content
stringlengths
1
63.8k
দুর্দান্ত গতিতে ছুটছেন কিয়ারা আদভানি। শহীদ কাপুরের সঙ্গে কবির সিং নিয়ে এক শ কোটি ক্লাবের দরজায় টোকা মারছেন এই বলিউড অভিনেত্রী। দিন কয়েকের মধ্যেই ঢুকে পড়বেন সেখানে, বক্স অফিসে এমনই তরতরিয়ে চলছে ছবিটি। সেই সঙ্গে কিয়ারার বলিউড ক্যারিয়ারের পালেও সুবাতাস বইছে। এরই মাঝে নেটফ্লিক্সের আরও একটি ছবি বগলদাবা করতে চলেছেন। প্রযোজক সেই করণ জোহর।‘সেই’ শব্দটির একটা মানে আছে। ২০১৪ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক হলেও তাঁর খ্যাতির খাতা খোলে ২০১৮ সালে। নেটফ্লিক্সের ছবি লাস্ট স্টোরিজ-এ করণ জোহরের মাধ্যমেই পরিচিতি পান তিনি। এই ছবি দিয়ে একেবারে বলিউডের আলোচনার বিষয়ে পরিণত হন। যদিও ছবিটির একটি দৃশ্য নিয়ে বেজায় বিতর্ক আছে, তাতে কী? কিয়ারার জনপ্রিয়তার পারদ তো চড়তে শুরু করেছে। এবার করণেরই আরেকটি ছবিতে নাম লেখাতে চলেছেন এই সুন্দরী। এটিও নেটফ্লিক্সের প্রযোজনা। নাম গিল্টি।নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া গতকাল জানায়, লাস্ট স্টোরিজ-এ অসাধারণ অভিনয়ের পর কিয়ারা ফিরছেন গিল্টি দিয়ে। এটি প্রযোজনা করছে করণ জোহরের একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ধর্মাটিক। ছবিটি পরিচালনা করবেন রুচি নারাইন। একটি ঘটনাকে ভিন্ন ভিন্ন চোখ দিয়ে দেখার নিরীক্ষামূলক গল্প নিয়ে ছবির কাহিনি।এই মুহূর্তে কিয়ারার সেরা সাফল্য কবির সিং। ছবিটি বক্স অফিসে বেশ ভালো আয় করছে। ছিলেন কলঙ্ক ছবিতে অতিথি চরিত্রে। এ ছাড়া কিয়ারার ঝুলিতে আছে গুড নিউজ, লক্ষ্মী বোম্ব, শেরশাহ ও ইন্দু কি জওয়ানি ছবিগুলো। সূত্র: বলিউড হাঙ্গামা
২০৩০ সাল নাগাদ সারা বিশ্বে শিল্প খাতের দুই কোটি কর্মসংস্থান চলে যাবে রোবটের হাতে। এই খাতে চাকরি হারানো মানুষগুলো সেবা খাতে জায়গা খুঁজে পেতেও প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবেন। কারণ, সেবা খাতেও অটোমেশনের কারণে কর্মসংস্থান সংকুচিত হবে।অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।অবশ্য অটোমেশনের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও চাকরির ক্ষেত্র বাড়বে বলে মনে করছে সংস্থাটি। সংস্থাটি মনে করছে, যে আয়–বৈষম্যের সৃষ্টি হবে, তা প্রতিরোধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।গবেষণায় বলা হচ্ছে, একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট ১ দশমিক ৬টি কর্মসংস্থান নিয়ে নেবে। তা ছাড়া যেসব অঞ্চলের কর্মীরা বেশি অদক্ষ, তাঁদের ওপর প্রভাব পড়বে বেশি।অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের এই গবেষকেরা বলছেন, যেসব অঞ্চলে কর্মীরা বেশি অদক্ষ, এ কারণে অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ছে ও বেকারত্ব বাড়ছে, তাঁদের রোবটের কাছে চাকরি হারানোর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। শিল্প খাতে যাঁরা চাকরি হারাবেন, তাঁরা যোগাযোগ, অবকাঠামো, ব্যবস্থাপনাসহ নানা ধরনের প্রশাসনিক কাজ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে অটোমেশনের কারণে তাও পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। রোবটের কাছে দক্ষ অঞ্চলের মানুষের চেয়ে অদক্ষ অঞ্চলের মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা দুই গুণ বেশি। এর ফলে অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং রাজনৈতিক মেরুকরণ বৃদ্ধি পাবে, যা এখনই অনেক বেশি।অনেক প্রতিবেদনে দেখা যায়, রোবট ও অটোমেশনের কারণে সব ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান হারাবে মানুষ—এমন অশনিসংকেত দেওয়া হয়। তবে এই প্রতিবেদন সেভাবে বিষয়টিকে বলা হয়নি। বরং রোবটের কারণে অর্থনৈতিক প্রভাবের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করেছে তারা। গবেষকেরা বলছেন, অটোমেশনের কারণে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, যার ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে। অর্থাৎ, যে পরিমাণ চাকরি হারানোর ভয় থাকছে, সেই পরিমাণ নতুন চাকরি সৃষ্টির উপায়ও থাকছে। এখন বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো সমাজের মধ্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি না করে নতুন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা। এ ক্ষেত্রে চাকরির পুনরাবৃত্তির ঝুঁকির বিষয়ে সরকারকে নজর রাখতে হবে।২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে শিল্প খাতে প্রায় ১৭ লাখ কর্মসংস্থান রোবটের হাতে চলে গেছে। যার মধ্যে ইউরোপে ৪ লাখ, যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৬০ হাজার, চীনে সাড়ে পাঁচ লাখ। গবেষণা সংস্থাটি মনে করছে, সবচেয়ে বেশি অটোমেশন হবে চীনে। ২০৩০ সাল নাগাদ এ অঞ্চলে ১ কোটি ৪০ লাখ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট কাজ করবে।
নির্বাচনের শুরু থেকেই নিজ দলের একাংশ প্রতিবাদ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিরোধিতা করেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় অসহযোগিতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল হবিগঞ্জ পৌরসভার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমানের। তবে সব বাধা কাটিয়েই তিনি ব্যক্তি ইমেজের কারণে জয়ী হয়েছেন বলে মনে করছেন এলাকার ভোটাররা।হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে উপনির্বাচন গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে চারজনই ছিলেন আওয়ামী লীগের। যে কারণে এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমান ১৩ হাজার ২০৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নীলাদ্রি শেখর পুরকায়স্থ পান ৫ হাজার ৫৮৭ ভোট। দুজনের ভোটের ব্যবধান ৭ হাজার ৬২১।এ নির্বাচনে শুরু থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমানের বিরোধিতা করে আসছিল তাঁর দলের একটি অংশ। এমনকি তারা রাজপথে প্রতিবাদ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহারের দাবি জানায়। সেখানে সফল হতে না পেরে দলের এ অংশটি বিদ্রোহী প্রার্থী হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নীলাদ্রি শেখর পুরকায়স্থকে সমর্থন দেয় এবং তাঁর পক্ষে কাজ করে সরাসরি। এসব কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমান নির্বাচনে দলের কাউকে পাশে পাননি। নিজের ব্যক্তিগত কিছু সমর্থক ও এলাকার নির্দলীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে মাঠে লড়াই করেন। অবশেষে সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি উল্লেখিত ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। তাঁর বিপরীতে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মর্তুজ আলী এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসলাম তরফদার। এ তিনজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।হবিগঞ্জ পৌরসভার ভোটার জসিম সরকার বলেন, মিজানুর রহমানের রাজনীতি বেশি দিন না হলেও তাঁর কোনো বদনাম নেই। তিনি সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িত করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন কম সময়ে। ভোটার আবদুর রউফ বলেন, মিজান এই প্রথম জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তা নয়। এর আগে তিনি একই পৌরসভার কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া গত নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী প্রার্থী জি কে গউছের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় হন।মিজানুর রহমান এলাকাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাঁর পরিষদের মেয়াদ অত্যন্ত কম। ১৪ থেকে ১৫ মাস। এ সময়ের ভেতর প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও তিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাবেন।হবিগঞ্জ পৌরসভা মেয়র জি কে গউছ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করে। সোমবার উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার ও বিশ্বকাপের টিভি ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপের মতে, সাকিব আল হাসানের মতো অলরাউন্ডারদের অর্থমূল্যে পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, এমন অলরাউন্ডারদের সব সময় পাওয়াও সম্ভব নয় কোনো দলের পক্ষে।সাকিব আল হাসান একটি ম্যাচ না খেললেই বোঝা যায়, তিনি বাংলাদেশ দলের কত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দেশের ক্রিকেটের অনেকেই বলেন, সাকিব হচ্ছেন দুজন খেলোয়াড়ের সমান—সাকিবের গুরুত্ব বোঝাতে এই একটি বাক্যই যথেষ্ট। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই সাকিব নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনি দলের জন্য কত বড় সম্পদ। বাংলাদেশের তিন জয়ের প্রতিটিতেই তাঁর দারুণ ভূমিকা। বাংলাদেশ যে ম্যাচগুলো জেতেনি, সেগুলোতেও সাকিব ছিলেন তাঁর মতো করেই। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাকিব যেন নতুন করে বুঝিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ক্রিকেটারের এ যুগে একটা দলে অলরাউন্ডারের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু।সাকিবের মতো অলরাউন্ডার কেবল যে বাংলাদেশ দলেরই নয়, যেকোনো দলের জন্যই অমূল, সেটি বলেছেন সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার ও বর্তমানের ধারাভাষ্যকার ইয়ান বিশপ, ‘প্রতিটি দলই একজন সাকিব আল হাসানকে চায়। কিন্তু সাকিবের মতো অলরাউন্ডাররা গাছ থেকে পড়ে না।’বাংলাদেশ দলে সাকিবের যে অবদান, সেটি অর্থমূল্যে কেনা সম্ভব নয় বলেও মনে করেন বিশপ, ‘সাকিবের মতো অলরাউন্ডারদের টাকা দিয়ে কেনা যায় না। আপনি দোকানে গিয়েই একজন সাকিবকে কিনে আনতে পারবেন না। প্রতিটি দলই বিশেষজ্ঞদের কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে কিন্তু দলে অলরাউন্ডারদের জায়গা সব সময়ই অন্য রকম।’সাকিবের জায়গাটা যে অন্য রকম, সেটি বাংলাদেশের চেয়ে আর ভালো কোন দল বোঝে!
দেশীয় ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ৬৪ প্রজাতির মাছ সময়ের বিবর্তনে বিলুপ্তপ্রায়। গবেষণা করে ইতিমধ্যে বিলুপ্তপ্রায় ১৯ প্রজাতির মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও চাষপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ কারণে বাজারে পাবদা, গুলশা, ট্যাংরা, গুতুম, মেনি, মহাশোল, কুচিয়া, দেশি পুঁটি ইত্যাদি মাছ সহজলভ্য হয়েছে।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান গবেষকেরা। ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার ‘মৎস্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী এ কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।মাছ উৎপাদনে সফলতার বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি মাছ চাষে ফসলি জমি নষ্ট না করার পরামর্শ দেন গবেষকেরা। তাঁরা জানান, দেশে এখন ৪২ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপন্ন হচ্ছে। এর মধ্যে উন্মুক্ত জলাশয় (নদী, বিল, হাওর) থেকে ২৫ ভাগ, বদ্ধ জলাশয় (পুকুর, ডোবা) থেকে ৫৭ ভাগ এবং বাকি অংশ সমুদ্র থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। দেশে ৮ লাখ হেক্টর বদ্ধ জলাশয়ের বাইরে আর কোনো ফসলি জমি নষ্ট করে মাছ চাষ করা ঠিক হবে না। বিদ্যমান নদী ও পুকুরগুলোতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়াতে হবে।ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মো. জসিমউদ্দিন খান। বিভিন্ন গবেষণা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নিয়ে আলোকপাত করেন ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. নূরুল্লাহ ও মো. খলিলুর রহমান এবং মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এইচ এম কোহিনুর।মহাপরিচালক বলেন, বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলোকে খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি মাছের প্রক্রিয়াজাত নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অপ্রচলিত মৎস্যসম্পদ হিসেবে কাঁকড়া, কুচিয়া ও সমুদ্র-শৈবাল নিয়ে গবেষণায় সফল হওয়া গেছে। তা ছাড়া ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়াতে বেশ কিছু গবেষণা চলমান।
শেরপুরে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর এক কলেজছাত্রীকে (১৯) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিউল ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালে ছাত্রীটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। ছাত্রীটি স্থানীয় একটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরপুর শহরের এক সবজি বিক্রেতার মেয়ে।গত রোববার রাতে কুমিল্লা ইপিজেডের উমাইসার এলাকা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিউল পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের আবদুল লতিফ সর্দারের ছেলে। সোমবার সন্ধ্যায় বিচারিক হাকিম মো. শরীফুল ইসলাম খানের নির্দেশে রবিউলকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।মেয়েটি বর্তমানে তাঁর মা–বাবার কাছে রয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁর বাবা বাদী হয়ে গ্রেপ্তার রবিউলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সদর থানায় মামলা করেছেন।পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চার মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে রবিউলের সঙ্গে ছাত্রীটির পরিচয় হয়। এরপর তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছাত্রীটির কাছে রবিউল নিজেকে আইটি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং কুমিল্লা ইপিজেডে চাকরি করেন বলে জানান। এরপর ১৩ মার্চ ছাত্রীটি শেরপুর শহরের বাসা থেকে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার উদ্দেশে বের হলে রবিউল তাঁকে অপহরণ করে কুমিল্লায় নিয়ে যান। কুমিল্লা শহরের একটি ভাড়া বাসায় রেখে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন রবিউল। অপহরণের পরদিন মেয়েটির বাবা তাঁর মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বিভিন্নভাবে জানতে পারেন, রবিউল তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন। এরপর ১৭ এপ্রিল তিনি বাদী হয়ে রবিউলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের নির্দেশে সদর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আনসার আলী দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে রোববার রাতে কুমিল্লা ইপিজেডের উমাইসার এলাকা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনসার আলী গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের ফলে মেয়েটি বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারা মোতাবেক বিচারিক হাকিম ফারিন ফারজানার আদালতে তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে গ্রেপ্তার রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। রবিউল একজন প্রতারক। এর আগে তিনি দুটি বিয়ে করেছেন এবং মিথ্যা কথা ও আশ্বাস দিয়ে একাধিক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন।সোমবার বিকেলে থানা হেফাজতে আটক থাকার সময় রবিউল বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীর কাছেও অভিযোগগুলো স্বীকার করেন।
একটা সময় ছিল যখন পরিচালকেরা অভিনয়শিল্পী খোঁজার জন্য বেইলি রোডে আড্ডা দিতেন। গাইড হাউস কিংবা মহিলা সমিতি মিলনায়তনে বিভিন্ন দলের নাটক দেখতেন। মঞ্চের কোন পাত্র-পাত্রী তাঁর অভিনয়ে চমকে দিচ্ছেন, তাঁকে তুলে আনতেন টেলিভিশন নাটকে। এখন অনেক ক্ষেত্রেই বিজ্ঞাপনচিত্র কিংবা পত্রপত্রিকার পাতায় প্রকাশিত সুন্দর মুখশ্রীর কাউকে খুঁজে নেন অনেক পরিচালক। শিল্পী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রামসহ অন্য সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার অনুসারী কত—এই ভাবনাও কাজ করে।কেউ বলছেন, পাত্র-পাত্রী যেকোনো মাধ্যম থেকে বাছাই হতে পারে। তবে বাছাইয়ের পর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে নিতে পারলে ভালো হয়। তা না হলে নাটকের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির পাশাপাশি ওই শিল্পীর স্থায়িত্বও কমে।টেলিভিশন নাটকে বর্তমানে যারা অভিনয় করছেন, তাঁদের অনেকেরই মঞ্চে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। বিজ্ঞাপনচিত্রে জনপ্রিয় এমন অনেকেই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন। এমনও শোনা যায়, আচ্ছা ওর তো ফেসবুকে ফ্যান-ফলোয়ার বেশি, তাঁকে নিয়ে নাটক বানালে তো নিশ্চিত লাখ ভিউ হবে—তাই অনেকে সেই পথেও হাঁটেন।পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বল বলেন, ‘নাটকে করপোরেট বিনিয়োগ বাড়ার সঙ্গে মঞ্চের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিল্পী বাছাইয়ের ধরন বদলে যেতে থাকে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত টেলিভিশন চ্যানেলের কারণে কাজের সংখ্যা এবং চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এর জোগান দিতে গিয়ে অভিনয়ের ন্যূনতম শিক্ষা না থাকা শিল্পীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে তো ওয়েবভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের উত্থানে কাজের চাহিদা সীমাহীন। শিল্পীর তুলনায় নির্মাতার সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি! ফলে কাজের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে আমরা ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছি।’শুধু থিয়েটার অভিজ্ঞতা থাকলেই একজন শিল্পীর কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত অভিনয় পাওয়া যাবে এমনটাও মনে করছেন না অনেকে। মঞ্চ, টিভি নাটক বা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ধরনও এক নয়। মঞ্চের অভিনয়শিল্পীর সুবিধা হলো তিনি অভিনয়ের পদ্ধতি ভালো জানেন। কিন্তু পদ্ধতি জানলেই হবে না, ভিন্ন মাধ্যমে সেটির প্রয়োগে ভিন্নতা থাকতে হবে। তা না হলে শিল্পী যদি চরিত্রের চাহিদা না বুঝে গৎবাঁধা অভিনয় করেন, সে চরিত্র ব্যর্থ হবে। দিন শেষে এটি মনে রাখতে হবে অভিনয়টা হচ্ছে বিশ্বাসযোগ্যতা—এমনটাই মনে করা হয়।অপূর্ব ও নিশো দুজনেই নাটকে অভিনয় শুরু করেন গাজী রাকায়েতের পরিচালনায়। ঘরছাড়ায় অপূর্ব ও বৈবাহিক নাটকে আফরান নিশো। এই পরিচালক বলেন, ‘বাইরের দেশে নাটক কিংবা কাস্টিং ডিরেক্টর বা কাস্টিং এজেন্সি বলে প্রতিষ্ঠান থাকে। সেখান থেকে চরিত্রের উপযোগী অভিনয়শিল্পী বাছাই করা যায়, হোক নতুন কিংবা পুরোনো। আমাদের দেশে শুধু বিজ্ঞাপনচিত্রে এই প্রচলন আছে। যেকোনো মাধ্যম থেকে নাটকের পাত্র-পাত্রী বাছাই করা যেতে পারে। নতুন হলে তাঁদের নিয়ে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রশিক্ষণ করিয়ে নিলে ভালো হয়। যেমনটা আমি অপূর্ব ও নিশোর ক্ষেত্রে করেছিলাম।’মঞ্চের অভিজ্ঞতা নেই কিন্তু টেলিভিশন নাটকে ব্যস্ত শবনম ফারিয়া, মেহজাবীন, তানজিন তিশা, ইরফান সাজ্জাদ প্রমুখ। এই অভিনয়শিল্পীদের বেশির ভাগই এসেছেন বিজ্ঞাপনচিত্র কিংবা গানের মডেল হিসেবে। অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি ও পরিচালক শহীদুজ্জামান সেলিম মনে করেন, চিত্রনাট্যের যে চরিত্রে যাকে মানায়, তাঁকেই নির্বাচন করেন। হতে পারে মঞ্চের নতুন একজন অভিনয়শিল্পী কিংবা অনেক পুরোনো। এমনকি টেলিভিশন বা মঞ্চ কোনোটাই করেননি—এমন একজন নবাগত তরুণ-তরুণী হতে পারেন।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী দেখে অভিনয়শিল্পী বাছাইয়ের বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত শহীদুজ্জামান সেলিম। দেশে পর্যাপ্ত দক্ষ অভিনয়শিল্পী থাকা সত্ত্বেও এমন সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন তিনি।নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলছেন, মঞ্চে আগের মতো অভিনয়শিল্পীও পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘ভালো নাটক বানাতে চান এমন পরিচালকেরা এখনো মঞ্চপাড়ায় আসেন। আমরা তো মঞ্চে আগের মতো সেই অবস্থা তৈরি করতে পারছি না। আগে যেমন ঝাঁকে ঝাঁকে শিল্পী পেতাম, এখন সেই সুযোগটা নেই। যেখান থেকে পাত্র-পাত্রী বাছাই করা হোক, অডিশন করে নিলে হয়। হলিউড ও বলিউডে নতুনদের ক্ষেত্রে অডিশন সিস্টেম চালু আছে। এখন আবার পরিচালকেরা সময়ও পায় না। টাকাপয়সাও কম। আবার চ্যানেলগুলো ঠিক করে অমুককে নেন, তমুককে নেন। যারা বলে দেয়, তারা খুব নিম্ন রুচির মানুষ। এ কারণে নাটক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
এখন যদি বলি, বিশ্বকাপ শুরুর আগেই আমি বলেছিলাম, সাকিব আল হাসান এবার দারুণ কিছু করবেন; জানি, অনেকেই তা বিশ্বাস করবেন না। তবে প্রমাণ চাইলে সেটি দিতে পারব। অনেককেই তো কথাটা বলেছি। কেউ আমার দাবি সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করলে তাঁরা সাক্ষ্য দেবেন বলেই আশা করি।কী কারণে এমন মনে হয়েছিল, সেটির সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। তবে কখন মনে হয়েছিল, তা পরিষ্কার স্মরণ করতে পারি। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে অফিশিয়াল টিম ফটোতে সাকিবের অনুপস্থিতি নিয়ে তুমুল বিতর্কের সময়টায়। এত বছর ধরে সাকিবকে দেখার অভিজ্ঞতায় জানি, হাঁস যেমন গা থেকে জল ঝেড়ে ফেলে, বিতর্ককে তিনিও তা-ই। কখনো কখনো বরং অদ্ভুত একটা কথাও মনে হয়েছে, নিজেকে উদ্দীপ্ত করতে মাঝেমধ্যে সাকিব ইচ্ছা করেই বিতর্কের জন্ম দেন। বিশ্বকাপের জন্য দেশ ছাড়ার রাতে মেসেঞ্জারে সেটি বললামও তাঁকে, ‘নিজেকে মোটিভেট করতেই কি আপনি এমন করেন?’ হাসির ইমো দিয়ে সাকিব জবাব দিলেন, ‘যা হয়েছে, তা ভুল-বোঝাবুঝি।’ আমি আর বিস্তারিত জানতে চাইলাম না। যখন মেসেঞ্জারে এই কথোপকথন, বাংলাদেশ দলের ততক্ষণে প্লেনে উঠে যাওয়ার কথা। সাকিব তখনো ব্যাগ গোছাচ্ছেন জেনে যারপরনাই অবাক। সেটি প্রকাশ করার পর বললেন, ‘আমি তো টিমের সঙ্গে যাচ্ছি না।’ এরপর আবার একটা হাসির ইমো। সঙ্গে ছোট্ট দুটি শব্দ—আবার কন্ট্রোভার্সি!এবার একটা স্বীকারোক্তির সময় হয়েছে। বিশ্বকাপে সাকিব খুব ভালো করবেন জানতাম, কিন্তু সেই ‘খুব ভালো’ যে ‘এত ভালো’—এটা কল্পনাও করিনি। বিশ্বকাপের মাঝপথে গিয়ে সবচেয়ে বেশি রান, ছয় ইনিংসের পাঁচটিতেই পঞ্চাশোর্ধ্ব স্কোর, যার দুটি আবার সেঞ্চুরি। প্রথম পাঁচ ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর ষষ্ঠ ইনিংসেই ৫ উইকেটে এই বিশ্বকাপের সেরা বোলিং, টেলিভিশনের পর্দায় আইসিসির ফ্যান্টাসি গেম ভেসে উঠলেই সবার ওপরে জ্বলজ্বলে সাকিব আল হাসানের নাম—কল্পনা কীভাবে এর নাগাল পাবে!এর মধ্যে ব্যাটিংটা একটু বিস্ময় হয়েই এসেছে। যতটা না রান, তার চেয়ে বেশি ব্যাটিংয়ের ধরন। ক্যারিয়ারের শুরুতে যখন চার নম্বরে নামতেন, সাকিবের ব্যাটিং দেখতে খুব সুন্দর লাগত। মাঝখানে টি-টোয়েন্টির প্রভাবেই কি না, সেই ব্যাটিংয়ে সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে কার্যকারিতাই বড় হয়ে উঠেছিল। এই বিশ্বকাপে সাকিবের ব্যাটিংয়ে সৌন্দর্য আর কার্যকারিতার মধ্যে কোনো আড়ি নেই। দুটির মেলবন্ধন ঘটিয়ে শুধু বাংলাদেশ দলেরই নয়, এই বিশ্বকাপেরই সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। অথচ মনে করে দেখুন, গত কয়েক বছর বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবের নাম কখনো আলোচিত হয়েছে কি না। কখনো এই স্বীকৃতি পেয়েছেন তামিম ইকবাল, কখনোবা মুশফিকুর রহিম।এমনই ব্যাটিং করছেন যে বিশেষজ্ঞরাও দেখছি বলছেন, সাকিব যত ভালো বোলার, তার চেয়ে অনেক বেশি ভালো ব্যাটসম্যান। অথচ মাঝখানে লম্বা একটা সময় আমরা কি উল্টোটাই জেনে আসিনি! কখনো মনে হবে ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলিং ভালো, কখনোবা বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিং—একজন অলরাউন্ডারের জন্য সর্বোচ্চ স্বীকৃতি তো এটাই।সাকিব ভালো, সবাই জানতেন। কতটা ভালো, তা বুঝিয়ে দিতে যেন পরিকল্পনা করেই ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চটাকে বেছে নিয়েছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি আর ৫ উইকেটের কীর্তিতে যুবরাজ সিংয়ের অংশীদারত্ব আছে। যদিও সবাই জানেন ব্যাটসম্যান যুবরাজের সঙ্গে বোলার যুবরাজের কোনো তুলনাই চলে না। এই ম্যাচের পর আরেকটি যে কীর্তি, সেটিই বরং সাকিবের অলরাউন্ডার সত্তার সত্যিকার জয়গান। এক বিশ্বকাপে আর কারও ৪০০ রান আর ১০ উইকেটের যুগলবন্দী নেই। কীর্তিটা কত বড়, তা বোঝাতে মনে করিয়ে দিই, গ্যারি সোবার্স ছাড়া ক্রিকেট ইতিহাসের বিখ্যাত সব অলরাউন্ডারই বিশ্বকাপ খেলেছেন। একই সময়ের ইমরান খান, কপিল দেব, ইয়ান বোথাম, রিচার্ড হ্যাডলির মতো এঁদের উত্তরসূরি জ্যাক ক্যালিসও ক্যারিয়ারের সেরা সময়েই।বর্তমান এবং সাম্প্রতিক অতীত ছাড়িয়ে সাকিবের মাহাত্ম্য যে আরও অনেক দূর বিস্তৃত, এটি এর একটা প্রমাণ। এর চেয়েও বড় একটা প্রমাণ আমি বের করেছিলাম আমার এগারো বইয়ে সাকিবকে নিয়ে লিখতে গিয়ে। কৌতূহল, নিছকই কৌতূহল থেকে দেখতে চেয়েছিলাম, ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ছয়জন অলরাউন্ডারের তুলনায় সাকিব কোথায় থাকেন। বাহন অবশ্যই পরিসংখ্যান। তখন পর্যন্ত সাকিব খেলেছিলেন ৫৫টি টেস্ট ও ১৯৫টি ওয়ানডে। টেস্টের ক্ষেত্রে ৫৫ টেস্ট শেষে বাকিদের রান-উইকেটের সঙ্গে সাকিবের রান-উইকেটের তুলনাই যথেষ্ট ছিল। ওয়ানডেতে একটু সমস্যায় পড়লাম। সোবার্স মাত্র একটিই ওয়ানডে খেলেছেন বলে তিনি না হয় বাদ। বাকিদের মধ্যেও যে কপিল আর ক্যালিস ছাড়া আর কেউ ১৯৫টি ওয়ানডে খেলেননি। এই দুজনের সঙ্গে সরাসরি তুলনা হলো। বাকিদের ক্ষেত্রে বিকল্প পথ—ইমরান (১৭৫), বোথাম (১১৬), হ্যাডলির (১১৫) সমান ম্যাচ খেলার পর সাকিব কোথায় ছিলেন। তা করতে গিয়েই বিষম চমক। সাকিব তো দেখছি কারও চেয়ে কম নন! কেউ রানে এগিয়ে থাকলে সাকিব উইকেটে এগিয়ে, কারও ক্ষেত্রে বা উল্টোটা। যেটির সরল সমীকরণ—সাকিব শুধু বর্তমান সময়েরই নয়, ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। যা নিয়ে কখনোই সেভাবে আলোচনা হয় না। এই ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর হয়তো হবে।আপাতত একটা কাজ তো আমরা করতেই পারি। ২০১৬ সালে ঢাকা টেস্টে বেন স্টোকসকে আউট করে সাকিবের স্যালুট দেওয়ার যে দৃশ্যটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের অমর ছবি হয়ে আছে, চলুন, সেই স্যালুটটাই দিয়ে দিই সাকিবকে।স্যালুট, সাকিব!
আফগানিস্তানকে নিয়ে সবার মনে শঙ্কা থাকলেও মাঠে টাইগারদের তা ছিল না বলে ধরে নেওয়া যায়। খেলার ধরন দেখেই তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে আফগানিস্তানের পরিশ্রমী দলটি বিশ্বকাপের স্বপ্নে বিভোর শক্তিধর ভারতকে ২২ তারিখ দুশ্চিন্তায় ফেলে দেওয়ার পর তাদের নিয়ে শঙ্কা সঞ্চারিত ছিল এই ভেবে যে ভারত তো কোনোরকমে পার পেয়ে গেল, বাংলাদেশকে না আবার একই রকম দুশ্চিন্তায় ফেলে।কিন্তু তা আর হয়নি। টাইগাররা জয়ী হয়েছে আফগানদের ২০০ রানে ঠেকিয়ে দিয়ে। নিজেদের ২৬২ রান নিয়ে দল সাউদাম্পটনের বৃহৎ স্লো মাঠেও প্রায় নিশ্চিন্তই ছিল বলা চলে। ‘কিছুই হারাবার’ নেই ভাবা, শূন্য পয়েন্টে থাকা আফগানরা হঠাৎ করেই সিরিয়াস প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার চেষ্টায় নেমেছিল দুটি খেলাতেই। সবার দুশ্চিন্তা বেড়েছিল এই কারণেই, ক্রিকেট বলে কথা। অঘটন ঘটতে কতক্ষণ!তো দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত আমার এক সহদর্শক বন্ধুর কথা বলি। ক্রিকেট–অন্তঃপ্রাণ বন্ধুটি সব সময়ই কিছুটা নৈরাশ্যবাদী। নেগেটিভ ভাবনাকেই প্রশ্রয় দেন বেশি পুরো খেলার সময়টিতে। হতাশাগ্রস্ততায় হা-হুতাশ করে কথা বলেন পুরো খেলা দেখতে দেখতে। লিটন প্রথমেই আউট হওয়ায় তাঁর উক্তি, ‘ব্যস, জিতন শ্যাষ! শুরু হইয়া গেল আনা–জানা। আর থার্ড আম্পায়ার তো অগো পক্ষে! বল মাটিতে ঠেকছে, তাও চোরামিটা করল। আর শূন্য পয়েন্টের অগো হেল্প করনের কী মানে!’তবে দল জিতে গেলে সবার আগে উল্লাসে আত্মহারা হয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি জানতাম, জিতনটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ তাঁর এই কাণ্ড সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম খেলার পর। বললেন, ‘ডার্ক সাইডটা ভাইবা টেনশনটা ধইরা রাখলে দল জিতলে মজাটা বেশি হয়।’বললেন, ‘টেনশনটা ফিল করায় মজা আছে। এই খেলাটা তো সাকিবের জন্য সব দিক দিয়া রেডি আছিল। রানও ৫০, উইকেটও নিল পাঁচটা। পঞ্চম উইকেটটা পাইতে লেট হইতাছিল দেইখা টেনশন না কইরা পারা যায়? তিন নম্বর ম্যান অব দ্য ম্যাচ হইতে হইব না।’এই লেখায় বন্ধুটিকে উদ্ধৃত করলাম। কারণ, খেলার শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, ‘শ্যাষে না পোলাপান পচা শামুকে পা কাটনের হালে পইড়া যায়। যেমনে কয় দিন ধইরা স্পিনার রশিদ–রশিদ রব উঠছে!’যাই হোক, খেলাটা আমাদের জন্য ইম্পরট্যান্ট ছিল। জয় পাওয়া গেছে। সাকিবের পাশাপাশি মুশফিক, তামিম, মোসাদ্দেক, মাহমুদউল্লাহ ব্যাটে এবং বোলিংয়ে মোস্তাফিজ, সাইফউদ্দিন, মোসাদ্দেক দলকে জেতানোর মূল কাজটি করেছেন। এখন পরবর্তীটার অপেক্ষা। দলকে উদ্দীপ্ত দেখতে চাই।তবে আফগানরা ভবিষ্যতে অনেক ওপরে উঠবে, ধারণা করা যায়। বড়দের জন্য বলা যায়—‘সবাইকে ধরিবে যেকাবুলে বাড়িছে সে।’
করলাগাছের বাড়ন্ত লতা উড়ালসড়ক ছুঁই–ছুঁই। মরিচগাছটিতে ছোট ছোট সাদা ফুল ফুটেছে। বটগাছটি মাথা উঁচু করে জানান দিচ্ছে ভবিষ্যতে ছায়া দেওয়ার সক্ষমতার কথা। ডালপালা মেলেছে ঔষধি নিমগাছ। মনে হতে পারে এটা কোনো নার্সারি কিংবা গ্রামীণ কোনো দৃশ্যপট। তবে তা নয়। মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নিচে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার এক অংশের দৃশ্য এটি।একসময় উড়ালসড়কের নিচের ওই জায়গা ছিল ‘ভাগাড়’। আশপাশের লোকজন সেখানে ময়লা ফেলতেন। রাতে ভবঘুরেদের আড্ডা বসত। এখন সেখানে গাছের সমারোহ সেখানে। বড়ই, খেজুর, পেঁপে, চালতা, আম, জাম কিংবা লিচুর মতো নানান ফলদ উদ্ভিদ। বনজ উদ্ভিদের মধ্যে আছে বটগাছ, মেহগনি, রাবার, কাঠবাদাম ও অশ্বত্থগাছ। এ ছাড়া সেখানে নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরেছে পাতাবাহার, ঝাউ আর গাঁদাফুল।যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে ডেমরা যাওয়ার সড়কের খানিকটা অংশজুড়ে এসব গাছ লাগানো হয়েছে। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের ডেমরা জোনের পরিদর্শক গোলাম মোস্তফার উদ্যোগে একই জোনের ২২ জন সার্জেন্ট এই সবুজ পরিবেশ গড়ে তুলেছেন।গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী-ডেমরার সড়কটিতে যানজট লেগে যাচ্ছিল খানিক বাদে বাদে। বাসে বসে ঘামছিলেন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। তবে জানালার পাশের আসনে বসা যাত্রীরা মাথা বের করে এ সৌন্দর্য উপভোগ করছিলেন। মৃদুমন্দ বাতাসে গাছগুলো দোল খাচ্ছিল।তানিয়া আক্তার যানজটে রিকশায় বসে গাছের দিকে তাকিয়ে সবুজের স্নিগ্ধতা উপভোগ করছিলেন। বললেন, অল্প জায়গাজুড়ে এ সবুজায়ন হলেও বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সড়কের পাশজুড়ে থাকা এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে যদি গন্তব্যে যাওয়া যেত, তবে প্রাণটাই যেন জুড়িয়ে যেত। আর মোটরবাইকে চেপে গন্তব্যে যাওয়া হিমেল আহমেদ বললেন, ‘রাজধানীর সড়কের পাশজুড়ে কিংবা এমন করে ফ্লাইওভারের নিচে যদি গাছের সমারোহ ঘটানো যায়, তাতে কিছুটা হলেও আমরা যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পাব।’এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডেমরা জোনের পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা বলেন, ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা রোদে দাঁড়িয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন। আর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তাকে কেন্দ্র করে গাড়ির চাপ সব সময় লেগেই থাকে। তখন মনে হলো চৌরাস্তার এ খালি জায়গাটায় কিছু গাছ লাগানো যায়, তবে কিছুটা সবুজ তাঁদের স্বস্তি দেবে। আর গাছ বড় হলে ছায়াও পাওয়া যাবে। ট্রাফিক সার্জেন্টদের তখন জানালে সবাই তাতে উৎসাহবোধ করেন। সবাই একটি করে গাছও দেবেন বলে জানান তাঁরা। পরে গত বছরের অক্টোবর মাসে জুরাইন থেকে গাছের উপযোগী মাটি আনা হয়। একটি নার্সারির দুজন কর্মচারী ও কয়েকজন দিনমজুরকে দিয়ে গাছগুলো লাগানো হয়েছে। তা দেখে স্থানীয়রাও কয়েকটি গাছ দিয়েছে। একজন একটা কলাগাছ এনে দিয়ে গেছেন।গোলাম মোস্তফা জানান, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তাঁরা গাছ লাগিয়েছেন। বেশি রোদ পড়ে এমন স্থানে বনজ আর কম পড়ে এমন স্থানে ফলদ বৃক্ষ লাগানো হয়েছে। তবে গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, গরমে পানি দিতে হয় নিয়মিত। প্রথমদিকে ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয় থেকেই পানি দেওয়া হতো। পরে ওয়াসার গাড়িতে পানি কিনে প্রতি সপ্তাহে দু–একবার দেওয়া হয়। গাছগুলো দৃশ্যমান হয়েছে। আম ও জাম্বুরাগাছ ফলও দিয়েছে কয়েকটি।২০১৩ সালে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়ক গাড়ি চলাচল করার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় উড়ালসড়কের এই অংশের নিচে ময়লা–আবর্জনা ফেলতে থাকে লোকজন। ২০১৭ সালের শেষ দিকে উড়ালসড়কের নিচে বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়। এতে ময়লা ফেলার পরিমাণ কমে এলেও জায়গাটি খালিই পড়ে থাকে।গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিয়মিত পরিচর্যা ও পানি দিতে হয়। তাতে বেশ খরচই হয়। হয়তো শখের বশে আমরা এটা করেছি। তবে ব্যাপারটি প্রতীকী। সিটি করপোরেশন যদি পুরো উড়ালসড়কের নিচটাজুড়ে এমন সবুজায়ন করে, তাহলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ উড়ালসড়কের নিচটা সবুজে ছেয়ে যাবে।’
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিউটি আক্তার (৪০) নামে সংরক্ষিত নারী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পশ্চিমগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত বিউটি আক্তারের বাড়ি রূপগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমগাঁও এলাকায়। তিনি কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য ছিলেন।এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, আজ ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বিউটি আক্তার উপজেলার চনপাড়া এলাকা থেকে পশ্চিমগাঁও এলাকার দিকে হাঁটতে বের হন। তিনি কুট্টি পশ্চিমগাঁও এলাকায় পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করা হয়।রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিউটির মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে কে বা কারা তাঁকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।গত বছরের ২৯ অক্টোবর রাতে রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে বিউটি আক্তারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদের সভাপতি আনোয়ার হোসেন পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, গুলি বিনিময় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিউটির স্বামী হাসান মহুরি প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে রাজধানীর ধানমন্ডির জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ৬ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বিউটি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছিলেন।
ওয়ান প্রো ও এ৩ মডেলের স্মার্টফোনে ছাড় ঘোষণা করেছে স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ইউমিডিজি। ১৯ হাজার ৯৯০ টাকার ইউমিডিজি ওয়ান প্রো ছাড়ের পর পাওয়া যাবে ১৪ হাজার টাকায়। ইউমিডিজি এ৩ পাওয়া যাবে ৬ হাজার ৮৩৯ টাকায়।ইউমিডিজির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম দারাজে http://bit.ly/2LsyL2b ছাড় পাবেন ক্রেতারা।ইউমিডিজির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইউমিডিজি ওয়ান প্রো ফোনে রয়েছে ৫.৯ ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে এবং ৪ডি কার্ভ গ্লাস বডি। ১.৫ গিগাহার্টজ হেলিও অক্টাকোর পি২৩ ফোরএক্স কর্টেক্স-এ ৫৩ চিপসেটের প্রসেসর রয়েছে এতে। ৪ গিগাবাইট র‍্যামেরা পাশাপাশি এতে রয়েছে ৬৪ গিগাবাইট ইন্টারনাল মেমোরি। মাইক্রো এসডি কার্ড দিয়ে ২৫৬ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যাবে। পেছনে রয়েছে ১২ ও ৫ মেগাপিক্সেল ডুয়েল ক্যামেরা। সামনে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ফোনটিতে ওয়্যারলেস চার্জিং ও ফাস্ট চার্জিং সুবিধাসহ রয়েছে ৩৫৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। রয়েছে সাইড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ফোরজি, ব্লুটুথ, ডুয়েল সিম ব্যবহারের সুবিধা। ডিভাইসটিতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে রয়েছে স্টক অ্যান্ড্রয়েড ৮.১।ইউমিডিজি এ৩ ফোনে রয়েছে ফুল এইচডি ৫.৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে। ডিভাইসটিতে প্রসেসর হিসেবে রয়েছে কোয়াডকোর মিডিয়াটেক এমটি ৬৭৩৯। ২ গিগাবাইট র‍্যামের পাশাপাশি এতে রয়েছে ১৬ গিগাবাইটের মেমোরি। অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে রয়েছে স্টক অ্যানড্রয়েড ৮.১ ওরিও। পেছনে রয়েছে ১২ ও ৫ মেগাপিক্সেলের ডুয়েল ক্যামেরা সেটআপ ও ৩৩০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি।
পুরো বাসস্ট্যান্ডে অন্তত এক ফুট উঁচু কাদামাটি জমে আছে। কোথাও কোথাও রয়েছে জলাবদ্ধতা। পানির ওপরই বাস দাঁড় করানো হয়েছে। কোনো কোনো অংশে আগাছা ও মশামাছি ওড়াউড়ি করছে। এই দৃশ্য কুমিল্লা নগরের চকবাজার বাসস্ট্যান্ডের।পরিবহনশ্রমিকদের অভিযোগ, প্রতিবছর সিটি করপোরেশন এই বাসস্ট্যান্ড ইজারা দিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করে। কিন্তু স্ট্যান্ডের উন্নয়নের জন্য কোনো অর্থ ব্যয় করছে না। গত এক দশকে এই বাসস্ট্যান্ডে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। অবিলম্বে বাসস্ট্যান্ড সংস্কার ও মেরামত করা দরকার।এই বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন কুমিল্লা, ফেনী, চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর ও কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকায় শত শত বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। প্রতিদিনই ভোগান্তি নিয়ে পরিবহনশ্রমিকদের বাসস্ট্যান্ড থেকে মূল সড়কে তুলতে হয়। এতে যাত্রীদেরও সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।চকবাজার বাসস্ট্যান্ডের পরিবহনশ্রমিক নেতাদের অন্তত পাঁচজনের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার কথা হয়। তাঁরা বলেন, ১৯৭৪ সালে প্রায় দুই একর জায়গা নিয়ে চকবাজার বাসস্ট্যান্ডের যাত্রা শুরু হয়। তখন এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস যাতায়াত করত। সময়ের পরিক্রমায় ও নগরে আরও নতুন বাস টার্মিনাল হওয়ার কারণে এখন এই বাসস্ট্যান্ড থেকে চট্টগ্রামে তিশা পরিবহন, ফেনীতে মদিনা পরিবহন, চৌদ্দগ্রামের কাশিনগরে বিজলি পরিবহন ও গোলাবাড়ি এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। বাসস্ট্যান্ডটি কুমিল্লার রাজগঞ্জ-চকবাজার সড়কের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত।সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব ভাগে চষা জমির মতো অবস্থা। বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ফেনীর আদর্শ সদর উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কাদা মাড়িয়ে বাসে উঠতে হলো। একটি সিটি করপোরেশনের বাসস্ট্যান্ডের এমন বেহাল চিত্র আমাকে হতবাক করেছে। এটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।’ফেনীগামী মদিনা পরিবহনের চালক মাসুক মিয়া বলেন, সব সময়ই এই বাসস্ট্যান্ডে পানি জমে থাকে। গর্তে ভরা। সংস্কার করা হয় না।চৌদ্দগ্রামের কাশিনগরগামী বিজলি পরিবহনের চালক জসিমউদ্দিন বলেন, ‘আমি সাত থেকে আট বছর ধরে বাস চালাই। এই রকম খারাপ অবস্থা দেখছি। কেউ কোনো নজর দেয় না।’কুমিল্লা জেলা পরিবহনশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মনির হোসেন বলেন, প্রতিবছর এই বাসস্ট্যান্ড ইজারা দেয় সিটি করপোরেশন। কিন্তু কোনো কাজ করে না। বছরের পর বছর কোনো কাজ নেই। কোনো সংস্কার নেই। বাসস্ট্যান্ড ভালো হলে গাড়ি বাড়ত। অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হতো। এখন শ্রমিকেরা এই স্ট্যান্ডে কাজ করতে এলে পচা গন্ধযুক্ত পানিতে নেমে বাস ঠেলতে হয়। এতে তাঁদের হাতে পায়ে চর্মরোগ হয়। এই স্ট্যান্ড থেকে পানি নামার কোনো পথ নেই। এ কারণে জলাবদ্ধতা বলতে গেলে স্থায়ী রূপ নিয়েছে।পরিবহনশ্রমিকদের ভাষ্যমতে, এই বাসস্ট্যান্ডের প্রতিটি বাস থেকে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ টাকা তোলা হয়। অটোরিকশা থেকে তোলা হয় ১০ টাকা করে। প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা তোলা হয়। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডের কোনো উন্নয়ন হয় না।কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম বড়ুয়া বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই বাসস্ট্যান্ড ইজারা দিয়ে সিটি করপোরেশন ২ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছে। ৩০ জুন এই চুক্তি শেষ হবে। নতুন করে দরপত্রের প্রক্রিয়া চলছে। আমি এটি সংস্কার করব।’মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, ‘বর্তমানে আশ্রাফপুর বাস টার্মিনালের সংস্কারকাজ চলছে। ওই কাজ শেষ হওয়ার পর আমরা চকবাজার বাসস্ট্যান্ডের কাজও করব।’
রংপুরের বদরগঞ্জের দামোদরপুর ইউনিয়নের ভাড়ারদহ গ্রামে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে এক বছর আগে ৩৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার না টানায় বিদ্যুৎ–সংযোগ পাননি গ্রাহকেরা। গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় তাঁরা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।’গত শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামে দুই শতাধিক পরিবারের বাস। এক বছর আগে সেখানে একের পর এক বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু টানানো হয়নি বৈদ্যুতিক তার। গ্রামের হরিদাস চন্দ্র অভিযোগ করেন, ‘গ্রামের বিধান চন্দ্র রায় নামের (৪৮) এক ব্যক্তির মাধ্যমে কাজের ঠিকাদার এক বছর আগে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের সময় দ্রুত সংযোগ দেওয়ার কথা বলে প্রতি গ্রাহকের কাছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে চান। আমরা গ্রামের ১০৩ জন মানুষ দ্রুত বিদ্যুৎ পাওয়ার আশায় প্রত্যেকে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিধান চন্দ্রের হাতে দিই। কিন্তু বিধান বাকি টাকার জন্য ঘুরছেন। টাকা না দেওয়ায় গ্রামে বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।’ওই অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিধান চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভাই, এই দেশে কি টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয়? বিদ্যুতের জন্য ঠিকাদার আশরাফের সঙ্গে দুই লাখ টাকা চুক্তি হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা তুলে তাঁকে দিয়েছি। চুক্তি অনুযায়ী এখনো ঠিকাদারকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিতে হবে। ঠিকাদার গ্রামে বৈদ্যুতিক তার পাঠিয়েছেন দুই মাস আগে। বাকি টাকা না পাওয়ায় তিনি খুঁটিতে তার টানছেন না।’ বিধান চন্দ্র আরও বলেন, শুধু ঠিকাদারকে ঘুষ দেওয়াই নয়, তাঁর শ্রমিকেরা গ্রামে যত দিন কাজ করেন, তত দিন দুই বেলা ভাতও খাওয়াতে হয়। তাঁরা ভালো তরিতরকারি ছাড়া ভাত খান না।’অভিযোগ সম্পর্কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওই গ্রামের বৈদ্যুতিক কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে ঘুষ দাবি করিনি এবং নিইওনি। আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ ঘুষ নিয়ে থাকলে সেটার দায় তাকেই নিতে হবে।’ এক বছরেও ওই গ্রামে বৈদ্যুতিক তার না টানানোর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এত দিন তার পাওয়া যায়নি।’বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড রংপুরের সহকারী প্রকৌশলী তারিক সিদ্দিক বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিতে ঘুষ লাগে না। বিনা টাকায় মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে।’ এক বছর আগে ঠিকাদারকে ঘুষ দিয়েও ওই গ্রামের শতাধিক পরিবার বিদ্যুৎ পায়নি—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর চেয়ারম্যান শেখ আবুবক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘অনেক ঠিকাদার নতুন লাইন নির্মাণ করতে গিয়ে এলাকার দালালদের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে থাকেন। এসব নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের বোর্ড মিটিংয়ে আমি নিজেই একাধিকবার আলোচনা করেছি। বেশি কিছু বললে ঠিকাদারেরা লাইন নির্মাণকাজে আরও কালক্ষেপণ করে থাকেন। তাঁরা সব সময় অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে কাজ করেন।’
