে তাঁদের ফের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। বাদ পড়াদের প্রত্যেকের বাড়িতেই যাচ্ছে নোটিশ। আগামী ১১ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁদের এনআরসি কেন্দ্রে হাজির হয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে।প্রসঙ্গত, ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪টি আবেদনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৭ জনের নাম ছিল। অর্থাৎ চূড়ান্ত খসড়াতেই বাদ পড়ে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম।বুধবার আরও ১ লাখেরও বেশি নাম বাদ পড়ায় আসামে ৪১ লাখেরও বেশি মানুষ হারাতে চলেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশিত হবে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। তবে এ দিন যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের সামনেও নতুন করে আবেদনের সুযোগ থাকছে। ১১ জুলাইয়ের মধ্যে এনআরসি সেবাকেন্দ্রে আবেদন করতে হবে।এনআরসি সূত্র জানায়, চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও এদিন বাদ যায়, ঘোষিত বিদেশিদের পাশাপাশি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে তাঁদের নামও। এ ছাড়া সন্দেহভাজন ভোটারদের নামও বাদ পড়েছে তালিকা থেকে।সমন পেয়েও যাঁরা এনআরসি কেন্দ্রে হাজিরা দেননি তাঁদের নামও বাদ গিয়েছে এই তালিকা থেকে। এ ছাড়া নথিপত্রে গড় মিল থাকাও নাম বাদ যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে জানানো হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল অবশ্য বলেছেন, বৈধ নাগরিকেরা সবাই ঠাঁই পাবে এনআরসি তালিকায়। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।আসাম রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার অভিযোগ, এনআরসি কর্তৃপক্ষ নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। বাঙালি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের এনআরসির নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্বকাপ দিয়েই একদিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন, এমন ঘোষণাই দিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে এক সাক্ষাৎকারে গেইল জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের পরেও ভারতের বিপক্ষে হোম সিরিজে খেলতে চান তিনিঅবসর নিয়ে তারপর ইউ-টার্ন, খেলার দুনিয়ায় বিষয়টি একেবারে বিরল নয়। এই যেমন ২০১৬ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে হারের পর আবেগের বশে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দেন মেসি। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার জার্সিতে ফিরেও আসেন তিনি। ক্রিকেটারেরাও এ ধারার বাইরের নন। ক্রিস গেইলের কথাই ধরুন, বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে গেইল বলেছিলেন, বিশ্বকাপের পর আর ওয়ানডে খেলব না। কিন্তু বিশ্বকাপের মাঝপথে সিদ্ধান্তটি থেকে সরে আসলেন ‘ইউনিভার্স বস’। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে গেইল নিজেই ঘোষণাটি দিলেন। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে ভারত। সেই সিরিজে ওয়ানডে এবং টেস্ট খেলে তবেই অবসর নেওয়ার কথা জানালেন গেইল, ‘বিশ্বকাপের পরে আমার পরিকল্পনা... হয়তো ভারতের বিপক্ষে আর একটা টেস্ট খেলব। আর ওয়ানডে তো অবশ্যই খেলব। তবে টি-টোয়েন্টি খেলব না।’এদিকে তাঁর এ সিদ্ধান্তে অন্য সবার মতো যারপরনাই অবাক ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডার, ‘ড্রেসিং রুমে সে এই বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। তবে আমি মনে করি, এটা ক্রিকেটের জন্য সুখবর। ক্রিসকে দলে পাওয়া সব সময়ই দারুণ ব্যাপার। তাঁর এখনো অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আশা করি, যদি তাঁর শরীর সায় দেয় তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয় আরও বেশ কিছু দিন ক্রিকেট মাঠে থাকতে পারবে।’তবে বিশ্বকাপের আগে গেইলের সুর ছিল অন্যরকম, ‘বিশ্বকাপ দিয়েই ৫০-ওভারের ক্রিকেটকে বিদায় বলতে চাই। তরুণদের সুযোগ করে দিতে চাই। পার্টি স্ট্যান্ডে বসে উৎসাহ দিয়ে যেতে চাই।’ অবসর নিয়ে গেইলের ‘ইউ-টার্ন’ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে মিডিয়া ম্যানেজার ফিলিপ স্পুনার, ‘ভারতের সঙ্গে সিরিজেই ক্রিস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানবে।’ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থা খুব একটা সুবিধের না। ৬ ম্যাচে মাত্র ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের আটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বরগুনা শহরে কয়েক যুবকের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক তরুণ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ সড়কের ক্যলিক্স কিন্ডারগার্টেনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।নিহত তরুণের নাম রিফাত শরীফ (২২)। তিনি সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দুলাল শরীফের ছেলে। অভিযুক্তদের মধ্যে নয়ন ও রিফাত ফরাজীর নাম বলতে পেরেছেন শরীফের বন্ধুরা।রিফাতের বন্ধু মঞ্জুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। আয়েশার বিয়ে নিয়ে নয়নের সঙ্গে রিফাতের দ্বন্দ্ব চলছিল। এ কারণে রিফাত প্রতিদিন আয়েশাকে কলেজে পৌঁছে দিতেন। স্ত্রীকে কলেজে দিয়ে ফেরার পথে হামলার শিকার হন রিফাত। প্রথমে তাঁকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে রিফাতের মৃত্যু হয়।মঞ্জুরুল আলমসহ রিফাতের কয়েক বন্ধু জানান, নয়নের নেতৃত্বে রিফাত ফরাজিসহ আরও দুই যুবক ওই হামলায় অংশ নেন। তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাতের বুকে, ঘাড়ে, পিঠে আঘাত করেন।রিফাতের বন্ধুরা আরও জানান, নয়ন বরগুনা সরকারি কলেজ হোস্টেল–সংলগ্ন আবুবকর সিদ্দিকের ছেলে। দুই মাস আগে রিফাতের সঙ্গে আয়েশার বিয়ে হয়। এরপর থেকে নয়ন আয়শাকে তাঁর সাবেক স্ত্রী দাবি করেন এবং আয়শার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ‘আপত্তিকর পোস্ট’ দেন। এ নিয়ে রিফাতের সঙ্গে নয়নের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক থাকায় তাঁদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।বরগুনার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্তদের ধরতে তাঁদের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।’
আবারও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। এখন এই দুই দলের ম্যাচ মানেই অন্য রকম উত্তেজনা।বিশ্বকাপের আগে এক ভবিষ্যদ্বাণী করে জাতির ‘শত্রু’তে পরিণত হওয়া ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে যে কতভাবে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে! সেই ট্রলের একটা আজ দেখানো হলো মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক সেটি দেখে হেসেই খুন! ‘ট্রল কি শুধু ফেসবুকে? সেদিন মাঠে ওকে পেয়ে দর্শকেরা গ্যালারি থেকে চিৎকার করছে আর হাতের দুটো আঙুল দেখিয়ে বলছে, “ম্যাককালাম দেখো, আমাদের দুটো হয়ে গেছে”!’—বার্মিংহামের টিম হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে মাশরাফি বলেন আর হাসেন। এই হাসির মধ্যে ম্যাককালামকে নিয়ে বানানো একটি ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও দেখানো হলো। বাংলাদেশ অধিনায়কের সেটি দেখে পেটে খিল লাগার জোগাড়। হাসি থামিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এটা কি মানেন, এখন ভারত-পাকিস্তান নয়, এখন বেশি উত্তাপ ছড়ায় বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ! এখন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই ব্লকবাস্টার শো! এসব হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে।’মাশরাফি ভুল বলেননি। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা হয়, কখনো সেটি এতটাই সীমা ছড়ায়, অনেক সময় খুবই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। আর এতে অদৃশ্য চাপ তৈরি হয় ক্রিকেটারদের ওপর। এজবাস্টনে ২ জুলাই বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়েও যেমন তুমুল উত্তেজনা বার্মিংহামে। কাল রাতে কজন বাংলাদেশি প্রবাসী খুব আফসোস করছিলেন, অনেক চেষ্টা করেও পারেননি ২ জুলাই ম্যাচের টিকিট জোগাড় করতে। যে দু-এক জায়গায় খোঁজ পেয়েছেন, কিন্তু টিকিটের দাম ২০০ পাউন্ড (প্রায় ২২ হাজার টাকা) ছাড়িয়ে গেছে! একজন জানালেন, এবার ইংল্যান্ডের প্রতিটি ভেন্যুতে বাংলাদেশের দর্শকদের দাপট থাকলেও বার্মিংহামে সেটি থাকবে না। গ্যালারির ৭০ শতাংশই থাকবে ভারতীয়। কেন থাকবে, সেটির দুটি যুক্তি আছে—প্রথমত, ভারতীয় দর্শকদের সংখ্যা। একটা টিকিটের জন্য বাংলাদেশের যদি ১০ জন আবেদন করেন, ভারতের করে ১০০ জন! আর বাণিজ্যিক কারণে আইসিসিও ভারতের ম্যাচে ভারতীয় সমর্থকদের চাহিদাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।ওভাল, কার্ডিফ, টন্টন, ট্রেন্টব্রিজ, সাউদাম্পটনে যে বিপুল সমর্থন পেয়ে এসেছেন, এজবাস্টনের গ্যালারিতে সেটা যে থাকবে না, ভালোই জানা মাশরাফির। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল তো এ মাঠেই খেলে গেছেন। দেখেছেন লাল–সবুজের চেয়ে নীলের বেশি উপস্থিতি! দর্শকদের বিপুল সমর্থন থাকুক বা না-ই থাকুক, বাংলাদেশ অধিনায়ক বেশি চিন্তিত এজবাস্টনের উইকেট নিয়ে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো হাই স্কোরিং উইকেট পাবেন, নাকি লো স্কোরিং ম্যাচ। নতুন উইকেট দেবে নাকি ব্যবহৃত উইকেট? যদি ব্যবহৃত উইকেটে খেলা হয়, তাহলে ভীষণ খুশিই হবে বাংলাদেশ। এই টুর্নামেন্টে মাশরাফি যে তিনটি ম্যাচ জিতেছেন প্রতিটিই ব্যবহৃত উইকেটে খেলে।মাশরাফি ভারত-ম্যাচ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না। তবে দলের প্রতিনিধি হয়ে দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা মেহেদী হাসান মিরাজ বলে গেলেন, ‘ভারতের সঙ্গে অনেকগুলো ম্যাচ আমরা খুব কাছে গিয়ে হেরেছি। বলব ভাগ্যের ছোঁয়া সেভাবে পাইনি। আল্লাহ সহায় হলে এই ম্যাচটা আশা করি জিততে পারব। হ্যাঁ, অবশ্যই ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ। তারা দাপটের সঙ্গে খেলছে, ভালো খেলছে। আমরা এসব ভেবে চাপ নিচ্ছি না। স্বাভাবিকভাবে খেলা খেললেই ভালো কিছু হবে আশা করি।’
ক্রিস গেইলকে ঘায়েল করতে মোহাম্মদ শামির চেয়ে ভুবনেশ্বর কুমারই বেশি কার্যকরী হবেন, এমনটাই মনে করছেন শচীন টেন্ডুলকার।বিশ্বকাপে এবার প্রথম সুযোগ পেয়েই মাত করেছেন মোহাম্মদ শামি। চেতন শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। অথচ সেই শামিকেই কি না পরের ম্যাচে একাদশে চাইছেন না শচীন টেন্ডুলকার!না, কোনো ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে নয়, বরং ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই শামিকে পরের ম্যাচের একাদশে চাইছেন না শচীন। যার ইনজুরির সুবাদে একাদশে ঢুকেছিলেন শামি, সেই ভুবনেশ্বর কুমারকেই দুজনের মধ্যে বেছে নিয়েছেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’।কাল ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবে ভারত। পাকিস্তানের বিপক্ষে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ভুবনেশ্বর কুমার এরই মধ্যে ফিট হয়ে উঠেছেন। আগের ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করা শামিই থাকবেন, না কি নিজের জায়গা ফিরে পাবেন ভুবনেশ্বর—সে ব্যাপারে কঠিন সিদ্ধান্তই নিতে হবে ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টকে। তবে ম্যাচের আগেই এ ব্যাপারে ‘টিপস’ দিয়ে রাখলেন শচীন।ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার স্পোর্টসের বিশ্লেষণে শচীন বলেছেন, ‘ভারতের জন্য এটা দারুণ খবর যে ভুবনেশ্বর কুমার ফিট হয়ে উঠেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য ভুবনেশ্বর ও শামির মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হলে আমি অবশ্যই ভুবনেশ্বরকেই বেছে নেব।’কেন শামির জায়গায় ভুবনেশ্বর, সেটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরির মালিক, ‘ওকে (ভুবনেশ্বর) বেছে নেওয়ার একমাত্র কারণ হলো, ক্রিস গেইলের বিপক্ষে দারুণ অ্যাঙ্গেলে আউটসুইঙ্গার করতে পারে। এটি খেলতে বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয় গেইলকে। এখনো মনে পড়ে, আমার শেষ টেস্টে ভুবনেশ্বরের বিপক্ষে কী রকম ভুগতে হয়েছিল গেইলকে।’আগের ম্যাচেই হ্যাটট্রিক করার পর শামিকে বাদ দেওয়া সহজ নয়, এটি শচীনও মানছেন। কিন্তু দলের স্বার্থেই ভুবনেশ্বরকে ফেরানোর পক্ষপাতী তিনি, ‘আমি জানি এটা শামির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আমার মনে হয় এ ম্যাচের জন্য ভুবনেশ্বরকেই নেওয়া উচিত।’
সেই দৃশ্যটা অনেকেরই হয়তো মনে আছে। ৯০ দশকের যারা বলিউড সিনেমা দেখতেন তাদের মনে থাকার কথা শাহরুখের সেই গানটির কথা। ‘দিওয়ানা’ ছবিতে মুম্বাইয়ের রাস্তায়, উড়াল সড়কে, সমুদ্রের পাড়ে বাইকে চড়ে বন্ধুদের নিয়ে শাহরুখ খানের সে কি বাহাদুরি! সুপারহিট গানের সঙ্গে, ‘কোয়ি না কোয়ি চাহিয়ে পেয়ার কারনেওয়ালা’...! বন্ধুদের সঙ্গে দলবলে ছুটে বেড়িয়ে কত কী কেরামতি দেখালেন সে গানে। ২৭ বছর আগের সেই স্মৃতিই যেন উসকে দিয়ে বলিউড বাদশাকে। আবারও বাইকের চড়ে সেই দিনটি উদ্‌যাপন করলেন শাহরুখ।গতকাল ২৫ জুন চলচ্চিত্রে ২৭ বছর সম্পূর্ণ হয়েছে শাহরুখের। আর সেই ২৭ বছরের উদ্‌যাপনটি শাহরুখ করলেন নানাভাবে। রাত সাড়ে ৯টায় নিজের টুইটারে একটি ভিডিও যোগ করলেন। ভিডিওটিতে শাহরুখকে বাইকে চড়ে পুরোনো কায়দায় দেখা গেল শাহরুখকে। নেপথ্যে সেই গানটিও জুড়ে দিয়েছিলেন,‘কোই না কোই চাহিয়ে পেয়ার কারনেওয়ালা’।অবশ্য ২৭ বছর আগের সেই ছবির গানে শাহরুখকে হেলমেট মাথায় দেখা যায়নি। সেটা অনুসরণ করে এবারের ভিডিওতে হেলমেট মাথায় রাখেন নি। তবে পরিষ্কার করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি অবশ্যই রাস্তায় বাইক নিয়ে বেরোলে হেলমেট ব্যবহার করব। তোমরাও বাইকে চালালে হেলমেট পড়বে।’ ভিডিও বার্তায় স্মৃতিকাতর শাহরুখ আরও বলেন, ‘আমি আমার ভক্ত-দর্শকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। এই ২৭ বছর ধরে তোমরা আমার সঙ্গে আছ। এই ২৭ বছর এখন পর্যন্ত আমার পুরো জীবনের অর্ধেক সময়। এই সময়ের মধ্যে আমি চেষ্টা করেছি তোমাদের বিনোদিত করতে। অনেক সময় আমি সফল হয়েছি, কখনো সফল হইনি। তারপরও তোমরা আমার সঙ্গে আছ সে জন্য জন্য অনেক ধন্যবাদ।’জানা গেছে, ক্যারিয়ারের ২৭ বছর পূর্তির দিনে মোটরসাইকেল কোম্পানিতে কাজ করা শাহরুখের এক বন্ধু তাঁকে দুটি মোটরসাইকেল পাঠিয়েছে। বলেছে- ‘কোয়ি না কোয়ি চাহিয়ে’ গানে যেভাবে স্টান্ট করেছ, এখন সেটি আবার করে দেখাও। বন্ধুর কথা রাখতে তিনি শাহরুখ মোটরসাইকেল চালানোর দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করেছেন।১৯৯২ সালের ২৫ জুনে মুক্তি পেয়েছিল শাহরুখের দিওয়ানা ছবিটি। যে ছবি দিয়ে বলিউড রাজ্য জয়যাত্রা চালু হয়েছিল, আজও চালু আছে যা। যদিও শাহরুখ আগে সই করেছিল ‘দিল আশনা হ্যায়’ ছবিতে। তবে তার আগেই মুক্তি পায় ‘দিওয়ানা।’তাজ মুহম্মদ খান আর লতিফ ফাতিমার পরিবারে ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর জন্ম হয় শাহরুখের। শাহরুখের বাবা পাকিস্তানের পেশোয়ারের মানুষ, মা ভারতের হায়দরাবাদের আর দাদি কাশ্মীরের। তবে শাহরুখের প্রথম টেলিভিশন ধারাবাহিক শুরু হয় ১৯৮৯ সালে। কর্নেল কাপুরের পরিচালনায় 'ফৌজি' নামের সেই ধারাবাহিক খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। সেখানেই প্রথমবার ভারতের দর্শক দেখলেন পরের কয়েক বছরে স্টার থেকে সুপার স্টার হয়ে ওঠা শাহরুখ খানকে।১৯৮৯-৯০ সালে রেণুকা সাহানের সঙ্গে ‘সার্কাস’ ধারাবাহিকে কাজ করতে শুরু করেন শাহরুখ। ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাসে মারা যান শাহরুখ খানের মা। মায়ের মৃত্যুর শোক থেকে দূরে সরে যেতে এক বছরের জন্য শাহরুখ দিল্লি থেকে মুম্বাই গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ফেরা আর হয়নি আর। সে বছরই প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন শাহরুখ খান। সেটি ছিল হেমা মালিনী অভিনীত ‘দিল আসনা হ্যায়’। নায়ক হিসাবে শাহরুখকে প্রথম দেখা গেল পরের বছর ২৫ জুন ১৯৯২তে ‘দিওয়ানা’য়। কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন শাহরুখ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৩৭ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড।বাংলাদেশ দলের বাইরে পয়েন্ট টেবিল দেখে সমর্থন দিতে হচ্ছে সমর্থকদের। যেমন ধরুন আজ নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান ম্যাচে বেশির ভাগ সমর্থকই কিউইদের পক্ষে। কেন উইলিয়ামসনের দল টেবিলের দুইয়ে (১১ পয়েন্ট), এ ম্যাচ ছাড়াও হাতে রয়েছে আরও দুটি ম্যাচ। এর মধ্যে অন্তত এক ম্যাচ জিতলেই সেমিতে উঠবে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু এই তিন ম্যাচেও নিউজিল্যান্ড যদি হারে আর বাংলাদেশ যদি নিজেদের বাকি দুই ম্যাচ জেতে তবুও রানরেটে দুই দলের মধ্যে বড় ব্যবধানের পার্থক্য থাকার কথা। বাংলাদেশের জন্য তাই নিউজিল্যান্ডকে ধরা অনেক কঠিন। এদিকে পাকিস্তান আজ জিতলে সেমিতে ওঠার দৌড়ে মাশরাফিদের প্রতিদ্বন্দ্বী বাড়বে। বাংলাদেশের সমর্থকেরা তাই আজ নিউজিল্যান্ডকে সমর্থন দিলেও আগে ব্যাট করতে নেমে দলটি কিন্তু ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল!এজবাস্টনে বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে। মাথার ওপরেও ভর করেছিল কালো মেঘ। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এর মধ্যে টস জিতে কেন আগে ব্যাটিং করলেন, সে প্রশ্ন থাকবে। অবশ্য খেসারতও দিতে হয়েছে ভালোই। টপ অর্ডারের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন দলীয় সংগ্রহ ১০০ রানের কোটা ছোঁয়ার আগেই। এখান থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে শেষ পর্যন্ত উঠে দাঁড়িয়ে পুরো ৫০ ওভারই খেলতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড ; সংগ্রহটাও হয়েছে লড়াই করার মতো—৬ উইকেটে ২৩৭।২০০ রান তোলার আগেই অলআউট হওয়ার শঙ্কায় ভোগা নিউজিল্যান্ডকে লড়াইয়ের সংগ্রহটুকু এনে দিয়েছেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও জিমি নিশাম। ষষ্ঠ উইকেটে ১২৮ বলে ১৩২ রানের জুটি গড়েন দুজন। গ্র্যান্ডহোম ৬৪ রান করে ফিরলেও নিশাম খেলেছেন ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। সেঞ্চুরির সুবাস ছড়িয়ে অপরাজিত ছিলেন ৯৭ রানে।এজবাস্টনের বাইশ গজ শুরু থেকেই পেসারদের সহায়তা করেছে। মজার ব্যাপার, লেগ স্পিনার শাদাব খানও উইকেট থেকে ভালোই বাঁক পেয়েছেন। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ফিরিয়েছেন কিউইদের ‘বিগ ফিশ’ উইলিয়ামসনকে (৪১)। কিউইদের সংগ্রহ তখন ২৬.২ ওভারে ৫ উইকেটে ৮৩। উইকেট কিছুটা ভেঙেছেও। বিশ্লেষক থেকে ধারাভাষ্যকারদের অনুমান, নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ তাড়া করা মোটেও সহজ হবে না পাকিস্তানের জন্য।পেসবান্ধব কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটি বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মার্টিন গাপটিলকে বোল্ড আউট করেন মোহাম্মদ আমির। সেটি আবার নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে ছিল আমিরের প্রথম ডেলিভারি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাকিস্তানের সবশেষ ম্যাচেও নিজের প্রথম বলে উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন আমির। এ পেসার শুরুটা করে দেওয়ার পর কিউইদের গতির আগুনে পুড়িয়েছেন শাহিন আফ্রিদি।১৩তম ওভারের তৃতীয় বলের মধ্যে ৪৬ রান তুলতে মোট ৪ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। পরের তিনটি উইকেট আফ্রিদির। কলিন মানরো, রস টেলর ও টম লাথামকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন বাঁমহাতি এ পেসার। এর মধ্যে রস টেলরের ক্যাচটি ছিল দুর্দান্ত। প্রথম স্লিপের দিকে ধেয়ে চলা ক্যাচটি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত দক্ষতায় গ্লাভস বন্দী করেন পাকিস্তান অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদ। নিজের ৫ ওভারের মধ্যেই মাত্র ৯ রান দিয়ে ২ মেডেনসহ ৩ উইকেট নেন আফ্রিদি। শেষ পর্যন্ত তাঁর বোলিং ফিগার ১০-৩-২৮-৩।পথ হারানো ইনিংসকে গড়েপিটে পথে ফিরিয়েছেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও জিমি নিশাম। ছয়ে ও সাতে নেমে ফিফটি তুলে নেন দুজনেই। দুজন জুটি বাঁধার আগে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে মাত্র দুবার ওভারপ্রতি রানরেট সাড়ে চারের ওপরে উঠেছে। দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারানোয় ক্রমশ নিম্নমুখী রানরেটকে ধীরে ধীরে টেনে তুলেছেন গ্র্যান্ডহোম-নিশাম জুটি। ২৭তম ওভার থেকে জুটি বেঁধে ৪৭.৪ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করেছেন দুজন। শেষ ১০ ওভারে ৮৫ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড।আমির ১ উইকেট নিলেও ১০ ওভারে ৬৭ রান দিয়েছেন। শাদাব খান ১০ ওভারে ৪৩ রান খরচায় নিয়েছেন ১ উইকেট। ওয়াহাব রিয়াজ ৫৫ রান দিলেও উইকেট পাননি।
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে একটি ঘরে সিঁধ কাটার ঘটনা ঘটেছে। পরে বুধবার সকালে ওই ঘরের পাশে ১০ বছর বয়সী শিশুর লাশ পাওয়া গেছে। নিহত ওই শিশুর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মঙ্গলবার রাতে সিঁধ কেটে ঘুরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে।মারা যাওয়া ওই শিশুর নাম হাসান আলী। সে একই গ্রামের আবদুল হালিমের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর মা রিনা বেগম ও বাবা আবদুল হালিমকে পুলিশ আটক করেছে।বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে দৌলতপুর গ্রামের আবদুল হালিমের দ্বিতীয় স্ত্রী রিনা বেগম তাঁর ছেলে হাসান আলীকে সঙ্গে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে বুধবার সকালে ঘরের পেছনে হাসান আলীর লাশ পাওয়া যায়। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। পরে ওই ঘর থেকে অচেতন অবস্থায় শিশুটির মা রিনা বেগমকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিনা বেগম ও তাঁর স্বামী আবদুল হালিমকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস বলেন, শিশুটিকে হত্যার রহস্য জানা যায়নি। ঘরে ঘুমানোর পর শিশুটিকে কীভাবে বাইরে এনে হত্যা করা হলো, তা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। অন্য কেউ সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকেছিল কি না, সেটাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এ আদেশ দেন।সাজা পাওয়া ব্যক্তির নাম আবদুল করিম (৩৯)। তিনি মতলব উত্তর উপজেলার বাসিন্দা।ইউএনওর কার্যালয়, ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন সহপাঠীসহ আজ বুধবার স্কুলে যাচ্ছিল ছাত্রীটি। বেলা ১১টার দিকে ছাত্রীটি উপজেলার একটি বাজারে পৌঁছায়। এ সময় ওই জায়গা থেকে করিম ফুসলিয়ে ছাত্রীটিকে বাজারের একটি দোকানের পেছনে নির্জন জায়গায় নিয়ে যান। পরে করিম তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রীটি ভয়ে চিৎকার শুরু করে। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ও সহপাঠীরা সেখানে ছুটে যায়। স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে করিমকে আটক করে ধোলাই দেন। এরপর মুঠোফোনে ঘটনাটি ইউএনওকে জানান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউএনও ঘটনাস্থলে যান ও সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই ব্যক্তির বিচার করেন।ঘটনার শিকার ছাত্রীটির বাবা প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, করিমের বিরুদ্ধে এলাকায় এ ধরনের আরও অভিযোগ আছে। এ ঘটনার পরে তাঁর মেয়েটি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে। তবে দোষীর সাজা হওয়ায় কিছুটা হলেও তাঁরা স্বস্তি পাচ্ছেন।মতলব উত্তরের ইউএনও শারমিন আক্তার বলেন, সাজার পর করিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে চাঁদপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
সরফরাজ হয়তো এখন মুচকি মুচকি হাসছেন। পাকিস্তানকে নিয়ে যে হাসির রোল উঠেছে, তারপরও যদি বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব হয় তাহলে ক্ষতি কী? ইংল্যান্ড বিশ্বকাপকে তো ইতিমধ্যেই ১৯৯২ বিশ্বকাপ বানিয়ে তুলেছে পাকিস্তান।কিছুটা মিল থাকতেই পারে, তাই বলে এতটা! ১৯৯২ বিশ্বকাপে ইমরান খানরা ঠিক যেভাবে হামাগুড়ি দিয়ে এগোচ্ছিল। অবিকল সেভাবেই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এগোচ্ছে সরফরাজরা। যেটিকে কাকতাল কেন, ‘কোকিল-তালীয়’ বললেও হয়তো কম বলা হয়!অনেক দিন পর ১৯৯২ বিশ্বকাপের ফরম্যাটে খেলা হচ্ছে এবার। প্রত্যেক দলের সঙ্গে প্রত্যেকের খেলা, কোয়ার্টার ফাইনাল বলে কিছুই নেই। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চার দল সরাসরি সেমিফাইনাল খেলবে। সেই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান।ফরম্যাটের মিল দিয়ে শুরু এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান ১৯৯২-এর পথযাত্রা অনুসরণ করছে একদম মেপে মেপে। ওই বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের শুরুটা ভালো ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পরাজয় দিয়ে শুরু হয় ইমরান খানদের। কাকতালীয় হলেও সত্যি ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও উইন্ডিজদের কাছে ৭ উইকেটে হেরেই পাকিস্তানের এবার বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু। এখানেই শুধু নয়, ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের প্রথম ছয়টি ম্যাচের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে এবার। সেবার প্রথম ছয় ম্যাচের ফলাফল ছিল: পরাজয়, জয়, পরিত্যক্ত, পরাজয়, পরাজয়, জয়। অবিশ্বাস্য হলেও এবারও ঠিক একই পথে এগোচ্ছেন সরফরাজরা।মিলটা আরও বেশি করে আসছে এ কারণে, ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সপ্তম ম্যাচটি ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আজ সপ্তম ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ কে, সে তো না বলে দিলেও চলছে। ১৯৯২ বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ড অপরাজিত ছিল। পাকিস্তান তাদের হারিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। যে কারণে ইমরানের খানের দলটা ক্রিকেট ইতিহাসে ‘কোণঠাসা বাঘ’ নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। আজকের ম্যাচের ফল কি সেই ধারা অনুসরণ করবে?১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের উদীয়মান তারকা ছিলেন ইনজামাম-উল-হক। এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে আছেন ইনজিরই ভাতিজা ইমাম-উল হক। সেবার পাকিস্তানের ষষ্ঠ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের নাম ছিল সোহেল (আমির সোহেল)। এবারও পাকিস্তানের ষষ্ঠ ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের নাম সোহেল (হারিস সোহেল)। ১৯৯২ বিশ্বকাপের আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়নের নাম ছিল অস্ট্রেলিয়া (১৯৮৭) ও ভারত (১৯৮৩)। এবারও আগের দুই চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া (২০১৫) ও ভারত (২০১১)।এ তো গেল মাঠের কথা, মাঠের বাইরেও কিছু অদ্ভুতুড়ে মিল রয়েছে। আসিফ আলী জারদারি ১৯৯২ বিশ্বকাপ চলার সময় জেলে ছিলেন। পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবারও ২০১৯ বিশ্বকাপও জেলে বসেই দেখছেন। মিল তো ছড়িয়ে গেছে হলিউড পর্যন্ত! ১৯৯২ সালে আলাদিন অ্যানিমেশন ছবিটি মুক্তি পায়। নতুন করে বানানো আলাদিন আবার মুক্তি পেয়েছে ২০১৯ সালে!এত এত কাকতালীয় মিল! পাকিস্তান তো তাহলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েই যাচ্ছে।দাঁড়ান, দাঁড়ান! বিশ্বসেরা মুকুট কাকতালীয় মিলের জন্য দেওয়া হয় না, দেওয়া হয় মাঠের খেলায় জেতার জন্য। পাকিস্তান কি পারবে?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আগামী ১ জুলাই দালিয়ানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র আজ বুধবার বাসসকে এ কথা জানিয়েছেন।সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেবেন। চীনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন তিনি। চীনের দালিয়ানে ১-৩ জুলাই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অ্যানুয়েল মিটিং অব দ্য নিউ চ্যাম্পিয়নস-২০১৯’, যা ডব্লিউইএফ সামার দাভোস নামেও পরিচিত।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রটি বাসসকে জানিয়েছে, সফরকালে শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেছিয়াং-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি ১৭২০) ১ জুলাই বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।বিমানটি ২ জুলাই স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে লিয়াওনিং প্রদেশের দালিয়ানের দালিয়ান ঝৌশুজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা শেষে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে শাংগ্রি-লা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। দালিয়ান সফরকালে তিনি এ হোটেলেই অবস্থান করবেন।২ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রী দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে অনুষ্ঠেয় ডব্লিউইএফ সামার দাভোস সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন।সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘লিডারশিপ ৪.০—সাকসিডিং ইন এ নিউ এরা অব গ্লোবালাইজেশন’ শেখ হাসিনা বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লস শোয়াবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বিকেলে দালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে শোয়াবের দপ্তরে অনুষ্ঠেয় ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।আগামী ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারের সরবরাহ করা একটি ভাড়া বিমানে স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় বেইজিংয়ের উদ্দেশে দালিয়ান ত্যাগ করবেন। একই দিন বিমানটি স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে বেইজিংয়ের ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে দিয়ায়োতাই স্টেট গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হবে। চীনের রাজধানীতে সফরকালে শেখ হাসিনা এই হোটেলেই অবস্থান করবেন। বিকেলে তিনি বেইজিংয়ের লিজেনডাল হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দেবেন।
ভারতের দুটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান পদে নতুন দুজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং বা ‘র’-এর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সামন্ত গোয়েলকে। আর অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিষয়ক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অরবিন্দ কুমারকে।আজ বুধবার ভারত সরকার এ নিয়োগ দিয়েছে।এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ‘র’-এর বর্তমান প্রধান অনিল ধর্মসেনার কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেবেন সামন্ত গোয়েল। অন্যদিকে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর কাশ্মীর ডেস্কের দ্বিতীয় প্রধান অরবিন্দ কুমার দায়িত্ব বুঝে নেবেন বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা রাজিব জৈনের কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ ফাইলে স্বাক্ষর করে পাঠিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অফিসে।ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে পাকিস্তানের বালাকোটে ভারত যে বিমান হামলা চালিয়েছিল সেই হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন সামন্ত গোয়েল। এর আগে পাকিস্তানের ২০১৬ সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর পরিকল্পনার অংশ ছিলেন সামন্ত গোয়েল।নতুন দায়িত্ব পাওয়া ওই দুই কর্মকর্তা আগামী ৩০ জুন থেকে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। সামন্ত গোয়েল এবং অরবিন্দ কুমার দু’জনেই ১৯৮৪ ব্যাচের আইপিএস অফিসার।ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ৯০ এর দশকে পাঞ্জাবে যখন উগ্রপন্থীদের প্রচণ্ড দৌরাত্ম্য ছিল তখন সামন্ত গোয়েল তা মোকাবিলায় সহায়তা করেন। দুবাইয়ে ও লন্ডনে তাকে ইনচার্জ কনস্যুলার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অরবিন্দ কুমার আসাম মেঘালয় ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। তিনি বিহারে এজেন্সির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন তিনি প্রশাসনিক ও এজেন্সির বিভিন্ন শাখায় তদন্তের কাজ করেছেন।
আগামী ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে গঠিত কমিটির সমন্বয় ও প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার। উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে তাঁর দপ্তর-সংলগ্ন অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিনে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনসংলগ্ন মল চত্বরে জমায়েত হবেন। সেখানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও সব হলে পতাকা উত্তোলন করা হবে।উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হবে। শোভাযাত্রা টিএসসিতে যাবে।কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘গুণগত শিক্ষা, প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন।দিবসটি উপলক্ষেবিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত দুর্লভ পাণ্ডুলিপি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে বেলা ৩টায় অনুষদ প্রাঙ্গণে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কার্জন হল ভবনের উত্তর-পূর্ব বারান্দায় উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হল দিনব্যাপী স্ব স্ব কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কেক কাটা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, রচনা প্রতিযোগিতা, বৃক্ষরোপণ, মিষ্টি বিতরণ ও আলোকসজ্জা।এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। তবে হল, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য অফিস যথারীতি খোলা থাকবে। তথ্যসূত্র: বাসস
প্রায় ৩৫ বছর পর প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ১৯৮৪ সালে কর মওকুফের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। ওই প্রজ্ঞাপনে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেল নির্মাণের সঙ্গে কর্মরত ছিলেন এমন বিদেশি নাগরিকদের আয় করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর নতুন আয়কর অধ্যাদেশ করা হয়। কিন্তু সেই করমুক্ত রাখার ঘোষণার প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হয়নি। গত ২৩ জুন ওই প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে আরেকটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।১৯৮৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) যুগ্ম সচিব মতিউর রহমান ওই প্রজ্ঞাপনটি জারি করেছিলেন। ১৯২২ সালের আয়কর আইনের ৬০ ধারার ২ উপধারা অনুযায়ী ওই সব বিদেশি প্রকৌশলীদের আয়ের ওপর কর মওকুফ করা হয়েছিল। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, শুধু বিদেশি কর্মীদের বেতনভাতা সোনারগাঁও হোটেল কর্তৃপক্ষ যে টাকা দেবে, সেই টাকা করমুক্ত থাকবে। অন্য আয়ের কর কর্তৃপক্ষ দেবে না। কিন্তু এরপর ১৯৮৪ সালে তৎকালীন সামরিক সরকারের আমলে নতুন আয়কর অধ্যাদেশ জারি করা হয়। কিন্তু পরে সেই প্রজ্ঞাপনটি আর বাতিল করা হয়নি।রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আট একর জমির ওপর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল অবস্থিত। বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন হোটেলস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এটি। তবে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্যান প্যাসিফিক হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্টস এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে। জাপানের ওভারসিজ ইকোনমিক কো-অপারেশন ফান্ড ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এই হোটেলটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
চট্টগ্রামে ইয়াবা রাখার দায়ে এক যুবককে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী আবদুল মজিদ এই রায় দেন। আদালত একইসঙ্গে আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন।সরকারি কৌঁসুলি বি কে বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম কাউসার শেখ। ২০১৬ সালের ৩১ মে জেলার সীতাকুণ্ডের কাসেম জুট মিলের সামনে থেকে চার ইয়াবাসহ কাউসারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে একই বছরের ২৫ আগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন। রায় ঘোষণার পর আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।
আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেছেন, কাউকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য জোর করা যাবে না, যা একটি সাংবিধানিক অধিকার। তবে রিমান্ডের ফলে এটি ব্যাপক হারে লঙ্ঘিত হচ্ছে।আজ বুধবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘নির্যাতন রোধের দায়-দায়িত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ২৬ জুন আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে শাহদীন মালিক বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটরা রিমান্ডে দিয়ে প্রতিদিনই সংবিধান লঙ্ঘন করছেন। আমরা সবাই জানি, রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ তো হাজির বিরিয়ানি খাওয়ায় না। যাকে ধরা হচ্ছে সে কী অপরাধ করেছে, কোথায় টাকা রেখেছে, এগুলো বলতে কাউকে বাধ্য করা যাবে না—এটা বঙ্গবন্ধুর আমলে ১৯৭২ সালের সংবিধানেই আছে। রিমান্ডে দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটেরা প্রতিনিয়ত সংবিধান লঙ্ঘন করছেন।’শাহদীন মালিক বলেন, ‘এখন আমরা সবচেয়ে বেশি অধিকারহীনতায় ভুগছি। বাহ্যিক কিছু উন্নয়ন হচ্ছে বিয়ের সময় লাইট লাগানোর মতো। প্রতি সপ্তাহে একনেকের সভা হচ্ছে, কোটি কোটি টাকার প্রজেক্ট পাস হচ্ছে। এসব বিয়ের আলো জ্বালানোর উন্নতি হচ্ছে, অধিকারগুলো সংরক্ষণ হচ্ছে না। আমরা সবাই চাই, উন্নত দেশের কাতারে এই দেশটা যাবে। তবে অধিকার না দিয়ে কোনো সমাজ উন্নতি করতে পারে না। অধিকার না দিলে ২০৪১ কেন, ২০৬১ সালের মধ্যেও কোনো ধরনের উন্নতি সম্ভব নয়।’শাহদীন মালিক আরও বলেন, কথা বললেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে বা উন্নত হবে, তা নয়। তবে কাজ হবে না বলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে কথা না বললে পরিস্থিতির উন্নতিও হবে না। নির্যাতন প্রতিরোধ করতেই হবে। নয়তো একদিন না একদিন সবাই এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হবে।আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি উপস্থাপনা শেষে বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্যাতকের শক্তি দেশের আইন, বিচারব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় শক্তির চেয়ে অনেক বেশি। এটা একটা নির্যাতনবান্ধব দেশ। এই চিত্র যদি আমরা প্রতিদিন দিতে থাকি, তাহলে আমার মনে হয় না মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ১৯৭২–এর সংবিধান এবং আমরা প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের যেসব ভিত্তি নিয়ে কথা বলি, সেটার প্রতি আমরা আদৌ শ্রদ্ধাবান আছি।’এর আগে আসিফ নজরুল তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনের সদস্য হয়। কিন্তু এই কনভেনশনের চুক্তিটির প্রতি বাংলাদেশের আন্তরিকতার অভাব ফুটে ওঠে। বাংলাদেশের দায়িত্ব ছিল, চুক্তির পক্ষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে এবং প্রতি চার বছর অন্তর নির্যাতনবিরোধী কমিটির কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া। কিন্তু ২১ বছর পার হওয়ার পরও বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত একটি প্রতিবেদনও জমা দেয়নি।পুলিশের ওপর এক ধরনের চাপ থাকে মন্তব্য করে আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘তাজউদ্দীন আহমেদের নাতি গুমের ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ তাঁর ভাতিজাকে ফেরত পাওয়ার পর পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। কিন্তু এই প্রশ্নটা তুলে নাই যে কারা তাঁকে তুলে নিয়েছিল, কেন তাঁকে নেওয়া হয়েছিল। ব্যাপারটি এমন দাঁড়িয়েছে, রাষ্ট্রে এই ধরনের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক এবং আমাদের এই ধারণার ফলে রাষ্ট্র সুপ্ত একটি অনুমোদন পাচ্ছে এই সমস্ত অন্যায় করার।’এটা একটি অস্বাভাবিক রাষ্ট্র মন্তব্য করে হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রী, এক ব্যক্তির রাষ্ট্র। এটা ব্রিটিশের রানির রাষ্ট্র ছিল, এটা গভর্নর জেনারেলের রাষ্ট্র ছিল, এটা সামরিক শাসকদের রাষ্ট্র ছিল অথবা এটা এখন রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের ক্ষমতা কাঠামোটাই এখন এ রকম যে রাষ্ট্র একজনের হাতের মুঠোয়। যিনি এটাকে হাতের মুঠোয় নিতে পারেন, তিনি যে–ই হোন, একই রকমের ভূমিকা পালন করবেন।’আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, ‘নির্যাতন বন্ধের পাশাপাশি আমাদের সাংবিধানিক অধিকারসহ নিষ্ঠুর, অমানবিক সাজার শিকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। এসবের বিরুদ্ধে সবাই মিলে আওয়াজ তোলার এখনই সময়।’ মানবাধিকার কমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও আইনজীবীদের ভূমিকা আরও জোরদার কেন হচ্ছে না সে ব্যাপারে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটির সদস্য শিরিন হকের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, র‍্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির ছাত্র লিমন হোসেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা আতাউল্লাহ প্রমুখ।
একেবারে তীরের কাছাকাছি উপুড় হয়ে পড়ে থাকা দুটি দেহ। নিথর, নিস্পন্দ। আর একটুক্ষণ দম থাকলে হয়তো তীরে উঠে মেয়ের গা, হাত-পা মুছে দিতেন বাবা। হয়তো দুই বছরের মেয়ে ভ্যালেরিয়াকে বুকে জড়িয়ে দম নিতেন প্রাণভরে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য হয়নি বাবা অস্কার মার্টিনেজ রামিরেজের। মেয়ের সঙ্গেই নদীতে ডুবে মরতে হয়েছে তাঁকে। অন্তিম মুহূর্তেও প্রিয় বাবার সঙ্গ ছাড়েনি মেয়ে, বাবার কাঁধে হাত রেখেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে সে। কখনো বাবাকে ছেড়ে যাবে না—এবারের বাবা দিবসে হয়তো এই প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিল ভ্যালেরিয়া।বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, এল সালভাদরের নাগরিক অস্কার (২৫)। দুই বছর বয়সী মেয়ে ভ্যালেরিয়া ও ২১ বছরের স্ত্রীকে নিয়ে গত রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রত্যাশা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার। অবৈধ ও বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে মার্কিন মুলুকে পা দেওয়া আর হলো না তাঁর। রিও গ্রান্দে নদী পার হতে গিয়ে নদীতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে অস্কার ও তাঁর মেয়ের। গত সোমবার তীরের কাছাকাছি বাবা-মেয়ের মরদেহ ভেসে ওঠে। তবে প্রাণে বেঁচে গেছেন অস্কারের স্ত্রী।এই ছবিটি মনে করিয়ে দিচ্ছে ৩ বছর বয়সী শিশু আয়লান কুর্দির কথা । ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশী সিরিয়ার এই শিশুটির মৃতদেহ ভেসে এসেছিল তুরস্কের সমুদ্রসৈকতে। ২০১৫ সালের ওই ঘটনার ছবিটি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছিল।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অস্কার মার্টিনেজ রামিরেজ মেয়েকে পিঠে নিয়ে নদী পার হতে চেয়েছিলেন। গায়ের টি-শার্টের ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন ছোট্ট মেয়েটিকে। মেয়েকে নিরাপদে রাখতে নিজের সাধ্য অনুযায়ী কিছুই করা বাকি রাখেননি অস্কার। খরস্রোতা রিও গ্রান্দে পাড়ি দিতে হতদরিদ্র অস্কার আর কীই বা করতে পারতেন! তাও রক্ষে হয়নি। স্রোতের টানে পানিতে ডুবে যান অস্কার। স্ত্রীর চোখের সামনেই ভেসে যায় স্বামী-সন্তান। স্ত্রী শেষতক তীরে পৌঁছেছিলেন, তবে তখন তাঁর সম্বল শুধুই আহাজারি।মেক্সিকোর মাতামোরোসের তামালিপাস রাজ্যের নদীর ধারে গত সোমবার মিলেছে অস্কার ও তাঁর ছোট্ট মেয়ের মৃতদেহ। সিএনএন বলছে, মেক্সিকোর এক আলোকচিত্রী সর্বপ্রথম মর্মস্পর্শী এ ছবিটি ক্যামেরাবন্দী করেন। বাবা-মেয়ের মৃতদেহের চারপাশে ছড়িয়ে ছিল কিছু পানীয়ের ক্যান।বাবা-মেয়ের মৃতদেহের এই ছবি ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, বৈশ্বিক গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে প্রতিবেদন। এই ঘটনায় এল সালভাদর ও মেক্সিকোতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিবাসীদের প্রতি এই দুই দেশের সরকারের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গিই ক্ষোভ সৃষ্টির মূল কারণ।এ ঘটনায় এল সালভাদরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্দ্রা হিল বলেছেন, দেশটির অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করছে তাদের সরকার। এ জন্য সরকারের পাশে থাকার জন্য দেশবাসীদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। হিল বলেন, ‘আমাদের দেশ আবার শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। আমি আপনাদের কাছে প্রার্থনা করছি-নিজেদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবেন না। জীবন আর সবকিছুর চেয়ে অধিক মূল্যবান।’ওদিকে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডোর বলেছেন, তাঁর সরকার অভিবাসন প্রত্যাশীদের অধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অধিকার রক্ষা করতেই হবে। তবে অভিযোগ আছে, উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে মেক্সিকো তেমন বাধা দেয় না। এ নিয়ে মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েনও আছে।
শিক্ষক বলেছেন কিছু একটা নিয়ে লিখতে হবে। কী নিয়ে লিখব, কীভাবে লিখব...। আমি অনেকক্ষণ তা নিয়ে চিন্তা করেছি। তারপরও ভেবে পাইনি কী নিয়ে লিখতে হবে আমাকে। শেষ পর্যন্ত আমার মনে হয়েছে নিজের জীবনের আনন্দ নিয়ে লিখলে কেমন হয়? পথ চলা বা যাত্রা করা আমার জীবনের আনন্দ। আমি বন্ধুদের সঙ্গে বা একা প্রতিদিন যাত্রা করি। কিন্তু যাত্রা কী?পুরোনো দিন থেকে মানুষ যাত্রা করছে। যেমন ভাস্কো দা গামা, ইনোউয়ে তাদাতাকা যাত্রা করেছেন। তাঁরা শুধু দেশের ভেতরের যাত্রা নয়, বিদেশও ভ্রমণ করেছেন। আর যাত্রা তো অনেকভাবে হতে পারে। যেমন হেঁটে, বাসে, ট্রেনে কিংবা বিমানে—এ রকম নানাভাবে। যদি যথেষ্ট সময় আর টাকা থাকে, তাহলে আমরা যেখানে যেতে চাই সেখানে যেতে পারব। কিন্তু আমার মনে একটা প্রশ্ন আছে। সেটা হচ্ছে, কেন মানুষ যাত্রা পছন্দ করে। আমি সেটা নিয়ে জানতে চাই। আর কেন আমি ভ্রমণ করছি তা নিয়েও চিন্তা করতে চাই।আমি এখন পর্যন্ত আমার নিজের দেশ নিয়ে পাঁচটি দেশ ভ্রমণ করেছি। আমার যাত্রা ছিল জাপান, থাইল্যান্ড, হাওয়াই, লাওস আর ভারতে। এখানে আমি আমার যাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখে যাত্রা নিয়ে চিন্তা করব।রেল যাত্রা আমি খুব পছন্দ করি। তাই বিদেশেও প্রায়ই ট্রেনে আমি ভ্রমণ করি। বিশেষত গ্রামাঞ্চলের ট্রেন যাত্রা আমার পছন্দ। ট্রেনের যাত্রায় বিস্ময়কর অনেক কিছু থাকে। আমি ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা খুব পছন্দ করি। অন্য দেশের প্রকৃতি জাপানের মতো নয়। আবহাওয়া, বাড়িঘর, মানুষের জীবন, সবকিছুই সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে সেসব দৃশ্য দেখে স্বদেশে ফেরার আকুলতা আমি অনুভব করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে কঠিন কোনো চিন্তা আমার মনে দেখা দেয় না। কিন্তু আমার জীবন নিয়ে কিছু কিছু ভাবনা মাঝেমধ্যে মনে দেখা দেয়। আমার ছোটবেলার স্মৃতি, বন্ধুদের কথা, পরিবার আর ভবিষ্যৎ মনে পড়ে যায়। উত্তর দরকার নেই। শুধু চিন্তা করে সময় পার হয়ে যায়। সে রকম সময় আমার পছন্দ। আর ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়াও খুব মজার। আমার আর তাদের দেশ ভিন্ন। মাতৃভাষাও আমাদের এক নয়। তাই আমি ইংরেজিতে বা তাদের ভাষায় কথা বলি।গত বসন্তে আমি বন্ধুর সঙ্গে ট্রেনে করে কলকাতা থেকে চেন্নাইতে গিয়েছি। ২৬ ঘণ্টার পথ। খুব দীর্ঘ দূরের যাত্রা সেটা ছিল। সেই ট্রেনে আমাদের সামনে বসেছিল একটি পরিবার। বাবা, মা আর দুই ছেলে। তারাও কলকাতা থেকে তাদের দেশের বাড়িতে যাচ্ছিল। তাদের দেশের বাড়ি কলকাতা নয়। কিন্তু তারা কলকাতায় থাকে। তাই আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলেছি। আমাদের সেই কথাবার্তা থেকে সাধারণ মানুষের জীবন, ভারতের পরিবার আর ভারতে কীভাবে পিতা সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে তা নিয়ে অল্প কিছু আমি জানতে পেরেছিলাম।আমরা একসঙ্গে ওরিগামি বানিয়েছি। তখন আমি এই দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম যে বড় ছেলেটি ভালো ওরিগামি বানাতে পারে। আমার জানা ছিল না ভারতেও শিশুদের মধ্যে ওরিগামি খুব জনপ্রিয়। আমরা ওরিগামি দিয়ে বিমান আর কপিকল বানিয়েছি। আমার তখন মনে হয়েছে যে বন্ধু হওয়ার জন্য বিশেষ দক্ষতা কিংবা জিনিসের দরকার নেই। শুধু কাগজ দিয়ে আমরা বন্ধু হতে পারি। আমাদের আবার দেখা হবে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু তাদের সঙ্গে সেই অল্প সময়ের দেখা ছিল আনন্দের। আমার স্মৃতি যেটা মনে রাখবে। সেই শিশুদের মনেও যদি আমাদের কথা থেকে যায়, তাহলে জাপান নিয়ে এরা হয়তো আগ্রহী হয়ে উঠবে। এই ভাবনা আমাকে আনন্দ দেয়। মানুষের সম্পর্ক সব সময়ে আমাকে নতুন অনেক কিছু শেখায়। জাপানে এটা আমি জানতে পারিনি।পরে আরেকটি বিষয় নিয়ে আমি লিখতে চাই। ছোটবেলা থেকে আমি খেতে খুব পছন্দ করেছি। এমনকি দুঃখ পাওয়ার সময়ও সামনে খাবার থাকলে দুঃখ আমি ভুলে যেতাম এবং সেই খাবার আমাকে খুশি করে দিত। তাই ভ্রমণেও আমি খাওয়া-দাওয়া উপভোগ করি। ভারতেও নানা রকম খাবার আর মিষ্টি আমি খেয়েছি। অবশ্যই এখন জাপানে অনেক ধরনের খাবার আমরা খেতে পারি। সেটাও ভালো। কিন্তু বিদেশে গিয়ে সেখানে সেই দেশের খাবার খাওয়া, বিশেষ করে সেই দেশের মানুষের সঙ্গে খাওয়া আরও বেশি বিস্ময়কর। শরীরে শক্তি জোগাতে আর সেই সঙ্গে সংস্কৃতির চর্চায় খাবার জরুরি।খাদ্যের মধ্যে দেশের ইতিহাসেরও খোঁজ পাওয়া যায়। যখন আমি বিদেশে যাই, তখন দামি কোনো দোকানে আমি খাই না। যেখানে সেই অঞ্চলের মানুষ খাওয়া-দাওয়া করে, আমিও সেখানেই খাই। খাবার খেয়ে আর মানুষের সঙ্গে কথা বলে সেই দেশ সম্পর্কে আরও অনেক কিছু আমি জানতে পারি বলে এটা আমার বেশি পছন্দ। কিন্তু জাপানে রেস্টুরেন্টে অজানা মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলি না। অন্য জাপানিরাও ঠিক তাই করে থাকে। জাপানে মানুষের সম্পর্ক তেমন গভীর নয়, বরং অনেক পাতলা। কিন্তু আমার মনে হয় এর অর্থ এই নয় যে, কথা বলতে তারা চায় না। বরং জাপানের সমাজে প্রচলিত নিয়মের কারণে তারা সেটা করতে পারছে না।পুরোনো দিন থেকে মানুষ কেন যাত্রা করে আসছে, সবশেষে এ বিষয়ে আমার ধারণা নিয়ে আমি লিখব। আমার মনে হয় এর দুটি কারণ আছে। প্রথমত, অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতা এর মধ্যে দিয়ে আমরা লাভ করতে পারি। আমরা সাধারণত দিনে কাজে ব্যস্ত থাকি। তাই সেই জীবনে ক্লান্তি দেখা দিলে অস্বাভাবিক কিছু আমরা চাই। অস্বাভাবিক বিশ্বে গিয়ে মনের সেই অসুখের আরোগ্য আমরা পেতে চাই।আরেকটি কারণ হলো, মানুষের সম্পর্ক আমরা চাই। আমি লিখছি যে জাপানে মানুষের সম্পর্ক পাতলা। আর তাই পথের যাত্রায় নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা পেয়ে, এদের সঙ্গে কথা বলে মানুষ বিশ্বাস করতে চায় যে তারা একা নয়, বিশ্বজুড়ে অনেক বন্ধু তাদের আছে। আমিও আমার ধারণা আরও বিস্তৃত করে নিতে যাত্রাপথের অস্বাভাবিক নানা রকম অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে মানুষকে আরও কাছে থেকে দেখতে চাই। আর আমার এই ধারণা অন্যদের মধ্যে আরও বিস্তৃত করতে পারলে সেটা হবে আমার জন্য আরও বেশি আনন্দের।অতীতে মানুষ যেমন নিজের মনে দেখা দেওয়া ভাবনা থেকে দূরের পথে যাত্রা করেছে, মানুষের সেই যাত্রা এখনো অব্যাহত আছে। অনেক বেশি মানুষ আজকাল বিদেশে যাচ্ছেন। ফলে আমার বেলায় বলা যায়, সময় হয়েছে নতুন যাত্রা শুরু করার।...আকারি মাৎসুওকা: তৃতীয় বর্ষ, বাংলা বিভাগ, টোকিও বিদেশবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান।
বিশ্বকাপের আগে বেশ সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এ সমালোচনা ভালো খেলতে তাঁকে তাতিয়ে তুলেছে বলে অনুমান জহির খানেরবিশ্বকাপ শুরুর আগে বেশ সমালোচনাই সহ্য করতে হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। সেটি খেলার বাইরের কিছু ব্যাপার নিয়ে। সাকিব কি তখন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স দিয়ে এসব সমালোচনার জবাব দেবেন? নিজেকে তাতিয়ে তুলতে বড় মাপের খেলোয়াড়দের প্রেরণা হিসেবে কিছু একটা লাগে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সমালোচনাই বিশ্বকাপে ভালো পারফর্ম করতে তাতিয়ে তুলেছে সাকিবকে—অনুমান ভারতের সাবেক পেসার জহির খানের।সাকিব আইপিএল থেকে দেরিতে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ক্রিকেট দলে। এতে জাতীয় দলের প্রতি তাঁর নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। বিশ্বকাপের জার্সি পরে বাংলাদেশ দলের অফিশিয়াল ফটো সেশনেও ছিলেন না সাকিব। এ জন্য বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান তাঁর সমালোচনা করেছিলেন। বিষয়টি তখন বেশ বিতর্কও ছড়িয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে মাঠের সাকিবকে বাকিদের তুলনায় একটু আলাদা করেই চোখে পড়েছে। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে দলের বাকিদের মধ্যে বেশ গা-ছাড়া ভাব থাকলেও সাকিব উজাড় করে দিয়েছিলেন নিজেকে। এরপর ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে বিশ্বকাপের এ পথ পর্যন্ত দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেই চলছেন ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় এ অলরাউন্ডার।বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ন্যূনতম ৪০০ রানের পাশাপাশি ১০ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। রয়েছে টানা দুটি সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের এখনো সেমিফাইনালে ওঠার আশা টিকে থাকার পেছনে সাকিবের রয়েছে অসামান্য ভূমিকা। তাঁর অতীত বিবেচনা করলে এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক, বিশ্বকাপের আগে সেসব সমালোচনাই ভালো খেলতে তাতিয়ে তুলেছে সাকিবকে। কারণ, তাঁর ঘোর নিন্দুকও একমত হবেন, তীব্র সমালোচনার মুখে তিনি ভালো খেলেন। লিওনেল মেসির ভীষণ রকমের ভক্ত সাকিব কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ঘরানার। একটা কিছু তাঁর লাগে, তেতে ওঠার জন্য।বিশ্বকাপে একটি সংবাদমাধ্যমে বিশ্লেষক হিসেবে হাজির হওয়া জহির তেমন অনুমানই করছেন, ‘হ্যাঁ এটা হতে পারে (বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলা তাতিয়ে দিতে পারে)। আরও বেশি দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং কিছু একটা প্রমাণের তাগিদ থাকলে নিজেকে আরেকটু নিংড়ে দিতেই পারে। ভালো খেলতে কিছু না কিছু প্রেরণা লাগেই। এটা সমালোচনা থেকেও হতে পারে। আমরা অতীতে অনেকবার দেখেছি, কেউ সমালোচনা কিংবা অতিরিক্ত সমালোচনার শিকার হলে তা প্রেরণা হিসেবে নিতে পারে। এই প্রেরণাটুকু শক্তিতে রূপান্তর করে অনুশীলন, ম্যাচ নিয়ে পরিকল্পনা এবং ভালো পারফরম্যান্সে কাজে লাগাতে পারে’—বিশ্বকাপে সাকিবের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন জহির।সাকিব এখন চলতি বিশ্বকাপের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (৪৭৬)। শীর্ষস্থান থেকে কিছু রানের ব্যবধানে তাঁকে তিনে নামিয়ে এনেছেন ডেভিড ওয়ার্নার (৫০০) ও অ্যারন ফিঞ্চ (৪৯৬)। মঙ্গলবার বার্মিংহামে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে আবার শীর্ষ রান সংগ্রাহক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন সাকিব।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁকে আজ বুধবার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) ‘ক্রিটিক্যাল ইউনিটে’ ভর্তি করা হয়েছে।এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই ও জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের মতিঝিলের এজিবি কলোনির মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির সিলেট ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় সম্মেলনে এ কথা জানান।সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তাঁর বয়স এখন ৯০ বছর।জি এম কাদের সেখানে বলেন, খোদা না করুক, তার কিছু হয়ে গেলে কী হবে? এরশাদের নির্দেশিত পথে, নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে জাতীয় পার্টি চলবে।
চলতি হজ মৌসুমের ৩৬৫টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এ জন্য নিজেদের বহরে থাকা চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজকে প্রস্তুত রেখেছে তারা। তাই অন্যান্য রুটে ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখতে দুটি এয়ারবাস আনতে যাচ্ছে বিমান। আগামী তিন মাস এই দুটি উড়োজাহাজ বিমানের যাত্রী বহন করবে।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার পিটি ইন্দোনেশিয়া এয়ারএশিয়া এয়ারলাইনস থেকে দুটি এয়ারবাস ভাড়ায় আনা হচ্ছে। প্রতিটি উড়োজাহাজের আসনসংখ্যা ৩৭৫। আগামী ১ জুলাই থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই দুটি উড়োজাহাজ বিমান বহরে থাকবে।বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, হজ মৌসুমে শিডিউল ফ্লাইটে এই দুটি এয়ারবাস দিয়ে হজযাত্রী বহন করা হবে। তাই আশা করা যায়, হজ মৌসুমে বিমানের ফ্লাইটের সময়সূচি বাধাগ্রস্ত হবে না।এ বছর বিমানের ফ্লাইটে সৌদি আরব যাবেন ৬৩ হাজার ৫৯৯ হজযাত্রী। এঁদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৭ হাজার ১৯৮ ব্যালটি, বাকি ৫৬ হাজার ৪০১ নন-ব্যালটি হজযাত্রী যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা জেদ্দায় যাবেন। বিমানের প্রতিটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে আনুমানিক ৭ ঘণ্টায় জেদ্দায় পৌঁছাবে।দুই মাসব্যাপী বিমানের হজযাত্রী বহনে ৩৬৫টি ফ্লাইটের মধ্যে ৩০৪ ডেডিকেটেড এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ১৯টি এবং সিলেট থেকে এ বছর ৩টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হজ-পূর্ব মোট ১৮৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১৫৭ এবং শিডিউল ৩২)। হজ-পরবর্তী ১৪৭টি ফ্লাইট চলবে ১৭ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১৪৭ এবং শিডিউল ২৯)। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মদিনা ১৮টি ও মদিনা থেকে বাংলাদেশে ১৫টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।এদিকে ২৮ জুন ঢাকায় এসে পৌঁছাবে বিমানের লিজে আনা তৃতীয় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজ। উড়োজাহাজটি কুয়েতের উড়োজাহাজ লিজদাতা প্রতিষ্ঠান আলাফকো থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠান থেকে গত ১৫ মে আরও একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ আনে বিমান। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগামী ২৫ জুলাই বিমানের তৃতীয় বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার ‘গাঙচিল’ ঢাকায় এসে পৌঁছাবে। এর দুই মাস পর আগামী সেপ্টেম্বরে বিমানের চতুর্থ ড্রিমলাইনারটি এ দেশে আসতে পারে।
চোরাচালানির পাঁচ হাজারের বেশি কচ্ছপের বাচ্চা জব্দ করেছে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে একাধিক স্যুটকেসের ভেতরে থাকা ঝুড়ি থেকে এগুলো জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ভারতের দুই নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জব্দ করা কচ্ছপের বাচ্চার বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা (১২ হাজার ৭০০ ডলার)। এসব কচ্ছপ পোষা প্রাণী হিসেবে ভারতে বিক্রি করার উদ্দশ্য ছিল।জ্যেষ্ঠ শুল্ক কর্মকর্তা জুলকারনাইন মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, গত সপ্তাহে চীনের গুয়াংঝো শহর থেকে কুয়ালালামপুরে আসার পর ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের একজনের বয়স ৩০, অপরজনের ৪০ বছর। কচ্ছপের চালানের জন্য তাঁদের কোনো বৈধ অনুমতি নেই।বন্য প্রাণী চোরাকারবারিদের জন্য মালয়েশিয়া হচ্ছে প্রধান ট্রানজিট পয়েন্ট। সেখান থেকে এশিয়ার দেশগুলোতে চোরাকারবারি হয়ে থাকে।দেশটির আইন অনুযায়ী চোরাচালানের অপরাধে গ্রেপ্তার ওই দুই ব্যক্তির পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে।
চট্টগ্রামে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাশকতার অভিযোগে করা ‘গায়েবি’ মামলায় বিএনপির ৫২ নেতা-কর্মীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. আল ইমরান খান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।কারাগারে পাঠানো আসামিদের সবাই নগরের পতেঙ্গা থানা বিএনপির নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি মো. মিয়া ভোলা, নগর যুবদলের সহসভাপতি মো. ইকবাল, পতেঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাবুদ্দিন, পতেঙ্গা ৪১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. ইলিয়াছ রয়েছেন।গত বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ৩২ থানায় নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়েছে ২৩২টি । এর মধ্যে শুধু অক্টোবর মাসেই হয় ১০৩ মামলা। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াত ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করেছে পুলিশ।আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে নাশকতার অভিযোগে পুলিশের নগরের পতেঙ্গা থানায় করা ১০ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন ৫৭ আসামি। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাঁরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আজ দুপুর থেকে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভিড় করতে থাকেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিকেলে শুনানি শুরু হওয়ার আগে ৫৯ আসামি এজলাসে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ান। শুনানিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি আদালতকে বলেন, আসামিরা সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। এরা কেউ ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ কিংবা নাশকতার সঙ্গে জড়িত নন। যে ১০টি মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে এগুলো সম্পূর্ণ গায়েবি মামলা। ওই ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। শুধু বিএনপির রাজনীতি করার কারণে তাঁরা মামলার আসামি হয়েছেন। নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষও গায়েবি এসব মামলার আসামি। তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হোক। জামিনে থাকলে তাঁরা কোনো ধরনের অপরাধে জড়াবেন না। এখন সেই পরিস্থিতিও নেই। ওই সময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে বলে, এরা সবাই ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ মামলার আসামি। জামিনে থাকলে পরিস্থিতির আবারও অবনতি ঘটাতে পারেন।চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অসুস্থ ও বয়স্ক হওয়ায় সাতজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। বাকি ৫২ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে সন্ধ্যায় তাঁদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিয়াদে কূটনীতিক ও সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংবাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ অবস্থা ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন নিয়ে সৌদি আরবের রিয়াদে এক ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন বিদেশি মিশনের প্রেস ও কালচারাল উইংয়ে কর্মরত কূটনীতিক এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা যোগ দেন। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস উইংয়ের উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) রিয়াদের ডিপ্লোম্যাটিক কোয়ার্টারের ম্যারিয়ট হোটেলে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ড. নজরুল ইসলাম রোহিঙ্গা বিষয়ে ব্রিফিংকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা ও সহানুভূতি প্রদর্শন করে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধিতে ভূষিত করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ মেয়াদে আশ্রয় ও খাবার প্রদান করা সম্ভব নয়। এ সময় তিনি রোহিঙ্গা সংকটের ইতিহাস তুলে ধরেন।নজরুল ইসলাম আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমারের উচিত তাদের নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেওয়া। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচটি সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া, রাখাইনে জাতিগত নিধন বন্ধ ও কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন।নজরুল ইসলাম রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সাংবাদিক ও কূটনীতিকদের সহায়তা কামনা করেন। তিনি এ সময় কূটনীতিকদের কেউ বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিবির সরেজমিনে প্রদর্শন করতে চাইলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে বলে জানান।ব্রিফিংয়ে আরও বক্তব্য দেন দূতাবাসের প্রেস উইংয়ের প্রথম সচিব মো. ফখরুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন ও অর্জন বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি উপস্থিত কূটনীতিকদের জানান, বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করছে।ফখরুল ইসলাম বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়েও আলোকপাত করেন। রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত ও সামাজিক সমস্যা তৈরি করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি সব মিশনে কর্মরত প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তাদের তাঁদের দেশের সংবাদমাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সংবাদ প্রচারের আহ্বান জানান।ব্রিফিংয়ে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, চীনসহ প্রায় ৪৫টি দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনীতিকেরা যোগ দেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের সর্বাধিক প্রচারিত পত্রিকা আরব নিউজ, সৌদি গেজেটসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা যোগ দেন। বিজ্ঞপ্তি
শরীয়তপুরে এক তরুণীকে গণধর্ষণের দায়ে দুই যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুস সালাম খান এ আদেশ দেন।সাজা পাওয়া আসামিরা হলেন সুজন ব্যাপারী (২৮) ও শামীম ব্যাপারী (২৬)। তাঁরা শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বাসিন্দা। একই মামলায় আরেক আসামিকে খালাস দেন আদালত।সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মির্জা হযরত আলী বলেন, আসামিরা জামিনে বের হয়ে প্রায় ২ বছর ধরে পলাতক। পিপি বলেন, ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল এক তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন আসামিরা। পরে স্বজনেরা তরুণীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ওই তরুণীর মা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে জাজিরা থানায় মামলা করেন।
৩৬ জন অভিবাসী বাঙালি নারী লেখকের ইংরেজি ভাষায় লেখা ও অনুবাদ করা ৩৬টি গল্প নিয়ে গল্প সংকলন ‘দ্য গোল্ডেন লিভস’ বই প্রকাশ হয়েছে।সম্প্রতি নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বইটি যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট লেখক ও বিজ্ঞানী পূরবী বসু এবং লেখক-প্রকাশক পপি চৌধুরী।অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন নেসা, নিউ ইয়র্কের ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ এর অ্যাসেম্বলি মেম্বার ক্যাটালিনা ক্রুজ, জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন-এর ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূর-এ-ইলাহি মিনা এবং বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন লেখক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা কারেন গোল্ডফ্ল্যাব, মিজ অ্যান্ড্রিয়া, অধ্যাপক আনিটা বাক্স, কবি সাফিয়া জামি, গেরি গ্রেঞ্জার, সিলসিয়া ডি. রোজারিও, ম্যাগডুলিন গোমেজ, আইরিন ডি রোজারিও এবং ইসাবেলা ডিয়াস।আমেরিকা ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী তাহমিনা শহীদ একটি দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করেন। আমেরিকার বিখ্যাত লেখক মায়া অ্যাঞ্জেলো’এর “স্টিল আই রাইজ” কবিতাটি পাঠ করেন মিজ অ্যান্ড্রিয়া।সম্মানিত কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন নেসা তার মূল্যবান বক্তব্যে বলেন, শুধু বাংলা বা ইংরেজিতে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের এই ডায়াসপোরা সাহিত্য স্প্যানিশ ভাষাতেও অনূদিত হোক, এটাই আমার প্রত্যাশা। কারণ নিউইয়র্কে ইংরেজির পরে স্প্যানিশ হলো দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাষা। স্প্যানিশ ভাষায় বাঙালি লেখকদের লেখা অনূদিত হলে বিশাল স্প্যানিশ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যাবে আমাদের বাংলা সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের খবর।জাতীয় প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, এভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে নারীদের সাফল্য একদিন আসবেই।জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন-এর ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূর-এ-ইলাহি মিনা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় কাজ, এভাবেই একদিন আমেরিকার মেইনস্ট্রীমে পৌঁছে যাবে আমাদের সাহিত্য।’বইটির অন্যতম সম্পাদক পূরবী বসু বলেন, এই হৃদয়গ্রাহী গল্পগুলো, যার অনেকগুলোই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে লেখা, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তা সাক্ষ্য-প্রমাণ হিসেবে থাকবে। প্রাথমিক অভিবাসী বাঙালি নারীদের চিন্তা-ভাবনা, তাদের জীবনযাপন প্রণালি, কীভাবে তারা তাদের সময় কাটিয়েছিল, তাদের দৈনন্দিন জীবন কেমন ছিল, মানবাধিকার, ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তারা কীভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিল একটি পশ্চিমা দেশে-এসবই জানতে পারবে পরবর্তী প্রজন্ম বইটি থেকে।সংগঠনের উপদেষ্টা এবং খানস টিউটোরিয়ালের চেয়ারপারসন নাঈমা খান বলেন, ‘এভাবে প্রবাসীরা সম্মিলিতভাবে ভালো কাজ করলে এ দেশে যেমন বাংলাদেশিদের সুনাম বাড়বে সেই সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।’প্রকাশক ও সম্পাদক পপি চৌধুরী বইটির অন্যতম সম্পাদক পূরবী বসুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘তাঁর সহযোগিতা ছাড়া এমন একটি বই করা সম্ভব হতো না কখনই।বইটি নিয়ে আলোচনা করেন লেখক-সাংবাদিক বেলাল বেগ এবং লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কারেন গোল্ডফ্ল্যাব। অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময়ে সাউথ এশিয়ান ক্রিয়েটিভ উইমেন থেকে প্রকাশিতব্য আগামী বইয়ের ঘোষণা দেন সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেসমিন আরা এবং কমিউনিকেশন ডিরেক্টর নাসরিন চৌধুরী।অনেক গুণী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছিল অনুষ্ঠানস্থল। গুণীজনের মধ্যে ছিলেন লেখক-সাংবাদিক বেলাল বেগ, সায়েন্টিস্ট এবং গবেষক ড. ধনঞ্জয় সাহা, খানস টিউটোরিয়ালের চেয়ারপারসন নাঈমা খান, অধ্যাপক তাহমিনা জামান, মূলধারার লিডার মোরশেদুল আলম, ফাদার স্ট্যানলি গোমেজ, রেভারেন্ড জোসেফ বিশ্বাস, লেখক আবেদিন কাদির, উদীচী’এর ইউএসএ প্রেসিডেন্ট জীবন বিশ্বাস, অভিনয়শিল্পী রেখা আহমেদ, লেখক-অভিনয় শিল্পী লুৎফুন্নাহার লতা, অধ্যাপক হুসনে আরা বেগম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদুল ইসলাম, লেখক-সাংবাদিক সামশাদ হুসাম, কন্ঠশিল্পী-লেখক তাহমিনা শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদুল ইসলাম, ডা. মনোয়ারা বেগম, কবি-শিক্ষক ও সংগঠক সামস আল মমিন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাবিনা হাই উর্বি, লেখক-সাংবাদিক লিজি রহমান, লেখক ওবায়দুল্লাহ মামুন, সাহিত্য একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন, কবি নাহার ফরিদ খান, কবি আলেয়া চৌধুরী, আভা’র প্রেসিডেন্ট মেহের চৌধুরী সহ আরো অনেকে। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কে বসবাসরত বইটির সকল লেখকেরা। অনুষ্ঠানের শুরুতে লেখক জয়ীষা দত্ত ভার্জিনিয়া থেকে হঠাৎ করে উপস্থিত হয়ে চমকে দেয় মা পূরবী বসুকে।অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে সম্মাননা জানানো হয় লেখক-সাংবাদিক ও নিউইয়র্ক মহিলা পরিষদের সভাপতি সামশাদ হুসাম, এবং আভা’র প্রেসিডেন্ট মেহের চৌধুরীকে। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন নিউইয়র্কের প্রখ্যাত আবৃত্তিশিল্পী এবং বাংলাদেশ বেতারের এক সময়কার জনপ্রিয় উপস্থাপক সাবিনা শারমিন নিহার এবং তার কন্যা শায়ান শারমিন। অনুষ্ঠানের শেষ অংশ উপস্থাপনা করেন রুপা খানম।প্রাণবন্ত এই প্রকাশনা উৎসবে অনেক গুণী মানুষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এবং সাপ্তাহিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক লাভলু আনসার, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ মোহম্মদুল্লাহ, সাপ্তাহিক ঠিকানা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান, সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকার সম্পাদক মনজুর আহমেদ, চ্যানেল আই এর নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, ভয়েস অব আমেরিকার নিউইয়র্ক প্রতিনিধি আকবর হায়দার কিরণ, দৈনিক ইত্তেফাকের ইউএসএ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, এটিএন নিউজ এডিটর কানু দত্ত, বাংলাভিষণ-এর নিহার সিদ্দিকী, সাংবাদিক আবি সাঈদ রতন, বাপস নিউজ-এর এডিটর ও সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, সাংবাদিক শামীম আল আমিনসহ আরো অনেকে।যাদের লেখা নিয়ে বইটি প্রকাশিত হয়েছে: দিলারা হাশেম, নূরজাহান বোস, পূরবী বসু, পপি চৌধুরী, নাহার মনিকা, সালমা বাণী, অনন্যা দাশ, নাঈমা খান, লিজি রহমান, লুৎফুন নাহার লতা, সামশাদ হুসাম, তাহমিনা জামান, শবনম নাদিয়া, জেসমিন আরা, তাহমিনা শহীদ, কামরুন জিনিয়া, মাকসুদা আইরিন মুকুল, আয়েশা ইকবাল, কাঁকন চক্রবর্তী, তামজিদা খান পিউ, সাদমা খান, নাসরিন চৌধুরী, টিউলিপ চৌধুরী, রওশন হাসান, রিটা রায় মিঠু, রশ্মি ভৌমিক, সুস্মিতা দেবনাথ, শেলী জামান খান, তাছলিমা হাসান, আলেয়া চৌধুরী, ছন্দা বিনতে সুলতান, কবিতা হোসাইন, সিমু আফরোজা, সাকিকুন নাহার, তানজিলা পূর্ণতা, এবং জয়ীষা দত্ত।৩৩৫ পৃষ্ঠার দৃষ্টিনন্দন এ বইটি নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশ করেছে “ক্রিয়েটিক ডিজাইন অ্যান্ড বুক পাবলিকেশন”, প্রচ্ছদ করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষ।
ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের আশ্রাফাবাদ এলাকায় ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হারিকেন কারখানা নিউ তাজ কিং ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড। একসময়কার অত্যন্ত জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ‘তাজ হারিকেন’ এখানেই উৎপাদিত হয়। তবে তাজের জৌলুস আর নেই। গ্রাম-গঞ্জে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, শহরে লোডশেডিং কমেছে। তাই কমেছে হারিকেনের কদর। আগে এই কারখানায় কাজ করতেন প্রায় ৪০০ শ্রমিক। এখন সেখানে কাজ করেন ১০০ জনের মতো। আগে বাংলাদেশ সবখানে পাওয়া যেত তাজ হারিকেন। দেশের চাহিদা পূরণ করে বাইরেও রপ্তানি হতো। কারখানার ব্যবস্থাপক ওয়াহিদুর রহমানের দাবি, ঢাকায় এখন হারিকেনের কারখানা এই একটিই। এখানে প্রতিটি হারিকেনের পাইকারি দাম ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। ছবিগুলো বুধবারের।
মাশরাফিরা আছেন ছুটিতে। দলের কোনো কার্যক্রম নেই তাতে কী, ভাবনা থেকে তো আর বিশ্বকাপ উবে যাচ্ছে না! ক্রিকেটারদের আলোচনায় ঘুরেফিরে আসছে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ। ছুটির মধ্যেও তাঁরা ছক কষছেন—ভারতকে কীভাবে হারানো যায়!বার্মিংহামে ভারতের বিপক্ষে শুধু মাশরাফিদেরই নয়, কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে আসা সাংবাদিকদেরও। টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২৫ থেকে ২৯ জুন পুরো দল থাকবে ছুটিতে।ক্রিকেটাররা ছুটিতে, কিন্তু সাংবাদিকদের তো আর ছুটি নেই। খবরের রসদ খুঁজতে তাই বার্মিংহামের বৃষ্টিভেজা হিমেল সকালে সবাই জড়ো হয়েছেন টিম হোটেলের সামনে। ‘নেই, কেউ নেই—সব ঘুরতে বেরিয়েছে’— অভিন্ন সুরে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন আর টিম ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ জানিয়ে দিলেন ফোনে। মিনহাজুল কথা বললেন লন্ডন থেকে আর মাহমুদ আছেন টিম হোটেল থেকে ‘তিন ঘণ্টার দূরত্বে কোথাও’।কেউ কথা বলবেন না, কাউকে পাওয়া যাবে না—এটি জানার পরও তবুও সাংবাদিকেরা ঠায় দাঁড়িয়ে টিম হোটেলের সামনে। হঠাৎ নিচে নেমে এলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়ককে ভীষণ মুগ্ধ করেছে ইংলিশ গ্রাম। টন্টনে অনেক সময় কাটিয়েছেন গ্রামে। কিন্তু তাতে মন ভরেনি। আজ আবার বেরিয়েছেন বার্মিংহামের কোনো এক গ্রাম দেখতে। ‘আপনারা এখানে কেন? নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান ম্যাচ দেখেন। আমাদের প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। নিউজিল্যান্ড জিতলে আমাদের কাজে দেবে’—মুঠোফোনে স্কোরকার্ড দেখতে দেখতে মাশরাফি একটু দাঁড়ালেন। মেতে উঠলেন স্বভাবসুলভ আড্ডায়।সপ্তাহজুড়ে বার্মিংহামে যে ক্রিকেট উৎসবটা হবে, তা নিয়ে রোমাঞ্চ আর উত্তেজনার শেষ নেই এখানকার বাংলাদেশি, ভারতীয়, পাকিস্তানি প্রবাসীদের। তিনটি দেশেরই খেলা পড়েছে এ শহরে। বার্মিংহাম এখন যেন রূপ নিয়েছে উপমহাদেশে। মাশরাফির সঙ্গে যখন আড্ডা হচ্ছে, এজবাস্টনে পাকিস্তান খেলছে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। একই মাঠে ৩০ জুন খেলবে ভারত-ইংল্যান্ড। আর ২ জুলাই বাংলাদেশ-ভারত।এই ভেন্যুতে বাংলাদেশ খেলবে একটি ম্যাচ, কিন্তু চোখ থাকবে বাকি দুটিতেই। প্রতিটির সঙ্গে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ জড়িয়ে। নিউজিল্যান্ডের কাছে যদি পাকিস্তান হারে, ভারতের কাছে যদি ইংল্যান্ড হারে। আর দুই ‘যদি’ মিলিয়ে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দেয়…। মাশরাফি উঁচু স্বরে বলে উঠলেন, ‘সেমিফাইনালে যেতে পারব কি না পরের হিসাব, আরে ভাই, এই বিশ্বকাপ ক্রিকেট তো জমিয়ে তুলেছে বাংলাদেশ! না হলে টুর্নামেন্ট ম্যাড়ম্যাড়ে মনে হতো। সবাই আগ থেকেই বুঝে যেত কোন চারটা দল উঠতে যাচ্ছে সেমিফাইনালে। আমাদের কারণেই তো এখনো কেউ বলতে পারছে না টুর্নামেন্টে শেষ চারের ছকটা কেমন হবে।’বাংলাদেশ খুব ভালো খেলছে এই টুর্নামেন্টে, কথাটা কাল সাউদাম্পটন থেকে বার্মিংহামে—কত ব্রিটিশের কাছে যে শোনা হলো। যে ট্যাক্সিচালক কাল রাতে কোচ স্টেশন থেকে হোটেলে নিয়ে এলেন, তিনি একজন পাকিস্তানি। ট্যাক্সিচালক হোসেন আলী ভাবছেন পাকিস্তান দল কীভাবে সেমিফাইনালে যাবে। এ ভাবনার মধ্যেও জানিয়ে রাখলেন, বাংলাদেশ যেভাবে খেলছে সেমিফাইনাল তাদের প্রাপ্য। মাশরাফিরা অবশ্য সেমিফাইনাল নয়, আপাতত তাঁরা ভাবছেন, ২ জুলাই এজবাস্টনে ভারতকে কীভাবে হারানো যায়।
রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের শিক্ষা সর্বজনীনরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের শিক্ষা সর্বজনীন। তাঁদের লেখনীতে মানবিকতার জয়গান ফুটে উঠেছে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল। গত রোববার (২৩ জুন) বাংলাদেশ দূতাবাস এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে দ্য হেগের দূতাবাস মিলনায়তন প্রবাসী বাংলাদেশি, ডাচ নাগরিক ও দূতাবাস পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। শিশুদের পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। পরে ধারাবাহিক আলোচনা ও সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের এই দুই মহিরুহের শিক্ষা-আদর্শ তুলে ধরা হয়।শেখ মুহম্মদ বেলাল তাঁর বক্তব্যে কাজী নজরুল ইসলামকে স্বর্গীয় উপহার হিসেবে উল্লেখ করে সাম্যবাদ ও দমনমুক্ত সমাজ গঠনে তাঁর শিক্ষা কতটা প্রয়োজনীয় ছিল, তা তুলে ধরেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে নজরুলকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা এবং বাংলাদেশকে তাঁর চিরনিদ্রার স্থান হিসেবে গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদৃষ্টি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।শেখ মুহম্মদ বেলাল বলেন, রবীন্দ্রনাথ ইউরোপ ও পশ্চিমা বিশ্বে অবস্থানকালে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পশ্চিমাদের মানবতার স্বার্থে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদী মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে মানুষের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে শান্তিময় পৃথিবী গঠনে রবীন্দ্রনাথ শান্তির বাণী প্রচার করেছিলেন।শাকিল আহমেদ ও জুই তাঁদের আলোচনায় রবীন্দ্র-নজরুলের শিক্ষা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। তাঁরা রবীন্দ্র-নজরুলের লেখনী ও জীবন থেকে নানাবিধ শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরে বলেন, তাঁদের এই শিক্ষা কেবল বাংলাদেশ অথবা দক্ষিণ এশিয়ার জনগোষ্ঠীর জন্যই প্রযোজ্য নয়, পৃথিবীর সব মানুষের জন্য।চিত্তব্রত সাহা রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি কীভাবে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে এসেছেন, তার প্রতি আলোকপাত করেন। তিনি অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্ব পরিচালনার পাশাপাশি আলোচনাও সঞ্চালনা করেন।সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নেদারল্যান্ডসে সংগীত শিক্ষামূলক স্কুল সংগীতির প্রতিষ্ঠাতা প্রজ্ঞা ভট্টাচার্য। তাঁর রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতের একক পরিবেশনা উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। সংগীত পরিবেশনায় আরও অংশগ্রহণ করেন অপর্ণা সাহা, শম্পা ও ঈশিতা মিত্র সাহা। এ ছাড়া রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী ড. দিলরুবা নাসরিন কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে সংগীত পরিবেশন করেন।ঈদুল ফিতরের পর বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে দেশটিতে এটিই ছিল প্রথম কোনো অনুষ্ঠান। তাই এ অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা পুনর্মিলনীর আমেজে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয়।অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কেক কাটা হয়। বিজ্ঞপ্তি
কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভায় ১০০ টাকা ধার নেওয়াকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম নজরুল ইসলাম (১৯)। তিনি লাকসাম পৌরসভার পশ্চিমগাঁও বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ পারভেজ ওরফে কালা (২০)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। সম্পর্কে পারভেজের খালাতো ভাই নজরুল।পারভেজকে গ্রেপ্তারের পরে আজ বুধবার বিকেলে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালত তাঁকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পারভেজ এক মাস আগে নজরুলের কাছ থেকে ১০০ টাকা ধার নেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নজরুলের বাড়িতে যান পারভেজ। এ সময় পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এরপর পারভেজ বাড়িতে গিয়ে ছুরি নিয়ে আসেন। পরে ছুরি দিয়ে নজরুলের পেটে আঘাত করেন। এ সময় নজরুলের চিত্কারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পারভেজ পালিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন নজরুলকে উদ্ধার করে প্রথমে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ বুধবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল মারা যান। এই ঘটনায় নজরুলের বাবা আলী আকবর বাদী হয়ে লাকসাম থানায় আজ সকালে মামলা করেন। মামলায় পারভেজকে একমাত্র আসামি করা হয়। মামলার পরপরই পারভেজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।নজরুলের বাবা আলী আকবর বলেন, ‘আট মাস আগে নজরুল বিয়ে করে। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা।’ তিনি বলেন, ‘পাওনা ১০০ টাকা ফেরত চাওয়ার কারণে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়।’লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, পারভেজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। হত্যায় ব্যবহার করা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই হত্যার কথা স্বীকার করেছেন পারভেজ। ১০০ টাকার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
উত্তরা বন্ধুসভা ২৫ জুন আয়োজন করেছে একটি কার্যকরী বৈঠক। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল আগামী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কী কী কর্মসূচির আয়োজন করা যায়, তার একটি বিস্তারিত তালিকা তৈরি করা।এ বৈঠকে বন্ধুরা তাঁদের নিজ নিজ মতামত উল্লেখ করেন। বন্ধুসভার এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা বন্ধুসভার সভাপতি সাজ্জাদ কামাল রিয়াদসহ বন্ধুসভার সদস্যরা।মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক, উত্তরা বন্ধুসভা
ভারতের মিনার্ভা পাঞ্জাবকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে আবাহনী লিমিটেড। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছে আসামে।অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেন আবাহনী ঘরের বাঘ! কথাটির বিরোধিতা করার সুযোগও ছিল না। ঘরোয়া ফুটবলের বেশির ভাগ শিরোপা আবাহনীর শো কেসে গেলেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে তারা ফিরে খালি হাতে। আপাতত সেই সমালোচনা বন্ধ। ভারতের মিনার্ভা পাঞ্জাবকে তাদের মাঠে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছে আবাহনী। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেছেন আফগানিস্তানের ডিফেন্ডার মাশিহ সাইগানি।জয় পেলে এএফসি কাপের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত, ড্র করলে বা হারলেও থাকবে সম্ভাবনা। তবে সেক্ষেত্রে তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রুপের অন্য ম্যাচের দিকে—এমন একটা সমীকরণ সামনে রেখেই আজ গুয়াহাটিতে মিনার্ভার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল আবাহনী। কিন্তু অত সমীকরণের ধার ধারেনি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। আই লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভাকে হারিয়ে নিজেদের কাজ সেরেই দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট নিশ্চিত করেছে তারা।গুয়াহাটির ম্যাচটির সঙ্গে একই সময়ে কাঠমান্ডুতে চলছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে আবাহনীর প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের চেন্নাইয়িন এফসি ও নেপালের মানাং মার্শিয়াংদির ম্যাচ। সে ম্যাচে চেন্নাইয়িন ৩-২ গোল হারায় মার্শিয়াংদিকে। ফলে দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে জয় ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না আবাহনীর সামনে। মিনার্ভার বিপক্ষে জিতে গ্রুপ ‘ই’ থেকে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী, রানার্সআপ ১১ পয়েন্ট পাওয়া চেন্নাইয়িন। গোলশূন্য ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল আবাহনী। অন্যদিকে কাঠমান্ডুতে ৩-২ গোলে জয়ের পথে চেন্নাইয়িন। খেলার মধ্যে থাকলেও খবরটা নিশ্চিত আবাহনী ফুটবলারদের কানে পৌঁছেছিল। শেষ বাঁশিও বেজে যাওয়ার অপেক্ষা। ড্র হলে খুব কাছে গিয়েও ইতিহাস গড়তে না পারার শঙ্কা আবাহনীর। এমন অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে সেন্টারব্যাক মাশিহ সাইগানির গোল। নাবীব নেওয়াজ জীবনের কর্নার থেকে হাইতিয়ান স্ট্রাইকার কেভিন বেলফোর্ট হেড করলে গোল মুখে গিয়ে ফিরে। সেখান থেকে মাশিহর ফিরতি হেড জালে। গোলটি হয়েছে ৯৩ মিনিটে।ইতিহাস গড়া গোলের উদ্‌যাপন কেমন হতে পারেন ভাবুন তো ! গোল করেই সাইগানি এক দৌড়ে সরাসরি ডাগ আউটে চলে আসলেন। ততক্ষণে ডাগআউটে উদ্দাম উল্লাস। রীতিমতো আবেগময় দৃশ্যপট। এমনটা হওয়াই তো স্বাভাবিক। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এএফসি কাপ খেলছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু এবারই প্রথম দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল আবাহনী।
সিলেট এমসি কলেজ বন্ধুসভা ২৫ জুন পাঠচক্রের আয়োজন করে। জাতীয় সংগীত গেয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এরপর পাঠচক্র বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।২৮ জুন শুক্রবার প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ ও সিলেটের সব বন্ধুসভার আয়োজনে সিলেটে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা ‘তৈরি হও, এগিয়ে যাও’ অনুষ্ঠিত হবে। কর্মশালা সফল করার জন্য এমসি কলেজ বন্ধুসভা আলোচনা সভা আয়োজন করে।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন তপু, সাবেক  সভাপতি আমিনুল ইসলাম, মুমিন, রিংকু, শ্রাবণী, ফাহিম, ইব্রাহিম, তানিম, জয়, কাজল, ফরিদা, আজিজ, তানিয়া, দ্বীপক, হৃদয় ও অতিথিরা।
তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ স্মরণে প্রথম আলো মোংলা বন্ধুসভা বুধবার সকালে রুদ্রের কবিতা পাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।মোংলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মোংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মোংলা সংবাদদাতা এইচ এম দুলাল। রুদ্রের কবিতা ও জীবন নিয়ে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মোংলা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মনোজ কান্তি বিশ্বাস। এরপর আলোচনা করেন মোংলা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর আলম, মোংলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মাহবুবুর রাহমান ও প্রথম আলোর মোংলা প্রতিনিধি সুমেল সারাফাত। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মোংলা বন্ধুসভার সভাপতি ধীমান মণ্ডল।কবির সাহিত্য ও জীবন নিয়ে মনোজ কান্তি বিশ্বাস বলেন, রুদ্র আপাদমস্তক একজন কবি ছিলেন। রাজনীতি ও সমাজসচেতনতার পাশাপাশি তিনি অনেক শিল্পসম্মত কবিতা লিখেছেন। তাঁর কাব্যের এক প্রান্তজুড়ে রয়েছে দ্রোহ আর সংগ্রাম। অন্য প্রান্তে প্রেম। তিনি অনেক সৃষ্টিশীল কবিতা লিখেছেন। ছন্দ ও রূপক ব্যবহারে তিনি অসামান্য প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। মো. নূর আলম বলেন, ‘কোনো গণ–আন্দোলন ও সংগ্রাম রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতা বাদ দিয়ে সম্ভব নয়। সারা বিশ্বের বাংলাভাষী মানুষ এখন গানে-কবিতায় রুদ্রকে স্মরণ করে। মোংলার মানুষ হিসেবে তাঁর জন্য আমরা গর্ব অনুভব করি।’ সুমেল সারাফাত বলেন, রুদ্র অসম্ভব দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কবি ছিলেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তিনিই প্রথম লিখেছিলেন ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন’। পরবর্তীকালে তাঁর এই পঙ্‌ক্তি চরম সত্যি হয়ে দেখা দিয়েছিল। রুদ্র কোনো অন্যায়ের সঙ্গেই কখনো আপস করেননি। সব অন্যায় আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। তাঁর ‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানটির জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি করেন মোংলা সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ অধকারী, বন্ধুসভার সদস্য ইমাম হাসান, বৃষ্টি মল্লিক, মনিরুল ইসলাম ও সুমেল সারাফাত। অনুষ্ঠানের শেষে রুদ্রের বিখ্যাত ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ গানটি গেয়ে শোনান বন্ধুসভার সহসভাপতি প্রসেণ মণ্ডল।
আগামীকাল ২৭ জুন বৃহস্পতিবার হেলেন কেলারের ১৩৮তম জন্মবার্ষিকী। কাল ‘হেলেন কেলার ডে ২০১৯’। এ উপলক্ষে মনোড্রামা ‘হেলেন কেলার’-এর ২৫তম প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদল। কাল সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটারের মিলনায়তনে এ বিশেষ মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে। হেলেন কেলারের জীবন-কর্ম-স্বপ্ন-সংগ্রাম-দর্শনভিত্তিক ব্যতিক্রমী প্রযোজনা ‘হেলেন কেলার’ রচনা করেছেন অপূর্ব কুমার কুন্ডু। নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। এতে অভিনয় করছেন জুয়েনা শবনম এবং প্রযোজনা-ব্যবস্থাপক শাখাওয়াত শ্যামল।নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। তিনি প্রথম আলোকে জানান, রজতজয়ন্তীর এ প্রদর্শনীর আগে “মহীয়সী হেলেন কেলার এবং ‘হেলেন কেলার’ মঞ্চায়নের প্রাসঙ্গিকতা’’ শীর্ষক বক্তব্য দেবেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সংস্কৃতিজন গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করবেন নাট্যজন দেবপ্রসাদ দেবনাথ, কামাল বায়েজীদ, নূনা আফরোজ প্রমুখ।জাহিদ রিপন বলেন, দৃষ্টি, বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও প্রবল আত্মবিশ্বাস আর শিক্ষয়িত্রী অ্যান স্যুলিভানের অতি-মানবিক প্রেরণায় হেলেন কেলারের সব নেতিবাচকতার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনি নিয়ে আবর্তিত আমাদের ‘হেলেন কেলার’ প্রযোজনাটি। এতে হেলেন কেলারের নিজ শিক্ষয়িত্রী আ্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষ্যে প্রকাশিত হয় চার্লি চ্যাপলিন-মার্ক টোয়েন-কেনেডি-আইনস্টাইন প্রমুখ বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের সান্নিধ্যে তাঁর জীবনের সমৃদ্ধির কথা। উন্মোচিত হয় পাশ্চাত্যের হেলেন কেলার-এর জীবনে প্রাচ্যের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথা রবীন্দ্রদর্শনের প্রবল প্রভাবের প্রকৃত-স্বরূপ! উঠে আসে নারী জাগরণ-মানবতাবাদের পক্ষে এবং যুদ্ধ-ধ্বংস-সহিংসতা-বর্ণবাদ তথা আণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তাঁর স্পষ্ট অবস্থানের কথা। পাশাপাশি উচ্চকিত হয় ব্যক্তিজীবনের নানা পূর্ণতা-অপূর্ণতার প্রসঙ্গও। অজস্র প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রকাশিত ও বিকশিত হয়ে মানবকল্যাণে নিবেদিত হতে পারাটাই হয়তো জীবনের চূড়ান্ত সার্থকতা- এ উচ্চাঙ্গের অনুভবটিই শেষাবধি প্রধান হয়ে ওঠে হেলেন কেলার-এর জীবনীনির্ভর গবেষণাগার পদ্ধতিতে নির্মিত ঐতিহ্যের ধারায় আধুনিক বাংলা নাট্যরীতিতে।জাপানের টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের আমন্ত্রণে এবং ভারতের কলকাতায় প্রাচ্য নিউ আলিপুর আয়োজিত স্বনামখ্যাত ‘পুবের নাট্যগাথা’ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে মঞ্চায়নসহ এ পর্যন্ত ২৪টি প্রদর্শনীর মাধ্যমে ‘হেলেন কেলার’ প্রযোজনাটি প্রশংসিত হয়েছে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের নিয়মিত মুখ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হামজা চৌধুরী। এবার জায়গা করে নিয়েছেন ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলে। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে তিনি এখন ইতালিতে। সেখান থেকে নিয়মিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খোঁজ খবর রাখছেন হামজা।ইতালিতে চলছে অনূর্ধ্ব-২১ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। ইউরোপের সেরা দলগুলোর লড়াই মানেই উত্তেজনায় ঠাসা। কে কাকে ছাপিয়ে ভবিষ্যৎ তারকা হয়ে উঠবে, মাঠে খেলোয়াড়দের বুটের ঘর্ষণে বোঝা যায় সেই তীব্র লড়াইয়ের ঝাঁজ। যুবাদের ইউরোপ সেরা টুর্নামেন্টের মাঝেও একজন খেলোয়াড়ের মগজে ঘুরে বেড়িয়েছে বাংলাদেশের নাম। অবাক হওয়ার মতোই কথা! ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে খেলছে এমন খেলোয়াড়ের সঙ্গে তো বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক থাকার কথা নয়। আছে! আছে বলেই ইতালিতে ইউরো টুর্নামেন্টের মাঝেও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তিনি ইংল্যান্ড দলের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী।হামজার নাম উঠলেই বাংলাদেশের ফুটবল-প্রেমীদের দীর্ঘশ্বাস ওঠে যায়। ইশ্‌, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ছেলেটা যদি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে হয়ে খেলতেন! ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লেস্টার সিটির জার্সিতে নিয়মিত খেলেন মিডফিল্ডার হামজা। দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে জায়গা করে নিয়েছেন ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ২১ দলে। ঝাঁকড়া চুলের হামজা এখন ইংলিশ যুব দলের প্রাণভোমরা। ৪-৩-৩ ফরমেশনে হোল্ডিং মিডফিল্ডার পজিশনে খেলে থাকেন। যুব দলে ভালো খেললে সিনিয়র জাতীয় দলের কোচ সাউথগেটের নজরে আসার সুযোগ। ইংল্যান্ড দলে খেলার সুযোগ থাকলে আর বাংলাদেশ ফুটবল দল কেন? অন্তত হামজার জীবদ্দশায় বাংলাদেশ ফুটবল দলের বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনাই নেই যেখানে!তবে বাংলাদেশ ঠিকই বিশ্বকাপ খেলে। সেটা ক্রিকেট বিশ্বকাপ। আর এই ক্রিকেট নিয়ে বাবার পাগলামি হামজা জানেন। এ কারণে নিজের দেশ ইংল্যান্ডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলছে বলে বাবা দিবসের উপহার হিসেবে বাবাকে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের টিকিট। গতকাল ইংল্যান্ড থেকে প্রথম আলোকে তথ্যটি দিলেন স্বয়ং হামজার বাবা গোলাম মোর্শেদ চৌধুরী, ‘ছেলে তো আমাকে চমকে দিয়েছে। বাবা দিবসে ইতালি থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলল, বাবা তোমার জন্য আমার একটা উপহার আছে। এই বলে অনলাইনে কেনা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট ম্যাচের টিকিট পাঠাল। সেই টিকিটে নটিংহামে বসে বাংলাদেশ দলের খেলাও দেখেছি।’মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াই করে হেরেছিল বাংলাদেশ। অনলাইনে খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া গেলেও ইতালিতে বসে খেলা দেখার সৌভাগ্য হয়নি হামজার। তাই মুশফিকের সেঞ্চুরির আমেজটাও তাঁর বোঝার কথা নয়। রাতেই ইতালি থেকে বাবাকে ফোন। সেই গল্পগুলো প্রথম আলোকে শোনালেন হামজার বাবা, ‘ওই ম্যাচের দিন রাতেই ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা কেমন খেলা দেখলাম। বাংলাদেশ কেমন খেলল, কে ভালো খেলছে। এ ছাড়া এর আগে বা পরে যখনই ফোন করে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কথা জিজ্ঞেস করে। বাংলাদেশের যেকোনো বিষয় নিয়েই ওর প্রচুর আগ্রহ প্রচুর।’১৯ জুন বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পরের দিন ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অনূর্ধ্ব ২১ ইউরোর মিশন শুরু করে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় ৬৩ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হামজা। বাকি সময় ১০ খেলোয়াড় নিয়ে কুলিয়ে উঠতে না পারাই শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে হেরে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। লাল কার্ডের খড়্গে রোমানিয়ার বিপক্ষে পরের ম্যাচেও খেলা হয়নি। ৪-২ গোলে হেরে বিদায় ঘণ্টা বেজে যায় ইংলিশদের। আর গতকাল নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ৩-৩ গোলের ড্র। মন্দের ভালো দিক হলো, এবার চাইলে বাবাকে নিয়ে মাঠে বসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা দেখতে পারবেন। বাংলাদেশের পরের দুটি ম্যাচ নিয়েই যে উত্তাপ ছড়াবে!ইংল্যান্ডে জন্ম নিলেও ছয় মাস বয়স থেকে মায়ের সঙ্গে হামজার বাংলাদেশে যাতায়াত শুরু। সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিলেন ২০১৫ সালে। বাংলাদেশে হামজাদের বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামে। সেই সুবাদে অসংখ্যবার বাংলাদেশে আসা হয়েছে তাঁর। সংখ্যাটা ২০ বারের কম নয়।
পিরোজপুর পৌরসভার রায়েরকাঠি গ্রামে মো. আবদুল হালিম হাওলাদার (৬০) নামের এক মুদি ব্যবসায়ীকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।নিহত আবদুল হালিম হাওলাদারের বাড়ি রায়েরকাঠি গ্রামে। তিনি মুদি দোকানের মালিক ছিলেন।পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে মো. আবদুল হালিম হাওলাদার ও তাঁর ছেলে আশিক হাওলাদার দোকানে বসে ছিলেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তিনি ছেলেকে দোকানে বসিয়ে রেখে বিড়ি কেনার জন্য বের হন। রাতে তিনি বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাঁকে সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে দুই শিশু স্থানীয় রায়েরকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পুকুর পাড়ে একটি নালার মধ্যে তাঁর লাশ দেখতে পায়।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। আজ সকালে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারবে।’আবদুল হালিম হাওলাদারের ছেলে আশিক হাওলাদার বলেন, বাবার সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা ছিল। তা ছাড়া তিনি সব সময় দোকানের মালামাল বিক্রির টাকা সঙ্গে রাখতেন। টাকার জন্য তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। বাবার কোনো শত্রু ছিল না।স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, আবদুল হালিম সঙ্গে টাকা রাখতেন। এ খবর জেনে মাদকসেবীরা টাকার জন্য আবদুল হালিমকে খুন করতে পারে।ওসি এস এম জিয়াউল হক বলেন, আবদুল হালিম হাওলাদারের মাথায় চারটি ধারালো অস্ত্রের জখম রয়েছে। তাঁর গলা কাটা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো একসময় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।
বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর মঙ্গলবার ২৫ জুন ৪৫তম জন্মদিন পালন করেছেন। দিনটি লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে কাটিয়েছেন তিনি। আর পোস্ট করেছেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর ছবি। অনেক দিন ধরেই সিনেমার পর্দা থেকে দূরেই আছেন কারিশমা কাপুর। এক সময় সিনেমার জগৎ থেকে বিরতি তিনি। সঞ্জয় কাপুরকে বিয়ে করেন। জন্ম দেন দুই সন্তান সামাইরা ও কিয়ানের। যদিও করিশমার সেই সংসার সুখের হয়নি। বিভিন্ন বাণিজ্যিক ছবিতে সফল ছিলেন কারিশমা। এর মধ্যে রয়েছে, জিগার, আনাড়ি, রাজা বাবু, বিবি নাম্বার ওয়ান, সুহাগ, কুলি নম্বর ওয়ান, গোপী কিষাণ, সাজান চালে শাশুরাল এবং জিত প্রভৃতি। ছবিগুলো ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া।
টুর্নামেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে টানা ম্যাচ খেলার ধকল সামলাতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচসহ মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে বিরাট কোহলির দলকে।বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভারতের সূচি নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। বাকি দলগুলো যেখানে দুটো-তিনটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছিল, ভারতের বিশ্বকাপ সেখানে শুরুই হয়েছে এক সপ্তাহ পর। তবে এটিই এখন হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াতে পারে ভারতের জন্য। বিশ্বকাপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসে যে একটানা ম্যাচ খেলতে হবে দলটিকে!এক ভারত বাদে বাকি দলগুলো এখনো পর্যন্ত অন্তত ছয়টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোর তো সাতটি করে ম্যাচ শেষ। সেখানে ভারত খেলেছে মাত্র পাঁচটি ম্যাচ, যার মধ্যে একটি আবার বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। যে কারণে টুর্নামেন্টের শেষ দিকে বাকি দলগুলোর চেয়ে বেশি চাপ নিতে হবে বিরাট কোহলির দলকে।দীর্ঘ এ টুর্নামেন্টের শেষ দিকে এসে এখন সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই জমে উঠতে শুরু করেছে। প্রতিটি ম্যাচেই বদলে যাচ্ছে সমীকরণ, একটি ম্যাচের ফলাফল বদলে দিতে পারে অন্য দলগুলোর ভাগ্যও। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকতে দলগুলোকে কষতে হচ্ছে অনেক হিসাব-নিকাশ, দ্রুত শুধরে নিতে হচ্ছে ভুল-ত্রুটি। ভারত সেই ত্রুটি সংশোধনের সময় পাবে কি না, সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকতে পারে খোদ ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যেই। এর পর যে একের পর এক ম্যাচ। বাংলাদেশ ম্যাচটি যেমন তাদের খেলতে হবে ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে খেলে মাত্র এক দিন বিরতি নিয়ে।টুর্নামেন্টের বাকি সূচির দিকে তাকালেই ভারতের অসুবিধা সম্পর্কে কিছুটা আঁচ করা যাবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটি বড় ম্যাচ খেলতে হবে ভারতকে। আগামীকাল ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। মাঝে বিরতি পাবে দুই দিন, এরপরই আবার ৮৭ মাইল ভ্রমণ করে এজবাস্টনে নামতে হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৭ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো টানা দুই ওয়ানডে হেরে ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালের আশা কিছুটা হলেও শঙ্কায় পড়ে গেছে। পরের ম্যাচেও হারলে সুতোয় ঝুলে যাবে স্বাগতিকদের ভাগ্য। ভারতের বিপক্ষে তাই মরণকামড়ই দিতে চাইবে এউইন মরগানের দল।২০১৯ বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত সেরা ফর্ম দেখাতে না পারলেও নিজেদের দিনে যে কোনো দলকে হারানোর সামর্থ্য আছে জেসন হোল্ডারের ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বিশেষ করে আগের ম্যাচেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিততে গিয়ে ঘাম ছুটে যাওয়ায় এ ম্যাচ নিয়ে একটু বেশি সতর্ক থাকার কথা দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হওয়ার মাত্র দুই দিন পরেই ইংল্যান্ডের সামনে পড়তে হবে বলে নেটে খুব বেশি সময়ও কাটানো হবে না কোহলিদের।ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে তাও দুই দিন সময় পাওয়া যাবে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে কোহলিদের কপালে সময় জুটবে মাত্র একদিন! ৩০ তারিখ যে মাঠে ইংলিশদের মোকাবিলা করবে, সেই এজবাস্টনেই বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়তে হবে ভারতকে। ইংল্যান্ড ম্যাচের শ্রান্তি ঠিকভাবে কাটিয়ে ওঠার আগেই আরেকটি ম্যাচ খেলতে নামতে হবে তাদের। ২৭ জুন থেকে ২ জুলাই—মাত্র ছয় দিনের ব্যবধানে তিনটি ম্যাচ খেলা তাই নিশ্চিতভাবেই কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারে গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টদের।তবে একই মাঠে দুটি ম্যাচ হবে বলে বাংলাদেশ বিপক্ষে ম্যাচটায় কিছুটা সুবিধাও পেতে পারে ভারত। এজবাস্টনে ভারতের অন্তত এক সপ্তাহ আগে পৌঁছালেও বার্মিংহাম শহরের মাঠটিতে খেলার সুযোগ বাংলাদেশ পাবে ভারতের পরে। ম্যাচ কন্ডিশনের স্বাদ তাই ভারত আগে পাবে। তার ওপর ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ একই উইকেটে খেলা হলে, সেটিও ভারতের জন্য বেশি সুবিধার উপলক্ষ হয়ে উঠতে পারে।চলমান বিশ্বকাপের নজির বলছে, দুটি ম্যাচ একই উইকেটে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহৃত উইকেটে খেলা হলে ভারতীয় স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পাবেন। অবশ্য সেই সুবিধা নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের স্পিনারদেরও থাকবে।তবে সব ছাপিয়ে আলোচনায় আসছে ছয় দিনের ব্যবধানে তিনটি ম্যাচ খেলার বিষয়টিই। প্রথমে বেশি জিরিয়ে নিয়ে শেষে এমন ঠাসা সূচি ভারতের জন্য ক্ষতিকর বলেই মনে করছেন সুনীল গাভাস্কার।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় মো. সবুজ (১২) নামের এক স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মান্নান এ রায় দেন।সাজা পাওয়া আসামির নাম আমির হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার খায়ের ঘটিচোরা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রিকশা চালাতেন।নিহত মো. সবুজ উপজেলার মঠবাড়িয়া পৌরসভার বাসিন্দা মো. শাহিনের ছেলে। সে স্থানীয় উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসানুল কবির বলেন, ‘আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’ তবে মামলার বাদী সবুজের মা খাদিজা বেগম রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিন।মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া পৌরসভার একটি ভাড়া বাড়িতে খাদিজা বেগম দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন। এক নারীর সঙ্গে রিকশাচালক আমিরের অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলেন খাদিজা। এ ঘটনায় খাদিজা আমিরকে জুতাপেটা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমির খাদিজার ছোট ছেলে সুমনকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ২০১০ সালের ৭ জুলাই সকালে খাদিজার বড় ছেলে সবুজ স্থানীয় জামে মসজিদের পুকুর ঘাটে যায়। সেখান থেকে আমির সবুজকে রিকশায় বেড়ানোর কথা বলে উপজেলার শাখারিকাঠি গ্রামে নিয়ে যান। এরপর হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দী একটি পুকুরে ফেলে রাখেন।মামলার বিবরণ থেকে আরও জানা যায়, ৯ জুলাই দুপুরে স্থানীয় লোকজন পুকুরে বস্তাভর্তি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে খাদিজা বেগম ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। ওই দিন খাদিজা বাদী হয়ে আমিরকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরপর আমিরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আমির আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ আমিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলার ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় ৭৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। পাবলিক পরীক্ষা আইনের মামলায় দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সারাফুজ্জামান আনসারী আজ বুধবার এই আদেশ দেন।যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাঁদের গ্রেপ্তার করা গেল কি না, তা আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত সূত্র বলছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ২৩ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ জন শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন এবং পাবলিক পরীক্ষা আইনে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।আজ বুধবার পাবলিক পরীক্ষা আইনের মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। আর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের মামলার অভিযোগপত্র আদালত দেখেছেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হলেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস। পুলিশ এবং আদালত সূত্র বলছে, মামলার ১২৫ জন আসামির মধ্যে পলাতক ৭৭ জন। মামলার পর গ্রেপ্তার ৪৭ জন আসামি বর্তমানে জামিনে আছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৬ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন।এর আগে গত ৩০ মে মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান মোহা. শফিকুল ইসলাম জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের এই মামলায় আরও অনেকের তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। সঠিক নাম-ঠিকানা পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।সিআইডির প্রধান জানান, অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল দীর্ঘ তদন্ত করে। তদন্তের মাধ্যমে তাঁরা দেশের সর্ববৃহৎ প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ডিজিটাল জালিয়াত চক্রকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হন।সিআইডির তালিকা ধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জড়িত লোকজনের মধ্যে অন্তত ২১ জন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মী। এই ২১ জনের মধ্যে ১৮ জন বিভিন্ন কমিটির পদধারী নেতা ছিলেন। আর তিনজন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ২০১১ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এই চক্রের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। পরীক্ষা শুরুর আগে প্রেস থেকে ছাপা প্রশ্ন নিয়ে প্রথমে তাঁরা মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর পাঠাতেন। পরে তাঁরা ডিজিটাল যন্ত্রাংশের ব্যবহার বাড়ান। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, অন্তত দুটো বিসিএস পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির প্রশ্নপত্র ফাঁসেও এই চক্র সক্রিয় ছিল। চক্রের মূল নেতারা অঢেল অবৈধ অর্থসম্পদের মালিক হন। এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে ইতিমধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মানি লন্ডারিং মামলাও করেছে সিআইডি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়া এবং জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এই ৮৭ জনের মধ্যে ১৫ জনকে বহিষ্কার করেছিল।ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক ২১ নেতা-কর্মীঅভিযুক্তদের মধ্যে ছাত্রলীগের অন্তত ২১ জন সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মী আছেন। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপসম্পাদক মহিউদ্দিন রানা, সহসম্পাদক বেলাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মশিউর রহমান, আপ্যায়ন সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক আবু জোনায়েদ, পাঠাগার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মাসুদ রানা, এফ রহমান হলের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সম্পাদক লাভলু রহমান, জহুরুল হলের উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো. বায়েজিদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক এম ফাইজার নাঈম, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের উপগণশিক্ষা সম্পাদক আফসানা নওরিন, রোকেয়া হলের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা তুজ জোহরা, সূর্য সেন হলের উপপ্রচার সম্পাদক সাবিরুল ইসলাম, জগন্নাথ হলের বর্ধিত কমিটির সহসম্পাদক শাশ্বত কুমার ঘোষ, ঢাকা কলেজের সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাগর সাহা, সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক সহসভাপতি প্রণয় পাণ্ডে ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সভাপতি রাজীবুল ইসলাম। হাসিবুর রহমান, খালিদ হাসান ও রবিউল ইসলাম ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সক্রিয় কর্মী। এ ছাড়া আছেন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সভাপতি ইশরাক হোসেন।তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার শুরু ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর মধ্যরাতে। ওই দিন গণমাধ্যমকর্মীদের কিছু তথ্যের সূত্র ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল থেকে ছাত্রলীগের নেতা মহিউদ্দিন রানা এবং অমর একুশে হল থেকে আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে ইশরাক হোসেন নামের এক পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে একে একে চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের নাম বেরিয়ে আসে।সিআইডির প্রধান শফিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মূলত দুভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে; অন্যটি পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে দ্রুত তা সমাধান করে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করে। পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রিন্টিং প্রেস থেকে যে চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁস করত, তার মূল সদস্য নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, তাঁর আত্মীয় সাইফুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি, মারুফসহ ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এই চক্র ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও ফাঁস করা প্রশ্ন নিয়ে সাভারের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার একটি বাসায় ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছিল। এ ছাড়া ডিজিটাল ডিভাইস চক্রের অন্যতম সদস্য বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস, ইব্রাহীম, মোস্তফা কামাল, হাফিজুর রহমান হাফিজ ও তাজুল ইসলামও গ্রেপ্তার হয়েছেন।রাজধানীর ইন্দিরা রোডের পিপলস প্রিন্টিং প্রেস থেকে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, জানতে চাইলে উপাচার্য আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসে ছাপা হয় না। সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন সিদ্ধান্ত নেন কোনো ছাপাখানায় ভর্তির প্রশ্ন ছাপা হবে। সিআইডি তাদের তদন্তে ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা পায়নি।
পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে ‘মোটা’ বলে কটাক্ষ করে বানানো ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এক সমর্থক। হোটেল কামরায় সেই ভিডিও দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি সরফরাজের স্ত্রী সৈয়দা খুশবখত শাহভারতের কাছে হারের পর থেকেই পাকিস্তান দলকে কথার শূলে চড়িয়েছেন সমর্থকেরা। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স তো বটেই খাদ্যাভ্যাস, ফিটনেস আর রাতে হোটেলের বাইরে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ শপিং মলে কেনাকাটা করতে গিয়েও শান্তি পাননি। সেখানে তাঁকে ‘মোটা’ বলে কটাক্ষ করে বানানো ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানের এক সমর্থক। পরে সেই সমর্থক ক্ষমা চাইলেও যা হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে। কিন্তু কারও কাছে যেটা মজা, অন্যের কাছে সেটা রক্তাক্ত আঘাত। সেই ভিডিও দেখে ফুঁপিয়ে কেঁদেছেন সরফরাজের স্ত্রী সৈয়দা খুশবখত শাহ।২০১৯ বিশ্বকাপের শুরুতেই সরফরাজকে সবচেয়ে ‘আনফিট’ অধিনায়ক বলেছিলেন পাকিস্তানের পেস কিংবদন্তি শোয়েব আখতার। এরপর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে হাই তোলা নিয়ে এখনো চলছে হাসি-ঠাট্টা। তবে শপিং মলে যা ঘটেছে তা সরফরাজের জন্য একটু বেশিই অপমানজনক। কেনাকাটার জন্য শপিং মলে গিয়ে দেখা হয় এক পাকিস্তানি সমর্থকের সঙ্গে। খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভক্তদের দেখা হলে যেমন উষ্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তা না হয়ে উল্টো ঘটেছে। একে তো সরফরাজকে মোটা বলেছেন, সঙ্গে আবার সেটি ভিডিও করেছেন। সরফরাজকে অপমান করার প্রমাণ রাখতে চেয়েছেন যেন! সেই ভিডিও পরে টুইটারে ছড়িয়ে দিলে সামাজিক মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও পরে তা মুছে ফেলতে বাধ্য হন সেই সমর্থক।সরফরাজ এ ঘটনাকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও তাঁর জীবনসঙ্গীর মেনে নিতে কষ্ট হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। ৩২ বছর বয়সী এ উইকেটরক্ষক হোটেলে নিজের কামরায় ফিরে দেখেন ভিডিওটি দেখে কাঁদছেন তাঁর স্ত্রী। সরফরাজ অবশ্য বুঝিয়ে শান্ত করেছেন। ক্রিকেট নিয়ে পাকিস্তানি সমর্থকদের আবেগ ও ভালোবাসা একটু বেশিই, এসব কথা বলে জীবনসঙ্গীকে বুঝিয়ে শান্ত করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। ‘হোটেলে ফিরে দেখি আমার স্ত্রী ভিডিওটি দেখে কাঁদছে। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, এটা সামান্য ভিডিও অথচ লোকের কাছে আমাদের কত কথা শুনতে হয়! এটা কোনো ব্যাপারই না, আমাদের শক্ত হতে হবে। এটা জীবনেরই অংশ। খারাপ খেললে এসবের মধ্য দিয়েই যেতে হবে’—আইসিসি ইনসাইডারকে বলেন সরফরাজ।ভিডিওটি বেশির ভাগ মানুষই ভালোভাবে নেয়নি। স্বাভাবিকভাবে সমর্থকের বাড়াবাড়ি পছন্দ হয়নি সাবেক খেলোয়াড়দেরও। কামরান আকমল তো টুইট করে সেই সমর্থকের শাস্তির দাবিও তুলেছেন। তবে সরফরাজ সেই সমর্থকের বিপক্ষে কোনো ব্যবস্থা নেননি। ক্রিকেটের প্রতি পাকিস্তানি সমর্থকদের আবেগের মাত্রা ভালোই বোঝেন তিনি। আর তাই বিষয়টিকে ইতিবাচক চোখেই দেখছেন পাকিস্তান অধিনায়ক, ‘শুধু পরিবারের সদস্যরা নয়, ভিডিওটি যারা দেখেছে, তারাই এর বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যারা টুইট ও বার্তা পাঠিয়ে সমর্থন দিয়েছেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা সবার কাছেই কৃতজ্ঞ। সব সময় বলেছি পাকিস্তানি সমর্থকেরা আমাদের খুব ভালোবাসে। আমরা এটাও জানি, জিতলে তারা আমাদের সম্মান করবে, তেমনি হারলে রাগ করবেই। কারণ আমাদের কাছে তারা ভালো কিছু প্রত্যাশা করে।’
গুগল-ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) এজেন্ট নিয়োগ করতে হবে। এজেন্টের মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন নিয়ে তাদের ভ্যাট দিতে হবে।জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ বুধবার এক নির্দেশনায় এ কথা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, আগামী ১ জুলাই থেকে দেশে ভ্যাট আইন কার্যকর হতে যাচ্ছে। এ আইনে অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক বেতার, টেলিভিশন ও ইলেকট্রনিক সেবা সরবরাহকারীদের ওপর ভ্যাট ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে।নির্দেশনায় বলা হয়, ভ্যাট আইন অনুযায়ী প্রত্যেক অনাবাসিক ব্যক্তিকে ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ করতে হবে। তাই মূসক নিবন্ধন নেওয়ার জন্য লিখিতভাবে অনুরোধ করতে বলা হয়েছে।ইলেকট্রনিক সেবাদাতা বলতে নির্দেশনায় ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, ভাইবার, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে দেওয়ার মেসেজ, ভয়েস, বিজ্ঞাপন ও অনুরূপ সেবাকে বোঝানো হয়েছে।
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হচ্ছে ‘বিজ্ঞানচিন্তা-মেটাল বিজ্ঞান বক্তৃতা ২০১৯-২০’। প্রতি দুই মাস পরপর এই বিজ্ঞান বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এর সঙ্গে আরও থাকবে বিজ্ঞানবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা।গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন বিজ্ঞান সাময়িকী ‘বিজ্ঞানচিন্তা’-এর সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ও বীজসংক্রান্ত বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেটাল-এর গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার এ এম এম ফরহাদ। সমঝোতা চুক্তি অনুষ্ঠানে মেটালের গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১ বছর বিজ্ঞানের এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করবে। রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোচিত কোনো বিষয় নিয়ে বিজ্ঞান বক্তৃতার আয়োজন করা হবে। বিজ্ঞান ও কৃষি বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক ও বিজ্ঞানীরা এতে বক্তৃতা করবেন। কিশোর ও তরুণ শিক্ষার্থীসহ বিজ্ঞানে আগ্রহীরা বিজ্ঞানচিন্তা-মেটাল বিজ্ঞান বক্তৃতা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে।চুক্তি অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাশার, মেটালের ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনের উপব্যবস্থাপক মীর মুহাম্মদ এমদাদুল হক, প্রথম আলোর ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশনের বিভাগীয় প্রধান কবির বকুল, বন্ধুসভার সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মধ্যম মায়ানী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।নিহত ওই যুবকের নাম কবির মোল্লা (৩০)। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালী সদরের বদেরপুর এলাকায়। তিনি দিনের বেলায় এক ঠিকাদারের অধীনে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস লাইনের ওয়েল্ডিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মধ্যম মায়ানী গ্রামে দুই-তিন মাস ধরে একটি চোর চক্র প্রায় প্রতি রাতেই কারও না কারও বাড়িতে ঢুকে মোবাইল সেট, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিল। যেসব বাড়িতে পুরুষ থাকেন না, সেসব বাড়িতে চুরির পাশাপাশি নারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করত ওই চক্রটি। চোরের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ১৫ দিন ধরে পাড়ায়-পাড়ায় পাহারা বসান স্থানীয় লোকজন। মঙ্গলবার রাতে দুটি বাড়িতে চুরি করতে ঢুকে ধাওয়া খেয়ে গ্রামের চৌধুরীপাড়ার ছাইদুল হকের বাড়িতে আসে চারজন চোর। সেখানে আগে থেকে পাহারায় থাকা লোকজনের হাতে কবির মোল্লা ধরা পড়েন। আর বাকি তিনজন পালিয়ে যান। এ সময় গণপিটুনিতে মারা যান তিনি।মধ্যম মায়ানী গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চোর চক্রের উৎপাতে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ ছিল। চুরির পাশাপাশি নারীদের গায়ে হাত দিত বলে গ্রামবাসীর ক্ষোভ ছিল বেশি। চোরদের ধরতে দুই সপ্তাহ ধরে এলাকায় রাতভর পাহারা চলছিল।মিরসরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গণপিটুনিতে যুবক নিহতের খবর পেয়ে বুধবার ভোরে ঘটনাস্থল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। লাশের মাথায় দুটি ক্ষত ও দুই বাহুতে রশি দিয়ে বাঁধার দাগ ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার রতন বড়ুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা লোকজনের বিরুদ্ধে মিরসরাই থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
প্যারিসের সমুদ্র, বিলাসবহুল প্রমোদতরি, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, নিক জোনাস, প্যারিসিয়ান ক্রুজ পার্টি- ব্যাস আর কী লাগে! নিক জোনাসের বড় ভাই কেভিন জোনাস আর ‘গেম অব থ্রোনস’ সিরিজের অভিনেত্রী সোফি টার্নার একরকম গোপনে বিয়ে সেরেছিলেন চলতি বছরের ১ মে। তাঁরা ঠিক দুই মাস পর জুলাইয়ের ১ তারিখে ঢাকঢোল পিটিয়ে মহাসমারোহে বিয়ে সারবেন প্যারিসে। আর সে জন্যই সবাই পা রেখেছেন 'সিটি অব লাভ'–এ।প্যারিসিয়ান ক্রুজ পার্টির জন্য প্রিয়াঙ্কা পরেছিলেন আলেকজান্দ্রা ও'নেইলের ডিজাইন করা পোশাক। পোশাকের রং আর নকশা দুটোই ছিল উৎসবমুখর। অন্যদিকে নিক জোনাসের পরনে ছিল সাধারণ গ্রীষ্মের পোশাক, হলুদ রঙের ছোট হাতার শার্ট আর আর ধূসর রঙের ডেনিম প্যান্ট। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস ছাড়া এই পার্টিতে আরও ছিলেন কেভিন জোনাস, সোফি টার্নার ও কাছের বন্ধুরা। প্রিয়াঙ্কা ও নিক জুটি যে সেখানে শতভাগ 'কোয়ালিটি টাইম' কাটিয়েছেন, তা আর ব্যাখ্যার দাবি রাখে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের ছবির দিকে একনজর চোখ বুলালেই তা স্পষ্ট হয়।এসব ছবিতে দেখা যায়, কোথাও প্রিয়াঙ্কা ও নিক নাচছেন। আবার কোনো ছবিতে দেখা যায় যে তাঁরা চুমু খাচ্ছেন। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া কখন, কোথায় কী করছেন, তার নিয়মিত আপডেট জানান ভক্তদের। ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কার চেয়ে ‘অ্যাকটিভ’ তারকা আর একটিও নেই। প্রতিনিয়ত তিনি ছবি আপলোড দিয়ে ভক্তদের খুশি রাখেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ইনস্টাগ্রামে প্রমোদতরিতে পার্টির ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমরা’। আবার বেশ কয়েকটা ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘দুঃখিত, অনেক অনেক ছবি’। সেই পার্টির আরও কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘বিয়ের সপ্তাহ শুরু হলো। আমরা প্যারিসে আশীর্বাদধন্য’।অন্যদিকে সোনালি বোসের পরিচালনায় ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ ছবি দিয়ে আবারও বলিউডে ফিরে আসছেন এই ‘দেশি গার্ল’। ছবিটি মূলত অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তা আয়েশা চৌধুরীর ওপর। তিনি জীবনের একটা বড় সময় দুরারোগ্য ও বিরল পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। এই রোগে ফুসফুসে ঘা হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে অনেক জটিলতার তৈরি হয়। এই আয়েশা চৌধুরীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন ১৮ বছর বয়সী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী জাইরা ওয়াসিম। আর জাইরার মায়ের ভূমিকায় দেখা যাবে প্রিয়াঙ্কাকে।অন্যদিকে জাইরা ওয়াসিমের বাবা ও প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করবেন ফারহান আখতার। কিছুদিন আগে এই ছবির বাকি থাকা একটি গানের শুটিংয়ে পায়ে চোট পেয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। আঘাত নিয়েই শুটিং সেরেছেন। শুটিং শেষে ১৩ জুনের পার্টিতেও তাঁকে দেখা গেছে হাঁটুতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায়। ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ ছবিটি ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর মুক্তি পাবে।
অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, ইভ টিজিংয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, দায়িত্ব চিরস্থায়ী।আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে পিরোজপুর জেলার সাংবাদিকদের জন্য ‘সাংবাদিকতায় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ’ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ আহ্বান জানান।মন্ত্রী বলেন, সংবাদ এ সমাজব্যবস্থাকে সভ্য করার জন্য, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ইভ টিজিংমুক্ত করার জন্য, মানবাধিকার ও সভ্যতাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য। তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, দায়িত্ব চিরস্থায়ী। সবার জন্য কাজ করা হচ্ছে দায়িত্ববোধ। সততা, দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সবাইকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্যের অবাধ প্রবাহে বিশ্বাস করেন। এ কারণে তিনি তথ্য অধিকার আইন করেছেন, যাতে যেকোনো মানুষ তথ্য পেতে পারে।সাংবাদিকদের উদ্দেশে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আপনারা নাগরিক দায়িত্বের বাইরে গিয়ে একটা বড় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। নানা রকম প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে আপনাদেরকে কাজ করতে হয়। সমাজব্যবস্থায় সাংবাদিকদের উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব আছে। আপনারা সেটা পালন করে চলেছেন।’পূর্তমন্ত্রী বলেন, সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। অনলাইন পোর্টাল এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়। মোবাইলে বসে সব সংবাদ এখন পাওয়া যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও এখন সংবাদমাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এ রকম একটি ব্যাপ্তির জায়গায় আজ সংবাদমাধ্যম চলছে।বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ বক্তব্য দেন।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় আজ বুধবার ভোরে মালবাহী ট্রাক উল্টে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের চালক ও সহকারী নিহত হন।নিহত ব্যক্তিরা হলেন ট্রাকের চালক সেলিম রেজা ওরফে দুলাল (৫২)। তাঁর বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায়। চালকের সহকারীর নাম জানা যায়নি। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জে।পুলিশ জানায়, উত্তরবঙ্গ থেকে মালবোঝাই ট্রাকটি আজ ভোরে ময়মনসিংহ শহরের দিকে যাচ্ছিল। পথে মুক্তাগাছা উপজেলার লেংড়া বাজার এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়েছে নিউজিল্যান্ডএজবাস্টনে মাথার ওপর কালো মেঘ দেখেও কেন উইলিয়ামসন কেন আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন? এ প্রশ্নটা উঠতেই পারে। তার আগে আবার একচোট বৃষ্টিও হয়েছে। খেলা নির্ধারিত সময়ে মাঠে না গড়ালেও কোনো ওভার কাটা পড়েনি। তবে পেসবান্ধব কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। প্রতিপক্ষের ইনিংসে নিজের প্রথম বলে উইকেট নেওয়াকে মোহাম্মদ আমির যে প্রায় অভ্যাসে পরিণত করেছেন!সেমিতে ওঠার আশা জিইয়ে রাখতে জয়ের বিকল্প নেই—এ সমীকরণ মাথায় নিয়ে আগে বোলিং করছে পাকিস্তান। পেসবান্ধব কন্ডিশনেও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ শুরুটা করিয়েছেন স্পিনার মোহাম্মদ হাফিজকে দিয়ে। প্রথম বলেই তাঁকে চার মেরে দারুণ শুরু করেছিলেন কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল। কিন্তু পরের ওভারেই কন্ডিশনের ফায়দা তুলে নেন আমির। তাঁর প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন গাপটিল। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৭ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৫ উইকেটে ৮৪। উইকেটের এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন। ব্যক্তিগত ৪১ রানে শাদাব খানের লেগ স্পিনে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন এ ব্যাটসম্যান। জিমি নিশামের সঙ্গে এখন ব্যাট করছেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম।দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচেও নিজের প্রথম বলে হাশিম আমলাকে তুলে নিয়েছিলেন আমির। সেদিনের মতো আজও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাঁর হাতে বল তুলে দেন সরফরাজ। প্রথম ডেলিভারিটা করেছিলেন অফ স্টাম্পের একটু বাইরে ফুল পিচ ডেলিভারি। বল সুইং করে ভেতরে ঢুকতে পারে, সম্ভবত তা ভেবেই ড্রাইভ করেছিলেন গাপটিল। বল তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। ৫ রান করে গাপটিল ফেরার পর দ্বিতীয় উইকেটে উইলিয়ামসনের সঙ্গে ১৯ রানের জুটি গড়ে আউট হন আরেক ওপেনার কলিন মানরো।পেসার শাহিন আফ্রিদির গতির কাছে হার মেনে স্লিপে ক্যাচ দেন মানরো (১২)। নিজের পরের ওভারে রস টেলরকেও গতির আগুনে পুড়িয়েছেন আফ্রিদি। তাঁর লেংথ বলে খোঁচা মারতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন টেলর। ডান দিকে ডাইভ দিয়ে অবিশ্বাস্য দক্ষতায় এক হাতে ক্যাচটি ধরেন অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক সরফরাজ। আমিরের তুলনায় আফ্রিদির গতি সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কিউইদের। লাথামকেও উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেছেন আফ্রিদি। নিউজিল্যান্ডের পতন হওয়া ৪ উইকেটের ৩টি নিয়েছেন আফ্রিদি।পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ জিতলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে নিউজিল্যান্ডের। ৬ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত টেবিলের দুইয়ে উইলিয়ামসনের দল।
আজ ২৬ জুন। আজ থেকে ৩৪ বছর আগে এই দিনে বনি কাপুর ও মোনা কাপুরের সংসারে জন্মেছিলেন আজকের বলিউড তারকা অর্জুন কাপুর। তাই আজকের দিনটি একটা বিশেষ দিন অর্জুন কাপুর আর তাঁর প্রেমিকা মালাইকা আরোরার জন্য।এই দিনটি একসঙ্গে উদ্‌যাপনের জন্য মালাইকা আরোরাকে নিয়ে নিউইয়র্কে উড়াল দিয়েছিলেন অর্জুন কাপুর। সেখানে এই জুটির ছুটির দিনগুলো কেমন কাটছে, তা জানতে যেন তর সইছে না ভক্তদের। অর্জুন কাপুরের জন্মদিনে ৪৫ বছর বয়সী মডেল ও বলিউড অভিনেত্রী মালাইকা আরোরার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট নিশ্চয়ই তাঁদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটাবে। প্রেমিকের জন্মদিনে দুটো ছবি পোস্ট করেছেন তিনি।প্রথম ছবিটা নিউইয়র্কে তাঁরা যে বাড়িতে রয়েছেন সেখানকার বাথটাব থেকে পুরো শহর আর আকাশের। সেই ছবিটার ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, 'উঁচুতে আরও উঁচুতে।' এই ক্যাপশন দিয়েই কি তিনি প্রেমিককে উইশ করলেন? আর দ্বিতীয় ছবিটি তাঁদের রাতের খাবারের।এর আগে ফিল্মফেয়ারে অর্জুন কাপুর প্রথমবারের মতো তাঁদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন। বলেছেন, 'আমি তাদের (পাপারাজ্জিদের) আমার বাড়ির পাশে বসে থাকতে নিষেধ করেছি। এটা এজন্য না যে আমরা লুকাতে চাচ্ছি। না। এটা সহজ, সাধারণ আর স্বাভাবিকভাবেই হতে দেওয়া উচিত। আমি চাই না আমার বা তাঁর প্রতিবেশীরা আমাদের জন্য বিরক্ত হোক। আমরা কোনো অপরাধ করি নি। তাই আমাদের লুকিয়ে থাকার কিছু নেই। তারা বোধ হয় বুঝতে পেরেছিল।'অর্জুন কাপুরের সঙ্গে প্রেম ছিল সালমান খানের বোন অর্পিতার (সালমানের বাবার পালিত মেয়ে)। অর্পিতার সঙ্গে সময় কাটাতেই সালমান খানের বাসায় যেতেন তিনি। সেই সুযোগে সালমান খানের কাছ থেকে বলিউডে আসার প্রস্তুতি হিসেবে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। তখন কি আর সালমান জানতেন, দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পুষছেন তিনি! সেই আসা যাওয়ার মাঝেই অর্জুন কাপুর আর সালমান খানের বড় ভাই আরবাজ খানের স্ত্রী মালাইকা আরোরার দুই জোড়া চোখের মিলন ঘটে। অর্জুন কাপুর এরপর অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন। আর তার কিছুদিন পর মালাইকা আরোরাও আরবাজ খানের থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন, সময়ের সঙ্গে তাঁদের বিচ্ছেদও হয়। অর্পিতা খান এবং আরবাজ খান দুজনের অর্জুন আর মালাইকার সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জয়ী হয়েছে অর্জুন আর মালাইকার প্রেম।সবই ঠিক আছে। ১৯ বছরের দাম্পত্যের সম্পর্ক ভেঙে মালাইকা আরোরা আর আরবাজ খানের ডিভোর্সেরও দুই বছর হয়ে গেল। তখন থেকেই প্রশ্ন আসছিল,তবে কবে বিয়ে করছেন এই জুটি? কিছুদিন পর পরই তাঁদের বিয়ের দিন তারিখ ছাপা হয়। সেসব এপ্রিল, বসন্ত পার হয়ে যায়। কিন্তু জানা হয় না, কবে বিয়ে করছেন তাঁরা। 'ইন্ডিয়া'স মোস্ট ওয়ান্টেড' খ্যাত অর্জুন কাপুর সেই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন, 'আমি আপাতত বিয়ে করছি না। আমি জানি এই প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক। এমনকি আমার বাড়িতেও আমাকে এই প্রশ্ন করা হয়। ৩৩ নিশ্চয়ই বিয়ের জন্য একটা বড় সংখ্যা। কিন্তু আমার জন্য মোটেই না। আমার হাতে এখনো অনেক সময় আছে। আমি যদি আমার সম্পর্ক গোপন না করি, তাহলে বিয়ের কথা কেন গোপন করব?'অন্যদিকে অর্জুন কাপুরের জন্মদিনে চাচা অনিল কাপুর তাঁদের পাঁচটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, 'শুভ জন্মদিবস, চাচু। তুমি প্রতিদিন আমাদের খুশি করো। যা-ই করো না কেন, সবকিছুতে নিতের শতভাগ উজাড় করে দাও। দোয়া করি, তুমি অনেক বড় হও, সমস্ত বাধা ডিঙিয়ে তোমার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য স্পর্শ করো। ভালোবাসা রইল।'যা হোক, অর্জুন এখন পর্যন্ত কোনো ছবি দিয়েই বক্স অফিসে তেমন আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেননি। তাঁকে আশুতোষ গোয়ারিকরের 'পানিপথ' ছবিতে দেখা যাবে। এই ছবিতে আরও দেখা যাবে কৃতি শ্যানন, কুনাল কাপুর ও সঞ্জয় দত্তকে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ১১৩টি গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। আগের অর্থায়ন করা গবেষণাগুলোতে ভালো ফলাফল পাওয়ায় মন্ত্রণালয় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন ভবনে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গবেষণা প্রকল্প পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক সেমিনার আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রকল্পগুলোর সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন বাউরেসের পরিচালক এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার।অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) মাধ্যমে এসব গবেষণা পরিচালিত হবে। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে মানসম্মত গবেষণার বিকল্প নেই। এর আগে মন্ত্রণালয় যেসব প্রকল্পে অর্থ দিয়েছিল, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেসব গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে চমৎকার ফলাফল পাওয়া গেছে। তাই এবার এত সংখ্যক গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে মন্ত্রণালয়, যা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে সবচেয়ে বেশি।ইয়াহিয়া খন্দকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকদের কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় সব সময় নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছে। বাউরেসের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রকল্পগুলোর পর্যায়, ব্যয় ও ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলো সার্থকভাবে শেষ করতে পারলে কৃষির উন্নয়ন আরও অগ্রগামী হবে।বাউরেসের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহফুজুল হকের সঞ্চালনায় ও ইয়াহিয়া খন্দকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. জসিমউদ্দিন খান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন গোলাম মোস্তফা।
মুঠোফোন সেবার ওপর কর আরোপ করা হলে তা সব শ্রেণির মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে দাবি করেছেন মুঠোফোন ব্যবহারকারী সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সরকারের লোকজন দাবি করে দেশের ফকিরেরাও এখন মুঠোফোন ব্যবহার করে। তাহলে ফকিরের ওপর এত কর কেন আরোপ করা হচ্ছে? এটা কি প্রান্তিক মানুষকে মুঠোফোন ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য?’নতুন বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মুঠোফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। এতে একজন মানুষ ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ২২ টাকা যাবে করের পেছনে। এ ছাড়া সিমের ওপর কর ১০০ টাকা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়। স্মার্টফোন আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়, যা আগে ১০ শতাংশ ছিল। এ ছাড়া মোবাইল অপারেটরের ন্যূনতম কর শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ শতাংশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এসব কর মুঠোফোন কেনা ও ব্যবহারে মানুষের ব্যয় অনেক বাড়িয়ে দেবে। মোবাইল অপারেটরগুলোও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।বাজেটে টেলিযোগাযোগ খাতে প্রভাব নিয়ে এ খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক (টিআরএনবি) আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মেফতাহ উদ্দিন খান, রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের সাবেক মহাসচিব টি আই এম নুরুল, গ্রামীণফোনের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের পরিচালক হোসেন সাদাত, বাংলালিংকের কর বিভাগের প্রধান সারোয়ার হোসেনসহ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একদিকে আপনারা মুঠোফোন সেবাকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলছেন। অন্যদিকে চড়া হারে কর আরোপ করে তারা যাতে ব্যবহার না করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করছেন। এটা প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা।’ তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটরগুলো আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম নয় যে তারা জনসেবা করবে। তারা সব করের চাপ মানুষের ওপর চাপাবে।রবির মাহতাব উদ্দিন বলেন, মুঠোফোন সেবার ওপর যে হারে কর আরোপ করা হচ্ছে, তা তামাকজাত পণ্যের মতো হয়ে যাচ্ছে। এটা কি তামাকের মতো ক্ষতিকর?বাংলালিংকের সারোয়ার হোসেন বলেন, সারা বিশ্বে আয়করের ওপর জোর দিয়ে শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাটের ওপর চাপ কমানো হচ্ছে। কারণ শুল্ক ও ভ্যাটের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ পড়ে। বাংলাদেশে আয়করের দিকে জোর দেওয়া উচিত।অনুষ্ঠানে জানতে চাওয়া হয় যে সম্পূরক শুল্ক সাধারণত ক্ষতিকর পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য আরোপ করা হয়। মুঠোফোনকে কি সরকার ক্ষতিকর হিসেবে গণ্য করছে?এনবিআর সদস্য মেফতাহ উদ্দিন খান বলেন, বাজেট শুধু এনবিআর একা করে না। শুরুতে একটি প্রস্তাব তৈরির পর অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়। অর্থমন্ত্রীর পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সবকিছু চূড়ান্ত হয়। তিনি বলেন, সিম কর বাড়ানোয় আসল ক্রেতাদের ওপর প্রভাব পড়বে না। ১টা দরকার হলেও এখন অনেক মানুষের কাছে ৫-৬টা সিম থাকে। তিনি বলেন, ‘স্মার্টফোনের একটা সামাজিক কুফল দেখা যাচ্ছে। আমার অফিসে দেখি সহকারীরা ফেসবুক, ইউটিউব নিয়ে পড়ে থাকে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, এত বেশি স্মার্টফোন কি দরকার আছে? তিনি আয়কর বাড়াতে ১০ হাজার কর্মী নিয়োগ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্যালয় খোলার পদক্ষেপের কথা জানান।টিআইএম নুরুল কবির বলেন, একদিকে সরকার সবাইকে টেলিযোগাযোগ সেবার আওতায় আনার কথা বলছে, অন্যদিকে উচ্চহারে কর আরোপ করা হচ্ছে। সরকারে কি দুই ধরনের নীতি প্রণেতা আছে? তিনি বলেন, মুঠোফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক পৃথিবীর কোথাও নেই। এটা কীভাবে আরোপ করা হল, তার তদন্ত হওয়া উচিত।
তৃতীয় বিশ্বের একজন শহুরে নাগরিককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ‘আলফা’ চলচ্চিত্রের কাহিনি। যেখানে ফুটে উঠে যান্ত্রিক শহরের বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া ও অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে বেঁচে থাকা এক চিত্রশিল্পীর জীবন। গেল ২৬ এপ্রিল নাসিরউদ্দিন ইউসুফের ‘আলফা’ ছবিটি মুক্তি পায়। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ছবিটি চলচ্চিত্র অঙ্গনে ছবিটি বেশ প্রশংসিতও হয়। মুক্তির পর রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, সীমান্ত সম্ভার, শ্যামলী সিনেমা হলসহ চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনে ছবিটি প্রদর্শিত হয়। এবার এবার চলচ্চিত্রটি সারা দেশ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন পরিচালক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। বুধবার দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে জানান, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এবার সিনেমা হলের বাইরে আলফার দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। আগামী ২৮ জুন শুক্রবার চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে আলফার তিনটি প্রদর্শনী হবে। পর্যায়ক্রমে রাজশাহী, সিলেট বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাবে।’ নাসিরউদ্দিন ইউসুফ জানান ২৮ তারিখে তিনিও চট্টগ্রামে যাবেন, দর্শকের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন। বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম-এর আয়োজনে আগামী ১৩ জুলাই বিকাল ৫টায় জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে দেখানো হবে আলফা। ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ‘আলফা’ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনী ছাড়াও আলোচনার আয়োজন থাকবে। ঢাকা শহরের একজন রিকশা পেইন্টারের জীবনের নানা বাঁকের গল্প এই ছবির প্রধান উপজীব্য। ছবিতে ফুটে উঠবে যান্ত্রিক শহরে বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে ও অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর বেঁচে থাকার চিত্র।’ আধুনিক শহরে একজন মানুষ ক্ষয়িষ্ণু শিল্পমাধ্যম (বিলবোর্ড, ব্যানার আঁকার কাজ) নিয়ে কাজ করেন। যান্ত্রিক এ শহরে বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে এবং অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর বেঁচে থাকার চিত্র দেখা যাবে এ ছবিতে।’ বললেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন নবীন অভিনয়শিল্পী আলমগীর কবির ও দোয়েল ম্যাশ। এ ছাড়াও পরিচিত মুখ হিসেবে দেখা গেছে প্রবীণ অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানকে। ছবিতে অভিনয় করেছেন হীরা চৌধুরী, ইশরাত নিশাত, মোস্তাফিজ নূর ইমরান ও ভাস্কর রাসা। প্রধান চরিত্রদের ছাড়া অন্যান্য অভিনয় শিল্পদের নির্বাচন করা হয়েছে অডিশনের মাধ্যমে। বেশির ভাগই মঞ্চ থেকে এসেছেন বলে জানিয়েছেন নির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ।
‘আমাদের বন বিভাগ গাছ লাগানো ভালো বোঝে কিন্তু বন বোঝে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’ বন সুরক্ষায় বন বিভাগের সমালোচনায় কথাগুলো বললেন চাকমা সার্কেলপ্রধান রাজা দেবাশীষ রায়। আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বন আইন, বিধিমালা ও বনবাসী মানুষের অধিকার’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। ভূমি অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এর আয়োজন করে।আজকের অনুষ্ঠানে বিচারপতি, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, বননির্ভর বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তাঁদের সামনেই বাংলাদেশের বন, বন আইন, বন আইন ও বিধিমালার ঐতিহাসিক পরম্পরা নিয়ে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দেবাশীষ রায়। তিনি বলেন, ‘যখন বন ছিল, তখন বন বিভাগ ছিল না। বন বিভাগ সৃষ্টি হওয়ার পরই বন ধ্বংস শুরু হয়েছে।’১৯২৭ সালের ব্রিটিশ আমলে বন আইন করা হয়। প্রায় শতাব্দীপ্রাচীন আইনটির নানা দিক নিয়ে সমালোচনা করেন দেবাশীষ রায়। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকার বন আইন করেছিল বন থেকে রেলওয়ে ও জাহাজের জন্য কাঠ সংগ্রহ করার জন্য। তাদের বনের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা ছিল না। আজও সেই আইন কীভাবে আমাদের দেশে থাকতে পারে সেটি প্রশ্ন।’ রাজা দেবাশীষ তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ভারত এবং উপমহাদেশের অন্যান্য দেশেও পুরোনো বন আইন আছে। কিন্তু এসব দেশে এখন সেই আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে। বননির্ভর মানুষের অধিকার দিয়ে ভারতে বন সংরক্ষণ আইন হয়েছে নতুন করে। নেপালেও সংশোধন করে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে আইন হয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই বননির্ভর মানুষের সুরক্ষা নেই।চাকমা সার্কেলপ্রধান বলেন, সংরক্ষিত, রক্ষিত, ইকোপার্ক, বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য ইত্যাদি নানা নামে বনকে বিভাজিত ও অভিহিত করা হয়। কিন্তু বনের সুরক্ষা হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি বিশাল অংশের বনকে বন বিভাগ ‘অশ্রেণিভুক্ত রাষ্ট্রীয় বন’ হিসেবে অভিহিত করে। তবে আইনে এ ধরনের কোনো বন নেই। ওই বনকে জেলা প্রশাসন বলে খাস জমি। আর পাহাড়ি মানুষ মনে করে তাদের প্রথাগত সম্পত্তি। বনের নানা কার্যক্রমের সঙ্গে বনবাসী মানুষকে সম্পৃক্ত না করায় বন বিভাগের সমালোচনা করেন দেবাশীষ রায়। তিনি বলেন, ‘বননির্ভর আদিবাসী মানুষ বন বিভাগকে শেখাতে পারে বন কাকে বলে। বনের সুরক্ষায় এসব মানুষের সহযোগিতা লাগবে।আজকের অনুষ্ঠানে বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসান বলেন, কক্সবাজারে ৮০০ একর বন কেটে বিসিএস কর্মকর্তাদের জন্য একাডেমি করবে সরকার। ওখানে যেসব কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ পাবেন, সেসব কর্মকর্তার বনের প্রতি কোনো মায়া জন্মাবে না।রিজওয়ানা হাসান বলেন, যে ঔপনিবেশিক বন আইন এখনো টিকে আছে, সেখানে বন বিভাগের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে কোনো কথা নেই। এক ধরনের অস্বচ্ছতা ও অদক্ষতা বন বিভাগের কাজের মধ্যে রয়ে গেছে। আর সরকার সেটা জানে। তাই যখনই সরকারের কোনো জমির দরকার হয়, তখন তার চোখ পড়ে বন বিভাগের জমির ওপর। আর বন বিভাগ তা দিয়ে দেয়।রিজওয়ানা হাসানের মতো বন আইনের সমালোচনা করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এই নেতা বলেন, বনকে বননির্ভর জাতিগোষ্ঠীর মানুষ দেখে জীবনের অংশ হিসেবে। কিন্তু বন বিভাগ এসব মানুষকে বিবেচনা করে প্রতিপক্ষ হিসেবে। যত দিন এসব মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক না হবে, বন বিভাগের তত দিন বন বিনাশ রোধ হবে না। এখনকার বন আইন পরিবর্তন করে বন সংরক্ষণের নতুন আইন প্রবর্তনের দাবি করেন সঞ্জীব দ্রং।আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের বোঝা উচিত তাঁদের দায়িত্ব বনের উপকার, বননির্ভর মানুষকে অপমান নয়।অনুষ্ঠানে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘বননির্ভর জনগোষ্ঠীর অধিকারকে স্বীকৃতি না দিলে বনের সুরক্ষা হবে না। এটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে। এই সহজ সত্যকে আমরা আজও বুঝতে পারছি না।’সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, এখন দেশে বনখেকো তৈরি হয়েছে। তবে এসব বনখেকোকে শাস্তি না দিয়ে সরকার কখনো কখনো বনখেকোর ভূমিকা নিয়ে নেয়।আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন এএলআরডির উপনির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি।
সুস্থ হয়ে উঠেছেন ব্রায়ান লারা। বুকের ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে। তবে দ্রুতই সমর্থকদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, তেমন কিছুই তাঁর হয়নি।বিশ্বকাপের ডামাডোলের মাঝে হঠাৎ একটা সংবাদে ভীত হয়ে পড়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। বুকের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ব্রায়ান লারা। তাঁর বয়সটা এমন, এ সময়ে ‘চেস্ট পেইন’-এর খবর এলে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা শঙ্কিত তো হবেই। তবে হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সমর্থকদের আশ্বস্ত করেছেন এই ক্রিকেট কিংবদন্তি। বলেছেন, দুশ্চিন্তার কিছু নেই।টুইটারে লারা লিখেছেন, ‘সবাই কেমন আছেন? জানি আপনারা সবাই আমার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। আমার মনে হয় আজ (গতকাল) সকালে একটু বেশিই জিম করে ফেলেছিলাম, যে কারণে বুকের ব্যথা হয়। তাই ভাবলাম, ডাক্তার দেখিয়ে আসা উচিত।’হাসপাতালে গিয়ে নিশ্চিন্তে কালকের ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দেখেছেন বলেও জানিয়েছেন, ‘আমি হাসপাতালে গেছি ঠিকই, কিন্তু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে মজাই করেছি! বেশ কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। আমি এখন ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার খেলা উপভোগ করছি। আশা করছি অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে আটকে দেবে। আমি ভালো আছি। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছি, আশা করছি আগামীকালের মধ্যে আমার হোটেল রুমে ফিরে যেতে পারব।’সবার মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ব্রায়ান লারাও । ভারতের স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে আইপিএলের ধারাভাষ্যের পর বিশ্বকাপেও ধারাভাষ্য করছিলেন এই ক্রিকেটার। মুম্বাইয়ের এক স্টুডিও থেকে প্রচারিত হয় এই বিশেষ ক্রিকেট বিশ্লেষণী অনুষ্ঠান, যেখানে লারার বিশ্লেষণ বিশেষ নজর কেড়েছে। সবকিছু ঠিকই ছিল, কিন্তু কাল সকালেই অঘটন। হঠাৎই বুকের ব্যথা শুরু। আর তাতেই ভর্তি হতে হলো মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে।ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, ‘দুই বছর আগে তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে রিং পরানো হয়েছিল। আজ (গতকাল) নিয়মিত চেক আপ করানো হয়েছে। কারণ সব সময়ই বুকের ব্যথার ভয় থাকে। তিনি ভালো আছেন এবং দ্রুত তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। গত কয়েক দিন কোনো টিভি শুটিং করেননি লারা।’টেস্ট ম্যাচে এক ইনিংসে ৪০০ রান করার অনন্য কীর্তির মালিক লারা অনেকের চোখেই সর্বকালের সেরাদের একজন। ১৩১ টেস্টে এই ব্যাটসম্যানের গড়টাও ঈর্ষণীয়। ৫২.৮৯ গড় নিয়ে করেছেন ১১ হাজার ৯৫৩ রান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে না পারলে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আছে।আজ বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ নূর মোহাম্মদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়।সংসদ নেতা বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা অধিবাসীরা অসন্তুষ্টিতে ভুগছে। তাদের অনেক অভাব অভিযোগ রয়েছে। তাদের প্রত্যাবাসনে সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার অপপ্রচার চালাচ্ছে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। আমরা বারবার বিভিন্ন ফোরামে বলেছি যে, এসব বাস্তুচ্যুত জনগণের ফেরত মিয়ানমার সরকারের ওপর বর্তায় এবং তাদেরকেই উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মিয়ানমার সরকারের অনড় অবস্থানের কারণে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। উপরন্তু মিয়ানমার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে এবং বলছে, বাংলাদেশের অসহযোগিতার কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হচ্ছে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব জনমত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অব্যাহতভাবে আমাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ এ বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনে একটি রিপোর্ট প্রেরণ করেছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাদের এ বিষয়ে কাজ করতে দিচ্ছে না। মিয়ানমারের অসহযোগিতা সত্ত্বেও আমরা দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় দুটি পথই খোলা রেখেছি।’রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের এসব নাগরিক এখানে স্বেচ্ছায় আসেনি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের বলপূর্বক বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করেছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার এসব মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক মানবিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি ছিল। এ জন্য তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও স্থানীয় এনজিওর সঙ্গে সমন্বয় করে এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
জনপ্রশাসনের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের তিনজন কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত সচিব করা হয়। এ বিষয়ে আজ বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।সচিব হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে বিয়ামের মহাপরিচালক শেখ মুজিবুর রহমানকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুনকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের বর্তমান সচিব জি এম সালেহউদ্দিন ৩০ জুন থেকে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাচ্ছেন। বর্তমানে জনপ্রশাসনে মোট ৭৯ জন সচিব আছেন।
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের সংসদে দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে গণফোরাম। তারা বলেছে, নাসিম উদ্দেশ্য মূলকভাবে মিথ্যাচার করেছেন।আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গণফোরাম এ প্রতিবাদ জানায়। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোট গড়ে ড. কামাল হোসেন কার্যত আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করেছেন।নাসিম বলেন, ‘তিনি (ড. কামাল) আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করে মাঠ খালি করিয়ে দিলেন আর আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। এই হচ্ছে তাদের ভাড়াটের মুরোদ। ওরা ড. কামাল হোসেনকে ভাড়া করল ওদের জন্য, আর কাজ করল আমাদের জন্য।’গণফোরামের বিবৃতিতে দলের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া নাসিমের এ বক্তব্যের নিন্দা প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, ‘তাঁর (ড. কামাল ) সম্পর্কে যে কুরুচিপূর্ণ উদ্দেশ্য মূলক শিষ্টাচার বিরোধী মিথ্যাচার করেছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভোটারবিহীন ও আগের রাতে ব্যালটবাক্স ভর্তি করা জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত বর্তমান পার্লামেন্টের সরকার দলীয় নেতা মো. নাসিমের কাছে- এর থেকে বেশি ভদ্রতা আশা করা যায় না।’মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনৈক্য সৃষ্টি করার লক্ষ্যে মো. নাসিম এই মিথ্যাচার করেছে বলে দাবি করে গণফোরাম জানায়, জাতীয় ঐক্যকে আরও শক্তিশালী ও সুদৃঢ় করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সফল করার মধ্য দিয়ে এ ধরনের কথার জবাব দিতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা রণদাপ্রসাদ সাহা, তাঁর ছেলে ভবানীপ্রসাদ সাহাসহ সাতজনকে হত্যা করার ঘটনায় করা মামলার রায় কাল বৃহস্পতিবার প্রদান করা হবে। আজ বুধবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায়ের জন্য কাল দিন ধার্য করেন।মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহা, তাঁর ছেলেসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা করা হয়। গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর ১২ ফেব্রুয়ারি মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন। ২৮ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তাঁর বিচার শুরু করার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এক বছরের বেশি সময় পর আজ আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি রানা দাশগুপ্ত। আসামিপক্ষে ছিলেন গাজি এম এইচ তামিম।মামলার আরজিতে বলা হয়, আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০ থেকে ২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদাপ্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালান। অভিযানে রণদাপ্রসাদ সাহা, তাঁর ছেলে ভবানীপ্রসাদ সাহা, রণদাপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব, রণদাপ্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ সাতজনকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে সবাইকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তাঁদের মরদেহ আর পাওয়া যায়নি।মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমসের আশপাশের এলাকা, নারায়ণগঞ্জের খানপুরের কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও তার আশপাশের এলাকা এবং টাঙ্গাইল সার্কিট হাউস এলাকায় অপরাধ সংঘটন করেন। রণদাপ্রসাদ সাহার পৈতৃক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। একসময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদাপ্রসাদ সাহা। তিনি থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে। সে বাড়ি থেকেই তাঁদের ধরে নিয়ে যান আসামি মাহবুবুর রহমান ও তাঁর সহযোগীরা।আসামি মাহবুবুর রহমানের বাবা আবদুল ওয়াদুদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি ছিলেন। মাহবুবুর রহমান ও তাঁর ভাই আবদুল মান্নান সে সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।রণদাপ্রসাদ সাহা ‘কুমুদিনী ডিসপেনসারি’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরে সেটিই কুমুদিনী হাসপাতাল নামে পূর্ণতা লাভ করে। এ ছাড়া তাঁর প্রপিতামহী ভারতেশ্বরী দেবীর নামে ‘ভারতেশ্বরী বিদ্যাপীঠ’ স্থাপন করে ওই অঞ্চলে নারী শিক্ষার সুযোগ করে দেন। এটি ১৯৪৫ সালে ভারতেশ্বরী হোমসে রূপলাভ করে। ১৯৪৩ সালে টাঙ্গাইলে কুমুদিনী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। বাবার নামে মানিকগঞ্জে দেবেন্দ্র কলেজ স্থাপন করেন। এ ছাড়া তিনি মির্জাপুরে কুমুদিনী মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
অনেকেই এখন ইন্টারনেট ব্যাংকিং করেন। এ জন্য মোবাইল বা পিসি থেকে ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করেন। কিন্তু সাইবার দুর্বৃত্তেরা বসে নেই। নানা কৌশলে ব্যবহারকারীকে বোকা বানিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে কাজ করছে তারা। এর মধ্যে গুগলের নানা অ্যাপ কৌশলে কাজে লাগিয়ে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করে ফেলতে পারে দুর্বৃত্তরা। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কির তথ্য অনুযায়ী গুগল ক্যালেন্ডার, ড্রাইভ, ফটোজের মতো সেবা কাজে লাগায় দুর্বৃত্তরা। সাইবার দুর্বৃত্তদের এসব কৌশল সম্পর্কে জেনে রাখুন:গুগল ক্যালেন্ডার: গুগল ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে আপনাকে বোকা বানাতে পারে। কোনো ইভেন্ট বা অনুষ্ঠানের ভুয়া আমন্ত্রণ বা রিমাইন্ডার পাঠাতে গুগল ক্যালেন্ডার ব্যবহার করতে পারে তারা। সেখানে বলা হতে পারে, আপনার ব্যাংকে কিছু টাকা ঢুকবে, এ জন্য আপনাকে কিছু তথ্য দিতে হবে। এর মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পিন নম্বরও চাওয়া হতে পারে। তাই অনলাইনে কোথাও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত পিন ও পাসওয়ার্ড দেওয়া থেকে সতর্ক থাকুন।গুগল ফটোজ: আপনার মোবাইলের গুগল ফটোজ অনেক সময় আপনার জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। ক্যাসপারস্কির তথ্য অনুযায়ী, দুর্বৃত্তরা গুগল ফটোজের মাধ্যমে আপনার সঙ্গে ছবি শেয়ার করতে পারে, যাতে বিশাল অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও মন্তব্য আকারে থাকতে পারে। বন্ধু বা বান্ধবীর ছদ্মবেশেও আপনাকে ফাঁসানো হতে পারে। অপরিচিত কোনো উৎস থেকে আসা ছবির মেইলে উত্তর দেওয়ার আগে তাই সচেতন থাকতে হবে। গুগল ফটোজ–সদৃশ নিরীহ দর্শন এসব মেইল আসলে ক্ষতিকর স্ক্যাম।গুগল ম্যাপস: গুগল ম্যাপের এখন বড় সমস্যা হচ্ছে, এতে অনেক ভুয়া বিজনেস প্রোফাইল বা পেজ তৈরি করা আছে। অনেক প্রকৃত ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ভুয়া ব্যবসার পেজ সৃষ্টি করে ক্ষতি করতে পারে দুর্বৃত্তরা। গুগল ম্যাপ থেকে কোনো ব্যবসার সঙ্গে অনলাইন লেনদের করার আগে তাই সতর্ক থাকতে হবে। তা না হলে আপনার অর্থ বেহাত হতে পারে।গুগল ড্রাইভ: অনেক ম্যালওয়্যার ও প্রতারণাপূর্ণ পেজ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এর মধ্যে দুর্বৃত্তদের বেশি আগ্রহ থাকে ব্যাংকিং তথ্য পাওয়ার দিকে। একবার ক্লাউডের মাধ্যমে গুগল ড্রাইভে ঢুকতে পারলে তারা সর্বনাশ করে ছাড়ে। তাই গুগল ড্রাইভে অপরিচিত উৎস কোনো সন্দেহজনক লিংক পেলে তা ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।গুগল ফরম: গুগলের অন্যতম টুল ফরম ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দুর্বৃত্তরা নানা জরিপ বা কুইজের আদলে আপনার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। তাই কোনো রকম অফার বা প্রলোভনে পড়ে গুগল ফরম পূরণ করবেন না।গুগল অ্যানালাইটিকস: অনেক প্রতিষ্ঠান গুগলের অ্যানালাইটিকস টুল ব্যবহার করেন। টেক্সট বা ছবিসহ কোনো লিংক পাঠিয়ে অ্যানালাইটিকসের মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠানের তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে দুর্বৃত্তরা। এতে খোয়াতে পারেন প্রতিষ্ঠানের প্রচুর অর্থ।
বাহরাইনের রাজধানী মানামায় গতকাল মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত এক অর্থনৈতিক কর্মশালা, যেখানে আরব ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। দুই দিনের এই কর্মশালায় গাজাসহ ফিলিস্তিন অধিকৃত অঞ্চলগুলোর জন্য নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা উপস্থাপন করার কথা। যদিও আমাদের এটা দেখে অবাক হওয়া উচিত হবে না যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন ধনী শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি কোনো একটি সমস্যা সমাধানের জন্য অর্থ ঢালতে চাইছেন। কিন্তু এটা দেখা খুব হতাশাজনক যে অনেকেই সত্যিই বিশ্বাস করেন যে সাধারণ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের কয়েক দশকের সমস্যার সমাধান করবে। জটিল রাজনৈতিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা ছাড়া কোনো ধরনের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণের কোনো উপকারে আসবে না।এটা সবার কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত যে একটি দখলকৃত অর্থনীতি কখনোই ‘সঠিক পথে যেতে পারে না’ এমনকি এই খাতে যদি শত শত কোটি টাকাও ঢালা হয়। ফিলিস্তিন একসময় অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ অঞ্চল ছিল। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং এরপর তাদের একের পর এক ফিলিস্তিনের ভূমি দখলের ফলে সেখানকার অর্থনৈতিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। অসলো চুক্তির অংশ হিসেবে ১৯৯০–এর দশকের গোড়ার দিকে স্বাক্ষরিত বেশ কয়েকটি শান্তিচুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনের অর্থনীতি সম্পূর্ণ ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে আসে।১৯৯৪ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস প্রটোকল ফিলিস্তিনের অর্থনীতির বিশেষভাবে ক্ষতি করেছে। এই প্রটোকল ইসরায়েলের পণ্যগুলোকে সরাসরি ফিলিস্তিনের বাজারে প্রবেশাধিকার দেয়, কিন্তু ইসরায়েলের বাজারে ফিলিস্তিনি পণ্যের প্রবেশাধিকার বাধা দেয় না। এই প্রটোকল ইসরায়েলকে কর সংগ্রহের দায়িত্ব দেয় এবং ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি মুদ্রা শেকেল ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এর ফলে নতুন করে গঠিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আর্থিক নিয়ন্ত্রণ বা কোনো অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করার আর সুযোগই রইল না। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেল ইসরায়েলের হাতে।গাজার ৩৫ শতাংশ কৃষিজমি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্ধারিত তথাকথিত ‘বাফার জোনে’ পড়েছে। এসব জমিতে চাষাবাদ করার সুযোগ খুবই কম। গাজার অন্যান্য কৃষিভূমিতে নির্দিষ্ট সময়ের বিরতিতে ইসরায়েলি বিমান থেকে আগাছানাশক ছিটানো হয়। যার ফলে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ফিলিস্তিনের ১৩ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছিল।পশ্চিম তীরের এরিয়া সি এলাকার জমি উর্বর, প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এবং সেগুলো ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। এই এলাকার পরিধি গোটা পশ্চিম তীরের ৬১ শতাংশ। এর মধ্যে রয়েছে জর্ডান উপত্যকার ৯৫ শতাংশ এলাকা। ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা এখানে ব্যাপক চাষাবাদ করে থাকে।ফিলিস্তিনের বেশির ভাগ অবকাঠামোর নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে এবং তারা চাইলে এসব অবকাঠামোয় ফিলিস্তিনিদের প্রবেশাধিকার সীমিত করতে পারে। কয়েক বছর ধরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের মোবাইল সেবার ওপর নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে আসছে। তারা সেখানে থ্রি–জি প্রযুক্তি চালুর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে থ্রি–জি প্রযুক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ২০১৩ থেকে ২০১৫ সময়ে ফিলিস্তিনের মোবাইল অপারেটরদের ৪৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার থেকে এবং দেড় শ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছিল।ইসরায়েল দৈনন্দিন ভিত্তিতে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন সড়ক ও পাসে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অধিকৃত ভূমিতে অসংখ্য ইসরায়েলি চেকপয়েন্টের কারণে ফিলিস্তিনের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এসব চেকপয়েন্টের কারণে ২০০৭ সালে ফিলিস্তিনের জিডিপি ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। আসলে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের কৃষি ও উৎপাদন শিল্পকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। আর এ কারণে এখানকার মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই বেকার। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিয়মিত বোমা চালিয়ে এই ভূখণ্ডের মৌলিক অবকাঠামোগুলোকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এভাবে যদি বোমা হামলা চলতে থাকে, তাহলে ২০২০ সালের মধ্যে গোটা ফিলিস্তিন বসবাসের অযোগ্য অঞ্চলে পরিণত হবে।অর্থনৈতিক ও সামরিক অবরোধের যৌথ প্রভাবে ফিলিস্তিনের অর্থনীতির এই নাজুক অবস্থা। ফিলিস্তিনিদের কাছে এটা পরিষ্কার যে এই সাধারণ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তাদের দমনের আরেকটি পদক্ষেপ। আসলে ইসরায়েলি দখলদারির অবসান ছাড়া ফিলিস্তিনিদের সমস্যার কোনো দিন সমাধান হবে না। এটা সব ফিলিস্তিনি বুঝে গেছে। তাই মার্কিন মধ্যস্থতায় বাহরাইনের বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। বর্ণবাদ উত্তর–দক্ষিণ আফ্রিকায়, অর্থনীতি থেকে রাজনীতিকে বিচ্ছিন্ন করার কারণে স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে অর্জন করা যায়নি। ফিলিস্তিনিদের ক্ষেত্রেও এটা সত্যি। আগে তাদের রাজনৈতিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের রাজনৈতিক অধিকার যতক্ষণ অস্বীকার করা হচ্ছে, ততক্ষণ তাদের ‘অর্থনৈতিক শান্তি’ আসবে না।আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিতইয়ারা হাওয়ারি: দ্য প্যালেস্টাইন পলিসি নেটওয়ার্ক আল–শাবাকার ফেলো
‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজা পুণ্যি দেশ’ অথবা ‘যদি থাকে বন্ধুরে মন, গাঙ সাঁতরাইতে কতক্ষণ’—এসব কথা আগে শোনা যেত দাদি-নানির কাছে। পাঠ্যবইয়ের চেয়ে লোকমুখেই বেশি, বিশেষ করে গ্রামের মানুষের মুখে। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের বহু আগের কথা; কবে রোদ হবে, কবে বৃষ্টি হবে, কখন ফসল বুনলে গোলা ভরবে বা কখন অনাহারে কাটবে দিন, তা গ্রামে প্রৌঢ় মানুষজন বলে দিতেন। কারণ তাঁরা জানতেন খনার বচন।সিংহলের রাজকন্যা খনা, যার আরেক নাম লীলাবতী। তিনি জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারী। খনার সেই উপকথাকে নাট্যরূপ দিয়ে নাট্যদল বটতলা প্রথম মঞ্চে আনে ২০১০ সালের ৯ মার্চ। বহুদিন ধরে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে এ নাট্যদল মঞ্চস্থ করে আসছে নাটক ‘খনা’। ইতিমধ্যে কাহিনি ও নাট্য আঙ্গিকের জন্য বেশ দর্শকপ্রিয়তাও অর্জন করেছে নাটকটি। হয়েছে ৬৯টি প্রদর্শনী। আজ বাংলাদেশ শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটারে নাটকটির ৭০তম প্রদর্শনী হবে। নাটকটি লিখেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। বটতলার তৃতীয় প্রযোজনা এটি।আগেই বলা হয়েছে ‘খনা’ নাটকটি বিদুষী ‘খনা’ যার অন্য নাম লীলাবতী, তাঁকে কেন্দ্র করে। তাঁর গল্পটা অনেক পুরোনো, কিংবদন্তির ঘেরাটোপে বন্দী। তবু যেটুকুর তল খুঁজে পাওয়া যায়, তাতে বোধ হয় যে তিনি এক বিদুষী জ্যোতিষী, স্বামী মিহিরও একই বৃত্তিধারী। শ্বশুর যশস্বী জ্যোতিষী বরাহ মিহির। পুত্রজায়ার যশ, খ্যাতি ও বিদ্যার প্রভাব দর্শনে বরাহের হীনমন্যতা ও ঈর্ষা। শ্বশুরের নির্দেশে লীলাবতীর জিহ্বা কর্তন ও তাঁর ‘খনা’ হয়ে ওঠার গল্প পেরিয়েছে প্রজন্মের সীমানা। খনার বচনের মাঝে টিকে থাকা শত বছর আগের জল, মাটি, ফসল আর মানুষের গন্ধ মাখা জ্ঞান আর সত্যটুকু কি সত্যি লীলাবতীর? নাকি এ সত্য-তথ্য সবই এ ভূ-খণ্ডের বৃষ্টি, পলি আর জল হাওয়ার সঙ্গে মিশে থাকা যুগান্তরের সামষ্টিক জ্ঞানের সংকলন? লীলাবতী শুধুই কি একজন নারী বলে তাঁর পরিণতি নির্মম? খনার সত্য শুধু থেকে যায় কৃষকের মুখে। তবু প্রশ্ন থাকে, খনার সত্যই কি একক সত্য? নাকি আজকে নির্ভুল যা, কাল তা হতে পারে অসত্য? শুধু সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর যে মৃত্যু নেশা তাঁর সে নেশা কি একরোখা জেদ? খনা নিজেই নিজেকে করেন সম্মুখীন প্রশ্নের। নাটকে এসব প্রশ্নই উঠেছে বারবার।খনায় নাটকে অভিনয় করছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা, ইমরান খান মুন্না, কাজী রোকসানা রুমা, ইভান রিয়াজ, তৌফিক হাসান, শেউতি শা’গুফতা, মিজানুর রহমান, সুমিত তেওয়ারি রানা, ম. সাঈদ, পঙ্কজ মজুমদার, হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, হ‌ুমায়ূন আজম রেওয়াজ, নাফিউল ইসলাম, হাফিজা আক্তার ঝুমা।
১২ বছর ধরে একই কাজ করে যাচ্ছেন মুকেশ কুমার। ছোট্ট দোকানে সকাল-সন্ধ্যা কচুরি, শিঙ্গাড়া, সমুচা ভাজেন আর বেচেন মুকেশ। সেই মুকেশের দোকানে হানা দিয়েছে ভারতের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা। এরপর তো তাঁদের অবাক হওয়ার পালা। কারণ, প্রতিদিন কচুরি বেচেই মুকেশ বছরে ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি রুপি আয় করেন! কচুরি বেচেই যে কোটিপতি বনে গেছেন মুকেশ, তা বুঝতেই পারেননি এলাকাবাসীও।ইন্ডিয়া টুডে ও এনডিটিভির খবরে জানানো হয়, উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে বাড়ি মুকেশ কুমারের। সেখানেই ‘সীমা টকিজ’ সিনেমা হলের পাশে মুকেশের কচুরির সেই দোকান। সকাল সকাল কর্মচারীদের সঙ্গে কাজে নেমে পড়েন মুকেশ নিজেও। ময়দা মাখা, তরকারির আলু কাটা, কড়াইয়ে তেল ঢালা—সবই করেন নিজে হাতে। এরপর গরম তেলে কচুরি-সমুচা ভেজে তুলে দেন ক্রেতাদের পাতে। সস্তায় ভালো কচুরির জন্য মুকেশের দোকানের সুনাম আছে। সেই ‘মুকেশ কচুরি’তে হঠাৎ হাজির রাজ্যর আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। আয়কর দপ্তরের বিশেষ অনুসন্ধান শাখার কর্মকর্তারা আলিগড়ের ব্যবসায়ীদের আয়কর এবং পণ্য ও সেবা করের (জিএসটি) ব্যাপারে খোঁজখবর চালাচ্ছিলেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন মুকেশের পুরির দোকানের কথা। তাঁরা জানতে পারেন, কোনো আয়কর দেন না মুকেশ। এমনকি নেই জিএসটি রেজিস্ট্রেশনও। এরপর বেশ কয়েক দিন মুকেশের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে সারা দিনের বিক্রিবাট্টার হিসাব নেন তাঁরা। কয়েক দিনের আয় দেখে আয়কর কর্মকর্তারা সারা বছরের বিক্রিবাট্টার একটা সম্ভাব্য হিসেব দাঁড় করান। এতে দেখা যায়, কচুরি বিক্রি করেই বছরে ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি রুপি আয় করেন মুকেশ।এরপরই নড়েচড়ে বসেন আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। তড়িঘড়ি নোটিশ পাঠানো হয় মুকেশের কাছে। তবে আয়কর কর্মকর্তাদের কাছে নিজের সাফাই দিয়েছেন মুকেশ। আয়কর না দেওয়া প্রসঙ্গে মুকেশ বলেন, ‘কচুরি-শিঙাড়া বেচেই আমার দিন চলে। এসব নিয়মের কথা কেউ কখনো বলেনি আমায়। আমি ১২ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছি। সহজ-সরল মানুষ আমি। অত জটিল ব্যাপার বুঝি না।’একজন আয়কর কর্মকর্তা বলেন, মুকেশ তাঁর আয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, মুকেশ সরকারকে এক বছরের আয়কর দিয়েছেন।মুকেশ জিএসটি নিবন্ধন করেছেন। আর আয়ের জন্য গত এক বছরের করও দিয়েছেন।বছরে কোনো ব্যবসায়ী বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর আয় ৪০ লাখ রুপির বেশি হলে সরকারকে জিএসটি দিতে হবে। আর খাদ্যপণ্যের ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
আহমেদ ইলিয়াসকে অল্পসংখ্যক বাংলাদেশিই জানেন। যদিও তাঁর পরিচিতি রয়েছে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে, কিন্তু দেশে স্বীকৃতি পাননি তিনি। উর্দুতে কবিতা লেখেন তিনি, উর্দুই তাঁর মাতৃভাষা। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে যে ভাষা এখানে মৃতপ্রায়।বাংলাদেশে উর্দুকে পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিয়ে চিন্তা করার রেওয়াজ। অথচ ভারতেও বিপুল মানুষের ভাষা এটা। সেখানে ২২টি সরকারি ভাষার একটি উর্দু। সাত রাজ্যে এটা ‘অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ’।উর্দু কবি হিসেবে আহমেদ ইলিয়াসের খ্যাতি রয়েছে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের কাব্যজগতেই। কলকাতাতে জন্ম তাঁর। দেশভাগ এখানে নিয়ে এসেছিল। বাংলাদেশ ও কবিতা—এই দুটোই তাঁর প্রেম। দুটোই আঁকড়ে ধরে আছেন। কিন্তু জীবনসায়াহ্নে এ রকম লিখিয়েদের দেখতে হচ্ছে মাতৃভাষার বিপন্ন দশা। যদিও এখনো উর্দু বলতে পারে অনেকে, কিন্তু পড়তে পারা মানুষ অতি নগণ্য। এর প্রাতিষ্ঠানিক চর্চার সুযোগ মরে গেছে।একসময় ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের লায়েল উন নাহার-এর ঢাকা প্রতিনিধি ছিলেন আহমেদ ইলিয়াস। সাপ্তাহিকটির সম্পাদনা পরিষদেও যুক্ত ছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতা বিপুল। বাংলাদেশে উর্দুভাষীদের মুরব্বি তিনি। সম্প্রতি এক দুপুরে খুলে ধরেছিলেন আশা ও আশাভঙ্গের বিপুল ভান্ডার, যেখানে রাষ্ট্রনৈতিক টানাপোড়েনে তাঁর জনগোষ্ঠীর ভাষা-সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলার শঙ্কাই মুখ্য হয়ে উঠেছিল। অথচ এদেরই প্রগতিশীল অংশ একদা ঝুঁকি নিয়ে স্লোগান দিয়েছিল: ‘তেরে নাজাত, মেরে নাজাত—ছে নুকাত ছে নুকাত’ (তোমার মুক্তি, আমার মুক্তি—ছয় দফা, ছয় দফা)।যে ‘নাগরিকদের’ স্থান এখনো ক্যাম্পউদ্বাস্তুদের জন্য তৈরি ক্যাম্পে আছে বাংলাদেশের প্রায় চার লাখ উর্দুভাষী। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তারা এ দেশেরই নাগরিক। ক্যাম্পের বাইরেও আছে আরও তিন লাখ উর্দুভাষী।প্রচারমাধ্যমে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যন্ত্রণাদগ্ধ উদ্বাস্তু জীবন নিয়ে প্রায়ই সংবাদ দেখা যায়। কিন্তু খোদ দেশের রাজধানীতে এমনও ‘ক্যাম্প’ রয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০ হাজার উদ্বাস্তু ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। ১ লাখ ৩৫ হাজার বর্গফুটের মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পে প্রতি বর্গফুটে তিনজনের বেশি মানুষের বাস!একজন কবিকে মানবিক বিষণ্নতা বেশি স্পর্শ করবে, এটা স্বাভাবিক। আহমেদ ইলিয়াস তাঁর সমাজের ক্যাম্প বাসিন্দাদের সহায়তা করছেন গত চার দশক। তাঁর দাবি, মোহাম্মদপুরের ‘জেনেভা ক্যাম্প’টি বিশ্বে এইরূপ সর্ববৃহৎ আশ্রয়স্থল। এত অল্প পরিসরে এত অধিক মানুষ বিশ্বের কোনো শরণার্থী শিবিরে নেই।যাঁরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং ঢাকায় উর্দুভাষীদের ক্যাম্প দেখেছেন, তাঁরা স্বীকার করবেন, শেষোক্ত ক্যাম্পগুলোতে বসবাসও চরম দুঃসহ। বাংলাদেশে এরূপ ১১৬টি ক্যাম্প আছে। ঢাকাতে রয়েছে ৪৫টি। চট্টগ্রামে আছে ৬টি ক্যাম্পে প্রায় ২৫ হাজার। ক্যাম্পের বয়স যত বাড়ছে, জনসংখ্যা তত উপচে পড়ছে; যদিও আয়তন বাড়ছে না। উচ্চতর প্রশাসনিক নির্দেশ থাকলেও কেবল বিলম্বিতই হচ্ছে এসব ক্যাম্পের দুর্গত জীবনের অবসান। পুনর্বাসন পেছালেও ঢাকার মিরপুরসহ কয়েকটি স্থানে প্রত্যহ তাদের ঘুমাতে যেতে হয় উচ্ছেদ–আতঙ্ক নিয়ে।দেশজুড়ে অনেক ক্যাম্পেই রয়েছে পাসপোর্ট না পাওয়ার সমস্যা। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরও এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক অনাপত্তি সত্ত্বেও ক্যাম্পবাসীর অনেকে পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত হন। যার কোনো সদুত্তর মেলে না কোনো দপ্তর থেকে।ক্যাম্পবাসীদের সমস্যায় বাইরের উর্দুভাষীদের সংহতি প্রত্যাশামতো নয়। তারা অর্থকড়িতে তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী কয়েকজনের উদ্যোগে ১৯৮১ সালে ‘আল ফালাহ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে ওঠে। উদ্বাস্তু উর্দুভাষীদের মানবিক সহায়তা দেওয়াই ছিল উদ্যোগের লক্ষ্য। এই সংস্থার কার্যালয়ে বসেই কবি আহমেদ ইলিয়াস জানাচ্ছিলেন, কীভাবে ৪০ বছরে ক্যাম্পগুলোর জনমনস্তত্ত্ব পাল্টে গেছে। বর্তমানে উর্দুভাষীদের সব ক্যাম্পে বাসিন্দাদের ৮০ ভাগের জন্ম ১৯৭১-এর পর। তারা নিজেদের বাংলাদেশিই ভাবে। এক দশক হলো আদালতের অনুমোদনেই তারা এখানকার পরিচয়পত্র নিয়েছে, ভোট দিচ্ছে। পূর্বপুরুষদের বিষণ্নতার মানসিক ক্ষত কাটিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করতে আগ্রহী সবাই। বাংলাদেশেই পুনর্বাসিত হতে চায় তারা। সরকারের মনোভাবও ইতিবাচক। যদিও উর্দুভাষীদের নিয়ে মূল সমাজ স্বচ্ছন্দ নয়।কিন্তু আহমেদ ইলিয়াসের বিষণ্নতার ভিন্ন কারণ আছে। উর্দুতে লিখিত তাঁর অসামান্য কবিতাগুলো হয়তো অনাগত সেই ভবিষ্যতের এখানে অপঠিতই থাকবে। বাংলাদেশে উর্দু ছোটগল্পের ঐতিহ্য মরে গেছে বহু আগেই। যে দেশ ‘মাতৃভাষা’র বিকাশে অসামান্য এক বৈশ্বিক আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে, সেই দেশেই ৭-৮ লাখ মানুষের ‘অপর’ একটি ভাষার লিখন-পঠনের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য প্রায় বিলীন হয়ে গেল।শহরাঞ্চলে পুনর্বাসিত হতে চায় তারা উর্দুভাষী ক্যাম্পের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন ২০১৪ সালের নভেম্বরে। অনেক বছর হলেও এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি কম। পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় জমি পাওয়াও সহজ নয়। ক্যাম্পগুলোতে ঘুরে মনে হলো, বাসিন্দারা পুনর্বাসন চাইছে শহরাঞ্চলেই। রুটি-রুজির ইতিমধ্যে সৃষ্ট উপায়গুলো রক্ষা করতে চায় তারা। খাবারের দোকান, কাপড়ে জরি বসানো, চুল কাটা, অটোমোবাইলের কাজ—এসবই তাদের আয়–রোজগারের উৎস, যা হারাতে চায় না তারা। এর মধ্যেই ঢাকার অনেক ক্যাম্পে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের নোটিশ এসেছে। উদ্বাস্তু ক্যাম্প বলে এত দিন ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকেই দেওয়া হতো এটা। বিদ্যুৎ বিভাগ এখন বলছে, যাঁদের ভোটার তালিকায় নাম আছে, তাঁদের খরচ সরকার বহন করবে না। এ নিয়ে ক্যাম্পে ক্যাম্পে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।শিক্ষার ক্ষেত্রে পুরোনো বঞ্চনা আর নেই। ক্যাম্পগুলোর আশপাশে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে নির্বিঘ্নে ভর্তি হতে পারছে শিশু-কিশোরেরা। যদিও দারিদ্র্যের কারণে উচ্চশিক্ষায় প্রায় অনুপস্থিত উর্দুভাষী তরুণ-তরুণীরা। চার দশক আগে এই জনগোষ্ঠীর শিক্ষা ও অর্থনৈতিক জীবনে যে ব্যাপক বিষণ্নতা তৈরি হয়, তার রেশ এখনো প্রবল। ৩৫-৪০ হাজার মানুষের জেনেভা ক্যাম্প থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া পাওয়া গেল মাত্র একজন।শিক্ষা ও আর্থিক নাজুকতাই মূলত এই জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষাকে কেবল মুখের ভাষায় পরিণত করেছে। চট্টগ্রামে হামজারবাগ, ফিরোজ শাহ প্রভৃতি কলোনির তরুণেরাও বলছিলেন, সামাজিক বিরাগ এড়াতে অনিচ্ছায় হলেও তাঁরা উর্দুকে বাদ দিয়েছেন। অথচ এককালে পাসবান, ওয়াতানসহ পাঠকপ্রিয় অনেক উর্দু সংবাদপত্র ছিল এই অঞ্চলে। ঢাকার নবাবপুর রোডের হোটেলগুলোতে উর্দু কবিদের আড্ডা বসত, যাঁরা উপমহাদেশজুড়ে আমন্ত্রিত হতেন মুশায়েরায়। কিন্তু পরবর্তী দৃশ্যটি বোঝা যায় আহমেদ ইলিয়াসের কাব্যগ্রন্থ হরফে দরিদা (ছিন্নভিন্ন অক্ষর), আয়নে রেয (চূর্ণ-বিচূর্ণ আয়না) ইত্যাদি নাম থেকে। একটি কবিতায় তিনি লিখেছেন:...যখন পথ চলা শুরু করিআমার সাথে ছিল শুধু পথ চলাছেড়ে এলাম ঘর যখনআমার নাম ছিল, ছিল পরিচয়আমার শব্দ ছিল, ছিল ভাষাআমার অস্তিত্বের ছিল অংশ এরা, এরা ছিল সব;এখন কোথায় এসে থেমেছি আমিআশপাশে কোথাও কিছু নেইজিভে নেই কোনো ভাষাঠোঁটের আড়ালে নেই কোনো শব্দএ কীসের খোঁজ আমার?[তর্জমা: জাভেদ হুসেন]৮৫ বছর বয়সী কবিকণ্ঠের এই আর্তিকে একটি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা রক্ষার আবেদন আকারে দেখা যায়। বাংলাদেশের জন্য এটা গৌরবের হবে যদি উর্দুভাষীদের পুনর্বাসনে যে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তাতে মাতৃভাষার লিখন-পঠনে মদদ দানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এভাবে আমরা আরও জোরের সঙ্গে বলতে পারব, কোনো ভাষার বিরুদ্ধে নয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ঔপনিবেশিক মনস্তত্ত্বের বিরুদ্ধে। উর্দুভাষী মানুষগুলোকে সমাজের মূলধারায় নিয়ে এসে বাংলাদেশ একাত্তরের বিজয়কে নৈতিকভাবে আরও বড় উচ্চতায় নিতে পারে।আলতাফ পারভেজ গবেষক
দক্ষিণ এশিয়ায় তো বটেই, গোটা বিশ্বেই বাংলাদেশের কর-জিডিপি হার নিম্নতম পর্যায়ের। বাংলাদেশের এই হার প্রতিবেশী দেশ নেপালের অর্ধেকের চেয়েও কম। এমনকি যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের অবস্থাও এদিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের এ পরিস্থিতিকে লজ্জাজনক ও উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন। জাতীয় সংসদে ১৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট উপস্থাপনের সময় মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিও প্রকাশ করেছেন। নীতি বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) গত এপ্রিলে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের প্রতিবেদনকে বিশ্লেষণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। পাঁচ বছরের কর-জিডিপি অনুপাতের চিত্র তুলে ধরে নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত ছিল গড়ে ১০ দশমিক ২ শতাংশ। অথচ বিশ্বের উদীয়মান দেশ ও এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ হার বাংলাদেশের দ্বিগুণেরও বেশি অর্থাৎ ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এমনকি সাব-সাহারা আফ্রিকার দেশগুলোর কর-জিডিপি হারও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ।কর-জিডিপি হারে নিকটতম প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও বাংলাদেশের তুলনা করা হয়েছে। আইএমএফের প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের গড় কর-জিডিপি অনুপাত নেপালের ২৩ দশমিক ৩, ভারতের ২০ দশমিক ৩, পাকিস্তানের ১৫ দশমিক ২ এবং শ্রীলঙ্কার ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের কর-জিডিপি হার লজ্জাজনক ও বিব্রতকর। এই নিম্নতম হারের কারণেই জাতিসংঘঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন করা সহজ হবে না, প্রয়োজন অনুযায়ী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। তিনি মনে করেন, কর-জিডিপি অনুপাত কম হওয়ার একটি বড় কারণ হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ধনীর কাছ থেকে আয়কর না নেওয়া।ধনীদের কাছ থেকে কর না-নেওয়া ইচ্ছেকৃত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ইচ্ছে করেই আদায় করা হচ্ছে না। সরকার ইতস্তত বোধ করে।’পিছিয়ে বাংলাদেশসংসদে উপস্থাপিত নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এক দশক ধরে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সত্ত্বেও রাজস্ব আহরণে আশানুরূপ সাফল্য অর্জনে বাংলাদেশ পিছিয়ে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় আঞ্চলিক এবং বহির্বিশ্বের সমতুল্য দেশগুলো যে হারে রাজস্ব আহরণ করতে পারছে, বাংলাদেশ তা পারছে না।রাজস্ব আদায়ের গতিধারা বিষয়ে বলা হয়, পাঁচ বছরে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য উত্থান-পতন হয় এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরের পর থেকে প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বগামী প্রবণতা কমে যায়। ওই অর্থবছরের পর থেকে রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা এবং প্রকৃত রাজস্ব আহরণের মধ্যে পার্থক্য বড় করে চোখে পড়তে শুরু করে। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।কর-জিডিপির হার কম থাকার পেছনে অনিয়ম-দুর্নীতিকে বড় করে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি কয়েক মাস আগে নিবিড় গবেষণা করে মন্ত্রিপরিষদকে বিভাগকে এক চিঠিতে জানিয়েছে, অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করতে পারলে বছরে অন্তত ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব সংগ্রহ করা সম্ভব, যা জিডিপির ৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেবে। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও বলেছেন, কর রাজস্ব আহরণ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব তখনই, যখন কর রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সব ধরনের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করা যাবে।অর্থমন্ত্রী ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার যে বাজেট উপস্থাপন করেছেন, তাতে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং শুল্ক—এই তিন শ্রেণিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একার দায়িত্ব হচ্ছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা। এর বাইরে বিভিন্ন ফি, টোল, ইজারা, সুদ, জরিমানা ইত্যাদি থেকে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা এবং জমির খাজনা, স্ট্যাম্প বিক্রি ইত্যাদি থেকে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে। আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে ২০১৫ সালেই। আর জাতিসংঘের হিসাবে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের সিঁড়িতে পা দেবে ২০২৪ সালে। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার ঠিক পাঁচ বছর আগের এই সময়ে জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আহরণের চিত্রে হতাশ সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হানও।সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর-জিডিপি পরিস্থিতিকে শুধু লজ্জাজনক না, আমি উদ্বেগজনক বলব। কারণ, উন্নয়নশীল দেশের যে কাতারে আমরা উঠতে যাচ্ছি এবং এ জন্য সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো ইত্যাদি খাতে যে পরিমাণ বাড়তি বরাদ্দ দরকার, সংকটের কারণেই সেই পরিমাণ অর্থ সরকার বরাদ্দ দিতে পারছে না।’সেলিম রায়হান আরও বলেন, আয়কর দেওয়ার যোগ্য অনেক লোক থাকলেও সরকার তাঁদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না বা পৌঁছাতে চাচ্ছে না। এর এক নম্বর কারণ, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব।
রংপুর বিভাগে দুই দিনের স্বর্ণমেলায় ২৮ হাজার ৫০৩ ভরি স্বর্ণ কর দিয়ে বৈধ বা সাদা করেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। এসব স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ১৪২ কোটি টাকা। বৈধ করতে ব্যবসায়ীরা মোট কর দিয়েছেন ২ কোটি ৮৫ লাখ ৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৩৯ হাজার ৪৯৭ ভরি রুপা এবং ৩৭৪ ক্যারেট হীরা বৈধ করেছেন ব্যবসায়ীরা।রংপুর চেম্বার অব কমার্স মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার ছিল এই স্বর্ণমেলার শেষ দিন। স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কাছে যে স্বর্ণ মজুত আছে, তা ঘোষণার জন্য এই মেলার আয়োজন করে আয়কর বিভাগ। মেলায় নিবন্ধিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের অঘোষিত ও মজুত স্বর্ণ, স্বর্ণালংকার, হীরা ও রুপার ঘোষণার বিপরীতে কর পরিশোধ করে তা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এ জন্য ভরিপ্রতি স্বর্ণে ১ হাজার টাকা, রৌপ্যের জন্য ৫০ টাকা এবং প্রতি ক্যারেট হীরার জন্য ৬ হাজার টাকা কর পরিশোধ করতে হচ্ছে।রংপুর কর অঞ্চল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রংপুর বিভাগের আট জেলায় (দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট) সব মিলিয়ে ১ হাজার ১১৪ জন ব্যবসায়ী ৩ কোটি ২৭ লাখ ৫১ হাজার ৮৫১ টাকা কর দিয়ে স্বর্ণ, রৌপ্য ও হীরা সাদা করেছেন।জুয়েলার্স সমিতির রংপুরের সভাপতি এনামুল হক সোহেল বলেন, সমিতির সঙ্গে যুক্ত সদস্যরাই এই কর দিয়েছেন। যাঁরা এখনো সমিতির আওতায় আসেননি, তাঁদেরও সমিতির আওতায় এসে কর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।রংপুর কর অঞ্চলের কর কমিশনার মো. আবদুল লতিফ বলেন, জুয়েলারি সমিতির আওতাভুক্ত সদস্যের বাইরে আরও অনেক ব্যবসায়ী আছেন। তাঁরা এই করের আওতায় আসেননি। তবে খুব শিগগির এসব ব্যবসায়ী জুয়েলারি সমিতির সদস্য হয়ে যাবেন। এতে করে আরও এক কোটি টাকা কর আদায় হবে বলে আশা করা হয়।মো. আবদুল লতিফ জানান, মেলা শেষ হলেও ৩০ জুন পর্যন্ত স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ রয়েছে।
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন এক যুবকের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। হামলাকারী যুবকের নাম মাহির হোসেন (৩৬)। মাহির মাদকাসক্ত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের যদুরভিটা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ওই যুবক গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।নিহত জাকির হোসেন (৪৫) উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের সোহাগদল গ্রামের মৃত মনসুর আলী মিয়ার ছেলে। তিনি সোহাগদল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন এবং পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী ছিলেন।হামলাকারী যুবক মাহির সোহাগদল ইউনিয়নের বরছাকাঠি গ্রামের মৃত আবদুল গণি মিয়ার ছেলে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহির হোসেন মাদকাসক্ত ও মানসিক বিকারগ্রস্ত। গতকাল সন্ধ্যায় মাহির হোসেন একই গ্রামের মো. আসলাম হোসেনকে (৩৫) ছুরিকাঘাত ও মশিউর রহমানকে (৫০) মারধর করে পালিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী যদুরভিটা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে আত্মগোপন করেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে জাকির হোসেন তাঁর খালাতো ভাই মো. সেলিমের নির্মাণাধীন ওই ভবনের কাজ দেখার জন্য যান। এ সময় জাকির হোসেন নির্মাণশ্রমিকদের নিয়ে ভবনের ছাদে গেলে সেখানে আত্মগোপন করে থাকা মাহির হোসেনকে দেখতে পান। মাহিরকে তিনি জিজ্ঞেস করেন,‘এখানে কেন এসেছিস?’ এ সময় মাহির তাঁর বুকের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করেন।ছুরি মেরেই মাহির দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় লোকজন তাঁকে আটকের জন্য তাড়া করলে তিনি নিজের গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।আহত জাকির হোসেনকে লোকজন নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো.আসাদুজ্জামান বলেন, ছুরিকাঘাতে জাকির হোসেনের ফুসফুস জখম হয়েছে। বুকের ভেতরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশিদ বলেন, মাহির একজন মাদকসেবী। তাঁকে বিভিন্ন সময় বাড়িতে আটকে রাখা হতো। তাঁর ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সোহাগদল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন।নেছারাবাদ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রিয়াজ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।পুলিশ জানায়, আহত মাহির পুলিশ হেফাজতে এখন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর কণ্ঠনালি কেটে গেছে।নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, আজ বুধবার সকালে জাকির হোসেনের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মাটির হাঁড়িকুড়িতে শিল্প ফুটিয়ে তোলা কুমারেরা আজ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছেন। পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের পালপাড়ায় এমন অনেক কুমারের বাস ছিল। মাটির তৈজসপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেকে এখন পেশা বদলেছেন। এরপরও এই শিল্পে টিকে আছেন কেউ কেউ। পাবনার সুজানগরের পালপাড়া তাঁদের দেখা মেলে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের রাজস্বভুক্ত বিভিন্ন পদে ১৮৩ জন লোক নেবে। আগ্রহী ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারেন।যেসব পদে আবেদন ১. পদের নাম: সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটরপদসংখ্যা: ৪বেতন স্কেল: ১০,২০০/-২৪,৬৮০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক/ সমমান পাস। সাঁটলিপিতে বাংলা ও ইংরেজিতে ন্যূনতম গতি যথাক্রমে ৬০ ও ৮০ এবং কম্পিউটার টাইপিংয়ে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রতি মিনিটে শব্দের গতি ২৫ ও ৩০ শব্দ।২. পদের নাম: উচ্চমান সহকারীপদসংখ্যা: ৭বেতন স্কেল: ১০,২০০/-২৪,৬৮০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক/সমমানের ডিগ্রি।৩. পদের নাম: পোস্টাল অপারেটরপদসংখ্যা: ৯৫বেতন স্কেল: ৯,৭০০/-২৩,৪৯০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: দ্বিতীয় বিভাগ অথবা সমমানের জিপিএসহ উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পাস।৪. পদের নাম: মেইল অপারেটরপদসংখ্যা: ৬৮বেতন স্কেল: ৯,৭০০/-২৩,৪৯০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পাস।৫. পদের নাম: ড্রাফটসম্যানপদসংখ্যা: ১বেতন স্কেল: ৯,৭০০/-২৩,৪৯০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে ড্রাফটসম্যানশিপ সার্টিফিকেটধারী।৬. পদের নাম: ড্রাইভার (ভারী)পদসংখ্যা: ৩বেতন স্কেল: ৯,৭০০/-২৩,৪৯০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক/সমমান পাস। ভারী গাড়ি চালানোর বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ দুই বছরের অভিজ্ঞতা।৭. পদের নাম: অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকপদসংখ্যা: ৫বেতন স্কেল: ৯,৩০০/-২২,৪৯০/ টাকাশিক্ষাগত যোগ্যতা: উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পাস। কম্পিউটার টাইপিংয়ে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রতি মিনিটে শব্দের গতি ২০ শব্দ।আগ্রহী প্রার্থীকে (http://pmgcc.teletalk.com.bd/home.php) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।আবেদনের শেষ তারিখ: ১৫ জুলাই, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
প্রথম দল হিসেবে এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করেছে অস্ট্রেলিয়া। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যে দলটিকে নিয়ে খুব একটা উচ্চাশা ছিল না, বিশ্বকাপ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে তাদের ভোজবাজির মতো পালটে যাওয়ার পেছনে কারণ কী?বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ৩০ মে থেকে। এর আগের এক বছরের কথা চিন্তা করুন। অস্ট্রেলিয়ার অবস্থা কেমন ছিল?ইংল্যান্ডে গিয়ে তারা হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে। ফাইনাল জেতা হয়নি পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজে। পরে সেই পাকিস্তানের কাছেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছেন ফিঞ্চরা। ভারতের সঙ্গে কোনোরকমে ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও সিরিজ হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ফিঞ্চ-স্টার্কদের পক্ষে আদৌ এই বিশ্বকাপ জেতা সম্ভব কি না, প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। বিশ্বকাপের ফেবারিটদের তালিকায় অধিকাংশ মানুষই অস্ট্রেলিয়াকে রাখতে চাননি। সে জায়গায় আধিপত্য ছিল ভারত, ইংল্যান্ডের।কিন্তু বিশ্বকাপ ২০১৯ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সেই অস্ট্রেলিয়াই দেখিয়ে দিয়েছে, ফর্ম যতই খারাপ হোক না কেন, বিশ্বকাপ আসলেই তারা কোন এক জাদুমন্ত্রে যেন জেগে ওঠে। বিশ্বকাপের আগে অ্যারন ফিঞ্চ ছিলেন ফর্মহীন, সেই ফিঞ্চই বিশ্বকাপ বদলে যাওয়া ক্রিকেটার। আসরের অন্যতম সেরা অধিনায়ক তিনি। ফিঞ্চকে দেখেই যেন গোটা দল গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে। ৭ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে সবার আগে সেমিতে উঠে গেছে তারা। বাকি তিনটি স্থানের জন্য লড়ছে ভারত, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মতো দলগুলো।কিন্তু পুনরুজ্জীবিত অস্ট্রেলিয়ার পেছনে সবচেয়ে ভূমিকা কার? বোলিংয়ে মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও জেসন বেহরেনডর্ফরা দুর্দান্ত খেললেও ব্যাটসম্যানদের ভূমিকাই আজ অস্ট্রেলিয়াকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নারের ওপেনিং জুটি। ফিঞ্চের ব্যাপারে তো বলাই হলো, তর্কযোগ্যভাবে জীবনের সেরা ফর্মে আছেন ডানহাতি এই তারকা ব্যাটসম্যান। সঙ্গে পেয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারকে। বল টেম্পারিং কাণ্ডে এক বছর নিষিদ্ধ থাকার পর যে ওয়ার্নার আবারও অস্ট্রেলিয়ার মানুষদের চোখে নায়ক হওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এক ম্যাচে ফিঞ্চ সেঞ্চুরি করছেন, তো পরের ম্যাচেই পালটা সেঞ্চুরি করে জবাব দিচ্ছেন ওয়ার্নার। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় প্রথম দুই স্থানে আছেন এই দুই তারকা। ওয়ার্নারের রান ৫০০, ফিঞ্চের ৪৯৬!এই দুই ওপেনারের ব্যাটে চড়ে অস্ট্রেলিয়া প্রায় প্রতি ম্যাচেই শক্ত ভিত্তি পাচ্ছে। অন্যান্য দেশের ওপেনারদের তুলনায় অস্ট্রেলিয়ার ওপেনাররা যোজন যোজন এগিয়ে। পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই বোঝা যায় ব্যাপারটা। সাত ম্যাচ খেলে ফিঞ্চ-ওয়ার্নারের ওপেনিং জুটি অস্ট্রেলিয়াকে দিয়েছে ৬৪২ রান, প্রতি ম্যাচে গড়ে ১০৭ রান করে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারত আছে অনেক পেছনে। প্রথমে শিখর ধাওয়ান ও পরে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে রোহিত শর্মা পাঁচ ম্যাচে তুলতে পেরেছেন ২৮৩ রান। এর পরেই আছে হাশিম আমলা, কুইন্টন ডি ককের দক্ষিণ আফ্রিকা। সাত ম্যাচে তাদের ওপেনিং জুটির সংগ্রহ ২৮১ রান। দিমুথ করুনারত্নে ও কুশল পেরেরা মিলে শ্রীলঙ্কাকে ছয় ম্যাচে এনে দিয়েছেন ২২৪ রান।তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছয়ে। সৌম্য সরকার ও লিটন দাসকে নিয়ে তামিম সাত ম্যাচে তুলেছেন ২১২ রান। বাংলাদেশের চেয়ে এক রান বেশি তুলেছেন আফগানিস্তানের হজরতউল্লাহ জাজাই, নূর আলী জাদরান ও মোহাম্মদ শাহজাদ। বাংলাদেশের চেয়ে এক রান কম তুলেছেন ছয় ম্যাচ খেলা ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক। তালিকার সবচেয়ে নিচের দুটি স্থান দখল করেছে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছয় ম্যাচে ১৮৪ রান তুলেছেন কিউই তারকা মার্টিন গাপটিল ও কলিন মানরো। ওদিকে এভিন লুইস আর শাই হোপকে নিয়ে ক্রিস গেইলের সংগ্রহ ৫৬ রান।টুর্নামেন্টে ভালো করার জন্য যে একটা শক্ত ভিত্তির বিকল্প নেই, অস্ট্রেলিয়ার ওপেনারদের দেখে অন্তত এখন পর্যন্ত সেটাই মনে হচ্ছে!
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বরমচালে রেল দুর্ঘটনার তদন্তে কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। এ ছাড়া নিহত ব্যক্তিদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে এবং আহত ব্যক্তিদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।আজ বুধবার দুপুরে রেল দুর্ঘটনায় আহত লোকজনকে দেখতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রেলমন্ত্রী।রেলমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এই রেল বিভাগ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেলপথের উন্নয়নে হাত দিয়েছে। তবে ভালো সেবা দিতে রেল বিভাগের সময় লাগবে। তিনি বলেন, ঢাকা-সিলেট রেলপথ আখাউড়া পর্যন্ত ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত হচ্ছে। আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করতে ইতিমধ্যেই ১৬ হাজার ১৪৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি অনুমোদন করেছে। দ্রুত তা বাস্তবায়নের কাজ চলছে।রেল দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কারও গাফিলতি কিংবা কাজে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।পরে মন্ত্রী কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে যান। সেখান থেকে বরমচালে গিয়ে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন।রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁরা এখানে এসেছেন। প্রয়োজন হলে হতাহতদের আরও সহায়তা প্রদান করা হবে। সিলেট অঞ্চলে রেললাইনে বন্য প্রাণী হতাহতের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলের বনের ভেতর দিয়ে যেসব রেললাইন ও সড়ক গেছে, তাতে প্রায়ই দুর্ঘটনায় বন্য প্রাণী মারা যায়। এসব দুর্ঘটনা রোধে রেলপথ ও সড়কপথের পাশে বেষ্টনী তৈরি করা হবে। এই নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরির জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।হাসপাতালে দুই মন্ত্রীর পরিদর্শনকালে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, ওসমানী মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।গত রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস বরমচালের বড়ছড়া সেতু এলাকা পার হওয়ার সময় বগি লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের ১৭টি বগির মধ্যে ৫টি বগি ছিটকে বড়ছড়ায় গিয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে চারজন নিহত ও শতাধিক যাত্রী আহত হন। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ট্রেন দুর্ঘটনায় কোনো যাত্রীর প্রাণহানি হলে কিংবা কেউ আহত হলে, ওই যাত্রীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে আইনত বাধ্য রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রেলের এই ক্ষতিপূরণ দিয়ে মৃতের সৎকার কিংবা আহতদের চিকিৎসা করাই কঠিন। কারণ, ৭৬ বছর আগে করা আইনে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ মাত্র ১০ হাজার টাকা। গত বছর রেল কর্তৃপক্ষ এই ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনের ৮২-এ ধারায় যাত্রীবাহী ট্রেনের দুর্ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষের দায়দায়িত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। এটি সর্বশেষ ১৯৪৩ সালে সংশোধন করা হয়। এতে বলা হয়, রেল কর্তৃপক্ষের কারণে ট্রেন দুর্ঘটনায় কোনো যাত্রীর প্রাণহানি কিংবা আহত হলে অথবা যাত্রীর কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এমনকি যাত্রীর সঙ্গে থাকা ব্যক্তি এবং মালামালের জন্যও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আইনে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাইলে আহতদের আরও কম ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব। তবে রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষতিপূরণের টাকা ১০ হাজারই দেওয়া হয়।রেলওয়ে আইনে শুধু টিকিটধারী যাত্রীদেরই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনায় ট্রেনের যাত্রীর বাইরে (ট্রেনে কাটা পড়ে বা ট্রেনের সঙ্গে গাড়ির সংঘর্ষে) কেউ নিহত বা আহত হলে কোনো ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেই।রেলওয়ের তথ্য বলছে, ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৯ বছরে ৪০০ মানুষ ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। রেলের একজন কর্মকর্তা বলেন, রেল দুর্ঘটনার হার কম। হতাহতের পরিমাণও বেশি নয়। এবারের বাজেটে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ালে সমস্যা হবে না। এতে হতাহতের পরিবার কিছুটা হলেও উপকৃত হতো।বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ব্রিটিশ আমলে কর্মকর্তাদের বেতন হিসাব করা হতো শ টাকায়। তখনকার বিবেচনায় ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঠিকই আছে। এখন ১০ লাখ টাকা হলেও কম হবে। আইনটা যুগোপযোগী করা উচিত। গত এক দশকে যাত্রী ভাড়া দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। যাত্রীরা সেবা পাচ্ছে না। মারা যাওয়ার পর ক্ষতিপূরণ না পাওয়া তো তামাশার শামিল।গত রোববার রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হলে চারজন প্রাণ হারান। আহত হন শতাধিক যাত্রী। এর আগে ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধ কর্মসূচির সময় রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে রাখার কারণে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে চারজন নিহত হন। ওই সময় আরও বেশ কিছু নাশকতার ঘটনায় ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে কয়েক শ মানুষ আহত হন। ২০১০ সালে নরসিংদী রেলস্টেশনে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রেনের একজন চালকসহ ১২ জন প্রাণ হারান।ব্রিটিশ আমলের ক্ষতিপূরণ আইনে চলছে রেলআইনে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ ১০ হাজার টাকাভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে ক্ষতিপূরণ ৪ লাখ রুপিরেলের কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি অনেকেই জানেন না। আবার যাঁরা জানেন, ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কম বলে দাবি করেন না।রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেন লাইনচ্যুতির দুটি বড় ঘটনা ঘটে ১৯৮৯ সালে। ওই বছর গাজীপুরের পুবাইলের কাছে এবং চট্টগ্রামে কুমিরায় পৃথক ট্রেন দুর্ঘটনায় মোট ৮১ জন প্রাণ হারান। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ বিশেষ ক্ষমতাবলে নিহতদের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেন।রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত বছরের ২৮ মে রেলের তৎকালীন মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেন। এতে বলা হয়, বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে ক্ষতিপূরণের হার পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এতে উল্লেখ করা হয়, ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় কারও প্রাণহানি হলে বা স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়লে এককালীন চার লাখ রুপি (ভারতীয় মুদ্রা) দেওয়া হয়। আর দুর্ঘটনায় রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী মারা গেলে ২০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের বিধান রয়েছে।বাংলাদেশের জন্য প্রস্তাবে ক্ষতিপূরণ বাবদ (মৃত্যু বা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেলে) সাড়ে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়। আহত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অবস্থাভেদে সর্বনিম্ন ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব করা হয়। তবে এই প্রস্তাব নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি নেই।রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিপূরণের যে অর্থ, তা আসলেই নগণ্য। এটা পরিবর্তন হওয়া দরকার। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, কুলাউড়ার ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে রেলমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাড়তি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশ পাখপাখালির দেশ। এ দেশের বনবাদাড়ে প্রচুর পাখির বাস। শীতে প্রচুর পরিযায়ী পাখি আসে দেশের হাওর-বাঁওড়ে। বাংলাদেশের গ্রামগুলো একসময় পাখিদের কলকাকলিতে মুখর থাকলেও এখন বেশির ভাগ জায়গায় সে চিত্র পাল্টে গেছে। বন উজাড় হওয়া আর অবাধ শিকারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক পাখি। একসময় প্রচুর দেখা গেলেও এখন অনেক পাখি দেখা যায় না। অনেক পাখি দেখতে হয় বিশেষ বিশেষ অঞ্চলে গিয়ে, বিশেষভাবে। প্রকৃতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ পাখিদের রক্ষায় আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।তামজিদ আলম: রাজশাহী বার্ড ক্লাবের সদস্য
ভারত শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ ভারতকে এজবাস্টনে শক্ত পরীক্ষায় ফেলবে, এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ সুনীল যোশী।ভারত তাঁকে ঘরের শত্রু ভাবতেই পারে। বাংলাদেশ স্পিন বোলিং কোচ সুনীল যোশীর তাতে আপত্তি থাকার কথা নয়। তাঁর আপত্তি যদি কিছু থাকে, সেটি হচ্ছে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে নিরাশায় ডুবে থাকা। ভারত শক্তিশালী দল, কিন্তু বাংলাদেশ যে মানের ক্রিকেট এবারের বিশ্বকাপে খেলছে, তাতে ভারতকে হারানো অসম্ভব কিছু নয় বলেই বিশ্বাস তাঁর।যোশীর মতে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ একেবারেই নিজেদের ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে। যেটি ইতিমধ্যেই কার্যকর প্রমাণিত। ২ জুলাই বার্মিংহামের এজবাস্টনে সে ধরনের ক্রিকেটটা ঠিকমতো খেলতে পারলে ভারতকে চাপে ফেলা সম্ভব, ‘সাদা বলের ক্রিকেটে আমরা কতটা ভালো, তা ইতিমধ্যেই দেখিয়ে দিয়েছি। আমরা আয়ারল্যান্ডে জিতেছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিজেদের মাঠের পাশাপাশি তাদের মাঠে গিয়েও হারিয়েছি। গত তিন বছরে তিনবার আমরা ভারতকে হারানোর খুব কাছে চলে গিয়েছিলাম।’২০১৫ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সফরে এসে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল ভারত। এরপর অবশ্য তাদের বিপক্ষে জয়টা অধরাই থেকে গেছে। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল কিংবা গত বছর দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেঙ্গালুরুতে জিততে জিততে অবিশ্বাস্যভাবে হেরে যাওয়া কিংবা কলম্বোয় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও ফিরে আসার দুঃখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই বাঁচা-মরার।কিন্তু বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের সঙ্গে ভারতীয় বোলাররা যে ধরনের ফর্মে আছেন, বাংলাদেশের খুব কড়া সমর্থকও এ ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার আগে একটু ভেবে নিচ্ছেন। তবে বাংলাদেশ দলের স্পিন কোচ যোশী আত্মবিশ্বাসটা ধরেই রেখেছেন, ‘প্রতিটি দলের শক্তি ও দুর্বলতার জায়গা থাকে। ভারতেরও দুর্বল জায়গা আছে। যেকোনো ব্যাটসম্যানকে আউট করার জন্য একটি বলই যথেষ্ট। আবার বলছি, আমরা কিন্তু তিনবার ভারতকে হারানোর খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। আমরা কিন্তু এখন আর কোনো ফেলনা দল নই।’ভারতের বিপক্ষে ‘কুলচা’স্পিন-জোড় মানে কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের ঘূর্ণি বাংলাদেশের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে কিন্তু এই দুই স্পিনারই ভাবনার কারণ হয়েছিলেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের জন্য। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্পিন খেলার সামর্থ্যও দুশ্চিন্তা তৈরি করছে। তবে যোশী কিন্তু নির্ভার, ‘আমরা সবাই জানি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিন খেলতে পারে খুব ভালো। আমরাও কিন্তু স্পিন যথেষ্ট ভালো খেলি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওদের তিন স্পিনারের বিপক্ষে আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও কিন্তু আমরা স্পিন ভালো খেলেছি। এখন আমাদের ধারাবাহিক হতে হবে। প্রতিটি ম্যাচেই ভালো করতে হবে। আমরা জানি, ভারতীয় স্পিনারদের খেলার সময় কোন কোন বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’এজবাস্টনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তাঁদের তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারেন কি না, সেটি দেখারই অপেক্ষায় বাংলাদেশের মানুষ!
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে জামাল হোসেন (৪৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।নিহত জামাল হোসেনের বাড়ি নবাবগঞ্জ উপজেলার হরিপুর কোনাকুড়ি গ্রামে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছেলে সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জামাল হোসেন ও দিলবর হোসেনের পরিবারের সঙ্গে একই এলাকার ইসার উদ্দিনের পরিবারের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। গতকাল রাতে জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা কাটার সময় ইসার উদ্দিনের লোকজনের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন জামাল হোসেন, দিলবর হোসেনের স্ত্রী সোনাবানু, ছেলে রবিমান ও মকবুল হোসেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার একজনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য জামালের লাশ এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে উৎসাহ–উদ্দীপনা ও যথাযথ মর্যাদায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপিত হয়েছে। গত শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসবমুখর পরিবেশে স্মরণ করেন বাংলা সাহিত্যের দুই পুরোধা ব্যক্তিত্বকে।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানিয়ে নতুন প্রজন্মকে রবীন্দ্র-নজরুলসাহিত্য পাঠে আগ্রহী করে তোলার জন্য তিনি অভিভাবকদের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের গানের উদ্দীপনাময় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম ও তাঁর জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর ড. দিমিত্রিও ভাসিলিয়াদিস। দূতাবাসের কাউন্সেলর মোহাম্মদ খালেদ জাতীয় কবি নজরুলের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তাঁরা বাংলা সাহিত্যে নজরুল ও রবীন্দ্রনাথের অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে এর তাৎপর্য সম্পর্কে আলোচনা করেন।আলোচনার পর আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দূতাবাসের কাউন্সেলর ড. সৈয়দা ফারহানা নূর চৌধুরীসহ দূতাবাস পরিবারের সদস্য এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠন দোয়েল একাডেমি ও দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন শ্রোতারা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব সুজন দেবনাথ। বিজ্ঞপ্তি
গীতিকবি রাধারমণ দত্তের অনন্য সৃষ্টি লোকগান ও তার জীবনদর্শন নিয়ে কানাডার টরন্টোতে হয়ে গেল ‘রাধারমণ ফোক ফেস্টিভ্যাল ২০১৯’। গত ২১ জুন সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত নান্দনিক আগা খান মিউজিয়াম মিলনায়তনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।রাধারমণ লোক উৎসবের অতিথি শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আসেন চন্দনা মজুমদার, আশিক ও পিন্টু ঘোষ। আর টরন্টো থেকে গান পরিবেশন করেন শিল্পী তমা পাল, তমা রায় ও সাবু শাহ। ধামাইল সংগীতের প্রবর্তক রাধারমণ দত্তের ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা। ছিল সুকন্যা নৃত্যাঙ্গনের নৃত্য পরিবেশনা।অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ পর্বে অংশ নেন টরন্টো বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল, সাংসদ, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মীসহ সুধীজন। উৎসবের প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছিল ৫০ ডলার ( ফ্রি পার্কিং সুবিধাসহ)।উৎসবের আয়োজক প্রতিষ্ঠান ড্যানফোর্থ এক্সপ্রেস। আয়োজন সহযোগী হিসেবে ছিল ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড বাংলাদেশ, জেএনআর লিগ্যাল সার্ভিসেস, রিয়েলেটর দেবব্রত দে,ঝংকার টিভি ও সংস্কৃতি বিষয়ক অনলাইন পত্রিকা গানপার।
চেয়েছিলেন চিকিৎসক হয়ে এলাকার অসহায় মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে ভাটা পড়লেও ছাড়েননি মানুষের সেবার স্বপ্ন। পরিবারের উৎসাহ ও সহযোগিতায় ভর্তি হন নার্সিং কলেজে। কিন্তু পড়া শেষ করে স্বপ্ন পূরণের আগেই তাঁকে জীবন থেকে বিদায় নিতে হলো।মৌলভীবাজারের কুলাউড়া বরমচালে গত রোববার রাতে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হন সিলেট নার্সিং কলেজের ছাত্রী ফাহমিদা ইয়াসমিন। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুরের আবদুল্লাহপুর গ্রামের আবদুল বারীর মেয়ে ফাহমিদার মৃত্যুতে পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম।তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় ফাহমিদা ইয়াসমিন। বাবা আবদুল বারী সৌদিপ্রবাসী ছিলেন। ২০০৪ সালের দিকে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে দেশে ফেরেন। এরপর থেকে সংসারের দায়িত্ব, চার ভাইবোনের পড়ালেখা এবং বাবার চিকিৎসার দায়িত্ব কাঁধে নেন আবদুল বারীর বড় ছেলে আবদুল হামিদ। ছোট বোন ফাহমিদা ইয়াসমিনের আকস্মিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না আবদুল হামিদ। শুধু আবদুল হামিদ নন, মেয়েকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা রহিমা বেগম। কিছু সময় পরপর বিলাপ করতে করতে মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিবেশীরাও ফাহমিদার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে আসেন। কান্নায় বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে জালালপুরের আবদুল্লাহপুর গ্রামে ফাহমিদাদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।আবদুল হামিদ জানান, তাঁর বোনের ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হয়ে এলাকার অসহায় মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু মেডিকেলে টিকতে পারেননি। বেসরকারি মেডিকেলে পড়ানোর সামর্থ্যও নেই। তাই বিএসসি নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সিলেট নার্সিং কলেজে ভর্তি হন ফাহমিদা। প্রায়ই বলতেন, চার বছরের নার্সিং পাস করার পর সরকারি হাসপাতালে চাকরি নেবেন। এতে সংসারের বোঝা অনেকটা কমবে। এবার তৃতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছিলেন। এলাকার কেউ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে তাদের সহযোগিতা এবং সেবা করতেন তিনি। এলাকায় অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে ফাহমিদার প্রশংসা করত। গত সোমবারও তাঁর মামা লিলু মিয়ার এলাকার এক নারী মামার কাছে ফাহমিদার মুঠোফোন নম্বর চেয়েছিলেন। কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় কণ্ঠ জড়িয়ে আসছিল আবদুল হামিদের।আবদুল হামিদ জানান, গত শুক্রবার ফাহমিদা শেষবারের মতো বাড়িতে এসেছিলেন। তখন মা-বাবাকে জানিয়েছিলেন, দুদিন পর ঢাকায় কোনো কর্মশালায় যোগ দিতে সহপাঠীর সঙ্গে যাবেন। পরে রোববার রাতে ট্রেনে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। রাত তিনটার দিকে মুঠোফোনে তাঁর এক সহপাঠী জানান, ফাহমিদা আহত হয়ে কুলাউড়ার একটি হাসপাতালে রয়েছেন। পরে সেখানে গিয়ে বোনের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন হামিদ।আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘দেশের অন্য অঞ্চলের চেয়ে সিলেটের রেলপথের অবস্থা খুবই নাজুক। রেলওয়েতে কর্মরত ব্যক্তিরা যদি নিজের কাজ ঠিকমতো করতেন, তাহলে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটত না। আমাদেরও অকালে বোন হারাতে হতো না।’এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত সিলেট নার্সিং কলেজের ছাত্রী সানজিদা আক্তারের মরদেহ গতকাল দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন। নিহত সানজিদার বাড়ি খুলনা জেলার বাগেরহাটে।ট্রেন দুর্ঘটনায় দুই ছাত্রী নিহতের ঘটনায় গতকাল থেকে সিলেট নার্সিং কলেজে তিন দিনব্যাপী শোক কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কলেজে কর্মরত নার্স, শিক্ষক এবং চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ ধারণ করে শোক পালন করছেন।
সৌদি আরবে বিয়ের চুক্তিপত্রে কনেরা নতুন একটি শর্ত যোগ করছেন ইদানীং। তা হলো, বিয়ের পর তাঁদের গাড়ি চালাতে দিতে হবে।সৌদি আরবে গত বছর ২৪ জুন নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে সরকার, যার এক বছর পূর্তি হলো গত সোমবার। এরপরও গাড়ি চালানোর ওপর স্বামীর নিশ্চয়তা পেতে এই ধরনের শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন স্ত্রীরা।শুধু তা–ই নয়, নারীরা আরও অনেক রকম শর্তই জুড়ে দিচ্ছেন বিয়ের চুক্তিতে। কারও শর্ত তাঁকে বিয়ের পর চাকরি করতে দিতে হবে, কারও শর্ত বিয়ের পর স্বামীকে ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে, কারও শর্ত স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। স্ত্রীর উপার্জনে হাত দিতে পারবেন না, প্রথম বছরে বাচ্চা নিতে পারবেন না—এমন শর্তও দিচ্ছেন দেশটির কোনো কোনো নারী। বিয়ের সময়ই চুক্তিতে নারীদের এই ধরনের শর্ত যোগ করার বিষয়টি সৌদি আরবের সমাজ পরিবর্তনের চিত্রই উপস্থাপন করছে।সৌদি রক্ষণশীল সমাজে পুরুষের আধিপত্যই শেষ কথা। দেশটিতে নারীদের পড়াশোনা, বিয়ে করা, এমনকি কারাভোগ শেষে কারাত্যাগের বিষয়েও পরিবারের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়।সাম্প্রতিক ইতিহাসে সৌদি আরবই একমাত্র দেশ, যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর আইন করে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। গত বছরের জুনে ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারীদের জন্য এমন অনেক সংস্কারই হচ্ছে দেশটিতে।কড়া পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সৌদি আরবে বিয়ের সময় করা চুক্তিপত্রই নারীদের নিরাপত্তাবলয় হিসেবে কাজ করে থাকে। স্বামীরা চুক্তির শর্ত ভাঙলে স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন গ্রাহ্য করেন আদালত। পুরুষেরাও এই চুক্তিতে স্ত্রীদের ওপর অনেক শর্ত চাপিয়ে দেন। যেমন স্ত্রী চাকরি করতে পারবেন না, বিয়ের পর শাশুড়ির (বরের মা) সঙ্গে থাকতে হবে ইত্যাদি। বিয়ে নিবন্ধনকারী কাজিরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যৎ মতবিরোধ এড়াতেই চুক্তিপত্রে এসব শর্তের আশ্রয় নেন হবু স্বামী-স্ত্রী। তবে নারীদের শর্তে জুড়ে দেওয়া এখনো পুরোনো ধ্যানধারণার অনেকে মানতে পারেন না। অনেকে ‘ট্রোল’ করছেন ওই সব স্বামীদের।দাম্মামের বাসিন্দা মাজেদ (২৯) চলতি মাসে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। তাঁর হবু স্ত্রী (২১) তাঁকে শর্ত দিয়েছেন, বিয়ের পর তাঁকে গাড়ি চালাতে এবং চাকরি করতে দিতে হবে। মাজেদ এই শর্ত মেনে নিয়েছেন।
দেশে মাদকদ্রব্যের সেবন ও কেনাবেচা কমছে না। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নথিপত্রে দেখা গেছে, মাদকের উদ্ধার, গ্রেপ্তার ও মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রমাণ করে দেশে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে আসা রোগীর সংখ্যাও বিগত ছয় বছরের মধ্যে গত বছর সবচেয়ে বেশি ছিল। চলতি বছরও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আজ দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস।তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামালউদ্দীন এ কথা মানতে চাননি। তিনি বলছেন, বেশি উদ্ধার হওয়ার কারণেই এটা মনে হচ্ছে।উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ মে ‘চল যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে অভিযান শুরু করে র‍্যাব। দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে পুলিশও। শুধু গত এক বছরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ৩৮৯ জন, আত্মসমর্পণ করেন শীর্ষস্থানীয় ১০২ মাদক কারবারি।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাগজপত্র অনুযায়ী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ২০১৪ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৫১ হাজার ৮০১টি মামলা করেছে, গ্রেপ্তার করেছে ৬২ হাজার ৮০ জনকে। ওই বছর উদ্ধার হওয়া ইয়াবার পরিমাণ ছিল ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯টি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৮ সালে মামলা করেছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি। এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জন। ওই বছর ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছিল ৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮টি।হেরোইনের অপব্যবহার বেড়েছে, আছে অন্য মাদকওমাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা ও পুনর্বাসন) জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ধারণা, মাদকাসক্তের মোট সংখ্যা বাড়লেও আনুপাতিক হারে কমছে। ২০১৪ সালের মোট জনসংখ্যার যতজন মাদকাসক্ত ছিল, সেই তুলনায় এখন মাদকাসক্তের সংখ্যা কম। তবে এ নিয়ে কোনো গবেষণা বা জরিপ হয়নি বলেও জানান তিনি।দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে ইয়াবা উদ্ধারের সংখ্যা ৮ গুণ বেড়েছে, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা মাদকাসক্তের সংখ্যাও বেড়েছে। ২০১৪ সালে সরকারি-বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে সেবা নিয়েছেন ১৬ হাজার ৯২৭ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার ৩৫ জন।মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর ৩৯১ দিনে নিহত ৩৮৯ জনআত্মসমর্পণ করেন শীর্ষস্থানীয় ১০২ মাদক কারবারিঅধিদপ্তরের নথি বলছে, মাদকের অপব্যবহার বেড়েছেকাগজপত্র বলছে, ইয়াবার পাশাপাশি হেরোইনের অপব্যবহারও দেশে বেড়ে গেছে। ২০১৪ সালে হেরোইন উদ্ধার হয় ৭৮ কেজির কিছু বেশি, গত বছর এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৫২ কেজি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, ফেনসিডিলের পরিমাণ ২০১৫–১৬ সালের দিকে কমেছিল, ২০১৭ সালে তা বাড়ে। এখন পর্যন্ত এর অপব্যবহার কমেনি। তবে গাঁজা ও শিরায় মাদক ব্যবহারের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে বেজলাইন স্টাডি অন ড্রাগ এডিকশন ইন বাংলাদেশের কাজ চূড়ান্ত হয়েছে সম্প্রতি। এতে দেখা গেছে, মাদকসেবীদের ৫০ শতাংশ ফেনসিডিলও সেবন করছেন। এই মাদকও নিষিদ্ধ হয় ১৯৮২ সালে।প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন মাদকসেবী একাধিক মাদক গ্রহণ করছেন। সাক্ষাৎকার যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ইয়াবা সেবন করে ১৩১ জন, গাঁজা ১২২ জন, ফেনসিডিল ৭৩ জন ও হেরোইন ৫৪ জন। এর বাইরে মাদকাসক্তরা দেশি ও বিদেশি মদ, রেক্টিফাইড স্পিরিট ও স্নিফিং গ্লু সেবন করে থাকেন।ঢাকা আহ্‌ছানিয়া মিশনের পরিচালক ইকবাল মাসুদ স্বাস্থ্য কর্মসূচির দেখভাল করেন। গতকাল তিনি বলেন, চলমান অভিযানের কোনো প্রভাব তাঁদের চোখে পড়েনি।পুলিশের দাবি ফলপ্রসূ, বিজিবির নাপুলিশের দাবি, দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান ফলপ্রসূ হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে দেশের সার্বিক মাদক পরিস্থিতির ‘বেশ উন্নতি’ হয়েছে। মাদকের বিস্তার কমেছে, জনসচেতনতা বেড়েছে।টেকনাফ বিজিবির অধিনায়ক মোহাম্মদ ফয়সাল হাসান খান গতকাল বলেন, সীমান্তে কড়াকড়ির পরও ইয়াবার চালান টেকনাফে ঢুকছে। ইয়াবার পাচার কমেনি। চলতি মাসেই বিজিবি ১৭ লাখ ইয়াবা জব্দ করেছে।
বাংলাদেশে গত তিন-চার দশকে জনসংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এর ফলে ছোট্ট এই দেশে খাদ্যাভাব অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কারণ, আমাদের ফসল ফলানোর উপযোগী জমির পরিমাণ জনসংখ্যার তুলনায় খুবই কম। জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষিজমির পরিমাণ ইতিমধ্যে অনেক কমেছে এবং আরও কমে যাচ্ছে। কিন্তু সে জন্য আমাদের খাদ্যাভাব বাড়েনি, বরং অনেক কমে গেছে। প্রাণ ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাব আজ আর নেই। বাংলাদেশের কোনো অঞ্চলে আজ আর কেউ স্রেফ অনাহারে মারা যায় না। উত্তরবঙ্গের মর্মান্তিক মঙ্গার অবসান ঘটেছে।এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে কৃষিব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতির ফলে। বিশেষত, ধানের উৎপাদন বেড়েছে অবিশ্বাস্য মাত্রায়। একসময় এক বিঘা জমিতে ৭-৮ মণের বেশি ধান ফলত না, কিন্তু এখন ফলে ৩০ মণ পর্যন্ত। উচ্চফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন, সেচব্যবস্থার উন্নয়ন, সার-কীটনাশকের সহজলভ্যতা ইত্যাদির ফলে ধান উৎপাদনে এই ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বনির্ভর দেশ—এই কথার অর্থ হলো, আমাদের প্রধান খাদ্য চাল আমরা এত পরিমাণ উৎপাদন করতে পারি যে তা দিয়ে ১৭ কোটি মানুষের ভাতের চাহিদা পূরণ হয়। এমনকি কোনো কোনো বছর কিছু উদ্বৃত্তও থেকে যায়।কাণ্ডজ্ঞান বলে, কৃষির উন্নতি হলে কৃষকেরও উন্নতি হওয়ার কথা। কিন্তু বড় দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশে কৃষির উন্নতির তুলনায় কৃষকের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। কৃষকের আয় খুব কম। কৃষকেরা নিজেদের বলেন ‘গরিব মানুষ’। বাংলাদেশে আজ আর ধনী কৃষক খুঁজে পাওয়া যাবে না। ‘কৃষিকাজে লাভ নাই’—এই কথা উত্তরবঙ্গে গেলে খুব শুনতে পাই। কথাটার মধ্যে চাপা হাহাকার টের পাওয়া যায়। কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়ে তা বিক্রি করে ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে হিমশিম খান।কৃষকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাশা তাঁদের মধ্যে, যাঁরা মূলত ধান চাষ করেন। কারণ, উৎপাদন খরচের তুলনায় ধানের দাম সাধারণত কম হয়। ধানের ফলন খুব বেশি হলে দাম আরও কমে যায় এবং ধানচাষির লোকসান বাড়ে। চলতি বোরো মৌসুমে সেটাই ঘটেছে। ধানের বাম্পার ফলন ধানচাষিদের দুঃখ-হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এত বেশি শোরগোল হয়েছে যে সরকারের জন্য এক বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার এবার কৃষকদের কাছ থেকে অন্যবারের চেয়ে বেশি পরিমাণ ধান কেনার ঘোষণা দিয়েছে। সরকার প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, দেড় লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনা হবে; কিন্তু ধানচাষিদের তীব্র ক্ষোভ-হতাশার খবর এবং সংবাদমাধ্যমে তার ব্যাপক জনপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করে সরকার আরও আড়াই লাখ টন ধান কেনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, বাড়তি আড়াই লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর। অর্থাৎ ধানচাষিদের ক্ষোভের বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গুরুত্ব পেয়েছে।কিন্তু সরাসরি ধানচাষির কাছ থেকে সরকারের ধান কেনা কর্মসূচি বাস্তবে যেভাবে চলছে, তাতে ধানচাষির দুঃখ-হতাশা-ক্ষোভ দূর হওয়ার নয় এবং তা হচ্ছেও না। কারণ, প্রথমত এই কর্মসূচিতে কিছু মৌলিক ত্রুটি বা অসংগতি আছে, আছে অনিয়ম-দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি ও নেতিবাচক রাজনৈতিক প্রভাব, যার ফলে প্রকৃত ধানচাষিদের বৃহত্তর অংশই সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে সরাসরি সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারছে না। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে উত্তরবঙ্গের জয়পুরহাট জেলায় বেড়াতে গিয়ে ধানচাষি, চাতালমালিক, জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে সরকারের ধান কেনা কর্মসূচি সম্পর্কে আমার যে ধারণা হলো, তাতে এটাকে ‘সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা কর্মসূচি’ বলা যায় না। এই কর্মসূচির প্রথম অসংগতি হলো, সরকারের পক্ষ থেকে ক্রয়যোগ্য ধানের আর্দ্রতার ন্যূনতম মাত্রা (১৪ শতাংশ) বেঁধে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু খতিয়ে দেখা হয়নি এই গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে ধানচাষিদের ধান অতটা ভালোভাবে শুকানোর ব্যবস্থা আছে কি না। ধানচাষিরা ধান শুকান মাটির উঠানে; গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে, যখন বোরো ধান কাটা হয়, তখন উঠানের মাটিতে আর্দ্রতা থাকে। সেই উঠানে ধান শুকিয়ে তার আর্দ্রতা কমিয়ে ১৪ শতাংশে নামানো যায় না। জয়পুরহাট জেলায় অনেক ধানচাষির সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে; প্রত্যেকেই একই অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। কেউ কেউ বাজি ধরে বলেছেন, কোনো চাষি যদি মাটির উঠানে কাঁচা ধান শুকিয়ে ধানের আর্দ্রতা ১৪ শতাংশে নামাতে পারেন, তাহলে তিনি তাঁর ‘গোলামি’ করবেন। তাঁরা আমাকে বলেন, ধান শুকিয়ে আর্দ্রতা ১৪ শতাংশে নামাতে পারেন চাতালের মালিকেরা, কারণ ধান শুকানোর জন্য তাঁদের পাকা জায়গা আছে। সংক্ষেপে ধানচাষিদের বক্তব্য হলো, বোরো মৌসুমে ধানের ন্যূনতম আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়ে সরকারের ধান কেনার কর্মসূচি কার্যত সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কর্মসূচি নয়, এটা কার্যত চাতালের মালিকদের কাছ থেকে ধান কেনার কর্মসূচি। কারণ, শুধু তাঁরাই ধান সেইভাবে শুকাতে পারেন।সরকারের ধান কেনা কর্মসূচির এই মৌলিক অসংগতির কারণে এর প্রকৃত উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হতে পারছে না। ধানের ন্যূনতম আর্দ্রতার শর্তের সুযোগে খাদ্যনিয়ন্ত্রকদের কার্যালয়গুলোতে ধান কেনার সময় অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধেও সেই দুর্নীতিতে অংশগ্রহণের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের টাকাপয়সা দিয়ে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করা যায়—এমন কথা আমি জয়পুরহাট-কালাই এলাকায় একাধিক মানুষের মুখে শুনেছি। আরও শুনেছি, যেসব ধানচাষি সরকারি দলের সমর্থক, তাঁদের ধান আর্দ্রতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে খাদ্য কর্মকর্তার অফিসে বিক্রি হতে পারে।সামগ্রিক বিচারে ‘সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে’ সরকারের ধান কেনা কর্মসূচি চলমান রূপে একটি অসফল ও হতাশাব্যঞ্জক কর্মসূচি, যা ধানচাষিদের স্থায়ী ক্ষোভের অন্যতম কারণ। এটাকে সফল করতে হলে প্রথমেই ধানের ন্যূনতম আর্দ্রতার শর্তটি তুলে দিতে হবে। সরকার যদি বোরো মৌসুমে সরাসরি ধানচাষিদের কাছ থেকেই ধান কিনতে চায়, তাহলে কাঁচা ধানই কিনতে হবে, অন্যথায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন অসম্ভব। এই শর্ত তুলে নিলে অনিয়ম-দুর্নীতি ও সেই উদ্দেশ্যে ধানচাষিদের হয়রানি করার সুযোগ অনেকাংশে কমে যাবে। তবে দুর্নীতি যেহেতু অংশত মজ্জাগত ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে, তাই খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়গুলোর অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করতে হবে; ধানচাষিদের কাছ থেকে অভিযোগ গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।তবু আরও কথা থেকে যাচ্ছে। অতি শুভবাদী মনে হলেও ধরা যাক, এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার সরকারি কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেল, ধানচাষিরা সরকার-নির্ধারিত দামে সরকারের কাছেই ধান বিক্রি করতে পারছেন। তারপরেও কি তাঁদের দুঃখ ঘুচবে?আমার সংশয়, সেটা সম্ভব হবে না। সরকার মোট চার লাখ টন ধান কিনলে তার প্রভাবে বাজারে ধানের দাম বাড়বে এবং ধানচাষি তথাকথিত ‘ন্যায্যমূল্য’ পাবেন—এমন আশা বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, মোট উৎপাদিত ধানের (চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ২ কোটি মেট্রিক টন) তুলনায় সরকারের কেনা ধানের পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জয়পুরহাট জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে এক খাদ্য পরিদর্শক আমাকে বলেন, জয়পুরহাট জেলায় মোট প্রায় ৯০ হাজার মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপন্ন হয়েছে; এর মধ্যে সরকারের কেনার বরাদ্দ মাত্র ৪৫০ মেট্রিক টন। বাকি সাড়ে ৮৯ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনবে কে? চাতাল ও চালকলের মালিকেরা ছাড়া এই ধানের আর কোনো ক্রেতা নেই। অর্থাৎ, নিন্দার্থে যাঁদের মধ্যস্বত্বভোগী বলা হয়, সেই চাতাল ও চালকলের মালিকদের কাছে ধান বিক্রি করা ছাড়া ধানচাষিদের কোনো উপায় থাকে না এবং মুক্তবাজার অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে তাঁদের ধানের দামও নির্ধারিত হয় চাহিদা-সরবরাহের সমীকরণে। মোট উৎপাদিত ধানের মাত্র ১ শতাংশ সরকার কৃষকদের কাছ থেকে কিনলে ধানের বাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব আশা করা যায় না। তা ছাড়া, সরকারের পক্ষে বছরে মোট ১৫ লাখ টনের বেশি ধান কেনা সম্ভব নয়, কারণ, সব সরকারি গুদামের মোট খাদ্যশস্য ধারণের ক্ষমতা প্রায় ২০ লাখ টন। সেগুলোতে ধান ছাড়াও চাল আর গমও মজুত রাখতে হয়।তাহলে ধানচাষির দুঃখ দূর করা যাবে কীভাবে?সরকারকে এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে, যার ফলে ধানের উৎপাদন খরচ বর্তমানের তুলনায় অন্তত অর্ধেক কমে যাবে। উৎপাদন খরচ কমানো ছাড়া ধানচাষিকে লোকসানের চক্র থেকে বের করে আনার কোনো বাস্তবসম্মত উপায় আছে বলে মনে হচ্ছে না।মশিউল আলম: প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিকmashiul.alam@gmail.com
লাগাতার আন্দোলনের মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ভবনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া প্রক্টর আতিউর রহমানের সই করা জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের নীতিমালা বাস্তবায়নসহ তিন দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলনের মুখে আবু কালাম ফরিদ উল ইসলামকে প্রক্টর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনসমূহে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, মাইকিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ পরিপন্থী সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ।’এদিকে ভবনের বাইরে আজ বুধবার সকাল ১০টায় কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। এ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। এই বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পর শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও আবৃত্তি সংগঠনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এসব সংগঠন ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন। গতকাল বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। আবার সেই তালা বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে বেশ কিছু শিক্ষার্থী ভেঙে ফেলেন। এ নিয়ে দিনভর উত্তেজনা ছিল। পুরো প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।এ প্রসঙ্গে তাবিউর রহমান নামের ওই শিক্ষক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মচারীরা সবাইকে জিম্মি করে প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে দিতে পারে না। তাই তালা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভেঙেছে। এতে আমি একা নই, অনেক শিক্ষকই উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় কিছু শিক্ষার্থী তাঁদের কাজের প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনে উপস্থিত ছিলেন।’ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) মহিব্বুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকলেও আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখানে সংঘাতের চেষ্টা হলে পুলিশ তা প্রতিহত করবে।কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুর আলম বলেন, ‘আমাদের দাবি নিয়ে আমরা বহুবার আন্দোলন করেছি। কিন্তু শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়, দাবি বাস্তবায়ন হয় না।’কর্মচারীদের দাবি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীবান্ধব পদোন্নতি নীতিমালা বাস্তবায়ন, ৫৮ জন কর্মচারীর ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান এবং মাস্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ।কর্মচারীরা জানান, ৩৪৬ জন কর্মচারীর মধ্যে ২৮৮ জনের বকেয়া পরিশোধ করা হলেও ৫৮ জন কর্মচারীকে ৪৪ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়া হয়নি।এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মচারীদের এসব দাবি আগের উপাচার্যের আমলে। এরপরও আমি চেষ্টা করছি তাঁদের সমস্যা সমাধানের। তাঁদের তিনটি দাবি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গ্রামবাসীর ভাষ্য, ওই যুবক চোর চক্রের সদস্য ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক বাড়িতে দলবল নিয়ে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে এলাকার লোকজন পিটিয়ে তাঁকে মেরে ফেলে। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছে।নিহত যুবকের নাম কবির মোল্লা (৩০)। তিনি পটুয়াখালী সদরের বদরপুর এলাকার আমজাদ মোল্লার ছেলে। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার সময় মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের মধ্যম মায়ানী গ্রামে এই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। এ সময় কবিরের সঙ্গে থাকা তিনজন পালিয়ে যায়।পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্র জানায়, মধ্যম মায়ানী গ্রামে দুই-তিন মাস ধরে একটি চোর চক্র প্রায় প্রতি রাতেই কারও না কারও বাড়িতে ঢুকে মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিল। যেসব বাড়িতে পুরুষ থাকত না, সেসব বাড়িতে ঢুকে চুরির পাশাপাশি নারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করত। চোরের দলটির এমন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৫ দিন ধরে গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসায় স্থানীয় লোকজন। গতকাল রাতে দুটি বাড়িতে চুরি করতে ঢুকে ধাওয়া খেয়ে গ্রামের চৌধুরীপাড়ার ছাইদুল হকের বাড়িতে আসে চার সদস্যের চোর দল। সেখানে পাহারায় থাকা লোকদের হাতে কবির মোল্লা ধরা পড়লেও অন্য তিনজন পালিয়ে বাঁচে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মধ্যম মায়ানী গ্রামের ইউপি সদস্য মো. নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই চোর দলের উৎপাতে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ ছিল। চুরির পাশাপাশি নারীদের গায়ে হাত দিত বলে গ্রামবাসীর ক্ষোভ ছিলে বেশি। গতকাল রাতে ধাওয়া করে একজনকে ধরতে পেরে গণধোলাই দেয়।নিহত যুবক দিনের বেলায় এক ঠিকাদারের অধীনে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস লাইনের ওয়েল্ডিং সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।গণপিটুনিতে যুবক নিহত হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মিরসরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুল আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে আজ বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। মাথায় দুটি ক্ষত ও হাতের দুই বাহুতে রশি দিয়ে বাঁধার দাগ ছিল।’এসআই জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে। নিহত যুবকের পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঋণের সুদহার কমিয়ে আনতে ব্যাংক একীভূত করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের সংখ্যা কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কি বাধ্যতামূলক একীভূতকরণের উদ্যোগ নেবে? কীভাবে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকই প্রতিযোগিতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে না। কিছু ব্যাংক তাদের অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে সুদহার ঠিক করে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ঠিক করে দিতে পারে।মির্জ্জা আজিজ আরও বলেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে তদারকি জোরদার করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার আনতে বাংলাদেশ ব্যাংককে উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে ঋণখেলাপিদের দ্রুত ও দৃশ্যমান শাস্তি হয়।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত দ্বিতীয় এ কে এন আহমেদ স্মারক বক্তব্যে মির্জ্জা আজিজ এসব কথা বলেন। ‘সেন্ট্রাল ব্যাংকিং’ শীর্ষক এ লেকচারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক মোহা. নাজিম উদ্দিন। মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খাত স্থিতিশীল ও কার্যকর রাখতে সহায়তা করে কার্যকর বিধিবিধান। ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠনের পর খেলাপি ঋণ যেভাবে বাড়ছে, তা ব্যাংক খাতের কার্যকর বিধিবিধানের ওপর অন্ধকার ছায়া ফেলেছে।বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ে মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার অবমূল্যায়ন করতেই পারে। তবে টাকার অবমূল্যায়ন করলে রপ্তানি, প্রবাসী আয় ও মূল্যস্ফীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা বিবেচনা করতে হবে। যেহেতু রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের ভালো প্রবৃদ্ধি রয়েছে, তাই এখন টাকার অবমূল্যায়নের সঠিক সময় নয়।মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির আপাত কোনো প্রভাব নেই। বাংলাদেশের মতো মুক্ত অর্থনীতির ও আমদানিনির্ভর দেশে পণ্যের দাম মূলত আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করে। অতএব মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির ভূমিকা সীমিত হতে বাধ্য।মুদ্রা সরবরাহ নিয়ে আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারের ঋণের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আবার সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণেও নিয়ন্ত্রণ নেই, যদিও এর মধ্যে কিছু ঋণে সরকারের গ্যারান্টি রয়েছে। রপ্তানি, প্রবাসী আয় ও বিদেশি মূলধনের ওপরও নিয়ন্ত্রণ নেই। এসব অক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। তাই তিনি মনে করেন, সরকারের ঋণের ওপর নজরদারি থাকা উচিত।মির্জ্জা আজিজ মনে করেন, ‘অসামঞ্জস্য তথ্য’ ও ‘নৈতিক বিপত্তি’ ব্যাংক খাতের অপরিহার্য উপাদান হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আমানতকারী ও ব্যাংক ব্যবস্থাপনার মধ্যে তথ্যের অসামঞ্জস্যতা। এর ফলে আমানতকারীরা কোনো সক্ষমতা যাচাই-বাছাই ছাড়াই ব্যাংকে আমানত জমা করছে। তারা মনে করে, ব্যাংক ব্যর্থ হলে সরকার উদ্ধার করবে, তাই আমানতকারীদের টাকা নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। নৈতিক বিপত্তি থেকে তাদের এ প্রবণতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘কয়েকটি প্রশ্ন রেখে আমি শেষ করতে চাই। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ভেবে দেখতে পারে।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘সরকার ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক অস্বীকৃতি জানাতে পারে কি? এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত। তবে এ বিষয়টি আমি আলোচনা করিনি। ব্যাংকের সংখ্যা কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কি বাধ্যতামূলক একীভূতকরণের উদ্যোগ নেবে? ব্যাংকগুলোর জোটবদ্ধ হয়ে সুদের হার নির্ধারণ বন্ধ করতে অ্যান্টি-ট্রাস্ট/অ্যান্টি একচেটিয়া আইন থাকা উচিত কি? কার্যকর বিধিবিধান কেন খেলাপি ঋণের পরিমাণ যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে পারল না?’মির্জ্জা আজিজ আরও প্রশ্ন করেন, খেলাপি ঋণ আদায় ও খেলাপিদের শাস্তি দিতে অর্থঋণ আদালত আইন ও দেউলিয়া আইনে কী ধরনের সংস্কার দরকার? নির্দেশিত ঋণ (কৃষি, এসএমই) নির্ধারিত খাতে গেল কি না, তা খতিয়ে দেখতে বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনা করা কি উচিত নয়? এ ছাড়া নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে এসব ঋণের প্রভাব কী, তা নিয়েও কি পর্যালোচনা থাকা উচিত নয়?সভাপতির বক্তব্যে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, একে তো ব্যাংকে ঋণের তুলনায় আমানতের প্রবৃদ্ধি কম, তার ওপর এ পর্যন্ত ২ লাখ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সমমূল্যের ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ, সাবেক ও বর্তমান ব্যাংকাররা উপস্থিত ছিলেন।
দেশে চীনা পণ্য আমদানিতে যাত্রা শুরু করেছে ড্রপশিপিং প্রতিষ্ঠান ডোরপিং ডটকম। সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চীন থেকে এয়ার কার্গো বা জাহাজের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে সুবিধা দেবে ডোরপিং। চীনা প্রোডাক্ট সোর্সিং, নমুনাসহ মান পরীক্ষা, গুয়াংজু ও ঢাকায় ওয়্যারহাউস সুবিধা দিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। বিস্তারিত (www.doorping.com) সাইট থেকে জানা যাবে।
সারা দেশে চলছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উন্মাদনা। এবারের আসর ইংল্যান্ডে। বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর আপডেট সরাসরি মাঠ থেকে দেওয়ার জন্য বর্তমানে ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন ‘ইয়ামাহা মোটরসাইকেল বাংলাদেশ’–এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ও উপস্থাপিকা জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া।সঞ্চালনার দায়িত্ব উপভোগ করার পাশাপাশি সম্প্রতি বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে পিয়া চলে যান ইয়ামাহার ইংল্যান্ডের শোরুমে। ২৪ জুন ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন সিটিতে অবস্থিত ক্রিসেন্ট শোরুমে বেশ খানিকটা সময় কাটান পিয়া। সেখানে ইয়ামাহার বিখ্যাত সব বাইক মডেলের সঙ্গে ছবি তোলেন তিনি।এ ছাড়া ভিডিও বার্তার মাধ্যমে পিয়া বাংলাদেশের ইয়ামাহা লাভারদের সঙ্গে শেয়ার করেন ইয়ামাহা শোরুম পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা। ভিডিও বার্তাটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন:
ঘটনা দুই মাস আগের। বলিউড তারকা ও ‘সাইক্লিং লাভার’ সালমান খান মুম্বাইয়ের রাস্তায় গভীর রাতে সাইকেল চালাচ্ছিলেন। এ সময় অশোক পান্ডে নামের একজন টেলিভিশন সাংবাদিক জুহু থেকে কান্দিবলী যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ফটোসাংবাদিক সৈয়দ ইরফান। সালমান খানকে সাইকেল চালাতে দেখে তিনি মুঠোফোনে ভিডিও করতে শুরু করেন। গোলমালের শুরু সেখান থেকেই।এমনিতেই সালমান খান নিজেকে একটু আড়ালে রাখতে ভালোবাসেন। সব সময় গাড়িতে কালো কাচ তুলে সবকিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাস্তায় চলাফেরা করেন। তাই কেউ অনুমতি না নিয়ে ভিডিও করছেন দেখে সালমান খান রেগে যান। অভিযোগে বলা হয়েছে, এ সময় তিনি, একজন দেহরক্ষী ও অন্য আরেকজন মিলে অশোক পান্ডের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নেন। তাঁরা ওই টিভি সাংবাদিককে মারধর করেন, হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। শুধু তা-ই নয়, মোবাইল থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।অশোক পান্ডেও কম যান না। তিনি ডিএন নগর থানায় সালমানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন। অনুমতি না নিয়ে ভিডিও করার জন্য সালমানের দেহরক্ষী উল্টো অভিযোগ করেছেন অশোকের বিরুদ্ধে। অশোক অভিযোগে লিখেছেন, ভিডিও করার আগে তিনি সালমানের দেহরক্ষীর কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েছিলেন। কিন্তু সালমানের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ ধোপে টেকেনি। থানা থেকে জানানো হয়, তারা সালমানের বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগের সত্যতা পায়নি।গতকাল মঙ্গলবার ওই সাংবাদিক আদালতে যান। ডেকান ক্রনিকলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে তিনি ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৩২৩, ৩৯২ ও ৫০৬—এই তিনটি ধারায় যথাক্রমে মারধর, ছিনতাই ও হুমকির অভিযোগে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন সালমান খান, তাঁর দেহরক্ষী গুরমিত সিং জলি ও নাম না–জানা তৃতীয় আরেকজন।সালমান খানের পক্ষ থেকে নাকি একজন ফোন করে বিষয়টি মীমাংসা করার প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু মামলাকারী অশোক পান্ডে সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। আগামী ১২ জুলাই আন্ধেরির আদালতে এই মামলার শুনানি হবে।এর আগে ১৯৯৮ সালে রাজস্থানে একটি ফিল্মের শুটিংয়ে গিয়ে অস্ত্র রাখা ও বিরল প্রজাতির হরিণ শিকারের অভিযোগে অস্ত্র আইনে সালমান খানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। দীর্ঘদিন পর ২০১৭ সালে সেই মামলা থেকে রেহাই পান তিনি।
১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেলেন নরসিংদীতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ তরুণী ফুলন রানী বর্মণ। আজ বুধবার সকাল ছয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।ফুলন নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুরের যুগেন্দ্র বর্মণের মেয়ে। গত বছর নরসিংদীর উদয়ন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও আর্থিক দুরবস্থার কারণে কোথাও ভর্তি হতে পারেননি। ফুলনের বাবা যুগেন্দ্র বর্মণ দলিল লেখকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন।পুলিশ ও ফুলনের পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৩ জুন সন্ধ্যার পর শাজাহান মোক্তার নামে ফুলনের বাবার এক সহকর্মী কাজের সূত্রে তাঁদের বাড়িতে আসেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে কেক কিনতে যান ফুলন। কেক কিনে ও মোবাইল ফোনে রিচার্জ করে রেললাইন পার হয়ে বাড়ির গলির মুখে পৌঁছার পর চলে যান শাজাহান মোক্তার। নির্জন আর অন্ধকার গলি ধরে একা বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। বাড়ির কাছে চলে আসার পর দুই দুর্বৃত্ত ফুলনের হাত ও মুখ চেপে ধরে খোলা একটি জায়গায় নিয়ে আসে। দুর্বৃত্তদের একজন তাঁর মুখ চেপে ধরে রাখে, আর অন্যজন তাঁর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ফুলনের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। উপস্থিত ব্যক্তিরা পানি ও চটের বস্তা চাপা দিয়ে তাঁর শরীরের আগুন নেভান। তাঁকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর শরীরের ২০ ভাগের বেশি পুড়ে যায়।আরও পড়ুন:তরুণীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় পিকআপের ধাক্কায় দাদা-নাতি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকাল আটটার দিকে সৈয়দপুর উপজেলায় ওয়াপদা নয়াহাট এলাকায় সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনতা চালক, চালকের সহকারীসহ পিকআপটিকে জব্দ করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। আটক চালক ও তার সহকারী দুজনই কিশোর।নিহত দাদা–নাতি হলেন রহমত উল্লাহ (৬৫) ও তুরাগ (২)। রহমত উল্লাহ সৈয়দপুর উপজেলায় ওয়াপদা নয়াহাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন।প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় রহমত উল্লাহ নাতি তুরাগকে নিয়ে সড়কের পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় নীলফামারীগামী খালি পিকআপটি বেপরোয়া গতিতে এসে দাদা-নাতিকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান রহমত উল্লাহ। গুরুতর আহত শিশু তুরাগ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায়। উত্তেজিত জনতা চালকসহ পিকআপটি জব্দ করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পালের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান পাশা বলেন, আটক চালক বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।গত এক মাসে সৈয়দপুর শহরে ওয়াপদা নতুনহাট এলাকায় পাঁচটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পাঁচজন নিহত হন।
পটুয়াখালীর বাউফলে নিখোঁজের দুই দিন পর শুভংকর হাওলাদার (২০) নামের এক ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নওমালা-আদাবাড়িয়া খালের গোলাবাড়ি এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।বাউফল উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ রাহাত জামশেদ জানান, শুভংকর উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। গত সোমবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি।বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুভংকরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ খালের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
পদ্মায় জেগে ওঠে চর। চরের বুকজুড়ে বেড়ে ওঠে ঘাসবন। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই এই ঘাসবন কতশত প্রাণের ঠিকানা। এই ঘাসবনে এখন বাংলা-বাবুই আর মুনিয়ার শত শত বাসা। সামনে আসছে তাদের প্রজনন মৌসুম। ঘাসবন হয়ে উঠবে তাদের আঁতুড়ঘর।প্রতিবছরই এই চরের ঘাস কেটে নেওয়া হয়। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে হাজার হাজার পাখির ডিম নষ্ট হয়ে যায়। পাখি বিশেষজ্ঞরা এই চরের ঘাসবনের খানিকটা জায়গা পাখিদের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েক বছর থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন।কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক, বার্ড ক্লাবের সহসভাপতি তারেক অণু ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আহমেদ হুসাইন রাজশাহীতে এসেছিলেন। তাঁরা পদ্মার চরের ঘাসবন ঘুরে পাখিদের প্রজননের প্রস্তুতি দেখে গেছেন।ইনাম আল হক জানিয়েছেন, বাংলা-বাবুই এমন একটা পাখি, যার বৈজ্ঞানিক নামের সঙ্গে বাংলার নাম জড়িয়ে রয়েছে। এই পাখি নিচু ঘাসে মানুষের নাগালের মধ্যেই বাসা বাঁধে। তাদের বাসা বাঁধার জন্য নিরালা ঘাসবন দরকার। রাজশাহীর পদ্মার চরে শত শত বাংলা-বাবুই বাসা বাঁধছে। এ ছাড়া আমাদের দেশের ছয় জাতের মুনিয়ার মধ্যে পাঁচ জাতের মুনিয়া এখন এই চরে বাসা বাঁধছে। দুই জাতের প্রিনা রয়েছে, এক জাতের ভ্রমরা ছোটন, ধানি তুলিকা ও দেশীয় মোটাহাঁটু এই চরের ঘাসবনে বাসা বাঁধছে। বিশ্বব্যাপী বিপন্ন শতদাগি-ঘাস পাখি কয়েক বছর ধরে এই চরের ঘাসবনে বাসা তৈরি করে বাচ্চা ওঠাচ্ছে। এটা যমুনার চর ও টাঙ্গুয়ার হাওর ছাড়া বাংলাদেশের কোথাও দেখা যায় না। তার মধ্যে রাজশাহীতেই এই পাখির প্রায় ৭০ ভাগ দেখা যায়। এবারও তাদের জোড়া দেখা গেছে। ইতিমধ্যে বাংলা-বাবুই ও মুনিয়ার পুরুষ পাখিগুলো বাসা তৈরি করে ফেলেছে। ডিম দেওয়ার সময় হলে মেয়েরা চলে আসবে।তারেক অণু জানালেন, শুধু পাখি নয়, এবার এই চরের ঘাসবনের ভেতর থেকে তাদের সামনে দিয়ে একটি খরগোশকে দৌড়ে যেতে দেখেছেন। এই চরে তাঁরা এর আগে ভোঁদড় দেখেছেন। এসব বন্য প্রাণীকে বেঁচে থাকার জন্য চর সংরক্ষণ করা খুবই প্রয়োজন।এলাকাবাসী স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন রেখেছে, এই চরের খানিকটা অংশ পাখিদের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। যেখান থেকে কেউ ঘাস কাটতে পারবে না। পুড়িয়ে দিতে পারবে না। তাহলে পাখিরা সেটাকেই তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে প্রজননক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
প্রথম আলোর সংবাদ থেকে শুরু করে শিক্ষা পাতার লেখা—সবকিছুই আমাদের আশার আলো দেখায়। এই আলো আরও ছড়িয়ে পড়ুক। দেশের প্রতিটি বিষয় নিয়ে প্রথম আলো সৎ ও সত্যসন্ধানী সাংবাদিকতা চালিয়ে যাবে, এই প্রত্যাশা আমাদের। গতকাল মঙ্গলবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।শিক্ষকেরা প্রথম আলোর কাছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে আরও বেশি সংবাদ প্রকাশের দাবি জানান। ‘জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ুক’ শিরোনামে শিক্ষকদের সম্মানে প্রথম আলো এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সাভার এলাকার ১২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪০ জন শিক্ষক এতে অংশ নেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় ম্যাট্রেস তৈরির কোম্পানি ইউরো এশিয়ার সৌজন্যে এসব প্রতিষ্ঠানকে দৈনিক দুটি করে প্রথম আলো পত্রিকা বিনা মূল্যে দেওয়া হয়। শিক্ষকেরা প্রথম আলোর এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলোর সহায়তায় লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া রেজাউল করিম বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমি তখন নবম শ্রেণিতে, ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকে প্রথম আলো আমার শিক্ষা ও চিকিৎসাব্যয় চালিয়ে যাচ্ছে। এখন আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আজকে আমি যে অবস্থায় এসেছি, তার পেছনে প্রথম আলোর অনেক অবদান।’সাভার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাবশিরা ইসলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ের প্রথম আলোকে নিয়ে তাঁর স্মৃতি তুলে ধরেন। বলেন, ‘আমি যখন ২০০২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন হলে প্রথম আলো পড়ার জন্য ভিড় জমে যেত। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার তিন মাস সময়ে প্রথম আলো শিক্ষা নিয়ে যে বিশেষ আয়োজন করে, তাতে শিক্ষার্থীদের অনেক উপকার হয়। প্রথম আলোর শিক্ষা পাতায় শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি নিয়ে যদি কিছু করা যায়, তাহলে ভালো হতো।’সাভারের মানিক চন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্কুল সব সময় ভালো ফল করে। কারণ, আমি প্রথম আলোর শিক্ষা পাতার লেখাগুলো আমার শিক্ষার্থীদের দিই।’ইমানদিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী শাহানা ইসলাম বলেন, ‘আমি যখন কোনো বাসায় যাই, তখন দেখি তারা কোন পত্রিকা রাখে। যদি দেখি প্রথম আলো, তাহলে বুঝি তাদের মনমানসিকতা উন্নত। তাদের সঙ্গে মুক্তমনে কথা বলা যাবে। এই পত্রিকাটি আমাদের মনের সঙ্গে জড়িত।’বারুইপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলালউদ্দিন বলেন, ‘প্রথম আলোর শিক্ষা পাতায় ছাপা হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে যেসব লেখা প্রকাশ হয়, তা নিয়ে আলাদা করে আধা ঘণ্টা ক্লাস নিতে হয়।’ফুলবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম পাটোয়ারি বলেন, ‘দেশ কীভাবে চলছে। কীভাবে এগিয়ে যাবে। তার দিকনির্দেশনা প্রথম আলো থেকে পাই।’অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. খবির উদ্দিন বলেন, ‘অনেকে বলে পত্রিকায় শুধু নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু প্রথম আলোতে আমার একটি গবেষণার সফলতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এরপর আমি জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছি।’জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান প্রথম আলোতে আরও বেশি বেশি সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানান।ইউরেশিয়া কোম্পানির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক শুভজিৎ সরকার অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের কোম্পানি মুখরোচক বিজ্ঞাপন দেয় না। আমরা গুণগত মান উন্নত করায় বেশি বিশ্বাসী। আমরা ভালোর সঙ্গে আলোর পথে থাকা প্রথম আলোর সঙ্গে আছি।’প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রথম আলো অ্যাসিড ছোড়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে এই অপরাধ কমিয়ে এনেছে। মাদকবিরোধী প্রচারণা, গণিত অলিম্পিয়াড, ভাষা প্রতিযোগ, কৃষি পদকসহ নানা উদ্যোগ আমরা নিই। সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি প্রথম আলো যেসব উদ্যোগ নেয়, তার প্রধান উদ্দেশ্য বাংলাদেশের জয়। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতেই এত সব কাজ আমরা করি।’অনুষ্ঠানে সাভার উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এবং প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক অরূপ রায় বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলোর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর নির্মিত দুটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রথম আলোর উপমহাব্যবস্থাপক (সার্কুলেশন সেল) অরূপ কুমার ঘোষ। শেষে গান গেয়ে শোনান শিক্ষক রুনা লায়লা ও শিক্ষার্থী শতাব্দী রায়, আবৃত্তি করেন শিক্ষক ফারহানা ইভা।
অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থার পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের মানসিকতাও শিশুশ্রমের জন্য দায়ী। শিশুশ্রম বন্ধ করতে শ্রম থেকে শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি নতুনভাবে যাতে যুক্ত হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে।গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলো কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ৮.৭: শিশুশ্রম নিরসনে অগ্রগতি ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা এসব কথা বলেন।আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সহযোগিতায় এ বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো। সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. রুহুল আমিন বলেন, অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থার পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের মানসিকতাও শিশুশ্রমের জন্য দায়ী। এ জন্য সব অংশীজনের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা দরকার। এতে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেনড বা জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগানোর সুযোগ বাড়বে।সব শিশুকে অন্তর্ভুক্ত না করে কর্মপরিকল্পনা নিলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুস শহীদ মাহমুদ। তিনি বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ঘন ঘন বদলির কারণেও শিশুশ্রম নিরসনের কাজের ধারাবাহিকতাকে বিঘ্নিত হচ্ছে।কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পোশাক খাতকে শিশুশ্রমমুক্ত করার জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় নিলে সফলতা আসতে পারে। শিশুদের কাজ থেকে সরিয়ে শিক্ষার সুযোগের পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাও দরকার। পরে দক্ষতা অনুযায়ী তাদের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করতে হবে।দরিদ্র পরিবারগুলোতে শিশুরা আর্থিক সহযোগিতা করে বলে জানান মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মজীবী শিশু সুরক্ষা বিভাগের সমন্বয়কারী রাফেজা শাহীন। তিনি বলেন, বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করে শিশুদের কাজ থেকে সরাতে হবে। সঠিকভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।সেভ দ্য চিলড্রেনের শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকারবিষয়ক সুশাসনের পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন বলেন, শিশুশ্রম নিরসনের যে হার, তাতে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে দ্বিধা রয়েছে। সার্বিক দারিদ্র্যের বাইরে গিয়ে শিশুদের দারিদ্র্য আলাদাভাবে দেখতে হবে। শিশুশ্রম নিরসনে খাতভিত্তিক নয়, অঞ্চলভিত্তিক কর্মসূচি নিতে হবে।আইএলওর ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সুরাইয়া বানু বলেন, বয়স বাড়িয়ে অনেক শিশুই প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করছে, যাদের শনাক্ত করা হচ্ছে না। আবার বাংলাদেশ শ্রমে প্রবেশের ন্যূনতম বয়সসংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৩৮ অনুস্বাক্ষর করেনি, যা শিশুশ্রম নিরসনে অত্যন্ত জরুরি।গৃহকর্ম ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের যুগ্ম মহাসচিব এ মো. জাফরুল হাসান বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮—এই চার বছরের ১৮২ গৃহকর্মী হত্যা ও ১৪৬ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অথচ শ্রম আইনের আওতায় গৃহশ্রমিক আসে না।ওয়ার্ল্ডভিশনের অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড জাস্টিস ফর চিলড্রেনের উপপরিচালক সাবিরা নুপুর বলেন, সব শিশুকে একত্র করে সামগ্রিক পরিকল্পনা করতে হবে। শ্রমে জড়িত শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার পরে পরিবারগুলোকে নিয়মিত ও এককালীন আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।ইউনিসেফের চাইল্ড প্রটেকশন কর্মকর্তা শাবনাজ জাহেরীন বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করলেও সরকার এটা আমলে নেয় না। অথচ শিশুশ্রমের সঙ্গে যৌন নির্যাতন, পাচার ও অন্যান্য নির্যাতনের বিষয় জড়িত।ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত শিশুদের মধ্যে অনেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে উল্লেখ করে ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম মাসুদ আলী বলেন, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আইনের মাধ্যমে শিশুকে সুরক্ষিত রেখে বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করতে হবে।বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের এসডিজি সমন্বয়ক সামিউর রহমান খান বলেন, শিশুশ্রমের জন্য দারিদ্র্য অনেকাংশে দায়ী। তবে স্কুলের অনাকর্ষণীয় পরিবেশ, পাঠদান পদ্ধতি ও শিক্ষকদের কারণেও অনেক শিশু ঝরে পড়ে, কাজে যুক্ত হয়।অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শিশু শ্রমিকদের চাহিদা বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের চাইল্ড স্পনসরশিপ কর্মকর্তা নিশিতা ইসলাম। তিনি বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শিশুশ্রমিকদের চাহিদা কমাতে নিয়োগকর্তাদের সচেতন করা দরকার।
এসডিজি অর্জনে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসন করতে হবে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা পুনর্মূল্যায়ন, কার্যকর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও এর বাস্তবায়নসহ সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলো কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ৮.৭: শিশুশ্রম নিরসনে অগ্রগতি ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা এসব কথা বলেন।আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সহযোগিতায় এ বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো। সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।শিশু শ্রমিকের সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে উল্লেখ করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাকিউন নাহার বেগম বলেন, তা সত্ত্বেও দেশের শিশুশ্রম পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। তবে সবাই মিলে কাজ করলে ২০২৫ সালের মধ্যে অবশ্যই দেশকে শিশুশ্রমমুক্ত করা সম্ভব। শিশুশ্রম নিরসনে মন্ত্রণালয় থেকে ২৮৪ কোটি টাকার প্রকল্পসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা পুনর্মূল্যায়ন, শিশু শ্রমিকদের হালনাগাদ ডেটাবেইস তৈরি, বিদ্যমান আইন নিয়ে আরও কাজ করা দরকার।গোলটেবিলে জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৫ লাখ শিশুর শিশুশ্রম নিরসন হয়েছে। এখনো দেশে ১৭ লাখ শিশু শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ১২ লাখের বেশি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে।আইএলওর এদেশীয় প্রতিনিধি টুমো পৌটিআইনেন বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসন করা সহজসাধ্য কাজ নয়। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে।লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রকল্পকে যথেষ্ট মনে করছেন না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের চাইল্ড লেবার মনিটরিং সেলের কো-চেয়ার সালমা আলী। এই আইনজীবী বলেন, গৃহকর্মীসহ সব ধরনের শিশু শ্রমিকের জন্য সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।
বিশ্বকাপে তামিম খারাপ করছেন, বলা যাবে না। প্রতিটি ম্যাচেই ইনিংসের শুরুটা করছেন। কিন্তু আউট হয়ে আসছেন বাজেভাবে। এ নিয়ে তাঁর মধ্যে রাজ্যের আক্ষেপ। তবে সমস্যাটা বুঝছেন বাংলাদেশের ওপেনার। এ আত্মোপলব্ধিই তাঁকে দেখাতে পারে ফিরে আসার পথ।‘পরের দুই ম্যাচে বিশ্রাম নিয়ে নেব।’ লিফটে উঠেই মুখে শুকনো হাসি ছড়িয়ে বললেন তামিম ইকবাল। কথার কথা। ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন তবু বিস্মিত, ‘কেন! পরের ম্যাচে তো সেঞ্চুরিও করতে পারো। তুমি না খেললে কীভাবে হবে!’ তামিমের শুকনো হাসি আরও বিস্তৃত হয়, ‘রান তো করছি ২৮-৩০। এটা যেকেউ করতে পারবে।’পরশু রাতে সাউদাম্পটনের হোটেল লবিতে সেলফিশিকারিদের পাল্লায় পড়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে তামিমকে। একের পর এক আবদার-অনুরোধ। ‘ভাই, এ আমার বোন’, ‘ও আমার ভাগনে।’ কিন্তু ছবি তোলার জন্য যাঁরা একে-ওকে ধরে এনে তামিমের পাশে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিলেন, তাঁরা যে কার কী, সেটিই বোঝা যাচ্ছিল না। অথচ তামিম মাত্রই মাঠ থেকে ফিরেছেন। তখনো কাঁধে ব্যাগ ঝুলছে। শরীর ক্লান্ত-বিধ্বস্ত। এরপরই লিফটে উঠে ওই কথা। ‘ক্লান্ত’ ও ‘বিধ্বস্ত’—ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে তামিম যেন এ দুটি শব্দেরই প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি ম্যাচেই ভালো শুরু পাচ্ছেন। এক ম্যাচে করলেন ফিফটি, আরেকটিতে ফিফটির কাছাকাছি গিয়ে আউট। সব ম্যাচেই আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত যে ব্যাটিংটা করছেন, সেটি নিয়ে তামিম অখুশি নন। কিন্তু মানতে পারছেন না হঠাৎ আউট হয়ে যাওয়াটা। হোটেলে, মাঠে, রেস্টুরেন্ট, যেখানেই দেখা হচ্ছে, চেহারায় রাজ্যের হতাশা। যেন গভীর এক গর্তে পড়ে এখন আর তা থেকে উঠতে পারছেন না। কথা বলতে গেলেই ঘুরেফিরে ওই প্রসঙ্গে চলে যান। ভাগ্যকে দোষ দিতে থাকেন। গত কয়েক দিনে তামিমের কাছে যতবারই জানতে চাওয়া হয়েছে, ‘কেমন আছেন’, উত্তর একটিই, ‘কেমন থাকব, ভাই? কষ্ট করে যখন উইকেটে সেট হচ্ছি, একটু মেরেটেরে ভালো খেলা শুরু করব, তখনই আউট হয়ে যাচ্ছি।’খারাপ সময় যে তামিমের জীবনে আগে আসেনি, তা নয়। শুধু বিশ্বকাপের কথা যদি বলেন, সেটি তো আরও দুঃস্মৃতি! এ যেন অদৃশ্যেরই ঠিক করা যে বিশ্বকাপ তামিমের জন্য নয়। ওয়ানডেতে যাঁর প্রায় ৭ হাজার রান, ১১টি সেঞ্চুরি আর ৪৭টি ফিফটি, এ নিয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেও এখনো তাঁর কোনো সেঞ্চুরি নেই। ফিফটি সব মিলিয়ে চারটি।ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত শুরুর পরও ২০০৭ সালে নিজের প্রথম বিশ্বকাপটা শেষ করেছেন মাত্র ১৯.১১ গড় নিয়ে। ২০১১ ও ২০১৫ সালের পরের দুই বিশ্বকাপে তামিম ৬টি করে ম্যাচ খেলে করেন ১৫৭ ও ১৫৪ রান। কোনোটিতেই গড় ৩০-এর বেশি নয়। আগের তিন বিশ্বকাপের সঙ্গে তুলনা করলে তাঁর জন্য বরং এবারের বিশ্বকাপটাই ভালো যাচ্ছে। বড় ইনিংস হয়তো খেলতে পারেননি, তবু রানের গড় এই ছয় ম্যাচে ৩৪.১৬। এক বিশ্বকাপে তাঁর মোট রানটাও (২০৫) এবারই প্রথম দুই শ অতিক্রম করল।কিন্তু তামিম এভাবে চিন্তা করবেন কেন? আর চিন্তা করলে তিনি তামিম ইকবালই-বা কেন! একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশের জয় মানেই তামিমের ব্যাট থেকে রানের স্ফুলিঙ্গ ছোটা। তামিম ঝোড়ো শুরু না দিলে বাংলাদেশের রান বেশি দূর এগোত না। অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দলে তামিমের ভূমিকা বদলেছে। বদলেছে ব্যাটিংয়ের ধরন। তাঁর কাছে দলের এখন এটাই চাওয়া, তিনি অন্তত ৩০ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকবেন। ইনিংসের মেরুদণ্ড হবেন। শুরুতেই ঝড় তুলতে হলে সে কাজ সঙ্গী ওপেনারের।ইংল্যান্ড ক্রিকেট বিশ্বকাপে দলে নিজের ভূমিকাটি ঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না বলেই তামিমের যত আক্ষেপ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তাদের সেরা খেলাটা খেলছে এবার। সাকিব আল হাসান একটার পর একটা সেঞ্চুরি আর ফিফটি করে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের দৌড়ে সবার আগে। পরশু তো বোলার সাকিবও আপন আলোয় উদ্ভাসিত হলেন আরও একটি ‘প্রথম’-এর গৌরবমালা পরে। বিশ্বকাপে এর আগে বাংলাদেশের কোনো বোলার এক ম্যাচে ৫ উইকেট পাননি। মুশফিকুর রহিম অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন, পরশু করলেন ৮৩। তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরাও তাঁদের কাছে দলের দাবি মিটিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। পারছেন না শুধু তামিম। নিজেকে নিজেই বারবার জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমি কী করছি!’বাংলাদেশ দলের সেমিফাইনাল-যাত্রার স্বপ্নে এখনো নিজের প্রত্যাশা মেটানো ভূমিকা রাখতে না পেরে তামিমের হতাশা, ‘দলে সবাই কিছু না কিছু করছে। শুধু আমি ছাড়া। হয়তো যতক্ষণ খেলছি, ভালো খেলছি। কিন্তু আমার তো আরও কিছু করা দরকার।’তামিম কি জানেন, এটাই তাঁর শক্তি? আজ যদি খারাপ সময়টা তাঁর না হয়ে দলের অন্য কারও হতো এবং তিনিও একই আক্ষেপে পুড়তেন, সবার আগে তামিমই ছুটে যেতেন সেই সতীর্থের কাছে। তাঁকে বলতেন, ‘আরে ধুর! খারাপ সময় তো যায়ই। আর সময় খারাপ তো না! তুই তো ভালো শুরু করছিস। বুঝতেও পারছিস সমস্যাটা কোথায়। নিজের সমস্যা নিজে বুঝলে আর কিছু লাগে নাকি!’তামিমের বেলায়ও এ কথাটাই সত্যি। আত্মোপলব্ধিই তাঁকে দেখাতে পারে ফিরে আসার পথ। সেটি বার্মিংহাম থেকেই নয় কেন!
মৃত্যুর পর পাঁচ বছর পূর্ণ হতে চলছে। এই পাঁচ বছর ধরেই খোকন ওরফে খোকন নন্দী ওরফে খোকন চৌধুরী ওরফে খোকা চৌধুরী ওরফে রাজীব চৌধুরীর লাশ মর্গের ডিপ ফ্রিজেই রয়েছে। দুই ধর্মের দুই স্ত্রী স্বামীর লাশের দাবিদার। আদালত এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত দেননি—খোকন নন্দী ওরফে খোকন চৌধুরী কোন ধর্মের ছিলেন।আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেকোনো এক স্ত্রীর কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হবে। এরপরই ধর্মীয়ভাবে লাশের সৎকার বা কবর দেওয়া হবে।২০১৪ সালের ১৫ জুন প্রায় ৭০ বছর বয়সী খোকনকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ২৬ জুন তিনি মারা যান। তাঁর লাশ প্রথমে বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়। সেখানে দীর্ঘ মেয়াদে লাশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বারডেম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানায় আদালতে। বছরটির ২৩ অক্টোবর সহকারী জজ আদালত (দেওয়ানি ২৫২/১৪ ঢাকা) এক আদেশে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় ও তদারকিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মরচুয়ারিতে লাশটি সংরক্ষণের আদেশ দেন। ১৫ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ লাশটি গ্রহণ করে। এখন পর্যন্ত লাশটি সেখানেই আছে।জানা গেছে, খোকনের প্রথম স্ত্রীর নাম মীরা নন্দী ও ছেলে বাবলু নন্দী। ১৯৮০ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে হিন্দু থেকে মুসলিম হন তিনি। ১৯৮৪ সালে খোকন হাবিবা আকতার খানমকে বিয়ে করেন। গত মঙ্গলবার কথা হলো হাবিবা আকতার খানমের সঙ্গে। তিনি বললেন,‘বুধবার (২৬ জুন) আমার স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকী। পাঁচ বছর হতে যাচ্ছে স্বামীর লাশ ফ্রিজে পড়ে রয়েছে। আদালত এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারলেন না—লাশ কে পাবেন। ওই পক্ষ আদালতের কাছ থেকে বারবার সময় চেয়ে নিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে। প্রায় ছয় মাস আগে মর্গে গিয়ে লাশ দেখে এসেছি, লাশ গলে যাচ্ছে। ওই পক্ষ কিন্তু এখন পর্যন্ত লাশ দেখতেও যায়নি। তারা চাইছে, সময় নষ্ট করতে করতে আমি মারা গেলে সম্পত্তি ভোগ দখল করবে। আমার কোনো সন্তান নেই, ফলে তাদের আর কোনো সমস্যাই হবে না। আমাদের যে ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে হয়েছিল, সে–সংক্রান্ত নথিসহ বিভিন্ন সাক্ষী আদালতের কাছে হাজির করেছি।’রাজধানীর একটি কলেজ থেকে অবসর নেওয়া শিক্ষক হাবিবা আকতার অভিযোগ করেন, ‘স্বামী বিভিন্ন সময় বলেছেন, তাঁর একটি মেয়ে আছে। কখনো ছেলে আছে বলেননি। স্বামীর মৃত্যুর পর এখন ছেলেও হাজির হয়েছেন। ফার্মগেটের ক্যাপিটাল সুপার মার্কেটসহ স্বামীর অনেক সম্পত্তি ছিল, তবে আসলেই সে সম্পত্তির পরিমাণ কত, তা জানি না। স্বামী নিজে থেকেও কিছু বলেননি বা আমার নামে কিছু দিয়ে যাননি। তবে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্বামী তাঁর আগের পক্ষের স্ত্রী বা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। হাসপাতালে মারা যাওয়ার আগে স্বামীর এক ভাই ওই পক্ষকে খবর দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বারডেম হাসপাতালে লাশ নিয়ে টানাটানি শুরু হলে রমনা থানা থেকে পুলিশ আসে। তারপর তো এত ঘটনা।’খোকন ওরফে খোকন নন্দী ওরফে খোকন চৌধুরীর ছেলে বাবলু নন্দীকে ফোন করা হলে তিনি প্রতিবেদকের পরিচয় জানার পর জানান, তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন। এক ঘণ্টা পর কথা বলতে পারবেন। এক ঘণ্টা পর ফোন দিলে তাঁর স্ত্রী পরিচয়ে একজন ফোন ধরে জানান, বাবলু নন্দী ফোন বাসায় রেখে বাইরে গেছেন।’বারডেম হাসপাতালে খোকনের লাশ হিমঘরে রাখা বাবদ বিল হয়েছিল ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। আদালতের আদেশে যে স্ত্রী স্বামীর লাশ পাবেন, তাঁকেই এ বিল পরিশোধ করতে হবে। এ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে হাবিবা বললেন, ‘লাশ পেলে এত টাকা আমি কোথা থেকে পরিশোধ করব, তাও এক বিরাট চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ক্ষমতার দাপটে স্বামীর ভাই, আগের পক্ষের স্ত্রী ও অন্যরাই তাঁর সম্পত্তি ভোগ দখল করছেন।’ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বললেন, ‘আইনি জটিলতা নিরসন না হলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা লাশ সংরক্ষণ করছি। তবে দীর্ঘদিন লাশ থাকলে তা কমবেশি নষ্ট হয়। আর এই লাশের জন্য আমাদের দৈনন্দিন কাজেও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। আদালত যে আদেশ দেবেন, আমরা তা–ই পালন করব।’
আপনি যদি কুষ্টিয়ার গ্রামাঞ্চলের লাউ, মিষ্টিকুমড়া, করলা, লালশাক, পালংশাকের রান্না তরিতরকারি খেয়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন, এমন স্বাদের সবজি আর হয় না। শুধু তা-ই না, হাতের কাছে পাবেন বেবি তরমুজ। দেখতে ঘন সবুজ। আর ভেতরে টকটকে লাল। এবং অসম্ভব মিষ্টি। একজন কৃষক বললেন, রাসায়নিক সার বা কীটনাশক-দূষণ নেই। জৈব সারই বেশি ব্যবহার করেন। সে জন্যই এত স্বাদের! সাখাওয়াত সাহেব নিজে চাষাবাদ করেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের গ্রামের খামারে পাবেন টার্কি। ওই যে দেখুন, ওই বাড়ির আঙিনায় তারের বেড়ায় তৈরি একটা ছোট্ট ঘরে ডজনখানেক টার্কি। স্বাদ অসাধারণ। মুরগির গোশতের চেয়েও মজা। দামে সস্তা। বাজারে কাটতি ভালো। ক্রেতার লাভ। খামারিরও লাভ। আবার ওই যে দেখুন ওই পাশে গড়ে উঠেছে কুষ্টিয়া অঞ্চলের বিশ্বখ্যাত ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের খামার। এর মাংস যেমন সুস্বাদু, চামড়া তেমনি বিশ্ববাজারে সমাদৃত। খামারটি আসলে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের মূল প্রজাতির ছাগল প্রজননকেন্দ্র। সেখানে গবেষণাও চলে। এদিকে আছে ধানের আবাদ। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) সহযোগিতা দিচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কুষ্টিয়ায় সুপরিচিত বেসরকারি সংস্থা দিশা।’কুষ্টিয়ার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখলাম, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এখন নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কত আশাবাদী। কত বৈচিত্র্যময় ও বহুমাত্রিক উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে গ্রামগুলো। মূল শহরের কাছেই। মিরপুর উপজেলার চরপাড়া, বারুইপাড়া, বলিদাপাড়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষক এখন শুধু চাষাবাদ আর খামারেই ধনী না, শিক্ষা-চিকিৎসা, নিঃস্ব প্রবীণদের বিশেষ সঞ্চয় প্রকল্প—সবকিছুই তাঁদের হাতের কাছে। এই গ্রামগুলোতে তামাক চাষই ছিল প্রধান। এখনো তা-ই, তবে কমতে শুরু করেছে। সেখানে কাজ শুরু করেছে দিশা। ওরা গ্রামের কৃষকদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। পাশাপাশি পিকেএসএফের সহায়তায় কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মানবকেন্দ্রিক কর্মসূচি, যা সমৃদ্ধি নামে পরিচিত।এটা হলো মূলত দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে গরিব পরিবারগুলোর সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কার্যক্রম। গ্রামের একজন সাধারণ গরিব কৃষক বা তাঁর পরিবারের সদস্য এই সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় সব ধরনের সেবা পান। মায়ের পেটে ভ্রূণাবস্থা থেকে শুরু করে তার জন্ম, বড় হওয়া, তার পড়ালেখা, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করার দক্ষতা অর্জন—সবকিছুই সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত হয়। এটা দান-খয়রাতি কার্যক্রম নয় বা শুধু একতরফা ঋণ কর্মসূচি নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে গরিব পরিবারের সদস্যের সাধ্যের আওতায়, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে নিজস্ব সঞ্চয়ের সঙ্গে ঋণসহায়তা যোগ করে উৎপাদনশীল কাজে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়াই হলো সমৃদ্ধি কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া থেকে নানা কারণে ঝরে পড়া শিশুদের শিক্ষা অব্যাহত রাখারও কর্মসূচি রয়েছে। বলা যায়, গ্রামের কেউ এখন আর শিক্ষাবঞ্চিত নয়। এটা বড় সাফল্য। ২০০-এর বেশি ইউনিয়নে সমৃদ্ধি কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। দিশা মিরপুর উপজেলায় এ কর্মসূচি চালাচ্ছে তিনটি ইউনিয়নে। সমৃদ্ধি কর্মসূচি প্রতিটি ইউনিয়নে বড় সাফল্য অর্জন করেছে। গ্রামের গরিব মানুষ নিজেদের সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে আস্থাশীল হয়ে উঠেছে। ক্রমেই এই কর্মসূচি দেশের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।ওই অঞ্চলের কৃষক আগে শুধু তামাক চাষ করতেন। তামাক চাষের কারণে গ্রামের সবাই যে ভয়াবহ বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়, সে ব্যাপারে কৃষকেরা সচেতন ছিলেন না। তামাক চাষের কারণে ফুসফুস নষ্ট হয়, অনেকে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে। স্ত্রী, ছেলেমেয়েরাও আক্রান্ত হয়। গ্রামে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাহলে কেন গ্রামের মানুষ তামাক চাষে যায়? এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আসলে কৃষক সবই জানেন। কিন্তু তামাক চাষে তাৎক্ষণিক লাভ বেশি বলে তাঁদের একটি ধারণা। তাই তাঁরা তামাক চাষে যান। মহাজন অগ্রিম টাকা দিয়ে কৃষকদের তথাকথিত চুক্তির জালে বাঁধেন। কৃষক ফসল ওঠার আগেই নগদ টাকা পান। এটাই তাঁদের আকর্ষণ। কিন্তু পরে উৎপন্ন তামাক তাঁরা নির্দিষ্ট মহাজনের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য থাকেন। তাঁদের পণ্যের দাম নির্ধারণের সময় শুরু হয় টালবাহানা। নিম্ন মান, মধ্যম মান প্রভৃতি বিভিন্ন ভাগে ফেলে তাঁদের উৎপন্ন তামাকের দাম কমিয়ে ধরেন। তখন আর কৃষকের কোনো ওজর-আপত্তি খাটে না। এভাবে কৃষক ঠকেন। আর ওদিকে তামাক চাষের কারণে অসুখ-বিসুখে জর্জরিত হন।দিশা ও পিকেএসএফের সহায়তায় ওই এলাকার কৃষকেরা বিকল্প লাভজনক সবজি চাষ শুরু করেন। তাঁদের উন্নত মানের বীজ, সার, সেচ প্রভৃতির ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় দিশা। এখন তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে সবজির চাষাবাদ এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাঁদের স্ত্রীদের কাজের সংস্থানও করা হয়। আগে তাঁদের দিন-রাত তামাক পাতা আগুনের তাপে শুকাতে হতো। চোখ নষ্ট হতো। ফুসফুস আক্রান্ত হতো। এখন তাঁরা ওই সব অসুখ-বিসুখমুক্ত। তাঁদের হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালনের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত এলাকার প্রায় ২০০ কৃষক তামাক চাষ থেকে সরে এসে বিকল্প লাভজনক চাষের কাজে যুক্ত হয়েছেন।তামাক চাষের কারণে ইতিমধ্যে বিকলাঙ্গ ও প্রতিবন্ধী হয়ে কৃষক পরিবারের যারা ধুঁকে ধুঁকে মরছিল, তাদের সুচিকিৎসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র। সেখানে বৃদ্ধ ও অসুস্থ মা-বাবা, প্রসূতি নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়। এই কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য হলো পরিপূরক প্রকল্প গ্রহণ ও সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন। একদিকে লাভজনক চাষাবাদ, অন্যদিকে টার্কি পালন। ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটের উৎকর্ষ সাধন ও বাণিজ্যিকভাবে গরু-ছাগল পালন প্রভৃতি। অন্যদিকে শিক্ষা-স্বাস্থ্য, গরিব মানুষকে উপার্জনক্ষম করে তোলার কাজ।আরেকটি দিক হলো, এই বিশাল এলাকায় গ্রামের পর গ্রামজুড়ে রয়েছে পাকা রাস্তা। এটা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগ। দিশা সেখানে স্থানীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি হয়েছে। এলাকার কৃষক এখন সহজে তাঁদের উৎপন্ন পণ্য বাজারজাত করতে পারেন। অন্যদিকে পুরো এলাকায় রয়েছে বিরতিহীন বিদ্যুৎ। উন্নয়নের চাবিকাঠি। বিদ্যুৎ ছাড়া এত বড় বড় প্রকল্প সফল করা কঠিন।পিকেএসএফের সমৃদ্ধি কর্মসূচি একটি সফল উদ্যোগ। দিশা ও অন্যান্য এনজিওর মাধ্যমে এই প্রকল্প দেশের সব গ্রামে নিয়ে যাওয়া দরকার।আব্দুল কাইয়ুম: প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদকquayum@gmail.com
স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাজ্যে বেড়াতে গিয়ে বাংলাদেশ দলের জয়ে সাক্ষী হলেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস। গত সোমবার যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটনে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের খেলা গ্যালারিতে বসে উপভোগ করেন তিনি ও তাঁর পরিবার। শুরুতে নিজ দেশের দলের ব্যাটিং শেষে সংগ্রহ নিয়ে টেনশনে ছিলেন এই নায়ক। আফগানিস্তানের ব্যাটিং শুরুর পর তিন উইকেট পড়লে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পান বলে লন্ডন থেকে প্রথম আলোকে জানান ফেরদৌস।প্রতিবছরই পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যান ফেরদৌস। এবার ১৫ জুন গেছেন যুক্তরাজ্যে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের একটি খেলা মাঠে বসে দেখার ইচ্ছে ছিল তাঁর।বাংলাদেশ দলের এমন জয়ে ফেরদৌস ভীষণ উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ‘এ এক অসাধারণ অনুভূতি। যাঁরা দেখেছেন শুধু তাঁরাই উপলব্ধি করতে পারেন। ভাবিনি লন্ডনে এসে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা মাঠে বসে দেখব। যখন দেখতে গেলাম, প্রত্যাশিত খেলা না হওয়ায় খারাপ লাগছিল। তবে আমার মধ্যে একটা অদ্ভুত আত্মবিশ্বাস কাজ করেছিল, বাংলাদেশ জয় বের করে আনবেই। সাকিব আল হাসান যেভাবে উইকেট নেওয়া শুরু করল, তখনই নিশ্চিত হয়ে যাই জয় আমাদের সুনিশ্চিত।’মাঠে বসে এর আগেও বাংলাদেশ দলের ক্রিকেট খেলা দেখেছেন ফেরদৌস। সেই স্মৃতি মনে করে এই নায়ক বলেন, ‘শুনতে যদিও অন্য রকম লাগবে, তারপরও বলব—যতবারই বাংলাদেশ দলের খেলা মাঠে বসে উপভোগ করেছি, জয়ী হয়েই ফিরেছি।’ফেরদৌস বলেন, ‘পুরো মাঠের মধ্যে হাজার হাজার বাঙালি। চারদিকে লাল–সবুজ পতাকা উড়ছে। এবারের ভ্রমণটা সত্যিই কখনো ভোলার নয়। ভীষণ আনন্দ নিয়ে মাঠ ছেড়েছি। আজ (মঙ্গলবার) তো লন্ডনে বেশ ফুরফুরে মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছি।’বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে গাজী টেলিভিশনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে লন্ডনে আছেন র‌্যাম্প মডেল ও উপস্থাপিকা জান্নাতুল পিয়া। খেলা শেষে ফেরদৌসের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়।আগামীকাল বৃহস্পতিবার ছুটি কাটিয়ে লন্ডন থেকে পরিবার নিয়ে ঢাকায় ফিরবেন ফেরদৌস।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে নিজেদের বিশ্বকাপ অভিযান একটু কঠিন করে ফেলেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। সাবেক ইংল্যান্ড তারকা কেভিন পিটারসেন বলেছেন, ইংল্যান্ডের অধিনায়ক এউইন মরগান অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্কের মুখোমুখি হতে ভয় পান!অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসারদের দাপটে গতকাল উড়ে গেছে ইংল্যান্ড। মিচেল স্টার্ক-জেসন বেহরেনডর্ফদের সামলানোর কোনো উপায় জানা ছিল না ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের। অধিনায়ক এউইন মরগান নিজেও ছিলেন নড়বড়ে। অধিনায়কের এই হতোদ্যম অবস্থা দেখে হতাশ হয়েছেন সাবেক তারকা কেভিন পিটারসেনের। অস্ট্রেলীয় পেস তারকা মিচেল স্টার্ককে নাকি মরগান ভয় পেয়েছিলেন বলে কটাক্ষ করেছেন পিটারসেন। ম্যাচের শুরু থেকেই নতুন বলে আগুন ঝরাচ্ছিলেন স্টার্ক আর বেহরেনডর্ফ। মরগান যখন ক্রিজে আসেন, ১৫ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড কাঁপছে। এ অবস্থায় স্টার্কের মুখোমুখি হয়েছিলেন মরগান। কিন্তু পিটারসেন একেবারেই পছন্দ করেননি, মরগান যেভাবে স্টার্ককে খেলেছেন, সে ব্যাপারটি। টুইটারে নিজের হতাশার জানিয়েছিলেন, ‘হায় হায়! মরগান তো স্টার্ককে ভয় পাচ্ছে! এটা খুবই ভয়ের কারণ! স্টার্কের প্রথম বলেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্কোয়ার লেগে মারছে, যা দেখে আমার মনে হচ্ছে, আগামী এক সপ্তাহে ইংল্যান্ডের ভালোই সমস্যা হতে পারে। আশা করব যেন না হয়, কিন্তু আমি এর আগে কোনো অধিনায়ককে এভাবে নিজের দুর্বলতা দেখিয়ে দিতে দেখিনি।’ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক মরগানকে পিটারসেনের টুইট পড়িয়ে শোনান। সবকিছু শুনেটুনে মরগান নিজের বিরক্তই প্রকাশ করেছে, ‘নাহ্‌, পিটারসেন যা বলেছে, তার সঙ্গে আমি একমত নই!’ তবে ম্যাচে মরগান যা করেছেন, তাতে পিটারসেনের কথা বিশ্বাস না করে উপায় কোথায়?সেই স্টার্কের বলেই নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন মরগান। কোনো রকমে সাত বল খেলে চার রান করার পর স্টার্কের বলে কামিন্সের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁ ধান ও আম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। একসময় এ জেলায় পাট চাষ হতো ব্যাপক। কিন্তু ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এ জেলার কৃষকেরা।কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পাট চাষে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। এ কারণে তাঁরা পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁ জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। সেই জায়গায় চাষ হয়েছে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ এ বছর পাট চাষে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। জেলার ১১ উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলায় (নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার) চলতি বছর কোনো পাটের আবাদ হয়নি। প্রতি হেক্টর জমিতে ১১ দশমিক ৪২ বেল হিসেবে চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ২৩৩ বেল। ২০১৮ সালে নওগাঁয় পাটের আবাদ হয়েছিল ৬ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত হয়েছিল ৮০ হাজার ১৪০ বেল পাট। ২০১৭ সালে জেলার পাটের আবাদ হয়েছিল ৮ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। পাট উৎপাদিত হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ বেল।জেলায় সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়ে মান্দা উপজেলায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর মান্দায় পাটের আবাদ কমেছে। চলতি মৌসুমে পাটের চাষ হয়েছে ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। যেখানে গত বছর চাষ হয়েছিল ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে।মান্দা উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক সুলতান আহমেদ বলেন, গত বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে তাঁকে লোকসান গুনতে হয়েছে। তাই এ বছর তিনি পাট চাষ করেননি। তিনি আরও বলেন, পাট চাষে অনেক শ্রম দিতে হয়। উৎপাদন খরচও বেশি। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে বীজ বপন থেকে শুরু করে পাটের আঁশ ছড়িয়ে শুকানো পর্যন্ত ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এক বিঘা জমিতে ভালো ফলন হলে ১০ মণ পাট হয়। এই হিসাবে এক মণ পাটের দাম ২ হাজার টাকার বেশি হওয়া দরকার। কিন্তু গত বছর পাটের দাম ছিল ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত।নওগাঁ সদর উপজেলার বাচাড়ীগ্রামের কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, ‘পাট চাষের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পাট চাষে তেমন আগ্রহ নেই। তারপরেও আমরা চাষি মানুষ। চাষ করতে হয়। এ বছর ৪০ শতক জমিতে পাটের আবাদ করেছি। দাম ভালো পেলে আগামী বছর আরও বেশি পাটের আবাদ করব। আর লোকসান হলে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।’এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনোজিৎ কুমার মল্লিক বলেন, কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহ হারানোর পেছনে ন্যায্যমূল্য না পাওয়া অন্যতম কারণ। এ ছাড়া আরও অনেক কারণ রয়েছে; যেমন এ বছর পাটের বীজ বপণের সময় মে মাসে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে নিচু জমিগুলোতে পানি জমে যাওয়ায় অনেক কৃষক বীজ বপণ করতে পারেননি। তা ছাড়া নওগাঁতে পাট জাগ দেওয়ার জায়গার ভীষণ সংকট। এসব কারনে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।