content
stringlengths
1
63.8k
মেঘলা আকাশ। ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও। এর মধ্যেই ঈদের আগাম পদধ্বনি শোনা গেল চট্টগ্রামে। প্রতিবারের মতো এবারও জমকালো আয়োজনে রমজান মাসের আগেই ঈদের আগমনী বার্তা ঘোষণা করল নুরজাহান-আলোকিত ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতা। ক্যাটওয়াকের ছন্দ ও নৃত্যের তালে তালে ঘোষণা করল ঈদের আগমনী বার্তা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরের জিইসি মোড়সংলগ্ন কে স্কয়ার মিলনায়তনে জমকালো এই ঈদ ফ্যাশনের আয়োজন করে প্রথম আলোর আঞ্চলিক প্রকাশনা আলোকিত চট্টগ্রাম। প্রতিযোগিতায় ১২টি বিভাগে সেরা ডিজাইন হাউসগুলো পুরস্কার পায়।অভিনয়শিল্পী অপি করিম বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অপি করিম বলেন, ‘আগেও এই প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছি। চট্টগ্রামকে ভালো লাগে। তাই বারবার ছুটে আসি। দেশের ফ্যাশন ডিজাইনাররা আজ অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। তাঁরা দেশের কাপড় পরতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন।’ আঁখির উপস্থাপনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রথম আলোর এই ফ্যাশন প্রতিযোগিতা ১৪ বছর ধরে দেশীয় পোশাককে দেশে ও বিদেশে পরিচিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে। এতে অনেকটাই সফল চট্টগ্রামের ডিজাইনাররা। চট্টগ্রামের অনেক ফ্যাশন হাউস এখন দেশব্যাপী নামকরা ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। স্পনসর প্রতিষ্ঠান নুরজাহান গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক কাজী মোতাহের হোসেন বলেন, ‘প্রতিযোগিতাটির সঙ্গে আমরা নিজেদের যুক্ত করতে পেরে ভালো লাগছে। ভবিষ্যতেও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ১৪ বছর ধরে প্রথম আলো কৃতিত্বের সঙ্গে এই কাজটি করে যাচ্ছে। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট পরা তরুণ-তরুণীদের ক্যাটওয়াকের পাশাপাশি ঢাকা থেকে আগত নাচের দল ঈগলসের পরিবেশনা সবার নজর কেড়েছে। নাচ ও কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে তাঁরা মাতিয়ে রাখেন দর্শকদের। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) জয়ধ্বনির সদস্যদের মূকাভিনয়। তাঁরা মূকাভিনয়ের মধ্য দিয়ে মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরেন। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ইত্যাদির পাশাপাশি ছিল যুগল পোশাকের প্রদর্শনীও। ঈদের সবচেয়ে প্রধান অনুষঙ্গ পাঞ্জাবির প্রদর্শনীও ছিল। বিখ্যাত মডেলরা এসব পোশাক পরে প্রদর্শন করেন। তবে বিখ্যাত মডেলদের ক্যাটওয়াক ছাপিয়ে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল শিশুদের ক্যাটওয়াক। ‘ও নদী রে তুই যাস কোথায় রে’ গানের সঙ্গে ১০ শিশু মঞ্চে প্রবেশ করলে দর্শকেরা করতালি দিয়ে স্বাগত জানান তাদের। হেলেদুলে ফোকলা দাঁতের হাসি দিয়ে শিশু মডেলরা মঞ্চ কাঁপিয়ে যায়। প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার মোহছেনা কোরাইশী, এইচ এম ইলিয়াস, নুর-এ জান্নাত, লুৎফা সানজিদা ও সুলতানা নুরজাহান। মিডিয়া পার্টনার ছিল চ্যানেল আই। রূপচর্চা সহযোগী ছিল পারসোনা। কোরিওগ্রাফার ছিলেন লুনা। শিশুদের কোরিওগ্রাফার ছিলেন অনন্য বড়ুয়া।যেসব ফ্যাশন হাউস পুরস্কার পেয়েছে: এবারের প্রতিযোগিতার ১২টি বিভাগে চট্টগ্রামের মোট ৬৫টি বুটিক হাউস অংশ নেয়। শাড়ি ক বিভাগে প্রথম হয়েছে তুলিস ক্রিয়েশান। দ্বিতীয় পুরস্কার পায় জত্রিতা বুটিকস হাউস। যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে তুলিস ক্রিয়েশান এবং ফ্যাশন মেক্স। পাঞ্জাবিতে প্রথম পুরস্কার পায় নক্ষত্র। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে ময়ূরাক্ষী ও নক্ষত্র। টি-শার্ট বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় হয় যথাক্রমে নক্ষত্র ও বাংলার কথা। যুগ্মভাবে তৃতীয় হয়েছে নক্ষত্র ও অরণি ফ্যাশন হাউস। শাড়ি গ বিভাগে নিহালস ওয়ার্ডরোব প্রথম, বাংলার কথা দ্বিতীয়, যুগ্মভাবে তৃতীয় হয় চামেলিস ও সাম্পান। শাড়ি খ বিভাগে প্রথম পুরস্কার পায় চামেলিস। যুগ্মভাবে দ্বিতীয় হয় জত্রিতা ও বার্নি। তৃতীয় পুরস্কার পায় নিহালস ও জত্রিতা। সালোয়ার-কামিজ (ক) বিভাগে প্রথম হয় হানিভিউ ফ্যাশন হাউস। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় যথাক্রমে ময়ূরাক্ষী ও সাফি’স ডিজাইন কালেকশন। সালোয়ার কামিজ (খ) বিভাগে প্রথম নক্ষত্র, যৌথভাবে দ্বিতীয় হয় বার্নি ও নৈ। তৃতীয় হয় ইলু ফ্যাশন। ফতুয়া ছেলেদের বিভাগে তিনটি পুরস্কারই পেয়েছে নক্ষত্র। ফতুয়া মেয়েদের বিভাগে প্রথম হয়েছে নিহালস ওয়ার্ডরোব। দ্বিতীয় হয় নক্ষত্র। যৌথভাবে তৃতীয় হয় জত্রিতা ও ভ্যালিন্ডা। ফিউশান ছেলে ও মেয়ে বিভাগে সুই সুতা প্রথম, নাজনীন বুটিকস দ্বিতীয় ও নিহালস তৃতীয় হয়। যুগল পোশাকে প্রথম হয় বাংলার কথা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় যথাক্রমে বার্নি ও লায়লা বুটিকস। শিশুদের বিভাগে প্রথম হয় আর এস জোনাকী ফ্যাশন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় এবি ক্রিয়েশান ও ময়ূরাক্ষী। সেরাদের সেরা নির্বাচিত হয়েছে নক্ষত্র।
মার্কিন সরকারের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সফরকারী বাংলাদেশি অ্যালামনাইরা হচ্ছেন দুই দেশের সম্পর্কের এক সেতুবন্ধ। মূলত তাঁদের মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্র সত্যিকার বাংলাদেশকে আবিষ্কার করতে পারে।  ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা গতকাল শনিবার বিকেলে অ্যালামনাই সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।  ড্যান ডব্লিউ মজীনা বলেন, ‘আপনারা হচ্ছেন সম্পর্কের একটি মজবুত সেতু তৈরির সুনিপুণ কারিগর। সত্যিকার বাংলাদেশ আপনারাই যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে চিনিয়ে দিতে পারেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সফরে আপনাদের যে অভিজ্ঞতা হয়, বাংলাদেশ গঠনে সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারেন।’ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের পর সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সাতজন অ্যালামনাইকে সম্মানিত করা হয়। তাঁরা হলেন মো. ফেরদৌস, বদরুননেসা, সামির শিহাব, কাজী নাসরিন সিদ্দিকী, মুসতাহসিন ইসলাম, করভি রাকশানদ ও তানভীর সিদ্দিকী। সবশেষে তাহসান খান ও এলিটা করিমের গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইকড়ছই এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম (২৯) মাত্র চার বছর আগেও পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। হঠাৎ করে হেরোইনে আসক্ত বন্ধুর পাল্লায় পড়ে পরিবার থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে নজরুল হেরোইনের টাকার জন্য অপরাধজনক কাজে জড়িয়ে পড়েন।গত ৩০ জুন জগন্নাথপুর বাজারে একটি চুরির ঘটনায় পুলিশ নজরুলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পেয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকেন। শুক্রবার রাতে পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে তিনি নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে তিনি মারা যান।নজরুলের বাবা ছরকুম উল্যা বলেন, ‘হেরোইন আমার ছেলেটিকে অকালে কেড়ে নিল। ছেলেটি নেশাগ্রস্ত হওয়ার আগে পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করত। ২০০৯ সালে রঙের কাজ করতে গিয়ে নজরুল এক হেরোইনসেবীর সঙ্গে মিশে আসক্ত হয়ে পড়ে। অনেক বুঝিয়ে তাকে এ পথ থেকে ফেরাতে না পেরে আমরা তার আশা ছেড়ে দিই। শুক্রবার রাতে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মোটরসাইকেলের শব্দ শুনে পুলিশ এসেছে মনে করে নজরুল দৌড় দিয়ে বাড়ির পাশের নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরে নদী থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।’নজরুলের প্রতিবেশী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নজরুল শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। কিন্তু হেরোইনের নেশায় আসক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত সে মারা গেল। এ নেশা থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষায় প্রশাসনের কঠোরতার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা দরকার।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইকড়ছই এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম (২৯) মাত্র চার বছর আগেও পরিবার ও এলাকাবাসীর কাছে ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। হঠাৎ করে হেরোইনে আসক্ত বন্ধুর পাল্লায় পড়ে পরিবার থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে নজরুল হেরোইনের টাকার জন্য অপরাধজনক কাজে জড়িয়ে পড়েন।গত ৩০ জুন জগন্নাথপুর বাজারে একটি চুরির ঘটনায় পুলিশ নজরুলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পেয়ে তাঁকে খুঁজতে থাকেন। শুক্রবার রাতে পুলিশের ভয়ে পালাতে গিয়ে তিনি নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে তিনি মারা যান।নজরুলের বাবা ছরকুম উল্যা বলেন, ‘হেরোইন আমার ছেলেটিকে অকালে কেড়ে নিল। ছেলেটি নেশাগ্রস্ত হওয়ার আগে পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করত। ২০০৯ সালে রঙের কাজ করতে গিয়ে নজরুল এক হেরোইনসেবীর সঙ্গে মিশে আসক্ত হয়ে পড়ে। অনেক বুঝিয়ে তাকে এ পথ থেকে ফেরাতে না পেরে আমরা তার আশা ছেড়ে দিই। শুক্রবার রাতে তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মোটরসাইকেলের শব্দ শুনে পুলিশ এসেছে মনে করে নজরুল দৌড় দিয়ে বাড়ির পাশের নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরে নদী থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।’নজরুলের প্রতিবেশী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নজরুল শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। কিন্তু হেরোইনের নেশায় আসক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত সে মারা গেল। এ নেশা থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষায় প্রশাসনের কঠোরতার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা দরকার।
ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে স্বাস্থ্যবিমার টাকা তুলে প্রতারণা করেছেন জাপানে বসবাসরত কয়েকজন বাংলাদেশি। জাপান পুলিশের তদন্তে মিলেছে, চার বছরে এ চক্রটি স্থানীয় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে প্রায় ১০ লাখ ইয়েন (১০ হাজার ডলার) তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। তবে পুলিশের ধারণা, আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ অনেক বেশি।জাপান পুলিশের সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে পুলিশ এ চক্রের আটজনকে শনাক্ত করেছে। এদের সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর চক্রের হোতা আগেই বাংলাদেশে পালিয়ে যান। তবে তাঁকে ধরতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তা চেয়েছে জাপান। গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের মধ্যে ছয়জনকে স্বল্প মেয়াদের কারাদণ্ড দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।সূত্র জানায়, এ ঘটনা নিয়ে জাপান পুলিশ প্রায় দুই বছর ধরে তদন্ত করে। সব রকমের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর গত মাসের শেষ দিকে সেখানকার পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে। এতে কী করে সেই প্রতারণা করা হয়েছিল, তার পুরো বিবরণ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়।পুলিশের সংবাদ সম্মেলনের পর জাপানের গণমাধ্যমে এ নিয়ে নানা খবর প্রচারিত হতে থাকে। সব খবরেই বাংলাদেশিদের প্রতারক হিসেবে তুলে ধরা হয়। তবে প্রতারণা ছোট হলেও এটি আলোচিত হওয়ার প্রধান কারণ, এ দলের হোতা আবু সাঈদ আল জরিপ নামের এক বাংলাদেশি। তাঁর মেয়ে রোলা জাপানের উঠতি মডেল। অনেক নাম করা কোম্পানির সঙ্গে তাঁর চুক্তি রয়েছে। এখন বাবার এ অপকর্মের কারণে সেই সব প্রতিষ্ঠান তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করছে।জাপানে বসবাসরত বাঙালিরা জানান, জাপানে বসবাসরত প্রতিটি নাগরিক জাতীয় স্বাস্থ্যবিমার আওতায় থাকেন। এ জন্য প্রতি মাসে তাঁদের বিমার কিস্তি দিতে হয়। বিমা করা কোনো ব্যক্তি জাপানের বাইরে গিয়ে অসুস্থ হলে তিনিও বিমাসুবিধা পাবেন। যে দেশে তিনি চিকিৎসা করাবেন, সেই দেশের কাগজপত্র দাখিল করলেই বিমা প্রতিষ্ঠান চিকিৎসার সব টাকা পরিশোধ করে। বাংলাদেশি ব্যক্তি আবু সাঈদ এ সুযোগকে কাজে লাগান। কোনো বাংলাদেশি দেশ থেকে জাপানে ফিরে গেলেই তিনি ওই লোকের স্বাস্থ্যবিমা কার্ড সংগ্রহ করে নেন। এরপর সেই লোকের নামে বাংলাদেশে চিকিৎসার যাবতীয় ভুয়া কাগজপত্র সংগ্রহ করে সেই ব্যয়ের বিল দাখিল করেন জাপানি কর্তৃপক্ষের কাছে। এভাবে পাওয়া টাকার একটা অংশ যাঁর বিমা কার্ড তাঁকে দেন, আর বাকি অর্থ নিজেরা রেখে দেন। এভাবে চার বছর ধরে তাঁরা বহু লোকের নামে ভুয়া বিল তুলে আত্মসাৎ করেন।সূত্র জানায়, এভাবে সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললেও গত বছর এপ্রিলে টোকিওর সুগিনামি ওয়ার্ড কর্তৃপক্ষ একটি চিকিৎসা বিল নিয়ে সন্দেহ করে। এ ঘটনাটি তারা পুলিশকে জানায়। এরপর টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্ত শুরু করে। দুই বছর তদন্তের পর দোষীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ আদালতের কাছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানায়। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর গত বছর সেপ্টেম্বরে সাত বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সহযোগীদের আটক হওয়ার খবর টের পেয়ে প্রতারক দলের নেতা আবু সাঈদ বাংলাদেশে পালিয়ে যান।জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের মধ্যে আবু সাঈদের ঘনিষ্ঠ আমিন শরিফ এখনো জাপানের কারাগারে আছেন। বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলায় দেড় থেকে তিন বছর কারাদণ্ড হয়। তবে স্বল্প কারাদণ্ডের কারণে এ ছয়জনকে দুই মাস আগে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় পুলিশ।জাপানে বসবাস করা বাঙালিরা জানান, এ চক্রের হোতা সাঈদ তাঁর মেয়ে রোলার কারণে জাপানে পরিচিত। রোলা জাপানের আলোচিত মডেল। সব গণমাধ্যমের নজর তাঁর দিকে। এখন তাঁর বাবার অপকর্মের কথা প্রচার করা হচ্ছে। বাবার অপরাধ এখন মেয়ের পেশাগত জীবনকেও বিষিয়ে তুলেছে। জাপানের বিজ্ঞাপনদাতাদের অনেকেই এই মডেল তারকার সঙ্গে করা চুক্তি বাতিল করে দিতে শুরু করেছেন।
একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা ও লোকসংগীতশিল্পী প্রয়াত বিপুল ভট্টাচার্যকে ফুল আর আন্তরিক ভালোবাসায় শেষ শ্রদ্ধা জানালেন সর্বস্তরের মানুষ। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী বিপুল ভট্টাচার্যের মরদেহ নিয়ে আসা হলে সংগীতশিল্পী, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের ঢল নামে। শুরুতেই ঢাকার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিতাভ পরাগ তালুকদারের নেতৃত্বে বিপুল ভট্টাচার্যকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে বিপুল ভট্টাচার্য গত শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় ৬১ বছর বয়সে ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। মুক্তির আলো ওই ঝরছে’ এবং ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গণ-আন্দোলনের দুটি গান গেয়ে বিপুলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী আবদুল জব্বার, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, ফকির আলমগীর, মলয় কুমার গাঙ্গুলী, বুলবুল মহলানবীশ প্রমুখ। এ সময় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘বিপুলের মতো একজন বড়মাপের শিল্পীকে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হয়নি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’ সংগীতশিল্পী আবদুল জব্বার বলেন, ‘বেঁচে থাকতে বিপুলকে রাষ্ট্র সম্মান দেয়নি। এখন যদি সরকার তাঁর পরিবারের দায়িত্ব নেয়, তাতেও বিপুলকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এই আয়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, বিটিভির মহাপরিচালক ম. হামিদসহ রামেন্দু মজুমদার, গোলাম কুদ্দুছ, শংকর সাঁওজাল, কুদ্দুস বয়াতিসহ সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রিয় মানুষটিকে কফিনে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। শ্রদ্ধা জানানোর পর দুপুরে বিপুল ভট্টাচার্যের মরদেহ পোস্তগোলার শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিপুল ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৫৫ সালে কিশোরগঞ্জে। ১৯৭১ সালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিপুল ভট্টাচার্যের গাওয়া গান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেরণা জোগায়। তিনি শরণার্থী শিবিরের হাজারো মানুষের মনে সাহস সঞ্চার করেছিলেন গানের মাধ্যমে।
মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা। গত শুক্রবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো জানান, সে দেশে আশ্রয় নিতে স্নোডেনকে প্রস্তাব দেওয়া হবে।এদিকে লাতিন আমেরিকার অপর দেশ বলিভিয়াও স্নোডেনকে আশ্রয় দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া বলেছে, ‘সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে’ স্নোডেনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে তারা।ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া ও নিকারাগুয়ার এমন অবস্থানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কোনো মন্তব্য করেনি। স্নোডেন গত শুক্রবার নতুন করে ছয়টি দেশে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। এর আগে তিনি ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়াসহ ২১ দেশে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেন। খবর বিবিসি, আল-জাজিরা ও রয়টার্সের।প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেন, ‘ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে আমি তরুণ স্নোডেনকে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দেব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্নোডেনকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর সাম্রাজ্যের যন্ত্রণাময় পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ ভেনেজুয়েলার ২০২তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানী কারাকাসে সামরিক বাহিনীর বিশেষ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের শুরুতে দেওয়া বক্তৃতায় মাদুরো এসব কথা বলেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘স্নোডেনের একমাত্র অপরাধ হলো, সত্য কথা বলা।’নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট দানিয়েল ওর্তেগা বলেন, ‘নিকারাগুয়া একটি মুক্ত দেশ। রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার অধিকারকে আমরা সম্মান জানাই। এটা স্পষ্ট যে সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে স্নোডেনকে আমরা সাদরে গ্রহণ করব।’ তিনি জানান, মস্কোয় নিকারাগুয়ার দূতাবাস স্নোডেনের আবেদনপত্র পেয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।বলিভিয়ার এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস স্নোডেনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।তবে মাদুরো, ওর্তেগা ও মোরালেস—কেউই স্নোডেনকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে কোনো শর্তের কথা উল্লেখ করেননি। রুশ পার্লামেন্ট দুমার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির প্রধান অ্যালেস্কি পুশকভ বলেছেন, স্নোডেনকে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক আশ্রয়দানের প্রস্তাব হচ্ছে সংকটের সর্বোত্তম সমাধান।এদিকে বিশ্বব্যাপী মার্কিন সরকারের গোপন তথ্য ফাঁস করে আলোড়ন তোলা ওয়েবসাইট উইকিলিকস বলেছে, স্নোডেন গত শুক্রবার নতুন করে আরও ছয়টি দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। ‘যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে আশঙ্কায়’ ওই ছয়টি দেশের নাম প্রকাশ করা হয়নি। আইসল্যান্ডে স্নোডেনের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি আপাতত ঝুলে গেছে। গত শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্ট আসন্ন গ্রীষ্মের আগে স্নোডেনের বিষয়টি আলোচনা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ওপর এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের ওপর মার্কিন প্রশাসনের গোপন নজরদারির কথা ফাঁস করে দেওয়ায় স্নোডেনের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও সরকারি তথ্য চুরির মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্নোডেন মামলার আগেই যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে হংকংয়ে যান। গত ২৩ জুন হংকং থেকে রাশিয়ার শেরেমেয়িতেভো বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। কিন্তু মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করায় এবং কোনো দেশ তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় না দেওয়ায় ওই বিমানবন্দরের ট্রানজিট এলাকাতেই অবস্থান করতে হচ্ছে স্নোডেনকে।
সাংবাদিক শাহ আলমগীর প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ এশিয়ান টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। গতকাল শনিবার শাহ আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন তিনি হাতে পেয়েছেন। আজ রোববার নতুন কর্মস্থলে যোগ দেবেন। তিনি বলেন, ‘পিআইবি আমাদের সংবাদপত্র তথা সংবাদকর্মীদেরই একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সাংবাদিকদের জন্য কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’ শিক্ষাজীবন থেকেই সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন শাহ আলমগীর। ১৯৭৯ সালে অবজারভার গ্রুপের সাপ্তাহিক কিশোর বাংলা পত্রিকায় কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে তাঁর সাংবাদিকতা শুরু। পরে কাজ করেন দৈনিক জনতা, বাংলার বাণী ও আজাদ পত্রিকায়। সংবাদ পত্রিকায় জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক ও শিফট ইনচার্জ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।পরে প্রথম আলো প্রকাশের সময় যুগ্ম বার্তা সম্পাদক পদে যোগ দেন। এরপর ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে চ্যানেল আই-এর প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। পরে একুশে টেলিভিশনে বার্তাপ্রধান হিসেবে কাজ করেন। যমুনা টেলিভিশনের পরিচালক (বার্তা) ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সর্বশেষ যোগ দেন এশিয়ান টিভিতে।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন শাহ আলমগীর। ১৯৮৯ সালে সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা করেন মস্কো ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম থেকে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঝাউদিয়া গ্রামের বাজারে এ সংঘর্ষ হয়। আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাতব্বর জহুরুল ইসলামের সঙ্গে ও আলম হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত শুক্রবার জহুরুল ইসলামের লোকজন আলম হোসেনের দুই সমর্থককে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে গতকাল বেলা দুইটার দিকে ঝাউদিয়া বাজারে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বেলা তিনটার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র, ঢাল-সড়কি ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে আলম হোসেনের পক্ষের আবদুল হালিম (৩২) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় উভয় পক্ষের আরও ২০ জন আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মোকাম আলী, কাশেম মান্দারসহ চারজনের অবস্থা গুরুতর। স্থানীয় ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী রুহুল ইমাম বলেন, আবদুল হালিম ঝাউদিয়া গ্রামের আক্কেস আলীর ছেলে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, আগামী ছয় মাস দেশ সংকটের ভেতর দিয়ে যাবে। বিশেষ চারটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দেশ এগোচ্ছে। এ চার পরিস্থিতি হলো: গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সামাজিক শক্তির ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, বিদেশি বিনিয়োগের শ্লথ ধারা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন। বিষয়গুলো নাগরিক শক্তিরও ভাবনার কারণ। দেশের এই পরিস্থিতিতে সুশীল সমাজের আর বসে থাকার সুযোগ নেই, কিছু একটা করা দরকার।সিলেটে গতকাল শনিবার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। নগরের একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও আদিবাসী সংগঠনগুলোর নেতারা বক্তব্য দেন। তাঁদের অনেকেই দেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মতবিনিময় সভায় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য সুশান্ত কুমার দাস, মদনমোহন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জামিলুল হক, সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহীদুল ইসলাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল আউয়াল বিশ্বাস, তুলসী কুমার দাস, হাসানুজ্জামান, জহির বিন আলম, তাহমিনা বেগম ও তানিয়া বেগম; উদীচী সিলেটের সভাপতি এ কে শেরাম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী খুশি চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম, মণিপুরি মহিলা সমিতির সভানেত্রী এস রীনা দেবী, আদিবাসী নেতা লক্ষ্মীকান্ত সিংহ ও গৌরাঙ্গ পাত্র বক্তব্য দেন।স্থিতিশীল বাংলাদেশের জন্য টেকসই গণতন্ত্র প্রয়োজন। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনই গণতন্ত্রের একমাত্র অঙ্গ নয় জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনই গণতন্ত্রের একমাত্র অঙ্গ, তা কিন্তু নয়। গণতান্ত্রিক বৈধতার সঙ্গে আরও অনেক জিনিস জড়িয়ে আছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্রের ধারণাকে আরও বিস্তৃত করতে হবে। এ জন্য রাজনীতির বাইরের সমাজসচেতন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন বিশ্বনাগরিক। বাংলাদেশকে তিনি বিশ্বের সঙ্গে তুলনা করতেন যেন দেশের জন্য ভালো কিছু করা যায়। তাঁর চিন্তা ও চেতনাজুড়ে ছিল শুধু দেশের কল্যাণ। গতকাল শনিবার তাজউদ্দীন আহমদ শান্তি স্বর্ণপদক, বৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী-২০১৩ অনুষ্ঠানে  বক্তারা এসব কথা বলেন। তাজউদ্দীন আহমদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে স্বর্ণপদক, বৃত্তি ও পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগ দেননি। মুসলিম শব্দটি যখন সংগঠনের নাম থেকে বাদ দেওয়া হয়, তখনই যোগ দিয়েছিলেন। এ থেকে অসাম্প্রদায়িক মানস চেতনার খোঁজ মেলে। আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭১ সালে তাজউদ্দীন অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সংবেদনশীল ও পরিপূর্ণ মানুষ। তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সাংসদ সিমিন হোসেন রিমি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ এমন গণতন্ত্র, এমন সমাজতন্ত্র চেয়েছিলেন, যা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। অনুষ্ঠানে ২০১১ সালে স্নাতক সম্মান পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফল করায় শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের শিক্ষার্থী সাবরিনা আহমেদকে স্বর্ণপদক এবং সদাচরণ, ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিতি ও লেখাপড়ায় সন্তোষজনক অগ্রগতির জন্য একই বিভাগের স্নাতক সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আদিবা সুলতানা মীমকে ‘তাজউদ্দীন আহমদ’ বৃত্তি দেওয়া হয়। এ ছাড়া রচনা প্রতিযোগিতায় শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মো. আবদুল হান্নান প্রথম, হাবিবুর রহমান দ্বিতীয়, মাস্টার্স দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আজহারুল ইসলাম তৃতীয়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা আবিদা ফারহিনা চতুর্থ এবং ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগের শাহ আমিন আহসান পঞ্চম স্থান অর্জন করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন  বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কামাল উদ্দীন, ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা শারমিন আহমেদ, আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডালেম চন্দ্র বর্মণ প্রমুখ।
সরকারের ‘মৃত্যুঘণ্টা’ বাজানোর বিরোধী দলের হুমকি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন,  ‘উনারা ঘণ্টা বহুবার বাজিয়েছেন। ঈদের পর, পূজার পর, এসএসসি পরীক্ষার পর, ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েও ঘণ্টা বাজিয়েছেন। ঘণ্টা উনারা বাজাবেন, কিন্তু ঘণ্টা বাজবে না।’ গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপির নেতারা হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘গাজীপুরে ফলাফল পরিবর্তনের চেষ্টা করা হলে সরকারের মৃত্যুঘণ্টা’ বাজবে। তোফায়েল আহমেদ প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে হেরে গেলে বলা হয় জনপ্রিয়তা ধসে গেছে। আর জিতলে বলা হয় কারচুপি হয়েছে। আমরা করবটা কী?’ গাজীপুরে ১৮-দলীয় জোট-সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি দলের লোকজন হয়রানি করছে বলে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এর জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ হচ্ছে। সত্য আড়াল করতে বিএনপি সিদ্ধহস্ত। অসত্য কথা বলতেও বিএনপি ক্লান্ত হয় না।’তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ নিরপেক্ষভাবেই দায়িত্ব পালন করছেন। উনি বিএনপি-আওয়ামী লীগ দুই আমলেই সরকারের উচ্চপদে ছিলেন। এই নির্বাচন কমিশন আজিজ মার্কা কমিশন নয়। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন যেভাবে হয়েছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনও সেভাবে হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।
বর্তমানে পুলিশের নারী সদস্যদের কার্যক্রম ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার এবং তদন্তের মধ্যে থেমে নেই। তাঁরা পুলিশের নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেশাদারির সঙ্গে কাজ করছেন। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ টেলিকম মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) প্রথম জাতীয় সম্মেলন ২০১৩-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  বক্তারা  এসব  কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা  মহানগর  পুলিশের  (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মিলি বিশ্বাস। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, ১৯৭৪ সালে মাত্র সাতজন করে  নারী উপপরিদর্শক (এসআই) ও কনস্টেবল বাংলাদেশ পুলিশ যোগ দেন। বর্তমানে নারী পুলিশের সদস্যসংখ্যা ছয় হাজারেরও বেশি। তিনি বলেন, নারী পুলিশ শুধু দেশেই নয়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পেশাদারি দক্ষতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে জেন্ডার সংবেদনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে জেন্ডার গাইডলাইন এবং জেন্ডার মডিউল তৈরি করা হয়েছে।পিআরপির (পুলিশ সংস্কার কর্মসূচি) প্রকল্প ব্যবস্থাপক হেনক ভ্যান ঝিল বলেন, পুলিশ বাহিনীর নারী সদস্যদের  পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মান উন্নয়নে পুলিশ সংস্কার কর্মসূচির আওতায় ইউএনডিপি অব্যাহত সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার নারী পুলিশ গঠনে অবদান রাখার জন্য আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে নারী পুলিশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র এবং একটি মিউজিক ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। বিপিডব্লিউএনের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ১০০ নারী সদস্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।পুলিশ নারীর সামর্থ্য ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্বে যোগ্যতা অর্জনের  উদ্দেশ্যে  ২০০৮ সালের ২১ নভেম্বর বিপিডব্লিউএন গঠিত হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেছেন, ভোটের ক্ষেত্রে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। বিষয়টি ঠেকানোর ক্ষমতা সরকারের নেই। তিনি এ-ও বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, সরকার প্রমাণ করে দিয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। বিএনপির এই নেতা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনের তুলনা করলে হবে না। আগের সংসদ বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের নির্বাচন করার নজির নেই। এটি সংবিধানসম্মত নয়। তা-ই এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। মওদুদ আহমদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ব্রিটিশ সরকার দাওয়াত দেয়নি, তার পরও এ সফরকে রাষ্ট্রীয় সফর বলা হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বলেন, তিনি তাঁর নিজের খরচে সফরে গিয়েছেন তাহলে আর বলার কিছু নেই। এ সময় মওদুদ বলেন, এসব কথা বললে সরকার আবার মামলা দিয়ে দিতে পারে।‘জাতীয় সংসদ চত্বরে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর চালানো নির্যাতন দিবস এবং প্রশ্নবিদ্ধ আগামী জাতীয় নির্বাচন ও আজকের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক উন্মুক্ত পরিষদ নামে একটি সংগঠন। এতে অন্যদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনও বক্তৃতা করেন।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় জানানো হয় চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলায় ৮৪ হাজার ৮৬০টি ছোট-বড় জলাশয় রয়েছে বলে জানানো হয়। এসব জলাশয়ে ৫৩ হাজার ৬৮২ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে বলে তথ্য তুলে ধরা হয়। গতকাল শনিবার সকালে জেলা মৎস্য মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে গণমাধ্যম-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের পরিচালক নাসির উদ্দিন মো. হুমায়ুন, উপপরিচালক এ কে এম ছিদ্দিক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রভাতী দেব, মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।সভায় গত এক বছরে ফরমালিনবিরোধী অভিযান, চিংড়ি আহরণ প্রতিরোধ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। ফরমালিনবিরোধী ২৯৬টি অভিযান এবং ৪৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়।এ ছাড়া মৎস্য সংরক্ষণ আইনে ৪০০টি, চিংড়ি পোনা আহরণ প্রতিরোধে ২০টি অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে মহাজোটের প্রার্থী দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হবেন।কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচনে কারচুরি করলে সরকারের শিগগিরই পতন হবে। এখন মহাজোটকেই চিন্তা করে নিতে হবে তারা পরাজয় বরণ করবে নাকি মৃত্যুবরণ করবে। গতকাল শনিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। দুই দিনের  ব্যক্তিগত সফরে গতকাল শুক্রবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ আসেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি আরও বলেন, স্থানীয় নির্বাচন স্থানীয়ভাবেই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নির্বাচন জাতীয় রূপ নিয়েছে।দেশের সংবিধানকে ‘অসুস্থ’ উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, সংবিধানে বিসমিল্লাহ স্থাপনের প্রয়োজন ছিল না। এখন সেটা প্রতিস্থাপনেরও প্রয়োজন নেই। অনুরূপভাবে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলাম প্রতিস্থাপনেও প্রয়োজন ছিল না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এই সরকারের ওপর মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এ জন্য ঈদের পর ভিন্নমাত্রার আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করা হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস-সংকটের প্রতিবাদে বিএনপির চট্টগ্রাম নগর শাখা গতকাল শনিবার দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন চত্বরে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে আমীর খসরু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির নগর শাখার সহসভাপতি শামসুল আলম। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান, বিএনপির নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার ভোরে কার্যালয়ের প্রধান সহকারীর কক্ষে আগুন লেগে কক্ষের আসবাবসহ শতাধিক নথি পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম আল-আমিন ও স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।এর আগে গত ২৬ জুন সকালে ওই কার্যালয়ের নাজির-কাম কোষাধ্যক্ষের কক্ষের জানালা ভেঙে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই দিনের আগুনে বিভিন্ন নামজারি খতিয়ানের বই পুড়ে যায়।ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ঠিক একই কায়দায় গতকাল সকালে প্রধান সহকারী আবদুল মোতালিবের কক্ষের পেছনের জানালার কাচ ভেঙে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে ওই কক্ষের আসবাবসহ শতাধিক নথি পুড়ে গেছে।১০ দিনের ব্যবধানে একই কার্যালয়ে দ্বিতীয়বার অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হাসানুল মতিন গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।   সহকারী কমিশনার কে এম আল-আমিন বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এর আগেও ঠিক একই কায়দায় দুর্বৃত্তরা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছিল। কারা কেন আগুন লাগাচ্ছে, এখনো জানা যায়নি।’ সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান খান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বাগেরহাটের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে মানববন্ধন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন পরিবেশ সংরক্ষণ উদ্যোগ। মানববন্ধনে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন বলেন, সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন। বছরের পর বছর এটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঢাল হিসেবে কাজ করেছে। বন থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে এটি। সংগঠনের সভাপতি নওরীন রীমা বলেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস এবং ছাই সুন্দরবনের পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। এর ফলে সুন্দরবনে পানি দূষিত হবে এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হবে। মানববন্ধনে অংশ নেন পরিবেশ সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন, উপদেষ্টা অধ্যাপক সালেহ আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান ও অধ্যাপক কামরুল হাসান। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে অংশ নেন।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, ছোটখাটো ফৌজদারি অপরাধ আদালতের বাইরে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা এডিআর ব্যবস্থায় নিষ্পত্তির বিধান রেখে ফৌজদারি কার্যবিধিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিচার শুরুর আগে মামলা ব্যবস্থাপনা কমিটি ছোটখাটো ফৌজদারি অপরাধের মামলাগুলো চিহ্নিত করে আদালতের বাইরে মীমাংসার জন্য পাঠালে আদালতে মামলার সংখ্যা কমবে। পাশাপাশি বিরোধের দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।আইনমন্ত্রী গতকাল শনিবার ঢাকায় বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ইউএনডিপি ও ইউকেএইডের সহযোগিতায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ‘জাস্টিস সেক্টর ফ্যাসিলিটি’ প্রকল্প আয়োজিত ‘মামলা ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন ও সক্রিয়করণ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।আইনমন্ত্রী বলেন, বিবদমান পক্ষগুলোর সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধের নিষ্পত্তি হলে তা সমাজে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক হয়। তবে এ পন্থায় জঘন্য অপরাধীরা যাতে বেরিয়ে যেতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কার্যকর মামলা ব্যবস্থাপনা আদালতে মামলার চাপ কমাতে সহায়ক হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এ এস এস এম জহিরুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, পাবনার জেলা ও দায়রা জজ এম হাসান ইমাম, কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ এ আর মাসুদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। বিজ্ঞপ্তি।
দেশ ও জনগণের কল্যাণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজামেঞ্চল হোসেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গতকাল শনিবার জিল্লুর রহমান পৌর মিলনায়তনে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সমঞ্চাননা প্রদান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।অনুষ্ঠানে কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। দেশপ্রেম ও সামাজিক মূল্যবোধকে ধারণ করে নিজেদের মেধা-মনন জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। সততা, নিষ্ঠা ও দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। পড়ালেখায় কৃতিত্ব অর্জনের পাশাপাশি নিজেদের ভালো মানুষ হিসেবেও গড়ে তুলতে হবে।বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ভৈরবের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ভৈরব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে  এসএসসি, জেএসসি, পিএসসিসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ ৮৪০ জন শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।সংগঠনের সভাপতি মো. আশফিকুজ্জামান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো. সামসুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ এ এম আবু সাইদ, জেলা প্রশাসক মো. ছিদ্দিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল আহসান তালুকদার, ভৈরব পৌরসভার মেয়র হাজি মো. শাহীন, হাজী আসমত কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ ক ম মোবারক আলী, রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ উদ্দিন আহমেদ ও ভৈরব এম পি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এম মুহিত।
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম ঘুষ নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে হাসপাতালে খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের ঠিকাদার নিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ পরিস্থিতিতে কয়েকজন ঠিকাদার আবার দরপত্র আহ্বানের অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জনের কাছে।সিভিল সার্জন রশিদ আহমেদ বলেন, এ ব্যাপারে মেসার্স মুক্তি বাংলা এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স রুদ্র এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, দরপত্র খোলার নির্ধারিত দিন ২১ জুন কোনো প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। দরপত্রের শর্ত উপেক্ষা করে ২৬ জুন কাউকে কিছু না জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেসার্স মুক্তা এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেন।মেসার্স মুক্তি বাংলা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দরপত্র জমা দেওয়ার আগেই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম আলাদাভাবে ডেকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা দাবি করেন। ঘুষের বিনিময়ে কাজ নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে দরপত্র যাচাই-বাছাই না করেই মুক্তা এন্টারপ্রাইজকে কাজের অনুমতিপত্র দিয়ে দেন।’ মেসার্স রুদ্র এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেনও একই কথা বলেন। তাঁরা আরও বলেন, ‘১৯ জুন নুরুল ইসলাম সরকারি প্রশিক্ষণে ব্যাংকক যান। যাওয়ার আগে তিনি দেড় লাখ টাকা চেয়েছিলেন। যত দূর শুনেছি, মুক্তা এন্টারপ্রাইজের মালিক টাকাটা দিয়েছেন। তাই ২৫ জুন ব্যাংকক থেকে ফিরেই নুরুল ইসলাম কাজটা মুক্তা এন্টারপ্রাইজকে দিয়েছেন।’মেসার্স মুক্তা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীর পক্ষে দরপত্রটি ক্রয় করেছিলেন সাঈদ মিয়া। তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।পাঁচ সদস্যের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি সোলায়মান মোল্লা জানান, নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘অন্য ঠিকাদারেরা কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তাঁদের কাছে আমি টাকা দাবি করব কীভাবে? এগুলো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।’সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ হাসপাতালে ওষুধ ও খাদ্যদ্রব্যসহ ৫২ ধরনের পণ্য সরবরাহ করতে ঠিকাদার নিয়োগের জন্য ২৬ মে দরপত্র আহ্বান করা হয়। আটটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কিনে নির্ধারিত ২১ জুনের মধ্যে জমা দেয়। ওই দিনই দরপত্র খোলার কথা ছিল।
জামায়াতে ইসলামী দাবি করেছে, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ্ধতির অনিয়ম ও ভোট চুরির ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে জনগণ। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া বাংলাদেশে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।বিবৃতিতে বলা হয়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সরকার-সমর্থিত প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের পাশাপাশি পুলিশও নগ্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। কোনো কোনো কেন্দ্রে বিলম্বে ভোট গ্রহণ শুরু, আবার কোনো কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। র‌্যাব অনেক কেন্দ্রে পরিচয়পত্র ছাড়া ভোটারদের ভোট দিতে দেয়নি। বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ভোট গ্রহণ শেষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের ক্যাডাররা ফলাফল প্রকাশের ব্যাপারে প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টা চালায়। এসব ঘটনা থেকে প্রতীয়মান হয়, জাতীয় নির্বাচনে তারা আরও মরিয়া হয়ে উঠবে।
ব্র্যান্ড ও যোগাযোগ গবেষণায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান মিলওয়ার্ড ব্রাউন ঢাকায় কার্যালয় খুলেছে। সম্প্রতি রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করা হয়।অনুষ্ঠানে মিলওয়ার্ড ব্রাউন গ্লোবাল সলিউশন্সের চেয়ারম্যান গর্ডন পিনকট, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) প্রসূন বসু, ফায়ারফ্লাইয়ের প্রধান ভার্তিকাহালি এবং বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার সামিনা আফরিন উপস্থিত ছিলেন।বাংলাদেশে মিলওয়ার্ড ব্রাউনের এই কার্যালয় আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে লতি বছরে উদ্বোধন করা দ্বিতীয় কার্যালয়। সম্প্রতি মিয়ানমারে এর একটি কার্যালয় খোলা হয়।মিলওয়ার্ড ব্রাউন গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসলেও এখানে তাদের কোনো স্থায়ী কার্যালয় ছিল না। স্থানীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভোক্তাদের আরও অধিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে ঢাকায় স্থায়ী কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে মিলওয়ার্ড ব্রাউনের সাউথ এশিয়া ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রসূন বসু বলেন, বাংলাদেশ হলো গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল পরবর্তী-১১ মার্কেটের অন্যতম। তাই এটি আমাদের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভোক্তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞপ্তি।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মত্ত গ্রামে গতকাল শনিবার ভোরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট আকতার হোসেন বিশ্বাস (৫৫) নামের এক কৃষি কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে।আকতার ওই গ্রামের প্রয়াত হামিদ বিশ্বাসের ছেলে এবং সিঙ্গাইর উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি উন্নয়ন কর্মকর্তা পদে কর্মরত ছিলেন।  স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল ফজরের নামাজ শেষে আকতার বাড়ির পাশের একটি মসজিদে বাল্ব লাগাচ্ছিলেন। এ সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে ছিটকে পড়েন তিনি। প্রতিবেশী ও স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।  হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই কৃষি কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
প্রথম আলোর উদ্যোগে ঝালকাঠিতে সংবাদপত্র বিক্রয়কর্মীদের মধ্যে রেইনকোট বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ে জেলার ২০ জন বিক্রয়কর্মীর হাতে রেইনকোট তুলে দেন প্রথম আলোর আঞ্চলিক উপব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান। এ সময় জেলা সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি সালাহউদ্দিন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, প্রথম আলোর ঝালকাঠি প্রতিনিধি মো. আক্কাস সিকদার ও ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মানিক রায় উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজারে একটি ভবনে নির্মাণকাজ করার সময় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। গতকাল শনিবার সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত নির্মাণশ্রমিকের নাম শুক্কুর আহমেদ। তাঁর গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের গোপালপুর এলাকায় বলে জানা গেছে। তাঁর বাবার নাম মো. তাজুল ইসলাম।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সিমেন্ট প্রস্তুতকারক লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেড বোরো চাষে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ১২ জন চাষিকে পুরস্কৃত করেছে। এ বছর কোম্পানিটির ‘বোরো ল্যান্ড রিভাইটালাইজেশন প্রকল্পের’ আওতায় এই চাষিরা অনাবাদি জমিতে বোরো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।  কয়েক দশক ধরে অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকা ছাতকের প্রায় ২৫০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করে ওই কৃষকেরা বিঘাপ্রতি ২০ মণ ধান উৎপাদনে সক্ষম হন।গত বুধবার সন্ধ্যায় ছাতকে অবস্থিত কোম্পানি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন সংস্থার (বিএডিসি) চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব জহির উদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডের ফিন্যান্স ডিরেক্টর মাসুদ খান ও এইচআর ডিরেক্টর তাহিয়া হোসেইন চাষিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারি ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা প্রশাসন গতকাল শনিবার মুচলেকা ও অঙ্গীকার নিয়ে দুটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার করিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীর (১১) সঙ্গে একই গ্রামের কৃষক মনির হোসেন এবং মুগারচরের একটি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রীর (১৫) সঙ্গে একই গ্রামের কলেজছাত্র মিলনের বিয়ের আয়োজন করা হয়। বরপক্ষ পৌঁছানোর পরপরই ইউএনও সামছুল হক ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাল্যবিবাহ দুটি বন্ধ করে দেন। দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি। উন্নত জাতের লাউকৃষি বিভাগের মানসম্পন্ন উদ্যান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উন্নত মানের ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ‘আবু লাউ’ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টার। কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ সাইফুর রহমান জানান, এর আকার ও রং আকর্ষণীয় এবং খেতেও সুস্বাদু, সাধারণত লাউয়ের চেয়ে এর ফলন বেশি। সারা বছরই এর চাষ করা যায়। তাই বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ বেশি লাভজনক। নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। পিরানহা মাছ জব্দ বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সিও বাসস্ট্যান্ড এলাকার পৌর বাজারের আলম হোসেনের মাছের আড়তে গতকাল শনিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে প্রায় চার মণ পিরানহা মাছ জব্দ করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফ আহমেঞ্চদ এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও মৎস্য অফিসের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি। মতবিনিময় সভা ফরিদপুরে জেলা প্রশাসকের সমেঞ্চলনকক্ষে গতকাল শনিবার দুপুরে ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচির আওতায় ‘ইমপ্রুভিং দ্য কনডিশন্স ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্র্যাকের জ্যেষ্ঠ প্রকল্প কর্মকর্তা কাজী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এস এম নুরুন্নবী। ফরিদপুর অফিস।
মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজাঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজা (৮৪) গত শুক্রবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। আজ রোববার বাদ জোহর রাজধানীর আজাদ মসজিদে তাঁর জানাজা হবে। কাল সোমবার বাদ মাগরিব তাঁর বাসায় (অ্যাপার্টমেন্ট বি-৫, সিইএন-১১/এ, রোড-৯৬, গুলশান-২) কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞপ্তি।
জাহাঙ্গীর আলমনীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচণ্ডী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (২৫) গত ১৫ জুন রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে মুঠোফোনে সর্বশেষ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় গত ২৮ জুন একটি সাধারণ ডায়েরি (১৫১৭) করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরের উচ্চতা পাঁচ ফুট ১০ ইঞ্চি। গায়ের রং শ্যামলা, হালকা-পাতলা গড়ন। ওই দিন তাঁর পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও জামা। কোনো সহূদয়বান ব্যক্তি তাঁর সন্ধান পেলে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।
ভাষাসংগ্রামী ও কলাম লেখক মতলুব আনামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৭ জুলাই। মতলুব আনাম উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ আবুল মনসুর আহমদের তৃতীয় পুত্র এবং ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বড় ভাই।মতলুব আনাম বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে ফাইজার, সার্ল, স্মিথ-ক্লাইন-অ্যান্ড-ফ্রেঞ্চ, এসএমসিসহ বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। তিনি সর্বশেষ গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের মহাব্যবস্থাপক ছিলেন। তিনি ১৯৩৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংয়ের ত্রিশালের ধানীখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিজ্ঞপ্তি। আবদুল গফুরবাংলাদেশ টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ বোর্ডের সাবেক পরিচালক আবদুল গফুরের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৭ জুলাই। এ উপলক্ষে বাদ মাগরিব রাজধানীর মগবাজারে বিটিসিএলের অফিসার্স কোয়ার্টারে (ডি-৭) মিলাদ মহাফিল ও কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেওয়ার জন্য আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।
ক্যানসারে আক্রান্ত বিউটি বেগম (৩৫) নিজে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। অথচ মানুষকে নদীর ঘোলা পানি পান করে সর্বরোগ থেকে মুক্তির পরামর্শ দিচ্ছেন। স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে তিনি এমন পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাঁর কথায় বিশ্বাস করে প্রতিদিন নদীর ঘাটে কয়েক শ মানুষ ভিড় করছে।সাধারণ মানুষের এই ভিড়কে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় লোকজন রমরমা ব্যবসা করছে। আড়াই মাস ধরে কাজিবাচা নদীর খুলনার বটিয়াঘাটার বুজবুনিয়া ঘাটে এমন কর্মকাণ্ড চলছে। চিকিৎসকদের মতে, এটি অন্ধবিশ্বাস ও অপপ্রচার মাত্র। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে।এলাকার কয়েকজন, বিউটি ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় বটিয়াঘাটা উপজেলার হাশিমপুর গ্রামের পাটকল শ্রমিক আকরাম শেখের স্ত্রী বিউটির জরায়ুতে ক্যানসার ধরা পড়ে। হাসপাতালের চিকিৎসক মৃণালকান্তি সরকারের অধীনে তাঁকে পর পর দুটি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এরপর কোনো এক রাতে বিউটি স্বপ্নে দেখেন, এক বৃদ্ধা এসে তাঁকে বলছেন, ‘তুই আর কান্দিসনে। বাড়ি ফিরে বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বুজবুনিয়া গ্রামের পাশে কাজিবাচা নদীর চরে কবরের পাশ থেকে তিন কোষ পানি খাগে, ভালো হয়ে যাবি।’ কিছুদিন পর বিউটি তৃতীয় কেমো নিয়ে বাড়ি ফেরার পর আবারও একই স্বপ্ন দেখেন। তখন তিনি বুজবুনিয়া ঘাটে গিয়ে নদী থেকে তিন আঁচলা পানি পান করেন। এর পর থেকে তিনি সুস্থবোধ করতে থাকেন। এ খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকে আশপাশের বিপুলসংখ্যক মানুষ বিউটিকে দেখতে ও তাঁর স্বপ্নের কথা শুনতে আসে। এর পর থেকেই নদীর পানি পান শুরু।খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ হুজুগের ব্যাপার। বিজ্ঞানের এই যুগে এসব চলে না। অবিলম্বে এটা বন্ধ করা জরুরি।’৩ জুলাই সরেজমিনে দেখা যায়, বুজবুনিয়া গ্রামসংলগ্ন কাজিবাচা নদীর পূর্ব পাশে বাঁধের ওপর অসংখ্য নারী, শিশু ও পুরুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে নদীতে নামছে এবং হাত দিয়ে নদী থেকে তিনবার পানি তুলে মুখে দিচ্ছে। ওই সময় বেশ কয়েকটি ট্রলার ও নৌকা থেকে মানুষ নেমে সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে যায়। সকাল সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ট্রলার ওই স্থানে এসে থামে। দেড় ঘণ্টায় ৭০০ থেকে ৮০০ মানুষকে নদীর পানি পান করতে দেখা গেল।ওই সময় মাথায় লাল কাপড় বাঁধা বেশ কয়েকজন সেবককে দেখা গেল। তাঁরা আগত মানুষদের তদারকি করছেন। আগতরা খালি পায়ে নদীতে নামছে। বিপুলসংখ্যক মানুষের আসা-যাওয়ার কারণে সেখানে বেশ কিছু খাবারের দোকান গড়ে উঠেছে। ঝোলানো হয়েছে ৩০টিরও বেশি দানবাক্স। আর স্বঘোষিত স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যবস্থাপনা খরচের নামে ওই ঘাটে আসা ট্রলারপ্রতি ৫০ টাকা ও দোকানপ্রতি ২০ টাকা হারে চাঁদা তুলতে দেখা গেল। তবে বিউটির নামে কোনো টাকা তুলতে কাউকে দেখা যায়নি। স্বেচ্ছাসেবক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘স্বপ্নে পাওয়া পানি খেয়ে বিউটি বেগমের ক্যানসার ভালো হওয়ার কথা শুনে আড়াই মাস ধরে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে পানি খাতি আসতিছে। আমরা এখানে বাঁশ পুঁতে দিয়ে, মাইক লাগায়ে শৃঙ্খলা রক্ষা কত্তিছি। তা না হলি তো এত ভিড় সামলানে যাবে নানে। তবে আমরা পানি খাতি কারও কাছেত্তে কোনো টাকা-পয়সা নিচ্ছিনে। মানুষ স্বেচ্ছায় দান কত্তেছে।’ঢাকা থেকে পানি খেতে আসা আসাবুর রহমান (৫০) বলেন, ‘আমার বুকের মধ্যে মেলা দিনের জ্বালাপোড়া। কোনো চিকিৎসায় ভালো না হওয়ায় এখানে আসছি।’ যশোরের ট্রাকচালক অলিয়ার রহমান (৪০) বলেন, ‘আগে ট্রাক চালানোর সময় কিছু সময় পর পর চোখে ঝাপসা দেখতাম। এই পানির খবর শুনে আসে খাওয়ার পরেত্তে সুস্থবোধ কত্তিছি।’আকরাম শেখ বলেন, ‘আমার স্ত্রী অনেক দিন ক্যানসারে ভোগার পরে স্বপ্নে এই পানি পায়ে খায়ে এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে।’ পানি খাওয়ার পরও স্ত্রীকে দুবার কেমোথেরাপি কেন দেওয়ালেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পানি খাওয়ার পরেত্তে তো আমার স্ত্রীর টিউমার কুমতি থাকে। ডাক্তার পরীক্ষা করে কলে, আর দুডো কেমো নিলি সে সম্পূর্ণ সুস্থ হবে। তাই কেমো নিছি।’খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ মৃণালকান্তি সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ যখন সাঈদীকে চাঁদে দেখার ঘটনা বিশ্বাস করে, তখন এমন প্রচার কেন বিশ্বাস করবে না?’ বিউটি বেগমের পানি খেয়ে সুস্থ হওয়ার দাবি উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘নদীর পানি খেলে যদি ক্যানসার সারে, তাহলে উনি আবার কেমো নিচ্ছেন কেন?’
যানজটের সুযোগে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে সিরিয়াল ভেঙে গাড়ি ফেরিতে ওঠার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।সরেজমিনে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেরিসংকট এবং নদীতে তীব্র স্রোত ও ডুবোচরের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় কয়েক দিন ধরে দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট লেগে আছে। কয়েকজন গাড়িচালক ও স্থানীয় বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন, যানজটের সুযোগে ঘাটে কর্মরত কতিপয় অসাধু ট্রাফিক পুলিশ এবং দালাল চক্র টাকার বিনিময়ে সিরিয়াল ভেঙে বাইপাস (বিকল্প) সড়ক দিয়ে গাড়ি ফেরিতে ওঠার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘাটে অপেক্ষা করে দেখা যায়, ফেরিসংকটের কারণে ঘাট থেকে ক্যানেল ঘাট পর্যন্ত দুই-তিন সারিতে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে। ক্যানেল ঘাটের পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় পর্যন্ত গাড়ির আরও প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ সারি। ঘাটের টার্মিনালসংলগ্ন বিকল্প সড়কের প্রবেশমুখে ট্রাফিক পুলিশ স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী গাড়ি দ্রুত ফেরিতে ওঠার সুযোগ করে দিচ্ছে।খুলনা থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক রুমি শেখ বলেন, ‘এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি। অথচ স্থানীয় দালাল এবং পুলিশ ২০০-৩০০ করে টাকা নিয়ে সিরিয়াল ভেঙে অনেক গাড়ি বাইপাস সড়ক দিয়ে বের করে দিচ্ছে।’ যশোর থেকে আসা ট্রাকের চালক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে ঘাটে এসে সিরিয়াল দিয়ে এখনো পার হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। অথচ আমাদের অনেক পরে এসেও কিছু গাড়িচালক ৩০০-৫০০ টাকা করে দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে।’বিকল্প সড়কের প্রবেশমুখের একটু দূরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখা গেল ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মেহেদী হাসান ও এক পুলিশ কনস্টেবল বাস-ট্রাকের সিরিয়াল ঠিক রাখছেন। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু দালাল কথা বলে মাঝেমধ্যে গাড়ি বাইপাস সড়ক দিয়ে ফেরিতে ওঠার সুযোগ করে দিচ্ছেন। আধা ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১০টি গাড়ি দ্রুত ফেরিতে ওঠার সুযোগ করে দিলেন তাঁরা।গত ২২ জুন গোয়ালন্দের ইউএনও ছরোয়ার হোসেন দালালের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ট্রাফিক পুলিশকে সিরিয়াল ভেঙে যাত্রীবাহী বাস ফেরিতে ওঠার সুযোগ করে দিতে দেখেন। পরে একটি বাসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। মেহেদী হাসান দালালদের মাধ্যমে টাকা নিয়ে সিরিয়াল ভেঙে বিকল্প সড়ক দিয়ে গাড়ি পার করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর সামনেই ১০ মিনিটে কয়েকটি গাড়ি সিরিয়াল ভেঙে ফেরিতে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি বাসে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার আত্মীয় ছিল। পরিচিত একজনের অনুরোধে আরেকটি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর গরুর গাড়িগুলো ট্রলার ঘাটে নামবে বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মাঝেমধ্যে অনুরোধের কারণে গাড়ি ছাড়তে হয় বলে তিনি স্বীকার করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে বরগুনার পাথরঘাটায় মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি তিন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।প্রতারণার শিকার চাকরিপ্রার্থীরা হলেন উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মধ্য জ্ঞানপাড়া গ্রামের আবদুর রহিম, ইব্রাহিম খলিল ও মো. ফয়সাল। মতিউর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। তাঁর বাড়িও একই গ্রামে।আবদুর রহিমের বাবা আবু শিকদার জানান, মতিউর রহমানের ছেলে সোহেলের সেনাবাহিনীতে চাকরি হয়েছে। টাকার বিনিময়ে আবদুর রহিমেরও সেনাবাহিনীতে চাকরি দিতে পারেন জানালে, তিনি ছেলের চাকরির জন্য তাঁকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দেন। এরপর মতিউর রহমান তাঁকে সেনাবাহিনীর আর্টিলারি (গার্নার) রেজিমেন্ট কোরের একটি নিয়োগপত্র দেন। ওই নিয়োগপত্রে গত বছরের ২০ জুলাই সকাল নয়টায় ঢাকা সেনানিবাসের সদর দপ্তরে হাজির হতে বলা হয়। পরে ওই নিয়োগপত্র নিয়ে আবদুর রহিম ঢাকা যাওয়ার উদ্যোগ নিলে মতিউর রহমান এটি ভুয়া বলে স্বীকার করে সদর দপ্তরে হাজির না হতে অনুরোধ করেন।মতিউর রহমানের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ঘটনা নিশ্চিত করে নাচনাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হয়েছে। মতিউর রহমান সালিসে আবদুর রহিমকে ৫৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন।গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মতিউর রহমান ১০-১৫ বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তাঁর ছেলে হারুন অর রশীদ ওরফে মো. সোহেল টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি হয়েছে বলে এলাকায় প্রচার করেন এবং সোহেলের সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ছবি বাঁধাই করে ঘরে ঝুলিয়ে রাখেন। একইভাবে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে ওই গ্রামের আবদুর রহিম, ইব্রাহিম খলিল ও মো. ফয়সালের কাছ থেকে সাড়ে ১০ লাখ টাকা নেন। একপর্যায়ে তিনি ওই তিনজনকে সেনাবাহিনীর ভুয়া নিয়োগপত্রও দেন।নাচনাপাড়া ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রুহুল আমিন জানান, ঢাকার একটি দালাল চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে মতিউর রহমান এলাকায় এ কাজ করেন। তাঁর ছেলে সোহেল কোনো সময়ই সেনাবাহিনীতে চাকরি করেননি। সোহেল কয়েক বছর বাড়িতে ছিলেন না। বছর দেড়েক আগে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় অতিদরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির দুটি প্রকল্পে আত্মসাৎ করা প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ছয় মাসেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। গত ২৫ ডিসেম্বর ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল।প্রকল্প দুটির চেয়ারম্যান সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য জাহিদ মো. মাসুম ও কমলাপুর ইউপির সদস্য মিজানুর রহমান প্রকল্পের কাজ করে দেবেন বলে জানান। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেন কাজ করা হয়নি বা কেন টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি, এ প্রসঙ্গে তাঁরা কিছু বলতে চাননি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শান্তি রঞ্জন বৈদ্য বলেন, ওই টাকা অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপজেলায় ২০১১-১২ অর্থবছরে কর্মসংস্থান কর্মসূচি ‘নন ওয়েজ’ প্রকল্পের জন্য দুই পর্যায়ে মোট ৫৫ লাখ ছয় হাজার ২৫৩ টাকা বরাদ্দ করা হয়। উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প চেয়ারম্যানরা বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করেন। তবে লাউকাঠি ও কমলাপুর ইউনিয়নে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দুজন প্রকল্প চেয়ারম্যান মোট ছয় লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৪ টাকা উত্তোলন করেন।গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, লাউকাঠি ইউনিয়নের ‘জামুরা কালাম সিকদারের বাড়ি থেকে শাহ আলম লাহরীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্পে প্যালাসাইডিং ও বক্স কালভার্ট নির্মাণকাজের জন্য একটি চেকে দুই লাখ ৬০ হাজার ৮৪৭ টাকা উত্তোলন করেন জাহিদ মো. মাসুম। অপরটি কমলাপুর ইউনিয়নের ‘চরমৈশাদী বজু আকনের বাড়ি থেকে ইউসুফ মৃধার বাড়ি হয়ে ইসলামপুর মাদ্রাসা পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্পের কালভার্ট নির্মাণকাজের জন্য মিজানুর রহমান দুটি চেকের মাধ্যমে চার লাখ ছয় হাজার ৭৪৭ টাকা উত্তোলন করেন। কিন্তু প্রকল্প দুটিতে আদৌ কোনো কাজ করা হয়নি। এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা দল প্রকল্প দুটির বিষয়ে আপত্তি করে। এ কারণে উত্তোলিত টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে চালানের মূল কপি ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
৭ জুলাই, ২০১৩আজকের এই তারিখে জন্মগ্রহণ করায় পাশ্চাত্যমতে আপনি কর্কট রাশির জাতক বা জাতিকা। আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা ২ ও ৭। গুরুত্বপূর্ণ দিন সোমবার। শুভ রং: সোনালি, হালকা সবুজ, সাদা। শুভ রত্ন: ক্যাটস আই, মুন স্টোন। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব: প্রবোধ কুমার স্যানাল, কে এস ফিরোজ, রিঙ্গোস্টার। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার রাশিতে আজকের পূর্বাভাস:মেষ (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল): কর্মস্থলে কারও প্ররোচনায় ভুল সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে। প্রিয়জনের মন রক্ষা করা কঠিন হতে পারে। পাওনা আদায় হবে। নতুন প্রেমের ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হতে পারে। আজ আপনার অর্থভাগ্য বিশেষ শুভ।বৃষ (২১ এপ্রিল-২১ মে): ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আজ দূরে কোথাও যেতে হতে পারে। সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রশংসিত হবেন। পাওনা আদায়ে প্রভাবশালী কারও সহযোগিতা পেতে পারেন। প্রেমে সাফল্যের সম্ভাবনা আছে।মিথুন (২২ মে-২১ জুন): শিক্ষা কিংবা গবেষণার জন্য সম্মাননা পেতে পারেন। পারিবারিক দ্বন্দ্বের অবসান হতে পারে। আজ কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন। প্রেমে সাফল্যের সম্ভাবনা আছে। যাবতীয় কেনাকাটা শুভ।কর্কট (২২ জুন-২২ জুলাই): ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আজ দূরে কোথাও যেতে হতে পারে। সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেতে পারে। হারিয়ে যাওয়া মূল্যবান জিনিস খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রেমের ব্যাপারে আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।সিংহ (২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট): কর্মস্থলে প্রতিপক্ষের কূটচাল ব্যর্থ হবে। সৃজনশীল কাজের জন্য সম্মাননা পেতে পারেন। পরিবারের কারও রোগমুক্তি ঘটতে পারে। আজ আপনার অর্থভাগ্য বিশেষ শুভ। প্রেমের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে।কন্যা (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর): ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পাদনের জন্য দিনটি শুভ। পারিবারিক প্রয়োজনে আজ আপনাকে আপস করতে হতে পারে। শিক্ষা কিংবা গবেষণায় অবদানের জন্য সম্মাননা পেতে পারেন। প্রেমের ব্যাপারে আজ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।তুলা (২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর): বেকারদের কারও কারও জন্য আজ সুখবর আছে। পারিবারিক সমস্যার সমাধানে আপনার উদ্যোগ ফলপ্রসূ হতে পারে। প্রেমের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। আজ আপনার অর্থভাগ্য বিশেষ শুভ।বৃশ্চিক (২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর): বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ আসতে পারে। শিল্পকলা কিংবা সাহিত্যকর্মের জন্য সম্মাননা পেতে পারেন। নতুন কাজে হাত দেওয়ার জন্য দিনটি শুভ। ভেঙে যাওয়া প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগতে পারে।ধনু (২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর): বৈদেশিক বাণিজ্যে শুভ যোগাযোগ ঘটতে পারে। বেকারদের কেউ কেউ ঝুঁকিপূর্ণ বিদেশযাত্রায় সফল হবেন। হারিয়ে যাওয়া মূল্যবান জিনিস খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রেমে সাফল্যের দেখা পাবেন।মকর (২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি): কর্মস্থলে কারও প্ররোচনায় ভুল সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের অবসান হবে। সৃজনশীল কাজের জন্য বিদেশ থেকে সম্মাননা পেতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। দূরের যাত্রা শুভ।কুম্ভ (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): দিনটি শুরু হতে পারে প্রিয়জনের কোনো সুসংবাদ দিয়ে। সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেতে পারে। জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি হতে পারে। সহকর্মীর সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কের সূচনা হতে পারে।মীন (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে তেজিভাব বিরাজ করবে। পাওনা আদায়ে অন্যের সহযোগিতা পাবেন। বৈদেশিক যোগাযোগ শুভ। ফেসবুকে কারও হেঁয়ালিপূর্ণ মন্তব্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে প্রেমের পরোক্ষ আহ্বান
সড়ক দুর্ঘটনায় গত দুই দিনে চুয়াডাঙ্গায় মিঠুন মিয়া (২৬) নামের আলমসাধুচালক, মাগুরায় ইবাদত হোসেন (৩০) নামের নছিমনচালক এবং কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় অজ্ঞাত (২৬) এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আমাদের আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:চুয়াডাঙ্গা: গতকাল শনিবার সকাল নয়টার দিকে জেলার সরোজগঞ্জ বাজার থেকে আলমসাধুভর্তি চামড়া নিয়ে ঝিনাইদহ যাচ্ছিলেন মিঠুন মিয়া। পথে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবীননগরে ঢাকাগামী একটি বাস আলমসাধুটিকে ধাক্কা দিলে মিঠুন মিয়া আহত হন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মিঠুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না গ্রামের করিম মণ্ডলের ছেলে।মাগুরা: গত শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে মাগুরা-যশোর সড়কের মাগুরার মঘির ঢালে নছিমন ও যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও নছিমনকে আরেকটি ট্রাক আঘাত করে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। এ ঘটনায় নছিমন ও বাসের অন্তত ১০ যাত্রী আহত হন। আহত ব্যক্তিদের পাঁচজনকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নছিমনচালক ইবাদত হোসেন মারা যান।কুষ্টিয়া: গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে মেহেরপুর থেকে একটি বাস কুষ্টিয়া আসার পথে মিরপুর উপজেলার চার মাইল এলাকায় একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল ও বাসের ২০-২২ জন যাত্রী আহত হন। আহত ব্যক্তিদের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে মারাত্মক আহত মোটরসাইকেল আরোহীকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ভার্সিটিজীবন শেষ হতে না হতেই যখন লাখ লাখ শিক্ষার্থী বিসিএস গাইড বই মুখস্থ করতে কিংবা নামীদামি বিদেশি কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদনপত্র লিখতে বসে যান, তখন সবার চেয়ে আলাদা কিছু স্বাধীনচেতা, উদ্যমী তরুণ খুঁজে বেড়ান নতুন প্রকল্পের আইডিয়া। তাঁরা মাস শেষে মোটা অঙ্কের বেতনের স্বপ্ন না দেখে উদ্ভাবনের নেশায় অনেক দিনের জমানো সঞ্চয়ও খরচ করে ফেলেন নির্দ্বিধায়। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের মির্জা জুনায়না সাবাহ, সৈয়দ আজিম হায়দার, সাকিফ নাঈম খান ও অর্থনীতি বিভাগের তাসমিয়া নাহরিন এমনই কয়েকজন উৎসাহী তরুণ উদ্যোক্তা। গত ১৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিন আয়োজিত ‘ডেল সোশ্যাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০১৩’ প্রতিযোগিতার ফাইনালে নিজেদের সামাজিক ব্যবসা পরিকল্পনা উপস্থাপন করে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ৩২ লাখ টাকা) পুরস্কার জিতে এসেছেন তাঁরা।২০০৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে। এ বছর মোট তিন লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যমানের পুরস্কারের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনে জমা পড়েছিল মোট দুই হাজার ৬০৫টি প্রজেক্ট। অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এ প্রতিযোগিতার ফাইনালে জার্মানি, মেক্সিকো, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের দলকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের দল ‘ফুট সোলজার’ দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। প্রথম পুরস্কার পেয়েছে সিঙ্গাপুর ও ভারতের একটি যৌথ দল। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশের কী এমন পরিকল্পনা, যা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কেও হারিয়ে দিল? দেশে ফিরে ‘স্বপ্ন নিয়ে’কে সে গল্পই শোনালেন বিজয়ী তরুণ উদ্যোক্তারা। (অনিবার্য কারণে যুক্তরাষ্ট্র যেতে পারেননি দলের অন্যতম সদস্য আজিম।) আমরা কথা বলি জুনায়না সাবাহ, সাকিফ ও তাসমিয়ার সঙ্গে।জুনায়না বলেন, ‘গাড়ির বাতিল টায়ার ব্যবহার করে স্বল্প খরচে পরিবেশবান্ধব জুতা তৈরির প্রকল্প হচ্ছে “ফুট সোলজার”। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে গত শীতে আমরা সবাই পঞ্চগড়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে যাই। সেখানে দরিদ্র মানুষের হাতে গরম কাপড় তুলে দিতে গিয়ে আমরা দেখি, সমস্যা শুধু কাপড়েরই নয়। তীব্র শীতের মধ্যেও তাদের অনেকের পা খালি, ঠান্ডা মাটির ওপর দাঁড়িয়ে আছে তারা। আমরা ভেবে দেখলাম, সত্যিই তো, বাংলাদেশে এমন লাখ লাখ মানুষ শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা খালি পায়ে কাটিয়ে দিচ্ছে, সাধারণ মানের জুতা কেনার সামর্থ্যও তাদের নেই। ফেরার পথে সারাক্ষণ মাথায় ঘুরছিল, শুধু বছরে একবারের জন্য গরম কাপড় বিতরণ করেই কি আমাদের দায়বদ্ধতা শেষ হয়ে যায়? বিষয়টি আমাদের ভীষণভাবে নাড়া দেয়, আর সে ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় ফুট সোলজার।’শুরুটা হয়ে যায় এভাবেই। স্বল্প খরচে কীভাবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই জুতা তৈরি করা যায়, এ নিয়ে পড়াশোনা করতে উঠেপড়ে লেগে যান চার বন্ধু। নানা ভাবনাচিন্তার পর মনে হলো, প্রতিবছর লাখ লাখ গাড়ির টায়ার বাতিল হয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশে সেগুলো নবায়ন করে ব্যবহারযোগ্য পণ্য তৈরি করার কোনো ব্যবস্থা নেই। অসংখ্য টায়ার পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে, এতে শহরের বাতাস মারাত্মক দূষিত হয়ে পড়ছে। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই ফেলে দেওয়া টায়ার হতে পারে রাবারের ভালো উৎস। ব্যস, হয়ে গেল! ‘কম খরচে জুতা তৈরির চেষ্টা আর গাড়ির বাতিল টায়ার—দুয়ে দুয়ে চার মেলাতে দেরি হয়নি আমাদের’, যোগ করলেন তাসমিয়া।একেই বলে সমস্যা থেকে সুযোগ সৃষ্টি করা। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যাঁরা আইডিয়া নিয়ে কেবল সঠিক সময়ের অপেক্ষায় বসেই থাকেন, কাজ আর শুরু করা হয়ে ওঠে না। ফুট সোলজার দলটির সদস্যরা কিন্তু তেমন নন। মাথায় আইডিয়া আসার পর থেকেই তাঁরা কাজ করতে মাঠে নেমে যান। প্রথমে কয়েকজন মুচির সঙ্গে কথা বলে অল্প কয়েকটি টায়ার থেকে কিছু জুতার নমুনা তৈরি করেন। শুধু নমুনা নয়, মাত্র এক মার্কিন ডলারে কীভাবে মানসম্মত, পরিবেশবান্ধব জুতা তৈরি করা যাবে, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা বানিয়ে ফেলেন তাঁরা। কিন্তু সবাইকে তো জানাতে হবে এই উদ্যোগের কথা। বিনা খরচে প্রচার করার জন্য তাঁরা বেছে নেন ফেসবুক। বাতিল টায়ার থেকে বানানো জুতাগুলোর ছবি তুলে ফেসবুকে ‘ফুট সোলজার’-এর ফ্যান পেজ তুলে দেন তাঁরা। অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেন এই উদ্যোগে বিভিন্নভাবে সাহায্য করার জন্য। বিশেষত অনেকেই তাঁদের গাড়ির বাতিল টায়ার তুলে দিতে চান এই তরুণ উদ্যোক্তাদের হাতে।তবু প্রশ্ন থেকে যায়, এই চমৎকার সামাজিক ব্যবসার উদ্যোগটি কি শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি বাস্তবেও হাজার হাজার পথশিশু বা দরিদ্র মানুষের পায়ে জুতা পরিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে? ব্যবসা শুরু করে দেওয়ার জন্য ফুট সোলজারের উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন ছিল ন্যূনতম ৩০ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ২৪ লাখ টাকা)। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কীভাবে এত টাকা সংগ্রহ করা যাবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না কেউই। তবুও হাল ছেড়ে না দিয়ে তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের প্রথম সাফল্য আসে প্রফেশনাল সোসাইটি অব সোশ্যাল বিজনেস ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সোশ্যাল বিজনেস প্ল্যান কম্পিটিশন ২০১২’-এ বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে। জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার জিতে আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে তাঁদের, চোখ রাখেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতাগুলোতে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকল্প জমা দেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডেল সোশ্যাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০১৩’ প্রতিযোগিতায়। এর পরের গল্প শুধুই সাফল্যের, বিদেশের মাটিতে দেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ানোর।এত বড় পুরস্কার জিতে দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে বলে মনে করেন দলের সদস্যরা। সাকিফ বলেন, ‘আমাদের যে প্রাথমিক পুঁজির দরকার ছিল, এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার জিতে সেটুকু অন্তত নিশ্চিত হয়েছে। এখন আমরা দেশের এনজিওগুলোর সঙ্গে যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চাই। এ ছাড়া যেকোনো ব্যক্তি তাঁর পুরোনো টায়ার আমাদের প্রকল্পে দান করতে পারেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য আমাদের ফেসবুক পেজে পাওয়া যাবে www.fb.com/footsoldiersbd।জুনায়না, আজিম, সাকিফ ও তাসমিয়ারা প্রমাণ করে দিয়েছেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে থাকলে প্রলয়ংকরী বন্যা কিংবা শৈত্যপ্রবাহের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না, নিজেদের অবস্থান থেকেই অনেক কিছু করা যায়। নিজেদের অদম্য ইচ্ছা আর পরিশ্রম দিয়ে তাঁরা স্বপ্ন দেখেন সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে সমাজকে বদলে দেওয়ার।
কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্রীদের ওপর যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ। গতকাল শনিবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের থানার মোড়ে মানববন্ধন করা হয়।সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সুব্রত চক্রবতী, সাজ্জাদ হোসেন, সুমন আশরাফ, আবদুল হাকিম, কে এম জাহিদ, মাহমুদুল ইসলাম, আবু জাফর গোলাম, আরিফুর রহমান প্রমুখ।বক্তারা বলেন, যৌন নির্যাতনের মূল হোতা স্কুলশিক্ষক হেলাল উদ্দীনসহ তাঁর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে না পারলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।অভিযোগ রয়েছে, হেলাল উদ্দীন মাধ্যমিক পর্যায়ের একাধিক ছাত্রীকে কৌশলে যৌন নির্যাতন করে তার ভিডিও ধারণ করতেন। এর সঙ্গে শহরের আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। সম্প্রতি এসব ভিডিও শহরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার পুশ আমলা গ্রামে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক নারীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন করার ঘটনায় গত শুক্রবার চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।কারাগারে পাঠানো চার ব্যক্তি হলেন উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের পুশ আমলা গ্রামের বিষ্ণু কুমার ধর, শিশির কুমার মণ্ডল, তপন বাড়ুনী ও সুনীল কুমার বিশ্বাস।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের জগেন্দ্রনাথ মণ্ডলের স্ত্রী শুভধরা মণ্ডল আর্থিক দৈন্যের কারণে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নেন। এসব ঋণের সুদ পরিশোধ করার জন্য কয়েকজন প্রতিবেশীর কাছ থেকে আবারও ঋণ নেন। সম্প্রতি তিনি ১৭ শতাংশ জমি বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া কয়েক দিন ধরে তাঁর স্বামী গা-ঢাকা দেওয়ায় পাওনাদারেরা টাকার জন্য চাপ দেন। গত মঙ্গলবার পাওনাদারেরা এসে টাকা না পেয়ে তাঁকে বারান্দার কাছে পেয়ারাগাছের সঙ্গে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করেন। গত বুধবার বিকেলে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মাখন লাল ঘোষের হেফাজতে রাখে।বালিয়াকান্দি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল আসলাম শেখ জানান, নির্যাতনের শিকার শুভধরা মণ্ডল বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এর পরপরই বিকেলে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সেমিস্টারে উত্তীর্ণ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা গতকাল শনিবার বিক্ষোভ-ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেছেন।মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের ১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। এ কারণে তাঁদের পরবর্তী সেমিস্টারে উত্তীর্ণ করা হয়নি। অকৃতকার্য এসব শিক্ষার্থী পরবর্তী সময় ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীর কাছে তাঁদের কৃতকার্য করার দাবি জানান। কিন্তু অধ্যক্ষ তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এর প্রতিবাদে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন এবং ইনস্টিটিউটের জানালার কাচ ভা ঙচুর করেন। এরপর তাঁরা কলেজের সামনে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করেন।অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই অপতৎপরতার পর কলেজের সব পরীক্ষা ও ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছি।’
মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ওই ছাত্রীকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।এ ঘটনায় প্রতিবেশী জিল্লুর রহমানের (২৫) বিরুদ্ধে মামলা হলেও পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।মাগুরা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিশ্বজিৎ রায় প্রথম আলোকে জানান, জিল্লুর শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ওই ছাত্রীকে কৌশলে বাড়ির পাশে কলাবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। পরে ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরে লজ্জা-অপমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে ছাত্রীর ফুফু তাকে নিবৃত্ত করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।এসআই জানান, গতকাল শনিবার মাগুরা সদর হাসপাতালে ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। জিল্লুরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
টনি ব্লেয়ারের জন্ম ৬ মে ১৯৫৩। তিনি লেবার পার্টির হয়ে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কোলবাই কলেজের ২০১২ সালের সমাবর্তনে তিনি এই বক্তব্য দেনসভাপ্রধান, সম্মানিত অতিথি, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, কোলবাই কলেজে আসতে পারাটা আমার জন্য চমৎকার আনন্দের ও মর্যাদার ব্যাপার।প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আমার জীবন থেকে শেখা সাতটি শিক্ষার কথা তোমাদের বলতে যাচ্ছি। তোমরা ইচ্ছা করলে এই শিক্ষাগুলো গ্রহণ করতে পারো, আবার নাও পারো। এগুলোর মধ্যে প্রথম শিক্ষাটি সরাসরি তোমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কারণ, তোমরা এখনো এই বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা গ্রহণ করছ।প্রথম শিক্ষাবাঁচতে হলে শিখতে হবে। কখনো শেখা থামিয়ো না। সফল ব্যক্তিরা কখনো নির্বিঘ্ন খ্যাতি ও সৌভাগ্যের জন্য সফল হন না, বরং তাঁরা সফল হন ভালো কিছু করার অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা ও অপরিসীম কৌতূহলের জন্য। তাঁরা আত্মোন্নয়নের পথে বিরতিহীন নাবিক। তাই ব্যর্থতার ভয়ে ভীত হয়ো না। ভীত হও চেষ্টাহীন হতে।দ্বিতীয় শিক্ষামুক্তমনা হও। আমি মনে করি, বর্তমান সময়ে মুক্তমনা হওয়াটা ডান ও বাঁয়ের পার্থক্যসূচক বৈশিষ্ট্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আমি পৃথিবীজুড়েই এই পার্থক্যসূচক বৈশিষ্ট্য দেখেছি উদারমনা ও অনুদারমনা ব্যক্তিদের মধ্যে। তাই আমার উপদেশ, বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির ব্যাপারে দিলখোলা হও। কারণ, এই জিনিসগুলোই ইতিহাসের মধ্যে বিভক্তি এনেছে। তবে মুক্তমনা ব্যক্তিরা এসব উতরে যেতে পারেতৃতীয় শিক্ষাভালো কিছু দিলেই ভালো কিছু পাবে। অন্যের সেবা করার চেয়ে অধিকতর সম্মানজনক আর কিছুই নেই। কারণ, এটিই তোমাকে সবচেয়ে বেশি আত্মতৃপ্তি দেয়। সমব্যথী হতে পারাটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ উচ্চাকাঙ্ক্ষা। তাই শুধুই প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়ো না, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনের কারণও খোঁজো। তোমার সামনে বেছে নেওয়ার অনেক কিছুই আছে।চতুর্থ শিক্ষাপরিবার, বন্ধুত্ব ও অন্যান্য ব্যাপারে গুরুত্ব দাও। তোমার আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুদের যত্ন নাও, ভালোবাসো। কারণ, পরিবার থেকে তুমি তোমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা গ্রহণ করেছ।পঞ্চম শিক্ষানেতা হও, অনুসারী হয়ো না। সর্বোপরি একজন কেজো মানুষ হও, সমালোচক হয়ো না। মানুষের অগ্রগতি কখনোই বাচাল, অভিযোগকারী কিংবা হতাশাবাদীদের মাধ্যমে নির্মিত হয় না। অগ্রগতি দ্রুতগতিতে এগিয়ে যায় পরিবর্তনকারীদের সাহসের মাধ্যমে। এই সাহস মানে ভয়ের অনুপস্থিতি নয়, বরং ভয়কে জয় করাই সাহস। আমার দেখা প্রায় সব কটি নেতার মধ্যেই একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সন্দেহ, অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা ও আত্মবিশ্বাসের চূড়ান্ত অভাব ছিল। কিন্তু তাঁরা সেসব জয় করতে পেরেছেন বলেই নেতা হতে পেরেছেন।ষষ্ঠ শিক্ষাআজকের পৃথিবী আগের তুলনায় অনেক বেশি যোগাযোগনির্ভর। এখানে মুগ্ধ করার মতো ও আন্দোলিত করার মতো অনেক কিছুই আছে। সুতরাং, এখনই সময় এই পৃথিবীকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখার। এই পৃথিবী হাত বাড়িয়ে আছে অনেক রোমাঞ্চ আর সম্ভাবনা নিয়ে। তাই আমি বলব, এই পৃথিবীর সুবিধাগুলো লুফে নাও। দেখো এই বিশ্বকে, দেখো এর সম্ভাবনাগুলোকে। সপ্তম শিক্ষাএটা নজিরবিহীন সুযোগের এক অভাবনীয় সময়। এটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলারও সময়। তবে এই চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ গ্রহণ করতে গিয়ে কেবল মুনাফার দিকটাই ভেবো না। কারণ, জীবনে শুধু মুনাফাই মুখ্য নয়, আমাদের জীবনযাপন নির্ভর করে কিছু মূল্যবোধের ওপর। এই মূল্যবোধগুলো হচ্ছে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও প্রতিটি ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের সমতা। অতএব, তোমাদের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে, আশাবাদী হও। প্রতিটি সকালে ঘুম থেকে জেগে ওঠো একেকটি লক্ষ্য নিয়ে। কারণ, পৃথিবী তোমার কাছে উন্মুক্তই আছে, যদি তুমি তার কাছে নিজেকে মেলে ধরতে পারো।ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মারুফ ইসলাম
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর বিরুদ্ধে সংসদ নির্বাচনের আগাম প্রার্থী ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। জেলা শাখা তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে। এই মর্মে জেলা কমিটির নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত গত মঙ্গলবার কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।দলীয় সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় বিশেষ সম্পাদক ও জেলা শাখার সভাপতি নাদিম মোস্তফা ১৯ বছরের বিরোধ ভুলে গত ১৫ জুনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একসঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ২৫ জুন নবনির্বাচিত মেয়রের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক নেতাকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করে দেওয়া নিয়ে সেই পুরোনো বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।জেলা শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১ জুলাই বিকেলে বিএনপির জেলা শাখার অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সভায় মিজানুর রহমানের কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুলিপি ফ্যাক্স ও ই-মেইল করে দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২৫ জুন পবা উপজেলার দারুশাহাট চত্বরে কিছু দলছুট নেতাকে নিয়ে চেয়ারপারসনের পক্ষে জেলার সব নির্বাচনী এলাকার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন মিজানুর রহমান। ওই সভায় পবা-মোহনপুর আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হককে পরিচয় করিয়ে দেন। তাঁর এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সংবিধানসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী, বেআইনি ও অযৌক্তিক।নাদিম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, প্রচার করা হয়েছে যে বিএনপির পবা উপজেলা শাখা ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আসলে তাঁকে না জানিয়ে এবং বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের পবা উপজেলা শাখার অনুমোদিত কমিটির নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে ওই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। তিনি বলেন, মিজানুর রহমানের সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। শুধু মিথ্যা কথা বলার কারণে তাঁর সঙ্গে ১৯ বছর ধরে তাঁর বিরোধ মিটছে না।জানতে চাইলে মিজানুর রহমান প্রার্থী ঘোষণার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, পবা-মোহনপুরের জনগণ শফিকুল হককে প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছেন। এটা জনগণের চাওয়া। সেই কারণে তিনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এটা স্থানীয় সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, বড় ভাই হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছোট ভাইদের রাজনীতিতে এগিয়ে নেওয়া। যেভাবে মোসাদ্দেক হোসেন মেয়র হয়েছেন। শফিকুল আন্দোলন-সংগ্রামে থাকেন। জেল খেটেছেন। তাঁর একটা জায়গা হবে। নাদিম মোস্তফাও বড় জায়গা পাবেন। পবার অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপির জেলা শাখা কেন্দ্রে অভিযোগ পাঠানো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাঠাক। যারা ফুটুর-ফুটুর করছে, তারা কি রাজশাহীর আন্দোলন-সংগ্রামে থাকে? এটা ম্যাডামও জানেন।’
পুরোনো দিনে ‘বিলাত ফেরত’ কথাটা শুনলেই নাকি মানুষ অন্য চোখে তাকাত। মা-বাবা অনেক কষ্ট করে হলেও ইংল্যান্ডে ছেলেমেয়েদের পড়াতে পাঠাতেন। যুগ পাল্টেছে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির যুগে পৃথিবীটা এখন ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ হয়ে গেলেও বিলেত তথা ইংল্যান্ডে পড়তে যাওয়ার চাহিদা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো আগের মতোই। ইংল্যান্ডে পড়তে যাওয়ার ব্যাপারটিকে শিক্ষার্থীদের সামনে আরও সহজ করার জন্যই সম্প্রতি ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক দিনের ‘এডুকেশন ইউকে এক্সিবিশন-২০১৩’।গত ২২ জুন দিনব্যাপী ঢাকার ফুলার রোডের ব্রিটিশ কাউন্সিল কার্যালয়ে চলে এই কার্যক্রম। বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এজেন্টদের নিয়েই ছিল এই আয়োজন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া, টিউশন ফি, স্কলারশিপ, ভর্তি হওয়ার জন্য যোগ্যতার মাপকাঠি এ রকম আরও নানা তথ্য জানার ব্যবস্থা ছিল এই এডুকেশন এক্সিবিশনে। সকাল থেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় মেলা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।এক্সিবিশন আয়োজনের উদ্দেশ্য নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রজেক্ট ম্যানেজার এম জহির উদ্দীন জানান, ‘প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার জন্য যান। কিন্তু কোথায় পড়তে যাওয়া হবে, এই নিয়ে সঠিক তথ্যের অভাবে অনেক সময় তাঁদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এক জায়গায় এসেই তাঁরা যেন বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই আয়োজন। এখন থেকে নিয়মিত এ রকম এক্সিবিশনের আয়োজনের ইচ্ছা আছে আমাদের।’ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের দেশেই এখন অনেক প্রতিষ্ঠান এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। এরা সরাসরি পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে থাকে। ‘শুধু যোগাযোগ করিয়ে দিয়েই আমাদের দায়িত্ব শেষ হয় না, এমনকি স্কলারশিপ, টিউশন মওকুফ, বাইরে থাকা-খাওয়ার ব্যাপারগুলো নিয়েও আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে থাকি। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর কাগজপত্র ইউকে পাঠানো, সেখানে ভর্তির সব ব্যবস্থা করার দায়িত্ব নিই আমরা’ জানালেন ফাহাদ আজিজ নামের একজন এজেন্ট।আমাদের দেশের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থা ব্রিটিশ কারিকুলাম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়। সে জন্য ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষা নেওয়ার জন্য প্রথম পছন্দ থাকে ইউকে। মাস্টারমাইন্ড থেকে সদ্য এ লেভেল সম্পন্ন করা হূদিতা ফারহান বলেন, ‘ও এবং এ লেভেল পড়াশোনায় ওদের সঙ্গে আমাদের মিল থাকার কারণে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনায় অনেক সহজ হয়। আজকের এই এডুকেশন এক্সিবিশনে এসে কোন বিশ্ববিদ্যালয় আমার জন্য ভালো হবে, সে সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পেলাম।’ইংল্যান্ডজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তো আছেই, এমনকি অক্সফোর্ড, কেমব্রিজের মতো বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বাংলাদেশি অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার সুযোগ পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা তারেক মেহ্দী বলেন, ‘আমার পড়ার বিষয়টি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংল্যান্ডে অনেক ভালো। তাই স্নাতকোত্তর পড়াশোনা সেখানেই সম্পন্ন করতে চাই। এ সম্পর্কে তথ্য জানতেই এখানে আসা।’শুধু পড়াশোনাই নয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে এ দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচয় করানোর জন্যও এই মেলা ভূমিকা রেখেছে। চট্টগ্রামে শুরু হওয়া এই এক্সিবিশনের এটা ছিল দ্বিতীয় আসর।ইউকে এডুকেশন এক্সিবিশনের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সেগুফতা আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ব আজ যোগাযোগের মাধ্যমে খুব সহজ হয়ে গেছে। প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়নের এই যুগে আমরা চেয়েছি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যোগাযোগটা যেন সহজ হয়। গত বছর প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা কার্যক্রমে ইংল্যান্ডে গেছে। এই সংখ্যাটা যেন দিন দিন বৃদ্ধি পায় এ জন্য আমরা আরও বেশি এ রকম আয়োজন করতে চাই।
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সরকারি প্রকল্পের টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা মোস্তাফিজার রহমান মোটরসাইকেল কিনেছেন বলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেছেন।তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ওই আওয়ামী লীগ নেতা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও তাঁকে মারধরের পাল্টা অভিযোগ করে থানায় মামলা করেছেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলছে।ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের কয়েকজন ক্যাডার আমার কাছে স্থানীয় সরকার সহায়তা কর্মসূচি (এলজিএসপি) প্রকল্পের টাকার ভাগ চান। আমি দিতে অস্বীকার করায় তাঁরা আমাকে মারধর করেছেন। আমি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করায় তাঁরা আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। এলজিএসপির টাকায় নয়, আমি আমার ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনেছি।’উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বলেন, ‘ইউপি সদস্য হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে মোস্তাফিজার রহমান দুই লাখ টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ পেয়েছেন। সেই টাকায় প্রকল্পের কাজ না করে তিনি মোটরসাইকেল কিনেছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দলীয় কাজের জন্য সেই টাকা থেকে কিছু চাইতেই পারেন। সেটাকে চাঁদাবাজি বলে তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন না। এর পরও তিনি বিএনপি নেতাদের নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ধুনট সদর ইউনিয়নে এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১২ লাখ ৬২ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। ৩০ জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করার কথা। এর মধ্যে মোস্তাফিজার রহমানকে ল্যাপটপ ও নলকূপ কেনার জন্য দুই লাখ ৯১ হাজার টাকার দুটি প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরিষদের অন্য সদস্যদের ৬০ থেকে ৮০ হাজার করে বাকি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।২৬ জুন ব্যাংক থেকে ওই টাকা উত্তোলন করে ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মাসুদ রানা সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করেন। ওই দিনই মোস্তাফিজার রহমান চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে জয়পুরহাট থেকে একটি মোটরসাইকেল কেনেন।এস এম মাসুদ রানা বলেন, ‘মোস্তাফিজার রহমানকে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে অতিরিক্ত একটি প্রকল্পে দুই লাখ টাকা বেশি দেওয়া হয়েছে। টাকা উত্তোলন করে তিনি এখনো প্রকল্পের কাজ করেননি। তবে কোন টাকা দিয়ে আমার সঙ্গে গিয়ে মোটরসাইকেল কিনেছেন, তা আমার জানা নেই।’জানা যায়, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ২৭ জুন ওই নেতার কাছে সংগঠনের খরচ বাবদ কিছু টাকা চান। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের গালিগালাজ করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের কয়েকজন ওই দিন সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদের সামনে মোস্তাফিজার রহমানকে মারধর করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে ওই রাতেই তিনি ছাত্রলীগের ছয় নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পুলিশ আবদুল কাইয়ুম, স্বপন ও রফিক নামে ছাত্রলীগের তিন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। তিন দিন পর তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।
রংপুরের বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে গত অর্থবছরে প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ টাকার ভুয়া ভাউচার জমা করা হয়েছে। টিআর ও কাবিখা প্রকল্প কমিটির সদস্যরা উন্নয়নমূলক কাজ করে সরকারি বাধ্যবাধকতার কারণে ওই ভুয়া ভাউচার জমা দিয়েছেন।বদরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান ও তারাগঞ্জের রেফাউল আযম জানান, বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারিভাবে প্রকল্পের চালের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলে ওই সমস্যা হতো না। কাজ শেষে ভুয়া ভাউচার জমা নেওয়ার সময় প্রকল্প কমিটির সদস্যদের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। এ কারণে অনেক সময় প্রকল্প কমিটির অনৈতিক কাজেও কিছুটা সমর্থন দিতে হয়েছে।পিআইও কার্যালয় সূত্র জানায়, গত অর্থবছরে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় টিআর (টেস্ট রিলিফ) প্রকল্পের আওতায় বদরগঞ্জে বিশেষ ও সাধারণ মিলে ৮৩২ মেট্রিক টন, কাবিখায় (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) ৭৮৫ টন এবং তারাগঞ্জে টিআরে ৩১৬ টন ও কাবিখায় ৪২৮ টন চাল বরাদ্দ পাওয়া যায়।ত্রাণ ও পুর্ণবাসন অধিদপ্তরের ২০১২ সালের পরিপত্র অনুযায়ী, টিআরের বরাদ্দ পাওয়া সব চাল ও কাবিখার ৩০ শতাংশ চাল বিক্রি করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মন্দির সংস্কার এবং জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ও মেরামতের কাজে ব্যয় করা হয়। এসব চালের বিপরীতে বদরগঞ্জে টিআরের ৪৬৭টি ও কাবিখার ১০১টি এবং তারাগঞ্জে টিআরের ১৩৪টি ও কাবিখার ৫৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এসব প্রকল্পে মোট এক হাজার ৫১০ টন চাল ব্যয় হয়।প্রকল্প কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার গত অর্থবছরে প্রতি টন চাল ২৮ হাজার টাকা দরে কেনে। অথচ তাঁরা প্রকল্পের চাল খাদ্যগুদাম থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন প্রতি টন গড়ে ২০ হাজার টাকায়।সরকার প্রতি টনের বিপরীতে ভাউচার জমা নিয়েছে ৩৩ হাজার ৮০৫ টাকার। বাস্তবতা হচ্ছে, বাজারে ২০ হাজার টাকা টন হিসেবে এক হাজার ৫১০ টন চাল তিন কোটি ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করলেও ভাউচার জমা নেওয়া হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি ১০ লাখ টাকার।
সিরাজগঞ্জে দুই দিন ধরে যমুনা নদীর পানি বাড়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ী গ্রামে যমুনার ডান তীর সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার এলাকা ধসে গেছে।এ ছাড়া চৌহালী উপজেলা সদরে বিএডিসির গুদামঘর, ৫০টি গাছসহ অর্ধশতাধিক ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিরাজগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কাজীপুরের মাইজবাড়ী ইউনিয়নের মাইজবাড়ী গ্রামে গতকাল সকাল সাতটার দিকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে বাঁধের ৫০ মিটার অংশ ধসে যায়। এলাকার বেশ কয়েকজন বলেন, ধস অব্যাহত থাকায় পুরো বাঁধ এবং আশপাশের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে।চৌহালী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জুয়েল সরকার জানান, গতকাল ভোরে উপজেলা সদরে বিএডিসির একটি পাকা গুদামঘর, উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের প্রাচীর, উপজেলা পরিষদ চত্বরে থাকা বন বিভাগের নার্সারির প্রায় ৫০টি বড় মেহগনি গাছসহ গত দুই দিনে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের আশপাশের অর্ধশতাধিক ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অনেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন।
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূর্তি উৎসব উদ্যাপিত হয়েছে। একই দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী উৎসব শেষ হয়েছে।সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবন চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহমঞ্চদ মিজানউদ্দিন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন চত্বরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।‘সাংবাদিকতায় সততা ও শুদ্ধাচার: গণতন্ত্র, সুশাসন, জবাবদিহিতার অঙ্গীকার’ স্লোগানকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির তিন দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন মুহমঞ্চদ মিজানউদ্দিন। ওই দিন ‘ঢাকার বাইরের ও ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস। গত শুক্রবার ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা: প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি’ শীর্ষক সেমিনার এবং সাংবাদিক সমিতির নবীন-প্রবীণদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।গতকাল উৎসবের শেষ দিনে দুর্নীতিবিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন সহ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান।ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সমাজের অসৎ ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পান না। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকলেই কেবল দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, কালোটাকা সাদা করার অনুমতি দিয়ে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। এতে বৈধ পথে উপার্জনকারী ব্যক্তিরা নিরুৎসাহিত হবেন।
পরদিন কর্মশালা। রাত জেগে তাই পড়াশোনা আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গোছগাছ করছেন রানা। ঘড়িতে কখন যে রাত একটা বেজে গেছে খেয়ালই নেই! যখন খেয়াল হলো, নিজেকে আবিষ্কার করলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী মাইকেলের পাশে। মাইকেল তাঁকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিজের হোস্টেলে। তাঁর সঙ্গেই যে বেশ কয়েকটা দিন থাকতে হবে শরীফ উদ্দিন আহমেদকে! নিকটজনদের কাছে যাঁর পরিচয় রানা নামে।গত বছরের ৭ নভেম্বরের ঘটনা বর্ণনা করছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) এমবিএর শিক্ষার্থী শরীফ উদ্দিন আহমেদ। চোখে-মুখে গাম্ভীর্য আর জলদগম্ভীর কণ্ঠ শুনে বোঝা মুশকিল শরীফ উদ্দিন বিতর্ক করতে উড়ে গিয়েছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। হয়েছেন ওয়ার্ল্ড ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপের পরিচালক। আমাদের অবাক করে দিয়ে শরীফ উদ্দিন যখন আরও জানালেন তিনি শুধু অক্সফোর্ডই নয়, ৭ নভেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় দুই মাস ঘুরেছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়েস্ট মিনস্টার অ্যাবে, সাউদাম্পটন ও ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন স্বভাবিকভাবেই আমাদের বিস্ময় স্পর্শ করেছে চূড়ান্ত সীমা। শরীফ উদ্দিন জানালেন, এ সময়টা পুরোপুরি ব্যস্ত ছিলেন বিতর্ক, বিতর্কবিষয়ক কর্মশালা আর সেমিনার নিয়েই। এবং স্বীকার করলেন, ‘এই সফরেই বিতর্ক বিষয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা লাভ করেছি আমি।’এরপর শরীফ উদ্দিন শোনাতে শুরু করেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। ‘উন্নত দেশগুলোতে রাজনীতি, অর্থনীতি কিংবা বিনোদন—সব বিষয় নিয়েই বিতর্ক হয়। ওদের সব মনোযোগ থাকে কে কত ভালোভাবে বিষয়ের গভীরে গিয়ে তথ্য তুলে আনতে পারছে আর তথ্যের বিশ্লেষণ করতে পারছে।’ব্রিটেনে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়—সব জায়গাতেই তুমুল চর্চা হয় বিতর্কের। বিতর্কে অভ্যস্ত ছেলেমেয়েরাই পরবর্তী সময়ে যোগ দেন রাজনীতিতে। শরীফ উদ্দিন মনে করেন, এ জন্যই ওদের রাজনীতিতে বিতর্কের এত গুরুত্ব, মত-ভিন্নমতের এত বেশি উপস্থাপন। বিভিন্ন প্রীতি বিতর্কে দেখেছি, সবখানেই উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ নানা পেশার মানুষ। বিতর্ক হয়েছে জলবায়ু, স্বাস্থ্যনীতিসহ স্থানীয়-আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে। বাংলাদেশ থেকে আসা তরুণটি তখন আফসোস করেছেন, বাংলাদেশেও এভাবে স্কুল-কলেজে বিতর্কচর্চা হলে তার প্রভাব পড়ত জাতীয় রাজনীতিতে! এ বছরের শেষদিকে ভারতের চেন্নাইয়ে বসবে ওয়ার্ল্ড ডিবেট চ্যাম্পিয়নশিপ। সারা বিশ্বের দুই শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০০ দলের হয়ে অংশ নেবেন প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী। বিশাল এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করছে বিশ্ব বিতর্ক সংগঠন। এ প্রতিযোগিতার পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন শরীফ উদ্দিন আহমেদও।এসব ব্যস্ততার পাশাপাশি এমবিএ পড়াশোনা নিয়েও ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন রানা। তবু একটু অবসর পেলেই গান শোনেন, সিনেমা দেখেন। আর স্বপ্ন দেখেন দেশে একটা আন্তর্জাতিক মানের ডিবেট একাডেমি তৈরি করার। স্বপ্ন দেখেন, সেখান থেকে তৈরি হবে নামী বিশ্বসেরা তার্কিক, বিতর্ক বিশ্লেষক।
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী ও লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুই জেলার ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি জলকপাট (স্লুইসগেট) খুলে দেওয়া হয়েছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি, খালিশা চাপানি, পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, গোলমুন্ডা শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের ১০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী বলেন, গত শুক্রবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। এতে ইউনিয়নের ছাতুনামা চরে প্রায় দুই হাজার এবং ভেন্ডাবাড়ী চরে তিন শতাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন মণ্ডল বলেন, শুক্রবার রাত ১০টা থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। গতকাল শনিবার বেলা দুইটা পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।লালমনিরহাটের আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম ছিটমহলসহ জেলার ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পাউবো তিস্তা দোয়ানী-ডালিয়া শাখার সহকারী প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন মণ্ডল জানান, যেকোনো মুহূর্তে তিস্তার পানি আরও বাড়তে পারে। তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, বড়খাতা, সিংগীমারী, ডাউয়াবাড়ী, পাটিকাপাড়া ও সানিয়াজান এ ছয় ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বিশ্বে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিযোগিতা হচ্ছে এসিএম-আইসিপিসি কনটেস্ট। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সেরা প্রতিযোগীরা সারা বছর ধরে মুখিয়ে থাকেন এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি দলের পাশাপাশি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সদস্যের দলটিও চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এখন রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে রয়েছেন।আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং কলেজিয়েট প্রতিযোগিতার প্রাথমিক পর্বে ৯১টি দেশের দুই হাজার ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় হাজার ৯০০টি দল অংশ নেয়। এর মধ্যে ১২০টি দলকে চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। এ দলগুলো রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে ২৯ জুন থেকে ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকোত্তর বিভাগের শিক্ষার্থী বাকের মোহাম্মদ আনাছ, ফরহাদ আহমদ ও স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মাকসুদ হোসাইনের সমন্বয়ে তিন সদস্যের ‘সাস্ট-প্লেইনড্রোম’ নামে একটি দল গঠিত হয়। দলটির কোচ হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম। সহকারী কোচ হিসেবে রয়েছেন সাইফ সামস ও আয়েশা তাসনিম। এ দলটি দেশের বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। দলটির তিন সদস্যই সদ্য প্রকাশিত বাংলাদেশের প্রথম সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকাতে কর্মরত রয়েছেন।২০১২ সালে সাস্ট-প্লেইনড্রোমের সদস্যরা পোল্যান্ডের ওয়ারসো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত চূড়ান্ত পর্বে লড়াই করেছিলেন। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রতিযোগিতায় নির্ধারিত পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে ১০ থেকে ১২টি প্রোগ্রামিং প্রবলেম যে দল বেশি সমাধান করতে পারবে, তাদেরই বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। সেন্ট পিটার্সবার্গ রওয়া হওয়ার আগে সাস্ট-প্লেইনড্রোমের দলনেতা বাকের মোহাম্মদ আনাছ বলেন, ‘এসিএম-আইসিপিসি কনটেস্টটি বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা। অতীতে ঢাকার বাইরে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের দল এ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে লড়াইয়ের সুযোগ পায়নি। আমরাই প্রথমবারের মতো এ গৌরব অর্জন করেছি। এবার বাংলাদেশ থেকে বুয়েট ও আমরা চূড়ান্ত পর্বে লড়াই করছি। আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দেশের হয়ে অংশগ্রহণ করাটা সত্যিই অনেক আনন্দের ও গর্বের বিষয়।’দলটির অপর সদস্য ফরহাদ আহমদ বলেন, ‘নিজেকে অনেক আনন্দিত লাগছে ওয়ার্ল্ড ফাইনালসের মতো বড় একটি আসরে অংশগ্রহণের সুযোগ করে নিতে পেরে। শুরু থেকে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।’ প্রায় অভিন্ন মন্তব্য করেন আরেক সদস্য মাকসুদ হোসাইন। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমরা গর্বিত।’sumankumardash@yahoo.com
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় যমুনা নদীতে গত শুক্রবার নৌ-ডাকাতদের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গুলিবিদ্ধ একজনসহ দুই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে।গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাতেরা হলেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দদাস গ্রামের মনির হোসেন (৩৫) ও জোয়াত আলী (৪৫)। গুরুতর আহত মনিরকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসনকেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে।এলাকাবাসীর কয়েকজন ও পুলিশ জানান, উপজেলার নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচর নামক এলাকায় একটি যাত্রীবাহী নৌকায় একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে, এ খবর পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় নদীতে টহলরত পুলিশ ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেন। ছয়জন পুলিশসহ উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা স্পিডবোট নিয়ে ওই চরের কাছাকাছি গেলে ডাকাতেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় পুলিশের গুলিতে ডাকাত দলের সদস্যরা আহত হয়ে নদীতে পড়ে যান। পরে পুলিশ গুলিবিদ্ধ মনির ও আহত জোয়াতকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ডাকাতদের নৌকাটি জব্দ করা হয়। পরে পুলিশ নৌকা থেকে দুটি রামদা, দুটি হাত দা, কাঁচি, ছুরিসহ লাঠিসোঁটা উদ্ধার করে।মনিরকে প্রথমে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া পুুলিশি পাহারায় জোয়াত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জোয়াত জানান, তাঁরা নয়জন ডাকাত একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে এসে যাত্রীবাহী ওই নৌকায় ডাকাতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁদের সবার বাড়ি ভূঞাপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এ সময় তিনি বাকি সাতজনের নাম ও পরিচয় পুলিশের কাছে দেন। এ ছাড়া তিনি আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এ-ক যে ছি-ল হা-তি। এক নিঃশ্বাসে নয়। প্রতিটা বর্ণের দিকে তাকিয়ে ঠেকতে ঠেকতে একটা লাইন পড়ে আনন্দে আটখানা হওয়ার অনুভূতি কি আমাদের মনে আছে? আমাদের সবার জীবনের প্রাথমিক বইগুলো কিন্তু এমনি করেই পড়তে শেখা। এখন রুদ্ধশ্বাসে একটা বই পড়ে শেষ করলেও ছোট্টবেলার রূপকথা অথবা সিন্দাবাদের ভূত কিন্তু এখনো মাথায় চেপে বসেই আছে। তাই যত রকম কম্পিউটার গেম আসুক, আর অমুক-তমুক কার্টুনই আসুক—বইয়ের সঙ্গে অন্য কোনো কিছুরই জুড়ি মেলা ভার। তাই পড়ার অভ্যাসটা গড়ে তোলা উচিত শিশুদের বানান করে পড়তে শুরু করার সময় থেকেই। আর এ ক্ষেত্রে শিশুর জন্য চাই তার মনের মতো বই। যেমন-তেমন বই হলেই কিন্তু সে পড়বে না। যে বই তার মনের রঙে আঁকানো থাকবে, সহজ শব্দে কল্পনার কাহিনি বলতে পারবে, এমন বই-ই তার চাই। তাই শুধু তাদের কথা ভেবে একদল লেখক ও আঁকিয়ে কাজ করছেন রুম টু রিডের মাধ্যমে। শিশুদের সাক্ষরতার দক্ষতা ও পড়ার অভ্যাস উন্নয়নে এশিয়া ও আফ্রিকার ১১টি দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে রুম টু রিড।বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণ লেখক ও আঁকিয়ে রুম টু রিডের ঢাকা কর্মশালার পর একত্র হয়েছিলেন সাভারে সিসিডিবি হোপ সেন্টারে। সে এক দারুণ কাণ্ড! একদিকে লেখকেরা লিখছেন, অন্যদিকে আঁকিয়েরা একেকটা বাক্যকে একেকটা দৃশ্যে পরিণত করে তুলছেন। কেউ একমনে চাঁদের বুড়ির ছবি আঁকছেন, কেউ জোনাকির আলো কীভাবে দেখাবেন, তা ভাবছেন। কেউ আবার হাবাং ভূতের চেহারা নিয়ে চিন্তায় মগ্ন। লেখকেরাও ভাবতে ব্যস্ত, কোন বাক্যগুলোকে আরও সহজ করে লেখা যায়, কাহিনির পরিণতি কীভাবে আরও দারুণ করা যায়—কোনো পক্ষেরই ভাবনার শেষ নেই। তবে শিশুদের বইগুলো নিয়ে সবাই বেশ উৎফুল্ল।‘সহজভাবে কাজ করাটা যে কত্ত কঠিন, সেটা টের পাচ্ছি’ হাসতে হাসতে বললেন আঁকিয়ে নিশা। তাঁর কথা সমর্থন দিয়ে উর্মি বলেন, ‘তবে যখনই ভাবি আমাদের এই কাজগুলো দেখে শিশুরা দারুণ আনন্দ পাবে, তখন খুবই ভালো লাগে।’ তরুণ লেখকদের মধ্যে রূম্পা জানান, শিশুদের জন্য লেখার ক্ষেত্রে তাদের মতো করে চিন্তা করাটা খুব জরুরি। শুধু লিখলেই তো হলো না, শিশুরা শব্দগুলো বুঝতে পারবে কি না, তাদের মনে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে—এসব দিক বেশ ভাবতে হয়েছে।তরুণ লেখক খাইরুল বাবুই বেশ আনন্দিত যে লেখক ও আঁকিয়ে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে পারছেন। তিনি মনে করেন, এতে লেখকদের ভাবনা আঁকিয়েদের কাছে সহজে পৌঁছে যাচ্ছে, ফলে চিন্তার দূরত্ব কমে আসছে। একটা ব্যাপারে তাঁরা সবাই একমত যে একটা জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে এর মূলকে শক্তিশালী করতে হয়। আর শক্তিশালী করার কাজটিই করে শিক্ষা। তাই এই কাজটা তাঁদের প্রত্যেকের জন্যই বিশেষ একটা অভিজ্ঞতা।রুম টু রিড বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার (লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ পাবলিশিং প্রোগ্রাম) বলেন, ছোটদের জন্য লেখার ক্ষেত্রে তাদের পড়ার দক্ষতা, তাদের চিন্তাচেতনা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ—অনেক দিকই বিবেচনা করতে হয়। এ ব্যাপারে তরুণ লেখকেরা অনেক ভালো কাজ করছেন। কর্মশালাগুলোতে তাঁরা আন্তরিকভাবে অংশ নিয়েছেন। আর যাঁরা আঁকিয়ে, তাঁরা সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করে অলংকরণের মাধ্যমে বইগুলোকে বৈচিত্র্যময় ও আকর্ষণীয় করে তুলেছেন। ভবিষ্যতে তাঁদের নিয়ে একটা ফোরাম করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
মোরশেদfb.com/juniormorshedঅভিনন্দন আই-জিনিয়াস রাইসা! এগিয়ে যাও, তোমাদের মতো রাইসাদের সাফল্যে সমাজ বদলে যেতে বাধ্য। বদলে যেতে বাধ্য মেয়েদের প্রতি মানুষের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি। —৩০ জুন হাবিবুর রহমানfb.com/habibrngআমাদের শোকাহত করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী বিপুল ভট্টাচার্য। বিনম্র শ্রদ্ধা মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী আপনার চরণে! —৫ জুলাই অর্পিতা সাহাfb.com/orpita89শুভকামনা মুশফিক, নিজেকে প্রমাণ করো! তবে মুশফিককেই দীর্ঘ মেয়াদের জন্য অধিনায়ক করা উচিত। —৫ জুলাই গুলশান খায়ের রাশেদfb.com/rashed.cool1আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি বলে বড় কোনো স্বপ্ন দেখার সাহস পেতাম না। স্বপ্ন নিয়ে আমাকে সেই স্বপ্ন দেখার সাহস জুগিয়েছে। ধন্যবাদ স্বপ্ন নিয়ে। —৩০ জুন মিথুন দাসfb.com/mitundঅনেক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর হাসি-কান্না জড়িত এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। শুভ হোক প্রতিষ্ঠার দিনটি।—১ জুলাই শাহীন মশিউরfb.com/shahin.mosheurসুন্দর পৃথিবীর জন্য নেলসন ম্যান্ডেলার মতো কিছু মহান মানুষের বড়ই প্রয়োজন। হাজার বছর বেঁচে থাকুন নেলসন ম্যান্ডেলা। —৪ জুলাই
১৪ বছর পর গতকাল শনিবার নীলফামারীর ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সমেঞ্চলন হয়েছে। ডোমার নাট্য সমিতি মঞ্চে দিনব্যাপী সমেঞ্চলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর।উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমেঞ্চলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামার আহমেদ। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক।সম্মেলনে সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘আমাদের সরকারের করা উত্তরা ইপিজেডে সাড়ে ১২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। নতুন নতুন কলকারখানা হচ্ছে। বছরের শুরুতে প্রতিটি স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে বই সরবরাহ করা হচ্ছে।’
দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্য অথবা বিদেশে কাজ করতে যেতে অথবা চাকরির ক্ষেত্রে জীবনবৃত্তান্ত সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ভাষার পরও অন্যান্য ভাষা শিখতে আগ্রহী হন। নানান জায়গায় বিদেশি ভাষা শিক্ষার সুযোগ থাকলেও ভাষা শিক্ষার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও পরিচিত প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এখানে নানান ভাষার ওপর কোর্স করতে পারেন।জার্মান ভাষা শিখতে আসা মুশফিকার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বর্তমানে জার্মানিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অনেক সুযোগ-সুবিধা, তাই এই ভাষা জানা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়া যাবে। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ফ্রান্সে পড়তে যেতে চাই। এ জন্য ফরাসি ভাষা জানা থাকাটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই ভাষা শিখতে আসার উদ্দেশ্যটা অনেকটা একই রকম।বর্তমানে এখানে আরবি, ফরাসি, চীনা, জার্মান, জাপানি, কোরিয়ান, ফারসি, রাশিয়ান, স্প্যানিশ, তুির্ক, ইতালিয়ান ইত্যাদি ভাষা শেখানো হয়। এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ভাষা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি ভাষা শেখার সুযোগ রয়েছে।সিনিয়র, ডিপ্লোমা ও উচ্চতর ডিপ্লোমা নামের বিভিন্ন কোর্সের মধ্য দিয়ে এখানে ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। তবে ইংরেজি ভাষার জন্য শুধু জুনিয়র কোর্স চালু রয়েছে। প্রতিটি কোর্সের মেয়াদ এক বছর। দীর্ঘমেয়াদি কোর্সগুলোর পাশাপাশি কিছু সংক্ষিপ্ত কোর্সও প্রচলিত আছে। স্প্যানিশ, ফরাসি, ইংরেজি ইত্যাদি ভাষার ওপর বর্তমানে এখানে সংক্ষিপ্ত কোর্স করা যায়।উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যেকোনো শিক্ষার্থী বিদেশি ভাষায় জুনিয়র সার্টিফিকেট কোর্সে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। উল্লেখ্য, সিনিয়র, ডিপ্লোমা ও উচ্চতর ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে হলে এর পূর্ববর্তী কোর্স অথবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সমমানের কোর্সে উত্তীর্ণ হতে হবে। যেকোনো ভাষায় সরাসরি উচ্চতর কোর্সে (জুনিয়র ব্যতীত) ভর্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট ভাষায় দক্ষতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে ।এখানে ভাষা শিখতে হলে খরচটাও মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে। সবার মাসিক বেতন ৩০০ টাকা হলেও প্রতিষ্ঠানভেদে অন্যান্য খরচ আলাদা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ৪৫০ টাকা, যাঁরা নিয়মিত শিক্ষার্থী নন কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশন নম্বর আছে, তাঁদের জন্য খরচ দুই হাজার ৮১৫ টাকা মাত্র এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য তিন হাজার ১১৫ টাকা ভর্তি ফি। আর সব শিক্ষার্থীকেই ইনস্টিটিউটের অ্যাকাউন্টে ৯০০ টাকা ফিস প্রদান করতে হবে। প্রতিবছর মে মাসে সেশন শুরু হয়। এ বছর ক্লাস শুরু হবে আগস্ট মাসে।আগ্রহী শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করতে হবে এবং জনতা ব্যাংক টিএসসি শাখা থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছে সয়াবিন চাষ। এ বছর উত্তরাঞ্চলের সাতটি জেলায় দেড় হাজার বিঘা জমিতে সয়াবিনের চাষ হয়েছে। আগামী বছরের ৫০ হাজার বিঘায় সয়াবিন চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সয়াবিনের উৎপাদন বাড়াতে পাড়লে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। কারণ, সয়াবিন তেল উৎপাদনকারী শিল্পের একমাত্র কাঁচামাল সয়াবিন। চাহিদার বেশির ভাগ সয়াবিন বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এত দিন নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল ও ফরিদপুর জেলায় সয়াবিনের চাষ হতো।মাটি সয়াবিন চাষের উপযোগী হওয়ায় এবারই প্রথম সয়াবিন চাষ শুরু হয়েছে নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বগুড়া ও ঠাকুরগাঁও জেলায়। নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের কৃষক আসাদুজ্জামান জানান, এপেক্স অর্গানিক সয়া ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগিতায় ৫০ শতক জমিতে তিনি সয়াবিন চাষ করেছেন। এতে তাঁর খরচ হয়েছে ছয় হাজার টাকা। উৎপাদন হয়েছে ১৬ মণ সয়াবিন। যার বর্তমান বাজারমূল্য ১৯ হাজার ২০০ টাকা। অপেক্ষাকৃত অনুর্বর জমিতে ৯৬ দিনের ব্যবধানে খরচ বাদে তাঁর লাভ হয়েছে ১৩ হাজার ২০০ টাকা। ভবিষ্যতে তিনি সয়াবিন চাষের জমির পরিমাণ বাড়াবেন।এপেক্স অর্গানিক সয়া ইন্ডাস্ট্রিজের কর্মকর্তা গোলামুর রহমান জানান, উত্তরাঞ্চলের নদীতীরবর্তী এলাকাসহ অসংখ্য জমি পতিত থাকে। এসব জমিতে কৃষকদের উৎসাহিত করে সয়াবিন চাষ করা গেলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, এর আগে বাজারজাত করতে না পারায় সয়াবিন চাষে কৃষকের উৎসাহ ছিল না। এখন তাঁরা বীজ সরবরাহ, কারিগরি সহায়তা ও বিক্রয়ের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন।নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারজাতের নিশ্চয়তা পেলে কৃষক সয়াবিন চাষে আগ্রহী হবেন। সয়াবিন চাষ করলে ওই জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায় বলে জানান তিনি।
বেড়ে চলেছে পেশাগত ডিগ্রির কদর। তাই শুধু প্রাতিষ্ঠানিক সনদে মিলছে না চাকরি নামের সোনার হরিণ। আবার অনেকের প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির জন্য প্রয়োজন পেশাগত সনদ। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নিরীক্ষা ও ব্যবসায়-বাণিজ্যে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিভাগ, প্রশাসনসহ কর্মরতদের জন্য একটি কোর্স হচ্ছে সিএমএ। সিএমএ হচ্ছে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টসের সংক্ষিপ্ত রূপ। নিজেদের এগিয়ে রাখতে সদ্য স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীরাও করতে পারেন কোর্সটি। বিশ্বস্বীকৃত এই পেশাগত ডিগ্রিটি বাংলাদেশে প্রদান করে থাকে দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস অব বাংলাদেশ, সংক্ষেপে যা আইসিএমএবি নামে পরিচিত।ভর্তির সময়: সিএমএ কোর্সে দুটি ভাগে ভর্তি হওয়া যায়। সদ্য স্নাতক বা যাঁরা এখনো চাকরিতে ঢোকেননি তাঁদের জন্য কোর্সটির নাম কোচিং কোর্স। আর যাঁরা মূলত পেশাজীবী তাঁদের জন্য করেসপনডেন্স কোর্স। তবে কেউ চাইলে দুটোর যেকোনো একটাতে ভর্তি হতে পারবেন। কোর্স দুটির মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে, কোচিং কোর্সের ক্ষেত্রে নিয়মিত ক্লাস করতে হয় এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। অন্য দিকে করেসপনডেন্স কোর্সের জন্য ক্লাসের বাধ্যবাধকতা নেই। শুধু নির্দিষ্ট সময়ে অভিসন্দর্ভ জমা দিতে হবে। বছরে দুইবার ভর্তি-কার্যক্রম চলে কোচিং কোর্সের জন্য—জানুয়ারি ও জুলাই। করেসপনডেন্স কোর্সের ক্ষেত্রে জানুয়ারি থেকে জুন সেশনে ভর্তি হতে চাইলে ডিসেম্বর থেকে মার্চ এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর সেশনের জন্য জুন থেকে সেপ্টেম্বর।খরচ: সিএমএ কোর্স সম্পন্ন করতে আপনাকে পাঁচটি লেভেল পার করতে হবে। এ জন্য প্রতিটি লেভেলে চারটি করে বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। প্রতিটি লেভেলে কোর্সের মেয়াদ ছয় মাস। কোচিং কোর্সের ক্ষেত্রে পাঁচটি লেভেল মিলে ভর্তি হিসেবে খরচ হবে মোট ৪৮ হাজার ৪০০ টাকা। করেসপনডেন্স কোর্সের জন্য এ খরচ দাঁড়াবে ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি লেভেলে পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের আলাদা ফি দিতে হবে। জানালেন আইসিএমএবির সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম।যোগ্যতা: যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে স্নাতক পর্যন্ত সব পরীক্ষা মিলে ফল থাকতে হবে ন্যূনতম ৬ পয়েন্ট। পয়েন্ট হিসাবের ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণীর জন্য ৩ পয়েন্ট ধরা হয়। এ ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৫-এর মধ্যে ৩.৫ থেকে ৫ এবং সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ৩ থেকে ৪ পর্যন্ত ধরা হয় প্রথম শ্রেণী। দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য ২ পয়েন্ট হিসাব করা হয়। এ ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৫-এর মধ্যে ২.৫ থেকে ৩.৫ এবং সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ২ থেকে ৩ পর্যন্ত ধরা হয় দ্বিতীয় শ্রেণী। তৃতীয় শ্রেণীর জন্য দেওয়া হয় ১ পয়েন্ট। এ ক্ষেত্রে সিজিপিএ ৫-এর মধ্যে ২.৫ নিচে এবং সিজিপিএ ৪-এর মধ্যে ২ নিচে ধরা হয় তৃতীয় শ্রেণী।বৃত্তি ও শিক্ষানবিশ কাজ: গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া চারটি লেভেল বা প্রফেশনাল লেভেল-৩ সমাপ্তির পর ৩ মাসের জন্য গবেষণা ও শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হয়।কাজের ক্ষেত্র: সিএমএ সম্পন্ন করে বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় ও বাণিজ্যক প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিভাগ, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বিভাগসহ প্রশাসন বা অন্যান্য বিভাগেও এ ডিগ্রির কদর রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায়ও কাজের ক্ষেত্র বাড়ছে। কাজের ক্ষেত্র সম্পর্কে আইসিএমএবির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শামসুল আলম যোগ করেন, ‘আইসিএবি স্বীকৃত বিভিন্ন ফার্ম অথবা নিজেই স্বাধীনভাবে একটি ফার্ম খুলে বসতে পারেন ব্যবসা-বিশ্লেষণ, কর পরামর্শ, ব্যবস্থাপনা পরামর্শ এবং আর্থিক বিশ্লেষণসহ বিভিন্ন সেবা দেওয়ার জন্য। এ ছাড়া নিজে উদ্যোক্তা হতে চাইলেও করতে পারেন কোর্সটি।যোগাযোগ: ঢাকা ছাড়াও চারটি আঞ্চলিক শাখার মাধ্যমে আইসিএমএবি তাদের কার্যক্রম চালায়। ঢাকার জন্য আইসিএমএ ভবন, নীলক্ষেত। ফোন: ৯৬১৫৪৬০। চট্টগ্রামে যোগাযোগ করুন সিডিএ, আগ্রাবাদ। ফোন: ০৩১-৭২৭৬৩৮। রাজশাহীর যাঁরা ভর্তি হতে চান তাঁরা যোগাযোগ করুণ, ফোন: ০৭২১-৭৫১৩৩২। খুলনাতে ভর্তির জন্য, ফোন: ০৩১-৭২২৩৩৫। কুমিল্লার জন্য সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ। ফোন: ০৮১-৬৮৪৬৩/১০৪। এ ছাড়া সার্বিক বিষয় জানতে আইসিএমএর ওয়েবসাইট www.icmab.org.bd ভিজিট করুন।
বিতরণ-সমস্যার কারণে গত কয়েক দিন রংপুরে অন্য সব জাতীয় দৈনিকের পাশাপাশি প্রথম আলো সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য পাঠকের কাছে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সম্পাদক
বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতক শ্রেণী চালুর জন্য ৫২টি নতুন পদ সৃষ্টির চাহিদাপত্র পাঠানোর পরপর দুজন শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর কলেজের তিনটি বিভাগে পদায়িত মাত্র ১৩ জন শিক্ষকের মধ্যে কোনো স্থলাভিষিক্ত ছাড়া ওই দুই শিক্ষক বদলি করায় পাঠদানের শৃঙ্খলা রক্ষা কঠিন হয়েছে বলে গতকাল শনিবার অধ্যক্ষ জানিয়েছেন।কলেজের ছাত্রীরা বলেছে, বান্দরবানে নারী শিক্ষার একমাত্র কলেজটিতে স্নাতক শ্রেণী চালু না হওয়ায় উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর তারা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ছাত্রীদের জন্য আবাসিক সুবিধা থাকায় কলেজটি অবলিম্বে স্নাতক শ্রেণী চালু করার জন্যও তারা দাবি জানিয়েছে।ছাত্রী ও শিক্ষকেরা বলেছেন, ২০০৯ সালে প্রভাষক পদে ১৩ জনকে পদায়ন করে চালু হওয়া কলেজটিতে ছাত্রী, ছাত্রীনিবাস ও বিষয়সংখ্যা বেড়েছে অনেক। বর্তমানে প্রায় ৬০০ ছাত্রীর পাঠদানে শৃঙ্খলা রক্ষা করা মাত্র ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।এ জন্য কলেজে ৫২টি নতুন পদ সৃষ্টিসহ মোট ৭৭টি পদে শিক্ষক-কর্মচারী পদায়নের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা বেগম ও কণা দাশ বলেছে, কলেজে এক বিষয়ে শুধু একজন শিক্ষক হওয়ায় প্রায় ক্ষেত্রে তাদের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের পাঠ গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক হিসাববিজ্ঞান অথবা কম্পিউটার শিক্ষার শিক্ষক গণিতে পাঠদান করে থাকেন। আবার বাধ্যতামূলক সাধারণ বিষয়গুলোর (যেমন: বাংলা, ইংরেজি) পাঠদানে শতাধিক ছাত্রীর উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ শ্রেণীকক্ষে পাঠ গ্রহণ করাও সম্ভব হয় না।মানবিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মাম্যা মারমা, কাঞ্চন তঞ্চঙ্গ্যা বলেছে, ছাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতিটি বিষয়ে অন্তত দুজন শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু তা না করে কোনো স্থলাভিষিক্ত ছাড়া সম্প্রতি যুক্তিবিদ্যা ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের দুজন শিক্ষক অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।অধ্যক্ষ প্রদীপ বড়ুয়া বলেছেন, কলেজটি ডিগ্রি কলেজে উন্নীত করার জোরালো দাবির মুখে তা না করে উপায় থাকবে না। এ জন্য বিষয়টি মহাপরিচালককে জানিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীর নতুন পদ সৃষ্টির চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। তবে সেখান থেকে নতুন পদ সৃষ্টির ব্যাপারে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া না গেলেও দুজন শিক্ষককে বদলি করে নেওয়া হয়েছে।
আষাঢ়ের মেঘলা দুপুর। একটি গাছের ছায়ায় তারুণ্যের আড্ডা। হঠাৎ এক বন্ধু কণ্ঠ ছেড়ে গেয়ে উঠলেন—‘আকাশ দেখে খাঁচার পাখির উড়ে যাবার ইচ্ছে হতে পারে/ বুকের খাঁচায় রাখি, কেমন করে উড়াই বলো তারে’...। ক্ষণিক স্তব্ধতা। নীরবতা ভেঙে এবার সবার কণ্ঠে বাজল ‘তোমার ঘরে বাস করে কারা...।’ উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা মেশানো তারুণ্যের এ আড্ডা বসেছিল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। ক্লাসের ফাঁকে কয়েকটি বিভাগের বন্ধুদের ওই জমকালো আড্ডায় যোগ দেওয়ার সুযোগ হলো। ক্যাম্পাসের গাছের ছায়ার সবুজ চত্বরে বসে অনির্ধারিত বিষয়ে আলাপচারিতা যেন উচ্চশিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ। এ আড্ডা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কোনো মানেই হয় না। আড্ডার বন্ধুদের এমনই অভিব্যক্তি।ক্যাম্পাস থেকে প্রকাশিত ষাণ্মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক মৎস্য ও মেরিন জীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিজা ইসলাম আড্ডায় যোগ দিয়ে কিছুটা উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘যারা শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে থাকে, তারা নির্মল আড্ডাবাজ হয়। ভালো থাকে।’যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি বয়সে এখনো নবীন। অতিথি পাখি কিংবা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীদের কলকাকলিতে মুখর হতে ক্যাম্পাসকে আরও কিছুটা সময় দিতে হবে। সবে সারি সারি গাছগাছালিতে ক্যাম্পাস সুশোভিত করা হয়েছে। আড্ডায় গান গাওয়া বন্ধুটি ফাহিম রহমান। তিনি পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর কথা, পরিবেশের জন্য কিছু একটা করা দরকার। পরিবেশ ভালো রাখার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি সবচেয়ে জরুরি। ৫ জুনে যে পরিবেশ দিবসটি হয়, সেটি উৎসবের রূপ দেওয়ার জন্য আমরা দাবি তুলব। আড্ডা কেমন যেন গুরুগম্ভীর হয়ে যাচ্ছে। কোনো এক বন্ধু ফাহিমকে অনুরোধ জানালেন, সেই গানটি ধর না। আরেক বন্ধু বলে উঠলেন ‘নিজস্ব সংস্কৃতির বাইরে যাস না’। এবার সংস্কৃতি আর অপসংস্কৃতি নিয়ে বিতর্ক উঠল। অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরণিকা হক সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, যা কিছু গ্রহণীয়, ভালো তা-ই সংস্কৃতি। আর যা মানুষের মধ্যে অসুস্থ চিন্তার উন্মেষ ঘটায় তা-ই অপসংস্কৃতি। আর একখান গান হয়ে যাক বলতেই ‘গাড়ি চলে না, চলে না চলে না-রে, গাড়ি চলে না’, ‘সাধের লাউ বানাইল মোরে বৈরাগী’ সমবেত কণ্ঠে চলতে থাকল একের পর এক গান।যশোর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের আমবটতলায় ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ৩৫ একর সীমানার বিশাল ক্যাম্পাসের এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২টি বিভাগে বর্তমানে হাজার দুয়েক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুস সাত্তার বলেন, পরিকল্পনা করে ক্যাম্পাস সাজানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসে চার ধরনের গাছ লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফলদ, বনজ, ভেষজ ও দৃষ্টিনন্দন গাছ। গাছগুলো আরেকটু বড় হলে শিক্ষার্থীদের বসার জন্য গোড়া বাঁধাই করে দেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে একটি পুকুর খনন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাস সমৃদ্ধ করার জন্য অন্তত আরও ১৫ একর জায়গার দরকার। উপাচার্য বলেন, যশোর শহরকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উচ্চশিক্ষা বেষ্টনী করার ভাবনা রয়েছে। যেটি আলাদা একটি ক্যাম্পাসে রূপান্তিত হবে। এতে শিক্ষার্থীরা বিদেশি নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বাদ পাবে। শহরও আলোকিত হবে বলে তিনি দাবি করেন। ২০১৯ সালের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬টি বিভাগ খোলার পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান।
জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে, নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে কৃষি, মৎস্য এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর। এই পরিবর্তনকে ঠেকানোর কোনো উপায় নেই। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের মানিয়ে চলতে হবে।গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।সাংবাদিক এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন (সিডিসি)। সহায়তায় ছিল জার্মান দূতাবাস।কর্মশালায় আলোচক ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ জিয়াউল হক এবং পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি অরুণ কর্মকার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সিডিসির নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর।সেমিনারে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ জিয়াউল হক জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে, ঝড়-ঝঞ্ঝা বাড়ছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তা ছাড়া এর প্রভাবে জলমগ্নতা তৈরি হবে, নদীভাঙনের পরিমাণও বাড়তে থাকবে।প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি অরুণ কর্মকার বলেন, আবহাওয়া ও জলবায়ু ভিন্ন জিনিস। এক দিনের বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রার পরিমাণ, বাতাসের আর্দ্রতা হচ্ছে আবহাওয়া। আর কমপক্ষে ৩০ বছরের আবহাওয়ার গড় করে যে চিত্র আসে সেটাই হলো একটি অঞ্চলের জলবায়ু।মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য এটি একটি প্রাথমিক আয়োজন মাত্র। এ বিষয়ে লেখালেখি এবং সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বই এবং গবেষণাপত্র পড়ার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।কর্মশালায় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকের সাংবাদিক, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের একমাত্র সেবাখোলা মা মগদ্বেশ্বরী মন্দিরে ১৪ দিন ধরে ধর্মীয় পূজা করতে পারছে না হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। কারণ, স্থানীয় প্রভাবশালী মোজাফফর আহমদ সশস্ত্র সন্ত্রাসী দিয়ে সেবাখোলার জমি দখল করে তাতে অবকাঠামো তৈরি করছেন। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় কক্সবাজার শহরের ব্রাহ্মমন্দিরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ উত্থাপন করেন সদর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দীপক দাশ।লিখিত অভিযোগে দীপক দাশ বলেন, গত ২২ জুন মোজাফফর বাহিনীর সন্ত্রাসীরা জমি দখলের জন্য মা মগদ্বেশ্বরী মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় বাবুল কান্তি দে, বিউ রঞ্জন দে, মুখেন্দু দেসহ ছয়জন গুরুতর আহত হন। ওই দিন হামলার ঘটনায় সেবাখোলা মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাগর কান্তি দাশ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় ঈদগাঁও ইউনিয়নের উত্তর মাইজপাড়ার মোজাফফর আহমদ (৫২), মোহামঞ্চদ আরিফসহ (২৮) ১২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সন্ত্রাসীরা এখন মামলা প্রত্যাহারের জন্য হিন্দুদের প্রাণনাশের হুমকিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।মামলার বাদী সাগর কান্তি দাশ বলেন, প্রায় ৯০ বছর আগে তৎকালীন জমিদার খান বাহাদুর মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার জন্য ৩৩ শতক জমি দান করেন। তখন থেকে এই মন্দিরে ঈদগাঁও, ইসলামবাদ, ইসলামপুর, ভারুয়াখালী, খুরুশকুল ইউনিয়নের অন্তত ১২ হাজার হিন্দু পূজা করে আসছে। কিন্তু ১৪ দিন ধরে সেখানে পূজা করা যাচ্ছে না। বর্তমানে মন্দিরের জমিতে সন্ত্রাসীরা ঘর নির্মাণ করছে এবং সেবাখোলায় চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দখলীয় জমিতে অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি করা হয়।এ ছাড়া সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৮ জুলাই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান, ৯ জুলাই প্রতিবাদ সমাবেশ, ১০ জুলাই জেলার সব মন্দিরে কালো পতাকা উত্তোলন ও ১২ জুলাই শহরের প্রধান সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি।মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মনজুরুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, গত ২২ জুন মোজাফফর আহমদের লোকজন সেবাখোলা জমি দখল করে একটি ঘর তৈরি করেন। মামলা করার পর পুলিশ ওই জমি থেকে মোজাফফরকে উচ্ছেদ করে এবং আসামিদের ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ঘরোয়া কর্মসূচির মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রদলের দুই কর্মী ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে নগরের পাহাড়তলী থানাধীন সরাইপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।ছাত্রদলের আহত দুই কর্মীর নাম রাজু ও সগির বলে জানা গেছে। গতকাল স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে চেয়ারে বসা নিয়ে প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।দলীয় সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপ্রচারের প্রতিবাদে গতকাল সভার আয়োজন করে সরাইপাড়া ওয়ার্ড বিএনপি।এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। সভাটি খোলা জায়গায় হওয়ার কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে তা পাশের একটি কমিউনিটি সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে চেয়ারে বসা নিয়ে স্থানীয় ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। ওই ওয়ার্ডে বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে অনেক দিন ধরে। দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা নোমানের ডাকা সভায় যোগ দেন। গত সংসদ নির্বাচনে নোমান ওই এলাকা থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন।জানতে চাইলে সরাইপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দিদারুল রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই পক্ষই হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এতে রাজু নামের একজন ছুরিকাঘাত হয়েছেন। হট্টগোলকারীদের কমিউনিটি সেন্টার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আমরা সভা করেছি।’আবদুল্লাহ আল নোমানের ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল আজিম বলেন, কর্মীদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার কারণে এ কাণ্ড ঘটেছে। বড় সংগঠনে এরকম হয়েই থাকে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, গাজীপুরে অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ থাকলে তাঁরা তথ্যপ্রমাণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যেতে পারেন। এর আগের নির্বাচনগুলোতে কারচুপির কোনো অভিযোগ মিডিয়ায় আসেনি।তথ্যমন্ত্রী গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের জিমনেশিয়ামে আয়োজিত তিন দিনের ঈদ ই-বাণিজ্য মেলা এবং ডিজাটাল উদ্ভাবনী মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের জন্য আলাদা ওয়েজ বোর্ড গড়ার প্রক্রিয়ার কথাও জানান।এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমরা তথ্যপ্রযুক্তির বাংলাদেশ বানাব। তথ্যপ্রযুক্তির বাংলাদেশ হলে এ দেশের ছেলেমেয়েরা বিশ্বের বুকে নতুন নতুন চাকরি পাবে। দেশকে উন্নত করবে। এ লক্ষ্যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সরকার ২৩ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।’অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, এস আলম গ্রুপের বিপণন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান।হাসানুল হক ইনু বিরোধী নেত্রীর সমালোচনা করে বলেন, এ দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের কঠিন সাজা চায়। অথচ খালেদা জিয়া এবং জামায়াতে ইসলামী এদের পক্ষ নিয়েছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।
চট্টগ্রামে ছাত্রশিবিরের কর্মীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে নিহত ইজিবাইকচালক মোহাম্মদ মুসার পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নিহত মুসার মা-বাবার হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসি উপস্থিত ছিলেন।অনুদানের চেক পেয়ে নিহত মুসার বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ছেলে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। তার মৃত্যুর পর আমাদের পথে বসতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পাঁচ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা রেখে সংসারের খরচ চালাব।’গত ২৫ মার্চ জামায়াতের ডাকা হরতাল কর্মসূচির দিন ভোরের দিকে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক নিয়ে বের হন মুসা। ওই দিন নগরের রাহাত্তরপোল এলাকায় শিবিরের কর্মীরা তাঁর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মারা যান।মুসার চিকিৎসার জন্য স্থানীয় লোকজন চাঁদা তোলেন। স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলামও চিকিৎসার জন্য টাকার জোগান দেন।সাংসদ নুরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুসার মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দেন। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে মুসার বাবার ঘর মেরামত করে দেব।’গতকাল অনুদানের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মুসার মৃত্যুর দায় খালেদা জিয়া ও ১৮-দলীয় জোট এড়াতে পারেন না। ১৮-দলীয় জোট হরতালের নামে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যাচ্ছে। তাদের হাত থেকে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষও রক্ষা পাচ্ছে না। এদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ) কর্তৃপক্ষ গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবে ‘সেলিব্রেশন লাঞ্চে’র আয়োজন করে। সরকারের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়া উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শামসুল হক চৌধুরী, বেগম চেমন আরা তৈয়ব ও জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত শিক্ষাসচিব সালাহউদ্দীন আকবর উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি এস এম আল হোসায়নী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি ইরশাদ কামাল খান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইএসটিসিডিটির সভাপতি সাইফুর রহমান।প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, নৈতিকতা এবং দেশপ্রেমহীন শিক্ষা কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সহায়ক নয়। শিক্ষাক্ষেত্রে চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি এ অভাব পূরণ করে সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণে যথাযথ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।ইএসটিসিডিটির সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, সবার সহযোগিতায় চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি নিকট-ভবিষ্যতে দেশের অন্যতম প্রধান উচ্চশিক্ষা বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি এস এম আল হোসায়নী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার বিদ্যমান পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কাজ চলছে।অনুষ্ঠানে চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য, ইএসটিসিডিটির বোর্ড সদস্য, চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের কাটা মোবারক ঘোনা গ্রাম এলাকায় অবৈধভাবে নদী দখল করে পুকুর খনন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।এলাকাবাসী জানান, গ্রামের সাহাব উদ্দিনসহ কয়েক ব্যক্তি গত কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে মুহুরী নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করে আসছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা প্রায় ৩০ একর নদী অবৈধভাবে দখল করে কয়েকটি পুকুর খনন করেছেন। ফরহাদনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাহাবুদ্দিন বলেন, নদীতে অবৈধভাবে পুকুর খননকারীরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় লোকজন প্রকাশ্যে বিরোধিতা কিংবা অবৈধ নদী দখলের প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তিনি বলেন, নদীর মাঝ বরাবর বাঁধ দেওয়ায় বর্ষাকালে পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এতে অনেকের খেতের ফসল ডুবে যায়। পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার কারণে নদীর অপর পাড়ে চরলালা গ্রামে নদীভাঙন দেখা দেয়। এতে অনেকের জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের বিষয়টি তিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার জন্য সাহাব উদ্দিনকে ইউপি কার্যালয়ে উপস্থিত হতে লিখিতভাবে বলা হয়। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। পরে বিষয়টি ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনসুর উদ্দিনকে জানালে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি এলাকা পরিদর্শন করে অবৈধভাবে নদী দখল করে পুকুর খননের সত্যতা দেখতে পান।ইউএনও বলেন, অবৈধভাবে নদী দখল করে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিক উল্যাহ বলেন, অবৈধভাবে নদী দখলের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তা ছাড়া নদীর মালিক জেলা প্রশাসন। অবৈধ দখলের বিষয়ে জেলা প্রশাসন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। তিনিও এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন।
‘তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে/ কীভাবে যে ক্ষয়ে গেছি অন্তরে বাহিরে/ কীভাবে যে হয়ে গেছি নিঃস্ব রিক্ত উদ্দামহীন’। দরাজ গলায় আবৃত্তি করছিলেন অর্থনীতির শিক্ষার্থী সাজিদ। মাঝে তাঁর বন্ধুরা ধুয়ো দিচ্ছিলেন ‘আহা!’, ‘সাধু!’। কিন্তু হঠাৎ আরেক বন্ধু অনীক সব বগি ঘুরে এসে জানাল, ‘দোস্ত, শান্তা তো আজ এই বগিতে ওঠেনি।’ মুহূর্তেই সব উদ্যম হারিয়ে ফেলল সাজিদ ‘আমার এত বড় সাধনা এমন মাঠে মারা গেল! কাল রাত জেগে মুখস্থ করলাম কবিতাটা। দূর! বন্ধুরা আবার ধুয়ো তুলল, ‘হায় হায়’। আর অন্য শ্রোতারা বদ্ধ বাতাস কাঁপিয়ে হাসতে লাগল।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের যাত্রীরা এমনই। কারণে-অকারণে হেসে উঠতে পারে আমূল। হাসি-গান-আড্ডায় মাতোয়ারা সারাক্ষণ। আর এই অসাধারণ প্রাণবান তারুণ্যের বাহন বলেই হয়তো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলও হয়ে উঠেছে বিশিষ্ট। উদরভর্তি একঝাঁক উচ্ছল যাত্রী নিয়ে শাটল ট্রেন রাজকীয় চালে হেলেদুলে ভেঁপু বাজিয়ে চলছে। ট্রেনের ছাদ থেকে শুরু করে দরজা পর্যন্ত কোথাও তিলধারণের ঠাঁই নেই। গরমে ঘেমে-নেয়ে অস্থির সবাই। তবু কী আনন্দ ছড়ানো মুখে! গলায় বাজছে গান! আশপাশের লোকজন অবাক হয়ে এই মজার দৃশ্য দেখছে আর আপনমনে হাসছে। এই শাটল নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। চারুকলার শিক্ষার্থী নদী যেমন বললেন, ‘আমাদের যেকোনো উৎসবের কেন্দ্রীয় চরিত্র শাটল ট্রেন। পয়লা বৈশাখ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নিজেদের আগে আমরা আমাদের প্রাণের শাটলকে সাজাই। শাটল দেখে সবাই বুঝতে পারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু হতে চলেছে। শাটল নিয়ে কবিতা, উপন্যাস এমনকি টেলিফিল্ম পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। আর গান তো প্রায়ই হচ্ছে।’শাটল ট্রেনের সজ্জা দেখেই নদীর কথার সত্যতা মেলে। প্রতিটি বগিতে শোভা পাচ্ছে বিচিত্র আলপনা। বগির গায়ে বড় করে লেখা আছে নাম—এপিটাফ, সাম্পান, একাকার, মহাপাপী; রয়েছে কিছু মজার নাম-ফাটাফাটি, ৬৯, সিএফসি ইত্যাদি। শাটলে উঠে প্রথমেই চোখে পড়ে সিট দখলের যুদ্ধে হেরে গিয়ে মুখ চুন করে দাঁড়িয়ে থাকা অনেককে। কিন্তু বগির দুপ্রান্তেই যে বসেছে জলসা। তবলা, তানপুরা নেই তো কী! ট্রেনের গায়ে শক্ত হাতের চাপড়ে বেজে চলছে নিখুঁত বাজনা। শাটল সিঙ্গাররা একের পর এক বিখ্যাত গানের প্যারোডি গেয়ে যাচ্ছেন। গাইছেন নিজেদের লেখা, সুর করা গানও। এই আনন্দযজ্ঞের মধ্যে পড়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই চুনমুখোরা হাসিমুখ হয়ে যান। গলা মেলান শাটল সিঙ্গারদের সঙ্গে। শাটলের মেঝেতে পা ঠুকে তোলেন তাল।যাঁদের গানে উৎসাহ নেই, তাঁরা মেতেছেন আড্ডায়, কেউ কেউ করছেন নোট নিয়ে কাড়াকাড়ি, নানা ছুঁতোয় জুটিরা ব্যস্ত খুনসুটিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর বন্ধুতা কিংবা প্রেমের শুরু শাটলেই। হিসাববিজ্ঞানের সমীর আর ইতিহাসের শান্তার ভালোবাসার গল্পটি যেমন। আলাদা অনুষদের হওয়ায় কেউ কাউকে চিনতেন না। শাটলেই পরিচয়। শান্তা শোনালেন সে গল্প, ‘সিট পাচ্ছিলাম না সেদিন। বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ তাঁর দয়া হলো শুধু আমার জন্য। নিজে উঠে গিয়ে বসতে দিলেন। ব্যস আমিও পটে গেলাম। এখন বুঝি ওটা ছিল গভীর ষড়যন্ত্র। হি হি হি...’। এই হাসি-প্রেম-বন্ধুতার বিপরীতটিও ঘটে শাটলে।গানের ট্রেন শাটলে সেদিন বেজে ওঠে কবিগুরুর গান ‘সে ঢেউয়ের মতন ভেসে গেছে / চাঁদের আলোর দেশে গেছে...’। কিছু দুঃখ আছে, কান্না আছে জড়িয়ে। কিন্তু তবু চবির শাটল মানেই আশ্চর্য প্রাণবন্ত যাত্রা—যে যাত্রা চুকেবুকে গেলে হঠাৎই নিজেকে খুব নিঃস্ব মনে হয়, ভীষণ একা মনে হয়।
‘তুমি মুখ তুলে তাকাওনি বলে/ কীভাবে যে ক্ষয়ে গেছি অন্তরে বাহিরে/ কীভাবে যে হয়ে গেছি নিঃস্ব রিক্ত উদ্দামহীন’। দরাজ গলায় আবৃত্তি করছিলেন অর্থনীতির শিক্ষার্থী সাজিদ। মাঝে তাঁর বন্ধুরা ধুয়ো দিচ্ছিলেন ‘আহা!’, ‘সাধু!’। কিন্তু হঠাৎ আরেক বন্ধু অনীক সব বগি ঘুরে এসে জানাল, ‘দোস্ত, শান্তা তো আজ এই বগিতে ওঠেনি।’ মুহূর্তেই সব উদ্যম হারিয়ে ফেলল সাজিদ ‘আমার এত বড় সাধনা এমন মাঠে মারা গেল! কাল রাত জেগে মুখস্থ করলাম কবিতাটা। দূর! বন্ধুরা আবার ধুয়ো তুলল, ‘হায় হায়’। আর অন্য শ্রোতারা বদ্ধ বাতাস কাঁপিয়ে হাসতে লাগল।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের যাত্রীরা এমনই। কারণে-অকারণে হেসে উঠতে পারে আমূল। হাসি-গান-আড্ডায় মাতোয়ারা সারাক্ষণ। আর এই অসাধারণ প্রাণবান তারুণ্যের বাহন বলেই হয়তো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলও হয়ে উঠেছে বিশিষ্ট। উদরভর্তি একঝাঁক উচ্ছল যাত্রী নিয়ে শাটল ট্রেন রাজকীয় চালে হেলেদুলে ভেঁপু বাজিয়ে চলছে। ট্রেনের ছাদ থেকে শুরু করে দরজা পর্যন্ত কোথাও তিলধারণের ঠাঁই নেই। গরমে ঘেমে-নেয়ে অস্থির সবাই। তবু কী আনন্দ ছড়ানো মুখে! গলায় বাজছে গান! আশপাশের লোকজন অবাক হয়ে এই মজার দৃশ্য দেখছে আর আপনমনে হাসছে। এই শাটল নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। চারুকলার শিক্ষার্থী নদী যেমন বললেন, ‘আমাদের যেকোনো উৎসবের কেন্দ্রীয় চরিত্র শাটল ট্রেন। পয়লা বৈশাখ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নিজেদের আগে আমরা আমাদের প্রাণের শাটলকে সাজাই। শাটল দেখে সবাই বুঝতে পারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু হতে চলেছে। শাটল নিয়ে কবিতা, উপন্যাস এমনকি টেলিফিল্ম পর্যন্ত তৈরি হয়েছে। আর গান তো প্রায়ই হচ্ছে।’শাটল ট্রেনের সজ্জা দেখেই নদীর কথার সত্যতা মেলে। প্রতিটি বগিতে শোভা পাচ্ছে বিচিত্র আলপনা। বগির গায়ে বড় করে লেখা আছে নাম—এপিটাফ, সাম্পান, একাকার, মহাপাপী; রয়েছে কিছু মজার নাম-ফাটাফাটি, ৬৯, সিএফসি ইত্যাদি। শাটলে উঠে প্রথমেই চোখে পড়ে সিট দখলের যুদ্ধে হেরে গিয়ে মুখ চুন করে দাঁড়িয়ে থাকা অনেককে। কিন্তু বগির দুপ্রান্তেই যে বসেছে জলসা। তবলা, তানপুরা নেই তো কী! ট্রেনের গায়ে শক্ত হাতের চাপড়ে বেজে চলছে নিখুঁত বাজনা। শাটল সিঙ্গাররা একের পর এক বিখ্যাত গানের প্যারোডি গেয়ে যাচ্ছেন। গাইছেন নিজেদের লেখা, সুর করা গানও। এই আনন্দযজ্ঞের মধ্যে পড়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই চুনমুখোরা হাসিমুখ হয়ে যান। গলা মেলান শাটল সিঙ্গারদের সঙ্গে। শাটলের মেঝেতে পা ঠুকে তোলেন তাল।যাঁদের গানে উৎসাহ নেই, তাঁরা মেতেছেন আড্ডায়, কেউ কেউ করছেন নোট নিয়ে কাড়াকাড়ি, নানা ছুঁতোয় জুটিরা ব্যস্ত খুনসুটিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর বন্ধুতা কিংবা প্রেমের শুরু শাটলেই। হিসাববিজ্ঞানের সমীর আর ইতিহাসের শান্তার ভালোবাসার গল্পটি যেমন। আলাদা অনুষদের হওয়ায় কেউ কাউকে চিনতেন না। শাটলেই পরিচয়। শান্তা শোনালেন সে গল্প, ‘সিট পাচ্ছিলাম না সেদিন। বন্ধুদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ তাঁর দয়া হলো শুধু আমার জন্য। নিজে উঠে গিয়ে বসতে দিলেন। ব্যস আমিও পটে গেলাম। এখন বুঝি ওটা ছিল গভীর ষড়যন্ত্র। হি হি হি...’। এই হাসি-প্রেম-বন্ধুতার বিপরীতটিও ঘটে শাটলে।গানের ট্রেন শাটলে সেদিন বেজে ওঠে কবিগুরুর গান ‘সে ঢেউয়ের মতন ভেসে গেছে / চাঁদের আলোর দেশে গেছে...’। কিছু দুঃখ আছে, কান্না আছে জড়িয়ে। কিন্তু তবু চবির শাটল মানেই আশ্চর্য প্রাণবন্ত যাত্রা—যে যাত্রা চুকেবুকে গেলে হঠাৎই নিজেকে খুব নিঃস্ব মনে হয়, ভীষণ একা মনে হয়।
কক্সবাজারের টেকনাফে গতকাল শনিবার ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ অভিযানের পর অবৈধ লেনদেনের ছবি তোলার কারণে সাংবাদিকদের গালাগাল করে প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিনের ক্যামেরা কেড়ে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে টেকনাফ থানায় এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানান, গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কক্সবাজারের ট্রাফিক পুলিশ টেকনাফে বেশ কিছু নিবন্ধনবিহীন মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।পরে থানা থেকে টাকার বিনিময়ে কয়েকটি মোটরসাইকেল ছেড়ে দেওয়ার সময় ছবি তোলেন গিয়াস উদ্দিন। এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকেরা ট্রাফিক সার্জেন্ট অমিতাভকে কয়টি মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমার জানা নেই।’ তাঁর পুরো নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘নাম দিয়ে কাম কী?’এ সময় কনস্টেবল সৌরভ বড়ুয়া ও মো. ইউনুছ ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন ও গিয়াস উদ্দিনের সনি ডিএসসি-এইচ ৫০ ক্যামেরাটি কেড়ে নেন।এ ব্যাপারে সার্জেন্ট অমিতাভের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বলেন, ‘ক্যামেরা কি আমি নিয়েছি? আপনারা কনস্টেবলরা ক্যামেরা নিয়েছে বললে আমার করার কিছু নেই, আপনাদের ক্যামেরা আপনারা নেন’ বলে তিনি সটকে পড়েন।
সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের মান্দারীটোলা গ্রামে একটি বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নয়টি কাঁচা বসতঘর পুড়ে গেছে। এতে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস সূত্র।সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা দোলন আচার্য বলেন, গত শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মান্দারীটোলা গ্রামের হাসমত আলীর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী রাত পৌনে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে আরব আলী, ভুট্টো, শানু, নুরুল করিমসহ নয় পরিবারের বসতঘর পুড়ে যায়। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২ লাখ টাকা। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার আরব আলীর মায়ের মৃত্যুতে ফাতিহা অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানের ডেকোরেশন কিংবা বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনে একে একে পার্শ্ববর্তী নয়টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন।
চট্টগ্রাম বিএন স্কুল ও কলেজের পুনর্মিলনীচট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী (বিএন) স্কুল ও কলেজের এসএসসি ২০০৫ ও এইচএসসি ২০০৭ সালের শিক্ষার্থীদের এক পুনর্মিলনী আগামী ১১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পতেঙ্গার বাংলাদেশ নেভাল অ্যাকাডেমিসংলগ্ন সৈকতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। রেজিস্ট্রেশন করা যাবে ২৯ জুলাই পর্যন্ত। বিস্তারিত: ০১৭৪৩৭৭৩৭৫৫ রেজিস্ট্রেশনের সাইট: http://goo.gl/RAa3T উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শুরুবাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাউবি) সার্টিফিকেট ইন ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোফিসিয়েন্সি (সিইএলপি) ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি চলছে। সিইএলপি কোর্সের জন্য ২৫ জুন থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাচ্ছে। এমবিএ প্রোগ্রামের জন্য বাউবির রিজিওনাল রিসোর্স সেন্টারগুলোতে আবেদন ফর্ম কিনতে পাওয়া যাবে। জনতা ব্যাংক থেকে ৪০০ টাকা জমা দিয়ে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করতে হবে। বিস্তারিত: www.bou.edu.bd/home.php রিয়াল ফ্যানদের পুনর্মিলনীস্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব ‘রিয়াল মাদ্রিদ’-এর সমর্থকদের মাদ্রিদিস্তা নামে ডাকা হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘মাদ্রিদিস্তা’দের আয়োজনে এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার হাতিরপুলের একটি রেস্তোরাঁয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন জনা চল্লিশেক মাদ্রিদিস্তা। শুরুটা ছিল ফেসবুকে। এরপর আস্তে আস্তে সবার ঘনিষ্ঠতা। মাদ্রিদিস্তা গ্রুপ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—একটা কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হবে। গ্রুপের অ্যাডমিন নির্ঝর খান, শারফুদ্দিন রাজু আর তানবির রোমান ছিলেন অগ্রণী ভূমিকায়। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী থেকেও বেশ কয়েকজন মাদ্রিদিস্তা আসেন এই পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে। গত এক বছরে গ্রুপে কার্যক্রমের ভিত্তিতে ছয়টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারের মধ্যে ছিল রিয়াল মাদ্রিদের সামনের মৌসুমের জার্সিসহ বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনির। সবশেষে ছিল ভূরিভোজ। সব মিলিয়ে অসাধারণ এক বিকেল পার করে বাড়ি ফেরেন বাংলাদেশি মাদ্রিদিস্তারা।চিরকুট:h:চট্টগ্রাম বিএন স্কুল ও কলেজের পুনর্মিলনীচট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী (বিএন) স্কুল ও কলেজের এসএসসি ২০০৫ ও এইচএসসি ২০০৭ সালের শিক্ষার্থীদের এক পুনর্মিলনী আগামী ১১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পতেঙ্গার বাংলাদেশ নেভাল অ্যাকাডেমিসংলগ্ন সৈকতে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। রেজিস্ট্রেশন করা যাবে ২৯ জুলাই পর্যন্ত। বিস্তারিত: ০১৭৪৩৭৭৩৭৫৫ রেজিস্ট্রেশনের সাইট: http://goo.gl/RAa3T উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শুরুবাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাউবি) সার্টিফিকেট ইন ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোফিসিয়েন্সি (সিইএলপি) ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি চলছে। সিইএলপি কোর্সের জন্য ২৫ জুন থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা যাচ্ছে। এমবিএ প্রোগ্রামের জন্য বাউবির রিজিওনাল রিসোর্স সেন্টারগুলোতে আবেদন ফর্ম কিনতে পাওয়া যাবে। জনতা ব্যাংক থেকে ৪০০ টাকা জমা দিয়ে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করতে হবে। বিস্তারিত: www.bou.edu.bd/home.php রিয়াল ফ্যানদের পুনর্মিলনীস্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব ‘রিয়াল মাদ্রিদ’-এর সমর্থকদের মাদ্রিদিস্তা নামে ডাকা হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘মাদ্রিদিস্তা’দের আয়োজনে এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার হাতিরপুলের একটি রেস্তোরাঁয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন জনা চল্লিশেক মাদ্রিদিস্তা।শুরুটা ছিল ফেসবুকে। এরপর আস্তে আস্তে সবার ঘনিষ্ঠতা। মাদ্রিদিস্তা গ্রুপ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—একটা কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হবে। গ্রুপের অ্যাডমিন নির্ঝর খান, শারফুদ্দিন রাজু আর তানবির রোমান ছিলেন অগ্রণী ভূমিকায়। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী থেকেও বেশ কয়েকজন মাদ্রিদিস্তা আসেন এই পুনর্মিলনীতে যোগ দিতে। গত এক বছরে গ্রুপে কার্যক্রমের ভিত্তিতে ছয়টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারের মধ্যে ছিল রিয়াল মাদ্রিদের সামনের মৌসুমের জার্সিসহ বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনির। সবশেষে ছিল ভূরিভোজ। সব মিলিয়ে অসাধারণ এক বিকেল পার করে বাড়ি ফেরেন বাংলাদেশি মাদ্রিদিস্তারা।:
চাঁদা না পেয়ে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় গতকাল শনিবার সকালে দুর্বৃত্তরা মোহামঞ্চদ ইউনুছ (৪২) ও এমরানুল হক (১৮) নামের দুই পানচাষিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।অপহরণের শিকার দুই পানচাষি পরিবারের দাবি, তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে দুর্বৃত্তরা ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।প্রত্যক্ষদর্শী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুইছড়া পাহাড়ি এলাকার পানের বরজ থেকে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা চাঁদা দাবি করে আসছিল। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন পানচাষি দুর্বৃত্তদের দাবি করা চাঁদা দিয়ে পানের বরজে পান চাষ করে আসছে। তবে চাঁদা না দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা মোহামঞ্চদ ইউনুছ ও এমরান নামের দুই পানচাষির ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে চাঁদা না দেওয়ায় গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় দুর্বৃত্তরা ইউনুছ ও এমরানুল হককে অপহরণ করে।অপহরণের শিকার ইউনুছের ভাতিজা মোহামঞ্চদ মকছুদ জানান, তাঁদের ছাড়িয়ে নিতে দুর্বৃত্তরা ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে।মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহামঞ্চদ হাবিবুর রহমান বলেন, এ নিয়ে থানাকে কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে অবহিত করেননি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেনে ছাত্রলীগ-নিয়ন্ত্রিত সিটে বসাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশন এলাকায় ছাত্রলীগ ও এলাকাবাসীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।এ সময় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ১ নম্বর সড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এলাকাবাসী আজ (রোববার) সকাল ১০টার মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধের ঘোষণা দেয়।ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মামুন, চারুকলা ইনস্টিটিউট দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নয়ন ও অর্থনীতি বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জিসান। আহত ব্যক্তিদের চবি মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বিকেলে প্রক্টর অফিস বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছে আহত মামুন ও নয়ন। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।চবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি মোস্তফা সাইফুল ইসলাম রোমেন বলেন, ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। আলোচনার মাধ্যমে এ ঘটনার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পাবলিক হল মাঠে কৃষিপ্রযুক্তি ও ফলদ বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়েছে গতকাল শনিবার বিকেল চারটায়।পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে এ মেলার উদ্বোধন করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, কৃষি অধিদপ্তর ও বন বিভাগ যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে। ৮ জুলাই পর্যন্ত মেলা চলবে।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) পদের উপনির্বাচন কাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৪ এপ্রিল ওই ওয়ার্ডের সদস্য মারা গেলে পদটি শূন্য হয়।উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, বৈরাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর (গুয়াপঞ্চক) ওয়ার্ডের সদস্য আহমদ ছফা গত ১৪ এপ্রিল মারা গেলে নির্বাচন কমিশন তাঁর পদটি শূন্য ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী কাল সোমবার সে পদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোহামঞ্চদ ইদ্রিস (মোরগ) ও মোহামঞ্চদ সবুর (ফুটবল)। ওয়ার্ডে ভোটারের সংখ্যা এক হাজার ৪৪৭ জন।আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহামঞ্চদ মনিরুজ্জামান বলেন, উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
সেদিন সন্ধ্যায় ঢাকার বেঙ্গল ক্যাফে ঠিক আর দশ দিনের মতো ছিল না। বাইরে বলা নেই কওয়া নেই আষাঢ়ের কান্না। এই কান্নার জল ফাঁকি দিয়ে অথবা মুছতে মুছতে যাঁরা ক্যাফেতে ঢুকছেন, তাঁরা বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরের বন্ধু। বলছিলাম গত ৩০ জুনের আড্ডার কথা। সে সন্ধ্যায় ঘণ্টা খানেক ‘অনিয়ন্ত্রিত আড্ডা’র পর শুরু হয় আয়োজনের মূল পর্ব। কারণ, তখন আড্ডার রাশ টেনে ধরেছেন বন্ধুসভার নির্বাহী সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন। তিনি পরিচয় করিয়ে দেন উপস্থিত সবাইকে। এরপর শুরু হয় অনুভূতি ভাগাভাগির। অনুভূতি জানাতে গিয়ে অনেকে খুলে বসেন স্মৃতির ঝাঁপি। স্মৃতি রোমন্থন করেন বন্ধুসভার উপদেষ্টা মাহমুদুজ্জামান বাবু।আবেদা সুলতানা বলেন ভিন্ন কথা, ‘এই আনন্দ আয়োজনে আমরা পেয়েছি বর্তমান খ্যাতনামাদের আর ভবিষ্যতে যারা খ্যাতনামা হবে তাদের।’ আবার কর কর্মকর্তা কাম লেখক হিসেবে যাঁর পরিচিতি, সেই অরুণ কুমার বিশ্বাস কথায়ও যে কতটা বাকপটু তা সেদিন তিনি বুঝিয়েছেন। আবৃত্তিকার রবিশঙ্কর মৈত্রী অনুভূতি জানালেন কবিতা আবৃত্তি করে। যার মধ্য দিয়ে আয়োজনে যোগ হলো ভিন্ন মাত্রা। তারপর ‘অন্তরাটুকু’ শোনানোর যাঁর ডাক পড়ল, তিনি সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী। আর সবার শেষে একটু আগে যিনি দরজা খুললেন, তিনি শহীদুল আলম সাচ্চু। সংক্ষিপ্ত অনুভূতি জানান মুমিত আল রশিদ, বিনয় বর্মণ, ফিজার আহমেদ, ফিরোজ জামান চৌধুরী ও হাসান মাহমুদ।বন্ধুসভার সভাপতি আব্দুন নূর তুষার বলেন, বন্ধুরা সব ভালো কাজের সঙ্গে সব সময়ই আছে থাকবে। যাঁর উদ্যোগে আনন্দ আড্ডা, তিনি বন্ধুসভার উপদেষ্টা ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা মাত্রার পরিচালক সানাউল আরেফিন। ‘বন্ধুসভার সঙ্গে মাত্রা শুরু থেকে বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত। আর এখন সেই পরিধি আরও বেড়ে যাবে অনেক’, বলেন সানাউল আরেফিন। তারপর তিনি পরিচয় করিয়ে দেন আহমেদ রেজাউল করিম, আনোয়ার হোসেন, তাবাসসুম, সজীব, মুবিনসহ মাত্রার টিমকে, যারা নাকি শুধু বন্ধুসভার নানা কাজে যুক্ত থাকবে। ততক্ষণে তিনি বুঝে গেছেন অনুষ্ঠানের পূর্ণতা যেখানে নিহিত, সেই ভোজপর্ব বাদ দিয়ে অতি রসসিক্ত কথায় আর চিড়ে ভিজবে না! শুরু হয় নৈশভোজ। বাঙালি যে ভোজন রসিক তারও প্রমাণ রাখলেন কেউ কেউ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বিএনপির আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে।এদিকে গতকাল শনিবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলা সদরে পৌঁছান। তাঁর আগমনের খবরে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহমান সমর্থিত নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামলার আশঙ্কায় অপর যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মাস্টারসহ শতাধিক নেতা-কর্মী আবদুস সাত্তারকে নিয়ে রাত নয়টার দিকে উপজেলা সদর ত্যাগ করেন।রাত সাড়ে নয়টার দিকে আবদুর রহমান সমর্থিত নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি অন্নদা স্কুল মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় হয়ে উপজেলা সদরের দিকে রওনা হয়। ওই মিছিল থেকে আবদুস সাত্তারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় সাত্তার সমর্থিত কিছু তরুণ মিছিলটিকে পেছন থেকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সরাইল বাজার ও আশপাশের এলাকায় উভয় পক্ষের চার শতাধিক লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২টি রাবার বুলেট ছোড়ে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার চক্রবর্তীসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সরাইল থানার ওসি উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।হবিগঞ্জ: পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ ও তাঁর লোকজন আজ রোববার উপজেলার নতুন বাজার এলাকায় সমাবেশ ডাকেন। সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল সকালে হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক অলিউর রহমান ও পৌর ছাত্রদল আহ্বায়ক আতাউর রহমান প্রচার অভিযানে বের হন। শহরের নতুন বাজার এলাকায় তাঁদের প্রচারকাজে বাধা দেয় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাহিদ আলম, জহিরুল ইসলাম ও রায়েস চৌধুরীর নেতৃত্বে অপর একটি পক্ষ। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে হারুনুর রশিদসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতা রায়েস চৌধুরীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং রাশেদ চৌধুরীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইউএনও লুৎফুর রহমান গতকাল দুপুর দুইটা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন। নবীগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, নবীগঞ্জ পৌর এলাকা ও নতুন বাজার এলাকায় এবং এর আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
বাতিটা নেভাও, ঘুমাব। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। পারলে কপালটা একটু টিপে দাও। কিছুটা ক্লান্তিমাখা কণ্ঠে কথাগুলো বলল আনিতা। যাকে বলল সে আর কেউ নয়, আনিতার জীবনের সবকিছু জড়িয়ে যার বসবাস। কিছুটা আক্ষেপ, তবুও ভালোবাসে মানুষটাকে। ভীষণ কি না জানে না। এবার খেই খেই করে ওঠে আনিতা, কী হলো ফারদিন? তোমাকে কখন না বললাম বাতিটা নেভাও। আজব একটা মানুষ তুমি। কখনো বুঝতে চাও না আমাকে। সারাটাক্ষণ শুধু খামখেয়ালি করো, রাবিশ। ফারদিন বাতি জ্বালিয়ে বই পড়ছিল। যথারীতি কোমল সুরে, আচ্ছা দিচ্ছি। (ফারদিন সুইচটা অফ করে) এবার আরাম করে ঘুমাও।ক্লান্ত শরীরে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে আনিতা। কিছুতেই ঘুম আসছে না। জোর করে চোখের দুপাতা এক করতেই একটা ঘোরের মধ্যে ডুবে যায়...সাতটি বছরের দাম্পত্যজীবন তাদের। কারণে-অকারণে যা ইচ্ছা তা-ই বলে ফারদিনকে। কোনো বিবর্তন নেই মানুষটার। মাঝেমধ্যে মনে হয়, এত লম্বা একটা জীবন কী করে পার করবে এই একরোখা মানুষটার সঙ্গে! মানুষটাকে ঠিক কোন সংজ্ঞায় ফেলবে তা আজও বুঝে উঠতে পারেনি সে।জানালার ফাঁক দিয়ে সকালের চিকচিকে রোদ এসে আনিতার চোখে লাগে। হুড়মুড় করে বিছানা ছাড়ে। নাশতা বানাতে হবে ফারদিনের জন্য। ফারদিন খুব সকাল সকাল বের হয়। আনিতা ফারদিনকে ডাকে ফারদিন...ফারদিন...কোথায় গেলে তুমি। বাথরুমে শাওয়ারের শব্দ পেয়ে ভাবে বাথরুমে আছে। কিন্তু অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া না পেয়ে বাথরুমের দরজায় ধাক্কা দেয় আনিতা। সাওয়ার ছাড়া কিন্তু ফারদিন নেই। একটু অবাক হয় সে। বারান্দায় যায়, নিচে রাস্তার দিকে তাকায়, কোথাও দেখতে পায় না। ফোন করে, তাও বন্ধ পাচ্ছে। যথারীতি টেনশন হয় আনিতার। কোথায় গেল মানুষটা! সম্ভাব্য সব জায়গায় ফোন করেও নিরাশ হয়। তাহলে কি আমার ওপর অভিমান করে এমন করছে? নানা প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দেয় আনিতার মনে। এভাবে এক দিন, দুই দিন করে সপ্তাহ পার হয়ে যায়। টেনশনে টেনশনে আনিতার চোখমুখ শুকিয়ে একাকার।হঠাৎ কলবেল বেজে ওঠে। আনিতা এক দৌড়ে দরজার দিকে ছুটে যায়। দরজা খুলে দেখে ফারদিন। কোনো কথা না বলেই জাপটে ধরে তাকে। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে আনিতা। নানা প্রশ্নে জর্জরিত করে ফারদিনকে।চিরচেনা সেই সুরেই ফারদিন বলে, কেউ যখন নিজে থেকে হারিয়ে যায়, তখন তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আমার সঙ্গে ঠুনকো বিষয় নিয়ে যে রূঢ় আচরণগুলো করো তার একমাত্র কারণ হচ্ছে, নিজের মতো করে আমাকে আশা করো। এটা ঠিক নয়। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও। আর আমার এই না বলে চলে যাওয়ার কারণ একটাই—যাকে ভালোবাসি, তাকে কটুবাক্য শোনাতে চাই না। তাই আড়ালে গিয়েছি নিজেকে সংযত করার জন্য। এটাই আমার জন্য সহজ উপায়। আর যেখানেই যাই না কেন, আমি ফিরব। অবশ্যই ফিরব তোমার কাছে।আনিতা আরও জোরে চেপে ধরে ফারদিনকে। তার শুকিয়ে যাওয়া বুকের ভেতর টুপটাপ বৃষ্টি হতে থাকে। ফারদিনের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে, আর কখনো এমন হবে না; দেখে নিয়ো।
পত্রিকার ছোটদের পাতায় তাঁর প্রথম লেখা ছাপা হয়। সেই থেকে লেখালেখি শুরু। তখন সবে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। একসময় প্রায় সব জাতীয় দৈনিকের ছোটদের পাতায় নিয়মিত লিখেছেন। ছোটদের জন্য লেখেন বলেই ছোটদের কাছে পেলে সবকিছু ভুলে যান। বলছি আমাদের লেখকবন্ধু ফারজানা তান্নির কথা। বাবা মির্জা মো. মোশারফ হোসেনের লেখা নাটক একসময় বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হতো। বাবার এই লেখালেখি দেখেই ফারজানার মধ্যে লেখালেখির আগ্রহ জন্মে। একসময় ছোটদের পাতায় লেখালেখি করা আমাদের এই বন্ধু আজ আর ছোট্ট নেই। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বছর ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।ফারজানা লেখালেখির পাশাপাশি সুন্দর কার্টুন আঁকেন। ছাত্রজীবনে প্রথম আলোর আলপিনসহ জাতীয় দৈনিকের ফান ম্যাগাজিনের জন্য প্রচুর কার্টুন এঁকেছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নিয়মিত ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি করতেন। লেখালেখি ভালোবাসেন আর ইংরেজি সাহিত্যে পড়েছেন বলেই এখন একটি ইংরেজি ম্যাগাজিনে সাব-এডিটর হিসেবে কাজ করছেন।শিশুদের বই নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান রুম টু রিড থেকে বনের মাঝে বাজনা বাজে এবং লাল মাছ ও হলুদ পাখি নামে ফারজানার দুটি বই বের হয়েছে, যে বই দুটি সেখানে শিশুদের পড়ানো হয়। আমাদের এই লেখকবন্ধুর প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ। শিশুতোষ লেখক থেকে এখন নিজেকে বড়দের লেখক হওয়ার জন্য তৈরি করছেন। ফারজানা ঢাকা বন্ধুসভার বন্ধু।
মাঝখানের দেড় কিলোমিটার শুধু বাংলাদেশের। এর দুই পাশেই ভারতীয় সীমানা। মাঝখানে নৌকা ভেড়াতে হবে। তাও সব জায়গায় ঘাট নেই। খাড়া পাড়। ভাঙছে। ঘুরে-ফিরে এক জায়গায় দুখানা নৌকা ভিড়ল। রাজশাহী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুরা একে একে দুটি নৌকা থেকে নেমে রাজশাহীর পবা উপজেলার চরখিদিরপুরের মাটিতে পা রাখলেন। এই গ্রামে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে হবে আম উৎসব। শুধু আম নয়, তাদের সঙ্গে খাওয়া হবে খিচুড়ি ও ভুনা মাংস। এ জন্য রাজশাহী শহর থেকে কিনে আনা হয়েছে ১৫ কেজি মাংস, চাল, ডাল আর যা যা প্রয়োজন—সব। ইতিমধ্যে নিকটবর্তী বিজিবি ক্যাম্প থেকে বলে দেওয়া হয়েছে ছেলেমেয়েরা যেন বিদ্যালয়ের মাঠের বাইরে না যায়। বিদ্যালয়ে গিয়ে বন্ধুদের কয়েকজন চুলা তৈরি করে রান্না নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। অন্যরা ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক আড্ডায় মেতে উঠলেন। নাচ, গান, আবৃত্তি—সবই চলল দুই-আড়াই ঘণ্টা। এরপর শুরু হলো খাওয়া। কেউ প্লেটে, কেউ কলাপাতায়। সে এক অন্য রকম উৎসব। শেষে আম কাটবেন কে? বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার কাজল ও ইতি বসে গেলেন আম কাটতে। গামলায় হাত লাগিয়ে খাওয়ার পর অবশিষ্ট আমগুলো আস্ত নিয়েই দৌড় দিল শিক্ষার্থীরা।l রাজশাহী বন্ধুসভা
প্রতিটি বন্ধুসভাতেই পাঠচক্র থাকবে—এটা আমাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া। নির্দিষ্ট বই সবাই পড়ে এসে আলোচনায় বসবে। সবাই পাঠক হয়ে উঠবে। পাঠাভ্যাস গড়ে উঠবে বন্ধুদের মধ্যে। বাংলা সাহিত্য ও বিশ্বসাহিত্যের সেরা বইগুলো পড়া থাকবে বন্ধুদের। বন্ধু মানেই যার পড়ার অভ্যাস আছে। বন্ধু মানেই ভালো বইয়ের পাঠক। কোথাও বন্ধুসভা গড়ে উঠছে মানেই সেখানে পাঠচক্র আছে। বন্ধুদের এ বিষয়ে জোর দিতে বলি। আজ থেকে বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ শুরু করতে যাচ্ছে পাঠচক্র। এটি বসবে প্রথম আলোর নতুন ভবনের বন্ধুসভা কক্ষে (১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা)।আজ থেকে প্রতি রোববার নিয়মিত বসবে এই পাঠচক্র। বিকেল চারটা থেকে শুরু হবে। জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, ঢাকা মহানগরের বন্ধুসভার সদস্যসহ আগ্রহী যে কেউ এই পাঠচক্রে অংশ নিতে পারবে। আজকের আলোচ্য বই এবিএম মূসার মুজিব ভাই। বইটি প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন। পরের রোববারের আলোচ্য বই প্রথমা প্রকাশনীর হুমায়ূন আহমেদের বসন্ত বিলাপ।ঢাকা মহানগরে যারা বিভিন্ন বন্ধুসভার সঙ্গে জড়িত, তাদের বাংলামোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে বন্ধুদের নিয়মিত যোগাযোগ থাকুক, বন্ধুরা সদস্য হোক, বই পড়ুক—এটা আমাদের চাওয়া।বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিও আছে। এ লাইব্রেরি থেকেও বই সংগ্রহ করা যায়। ঢাকার বাইরেও অনেক জায়গায় ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ছুটে বেড়াচ্ছে। এ সুযোগ আমরা সারা দেশের বন্ধুদের কাজে লাগাতে বলি। আমরা যেন একসময় বলতে পারি, যারা বন্ধুসভা করে, তারাই বইয়ের নিয়মিত পাঠক। বই হোক বন্ধুদের প্রিয় সঙ্গী।l নির্বাহী সভাপতি, প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ
২৯ জুন। শনিবার। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালকের কক্ষ। হুইল চেয়ারে করে একজন রোগীকে আনা হলো। একে একে আটজন রোগী। তাঁরা সবাই সাভার রানা প্লাজাধসে আহত। দেশের বাইরে থেকে বাংলাদেশি চিকিৎসকেরা তাঁদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন।উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা করোলিনা চ্যাপটার (বিএমএএসএ-সিসি)’ আর্থিকভাবে সহায়তা দিল রানা প্লাজাধসে আট আহত ব্যক্তির পরিবারকে।রোগীদের হাতে চেক তুলে দেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় অধ্যাপক শায়লা খাতুন, ভাইস প্রিন্সিপাল ইসমাইল খান, আসমা আক্তারসহ ঢাকা মেডিকেলের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক এবং চিকিৎসক।আহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য বিএমএএসএ-সিসি দান করেছে ছয় হাজার ইউএস ডলার। সেই সঙ্গে ডা. সুফিয়া সিদ্দিক যোগ করেছেন এক হাজার ৫০০ ইউএস ডলার।ডা. সুফিয়া সিদ্দিকী ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে ৪০ ব্যাচের তাঁর বন্ধুদের কাছে এ আর্থিক সাহায্য পাঠান। তাঁরা পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টাকা রানা প্লাজাধসের আট আহত ব্যক্তির মধ্যে বিতরণ করেন। রোগের জটিলতার ওপর ভিত্তি করে মোবারক হোসেনকে দেড় লাখ টাকা, রোজিনা বেগম, রোজিনা আক্তার, রিক্তা মনি ও জেসমিনকে এক লাখ টাকা এবং রেহেনা, তাসলিমা ও আখতার বানুকে ১০ হাজার করে টাকা দিয়েছেন। রোগী নির্বাচনে কাজ করেছেন প্রশিক্ষণরত ডা. হ্যাপি, চৈতী, নাজমুল ও জিনিয়া। এই আয়োজনের সার্বিক ব্যবস্থা করেছেন ডা. আবদুল হানিফ, পেডিঅ্যাট্রিক সার্জারি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর।
কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বলছি, তোমরা যারা বন্ধুসভার সঙ্গে যুক্ত হতে চাও, চলে আসো ৯ জুলাই, মঙ্গলবার। যুক্ত হতে পারো গানের আসরে, লেখা পাঠের আসরে, নাট্যচর্চার সঙ্গে, আবৃত্তির সঙ্গে, পাঠচক্র অথবা সংগঠক হিসেবে। যেটা তোমার পছন্দ।যেখানে আসবে: ১৯ কারওয়ান বাজার, প্রথম আলোর নতুন ভবন (বন্ধুসভা কক্ষ, নিচতলা), সময়: বিকেল চারটা, তারিখ: ৯ জুলাই, মঙ্গলবারযা আনতে হবে: কাগজের একদিকে (নিজ হাতে লেখা) পূর্ণাঙ্গ নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, পূর্ণাঙ্গ বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং মুঠোফোন নম্বর।যোগাযোগ: সাইফুল ইসলাম: ০১৭১৯১০৬২১৫। চবিসভার সদস্য সংগ্রহচট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধু সংগ্রহ চলছে। আগ্রহী বন্ধুরা যোগাযোগ করতে পারো। সব অনুষদের নিচতলায় ও চাকসুর নিচতলায়। সাইদ সরওয়ার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।যোগাযোগ: কৌশিক: ০১৭৪০১৬৯০৩৫সৌরভ: ০১৮৫০-৫৬৬১৩৭
ই-মেইলের ভাষা বেশ কড়া। বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর উদ্দেশে কঠিন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বিপিএলের খেলোয়াড়দের এক এজেন্ট। যার সারমর্ম—বিশ্বজুড়ে আবারও হইচই শুরু হয়ে যাওয়ার আগেই কি বিসিবি জরুরিভিত্তিতে বিপিএলের পাওনা টাকা খেলোয়াড়দের পরিশোধ করবে? ব্যাপারটা নিয়ে কি আদৌ তারা কথা বলবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে?বিপিএলের দেনা-পাওনাসংক্রান্ত আলোচনা কখনোই থেমে না গেলেও বিদেশি খেলোয়াড়দের টাকা মোটামুটি সময়মতো শোধ হচ্ছে—এমন ধারণা দিয়ে আসছিল বিসিবি ও ফ্র্যাঞ্চাইজিরা। কিন্তু বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী বরাবর ওই খেলোয়াড়-এজেন্টের গত মাসে পাঠানো ই-মেইলটাই বলে দিচ্ছে, বিসিবি আর ফ্র্যাঞ্চাইজিরা যুগপৎ ব্যর্থ এখানেও। গত ১৯ মে তৃতীয় কিস্তির টাকা পরিশোধের সময় পেরিয়ে গেলেও বেশির ভাগ বিদেশি খেলোয়াড়ই এখনো কেবল প্রথম কিস্তির টাকা নিয়েই ‘সন্তুষ্ট’ আছেন। বিসিবিকে দেওয়া ই-মেইলেও একই দাবি করেছেন ওই এজেন্ট। খেলোয়াড়দের চতুর্থ ও শেষ কিস্তির টাকা দেওয়ার সময় শেষ হবে অগামী ১৯ আগস্ট।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বিদেশি খেলোয়াড়-এজেন্ট প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‘খেলোয়াড়দের বকেয়া টাকার ব্যাপারে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল, বিসিবি এবং ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। এখন তো তারা কোনো রকম সাড়া দেওয়ার সৌজন্যটুকুও দেখাচ্ছে না। বিসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের দোষ দেয়। আর ফ্র্যাঞ্চাইজিরা কিছুই বলে না।’তিন কিস্তির সময় পেরিয়ে গেলেও বিদেশিদের কেউ কেউ বড় জোর দ্বিতীয় কিস্তির টাকাই পেয়েছেন এখনো পর্যন্ত। বেশির ভাগ বিদেশি ২৫ শতাংশের বেশি পাননি। সিলেট রয়্যালসের দুই জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও এলটন চিগুম্বুরা তেমনই দুজন। ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক পক্ষের একজন আতিকুর রহমান ব্যর্থতা স্বীকার করে কাল টেলিফোনে বলেছেন, ‘আমার জানামতে, বিদেশি খেলোয়াড়দের ২৫ শতাংশ অর্থ দেওয়া হয়েছে। বাকিটা দেওয়ার জন্য আমরা বিসিবির কাছে সময় চেয়েছি।’ বরিশাল বার্নার্স আজহার মেহমুদ ও ব্র্যাড হজকে অর্ধেক টাকা দিয়ে দিলেও দ্বিতীয় বিপিএলে তাদের হয়ে খেলা বাকি প্রায় সব বিদেশিই এখন পর্যন্ত পেয়েছেন মাত্র ২৫ শতাংশ অর্থ। স্থানীয় ক্রিকেটারদের পাওনা মেটানোর ব্যাপারেও এই ফ্র্যাঞ্চাইজির অবস্থা বেশ করুণ। মাত্র সাতজন স্থানীয় ক্রিকেটার নাকি পেয়েছেন ২৫ শতাংশ অর্থ। পাঁচজন পাননি একটি টাকাও! তবে ফ্র্যাঞ্চাইজির পরিচালক তুহিন রেজার দাবি, ‘স্থানীয় সবাইকেই আমরা ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে দিয়েছি। বিদেশিরাও মোটামুটি ভালো অঙ্কের টাকা পেয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে কোনো খেলোয়াড়ই অভিযোগ করতে পারবে না।’রংপুর রাইডার্সের মালিক মুস্তফা রফিকুল ইসলামের বক্তব্য অনুযায়ী প্রথম দুই কিস্তির টাকা (৫০ শতাংশ) পেয়ে গেছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সব বিদেশি খেলোয়াড়ই, ‘আমরা সেকেন্ড পেমেন্ট করে ফেলেছি। পরের পেমেন্টও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করার চেষ্টা করব।’ তাঁর কথা, বিপিএল থেকে লাভ না হওয়ায় ফ্র্যাঞ্চাইজিরা গেম অন ও বিসিবির পাওনা থেকে কিছু ছাড় চান, যদিও খেলোয়াড়দের টাকা পুরোটাই দেওয়া হবে, ‘... খেলোয়াড়দের পাওনা থেকে আমরা কোনো ছাড় চাচ্ছি না। তাঁরা আমাদের হয়ে খেলেছেন। দেরিতে হলেও প্রতিশ্রুত টাকা তাঁরা অবশ্যই পাবেন।’মালিকপক্ষ এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও বিপিএল নিয়ে হতাশা ঝরেছে রংপুর রাইডার্সের ক্রিকেটার ফিদেল এডওয়ার্ডসের কণ্ঠে। একটি মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে এডওয়ার্ডস বলেছেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে এত দিন ধরে আমাদের পাওনা টাকার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত ছয় সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো তৃতীয় কিস্তির টাকা পাইনি। এই টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশে এক মাস থেকেছি এবং উপভোগও করেছি। কাজেই টাকা-পয়সা সময়মতো পাওয়ার আশা করতেই পারি।’ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের মালিক সেলিম চৌধুরীর দাবি, বিদেশিদের সব টাকাই পরিশোধ করে ফেলেছেন, ‘বিদেশিদের প্রথম কিস্তির টাকা বোর্ডের মাধ্যমে ও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা সরাসরি দিয়ে দিয়েছি। বিসিবির কাছে আমাদেরও কিছু টাকা পাওনা আছে। সেসব হিসাব করলে বিদেশিদের সব টাকাই দিয়ে দিয়েছি বলতে পারেন।’ এখন পর্যন্ত তিন কিস্তির টাকা পরিশোধ করেছেন বলে জানালেন চিটাগং কিংসের কর্ণধার সামির কাদের চৌধুরী। আর দুরন্ত রাজশাহীর মালিক মুশফিকুর রহমান বলেছেন, ‘প্রথম দুটি পেমেন্ট করেছি। তৃতীয় পেমেন্টও শিগগিরই করে দেব।’ খুলনা রয়েল বেঙ্গলসের পাওনা সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি ফ্র্যাঞ্চাইজির মিডিয়া ম্যানেজার চৌধুরী খালেদ মাসুদ। তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় কিস্তির টাকা বাকি আছে তাঁদেরও।প্রথম বিপিএলের তিক্ত অভিজ্ঞতার পর অর্থপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিয়েই দ্বিতীয় বিপিএলে খেলোয়াড়দের এনেছিল বিসিবি। ফ্র্যাঞ্চাইজি না দিলে টাকা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল নিজেরাই। সেই বিসিবিও যখন প্রতিশ্রুতি পূরণে আপাতত ব্যর্থ, বিদেশি ক্রিকেটারদের কাছে ভাবমূর্তির সংকটে পড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটই। অবশ্য বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহীর কথা শুনে নতুন করে আশার জাল বুনতে পারেন এডওয়ার্ডস-মাসাকাদজরা। ‘এ ব্যাপারে গত বোর্ড সভায়ও আলোচনা হয়েছে। দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, এমন কিছুই হতে দেব না আমরা’—আশ্বাস নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর।
সিলেট, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও জামালপুরের বিভিন্ন উপজেলায় গতকাল শনিবার বৃক্ষ ও কৃষিপ্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেছেন, ‘দূষণযুক্ত পরিবেশ থেকে বাঁচতে, ভেজালমুক্ত ফল আহরণ করতে আমাদের সবার উচিত বেশি বেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো। অল্প পুঁজিতে গাছ লাগিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। সবাই মিলে গাছ রোপণ করলে চৌদ্দগ্রামসহ গোটা দেশে সবুজ বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া সম্ভব।’ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিভা বিকাশ বাংলাদেশ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করে। সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে একটি ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে এর উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ মতিউর রহমান।চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা): উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কুমিল্লার সামাজিক বন বিভাগ এ মেলার আয়োজন করে। পরে ইউএনও মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়।বিশ্বনাথ (সিলেট): পুরান বাজারে মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ মেলার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও সোনামণি চাকমা।সরিষাবাড়ী (জামালপুর): উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক।ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): মেলার উদ্বোধন করেন সাংসদ আবদুছ ছাত্তার। মেলা উপলক্ষে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। পরে উপজেলা পরিষদ সমেঞ্চলনকক্ষে ইউএনও তাহমিনা আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়।কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের আয়োজনে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ। এ সময় চিফ হুইপ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে এক হাজার ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করেন। পরে ইউএনও মোহামঞ্চদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়।
ঘরোয়া ফুটবল কাঠামো ঢেলে সাজানোর কথা বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সে কাজে তিনি অনেকটাই এগিয়ে গেছেন। আগামী ফুটবল মৌসুমের জন্য তৈরি করেছেন খসড়া একটা ছক, যা বড়সড় একটা পরিবর্তনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। নতুন পদ্ধতি অনুমোদনের জন্য ১৩ জুলাই ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সভায় তোলা হবে। সালাউদ্দিন গতকাল জানান, আগামী মৌসুমে ঘরোয়া ফুটবলের ভেন্যু হবে অন্তত তিনটি। ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম এমএ আজিজ ও সিলেট স্টেডিয়াম। লিগ ও টুর্নামেন্ট হবে এই তিন ভেন্যুতে। খুলনা অথবা যশোরের মধ্যে যেকোনো একটিকে নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে সেটি চূড়ান্ত কিছু নয়। তিন বা চার ভেন্যু যে কটিই হোক, বর্তমান কাঠামোর হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি বাতিল হচ্ছে। যদিও মাঠের অভাবে এই পদ্ধতি কাগজে থাকলেও বাস্তবে নেই বাংলাদেশে। গত মৌসুমে যেমন খেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ও ফেনী স্টেডিয়ামে। এবার ফেনীতে ভেন্যু থাকছে না, এটা নিশ্চিত। নতুন পরিকল্পনায় লিগে ‘ম্যাচ ডে’ বলে একটা দিন রাখা হয়েছে। অর্থাৎ শুক্র অথবা শনিবার ‘ম্যাচ ডে’ হবে এবং ওই দিন তিন ভেন্যুতে সপ্তাহের সব ম্যাচ হবে। এবারের লিগ ১১ দল নিয়ে আয়োজনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত। গতবার নয় দলের লিগ থেকে অবনমিত আরামবাগকে বিশেষ বিবেচনায় রাখা হচ্ছে, যোগ হচ্ছে দ্বিতীয় স্তর থেকে উত্তীর্ণ দুই দল চট্টগ্রাম আবাহনী ও উত্তর বারিধারা। এই ১১ দল নিয়ে লিগ হলে প্রতি সপ্তাহে একটি দল বিশ্রাম পাবে এবং ম্যাচ হবে পাঁচটি। ওই পাঁচটি ম্যাচই একই দিনে হবে তিন ভেন্যুতে। প্রস্তাবিত ছকে এটাই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। কোনো ভেন্যুতে বিশেষ কারণে ম্যাচ না হলে শনি বা মঙ্গলবার ‘রিজার্ভ ডে’তে ওই ম্যাচ হবে। তার মানে লিগে প্রতি সপ্তাহে একটা করে ম্যাচ পাবে দলগুলো। মাসে সাকল্যে চারটি।ফিফার নিয়ম অনুযায়ী পেশাদার দলগুলোকে বছরে অন্তত ৪০টি ম্যাচ দিতে হবে। কিন্তু গতবার লিগ-টুর্নামেন্ট মিলিয়ে প্রিমিয়ারের দলগুলো পেয়েছে সর্বোচ্চ ২৫টি আর চ্যাম্পিয়নশিপের দলগুলো ১৯টি করে। নতুন পদ্ধতিতে প্রিমিয়ারের দল পাবে ৩০টি ম্যাচ, চ্যাম্পিয়নশিপে ২৮। তার মানে বড়সড় ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।এই ঘাটতি দূর করতে আস্তে আস্তে এগোনোর পরিকল্পনা সালাউদ্দিনের। সামনের মৌসুমের পরের মৌসুম পেশাদার লিগে একটি দল বাড়িয়ে ১২টি করার চিন্তা আছে।বাফুফে ভবনে এসে নতুন এই ছক তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন সালাউদ্দিনের জামাতা অ্যালেক্স। সালাউদ্দিন বলছিলেন, ‘অ্যালেক্স বাইরের দুনিয়ার অনেক ফরম্যাট দেখে এটা দাঁড় করিয়েছে। বর্তমান অবস্থায় ফুটবল শুধুই ঢাকাকেন্দ্রিক। দলগুলোকে ঢাকার বাইরে ভেন্যু নিতে বললে নেয় না। তাই আমরা নিজেরাই অনেক ভেবেচিন্তে ঢাকা, চট্টগ্রামে, সিলেটে খেলা দিচ্ছি ফুটবল ছড়িয়ে দিতে। এই ভেন্যুগুলো বাফুফের তত্ত্বাবধানেই থাকবে। সপ্তাহে লিগের পাঁচটি ম্যাচই তিন ভেন্যুতে রাখছি একই দিনে। এখন ফেডারেশন অনুমোদন দিলেই হয়।’নতুন পদ্ধতিতে ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপের ছকেও আসছে পরিবর্তন। আগে এ দুটি টুর্নামেন্টের বাছাইপর্ব থাকলেও এবার সরাসরি গ্রুপ পর্ব হবে। ফেডারেশন কাপে সর্বোচ্চ ২৫টি এবং স্বাধীনতা কাপে ২০টি দল খেলবে গ্রুপ পর্বে, যা হবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে। ঢাকায় হবে শুধু নকআউট পর্ব। তবে সুপার কাপে ছয়টি দল রাখার পক্ষে সালাউদ্দিন। সে ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় এই টুর্নামেন্টটা শুধু ঢাকাতেই হওয়ার সম্ভাবনা।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে কাজ না করে ও ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে টেস্ট রিলিফের (টিআর) ১৯ মেট্রিক টন চাল প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও একজন ইউপি চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ডোয়াইল ও ভাটারা ইউনিয়নে সাতটি প্রকল্পে ১৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ি দুর্গা মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। মন্দির কমিটির সভাপতি হরে কৃষ্ণ বর্মণের অভিযোগ, প্রকল্পের সভাপতি কমল চন্দ্র বর্মণ কাজ না করে ওই চাল আত্মসাৎ করেছেন। কমল চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘মেম্বার আমার কাছ থেকে প্রকল্পের কাগজপত্রে সই নিয়েছেন। আমি আর কিছু জানি না।’চার মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয় রায়দেরপাড়া শামীম-শাহীন বাজারসংলগ্ন মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য। প্রকল্প ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মুনছুর আলীর অভিযোগ, ‘ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ ওই চাল আত্মসাৎ করেছেন।’ ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘চাল বিক্রি করে টাকা রেখে দিয়েছি। পরে কাজ করব।’চাঁপারকোনা বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা এক মেট্রিক টন চাল প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য হুমায়ূন কবীর খান উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হুমায়ূন কবীর খান বলেন, ‘চাল উত্তোলন করে রেখে দিয়েছি। পরে কাজ করব।’ রায়দেরপাড়া হোসেন হাজির মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য এক মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল হাই বলেন, প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য মহর আলী বরাদ্দ করা চাল আত্মসাৎ করেছেন। মহর আলী বলেন, ‘চার বছর আগে নির্বাচিত হয়েছি। কোনো কিছু পাইনি, তাই ওই চাল তুলে নিয়েছি।’মাজালিয়া বাজারে গণশৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের জন্য দেওয়া এক মেট্রিক টন চাল প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য জান্নাতুল রেজুয়ান আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন বাজার কমিটির সভাপতি ফজলুল হক। জান্নাতুল রেজুয়ান চাল উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘পরে কাজ করব।’ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য দুই মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান কাজ না করে ওই চাল আত্মসাৎ করেছেন।’ তবে মো. মনিরুজ্জামানের দাবি, বিদ্যালয়ের সংস্কারকাজ করা হয়েছে।পুকুরিয়া গ্রামের লেবু মিয়ার বাড়িতে হাফেজিয়া মাদ্রাসা না থাকলেও মাদ্রাসার নামে প্রকল্প দেখিয়ে প্রকল্প সভাপতি আবদুল মজিদ সাত মেট্রিক টন চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবদুল মজিদ বলেন, ‘ওই চালের টাকা উত্তোলন করে ডিলার রাজু মিয়া নিয়ে গেছেন।’ রাজু মিয়া চালের টাকা তুলে নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওই টাকা একজন জনপ্রতিনিধিকে দেওয়া হয়েছে।লেবু মিয়া বলেন, ১০-১২ বছর আগে মাদ্রাসাটি বন্ধ হয়ে যায়।ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘বরাদ্দ করা চাল সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা প্রকল্পের কাজ করেছে কি না, তা জানি না।’ ভাটারা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ খান বলেন, ‘এসব প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।’উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সৈয়দ মনিরুল হক বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
প্রেম করে বিয়ে করার পর সালিস বৈঠকের মাধ্যমে ছেলের কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে আসার পর বাবার বাড়িতে গতকাল শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মেয়েকে বেঁধে রেখে তাঁকে জোর করে তালাকনামায় স্বাক্ষর করানো হয়েছে। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের লাউটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।পুলিশ ও পরিবার জানায়, ওই গ্রামের সমেশ আলীর ছেলে রূপ মিয়ার (২৪) সঙ্গে প্রেমানন্দ নমদাসের কন্যা বাসনা রানী নমদাসের (১৮) প্রেম হয়। পরে গত ২২ জুন তাঁরা পালিয়ে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় ২৬ জুন মেয়ের বড় ভাই অমূল্য নমদাস (৪০) তারাকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে গত সোমবার এ ব্যাপারে স্থানীয় মাতাব্বর প্রদীপ চক্রবর্তীর নেত্বত্বে একটি সালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে বানিহালা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত উপস্থিত ছিলেন। সালিসে বাসনা প্রথমে তাঁর বড় ভাইয়ের সঙ্গে বাড়িতে যেতে রাজি হননি। পরে বৈঠকে মেয়েকে রাজি করিয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।প্রতিবেশী লোকজন জানান, বাড়িতে মেয়েটিকে একটি টিনের চালাঘরে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। এমনকি রাতে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে রাখত তাঁর পরিবার। এতে মেয়েটি রাগে ও ক্ষোভে ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করতেন না। গত বৃহস্পতিবার মেয়ের পরিবারের সদস্যরা বাসনাকে একটি তালাকনামায় স্বাক্ষর করতে বললে তাতে মেয়েটি রাজি হননি। পরে একপর্যায়ে তিনি রাজি হন। গতকাল মেয়েটি হঠাৎ তাঁর নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। অবশেষে তিনি মারা যান।অমূল্য নমদাস বলেন, বৈঠকের পর বাসনাকে ঘরে এনে কয়েক ঘণ্টা রশি দিয়ে বেঁধে রাখলেও পরে খুলে দেওয়া হয়। বাসনা তালাকনামায় স্বাক্ষর করতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে রাজি হন।ছেলের মা মোমেনা খাতুন বলেন, ‘গত সোমবার এক সালিস বৈঠকে আমার ছেলের কাছ থেকে তাঁরা মেয়েকে নিয়ে যান। এটুকুই আমরা জানি।’ আবুল হাসনাত বলেন, ‘আমরা সালিস করে মেয়েকে তাঁর বড় ভাইয়ের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। প্রথমে মেয়েটি রাজি না হলেও পরে তিনি তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে যেতে রাজি হন। শুনেছি, মেয়েটিকে ঘরে প্রায়ই তালাবদ্ধ করে রাখত তাঁর পরিবার।’তারাকান্দা থানার এসআই এয়াকুব আলী জানান, বাসনার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
নরসিংদী শহর থেকে নিখোঁজের তিন দিন পর মেঘনা নদী থেকে প্রদীপ দাস (২২) নামের এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বেঙ্গল মাদ্রাসাসংলগ্ন নদীতীরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়।প্রদীপ দাসের বাড়ি নরসিংদী শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়া এলাকায়। তিনি নরসিংদী সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের (বাণিজ্য) ছাত্র ছিলেন।নিহত ব্যক্তির পরিবার ও পুলিশ জানায়, প্রদীপ দাস লেখাপড়ার পাশাপাশি দ্য ন্যাশনাল মাল্টিপারপাস নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। গত বুধবার বিকেল ছয়টার দিকে পশ্চিম দত্তপাড়া এলাকার মাছুম মিয়া (২২) নামের এক ব্যক্তি তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এর পর থেকে প্রদীপ নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর মুঠোফোনও ছিল বন্ধ। এ ঘটনায় রাতেই অনুকূল দাস নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।নিহতের খালাতো ভাই উত্তম পোদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যত দূর জানতে পেরেছি মাছুমের সঙ্গে প্রদীপের প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে সামান্য বিরোধ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কী কারণে কারা প্রদীপকে হত্যা করেছে, সেটা বলতে পারছি না।’নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রদীপের বাবার করা জিডি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। তিনি বলেন, প্রেমঘটিত কারণে নাকি অন্য কোনো কারণে প্রদীপকে হত্যা করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।ওসি জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাছুমকে আটক করা হয়েছে।
ছয় মাসের মধ্যে দুটি অ্যাশেজ, দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল মুখোমুখি হবে ১০ বার! ২০১১ সালের জানুয়ারিতে যখন সূচি ঘোষিত হয়েছিল, চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল অনেকের। অ্যাশেজ ক্রিকেটের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত লড়াইগুলোর একটি হতে পারে, কিন্তু অতিভোজনে যে অমৃতেও অরুচি হয়! সর্বশেষ এমন পিঠোপিঠি অ্যাশেজ হয়েছিল সেই ১৯৭৪-৭৫ সালে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৫ বিশ্বকাপ আয়োজন মাথায় রেখে পিঠোপিঠি সিরিজ না করে উপায়ও ছিল না আয়োজকদের।মাঝে আর দুটি দিন। পিঠোপিঠি সিরিজের প্রথমটি শুরু হয়ে যাচ্ছে বুধবার, টেন্টব্রিজে। তবে শেন ওয়ার্নের দাবি, অ্যাশেজ শুরু হয়ে গেছে মাস খানেক আগেই! চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দুই দলের সাক্ষাৎ দিয়েই। এবং লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়েও গেছে ইংল্যান্ড। ওই ম্যাচটি সহজে জিতেছে বলেই শুধু নয়, ম্যাচের প্রথম বলেই মিচেল স্টার্ক যখন হজম করলেন ৪! প্রথম বল লেগ স্টাম্পে হাফভলি, পুরো ওভারে ছিল না আক্রমণাত্মক মানসিকতার ঝাঁজ। ওয়ার্নের সময়ের অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি শারীরিক ভাষাতেও গুঁড়িয়ে দিতে চাইত প্রতিপক্ষকে। ওই প্রথম ওভারেই স্টার্ক যেন আক্রমণের বার্তা পৌঁছে দেন প্রতিপক্ষ শিবিরে, এই ছিল ওয়ার্নের চাওয়া। হয়েছে উল্টো। কিংবদন্তি লেগ স্পিনার তাই যথেষ্টই খেপেছেন। স্টার্কের ওই ওভারটিকে বলছেন ‘পাউডার পাফ!’ওয়ার্নদের কাছে আক্রমণাত্মক মানসিকতার অন্যতম অনুষঙ্গ স্লেজিং। উত্তরসূরিদের তাই পরামর্শ দিয়েছেন, স্লেজিং অস্ত্রের জুতসই ব্যবহার করতে, তবে সীমা লঙ্ঘন না করে। তবে স্লেজিংয়ের লড়াই কতটা জমবে, এটা নিয়ে সন্দিহান ওয়ার্ন নিজেই। অ্যাশেজ ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির (১৯৫) আশঙ্কা, ‘অতি ঈর্ষাপরায়ণ আম্পায়াররা স্লেজিংয়ের স্রোতে বাঁধ দিয়ে বর্ণহীন করে তুলবেন অ্যাশেজকে।’তবে বাস্তবতা হলো, ওয়ার্নের সংশয়ই সংশয়ের মধ্যে। স্লেজিংয়ের স্রোতে আম্পায়ারদের বাঁধ দেওয়া বহুদূর,  প্রশ্ন বরং স্লেজিং আদৌ কতটা হবে। এই যে দরজায় কড়া নাড়ছে অ্যাশেজ, অথচ এখনো কথার লড়াইয়ের নামগন্ধ নেই। অস্ট্রেলিয়ার সোনালি সময়ে হলে হয়তো ইংল্যান্ডে পা রেখেই হোয়াইটওয়াশের ঘোষণা দিয়ে রাখতেন গ্লেন ম্যাকগ্রা। হেইডেন-ল্যাঙ্গারদের শরীরী ভাষা আর প্রতিটি কথায় ঠিকরে বেরোত প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আত্মবিশ্বাস।সেই সময় আর নেই। কথার লড়াইয়ে নামবে কী, নিজেদের সামলাতেই ব্যস্ত অস্ট্রেলিয়া। অ্যাশেজের মাত্র তিন সপ্তাহ আগে বরখাস্ত করা হয়েছে কোচকে। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাবেক অ্যাশেজজয়ী ড্যারেন লেম্যানকে। নির্বাচকের বাড়তি দায়িত্ব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে মাইকেল ক্লার্ককে। অ্যাশেজ শুরু পর্যন্ত বহিষ্কৃত আছেন বর্তমান দলের সেরা ওপেনার। নতুন কোচ এসে ঘোষণা দিয়েছেন প্রথম টেস্টে নতুন উদ্বোধনী জুটির—শেন ওয়াটসন ও ক্রিস রজার্স। সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া এবার অ্যাশেজের স্বীকৃত আন্ডারডগ। ইংলিশ সংবাদমাধ্যমে বলাবলি হচ্ছে, ইংল্যান্ড সফরে আসা সর্বকালের সবচেয়ে দুর্বল অস্ট্রেলিয়া দল!লেম্যান জমানার শুরুটায় অবশ্য আঁধার ফুঁড়ে খানিকটা আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে। সমারসেট ও উস্টারশায়ারের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ করেছে অস্ট্রেলিয়া। বিশেষ করে মূল দুশ্চিন্তা যেটা নিয়ে, সেই ব্যাটিংটা হয়েছে দুর্দান্ত। রানের দেখা পেয়েছেন টপ ও মিডল-অর্ডারের সবাই। সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক গ্যাটিংয়ের ধারণা, আন্ডারডগ তকমাটাই শাপেবর হয়ে উঠতে পারে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। গ্যাটিংই এমন এক ইতিহাসের সাক্ষী। ১৯৮৬ সালে যে দলটিকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন, সেটিকে বলা হচ্ছিল স্মরণকালের দুর্বলতম ইংল্যান্ড দল। অথচ গ্যাটিংয়ের দলই জিতেছিল অ্যাশেজ!গ্যাটিং তাই সতর্ক করে দিয়েছেন কুকদের, ‘অ্যাশেজের সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, আগে থেকে বলা মুশকিল কী ঘটতে যাচ্ছে। লোকে যেমন বলে, দল প্রায়ই তার চেয়ে অনেক ভালো খেলে। নিজেদের ওপর বিশ্বাসটাই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৬ সালে আমি ও মিকি স্টুয়ার্ট (কোচ) দলে বিশ্বাসটা ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলাম যে আমরা পারব। মাইকেল ক্লার্কও নিশ্চয়ই এমন কিছুই করবে।’নিরপেক্ষ ক্রিকেটপ্রেমীদেরও চাওয়াটা আসলে এমনই—জমজমাট একটি অ্যাশেজ, যা হয়ে থাকবে টেস্ট ক্রিকেটের বড় একটি বিজ্ঞাপন। ওয়েবসাইট।
আটপাড়া-নেত্রকোনা সড়কের নেত্রকোনার আটপাড়ার সুমাইখালী সেতুর ওপর গত শুক্রবার রাতে বরযাত্রীবাহী টেম্পোর সঙ্গে বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে কনের ভাইসহ দুজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে। এদিকে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায় গতকাল শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে আটপাড়ার শুনই গ্রামে কনের বাড়িতে বিয়ে শেষে দুটি টেম্পোযোগে বারহাট্টার বোয়ালজানা গ্রামে ফিরছিল বরপক্ষ। এ সময় সুমাইখালী সেতুর ওপর আটপাড়াগামী একটি বাসের সঙ্গে বরযাত্রীবাহী একটি টেম্পোর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে কনের ভাই মাসুদ মিয়া (১৭) ঘটনাস্থলে ও বরযাত্রী সাবিনা আক্তার (৮) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায়। দুর্ঘটনায় আহত হন ছয়জন। আটপাড়া থানার ওসি সালেমুজ্জামান বলেন, বাস ও টেম্পো দুটি আটক করা রয়েছে।এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচরে কুমিল্লা থেকে কোম্পানীগঞ্জগামী একটি বাসের সঙ্গে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান অটোরিকশার যাত্রী হোমনা উপজেলার ফরিদ মিয়া (৬৫)। দুর্ঘটনায় আহত হন পাঁচজন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তাবিত ভেন্যু সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম। তবে বিশ্বকাপের আগেই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করে ফেলতে পারে এই মাঠ। আগামী অক্টোবরে সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এ মাঠে একটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আয়োজনের চিন্তা করছে বিসিবি। প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী ১ অক্টোবর বাংলাদেশে আসার পর চট্টগ্রামে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ ও প্রথম টেস্ট খেলবে নিউজিল্যান্ড দল। এরপর ঢাকায় এসে খেলবে দ্বিতীয় টেস্ট ও প্রথম দুটি ওয়ানডে। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচটি হতে পারে সিলেটে, সঙ্গে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিও। বিসিবির এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অবশ্য নির্ভর করছে সিলেটকে আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে আইসিসির স্বীকৃতি প্রদানের ওপর। সিলেট স্টেডিয়াম শেষ পর্যন্ত প্রস্তুত না হলে ফতুল্লাতেও হতে পারে নিউজিল্যান্ড সিরিজের ম্যাচ।
পাটগুদাম ব্রিজ থেকে চরপাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কটি ময়মনসিংহ শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। সড়কটি এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই নানা স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়ে সড়কটির বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন এই পথের চলাচলকারী মানুষ।৩ জুলাই সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির কৃষ্টপুর, ভাটিকাশর কবরস্থান ও বাঘমারা এলাকায় প্রায় আড়াই শ গজ এলাকায় বেশ কয়েকটি খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনেও সৃষ্টি হয়েছে ছোট কয়েকটি গর্ত। বৃষ্টির পানি এসব গর্তে জমে সড়কটি যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম শেষ হলে ইট-সুরকি দিয়ে হালকাভাবে মেরামত করা হয় সড়কটি।মকবুল হোসেন নেত্রকোনা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘যতবার মমসিং আই খালি দেহি এই রাস্তাডায় গাতা।’প্রতিবছর বর্ষাকাল এলেই সড়কটির বেহাল দশা দেখে হারুনুর রশিদ নামের এক কলেজশিক্ষক বলেন, ‘সড়কটি ময়মনসিংহবাসীর জন্য দুঃখ।’সওজ ময়মনসিংহ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে মেরামত করা হয়েছিল।সওজ ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী চন্দক কুমার বসাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপাতত সড়কে সুরকি ফেলার চিন্তা আছে। বর্ষাকালে বিটুমিনের কাজ করা সম্ভব নয়।’
খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নিয়ে কথা বলতে নারাজ ক্রুইফ। তবে প্রবাসী ফুটবলার জামাল ভূঁইয়া সম্পর্কে কাল কিছু না বলে পারলেন না। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুশীলনের পর এক প্রশ্নে ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা মিডফিল্ডারকে নিয়ে ডাচ কোচের মন্তব্য, ‘তাকে আমার ভালোই লেগেছে।’ দুই দিন আগে সহকারী কোচ রেনে কোস্টারের মুখেও শোনা গেছে জামালের প্রশংসা, ‘শারীরিকভাবে সে ফিট। এটা তার জন্য বড় সুবিধা।’আগেরবার পাসপোর্ট জটিলতায় ফিরে গেলেও এবার জাতীয় দলে খেলার পণ করেই এসেছেন ২৩ বছরের তরুণ। একই স্বপ্ন নিয়ে সিডনিপ্রবাসী আরেক ফুটবলার আনন্দ রহমান অবশ্য এখানকার গরম আর অনুশীলনের চাপ সইতে না পেরে ক্যাম্প ছেড়েছেন। কোচের নজর কেড়ে জামাল টিকে আছেন বেশ ভালোভাবেই। গত পরশু আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন ডি ক্রুইফ। গতকাল থেকে সাফ ফুটবল দলকে অনুশীলন ম্যাচ খেলালেন। বুধবার দ্বিতীয় অনুশীলন ম্যাচ। লক্ষণীয় বিষয়, কাঠমান্ডুতে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে গোলপোস্টে তরুণ সোহেলকে রেখেছিলেন ডি ক্রুইফ। কালকের অনুশীলন ম্যাচে সেই সোহেল বেঞ্চে। দুই পোস্টে গোলরক্ষক ছিলেন বিপ্লব ও মামুন খান। এতে বোঝা যাচ্ছে, বিপ্লব, মামুনে বেশি আস্থা কোচের। অনুশীলন ম্যাচ শেষে বেরিয়ে এল ডি ক্রুইফের একটা সামগ্রিক মূল্যায়ন, ‘আমার কাছে টিমওয়ার্ক ভালোই লেগেছে। তবে শেষ কুড়ি মিনিট খেলোয়াড়দের ফিটনেসে ঘাটতি দেখলাম। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। সাফের আগে প্রায় দুই মাস সময় পাচ্ছি। আশা করছি, খেলোয়াড়দের ফিটনেস ভালো একটা পর্যায়ে নিতে পারব।
ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না—কথাটা বায়ার্ন ত্রয়ীর জন্য একটু বদলে যেতে পারে। তাঁরা বলবেন, ভাবিয়া পরিও পোশাক, পরিয়া ভাবিও না। মারিও গোটশে, মারিও গোমেজ, ইয়ান কিরচফকে যে বড় অঙ্কের জরিমানাই গুনতে হচ্ছে জার্সি-বিভ্রাটের জন্য! এই তিন বায়ার্ন খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত স্পনসর নাইকি। কিন্তু বায়ার্ন মিউনিখের অফিশিয়াল স্পনসর আবার প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি অ্যাডিডাস। কয়েক দিন আগে সংবাদ সম্মেলনে গোটশে ও কিরচফ এসেছিলেন নাইকির লোগোখচিত জার্সি পরে। গোমেজ পরেছিলেন নাইকির ক্যাপ। কিন্তু অ্যাডিডাসের সঙ্গে চুক্তি আছে বায়ার্নের। সেই চুক্তির বরখেলাপ করায় এবার পাঁচ অঙ্কের অর্থদণ্ড দিতে হচ্ছে তাঁদের! এএফপি
তথ্য অধিদপ্তরের সিলেটে জেলা কার্যালয়ের আলোকচিত্র প্রদর্শনী প্রতিযোগিতায় প্রথম আলোর আলোকচিত্রী আনিস মাহমুদ প্রথম হয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে সিলেট নগরের কিনব্রিজ এলাকায় প্রদর্শনী শেষে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য অধিদপ্তর সিলেটের জুলিয়া জেসমিন।তথ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সিলেটের প্রকৃতি নিয়ে আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তথ্য অধিদপ্তর। সিলেটে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত আলোকচিত্রীসহ পেশাদার আলোকচিত্রীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ৭৪টি আলোকচিত্রের মধ্যে আনিস মাহমুদের ‘বাংলার প্রকৃতি’ শিরোনামে সিলেটের জলাবন খ্যাত রাতারগুলের আলোকচিত্রটি প্রথম হয়। প্রতিযোগিতায় আবদুল বাতিন ফয়সল দ্বিতীয় ও নিজামুল হক তৃতীয় হন।