বেশ কয়েক বছর ধরে নগরজীবনে সুপারশপ ধারণা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে ঘরগৃহস্থালির সব পণ্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পাওয়া যায় একই ছাদের নিচে। দেশি উদ্যোগ ইউনিমার্ট সে ধারণাকে আরও ব্যাপক করেছে। ছয় বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ইউনিমার্ট নিয়ে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন।বছর ছয়েক আগের কথা। হঠাৎ করেই ফেসবুকজুড়ে অনেক ‘চেক–ইন’ দেখা গেল ইউনিমার্ট নামের একটি জায়গার। সেখানে প্রাত্যহিক জীবনের কেনাকাটা যেমন করা যায়, সঙ্গে খাবার খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। রাজধানীর গুলশান ২–এর এই ইউনিমার্টে গিয়ে একটি চেক–ইন দেওয়া না থাকলে যেন চলতি ধারার সঙ্গে থাকা হচ্ছিল না। ফেসবুকের ভাষায়, এখানে না গেলে জাতি মেনে নেবে না। সেই ইউনিমার্ট এ বছর ছয়ে পা দেবে। ঢাকার মানুষের কাছে এর আবেদন তো কমেইনি, বরং নিত্যনতুন পণ্যের পসরা সাজিয়ে আকর্ষণ বাড়িয়েই চলেছে সব বয়সের মানুষের কাছে।ইউনিমার্টের ফেসবুক পেজে গেলে সেটির রিভিউ দেখার পর বোঝা যায়, কতটা আস্থা অর্জন করেছে। বিশ্বমানের সেবা দিতে ইউনাইটেড গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনিমার্ট যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে। চলতি বছর ঢাকার ধানমন্ডিতেও চালু হয়েছে আরেকটি শাখা। ইউনিমার্টকে আরেক ধাপ এগিয়ে দিতে ঢাকাবাসীকে চমক দিতে এনেছে শেফ’স টেবিল (গুলশান ও ধানমন্ডি শাখা)। একই ছাদের নিচে পাওয়া যায় ঢাকার সেরা বিভিন্ন রেস্তোরাঁর খাবারের স্বাদ।যা দেখে চোখ জুড়ায়গুলশান ইউনিমার্টে ঢোকার মুখেই চোখে পড়ে নানা জাতের মাছের সম্ভার নিয়ে অ্যাকুয়ারিয়াম। মাছের জলকেলি দেখতে দেখতে ভেতরে ঢুকলেন। চাইলে কিনতেও পারেন অ্যাকুয়ারিয়াম। হাতে একটু সময় নিয়ে গেলে ‘ইনডালজ’ নামের বেকারি শপ থেকে নিতে পারেন পছন্দের কোনো মিষ্টান্ন ও কফি। যাঁরা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে ভালোবাসেন বা ডায়েটের মধ্যে থাকেন, তাঁরা নিজে নিজে পছন্দের উপকরণ মিশিয়ে নিয়ে সালাদ বানিয়েও নিতে পারেন। ওজন মেপে দাম দিতে পারেন।এরপর ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন এখানের ২১টি ডিপার্টমেন্টের নানা ধরনের পণ্য। কী নেই এখানে? ইউনিমার্টের নিয়মিত একজন ক্রেতা চৈতি আহমেদ। গুলশানে তাঁর অফিস থাকায় ফেরার পথে মাসকাবারি বাজার করা থেকে শুরু করে দুপুরে লাঞ্চও ওখানে সারেন। ছয় বছর ধরেই সেখানে তাঁর যাতায়াত। কেন ইউনিমার্টে যান—এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমত, পাওয়া যায় না এমন কোনো জিনিস নেই সেখানে। সবচেয়ে বড় কথা, বৈচিত্র্য আছে। মান নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এখানে যাঁরা কাজ করেন, সবার ব্যবহারও খুব ক্রেতাবান্ধব।’৫০ হাজারের বেশি পণ্যের সম্ভার এখানে। ফলে দেখে–শুনে–বুঝে সুবিধা ও পছন্দমতো কেনাকাটা করা যায়।বৈচিত্র্যময় পণ্যের সম্ভারধরা যাক, নতুন একটি পদ রান্না করবেন। এমন একটা উপকরণ দরকার, সারা শহরে খুঁজে পাচ্ছেন না। কিন্তু ইউনিমার্টে মিলবেই। ফেসবুকে প্রায়ই এমন স্ট্যাটাস দেখা যায়। এখানকার কাঁচা সবজি থেকে শুরু করে জুতা কেনা পর্যন্ত সবকিছুতেই গুণগত মান বজায় থাকে। গুলশানের ইউনিমার্টে ৪০ হাজার বর্গফুটের মধ্যে পাবেন নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় সব সামগ্রীই। পিছিয়ে নেই ধানমন্ডির ইউনিমার্টও। প্রায় ৩০ হাজার বর্গফুটের এই শাখা তিনতলাজুড়ে আছে।কত ধরনের চিজ (পনির) যে পাওয়া যায়, তা ইউনিমার্টে গেলেই দেখতে পাবেন। গুলশানে যেহেতু বিদেশি ক্রেতাদের আনাগোনা বেশি, তাই সেখানে বিশেষ কিছু কর্নার আছে। চীনাদের কথা ভেবে শুধু তাদের জন্য একটি কর্নার রয়েছে। এ ছাড়া ভারতীয়, কোরীয়, শ্রীলঙ্কানসহ বিভিন্ন জাতির মানুষের জন্য বিশেষ এই কর্নারগুলো বাংলাদেশের ক্রেতাদের কাছেও প্রিয়। বৈচিত্র্য আছে ফ্রোজেন খাবার, শুকনা খাবার, বিস্কুট, কেক, পাস্তা, বাদাম, চকলেট, ফল, মসলাসহ বৈদ্যুতিক পণ্য ও প্রসাধনসামগ্রীতে। চাল, ডাল ও মাছেও আছে দেশ–বিদেশের স্বাদ। ‘শুদ্ধ কৃষি’ নামের ব্র্যান্ডের আওতায় গ্রামের নারীদের আঙিনা থেকে সরবরাহ করা কৃষিপণ্য এখানে পাওয়া যায়। ফলে একদম মাচার লাউ, শাক, আঙিনার বেগুন, টমেটো, ক্ষীরায় দেশি স্বাদ।যাঁরা চা ও কফি পান করতে পছন্দ করেন, তাঁরা পাবেন নানা দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চা ও কফি। বেকিংয়ের উপকরণও আছে। মেয়েদের পারসোনাল হাইজিন বিভাগে আছে নানা রকমের জিনিস। স্যানিটারি ন্যাপকিন, টেমপোন, মেনস্ট্রুয়াল কাপও পাবেন এখানে। ছেলেদের শেভিং ক্রিম, পারফিউম, ট্রিমারসহ সব ধরনের ব্যবহার্য সামগ্রী আছে এখানে।ইউনিমার্টে খেলাধুলা ও ব্যায়াম করার পোশাকের মানও ভালো। বুক এন্ডস বিভাগে পাবেন দেশ–বিদেশের লেখকদের নানা রকমের বই। দেশীয় ব্র্যান্ড ‘যথাশিল্প’–এর তৈরি নান্দনিক নকশার নোটবুক আছে। নিজের জন্য বা উপহার দেওয়ার জন্য ল্যাম্পশেড, ফটোফ্রেম, শিশুদের জন্য টেবিল ল্যাম্প আছে। ধানমন্ডি ও গুলশান—দুই জায়গাতেই শিশুদের খেলনা দেখলে মনে হবে, এ এক রূপকথার জগৎ। বিচিত্র ধরনের খেলনা পাওয়া যায় সব বয়সের শিশুদের জন্য। শুধু তা–ই নয়, শিশুদের যত্নআত্তির সামগ্রীতে আছে ভিন্নতা। নবজাতক শিশুর নানা উপকরণও রয়েছে এখানে। পুরুষদের পোশাকও পাওয়া যায় এখানে। আরও আছে সবুজ একটা কোণ। যেখানে মেলে গাছ, তাজা ফুল ইত্যাদি।দিন কয়েক আগে ধানমন্ডির ইউনিমার্টে দল বেঁধে এসেছিলেন তরুণদের একটি দল। জানতে চাওয়া হলো কী কী কেনাকাটা করতে এসেছেন। তাঁদের একজন বললেন, বিদেশি জিনিস কেনার সময় নির্দ্বিধায় কিনতে পারি। আজ এসেছি ফল কিনতে। এখানকার ফলগুলো তাজা ও ফরমালিনমুক্ত। মানের ব্যাপারে এখানে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না, তাই আসি।’এটাই ইউনিমার্টের ইউনিক দিক—ক্রেতার বিশ্বস্ত বন্ধু হতে পারা। যেখানে কেনাকাটা না করা হলেও নিছক ঘুরতে আসা যায়।একনজরে ইউনিমার্টপ্রতিষ্ঠা: জুলাই, ২০১৩শাখা: ২টি (গুলশানে চালু হয় ২০১৩ সালে ও ধানমন্ডিতে চালু হয় ২০১৯ সালে)পণ্যের ডিপার্টমেন্ট: ২১পণ্য: ৫০ হাজারের বেশি রকমেরপরিসর: ৪০ হাজার বর্গফুট গুলশান শাখা, ৩০ হাজার বর্গফুট ধানমন্ডি শাখা।উদ্যোগ: শেফ’স টেবিলমূল প্রতিষ্ঠান: ইউনাইটেড গ্রুপ
মেট্রোরেল প্রকল্প এলাকায় পড়ায় কারওয়ান বাজারের ‘প্রজাপতি গুহা’ নামে পরিচিত পাতালপথটি ভেঙে ফেলা হবে। আগামী সপ্তাহে পাতালপথটি ভাঙার কাজ শুরু হবে বলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। পথচারীদের সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা হিসেবে পাতালপথের কয়েক মিটার দূরে একটি পদচারী-সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি-৬ বা মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পের কাজ আটটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্প এলাকার ভেতরে পড়ায় পাতালপথটি সরিয়ে নিতে হচ্ছে।গতকাল মঙ্গলবার দেখা যায়, পাতালপথটি বেশ অপরিচ্ছন্ন। ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। ভেতরে অন্ধকার। অধিকাংশ বাতি জ্বলছে না। প্রবেশমুখে কয়েকজন ভবঘুরে বসে আছে। পাতালপথের কয়েক মিটার সামনে নতুন একটি পদচারী-সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতুর চারদিকে ফুটপাতের ভাঙা অংশ মেরামত করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মারুফ কিবরিয়া প্রতিদিন এই পাতালপথ দিয়ে যাতায়াত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে এই পাতালপথ নিয়মিত পরিষ্কার করা হতো। লাইটও বেশি ছিল। বেশ কয়েক দিন ধরে এটির যত্ন সেভাবে নেওয়া হচ্ছে না।’পাতালপথটি দেখভালের দায়িত্ব ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, পাতালপথটি কয়েক দিনের মধ্যে ভাঙা পড়বে—এটি জানার পর থেকে সিটি করপোরেশন আগের মতো দেখভাল করছে না। আগে পাতালপথে নিরাপত্তাকর্মী ছিল। এখন সেটিও নেই।ডিএনসিসি সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে একটি বেসরকারি টেলিভিশন ও একটি ব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে পাতালপথটির সংস্কার করা হয়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে পাতালপথটির টাইলস পরিবর্তন, বাতি লাগানোর কাজ করা হয়।মেট্রোরেল প্রকল্প এলাকায় পড়ায় পাতালপথটি ভেঙে ফেলা হবে। পথচারীদের সড়ক পারাপারের জন্য পদচারী-সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।ডিএনসিসির অঞ্চল-৫-এর নির্বাহী কর্মকর্তা মীর নাহিদ আহসান প্রথম আলোকে বলেন, আগারগাঁও থেকে সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কটি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। মেট্রোরেলের কাজ চলার সময়ে সড়কের দায়িত্ব তাদের। এই সড়কে অবস্থিত পাতালপথটি ভাঙার ফলে জনগণের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সেই অনুরোধ করা হয়েছিল।গতকাল দেখা যায়, পথচারীদের পারাপারের জন্য নির্মিত নতুন পদচারী-সেতুটির এক পাশের সিঁড়ি সড়কের মাঝামাঝিতে নেমেছে। ফলে সড়কের এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে এলেও পুরোপুরি সড়ক পার হতে পারবেন না। বাকি অংশটুকু যানবাহনের মধ্য দিয়েই পার হতে হবে। সড়কের এক পাশের ফুটপাতে পদচারী-সেতুর সিঁড়ি বসানোর জায়গা না থাকায় এই ব্যবস্থা করতে হয়েছে বলে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, পাতালপথটির জায়গায় মেট্রোরেলের একটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। স্টেশনের ভেতর দিয়ে সড়ক পারাপারের সুযোগ থাকবে। ফলে মেট্রোরেল চালু হলে পাতালপথের আর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।মেট্রোরেলের প্যাকেজ-৫-এর চিফ প্ল্যানিং ইঞ্জিনিয়ার মো. সারফরাজ উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, কারওয়ান বাজারে নতুন পদচারী-সেতুর নির্মাণকাজ শেষ। ২৭ জুন চূড়ান্ত পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। ২৮ জুন এটি সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে। এটি চালু হলে পাতালপথটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রথম যকৃৎ প্রতিস্থাপন হয়েছে। মায়ের যকৃৎ অসুস্থ ছেলের শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন বিএসএমএমইউয়ের চিকিৎসকেরা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ছেলে ও মা ভালো আছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম যকৃৎ প্রতিস্থাপন বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘যকৃৎ প্রতিস্থাপন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঐতিহাসিক ঘটনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিস্থাপন উদ্যোগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়েছে।’বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খানের নেতৃত্বে এই প্রতিস্থাপন হয়েছে। অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২৪ জুন ভোরবেলায় এই অস্ত্রোপচার শুরু হয়। শেষ হতে সময় লাগে ১৬ ঘণ্টার বেশি। এই চিকিৎসা হয়েছে প্রায় বিনা মূল্যে।’ ২০ বছর বয়সী কলেজছাত্রের লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে দুই বছর আগে। চিকিৎসকেরা যকৃৎ প্রতিস্থাপনকেই উত্তম বিকল্প হিসেবে বেছে নেন। যকৃৎ দেওয়ার জন্য ছেলেটির মা রাজি হন। যকৃৎ প্রতিস্থাপনে অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খান ও তাঁর দলকে সব ধরনের সহায়তা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, অত্যাধুনিক চিকিৎসাকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুত।অধ্যাপক মো. জুলফিকার রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৫০ জন চিকিৎসক এই অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন।
অনেকেই পড়াশোনা, ব্যবসা বা ভ্রমণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার আশা করেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা এখন সহজ নয়। যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে করা আপনার বিভিন্ন পোস্টের ওপর গবেষণা চলে। ভিসা পাওয়ার আগে বাধ্যতামূলকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার বিস্তারিত তথ্য এখন দেওয়া লাগে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিতর্কিত অনেক পোস্টের কারণে যুক্তরাষ্ট্র আপনাকে ভিসা না দিতে পারে। তাই যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাপ্রত্যাশী, তাঁদের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার আগে সচেতন থাকতে হবে। জেনে নিন কোন কোন পোস্ট করা যাবে না:রাজনৈতিক পোস্টযুক্তরাষ্ট্রের ভিসাপ্রত্যাশীদের ওই দেশ সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে করা পোস্ট বিশ্লেষণ করে মনোভাব বুঝতে চাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি আগে দেখা হয়। তাই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে কোনো পোস্ট করা ঠিক হবে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে তৈরি মিম, বিকৃত ছবি বা কোনো মন্তব্য শেয়ার করা বা রিটুইট করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালার সমালোচনা করা যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট থেকেও দূরে থাকতে হবে।সহিংস পোস্টফেসবুকে সহিংস কোনো পোস্ট দেওয়া বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না। সহিংসতার সমর্থনে কোনো পোস্ট দিলে বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে পোস্ট দেওয়া হলে তা ভালো চোখে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র। কারও প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে টুইটার ও ফেসবুকে পোস্ট দিলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তা বিশেষভাবে খতিয়ে দেখে। অনেক সময় এ কারণে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।হইহুল্লোড়বন্ধুদের নিয়ে হইহুল্লোড় করে পার্টি করা, মাদক গ্রহণের ছবি বা তথ্য প্রকাশ করলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। অ্যালকোহল, গাঁজা, এমনকি ধূমপানের ছবিতেও সন্দেহ তৈরি হলে আপনাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হবে। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টির ছবি পোস্টের কারণে আপনার যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে।যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার ঘোষণাঅনেকেই আড়ম্বর করে ফেসবুক বা টুইটারে ‘আমেরিকা যাচ্ছি, সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করব’—এসব পোস্ট দেন। যাঁদের লেখাপড়া বা কাজ শেষে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার বাসনা রয়েছে, তাঁদের ভিসা পাওয়া কঠিন। তাই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার গোপন বাসনা কখনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করা ঠিক নয়।অশ্লীল পোস্টঅনেকেই ফেসবুক টাইমলাইনে অশ্লীল পোস্ট শেয়ার করেন। আবার কেউ কেউ কারও ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ফেসবুকে উল্টাপাল্টা পোস্ট দেন। ফেসবুকে আপনার রাগের বা ক্ষিপ্ত হওয়ার ছবি বা ভিডিও পোস্ট দেওয়া বোকামি। সবচেয়ে বড় বোকামি কোনো অশ্লীল ছবি, ভিডিও বা মন্তব্য সেখানে রাখা। এসব পোস্ট দেখে আপনার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে একটা ধারণা নেয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। তাই উল্টাপাল্টা পোস্ট না দিয়ে যেসব পোস্ট আপনার ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে, তেমন পোস্ট টাইমলাইনে রাখুন।পোস্ট মুছলে সন্দেহ বাড়েযুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আশায় যদি টাইমলাইনে কোনো বিতর্কিত পোস্ট মুছে ফেলেন, তবে তাতে সন্দেহ আরও বাড়ে। পোস্ট মুছে ফেলা বা পোস্ট শুধু প্রাইভেট করে ফেললে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিতে পারবেন না। কোনো কিছু গোপন করার চেষ্টা তাদের সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। তাই কোনো পোস্ট দেওয়ার চিন্তা করা উচিত। তথ্যসূত্র: গ্যাজেটস নাউ।
সাত-আট বছর আগে মালদ্বীপ যাচ্ছি একটি আঞ্চলিক মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য হিসেবে। সেখানকার রাজনৈতিক অচলাবস্থার ওপর তথ্যানুসন্ধান করার কাজে। যাওয়ার আগে মালদ্বীপের সংবিধান পড়লাম ভালো করে। বিমানে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন আমাদের দলটির প্রধান ড. কামাল হোসেন। তাঁকে বললাম, মালদ্বীপের সংবিধানটা অসাধারণ, পৃথিবীর সব ভালো ভালো বিধান ঠেসে ঢোকানো হয়েছে সেখানে। তিনি হাসলেন, বললেন, সেটা বড় কথা না, আসল কথা হচ্ছে তার প্রয়োগ। তিনি কিছু আফ্রিকান দেশের উদাহরণ দিয়ে বললেন, ভালো ভালো চুক্তি আর আইন করেছে তারা, কিন্তু কোনো বাস্তবায়ন নেই। শুধু আইন পড়লে তাই ভুল ধারণা পায় মানুষ।তাঁর এ কথা বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ভালো ভালো আইনের অভাব নেই এ দেশে। কিন্তু তার বাস্তবায়ন নেই। নির্যাতন-সংক্রান্ত আইন এর একটি বড় উদাহরণ। এ দেশের সংবিধান, আইন, আদালতের রায়—সবই নির্যাতনবিরোধী। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। নির্যাতনের ভয়াবহ খবর প্রকাশিত হয় না, এমন একটি দিন পাওয়া বিরল। অথচ নির্যাতনের জন্য রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কারও শাস্তি হয়েছে, এমন সংবাদ কখনো প্রকাশিত হয়েছে কি না, সন্দেহ।নির্যাতন নিয়ে আইনি ব্যবস্থার পেছনে যে সদিচ্ছা নেই কোনো, তার একটি বড় প্রমাণ পাওয়া যায় আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোতে বাংলাদেশের ঢিলেঢালা অংশগ্রহণ দেখলে। সাদামাটা চোখে দেখলে মনে হবে, কথাটি ঠিক নয়। একমাত্র গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক চুক্তি ছাড়া নির্যাতনবিরোধী প্রায় সব আন্তর্জাতিক চুক্তির সদস্যরাষ্ট্র বাংলাদেশ। কিন্তু তলিয়ে দেখলে দেখা যাবে, সেখানেও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি।২. নির্যাতনবিরোধী (নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অমর্যাদাকর আচরণ ও শাস্তির বিরুদ্ধে চুক্তি) সবচেয়ে সুনির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক চুক্তিটি প্রণীত হয় ১৯৮৪ সালে। এই চুক্তি অনুসারে, সদস্যরাষ্ট্রগুলো নির্যাতনমূলক আচরণ নিবারণ, বন্ধ ও শাস্তিযোগ্য করবে এবং মানুষকে সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন থেকে রক্ষার জন্য সব উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে। নির্যাতনবিরোধী চুক্তির উল্লেখযোগ্য একটি বিধান হচ্ছে এর ১৪ অনুচ্ছেদ। এতে বলা আছে, প্রতিটি রাষ্ট্র তার আইনব্যবস্থায় এটি নিশ্চিত করবে যে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি বা তার পরিবার উপযুক্ত প্রতিকার পেয়েছে এবং পরিপূর্ণ পুনর্বাসনসহ তার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার আছে। ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ চুক্তিটির পক্ষ হওয়ার সময় ঘোষণা দেয় যে সে অনুচ্ছেদটি তার নিজস্ব আইন অনুসারে প্রয়োগ করবে।দৃশ্যত, এই ঘোষণা বা ডিক্লারেশনের উদ্দেশ্য ছিল নির্যাতনবিরোধী বৈশ্বিক মানদণ্ড এড়িয়ে যাওয়া। ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯৯ জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জার্মানি বাংলাদেশের এই ঘোষণার প্রতি আপত্তি জানায়। জার্মানির মন্তব্য হচ্ছে: এই ঘোষণা চুক্তিটির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। ২০ ডিসেম্বর ১৯৯৯ একই রকম আপত্তি জানিয়ে নেদারল্যান্ডস মন্তব্য করে, এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক চুক্তি আইনের প্রতি অবমাননামূলক।নির্যাতনবিরোধী চুক্তিটির প্রতি বাংলাদেশের অনান্তরিক মনোভাব ফুটে ওঠে এই চুক্তির অধীনে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নজরদারি পদ্ধতিগুলো এড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে। উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করছি।প্রতিবেদন পেশ: বাংলাদেশ নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক চুক্তির পক্ষ হয়েছে ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর। কাজেই বাংলাদেশের দায়িত্ব ছিল এর ১৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে চুক্তির পক্ষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে (এবং এরপর প্রতি চার বছর অন্তর) একটি প্রতিবেদন চুক্তিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত নির্যাতনবিরোধী কমিটির কাছে জমা দেওয়া। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনী যাতে নির্যাতন না করে এবং নির্যাতন করলে কী শাস্তি পাবে এবং দেশের সংবিধান, আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থায় এগুলো নিশ্চিত করার কী কী ব্যবস্থা রয়েছে তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার দায়দায়িত্ব ছিল। চুক্তির পক্ষ হওয়ার পর ২১ বছর পেরিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত প্রথম প্রতিবেদনটিই জমা দেয়নি। শোনা যাচ্ছে, এ বছর ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য কমিটির ৬৭ তম বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার আগে তড়িঘড়ি করে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।চুক্তির অন্যান্য নজরদারি: নির্যাতনবিরোধী চুক্তিতে কোনো সদস্যরাষ্ট্রের ওপর নজরদারির জন্য আরও তিনটি পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে অন্য কোনো সদস্যরাষ্ট্র (অনুচ্ছেদ ২১) এবং/বা নিজ রাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে (অনুচ্ছেদ ২২) কমিটির কাছে অভিযোগ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সদস্যরাষ্ট্রকে আলাদাভাবে সম্মতিমূলক ঘোষণা দিতে হয়। বাংলাদেশ একটি ঘোষণাও দেয়নি। কমিটি কর্তৃক নিজে থেকে তদন্ত ও তদন্তের প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দেশে পরিদর্শন (অনুচ্ছেদ ২০) করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশকে রাজি হতে হয়। অন্যান্য দায়দায়িত্ব পালনে অনীহা থেকে মনে হয় না বাংলাদেশ কখনো এতে রাজি হবে।নির্যাতনবিরোধী ঐচ্ছিক প্রটোকল: নির্যাতন নিবারণ বা হওয়ার আগেই এর সম্ভাবনা রোধ করার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রটোকল প্রণীত হয়। এতে প্রতিটি রাষ্ট্রকে তার নিজস্ব নির্যাতন নিবারণব্যবস্থা গড়ে তোলার তাগিদ দেওয়া হয়। এতে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক আটক রাখার প্রকাশ্য ও গোপন স্থানগুলোতে নিয়মিত পরিদর্শনের অধিকার দেওয়া হয় বেসরকারি পর্যায়ের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে।২০০২ সালে প্রটোকলটি প্রণীত হয় এবং ২০০৬ সালে কার্যকরী হয়। ১০ জুন ২০১৯ পর্যন্ত এর সদস্যরাষ্ট্র ৮৯। এর মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফ্রিকার বেশ কিছু রাষ্ট্র থাকলেও বাংলাদেশ এখনো এটির সদস্য হয়নি। ফলে বাংলাদেশ নির্যাতনবিরোধী চুক্তির সদস্যরাষ্ট্র হলেও এ দেশে এর বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক নজরদারির সুযোগ খুব সীমিত বলা যায়।৩. আন্তর্জাতিক চুক্তিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দুর্বল হলেও তার নিজের আইনে নির্যাতনের বিরুদ্ধে শক্ত বিধান রয়েছে। নির্যাতন থেকে মুক্তি বাংলাদেশের সংবিধানের অন্তত তিনটি অনুচ্ছেদ অনুসারে (৩১,৩২, ৩৫) মৌলিক একটি অধিকার। অনুচ্ছেদ ৪৪ ও ১০২ অনুসারে এটি আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য অধিকার। এরপরও ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৭ ও ১৬৭ ধারার অপপ্রয়োগ করে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার ও পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদকালে যেকোনো ধরনের নির্যাতন রোধ করার জন্য কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। প্রায় এক যুগ আগে এ-সংক্রান্ত প্রথম রায়টি দেওয়া হলেও নির্যাতনের ভয়াবহতা বরং বেড়েছে পরে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এর বহু নজির আছে।বাংলাদেশ ২০১৩ সালে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ করার জন্য একটি আইন করেছে। এখন পর্যন্ত এই আইনে কারও শাস্তি হয়নি, এমনকি এই আইনে মামলা দিতে গেলেও নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। ৬ আগস্ট ২০১৪ সালে এ-সংক্রান্ত একটি মামলা ঢাকার মেট্রোপলিটন সেশনস আদালতে দায়ের করা হলেও আজও এর নিষ্পত্তি হয়নি। নিষ্পত্তি হয়নি এই আইনে দায়েরকৃত আরও কয়েকটি মামলার, যদিও আইনটিতে বিধান রয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করার। কেন এমন একটি আইন থাকা সত্ত্বেও বিচার হচ্ছে না, তা নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কোনো প্রশ্ন তোলেনি। দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনো বিশদ গবেষণাও করে দেখেনি। ২০১৮ সালের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনে অবশ্য আইনটি বাস্তবায়নের ঘাটতির জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অসচেতনতাকে দায়ী করা হয়েছিল।৪. আজ ২৬ জুন বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে নির্যাতনবিরোধী দিবস। দিবসটির লক্ষ্য নির্যাতনবিরোধী চুক্তিটির বাস্তবায়নের তাগিদ তুলে ধরা। বাংলাদেশের জন্য এটি বাস্তবায়নের সবচেয়ে জোরালো পথ হতে পারে দেশটির নিজস্ব সাংবিধানিক বিধান ও বিশেষ করে ২০১৩ সালের আইনটি শক্তভাবে প্রয়োগ করা।আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু আইন করে ফেলে রাখলে কোনো লাভ নেই। এতে বরং আইন ও বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের হতাশা বাড়ে। আসিফ নজরুল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক
এই মুহূর্তে ঢাকা শহরে অন্যতম জনপ্রিয় খাবারের জায়গার নাম জিজ্ঞাসা করা হলে শেফ’স টেবিলের নাম আসবে। ঢাকার জনপ্রিয় বিশেষায়িত বেশ কিছু রেস্তোরাঁর খাবারের স্বাদ একই ছাদের নিচে পাওয়া যায় গুলশান ও ধানমন্ডির শেফ’স টেবিলে। দেশি তেহারি থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কার খাবার, থাই, জাপানি, ইতালীয়—কী নেই এখানে। এটি ইউনিমার্টের একটি উদ্যোগ।গত বছরের জুলাই মাসে গুলশানে প্রথম শেফ’স টেবিল তার যাত্রা শুরু করে। ভোজনরসিক ও খাদ্যপ্রেমিক মানুষের জন্য এটি আদর্শ জায়গা। গুলশানের শেফ’স টেবিলে ২৪টি রেস্তোরাঁ ও ৩টি খাবারের কার্ট আছে। আর ধানমন্ডিতে আছে ১২টি রেস্তোরাঁ ও ২টা কার্ট। গুলশানের শেফ’স টেবিলে গিয়ে আপনি যেমন থাই খাবারের জন্য পাবেন থাই এমারেল্ড। পুরোপুরি দেশি খাবারের স্বাদ পেতে চাইলে স্বাদ তেহারি ঘর আছে।দোস লোকোস রেস্তোরাঁতে পাবেন প্রকৃত (অথেনটিক) মেক্সিকান খাবারের স্বাদ। শেফ’স টেবিল কেন জনপ্রিয় জানেন, একজন ভোজনরসিক বলেছিলেন, এখানে সবকিছুই একসঙ্গে খাওয়া যায়। যানজটের এই শহরে পার্কিং নিয়ে ভাবতে হয় না। আবার একটু থাই, একটু মেক্সিকান বা ধরেন শুধু ডেজার্ট খেতে ইচ্ছে করল, এক জায়গায় সব পাবেন। সময় বাঁচে।গুলশানের শেফ’স টেবিলে সো জুসিতে আপনাকে তাজা ফলের রস বানিয়ে দেবে। ভারতীয় খাবার খেতে চাইলে ‘তরকা’ নামের রেস্তোরাঁতে ঢুঁ মারতে পারেন। টেস্ট অব লঙ্কা আপনার জন্য শ্রীলঙ্কার খাবারের স্বাদ নিয়ে উপস্থিত সেখানে। আরেকটি বিষয় হলো, শেফরা কী বানাচ্ছেন আপনার জন্য, সেটি আপনি নিজের চোখে দেখতে পারবেন। এই স্বচ্ছতাটুকু রাখতে চেয়েছেন তাঁরা। যাতে আগত অতিথিরা আস্থা নিয়ে খাবার খেতে পারেন।কখনো কেউ ভেবেছিল, জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ স্প্যাগেটি জ্যাজ ধানমন্ডিতে চলে আসবে। যাঁরা খেতে ভালোবাসেন, তাঁদের স্বপ্ন যেন সত্যি হয়েছে। স্প্যাগেটি জাজ, টারকিশ বাজার, অ্যাবস্যুলুট থাই, জাপানি খাবার নিয়ে কিওশি, অজো—সবই এখন আছে ধানমন্ডির শেফ’স টেবিলে। চীনা খাবারের রেস্তোরাঁ আই লাভ মাই হোম আছে এখানে। হাক্কা ঢাক্কা, দ্য ভোজ, আত–তিন রেস্তোরাঁ আছে গুলশানের শেফ’স টেবিলে। এটি সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে।শেফ’স টেবিলে এক পরিবার বা কোনো দলের একেকজনের একেক খাবারের দিক টান থাকলেও সমস্যা নেই। যেটা যাঁর পছন্দ, সেটা বেছে নিলেই হলো।
উইন্ডোজ পিসিতে মাইক্রোসফটের অফিস ব্যবহারকারীদের নতুন ম্যালওয়্যার আক্রমণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছে মাইক্রোসফট। অফিস সফটওয়্যারের ম্যাক্রো ফাংশনের মাধ্যমে আসা ওই ম্যালওয়্যারে উইন্ডোজ সিস্টেম আক্রান্ত হতে পারে। মাইক্রোসফটের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন একটি ম্যালওয়্যার কর্মসূচি আবার নতুন করে ফিরে এসেছে। এটি জটিল আক্রমণ চেইন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। মাইক্রোসফট এক্সেলের মতো ফাইল কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে ভয়ংকর ফ্লাওয়েডঅ্যামি র‍্যাট ম্যালওয়্যার সরাসরি মেমোরিতে আক্রান্ত করে।বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি শুরু হয় ই–মেইলের মাধ্যমে। ই–মেইলে আসা ডট এক্সএলএস (. xls) অ্যাটাচমেন্ট যুক্ত কনটেন্ট ডাউনলোড করার পর থেকে এ ম্যালওয়্যার সক্রিয় হয়। ওই কনটেন্ট কোরিয়ার ভাষায় লেখা। এক্সেল অ্যাটাচমেন্টে ক্ষতিকর ম্যাক্রো ফাংশন যুক্ত করে উইন্ডোজ পিসিতে আক্রমণ চালায় দুর্বৃত্তরা। শুরুতে কোরিয়ার ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে এ আক্রমণ চালানো হয়।সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান প্রুফপয়েন্টের তথ্য অনুযায়ী, টিএ ৫০৫ নামের একটি গ্রুপ এ আক্রমণ চালায়। এর আগেও ওই গ্রুপ এ ধরনের আক্রমণ করেছিল। তবে এবারে ই–মেইলে বাড়তি কিছু কৌশল যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে এ ধরনের ক্ষতিকর অ্যাটাচমেন্টে ক্লিক না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ফাইল খুলতে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ম্যাক্রো ফাংশন চালু হয়ে msiexec. exe নামের একটি ফাইল চালু করে, যা ডাউনলোডসকে এমএসআই আর্কাইভে রূপান্তরিত করে। এমএসআই আর্কাইভে ডিজিটাল সাইনযুক্ত ইএক্সই ফাইল থাকে, যা মেমোরিতে অন্য ইএক্সই ফাইল চালু করে দেয়। এ প্রক্রিয়ায় wsus. exe ফাইল ডাউনলোড হয়ে যায়, যা মাইক্রোসফটের অফিশিয়াল উইন্ডোজ সার্ভিস আপডেটকে পাশ কাটাতে পারে। এতে ফ্লাওয়েডঅ্যামি র‍্যাট ম্যালওয়্যার কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে পড়ে।সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেন, অপরিচিত উৎস থেকে আসা ই–মেইলের অ্যাটাচমেন্ট খোলা থেকে সাবধান থাকতে হবে। এর আগে ওয়ার্ড ফাইলেও এ ধরনের আক্রমণের কথা এসেছিল। ওয়ার্ড বা এক্সেল যে ধরনের অ্যাটাচমেন্ট হোক না কেন, তা নিশ্চিত না হয়ে খোলা ঠিক নয়। সাইবার দুর্বৃত্তরা প্রতারণা ও প্রলোভনের মেইল করে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।
প্রায় ১৮ বছর আগে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় বৃদ্ধ রাবেয়া খাতুন হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে আজ বুধবার সকালে তিনি তাঁর নাতি আলমগীর হোসেনের হাত ধরে লাঠিতে ভর দিয়ে আদালতে আসেন।বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মোহাম্মদ রিয়াজউদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ এ–সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার দিন রয়েছে।‘অশীতিপর রাবেয়া: আদালতের বারান্দায় আর কত ঘুরবেন তিনি?’ শিরোনামে গত ২০ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুল আলম গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন। এর শুনানি গ্রহণে ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট রাবেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে থাকা মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন। মামলার নথি তলবের পাশাপাশি নিম্ন আদালতে থাকা মামলাটি কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেওয়া হয়।এরপর গত ১৫ মে হাইকোর্ট এক আদেশে ২৬ জুন রাবেয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তাঁর আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ অশীতিপর রাবেয়া আদালতে হাজির হন।আবেদনকারী আইনজীবী আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ২০০২ সালে করা ওই মামলায় রাবেয়ার বয়স ৬০ বছর বলা হয়। সে অনুসারে তাঁর বয়স হয় ৭৭ বছর। তবে রাবেয়ার ভাষ্য, তাঁর বয়স ১০৪ বছর।জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ বছর ধরে আদালতে হাজিরা দেন রাবেয়া। মামলা শেষ হয় না। কবে শেষ হবে তাও জানেন না। রাবেয়া বলেন, ‘পুলিশেরে শরবত, মোরব্বা বানাই খাওয়াইছি। তারপরও মামলায় আমারে আসামি বানাইছে। আমি আর বাঁচতে চাই না, মরতে চাই। অনেক দিন ধরে এই মামলায় হাজিরা দেই। আদালত আমাকে মামলা থেকে খালাসও দেয় না, শাস্তিও দেয় না।’অবৈধ অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে ২০০২ সালের ২ জুন রাবেয়া খাতুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করা হয়।
বলিউড তারকা শিল্পা শেঠি ফিটনেস এবং সুস্থ থাকা (ওয়েলনেস) সম্পর্কিত নিজের একটি অ্যাপ প্রকাশ করেছেন গত ৬ মে। আন্তর্জাতিক যোগব্যায়াম দিবস উপলক্ষে শিল্পা শেঠি কুন্দ্রার বাড়িতে ১৭ জুন উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য। শিল্পার সঙ্গে কথোপকথনে উঠে এসেছে যোগব্যায়াম ও অন্যান্য বিষয়ের নানা কথা।ফিটনেস ও ওয়েলনেস নিয়ে প্রকাশ করা নতুন অ্যাপটির প্রতিক্রিয়া কেমন?শিল্পা শেঠি: দারুণ প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। আর এত ভালো সাড়া পেয়ে আমি অভিভূত। এখন অনেকে এটা নামিয়ে নিচ্ছে। বিদেশে বসে মানুষ ভারত থেকে যোগব্যায়াম (ইয়োগা) শিখছেন। ১১ বছর আগে আমি যোগের ওপর ডিভিডি প্রকাশ করেছিলাম। তখনো সবার প্রশংসা পেয়েছিলাম। এখন সময় বদলেছে। সবাই এখন চটজলদি উপায় খোঁজে। মোবাইল ফোনের মধ্যে সবকিছু পেতে চায়। অ্যাপটি বানাতে আমার দুই বছর সময় লেগেছে। আসলে আমি খুব খুঁতখুঁতে। তাই একটু সময় বেশি লাগল। আর অ্যাপটি আমি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে বানিয়েছি।যোগব্যায়াম আপনার জীবনধারাকে কতটা বদলেছে?শিল্পা শেঠি: এটা আমার কাছে নিয়মানুবর্তিতা। আর আমি মনে করি, এটা ছাড়া মানুষ কোনো সফলতা পেতে পারে না। এমনকি নিয়মানুবর্তিতা ছাড়া মানুষের মধ্যে উদারতাও আসে না। যোগের মাধ্যমেই আমার জীবনকে আমি এক সুস্থ-স্বাভাবিক ছন্দে আনতে পেরেছি। এই ব্যায়াম মনকে শুদ্ধ করে। আসনের মাধ্যমে আমি আমার শরীর এবং মনের শুদ্ধীকরণ করি। এমনকি আমার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারার জন্ম হয়েছে। আমার মধ্যে অফুরন্ত প্রাণশক্তির সঞ্চার হয়েছে। এখন যোগব্যায়াম আমার জীবনযাত্রার সঙ্গে পুরোপুরি জড়িয়ে গেছে।আপনি কার কাছে যোগব্যায়ামের প্রশিক্ষণ নেন?শিল্পা শেঠি: রাজ পাণিগ্রাহির কাছে। তিনি আমার থেকে ১০ বছরের ছোট হবেন। কিন্তু তাঁর কথাবার্তা, চিন্তাভাবনা আমার চেয়ে পরিণত। উনি আট বছর বয়স থেকে যোগব্যায়াম করছেন।নানা রকম চাপের এই যুগে যোগব্যায়াম মানুষকে চাপমুক্ত (স্ট্রেস) রাখতে কতটা সাহায্য করে?শিল্পা শেঠি: প্রত্যেকের জীবনে স্ট্রেস আছে। আমার জীবনও স্ট্রেসে ভরপুর। শুধু ভক্তরা নয়, আমার কাছে আমার পরিবারের প্রচুর আবদার ও চাহিদা থাকে। সেসব পূরণ করতে করতে স্ট্রেস আমাকে ঘিরে ধরে। মাঝেমধ্যে আমি অবাক হই যে কীভাবে আমি সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলি। যোগব্যায়াম আমাকে সেই প্রাণশক্তি দেয়। আর একটা কঠিন দিনকে সহজে অতিক্রম করার মনোবল জোগায়।যোগের পাশাপাশি সঠিক ডায়েট কতটা জরুরি?শিল্পা শেঠি: আমার এই অ্যাপ এবং আপনাদের মাধ্যমে আমি বলতে চাই যে পুষ্টি (নিউট্রিশন) সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়া খুব জরুরি। আমাদের সুস্থ থাকা ৭০ শতাংশ নির্ভর করে ডায়েটের ওপর। আর ডায়েট মানে এই নয় যে আপনি তেল খাওয়া ছেড়ে দেবেন, তেল–বর্জিত খাবার খাবেন। এখন এটা মানুষের নতুন ঢং। অনেকে জলপাই তেলে রান্না করেন। যার কোনো মানে হয় না। আমার রোজ ১ টেবিল চামচ ঘি চাই। তা না হলে আমার খাবার অসম্পূর্ণ বলে মনে হয়। এখন আরেকটা ধারা—‘নো কার্বস’। ভালো কার্বস, রিচ ফাইবার শরীরের জন্য উপকারী। আলু থেকেও অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আমি তো পেট ভরে জিরা-আলু খাই।আজ আপনার অ্যাপের মাধ্যমে যোগব্যায়াম আরও মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। আপনার পরিবার, অর্থাৎ আপনার স্বামী ও পুত্র কি যোগচর্চা করেন?শিল্পা শেঠি: আমার স্বামী যোগব্যায়াম করে। আর এর মাধ্যমে ও আট কেজির মতো ওজন ঝরিয়েছে। তবে ওকে আরও ঝরাতে হবে। আমরা একসঙ্গে যোগ করতে পারি না। কারণ, ও সবে শুরু করেছে। আর আমি অ্যাডভান্স লেভেলে পৌঁছে গেছি। আগে যোগব্যায়ামের প্রতি ওর খুব একটা আগ্রহ ছিল না। আর আমাকেও খুব একটা পাত্তা দিত না। তবে এখন ও দেখেছে যে এর মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিকভাবে কতটা উপকৃত হওয়া যায়। যোগ ওর জীবনে দারুণ প্রভাব ফেলেছে। এখন যোগে ও অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। আসলে এটা একটা অভ্যাসের মতো। এটা ছাড়া একটা দিন ভাবা যায় না। আমার ছেলেও যোগব্যায়াম করে। আর ও খুব সহজেই করে। আসলে এই বয়সে শরীরে নমনীয়তা থাকে। আমি মনে করি, প্রতিটি স্কুলে যোগব্যায়ামের একটা সেশন থাকা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।আপনাদের সফল দাম্পত্যের রহস্য কী?শিল্পা শেঠি: বন্ধুত্ব এবং বিশ্বাস। আমার মনে হয়, প্রতিটি বৈবাহিক সম্পর্ক অটুট থাকতে পারে এই দুটি বজায় থাকলে। এ ছাড়া আর কোনো রহস্য নেই আমাদের দাম্পত্যে।এই প্রজন্মের ব্যায়ামাগার বা জিমে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এ সম্পর্কে কিছু বলতে চান?শিল্পা শেঠি: আমার মনে হয়, যুব সম্প্রদায় ধীরে ধীরে যোগব্যায়ামের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। আসলে যোগ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা আছে। আগে সেসব দূর করতে হবে। অনেকে ভাবে, যোগব্যায়াম ওজন কমাতে সাহায্য করে না। আর যোগ করতে হলে শরীরে নমনীয়তা থাকা জরুরি। আপনি যেটাই ধৈর্য ধরে করবেন, সেটাই আপনাকে সাহায্য করবে। যোগ আন্তর্জাতিক স্তরে যাওয়ার আগে আমি এর দ্বারা প্রভাবিত। তবে আমি আজও অনেক আসন পারি না। আগে নিজের মনকে প্রস্তুত করতে হবে। নিজেকে বলতে হবে আমি এটা পারব। আর এটা সম্ভব অনুশীলনের মাধ্যমে। আমি খুবই গর্বিত যে আমাদের মোদিজি (ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) যোগ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলছেন। আমি অনেক দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রয়াসের প্রশংসা করে একটা চিঠি তাঁর উদ্দেশে লিখেছিলাম। যোগ আমাদের দেশের। আর এখন পাশ্চাত্যের মানুষেরা আমাদের থেকে বেশি যোগব্যায়াম চর্চা করে। ম্যাডোনা, জেনিফার লোপেজ যোগ করেন। তাঁদের জীবনে এটি দারুণ প্রভাব ফেলেছে।শিল্পা শেঠির ফিটনেস অ্যাপ নামানোর ঠিকানা:অ্যন্ড্রয়েড:আইওএস:
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির কথায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর ভাষায়, রুহানির কথাতেই বোঝা যায়, ইরানের নেতারা বাস্তবতা বোঝেন না। এ সময় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাবস্থার জন্য ইরানকে তিনি আবার দায়ী করেন।আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ইরানের প্রকাশিত বিবৃতিকে ‘মূর্খ ও অপমানজনক’ উল্লেখ করে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দেশটি ওই বিবৃতি প্রকাশ করে। ওই বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, এই পদক্ষেপ প্রমাণ করল হোয়াইট হাউস ‘মানসিক সমস্যায়’ আছে। রুহানির বিবৃতির পর এটাকে ‘মূর্খ ও অপমানজনক’ উল্লেখ করে গতকাল মঙ্গলবার টুইট করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এতে বোঝা গেল ইরানের নেতারা ‘বাস্তবতা বোঝেন না’।গত সোমবার ট্রাম্প ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ইরানের ‘আক্রমণাত্মক আচরণের’ জবাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তিনি। ইরানের প্রধান নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিসহ কয়েকজন শীর্ষ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প দাবি করেন, এই ব্যক্তিরা ওই অঞ্চলের যুদ্ধাবস্থার জন্য দায়ী।যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির বিশাল সম্পদের জোগান রয়েছে, যা দিয়ে তিনি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শাখা ইসলামিক রেভুল্যুশন গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) অর্থায়ন করেন।২০১৮ সালে একবার পত্রিকার মতামতে প্রকাশিত লেখায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছিলেন, খোমেনির এই সম্পদের উৎসের পরিমাণ ৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো, যা আইআরজিসির জন্য ব্যবহৃত হয়।ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি প্রশ্ন করেছেন, কেন একজন ব্যক্তি বিশেষের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা, যাঁর ‘হোসেনিয়েহ (প্রার্থনার জায়গা) ও সাধারণ একটি বাড়ি’ ছাড়া কিছু নেই। এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘জঘন্য ও নির্বোধ’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহুবার এ ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে গত বছরের ৫ নভেম্বর ইরানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে জুনে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি সই করা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র নাম প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে সই করা অন্য পাঁচটি দেশ হচ্ছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। ৭ জুলাইয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে এই দেশগুলো কোনো ব্যবস্থা না নিলে চুক্তি ভঙ্গ করে ইউরেনিয়াম উৎপাদনের সীমা লঙ্ঘন করবে বলেও হুমকি দিয়েছে ইরান।ইরান মার্কিন স্বার্থে হামলা করতে পারে—নিজ দেশের এমন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত মাসে ইরানকে লক্ষ্য করে মধ্যপ্রাচ্যে রণসাজে সজ্জিত হয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চারটি ট্যাংকারে হামলা এবং জুন মাসে ওমান উপসাগরীয় এলাকায় জাপান ও নরওয়ের মালিকানাধীন দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে মধ্যপ্রাচ্যে আরও এক হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সামরিক ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনায় পরদিন ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়ার পরও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করেন ট্রাম্প।তবে ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনাটি ছাড়া বাকি অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।গতকাল টুইটে ট্রাম্প বলেন, ইরান কেবল ‘শক্তি আর ক্ষমতাই’ বোঝে। যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী। আমেরিকার কোনো কিছুর ওপর ইরান কোনো হামলা চালালে এই বিশাল ও অপ্রতিরোধ্য বাহিনীর সঙ্গে দেখা করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে এই অপ্রতিরোধ্য হওয়ার অর্থ হবে ধ্বংস।যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, এটা প্রতীকী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণের সম্পদ খোয়াতে হবে ইরানকে।ট্রাম্প বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আয়াতুল্লাহ খামেনি, তাঁর কার্যালয়, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর এবং খামেনির অর্থনৈতিক উৎস ও সহায়তার মূল জোগানের জায়গাগুলো বাধাগ্রস্ত হবে।
১৩ বছরের রিমু ইদানীং খুব জেদি হয়ে উঠেছে। তার ইচ্ছেমতো কোনো কিছু না হলেই ভীষণ রাগ। যখন যা চাইবে না দিলে চিৎকার–চেঁচামেচি, না খেয়ে থাকা; এমনকি ভাঙচুর করতেও দ্বিধা করে না। গতকাল মোবাইল ফোন ব্যবহার কমানোর কথা বলতেই চিৎকার করে বাড়ি মাথায় তোলার অবস্থা। ইদানীং বাবা-মা কোনোভাবেই তার জেদকে সামাল দিতে পারছেন না।কৈশোরের (সাধারণত ১০ থেকে ১৯ বছর) আবেগের প্রাবল্য, কৌতূহলপ্রবণতা আর স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে সবকিছু নিজের ইচ্ছেমতো করার ইচ্ছা এবং সেই সঙ্গে অভিভাবকের কঠোর শাসন বা অতিরিক্ত প্রশ্রয় সন্তানের জেদি মনোভাব তৈরি করতে পারে।জেদ সামলাবেন কীভাবেজেদে সম্পূর্ণ উপেক্ষা: মনোবিজ্ঞানের একটা সূত্র হলো, যে আচরণ মনোযোগ বা প্রশ্রয় পায়, সেটা বেড়ে যাবে। আর যে আচরণ উপেক্ষিত হবে, সেটি ধীরে ধীরে কমে যাবে। প্রশ্রয় বা মনোযোগ আমরা নানাভাবে দিয়ে থাকি। যেমন, জেদ করলে সে যা চাইছে সেটা পূরণ করার মাধ্যমে, তাকে বকা বা সমালোচনা করার মাধ্যমে, এমনকি অতিরিক্ত বোঝানোর মাধ্যমেও তার জেদকে প্রশ্রয় বা মনোযোগ দিয়ে থাকি।সুতরাং সন্তানের জেদ কমানোর প্রথম পদক্ষেপ হলো তার অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা অর্থাৎ জেদ নিয়ে কোনো কথা বলা বা প্রতিক্রিয়া না দেখানো। জেদ করে তার কোনো চাহিদা ক্রমাগত উপেক্ষিত হলে ধীরে ধীরে এ আচরণ কমে আসবে।অগ্রহণযোগ্য আচরণে প্রাপ্য সুবিধা সাময়িকভাবে কমিয়ে দিনজেদ করে পরিবারের নিয়ম ভঙ্গ করলে (যেমন: ভাঙচুর, গালাগালি, না বলে বাইরে থাকা, গায়ে হাত তোলা, হুমকি দেওয়া) উপেক্ষার পাশাপাশি সাময়িকভাবে তার প্রাপ্য সুবিধা অর্থাৎ তার প্রতি আপনার ভালোবাসার প্রকাশ (যেমন: ব্যবহারে উষ্ণতা, খাবার বেড়ে দেওয়া, পছন্দ অনুযায়ী রান্না, পকেট মানি, উপহার দেওয়া ইত্যাদি) প্রয়োজন অনুযায়ী কমিয়ে দিন। সন্তানকে পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিন অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ বা জেদ করে যেমন সে তার দাবি আদায় করতে পারবে না, তেমনি অগ্রহণযোগ্য ব্যবহারে তার ‘সুবিধা’ কমে যাবে।যা চাইবে তা দেবেন না। আপনার সামর্থ্য থাকলেও সন্তানের কিছু চাহিদা অপূর্ণ রাখুন। এতে সন্তান যেমন বুঝতে শেখে আমাদের সব ইচ্ছা সব সময় পূরণ হয় না, তেমনি সে শেখে ‘না পাওয়াকে’ কীভাবে মানিয়ে নিতে হয়। ছেলেবেলা থেকেই এই মানিয়ে নেওয়ার শিক্ষা প্রাপ্ত বয়সে জীবনের নানা ‘না পাওয়া’, ব্যর্থতা, অপ্রতাশিত ঘটনা সহজভাবে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।কাঙ্ক্ষিত আচরণে মনোযোগসন্তানের যেকোনো ভালো কাজে, যেমন—আপনার কথা শুনলে, জেদ কমিয়ে ফেললে, পরিবারের নিয়মকানুন মেনে চললে, খেলাধুলা বা পড়ালেখায় ভালো করলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশংসা ও ভালোবাসা প্রকাশ করুন।আপনি নিজে সন্তানের জন্য একটি ভালো উদাহরণ হয়ে উঠুনশিশু-কিশোর মূলত দেখে শেখে। কাজেই আপনি যদি অল্পতেই রেগে যান, গালিগালাজ, ভাঙচুর করার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করেন, তাহলে স্বভাবতই আপনার সন্তান সেটাই শিখবে। সন্তানের ক্ষেত্রে আপনি যা চাইছেন সেটা নিজের আচরণে প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করুন।নেতিবাচক আচরণ থেকে বিরত থাকুনজেদ করলে বকা দেওয়া, গায়ে হাত তোলা, সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকবেন। অতিরিক্ত বকা, সমালোচনা এর গুরুত্ব নষ্ট করে। সন্তান এ ধরনের আচরণে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং একসময় আর আমলে নেয় না। এ ছাড়া সন্তানকে বকা দিলে কিছুক্ষণ পর অভিভাবকের নিজেরই খারাপ লাগা কাজ করে এবং কোনোভাবে পুরস্কৃত করে পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরিণামে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ কমার বদলে বেড়ে যায়।পরিবারের মূল নিয়মকানুন অবহিত করুনছোটবেলা থেকেই সন্তানকে পরিবারের মূল নিয়মকানুন, যেমন—নিয়মিত স্কুল, বড়দের সম্মান, অনুমতি ছাড়া বাসার বাইরে সময় কাটানো বা অন্যের ব্যক্তিগত জিনিস, যেমন মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ধরা যাবে না ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত করুন।কী করবেন*  সন্তানকে যে আপনি ভালোবাসেন সেটা মুখে প্রকাশ করুন*  সন্তানের ‘প্রাইভেসি’কে সম্মান করুন (ঘরে ঢোকার সময় নক করুন)*  বয়স অনুযায়ী পরিবারের ছোটখাটো দায়িত্ব দিন, নিজের পছন্দে তার ব্যক্তিগত জিনিস কিনতে দিন (এতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে, সন্তান আত্মবিশ্বাসী হয়)*  সাধারণ ব্যর্থতা (রেজাল্ট খারাপ করা ইত্যাদি) তিরস্কারের বদলে সহজে গ্রহণ করুন এবং তাকে মেনে নিতে শেখান (এতে চাপ মোকাবিলার ক্ষমতা বাড়বে)*  সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান, তার আগ্রহের জায়গাগুলো নিয়ে কথা বলুন (যেমন: তার বন্ধুবান্ধব, খেলাধুলা, প্রিয় গায়ক, ভবিষ্যতের স্বপ্ন), একসঙ্গে সিনেমা দেখুন, গান শুনুন (এতে সন্তানের কাছাকাছি যেতে পারবেন)যা করবেন না*  মনে আঘাত দিয়ে বা অসম্মান করে কথা বলা, গায়ে হাত তোলা, তুলনা করা (কারণ এতে সন্তানের হীনম্মন্যতা তৈরি হয়)*  সন্তানের জেদ নিয়ে অন্যের কাছে বা সন্তানের সামনে কথা বলবেন না (কারণ এতে জেদ গুরুত্ব পায়)*  মিথ্যা হুমকি দেবেন না, যা করতে পারবেন না, সেটা প্রকাশ করবেন না (কারণ, এতে আপনার কথার গুরুত্ব কমে)।*  ব্যক্তিগত বিষয়ে আপনার নিজস্ব মতামত চাপাবেন না (এতে সন্তানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কম হয়)মেখলা সরকার : সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা।
দেশি এবং বিদেশি—উভয় ধরনের বিনিয়োগকেই নিরুৎসাহিত করবে প্রস্তাবিত বাজেট। নতুন বাজেটে এমন সব ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেবে, ব্যবসায়ের খরচও বাড়াবে।জাতীয় সংসদে ১৩ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আর এ বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এমন পর্যবেক্ষণই তুলে ধরেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন সংস্থা বিডা পর্যবেক্ষণসংবলিত প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পাঠিয়েছে। প্রতিবেদনে বিনিয়োগের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়েছে।যোগাযোগ করলে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন করে কিছু বলতে চাই না। যা বলার আমরা প্রতিবেদনেই বলেছি। এগুলো মানা বা বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন সরকারের।’বাজেট পাসের আগে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আরেকবার তাদের মতামত জানাবে। তাই বাজেট নিয়ে বিডার মূল্যায়ন এফবিসিসিআইয়ের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে জানান কাজী আমিনুল ইসলাম।বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী সহজে ব্যবসা করার সূচকে (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে ১৯০ দেশের মধ্যে ১৭৬ তম, প্রস্তাবিত বাজেট সেই অবস্থানকে আরও পিছিয়ে দেবে বলে আশঙ্কা বিডার। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে সহজে ব্যবসা করার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০-এর নিচে নামিয়ে আনা।বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে এমন কোনো আশার কথা শোনানো হয়নি যে দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হবেন। এরই মধ্যে যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, উল্টো তাঁদের জন্য অসুবিধা হওয়ার মতো পদক্ষেপই নেওয়া হয়েছে।জাহিদ হোসেন বলেন, করপোরেট কর কমিয়ে বিনিয়োগবান্ধব হওয়ার সুযোগ ছিল—অর্থমন্ত্রী তাতে হাতই দেননি। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে নগদ লভ্যাংশ দিতে বলা হয়েছে, এটিও বিনিয়োগবিরোধী পদক্ষেপ। কারণ, এতে কোম্পানির তারল্যসংকট হবে। রিটেইন্ড আর্নিংয়ের ওপর যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা একেবারেই ভুল পদক্ষেপ।ব্যয় হয়ে যাবে আয়প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ উপধারায় নতুন একটি বিষয় সংযোজন করে বলা হয়েছে, মূলধনি যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন করা না হলে মূলধনি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য যত টাকা ব্যয় হবে, তা আয় হিসেবে গণ্য হবে।বিষয়টি উল্লেখ করে বিডা বলেছে, বিনিয়োগকারীরা সব সময় মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় অজ্ঞতা বা আইনগত অস্পষ্টতার কারণে উৎসে কর কর্তন এবং তা জমা সময়মতো না-ও হতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে আয়কর কর্তৃপক্ষ দাবিনামা জারির মাধ্যমে সুদসহ কর কর্তন ও জরিমানা আরোপ করে থাকে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে মূলধনি যন্ত্রপাতি কেনায় ব্যয় করা অর্থকে আয় হিসেবে গণ্য করা অযৌক্তিক।উদাহরণ দিয়ে বিডা বলেছে, এক কোটি টাকা মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ৫ শতাংশ উৎসে কর হলে ৫ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। কেউ তা দিতে না পারলে এক কোটি টাকাকে আয় ধরে নিয়ে সরকার তাঁর কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা বাড়তি আয়কর আদায় করবে। নতুন এ ব্যবস্থা লঘুপাপে গুরুদণ্ডের শামিল এবং বিনিয়োগবিরোধী।লাইসেন্স ফি ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি আয়কর অধ্যাদেশের ৫২কে ধারা সংশোধন করে ট্রেড লাইসেন্সের নবায়ন ফি (মাশুল) ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশনে ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা, জেলা সদরের পৌরসভায় ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা এবং অন্যান্য পৌরসভায় ১০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে।নতুন হারের কারণে ব্যবসায়ের খরচ বাড়বে এবং ব্যবসায়ের পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই হার কার্যকর হলে বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা শুরুর সূচকে ব্যয় বাড়বে অন্তত ১ দশমিক ৩ শতাংশ। কর রেয়াতের অযৌক্তিক শর্তমূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ৪৬ (১) (ক) ধারায় বলা হয়েছে, করযোগ্য সরবরাহের মূল্য যদি এক লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায় এবং তা যদি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পরিশোধ করা না হয়, তাহলে কোনো ব্যবসায়ী উপকরণ কর রেয়াত পাবেন না।বিডা বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছে, পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে মূসক প্রমাণপত্র ঠিক থাকলেই কর রেয়াত পাওয়া উচিত। ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়নি, শুধু এ কারণে কর রেয়াত না দেওয়ার যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, দেশের আর্থিক বাস্তবতা বিবেচনায় অনেক সময় ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন সম্ভব না-ও হতে পারে।সরকারি কোষাগারে কর জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র থাকলেও কর রেয়াত পাওয়া যাবে না, এমন বিধান ব্যবসাবান্ধব নয় এবং তা কার্যকর হলে বিনিয়োগ পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হবে।আরেকটি ধারায় কর রেয়াত নেওয়ার সময়সীমা সংশ্লিষ্ট কর মেয়াদ বা পরের দুই কর মেয়াদ। বিডা বলেছে, এটাও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ, কোনো কারণে ব্যবসায়ের উৎপাদন বন্ধ থাকলে বা অন্য কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর রেয়াত নেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। এ প্রস্তাব কার্যকর হলেও বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যাংক হিসাব অপরিচালনযোগ্যের প্রস্তাবমূসক আইনের ৮৩ ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, মূসক আইন বা এই আইনের আওতার বলে তৈরি বিধি লঙ্ঘনের দায়ে লঙ্ঘনকারীর ব্যাংক হিসাব অপরিচালনযোগ্য বা ফ্রিজ করার ক্ষমতা পাবেন সরকারি কর্মচারীরা। সহকারী কমিশনার বা সহকারী পরিচালক বা তাঁর ওপরের পদের কর্মচারীরা এ ক্ষমতার চর্চা করবেন।বিডা বলেছে, কোনো কর দাবি সৃষ্টি ও দাবিনামা জারি ছাড়া বিধিবিধান লঙ্ঘনের দায়ে কারও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঢালাও ক্ষমতা দেওয়া উচিত হবে না। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনে সংশয় সৃষ্টি হবে এবং দেশের বিনিয়োগ পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়বে। স্বাভাবিক কাজের অস্বাভাবিক পুরস্কারমূসক আইনের ১২৬ (খ) (১) (খ) ধারায় পুরস্কার ও কর্মদক্ষতা প্রণোদনা তহবিল নামে একটি হিসাব সংরক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। তহবিলের আকার হবে আদায়কৃত মোট কর রাজস্বের (ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক) শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসার সূচকে অবস্থান আরও খারাপ হতে পারেট্রেড লাইসেন্স ফি ৫০০ শতাংশ বৃদ্ধি খরচ বাড়াবেস্বাভাবিক কাজের জন্যও অস্বাভাবিক পুরস্কারের ব্যবস্থাআন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা যাবেএ কথা উল্লেখ করে বিডা বলেছে, সরকারি কর্মচারী হিসেবে মূসক সংগ্রহ করাই যাঁদের দায়িত্ব, তা পালনের জন্য রাজস্বের একটা অংশ আদায়কারীদের পুরস্কার হিসেবে দিয়ে দেওয়া হবে। অথচ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অন্য দুই বিভাগ অর্থাৎ আয়কর বিভাগ ও শুল্ক বিভাগের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিধানের কথা বলা হয়নি। সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্য মূল রাজস্ব থেকে এভাবে টাকা দেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক বা আইনানুগ হবে না। বিডা এই প্রস্তাব বাতিলের পক্ষে।আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১ লাখ ২৩ হাজার ৬৭ কোটি টাকা মূসক সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। সে হিসাবে প্রণোদনা তহবিলের আকার হবে ৬০০ কোটি টাকার বেশি, যার একটা অংশ মূসক সংগ্রহকারীরা পেয়ে যাবেন। এক ভুলে একাধিক দণ্ডঅর্থ বিলের আয়কর অংশে ৩০বি ধারা সংযোজন করে বলা হয়েছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর কর্তনের ব্যর্থতার কারণে সম্পূর্ণ খরচকে আলাদাভাবে আয় হিসেবে দেখা হবে এবং তার ওপর কর আরোপের ব্যবস্থা করা হবে।উৎসে কর কর্তন ও জমা সময়মতো না হলে আয়কর কর্তৃপক্ষ দাবিনামা জারির মাধ্যমে সুদসহ প্রযোজ্য কর আদায় ও জরিমানা আরোপ করতে পারবে। আগে দাবি করা খরচকে অগ্রাহ্য করে আয়ের সঙ্গে যোগ করার বিধান ছিল, আলাদাভাবে আয় হিসেবে বিবেচনা করে কর আরোপ করা হতো না।বিডার মতে, নতুন প্রস্তাবটি আয়কর আরোপের মৌলিক সিদ্ধান্তের পরিপন্থী এবং এতে একই ভুলের জন্য একাধিক দণ্ডের ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। আবার কোম্পানির ক্ষতি থাকলেও আলাদাভাবে বাড়তি কর পরিশোধ করতে হবে, যা বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। একই আয়ে দুবার কর আয়কর অধ্যাদেশের ১৬-এ একটি ধারা সংযোজন করে বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি লভ্যাংশের ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর দেবে। আরেকটি ধারা সংযোজন করে বলা হয়েছে, রিটেইন্ড আর্নিং, রিজার্ভ ও অন্যান্য ইক্যুইটি যদি পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হয়, তাহলে বাড়তি অঙ্কের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপ করা হবে।বিডা বলেছে, কোম্পানির মুনাফার ওপর আয়কর পরিশোধের পর বাকি অর্থ থেকে বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়। এরপর যা থাকে, কোম্পানি তা রাখে রিটেইন্ড আর্নিং (মুনাফা থেকে সঞ্চিতি) হিসেবে। কোম্পানি এই সঞ্চিতি বিনিয়োগ ও সম্প্রসারণে ব্যয় করে। নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে কোম্পানি অনেক সময় বোনাস শেয়ারও দেয় বিনিয়োগকারীদের।কর প্রদত্ত রিটেইন্ড আর্নিং থেকে ঘোষিত বোনাস শেয়ারের বিপরীতে আয়কর আরোপ করা হলে তা একই আয়ের ওপর দুবার কর আরোপের ঘটনা ঘটবে।বিডা আরও বলেছে, কোম্পানি তার স্বার্থে রিজার্ভ সৃষ্টি করতে পারে। আবার অন্যান্য ইক্যুইটির মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক (প্রেফারড) শেয়ার থাকে, যা কোম্পানির মূলধনের অন্তর্ভুক্ত। সরাসরি মূলধনের অংশ হওয়ার কারণে এর ওপর কর আরোপ যৌক্তিক নয়। দুটি নতুন ধারা সংযোজনে নতুন বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হতে নিরুৎসাহিত হবে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘বিডা যদি এ রকম মূল্যায়ন করে থাকে যে প্রস্তাবিত বাজেট বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং ব্যবসায়ের খরচ বাড়িয়ে দেবে, আমি এর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। বিডা বাস্তবে আমাদের কথাই বলেছে।’আবুল কাসেম খান বলেন, ‘বিনিয়োগে আমরা দীর্ঘ বছর একই জায়গায় আটকে আছি। প্রস্তাবিত বাজেট তা থেকেও পিছিয়ে দেবে। কারণ, প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, দেশি-বিদেশি কোনো বিনিয়োগকারীরই তাতে উৎসাহিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রে আছি। বাংলাদেশের খেলা শুরু হয় এখানকার সময়ে ভোর পাঁচটায়। কষ্ট হলেও খেলা দেখতে ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠি। আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ দেখলাম। একেবারে নিখাদ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে বাংলাদেশ। যেমনটা বাংলাদেশের কাছে প্রত্যাশা ছিল, ঠিক তেমনটাই হয়েছে। এই জয় নিয়ে খুব বেশি উতলা হওয়ার কিছু নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারিয়েও উল্লাস করে না বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ম্যাচে সহজে খুব একটা আলোড়ন সৃষ্টি করবে না ক্রিকেটারদের মনে। তবে জয় তো জয়ই, ক্রিকেটাররা আত্মবিশ্বাস নেবে এই জয় থেকে।বাংলাদেশ আফগান স্পিন সামলানোর জন্য লিটন দাসকে ওপেন করিয়েছে। পরিকল্পনাটা ভালো ছিল। ওদের মুজিব উর রেহমানকে নিয়ে একটু ভীতি ছিল, টপ অর্ডারে সৌম্য খেললে সে চেপে ধরতে পারত। সেই সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ।মুশফিক ‘ক্ল্যাসিক’ ইনিংস খেলেছে। উইকেটে বড় বড় টার্ন হচ্ছিল। কঠিন উইকেটে কীভাবে ব্যাট করতে হয় দেখিয়ে দিয়েছে মুশফিক। এক-দুই-তিন রান এসেছে প্রচুর। দেখে ভালো লেগেছে। এমন উইকেট ও বড় বাউন্ডারির মাঠে মাথা খাটিয়ে ব্যাটিং করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মুশফিক ঠিক তা–ই করেছে। রিয়াদ চোটে না পড়লে বাংলাদেশের রান আরও বেশি হতে পারত। মোসাদ্দেক নিজের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করেছে। শেষের দিকে আদর্শ ইনিংস খেলেছে সে।আর সাকিবের কথা কী বলব! অতিমানবীয় পারফরম্যান্স। সাকিবকে অন্যদের সঙ্গে তুলনার সময় শেষ। সাকিব এখন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, ধাপে ধাপে নিজেকে সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। ওর ভালো খেলা মানেই বাংলাদেশের জয়, খুব কম ম্যাচে ওর পারফরম্যান্সের পরও বাংলাদেশ হেরেছে। সাকিব ব্যাটে-বলে পারফর্ম করলে এমন জয় আসেই। আমি আশা করছি সাকিব টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার হবে। আশা করব, বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে নিয়ে যাবে সাকিব।তামিমের কাছে কিছু রান পেলে বাংলাদেশের কাজটা সহজ হয়ে যায়। সামনে দুটি বড় ম্যাচ আছে, প্রতিপক্ষ ভারত ও পাকিস্তান। আশা করি, বড় দুই ম্যাচের জন্য নিজের সেরা ক্রিকেটটা জমিয়ে রাখবে।বোলিংয়ে একটা জিনিস আমার ভালো লেগেছে। বোলাররা জুটি বেঁধে বোলিং করেছে। উইকেটে সাহায্য ছিল, তবে সবাই উইকেটের পেছনে ছোটেনি। একজন রান থামিয়ে রেখেছে, আরেকজন উইকেট পেয়েছে। দলের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো থাকলেই এটা সম্ভব।ইংল্যান্ডে এই সময় উইকেট থেকে স্পিনাররা সাহায্য আদায় করে নিতে পারবে। বলটা ভালো ব্যবহার করতে পারলে পেসাররাও রিভার্স সুইং পাবে। সাইফের বল সেদিন একটু রিভার্স সুইং করছিল। মোস্তাফিজের বলও গ্রিপ করেছে। আশা করি, আমাদের বোলাররা এটা কাজে লাগাতে পারবে।এই ম্যাচের আগে আফগান ক্রিকেটাররা অনেক কথা বলেছে। ওদের কথাবার্তা আমার কাছে বোধগম্য মনে হয়নি। ক্রিকেট জাতি হিসেবে বড় হতে হলে সব দিক থেকেই পরিণত মনোভাব পোষণ করতে হবে। আশা করি, এই দিকটায় আফগানিস্তান আরও উন্নতি করবে।বাংলাদেশের সামনে বড় দুইটি ম্যাচ—ভারত ও পাকিস্তান। আমাদের দলগত পারফরম্যান্স লাগবে। এক বিভাগে বা একজনের ভালো পারফরম্যান্সে জয় পাওয়া কঠিন হবে। ব্যাটে, বলে, ফিল্ডিংয়ে ভালো করতে হবে, তবেই জয় আসবে।
এখন জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। জ্বর আসার কারণ নিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনেরাও চিন্তিত থাকেন। বিশেষ করে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় যেভাবে পালাক্রমে প্রতিবছর মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস (গ্রীষ্ম ও বর্ষার সময়) পর্যন্ত দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী আক্রান্ত হচ্ছে। তাই এই সময়ে জ্বর মানেই আতঙ্ক।শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এ সময়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। প্রথমবার ডেঙ্গু হলে এটি শরীরে জটিলতা ছাড়া এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। যাঁরা আগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের শরীরে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে কয়েক দিনেই ডেঙ্গু পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়।কীভাবে ছড়ায়?ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া জ্বর দুটোই এডিস মশার কারণে হয়। এই দুটি রোগের লক্ষণে যেমন নানা মিল রয়েছে তেমনি আবার ভিন্নতাও রয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।চেনার উপায় কী?ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর এবং সেই সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হয়। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। এ ছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের সময় সারা শরীরে লালচে দানা দেখা যায়। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব এমনকি বমি হতে পারে।রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করে এবং রুচি কমে যায়। এ অবস্থাটা যেকোনো সময় জটিল হয়ে উঠতে পারে। যেমন অন্য সমস্যার পাশাপাশি যদি শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্তপড়া শুরু হয়। যেমন: চামড়ার নিচে, নাক ও মুখ দিয়ে, মাড়ি ও দাঁত থেকে, কফের সঙ্গে রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত বা কালো পায়খানা, চোখের মধ্যে ও চোখের বাইরে রক্ত পড়তে পারে।মেয়েদের বেলায় অসময়ে ঋতুস্রাব বা রক্তক্ষরণ শুরু হলে অনেক দিন পর্যন্ত রক্ত পড়তে থাকা ইত্যাদি হতে পারে। এই রোগের বেলায় অনেক সময় বুকে পানি, পেটে পানি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অনেক সময় লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগীর জন্ডিস, কিডনিতে আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেইলিউর ইত্যাদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেনডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এই জ্বর সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। তাই উপসর্গ অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসা যথেষ্ট। তবে যাদের আগে ডেঙ্গু হয়েছিল, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে থাকতে হবে। যেমন—l শরীরের যেকোনো অংশে রক্তপাত হলেl প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলেl শ্বাসকষ্ট হলে, পেট ফুলে পানি এলেl প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলেl জন্ডিস দেখা দিলেl অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দিলেl প্রচণ্ড পেটব্যথা বা বমি হলে।চিকিৎসাডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই চলতে হবে, যাতে ডেঙ্গুজনিত কোনো গুরুতর জটিলতা না হয়। সাধারণত লক্ষণ বুঝেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।l সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে।l যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত, ডাবের পানি ও অন্যান্য তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।l খেতে না পারলে দরকার হলে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া যেতে পারে।l জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামলজাতীয় ব্যথার ওষুধই যথেষ্ট। অ্যাসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক-জাতীয় ব্যথার ওষুধ কোনোক্রমেই খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে।l জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছাতে হবে।ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পার্থক্য কী?l ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া জ্বরে সাধারণত ঠান্ডা-কাশি হয় না; নাক দিয়ে পানি ঝরে না। তবে সাধারণ ভাইরাসের কারণে হওয়া জ্বরে এগুলো হয়।l সাধারণ ভাইরাল জ্বরে তাপমাত্রা বেশি ওঠে না, শরীরে ব্যথা তুলনামূলক কম থাকে।l ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে কাঁপুনি, ঘাম ও তীব্র অবস্থায় রক্তক্ষরণ হয়। তবে চিকুনগুনিয়া জ্বরে সাধারণত এগুলো হয় না।l হাতের আঙুলের জয়েন্টে, পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে চিকুনগুনিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আর মাংসপেশিতে ব্যথা হলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার আশঙ্কা বেশি।l চিকুনগুনিয়ায় হাত-পা ও মুখমণ্ডলে র‌্যাশ হয়। তবে ডেঙ্গু হলে পুরো শরীরে র‌্যাশ হয়।l ডেঙ্গু জ্বরে রক্তের অণুচক্রিকার সংখ্যা অনেক কমে যায়। তবে চিকুনগুনিয়ায় রক্তের অনুচক্রিকার সংখ্যা ততটা কমে না।l চিকুনগুনিয়া জ্বরে অস্থিসন্ধির ব্যথা জ্বর কমে যাওয়ার পরও কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে অস্থিসন্ধির ব্যথা জ্বর কমে যাওয়ার পর কমে যায়। চিকুনগুনিয়া জ্বর ভালো হলেও রোগটি অনেক দিন ধরে রোগীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্য কোনো ভাইরাল জ্বরে এতটা ভোগান্তি হয় না।l একই মশা দিয়ে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর হলেও ডেঙ্গুতে মৃত্যুঝুঁকি হয়। চিকুনগুনিয়া হলে কারও মৃত্যু হয় না।প্রতিরোধই হোক প্রথম পদক্ষেপযেহেতু এটি একটি মশাবাহিত রোগ, তাই মশার বংশ বৃদ্ধিরোধ, নিধন ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর এই মশা সাধারণত পরিষ্কার পানিতে বংশ বৃদ্ধি করে।আর তাই ঘরবাড়ি ও এর চারপাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ক্যান, টিনের কৌটা, মাটির পাত্র, বোতল, নারকেলের মালা ও এ-জাতীয় পানি ধারণ করতে পারে, এমন পাত্র ধ্বংস করে ফেলতে হবে, যেন পানি জমতে না পারে। গোসলখানায় বালতি, ড্রাম, প্লাস্টিক ও সিমেন্টের ট্যাঙ্ক কিংবা মাটির গর্তে চার-পাঁচ দিনের বেশি কোনো অবস্থাতেই পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। পরিষ্কার ও স্থবির পানিতে ডেঙ্গুর জীবাণু বেশি জন্মায়।ঘরের আঙিনা, ফুলের টব, বারান্দা, বাথরুম, ফ্রিজের নিচে ও এসির নিচে জমানো পানি নিয়মিত পরিষ্কার করা, যাতে মশা বংশবৃদ্ধি করতে না পারে।মশা মারার ওষুধ দিয়ে মশা নিধন করা। দিনের বেলায় এডিস মশা কামড়ায় বলে দিনের বেলায়ও মশারির নিচে ঘুমান। বাচ্চাদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট পরানো। আক্রান্ত রোগীকে পৃথক বিছানায় মশারির ভেতর রাখতে হবে। ঘরের দরজা, জানালায় ও ভেন্টিলেটরে মশানিরোধক জাল ব্যবহার করুন।লেখক: চিকিৎসক
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে লিখেছেন তাঁর স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির।এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে আমাদের সফরটা বেশ রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে। ইংল্যান্ডের আবহাওয়া ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে সুন্দর। আমরা উপভোগ করছি।এই তো আমি, আমাদের মেয়ে আলায়না আর আমাদের মারিও ভিল্লাভারায়নের (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ) স্ত্রী দিন্নি এখানে স্ট্রবেরি খামার ঘুরে এলাম। আলায়না খুবই খুশি। স্ট্রবেরি খেতে পেয়ে যত-না খুশি, তার চেয়ে বেশি খুশি স্ট্রবেরির ছবি তুলতে পেরে। সাকিব এবারের বিশ্বকাপে ভালো করছে, আমিও তা উপভোগ করছি। একটি বাদে সব খেলাই মাঠে গিয়ে দেখেছি। দুই দিন সাকিব সেঞ্চুরি করেছে। মাঠে গিয়ে খেলা দেখা আমিও খুব উপভোগ করি। তবে আমার চেয়ে বেশি খুশি হয় আলায়না।বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়ের মনোভাবই এবার এক রকম-ভালো খেলতে হবে, সেমিফাইনালে যেতে হবে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচের দিন বৃষ্টি হওয়ায় সবারই মন খারাপ ছিল। তবে ওই দিন সাকিবের চোট (ইনজুরি) ছিল। খেলা নিয়ে আমি সাকিবকে বেশি কিছু বলি না। সাকিবও আমাকে তেমন কিছু বলে না। শুধু আমি বলি ফিফটি করলে শতরান করতে হবে। ও যখন ৭০-৮০ রান করে আউট হয়, তখন আমার মন খারাপ হয়। আমি বলি সেঞ্চুরি করতে। আরও বলি ফিফটিকে সেঞ্চুরি বানাতে হবে।সাকিব সত্যিই ভালো করছে। আজ (গত সোমবার) তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫টি উইকেট নিল সাকিব। তার আগে করল অর্ধশত। এমন রেকর্ড তো এর আগে করেছেন শুধুই একজন (যুবরাজ সিং, ভারত)। বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথম ১ হাজার রান করেছে সাকিব। আবার বিশ্বকাপে ১ হাজার রান ও ৫০ উইকেট শুধুই সাকিবের দখলে। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচটি আমি মাঠে বসে দেখতে পারিনি।বিশ্বকাপে সাকিবের এমন খেলায় আমরা সবাই খুশি। শুধু আমরাই নই, আমি জানি বাংলাদেশের প্রত্যেকেই খুশি। সাকিবের সাফল্যে, বাংলাদেশ দলের বিজয়ে। তবে এসব আনন্দ উপভোগ করার সময়ও তেমন একটা নেই। এখনই আবার স্যুটকেস গোছাতে হবে। আবার শহর থেকে আরেক শহর, এক হোটেল থেকে আরেক হোটেল।সব মিলিয়ে এবার আমার বিশ্বকাপ দারুণ লাগছে। সাকিবের ফর্ম এবার বেশ ভালো। তবে সাকিব বলে, ‘আমি চাই দলের জন্য অবদান রাখতে। আমার কারণে যেন দল জেতে।’দলের জয়টাই ওর কাছে বড়। নিজের রেকর্ডের দিকে সাকিবের খেয়াল নেই। ওর একমাত্র নজর বাংলাদেশের বিজয়ের দিকে।আমরাও সেটা চাই-সাকিব ভালো করুকবাংলাদেশ জয়লাভ করুক।
কিছুদিন হলো নতুন সংসার শুরু করেছেন হানিফ মাহমুদ ও জান্নাতুল মাওয়া। নিজেদের সংসারের জন্য অনেক কিছু কিনতে হচ্ছে। সেই তালিকায় রয়েছে ঘর সাজানোর উপকরণও। দুজনেই চাকরিজীবী হওয়ার কারণে সংসারের শুরুতেই ফ্রিজ কিনতে হচ্ছে। ঢাকার স্টেডিয়াম মার্কেটে নতুন একটি ফ্রিজ কিনতে এসেছেন তাঁরা। সিঙ্গারের শোরুমেই কথা হলো জান্নাতুল মাওয়ার সঙ্গে। ‘ফ্রিজ শুধু খাবারদাবার সংরক্ষণ বা ঠান্ডা করার একটি যন্ত্র হিসেবেই ঘরে রাখতে চাই না। আমি এমন একটি ফ্রিজ কিনতে চাই, তা যেন ঘরের সৌন্দর্যও বাড়ায়।’ঘর সাজাতে ফ্রিজবর্তমান সময়ে সংসারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ ফ্রিজ। বাসায় ফ্রিজ থাকলে প্রতিদিনের বাজার করার ঝামেলা থেকে মুক্তিসহ বিভিন্ন রকম সুবিধা পাওয়া যায়। এখন খাবারকে সতেজ বা ভালো রাখার পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ফ্রিজের ভূমিকা রয়েছে। ঢাকার বাড্ডার মায়ের দোয়া ইলেকট্রনিকসের বিক্রয় ব্যবস্থাপক মো. মাহিদুল ইসলাম জানান, ‘ঘরের দেয়ালের রং, আসবাব কিংবা ঘরের আকারের ওপর নির্ভর করে অনেকে ফ্রিজ কেনেন। ঘরের নান্দনিকতা আরও একটু বাড়িয়ে নিতে বর্তমানে ফ্রিজও ভূমিকা রাখছে।’ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সিঙ্গারের ভিন্ন রং এবং নকশার রেফ্রিজারেটর। রং ও ভিন্নতা ছাড়াও এগুলোতে রয়েছে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য। রেফ্রিজারেটরগুলোতে বৈচিত্র্যময় ফিচার যুক্ত করেছে সিঙ্গার।নান্দনিক ডিজাইননান্দনিক বৈচিত্র্যে সিঙ্গারের ফ্রিজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কালো, রূপালি, সোনালি, লাল ও নীল—এই পাঁচটি রঙে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সিঙ্গারের রেফ্রিজারেটর। এ ছাড়া থাকছে ফুলেল নকশাসহ কিছু ডিজাইন। ফ্রিজে ব্যবহার করা হয়েছে এলিগ্যান্ট টেম্পারড গ্লাস। অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে টেম্পার্ড গ্লাস ট্রে, এলইডি লাইট, টোটাল নো ফ্রস্ট প্রযুক্তি (২০ দিনের বেশি খাবার সতেজ থাকে)। রয়েছে গ্লাস, ভিসিএম, স্টিল দরজার ভিন্নতা। নো ফ্রস্ট, সাইড-বাই-সাইড, ডিরেক্ট কুল, ডিপ রেফ্রিজারেটরের ধরন।দরদামসাধ্যের মধ্যে পছন্দমতো ফ্রিজ কেনার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সুবিধা ও মূল্যছাড়ের ঘোষণা করে। বিভিন্ন ফ্রিজ নির্মাতা দোকান ঘুরে ফ্রিজের দরদাম তুলে ধরা হলো। সিঙ্গারের এই রেফ্রিজারেটরগুলো ৪৬ লিটার থেকে ৫১৭ লিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন। সিঙ্গারের ৪৭ লিটারের মিনি ফ্রিজের দাম ১১ হাজার ৮৬০ টাকা, ৯৫ লিটারের ফ্রিজ ১৫ হাজার ৫৬ টাকা, ১৩৮ লিটার ১৮ হাজার ৭০৮ টাকা; ১৩৮ লিটার ডিপ ফ্রিজ ২১ হাজার ৪৫৭ টাকা, ১৯৮ লিটার ২৪ হাজার ১৮৭ টাকা, ২০৮ লিটারের দাম ২৯ হাজার ২০৮ টাকা, ২৪৮ লিটারের দাম ৩১ হাজার ৯৪৭ টাকা। আয়তনের ওপর সিঙ্গারের ফ্রিজের দাম নির্ভর করে।স্যামসাংয়ের বেশ কয়েকটি মডেলের ফ্রিজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। স্যামসাংয়ের বিভিন্ন আকারের ফ্রিজ বাজারে রয়েছে। দামেরও ভিন্নতা রয়েছে। ট্রান্সটেকের ১০০ লিটার থেকে বিভিন্ন আয়তনের ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে। এর দাম ১৯ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকার মধ্যে। ট্রান্সটেক ব্র্যান্ডের ফ্রিজ ২৭টি ব্যাংকে শূন্য শতাংশ ইন্টারেস্টে ১২ মাসের কিস্তিতে পাওয়া যাবে। দেশের বাজারে রেফ্রিজারেটর ও ফিজারের চাহিদা বড় একটা অংশ পূরণ করছে ওয়ালটন। বর্তমানে ফ্রস্ট (ডিরেক্ট কুল), নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর এবং ডিপ ফ্রিজ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে দেশীয় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানটি। ওয়ালটন রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের বৈশিষ্ট্য হলো আকর্ষণীয় ডিজাইন, বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী, ন্যানো হেলথ কেয়ার ও এন্টি–ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট প্রযুক্তির ব্যবহার, যা ফ্রিজের ব্যাকটেরিয়া, ধুলাবালুর প্রবেশ রোধ এবং খাবার সতেজ ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখে। ওয়ালটন ফ্রিজের দাম ১০ হাজার থেকে শুরু। বর্তমান বাজারে আরএফএলের ভিশন ও ভিগো ব্র্যান্ডের বেশ কিছু মডেলের রেফ্রিজারেটর পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ৫০ লিটার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫৫৬ লিটারের ফ্রিজ রয়েছে ভিশন ও ভিগো ব্র্যান্ডের। দাম পড়বে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৮৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বাজারে ওয়ার্লপুল, হিটাচি, এলজি, তোশিবা, সনি-র‌্যাংগস, শার্প, মিনিস্টার, কনকা, হাইকো, যমুনাসহ বিভিন্ন কোম্পানির ফ্রিজ পাওয়া যাচ্ছে।কোথায় পাবেনরাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানসহ স্টেডিয়াম মার্কেট, মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, মিরপুর রোড, পান্থপথসহ জেলা শহরগুলোতে ফ্রিজ পাওয়া যায়।
দুর্নীতি দমন কমিশনই (দুদক) দেশের একমাত্র সংস্থা নয়, যার ওপর ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি দেওয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। আইন বলছে, ছোট-বড় প্রতিটি সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে অনিয়ম রোধে সজাগ থাকবেন, প্রয়োজনে অভিযুক্তকে তিরস্কার, সতর্ক কিংবা বরখাস্ত করবেন। বিভাগীয় মামলা করবেন। সন্দেহ হলেই তদন্ত করাবেন। কিন্তু বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার নজির খুবই কম। অথচ ক্ষমতার কারও কোনো ঘাটতি নেই। দুদককে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা করতে অনেক কসরত গেছে। তার বর্তমান ক্ষমতা কাজের কাজ করে দেখানোর জন্য যথেষ্ট। তবে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে সন্তোষজনক কিছু করার নজির প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করতে পারেনি। এ অবস্থায় আমরা আগের ক্ষমতার আওতা আরও বাড়ানোসংক্রান্ত একটি নতুন প্রজ্ঞাপন পেলাম। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই দুদকের এই ক্ষমতা বৃদ্ধির খবরে উৎসাহিত হচ্ছেন না।দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান দুর্নীতির ব্যাপকতা রোধে রাষ্ট্রযন্ত্র সাফল্য অর্জন থেকে বহু দূরে রয়েছে। সার্বিক বিচারে রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতির কারণেই দুর্নীতির রাশ টানা যাচ্ছে না। দুর্নীতিগ্রস্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হলে যেকোনো রাষ্ট্রের জনপ্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজন একটি অনুকূল রাজনৈতিক পরিমণ্ডল। কিন্তু বাংলাদেশে তা যথেষ্ট অনুপস্থিত।সম্প্রতি অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত একজন ডিআইজির সঙ্গে দুদকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ‘ঘুষ কেলেঙ্কারি’ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কিন্তু আমরা দেখলাম যে ঘুষ লেনদেনের সন্দেহজনক অডিও টেপ প্রকাশের পরই কেবল ডিআইজির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা এবং তাঁর বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা এল। উচ্চ আদালতে ‘হাইপ্রোফাইল’ দুর্নীতির মামলা পরিচালনা নিয়ে দুদক গর্ববোধ করে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেই মামলাগুলোর প্রায় ষোলো আনাই এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের। ক্ষমতাসীনদের অনুগ্রহভাজনদের প্রতি দুদক আইনের আপন গতির চর্চা খুবই কম করতে পেরেছে।দুদক নিজেদের অপারগতা ঢাকতে গিয়ে ‘চুনোপুঁটি ধরি’ কিংবা অভিযোগপত্র না দিয়ে ‘টাকা পুনরুদ্ধার’–এর আওয়াজ তুলেছে। সুতরাং নতুন বিধি দুদকের কাজকে গতিশীল ও সফল হতে সহায়তা করবে এমন অনুমান করার সংগত কারণ নেই। নতুন বিধান অনুযায়ী তদন্ত বা অনুসন্ধানের জন্য দুদক আয়কর বিভাগ এবং ব্যাংকগুলো থেকে ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য সরাসরি তলব করতে পারবে। গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধান না করেই দুদক সরাসরি মামলা করতে পারবে। কিন্তু সন্দেহভাজন ব্যক্তির সরাসরি আয়কর নথি বা ব্যাংক বিবরণী তলব এবং গুরুত্ব বিবেচনায় অনুসন্ধান ছাড়াই সরাসরি মামলা করার সামর্থ্য দুদকের এত দিন একেবারে ছিল না, তা নয়। কিছুটা অস্পষ্টতা ছিল। অন্তত তিন-চার বছর আগেই সোনালী পাটকলের মামলায় আপিল বিভাগ সুরাহা দেন যে দুদক ব্যাংক বিবরণী তলব করতে পারবে। কিন্তু এই এখতিয়ার অর্জন করার পরের বছরগুলোতে রুই-কাতলাদের বিষয়ে দুদক তার এই এখতিয়ার প্রয়োগ করেছে বলে জানা যায় না।দুদকের বিধি সংশোধনের ফলে এখন এই আশঙ্কা জোরালো হয়েছে যে প্রভাবশালীদের বিরাগভাজন হওয়ার পরিবর্তে তাঁদের নেকনজর নিশ্চিত করতে দুদক কোনো মহলের ইঙ্গিতে তার লব্ধ ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করতে পারে। স্বাধীন সংস্থার ক্ষমতায়ন চাওয়া হয় তার নিরপেক্ষ প্রয়োগের আশায়, এখানেই তার সার্থকতা। কিন্তু এর অপপ্রয়োগ হওয়ার অর্থ হচ্ছে সরকারে যঁারা আছেন তাঁদের নিরাপদ রাখা ও সুবিধামতো যঁাকে-তঁাকে অহেতুক হয়রানি করা। স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দুদকের সামর্থ্য বৃদ্ধির বিষয়টি নীতিগতভাবে সমর্থনযোগ্য। কিন্তু দুদকের কাঁধে বন্দুক রেখে কেউ যদি তার নিশানা স্থির করতে পারে, তবে তা হবে বিপজ্জনক।
প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে—নিউটনের এই তৃতীয় সূত্র যে দেশের ধান আবাদের ওপরও ভর করবে এবং আউশ চাষে কৃষক আগ্রহ হারাবেন, তা বোরো ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ার পরই স্পষ্ট হয়েছিল। এরপরও সরকারের সদিচ্ছা ও কার্যকর পদক্ষেপ ধানের আবাদকে তৃতীয় সূত্রটির ‘আসর’ থেকে রক্ষা করতে পারত। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের দিক থেকে এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যার ওপর ভরসা করে কৃষক আবাদে মনোযোগী হতে পারেন।এই মুহূর্তের মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা হলো, বাম্পার ফলনের পরও বোরোর দাম না পাওয়ায় কৃষকের বুকে তুষের আগুনের মতো যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে, আউশ আবাদে তার তপ্ত আঁচ লাগতে শুরু করেছে। একদিকে ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কা, অন্যদিকে সেচের খরচ বাড়ার ভয়—সব মিলিয়ে আউশ আবাদে আগ্রহ হারিয়েছেন কৃষকেরা। বিশেষ করে যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের ছয় জেলার কৃষকদের অনাগ্রহ খাদ্যনিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করার মতো। এ অঞ্চলের ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৬ হেক্টর চাষযোগ্য জমি কৃষকেরা ফেলে রেখেছেন। সেখানে পাট অথবা আউশ আবাদের কথা থাকলেও এবার জমিগুলো ‘ছুটি কাটাচ্ছে’। সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প থেকে চলতি মৌসুমে কৃষক সময়মতো প্রয়োজনীয় পানি পায়নি। বৃষ্টিপাতও এ বছর তুলনামূলক কম। খরায় পুড়ছে মাঠ। ফলে সেচ খরচ বাড়ার ভয় বেড়েছে।পাউবো কুষ্টিয়ার একজন কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘ওই সময়ে সেচপাম্প বন্ধ রেখে বার্ষিক মেরামতের কাজ করা হয়েছে। যে কারণে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।’ অর্থাৎ বার্ষিক ‘মেরামতের কাজ’ করার আর কোনো সময় পাওয়া গেল না, বেছে বেছে আউশের সেচের আসল সময়টাতেই এই কাজ করা হলো। এতে মাঠে কৃষক কম খরচে সেচের পানি পাননি। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা যে বার্তাটি পেলেন, সেটি হলো ধান আবাদের বিষয়ে সরকার তাঁদের পাশে নেই, যা করার তা তাঁদের নিজেদেরই দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে। সরকারের এই গা ছাড়া মনোভাব তাঁদের আউশ আবাদে অনাগ্রহী করবে—সেটাই স্বাভাবিক।নিউটনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সূত্র অনুযায়ী, এর পরের ধাপে যা ঘটবে তা হলো, মাঠ পতিত থাকায় ফসল তোলার মৌসুমে আউশ পাওয়া যাবে না। তখন দাম হবে দ্বিগুণ বা তারও বেশি। সরকারি গোলায় টান পড়বে। সরকার গুদাম ভরতে অনেক বেশি টাকায় ধান কেনা শুরু করবে। বরাবরের মতোই কৃষকের কাছ থেকে কম টাকায় ধান কিনে সেই ধান মধ্যস্বত্বভোগী মিলমালিক ও ফড়িয়ারা কৌশলে সরকারের কাছে বিক্রি করবেন। পুরো প্রক্রিয়াটির দিকে তাকালে বোঝা যায়, কোনো বিশেষ গোষ্ঠী নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য ধানের আবাদ ও বাজার ব্যবস্থাপনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা যতক্ষণ সক্রিয় থাকছে, ততক্ষণ এ দেশে ধানের আবাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
দুনিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের শীর্ষ দুজন তাঁরা। আধুনিক কালের রাজা–বাদশাহ বলা যায় নির্দ্বিধায়। তুড়ি বাজালেই হতে পারে যেকোনো মুশকিলের ত্বরিত সমাধান। অথচ বিল গেটস ও জেফ বেজোস রোজ রাতে থালাবাসন ধুয়ে রাখেন নিজ হাতেই। কেবল নিজের প্লেট বা গ্লাসই নয়, পরিবারের বাকিদের এঁটো ঘটিবাটিও সাফ করেন যত্ন নিয়ে।২০১৪ সালে বিজনেস ইনসাইডারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমাজন ডটকমের প্রধান বেজোস বলেছিলেন, ‘আমি রোজ থালাবাসন মাজি। আমি বিশ্বাস করি, আমার করা কাজগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে দারুণ।’মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কী বলেন এ ব্যাপারে? ২০১৪ সালে রেডিট আস্ক মি অ্যানিথিং নামের প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘অন্যরা আপনার কাছ থেকে আশা করে না এমন কী আছে যা আপনি উপভোগ করেন?’ গেটসের উত্তর ছিল বেজোসের মতোই, ‘আমি রোজ রাতে থালাবাসন মাজি। অনেকেই অন্যদের সাহায্য নেয় কিন্তু আমি নিজেই করতে ভালোবাসি।’দুই ধনকুবের যে কারণেই থালাবাসন মাজুন না কেন, বিজ্ঞান বলে, এতে করে সৃজনশীলতার বিকাশ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি একটি গবেষণা করেছিল। তাতে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা থালাবাসন মাজার পর নিজেদের ফুরফুরে মেজাজে আবিষ্কার করে। এ ধরনের কাজের সময় শিক্ষার্থীরা শ্বাস–প্রশ্বাস, স্পর্শ, ঘ্রাণে মনোযোগ দেয় বেশি। এর ফলেই মানসিক চাপ যায় কমে। নতুন কোনো কাজের অনুপ্রেরণাও খুঁজে পায়। হালকা গরম পানি স্পর্শ করার অনুভূতি অথবা সাবানের ঘ্রাণ মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে।ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, স্যান্টা বারবারার আরেক গবেষণায় জানা গেছে, এলেবেলে কাজের সময় সৃজনশীল সমস্যা সমাধানে তৎপর হয়ে ওঠে আমাদের মস্তিষ্ক। অতএব এরপর যখনই নোংরা থালাবাসন দেখবেন, ঝাঁপিয়ে পড়ুন সেগুলোর ওপর। এর ফলে যে আপনি বিল গেটস বা জেফ বেজোস বনে যাবেন, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে আপনি যে প্রশান্তি পাবেন এবং সৃজনশীল চিন্তা করতে পারবেন, তা প্রায় নিশ্চিত।সূত্র: সিএনবিসি ডটকম
