content
stringlengths
1
63.8k
গ্যাস সিলিন্ডার বিধি লঙ্ঘন করে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। ওই বিধিতে আচ্ছাদিত এলাকায় বিক্রি করার নির্দেশ থাকলেও রাস্তার পাশে, বাজার এলাকা ও সড়কের মোড়ে তরল পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার রাখা হয়েছে। এভাবে বিক্রি করায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করতে হলে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স নিতে হয়। কিন্তু আত্রাই উপজেলার অনেক ব্যবসায়ীই সেই লাইসেন্স নেননি। উপরন্ত অনেকের ট্রেড লাইসেন্সও নেই। এসব দোকানে নেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রতিকারেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।এই বিষয়ে আত্রাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা নিতাই ঘোষ বলেন, ‘আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরামর্শে এ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ৫২টি দোকান পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে ১৪টির বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স পাওয়া গেছে। বাকি ৩৮টি দোকানে লাইসেন্স নেই। অবৈধ ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দিয়েছি। বিস্ফোরক পরিদপ্তর বিস্ফোরক লাইসেন্স দিয়ে থাকে। সহজেই এ লাইসেন্স পাওয়া গেলেও অনেকেই তা নেন না।’আত্রাই ইউএনও মো. ছানাউল ইসলাম তালিকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অবৈধভাবে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবসা বন্ধে কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কয়েকজন ব্যবসায়ীর জরিমানা করা হয়েছে। আগামী মাসে ব্যবসায়ী ও তাঁদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে এ বিষয়ে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে যেসব ব্যবসায়ীর বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স নেই, সেসব ব্যবসায়ীর কাছে ওই পরিদপ্তরের কাছ থেকে লাইসেন্স নেওয়ার নোটিশ পাঠানো হবে। কেউ তা না করলে পরবর্তী সময়ে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৫২ ধারা অনুযায়ী, সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে এমন কোনো কাজ করলে তিন বছরের কারাদণ্ড, বা অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ এ জ্বালানি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করে খোলা আকাশের নিচে অবাধে বিক্রি হচ্ছে।সম্প্রতি উপজেলার ভবানীবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে ভবানীপুর উচ্চবিদ্যালয় ও ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫০ থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে কয়েকটি দোকানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এসব দোকানে কোনো অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র নেই। অথচ নিয়মানুযায়ী যেসব দোকানে ৪০ থেকে ৫০টি এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে, সেসব দোকানে একটি করে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখতে হবে।সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর বাজার, আত্রাই স্টেশন বাজার, নওদুলি বাজার, সাহেবগঞ্জ বাজার, বান্দাইখাড়া বাজার,শাহাগোলা স্টেশন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট ছোট দোকান, খুচরা বাজারের দোকান, রাস্তার পাশের দোকানে বিক্রি হচ্ছে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। এসব দোকানদার বেশির ভাগই বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স নেননি। তা ছাড়া তদারকির অভাবে ঝুঁকি জেনেও দোকানিরা সনদ ও অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক দোকানে নানা ব্র্যান্ডের এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও চা ও পানের দোকান ছাড়াও হার্ডওয়্যার, সিমেন্ট, মনোহরি ও মুদি দোকানেও এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন দোকানমালিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।তবে লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী অজিত সাহা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন থেকে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছি। আমাদের মাত্র কয়েকজনের লাইসেন্স আছে। কিন্তু বাকিরা লাইসেন্স না নিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা করে যাচ্ছে।’
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কটারকোনা বাজার-হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সড়ক। ওই সড়কের হাসিমপুর এলাকায় গত বুধবার বাঁধের প্রায় ৫০ ফুট জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। এতে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।স্থানীয় লোকজনের আশঙ্কা, বাঁধ ভেঙে পড়লে নদের পানি ঢুকে এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। নদের ওই স্থান থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলায় বাঁধে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের।এলাকাবাসী ও পাউবোর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সড়কটি নির্মাণ করেছে। এই সড়ক দিয়ে হাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার লোকজন প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে কুলাউড়া উপজেলা সদরসহ পাশের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চলাচল করেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সড়কের হাসিমপুর এলাকায় কুতুব উদ্দিনের বাড়ির সামনে বাঁধের প্রায় ৫০ ফুট জায়গায় ফাটলের সৃষ্টি হয়। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এলাকাবাসী ওই স্থানে লাল পতাকা টানিয়ে রাখেন স্থানীয়রা। বিকেলে পাউবোর কর্মকর্তারা ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে স্থানটি পরিদর্শনে যান।ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল বাছিত বলেন, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। উজানের পাহাড়ি ঢলও নামছে। নদে পানি বাড়ছে। প্রবল স্রোতে বাঁধ ভেঙে গেলে পানি ঢুকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যেতে পারে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, মনু নদ বালুমহাল প্রতিবছর ইজারা দেওয়া হয়। দুটি স্থান কটারকোনা সড়কসেতু ও মনু রেলসেতুর কাছাকাছি পড়েছে। ইজারার শর্ত অনুযায়ী, ওই দুটি স্থানের এক কিলোমিটারের ভেতর থেকে বালু তোলা নিষেধ। কিন্তু ইজারাদারেরা ওই নিষেধাজ্ঞা না মেনে প্রায়ই খননযন্ত্র দিয়ে সেখান থেকে বালু তোলেন। ফলে জায়গাটি গভীর হয়ে যাওয়ায় বাঁধের মাটি সরে গিয়ে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে।পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, দু-এক দিনের মধ্যেই সরেজমিনে দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদি উর রহিম বলেন, নতুন ইজারাদারকে বালুমহাল বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সেতুর কাছ থেকে বালু তুলছেন না।ইজারাদার ও জেলা পরিষদের সদস্য বদরুল ইসলাম বলেন, দুটি সেতুর এক কিলোমিটার ভেতর থেকে বালু না তুলতে ভূমি কার্যালয় থেকে তাঁদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সেটা মেনে চলছেন।
শিক্ষকতা জীবনের ২০ বছরে তিনি এক মিনিটও ক্লাসে দেরি করে আসেননি। শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী করাতে নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। শিক্ষার প্রসারে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। জাতি গড়ার এই মহৎ কাজের স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। জাতীয় পর্যায়ে তিনি এবার শ্রেষ্ঠ কলেজশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন।ওই শিক্ষকের নাম নিতাই কুমার সাহা। তিনি রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। আজ থেকে ৯ বছর আগে তাঁকে নিয়ে প্রথম আলোতে ‘আছেন আমাদের নিতাই স্যার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি তাঁর হাতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরস্কার তুলে দিয়েছেন।নিতাই কুমার সাহা রাজশাহী কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। ঝড় হোক, বৃষ্টি হোক—সব সময় নিতাই স্যারের ক্লাস শিক্ষার্থীতে পূর্ণ থাকে। গত ২০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি এক মিনিটও দেরি করে ক্লাসে আসেননি। বছরের শুরুতেই তিনি শিক্ষার্থীদের হাতে নিজের তৈরি বিশেষ ধরনের একটা ক্যালেন্ডার ধরিয়ে দেন। সারা বছর কয়টি টিউটরিয়াল পরীক্ষা নেওয়া হবে, কয়টি ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হবে, কয়টি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে, কয়টি সাক্ষাৎকার, কয়টি উপস্থাপনা থাকবে—ক্যালেন্ডারে এর উল্লেখ থাকে। প্রতিটির পাশে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের ঘর থাকে। সারা বছর এই সব বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষার্থীরাই পূরণ করেন। মোট ৩০০ নম্বরের মূল্যায়ন শেষে নিতাই স্যার তাতে স্বাক্ষর করে দেন। তারপর তাতে অভিভাবকদের স্বাক্ষর নিয়ে আসতে হয়। তার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার দেওয়া হয়।শিক্ষক নিতাই কুমার সাহার ভাষায়, পুরস্কার তাঁদের ছোটখাটোই দেওয়া হয় কিন্তু এতে তাঁরা দারুণ উৎসাহিত হন। সব শিক্ষার্থীর মধ্যে যখন তাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়, তখন তাঁরা খুব সম্মানিত বোধ করেন।রাজশাহী কলেজ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের র‌্যাংকিংয়ে টানা চার বছর ধরে সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিন বছর ধরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়েও প্রতিষ্ঠানটি সেরা। এবার সেই কলেজের শিক্ষক নিতাই কুমার সাহা জাতীয় পর্যায়ের সেরা কলেজ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। গত বুধবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিতাই কুমারকে শ্রেষ্ঠ কলেজশিক্ষকের পুরস্কার দেওয়া হয়। তাঁকে একটি ক্রেস্ট, সনদ ও আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।নিতাই কুমার সাহা তাঁর সাফল্যের জন্য কলেজের অধ্যক্ষ, সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাঁর ভাষায়, ‘এই পুরস্কার পাওয়ার মাধ্যমে আমার দায়িত্বটা আরও বেড়ে গেল। এই পেশায় এসেছি ভালোবেসে। এ জন্য ছাত্রদের যতটা দেওয়া সম্ভব, তার সবটুকুই দিতে চাই। এই দেওয়ার ইচ্ছাটা একেবারে ভেতর থেকেই আসতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে ক্লাসে এলে তাদের কিছু লাভ হবে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের চুলের ভাঁজ থেকে শুরু পায়ের নখ পর্যন্ত অনুসরণ করতে পারে। সেই জন্য আমাকে দায়িত্বশীল থাকতে হয়। শিক্ষার্থীদের সময়ানুবর্তিতা শেখানোর জন্য আমাকেই সময়মতো ক্লাসে যেতে হয়।’নিতাইয়ের এই উদ্যোগের কারণে কলেজের ফলাফলেও পাওয়া গেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। ২০১৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান শ্রেণি থেকে মোট ৩৭ জন শিক্ষার্থী প্রথম শ্রেণি পেয়েছিলেন। তার মধ্যে রাজশাহী কলেজেরই ছিলেন ২০ জন। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা চলেই আসছে।নিতাই কুমার ২৪তম বিসিএস পাস করে শিক্ষকতা পেশায় ঢোকেন। এর আগে তিনি সিলেট এমসি কলেজ ও কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে ছিলেন। তিনি ২০০৫ সালের মার্চ মাসে রাজশাহী কলেজে যোগদান করেন। ইতিমধ্যেই তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, নিতাই কুমার সাহা একজন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক। শ্রেণিকক্ষে তিনি যথেষ্ট সময় দেন। এ ব্যাপারে তিনি অতুলনীয়। শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের যতটা দেওয়ার কথা, তাতে তাঁর কোনো ঘাটতি থাকে না। বরং প্রশাসন যতটুকু আশা করে, তিনি তাঁর চেয়ে বেশি দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নে তাঁর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া রেলস্টেশনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ট্রেন ভেড়ে। নিজ নিজ গন্তব্যে স্টেশন ছাড়তে ব্যস্ত যাত্রীরা। প্ল্যাটফর্মের উত্তর প্রান্তের একটি খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ২৪ বছরের তরুণ শুভ চন্দ্র দাস। স্টেশন ছাড়তে তাঁর কোনো তাড়া নেই। কারণ, তাঁর মন পড়ে থাকে স্বপ্নের গন্তব্যে, যেখানে শিশুদের হাতে-কলমে বর্ণমালা শেখান; এই শিক্ষা নিয়ে দরিদ্র শিশুরা হয় স্কুলগামী।চার বছর ধরে চাষাঢ়া রেলস্টেশন ও আশপাশের এলাকার শিশুদের বিনা মূল্যে পড়াশোনা করাচ্ছেন চা-দোকানি শুভ চন্দ্র দাস। শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে দিচ্ছেন বই, খাতা, কলম, ব্যাগসহ পড়াশোনার প্রয়োজনীয় উপকরণ। এ পর্যন্ত শতাধিক ছেলেমেয়ে পড়তে-লিখতে শিখেছে তাঁর কাছে। অক্ষরজ্ঞান দিয়ে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থীকে তিনি ভর্তি করিয়েছেন আশপাশের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখনো তাদের নিয়মিত সরবরাহ করছেন পড়াশোনার উপকরণ।নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া শুভ চন্দ্র পড়াশোনা শেষ করে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় গার্মেন্টসে শ্রমিকের চাকরি নেন। কিছুদিনের মধ্যেই মায়ের মৃত্যু হয়। নানান কারণে আর প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা হয়নি। গার্মেন্টসে চাকরির পাশাপাশি পরিচিত এক স্কুলশিক্ষকের কাছে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই পড়েছেন। সেই শিক্ষকের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পড়াশোনাও শেষ হয়ে যায় তাঁর।২৫ জুন বিকেলে চাষাঢ়া স্টেশনে পৌঁছাতেই দূর থেকে একটি জাতীয় পতাকা চোখে পড়ে, এটি ছোট্ট টংদোকানের সঙ্গে বাঁশে বাঁধা। এগিয়ে যেতেই কানে আসে ‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি, আমার সোনার বাংলা’। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বুকে হাত রেখে একসঙ্গে জাতীয় সংগীত গাইছে। এরপর শপথ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পড়ালেখা। খোলা আকাশের নিচে ছেঁড়া চটে বই-খাতা নিয়ে সামনের সারিতে বসেছে শিশুরা। পেছনে একসঙ্গে বসেছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শুভর পুরোনো শিক্ষার্থীরা। তাদের সামনেই সবুজ টংদোকান। দোকানের এক পাশে লেখা, ‘শ্রী শুভ চন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা খরচে লেখাপড়া শেখানো হয়।’ পড়ালেখা শেষে কথা হয় শুভর সঙ্গে। তিনি জানান পেছনের গল্প।শুভ চন্দ্র বলেন, ‘স্টেশনে বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম। খেয়াল করলাম, এখানকার শিশুরা সারা দিন ঝগড়া আর খেলাধুলা করে সময় কাটায়। বাবা-মায়েরা শিশুদের কাজ করতে পাঠায়, কিন্তু স্কুলে পাঠায় না। এসব শিশুর অভিভাবকেরা নিম্ন আয়ের। শিশুদের বাবারা রিকশা, ভ্যান চালায়; মায়েরা ঝিয়ের কাজ করে। অর্থ আর সচেতনতার অভাবে সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি তাদের আগ্রহ নেই। ওদের দেখে আমার মনে দাগ কাটে। তখন থেকেই শিশুদের সঙ্গে মিশতে শুরু করি। ওদের বাবা-মাকে স্বপ্ন দেখাই। প্রায় পাঁচ বছর শিক্ষার্থী সংগ্রহ করার পর ২০১৬ সালের ১১ মার্চ তাদের পড়ানো শুরু করি। একসময় শিক্ষার্থী পাইনি। এখন বন্দর, পাগলাসহ দূর-দূরান্ত থেকে বাচ্চারা আসে।’শুভ জানান, ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে তাঁর শিক্ষার্থী ৭৭ জন। প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে পড়াশোনা। শুভর স্বপ্ন, তাঁর এই কার্যক্রমের গণ্ডি বিস্তৃত হবে। এটি বিদ্যালয়ে রূপ নেবে, যেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার ব্যবস্থা থাকবে। বিদ্যালয়ের জায়গা হবে, শিশুদের মাথার ওপর ছাদ হবে। ওরা যেন রোদ-বৃষ্টিতে কষ্ট না পায়।শুভর কাছে পড়ালেখা করে ছাদিয়া জাহান। সে স্থানীয় আনন্দ স্লাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছাদিয়া জানায়, সে বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। পাশের হামিদার ইচ্ছা শিক্ষক হওয়ার। ছাদিয়ার মা আসমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওরে পড়ানোর সামর্থ্য ছিল আমাগো। কিন্তু ইচ্ছা ছিল না। উনি (শুভ) ইচ্ছাটা তৈরি কইরা দিছেন। মাইয়ারে পড়াশোনা করায়া পাশের স্কুলে ভর্তি করাইছেন। খাতা-কলম, সবই উনি ব্যবস্থা করেন।’ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ হোসাইন ও মাশরুল আফতাব। নিয়মিত আড্ডা দেন শুভর চায়ের দোকানে। আসিফ বলেন, ‘শুভ শুধু বাচ্চাদের শেখান না, আমাদের সমাজের করণীয় কী, সেটাও দেখিয়ে দেন। শুভ আমাদের সমাজেরও শিক্ষক।’নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ‘যে কাজটা রাষ্ট্রের করার কথা ছিল, সেটা করছেন শুভ। কোনো কিছুই যে স্বপ্নপূরণে বাধা হতে পারে না, তা শুভ আমাদের শেখান। শুভ সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের মধ্যে স্বপ্নের দীপ জ্বেলে দেন।’
ভেনেজুয়েলাকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। গোল করেছেন ইন্টার মিলানের স্ট্রাইকার লওতারো মার্টিনেজ ও রিয়াল বেতিসের মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসো। গোটা টুর্নামেন্টে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না মেসিআর্জেন্টিনার ইতিহাসে লিওনেল মেসিই সর্বোচ্চ গোলদাতা। এখনো কোনো ম্যাচ জেতার জন্য মেসি-ম্যাজিকের অপেক্ষা করে দলটি। মেসি জ্বলে উঠলে আর্জেন্টিনাও জ্বলে ওঠে, এটাই যেন স্বাভাবিক। কিন্তু এবারের কোপা আমেরিকায় সেটা হচ্ছে কি? হচ্ছে না। যে কারণে গ্রুপ পর্ব পেরোতেও আর্জেন্টিনার অনেক কষ্ট হয়েছে। কাল রাতে কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষেও মেসি ছিলেন নিষ্প্রভ। সব মিলিয়ে এবারের কোপায় যে স্বরূপে আসতে পারেননি, মেসি নিজেও বুঝেছেন সেটা। ম্যাচ শেষে সেটাই জানিয়েছেন।গত রাতে জিওভান্নি লো সেলসো ও লওতারো মার্টিনেজের কাঁধে চড়ে সেমিতে উঠেছে আর্জেন্টিনা। মেসিকে দেখা যায়নি মেসির মতো। কিন্তু কেন হচ্ছে এটা? মেসি নিজেই খুঁজে বের করেছেন কারণ। ব্রাজিলের মাঠগুলো একদমই খেলার উপযুক্ত না বলে জানিয়েছেন তিনি, ‘পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে এটা যে আমার সেরা কোপা আমেরিকা, বলব না সেটা। যেসব মাঠে খেলছি, সেসব মাঠে খেলা আসলেই অনেক কঠিন। ভালো গতিশীল ফুটবল খেলার জন্য উপযুক্ত নয় মাঠগুলো। মাঠের অবস্থা অনেক খারাপ।’আর্জেন্টিনা সাধারণত ‘ওয়ান-টাচ ফুটবল’ খেলে অভ্যস্ত। আর এই মাঠগুলোয় এভাবে খেলতে পারছেন না মেসিরা। ফলে, সমস্যা তো হবেই!মাঠ নিয়ে মেসির অভিযোগ আজকের নতুন না। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে কাতারের বিপক্ষে খেলতে নেমেও একই সমস্যা পড়েছিল আর্জেন্টিনা, তখনো একই অভিযোগ করেছিলেন মেসি। কোপার মাঠ যে একদমই খেলার অনুপযুক্ত, সে ব্যাপারে মেসির সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন ব্রাজিল কোচ তিতেও। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি শুটআউটে কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে তিতে সকল ক্ষোভ ঝাড়েন মাঠের ওপর, ‘এই মাঠে কেউ টানা তিনটা পাস পর্যন্ত দিতে পারে না!’কাল ম্যাচ জেতার পেছনে মেসি কৃতিত্ব দিয়েছেন দলের রক্ষণ করার মানসিকতাকে, ‘ভেনেজুয়েলা যখন গোল করতে গিয়েছে, আমরা ওদের জায়গা ছেড়ে দিইনি আক্রমণ করার জন্য। ম্যাচটা বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। আমরা সব সময় প্রতি-আক্রমণ করার চেষ্টা করেছি।’
জি–২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন জাপানের ওসাকায় অবস্থান করছেন। স্থানীয় সময় আজ শনিবার দিনের দ্বিতীয়ার্ধে সম্মেলন শেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে তিনি রওনা হবেন।আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার ব্যস্ততার মধ্যেও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে টুইট করে গেছেন ট্রাম্প। বরাবরের মতো এবারও তিনি তাঁর অভিমত ও ভাবনা টুইট করেছেন।গতকাল জি–২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনের আনুষ্ঠানিকতার শেষে ট্রাম্পের টুইট ছিল এ রকম। তিনি বলেন, ‘সেখানে অবস্থানকালে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে শুধু হ্যালো বলে হাত মেলানোর জন্য সীমান্তের ডিএমজেডে তাঁর সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করব।’ ডিএমজেড হলো দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী সংঘাত বন্ধ রাখার এলাকা।দুই কোরিয়ার যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি টেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখন পর্যন্ত সই হয়নি বলে সীমান্তের পানমুনজং গ্রামটি ডিএমজেড নামে পরিচিত। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন দুই বছর আগে সেখানেই উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছিলেন।গত বছরের সেপ্টেম্বরে হ্যানয়ে কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক ব্যর্থ হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যেকার আলোচনা এখন স্থগিত হয়ে আছে। আবার শুরু হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই টুইটে কূটনৈতিক মহলে নতুন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানকালে আলোচনায় নতুন কোনো অগ্রগতি হয় কি না, তা নিয়ে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।
টেলিভিশনের পর্দায় আজ যেসব খেলা দেখবেন:বিশ্বকাপ ক্রিকেটবিটিভি, মাছরাঙা, গাজী, স্টার স্পোর্টস ১, ২পাকিস্তান-আফগানিস্তানবেলা ৩-৩০ মি.বিশ্বকাপ ক্রিকেটস্টার স্পোর্টস ২ ও ৩অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডসন্ধ্যা ৬-৩০ মি.মেয়েদের বিশ্বকাপ ফুটবলসনি টেন ২ইতালি-হল্যান্ড         সন্ধ্যা ৭টাজার্মানি-সুইডেন     রাত ১০-৩০ মি.ফর্মুলা ওয়ানস্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ২কোয়ালিফাইং         সন্ধ্যা ৭টা
জমিজমা নিয়ে চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে বিরোধ এক নারীর। তাঁকে মামলায় ফাঁসিয়ে কাবু করতে হবে। কিন্তু উপায় কী? ওই নারী গেলেন এক আইনজীবীর সহকারীর কাছে। তাঁর বুদ্ধিতে ভাড়াটে ‘ধর্ষক’ আনা হয়। তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর ওই নারী চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দেন।জামালপুরের পুলিশ এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা উদ্‌ঘাটনের দাবি করেছে। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। তাঁরা হলেন মেলান্দহ উপজেলার রেখিরপাড়া এলাকার ফজল মিয়া (৪৫) ও খোশনবী (৩৫)। এঁদের মধ্যে ফজল ভাড়াটে ‘ধর্ষক’। আর খোশনবী একজন আইনজীবীর সহকারী (মুহুরি)।জামালপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গতকাল শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন।সে মোতাবেক, গত ২৫ মে মেলান্দহ উপজেলার ফুলকোচা ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক নারী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই নারী ৩০ মে মেলান্দহ থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি আসামি করেন নিজের চাচাতো ভাই মো. নুরনবী (৩০) ও নুরনবীর বোনের স্বামী মো. ছাইরুলকে (৩৫)। মামলায় নুরনবীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের এবং ছাইরুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়। পরে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের শিকার হওয়ার প্রমাণও পায়। কিন্তু একটি সূত্রে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে তদন্তের মোড় ঘুরে যায়। তাতে যে তথ্য উঠে আসে, তাতে পুলিশের চোখই ছানাবড়া।পুলিশ জানতে পারে, ওই নারীর সঙ্গে ৭ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে চাচাতো ভাই নুরনবীর। তিনি ওই চাচাতো ভাইসহ পাঁচজনের নামে আদালতে একটি মামলাও করেন। কিন্তু আসামিরা আদালতে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। ফলে চাচাতো ভাইকে কাবু করতে নতুন উপায় খুঁজছিলেন ওই নারী। তিনি শরণাপন্ন হন মুহুরি খোশনবীর। তিনি চাচাতো ভাইয়ের নামে ধর্ষণের মামলা করার পরামর্শ দেন। কিন্তু মিছেমিছি ধর্ষণের মামলা দিলে তদন্তে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যেতে পারে। সেটা এড়াতে খোশনবী নতুন বুদ্ধি আঁটেন। ২২ হাজার টাকা চুক্তিতে নিজের দূরসম্পর্কের মামা ফজল মিয়াকে ভাড়া করে আনেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী খোশনবী ২৫ মে রাতে ওই নারীকে নিয়ে মেলান্দহের কোনা মালঞ্চ ব্যাপারীপাড়া মোড়ের একটি ধানখেতে নিয়ে যান। সেখানে চলে আসেন ফজল মিয়াও। তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন ওই নারী। পরে সেখান থেকে উদ্ধার দেখিয়ে তাঁকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে থানায় গিয়ে মামলা করেন।সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা উদ্‌ঘাটনের পর আমরা হতবাক। একজন মানুষকে ফাঁসানোর জন্য ইচ্ছা করে ধর্ষণের শিকার হয়ে মামলা দায়ের করেছেন ওই নারী। মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি। পরে গত বৃহস্পতিবার ওই নারীকে আমার কাছে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি সবকিছু স্বীকার করেন। পরে বিকেলে তিনি আদালতে দণ্ডবিধির ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।’ পরে পুলিশ জামালপুর শহর থেকে খোশনবীকে ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ফজল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই দুজনও পুরো বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এখন মামলায় তাঁদের আসামি করা হবে। আর ওই নারীর চাচাতো ভাইদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় সেমিফাইনালে উঠেছে চিলিলাতিন আমেরিকায় দুটি দলই শক্তিশালী। চিলি কোপা আমেরিকায় সবশেষ দুটি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন। কার্লোস কুইরোজের অধীনে কলম্বিয়াও সমীহ–জাগানিয়া দল। সাও পাওলোয় আজ এ দুটি দলের মুখোমুখিতে গোল পাল্টা গোল দেখার আশা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়েও গোলের দেখা মেলেনি। অথচ বল জালে ঢুকেছে দুবার!এ দুবারই কলম্বিয়ার জালে বল পাঠিয়েছে চিলি। কিন্তু গোল বাতিল করে দিয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। গোলশূন্য ম্যাচের গেরো খুলতে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। স্নায়ুচাপের পরীক্ষায় কলম্বিয়াকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠেছে চিলি। উরুগুয়ে-পেরু ম্যাচে জয়ী দলের বিপক্ষে সেমিতে লড়বে রেইনালদো রুয়েদার দল।কোপায় এ নিয়ে চারবার টাইব্রেকার-পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে তিনবারই জয়ের মুখ দেখল ‘লা রোজা’রা। ১৯৯৯ টুর্নামেন্টে উরুগুয়ের কাছে হারের পর সবশেষ তিনবারই (২০১৫, ২০১৬ এবং এবার) টাইব্রেকার-পরীক্ষা জিতেছে চিলি। আর নকআউট পর্বে তাদের বিপক্ষে কলম্বিয়াও খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। এ নিয়ে চারবার কোপার নকআউট পর্বে চিলির কাছে হেরে বিদায় নিল কলম্বিয়া।১২ মিনিটে হেডে গোল প্রায় করেই ফেলেছিলেন চিলি মিডফিল্ডার চার্লস আরানগুইজ। দুর্দান্ত সেভ করেন কলম্বিয়া গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনা। এর চার মিনিট অবশ্য ওসপিনার কিছু করার ছিল না। কলম্বিয়া সেন্টারব্যাক ডেভিনসন সানচেজের ভুলে বিপদ সীমায় বল পেয়ে যান আরানগুইজ। কোনাকুনি শটে বল জড়ান জালে। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নিয়ে মাঠের রেফারি দেখতে পান আরানগুইজ বল পাওয়ার আগেই অফসাইড ছিলেন চিলি তারকা অ্যালেক্সিস সানচেজ। গোলটি তাই বাতিল করে দেওয়া হয়।প্রথমার্ধে দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ সেভাবে জমেনি। বিক্ষিপ্তভাবে আক্রমণের চেষ্টা করেছে দুই দল। মাঝমাঠ থেকে খেলা তৈরির তেমন কোনো চেস্টাও চোখে পড়েনি। বিরতির পর ৭১ মিনিটে ভিএআর আরেকটি গোল বাতিল করে চিলির। বক্স থেকে গোল করেছিলেন আরতুরো ভিদাল। কিন্তু তার আগে সানচেজের ভলি গিয়ে লাগে চিলি ডিফেন্ডার গুইলার্মো মারপিনের হাতে। মাঠের রেফারি এ ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলটি বাতিল করে দেন।
ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সেই শিক্ষক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।গতকাল শুক্রবার বিকেলে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে এক স্কুলছাত্রীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। একই থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে আরেকটি মামলা করেছেন র‌্যাব-১১–এর উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) আবদুল আজিজ। র‍্যাবের মামলায় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জুলফিকার ওরফে রফিকুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।ধর্ষণের মামলায় ঘটনার শিকার ছাত্রীর বাবা উল্লেখ করেছেন, তাঁর মেয়ে অক্সফোর্ড হাইস্কুলে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সময় শিক্ষক আরিফুল তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। লোকলজ্জার ভয়ে তাঁরা বিষয়টি এত দিন গোপন রাখেন। শিক্ষক আরিফুল শুধু তাঁর মেয়েকেই নয়, আরও ২০ থেকে ২৫ ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন।পাঁচ বছরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছেন শিক্ষকফাঁদে ফেলে কোনো কোনো শিক্ষার্থীর মাকেও ধর্ষণ করেছেনএ বিষয়ে র‌্যাব-১১–এর কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরিফুলের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ছাত্রীদের কখনো পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া বা ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতেন তিনি। আবার কখনো কম্পিউটার গ্রাফিকসে আপত্তিকর ছবি তৈরি করে তা দেখিয়ে ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেল। এভাবে গত পাঁচ বছরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছেন তিনি। ফাঁদে ফেলে কোনো কোনো শিক্ষার্থীর মাকেও ধর্ষণ করেছেন তিনি। সেগুলো আবার মুঠোফোনে ভিডিও করে রাখেন।
হাসপাতালের অভ্যর্থনাকক্ষে বই রাখার প্রয়োজন কেন হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দিন তোহা বললেন, ‘যেসব জায়গায় সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে বসে থাকতে হয়, তার মধ্যে অন্যতম একটি জায়গা হলো হাসপাতাল। এখানে অবসর সময়টুকু নষ্ট না করে মানুষ যাতে বই পড়ে কাজে লাগাতে পারে, সেই চিন্তা থেকেই হাসপাতালের এক কোণে গড়ে তুলেছি পাঠাগার।’শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ‘বইবন্ধু’ নামে শিক্ষা প্রকল্পের সমন্বয়ক মহিউদ্দিন তোহার সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব বিষয় জানা গেল। ‘সোশ্যাল চেইন ফর ডেভেলপমেন্ট’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অধীনে বইবন্ধু প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ও একদল তরুণের সহায়তায় এগিয়ে চলছে বইবন্ধুর কার্যক্রম।২০১৫ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরু করে সোশ্যাল চেইন ফর ডেভেলপমেন্ট। এর আওতায় মানুষকে বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলার উদ্দেশ্যে গত বছর থেকে শুরু হয় বইবন্ধু কর্মসূচি। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকায় মোহাম্মদপুরের ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের অভ্যর্থনাকক্ষের এক কোণে করা হয়েছে একটি ছোট পাঠাগার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছায় ও চিকিৎসকদের সংগঠন ‘প্ল্যাটফর্ম’–এর সহযোগিতায় চলছে এই কার্যক্রম।চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে কিংবা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা এই পাঠাগার থেকে বই নিয়ে বসে বসে পড়েন। অল্প কিন্তু সৃজনশীল সব বই আছে এখানে। যাযাবরের ‘দৃষ্টিপাত’, রবীন্দ্রনাথের ‘সঞ্চয়িতা’, ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’, জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’, লুৎফর রহমানের ‘উন্নত জীবন’সহ নানা ধরনের বই দেখা গেল এই পাঠাগারে।এর আগে বইবন্ধু প্রকল্পের অধীনে আরও বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর ২৯টি বাসে বইবন্ধু পাঠাগার স্থাপন করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি সেলুনের একাংশে পাঠাগার স্থাপন করে প্রশংসা কুড়িয়েছে তারা। রাজধানীর দক্ষিণ কমলাপুরে তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের জন্য গড়ে তোলা হয় ‘বইবন্ধু আলোর ঘর’। বইয়ে ভর্তি এই আলোর ঘর তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলোর জীবনে আলো ছড়ানো শুরু করেছে। থেমে নেই বইবন্ধু। সর্বশেষ সংযোজন হাসপাতালের এই ছোট্ট পাঠাগার। সরকারি–বেসরকারি অন্যান্য হাসপাতালেও পাঠাগার করতে চায় বইবন্ধু। দু–একটি হাসপাতালের সঙ্গে কথাও চলছে বলে জানালেন মহিউদ্দিন তোহা। বই নিয়ে তাঁদের অনেক পরিকল্পনা আছে। তোহারা চান দেশের প্রতিটি ক্যাফে ও রেস্তোরাঁয় জায়গা করে নিক পাঠাগার। সে অনুযায়ী কাজও হচ্ছে, বইবন্ধুর ‘ক্যাফে পাঠাগার’–এর ভাবনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নরসিংদীর মাধবদীতে খুলেছে একটি রেস্তোরাঁ।প্রকল্পের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে ‘বিচ পাঠাগার’। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে তারা গড়ে তুলতে চায় একাধিক ছোট ছোট পাঠাগার। এ জন্য সেখানকার জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে বলেও জানালেন তোহা। এখন শুধু আর্থিক সহযোগিতার অপেক্ষা। তোহা বলেন, ‘মানুষের সমাগম যেসব জায়গায় হয়, যেমন: ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, টিএসসি, সেসব জায়গায় ‘বইবুথ’ করতে চাই। টেলিফোন বুথের মতো হবে বইবুথগুলো। এসব বুথে থাকবে বই।’বই নিয়ে স্কুল–কলেজভিত্তিক বইবিষয়ক আলোচনারও আয়োজন করতে চান তাঁরা। মহিউদ্দিন তোহা বলেন, তাঁদের একটি বইও কিনতে হয়নি। সাধারণ মানুষই নতুন–পুরোনো বই অনুদান হিসেবে দিয়েছে। তিনি জানালেন, যেকেউ বইবন্ধু প্রকল্পে বই ও অর্থ অনুদান হিসেবে দিতে পারেন। শুধু তা–ই নয়, কেউ চাইলে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবেও বইবন্ধুর সঙ্গে কাজ করতে পারেন। বইবন্ধুর ঠিকানা: ১২/২০ শেখেরটেক, শ্যামলী, আদাবর, ঢাকা।
কটরেলের ‘স্যালুট’ উদ্‌যাপন তাঁকেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মোহাম্মাদ শামি। তবে বিষয়টিকে কোনো ধরনের উসকানি মনে না করে বরং হালকাভাবেই নিচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শেলডন কটরেল।ফুটবলের মতো ক্রিকেটে উদ্‌যাপনের তেমন বাহার নেই। তবু উইকেট পেলে বা ক্যাচ নিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহিরের ভোঁ দৌড় বা বাংলাদেশের সাইফউদ্দিনের বিশেষ অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে করা উদ্‌যাপনগুলো ক্রিকেটপ্রেমীদের আনন্দ দেয়।এ ক্ষেত্রে আরেকটি বিচিত্র উদ্‌যাপন নিশ্চয়ই দর্শকের নজর এড়ায়নি। সেটি হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার শেলডন কটরেলের ‘স্যালুট’ উদ্‌যাপন। উইকেট পেলেই পুরো সেনাদের কায়দায় ‘স্যালুট’ দেওয়ার মাধ্যমে উদ্‌যাপন করে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ খ্যাতি পেয়েছেন।ভারতের বিপক্ষে ১২৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে ২০১৯ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই ম্যাচের ডেথ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া এবং মোহাম্মাদ শামির উইকেট তুলে নেন কটরেল। ৪৯তম ওভারে শামির উইকেট পাওয়ার পর সেই চিরাচরিত ‘স্যালুট’ দিয়ে উদ্‌যাপন করেন কটরেল। কিন্তু তাঁর এই উদ্‌যাপনটি বোধ হয় খুব একটা ভালো ঠেকেনি ভারতীয় পেসারের কাছে।উইন্ডিজ ইনিংসের পড়ন্ত বেলায় এক চার, এক ছয়ে ৮ বলে ১০ রান করা কটরেল যখন ম্যাচ শেষ হওয়ার আগে একটু ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে ইনিংসের ৩০তম ওভারে যুজবেন্দ্র চাহালের বলকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন। কিন্তু এবারে সেই বিখ্যাত ‘স্যালুট’ উদ্‌যাপন তাঁকেই উপহার দিয়ে মাঠ থেকে বিদায় জানান মোহাম্মাদ শামি।কটরেল আগেই তাঁর উদ্‌যাপন নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তিনি সামরিক বাহিনীতে কাজ করেন। জ্যামাইকার সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই তিনি এই বিচিত্র উদ্‌যাপন করেন। তাই অনেক ছিদ্রান্বেষী লোক কটরেল আউট হওয়ার পর শামির ‘স্যালুট’ উদ্‌যাপনকে সেনাদের প্রতি কটাক্ষ হিসেবে দেখেছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে খোদ কটরেল মোটেও উচ্চবাচ্য করতে চাইলেন না, বরং এক টুইটে হিন্দিতে শামির উদ্দেশে লিখলেন, ‘অনুকরণই শ্রেষ্ঠ প্রশংসা’।
সাউদাম্পটনে ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন যখন বললেন টস জিতেছে গুলবাদিন নাইব, তখন মাশরাফি বিন মুর্তজা দুরুদুরু বুকে অপেক্ষা করছে আফগান অধিনায়ক না আবার আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন! বাংলাদেশ অধিনায়ককে মুখে ‘হাসি’ ফুটিয়ে আফগান অধিনায়ক টস জিতে নিলেন বোলিং।টস শেষে মাশরাফি যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছেন, দেখলেন সতীর্থরা উদ্বেগভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন অধিনায়কের দিকে। মাশরাফি অভয় দিলেন, ‘আরে, আমরা আগে ব্যাটিং করব।’ এবার সতীর্থদের মুখে হাসি। সেদিন বাংলাদেশ চেয়েছিল আগে ব্যাটিং করতে। আফগান অধিনায়ক ভেবেছিলেন, শুরুতেই উইকেট থেকে সহায়তা পাবেন তাঁর স্পিনাররা। কিন্তু বাংলাদেশ বুঝতে পেরেছিল, এই উইকেটে শুরুতে নয়, ম্যাচ যত এগোবে, স্পিনাররা তত বেশি সহায়তা পাবেন। টস জিতে আফগানিস্তানের বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল, সেটি তো পরে প্রমাণই হলো। মন্থর উইকেটে বাংলাদেশের স্পিনাররা ভালো করলেন। দুর্দান্ত বোলিং করলেন সাকিব আল হাসান।যেহেতু খেলাটা সরাসরি আবহাওয়া বা কন্ডিশনের সঙ্গে সম্পর্কিত, ক্রিকেটে টস কতটা গুরুত্বপূর্ণ, নতুন করে না বললেও চলছে। টস জিতে অধিনায়ক প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাটিং করাবেন না পরে—এই সিদ্ধান্ত ঠিকঠাক নিতে না পারলেই বিপদ! মাশরাফিকে যেমন কার্ডিফে ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারায় কাঠগড়ায় তোলা হলো। দুর্দান্ত ব্যাটিং অর্ডার জেনেও কেন ইংলিশদের আগে ব্যাটিং করতে পাঠানো হলো এবং স্বেচ্ছায় রানপাহাড়ে চাপা পড়তে হলো? মাশরাফি টন্টনেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস জিতে আগে বোলিং নিয়েছিলেন, সেটি নিয়েও প্রশ্ন হতো যদি ম্যাচটা বাংলাদেশ হারত।ফুটবল বিশ্বকাপে জার্সির রং নির্ধারণে ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেট বিশ্বকাপে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিটা বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে শুধুই টস করার আগে। নিয়মটা হচ্ছে, ‘হোম’ দলের অধিনায়ক কয়েন ছুড়বেন, ‘অ্যাওয়ে’ দলের অধিনায়ক ‘কল’ দেবেন। কিন্তু কে স্বাগতিক, কে সফরকারী—এটা কীভাবে নির্ধারণ করা হয়, জানা নেই মাশরাফির, ‘ম্যাচ রেফারি ঠিক করে দেন কারা হোম আর কারা অ্যাওয়ে দল। দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা ছিলাম হোম টিম। আগে জানতাম নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে ঠিক হয় হোম–অ্যাওয়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোম দল হওয়ার পর তো সে ধারণাও ভুল মনে হলো!’ টস জিততে অবশ্যই ভাগ্যের সহায়তা লাগে। কিন্তু এখানে মানুষেরও হাত আছে! মাশরাফি সেদিন আড্ডায় চমকে যাওয়া একটা তথ্য দিলেন, ‘এই বিশ্বকাপে যারা টেল কল দিচ্ছে, তারাই জিতছে। এবার টুর্নামেন্টে কয়েন একটু অদ্ভুত লাগছে।’এজবাস্টনে বাংলাদেশ স্বাগতিক না সফরকারী দল হিসেবে খেলবে, সেটি এখনো বলার উপায় নেই। বলার উপায় নেই বাংলাদেশ টস জিতলে কী নেবে। ম্যাচ এখনো যে অনেক দেরি। তার আগে একই মাঠে কাল খেলবে ভারত–ইংল্যান্ড। এখন বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচ ব্যবহৃত উইকেটেই হবে নাকি নতুন উইকেটে, সেটিও আগে জানতে হবে। বাংলাদেশ এবারের বিশ্বকাপে তিন ম্যাচই জিতেছে ব্যবহৃত উইকেট খেলে। ব্যবহৃত উইকেট মানে সেখানে স্পিনারদের জন্য কিছু থাকবে। নিজেদের শক্তি চিন্তা করেই বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবে চাইছে খেলাটা ব্যবহৃত উইকেটেই যেন হয়।
ছাত্রদলের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের চেয়ে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীরা নিজেদের ভদ্র ও সহিষ্ণু দাবি করতে পারেন। তাঁরা এখন পর্যন্ত আইন ভাঙেননি। কারও ওপর হামলাও করেননি। বরং পদবঞ্চিতরা হামলার শিকার হয়েও সব অপমান ও অপবাদ মুখ বুজে সহ্য করেছেন, করছেন।অন্যদিকে আগের কমিটি বিলুপ্ত করার সঙ্গে সঙ্গে ‘আমরা শক্তি আমরা বল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল’ বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছে, নেতাদের হেনস্তা করেছে, অফিস ভাঙচুর করেছে। অফিসের বিদ্যুতের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। সর্বশেষ খবরে দেখলাম, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অফিসে ডিম ছুড়ে মেরেছেন। এর আগে অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছিল।দুই সংগঠনের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের আচরণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ছাত্রলীগের বিদ্রোহী বা পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা নিয়মতান্ত্রিক পথেই আন্দোলন করছেন। এত দিন তাঁরা অবস্থান ধর্মঘটে ছিলেন। শুক্রবার চার দফা দাবিতে ‘ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা’ আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাঁদের চার দফা হলো আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ, পদ শূন্য ঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটির ১৯ জনের পদসহ নাম প্রকাশ, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে পদবঞ্চিতদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিটিতে পদায়ন এবং মধুর ক্যানটিনে (১৩ মে) ও টিএসসিতে (১৯ মে) তাঁদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার।ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশের প্রায় ১০ মাস পর গত ১৩ মে সংগঠনের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এ নিয়েই যত বিপত্তি। কমিটি ঘোষণার দিন সন্ধ্যায় কমিটিতে পদবঞ্চিতরা মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। এতে কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। পরদিন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গণভবনে ডেকে ছাত্রলীগের কমিটি থেকে বিতর্কিত নেতাদের বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বহিষ্কার করা হবে বলে জানান এবং ১৬ জনের নাম প্রকাশ করেন । অন্যদিকে পদবঞ্চিতরা ‘বিতর্কিত’ ও ‘অযোগ্য’ ৯৯ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেন।১৯ মে টিএসসিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের হাতে ফের মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন পদবঞ্চিতরা। এক দিনের মাথায় আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আশ্বাসে তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে আসেন। পরের দিন মধুর ক্যানটিনের ঘটনায় পাঁচজনকে বহিষ্কার করে ছাত্রলীগ। বহিষ্কৃত হওয়ার দুঃখে রাতেই জারিন দিয়া নামের এক নেত্রী ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর থেকেই ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভেতরে-বাইরে সরগরম আলোচনা চলছিল। দলের সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করলেন, শিগগিরই ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিরোধ মিটে যাবে। কিন্তু পদবঞ্চিতদের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে মনে হচ্ছে, বিরোধ মেটেনি।গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ছিল ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে। শিরোনাম ছিল, ‘ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে অভিযোগ: আছে শিবির, ছাত্রদল, মাদকাসক্ত সবই’। এতে বলা হয়, ‘৩০১ সদস্যবিশিষ্ট ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন মাদকাসক্ত, বিবাহিত, বহিষ্কৃত, মামলার আসামিসহ বিতর্কিত অনেকে। ছাত্রলীগের একাংশ নতুন কমিটির ১০৭ জনের বিরুদ্ধে এমন নানা অভিযোগ তুলেছে। কমিটিতে বিতর্কিতদের জায়গা হওয়ার পেছনে আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের মুখপাত্র ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছাড়া বিতর্কিতরা কমিটিতে কোনোভাবেই জায়গা পেতেন না। এখানে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে।’ (২৭ জুন, ২০১৯ প্রথম আলো)তবে ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা সবাই ছিলেন সদ্য সাবেক কমিটির (সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন) আস্থাভাজন। পদ-পদবি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধায় তাঁরা তখন অন্যদের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ অনুযায়ী, কমিটিতে যে ১০৭ জন ‘বিতর্কিত’ স্থান পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২৫ জন বিবাহিত (ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে বিবাহিতদের নেতা হওয়ার সুযোগ নেই), ১৯ জনের পরিবার সরাসরি বিএনপি কিংবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, ১১ জন মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, ৮ জন বিভিন্ন মামলার আসামি, ৬ জন ব্যবসায়ী, ৩ জন বিভিন্ন অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কৃত, ২ জন ছাত্রলীগ থেকে আগে বহিষ্কৃত, ৬ জন ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা, ৬ জন চাকরিজীবী বা সরকারি চাকরির জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত। এ ছাড়া ১৪ জন রয়েছেন, যাঁরা প্রথমবারের মতো সংগঠনে পদ পেয়েছেন। ৭ জন দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার পরও পদবি পেয়েছেন।ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির প্রতিপক্ষ অন্য কোনো ছাত্র সংগঠন নয়। প্রতিপক্ষ হলো আগের কমিটি। ছাত্রলীগ বরাবর নিজেদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন বলে দাবি করে। সাড়ে ১০ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। তারপরও কেন ছাত্রলীগকে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির থেকে ‘নেতা’ ভাড়া করতে হবে, এই প্রশ্নের জবাব নেই। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে আছে, সেখানে কোনো বিবাহিত ও চাকরিজীবী থাকতে পারবে না। অথচ কমিটিতে বেশ কজন নেতা আছেন, যাঁরা বিবাহিত ও যাঁদের বয়স ২৯ বছরের বেশি।সম্প্রতি টেলিভিশনে একটি অনুসন্ধানী খবর দেখেছিলাম, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বিধিতে বলা হয়েছে, ২৮ বছরের বেশি বয়সী কাউকে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। কিন্তু যাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁর বয়স ৫০ বছরের বেশি। পরে সাংবাদিক যখন নিয়োগ কমিটির প্রধানকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনারা যাঁকে নিয়োগ দিয়েছেন, তাঁর বয়স ৫৬ বছর কিন্তু আপনারা কীভাবে তাঁকে নিয়োগ দিলেন?’ জবাবে ভদ্রলোক বললেন, তাঁদের কাছে ২৮ বছরই মনে হয়েছে। কাগজপত্রে সেটাই লেখা ছিল। ছাত্রলীগের কমিটি যাঁরা ঠিক করেছেন, তাঁদের কাছেও যদি ৫৬ বছরকে ২৮ বছর মনে হয় কারও কিছু করার নেই। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হতে হলে বয়স ২৯ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি তানজিল ভূঁইয়ার ক্ষেত্রে এ নিয়ম মানা হয়নি। আরেক সহসভাপতি সোহেল রানার জন্ম ১৯৮৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। বয়স না থাকার কারণে তিনিও গত বছর মনোনয়ন নিতে পারেননি। অথচ এখন তিনি সহসভাপতি পদ পেয়েছেন।ছাত্রলীগের কর্মী নাসরুল্লাহ নাসিম হত্যা মামলাসহ ছয়টি মামলার আসামি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি খালিদ হাসান ওরফে নয়ন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তিনি এখন সহসভাপতির পদবি পেয়েছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হয়েছিলেন সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য আবু সাঈদ আকন্দ। বর্তমান কমিটিতে তিনি সহসভাপতি। আবু সাঈদ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রোষানলে পড়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আমাদের ধারণা ছিল, ছাত্রলীগের রোষানল শুধু বিরোধী ছাত্রসংগঠনের ওপর পড়ে। এখন দেখা যাচ্ছে, নিজ সংগঠনের মধ্যে যাঁরা অপছন্দের, তাঁদের ওপর অনল বর্ষিত হয়।প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একের পর এক সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনাসহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য বারবার আলোচনায় আসে ছাত্রলীগ। মাদক ব্যবসা, টেন্ডার-বাণিজ্য, পুলিশকে মারধরসহ একের পর এক নানা অভিযোগ উঠেছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত ১২ মে নকলে বাধা দেওয়ায় পাবনার শহীদ বুলবুল কলেজের এক প্রভাষককে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগ আয়োজিত কনসার্টে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গত ১২ এপ্রিল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরে কনসার্ট স্থলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তার আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে ঢুকে তাঁর ওপর ময়লা দিয়ে হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ১৩ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগকে কেন্দ্র করে ৬০ লাখ টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।ছাত্রলীগের যেই নেতৃত্ব ডাকসুর কনসার্ট নিয়ে মারামারি করে, যাঁদের অনুসারীরা কর্মচারী নিয়োগের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান, সেই নেতৃত্ব কীভাবে সংগঠনকে নেতৃত্ব দেবে?আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনকারীরা কখনো ছাত্রলীগের সঙ্গে আদর্শিকভাবে ছিল না। তারা কোনো ভাই বা সিন্ডিকেটের রাজনীতি করেছে। এই নেতার ভাষ্যমতে, সিন্ডিকেট হলো তারাই, যারা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে অর্থ, সম্পদ, বিত্ত, বৈভব বানিয়েছে। তাঁর কথা যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে মানতে হবে ছাত্রলীগের আগের কমিটি ছিল একটি সিন্ডিকেট এবং তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে আদর্শিকভাবে ছিল না।ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি যখন সাবেক হবে, তখনো যে এই কমিটির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ উঠবে না, এর নিশ্চয়তা কী?সোহরাব হাসান: প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবিই-মেইল: sohrab.hassan@prothomalo.com
কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ভেনেজুয়েলাকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার হয়ে একটি করে গোল করেন মার্টিনেজ ও সেলসো। সেমিতে ব্রাজিলের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে আর্জেন্টিনার রীতিমতো জ্বর উঠে গেছে! কোনোমতে টেনেটুনে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে মেসি-আগুয়েরোরা। শুক্রবারের ম্যাচে ভেনেজুয়েলার মুখোমুখি হয়েও আর্জেন্টিনা খুব একটা ভালো ফুটবল খেলেছে বলা যাবে না। বরং ভেনেজুয়েলার ছিরিহীন আর দুর্বল ফুটবলের সুবিধা নিয়ে জয় পেয়েছে কোপা আমেরিকার অন্যতম সফল দলটি। প্রথমার্ধে মার্টিনেজ আর দ্বিতীয়ার্ধে লো সেলসোর গোলে শেষপর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা।এ জয়ে সেমিফাইনালের টিকিট তো নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা। কিন্তু মেসির ট্রফি উঁচু করে ধরার স্বপ্ন! জাতীয় দলের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে লিওনেল মেসির শিরোপা জয়ের স্বপ্নটা বাঁচিয়ে রাখল এ জয়। তবে সেমিফাইনালেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের মুখোমুখি হতে হচ্ছে মেসিদের। বেলো হরিজন্তে স্বাগতিকদের বিদায় করে আর্জেন্টিনা কি পারবে ফাইনালে পৌঁছাতে? আরও নির্দিষ্ট করে বললে, মেসি কি পারবেন দেশের হয়ে তাঁর ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে?এসবই সময় বলে দেবে। তবে আজকের ম্যাচে শুরুতেই গোল পেতে পারত আর্জেন্টিনা। আগুয়েরোর শট না ঠেকালে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে এগিয়ে যেত আর্জেন্টাইনরা। যদিও গোলের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি মেসিদের। ম্যাচের দশম মিনিটেই মার্টিনেজের গোলে এগিয়ে যায় কোপা আমেরিকার ১৪ বারের শিরোপাজয়ীরা। মেসির কর্নার কিক ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় ভেনেজুয়েলার রক্ষণ। এরপর আগুয়েরোর বাড়ানো বল থেকে গোল করেন মার্টিনেজ। দেশের হয়ে ১০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটি মার্টিনেজের ছয় নম্বর গোল। দ্বিতীয়ার্ধে এসে কেমন গাছাড়া ভাব দিয়ে খেলে আর্জেন্টিনা। গোলের সুযোগ তৈরি হয় ভেনেজুয়েলার। কিন্তু ভেনেজুয়েলা সেসব কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। উল্টো ৭৪ মিনিটে গোল হজম করে বসে। ভেনেজুয়েলার গোলরক্ষকের শিশুসুলভ ভুলে বল জালে জড়ান লো সেলসো। শেষতক আর গোল পরিশোধ করতে পারেনি ভেনেজুয়েলা।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘ফেনীর নুসরাত জাহান হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে। বরগুনায় যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তারও বিচার অবশ্যই হবে। আমরা সরকারের দায়িত্ব পালন করব।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে ঢাকার রতনপুর পরিষদ আয়োজিত বার্ষিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।আইনমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বরগুনায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘এ ঘটনায় যে জিনিসটা আমাদের আমলে নিতে হবে, সেটা হচ্ছে বরগুনায় যে ঘটনা ঘটেছে তাতে দেখা গেছে যে একটা ছেলেকে কয়েকজন গুন্ডা মারছে এবং সেটাকে ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে এবং তা ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু ছেলেটাকে রক্ষা করার জন্য কেউ এগিয়ে আসছে না বা তাকে রক্ষা করার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এই যদি সমাজের অবস্থা হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু আমাদের দুঃশ্চিন্তা হওয়ার কারণ আছে।’আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যারা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, আমাদের যারা ছোট ছোট বাচ্চা আছে, তারা যদি দেখে যে তাদের মুরব্বিরা এই ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না কিংবা সমাজ থেকে এই ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদ আসছে না, তাহলে কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো থাকবে না। এদের কিন্তু আমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারব না। সে কারণে আমি সকলকে এ বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষের মনের উদারতা বৃদ্ধি পাক এবং তা দেখে সারা বিশ্ব মনে করুক যে বাংলাদেশে উদার ও ভালো মানুষ আছে। এই জিনিসটা যেন পরিচয় পায়, আমরা সকলে মিলে সেই চেষ্টায় থাকব।’পরিষদের সভাপতি কাজী মনজুর কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী হাবিব উল্লাহ, সহসভাপতি ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক আবুল হাসান খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ইংল্যান্ড: ৩৩৭/৭ভারত: ৩০৬/৫ইংল্যান্ড ৩১ রানে জয়ী।মাঠে খেলছিলেন বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মারা, প্রার্থনায় পুরো উপমহাদেশ! শুধু ক্রিকেট নয়, সব ধরনের খেলা মিলেই হয়তো এই প্রথম কোনো ম্যাচের ভারতের জয় কামনা করেছে পুরো উপমহাদেশ। দর্শকের ভূমিকায় থাকা বাংলাদেশ, পাকিস্তান কিংবা শ্রীলঙ্কা—সবার সেমিফাইনাল–ভাগ্যই যে এ ম্যাচের ওপর নির্ভর করছে! ১৭৬ কোটি মানুষের প্রার্থনা কাজে আসেনি। ইংল্যান্ডের কাছে ৩১ রানে হেরে গেছে ভারত। ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হারল ভারত।৩৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে হলে রেকর্ড বইয়ের বেশ কিছু পাতায় ওলট-পালট আনতে হতো বিরাট কোহলির দলকে। বিশ্বকাপে রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড লিখতে হতো, এজবাস্টনে পাঁচ বছর পর ইংল্যান্ডকে পরাজয়ের স্বাদও দিতে হতো। কোনোটিই পারেনি এ ম্যাচের আগ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকা ভারত। ৫০ ওভার শেষে থেমেছে ৫ উইকেটে ৩০৬ রানে। ফলাফল, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে সেমিফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল স্বাগতিকেরা। আর আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর চতুর্থ দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে শ্রীলঙ্কার।৪০ ওভার শেষেও মোটামুটি সমানতালেই রান তুলছিল ভারত। ডেথ ওভার শুরুর আগে ইংল্যান্ডের রান ছিল ২৪৫, ভারতের ২৩৪। পার্থক্যটা গড়ে দিয়েছে দুই দলের ডেথ ওভার বোলিং। ভারতের হয়ে যশপ্রীত বুমরা একা চেষ্টা করেছিলেন, আর ইংল্যান্ড এগিয়েছে ‘দশে মিলি করি কাজ’ নীতিতে। লিয়াম প্লাংকেট, জফরা আর্চার, আদিল রশিদ প্রত্যেকেই দুর্দান্ত বল করেছেন। কেন তাঁকে সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান বোলার ভাবা হচ্ছে সেটি আরেকবার দেখিয়েছেন আর্চার। উইকেট পাননি একটিও, কিন্তু দারুণ নিয়ন্ত্রিত সব স্লোয়ারে বেঁধে রেখেছিলেন ভারতের রানের চাকা।হার্দিক পান্ডিয়া-মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো হার্ডহিটার ব্যাটসম্যানদের একদমই হাত খুলতে দেননি ইংলিশ পেসাররা। একের পর এক স্লোয়ারে ঠিকমতো ব্যাটে-বলেই করতে পারছিলেন না ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। ক্রমাগত তৈরি করা চাপের কারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই উইকেট দিয়ে এসেছেন পান্ডিয়া-পন্তরা। শেষ ৫ ওভারে যেখানে চার-ছয়ের ফুলঝুরি ছোটানোর কথা, সেখানে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা মারতে পেরেছেন মাত্র ৩টি চার ও একটি ছয়! শেষ ৩০ বলের মধ্যে সিঙ্গেলই নিয়েছেন ২০টি। এমন ব্যাটিং দিয়ে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা ছিল না কোহলিদের।ব্যাটিংয়ে নেমেও আজ তেড়েফুঁড়ে শুরু করতে পারেনি ভারত। প্রথম ১০ ওভারে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন নতুন বলের দুই বোলার ক্রিস ওকস ও জফরা আর্চার। ওকস তো ছিলেন এক কথায় দুর্দান্ত, ৫ ওভারের প্রথম স্পেলে মাত্র ৮ রানের বিনিময়ে লোকেশ রাহুলের উইকেট তুলেছেন। ভারতও ১০ ওভার শেষে তুলতে পেরেছে মাত্র ২৮ রান। এখানেই অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে ভারত। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ৫০ এর কাছাকাছি রান তুলতে পারলেও শেষ দিকে জমে উঠতে পারত ম্যাচটা। ইংল্যান্ডের হয়ে সেরা বোলার ছিলেন দলে ফেরা প্লাংকেট। ১০ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট। ওকসও ছিলেন অসাধারণ। নিজের প্রথম তিন ওভারে তো কোনো রানই নিতে দেননি ভারতকে। ১০ ওভারে ২ উইকেট পেয়েছেন, রানও দিয়েছেন মাত্র ৫৮।ভারতকে আশা দেখাচ্ছিল রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলির দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ২৫.৫ ওভারে ১৩৮ রান যোগ করেছিলেন দুজন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৬৬ রান করে আউট হয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে টানা পাঁচ ইনিংসে ফিফটি করা কোহলি। পাঁচ ফিফটির একটিকেও সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে না পারার বিষয়টা নিশ্চিতভাবেই ভাবাবে ভারত অধিনায়ককে।ইংল্যান্ডের হয়ে যেমন সেঞ্চুরি করেছেন জনি বেয়ারস্টো, ভারতের হয়ে সেটা করেছেন রোহিত শর্মা। ব্যক্তিগত চার রানে আর্চারের বলে জীবন পাওয়া রোহিত ফিরেছেন এ বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি করে। সাধারণত সেঞ্চুরির পরেই বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন রোহিত। তবে আজ সেটি হতে দেননি ওকস, ১০২ রানেই বাটলারের ক্যাচ বানিয়েছেন ভারতীয় ওপেনারকে।তবে বেয়ারস্টোকে যে সমর্থন দিয়েছিলেন রয়-স্টোকস, এক কোহলি ছাড়া আর কারওর থেকেই সেটি পাননি রোহিত। ৩৩ বলে ৪৫ করে পান্ডিয়া চেষ্টা করেছিলেন বটে, তবে সেটা যথেষ্ট ছিল না মোটেও। পন্ত এবং ধোনিও চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি। ধোনির ব্যাট থেকে ইনিংসের একমাত্র ছয়টি এসেছে একদম শেষ ওভারে, ততক্ষণে ম্যাচ ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে গেছে। বিশ্বকাপে ১২ ম্যাচ পর গ্রুপপর্বে হারের স্বাদ পেল ভারত। সবশেষ ভারত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে হেরেছিল ২০১১ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।আজকের জয়ে পাকিস্তানকে টপকে চারে চলে এসেছে ইংল্যান্ড। নিজেদের শেষ ম্যাচে (৩ জুলাই) নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালে চলে যাবে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সে ক্ষেত্রে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে এক ম্যাচ হাতে রেখেই।
রাজধানীতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে এক গৃহবধূর ‘আত্মহত্যা’র খবর পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) মারা গেছেন। রোববার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম সার্বারি (২২)। তাঁর স্বামীর নাম করিম। তাঁরা মোহাম্মদপুর থানার জেনেভা ক্যাম্পের একটি বাসায় থাকতেন। সার্বারি গৃহকর্মীর কাজ করতেন। তাঁর স্বামী হোটেল কর্মচারী।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রথমে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সার্বারিকে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।সার্বারির ভাই সাব্বির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে কয়েক দিন ধরে সার্বারিকে মারধর করতেন করিম—এমন কথা তিনি বোনের কাছ থেকে শুনেছিলেন। এ নিয়ে রোববারও তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে করিম সার্বারিকে বাসা থেকে বের করে দিতে চেয়েছিলেন। পরে করিম বেলা তিনটার দিকে কাজে চলে যান। এর পরপরই সার্বারি নিজের গায়ে কেরোসিন ঢালেন ও আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।বার্ন ইউনিটের মেডিকেল অফিসার ফারুক হোসেন বলেন, মেয়েটির শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য সার্বারির মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
ভারতের আসাম রাজ্যে এনআরসির (ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেনস) মতোই প্রতিবেশী নাগাল্যান্ডে গড়া হলো রিন (রেজিস্ট্রার অব ইন্ডিজেনাস ইনহ্যাবিট্যান্টস অব নাগাল্যান্ড)। রিনেরও মুখ্য কাজ হবে ভূমিপুত্রদের স্বার্থ সুরক্ষায় বহিরাগতদের খুঁজে বের করা।নাগাল্যান্ডের স্বরাষ্ট্র কমিশনার রিন গঠনের বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১০ জুলাই থেকেই রিন কাজ শুরু করবে।বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্যের প্রতিটি প্রান্ত থেকে খুঁজে বের করা হবে ভুয়া আদিবাসীদের। সেই সঙ্গে বহিরাগতদের কাছ থেকে নাগাদের স্থায়ী সম্পদ উদ্ধার করাও রয়েছে রিন গঠনের উদ্দেশ্য।গোটা প্রক্রিয়া তদারকির দায়িত্বে থাকবেন খোদ স্বরাষ্ট্র কমিশনার। জেলা শাসক থেকে শুরু করে একেবারে প্রশাসনের তৃণমূল স্তরকেও আনা হচ্ছে রিনের আওতায়। গঠিত হচ্ছে নতুন কর্মীদলও।এদিকে, আসামে এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ২৫ লাখ নাগরিকের স্বাক্ষর সংবলিত স্মারকপত্র জমা পড়ল ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে। অসমিয়া সংগঠন ‘আসাম সচেতন নাগরিক মঞ্চ’ এই স্মারকপত্র জমা দেয়।স্মারকপত্রে রাষ্ট্রপতিকে এনআরসি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করা হয়। মঞ্চের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে এনআরসি প্রক্রিয়া চললেও বেশ কিছু দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তাই আসামের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে এনআরসি প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ জরুরি। তাঁদের দাবির সমর্থনে ২৫ লাখ অসমিয়ার স্বাক্ষর সংবলিত স্মারক পত্র তুলে দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতি ভবনে।প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রকাশিত হচ্ছে আসামের বহুল চর্চিত এনআরসি তালিকা।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকায় নেত্রকোনায় আট শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার রাত আটটার দিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।অন্যদিকে, ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকায় আরও তিন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ বিভাগীয় উপপরিচালক (ডিডি) বরাবর পত্র দেওয়া হয়েছে।বরখাস্ত শিক্ষকদের মধ্যে দুজন মদন উপজেলা, একজন আটপাড়া উপজেলা ও পাঁচজন কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক।তাঁরা হলেন কেন্দুয়ার দিগদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মজিবুর রহমান, নওয়াপাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাওয়া বেগম, একই বিদ্যালয়ের নিপা মোনালিস, বলাইশিমুল বিদ্যালয়ের শিক্ষক মরিয়ম আক্তার, কেন্দুয়া মডেল বিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা আক্তার, আটপাড়ার তেলিগাতি বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্মৃতি খানম, মদনের খাগুরিয়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাকি আক্তার, মদনের জঙ্গল টেংগা বিদ্যালয়ের শিক্ষক জেবুন্নাহার ডলি। বর্তমানে এই শিক্ষকেরা সবাই কারাগারে আছেন।তিনজন প্রধান শিক্ষক হলেন কেন্দুয়ার বলাইশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মান্নান, পুরাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুস সাকি, পানগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিন আক্তার।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে শিক্ষকদের সাময়িকভাবে বরখাস্তের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার নিয়োগ পরীক্ষার চলাকালে ওই চক্রটি কেন্দুয়া শহরের একটি বাড়ি থেকে প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর সরবরাহ করছিল। এ সময় পুলিশ ৩২ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই দিন রাতে কেন্দুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। শনিবার বিকেলের দিকে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। নেত্রকোনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘এ চক্রের সঙ্গে নেত্রকোনা সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মোমেন খান, উন্মেষ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী আরিফুল ইসলাম, বাংলা কৃষ্ণ গোবিন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ঝন্টুসহ আরও কয়েকজন জড়িত। তাঁদের নামেও মামলা হয়েছে। তাঁরা কেন্দ্র থেকে মুঠোফোনে প্রশ্নের ছবি তুলে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে তা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
৯২ বিশ্বকাপের সঙ্গে কাকতালীয় ভাবে মিলে যাচ্ছে একের পর এক পরিসংখ্যান। পাকিস্তান সমর্থকেরা তাই আশায় আছেন, চূড়ান্ত কাকতাল মানে বিশ্বকাপ জেতাটাও এবার হয়ে যাবে। তবে পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ জানালেন, ক্রিকেটাররা কাকতাল নিয়ে নিজেদের মধ্যে তেমন একটা আলোচনা করেন না।পাকিস্তানি ক্রিকেট সমর্থকদের কাছে ১৯৯২ আর ২০১৯ মিলে মিশে একাকার! একের পর এক পরিসংখ্যান মিলে যাচ্ছে, শুরুতে শুধু জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যান মিললেও এখন তো ম্যাচের খুঁটি-নাটিও মিলে যাচ্ছে। যদিও এখনো পাকিস্তানের সেমিফাইনাল নিশ্চিত নয়, তবুও সমর্থকদের কেউ কেউ তো দিব্যদৃষ্টিতে ১৪ জুলাই লর্ডসের ব্যালকনিতে সরফরাজকেই বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে উৎসব করতে দেখছেন!কাকতালের এই উন্মাদনা পাকিস্তান দলকে কতটা ছুঁয়ে যাচ্ছে সেটা এত দিন জানার কোনো উপায় ছিল না। তবে দলের পেসার ওয়াহাব রিয়াজ আজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে গেলেন, ৯২ নয়, ভাবনাটাকে ২০১৯ বিশ্বকাপে সীমাবদ্ধ রাখছেন তাঁরা, ‘আমাদের মাঝে ১৯৯২ বিশ্বকাপ নিয়ে তেমন একটা কথা হয় না। দলের সবাই একই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। আমরা এবারের বিশ্বকাপে খেলছি, তাই আমাদের এটি নিয়েই ভাবতে হবে।’ভারতের বিপক্ষে বড় হারের পর পাকিস্তানের বিশ্বকাপ মিশন শেষ বলেই ধরে নিয়েছিল সবাই। কিন্তু দারুণ প্রত্যাবর্তনে টানা তিন ম্যাচ জিতে পাকিস্তান এখন পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে। খাদের কিনারা থেকে ফিরে আসার রহস্য নিয়েও বললেন ওয়াহাব রিয়াজ, ‘মূলত বিশ্বকাপের জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলার কারণেই এখন ফল আমাদের পক্ষে আসছে। সবার লক্ষ্য একটাই, বিশ্বকাপ জয়।’এদিকে এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম কার্যকর পেস ত্রয়ী পাকিস্তানের। ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ আমির এবং শাহিন শাহ আফ্রিদিকে দিয়ে গড়া পেস আক্রমণের সামনে খাবি খাচ্ছে প্রতিপক্ষরা। তিন পেসার এখন পর্যন্ত ৩৬ উইকেট তুলে নিয়েছেন এবারের বিশ্বকাপে, ওয়াহাব রিয়াজের কণ্ঠেও বোলিং নিয়ে স্বস্তি, ‘বোলিংয়ে যেভাবে সম্মিলিতভাবে পারফর্ম করছি আমরা, সেটা অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। বিশেষভাবে শাহিন দারুণ উন্নতি করেছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচের পর ও কিছুটা চাপে ছিল, কিন্তু দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছে। আমির বিশ্ব সেরা বোলারদের একজন, সে দুদিকেই বল ঘোরাতে পারে। এর মাধ্যমে সে ব্যাটসম্যানদের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারছে। আমাদের এভাবেই বোলিং করে যেতে হবে যা দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’
মেয়াদ নিয়ে ‘আইনের দুটি ধারা সাংঘর্ষিক হওয়ায়’ আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরামর্শে দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। আইনের একটি ধারা অনুযায়ী, চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার ঠিক আগের দিন রোববার আইনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি এই আগ্রহের কথা জানান।এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রোববার রাতে প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি মতামত দিয়েছেন। তাঁর মতামত অনুযায়ী, সোমবারই চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন-২০০৯ এর ধারা ৬ (১) অনুযায়ী ৩৫ বছরের কম এবং ৭০ বছরের বেশি হলে কাউকে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এই ধারা অনুযায়ী, ৭০ বছর হওয়ায় সোমবার চেয়ারম্যান হিসেবে কাজী রিয়াজুল হকের শেষ কর্মদিবস। কিন্তু আইনের ৬ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, কমিশনের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে তিন বছর মেয়াদে নিজ পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। কাজী রিয়াজুল হক ও কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট। এমন পরিস্থিতিতে তিনি রোববার আইনমন্ত্রীকে চিঠি দেন।এতে কমিশনের প্যানেল আইনজীবী খন্দকার মো. মুশফিকুল হুদার আইনি মতামত তুলে ধরে লেখেন ‘আইনজীবীর মতে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ আগামী ১ আগস্ট শেষ হবে। এ ব্যাপারে আপনার সুচিন্তিত পরামর্শ আশা করছি। আপনার বিজ্ঞ পরামর্শের ভিত্তিতে নির্ধারিত দিনে আমি কমিশনের দায়িত্বভার অর্পণ করব।’
টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের সাংসদ হাসান ইমাম খান ওরফে সোহেল হাজারীর বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ করেছেন তাঁর দলের এক নেতা। আদালত রোববার বাদীপক্ষের শুনানি গ্রহণ করলেও এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।সাংসদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগকারী ওই নেতার নাম মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি কালিহাতী উপজেলার বাংড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আমলি আদালতে মোখলেছুর রহমানের করা অভিযোগে বলা হয়, গত মার্চে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থনে বাংড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করে নেওয়া হয়। সাংসদ হাসান ইমামের নির্দেশে তাঁর অনুসারী মাহমুদুল হাসান ও সোহেল সরকার তালা ভেঙে ওই কার্যালয়ে দখল করেন। বিষয়টি তিনি (মোখলেছুর) দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের লিখিতভাবে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৭ এপ্রিল সাংসদ হাসান ইমাম তাঁর ব্যবহৃত সহকারী মুঠোফোন থেকে মোখলেছুরকে ফোন করে আপত্তিকর ভাষায় গালিগালাজ করেন। একই সঙ্গে তাঁকে (মোখলেছুর) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার হুমকি দেন এবং তাঁর অনুগত লোকজন দিয়ে হামলা করে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। সাংসদ সোহেল হাজারীর এই হুমকি মুঠোফোনে রেকর্ড করা আছে বলেও দাবি করেন মোখলেছুর রহমান।মোখলেছুর রহমানের আইনজীবী মো. আবদুল করিম বলেন, আদালতে অভিযোগের পর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমিনুল ইসলাম ফৌজদারির কার্যবিধিতে বাদীর জবানবন্দি নিয়েছেন এবং আইনজীবীরও শুনানি গ্রহণ করেছেন। পরবর্তী সময়ে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।অভিযোগের বিষয়ে সাংসদ হাসান ইমাম খান ওরফে সোহেল হাজারী বলেন, ‘মোখলেছুর রহমান আদম ব্যবসায়ী। তাঁর কাছে অনেক মানুষ টাকা পায়। তাকে একটি প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্পের কাজও ঠিকমতো করেনি। তাই তাঁর সঙ্গে ফোনে কিছু কথা হয়েছিল। আদালত যদি পরোয়ানা দেন, তবে আদালতকে সম্মান জানিয়ে আমি আদালতে যাব।’প্রসঙ্গত, হাসান ইমাম খান টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের সাংসদ। এ আসনের সাবেক সাংসদ আবদুল লতিফ সিদ্দিকী হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করায় ২০১৪ সালে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত হন ও দল থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করার পর উপনির্বাচনে হাসান ইমাম খান সাংসদ নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাংসদ হন।
মাশরাফি এখনো পর্যন্ত উইকেট পেয়েছেন মাত্র ১টি। বাংলাদেশ অধিনায়ক কি পারছেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে? তাঁর পারফরম্যান্স প্রশ্নটা আবারও তুলে দিল বার্মিংহামেমাশরাফি বিন মুর্তজার পারফরম্যান্স নিয়ে কাল ভারতীয় সাংবাদিকেরা বড় নিষ্ঠুর মন্তব্যই করলেন এজবাস্টনের প্রেসবক্সে—‘বিশ্বকাপে ওঁর যে পারফরম্যান্স, এরপরও খেলা চালিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বিশ্বকাপ শেষে তাঁর বিদায় জানানোই হবে সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত।’টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচের ছয় ইনিংসে প্রতিপক্ষের ৬০ উইকেটের বাংলাদেশ তুলে নিতে পেরেছে ৪২টি। এর মধ্যে ১০টি করে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান আর সাইফউদ্দিন। মেহেদী হাসান মিরাজ পেয়েছেন ৫টি। দুই খণ্ডকালীন বোলার মোসাদ্দেক হোসেন ও সৌম্য সরকার পেয়েছেন ৩টি করে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার উইকেট মাত্র ১টি। সেই উইকেটটি কার জানেন? আজ যিনি এজবাস্টনে ভারতীয় বোলারদের মেরে সেঞ্চুরি করলেন—জনি বেয়ারস্টো। কার্ডিফে ইংলিশ ওপেনারকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু দিয়েছিলেন মাশরাফি। ৬ ম্যাচে যে ২৬৪ বল করেছেন ওই একটি উইকেটই মাশরাফির প্রাপ্তি। রান দিয়েছেন ২৭৯। বোলিং স্ট্রাইকরেট আর গড় তাঁর তাই আকাশছোঁয়া—২৬৪ আর ২৭৯।ভারতীয় সাংবাদিকদের আশঙ্কা মাশরাফিকে দ্রুত ‘পিক’ করবেন কোহলিরাও। মাশরাফিকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নাকি খুব ভালো মুখস্থ; বাংলাদেশ অধিনায়ক কোথায় বল ফেলেন সব তাঁদের জানা! পারফরম্যান্সের বিচারে ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে মাশরাফির জন্য পরিস্থিতি কিছুটা বিব্রতকর তো বটেই। দল ভালো খেলছে অথচ তিনি নেতৃত্ব দিতে পারছেন না সামনে থেকে। বিষয়টা তাঁকে যে পোড়াচ্ছে, আড্ডা কিংবা আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর কথায় বেশ বোঝা যাচ্ছে।নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে মাশরাফি চিন্তিত হলেও দলের পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ বাংলাদেশ অধিনায়কের উইকেট খরা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন, ‘উইকেটই সব নয়। রানরেটও তো (ইকোনমি) এখানে গুরুত্বপূর্ণ। সে উইকেট পাচ্ছে না, আমরা জানি। এই টুর্নামেন্টে অনেক বোলার খেলছে, তাদের অনেকেই কিন্তু বলার মতো উইকেট পায়নি। তবে মনে করি ওর ইকোনমি রেট (৬.৩৪) ভালো। সে হিসেবে ভালো বোলিং করছে। নিশ্চিত উইকেট সামনে আসবে। ম্যাশ উইকেট পাচ্ছে না বলে আমি চিন্তিত নই। সে কতটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পারে, সেটাই হচ্ছে কথা। সেটা সে করছেও। যখন সে উইকেট পাবে ওটা আমাদের বোনাস। এখনো দুই ম্যাচ আছে, আশা করি এটিও সে করতে পারবে।’ওয়ালশের আশা পূরণ হলে বিদায়ী টুর্নামেন্টটা মাশরাফি শেষ করতে পারবেন আরও বড় হাসি দিয়েই।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মোল্লাপাড়ায় সাপের ছোবলে এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকাল সাতটার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।মারা যাওয়া ওই শিশুর নাম আছিয়া (৯)। সে একই গ্রামের ফরু মোল্লার মেয়ে। আড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল আছিয়া।শিশুটির পরিবার জানায়, শনিবার রাতে একই বিছানায় মা-বাবার সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল আছিয়া। রাত একটার দিকে ডান হাতে যন্ত্রণা শুরু হয় তার। মা-বাবা দেখেন হাতের কবজিতে সাপে কাটা দাগ। এরপর চলে ঝাড় ফুঁক। রোববার সকাল সাতটার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে শিশুটিকে সাপে কাটে। রোববার সকালে সে মারা যায়।লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকারম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাপের কামড়ে মারা যাওয়া শিশুটির লাশ দাফন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মোটর সিটি খ্যাত মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহরে হয়ে গেল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খুদে প্রতিভাবানদের গ্রীষ্মকালীন সায়েন্স ক্যাম্প। এর আয়োজন করে আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আবিয়া) মিশিগানভিত্তিক গ্রেটলেক চ্যাপটার।মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের উদ্ভাবনী প্রতিভা বিকাশে দুই দিনব্যাপী এই ইয়ুথ সামার সায়েন্স ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয় ২২ ও ২৩ জুন (শনিবার ও রোববার)। ক্যাম্প আয়োজন করা হয় মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ট্রয় শহরের বাংলাদেশিদের জনপ্রিয় ভেনু বলকান আমেরিকান কমিউনিটি সেন্টারের হল রুমে।আবিয়া গ্রেটলেক চ্যাপটারের বর্তমান প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী আবু আশরাফের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই ক্যাম্প পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতা করেন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কামরুল মজুমদার, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী ইমরান হোসাইন ও প্রকৌশলী ড. ফয়জুল মোমেন।ক্যাম্পটি পরিপূর্ণ ছিল সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথের (STEM) ওপর ১৬টি বিভিন্ন রকম ওয়ার্কশপ, খুদে প্রতিভাবানদের বিজ্ঞান বিষয়ক আবিষ্কার নিয়ে প্রদর্শনী ও মজার নানা খেলাধুলায়। টেকনিক্যাল সেমিনার ও ওয়ার্কশপের বিভিন্ন টপিকসের মধ্য অন্যতম ছিল বিভিন্ন রকম ম্যাথ গেম, ফিজিকস থিওরি, ইন্টারনেট সেফটি অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি, সিম্পল কোডিং, মাইক্রো-ইলেকট্রনিকস, রোবোটিকস, আর্থ সায়েন্স, লাইট থিওরি, বিল্ডিং স্ট্রাকচার, আইওটি। আবার কিছু কিছু ওয়ার্কশপের বিষয় ছিল অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করে গড়ে তোলা এবং শিক্ষা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ব্যয় ব্যবস্থাপনা, সন্তানদের সঙ্গে ক্রুশিয়াল কনভারসেশন সম্পর্কিত পরামর্শ ইত্যাদি।এ ক্যাম্প ছিল বাংলাদেশি আমেরিকান এলিমেন্টারি ও মিডল স্কুলের ছাত্রসহ ভিন্ন ভিন্ন কমিউনিটি থেকে আগত তাদের বন্ধুদের জন্য উন্মুক্ত।অনুষ্ঠানে মৃধা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার ড. দেবাশীষ মৃধার উপস্থিতি এবং উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন বিষয়ক তার বক্তব্য ছিল বিশেষ আকর্ষণ। এ ছাড়া খুদে মেধাবী তরুণদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন আবিয়ার কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য বিদায়ী সভাপতি প্রকৌশলী ড. জাকিরুল হক, মিশিগান চ্যাপটারের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মনির জামান, সদ্য বিদায়ী সভাপতি প্রকৌশলী সাদেক রহমান ও প্রকৌশলী আবিদ রহমান প্রমুখ।বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ মেধাবী সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনী বিষয়ক অনুপ্রেরণামূলক এমন ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান প্রথমবারের মতো আয়োজন বিষয়ে বক্তব্য দেন মূল উদ্যোক্তা ও সংগঠনের বর্তমান সভাপতি প্রকৌশলী আবু আশরাফ। তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানটি আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল স্কুলে অধ্যয়নরত আমাদের সন্তানদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও অঙ্ক বিষয়ক তাদের উদ্বোধনী প্রতিভা বিকশিত এবং তাদের পরস্পরের মাঝে একটি বন্ধন তৈরি, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের এই সব বিষয়ে সম্পৃক্ত করা।এ ধরনের ক্যাম্প এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলেও ব্যাপক উপস্থিতি ও সফল সমাপনী আয়োজকদের উদ্বুদ্ধ করে। তারা প্রতিবছর এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এ অনুষ্ঠান আগামী বছর থেকে আবিয়ার বার্ষিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে আয়োজক কমিটি জানায়।ক্যাম্প পরিচালনায় বিভিন্নভাবে সহায়তা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী কাজী মাশফিক হোসাইন, প্রকৌশলী জিন্নু রাইন, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী মাহমুদ সালাম ও প্রকৌশলী গোলাম মাইনুদ্দিন (তানভীর), কোষাধ্যক্ষ প্রকৌশলী প্রণব চৌধুরী শাওন প্রমুখ।অনুষ্ঠানের মাঝে প্রকৌশলী আবিদ রহমানের হাতে তৈরি ওয়াটার রকেট লাঞ্চ ছিল বাড়তি আকর্ষণ। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি (গ্রাভিটি) উপেক্ষা করে রকেট কীভাবে মহাশূন্যে উৎক্ষেপণ করা হয়, সেটি দেখানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। অনুষ্ঠানে আগত শিক্ষার্থীরা বেশ আগ্রহ নিয়ে এই রকেট লাঞ্চ উপভোগ করে।মিশিগান অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তর ডেট্রয়েট শহরে অনেক বাংলাদেশি আমেরিকান প্রকৌশলী, স্থপতি ও তথ্য প্রযুক্তিবিদের বসবাস। তারা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে আমেরিকার প্রধান তিনটি মোটর কোম্পানিসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রকৌশলী, স্থপতি ও তথ্য প্রযুক্তিবিদের সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্ট অ্যাসোসিয়েশন (আবিয়া) মিশিগান চ্যাপটারের প্রধান লক্ষ্য সদ্য পাস করে আসা নতুনদের কর্মসংস্থানের জন্য সব ধরনের কারিগরি সহায়তা প্রদান। এই সব ক্ষেত্রে যারা পড়তে ইচ্ছুক ও ইতিমধ্যেই আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত তাদের সঠিক লক্ষ্য অর্জনে কাজ করা।বিগত সময়ে সংগঠনটি স্কুলপড়ুয়া ছাত্রদের ভবিষ্যৎ গবেষণায় অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য প্রযুক্তি বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এ ছাড়া তাদের নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কিত জ্ঞানের রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেন তারা বাংলাদেশ ও সে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। এর আগে সংগঠনটি বেশ কয়েকটি সফল মেগা ইভেন্ট ও বিশেষ করে নতুন চাকরি প্রার্থীদের জব ফেয়ার আয়োজন করে আমেরিকাপ্রবাসী নতুন প্রকৌশলীদের মাঝে সাড়া ফেলেছে। সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই আশা করছে ভবিষ্যতে তারা আরও অনেক সফলভাবে কমিউনিটির জন্য কাজ করে যেতে পারবে।
এই বিশ্বকাপে মিস ফিল্ডিংয়ে বেশ কিছু রান হজম করেছে বাংলাদেশ। মিস ফিল্ডিংয়ে রান দেওয়াতে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে কেবল আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত এই রানগুলোই বাংলাদেশের স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তো!ভালো ব্যাটিং, ভালো বোলিংয়ের পাশাপাশি ম্যাচ জেতার জন্য ভালো ফিল্ডিংয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেখা গেল মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে প্রথমে অতিরিক্ত ২ রান দিয়ে দিলেন, পরে সেই এক-দুই রানের জন্যই আপনাকে ম্যাচটা হেরে যেতে হলো। এখন তো ম্যাচে ফিল্ডারদের গুরুত্ব আরও বেশি। জন্টি রোডস, হার্শেল গিবস, পল কলিংউড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, রবীন্দ্র জাদেজা, এবি ডি ভিলিয়ার্সরা আলাদা কদর পান মাঠে বাড়তি রান বাঁচানোর জন্যই। এই বিশ্বকাপেও ম্যাক্সওয়েল, মার্টিন গাপটিল, শেলডন কটরেলের মতো তারকারা ফিল্ডিং দিয়ে নজর কাড়ছেন। কিন্তু বাংলাদেশ? পরিসংখ্যান বলছে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের রান দেওয়ার প্রবণতা হতাশাজনকই।মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে এবার বাংলাদেশের ফিল্ডাররা অতিরিক্ত ৬০ রান দিয়েছেন, যা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শীর্ষে আছে বিশ্বকাপে একটি ম্যাচও না জেতা আফগানিস্তান। ১০১ রান দিয়েছে তারা। বাংলাদেশের পরেই আছে শ্রীলঙ্কা (৫৭ রান) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (৫৪ রান)। লঙ্কানদের ভাগ্য সুতোয় ঝুললেও দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিমধ্যেই বাদ পড়ে গেছে টুর্নামেন্ট থেকে। পয়েন্ট তালিকার ৪ নম্বরে থাকার জন্য লড়ছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। ভালো ফিল্ডিংয়ের ওপর একটা দলের পারফরম্যান্স যে কতটুকু নির্ভর করে, সেটা মোটামুটি এই তথ্য থেকেই বোঝা যায়। ফিল্ডিংয়ে যারাই খারাপ করছে, তারা হয় টুর্নামেন্ট থেকে এর মধ্যেই বাদ পড়ে গেছে, অথবা বাদ পড়ার শঙ্কায় আছে। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়া মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে রান দিয়েছে ৪২। মিস ফিল্ডিং তালিকার ৭ নম্বরে আছে তারা। তালিকার একদম শেষে আছে নিউজিল্যান্ড, ফিল্ডিংয়ের দিক দিয়ে সেরা তারা। মিস ফিল্ডিংয়ের কারণে ৩৪ রান বাড়তি দিয়েছেন উইলিয়ামসন-গাপটিলরা। তবে ভালো ফিল্ডিং করেও বাদ পড়ার শঙ্কায় আছে ইংল্যান্ড, মিস ফিল্ডিং তালিকায় নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে সবার নিচে আছে তারা।টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভালো ফিল্ডারের তালিকায় বাংলাদেশ থেকে শুধু মেহেদী হাসান মিরাজ স্থান করে নিয়েছেন— ১৮ রান বাঁচিয়েছেন তিনি। শীর্ষে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেলডন কটরেল বাঁচিয়েছেন ৩৭ রান। এর পরেই আছেন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৩১ রান) ও নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল (২৯ রান)। কার্যকরী ফিল্ডারদের তালিকায় ম্যাক্সওয়েল ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার আছেন আরও দুজন—অ্যারন ফিঞ্চ ও মার্কাস স্টয়নিস।ফিল্ডিং নিয়ে বাংলাদেশের এখনো ভাবার জায়গা আছে, এ বিশ্বকাপ যেন সেটিই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন এরশাদকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে।জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোট ভাই জিএম কাদের আজ রোববার ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, এরশাদের শারীরিক অবস্থা গতকাল শনিবারের চেয়ে আজ অবনতি ঘটলে তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্টে দেওয়া হয়।জি এম কাদের বলেন, শনিবার পর্যন্ত এরশাদের শারীরিক অবস্থার ৫০ শতাংশ উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু আজ রোববার সকাল থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ফুসফুসে পানি চলে এসেছে, দেখা দিয়েছে ইনফেকশন। পরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। ওষুধের পরিবর্তন করে ইনফেকশন বন্ধের চিকিৎসা চলছে।জিএম কাদের বলেন, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদের চিকিৎসার সকল ব্যয় সরকারের পক্ষ থেকে বহন করা হচ্ছে। বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত আছে। তবে তা চিকিৎসকদের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে। এ মুহূর্তে সিএমএইচের চিকিৎসায় আমাদের আস্থা আছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে পারে বলে চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন।উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন সকালে এরশাদ অসুস্থবোধ করলে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী দেশের চারুশিল্পের বৃহত্তম উৎসব। ১৯৭৪ সালে সমকালীন চিত্রকলা প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিষয়ক কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এ কর্মকাণ্ডের সূত্র ধরে ১৯৭৫ সালে শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে প্রথম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর যাত্রা শুরু। প্রতি দুই বছর পর পর শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এ প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে কাল শুরু হবে ২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী।কাল থেকে শুরু হয়ে এবারের আসরটি চলবে ২১ জুলাই পর্যন্ত। যেখানে দেশের ৩১০ জন শিল্পীর ৩২২টি শিল্পকর্ম স্থান পাবে। প্রদর্শনীর উদ্বোধন ছাড়াও কাল ৮টি পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বিজয়ী শিল্পীদের হাতে। এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্মের জন্য ২ লাখ টাকার পাবেন একজন শিল্পী। এ ছাড়া চারটি বিভাগীয় চিত্রকলা, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, নিউ মিডিয়া সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হবে, যার আর্থিক মূল্যমান এক লাখ টাকা। এ ছাড়া থাকবে ১ লাখ টাকা অর্থমূল্যের বেঙ্গল ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের দীপা হক পুরস্কার ও ৫০ হাজার টাকার মূল্যের চিত্রশিল্পী কাজী আলোয়ার হোসেন পুরস্কার।আজ রোববার বিকেলে জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ২৩তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। তিনি জানান, কাল বিকেল ৫টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও বিজয়ী শিল্পীদের পুরস্কার দেবেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও বরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার জন্য ৮৫০ জন শিল্পী আবেদন করেছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে শিল্পকর্ম বাছাই কমিটিতে ছিলেন শিল্পী নাসরিন বেগম, শিল্পী মোস্তাফিজুল হক, শিল্পী শেখ সাদী ভূইয়া, শিল্পী মোহাম্মদ ইকবাল ও শিল্পী আনিসুজ্জামান। তাঁরা আবেদনকৃত শিল্পীদের মধ্যে ৩১০ জন শিল্পীর ৩২২টি শিল্পকর্ম বাছাই করেছেন। এর মধ্যে ১৫৯টি চিত্রকলা, ৪৫টি ভাস্কর্য, ৫০ টি ছাপচিত্র, ১৭টি কারুশিল্প, ৮টি মৃৎশিল্প, ৩৭টি স্থাপনা ও ভিডিও আর্ট, ৭টি কৃৎকলা (পারফরম্যান্স আর্ট)। এসবের মধ্যে কাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চূড়ান্তভাবে পুরস্কার দেওয়া হবে। পুরস্কারের জন্য সেরা শিল্পকর্ম বাছাইয়ে বিচারক হিসেবে ছিলেন শিল্পী আবদুস শাকুর শাহ, স্থপতি শামসুল ওয়ারেস, শিল্পী রণজীৎ দাস, শিল্পী ফরিদা জামান ও শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস।একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘জাতীয় সংস্কৃতির গৌরবময় বিকাশকে অব্যাহত রাখতে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলার চর্চা ও বিকাশের উদ্দেশ্যে শিল্পসংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা। প্রতি দুই বছর পর পর একাডেমির চারুকলা বিভাগ নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী, দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী আয়োজনসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রদর্শনী আয়োজন করে থাকে।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব বদরুল আনম ভূঁইয়া, চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী আশরাফুল আলম পপলু, উপপরিচালক এ এম মোস্তাক আহমেদ, সহকারী পরিচালক মো. আবদুল রাকিবিল বারী, জনসংযোগ কর্মকর্তা হাসান মাহমুদ, শিল্পী সুজন মাহাবুব প্রমুখ। চারুকলা বিভাগের পরিচালক বলেন, ‘আমাদের যেসব বরেণ্য শিল্পী আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই কোনো না কোনো সময় জাতীয় এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তাই চারুশিল্পীদের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়োজন।’
এ বিশ্বকাপ শাসন করবে ফাস্ট বোলার ও লেগ স্পিনাররা। বাংলাদেশ ছাড়া সব দলই লেগ স্পিনার নিয়ে বিশ্বকাপে গেছে। এ নিয়ে শঙ্কাও ছিল অনেক। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব শেষ হওয়ার পর সে শঙ্কা অমূলক বলেই প্রমাণ হচ্ছে। কারণ ফাস্ট বোলাররা দাপট দেখালেও লেগ স্পিনারদের নিয়ে সতর্কতা গল্পকথা বলেই মনে হচ্ছে এখন।২০১৯ বিশ্বকাপেই নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন সময়ের সেরা লেগ স্পিনার রশিদ খান। ৮ ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভার বল করেই ১১০ রান দিয়েছেন। বিশ্বকাপে সবচেয়ে খরচে বোলিংয়ের রেকর্ডটা এখন তাঁর। ওয়ানডেতে সবচেয়ে খরচে স্পিনারের রেকর্ডও এখন লেগ স্পিনার রশিদের।আজও ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা ভারতীয় লেগ স্পিনারদের নিয়ে রীতিমতো উৎসবে মেতেছিলেন। ৩০ থেকে ৪০ ওভারে রান তোলায় বাঁধ দিয়ে কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল নিজেদের বোলিং ফিগারকে একটু ভদ্রস্থ করতে পেরেছেন। ১০ ওভারে ৭২ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন যাদব। ওতেই অমর্যাদাকর এক তালিকায় ঢুকে গেছেন বাঁহাতি লেগ স্পিনার যাদব। বিশ্বকাপে ভারতীয় বোলার হিসেবে এক ম্যাচে তাঁর চেয়ে বেশি রান দিয়েছেন মাত্র ছয়জন।যাদব তবু তাঁর সামনে আরও ছয়জনকে পাচ্ছেন। কিন্তু চাহালের যে সেই সান্ত্বনাও নেই। আজ ১০ ওভার বল করে কোনো উইকেট পাননি চাহাল। শুধু উইকেটশূন্য থাকেননি, উদারহস্তে রানও দিয়েছেন ৮৮টি। বিশ্বকাপে তাঁর চেয়ে বেশি রান এক ম্যাচে ভারতের কেউ দেননি। ২০০৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে রিকি পন্টিংয়ের কাছে বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়ে জাভাগাল শ্রীনাথ ৮৭ রান দিয়েছিলেন। গত তিন বিশ্বকাপে সে রেকর্ড আর ভাঙা হয়নি কারও। বিশ্বকাপে ভারতের সবচেয়ে খরচে বোলিংয়ের রেকর্ডটা আজ থেকে চাহালের।বিশ্বকাপে চাহালের চেয়ে বেশি রান দিয়েছেন এমন স্পিনারই আছেন মাত্র দুজন। একজন যে রশিদ সেটা তো লেখা শুরুতেই বলা হয়েছে। আর এ দুই লেগ স্পিনারে মাঝে আছেন ডোয়াইন লেভেরক। ২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডার হয়ে ভারতের বিপক্ষে ৯৬ রান দিয়েছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
ঝিনাইদহে হত্যা, বিস্ফোরক ও মাদকের পৃথক মামলায় সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম, দ্বিতীয় ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বে থাকা বিচারক এম জি আযম এ রায় দেন।দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সদর উপজেলার হাজীডাঙ্গা গ্রামের নাজিম উদ্দিন, মায়াধরপুর গ্রামের আসমত আলী মণ্ডল, শ্রীপুর গ্রামের তক্কেল আলী মণ্ডল, কুটিদুর্গাপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম, মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া গ্রামের আমেনা খাতুন, রাবেয়া খাতুন ও মজিদা খাতুন।এক মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে আবদুল গনিকে বোমা মেরে হত্যা করেন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা। এই ঘটনায় পরদিন গনির ভাই সদর থানায় দুটি মামলা করেন। ওই বছরই পুলিশ চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।মামলাটির দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রোববার আদালত নাজিম উদ্দিন, আসমত আলী, তক্কেল আলী ও নজরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। অনাদায়ে তাঁদের আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত তক্কেল আলী ও নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।অপর মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ জুলাই মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর বাজার থেকে ফেনসিডিলসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই দিন পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।সাক্ষ্য গ্রহণ ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত আমেনা খাতুন, মজিদা খাতুন ও রাবেয়া খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। মামলার অপর আসামি তারা মিয়া বর্তমানে মৃত এবং রাবেয়া খাতুন ও আমেনা খাতুন পলাতক রয়েছেন।
লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকায় মারা যাওয়া ইমরান খান (৩৩) না‌মের এক যুবকের মর‌দেহ পৌঁছেছে পরিবারের সদস্যদের কা‌ছে। আজ রোববার সকাল ৯টার দি‌কে শরীয়তপুরের ন‌ড়িয়া উপ‌জেলার কেদারপু‌র গ্রামে আনা হয় মর‌দেহ‌টি।ইমরান খান উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়‌নের কেদারপুর গ্রামের আবদুল মান্নান খানের ছেলে। লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে গত বছরের আগস্টে তাঁর মৃত্যু হয়।ইমরান খানের ছোট ভাই শোভন খান জানান, ২০১৮ সা‌লের মার্চ মা‌সে দালালের প্রলোভনে সুদা‌নে পা‌ড়ি জমান ইমরান। প‌রে সেখান থে‌কে তিনি ‌লি‌বিয়া যান। এর ছয় মাস পর গত ২৯ আগস্ট লি‌বিয়া থে‌কে অভিবাসীবাহী নৌকায় ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিসিয়ার উপকূলে পৌঁছালে নৌকার তেল, সঙ্গে থাকা পানি ও খাবার ফুরিয়ে যায়। দুদিন পর অন্যদের সঙ্গে ইমরানও খাবার না পে‌য়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প‌রে নৌকাতেই মারা যান ইমরান। পরবর্তী সময়ে তাঁদের বহনকারী নৌকাটি ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ মাল্টায় পৌঁছালে মৃত ও জীবিত থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করেন দেশটির কোস্টগার্ডের সদস্যরা। প‌রে ইমরানের লাশ মাল্টার মর্গে রাখা হয়। এর তিন মাস পর পরিবারের কাছে ইমরা‌নের মৃত্যুর খবর আসে। ন‌ড়িয়ার ইতা‌লিপ্রবাসীরা ইমরা‌নের মর‌দেহ‌ শনাক্ত ক‌রেন।পু‌লিশ ও পা‌রিবা‌রিক সূত্রে জানা গেছে, ইমরানের মরদেহ দেশে আনা ব্যয়বহুল জেনে স্বজনরা শুরুতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। শেষে ১১ মাস ম‌র্গে থাকার পর ইতালিপ্রবাসী সহায়তায় মাল্টার মর্গ থে‌কে ইমরানের মরদেহ শুক্রবার বাংলাদেশে পাঠানো হয়। শনিবার রাত ১১টা ২০ মি‌নি‌টের দিকে ইমরা‌নের মর‌দেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দ‌রে পৌঁছায়। প‌রে রোববার সকালে শরীয়তপু‌রের গ্রা‌মের বা‌ড়ি‌তে ইমরা‌নের মর‌দেহ নি‌য়ে আসেন স্বজনেরা। বেলা ২টার দি‌কে জানাজা শে‌ষে ন‌ড়িয়া মুলফতগঞ্জ মাদ্রাসাসংলগ্ন কবরস্থা‌নে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।ইমরানের ভাই শোভন খান ব‌লেন, ‘যারা ইমরান ভাইকে প্রলোভন দেখিয়ে ইতা‌লি পাঠানোর নাম করে নৌকায় তুলেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।’ তবে তিনি কোনো দালালের নাম বলতে পারেননি।নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, ইমরানের লাশ তাঁর পরিবার দাফন করেছে। তাঁরা এ বিষয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। তিনি কোন দালালের মাধ্যমে লিবিয়া গেছেন, তাও জানা সম্ভব হয়নি।
আজ রোববার প্রায় সারা দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও মাঝারি আবার কোথাও ভারী। এই বৃষ্টিতে ব্যস্ত সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। কিন্তু হাতিরঝিলে বিকেলের বৃষ্টি কারও কারও কাছে এসেছে অন্য রকম আমেজ নিয়ে। তাই এই ‘বৃষ্টিবিলাস’—
প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৮ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেও আছে তারা। দলটিকে চ্যাম্পিয়ন চেহারায় আবিষ্কার করেছেন অ্যালান বোর্ডার।বিশ্বকাপ শুরুর আগে বাজির দরে অস্ট্রেলিয়া খুব একটা ওপরে ছিল না। কিন্তু বল মাঠে গড়াতেই পাশার গুটি উল্টে গেছে। প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা এখনো পর্যন্ত শুধু ভারতের কাছেই হেরেছে। ৮ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে তারা।গতকাল লো স্কোরিং ম্যাচেও বড় জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছে তারা। প্রথমে ব্যাট করে ট্রেন্ট বোল্টের তোপে ২৪৩ রানেই থেমে যায় অস্ট্রেলিয়া। মারকাটারি ব্যাটিংয়ের এ যুগে ২৪৩ রান করে স্বস্তিতে থাকতে পারে খুব কম দলই। কিন্তু এমন লো স্কোরিং ম্যাচেও আয়েশি জয় তুলে নিয়ে নিজেদের দাপট ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। ১৫৭ রানেই নিউজিল্যান্ডকে থামিয়ে দিয়ে পেয়েছে ৮৬ রানের বড় জয়। মিচেল স্টার্কদের এমন দাপুটে পারফরমেন্স দেখে অনেকে অতীতের অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বর্তমান দলটিকে মেলানোর চেষ্টা করছে। মনে পড়ছে অপরাজেয় হয়ে ওঠা সেই অস্ট্রেলিয়া দলটির কথা।বর্তমান দলটির মধ্যেও সেই রসদ দেখছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান তারকা অ্যালান বোর্ডার, ‘ধীরে শুরু করার পর অস্ট্রেলিয়া এখন প্রয়োজন অনুযায়ী খেলতে শুরু করেছে এবং গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর পুরোনো দিনের অনুভূতি ফিরে এসেছে। যা বিশ্বকাপ জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’ক্রিকেট বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে গতকালের জয়ের স্বাদটা একটু ভিন্ন। কারণ ২৪৩ রান করে ৮৬ রানের বড় জয়। তাই এই জয়টিকে এগিয়ে রাখছেন বোর্ডার, ‘গতকালের জয়টি দারুণ ছিল। কারণ জয় পাওয়াটা ছিল কঠিন কাজ। এই টুর্নামেন্টে টপ অর্ডার অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভ স্মিথের ওপর বেশি নির্ভরতা ছিল। কিন্তু গতকাল তাদের ব্যর্থতায় নিচের দিকের ব্যাটসম্যানরা ভালো করেছে। এটি খুব ভালো লক্ষণ।’গতকাল বল হাতে আগুন ঝরিয়েছেন স্টার্ক। এর আগে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ার কাজটা করেছেন অ্যালেক্স ক্যারি। উইকেট রক্ষক এই ব্যাটসম্যানের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। বোর্ডার নিজেও ক্যারিকে বসিয়েছেন নায়কের আসনে, ‘কোনো সন্দেহ ছাড়াই সে আমার ম্যাচ সেরা। ক্যারিকে ছাড়া গতকাল ১৫০ রানও করতে পারত না অস্ট্রেলিয়া।’
কোর্টনি ওয়ালশ—বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচের এক চোখ যেন আজকের ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে। আরেক চোখ ২ জুলাইয়ের ম্যাচে। টিম হোটেলে দাঁড়িয়ে বললেন দুটি ম্যাচ নিয়েইভারতীয় দর্শকদের চিৎকারের জোর কতটা, এজবাস্টনের প্র্যাকটিস এরিয়াতে বাংলাদেশ সেটি ভালোই টের পেল। তবে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যে আজ ভারতীয় বোলারদের ওপর যেভাবে চড়াও হয়েছেন, তারা গগনবিদারী চিৎকারের খুব বেশি সুযোগ পেল কোথায়। ভারতকে ৩৩৮ রানের বড় লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছে ইংল্যান্ড। কোহলিরা এই রান তাড়া না করতে পারলে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল-স্বপ্ন বড় ধাক্কাই খাবে।বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ দল আজ ক্ষণে ক্ষণে খোঁজ নিচ্ছেন পাশের মাঠে হওয়া ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের। যদি ভারত হেরে যায়! অনুশীলনে রওনা দেওয়ার আগে টিম হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে দলের পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ অবশ্য জানিয়ে গেলেন ম্যাচের ফল যেটাই হোক, তাঁদের লক্ষ্য একটাই—ভালো খেলতে নিজেদের পরের দুটি ম্যাচ, ‘হ্যাঁ, আমরা ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের দিকে চোখ রাখছি। আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কোনো কিছু বলতে চাই না এ ম্যাচ নিয়ে। দেখা যাক কী হয়। আমাদের সামনে দুটি বড় ম্যাচ। আমাদের ছেলেরা বাংলাদেশকে গর্বিত করতে চায়। যাই ঘটুক না কেন আমাদের সেরা ব্র্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে। বাকি দুই ম্যাচে আমরা শুধু এটাই করতে পারি।’ সেরা ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে হলে শুধু ব্যাটিং ভালো করলে হবে না, বোলিংটাও তো ভালো করতে হবে। বিশেষ করে পেস বোলিং আক্রমণ—যে বিভাগের দায়িত্বে আছেন ওয়ালশ। হতে পারেন ফাস্ট বোলিংয়ের কিংবদন্তি, কিন্তু কোচ হিসেবে তিনি কতটা সফল হতে পারলেন, সেটি নিয়ে আছে প্রশ্ন। গত তিন বছরে তাঁর অধীনে বাংলাদেশ পেস বোলাররা আহামরি এমন কিছু করতে পারেননি যে বলা যায় ওয়ালশ কোচ হিসেবে সফল। বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণের দুই ভরসা মোস্তাফিজুর রহমান আর সাইফউদ্দিন যেমন নতুন বলে তেমন কোনো সাফল্যই এনে দিতে পারেননি ২০১৯ বিশ্বকাপে। দেশের মাঠে পুরোনো বলেই তাঁদের বেশির ভাগ সাফল্য। সামনের দুই ম্যাচেও যদি সেই একই ছবি দেখা যায়—বাংলাদেশ কি পারবে প্রতিপক্ষের বড় স্কোর ঠেকাতে?ওয়ালশ বিষয়টা ছেড়ে দিচ্ছেন উইকেটের ওপর, ‘এটা নির্ভর করে উইকেটের ওপর। বার্মিংহামের উইকেট কেমন হয় সেটি আগে দেখতে হবে। যদি উইকেটে ঘূর্ণি থাকে তাহলে শুরুতেই উইকেট তুলে নিতে স্পিনার ব্যবহার করতে হবে। এই ম্যাচে (ভারত-ইংল্যান্ড) কী উইকেট ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি দেখতে হবে। আর নতুন বলে যদি সুইং বা মুভমেন্ট থাকে তাহলে আমি সিমারদের ব্যবহার করতে চাইব। এটা নির্ভর করে নির্দিষ্ট দিনের ওপর, উইকেট কেমন আচরণ করছে সেটি বুঝেই আমরা বোলার ব্যবহার করব।’নতুন বল যে বা যাঁদের হাতেই তুলে দেওয়া হোক, এজবাস্টনে দ্রুত ভারতীয় টপ অর্ডারে ভাঙন ধরাতে না পারলে বাংলাদেশের জন্য কাজটা কঠিনই হয়ে যাবে।
জাইরা ওয়াসিমের শুরুটা হয়েছিলো ধামাকাদার। ২০১৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে আমির খানের সঙ্গে ‘দঙ্গল’ ছবিতে কুস্তিবিদ গীতা প্রগতের চরিত্রে অভিনয় করেন। ৭০ কোটি রুপি খরচ করে বানানো এই ছবি বক্স অফিসে তুলে আনে প্রায় ২১০০ কোটি রুপি। এটি এখন পর্যন্ত ভারতের সব থেকে বেশি অর্থ উপার্জনকারী ছবি। আর এই ছবি জম্মু ও কাশ্মীরে জন্ম নেওয়া জাইরা ওয়াসিমকে এনে দেয় জাতীয় পুরস্কার।তাঁর পরের ছবিটিও ছিল প্রথাবিরোধী। আর সেটিও ছিল আমির খানের সঙ্গে। ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ নামের সেই ছবি জাইরা ওয়াসিমকে উপহার দিয়েছিল ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। আর গত ১১ মার্চ শেষ হয়েছে তাঁর তৃতীয় ছবি ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’–এর শুটিং। এই বায়োপিকে তাঁকে অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তা আয়েশা চৌধুরীর ভূমিকায় দেখা গেছে, যিনি জীবনের একটা বড় সময় দুরারোগ্য ও বিরল পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। এই রোগে ফুসফুসে ঘা হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে অনেক জটিলতার তৈরি হয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে মারা যান আয়েশা চৌধুরী। এই ছবিতে জাইরা ওয়াসিমের মা ও বাবার ভূমিকায় থাকবেন যথাক্রমে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও ফারহান আখতার।যা হোক, জাইরা ওয়াসিম গতকাল তাঁর ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ স্টাটাস দিয়েছেন। এই প্রতিবেদন সেই পোস্টকে ঘিরে। কেননা, সেখানে জাইরা ওয়াসিম বলিউডে তাঁর যাত্রা আর অভিজ্ঞতার বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। আর জানিয়েছেন যে বলিউডে ভালো নেই এই মুসলিম তারকা। এখনে তিনি যা করছেন, তা নাকি তাঁর ধর্মীয় আদর্শ আর মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই তিনি লিখেছেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমি একেবারে নিজের ইচ্ছায় বলিউডে পা রাখি। অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তা পাই। মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হই। রাতারাতি তরুণদের মডেল বনে যাই। কিন্তু আমি এগুলো কিছুই চাইনি। আমি আমার নতুন এসব পরিচয় নিয়ে সুখী নই।’জাইরা ওয়াসিম আরও লিখেছেন, ‘বলিউড আমাকে দুহাত ভরে দিয়েছে। ভালোবাসা, সমর্থন, জীবনযাপনের পদ্ধতি—সবকিছু। কিন্তু আমি যেভাবে কাজ করেছি, তাতে আমার ধর্মীয় বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ইসলামের সঙ্গে আমার সম্পর্ক হুমকির মুখে পড়েছে। আল্লাহর সঙ্গে আমার দূরত্ব বেড়েছে। আমার মানসিক শান্তি নষ্ট হয়েছে। আমি আমার জীবন থেকে বরকত হারিয়েছি। আমি ভুলতে বসেছিলাম, পৃথিবীতে আমাদের পাঠানোর উদ্দেশ্য। আর সফলতা সেখানেই যখন যে উদ্দেশ্যে আমাদের পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে আমরা তা পূরণ করতে সমর্থ হব।'শেষ বাক্যে জাইরা ওয়াসিম জানিয়েছেন, মনের শান্তি আর ইমানের বিনিময়ে এসব সফলতা, তারকাখ্যাতি, কর্তৃত্ব, সম্পদ কিছুই চান না তিনি। তবে কি এই স্টাটাস বলিউড থেকে বিদায়ের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত? ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’-ই হতে যাচ্ছে তাঁর শেষ ছবি?
খোলামোড়া ঘাটের কাছেই ভাসছে অসংখ্য গাছের গুঁড়ি। মেহগনি, রেইনট্রি, চাম্বুল আরও কত কী। ঘাটে ভেড়ানো আছে গুঁড়িভর্তি দুটি বড় ট্রলার। ট্রলার দুটো থেকেই পানিতে ফেলা হচ্ছে গুঁড়িগুলো। ভারী গুঁড়িগুলো ঠেলে ফেলা হচ্ছে, একটু কম ভারী যেগুলো, সেগুলো কাঁধে তুলে নিচ্ছেন একেকজন। কয়েকজন নেমে পড়েছেন পানিতে। ডুবসাঁতার দিয়ে তুলে আনছেন গুঁড়িগুলো। ডুবে থাকা গুঁড়িগুলো কয়েক দিন আগে আনা। আরেক দল শ্রমিক লেগে আছে সেগুলো পাড়ে তুলে রাখার জন্য। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া ঘাট এলাকায় প্রতিদিন টনের পর টন গাছের গুঁড়ি নামে। এগুলো আসে প্রধানত বরিশাল থেকে।প্রখর রোদে গায়ে ফোঁসকা পড়ার উপক্রম। এর মধ্যেই সকাল থেকে কাজ করছেন বরিশাল থেকে গুঁড়ির সঙ্গে আসা শ্রমিকেরা। রোদে চকচক করছে তাঁদের ঘামে চটচটে শরীর।আজ রোববার দুপুরে বুড়িগঙ্গার ঘাটে ভেড়ানো ট্রলারে বসেই কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলো। এদের একজন মো. মিন্টুর বয়স ২৬। এখানকার বেশির ভাগ শ্রমিকের বয়সই ২০ থেকে ৩০-এর মধ্য। মিন্টু জানালেন, গুঁড়িভর্তি ট্রলার নিয়ে তাঁরা এসেছেন বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট থেকে। রওনা হওয়ার দিন থেকে কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া পর্যন্ত আসতে ৯ দিন লেগেছে। কখনো কখনো এক দিন বেশিও লেগে যায়। ফিরে যেতে আরও কমপক্ষে ৯ দিন লাগবে। এই ১৮ দিনে একেকজন ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা মজুরি পান। খাবারের জন্য আলাদা বরাদ্দ থাকে।মিন্টু বললেন, ‘আমাদের কাজ হলো মেহোন্দীগঞ্জ থেকে ট্রলার গুঁড়ি দিয়ে লোড করে রওনা হওয়া এবং ঢাকার মিলের লোকদের কাছে সেগুলো বুঝিয়ে দেওয়া।’ যাওয়ার সময় কী করেন? উত্তর আরেক শ্রমিক মো. সোহাগের, ‘যাওয়ার সময় ট্রলার খালি নিই না। ঢাকার মুদিপণ্য নিয়ে যাই।’ এটা তাঁদের বাড়তি পাওনা।বাবা-মা, ছোট বোন, স্ত্রী এবং চার বছরের ছেলেকে নিয়ে মিন্টুর সংসার। অন্য শ্রমিকদের চেয়ে মিন্টুর আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো। যে ট্রলারটিতে করে গুঁড়ি আনা হয়েছে তার অন্যতম মালিক তিনি। ট্রলার ভাড়ার একাংশ তাঁর। ট্রলার চালকও তিনি। তবে চালক হিসেবে মিন্টু কিছু পান না।সোহাগের বয়স যখন মাত্র চার বছর, তখন তাঁর মা মারা যান। মায়ের অস্পষ্ট স্মৃতি মাঝে মাঝে উঁকি দেয় বলে তিনি জানালেন। সোহাগ সংসার পাততে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করছেন, সামনের ঈদুল আজহার পরপরই বিয়ে হয়ে যাবে। বরিশালের বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধ বাবা একা থাকেন।ঢাকা থেকে ফেরার পর চার থেকে পাঁচ দিনের অবসর পান শ্রমিকেরা। তারপর আবার ট্রলার নিয়ে নেমে পড়তে হয় নদীতে। মিন্টু বলেন, ‘পরিবারের লোকজন জানে, আমার কাজই এমন। দিনের পর দিন আমার নদীতে থাকা তারা মেনে নিয়েছে।’ মিন্টুর চেয়ে রাকিবের বয়স কিছুটা কম। সে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। তাঁর চোখ দুটো পাথরের মতো। ইশারায় অনেক কথা বলল সে। মিন্টু বুঝিয়ে দিল, রাকিবের ইচ্ছে আমি যেন বরিশালে গিয়ে তাঁর ছবি তুলি। সে তখন ভালো জামা কাপড় পরবে।ট্রলার থেকে মেপে মেপে গুঁড়ি ‘খালাস’ করার দায়িত্ব আলতাফ ব্যাপারীর। তিনিও বরিশাল থেকে এসেছেন। তবে ট্রলারে করে নয়। প্রতিটি গুঁড়ির তথ্য টালি খাতায় টুকে রাখেন তিনি।
রান্না একটি শিল্প। এটা সবাই জানলেও শিল্পটিকে সবাই ফুটিয়ে তুলতে পারেন না। স্বাদের ব্যাপার তো আছেই। বাংলার রান্নার ইতিহাস বেশ পুরোনো। মোগল আমল থেকে শুরু করে বর্তমান যুগে রান্নার ধরন, স্বাদ ও পরিবেশনা—সবকিছুর মধ্যে পরিবর্তন এসেছে।বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে আমরা নিত্য নতুন খাবার সম্পর্কে জানতে পারি। তবে ছবি দেখে তো আর খাবারের স্বাদ নেওয়া যায় না। অন্যদিকে, রান্নায় কে কতটুকু পারদর্শী, সেটা নিজে নিজে বিচার করা সম্ভব না। সে জন্য রূপচাঁদা সুপার শেফের মাধ্যমে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারাটা অনেক সৌভাগ্যের। অডিশন রাউন্ড থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্বেই নিজের রান্নার কৌশল মেলে ধরার চেষ্টা করেছি। সবার কাছ থেকে ধারণা নিয়েছি রান্নার স্বাদ ও পরিবেশনা কীভাবে আরও উন্নত করা যায়।যেহেতু রূপচাঁদা সুপার শেফ সারা দেশ থেকে নির্ভুল বিচার-বিশ্লেষণ করে তুলে এনেছে সেরা ২০ প্রতিযোগীকে, তাই অঞ্চলভেদে রান্নার রেসিপি ও কৌশল ভিন্ন। সুপার শেফে অংশগ্রহণ করার অভিজ্ঞতাটা একটু ভিন্ন এবং অপ্রত্যাশিত ছিল আমার জন্য। আমার একটা ধারণা ছিল, সুপার শেফ বা কুকিং রিয়েলিটি শোতে হোম শেফরা অংশগ্রহণ করেন, তবে গ্রুমিং সেশনে এসে জানতে পারলাম হোম শেফ ছাড়াও অনেক প্রফেশনাল শেফও অংশগ্রহণ করেছেন। ব্যাপারটা আমাকে একটু নার্ভাস করে দেয়। একই প্লাটফর্মে এত অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারব তো?যা-ই হোক সব ভয়কে দূর করে নিজের প্রতি আস্থা রেখে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েছি। সত্যি বলতে গেলে, আমার খুব ইচ্ছে ছিল এ রকম একটা প্লাটফর্মে অডিশন উপভোগ করার। নির্বাচিত হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও আমি অডিশন দিলাম। অডিশন দিয়ে ফলাফল না জেনে চলে আসি বাসায়, শো তখনো চলছিল। হঠাৎ আমার কাছে একটা কল এল ওই দিন বিকেলে। ওপার থেকে বলল, ‘মিসেস ফাহমিদা আপনি অ্যাপ্রোন পেয়েছেন। আপনি সেরা দশে আছেন। আপনি কোথায়? এখনই চলে আসেন।’ আমি তখনই বাসা থেকে ইভেন্ট এর উদ্দেশে আবার রওনা হলাম। যদিও আমি ওইখানে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ইভেন্ট শেষ হয়ে যায়, সব বিচারক এবং দর্শক চলে যান, তবে ইভেন্টের পুরো দল আমার অপেক্ষায় ছিল।সুপার শেফ কিচেনে প্রথম দিন, নিজের প্রতি আস্থা ও মনোবল নিয়ে শুরু করলাম সুপার শেফের জার্নি। সুপার শেফের জাজ ছিলেন তারিক আনাম স্যার, শেফ ট্রেইনার নাফিজ ইসলাম লিপি এবং উপমহাদেশের সেলিব্রিটি শেফ রঙ্গন নিয়োগী, বিশেষ অতিথি হয়ে এসেছিলেন কলকাতাভিত্তিক ম্যাগাজিন ‘সানন্দা’র সাবেক সম্পাদক শর্মিলা বসুঠাকুর। প্রথম পর্বে আমরা সম্মুখীন হয়েছি পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবিরের রেসিপি চ্যালেঞ্জে। প্রথম রাউন্ডে কোনো এলিমিনেশন ছিল না। বেঁচে গেছি এই রাউন্ড।দ্বিতীয় দিন, এই রাউন্ডে আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল ফিউশনের ওপর। এই রাউন্ডে ২০ জনের মধ্যে একজন বাদ পড়ে যান। বাকি ১৯ জন পরের রাউন্ডে এগিয়ে যান।তৃতীয় দিন, এই এপিসোডে সেলিব্রিটি শেফ রঙ্গন নিয়োগী স্যার আমাদের টাস্ক ডেমনস্ট্রেশন দেখান। আমরা সবাই চিকেন রোলেড বানিয়ে পরিবেশন করি জাজদের কাছে। এই রাউন্ডে দুজন বাদ পড়ে যান। একদিনে দুজন একসঙ্গে বাদ পড়ার পর বুঝতে পারি যে আস্তে আস্তে প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিছুটা ভয় হচ্ছিল।চতুর্থ দিন, এই রাউন্ডে নাফিজ ইসলাম লিপি ম্যাম আমাদের একটা টাস্ক ডেমনস্ট্রেশন করে দেখান। ডেমনস্ট্রেশনটা হয় ব্লাঞ্চিং মেথডের ওপর। আমরা এই কনসেপ্টের ওপর একটা মেইন ডিশ তৈরি করি। এই রাউন্ডেও পরপর দুজন বাদ পড়েন। প্রতিযোগিতা আরও কঠিন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, এটাই ভাবছিলাম তখন।বাসায় যখন রান্না করি তখন তো কেউ বলে না আর মাত্র ২ মিনিট বাকি, ৫ মিনিট বাকি। সুতরাং এখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রান্না শেষ করে কুকিং স্টেশন পরিষ্কার করে বিচারকদের সামনে খাবার পরিবেশন করাটা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল প্রতিযোগীদের জন্য। শুরুর পর্ব থেকে এই পর্যন্ত আমিসহ ২০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৫ জন বাদ পড়েছেন। এখন আমরা ১৫ জন আছি পরের রাউন্ড ফেস করার জন্য। ভয়ে আছি! আর সামনের দিনগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।পরিশেষে একটা ব্যাপার তুলে না ধরলেই নয়। এত দিন বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড মানেই ভেবেছি রূপচাঁদা। আর রূপচাঁদা মানেই চাল আর তেল। তবে এই প্রোগ্রামে এসে বুঝতে পেরেছি রূপচাঁদা শুধু পণ্য হিসেবে সীমাবদ্ধ নয়, বরং কুকিংয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অনেক পরিবারে অবদানকারী একটি ব্র্যান্ড এটি। শুধু নিজের জীবনের পরিবর্তন থেকে আশ্বস্ত হয়ে বলছি না, বরং বিগত বছরগুলোর বাকি সুপার শেফদের সামাজিক অবস্থান এবং সফলতা আমার বিশ্বাসকে পাকাপোক্ত করেছে। আর তাই রূপচাঁদা সুপার শেফের সব কলাকুশলীকে ধন্যবাদ আমাকে এই অনুষ্ঠানে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। এই পরিবেশে মিশে আমার নিজের প্রতি অনেক আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠেছে। আমি গর্বিত রূপচাঁদা সুপার শেফের পরিবারের সদস্য হতে পেরে।সর্বোপরি আমার কাছে, ‘Cooking is based on Chemistry but also involves fantasy and creativity’
টান টান উত্তেজনাকর এক ম্যাচে গতকাল আফগানিস্তানকে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে এক পা এগিয়ে গেছে পাকিস্তান। ম্যাচের আগে এবং ম্যাচ শেষে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সমর্থকেরা গ্যালারিতে বিবাদে জড়ান, যা পরবর্তী সময়ে মাঠ ও মাঠের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসবের মূলে ইন্ধন জুগিয়েছে কে বা কারা, তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ম্যাচটি উত্তেজনায় ঠাসা হবে, তা হয়তো সবারই জানা ছিল। ম্যাচের আগে আফগান ক্রিকেট বোর্ডের এক কর্মকর্তা পাকিস্তান ক্রিকেট দলের উদ্দেশ্যে প্রায় ‘অপমানজনক’ মন্তব্য করে বসেন। তারপর পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটারদের তরফ থেকে পাল্টা মন্তব্যে পরিস্থিতি যথেষ্ট ঘোলাটে হয়ে গিয়েছিল। আর মাঠের ক্রিকেটও সেই উত্তেজনার স্মারক হয়ে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।এ উত্তেজনা মাঠ ছাড়িয়ে গ্যালারিতে পৌঁছে যাবে, দুই দলের সমর্থকদের মাঝে মারামারি হবে, এমনটা হয়তো কেউই ভাবেননি। কিন্তু ম্যাচের আগে মাঠের বাইরে এবং ম্যাচের পর মাঠে, গ্যালারিতে দুই দলের সমর্থকদের মাঝে হাতাহাতি হয়, যা থামাতে শেষ পর্যন্ত ইয়র্কশায়ার পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।দুই দলের সমর্থকদের মাঝে ম্যাচের শেষে মারামারির মূলে রসদ হিসেবে কি শুধুই ম্যাচের উত্তেজনা কাজ করেছে নাকি অন্য কিছুও ছিল? বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ম্যাচ চলাকালে লিডসের হেডিংলি স্টেডিয়ামের ওপর দিয়ে একটি বিমান উড়ে যায়, যাতে একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘জাস্টিস ফর বেলুচিস্তান’। এই ঘটনার পরই নাকি দুই দেশের সমর্থকদের মাঝে মারামারির সূত্রপাত।আয়তনের দিক দিয়ে বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ প্রদেশ এবং এটি উত্তর আফগানিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষা। ১৯৪৮ সাল থেকেই বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে। পাকিস্তান বরাবরই দাবি করে আসছে, বেলুচ বিদ্রোহীদের মদদ জোগাচ্ছে ভারত ও আফগানিস্তান। তাই সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক সম্পর্ক বেশ নড়বড়ে।সমর্থকদের মাঝে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয়, তার জন্য আইসিসি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন। এ ছাড়াও স্টেডিয়ামগুলোতে যেন কোনো ধরনের রাজনৈতিক স্লোগান কেউ প্রচার করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেও কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইসিসি।ম্যাচটি নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে ডেভিড রিচার্ডসন জানিয়েছেন, ‘আমরা টুর্নামেন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। তবে মাঠের প্রত্যেকটি লোকের ওপর দৃষ্টি রাখা কঠিন, তবুও আমাদের নিরাপত্তা দল চেষ্টা করে যাচ্ছে, যাতে রাজনৈতিক স্লোগান যুক্ত ব্যানার নিয়ে কেউ মাঠে আসতে না পারে।’এদিকে ম্যাচের আগে পাকিস্তান আর আফগানিস্তান সমর্থকদের মধ্যে দুজনকে মারামারি করার দায়ে  মাঠ থেকে বের করে দিয়েছিল ইয়র্কশায়ার পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই দলের সমর্থকদের নিরস্ত করতে মাঠের নিরাপত্তা কর্মীরা চেষ্টা করছেন।ম্যাচের পর আইসিসির এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মাঠে এবং মাঠের বাইরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার পেছনে কোনো ধরনের রাজনৈতিক উসকানিমূলক বার্তার ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে পশ্চিম ইয়র্কশায়ার পুলিশ, ‘বিশ্বকাপে রাজনৈতিক কোনো বার্তা প্রদর্শনে আমরা কাউকে উৎসাহিত করি না। এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল, তা বের করার জন্য আমরা পুলিশের সঙ্গে মিলে কাজ করছি, যাতে ভবিষ্যতে একই রকমের বিশৃঙ্খলা এড়ানো সহজ হয়।’
মাশরাফিরা আজ এজবাস্টনে অনুশীলন করেছেন লোকচক্ষুর আড়ালে। এজবাস্টনের প্র্যাকটিস এরিয়ার ঘেরাটোপ ভেদ করেই কত ঘটনা বেরিয়ে এল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন থেকেবাংলাদেশ দল আজ অনুশীলন সেরেছে সবার আড়ালে থেকেই। যেখানে সংবাদমাধ্যম কিংবা দর্শক-সমর্থকদের কোনো ‘উৎপাত’ নেই! মাশরাফিরা এমন এক মাঠে অনুশীলন করেছেন, দূর থেকে সেটি দেখার সুযোগই নেই। মাশরাফি-সাকিবরা ভারত ম্যাচের আগে তৈরি হচ্ছেন নিশ্ছিদ্র এক ঘেরাটোপে।এজবাস্টন মাঠে এখন চলছে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ। মূল মাঠে প্রবেশের যেহেতু সুযোগ নেই, বাংলাদেশ দলকে তাই ঝালিয়ে নিতে হয়েছে এজবাস্টনের প্র্যাকটিস এরিয়াতে। মূল ভেন্যুর পাশেই এজবাস্টন রোডে অনুশীলন মাঠটা। সে মাঠে রুদ্ধদ্বার অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ।সেরে উঠছেন মাহমুদউল্লাহপায়ের মাংসপেশিতে চোটে পড়া মাহমুদউল্লাহকে আজ টিম বাসে উঠতে দেখা গেল পা টেনে টেনে। ব্যথা পুরোপুরি সারেনি। তবে চোট থেকে সেরা ওঠার অগ্রগতি বলার মতোই। অনুশীলনে হালকা নক করেছেন। অনুশীলনটা যেহেতু রুদ্ধদ্বার ছিল, নেটে ব্যাটিং করেছেন কি না, বলার উপায় ছিল না। দলের সঙ্গে থাকা প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন দুদিন আগে বলছিলেন, যেহেতু সময় আছে, মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে তাঁরা আশাবাদী। হালকা চোট আছে মাশরাফি বিন মুর্তজারও। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক আশাবাদী, বাকি ম্যাচগুলোও তিনি ভালোভাবে শেষ করতে পারবেন।বাংলাদেশের অনুশীলনে ড্রোনে আগেই বলা হলো, অনুশীলন মাঠে ঢোকার সুযোগ নেই। তবে এজবাস্টন রোডে দাঁড়িয়েই দেখা গেল খেলোয়াড়দের মাথার ওপর ঘুরছে একটা ড্রোন! বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে যেটি বিরল দৃশ্য। মাশরাফিরা তবে অনুশীলনে ড্রোন ব্যবহার করছেন? টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হলো, ড্রোনটা আসলে আইসিসির। সম্ভবত মাশরাফিদের অনুশীলনের ভিডিও করতেই তারা এটি ব্যবহার করেছে, পরে যেটি প্রচার হবে আইসিসির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।‘লেট লতিফ’ সাইফউদ্দিন বাংলাদেশ দলের প্রায় সবাই উঠে গেছেন টিম বাসে। বাকি ছিলেন কোর্টনি ওয়ালশ আর মিডিয়া ম্যানেজার। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশ দলের ফাস্ট বোলিং কোচ হন্তদন্ত হয়ে ছুটলেন টিম বাস ধরতে। বাস যেই রওনা দিয়েছে অনুশীলন মাঠে, এ সময় হোটেলের নিচে এলেন সাইফউদ্দিন। বাংলাদেশ দলের তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার দেরি করায় হাতছাড়া করেছেন টিম বাস! সাইফউদ্দিন পরে অনুশীলন মাঠে গেছেন আকসুর এক কর্মকর্তার সঙ্গে।কাঁপন ধরা আওয়াজবাংলাদেশ দল যতই লোকচক্ষুর আড়ালে অনুশীলন করুক, ভারতীয় সমর্থকদের গগনবিদারী চিৎকার তাদের কানে ঠিকই পৌঁছে গেছে। অনুশীলন মাঠ যেহেতু এজবাস্টন স্টেডিয়ামের পাশেই, ভারতীয় বোলাররা ইংল্যান্ডের উইকেট পেলেই যে গর্জনটা তারা তুলছে, তাতে যেন পুরো বার্মিংহামই কেঁপে উঠছে! ২ জুলাই বাংলাদেশের বিপক্ষেও হয়তো বিপুলসংখ্যক ভারতীয় দর্শকের উপস্থিতি থাকবে এজবাস্টনে। তবে বাংলাদেশের সমর্থকেরা চেষ্টা করছেন ‘দ্বাদশ’ খেলোয়াড় হিসেবে ভারতীয়দের সঙ্গে টেক্কা দিতে। ২ জুলাই ম্যাচকে ঘিরে নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তাঁরা। জানা গেছে, সবাই জড়ো হয়ে মিছিল করতে করতে ঢুকবেন গ্রাউন্ডে। কাগজে-কলমে এ আয়োজনের নাম সাপোর্টার্স র‍্যালি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে থেকে মিলেছে অনুমতিও। আয়োজন শান্তিপূর্ণ করতে লাল-সবুজ সমর্থকদের মাঝ থেকেই কাজ করবেন ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী। ভারতীয় সমর্থকদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে পাকিস্তান-আফগানিস্তান দর্শকদের মধ্যে কোনো কাণ্ড হবে না, এটাই সবার প্রত্যাশা।
আগামীকাল সোমবার ৩৮তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশ করতে পারে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। পিএসসির একাধিক সূত্র থেকে এ কথা জানা গেছে।  লিখিত পরীক্ষার প্রায় এক বছর পর এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে যাচ্ছে পিএসসি।ওই সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, সোমবার পিএসসি বিশেষ সভা ডেকেছে। ওই সভায় ৩৮ তম বিসিএসের লিখিত ফলাফলের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হতে পারে। অনুমোদিত হলে সভা শেষ পিএসসি আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করবে।৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে বেশি সময় লাগার কারণ বলতে গিয়ে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষকের পর তৃতীয় পরীক্ষক খাতা দেখেছেন। তাই ফলাফল দিতে সময় বেশি লেগেছে।৩৮ তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করার কথা ছিল। তবে এখন এই বিসিএসে ১৩৬ জন বেশি নিয়োগ পাবেন। এতে এই বিসিএসে মোট পদের সংখ্যা হচ্ছে ২ হাজার ১৬০ জন।৩৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত বছরের ১৩ আগস্ট। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা হওয়ার প্রায় দুই মাসের মধ্যে এর ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন।
৩ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৬টায় কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। ২০০৭ সালে সর্বশেষ এই দুই দল কোপায় মুখোমুখি হয়েছিল। আর ব্রাজিলের বিপক্ষে কোপায় আর্জেন্টিনার সর্বশেষ জয় ছিল ১৯৯১ সালে১২ বছর, কম সময় তো নয়। সে সময়ের ৬ বছরের শিশুটি আজ ১৮ বছরের তরুণ! ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুই দলকে সর্বশেষ এক যুগ আগেই দেখা গিয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক কোনো ম্যাচে লড়াই করতে। এরপর দুই দল বেশ কয়বার প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু দুধের সাধ কি আর ঘোলে মেটে! অবশেষে আবার দুই দলকে দেখা যাবে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে।২০০৭ সালে কোপার ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ৩-০ গোলে হেরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ওই আসরে ফাইনালের আগে আর্জেন্টিনা খেলছিল দারুণ। ৫ ম্যাচে করেছিল ১৬ গোল। রিকেলমে-মেসির বোঝাপড়া এতটাই জমেছিল, আজও সেই জুটির কথা আর্জেন্টিনা সমর্থকদের মনে পড়ে। যদিও শেষ পর্যন্ত এক বছর আগের বিশ্বকাপের মতোই হতাশা নিয়ে ফেরা। সেই ফাইনাল খেলা দুজন খেলোয়াড় টিকে আছেন কেবল। ব্রাজিলের দানি আলভেজ, আর্জেন্টিনার মেসি।এই ম্যাচ নিয়ে খেলোয়াড়রাও রোমাঞ্চিত। সার্জিও আগুয়েরো যেমন সবার মনের কথাটাই বলে দিলেন, ‘আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ম্যাচ কিন্তু রোজ হয় না। বিশেষ করে কোপা আমেরিকার মতো প্রতিযোগিতায় তো আরও বিরল। এ ধরনের ম্যাচ ঘিরে অনেক প্রত্যাশা তৈরি হয়, শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা বিশ্বেই। আমরা জানি এই ম্যাচ সহজ হবে না। তবে আমরা সেমিফাইনালে উঠতে পেরেই খুশি। আমরা ধীরে ধীরে ভালো করছি।’এ ম্যাচে ব্র্রাজিল পরিষ্কার ফেবারিট। শুধু নিজেদের মাঠে খেলছে বলে নয়, শক্তিমত্তায়ও হলুদ জার্সিরা ঢের এগিয়ে। আর্জেন্টিনা শেষ চারে উঠেছে, সেটাই বরং অবিশ্বাস্য। এতটাই, কলম্বিয়া বাদ পড়ার পর অনুযোগের সুরে হামেস রদ্রিগেজ এমন মন্তব্যও করেছেন, ‘ফুটবল কখনো কখনো খুব অন্যায় কিছু করে। দেখুন না, আমরা কত ভালো খেলছিলাম, তবু বাদ পড়ে গেলাম। অথচ যে আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বেই মরে গিয়েছিল, তারাই এখন শেষ চারে।’নিকোলাস ওটামেন্ডি অবশ্য মনে করেন, আর্জেন্টিনার এবারের বড় শক্তি তাদের সুশৃঙ্খল রক্ষণ। এটা দিয়েই ব্রাজিলকে চমকে দিতে চান এই ডিফেন্ডার, ‘আমরা সেমিফাইনালে এমন এক দলের বিপক্ষে খেলব, যে ম্যাচটা একটা ক্লাসিকো। আশা করি ফল আর্জেন্টিনার পক্ষেই যাবে।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগসহ চার দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিতরা। তাঁদের এই কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেছেন, কেউ যদি ‘ইচ্ছা করে’ রাস্তায় ‘আত্মহত্যা’ করতে যায়, সেই দায়-দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না।রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গত শুক্রবার থেকে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা আমরণ অনশন করছেন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও কোনো আশ্বাস না মেলায় তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করেন। এ বিষয়ে আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।আব্দুর রহমান বলেন, ‘পদের জন্য অতীতে কি কেউ আমরণ অনশন করেছে? আমরণ অনশন কর্মসূচি দিয়ে ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবি পাওয়া যাবে না৷ তাঁদের প্রতি আহ্বান, তাঁরা ওখান থেকে উঠে আসুক, কর্মসূচি প্রত্যাহার করুক। তাঁদের মধ্যে যোগ্য কেউ থাকলে তাঁদের পদায়ন করার সুযোগ এখনো আছে। নিঃশর্তভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে আমাদের কাছে এসে যদি আবেদন জানায়, সে ক্ষেত্রে যোগ্য লোকদের বিবেচনা করা হবে।’কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান বিষয়ে পদবঞ্চিতদের মুখপাত্র এবং ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রহমান ভাই আমাদের শ্রদ্ধেয় অভিভাবক। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, তাঁরা আমাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে। প্রাণের বিনিময়ে হলেও আমরা ছাত্রলীগকে কলঙ্কমুক্ত করব।’এদিকে আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে আজ রোববার আন্দোলনকারীদের অন্তত ৯ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা হলেন ছাত্রলীগের বিগত কমিটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক সম্পাদক আনন্দ সাহা পার্থ, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপসম্পাদক ইমদাদ হোসেন সোহাগ, কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপসম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক উপসম্পাদক কৃষ্ণ মজুমদার, উপপ্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ ও খন্দকার রবিউল ইসলাম, পরিবেশবিষয়ক উপসম্পাদক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী এবং সহসম্পাদক এস এম মামুন।পদবঞ্চিতদের অনশন ভাঙাতে আওয়ামী লীগ কিংবা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না—জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান বলেন, ‘কোনো সুযোগ নেই। ওদেরকে সোজা ওখান থেকে উঠিয়ে দেওয়া হবে।’পদবঞ্চিতদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে পদ শূন্য ঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটির ১৯ জনসহ সব ‘বিতর্কিত’ নেতার পদ ও নাম প্রকাশ, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে পদবঞ্চিতদের মধ্য থেকে যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিটিতে পদায়ন এবং মধুর ক্যানটিনে (১৩ মে) ও টিএসসিতে (১৯ মে) তাঁদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভারতের ’ভোটগুরু’ হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছে। লক্ষ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেতা। লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক পরাজয়ের পর ভোটগুরুর দ্বারস্থ হয়েছেন মমতা।গতকাল শনিবার ভোট গুরুর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় নবান্নে দেড় ঘণ্টা বৈঠকও করেন মমতা । সঙ্গে ছিলেন মমতার ভাইয়ের ছেলে ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতিও। বৈঠকের পর একটি চুক্তি সম্পাদন হয় ভোটগুরুর সংস্থার ।প্রশান্ত কিশোর গোটা ভারতে ’ভোটগুরু’ হিসেবে পরিচিত। গত ২০১৬ সালে মমতার সঙ্গে ভোটগুরুর কথা হলেও মমতা শেষ পর্যন্ত তাঁর সংস্থার সঙ্গে কোনো চুক্তিতে যাননি। এবার তৃণমূলের ব্যাপক পরাজয় এবং বিজেপির উত্থানকে রোধ করা এবং ২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে মমতা শরণাপন্ন হন ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের । প্রশান্ত কিশোরই ঠিক করবেন আগামী ২০২১ সালে কীভাবে জিতবে তৃণমূল। কী হবে তাদের নির্বাচনী রণকৌশল। এ-সংক্রান্ত নানা পরামর্শ দেবেন তিনি এবং তাঁর সংস্থা। ভোটগুরুর রয়েছে এ সংক্রান্ত একটি সংস্থা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি বা আইপিএকে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপিএকে কাজ শুরু করেছে।গতকাল প্রশান্তের দেওয়া প্রধান পরামর্শ ছিল, বর্তমানে দলে থাকা চার নেতা-মন্ত্রীকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাঁদের অবিলম্বে নিষ্ক্রিয় করে দিতে। সংবাদমাধ্যমে আজ এ-সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও ওই চার নেতা-মন্ত্রীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। একসময় তৃণমূলের নেতারা পঞ্চায়েত ভোটে এই রাজ্য বিরোধীশূন্য করার উদ্যোগ নেয়। এটাকে সমর্থন জানাননি ভোটগুরু। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কথাও তুলে পরামর্শ দিয়েছেন।প্রশান্ত যে দাওয়াই দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যে সংগঠন বাড়াতে তৃণমূলকে পুলিশ এবং প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া বন্ধ করতে হবে। দলের কর্মসূচি সম্পর্কে পুলিশ ও প্রশাসনকে আগাম জানানো যাবে না। পুলিশের অন্যায় দেখলে দলীয়ভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। আর ১৯৯৮ সাল থেকে দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে চলা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। প্রথম পর্যায়ে এই দাওয়াই দিয়েছেন ভোটগুরু।ভোটগুরুর এই সংস্থা ২০১২ সালে গুজরাটের নির্বাচনে দায়িত্বে থেকে তৃতীয়বারের জন্য মোদিকে ক্ষমতায় আসতে সহযোগিতা করে। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে ‘হর হর মোদি, ঘর ঘর মোদি’ আর ’চায়ে পে চর্চা’ স্লোগান তুলে মোদিকে ক্ষমতায় আনার কারিগরে পরিণত হয় এই সংস্থা। ২০১৫ সালে বিহারে নীতিশ-লালু প্রসাদ জোটকে ক্ষমতায় আনতে এ সংস্থার জোর ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়। ২০১৭ সালে ১০ বছর পর কংগ্রেসকে পাঞ্জাবে ক্ষমতায় আসতে ভোটগুরু সহায়তা করেন। আর এ বছর ২০১৯-এ অন্ধ্র প্রদেশের লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নেতা জগন্মোহন রেড্ডিকে ক্ষমতায় আনার কারিগর হন। অন্ধ্র প্রদেশের ২৪টি লোকসভা আসনের ২২টিতে জেতেন রেড্ডি। আর বিধানসভার ১৭৫টি আসনের মধ্যে জেতেন ১৫১টি আসনে।
বাজেট কার্যকর হওয়ার আগে বিদেশি রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও সমজাতীয় পণ্য আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে বিদেশি ফ্রিজের দাম বেশ বাড়তে পারে। এখন ফ্রিজ আমদানিতে মোট করভার ৮৯ শতাংশের কিছু বেশি। নতুন করে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে করভারও আরও বাড়বে। অবশ্য এ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে। দেশে বেশ কিছু দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ড ফ্রিজ উৎপাদন করে। বাজেটে কমপ্রেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কছাড়ও দেওয়া হয়েছে।জাতীয় সংসদে গত ১৩ জুন ২০১৯–২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী । এর আগে গতকাল শনিবার অর্থবিলের ওপর আলোচনায় সমাপনী বক্তব্য দেন তিনি। কাল সোমবার থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে। নতুন বাজেটও কার্যকর হবে।
৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৩৭ তুলেছে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই কোনো দলের। জিততে হলে তাই রেকর্ডই করতে হবে কোহলিদের।৩০ ওভার শেষেও ইংল্যান্ডের রান ছিল ১ উইকেটে ২০২। চার শ না হোক, অন্তত সাড়ে তিন শ পেরোনো স্কোর হওয়াটা একদমই অসম্ভব মনে হচ্ছিল না তখন। কিন্তু ইনিংসের শেষভাগে ভারতকে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরিয়েছেন বোলাররা। যেভাবে শুরু করেছিল, ইনিংস শেষে সে তুলনায় রানটা একটু কমই হয়েছে ইংল্যান্ডের। ৫০ ওভার শেষে থেমেছে ৭ উইকেটে ৩৩৭ রানে।জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন, দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালকে বেদম মেরেছেন। তবে ভারতকে ম্যাচে ফেরানোর প্রাথমিক কৃতিত্বটাও এ দুজনই পাবেন। ১৬০ রানের ওপেনিং জুটিও ভেঙেছেন কুলদীপ। যদিও আউটটির পেছনে কুলদীপের চেয়ে রবীন্দ্র জাদেজার অবদানই বেশি। লং অন দিয়ে সজোরে হাঁকিয়েছিলেন রয়, বাউন্ডারিতে দৌড়ে এসে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেছেন লোকেশ রাহুলের বদলে ফিল্ডিংয়ে নামা জাদেজা।রয়ের আঊটের পরই ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরতে শুরু করে ভারত। ৩১ থেকে ৩৫- এ পাঁচ ওভারে রান এসেছে মাত্র ৯। ইনিংসের একপর্যায়ে ৬২ বলে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। তবে ৩৮তম ওভার থেকে আবার আক্রমণাত্মক হতে শুরু করে ইংল্যান্ড। এর কৃতিত্বটা পাবেন বেন স্টোকস। জো রুট হাত খুলতে পারছিলেন না বলে চাপ বাড়ছিল ইংলিশদের ওপর। ৫৪ বলে ৭৯ রানের অসাধারণ ইনিংসে সে চাপ দূর করেছেন স্টোকস।এজবাস্টনে আজ ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের প্রাণ ছিলেন বেয়ারস্টো। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া বেয়ারস্টো ছিলেন সেরা ছন্দে। ১১১ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন মোহাম্মদ শামির বলে। আরেক ওপেনার জেসন রয়ও বুঝিয়েছেন নিজের গুরুত্ব। চোট কাটিয়ে দলে ফেরা রয় করেছেন ৫৭ বলে ৬৬।সময়ের অন্যতম বিধ্বংসী ফিনিশার মানা হচ্ছে যাকে, সেই জস বাটলারের জন্য আজ সাজানো ছিল আদর্শ মঞ্চ। রুটের বিদায়ের পর যখন উইকেটে নামছেন, হাতে তখনো পাক্কা ৬ ওভার, বাটলারের জন্য আদর্শ মঞ্চ। কিন্তু কিছুটা হতাশই করলেন ইংলিশ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। পেটানো শুরু করেও শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি। ৭ বলে ২০ রান তুলে ফেলেছিলেন, কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে তাঁকেও ফিরিয়েছেন শামি।শেষ দশ ওভারে ৯২ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। উঠতে পারত আরও বেশি রান। তবে সেটি হতে দেননি যশপ্রীত বুমরা। বুমরা আজও ছিলেন বরাবরের মতোই দুর্দান্ত। বাকি বোলাররা যেখানে দেদারসে রান বিলিয়েছেন, বুমরা সেখানে ছিলেন ভীষণ কৃপণ। উইকেট পেয়েছেন মোটে একটি, তবে ১০ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ৪৪।বুমরা বেশি উইকেট না পেলেও ভারতকে উইকেটের জন্য হাপিত্যেশ করতে হয়নি। অপর পাশে শামি ছিলেন যে! ভুবনেশ্বর কুমারের চোটের কারণে একাদশে সুযোগ পাওয়া শামি নিজেকে চিনিয়ে যাচ্ছেন প্রতি ম্যাচেই। আগের দুই ম্যাচে পেয়েছিলেন ৪টি করে উইকেট। আজ ৫ উইকেট না পেয়ে থামেননি। এ নিয়ে টুর্নামেন্টে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলেই ১৩ উইকেট হয়ে গেছে ডানহাতি এ পেসারের। বাটলার ও ওকসকে পরপর দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন। হ্যাটট্রিক বলে উল্টো চার খেয়েছেন স্টোকসের কাছে। ডেথ ওভারে ৩ উইকেট পেয়েছেন বটে, তবে রানও দিয়েছেন। শেষ দুই ওভারেই দিয়েছেন ৩২ রান।মুক্তহস্তে রান বিলিয়েছেন চাহালও। এতে করে অস্বস্তির এক রেকর্ডও সঙ্গী হয়েছে এ লেগ স্পিনারের। চাহালের ১০ ওভার থেকে ৮৮ রান তুলেছে ইংল্যান্ড, বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ডটা জাভাগাল শ্রীনাথের থেকে কেড়ে নিয়েছেন তিনি। এর আগে ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮৭ রান দিয়েছিলেন শ্রীনাথ।জিততে হলে ভারতকে করতে হবে বিশ্ব রেকর্ড। ক্রিকেট বিশ্বকাপে এত রান তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দল। এজবাস্টনের রেকর্ডও থাকবে ভারতের বিপক্ষে। ২০১৪ সালের পর বার্মিংহামের এ মাঠে হারেনি ইংল্যান্ড। ২০১৪ সালের পর টানা তিন ওয়ানডেতেও কখনো হারেনি ইংলিশরা। চাইলে অবশ্য ইতিহাস থেকেই অনুপ্রেরণা নিতে পারেন কোহলিরা। এ মাঠে সবশেষ যে দলের কাছে হেরেছিল ইংল্যান্ড, সে দলটি কিন্তু ভারত!
দেশের ব্যবহারকারীদের সর্বশেষ প্রযুক্তির স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার দেখার ও কেনার সুযোগ করে দিতে রাজধানীতে হতে যাচ্ছে ‘স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপো (সামার) ২০১৯’।আগামী ৪ (বৃহস্পতিবার) থেকে ৬ জুলাই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হবে এই মেলা।মেলা উপলক্ষে আজ রোববার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে আয়োজকেরা। সেখানে বিভিন্ন স্মার্টফোন কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের মেলায় বিশ্বখ্যাত সব ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড ও প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।ব্র্যান্ডগুলো মেলায় বিভিন্ন মডেলের স্মার্টফোন ও স্মার্ট ডিভাইস প্রদর্শন ও বিক্রি করবে। বেশ কিছু মডেলের স্মার্টফোন উন্মোচনও করা হবে। পাওয়া যাবে মোবাইল অ্যাক্সেসরিজও।আগামী বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। ওই দিন বিকেল চারটায় আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করা হবে। মূল্যছাড়ের পাশাপাশি উপহার, গিফট বক্স, র‍্যাফেল ড্র, অনেক প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রাখছে ব্র্যান্ডগুলো।
বলিউড ও হলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বর্তমানে বেশ খোশমেজাজে আছেন। প্যারিসে প্রমোদতরীতে পার্টি করলেন। এখানেই ভাশুর জো জোনাস আর সোফি টার্নার দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে সারলেন। নিঃসন্দেহে এটি প্রিয়াঙ্কার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। আর এই 'দেশি গার্ল' সেই দিনটি উদ্‌যাপন করলেন শাড়ি পরে।অনেকেই বলছিলেন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া হলিউডে গিয়ে নাকি পশ্চিমা হয়ে গেছেন। নিয়মিত মেট গালা, গোল্ডেন গ্লোব, অ্যামি, অ্যাকাডেমি আর কানে গিয়ে হয়েছেন আরও পশ্চিমা। আর মার্কিন গায়ক নিক জোনাসকে বিয়ে করে হয়েছেন আরও আরও পশ্চিমা। মোট কথা, তাঁদের মতে ভারতীয় প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার নাকি আর অবশিষ্ট নেই। কিন্তু, জো জোনাসের বিয়ের অনুষ্ঠানে গোলাপি শাড়ি পরে প্রিয়াঙ্কা বুঝিয়ে দিলেন, শাড়ি পরা ভুলে যাননি তিনি। ভারতীয় সত্তা বুকে নিয়েই ঘুরছেন আমেরিকা, প্যারিস, লন্ডন।যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে গত মে মাসের ২ তারিখে বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড শেষ হল। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একরকম গোপনেই বিয়ে সেরেছিলেন জো জোনাস আর ‘গেম অব থ্রোনস’ সিরিজের অভিনেত্রী সোফি টার্নার। আবারও ঢাক ঢোল পিটিয়ে মহাসমারোহে বিয়ে করলেন তাঁরা। আর এই অনুষ্ঠানেই গোলাপি রঙ্গের চমৎকার কারুকার্যময় শাড়ি পরে, খোঁপায় গোলাপি গোলাপ গুজে দেখিয়ে দিলেন, হৃদয়টা এখনো ভারতীয় রয়ে গেছে।এই বিয়েতে জোনাস পরিবার আর তাঁদের কাছে কিছু বন্ধু-বান্ধব উপস্থিত ছিলেন। প্রিয়াঙ্কার শাশুড়ি, দুই জা- সবাই এদিন গোলাপি রঙ্গের পোশাক পরেছিল। অন্যদিকে নিক জোনাস, বড় ভাই কেভিন ও জো জোনাস, ছোট ভাই ফ্রাঙ্কলিন জোনাস ও বাবা পল কেভিন জোনাস- সবাই পরেছিল সাদা-কালো পশ্চিমা টুক্সেডো আর সঙ্গে মানানসই বো টাই।অল্প গয়নায় প্রিয়াঙ্কাকে এই গোলাপি শাড়িতে লেগেছে অপরূপ। সবাই এক বাক্যে এই পোশাকের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। অনেকেই ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কার পোস্ট করা শারির নিচে মন্তব্যে লিখেছেন, অন্য কিছুতের এর থেকে ভালো লাগা সম্ভব নয়। প্রিয়াঙ্কার এই লুককে পারফেক্ট বলে দশে দশ নম্বরও দিয়েছেন একজন। মেট গালায় প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার কোটি টাকার পোশাকের চেয়ে যে শাড়ি কোটি গুণ ভালো সেটিও জানিয়েছেন এক ভক্ত। আবার অনেকেই প্রিয়াঙ্কাকে নিয়মিত শাড়ি পরতে উপদেশ দিয়েছেন।যা হোক, অনেক দিন পর গোলাপি শাড়ির এই প্রিয়াঙ্কাকে দেখা যাবে ‘দ্য স্কাই ইজ পিংক’ ছবিতে। ছবিটি মূলত অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তা আয়েশা চৌধুরীর ওপর। তিনি জীবনের একটা বড় সময় দুরারোগ্য ও বিরল পালমোনারি ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। এই ছবিতে আয়েশা চৌধুরির মা হবেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। অন্যদিকে 'মিডওয়ে' এবং 'জুমাঞ্জি ২' ছবিতে দেখা মিলবে নিক জোনাসের।
বরগুনায় রিফাত হত্যাকাণ্ডে এফআইআরের বাইরেও অনেকে জড়িত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি আজ রোববার বিকেলে রংপুরে নবনির্মিত পুলিশ সুপারের কার্যালয় উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।আইজিপি বলেন, রিফাত হত্যার ঘটনায় কেউ রেহাই পাবে না। তাদের পালানোর সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের সব সীমান্ত ও ইমিগ্রেশনে তাদের বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে, যাতে পালাতে না পারে। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে আরও অনেক বেশি সরঞ্জামাদি প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি যাতে রংপুর পুলিশ প্রশাসন আরও বেশি স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।’এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর পুলিশ রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দেবদাস ভট্টাচার্য, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদ, রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার রশিদুল হক, রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-এ) সাইফুর রহমান সাইফ প্রমুখ।এদিকে বিকেলে টাউন হল হল চত্বরে কমিউনিটি পুলিশিং মেট্রোপলিটন কমিটির আয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদ।
সালমান খান তো বিভিন্ন কারণেই খবরের শিরোনাম হন। কখনো ছবি, কখনো টিভি বা কখনো প্রেম বা বিতর্কের কারণে। কিন্তু সম্প্রতি তিনি শিরোনাম হয়েছেন একটা টিভি অনুষ্ঠানের প্রযোজক হয়ে। সেই অনুষ্ঠানের নাম নাচ-বালিয়ে ৯। এবার নাচ-বালিয়ে ৯ আবারও খবরের শিরোনাম হয়ে আসল বলিউডের সব থেকে আলোচিত তারকা জুটি রণবীর সিং ও দীপিকা পাড়ুকোনের কল্যাণে।গতকাল শনিবার শোনা গিয়েছিল সালমান খানের নাচ বালিয়েতে দেখা দেবেন দীপিকা পাড়ুকোন ও রণবীর সিং জুটিকে। কিন্তু এর পরে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্নও ছিল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই প্রশ্নবোধক চিহ্ন বদলে দাঁড়ি হয়েছে। সূত্র নিশ্চিত করেছে, দীপিকা ও রণবীরের নাচ দিয়ে যাত্রা শুরু করবে 'নাচ বালিয়ে ৯'।নাচ বালিয়ে ভারতীয় হিন্দি চ্যানেল স্টার প্লাসের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো। প্রতিটি সিজনে এখানে মূলত দম্পতিরা আসেন, নাচেন, জয় করেন। আর গুরুত্বপূর্ণ পর্বগুলোতে জনপ্রিয় সব তারকারা আসেন বিশেষ অতিথি হয়ে। এবারে নাচ বালিয়ের নবম আসরের 'গ্র্যান্ড ওপেনিংয়ে' বিশেষ অতিথি হয়ে আসবেন এই তারকা জুটি। তাই এই বিশেষ পর্বকে আরও বিশেষ করতে উপস্থাপক হিসেবে দেখা যাবে বলিউডের ভাইজান সালমান খানকে।এই শোয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটা সূত্র ভারতের প্রথম সারির একটা দৈনিককে বলেছেন, 'স্টার প্লাস অনেক দিন ধরেই এই জুটির সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছিল। কিন্তু ব্যাটে বলে সময় মিলেছিল না। কারণ তাঁরা লন্ডনে "এইটি থ্রি" ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত। অবশেষে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাঁরা সময় দিয়েছেন। আর তখনই শুটিং হবে। সালমান ভাই এই পর্ব উপস্থাপনা করবেন। এই তিনে মিলে অনেক মজা হবে।'এবারের আয়োজনে বিচারকদের আসরে কারা বসবেন সেই তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে একজনের নাম নিশ্চিত হয়েছে। তিনি রাভিনা ট্যান্ডন। তাঁর সঙ্গে টাইগার শ্রফ, দিশা পাটানি এবং শহীদ কাপুরকে দেখা যেতে পারে বলে কানাঘুষা চলছে। তবে এই নামগুলোর কোনোটাই চূড়ান্ত নয়। তবে ভারত ছবির পরিচালক আলী আব্বাস জাফরকে একটি পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আনা হবে।অবশ্য কিছুদিন আগে ‘নাচ বালিয়ে ৯’ এর প্রোমো প্রকাশিত হয়। যেখানে উর্বশী এবং বিশালকে 'আগুন এবং বরফ' থিমে নাচতে দেখা যায়। এবারের আসরে উর্বশী ঢোলকিয়ার সঙ্গে জুটি বাঁধবেন অনুজ সাচদেবা। অন্যদিকে বিশাল আসবেন তাঁর প্রাক্তন বান্ধবী মধুরিমা তুলি সঙ্গে। এ ছাড়া প্রিন্স নারুলা এবং তাঁর স্ত্রী ইউভিকা চৌধুরীকেও জুটি বেঁধে নাচতে দেখা যেতে পারে। প্রতিযোগীদের চূড়ান্ত তালিকা এখনো জানা যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত যে জনপ্রিয় উপস্থাপক মনীষ পল এই শো সঞ্চালনা করবেন।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ৯ মাসের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় এক যুবক আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ রোববার চট্টগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।যুবকের নাম মুহাম্মদ মোজাম্মেল (২৬)। ঘটনার ছয় দিন পর মোজাম্মেল নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণের পরে মোজাম্মেল আদালতের কাছে জামিন প্রার্থনা করেন। তবে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুস্মিতা আহমদ তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।আদালত পরিদর্শক বিজন বড়ুয়া মোজাম্মেলের আত্মসমর্পণের পরে কারাগারে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ মাস বয়সী ওই শিশুকে বাসায় রেখে তার মা কাপড় পরিষ্কার করতে পুকুরে যান। সেই সুযোগে মোজাম্মেল গত মঙ্গলবার দুপুরে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। পরে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে মা প্রথমে তাকে উপজেলার নাজিরহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই বর্তমানে শিশুটি চিকিৎসাধীন। ঘটনার পরদিন বুধবার রাতে শিশুটির মামা বাদী হয়ে মোজাম্মেলকে একমাত্র আসামি করে ফটিকছড়ি থানায় মামলা করেন।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ছবিটি। তাতে দেখা যায়, রক্তাক্ত এক কিশোর বসে আছে, তাকিয়ে অপলক দৃষ্টিতে। হামলার সময় প্রাণ বাঁচাতে দুর্বৃত্তদের কাছে কাকুতি-মিনতি করেছিল যশোরের ওই কিশোর শাহীন আলম (১৬)। কিন্তু নিস্তার মেলেনি। চেতনা থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝেই চিৎকার দিয়ে শাহীন বলে উঠছিল, ‘এত করে কলাম, আমারে মারিস না। ওরা কয় তোর নিস্তার নেই।’শাহীন এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের বাইরে ঠায় বসে আছেন তার মা মোসাম্মত খাদিজা। তিনি জানান, চেতনা থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝেই চিৎকার করে উঠত শাহীন। বলে উঠত, দুর্বৃত্তদের কাছে তার মিনতির কথা। আহত শাহীন স্বজনদের শুধু এটুকুই বলতে পারছিল।শাহীনকে গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। রাতে অপারেশন শেষে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শাহীনের মা খাদিজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার সকালে সাতটার সময়ে শাহীন ভ্যান নিয়ে বাইর হয়ে যায়। দুপুরে গ্রামের মেম্বার ফোন করে শাহীনের কথা জানায়। প্রথমে শুনেছিলাম ও মারা গেছে। পরে ওরে আমরা খুলনা হাসপাতালে নিয়ে যাই। পথের মধ্যেই বারবার চিল্লায়ে উঠতেছিল, “এত করে কলাম, আমারে মারিস না। ওরা কয় তোর নিস্তার নেই।’”যশোরের কেশবপুরের গোলাঘাটা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহীন গত শুক্রবার দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়। ওই দিন যাত্রীবেশী কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার ভ্যানটি ভাড়া নেয়। শাহীন তাদের নিয়ে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ার নামক এলাকায় যাচ্ছিল। পথে একটি পাটখেতের পাশে শাহীনের ভ্যানটি দাঁড় করায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা শাহীনের মাথায় আঘাত করে ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। আঘাত ও রক্তক্ষরণের ফলে অচেতন হয়ে পড়েছিল শাহীন। পরে চেতনা ফিরলে কাঁদতে শুরু করে সে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় খবর দেয়। শাহীনের খালু রবিউল বাশার প্রথম আলোকে বলেন, ভ্যান ও শাহীনের সঙ্গে থাকা টাকা, মোবাইল ফোন—সবই নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। শাহীন মারা গেছে ভেবে ওরা ফেলে রেখে চলে যায়। প্রথমে শাহীনকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে খুলনার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নেওয়া হয়। খুলনার চিকিৎসকেরা জানান, শাহীনের মাথায় মারাত্মক জখম হয়েছে, ঢাকা মেডিকেলে নিতে হবে। শনিবারই ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয় শাহীনকে। কেশবপুর থানার মঙ্গলকোট গ্রামে শাহীনদের বাড়ি। বাবা হায়দার আলী মোড়ল একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যান কিনেছিলেন। বাড়তি রোজগারের আশায় পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে শাহীনও ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়ত। মা খাদিজা বলেন, তাঁর ছেলে পড়াশোনায় ভালো। ছোট দুই বোনের পড়াশোনার প্রতিও নজর ছিল শাহীনের। সংসারের উপার্জনের বাহনটি ছিনতাই হলেও মায়ের চিন্তা এখন শুধুই ছেলের সুস্থতা নিয়ে। কখন ছেলের জ্ঞান ফিরবে, সেই আশায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের বারান্দায় স্বজনদের সঙ্গে অপেক্ষা করছেন খাদিজা। তিনি বলেন, ‘ছেলে আমার জানে বাঁচি গেছে। আল্লাহ এখন ওকে সুস্থ করে দিলেই আমার শান্তি।’ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অসিত চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহীনের মাথার হাড় ফেটে ভেতরের দিকে ঢুকে গেছে। গতকাল ভর্তি হওয়ার পর পরই অপারেশন হয়েছে। ওর ইনজুরিটা একটু ক্রিটিক্যাল। তাই আইসিইউতে আছে। ওর চিকিৎসায় সাত সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’শাহীনের বাবা হায়দার আলী মোড়ল বাদী হয়ে গতকাল শনিবার পাটকেলঘাটা থানায় মামলা করেছেন। সাতক্ষীরা থেকে প্রথম আলোর প্রতিবেদক জানান, অপরাধীদের ধরতে সাতক্ষীরা ও যশোরের পুলিশ যৌথ অভিযান চালাচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, শনিবার রাত থেকে অভিযান শুরু করেছে। দ্রুতই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম আলোয় শাহীনকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর একজন ইতালিপ্রবাসী তাঁর কাছে শাহীনের বাবা-মাকে দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন।এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন,  যশোর থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসা এবং অপারেশন থেকে শুরু করে চিকিৎসার সব কাজে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা–কর্মীরা সহায়তা করেছেন। তিনি পোস্টে আরও লিখেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁর বিশেষ সহকারী  বিপ্লব বড়ুয়াও যোগাযোগ রাখছিলেন।
চলতি বছরের বাজেটে প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ অপ্রতুল। এই বাজেট প্রণয়নের আগে প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা করেনি—এমনটা বলছে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম। প্রতিবন্ধীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা না বাড়িয়ে তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হোক, এমন দাবি জানিয়েছে ফোরাম।আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সদস্যরা। চলতি অর্থবছর ২০১৯-২০-এ প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ফোরামের মহাসচিব সেলিনা আখতার। তিনি বলেন, বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বরাদ্দ মূলত সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতাধীন নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন খাতে রাখা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর খাতে বাজেটের বরাদ্দ মাত্র ২ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা মোট বাজেটের মাত্র ০ দশমিক ৩১ শতাংশ। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার তুলনায় এই বাজেট খুবই অপ্রতুল।সেলিনা আখতার বলেন, ‘বাজেট প্রণয়নের পূর্বে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময় করলেও আমাদের জানামতে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। তাহলে কীভাবে বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার প্রতিফলন ঘটবে?’ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির শিক্ষাকে গুরুত্ব দিলেও এবারের বাজেটে এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হলেও এ বছর মাত্র ১০ হাজার উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।এবারের বাজেটটি প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য ‘ভাতা নির্ভরশীল বাজেট’ বলে মন্তব্য করেছেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাজরানা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, এবারের বাজেটটি কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নেওয়া হয়নি। প্রতিবন্ধী মানুষের ভাতার চেয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়া দরকার। ভাতানির্ভর বাজেট প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উৎপাদনমুখী উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।এ সময় জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সহসভাপতি মো. আনজামুল আলম বলেন, বাজেট বরাদ্দের দিকে তাকালে এটাকে সদকা, ফিতরার মতো মনে হয়। এই সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব হলেও প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোথায় যেন একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে।দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি মো. সাইদুল হক বলেন, একজন সাধারণ মানুষের চেয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চলাফেরা করতে বেশি খরচ হয়। তাই প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতা বরাদ্দও জরুরি।সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সহসভাপতি দিলীপ কুমার ঘোষ। সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ, প্রতিটি বিভাগে প্রবীণ প্রতিবন্ধী নিবাস স্থাপন করাসহ ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চারটি রেকর্ড করার সুযোগ আছে বিরাট কোহলির।মাইলফলক যেন বিরাট কোহলির পিছু ছোটে! মাঠে নামলেই আজ এই রেকর্ডে ভাগ বসানো তো পরের দিনই আবার টুপটাপ খসে পড়ে অন্য কোনো রেকর্ড। শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম ২০ হাজার রানের রেকর্ড গড়েছিলেন। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন নতুন চার রেকর্ডের হাতছানি নিয়ে।কোহলির নেতৃত্বে ২০১৯ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল ভারত। ৬ ম্যাচ থেকে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা। বাকি তিন ম্যাচ থেকে আর মাত্র ১টি পয়েন্ট পেলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে কোহলিদের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ এজবাস্টনেই পাওয়া যেতে পারে সেই পয়েন্ট। দলীয় সমীকরণ এক পাশে রাখলে ব্যক্তিগতভাবে কোহলির জন্য অপেক্ষা করছে তিনটি মাইলফলক।আজ ইংল্যান্ড যেভাবে ব্যাট করছে, তাতে এ বিশ্বকাপে কোহলির কাছ থেকে প্রথম সেঞ্চুরিটা আজ দরকার হতে পারে ভারতের। আর তাহলেই হয়ে যাবে রেকর্ড। আজ ৯৭ রান করতে পারলেই তৃতীয় ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে এক হাজার রানের মালিক হবেন কোহলি। শেষ চার ম্যাচে টানা হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। তবু কাজটা যে কঠিন, সেটা মানতেই হবে।এর পরের লক্ষ্যটা একটু সহজ। আজ পঞ্চাশ ছুঁতে পারলেই হয়ে যাবে দুটি রেকর্ড। বিশ্বকাপে টানা পাঁচ হাফ সেঞ্চুরি করার রেকর্ড আছে অস্ট্রেলিয়ান স্টিভ স্মিথের। টানা চার ফিফটি করা কোহলির সুযোগ আছে আজ তাঁর পাশে বসার। এই রেকর্ডটা করতে পারলে হয়ে যাবে আরেকটি রেকর্ড। ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংলিশদের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান রাহুল দ্রাবিড়ের। আজ ৫০ রান করলেই তাঁকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন কোহলি। শেষ চার ম্যাচে টানা হাফ সেঞ্চুরি করা কোহলি কি পারবেন?তৃতীয় মাইলফলক ছোঁয়া কোহলির জন্য খুবই সহজ কাজ! সে জন্য করতে হবে মাত্র ২০ রান। ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫০৪ রানের মালিক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আজ ২০ রান করতে পারলেই সাবেক অধিনায়ককে ছাড়িয়ে যাবেন বর্তমান অধিনায়ক। কোহলির জন্য ২০ রান আর এমন কী! শুধু মাথায় রাখতে হবে তাঁর পরে নামা ধোনিও কিন্তু রান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
২৮ জুন শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্ধুসভা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে ফল উৎসবের আয়োজন করে। এতে ১৫০টি সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে মৌসুমি ফল খাওয়ানো হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার দপ্তর সম্পাদক রাহিম মাহমুদ ও যোগাযোগ সম্পাদক শাওন রায়। নগরের ২ নম্বর গেটের তুলাতলী বস্তিতে অবস্থিত চারুলতা বিদ্যাপীঠে এ আয়োজন করা হয়।চট্টগ্রাম বন্ধুসভার জাকিয়া কবির বলেন, ‘বন্ধুসভার বন্ধুরা সব সময় নিজের জন্য এবং দেশের জন্য ভালো কাজ করেন। আজ যে শিশুরা এ ফল উৎসবে অংশ নিয়েছে, তারাও যেন ভবিষ্যতে দেশের জন্য ভালো কাজ করে, মানুষের পাশে থাকে।’ চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি শিহাব জিসান বলেন, ‘বন্ধুসভা অন্য সংগঠনগুলো থেকে ভিন্ন। শুধু বিষয়-বিশেষজ্ঞের ওপর সংগঠনটি চলে না। বন্ধুসভা শুধু আবৃত্তির সংগঠন নয়, গানের সংগঠন নয়, নাচের নয়। শিল্পকলা বা সাহিত্যের কোনো বিশেষ সংগঠন নয়। বন্ধুসভা একটি পূর্ণাঙ্গ সংগঠন। বন্ধুসভা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করে।’সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা সানজিদা বলেন, ‘বন্ধুসভার প্রতিটি সদস্য সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়বদ্ধ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিতি ছিলেন ইব্রাহিম তানভীর, জয়নাল আবেদিন, সাঈদ আল সোহেল, ইরফাতুর রহমান অনিক, নুরুজ্জামান খান পাপ্পু, মাসুদ রানা, ফয়সাল রহমান, মিজানুর রহমান, তানজিলা বিনতে শওকত, শারমিন আহমেদ ঐশ্বর্য, রুনা আক্তার, তন্দ্রা বিশ্বাস, সৈয়দা শিরিন, স্বস্তিকা সেনগুপ্ত বৃষ্টি, সারিবা প্রমুখ।মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক, চট্টগ্রাম বন্ধুসভা
ময়মনসিংহ বন্ধুসভা প্রায় ৫৫ জন বন্ধুর উপস্থিতিতে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। ২৯ জুন ময়মনসিংহ বন্ধুসভা একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। প্রথম আলো ময়মনসিংহ প্রতিনিধি কামরান পারভেজের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর ধারাবাহিকভাবে উপস্থিত অতিথিরা একেকজন একেক বিষয়ে কথা বলেন।সংবাদ লিখতে হলে কীভাবে লিখতে হবে, লেখালেখি শুরু করার প্রথম ধাপ কী, শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে হলে কোন বিষয়ের ওপর বেশি জোর দিতে হবে এবং একজন ভালো সংগঠকের কী কী গুণ থাকা জরুরি, ইত্যাদি বিষয়ের ওপর বন্ধুদের উদ্দেশে কথা বলেন ময়মনসিংহ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। কবি আল মাকসুদ, সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।এ সময় ময়মনসিংহ বন্ধুসভার শাহিদা সনি, আল মামুন, মাহবুব আলম, প্লাবন, খালিদ হাসান, রবিউল ইসলাম রিমন, শৌরভ, মাইমুনা, সুইটি, রনি, ফজলে রাব্বি, সাদমান সাকিব, তনু, আশরাফুল আলম, ইমরান, জাহাঙ্গীর, ফারজানা, দুর্গা ধর, আবুল বাশারসহ ৫০ জন বন্ধু উপস্থিত ছিলেন। সব শেষে বন্ধুসভার সভাপতি আবুল বাশার উপস্থিত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বন্ধুদের সব সময়ই বন্ধুসভার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে অংশগ্রহণের আহ্বান করেন।সভাপতি, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা
মেঘলা আকাশের ফাঁকে ফাঁকে সূর্য উঁকি দিচ্ছিল। পূর্বনির্ধারিত আয়োজনে বন্ধুদের সমাগম হতে থাকে।  বিকেল চারটায় শুরু হয় বন্ধুসভার সাংস্কৃতিক আড্ডা।জমে ওঠে একের পর এক ভিন্নধর্মী আয়োজনে। গান, কবিতা, নাচ, একক অভিনয়, হাস্যরস ও কৌতুক। অনুষ্ঠান শুরু হয় কবিতায়।কবিতার প্রাণবন্ত আবৃত্তির পর শুরু হয় গান। গান পরিবেশন করেন মিজানুর রহমান।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধু গান, কবিতা, সাহিত্য আর নাটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নন। তাঁর ছিল আধুনিক ও মুক্তচিন্তার আদর্শ ও দর্শন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমানে প্রতিটি মানুষকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে হবে। গড়ে তুলতে হবে ঐক্য ও সাম্যের এক কাঙ্ক্ষিত সমাজ।জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মজয়ন্তী গত বৃহস্পতিবার পালন করেছে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)। এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তারা। ওই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে আইইউবির ডিপার্টমেন্ট অব ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ এবং কাজী নজরুল ইসলাম-আব্বাসউদ্দিন আহমেদ রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি সেন্টার।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবির নাতনি খিলখিল কাজী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মিলান পাগন।অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে নজরুলকে নিয়ে আইইউবির ডিপার্টমেন্ট অব ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজের উপদেষ্টা অধ্যাপক নিয়াজ জামানের লেখা ‘কাজী নজরুল ইসলাম: পোয়েট্রি, পলিটিকস, প্যাশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বিশ্বজুড়ে বর্তমানে যে উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে নজরুলের সাহিত্যচর্চা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। খিলখিল কাজী বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি করে নজরুলকে পৌঁছানোর দরকার।দেশপ্রেম, মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িক জীবন ও রাষ্ট্র গঠনে নজরুলের বাণী সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। জাতীয় পর্যায়ের এ আয়োজনে নজরুলের জীবন ও রচনা নিয়ে আরও আলোচনা করেন মোহিতুল ইসলাম ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নজরুল গবেষক দেবযানী সেনগুপ্তা। এ ছাড়া সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা করেন আইইউবির ডিপার্টমেন্ট অব ইংলিশ অ্যান্ড মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজের প্রধান তৌহিদ বিন মুজাফফর।
অনলাইনে কেনাকাটায় মূল্য সংযোজন করের (মূসক/ভ্যাট) হার কিছুটা কমিয়ে ধরল সরকার। নতুন বাজেটে এ ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার সাড়ে ৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছিল। সংশোধন করে তা ৫ শতাংশ করার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় সংসদে ১৩ জুন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বাজেটের সঙ্গে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে ই-কমার্স ও রাইড শেয়ারিং সেবায় ভ্যাটের হার ধরা হয় সাড়ে ৭ শতাংশ।বাজেটের অর্থবিল পাসের আগে গত শনিবার অর্থমন্ত্রীর লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ব্যবসায়ী মহলের দাবি ও একটি বিকাশমান খাত বিবেচনায় অনলাইনে পণ্য বিক্রি ও রাইড শেয়ারিং সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার কমিয়ে ৫ শতাংশ আরোপের প্রস্তাব করা হলো।অবশ্য যাঁদের দোকান নেই, সেই সব অনলাইন পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জন্য ভ্যাট অব্যাহতি দাবি করেছিল ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) । তাদের যুক্তি হলো, বাংলাদেশে ই-কমার্সের বিকাশ মাত্র শুরু হয়েছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাটের আওতায় আনতে আরও কয়েক বছর সময় দেওয়া উচিত।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ৩৩ শতাংশ খাসজমির দলিল জালিয়াতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়ার সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলা করা হয় দুদকের বগুড়া কার্যালয়ে।আসামিদের নয়জন হলেন আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিসরুল হামিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুল ইসলাম, থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু রেজা খান, থানা যুবলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান, উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম, থানা কৃষক লীগের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ, এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে হিটলু, তাঁদের সহযোগী আয়ুব খাঁন ও চন্দন কুমার। তাঁরা জমির ক্রেতা। বাড়ি আদমদীঘি উপজেলায়। অন্য তিনজন হলেন আদমদীঘি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলী, দলিল লেখক রাকিব হোসেন ও জমির বিক্রেতা নওগাঁ সদর উপজেলার রবীন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী।সরকারি ‘ক’ তফসিলভুক্ত জমির দুর্নীতি নিয়ে গত ২০ জানুয়ারি দৈনিক ‘প্রথম আলো’তে ‘খাসজমি দখল নিতে দলিল জালিয়াতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে তদন্তে নামে দুদক।উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার পৌরসভায় কলসা মৌজা। এ জমির জুরিসডিকেশন লিস্ট (জেএল) নং-১৭১। দাগ নম্বর ১৭৬। এমআরআর খতিয়ান নম্বর ০৮। এই দাগে জমির পরিমাণ ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে সান্তাহার ইউপির নামে ৭ শতাংশ রেকর্ড হয়। বাকি ২৫ শতাংশ উপজেলা পরিষদের নামে আছে। এখানে পুকুর ও দোকানঘর রয়েছে। এই ৩৩ শতাংশ জমি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসকের নামে এমআরআর খতিয়ানভুক্ত। সান্তাহার-বগুড়া প্রধান সড়কের পাশেই জমির অবস্থান। এই জমির জাল কাগজপত্র দিয়ে আদমদীঘি সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় নিবন্ধিত হয় গত বছরের ৪ অক্টোবর। ৩৩ শতক জমি বিক্রি করা হয় ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়। উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন মো. ইউসুফ আলী। জমির ভুয়া মালিক সাজানো হয় নওগাঁ জেলার দুবলহাটি রাজবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ রায়কে।দলিল সূত্রে এই জমির মালিকানা দাবি করেন ক্রেতারা। তবে দুদক মামলার এজাহারে বলছে, ক্রেতারা নওগাঁর বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে ভুয়া নথিপত্র তৈরি করেন। তাঁর কাছ থেকে মাত্র ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় ওই সম্পত্তি কিনে নেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সান্তাহারের গুরুত্বপূর্ণ এই জমির বর্তমান বাজারমূল্য ২ কোটিরও বেশি হবে। জমির মালিকানা সংক্রান্ত মূল নথি না থাকলেও সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ ও দলিল লেখক সরকারি সম্পত্তির দলিল সম্পাদন করেন। আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যক্তিস্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য জাল দলিল ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। তাদের অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।জমির সাজানো মালিক রবীন্দ্রনাথ এই জমির খাজনা দেওয়া সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। রবীন্দ্রনাথ বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বেদখল জমি আছে। তিনি সেগুলোর খোঁজ জানেন না। কোন জমি তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে তাও তিনি জানেন না বলে দাবি করেছেন।জানতে চাইলে আদমদীঘি উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী বলেন, ‘উপস্থাপিত কাগজপত্রের আলোকে জমি নিবন্ধন আইন ও বিধি মোতাবেক জমি নিবন্ধন করা হয়েছে। এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘর প্রাঙ্গণে গত বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় শুরু হয় চবি বন্ধুসভার সদস্যদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। আহ্বায়ক উজ্জ্বল বিন আমিরের নেতৃত্বে বন্ধুদের মজার মজার অভিজ্ঞতা, জোকস, স্মৃতিকথায় বেশ জমজমাট ছিল অনুষ্ঠানটি।এতে উপস্থিত ছিলেন চবি বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমেদ সোবহানি, সহসভাপতি মাইনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রোবাইয়া রাখি, অর্থ সম্পাদক এস এইচ সাগর, মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক গোলাম মওলা শরীফ, ক্রীড়া সম্পাদক এম হুমায়ুন কবিরসহ অন্য বন্ধুরা।অনুষ্ঠান শেষে বন্ধুরা একসঙ্গে চবি ক্যাম্পাসের পামবাগান,বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঘোরাঘুরি, অবশেষে শহীদ মিনার চত্বরে শুরু হয় সন্ধ্যা আড্ডা।ক্রীড়া সম্পাদক, চবি বন্ধুসভা।
প্রথম আলো চাঁদপুর বন্ধুসভা ২৭ জুন মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার রোধে ‘সুস্বাস্থ্যেই সুবিচার মাদকমুক্তির অঙ্গীকার’ স্লোগানে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে। শপথ চত্বর থেকে ছাড়াবাণী, চিত্রলেখার মোড় কলেজ গেট হয়ে আবার শপথ চত্বরে মিলিত হয়।এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক জনি রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল মাওয়া, সাংগাঠনিক সম্পাদক অভি লোধ, অর্থ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক এলান রহমান, প্রচার সম্পাদক আল আমিন গাজী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক শুভ চৌধুরী, সাহিত্য সম্পাদক সোমা তালুকদার, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মিহির সরকারসহ অনেকে।সভাপতি, চাঁদপুর বন্ধুসভা
পদ বাড়ছে ৩৮ তম বিসিএসে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) হাতে এসেছে। পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে ৩৮ তম বিসিএসে ১৩৬টি পদ বাড়ছে। ফলে এই বিসিএসে ১৩৬ জন বেশি নিয়োগ পাবেন।জনপ্রশাসন সূত্র জানায়, নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে পররাষ্ট্র ক্যাডারে ৮ টি, পরিবার পরিকল্পনাতে ১০, গণপূর্তে সিভিল ৩৯ ও মেকানিক্যালে ২৬, সড়ক ও জনপথে সিভিল ১৪ ও মেকানিক্যালে ৪ এবং ডাকে ৮টি পদ বেড়েছে।পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৮ তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। প্রশাসন ক্যাডারের ৩০০, পুলিশ ক্যাডারের ১০০টি পদসহ ৩৮ তম বিসিএসে সাধারণ ক্যাডারে মোট ৫২০ টি, কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে ৫৪৯ টি, শিক্ষা ক্যাডারে ৯৫৫টি পদ থাকছে। তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে পদ বেড়ে মোট ২ হাজার ১৬০ জন নিয়োগ পাবে।জানতে চাইলে পিএসসির একটি বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৩৮ তম বিসিএসে পদ বাড়ছে। এর বিস্তারিত কিছু জানাতে চায়নি সূত্রটি।এদিকে প্রায় এক বছর হলেও পিএসসি ৩৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেনি। ফলাফল কবে প্রকাশ করা হবে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার খাতা দেখতে কিছুটা বেশি সময় লাগে। আলাদা আলাদা ক্যাডারের আলাদা আলাদা বিষয় থাকে। সেই খাতা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের দেখতে দেওয়া হয়। এ ছাড়া লিখিত পরীক্ষার খাতা দুজন পরীক্ষক দেখেছেন।’এবার বেশি সময় লাগার কারণ বলতে গিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, এবারই প্রথম তৃতীয় পরীক্ষক খাতা দেখেছেন। তাই ফলাফল দিতে সময় বেশি লেগেছে। খুব দ্রুতই ফলাফল প্রকাশ করা হবে।৩৮ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত বছরের ১৩ আগস্ট। ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৩৮ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা হওয়ার প্রায় দুই মাসের মধ্যে এর ফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন।
জন্মই যেন তাদের আজন্ম বঞ্চনা—সেসব পিতৃহারা-মাতৃহারা অসহায় সুবিধাবঞ্চিত নওগাঁ সরকারি শিশু পরিবারের শতাধিক শিশুর সঙ্গে আজ দেশীয় ফল উৎসবের আয়োজন করে নওগাঁ বন্ধুসভা।আম, জাম, কাঁঠাল, জামরুল, লটকন, কাঠলিচু, তালপুর সঙ্গে মুড়ি—বৃষ্টিভেজা মেঘলা বিকেলে শিশুদের চোখেমুখে তৃপ্তির এক রক্তিম আভা, কী যে ভালো লাগল! প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি ওমর ফারুক, সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইদুর রহমানসহ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন চন্দন কুমার দেবসহ সভাপতি সেন্টু আনসারী, বিষ্ণু কুমার দেবনাথ, নারীবিষয়ক সম্পাদিকা লিনা আলী, বন্ধু সোহেল রানা, অপু, সানম সাব্বির, প্রিন্স, সাথি, রনি সাধারণ সম্পাদক ফারহান শাহরিয়ার বাঁধন ও সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।সভাপতি, নওগাঁ বন্ধুসভা
রাজধানীর সেনা মালঞ্চে এবি ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ এ. (রুমী) আলী। সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজালসহ ব্যাংকের পরিচালক ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি।
ভৈরব বন্ধুসভার এবারের পাঠচক্র হয়েছে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘পেন্সিলে আঁকা পরী’ বইটি নিয়ে। পাঠের আসর বসে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রথম আলো ভৈরব কার্যালয়ে। পাঠচক্রের বিষয় বন্ধুদের ১০ দিন আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক দিনের মধ্যে বন্ধুরা বেশ কয়েকটি বই সংগ্রহ করেন।প্রথম আলো ভৈরব কার্যালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমন মোল্লা, বন্ধুসভার সভাপতি আসাদুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক আল আমিন তুষার শুরুতে আগত বন্ধুদের স্বাগত জানান। মুক্ত আলোচনায় উঠে আসে উপন্যাসটির নানা দিক। মূল আলোচনা শেষে আয়োজন করা হয় কুইজ পর্বের।পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক, ভৈরব বন্ধুসভা
লিওনেল মেসির প্রতি তাঁর মুগ্ধতা নতুন কিছু নয়। আরও একবার সুযোগ পেতেই সেই মুগ্ধতার কথা জানিয়ে দিলেন থিয়াগো সিলভা। পেলে, গারিঞ্চা থেকে শুরু করে রোনালদো—তাঁর নিজের দেশে কত কত কিংবদন্তি। তবে সিলভার চোখে সর্বকালের সেরা ফুটবলারের নাম মেসি।ব্রাজিলের এই সেন্টার ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘আমার কাছে মেসিই ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরা। আমার দেখা সর্বকালের সেরা। তবে পরের ম্যাচটা ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার। ফলে মেসির প্রতি এই মুগ্ধতা ভবিষ্যতের জন্য তুলে রাখতে হবে।’সিলভা মেসিকে আগেও সর্বকালের সেরা বলেছেন। পিএসজির অধিনায়ক হিসেবে বার্সেলোনার মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য নতুন নয়। এর আগে এসি মিলানের হয়ে খেলার সময়ও মেসির মুখোমুখি হয়েছেন। এবার জাতীয় দলের হয়ে মেসির মুখোমুখি হচ্ছেন। অনেক দিন পর ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে খেলছে। সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৭ কোপা আমেরিকার ফাইনালে। এবার দুই দলের দেখা হয়ে যাচ্ছে সেমিফাইনালে। ৩ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৬টায় মুখোমুখি হবে এই দুই দল।এবারের কোপায় মেসি একেবারেই জঘন্য খেলছেন। মাঠে নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁকে। তবে সিলভা মনে করেন, ব্রাজিলের তাতে নির্ভার থাকার সুযোগ নেই। বরং মেসির এক মুহূর্তের জাদুও যে সবাইকে বিবশ করে দিতে পারে, সেটাই মনে করিয়ে দিলেন, ‘মেসিকে নিয়ে যতই গবেষণা করুন না কেন, আপনার বোঝার সাধ্য নেই ও কী মানের কিংবা ও কী পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। ম্যাচে হঠাৎ করেই ও এমন কিছু করে ফেলবে, আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। এটাই বাকিদের সঙ্গে ওর পার্থক্য। সেন্টার-ব্যাক হিসেবে তাই আমাকে সম্ভাব্য সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।’কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে, সেটিও বললেন সিলভা, ‘আমরা সবাই জানি ও বাঁ পায়ে খেলে। কিন্তু কখনো কখনো ও কিন্তু ডান পায়েও খেলে ফেলে। ফলে আমাদের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে সব সময়, ওর পায়ে বল থাকলেও রাখতে হবে, না থাকলেও রাখতে হবে। কখনো কখনো ওকে স্রেফ হাঁটার গতিতে খেলতে দেখা যাবে, কিন্তু ও পাল্টা আক্রমণ তৈরি করতে সব সময়ই কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আসলে আবার ওর মুখোমুখি হতে পারাটাই সৌভাগ্যের। আমরা চেষ্টা করব ওকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতে।’মেসি অবশ্য নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন এমনিতেই। কোপা একমাত্র গোলটি করেছেন পেনাল্টি থেকে। এ ছাড়া প্রায় দর্শকের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁকে। মাঝখানে ব্রাজিলের মাঠ নিয়েও অভিযোগ করলেন। তবে সত্যিটাও স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘সত্যিটা হলো আমি আমার সেরাটা কোপা দিতে পারছি না। কেউ কোপায় আমাদের সহজে ছাড় দেবে না। কিন্তু খেলাটাও খুব কঠিন হয়ে পড়েছে মাঠের কারণে। মাঠের অবস্থা ভয়াবহ। বল তো খরগোশের মতো লাফাচ্ছে, যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো জায়গায় বল চলে যেতে পারে। এই অবস্থায় ড্রিবল করা যায় না।’
জামালপুরে সংবাদ লেখার কলাকৌশলবিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের দয়াময়ী এলাকায় জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় বন্ধুসভার আয়োজনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় আলোচক প্রথম আলোর জামালপুর প্রতিনিধি ও জামালপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা আবদুল আজিজ সংবাদ লেখার কলাকৌশল, সংবাদকাঠামো, তথ্যের যাচাই–বাছাই ও বস্তুনিষ্ঠতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে গণমাধ্যমে রিপোর্টিং ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি নিয়ে আলোচনা করেন।তিনি উপস্থিত সবার উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্যের সত্যতা যাচাই করে পরিবেশন করার পরামর্শ দেন। ভুল তথ্য পরিবেশন করা হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হতে পারে। ফলে বন্ধুদের সতর্ক হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির আহ্বান জানান। বন্ধুসভার নতুন সদস্যদের উদ্দেশে বন্ধুসভার কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন বন্ধুসভার মহসিন কাঁকন ও বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সিফাত আবদুল্লাহ্।এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামালপুর বন্ধুসভার কমল হাসান ও মেহেদী ফখরুল হাসান এবং কার্যকরী কমিটির সহসভাপতি মনিরুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল হাদী, অর্থ সম্পাদক মোহাইমিনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মেহেদী হাসান শিশির, সাহিত্য সম্পাদক একরামুল হক জিহাদ, পাঠচক্র সম্পাদক মামুনুর রশিদ, বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক বাবলী আক্তার, সমাজকল্যাণ সম্পাদক আফরা আক্তার ঋতু, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আনিছুর রহমান সোহাগ, পরিবেশ সম্পাদক আজিজুর রহমান, পাঠাগার সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন। তা ছাড়া এই কর্মশালায় বন্ধু মুক্তা, রওজা, হিমা, অনন্ত, আলী, সাদ্দাম, নিজাম, জিন্নাহ, রাইহান, জুলমান, মামুন, জুবায়ের, জাদিদ, মিহামসহ ৩০ জন সদস্য অংশ নেন।জামালপুর বন্ধুসভা
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে এক গৃহবধূর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার বানিশাইল দীঘিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ধারণা, গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম রুপেলা বেগম (৩৫)। তাঁর স্বামীর নাম আনিছুর রহমান।স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূ রুপেলার দুই ছেলে-মেয়ে। তাঁর স্বামী আনিছুর রহমান ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বানিশাইল দীঘিপাড়ায় থাকতেন রুপেলা। সন্তানদের নিয়ে শনিবার রাতের খাবার খাওয়ার পর নিজ ঘরে ঘুমাতে যান তিনি। ছেলে-মেয়েরা অন্য ঘরে ঘুমাতে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি করায় গৃহবধূর ছেলে রাজু (১৪) তাঁকে ডাকতে যায়। ঘরে ঢুকে মায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায় সে। পরে স্থানীয় লোকজনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে নিয়ামতপুর থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।নিয়ামতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) দুরুল হুদা বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, রুপেলা বেগমের মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁকে যে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, ঘটনাস্থলে সেটা পাওয়া গেছে। ওই লাঠিতে রক্ত ও মাংস লেগে ছিল। নিহত গৃহবধূর সন্তান ও প্রতিবেশীরা লাশ বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশ যাওয়ার আগে লাশটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।দুরুল হুদা আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী ঢাকা থেকে এলে মামলার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এবারের বিশ্বকাপ শেষভাগে এসে বেশ জমেছে। মাঠের খেলার চেয়ে সেমিফাইনালের জটিল সমীকরণ নিয়েই যদিও ভাবতে হচ্ছে। কোন ম্যাচে কারা জিতলে নিজেদের সুবিধা হবে, সেটা নিয়েই সবাই ভাবছে। আর তাতেই অভাবনীয় এক পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে এখন ভারতের সবচেয়ে বড় সমর্থক হয়ে গেছে তারা।২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের চতুর্থ স্থানটি দখলে নেওয়ার জন্য বেশ লড়াই চলছে। কাগজে কলমে–ভারত ও নিউজিল্যান্ডের এখনো বাদ পড়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু নেট রান রেটে দুই দল এতটাই এগিয়ে যে তাদের নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। যত ঝামেলায় আছে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। ভারতের শেষ তিন ম্যাচই ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। পাকিস্তানের সমর্থকেরা এখন তাই কায়মনোবাক্যে ভারতের জয় চাচ্ছেন তিন ম্যাচেই। পাকিস্তানের সুবিধা পাওয়া নিয়ে কথা!পাকিস্তানের এমন সমর্থনে মজা পাচ্ছেন কোহলি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের জয় কামনা করছে পাকিস্তান। এমন পরিস্থিতি যে বিরল, সেটা মেনে নিয়েছেন কোহলি। আজ টসের মুহূর্তে তাই হাসতে হাসতে কোহলি বলেছেন, ‘সত্যি বলতে আমি জানি না বাইরে কী হচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, পাকিস্তানের সমর্থকেরা আজ আমাদের সমর্থন দেবে, যেটা বিরল ঘটনা।’ এমন ম্যাচে পাকিস্তানের সেমিফাইনাল যাত্রা আটকাতে ভারত ইচ্ছা করে শেষ তিন ম্যাচ হেরে যেতে পারে এমন আশঙ্কার কথাও শুনিয়েছেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার!শোয়েব আখতার অবশ্য এমন হতাশাবাদী নন। আজকের ম্যাচের আগে ইউটিউবে পাকিস্তানের সমর্থকদের পুরোপুরি ভারত সমর্থক বনে যেতে বলেছেন, ‘আমি আজ পুরো পাকিস্তানকে বলব ভারতের পক্ষে থাকতে। সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোক , হোক সেটা খবরে। কারণ ইংল্যান্ডের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুব দরকার।’এভাবে ভারতের সমর্থক হওয়ার ব্যাপারটা যে বিস্ময়কর, সেটা নিজেই স্বীকার করেছেন শোয়েব, ‘একজন পাকিস্তানি হিসেবে আমি এটা বলছি, জানি খুব অদ্ভুত। দেশ ও দেশের বাইরে থাকা সব পাকিস্তানিকে বলব তাকেই সমর্থন দাও, যা তোমার কাছে সঠিক মনে হয়। কিন্তু আরেকটা ব্যাপারও আছে। আপনি ওদের পানি খান, ওদের সমর্থন দেন। আপনি ইংল্যান্ডে থাকেন, তাহলে ওদের সমর্থন দিন। ইংল্যান্ডে খান তবে তাকেই সমর্থন দিন। কিন্তু পাকিস্তানের একজন পাকিস্তানি হিসেবে আমরা চাই, পাকিস্তান সেমিতে উঠুক। যদি ইংল্যান্ড বাদ পড়ে এবং পাকিস্তান বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পায়, আমাদের পথ খুলে যাবে।’ইংল্যান্ড যেভাবে ইনিংস শুরু করেছে, তাতে পাকিস্তানের সমর্থকদের হতাশ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি আজ!
কাল আফগানিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চারে উঠে এসেছে পাকিস্তান। কালকের ম্যাচেও ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার পথে হেঁটেছে সরফরাজ আহমেদের দলপাকিস্তান যা ঘটিয়ে চলছে তা বিশ্বাস করা সত্যিই খুব কঠিন।ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জঘন্য হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল পাকিস্তান। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের কাছে হারে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল সরফরাজ আহমেদের দল। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান এখন টেবিলের শীর্ষ চারে। দলটির সমর্থকেরা রব তুলেছেন, সরফরাজের দল, ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। এবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। তবে সরফরাজের দল আপাতত ১৯৯২ বিশ্বকাপের সঙ্গে অবিশ্বাস্য কাকতাল ধরে রেখেছে। ’৯২ বিশ্বকাপের ‘ভূত’ দেখা গেছে কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও।লিডসে কাল আফগানিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। গ্রুপপর্বে ৮ম ম্যাচ শেষে সরফরাজদের ঝুলিতে জমা পড়েছে ৪ জয়, ৩ হার আর ১টি নো-রেজাল্ট (বৃষ্টির জন্য)। ১৯৯২ বিশ্বকাপেও অষ্টম ম্যাচ শেষে ঠিক একইসংখ্যক হার-জিত ছিল পাকিস্তানের—৪ জয়, ৩ হার ও ১টি নো-রেজাল্ট (বৃষ্টির জন্য)। সেবার অষ্টম ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। কালকের ম্যাচের মতো ২৭ বছর আগের ম্যাচেও পরে ব্যাট করেছিল পাকিস্তান। শুধু তাই নয় মিল আছে আরও।কিউইদের বিপক্ষে সে ম্যাচে কোনো রান তোলার আগেই প্রথম ওভারে উইকেট হারিয়েছিল ইমরান খানের দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও প্রথম ওভারে কোনো রান তোলার আগে উইকেট হারিয়েছে সরফরাজের দল। পার্থক্য শুধু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচটা বেশ সহজেই জিতেছিল পাকিস্তান, যা হয়নি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। মজার ব্যাপার, ক্রিকেট বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচে রান তোলার আগেই প্রথম ওভারে উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান যে দুটি ম্যাচ জিতেছে তা ২৭ বছর আগের নিউজিল্যান্ড আর কালকের আফগানিস্তান ম্যাচ।নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম। বাঁ হাতি এ পেসারের পথে হেঁটেই কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ উইকেট নেন পাকিস্তানের উঠতি বাঁ হাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি। সত্যি এতটা মিল বিশ্বাস করাই কঠিন।আফগানিস্তান ম্যাচের আগেও ’৯২ বিশ্বকাপের পথে হেঁটেছে পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপপর্বে নিজেদের সপ্তম ম্যাচটি ৪৯.১ ওভারে জিতেছিল সরফরাজের দল। ’৯২ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সপ্তম ম্যাচটিও পাকিস্তান জিতেছিল ৪৯.১ ওভারে। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে ম্যাচে রানআউট হয়েছিলেন ইনজামাম-উল হক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রানআউট হয়েছেন হারিস সোহেলও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কদিন তাই বেশ রসিকতা চলছে, হারিস সোহেল যেন নতুন ইনজামাম!
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় দুর্গম এলাকার একটি পাহাড়ি ঝরনা দেখে ফেরার পথে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে দুই পর্যটক নিখোঁজ রয়েছেন। খরস্রোতা পাইন্দু খাল পার হওয়ার সময় হঠাৎ পাহাড়ি ঢলের পানি এসে তাঁদের দুজনকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বলে সঙ্গীদের বরাত দিয়ে আজ রোববার পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় লোকজন নিখোঁজ দুজনের উদ্ধারে কাজ করছেন। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং সেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক পর্যাপ্ত না হওয়ায় উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, নৌবাহিনীর চারজন কনিষ্ঠ কর্মকর্তাসহ ছয়জনের একটি দল রুমা উপজেলায় অবস্থিত পাইন্দু খালের ‘তিনাপ সাইথার’ ঝরনায় যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফেরার পথে পাইন্দু খাল পার হওয়ার সময় হঠাৎ তীব্র বেগে পাহাড়ি ঢলের পানি এসে দুজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তাঁরা হলেন সাব লেফটেন্যান্ট সাইফুল্লাহ (২৩) ও ঢাকার একটি আর্ট কলেজের ছাত্রী জান্নাত মজুমদার (১৮)। তিনাপ সাইথার ঝরনা রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত। এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় বিস্তারিত জানা যায়নি। ফিরে আসা চারজন হলেন লেফটেন্যান্ট আশিক (২৫), লেফটেন্যান্ট তৌকির (২৪), সাব লেফটেন্যান্ট আশিক (২৪) ও তাঁদের বন্ধু আবু সাঈদ (২৫)। তাঁরা সবাই ঢাকা থেকে এসেছেন।রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঝরনাটি রুমা উপজেলায় হলেও ঝরনা দেখতে যাওয়া ছয়জনের দলটি রোয়াংছড়ি হয়ে গিয়েছিল। রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর থেকে ভোরে তাঁরা রনিনপাড়ায় যান। সেখান থেকে দুপুরে একজন স্থানীয় পথপ্রদর্শক (গাইড) নিয়ে ঝরনায় গেছেন।রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের রনিনপাড়া এলাকার সদস্য লাল রাউ বম জানিয়েছেন, বিকেলে তিনাপ সাইথার ঝরনা এলাকায় প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছিল। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঝরনা থেকে ছয়জন রনিনপাড়ায় ফিরে আসছিলেন। পাইন্দু খাল পাড় হওয়ার সময় হঠাৎ উজান থেকে বিকেলে বৃষ্টি হওয়া পানি নেমে আসে। এ সময় চারজন কোনো রকমে খাল অতিক্রম করতে পারলেও দুজনকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।ঘটনাস্থল থেকে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উ হ্লা মং জানিয়েছেন, আজ বেলা ৩টা পর্যন্ত নিখোঁজ দুজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যার পর প্রশ্ন উঠেছে, এই মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড কার লোক? কার পক্ষে কাজ করতেন। অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের তালিকায় আছে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ ও স্থানীয় পুলিশ।বরগুনা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের নেতারা বলেছেন, ‘নয়ন বন্ড আমার নয়, ওদের লোক।’ আসলে নয়ন বন্ড কার লোক, সেটি খুঁজে বের করতে আরেকটু পেছনে তাকাতে হবে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক হয়েছিল। একদিকে বর্তমান সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দেলোয়ার হোসেন। পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলনে বরগুনা তখন জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম হয়েছিল।জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন এখন বলছেন, নয়ন বন্ড সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে ও আওয়ামী লীগের নেতা সুনাম দেবনাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এই পরিচয়েই তিনি স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন। স্থানীয় লোকজনও বলছেন, নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী কীভাবে পুলিশের সোর্স হন, সেটাও প্রশ্ন বটে। শুধু বরগুনা নয়, সারা দেশে যাঁরা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের বড় অংশ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত।জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ও সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘তাঁদের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী রিফাত হত্যার ঘটনায় রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। নয়ন কখনো আমাদের গ্রুপে ছিল না। রিফাত হত্যায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোক। আমার রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস করতে তাঁরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’ উল্লেখ্য, নয়ন বন্ডের সহযোগী রিফাত ফরাজী ও তাঁর ভাই রিশান ফরাজী আওয়ামী লীগের নেতা ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। স্থানীয় লোকজন ও প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের লোকজনের মতে, তাঁরা দেলোয়ারের নিকটাত্মীয় ও রাজনৈতিকভাবেও তাঁর অনুসারী।তবে তিনি বলেছেন, ‘আমার আত্মীয় হলেও দুই বছর ধরে ওদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। ওরা প্রতিদ্বন্দ্বী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর অনুসারী।’ টেলিভিশনে দেখলাম, শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলছেন, নানা ধরনের কথাবার্তা উঠেছে বলেই তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে। তিনিও খুনিদের শাস্তি চান।স্থানীয় লোকজন বলছেন, কোনো কমিটিতে না থাকলেও নয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেই ছিলেন। যুবলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁকে সক্রিয় দেখা গেছে।জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেছেন, নয়ন পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু পুলিশ এ কথা স্বীকার করছে না। তারা বলছে, যখনই নয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এসব তথ্য ও অভিযোগ থেকে আমরা কী উপসংহার টানতে পারি? সুনাম দেবনাথের বক্তব্য অনুযায়ী, নয়ন বন্ড দেলোয়ারের লোক। দেলোয়ারের কথা অনুযায়ী, তিনি সুনামের লোক। আবার পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে থাকলে পুলিশের লোক। এই তিন পক্ষের মধ্যে নয়নকে কে কতটা ব্যবহার করেছে, আর নয়ন তাদের কাছ থেকে কী পরিমাণ পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন, সেটি বের করতে হলে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তবে নয়ন যারই লোক হয়ে থাকুন না কেন, সাধারণ ও নিরীহ মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন। পুলিশ এখন বলছে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস আগে নয়ন বন্ড যখন আয়েশা সিদ্দিকার স্বামী রিফাতকে মাদকের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছিলেন, তখন কিন্তু তারা নয়নের হয়েই কাজ করেছিলেন। একটি নিরীহ ছেলেকে জেলে পাঠিয়েছেন। ওই ঘটনা যে নয়নকে আরও বেপরোয়া করেছে, তাতে সন্দেহ নেই। রিফাত হত্যার আরেক আসামি কামরুল ইসলাম সাইমুনকে পুলিশ গত শনিবার গ্রেপ্তার করেছে পটুয়াখালী থেকে। তিনি নয়নের বন্ধু ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল মান্নানের জামাতা।দুই.শনিবার ‘একজন নয়ন বন্ড যেভাবে তৈরি হয়’ শিরোনামে লেখাটি ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত হওয়ার পর যেসব প্রতিক্রিয়া এসেছে, তাতে ক্ষোভ ও বেদনার পাশাপাশি অপরাধীদের প্রতিরোধ করতে না পারার অক্ষমতাও ফুটে উঠেছে। অনেকে ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি। লিখেছেন, ‘নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক।’ একাধিক পাঠক নিজ নিজ উপজেলার কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস ও মাদক ভয়াবহ রূপ নিলেও কেউ ভয়ে কথা বলছেন না। কারও কারও লেখায় উঠে এসেছে মাদকের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনীতির যোগসাজশের কথা। এখানে কয়েকটি মন্তব্য তুলে দিচ্ছি:১. এই বন্ডকে রক্ষা করার জন্য .,.,..,. বেচারা মিন্নির অতীত জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। যেন কিছু একটা প্রমাণ করতে পারলে হত্যাকাণ্ড বৈধ।২. একজন অপরাধীকে রক্ষা করে দেশ ও দলের কখনোই কোনো লাভ হয় না। জনগণ সুযোগ পেলে মোক্ষম জবাব দিয়ে দেয়, ইতিহাস তা-ই বলে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে সরকার এবং দলগুলো একই ভুল বারবার করে চলে!৩. ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়ে এ রকম হাজারো নয়ন বন্ড আছে সমগ্র বাংলায়...।৪. আসলেই সবকিছুর পেছনে রয়েছে মাদক ও ক্ষমতার রাজনীতি। আর বর্তমানে দেশে কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে না যে এদের পেছনে কোনো রাজনীতিবিদ নেই, সবকিছুর মূলেই রয়েছে নষ্ট রাজনীতি।৫. জনগণ যখন রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মূল্যহীন ‘জীব’-এ পরিণত হয়, তখন মানুষের বিবেকও হারিয়ে যায়। আমরা ভয়াবহ উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছি!৬. এখানে যাঁরা মন্তব্য করছেন তাদের বেশির ভাগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, অনলাইনেই আমরা এখন রুখে দাঁড়াতে ভয় পাই, রাস্তায় দাঁড়ানোর তো প্রশ্নই ওঠে না!৭.. Everyone know it, why u dont know ?৮. We are very sad for police performance...৯.আয়েশা সিদ্দিকার মতো অসহায় মেয়েদের রক্ষার জন্য কী উপায় আছে—লেখক বলবেন কি? রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষানীতি, কোনটাকে কীভাবে পরিবর্তন করা যায়, তার জন্য লিখুন সাধারণ মানুষের জন্য।১০.এই একজন ধরা খেয়েছে বলে সবার সামনে আসল...কিন্তু বাংলাদেশের অলিতে-গলিতে এখন নয়ন বন্ড... আইনশৃঙ্খলা আউট অব কন্ট্রোল...১১.এই সব ঘটনার জন্য বাংলাদেশের সিস্টেম, প্রশাসন এবং বিচার ব্যবস্থাই দায়ী। তাদের ভুলের কারণে সাধারণ জনগণকে মাশুল দিতে হয় তাদের জীবন দিয়ে। সুন্দর ও নির্ভয় জীবনযাপনের জন্য আর কত অপেক্ষা করব আমরা...।১২. স্যার, এ রকম নয়ন বন্ড প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একজন করে আছে। এদের উত্থান ও টিকে থাকার কাহিনিও অভিন্ন। আমরা যাব কোথায়? কে রক্ষা করবে দেশটাকে?১৩. এখন নেতাদের চেয়ে, নেতাদের চেলা, চামচাদের দাপটে দেশবাসী অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, আওয়ামী লীগকে এ ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে।আরও অনেক মন্তব্য আছে। সব যে সরকার বা সরকারি দলের বিরুদ্ধে, তা-ও নয়। অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন অবিলম্বে আওয়ামী লীগের উচিত এসব সন্ত্রাসী ও মাদকের পৃষ্ঠপোষককে দল থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা। কিন্তু শরীরের সর্বাঙ্গে যখন ব্যথা হয় ওষুধ দিয়ে সেটি নিরাময় করা কঠিনই বৈকি।রাজনৈতিক দলগুলো মুখে যে স্লোগানই দিক না কেন, রাজনীতি হয়ে উঠেছে নীতি ও আদর্শবর্জিত। এ কারণেই এককালীন জামায়াতের নেতা ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা আওয়ামী লীগের পেয়ারের মানুষ হয়ে যান। এ কারণেই নয়ন বন্ডের মতো দুর্ধর্ষ অপরাধী ‘কার লোক’ তা নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বাহাসে জড়িয়ে পড়েন।সোহরাব হাসান, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবিsohrabhassan55@gmail.com
রাজশাহীতে অস্ত্র ও জিহাদি বইসহ পাঁচজনকে আটক করেছে র‌্যাব। এর মধ্যে একজন নারী। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে র‌্যাব-৫-এর রাজশাহী মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল জেলার পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর থানার ক্ষুদ্র জামিরা ও ভরুয়াপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।র‌্যাবের দাবি, আটক ব্যক্তিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল-ইসলাম’ এর সদস্য।আটক ব্যক্তিরা হলেন ভরুয়াপাড়া গ্রামের আনসার আলীর স্ত্রী আফরোজা বেগম (৫৫), তাঁর ছেলে আনিসুর রহমান ওরফে সাদ্দাম (৩০), একই গ্রামের রুহুল আমিন (৩১) ও মামুন-অর-রশিদ (৩৭) এবং ক্ষুদ্র জামিরা গ্রামের আবু তালহা (২১)।র‌্যাব-৫-এর কোম্পানি অধিনায়ক এ টি এম মাইনুল ইসলামের ভাষ্য, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ৫টি গুলি, ২৪টি ককটেল, ১০টি জিহাদি বই এবং ৮টি জিহাদি নোটবই উদ্ধার করা হয়েছে। আটক লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে তিনি জানান।
টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত শুরু করেছেন দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো।ম্যাচ শুরুর আগে শচীন টেন্ডুলকার বলছিলেন, ‘এ উইকেটে বল শুধু উড়বে। নিশ্চিতভাবেই ৩০০ এর বেশি রান করার মতো উইকেট।’ টেন্ডুলকারের কথাকেই যেন সত্য প্রমাণ করছে ইংল্যান্ড। ভারতের বিপক্ষে দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান মিলে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে। বহুল আলোচিত গেরুয়া জার্সি পরে খেলতে নামা ভারত কাঁপছে ইংল্যান্ডের সামনে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইংল্যান্ডের রান ২১ ওভারে বিনা উইকেটে ১৫৫ রান।চোট কাটিয়ে জেসন রয় দলে ফিরতেই আজ স্বরূপে ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি। বেয়ারস্টোকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় বোলারদের ওপর রীতিমত তাণ্ডব চালাচ্ছেন রয়। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মোহাম্মদ শামিকে জোড়া চার মেরে শুরু করেছেন রয়। তাল মেলাতে দেরি করেননি বেয়ারস্টোও। উইকেটের চারপাশে শট খেলেছেন হাত খুলে। ৭৪ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত আছেন বেয়ারস্টো। রয়ও পেয়ে গেছেন ফিফটি, খেলছেন ৫২ বলে ৬৩ রানে।টুর্নামেন্টে যে তিন ম্যাচে হেরেছে ইংল্যান্ড, তিনটিই রান তাড়া করতে গিয়ে। সে কারণেই কি না, আজ টস জিতে ব্যাটিংই নিয়েছেন এউইন মরগান। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও বলেছেন, টসে জিতলে তিনিও ব্যাটিংই নিতেন।যশপ্রীত বুমরা ছাড়া বেয়ারস্টো-রয়ের আগ্রাসনের শিকার হয়েছেন বাকি সব বোলাররাই। শামি প্রথম স্পেলে বেশ কয়েকবার ভুগিয়েছেন, কিন্তু ভাগ্যও যেন আজ ইংল্যান্ডের পক্ষেই। যে কারণেই কি না, একাদশ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বল জেসন রয়ের গ্লাভসে টোকা দিয়ে গেলেও সাড়া দেননি আম্পায়ার আলিম দার। ভারতের সামনে সুযোগ ছিল রিভিউ নেওয়ার, কিন্তু আলোচনা করেও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি ধোনি-কোহলি। পরে রিপ্লেতে দেখা গেছে, রিভিউ নিলে ২১ রানেই ফিরতেন রয়।আউটের হাত থেকে বেঁচে গিয়ে ভারতের ক্ষতে নুন দিয়েছেন রয়। পরের দুই বলেই পান্ডিয়াকে দুর্দান্ত দুই শটে মিড অফের ওপর দিয়ে ছয়-চার মেরে যেন কৃতজ্ঞতাই জানালেন ভারতের প্রতি। ১০ ওভারের পরে রীতিমত উড়তে শুরু করেছে ইংলিশরা। ১০ ওভার শেষে রান ছিল ৪৭, পরের ৫ ওভারে দুই ব্যাটসম্যান মিলে তুলেছেন ঠিক ৫০ রান! ১৬ ওভার হওয়ার আগেই দুজনে মিলে তুলে ফেলেছেন ১০০ রান।ভারত আজ নেমেছে একাদশে একটি বদল নিয়ে। ফর্মে না থাকা বিজয় শংকরের বদলে একাদশে এনেছেন ঋষভ পন্ত। ইংল্যান্ড দলে আছে দুটি বদল। মঈন আলীর বদলে লিয়াম প্লাংকেট আর জেসন রয় খেলছেন জেমস ভিনসের জায়গায়।
বাসাবাড়িসহ সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্য গ্যাসের দাম বাড়াল। আজ রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এ ঘোষণা দেয়। গড়ে সব খাতে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে। কাল সোমবার থেকে এ দাম কার্যকর হবে বলে বিইআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।বিইআরসির আদেশ অনুযায়ী, আগামী মাস থেকে আবাসিক গ্রাহকদের রান্নাঘরে যাঁদের দুই চুলা আছে তাঁদের দিতে হবে ৯৭৫ টাকা। এখন দিতে হয় ৮০০ টাকা। অর্থাৎ দুই চুলার গ্রাহকদের এখন থেকে পৌনে ২০০ টাকা বেশি দিতে হবে। যাঁদের রান্নাঘরে এক চুলা আছে, তাঁদের দিতে হবে ৯২৫ টাকা। এখন দিতে হয় ৭৫০ টাকা। যেসব আবাসিক গ্রাহকের মিটার আছে, আগামী মাস থেকে তাঁদের ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ১২ টাকা ৬০ পয়সা ধার্য করা হয়েছে।যানবাহনে ব্যবহৃত সিএনজির দাম প্রতি ঘনমিটার হবে ৪৩ টাকা।বিদ্যুৎকেন্দ্র, ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ উৎপাদন (ক্যাপটিভ পাওয়ার), সার কারখানা, শিল্প, হোটেল রেস্তোরাঁ এবং ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পসহ বাণিজ্যিক, চা-বাগান প্রতিটি খাতেই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।
দেশের সরকারি–বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে শিশু জন্মের সময় অন্তঃসত্ত্বার অপ্রয়োজনীয় সিজার রোধে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে ওই কমিটি গঠন করতে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।কমিটিকে নীতিমালা প্রণয়ন করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য আদালত আগামী ৫ ডিসেম্বর দিন রেখেছেন।জনস্বার্থে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) আজ ওই রিট করে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাশনা ইমাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অন্তঃসত্ত্বার অপ্রয়োজনীয় সিজার রোধে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে কথা বলার সুযোগ চেয়ে ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের আইনজীবীরা আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন নাকচ করে দেন।শুনানির সময় মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘স্যার, আমরা মক্কেলের সঙ্গে কথা বলতে চাই। এই অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। আমরা আইনি পরামর্শ করতে চাই।’ মোয়াজ্জেমের আইনজীবীর এই বক্তব্য শোনার পর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বলেন, ‘আদালতে বসে কথা বলার পারমিশন দেব না। আপনার মক্কেলের সঙ্গে কারাগারের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন।’আদালত আগামী ১০ জুলাই মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ক শুনানির নতুন দিন ঠিক করেছেন। ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগের মামলায় আজ রোববার অভিযোগ গঠন বিষয়ক শুনানির দিন ঠিক ছিল। আসামি মোয়াজ্জেমকে সকালে প্রিজনভ্যানে করে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকার আদালতে আনা হয়। পরে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায়। দুপুর ২টার দিকে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালের এজলাসে আনা হয়।শুনানির শুরু থেকে মোয়াজ্জেম আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর সামনে পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ছিলেন। মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক হোসেন শুনানির শুরুতে আদালতকে বলেন, ‘মামলার বিচার্য বিষয় যে ভিডিও বাদী পেনড্রাইভে করে আদালতে জমা দিয়েছেন, তার অনুলিপি চেয়ে আমরা আবেদন করেছি। সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী আসামিপক্ষ ওই ভিডিওর অনুলিপি পাওয়ার দাবি রাখেন।’তখন সাইবার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নজরুল ইসলাম শামীম আদালতকে বলেন, বাদী পেনড্রাইভে করে যে ভিডিও আদালতে জমা দিয়েছেন তা সবাই দেখেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখনো ওই ভিডিও আছে। আইন অনুযায়ী, ওই ভিডিও মামলার আলামত। আলামতের অনুলিপি আসামিপক্ষ পেতে পারে না। আর এই ধরনের আলামত দেওয়ার বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিছু উল্লেখ নেই।সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ তখন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটা বিশেষ আইন। এই আইনে উল্লেখ আছে, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচার হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি এবং সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী, আসামি ওই ভিডিওর অনুলিপি পাওয়ার হকদার। পিপি নজরুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ‘সবার উপস্থিতিতে ওই ভিডিও আমরা দেখাতে পারি। কিন্তু ভিডিওর কপি আসামিপক্ষ পেতে পারে না।’মোয়াজ্জেমের আরেক আইনজীবী আবু সাঈদ সাগর আদালতকে বলেন, যে ভিডিও এই মামলার বিচার্য বিষয়, সেই ভিডিও অবশ্যই আসামি পক্ষ দেখার দাবি রাখে। আইনজীবী ফারুক আদালতকে আরও বলেন, এ মামলায় ওসি মোয়াজ্জেম বড় কথা না, ন্যায়বিচার বড় কথা। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসামিপক্ষ ওই ভিডিওর অনুলিপি পেতে পারেন। পিপি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ অভিযোগ গঠন বিষয়ক শুনানির দিন আছে। আসামিপক্ষ থেকে সময়ের কোনো আবেদন নেই। আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার আবেদন করছি।’আসামিপক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত আগামী ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন দিন ঠিক করেন। জনাকীর্ণ আদালতের ভিড় ঠেলে ফারুক আহম্মেদ সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের সঙ্গে কথা বলেন। ফারুক আহম্মেদ বলেন, ‘কারাগারে গিয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করব।’ এ সময় মোয়াজ্জেম মুচকি হাসি দেন। পরে যখন মোয়াজ্জেমকে আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়, মোয়াজ্জেম বরাবরের মতো মুখ নিচু করে রাখেন।শুনানি শেষ হলে পিপি নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমকে আদালতে বাদীর জমা দেওয়া ভিডিওর অনুলিপি দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত ১৬ জুন গ্রেপ্তার হন সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম। পরের দিন তাঁকে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মোয়াজ্জেমের পক্ষে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেদিন মামলার বাদী সৈয়দ সাইয়েদুল হক আদালতকে বলেছিলেন, আইনের সেবক হয়েও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাননি সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম। তবে মোয়াজ্জেমকে নির্দোষ দাবি করেন তাঁর আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ। সেদিন থেকে কারাগারে আছেন মোয়াজ্জেম।ফেনীর সোনাগাজী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে গেলে গত ৬ এপ্রিল নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এর ১০ দিন আগে নুসরাত ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন সে সময় নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে আদালতের নির্দেশে সেটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই গত ২৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে ওই দিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। গত সপ্তাহে আদালত কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন।মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ আদালতের কাছে দাবি করেন, তাঁর মক্কেল মোয়াজ্জেম প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেডে তিনি বেতন পান। প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হওয়ায় জেলকোড অনুযায়ী মোয়াজ্জেম প্রথম শ্রেণির বন্দীর মর্যাদা পাওয়ার হকদার।ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল গত ২৭ মে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ২০ দিন পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
টুইটে প্রকাশ করা ইচ্ছাকেই বাস্তবে রূপ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে ঠিকই ‘হ্যান্ডশেক’ করতে ছুটে গেলেন দুই কোরিয়ার মাঝের অসামরিক এলাকায় (ডিএমজেড)। পরে ট্রাম্প সীমান্তরেখা অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ার মাটিতেও পা রাখেন। কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই প্রথম উত্তর কোরিয়ায় পা রাখলেন।সমালোচকদের চোখে, ট্রাম্পের এই কাজ রাজনৈতিক নাটকের মঞ্চায়ন ছাড়া আর কিছু নয়। তবে অন্যরা বলছেন, ভবিষ্যৎ আলোচনার দৃশ্যপট তৈরি করতে পারে এই ‘হ্যান্ডশেক’।গতকাল শনিবার চমকপ্রদ টুইটটি করেন ট্রাম্প। পরে সবাইকে বিস্মিত করে দিয়ে ট্রাম্প নিশ্চিত করেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে শুধু ‘হাত মেলানোর জন্য’ যাচ্ছেন ডিএমজেডে।আজ রোববার ডিএমজেডে গিয়ে কিম জং-উনের সঙ্গে সেই ‘হ্যান্ডশেক’ করেন ট্রাম্প। এ সময় দুজনের মুখেই ছিল হাসি। পরে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার ভেতরে কিছুটা পথ যান।ডিএমজেডে দুই নেতা প্রায় ৩০ মিনিটের মতো বৈঠকে মিলিত হন। তাঁরা পরমাণু আলোচনা ফের শুরু করতে টিম গঠনের ব্যাপারে একমত হন।এভাবে দুই নেতার দেখা করার ঘটনাটিকে নজিরবিহীন বলা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়াও ট্রাম্পের ওই টুইটে বিস্মিত হয়। জাপানে জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া শেষে আজ ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া সফরে যান। সেখান থেকেই তিনি কিম জং-উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। গত শুক্রবার জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ট্রাম্প জাপানের ওসাকায় যান। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনটি শেষ হয় গতকাল।গতকাল উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনকে উদ্দেশ করে ট্রাম্প টুইট করার পর তা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়।ট্রাম্প ওই টুইটে বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে দেখা করতে, শুধু হ্যালো বলে হাত মেলাতে তিনি ডিএমজেডে যাবেন। সেই টুইটের পরিপ্রেক্ষিতেই দুই নেতার অভূতপূর্ব এই সাক্ষাৎ হলো।হঠাৎ সাক্ষাতের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন আগেই বলেন, ‘শান্তির জন্য তাঁরা (দুই নেতা) হ্যান্ডশেক করবেন।’সাক্ষাতের বিষয়ে উত্তর কোরিয়া এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ট্রাম্পের টুইটের প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়া বলে, বিষয়টি বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।ভেস্তে যাওয়া আলোচনা এখন নতুন করে প্রাণ পেতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, এ নিয়ে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে তৃতীয় দফায় মুখোমুখি সাক্ষাৎ হলো। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে গত বছরের জুনে প্রথমবারের মতো বৈঠক হয় ট্রাম্প ও কিমের। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। দুই নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিয়েতনামের হ্যানয়ে। কোনো সমঝোতা না হওয়ায় ভেস্তে যায় সেই বৈঠক।আজ কিমের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেন, ‘এটা অনেক বড় সম্মান। এর মাধ্যমে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বিশ্বের জন্য আজ একটি মহৎ দিন।এ সময় হাসিমুখে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কিম বলেন, তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে অতীত দূরে ঠেলে নতুন যুগে প্রবেশের ইচ্ছার প্রকাশ ঘটেছে।সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের পর দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ফিরে যান ট্রাম্প।
সেলেনা গোমেজ একজন জনপ্রিয় মার্কিন গায়িকা ও অভিনেত্রী। টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরিতে জন্মেছিলেন বলেই কিনা সীমান্তের বন্দীশালার মানুষগুলোর যন্ত্রণা স্পর্শ করে এই তারকাকে। ইনস্টাগ্রামে গতকাল শনিবার নিজের একটি সাদাকালো চমৎকার ছবি শেয়ার করে অভিবাসন-প্রত্যাশী শিশুদের বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তিনি।উন্নত জীবনের আশায় অনেকেই নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মেক্সিকো সীমান্ত পার হয়ে ঢুকে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে, তাদের শনাক্ত করে আটক রাখা হয়েছে। সেখানকার মানুষের জীবন এক কথায় দুর্বিষহ। সেখানে জন্ম নেওয়া শিশুদের পৃথিবী আটকে আছে দেয়াল দিয়ে ঘেরা পুলিশি পাহারার একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।এই শিশুদের কোনো অপরাধ নেই। তারা কেন একটা স্বাভাবিক জীবন পাবে না? তাদের শৈশব কেন আর দশটা শিশুর মতো স্বাভাবিক হবে না? তাই ইনস্টাগ্রামে সেই ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘বাচ্চারা জেলখানায়। তারা অ্যালুমিনিয়ামের মতো শক্ত চাদর গায়ে চাপিয়ে মেঝেতে ঘুমাচ্ছে। তাদের জন্য মৌলিক চাহিদা বলে কিছু নেই। এই নিষ্পাপ শিশুদের সঙ্গে যেটা ঘটছে, তা একেবারেই অমানবিক। তারা যে জীবনযাপন করছে, আমরা সেটা কল্পনাও করতে পারি না। এটা বন্ধ করতেই হবে।’এ সময় সেলেনা গোমেজ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে কী করতে হবে, তা বলে দেন। একটি নম্বর দিয়ে সেখানে ফোন করার পরামর্শ দেন তিনি।এই ঘটনায় সেলেনা গোমেজের অনুসারীরা মন্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। কেউ কেউ সেলেনার পোস্ট করা নিজের ছবির সঙ্গে কিছুতেই মেলাতে পারেননি ক্যাপশনের বার্তাকে। লিখেছেন, ‘আপনার বোধ হয় নিজের সুন্দর মুখের ছবির বদলে ওদের বাস্তবতার একটা ছবি পোস্ট করা উচিত ছিল। তাহলে বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হতো। আপনি সুবিধাপ্রাপ্তদের একজন। তারা নয়।’একজন সেলেনা গোমেজকে ‘রানি’ সম্বোধন করে তাঁর সঙ্গে একমত প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘তিনিই রানি, যার কাছে ক্ষমতা আছে। আর তিনি সেই ক্ষমতাকে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য ব্যবহার করেন।’ আরেকজন সহমত প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘এটাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সর্বোৎকৃষ্ট উপায়।’কিছুদিন আগে স্টার ট্রেক সিরিজের হিকারু সুলু চরিত্রের বিখ্যাত অভিনেতা জর্জ তাকেই এই বিষয়ে কথা বলেছেন। ১৯৩৭ সালে জন্ম নেওয়া এই অভিনেতাও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান-মার্কিন ক্যাম্পে আটকা পরেছিলেন। তিনিও শিশুদের এসব ক্যাম্পে আটক জীবনের ঘোর বিরোধী। ডলি লুসিও সেভিয়ার নামে একজন চিকিৎসক কিছুদিন আগে এ রকম কিছু ক্যাম্প ঘুরে দেখেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, সেখানে বাচ্চারা যে ধরনের ‘সুবিধা’ পায়, সেগুলো স্রেফ নির্যাতন।
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির মতো কর্মসূচিগুলোর বরাদ্দ সাংসদদের হাতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা। তিনি এই বরাদ্দ স্থানীয় সরকারের হাতে দেওয়ার দাবি জানান।আজ রোববার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন ফারহানা এই দাবি জানান।ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় রুমিন ফারহানা বলেন, টিআর, কাবিখা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা সাংসদদের কাজ নয়। তাঁদের কাজ আইন প্রণয়ন করা, আইন সংশোধন করা, মন্ত্রিসভা গঠন করা। টিআর, কাবিখা নিয়ে অনেক প্রশ্ন এসেছে। এগুলো সংসদ সদস্যদের হাতে না দিয়ে স্থানীয় সরকারের হাতে দেওয়া উচিত।জাতীয় পার্টির সাংসদ পীর ফজলুর রহমান বলেন, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে কি না, তা তদন্ত হওয়া দরকার।ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, মানুষ এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে ভয় পায় না। মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ নিয়ে ভয় পায়। সেটা হলো বিএনপি-জামায়াত।কৃষি মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবির আলোচনায় রুমিন বলেন, কৃষক ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। কৃষিতে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, তা সব সময় কৃষক পর্যায়ে পৌঁছায় না। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগসাজশ আছে বলে মানুষ বিশ্বাস করে।এবার ধানের দাম না পাওয়ায় কৃষকদের কৃষি ঋণের সুদ মওকুফ করার দাবি জানান জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ। জাতীয় পার্টির আরেক সাংসদ মুজিবুল হক বলেন, উৎপাদনের পর কৃষিপণ্যের কী অবস্থা হয়, সরকার তা দেখে না। বাজারজাতকরণের বিষয়টি সরকারের খেয়াল রাখতে হবে। সরকার ধানের চেয়ে চাল বেশি সংগ্রহ করে। কৃষক চাল বিক্রি করেন না। চাল বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। কৃষকেরা কষ্টে আছেন। তিনি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার পরিমাণ বাড়াতে বেসরকারি গুদাম ভাড়া নেওয়ার দাবি জানান।কৃষিতে সরকারের সাফল্য তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সবকিছু আবর্তিত হয় কৃষিকে কেন্দ্র করে। গ্রামের মানুষের মূল জীবিকা কৃষি। কৃষিতে মূলত যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেটা ভর্তুকি নয়, প্রণোদনা। এটা সরকারের বিনিয়োগ।
জীবনে চলার পথে যত প্রতিবন্ধকতাই আসুক না কেন, তরুণদের কখনোই পিছু হটলে চলবে না। সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা, আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্ন থাকলে সব তরুণই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। তারুণ্যের রীতিই হচ্ছে যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিকে সামাল দিয়ে ওঠা আর মানসিকভাবে কখনোই ভেঙে না পড়া।সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আজ শুক্রবার দিনব্যাপী ‘তৈরি হও, এগিয়ে যাও’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রশিক্ষকেরা উপস্থিত তরুণ প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ ও সিলেট বন্ধুসভার যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় আড়াই শর বেশি তরুণ অংশ নেন।কর্মশালায় ‘সংগঠকের ভূমিকা ও নেতৃত্ব’, ‘ক্যারিয়ার কথা’, ‘সবার জন্য বিতর্ক’, ‘আইটিতে চাই দক্ষতা’, ‘লেখক যদি হতে চাও’, ‘শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তি’ এবং ‘ফটোগ্রাফি’—এই সাত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন প্রশিক্ষকেরা। কর্মশালায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট এমসি কলেজ, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, কুলাউড়া ও জুড়ী বন্ধুসভার সদস্যরা ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি শাহ সিকান্দর শাকির। উদ্বোধনী পর্বে বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন বলেন, ‘তৈরি হও, এগিয়ে যাও’ এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে আমরা তরুণদের নানা বিষয়ে প্রশিক্ষিত করার চেষ্টা করছি। এ প্রশিক্ষণ নিয়ে তরুণেরা সামনে এগিয়ে যাবে, সেই চেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে।’কর্মশালায় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন প্রথম আলো বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মুমিত আল রশিদ ও নাজমুল হাসান, ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক সাইদুল হাসান, সংবাদ পাঠক জাফর সাদিক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা হাসান মাহমুদ, আলোকচিত্রী সৈকত বরণ শীল, আবৃত্তিকার মোহতারিমা রহমান, প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের রবিউল ইসলাম ও রিদিতা তাহসিন। অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে সিলেটের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা ও খাবারের অভিজাত রেস্তোরাঁ উনদালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন বাবলু বক্তব্য দেন। তিনি তরুণদের মানবিক ও দেশপ্রেমী হওয়ার আহ্বান জানান।কর্মশালায় ভালো প্রশ্ন ও উত্তর প্রদানকারীদের বই উপহার দেওয়া হয়। এ ছাড়া সিলেট বন্ধুসভা ও মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভার সদস্যরা দলীয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন। এ পর্বে একক পরিবেশনায় অংশ নেন সিলেট বন্ধুসভার সদস্য তন্বী সূত্রধর, মেহেরিন ঝুমু, পল্লবী চক্রবর্তী প্রমুখ। গান পরিবেশনকারীদের জন্য উপহার হিসেবে ছিল বই।শুক্রবার বিকেলে প্রশিক্ষণার্থীদের সনদ বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল বিসমিল্লাহ্ টেলিকম সার্ভিস লিমিটেড।
বিশ্বকাপ কী ইংল্যান্ডে হচ্ছে নাকি এশিয়ায়? এউইন মরগান মাঠে নেমে হয়তো প্রায়ই নিজেকে এই প্রশ্নটা করেন। এশিয়ানদের বিপক্ষে খেলতে নামলে ইংল্যান্ডের এই অধিনায়কের নাকি কখনোই নিজেদের স্বাগতিক দেশ বলে মনে হয় না।উপমহাদেশীয়দের ক্রিকেট নিয়ে পাগলামোটা বরাবরই মাত্রা ছাড়ানো। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ ২০১৯ দেখলেই তা বোঝা যায়। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ মানেই দর্শকে টইটম্বুর। ব্যাপারটা এমন ঠেকেছে যে এশিয়ানদের বিপক্ষে ইংল্যান্ড খেলতে নামলে ইংলিশ দর্শকদেরই খুঁজে বের করতে হয়। ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগানও ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন। এশিয়ানদের বিপক্ষে খেলতে নামলে নাকি তাঁর মনে হয় প্রতিপক্ষের মাঠে খেলছেন তিনি।এশিয়ানদের বিপক্ষে মাঠে নেমে রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান ইংলিশ অধিনায়ক—নিজেদের মাঠে খেলা হচ্ছে নাকি প্রতিপক্ষের মাঠে? এত দর্শক অথচ ইংল্যান্ডকে সমর্থন অল্প। এশীয়দের ক্রিকেটের প্রতি উন্মাদনা বরাবরই চোখে পড়ার মতো। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও নিজের দেশকে সমর্থন করতে অনেক ভক্তই পাড়ি জমিয়েছে বিলেতে। মাঠে ওড়াচ্ছেন দেশের পতাকা। মরগান সে অভিজ্ঞতাটাই বলেছেন, ‘যখন তুমি এশিয়ান কোনো দলের বিপক্ষে খেলবে তখন তোমার মনে হবে মাঠে অনেক দর্শক এসেছে। এ ব্যাপারটা মেনেই নিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক, ‘আমরা এটা মেনে নিয়েছি। আমরা যখন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের মতো কোনো দেশের বিপক্ষে খেলি তখন আমাদের নিজেদেরই মনে হয় ঘরের বাইরের কোনো মাঠে খেলছি।’ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমার তো জোর গলাতে বলেছিলেনই, ভারতের খেলা হলে কোথায় খেলছি এটা কোনো ঘটনাই না। ইংল্যান্ড হোক অথবা অস্ট্রেলিয়া, ‘যে দেশই হোক আমাদের ম্যাচে দর্শক আসবেই। আমরা এটা উপভোগ করি।’ পাকিস্তানি ওপেনার ব্যাটসম্যান ইমাম উল হকও দর্শকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ‘আমরা গত তিন বছর ধরে এখানে আসছি। আমরা সব সময়ই ভালো সমর্থন পেয়ে এসেছি। ঘরের বাইরেও ইংল্যান্ড আমাদের ঘরের মাঠ। আর আমরা যে সমর্থনটা পাই এখানে সত্যিই অবিশ্বাস্য।’বাংলাদেশের ম্যাচগুলোতেও বাংলাদেশি দর্শকদের বিপুল উপস্থিতি বাড়তি প্রেরণা দেয় সাকিব-মাশরাফিদের।
অজয়-কাজলের পরিবারের কাছে গত মাসটা ছিল খারাপ সংবাদে ঠাসা। এক মাস আগে বাবাকে হারিয়েছেন বলিউড তারকা অজয় দেবগন। এরপর আবার কাজলের মা তনুজা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অবশ্য তিনি সেরে উঠেছেন। শোক-দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে মানসিক প্রশান্তির জন্য সন্তানদের নিয়ে ভ্রমণে গেলেন অজয়-কাজল।এখন তারা বেড়াচ্ছেন প্রকৃতির কাছাকাছি, পাহাড়ি কোনো অঞ্চলে। নিজেদের সুন্দর মুহূর্তের ছবিগুলো নিজের ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন কাজল। যদিও কোথায় বেড়াতে গেছেন, সেটা জানাননি তিনি। পারিবারিক সুন্দর মুহূর্তের বেশ কয়েকটি ছবি দিয়েছেন কাজল। যেখানে একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কোনো এক পাহাড়ি এলাকায় বিলাসবহুল হোটেলের সুইমিং পুলে ছেলে যুগকে নিয়ে জলবিলাস করছেন অজয় দেবগন। আরেকটি ছবিতে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে কাজল দম্পতি বড় রাস্তার পাশে। গাড়ির পাশে পুরো পরিবার বন্দী ক্যামেরায়। কাজল, অজয় দেবগন এবং তাদের মেয়ে নিশা দেবগন ও ছেলে যুগ দেবগন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, অজয়ের গায়ে নীল শার্ট ও কালো জিনস। কাজল পরেছেন নীল রঙের জাম্পস্যুট। কন্যা নিশার পরনে বর্ণিল টি-শার্ট ও কালো জিনস। আর যুগ পরেছে মিলিটারি সবুজ টি-শার্ট ও ধূসর হাফপ্যান্ট। ছবিতে অন্যরা হাস্যোজ্জ্বল হলেও অজয় বরাবারের মতোই গম্ভীর। এই নির্জনতার শতভাগ উপভোগ করতে চাইছেন কাজল। কেননা অবস্থান না জানিয়ে ইনস্টাগ্রামে এই ছবি শেয়ার করে কাজল লিখেছেন, ‘চারপাশের এত উজ্জ্বলতা নিয়ে ভাবছি...কোনো এক পাহাড়ের কোলে।’ইনস্টাগ্রামে এই দুটি ছবির আগে নিজের একটি একক ছবি পোস্ট করেছেন কাজল। যেখানে সানগ্লাস চোখে, হলুদ জামা গায়ে হাস্যোজ্জ্বল কাজলকে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি তুলেছে তাঁর প্রিয় আলোকচিত্রী ছেলে যুগ দেবগন। ক্যাপশনে মা কাজল ইংরেজিতে যা লিখেছেন, তা বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘আবারও আমার প্রিয় আলোকচিত্রীর কাজ। …আমাকে সুন্দর দেখাতে ওর পরিশ্রমের শেষ নেই!’১৯৯৯ সালে বিয়ে করেন অজয় দেবগন ও কাজল। এর আগে বেশ কয়েকটি ছবিতে একসঙ্গে কাজও করেছেন তিনি। খুব শিগগির ‘তানাজি: দ্য আনসাং ওয়ারিয়র’ ছবিতে ফের জুটি বাঁধবেন অজয়-কাজল। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে সাইফ আলী খানকেও। ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে এ ছবি।গত ২৭ মে অজয়ের বাবা বলিউডের বর্ষীয়ান অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার, প্রযোজক ও পরিচালক ভীরু দেবগন প্রয়াত হন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। ওই সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের ভিলে পার্লে শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস ও ডিএনএ
৪৩ বছরের মধ্যে এই প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। চার আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে দুজন জল্লাদ নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।মাদকসংক্রান্ত অপরাধের দায়ে ওই চার আসামির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে এ-সংক্রান্ত ঘোষণা আসার পর জল্লাদ নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ।১৯৭৬ সাল থেকে শ্রীলঙ্কায় মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে। চার আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে এই স্থগিতাদেশের অবসান ঘটবে।জল্লাদ পদে নিয়োগ দিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞপ্তি দেয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তিতে দৃঢ় নৈতিক চরিত্রের অধিকারী প্রার্থী চাওয়া হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রার্থীদের শ্রীলঙ্কার নাগরিক হতে হবে। পুরুষ হতে হবে। বয়স হবে ১৮ থেকে ৪৫ বছর। প্রার্থীদের শক্ত মনের অধিকারী হতে হবে।বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর জল্লাদ পদে নিয়োগ পেতে শতাধিক প্রার্থী আবেদন করেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ডেইলি নিউজ জানিয়েছে, দুজন মার্কিন নাগরিক ও দুই নারীও আবেদন করেছিলেন।এক কারা মুখপাত্র বলেছেন, সফল দুই প্রার্থীকে চূড়ান্ত প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। দুই সপ্তাহ ধরে এই প্রশিক্ষণ হবে।শ্রীলঙ্কায় সবশেষ জল্লাদ পাঁচ বছর আগে পদত্যাগ করেন। তিনি ফাঁসির কাষ্ঠ দেখে মানসিকভাবে মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন। গত বছর আরেকজন জল্লাদকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কাজেই যোগ দেননি।
বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলার মামলায় পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপির ৩০ নেতা-কর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার পাবনার অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতে ৫২ জনের মধ্যে ৩০ জন আসামি হাজির হলে জামিন বাতিল করে বিচারক রুস্তম আলী সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টার দিকে বিচারক রুস্তম আলী এজলাসে বসেন। এর পরপরই বিএনপির নেতা-কর্মীরা আদালতের কাঠগড়ায় হাজির হন। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর বিচারক জামিন বাতিল করে তাঁদের কারাগারে পাঠান। আগামীকাল সোমবার মামলার যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য করেন।এ মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু, বর্তমান ঈশ্বরদী পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ বাকি নেতা-কর্মীরা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের সময় শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। হামলার ঘটনায় শেখ হাসিনা ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ৫২ জনকে আসামি করে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২৫ বছর ধরে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন আছে।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে লম্বা বিরতি থাকায় বেশ কয়েক দিন ছুটিয়ে কাটিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ছুটি শেষে আজ থেকে শুরু হবে অনুশীলন।ছুটি মানে ছুটি। ঘুরে বেড়াও, ঘুমাও, পছন্দের জায়গায় খেতে যাও। যার যা ইচ্ছা করো। গত পাঁচ দিন তাই ব্যাট-বলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরু হবে আজ থেকে।লম্বা সফরের মধ্যে এমনিতেও এ রকম একটা বিশ্রাম দরকার ছিল ক্রিকেটারদের। তার ওপর বার্মিংহামে এই কয় দিন চাইলেও অনুশীলনের জন্য মাঠ পাওয়াটা কঠিন ছিল। অন্য দলের খেলা ছিল বলে মাঠ-নেট ছিল তাঁদের দখলে। আজ ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের পর ২ জুলাই বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দিয়ে আপাতত শেষ হবে বার্মিংহামের বিশ্বকাপ ২০১৯। এরপর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালটাও হবে এজবাস্টনেই।ছুটির শেষ দিনে টিম হোটেল হায়াৎ রিজেন্সির সামনে মোসাদ্দেক হোসেন কথা বলছিলেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে, ‘যেভাবে আমরা ম্যাচ খেলছিলাম, এত বড় টুর্নামেন্টে একটা বিরতিও দরকার ছিল। সবাই ছুটিটা ভালোভাবে কাটিয়ে হোটেলে ফিরেছে। কাল (আজ) থেকে আবার আমরা অনুশীলন শুরু করব।’ভারতকে শক্ত প্রতিপক্ষ মেনেও আশাবাদী মোসাদ্দেক। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে বাংলাদেশ দল যেভাবে খেলে আসছে, সেই ধারাবাহিকতা রাখতে পারলে ভারতকে হারানো অসম্ভব মনে হয় না জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের কাছে, ‘আমরা টুর্নামেন্টের এমন একটা জায়গায় আছি, আমি মনে করি না ভারত বা কোনো দলকে নিয়ে ভাবার সময় আছে। আমরা যেভাবে খেলছি, সেভাবে খেলতে পারলে আশা করি ভালো কিছু হবে।’এজবাস্টনের উইকেট বিশ্বকাপের অন্য উইকেটগুলোর তুলনায় বেশি ব্যাটিং সহায়ক হবে বলে ধারণা মোসাদ্দেকের। যে জায়গায় ব্যাট করেন, ও রকম উইকেট হলে আবারও হয়তো দেখাতে চাইবেন আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজে তোলা ঝড়ের মতো কিছু। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৭ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস এসেছিল মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে। সে রকম সুযোগ এলে এবারও ভালো কিছুর আশায় তিনি, ‘এখানে আসার আগে তৈরি হচ্ছিলাম, যেন সুযোগ পেলে ভালো কিছু করতে পারি। আমি যা পারি সেটাই করছি, এর বেশি কিছু নয়। সামনেও একই চেষ্টা করব।’বার্মিংহামে বাংলাদেশ ও ভারত আছে একই হোটেলে। কাল পর্যন্ত দুই দলের খেলোয়াড়দের দেখা-সাক্ষাতে সৌজন্য বিনিময় আর টুকটাক আড্ডাই বেশি হয়েছে। কিন্তু আজকের পরই তো ভারতের সামনে ইংল্যান্ডের জায়গায় চলে আসবে বাংলাদেশ! হায়াত রিজেন্সির পরিবেশটাও কি হয়ে উঠবে একটু গুমোট?
বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড-ভারত ম্যাচ। সেমিফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে ইংল্যান্ডের জন্য ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।প্রথম পাঁচ ম্যাচের চারটিতে দাপুটে জয়। ফেবারিটের মতোই শুরু ছিল বিশ্বকাপ-স্বাগতিকদের। কিন্তু সেই ইংল্যান্ডই কিনা এখন সেমিফাইনালে ওঠার পথে খোঁড়াচ্ছে! সর্বশেষ দুটি ম্যাচেই হেরে এর মধ্যেই সরিষায় ভূত খুঁজতে শুরু করেছে দলটা। উইকেটে নাকি ঝামেলা, কেউ তাদের ভালো চায় না—আরও কত যে অনুযোগ!এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিজেদের মধ্যে কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে গেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। সমালোচনা শুনে দুদিন আগে জনি বেয়ারস্টো ক্ষোভ ঝেড়েছেন, সবাই নাকি বিশ্বকাপে তাদের ব্যর্থতা দেখার অপেক্ষায় আছে। সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভনের পাল্টাটা বেশ আক্রমণাত্মকই হয়েছে। বেয়ারস্টোর মন্তব্য তাঁর ভাষায় ‘নেতিবাচক ও দুঃখজনক’।ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে এই যখন স্বাগতিকদের অবস্থা, তখন বিরাট কোহলির দলে সুখী পরিবারের বাতাবরণ। সেটির পরিধি হায়াত রিজেন্সিতে থাকা ভারতীয় দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বার্মিংহামের মোট জনসংখ্যার অন্তত ২৫ শতাংশ মানুষও আপাতত সময় কাটাচ্ছে একই পারিবারিক আবহে। শহরের এক-চতুর্থাংশ মানুষ উপমহাদেশের, তাদের বেশির ভাগই আবার ভারতীয়। কোহলি-ধোনিদের দেশের মানুষেরা এজবাস্টনের গ্যালারিতে উদ্বাহু সমর্থন পেতেই পারেন প্রবাসজীবনের সুখ-দুঃখের সাথি বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বন্ধুদের।উপমহাদেশের চার দেশ কোনো বিষয়ে এককাট্টা হয়েছে খুব কমই। তবু বিদেশের মাটিতে এক ম্যাচের জন্য এই উপমহাদেশীয় ঐক্যের মূল কারণ, বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের অমীমাংসিত সমীকরণ। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ভারতের শেষ চারে যাওয়া মোটামুটি নিশ্চিত। চতুর্থ দল হিসেবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ‘অপেক্ষমাণ’ তালিকায় আছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। সেমিফাইনালে যাওয়ার প্রথম শর্ত তো অবশ্যই নিজেদের বাকি ম্যাচগুলো জিততে হবে। তবে ইংল্যান্ডকে ভারত হারিয়ে দিলে এই তিন দলের জন্যই আশাটা বাড়বে। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক বৈরিতা আছে, আছে বাংলাদেশের ফেসবুক-সমাজের ওপর কিছুটা রাগ-ক্ষোভও, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অতীত সম্পর্কে আছে তিক্ততা। তবু এজবাস্টনের ২৫ হাজার দর্শকের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনই আজ পেতে যাচ্ছে ভারত। বার্মিংহামের বাইরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা উপমহাদেশীয়দের সমর্থনটাকেই-বা বাদ দেবেন কেন!ক্রিকেট বিশ্বকাপে একমাত্র অজেয় এখনো কোহলির দলই, সেমিফাইনালে যাওয়ার পথটাও তাদের জন্য মোটামুটি কণ্টকমুক্ত অবস্থায়। তার ওপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দলটা খেলছে বার্মিংহামে, যেটি আসলে ইংল্যান্ডের শহর, নাকি উপমহাদেশের, তাই নিয়ে মাঝেমধ্যে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। ট্যাক্সিতে উঠবেন, তো চালক পাকিস্তানের। রেস্টুরেন্টে যাবেন, তো ওয়েটার ভারত বা বাংলাদেশের। দোকানে কিছু কিনতে গেছেন, পাশ থেকে ভেসে আসবে সিংহলিজ কথাবার্তা। আর সত্যিকারের ব্রিটিশ যাঁরা আছেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেট যে তাঁদের মধ্যে তেমন একটা ভাবান্তর ঘটাতে পারে না, তা তো টুর্নামেন্টজুড়েই চোখে পড়ছে।এর মধ্যে বার্মিংহাম পুড়ছে ‘তীব্র দাবদাহে’। অবাক হচ্ছেন? ইংল্যান্ডের আবহাওয়া আবার বাংলাদেশের মতো হয়ে গেল নাকি! অতটা না হলেও ইংল্যান্ডের কোনো শহরের তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস স্পর্শ করলে সেটাকে ‘দাবদাহ’ না বলে উপায় কী! ইউরোপের অন্যান্য দেশেও কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড গরম। বিবিসির খবর, গত শুক্রবার ফ্রান্সের তাপমাত্রা উঠেছে ৪৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেটি কিনা দেশটির সর্বকালের সর্বোচ্চ।বুঝতেই পারছেন, এজবাস্টনে আজ কতটা ‘স্বাগতিক’ হয়ে উঠতে পারে ভারত। গ্যালারিতে উপমহাদেশীয় ঐক্য, মাথার ওপর চেনা সূর্য। তাপমাত্রা আজও প্রায় একই রকম থাকার পূর্বাভাসে ইঙ্গিত মিলছে, উইকেটের সম্ভাব্য ফাটল থেকে হয়তো কিছুটা টার্নও পাবেন ভারতীয় স্পিনাররা।বার্মিংহামে ভারতের অতীতটাও কিন্তু বেশ সুখস্মৃতির। লর্ডস, ওল্ড ট্রাফোর্ড এবং ওভালের পর ইংল্যান্ডের চতুর্থ বৃহত্তম ভেন্যু এজবাস্টনে এখন পর্যন্ত ১০টি ওয়ানডে খেলে সাতটিতেই জিতেছে ভারত, এর পাঁচটিই সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ও তাদের এ মাঠেই। ফাইনালটা সেবার কার বিপক্ষে খেলেছিল ভারত, মনে আছে তো? এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন দেশ ও সহায়তা সংস্থার লোকজন এসে সহায়তার পাশাপাশি নানা রকম সবক দিয়ে যান। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তাঁদের কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা দেখা যায়নি। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মিয়ানমারকে যথেষ্ট চাপ আন্তর্জাতিক মহল প্রয়োগ করতে পারেনি।‘রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন রিয়াজুল হক। আজ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কমিশনের সম্মেলনকক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।রিয়াজুল হক বলেন, দুই বছর আগে নিপীড়নের শিকার হয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার উৎকর্ষ দেখিয়েছে। বাংলাদেশের এই ভূমিকা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। ওই সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষায় ভূমিকা রেখেছে।মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। নিজ দেশে তাদের নির্বিঘ্নে ফিরে যাওয়া দরকার। রোহিঙ্গারাও ফিরে যেতে চায়। কিন্তু এর আগে তারা নিরাপত্তা চায়, নিরাপদ পরিবেশ চায়। আমরাও তাদের আগুনে ফেলে দিতে পারি না।’রিয়াজুল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করলেও যারা এ ঘটনার মূলে, সেই মিয়ানমারকে তারা কোনো কিছুতে বাধ্য করতে পারেনি। মানবিকতার কাছে সবকিছু কী পরাজিত হবে? একটি দেশ কি এত শক্তিশালী যে তার বিরুদ্ধে কারও কিছু বলার নেই?আজকের অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি স্টিভেন কর্লিস বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এ জন্য দেশের সরকারের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষ ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। বিশেষ করে টেকনাফ ও উখিয়ার মানুষ অসীম ধৈর্য দেখিয়েছে। স্টিভেন কর্লিস বলেন, এত মানুষ আশ্রয় নিলেও বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় হয়নি। এটা বড় সার্থকতা। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এখন বড় বিষয়। মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে এসব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে মিয়ানমার যতটা গবেষণা করেছে, বাংলাদেশ তা করেনি বলে মনে হয়। আমরা তিস্তা ইস্যুতে যত কথা বলি, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ততটা নয়। রোহিঙ্গা ইস্যু শুধু স্থানীয় অর্থনীতির জন্য নয়, বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, ভৌগোলিক পরিবেশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইত্যাদি নানা বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই আমাদের বিষয়টি হালকাভাবে নেওয়ার অবকাশ নেই।’অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. নজরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি সহযোগী আশফাকুর রহমান খান, সেভ দ্য চিলড্রেনের আয়েশা আক্তার প্রমুখ।
স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জবাব দেওয়ার আগেই অভিযোগ খণ্ডনে তৎপরতা দেখান সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) দুজন সদস্য।এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এমন এক পার্লামেন্টে আছি, কোনটা সরকারি দল আর কোনটা বিরোধী দল, কিছুই বুঝি না।’আজ রোববার সংসদের বৈঠকে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মঞ্জুরি দাবির ওপরে আলোচনায় এই পরিস্থিতি দেখা যায়। বাজেটের মঞ্জুরি দাবিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ত্রাণ—এই চার মন্ত্রণালয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপিদলীয় সদস্য হারুনুর রশীদ অভিযোগ করেন, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক থাকেন না। এখানে স্বাস্থ্যসেবা বলতে কিছু নেই। দেশের চিকিৎসা খাত এখন ভারতীয় বাজারে পরিণত হয়েছে। এই সংসদে উপস্থিত সাংসদের কেউ বাংলাদেশে চিকিৎসা নেন না। চিকিৎসকেরা নিজের পেশার তুলনায় রাজনীতির সঙ্গে বেশি জড়িয়ে গেছেন।এই বক্তব্যের পরপরই জাপার সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী নিজের প্রস্তাবের বিষয়ে কিছু না বলে হারুনুর রশীদের বক্তব্যের জবাব দিতে শুরু করেন। পেশায় চিকিৎসক ফরাজী বলেন, সব দোষ চিকিৎসকদের দিলে চলবে না। দু-একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সবাইকে দোষ দেওয়া ঠিক না। টাকা থাকলে মানুষ বিদেশে যায়। অনেকে ইচ্ছা করে যায়; দেশকে অপমান করার জন্য।এরপর প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন জাপার আরেক সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনিও নিজের প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য না রেখে হারুনের বক্তব্য খণ্ডন করেন। নিজের মোবাইল ফোনে একটি ছবি দেখিয়ে কাজী ফিরোজ বলেন, দেশের চিকিৎসকেরা চোখের অস্ত্রোপচার করছেন। দেশের চিকিৎসা হয় না, এটা ঠিক নয়। চিকিৎসকদের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সংস্কৃতি দেশে চালু করেছে বিএনপি। সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ড্যাব গঠন করেছিলেন। বিএনপিই দলীয়করণ করেছে। এ পর্যায়ে বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সদস্য রুমিন ফারহানা তাঁর প্রস্তাবের বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার শুরুতেই জাপার দুই সদস্যের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এমন এক পার্লামেন্টে আছি, কোনটা সরকারি দল কোনটা বিরোধী দল, কিছুই বুঝি না।’এরপর জাপার আরেক সদস্য মুজিবুল হক বলেন, সরকার ভুলত্রুটি করলে বিরোধী দল ধরিয়ে দেবে। ভালো কাজ করলে সেটার প্রশংসা করবে। ৪০০ দিনে মাত্র ১০ দিন উপস্থিত হওয়া বিরোধী দলের মতো বিরোধী দল জাপা হতে চায় না।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম-দহগ্রাম মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ১৩ কিলোমিটার। এর ৮ কিলোমিটারজুড়ে সড়কের ওপরে ধানমাড়াই করা হচ্ছে। মাড়াই শেষে ধান ও খড় শুকানোও হচ্ছে সড়কে। এতে মহাসড়ক সরু হয়ে গেছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।এলাকার কয়েকজন বলেন, এ এলাকায় বোরো ধান কাটা ও মাড়াই দেরিতে হয়। আশপাশের খেত থেকে ধান কেটে এনে সড়কের ওপর রাখা হয়। সেখানেই মাড়াই শেষে ধান ও খড়ও শুকানো হয়। সড়কটি যেন চাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাটগ্রাম ইউনিয়নের বাবুরকামাট মোড় থেকে কুচলিবাড়ি ইউনিয়নে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের এলাকা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারে এ কাজ চলছে।গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধান কেটে এনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশেই ইঞ্জিনচালিত যন্ত্র দিয়ে মাড়াই করা হচ্ছে। মাড়াই শেষে ধান ও খড় সড়কের ওপর শুকানো হচ্ছে। সড়কের দুই পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে খড়।সড়কের ওপর ধানমাড়াই করছিলেন হামিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাড়ির আঙিনা ছোট। এই জন্য ধানমাড়াই করতে অসুবিধা হয়চ্ছে। কী করিমো বাহে, এ জন্য রাস্তায় ধান ভাঙ্গচ্ছি।’সওজের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়েন বলেন, তাঁরা মহাসড়কে এসব কাজ না করার জন্য অনেকবার কৃষককে নিষেধ করেছেন। এরপরও কৃষক শুনছেন না। সচেতনতা বাড়াতে তাঁরা কাজ করবেন।
এ বর্ষায় বেশ জমে উঠেছে রাজধানীর নাট্যাঙ্গন। এক দিন আগে দুটি নতুন নাটক দেখেছে শহর। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পুরোনো নাটক ফিরে এসেছে নতুন নামে। ‘দাঁড়াও...জন্ম যদি তব বঙ্গে’ নাটকটি মঞ্চস্থ হলো ‘মাইকেল মধুসূদন’ নামে। মাইকেল মধুসূদন দত্তর ১৪৬তম প্রয়াণদিবস উপলক্ষে রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে নাটকটি প্রদর্শন করে প্রাঙ্গণেমোর। গতকাল শনিবার ছিল নাটকের অষ্টম প্রদর্শনী।২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি ঢাকার মঞ্চে উদ্বোধন হয় নাটক ‘দাঁড়াও...জন্ম যদি তব বঙ্গে’র। নাটকটি প্রাঙ্গণেমোরের দ্বাদশ প্রযোজনা। নাটকটি লিখেছেন অপূর্ব কুমার কুণ্ডু। নির্দেশনা দিয়েছেন ও নাটকে ‘মাইকেল’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনন্ত হিরা। নির্দেশক জানান, এখন থেকে ‘মাইকেল মধুসূদন’ নামেই মঞ্চস্থ হবে ‘দাঁড়াও...জন্ম যদি তব বঙ্গে’ নাটকটি। তিনি জানান, নাট্যকার এবং নির্দেশকের যৌথ সিদ্ধান্তে নাটকের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।মাঝপথে কেন নাটকের নাম পরিবর্তন করতে হলো? অনন্ত হিরা বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে “দাঁড়াও...জন্ম যদি তব বঙ্গে” নাম একটু কঠিন, এই নামের সঙ্গে দর্শক ঠিক সেভাবে যোগাযোগ করতে পারে না। “মাইকেল মধুসূদন” নামের সঙ্গে দর্শক সহজেই যোগাযোগ করতে পারবে। এ জন্যই নামটি পরিবর্তন করেছি।’নাটকে মাইকেল মধুসূদনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন নির্দেশক অনন্ত হিরা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর চরিত্রে অভিনয় করেছেন রামিজ রাজু। আরও অভিনয় করেছেন শুভেচ্ছা রহমান। নাটকটির মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনা করেছেন নূনা আফরোজ, সংগীতের পরিকল্পনা করেছেন রামিজ রাজু এবং আলোক পরিকল্পনা করেছেন আহমেদ সুজন।‘মাইকেল মধুসূদন’ নাটক নিয়ে অনন্ত হিরা বলেন, ‌‘মাইকেল মধুসূদন এমন একজন সৃষ্টিশীল মানুষ, যিনি একাধারে বাংলা ভাষার প্রথম নাটক “শর্মিষ্ঠা”, প্রথম অনুবাদ নাটক “রত্নাবলী”, প্রথম প্রহসন, প্রথম ট্র্যাজেডি নাটকের রচয়িতা এবং প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দে মহাকাব্য রচনা করেছেন। তাঁকে নিয়েই এই নাট্য প্রযোজনা। বাংলা নাটকের যেকোনো প্রয়োগকর্তার দায় তাঁকে নিয়ে কাজ করা।’
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এবার ভুলের পর ভুল করছেন আম্পায়াররা। কাল পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচেও ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন মাঠের আম্পায়ারমাঠে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত—ক্রিকেটের প্রচলিত আপ্তবাক্য। কথাটা এখন বেশ হাস্যকরই মনে হচ্ছে। মাঠে আম্পায়াররা তাঁদের মতো করেই সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। ক্রিকেটাররা তা মানতে না পারলে নিচ্ছেন রিভিউ। মাঠের সিদ্ধান্ত ভুল হলে তা ঠিক করছেন টিভি আম্পায়ার। আর টিভি কিংবা থার্ড আম্পায়ারও ভুল করছেন নিয়মিতই। যে আম্পায়ারিং নিয়ে একসময় কথা উঠত খুব কমই, এখন খেলার সেই বিচারকার্যই প্রশ্নের মুখে। এবার ক্রিকেট বিশ্বকাপের আম্পায়াররা তো বলতে গেলে অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সহজ কথায়, ভুলের চূড়ান্ত করে ছাড়ছেন!কাল আফগানিস্তান-পাকিস্তান ম্যাচের আম্পায়ারিং নিয়েই প্রশ্ন তোলা যায়। হারিস সোহেল জীবন পেয়েছেন আম্পায়ারের ভুলে। সে ওভারে আম্পায়ার ছিলেন নাইজল লং। হারিসের ব্যাটে লেগে বল জমা পড়েছে উইকেটকিপারের গ্লাভসে কিন্তু লং আউট দেননি। এরপর পাকিস্তানকে ম্যাচ জেতানো ইমাদ ওয়াসিম ১ রানে থাকতেও জীবন পেয়েছেন আম্পায়ারের ভুলে। রশিদ খানের বল ইমাদের প্যাডে লেগেছিল। আফগানরা জোরালো আবেদন করলেও আম্পায়ার পল উইলসন সাড়া দেননি। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে ওটা নিশ্চিত আউট ছিল। রিভিউ না থাকায় আফগানরাও উইলসনের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারেনি।আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে তাই কালও প্রশ্ন উঠেছে। আর টুইটারে তা তুলেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক আকাশ চোপড়া, ‘আম্পায়ারিং ও নেতৃত্বের মান আজ প্রশ্নের মুখে...।’ সে ক্ষেত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একই প্রশ্ন তুলতে মুখিয়ে থাকার কথা! গত বৃহস্পতিবার ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ পর্যন্ত একটি পরিসংখ্যান দেওয়া যায়—সে ম্যাচ পর্যন্ত আম্পায়ারদের নয়টি ভুল সিদ্ধান্ত সফলভাবে ঠিক করতে পেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর বাকি দলগুলো মিলে রিভিউ নিয়ে ঠিক করেছে ১৪টি ভুল সিদ্ধান্ত। ভাবা যায়!এবার বিশ্বকাপ শুরুর দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে তো আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ক্রিস গেইলের ইনিংসে তাঁর বিপক্ষে তিন-তিনবার আঙুল তুলেছিলেন গ্যাফানি। দুবার বেঁচেছেন রিভিউ নিয়ে। তৃতীয়বারে দুর্ভাগ্য। রিভিউ নিলেও ‘আম্পায়ারস কল’ তাঁকে বাঁচতে দেয়নি। মজাটা সবাই পায় একটু পর। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেল, গেইল যে বলে আউট হয়েছেন, সেটি করার আগে মিচেল স্টার্ক করেছেন বিশাল এক নো বল। ক্রিজের অনেক বাইরে পা ফেললেও গ্যাফানির চোখ এড়িয়ে গেছে তা।পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে মাঠের আম্পায়ার ছিলেন কুমার ধর্মসেনা ও জোয়েল উইলসন। পাকিস্তানের ইনিংসে ১৪তম ওভারে ৭ বলে ওভার দিয়েছেন দুই আম্পায়ার। মাঠের দুই আম্পায়ারই বলের হিসেব রাখতে ভুল করেন। ভাগ্য ভালো, ওই ওভারের সপ্তম বলে কোনো রান হয়নি কিংবা উইকেট পড়েনি। না হলে বিতর্ক আরও বাড়ত। ওই ম্যাচেই বিতর্কের খোরাক জুগিয়েছে সফট সিগন্যাল। ক্রিস মরিসের বলে ডিপ মিড উইকেটে ইমরান তাহিরকে ক্যাচ দেন হারিস সোহেল। তাহির একপ্রকার নিশ্চিতই ছিলেন, ক্যাচটা যথার্থভাবে ধরেছেন। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠানোর আগে মাঠের আম্পায়ার সফট সিগন্যাল দিলেন নট আউট। বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হতে পারেননি থার্ড আম্পায়ার। ফলে মাঠের আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেই নট আউট দেওয়া হয় হারিসকে।আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক আছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচেও। মুজিব উর রেহমানের বলে লিটন দাসের ক্যাচ এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের যুক্তিতর্কের খোরাক। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠানোর আগে মাঠের আম্পায়ার সফট সিগন্যাল দিয়েছিলেন আউট। কিন্তু বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না টিভি আম্পায়ার আলিম দার। শেষ পর্যন্ত মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগন্যালের ওপর ভিত্তি করে লিটনকে আউট ঘোষণা করেন আলিম দার। তবে সিদ্ধান্তটি নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ আছে। টিভি রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, ক্যাচটা তালুবন্দীর সময় বল কিছু সময়ের জন্য মাটি ছুঁয়েছিল।গত বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারত ম্যাচে রোহিত শর্মার আউটের সিদ্ধান্তও প্রশ্নবিদ্ধ। কেমার রোচের শিকার হয়ে ফিরে যান রোহিত। মাঠের আম্পায়ারের নট আউটের সিদ্ধান্ত থার্ড আম্পায়ারের কাছে গিয়ে বদলে যায়। ইনসাইড এজের আবেদন করেছিল ক্যারিবীয়রা। মাঠের ইংলিশ আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ আবেদনটি সরাসরি নাকচ করে দেন। কিন্তু থার্ড আম্পায়ার মাইকেল গফ বল যখন ব্যাট পার হয়, তখন স্নিকো মিটারে স্পাইক দেখে সেটাকে অকাট্য প্রমাণ হিসেবে ধরে নিয়ে আউটের সিদ্ধান্ত নেন। তবে বলটি ব্যাট এবং প্যাডের মাঝ দিয়ে একই সময়ে পার হওয়ায় স্পাইকগুলো আসলে ব্যাটের নাকি প্যাডের, তা নিশ্চিত হওয়া ছিল বেশ কঠিন। আর আম্পায়ার গফ আউট নিয়ে তাঁর সিদ্ধান্তটি খুব দ্রুত জানিয়ে দেওয়াতে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় কানাঘুষা।ক্রিকেটমোদীরা কিন্তু চুপ করে থাকেননি। রোহিতের আউটের প্রতিশোধ নিতে উইকিপিডিয়ায় মাইকেল গফের পেজের কিছু কথা পাল্টে দিয়েছেন অজানা এক বা একাধিক ক্রিকেটপ্রেমী। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘...রোহিতকে মাঠের আম্পায়ার নট আউট ঘোষণা করলেও অকাট্য প্রমাণ ছাড়া সিদ্ধান্তটি পাল্টে তিনি তোপের মুখে পড়েন। সন্দেহ ছিল, তিনি ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠার পথ করতে তাদের দিকে টেনেছেন।’আসলে ক্রিকেটপ্রেমীদের এই প্রতিশোধপ্রবণ মানসিকতা হওয়ার পেছনে আম্পায়ারদের অবদান কিন্তু কম নয়। ভুলের পর ভুল সিদ্ধান্তে ম্যাচের ফল পাল্টে গেলে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনও পাল্টে যায়। এবার বিশ্বকাপে আম্পায়াররা যে পরিমাণ ভুল করছেন, তাতে আরও কী কী ঘটে কে জানে!
একসময় লীগ বলতেই মুসলিম লীগ বোঝাত। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের আগে লবণের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছিল। ১৫-১৬ টাকা সের (এক কেজির সমপরিমাণ)। স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল দুই আনা সের। তখন লীগবিরোধী প্রচার তুঙ্গে। নেতৃত্বে শেরেবাংলা। তাঁর ভক্ত বিডি হাবিবুল্লাহ গান লিখতেন। শেরেবাংলা জনসভায় বরিশালে কর্মী রাজ্জাককে বললেন, ‘গানডা গাও দেহি’। তো গানটি গাওয়া হলো:লীগ শাসনের গুণ কেমনছয় শ টাকা নুনের মণহায় রে আজব লীগের বাহানা।নির্বাচনে আমজনতার ভোট পেতে এ ধরনের প্রচারণার জুড়ি নেই। মুসলিম লীগ এখন ইতিহাসের জাদুঘরে। মুসলিম লীগের গণতন্ত্রায়ণের দাবিতে তৈরি হয়েছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। ‘আওয়াম’ উর্দু-ফারসি শব্দ। এর বাংলা জনগণ। অর্থাৎ, সরকারি মুসলিম লীগের পাল্টাপাল্টি জনগণের মুসলিম লীগ তৈরি হলো। সেই দলের নাম থেকে কয়েক বছর পর ‘মুসলিম’ শব্দটি খসে পড়েছিল। দল চালু থাকল আওয়ামী লীগ নামে। এখন লীগ বলতে আওয়ামী লীগই বোঝায়।একসময় আওয়ামী লীগ এ দেশে অপ্রতিদ্বন্দ্বী দল ছিল। পঁচাত্তরের আগস্টে অভ্যুত্থান ও হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তৈরি হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি—বিএনপি)। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলেরই আছে অনেক অঙ্গসংগঠন। আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনগুলোর নামের শেষে ‘লীগ’ থাকে। বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলোর নামের শেষে থাকে ‘দল’। নাম দেখেই বোঝা যায় কোনটি কোন গ্রহের উপগ্রহ। ইদানীং পথে–ঘাটে নতুন নতুন অঙ্গসংগঠন গজিয়ে উঠেছে, যাদের নাম দলের গঠনতন্ত্রে নেই। যেমন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক লীগ, জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদ, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া পরিষদ ইত্যাদি। নেতার নাম জুড়ে দিলেই কিংবা নামের শেষে ‘লীগ’ বা ‘দল’ থাকলেই এটি কোন বর্গের, তা বোঝা যায়। এদের ব্যানার-পোস্টার সব জায়গায় চোখে পড়ে।দুই দলেই আছে অসংখ্য তরুণ, তাঁরাই দলের মূল খুঁটি। নেতারা তাঁদের খুব একটা ঘাঁটাতে চান না। একদিকে আছে ছাত্রলীগ, অন্যদিকে ছাত্রদল। এরা কারণে-অকারণে প্রায়ই সংবাদ শিরোনাম হয়। লাঠিসোঁটা, বন্দুক-পিস্তল কিংবা চাপাতি-কিরিচ হাতে তাদের প্রকাশ্য মহড়া ও যুদ্ধ দেখা যায় রাস্তায়। সিটিজেন জার্নালিজমের কল্যাণে অনেক বেরসিক সাংবাদিক অস্ত্র হাতে এদের ছবি সংবাদমাধ্যমে পাঠিয়ে দেন।ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্ব প্রাচীনকালে কাউন্সিল সভার মাধ্যমে ছাত্ররাই নির্বাচন করতেন। এখন এই নিয়ম আর নেই। এখন গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার যুগ। গণতন্ত্রের কতটুকু চর্চা হয়, জানি না। তবে কেন্দ্রিকতা আছে শতভাগ। অঙ্গসংগঠনের কমিটি এখন ঠিক করে দেন মূল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। নেতৃত্বে বিভেদ বা টানাপোড়েন থাকলে তার প্রভাব দেখা যায় ছাত্রসংগঠনের মধ্যকার বিভাজন বা হাঙ্গামায়। সম্প্রতি এটি ভালোভাবেই ঘটেছে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলে।ছাত্রলীগ এখন ক্ষমতাসীনদের বলয়ে। তাদের হাতে অনেক ক্ষমতা। কমিটিতে থাকা মানে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া। পদ না পাওয়া মানে ইহকাল একেবারেই ঝরঝরে। এখন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা ‘আন্দোলন’ করছেন। বেশ কয়েকজন অনশনেও গেছেন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগসহ চার দফা দাবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাস্তবায়িত না হলে তাঁরা আমরণ অনশন করবেন (সূত্র: প্রথম আলো, ২৮ জুন ২০১৯)।ছাত্রদলের পুরোনো কমিটি ভেঙে দেওয়ায় অনেকেই নাখোশ। তাঁরা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন। ছাত্রদলের কমিটিতে থাকার জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেওয়ায় অনেকেই বাদ পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন। বয়সসীমা তুলে দেওয়া ও কাউন্সিলের তফসিল বাতিলের দাবিতে লাঠিসোঁটা এবং ক্রিকেটের স্টাম্প নিয়ে বিএনপি অফিসের সামনে মহড়া দিয়েছে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। গত বৃহস্পতিবার তারা বিএনপি অফিসের একটি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা ভেঙে ফেলে, বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয় এবং অফিস লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারে (সূত্র: ওই)। বিএনপি নিজেদের একটি ‘নির্যাতিত’ দল মনে করলেও এটি আগে কয়েক মেয়াদে ক্ষমতায় ছিল এবং ভবিষ্যতেও ক্ষমতায় যাওয়ার আশা রাখে। সুতরাং পদ–পদবির লড়াই চলছে, চলবে। পদ মানেই ক্ষমতা এবং নানান প্রাপ্তি।ছাত্রসংগঠনের প্রসঙ্গ মানেই ছাত্ররাজনীতি। এ বিষয়ে গবেষক আবুল আহসান চৌধুরী ও তাঁর একসময়ের শিক্ষক অধ্যাপক আহমদ শরীফের আলাপচারিতার কথা মনে হলো। প্রাসঙ্গিক মনে হওয়ায় এখানে তার কিছু অংশ উদ্ধৃত করছি:আবুল আহসান চৌধুরী: আমাদের শিক্ষাঙ্গনে যে সন্ত্রাসী-নৈরাজ্য-অবক্ষয় চলছে, তার কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?আহমদ শরীফ: শিক্ষাঙ্গনে কোনো সন্ত্রাস-নৈরাজ্য নেই, আমাদের রাজনীতির অঙ্গনে আছে। তারা গুন্ডা জোগাড় করেছে টাকা দিয়ে ছাত্রকে। তারা তাদের উপদল বলে না কী বলে—মানে ছাত্র ফ্রন্ট আরকি—বাংলায় কী বলে—অঙ্গদল—অঙ্গদল হিসেবে কালকে থেকে যারা তাদের ছাত্র অঙ্গদল–যুব অঙ্গদল—চল্লিশ বছর পর্যন্ত যুব থাকে—অঙ্গদল তুলে দিক, সন্ত্রাস মুহূর্তে চলে যাবে। পয়সা না দিলে কে কার জন্য মারামারি করে? কেউ করে না।আহসান: তাহলে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি সম্পর্কে আপনার ধারণা কি নেতিবাচক?শরীফ: কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাজনীতি করে পয়সা পেয়েই এবং আমাদের জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলো গুন্ডা পোষণ করে বলে, পয়সা দিয়ে পালন করে বলে, তাদের খুনি বানায় বলেই তারা মাস্তান-খুনি-গুন্ডা হয়েছে। কালকে তারা এটা বন্ধ করে দিলে আর হবে না। তার একটা প্রমাণ, তুমি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়েছ, তুমি দেখেছ, ইলেকশন না থাকলে কোনো দলীয় চেতনা হলে-হোস্টেলে তুমি দেখোনি। ইলেকশন আসলে দলীয় চেতনা হতো। এখন তো পয়সা দিয়ে দলীয় চেতনা এনেছে। কাউকে খুন করার জন্য হাইকমান্ড থেকে, দলপ্রধান থেকে, দলের পক্ষ থেকে খুন করবার জন্য আদেশ দেয়, মারামারি করার জন্য আদেশ দেয়, টাকা যত লাগে। এতেই প্রলুব্ধ হয়। প্রথমত, সে ক্যাশ টাকা পায়। সেটা দিয়ে সে চায়নিজ খেতে পারে, মদ খেতে পারে, আরও অন্য অপকর্ম করতে পারে। দ্বিতীয় হচ্ছে, একটা ভরসা—কোনোরকমে যদি প্রাণে বেঁচে যায়, তাহলে একটা ব্যবসা ফাঁদানো যাবে, একটা চাকরি পাওয়া যাবে। পেয়েছে না! অনেকে পেয়েছে। এই কারণে ওদের প্রলুব্ধ করে আনে। কাজেই শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসের বিষয়ে কথাটা যেভাবে বলছ, কথাটা সেভাবে সত্য নয়। শিক্ষাঙ্গনে কোনো সন্ত্রাস নেই। দেশের মধ্যে কোনো সন্ত্রাস নেই। সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, পয়সা দিয়ে জিইয়ে রেখেছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলো যদি আজকেই বলে দেয়, বিএনপি যদি আজকেই বলে দেয়, আমাদের আজ থেকে কোনো অঙ্গদল থাকবে না, ছাত্র-যুব অঙ্গদল থাকবে না; জামায়াতে ইসলামী বলে দেয়, ছাত্র-যুব অঙ্গদল থাকবে না; আওয়ামী লীগ যদি বলে অঙ্গদল থাকবে না; কাল থেকে মারামারি বন্ধ।আহসান: একসময় তো বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে সুস্থ রাজনীতি ছিল?শরীফ: এখনো থাকবে, চিরকাল থাকবে।... যেমন চরাঞ্চলে গুন্ডা জোগাড় করে পয়সা দিয়ে লাঠিয়াল জোগাড় করে চর দখল করে। এটা তো ভাড়াটে কাজ। এটা তো পলিটিকস নয়। এই যেমন ছাত্ররা মাও সে তুংয়ের জন্মবার্ষিকী করেছে, গঞ্জালেসের মুক্তি দাবি করেছে। সেটা যে সে জিনিস নয়। দুনিয়ার মজদুর এক হও বলে যে স্লোগান দেয়, সেটা ছাত্রদলীয় নয়, এটা হচ্ছে বিবেকের। সেটা দেশের ভেতরে হোক, দেশের বাইরে হোক (সূত্র: আলাপচারী আহমদ শরীফ, আগামী প্রকাশনী, ২০১৭)।আহমদ শরীফের চাঁছাছোলা মন্তব্যগুলো ভাবায়। মূল রাজনৈতিক দল এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলোর মধ্যে আছে প্যাট্রন-ক্লায়েন্ট সম্পর্ক। নামে ছাত্রসংগঠন হলেও এগুলো এখন রাজনৈতিক দলের শিক্ষাঙ্গনভিত্তিক শাখা। একটি পদ পাওয়ার জন্য মানুষ কত মরিয়া হতে পারে, ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সাম্প্রতিক উদাহরণ টানলেই বোঝা যায়। ৩০-৪০ জনের কমিটি বাড়িয়ে ৩০০-৪০০ জন করেও কূল পাওয়া যাচ্ছে না। সবাইকে জায়গা দিতে আরও কত অঙ্গদল তৈরি করতে হবে, কে জানে!মহিউদ্দিন আহমদ: লেখক ও গবেষকmohi2005@gmail.com
নতুন সেতু নির্মাণের জন্য আগের সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। পাশে তৈরি করা হয়েছে বিকল্প সড়ক। এর মধ্যে কাজের মেয়াদ শেষ হয়েও পার হয়েছে এক বছর। এখনো হয়নি সেতু। বিকল্প সড়কটিতেও উঠেছে পানি। এতে কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।এ অবস্থা রংপুর নগরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুকরুল এলাকায়। সড়কটি দিয়ে কুকরুল, আমাশু, বালাটারি, জলছত্র, খটখটিয়াসহ পাঁচটি গ্রাম এবং গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের আরও পাঁচটি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। এসব গ্রামে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বাস।এসব এলাকার লোকজন বলছেন, ভেঙে ফেলা সেতুর পাশে জমির মধ্যে তৈরি বিকল্প সড়ক দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা গেছে। এখন বর্ষা আসায় সেই সড়কে পানি উঠেছে। এর ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে।এ পথ দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন আমাশু এলাকার বাসিন্দা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুকনো মৌসুমে চলাচলে অসুবিধা না হলেও বর্ষাকালে বিকল্প সড়কে পানি ওঠায় দুর্ভোগ হয়েছে।সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের আগস্টে বন্যায় কুকরুল এলাকার সেতুটি ভেঙে যায়। সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করার জন্য সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়রের আমলে ২০১৭ সালের ২৩ মে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী কুকরুল সেতুসহ খটখটিয়া এলাকায় আরও একটি সেতুর একসঙ্গে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। সেতু দুটির নির্মাণকাজ পায় শহীদ ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছর ২ জুন দুটি সেতুরই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো একটি সেতুরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজম আলী কাজের ধীরগতি ও কিছু সময় কাজ বন্ধ থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আশা করি এবার অল্প সময়ের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে।’জানতে চাইলে ঠিকাদার শহীদ উদ্দিন গতকাল শনিবার বলেন, ‘অর্থসংকটে এত দিন কাজ করতে পারিনি। আশা করি খুব শিগগির কাজ শেষ করা হবে।’গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, কুকরুল সেতুটির খুঁটি বসানো হয়েছে। ওপরের অংশে রডের কাজও করা হয়েছে। নির্মাণাধীন সড়কের পাশের বিকল্প সড়কের ওপর পানি উঠেছে। সেটি দিয়ে কষ্ট করে চলাচল করছেন লোকজন। এলাকার কয়েকজন বলেন, এখনো সড়কটি দিয়ে কোনোরকমে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করতে পারছে। পানি বেশি হলে একপর্যায়ে কোনো যানবাহনই চলবে না। এমনকি হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।কুকরুল, আমাশু ও খটখটিয়া এলাকায় সবজিসহ নানা কৃষিপণ্য উৎপন্ন হয়। এসব পণ্য ওই সড়ক দিয়ে এক কিলোমিটার পেরিয়ে নগরের প্রধান সিটি বাজারে আসে। কিন্তু সড়কটিতে পানি ওঠায় এসব পণ্য ভ্যানে ও পিকআপ ভ্যানে করে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে খটখটিয়া এলাকা দিয়ে আনতে হচ্ছে।কুকরুল এলাকার কৃষক আজিজার রহমান বলেন, ‘এক বছরের কাম দুই বছরেও হয় না। এলা বর্ষাকাল চলি আসছে। ভাঙা সেতুর পাশের জমি দিয়া একটা রাস্তা করা হইলেও সেই রাস্তাত পানি। কী যে কষ্ট হইছে।’এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এটি আগের মেয়রের আমলে দরপত্র হওয়া কাজ। তবে তা শেষ না হওয়ায় লোকজনের দুর্ভোগ হচ্ছে। ঠিকাদারকে তাগাদা দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। এখন কাজ শেষ পর্যায়ে।
বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য গ্রহণযোগ্য মানের দুধের উৎপাদন বাড়িয়ে দুগ্ধ খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। এই খাতের উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন হলো সম্প্রতি অনুমোদিত প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পটি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। কিন্তু ঠিকভাবে কাজ করার জন্য তাদের প্রয়োজন দুগ্ধ খাতের সবার কাছ থেকে সঠিক তথ্য ও সহযোগিতা। কিন্তু শুল্ক বাড়ানোর দাবিতে খামারিদের সাম্প্রতিক কিছু কাজকর্মও (রাস্তায় আন্দোলন এবং দুধ রাস্তায় ঢেলে ফেলে দেওয়া) বর্তমান সময়ে দুগ্ধ খাতের জন্য মূল উদ্বেগের বিষয়।প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (২০১৮) মতে, বাংলাদেশ বছরে ৯০ লাখ ৪০ হাজার টন দুধ (প্রয়োজন ১ কোটি ৫৪ লাখ টন) উৎপাদন করে। ইন্টারন্যাশনাল ফার্ম কম্পারিজন নেটওয়ার্কের (আইএফসিএন) মতে, বাংলাদেশ বছরে সর্বমোট ৮০ লাখ ৮০ হাজার টন দুধ উৎপাদন করতে পারে। এর মানে হলো, বাংলাদেশ তার মোট প্রয়োজনের ৬৩ শতাংশ দুধ (আইএফসিএনের মতে ৫৪ শতাংশ) উৎপাদন করতে পারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো—বিবিএসের (২০১৮) মতে, বাংলাদেশ ১১ হাজার টন দুধ আমদানি করে, ফলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে, ৬৭ শতাংশ (স্থানীয় উৎপাদন এবং আমদানি) এবং আইএফসিএনের মতে, ৫৯ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয়। স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন থেকে বাংলাদেশ কতটা দূরে? ২০৩০ সাল পর্যন্ত হিসাব করলে বাংলাদেশের আরও ৬০ লাখ টন দুধ প্রয়োজন। এই ঘাটতির আরও ৬০ লাখ টন যোগ হয়ে পরবর্তী ১২ বছরে বাংলাদেশের ১ কোটি ২০ লাখ টন দুধ উৎপাদন করা প্রয়োজন। দেশে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো হলো জমির প্রাপ্যতা, গবাদিপশুর পর্যাপ্ত খাবারের অভাব এবং গরুর স্বল্প উৎপাদন ক্ষমতা। সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন না করলে দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা বাংলাদেশের জন্য বেশ কঠিন হবে।শুধু আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদপত্র যেভাবে শিরোনাম করেছে, তার কারণ বোধগম্য না। শুল্ক-সম্পর্কিত কাজগুলো প্রকৃত উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। শুল্ক কমালে জাতীয় সার্বিক উন্নয়ন ও ভোক্তাদের সুবিধা বাড়বে। আর শুল্ক কমালে পারিবারিক ব্যবসা ছাড়া ছোট পরিসরের খামারিদের আয় কমে যাবে। বর্তমানে স্কিমড গুঁড়া দুধের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই পরিমাণ একই আছে, কিন্তু খামারিরা তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার দাবি করছেন। কিন্তু বাস্তবে দুগ্ধখামারিদের আয় বৃদ্ধি নির্ভর করে দুধের উৎপাদন খরচ কমার ওপর, শুল্ক বাড়ানোর ওপর নয়। বিশ্বব্যাপী দুধের গড় দামের চেয়ে বাংলাদেশের দুগ্ধখামারিরা ৩৭ শতাংশ বেশি মূল্য পান। যদিও ছোট খামারিদের উৎপাদন খরচ বেশি হয় বলে তাঁদের লাভের পরিমাণ বেশি হয় না। দুধের দাম বাড়ানো বা আমদানি শুল্ক বাড়ানোর চেয়ে উৎপাদন দক্ষতা বাড়িয়ে খরচ কমানোর বিষয়ে খামারিদের বেশি তৎপর হওয়া উচিত। শুল্ক বাড়ানো খামারিদের জন্য ভালো হতে পারে, কিন্তু এতে খরচ কমানো এবং দুধের মানোন্নয়নের মতো বিষয়গুলোর কোনো সমাধান হবে না। অন্যদিকে, শুল্ক বাড়ানো হলে ভোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং এর ফলে দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার সক্ষমতা কমবে।‘ভোক্তারা হলেন নতুন সিইও এবং খামারি ও প্রক্রিয়াজাতকারীদের ওপর তাঁদের প্রভাব আছে’—উক্তিটি করা হয়েছিল গত ১৫-১৯ জুন বার্লিনে অনুষ্ঠিত ১২তম ইন্টারন্যাশনাল ফার্ম কম্পারিজন নেটওয়ার্কের (আইএফসিএন) ডেইরি কনফারেন্সে। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা ও এশিয়ার ৪৮টি দেশ থেকে ৮৫ জন দুগ্ধ গবেষক অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে এ–ও বলা হয়েছিল যে নিম্নমান এবং দুধের উচ্চ মূল্যের কারণে ভোক্তারা ‘বিকল্প দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্যে’র প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যায়, দুগ্ধখামারি ও প্রক্রিয়াজাতকারীদের ওপর ভোক্তাদের প্রভাব অনেক বেশি এবং দুগ্ধ খাতের উন্নয়ন করতে হলে ভোক্তাদের চাহিদার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।শুল্ক বাড়ানো, নাকি কমানো দুগ্ধ খাতের প্রতিযোগিতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে—এই প্রশ্নে এক সাম্প্রতিক গবেষণায় পরিষ্কার দেখা যায় যে শুল্ক ১০ শতাংশ কমালে খামারিরা ছোট পরিসরে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, কিন্তু মাঝারি ও বড় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। অন্যদিকে, ১০ শতাংশ বাড়ালে ভোক্তা ও দেশ পর্যাপ্ত পরিমাণে সুবিধা পাবে এবং এর ফলে দুধের ব্যবহার বাড়বে। বর্তমানে দুধের ব্যবহার কমছে, এর প্রধান কারণ তরল দুধের উচ্চ মূল্য ও নিম্নমান।দুগ্ধখামারিদের সাম্প্রতিক আন্দোলন করে রাস্তায় দুধ ঢেলে ফেলা সরকারের কাছে নিজেদের অবস্থা তুলে ধরার কার্যকর কোনো উপায় নয়। এর ফলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি (অর্থ ও সময়) হবে। তা না করে তাঁদের নিজেদের ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং দক্ষতা বাড়ানো উচিত।আন্তর্জাতিক দুগ্ধ কোম্পানি বা আমদানিকারকদের একদিকে স্থানীয় দুগ্ধ উন্নয়নে মনোনিবেশ করতে হবে, অন্যদিকে সরকারকেও তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে ন্যায্য ভূমিকা রাখতে হবে। ঠিক একইভাবে স্থানীয় ব্যবসা সম্প্রসারণেও সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের দুগ্ধ খাতের উন্নয়নে সব অংশীদারকে একত্র হয়ে কাজ করতে হবে। খামারিদের দায়িত্ব নিজেদের দক্ষতা বাড়ানো, দুধের উৎপাদন খরচ কমানো এবং দুধের ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। গবেষক ও শিক্ষাবিদদের সরকারের জন্য কৌশল বের করতে হবে, যেন সরকার দুগ্ধ খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। সব ধরনের উন্নয়নকাজ যেন ঠিকভাবে হয়, তা নিশ্চিত করার করার প্রধান কার্যকরী শক্তি সরকার। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ইন্টিগ্রেটেড ডেইরি রিসার্চ নেটওয়ার্ক (আইডিআরএন) গত বছর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্মানির ইন্টারন্যাশনাল ফার্ম কম্পারিজন নেটওয়ার্কের সঙ্গে যৌথভাবে ডিপার্টমেন্ট অব অ্যানিমেল নিউট্রিশন প্রতিষ্ঠা করে। আইডিআরএন দুগ্ধ খাতের অংশীদারদের একত্র করতে কাজ করছে, যেন দুগ্ধ খাতের উন্নয়নে সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।এভাবে এটি পরিষ্কার যে দুগ্ধ খাতের উন্নয়নের জন্য শুধু আমদানি শুল্কের ওপর গুরুত্বারোপ না করে দুগ্ধ খাতের সব অংশীদার যেন তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে, তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।ড. মো. মহিউদ্দিন: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল নিউট্রিশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপকmohammad.uddin@bau.edu.bd
‘আমার ছেলেকে কেন জানে মারল। পঙ্গু করে দিলেও তো আমার বুক আগলে থাকত,’ রিফাতের মায়ের এই অসহায় আকুতি প্রমাণ করে, আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দূরের কথা, তাদের কাছে নতজানু হয়ে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার পরিবেশে বাস করছি। এতই অসহায় যে বলছি, তোমরা জানে মেরে ফেলো না, পঙ্গু করে হলেও কোনো রকমে বাঁচিয়ে রেখো।গুম হয়ে যাওয়া মা-বাবারাও আবেদন করে যাচ্ছে আমাদের সন্তানের লাশটুকু অন্তত ফেরত দাও।হত্যা–খুন আগেও হতো। তবে তখন তা হতো গোপনে, নির্জনে বা ভাড়াটে খুনি দিয়ে। অপরাধীরা প্রকাশ্য হতে ভয় পেত। পুলিশে ধরবে, গণপিটুনি খাবে, চিহ্নিত হলে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হবে। কিন্তু এখন চিত্র পুরো উল্টো হয়ে গেল কেন? সাধারণ মানুষ কেন অপরাধ প্রতিরোধে এগিয়ে আছে না? মহামান্য হাইকোর্ট পর্যন্ত বলছেন, এটি সমাজের ব্যর্থতা। কেন সমাজ ব্যর্থ হচ্ছে?এককথায় এর উত্তর পাওয়া যাবে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ কারণটি বোঝা যায় প্রথম আলোর হেডলাইন থেকে, ‘বহু অভিযোগ নিয়ে ও তারা দাপিয়ে বেড়াত’। মাদক বিক্রি, সেবনসহ আগেও কোপানোর ইতিহাস রয়েছে তাদের। তারা বহু মামলার আসামি ছিল। এমনকি পুলিশ অফিসারের বাসায় তাণ্ডব চালানোর মতো ‘বীরত্বসূচক’ কৃতিত্বও তাদের রয়েছে। অপরাধের বহু রকম ‘বিজয়মুকুট’ তারা ইতিমধ্যে অর্জন করে ফেলেছে।ফলে, প্রকাশ্যে কোপানো সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা চলছে। চাপাতি দিয়ে উপর্যুপরি কোপানোর এই বর্বরতার উৎস কোথায়?আমরা হয়তো কিছু তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারব, কিন্তু সমাধান যাদের হাতে, তাদের সেটি করতে বাধ্য করবে কারা? বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?কারা এর জন্য দায়ী, গলদ কোথায়, প্রতিকার কী?এ আমার, এ তোমার পাপ।কেউই এর দায় এড়াতে পারি না। পরিবার, সমাজ, প্রতিবেশী, রাষ্ট্র, সর্বোপরি রাজনীতি—সবাইকে এর কোনো না কোনো অংশের দায় নিতে হবে।পরিবারের কথায় আসি: তোমারে বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সেআমার পরিবারে এমন পশু, দানব কীভাবে সৃষ্টি হলো? এমনকি পাঁচ লাখ টাকার মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার পরও নতুন মডেলের আরেকটি মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় মা-বাবা উভয়কে পুড়িয়ে মারে?গোকুলে এমন পিশাচ কেমনে তৈরি হলো?সন্তান কি এক দিনে বখে যায়? নাকি আমাদের সন্তান প্রতিপালন পদ্ধতিতে রয়েছে বড় গলদ?প্রথমত, বুঝলাম কোনোভাবে কোনো সন্তান বখে গেছে, বিপথে চলে গেছে, কিন্তু তার বখাটেপনা, অনৈতিক, অসামাজিক, এমনকি অপরাধমূলক কাজগুলোও কি আমাদের নজরে পড়বে না? এতই ব্যস্ততা, নাকি উদাসীনতা আমাদের?যে ঘাতক আমাকেও বধিবে, তার কি কোনো পূর্বাভাসই আমরা দেখতে পাই না? তত্ত্বাবধান, নজরদারিতে কি তাহলে বড় গলদ রয়েছে?মাদকাসক্ত ছেলে বা মেয়ে একসময় নিজের মা–বাবাকেই খুন করে ফেলতে পারে, তার এত দিনের বেপরোয়া, সহিংস উন্মাদনা দেখেও কি আমরা অনুধাবন করতে শিখিনি? অভিভাবক হিসেবে আমি কিছুই জানি না—এমনটি হওয়া কি স্বাভাবিক? নাকি টের পেয়েও সন্তানের ক্ষমতা, দাপট দেখে আরও গর্ব অনুভব করছি। প্রতিবেশীরা আরও সমীহ করে চলে যে অমুকের বাপ ‘সম্মান দিয়ে চলো’। দেখে বুকের ছাতি বড় হয়ে যাচ্ছে? নাকি মূর্খ ছেলে কিছু না করেও কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ‘উপার্জন’ করছে দেখে সন্তানের অভাবিত ‘উন্নতিতে’ উৎসাহ বোধ করছি? নাকি সন্তানকে বাগে আনতে পারছেন না?বখে যাওয়া ছেলেগুলো যখন মাদক নেয়, তখন তাদের বোধ–বুদ্ধি–বিবেচনাবোধ সব হারিয়ে ফেলে। তারা তুচ্ছ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে কাণ্ডজ্ঞানহীন হয়ে যেকোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।এই ছেলেমেয়েগুলো তো এ এলাকারই সন্তান। যত কুকর্ম, অপকর্ম করে বেশির ভাগ তো নিজ এলাকায়ই করে। মাদক কেনাবেচা, ইভ টিজিং, প্রেমের প্রস্তাব, চাঁদাবাজি, মাস্তানি, খুনখারাবি—সবই তো কোনো না কোনো সমাজেই ঘটছে?‘সামাজিক সচেতনতা ও সামাজিক প্রতিরোধের’ কথা আমরা অহরহ বলছি। কিন্তু সমাজ কি মরে গেছে, নাকি পচে গেছে? সবকিছুই ভেঙে পড়ছে কেন? এসব অপরাধ কি কালেভদ্রে একটি–দুটি ঘটে, না প্রায়ই ঘটে? এসবই কি খুব গোপনে, লোকচক্ষুর আড়ালে ঘটে, না অনেক ঘটনা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটে?তাহলে প্রতিরোধের উদাহরণ কোথায়?আগে এই সমাজে ছোটখাটো অপরাধ, ঝগড়া-বিবাদ বা কোনো অনাচার হলে স্থানীয় মুরব্বিরা বিচারসভা বসাতেন। বিবেকবান মুরব্বিরা পারিবারিক–সামাজিক সংকটগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধান করে দিতেন।এখন তেমন ‘সামাজিক ন্যায়বিচার’ তো নেই, বরং যা আছে সেখানে গোষ্ঠী, পরিবার, দলপ্রীতির সভা হয়। ক্ষমতাবানেরা পার পেয়ে যায়, প্রশ্রয় পায়। দুর্বলদের ওপর শাস্তি বা বদনাম দেওয়া হয় (তোমার মেয়েকে সামলাও, তার চরিত্র ঠিক করো)। অথবা বিচারের নামে অবিচার করা হয়, সালিসের নামে, ফতোয়ার নামে দুর্বলদের ওপর অমানবিক শাস্তি দেওয়া হয়।সবই হয় ‘ক্ষমতার’ ইকুয়েশন বিবেচনা করে।দ্বিতীয়ত, চোখের সামনে অপরাধ ঘটলেও কেউ এগিয়ে আসেন না প্রতিরোধ করতে।কেউ আসেন না ভয়ে নিজে আক্রান্ত হবেন বা পরে টার্গেট হবেন—এই আশঙ্কায়।কেউ ভয় পান পুলিশের ঝামেলার কথা মনে করে।দু–একজন সাহস করে এগিয়ে এলেও তার খেসারত দিতে হয় বিভিন্নভাবে (বদরুল আগেও একবার খাদিজাকে প্রকাশ্যে উত্ত্যক্ত করার সময় কিছু লোক তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে সে ওই লোকদের বিরুদ্ধে মামলা করে, পুলিশ ওই উদ্ধারকারীদের হয়রানি শুরু করে, এমনকি তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেয়)।বুঝুন ঠেলা। যান সমাজসেবা করতে, অপরাধ দমন করতে। মানবাধিকার সংস্থা, নারীবাদী সংগঠনগুলো তখন কী ভূমিকা নিয়েছিল? এভাবে কি ওই অপরাধী আরও উৎসাহ পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেনি?ভালো মানুষগুলোর অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়ানোর মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়নি? তাঁরা কি আবার এ রকম অন্যায়ের প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে উৎসাহ বা সাহস পাবেন?লক্ষ করলে দেখবেন, পথেঘাটে, হাটেবাজারে, যানবাহনে এ রকম অনেক অন্যায় কাজ হচ্ছে। আমরা বেশির ভাগ ভদ্রলোক(?) এগুলো না দেখার ভান করি। গা বাঁচিয়ে পাশ কাটিয়ে যাই।এ রকম ছোটখাটো অন্যায়, অপরাধ প্রতিরোধ অন্তত সমাজ, গণমানুষ যদি করতে সক্ষম হতো, তাহলে অনেক অপরাধ কমে আসত।কিন্তু প্রকাশ্যে দায়ের সামনে দাঁড়ানোর কথা যাঁরা বলেন, তারা নিজেরা ওই অবস্থায় কী করতেন?কেন সমাজ এমন হলো?একটি জীবন্ত, প্রাণবন্ত, মানবিক সমাজের তো এমন হওয়ার কথা নয়।প্রশ্নের উত্তর যেমন জানতে হবে, একে বদলানোর উপায় বের করা আরও জরুরি।পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা:অপরাধের পেছনে আপনার আমার যত দায় থাকুক, অবশেষে অপরাধ দমন, গ্রেপ্তার, আইনের কাছে পৌঁছানোর সাংবিধানিক দায়িত্ব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার।সঠিক আসামিকে দ্রুত ধরার, নিরপরাধীকে হয়রানি না করা, সৎভাবে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া—কোন দায়িত্বটি সঠিকভাবে হচ্ছে? নুসরাতকে বরং উল্টো ওসি মোয়াজ্জেম কী হয়রানিটা করল? ঢালাওভাবে সব পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ঠিক হবে না এটা ঠিক, তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন নেই—এমন লোক পাওয়া কঠিন।কেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোক সঠিক দায়িত্ব পালন তো করছেন না, বরং অপরাধীদের সহযোগিতা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ?টাকাপয়সার লেনদেন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, নৈতিক মানের অবনতি, কম বেতন, ট্রেনিংয়ের অভাব?কারণ অনেক হতে পারে, তবে সমাধান খুঁজতে হবে এখনই।রাজনীতিএ বিষয়ে কথা বলা ঝুঁকির বিষয়। তার মানে সকল ক্ষমতার উৎস রাজনীতি।তাই সব উৎসাহ, অনুপ্রেরণার উৎস রাজনীতি এবং সব ভয়ের ও উৎস রাজনীতি।এতক্ষণ যাদের বিভিন্ন ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা বললাম, তাদের ক্ষমতা নিমেষে হারিয়ে যাবে যদি রাজনীতি পরিশুদ্ধ হয়।প্রতিটি অপরাধকে ‘রাজনৈতিকীকরণের’ ফলে অপরাধ আর স্রেফ অপরাধ থাকছে না; তা রাজনীতির খেলায় পরিণত হচ্ছে। তাই পুলিশ ও বিচার বিভাগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের সুযোগ সীমিত হয়ে আছে।সবশেষে রিফাতের স্ত্রী মিন্নির সাহসিকতা ও স্বামীর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্যের প্রশংসা না করলে আমরা নিজেরা অপরাধী হয়ে থাকব। যারা মাদকাসক্ত ও বখে যাওয়া, তারা জোর করে মিন্নিদের মতো বহু সুন্দরী মেয়েকে বাধ্য করে তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে বা ঘুরে বেড়াতে। একসময় তাদের অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে তারা ও তাদের অভিভাবক দ্রুত অন্যত্র বিয়ে দিয়ে থাকেন। কিন্তু এদের কি শেষ পর্যন্ত সমাজ বা রাষ্ট্র রক্ষা করতে পারছে?ডা. তাজুল ইসলাম: প্রফেসর অব সাইকিয়াট্রি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা।drtazul84@gmail.com
উচ্ছেদের চার মাসের মাথায় কর্ণফুলী নদীর উদ্ধার করা জায়গা আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নগরের মাঝিরঘাট বাংলাবাজার এলাকায় প্রায় ১০টি লবণ কারখানা ও গুদাম নতুন করে নির্মাণ করেছেন আগের দখলদারেরা। চার মাস আগে উচ্ছেদের সময় এই কারখানাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।উচ্ছেদ করা অংশে প্রায় দুই মাস আগে একটি সীমানাদেয়াল দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদ করার পর জেলা প্রশাসনের দেওয়া সীমানাচিহ্ন ও বন্দরের সীমানাদেয়ালের ভেতরের অংশ দখল করে নতুন করে এসব টিনের স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে।জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা তাদের আইন অনুযায়ী এই দেয়াল দিয়েছে। বাংলাদেশ জরিপ (বিএস সার্ভে) অনুযায়ী ওই জায়গা বন্দরের বলে দাবি করছে। উচ্ছেদ করা জায়গায় অনেকগুলো স্থাপনা গড়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন আমরা রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদকে পাঠাব।’ এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দায়িত্ব পুরোপুরি বন্দর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। এখন তারা যদি তা না করে নতুন করে স্থাপনার অনুমতি দেয়, তাহলে কী করা যাবে?হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। সে সময় সদরঘাট থেকে মাঝিরঘাট এলাকায় প্রায় ২০ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করে নদীর অংশ চিহ্নিত করে সীমানাখুঁটি দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘কত কষ্ট করে এই উচ্ছেদ করেছিলাম। এখন সেখানে নতুন করে স্থাপনা গড়ে উঠছে। এখন উচ্ছেদ কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।’গতকাল শনিবার মাঝিরঘাটে দেখা গেছে, উদ্ধার করা জায়গার প্রায় ৬২ ফুট অংশ ঘিরে লম্বালম্বি পাকা দেয়াল নির্মাণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৪২০ ফুট দীর্ঘ দেয়ালের বাইরে (রাস্তার দিকে) গড়ে তোলা হয়েছে নতুন করে প্রায় ১০টি টিনের স্থাপনা। এগুলো লবণের গুদাম ও কারখানার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।উদ্ধার হওয়া জায়গায় ১০টি লবণ কারখানা ও গুদাম নির্মাণ করেছেন আগের দখলদারেরা দখল ঠেকাতে দুই মাস আগে দেয়াল দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষমাঝিরঘাটের বাজারগলি থেকে আনু মাঝিরঘাট খালের মাথা পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিমে এই দেয়াল দেওয়া হয়। খালের পাশ ধরে আবার নদীর মুখ পর্যন্ত আরেকটি দেয়াল দেওয়া হয় উত্তর-দক্ষিণে। এই সীমানাদেয়ালের পাশ ঘেঁষে ফারিয়াল সল্ট অ্যান্ড ক্রাশিং, নূরে মদিনা সল্ট, আল মদিনা সল্টসহ বেশ কয়েকটি কারখানা ও গুদাম হয়েছে। অথচ এসব কারখানা ও গুদাম উচ্ছেদের সময় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।নূরে মদিনা সল্টের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘উচ্ছেদের সময় আমাদের দুটি কারখানা ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এখন নতুন করে আবার টিনের স্থাপনা নির্মাণ করেছি। বন্দর কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে কাজ শুরু করব।’কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রিট আবেদনকারী হাইকোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ সীমানাদেয়াল দিলে দিক। কিন্তু উচ্ছেদ করা অংশে নতুন করে স্থাপনা গড়ে তোলা যাবে না। বন্দর কর্তৃপক্ষও এই অনুমতি দিতে পারবে না। এটা হলে আমি আবার আদালতের দ্বারস্থ হব।’মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের আইনজীবী মনজিল মোরসেদের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসন উচ্ছেদকাজ শুরু করেছিল। তবে গত ৯ এপ্রিল কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা এক মাসের মধ্যে অপসারণ করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন আদালত।চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপব্যবস্থাপক (ভূমি) জিল্লুর রহমান বলেন, ‘নতুন করে কেউ যাতে দখল করতে না পারে, সে জন্য বাংলাবাজার এলাকায় দেয়াল দেওয়া হয়েছে। দেয়ালের বাইরের অংশে (রাস্তার দিকে) আমাদের জমি রয়েছে। ওখানে কারা অস্থায়ী স্থাপনা করছে, তা দেখে বলতে হবে। আমাদের অনুমতি আছে কি না, তা-ও এখন বলতে পারছি না। তবে অবৈধভাবে কেউ কিছু করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার নাম করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রায় ২০০ ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জাহানপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ওই টাকা আদায় করেছেন।দেড় বছর ধরে দফায় দফায় টাকা দিলেও ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা আজও বিদ্যুৎ পাননি। এ ব্যাপারে জাহানপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নানাইচ গ্রামের বাসিন্দা মতিশ পাহান ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর পক্ষে ২৫ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।পশ্চিম নানাইচ গ্রামের মতিশ পাহানসহ বিদ্যুৎ-সংযোগের জন্য আবেদন করা কয়েকজন গ্রাহক অভিযোগ করেন, পশ্চিম নানাইচ গ্রামের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেন বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার নামে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কয়েক দফায় গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের কাছ থেকে তিন-চার হাজার টাকা করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা আদায় করেন। গ্রামে ইতিমধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার টানানো হলেও মিটার সংযোগ না দেওয়ায় বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না আবেদনকারীরা।গত শুক্রবার পশ্চিম নানাইচ গ্রামে গিয়ে একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের মধ্যে রণজিৎ কুমার নামের একজন বলেন, ‘প্রথমে পোল (বিদ্যুতের খুঁটি) বাবদ কারও কাছ থেকে ১ হাজার, আবারও কারও কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে মিটার ও ট্রান্সফরমার লাগানোর কথা বলে আরও ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার করে টাকা করে আবেদনকারীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার টানানোর পর বাড়িতে মিটার লাগানোর জন্য পল্লী বিদ্যুতের লোকজন প্রত্যেক গ্রাহককে ৪৫০ টাকা করে দিতে বলছেন। গ্রামবাসী মোয়াজ্জেমকে টাকা দেওয়ার কথা বললে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে আমাদের জানান।’নিতীশ পাহান নামের আরেক গ্রাহক বলেন, ‘মোয়াজ্জেম আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই। অথচ তিনি বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার নাম করে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে তিন-চার হাজার টাকা করে আদায় করেছেন। এই প্রতারকের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।’নজরুল ইসলাম নামের পশ্চিম নানাইচ গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, মোয়াজ্জেম এর আগে একাধিকবার এই গ্রামে বিদ্যুৎ-সংযোগের উদ্বোধন করা হবে বলে তারিখ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনোবারই তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিদ্যুৎ-সংযোগ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়নি। এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের মিটারই লাগানো হয়নি।আবেদনকারীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক চাল। এই টাকা আদায়ের পেছনে আরও অনেকেই জড়িত। আমি শুধু দু-একজনের কাছ থেকে কিছু টাকা আদায়ে তাঁদের সহযোগিতা করেছি। আমি ব্যক্তিগত স্বার্থে কারও কাছ থেকে বিদ্যুতের সংযোগের জন্য টাকাপয়সা নিইনি। যাঁরা এই টাকা পেয়েছেন, এখন তাঁরাই আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।’ তবে কাদের জন্য তিনি টাকা আদায় করেছেন, এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।এ ব্যাপারে ধামইরহাট পল্লী বিদ্যুতের উপ-আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (এজিএম) হানিফ রেজা বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে ওই গ্রামে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে এখন কোনো ঘুষ দিতে হয় না। পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী শুধু বিদ্যুতের মিটার লাগানোর জন্য গ্রাহকদের ৪৫০ টাকা করে দিতে হয়। এর বাইরে আর কোনো টাকা লাগে না।’হানিফ রেজা দাবি করেন, ‘পশ্চিম নানাইচ গ্রামের আবেদনকারীরা বিদ্যুতের জন্য মোয়াজ্জেম নামের যে ব্যক্তিকে টাকা দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের লোককে টাকা দিয়ে গ্রাহকেরা প্রতারিত হলে এর দায় আমরা নেব না। এর জন্য তাঁরা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
গতকাল স্টার্কের তোপেই অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে নিউজিল্যান্ড। পাঁচ উইকেট নিয়েছেন, নিজের পুরো স্পেলে ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নিজের জন্য এক আলাদা স্থান করে নিয়েছেন এই অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলার!ছোটবেলায় হতে চেয়েছিলেন উইকেটরক্ষক। ভাগ্যিস হননি! হলে বিশ্ব এমন ভীতিজাগানিয়া ফাস্ট বোলার পেত কীভাবে? টি-টোয়েন্টির ধুমধাড়াক্কার এ যুগে আগের মতো ফাস্ট বোলার পাওয়া যায় কোথায়? মিচেল স্টার্কের মতো কিছু ফাস্ট বোলারের কল্যাণেই এখনো ফাস্ট বোলিং শিল্পটা বেঁচে আছে যেন। প্রতি বিশ্বকাপেই সে কথাটা যেন নতুন করে মনে করিয়ে দেন স্টার্ক।গতকাল স্টার্কের তোপেই উড়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে তেমন বড় স্কোর করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। কিউই বাঁহাতি ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্টের তোপে ২৪৩ রানেই থেমে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। মারকাটারি ব্যাটিংয়ের এ যুগে ২৪৩ রান করে স্বস্তিতে থাকতে পারে খুব কম দল। এই খুব কম দলগুলোর মধ্যেই একটি দল অস্ট্রেলিয়া। স্টার্কের মতো পেসার যে আছে তাদের! স্টার্কের গতিতে বাঁধ দেওয়ার কোনো উপায় জানা ছিল না কিউই ব্যাটসম্যানদের। ১৫৭ রানে থেমে যায় তারা। ৫ উইকেট নিয়ে দলকে ৮৬ রানের ম্যাচ উপহার দেয় স্টার্ক। এই নিয়ে বিশ্বকাপে তিনবার ম্যাচে পাঁচ উইকেট পাওয়া হয়ে গেল এই গতিতারকার। যে কীর্তি গ্লেন ম্যাকগ্রা থেকে শুরু করে ওয়াসিম আকরাম, লাসিথ মালিঙ্গা থেকে শুরু করে ব্রেট লি, কার্টলি অ্যামব্রোস থেকে শুরু করে রিচার্ড হ্যাডলি, কপিল দেব থেকে শুরু করে মাইকেল হোল্ডিং—কোনো পেসারেরই নেই!অথচ এটা স্টার্কের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ মাত্র! ২০১৫ বিশ্বকাপে আট ম্যাচ খেলে ২২ উইকেট পেয়েছিলেন স্টার্ক। এবার নিজেকেই ছাড়িয়ে গেছেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত খেলেছেন আট ম্যাচ, ২৪ উইকেট নেওয়া হয়ে গেছে তার। মাত্র দুই বিশ্বকাপ খেলে এর মধ্যেই বিশ্বকাপের ইতিহাসের সফলতম বোলারের তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে চলে এসেছেন—৪৬ উইকেট নিয়ে। স্টার্কের ওপরে আছেন শুধু সাবেক অস্ট্রেলিয়ান পেস তারকা গ্লেন ম্যাকগ্রা (৪ আসরে, ৩৯ ম্যাচে ৭১ উইকেট), লঙ্কান স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন (৫ আসরে, ৪০ ম্যাচে ৬৮ উইকেট), পাকিস্তান কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম (৫ আসরে, ৩৮ ম্যাচে ৫৫ উইকেট), লঙ্কান তারকা লাসিথ মালিঙ্গা (৪ আসরে, ২৭ ম্যাচে ৫২ উইকেট) ও চামিন্দা ভাস (৪ আসরে, ৩১ ম্যাচে ৪৯ উইকেট)। হিসেব করে দেখুন, ম্যাকগ্রা-মুরালিদের মতো চার-পাঁচ আসর খেললে মাত্র ১৬ ম্যাচ খেলা স্টার্ক নিজেকে কোথায় নিয়ে যাবেন!স্টার্ককে আরও ভয়ংকর ব্যাপার হলো নতুন ও পুরোনো বল উভয় ক্ষেত্রেই তিনি সমান ভয়ংকর। ইনিংসের মাঝপথে উইকেট নিতে জুড়ি নেই তাঁর। এই বিশ্বকাপের কথাই ধরুন। বাংলাদেশের বিপক্ষে তামিমকে যখন বোল্ড করলেন, ৬২ রান করে তামিম তখন মোটামুটি থিতু হয়েছেন উইকেটে। ভারতের বিপক্ষে শিখর ধাওয়ানকে আউট করার সময় ভারত ওপেনারের রান ছিল ১১৭। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আন্দ্রে রাসেল আর জেসন হোল্ডারকে আউট করেছেন যথাক্রমে ১৫ ও ৫১ রানে। ওয়াহাব রিয়াজের রান যখন ৪৫, স্টার্কের হাতে প্রাণ যায় তাঁর। একই অবস্থা বেন স্টোকসেরও। স্টার্কের বলে আউট হওয়ার সময় রান ছিল ৮৯। গতকাল কেইন উইলিয়ামসন স্টার্কের বলে আউট হয়েছেন ৪০ রান করে। জুটি ভাঙা দরকার? স্টার্ককে ডাকো! ইনিংসের শুরুতে উইকেট দরকার—স্টার্ক কোথায়? ডেথ ওভারে প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপের লেজ গুটিয়ে দিতে হবে? স্টার্ক আছে না!এভাবেই অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের চিন্তা অনেক কমিয়ে দিয়েছেন এই তারকা। আর নিজেকে প্রমাণ করেছেন ম্যাকগ্রা, লিলি, টমসন, রিড, ম্যাকডারমটদের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে।