content
stringlengths 1
63.8k
⌀ |
---|
নেইমারের পথে হাঁটতে চাইছেন ব্রাজিল অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। চোখে বার্সেলোনায় খেলার স্বপ্ন। কিন্তু নিজে থেকে আগ্রহ দেখালে সিলভার এখনকার ক্লাব প্যারিস সেন্ট-জার্মেই যদি খেপে যায়? ব্রাজিলিয়ান সেন্টার ব্যাক তাই খুব সাবধানী। বার্সেলোনায় খেলার ইচ্ছের কথা যেমন বলছেন, তেমনি এটাও জানিয়ে রাখছেন, পিএসজিতেও সুখেই আছেন তিনি।সেন্টার ব্যাক কার্লোস পুয়োলের বিকল্প খুঁজছে বার্সেলোনা। তাদের পছন্দের তালিকায় আছেন পিএসজির থিয়াগো সিলভা। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে খেলার স্বপ্ন সিলভারও। কিন্তু পিএসজির সঙ্গে তাঁর চুক্তিটা জুন ২০১৭ পর্যন্ত। ক্লাব না চাইলে স্বপ্নপূরণ হবে না ব্রাজিল ডিফেন্ডারের। ব্রাজিলিয়ান ক্রীড়া দৈনিক গ্লোবো এস্পোর্তেতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিলভা তাই কথা বললেন খুব সতর্কভাবে, ‘বার্সেলোনায় খেলা প্রতিটি ফুটবলারের স্বপ্ন। আমি সব সময় চেয়েছি ইউরোপের বড় কোনো ক্লাবের হয়ে খেলতে। যদিও পিএসজিতে এখন বেশ ভালোই আছি।’ সরাসরি না বললেও তাঁর কথায় অবশ্য বোঝা যাচ্ছে, থিয়াগো চাইছেন বার্সেলোনা থেকে যেন আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয় পিএসজিকে, ‘আমি আমার এজেন্টকে বলেছি নির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব না আসা পর্যন্ত বেশি আগ্রহ না দেখাতে। এটা খেলা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়।’ ওয়েবসাইট। |
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গণধর্ষণের শিকার মেধাবী সেই ছাত্রীর চোখেমুখে এখনো ভয়ের ছাপ। অচেনা কাউকে দেখলেই আঁতকে উঠছে সে। চিকিৎসক বলেছেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে মেয়েটি। সেরে উঠতে সময় লাগবে।এদিকে ইউএনও ও ওসির দেওয়া আশ্বাসের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান হাবীব জানান, সার্বক্ষণিক মেয়েটির খোঁজখবর রাখছেন। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক প্রতিবেদন পেয়েছেন। সেখানে ধর্ষণের আলামত রয়েছে। অপরাধীদের ধরার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।গত মঙ্গলবার উপজেলার আন্ধারীরঝারে দশম শ্রেণীর ওই ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়। প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার এলাকার সর্বস্তরের মানুষ মানববন্ধন করে। এ নিয়ে গতকাল প্রথম আলোতে ‘গণধর্ষণ, মেধাবী ছাত্রীর স্বপ্নভঙ্গ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি গতকাল প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে সবচেয়ে আলোচিতের তালিকায় শীর্ষে ছিল। বহু পাঠক ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। |
খাগড়াছড়িতে গত ছয় দিনে চার ব্যক্তি খুন হয়েছেন। ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করেছে। জনসংহতি সমিতি (সন্তু লারমা) এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এদিকে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।গত ২৯ জুন রূপায়ণ দেওয়ান ও সুধাসিন্ধু খীসার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) পানছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুপন চাকমা ওরফে সাগরভাসাকে (৪২) গুলি করে হত্যা করা হয়। ২ জুলাই দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের চোংড়াছড়ি তাসবাড়ি এলাকায় হত্যা করা হয় একই সংগঠনের কর্মী মিথন চাকমাকে (৪০)। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) গুলি করে হত্যা করা হয় একই সংগঠনের কর্মী ভদ্র চাকমা ওরফে জার্মানকে (৪০)। একই ঘটনায় গুলিতে প্রাণ হারান ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কর্মী সমীরণ চাকমা (৩২)।ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র ক্যাডারদের দায়ী করেছে। তবে জনসংহিত সমিতি (সন্তু লারমা) এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তাতিন্দ্র লাল চাকমার অভিযোগ, ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত সন্তু লারমাই করে যাচ্ছেন। তিনিই একের পর এক তাঁর (সন্তু লারমা) বিরুদ্ধবাদীদের হত্যা করছেন। তিনি বলেন, তাঁর দল জনমতের ওপর শ্রদ্ধাশীল। সাধারণ জনমত কখনো ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত চায় না। ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত অবিলম্বে বন্ধ হোক, তাঁর দলও তা চায়।ইউপিডিএফের তথ্য ও প্রচার শাখার সদস্য নিরণ চাকমা বলেন, ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত সন্তু লারমার জন্যই বন্ধ হচ্ছে না। তিনি তাঁর বিরুদ্ধবাদীদের নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছেন। সেই ঘোষণার কারণে আজকের এই হত্যাকাণ্ড। তিনি বলেন, ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে পাহাড়ি সমাজের বিশিষ্টজনেরা উদ্যোগ নিলে সে উদ্যোগকে ইউপিডিএফ স্বাগত জানাবে।সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা বলেন, ‘আমাদের দলে কোনো সশস্ত্র গ্রুপ নেই। তাই সশস্ত্র হামলার ঘটনায় আমাদের দলের কোনো সংশ্লিষ্টতার সুযোগ নেই। তাদের (ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতি-এমএন লারমা) অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই এসব হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) সশস্ত্র তৎপরতা বন্ধ করলে সংঘাত আপনা-আপনিই বন্ধ হয়ে যাবে।এদিকে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। খাগড়াছড়ি সদরের খবংপুড়িয়া গ্রামের সমাজসেবক ধীমান খীসা বলেন, এ ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত কখনো কাম্য নয়। এসব করে আদিবাসীদের অধিকার আদায় হবে না। তিনি আঞ্চলিক দলগুলোর প্রতি হানাহানি বন্ধের আবেদন জানান।খাগড়াছড়ি হেডম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও নুনছড়ি মৌজার হেডম্যান ক্ষেত্রমোহন রোয়াজা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। আদিবাসীরা এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে শঙ্কিত। যেহেতু সব আঞ্চলিক দলই আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছে, তাদের উচিত এক হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বাড়লে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন আরও পিছিয়ে পড়বে। |
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বাসের চাপায় শাহজাদপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জামিল হোসেন (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় সুকুমার রায় (৩৮) নামের এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন।গতকাল শুক্রবার দুপুর সোয়া দুইটার দিকে নগড়বাড়ী-বগুড়া মহাসড়কের নূকালীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জামিলের বাবার নাম মকবুল হোসেন। তাঁর বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কুঠিপাড়া গ্রামে।শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিম ইকবাল জানান, জামিল ও সুকুমার রায় মামলার নোটিশ দিতে থানা থেকে মোটরসাইকেলে করে বাঘাবাড়ী যাচ্ছিলেন। নূকালী নামক স্থানে পেছন থেকে একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে সুকুমার ছিটকে পড়েন। জামিল মোটরসাইকেলসহ কোচের নিচে আটকে যান। এ অবস্থায় বাসটি প্রায় অর্ধকিলোমিটার মোটরসাইকেলসহ জামিলকে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। এতে জামিল নিহত হন।অপর এক দুর্ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জে একটি বাসের চাপায় আটজন আহত হন। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা সেতাবগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঘাতক বাসটিসহ দুটি বাস পুড়িয়ে দেয়। এরপর দিনাজপুর থেকে সেতাবগঞ্জ হয়ে পীরগঞ্জ পথে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন দিনাজপুরের বাসমালিকেরা। |
‘অর্ডার দেওয়ার দু-তিন ঘণ্টার মধ্যে বাসাবাড়ি, অফিসে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। শুধু বগুড়ার দই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, টাঙ্গাইলের চমচম ইত্যাদি সপ্তাহে এক দিন ডেলিভারি দিয়ে থাকি। কারণ, এগুলো আনতে সময় লাগে এবং বেশি দিন রাখাও সম্ভব নয়।’ এভাবেই বলছিলেন ‘ইট এনজয় ডট কমের’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজিম চৌধুরী। চট্টগ্রাম নগরের জেলা ক্রীড়া সংস্থার জিমনেসিয়ামে আয়োজিত ঈদ ই-বাণিজ্য মেলার স্টলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। ইট এনজয় ডট কম চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠান।গতকাল শুক্রবার বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণ ভরে ওঠে দর্শনার্থীদের পদচারণে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিনথিয়া চৌধুরী বললেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলেই মেলায় এসেছি। ভালোই লাগছে। এখানে এসে অনলাইন কেনাকাটায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পাওয়া গেল।’বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিস আহমেদ বললেন, ‘চট্টগ্রামে অনেক দিন পরে একটি ব্যতিক্রমী মেলা হচ্ছে—এ খবর পেয়ে এখানে ছুটে এসেছি।’ এ মেলার বিশেষত্ব হলো, এখানে ই-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিকাশমান প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম তুলে ধরা। গতকাল ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। এর আয়োজন করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।এ মেলার স্লোগান ‘ঘরে বসে কেনাকাটার উৎসব’। মেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাসিক কমপিউটার বিচিত্রার প্রতিনিধি এহতেশাম উদ্দিন জানান, এ মেলার মূল ভাবনা এবং স্লোগান তাঁরাই নির্ধারণ করেছেন।মেলায় চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক, ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রের স্টল রয়েছে। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সফটওয়্যার ও অ্যাপস প্রদর্শন করছেন।চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং ব্যবসায়-বাণিজ্য বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী কমিশনার আসিফ ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে ই-কমার্সের বয়স বছর দেড়েকের বেশি হবে না। আমরা এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী ভারত ও চীনের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছি। এই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন করা এবং ই-বাণিজ্যের প্রসার ঘটনোর জন্যই এ মেলার আয়োজন।’প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলছে। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। |
কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পরিবেশবান্ধব বিনোদনসেবা দিতে রামুতে তৈরি করা হচ্ছে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র বোটানিক্যাল গার্ডেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই গার্ডেনের উদ্বোধন করেন।এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী, চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আকবর হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন, পুলিশ সুপার মো. আজাদ মিয়া, জেলা পরিষদ প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজার (দক্ষিণ) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বিপুল কৃঞ্চ দাস প্রমুখ।মন্ত্রী বলেন, পর্যটনশিল্পের বিকাশে এই বোটানিকেল গার্ডেন নতুন সম্ভাবনা। গার্ডেনটি পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি হলে শুধু কক্সবাজার নয়, সারা দেশের জন্য সম্পদ হয়ে দাঁড়াবে। শিক্ষার্থীরা এখানে এসে গবেষণা সম্পন্ন করতে পারবে। বোটানিকেল গার্ডেনের মাধ্যমে পরিবেশ-প্রতিবেশ ঠিক রাখার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা হবে। বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রকল্প পরিচালক ও কক্সবাজার (দক্ষিণ) বন বিভাগীয় কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণ দাস বলেন, কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকের সমুদ্রসৈকতে গোসল আর সূর্যাস্ত দর্শন ছাড়া বিনোদনের তেমন কিছু নেই। তাই পরিবেশবান্ধব বিনোদনসেবা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনের পর গার্ডেনটি সবার জন্য (দিনের বেলায়) উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। |
ঈদ সামনে রেখে আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পর্দা উঠবে নুরজাহান-আলোকিত ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতার। প্রথম আলোর আয়োজনে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়সংলগ্ন কে স্কয়ার মিলনায়তনে জমকালো এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।প্রথম আলোর আঞ্চলিক প্রকাশনা আলোকিত চট্টগ্রাম প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এবারের প্রতিযোগিতার ১২টি বিভাগে চট্টগ্রামের মোট ৬৫টি বুটিক হাউস অংশ নেয়। ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। আজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিটি বিভাগের সেরা পোশাকগুলো দেখে ডিজাইনারদের পুরস্কৃত করা হবে। আজকের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অভিনয়শিল্পী অপি করিম। প্রতিযোগিতার বিচারক থাকবেন ফ্যাশন ডিজাইনার মোহছেনা কোরাইশী, এইচ এম ইলিয়াস, নুর-এ জান্নাত, লুৎফা সানজিদা ও সুলতানা নুরজাহান। |
চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় সামান্য পরিবর্তন করে সংসদীয় আসন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে বিরোধী ও সরকারি দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কোনো আপত্তি নেই বলে জানা গেছে।নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে রাউজানের সংসদীয় ৫ নম্বর আসনটি এখন ৬ নম্বর করা হয়েছে। এই আসনের সঙ্গে যুক্ত হাটহাজারীর গড়দুয়ারা ইউনিয়নকে হাটহাজারীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে হাটহাজারীর সংসদীয় আসন নম্বর ছিল ৪। এখন এটির নম্বর ৫ হয়েছে।রাউজানের বিএনপির সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এলাকার সংসদীয় আসনের পরিবর্তনে কোনো আপত্তি নেই। তবে হাটহাজারীর গড়দুয়ারা ইউনিয়ন আমাদের সঙ্গে থাকলে খুশি হতাম। ওই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সেবা করতে পারতাম।’হাটহাজারী এলাকার বিএনপির সাবেক সাংসদ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘গড়দুয়ারা আমার উপজেলার একটি ইউনিয়ন। এটিকে হাটহাজারীর সঙ্গে যুক্ত করতে আমি তদবির করেছিলাম। নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত তালিকায় গড়দুয়ারা ফিরিয়ে দিয়ে সঠিক কাজ করেছে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই।’আগের নির্বাচনে বোয়ালখালী সংসদীয় আসনের নম্বর ছিল ৭। এখন হয়েছে ৮। বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর ও খরণদ্বীপ বাদ দিয়ে বাকি সব ইউনিয়ন এবং সিটি করপোরেশনের ৩ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে আসনটি গঠিত হয়েছে।বোয়ালখালী থেকে নির্বাচিত সাংসদ ও মহাজোটের অংশীদার জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা মঈন উদ্দীন খান বাদল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার আসনে সামান্য পরিবর্তনে কোনো আপত্তি নেই।’আনোয়ারা সংসদীয় আসনের নম্বর ১২ থেকে ১৩ করা হয়েছে। আনোয়ারা উপজেলা, পটিয়া উপজেলার চর পাথরঘাটা, চরলক্ষ্মা, জুলধা, বড় উঠান ও শিকলবাহা ইউনিয়ন এবং চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন কর্ণফুলী থানা এলাকা নিয়ে সংসদীয় আসন চট্টগ্রাম-১৩ গঠিত হয়েছে।আনোয়ারা আসনের বিএনপির সাবেক সাংসদ সরওয়ার জামাল নিজাম এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সংসদীয় আসনের নম্বর পরিবর্তন হয়ে ১২ থেকে ১৩ করা হয়েছে। এটা নিয়ে আমার আপত্তি নেই। তবে এই পরিবর্তনে আমার দল যদি আপত্তি জানায়, তাতে আমার সমর্থন থাকবে।’চন্দনাইশ উপজেলা এবং সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া, কালিয়াইশ, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড় ও খাগরিয়া ইউনিয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-১৪ আসন পুনর্গঠিত হয়েছে। আগে এই সংসদীয় আসনের নম্বর ছিল ১৩। জানতে চাইলে চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার ছয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সীমানা তো আগের মতোই আছে। পরিবর্তন হয়েছে সংসদীয় ক্রমনম্বর। এতে আমাদের আপত্তি নেই।’লোহাগাড়া উপজেলা এবং চন্দনাইশের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সাতকানিয়ার বাকি ইউনিয়নগুলো নিয়ে গঠিত হয়েছে চট্টগ্রাম-১৫। আগে এই আসনের ক্রমনম্বর ছিল ১৬। সেখানে আগের নির্বাচনে জয়ী হন জামায়াতের মহানগর আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। |
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, হেফাজতের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্তিমিত হয়নি, বরং আরও বেশি জোরদার হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নৈরাজ্যকর ও হিংসাত্মক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্বীনের পতাকাবাহী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের বিকল্প নেই।কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে চিকিৎসা শেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নিজ গ্রাম বাবুনগরে প্রথম সংবর্ধনায় প্রধান অথিতি হিসেবে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন। বাবুনগর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সংবর্ধনার আয়োজন করে।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা হাফেজ হাবিব উল্লাহ। জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। কাউকে ক্ষমতার মসনদে বসাতে কিংবা বসতে দল করি না। তবে ইসলামের পক্ষে বলতে গিয়ে যদি কারও মনে আগুন জ্বলে, সে জন্য হেফাজত দায়ী নয়।’ তিনি গ্রেপ্তার করা হেফাজতের নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা সেলিম, মুফতি হাবিব উল্লাহ, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা নাছির উদ্দিন ও মাওলানা জালাল। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আবু মাকনুন মোহামঞ্চদ বাবুনগরী। |
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নে ১১ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।পুলিশ ও শিশুর পরিবার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সিন্দুরপর ইউনিয়নের সুন্দিরপুর মসজিদের মোয়াজ্জিন ও মক্তবের আরবি শিক্ষক মো. মোস্তফা (৩৪) অন্য দিনের মতো স্থানীয় শিশুদের মক্তবে আরবি শিক্ষার তালিম দেন। সকাল নয়টার দিকে মক্তব ছুটির পর ওই শিশুকে কথা আছে বলে ওই শিক্ষক বসিয়ে রাখেন। অন্য সব শিক্ষার্থী চলে যাওয়ার পর শিশুটির মুখ চেপে ধরে জোর করে ধর্ষণ করেন। শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তার মা, বাবাসহ পরিবারের লোকজনকে জানায়। প্রথমে লোকলজ্জার ভয়ে তাঁরা শিশু ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করতে চাননি এবং গ্রামের পল্লি চিকিৎসক দিয়ে স্থানীয়ভাবে গোপনে শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের পরামর্শেই বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে শিশুটিকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।অভিযুক্ত মো. মোস্তফা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জয়দেবপুর গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক। ঘটনার পর থেকে মো. মোস্তফা পলাতক রয়েছেন।ফেনী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আলাউদ্দিন মজুমদার জানান, রাতেই শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। |
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে একদল ডাকাত চাঁদের গাড়ি, পিকআপ ও সিএনজিসহ অন্তত ২৪টি গাড়িতে ডাকাতি করেছে। এ সময় ডাকাতেরা মারধর করে যাত্রীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, মুঠোফোন, টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। ডাকাতদের হামলায় ১০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শী ও মহেশখালী পরিবহন শ্রমিক মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত আটটায় উপজেলার গোরকঘাটা স্টেশন থেকে চালক সলিম উল্লাহ যাত্রীবাহী একটি চাঁদের গাড়ি নিয়ে শাপলাপুর হয়ে বদরখালী যাওয়ার পথে রশিদ মিয়ার ফার্মের সামনে পৌঁছালে একদল ডাকাত সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ওই গাড়িটি আটক করে। পরে যাত্রীদের মারধর করে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্রসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতেরা সড়কের দুই পাশে আটকে থাকা আরও ১০টি সিএনজি, ছয়টি পিকআপ ও আটটি চাঁদের গাড়িতে উঠে যাত্রীদের কাছ থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার, ৬০ হাজার টাকার মুঠোফোন, নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্রসহ অন্তত ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে ডাকাতদের হামলায় ১০ জন যাত্রী আহত হন। আহতদের মধ্যে শামসুল আলম (৩৮) নামের এক যাত্রীকে বৃহস্পতিবার রাতে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহামঞ্চদ কবির হোসেন বলেন, ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে ওই সড়কে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। |
নোয়াখালী জেলা খেলাঘরের উদ্যোগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়েছে।গতকাল শুক্রবার বিকেলে চৌমুহনী গণ মিলনায়তনে ১২টি শাখা খেলাঘর আসর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জেলা খেলাঘরের সভাপতি মাখন লাল দাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভিপি মোহামঞ্চদউল্যা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবুল হোসেন, কেন্দ্রীয় খেলাঘরের সহসাধারণ সম্পাদক আবুল ফারাহ। বক্তব্য দেন জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ, দুর্নিবার খেলাঘরের সংগঠক দীপক আইচ প্রমুখ। পরে দুর্নিবার খেলাঘর আসর, মল্লিকা খেলাঘর আসর, তরুলতা খেলাঘর আসর, বনলতা খেলাঘর আসর, আত্মমুক্তি খেলাঘর আসর, সাগরদোলা খেলাঘর আসর, কচিকণ্ঠ খেলাঘর আসর, অনিরুদ্ধ খেলাঘর আসর, রিমঝিম খেলাঘর আসর, সুরভী খেলাঘর আসর, অগ্রযাত্রা খেলাঘর আসর ও সুরঞ্জলি খেলাঘর আসরের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। |
মাঠে দুজনের একই দায়িত্ব—গোলপোস্ট আগলানো। মাঠের বাইরে দায়িত্বটাও এক রকমই বলা যায়। দুজনকেই আগলাতে হয় একটা সংসার! গল্পটা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের গোলরক্ষক সাবিনা আক্তার ও তাঁর স্বামী গোলরক্ষক রাজু আহমেদের।মেয়েদের মধ্যে দেশসেরা গোলরক্ষক সাবিনা ঘরোয়া ফুটবলে খেলেন মোহামেডান, আবাহনী ও বিজেএমসির হয়ে। তবে রাজু এখনো একজন ‘আমিনুল’ বা ‘বিপ্লব’ হয়ে উঠতে পারেননি। যশোর আবাহনীতে খেলেছেন কয়েক বছর, গত মৌসুমে খেলেছেন নারায়ণগঞ্জের দ্বিতীয় বিভাগের দল স্বাধীনতা ক্রীড়াচক্রে। রাজুর দলটি এবার উঠে গেছে প্রথম বিভাগে।যশোরের এই গোলরক্ষক দম্পতির বিয়েটা হয়েছে বছর দুয়েক আগে। ধর্মতলার মেয়ে সাবিনা অনুশীলনে যেতেন উপশহর মাঠে। মনিহার মোড় থেকে একই মাঠে অনুশীলন করতে আসতেন রাজুও। বিয়ের আগে মাঠেই দুজনের সামান্য আলাপ-পরিচয়। তারপর ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা। তবে বিয়েটা হয়েছে পারিবারিকভাবেই।এত কিছু রেখে গোলরক্ষক হতে গেলেন কেন? ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার রাজু বললেন, ‘আমার এক ভাই আমার উচ্চতা দেখে বলতেন, তুই গোলপোস্টে দাঁড়াবি। আমিও ভালোই করতে লাগলাম কিপিংয়ে। এরপর যশোর আবাহনীর নিয়মিত গোলরক্ষক হয়ে গেলাম।’ সাবিনাও তো গোলরক্ষক, ব্যাপারটা কেমন লাগে? রাজুর উত্তর, ‘ভালোই লাগে।’ সাবিনার কাছে শ্বশুরবাড়ির বিষয়টা এখনো লজ্জার আবরণে ঢাকা। রাজু সম্পর্কে প্রথমে লজ্জায় কিছু বলতেই চাননি। পরে বললেন, ‘ও খুবই ভালো কিপার।’ রাজুর খেলা কখনো মাঠে বসে দেখেননি সাবিনা। তবে মাঠে বা টেলিভিশনে যেভাবেই হোক না কেন, সাবিনার প্রায় সব ম্যাচই রাজু দেখেন। গত মে মাসে মহিলা এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে থাইল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচটি রাজু দেখেছেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসে। ব্যস্ততার কারণে পরদিনই যেতে হয়েছিল যশোরে। সাবিনার বাকি ম্যাচগুলো টেলিভিশনে দেখেছেন। স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাজু, ‘ও দেশের সেরা গোলরক্ষক। অনুশীলনেও খুবই মনোযোগী। সাবিনা অনেক দূরে যাবে।’ সাবিনার মতো লাল-সবুজের জার্সি পরতে ইচ্ছা করে রাজুরও, ‘কার না স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে খেলার? আমিও খেলতে চাই জাতীয় দলে। তবে এই জেদটা কাজে লাগানোর মতো সুযোগ সব সময় পাই না।’ খেলার পাশাপাশি মোটর পার্টসের ব্যবসা করেন রাজু। যশোরের মনিহার মোড়ে তাঁর দোকান। দৈনিক পত্রিকা ও সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে সাবিনার ছাপা হওয়া সব ছবি কেটে যত্ন করে সংগ্রহে রাখেন। সাবিনার মতো খেলতে পারেন না বলে এতটুকু ঈর্ষা নেই। বরং সাবিনার খেলা দেখে রাজু খুশি, ‘ওর খেলা দেখেই আমার আনন্দ। ও খেলুক সেটাই আমি চাই।’একই শহরে দুজনের বাস। কিন্তু দেখা-সাক্ষাতের উপলক্ষ অনুশীলন মাঠ। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়নি বলেই সাবিনা এখনো বাবার বাড়িতেই থাকেন। আর দশটা বাঙালি মেয়ের মতো হাতে চুড়ি পরে ঘরকন্নায় ব্যস্ত থাকতে হয় না সাবিনাকে। তাঁর দুহাতে চুড়ির বদলে থাকে কিপিং গ্লাভস। এমন খেলোয়াড় বউকেও খুশি মনেই মেনে নিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির সবাই। সাবিনাও খুশি, ‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি এবং পরিবারের অন্যরাও আমাকে খেলার ব্যাপারে খুব উৎসাহ দেয়।’ এখনই পুরোদস্তুর গৃহিণী হওয়ার ইচ্ছা নেই তাঁর, ‘এখন আমি লেখাপড়া করছি। পাশাপাশি বিজেএমসি ও জাতীয় দলে খেলছি। আমি এখনই সংসার করতে চাই না। নিজেকে আরও একটু গুছিয়ে নিতে চাই।’রাজুর মোবাইলের ওয়েলকাম টিউনে সারাক্ষণ বাজে একটাই গান—‘তোমায় ছেড়ে বহু দূরে যাব কোথায়, এক জীবনে এত প্রেম পাব কোথায়।’ শুধু ফুটবল নয়, সাবিনার প্রতি রাজুর ভালোবাসাও কম নেই। |
চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী মাছ বাজারে অভিযান চালিয়ে ফরমালিনযুক্ত ৪০ কেজি সামুদ্রিক রূপচাঁদা মাছ জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা মৎস্য কার্যালয় এই আদালত পরিচালনা করে।জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ই আদালতের নেতৃত্ব দেন। এ সময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রভাতী দেব ও মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান, পাহাড়তলী মাছ বাজারে এনএইচ ফিশিং নামে একটি আড়তে ৪০ কেজি ফরমালিনযুক্ত রূপচাঁদা মাছ পাওয়া যায়। ওই প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মাছগুলো জব্দ করে নষ্ট করে ফেলা হয়। |
খাগড়াছড়িতে পরিবহন মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রশাসনের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার পর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল বিকেল পাঁচটায় খাগড়াছড়ি জেলার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবহন মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের নেতাদের বৈঠক হয়। দুই ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকের পর খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এস এম শফি ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক শ্রমিক সমম্বয় পরিষদের নেতাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, অতি সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খাগড়াছড়ি জেলা সফর করবেন। এ সময় তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশাসন উত্থাপন করবে। নেতারা প্রশাসনের এই আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। বৈঠকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসক মাসুদ করিম, পুলিশ সুপার শেখ মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম, পৌর মেয়র রফিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। |
প্রাইম ব্যাংক জেলা ফুটবল লিগে কিশোরগঞ্জে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে প্রভাতী সংসদ। কিশোরগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামে কাল প্রভাতী ২-০ গোলে হারিয়েছে সচেতন স্পোর্টিং ক্লাবকে। গোল করেছেন গালিব ও শান্তি। খেলা শেষে বিজয়ীদের পুরস্কার দেন বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। |
পটুয়াখালীর বাউফলে কাল স্থানীয় আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সমর্থকদের নিয়ে হয়ে গেল আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল প্রীতি ফুটবলের ফাইনাল। এতে আর্জেন্টিনা একাদশ ৩-২ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল একাদশকে। আর্জেন্টিনা একাদশের পক্ষে গোল করেন মাইনুল, মনসুর ও মাসুম। ব্রাজিল একাদশের দুটি গোলই প্যাট্রিকের। প্রায় ১০ হাজার দর্শক উপভোগ করেছে এই ম্যাচ।— |
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার দুর্গম কুমারী তিনট্যহরী এলাকায় গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে শান্তিবাহিনীর সাবেক সদস্য উমং মারমা (৫০) নামের এক সদস্য খুন হয়েছেন।মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেশব চক্রবর্তী খুনের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, মানিকছড়ি উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে দুর্গম কুমারী তিনট্যহরী এলাকার একটি ইটভাটাসংলগ্ন চায়ের দোকানে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় মুখোশপরা চারজনের একটি দল খুব কাছ থেকে তাঁকে (উমং) গুলি করে পালিয়ে যায়। |
চট্টগ্রাম নগরের বন্দর রিপাবলিক ক্লাব এলাকায় এক যুবক ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে। যুবকটির পরিচয় পাওয়া যায়নি। |
চট্টগ্রাম নগরের ফয়’স লেক এলাকা থেকে অস্ত্রসহ এক ছিনতাইকারীকে পুলিশ গতকাল শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারীর নাম আলী আক্কাস (২২)। তাঁর গ্রামের বাড়ি ফেনীতে। পাঁচ বছর ধরে তিনি ফয়’স লেকের একটি বস্তিতে বসবাস করে আসছেন। গতকাল সকালে পুলিশ তাঁর কাছ থেকে একটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, কার্তুজ ও একটি ছোরা উদ্ধার করে। |
অ্যাশেজের ঠিক আগে আগে মিকি আর্থারকে বরখাস্ত করায় অনেকেই বিস্মিত। কিন্তু টম মুডি এই দলে নেই, তিনি বলছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচের পদ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই কোচের বরখাস্ত হওয়াটা অনিবার্যই ছিল। শ্রীলঙ্কার সাবেক কোচের দাবি, কোচ-খেলোয়াড়ের মধ্যে যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকে, বরখাস্ত হওয়ার আগে আর্থার তা হারিয়ে ফেলেছিলেন।আর্থার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বিদেশি কোচ। গত ফেব্রুয়ারি-মার্চে তাঁর অধীনে ভারতে এসে টেস্ট সিরিজে ৪-০ ধবলধোলাই হয় অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের মাঝপথে টিম ম্যানেজমেন্ট নির্দেশিত ‘হোমওয়ার্ক’ জমা না দেওয়ায় চার ক্রিকেটারকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মুডির কথা, আর্থার সর্বনাশ করেছেন তখনই। এরপর ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি চলাকালে ইংল্যান্ডের জো রুটকে ঘুষি মেরে সাময়িক নিষিদ্ধ হয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারও। মুডি বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দল ছিল অগোছালো। তাদের আত্মবিশ্বাস ছিল না। তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়েই অনিশ্চিত ছিল।’তবে অস্ট্রেলিয়ার নতুন কোচ ড্যারেন লেম্যনের ওপর দারুণ আস্থা মুডির। ১৯৯৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন দুজনেই। মুডি মনে করেন, লেম্যান ঠিকই অস্ট্রেলিয়া দল এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন হারানো মর্যাদা। লেম্যানের অধীনে মাইকেল ক্লার্কের দল ভালো করতে মরিয়া ১০ জুলাই নটিংহাম টেস্ট দিয়ে শুরু আসন্ন অ্যাশেজেও। সেই প্রতিশ্রুতি মিলছে প্রস্তুতি ম্যাচে। উস্টারশায়ারের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ক্লার্ক। তাতে জয়ের আভাসও পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। কাল চতুর্থ বা শেষ দিনে এই প্রতিবেদন লেখার সময় জয় থেকে ৫ উইকেট দূরে ছিল অস্ট্রেলিয়া। ৪৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উস্টারশায়ার চতুর্থ ইনিংসে করেছে ৫ উইকেটে ২২৭। এর আগে সমারসেটের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেও জিতেছে ক্লার্কের দল। সব মিলিয়ে নতুন শুরুর স্বপ্ন দেখছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়েবসাইট। |
সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলায় ২০১২-১৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ১৮টি প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল গত এক বছরে এসব প্রকল্পের খবর না নেওয়ায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। অর্থবছর শেষ হওয়ার আগের দিন তিনি প্রকল্পগুলো অনুমোদন করেছেন। এসব প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য তিনি এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধরমপাশা কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের অধীন বাজার উন্নয়ন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেঞ্চ সরবরাহ, সড়ক উন্নয়ন, ঘর মেরামত, বিদ্যালয় উন্নয়ন, উপজেলা পরিষদের রেস্ট হাউস, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ডরমেটরি ভবনের পানির সরবরাহ লাইন মেরামতসহ মোট ১৮টি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য গত বছরের এপ্রিল ও মে মাসে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৮৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।এলজিইডির ধরমপাশা কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, উপজেলা দরপত্র কমিটি নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদার নির্বাচিত করে এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র অনুমোদনের জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছিল। কিন্তু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যথাসময়ে অনুমোদন না দেওয়ায় প্রকৌশল বিভাগ কার্যাদেশ দিতে পারেনি। এ কারণে যথাসময়ে কাজও শেষ করা যায়নি। ২৯ জুন রাতে তড়িঘড়ি করে তিনি এসব প্রকল্প অনুমোদন করেন।চামরদানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রভাকর তালুকদার অভিযোগ করেন, এ বরাদ্দ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল যথাসময়ে প্রকল্প অনুমোদন করেননি। এখন নামমাত্র কাজ করেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টাকা লুটপাট করার পাঁয়তারা করছেন।ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী নূরুল আলম চৌধুরী জানান, এডিবির কাজ বাস্তবায়নের অনুমোদন দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। কিন্তু অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় ঠিকাদারকে সময়মতো কার্যাদেশ দেওয়া যায়নি। তবে এ বরাদ্দের টাকা তুলে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ঠিকাদারের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হয়নি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ খালেদুর রহমান বলেন, এটি হাওর এলাকা। চারদিকে পানি থাকায় এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলীর যৌথ ব্যাংক হিসাবে এসব প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া টাকা তুলে রাখা হয়েছে। কাজ আদায় করে ঠিকাদারদের বিল দেওয়া হবে।জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে জানার দরকার কী? সঠিকভাবে কাজ শেষ করতে পারলেই হলো। কাজ আদায় করে আমরা ঠিকাদারদের বিল দেব।’জেলা প্রশাসক মুহম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী জানান, এডিবির কাজ বাস্তবায়ন না করে টাকা তুলে রাখার কোনো নিয়ম নেই। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। |
কুমিল্লার দেবীদ্বার, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, মেঘনা ও তিতাস উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কোনো স্টেশন নেই। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকলেও ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা থাকায় ওই উপজেলাগুলোতে এখনো ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা যায়নি। এ অবস্থায় সাত উপজেলার প্রায় ২২ লাখ বাসিন্দা অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. শাহ্বুদ্দীন মজুমদার জানান, কুমিল্লা জেলার ১৬ উপজেলার মধ্যে নয়টি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন রয়েছে। বাকি সাতটি উপজেলায় কোনো ধরনের ফায়ার স্টেশন নেই। ফায়ার স্টেশন করার জন্য সরকারের কাছে অর্থ রয়েছে। কিন্তু জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। ফায়ার স্টেশন স্থাপনের জন্য ২০০৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নাঙ্গলকোট উপজেলার কেন্দ্রা মৌজায় ৩৩ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পরে ভূমির মালিকেরা ওই অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ কারণে নাঙ্গলকোটে ফায়ার স্টেশন করার প্রক্রিয়া আর এগোয়নি। চলতি বছরের ১৪ মার্চ দেবীদ্বারের ভারেরা মৌজা এবং ৪ জুন বুড়িচং উপজেলার গাজীপুর মৌজায় ফায়ার স্টেশন স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। একই সঙ্গে তিতাস উপজেলায় ফায়ার স্টেশন করার প্রস্তাবও রয়েছে। কিন্তু ব্রাহ্মণপাড়া, মনোহরগঞ্জ ও মেঘনা উপজেলায় জায়গা পাওয়া যায়নি।ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শিদলাই আমির হোসেন জোবেদা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লার উত্তর জনপদের তিন উপজেলা দেবীদ্বার, ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং এলাকায় কোনো ফায়ার স্টেশন নেই। এসব এলাকায় আগুন লাগলে কুমিল্লা ও মুরাদনগর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আসতে হয়। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে যায়।নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি সংসদের সদস্যসচিব আইনজীবী নাজমুল বারী চৌধুরী বলেন, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ কুমিল্লার দক্ষিণ এলাকার পাশাপাশি দুইটি উপজেলা। ওই উপজেলাগুলোতে এখনো ফায়ার স্টেশন হয়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মেয়রকে সবার আগে উদ্যোগ নিতে হবে। |
নেত্রকোনা শহরে গতকাল শুক্রবার ট্রাকের চাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে। একই দিন কুমিল্লার দাউদকান্দি, চান্দিনা ও হবিগঞ্জের মাধবপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আরও চারজন নিহত হয়। প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:নেত্রকোনা: জেলা শহরের আনন্দ বাজার মোড়ে গতকাল দুপুরে একটি ট্রাক একটি বাইসাইকেলকে চাপা দেয়। এতে বাইসাইকেলের আরোহী শহরের মধ্য নাগড়া এলাকার পসর আলীর ছেলে শুভ (১২) মারা যায়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মফিজুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।দাউদকান্দি (কুমিল্লা): দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলীতে একটি খালি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আবদুর রউফ (৭০) নামের এক পথচারীকে চাপা দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তাঁর বাড়ি তিতাস উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক রইছ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।সন্ধ্যা ছয়টার দিকে একই মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার দোতালা এলাকায় কুমিল্লাগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের অজ্ঞাতনামা এক পুরুষ যাত্রী (৩৫) মারা যান এবং বাস ও মাইক্রোবাসের ১০ যাত্রী আহত হয়।মাধবপুর (হবিগঞ্জ): ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহপুর নতুন বাজার এলাকায় গতকাল একটি ট্রাক্টর একটি যাত্রীবাহী টেম্পোকে ধাক্কা দেয়। এতে টেম্পোর যাত্রী উপজেলার হরিতলা গ্রামের আবদুল মজিদ (৬৫) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের নাজিম উদ্দিন (৩০) মারা যান। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। |
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিজছত্তিশ গ্রামে খালেদ আহমদ (২৭) নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণকে চিকিৎসার নামে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচালের ইসলামাবাদ গ্রামের হেলিম মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।খালেদের স্ত্রী অভিযোগ করেন, কুপ্রস্তাবে তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁর অসুস্থ স্বামীকে কবিরাজ পিটিয়ে আহত করেছেন।ওই তরুণের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে ধনু মিয়া নামের এক ব্যক্তি বরমচালের ইসলামাবাদ গ্রামে তাঁর মামা হেলিম মিয়ার বাড়িতে থেকে কবিরাজি করে আসছিলেন। অভিভাবকেরা খালেদকে সুস্থ করার জন্য ৩৫ হাজার টাকায় হেলিম মিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে খালেদকে তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য ধনু মিয়ার কাছে নিয়ে যান। রাতে ধনু মিয়ার ঘরে খালেদ ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিনকে রেখে তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের আলাদা কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। ধনু মিয়া খালেদকে সুস্থ করে তোলার আশ্বাস দিয়ে সাবিনা ইয়াছমিনকে কুপ্রস্তাব দেন। সাবিনা রাজি না হওয়ায় ধনু মিয়া খালেদকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। এ সময় খালেদ ও তাঁর স্ত্রী চিৎকার শুরু করলে ধনু মিয়া পালিয়ে যান। খালেদকে ওই রাতেই ফেঞ্চুগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ধনু মিয়া আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। হেলু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিষয়টি মীমাংসা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা রোগী নিয়ে চলে গেছেন।’ |
মারিওন বারতোলি না সাবিনা লিসিকি? ফ্রান্স না জার্মানি? আজ অল ইংল্যান্ড ক্লাবে কার উত্তরসূরি দেখবে, স্টেফি গ্রাফ না অ্যামেলি মরেসমোর? বারতোলি জিতলে ২০০৬ সালের পর ফ্রান্স পাবে প্রথম চ্যাম্পিয়ন। লিসিকি চ্যাম্পিয়ন হলে ১৯৯৯ সালের পর জার্মানিতে প্রথম যাবে উইম্বলডন ট্রফি, অবসান হবে ১৪ বছরের প্রতীক্ষার। উইম্বলডনে মেয়েদের একক জেতার পর সবচেয়ে দীর্ঘ সময় পার করেছে ব্রাজিল। ১৯৬৪ সালে মারিয়া বুয়েনো সর্বশেষ ব্রাজিলিয়ান হিসেবে উইম্বলডন জেতার পর কেটে গেছে ৪৯ বছর। স্বাগতিক ব্রিটেন আছে এরপরই। ভার্জিনিয়া ওয়েডের (১৯৭৭) জয়ের পর ৩৬ বছর ধরে প্রতীক্ষা করছে দেশটি। অস্ট্রেলিয়ার অপেক্ষা ৩৩ বছরের। ১৯৮০ সালে সর্বশেষ অস্ট্রেলীয় হিসেবে জেতেন ইভোন গুলাগং। |
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি। কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে।কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ মার্চ কলেজের পরিচালনা পর্ষদের অভিভাবক সদস্য আমির হোসেন তৎকালীন সভাপতি স্থানীয় সাংসদ মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলামের কাছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার লিখিত অভিযোগ দেন। ওই বছরের ৩ মে পরিচালনা পর্ষদের সভায় অভিযোগটি খতিয়ে দেখতে কলেজের সহকারী অধ্যাপক এমতিয়াজ হোসেনকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পরবর্তী সভায় প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু কমিটি প্রায় এক বছর পর ২৭ জুন প্রতিবেদন দাখিল করে।এমতিয়াজ হোসেন জানান, ২৭ নভেম্বর নিরীক্ষা শেষ হলেও পরিচালনা পর্ষদের সভা না হওয়ায় প্রতিবেদন দাখিল করতে দেরি হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের বিভিন্ন খাতে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকার হিসাবে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আবদুর রহিম বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম করিনি, যা কিছু করেছি কলেজের স্বার্থেই করেছি।’কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সভায় দাখিল করা প্রতিবেদনটি পেয়েছি। আমি অধ্যক্ষকে তা দেখতে দিয়েছি। পরবর্তী সভায় আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ |
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তার ছয়টি পদের পাঁচটিই শূন্য। এ কারণে এই উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শিক্ষকদের তদারকিসহ নানা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের জন্য ছয় ভাগে ছয়জন সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তার পদ থাকলেও আছেন মাত্র একজন। ফলে এ উপজেলার ৮৫টি সরকারি, ৩০টি বেসরকারি ও দুটি কমিউনিটিসহ ১১৭টি বিদ্যালয়ে তদারকি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।কয়েকজন প্রাথমিক শিক্ষক জানান, উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তার সংকট চলছে। এমনকি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদও এক বছর শূন্য ছিল। সম্প্রতি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা যোগ দিলেও সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তার পাঁচটি পদই শূন্য আছে। কর্মকর্তা-সংকটের কারণে বিদ্যালয় পরিদর্শন, শিক্ষকদের তদারকি ও উপবৃত্তি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অফিস সহকারী সিরাজুল ইসলাম জানান, গোয়াইনঘাট একটি বড় উপজেলা। পাঁচ শতাধিক শিক্ষকের বিভিন্ন কাজ কর্মকর্তা-সংকটের কারণে যথাসময়ে করা সম্ভব হচ্ছে না।বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও গোয়াইনঘাট উপজেলার নওয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব পুরকায়স্থ বলেন, বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অনেক কাজ হয়। তাই এ উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের স্বার্থে শিক্ষা কর্মকর্তাদের শূন্য পদগুলো পূরণ করা উচিত।গোয়াইনঘাটে কর্মরত একমাত্র সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মোশাহিদ মিয়া বলেন, ‘ছয়জনের জায়গায় একজন আছি। সমস্যা তো হচ্ছেই। কাজে গতি আনতে হলে শূন্য পদগুলো পূরণ করতে হবে।’উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ বলেন, একজন সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তা দিয়ে সব কাজ চালিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও যথাযথভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। |
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মমতাজ উদ্দীনের বিরুদ্ধে সরকারের স্থায়ী সম্পত্তি হস্তান্তর কর তহবিলের নয় লাখ ৮৫ হাজার ৩২৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কোনো কাজ না করেই চেয়ারম্যান ওই টাকায় ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধ করেছেন বলে জানা গেছে।এ পরিস্থিতিতে ওই ইউপির নয়জন সদস্য গত বুধবার চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে চিঠি দেন। মমতাজ উদ্দীন নবগঠিত শাকপুর ইউপির প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান।জানতে চাইলে বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছানিয়া আক্তার বুধবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাকপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনে ওই ইউনিয়নের নয়জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁকে অপসারণের জন্য আমার কাছে আবেদন করা হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ইউনিয়ন পরিষদের নয়জন সদস্য জানান, ২০১২-১৩ অর্থবছরে নামসর্বস্ব বিভিন্ন প্রকল্প দাখিল করে শাকপুর ইউপির চেয়ারম্যান নয় লাখ ৮৫ হাজার ৩২৪ টাকা উত্তোলন করেন। ওই ইউনিয়নের গত ছয় মাসের সরকারের স্থায়ী সম্পত্তি হস্তান্তর কর তহবিলের শতকরা ১ ভাগ টাকা চেয়ারম্যান একক ক্ষমতা দেখিয়ে উত্তোলন করেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি কোনো প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করেননি। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ মোতাবেক পরিষদ গঠিত হওয়ার পর প্রথম সভার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওই আইন মানা হয়নি।ওই ইউপির ১, ২, ৪, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের তিন নারী সদস্য ওই অনাস্থা প্রস্তাব দেন।অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. মমতাজ উদ্দীন বলেন, ‘আমি কোনো টাকা উত্তোলন করিনি। মেম্বাররাই (সদস্য) টাকা উঠিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ একেবারেই অসত্য।’ প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। |
জাতীয় নির্বাচন বলতে যা বোঝায় তার সবই আছে। শুধু নেই নৌকা আর ধানের শীষ প্রতীক। এর বদলে আছে দোয়াত-কলম আর টেলিভিশন।প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্ব ও নাটকীয়তা, জোট-মহাজোটের পাল্টাপাল্টি দোষারোপের রাজনীতি, এরশাদকে নিয়ে সেই পুরোনো টানাহেঁচড়া, কেন্দ্রীয় নেতাদের অবিরাম দৌড়ঝাঁপ—সবকিছু মিলিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়ে উঠেছে ‘জাতীয়’ এক নির্বাচন।আজকের এই ভোটাভুটির দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশের মানুষ। কারণ, আজকের ফল বলে দিতে পারে আগামী জাতীয় রাজনীতির গতি-প্রকৃতি। গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও এ রকম আবহ তৈরি হয়েছিল। এ নির্বাচনে অবশ্য সরকারি দলের চার মেয়র প্রার্থীই পরাজিত হয়েছেন।আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, চার সিটির নির্বাচনের ফল দলের নেতা-কর্মীদের দারুণভাবে হতাশ করেছে। তবে আওয়ামী লীগের দুর্গ বলে পরিচিত গাজীপুরে এ রকম ফল তাঁরা আশা করেন না। এখানে জয় ছাড়া অন্য কিছু তাঁরা ভাবছেন না। অন্যদিকে বিরোধী দল বিএনপি বলছে, এই নির্বাচনেও জয়ী হয়ে তারা প্রমাণ করতে চায়, এ সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা নেই।নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এই নির্বাচনে ভোটার ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯। ৩৯২টি কেন্দ্রে আজ সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্ট মিলিয়ে প্রায় আট হাজার কর্মকর্তা নির্বাচনের কাজে যুক্ত আছেন। আর র্যাব-পুলিশ-বিজিবি-আনসারসহ সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে ১১ হাজার সদস্য থাকবেন নিরাপত্তার দায়িত্বে।গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয় গত ৭ জানুয়ারি। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ২২ মে। তবে চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগ এখানে জয় পেতে দলের সর্বশক্তি কাজে লাগায়। একই ধারাবাহিকতায় মাঠে নামে বিএনপি। শুরু হয় দুই দল আর জোটের লড়াই।আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি সত্যি, যেকোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চেয়ে গাজীপুরে আমরা সর্বোচ্চ শ্রম দিয়েছি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা এখানে এসেছেন। সারা দিন কাজ করেছেন। সব দেখে মনে হতে পারে, এটি জাতীয় কোনো নির্বাচন। তবে একটি বিষয় হলো, গাজীপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। এখানে বিজয়ী হয়ে আমরা সারা দেশে একটা বার্তাই দিতে চাই, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষেই আছে।’গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বলেন, চার সিটির নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় জয়ী হওয়ার জন্য বিএনপি গাজীপুরের নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে নাটক: স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী মনোনায়ন নিয়ে দলের দ্বন্দ্ব এবং নাটকীয়তা যে জাতীয় নির্বাচনকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে, তার উদাহরণ গাজীপুর। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে সব দ্বন্দ্ব ভুলে এককভাবে প্রার্থী ঠিক করতে পারলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বেশ নাটকীয়তা লক্ষ করা যায়।গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৭ জুন। এর মাত্র দুই দিন আগে চার সিটিতে পরাজয়ের কারণে ক্ষমতাসীন দল হঠাৎ তৎপর হয়ে ওঠে। কিন্তু ততক্ষণে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ বলে খ্যাত গাজীপুরে দলের প্রার্থী হয়ে গেছেন দুজন। টঙ্গীর সাবেক পৌর মেয়র আজমত উল্লা খান দলের সমর্থন পেলেও অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আদালতের নির্দেশে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে টিকে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। অতঃপর প্রার্থী সমস্যা নিরসনের জন্য ১৮ জুন নাটকীয়ভাবে জাহাঙ্গীরকে ঢাকায় তুলে নিয়ে যান ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। এরপর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের নেতারা ঘোষণা দেন, আজমত উল্লাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে গেছেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু জাহাঙ্গীরের নেতা-কর্মীরা তখনো নির্বাচনের মাঠে।সমস্যা সমাধানে নানা দেনদরবারের পর ২৩ জুন জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরে এসে কান্নাজড়িত কণ্ঠে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এরপর আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লার পক্ষে কাজ শুরু করেন তিনি।জোটের রাজনীতি: জাতীয় নির্বাচনের মতোই জোটের রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে গাজীপুরে। ১৮ দলের শরিক জামায়াতে ইসলামী বরাবরের মতোই বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানকে সমর্থন দেন। তবে গোল বাধে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে। এরশাদকে নিয়ে শুরু হয় টানাহেঁচড়া। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছিলেন জাপার জেলা সভাপতি কাজী মাহমুদ হাসান। ১৭ জুন তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। এরপরই জাতীয় পার্টির সমর্থন পেতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই মরিয়া হয়ে ওঠে।জাতীয় পার্টিকে পাশে রাখতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এবং দুই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানসহ নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করে সমর্থন চান। কিন্তু এরশাদ তখনো সমর্থন ঘোষণা করেননি। ইতিমধ্যে জেলা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে একটি বড় অংশ বিএনপির দিকে আরেকটি অংশ আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে ৩০ জুন এরশাদের সঙ্গে দেখা করেন মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান। দুই দিন পর বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানও দেখা করেন এরশাদের সঙ্গে। তিনি দুজনকেই দোয়া দেন। এরপর নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে গত বৃহস্পতিবার এরশাদ মহাজোটের প্রার্থীকেই সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, এবার গাজীপুরের স্থানীয় নির্বাচনে ‘স্বৈরাচারী’ এরশাদকে নিয়ে যেভাবে টানাটানি হলো, তাতে করে জাতীয় রাজনীতিতে তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলেন। জাতীয় পার্টি ছাড়াও হেফাজতে ইসলামকে নিয়েও দুই দল টানাটানি করেছে।কেন্দ্রীয় নেতাদের দৌড়ঝাঁপ: অতীতে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দুই দলের প্রভাবশালী এত নেতাকে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়নি। চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগ গাজীপুরে জয় পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে খোঁজখবর রাখা শুরু করেন। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানককে সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজখবর নেওয়ার দায়িত্ব দেন। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য গাজীপুরের ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন সাংসদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা পড়ে ছিলেন গাজীপুরে।একই অবস্থা বিএনপিতে। খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেই গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে সার্বক্ষণিকভাবে নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সব নেতা ও সাংসদ তাঁদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছিলেন সর্বশক্তি দিয়ে। পাশাপাশি ছাত্রদল, যুববদলসহ বিএনপির সব অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ছিলেন মাঠে।রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দুই দলের সংস্কৃতিকর্মী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ীরাও নির্বাচনী মাঠে ছিলেন।গুরুত্ব পেয়েছে জাতীয় বিষয়: স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় সমস্যাগুলো সেভাবে আলোচিত হয়নি। এর বদলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেমন দুই দল পরস্পরের বিরুদ্ধে বলে এখানেও তেমনটিই হয়েছে।বিরোধী দল শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু, হল-মার্ক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারি, মতিঝিলে হেফাজতের বিরুদ্ধে অভিযানসহ সরকারের ব্যর্থতার নানা দিক তুলে ধরে প্রচার করে। আর আওয়ামী লীগ তুলে ধরেছে গত সাড়ে চার বছরে তাদের সাফল্যের কথা। পাশাপাশি তারা বিএনপির অতীতের দুর্নীতি, তারেক-কোকোর দুর্নীতি, আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছে। |
যেনতেনভাবে নিম্নমানের অবৈধ লাইন বসিয়ে গ্যাস নেওয়ার চেষ্টা, বিদ্যমান লাইনে অননুমোদিত কমপ্রেসর ও বিশেষ ধরনের রেগুলেটর স্থাপনের কারণে গ্যাসের বিতরণ লাইনগুলো বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। এসব লাইনে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। পেট্রোবাংলা ও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সূত্রগুলো জানায়, গ্যাস-সংযোগ বন্ধ থাকাকালে বিদ্যমান লাইনের মধ্যে অবৈধ সংযোগ নেওয়া হতো। তবে সংযোগ চালু করার পর শুরু হয়েছে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেপরোয়া অবৈধ লাইন বসানো।সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে যেকোনো শ্রেণীর ঠিকাদারের মাধ্যমে নিম্নমানের পাইপ দিয়ে এ ধরনের হাজার হাজার ফুট লাইন বসানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এর সঙ্গে তিতাসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। অননুমোদিত এসব লাইন স্থাপনে যথাযথ নিরাপত্তা মানদণ্ড বজায় রাখা হচ্ছে না।ঢাকার কেরানীগঞ্জে সরেজমিন দেখা গেছে, তিতাস গ্যাসের নেটওয়ার্কের বাইরেও গ্রামের পর গ্রামজুড়ে লাইন বসানো হয়েছে এবং হচ্ছে। এসব লাইন নেওয়া হচ্ছে কতিপয় আবাসন কোম্পানির আবাসিক প্রকল্পের কাছে, যাতে ওই সব প্রকল্পে গ্যাস-সংযোগ দেওয়া যায়।জানতে চাইলে তিতাসের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশাদ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে লাইন বসানোর বিষয় তাঁরাও জানেন। একাধিক জায়গায় ওই কাজ বন্ধ করতে গিয়ে তাঁদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঞ্ছিত হয়েছেন। কোথাও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের বাধা দিয়েছেন। অবশ্য এসব লাইন চিহ্নিত করে গ্যাস-সংযোগ না দেওয়া কঠিন হবে না।অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিপুল অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে এসব লাইন হচ্ছে। রাজধানীর ভাটারা থানার একটি আবাসিক প্রকল্পের ২৫০টি প্লটের প্রতিটিতে সংযোগের জন্য ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে লাইন বসানো হচ্ছে। ওই এলাকা তিতাসের নেটওয়ার্কের বাইরে। কেরানীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী প্রভৃতি এলাকায়ও তিতাসের নেটওয়ার্কের বাইরে লাইন বসানো হচ্ছে।পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বলেন, এসব লাইন রাখা যাবে না। কারণ, একদিকে এগুলো করা হচ্ছে সরকারি আদেশ অমান্য করে অবৈধভাবে। অন্যদিকে নিয়ম মেনে মানসম্পন্ন জিনিসপত্র ব্যবহার করে এগুলো করা হচ্ছে না। ফলে জননিরাপত্তার জন্য এই লাইনগুলো মারাত্মক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাই এসব লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। সময়মতো এ ব্যাপারে অভিযান চালানো হবে।কমপ্রেসর ও রেগুলেটর: এদিকে অনেক শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহক বিদ্যমান গ্যাস লাইনে অবৈধভাবে ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কমপ্রেসর (গ্যাসের চাপ বাড়ানোর যন্ত্র) বসাচ্ছেন। যেসব এলাকায় গ্যাসের চাপ কম, সেখানে এই প্রবণতা বেশি।তিতাসের সূত্র জানায়, গত সোমবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি স্পিনিং মিলের ছাদ থেকে এ রকম একটি কমপ্রেসর আটক করা হয়। এটি আসলে এয়ার কমপ্রেসর। কিন্তু কারখানার লাইনে গ্যাসের চাপ বাড়ানোর জন্য সেটিই ব্যবহার করা হচ্ছিল, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ রকম আরও ঘটনার খবর পেয়ে স্থানগুলোতে গেলেও তা সহজে ধরা যায় না।এ ছাড়া কোনো কোনো শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহক তাঁদের লাইনে ‘লো ডিফারেন্সিয়াল রেগুলেটর’ নামে বিশেষ ধরনের রেগুলেটর বসাচ্ছেন। এতে মূল লাইনে গ্যাসের চাপ কম থাকলেও তাঁদের প্রতিষ্ঠানে রেগুলেটরটি সঠিক চাপেই গ্যাস সরবরাহ করে। কিন্তু এতে আশপাশের গ্রাহকের লাইনের চাপ আরও কমে যায়।তিতাসের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, আজকাল কোনো কোনো গ্রাহক তাঁদের শিল্পে বা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের রেগুলেটর স্থাপনের জন্য অনুমোদনও চাইছেন। কিন্তু তা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এতে কোনো না কোনো গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।ডিইপিজেডের লাইন থেকে চুরি: সাভারের ঢাকা ইপিজেডে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য দুটি লাইন আছে। দুটি লাইনেরই বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে ছিদ্র করে শাখা লাইন করে অন্যত্র গ্যাস নেওয়া হচ্ছে। এ প্রবণতা বাড়তে থাকায় এখন ইপিজেডের কারখানাগুলো সঠিক চাপে গ্যাস পাচ্ছে না। এ জন্য ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ব্যয় ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বহন করছে।নতুন সংযোগ চলছে: সরকার গত ৭ মে নতুন গ্যাস-সংযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর অবৈধ হিসেবে আবেদনকারী ছাড়া অন্য গ্রাহকদের সংযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। এই গ্রাহকদের মধ্যে আছেন সংযোগ বন্ধের আগেই চাহিদাপত্র ইস্যু করা নতুন গ্রাহক, যাঁরা চুলার সংখ্যা বাড়াতে চান, এমন গ্রাহক এবং বিভিন্ন আবাসিক কোম্পানির ভবনগুলো।এর মধ্যে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রক্রিয়াগত বিলম্বের কারণে আবাসিক কোম্পানিগুলো নিজেদের উদ্যোগে ঠিকাদার নিয়োগ করে লাইন টানছে। অন্যগুলো বিতরণ কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় দেওয়া হচ্ছে। তিতাস সূত্র জানায়, তারা এখন পর্যন্ত একেবারে নতুন সংযোগ দিয়েছে প্রায় তিন হাজার। চুলার সংখ্যা বাড়িয়েছে প্রায় দুই হাজার। অবৈধ গ্রাহকদের আবেদনগুলো তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে, যাতে নতুন কোনো গ্রাহক এই শ্রেণীতে আবেদন করতে না পারেন। তালিকাভুক্তির কাজ শেষ হলেই এই শ্রেণীর গ্রাহকের সংযোগ বৈধ করার কাজ শুরু হবে।তিতাস সূত্র জানায়, নির্ধারিত সময়ের (গত ২০ জুন) মধ্যে তারা ৫৮ হাজার ৭৭৭ গ্রাহকের কাছ থেকে এক লাখ ৬৪ হাজার ৮০৩টি চুলার সংযোগ বৈধ করার আবেদন পেয়েছে।পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, অন্য তিনটি বিতরণ কোম্পানির এলাকায় অবৈধ সংযোগ বৈধ করার আহ্বানে একেবারে সাড়া মেলেনি। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক কর্ণফুলী বিতরণ কোম্পানিতে ৫৭টি ও কুমিল্লাকেন্দ্রিক বাখরাবাদে ১২০টি আবেদন জমা পড়েছে। পশ্চিমাঞ্চল বিতরণ কোম্পানির এলাকায় কোনো আবেদন জমা পড়েনি। |
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সিপাইকান্দি গ্রামে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধসংলগ্ন তিন একর আয়তনের জলাশয়ে মাটি ভরাট বন্ধে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দিয়েছে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ।সম্প্রতি জলাশয়ের পাশে একটি গাছে ওই বিজ্ঞপ্তি লেখা সাইনবোর্ডটি টাঙিয়ে দেন পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী ইয়ার আলী। তিনি বলেন, ‘ওই জলাশয়ে যাতে অবৈধভাবে আর কেউ মাটি/বালু ভরাট করতে না পারে, সে জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পরও যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করে এটি ভরাট করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’মতলব উত্তর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘অবৈধভাবে নেওয়া জলাশয়ের ইজারা বাতিলের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করা হবে।’১৯৯৩ সাল থেকে স্থানীয় মাছচাষিরা পাউবোর কাছ থেকে জলাশয়টি ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। কিন্তু গত বছরের জুনে এটি সেলিনা বেগম ও মমতাজ বেগম নামের দুজনের কাছে অবৈধভাবে ইজারা দেন চাঁদপুর পাউবোর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী। ইজারা গ্রহীতারা কয়েক দিন আগে সেখানে বালু দিয়ে ভরাট শুরু করলে মাছচাষিরা এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।এ ব্যাপারে ১৯ ও ২০ জুন প্রথম আলোয় যথাক্রমে ‘বনায়নে জলাশয় ভরাট!’ ও ‘জলাশয় রক্ষায় মানববন্ধন’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। |
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সাড়ে চার শ কেজি পোনা মাছ জব্দ করা হয়েছে। এ সময় দুজনকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং দুজনকে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বৃহস্পতিবার কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শামছুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।কুলাউড়া মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর থেকে অবৈধভাবে ধরা পোনা পাচারের সময় উপজেলা সদরের কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের আউটার সিগনাল এলাকা থেকে একটি পিকআপ ভ্যান আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পিকআপ ভ্যান থেকে ড্রামভর্তি প্রায় সাড়ে চার শ কেজি বোয়াল, ঘাগট, চাপিলার পোনা উদ্ধার করা হয়। আদালত পোনা মাছের দুই মালিক মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আওয়াল আলী ও দুলাল মিয়াকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং পিকআপ ভ্যানের চালক সাহেল ও চালকের সহকারী শাহীনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক পোনা জব্দ ও চারজনকে জেল-জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা পিকআপ ভ্যানে করে পোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মৎস্য আইন অনুযায়ী আটক চারজনকে জেল ও জরিমানা করেছেন। মাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।’ |
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে পুনরায় ভোট গ্রহণ আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে।নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ১৫ জুনের নির্বাচনে বর্তমান কাউন্সিলর জামাল আহমদ (বাসগাড়ি) ও আবদুল মুহিত জাবেদ (টিউবওয়েল) সমানসংখ্যক ভোট পাওয়ায় বিধি অনুযায়ী পুনরায় ভোট গ্রহণের আয়োজন করা হচ্ছে।ভোট গ্রহণকালে ওয়ার্ডের চারটি কেন্দ্রে দুজন নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম। |
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের একটি দল ১০২টি তৈরি পোশাক কারখানা ভবন পরিদর্শন করে ৯৪টিতে বিভিন্ন রকম ত্রুটি পেয়েছে। এর মধ্যে দুটি ভবনকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ও চারটিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। ৪০টি ভবনে ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বেশ কিছু শর্ত পালন ও নকশা অনুসরণ করা হয়নি এবং ৪৮টি ভবনে নির্মাণগত সামান্য ত্রুটি রয়েছে। বাকি আটটি ভবনে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। ওই ১০২টি কারখানা ভবন পরিদর্শন শেষে বুয়েটের তৈরি করা প্রাথমিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য রয়েছে।প্রতিবেদনে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন দুটি অবিলম্বে এবং ঝুঁকিপূর্ণ চারটি ভবন যত দ্রুত সম্ভব বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। আর বিধিমালার শর্ত অমান্যজনিত ও নির্মাণগত সামান্য ত্রুটি থাকা ৮৮টি ভবনকে ত্রুটি শোধরানোর জন্য তিন থেকে ছয় মাসের সময় বেঁধে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।এদিকে সরকারের কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর দেশের দুই হাজার ৩৮১টি পোশাক কারখানা পরিদর্শনে দেখেছে, ৯০০ কারখানা শ্রম আইন ভঙ্গ করছে। এগুলোতে শ্রমিকের জন্য যেসব সুবিধা এবং ভবনের যে ধরনের নিরাপত্তা থাকার শর্ত রয়েছে, তা পালিত হচ্ছে না।গত ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর ৩০০ কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানা পরিদর্শনের জন্য বুয়েটে আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ১৮ জনের একটি দল দুই মাস ধরে ১৫২টি কারখানা পরিদর্শন করে। এর মধ্যে ১০২টির প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে দলটি। বাকি ৫০টি ভবন পরিদর্শনসংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।তবে শুরুতে আগ্রহ দেখিয়ে আবেদন করলেও ১৪৮টি কারখানা কর্তৃপক্ষ ভবন পরিদর্শনে সহযোগিতা করেনি বলে বুয়েট সূত্র জানিয়েছে। পরিদর্শনের জন্য ফরম সংগ্রহসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন না করায় বুয়েটের দলটি ওই ভবনগুলো পরিদর্শনে যেতে পারেনি।পরিদর্শন প্রতিবেদনের ব্যাপারে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের সভাপতি ও ভবন সমীক্ষা দলের প্রধান অধ্যাপক মুজিবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ দুটি ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত চারটি ছাড়া বাকি ভবনগুলোতে নানা ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়লেও সেগুলো এই মুহূর্তে ভেঙে পড়ার বা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নেই। ত্রুটি ধরা পড়া ৮৮টি ভবনকে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ত্রুটি সংশোধনের জন্য বলা হয়েছে।১৪৮টি কারখানা ভবন পরিদর্শনে কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিটি কারখানাকেই আজ বা কাল ভবনের ঝুঁকি পরীক্ষা করাতে হবে। বুয়েট বা অন্য কোনো বেসরকারি প্রকৌশল সংস্থা থেকে সবার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষা করানোর জন্য আমরা কাজ করছি। অবশ্যই তা করানো হবে।’কোন ভবন কোন মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ: বুয়েটের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানিকগঞ্জ শহরের সিদ্দিক খান সুপার মার্কেট ভবন ও রাজধানীর মালিবাগের আল-হামরা গার্মেন্টস ভবন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত হয়েছে। পলমল গ্রুপের মালিকানাধীন আল-হামরা গার্মেন্টসের ভবনটিতে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পরিদর্শনে ভবনটির বিম ও থামে ফাটল ধরা পড়েছে। দেয়ালগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ।যোগাযোগ করলে পলমল গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন) শফিউল আজম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ভবনটি ইতিমধ্যে খালি করে দিয়েছি। ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা সেখানে কোনো কার্যক্রম চালাব না।’প্রতিবেদন অনুসারে, মানিকগঞ্জের সিদ্দিক খান সুপার মার্কেট ভবনটির বাণিজ্যিক ভবনের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু ভবনের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত তিনটি পোশাক কারখানাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। নিচতলায় রয়েছে ব্যাংক ও বিপণিবিতান। ভবনটির দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় গত ২৫ এপ্রিল কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।ওই ভবনের মালিক মোরশেদ খান বলেন, ভবনে সামান্য ফাটল দেখা দেওয়ায় এবং বুয়েট একে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করায় পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যে কারখানার যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।অন্য ৯৪টি ভবনের ত্রুটি: বুয়েটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পরিদর্শনে মোটা দাগে দুই ধরনের সমস্যা দেখা গেছে। পরিদর্শন করা ৪০ শতাংশ ভবন রাজউক থেকে যত তলার অনুমতি নিয়েছে, তার চেয়ে এক-দুই তলা অতিরিক্ত নির্মাণ করেছে। রাজউক ও কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, ভবনের ছাদে টিনের ঘর থাকতে পারবে না। কিন্তু ওই ৪০টি ভবনের ছাদে টিনের অবকাঠামো দেখা গেছে।এ ছাড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ক্ষেত্রে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি হওয়া ৪৮টি কারখানা ভবনের ক্ষেত্রে দেয়ালে সামান্য ফাটল, বিম নির্দেশিত মাত্রার চেয়ে চিকন, দেয়াল ও বিমের সংযোগ সঠিকভাবে না হওয়া, প্রয়োজনীয় ফাঁকা জায়গা না রেখে ভবন নির্মাণজনিত ত্রুটি পাওয়া গেছে। তবে বুয়েটের মতে, এমন ত্রুটি থাকলেও ভবন ভেঙে পড়ার বা বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেই।৯০০ কারখানায় শ্রম আইন ভঙ্গ: শিল্প মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেশে শিল্প কারখানার সংখ্যা ১৬ হাজার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানা প্রায় সাড়ে চার হাজার। এগুলোর মধ্যে চালু আছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার।কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, অধিদপ্তর গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দুই হাজার ৩৮১টি কারখানা পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০০ কারখানায় শ্রম আইন, কারখানা আইন ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ভঙ্গের চিত্র দেখা গেছে। এর প্রায় ৩০০ কারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। কারখানাগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা বা জরুরি নির্গমন পথ নেই, দুটি সিঁড়ির স্থলে আছে একটি। ভবনের ছাদের ২৫ শতাংশের বেশি এলাকায় টিনের ঘর রয়েছে বা ভবনের জন্য যথাযথ অনুমোদন নেই।সূত্র আরও জানায়, ওই ৯০০ কারখানার মধ্যে মে মাস পর্যন্ত ১৬২টির বিরুদ্ধে শ্রম আইন, ২০০৬ অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। আরও ১০০টির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। |
প্রস্তুত ৩৯২ ভোটকেন্দ্র। প্রস্তুত সাত হাজার ২৫৯ জন নির্বাচনী কর্মকর্তা আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে ১১ হাজার সদস্য। তাঁরা অপেক্ষা করছেন গাজীপুরের ভোটারদের জন্য। গাজীপুরবাসী আজ শনিবার তাঁদের প্রথম নগরপিতা নির্বাচন করবেন।গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯। নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় আজ সরকারি ছুটি। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। মোট সাতজন মেয়র প্রার্থী এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৫৬ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ১৯টি আসনে ১২৮ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাজীপুরে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ২২ মে। ৬ জুন ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১৭ জুন ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৮ জুন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচারের সুযোগ পান প্রার্থীরা। ৪ জুলাই পর্যন্ত তাঁরা প্রচার চালান।মেয়র প্রার্থী: এ নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী রয়েছেন। এঁরা হলেন ১৪ দল-সমর্থিত আজমত উল্লা খান (প্রতীক দোয়াত-কলম) ও ১৮ দল-সমর্থিত এম এ মান্নান (টেলিভিশন), রিনা সুলতানা (প্রজাপতি), মেজবাহ উদ্দিন রুবেল (হাঁস), নাজিম উদ্দিন (ঘোড়া) ও আমান উল্লাহ (তালা)। জাহাঙ্গীর আলমের আনারস প্রতীক ব্যালটে থাকলেও তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।কাউন্সিলর প্রার্থী: ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কোনো নারী নেই। সংরক্ষিত ১৯ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২৮ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী।ভোটার ও ভোটকেন্দ্র: পুরুষ ভোটার পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৭৭৭ এবং নারী ভোটার চার লাখ ৯৯ হাজার ১৬২ জন। ৩২৯ দশমিক ৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই করপোরেশনে ভোটকেন্দ্র সংখ্যা ৩৯২। ভোট কক্ষের সংখ্যা দুই হাজার ২৮৯। এ ছাড়া দুটি অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র থাকবে।আইনশৃঙ্খলা: র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কিসমত হায়াৎ জানান, নির্বাচনী এলাকায় র্যাব-১-এর পক্ষ থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে পোশাকধারী এবং গোয়েন্দা মিলিয়ে ৮৪৭ জন র্যাবের সদস্য সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। নির্বাচনী এলাকাকে দুটি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি গাজীপুর সেক্টর অপরটি টঙ্গী সেক্টর। প্রতিটি সেক্টরকে তিনটি করে সাব সেক্টরে ও প্রতিটি সাব সেক্টরকে চারটি ডিটাচমেন্টে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ডিটাচমেন্টে একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে দুটি টহল দল সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দুটি ওয়ার্ডের জন্য দুটি করে টহল নিয়োজিত থাকবে। আপৎকালীন প্রতিটি সাব সেক্টরে দুটি টহলে ১৬ জন স্ট্রাইকিং রিজার্ভ হিসেবে নিয়োজিত থাকবে।পুলিশ সুপার মো. আবদুল বাতেন জানান, নির্বাচন উপলক্ষে নগরে ১২ প্লাটুন বিজিবি, আনসার, এবিপিএনসহ ১১ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাহনওয়াজ দিলরুবা খান জানান, ৫০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকায় টহলে থাকবেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।নির্বাচনী কর্মকর্তা: নির্বাচনে ৩৯২টি কেন্দ্রে ৩৯২ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন। দুই হাজার ২৮৯টি বুথের প্রতিটিতে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন। পোলিং কর্মকর্তা থাকবেন চার হাজার ৫৭৮ জন।ঝুঁকিপূর্ণ ২৩৫ কেন্দ্র: ২৩৫টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যা মোট ভোট কেন্দ্রের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ। গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রেগুলোর মধ্যে মহানগরের জয়দেবপুর থানা এলাকায় রয়েছে ১৬০টি এবং টঙ্গী মডেল থানা এলাকায় ৭৫টি। বাকি ১৫৭টি সাধারণ ভোট কেন্দ্র।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রগুলোর প্রতিটিতে অস্ত্রসহ সাতজন পুলিশ, তিনজন ব্যাটালিয়ন আনসার, অঙ্গীভূত আনসারের একজন পিসি, একজন এপিসি এবং লাঠিসহ ১২ জন সদস্যসহ মোট ২৪ জন সদস্য মোতায়েন থাকবে। আর সাধারণ ভোট কেন্দ্রে ২২জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।সাধারণ ছুটি ঘোষণা: গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, নির্বাচন উপলক্ষে আজ সাধারণ ছুটি থাকবে। কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বিমা খোলা থাকবে না। গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানাগুলোতে বাধ্যতামূলক ছুটি রাখতে হবে। কেউ চাইলেও সেদিন কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারবেন না। |
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন আজ। তাই নগরবাসীর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে বিরাজ করছে উৎসাহ-উদ্দীপনা। কিন্তু কেমন মেয়র চান গাজীপুরবাসী? আর নির্বাচন নিয়েই বা তাঁরা কী ভাবছেন? সেসব জানতেই গতকাল কথা হয় গাজীপুরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে।যেকোনো মূল্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চান নগরবাসী। এরপর একজন যোগ্য মেয়র চান, যিনি সবাইকে নিয়ে এই নগরকে একটি আধুনিক নগরে পরিণত করবেন। তাঁদের মতে, গাজীপুর একটি অপরিকল্পিত নগর। জলাবদ্ধতা, জঞ্জাল আর যানজট এই নগরের ভয়াবহ সমস্যা। নতুন মেয়র এগুলো দূর করবেন এমনটা চান নগরবাসী।গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এম এ বারী বলেন, ‘যাঁকে আমাদের কাছে যোগ্য মনে হবে, আমরা তাঁকেই নির্বাচিত করব। তাঁর কাজ হবে একটি মহাপরিকল্পনা নিয়ে গাজীপুরকে ঢেলে সাজানো।’ শহরের শিববাড়ী এলাকায় কথা হয় ভাওয়াল বদরে আলম কলেজের ছাত্র ইলিয়াস সরকার, রফিকুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও অনেকের সঙ্গে। ইলিয়াস বলেন, ‘গাজীপুরবাসী এমন একজন মেয়র চান, যিনি মানুষের কথা ভাববেন। যাঁকে সব সময় কাছে পাওয়া যাবে।’ ইলিয়াসকে সমর্থন দিলেন তাঁর বন্ধুরা। শহরের রাজবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী সজল খালেদ বলেন, ‘নির্বাচনের পর অনেকেই ফল মানতে চান না। আমরা চাই জয়-পরাজয় যাই হোক, সবাই ফল মেনে নেবেন।’ গাজীপুরের নারী ভোটারদের চাওয়াটা একটু ভিন্ন। শহরের দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকার গৃহবধূ তানিয়া আক্তার বলেন, ‘সমাজে নারীরা এখনো অনেক অবহেলিত। তাই এমন একজন মেয়র চাই, যিনি নারীদের উন্নয়নে কাজ করবেন।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হান্নান সরকার বলেন, ‘আমরা চাই গাজীপুর একটি তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নগর হোক। গড়ে উঠুক তথ্যপ্রযুক্তিকেন্দ্র। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ওয়াইফাই থাকুক।’ গাজীপুর শহরের মানুষের দাবি থেকে একটু ভিন্ন দাবি জানালেন প্রান্তিক এলাকার বাসিন্দারা। সিটি করপোরেশনের মধ্যে পড়লেও লক্ষ্মীপুর এলাকা অনুন্নত। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। এই এলাকার বাসিন্দারা চান তাঁদের এখানেও উন্নতির ছোঁয়া লাগুক। |
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নায়ক নেলসন ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে হাসপাতালে তিনি আসলে কেমন আছেন, তা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।ম্যান্ডেলা হাসপাতালে ‘বোধশক্তিহীন অবস্থায়’ রয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে এই খবর নাকচ করে দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট দপ্তর। অন্য কয়েকটি খবরে বলা হচ্ছে, ম্যান্ডেলার চেতনাশক্তি ঠিক আছে। তিনি কথা বলারও চেষ্টা করছেন।আদালতে ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যদের দাখিল করা কিছু নথিপত্র গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়। এতে দাবি করা হয়েছে, ম্যান্ডেলা ‘স্থায়ী বোধশক্তিহীন অবস্থায়’ রয়েছেন। যন্ত্রের সাহায্যে তাঁকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সাহায্য করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা ম্যান্ডেলার পরিবারকে তাঁর লাইফসাপোর্ট খুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। নথিতে বলা হয়েছে, ‘তাঁর (ম্যান্ডেলার) যন্ত্রণা দীর্ঘায়িত করার চেয়ে, ম্যান্ডেলার পরিবার এই বিকল্পকে খুবই বাস্তবিক একটা সম্ভাব্য পথ হিসেবে যাচাই করছে।’বৃহস্পতিবার প্রকাশ পাওয়া ওই নথিপত্রগুলো গত ২৬ জুন আদালতে দাখিল করা হয়। ম্যান্ডেলার তিন সন্তানের কবরস্থান নিয়ে সৃষ্ট পারিবারিক বিরোধের অংশ হিসেবে নথিগুলো আদালতে উপস্থাপন করেন তাঁর নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলার পক্ষের আইনজীবী ওয়েসলি হেইস। ম্যান্ডেলার তিন সন্তানকে এমজেভো গ্রামে সমাহিত করেছিলেন মান্ডলা, যাঁদের মধ্যে মান্ডলার বাবাও ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত মামলায় তিনি হেরে যান। আদালতের নির্দেশে তাঁদের দেহাবশেষ তুলে এনে ম্যান্ডেলার নিজ গ্রাম কুনুতে সমাহিত করা হয়েছে।ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল বৃহস্পতিবার বলেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থা মাঝেমধ্যে খারাপ হলেও ‘তিনি কষ্টে নেই। মাদিবা (ম্যান্ডেলার গোত্রীয় নাম) ‘ভালো আছেন’।ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এই বিভ্রান্তিতে যুক্ত হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্টের দপ্তরের একটি বিবৃতি। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ম্যান্ডেলা ‘স্থিতিশীল তবে সংকটাপন্ন’ অবস্থায় রয়েছেন। বিবৃতিতে আদালতে উপস্থাপিত ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যদের দাবি নাকচ করে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার মুখপাত্র ম্যাক মহারাজ বলেন, ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট বোধশক্তিহীন অবস্থায় রয়েছেন—এমন বক্তব্য সত্য নয় বলে জানিয়ছেন চিকিৎসকেরা।’এ ছাড়া হাসপাতালে ম্যান্ডেলার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সরাসরি অবগত আছেন এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ম্যান্ডেলার কিডনি ডায়ালিসিস করানো হচ্ছে এবং কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বললে তিনি চোখ খুলছেন। ম্যান্ডেলাকে কৃত্রিমভাবে বাঁচিয়ে রাখা হলেও তিনি বোধশক্তিহীন অবস্থায় নেই বলে দাবি করেছে ওই সূত্র।এদিকে বিবিসির সাংবাদিক অ্যান্ড্রু হার্ডিং গত বৃহস্পতিবার রাতে এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ম্যান্ডেলা এখনো ‘মনোযোগী’ আছেন। তিনি কথা বলার চেষ্টা করছেন, তবে নল লাগানো থাকায় তিনি কথা বলতে পারছেন না। ম্যান্ডেলার দীর্ঘদিনের বন্ধু ডেনিস গোল্ডবার্গ এসব কথা জানিয়েছেন। হার্ডিংয়ের টুইটার বার্তা মতে, গোল্ডবার্গ গত সোমবার হাসতাপালে ম্যান্ডেলাকে দেখতে গিয়েছিলেন।ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে গত ৮ জুন প্রিটোরিয়ার মেডি-ক্লিনিক হার্ট হাসপাতালে ভর্তি হন ম্যান্ডেলা। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত হন তিনি। ২৭ বছর জেলে কাটানোর পর ১৯৯০ সালে তিনি মুক্তি পান। তার চার বছর পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। দক্ষিণ আফ্রিকার গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা বিবেচনা করা হয়ে থাকে শান্তিতে নোবেলজয়ী ম্যান্ডেলাকে। এএফপি, এপি, দ্য স্টার। |
কে হচ্ছেন নবগঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নগরপিতা, তা আজই নির্ধারিত হবে। গত কয়েক দিনের প্রচারণায় উজ্জীবিত গাজীপুরের সাধারণ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী ১৪ দল-সমর্থিত আজমত উল্লা খান এবং ১৮ দল-সমর্থিত এম এ মান্নান বিজয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ থাকলেও দুজনই ফলাফল মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।গতকাল শুক্রবার বিকেলে আজমত উল্লা খান টঙ্গী পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এবং এম এ মান্নান টঙ্গী থানার দলীয় কার্যালয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। নির্বাচনের ফলাফলের ব্যাপারে আজমত উল্লা বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। ফলাফল যা-ই হোক জনগণের রায় আমি মেনে নেব।’ মান্নানের বক্তব্য, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হলে রায় মেনে নেব। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে কারচুপির চেষ্টা হলে জনগণ প্রতিরোধ করবে।’ মান্নান গতকাল বেলা তিনটায় টঙ্গীর চেরাগ আলীতে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সমেঞ্চলন করে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে আজমত উল্লার মতামত জানতে চাওয়া হলে বলেন, ‘সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। আমি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।’আজমত উল্লা অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হলেও ১৮ দল-সমর্থিত প্রার্থী সংবাদ সমেঞ্চলন করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, ‘প্রার্থী হিসেবে যেকোনো সময় আমি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে পারি।’শেষ মুহূর্তে দুই মেয়র প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন। আজমত উল্লার বক্তব্য, এম এ মান্নান গতকালও গাড়ির বহর নিয়ে মহড়া দিয়েছেন। এসব গাড়িতে ছিল অচেনা মুখ। এসব আচরণবিধির লঙ্ঘন। আর এম এ মান্নানের অভিযোগ, গতকালও পোড়াবাড়ি বাজারে ঘুরেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে তাঁরা কারা তিনি তা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি।সিটি করপোরেশনের গাছা ইউনিয়নে দুজন দলীয় কর্মী মান্নানের কর্মীদের আক্রমণে আহত হয়েছেন। আজমত উল্লার কর্মীদের হাতে ঘোগড়ায় পাঁচজন কর্মীর আহত হওয়ার অভিযোগ মান্নানের।আজমত উল্লা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গায় তাঁর পোস্টারের প্রতীকের ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এ কাজ করেছেন এম এ মান্নানের লোকেরা। তবে মান্নান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।পুলিশ সুপার মো. আবদুল বাতেন দুই দলের কর্মীদের আহত হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এসব খতিয়ে দেখছি।’ জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে দুই প্রার্থীর মধ্যে বিতণ্ডা শেষেও চলল। হুসেইন মুহমঞ্চদ এরশাদ সমর্থন দেওয়ার পরও জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা আপনার সঙ্গে নেই, এমন প্রশ্নের জবাবে আজমত উল্লা বললেন, ‘মান্নান শুরু থেকেই মিথ্যাচার করছেন। জাতীয় পার্টির টঙ্গী থানা ও গাজীপুর পৌর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক শুরু থেকেই আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। জাতীয় পার্টির সব ভোটই আমরা পাব।’এ বিষয়ে মান্নান বলেন, ‘জাতীয় পার্টির প্রার্থী স্থানীয় নেতাদের নিয়ে নিজ বাসভবনে সংবাদ সমেঞ্চলন করে আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। তাঁদের ভোট আমরাই পাব।’ দুজনই নির্বাচিত হলে কী করবেন সে পরিকল্পনার কথাও বলেছেন।অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে শেষ মুহূর্তটুকু ব্যয় করলেও বিজয়ের বিষয়ে একই ধরনের আশাবাদী দুজনই। মান্নান বললেন, ‘আমি বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’ আর আজমতের কথা, নিশ্চিত বিজয় হবে। |
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও গোপালদী পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ শনিবার। সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট দিয়ে ভোটাররা মেয়র নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।আড়াইহাজার পৌরসভা: আড়াইহাজার পৌরসভায় মোট ভোটার ১৭ হাজার ১৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ আট হাজার ৬৩৮ এবং নারী আট হাজার ৪৯৯ জন। ভোটকেন্দ্র নয়টি, বুথের সংখ্যা ৪৫টি। মেয়র পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ কাউন্সিলর ৪৯ জন হলেও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হাতেম আলীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। আড়াইহাজার পৌরসভায় মেয়র পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুন্দর আলী (চশমা), পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আলী (জাহাজ), সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ (টেলিভিশন), সম্প্রতি বিএনপি থেকে আওয়াামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান (তালা), কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মোজাম্মেল হক (টেবিল), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কাজী সুজন ইকবাল (কাপ-পিরিচ) ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য বিল্লাল হোসেন (মাইক)। অন্যদিকে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী পারভীন আক্তার (দোয়াত-কলম), উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি রুহুল আমিন মোল্লা (প্রজাপতি) মাঠে নামলেও পরে পারভীন আক্তারকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়ান। সাবেক ভিপি ও উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি কবির হোসেন (টেলিফোন) ও উপজেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক কাজী আবদুস সেলিম (আনারস) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।গোপালদী পৌরসভা: ভোটারের সংখ্যা ২৪ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৫৫২ জন এবং নারী ভোটার ১১ হাজার ৯৭৩ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নয়টি, বুথের সংখ্যা ৬০। মেয়র পদে তিন জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৭ ও সংরক্ষতি কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।মেয়র পদে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম (তালা), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম হালিম শিকদার (চশমা)। অন্যদিকে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী গোপালদী পৌর বিএনপির সভাপতি আবুল বাশার (কাপ-পিরিচ)।আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার মোর্শেদ জানান, দুটি পৌরসভায় পাঁচটি করে মোট ১০টি কেন্দ্রকে অতিগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ দল, পুলিশের ভ্রাম্যমাণ দল এবং চেকপোস্ট থাকবে।আড়াইহাজার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জালালউদ্দিন জানান, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। |
মিসরে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির সমর্থকেরা গতকাল শুক্রবার রাজধানী কায়রোতে বড় ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। তাঁরা সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের দিকে অগ্রসর হলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় গুলিতে তিনজন বিক্ষোভকারী নিহত ও বহু লোক আহত হন। এদিকে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপকে সমর্থনকারী মুরসি-বিরোধীরাও গতকাল রাজপথে ছিল।মুরসির পদত্যাগের দাবিতে বিরোধীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত বুধবার তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। সেনারা একটি অজ্ঞাত স্থানে মুরসিকে আটক রেখেছে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতের প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে। গত বৃহস্পতিবার তিনি শপথ নিয়ে শিগগির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে সরিয়ে সংবিধান স্থগিত করা হলেও সেনাবাহিনী জানিয়েছে, কারও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে তারা বাধা দেবে না, যতক্ষণ না তা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে।মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রধান মোহাম্মদ বাদি গতকাল বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বলেন, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসির ফিরে না আসা এবং তাঁকে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত তাঁদের বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে। লাখ লাখ জনতা রাজপথে অবস্থান করবে। গণমাধ্যমের খবরে এর আগে বলা হয়েছিল, মোহাম্মদ বাদিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তাদের রাজনৈতিক দল জাস্টিস অ্যান্ড ফ্রিডম পার্টির হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক গতকাল জড়ো হন কায়রোর রাবা আল-আদাওয়িবা মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদের কাছে। গত বৃহস্পতিবার ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে শুক্রবার দিনটিকে ‘প্রত্যাখ্যান দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়ে সাবাইকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়। ব্রাদারহুডের বক্তব্য, একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সেনাবাহিনী এভাবে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে না। সেনাবাহিনীর ওই পদক্ষেপকে তারা প্রত্যাখ্যান করছে।বিক্ষোভকারীদের একজন বিবিসিকে বলেন, ‘সারা দেশ থেকে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি, লক্ষ্য একটাই—গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে পুনর্বহাল করতে হবে।’ অনেকে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভকারীরা রিপাবলিকান গার্ডের সদর দপ্তরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের ধারণা, আটকের পর ওই ভবনেই মুরসিকে রাখা হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, ‘রিপাবলিকান গার্ড বিশ্বাসঘাতক, মুরসিই আমাদের প্রেসিডেন্ট’। একপর্যায়ে দুই পক্ষে গোলাগুলি শুরু হয়। এতে তিনজন নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে বিবিসির এক সাংবাদিক জানান, সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে। এদিকে গতকাল কায়রোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সেনাবাহিনীর ট্যাংক ও সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়। কায়রোর আকাশে মহড়া দেয় সেনাবাহিনীর জঙ্গি বিমান।এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার মুরসিবিরোধীদের সঙ্গে তাঁর সমর্থকদের সংঘর্ষের পর মুরসির নিজের শহর শারিকিয়া প্রদেশের জাগাজিগেও গতকাল সেনা মোতায়েন করা হয়। ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষে ৫০ জনের মতো আহত হন।গতকাল মিসরের সদস্যপদ স্থগিত করেছে আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ)। সংস্থার শান্তি ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এইউর নীতি অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্র ও সংবিধান পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত মিসরের সদস্যপদ স্থগিত থাকবে।মুরসিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন দেশটির অন্যতম বিরোধী নেতা মোহাম্মদ আল-বারাদি। তিনি বলেছেন, নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সেনাবাহিনীর এভাবে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা কষ্টদায়ক। তবে এর মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তা ছাড়া মুরসি নিজেই তাঁর ক্ষমতার বৈধতাকে খাটো করে ফেলেছিলেন। এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি। |
নারায়ণগঞ্জে গুম, হত্যা, ডাকাতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে সমাবেশ ও কালো পতাকা মিছিল করেছে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে সমাবেশে সংগঠনের আহ্বায়ক ও নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, ‘শামীম ওসমান আমাকে হত্যা করে বিএনপির সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিনের ওপর দোষ চাপাবে।’রফিউর রাব্বি আরও বলেন, ‘আমরা এই শহর থেকে খুনি-গডফাদার-ভূমিদস্যু-চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করে পরবর্তী প্রজন্মের বাসযোগ্য করে নগর গড়ে তুলব। নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মায়ের বুক খালি হতে দেওয়া হবে না। নারায়ণগঞ্জ এমন এক শহরে পরিণত হয়েছে, যেখানে খুন হলে শহর উত্তপ্ত হয় না, বরং খুন হলো কেন—এ কথা বললে শহর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।’নাম উল্লেখ না করে একটি গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রফিউর রাব্বি বলেন, তারা সরকারের উচ্চমহলে পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, আগামী নির্বাচনে রফিউর রাব্বি অংশ নেবে। এ কারণে বিএনপির সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন তাঁকে হত্যা করবে। আর এর জন্য আসামি করা হবে শামীম ওসমানকে।রফিউর রাব্বি কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হচ্ছে, শামীম ওসমান আমাকে হত্যা করবে। আর দোষ চাপাবে গিয়াসউদ্দিনের ওপর।’ টাকার বিনিময়ে এ ধরনের প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।সমাবেশে বক্তব্য দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হালিম আজাদ, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, জেলা বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাস, জেলা ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতির সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক হিমাংশু সাহা প্রমুখ।সমাবেশ শেষে কালো পতাকা মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। |
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল ও আমদা বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকার সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে চিকিৎসা ক্যাম্প করে রানা প্লাজা ধসে আহত কমপক্ষে ৭০০ জনকে চিকিৎসা সেবা দেয়। তাঁদের মধ্যে আটজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।রানা প্লাজা ধসে মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছিলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সালমা বেগম। ভবনধসের সাড়ে তিন ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করা হয়। এরপর দুই দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েও টাকার অভাবে চিকিৎসা শেষ করতে পারেননি। পরে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ।সালমার মতোই আহত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষ করতে পারেননি বীনা, নুরজাহান ও শুভ। গত ৭ জুন তাঁদের ভর্তি করা হয়েছিল রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে। এক মাসের চিকিৎসায় প্রায় সুস্থ হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।ভবন ধসে কোমরের হাঁড় ভেঙে যায় রত্নার। চার ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। প্রায় দেড় মাস চিকিৎসার পর গত ৪ জুন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি এখনো হাঁটতে পারেন না। গতকাল হুইল চেয়ারে করে এসেছিলেন অধরচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ে। চিকিৎসকেরা দেখে তাঁকে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন।একইভাবে আহত হওয়ার পর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ না হয়েই বাড়িতে ছিলেন বিউটি, ঝর্না, দ্রুপদী, সুমিতা, গীতা রানী, আসাদুজ্জামান ও বুলবুলি। এই সাতজনকেও গতকাল হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে গতকালই ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদের দু-এক দিনের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হবে।জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের পরিচালক মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রানা প্লাজার ভবনধসে আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য গত ৭ জুন সাভারের অধরচন্দ্র বিদ্যালয়ে চিকিৎসা ক্যাম্প করা হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে রোগীদের দেখে মনে হয়েছে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তাঁদের অনেককেই উন্নত চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। এ কারণে প্রথম পর্যায়ে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাঁরা এখন সুস্থ। গতকাল আরও আটজনকে হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করি, তাঁরাও চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠবেন।’ |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সভায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম সম্পর্কে কয়েকজন সিনেট সদস্যের তোপের মুখে পড়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফ। সমালোচনার মুখে উপাচার্য একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ‘মাফিয়া’ বলে উল্লেখ করেন।সিনেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আ ন ম মুনির আহমদ সাংবাদিকেরা অসত্য কিছু লিখলে উপাচার্যকে প্রেস কাউন্সিলে মামলা করার পরামর্শ দেন। এর জবাবে উপাচার্য বলেন, প্রেস কাউন্সিলও সাংবাদিকদের দখলে। গতকাল শুক্রবার ছিল সিনেটের ২৫তম অধিবেশন। অধিবেশন চলাকালে সিনেট সদস্য ও সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম সম্পর্কে উপাচার্যের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন। তিনি গতকাল প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘অনিয়মের পাহাড় যে বিশ্ববিদ্যালয়ে’ শীর্ষক প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলেন, ‘থার্ড ক্লাস পেয়েও রাজনীতি করা যায়। এমনকি সাংসদও হওয়া যায়। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে মানের প্রশ্নে কোনো রকম আপস করা যাবে না।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।আরেক সিনেট সদস্য মঞ্জুরুল আমীন চৌধুরীও শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের সমালোচনা করেন। এর জবাব দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এ সময় মঞ্জুরুল আমীন পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ পরিবেশন করা হলে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ করছি না কেন?’ এর জবাব দেননি উপাচার্য।একপর্যায়ে সিনেট সদস্য আ ন ম মুনির আহমদ শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম সম্পর্কে তীব্র সমালোচনা শুরু করলে উপাচার্য ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে এ বিষয়ে কথা না বলার অনুরোধ করেন। কিন্তু মুনির আহমদ এ প্রসঙ্গে বক্তব্য চালিয়ে যান। তিনি বলেন, অযোগ্য ব্যক্তিরা নিয়োগ পেলে যোগ্য ব্যক্তিরা বঞ্চিত হন। তা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর-বাইরে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। তিনি শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতার সঙ্গে আপস না করতে উপাচার্যের কাছে অনুরোধ জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন করেন, ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ে (আইইআরটি) যেসব শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁরা কি যোগ্য? জবাবে উপাচার্য বলেন, তাঁরা যোগ্য এবং তাঁদের যোগ্যতা প্রকাশ করা হলে অনেকেই বিব্রত হবেন। উল্লেখ্য, ওই ইনস্টিটিউটে উপাচার্যের ছেলেসহ একটি কলেজের ১৮ শিক্ষককে কৌশলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।উপাচার্যের সভাকক্ষে গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত সিনেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী অর্থবছরের জন্য ১৩৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার বাজেট পেশ করা হয়। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা। তবে গবেষণার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র নয় লাখ টাকা। বাজেটের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরতে চাইলে সময়স্বল্পতার কথা বলে সিনেট সদস্য মনসুর উদ্দিন আহমদকে থামিয়ে দেন উপাচার্য। এতে মনসুর উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।সিনেট সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালাউদ্দিন আকবর প্রমুখ। |
চাষির হাতে লাঙল, বলদের কাঁধে জোয়াল। কোথাও আবার বলদ না পেলে চাষিকেই টানতে হয় জোয়াল। ফসল ফলাতে এভাবে মানুষে-বলদে হাড়খাটুনিই চলে আসছে যুগযুগান্তর ধরে। তবে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারও তো নতুন নয়। যন্ত্রের ব্যবহার কৃষিতে এনেছে গতি। নিমেষেই চাষের উপযোগী হচ্ছে খেতের পর খেত। এ দেশে আমদানি করা কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারই বেশি। তবে বেশি মূল্য এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশীয় কলাকৌশল রপ্ত করে নানা ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির চেষ্টা লক্ষণীয়। এ প্রচেষ্টায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা মো. আবুল মিয়ার নাম আলাদাভাবে উল্লেখ করতেই হয়।আবুল মিয়া যে যন্ত্রটি তৈরি করেছেন, তার নাম ‘পাওয়ার টিলার’। যন্ত্রটি দিয়ে জমি চাষ করা হয়। এই যন্ত্রটি বাজারজাত করা হয় ২০১০ সালে বোরো মৌসুমের শুরুতে। সহজে ব্যবহারের উপযোগী এবং দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় সিলেট অঞ্চলের কৃষকদের কাছে যন্ত্রটি পরিচিতি পেয়েছে ‘আবুল মেশিন’ নামে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও জুটেছে আবুলের। পেয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার’। ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আবুল মিয়ার হাতে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় এ পুরস্কার তুলে দেন।গল্পের শুরু: দক্ষিণ সুরমার চরমোহাম্মদপুর গ্রামে আবুল মিয়ার বাড়ি। তিন ভাই ও দুই বোন। ভাইদের মধ্যে বড় তিনি। পরিবারে বাবা নেই, তাই সংসারের হাল ধরতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে কাজ নেন। কিন্তু তাতে রোজগার ভালো হচ্ছিল না। পাড়ি দেন সৌদি আরব। সেখানে গিয়ে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানায় এক বছর ১৮ মাস কাজ করে রপ্ত করেন কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরির নানা কৌশল। দেশে ফিরে বাড়ির সামনে ‘আবুল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস’ নামে একটি কৃষি যন্ত্রাংশ তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা খোলেন। আবুল বলেন, ‘মানুষ বিদেশ থেকে টাকা নিয়ে ফেরে। আমি ফিরেছি কাজ শিখে। বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সময় ওই কারিগরি শিক্ষাটাই ছিল আমার পুঁজি, আর হাতে ছিল ৩০০ টাকা। এই দিয়েই শুরু।’আবুল শুরুতে বিদেশি কৃষিযন্ত্র দেশীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি করে তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করেন। তাঁর তৈরি যন্ত্র ব্যবহারে কৃষকদের সাড়া দেখে মন দেন নতুন যন্ত্র তৈরির কাজে। ১৯৯৯ সালে বোরো মৌসুমে আবুল তৈরি করেন ধান মাড়াইয়ের কল। বাজারে যেটি ২৯ হাজার টাকায় মেলে, আবুল সেটির দাম রাখেন ২৮ হাজার টাকা। এরপর আরও চিন্তা করে প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ধান মাড়াইয়ের কলকে ছোট আকৃতি দিয়ে তৈরি করেন। ২০০২ সালে বাজারে আসা এই যন্ত্রটির দাম পড়ে ১৮ হাজার টাকা।বড় পরিসরে: ২০০৪ সালে ‘আবুল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস’ পরিণত হয় ‘আবুল ইন্ডাস্ট্রিজে’। ছোট দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে নতুন কৃষিযন্ত্র তৈরিতে পুরোদমে কাজে লেগে যান। নিয়মিত ১১ জন ও অনিয়মিত ১৯ জন শ্রমিক নিয়ে শুরু করেন। বানানো হয় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ মিকচার মেশিন, ব্লেন্ডার মেশিন। ২০০৫ সালে তৈরি করেন পাওয়ার টিলার। ওই বছরই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রাংশ প্রদর্শনী মেলায় আবুল তাঁর পাওয়ার টিলার প্রদর্শন করে পরবর্তী বছর থেকে বাজারজাত শুরু করেন। তখন চাহিদা অনুযায়ী প্রতিবছর একটি-দুটি করে বানাতেন। এভাবে চলে ২০১০ সালের বোরো মৌসুম পর্যন্ত। তাঁর তৈরি যন্ত্র কৃষকদের কাছে জনপ্রিয়তা পেলে উপজেলা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাঠানো হয় পরের বছর। এক বছর পর আবুল পুরস্কৃত হন।দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু নাসের প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে আমদানি করা পাওয়ার টিলারের দাম ৩৯ হাজার টাকা। আবুলের পাওয়ার টিলারের দাম ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। দেশীয় প্রযুক্তি ও দামের দিক দিয়ে সাশ্রয়ী হওয়ায় আবুলের যন্ত্র পুরস্কৃত হয়।আবুল যেন ‘জীবন্ত ইঞ্জিন’: এলাকার কৃষকেরা বলেন, আবুল ‘মানুষটাই একটা মেশিন’। এ কথার সত্যতা দেখা গেল সম্প্রতি একদিন আবুলের কারখানায় গিয়ে। সকালবেলা নাশতা করে কারখানার কাজে মনোযোগী হয়েছিলেন; কাজের ফাঁকে খেয়েছেন দুপুরের খাবার। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে চলল, আবুল কখনো ঝালাই করছেন, আবার শ্রমিকের হাত থেকে হাতুড়ি নিয়ে নিজেই নেমে পড়েছেন লোহালক্কড়কে যন্ত্রে পরিণত করার কাজে।মাথায় অনেক পরিকল্পনা আর হাতে অনেক কাজ তাঁর। চল্লিশোর্ধ্ব আবুল রসিকতা করে জানান, বিয়ে করার সময়ও পাচ্ছেন না। তিনি বললেন, ‘আমার এই খাটাখাটি দেখে মানুষ আমারে মেশিন কয়। আমি আসলে মেশিনের মতোই খাটি। আগের দিন ভোরে বাড়ি গেছি, সকাল সকাল আবার কারখানায় ফিরছি। বাড়ি ফিরমু কোনসমে, কইতে পারতাম নায়।’আবুলের সঙ্গে কারখানায় সকাল-দুপুর কাটিয়ে খেতে তাঁর যন্ত্র কেমন চলছে, তা দেখতে গত বোরো মৌসুমের শুরুতে একদিন বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বোরো ফসলি কিছু এলাকায় যাওয়া। সেখানে গিয়ে দেখা গেল আরেক চিত্র। আবুলকে তাঁর মেশিনের মতোই সমাদর করছেন মাঠের কৃষকেরা। জালালপুর এলাকার বোরো জমির কাদাজলের খেতে নেমে পাওয়ার টিলার চালানোর হাতেখড়ি দেন আবুল।যন্ত্র তৈরির উপকরণ: ‘আবুল মেশিন’ নামে পরিচিত পাওয়ার টিলার যন্ত্র তৈরিতে একেকটিতে মোট ১৫৫ কেজি লোহার দেশীয় কাঁচামালের প্রয়োজন পড়ে। পাইপ, অ্যাঙ্গেল, শিট ও পাত—এই চার রকমের উপকরণ লাগে। এসব কাঁচামাল ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে কেনা হয়। একেকটি যন্ত্র একজন কারিগরের তত্ত্বাবধানে তিনজন কর্মী মিলে ছয় দিনে তৈরি করতে সক্ষম। প্রতিটি যন্ত্রের ওজন প্রায় ১৬৫ কেজি। এই যন্ত্র মাটির নয় সেন্টিমিটার গভীর পর্যন্ত খুঁড়তে সক্ষম।সাশ্রয়ী মূল্য আর সহজে ব্যবহারের জন্য চাষিরা ‘আবুল মেশিন’ পছন্দ করেন—এ কথা জানিয়ে দক্ষিণ সুরমার দুবাগ হাওরের প্রবীণ চাষি মিজানুর আলী বলেন, ‘তার মেশিনরে চিননের লাগি (পরিচিতির জন্য) আমরা আবুল মেশিন কইয়া ডাকি। খেতে চলতে কোনো অসুবিধা অইলে খবর দিলে আবুল নিজেই ছুটে আয়।’পুঁজির অভাব: গত বোরো মৌসুমে অন্তত ১৩০টি যন্ত্র তৈরি করে বিক্রি করেছেন আবুল। তাঁর তৈরি যন্ত্র নিরবচ্ছিন্নভাবে আট বছর সচল থাকবে বলে জানান আবুল। তিনি বলেন, ‘আমি আমার কাজ দিয়ে পুরস্কার পাইছি। এটা সম্মানের। এই পুরস্কারের সঙ্গে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুব্যবস্থা সরকার করে দিলে আমি কৃষকের উপকারী নতুন অনেক যন্ত্র বানাতে পারতাম।’আবুলের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুঁজির অভাব একধরনের প্রতিবন্ধকতা—এ কথা জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁর পুঁজির বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহায়তা চাইব। |
টাঙ্গাইলের যুবলীগের নেতা আতিকুল ইসলাম ওরফে মোর্শেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রেজাউল করিম হত্যা মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সুপারিশ করেছিলেন।রেজাউল হত্যা মামলা প্রত্যাহার-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য টাঙ্গাইলের সরকারি অভিযোক্তা (কৌঁসুলি) এস আকবর খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে ১৩ জুন প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতায় এ-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে জেলার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের বরাবর আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাহী হাকিম ভাস্কর দেবনাথ ২ জুলাই এ-সংক্রান্ত লিখিত তথ্য সরবরাহ করেন।সরবরাহ করা তথ্য থেকে জানা গেছে, মোর্শেদ নিজেকে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য দাবি করে রেজাউল হত্যা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন জানান। তাঁর ওই আবেদনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান খান সুপারিশ করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইলের অভিযোক্তা এস আকবর তাঁর লিখিত মতামত দেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং নির্যাতনমূলক হিসেবে দাবি করে তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছেন। এ অবস্থায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারঘোষিত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’ ২০১০ সালের ৯ আগস্ট মামলা প্রত্যাহার কমিটির সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয় এবং মামলাটি প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়। |
গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে শিববাড়ি পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছিল তীব্র যানজট। যানজটের কারণে পাঁচ মিনিটের পথ পার হতে লেগে যায় প্রায় এক ঘণ্টা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।এলাকার লোকজন জানান, গতকাল সকাল থেকে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে গাজীপুর শহরের শিববাড়ী পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে ওই সড়কে চলাচলরত যানবাহনের যাত্রীরা।গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের মনোবিজ্ঞানের প্রদর্শক সমরেন্দ্র সাহা গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সহকারী পোলিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সকাল নয়টার দিকে তিনি নির্বাচনী-সামগ্রী বুঝে নিতে জেলা শহরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন ব্যালট পেপার ও বাক্স দেওয়া হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে তিনি জেলা শহর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন। কিন্তু জেলা পুলিশ লাইন এলাকায় গিয়ে তাঁকে পড়তে হয় দীর্ঘ যানজটে। পাঁচ মিনিটের রাস্তা পার হতে তাঁর সময় লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা।জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় এক হাজার গাড়ি রিকুইজিশন করা হয়। একসঙ্গে এত গাড়ির পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় পুলিশ লাইনের সামনের সড়কের দুই পাশে সেসব গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে সেখান থেকে একের পর এক গাড়ি নির্ধারিত কেন্দ্রে যাওয়ার সময় অন্য যানবাহন চলাচলে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। গাড়িগুলো চলে যাওয়ার পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। |
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দোগাছিতে মাওয়া সেতু প্রকল্প এলাকা থেকে গতকাল শুক্রবার সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বিপ্লব মোল্লার (২৬) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।পুলিশ জানায়, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে দোগাছিতে বালুর নিচে বিপ্লবের লাশ চাপা দেওয়া ছিল। গত কয়েক দিনের বর্ষণে বালু সরে গিয়ে লাশটি বের হয়ে আসে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে আশপাশের লোকজন লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ পচা-গলা লাশটি উদ্ধার করে। বিপ্লবের পরিবারের লোকজন শার্ট-প্যান্ট ও আংটি দেখে লাশটি শনাক্ত করে। |
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গুদামে নদীপথে নিজেদের ছোট জাহাজে পণ্য পরিবহন করছে মেঘনা, সিটি, আবুল খায়েরসহ বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলো। এই সুযোগ আর বেশিদিন থাকছে না। এর পরিবর্তে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে আমদানি পণ্যের অন্তত ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলকভাবে নৌ খাতের দুটি সংগঠনের আওতাভুক্ত জাহাজে পরিবহন করতে হবে। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর এমন বাধ্যবাধকতা রেখে একটি নীতিমালা তৈরি করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। গত ২০ এপ্রিল বন্দর ভবনে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে এই নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর জোবায়ের আহমেদকে আহ্বায়ক করে গঠিত ১২ সদস্যের একটি কমিটি এই নীতিমালা প্রণয়ন করে। ‘সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের নিবন্ধিত লাইটার জাহাজযোগে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরসমূহে পণ্য পরিবহন নীতিমালার’ ১২(৯) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সিমেন্ট কারখানার মালিকদের আমদানি করা ক্লিংকার এবং অন্যান্য পণ্যের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যক্তিমালিকানাধীন জাহাজে পরিবহন করতে হবে। এক কারখানার জাহাজ অন্য কারখানার জন্য ভাড়া নিতে হলে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নির্ধারিত ভাড়ায় পণ্য পরিবহনের চুক্তি করতে হবে।জানতে চাইলে নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক কমোডর জোবায়ের আহমেদ গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার বিপরীতে কোনো জাহাজ নিবন্ধন দেওয়া হয়নি, ব্যক্তিমালিকানায় দেওয়া হয়েছে। এ কারণে ব্যক্তিমালিকানাধীন জাহাজ পরিচালনার বিধিবিধান মানতে হবে। তবে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল যাতে এই খাতকে জিম্মি করতে না পারে, সে জন্য একটি তদারকি কমিটি গঠনের কথা বলা আছে নীতিমালায়। আর ৫০ শতাংশ পণ্য পরিবহনের বিষয়টি দুই পক্ষের সমঝোতা অনুযায়ী কম-বেশিও হতে পারে। আমদানিকারকেরা বলছেন, নিজস্ব জাহাজে বন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জে টনপ্রতি পণ্য পরিবহনের খরচ ২০০-২৫০ টাকা। ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল থেকে জাহাজ ভাড়া নিলে পরিশোধ করতে হয় ৫০৩ টাকা।জানতে চাইলে মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, নীতিমালা প্রণয়নের সময় কোনো চেম্বারের প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এই নীতিমালা কাঁচামাল ও পণ্য সরবরাহব্যবস্থাকে বিপদের মুখে ফেলে দেবে। নতুন নীতিমালায় ‘বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এবং ‘কোস্টালশিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ নামে জাহাজ মালিকদের দুটি সংগঠনের প্রশংসা এবং অবদানের কথা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই দুটি সংস্থার জাহাজ ‘ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল’ থেকে পরিচালিত হয়। অন্যদিকে শিল্পগ্রুপের মালিকেরা পণ্য খালাসে নিজস্ব স্টিভিডোরিং ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং নিজস্ব জাহাজে পণ্য পরিবহনকে ‘একচেটিয়া’ আচরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।নীতিমালার নেপথ্যে: নৌ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নিয়ন্ত্রণাধীন লাইটার জাহাজে নামে-বেনামে বিনিয়োগ আছে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের। নৌপথে পণ্য পরিবহন লাভজনক হওয়ায় এই সংস্থার অধীন জাহাজের সংখ্যাও বাড়তে থাকে দ্রুত। তিন বছরে জাহাজের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে এক হাজার ১৫০। কিন্তু এসব জাহাজে পণ্য পরিবহন ভাড়া দফায় দফায় বৃৃদ্ধি এবং সময়মতো জাহাজ বরাদ্দ না পাওয়ায় অনেকেই নিজেদের পণ্য পরিবহনের জন্য জাহাজ কিনতে শুরু করেন। এ রকম জাহাজের সংখ্যা এখন ১৭৫টি।শিল্পমালিকদের জাহাজের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন জাহাজের ব্যবসায় ধস নামে। বাড়তি মজুরি পরিশোধের দাবিতে গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি করে। একপর্যায়ে বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের পুরোটাই ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের আওতাধীন জাহাজে পরিবহনের জন্য চাপ দিতে ব্যক্তিমালিকানাধীন জাহাজের মালিকেরাও অঘোষিত কর্মবিরতি শুরু করেন। এই জাহাজমালিকদের সুরক্ষা দিতেই নতুন নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। |
খুনগোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মেহেদী হাসান (২২) নামে এক তরুণ খুন হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মুকসুদপুর থানা-পুলিশ এলাকাবাসীর কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ওই দিন রাতে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছে। মেহেদী হাসান ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত গ্রামের চান মোল্লার ছেলে। মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস হোসেন বলেন, লাশের হাত-পা ও মুখ বাঁধা ছিল। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১৫-১৬টি কোপের চিহ্ন রয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিতরণফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ১০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়মন আকবর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহামঞ্চদরুহুল কুদ্দুস। ফরিদপুর অফিসডাকাতিনড়াইলের লোহাগড়া কলেজপাড়ার সাইফুল ইসলামের বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতেরা প্রায় ১০ ভরি সোনার গয়না ও ২৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। গৃহকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ১০-১২ জন ডাকাত গ্রিল কেটে ঘরে ঢোকে। তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে ঘরের সবাইকে জিমিঞ্চ করে মালামাল লুট করে নেয়। লোহাগড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধিভারতীয়কে হস্তান্তরকারাভোগের পর অমল বর্মণ (১৮) নামের এক ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্ট দিয়ে তাঁকে ভারতের হিলি ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অমল ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার মানিকর গ্রামের অখিল বর্মণের ছেলে। হিলি ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাজা মুদ্দিন বলেন, জয়পুরহাট জেলা কারাগারে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় জয়পুরহাটের পুলিশ ও কারাগার কর্তৃপক্ষ গতকাল সকাল ১০টায় অমলকে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করে। দুপুর ১২টার দিকে অমলকে ভারতের হিলি ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি পরেশ মণ্ডলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় বিজিবি ও বিএসএফের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিরায়গঞ্জে সম্মেলন‘প্রত্যেক শিশুই স্বতন্ত্র, তাই প্রত্যেক শিশুই সুন্দর’—এ স্লোগান নিয়ে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় গুড নেইবার্স বাংলাদেশ আয়োজিত প্রথম জাতীয় শিশু পরিষদের সম্মেলন হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল নয়টায় উপজেলার ঘুড়কায় গুড নেইবার্স বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ কার্যালয়ে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন গুড নেইবার্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুং হিয়ং লি। জাতীয় শিশু পরিষদের সভাপতি সামিয়া খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ শাহ্, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক এ এস মাহমুদ, গুড নেইবার্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনা কর্ন প্রমুখ। রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিপুকুরে ডুবে মৃত্যুপাবনার চাটমোহর উপজেলার কুবিরদিয়া গ্রামে গতকাল শুক্রবার দুপুরে পানিতে ডুবে শিলা খাতুন (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে ওই গ্রামের সেলিম হোসেনের মেয়ে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি বাড়ির আঙিনায় খেলতে খেলতে হঠাৎ পুকুরে পড়ে ডুবে যায়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বেলা দুইটার দিকে পুকুরে তার লাশ ভেসে ওঠে। পাবনা অফিসসংবর্ধনামৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা-বাগানে গতকাল শুক্রবার চা-শ্রমিক মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। চা-শ্রমিকদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া সন্তানদের সংগঠন ‘উত্তরণ’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-২ আসনের সাংসদ নওয়াব আলী আব্বাস খান এবং সভাপতিত্ব করেন শমশেরনগর চা-বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি রামস্বামী রাজভর। অনুষ্ঠানে শমশেরনগর, আলীনগর ও চাতলাপুর চা-বাগানের ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান এবং ওই তিনটি চা-বাগান থেকে ২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৬৫ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কমলগঞ্জ প্রতিনিধিকর্মশালাকুমিল্লার কোটবাড়িতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর (বার্ড) ড. আখতার হামিদ খান মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার সকালে অর্থের অবৈধ লেনদেন (মানি লন্ডারিং) প্রতিরোধবিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড কুমিল্লা অঞ্চলের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান মোজাম্মেল হক। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি ব্যাংকের নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক সেলিম নজরুল হক চৌধুরী, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মাহবুব আলম, উত্তরা ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক কুদরত হায়াত খান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কাদের খান। নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লাবৃক্ষ মেলাচাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী ফলদ বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ এম রফিকুল ইসলাম। ইউএনও সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ শুক্কুর পাটোয়ারী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু আদনান। মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি |
পিস্তলের একটি ম্যাগাজিন, আটটি গুলিসহ দুজনকে আটক করেছে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার পুলিশ। কিন্তু এ ঘটনায় অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়নি। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করা হয়েছে সাধারণ ডায়েরি (জিডি)। আর আটক দুজনকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে। ঘটনা জানাজানি হলে দুই দিন পর অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়।গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের একজন আওয়ামী লীগের কামরাঙ্গীরচর থানার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁর নাম জাহাঙ্গীর আলম। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের চাপের কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দেয়নি পুলিশ।পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১২ জুন বিকেলে কয়লারঘাট এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর ও মো. কালাম নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পরে কালামের বাসা থেকে পিস্তলের গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।স্থানীয় লোকজন জানান, জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের কামরাঙ্গীরচর থানার সভাপতি আবুল হোসেন সরকারের অনুসারী। তিনি এলাকায় মাদক, অস্ত্র ব্যবসা, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত।জাহাঙ্গীরের পক্ষে তদবির করতে থানায় যান আবুল হোসেনসহ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। তদবিরের মুখে পুলিশ আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা না দিয়ে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠান।জানতে চাইলে ১৩ জুন রাতে কামরাঙ্গীরচর থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আটটি গুলি ও ম্যাগাজিন হাতেনাতে পাইলে তো মামলাই হইত। আমরা এখনো হানড্রেড পারসেন্ট শিওর না। তবে জিডিতে গুলি ও ম্যাগাজিনের কথা উল্লেখ আছে।’অস্ত্র মামলা না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নূরুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কবি তো এখানেই নীরব। ১২ জুন বিকেলে তাঁদের গ্রেপ্তার করেছি। গুলি ও ম্যাগাজিন পাইছি ঠিক। কিন্তু কার কতটুকু সংশ্লিষ্টতা, তা তদন্ত করে দেখার জন্য জিডি করেছি।’এরপর ১৪ জুন কামরাঙ্গীরচর থানায় গিয়ে জানতে চাইলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের বাসা কামরাঙ্গীরচরের কয়লারঘাট এলাকায়। একটু দূরে একটি বাসায় থাকেন কালাম। কালামকে মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে জাহাঙ্গীর ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। কালাম প্রাথমিকভাবে চার হাজার টাকা দিয়ে রক্ষা পান।’সিরাজুল বলেন, ‘১২ জুন কালামের কাছ থেকে বাকি ১৬ হাজার টাকা দাবি করেন জাহাঙ্গীর। এতে রাজি না হওয়ায় কালামকে কয়লারঘাটে একটি ক্লাবে আটকে নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে কালামকে ফাঁসানোর জন্য পরিচিত এক পুলিশ সদস্যের কাছে ফোন করে জাহাঙ্গীর জানান, কালামের বাসায় গুলি ও ম্যাগাজিন আছে। জাহাঙ্গীর পুলিশসহ কালামের বাসায় গিয়ে তা উদ্ধার করেন। পরে জাহাঙ্গীরকেও আটক করা হয়। তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া আটটি গুলি আট ধরনের। নিশ্চয়ই এগুলোর আলাদা অস্ত্র আছে। জাহাঙ্গীর তা জানে। বোঝাই যাচ্ছে, এরা অস্ত্রের ব্যবসা করে।তাহলে জিডি করলেন কেন—জবাবে পরিদর্শক (তদন্ত) বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি।’ আওয়ামী লীগের কামরাঙ্গীরচর থানার সভাপতি আবুল হোসেনসহ বিভিন্নজনের তদবির সম্পর্কে জানতে চাইলে সিরাজুল বলেন, ‘হ্যাঁ, নেতারা থানায় এসেছিলেন।’থানায় যাওয়ার কথা স্বীকার করেন আবুল হোসেনও। তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আমার দেশের লোক। আমাদের দল করে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিট সেক্রেটারি সে।’ তাঁদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে জাহাঙ্গীর বিভিন্ন অপকর্ম করার অভিযোগ অস্বীকার করেন আবুল হোসেন।এ বিষয়ে প্রথম আলোর খোঁজখবর করার একপর্যায়ে ১৪ জুন রাত পৌনে ১২টার দিকে এসআই নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে কালাম ও জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, তাঁরা দুই আসামির রিমান্ড চেয়েছিলেন, আদালত শুধু কালামের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। |
ভাষা নিয়ে জাতীয় উৎসব। সেই উৎসবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার মধ্য দিয়ে দেশকে ভালোবাসারও অঙ্গীকার করল। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন স্কুল বন্ধ। তা সত্ত্বেও রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাস নবীন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা। সারা দেশ থেকে এসেছিল তারা এইচএসবিসি-প্রথম আলো ভাষা প্রতিযোগের জাতীয় উৎসবে যোগ দিতে।সকাল আটটা থেকেই শুরু হয়েছিল নিবন্ধনের পালা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নয়টায়। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুআরা বেগম জাতীয় পতাকা এবং ভাষা প্রতিযোগের উপদেষ্টা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ভাষা প্রতিযোগের পতাকা উত্তোলন করেন। মঞ্জুআরা বেগম উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করে বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের ভাষার প্রতি মমত্ববোধ বৃদ্ধি এবং শুদ্ধ করে শেখার প্রতি আগ্রহী করবে।’আনিসুজ্জামান শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘ভাষার মধ্যে অসাধারণ রহস্য আছে। সেটা ব্যাকরণের চেয়েও বেশি কিছু। তোমরা ভাষাকে ভালোবেসেছ বলেই আজ এখানে এসেছ। ভাষাকে ভালোবেসে দেশকে ভালোবাসবে। ভাষা, দেশ ও মানুষের জন্য কষ্ট স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকবে।’এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মাহবুবুল হক, বিশ্বজিৎ ঘোষ, সৌরভ সিকদার, তারেক রেজা, গুলশান আরা, উপল তালুকদার, এইচএসবিসির কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল জুবায়ের ও সাইফুর রহমান, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ ও ভাষা প্রতিযোগের সমন্বয়কারী তারিক মনজুর। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর উপফিচার সম্পাদক জাহীদ রেজা নূর। এরপর অতিথিরা প্রতিযোগীদের নিয়ে রঙিন বেলুন উড়িয়ে প্রতিযোগের কার্যক্রমের সূচনা করেন।বেলুন ওড়ানো শেষ হতেই প্রতিযোগীরা ছোটে নির্ধারিত কক্ষগুলোর দিকে। সেখানে এক ঘণ্টার পরীক্ষা। ভাষা প্রতিযোগ এবার নবমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো। এ বছর মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, যশোর, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ, বগুড়া, নীলফামারী ও ঢাকায় দুটি—এই মোট ১০টি অঞ্চলে হয়েছিল আঞ্চলিক প্রতিযোগ। প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক—এই চারটি বিভাগে ১০ হাজারের বেশি প্রতিযোগী এতে অংশ নেয়। তাদের মধ্যে বিজয়ী ৬০০ প্রতিযোগীকে নিয়ে গতকাল হলো চূড়ান্ত পর্বের এই জাতীয় উৎসব। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে সেরাদের সেরা হয়েছে কিশোরগঞ্জ এসবি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শাহানা ইসলাম।পরীক্ষার পর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল স্কুলের মিলনায়তনে শিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসীর আলোচনার মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, ‘যার হাতের লেখা ও কথা সুন্দর নয়, সে প্রকৃত বাঙালি নয়। ভাষাকে ভালোবাসতে হলে ভালো ভালো লেখকের বই পড়তে হবে।’অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘তোমরা প্রতিযোগিতার পুরস্কার সাজিয়ে না রেখে ভাষার সৌন্দর্য রক্ষার যুদ্ধে নেমে পড়বে।’অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে গান গেয়ে শোনান শিল্পী রিংকু। তাঁর দুটি গানের পর বাংলা ভাষা নিয়ে একজন বিদেশি তাঁর ভাবনার কথা তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞানের পিএইচডির ছাত্র ডাসটিন আলফানসো বলেন, ‘বিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমার দুজন বাংলাদেশি বন্ধু ছিল। তাদের কথা আমার ভালো লাগত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞানের ক্লাসে একদিন শিক্ষক জানালেন, ভাষাতত্ত্ব শিক্ষায় বাংলা ভাষা খুবই কাজে দেয়। এই কৌতূহল থেকে আমার বাংলা ভাষা শেখা।’অনুষ্ঠানটির এই পর্যায়ে এসে আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে রাজধানীর টিকাটুলী থেকে আসা প্রতিযোগী প্রমিতা রায় চৌধুরীর গাওয়া ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা’ রবীন্দ্রসংগীতে। শিল্পী পড়শী পরিবেশন করেন ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’। এরপর বক্তব্য দেন অধ্যাপক দানীউল হক। তিনি বলেন, ‘বাংলা একটি অসাধারণ সুন্দর ভাষা। দক্ষতার সঙ্গে এই ভাষা শিখতে হবে।’ এরপর হলভর্তি সবাই মুগ্ধ হয় রাজীব বসাকের জাদু দেখে। তারা করতালিতে মুখর করে তোলে পুরো মিলনায়তন। এরপর মাইকে ভেসে আসে গান, ‘আমি বাংলায় গান গাই’। পুরো মিলনায়তনে নেমে আসে একধরনের প্রশান্তি। গানটি পরিবেশন করে প্রতিযোগী স্মিতা সরকার। এরপর বক্তব্য দেন অধ্যাপক মাহবুবুল হক। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাদের মাঝে বাংলা ভাষার প্রতি গভীর আগ্রহ ও অনুরাগ দেখে মনে শক্তি পাচ্ছি।’ অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য দেন মৌলভীবাজারের মহবুবুল আলম। এরপর দুপুরের খাবারের বিরতি। এই পর্বের সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর বার্তাকক্ষ ব্যবস্থাপক অরুণ বসু।বেলা গড়ালে শেষ পর্ব শুরু হয়েছিল গানে গানে। বাপ্পা মজুমদার গেয়ে শোনান ‘দিন বাড়ি যায়’ ও ‘গাড়ি চলে না’ গান দুটি। অদিতি মহসীন পরিবেশন করেন ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি।’ মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের প্রতিযোগী সাঈদা জামান শোনায় ‘আমার বন্ধু দয়াময়’। সজীব গেয়েছেন ‘নিটোল পায়ে রিনিক ঝিনিক’।গানের পর ভাষা প্রতিযোগ কার্যক্রমের পরিচিতি তুলে ধরেন এর সমন্বয়কারী তারিক মনজুর। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘ইদানীং আমরা এমন এক ভাষায় কথা বলি, যা বাংলা নয়, ইংরেজি নয়, হিন্দিও নয়। এই জগাখিচুড়ি অবস্থা থেকে আমাদের মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে হবে। সে জন্য শুদ্ধভাবে ভাষা শিক্ষার প্রথম আলোর এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’এইচএসবিসির করপোরেট ব্যাংকিংয়ের প্রধান মাহবুব-উর-রহমান বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতায় কোনো হার নেই। এটি মাতৃভাষাকে, দেশকে, দেশের কৃষ্টি ও গৌরবকে ভালোবাসার প্রতিযোগিতা। এই ভালোবাসা দিয়েই তোমরা একদিন এ দেশের মর্যাদা ও গৌরবকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।’এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীম শিক্ষার্থীদের দেশকে ভালোবাসার অনুপ্রেরণা দেন।প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘বাঙালি যেখানেই যাক, দেশ ও ভাষাকে পেছনে ফেলে যেতে পারে না। এর প্রমাণ, আজ বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশে বাংলা ভাষার পত্রিকা প্রথম আলো পড়া হয়। তাই আমরা এখন বলছি, বিশ্বজুড়ে বাংলা বিশ্বজুড়ে প্রথম আলো। ভাষার সঙ্গে যোগ রেখেই আমরা পত্রিকাটিকে গড়ে তুলতে চাই।’এর পরই প্রতীক্ষার অবসান। শুরু হয় চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ। চারটি বিভাগে মোট ৬০ জন বিজয়ীকে এবং একটি সেরাদের সেরা পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়া আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিযোগে সেরা আয়োজনের পুরস্কার দেওয়া হয় বগুড়াকে। বগুড়ার প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মিলন রহমান পুরস্কার গ্রহণ করেন। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী সভাপতি সাইদুজ্জামান। প্রতিযোগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। সবার শেষে অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ীদের ছবি তোলার আয়োজন। বেলা পড়ে এসেছিল। আনন্দঘন এক উৎসবের শেষে তখন প্রতিযোগীদের ঘরে ফেরার পালা। |
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ওপর গুরুতারোপ করেছেন। যুক্তরাজ্যে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বৈঠকে হেগ এ গুরুতারোপ করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। শেখ হাসিনা লন্ডনে যে হোটেলে অবস্থান করছেন, হেগ সেখানে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন। বৈঠকে সব ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে নিবৃত থাকতে বাংলাদেশের সবার প্রতি আহ্বান জানান হেগ। একই সঙ্গে সাভারে রানা প্লাজা ধসের ঘটনার কথা উল্লেখ করে শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষায় পোশাকশিল্পে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে সংস্কার বাস্তবায়নেরও গুরুত্ব তুলে ধরেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে উইলিয়াম হেগের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘পোশাকশিল্পে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এই শিল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং আমি আশা করি, এই ইতিবাচক প্রভাব অব্যাহত থাকবে।’সভায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ ও মানবাধিকারের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। এ সময়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যৈষ্ঠ প্রতিমন্ত্রী ব্যারনেস ভার্সিও মি. হেগের সঙ্গে ছিলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকীর বিয়ে উপলক্ষে লন্ডন সফর করছেন। এরপর তিনি সেখান থেকে সরকারি সফরে বেলারুশ যাবেন।বাসস জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় বলেছেন, যুক্তরাজ্য ও বিশ্বব্যাপী অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনও একইভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যবস্থা অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এটি বিলু্প্ত হয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতার প্রয়োজনীতার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন গণতন্ত্র ছাড়া একটি জাতির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সাধন সম্ভব নয়। |
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, সরকার গাজীপুরে ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে বলেই সেনা মোতায়েন করতে চাচ্ছে না। ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে বলেই তারা সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করছে। তিনি অভিযোগ করেন, সারা দেশ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গাজীপুরে জড়ো করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। এসব অপকর্ম রোধে সেখানে সেনা মোতায়েনের আহ্বান জানান তিনি। গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন গাজীপুরে যদি কোনো কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়, তাহলে এর জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে।”বিএনপির নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে হত্যাচেষ্টার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল এ সমাবেশের আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম নামে একটি সংগঠন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ, সাংসদ আসিফা আশরাফী প্রমুখ। |
কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের উপনির্বাচনে ৩১টি কেন্দ্রের ভোট নজিরবিহীনভাবে লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থী সৈয়দ মহিতুল ইসলাম। এই ৩১টি কেন্দ্রে আবার ভোট গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি। গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে মহিতুল ইসলাম এ দাবি জানান। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সাড়া না পেলে উচ্চ আদালতের আশ্রয় নেবেন। |
সরকারি-বেসরকারি মালিকানায় বাস্তবায়নাধীন বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণকাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারিগুলোর অগ্রগতি অপেক্ষাকৃত ভালো। বর্তমান সরকারের বাকি মেয়াদে এর অধিকাংশ কেন্দ্র চালু হচ্ছে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই অভিমত বিদ্যুত্ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির।জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে একাধিক সাংসদ বিদ্যুত্ পরিস্থিতি এবং সরকার ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এ ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দিয়েও সুফল না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর আগে গত ৫ জুন সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে নির্মাণাধীন বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর হতাশাজনক চিত্র তুলে ধরা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, বারাকাতুল্লাহ ডায়নামিকসের মালিকানায় ৫০ মেগাওয়াটের পতেঙ্গা বিদ্যুেকন্দ্র ২০১২ সালের অক্টোবরের মধ্যে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৭০ শতাংশ। পাওয়ারপ্যাকের মালিকানায় জামালপুর বিদ্যুেকন্দ্র (৯৫ মেগাওয়াট) এবং খুলনা পিকিং বিদ্যুেকন্দ্র (১০০ মেগাওয়াট) ২০১২ সালের নভেম্বরের মধ্যে চালু হওয়ার কথা থাকলেও তারা এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করেনি। ঢাকা নর্থ পাওয়ারের মালিকানায় গাবতলী, ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ারের মালিকানায় বসিলা এবং সিএলসি পাওয়ার অ্যাসোসিয়েটসের মালিকানায় বসিলা বিদ্যুেকন্দ্র যথাক্রমে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা থাকলেও কাজের অগ্রগতি শূন্য। এই তিন কেন্দ্র থেকে ৩২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন হওয়ার কথা।সামিট পাওয়ার ও জিইসি কনসোর্টিয়ামের বিবিয়ানা-১ ও বিবিয়ানা-২ প্রকল্প থেকে ৩৪১ মেগাওয়াট করে বিদ্যুত্ উত্পাদন হওয়ার কথা। এর প্রথমটি বাস্তবায়িত হবে না। প্রকল্প বাতিলের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অন্যটিতে ৭ শতাংশ কাজ হয়েছে। দুটি প্রকল্পই গত মে মাসে চালু হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া সামিট পাওয়ারের ৩৩৫ মেগাওয়াটের মেঘনাঘাট প্রকল্প (জিটি) চলতি বছরের অক্টোবরে চালু হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৬০ শতাংশ। রিজেন্ট এনার্জি লিমিটেডের মালিকানায় ১০৮ মেগাওয়াটের ঘোড়াশাল বিদ্যুেকন্দ্র, মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানির ৫১ মেগাওয়াটের আশুগঞ্জ, সিনহা পিপলস এনার্জির ৫৩ মেগাওয়াটের মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি এবং সিনহা এনার্জির ৫৩ মেগাওয়াটের হোমনা বিদ্যুেকন্দ্র ২০১৩ সালের জানুয়ারির মধ্যে চালু হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে প্রথম তিনটি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ। শেষোক্তটির কাজ এখনো শুরু হয়নি। ইসিপিভির ১০৮ মেগাওয়াটের চট্টগ্রামের জুলদা বিদ্যুেকন্দ্র এবং ডিজিটাল পাওয়ার অ্যাসোসিয়েটসের ১০২ মেগাওয়াটের গগননগর বিদ্যুেকন্দ্র আগামী মাস থেকে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এই দুটি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে যথাক্রমে ৩০ ও ৫৫ শতাংশ। সংসদীয় কমিটির মতে, বেসরকারি মালিকানাধীন প্রকল্পের তুলনায় সরকারিভাবে বাস্তবায়নাধীন ১২টি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মোটামুটি সন্তোষজনক। এর মধ্যে ৪১২ মেগাওয়াটের হরিপুর এবং ১৫০ মেগাওয়াটের খুলনা বিদ্যুেকন্দ্রের নির্মাণকাজ ৮০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। এ দুটি প্রকল্প যথাক্রমে আগামী অক্টোবর ও জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপনা অনুযায়ী, বর্তমানে ছয় হাজার ৭০৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৩টি বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ১২টি প্রকল্প থেকে তিন হাজার ১১৪ মেগাওয়াট এবং বেসরকারি ২১টি প্রকল্প থেকে তিন হাজার ৫৯৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদন হওয়ার কথা। বেসরকারি ২১টির মধ্যে ছয়টি কেন্দ্র ২০১২ সালে এবং নয়টি ২০১৩ সালের মধ্যে, অর্থাত্ বর্তমান সরকারের মেয়াদে মোট ১৫টি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত্ উত্পাদন হওয়ার কথা দুই হাজার ৬১ মেগাওয়াট। কিন্তু ১৫টি বেসরকারি প্রকল্পের মধ্যে ছয়টির বাস্তবায়ন অগ্রগতি শূন্য। তিনটির অগ্রগতি ৩ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে। বাকি ছয়টির বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ।জানতে চাইলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুত্ প্রকল্পগুলো বর্তমান সরকারের মেয়াদে চালু হলে সরকারের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হতো। নির্বাচনে তা সরকারের জন্য ইতিবাচক হতো। দু-চারটি প্রকল্প বর্তমান সরকারের মেয়াদে চালু হওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকলেও তা জাতীয় গ্রিডে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদ্যুত্ যোগ করতে পারবে না। |
তিন বছর ধরে ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন বিপুল ভট্টাচার্য। গতকাল শুক্রবার সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শিল্পী। শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ধানমন্ডির আহমদ মেডিকেল সেন্টারে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গুণী এই শিল্পীর মৃত্যুতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও সহযোদ্ধারা।ফকির আলমগীরবিপুল ভট্টাচার্যের চেতনার মূলে ছিল গণসংগীত। আমরা একসঙ্গে অনেক জনপদে গান গেয়েছি। বিপুল সব সময় প্রগতি ও অসাম্প্র্রদায়িকতার পক্ষে কাজ করেছেন। তাঁর মতো একজন বড় মাপের শিল্পীকে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করা হয়নি—বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সাড়ে তিন বছর তিনি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছেন। প্রচারবিমুখ মানুষ ছিলেন; কেবল কাজ করে যেতেন। তাঁর চলে যাওয়ায় বড় ক্ষতি হয়ে গেল।সুজেয় শ্যামস্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে একজন শব্দসৈনিক হিসেবে বিপুল ভট্টাচার্যের অবদানের কথা সবাই জানেন। অনেক বড় মনের একজন মানুষ ছিলেন বিপুল। অত্যন্ত বন্ধুবৎসল ছিলেন। সবাইকে আপন করে নেওয়ার অন্য রকম ক্ষমতা ছিল তাঁর। এত তাড়াতাড়ি যে তিনি চলে যাবেন, সেটা কল্পনা করিনি।ইন্দ্রমোহন রাজবংশীবিপুল ভট্টাচার্যদের মতো মানুষেরা একবারই জন্ম নেন। বিপুল ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে বাংলাদেশের একটি অসম্ভব উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মেধাবী এই কণ্ঠশিল্পীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো সম্মাননা জানানো হয়নি, এটা আমাদের সবার লজ্জা। মূল্যবোধের এই অবক্ষয়ের সময়ে বিপুল ভট্টাচার্যের মতো মানুষের প্রয়োজন ছিল অনেক বেশি।তিমির নন্দীমুক্তিযুদ্ধে কণ্ঠযুদ্ধে আমার সহযোদ্ধা ছিলেন বিপুল। ছিলেন আমার একজন বন্ধুও। ১৯৬৯ সালে এক প্রতিযোগিতায় পল্লি গানে আমি হয়েছিলাম দ্বিতীয় আর বিপুল প্রথম। সেই থেকে আমাদের পরিচয় এবং বন্ধুত্ব। খুব কম শিল্পীই বিপুলের মতো এত লোকগান গেয়েছেন। আবদুল আলীম ছিলেন একজন, আরেকজন আমাদের বিপুল ভট্টাচার্য। বিপুলের মৃত্যুতে আমরা হারালাম এ দেশের ইতিহাসের একজন সাক্ষীকে। বিপুল অসুস্থ হওয়ার পরপরই তাঁকে নিয়ে বিটিভি ও দেশ টিভিতে অনুষ্ঠান করেছিলাম। সব সময় চেষ্টা করেছি কিছু একটা করতে।চন্দনা মজুমদারবিপুল ভট্টাচার্য স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রের শিল্পী। ঠিক তেমনি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে লোকগান প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছেন। এত দরাজ কণ্ঠস্বরের লোকগানের শিল্পী আমি আমার জীবনে খুব কম দেখেছি। সব সময় বেশ আড়ালে থাকতে পছন্দ করতেন। গান করে গেছেন নিজের জন্য, মানুষের জন্য। তাঁর মৃত্যুতে লোকসংগীতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। |
পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি-বিদেশি উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। দাম বাড়ার তালিকায় আরও আছে কাঁচা মরিচ, আদা, শসা ও ডিম।চালের দাম এখনো বাড়তিই আছে। ব্রয়লার মুরগির দামও কমেনি। তবে ছোলা, বিভিন্ন ধরনের মসলা, অ্যাংকর ডাল ও চিনির দাম স্থিতিশীল আছে। খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম একটু কমেছে। কারওয়ান বাজার ও নারিন্দার কাঁচাবাজার ঘুরে গতকাল শুক্রবার এ চিত্র দেখা গেছে।কারওয়ান বাজারে গতকাল দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও নারিন্দা বাজারে ৪৮ টাকা দাম হাঁকেন বিক্রেতারা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ উভয় বাজারেই ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়।পেঁয়াজের দামের এই ঊর্ধ্বগতি কেন জানতে চাইলে পাইকারি বাজার শ্যামবাজারের জননী ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মহসিন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ভারতে বন্যায় পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে। সে জন্য ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তিনি বলেন, পবিত্র রমজান উপলক্ষে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। মানুষ বেশি বেশি কিনছে। তাই দাম আরও বাড়ছে। তবে সপ্তাহ দুয়েক পর দাম কমতে পারে। কারণ, তখন চাহিদা কিছুটা কমে আসবে। তিনি জানান, শ্যামবাজারে পাইকারেরা গতকাল দেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা ও ভারতের পেঁয়াজ ৩৭ টাকা কেজি বিক্রি করেন।কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, শ্যামবাজারের আমদানিকারকেরা নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আসলে রোজার বাড়তি চাহিদার সুযোগে বেশি মুনাফা করতে চান তাঁরা।কারওয়ান বাজারে গতকাল প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৩৫, আদা ৮০ থেকে ১২০, রসুন ৭০ থেকে ৮০, কাঁকরোল ১৫, বেগুন ২৫ থেকে ৪০, আলু ১২ থেকে ১৫, ঝিঙে ৩০, বরবটি ২০ টাকায় বিক্রি হয়।এদিকে ব্রয়লার মুরগির ডিম হালিতে তিন টাকা বেড়ে ৩৫ টাকা হয়েছে। হাঁসের ডিমের হালি ৪০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতো গতকালও ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়।পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৬৩০ থেকে ৬৫০ টাকা ও খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১০০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোলা ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪৫ ও চিনি ৪৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। খোলা হলুদের গুঁড়া প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, মরিচের গুঁড়া ১৬০, জিরার গুঁড়া ৩০০ ও ধনিয়ার গুঁড়া ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।চালের দাম কমেনি: আগের দুই সপ্তাহের মতোই বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। গতকাল প্রতি কেজি মোটা চাল ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৩৮ থেকে ৪০, মিনিকেট ৪৫ থেকে ৪৬, নাজিরশাইল ৫০ থেকে ৫২, পারি জাতের চাল ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি করেন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা।এ বিষয়ে চাল ব্যবসায়ী মনসুর আহমেদ বলেন, মিলমালিকেরা বিনা কারণে চালের দাম বাড়িয়েছেন। সব সরকারের শেষ সময়ে মিলমালিকেরা এ কাজ করেন। কারণ, তাঁরা ধরেই নিয়েছেন, এ সময়ে সরকার তাঁদের কিছু বলবে না। |
থাইল্যান্ডের উপকূলে আন্দামান সাগরে আংশিক ডুবে যাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি হোপের মুশফিকুর রহমান, মো. মোবারক হোসেন ও রায়েক ফাইরুজ নামে তিন নাবিককে জীবিত এবং দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় থাইল্যান্ডের ফুকেত দ্বীপের কাছাকাছি সাগরে জাহাজটি কাত হয়ে যায়।এদিকে থাইল্যান্ডের উপকূলে আন্দামান সাগরে এফবি পাইলন নামের বাংলাদেশি মালিকানাধীন আরেকটি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে নিখোঁজ ১১ নাবিকের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে ২৭ ঘণ্টা পর মাছ ধরার ট্রলারটির খোঁজ পাওয়া গেছে।এমভি হোপ জাহাজের প্রতিনিধি ও মোবারকের পরিবার সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার হওয়া ময়মনসিংহের মুশফিকুর রহমান জাহাজটিতে ইঞ্জিন ক্যাডেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার জাহাজ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পর তিনি লাইফ জ্যাকেটের সাহায্যে আন্দামান সাগরে ভাসছিলেন। এ সময় কাছাকাছি থাকা এমভি বক্স লেগুন নামের একটি জাহাজের নাবিকেরা তাঁকে উদ্ধার করেন। একই জাহাজের সেকেন্ড অফিসার মো. মোবারক হোসেনকে সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার করেন থাই কোস্টগার্ডের সদস্যরা। রায়েক ফাইরুজকে কোথা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। মৃত উদ্ধার হওয়া দুই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। তবে একজন এমভি হোপ জাহাজে ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।এর আগে জীবিত উদ্ধার হওয়া জাহাজের চতুর্থ প্রকৌশলী মো. আবদুল হাকিম, ডেক ক্যাডেট মোখলেসুর রহমান, মো. রুবেল, আলী হোসেন ও সাইফুল ইসলামকে এমভি বক্সমুন জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে আসা হচ্ছে। আবু বকর সিদ্দিক নামের অপর নাবিককে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার পর দেশে আনা হবে। বৃহস্পতিবারই জাহাজের ছয়জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ নাবিক আলী হোসেনের ছেলে মো. জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার দিন আগে জাহাজটি মালয়েশিয়া ছেড়ে আসার আগে বাবা ফোনে জানিয়েছিলেন, এবার রোজা ও ঈদে বাড়িতেই থাকবেন। বাবা আসার অপেক্ষায় ছিলাম আমরাও। বৃহস্পতিবার জাহাজ দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে পরিবারের কারও চোখে ঘুম নেই।’ আলী হোসেনের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর শাকপুরায়। মো. জাকারিয়ার মতো অধীর অপেক্ষায় কোনো ভালো খবরের জন্য বসেছিলেন মো. ইদ্রিস। তিনি নিখোঁজ নাবিক নেজামউদ্দিনের বড় ভাই।এফবি পাইলিনের সন্ধান লাভএদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পথে থাইল্যান্ডের উপকূলে আন্দামান সাগরে ‘এফবি পাইলিন’ নামের বাংলাদেশি মালিকানাধীন একটি মাছ ধরার ট্রলারডুবির ঘটনায় তিন নাবিক নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ একজন হলেন ক্যাপ্টেন কৃপায়ন চাকমা। অন্য দুই নাবিকের পরিচয় জানা যায়নি। জানা গেছে, থাইল্যান্ড থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পথে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রলারটির সঙ্গে বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ২৭ ঘণ্টা পর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রলারটির খোঁজ পাওয়া যায়। এটি এখন থাইল্যান্ডের ফুকেট উপকূলের কাছে আন্দামান সাগর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে আসছে। জাহাজটির আমদানিকারক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ কোম্পানি লিমিটেডের মুখপাত্র খন্দকার হেদায়েতুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজে অবস্থানরত বাংলাদেশের তিনজনসহ ১০ নাবিকের সবাই সুস্থ আছেন। |
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রধান সুলতানা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে সুন্নি পুরুষ ছাড়া আর কেউই সম্পূর্ণ মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারেন না। তিনি বলেন, পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে আপসের রাজনীতির কারণে মৌলবাদীরা শক্তিশালী হয়েছে। এ কারণেই দেশে নারী ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা সংবিধানে বর্ণিত সম-অধিকার থেকে বঞ্চিত।গত বৃহস্পতিবার পূর্ব লন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর ডেমোক্রেসি (আইসিডিবি) ও ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশ আয়োজিত এক সেমিনারে সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।আইসিডিবি সভাপতি পিটার কাস্টার্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক শাহরিয়ার কবির এবং রুয়ান্ডার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ের লক্ষ্যে গঠিত সংগঠন সারভাইভারস ফান্ডের পরিচালক ডেভিড রাসেল। সেমিনারে সুলতানা কামাল বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ওই আদালতের সাক্ষী হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনজীবীদের জেরার বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই বিচারকাজ আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করেই পরিচালিত হচ্ছে। তিনিসহ অন্য বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ না থাকাকে বিচারকাজ ৪২ বছর বিলম্বিত হওয়ার অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেন। রুয়ান্ডার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ডেভিড রাসেল বলেন, তাঁরা মৃত্যুদণ্ডের বিধান তুলে দেওয়ায় যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া রুয়ান্ডার গণহত্যায় অভিযুক্ত বেশ কয়েকজনকে ফিরিয়ে নিতে পেরেছে। ফলে তাঁরা অপরাধের দায় থেকে রেহাই পাননি। রুয়ান্ডার গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে যে বিচার হয়েছে, তার নানা সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে রাসেল বলেন, গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলো ওই বিচারে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। কারণ, তাতে ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থাই রাখা হয়নি। তবে রুয়ান্ডার বিচারের অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। |
জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। এরপর তাদের অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবিরকে নিয়ে জঙ্গিবাদের প্রসার ঘটিয়েছে। তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন আইনি, সামাজিক এবং সর্বোপরি তারুণ্যের ত্রিমুখী লড়াই। গতকাল শুক্রবার বিকেলে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে আয়োজিত ‘জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ ও মুক্তিযদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ শীর্ষক গণসংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ এ সংলাপের আয়োজন করে। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সংলাপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনতে হলে জামায়াতে ইসলামীর মতো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে নয়, একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা যায়। নিষিদ্ধ না করলে তাদের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।শিক্ষাবিদ অজয় রায় বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে যদি দেখা হয়, তবে তারা অসাম্প্রদায়িক দেশে কাজ করতে পারে না। আবার যদি ধর্মভিত্তিক দল হিসেবে দেখা হয়, তবে তারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। কিন্তু তারা তাদের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। জাতীয় সংসদে আইন পাস করে তাদের নিষিদ্ধ করার জন্য তিনি সাংসদদের অনুরোধ জানান।শিক্ষাবিদ ও লেখক ড. জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি চালান কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিক আর প্রবাসী শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ নামক গাড়িতে এই তিনটি চাকা লাগানো আছে। চতুর্থ চাকাটি লাগাতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। পড়াশোনা করতে হবে, জানতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী হাজার হাজার কোটি টাকা তৈরি করেছে রাজনীতির জন্য। তরুণদের শত শত কোটি টাকা তৈরি করতে হবে গরিব মানুষের জন্য। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, এ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছাড়া বিনির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই এ চেতনাকে বুকে ধারণ করতে হবে। তাহলে আর কোনো শক্তিই ভয় দেখাতে পারবে না।অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ এবং অসাম্প্রদায়িক মানস কাঠামো তৈরির উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এর কোনোটাই বাস্তবায়িত হয়নি।সংলাপ অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, জামায়াত-শিবিরের ভোট দিয়ে কেউ ক্ষমতায় যাবেন এটা হতে দেওয়া হবে না। বরং নিষিদ্ধ করে ক্ষমতায় গেলে সেটি আরও পাকাপোক্ত ও সবার জন্য কল্যাণের হবে। বক্তব্যে মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, একমাত্র জামায়াত নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনর্জীবিত হতে পারে।গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা মারুফ রসূলের সঞ্চালনায় সংলাপে অন্যদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুব জামান, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক হারুন হাবীব, হাক্কানি খানকা শরিফের সভাপতি ইমদাদুল হক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ প্রমুখ বক্তব্য দেন। এদিকে একই দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন করে শহীদ রুমী স্কোয়াডসহ কয়েকটি সংগঠন। |
বাপ্পা মজুমদারের উপস্থাপনায় ‘রক অ্যান্ড রিদম’...বেশ কিছু গান করব অনুষ্ঠানে। বাপ্পাদা আমার খুব পছন্দের একজন মানুষ। আজকের অনুষ্ঠানে তাঁর সুরে আমার ‘জলতারা’ গানটি গাইব। আড্ডাটা নিশ্চয়ই জমবে। সমস্যা একটাই, বাপ্পাদা খুবই স্বল্পভাষী। আমি আবার কথা বলতে পছন্দ করি... হা হা হা!ফিরছি নতুন করে...শ্রোতারা যাঁরা আমার কণ্ঠটা মিস করছিলেন, তাঁদের জন্য বলে রাখি, আমি পুরোদমে ফিরছি। আমার ১৩ বছরের সংগীতজীবনে মাত্র দুটি জিঙ্গেল গেয়েছি। ইচ্ছা আছে, এখন থেকে নিয়মিত জিঙ্গেল করব, যেন শ্রোতারা সব সময় আমাকে পান। এ ছাড়া নতুন অ্যালবাম তো আসছেই। ১৯ রমজানে মুক্তি পাচ্ছে আমার অ্যালবাম, এক্স প্রেম।নতুন অ্যালবামের নতুনত্ব...অ্যালবামটির পরিবেশনা আর বিপণনের দায়িত্ব নিয়েছে দেশের ১৩৮টি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। নতুনত্ব বলতে আমার কাছে এই অ্যালবামটি ‘আমার’ অ্যালবাম নয়। এটি সারা দেশের অ্যালবাম। দেশের অডিওশিল্পকে বাঁচানোর জন্য একটি বিপ্লব। অ্যালবাম বিক্রির আয়ের অর্ধেক ব্যয় করা হবে পাইরেসিবিরোধী আন্দোলনের কাজে।‘এক্স প্রেম’ অ্যালবামের গানগুলো...মোট ১৪টি গান। তবে খালি চোখে দেখলে শ্রোতারা হয়তো এই অ্যালবামে পুরোনো আসিফকে না-ও পেতে পারেন। রক-ব্লুজ প্যাটার্নের গানও থাকছে। আমার গায়কিতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। আমার প্রতিটি অ্যালবামে একটি দেশের গান থাকে। এই অ্যালবামে একটি অন্য রকম দেশের গান পাবেন।ক্রিকেটপাগল আসিফ...ক্রিকেট নিয়ে আমার পাগলামির কথা তো সবাই জানে। নতুন খবর হলো, রোজার পর থেকে হয়তো মোহামেডান ক্লাবে অনূর্ধ্ব-১৩ দলের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ শুরু করব। বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ দেব। কথা চলছে।ডানপিটে আসিফের ‘দুরন্ত দল’...তখনো আমি আসিফ আকবর হয়ে উঠিনি। আমাদের একটি ব্যান্ড ছিল ‘ফিকল বয়েজ’, মানে দুরন্ত ছেলেরা। গ্যারেজে ড্রামস-ট্রামস নিয়ে আমরা যখন প্র্যাকটিস করতাম, এলাকাবাসী আমাদের গ্যারেজের ছাদে ঢিল ছুড়ত! কী যে বিরক্ত হতো সবাই! আমার মনে হয়, সব শিল্পীকেই একসময় এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। তবু এলাকাবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা। বিরক্তি নিয়েও তাঁরা আমাদের যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।সিনেমার গান...সিনেমায় নতুন করে গান শুরু করেছি। সম্প্রতি ছয়টি সিনেমায় গান গাইলাম।মো. সাইফুল্লাহ |
সারা দেশে সিএনজি স্টেশনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর দুপুরে এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাকির হোসেন এ তথ্য জানান।ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নামে হয়রানির অভিযোগে গতকাল সকাল থেকে সারা দেশে ধর্মঘট পালন করছিল সংগঠনটি। বেলা ১১টায় পেট্রোবাংলায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, জ্বালানিসচিব মোজাম্মেল হক খান ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করেন সংগঠনটির কর্মকর্তারা।বৈঠকে জানানো হয়, সিএনজি স্টেশন নিয়ে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা নিয়ে একটি কারিগরি কমিটি কাজ করছে। ওই কমিটির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পেট্রোবাংলার ম্যাজিস্ট্রেট কোনো অভিযান চালাবেন না। একই সঙ্গে সংগঠনটির অন্যান্য দাবি-দাওয়ার বিষয়েও একটি কমিটি গঠন করে দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর সংগঠনটি ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।সংগঠনের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ছয় মাস ধরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত সিএনজি স্টেশন ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সিলেটে একটি সিএনজি স্টেশনে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কর্তাব্যক্তিদের কাছে বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো সুরাহা হয়নি।সংগঠনের নেতারা জানিয়েছিলেন, ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। গতকাল সিলেটের জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানান, সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।সিএনজি স্টেশনগুলোর বিরুদ্ধে পেট্রোবাংলার অভিযোগ, অনেক স্টেশন সরকারি আদেশ অমান্য করে প্রতিদিন যে সময় বন্ধ রাখার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সে সময়েও খোলা রাখা হয়। |
না ফেরার দেশে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী বিপুল ভট্টাচার্য। তিনি ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন। গতকাল শুক্রবার সকাল নয়টা ২৫ মিনিটে ধানমন্ডির আহমদ মেডিকেল সেন্টারে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অনেক ভক্ত ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী বিপুল ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবাণীতে বলেছেন, যাঁরা স্বাধীনতাযুদ্ধে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিয়েছিলেন, বিপুল ভট্টাচার্য ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন। বিপুল ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজধানীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁকে দেখার জন্য তাঁর সহকর্মী, বন্ধুসহ বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ হাসপাতালে ও তাঁর বাসভবনে ছুটে আসেন। বিপুল ভট্টাচার্যের স্ত্রী কুমকুম ভট্টাচার্য গতকাল জানান, হাসপাতাল থেকে মরদেহ দুপুরে ছায়ানট মিলনায়তনে আনা হয়। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তাঁকে নিয়ে আসা হয় মোহাম্মদপুরের বাসভবনে। এরপর তাঁর মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিল্পীর মরদেহ রাখা হবে। এরপর সেখান থেকে নেওয়া হবে পোস্তগোলা শ্মশানঘাটে। সেখানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে বিপুল ভট্টাচার্য ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন। সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে আহমদ মেডিকেল সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।বিপুল ভট্টাচার্য ১৯৫২ সালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে তরুণ বিপুল গানে গানে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এ সময় মাইলের পর মাইল হেঁটে তিনি গেয়ে গেছেন দেশের গান। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত বিপুল ভট্টাচার্যের গাওয়া গান মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। শরণার্থী শিবিরের হাজার হাজার মানুষের মনে সাহস সঞ্চার করেছিলেন তিনি। মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থার সদস্য ছিলেন বিপুল। তিনি বাংলা গণসংগীত ও লোকগানেও রেখেছেন বিশেষ অবদান। প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ পরিচালিত মুক্তির গান চলচ্চিত্রের ১১টি গানের মধ্যে ১০টিই তাঁর গাওয়া। বিপুল ভট্টাচার্য গান গেয়ে ও শিখিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। |
অভিনেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ওরফে মিতা নূরের আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশ তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁরা সবাই এ ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।গুলশান বিভাগের উপকমিশনার খন্দকার লুত্ফুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, মিতা নূরের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর স্বামী, ছেলে, মা-বাবা, বোন, গাড়িচালক ও গৃহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মিতা নূরকে তাঁর স্বামী নির্যাতন করতেন, এমন তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ এখনো আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করছে। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন পুলিশের হাতে এসেছে। এতে তাঁর শরীরের দুটি স্থানে দাগ পাওয়া গেছে, তবে এ কারণে তাঁর মৃত্যু হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মিতা নূরের স্বজনেরা জানান, গত ২৩ জুন শুটিং করতে গিয়ে মিতার পায়ে আঘাত লাগে। চিকিত্সকের পরামর্শে তিনি ক্রাচে ভর করে চলাফেরা করছিলেন। মিতা নূরের বড় ছেলে শেহজাদ নূর তাউজ অভিযোগ করে, কয়েকটি পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল তাদের পরিবারের সঙ্গে কোনো কথা না বলে তাদের মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। ছোট বোন মনিরা পারভীন বলেন, মিতা অনেক জেদি ছিলেন। পরিবারের কাছে তাঁর কোনো কথা না টিকলে খুব রেগে যেতেন। একবার রাগ সামলাতে না পেরে ঘুমের বড়ি খেয়ে অস্বাভাবিক হয়ে পড়েন।মিতার বাবা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি এজাহারে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করিনি। কিংবা সাংবাদিকদের কাছেও কোনো অভিযোগ করিনি। তার পরও কেন এই অপপ্রচার করা হচ্ছে?’ মিতার স্বামী শাহনূর রহমান মজুমদার বলেন, ‘মিতার সঙ্গে কোনো কিছু নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি হলে তা সহজেই মিটিয়ে ফেলতাম। নির্যাতন করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কেন মিতা নূর আত্মহত্যা করেছেন, সে প্রশ্ন আমাকেও তাড়া করে বেড়ায়। অভিনয়জীবনে কোনো গণমাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে নেতিবাচক কথা ছাপা হয়নি। কিন্তু মরে যাওয়ার পর তাঁর নামে নেতিবাচক খবর ছাপানো হচ্ছে।’ পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার বাদ আসর লেকপাড়ের বাসায় মিতা নূরের কুলখানি অনুষ্ঠিত হয়। |
‘পড়াশোনার জন্য আমি আড়াই বছর জার্মানিতে ছিলাম। আমার কয়েকজন চীনা বন্ধু ছিলেন। তাঁদের অন্যতম খাবার হলো স্যুপ। নানা ধরনের স্যুপ তৈরি করতে পারেন তাঁরা। আমিও তাঁদের কাছ থেকেই স্যুপ তৈরি শিখেছি। ওই সময় প্রায় প্রতিদিনই স্যুপ খেয়েছি। মজার ব্যাপার হলো, এবার আমি শুধু স্যুপ তৈরির ওপর একটি অনুষ্ঠান করছি।’ বললেন অপি করিম।পবিত্র রমজানে ৩০ দিন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হবে স্যুপ তৈরির ওপর অনুষ্ঠান। নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ইউনিলিভারের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছেন শাহরিয়ার শাকিল।অপি আরও বললেন, ‘দু-একটি রান্নার অনুষ্ঠানে আমি অতিথি হয়েছি। কিন্তু নিজে কখনো রান্নার অনুষ্ঠান করব, তা একবারও ভাবিনি। কিন্তু শাহরিয়ার শাকিল আর তাঁর স্ত্রী দিয়ার অনুরোধে কীভাবে যেন রাজি হয়ে গেলাম। তবে অনুষ্ঠানের ভাবনাটা চমৎকার। ৩০ দিনে ৩০ রকম স্যুপ তৈরি করব।’কোনো সেট তৈরি করে নয়, ধানমন্ডিতে দিয়া’স কিচেনে অনুষ্ঠানটির শুটিং হবে। অপি বললেন, ‘তাই পরিবেশটাও চমৎকার। আর একটি কথা বলে রাখি, আমাদের তৈরি স্যুপগুলো যে কেউ বাসায় তৈরি করতে পারবেন। স্বাদে ও গুণে তা হবে অনন্য।’ |
মহারাষ্ট্রের পুনের ইয়েরাওয়াড়া কারাগারে এখন বিভিন্ন আকারের ঠোঙা বানিয়ে দিন কাটান বলিউডের তারকা সঞ্জয় দত্ত। আর এ কাজের জন্য তাঁর প্রতিদিন পাওয়ার কথা ২৫ থেকে ৪০ রুপি। জানা গেছে, ২৫ রুপি রোজগার করতেই নাকি তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। ইয়েরাওয়াড়া কারাগারের সুপার যোগেশ দেশাই বলেছেন, ঠোঙা বানানোর কাজ সঞ্জয় এখনো পুরোপুরি রপ্ত করতে পারেননি। ধীরগতিতে চলছে এই কাজ। ঠোঙা বানানোর জন্য সঞ্জয়কে সহযোগিতা করছেন একজন প্রশিক্ষক। ঠোঙা বানানোর কাজ রপ্ত হলেই সঞ্জয়কে ফাইল তৈরি ও বাঁধাইয়ের কাজ দেওয়া হবে।যোগেশ দেশাই আরও বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে সঞ্জয়কে কারাগারে রান্নাঘরের কাজ দেওয়া হয়নি।১৯৯৩ সালে মুম্বাই বোমা বিস্ফোরণ মামলায় বেআইনিভাবে অস্ত্র রাখার দায়ে সঞ্জয়ের কারাদণ্ড হয়। |
টাঙ্গাইলের যুবলীগের নেতা আতিকুল ইসলাম ওরফে মোর্শেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রেজাউল করিম হত্যা মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সুপারিশ করেছিলেন। রেজাউল হত্যা মামলা প্রত্যাহার-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য টাঙ্গাইলের সরকারি অভিযোক্তা (কৌঁসুলি) এস আকবর খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে ১৩ জুন প্রথম আলোর পক্ষ থেকে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতায় এ-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে জেলার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের বরাবর আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাহী হাকিম ভাস্কর দেবনাথ ২ জুলাই এ-সংক্রান্ত লিখিত তথ্য সরবরাহ করেন।সরবরাহ করা তথ্য থেকে জানা গেছে, মোর্শেদ নিজেকে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য দাবি করে রেজাউল হত্যা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন জানান। তাঁর ওই আবেদনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান খান সুপারিশ করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইলের অভিযোক্তা এস আকবর তাঁর লিখিত মতামত দেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং নির্যাতনমূলক হিসেবে দাবি করে তা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছেন। এ অবস্থায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারঘোষিত বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’ ২০১০ সালের ৯ আগস্ট মামলা প্রত্যাহার কমিটির সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয় এবং মামলাটি প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়।জেলা যুবলীগের সদস্য মোর্শেদের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের ১৪ নভেম্বর সদর থানায় ছাত্রদলের কর্মী রেজাউল হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে মোর্শেদসহ তাঁর সাত সহযোগীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। টাঙ্গাইলের ১ নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটি চলতি বছরের ২২ মে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়। এর এক মাস পর ২৩ জুন দেলোয়ার হোসেন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মোর্শেদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার বলেন, মোর্শেদ পলাতক রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। |
দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, কৃষিসহ জনজীবনের সর্বক্ষেত্রে সংকট চলছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ইউনাইটেড ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ঐক্য ন্যাপ) আয়োজিত ‘জনজীবনের সংকট ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, পবিত্র রমজানে সংযমের বদলে ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে শোষণ করতে নেমে পড়েন। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুত্, পানি, গ্যাস, হরতাল, যানজট ও সহিংসতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, এখন বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সেবা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তুষ্ট করতে হয়। এর পাশাপাশি গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বাড়িভাড়া বৃদ্ধির কারণে কম আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গোলটেবিল আলোচনায় অর্থনীতিবিদ রমনী মোহন দেবনাথ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত মানুষের আয় দ্বিগুণ বাড়লেও দ্রব্যমূল্য বেড়েছে ৩০ গুণ। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে না পারায় এ-সংকট সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব শান্তি পরিষদের বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ব্যবসায়ীদের হাতে শুধু সরকার নয়, সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষও জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সক্রিয় হতে হবে। গোলটেবিল আলোচনায় সাহিত্যিক ড. হায়াত্ মামুদ, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক, এম এ মতিন, সফর আলী ভূঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। আলোচকেরা পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য ব্যবসায়ী ও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ রুখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। |
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ছাত্রলীগের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষককে মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের ওই কর্মীরা বড়খাতা ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক জাহেদুল ইসলামকে মারধর করে তাঁর কাছ থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনতাই করেন। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বড়খাতা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জাহেদুল ইসলাম রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক দোয়ানী-বড়খাতা শাখা থেকে পারিবারিক প্রয়োজনে কিছু টাকা তোলেন। সন্ধ্যার সময় তিনি ব্যাংকের নিচে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মাজেদুল ইসলামসহ উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাঁর ওপর হামলা চালান এবং তাঁকে মারধর করে ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় জাহেদুল ইসলাম বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফিউজ্জামান জুয়েল বলেন, শিক্ষক জাহেদুল ইসলামের ওপর হামলা ও তাঁর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নন। হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাপস সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। |
এর আগে এমন সহ-অভিনেতা পাননি চঞ্চল চৌধুরী। নতুন এই ‘সহ-অভিনেতা’ কেমন ছিল? চঞ্চলের উত্তর, ‘খুবই ভালো এবং কো-অপারেটিভ। তবে তাকে বাগে আনা ভীষণ কঠিন ছিল। গলার দড়িতে টান লাগলেই আমাকে খামচেটামচে পুরোপুরি নাকাল করে ফেলেছিল!’ সহ-অভিনেতার খামচি! চঞ্চলের ব্যাখ্যা, সহ-অভিনেতা যখন বানর, তখন এক-আধটু খামচি তো হজম করতেই হয়।বৃন্দাবন দাসের লেখা ও সাইদুর রহমান রাসেল পরিচালিত বানর-মধু নাটকেই এমন সহ-অভিনেতা পেলেন চঞ্চল। যেখানে বানরের খেলা দেখায় মধু নামের একজন। তাই তাকে সবাই চেনে ‘বানর-মধু’ নামে। চঞ্চল বললেন, ‘প্রথম দিকে কষ্ট হলেও অভিনয়ের সময় বানরটা খুব শান্তশিষ্ট ছিল। অভিনয়ও করেছে বেশ ভালো। এ ছাড়া সেটে আমরা যা খেয়েছি, বানরটাও তা-ই খেয়েছে! পুরোদস্তুর সহ-অভিনেতা যাকে বলে!’ পরিচালক রাসেল বললেন বানরবিষয়ক অভিজ্ঞতার কথা, ‘নাটকের প্রধান চরিত্রের নাম মধু। বানরটি অনেক কষ্টে জোগাড় করেছি টঙ্গী থেকে। মজার বিষয়, বানরের মালিক তাঁর পোষা বানরটিকে ডাকেন মধু নামেই! বরাবরের মতোই বৃন্দাবন দাস খুব ভালো লিখেছেন। চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়ও দারুণ ছিল।’বানর-মধু দেখা যাবে রোজার ঈদে, বাংলাভিশনে। |
বাংলাদেশ টেলিভিশনসন্ধ্যা৬-১০ আমাদেরও ভালোবাসুন।৭-০০ ললনা।৭-২৫ আশার তরণী।৯-০০ নাটক।৯-৪০ উন্নয়নে বাংলাদেশ।১০-২৫ অনির্ধারিত।১১-০০ আজকের বিষয়।এটিএন বাংলারাত৮-০০ রক অ্যান্ড রিদম।৯-২০ ডিবি।১০-৫০ ভোটের দিন সারা দিন।চ্যানেল আইসন্ধ্যা৬-২০ দ্য ট্রাফিক সিগন্যাল।৭-৫০ নূরজাহান।৯-৩৫ হূদয়ে মাটি ও মানুষ।১১-৩০ ঘটকের বিয়ে।একুশে টিভিসন্ধ্যা৬-৩০ অন্বেষণ।৭-৫০ অতঃপর আমি।৯-৩০ কথা কাজে মিল নাই।১০-১০ মেঘের খেয়া।এনটিভিসন্ধ্যা৬-৪৫ বিজ টাইম।৮-১৫ অঘটনঘটনপটীয়সী।৯-০০ ফানুস।১১-৩০ অনির্ধারিত।দেশ টিভিসন্ধ্যা৬-৩০ নূপুর বেজে যায়।৭-৪৫ মিউজিক ডট নেট।৮-১৫ পথে যেতে যেতে।৯-৪৫ মাই সেকেন্ড হানিমুন।১১-৪৫ সোজা কথা।আরটিভিরাত৮-১০ ফেসবুক।৯-০৫ অলসপুর।৯-৫০ ইতি... দুলাভাই।১১-২০ আওয়ার ডেমোক্রেসি।বাংলাভিশনসন্ধ্যা৬-২৫ ফ্রন্ট লাইন।৮-১৫ দুই টাকার বাহাদুরি।৯-০৫ আমার আমি (বাপ্পা মজুমদার, হাসান)।৯-৪৫ কর্তাকাহিনি।১১-২৫ লাল গোলাপ।বৈশাখী টিভিরাত৮-০০ গরুর ডাক্তার আবদুল আহাদ।৯-১০ শুধুই আড্ডা।১১-০০ বিজনেস টক।১১-৩০ পাথরের কান্না।মাছরাঙা টেলিভিশনসন্ধ্যা৬-৩০ সহজ হোক স্বাদের রান্না।৭-৪০ রান্না ঘরে-বাইরে।৯-০০ উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব।১১-০০ রাজনীতির বাইরে।চ্যানেল নাইনসন্ধ্যা৭-৪০ গ্রন্থিকগণ কহে।৮-২৫ নাগরিক।৯-০০ ওয়ানা বি ট্রাভেলার।৯-৪৫ টেক গ্যারেজ।১০-১৫ সুপার স্টার।১১-০০ নিশিগন্ধা।চ্যানেল টোয়েন্টিফোরসন্ধ্যা৬-২০ প্রসঙ্গ রাজনীতি।৮-৪৫ আসিন।৯-৫৫ অনির্ধারিত।১১-০০ রোদ।জি টিভি (গাজী টিভি)রাত৮-১০ পয়মন্ত।৮-৫৫ ওয়ার্ল্ড অব গ্ল্যামার।৯-৩৫ অনির্ধারিত।১১-০০ গানোফোন।এশিয়ান টিভিসন্ধ্যা৭-৪০ কাচের ক্যানভাস।৮-২০ চেনা পথ অচেনা গলি।৯-০০ মিডিয়া বিতর্ক।৯-৪০ প্রতিপক্ষ।১০-২০ স্টার ড্যান্স।১১-০০ গানের ডায়েরি।এসএ টিভিরাত৮-০০ মেন।৮-৩০ বাংলাদেশি আইডল।৯-০০ হাইট অব ফ্যাশন।৯-৩০ চুপকথা।১১-০০ গহিনের গান (আঁখি আলমগীর)। |
বিটিভিবেলা ৩-০৫ অনির্ধারিত।এটিএন বাংলাবেলা ৩-০৫ ভাই আমার ভাই (জসীম, নূতন, আলমগীর, সুনেত্রা)।চ্যানেল আইবেলা ১-৩০ সুখের স্বর্গ।এনটিভিসকাল ৮-৪৫ অন্তরে ঝড় (রিয়াজ, আয়না, সোনিয়া, মিশা)।দেশ টিভিবেলা ৩-০০ স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা।আরটিভিদুপুর ১২-১০ হূদয়ের বন্ধন (শাবনূর, রিয়াজ, আমিন খান)।বৈশাখী টিভিসকাল ১০-১৫ জগৎসংসার।মাছরাঙা টিভিবেলা ২-৩০ শত্রু শত্রু খেলা (মান্না, মৌসুমী, স্বাগতা)।চ্যানেল নাইনসকাল ৯-০০ কঠিন পুরুষ (মান্না, শাবনূর)। বেলা ২-৩৫ কে অপরাধী (অমিত হাসান, শাবনূর)।ডিডি বাংলাবেলা ১১-৩০ জলসাঘর (ছবি বিশ্বাস, গঙ্গাপদ বসু, পদ্মা দেবী)।ইটিভি বাংলাবেলা ১-৩০ কুলাঙ্গার (সৌমিত্র, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা, অভিষেক)।জলসা মুভিজসকাল ৮-৫০ সেই তো আবার কাছে এলে (প্রসেনজিৎ, বর্ষা, সৌমিত্র)। ১২-০০ বেদের মেয়ে কাঞ্চনমালা (রচনা, সঞ্জয়, দেবু বোস)। ৩-২০ সাথি (জিৎ, প্রিয়াঙ্কা)। ৬-৩৫ হেমলক সোসাইটি (পরমব্রত, কোয়েল মল্লিক)। ৯-৩০ বেদেনীর প্রেম (চিরঞ্জিৎ, অঞ্জু ঘোষ)।সনিবেলা ১-৩০ মেরে ড্যাড কি মারুতি। ৪-০০ থ্রি ইডিয়টস (আমির খান, কারিনা কাপুর, আর মাধবন, শরমান যোশি)।জি সিনেমাসকাল ৮-৩০ শির্দি কে সাইবাবা (মনোজ কুমার, রাজেন্দ্র কুমার, হেমা মালিনী)। ১১-২৪ কসম হিন্দুস্তান কি। ২-৩২ শাহেনশাহ (অমিতাভ বচ্চন, মীনাক্ষী)। ৬-০১ লোফার (অনিল কাপুর, জুহি চাওলা)। ৯-০০ হাম সাথ সাথ হ্যায় (সালমান খান, সাইফ আলী খান, কারিশমা কাপুর, টাবু, সোনালি বেন্দ্রে)।সেট ম্যাক্সসকাল ৯-৪৩ লোক-পরলোক (কৃষ্ণ, সুন্দরিয়া)। ১১-৫০ ১৯২০ এভিল রিটার্নস (আফতাব, টিয়া বাজপেয়ি)। ২-২৪ ঘর ঘর কি কাহানি (ঋষি কাপুর, জয়াপ্রদা, গোবিন্দ, ফারহা)। ৬-০০ যমলা পাগলা দিওয়ানা (ধর্মেন্দ্র, সানি দেওল, ববি দেওল)। ৯-২৫ যব তক্ হ্যায় জান (শাহরুখ খান, ক্যাটরিনা কাইফ, আনুশকা শর্মা)।ফক্স মুভিজসকাল ৮-৪৫ সেফ (জেসন স্ট্যাটহ্যাম)। ১০-২৫ দ্য বুক অব এলি (ডেনজেল ওয়াশিংটন, মিলা কুনিস)। ১২-২৫ স্পাই কিডস। ১-৫৫ দ্য ভো (স্যাম নিল, র্যাচেল ম্যাকঅ্যাডামস)। ৩-৪০ হোয়াটস ইয়োর নাম্বার (ক্রিস ইভানস)। ৫-৩০ শার্ক নাইট। ৭-০০ পিরানহা। ৮-২০ ক্রনিকল। ৯-৪৫ ওয়ানস আপন এ টাইম। ১০-৩৫ ক্যাট এইট।এইচবিওসকাল ৮-৩০ নো স্ট্রিংস অ্যাটাচড (নাটালি পোর্টম্যান, অ্যাস্টন কুচার)। ১০-২৬ স্ট্রিট ফাইটার। ১২-২৫ গোস্ট রাইডার (নিকোলাস কেজ)। ২-২২ দ্য ম্যাট্রিক্স রেভল্যুশনস (কিয়ানু রিভস)। ৫-০০ ট্রান্সপোর্টার ৩ (জেসন স্ট্যাটহ্যাম)। ৭-০৮ চার্লি অ্যান্ড দ্য চকলেট ফ্যাক্টরি (জনি ডেপ)। ৯-৩০ ট্রান্সফরমারস (শিয়া ল্যাবাফ)। |
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেছেন, শিগগিরই তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্ধর দিয়ে মানুষের চলাচল সুবিধা শুরু হবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে স্থলবন্দরটি পরিদর্শনের পর বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভার আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন গওহর বিজভী। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জিএসপি সুবিধা চালু করা সম্ভব হবে। এর আগে দেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে কিছু কাজ করত হবে। ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা, পোশাক শ্রমিকদের চিকিত্সা, কাজের পরিবেশ উন্নয়ন ও মজুরির বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। আগামী সংসদে এ আইন পাস হবে। ভরতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় প্রসঙ্গে গওহর রিজভী বলেন, ছিটমহল বিনিময়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। ভারত সরকার চুক্তিটি সংসদে তুলেছে। শিগগিরই চুক্তিটি পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে গতকাল বিকেলে গওহর বিজভী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পৌঁছালে বিজিবির রংপুর অঞ্চলের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ফিরোজ তাঁকে স্বাগত জানান। এরপর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ভবনে বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন, কাস্টমস, বিজিবি, আমদানি-রপ্তানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। |
abcতথ্য ও বিনোদন৯.২০ মুডস অ্যান্ড মেলোডি১২.০৫ ক্যাম্পাস ক্যাম্পাস৩.২০ অনুরোধের গান: ছন্দছাড়া৮.১০ প্রাণ মি. নুডলস মিউজিক ডিসকো১১.১৫ প্রেমরোগ |
বিএনপির ভোট কারচুপির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ। তাঁর দাবি, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত করতে চায়। কারণ তারা জানে, ঐতিহাসিকভাবে গাজীপুর আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে তোফায়েল এ কথা বলেন।তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত বিগত চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চারটিতে আমরা হেরেছি। আমরা এমন কিছুই করব না, যাতে ওই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনগুলো কলুষিত হয়।’আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা অভিযোগ করেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা নষ্ট করেছে। তারা এক কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে, প্রধান বিচারপতিসহ বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে এক-এগারো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, বিএনপি যদি গাজীপুরে নির্বাচনে হেরে যায়, তবে কারচুপির অভিযোগ এনে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে মাঠে নামতে পারে। সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আগামী সাধারণ নির্বাচন এই সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। গাজীপুরের নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে হারার পর বিরোধী দল সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করেছিল। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হারলে তারা আবার একই কাজ করবে। |
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, সরকার গাজীপুরে ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে বলেই সেনা মোতায়েন করতে চাচ্ছে না। ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে বলেই তারা সেনা মোতায়েনের বিরোধিতা করছে। তিনি অভিযোগ করেন, সারা দেশ থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গাজীপুরে জড়ো করা হয়েছে। কোটি কোটি টাকা বিতরণ করা হচ্ছে। এসব অপকর্ম রোধে সেখানে সেনা মোতায়েনের আহ্বান জানান তিনি। গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন গাজীপুরে যদি কোনো কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়, তাহলে এর জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী থাকবে।” তিনি বলেন, ‘আমরা জানি সেনাবাহিনী নিরপেক্ষ। কিন্তু আওয়ামী লীয় চায় গাজীপুরের নির্বাচন নিরপেক্ষ না হোক। আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করতে চায়। কিন্তু তারা জানে, সেনাবাহিনী থাকলে সেটা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, গাজীপুরে কারচুপির চেষ্টা করলে সেখান থেকেই সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে। ‘বিএনপি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে চায়’—তোফায়েল আহমেদের এই বক্তব্যর প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সব সময় কথা বলেছেন, কিন্তু এখন এত মমত্ববোধ কেন?’ বিএনপির নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে হত্যাচেষ্টার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল এ সমাবেশের আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম নামে একটি সংগঠন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ, সাংসদ আসিফা আশরাফী প্রমুখ। |
ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, গুলশানআধুনিক গান। শিল্পী আবদুল কুদ্দুস বয়াতি। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়।কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার, শাহবাগবর্ষার গান ও নাচ। আয়োজন করেছে রবিরাগ। সন্ধ্যা সাতটায়।বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নাটক লখাই। জাতীয় নাট্যশালায়, সন্ধ্যা সাতটায়। লোক নাট্যদলের (সিদ্ধেশ্বরী) নাটক কঞ্জুস। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে, সন্ধ্যা সাতটায়। জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী। জাতীয় চিত্রশালায়, চলবে ১২ জুলাই পর্যন্ত। পাপেট প্রদর্শনী। নির্দেশনা দিয়েছেন মুস্তাফা মনোয়ার। সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে, সন্ধ্যা সাতটায়। সমকালীন দেশীয় চলচ্চিত্র উৎসব। সকাল সাড়ে ১০টায় হাজার বছর ধরে ও বেলা তিনটায় শ্যামল ছায়া।গ্যালারি কায়া, উত্তরাগ্লিম্পসেস। কয়েকজন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পীর বাছাই করা চিত্রকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী। চলবে ২০ জুলাই পর্যন্ত।ঢাকা আর্ট সেন্টার, ধানমন্ডিবীরেণ সোমের ছাপচিত্র প্রদর্শনী। চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত।বলাকা সিনেওয়ার্ল্ডপোড়ামন ও টেলিভিশন। সকাল সাড়ে ১০টা, দুপুর সাড়ে ১২টা, বেলা সাড়ে তিনটা, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা ও রাত নয়টায়।স্টার সিনেপ্লেক্স ম্যান অব স্টিল, সকাল ১০টা ৫০, বেলা একটা ৪০, বিকেল চারটা ৩৫ ও সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। জিআইজো: রিটেলিয়েশন থ্রিডি, বেলা ১১টা, দেড়টা, বিকেল চারটা ও সন্ধ্যা পৌনে সাতটায়। আয়রনম্যান ৩ থ্রিডি, বেলা সাড়ে ১১টা ও বিকেল সাড়ে চারটায়। লাইফ অব পাই, বেলা দুইটা ও সন্ধ্যা সাতটায়। |
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম ওরফে শামীমের বিরুদ্ধে টেস্ট রিলিফের (টিআর) একটি প্রকল্পের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় লোকজন জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিতভাবে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের বুড়ি ডাকুয়া হাওরপাড়ের একটি রাস্তার উন্নয়নকাজের জন্য টিআর প্রকল্পের মাধ্যমে ছয় টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন জামালগঞ্জের বাসিন্দা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল। তিনি মার্চে এই প্রকল্পের কাজ পান। কিন্তু এই প্রকল্পের কোনো কাজ হয়নি।অভিযোগে বলা হয়েছে, রাস্তা উন্নয়নের জন্য রেজাউল ছয় টন চাল উত্তোলন করেছেন। অথচ কোনো কাজ করেননি। গ্রামবাসী এ বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি উল্টো তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এই প্রকল্পের চাল আত্মসাত্ করেছেন। এ বিষয়ে রেজাউল করিম বলেন, ‘তিন মাস আগে এই প্রকল্পের কাজ হয়েছে। এখন হাওরে পানি, তাই কাজ দেখা যাবে না। এ সুযোগে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মাহমুদুল ইসলাম জানান, অভিযোগের বিষয়টি তিনি তদন্ত করছেন। পরে এ বিষয়ে তিনি ইউএনওর কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন। ইউএনও এস এম শফি কামাল বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ |
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গতকাল শুক্রবার পানিতে ডুবে নিশাত (৬) ও মিথিলা (৭) নামের দুটি শিশু মারা গেছে। উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রশিদ দেওহাটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।রশিদ দেওহাটা গ্রামের দুবাইপ্রবাসী হেলাল উদ্দিনের ছেলে নিশাত দেওহাটা মিত্তাহ উলুম মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র এবং উপজেলার লতিফপুর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমানের মেয়ে মিথিলা এলাকার ব্র্যাক স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। এলাকাবাসী জানান, গতকাল সকালে মিথিলা তার মায়ের সঙ্গে রশিদ দেওহাটা গ্রামে নানাবাড়ি বেড়াতে আসে। জুমার নামাজের সময় নিশাত ও মিথিলা বাড়ির পাশের খালে গোসল করতে যায়। সাঁতার না জানায় তারা দুজনই ডুবে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিকেলে খালে তাদের লাশ পাওয়া যায়। |
‘সংকট মোকাবিলায় সমবায়ী উদ্যোগ’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ ৬ জুলাই শনিবার দেশে আন্তর্জাতিক সমবায় দিবস-২০১৩ পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। সমবায় দিবস উপলক্ষে আজ সকাল নয়টায় মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। |
দেশে উদ্যোক্তা বাড়লে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, বেকারত্ব কমবে। উদ্যোক্তানির্ভর অর্থনীতিই পাল্টে দেবে দেশের ভবিষ্যত্। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেশের সম্ভাবনাময় ও তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে ঢাকায় ‘জাতীয় উদ্যোক্তা সম্মেলন’ শুরু হয়েছে। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান টিম ইঞ্জিন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সহসভাপতি নেসার মাকসুদ খান ও অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির। টিম ইঞ্জিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিয়া জুবেরি এতে স্বাগত বক্তব্য দেন। আয়োজকেরা জানান, সম্মেলন উপলক্ষে সারা দেশের ৩২ হাজার উদ্যোক্তা নাম নিবন্ধন করেন। সম্মেলনের স্লোগান, ‘আপনার সাফল্যই দেশের উন্নতি’। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, দেশের অর্থনীতির গতিশীলতার তিন কারণ—কৃষক, শ্রমিক ও উদ্যোক্তা। সেই বিবেচনাতেই সরকারের দিক থেকে নতুন উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহায়তা করা হয়, ভবিষ্যতেও হবে। ভারতের হায়দরাবাদে হকারদের নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী ইলা ভাটকে দুই দশক আগে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের প্রশংসা করে এসেছিলেন বলে স্মরণ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি তাঁকে বললাম বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক একটি বিপ্লব সাধন করেছে। এর গ্রাহকেরা কেউ মিষ্টি বানায়, কেউ ছাগল পোষে, আবার কেউ দুধ উত্পাদন করে—এভাবে একেকজন একেক কাজ করে। দেখা গেল কাজের বিভাজন হচ্ছে। এটা ভালো। যেটা ইলা ভাটের ওই কার্যক্রমে ছিল না।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ইলা ভাট তখন বললেন, ‘অদ্ভুত তো! যে যার কাজ করছে। কিন্তু একজন আরেকজনের পণ্যের গ্রাহক হচ্ছে, বাইরে থেকে চাহিদার দরকার পড়ছে না।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিশ্বের ১২৮টি দেশে অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। |
ঢাকার পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের লবিতে গতকাল শুক্রবার থেকে সিঙ্গার বাংলাদেশের উদ্যোগে শুরু হয়েছে হুয়াওয়েই স্মার্টফোনের এক্সপেরিয়েন্স বুথ। রোববার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সবার জন্য এই সেবা উন্মুক্ত থাকবে। সকালে এই বুথের কার্যক্রম শুরুর সময় উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়েই টেকনোলজিস বাংলাদেশের হেড অব ডিভাইস মরগান লিউ, চ্যানেল সেলস ম্যানেজার এএসএম মাহফুজুল হক, সিঙ্গারের মার্কেটিং কম্যুনিকেশন ম্যানেজার রাজিউর রহমান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি। |
৬ জুলাই, ২০১৩আজকের এই তারিখে জন্মগ্রহণ করায় পাশ্চাত্যমতে আপনি কর্কট রাশির জাতক বা জাতিকা। আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা ২ ও ৬। গুরুত্বপূর্ণ দিন শুক্র ও সোমবার। শুভ রং: সাদা, নিল ও গোলাপি। শুভ রত্ন: জারকন ও মুক্তা। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব: রুশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে গ্রোমিকো, ন্যান্সি রিগান ও অভিনেতা সিলভেস্টার স্ট্যালোন। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার রাশিতে আজকের পূর্বাভাস:মেষ (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল): ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে আপনার সুনাম বৃদ্ধি পেতে পারে। পারিবারিক সমস্যার সমাধান হতে পারে। ব্যর্থ প্রেমের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। আর্থিক লেনদেন শুভ। কোনো আইনি সমস্যার সমাধান হতে পারে।বৃষ (২১ এপ্রিল-২১ মে): বেকারদের কেউ কেউ খণ্ডকালীন কাজের সন্ধান পাবেন। পেশাগত দ্বন্দ্বের অবসান হবে। পছন্দের মানুষটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েই দেখুন না; কথা দিচ্ছি, আজ আপনাকে হতাশ হতে হবে না। সৃজনশীল কাজের স্বীকৃতি পাবেন।মিথুন (২২ মে-২১ জুন): মিথুনের জাতক বা জাতিকার জন্য দিনটি সম্ভাবনার বার্তা বয়ে আনতে পারে। ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকার মনের আকাশে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিতে পারে। সৃজনশীল পেশায় সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। দূরের যাত্রা শুভ।কর্কট (২২ জুন-২২ জুলাই): কর্মস্থলে সার্বিক পরিস্থিতি আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের অবসান হবে। প্রেমের ব্যাপারে আপনার মনের জানালায় কেউ আজ উঁকি দিয়ে যেতে পারে। আজ আকস্মিকভাবে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে।সিংহ (২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট): বেকারদের কারও কারও জন্য দিনটি সৌভাগ্যের বার্তা বয়ে আনতে পারে। পাওনা আদায়ে অন্যের সহযোগিতা পাবেন। প্রবাসী কারও সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কের সূচনা হতে পারে। আজ আপনার অর্থভাগ্য বিশেষ শুভ।কন্যা (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর): সৃজনশীল কাজের স্বীকৃতি পাবেন। কোনো পুরোনো স্মৃতি আপনাকে আবেগপ্রবণ করে তুলতে পারে। সন্তানসন্ততির কৃতিত্বে আপনার সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য দিনটি বিশেষ শুভ।তুলা (২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর): ব্যবসায়িক ভ্রমণ ফলপ্রসূ হতে পারে। চাকরিতে কারও কারও আটকে থাকা পদোন্নতির বিষয়ে নিষ্পত্তি হতে পারে। ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ বিদেশে অধ্যয়নের সুযোগ পাবেন। প্রেমে সাফল্যের দেখা পাবেন।বৃশ্চিক (২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর): ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগ আশার সঞ্চার করবে। জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি হতে পারে। আজ আকস্মিকভাবে অর্থপ্রাপ্তি ঘটতে পারে। আপনার প্রেমিক মন আজ তার ঠিকানা খুঁজে পাবে। দূরের যাত্রা শুভ।ধনু (২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর): শিক্ষাক্ষেত্রে কারও কারও বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। পারিবারিক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আপনাকে কিছুটা ছাড় দিতে হতে পারে। প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। আর্থিক লেনদেন শুভ।মকর (২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি): বিদেশ যাত্রায় প্রবাসী আত্মীয়ের সহায়তা পেতে পারেন। যৌথ বিনিয়োগ শুভ। ব্যর্থ প্রেমের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। সৃজনশীল পেশায় সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি হতে পারে।কুম্ভ (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): ব্যবসায়িক জটিলতার অবসান হবে। সৃজনশীল কাজের জন্য প্রশংসিত হবেন। প্রেমের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও আপনার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। আর্থিক লেনদেন শুভ। রাজনীতি থেকে দূরে থাকুন।মীন (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): বেকারদের কারও কারও বিদেশ যাত্রার প্রচেষ্টা সফল হতে পারে। সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রশংসিত হবেন। কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতে পারে। ভেঙে যাওয়া প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগতে পারে। |
গণসংগীত থেকে লোকসংগীত সব ধরনের গানের সম্প্রসারণে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে জাগরণ সংস্কৃতিচর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র। বাংলা গানের বৈচিত্র্যময় ধারার সংগীত নিয়ে জাগরণের একক কাজ প্রশংসনীয়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে জাগরণ সংস্কৃতিচর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র নিবেদিত আট শিল্পীর একক গানের আটটি অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।অনুষ্ঠানে শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন বলেন, সুস্থ সংগীতের পরিবেশ তৈরিতে অগ্রপথিক জাগরণ সংস্কৃতিচর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র। এই আট শিল্পীকে উৎসাহিত করে সম্ভাবনাময় শিল্পীদের এগিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে এই সংগঠন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগীতশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায় ও খায়রুল আনাম শাকিল।রবীন্দ্র, নজরুল, লালন, লোকসংগীত ও আধুনিক গান নিয়ে আটজন শিল্পীর আটটি অ্যালবাম প্রকাশ করেছে জাগরণ। এই আট শিল্পী হলেন নাসিমা খান, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, ফারাহ দীনা, জান্নাতে ফেরদৌস, রেজাউল করিম, শহিদ কবির, মাহমুদুল হাসান ও দিদারুল করিম। অ্যালবামগুলোর সংগীত পরিচালনা করেছেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়।অনুষ্ঠানে এই আট শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেন। ‘তুমি কোনবা দেশে রইলা’ ও ‘কালসাপ দংশিলে বিষে’ পরিবেশন করেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, নাসিমা খান করেন রবীন্দ্রসংগীত ‘আর রেখো না আঁধারে’, শহিদ কবির শোনান ‘রুমা ঝুম রুমা ঝুম’, মাহমুদুল হাসান শোনান ‘মাগো ধন্য হলো’।বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে ‘আন্ডার প্রেশার’গুলশানে বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ‘আন্ডার প্রেশার’ নামে ছাপচিত্রকলার দলগত প্রদর্শনী।বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সফিউদ্দীন বেঙ্গল প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর পরিচালক শিল্পী মাহমুদুল হক এবং বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের পরিচালক নওশীন খায়ের।প্রদর্শনীতে শিল্পী মাহমুদুল হক, রোকেয়া সুলতানাসহ ২৬ জন শিল্পীর ৫৫টি ছাপচিত্র রয়েছে। প্রদর্শনী আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। |
একজন ব্যক্তি যদি কর শনাক্তকরণ সংখ্যা (টিআইএন) নিতে চান, তাহলে আর কর অফিসে যেতে হবে না। ঘরে বসেই তিনি অনলাইনে টিআইএন নিতে পারবেন। আবার যদি বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দিতে চান, তাহলেও কর অফিসে যেতে হবে না আগামী ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে।এছাড়া আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই অনলাইনে বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।এভাবেই বদলে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকাণ্ড। এনবিআর তার কার্যপরিধির প্রথাগত ধারণা অনেকটাই পাল্টে ফেলতে চাইছে। তাই এনবিআর আদায়কারীর চেয়ে স্বেচ্ছায় করদানে উৎসাহিত করার উদ্যোগে জোর দেওয়া হয়েছে।দীর্ঘদিন ধরে করদাতাদের হয়রানির অভিযোগ রয়েছে এনবিআরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। তাই করদাতা ও কর আদায়কারীর মধ্যে যাতে সরাসরি যোগাযোগ কম হয়, সে জন্য বিভিন্ন ধরনের ইলেট্রনিক সার্ভিস বা ই-সার্ভিস চালু করেছে এনবিআর। আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্ক—সব বিভাগেই চলছে অনলাইনে সেবা বাড়ানোর উদ্যোগ।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনবিআরের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘করবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এনবিআরের সেবাগুলো মানুষের দোড়গোড়ায় নিয়ে যেতে চাই। এতে রাজস্ব আদায়ের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কর দিতে আর কর অফিসে আসতে হবে না। এনবিআরই এমন ব্যবস্থা চালু করছে, করদাতারা ঘরে বসেই কর দিতে পারবেন।’এনবিআরের চেয়ারম্যানের মতে, এ দেশে ৬০ লাখ লোকের টিআইএন থাকা উচিত। অথচ সক্রিয় ও সচল টিআইএন রয়েছে মাত্র ১৭ লাখ লোকের। কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই যাতে করদাতারা টিআইএন নিতে ও আয়কর বিবরণী জমা দিতে পারেন, এখন সেই ব্যবস্থা করছে এনবিআর।গোলাম হোসেন বলেন, স্বচ্ছতা ও সঠিকত্ব নির্ধারণে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করতে হবে। তাই একই তথ্য যাতে আয়কর, শুল্ক ও মূসক বিভাগ ব্যবহার করতে পারে, সে জন্য সমন্বিত তথ্যভান্ডার তৈরি করা হচ্ছে।আয়কর: এনবিআরের সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে চলতি জুলাই মাস থেকে আয়কর খাতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে। এখন থেকে টিআইএন নিতে হলে আর কর অফিসে যেতে হবে না। ঘরে বসেই অনলাইনে টিআইএন নিতে হবে। সনাতনী পদ্ধতিতে টিআইএন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এনবিআর। আর পুরোনো টিআইএনধারীদেরও অনলাইনে পুনর্নিবন্ধন নিতে হবে।অনলাইনে টিআইএন নিতে হলে ইচ্ছুকদের www.incometax. gov.bd এই ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম পূরণ করে টিআইএন নিতে হবে। টিআইএন নিতে ইচ্ছুকদের জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে। ১ জুলাই থেকে চালু হওয়া এই সুবিধার প্রথম তিন দিনেই ১০ হাজার করদাতার টিআইএন দেওয়া হয়েছে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।অনলাইনে টিআইএন নেওয়ার সেবা চালু করে মূলত ভুয়া ও অকার্যকর টিআইএন নেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। আর টিআইএন নিতে গিয়ে করদাতাদের হয়রানিও কমবে বলে মনে করছে এনবিআর।এই পর্যন্ত ৩৩ লাখ টিআইএন দিয়েছে এনবিআর। প্রতিবছর মাত্র ১২ থেকে ১৩ লাখ টিআইএনধারী বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেন। দুই বছর ধরে এনবিআর ভুয়া টিআইএন বাদ দেওয়ার জন্য কাজ করেছে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১৭ লাখ সচল ও কার্যকর টিআইএন রেখে বাকিগুলো বাদ দিয়েছে এনবিআর।আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অনলাইনে বার্ষিক আয়কর বিবরণীও দাখিল করা যাবে। এই ব্যবস্থা চালু হলে ঘরে বসেই একজন করদাতা টিআইএন নেওয়া থেকে শুরু করে কর প্রদান পর্যন্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবেন।এদিকে করদাতাদের জন্য চলতি অর্থবছর থেকে মাত্র এক পৃষ্ঠার আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার ফরম চালু করেছে। এ বছর বার্ষিক কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় করদাতারা সেই ফরম ব্যবহার করতে পারবেন।রাজধানী ও বড় শহরগুলোর করদাতাদের বাইরে উপজেলা পর্যায়ে বিপুলসংখ্যক করযোগ্য ব্যক্তি রয়েছেন। কষ্ট করে জেলা শহরে গিয়ে কর দেবেন—এমন বিবেচনায় অনেক করদাতা টিআইএন নেন না, করও দেন না। মফস্বলের মানুষকে করজালে আনতে এবার এনবিআর তার কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। উপজেলা পর্যায়ে কর অফিস স্থাপন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৮৫টি উপজেলায় কর অফিস স্থাপন করা হয়েছে। আর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করদাতাদের ন্যূনতম করের পরিমাণও কমানো হয়েছে।এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে কর তথ্যসেবাকেন্দ্র চালু করেছে। পর্যায়ক্রমে তা অন্য বিভাগীয় শহরে চালু করা হবে। এই সেবাকেন্দ্রে গিয়ে করসংক্রান্ত যেকোনো তথ্য জানতে পারবেন।শুল্ক: সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে এসাইকুডা ব্যবস্থায় ‘ম্যানুফেস্ট মডিউল’ চালু করা হয়েছে। এতে আগে থেকেই অনলাইনে জানা যাবে কোন জাহাজে কোন কনটেইনারে কী ধরনের পণ্য আসছে। এত দিন তা ‘ম্যানুয়ালি’ জমা দিতে হতো। এতে সময় বেশি লাগত। ২০১২ সালের মধ্যেই দেশের ছয়টি কাস্টমস হাউস ও ১০টি শুল্কস্টেশনে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।জানা গেছে, শিগগিরই এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড ব্যবস্থায় যাবে শুল্ক বিভাগ। এতে শুল্কায়ন পদ্ধতি আরও স্বয়ংক্রিয় হবে।মূসক: বেশ কয়েক বছর আগেই বেচাকেনায় ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার (ইসিআর) বা পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) বাধ্যতামূলক চালু করা হয়েছে। ধীরে ধীরে বড় সুপারশপগুলোতে ইসিআর বা পিওএস চালু করছে।বৃহৎ করদাতা ইউনিটে (এলটিইউ) নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মূসক বিবরণী জমার ব্যবস্থা অনলাইনে করা হলেও তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন মূসক আইন কার্যকর হবে। সেই আইনে অনলাইনে ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূসক জমার ব্যবস্থা করা হবে।এদিকে আয়কর, মূসক ও শুল্ক—এই তিনটি বিভাগকে সমন্বিত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনায় আনা হচ্ছে। প্রতিটি পরস্পরের তথ্য ব্যবহার করতে পারবে। কোন আমদানিকারক কী পরিমাণ, কত টাকার পণ্য এনেছেন সেই তথ্য শুধু শুল্ক বিভাগ নয়, মূসক নির্ধারণের জন্য মূসক বিভাগ ব্যবহার করতে পারবে। আবার আমদানিকারক সঠিকভাবে আয়কর দিয়েছেন কি না, তাও জানতে পারবে আয়কর বিভাগ। |
প্রথম আলো: আমরা জানি ব্র্যাক ব্যাংক মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করে। এই এসএমই খাত নিয়ে আপনারা কী কী কাজ করছেন?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: ব্র্যাক ব্যাংক প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই এসএমই খাতই প্রাধান্য পেয়েছে। এই পর্যন্ত পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি এসএমই ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই ঋণের বেশির ভাগই ছোট উদ্যোক্তারা পেয়েছেন। দেশের ব্যাংকিং জগতে এসএমই খাতের অর্থায়নে আমরাই বিশেষ অবদান রাখছি।প্রথম আলো: সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক এসএমই উদ্যোক্তাদের নিয়ে সম্মেলন করেছে। কেন?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: গত ২৫ মে এই উদ্যোক্তা সম্মেলন হয়েছে। এতে দেড় হাজারের বেশি উদ্যোক্তা এসেছিলেন, যাঁরা ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। আমরা তাঁদের কাছ থেকে তাঁদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা শুনতে চেয়েছি। তাঁদের কথা শুনে আর সেসব বিষয় নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কাজ করছে। ভবিষ্যতে দুই বছর পরপর এই সম্মেলন করব বলে আশা করছি। ব্র্যাক ব্যাংক এখন এসব সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের কাছে যাবে। তাঁদের চাহিদা পূরণে চেষ্টা করবে। এবারের সম্মেলনে ১৩ জন উদ্যোক্তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।প্রথম আলো: বিগত ১২ বছরে ব্র্যাক ব্যাংকের অর্জন কী কী?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ১২ বছরে ব্র্যাক ব্যাংকের দুই ধরনের লক্ষ্য অর্জন হয়েছে। প্রথমত, এই পর্যন্ত আমরা সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি। এর মধ্যে চার লাখ ১৫ হাজার ব্যক্তিকে এসমএই ঋণ দিয়েছি। এতে ১৬ লাখ লোকের সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে। দ্বিতীয় অর্জন হলো, দেশের ব্যাংকিং জগতে এসএমই সম্পর্কে ধারণা বদলাতে সহায়তা করেছি। আমাদের সাফল্যে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এসএমই অর্থায়নে উৎসাহিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই বিভাগ চালু করেছে। প্রতিবছর দেশে ৬০ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা এসএমই ঋণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত এপ্রিল মাসে ব্র্যাক ব্যাংক এশিয়ান ব্যাংকার্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। আর আমি লিডারশিপ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। এশিয়ান ব্যাংকার্স ফোরাম এই সম্মাননা দিয়েছে।প্রথম আলো: ব্র্যাক ব্যাংক সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়গুলো কীভাবে দেখে?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়গুলো ব্র্যাক ব্যাংক একটু ভিন্ন আঙ্গিকে করে থাকে। আমরা গতানুগতিকভাবে সামাজিক দায়বদ্ধতার বা সিএসআর কার্যক্রম করি না। সমাজে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কর্মসূচিই এই সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমে আনা হয়েছে। আমরা শুদ্ধ সংগীতচর্চায় যেমন অর্থ ব্যয় করছি, তেমনি অদম্য মেধাবীদেরও অনুপ্রেরণা দিচ্ছি। আবার অটিস্টিক বাচ্চাদের পাশে থাকছে ব্র্যাক ব্যাংক। মুক্তিযদ্ধ জাদুঘরের জন্য আমরা কাজ করছি। সাভার ট্র্যাজেডিতে মানুষের পাশে ছিলাম। তারামন বিবির মতো খেতাবপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধাকে আজীবন ভাতা দিচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক।প্রথম আলো: সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাত এই মুহূর্তে কিছুটা শ্লথ রয়েছে। নির্বাচনের বছরে এটা হয়। এ ছাড়া বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিও ক্রমশ কঠিন হবে, মসৃণ হবে না। রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে অর্থনীতি শ্লথ হবে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগের ওপর প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। এতে কর্মসংস্থান কমছে। মনে রাখতে হবে, ১৬ থেকে ১৮ লাখ লোক প্রতিবছর শ্রমশক্তিতে যুক্ত হচ্ছে। তাদের কর্মস্থানে বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। বেসরকারি খাতে ১৮ শতাংশ ঋণপ্রবাহের লক্ষ্য অর্জন চ্যালেঞ্জিং হবে। বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকতে হবে। আবার ব্যাংকগুলোকে মনে রাখতে হবে, শুধু ঋণ দিলেই হবে না, ঋণ ফেরত পেতে হবে।প্রথম আলো: হল-মার্ক, ডেসটিনি কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা কেন ঘটছে বলে আপনি মনে করেন?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: এই ধরনের ঘটনা মূলত ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতার জন্য ঘটছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কঠোর ও সতর্ক হতে হবে। ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া যথার্থ হতে হবে। এ ছাড়া সময়ের সঙ্গে ব্যবস্থাপনাও যুগোপযোগী করতে হবে। ব্যবস্থাপনায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি আনতে হবে।প্রথম আলো: বাংলাদেশের বন্ড বাজার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: কর-সংক্রান্ত বিষয়গুলো পুনর্মূল্যায়ন না করলে এ দেশে বন্ড আকর্ষণীয় হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সব প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে নীতি গ্রহণ করতে হবে। বন্ড না হলে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আসবে না।[সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাহাঙ্গীর শাহ] |
অধ্যায়-৭ প্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের জন্য প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যায়-৭ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হলো। শূন্যস্থান পূরণ করো।১। সকল উৎসের পানি — নয়।উত্তর: সকল উৎসের পানি নিরাপদ নয়।২। — সুস্থ রাখার জন্য নিরাপদ পানি প্রয়োজন।উত্তর: শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিরাপদ পানি প্রয়োজন।৩। বসন্ত রোগের জীবাণু — মাধ্যমে ছড়ায়।উত্তর: বসন্ত রোগের জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়।৪। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের — পরিবর্তন ঘটে।উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন ঘটে।৫। ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি — রোগ।উত্তর: ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি বায়ুবাহিত রোগ।৬। আমাশয় একটি — রোগ।উত্তর: আমাশয় একটি পানিবাহিত রোগ।৭। হাম রোগের জীবাণু — মাধ্যমে ছড়ায়।উত্তর: হাম রোগের জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়।৮। — প্রতিরোধের জন্য শিশুকে বিসিজি টিকা দিতে হয়।উত্তর: যক্ষ্মা প্রতিরোধের জন্য শিশুকে বিসিজি টিকা দিতে হয়।৯। অ্যানোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশার কামড়ে — হয়।উত্তর: অ্যানোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়।১০। এইচওয়ানএনওয়ান নামক ভাইরাসের কারণে — রোগ হয়।উত্তর: এইচওয়ানএনওয়ান নামক ভাইরাসের কারণে সোয়াইন ফ্লু রোগ হয়।১১। — মশা সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যার আগে কামড়ায়।উত্তর: এডিস মশা সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যার আগে কামড়ায়।১২। স্ট্রেপটোকক্কাস নামক জীবাণু — রোগের জন্য দায়ী।উত্তর: স্ট্রেপটোকক্কাস নামক জীবাণু বাতজ্বর রোগের জন্য দায়ী।১৩। সাধারণত — বছর বয়সের পর থেকে ছেলেশিশুকে বলা হয় বালক।উত্তর: সাধারণত ছয় বছর বয়সের পর থেকে ছেলেশিশুকে বলা হয় বালক।১৪। ছয় বছর থেকে দশ বছর পর্যন্ত বয়স হলো —।উত্তর: ছয় বছর থেকে দশ বছর পর্যন্ত বয়স হলো বাল্যকাল।১৫। বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন —।উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন স্বাভাবিক।১৬। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যক্ষ্মা রোগের — চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।উত্তর: সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যক্ষ্মা রোগের বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।১৭। — মশার কামড়ে গোঁদ রোগ হয়।উত্তর: কিউলেক্স মশার কামড়ে গোঁদ রোগ হয়।১৮। দশ বছরের পর থেকে উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়টা হলো ছেলেদের ও মেয়েদের — ।উত্তর: দশ বছরের পর থেকে উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়টা হলো ছেলেদের ও মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: (প্রতিটির জন্য নম্বর থাকবে ১)১. বায়ুবাহিত রোগ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।উত্তর: যেসব রোগের জীবাণু বায়ুর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, তাদের বায়ুবাহিত রোগ বলে। যেমন: হাম, যক্ষ্মা, বসন্ত, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি।২. পানিবাহিত রোগ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।উত্তর: যেসব রোগ পানির মাধ্যমে ছড়ায়, তাদের পানিবাহিত রোগ বলে। যেমন: কলেরা, ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ইত্যাদি।৩. সোয়াইন ফ্লু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে কত ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে জ্বর হয়?উত্তর: সোয়াইন ফ্লু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ১০৪০ ফারেনহাইটের ওপরে জ্বর হয়।৪. শৈশবকাল কাকে বলে?উত্তর: শিশুর জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কে তার শৈশবকাল বলে।৫. কোন সময়কালকে বাল্যকাল বলে?উত্তর: ছয় থেকে দশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়কালকে বাল্যকাল বলে। ছেলেদের বলে বালক, মেয়েদের বলে বালিকা।# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল প্রধান শিক্ষক, ফকিরেরপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা |
শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য রয়েছে জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের ৫ নম্বর অধ্যায় থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর।প্রশ্ন:ক. যোজক কলা কাকে বলে?খ. অস্থি বলতে কী বোঝায়?গ. Q এর গঠন বর্ণনা করো।ঘ. প্রাণিদেহের বৃদ্ধির সঙ্গে Q-এর আকারের কোনো পরিবর্তন হয় কি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।উত্তর: ক. মেসোডার্ম নামক ভ্রূণস্তর থেকে উৎপন্ন হয়ে যে কলা দেহের গাঠনিক, যান্ত্রিক ও প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা পালনের পাশাপাশি অন্যান্য কলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে পুষ্টি জোগানো, বৃদ্ধি ও বিভেদীকরণে সহায়তা করে, তাকে যোজক কলা বলে।উত্তর: খ. অস্থি হচ্ছে দেহের সবচেয়ে সুদৃঢ় কলা। এর ম্যাট্রিক্স বিভিন্ন জৈব (৪০%) ও অজৈব (৬০%) পদার্থে গঠিত হওয়ায় সম্পূর্ণ কলাটি কঠিন আকার ধারণ করে। জৈব অংশটি কোলাজেন ও অসিমিউকয়েডে গঠিত। অজৈব অংশটিকে প্রধানত ক্যালসিয়াম ফসফেট ও ক্যালসিয়াম কার্বনেট পাওয়া যায়। এ কলা মেরুদণ্ডী প্রাণীর দৈহিক কাঠামো নির্মাণ করে।উত্তর: গ. Q একটি নিউরণ। প্রতিটি নিউরণ দুটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত—১. কোষদেহ বা সোমা এবং ২. প্রলম্বিত অংশ বা নিউরাইট।১. কোষদেহ: এটি নিউরণের মুখ্য অংশ এবং গোল, ডিম্বাকার, নক্ষত্রাকার, মোচাকার, সুচালো প্রভৃতি আকারের হতে পারে। কোষদেহের ব্যাস ৫ থেকে ১২০ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। কোষদেহ প্লাজমা মেমরেন, সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াস—এ তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। সাইটোপ্লাজমে প্রচুর অমসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম এবং মুক্ত পলিরাইবোসোম মিলে নিসল দানা গঠন করে। এ ছাড়া এতে বহুসংখ্যক মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগি বডি গুচ্ছবদ্ধ নিউরোফিলামেন্টসহ অন্যান্য দ্রব্য থাকে।২. প্রলম্বিত অংশ বা নিউরাইট: কোষদেহ থেকে বহির্গত শাখা-প্রশাখাকে প্রলম্বিত অংশ বলে। এটি দু ধরনের—i. ডেনড্রাইট এবং ii. অ্যাক্সনi. ডেনড্রাইট: কোষদেহের চারদিক থেকে সৃষ্ট শাখান্বিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রলম্বিত অংশকে ড্রেনড্রাইট বলে। এগুলো উদ্দীপনা গ্রহণ করে কোষদেহে পৌঁছে দেয়। ডেনড্রাইটের মধ্যে রাইবোসোম, মসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, নিউরোফিলামেন্ট ইত্যাদি বিস্মৃত থাকে।ii. অ্যাক্সন: কোষদেহের নিসল দানাযুক্ত এলাকা থেকে যে দীর্ঘকার নিউরাইট উৎপন্ন হয়, তাকে অ্যাক্সন বলে। অ্যাক্সনের মধ্যে সাইক্রোটিউবিউল, নিউরোফিলামেন্ট, মাইটোকন্ড্রিয়া, লাইসোজোম ইত্যাদি অঙ্গানু থাকে। অ্যাক্সন একটি বা দুটি আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে এবং তখন এর নাম হয় স্নায়ুতন্ত্র। চাপা সোয়ান কোষ নির্মিত নিউরিলেমা নামক আরবণীতে অ্যাক্সন আবৃত থাকে। অ্যাক্সন ও নিউরিলেমার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত প্রোটিন ও ফ্যাট নির্মিত দ্বিতীয় আবরণীর নাম মায়োলিন সিথ। বিভিন্ন স্থানে নিউরিলেমা অ্যাক্সনের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে চলে আসে। এখানে মায়োলিন সিথ থাকে না। একে র্যানভিয়ার এর পর্ব বলে। অ্যাক্সনের শেষপ্রান্ত বিভক্ত হয়ে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাখা সৃষ্টি করে সেগুলোকে টেলোডেনড্রিয়া বলে। টেলোডেনড্রিয়ার শেষ প্রান্তের স্ফীত অংশের নাম সিনাপাটিক নব।উত্তর: ঘ. উদ্দীপকে Q হলো স্নায়ুকোষ বা নিউরণ। প্রাণীদেহের বৃদ্ধি ঘটে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে কোষ সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রাণীর দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে। প্রাণিকোষের এই বিভাজনে সেন্ট্রিওল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেন্ট্রিওলবিহীন প্রাণীকোষ বিভাজন ক্ষমতাহীন। স্নায়ুকোষে কোনো সেন্ট্রিওল নেই। এ কারণে স্নায়ুকোষের বিভাজন হয় না। প্রাণীর দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্নায়ুকোষসমূহের নিজস্ব কাজ সম্পাদনের জন্য কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় যাতে উদ্দীপনা গ্রহণ ও সাড়া প্রদানে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। স্নায়ু কোষগুলো প্রাণীর দৈহিক বৃদ্ধির সময় এগুলো সংখ্যায় বৃদ্ধি না পেয়ে আকারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। স্নায়যুকোষের অ্যাক্সন ক্রমান্বয়ে লম্বা হয়ে স্নায়ুকোষসমূহের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। অ্যাক্সন লম্বায় ১ মিটারের বেশি হতে পারে। ফলে স্নায়ুকোষ তার প্রাথমিক অবস্থা থেকে ভিন্নতর অবস্থায় উপনীত হয়। সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা হতে প্রতীয়মান হয় যে প্রাণীদেহের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে Q- এর (স্নায়ুকোষ বা নিউরণ) আকারের পরিবর্তন হয়। প্রভাষক, রূপনগর মডেল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা |
Adverb সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, তোমাদের English second paper Grammar-এর ওপর দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার প্রত্যাশায় আজ তোমাদের জন্য Grammar item Adverb-নিয়ে আলোচনা করব। Model Test.Fill in the blanks with suitable Adverb from the following list. নিচের তালিকা থেকে উপযুক্ত Adverb দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করো।A.Cheaply —correctly —well —comfortably easily —always1. He sings —.2. The -students answered the question —.3. He bought it —.4. I get the address —.5. He lived there —.Answer : A.1. well; 2. correctly; 3. cheaply;4. easily; 5. comfortablyB.here —ago —late —when —well —quickly(1) Never go to school —.(2) Long — there was a king.(3) — did he go?(4) She writes —.(5) Please, wait —.Answer :B.1. late 2. ago 3. When 4. well 5. here.C.silently —occasionally —yesterday —quickly why —what(1) I saw him — .(2) He knows — he failed.(3) He visits us —.(4) He always walks —.(5) He left the place —.Answer : C.1. yesterday 2. why 3. occasionally4. quickly 5. silently.# পরবর্তী অংশ ছাপা হবে আগামীকাল সিনিয়র ইংরেজি শিক্ষক, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত হাইস্কুল, ঢাকা |
জিএসপি সুবিধা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের গণমাধ্যম, রাজনীতির মঞ্চ এবং ব্যবসায়ী মহলে নানামুখী আলোচনা চলছে। কিন্তু এসব আলোচনার কোনো কোনোটি থেকে মনে হয় জিএসপি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা না থাকার কারণে এটি নিয়ে কিছু অপ্রয়োজনীয় এবং ভিত্তিহীন মন্তব্য করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। জিএসপি বুঝতে হলে প্রথমে বোঝা উচিত এমএফএন (মোস্ট ফেভার্ড নেশন)-এর ধারণা, কারণ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (বিবাস) এই ধারণাটি থেকে জিএসপির সৃষ্টি। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার একটি সাধারণ নিয়ম আছে, সংস্থাভুক্ত দেশগুলোর প্রতিটি তাদের বাণিজ্যে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে সমভাবে বিবেচনা করবে, অর্থাত্ কোনো দেশ অন্য একটিকে আলাদাভাবে বিশেষ কোনো বাণিজ্য বা শুল্কসুবিধা দিতে পারবে না, যদি সেই সুবিধা সবার জন্য প্রযোজ্য না করা হয়। বিবাস-এর এ নীতিমালাটির অধীনেই এমএফএন বা সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের ধারণা। তবে বিশেষ বিবেচনায় কোনো দেশের জন্য এই ধারাটিকে শিথিল করার কিংবা এটি থেকে ছাড় দেওয়ার আনুষ্ঠানিক পদ্ধতিকেই বলা হয় জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স বা জিএসপি। এই নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো কিছু নির্দিষ্ট উন্নয়নশীল এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো বিশেষ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রতিদানহীনভাবে শুল্কমুক্ত বা শুল্কহ্রাস সুবিধা দিয়ে থাকে। মূলত সত্তরের দশক থেকে উন্নত বিশ্বের দেশগুলো পশ্চাত্পদ দেশগুলোর রপ্তানি বাড়ানোর জন্য এই সুবিধা দিয়ে আসছে, যাতে রপ্তানিকারক দেশগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে। তবে একটা কথা বুঝতে হবে যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে যে পণ্যটি রপ্তানি করতে সক্ষমতা দান করা হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই পণ্যটির উত্পাদন ব্যয় হয়তো আমদানিকারক উন্নত দেশে বেশি পড়বে, ফলে তাদের নিজস্ব ভোক্তাদের সেটি বেশি দামে কিনতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭৪ সাল থেকে জিএসপি সুবিধা বহাল করেছে বিভিন্ন দেশ ও পণ্যের ক্ষেত্রে। এটি বছর বছর পর্যালোচনা করে নবায়ন করা হয়, সে সময় বিভিন্ন কারণে ও যুক্তিতে এই সুবিধাপ্রাপ্ত পণ্য ও দেশের তালিকায় রদবদল করা হয়। যেমন ২০১২ সালে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার কারণে জিব্রালটা, তুরস্কসহ আরও দুটি দেশের জন্য জিএসপি বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে নতুন করে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেনেগাল ও দক্ষিণ সুদানকে। আবার আর্জেন্টিনার সুবিধা বাতিল করা হয়েছে, কারণ দেশটি মার্কিন নাগরিকদের পক্ষে দেওয়া সালিসি রায় বাস্তবায়নে বিশ্বস্ততার পরিচয় দেয়নি। ২০১১ সালে পেশকৃত কিছু তদন্ত ২০১২ সালে নিষ্পত্তি করা হয়েছে, যেমন শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে সুবিধা অব্যাহত রাখা হয়েছে, শ্রম অধিকারসংক্রান্ত দুটি আবেদন গৃহীত হয়েছে ইরাক ও ফিজির ক্ষেত্রে। একই বিষয়ের ওপর তদন্ত অব্যাহত ছিল বাংলাদেশ, নাইজার, ফিলিপাইন, উজবেকিস্তান ও জর্জিয়ার ক্ষেত্রে। এই তদন্তের ওপর ভিত্তি করেই শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করা হয়।এখানে একটা কথা উল্লেখ করা দরকার, যেসব পূর্বশর্তের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা দিয়ে থাকে, সেসব পর্যালোচনা করে দেখলে বোঝা যায় সুবিধাটি কেবল অর্থনৈতিক সহায়তা প্রকল্প নয়, সে দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রতিফলনও বটে। সে কারণে রাশিয়া বা ভেনেজুয়েলার মতো দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে জিএসপি সুবিধা পায়। তবে এই সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি দেশটির নিজ স্বার্থ যাতে লঙ্ঘিত না হয়, সে বিষয়েও রাখা হয়েছে সুস্পষ্ট নীতির সংস্থান। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, কিংবা এই সুবিধা দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থে দেওয়া হচ্ছে কি না—এসব বিষয় নিশ্চিত করেই জিএসপি সুবিধার বিষয়গুলো নির্ধারণ করা হয়। এমনকি সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের বাজারে মার্কিন পণ্যের যৌক্তিক এবং ন্যায্য প্রবেশাধিকার আছে কি না, মার্কিন নাগরিকের সম্পদ বা ব্যবসা বাজেয়াপ্ত করার বিরুদ্ধে সুরক্ষা কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষা অধিকার আইন বলবত্ আছে কি না—এসবও বিবেচনা করা হয়।যুক্তরাষ্ট্রের আইনে যেসব দেশকে জিএসপি সুবিধা দেওয়া নিষিদ্ধ, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: অন্যান্য শিল্পায়িত দেশ, কমিউনিস্ট বা আন্তর্জাতিক কমিউনিজম কর্তৃক পরিচালিত দেশ; যদি না তারা বিবাস এবং আইএমএফের সদস্য হয়, অন্য দেশের পণ্য আমদানি বন্ধ করার জন্য যে দেশ কোনো বিশেষ দেশের সঙ্গে ষড়যন্ত্র বা গোপন চুক্তি করে, যে দেশ মার্কিন নাগরিকদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে, যে দেশ কোনো আন্তর্জাতিক জঙ্গি ব্যক্তি বা সংগঠনকে প্রশ্রয় বা মদদ দান করে কিংবা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত ব্যবস্থাকে সমর্থন না করে ইত্যাদি। এ ছাড়া বাধ্যতামূলক পূর্বশর্ত হচ্ছে যে সুবিধাপ্রাপ্তির জন্য দেশটিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকার (যথা ট্রেড ইউনিয়ন, নিম্নতম আয়সহ উপযুক্ত কর্মপরিবেশ, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা, স্বাস্থ্যসেবা) প্রদানের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া এবং নিকৃষ্টতম শিশুশ্রম বন্ধের জন্য তাদের অঙ্গীকার পূরণ করা। এসব পূর্বশর্ত পরিপালনক্ষম যেসব দেশের মাথাপিছু আয় একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের কম, সেসব দেশকেই জিএসপি সুবিধা দেওয়া হয়। এসব শর্ত ঠিক থাকলে দেখা হয় নির্দিষ্ট পণ্যটির অন্যূন ৩৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন রপ্তানিকারক দেশটিতে হয় কি না এবং পণ্যটির শুল্কমুক্ত প্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রের উত্পাদনকারী এবং শ্রমিকদের স্বার্থহানি ঘটাচ্ছে কি না। জিএসপি ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন নামে যুক্তরাষ্ট্রের আরও কিছু বাণিজ্যসুবিধা ব্যবস্থা রয়েছে আফ্রিকা, আন্দিজ অঞ্চল (বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু) এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য। কেবল জিএসপির অধীনেই যুক্তরাষ্ট্র ১৭০টি দেশ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়ে থাকে।তবে পণ্যের তালিকা বিচারে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর জিএসপি অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক। কারণ, এখানে অস্ত্র ছাড়া সব পণ্যই অন্তর্ভুক্ত। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য তালিকা থেকে প্রতীয়মান হয় যে স্বল্পোন্নত দেশে সহজে উত্পাদনযোগ্য পণ্যের চেয়ে দেশটি তাদের অভ্যন্তরীণভাবে উত্পাদিত পণ্যের বাজারের কথা বেশি বিবেচনা করে, তাই পোশাক, কাচ, ইস্পাত ইত্যাদি পণ্যকে তাদের জিএসপি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেনি। সে কারণেই বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধাবঞ্চিত।যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের পর বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে একটা ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে এর ফলে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে ধস নামবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে তৈরি পোশাকশিল্প। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির সিংহভাগ অংশই তৈরি পোশাক এবং এটি জিএসপি সুবিধাবহির্ভূত একটা পণ্য। ২০১১-১২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি ছিল ২৪২৯ কোটি ডলার, যার মধ্যে তৈরি পোশাক থেকে আসে ১৯০৯ কোটি ডলার অর্থাত্ প্রায় ৭৯ শতাংশ। একই বছর মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ অর্থাত্ ১১৩৭ কোটি ডলার এসেছে ইইউভুক্ত দেশ থেকে, আর ২৪ শতাংশ অর্থাত্ ৪৫৩ কোটি ডলার আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আগেই বলা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে পাঁচ হাজারের বেশি পণ্য আমদানি করে জিএসপির আওতায়, অথচ এই সুবিধায় বাংলাদেশ পায় মাত্র তিন কোটি ৫০ লাখ ডলারের শুল্কমুক্ত রপ্তানি। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পণ্যের ওপর জিএসপি সুবিধা পায় সেগুলোর মধ্যে আছে তামাক, প্লাস্টিকসামগ্রী, চীনামাটির তৈজস ও ক্রীড়া সরঞ্জাম। এখানে একটা তথ্য উল্লেখ করা উচিত যে ২০১০ ও ২০১২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত রপ্তানিকারক দেশের প্রথম ২০টি দেশের মধ্যেও বাংলাদেশ নেই, অথচ সেখানে ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং এমনকি পাকিস্তানও আছে।অতএব যুক্তরাষ্ট্রের সুবিধা প্রত্যাহারের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের মারাত্মক কোনো ক্ষতি হবে না। তবে ইইউ যদি যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে, তাহলে সত্যিকার বিপর্যয় নেমে আসতে পারে আমাদের ওপর। তার জন্য এখন থেকেই নিদানমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে দেশের কর্মপরিবেশ এবং শ্রম অধিকারসংক্রান্ত অভিযোগ এবং ঘাটতিগুলো দূর করা যায়। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে সে দেশের বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন জোট এএফএল-সিআইও বাংলাদেশের শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যর্থতা সম্পর্কে অভিযোগ পেশ করেছিল ২০০৭ সালে। বিষয়টিকে আমরা তখন থেকেই যদি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র আজ জিএসপি বাতিলের কোনো অজুহাত পেত না। আমরা জানি এই সুবিধাটি বাতিলের ফলে আমাদের আর্থিক ক্ষতি বেশি না হলেও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এমন আশা করাও উচিত হবে না যে ইইউ যেকোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরবে না। বাংলাদেশে এই জিএসপি সুবিধা বাতিল নিয়ে যখন নানামুখী আলোচনা চলছে, ঠিক তখনই ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর ২ জুলাই ২০১৩ তারিখের সংস্করণে মন্তব্য করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে বাংলাদেশকে শাস্তি দেওয়ার জন্য। রানা প্লাজায় সহস্রাধিক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অর্থনৈতিক এবং নৈতিক যৌক্তিকতাকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা পোশাক খাতের জন্য প্রযোজ্য নয়। প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, জিএসপিতে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে পোশাকের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করে ওয়াশিংটন উন্নয়নশীল বিশ্বের শ্রমিকদের আরও সাহায্য করতে পারত। বাংলাদেশের মতো দেশগুলো যদি আরও সহজে পোশাক রপ্তানি করতে পারে, তারা দ্রুত শিল্পায়নে অগ্রগতি লাভ করতে পারবে। সরকারের ব্যর্থতার জন্য দেশের প্রগতিকে শ্লথ করে দিলে শাস্তিটা দেশকেই দেওয়া হয় এবং পুরস্কৃত করা হয় এএফএল-সিআইওর পশ্চাত্পদ দর্শনকে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কাছে শুনানির সময় এই সংগঠনটিই বাংলাদেশের শ্রমব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের আগের অসন্তোষে অবিচল ছিল।বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় বাজার ধরে রাখা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও বড় রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঢোকার জন্য অবশ্যকরণীয় কাজগুলো সমাধা করতে হবে যথাশিগগির সম্ভব। মনে রাখতে হবে, দারিদ্র্য হ্রাস, পোশাকশিল্পে শিশুশ্রম বন্ধ এবং কারখানার মানোন্নয়ন এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি সন্তোষজনক। বাকি কিছু পূর্বশর্ত পূরণ করা গেলে এবং অন্য কোনো পররাষ্ট্র-রাজনৈতিক বাধা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের হূত সুবিধা পুনর্বহাল করা সহজতর হবে।ফারুক মঈনউদ্দীন: লেখক ও ব্যাংকার। fmainuddin@hotmail.com |
পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় সরকার কাঠামোর মূল ভিত্তিই হলো পঞ্চায়েত রাজ। এই পঞ্চায়েত রাজের আওতায় একেবারে গ্রাম পর্যায় থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত গড়া হয় স্থানীয় সরকার। রাজ্যের প্রতিটি গ্রামে গড়া হয় গ্রাম পঞ্চায়েত। ব্লক বা থানা পর্যায়ে গড়া হয় পঞ্চায়েত সমিতি। আর জেলা পর্যায়ে গড়া হয় জেলা পরিষদ। ত্রিস্তর এই পঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হন পৌর এলাকা বাদে প্রতিটি গ্রামের ভোটারের ভোটের মাধ্যমে। নির্বাচিত ব্যক্তিরাই নির্বাচন করেন গ্রাম পঞ্চায়েতপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে। এই নির্বাচনও হয় রাজনৈতিক ব্যানারে। প্রতীকও বরাদ্দ হয় রাজনৈতিক দলের।পশ্চিমবঙ্গে রয়েছেন তিন হাজার ৩৫৪টি গ্রামের ৪১ হাজার ৫০৪ জন পঞ্চায়েত সদস্য। ৩৪১টি ব্লক বা থানায় রয়েছেন আট হাজার ৮৬৪ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আর ১৭টি জেলা পরিষদে রয়েছেন ৭৫৫ জন সদস্য।সর্বশেষ এই পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০০৮ সালের ১১, ১৪ ও ১৮ মে। সেই নির্বাচনে বেশির ভাগ আসনেই জয়ী হয়েছিল বামফ্রন্ট। গ্রাম পঞ্চায়েতে বামফ্রন্ট পেয়েছিল ২১ হাজার ৬৯১টি আসন। তৃণমূল পেয়েছিল নয় হাজার ৩৭৫ এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ছয় হাজার ৮৩৭টি আসন। পঞ্চায়েত সমিতিতে বামফ্রন্ট পেয়েছিল চার হাজার ৮৮২টি, তৃণমূল দুই হাজার ১৮ এবং কংগ্রেস পেয়েছিল এক হাজার ৪৪৬টি আসন। আর জেলা পরিষদে বামফ্রন্ট পেয়েছিল ৫১৪টি আসন। তৃণমূল পেয়েছিল ১২০টি এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ৯৯টি আসন।এবার ২০১৩ সালে আবার এসেছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। এবার ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয়ে মমতা চেয়েছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আনতে। কারণ, বর্তমানে অধিকাংশ পঞ্চায়েত রয়েছে বামফ্রন্টের দখলে। ফলে রাজ্য সরকারের উন্নয়নকাজ ব্যাহত হবে—এই ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন রাজ্য সরকারের মতো স্থানীয় সরকারকেও তাঁর কবজায় আনতে। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতা না পাওয়ায় মমতা আর এগিয়ে আনতে পারেননি পঞ্চায়েত নির্বাচন। পঞ্চায়েত নির্বাচন এ বছরের এপ্রিল-মে মাসে নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে এবং পাঁচ দফায় সম্পন্ন করার প্রস্তাব পাঠায় রাজ্য সরকারকে। কিন্তু সেই প্রস্তাব মানতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার।রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তাঁরা চান এই নির্বাচন হবে এক দফায়, অর্থাত্ একটি তারিখে এবং তা হবে রাজ্যের পুলিশের সহায়তায়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। এই নিয়ে শুরু হয় রাজ্য সরকারের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংঘাত। এর পরই রাজ্য সরকার দুই দফায় নির্বাচন করতে সম্মত হয়। তবে তারা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগে তাদের আপত্তি যথারীতি বহাল রাখে। এর পরই নির্বাচন কমিশন দ্বারস্থ হয় কলকাতা হাইকোর্টের। সেখান থেকে তিন পর্যায়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করার ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়নি।ইতিমধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয় ২, ৬ ও ৯ জুলাই। প্রার্থীরাও যথারীতি মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু এই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ঘটে হিংসাত্মক ঘটনা। বহু জায়গায় বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেননি সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা। শুধু তা-ই নয়, মনোনয়নপত্র দাখিলের পর বহু জায়গায় ভয়ভীতি দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতেও বাধ্য করেন সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা। এরই জের ধরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ত্রিস্তরে নির্বাচিত হয়ে যান ছয় হাজার ২৫০ জন প্রার্থী। এর প্রায় সবই শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের।এসব ঘটনার পর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের ব্যাপারে অনড় থাকে। কিন্তু রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ না নিলে নির্বাচন কমিশন গত ২৬ জুন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।২৮ জুন সুপ্রিম কোর্টে ওই আবেদনের শুনানি হয় বিচারপতি এ কে পট্টনায়ক ও বিচারপতি রঞ্জন গগৈর সমন্বয়ে গঠিত গ্রীষ্ম অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেন, পঞ্চায়েত ভোট হবে পাঁচ দফায়। ভোট হবে ১১, ১৫, ১৯, ২২ ও ২৫ জুলাই। আর এই নির্বাচন হবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে প্রতিদিন ১৫ হাজার, তৃতীয় ও চতুর্থ দফার নির্বাচনে ২৫ হাজার করে এবং শেষ দফার নির্বাচনে দুই হাজার নিরাপত্তা বাহিনী দেবে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে হতাশ হয়ে পড়েন মমতা। অন্যদিকে বেজায় খুশি হয়েছে রাজ্যের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রথম ধাক্কা খান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকার। এরপর যেহেতু রমজান মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সে কারণে রাজ্য সরকার নির্বাচনের তারিখ পুনর্বিবেচনার জন্য ফের আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে। ২ জুলাই সেই মামলার শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্টেও সেই ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেন, দেশের সংবিধানকে সম্মান জানিয়েই নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারিখ পরিবর্তনের সময় ও সুযোগ নেই। এর ফলে দ্বিতীয় ধাক্কা খান মমতা এবং তাঁর সরকার।যদিও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন মমতা কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করাতে চাইছেন না? কেনই বা মমতা এক দফা থেকে তিন দফায় নির্বাচন করতে চাইছেন? এর উত্তরও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে। মমতার মূল কথা, যেনতেন প্রকারে রাজ্যের সব পঞ্চায়েতের ক্ষমতা নিতে হবে তাঁদের। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী এলে নির্বাচন কেন্দ্রে যেমন ভোটার ছাড়া কারও প্রবেশের অধিকার থাকবে না, তেমনি রাজ্য পুলিশ মোতায়েন থাকলে রাজ্য সরকারের নির্দেশে শাসক দল জয়ের জন্য যেকোনো ঘটনা ঘটাতে কার্পণ্য করবে না। এতে করে শাসক দলের নেতা-কর্মীরা জয়ের জন্য তাঁদের পথ প্রশস্ত করে নিতে পারবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের ডাবল ধাক্কায় খানখান হয়ে গেল পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে পুষে রাখা তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের স্বপ্ন।অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি। |
ভারতের পাতিয়ালার সাবেক মহারাজার ফরমাশে তৈরি একটি রুপার ডিনার সেট নিলামে ৩০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে। লন্ডনের ক্রিস্টিজ নিলামঘর থেকে নাম উল্লেখ না করা একজন ক্রেতা এক হাজার ৪০০ পিসের সেটটি কিনেছেন। সোনার প্রলেপ দেওয়া প্রতিটি তৈজসপত্রে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন নকশা। সেটটির ওজন প্রায় ৫০০ কেজি। ১৯২২ সালে প্রিন্স অব ওয়েলসের পাতিয়ালা সফর উপলক্ষে মহারাজা ভূপিন্দর সিং এটি লন্ডন থেকে ফরমাশ করে তৈরি করিয়েছিলেন। প্রিন্সের তিন দিনের পাতিয়ালা সফরের শেষ দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি ছিল একটি রাজকীয় ভোজসভা। সেই প্রিন্স অব ওয়েলসই পরে রাজা অষ্টম এডওয়ার্ড হন।এক বিবৃতিতে ক্রিস্টিজ বলেছে, ‘বিশেষ বিক্রির’ অংশ হিসেবে সেটটি বিক্রি হয়। পাঞ্জাবে অবস্থিত পাতিয়ালা ছিল ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে ধনাঢ্য দেশীয় রাজ্যগুলোর একটি। শৌখিন ও জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য বিখ্যাত এ রাজ্যের মহারাজা ভূপিন্দর সিং প্রথম ভারতীয় হিসেবে নিজের জন্য বিমান কেনেন। গাড়ির ব্যাপারেও তাঁর বেশ আগ্রহ ছিল। তাঁর মোটর শোভাযাত্রায় ২০টি পর্যন্ত রোলস রয়েস দেখা গেছে।ভূপিন্দর সিং ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। ইতিহাসবিদেরা লিখেছেন, তিনি বেশ কয়েকবার বিয়ে করেন। প্রণয়ীর সংখ্যাও ছিল অনেক। বেশ কয়েকজন ছেলেমেয়ের বাবা হয়েছিলেন মহারাজা। বিবিসি। |
নেলসন ম্যান্ডেলার তিন সন্তানের মরদেহ নতুন করে সমাহিত করা নিয়ে সৃষ্ট পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুজন নেতা। তাঁরা হলেন ডেপুটি প্রেসিডেন্ট কেগালেমা মোতলান্তে ও আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মান্ডলা অভিযোগ করেন, পরিবারের কিছু সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চান। তাঁরা ম্যান্ডেলার সম্পত্তি বেহাত করতে চান।ম্যান্ডেলা পরিবারের এই কলহে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডেপুটি প্রেসিডেন্ট মোতলান্তে এক রেডিও অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা প্রার্থনা করছি যেন মাদিবার পরিবারের সদস্যরা এ বিরোধ শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিটিয়ে নেন।’ শান্তিতে নোবেলজয়ী আর্চবিশপ টুটুও ম্যান্ডেলার পরিবারের সদস্যদের মতপার্থক্য দূর করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘প্লিজ, প্লিজ, প্লিজ আমরা কি শুধু আমাদের স্বার্থ আর ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না? বিষয়টি প্রায় ম্যান্ডেলার মুখে থুতু ছিটিয়ে দেওয়ার পর্যায়ে নেমে গেছে।... প্লিজ, আমরা কি তাঁর কীর্তিকে অক্ষুণ্ন রাখতে পারি না?’ বিবিসি। |
রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে। এতে ৪২ হাজার শিক্ষকের নাম তালিকাভুক্ত করা হয় এবং এ পর্যন্ত ১২ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩০ হাজার তালিকাভুক্ত শিক্ষককে নিয়োগদানের ব্যাপারে সরকার এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি। অথচ ওই ৩০ হাজার তালিকাভুক্ত শিক্ষকের অধিকাংশই আমার মতো কোনো দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে; যাঁরা এক বছরেরও অধিক সময় ধরে পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, মানসিক ও নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পরিবারকে অর্থনৈতিক সাহায্যের পরিবর্তে তাঁরা পরিবারের কাঁধে বোঝা হয়ে পড়ে আছেন। তবু নিয়োগ পাওয়ার অপেক্ষায় দিন-রাত স্বপ্নের জাল বুনছেন।সরকার গত ৯ জানুয়ারি ২৬ হাজার রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয় এবং একই ধারাবাহিকতায় এ মাসেই বিদ্যালয়গুলোকে সরকারীকরণের গেজেট নোটিফিকেশন ঘোষণা করবে (সূত্র: প্রথম আলো)। এ অবস্থায় ৩০ হাজার তালিকাভুক্ত শিক্ষক গভীর হতাশা ও অনিশ্চয়তায় দিন যাপন করছেন। অথচ রেজিস্টার্ড প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ২০১০-এর বিধিমালা অনুযায়ী, নিয়োগকৃত ১২ হাজার শিক্ষকের মতো ওই ৩০ হাজার শিক্ষকও সরকারীকরণ নোটিফিকেশন ঘোষণাকৃত বিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ পাওয়ার দাবিদার। যদি কোনো কারণে এসব তালিকাভুক্ত শিক্ষককে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করা হয়, তবে ৩০ হাজার পরিবারের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। তাই আমাদের দাবি, এই ৩০ হাজার ভবিষ্যত্ শিক্ষকের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা যেন দেওয়া হয়।নমীতা সাহাসদরপুর, ফরিদপুর। |
বেসরকারি খাতের ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিমা খাতেও দৃশ্যত রাজনৈতিক বিবেচনায় একসঙ্গে ১১টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদানের ঘটনা আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার জন্য একটি হুমকি। এর বহুমাত্রিক ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। তাই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ৩০টি দেওয়ার বিপরীতে বিএনপি ভাগ্যিস একটিও দিয়ে যায়নি। আওয়ামী লীগ সম্ভবত সেটা পুষিয়ে দিল। তবে এই খাতে নৈরাজ্য আসার আগেই বর্তমানে যেগুলোর প্রাণপ্রদীপ নিবু নিবু, তাদের বিষয়ে সরকারকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাকে নিরুত্সাহিত করা নিশ্চয় আমাদের অভিপ্রায় নয়।তবে বিশেষজ্ঞ মহল পরিহাসের সঙ্গে বলছে যে ভারত ও পাকিস্তানে দুই দেশ মিলে বিমা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ষাটের কোঠায় সীমিত থাকলেও বাংলাদেশ ৭৩টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়ার একটি রেকর্ড স্থাপন করেছে। ৫ জুলাই প্রথম আলোতে প্রকাশিত বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদের বক্তব্য বড় দুর্ভাগ্যজনক বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। তাঁর আচানক দাবি বিমা ব্যবসায়ের ‘ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে বলে নতুন লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আইডিআরএ আগে স্বায়ত্তশাসনের স্বাদ থেকে একেবারেই বঞ্চিত ছিল। এ সরকারের আমলে এটিকে ‘কর্তৃপক্ষ’ করা হয়। নিঃসন্দেহে সরকারের মুঠো আলগা করার এই প্রক্রিয়াটি ভালো।সরকারের মেয়াদ শেষের দিকে একসঙ্গে ১১টি বিমা কোম্পানির লাইসেন্স কোনো আকস্মিক সিদ্ধান্ত নয়। স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তরফ থেকে গোড়া থেকেই চাপ ছিল। এবং অর্থমন্ত্রী তাতে বিনা বাক্য ব্যয়ে সম্মত ছিলেন, তা হয়তো বলা যাবে না। কারণ, গত বছর তিনি দেশে আর কোনো বিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়ার আদৌ কোনো দরকার আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি সমীক্ষা চেয়েছিলেন। আইডিআরএর চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদই তখন সুচিন্তিতভাবে জানিয়েছিলেন যে আর ‘বড় জোর দুই থেকে তিনটি জীবনবিমা কোম্পানির লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে। তবে কোনোভাবেই সাধারণ বিমা কোম্পানি নয়।’ এখন আমরা তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতেই সন্দেহ করি, গত এক বছরে দেশের আর্থিক অবস্থা এমনভাবে বদলে যায়নি যে তার ওই সমীক্ষার বাস্তবতা আমূল বদলে গিয়েছে। আরডিআরএর উচিত হবে তাদের এই দৃশ্যমান ডিগবাজির একটি উপযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদান করা। এ রকমের একটি ব্যাখ্যায় সরকারি সিদ্ধান্ত হয়তো বদলাবে না, কিন্তু তাতে একটি লব্ধপ্রতিষ্ঠ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার আত্মমর্যাদার সঙ্গে সেটা সংগতিপূর্ণ হবে। উপযুক্ত ব্যাখ্যা না দিয়ে হঠাত্ ‘ভালো সম্ভাবনা’ আবিষ্কার করা উর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত বলে গণ্য হতে পারে। যেখানে একটিও সাধারণ বিমা দেওয়ার কথা নয়, সেখানে কোন যুক্তিতে দুটি সাধারণ বিমা, আর দু-তিনটির বদলে কী কারণে নয়টি জীবনবিমার লাইসেন্স দেওয়া হলো, তা সত্যি রহস্যজনক। সাধারণ সংশয় আছে যে বড় ব্যবসায়ী ও তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে বাগে রাখা এবং তাঁদের কাছ থেকে দলীয় তহবিলে চাঁদা সংগ্রহের একটি উত্স হিসেবে ব্যবহার করার সঙ্গে বিমার লাইসেন্সের যোগসূত্র রয়েছে। সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত জনমনের এই সন্দেহকেই প্রকট করবে। |
আফ্রিকার দেশগুলোর জোট আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) মিসরের সদস্যপদ স্থগিত করেছে। গতকাল শুক্রবার এক বিশেষ বৈঠকের পর এইউ এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে। মিসরে সেনা অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দুই দিন পর এইউ এই সিদ্ধান্ত নিল। এইউর শান্তি ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি আদমোর কামবুদজি জানান, জোটের শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদ মিসরের সদস্যপদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংবিধান পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত সদস্যপদ স্থগিত থাকবে। দেশটি এই সময়ের মধ্যে এইউর কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না। মিসরের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সংবিধান স্থগিত করারও ঘোষণা দেন। বিধান অনুযায়ী সংবিধান স্থগিত করার স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে মিসরের সদস্যপদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এইউ। আল-জাজিরা। |
প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক জাহিদুল করিম (সেলিম) গত ২৬ জুন গাজীপুরে নির্বাচনী প্রচার মিছিলের ছবি তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁর মুখ, হাত-পা ঝলসে যায়। একটি ভবনের ছাদ থেকে তিনি ছবি তুলছিলেন। পাশেই ছিল ৩৩ কিলো ভোল্টের সরবরাহ লাইন। ছবি তোলার সঙ্গে এর সম্পর্ক আছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে ক্যামেরার কারণে কিছু হয়নি। ফ্ল্যাশগানের আলোর পথ ধরে বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে না। ছবি তোলার সময় উঁচু ভোল্টের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের খুব কাছে চলে যাওয়ায় তিনি তড়িতাহত হয়েছেন। যেমন মেঘে সঞ্চিত স্থির বিদ্যুতের পরিমাণ খুব বেড়ে গেলে বাজ পড়ে, অর্থাৎ মাঝখানের অপরিবাহী বাতাসের বাধা ভেদ করে বিদ্যুৎ নিচে নেমে আসে। জাহিদুলের ক্ষেত্রেও অনেকটা সে রকম হয়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় ভবনটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় না, কারণ সরবরাহ লাইন থেকে এর দূরত্ব একটু বেশি। তা ছাড়া সেদিন বৃষ্টি ছিল। ভেজা বাতাস কিছুটা বিদ্যুৎ পরিবাহী। জাহিদুলের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার এটিও একটি বাড়তি কারণ হতে পারে। |
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্যারিসের উপকণ্ঠে উবারভিলিয়ে শহরে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মিত হচ্ছে। সম্প্রতি এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাংলা, ফরাসি, আরবি, চীনা, তামিলসহ অন্যান্য ভাষায় বিখ্যাত কবিদের কবিতা আবৃত্তি, ভাষার ওপর আলোচনা এবং উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সংগীত পরিবেশনা। শহীদ মিনারের জন্য বরাদ্দ করা নির্ধারিত স্থানে একটি বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন উবারভিলিয়ে শহরের মেয়র জ্যাক সালভাতর। ফ্রান্সে বসবাসরত বাঙালি কমিউনিটির এই মাহেন্দ্রক্ষণ সৌন্দর্যমণ্ডিত করার জন্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম, ইউনেসকোর প্রতিনিধি জন ওদুস, ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে আগত বাঙালি কমিউনিটি নেতারা, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীসহ ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটির বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।উল্লেখ্য, ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটি বাংলাদেশের অন্যান্য জাতীয় দিবসের পাশাপাশি প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে বায়ান্নর ভাষাশহীদদের স্মরণে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করে। এত দিন অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শহীদ দিবস পালন করা হতো। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোর পক্ষ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করা হলে ফ্রান্সের বাঙালি কমিউনিটি প্যারিসে স্থায়ীভাবে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রশাসনিক চেষ্টা চালাতে থাকেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ফ্রান্স সংসদ এবং প্যারিসের উবারভিলিয়ে মেরি কর্তৃক যৌথভাবে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে পোকর্ত দ্য উবারভিলিয়েতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৩ পালন করা হয়।অনুষ্ঠানে উবারভিলিয়ে শহরের মেয়র জ্যাক সালভাতর আনুষ্ঠানিকভাবে প্যারিসে স্থায়ীভাবে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ইউনেসকোর সদর দপ্তরের শহরেই এবার স্থাপিত হবে মহান ভাষাশহীদদের জন্য একটি স্থায়ী শহীদ মিনার।তাঁর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ফ্রান্সে বসবাসরত বাঙালি কমিউনিটির ১৪ বছরের প্রচেষ্টা বাস্তবে রূপ নিল। কয়েক দিনের মধ্যেই সেখানে শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ শুরু হবে। আশা করা যায়, ২০১৪ সালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ফ্রান্সে বসবাসরত বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষ এই স্থায়ী শহীদ মিনারে পালন করতে পারবে। প্যারিস, ফ্রান্সmorshedmehjabin@gmail.com |
আমাদের দেশে সব জায়গাতেই অহরহ ভিক্ষুক দেখা যায়। ভিক্ষাবৃত্তি অত্যন্ত নিম্ন প্রকৃতির একটি কাজ হলেও আয়ের একটি সহজ উপায়। আগে বয়স্ক, অসহায় ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে মানুষ ভিক্ষা করত। কিন্তু বর্তমানে শারীরিকভাবে শক্ত-সামর্থ্য একশ্রেণীর ভণ্ড ভিক্ষাবৃত্তিকে তাদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে।অর্থলোভী একশ্রেণীর মানুষ পথশিশুদের ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করছে। এ জন্য তারা অনেক শিশুর অঙ্গহানির মতো অপরাধও করছে। তাদের শেখানো পথ অনুযায়ী এসব শিশু রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় মানুষের গায়ের পোশাক ধরে টানাটানি করে, পা জড়িয়ে ধরে রেখে ভিক্ষা আদায় করে ছাড়ে। বেদে শ্রেণীর একদল নারী ভিক্ষার জন্য এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যে পথচারীরা বাধ্য হয় টাকা দিতে। টাকা না দিলে বা নির্দিষ্ট পরিমাণের কম দিলে পথচারীদের তারা বিভিন্নভাবে নাজেহাল করে এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে।আরও একশ্রেণীর ভিক্ষক আছে যারা বাস, ট্রেন, লঞ্চে উঠে তাদের বা তাদের পরিবারের কোনো সদস্যের ভুয়া শারীরিক সমস্যার কথা বলে টাকা আদায় করে যাত্রীদের ঠকায়। এভাবেই মানুষের আবেগের সুযোগে বা বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভিক্ষুক নামধারী এসব নীরব চাঁদাবাজ অবাধে অর্থ উপার্জন করছে। কাজেই সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ, ভিক্ষক বেশধারী এসব চাঁদাবাজকে যেন কঠোর হস্তে দমন করা হয়।মাকসুদুল হাসানদর্শন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। |