তেল, দুধ, মসলাসহ আট ধরনের ভোগ্যপণ্যের ৭১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগারে। পরীক্ষায় ৬৯টি পণ্যই মানোত্তীর্ণ হতে পারেনি। পণ্যগুলোর বেশ কয়েকটিতে অ্যান্টিবায়োটিক ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পাওয়া গেছে; যা দীর্ঘ মেয়াদে নানা ধরনের জটিল রোগের কারণ হতে পারে।গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি লেকচার থিয়েটারে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, খাদ্যের গুণগত মান নিয়ে সরকার ও সাধারণ মানুষের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টার ও ফার্মাসি অনুষদের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পণ্যগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক এবং বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক আ ব ম ফারুক।লিখিত বক্তব্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় এমন ঘির ৮টি, ফ্রুট ড্রিংকসের ১১টি, শুকনা মরিচের গুঁড়ার ৮টি, হলুদের গুঁড়ার ৮টি, পাম তেলের ১০টি, সরিষার তেলের ৮টি, সয়াবিন তেলের ৮টি, পাস্তুরিত তরল দুধের ৭টি এবং অপাস্তুরিত তরল দুধের ৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়।দেশে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) নির্ধারিত বিভিন্ন মানদণ্ড অনুযায়ী পণ্যগুলো পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় হলুদের দুটি নমুনা ছাড়া বাকি সব পণ্যেই ভেজাল অথবা ক্ষতিকর রাসায়নিক পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পাস্তুরিত তরল দুধের ৭টি নমুনাতেই মানবদেহে ব্যবহার করা হয় এমন অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়। অপাস্তুরিত তরল দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়নি।পরীক্ষায় পাস্তুরিত তরল দুধের ৭টি নমুনাতেই অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছেঅপাস্তুরিত তরল দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়নিহলুদের দুটি নমুনা ছাড়া বাকি সব পণ্যেই ভেজাল বা ক্ষতিকর রাসায়নিক মিলেছেআ ব ম ফারুক বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের একটি নিয়ম আছে। মানবদেহে ব্যবহার করা হয় এমন অ্যান্টিবায়োটিক পশুর শরীরে ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু খামারগুলোতে সেটি করা হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর খাবারেও অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। এতে দুধ ও মাংসে অ্যান্টিবায়োটিক থেকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই অ্যান্টিবায়োটিকযুক্ত দুধ ও মাংস খেলে মানুষের শরীরে আর প্রয়োজনের সময় অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না।পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ বলেন, হলুদের গুঁড়ায় কাপড়ের রং পাওয়া গেছে। কিন্তু রং কী পরিমাণে আছে, তা নিশ্চিত হতে আরও পর্যালোচনা করা হবে। এই রং লিভার, কিডনিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসার হতে পারে। এমন রংযুক্ত হলুদ খেলে শিশুদের হাঁপানি হয়। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদের ডিন এস এম আবদুর রহমানও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, খাবার মানহীন হলে পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় না। এ ছাড়া খাবারে বিষাক্ত রাসায়নিকও পাওয়া যাচ্ছে। নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।মালিকানা প্রতিষ্ঠানগুলোর বক্তব্য না পাওয়ায় এসব পণ্যের নাম প্রকাশ করা হলো না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতীয় সংসদে সরকারি দল ও বিএনপির সাংসদদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে। সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ সাংসদ মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৌশলের কাছে বিএনপি হেরেছে। বিএনপি ড. কামাল হোসেনকে ‘ভাড়া’ করলেও তিনি কাজ করেছেন আওয়ামী লীগের জন্য। তিনি মাঠ ফাঁকা করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে ভোট দিয়েছে।এর জবাবে বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, এখানে কৌশলের কোনো বিষয় নেই। প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার করেও তা রক্ষা করেননি। একাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো কোনো নির্বাচন অতীতে হয়নি। এটি ছিল রাতের নির্বাচন। যে কারণে এই সংসদকে বলা হচ্ছে ‘মধ্যরাতের সংসদ’।গতকাল মঙ্গলবার ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওই দুই সাংসদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনীতি হচ্ছে কৌশল। বিএনপির বন্ধুরা বারবার ভুল করেছে। নাসিম বলেন, ‘তিনি (ড. কামাল) আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করে মাঠ খালি করিয়ে দিলেন আর আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। এই হচ্ছে তাদের ভাড়াটের মুরদ। তিনি বলেন, তারেক রহমান এসে বিএনপির ১২টা থেকে ১৩টা বাজিয়ে দিয়েছেন। বিএনপি এখন আন্দোলনও করতে পারে না।মো. নাসিমের বক্তব্যের জবাবে হারুনুর রশীদ বলেন, সংসদে বারবার বলা হচ্ছে যে কৌশলে বিএনপি হেরে গেছে। অথচ একাদশ সংসদ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে জাতিসংঘ, টিআইবি, যুক্তরাষ্ট্র, নিউইয়র্ক টাইমস, দিল্লির গবেষক-বিশ্লেষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘যে সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, সেই সংসদ নির্বাচনে আগের রাতেই ব্যালট ভর্তি করা হয় আর পরদিন তা গণনা করা হয়।’হারুন বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতীয় সংলাপে প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। বিএনপির নেতা–কর্মীদের মামলার তালিকা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু নির্বাচনে বিএনপির ২২ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৪০ জন প্রার্থী ভয়ানকভাবে আহত হন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে হারুন প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনি জাতীয় সংলাপের সময় ওয়াদা করেছেন, সে ওয়াদা কি পূরণ হয়েছে?’হারুন বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী গায়েবি মামলা বলে কিছু নেই। গত ১০ বছরে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ৯০ হাজার মামলা হয়েছে। অধিকাংশই ভুয়া। প্রায় ২৫ লাখ আসামি । তিনি এসব মামলা নিয়ে একটি সংসদীয় কমিটি করার দাবি জানান।গত ১০ বছরে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিখোঁজ হয়েছে দাবি করে হারুন বলেন, ‘জানি না এখানে কথা বলে বাড়ি ফিরে যেতে পারব কি না। রাস্তা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে আমার ভাগ্যে ইলিয়াসের ভাগ্য জুটবে কি না, সালাহউদ্দিনের ভাগ্য জুটবে কি না, এ কথা বলতে পারছি না।’হারুনের বক্তব্যের একপর্যায়ে সরকারি দলের সদস্যরা হইচই করে প্রতিবাদ জানাতে থাকলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী হারুনের উদ্দেশে বলেন, ‘মাননীয় সদস্য, আপনি বাজেটের ওপর বলুন।’ জবাবে হারুন বলেন, বক্তব্যের ধারা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি অদ্ভুত সরকার। মহাজোটের নামে ভোট করে শরিকদের বিরোধী দলে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের চেহারা মলিন। রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ওনারা নিজেদের অবস্থান নিয়ে বিব্রত। হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ফরমাশি বিরোধী দল দিয়ে সংসদ কার্যকর করা যাবে না। এগুলো সত্য।হারুন দাবি করেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বালিশ–কান্ডে ছাত্রদল বা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত—এটা অবিশ্বাস্য।বহুমুখী ব্যবসায়ী সরকারি দলেনাসিম বলেন, ‘ঋণখেলাপিদের ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কৃষকেরা ১–২ হাজার টাকার জন্য সার্টিফিকেট মামলার আসামি হবে আর ঋণখেলাপিরা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নেবে, এটা কেন হবে? কোর্ট এত কথা বলেন, কোর্ট কেন স্থগিতাদেশ দেন।’তিনি বলেন, কিছু ব্যবসায়ী আছেন, তাঁরা ব্যাংকের মালিক, গার্মেন্টস, ওষুধ কোম্পানি এমনকি সংবাদপত্রেরও মালিক। এই ধরনের বহুমুখী ব্যবসায়ী সরকারি দলে ঢুকে আছেন। তাঁর মতে, সংসদ হবে রাজনৈতিক নেতাদের। যারা ব্যবসায়ী, কোনো দিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেনি, তারা সুখের পায়রা। আওয়ামী লীগ সরকারের থেকে লাইসেন্স নিয়ে তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলছে। তারা সংবাদপত্রের মালিক হয়ে দিনের পর দিন লিখে যাচ্ছে।মো. নাসিম সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশ জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈনউদ্দীন খান বাদল রোহিঙ্গা বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় সংসদে ‘ক্যামেরা সেশন’ দাবি করেন।কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখার সমালোচনা হলেও এর পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিলে নতুন কর্মসংস্থান হবে। অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাংসদ আ স ম ফিরোজ, কামাল আহমদ মজুমদার, নুরুজ্জামান আহমদ, মো. ইসরাফিল আলম, ফজিলাতুন্নেসা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চাঞ্চল্যকর খাগড়াগড় বিস্ফোরণ ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান শেখকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরু শহরের ডোডাবল্লাপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।গতকালই গ্রেপ্তার হাবিবুর রহমান শেখকে এনআইএর বিশেষ আদালতে তোলা হয়, বিচারক তাঁকে এনআইএর হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।এর আগে হাবিবুরকে ধরার জন্য এনআইএ ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমানের একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে শাকিল গাজি ও করিম শেখ নামের দুই ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন তিনজন। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি পুলিশের দাবি করে হতাহত ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য। এই ঘটনার তদন্ত ভার নেয় এনআইএ। ওই ঘটনার পর প্রকাশিত হয়, বাড়িটি ছিল জেএমবির অস্ত্র কারখানা। ওখানেই তৈরি হতো গ্রেনেড ও বোমা। তা পাঠিয়ে দেওয়া হতো বাংলাদেশে। এখন এই খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার বিচার চলছে কলকাতার বিশেষ নগর আদালতে। হাবিবুরকে নিয়ে এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনো বাকি একজন।গত বছরের আগস্টে এনআইএ গ্রেপ্তার করে খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কাওসার ওরফে বোমারু মিজানকে। এনআইএ ৬ আগস্ট বেঙ্গালুরুর রামনগর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। বলা হয়, ৩৮ বছর বয়সী এই ‘বোমারু’ মিজান ছিলেন খাগড়াগড়কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড এবং নিষিদ্ধ জেএমবির শীর্ষ নেতা। মিজানকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এনআইএ ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে। তিনি বুদ্ধগয়ার বিস্ফোরণকাণ্ডেও জড়িত বলে অভিযোগ আছে।মিজান ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করে দুই জঙ্গিসহ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওই সময় দুই সঙ্গী মারা গেলেও মিজান চোরাই পথে ভারতে এসে আত্মগোপন করেন।
রেললাইনের দুর্ঘটনাস্থল মেরামত করা হয়েছে আগের দিনই (গত সোমবার)। এরপর রাত থেকেই ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা পর্যন্ত আন্তনগর ও লোকাল ১২টি ট্রেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচালের বড়ছড়া সেতু দিয়ে আসা–যাওয়া করেছে। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ট্রেন চলছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ধীরগতিতে। সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে ৫ কিলোমিটার। পাশাপাশি রেললাইনের আরও সংস্কারকাজ চলছে। ঠিকঠাক করা হচ্ছে কারিগরি বিভিন্ন দিক।গত রোববার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন বড়ছড়া ব্রিজ অতিক্রমের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেতু থেকে নিচে পড়ে যায় ট্রেনের পেছনের একটি কামরা। আরও চারটি কামরা কাত হয়ে পড়ে রেললাইনের একপাশে। এতে চার যাত্রীর প্রাণহানি এবং শতাধিক যাত্রী আহত হন। প্রায় ২২ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনে সরাসরি ট্রেন চলাচল করতে পারেনি।গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বরমচাল বড়ছড়া ব্রিজের কাছে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক শ্রমিক সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন। কেউ রেললাইন সোজা করছেন। কেউ হাতুড়ি পিটিয়ে রেলের নাট-বল্টু টাইট করছেন। কেউ পাথর টেনে এনে রেললাইনের সঙ্গে যুক্ত করছেন। কেউ ঘাস বা আগাছা পরিষ্কার করছেন। রেললাইনের পাশেই একদিকে দুর্ঘটনাকবলিত একটি কামরা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। অপর পাশে উল্টে যাওয়া কামরাগুলো আগের মতোই পড়ে আছে। লাইন সম্পূর্ণ ঠিকটাক হওয়ার পর এই কামরাগুলো তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। কর্মরত শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা গতকাল সকাল থেকেই লাইনে কাজ করছেন। কাঠের স্লিপার স্থাপনসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলে প্রায় ৫০টি কাঠের স্লিপার স্থাপন করা হয়েছে। তবে যতটা প্রয়োজন ততটা কাঠের স্লিপারই স্থাপন করা হবে। বড়ছড়া ব্রিজের ওপরও তখন কাজ চলছে।ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা জানালেন, কাজ তদারকির জন্য তিনি সিলেট থেকে এসেছেন। গত সোমবার ঠিকমতো সব কাজ করা সম্ভব হয়নি। শুধু লাইন চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। লাইনের ‘প্যাকিং’ করা যায়নি। এখনো স্বাভাবিক গতিতে ট্রেন যেতে পারছে না। ট্রেনের গতি স্বাভাবিক করতে লাইনের প্যাকিং ও অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করা হচ্ছে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবারও নারী-শিশুসহ অনেক মানুষকে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে ট্রেন দুর্ঘটনার স্থানটি দেখতে ভিড় করছেন।রেলওয়ের ওয়েম্যান কাজল দাস গতকাল বলেন, ‘আমরা আজকে (মঙ্গলবার) কাঠ (স্লিপার) বদলি করছি। হুদি (বাঁকা রেল সোজা করা) করছি। গাচ্ছা (রেলের জোড়া সোজা করা) করছি। রেললাইনে পাথর দেওয়া ও পাথর টানার কাজ করছি।’বড়ছড়া এলাকায় রেললাইনের একদম পাশ ঘেঁষেই বাড়ি শফিক মিয়ার। তিনি জানালেন, গত সোমবার রাত থেকেই লাইনে ট্রেন চলছে। রাতে ঘুমানোর আগে তিনি দুটি ট্রেন যেতে দেখেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালেও ট্রেন যেতে দেখেছেন। তবে খুব ধীরগতিতে এখানে ট্রেন চলছে। শফিক মিয়া দুর্ঘটনার রাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘরে বসে তখন টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ ভাঙচুরের শব্দ পাইছি। ঘর থেকে বাইরে এসে মানুষের কান্না, হল্লা-চিৎকার শুনছি। পরে আবার ঘরে গিয়ে টর্চ নিয়া আসছি। এলাকার মানুষও ছুটে আসছে। এলাকার মানুষ তিনটা বগির সবাইরে উদ্ধার করছে। এরপর প্রশাসনের লোকজন আইছে। একটা বগির লোকজন নিজেরাই নেমে গেছে। এলাকার মানুষ খুব সহযোগিতা করছে।’এদিকে উপবন দুর্ঘটনার প্রায় ২২ ঘণ্টা পর রেললাইন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। গত সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে প্রথম সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী উদয়ন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাস্থল অতিক্রম করেছে। এরপর গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত আন্তনগরসহ সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ৭টি এবং সিলেটমুখী ৫টিসহ মোট ১২টি ট্রেন বরমচালের দুর্ঘটনাস্থল এলাকা অতিক্রম করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে স্থানটি অতিক্রম করে সিলেটের দিকে গেছে সুরমা মেইল।বরমচাল রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বরমচালে আন্তনগর ট্রেন থামে না। কিন্তু দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনাস্থল অতিক্রম করার আগে এখন ট্রেন থামে। তারপর সর্বোচ্চ পাঁচ কিলোমিটার গতিতে এই স্থানটি অতিক্রম করছে। এই স্থানটি অতিক্রমের স্বাভাবিক গতি হচ্ছে ৭০ কিলোমিটার। আপাতত এভাবেই ট্রেন চলছে। নিয়মিত প্রায় সব ট্রেনই চলছে এখন।’
ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক তরুণীকে গণধর্ষণের পর হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়ার সময় তাঁকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন।গত সোমবার রাতে নান্দাইলের কালীগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গণধর্ষণের পর তরুণীকে (২২) নদীতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ চার যুবকের বিরুদ্ধে।পরে কালীগঞ্জ বাজারের একটি ক্লাবঘর থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।মেয়েটির ভাষ্য, তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। বাবা দিনমজুর। মুঠোফোনে শামীম নামের এক তরুণের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। কালীগঞ্জ বাজারের রাফি মার্কেটে শামীমের একটি দরজির দোকান আছে। সোমবার রাতে বিয়ে করার কথা বলে তাঁকে নিজের দোকানে নিয়ে আসেন শামীম। গভীর রাতে সেখানেই শামীমসহ চারজন তাঁকে ধর্ষণ করেন।মেয়েটির ভাষ্য, কান্নাকাটি করলে গভীর রাতে তাঁকে শামীম বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে দোকান থেকে বের করেন। এরপর অপর তিন সহযোগীকে নিয়ে তাঁর হাত-পা-মুখ বেঁধে নদীতে ফেলার চেষ্টা করেন।এ সময় মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয় একজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে একটি ক্লাবঘরে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে থাকা অন্য দুজন হলেন রিপন মিয়া ও মো. হাবিব। আরেকজনের নাম জানেন না মেয়েটি।নান্দাইল থানার এসআই লিটন মিয়া বলেন, মেয়েটির বাবাকে মামলা করতে বলা হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে একটি পা হারিয়েছেন। এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করাই দুরূহ। এর মধ্যেই রোজগারে নামেন তিনি। স্রেফ সাহসের জোরে চলে তাঁর ব্যাটারিচালিত রিকশা। এতে পেটে ভাত জোটে, চলে তাঁর সংসার।তাঁর নাম মো. আরিফ (৩২)। তখন তিনি ২২ বছরের তরুণ। মা-বাবা ও সাত ভাই–বোনের বড় সংসার। বাবা ভূমিহীন কৃষক। সংসারে নিত্য অভাব। বড় দুই ভাই মজুর খাটেন। চার বোনকে পর্যায়ক্রমে বিয়ে দেওয়া হয়। বাবার শরীরের বল কমে আসে। বৃদ্ধ হয়ে পড়েন। পরিবারের ভরণপোষণের জন্য বাবার হাতে কিছু টাকা তুলে দিতে নছিমন চালাতে শুরু করেন আরিফ। কিন্তু কিছুদিন পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলী এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। ঢাকাগামী একটি ট্রাকের চাপায় পড়েন। দেড় মাস ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল ও একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাঁর ডান পা কেটে ফেলতে হয়। স্বজন ও বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে চিকিৎসা চলে তাঁর। খরচ হয় পাঁচ লাখের বেশি টাকা। এরপর থেকে পঙ্গুত্বকে বরণ করে শুরু হয় আরিফের অন্য রকম পথচলা। তবে তিনি বসে থাকেননি। আবার রাস্তায় নামেন। এবার তিনি ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক হন।আরিফের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামে। তাঁর স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে বড় হবেন। কিন্তু অভাব–অনটনের সংসারে আরিফ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। নেমে পড়েন রোজগারে। এরপর সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। এক পায়ের ওপর ভরসা করেই নেমে পড়েন। প্রথমে ভাড়ায় অন্যের রিকশা চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মালিকেরা তাঁর কাছে রিকশা ভাড়া না দিয়ে ফিরিয়ে দিতেন। ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ১৮ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা কেনেন তিনি। এখন সেই রিকশা নিয়ে প্রতিদিন রাস্তায় নামেন।আরিফ বলেন, পা হারানোর পর খুব অসহায় লাগত। ভেবে পাচ্ছিলেন না কীভাবে ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করবেন। কী কাজে লাগবেন তিনি। তবে মরে গেলেও ভিক্ষা করবেন না। ব্যাটারিচালিত রিকশার কথা তাঁর মাথায় আসে। শুরুতে ভাড়ায় রিকশা জোগাড় করাও সমস্যা হয়। কিন্তু পরে নিজেই রিকশা কেনেন। এখন লক্ষ্মীপুর, কলাকোপা, দৌলতপুর এবং মাঝেমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তাঁর এই রিকশা চালান। প্রতিদিন তাঁর ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। এই টাকা দিয়েই তাঁর সংসার এবং দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলের লেখাপড়া চলছে।আরিফের স্ত্রী পাখি আক্তার বলেন, স্বামী আরিফের আয়ে তাঁরা দুমুঠো ভাত খেতে পারছেন। স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারছেন।ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান মো. মামুনুর রশিদ বলেন, দুর্ঘটনায় একটি পা হারানোর পরও আরিফ থেমে যাননি। তাঁকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। ছয় মাস পরপর কিছু টাকা পাচ্ছেন।
দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল। বগুড়ার শেরপুরের মির্জাপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের মূল সড়ক থেকে নেমে জমির আইল ধরে যেতে যেতে চোখে পড়ে টিনশেডের পাকা বাড়িটা। বাড়ির প্রধান ফটক থেকে একটু ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন নারী হাতে তৈরি করছেন পুঁথির ব্যাগ, ওয়ালম্যাট, ফুলের টবসহ নানা জিনিসপত্র। হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁরা এখন স্বাবলম্বী। এ কাজে তাঁদের নেতৃত্ব দিয়েছেন মর্জিনা খাতুন।সেলাই ও হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে মর্জিনা এখন মাসে আয় করেন ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। গ্রামের অন্য নারীদেরও স্বাবলম্বী করার পথ দেখিয়েছেন তিনি। অবসর সময়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন মর্জিনা। এ পর্যন্ত অন্তত ৫০০ নারী তাঁর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে টাকা আয় করছেন। পরিবার নিয়ে তাঁরা সুখে–স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন।গত শনিবার কথা হয় মর্জিনা খাতুনের সঙ্গে। এ সময় তিনি জানান তাঁর পরিশ্রম ও নানা অর্জনের কথা। মদনপুর গ্রামের কৃষক সুজির উদ্দিনের পাঁচ সন্তানের মধ্যে মর্জিনা রয়েছেন চার নম্বরে। মা জয়গুন বিবি গৃহিণী। ১৯৯৫ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয় মর্জিনার। শ্বশুরবাড়িও একই গ্রামে। স্বামী বাসচালকের সহকারী (হেলপার) ছিলেন। বিয়ের পর তাঁকে সইতে হয়েছে অসহ্য যন্ত্রণা। বড় বোন মেরিনা বেগমের সহায়তায় পোশাক তৈরির কাজ শিখেছেন।মর্জিনা খাতুন বলেন, বিয়ের পর বাবা তাঁকে দুই বিঘা জমি দিয়েছিলেন। ওই জমির আয় থেকে জায়গা কিনে বসতবাড়ি গড়েন। ওই বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। স্বামীর সংসারে গেলেও লুকিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যান। স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে ২০০০ সালে দাখিল পাস করেন। পরে উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের সহায়তায় দুই বছরের প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১০ সাল থেকে তিনি ইউনিয়ন তথ্যসেবা ও ডিজিটাল সেন্টারে কাজ করছেন। অবশেষে ২০১৩ সালে স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান। পরের বছর আলিম পাস করেন মর্জিনা। ওই বছরই জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ–এর তালিকায় উপজেলা পর্যায়ে ২০১৪ সালে শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নির্বাচিত হন। একই সঙ্গে তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা হিসেবেও তালিকাভুক্ত হন।
ইয়েমেনের যুদ্ধের নিউজগুলো অনুবাদ করতে গেলেই আদেলের মুখ ভেসে ওঠে। প্রতিবারই ভাবি আদেলের খোঁজ নেব, কিন্তু নেওয়া হয় না। ফেসবুকের পোস্ট থেকে বুঝতে পারি, সে নিরাপদ আছে। হয়তো সে কারণে খোঁজ নেওয়ার তাগিদ নিজের অজান্তে চাপা পড়ে যায়। এই প্রথম ফেসবুক মেসেঞ্জারে আদেলের সঙ্গে কথা হওয়ার পর তাঁর পোস্টগুলোয় ভালোভাবে নজর বোলালাম। এক পোস্টে সে লিখেছে, ‘কত কষ্ট হয় যখন তোমার প্রিয় ভালোবাসার মানুষগুলো কষ্টে থাকে আর তুমি কিছু করতে পারো না।’আদেল আল-হাদ্দাদের সঙ্গে পরিচয় ২০০৫ সালের আগস্টে। ভারতের সরকারের বৃত্তি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে আমরা চার নারী সাংবাদিক তখন দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মাস কমিউনিকেশনে (আইআইএমসি) উন্নয়ন সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা কোর্স করছি। এর মধ্যে আমি, রোজিনা ইসলাম, আঙ্গুর নাহার মন্টি সাংবাদিকতায় আছি। আর আলফা আরজু অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী, ফ্রিল্যান্স হিসেবে দেশের বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে লেখে। ১৪টি দেশের সাংবাদিকদের সঙ্গে ইয়েমেনের আদেলও সেই কোর্সে ছিল। দেশটির বাসিন্দাদের গৌর–কৃষ্ণবর্ণের মিশ্র চেহারা থাকলেও আদেলের মুখের আদল আরবদের মতো। ভিন্ন উচ্চারণের ইংরেজির কারণে মাঝেমধ্যেই আদেলের কথার অর্থ বুঝতে অসুবিধা হতো। অর্থ উদ্ধারের পর আমরা একে অন্যকে বলতাম, ‘এই ইংরেজির পাঠোদ্ধার কে কবে কোথায় করতে পারবে?’ একবার অর্থনীতি বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল বলে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম আদেল ‘গিডিপি’ বলতে ‘জিডিপি’ এবং ‘বাডগেট’ বলতে ‘বাজেট’ বোঝাচ্ছে। কোর্সের শুরুতে সবাইকে নিজ নিজ দেশের জাতীয় পোশাক পরে আসতে বলা হয়েছিল। আদেলের পোশাক দেখে আমাদের কৌতূহল চরমে। মনে হচ্ছে, শুটিংয়ের অপেক্ষায় রাজা–বাদশাহর আমলের কোনো চরিত্র। মাথায় পাগড়ি, কোমরে বাঁধা হোল্ডারে বড় ছুরি গোঁজা, হাতে লাঠি। আমাদের কৌতূহলী দৃষ্টির সামনে বলল, ‘এটাই আমাদের জাতীয় পোশাক’।শান্ত স্বভাবের সেই আদেল লিখেছে ভালোবাসার মানুষগুলোর কষ্টে কিছু করতে না পারার অসহায়ত্বের কথা। আদেল জানাল, ২০১২ সাল থেকে সে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে সৌদি আরবের রিয়াদে বসবাস করছে। সেভাবে আর সাংবাদিকতায় নেই। শেষ ইয়েমেনে গেছে ২০১৪ সালে। যুদ্ধের ডামাডোলে এরপর থেকে আর ইয়েমেন যাওয়া হয় না। গত বছর চেষ্টা করেও যেতে পারেনি। এবার আগস্টে যাবেই জানাল।‘আদেল, যুদ্ধের মধ্যে যাওয়া কি ঠিক হবে?’ জবাবে বলল, ‘আমার বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন—সবাই সেখানে। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতেই হবে। আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। পরিস্থিতি অনেক কঠিন। সিরিয়ার চেয়েও খারাপ। আশা করি, এই যুদ্ধের শেষ হবে। নারী-শিশুরা ভয়াবহ দুর্ভোগে। পুরুষেরা চাকরি হারিয়ে বেকার। কোনো অর্থ নেই, খাবার নেই, ওষুধ নেই।’‘কীভাবে যাবে? জানতেই বলল, ‘সেখানে যাওয়া খুব বিপজ্জনক। আকাশ আর জলপথে যাওয়াই যায় না। একমাত্র সীমান্ত দিয়ে পাড়ি দেওয়া যায়। সেটাও সহজ পথ নয়।’আদেল আরও জানাল, তাঁর শহর ইব এখনো নিরাপদ। সেখানে যুদ্ধ হচ্ছে না। ইয়েমেনের মধ্যভাগে ইবের অবস্থান। উত্তরাঞ্চলে যুদ্ধ হচ্ছে। সেটি সরকারবিদ্রোহী ইরান–সমর্থিত হুতিদের নিয়ন্ত্রণে। দক্ষিণাঞ্চলে এখন যুদ্ধ নেই। সেখানের নিয়ন্ত্রণ সরকার বাহিনীর হাতে। তবে প্রেসিডেন্ট বা মন্ত্রীরা কেউ থাকেন না। তাঁরা সবাই সৌদি আরবে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিরাপদে বসবাস করছেন। প্রেসিডেন্ট আছেন সৌদি আরবে। সৌদি মানেই অর্থ, সৌদি মানেই নিরাপদ।’প্রশ্ন করলাম, ‘ব্যক্তিগতভাবে তুমি এ যুদ্ধের জন্য কাদের দায়ী করো?’ আদেলের জবাব, ‘দুই পক্ষই। মাঝখানে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সরকারপ্রধান পালিয়ে দেশের বাইরে। আর হুতিরা ইয়েমেনের সব অর্থ সম্পদ দখল করেছে। তারাই এখন দেশ চালাচ্ছে। হুতিরা বিলাসবহুল জীবন যাপন করে, সেই চিত্র গণমাধ্যমে আসে না। জাতিসংঘ থেকে যেসব সাহায্য আসে, তা ভুক্তভোগীদের চেয়ে হুতিদের হাতেই বেশি চলে যায়।’‘হুতিদের নিশ্চয় সমর্থন আছে ব্যাপক!’ আদেল বলল, ‘৯০ শতাংশ সুন্নির দেশ ইয়েমেন। আর হুতিরা শিয়া। তারা ছোট একটি গ্রুপ। কিন্তু সামরিক বাহিনী, ব্যাংকসহ অন্যান্য উৎস দখল করে তারা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তাই সাধারণ ইয়েমেনিদের হুতিদের প্রতি সমর্থন রয়েছে, এটা বলা যায় না। লোকজন দেশ ছেড়েও পালাতে পারছে না। যাদের অর্থ আছে, তারা ইউরোপ বা এশিয়ার কোনো দেশে বা কোনো আরব দেশে চলে যাচ্ছে। তবে সেই সংখ্যা কম। সৌদি হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছে। কিন্তু তারা সীমান্ত দিয়ে কোনো ইয়েমেনি শরণার্থী প্রবেশ করতে দেয় না। ইরানও এ যুদ্ধের জন্য দায়ী। এক পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, অন্য পক্ষে রাশিয়া।’আদেলের কথার সঙ্গে মিল খুঁজে পেলাম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরেও। হুতি, হাদি সরকারের ক্ষমতার দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা অস্ত্র হাতে মিত্রদেশগুলো নিয়ে সৌদির হামলা, ইরানের অস্ত্র সহায়তায় হুতির যুদ্ধ, আর সব ছাপিয়ে দিনের পর দিন খাবার না পেয়ে হাড্ডিসারে পরিণত হওয়া শিশুদের কথা। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশটি এই যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।কেন এই যুদ্ধ?রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন ও রূপান্তরের লক্ষ্যে গণবিক্ষোভের সেই ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কা লেগেছিল ইয়েমেনেও। পশ্চিমা সাংবাদিকদের ভাষায় যা আরব বসন্ত। সেই আরব বসন্তের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন ইয়েমেনের ৩৩ বছরের স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহ। ২০১১ সালে তিনি তাঁর ডেপুটি আবদ্রাববুহ মানসুর হাদির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। দেশটির সবচেয়ে বড় শহর সানায় হুতিদের সঙ্গে যুদ্ধে ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর স্বৈরশাসক আলি আবদুল্লাহ সালেহ মারা যান।তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মানসুর হাদিকে চারপাশ থেকে নানা সংকট চেপে ধরে। জিহাদিদের হামলা, দক্ষিণে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন, সেনাবাহিনীতে সালেহর অনুগত বাহিনী, দুর্নীতি, বেকারত্ব, খাদ্যসংকট। সালেহর শাসনামলে ইয়েমেনের সংখ্যালঘু জাইদি শিয়া সম্প্রদায়ের হুতি বাহিনী কয়েক দশক ধরে একাধিকবার সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, লড়াই করেছিল। নতুন প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে হুতি বাহিনী এবং উত্তরের সাদা প্রদেশসহ আশপাশের এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। সরকারের ব্যর্থতায় বিরক্ত সাধারণ সুন্নিরা ২০১৪ সালের শেষে এবং ২০১৫ সালের শুরুতে হুতিদের প্রতি সমর্থন দেখায়। বিদ্রোহীরা ওই সময় সানাও দখলে নেয়।সেনাবাহিনীর সালেহ অনুগত সেনারা হুতিদের সঙ্গে একজোট বেঁধে ক্ষমতা দখলে পুরো দেশ দখলে সর্বশক্তি নিয়োগ করে। চাপের মুখে মানসুর হাদি ২০১৫ সালের মার্চে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।হুতি বাহিনীর এই শক্তিশালী হওয়ার পেছনে ওই অঞ্চলের শিয়া শক্তি ইরান নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে বলা হয়। ফলে পাল্টা হামলার জন্য জোটবদ্ধ হয় আরব বিশ্বের সুন্নি দেশগুলো। সৌদি আরবের নেতৃত্বে আটটি আরব দেশ (বেশির ভাগই সুন্নি) হাদি সরকারকে ক্ষমতায় বসাতে শক্তি প্রয়োগ শুরু করে। শুরুতে সৌদি আরব পূর্বাভাস দিয়েছিল, এ যুদ্ধ মাত্র কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হবে। তবে আজ চার বছর হয়ে গেল, এ যুদ্ধ শেষের কোনো লক্ষণ নেই।সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৫ সালের আগস্টে দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর শহর আদেনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। দক্ষিণাঞ্চলের বেশির ভাগ জায়গা থেকে হুতি ও তাদের মিত্রদের কয়েক মাসের মধ্যে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। হাদি সরকার আদেনে সাময়িক আবাস গড়ে তোলে। তবে ন্যূনতম চাহিদা মেটানো ও নিরাপত্তা দিতেও এ সরকার ব্যর্থ হয়। সৌদি জোট সানা থেকে হুতিদের উৎখাত করতে পারেনি। বরং হুতিরা তায়াজ শহরও দখলে নেয় এবং সৌদির সঙ্গে সীমান্ত এলাকাজুড়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কঠিন বলয় তৈরি করে। ২০১৭ সালের নভেম্বর রিয়াদকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে সৌদি জোট ইয়েমেনের ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করে।২০১৮ সালের এপ্রিলে পশ্চিমের হোদেইদা প্রদেশে সৌদি হামলায় নিহত হন হুতিদের শীর্ষ রাজনৈতিক কাউন্সিলের প্রধান সালেহ আল-সামাদ। বলা হয়, এখন হুতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৪০ বছর বয়সী আবদুল মালিক আল-হুতি।সৌদি জোটের ভাষ্য, ইরান হুতি বাহিনীর হাতে পারমাণবিক অস্ত্র তুলে দিচ্ছে। সেটা তারা বন্ধ করতে চায়। যদিও ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে সৌদি জোটের অবরোধ আরোপের কারণে সাধারণ মানুষ ভয়াবহ খাদ্যসংকটে ভোগা শুরু করে। জ্বালানি সংকট তীব্র হয়।আর এই পরিস্থিতির পুরো ফায়দা নেওয়া শুরু করে আরব উপদ্বীপের আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস)।২০১৮ সালের জুন মাসে জোট বাহিনী এই অবরোধ তুলে নেওয়ার চেষ্টা হিসেবে লোহিত সাগরের শহর হোদেইদায়ে হামলা চালায়। এই বন্দর শহরটিকে ইয়েমেনের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জীবনধারা বলা হয়ে থাকে। জাতিসংঘ এই বন্দরের ব্যাপারে সতর্ক করে জানায়, বন্দরটি অবরুদ্ধ হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভয়াবহ মানব বিপর্যয় ঘটবে। গত বছরের ডিসেম্বরে হাদি সরকার ও হুতি প্রতিনিধিরা হোদেইদা শহর ও বন্দরে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় এবং এ বছরের মধ্য জানুয়ারির মধ্যে যার যার বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারে সম্মত হয়। তবে এখন পর্যন্ত দুই পক্ষের কেউ সেনা প্রত্যাহার শুরু না করায় ওই চুক্তি ভেস্তে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।কী খেসারত দিল ইয়েমেনিরা?রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। ইয়েমেনের সাধারণ মানুষ আজ সেই উলুখাগড়া। মোহাম্মদ, সামিয়ার মতো মানুষেরা সেই উলুখাগড়া। তাঁদের গল্পগুলো পড়েছিলাম বিভিন্ন গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সংস্থার টুইটার পোস্টে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তিন বছর ধরে মোহাম্মদের মতো অনেক ইয়েমেনি বাড়ি ছেড়ে এখান থেকে সেখানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শরণার্থী শিবিরে জন্ম নিয়েছে তাঁর সন্তানও। মোহাম্মদ বলেছিলেন, একটি প্রকৃত বাড়ি থাকলে কেমন লাগে, তা তিনি ভুলে গেছেন। মোহাম্মদের মতো ৩৩ লাখ ইয়েমেনি এখন গৃহহারা। সামিয়া নামের এক নারী বলেছিলেন, যুদ্ধ তাঁর ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। বেঁচে থাকার তাগিদে সন্তানদের এখন তাঁর সঙ্গে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে বিক্রি করতে হয়। যুদ্ধ সামিয়ার সন্তানদের মতো স্কুল থেকে ঝরিয়ে দিয়েছে ২০ লাখ ইয়েমেনি শিশুকে।এককথায় বলা যায়, ইয়েমেন পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ মনুষ্যসৃষ্ট মানব বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে।জাতিসংঘ বলেছে, এ যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে বিশ্ব ১০০ বছরে সবচেয়ে বড় দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করবে। এ যুদ্ধে ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ২৫ জনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছে ১১ হাজার ১৪০ জন। এর মধ্যে সৌদি জোটের হামলায় ৬৫ শতাংশের প্রাণ গেছে। তবে আন্তর্জাতিক অনেক সংগঠনের মতে, মৃতের সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি। ইয়েমেন যুদ্ধের প্রতিটি নিউজ থেকে নেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে মার্কিনভিত্তিক আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট জানিয়েছে, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৬৫০ জন সামরিক-বেসামরিক মানুষ মারা গেছে।জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনের ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা প্রয়োজন। ২৪ লাখ মানুষ সর্বোচ্চ খাদ্যসংকটে। সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবরের মধ্যে ভয়ানক অপুষ্টির শিকার হয়ে ৮৫ হাজার শিশু মারা গেছে।ইয়েমেনে কর্মরত ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসের (আইসিআরসি) তথ্য অনুসারে, সেখানের ৩২ লাখ শিশু ও নারী তীব্র অপুষ্টির শিকার। গত তিন বছরে শিশুদের অনুপাতে অপুষ্টি বৃদ্ধি পেয়েছে ৯০ শতাংশ। যুদ্ধে গত বছরের জুন থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম উপকূল থেকে পালিয়ে এসেছে ৬ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ।ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় একটি প্রশ্ন অবধারিত, সংঘাতের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল দেশটি?কৌশলগত দিক দিয়ে ইয়েমেনের গুরুত্ব রয়েছে অনেক। এটি এমন একটি প্রণালিতে, যা লোহিত সাগর আর আদেন উপসাগরীয় এলাকাকে সংযুক্ত করেছে। এ পথ দিয়ে বিশ্বের বেশির ভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে। ইয়েমেনকে তাই সৌদি–আমেরিকান বলয়ে রাখা নিয়েই পশ্চিমাদের জন্য মাথাব্যথা। দেশটি যত অস্থিতিশীল থাকবে, তত ওই অঞ্চল ঘিরে ফণা তুলবে আল-কায়েদা বা আইএস। এসব ছাপিয়ে আরেকটি কথা না বললেই নয়, তা হলো এই অঞ্চল ঘিরে সুন্নি শাসিত সৌদি আরব এবং শিয়া শাসিত ইরানের পেশির লড়াই।নাজনীন আখতার: সাংবাদিক।
ব্যাটিং উইকেট ছাড়া এউইন মরগানের ইংল্যান্ড দল ম্যাচ জিততে সক্ষম নয়, এমনটাই মনে করছেন সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান জিওফ্রে বয়কট।বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপ ইংল্যান্ডের। গত ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর থেকেই নিজেদের আমূল বদলে নিয়েছে এউইন মরগানের দল। ওয়ানডেতে ৩০০ ছাড়ানো স্কোর করাকে রীতিমতো ডালভাত বানিয়ে ফেলেছে তারা। অথচ দলটিরই সাবেক এক ব্যাটসম্যান বলছেন, ব্যাটিং উইকেট ছাড়া এই ইংল্যান্ড দল জিততে পারে না!মন্তব্যটা যিনি করেছেন, ক্রিকেট বিশ্বে ঠোঁটকাটা হিসেবে পরিচয় আছে তাঁর। ভুলত্রুটি দেখলে কখনোই সমালোচনা করতে পিছপা না হওয়া জিওফ্রে বয়কট সরাসরিই বলে দিয়েছেন, ‘একমাত্রিক’ এই ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ ব্যাটিং উইকেট ছাড়া একেবারেই অকার্যকর। একটু বোলিং–সহায়ক উইকেট হলেই মুখ থুবড়ে পড়ে এই ব্যাটিং, এমনটিও মন্তব্য করেছেন বয়কট।টেলিগ্রাফে লেখা এক কলামে মরগানের দলের এমন সমালোচনা করেছেন ৮ হাজারের বেশি টেস্ট রানের মালিক বয়কট, ‘ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ইউনিট একমাত্রিক। তাদের কোনো বিকল্প পরিকল্পনা আছে বলে মনে হয় না। থাকলেও তারা সেটি কাজে লাগাতে পারছে না। এখনকার দিনে যেসব উইকেটে খেলা হয়, ২১ বারের মধ্যে ২০ বারই সেগুলো বড় সংগ্রহের জন্য সহায়ক। এসব উইকেটে এই ইংল্যান্ড দল অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু যখনই উইকেটে বোলারদের জন্য একটু কিছু থাকে, বা বল একটু ধীরে আসতে শুরু করে, তখনই তাদের দুর্বলতা ধরা পড়ে যায়। বল ঠিকভাবে ব্যাটে না এলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আর নিজেদের হাতে রাখতে পারে না তারা। এই দলের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে ব্যাটিং করতে জানে না।’ব্যাটসম্যানদের সমালোচনা করলেও জো রুটের জন্য আলাদা প্রশংসা বরাদ্দ রেখেছেন বয়কট। টেকনিকের জন্যই রুট বাকিদের চেয়ে আলাদা, এমনটাই মনে করছেন সাবেক এই ইংলিশ অধিনায়ক, ‘জো রুট বাকিদের চেয়ে ব্যতিক্রম। নিজের টেকনিক দিয়েই সব সংস্করণের ক্রিকেটে রান করে চলেছে সে।’গতকালের ম্যাচে যেন বয়কটের কথাকেই সত্য প্রমাণিত করেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। নিজেদের ইনিংস শেষেই অ্যারন ফিঞ্চ জানিয়েছিলেন, শেষ দিকে বল একটু ধীরে ব্যাটে আসছিল। শচীন টেন্ডুলকারও ইনিংস–মধ্যবর্তী বিশ্লেষণে বলেছিলেন, এ উইকেটে ২৮৫ ম্যাচ জেতার মতো সংগ্রহ। ৬৪ রানে ম্যাচ হেরে সেটিই যেন প্রমাণ করেছে ইংলিশরা। ৫৩ রানের মধ্যেই হারিয়ে ফেলেছিল ৪ উইকেট। এক বেন স্টোকস ছাড়া মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি আর কেউই। দুই বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক ও জেসন বেরেনডর্ফের সামনে একধরনের অসহায় আত্মসমর্পণই করেছে মরগানের দল।
প্রতারণার মাধ্যমে এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান নামের এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গত সোমবার তিনজনের নামে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজিএম) আদালতে মামলা করেছেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।তিন আসামি হলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার হারুনদিয়া গ্রামের হারুন অর রশীদ ওরফে রনি, তাঁর বোন পারভীন আক্তার এবং বোনজামাই (আরেক বোনের স্বামী) নাজমুল হুছাইন। মিজানুরের আইনজীবী আবদুস সাত্তার মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, হারুন অর রশীদ নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মিজানুরের কাছ থেকে ৪ লাখ ১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অন্য দুই আসামি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আদালত এ ঘটনা তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।আইনজীবী আবদুস সাত্তার আরও বলেন, হারুন নামের ওই লোক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কোনো চাকরি করেন না। তিনি ভুয়া পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছেন। যেভাবে প্রতারণাদৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিজানুর রহমানের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে। ডায়াবেটিসের রোগী হওয়ায় গত বছর চিকিৎসা নিতে বারডেম হাসপাতালে যান মিজানুর। সেখানেই হারুন অর রশীদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। হারুন তখন নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন।মামলায় মিজানুর অভিযোগ করেন, পরিচয়ের পর হারুন তাঁকে বলেছিলেন, তিনি (হারুন) প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলসহ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। একই কথা বলেন হারুনের বোনজামাই নাজমুল ও বোন পারভীন। তিনি হারুনের কথা বিশ্বাস করেন। একপর্যায়ে প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের অনুদানের টাকা তোলার জন্য খরচপাতি লাগবে বলে জানান হারুন। এরপর তিনি মিজানুরের কাছ থেকে গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বরের মধ্যে ৪ লাখ ১ হাজার টাকা নেন। সাভারের হেমায়েতপুরের বাসস্ট্যান্ডে একটি চায়ের দোকানে বসে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে মিজানুর এই টাকা হারুনকে দিয়েছিলেন।মিজানুর আদালতকে বলেন, টাকা নেওয়ার পর হারুন তাঁকে দুটি মোবাইল ফোন নম্বর দেন। ওই সব নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক তিনি হারুনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। কিছুদিন যাওয়ার পর হারুন তাঁকে (মিজান) আশ্বস্ত করে বলেন, কিছুদিনের মধ্যে তিনি অনুদানের ২০ লাখ টাকা পেয়ে যাবেন। এভাবে হারুন তাঁকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আরও কয়েক সপ্তাহ ঘোরাতে থাকেন। একপর্যায়ে হারুনের দেওয়া দুটি মোবাইল ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়।মিজানুর রহমান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, হারুনের মুঠোফোন বন্ধ পেয়ে সাভার থানা, র‍্যাব ও ডিবি অফিসে যোগাযোগ করেন তিনি। পুলিশের সহায়তায় তিনি হারুনসহ অন্যদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা পান।হারুনের বোনজামাই ও মামলার আসামি নাজমুল হুছাইন মঙ্গলবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক মাস আগে ডিবি অফিস থেকে তাঁকে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিজানুরের মুখোমুখি করা হয় তাঁকে। তখন তিনি জানতে পারেন, মিজানুরের টাকা মেরে দিয়েছেন হারুন অর রশীদ। নাজমুলের দাবি, মিজানুরের টাকা মেরে দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবে জড়িত নন। হারুন অর রশীদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই।একই কথা বলেন অপর আসামি পারভীন আক্তারের মেয়ে আইরিন। তাঁর দাবি, মামা হারুন অর রশীদের সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁর মা সম্পূর্ণ নির্দোষ। নাজমুল জানান, হারুনেরা পাঁচ ভাই ও চার বোন।দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিজানুর বলেন, হারুন অর রশীদকে বিশ্বাস করে তিনি ৪ লাখ ১ হাজার টাকা তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছেন। মিজানুর আরও বলেন, ‘কণ্ঠ শুনলেই আমি হারুনকে ঠিকই চিনে ফেলব। আমি বিচার চাই।’
বাড়ি থেকে পালানো সেই সৌদি তরুণী রাহাফ আল-কুনের কথা নিশ্চয় মনে আছে! থাইল্যান্ডের ব্যাংকক বিমানবন্দরে কী হুলুস্থুল কাণ্ডটাই না বাধিয়েছিলেন! তাঁর সাফ কথা, অত ধর্মীয় বিধিনিষেধের বেড়াজালের পরিবারের আর ফিরে যাবেন না। ঘটনাটি ঘটে এ বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে। পরে ১২ জানুয়ারি কানাডা সরকার তাঁকে আশ্রয় দিয়ে কানাডায় নিয়ে যায়।সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ ১৮ বছরের তরুণী রাহাফ বাড়ি থেকে পালিয়ে ব্যাংককে বিমানবন্দরে আটকে পড়েন। তাঁর পরিবারের সদস্যরা কুয়েতে ছিলেন। তিনি কুয়েত থেকে ব্যাংকক হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ব্যাংকক থেকে তাঁকে কুয়েতে ফেরত পাঠানোর জন্য বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থিত হোটেলে রাখলে সেখানে তিনি নিজেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। রাহাফ কুয়েতে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তিনি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছেন। পরিবারে ফিরলে তাঁকে মেরে ফেলা হবে।পরিবার সম্পর্কে অভিযোগ করে রাহাফ বলেছিলেন, ‘আমার দেশে আমি পড়তে পারি না। কাজ করতে পারিনি। আমি স্বাধীন হতে চাই। পড়তে চাই। আমার ইচ্ছেমতো কাজ করতে চাই।’ তিনি জানান, পরিবারে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতেন। চুল কেটে ফেলার কারণে তাঁকে ছয় মাস ঘরে বন্দী করে রাখা হয়।পরিবারের অতিমাত্রায় শাসন থেকে বেরিয়ে দম ফেলার জন্য কোনো সৌদি তরুণীর এটাই প্রথম পলায়ন নয়; রাহাফের আগে আরেক সৌদি তরুণী দিনা আলী লাসলুমও (২৪) বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। তবে তিনি সফল হননি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে দিনাকে ফিলিপাইনের ম্যানিলা বিমানবন্দরে আটক করা হয় এবং ফিরিয়ে দেওয়া হয় পরিবারের কাছে।রাহাফের ঘটনার আট মাস আগে সালওয়া নামের আরেক সৌদি নারী বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। তবে তিনি একা পালাননি। সঙ্গে নিয়েছিলেন ছোট বোনকে। দুই বোন এখন বাস করছেন কানাডার মনট্রিয়লে।তাহলে প্রশ্ন উঠেছে, ধর্মীয় বিধিনিষেধ কি আরব সমাজের অনেকের জন্য শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে? উত্তরটা ‘হ্যাঁ’। শুধু নারী নয়, অনেক পুরুষের জন্যও এ উত্তর প্রযোজ্য। বিবিসির এক সাম্প্রতিক জরিপও তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাজুড়ে বিবিসি পরিচালিত সবচেয়ে বড় ও ব্যাপকভিত্তিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আরব দেশগুলোতে ধর্মে অনাগ্রহী লোকের সংখ্যা বাড়ছে। জরিপে নারীর অধিকার, ধর্ম, মধ্যপ্রাচ্য নীতির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক নেতৃত্ব, এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা, অভিবাসন ও যৌনতার ব্যাপারে আরবদের ভাবনা, অনুভূতি ও মতামত জানতে চাওয়া হয়। তবে লক্ষণীয়, এই জরিপে সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, ওমান, ইরান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো প্রভাবশালী দেশগুলো বাদ পড়েছে। এর ব্যাখ্যায় দেশগুলোর নাম উল্লেখ না করে বিবিসি বলেছে, কিছু দেশের সরকার জরিপ পরিচালনায় ‘অবাধ ও পূর্ণ’ প্রবেশাধিকার দেয়নি।বিবিসি নিউজ অ্যারাবিকের জন্য আরব ব্যারোমিটার রিসার্চ নেটওয়ার্কের করা এই জরিপে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষের। ২০১৮ সালের শেষে এবং ২০১৯ সালের বসন্ত পর্যন্ত ১০টি দেশে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হচ্ছে আলজেরিয়া, মিসর, ইরাক, জর্ডান, লেবানন, মরক্কো, ফিলিস্তিন-অধ্যুষিত এলাকা, সুদান, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেন।জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ২০১৩ সাল থেকে এসব অঞ্চলে ধর্মে মন নেই—এমন লোকের সংখ্যা ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৩ শতাংশ হয়েছে বলে শনাক্ত করা হয়। ৩০ বছরের নিচের বয়সীদের মধ্যেই এ প্রবণতা বেশি। এই বয়সীদের মধ্যে ১৮ শতাংশ ধর্মে আগ্রহী নয় বলে শনাক্ত হয়েছে। একমাত্র ইয়েমেনের ক্ষেত্রে এ চিত্র উল্টো।রাজনীতিতে নারীর অধিকারকে বেশির ভাগ সমর্থন জানালেও পরিবারে পুরুষের আধিপত্যই চেয়েছেন তাঁরা। এমনকি নারীরাও চান পুরুষের সিদ্ধান্ত হোক ‘শেষ কথা’।জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মানুষ নারীদের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অধিকারকে সমর্থন করেন। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আলজেরিয়া। জরিপে আলজেরিয়ার অংশগ্রহণকারীদের ৫০ শতাংশেরও কম নারীদের দেশের প্রধান হওয়ার বিষয়টি সমর্থন করেছে।তবে পারিবারিক জীবনের ক্ষেত্রে নারীসহ বেশির ভাগই মনে করেন, পরিবারের চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত স্বামীর বা পুরুষের নেওয়া উচিত। তবে এ ক্ষেত্রে মরক্কো থেকে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন। তাঁদের অর্ধেকেরও কম মনে করেন, স্বামীর হাতেই শুধু পারিবারিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কর্তৃত্ব থাকা উচিত।তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে নিজ দেশে বিরোধী মত কঠিনভাবে দমনের অভিযোগ থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক নীতির ব্যাপারে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্যোগ এই জরিপে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বেশির ভাগই এ ক্ষেত্রে নেতা এরদোয়ানের নাম নিয়েছেন। তবে তিনটি দেশের অংশগ্রহণকারীরা এরদোয়ানের চেয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তাঁদের পছন্দে এগিয়ে রেখেছেন। এ-বিষয়ক জরিপের প্রতিটি ধাপে সবচেয়ে নিচে স্থান পেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।জরিপে বলা হয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের ৫১ শতাংশ এরদোয়ান, ২৮ শতাংশ পুতিন এবং ১২ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে মত দিয়েছে। লেবানন, লিবিয়া ও মিসর পছন্দের শীর্ষে রেখেছে পুতিনকে। তবে এ ক্ষেত্রে এটাকে অংশগ্রহণকারীদের শতভাগ মতামতের সমষ্টিকে বোঝায় না। কারণ, ‘জানি না’ ও ‘প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি’ জানিয়েছেন যাঁরা, সেসব এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার অনেকেই নিরাপত্তার বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে মনে করেছেন। যখন তাঁদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছে, এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কোন দেশকে হুমকি মনে করেন? জবাবে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়েছে ইসরায়েলের নাম। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র এবং তৃতীয় দেশ হিসেবে ইরানের নাম এসেছে।জরিপ চালানো দেশগুলোয় অর্থনৈতিক অবস্থা কতটা করুণ, তা উঠে এসেছে বেশির ভাগের দেশত্যাগের ভাবনা থেকে। তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যেতে চান ইউরোপ, আমেরিকা, এমনকি আরব বিশ্বের ধনী দেশগুলোয়। তবে অভিবাসনের জন্য দেশ নির্বাচনে তাঁদের পছন্দে পরিবর্তন এসেছে। ইউরোপ নয়, তাঁদের পছন্দের শীর্ষে এখন উত্তর আমেরিকা। জরিপে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের প্রতি পাঁচজনের একজন অন্য দেশে অভিবাসনের কথা ভাবছেন। এ ভাবনায় সবচেয়ে এগিয়ে সুদান। অর্ধেক মানুষই অন্য দেশে চলে যেতে চান। এর জন্য দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।উত্তর আমেরিকায় অভিবাসনে আগ্রহী লোকের সংখ্যা বেড়েছে। একসময় এই অঞ্চলের লোকজনের অভিবাসনের জন্য পছন্দের শীর্ষে ছিল ইউরোপ। এখন তাঁদের কাছে ইউরোপ খুব একটা জনপ্রিয় না। এ ছাড়া আরব বিশ্বের অন্য দেশগুলোও তাঁদের অভিবাসনের আগ্রহের জায়গায় রয়েছে।সমকামিতার বিষয়ে মনোভাবে তারতম্য দেখা গেছে। তবে এ ব্যাপারে এই অঞ্চলগুলোয় গ্রহণযোগ্যতার হার কম, খুবই কম। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উদার হিসেবে সুনাম রয়েছে লেবাননের। এরপরও দেশটিতে সমকামিতার বিষয়ে উদার মনোভাব দেখিয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ।২৫ হাজার ৪০৭ জনের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। আরব ব্যারোমিটার রিসার্চ নেটওয়ার্ক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিভিত্তিক একটি গবেষণা নেটওয়ার্ক। ২০০৬ সাল থেকে নেটওয়ার্কটি এ ধরনের জরিপ পরিচালনা করে আসছে। ব্যক্তিগত স্থানে অংশগ্রহণকারীদের ৪৫ মিনিট ধরে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গবেষকেরা। এতে শুধু আরব বিশ্বের মতামত তুলে আনা হয়েছে। ফিলিস্তিনকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এতে নেওয়া হয়নি ইসরায়েল ও ইরানের লোকজনকে। এই অঞ্চলের বেশি ভাগ দেশই এতে অংশ নিয়েছে। তবে কয়েকটি দেশের সরকার জরিপ পরিচালনায় অবাধ ও পূর্ণ প্রবেশাধিকার দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কুয়েতের জরিপ ফলাফল এত দেরিতে এসেছে যে তা বিবিসি অ্যারাবিক কাভারেজে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সিরিয়ায় যাওয়া কষ্টসাধ্য হওয়ায় এ দেশটিও বাদ পড়েছে জরিপ থেকে। আইনি ও সাংস্কৃতিক দিক বিবেচনায় কিছু দেশের অংশগ্রহণকারীরা কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি। ব্যাপক পরিসরে করা জরিপে এগুলো ছিল সীমাবদ্ধতা।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে নারী, শিশুসহ অন্তত ২০ জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় পটিয়া পৌরসভার পিটিআই ট্রেনিং সেন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পেছন দিক থেকে একটি কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটির সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয় বলে জানা গেছে। দগ্ধ ব্যক্তিরা সবাই সাতকানিয়ার বাসিন্দা।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার নারায়ণ ধর প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত সাড়ে ১১টা থেকে রোগীদের এখানে আনা হয়। এখন পর্যন্ত ১৭ জন দগ্ধ রোগী ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেনেছি, কয়েকজনের শরীর ২৫ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে।’প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি মাইক্রোবাস নিয়ে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে এক প্রবাসীকে বিদায় দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। গুরুতর দগ্ধ ১৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
২১ জুন ইউরোপে গ্রীষ্মকাল শুরুর পর থেকেই তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এই গরমে জার্মানির জনজীবন ওষ্ঠাগত প্রায়। সপ্তাহ শেষে এ তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে জার্মানির আবহাওয়া দপ্তর।৭২ বছর আগে ১৯৪৭ সালে জার্মানির কিছু অঞ্চলের তাপমাত্রা হয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, এবার সেই তাপমাত্রা আরও বেড়ে বুধবার ফ্রাঙ্কফূর্ট অঞ্চলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে।সোমবার থেকেই এই উচ্চ তাপমাত্রা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জার্মানির অধিকাংশ বসতবাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা না থাকায় সবাই ফ্যান কেনার জন্য ছুটছেন।জার্মানিতে এমন উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সোমবার এবং মঙ্গলবার দুপুরের আগেই বিদ্যালয়গুলো ছুটি দেওয়া হয়। খুব প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষজন রাস্তায় বের হচ্ছেন না। পত্র পত্রিকায়, রেডিও টেলিভিশনে সবাইকে বেশি করে পানি পান করার উপদেশ দেওয়া হচ্ছে। জার্মানির প্রকৃতিবিষয়ক সংগঠনগুলি প্রচণ্ড গরমের কারণে পশু-পাখিদের তৃষ্ণা মেটাতে নাগরিকদের বারান্দা এবং বাগানে পানির পাত্র রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। জার্মানি জুড়ে বিভিন্ন হ্রদ, নদীর তীরে ও সাঁতার কাটার জায়গাগুলোতে বিকেলের পর লোকদের ভিড় জমেছে।জার্মানির বিভিন্ন হাসপাতালে প্রচণ্ড গরমে শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিরা চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তীব্র দাবদাহে বনাঞ্চলে আগুন লাগছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে জার্মানির অগ্নিনির্বাপক উড়োজাহাজগুলি আকাশে টহল দিচ্ছে।
এবারের বিশ্বকাপে মারাত্মক ভরাডুবির শিকার হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় দল হিসেবে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে প্রোটিয়ারা। ২০০৩-এর সেই দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপকেও যেন ছাড়িয়ে গেছে এবারের ব্যর্থতা। তাই সমর্থকদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার জেপি ডুমিনি।বিশ্বমঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার পরিচিতি ‘চোকার’ হিসেবে। নক আউট পর্ব পেরোতে না পারার ঐতিহাসিক অক্ষমতাকে নির্দেশ করে শব্দটি। ১৯৯২ থেকে নিয়মিত বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া প্রোটিয়ারা চারবার সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনালে যেতে পারেনি, কোয়ার্টার থেকে বাদ পড়েছে দুবার। আর এবার তো লিগ পর্বই পেরোতে পারল না ডু প্লেসিরা।এবারই প্রথম নয়, ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ২০০৩ বিশ্বকাপেও তারা প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়। সেবার তবু পয়েন্টের দৌড়ে নেট রানরেটে একটুর জন্য ‘সুপার সিক্স’ হাতছাড়া হয় তাদের। কিন্তু এবার তো পুরো আসর জুড়েই পায়ের তলে মাটিই খুঁজে পেল না প্রোটিয়ারা।ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু। বাংলাদেশের সঙ্গে হার বুঝিয়ে দিল এ বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের মূল অবস্থা। এরপর থেকে ডু প্লেসিদের কানে শুধু বেদনার বিউগলই বাজল। চোটাঘাতে জর্জরিত দল নিয়ে একের পর এক হারে বিশ্বকাপ সাঙ্গ হয় তাদের। তবু দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী এক দলের লিগ পর্ব থেকে বিদায় সমর্থকদের জন্য মেনে নেওয়া কঠিন। তাই দলটির অলরাউন্ডার জেপি ডুমিনি সমর্থকদের কাছ থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপ ভরাডুবির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেন, ‘টুর্নামেন্টে আমাদের দলগত পারফরম্যান্স খুব হতাশাজনক ছিল। আমাদের সমর্থকদের আমরা বাজেভাবে হতাশ করেছি। বিশ্বকাপে আমাদের ব্যর্থতার জন্য সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’সাত ম্যাচ থেকে এক জয় পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ মিশন গাণিতিকভাবে শেষ। পয়েন্ট তালিকায় তাদের নিচে শুধু আফগানিস্তান, একমাত্র জয় তাদের বিপক্ষেই পেয়েছেন ডুমিনিরা। কিন্তু এই ভয়াবহ পতনের কারণ কী, উত্তরটা ডুমিনিরও অজানা, ‘পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স করেছি আমরা। কিন্তু এর কোনো কারণ খুঁজে বের করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েই বিশ্বকাপে এসেছিলাম, মানসিকভাবেও আমরা যথেষ্ট ভালো অবস্থানে ছিলাম।’বিশ্বকাপের মধ্য দিয়েই নিজের এক দিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চলেছেন জেপি ডুমিনি। তবে টি-টোয়েন্টি খেলা চালিয়ে যাবেন আরও কিছুটা সময়। কিন্তু নিজের শেষ বিশ্বকাপ থেকে এমন লজ্জার বিদায়ের ক্ষত নিশ্চয়ই তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াবে অনেক দিন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা অবশ্যই গর্বের বিষয়। জাতীয় দলের সঙ্গে অনেক মানুষের আবেগ জড়িয়ে থাকে। কিন্তু এমন পারফর্ম করে বিদায় নেওয়ায় আমি লজ্জিত। তবে এই দলের ওপর আমি বিশ্বাস রাখতে চাই। তারা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে, এটাই আশা করি।’আগামীকাল চেস্টার-লি-স্ট্রিটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচের আগে অবশ্য একটি দুঃসংবাদ পেয়েছেন ডুমিনিরা, চোটের কারণে ম্যাচটিতে খেলতে পারবেন না ডেভিড মিলার।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্পের মুখে থুতু দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার এরিক যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের শিকাগো শহরে এক রেস্তোরাঁয় নৈশভোজে অংশ নেন। সেখানেই এ ঘটনা ঘটে।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, এ ঘটনায় ওই রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ বুধবার খাবার পরিবেশনকারী এক নারীকে ছুটিতে পাঠিয়েছে। ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের এক প্রতিনিধির বরাতে আরও জানা গেছে, এরিক ট্রাম্প শিকাগোর পশ্চিমে অবস্থিত এক অভিজাত রেস্তোরাঁয় নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন। মূলত এটি ছিল তাঁর ব্যবসাসংক্রান্ত ভোজ। এ সময় ওই রেস্তোরাঁর এক নারী কর্মী হুট করেই এরিকের মুখে থুতু ছোড়েন।তবে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের অন্য এক প্রতিনিধি এ ঘটনায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এরিক বলেছেন, যে ব্যক্তি এ ধরনের আচরণ করেন, বোঝা যায় তাঁর আবেগ প্রকাশে সমস্যা আছে।ওই রেস্তোরাঁ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কোনো গ্রাহকের সঙ্গেই এমন করা উচিত নয়। বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘আমরা এখনো ওই কর্মীর সঙ্গে কথা বলেতে পারিনি। তবে এরই মধ্যে আমাদের মানবসম্পদ বিভাগ ওই কর্মীকে ছুটিতে পাঠিয়েছে।’শিকাগো পুলিশ প্রধান এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ও শিকাগো পুলিশ এ ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখেছে। তবে ট্রাম্প অর্গানাইজেশন শিকাগো ট্রিবিউনকে জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ ওই নারীকে কারাগারে পাঠিয়েছিল। তবে এরিক ট্রাম্প এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখপাত্র সারা স্যান্ডার্সকে একটি রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছিল। কারণ, ওই রেস্তোরাঁর মালিক ট্রাম্প প্রশাসনের রাজনীতির সঙ্গে একমত ছিলেন না।
প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও (জাপা) বিএনপির সমালোচনায় মুখর হয়ছে। বৃহস্পতিবার ২০১৯–২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের একাধিক সদস্য বিএনপির সমালোচনা করে বক্তব্য দেন।একাদশ জাতীয় সংসদকে ‘অবৈধ’বলায় বিএনপির সাংসদদের সমালোচনা করেন জাপার জ্যেষ্ঠ সাংসদ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, এই সংসদে দাঁড়িয়ে কেউ জাতীয় সংসদকে অবৈধ বলতে পারে না। এ ব্যাপারে তিনি স্পিকারের রুলিং দাবি করেন। বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান বিএনপির বক্তব্যের জবাবে বলেন, সংসদে একটা বিরোধী দল প্রয়োজন। সে কারণে তাঁরা বিরোধী দলে আছেন। আর বিএনপির আছে ৫ জন। বিএনপির সাংসদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য তাঁর কাছ থেকে সময় নিয়ে আবার জাতীয় পার্টি ও এরশাদ সম্পর্কে অশালীন বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি কারাগারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত পরিচারিকাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং কারাকক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়ে বলেন, খালেদা জিয়া বের হয়ে যেতে পারেন।জাপার চেয়ারপারসন এইচ এম এরশাদের শারিরীক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে মশিউর রহমান বলেন, এইচ এম এরশাদ মৃত্যু শয্যায়। তাঁরা এখনো তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান করতে পারেননি।সরকারি দলের সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির আমলে সরকারের পরিবর্তে হাওয়া ভবন থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তারেক রহমানের নির্দেশেই সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হতো। তাদের দুর্বৃত্তায়নের কারণে বাংলাদেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। হাওয়া ভবনের দুর্নীতির কারণে স্যামসাং এ দেশে বিনিয়োগ করেনি।বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানার সমালোচনা করে সরকারি দলরে সাংসদ জিল্লুল হাকিম বলেন, বিএনপির একজন মহিলা সাংসদ মনে হয় কোমরে কাপড় প্যাঁচিয়ে ঝগড়া করার জন্য এসেছেন। তিনি নাকি এখনো অবিবাহিত। তিনি যদি বিবাহিত হতেন, তাঁর স্বামীর কী অবস্থা হতো!সরকারি দলের সাইমুম সরোয়ার বলেন, সংসদকে অবৈধ বলা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ জন্য তিনি বিএনপির সাংসদদের শাস্তি দাবি করেন।জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক বলেন, সাংসদ হিসেবে বাজেট প্রণয়নে তাঁর কোনো ভূমিকা আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। হয় এই বাজেট প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবে বা বর্জন করতে হবে। উপদেশ দেওয়ার জন্য তিনি বাজেট বক্তৃতা দিতে চান না। বাজেট তৈরিতে ভূমিকা রাখতে চান। তিনি বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ রাখা হবে কি না, এই বিষয় চিন্তা করার সময় এসেছে।মুজিবুল হক বলেন, শীর্ষ ঋণ খেলাপীদের নাম তালিকায় নেয়। তাঁরা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। সারা দেশে মানুষের মধ্যে আতংক, ব্যংকে টাকা নেই। একটি কমিশন করে খেলাপী ঋণ নিয়ে একটি সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি পারিবারিক সঞ্চয়পত্রে উৎসে কর ১০ শতাংশ না করা, মূলধনী যন্ত্রপাতিতে অগ্রিম কর (এআইটি) না বসানোর দাবি জানান। মুজিবুল হক, অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে উপরের পর্যায়ের বিচারকদের গাড়ির জন্য বিনা সুদে ঋণ এবং উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অন্তত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ৯০ লাখ টাকা দামের যে গাড়ি দেওয়া হচ্ছে সে মানের গাড়ি দেওয়ার দাবি জানান।ধান কাটার জন্য শ্রমিক না পাওয়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ভালো লক্ষণ বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ধানের দাম কম কিন্তু উৎপাদন খরচ বেশি। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে শ্রমিক পাওয়া যায় না। উন্নয়ন গতিসম্পন্ন অর্থনীতির জন্য এটি ভালো লক্ষণ।ধানের দাম কমার কারণ ব্যাখ্যা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির চাহিদা ও যোগানের নীতির কারণে দাম কমে গেছে। তবে, সরকার বসে নেই। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণসহ যা যা দরকার করা হবে।সরকারি দলের শাহিদুজ্জামান বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তির ক্ষেত্রে সাংসদদের সম্পৃক্ত করতে হবে। না হলে সাংসদদের এলাকায় যাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে।পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক সরকারি দলের সাংসদ নূর মোহাম্মদ বলেন, পুলিশ বাহীনি সৃষ্ঠি হয়েছিল ১৮৬১ সালে। এই দেড়শ বছরে আইনে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। আইনের কোথাও সেবা, জনগণ, মানবাধিকারের কথা নেই। স্বাধীন দেশের জন্য যুগপোযোগী আইন দরকার।বিকল্প ধারার আব্দুল মান্নান বলেন, যে কোনো মূল্যে খেলাপী ঋণ বন্ধ করতে হবে। চক্রবৃদ্ধি সুদ সমাজকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিচ্ছে। সব ব্যাংকে সরল সুদে ঋণ চালু করতে হবে। আর ঋণ খেলাপীদের ধরার দাবি জানান বিরোধী দলের সাংসদ গোলাম কিবরিয়া।অন্যদের মধ্যে মোতাহার হোসেন, মামুনুর রশীদ, আতিউর রহমান, আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
রাজধানীর পূর্ব কাজীপাড়া মাদ্রাসা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার প্রতারণা চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) বিভাগ।গ্রেপ্তার দুজনের নাম মো. মামুন (৩০) ও মো. রনি (২৮)। তাঁদের কাছ থেকে যানবাহন রেজিস্ট্রেশনের নকল ডিজিটাল নাম্বার প্লেট তৈরির একটি ডাইস মেশিন জব্দ করা হয়। মেশিনটি দিয়ে নম্বর প্লেটের অক্ষর ও সংখ্যা পরিবর্তন করে সংযোজন করা যায়।এ ছাড়া লোহার তৈরি বাংলায় বিভিন্ন অক্ষর ও সংখ্যা ৭৫টি, বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের নকল ডিজিটাল নাম্বার প্লেট তৈরির বিভিন্ন আকৃতির সিলভারের শিট ৪৫টি, লোহার তৈরি প্লেট সিট কাটিং মেশিন একটি ও রিপিট গান একটি উদ্ধার করে পুলিশ।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ওই দুজন জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের নকল ডিজিটাল নাম্বার প্লেট তৈরি করে প্রতারণা করে আসছিলেন। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে বিআরটিএ এর অনুমোদন ছাড়া তাঁরা এসব উপকরণ তৈরি করেন।গোয়েন্দা (দক্ষিণ) বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. জামিল হাসানের নির্দেশে অতিরিক্ত উপকমিশনার হাসান আরাফাতের তত্ত্বাবধানে ও লালবাগ জোনাল টিম লিডার অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার খন্দকার লেলিনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা হয়। খন্দকার লেলিন বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
১০ বছরের শিশু ধর্ষণের ভিডিও এলাকায় ছড়ানোর দায়ে দুজনকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আবু ফোরকান মোহাম্মদ মারুফ চৌধুরী এই দণ্ডাদেশ দেন।দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন ঢাকার ধামরাই উপজেলার সেলিম হোসেন ও জামাল। রায় ঘোষণার সময় জামাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সেলিম হোসেন জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার শিশুটি ধামরাই এলাকার এক মসজিদের ইমাম সেলিম হোসেনের কাছে পড়তে যায়। এ সময় শিশুটিকে ধর্ষণ করেন সেলিম এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করেন তাঁর সহযোগী জামাল। পরে ওই ভিডিও তাঁরা এলাকায় ছড়িয়ে দেন। এই ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ২৬ মে ধামরাই থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।এ দিকে আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শিশুটি ধর্ষণের ঘটনায় অপর মামলার বিচার চলছে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। ওই মামলায়ও অভিযুক্ত আসামি হলেন সেলিম ও জামাল।
ব্যাটিং উইকেট। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে সবাই বলছিলেন। এ মাঠে হওয়া আগের দুই ম্যাচও সে কথাই বলছিল। টসে জিতে বিরাট কোহলির ব্যাটিং বেছে নেওয়াও সে কারণেই। সে মাঠেই কি না ২৬৮ তাড়া করতে নেমে ১২৫ রানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৫ ওভারের মধ্যে ১৪৫ রানেই গুটিয়ে গেছে উইন্ডিজ। ম্যাচের আগে উইকেট সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া থেকে নিজেদের দূরে রাখতেই চাইবেন বিশেষজ্ঞরা।বিশেষজ্ঞরা কী করবেন, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল কী করবে, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী ৪ জুলাই আফগানিস্তান ম্যাচের আগের দিনই নিকোলাস পুরান ছাড়া বাদবাকিরা সবাই ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে পারবেন। কারণ, ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে উইন্ডিজদের বিদায় আজই নিশ্চিত হয়ে গেছে। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুধু নিয়ম রক্ষার জন্যই নামবে তারা। মাসের মধ্যভাগে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে খেলার সুযোগ পাওয়া পুরান তত দিন অপেক্ষা করবেন নাকি একবার বাড়ি থেকে ঘুরে আসবেন, কে জানে!তবে ভারত দল যে কোনো রকম ছুটি পাচ্ছে না সেটা একদম নিশ্চিত। অস্ট্রেলিয়ার মতো একেবারে নিশ্চিতভাবে সেমিফাইনালে তাদের তুলে এখনো দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু এমন দুর্দান্ত বোলারে পরিপূর্ণ একটি দল বাকি তিন ম্যাচ (ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা) থেকে একটি পয়েন্ট পাবে না, এমন বাজি ধরতে রাজি হবে না কেউই।ভারতের স্পিন আক্রমণকে কীভাবে সামলাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ নিয়ে আগ্রহ ছিল। কিন্তু স্পিনাররা আক্রমণে আসার আগেই যে ম্যাচ শেষ হওয়ার দশা! একদিকে মোহাম্মদ শামি উইকেট তুলে নিচ্ছেন, অন্যদিকে যশপ্রীত বুমরার বলে আতঙ্কে কাঁপছেন উইন্ডিজের পেস সামলাতে অভ্যস্ত ব্যাটসম্যানরা। হার্দিক পান্ডিয়াও সুযোগ বুঝে উইকেট তুলে নিলেন এক ফাঁকে। কুলদীপ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহালরাও বা বাদ যাবেন কেন? উইন্ডিজদের অত্যাচারে যোগ দিলেন তাঁরাও।এক শ পেরোনোর আগেই ৫ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ধ্বংসস্তূপ হলো এক শ পেরোনোর পর। প্রথম স্পেলে দুর্দান্ত বল করেও উইকেট না পাওয়ার দুঃখ বুমরা ভুললেন এবার। আগের ম্যাচের ট্র্যাজিক হিরো কার্লোস ব্রাফেটকে বিদায় দিয়ে পরের বলেই অ্যালেনকেও তুলে নিলেন। মোহাম্মদ শামি এসে একমাত্র বাধা হেটমায়ারকেও ড্রেসিংরুমের আরামদায়ক পরিবেশে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ করে দিলেন। শেলডন কটরেল ও কেমার রোচের খুদে দুটি ইনিংসে শেষ দুই উইকেটে ৩১ রান যোগ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শামির বলে ওশান টমাস যখন বিদায় নিলেন ম্যাচের তখনো ৯৪ বল বাকি!১৬ রানে ৪ উইকেট পেয়েছেন শামি। ৬ ওভারে ৯ রান দিয়ে ২ উইকেট বুমরার। টেল এন্ডারদের পাগলাটে ব্যাটিংয়ের শিকার চাহাল ২ উইকেট পেয়েছেন ৩৯ রানে।
বছরের প্রথম বৃষ্টি আলতাফের জন্য কেমন একটা উৎসবের মতো। কোনো কারণ ছাড়াই মনমেজাজ ভালো হয়ে যায়। যেদিকে তাকায়, যা কিছু দেখে, সবকিছু কেমন যেন ভালো লাগতে থাকে। বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের রাস্তায় হাঁটুপানি ভরে যাক, আর অলিগলি কাদামাটিতে ছেয়ে যাক, তার কাছে সবকিছুই অসাধারণ লাগে। এর মানে আবার এই নয় যে দিনের পর দিন বৃষ্টি তাকে মুগ্ধ করে। এত সময় তার নেইও।আলতাফ অপেক্ষা করে থাকে বছরের প্রথম বৃষ্টির জন্য। এদিন সে বিশেষ বিশেষ কাজ করে। অফিস থেকে যতটা দ্রুত সম্ভব ছুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। আর যদি কোনো কারণে বৃষ্টি রাতের বেলা হয়, তবু আলতাফ তার রুটিনমাফিক বছরের প্রথম বৃষ্টির দিনটি পালন করে পরদিন। এদিন আলতাফের পূর্ণ স্বাধীনতার দিন।স্ত্রী সুমাইয়া তাকে এদিন কোনো কাজে বাধা দিতে পারে না। অবশ্য সুমাইয়া জানেও না আলতাফ এ রকম ঝুম বৃষ্টির দিনে প্রকৃতপক্ষে কী করে? সুমাইয়া মনে করে, দুটি মানুষের সংসারে একজন আরেকজনকে ছাড় দিতে হবে। প্রাইভেসি দিতে হবে। তবেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে।কিন্তু আলতাফ অবশ্য এত কিছুর ধার ধারে না। সে জানে, সে এমন কিছু কাজে জড়িত, যা সুমাইয়ার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আলতাফ তাই সুমাইয়াকে জানাতেও চায় না। সে এই তর্কে কখনো যায় না, যা সে করছে তা ভালো নাকি খারাপ? সে জানে, তার জীবন স্বাধীন। সে প্রাপ্তবয়স্ক। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তার কিছু ব্যক্তিগত সাধ আহ্লাদ উপভোগ করতেই পারে। এটাই আলতাফের বিবেচনা।এই যে আজ দুপুরবেলা আকাশ কালো হয়ে আগমন হলো বছরের প্রথম বৃষ্টির। আলতাফ দ্বিতীয়বারের জন্য না ভেবে বেরিয়ে পড়ল অফিস থেকে। গন্তব্য বাজার। আলতাফ খুব আনন্দ নিয়ে ঘুরেফিরে দুই কেজি পোলাওর চাল কিনল। দুই কেজি মুগ আর মসুর ডাল, দুই বোতল তেল। মাছের দোকানে গিয়ে দেখেশুনে ডিম ছাড়া দুটো ইলিশ কিনল। আলতাফের ধারণা, ডিম না থাকলে ইলিশের স্বাদ তীব্রভাবে পাওয়া যায়। দুইটা বড় সাইজের দেশি মুরগি আর দুই কেজি গরুর মাংস কিনতেও ভুলে গেল না।সবকিছু দুটো সমান ভাগ করে দুই ভাগ দুই হাতে ঝুলিয়ে সে পথে নামল। নিজের বাসার উদ্দেশেই রওনা দিল। স্বল্প বেতনের চাকরি দিয়ে ঈদের দিন ছাড়া একসঙ্গে এত বাজার করা হয়ে ওঠে না তাদের। কিন্তু বছরের প্রথম বৃষ্টির দিনে সে ঠিক সেটাই করবে, যেটা তার মন চাইবে। তাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই।আলতাফ বাসায় গিয়ে এক ভাগ বাজার সুমাইয়ার হাতে দিয়ে অন্য ভাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। সুমাইয়া জানে, আজ রাতে আলতাফ আর ফিরবে না! বাসায় খাবেও না। এসব নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। সুমাইয়ার খারাপ লাগে, নিজেকে অবহেলিত মনে হয়, তবু সে প্রশ্ন করে না।আলতাফ এখন যাবে মর্জিনার কাছে। মর্জিনাকে সে ভীষণ পছন্দ করে। সে অনেক বছর আগের কথা। আলতাফ তখন ছাত্র। শেষ বর্ষের রেজাল্ট আশানুরূপ না হওয়ায় প্রচণ্ড দুঃখে সারাটা রাত সে রমনা পার্কে বসে ছিল। সেদিন গভীর রাতে এই মর্জিনা নামের মেয়েটি আলতাফের পাশে এসে বসেছিল। তাকে বলেছিল, মন ভালো করার ওষুধ সে দিতে পারবে। মর্জিনা আলতাফকে ডেকেছিল কেমন এক অন্য রকম আহ্বানে।আলতাফ সেই রাতে প্রথমবারের মতো বিষয়টাকে এত কাছ থেকে দেখছিল। পর্যবেক্ষণ করছিল মর্জিনার অদম্য চেষ্টা, আলতাফের দৃষ্টি আকর্ষণ করার। আলতাফ অপলক দৃষ্টিতে দেখছিল মেয়েটিকে। এত ছোট একটা মেয়ে, এত সুন্দর একটা মেয়ের স্থান এখানে হবে, তা সে ভাবেনি। নিজের জীবনে পরাজয় সইতে না পেরে আলতাফ ছিল বিপর্যস্ত। কোনো মন ভালো করার ওষুধের ব্যাপারে সে আগ্রহী ছিল না। কিন্তু কেন যেন আলতাফের খুব ইচ্ছা হলো মর্জিনার হাতে কিছু টাকা দেয়। যেন তার আজ রাতটা এভাবে লোকের দৃষ্টি আকর্ষণে নিয়োজিত থাকতে না হয়। অন্তত একটি রাত মেয়েটা যেন ঘরে গিয়ে দরজায় খিল লাগিয়ে ঘুমিয়ে থাকতে পারে।মানুষের সব চাওয়া পূর্ণ হয় না। আলতাফের কাছে সেদিন একটি পয়সাও ছিল না। সে একদৃষ্টিতে দেখছিল। তাকে বশ করতে না পেরে মর্জিনা আরেকজনকে বশ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বলা নেই কওয়া নেই, বছরের প্রথম বৃষ্টি হুট করে এসে ভিজিয়ে দিল আলতাফকে। তখনো চৈত্র মাস। বৃষ্টির জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। ভিজতে থাকল রমনায় দাঁড়িয়ে থাকা অল্প কিছু মেয়েও। যেন তাদের বৃষ্টি হলেও লুকিয়ে যাওয়া মানা।মর্জিনার আর বেশি বেগ পেতে হয়নি। ওই বৃষ্টিতেই সে খুঁজে পেয়েছিল সে রাতের খদ্দের। আলতাফের সামনে দিয়ে সে তার খদ্দেরের সঙ্গে রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। রেখে গেল আলতাফের হৃদয়ের গহিনে কেমন একটা টান। আলতাফ পরবর্তী সময়ে মর্জিনার ঠিকানা জোগাড় করে ফেলল। এগুলো অবশ্য খুব একটা কঠিন কোনো কাজও নয়। বহু বছর পেরিয়ে গেছে। আলতাফ বিয়ে করেছে, সংসার আছে, তবু মর্জিনার খোঁজ নিতে সে ভোলে না। মাঝে মাঝে খুব বৃষ্টির দিনে মর্জিনার আস্তানায় যায় সে। বছরের প্রথম দিনের বৃষ্টি, এক অলিখিত ক্যালেন্ডার যেন! এদিন মর্জিনার সঙ্গে দেখা হওয়া বাঞ্ছনীয়।মর্জিনা জানালার ধারে ঠায় দাঁড়িয়ে। বৃষ্টির ঝাপটায় পুরোপুরি ভিজে গিয়েছে। তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তার। আজ বৃষ্টি দেখেই দরজায় খিল দিয়েছে সে। আজ আর কোনো খদ্দের তার ঘরে আসতে পারবে না। এ রকম রাতের জন্য সারাটা বছর অপেক্ষা করে থাকে সে। ওই লোকটার নাম জানে না সে। শুধু চেহারা চেনে। কত বছর আগের কথা।লোকটির নিয়মে কেন ভুল নেই। ঝুম বৃষ্টির রাতে সে আসবেই। খালি হাতে আসবে না, দুহাত ভরে বাজার করে নিয়ে আসবে। মর্জিনা লোকটিকে বসিয়ে রেখে রান্না করতে থাকে। যত দ্রুত সম্ভব। রান্না শেষ হলে লোকটি মর্জিনার সঙ্গে বসে খায়। যা মর্জিনা বিশ্বাস করতে পারে না। কিন্তু এইটাই ঘটে। খাওয়াদাওয়া শেষ হলে মর্জিনার হাতে মুঠো ভরে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে লোকটা চলে যায়।প্রথমবার তো নিতেই চায়নি মর্জিনা। লোকটির এক কথা, সে চায় অন্তত একটি রাত মর্জিনা স্বাভাবিক মানুষের মতো সম্মানের সঙ্গে ঘুমিয়ে কাটাক। এর বেশি সাধ্য নেই লোকটির। নইলে নাকি আরও দিত। মর্জিনা জানে না এই লোকটিকে কী বলে সম্বোধন করবে সে? ভাই নাকি ফেরেশতা? এ রকম মানুষ কি বর্ষাদিনে আল্লাহর উপহার? মর্জিনার কাছে বর্ষাদিন যেন রূপকথার গল্প। পৃথিবীতে একজন মানুষ তাকে তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেয়। তার সঙ্গে বসে তারই রান্না করা খাবার পরম আয়েশ করে খায়। বিনিময়ে কিছু চায় না! তার কেবল উদ্দেশ্য অন্তত একটা দিন মর্জিনার জীবনের চরম সত্যকে ভুলিয়ে দেওয়া। একটা দিনের জন্য হলেও মর্জিনার কষ্ট লাঘব করা। পৃথিবীতে এ রকম মানুষ আছে? বিশ্বাস হয় না তার।ওই যে জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে চেনা একটি মুখ। হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে হেলতে দুলতে হাঁটছে। বৃষ্টি এখনো গুঁড়ি গুঁড়ি। কিন্তু ছাতা নেই লোকটির সঙ্গে। মর্জিনা ছাতা খুঁজে বের করল। খুব ছাতা হারায় লোকটা। মর্জিনা তাই ছাতা কিনে রাখে। ফেরার সময় ছাতা দিয়ে দেয় সঙ্গে। বৃষ্টি না হলে তো আর এই পথে আসা হবে না লোকটির। মর্জিনা তাই অধীর আগ্রহে বসে থাকে বৃষ্টিদিনের জন্য।...কাজী সাবরিনা তাবাসসুম: মিলান, ইতালি।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় ছাত্রদলের নয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পল্টন থানা-পুলিশ।আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ওই নয়জনকে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হক বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, যে নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মী। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বুধবার তাঁদের অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।ছাত্রদলের গ্রেপ্তার হওয়া ওই নেতা-কর্মীরা হলেন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার শফিক সরকার (৩২), রাসেল ফকির (২৩), শাহ আলম (২০), নরসিংদীর ফরহাদ মিয়া (২৫), লক্ষ্মীপুরের সজিব মজুমদার (২৯), ভোলার রফিকুল ইসলাম (২৪), চাঁদপুরের খোরশেদ আলম (২৮), রাঙামাটির মোর্শেদ আলম (৩৯) এবং সিরাজগঞ্জের আরিফুল ইসলাম আরিফ (২৯)।গত ২৪ জুন দুপুরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেদিন পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ বাদী হয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের অজ্ঞাত নেতা-কর্মীদের নামে পল্টন থানায় মামলা করেন।মামলার এজাহারে বলা হয়, অনুমতি না নিয়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে চার থেকে পাঁচটি ককটেলবোমা নিক্ষেপ করে। ককটেলগুলি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। পুরো এলাকা ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যায়। রাস্তার লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করে। খবর পেয়ে সেখানে গেলে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।বিএনপি ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই বিলুপ্ত কমিটির নেতারা বয়সসীমা না রেখে ধারাবাহিক কমিটি গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন।২২ জুন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের ১২ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার কথা জানানো হয়।গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কাউন্সিলের ঘোষণা দেয় বিএনপি। এতে বলা হয়, আগামী ১৫ জুলাই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কাউন্সিল। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হবে।ছাত্রদলের নেতারা সম্প্রতি ঘোষিত নেতৃত্ব নির্বাচনের তফসিল বাতিলে আন্দোলন করছ।
ঢাকার মঞ্চে আরও দুটি নতুন নাটক আসছে শুক্রবার। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় উদ্বোধন হবে ইউনিভার্সেল থিয়েটারের ‘রেনুলতা’র নাটকটির। স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে পালাকার নাট্যদল মঞ্চে আনছে নতুন নাটক 'রং লেগেছে’।‘রেনুলতা’র নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আবুল হোসেন খোকন। উদ্বোধনী প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণা শুরু করছে ইউনিভার্সেল থিয়েটার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাটকটির কারিগরি প্রদর্শনী হয়।স্বাধীনতা পরবর্তী ৪৮ বছরের পথচলায় এ দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষকে চোখের জলে ভেসে দেখতে হয়েছে স্বাধীনতা বিরোধীদের ইন্ধনে উগ্র মৌলবাদের উত্থান। জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসীদের বোমার বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে কেঁপে উঠেছে এ দেশের ধর্মপ্রাণ শান্তিপ্রিয় মানুষের অন্তর। এ ছাড়া ধর্মের দোহাই দিয়ে এত এত নিরীহ মানুষ হত্যা এটা শুধু এ দেশেরই বিষফোড়া নয় বরং পুরো দুনিয়া আজ সন্ত্রস্ত এই মরণব্যাধির ভয়ে। অথচ যারা এসবের মদদদাতা, যারা পেছনে বসে এসবের কলকাঠি নাড়ছেন তারা যুগের পর যুগ থেকে যাচ্ছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ইরাক, কুয়েত, সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, প্যালেস্টাইন, আফগানিস্তানসহ বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধর্মের লেবাসধারীরা ধর্মের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করে কাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছেন সময় এসেছে সেই প্রশ্নের গভীরে ঢোকার, সময় এসেছে সেই শেকড় উপড়ে ফেলবার। তা না হলে সেদিন আর খুব বেশি দূরে নয় যেদিন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে এই দেশ, তথা পৃথিবী নামের এই গ্রহ। সুতরাং পাপকে ঘৃণা করো, পাপীকে নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসা অমোঘ এই বিধানের বিপরীতে নির্মিত হয়েছে ‘রেনুলতা’ নাটকটি। জানালেন ইউনিভার্সেল থিয়েটার দল প্রধান আজিজুল পারভেজ।পালাকার নাট্যদলের নতুন নাটক ‘রং লেগেছে’ এর এর নাট্যনবায়ন, পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিচ্ছেন আমিনুর রহমান মুকুল। তিনি জানান, প্রায় ১২০ বছর আগে কলকাতার ‘দি রয়েল বেঙ্গল থিয়েটার’ তৈরি করেছিল এই নাটকটি। নাম দিয়েছিল ‘পৌরাণিক পঞ্চরং’। আমাদের এই প্রযোজনা ‘রং লেগেছে’-এর মূল পাণ্ডুলিপিতে যত চরিত্র সংখ্যা ছিল, তা কিছুটা কমানো হয়েছে। পাণ্ডুলিপির মূল ভাবটি ঠিক রেখে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর সুরও কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে, যা সময়ের দায়কে কিছুটা মোচন করেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। আশা করি, নাটকটি দর্শকদের ভালো লাগবে।
নরসিংদীতে উটপাখির ডিম চুরির সন্দেহে স্কুলছাত্রকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে নরসিংদীর সদরের আলীজান জুট মিলে এই ঘটনা ঘটে।পরিবারের অভিযোগ, ওই ছাত্রকে ডেকে নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছেন নরসিংদী শহর যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক মো. খায়রুল ইসলাম।আহত ওই ছাত্রের নাম রিয়াদ হোসেন (১৩)। সে নরসিংদী পৌর এলাকার কাউরিয়া পাড়ার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এবং সাটিরপাড়া কে কে ইনস্টিটিউশনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।আহত রিয়াদের চাচা জাকির হোসেন বলেন, রিয়াদ ও তার সহপাঠী লিংকন বুধবার আলীজান জুটমিলের ভেতরে উটপাখি দেখতে যায়। সেখানে তারা কেন গেল সেই অপরাধে বৃহস্পতিবার সকালে রিয়াদকে মিলের ভেতরে ডেকে নেন শহর যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক মো. খায়রুল ইসলাম। এই ঘটনায় রিয়াদকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন খায়রুল। গুরুতর আহত অবস্থায় রিয়াদকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার মাথায় ৪৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। রিয়াদের দুই পা ও এক হাত ভেঙে যাওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরে তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রিয়াদ জুটমিলের ভেতরে উটপাখির ডিম চুরি করতে গিয়েছিল। আমার ভাগনে ইসহাক তা দেখতে পেয়ে রিয়াদকে মারধর করে। পরে আমি নিজেই রিয়াদকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছি।’এ বিষয়ে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান বলেন, এই ঘটনা শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
গত তিন দশকে অর্ধেক তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশে ১ লাখ ১৬ হাজার ১৭৭টি তাঁত কারখানা আছে। ১৯৯০ সালে তাঁত কারখানার সংখ্যা ছিল ২ লাখ ১২ হাজার ৪২১। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তাঁত শুমারি ২০১৮-এর চূড়ান্ত ফলাফলে এই তথ্য উঠে এসেছে।এই উপলক্ষে আগারগাঁওয়ের বিবিএস মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তাঁত শুমারির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ। বিবিএসের শুমারি অনুসারে, বাংলাদেশে যত তাঁত কারখানা আছে এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি চট্টগ্রাম বিভাগে। চট্টগ্রাম বিভাগে মোট ৬৫ হাজার ১৭৭টি তাঁত কারখানা আছে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় এর আধিক্য বেশি। দ্বিতীয় স্থানে আছে রাজশাহী বিভাগ। সেখানে ১৯ হাজার ৬৮৪টি তাঁত কারখানা আছে। এ ছাড়া ঢাকা ও খুলনা বিভাগে যথাক্রমে ১১ হাজার ৫০৫টি ও ১৪ হাজার ৭৫৮টি তাঁত কারখানা আছে। সবচেয়ে কম ৮৭টি তাঁত কারখানা আছে ময়মনসিংহ বিভাগে। বাংলাদেশের চারটি জেলা ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও সাতক্ষীরা জেলায় কোনো তাঁত কারখানা নেই।অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী বলেন, সরকার এখন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-উপাত্তের ওপর জোর দিচ্ছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হচ্ছে। তিনি মনে করেন, তাঁত কমে যাচ্ছে। এতে মন খারাপের কিছু নেই। তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই পেশা পরিবর্তন করছেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) গুলনার নাজমুন নাহার, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বিবিএসের মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন।
কুমিল্লা ও দিনাজপুর জেলায় আজ বৃহস্পতিবার পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন।প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:কুমিল্লা: কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দৈয়াবাড়ি নামের স্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনা স্থালেই দুজন নিহত হন। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত দুজনের একজন বুড়িচং উপজেলার মিতালীপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক রৌশনারা বেগম (৬১)। অন্যজন একই উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মামুন মিয়ার মেয়ে ও ঢাকার ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আনিকা আক্তার (২২)।বাসের এক যাত্রী নাছির উদ্দিন বলেন, বাসটিতে প্রায় ৪৩ জন যাত্রী ছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এটি মহাসড়কের পাশে একটি খাদের পানিতে পড়ে যায়। এতে কমপক্ষে ৩৫ জন যাত্রী আহত হন। তবে আহত যাত্রীরা বাসের জানালার কাচ ভেঙে বের হয়ে আসেন।দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, লাশগুলো স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়েছে।দিনাজপুর: ফুলবাড়ী উপজেলায় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার পৌরসভার চাঁদপাড়া কালভার্ট-সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত দুজন হলেন উপজেলার চকিয়াপাড়া আদমপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন (৫৫) ও একই উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের মেহেদী (২০)। নিহত জালাল দাদুল চকিয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় ছুটির পর স্ত্রী ফেরদৌসী আরাকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন জালাল উদ্দিন। এ সময় সামনে থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই জালাল উদ্দিন মারা যান। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেহেদীও মারা যান। এ দুর্ঘটনায় আহত ফেরদৌসীকে প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। মরদেহগুলো মর্গে পাঠানো হবে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন হতে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ছাত্রনেতারা বলছেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন প্রহসনের আশ্বাস দিয়েছে।বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জাকসু নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে প্রশাসন ও ছাত্রনেতারা।সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে সহউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নূরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ শেখ মো. মনজুরুল হক, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক বশির আহমেদ, প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সোহেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।সভার শুরুতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জাকসু নির্বাচন করার লক্ষ্যে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য জাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১২ সদস্যের এ কমিটিতে আহ্বায়ক হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক।এ সময় ছাত্রনেতারা বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যায়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন হবে। এ অধিবেশনকে ঘিরে শিক্ষার্থীরা নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে বানচাল করতে তড়িঘড়ি করে এ সভা ও কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাঁদের দাবি, দুপুর ১২টায় মুঠোফোনের মাধ্যমে এ মতবিনিময় সবার কথা জানানো হয়। আগে থেকে না জানানোর কারণে ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্কসবাদী) নেতা-কর্মীর উপস্থিত হতে পারেননি। শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮ তম সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।আলোচনা সভায় অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘এ কমিটির মাধ্যমে জাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হলো। আমরা আশা করছি, আগামী বছরের জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তন ও ফেব্রুয়ারি নাগাদ জাকসু নির্বাচন দিতে পারব।’বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন আছে। এই অধিবেশনে যেন কোনো ঝামেলা না হয়, সেই জন্যই আগেরদিন কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে ডেকে চা খাইয়ে ঠান্ডা করার জন্য এই মতবিনিময় সভা।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে’ ৭৩-এর অধ্যাদেশ যথাযথভাবে পালন করা হয়। কিন্তু ছাত্রদের বিষয় আসলেই যত অনিয়ম। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম করাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।’আলোচনা সভা শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘কালকের সিনেট অধিবেশন যাতে নির্বিঘ্নে এবং শিক্ষার্থীরা কোনো দাবি তুলে যেন কোনো আন্দোলন করতে না পারে, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আই ওয়াশ করে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।’সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের দপ্তর সম্পাদক মারুফ বিন মোজাম্মেল, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট সোসাইটির সভাপতি পাভেল রহমান, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শাকিল-উজ-জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জনপদ কুমারখালী উপজেলা। কুষ্টিয়ার বেশির ভাগ ঐতিহ্য কুমারখালী উপজেলাকে ঘিরেই। এ জন্য কুমারখালীকে বলা হয় ‘শিল্প শহর’। ১৮২৮ সালে পাবনা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলে কুমারখালী পাবনার অন্তর্ভুক্ত হয়। এর আগে প্রাচীন জেলা যশোরের মধ্যে ছিল। ১৮৫৭ সালে কুমারখালীতে মহকুমা প্রতিষ্ঠা হয়। সেই সময় কুমারখালী মহকুমার অধীনে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি, পাংশা, কুমারখালী, খোকসা ও অধুনালুপ্ত ভালুকা থানা অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৭১ সালে কুমারখালী মহকুমা বিলুপ্ত হয়ে থানা হিসেবে নবগঠিত কুষ্টিয়া মহকুমা অন্তর্ভুক্ত হয়। এ সময় কুষ্টিয়া মহকুমা নদীয়া জেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। অন্যদিকে ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমারখালী পৌরসভা। প্রাচীন ইতিহাসখ্যাত জনপদ কুমারখালী এখনো তাঁতশিল্পে সমৃদ্ধ উপজেলা। কুমারখালী উপজেলার উত্তরে পদ্মা, মধ্যখানে আঁকাবাঁকা ঐতিহ্যবাহী গড়াই নদ।পলাশী থেকে মুজিবনগর, একাত্তর থেকে অদ্যাবধি বাঙালির বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম ও ইতিহাস ঐতিহ্যের স্মৃতি বহন করে আসছে কুমারখালী। কুমারখালীর মাটি ও মানুষ ধন্য হয়েছে সাঁইজি লালন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লোকগানের শিল্পী গগন হরকরা, শক্তিমান গদ্যশিল্পী মীর মশাররফ হোসেন, সাংবাদিক ও সমাজসংস্কারক কাঙাল হরিনাথ মজুমদার, সাহিত্যিক শিবচন্দ্র বিদ্যার্ণবসহ অগণিত গুণী মানুষের জন্ম এবং পদচারণ। স্মৃতির সমারোহে এই শহর এখন বাংলাদেশের একমাত্র মিউজিয়ামের শহর হিসেবে পরিচিত। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের মাঝেও একই উপজেলায় চারটি মিউজিয়াম নিয়ে কুমারখালী উপজেলার ইতিহাস এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের পরিমণ্ডলে।নান্দনিক শৈল্পিক নিদর্শন কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘর কাঙাল হরিনাথ মজুমদার ১৮৩৩ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কুণ্ডুপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যু হয় ১৮৯৬ সালে। তিনি একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সমাজসংস্কারক এবং বাউল গানের রচয়িতা। গত সরকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পে প্রায় ২৮ শতক জমির ওপর নির্মিত হয়েছে কাঙাল হরিনাথ স্মৃতি জাদুঘর। ২০১৭ সালের ৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত হয়েছে জাদুঘরটি। ব্যতিক্রমধর্মী এই জাদুঘরে প্রবেশমুখে চোখে পড়বে রঙিন ইটপাথরের সুন্দর কারুকাজ। মাঝখানেই কাঙাল হরিনাথের ভাস্কর্য। অনেকটা জায়গাজুড়ে রয়েছে ফুলের বাগান। বিভিন্ন ফুলের সমাহারে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে; বিশেষ করে দর্শনার্থীদের কাছে। কাঙাল হরিনাথের সঙ্গে সেলফি আর ছবি তোলার পর্বে বাড়তি সৌন্দর্য এনে দিয়েছে ফুলের বাগান। নিচতলায় রয়েছে ১০০ আসনবিশিষ্ট শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক সম্মেলনকক্ষ। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠলেই দেখতে পাওয়া যাবে কাঙাল হরিনাথের ছবি, গান, কবিতা, প্রবন্ধ, নিবন্ধ ও ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’ পত্রিকার অবয়বসহ বিভিন্ন বিষয়ের ১৬৮টি নিদর্শন। এর মধ্যে ৬৭টি ছবি। ছবির ফ্রেমে বাঁধানো রয়েছে কাঙাল হরিনাথের বিভিন্ন স্মৃতির নিদর্শন। বের হয়ে আসতেই সামনের খালি জায়গা রয়েছে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য। দোতলার উত্তর পাশে সুন্দর পাঠকক্ষ ও লাইব্রেরি। আছে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৩০০ বই। বইগুলো পড়ার জন্য সুব্যবস্থাও আছে। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বাদে ছয় দিনই খোলা থাকে। শুধু শুক্রবার বেলা আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ৮টা এবং অন্যান্য দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এটি উন্মুক্ত সবার জন্য। দৃষ্টিনন্দন জাদুঘর হিসেবে ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে দর্শনার্থীদের কাছে।জাদুঘর থেকে মিনিট পাঁচেক পশ্চিমে হাঁটলেই কাঙাল কুটির। যেখানে এখনো রয়েছে কাঙালের সেই বিখ্যাত ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’ ছাপার ‘এমএন প্রেস’, যা ইতিহাসে গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদার সম্পাদিত প্রথম ছাপাখানা হিসেবে পরিচিত। এখান থেকেই তিনি প্রকাশ করতেন পূর্ব বাংলার প্রথম পত্রিকা ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’। কাঙাল হরিনাথ মজুমদার বেঁচে নেই। কিন্তু আছে তাঁর ঐতিহ্যবাহী ‘এমএন প্রেস’। সর্বশেষ হরিনাথের প্রপৌত্র অশোক মুজমদার এটির দেখাশোনা করতেন। অশোক মজুমদার মৃত্যুবরণ করলে এখন তাঁর স্ত্রী, সন্তান দেখাশোনা করছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী এই ছাপাখানার ওপর বোমা নিক্ষেপ করলে অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। এখনো বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীদের ঘুরেফিরে দেখান প্রেসটি।লালনের আখড়াবাড়িকুমারখালী উপজেলার কালী নদীর পাশেই রয়েছে সাঁইজি লালনের আখড়াবাড়ি। মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন সাঁইজি লালন। ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগত ভেদকে উপেক্ষা করে তিনি গেয়েছেন মানবতার গান। প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে আসা শত শত মানুষের ভিড় লেগে থাকে। বছরে দুবার বৃহৎ পরিসরে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও লালন একাডেমির আয়োজনে লালনের মৃত্যুবার্ষিকী ও দোল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সাঁইজির ভক্তরা প্রতিদিনই আখড়াবাড়িতে গানের আসর বসান। রয়েছে লালন জাদুঘর ও সংগ্রহশালা এবং গবেষণাকেন্দ্র। গান শেখা ও চর্চার জন্য সংগীত বিদ্যালয়। গাছগাছালি আর ফুল ফলে ভরা মনোরম পরিবেশ। আরও রয়েছে লালন অডিটোরিয়াম, লালন মঞ্চ ও লালনের ভাস্কর্য। সাঁইজির মাজার ছাড়াও রয়েছে তাঁর ভক্তদের সমাধিস্থল। সংগ্রহ করতে পারবেন লালনবিষয়ক বিভিন্ন গ্রন্থ, মৃৎশিল্প ও খোদাই করা শৈল্পিক কারুকার্য এবং একতারাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। সাঁইজি লালনের আখড়াবাড়ি এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটাআয়তনে কুমারখালী উপজেলার মধ্যে হলেও কুষ্টিয়া শহর এবং সাঁইজি লালনের আখড়াবাড়ি থেকে একটু দূরে গড়াই নদের পাশে রয়েছে বিষাদসিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনর বাস্তুভিটা। সরকারিভাবে নির্মিত হয়েছে মীর মশাররফ হোসেন লাইব্রেরি, সংগ্রহশালা ও অডিটোরিয়াম। কালের বিবর্তনে অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও দেখতে পাওয়া যাবে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত অনেক কিছু। বিষাদসিন্ধু তাঁর অমর সৃষ্টি। মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর লাহিনীপাড়া গ্রামে মীর পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯১২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহরবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটনকেন্দ্র কুমারখালীর শিলাইদহ। দক্ষিণে গড়াই, উত্তরে পদ্মা নদীর অপর পারে পাবনা শহরের বিপরীতে এর অবস্থান। শিলাইদহ নামটি আধুনিক। আগে স্থানটি খোরশেদপুর গ্রাম নামে পরিচিত ছিল। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার এই গ্রামটি কিনে নেওয়ার আগে এখানে একটি নীলকুঠি ছিল। শেলী নামের একজন নীলকর এটি নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা যায়। গড়াই এবং পদ্মা নদীর মিলিত প্রবাহের ফলে সৃষ্ট গভীর একটি ‘দহ’ থেকে গ্রামটি শেলীদহ নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। কালক্রমে তা শিলাইদহতে পরিণত হয়। ১৮০৭ সালে রামলোচন ঠাকুরের উইলসূত্রে রবীন্দ্রনাথের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর এই জমিদারির মালিক হন। রবীন্দ্রনাথ জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে প্রথম শিলাইদহে আসেন ১৮৮৯ সালের নভেম্বর মাসে। ১৮৯১ থেকে ১৯০১ সালের মধ্যে এক দশকেরও বেশি সময় রবীন্দ্রনাথ অনিয়মিতভাবে এখানে অবস্থান করেছেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবস্থানকালে নানা উপলক্ষে শিলাইদহে এসেছিলেন স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, প্রমথ চৌধুরী, মোহিতলাল মজুমদারসহ তৎকালীন বঙ্গের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী। এই কুঠিবাড়ি ও পদ্মার বোটে বসেই রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন ‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’, ‘চৈতালী’, ‘কথা ও কাহিনী’, ‘ক্ষণিকা’, ‘নৈবেদ্য’ ও ‘খেয়া’র অধিকাংশ কবিতা, পদ্মা পারের গল্প, নাটক, উপন্যাস, পত্রাবলী ও ‘গীতাঞ্জলি’ এবং ‘গীতিমাল্যের’ গান। আবহমান গ্রামবাংলার অপরূপ সৌন্দর্যে ভরা শিলাইদহ ও পদ্মার প্রতি রবীন্দ্রনাথের ছিল গভীর অনুরাগ। রবীন্দ্রনাথ তাঁর একটি চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমার যৌবন ও প্রৌঢ় বয়সের সাহিত্যরস-সাধনার তীর্থস্থান ছিল পদ্মা-প্রবাহচুম্বিত শিলাইদহ পল্লীতে।’শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আম, কাঁঠাল ও অন্যান্য চিরসবুজ বৃক্ষের বাগান, একটি পুষ্পোদ্যান, দুটি পুকুরসহ প্রায় ১১ একর মনোরম এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। শিলাইদহে রয়েছে গ্রামীণ পরিবেশ আর মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দক্ষিণ দিকে অবস্থিত অতি সাধারণ অথচ আকর্ষণীয় প্রবেশ তোরণ পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করা যায়। কুঠিবাড়ি ভবনটি একটি বেষ্টনী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। নিচতলা ও দোতলায় বিভিন্ন আকারের মোট ১৫টি কক্ষ রয়েছে। উন্মুক্ত ব্যালকনিগুলো রানীগঞ্জ টালি দিয়ে তৈরি ঢালু ছাদ দ্বারা আংশিক আচ্ছাদিত। নিচতলার ওপরের মধ্যবর্তী অংশে রয়েছে ত্রিকোণ প্রান্তবিশিষ্ট একটি ঢালু ছাদ। দোতলার ওপরের পিরামিড আকৃতির ছাদ ভবনটি আরও বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে সৌন্দর্যকে। বর্তমানে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত একটি জাতীয় ইমারত। সরকারি উদ্যোগে এখানে ‘রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।শিলাইদহের কুঠিবাড়ি রবীন্দ্রভক্তদের তীর্থস্থান। প্রতিবছর ২৫ বৈশাখ জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী ও ২২ শ্রাবণ বিশ্বকবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এখানে অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি ও শিল্পী, কবি রবীন্দ্রনাথের জীবন ও কর্মভিত্তিক আলোচনা এবং সংগীত পরিবেশনে অংশগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৪১ সালে কলকাতার নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।ইমাম মেহেদী: সাহিত্যিক ও সাংবাদিকই-মেইল: emam.mehedi@gmail.com
এবারে পড়লাম নতুন আমদানি সেই সাতজনকে নিয়ে। সঙ্গে আয়েশা তো আছেই। এই নতুন সাত ছাত্র দেখি একটু ইংরেজি জানে বটে। তবে তাদের সাতজনের ছয়জনেরই ছয় রকম সমস্যা।ইউসুফ ছেলেটা এতটাই লাজুক, সাত চড়েও কিচ্ছু বলবে না। সে পড়া বুঝুক চাই না বুঝুক। পরে গিয়ে যখন ছোট ছোট পরীক্ষা নিতে যেতাম, তখন বুঝতে পারতাম।তুমি প্রশ্ন কেন কর না ইউসুফ?Miss, what if you mind when I ask silly questions?ধুর বোকা ছেলে, রাগ করতে হলে শেখাতে বসেছি কেন? ফাঁকিবাজি করলে রাগ করতে পারি।নুরুল্লাহ সমানে শুধু মোবাইল টিপত তো টিপতই। কী বলছি না বলছি কানে যেত কি না কে জানে? হাঁক দিতাম: এই নুরী! Naughty Noori!Yes Miss, I’m your naughty Noori! আচ্ছা পাঠক বলেন দেখি, এটাকে কী করি?এদের মধ্যে তাশকিন সবার ছোট। দুরন্ত ও ছটফটে। এক জায়গায় স্থির থাকবে এই ছেলে? তবেই হয়েছে!ইউনুস সবার বড়, বয়সে ছোটদের সঙ্গে পড়তে তার বেজায় অনীহা।বুরাক কোন গ্রহের বাসিন্দা বুঝতে পারতাম না। কী যে চিন্তা করত ক্লাসে বসে, সে–ই জানে।Hey Burak, are you with me? What did I just say?Miss, my ears are open, ask me questions, I’ll answer. প্রশ্ন করলে চুপ।আর মুজাহিদ। আমার ঘুম কুমার। কতবার যে ডাক দিয়ে জাগাতে হতো।একমাত্র ওরহান। এই ছেলেটার আগ্রহে জল ঢেলে দিতে ইচ্ছা করত না। অজস্র ভুল করলেও ওর চেষ্টা ছিল সব সময়। ওর মুখে হাসি লেগেই থাকত।অন্যদিকে আয়েশাকে তখন লেখা শেখানোর চেষ্টা আমার। যে মেয়ের মুখে ইংরেজি কথার তুবড়ি ছোটে, যে শব্দের খেলা ভালোবাসে, তাকে লিখতে বললেই বাঁধে গোল। ওর উচ্ছ্বাসে কিছুটা ভাটা দেখতে পেলাম। What if I can’t, apu? আমি তখন মনে মনে বলি, আল্লাহ, এখন মেয়েটাও যদি চুপসে যায়, আমি থাকি আর কাকে নিয়ে?আয়েশার চিবুক ধরে নেড়ে দিলাম। আঙুলে মুছে নিলাম উথলে ওঠা চোখের জল। You never gave up before, did you? Please don’t give up now, my precious. Can you do that for me?আয়েশা জলভরা চোখেই চাইল আমার দিকে। For you apu, I will never give up.ছেলেগুলোর ক্লাস দাদার অনুমতি নিয়েই একটু অন্যভাবে সাজালাম। এদের যা বয়স, এদের তো আর ডিজনি দিয়ে পোষ মানানো যাবে না। কী করি?সব কটি চেয়ারকে গোল বৃত্তাকারে ঘুরিয়ে নিলাম। আমার চেয়ারটা রাখলাম সাতটা চেয়ারের মাঝে। অ্যাই শামিম, ইধার আও! ডাকার সঙ্গেই বান্দা হাজির। ম্যাডআম, শামিম ইধার আ গায়া! আমার ডাকে দাদা হাসেন। ফাল্গুনাই, তুমি পারো বটে! আমি যথাসম্ভব করুণ সুরে জবাব দিলাম—আপনি হাসেন, আর আমি এদিকে তো ফান্দে পড়িয়া বগী কান্দি রে দাদা...।শামিমকে দিয়ে সাতটা কফি আনিয়ে রাখলাম টেবিলে। চল ছেলের দল, আজ পড়াব না। আজ আমরা খেলি আর কফি খাই। তার আগে কেউ মজের (মুজাহিদ) ঘুম ভাঙাও না রে ভাই। আর নুরীর ফোনটা চুরি করতে পারবে কেউ? ও ফোন ব্যাটা বড় জ্বালায়। আমার ক্লাসে হাসির ধুম আর আমার মনেও স্বস্তি।তারপর এদের কিছু এলোমেলো শব্দ দিলাম। তারা Jumbled Words থেকে বাক্য গঠন ভালোই পারল। সেখান থেকে আস্তে আস্তে Paragraphs, joining words–সহ আর বহু কিছু। ছোট ছোট প্রশ্ন। কিছু ক্ল্যাসিক ইংরেজি গান। কখনো সিনেমাও। ধীরে ধীরে আমার সঙ্গে দূরত্ব ঘুচল সবার। এদেরকে খবরের কাগজ থেকে পড়তে বলতাম। ধীরে ধীরে, গল্পে গল্পে কথা বলা শেখাতাম। এরা আমাকে তাদের বাড়ির আশপাশের দর্শনীয় জায়গার গল্প বলত।আমার অফিস ভবনের ছিল দুটি বিশাল সমস্যা। যে জন্য বাধ্য হয়ে চাকরিটা ছাড়তে হয়েছিল। এক, ভাঙাচোরা, অতি খাড়া সিঁড়ি, যা বেয়ে তিনতলায় ওঠা? ও মাগো। আর দুই, বাথরুমটা ঠিক আমার ব্যবহারের যোগ্য ছিল না।তেমনি একদিন, দোতলা পর্যন্ত উঠে আচমকা হোঁচট খেলাম। গড়িয়ে পড়ার আগেই হাত আঁকড়ে ধরল কেউ। চমকে দেখি, ওরহান। সঙ্গে সঙ্গেই আবদার—এবার থেকে নামবে যখন, আমাদের একজনকে সঙ্গে নিয়ে নামবে please miss, তুমি অসুস্থ হবে তো পড়ব কার কাছে?তারপর থেকে যখনই সিঁড়ি বাইতে হতো, আমার পেছনে ওরহান, নুরী বা মুজাহিদ। শামিম বলত, ফাল্গুনী ম্যাডআমের bodyguard! আসলেই আমাকে অনেক দেখে রাখত ওরা সাতজন। একবার অনুবাদ করে শুনিয়েছিলাম সাত ভাই চম্পার গল্প। সবার একসঙ্গে চিৎকার, মিস, তুমি আমাদের পারুল!আমার কণ্ঠে কিছুটা ক্ষোভ ঢেলেই জবাব দিলাম—পারুলকে ওর সাত ভাই নিশ্চয়ই ভীষণ ভালোবাসত। তোমরা ভালোবাসো আমায়? তবে যে ক্লাসে একজন ঘুম, একজন ফোন আর বাকিরা চুপ? এক ওরহান ছাড়া তোমরা বাকিরা তো...মোটেও ভালোবাসো না তোমাদের পারুলকে। ফরসা ওরহান ততক্ষণে লজ্জায় লাল।ওষুধে কাজ হলো। এরপর থেকে ওরা সবাই খুব মনোযোগী হয়ে উঠল পড়ায়। সঙ্গে হাসিঠাট্টা তো থাকতেই হবে।অন্যদিকে একদিন আয়েশাকে দেখি প্রায় টলতে টলতে আসছে। আয়েশা। ঠিক আছ তো? চোখ কিছুটা রক্তবর্ণ, গালেও লাল আভা। Flu, apu! মানে কী? জ্বর গায়ে তুমি ক্লাসে? আমাকে বললেই পারতে তো। তোমার ক্লাসটা পরে নিতাম আমি। ওকে ধরে ঘরে নিতেই আমার কাঁধে মাথা রাখল। আপু তুমি রাগ করেছ? আজ এসেছি তোমার কাছে থাকব বলে। বাড়িতে আজ একা ভালো লাগবে না আমার। দেখি, ওর হাতে একটা মোটা রূপকথার বই। এটা আমাকে শোনাবে তুমি আপু?ওর মন ভালো করতে গল্পের চরিত্র বুঝে কণ্ঠের কাজ করতে আরম্ভ করলাম। এ কাজটি অনেক ছোটবেলায় স্কুল থেকে রপ্ত করেছি। পড়ার ফাঁকে নিজেকে আনন্দ দিতে। ফাঁকে ফাঁকে প্রশ্ন করছিলাম, এখানে এই চরিত্রের জায়গায় তুমি হলে কী করতে আয়েশা? লিখে ফেলো দেখি। মনে হলো মজা পেল শুনে। পরে দেখি, দু–এক জায়গায় ছোট ছোট ভুল হলেও শব্দের গাঁথুনি বেশ। কীরে মেয়ে, বেশ তো বলছিলে, I can’t apu? এবারে এত কিছু কে লিখল? কথা নাই, মিষ্টি একটা হাসি আছে শুধু।আর একদিন Migratory birds বিষয়টি বোঝাতে বলেছিলাম, তুমি যেমন উড়ে আমার দেশ এ এসেছ পড়তে, তেমনি পরিযায়ী পাখিরা যায় এক দেশ থেকে অন্য দেশে। তুমিও পরিযায়ী পাখি, তাই না আয়েশা? অমনি মেয়ের মুখ ভার। না–আ–আ আমি পরিযায়ী নই আপু, আমি তোমার পোষা পাখি। I did not migrate here, I am your pet bird. অনেক আদর করে গোমড়া মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছিলাম সেদিন।দিন যায়, আর একদিকে আমার সাত চম্পা আর অন্য দিকে আয়েশা, দুটি ক্লাসেই আস্তে আস্তে আর একটু কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে আসতে লাগলাম। বেশ সাড়াও পেতে লাগলাম দুদিক থেকেই। ওরা এখন New Nation বা Daily Sun থেকে কিছু পড়ে সারমর্ম লিখতে দিলে পারে। ডেইলি স্টারের ইংরেজি একটু কঠিন। তাই ওদেরকে দিয়েছিলাম একেবারে শেষের দিকে। Reader’s Digest পড়ে, যেকোনো কিছু নিয়ে টানা দু–তিন মিনিট বলতে বললে তা–ও পারে। ওদের কলমও বেশ চলে। বিশেষ করে আয়েশার।আমি ওকে মাঝেমধ্যে রাগাই—কীরে মেয়ে, এই বুঝি তোমার লিখতে পারি না, আপু? তুমি তো ওরহানের চেয়েও ভালো লেখো এখন।জবাবে অবাক হলাম। For you, I never gave up, apu. সত্যি? তবে তুমি আজ আমায় কথা দাও, জীবনে যাই আসুক না কেন, কোনো দিন হার মানবে না তুমি। Do not give up, ever! আয়েশার মুখ ভার। আপু তুমি সত্যিই পরিযায়ী বানিয়ে দিলে তোমার পোষা পাখিকে? সুরেই দিলাম উত্তর—তোমায় হৃদমাঝারে রাখব, ছেড়ে দেব না।ওদেরকে সনদ দেওয়ার দিন এগিয়ে এল। শামিমকে আটটা রজনীগন্ধার স্টিক দিয়ে বলা হলো, ওরা দরজা দিয়ে ঢুকবে, আর সে একটা করে দেবে ওদের। না, আমি না, আমার লজ্জা করে, ম্যাডআম দেবেন। আরে ধুর! আমি সনদ বানাব, না ফুল হাতে দরজায় দাঁড়াব? কী আর করা। দাঁড়ালাম। আরে আমি ফুল দেব কী এদের? এদের একেকজনের হাতে দেখি ভিন্ন রঙের সাতটি গোলাপ, আমার জন্য। আয়েশার হাতে বেলি ফুলের মালা। এই, কাহিনি কী? আমি তো তোমাদের আমার কোন ফুল পছন্দ বলিনি কোনো দিন, জানলে কোথা থেকে? জবাবে সব কটি আঙুল একসঙ্গে দাদার দিকে, sir told us. দাদার মুখে হাসি—দড়ি বেঁধে কুয়োয় ফেলে দিয়েছিলাম তো? তা ফাল্গু...এখন কী সত্যিই নাই?এবার লজ্জা পাওয়ার পালা আমার। ধুত্তরি ছাই, কী কন না কন, আপনি আসলেই যাচ্ছেতাই!সেদিনের পর আয়েশার সঙ্গে সশরীরে দেখা হয়নি আর কোনো দিন। ঢাকায় এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ পর্যায়ের ছাত্রী সে। তার বিষয়? ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য। জেনে অবাক, খুশি দুটিই হয়েছিলাম। তুরস্ক-বাংলাদেশ দুটিই এখন তার নিজের দেশ। বুরাক চাকরি করে ঢাকায়। বাকিরা ফিরে গেছে দেশে। তবে যাওয়ার আগে কোনো এক ঈদে এই দলের দুজন আমার বাড়ি ঘুরে গেছে। ওরহানের সঙ্গে প্রায়ই কথা হয়। সে যোগ দিয়েছে পারিবারিক কাজে। ওরহান বলেছিল, বাবার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছা করছে না আপু, আমি পড়াব তোমার মতো।ওদের পর ভারত, পাকিস্তান, ইয়েমেন, সুদান অনেক দেশের ছাত্রছাত্রী পেয়েছি। কেউ আর মনে দাগ কাটেনি ওদের মতো। ওদেরকে দেখতে আর পাই না জানি। তবে ওদের আজও মনে করি আমার প্রার্থনায়। আজও ওরা আছে হৃদমাঝারে, ছাড়তে পারিনি, পারবও না। (শেষ)ধারাবাহিক এ রচনার আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন: https://www.prothomalo.com/durporobash/article/1600756
বছরে শুরুটা খারাপ কেটেছিল রাহাত ফতেহ আলী খানের। তাঁর বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের অভিযোগ করে ভারতের অর্থ তদন্তকারী সংস্থা। সে অভিযোগ থেকে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। বছরের মাঝামাঝি এসে মন ভালো করার মতো ঘটনা ঘটল তাঁর জীবনে। বিশেষ সম্মানে ভূষিত হলেন নুসরাত ফতেহ আলী খানের ভাতিজা রাহাত ফতেহ আলী খান। অর্জন করলেন ডক্টরেট ডিগ্রি। সংগীতের ওপর তাঁর দখল ও অনন্য অবদানের জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে এ সম্মাননা দিয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে তাঁর উপস্থিতিতে এই মর্যাদা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা দিয়েছিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।গতকাল রাহাত ফতেহ আলী খানের সঙ্গে আরও সাত ব্যক্তি এই সম্মাননা অর্জন করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মুসলিম সুফিদের ভক্তিমূলক গান ও কাওয়ালির কিংবদন্তি হিসেবেও অভিহিত করে পাকিস্তানের এই গায়ককে। ভারতের একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহাত বলেন, ‘আজকের দিনটি আমার ও আমার পরিবারের জন্য একটি বিশেষ দিন। একই সঙ্গে যে মানুষগুলো আমার পাশে থেকে আমাকে সহযোগিতা ও সমর্থন জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা।’ রাহাত ফতেহ আলী খান ওস্তাদ নুসরাত ফতেহ আলী খানের ভাতিজা এবং ওস্তাদ ফারুখ ফতেহ আলী খানের ছেলে। এ ছাড়া তিনি পুরাণখ্যাত কাওয়ালি শিল্পী ফতেহ আলী খানের নাতি। রাহাতকে তাঁর চাচা ওস্তাদ নুসরাত ফতেহ আলী খান কাওয়ালিসংগীতের ঐতিহ্যকে ধারণ করার লক্ষ্যে তৈরি করেন এবং মাত্র তিন বছর বয়স থেকে রাহাত তাঁর চাচা ও বাবার সঙ্গে গাওয়া শুরু করেন। কাওয়ালি ছাড়াও রাহাত গজল গাইতেন এবং অন্যান্য মৃদু সংগীতেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তিনি বলিউডের জনপ্রিয় একজন প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। রাহাত ফতেহ আলী খান পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারতেও তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তাঁর পরিবার মুসলিম সুফিদের ভক্তিমূলক গান ও কাওয়ালিসংগীতে দক্ষিণ এশিয়ায় সুপরিচিত। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত অ্যালবামের সংখ্যা ৫০টির বেশি।বলিউড চলচ্চিত্রশিল্পে একজন প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে রাহাতের অসামান্য অবদান রয়েছে। ‘পাপ’, ‘ওমকারা’, ‘ওম শান্তি ওম’, ‘লাভ আজকাল’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বাই’, ‘রেডি’, ‘বডিগার্ড’, ‘জান্নাত ২ ’, ‘হিরোইন’, ‘দাবাং’, ‘দাবাং ২ ’, ‘ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো’সহ বলিউডের অসংখ্য ছবির গানে কণ্ঠ দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন রাহাত। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর থেকেই সমালোচনা চলছে পাকিস্তানের। পান থেকে চুন খসলেই সরফরাজদের দোষ খুঁজতে হাজির হচ্ছেন সাবেক খেলোয়াড়েরা। ভারতের বিপক্ষে হারের পর সবাই তো এমন আচরণ করা শুরু করল, মনে হচ্ছিল বিশ্বকাপে ভারতের কাছে এই প্রথম হেরেছে পাকিস্তান। শোয়েব আখতার থেকে মিসবাহ উল হক—সবাই মেতেছিলেন সমালোচনার খেলায়।গত কয়েক দিনে অবস্থা পাল্টেছে। পাকিস্তানকে নিয়ে যে রকম সমালোচনা হচ্ছিল, তা এখন নেই বললেই চলে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা জয়ের পর সাবেক পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের মুখও এখন বন্ধ। তবে এত দিন যাঁরা সমালোচনা করছিলেন, তাঁরা এখন কোথায়? পাকিস্তানের সাফল্যের পর এই সমালোচকদের খোঁচা দিয়েছেন ভারতীয় টেনিস তারকা ও পাকিস্তান দলের খেলোয়াড় শোয়েব মালিকের স্ত্রী সানিয়া মির্জা।বিশ্বকাপের শুরুটা পাকিস্তানের জন্য কতটা তেতো ছিল সেটা সবার জানা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে হারার পর সময়টা কতটা কঠিন ছিল, তা শুধু ক্রিকেটাররাই ভালো বলতে পারবেন। সরফরাজের ‘ভুঁড়ি’ নিয়েও কম আলোচনা হয়নি।। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে শোয়েব মালিকের সিসা বারে যাওয়া নিয়েও অনেক কথা উঠেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সাফল্যের কাছে এখন সবকিছুই চাপা পড়ে গেছে। এখন কথা হচ্ছে বাবর আজমের দাপুটে সেঞ্চুরি নিয়ে।কথা হবেই না–ই বা কেন? তিনে নামা ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে বিশ্বকাপে এর চেয়ে ভালো কিছু শেষ কবে পেয়েছিল, তা তো ভুলেই গিয়েছিল সবাই। ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে তিনে নামা প্রথম সেঞ্চুরিয়ান ব্যাটসম্যান সেলিম মালিক। এই কীর্তির আরও ৩২ বছর বছর পর এমন কিছু দেখালেন বাবর! তবে পাকিস্তান দলের এমন ঘুরে দাঁড়ানোটাই মূলত অবাক করেছে সবাইকে। অনেকে তো মনে করছেন ১৯৯২ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তিই করে বসতে পারেন সরফরাজরা।পাকিস্তানের এমন সাফল্যে খুশি হয়েছেন সানিয়া মির্জাও। তবে প্রশংসাটা একটু ভিন্নভাবেই করেছেন। স্বামী শোয়েব মালিক আপাতত দলের বাইরে আছেন। শেষ দুই ম্যাচে জায়গা হয়নি এই অলরাউন্ডারের। এত দিন শোয়েব মালিকসহ সবারই সমানতালে সমালোচনা চলছিল। কিন্তু দুটো জয়েই সবার মুখ বন্ধ। তাই সমালোচকদের খোঁচা দিতে দেরি করেননি, ‘খেলা কতটা অবিশ্বাস্য ভাবেই না সবকিছু বদলে দেয়।’
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বুধবার এই অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপপরিচালক দেওয়ান সফিউদ্দিন আহমেদ।অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন সোহেল রানা। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুদকের সাবেক উপপরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে সাভার থানায় মামলা করেন।অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সোহেল রানার ব্যাংক হিসাব এবং আয়করসংক্রান্ত নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাভারের এক চিকিৎসক মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকায় ১০ শতাংশের কিছু বেশি জমি কেনেন। সোহেল সাভার পৌরসভায় ১২তলা ভবন তৈরির জন্য আবেদন করেন। ২০০৮ সালে কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালে আটতলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হয়। সোহেল রানার আয়কর রিটার্ন পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি জমির মূল্য দেখিয়েছেন ২ লাখ টাকা। চতুর্থ তলা পর্যন্ত নির্মাণব্যয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৩২ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৪ টাকা।তদন্ত কর্মকর্তা দেওয়ান সফিউদ্দিন আহমেদ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে তিনি সাভারে রানা প্লাজার বাড়িটি পরিদর্শন করে পরিমাপ করেন। ভবনটি নির্মিত হয়েছে ভবনমালিকের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে। নিচতলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত মোট নির্মাণব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৭৩ টাকা। অথচ সোহেল রানা ২০১২-২০১৩ কর বছরে আয়কর রিটার্নে চতুর্থ তলা পর্যন্ত নির্মাণব্যয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৩০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯৪ টাকা। অর্থাৎ সোহেল রানা ২ কোটি ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৯ টাকার তথ্য দেখাননি।অভিযোগপত্রের তথ্যমতে, সোহেল রানার তিনটি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। তাঁর জমা করা টাকার পরিমাণ ২৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৬৭ টাকা। ২০১২ সালে সোহেল রানার আয়কর রিটার্নে ব্যাংক ও নগদ টাকা দেখিয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৫৩ টাকা। অর্থাৎ সোহেল রানা ২৬ লাখ ১ হাজার ৮১৪ টাকার তথ্য গোপন করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তার হিসাবে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৫৪ হাজার ৪৩ হাজার ৭৯৩ টাকার। এই মামলায় ৩৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।সোহেল রানার বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা বিচারাধীন। এসব মামলায় তিনি কারাগারে আছেন। সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা না দেওয়ার মামলায় ঢাকার একটি আদালত সোহেল রানাকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে পড়ে। ২৯ এপ্রিল বেনাপোলে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন রানা। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১ হাজার ১৭৫ জন প্রাণ হারান। অনেকে আহত হন। হতাহত হওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ও সংশ্লিষ্ট রাজস্ব খাতের ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন্য ব্যাপক, বিশ্বাসযোগ্য ও নির্দিষ্ট সময়ের কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।বাংলাদেশে দুই সপ্তাহের সফর শেষে আইএমএফ মিশনপ্রধান দায়সাকু কিহারা এক সংবাদ সম্মেলনে এ মত দেন। আগামী সেপ্টেম্বরে আইএমএফের পর্ষদে প্রতিনিধিদলটির প্রতিবেদন অনুমোদন হবে বলে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের তিনটি খাতে সংস্কারকে প্রাধান্য দিয়েছে আইএমএফ। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক খাতের ক্রমাগত দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা। সামাজিক চাহিদা, অবকাঠামো ও জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিগ্রস্তদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা। সুশাসনের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়ন করে অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ করা।ব্যাংক খাত নিয়ে দায়সাকু কিহারা বলেন, ব্যাংক খাতের সম্পদের নিবিড় মূল্যায়ন করে মানদণ্ড শক্তিশালী করতে হবে। ঋণ পুনঃ তফসিল ও ঋণ পুনর্গঠনের ব্যবহার কম করতে হবে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাজেটে কম চাপ পড়বে। এ জন্য দাতা সংস্থাগুলোর কাছে নিয়মিত আর্থিক সহায়তা খুবই জরুরি।বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে দায়সাকু কিহারা বলেন, দারিদ্র্য কমিয়ে গতিশীল ও দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে সফল বাংলাদেশ। এটা ধরে রাখতে রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ করতে হবে। যাতে বৈশ্বিক চাহিদা মেটানো যায়। ব্যবসায় পরিবেশ উন্নতি ঘাটতে হবে ও কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। এতে দুর্নীতি সহনশীল মাত্রায় আসবে, যা উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সহায়ক হবে।
প্রতিটি ঋতুকে সমৃদ্ধ করে নানা রং ও সুগন্ধের ফুল। বর্ষাকালেও প্রকৃতি তার ফুলের ডালা নিয়ে হাজির হয়। কিছু ফুল শুধু এই বর্ষাকালের, কিছু ফুল সারা বছরই ফোটে। কিছু ফুল খুব পরিচিত, কিছু ফুল অপরিচিত। ফুলের গাছের জন্য রমনা পার্কের জুড়ি নেই। ২০০৫ সালের তথ্য অনুযায়ী রমনা পার্কে ৮৭ প্রজাতির ফুলের গাছ রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনা পার্কে গিয়ে খুব বেশি ফুল দেখা যায়নি। যে কয়েকটি ফুল ফুটেছে তার মধ্যে নাগলিঙ্গমই প্রধান। কয়েকটি ফুলের ছবি নিয়ে একটি ছবির গল্প।
‘বেশ বিধ্বংসী বোলিং হচ্ছে। কিন্তু আমি এখনো ক্রিজে আছি। সন্দেহবাদীদের নিশ্চিত করতে চাই, আমি বাউন্সারে ভীত হব না, রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেও খেলব না। সজোরে আঘাত পেয়ে বল মাঠের চারদিকে গড়াবে। এটাই আমার স্টাইল।’ যুক্তরাজ্যের আয়রন লেডি খ্যাত প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার একদিন আগে (১২ নভেম্বর, ১৯৯০) ক্রিকেটীয় উপমা টেনে এমন জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।পরদিন (১৩ নভেম্বর) পদত্যাগী উপপ্রধানমন্ত্রী জেওফরি হাউ পাল্টা বক্তব্যে বললেন, ‘বিষয়টি বরং এমন যে, আপনার ওপেনিং ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে পাঠালেন আর সঙ্গে সঙ্গেই বোল্ড হয়ে ফিরল। কেননা খেলা শুরুর আগেই দলের ক্যাপটেন তাঁদের ব্যাট ভেঙে দিয়েছেন।’ঠিক ওই সময়টির অপেক্ষায় ছিলেন ১৯৮৬ সালে থ্যাচারের সঙ্গে বিরোধের জেরে মন্ত্রিসভা ত্যাগ করা মাইকেল হেসেলটাইন। সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেসেলটাইন ১৪ নভেম্বর থ্যাচারের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেন। পদত্যাগে বাধ্য হন যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। কনজারভেটিভ দলে প্রভাবশালী মাইকেল হেসেলটাইনকে মনে করা হচ্ছিল ‘অপেক্ষমাণ প্রধানমন্ত্রী’। কিন্তু অপেক্ষার অবসান হলেও হেসেলটাইন শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি।তিন দশক আগের ওই নির্বাচনের সঙ্গে এবারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বেশ মিল। এখনো কনজারভেটিভ দল ক্ষমতায়। নেতৃত্বে দেশটির দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী, ব্রেক্সিট নিয়ে গৃহবিবাদের জের ধরে যাঁকে চলে যেতে হচ্ছে। থেরেসার উত্তরসূরি নির্বাচনে আলোচিত প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। যিনি ব্রেক্সিট নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৮ সালে থেরেসার মন্ত্রিসভা ছাড়েন। দাপুটে রাজনীতিক বরিসকেও দেশটির ‘অপেক্ষমাণ প্রধানমন্ত্রী’ বলে ভাবা হচ্ছে বেশ আগ থেকেই।তবে কি মাইকেল হ্যাসেলটাইনের সঙ্গে বরিসের সবকিছু মিলে যাচ্ছে? এ প্রশ্নকে ঘিরেই এখন যত কৌতূহল। কেননা মার্গারেট থ্যাচারের উত্তরসূরি নির্বাচনে প্রথম ব্যালটে এগিয়ে ছিলেন হেসেলটাইন। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যালটে হুট করে প্রতিযোগিতায় নাম লেখানো তৎকালীন চ্যান্সেলর জন মেজর থেকে পিছিয়ে পড়েন তিনি। প্রভাবশালী ও দাপুটে হেসেলটাইন হেরে যান অনেকটা আনকোরা জন মেজরের কাছে। যদিও নির্বাচন পদ্ধতি তখন কিছুটা ভিন্ন ছিল।এবার বরিস জনসন বিপুল ভোটের ব্যবধানে চূড়ান্ত দুইয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট কোনো হাঁকডাক ছাড়াই প্রতিযোগিতায় এসেছেন। হান্টের শান্ত ভাব, হিসাবী বক্তব্য এবং পরিস্থিতি বুঝে আক্রমণাত্মক হওয়ার ভঙ্গি ইতিমধ্যে আলাদা নজর কাটতে শুরু করেছে। অন্যদিকে হুট-হাট কথা বলা, যখন-তখন হাস্যরসে মাতা বরিস জনসন নেতা হিসেবে কতটা ‘সিরিয়াস’ সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বরিসের বান্ধবী-কাণ্ড সহ ব্যক্তিগত মনোভাব নিয়ে নানা সমালোচনা।ওয়েস্টমিনস্টারের রাজনীতি নিয়ে সবাই যা ভাবে, তার উল্টোটা হওয়ার নজির আছে আরও অনেক। ২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটের কথাই ধরুন। কে ভেবেছিল বিচ্ছেদপন্থীদের জয় হবে? অথবা ২০১৭ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন। কেবল বিরোধী লেবার দলকে কোণঠাসা করতে প্রধানমন্ত্রী মে কোনো প্রয়োজন ছাড়াই ওই নির্বাচন দিয়েছিলেন। সবগুলো জরিপ ক্ষমতাসীনদের বড় বিজয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু ফলাফলে দেখা গেল—লেবার দল নয়, বরং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে।ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের চলমান নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে বরিস জনসন দাপটের সঙ্গে এগিয়ে আছেন। কিন্তু তিনি অঘটন এড়াতে পারেন কি না সেটাই দেখার বিষয়।
দিনে দুপুরে একজন মানুষকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করল, আর চারপাশের সব মানুষ সেই দৃশ্য দেখল, কেউ ছবি তুলে সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেন; কিন্তু আক্রান্ত মানুষটিকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন না, এ কেমন সমাজে আমরা বাস করছি?দেশে আইনের শাসন এতটাই ভঙ্গুর যে দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে মানুষ খুন করতে সাহস পায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে প্রথম আলোর বরগুনা প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিক জানান, ‘রিফাত শরীফ গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তাঁরা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়। ওই হামলার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।’বৃহস্পতিবার নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার সংবাদ সম্মেলনের বক্তৃতা যারা শুনেছেন, ইউটিউবে দেখেছেন, তাঁদের পক্ষে কান্না ধরে রাখা কঠিন। কলেজপড়ুয়া একটি মেয়ে স্বামীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এ রকম পরিস্থিতির শিকার হলেন, অথচ কেউ আক্রান্তকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন না। সবাই নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকলেন! আমাদের সমাজ এতটা নিষ্ঠুর ও বিবেকহীন হলো কীভাবে?আয়েশা সিদ্দিকা আরও জানিয়েছেন, ‘আমার সামনেই সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমি শত চেষ্টা করেও তাঁকে রক্ষা করতে পারিনি। হামলার সময় কোনো লোক এগিয়ে আসেনি। নয়ন, রিশান ফরাজী ও রিফাত ফরাজী এই হামলা চালিয়েছে।’এই লজ্জা আয়েশা সিদ্দিকার নয়। এ লজ্জা আমাদের সবার—এই সমাজের ও রাষ্ট্রের। কেননা তারা একজন নারীকে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। দুর্বৃত্তদের জিঘাংসা থেকে একজন নিরীহ মানুষকে রক্ষা করতে পারেননি। যে দেশে বড় বড় অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, সে দেশেই দুর্বৃত্তরা এভাবে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মানুষ হত্যার সাহস পায়।সেদিন আয়েশার সঙ্গে অন্তত আরেক তরুণ দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করকে চেয়েছিলেন। তার নাম নুরুল ইসলাম রনি। কিন্তু খুনিরা ছিল ভয়ংকর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, খুনি নয়ন ও তার সহযোগীরা রাম দা দিয়ে রিফাতকে কোপাচ্ছেন। আয়েশা সিদ্দিকা রাম দাধারীর হাত ধরে নিবৃত্ত করতে চাইছেন। কিন্তু খুনিদের উন্মত্ততা ও নৃশংসতার কাছে তাঁকে হার মানতে হয়েছে।রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনা আমাদের আরেকটি খুনের দৃশ্য মনে করিয়ে দেয়। ঢাকায় বিশ্বজিৎ নামে এক তরুণকেও এভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছিল ছাত্রলীগের কর্মীরা। সেটি ছিল রাজনৈতিক ঘটনা। বিরোধী দলের হরতাল বন্ধ করতে ছাত্রলীগের বীরপুরুষেরা দরজি দোকানের এক দরিদ্র কর্মচারীর ওপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।শুধু রিফাত ও বিশ্বজিৎই নৃশংসতার শিকার নন। ফেনীতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষরূপী দুর্বৃত্ত কীভাবে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, সে ঘটনা দেশবাসী দেখেছে। নরসিংদীতেও আরেক নারীকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। প্রতিদিনই দশের কোথাও না কোথাও নারী ও শিশুরা নৃশংসতার শিকার হচ্ছে। আর সরকারের নীতিনির্ধারকেরা কঠোর নির্দেশে দিয়ে যাচ্ছেন, অপরাধীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কিন্তু তারপরও অপরাধীরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন।বুধবার রাতে রিফাতের হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ তিনজনকে আটক কলেও প্রধান আসামি নয়ন ধরা পড়েনি। সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে বরিশাল বিভাগের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ যদি সত্যি সত্যি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনত তাহলে নয়নেরা এত দুর্ধর্ষ হতে পারত না। তার আগেই তাদের শাস্তি হতো।আয়েশা সিদ্দিকা বলেছেন, অনেক দিন ধরেই নয়ন তাঁকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। তিনি প্রথমে পরিবারকে না জানালেও পরে জানিয়েছেন। স্বামী এর প্রতিবাদ করেছেন বলেই তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। তাহলে কি সমাজে সাধারণ মানুষ, নিরীহ মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে না। অন্যায় প্রতিবাদ করলেই খুন হতে হবে? আয়েশা সিদ্দিকার অভিযোগ, নয়ন বিভিন্ন সময় আমাকে বিরক্ত করত, এসব ঘটনা পরিবারকে না জানাতে আমাকে হুমকি দিত। স্বামী তার প্রতিবাদ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে হত্যা করেছেন।বৃহস্পতিবার বরগুনা প্রতিনিধির সঙ্গে কয়েকবার কথা হয়। তিনি জানান, নয়ন বন্ড নামের ছেলেটি দলবল নিয়ে রিফাতকে হত্যা করছে, সে মাদকব্যবসায়ী। নিজেও মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে থানায় আটটি মামলা আছে। কিন্তু মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণাকারী পুলিশ বাহিনী তাকে ধরেনি। ধরলেও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসে ফের মাদক ব্যবসা করছে।ময়নাতদন্তে রিপোর্ট অনুযায়ী, নিহত রিফাত শরীফের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ আঘাতের চিহ্ন ও রক্তক্ষরণ শুধু রিফাতের শরীরে নয়। এই সমাজের শরীরের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিয়ত রক্তক্ষরণ ঘটছে। কিন্তু আমাদের সমাজের ও রাষ্ট্রের যারা নিয়ন্ত্রক তারা নির্বিকার। তাদের ভাবসাবে মনে হয়, যেন কিছুই হয়নি।রিফাত শরীফের হত্যার বিষয়ে একজন আইনজীবী বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মাননীয় আদালত মন্তব্য করেন, ‘সারা দেশেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সমাজটা কোথায় যাচ্ছে। প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারল। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসল না। জনগণকে আপনি কী করবেন? বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন ছিল না। ভিডিও করল, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসল না। এটি জনগণের ব্যর্থতা। তাই এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে? দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করল না। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না। হয়তো তারা (দুর্বৃত্তরা) ক্ষমতাবান, হয়তো মানুষ ভয়ে এগিয়ে আসেনি।’বাংলাদেশে এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি হলো? এভাবে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মানুষ মারার পর কেন প্রতিবাদের কণ্ঠ জোরালো হয় না? আদালত আসলে ক্ষমতাহীন মানুষের মনের কথা বলেছেন। কিন্তু ক্ষমতার আসনে যারা বসে আসছেন, তাদের নীরবতা কবে ভাঙবে?সোহরাব হাসান: কবি ও সাংবাদিকআরও পড়ুন: এই রামদা কে দিয়েছে?
সৌম্য সরকার অসাধারণ খেলেছিলেন আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে। বিশ্বকাপের শুরুটাও মন্দ হয়নি। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী লম্বা ইনিংস আসেনি বাঁহাতি ওপেনারের কাছ থেকেভারত এখন ম্যানচেস্টারে, আজ খেলছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর ইংল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচ শেষে তবেই বার্মিংহাম নিয়ে চিন্তা করবে তারা। বাংলাদেশ বার্মিংহামে এসেছে দুদিন আগে। অবশ্য আগে আসলেই কী, লম্বা বিরতি কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটারদের সবাই ছুটিতে। সৌম্য সরকার একটু ব্যতিক্রম! কোথাও ঘুরতে–টুরতে যাননি, হোটেলেই আছেন। বেলা ১১টার দিকে নিচে নামলেন দুটো কাজে—সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা আর ফিটনেস নিয়ে কাজ করা।বিয়ে করেননি, স্ত্রী–সন্তানের প্রসঙ্গের তো প্রশ্ন আসে না। সতীর্থদের অনেকের মতো পরিবার সঙ্গে নেই বলে কোথাও ঘুরতে বের হলেন না? সৌম্য হাসলেন বটে, কিন্তু তিনি গভীর চিন্তায়। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে কী দুর্দান্ত একটা সিরিজই না গেল তাঁর। বিশ্বকাপের শুরুটাও মন্দ ছিল না। ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেছিলেন ৪২ রান। কিন্তু পরে ইনিংস আরও প্রত্যাশা অনুযায়ী বড় করতে পারেননি। ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রায় শেষ দেখা যাচ্ছে। এখনো সে ইনিংসটাই সৌম্যের সেরা হয়ে আছে! ৪২, ২৫, ২, ২৯, ১০, ৩—৬ ম্যাচে ১৮.৫০ গড়ে সৌম্যর রান ১১১।সৌম্য ভালো করেই জানেন, দলকে ভালো শুরু এনে দিতে, ব্যাটিং অর্ডারের পরের ব্যাটসম্যানদের ভালো সুযোগ করে দিতে তাঁকে ইনিংসটা লম্বা করতেই হবে। বাঁহাতি ওপেনার উপলব্ধি করতে পারছেন, পেছনের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করা যাবে না, ‘যে সময়ে আউট হয়েছি তখন রান আসছিল। আরও কিছুটা সময় যদি উইকেটে থেকে রান করতে পারি, পেছনের ব্যাটসম্যানরা সহজভাবে এগোতে পারবে। ওই পরিস্থিতিতে যদি আমি আরেকটু রান করতে পারি, পরের ব্যাটসম্যানরা একটু সময় পাবে। তাতে দলের স্কোর অনেক বড় হবে। আমার সব সময়ই পরিকল্পনা এমনই থাকে। অনেক সময় উইকেট কঠিন থাকলেও চেষ্টা থাকে এমনভাবে খেলতে যেন রানের ধারাটা ঠিক রাখতে। পেছনের ব্যাটসম্যানরা যেন মনে না করে উইকেট অনেক কঠিন, এখানে হবে না। সব সময়ই ইতিবাচক মনোভাবে খেলতে চাই।’সৌম্যকে বিষয়টা ভাবাচ্ছে মানে তিনি ভেতরে ভেতরে ভালো করার ভীষণ তাড়না অনুভব করছেন। ভারতের ম্যাচটাই যদি হয় তাঁর রানখরা কাটিয়ে ওঠার ম্যাচ, এজবাস্টনে ভারতীয় বোলারদের মুখে সেদিন হাসি থাকবে না নিশ্চিত! এখন সৌম্য হাসবেন না ভারতীয় বোলাররা, সেটিই দেখার।
বরগুনা শহরের কলেজ রোড এলাকায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটা পর্যন্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তিন আসামির মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি চন্দনকে (২১) আজ সকালে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর দুপুরে গ্রেপ্তার হয় মামলার ৯ নম্বর আসামি হাসান (১৯)। তদন্তের স্বার্থে দুপুরে গ্রেপ্তার আরেক আসামির নাম জানায়নি পুলিশ।বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের একজনের নাম তদন্তের স্বার্থে বলতে চাচ্ছি না। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে ব্যাপক অভিযান চলছে। আশা করি দ্রুতই বাকিরা গ্রেপ্তার হবেন।’এর আগে নিহত রিফাতের বাবা গতকাল বুধবার ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।উল্লেখ্য গতকাল সকালে বরগুনার কলেজ সড়কের ক্যালিক্স কিন্ডারগার্টেনের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকার সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই হামলার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। নিহত রিফাত সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দুলাল শরীফের ছেলে।আরও পড়ুন:‘রিফাতের শরীরে ছিল অসংখ্য আঘাত’‘আমি শত চেষ্টা করেও তাঁকে রক্ষা করতে পারিনি’এই রামদা কে দিয়েছে?হত্যার স্বাভাবিকীকরণের ফল নিষ্ক্রিয়তারিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১সমাজটা কোথায় যাচ্ছে: হাইকোর্টএভাবে প্রকাশ্যে কোপাল!
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় গরম তেলে ঝলসে যাওয়া সেই স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, স্ত্রীর ঢেলে দেওয়া গরম তেলে দগ্ধ হয়েই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম দিদার হোসেন (৩৫)। তিনি সদর উপজেলার চররুহিতা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, সকালে ঢামেক হাসপাতালে দিদার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গরম তেল দিয়ে ঝলসে দেওয়ার মামলাটিতে এখন হত্যা মামলার ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ঘটনার পর থেকে দিদারের স্ত্রী ও তাঁর ভাই পলাতক রয়েছেন। তাঁদের আটকের চেষ্টা চলছে।পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৭ জুন পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী জহুরা বেগমের দেওয়া গরম তেলে শরীর ঝলসে যায় দিদার হোসেনের। তাঁর মুখ, হাত, বুকসহ শরীরের ৩০-৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়। ওই দিনই দিদারের মা বানু বেগম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মামলা করেন। এতে জহুরা বেগম ও তাঁর ভাই আলমগীর হোসেনকে আসামি করা হয়।মামলার এজাহারে বলা হয়, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ রোড এলাকায় স্ত্রীসহ ভাড়া বাসায় থাকতেন দিদার। ঘুমন্ত অবস্থায় দিদারের শরীরে গরম তেল ঢেলে দেন স্ত্রী জহুরা বেগম ও তাঁর ভাই আলমগীর হোসেন। এরপরই তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।দিদারের বড় ভাই আকবর হোসেন বলেন, ২০০৩ সালে উপজেলার চর রমণীমোহন গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে জহুরা বেগমের সঙ্গে দিদারের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে ২০১৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। পরে দুজনই অন্য জায়গায় বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে জহুরাকে আবার দিদার বিয়ে করেন। এরপর থেকে তাঁরা লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। পারিবারিক কলহের জেরে জহুরা গরম তেল ঢেলে দিদারের শরীর ঝলসে দিয়েছেন।আরও পড়ুন...গরম তেলে ঝলসে গেছে স্বামীর শরীর
হেমন্তের শেষ সময়। গ্রাম–বাংলার নতুন ধান তোলার উৎসব শেষ হয়েছে। এখন প্রায় সব চাষির বাড়িতেই কোলা (মাটির মাত্র) আর গোলা ভরা ধান। গ্রামে গ্রামে দলে দলে গোক্ষুনাথেরা চলে এসেছেন। তাঁদের হাতে মন্দিরা আর কাঁধে ঝোলা। চটের বস্তাগুলোকেই তাঁরা ঝোলার মতো করে কাঁধের ওপর দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছেন।তাঁরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। গোয়ালঘরে ঢোকার দরজার মুখে বসে হাতের মন্দিরা বাজিয়ে সুর করে গান গেয়ে গোলাঘর বেঁধে দিচ্ছেন। যাতে পরবর্তী এক বছর কোনো প্রকার রোগজীবাণু গোয়ালঘরে ঢুকতে না পারে। গান শেষ হলে গোক্ষুনাথ তাঁর কোমরের বাঁধা গামছার পোঁটলা থেকে একটা কাঁসার বন্ধ বাটি বের করে সেটার ঢাকনা খুলে সেখান থেকে লাল রং ডান হাতের বুড়ো আঙুলে ঠেকিয়ে সেটা দিয়ে গোয়ালঘরের ওপরের দিকে চৌকাঠে তিনটা দাগ এঁকে দিচ্ছেন। তারপর গৃহস্থের কাছ থেকে তাঁর সাধ্যমতো ধান নিয়ে ঝোলায় ভরে পরের বাড়িটাতে যাচ্ছেন।ছোটবেলায় বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই প্রতিবছর নিয়ম করে গোক্ষুনাথের এই গান শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। শুধু একটা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েও যে এমন মধুর সুরের গান করা সম্ভব, সেটা তাঁর কাছ থেকেই জেনেছিলাম।দুই.  পাশের পাড়ায় আলতাফ ফকির কিছুদিন আগে ফকির লাইনে মুরিদ হয়ে এসেছেন। মা-চাচিরা পরিকল্পনা করছেন তাঁর গান শুনতে যাবেন। তিনি অনেক ভালো দোতারা বাজিয়ে গান করেন। পায়ে হেঁটে আমরা তাঁর বাড়িতে হাজির হলাম। তিনি ঘরের মেঝেতে আসন মেলে বসে চোখ বন্ধ করে একমনে দোতারা বাজিয়ে চলেছেন। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ বাজানোর পর তিনি আরও কিছুক্ষণ ধরে শুধু হা শব্দটাই অনেকক্ষণ ধরে টেনে টেনে বলেন। তারপর সেটা শেষ হলে গান ধরেন। পুরুষ মানুষেরা আর ছোটরা আমরা ঘরের মধ্যে ঢুকে তাঁর কাছাকাছি বসে গান শুনছি আর নারীরা অন্য ঘরে বসেছেন। যাতে পুরুষদের সঙ্গে তাঁদের দেখা না হয়ে যায়।আলতাফ ফকির মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে গান করে যাচ্ছেন আর পাশাপাশি তাঁর দোতারা বাজিয়ে চলেছেন একমনে। আমরা মুগ্ধ হয়ে তাঁর গান শুনছি আর দোতারা যন্ত্রটা দেখে অবাক হচ্ছি। একটা ময়ূর আকৃতির কাঠের পাটাতনের ওপর মাত্র চারটা তার বসানো। সেখান থেকেই বের হচ্ছে বিভিন্ন রকমের সুর। এখনো চোখ বন্ধ করলে আলতাফ ফকিরের মাথা দুলিয়ে গান করার দৃশ্য চোখে ভাসে।তিন.  গ্রামে প্রতিদিনই কিছু মানুষ বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে আসেন। বেশির ভাগই সাধারণ ভিক্ষুক। তাঁরা এসে সরাসরি ভিক্ষা বা খাবার চান। তারপর সেটা পান বা না পান গৃহস্থের জন্য দোয়া করে বিদায় নেন। দু-একজন জাঁদরেল ভিক্ষুক ভিক্ষা না পেলে গোল বাঁধান। এর মধ্যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ একজন ভিক্ষুক ছিলেন, যিনি হয়তো বছরে এক বা দুবার আসতেন। তিনি সারাক্ষণই তাঁর ডান হাতে ধরা একতারা বাজিয়ে যেতেন।তাঁর একতারার বাজনা শুনলেই আমরা ছোটরা বাড়ির বাইরে এসে তাঁর পিছু নিতাম। তিনি সাধারণত বাড়ির সদর দরজার কাছে দাঁড়িয়ে একতারার সুরে কোনো একটা গান ধরতেন। আমরা সেটা শোনার অপেক্ষায় থাকতাম। তাঁর গলার স্বর ছিল অসম্ভব কোমল। শুনলেই মনের মধ্যে তাঁর জন্য এক অদ্ভুত মায়া তৈরি হতো। তাঁর পিছু নিয়ে ক্লান্ত হয়ে আমরা একসময় ফিরে আসতাম। কিন্তু তার প্রভাব থাকত অনেক দিন পর্যন্ত। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলত তাঁকে আগে কে দেখেছে।চার. পাশের পাড়ার একজন অন্ধ মানুষ মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করতে আসতেন। অবশ্য তাঁর সাহায্য চাওয়ার ব্যাপারটাকে আমরা ভিক্ষা বলতাম না। বলতাম তাঁর গান শুনতে যাচ্ছি আমরা। তিনি সাধারণত প্রত্যেকটা পাড়ায় এসে মাতব্বরের বাড়ির সামনে বা রাস্তার তেমাথায় অপেক্ষা করতেন। মানুষ জড়ো হলে গান ধরতেন। তিনি তাঁর ছোট মেয়েটাকে সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করতেন। মেয়েটা তাঁর হাত ধরে আগে আগে চলত আর তিনি পেছনে পেছনে।তেমাথায় একটি বাড়ির বাইরের খোলায় তিনি গোল হয়ে নেচে নেচে গান পরিবেশন করতেন। তাঁর এক হাতে থাকত খঞ্জনি আর অন্য হাতটা গানের তালে তাল মিলিয়ে অনবরত দুলিয়ে যেতেন। শুধু খঞ্জনি বাজিয়েও যে এমন মধুর গান করা যায়, তাঁকে দেখার আগে আমাদের জানা ছিল না। গান শেষে প্রত্যেকেই তাঁর নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী তাঁকে সাহায্য দিতেন। কারও টাকা না থাকলে বাড়ি থেকে চাল বা ধান এনে দিতেন। আমরা মনে মনে তাঁর মেয়েটার জন্য ঈর্ষান্বিত বোধ করতাম। যে ও কত সৌভাগ্যবান, সারাক্ষণই তাঁর বাবার মধুর গান শুনতে পায়।পাঁচ. নদীভাঙনের পর কুষ্টিয়ার শহরতলি বাড়াদীতে বসবাস করতে গিয়ে সন্ধান পেলাম বাউল আবদুর রব ফকিরের। আমরা অবশ্য তাঁকে রব চাচা বলেই সম্বোধন করতাম। আমাদের পাড়ার নাম ধোপাপাড়া। তার পূর্বে বাবুপাড়া। আর তার পূর্বে ফকিরপাড়া। বাড়াদীতে বসবাস করার শুরুতে আমরা ছোটরা কোনোভাবেই বুঝতে পারতাম না, ফকিরপাড়ার কেউই ভিক্ষা না করলেও কেন ওই পাড়াটাকে ফকিরপাড়া বলা হয়। পরবর্তী সময়ে বুঝেছিলাম ওই পাড়ার সবাই লালন ফকিরের মুরিদ। তাই এমন নামকরণ। তার মধ্যে রব চাচা ছিলেন অনেক বড় মাপের লালন সাধক ও গবেষক।এটা অবশ্য জেনেছিলাম তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁকে নিয়ে লিখতে গিয়ে। আসলে তিনি এতটাই নিভৃতচারী ছিলেন সত্যি কথা বলতে আমরা তাঁকে তেমন একটা পাত্তায় দিতাম না। অবশ্য তিনিও কারও মুখাপেক্ষী ছিলেন না। রাস্তার বাঁ দিক দিয়ে নীরবে সাইকেল চালিয়ে তাঁর কর্মস্থল কুষ্টিয়া চিনিকলে যেতেন আর আসতেন। আবার কখনো তাঁর ডান কাঁধে একটা লাল রঙের ঝোলা থাকত। আমরা জানতাম ওটার মধ্যে দোতারা রাখা।রব চাচাদের বাড়িতে বছরে অন্তত একবার সাধুসঙ্গের আসর বসত। তখন দেশ–বিদেশের শত শত বাউল তাঁর বাড়িতে গিজগিজ করতেন। আমরা মায়ের সঙ্গে সেটা দেখতে যেতাম। পরবর্তী সময়ে তিনি মারা যাওয়ার পর ইউটিউব ঘেঁটে তাঁর অনেক সাক্ষাৎকার ও দেশ–বিদেশে তাঁর পরিবেশনা দেখেছি। সেগুলো থেকেই সাধুসঙ্গ, মুরিদদের জীবনপ্রণালি ও চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনেছি। সেখান থেকেই বুঝেছি বাউলদের জীবন হবে অত্যন্ত অনাড়ম্বর। জাগতিক কোনো কিছুর প্রতি তাঁদের মোহ নেই বরং উল্টো তাঁরা মানুষকে জীবনের প্রকৃত রূপ সন্ধানের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন যুগ যুগ ধরে। সত্য কথা বলতে হবে, সহজ পথে চলতে হবে আর গুরুকে ভজতে হবে। এগুলোও তাঁর মুখ থেকেই শোনা।রব চাচা বাংলার মতো বিখ্যাত ব্যান্ডের সঙ্গেও গান করেছেন আবার ঘুরেছেন পৃথিবীর প্রায় পঞ্চাশটার ওপরের দেশ। তবুও তাঁর বাড়িঘর ও জীবন যাপন ছিল একজন প্রকৃত বাউলের জীবনধারার আলোকে আবর্তিত। তিনি কখনোই কারও সঙ্গে একটা কথা উঁচু গলায় বলেননি। বাড়িঘরের অবস্থায় তথৈবচ। কোনোমতে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই আছে শুধু। তাঁর ছেলে পরান ফকির বয়সে আমাদের ছোট হলেও আমাদের বন্ধুর মতো। পরান ফকিরকে আমরা পরানদা বলে সম্বোধন করি। তিনি এখন দোতারা বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।ছয় .এভাবে চলতে চলতে কখন জানি মনের গভীরে বাংলাদেশের লোকসংগীত ও বাউলসংগীতের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেছে। এটা এখনো অক্ষুণ্ন আছে। আশা করি আমরণ এই ভালোবাসাটা চিরজাগরুক থাকবে। ছোটবেলায় শোনা আব্বাসউদ্দীন, আবদুল আলীমের গান থেকে শুরু করে হালের দোহার, বাংলা বা লালন ব্যান্ডের গান তাই অনেক প্রিয়। এ ছাড়া ভ্যানে করে যাঁরা মালয় (আইসক্রিম) বিক্রি করতেন তাঁরা মুজিব পরদেশী বা আশরাফ উদাসের গান বাজাতেন। সেগুলোও অনেক ভালো লাগে এখন পর্যন্ত।অন্য অনেক ভাষার বা অন্য ঘরানার গান শোনা হলেও দিন শেষে অন্তরের প্রশান্তির জন্য এসব গানের কাছে ফিরে আসি। অনেক বড় বয়সে বাউল শাহ আবদুল করিমের গান শুনেছি। তাঁর জীবনবোধের সঙ্গে রব চাচার জীবনবোধের মিল খুঁজে পেলাম। তাঁর গানগুলোও অনেক শ্রুতিমধুর ও প্রাণস্পর্শী। এ ছাড়া বাংলাদেশের লালনগীতির অন্যতম গায়িকা ফরিদা পারভীনের গাওয়া গানগুলো অনেক বেশি ভালো লাগে। তাঁর গায়কির সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য দিক হচ্ছে তিনি প্রত্যেকটা শব্দ উচ্চারণ করেন প্রচণ্ড রকমের আন্তরিকতা দিয়ে।সাত.  জীবনের গতিময়তায় একসময় দেশান্তরী হয়ে সিডনিতে প্রবাসজীবন বেছে নিলেও মনের মধ্যে লোকগান বা বাউল গানের প্রতি ভালোবাসা একটুও কমেনি। বরং বেড়ে গেছে। অফিসে ইউটিউব থেকে গান এমপিথ্রি ফরম্যাটে কনভার্ট করে সেটাকে আবার সিডিতে রাইট করে গাড়িতে বাজাই সারাক্ষণ। আর কারও কাছে বাংলাদেশি বাদ্যযন্ত্র দেখলেই একটু ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি। এভাবেই একদিন স্বপন ভাইয়ের বাসায় দেখি দোতারা। তিনি বাংলাদেশ থেকে মুনা ভাবির বোনের মাধ্যমে সেই দোতারা এনেছেন। হাতের কাছে পেয়ে শৈশবে দেখা বাদ্যযন্ত্রটা নেড়েচেড়ে দেখলাম। কিন্তু কিছুতেই যেন সাধ মিটছিল না।পরে তাঁর দোতারার তার ছিঁড়ে গেলে আমি আমার এক ছাত্রীর মাধ্যমে কুষ্টিয়ার লালনের আখড়ার সামনের দোকানগুলো থেকে তার আনিয়ে দিলাম। আমি মাঝেমধ্যে স্বপন ভাইয়ের দোতারাটা হাতে নিয়ে সামান্য টুংটাং করি। কিন্তু শেখার মতো সাহস বা ধৈর্য কোনোটাই আমার নেই। স্বপন ভাই লেগে আছেন। তিনি অনলাইনে ইতিমধ্যে আহমেদ তারিক ভাইয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। আহমেদ তারিক ভাই স্বশিক্ষিত দোতারা বাদক। এ ছাড়া তিনি অন্য অনেক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন। যেমন বাঁশি খঞ্জনি ইত্যাদি।এরপর একদিন স্বপন ভাই তারিক ভাই ও তাঁর মেয়ে তাইশা এবং কায়সানকে বাংলা স্কুলে নিয়ে এলেন। তারিক ভাইয়ের সঙ্গে আরও এলেন শাহরিয়ার ভাই। তারিক ভাই নিজের তাগিদে দোতারা বাজানো শিখেছেন। সিডনির সমমনা লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা ব্যান্ডের মতো দলও বানিয়েছেন। নাম তার শিকড়। তাঁর ইচ্ছে প্রবাসী দ্বিতীয় প্রজন্মকে বাংলাদেশের বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের অন্তরের ক্ষুধা মেটানোর জন্য নিজেদের মধ্যে মাঝেমধ্যে পরিবেশন করা। তাঁর ছেলেমেয়ে দুজনই বাবাকে এই কাজে সঙ্গ দেয়। যার ফলে এই ছোট বয়সেই তাদের তালজ্ঞান অনেক প্রখর। শাহরিয়ার ভাইও তারিক ভাইকে সংগত দেন। পাশাপাশি লেখালেখি করেন। নতুন নতুন দেশ ও ভাষার মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া ও তাদের ভাষা সম্বন্ধে জানা তাঁর শখ।তাঁরা যেদিন বাংলা স্কুলে এলেন সেদিন আমার যেতে একটু দেরি হয়ে গেল। পরে গিয়ে দেখি তাঁরা বিভিন্ন রকমের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে টিউনিং করছেন। তাঁদের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর আমরা আবদার করলাম আমাদের কিছু বাজিয়ে শোনানোর জন্য। তাঁরাও সানন্দে রাজি হলেন। ইতিমধ্যেই স্কুলের ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়াতে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা এসে আমাদের সঙ্গে শ্রোতৃমণ্ডলী হিসেবে যোগ দিলেন। বাচ্চারা সব বাদ্যযন্ত্র দেখছিল আর প্রশ্ন করে যাচ্ছিল। তারিক ভাই, শাহরিয়ার ভাই, বিধান দাদা আর স্বপন ভাই দাঁড়িয়ে গেলেন আর সেই সঙ্গে যোগ দিল তাইশা আর কায়সান। যেকোনো পরিবেশনায় সামনাসামনি অনেক মনোমুগ্ধকর। আর সেটা যদি হয় শৈশব–কৈশোরে শোনা বাদ্যযন্ত্রের পরিবেশনা, তাহলে ভালো লাগাটা অনেক গুণ বেড়ে যায়। তাদের একের পর এক পরিবেশনা শেষ হলে আমি, আশফাক ভাই ও রহমত ভাই আমরা যন্ত্রগুলো নেড়েচেড়ে দেখলাম। আবদার করলাম এখন থেকে আমাদের মাঝেমধ্যে বাজিয়ে শোনাতে। তাঁরা বলছিলেন তাঁদের সঙ্গে বাজনাতে যোগ দিতে। কিন্তু আমি রাজি হলাম না। কারণ, আমার সংগীত বা বাদ্যযন্ত্র বিষয়ে জ্ঞান শূন্যের কোঠায়।বহু সংস্কৃতির দেশ অস্ট্রেলিয়া। এ দেশ সরকারিভাবে সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণের জন্য অনেক বেশি উদ্যোগী। বাংলা স্কুলপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বাংলা ভাষা শিক্ষা দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। আর তারিক ভাইয়ের মতো কিছু পাগলাটে মানুষ প্রবাসী প্রজন্মকে বাংলাদেশের তাঁদের ফেলে আসা শিকড়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কাজটা করে যাচ্ছেন। নিজ উদ্যোগে বিনা পারিশ্রমিকে। আশা করি প্রবাসে বেড়ে ওঠা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁদের মধ্যে এগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করে যাবে। এতে করে তাঁদের একই সঙ্গে শিকড় ও অন্য দেশের সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান তৈরি হবে। তখন সবাই একে অপরের প্রতি সহনশীল আচরণ করবে। কারণ, বর্তমান অস্থির পৃথিবীতে সহনশীলতার বড্ড অভাব।
পিরোজপুরের নেছারাবাদে কলেজছাত্রী ঝর্ণা রানি দেউড়ি (১৯) হত্যা মামলায় এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মিজানুর রহমান এ রায় দেন।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম লিটন মণ্ডল (৩৪)। তিনি নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর গ্রামের সুধীর রঞ্জন মণ্ডলের ছেলে। নিহত ঝর্ণা রানি দেউড়ি একই গ্রামের সুভাষ চন্দ্র দেউড়ি মেয়ে। তিনি বানারীপাড়া শাহ মাহামুদিয়া কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০০৯ সালের মে মাসে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, লিটন মণ্ডল ঝর্ণা রানিকে ভালোবাসতেন। ঝর্ণা বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তিনি স্থানীয়দের মাধ্যমে মেয়েটির পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে ঝর্ণার পরিবার বিয়ের ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরও লিটন পিছু না ছাড়লে ঝর্ণার পরিবার মেয়েকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বরিশালের বানারীপাড়ায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। পরে আবার আটঘর গ্রামের বাড়ি চলে আসে। ২০০৯ সালের ১৪ মে সকালে ঝর্ণা তাঁর বড় বোনের বাড়ি থেকে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। পথে কৌড়িখাড়া খেয়া ঘাট থেকে লিটন ঝর্ণাকে একটি ট্রলারে তুলে নেন। সাক্ষীদের দাবি, সে সময় বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় লিটন ঝর্ণাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্থানীয় সন্ধ্যা নদীতে ফেলে দেন।মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বানারীপাড়া থানা-পুলিশ নদী থেকে অজ্ঞাত হিসেবে ঝর্ণার লাশ উদ্ধার করেছিল। এ নিয়ে ওই বছরের ১৭ মে একটি পত্রিকায় ‘বানারীপাড়ায় অজ্ঞাত লাশ’ উদ্ধারের সংবাদ প্রকাশ হয়। এর সূত্র ধরে ঝর্ণার বাবা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মেয়েকে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৪ মে সুভাষ চন্দ্র লিটন মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য নেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রতন দেউড়ি, রণজিৎ হালদার ও বিপুল শাঁখারি নামের তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়।রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (বিশেষ পিপি) আবদুর রাজ্জাক খান। তিনি এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। আবদুর রাজ্জাক খান জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে আসামি লিটন মণ্ডল পলাতক। লিটন মণ্ডলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন ফাতেমা বেগম। খালাস পাওয়া আসামিদের আইনজীবী ছিলেন কানাই লাল বিশ্বাস।
২০২০ সালে কে হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, সে প্রশ্নে নিজেদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বিতর্ক শুরু করেছে ডেমোক্রেটিক পার্টি।গতকাল বুধবার মায়ামিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির মোট ১০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী নিজেদের মধ্যে দুই ঘণ্টা স্থায়ী এক টিভি বিতর্কে অংশ নেন। আরও ১০ জন একই বিতর্কে অংশ নেবেন আজ বৃহস্পতিবার। এর বাইরে রয়েছে আরও চারজন প্রার্থী, তাঁরা বিতর্কে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।স্বাস্থ্যবিমা ও অভিবাসনের প্রশ্ন ছিল বিতর্কের প্রধান দুই বিষয়। তিন দিন আগে এল সালভাদরের অস্কার মার্টিনেস ও তাঁর বছর দু–একের কন্যা ভ্যালেরিয়া মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে আসার চেষ্টা করে খরস্রোতা রিও গ্রান্দে নদীতে ডুবে নিহত হন। তাঁদের মৃতদেহের ছবি দেশের সব পত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হলে অনেকে এই মৃত্যু ২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে পালানোর চেষ্টায় সমুদ্রে ডুবে নিহত কুর্দি বালক আয়লানের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন। অভিবাসননীতির কারণে এই মৃত্যু, সে কথা স্বীকারের বদলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সব দোষ চাপান বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের ওপর। তাঁদের কারণেই অভিবাসন প্রশ্নে কোনো সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না, তিনি অভিযোগ করেন।বিতর্কে অংশগ্রহণকারী ডেমোক্রেটিক প্রার্থীরা অস্কার ও ভ্যালেরিয়ার মৃত্যুর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বহিরাগত প্রশ্নে তাঁর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে দায়ী করে অভিবাসন প্রশ্নে দ্রুত সংস্কারের পক্ষে মত দেন। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আগত আশ্রয়প্রার্থী বহিরাগত ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে আসতে অনুমতি দেওয়ার বদলে তাদের মেক্সিকোতে রাখার যে ব্যবস্থা চালু হয়েছে, এই মৃত্যুর সেটাই কারণ। বারাক ওবামা আমলের সাবেক গৃহায়ণমন্ত্রী হুলিয়ান কাস্ত্রো বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম দিনই এক নির্বাহী আদেশে এই নিয়মের পরিবর্তন করবেন।অন্য প্রার্থীরাও ট্রাম্পের অভিবাসননীতি রদের দাবি সমর্থন করেন। সিনেটর কোরি বুকার বলেন, ট্রাম্পের হাতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। তারা যখন এ দেশে প্রবেশ করে, তাদের কেউ নিজেদের মানবাধিকার সীমান্তে ফেলে রেখে আসে না। বুকার ও অন্য প্রার্থীরা ‘ডাকা’ কর্মসূচির অন্তর্গত তরুণ বহিরাগতদের বৈধতা প্রদানেরও অঙ্গীকার করেন।
ফ্রান্স ছেড়ে আবার স্পেনে ফিরতে চাইছেন নেইমার। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের এমন নিউজকে আর উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ বার্সেলোনার সহসভাপতি আজ জানিয়ে দিয়েছেন, গুঞ্জন নয়, নেইমার আসলেই ফিরতে চান কাতালান ক্লাবে।গত এক বছর ধরেই দলবদলের বাজারকে স্বস্তি দিচ্ছেন না নেইমার। আজ রিয়াল মাদ্রিদ তো পরদিন বার্সেলোনায় যাচ্ছেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড। এ দলবদলের বাজারে সে তুলনায় একটু পানসে সময় কাটাচ্ছেন। যত গুঞ্জন, সবই বার্সেলোনা ঘিরে। স্প্যানিশ পত্রিকা স্পোর্ত দুই দিন আগে দাবি করেছে নেইমারের ইচ্ছা এবার বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। বার্সেলোনায় ফিরছেন এই ফরোয়ার্ড। দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়ে গেছে , এখন শুধু দলবদলের অঙ্কটা ঠিক করা হবে পিএসজির সঙ্গে।বার্সেলোনার সহ সভাপতি জর্দি কারদোনের আজ স্বীকার করে নিয়েছেন নেইমারের আগ্রহের কথা, ‘এখন পর্যন্ত যা পড়েছি এবং এটা নিশ্চিত যে নেইমার বার্সেলোনাতে ফিরতে চায়। কিন্তু বার্সেলোনা নেইমারকে কিনতে চায় এ কথায় (পত্রিকার দাবি) আমাদের আপত্তি আছে। খেলোয়াড় তার ইচ্ছের কথা জানিয়েছে এবং আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। মিডিয়া যা বলছে (বার্সেলোনাও কিনতে চায়),সেটা বাড়িয়ে বলেছে। আমরা যারা সিদ্ধান্ত নেব তারা এখনো নিশ্চিত নই নেইমারকে চাই কি না। আমি এখনো অনিশ্চিত এ কারণে যে, আমরা ওর সঙ্গে যোগাযোগ করিনি।’ বার্সেলোনা ছেড়ে নেইমার নিজে থেকেই পিএসজিতে গিয়েছিলেন। একটি দলের প্রাণভোমরা হওয়ার ইচ্ছেটা গুরুত্ব পেয়েছিল এই নেইমারের কাছে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে আবার বার্সেলোনায় ফিরতে চাইছেন। খেলোয়াড় নিজে থেকে ফিরতে চাওয়ায় বার্সেলোনা যে সুবিধাজনক অবস্থায় সেটাও স্বীকার করেছেন কারদোনের, ‘একজন খেলোয়াড় যে বিদায় নিয়েছে, তার এভাবে ফিরতে চাওয়ায় আমি বিস্মিত নই। কারণ, এর চেয়ে ভালো খুব কম জায়গাই আছে। আমরা এটা মাথায় রাখব। অনেকেই আমাদের ছেড়ে গিয়েছিল উন্নতির জন্য, আবার অনেকে অন্য কারণে। ও যেসব কারণে বিদায় নিয়েছিল, তার অধিকাংশই আমি বুঝিনি। নেইমারের সিদ্ধান্তের ব্যাপারগুলো আরেকটু পরীক্ষা করা হবে।’নেইমারের মতো খেলোয়াড়কে পেলে বার্সেলোনার জন্য যে ভালো সেটা স্বীকার করেছেন সহ সভাপতি। কিন্তু নেইমারের অতীত তাদের একটু সাবধান হতে বলছে, ‘সে নিজে বার্সেলোনা ছেড়েছে। সে অবশ্যই দারুণ খেলোয়াড় এবং খেলোয়াড়ি দিক থেকে ওর মূল্য সবাই জানি। কিন্তু ও যেভাবে বিদায় নিয়েছিল সেটা নিয়ে আমাদের আরও ভাবতে হবে। আমার মনে হয় কিছু তথ্য বলা হচ্ছে যা সত্য নয়। যখনই কোনো নাম উচ্চারিত হয় (দলবদল নিয়ে), আমরা উত্তেজিত হয়ে যাই। কিন্তু আমাদের একটি বাজেট আছে। আমাদের আগে দেখতে হবে কাদের বিক্রি করা যাবে, তারপর কাদের আনা যাবে।’
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে ‘বড় ভাই’ সম্বোধন না করায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েক দফা মারামারির খবর পাওয়া গেছে। এতে ঘটনাস্থল থেকে ছয় ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ।উপজেলার বোয়ালিয়া উচ্চবিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় এ বিষয় নিয়ে সোম, মঙ্গল ও বুধবার কয়েক দফা মারামারি করেছে শিক্ষার্থীরা।বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের মাঠে নবম শ্রেণির এক ছাত্র ও দশম শ্রেণির এক ছাত্রের মধ্যে কথা হচ্ছিল। কথা বলার সময় দশম শ্রেণির ছাত্রকে ‘ভাই’ বলে ডাকেনি নবম শ্রেণির ছাত্র। এতে দশম শ্রেণির ছাত্র রেগে যায়। এ নিয়ে নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে নবম শ্রেণির ছাত্র দশম শ্রেণির ছাত্রকে মারধর করে। এই ঘটনার জেরে ওই দুই শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে কয়েক দফা মারামারির ঘটনা ঘটে।স্থানীয় সূত্রে আরও জানায়, মারামারির ঘটনার জেরে বুধবার সন্ধ্যায় দশম শ্রেণির ছাত্রের এক সহপাঠী বিদ্যালয়ের পাশের উপাধি গ্রামের শান্তিনগর বাজারে লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে ছয়জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম এস ইকবাল বলেন, অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে আটক ছাত্রদের বুধবার রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়নি। বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোকন চন্দ্র শীল বলেন, ঘটনার সময় তিনি এলাকার বাইরে ছিলেন। পরে এসব জানতে পারেন। ছাত্রদের উভয় পক্ষ ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে সভা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় মেয়েদের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদকারী আহত নার্স তানজিনা আক্তারের (২৪) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) তাঁর মৃত্যু হয়। গত ২০ জুন তানজিনাকে ছুরিকাঘাত করে স্থানীয় কয়েক তরুন।তানজিনা আক্তার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের মাদ্রাসাপাড়া এলাকার আবদুল হামিদের মেয়ে। তিনি ওই ইউনিয়নের অবস্থিত ঠাকুরগাঁও গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মূল অভিযুক্ত মো. জীবন বর্তমানে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে আছে।মামলার এজাহার, পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির পাশে হওয়ায় তানজিনা তাঁর কর্মস্থলে হেঁটে যাতায়াত করতেন। প্রায় সময়ই তিনি পথে স্থানীয় তরুণ জীবন ও তার ৪-৫ জন সহযোগীকে বিভিন্ন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতে দেখে প্রতিবাদ করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০ জুন হাসপাতালে যাওয়ার পথে তানজিনাকে ছুরিকাঘাত করে জীবনেরা। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তানজিনাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই আজ তাঁর মৃত্যু হয়।ঘটনার দিন (২০ জুন) তানজিনার বাবা আবদুল হামিদ বাদী হয়ে জীবনসহ অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ জীবনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান।মামলার এজাহারে জীবনের বয়স ১৯ বছর উল্লেখ করা হয়। তবে পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে জীবনের বয়স ১৪ বছর পেয়েছেন। ফলে তাকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।তানজিনা আক্তারের চাচাতো ভাই মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘একটা সময় তানজিনা অভিযুক্ত ছেলেটিকে (জীবন) প্রাইভেট পড়াত। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ছেলেটি যখন বিভিন্ন মেয়েদের উত্ত্যক্ত করত তখন সে তার প্রতিবাদ করত। এই প্রতিবাদ করতে গিয়েই আজ তাঁকে জীবন দিতে হলো। রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শরীরে ২৭ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টার পর তাকে বাঁচানো গেল না। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’নিহত তানজিনার বাবা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমার মেয়ে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আজ বখাটেদের হাতে হত্যার শিকার হলো। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আর যেন কোনো বাবাকে এভাবে সন্তান হারাতে না হয়।’ তানজিনা আক্তার তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোতাউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমে মামলাটি হত্যাচেষ্টার ধারায় রুজু করা হয়েছিল। এখন যেহেতু নির্যাতিতা (ভিকটিম) মারা গেছেন সে ক্ষেত্রে এ মামলায় এখন হত্যার ধারা সংযুক্ত হবে। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে অভিযুক্তের বয়স ১৪ বছর পাওয়া গেছে। সে জন্য গ্রেপ্তারের পর তাকে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মামলার আরও তদন্ত চলছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে একটি মামলা হয়েছে। মামলার পর স্বামীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার। তাঁর স্বামীর নাম মাজেদ ফকির। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান আছে।এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন গৃহবধূর স্বামী মাজেদ ফকির, শ্বশুর টগর ফকির, ভাশুর শাহজাহান ও তাঁর স্ত্রী ছানোয়ারা বেগম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।পুলিশ ও গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে মাদারগঞ্জ পৌর শহরের চরবওলা গ্রামের দুদু প্রামাণিকের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার বালিজুড়ি গ্রামের মাজেদ ফকিরের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরকে আসবাবসহ বিভিন্ন জিনিস যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার ঈদের আগ থেকে ইয়াসমিনের কাছে আরও তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন মাজেদ। টাকা দিতে না পারায় মাজেদ ইয়াসমিনকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতেন। গত মঙ্গলবার সকালে যৌতুকের টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে মাজেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ইয়াসমিনকে প্রথমে মারধর করেন। এরপর বাড়ির আঙিনায় থাকা একটি সুপারি গাছে বেঁধে রাখেন। এ সময় লোহার রড দিয়ে ইয়াসমিনকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ইয়াসমিন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে বাবার বাড়ির লোকজন ইয়াসমিনকে উদ্ধার করেন। ওই দিনই তাঁকে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। গৃহবধূর বাবা দুদু প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কৃষক মানুষ। বিয়ের সময় নগদ এক লাখ টাকা, তিনটি গরু, একটি মোটরসাইকেল ও ঘরের সব আসবাবপত্র দিয়েছিলাম। তাঁদের সংসার ভালোই চলছিল। হঠাৎ করে ছোট ঈদের আগে দোকান দেওয়ার জন্য আমার কাছে তিন লাখ টাকা চান। আমি দিতে পারেনি। এর পর থেকে আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছিল। এর আগে একবার আমার মেয়েকে ব্যাপক মারধর করে হাতের দুই আঙুল ভেঙে দিয়েছিল। এবার গাছে বেঁধে লোহার রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করেছে।’মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মাদারগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইয়াসমিনের অভিযোগ পেয়েই আমরা মামলা নিয়েছি। তাঁর স্বামী, শ্বশুরসহ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
ব্যাটিং বেছে নিয়েও উইকেটের পুরো সুবিধা নিতে পারেনি ভারত। ৭ উইকেটে ২৬৮ রান তুলেছে তারা। কোহলির পর ধোনিও তুলে নিয়েছেন ফিফটি।ভারতের চারে ব্যাট করবে কে? গত দুই তিন মাস ধরে চলা এ আলোচনা ক্রিকেট বিশ্বকাপে আরও প্রবল হয়েছে শিখর ধাওয়ান চোটে পড়ায়। চারে বিজয় শংকরের টানা ব্যর্থতার পর এ নিয়ে কথা বলাটা এখন মেনে নিতে হচ্ছে সবাইকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের পর অবশ্য আলোচনাটা শুধু চার নয়, পাঁচ-ছয় পজিশন নিয়েও শুরু হতে বাধ্য। ওল্ড ট্রাফোর্ডের উইকেটেও যে ভারত মাত্র ২৬৮ রান তুলল, এর পেছনে যে ভঙ্গুর মিডল অর্ডারেরই পুরো দায়।ম্যানচেস্টারেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৩৬ রান তুলেছিল ভারত। আফগানিস্তানের বোলারদের উড়িয়ে ইংল্যান্ডও ৩৯৭ রান করেছিল। আজও পিচ রিপোর্টের পর রানবন্যার আশা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে ৪৯ রান না তুললে আজ আড়াই শ পেরোতে পারত না ভারত।ইনিংসের শুরুতে রোহিত শর্মার আলোচনার জন্ম দেওয়া বিদায়ের পরও ভারতের খুব একটা ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হয়নি। কারণ, বিরাট কোহলি যে উইকেটে এসেছেন। চাপের মুখে এত অবলীলায় খেলেন যে অবিশ্বাস্য ঠেকে। কোহলির দারুণ ছন্দ দেখে অন্যদিকে লোকেশ রাহুলও খেলছিলেন ভালো। একমাত্র জ্যাসন হোল্ডারের বলেই কোহলি-রাহুল স্বস্তি নিয়ে খেলতে পারছিলেন না। হোল্ডারের বলেই থামল দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ইনসুইং বলটা পড়তেই পারেননি রাহুল।এরপরই স্টার স্পোর্টসের সব আলোচনার কেন্দ্রে থাকা শংকর নামলেন। এবং আলোচনাকে সার্থক করে মাত্র ১৪ রান করে ফিরলেন। এরপরও ধোনিকে নামানো হয়নি। কেদার যাদব নেমে মাত্র ৭ রান যোগ করে ফিরেছেন। ১৪০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ধোনি নামলেন।ধোনি নামার পর কোহলি কোথায় চাপমুক্ত হবেন, উল্টো চাপ বাড়ল। অন্য প্রান্তে ধীর গতির খেলার চাপে দ্রুত রান নিতে হচ্ছিল কোহলিকে। ম্যাচের পর ম্যাচ ধরে এ কাজটি করে ক্লান্ত কোহলি আজ আর পারেননি। ৩৯তম ওভারে হোল্ডারের বলেই ফিরেছেন কোহলি। ৮২ বলে ৯ চারে ৭২ রান করে কোহলি ফিরলেন। ১৮০ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল ভারত।ধোনির রান তোলার গতি এরপরও বাড়েনি। ৪৫ ওভার শেষেও ৪৫ বলে ২৬ রান ছিল ধোনির। অন্যপ্রান্তে পান্ডিয়া অবশ্য বলে বলে রান তুলে সেটা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এরপরই যা একটু প্রাণ পেয়েছে ভারতীয় ইনিংস। ৪৯তম ওভারে ৭০ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি থেমেছে। কটরেলের বলে আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৪৬ রান করেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। শেষ দিকে ঝড় তুলে ৬১ বলে ৫৬ রান তুলে অপরাজিত হয়ে মাঠ ছেড়েছেন ধোনি।
১৯৭১ সালের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয়, দাবি করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ বলেছেন, জামায়াতে ইসলামি দেশপ্রেমী শক্তি।আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মধ্যবর্তী নির্বাচন ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ এসব কথা বলেন।‘নাজুক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক’ পরিস্থিতি এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এলডিপি ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে এক মঞ্চের ঘোষণা দেয়। সেখানে জামায়াত থাকবে কি না? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, ‘১৯৭১ সালের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত এক না। তাদের মধ্যে অনেক সংশোধন এসেছে এবং তারা নিজেদের মধ্যেও বসে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তারা দেশপ্রেমী শক্তি। তারা দেশকে ভালোবাসে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চায়।’ এ ছাড়া তিনি জানান, দেশপ্রেমী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাসী, তাদের সবাইকে নতুন মঞ্চে নেবেন। তবে দালালদের এই মঞ্চে রাখবেন না। অলি আহমদ বলেন, অন্যের কাঁধের ওপর বন্দুক রেখে চালানো ঠিক না। সব সময় অন্যকে দোষ দিয়েও এগোনো ঠিক না। ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ আলাদা জোট কি না? এ প্রশ্নের জবাবে এলডিপি সভাপতি বলেন, ‘এটা জোট কেন হবে? আমরা তো ২০–দলীয় জোটে আছি এবং থাকব। ২০ দলে বিএনপি মূল দল। তারা ২০ দলে থেকেই কামাল হোসেনের সঙ্গে জোট গড়েছে। ২০ দলের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যার যার জায়গা থেকে কর্মসূচি করতে।’এলডিপির মঞ্চে আর কে কে থাকবেন? জানতে চাইলে অলি আহমদ বলেন, যথাসময়ে সে তালিকা প্রকাশ করবেন।সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে অলি আহমদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সেখানে তিনি বলেন, বিএনপি অনেক বড় ইস্যু পেয়েও আন্দোলন করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ‘কারণ আমাদের মধ্যে অনেকে অবৈধ পন্থায় উপার্জিত টাকা/ধন সম্পদ রক্ষা করার জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে কাজ করছি।’জাতীয় মুক্তি মঞ্চ থেকে অলি আহমদ সরকারের উদ্দেশে ১৭টি দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হচ্ছে—জাতীয় সংসদের পুনঃ নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, দেশবিরোধী চুক্তি প্রকাশ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা, জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিশন গঠন, শিক্ষিত যুবকদের নিয়োগে অগ্রাধিকার, গুম ও খুন বন্ধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হয়রানি বন্ধ, ভেজাল ও নকল ওষুধ বন্ধ, খাদ্যে ভেজালকারীদের মৃত্যুদণ্ড, কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য, অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার, জাল ভোট প্রদানকারী ও সাহায্যকারীদের শাস্তি দাবি, ডিজিটাল আইন বাতিল, দুর্নীতি দমন আইনে বৈষম্য দূরীকরণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সংবিধান অনুযায়ী সুযোগ সৃষ্টি।এ ছাড়া এই দাবির মধ্যেই এলডিপি লিগ্যাল এইড কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়। যেখানে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মামলা পরিচালনার সব দায়িত্ব তারা নেবে।সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, খেলাফত মজলিসের আহমদ আলি কাসেমী প্রমুখ।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘রাজউককে একটা ইমেজপূর্ণ জায়গায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছি। রাজউকের ভেতরে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্তরিকভাবে কাজ করছে। কিন্তু একটি ক্ষুদ্র অংশের জন্য রাজউককে বদনামের বোঝা কাঁধে নিতে হয়। হাতিরঝিল থেকে শুরু করে সব নির্মাণের অর্জন ঢাকা পড়ে যায়, বালিশ-কেলেঙ্কারির বোঝা আমাদের মাথায় নিতে হয়।’আজ বৃহস্পতিবার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অডিটোরিয়ামে রাজউক সেবা সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা রাজউককে জনবান্ধব, স্বচ্ছ, দীর্ঘসূত্রতামুক্ত একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারব। রাজউককে আমরা বিকেন্দ্রীকরণ করার কথা ভাবছি। এত বড় ঢাকায় একটি রাজউকে বসে সবকিছু পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজউকের সব জোনকে শক্তিশালী করতে চাই। স্তরভিত্তিক পরিসর বাড়ার কারণে রাজউকের বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে। এটা তিনি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছেন। অদূর ভবিষ্যতে রাজউকের কেন্দ্রিকতা বিকেন্দ্রীকতায় পরিণত হবে, যাতে মানুষ সেবা পেতে পারে।’রেজাউল করিম বলেন, ‘রাজউককে আমরা একটা ইমেজপূর্ণ জায়গায় ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছি। রাজউকের ভেতরে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্তরিকভাবে কাজ করছে, কিন্তু একটি ক্ষুদ্র অংশের জন্য রাজউককে বদনামের বোঝা কাঁধে নিতে হয়। দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিল থেকে শুরু করে সব নির্মাণের অর্জন ঢাকা পড়ে যায় যখনই বালিশ-কেলেঙ্কারির বোঝা আমাদের মাথায় নিতে হয়। যাঁদের ভুল আছে, তাঁদের শোধরানোর জন্য বারবার বলছি। যাঁরা শোধরাবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে মন্ত্রণালয়, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে শুরু করে একটা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী অন্যায়ভাবে হয়রানি হোক, এটা আমি চাই না।’মন্ত্রী বলেন, ‘রাজউকের ৯০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁদের সম্পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন। বাকি ক্ষুদ্র অংশকে অনুরোধ করছি সবাই মিলে ভালো হয়ে যান। ভালো না হলে আপনাদের রাজউকে প্রয়োজন আছে কি না, ভেবে দেখতে হবে। এত পরিশ্রমের রাজউক দু-একজনের কারণে নষ্ট হয়ে যাবে, বদনাম কাঁধে নেবে, এটা হতে পারে না।’সাধারণ মানুষদের উদ্দেশে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘রাজউককে সাহায্য করুন। গতানুগতিকভাবে রাজউকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন না। রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্যে যেভাবে কাজ করছেন, এটা প্রশংসার দাবি রাখে। রাজউকের সেবাটাও দেখুন। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা কাউকে ছাড় দিতে চাই না। দুর্নীতি কোনোভাবে চলতে দেওয়া যাবে না।’সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রতিবেদন করার পূর্বে একটু খতিয়ে দেখুন, রাজউক তার নৈমিত্তিক কাজের বাইরে গিয়ে, গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে আগের চেয়ে গতিশীলতা নিয়ে কাজ করছে কি না। কোনো বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকলে রাজউকের চেয়ারম্যান, সদস্য এমনকি প্রয়োজনে আমাকে জিজ্ঞেস করুন। আমরা কৈফিয়ত দেব। আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে প্রতিবেদন করলে ভালো হয়। আমি চাই না আমার বিরুদ্ধে, মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে, রাজউকের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবেদন করবেন না। তবে এটা চাই প্রতিবেদনে যেন সারবস্তু, তথ্য ও ভিত্তি থাকে। অনিয়ম হলে অবশ্যই প্রতিবেদন করবেন, ব্যবস্থা নেব।’সভাপতির বক্তব্যে রাজউকের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বলেন, ‘রাজউকের জনবল কম থাকা সত্ত্বেও সেবা প্রদান কার্যক্রম আগের চেয়ে অনেক বেগবান হয়েছে। স্বল্প সময়ে কোনো রকমের হয়রানি ছাড়াই সেবাগ্রহীতারা যাতে সেবা পেতে পারেন, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’প্রধান অতিথি সমাপনী অনুষ্ঠানের পূর্বে বিভিন্ন সেবা স্টল ঘুরে দেখেন এবং বিভিন্ন সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে সেবা গ্রহণ সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন।উল্লেখ্য, সেবাগ্রহীতাদের সহজে ও দ্রুততম সময়ে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও রাজউকে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২৩-২৭ জুন ৫ দিনব্যাপী পালন করা হয়েছে রাজউক সেবা সপ্তাহ ২০১৯।সেবা সপ্তাহ চলাকালে রাজউকের বিভিন্ন শাখা থেকে সেবাগ্রহীতার ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, ভবন নির্মাণ অনুমোদন, রাজউকের প্লট/ফ্ল্যাটের নামজারি, আমমোক্তার অনুমোদন, নকশা অনুমোদন প্রভৃতি সেবা প্রদান করা হয়। সেবাগ্রহীতারা সেবা উন্নয়নে মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন। সেবা সপ্তাহে রাজউকের নগর-পরিকল্পনা শাখা থেকে ২৩০টি ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে ১৮৮টি ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদন এবং এস্টেট ও ভূমি শাখা থেকে ৬৯টি নামজারি, ৩২টি প্লটের দখল হস্তান্তর, ৮১টি প্লটের আম-মোক্তার/হস্তান্তর/লিজ ডিট/হেবা, ০৭টি নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্র, ১০টি ঋণ গ্রহণের অনাপত্তিপত্র, ৩২টি হাতিরঝিল ফ্ল্যাটের সাময়িক বরাদ্দপত্র, ১৭৫টি উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে।অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি জালাল আহমেদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি মো. আবদুস সবুর। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আমজাদ হোসেন খান। তথ্যসূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি
রোহিঙ্গাদের নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে আছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছি, যাতে তারা ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে। ক্যাম্পের ভেতর যেন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছি।’ বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘নাফ নদীর তীরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় ছিল, সেই দৃশ্যটি নিশ্চয়ই মনে আছে। এখন আমরা এই রোহিঙ্গা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। তারা যেকোনো জায়গায় চলে যাচ্ছে। তবে তারা চলে গেলেও নিরাপত্তা বাহিনী আবার তাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসছে।’অল্প সময়ের মধ্যে লাখ লাখ রোহিঙ্গা চলে এসেছে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এটি তাঁদের ধারণার বাইরে ছিল। ধারণা থাকলে আগে থেকে একটা ব্যবস্থা নিতে পারতেন। এখনো তাঁরা সেরকম কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি। তাদের (রোহিঙ্গা) জন্য একটা কাঁটাতারের বেড়া করার কথা ছিল, সেটির কাজও সম্পন্ন করতে পারেননি।বরগুনায় দিনের বেলায় স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাকে দুঃখজনক মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেন ঘটেছে তদন্ত করে জানা যাবে। পুলিশ বসে নেই। দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি যারা জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশের দক্ষতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এই পুলিশকে যদি ১০ বছর আগের পুলিশ মনে করে কেউ, তাহলে ভুল করবে। আমাদের পুলিশ অনেক সক্ষম ও অনেক দক্ষ।চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহাবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাংসদ ওয়াসিকা আয়শা খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ সভাপতি আমেনা বেগম প্রমুখ। পরে বিকেলে নগরের আরেকটি কমিউনিটি সেন্টারে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১০ পুলিশ কর্মকর্তা চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় ১০ পুলিশ কর্মকর্তাকে। দেশে ও দেশের বাইরে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করার জন্য এদের পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন: পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত এআইজি (স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) তাপতুন নাসরীন, র‍্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক আতিকা ইসলাম, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা, পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত পুলিশ সুপার মাহফুজা বেগম, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রো (উত্তর) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মাহফুজা লিজা, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাহমিদা হক শেলী, নারী সহায়তা কেন্দ্র বরগুনায় কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) জান্নাতুল ফেরদৌস ও জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ রাজারবাগ ঢাকায় কর্মরত নুসরাত জাহান। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন পুরস্কার পান। তাঁদের প্রতে৵ককে নগদ অর্থ, সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
রেলওয়ের পরিত্যক্ত লোহা (স্ক্র্যাপ) বিক্রি নিয়ে একটি মহল বরাবরই সক্রিয় ছিল। এই সিন্ডিকেট ভেঙে পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সাড়ে ৩২ কোটি টাকা আয় করেছে। এই বিপুল পরিমাণ আয় হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহীর প্রধান কার্যালয়।রেলওয়ে সূত্র জানায়, দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাসহ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন ইয়ার্ডে পড়ে থাকা পরিত্যক্ত লোহা উন্মুক্ত দরপত্রে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিক্রি করা হয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিওএস) প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন ওই দরপত্র আহ্বান করেন। একটি সূত্রের অভিযোগ, ইতিপূর্বে রেলওয়ের পরিত্যক্ত লোহা বিক্রি নিয়ে একটি মহল বরাবরই সক্রিয় ছিল। তারা সিন্ডিকেট করে এ খাত থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। বর্তমানে রেল প্রশাসন ওই সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে দেয়। ফলে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে স্ক্র্যাপ বিক্রি করে আয় করেছিল সাড়ে ২৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা দাঁড়ায় সাড়ে ৩২ কোটি টাকায়। অর্থাৎ প্রতি টন স্ক্র্যাপ বিক্রি হয়েছে ৩৮ হাজার টাকা দরে।সূত্র জানায়, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে অর্থাৎ চট্টগ্রাম অঞ্চলে একই ধরনের স্ক্র্যাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ হাজার টাকা প্রতি টন দরে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আদলে পূর্বাঞ্চল রেলওয়েকেও স্ক্র্যাপ বিক্রি থেকে আয় বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আগামী অর্থবছরে ওই খাত থেকে দ্বিগুণ আয় বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. শহীদুল ইসলাম প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রককে আয় বাড়ানোর কারণে অভিনন্দন জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক মো. বেলাল হোসেন জানান, ‘আমরা স্বচ্ছতা আনতে সক্ষম হয়েছি। ফলে স্ক্র্যাপ খাতে আয় বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।’ ভবিষ্যতে এ খাত থেকে আরও বেশি টাকা আয় করা যাবে বলে জানান তিনি।
খেলার সুযোগ এখনো পাননি। তবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের অন্যতম সদস্য আবু জায়েদের অভিজ্ঞতা এখনো পর্যন্ত চমৎকার। খুব ভালো সময় কাটছে তাঁর।চারবার সময় দিয়েও সময় ঠিক রাখতে পারলেন না আবু জায়েদ। তাঁরই-বা দোষ কী! ইংল্যান্ডে দারুণ ব্যস্ত সময় কাটছে। এর মধ্যে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় বের করা সত্যিই কঠিন।পরশু বার্মিংহামে আসার পর সময় হলো। সেটিও সিটি সেন্টারের এক ক্যাশ মেশিন থেকে টাকা তুলে হোটেলে আসার পথে মিনিট দশেক। হোটেলের সামনে গাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন জায়েদের বোনজামাই। বোনের পরিবার বার্মিংহাম থেকে দেড় ঘণ্টা দূরত্বের চেলটেনহামে থাকে। ছুটির চার দিনের দুই দিন বোনের বাসায় বেড়াবেন জায়েদ। সে জন্য তাড়াহুড়া ছিল।সিলেটের ছেলে বলে এই দেশে এ রকম ব্যস্ততা জায়েদের নিত্যদিনের। ইংল্যান্ডে সিলেটের মানুষের অভাব নেই। তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ঘরের ছেলে জায়েদ। আজ একজন ঘোরাতে নিয়ে যাচ্ছেন, তো কাল কেউ দাওয়াত দিচ্ছেন। না খেললেও ইংল্যান্ডে অলস সময় কাটছে না বাংলাদেশ দলের পেসার জায়েদের।তবে তিনি দলের সঙ্গে থেকেও যেন নেই! বিশ্বকাপে এক ম্যাচও এখনো খেলেননি, দলে আছেন অতিথির মতো। অনেকটা ১৯৯৯ বিশ্বকাপের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান জাহাঙ্গীর আলমের অবস্থা। দলের সঙ্গে ১৬ তম সদস্য হিসেবে সেবার ইংল্যান্ডে শুধু ঘুরেই বেড়িয়েছিলেন জাহাঙ্গীর, কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি।জায়েদের সামনে অবশ্য এখনো অন্তত দুটো ম্যাচ আছে। নিশ্চিত করে তাই এখনই বলে দেওয়া ঠিক হবে না যে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে তিনিও জাহাঙ্গীরের মতো না খেলে দেশে ফিরবেন। আর যদি একটি ম্যাচও খেলেন, জাহাঙ্গীর না হলেও জায়েদ হয়ে যাবেন নিয়ামুর রশিদ কিংবা শফিউদ্দিন আহমেদ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের দলে থাকলেও নিয়ামুর আর শফিউদ্দিনের খেলার সুযোগ হয়েছিল শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে।জায়েদ অবশ্য নিজেকে জাহাঙ্গীর বা নিয়ামুর কিছুই ভাবছেন না। বিশ্বকাপের দলের সঙ্গে আছেন। যেকোনো সময় দলে ডাক পড়তে পারে। সে জন্য প্রতি মুহূর্তে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে-এই হলো তাঁর চিন্তা। জায়েদ সেভাবে কাজও করে যাচ্ছেন অনুশীলনে, ‘আমি অনুশীলনে বোঝার চেষ্টা করছি আমাদের বোলিংয়ে কোন জিনিসটার অভাব থেকে যাচ্ছে। ওটা নিয়ে বেশি কাজ করি। ম্যাচ খেললে আমাকে হয়তো ওই ঘাটতিগুলো পূরণ করতে হবে।’সব ক্রিকেটারের মতো বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন জায়েদেরও ছিল। টেস্ট অভিষেকের পরই নাকি মনে হয়েছিল, বিশ্বকাপের স্বপ্নপূরণের দরজাটাও হয়তো সামনে খুলে যাবে। প্রধান নির্বাচক যেদিন বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করলেন, সেখানে নিজের নাম দেখে তাই অবাক হননি জায়েদ। হ্যাঁ, ২০১৯ বিশ্বকাপে দলের সাত ম্যাচের একটিতেও খেলার সুযোগ হয়নি বলে কিছুটা আফসোস তো আছেই। তবে দল ভালো খেলায় সেটিও উঁকি দিয়েই হারিয়ে যাচ্ছে, ‘দলে থেকেও খেলতে না পারলে খারাপ লাগবেই। কিন্তু দল তো আগে। দল ভালো খেললে সবই ভালো লাগে। ইচ্ছা আছে যখনই সুযোগ পাব, তখনই যেন ভালো কিছু করতে পারি।’আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজে থেকেই দলের সঙ্গে আছেন জায়েদ। ওই সিরিজের মাঝখানে একবার কথা উঠেছিল, জায়েদ শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের দলে থাকবেন না। তাঁর জায়গায় আনা হবে তাসকিন আহমেদকে। কোচিং স্টাফ থেকেই নাকি তাসকিনকে আনার চাপটা বেশি ছিল। দলের মধ্যে ওঠা সে আলোচনায় প্রতিবাদী ছিলেন তামিম ইকবাল।একজন খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখিয়ে দলের সঙ্গে উড়িয়ে আনার পর কোনো কারণ ছাড়াই তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি তামিম। এ ছাড়া নির্বাচকদের দিক থেকেও সায় ছিল না তাসকিনকে আনায়। শেষ পর্যন্ত জায়েদই থেকে যান দলের সঙ্গে। ত্রিদেশীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট পেয়ে তাসকিনের সম্ভাবনার কফিনে শেষ পেরেকটিও ঠুকে দেন তিনি। পরশু সে প্রসঙ্গ তুললে হেসে ফেলেন জায়েদ, ‘ও রকম আলোচনা শুনে খারাপ লাগেনি আসলে (হাসি)। দলের ভালোর জন্যই তো আলোচনা। তবে আমি নিজেও জানতাম না ও রকম একটা কিছু হচ্ছে। সবাই বলল আগে ভালো খেলো, তারপরেই না যাওয়ার চিন্তা।’পরে তো আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে জায়েদও দেখিয়ে দিলেন তাঁর সামর্থ্য, ‘৫ উইকেট পাওয়ার পর মনে হয়েছে, আমি ওয়ানডে ক্রিকেটটাও খেলতে পারব। আপনি জানেন, লিস্ট ‘এ’তেও কিন্তু আমার ৫ উইকেট নেই। কিন্তু ওখানে ঠিকই হয়ে গেল।’ খেললে বিশ্বকাপেও সে রকম কিছু হতো, সে নিশ্চয়তা অবশ্য দিচ্ছেন না জায়েদ, ‘আমার বল যে রকম সুইং করে, এখানে উইকেটে ঘাস থাকলে হয়তো সেটা কাজে আসত। এখানে তো বেশির ভাগ উইকেটই ফ্ল্যাট।’খেলার সুযোগ না পেলেও বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতা জায়েদের এখন পর্যন্ত চমৎকার। মজার ঘটনাও আছে। এখানে এক দর্শককে প্রায়ই মাঠে দেখেন জায়েদ। তাঁকে দেখলেই জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার ভাইয়ের সঙ্গে কথা হইছে?’ জায়েদ বলছিলেন, ‘ওনার মনে হয় সন্দেহ, এখানে আসার পর আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। উনি কথা বলিয়ে দিবেন। আমি এখানে আসছি, আমার ভাই এখানে আছে। তারপরও ওনার টেনশন আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে কি না।’বলতে বলতে জায়েদ হাসেন। হাসিতে দূরদেশে কাছের মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার তৃপ্তি।
আরেকটি বাংলাদেশ-ভারত লড়াই। সৌম্য সরকার কী ভাবছেন এজবাস্টনের এই দ্বৈরথ নিয়ে?আইসিসির আরেকটি টুর্নামেন্টে আরেকটি বাংলাদেশ-ভারত লড়াই। এজবাস্টনে দুই দলের লড়াই শুরু হতে এখনো অনেক দেরি। ২ জুলাইয়ের আগে ভারত আরও দুটি ম্যাচ খেলবে। বাংলাদেশের সামনে তাই লম্বা বিরতি। এই বিরতি ক্রিকেটাররা কাজে লাগাচ্ছেন ছুটি কাটিয়ে। দলের ওপেনার সৌম্য সরকার অবশ্য ছুটি কাটাচ্ছেন না, তৈরি হচ্ছেন ভারত-ম্যাচ সামনে রেখে।২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনে সেই যে জয়টা আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতীয়দের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র আনন্দদায়ী স্মৃতি। বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা ৬টি আইসিসির টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ হেরেছে ভারতের কাছে। এজবাস্টনে এ গল্পে পরিবর্তন না এলে যে বাংলাদেশের সেমিফাইনালের আশাই প্রায় শেষ! সৌম্যর অবশ্য ম্যাচটা নিয়ে আলাদা ভাবতে আপত্তি আছে। ভারত ম্যাচটা আলাদাভাবেই নিতে চান না। বাঁহাতি ওপেনারের যুক্তি, ‘এভাবে না চিন্তা করে আমরা কীভাবে ক্রিকেট খেলছি সেভাবে যদি ভালো খেলতে পারি মনে হয় জেতা সম্ভব এবং আমরা জিতব।’ সৌম্য আজ টিম হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে ভারত-ম্যাচ নিয়ে আরও অনেক কিছু বললেন। তাঁর মুখ থেকেই বাকিটা শোনা যাক—ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য‘ওরা ভারত, আমরা বাংলাদেশ—পার্থক্য এটাই। মাঠে গিয়ে যেদিন ভালো খেলবে সে জিতবে। ভালো খেলার ওপর সব নির্ভর করছে। এই বড় টুর্নামেন্টে যদি নাম দেখে খেলতে যান অবশ্যই শুরুতে পিছিয়ে থাকবেন। এসব চিন্তা না করে জয়ের লক্ষ্যে একটা ভালো পরিকল্পনা করে নামতে হবে। ওদের শক্তি-দুর্বলতা বুঝে আমাদের তিন বিভাগেই ভালো করতে হবে। ভালো করতে পারলে অবশ্যই জিততে পারি।’ভারতের বোলিং কতটা ভাবাচ্ছে‘ওদের নম্বর ওয়ান পেস বোলার আছে। ওদের স্পিনার যারা আছে তারাও অনেক ভালো। ওদের কীভাবে পিক করতে হবে সেটাই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। নির্দিষ্ট দিনে কাকে পিক করতে পারলে সহজে খেলতে পারব আর কাকে সমীহ করতে হবে—এই পরিকল্পনা করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় হয়, আগ থেকে ভেবে রেখেছি ওই বোলারকে পিক করব। দেখা গেল ম্যাচে সে সবচেয়ে ভালো বোলিং করছে। এটা সামলানোই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। ’দলের অতি সাকিব-নির্ভরতা‘একটা টুর্নামেন্টে একজন খুবই ভালো খেলে, একজনের খুব ভালো সময় যাবে। সে কতটা এটা ধরে রাখে, সেটাই হচ্ছে কথা। বাকিদের কাজ তখন তাকে সমর্থন করে যাওয়া। সবাই ভালো করলে দল একটা ভালো ফল পাবে।’হুমকি ভারতীয় পেস বোলিং না স্পিনাররা?‘নির্ভর করে উইকেটের ওপর। নতুন উইকেট থাকলে পেসারদের একটু সুবিধা থাকে শুরুতে। আর ব্যবহৃত উইকেট থাকলে স্পিনাররা ভালো করতে পারে।’সেমিফাইনালের আশা‘ওইটা তো বদলাতে পারব না। আমাদের যে দুটো ম্যাচ আছে দুটিতেই জিতলে দৌড়ে থাকতে পারব। আমরা আমাদের কাজ নিয়েই ভাবছি।’সৌম্য দৌড়ে টিকে থাকার কথা বললেন। এতটা পথ দৌড়ে ফিনিশিং লাইনের কাছাকাছি এসে কেউ কি আর মুখ থুবড়ে পড়তে চায়? ভারতের বিপক্ষে তাই জয় পাওয়াটা খুবই জরুরি।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে আমদানি পণ্যের মেলায় (ইমপোর্ট গুডস ফেয়ার—আইজিএফ) প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) ১০টি কোম্পানি এ মেলায় অংশগ্রহণ করে। সিউলের কোএক্স মলে আজ (২৭ জুন) থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে। চলবে ২৯ জুন পর্যন্ত।দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে জড়িত দেশগুলোর নতুন নতুন রপ্তানি পণ্যসামগ্রী কোরিয়ার ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিবছর উপস্থাপনের মাধ্যমে সেই দেশগুলোর সঙ্গে ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি ও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে কোরিয়া ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘদিন ধরে এই মেলার আয়োজন করে আসছে। এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ৪৫টি দেশের ১২৯টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে।বাংলাদেশ এই মেলায় মোট ১২টি বুথের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশ থেকে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, নোভো কার্গো সার্ভিস লিমিটেড, ইন্ট্রাকো গ্রুপ, ন্যাশনাল পলিসার, জিশান, মুন্সী ও ইনডেক্স এক্সেসরিজ লিমিটেড এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।আজ সকালে কোরিয়া ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান Hong Kwang-hee মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত-কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মেলার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর তিনি অতিথিদের নিয়ে মেলায় বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টল পরিদর্শন করেন।অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও অন্য রাষ্ট্রদূত-কূটনীতিকেরা বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শনে এলে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম, কেবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও উপস্থিত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তাঁদের স্বাগত জানান। এ সময় রাষ্ট্রদূত অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্প ও কেবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট উপহার দেন।প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী গার্মেন্টস দ্রব্যাদি, কার্গো সার্ভিস, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, চা, সিরামিক পণ্য ইত্যাদি প্রদর্শন করা হয়। এসব আগত অতিথি ও দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, মেলায় আগত কোরিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের উন্নত মানের চামড়াজাত পণ্য ও সিরামিক পণ্যের বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেন। মেলার প্রথম দিন বিভিন্ন দেশের প্রায় দুই শ দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ী বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া কেবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিরা মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বি টু বি সভায় অংশগ্রহণ করেন।আমদানি পণ্যের মেলায় অংশগ্রহণ বাংলাদেশকে তার বিভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত পণ্য উপস্থাপনের সুযোগ এবং কোরিয়ার ব্যবসায়ীদের মধ্যেও যথেষ্ট উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে। তাঁরা অনেকেই এসব পণ্যের বিষয়ে আগ্রহের সঙ্গে খোঁজখবর নেন। তাঁদের এই আগ্রহ ও উদ্দীপনা ভবিষ্যতে এ দেশে এসব পণ্যের বাজার সৃষ্টিতে সহায়ক হতে পারে; যা দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। বিজ্ঞপ্তি
বাদী ও সাক্ষীদের অস্তিত্ব নেই, এমন একটি মামলায় ৮ দিন কারাবাস করা বরিশালের সাজ্জাদুল হককে (৩৫) মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মামলাটি বানোয়াট প্রমাণিত হওয়ায় সাজ্জাদুলকে অব্যাহতি দেন ঢাকা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-৪-এর বিচারক তাবাসসুম ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার সাজ্জাদুল এই আদেশের কপি হাতে পান।সাজ্জাদুল হক বরিশাল নগরের একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের পরিচালক। পাশাপাশি তিনি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত। মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ঢাকার কেরানীগঞ্জের আরশিনগর এলাকার রুনা (২৬) নামের এক নারী সাজ্জাদুলের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে গত ১১ মার্চ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-৪ এ যৌতুক আইনে মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, এক লাখ টাকা যৌতুক দিতে না পারায় সাজ্জাদুল ওই নারীকে নির্যাতন করেন। আদালতে যে বিবাহ নিবন্ধন নথি দাখিল করা হয়, তাতে উল্লেখ আছে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ সাজ্জাদ ও রুনার বিয়ে হয়। রাজধানীর লালমাটিয়ার কাজী গোলাম কিবরিয়া তাঁদের এই বিবাহ নিবন্ধন করেন। ওই মামলায় আদালত সাজ্জাদুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।কিন্তু সাজ্জাদুল তখনো কোথায়, কিসের মামলা কিছুই জানতেন না। পরে সাজ্জাদুলের বাবা ঢাকায় গিয়ে আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এই মামলার খবর। আদালত থেকে মামলার কাগজপত্র তুলে সাজ্জাদুলের পরিবার অনুসন্ধান শুরু করেন। এতে দেখা যায়, মামলায় বাদীর এবং সাক্ষীদের যে নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনো হদিস নেই। এমনকি মামলার বাদীর আইনজীবী খায়রুল আমিনের মুঠোফোন নম্বর এবং যে ঠিকানা উল্লেখ করেছেন তাও ভুয়া। এ ছাড়া যে কাজীর কাছ থেকে বিবাহ নিবন্ধনের কাগজপত্র জমা দেওয়া হয় তাও সঠিক ছিল না।গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুযায়ী গত ১৫ এপ্রিল বরিশাল কোতোয়ালি থানার পুলিশ সাজ্জাদুলকে নগরের রূপাতলী হাউজিং এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২০ এপ্রিল তিনি ঢাকার ওই আদালত থেকে জামিন পান। ওই দিন জামিন পেলেও কারাগার থেকে তাঁর মুক্তি মেলে ২৩ এপ্রিল। এ নিয়ে গত ২৫ মে প্রথম আলোতে ‘গায়েবি যৌতুক মামলায় আট দিন কারাবাস’ শিরোনামে খবর ছাপা হয়।আদালত সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার সাজ্জাদুলের এই মামলার অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এ দিন বাদী ও তাঁর আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট কেউই আদালতে উপস্থিত হননি। এরপর মামলাটি খারিজ করে সাজ্জাদুলকে অব্যাহতি দেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী খায়রুল আমিন লিখিতভাবে আদালতকে জানান, এই মামলায় তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কেউ তাঁর সিল, স্বাক্ষর ব্যবহার করে এই মামলায় তাঁকে আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করেছে।মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর সাজ্জাদুল আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের এই আদেশে আমি খুব খুশি। ওই নারীকে বিয়ে তো দূরের কথা, তাঁকে চিনিও না। শত্রুতা করে কোনো নারীকে দিয়ে জাল-কাবিননামা দিয়ে হয়রানির জন্য আমার বিরুদ্ধে এই কাল্পনিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল।’ তিনি সন্দেহ করছেন, তাঁর এক সাবেক ব্যবসায়িক অংশীদার এই মামলা করাতে পারেন। তিনি এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চান।ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোহাম্মাদ ফোরকান মিয়া আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৩ মে স্থায়ী জামিন প্রদানের সময় আদালত আসামিপক্ষকে বলেছেন, এই মামলা মিথ্যা, বানোয়াট। এ জন্য ২৫ জুন মামলার ধার্য তারিখে অভিযোগ গঠনের দিন (চার্জ শুনানি) নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন বিচারক। একই সঙ্গে ওই দিন এ মামলার বাদীর বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পাশাপাশি আইনজীবী ও কাজীকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু গত মঙ্গলবারও বাদী হাজির হননি। এমনকি তার আইনজীবীও এই মামলার আইনজীবী নন বলে আদালতকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। পরে মামলাটি খারিজ করে সাজ্জাদুলকে অব্যাহতি দেন বিচারক।সাজ্জাদুলের আইনজীবী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বিশ্বাস বলেন, কাল্পনিক অভিযোগ, ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে সাজ্জাদুলকে সামাজিকভাবে হেয় এবং হয়রানি করার উদ্দেশ্যে এই বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আদালত এটা অনুধাবন করেই সাজ্জাদুলকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটকের পরে আজ বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে।নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর নাম রুবি আক্তার (২০)। তাঁর স্বামী তোফাজ্জল হাসান (২২)। তাঁরা উপজেলার লেমশিয়াখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।আটক ব্যক্তিরা হলেন গৃহবধূর স্বামী তোফাজ্জল হাসান, তাঁর বড় ভাই নুরুল বশর (৩৩) ও ভাবি আয়েশা বেগম (২৮)। বুধবার রাত ১২টার দিকে তাঁদের আটক করে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে তোফাজ্জল ও রুবির বিয়ে হয়েছে। তবে দুই মাস ধরে তোফজ্জলের পরিবার যৌতুকের দাবিতে রুবির ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার রুবিকে বাবার বাড়ি থেকে টেম্পো কেনার টাকা এনে দিতে বলেন তোফাজ্জল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। রুবি এতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তোফাজ্জল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রথমে রুবিকে মারধর করেন। পরে রুবির মাথা ন্যাড়া করে দেন। এরপর আহত অবস্থায় রুবিকে বাবার বাড়ি রেখে আসেন তাঁরা। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে রুবিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর বাবার বাড়ির সদস্যরা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে রুবির সৎমা হুমায়রা বেগম বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস বলেন, গৃহবধূ রুবির মাথা ন্যাড়া করার ঘটনা তাঁকে কেউ জানাননি। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত পুলিশের একটি দল ঘটনাটি তাঁকে জানায়। এরপর বুধবার রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে রুবির স্বামীসহ তিনজনকে আটক করা হয়।মহেশখালী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রতন কুমার দাশগুপ্ত বলেন, তিনি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রুবিকে দেখতে গিয়েছিলেন। রুবি এখন অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে পুলিশ।
মাগুরা সদরের বেলনগর গ্রামে হাইকোর্টের বিচারপতি খায়রুল আলমের বাড়িতে গতকাল বুধবার গভীর রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতেরা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ২৩ ভরি সোনা, নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিস লুটে নেয়।বিচারপতি খায়রুল আলমের মা সুফিয়া বেগম বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ৩টার দিকে ৮ থেকে ১০ জনের ডাকাত দল বাড়ির পেছন দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এ সময় তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনাসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে মাগুরা সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি দুঃখজনক। এর সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। সব অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।’চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বসে নেই। দুজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অপরাধীদের ধরতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। ১০ বছর আগের পুলিশ আর এখনকার পুলিশের দক্ষতায় পার্থক্য আছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মন্ত্রী তাঁদের নাম উল্লেখ করেননি।মন্ত্রী বলেন, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলে তিনি মনে করেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের পুলিশ বিভাগে ২৩ হাজার নারী সদস্য কাজ করেন। এর মধ্যে ৭২ জন পুলিশ সুপার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।বাৎসরিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের আয়োজনে নয়জন নারী ও একজন পুরুষ সদস্যকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এবারই প্রথম ঢাকার বাইরে এ অনুষ্ঠান হয়েছে।আরও পড়ুন:কুপিয়ে হত্যার আসামিরা যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন: হাইকোর্টরিফাতের খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের
ঝালকাঠিতে মাদক সেবন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ভূমিদস্যুতা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহর ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।এতে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ছাড়াও শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক শারমিন মৌসুমী, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল হক খলিফা, যুবলীগ নেতা কামাল শরীফ, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান ও সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন।সভায় বক্তারা বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস ও ভূমিদস্যুতা বেড়ে গেছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রভাবশালী সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা জড়িত। তাঁরা দক্ষিণের শান্ত জেলা ঝালকাঠিকে উত্তপ্ত করতে চান। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সব শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবিও জানানো হয়।
প্রেমিকার সংখ্যার দিক থেকে সুস্মিতা সেন বলিউডে সবার থেকে এগিয়ে। বারবার প্রেমে পড়তে ভালোবাসেন সাবেক এই ব্রহ্মাণ্ড সুন্দরী। আবার প্রেমে পড়েছিলেন সুস্মিতা। আর এবার তার চেয়ে ১৫ বছরের ছোট রোহমান শলের প্রেমে রীতিমতো হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তিনি। সুস্মিতা সেনের ইনস্টাগ্রামে একবার চোখ বুলালেই তার সত্যতা মেলে। সেখানে সুস্মিতা সেন আর রোহমান শলের একসঙ্গে ব্যায়ামের ছবি ভক্তদের নতুন করে ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ করেছিল।কাশ্মীরি মডেল রোহমানের সঙ্গে তোলা একটা ছবিতে সুস্মিতার অনামিকার আংটি তাঁদের বাগদানের ইঙ্গিত দিয়েছিল। তাঁদের বিয়ের খবর শোনা যেত বিটাউনের অলিগলিতে। সম্প্রতি জনপ্রিয় বিনোদন সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র সমালোচক রাজীব মাসান্দের ‘উইমেন উই লাভ’ অনুষ্ঠানে এসেও সুস্মিতা তাঁদের প্রেমের সম্পর্কে অকপটে বলেছেন অনেক কথা। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোহমানের এক পোস্ট তাঁদের ব্রেকআপের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাহলে কি এই সম্পর্কে অরুচি ধরেছে ৪৩ বছর বয়সী এই মিস ইউনিভার্সের?সুস্মিতার প্রেমিকদের তালিকা বেশ দীর্ঘ। সেই তালিকায় রয়েছে বলিউড অভিনেতা হৃতিক রোশন, রণদীপ হুদা, মুম্বাইয়ের জনপ্রিয় নাইট ক্লাব রেড লাইটের মালিক হৃত্বিক ভাসিন, পরিচালক বিক্রম ভাট, সেলিব্রিটি ম্যানেজার বান্টি সচদেব, পরিচালক মুদাসির আজিজ, হটমেলের ফাউন্ডার সবির ভাটিয়া, বসায়ী ইমতিয়াজ খাতরি, মানব মেনন, সঞ্জয় নারঙ্গ এবং পাকিস্তানি কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামদের নাম।এর মধ্যে রণদীপ হুদার সঙ্গে সুস্মিতার প্রেম অনেক গভীর ছিল। প্রায় তিন বছর টিকেছিল তাঁদের সম্পর্ক। সুস্মিতার জন্য নাকি পাগল ছিলেন রণদীপ। কিন্তু সুস্মিতার কি স্বভাবই এমন যে কেউ বেঁধে রাখতে পারবেন না তাঁকে? সেই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন কি ২৮ বছর বয়সী রোহমান শল?সুস্মিতা সেন তার ক্যারিয়ারের থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েই আলোচনায় থাকেন বেশি। কয়েক মাস আগে সুস্মিতার জীবনে নতুন এক পুরুষের আগমন হয়। আর তার এই নতুন সম্পর্ককে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান মুখরোচক খবর উঠে আসত। তিনিই মডেল ও ফুটবলার রোহমান শল। রোহমানের সঙ্গে সুস্মিতার বয়সের ব্যবধান নিয়ে তখন অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এই বলিউড সুন্দরী ইন্টারনেটে হামেশাই তাঁর এবং রোহমানের ছবি পোস্ট করে আলোচনায় উঠে আসতেন।সম্প্রতি রোহমানের এক পোস্ট ইশারা করছে যে ভালো নেই তাঁদের সম্পর্ক। এমনকি সুস্মিতা রোহমানকে ইনস্টাগ্রামে ‘আনফলো’ করে দিয়েছেন। এদিকে রোহমান ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে তাদের ব্রেকআপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। রোহমান লিখেছেন, 'হ্যাঁ তুমি! আমি তোমাকেই বলছি। এমন কী হয়েছে যা তোমাকে এত ভাবাচ্ছে? কাম অন, আমি শুধু আগামী ২৪ ঘণ্টা তোমার কথা শোনার অপেক্ষায় আছি। আমার সঙ্গে কথা বলো।’তিনি আরও লিখেছেন, ‘তোমার কি মনে হচ্ছে এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য একা তুমিই অনেক কিছু করছো। আর তোমার সঙ্গী কিছুই করছে না। তোমার বোঝা উচিত যে তুমি তোমার সঙ্গীর জন্য যা করো সেটা তোমার নিজের ইচ্ছায়। আর তাকে যে তোমার পথেই হাঁটতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।’ রোহমান এই পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘সময় নাও। আগে নিজেকে ভালোবাসো। তুমি যখন নিজের সঙ্গে সময় কাটাও তখন কি বিরক্ত হও? তাহলে তুমি কী করে আশা করো যে অন্য কেউ তোমার সঙ্গ উপভোগ করবে? যেখানে তুমি নিজেই নিজেকে উপভোগ করতে পারো না। নিজের সঙ্গে একান্তে ১৫-২০ মিনিট সময় কাটাও। কোনো বই, টিভি বা মোবাইল ছাড়া। নিজের অন্তরের কথা শোনো। আর সেখানেই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।’তবে নিজের অন্তরের কথা শুনে সুস্মিতা কী জানতে পেরেছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিটাউনের এই রোমান্টিক জুটি সব মান-অভিমান ভুলে তাঁদের সম্পর্ক আবার নতুন করে শুরু করবে? নাকি সুস্মিতার জীবন থেকে এই প্রেমও হারিয়ে যাবে ধূমকেতুর মতো? বীজগণিতের সূত্র মেনে আসবে নতুন প্রেম। সব প্রশ্নের উত্তর বলে দেবে সময়।
চলতি বছরেই দেশের হাসপাতালগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে প্রায় ৫০০টি আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) স্থাপন করবে সরকার।আজ বৃহষ্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ক্রিয়েটিভ মিডিয়া আয়োজিত স্বাস্থ্যসম্মত জীবন, কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং স্কুলে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ের প্রচারণা কার্যক্রমের সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে পর্যাপ্ত আইসিইউ না থাকায় অস্বচ্ছল মানুষদের উন্নত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে। এ কারণেই দেশের হাসপাতালগুলোতে জরুরিভিত্তিতে প্রায় ৫০০টি আইসিইউ স্থাপন করা হবে।জাহিদ মালেক বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ হাজার টাকার মতো ব্যয় করতে হয়। এই পরিমান অর্থ যোগান দেওয়া দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে ভীষণ কষ্টকর ব্যাপার। এ কারণে এ বছরেই দেশের হাসপাতালগুলোতে জরুরিভিত্তিতে প্রায় ৫০০টি আইসিইউ স্থাপন করা হবে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইফ স্টাইল অ্যান্ড হেলথ এডুকেশন ও প্রোমোশনের লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. এহসানুল কবির, ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে ভারত। ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারে কেমার রোচের বলে ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। কিন্তু সেই আউট নিয়েই একটি বিতর্কের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।ভারতীয় ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কেমার রোচের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রোহিত শর্মা। মাঠের আম্পায়ারের নট আউটের সিদ্ধান্ত থার্ড আম্পায়ারের কাছে গিয়ে বদলে যায়। আউটের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে কিছুক্ষণ গাঁইগুঁই করে তবেই মাঠ ছাড়েন রোহিত। তবে সিদ্ধান্তটি আদৌ কতটা সঠিক ছিল, তা নিয়েই পরবর্তীতে শুরু হয় কাটাছেঁড়া।রোচের বাঁক খেয়ে ভেতরের দিকে আসা বলটি রোহিতকে কিছুটা চমকে দিয়ে উইকেট রক্ষকের হাতে ঠাঁই নেয়। কিন্তু তাতে আলতো ইনসাইড এজ হয়েছে এমন দাবি করে উইন্ডিজ খেলোয়াড়রা আউটের আবেদন জানান ইংলিশ আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওর্থের কাছে। আবেদনটি সরাসরি নাকচ করে দেন। উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার, বোলার কেমার রোচ এবং উইকেট রক্ষক শাই হোপ অবশ্য আউটটি নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তাই তারা সময়ক্ষেপণ না করে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নেন। থার্ড আম্পায়ার মাইকেল গফ বল যখন ব্যাট পার হয়, তখন স্নিকো মিটারে স্পাইক দেখে সেটাকে অকাট্য প্রমাণ হিসেবে ধরে নিয়ে আউটের সিদ্ধান্ত নেন।কিন্তু বলটি ব্যাট এবং প্যাডের মাঝ দিয়ে একই সময়ে পার হওয়ায় স্পাইকগুলো আসলে ব্যাটের নাকি প্যাডের, তা নিশ্চিত হওয়া ছিল বেশ কঠিন। আর আম্পায়ার গফ আউট নিয়ে তাঁর সিদ্ধান্তটি খুব দ্রুত জানিয়ে দেওয়াতে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় কানা-ঘুষা। ম্যাচে ধারাভাষ্যের দায়িত্বে থাকা ভারতীয় সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের মতে, থার্ড আম্পায়ারের হাতে থাকা ভিজুয়ালগুলো আউটের পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি, ‘আমি হয়তো আরেকটু বেশি সময় নিতাম। ব্যাটসম্যান নিশ্চিত ছিল সে নট আউট। অবশ্য বোলারও আত্মবিশ্বাসী ছিল। বল প্যাডে লেগেছে সেটা নিশ্চিত কিন্তু ব্যাটে কি লেগেছে?’ প্রশ্ন করেছেন মাঞ্জরেকার।২০১৯ বিশ্বকাপে মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই। তাই এ বিষয়ে তাঁর মতামত অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তবে আরেক ধারাভাষ্যকার মাইকেল আথারটনও মাঞ্জরেকারের সুরেই বলেছেন, ‘উইন্ডিজ খেলোয়াড়রা বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল, ব্যাট-প্যাডের মাঝে যথেষ্ট ফাঁকা ছিল। তবে যেহেতু বলটি ব্যাট এবং প্যাডের মাঝে দিয়ে একই সময়ে পার হয়, তাই থার্ড আম্পায়ারের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। এ ক্ষেত্রে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটি আমলে নেওয়া জরুরি, একেবারে নিশ্চিত হলেই কেবল সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা উচিত।’
মিল্ক ভিটার দুধে আর্সেনিক ও ফরমালিন রয়েছে বলে যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেছেন, বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় মিল্ক ভিটার দুধে ফরমালিনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মিল্ক ভিটা দুধ হচ্ছে পরিপূর্ণ, উপযুক্ত এবং সুস্বাদু।বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বপন ভট্টাচার্য্য এ দাবি করেন।প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কিছু অসৎ ব্যবসায়ী ঢাকা ইউনিভার্সিটির একটি টেস্ট রিপোর্ট দিয়ে বলছে, মিল্ক ভিটাতে আর্সেনিক আছে। মিল্ক ভিটা দুধের মধ্যে নাকি ফরমালিন আছে। এটি একটি সর্বৈব মিথ্যা কথা।’ তিনি বলেন, গত বুধবার তাঁরা বিএসটিআইয়ে পরীক্ষা করিয়ে দেখেছেন মিল্ক ভিটার দুধে ফরমালিনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে একটি পরীক্ষা করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, মিল্ক ভিটা দুধ হচ্ছে পরিপূর্ণ, উপযুক্ত এবং সুস্বাদু দুধ। এর বিপরীতে কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি।স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘এই সংসদের মাধ্যমে জনগণকে নিশ্চিত করতে চাই, এখন পর্যন্ত যে সমস্ত আমদানি করা দুধ বাজারজাত করা হচ্ছে, মিল্ক ভিটা অনেক ক্ষেত্রে ভালো। অনেক ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য এবং পুষ্টিকর।’আমদানি করা গুঁড়া দুধ মানসম্মত নয়, দাবি করে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, দেশে যে গুঁড়া দুধ আমদানি করা হয়, তা পুষ্টিযুক্ত খাবার নয়। ডেনমার্ক ও ইউরোপের যেসব দুধ পরিত্যক্ত, দুধের ফ্যাট সংগ্রহের পর যা ব্যবহার হয় না, তা ‘বাল্ক মাল’ হিসেবে ৫ শতাংশ কর দিয়ে আমদানি করে বিক্রি করে। এ দেশের মানসম্মত মিল্ক ভিটার দুধ যাতে বিক্রি না হয়, তার একটি অপচেষ্টা চলেছিল। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী এটা বুঝতে পেরে ওই ৫ শতাংশ ট্যাক্সের পর আরও ৫ শতাংশ যোগ করেছেন। এটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের ফলে মিল্ক ভিটার দুধের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ হবে।
২০০৮ সালের ১৪ নভেম্বর ‘দোস্তানা’ নামে বলিউডের একটি ছবি মুক্তি পায়। ছবিটি মুক্তির পরই নানা দিক থেকে ইতিহাস গড়ে। বিশেষ করে ‘মোস্ট স্টাইলিশ’ সিনেমা হিসেবে ছবিটি এখনো আইকনিক। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, জন আব্রাহাম ও অভিষেক বচ্চন অভিনীত এই ছবি ৯টি ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পায় আর তরুণদের ফ্যাশনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। ‘দেশি গার্ল’ গানে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সোনালি শাড়ি পরবর্তী কয়েক বছর পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় শাড়ির তালিকায় স্থান নেয়।এর মধ্যে কেটে গেছে ১১ বছর। এখন বলিউডে সিক্যুয়াল, বায়োপিক আর রিমেক তৈরির হিড়িক পড়ে গেছে। তাই আবারও বড় পর্দা মাতাতে আসছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় ছবি ‘দোস্তানা ২’। আর প্রযোজক করণ জোহর টুইটারে পোস্ট করে জানিয়েছেন, এবারের ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে ‘ফ্রেশ ফেস’ জাহ্নবী কাপুর ও কার্তিক আরিয়ানকে। প্রযোজক বনি কাপুর ও শ্রীদেবী কন্যা জাহ্নবী ইতিমধ্যে ‘ধড়ক’ ছবি দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন দর্শক আর সমালোচকদের। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি সিনেমা দিয়ে কার্তিক ইতিমধ্যে তরুণীদের ক্রাশলিস্টের তালিকার ওপরের দিকে স্থান করে নিয়েছে। আর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য তাই তাদের দুজনকেই সেরা মনে হয়েছে পরিচালক ও প্রযোজকদের চোখে। এই সিনেমা দিয়ে কলিন ডি’কানহার অভিষেক ঘটবে পরিচালক হিসেবে।টুইটে করণ লিখেছেন, ‘সীমাহীন পাগলামি আর মজা নিয়ে ফিরে আসছে দোস্তানা ফ্র্যাঞ্চাইজি। কার্তিক আরিয়ান আর জাহ্নবী—এই দুই ফ্রেশ ফেস থাকছে। তৃতীয় মানানসই অভিনেতা কে, তা জানতে চোখ রাখুন।’ গতকালকেই করণ জোহর একটা এনিমেটেড ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন যে আজকে একটা বড় খবর জানাবেন। সেই বড় খবরের নামই ‘দোস্তানা ২’।‘দোস্তানা ২’ নিয়ে করণ জোহর বলেন, ‘কার্তিক আর জাহ্নবীকে নিয়ে দোস্তানা ফ্র্যাঞ্চাইজিকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আমি দারুণ রোমাঞ্চিত। আবারও বড় পর্দায় দেশি গার্ল আর বয়দের পাগলামি তৈরি নিয়ে আমার তর সইছে না। কার্তিকের সঙ্গে এটি হতে যাচ্ছে ধর্মা প্রোডাকশনের প্রথম ছবি। এই ছবিতে আরও একজন নতুন অভিনেতাকে দেখা যাবে। কলিন ডি’কানহা দোস্তানা ২ দিয়েই পরিচালক হিসেবে তাঁর যাত্রা শুরু করবেন।’বেশ আগেই শোনা গিয়েছিল, করণ জোহর প্রযোজিত সিনেমাটির সিক্যুয়াল হচ্ছে। আগে থেকেই জানা যায়, সিক্যুয়ালে থাকছেন না পুরোনো তারকারা। তখন জাহ্নবীর সঙ্গে শোনা গিয়েছিল আয়ুষ্মান খুরানা ও রাজকুমার রাওয়ের নাম। কিন্তু সব নাম পেছনে ফেলে সামনে এলেন কার্তিক আরিয়ান। তবে তৃতীয় ব্যক্তি কে, তা জানতে অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই।ধর্ম প্রডাকশনের ব্যানারে ছবিটি ২০২০ সালে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।
সেমিফাইনালে যেতে হলে শেষ দুটো ম্যাচ জিততেই হবে সরফরাজদের। তবে এর চেয়েও কঠিন পরীক্ষা পাকিস্তানি সমর্থকদের সামনে। আগামী ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচে যে ভারতকেই সমর্থন করতে হচ্ছে তাদের!পাকিস্তানি সমর্থকেরা পড়েছে উভয়সংকটে। ভারতের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব অনেক পুরোনো। হোক সেটা ক্রিকেট কিংবা জাতিগত। খেলা হোক বা অন্য কিছু, পাকিস্তানিরা কখনোই কোনো বিষয়ে ভারতকে সমর্থন করতে চায় না। এবার কিন্তু কোহলিদের সমর্থন না করেও কোনো গতি নেই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত না জিতলে যে শেষ চারে জায়গা হবে না সরফরাজদের। ২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কারা খেলবে শেষ চারে? এই নিয়ে হিসাব কষতে কষতেই রাত–দিন এক করে ফেলছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার ম্যাচটাই হিসাবটা একটু বেশি জটিল করে দিল। এখন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড যে কেউই যেতে পারে সেমিফাইনালে। তবে পাকিস্তানি সমর্থকদের জন্য পরীক্ষাটা আরও কঠিন।শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে পাকিস্তানকে বাকি দুটো ম্যাচ জিততেই হবে। শুধু এখানে শেষ হলেও মানা যেত। দুর্ভাগ্যের বিষয়, পাকিস্তানের বিশ্বকাপে টিকে থাকা না–থাকা এখন কোহলিদের ওপর নির্ভর করছে। ৩০ জুন ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে ভারত জিতলে পাকিস্তানের পথ অনেকটাই সুগম হবে। সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার নাসির হুসেইন তাই প্রশ্ন ছুড়েছেন, রোববার পাকিস্তানি সমর্থকেরা কাকে সমর্থন করছে?নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে আজ পাকিস্তানের সমর্থকদের উদ্দেশে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন নাসির হুসেইন। লিখেছেন, ‘পাকিস্তানি সমর্থকদের জন্য একটা প্রশ্ন, রোববার ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচে তোমরা কাকে সমর্থন করছ?’ প্রশ্নটা কোটি টাকার। একে তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, তার ওপর টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে ভারতকে সমর্থন করা ছাড়া কোনো উপায়ও নেই। পাকিস্তানি সমর্থকেরা অবশ্য পুরোনো দ্বন্দ্ব ভুলে ভারতকেই বেছে নিয়েছে।
সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য যে ভারত ঘেঁষা, এ ‘অভিযোগ’ আজকের নতুন নয়। সে অভিযোগটাই এবার আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসির কাছে করেছেন এক অস্ট্রেলিয়ান! মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য একেবারে ‘অপেশাদার’ আদি কুমারের অভিযোগ এমনই!বিশ্বকাপে ধারাভাষ্য দিতে এসে বিপাকে পড়েছেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার। দলকানা ধারাভাষ্য দেওয়ার অভিযোগে এক অস্ট্রেলিয়ান তাঁর নামে নালিশ করেছে আইসিসির কাছে।ধারাভাষ্যকারদের হতে হয় নিরপেক্ষ। খেলার গূঢ় তথ্য ও তত্ত্বটা দর্শকদের সামনে তুলে ধরার গুরুদায়িত্বটা থাকে তাদের ওপর। দলকানা হওয়ার সুযোগ থাকে সামান্যই। তারপরেও অনেক ধারাভাষ্যকারই মাইক্রোফোনের পেছনে বসে ‘দেশপ্রেমিক’ বনে যান। নিজের দলের গুণকীর্তন হয়ে ওঠে তাদের মূল দায়িত্ব। এমন দেশপ্রেমী ধারাভাষ্য যে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে বিরক্তির উদ্রেক করে—এটা বলা বাহুল্য। এবারের বিশ্বকাপে অনেক ধারাভাষ্যকারই যেন নিজ নিজ দেশের ‘মুখপাত্র’। দলকানা ধারাভাষ্যের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের বিরুদ্ধে। তাঁর ধারাভাষ্য নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আইসিসিকে চিঠি লিখেছেন এক অস্ট্রেলীয় নাগরিক।মাঞ্জরেকারকে নিয়ে অভিযোগ চিঠি আকারে আইসিসির কাছে গেলেও তাঁর বিরুদ্ধে দলকানা ধারাভাষ্যের অভিযোগ অনেক পুরোনো। সাবেক এ ভারতীয় ক্রিকেটারের ধারাভাষ্য যে নিরপেক্ষ হয়, তা তাঁর পরম বন্ধুটিও মনে হয় স্বীকার করবেন না। বিশেষ করে ২০১৯ বিশ্বকাপে মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য শুনতে শুনতে খেলা দেখাটা যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের কাছে। খেলা দেখতে এসে সারাক্ষণ ভারতের গুণকীর্তন কে-ই বা শুনতে চায়? আইসিসিকে চিঠি লিখে অস্ট্রেলীয় নাগরিক আদি কুমার অভিযোগ করেছেন, মাঞ্জরেকার ধারাভাষ্যকার হিসেবে চরম ‘অদক্ষ’ ও ‘অপেশাদার’আদি থাকেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। থাকতে না পেরে দুবাইতে আইসিসির অফিস বরাবর চিঠি লিখেছেন তিনি। বলেছেন, ‘সিডনি থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আইসিসি। সঞ্জয় মাঞ্জরেকার সম্পর্কে আমার কিছু মতামত আছে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ধারাভাষ্য প্যানেলের যে অন্যতম অংশ। তার ধারাভাষ্য আমার কাছে চূড়ান্ত অপেশাদার ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়। এটা ছাড়া, অসাধারণ বিশ্বকাপ আয়োজন করছ তোমরা, ধন্যবাদ।’মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য কেন বিরক্তিকর, তার দুই-একটা উদাহরণও দিয়েছেন আদি কুমার, ‘ভারতের উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনির সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ধোনিকে দর্শকদের সামনে “উইকেটের পেছনে আমাদের অতন্দ্র প্রহরী” বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন মাঞ্জরেকার। এটা উচিত হয়নি। আপনি একজন ধারাভাষ্যকার। আপনার কোনো পক্ষ থাকতে পারে না। আপনি ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় “আমি”, “আমরা”, এসব শব্দ ব্যবহার করতে পারেন না।’চিঠি লিখে সে চিঠির একটা ছবি তুলে টুইটও করেছেন আদি কুমার। সঙ্গে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের ধারাভাষ্য শুনে আমি বিরক্ত। তাই আইসিসির কাছে নালিশ করেছি।’দেখা যাক, আদি কুমারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা, বিশ্বকাপে পক্ষপাতদুষ্ট ধারাভাষ্য বন্ধ হয় কিনা!
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নিয়োগ করা কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে থাকা হাই ইলেকশন কাউন্সিল গত ৬ মে যখন ইস্তাম্বুলের সব গুরুত্বপূর্ণ মিউনিসিপ্যাল নির্বাচন বাতিল করেছিল, তখন সবাই যৌক্তিকভাবেই উদ্বিগ্ন ছিল। কিন্তু এখন নতুন করে অনুষ্ঠিত ইস্তাম্বুল মিউনিসিপ্যালের ভোটের পর যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, তাতে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানেরই উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা। এ বছরের ৩১ মার্চ তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনকে এরদোয়ানের কর্তৃত্ববাদী শাসনের পক্ষে-বিপক্ষের গণভোট হিসেবে দেখা হচ্ছিল। আপত্তির মুখে ইস্তাম্বুলে পুনরায় ভোট নেওয়া হয়। এরপরই পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পাওয়া গেল। ফলাফলে দেখা গেছে, বিরোধীদলীয় রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মহানগর এলাকা আঙ্কারা, ইজমির ও ইস্তাম্বুলে জয়ী হয়েছে। দেশটির অর্থনৈতিক রাজধানী ও সবচেয়ে জনবহুল শহর ইস্তাম্বুলের বিজয়কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এর প্রতীকী গুরুত্বের বাইরেও এই শহরের ক্ষমতা দখলের ক্ষমতা বিরোধীদের হাতে যাওয়ার বিষয়টিও তাৎপর্যপূর্ণ। ইস্তাম্বুলের নিয়ন্ত্রণক্ষমতা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা খোদ এরদোয়ানের বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘ইস্তাম্বুল জয় করা মানে তুরস্ককে জয় করা।’ ফিলিপাইন, ব্রাজিল, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশের জনতুষ্টিবাদী নেতাদের মতো প্রথমদিকে এরদোয়ানও একজন মেয়র ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে তিনি ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন। ইস্তাম্বুল ভোটে অনিয়মের অভিযোগে প্রথমদিকে সবাই ভোট বয়কট করলেও পরে সিএইচপি নির্বাচন করতে রাজি হয়। ২০০২ সাল থেকে এরদোয়ানের একেপি পার্টি তুরস্কের ক্ষমতায় এবং ১৯৯৪ সাল থেকে তারাই ইস্তাম্বুলের মেয়রের পদ দখল করে রেখেছিল। এবার তাদেরই সিএইচপি হারিয়ে দিল। সিএইচপির প্রার্থী একরেম ইমামোগলু ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়ে একেপির প্রার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদ্রিমকে হারিয়ে নতুন মেয়র হয়েছেন। ইস্তাম্বুলে একেপির এই হারের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর, কারণ এর মাধ্যমে কর্তৃত্বপরায়ণ জনতুষ্টিবাদীদের মূল দুর্বলতা সামনে চলে এসেছে। সেই দুর্বলতার নাম ‘ব্যালট বাক্স’। আজকের দিনের জনতুষ্টিবাদীরা আগের দিনের লাতিন আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া কিংবা তুরস্কের একনায়কদের মতো নয়। আগের দিনের সেই নেতারা উর্দি পরে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে গদিতে চেপে বসতেন। চিলির অগাস্তো পিনোশের মতো গণতন্ত্রের শত্রুরা সহিংসতার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করতেন এবং যাঁরাই তাঁদের বিরোধিতা করতেন, তাঁদের খুন, নির্যাতন ও কারাবন্দী করে সব ধরনের বিরুদ্ধ স্রোতকে দমন করে রাখতেন। কিন্তু গত দুই দশকে দেখা গেছে, জনতুষ্টিবাদীরা নির্বাচনের পিঠে সওয়ার হয়ে ক্ষমতায় আসছেন এবং দৃষ্টিগ্রাহ্য পন্থায় বিরোধীদের খুন করছেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিভেদকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষের মন জয় করছেন এবং ক্ষমতায় বসার পরই দানব হয়ে উঠছেন। ক্ষমতায় বসেই তাঁরা বিরোধীদের ওপর দমনপীড়ন শুরু করেন। তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, এ সময়ও তাঁরা জনসমর্থন হারাতে চান না। সংখ্যাগুরুর সমর্থন পেতে তাঁরা বিভিন্ন ইস্যুতে জনগণের মধ্যে বিভক্তি টেনে রাখেন। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই বিভক্তি চরম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় এবং সরকারের গুণগান করার জন্য তখন সংবাদমাধ্যমগুলোর ওপর চাপ বাড়ানো হয়। অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত, অপেক্ষাকৃত বেশি ধার্মিক এবং অপেক্ষাকৃত কম পশ্চিমা জীবনযাপনকারী তুর্কিরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের প্রান্তিক ও কোণঠাসা মনে করে এসেছে। তারা একধরনের হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। এই শ্রেণির সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের হতাশাকে কাজে লাগিয়ে এরদোয়ান ইসলামি জাতীয়তাবাদের ডাক দিয়েছিলেন। সেই ডাকে তারা দলে দলে এরদোয়ানকে সমর্থন করেছে। ১৭ বছর ধরে এরদোয়ান ‘জনগণের’ মধ্যে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন এবং একের পর এক নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। কিন্তু এর মধ্যে তিনি ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী শাসক হয়ে উঠেছেন। একপর্যায়ে দেখে গেছে, তুরস্কের সংবাদপত্র ও টেলিভিশন স্টেশনগুলো আর স্বাধীন নেই এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এরদোয়ানের অনুগত ব্যক্তিরা দখল করে ফেলেছেন। তবে ইস্তাম্বুলের এই ফলাফলে এরদোয়ানের আসল দুর্বলতা বেরিয়ে পড়েছে। ব্যালটে যাঁর জয় হয়েছিল, ব্যালটেই তাঁর পরাজয় হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে, জনগণের মোহ কেটেছে এবং জনতুষ্টিবাদী কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনের অবসান ঘটিয়ে মানুষ এখন আবার গণতন্ত্রের দিকেই যেতে চাইছে। এটি ঠিক যে ইস্তাম্বুলের এই পরাজয়ের মধ্য দিয়ে তুরস্কে এখনই একেপির শাসনের অবসান হচ্ছে না। কিন্তু এই ফল তুরস্কের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ—এতে কোনো সন্দেহ নেই। ইংরেজি থেকে অনূদিত। স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেটদারোন আসেমোগলু এমআইটির অর্থনীতির অধ্যাপকজেমস এ রবিনসন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল কনফ্লিক্ট বিষয়ের অধ্যাপক
ফারুক হোসেন (২৭) একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। এক সন্ধ্যায় দিনের কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় বাস না পেয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য একটি মাইক্রোবাসে ওঠেন। পথে মাইক্রোবাসে থাকা ছিনতাইকারী চক্র তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যার পর সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয়।ঘটনাটি ঘটে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর পাবনার সুজানগর উপজেলার পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের বিরাহিমপুর এলাকায়। ঘটনার পরদিন নিহত ব্যক্তির ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে আমিনপুর থানায় মামলা করেন।দীর্ঘদিনেও পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে পাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পাবনা জেলা শাখা বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে ছিনতাই চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মাইক্রোবাসে যাত্রী বহনের নামে ছিনতাই ও খুনের কথা স্বীকার করেছেন।গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জেলার সুজানগর উপজেলার ভাটিকয়া গ্রামের মাসুদ শেখ (৩৮) ও সৈয়দপুর গ্রামের আসলাম কাজী (২৮)। তাঁরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় গাড়ি যাত্রী বহনের পাশাপাশি ছিনতাই করেন।পিবিআই কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার দুজনসহ পাঁচ সদস্যের একটি চক্র মাইক্রোবাসে যাত্রী বহনের নামে ছিনতাই, খুনসহ নানা অপকর্ম করছিলেন। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর তাঁরা পাবনার কাশিনাথপুর মোড় থেকে নিহত ফারুকসহ তিন যাত্রীকে পাবনা জেলা সদরে পৌঁছে দেওয়ার নামে মাইক্রোবাসে তোলেন। পথে চক্রটি দুই যাত্রীর কাছ থেকে টাকা কেড়ে নেয়। তবে ফারুকের কাছে কোম্পানির টাকা থাকায় তিনি তা দিতে চাচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে চক্রের সদস্যরা তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সেই সঙ্গে ফারুকের লাশটি ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের বিরাহিমপুর এলাকায় ফেলে দেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই পাবনার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, মামলাটির দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি পিবিআই পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলামের নির্দেশে একটি দল গঠন করেন। দলের সদস্যরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করেন। তবে আসামিরা বারবার স্থান পরিবর্তন করায় তাঁদের ধরতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। একপর্যায়ে ঢাকার মিরপুর থেকে প্রথমে মাসুদ শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মাসুদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাইক্রোবাসের চালক আসলাম কাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পিবিআই পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পেশা গাড়িচালক। তাঁদের বড় একটি চক্র আছে। গাড়ি চালানোর পাশাপাশি তাঁরা বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ছিনতাই করেন।সুপার তরিকুল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ছিনতাই ও খুনের কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে।